সহিহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "আযান" হাদিস নং -৭৫১ থেকে ৭৭৫
সালাতে এদিক ওদিক তাকান ।
৭৫১
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَشْعَثُ بْنُ
سُلَيْمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ سَأَلْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الاِلْتِفَاتِ فِي الصَّلاَةِ فَقَالَ
" هُوَ اخْتِلاَسٌ يَخْتَلِسُهُ الشَّيْطَانُ مِنْ صَلاَةِ الْعَبْدِ
".
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে সালাতে এদিক ওদিক তাকানো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ এটা
একধরনের ছিনতাই, যার মাধ্যমে শয়তান বান্দার সালাত হতে অংশ বিশেষ অংশ ছিনিয়ে নেয়।
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ
عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي خَمِيصَةٍ لَهَا
أَعْلاَمٌ فَقَالَ " شَغَلَتْنِي أَعْلاَمُ هَذِهِ، اذْهَبُوا بِهَا إِلَى
أَبِي جَهْمٍ وَأْتُونِي بِأَنْبِجَانِيَّةٍ ".
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি নক্শা করা চাদর
পরে সালাত আদায় করলেন। সালাতের পরে তিনি বললেনঃ এ চাদরের কারুকার্য আমার মনকে
আকর্ষিত করেছিল। এটি আবূ জাহমের নিকট নিয়ে যাও এবং এর বদলে একটি ‘আম্বজানিয়্যাহ’
(নকশা ছাড়া মোটা কাপড়) নিয়ে এসো।
১০/৯৪. অধ্যায়ঃ
সালাতের মধ্যে কোন কিছু ঘটলে বা কোন কিছু দেখলে বা ক্বিব্লাহর দিকে
থুথু দেখলে, সে দিকে তাকান ।
সাহ্ল (রহঃ) বলেছেন, আবূ বক্র (রাঃ) তাকালেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলেন ।
৭৫৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ، أَنَّهُ قَالَ رَأَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم نُخَامَةً فِي
قِبْلَةِ الْمَسْجِدِ، وَهْوَ يُصَلِّي بَيْنَ يَدَىِ النَّاسِ، فَحَتَّهَا ثُمَّ
قَالَ حِينَ انْصَرَفَ " إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا كَانَ فِي الصَّلاَةِ
فَإِنَّ اللَّهَ قِبَلَ وَجْهِهِ، فَلاَ يَتَنَخَّمَنَّ أَحَدٌ قِبَلَ وَجْهِهِ
فِي الصَّلاَةِ ". رَوَاهُ مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ وَابْنُ أَبِي رَوَّادٍ
عَنْ نَافِعٍ.
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের সামনে
দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন, এমতাবস্থায় মসজিদে কিব্লার দিকে থুথু দেখতে পেয়ে তা
পরিষ্কার করে ফেললেন। অতঃপর তিনি সালাত শেষ করে বললেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে
থাকে, তখন আল্লাহ্ তার সামনে থাকেন। কাজেই সালাতে থাকা অবস্থায় কেউ সামনের দিকে
থুথু ফেলবে না। মূসা ইব্নু ‘উক্বাহ ও ইব্নু আবূ রাওয়াদও (রহঃ) নাফি’ (রহঃ) হতে
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
৭৫৪
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسٌ، قَالَ بَيْنَمَا الْمُسْلِمُونَ فِي
صَلاَةِ الْفَجْرِ لَمْ يَفْجَأْهُمْ إِلاَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
كَشَفَ سِتْرَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ فَنَظَرَ إِلَيْهِمْ وَهُمْ صُفُوفٌ،
فَتَبَسَّمَ يَضْحَكُ، وَنَكَصَ أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه عَلَى عَقِبَيْهِ
لِيَصِلَ لَهُ الصَّفَّ فَظَنَّ أَنَّهُ يُرِيدُ الْخُرُوجَ، وَهَمَّ
الْمُسْلِمُونَ أَنْ يَفْتَتِنُوا فِي صَلاَتِهِمْ، فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ
أَتِمُّوا صَلاَتَكُمْ، فَأَرْخَى السِّتْرَ، وَتُوُفِّيَ مِنْ آخِرِ ذَلِكَ
الْيَوْمِ.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বললেন, মুসলমানগণ ফজরের সালাতে রত এ সময় আল্লাহ্র রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ)-এর হুজরার পর্দা উঠালে তাঁরা
চমকে উঠলেন। তিনি তাদের দিকে তাঁকিয়ে দেখলেন, তাঁরা কাতারবদ্ধ হয়ে আছেন। তা দেখে
তিনি মুচকি হাসলেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁর ইমামতের স্থান ছেড়ে দিয়ে কাতারে শামিল হবার
জন্য পিছিয়ে আসতে চাইলেন। তিনি মনে করেছিলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হতে চান। মুসলিমগণও সালাত ছেড়ে দিতে উদ্যত হয়েছিলেন।
তিনি ইঙ্গিতে তাঁদের বললেন, তোমরা তোমাদের সালাত পুরো কর। অতঃপর তিনি পর্দা ফেলে
দিলেন। এ দিনেরই শেষে তাঁর ওফাত হয়। [১]
[১] অর্থাৎ তাঁর ইন্তিকালের বিষয়টি শেষ প্রহরে
সকলের নিকট সুনিশ্চিতভাবে প্রতীয়মান হয় । কেননা , ঐতি-হাসিকগণ এ ব্যাপারে একমত যে
, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দিনের প্রথম প্রহরে ইন্তিকাল
করেছেন । তাই এ হাদীসের ব্যাখ্যা এভাবেই করা যায় ।
১০/৯৫. অধ্যায়ঃ
সব সালাতেই ইমাম ও মুক্তাদীর কিরাআত পড়া জরুরী, মুকীম অবস্থায় হোক বা
