সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "পানীয় দ্রব্যসমূহ" হাদিস নং - ৫৫৭৫ থেকে ৫৬৩৯

পানীয় দ্রব্যসমূহ- ৫৫৭৫ – ৫৬৩৯
মহান আল্লাহর বাণীঃ হে বিশ্বাসীগণ ! মদ, জুয়া আর আস্তানা ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত শয়তানী কাজ, তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সাফল্যমণ্ডিত হতে পার (সূরা আল-মায়িদা ৫ : ৯০)

৫৫৭৫

عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ فِي الدُّنْيَا ثُمَّ لَمْ يَتُبْ مِنْهَا حُرِمَهَا فِي الآخِرَةِ.
‘আবদুল্লাহ্‌ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুনিয়ায় মদ পান করেছে অতঃপর তা-থেকে তওবা করে নি, সে আখিরাতে তা-থেকে বঞ্চিত থাকবে।[মুসলিম ৩৬/৮, হাঃ ২০০৩, আহমাদ ৪৬৯০] আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬২)

৫৫৭৬

أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّه“ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِه„ بِإِيلِيَاءَ بِقَدَحَيْنِ مِنْ خَمْرٍ وَلَبَنٍ فَنَظَرَ إِلَيْهِمَا ثُمَّ أَخَذَ اللَّبَنَ فَقَالَ جِبْرِيلُ الْحَمْدُ للهِ÷ الَّذِي هَدَاكَ لِلْفِطْرَةِ وَلَوْ أَخَذْتَ الْخَمْرَ غَوَتْ أُمَّتُكَ تَابَعَه“ مَعْمَرٌ وَابْنُ الْهَادِ وَعُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ وَالزُّبَيْدِيُّ عَنْ الزُّهْرِيِّ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইস্‌রা (মি’রাজের) রাতে ঈলিয়া নামক স্থানে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মুখে শরাব ও দুধের দু’টি পেয়ালা পেশ করা হল। তিনি উভয়টির প্রতি লক্ষ্য করলেন। এরপর দুধের পেয়ালাটি গ্রহণ করলেন। তখন জিব্‌রীল (‘আঃ) বললেনঃ যাবতীয় প্রশংসা সেই আল্লাহ্‌র জন্য যিনি আপনাকে স্বভাবজাত দ্রব্যের দিকে পথ প্রদর্শন করেছেন। অথচ যদি আপনি শরাব গ্রহণ করতেন তাহলে আপনার উম্মত পথভ্রষ্ট হয়ে যেত। [৪৮]
যুহরী (রহঃ) থেকে মা’মার, ইবনু হাদী, ‘উসমান ইবনু ‘উমর ও যুবায়দী এরকম বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৩)

৫৫৭৭

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ قَالَ سَمِعْتُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَدِيثًا لاَ يُحَدِّثُكُمْ بِه„ غَيْرِي قَالَ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يَظْهَرَ الْجَهْلُ وَيَقِلَّ الْعِلْمُ وَيَظْهَرَ الزِّنَا وَتُشْرَبَ الْخَمْرُ وَيَقِلَّ الرِّجَالُ وَيَكْثُرَ النِّسَاءُ حَتّٰى يَكُونَ لِخَمْسِينَ امْرَأَةً قَيِّمُهُنَّ رَجُلٌ وَاحِدٌ.
মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ………আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে এমন একটি হাদীস শুনেছি যা আমি ছাড়া আর কেউ তোমাদের বর্ণনা করবে না। তিনি বলেন, কেয়ামতের কতক নিদর্শন হলঃ অজ্ঞতা প্রকাশ পাবে‌, ইল্‌ম (দ্বীনী) হ্রাস পাবে, ব্যভিচার প্রকাশ হতে থাকবে, মদ্যপান ব্যাপক হবে, পুরুষের সংখ্যা কমবে আর নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে, এমনকি পঞ্চাশ জন নারীর পরিচালক হবে একজন পুরুষ।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৪)

