সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "সৃষ্টির সূচনা" হাদিস নং - ৩২৫১থেকে ৩৩২৫
৩২৫১
حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عَبْدِ الْمُؤْمِنِ، حَدَّثَنَا
يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسُ
بْنُ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَشَجَرَةً يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّهَا مِائَةَ
عَامٍ لاَ يَقْطَعُهَا ".
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জান্নাতে এমন একটি গাছ আছে, যার ছায়ায়
কোন আরোহী শত বছর পর্যন্ত চললেও তা অতিক্রম করতে পারবে না।
৩২৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا فُلَيْحُ
بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا هِلاَلُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَشَجَرَةً يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي
ظِلِّهَا مِائَةَ سَنَةٍ، وَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ {وَظِلٍّ
مَمْدُودٍ}"
«وَلَقَابُ قَوْسِ أَحَدِكُمْ فِي الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ أَوْ تَغْرُبُ»
«وَلَقَابُ قَوْسِ أَحَدِكُمْ فِي الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ أَوْ تَغْرُبُ»
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জান্নাতে এমন একটি বৃক্ষ আছে যার
ছায়ায় কোন আরোহী শত বছর পর্যন্ত চলতে পারবে। আর তোমরা ইচ্ছা করলে তিলওয়াত করতে পার
-------------- এবং দীর্ঘ ছায়া।
৩২৫৩
See previous Hadith
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আর
জান্নাতে তোমাদের কারও একটি ধনুকের পরিমাণ জায়গাও ঐ জায়গা অপেক্ষা অধিক উত্তম
সেখানে সূর্য উদিত হয় আর সূর্য অস্তমিত হয় (অর্থাৎ পৃথিবীর চেয়ে)।
৩২৫৪
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ فُلَيْحٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ هِلاَلٍ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " أَوَّلُ زُمْرَةٍ تَدْخُلُ الْجَنَّةَ
عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ، وَالَّذِينَ عَلَى آثَارِهِمْ
كَأَحْسَنِ كَوْكَبٍ دُرِّيٍّ فِي السَّمَاءِ إِضَاءَةً، قُلُوبُهُمْ عَلَى قَلْبِ
رَجُلٍ وَاحِدٍ، لاَ تَبَاغُضَ بَيْنَهُمْ وَلاَ تَحَاسُدَ، لِكُلِّ امْرِئٍ
زَوْجَتَانِ مِنَ الْحُورِ الْعِينِ، يُرَى مُخُّ سُوقِهِنَّ مِنْ وَرَاءِ
الْعَظْمِ وَاللَّحْمِ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রথম যে দল জান্নাতে প্রবেশ করবে
তাদের চেহারা পূর্ণিমা রাতের চাঁদের মত উজ্জ্বল হবে আর তাদের অনুগামী দলের চেহারা
আকাশের উজ্জ্বল তারকার চেয়েও অধিক সুন্দর ও উজ্জ্বল হবে। তাদের অন্তরগুলো এক
ব্যক্তির অন্তরের মত হবে। তাদের মধ্যে কোন বিদ্বেষ থাকবে না, কোন হিংসা থাকবে না,
তাদের প্রত্যেকের জন্য ডাগর ডাগর চোখওয়ালা দু’জন করে এমন স্ত্রী থাকবে, যাদের পদ
তলের অস্থি মজ্জা ও গোশত ভেদ করে দেখা যাবে।
৩২৫৫
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ،
قَالَ عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ أَخْبَرَنِي قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ ـ رضى الله عنه
ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَمَّا مَاتَ إِبْرَاهِيمُ قَالَ
" إِنَّ لَهُ مُرْضِعًا فِي الْجَنَّةِ ".
বারাআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) (এর ছেলে) ইবরাহীম (রাঃ) ইন্তিকাল করেন, তখন তিনি বলেন, জান্নাতে এর এক
ধাত্রী আছে।
৩২৫৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ
حَدَّثَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ
يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ أَهْلَ الْجَنَّةِ يَتَرَاءَيُونَ أَهْلَ
الْغُرَفِ مِنْ فَوْقِهِمْ كَمَا يَتَرَاءَيُونَ الْكَوْكَبَ الدُّرِّيَّ
الْغَابِرَ فِي الأُفُقِ مِنَ الْمَشْرِقِ أَوِ الْمَغْرِبِ، لِتَفَاضُلِ مَا
بَيْنَهُمْ ". قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، تِلْكَ مَنَازِلُ
الأَنْبِيَاءِ لاَ يَبْلُغُهَا غَيْرُهُمْ قَالَ " بَلَى وَالَّذِي نَفْسِي
بِيَدِهِ، رِجَالٌ آمَنُوا بِاللَّهِ وَصَدَّقُوا الْمُرْسَلِينَ ".
আবূ
সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, অবশ্যই জান্নাতবাসীরা তাদের উপরের
বালাখানার বাসিন্দাদের এমনভাবে দেখতে পাবে, যেমন তোমরা আকাশের পূর্ব অথবা পশ্চিম
দিকে উজ্জ্বল দীপ্তিমান নক্ষত্র দেখতে পাও। এটা হবে তাদের মধ্যে মর্যাদার
পার্থক্যের কারণে। সাহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এ তো নবীগণের জায়গা। তাদের ব্যতিত অন্যরা সেখানে পৌঁছতে পারবে না। তিনি
বললেন, হ্যাঁ, সে সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যেসব লোক আল্লাহ্র প্রতি
ঈমান আনবে এবং রসূলগণকে সত্য বলে স্বীকার করবে।
৫৯/৯. অধ্যায়ঃ
জান্নাতের দরজাসমূহের বর্ণনা
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন জিনিস জোড়া জোড়া দান করবে তাকে জান্নাতের
দরজা থেকে ডাকা হবে। এ কথাটি ‘উবাদা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট হতে বর্ণনা করেছেন।
৩২৫৭
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ مُطَرِّفٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ
سَعْدٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " فِي
الْجَنَّةِ ثَمَانِيَةُ أَبْوَابٍ، فِيهَا باب يُسَمَّى الرَّيَّانَ لاَ
يَدْخُلُهُ إِلاَّ الصَّائِمُونَ
সাহ্ল
ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘জান্নাতে আটটি দরজা। তার মধ্যে একটি
দরজার নাম হবে রাইয়্যান। সাওম পালনকারী ছাড়া অন্য কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে
না’।
৫৯/১০. অধ্যায়ঃ
জাহান্নামের বিবরণ আর তা হতে
সৃষ্ট বস্তু।
------- প্রবাহিত পূঁজ যেমন
কেউ বলে, তার চোখ প্রবাহিত হয়েছে ও ঘা প্রবাহিত হচ্ছে। ------ আর ------ একই অর্থ।
------ যে কোন বস্তুকে ধৌত করার পর তা হতে যা বের হয়, তাকে ------ বলা হয়, এটা
------- শব্দ হতে ------- এর ওযনে হয়ে থাকে। ‘ইকরিমা (রহঃ) বলেছেন, ----------এর
অর্থ জাহান্নামের জ্বালানী। এটা হাবশীদের ভাষা। আর অন্যরা বলেছেন, -------- অর্থ
দমকা হাওয়া। আর ------- অর্থ বায়ু যা ছুঁড়ে ফেলে। এ হতে হয়েছে -------------- যার
অর্থ হচ্ছে যা কিছু জাহান্নামে ছুঁড়ে ফেলা হয় আর এরাই এর জ্বালানী। ------- শব্দটি
-------- শব্দ হতে উৎপত্তি। যার অর্থ কংকরসমূহ। --------পূঁজ ও রক্ত। --------
নিভে গেছে। ---------- তোমরা আগুন বের করছ। ------ অর্থ আমি আগুন জ্বালিয়েছি।
--------- মুসাফিরগণের উপকারার্থে। আর ----- তরুলতাহীন প্রান্তর। ইবনু ‘আব্বাস
(রাঃ) বলেছেন, ------------- অর্থ জাহান্নামের দিক ও তার মধ্যস্থল। ------ তাদের
খাদ্য অতি সরম পানির সঙ্গে মিশানো হবে। ---------- কঠোর চিৎকার ও আর্তনাদ। ------
পিপাসার্ত। -------- ক্ষতিগ্রস্ত। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, --------- তাদের দ্বারা
আগুন জ্বালানো হবে। আর ------ অর্থ শীশা যা গলিয়ে তাদের মাথায় ঢেলে দেয়া হবে। বলা
হয়েছে ------- এর অর্থ স্বাদ গ্রহণ কর এবং অভিজ্ঞতা হাসিল কর। এরা কিন্তু মুখের
দ্বারা স্বাদ গ্রহণ করা নয়। ------ নির্ভেজাল অগ্নি। ------------------ আমীর তার
প্রজাকে ছেড়ে দিয়েছে, কথাটি এ সময় বলা হয় যখন সে তাদেরকে ছেড়ে দেয় আর তারা একে
অন্যের প্রতি শত্রুতা করতে থাকে। ------ মিশ্রিত। ------------- যখন মানুষের কোন
বিষয় তালগোল পাকিয়ে যায়। আর ---------- অর্থ তিনি দু’টি নদী প্রবাহিত করেছেন।
----------------- এ কথাটি সে সময় বলা হয়, যখন তুমি তোমার চতুষ্পদ জন্তুকে ছেড়ে
দাও।
৩২৫৮
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
مُهَاجِرٍ أَبِي الْحَسَنِ، قَالَ سَمِعْتُ زَيْدَ بْنَ وَهْبٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ
أَبَا ذَرٍّ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي
سَفَرٍ فَقَالَ " أَبْرِدْ ". ثُمَّ قَالَ " أَبْرِدْ
". حَتَّى فَاءَ الْفَىْءُ، يَعْنِي لِلتُّلُولِ، ثُمَّ قَالَ "
أَبْرِدُوا بِالصَّلاَةِ، فَإِنَّ شِدَّةَ الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ
".
আবূ
যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এক সফরে ছিলেন, তখন তিনি বলেন,
‘ঠাণ্ডা হতে দাও।’ আবার বললেন, ‘টিলাগুলোর ছায়া নীচে নেমে আসা পর্যন্ত ঠাণ্ডা হতে
দাও।’ আবার বললেন, ‘সালাত ঠাণ্ডা হলে পরে আদায় করবে। কেননা, গরমের তীব্রতা
জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়।’
৩২৫৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ،
عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ ذَكْوَانَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، رضى الله عنه قَالَ قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَبْرِدُوا بِالصَّلاَةِ فَإِنَّ شِدَّةَ
الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ ".