সফরে, সশব্দে কিরাআতের সালাত হোক বা নিঃশব্দে সব সালাতেই ইমাম ও মুক্তাদীর কিরাআত
পড়া জরুরী
৭৫৫
حَدَّثَنَا
مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ
بْنُ عُمَيْرٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ شَكَا أَهْلُ الْكُوفَةِ
سَعْدًا إِلَى عُمَرَ ـ رضى الله عنه ـ فَعَزَلَهُ وَاسْتَعْمَلَ عَلَيْهِمْ
عَمَّارًا، فَشَكَوْا حَتَّى ذَكَرُوا أَنَّهُ لاَ يُحْسِنُ يُصَلِّي، فَأَرْسَلَ
إِلَيْهِ فَقَالَ يَا أَبَا إِسْحَاقَ إِنَّ هَؤُلاَءِ يَزْعُمُونَ أَنَّكَ لاَ
تُحْسِنُ تُصَلِّي قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ أَمَّا أَنَا وَاللَّهِ فَإِنِّي كُنْتُ
أُصَلِّي بِهِمْ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَخْرِمُ
عَنْهَا، أُصَلِّي صَلاَةَ الْعِشَاءِ فَأَرْكُدُ فِي الأُولَيَيْنِ وَأُخِفُّ فِي
الأُخْرَيَيْنِ. قَالَ ذَاكَ الظَّنُّ بِكَ يَا أَبَا إِسْحَاقَ. فَأَرْسَلَ
مَعَهُ رَجُلاً أَوْ رِجَالاً إِلَى الْكُوفَةِ، فَسَأَلَ عَنْهُ أَهْلَ
الْكُوفَةِ، وَلَمْ يَدَعْ مَسْجِدًا إِلاَّ سَأَلَ عَنْهُ، وَيُثْنُونَ
مَعْرُوفًا، حَتَّى دَخَلَ مَسْجِدًا لِبَنِي عَبْسٍ، فَقَامَ رَجُلٌ مِنْهُمْ
يُقَالُ لَهُ أُسَامَةُ بْنُ قَتَادَةَ يُكْنَى أَبَا سَعْدَةَ قَالَ أَمَّا إِذْ
نَشَدْتَنَا فَإِنَّ سَعْدًا كَانَ لاَ يَسِيرُ بِالسَّرِيَّةِ، وَلاَ يَقْسِمُ
بِالسَّوِيَّةِ، وَلاَ يَعْدِلُ فِي الْقَضِيَّةِ. قَالَ سَعْدٌ أَمَا وَاللَّهِ
لأَدْعُوَنَّ بِثَلاَثٍ، اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ عَبْدُكَ هَذَا كَاذِبًا، قَامَ
رِيَاءً وَسُمْعَةً فَأَطِلْ عُمْرَهُ، وَأَطِلْ فَقْرَهُ، وَعَرِّضْهُ
بِالْفِتَنِ، وَكَانَ بَعْدُ إِذَا سُئِلَ يَقُولُ شَيْخٌ كَبِيرٌ مَفْتُونٌ، أَصَابَتْنِي
دَعْوَةُ سَعْدٍ. قَالَ عَبْدُ الْمَلِكِ فَأَنَا رَأَيْتُهُ بَعْدُ قَدْ سَقَطَ
حَاجِبَاهُ عَلَى عَيْنَيْهِ مِنَ الْكِبَرِ، وَإِنَّهُ لَيَتَعَرَّضُ
لِلْجَوَارِي فِي الطُّرُقِ يَغْمِزُهُنَّ.
জাবির ইব্নু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কূফাবাসীরা সা’দ (রাঃ)-এর [১] বিরুদ্ধে ‘উমর (রাঃ)-এর
নিকট অভিযোগ করলে তিনি তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন এবং আম্মার (রাঃ)-কে তাদের
শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। কূফার লোকেরা সা’দ (রাঃ)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে
এ-ও বলে যে, তিনি ভালরূপে সালাত আদায় করতে পারেন না। ‘উমর (রাঃ) তাঁকে ডেকে
পাঠালেন এবং বললেন, হে আবূ ইসহাক! তারা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, আপনি নাকি
ভালরূপে সালাত আদায় করতে পারেন না। সা’দ (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের অনুরূপই সালাত আদায় করে থাকি। তাতে
কোন ত্রুটি করি না। আমি ‘ইশার সালাত আদায় করতে প্রথমে দু’ রাকাআত একটু দীর্ঘ ও
শেষের দু’ রাকা‘আত সংক্ষেপ করতাম। ‘উমর (রাঃ) বললেন, হে আবূ ইসহাক! আপনার সম্পর্কে
আমার এ-ই ধারণা। অতঃপর ‘উমর (রাঃ) কূফার অধিবাসীদের এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য
এক বা একাধিক ব্যক্তিকে সা’দ (রাঃ) এর সঙ্গে কূফায় পাঠান। সে ব্যক্তি প্রতিটি
মসজিদে গিয়ে সা’দ (রাঃ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো এবং তাঁরা সকলেই তাঁর ভূয়সী প্রশংসা
করলেন। অবশেষে সে ব্যক্তি বনূ আব্স গোত্রের মসজিদে উপস্থিত হয়। এখানে উসামা উব্নু
কাতাদা নামে এক ব্যক্তি যাকে আবূ সা’দাহ্ ডাকা হত– দাঁড়িয়ে বলল, যেহেতু তুমি
আল্লাহ্র নামে শপথ দিয়ে জিজ্ঞেস করেছ, সা’দ (রাঃ) কখনো সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে
যান না, গানীমাতের মাল সমভাবে বন্টন করেন না এবং বিচারে ইনসাফ করেন না। তখন সা’দ
(রাঃ) বললেন, মনে রেখো, আল্লাহ্র কসম! আমি তিনটি দু’আ করছিঃ হে আল্লাহ্! যদি
তোমার এ বান্দা মিথ্যাবাদী হয়, লোক দেখানো এবং অপপ্রচারের জন্য দাঁড়িয়ে থাকে
তাহলে– ১. তার হায়াত বাড়িয়ে দিন, ২. তার অভাব বাড়িয়ে দিন, এবং ৩. তাঁকে ফিত্নার
সম্মুখীন করুন। পরবর্তীকালে লোকটিকে (তার অবস্থা সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করা হলে সে
বলতো, আমি বয়সে বৃদ্ধ, ফিত্নায় লিপ্ত। সা’দ (রাঃ) এর দু’আ আমার উপর লেগে আছে।
বর্ণনাকারী আবদুল মালিক (রহঃ) বলেন, পরে আমি সে লোকটিকে দেখেছি, অতি বৃদ্ধ হয়ে
যাওয়ার কারণে তার ভ্রু চোখের উপর ঝুলে গেছে এবং সে পথে মেয়েদের বিরক্ত করত এবং
তাদের চিমটি দিত।
৭৫৬
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا
الزُّهْرِيُّ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ صَلاَةَ لِمَنْ
لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ ".