৫৫৭৮

أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ وَابْنَ الْمُسَيَّبِ يَقُوْلاَنِ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِينَ يَشْرَبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَسْرِقُ السَّارِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِي عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ كَانَ يُحَدِّثُه“ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ثُمَّ يَقُوْلُ كَانَ أَبُو بَكْرٍ يُلْحِقُ مَعَهُنَّ وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً ذَاتَ شَرَفٍ يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ أَبْصَارَهُمْ فِيهَا حِينَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ব্যভিচারী ব্যভিচার করার সময়ে মু’মিন থাকে না, মদ পানকারী মদ পান করার সময়ে মু’মিন থাকে না। চোর চুরি করার সময়ে মু’মিন থাকে না।
ইবনু শিহাব বলেনঃ ‘আবদুল মালিক ইবনু আবূ বক্‌র ইবনু হারিস ইবনু হিশাম আমাকে জানিয়েছে যে, আবূ বকর (রাঃ) এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি বলেন, আবূ বক্‌র উপরোক্ত হাদীসের সাথে এটিও যোগ করতেন যে, মূল্যবান জিনিস, যার দিকে লোকজন চোখ উঁচিয়ে তাকিয়ে থাকে, ছিনতাইকারী তা ছিনতাই করার সময়ে মু’মিন থাকে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৫)

৭৪/. অধ্যায়ঃ

আঙ্গুর থেকে তৈরি মদ

৫৫৭৯

الْحَسَنُ بْنُ صَبَّاحٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَابِقٍ حَدَّثَنَا مَالِكٌ هُوَ ابْنُ مِغْوَلٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ لَقَدْ حُرِّمَتْ الْخَمْرُ وَمَا بِالْمَدِينَةِ مِنْهَا شَيْءٌ.
হাসান ইবনু সাব্বাহ্‌ (রাঃ) ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মদ হারাম ঘোষিত হয়েছে এমন অবস্থায় যে, মদীনায় আঙ্গুরের মদের কিছু অবশিষ্ট ছিল না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৬)

৫৫৮০

أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا أَبُو شِهَابٍ عَبْدُ رَبِّهِ بْنُ نَافِعٍ عَنْ يُونُسَ عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ عَنْ أَنَسٍ قَالَ حُرِّمَتْ عَلَيْنَا الْخَمْرُ حِينَ حُرِّمَتْ وَمَا نَجِدُ يَعْنِي بِالْمَدِينَةِ خَمْرَ الأَعْنَابِ إِلاَّ قَلِيلاً وَعَامَّةُ خَمْرِنَا الْبُسْرُ وَالتَّمْرُ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন আমাদের উপর মদ হারাম হল, তখন আমরা মদীনায় আঙ্গুর থেকে তৈরী মদ খুব কম পেতাম। সাধারণভাবে আমাদের মদ ছিল কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে প্রস্তুত।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৭)

৫৫৮১

مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيٰى عَنْ أَبِي حَيَّانَ حَدَّثَنَا عَامِرٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَامَ عُمَرُ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ أَمَّا بَعْدُ نَزَلَ تَحْرِيمُ الْخَمْرِ وَهِيَ مِنْ خَمْسَةٍ الْعِنَبِ وَالتَّمْرِ وَالْعَسَلِ وَالْحِنْطَةِ وَالشَّعِيرِ وَالْخَمْرُ مَا خَامَرَ الْعَقْلَ.
ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমর (রাঃ) মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে বলেনঃ অতঃপর জেনে রাখ মদ হারাম করে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। আর তা তৈরী হয় পাঁচ রকম জিনিস থেকেঃ আঙ্গুর, খেজুর, মধু, গম ও যব। আর মদ হল, যা বুদ্ধিকে বিলোপ করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৮)

৭৪/. অধ্যায়ঃ

মদ হারাম করে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে এবং তা থেকে তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে।