আবূ
সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, ‘সালাত ঠাণ্ডা হলে, পরে
আদায় করবে। কেননা গরমের ভীষণতা জাহান্নামের উত্তাপ হতে হয়।’
৩২৬০
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ
سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " اشْتَكَتِ النَّارُ إِلَى رَبِّهَا، فَقَالَتْ رَبِّ أَكَلَ
بَعْضِي بَعْضًا، فَأَذِنَ لَهَا بِنَفَسَيْنِ نَفَسٍ فِي الشِّتَاءِ وَنَفَسٍ فِي
الصَّيْفِ، فَأَشَدُّ مَا تَجِدُونَ فِي الْحَرِّ، وَأَشَدُّ مَا تَجِدُونَ مِنَ
الزَّمْهَرِيرِ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘জাহান্নাম তার
রবের নিকট অভিযোগ করে বলেছে, হে রব! আমার এক অংশ অপর অংশকে খেয়ে ফেলেছে। তখন তিনি
তাকে দু’টি নিঃশ্বাস ফেলার অনুমতি প্রদান করেন। একটি নিঃশ্বাস শীতকালে আর একটি
নিঃশ্বাস গ্রীষ্মকালে। কাজেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাক।’
৩২৬১
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا
أَبُو عَامِرٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ الضُّبَعِيِّ، قَالَ
كُنْتُ أُجَالِسُ ابْنَ عَبَّاسٍ بِمَكَّةَ، فَأَخَذَتْنِي الْحُمَّى، فَقَالَ
أَبْرِدْهَا عَنْكَ بِمَاءِ زَمْزَمَ، فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " الْحُمَّى مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ فَأَبْرِدُوهَا بِالْمَاءِ
". أَوْ قَالَ " بِمَاءِ زَمْزَمَ ". شَكَّ هَمَّامٌ.
আবূ
জামরাহ যুবা’য়ী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি মক্কায় ইব্নু আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট বসতাম। একবার আমি জ্বরাক্রান্ত হই।
তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি তোমার গায়ের জ্বর যমযমের পানি দিয়ে ঠাণ্ডা কর।’ কারণ,
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এটা জাহান্নামের
উত্তাপ হতেই হয়ে থাকে। কাজেই তোমরা তা পানি দিয়ে ঠাণ্ডা কর অথবা বলেছেন। যমযমের
পানি দিয়ে ঠাণ্ডা কর। এ বিষয়ে বর্ণনাকারী হাম্মাম সন্দেহ পোষণ করেছেন।
৩২৬২
حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ عَبَّاسٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبَايَةَ بْنِ رِفَاعَةَ،
قَالَ أَخْبَرَنِي رَافِعُ بْنُ خَدِيجٍ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم يَقُولُ " الْحُمَّى مِنْ فَوْرِ جَهَنَّمَ، فَأَبْرِدُوهَا عَنْكُمْ
بِالْمَاءِ ".
রাফি’
ইব্নু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, ‘জ্বরের
উৎপত্তি হয় জাহান্নামের ভীষণ উত্তাপ হতে। অতএব তোমাদের গায়ের সে তাপ পানি দ্বারা
ঠাণ্ডা কর।’
৩২৬৩
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا
زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْحُمَّى مِنْ فَيْحِ
جَهَنَّمَ، فَأَبْرِدُوهَا بِالْمَاءِ ".
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘জ্বর হয় জাহান্নামের উত্তাপ থেকে।
কাজেই তোমরা তা পানি দিয়ে ঠাণ্ডা কর।’
৩২৬৪
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ
اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْحُمَّى مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ
فَأَبْرِدُوهَا بِالْمَاءِ ".
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘জ্বর হয় জাহান্নামের উত্তাপ থেকে,
কাজেই তোমরা পানি দিয়ে তা ঠাণ্ডা কর।
৩২৬৫
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، قَالَ
حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" نَارُكُمْ جُزْءٌ مِنْ سَبْعِينَ جُزْءًا مِنْ نَارِ جَهَنَّمَ
". قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنْ كَانَتْ لَكَافِيَةً. قَالَ
" فُضِّلَتْ عَلَيْهِنَّ بِتِسْعَةٍ وَسِتِّينَ جُزْءًا، كُلُّهُنَّ مِثْلُ
حَرِّهَا ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের আগুন জাহান্নামের আগুনের
সত্তর ভাগের একভাগ মাত্র। বলা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল! জাহান্নামীদেরকে শাস্তি দেয়ার
জন্য দুনিয়ার আগুনই তো যথেষ্ট ছিল।’ তিনি বললেন, ‘দুনিয়ার আগুনের উপর জাহান্নামের
আগুনের তাপ আরো ঊনসত্তর গুন বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, প্রত্যেক অংশে তার সম পরিমাণ
উত্তাপ রয়েছে।’
৩২৬৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ،
عَنْ عَمْرٍو، سَمِعَ عَطَاءً، يُخْبِرُ عَنْ صَفْوَانَ بْنِ يَعْلَى، عَنْ
أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ عَلَى
الْمِنْبَرِ {وَنَادَوْا يَا مَالِكُ }.
ইয়া’লা
(রাঃ) এর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মিম্বারে তিলওয়াত করতে শুনেছেন, “আর
তারা ডাকবে, হে মালিক।” (সূরা যুখরুফঃ ৭৭)
৩২৬৭
حَدَّثَنَا عَلِيٌّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ،، قَالَ قِيلَ لأُسَامَةَ لَوْ أَتَيْتَ فُلاَنًا
فَكَلَّمْتَهُ. قَالَ إِنَّكُمْ لَتَرَوْنَ أَنِّي لاَ أُكَلِّمُهُ إِلاَّ
أُسْمِعُكُمْ، إِنِّي أُكُلِّمُهُ فِي السِّرِّ دُونَ أَنْ أَفْتَحَ بَابًا لاَ
أَكُونُ أَوَّلَ مَنْ فَتَحَهُ، وَلاَ أَقُولُ لِرَجُلٍ أَنْ كَانَ عَلَىَّ
أَمِيرًا إِنَّهُ خَيْرُ النَّاسِ بَعْدَ شَىْءٍ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم. قَالُوا وَمَا سَمِعْتَهُ يَقُولُ قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ
" يُجَاءُ بِالرَّجُلِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُلْقَى فِي النَّارِ،
فَتَنْدَلِقُ أَقْتَابُهُ فِي النَّارِ، فَيَدُورُ كَمَا يَدُورُ الْحِمَارُ
بِرَحَاهُ، فَيَجْتَمِعُ أَهْلُ النَّارِ عَلَيْهِ، فَيَقُولُونَ أَىْ فُلاَنُ،
مَا شَأْنُكَ أَلَيْسَ كُنْتَ تَأْمُرُنَا بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَى عَنِ
الْمُنْكَرِ قَالَ كُنْتُ آمُرُكُمْ بِالْمَعْرُوفِ وَلاَ آتِيهِ، وَأَنْهَاكُمْ عَنِ
الْمُنْكَرِ وَآتِيهِ ". رَوَاهُ غُنْدَرٌ عَنْ شُعْبَةَ عَنِ
الأَعْمَشِ.
আবূ
ওয়াইল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, উসামা (রাঃ)-কে বলা হল, কত ভাল হত! যদি আপনি ঐ ব্যক্তির [উসমান (রাঃ)]-এর
নিকট যেতেন এবং তার সঙ্গে আলোচনা করতেন। উত্তরে তিনি বললেন, আপনারা মনে করছেন যে
আমি তাঁর সঙ্গে আপনাদেরকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলব। অথচ আমি তাঁর সঙ্গে (দাঙ্গা দমনের
ব্যাপারে) গোপনে আলোচনা করছি, যেন আমি একটি দ্বার খুলে না বসি। আমি দ্বার
উন্মুক্তকারীর প্রথম ব্যক্তি হতে চাই না। আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে কিছু শুনেছি, যার পরে আমি কোন ব্যক্তিকে যিনি আমাদের
আমীর নির্বাচিত হয়েছেন এ কারণে তিনি আমাদের সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তি এ কথা বলতে পারি
না। লোকেরা তাঁকে বলল, আপনি তাঁকে কি বলতে শুনেছেন? উসা্মাহ (রাঃ) বললেন, আমি
তাঁকে বলতে শুনেছি, ক্বিয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে আনা হবে। অরঃপর তাকে জাহান্নামে
নিক্ষেপ করা হবে। তখন আগুনে পুড়ে তার নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যাবে। এ সময় সে ঘুরতে
থাকবে যেমন গাধা তার চাকা নিয়ে তার চারপাশে ঘুরতে থাকে। তখন জাহান্নামবাসীরা তার
নিকট একত্রিত হয়ে তাকে বলবে, হে অমুক ব্যক্তি! তোমার এ অবস্থা কেন? তুমি না
আমাদেরকে সৎ কাজের আদেশ করতে আর অন্যায় কাজ হতে নিষেধ করতে? সে বলবে, আমি
তোমাদেরকে সৎ কাজের আদেশ করতাম বটে, কিন্তু আমি তা করতাম না আর আমি তোমাদেরকে
অন্যায় কাজ হতে নিষেধ করতাম, অথচ আমিই তা করতাম। এ হাদীসটি গুনদার (রহঃ) শুবা
(রহঃ) সূত্রে আ’মাশ (রহঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
৫৯/১১. অধ্যায়ঃ
ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা
মুজাহিদ (রহঃ) বলেন,
--------- তাদের নিক্ষেপ করা হবে। ------- তাদের হাঁকিয়ে বের করে দেয়া হবে। --------
স্থায়ী। আর ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, --------- হাঁকিয়ে বের করা অবস্থায়। --------
বিদ্রোহীরূপে। ------- তাকে ছিন্ন করেছে। -------- তুমি ভয় দেখাও। --------
অশ্বারোহী। -------- পদাতিকগণ। এর একবচন ------ যেমন --------- এর বহুবচন
--------- আর -------- এর বহুবচন --------------- অবশ্যই আমি সমূলে উৎপাটন করব।
--------- শয়তান।
৩২৬৮
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا عِيسَى،
عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ سُحِرَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم. وَقَالَ اللَّيْثُ كَتَبَ إِلَىَّ هِشَامٌ
أَنَّهُ سَمِعَهُ وَوَعَاهُ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ سُحِرَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى كَانَ يُخَيَّلُ إِلَيْهِ أَنَّهُ يَفْعَلُ
الشَّىْءَ وَمَا يَفْعَلُهُ، حَتَّى كَانَ ذَاتَ يَوْمٍ دَعَا وَدَعَا، ثُمَّ قَالَ
" أَشَعَرْتِ أَنَّ اللَّهَ أَفْتَانِي فِيمَا فِيهِ شِفَائِي أَتَانِي
رَجُلاَنِ، فَقَعَدَ أَحَدُهُمَا عِنْدَ رَأْسِي وَالآخَرُ عِنْدَ رِجْلَىَّ،
فَقَالَ أَحَدُهُمَا لِلآخَرِ مَا وَجَعُ الرَّجُلِ قَالَ مَطْبُوبٌ. قَالَ
وَمَنْ طَبَّهُ قَالَ لَبِيدُ بْنُ الأَعْصَمِ. قَالَ فِي مَاذَا قَالَ فِي
مُشُطٍ وَمُشَاقَةٍ وَجُفِّ طَلْعَةٍ ذَكَرٍ. قَالَ فَأَيْنَ هُوَ قَالَ فِي
بِئْرِ ذَرْوَانَ ". فَخَرَجَ إِلَيْهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
ثُمَّ رَجَعَ فَقَالَ لِعَائِشَةَ حِينَ رَجَعَ " نَخْلُهَا كَأَنَّهَا
رُءُوسُ الشَّيَاطِينِ ". فَقُلْتُ اسْتَخْرَجْتَهُ فَقَالَ " لاَ
أَمَّا أَنَا فَقَدْ شَفَانِي اللَّهُ، وَخَشِيتُ أَنْ يُثِيرَ ذَلِكَ عَلَى
النَّاسِ شَرًّا، ثُمَّ دُفِنَتِ الْبِئْرُ ".