‘উবাদাহ ইব্নু সমিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে
ব্যক্তি সালাতে সূরা আল-ফাতিহা পড়ল না তার সালাত হলো না। [১]
[১] আমাদের দেশের হানাফী ভাইয়েরা ইমামের পেছনে সূরা আল-ফাতিহা
পাঠ করেন না, এটা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ‘আমলের বিপরীত।
ইমামের পিছনে মুক্তাদীকে অবশ্যই সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করতে হবে। মুক্তাদী ইমামের
পিছনে সূরা ফাতিহা না পড়লে তার সালাত, সালাত বলে গণ্য হবে না ।
বুখারীর অন্য বর্ণনায় জুযউল ক্বিরাআতের মধ্যে আছে- ‘আমর্ বিন শুয়াইব তাঁর পিতা হতে, তাঁর পিতা তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করে বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন তোমরা কি আমার পেছনে কিছু পড়ে থাক? তাঁরা বললেন, হাঁ আমরা খুব তাড়াহুড়া করে পাঠ করে থাকি। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন তোমরা উম্মুল কুরআন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা ব্যতিত কিছুই পড়বে না। (বুখারী ১ম ১০৪ পৃষ্ঠা। জুযউল কিরায়াত। মুসলিম ১৬৯, ১৭০ পৃষ্ঠা। আবূ দাউদ ১০১ পৃষ্ঠা। তিরমিযী ১ম খণ্ড ৫৭, ৭১ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪৬ পৃষ্ঠা। ইব্নু মাজাহ ৬১ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ৯৫ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মালিক ১০৬ পৃষ্ঠা। সহীহ ইব্নু খুযায়মাহ ১ম খণ্ড ২৪৭ পৃষ্ঠা। মুসলিম ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদীস নং ৭৫৮-৭৬৭ ও ৮২০-৮২৪। হাদীস শরীফ, মাওঃ আবদুর রহীম, ২য় খণ্ড ১৯৩-১৯৬ পৃষ্ঠা, ইসলামিয়াত বি-এ, হাদীস পর্ব ১৪৪-১৬১ পৃষ্ঠা। হিদায়াহ দিরায়াহ ১০৬ পৃষ্ঠা। মেশকাত ৭৮ পৃষ্ঠা। বুখারী আযীযুল হক ১ম হাদীস নং ৪৪১। বুখারী- আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৭১২। বুখারী-ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭১৮। তিরমিযী- ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২৪৭। মিশকাত- নূর মোহাম্মদ আযমী ২য় খণ্ড ও মাদ্রাসা পাঠ্য হাদীস নং ৭৬৫, ৭৬৬, ৭৯৪। বুলূগুল মারাম ৮৩ পৃষ্ঠা। কিমিয়ায়ে সায়াদাত ১ম খণ্ড ২০৪ পৃষ্ঠা ।)
বুখারীর অন্য বর্ণনায় জুযউল ক্বিরাআতের মধ্যে আছে- ‘আমর্ বিন শুয়াইব তাঁর পিতা হতে, তাঁর পিতা তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করে বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন তোমরা কি আমার পেছনে কিছু পড়ে থাক? তাঁরা বললেন, হাঁ আমরা খুব তাড়াহুড়া করে পাঠ করে থাকি। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন তোমরা উম্মুল কুরআন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা ব্যতিত কিছুই পড়বে না। (বুখারী ১ম ১০৪ পৃষ্ঠা। জুযউল কিরায়াত। মুসলিম ১৬৯, ১৭০ পৃষ্ঠা। আবূ দাউদ ১০১ পৃষ্ঠা। তিরমিযী ১ম খণ্ড ৫৭, ৭১ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪৬ পৃষ্ঠা। ইব্নু মাজাহ ৬১ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ৯৫ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মালিক ১০৬ পৃষ্ঠা। সহীহ ইব্নু খুযায়মাহ ১ম খণ্ড ২৪৭ পৃষ্ঠা। মুসলিম ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদীস নং ৭৫৮-৭৬৭ ও ৮২০-৮২৪। হাদীস শরীফ, মাওঃ আবদুর রহীম, ২য় খণ্ড ১৯৩-১৯৬ পৃষ্ঠা, ইসলামিয়াত বি-এ, হাদীস পর্ব ১৪৪-১৬১ পৃষ্ঠা। হিদায়াহ দিরায়াহ ১০৬ পৃষ্ঠা। মেশকাত ৭৮ পৃষ্ঠা। বুখারী আযীযুল হক ১ম হাদীস নং ৪৪১। বুখারী- আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৭১২। বুখারী-ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭১৮। তিরমিযী- ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২৪৭। মিশকাত- নূর মোহাম্মদ আযমী ২য় খণ্ড ও মাদ্রাসা পাঠ্য হাদীস নং ৭৬৫, ৭৬৬, ৭৯৪। বুলূগুল মারাম ৮৩ পৃষ্ঠা। কিমিয়ায়ে সায়াদাত ১ম খণ্ড ২০৪ পৃষ্ঠা ।)
৭৫৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ
حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْمَسْجِدَ، فَدَخَلَ رَجُلٌ
فَصَلَّى فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ وَقَالَ "
ارْجِعْ فَصَلِّ، فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ ". فَرَجَعَ يُصَلِّي كَمَا
صَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ
" ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " ثَلاَثًا. فَقَالَ
وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَهُ فَعَلِّمْنِي. فَقَالَ
" إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَكَبِّرْ، ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ
مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ، ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا، ثُمَّ
ارْفَعْ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا،
ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا، وَافْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ
كُلِّهَا ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে প্রবেশ
করলেন, তখন একজন সাহাবী এসে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম করলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, আবার গিয়ে
সালাত আদায় কর। কেননা, তুমিতো সালাত আদায় করনি। তিনি ফিরে গিয়ে পূর্বের মত সালাত
আদায় করলেন। অতঃপর এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম করলেন।
তিনি বললেনঃ ফিরে গিয়ে আবার সালাত আদায় কর। কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে
তিনবার বললেন। সাহাবী বললেন, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ
করেছেন- আমিতো এর চেয়ে সুন্দর করে সালাত আদায় করতে জানি না। কাজেই আপনি আমাকে
শিখিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ যখন তুমি সালাতের জন্য দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে। অতঃপর
কুরআন হতে যা তোমার পক্ষে সহজ তা পড়বে। অতঃপর রুকু’তে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকূ’
করবে। অতঃপর সিজদা হতে উঠে স্থির হয়ে বসবে। আর তোমার পুরো সালাতে এভাবেই করবে।
৭৫৮
حَدَّثَنَا
أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ
عُمَيْرٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ قَالَ سَعْدٌ كُنْتُ أُصَلِّي بِهِمْ
صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلاَتَىِ الْعَشِيِّ لاَ أَخْرِمُ
عَنْهَا، أَرْكُدُ فِي الأُولَيَيْنِ وَأَحْذِفُ فِي الأُخْرَيَيْنِ. فَقَالَ
عُمَرُ ـ رضى الله عنه ـ ذَلِكَ الظَّنُّ بِكَ.
জাবির ইব্নু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা’দ (রাঃ) বলেন, আমি তাদেরকে নিয়ে বিকালের দু’ সালাত (যুহর ও ‘আসর)
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের মত সালাত আদায় করতাম।
এতে কোন ত্রুটি করতাম না। প্রথম দু’ রাক’আতে কিরআত দীর্ঘায়িত এবং শেষ দু’ রাক’আতে
তা সংক্ষিপ্ত করতাম। ‘উমর (রাঃ) বলেন, তোমার ব্যাপারে এটাই ধারণা।
১০/৯৬ অধ্যায়ঃ
যুহরের সালাতে কিরাআত পড়া ।
৭৫৯
حَدَّثَنَا
أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ مِنْ صَلاَةِ الظُّهْرِ بِفَاتِحَةِ
الْكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، يُطَوِّلُ فِي الأُولَى، وَيُقَصِّرُ فِي الثَّانِيَةِ،
وَيُسْمِعُ الآيَةَ أَحْيَانًا، وَكَانَ يَقْرَأُ فِي الْعَصْرِ بِفَاتِحَةِ
الْكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، وَكَانَ يُطَوِّلُ فِي الأُولَى، وَكَانَ يُطَوِّلُ فِي
الرَّكْعَةِ الأُولَى مِنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ، وَيُقَصِّرُ فِي الثَّانِيَةِ.
আবূ ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের প্রথম দু’
রাক’আতে সূরা ফাতিহার সঙ্গে আরও দু’টি সূরা পাঠ করতেন। প্রথম রাক’আতে দীর্ঘ করতেন
এবং দ্বিতীয় রাক’আত সংক্ষেপ করতেন। কখনো কোন আয়াত শুনিয়ে পড়তেন। ‘আসরের সালাতেও
তিনি সূরা ফাতিহার সাথে অন্য দু’টি সূরা পড়তেন। প্রথম রাক’আত দীর্ঘ করতেন। ফজরের
প্রথম রাক’আতও তিনি দীর্ঘ করতেন এবং দ্বিতীয় রাক’আতে সংক্ষেপ করতেন।
৭৬০
حَدَّثَنَا
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ،
حَدَّثَنِي عُمَارَةُ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ سَأَلْنَا خَ بابا أَكَانَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ
نَعَمْ. قُلْنَا بِأَىِّ شَىْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ قَالَ بِاضْطِرَابِ
لِحْيَتِهِ.
আবূ মা’মার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহ্র ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
আমরা প্রশ্ন করলাম, আপনারা কী করে তা বুঝতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ির নড়াচড়ায়।
১০/৯৭. অধ্যায়ঃ
‘আসরের সালাতে কিরাআত ।
৭৬১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ
عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ قُلْتُ لِخَ باب بْنِ
الأَرَتِّ أَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ
وَالْعَصْرِ قَالَ نَعَمْ. قَالَ قُلْتُ بِأَىِّ شَىْءٍ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ
قِرَاءَتَهُ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ.
আবূ মা’মার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি খাব্বাব ইব্নু আরত্ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহর ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি
বললেন, হ্যাঁ। আমি জিজ্ঞেস করলাম আপনারা কী করে তাঁর কিরাআত বুঝতেন? তিনি বললেন,
তাঁর দাড়ি নড়াচড়ায়।
৭৬২
حَدَّثَنَا
الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ
بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ، وَسُورَةٍ سُورَةٍ، وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ أَحْيَانًا.