৫৫৮২

إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كُنْتُ أَسْقِي أَبَا عُبَيْدَةَ وَأَبَا طَلْحَةَ وَأُبَيَّ بْنَ كَعْبٍ مِنْ فَضِيخِ زَهْوٍ وَتَمْرٍ فَجَاءَهُمْ آتٍ فَقَالَ إِنَّ الْخَمْرَ قَدْ حُرِّمَتْ فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ قُمْ يَا أَنَسُ فَأَهْرِقْهَا فَأَهْرَقْتُهَا.
আনাস ইবনু মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ ‘উবাইদাহ, আবূ তালহা ও উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-কে কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে মদ প্রস্তুত মদ পান পান করতে দিয়েছিলাম। এমন সময়ে তাদের নিকট এক আগন্তুক এসে বলল, মদ হারাম করা হয়েছে। তখন আবূ তালহা (রাঃ) বললেন, হে আনাস! দাঁড়াও আর এগুলো গড়িয়ে দাও। আমি তখন তা গড়িয়ে দিলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৯)

৫৫৮৩

مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ عَنْ أَبِيهِ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا قَالَ كُنْتُ قَائِمًا عَلَى الْحَيِّ أَسْقِيهِمْ عُمُومَتِي وَأَنَا أَصْغَرُهُمْ الْفَضِيخَ فَقِيلَ حُرِّمَتْ الْخَمْرُ فَقَالُوا أَكْفِئْهَا فَكَفَأْتُهَا قُلْتُ لأ÷َنَسٍ مَا شَرَابُهُمْ قَالَ رُطَبٌ وَبُسْرٌ فَقَالَ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَنَسٍ وَكَانَتْ خَمْرَهُمْ فَلَمْ يُنْكِرْ أَنَسٌ وَحَدَّثَنِي بَعْضُ أَصْحَابِي أَنَّه“ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ كَانَتْ خَمْرَهُمْ يَوْمَئِذٍ.
মু‘তামির তার পিতার সূত্রে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আনাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ একটি আসরে দাঁড়িয়ে আমি তাদের অর্থাৎ চাচাদের ‘ফাযীখ’ অর্থাৎ কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে প্রস্তুত মদ পান করাচ্ছিলাম। আমি ছিলাম সবার ছোট। এমন সময় বলা হলঃ মদ হারাম করা হয়েছে। তখন তাঁরা বললেনঃ তা গড়িয়ে দাও। সুতরাং আমি তা ঢেলে দিলাম।
রাবী বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে বললামঃ তাঁদের শরাব কিসের ছিল? তিনি বললেনঃ কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে তৈরী। তখন আনাস (রাঃ)-এর পুত্র আবূ বক্‌র বললেনঃ সেটিই কি ছিল তাদের মদ? জবাবে আনাস (রাঃ) কোন অসম্মতি জানালেন না।
রাবী আরো বলেন, আমার কতক সঙ্গী বর্ণনা করেছেন যে, তাঁরা আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেন তিনি বলেছেন, সেকালে এটিই ছিল তাদের মদ।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭০)

৫৫৮৪

مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ حَدَّثَنَا يُوسُفُ أَبُو مَعْشَرٍ الْبَرَّاءُ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِي بَكْرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ حَدَّثَهُمْ أَنَّ الْخَمْرَ حُرِّمَتْ وَالْخَمْرُ يَوْمَئِذٍ الْبُسْرُ وَالتَّمْرُ.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, মদ হারাম করা হয়েছে। আর সেকালে মদ তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭১)

৭৪/. অধ্যায়ঃ

মধু থেকে তৈরী মদ। এটিকে পরিভাষায় ‘বিতা’ বলে।
মা’ন (রহঃ) বলেন, আমি মালিক ইবনু আনাসকে ‘ফুক্‌কা’ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেছি। তিনি বলেছেনঃ নেশাগ্রস্ত না করলে তাতে কোন ক্ষতি নেই। ইবনু দারাওয়ারদী বলেন, আমরা এ সম্পর্কে অনেককে জিজ্ঞেস করেছি, তারা বলেছেন, নেশাগ্রস্ত না করলে তাতে আপত্তি নেই।