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যাদু করা হয়েছিল। লায়স (রহঃ)
বলেন, আমার নিকট হিশাম পত্র লিখেন, তাতে লেখা ছিল যে, তিনি তার পিতা সূত্রে ‘আয়িশা
(রাঃ) হতে হাদীস শুনেছেন এবং তা ভালভাবে মুখস্থ করেছেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে যাদু করা হয়। এমনকি যাদুর প্রভাবে তাঁর
খেয়াল হতো যে, তিনি স্ত্রীগণের বিষয়ে কোন কাজ করে ফেলেছেন অথচ তিনি তা করেননি। শেষ
পর্যন্ত একদা তিনি রোগ আরোগ্যের জন্য বারবার দু’আ করলেন, অরঃপর তিনি আমাকে বললেন,
তুমি কি জান আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন, যাতে আমার রোগের আরোগ্য আছে? আমার নিকট
দু’জন লোক আসল। তাদের একজন মাথার নিকট বসল আর অপরজন আমার পায়ের নিকট বসল। অরঃপর
একজন অন্যজনকে জিজ্ঞেস করল, এ ব্যক্তির রোগ কি? জিজ্ঞাসিত লোকটি জবাব দিল, তাকে
যাদু করা হয়েছে। প্রথম লোকটি বলল, তাকে যাদু কে করল? সে বলল, লবীদ ইব্নু আ’সাম।
প্রথম ব্যক্তি বলল, কিসের দ্বারা? দ্বিতীয় ব্যক্তি বলল, তাকে যাদু করা হয়েছে,
চিরুনি, সুতার তাগা এবং খেজুরের খোসায়। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, এগুলো কোথায়
আছে? দ্বিতীয় ব্যক্তি জবাব দিল, যারওয়ান কূপে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সেখানে গেলেন এবং ফিরে আসলেন, অতঃপর তিনি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে বললেন, কূপের
কাছের খেজুর গাছগুলো যেন এক একটা শয়তানের মাথা। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি
সেই যাদু করা জিনিসগুলো বের করতে পেরেছেন? তিনি বললেন, না। তবে আল্লাহ আমাকে
আরোগ্য দিয়েছেন। আমার আশংকা হয়েছিল এসব জিনিস বের করলে মানুষের মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টি
হতে পারে। অতঃপর সেই কূপটি বন্ধ করে দেয়া হল।
৩২৬৯
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، قَالَ
حَدَّثَنِي أَخِي، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ،
عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى
قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلاَثَ عُقَدٍ، يَضْرِبُ كُلَّ
عُقْدَةٍ مَكَانَهَا عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيلٌ فَارْقُدْ. فَإِنِ اسْتَيْقَظَ
فَذَكَرَ اللَّهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ،
فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقَدُهُ كُلُّهَا، فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طَيِّبَ
النَّفْسِ، وَإِلاَّ أَصْبَحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلاَنَ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন নিদ্রা যায় তখন
শয়তান তার মাথার শেষভাগে তিনটি গিরা দিয়ে দেয়। প্রত্যেক গিরার সময় এ কথা বলে
কুমন্ত্রণা দিয়ে দেয় যে, এখনো রাত অনেক রয়ে গেছে, কাজেই শুয়ে থাক। অতঃপর সে লোক
যদি জেগে উঠে এবং আল্লাহকে স্মরণ করে তখন একটি গিরা খুলে যায়। অতঃপর যদি সে উযূ
করে, তবে দ্বিতীয় গিরাও খুলে যায়। আর যদি সে সালাত আদায় করে তবে সব কয়টি গিরাই
খুলে যায়। আর খুশির সঙ্গে পবিত্র মনে তার সকাল হয়, অন্যথায় অপবিত্র মনে আলস্যের
সাথে তার সকাল হয়।
৩২৭০
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ،
عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ
ذُكِرَ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ نَامَ لَيْلَهُ حَتَّى
أَصْبَحَ، قَالَ " ذَاكَ رَجُلٌ بَالَ الشَّيْطَانُ فِي أُذُنَيْهِ ـ أَوْ
قَالَ ـ فِي أُذُنِهِ
‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এমন এক লোকের ব্যাপারে
উল্লেখ করা হল, যে সারা রাত এমনকি ভোর পর্যন্ত ঘুমিয়ে ছিল। তখন তিনি বললেন, সে এমন
লোক যার উভয় কানে অথবা তিনি বললেন, তার কানে শয়তান পেশাব করেছে।
৩২৭১
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ،
عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
أَمَا إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا أَتَى أَهْلَهُ وَقَالَ بِسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ
جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ، وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا. فَرُزِقَا
وَلَدًا، لَمْ يَضُرُّهُ الشَّيْطَانُ ".
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, দেখ, তোমাদের কেউ যখন তার স্ত্রীর কাছে আসে, আর তখন বলে, বিসমিল্লাহ্। হে
আল্লাহ! আমাদেরকে শয়তানের প্রভাব থেকে দূরে রাখ। আর আমাদেরকে যে সন্তান দেয়া হবে
শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
৩২৭২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامِ
بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ
فَدَعُوا الصَّلاَةَ حَتَّى تَبْرُزَ، وَإِذَا غَابَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَدَعُوا
الصَّلاَةَ حَتَّى تَغِيبَ ". " وَلاَ تَحَيَّنُوا بِصَلاَتِكُمْ
طُلُوعَ الشَّمْسِ وَلاَ غُرُوبَهَا، فَإِنَّهَا تَطْلُعُ بَيْنَ قَرْنَىْ
شَيْطَانٍ ". أَوِ الشَّيْطَانِ. لاَ أَدْرِي أَىَّ ذَلِكَ قَالَ
هِشَامٌ.
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন সূর্যের এক
কিনারা উদিত হবে, তখন তা পরিষ্কারভাবে উদিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা সালাত আদায় বন্ধ
রাখ। আবার যখন সূর্যের এক কিনারা অস্ত যাবে তখন তা সম্পূর্ণ অস্ত না যাওয়া পর্যন্ত
তোমরা সালাত আদায় বন্ধ রাখ।
৩২৭৩
See previous Hadith
বর্ণনাকারী
থেকে বর্ণিতঃ
আর
তোমরা সূর্যোদয়ের সময়কে এবং সূর্যাস্তের সময়কে তোমাদের সালাতের জন্য নির্ধারিত করো
না। কেননা তা শয়তানের দু’ শিং-এর মাঝখান দিয়ে উদিত হয়। বর্ণনাকারী বলেন, হিশাম
(রহ.) ‘শয়তান’ বলেছেন না ‘আশ-শয়তান’ বলেছেন তা আমি জানি না।
(মুসলিম ৬/৫১ হাঃ ৮২৯, আহমাদ ৪৬১২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩০৪১ শেষাংশ)
(মুসলিম ৬/৫১ হাঃ ৮২৯, আহমাদ ৪৬১২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩০৪১ শেষাংশ)
৩২৭৪
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ،
حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلاَلٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِذَا مَرَّ بَيْنَ
يَدَىْ أَحَدِكُمْ شَىْءٌ وَهُوَ يُصَلِّي فَلْيَمْنَعْهُ، فَإِنْ أَبَى
فَلْيَمْنَعْهُ، فَإِنْ أَبَى فَلْيُقَاتِلْهُ، فَإِنَّمَا هُوَ شَيْطَانٌ
".
আবূ
সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সালাত আদায়ের সময় তোমাদের
কারো সম্মুখ দিয়ে যখন কেউ চলাচল করবে তখন সে তাকে অবশ্যই বাধা দিবে। সে যদি অমান্য
করে তবে আবারো তাকে বাধা দিবে। অতঃপরও যদি সে অমান্য করে তবে অবশ্যই তার সঙ্গে
লড়াই করবে। কেননা সে শয়তান।
৩২৭৫
وَقَالَ عُثْمَانُ بْنُ الْهَيْثَمِ حَدَّثَنَا عَوْفٌ،
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ
وَكَّلَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِحِفْظِ زَكَاةِ رَمَضَانَ،
فَأَتَانِي آتٍ، فَجَعَلَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ، فَأَخَذْتُهُ فَقُلْتُ
لأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. فَذَكَرَ الْحَدِيثَ
فَقَالَ إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الْكُرْسِيِّ لَنْ
يَزَالَ عَلَيْكَ مِنَ اللَّهِ حَافِظٌ، وَلاَ يَقْرَبُكَ شَيْطَانٌ حَتَّى
تُصْبِحَ. فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " صَدَقَكَ وَهْوَ
كَذُوبٌ، ذَاكَ شَيْطَانٌ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে রমযানের যাকাত
(সাদাকাতুল ফিত্রের) হিফাযতের দায়িত্ব প্রাদান করলেন। অতঃপর আমার নিকট এক আগন্তুক
আসল। সে তার দু’হাতের আঁজলা ভরে খাদ্যশস্য গ্রহণ করতে লাগল। তখন আমি তাকে ধরে
ফেললাম এবং বললাম, আমি অবশ্যই তোমাকে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট নিয়ে যাব। তখন সে একটি হাদীস উল্লেখ করল এবং বলল, যখন তুমি
বিছানায় শুতে যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী পড়বে। তাহলে সর্বদা আল্লাহ্র পক্ষ হতে তোমার
জন্য একজন হিফাযতকারী থাকবে এবং সকাল হওয়া অবধি তোমার নিকট শয়তান আসতে পারবে না।
তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে তোমাকে সত্য বলেছে, অথচ সে
মিথ্যাচারী এবং শয়তান ছিল।
৩২৭৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، قَالَ أَبُو
هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
يَأْتِي الشَّيْطَانُ أَحَدَكُمْ فَيَقُولُ مَنْ خَلَقَ كَذَا مَنْ خَلَقَ كَذَا
حَتَّى يَقُولَ مَنْ خَلَقَ رَبَّكَ فَإِذَا بَلَغَهُ فَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ،
وَلْيَنْتَهِ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কারো নিকট
শয়তান আসতে পারে এবং সে বলতে পারে, এ বস্তু কে সৃষ্টি করেছে? ঐ বস্তু কে সৃষ্টি
করেছে? এরূপ প্রশ্ন করতে করতে শেষ পর্যন্ত বলে বসবে, তোমাদের প্রতিপালককে কে
সৃষ্টি করেছে? যখন ব্যাপারটি এ স্তরে পৌঁছে যাবে তখন সে যেন অবশ্যই আল্লাহর নিকট
আশ্রয় চায় এবং বিরত হয়ে যায়।
৩২৭৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ،
قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي
أَنَسٍ، مَوْلَى التَّيْمِيِّينَ أَنَّ أَبَاهُ، حَدَّثَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا
هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِذَا دَخَلَ رَمَضَانُ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ، وَغُلِّقَتْ
أَبْوَابُ جَهَنَّمَ، وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِينُ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন রমযান মাস আরম্ভ হয়,
জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় আর
শয়তানদেরকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়।
৩২৭৮
حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ،
حَدَّثَنَا عَمْرٌو، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ، قَالَ قُلْتُ
لاِبْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ حَدَّثَنَا أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ مُوسَى قَالَ لِفَتَاهُ
آتِنَا غَدَاءَنَا، قَالَ أَرَأَيْتَ إِذْ أَوَيْنَا إِلَى الصَّخْرَةِ، فَإِنِّي
نَسِيتُ الْحُوتَ، وَمَا أَنْسَانِيهِ إِلاَّ الشَّيْطَانُ أَنْ أَذْكُرَهُ،
وَلَمْ يَجِدْ مُوسَى النَّصَبَ حَتَّى جَاوَزَ الْمَكَانَ الَّذِي أَمَرَ اللَّهُ
بِهِ ".