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর ও ‘আসরের
প্রথম দু’ রাক’আতে সূরা আল-ফাতিহার সাথে আর একটি করে সূরা পড়তেন। আর কখনো কখনো কোন
আয়াত আমাদের শুনিয়ে পড়তেন।
১০/৯৮. অধ্যায়ঃ
মাগরিবের সালাতে কিরাআত ।
৭৬৩
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ،
عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ
رضى الله عنهما ـ أَنَّهُ قَالَ إِنَّ أُمَّ الْفَضْلِ سَمِعَتْهُ وَهُوَ يَقْرَأُ
{وَالْمُرْسَلاَتِ عُرْفًا} فَقَالَتْ يَا بُنَىَّ وَاللَّهِ لَقَدْ
ذَكَّرْتَنِي بِقِرَاءَتِكَ هَذِهِ السُّورَةَ، إِنَّهَا لآخِرُ مَا سَمِعْتُ مِنْ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ بِهَا فِي الْمَغْرِبِ.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উম্মুল ফায্ল (রাঃ) তাঁকে 'وَالمُرسَلاتِ غُرفاً' সূরাটি তেলাওয়াত করতে শুনে বললেন, বেটা! তুমি এ সূরা তেলাওয়াত করে
আমাকে স্মরণ করিয়ে দিলে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
মাগরিবের সালাতে এ সূরাটি পড়তে শেষবারের মত শুনেছিলাম।
৭৬৪
حَدَّثَنَا
أَبُو عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُرْوَةَ
بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ مَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ، قَالَ قَالَ لِي زَيْدُ بْنُ
ثَابِتٍ مَا لَكَ تَقْرَأُ فِي الْمَغْرِبِ بِقِصَارٍ، وَقَدْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ بِطُولِ الطُّولَيَيْنِ
মারওয়ান ইব্নু হাকাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা যায়িদ ইব্নু সাবিত (রাঃ) আমাকে বললেন, কী ব্যাপার,
মাগরিবের সালাতে তুমি যে কেবল ছোট ছোট সুরা তেলাওয়াত কর? অথচ আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দু’টি দীর্ঘ সূরার মধ্যে অধিকতর দীর্ঘটি
পাঠ করতে শুনেছি। [১]
[১] অপেক্ষাকৃত দু'টি দীর্ঘতম সূরা দ্বারা সূরা
আরাফ ও সূরা আন'আমকে বুঝানো হয়েছে। আর এ দু'টির মাঝে দীর্ঘতম সূরা আরাফ।
১০/৯৯. অধ্যায়ঃ
মাগরিবের সালাতে উচ্চৈঃস্বরে কিরাআত পাঠ ।
৭৬৫
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ،
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ فِي الْمَغْرِبِ بِالطُّورِ.
জুবায়র ইব্নু মুত’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
মাগরিবের সালাতে সূরা আত-তূর পড়তে শুনেছি।
১০/১০০. অধ্যায়ঃ
‘ইশার সালাতে সশব্দে কিরাআত ।
৭৬৬
حَدَّثَنَا
أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ بَكْرٍ،
عَنْ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ الْعَتَمَةَ فَقَرَأَ
{إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ} فَسَجَدَ فَقُلْتُ لَهُ قَالَ سَجَدْتُ خَلْفَ
أَبِي الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم فَلاَ أَزَالُ أَسْجُدُ بِهَا حَتَّى
أَلْقَاهُ.
আবূ রাফি’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সঙ্গে ‘ইশার সালাত আদায়
করলাম। সেদিন তিনি 'إِذاَ السَّماءُ انشَقَّت' সূরাটি তেলাওয়াত করে সিজদা করলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি
বলেন, আমি আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে এ সিজদা করেছি,
তাই তাঁর সঙ্গে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত এ সূরায় সিজদা করব।
৭৬৭
حَدَّثَنَا
أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيٍّ، قَالَ سَمِعْتُ
الْبَرَاءَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ فِي سَفَرٍ فَقَرَأَ فِي
الْعِشَاءِ فِي إِحْدَى الرَّكْعَتَيْنِ بِالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ.
‘আদী (ইব্ন সাবিত) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বারা‘আ (রাঃ) হতে শুনেছি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সফরে ‘ইশা সালাতের প্রথম দু‘ রাক‘আতের এক রাক‘আতে সূরা 'وَالتّيِنِ وَالزَّيتوُنِ' পাঠ করেন।
১০/১০১. অধ্যায়ঃ
‘ইশার সালাতে সিজদার আয়াত (সম্বলিত সুরা) তেলাওয়াত ।
৭৬৮
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، قَالَ حَدَّثَنِي
التَّيْمِيُّ، عَنْ بَكْرٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ أَبِي
هُرَيْرَةَ الْعَتَمَةَ فَقَرَأَ {إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ} فَسَجَدَ
فَقُلْتُ مَا هَذِهِ قَالَ سَجَدْتُ بِهَا خَلْفَ أَبِي الْقَاسِمِ صلى الله عليه
وسلم فَلاَ أَزَالُ أَسْجُدُ بِهَا حَتَّى أَلْقَاهُ.
আবূ রাফি‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সঙ্গে ‘ইশার সালাত আদায় করলাম।
তিনি 'إِذاَ السَّماءُ انشَقَّت' সূরাটি তেলাওয়াত করে সিজদা করলেন। আমি তাঁকে
জিজ্ঞেস করলাম, এ সিজদা কেন? তিনি বলেন, আমি আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর পিছনে এ সূরায় সিজদা করেছি, তাই তাঁর সঙ্গে মিলিত না হওয়া অবধি আমি
এতে সিজদা করব।
১০/১০২. অধ্যায়ঃ
‘ইশার সালাতে কিরাআত ।
৭৬৯
حَدَّثَنَا
خَلاَّدُ بْنُ يَحْيَى، قَالَ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا عَدِيُّ بْنُ
ثَابِتٍ، سَمِعَ الْبَرَاءَ، رضى الله عنه قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم يَقْرَأُ {وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ} فِي الْعِشَاءِ، وَمَا
سَمِعْتُ أَحَدًا أَحْسَنَ صَوْتًا مِنْهُ أَوْ قِرَاءَةً.
বারা‘আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘ইশার
সালাতে 'وَالتّيِنِ وَالزَّيتوُنِ' -"সূরা আত তীন" পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে কারো সুন্দর
কন্ঠ অথবা কিরাআত শুনিনি।
১০/১০৩. অধ্যায়ঃ
প্রথম দু‘রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করা ও শেষ দু’ রাক‘আতে তা সংক্ষেপ করা
।
৭৭০
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي عَوْنٍ، قَالَ
سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ، قَالَ قَالَ عُمَرُ لِسَعْدٍ لَقَدْ شَكَوْكَ فِي
كُلِّ شَىْءٍ حَتَّى الصَّلاَةِ. قَالَ أَمَّا أَنَا فَأَمُدُّ فِي
الأُولَيَيْنِ، وَأَحْذِفُ فِي الأُخْرَيَيْنِ، وَلاَ آلُو مَا اقْتَدَيْتُ بِهِ
مِنْ صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. قَالَ صَدَقْتَ، ذَاكَ
الظَّنُّ بِكَ، أَوْ ظَنِّي بِكَ.
জাবির ইব্নু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমর (রাঃ) সা‘দ (রাঃ)-কে বললেন, আপনার বিরুদ্ধে তারা
(কূফাবাসীরা) সর্ব বিষয়ে অভিযোগ করেছে, এমনকি সালাত সম্পর্কেও। সা‘দ (রাঃ) বললেন,
আমি প্রথম দু‘রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করে থাকি এবং শেষের দু‘ রাক‘আতে তা সংক্ষেপ
করি। আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে যেমন সালাত
আদায় করেছি, তেমনই সালাত আদায়ের ব্যাপারে আমি ক্রটি করিনি। ‘উমর (রাঃ) বললেন আপনি
ঠিকই বলেছেন, আপনার ব্যাপারে ধারণা এমনই, কিংবা (তিনি বলেছিলেন) আপনার সম্পর্কে
আমার এ রকমই ধারণা।
১০/১০৪. অধ্যায়ঃ
ফজরের সালাতে কিরাআত ।
উম্মূ সালামা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সূরা তূর পড়েছেন।
৭৭১
حَدَّثَنَا
آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا سَيَّارُ بْنُ سَلاَمَةَ،
قَالَ دَخَلْتُ أَنَا وَأَبِي، عَلَى أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ فَسَأَلْنَاهُ
عَنْ وَقْتِ الصَّلَوَاتِ، فَقَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي
الظُّهْرَ حِينَ تَزُولُ الشَّمْسُ، وَالْعَصْرَ وَيَرْجِعُ الرَّجُلُ إِلَى
أَقْصَى الْمَدِينَةِ وَالشَّمْسُ حَيَّةٌ، وَنَسِيتُ مَا قَالَ فِي الْمَغْرِبِ،
وَلاَ يُبَالِي بِتَأْخِيرِ الْعِشَاءِ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ وَلاَ يُحِبُّ
النَّوْمَ قَبْلَهَا، وَلاَ الْحَدِيثَ بَعْدَهَا، وَيُصَلِّي الصُّبْحَ
فَيَنْصَرِفُ الرَّجُلُ فَيَعْرِفُ جَلِيسَهُ، وَكَانَ يَقْرَأُ فِي
الرَّكْعَتَيْنِ أَوْ إِحْدَاهُمَا مَا بَيْنَ السِّتِّينَ إِلَى الْمِائَةِ.
সাইয়ার ইব্নু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ও আমার পিতা আবূ বারযা আসলামী (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত
হয়ে সালাতসমূহের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত সূর্য ঢলে গেলেই আদায় করতেন। আর ‘আসর (এমন সময়
যে, সালাতের শেষে) কোন ব্যক্তি সূর্য সতেজ থাকাবস্থায় মদীনার প্রান্তে ফিরে আসতে পারতো।
মাগরিব সম্পর্কে তিনি কী বলেছিলেন, তা আমি ভুলে গেছি। আর তিনি রাতের এক তৃতীয়াংশ
পর্যন্ত ‘ইশা বিলম্ব করতে কোন দ্বিধা করতেন না এবং ‘ইশার পূর্বে ঘুমানো ও পরে
কথাবার্তা বলা তিনি পছন্দ করতেন না। আর তিনি ফজর আদায় করতেন এমন সময় যে, সালাত
শেষে ফিরে যেতে লোকেরা তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তিকে চিনতে পারতো। এর দু’ রাক‘আতে
অথবা রাবী বলেছেন, এক রাক‘আতে তিনি ষাট থেকে একশ’ আয়াত পাঠ করতেন।
৭৭২
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ أَخْبَرَنَا
ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ
رضى الله عنه ـ يَقُولُ فِي كُلِّ صَلاَةٍ يُقْرَأُ، فَمَا أَسْمَعَنَا رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَسْمَعْنَاكُمْ، وَمَا أَخْفَى عَنَّا أَخْفَيْنَا
عَنْكُمْ، وَإِنْ لَمْ تَزِدْ عَلَى أُمِّ الْقُرْآنِ أَجْزَأَتْ، وَإِنْ زِدْتَ
فَهُوَ خَيْرٌ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রত্যেক সালাতেই কিরাআত পড়া হয়। তবে যে সব সালাত আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের শুনিয়ে পড়েছেন, আমরাও তোমাদের
শুনিয়ে পড়ব। আর যে সব সালাতে আমাদের না শুনিয়ে পড়েছেন, আমরাও তোমাদের না শুনিয়ে
পড়ব। যদি তোমরা সূরা আল- ফাতিহার উপরে আরো অধিক না পড়, সালাত আদায় হয়ে যাবে। আর
যদি অধিক পড় তা উত্তম।
১০/১০৫. অধ্যায়ঃ
ফজরের সালাতে সশব্দে কিরাআত ।
উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, আমি লোকদের পিছনে তাওয়াফ করছিলাম। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন সালাত আদায় করছিলেন এবং সূরা তূর পাঠ
করছিলেন ।
৭৭৩
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ
بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ انْطَلَقَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي طَائِفَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ عَامِدِينَ إِلَى
سُوقِ عُكَاظٍ، وَقَدْ حِيلَ بَيْنَ الشَّيَاطِينِ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ،
وَأُرْسِلَتْ عَلَيْهِمُ الشُّهُبُ، فَرَجَعَتِ الشَّيَاطِينُ إِلَى قَوْمِهِمْ.