উবাই
ইব্নু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, “মুসা (‘আঃ)
তার সঙ্গীকে বললেনঃ আমাদের নাশতা আন, এ সফরে আমরা অবশ্যই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। সঙ্গী
বললঃ আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, আমরা যখন প্রস্তর খণ্ডের কাছে বিশ্রাম করেছিলাম, তখন
আমি মাছের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। শয়তানই আমাকে এ কথা স্মরণ রাখতে ভুলিয়ে দিয়েছিল”-
(সূরা কাহ্ফ ৬২-৬৩)। আল্লাহ তা’আলা মূসা (‘আঃ)-কে যে স্থানটি সম্পর্কে নির্দেশ
দিয়েছিলেন, তিনি সে স্থানটি অতিক্রম করা পর্যন্ত কোন প্রকার ক্লান্তি অনুভব
করেননি।
৩২৭৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله
عنهما ـ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُشِيرُ إِلَى
الْمَشْرِقِ فَقَالَ " هَا إِنَّ الْفِتْنَةَ هَا هُنَا إِنَّ الْفِتْنَةَ
هَا هُنَا مِنْ حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنُ الشَّيْطَانِ ".
‘আবদুল্লাহ
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি, তিনি পূর্ব
দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, সাবধান! ফিতনা এখানেই। সাবধান! ফিত্না এখানেই। সেখান
থেকে শয়তানের শিং উদিত হবে।
৩২৮০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ
أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنْ جَابِرٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " إِذَا اسْتَجْنَحَ {اللَّيْلُ} ـ أَوْ كَانَ جُنْحُ
اللَّيْلِ ـ فَكُفُّوا صِبْيَانَكُمْ، فَإِنَّ الشَّيَاطِينَ تَنْتَشِرُ
حِينَئِذٍ، فَإِذَا ذَهَبَ سَاعَةٌ مِنَ الْعِشَاءِ فَحُلُّوهُمْ وَأَغْلِقْ
بَابَكَ، وَاذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ، وَأَطْفِئْ مِصْبَاحَكَ، وَاذْكُرِ اسْمَ
اللَّهِ، وَأَوْكِ سِقَاءَكَ، وَاذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ، وَخَمِّرْ إِنَاءَكَ،
وَاذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ، وَلَوْ تَعْرُضُ عَلَيْهِ شَيْئًا ".
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘সূর্যাস্তের পরপরই যখন রাত শুরু হয়
অথবা বলেছেন, যখন রাতের অন্ধকার নেমে আসে তখন তোমরা তোমাদের শিশুদেরকে ঘরে আটকে
রাখবে। কারণ এ সময় শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে। অতঃপর যখন রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হবে তখন
তাদের ছেড়ে দিতে পার আর তুমি তোমার ঘরের দরজা বন্ধ করে দাও এবং আল্লাহর নাম স্মরণ
কর। তোমার ঘরের বাতি নিভিয়ে দাও এবং আল্লাহ্র নাম স্মরণ কর। তোমার পানি রাখার
পাত্রের মুখ ঢেকে রাখ এবং আল্লাহর নাম স্মরণ কর। তোমার বাসনপত্র ঢেকে রাখ এবং
আল্লাহর নাম স্মরণ কর। সামান্য কিছু হলেও তার ওপর দিয়ে রেখে দাও।’
৩২৮১
حَدَّثَنِي مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ
حُسَيْنٍ، عَنْ صَفِيَّةَ ابْنَةِ حُيَىٍّ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم مُعْتَكِفًا، فَأَتَيْتُهُ أَزُورُهُ لَيْلاً فَحَدَّثْتُهُ ثُمَّ
قُمْتُ، فَانْقَلَبْتُ فَقَامَ مَعِي لِيَقْلِبَنِي. وَكَانَ مَسْكَنُهَا فِي
دَارِ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، فَمَرَّ رَجُلاَنِ مِنَ الأَنْصَارِ، فَلَمَّا
رَأَيَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَسْرَعَا، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم " عَلَى رِسْلِكُمَا إِنَّهَا صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَىٍّ
". فَقَالاَ سُبْحَانَ اللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ "
إِنَّ الشَّيْطَانَ يَجْرِي مِنَ الإِنْسَانِ مَجْرَى الدَّمِ، وَإِنِّي خَشِيتُ
أَنْ يَقْذِفَ فِي قُلُوبِكُمَا سُوءًا ـ أَوْ قَالَ ـ شَيْئًا
সাফিয়্যাহ
বিন্তু হুয়াই (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ই’তিকাফ অবস্থায় ছিলেন।
আমি রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসলাম। অতঃপর তার সঙ্গে কিছু কথা বললাম। অতঃপর আমি
ফিরে আসার জন্য দাঁড়ালাম। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-ও আমাকে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমার সঙ্গে উঠে দাঁড়ালেন। আর তার বাসস্থান ছিল
উসামা ইব্নু যায়দের বাড়িতে। এ সময় দু’জন আনসারী সে স্থান দিয়ে অতিক্রম করল। তারা
যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখল তখন তারা শীঘ্র চলে যেতে
লাগল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা একটু থাম। এ
সাফিয়্যা বিন্তে হুয়াই। তারা বললেন, সুবহানাল্লাহ! হে আল্লাহ্র রসূল! তিনি
বললেন, মানুষের রক্তধারায় শয়তান প্রবাহমান থাকে। আমি শঙ্কাবোধ করছিলাম, সে তোমাদের
মনে কোন খারাপ ধারণা অথবা বললেন অন্য কিছু সৃষ্টি করে না কি।
৩২৮২
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ صُرَدٍ، قَالَ
كُنْتُ جَالِسًا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَرَجُلاَنِ يَسْتَبَّانِ،
فَأَحَدُهُمَا احْمَرَّ وَجْهُهُ وَانْتَفَخَتْ أَوْدَاجُهُ، فَقَالَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم " إِنِّي لأَعْلَمُ كَلِمَةً لَوْ قَالَهَا ذَهَبَ
عَنْهُ مَا يَجِدُ، لَوْ قَالَ أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ. ذَهَبَ
عَنْهُ مَا يَجِدُ ". فَقَالُوا لَهُ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " تَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ ". فَقَالَ
وَهَلْ بِي جُنُونٌ
সুলাইমান
ইব্নু সুরাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন দু’জন
লোক গালাগালি করছিল। তাদের এক জনের চেহারা লাল হয়ে গিয়েছিল এবং তার রগগুলো ফুলে
গিয়েছিল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি এমন একটি দু’আ
জানি, যদি এ লোকটি পড়ে তবে তার রাগ দূর হয়ে যাবে। সে যদি পড়ে “আ’উযুবিল্লাহি মিনাশ
শায়তান”- আমি শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। তবে তার রাগ চলে যাবে। তখন তাকে
বলল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তুমি আল্লাহর নিকট শয়তান
থেকে আশ্রয় চাও। সে বলল, আমি কি পাগল হয়েছি?
৩২৮৩
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا
مَنْصُورٌ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لَوْ أَنَّ
أَحَدَكُمْ إِذَا أَتَى أَهْلَهُ قَالَ {اللَّهُمَّ} جَنِّبْنِي الشَّيْطَانَ،
وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنِي. فَإِنْ كَانَ بَيْنَهُمَا وَلَدٌ لَمْ
يَضُرُّهُ الشَّيْطَانُ، وَلَمْ يُسَلَّطْ عَلَيْهِ ". قَالَ
وَحَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ سَالِمٍ عَنْ كُرَيْبٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
مِثْلَهُ.
ইব্নু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন স্ত্রীর
নিকট গমন করে এবং বলে, “হে আল্লাহ্! আমাকে শয়তান হতে রক্ষা আর আমাকে এর মাধ্যমে
যে সন্তান দিবে তাকেও শয়তান থেকে হেফাজত কর”। তাহলে যদি তাদের কোন সন্তান জন্মায়,
তবে শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না এবং তার উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারবে না।
আসমা (রহঃ)..... ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) নিকট হতে অনুরূপ রিওয়ায়ত বর্ণনা করেন।
৩২৮৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودٌ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ صَلَّى صَلاَةً فَقَالَ "
إِنَّ الشَّيْطَانَ عَرَضَ لِي، فَشَدَّ عَلَىَّ يَقْطَعُ الصَّلاَةَ عَلَىَّ،
فَأَمْكَنَنِي اللَّهُ مِنْهُ ". فَذَكَرَهُ.
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আদায় করলেন। অতঃপর বললেন, শয়তান আমার
সামনে এসেছিল। সে আমার সালাত নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আল্লাহ আমাকে তার
উপর বিজয়ী করেন। অতঃপর পূর্ণাঙ্গ হাদীসটি উল্লেখ করেন।
৩২৮৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا
الأَوْزَاعِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" إِذَا نُودِيَ بِالصَّلاَةِ أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ وَلَهُ ضُرَاطٌ،
فَإِذَا قُضِيَ أَقْبَلَ، فَإِذَا ثُوِّبَ بِهَا أَدْبَرَ، فَإِذَا قُضِيَ
أَقْبَلَ، حَتَّى يَخْطِرَ بَيْنَ الإِنْسَانِ وَقَلْبِهِ، فَيَقُولُ اذْكُرْ
كَذَا وَكَذَا. حَتَّى لاَ يَدْرِي أَثَلاَثًا صَلَّى أَمْ أَرْبَعًا فَإِذَا
لَمْ يَدْرِ ثَلاَثًا صَلَّى أَوْ أَرْبَعًا سَجَدَ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ
".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন সালাতের জন্যে আযান
দেয়া হয় তখন শয়তান সশব্দে বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালাতে থাকে। আযান শেষ হলে সামনে এগিয়ে
আসে। আবার যখন ইকামাত দেয়া হয় তখন আবার পালাতে থাকে। ইকামাত শেষ হলে আবার সামনে
আসে এবং মানুষের মনে খটকা সৃষ্টি করতে থাকে আর বলতে থাকে ওটা ওটা মনে কর। এমন কি
সে ব্যক্তি আর মনে রাখতে পারে না যে, সে কি তিন রাক’আত পড়ল না চার রাক’আত পড়ল।
এরকম যদি কারো হয়ে যায়, সে মনে রাখতে পারে না তিন রাকা’আত পড়েছে না কি চার রাকা’আত
তখন সে যেন দু’টি সাহু সিজদা করে।
৩২৮৬
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنْ
أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ
قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " كُلُّ بَنِي آدَمَ يَطْعُنُ
الشَّيْطَانُ فِي جَنْبَيْهِ بِإِصْبَعِهِ حِينَ يُولَدُ، غَيْرَ عِيسَى بْنِ
مَرْيَمَ، ذَهَبَ يَطْعُنُ فَطَعَنَ فِي الْحِجَابِ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক আদম সন্তানের
জন্মের সময় তার পার্শ্বদেশে শয়তান তার দুই আঙ্গুলের দ্বারা খোঁচা মারে। ‘ঈসা ইব্নু
মরয়াম (‘আঃ)-এর ব্যতিক্রম। সে তাকে খোঁচা মারতে গিয়েছিল। তখন সে পর্দার ওপর খোঁচা
মারে।
৩২৮৭
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا
إِسْرَائِيلُ، عَنِ الْمُغِيرَةِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ
قَدِمْتُ الشَّأْمَ {فَقُلْتُ مَنْ هَا هُنَا} قَالُوا أَبُو الدَّرْدَاءِ
قَالَ أَفِيكُمُ الَّذِي أَجَارَهُ اللَّهُ مِنَ الشَّيْطَانِ عَلَى لِسَانِ
نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ عَنْ مُغِيرَةَ وَقَالَ الَّذِي أَجَارَهُ اللَّهُ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِ
صلى الله عليه وسلم يَعْنِي عَمَّارًا.
‘আলকামাহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি সিরিয়ায় গেলাম, লোকেরা বলল, ইনি আবূ দারদা (রাঃ)। তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
‘তোমাদের মধ্যে কি সে ব্যক্তি আছে, যাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর মৌখিক দু’আয় আল্লাহ্ শয়তান হতে রক্ষা করেছেন? মুগীরাহ (রাঃ) হতে
বর্ণিত। তিনি বলেন, সেই ব্যক্তি যাঁকে আল্লাহ্ তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর মৌখিক দু’আয় শয়তান হতে রক্ষা করেছিলেন, তিনি হলেন, আম্মার (রাঃ)।
৩২৮৮
قَالَ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي خَالِدُ بْنُ يَزِيدَ،
عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِلاَلٍ، أَنَّ أَبَا الأَسْوَدِ، أَخْبَرَهُ عُرْوَةُ،
عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" الْمَلاَئِكَةُ تَتَحَدَّثُ فِي الْعَنَانِ ـ وَالْعَنَانُ الْغَمَامُ ـ
بِالأَمْرِ يَكُونُ فِي الأَرْضِ، فَتَسْمَعُ الشَّيَاطِينُ الْكَلِمَةَ،
فَتَقُرُّهَا فِي أُذُنِ الْكَاهِنِ، كَمَا تُقَرُّ الْقَارُورَةُ، فَيَزِيدُونَ
مَعَهَا مِائَةَ كَذِبَةٍ ".
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘ফেরেশতামণ্ডলী মেঘের মাঝে এমন সব
বিষয় আলোচনা করেন, যা পৃথিবীতে ঘটবে। তখন শয়তানেরা দু’ একটি কথা শুনে ফেলে এবং তা
জ্যোতিষীদের কানে এমনভাবে ঢেলে দেয় যেমন বোতলে পানি ঢালা হয়। তখন তারা সত্য কথার
সঙ্গে শত রকমের মিথ্যা বাড়িয়ে বলে’।
৩২৮৯
حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي
ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى
الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " التَّثَاؤُبُ مِنَ
الشَّيْطَانِ، فَإِذَا تَثَاءَبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَرُدَّهُ مَا اسْتَطَاعَ،
فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَالَ هَا. ضَحِكَ الشَّيْطَانُ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, হাই তোলা শয়তানের পক্ষ হতে হয়ে থাকে।
কাজেই তোমাদের কারো যখন হাই আসবে যথাসম্ভব তা রোধ করবে। কারণ তোমাদের কেউ হাই
তোলার সময় যখন ‘হা’ বলে, তখন শয়তান হাসতে থাকে।
৩২৯০
حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو
أُسَامَةَ، قَالَ هِشَامٌ أَخْبَرَنَا عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله
عنها قَالَتْ لَمَّا كَانَ يَوْمَ أُحُدٍ هُزِمَ الْمُشْرِكُونَ فَصَاحَ إِبْلِيسُ
أَىْ عِبَادَ اللَّهِ أُخْرَاكُمْ. فَرَجَعَتْ أُولاَهُمْ فَاجْتَلَدَتْ هِيَ
وَأُخْرَاهُمْ، فَنَظَرَ حُذَيْفَةُ فَإِذَا هُوَ بِأَبِيهِ الْيَمَانِ فَقَالَ
أَىْ عِبَادَ اللَّهِ أَبِي أَبِي. فَوَاللَّهِ مَا احْتَجَزُوا حَتَّى قَتَلُوهُ،
فَقَالَ حُذَيْفَةُ غَفَرَ اللَّهُ لَكُمْ. قَالَ عُرْوَةُ فَمَا زَالَتْ فِي
حُذَيْفَةَ مِنْهُ بَقِيَّةُ خَيْرٍ حَتَّى لَحِقَ بِاللَّهِ.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, উহুদের দিন যখন মুশরিকরা পরাজিত হলো, তখন ইব্লীস চিৎকার করে বলল, হে আল্লাহ্র
বান্দারা! তোমাদের পিছনের লোকদের থেকে সতর্ক হও। কাজেই সামনের লোকেরা পিছনের
লোকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। ফলে উভয় দলের মধ্যে নতুনভাবে লড়াই শুরু হল। হুযাইফাহ
(রাঃ) হঠাৎ তার পিতা ইয়ামানকে দেখতে পেলেন। তখন তিনি (হুযাইফাহ) বললেন, হে আল্লাহর
বান্দারা! আমার পিতা! আমার পিতা! কিন্তু আল্লাহর কসম, তারা বিরত হয়নি। শেষ পর্যন্ত
তারা তাঁকে হত্যা করে ফেলল। তখন হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুক।
‘উরওয়াহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর সঙ্গে মিলত হওয়া পর্যন্ত হুযাইফাহ (রাঃ) দু’আ ও
ইস্তিগফার করতে থাকেন।
৩২৯১
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الرَّبِيعِ، حَدَّثَنَا أَبُو
الأَحْوَصِ، عَنْ أَشْعَثَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ قَالَتْ
عَائِشَةُ ـ رضى الله عنها ـ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنِ
الْتِفَاتِ الرَّجُلِ فِي الصَّلاَةِ. فَقَالَ " هُوَ اخْتِلاَسٌ يَخْتَلِسُ
الشَّيْطَانُ مِنْ صَلاَةِ أَحَدِكُمْ ".
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাতের ভিতরে মানুষের
এদিক-ওদিক তাকানোর বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তা হল শয়তানের এক ধরনের
ছিনতাই, যা সে তোমাদের এক জনের সালাত হতে ছিনিয়ে নেয়।
৩২৯২
حَدَّثَنَا أَبُو الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ،
قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ
حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلُمُ مِنَ الشَّيْطَانِ
فَإِذَا حَلَمَ أَحَدُكُمْ حُلُمًا يَخَافُهُ فَلْيَبْصُقْ عَنْ يَسَارِهِ،
وَلْيَتَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنْ شَرِّهَا، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".
আবূ
ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সৎ ও ভাল স্বপ্ন আল্লাহর
তরফ হতে হয়ে থাকে। আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের তরফ হতে হয়ে থাকে। কাজেই তোমাদের কেউ
যখন ভয়ানক মন্দ স্বপ্ন দেখে তখন সে যেন তার বাম দিকে থুথু ফেলে আর শয়তানের ক্ষতি
হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চায়। তা হলে স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
৩২৯৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا
مَالِكٌ، عَنْ سُمَىٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ
الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ. فِي يَوْمٍ
مِائَةَ مَرَّةٍ، كَانَتْ لَهُ عَدْلَ عَشْرِ رِقَابٍ، وَكُتِبَتْ لَهُ مِائَةُ
حَسَنَةٍ، وَمُحِيَتْ عَنْهُ مِائَةُ سَيِّئَةٍ، وَكَانَتْ لَهُ حِرْزًا مِنَ الشَّيْطَانِ
يَوْمَهُ ذَلِكَ حَتَّى يُمْسِيَ، وَلَمْ يَأْتِ أَحَدٌ بِأَفْضَلَ مِمَّا جَاءَ
بِهِ، إِلاَّ أَحَدٌ عَمِلَ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে লোক একশ’বার এ দু’আ’টি পড়বেঃ
আল্লাহ ব্যতিত কোন ইলাহা নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই, রাজত্ব একমাত্র তাঁরই,
সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তাঁরই জন্য, আর তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। তাহলে দশটি
গোলাম আযাদ করার সমান সওয়াব তার হবে। তার জন্য একশটি সওয়াব লেখা হবে এবং আর একশটি
গুনাহ মিটিয়ে ফেলা হবে। ঐদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান হতে মাহফুজ থাকবে। কোন লোক
তার চেয়ে উত্তম সওয়াবের কাজ করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, ঐ ব্যক্তি সক্ষম হবে, যে এর
চেয়ে ঐ দু’আটির ‘আমল বেশি পরিমাণ করবে।
৩২৯৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا
يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
زَيْدٍ، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ
أَبَاهُ سَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ اسْتَأْذَنَ عُمَرُ عَلَى رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، وَعِنْدَهُ نِسَاءٌ مِنْ قُرَيْشٍ يُكَلِّمْنَهُ
وَيَسْتَكْثِرْنَهُ، عَالِيَةً أَصْوَاتُهُنَّ، فَلَمَّا اسْتَأْذَنَ عُمَرُ،
قُمْنَ يَبْتَدِرْنَ الْحِجَابَ، فَأَذِنَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم، وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَضْحَكُ، فَقَالَ عُمَرُ أَضْحَكَ
اللَّهُ سِنَّكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ " عَجِبْتُ مِنْ هَؤُلاَءِ
اللاَّتِي كُنَّ عِنْدِي، فَلَمَّا سَمِعْنَ صَوْتَكَ ابْتَدَرْنَ الْحِجَابَ
". قَالَ عُمَرُ فَأَنْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كُنْتَ أَحَقَّ أَنْ
يَهَبْنَ. ثُمَّ قَالَ أَىْ عَدُوَّاتِ أَنْفُسِهِنَّ، أَتَهَبْنَنِي وَلاَ
تَهَبْنَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْنَ نَعَمْ، أَنْتَ أَفَظُّ
وَأَغْلَظُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا لَقِيَكَ الشَّيْطَانُ
قَطُّ سَالِكًا فَجًّا إِلاَّ سَلَكَ فَجًّا غَيْرَ فَجِّكَ
সা’দ
ইব্নু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, একদা ‘উমর (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট
আসার অনুমতি চাইলেন। তখন তাঁর সঙ্গে কয়েকজন কুরাইশ নারী কথাবার্তা বলছিল। তারা খুব
উচ্চঃস্বরে কথা বলছিল। অতঃপর যখন ‘উমর (রাঃ) অনুমতি চাইলেন, তারা উঠে শীঘ্র পর্দার
আড়ালে চলে গেলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে
অনুমতি প্রদান করলেন। তখন তিনি মুচকি হাসছিলেন। তখন ‘উমর (রাঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহর
রসূল! আল্লাহ আপনাকে সর্বদা সহাস্য রাখুন।’ তিনি বললেন, আমার নিকট যে সব মহিলা ছিল
তাদের ব্যাপারে আমি আশ্চর্যান্বিত হয়েছি। তারা যখনি তোমার আওয়াজ শুনল তখনই দ্রুত
পর্দার আড়ালে চলে গেল। ‘উমর (রাঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহ্র রসূল! আপনাকেই তাদের বেশি
ভয় করা উচিত ছিল।’ অতঃপর তিনি মহিলাদের উদ্দেশ্য করে বললেন, হে আত্মশত্রু মহিলাগণ!