فَقَالُوا مَا لَكُمْ فَقَالُوا حِيلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ،
وَأُرْسِلَتْ عَلَيْنَا الشُّهُبُ. قَالُوا مَا حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ
خَبَرِ السَّمَاءِ إِلاَّ شَىْءٌ حَدَثَ، فَاضْرِبُوا مَشَارِقَ الأَرْضِ
وَمَغَارِبَهَا، فَانْظُرُوا مَا هَذَا الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ
السَّمَاءِ فَانْصَرَفَ أُولَئِكَ الَّذِينَ تَوَجَّهُوا نَحْوَ تِهَامَةَ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ بِنَخْلَةَ، عَامِدِينَ إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ
وَهْوَ يُصَلِّي بِأَصْحَابِهِ صَلاَةَ الْفَجْرِ، فَلَمَّا سَمِعُوا الْقُرْآنَ
اسْتَمَعُوا لَهُ فَقَالُوا هَذَا وَاللَّهِ الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ
خَبَرِ السَّمَاءِ. فَهُنَالِكَ حِينَ رَجَعُوا إِلَى قَوْمِهِمْ وَقَالُوا يَا
قَوْمَنَا {إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا * يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ
فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا} فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى
نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم {قُلْ أُوحِيَ إِلَىَّ} وَإِنَّمَا أُوحِيَ
إِلَيْهِ قَوْلُ الْجِنِّ.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়েকজন সাহাবীকে
সঙ্গে নিয়ে উকায বাজারের উদ্দেশে রওয়ানা করেন। আর দুষ্ট জিন-দের [১] উর্দ্ধলোকের
সংবাদ সংগ্রহের পথে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয় এবং তাদের দিকে অগ্নিপিণ্ড নিক্ষিপ্ত
হয়। কাজেই শয়তানরা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসে। তারা জিজ্ঞেস করলো, তোমাদের
কী হয়েছে? তারা বলল, আমাদের এবং আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধা দেখা দিয়েছে এবং
আমাদের দিকে অগ্নিপিণ্ড ছুঁড়ে মারা হয়েছে। তখন তারা বলল, নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ
একটা কিছু ঘটেছে বলেই তোমাদের এবং আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
কাজেই, পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত ঘুরে দেখ, কী কারণে তোমাদের ও
আকাশের সংবাদ সংগ্রহের বাধা সৃষ্টি হয়েছে? তাই তাদের যে দলটি তিহামার দিকে
গিয়েছিল, তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিকে অগ্রসর হল। তিনি
তখন ‘উকায বাজারের পথে নাখ্লা নামক স্থানে সাহাবীগণকে নিয়ে ফজরের সালাত আদায়
করছিলেন। তারা যখন কুরআন শুনতে পেল, তখন সেদিকে মনোনিবেশ করলো। অতঃপর তারা বলে
উঠলো, আল্লাহ্র শপথ! এটিই তোমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধা সৃষ্টি
করেছে। এমন সময় যখন তারা গোত্রের নিকট ফিরে আসল এবং বলল হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা
এক আশ্চর্যজনক কুরআন শুনেছি যা সঠিক পথ নির্দেশ করে, আমরা এতে ঈমান এনেছি এবং কখনো
আমরা আমাদের প্রতিপালকের সঙ্গে কাউকে শরীক স্থির করব না। এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ্
তা‘আলা তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি '......قُل أُوحِيَ إِلَيَّ' সূরা নাযিল করেন। মূলতঃ তাঁর নিকট জিনদের
কথাবার্তাই ওয়াহীরূপে অবর্তীণ করা হয়েছে।
[১] হাদীসে উল্লেখিত “শায়াতিন”
(شَياطين) শব্দটি দুষ্ট প্রকৃতির জিন্নদের জন্য ব্যবহার
করা হয়েছে।
৭৭৪
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ
عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَرَأَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فِيمَا أُمِرَ، وَسَكَتَ فِيمَا أُمِرَ {وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيًّا}
{لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ}.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেখানে কিরাআত
পাঠের [১] জন্য আদেশ পেয়েছেন, সেখানে পড়েছেন। আর যেখানে চুপ থাকতে [২] আদেশ
পেয়েছেন সেখানে চুপ থেকেছেন রয়েছেন। (আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী): “তোমার প্রতিপালক ভুল
করেন না”-(সূরা মারইয়াম ১৯/৬৪)। “নিশ্চয় তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূল-এর মধ্যে রয়েছে
উত্তম আদর্শ।” (সূরা আল-আহযাব ৩৩/২১)