তোমরা আমাকে ভয় করছ অথচ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ভয়
করছ না? তারা জবাব দিল, হ্যাঁ, কারণ তুমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)–এর চেয়ে অধিক কর্কশ ভাষী ও কঠোর হৃদয়ের লোক। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘শপথ ঐ সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তুমি যে পথে চল
শয়তান কখনও সে পথে চলে না বরং সে তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথে চলে।’
৩২৯৫
حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ حَمْزَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي
ابْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ يَزِيدَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ
عِيسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا اسْتَيْقَظَ ـ أُرَاهُ ـ أَحَدُكُمْ
مِنْ مَنَامِهِ فَتَوَضَّأَ فَلْيَسْتَنْثِرْ ثَلاَثًا، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ
يَبِيتُ عَلَى خَيْشُومِهِ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন ঘুম হতে উঠল এবং উযূ করল তখন তার উচিত নাক তিনবার ঝেড়ে
ফেলা। কারণ, শয়তান তার নাকের ছিদ্রে রাত কাটিয়েছে।’
৫৯/১২. অধ্যায়ঃ
জ্বিন, তাদের পুরস্কার এবং
শাস্তির বিবরণ।
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ হে
জ্বিন ও মানবজাতি! তোমাদের কাছে কি আসেনি তোমাদের মধ্য থেকে রসূলগণ যারা তোমাদের
কাছে আমার নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করত- (সূরা আন’আম ১৩০)। ------ ক্ষতি।
--------------তারা আল্লাহ ও জ্বিনদের মাঝে সম্পর্ক স্থাপণ করেছে- (সূরা সাফফাত
১৫৮ আয়াতের তাফসীরে)। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, কুরাইশ কাফিররা ফেরেশতামণ্ডলীকে আল্লাহর
কন্যা এবং তাদের মাতাদেরকে জ্বিনের নেতাদের কন্যা বলে আখ্যায়িত করত। মহান আল্লাহ
বলেনঃ জ্বিনগণ অবশ্যই জানে যে, তাদেরকে হিসাবের সময় উপস্থিত করা হবে। অচিরেই
তাদেরকে হিসাবের জন্য উপস্থিত করা হবে। --------- তারা এমন এক সম্প্রদায় যাদেরকে
হিসাবের সময় উপস্থিত করা হবে- (সূরা ইয়াসীন ৭৫)।
৩২৯৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ
الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ
الْخُدْرِيَّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ لَهُ " إِنِّي أَرَاكَ تُحِبُّ
الْغَنَمَ وَالْبَادِيَةَ، فَإِذَا كُنْتَ فِي غَنَمِكَ وَبَادِيَتِكَ فَأَذَّنْتَ
بِالصَّلاَةِ، فَارْفَعْ صَوْتَكَ بِالنِّدَاءِ، فَإِنَّهُ لاَ يَسْمَعُ مَدَى
صَوْتِ الْمُؤَذِّنِ جِنٌّ وَلاَ إِنْسٌ وَلاَ شَىْءٌ إِلاَّ شَهِدَ لَهُ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ ". قَالَ أَبُو سَعِيدٍ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم.
আবূ
সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আবদুর রহমান (রহঃ)- কে বলেছেন, ‘আমি তোমাকে দেখছি তুমি বকরির
পাল ও মরুভূমি পছন্দ করছ। অতএব, তুমি যখন তোমার বকরির পাল নিয়ে মরুভূমিতে অবস্থান
করবে, সালাতের সময় হলে আযান দিবে, আযানে তোমার স্বর উচ্চ করবে। কেননা মুআয্যিনের
কণ্ঠস্বর জ্বিন, মানুষ ও যে কোন বস্তু শুনে, তারা ক্বিয়ামতের দিন তার পক্ষে
সাক্ষ্য দিবে।’ আবূ সা’ঈদ (রাঃ) বলেন, আমি এ হাদীসটি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে শুনেছি।
৫৯/১৩. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ “স্মরণ
করুন, আমি আপনার প্রতি একদল জ্বিনকে আকৃষ্ট করেছিলাম .... এরূপ লোকেরাই প্রকাশ্য
পথভ্রষ্টতার মধ্যে পতিত রয়েছে। (সূরা আহ্কাফ ২৯-৩২)
------ অর্থ ফিরিবার স্থান।
------ আমরা ফিরিয়ে দিলাম।
৫৯/১৪. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ আর
আল্লাহ যমীনে সকল প্রকার প্রাণী ছড়িয়ে দিয়েছেন।”
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন,
-------- হল পুরুষ সাপ। বলা হয় সাপ বিভিন্ন প্রকারের হয়, শ্বেত সাপ, মাদী সাপ আর
কাল সাপ, ---------- অর্থ আল্লাহ তাঁর রাজত্ব ও কর্তৃত্বে সকল জীবকে রেখেছেন, ----
তাদের ডানাগুলো সম্প্রসারিত অবস্থায়। --- তারা তাদের ডানাগুলো সঙ্কুচিত করে।
৩২৯৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا
هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ،
عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم يَخْطُبُ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ " اقْتُلُوا الْحَيَّاتِ،
وَاقْتُلُوا ذَا الطُّفْيَتَيْنِ وَالأَبْتَرَ، فَإِنَّهُمَا يَطْمِسَانِ
الْبَصَرَ، وَيَسْتَسْقِطَانِ الْحَبَلَ ". قَالَ عَبْدُ اللَّهِ فَبَيْنَا
أَنَا أُطَارِدُ، حَيَّةً لأَقْتُلَهَا فَنَادَانِي أَبُو لُبَابَةَ لاَ
تَقْتُلْهَا. فَقُلْتُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أَمَرَ
بِقَتْلِ الْحَيَّاتِ. قَالَ إِنَّهُ نَهَى بَعْدَ ذَلِكَ عَنْ ذَوَاتِ
الْبُيُوتِ، وَهْىَ الْعَوَامِرُ.
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে মিম্বারের উপর ভাষণ দানের সময় বলতে
শুনেছেন, ‘সাপ মেরে ফেল। বিশেষ করে মেরে ফেল ঐ সাপ, যার মাথার উপর দু’টো সাদা রেখা
আছে এবং লেজ কাটা সাপ। কারণ এ দু’প্রকারের সাপ চোখের জ্যোতি নষ্ট করে দেয় ও
গর্ভপাত ঘটায়।’
৩২৯৮
See previous Hadith
‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) বললেন, একদা আমি একটি সাপ মারার জন্য তার পিছু ধাওয়া করছিলাম। এমন সময় আবূ
লুবাবা (রাঃ) আমাকে ডেকে বললেন, সাপটি মেরোনা। তখন আমি বললাম, আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাপ মারার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তিনি বললেন,
এরপরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সাপ ঘরে বাস করে যাকে ‘আওয়ামির’
বলা হয় এমন সাপ মারতে নিষেধ করেছেন।
৩২৯৯
وَقَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ، فَرَآنِي أَبُو
لُبَابَةَ أَوْ زَيْدُ بْنُ الْخَطَّابِ. وَتَابَعَهُ يُونُسُ وَابْنُ
عُيَيْنَةَ وَإِسْحَاقُ الْكَلْبِيُّ وَالزُّبَيْدِيُّ. وَقَالَ صَالِحٌ وَابْنُ
أَبِي حَفْصَةَ وَابْنُ مُجَمِّعٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ، رَآنِي أَبُو لُبَابَةَ وَزَيْدُ بْنُ الْخَطَّابِ.
‘আবদুর
রায্যাক (রহঃ) মা’মার (রহঃ) সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
আমাকে
দেখেছেন আবূ লুবাবা অথবা যায়দ ইব্নু খাত্তাব (রাঃ) আর অনুসরণ করেছেন মা’মার
(রহঃ)- কে ইউনুস ইব্নু ইয়াইনা, ইসহাক কলবী ও যুবাইদী (রহঃ) এবং সালিহ, ইব্নু আবূ
হাফসাহ ও ইব্নু মুজাম্মি’ (রহঃ).... ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে,
‘আমাকে দেখেছেন আবু লুবাবা ও যায়দ ইব্নু খাত্তাব (রাঃ)।
৫৯/১৫. অধ্যায়ঃ
মুসলিমের সর্বোৎকৃষ্ট মাল
হল ছাগের পাল যেগুলোকে নিয়ে তারা পাহাড়ের উপর চলে যায়।
৩৩০০
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، قَالَ
حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" يُوشِكُ أَنْ يَكُونَ خَيْرَ مَالِ الرَّجُلِ غَنَمٌ يَتْبَعُ بِهَا
شَعَفَ الْجِبَالِ وَمَوَاقِعَ الْقَطْرِ، يَفِرُّ بِدِينِهِ مِنَ الْفِتَنِ
".
আবূ
সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সে সময় অতি নিকটে
যখন একজন মুসলিমের সবচেয়ে উত্তম সম্পদ হবে ছাগ-পাল। তা নিয়ে সে পাহাড়ের চূড়ায় এবং
বৃষ্টির এলাকায় চলে যাবে; সে ফিতনা হতে নিজের দ্বীনকে রক্ষার জন্য পলায়ন করবে।
৩৩০১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا
مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى
الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " رَأْسُ
الْكُفْرِ نَحْوَ الْمَشْرِقِ، وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلاَءُ فِي أَهْلِ الْخَيْلِ
وَالإِبِلِ، وَالْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْوَبَرِ، وَالسَّكِينَةُ فِي أَهْلِ
الْغَنَمِ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘কুফরীর মূল পূর্বদিকে, গর্ব এবং
অহংকার ঘোড়া এবং উটের মালিকদের মধ্যে এবং বেদুইনদের মধ্যে যারা তাদের উটের পাল
নিয়ে ব্যস্ত থাকে, আর শান্তি বকরির পালের মালিকদের মধ্যে।’
৩৩০২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ
إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنِي قَيْسٌ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَمْرٍو أَبِي
مَسْعُودٍ، قَالَ أَشَارَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ نَحْوَ
الْيَمَنِ فَقَالَ " الإِيمَانُ يَمَانٍ هَا هُنَا، أَلاَ إِنَّ
الْقَسْوَةَ وَغِلَظَ الْقُلُوبِ فِي الْفَدَّادِينَ عِنْدَ أُصُولِ أَذْنَابِ
الإِبِلِ، حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنَا الشَّيْطَانِ فِي رَبِيعَةَ وَمُضَرَ
".
‘উক্বাহ
ইব্নু আম্র আবূ মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ হাতের দ্বারা ইয়ামানের
দিকে ইশারা করে বললেন, ঈমান এদিকে। দেখ কঠোরতা এবং অন্তরের কাঠিন্য ঐ সব বেদুইনদের
মধ্যে যারা তাদের উট নিয়ে ব্যস্ত থাকে যেখান থেকে শয়তানের শিং দু’টি উদয় হয়
অর্থ্যাৎ রাবীয়াহ ও মুযার গোত্রদ্বয়ের মধ্যে।
৩৩০৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ
جَعْفَرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه
ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا سَمِعْتُمْ صِيَاحَ
الدِّيَكَةِ فَاسْأَلُوا اللَّهَ مِنْ فَضْلِهِ، فَإِنَّهَا رَأَتْ مَلَكًا،
وَإِذَا سَمِعْتُمْ نَهِيقَ الْحِمَارِ فَتَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنَ
الشَّيْطَانِ، فَإِنَّهُ رَأَى شَيْطَانًا ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যখন তোমরা মোরগের ডাক শুনবে তখন
তোমরা আল্লাহর নিকট তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করে দু’আ কর। কেননা এ মোরগ ফেরেশতাদের
দেখে আর যখন গাধার আওয়াজ শুনবে তখন শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইবে, কেননা এ
গাধাটি শয়তান দেখেছে।’
৩৩০৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا رَوْحٌ، أَخْبَرَنَا
ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ ـ
رضى الله عنهما ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا كَانَ
جُنْحُ اللَّيْلِ ـ أَوْ أَمْسَيْتُمْ ـ فَكُفُّوا صِبْيَانَكُمْ، فَإِنَّ
الشَّيَاطِينَ تَنْتَشِرُ حِينَئِذٍ، فَإِذَا ذَهَبَ سَاعَةٌ مِنَ اللَّيْلِ
فَحُلُّوهُمْ، وَأَغْلِقُوا الأَبْوَابَ، وَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ، فَإِنَّ
الشَّيْطَانَ لاَ يَفْتَحُ بَابًا مُغْلَقًا ". قَالَ وَأَخْبَرَنِي
عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ نَحْوَ مَا أَخْبَرَنِي
عَطَاءٌ وَلَمْ يَذْكُرْ " وَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ ".
জাবির
ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘যখন রাতের আঁধার
নেমে আসবে অথবা বলেছেন, যখন সন্ধ্যা হয়ে যাবে তখন তোমরা তোমাদের শিশুদেরকে আটকিয়ে
রাখবে। কেননা এসময় শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে। আর যখন রাতের কিছু অংশ অতিক্রান্ত হবে তখন
তাদেরকে ছেড়ে দিতে পার। তোমরা ঘরের দরজা বন্ধ করবে এবং আল্লাহ্র নাম স্মরণ করবে।
কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারেনা। ইব্নু জুরাইজ (রহঃ) বলেন, হাদীসটি ‘আম্র
ইব্নু দীনার (রহঃ) ....... জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ হতে ‘আত্বা (রহঃ)-এর মতই
বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি ------------ বলেননি।
৩৩০৫
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ،
عَنْ خَالِدٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " فُقِدَتْ أُمَّةٌ مِنْ بَنِي
إِسْرَائِيلَ لاَ يُدْرَى مَا فَعَلَتْ، وَإِنِّي لاَ أُرَاهَا إِلاَّ الْفَارَ
إِذَا وُضِعَ لَهَا أَلْبَانُ الإِبِلِ لَمْ تَشْرَبْ، وَإِذَا وُضِعَ لَهَا
أَلْبَانُ الشَّاءِ شَرِبَتْ ". فَحَدَّثْتُ كَعْبًا فَقَالَ أَنْتَ
سَمِعْتَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُهُ قُلْتُ نَعَمْ. قَالَ لِي
مِرَارًا. فَقُلْتُ أَفَأَقْرَأُ التَّوْرَاةَ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বনী ইসরাঈলের একদল লোক নিখোঁজ হয়েছিল।
কেউ জানেনা তাদের কী হলো আর আমি তাদেরকে ইঁদুর বলেই মনে করি। কেননা তাদের সামনে
যখন উটের দুধ রাখা হয়, তারা তা পান করে না, আর যখন তাদের সামনে ছাগী দুগ্ধ রাখা হয়
তখন তারা তা পান করে। [আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন] আমি এ হাদীসটি কা‘বের নিকট বললাম,
তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আপনি কি এটা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে
বলতে শুনেছেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি কয়েকবার আমাকে এ কথাটি জিজ্ঞেস করলেন।
তখন আমি বললাম, আমি কি তাওরাত কিতাব পড়েছি?
৩৩০৬
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، عَنِ ابْنِ وَهْبٍ،
قَالَ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ
عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِلْوَزَغِ
الْفُوَيْسِقُ. وَلَمْ أَسْمَعْهُ أَمَرَ بِقَتْلِهِ. وَزَعَمَ سَعْدُ بْنُ
أَبِي وَقَّاصٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِقَتْلِهِ.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গিরগিটি বা রক্তচোষা টিকটিকি কে নিকৃষ্টতম
ফাসিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)–কে একে হত্যা করার আদেশ দিতে শুনিনি। আর সা‘দ ইব্নু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একে হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন।
৩৩০৭
حَدَّثَنَا صَدَقَةُ، أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ شَيْبَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أُمَّ شَرِيكٍ، أَخْبَرَتْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم أَمَرَهَا بِقَتْلِ الأَوْزَاغِ.
সা‘ঈদ
ইব্নু মুসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মু
শারীক (রহঃ) তাঁকে খবর দিয়েছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে
গিরগিটি বা রক্ত চোষা জাতীয় টিকটিকি হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
৩৩০৮
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو
أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ
قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " اقْتُلُوا ذَا الطُّفْيَتَيْنِ،
فَإِنَّهُ يَلْتَمِسُ الْبَصَرَ، وَيُصِيبُ الْحَبَلَ ".
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘পিঠে দু’টি সাদা
রেখা ওয়ালা সাপকে হত্যা কর। কেননা এ জাতীয় সাপ দৃষ্টিশক্তি বিনষ্ট করে আর গর্ভপাত
ঘটায়।’
৩৩০৯
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ
حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ،، قَالَتْ أَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
بِقَتْلِ الأَبْتَرِ وَقَالَ " إِنَّهُ يُصِيبُ الْبَصَرَ، وَيُذْهِبُ
الْحَبَلَ ".
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লেজকাটা সাপকে হত্যা করার নির্দেশ
দিয়েছেন, আর বলেছেন, এ ধরনের সাপ দৃষ্টিশক্তি বিনষ্ট করে এবং গর্ভপাত ঘটায়।
৩৩১০
حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي
عَدِيٍّ، عَنْ أَبِي يُونُسَ الْقُشَيْرِيِّ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، أَنَّ
ابْنَ عُمَرَ، كَانَ يَقْتُلُ الْحَيَّاتِ ثُمَّ نَهَى قَالَ إِنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم هَدَمَ حَائِطًا لَهُ، فَوَجَدَ فِيهِ سِلْخَ حَيَّةٍ فَقَالَ
" انْظُرُوا أَيْنَ هُوَ ". فَنَظَرُوا فَقَالَ "
اقْتُلُوهُ ". فَكُنْتُ أَقْتُلُهَا لِذَلِكَ. فَلَقِيتُ أَبَا
لُبَابَةَ فَأَخْبَرَنِي أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ
تَقْتُلُوا الْجِنَّانَ، إِلاَّ كُلَّ أَبْتَرَ ذِي طُفْيَتَيْنِ، فَإِنَّهُ
يُسْقِطُ الْوَلَدَ، وَيُذْهِبُ الْبَصَرَ، فَاقْتُلُوهُ ".
ইব্নু
আবূ মুলায়কাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) প্রথমে সাপ মেরে ফেলতেন। পরে মারতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার তাঁর একটি দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেন। তাতে
তিনি সাপের খোলস দেখতে পান। তখন তিনি বললেন, দেখ! কোথায় সাপ আছে? লোকেরা দেখল তিনি
বললেন, একে মেরে ফেল। এ কারণে আমি সাপ মেরে ফেললাম।
৩৩১১
See previous Hadith
ইব্নু
আবূ মুলায়কাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অতঃপর
আবূ লুবাবার সঙ্গে আমার দেখা হল। তিনি আমাকে জানালেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পিঠের উপর দু‘টি রেখাওয়ালা এবং লেজকাটা সাপ ছাড়া অন্য কোন
সাপকে তোমরা মেরোনা। কেননা ওগুলো গর্ভপাত ঘটায় এবং চোখের জ্যোতি নষ্ট করে দেয়। তাই
এ জাতীয় সাপ মেরে ফেল।
৩৩১২
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ
بْنُ حَازِمٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ كَانَ يَقْتُلُ
الْحَيَّاتِ. فَحَدَّثَهُ أَبُو لُبَابَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
نَهَى عَنْ قَتْلِ جِنَّانِ الْبُيُوتِ، فَأَمْسَكَ عَنْهَا.
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
সাপ হত্যা করতেন।
৩৩১৩
See previous Hadith
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অতঃপর
আবূ লুবাবাহ (রাঃ) তাঁকে একটি হাদীস শুনালেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ঘরে বসবাসকারী সাপ হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। ফলে তিনি সাপ মারা বন্ধ করে
দেন।
৫৯/১৬. অধ্যায়ঃ
হারামে হত্যাযোগ্য পাঁচ
প্রকারের অনিষ্টকারী প্রাণী।
৩৩১৪
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ،
حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى
الله عَنْهَا ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " خَمْسٌ
فَوَاسِقُ يُقْتَلْنَ فِي الْحَرَمِ الْفَأْرَةُ، وَالْعَقْرَبُ، وَالْحُدَيَّا،
وَالْغُرَابُ، وَالْكَلْبُ الْعَقُورُ ".
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, পাঁচ প্রকার প্রাণী অধিক ক্ষতিকারক।
এদেরকে হারামেও (সীমানারমধ্যে) হত্যা করা যায়। এগুলো হল বিচ্ছু, ইঁদুর, চিল, কাক ও
পাগলা কুকুর।
৩৩১৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، أَخْبَرَنَا
مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ
رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
خَمْسٌ مِنَ الدَّوَابِّ مَنْ قَتَلَهُنَّ وَهْوَ مُحْرِمٌ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ
الْعَقْرَبُ، وَالْفَأْرَةُ، وَالْكَلْبُ الْعَقُورُ، وَالْغُرَابُ، وَالْحِدَأَةُ
".
‘আবদুল্লাহ
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পাঁচ প্রকারের ক্ষতিকারক প্রাণী
যাদেরকে কেউ ইহরাম অবস্থায়ও যদি মেরে ফেলে, তাহলে তার কোন গুনাহ নেই। এগুলো হল
বিচ্ছু, ইঁদুর, পাগলা কুকুর, কাক এবং চিল।
৩৩১৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ،
عَنْ كَثِيرٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ
رَفَعَهُ قَالَ " خَمِّرُوا الآنِيَةَ، وَأَوْكُوا الأَسْقِيَةَ،
وَأَجِيفُوا الأَبْوَابَ، وَاكْفِتُوا صِبْيَانَكُمْ عِنْدَ الْعِشَاءِ، فَإِنَّ
لِلْجِنِّ انْتِشَارًا وَخَطْفَةً، وَأَطْفِئُوا الْمَصَابِيحَ عِنْدَ الرُّقَادِ،
فَإِنَّ الْفُوَيْسِقَةَ رُبَّمَا اجْتَرَّتِ الْفَتِيلَةَ فَأَحْرَقَتْ أَهْلَ
الْبَيْتِ ". قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ وَحَبِيبٌ عَنْ عَطَاءٍ فَإِنَّ
لِلشَّيَاطِينِ.