৭৭৪/১. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। কুবার মসজিদে এক আনসারী ব্যক্তি তাঁদের ইমামাত করতেন। তিনি সশব্দে কিরা-আত পড়া হয় এমন কোন সালাতে যখনই কোন সূরা তেলাওয়াত করতেন, قُل هُوَ اللهُ أَحَدٌ সূরা দ্বারা শুরু করতেন। তা শেষ করে অন্য একটি সূরা এর সাথে মিলিয়ে পড়তেন। আর প্রতি রাক‘আতেই তিনি এমন করতেন। তাঁর সঙ্গীরা এ ব্যাপারে তাঁর নিকট বললেন যে, আপনি এ সূরাটি দিয়ে শুরু করেন, এটি যথেষ্ট হয় বলে আপনি মনে করেন না তাই আর একটি সূরা মিলিয়ে পড়েন। হয় আপনি এটিই পড়বেন, না হয় এটি বাদ দিয়ে অন্যটি পড়বেন। তিনি বললেন, আমি এটি কিছুতেই ছাড়তে পারব না। আমার এভাবে ইমামাত করা যদি আপনারা অপছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাদের ইমামাত ছেড়ে দেব। কিন্তু তাঁরা জানতেন যে, তিনি তাদের মাঝে উত্তম। তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তাদের ইমামাত করুক এটা তাঁরা অপছন্দ করতেন। পরে নবী যখন তাঁদের এখানে আগমন করেন, তাঁরা বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানান। তিনি বললেন, হে, অমুক! তোমার সঙ্গীগণ যা বলেন তা করতে তোমাকে কিসে বাধা দেয়? আর প্রতি রাক‘আতে এ সূরাটি বাধ্যতামূলক করে নিতে কিসে উদ্বুদ্ধ করছে? তিনি বললেন, আমি এ সূরাটি ভালবাসি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ সূরার ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। (আ.প্র. অনুচ্ছেদ পৃষ্ঠা ৩৩৬, ই.ফা. অনুচ্ছেদ ৪৯৮ )
৭৭৪/১. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। কুবার মসজিদে এক আনসারী ব্যক্তি তাঁদের ইমামাত করতেন। তিনি সশব্দে কিরা-আত পড়া হয় এমন কোন সালাতে যখনই কোন সূরা তেলাওয়াত করতেন, قُل هُوَ اللهُ أَحَدٌ সূরা দ্বারা শুরু করতেন। তা শেষ করে অন্য একটি সূরা এর সাথে মিলিয়ে পড়তেন। আর প্রতি রাক‘আতেই তিনি এমন করতেন। তাঁর সঙ্গীরা এ ব্যাপারে তাঁর নিকট বললেন যে, আপনি এ সূরাটি দিয়ে শুরু করেন, এটি যথেষ্ট হয় বলে আপনি মনে করেন না তাই আর একটি সূরা মিলিয়ে পড়েন। হয় আপনি এটিই পড়বেন, না হয় এটি বাদ দিয়ে অন্যটি পড়বেন। তিনি বললেন, আমি এটি কিছুতেই ছাড়তে পারব না। আমার এভাবে ইমামাত করা যদি আপনারা অপছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাদের ইমামাত ছেড়ে দেব। কিন্তু তাঁরা জানতেন যে, তিনি তাদের মাঝে উত্তম। তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তাদের ইমামাত করুক এটা তাঁরা অপছন্দ করতেন। পরে নবী যখন তাঁদের এখানে আগমন করেন, তাঁরা বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানান। তিনি বললেন, হে, অমুক! তোমার সঙ্গীগণ যা বলেন তা করতে তোমাকে কিসে বাধা দেয়? আর প্রতি রাক‘আতে এ সূরাটি বাধ্যতামূলক করে নিতে কিসে উদ্বুদ্ধ করছে? তিনি বললেন, আমি এ সূরাটি ভালবাসি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ সূরার ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। (আ.প্র. অনুচ্ছেদ পৃষ্ঠা ৩৩৬, ই.ফা. অনুচ্ছেদ ৪৯৮ )
[১] অর্থাৎ সশব্দে পড়ার।
[২] নিঃশব্দে পড়ার।
[২] নিঃশব্দে পড়ার।
১০/১০৬. অধ্যায়ঃ
এক রাক‘আতে দু’ সূরা মিলিয়ে পড়া, সূরার শেষাংশ পড়া, এক সূরার পূর্বে
আরেক সূরা পড়া এবং সূরার প্রথমাংশ পড়া ।
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু সায়িব (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের সালাতে সূরা মু’মিনূন পড়তে শুরু করেন। যখন মূসা (আঃ) ও
হারূন (আঃ) বা ‘ঈসা (আঃ)-এর আলোচনা এল, তাঁর কাশি উঠল আর তখন তিনি রুকূ’তে চলে
গেলেন। ‘উমর (রাঃ) প্রথম রাক‘আতে সূরা বাকারার একশ’বিশ আয়াত তেলাওয়াত করেন এবং
দ্বিতীয় রাক‘আতে মাসানী সূরা সমূহের কোন একটি তেলাওয়াত করেন। আহনাফ (রহঃ) প্রথম
রাক‘আতে সূরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে সূরা ইউসুফ বা সূরা ইউনুস
তেলাওয়াত করেন এবং তিনি বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ‘উমর (রাঃ)-এর পিছনে এ দু’টি সূরা
দিয়ে ফজরের সালাত আদায় করেন। ইব্নু মাস’উদ (রাঃ) (প্রথম রাক‘আতে) সূরা আল-আনফালের
চল্লিশ আয়াত পড়েন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে মুফাস্সাল সূরা সমূহের একটি পড়েন। যে
ব্যক্তি দু’ রাক‘আতে একই সূরা ভাগ করে পড়ে বা দু’ রাক‘আতে একই সূরা দুহরিয়ে পড়ে
তার সম্পর্কে কাতাদা (রহঃ) বলেন, সবই আল্লাহর কিতাব। (অর্থাৎ জায়িয)।
৭৭৫
حَدَّثَنَا
آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، قَالَ سَمِعْتُ
أَبَا وَائِلٍ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ مَسْعُودٍ فَقَالَ قَرَأْتُ الْمُفَصَّلَ
اللَّيْلَةَ فِي رَكْعَةٍ. فَقَالَ هَذًّا كَهَذِّ الشِّعْرِ لَقَدْ عَرَفْتُ
النَّظَائِرَ الَّتِي كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرِنُ بَيْنَهُنَّ
فَذَكَرَ عِشْرِينَ سُورَةً مِنَ الْمُفَصَّلِ سُورَتَيْنِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ.
আবূ ওয়াইল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইব্নু মাস’উদ (রাঃ)-এর নিকট এসে বলল, গতরাতে
আমি মুফাস্সাল সূরাগুলো এক রাক‘আতেই তেলাওয়াত করেছি। তিনি বললেন, তাহলে নিশ্চয়ই
কবিতার ন্যায় দ্রুত পড়েছ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরস্পর সমতুল্য
যে সব সূরা মিলিয়ে পড়তেন, সেগুলো সম্পর্কে আমি জানি। এ বলে তিনি মুফাস্সাল
সূরাসমূহের বিশটি সূরা উল্লেখ পূর্বক বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) প্রতি রাক‘আতে এর দু’টি করে সূরা পড়তেন।
No comments