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা পাত্রগুলো ঢেকে রেখো, পান
করার পাত্রগুলো বন্ধ করে রেখো, ঘরের দরজাগুলো বন্ধ করে রেখো আর সাঁঝের বেলায়
তোমাদের বাচ্চাদেরকে ঘরে আটকে রেখো। কারণ এসময় জ্বিনেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোনকিছুকে
দ্রুত পাকড়াও করে। আর নিদ্রাকালে বাতিগুলো নিভিয়ে দেবে। কেননা অনেক সময় ছোট ছোট
ক্ষতিকারক ইঁদুর প্রজ্জ্বলিত সলতেযুক্ত বাতি টেনে নিয়ে যায় এবং গৃহবাসীকে জ্বালিয়ে
পুড়িয়ে দেয়। ইব্নু জুরাইজ এবং হাবীব (রহঃ) আত্বা (রহঃ) হতে “কেননা এসময় জ্বিনেরা
ছড়িয়ে পড়ে” এর স্থলে “শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে” বর্ণনা করেছেন।
৩৩১৭
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا
يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ
عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فِي غَارٍ فَنَزَلَتْ {وَالْمُرْسَلاَتِ عُرْفًا} فَإِنَّا
لَنَتَلَقَّاهَا مِنْ فِيهِ، إِذْ خَرَجَتْ حَيَّةٌ مِنْ جُحْرِهَا
فَابْتَدَرْنَاهَا لِنَقْتُلَهَا، فَسَبَقَتْنَا فَدَخَلَتْ جُحْرَهَا، فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وُقِيَتْ شَرَّكُمْ، كَمَا وُقِيتُمْ
شَرَّهَا ". وَعَنْ إِسْرَائِيلَ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ
عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ مِثْلَهُ قَالَ وَإِنَّا لَنَتَلَقَّاهَا مِنْ
فِيهِ رَطْبَةً. وَتَابَعَهُ أَبُو عَوَانَةَ عَنْ مُغِيرَةَ. وَقَالَ حَفْصٌ
وَأَبُو مُعَاوِيَةَ وَسُلَيْمَانُ بْنُ قَرْمٍ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ
عَنِ الأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ.
‘আবদুল্লাহ
ইব্নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সঙ্গে এক গুহায়
ছিলাম। তখন ওয়াল “মুরসালাতি গারকা” সূরাটি অবতীর্ণ হয়। আমরা আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– এর মুখ হতে সূরাটি শিখে নিচ্ছিলাম। এমন সময়
একটা সাপ বেরিয়ে এল তার গর্ত হতে। আমরা তাকে মারার জন্য দৌঁড়ে যাই। কিন্তু সে
আমাদের আগেই গিয়ে গর্তে ঢুকে পড়ে। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, সে তোমাদের অনিষ্ট হতে যেমন রক্ষা পেয়েছে, তোমরাও তেমন তার অনিষ্ট
হতে বেঁচে গেছ।
ইসরাঈল (রহ) আ’মাশ, ইব্রাহীম,‘আলকামাহ (রহঃ)-ও ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে এ রকমই বর্ণনা করেছেন। রাবী ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেছেন, আমরা সূরাটি তাঁর মুখ হতে বের হবার সঙ্গে সঙ্গে শিখে নিচ্ছিলাম। আবূ আওয়ানাহ মুগীরাহ (রাঃ) হতে এভাবেই বর্ণনা করেছেন। আর হাফস, আবূ মু’আবিয়া ও সুলাইমান ইব্নু কারম, আ’মাশ, ইব্রাহীম, আসওয়াদ (রহঃ)-ও ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে অনুরূপই বর্ণনা করেছেন।
ইসরাঈল (রহ) আ’মাশ, ইব্রাহীম,‘আলকামাহ (রহঃ)-ও ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে এ রকমই বর্ণনা করেছেন। রাবী ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেছেন, আমরা সূরাটি তাঁর মুখ হতে বের হবার সঙ্গে সঙ্গে শিখে নিচ্ছিলাম। আবূ আওয়ানাহ মুগীরাহ (রাঃ) হতে এভাবেই বর্ণনা করেছেন। আর হাফস, আবূ মু’আবিয়া ও সুলাইমান ইব্নু কারম, আ’মাশ, ইব্রাহীম, আসওয়াদ (রহঃ)-ও ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে অনুরূপই বর্ণনা করেছেন।
৩৩১৮
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ
الأَعْلَى، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
دَخَلَتِ امْرَأَةٌ النَّارَ فِي هِرَّةٍ رَبَطَتْهَا، فَلَمْ تُطْعِمْهَا، وَلَمْ
تَدَعْهَا تَأْكُلُ مِنْ خِشَاشِ الأَرْضِ ". قَالَ وَحَدَّثَنَا
عُبَيْدُ اللَّهِ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ.
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে
তাকে খাবারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত। আবু হুরায়রা
(রাঃ) সূত্রেও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত
আছে।
৩৩১৯
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، قَالَ
حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" نَزَلَ نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ تَحْتَ شَجَرَةٍ فَلَدَغَتْهُ
نَمْلَةٌ، فَأَمَرَ بِجَهَازِهِ فَأُخْرِجَ مِنْ تَحْتِهَا، ثُمَّ أَمَرَ
بِبَيْتِهَا فَأُحْرِقَ بِالنَّارِ، فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ فَهَلاَّ نَمْلَةً
وَاحِدَةً ".
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল( সাঃ) বলেছেন, নবীগণের মধ্যে কোন এক নবী একটি গাছের নীচে অবতরণ করেন। অতঃপর
তাঁকে একটি পিঁপড়ায় কামড় দেয়। তিনি তাঁর আসবাবপত্রের ব্যাপারে আদেশ দেন। এগুলো
গাছের নিচ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। অতঃপর তিনি নির্দেশ দিলে পিঁপড়ার বাসা আগুন দিতে
জ্বালিয়ে দেয়া হল। তখন আল্লাহ তাঁর প্রতি ওয়াহী নাযিল করলেন, ‘তুমি একটি মাত্র
পিঁপড়াকে শাস্তি দিলে না কেন?’
৫৯/১৭. অধ্যায়ঃ
পানীয় দ্রব্যে মাছি পড়লে
ডুবিয়ে দেবে। কারণ তার এক ডানায় থাকে রোগ, অন্যটিতে থাকে আরোগ্যের উপায়।
৩৩২০
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ
بْنُ بِلاَلٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُتْبَةُ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي
عُبَيْدُ بْنُ حُنَيْنٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ
يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِذَا وَقَعَ الذُّبَابُ
فِي شَرَابِ أَحَدِكُمْ فَلْيَغْمِسْهُ، ثُمَّ لِيَنْزِعْهُ، فَإِنَّ فِي إِحْدَى
جَنَاحَيْهِ دَاءً وَالأُخْرَى شِفَاءً
‘উবাইদ
ইব্নু হুনায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, ‘তোমাদের কারো পানীয় দ্রব্যে মাছি পড়লে সেটাকে তাতে ডুবিয়ে দেবে। অতঃপর
তাকে উঠিয়ে ফেলবে। কেননা তার এক ডানায় রোগ থাকে আর অপর ডানায় থাকে রোগের
প্রতিষেধক।’
৩৩২১
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ، حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ الأَزْرَقُ، حَدَّثَنَا عَوْفٌ، عَنِ الْحَسَنِ، وَابْنِ، سِيرِينَ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" غُفِرَ لاِمْرَأَةٍ مُومِسَةٍ مَرَّتْ بِكَلْبٍ عَلَى رَأْسِ رَكِيٍّ
يَلْهَثُ، قَالَ كَادَ يَقْتُلُهُ الْعَطَشُ، فَنَزَعَتْ خُفَّهَا، فَأَوْثَقَتْهُ
بِخِمَارِهَا، فَنَزَعَتْ لَهُ مِنَ الْمَاءِ، فَغُفِرَ لَهَا بِذَلِكَ
".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘এক ব্যভিচারিণীকে ক্ষমা করে দেয়া হয়। সে একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল।
তখন সে দেখতে পেল কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। রাবী বলেন, পানির পিপাসা
তাকে মুমূর্ষ করে দিয়েছিল। তখন সেই নারী তার মোজা খুলে উড়নার সাথে বাঁধল। অতঃপর সে
কূপ হতে পানি তুলল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করালো) এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেয়া
হল।’
৩৩২২
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، قَالَ حَفِظْتُهُ مِنَ الزُّهْرِيِّ كَمَا أَنَّكَ هَا هُنَا
أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ أَبِي طَلْحَةَ ـ رضى الله
عنهم ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَدْخُلُ
الْمَلاَئِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلاَ صُورَةٌ ".
আবূ
ত্বলহা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘যে বাড়িতে কুকুর এবং প্রাণীর ছবি থাকে তাতে ফেরেশতামন্ডলী প্রবেশ করেন না।’
৩৩২৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا
مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِقَتْلِ الْكِلاَبِ.
‘আবদুল্লাহ
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুকুর মেরে ফেলতে আদেশ করেছেন।’
৩৩২৪
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ،
عَنْ يَحْيَى، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى
الله عنه ـ حَدَّثَهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
مَنْ أَمْسَكَ كَلْبًا يَنْقُصْ مِنْ عَمَلِهِ كُلَّ يَوْمٍ قِيرَاطٌ، إِلاَّ
كَلْبَ حَرْثٍ أَوْ كَلْبَ مَاشِيَةٍ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কুকুর
প্রতিপালন করবে, প্রত্যেক দিন তার ‘আমলনামা হতে এক ক্বীরাত করে সওয়াব কমতে থাকবে।
তবে ক্ষেত খামার কিংবা পশু পাল পাহারা দেয়ার কাজে নিযুক্ত শিকারী কুকুর ছাড়া।’
৩৩২৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ، قَالَ أَخْبَرَنِي يَزِيدُ بْنُ خُصَيْفَةَ، قَالَ أَخْبَرَنِي
السَّائِبُ بْنُ يَزِيدَ، سَمِعَ سُفْيَانَ بْنَ أَبِي زُهَيْرٍ الشَّنَئِيَّ،
أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنِ
اقْتَنَى كَلْبًا لاَ يُغْنِي عَنْهُ زَرْعًا وَلاَ ضَرْعًا، نَقَصَ مِنْ عَمَلِهِ
كُلَّ يَوْمٍ قِيرَاطٌ ". فَقَالَ السَّائِبُ أَنْتَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِيْ وَرَبِّ هَذِهِ الْقِبْلَةِ.
সায়িব
ইবনু ইয়াযীদ সুফিয়ান ইবনু আবূ যুহাইর শানাভির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি কুকুর লালন
পালন করে, যদ্দ্বারা না কৃষির উপকার হয়, না পশুপালনের, তার ‘আমল হতে প্রত্যহ এক
কিরাত ‘আমল কমে যায়। সায়িব জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি তা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছেন? তিনি বললেন, এই কিবলার (কা’বার) প্রতিপালকের
শপথ!, অবশ্যই।
No comments