৫৫৮৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ عَائِشَةَ، قَالَتْ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْبِتْعِ فَقَالَ ‏ "‏ كُلُّ شَرَابٍ أَسْكَرَ فَهْوَ حَرَامٌ ‏"‏‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘বিতা’ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেছি। তিনি বললেনঃ সর্বপ্রকার নেশা জাতীয় পানীয় হারাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭২)

৫৫৮৬

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْبِتْعِ وَهْوَ نَبِيذُ الْعَسَلِ، وَكَانَ أَهْلُ الْيَمَنِ يَشْرَبُونَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ كُلُّ شَرَابٍ أَسْكَرَ فَهْوَ حَرَامٌ ‏"‏‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘বিতা’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। ‘বিতা’ হচ্ছে মধু থেকে তৈরী নবীয। ইয়ামানের লোকেরা তা পান করত। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে সকল পানীয় নেশার সৃষ্টি করে তা-ই হারাম। যুহরী হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) আমাকে খবর দিয়েছেন যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা দুব্বা (কদুর খোল) এর মধ্যে নবীয তৈরী করবে না, মুযাফ্‌ফাত (আলকাতরা যুক্ত পাত্র)’র মধ্যেও করবে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৩)

৫৫৮৭

وَعَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ تَنْتَبِذُوا فِي الدُّبَّاءِ وَلاَ فِي الْمُزَفَّتِ وَكَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يُلْحِقُ مَعَهَا الْحَنْتَمَ وَالنَّقِيرَ.
যুহরী থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) এগুলোর সঙ্গে হান্‌তাম (মাটির সবুজ পাত্র) ও নাকীর (খেজুর বৃক্ষের মূলের খোল) এর কথাও যোগ করতেন।[মুসলিম ৩৬/৬, হাঃ ১৯৯২, ১৯৯৩] আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৩)

৭৪/. অধ্যায়ঃ

মদ এমন পানীয় যা জ্ঞান লোপ করে দেয়।

৫৫৮৮

أَحْمَدُ ابْنُ أَبِي رَجَاءٍ حَدَّثَنَا يَحْيٰى عَنْ أَبِي حَيَّانَ التَّيْمِيِّ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ خَطَبَ عُمَرُ عَلٰى مِنْبَرِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّه“ قَدْ نَزَلَ تَحْرِيمُ الْخَمْرِ وَهِيَ مِنْ خَمْسَةِ أَشْيَاءَ الْعِنَبِ وَالتَّمْرِ وَالْحِنْطَةِ وَالشَّعِيرِ وَالْعَسَلِ وَالْخَمْرُ مَا خَامَرَ الْعَقْلَ وَثَلاَثٌ وَدِدْتُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يُفَارِقْنَا حَتّٰى يَعْهَدَ إِلَيْنَا عَهْدًا الْجَدُّ وَالْكَلاَلَةُ وَأَبْوَابٌ مِنْ أَبْوَابِ الرِّبَا قَالَ قُلْتُ يَا أَبَا عَمْرٍو فَشَيْءٌ يُصْنَعُ بِالسِّنْدِ مِنَ الأُرْزِ قَالَ ذَاكَ لَمْ يَكُنْ عَلٰى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَوْ قَالَ عَلٰى عَهْدِ عُمَرَ وَقَالَ حَجَّاجٌ عَنْ حَمَّادٍ عَنْ أَبِي حَيَّانَ مَكَانَ الْعِنَبِ الزَّبِيبَ.
ইবনু ‘উমর থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ‘উমার মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে খুত্বা দিতে গিয়ে বললেন, নিশ্চয় মদ হারাম সম্পর্কীয় আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। আর তা প্রস্ত্তত হয় পাঁচটি জিনিস থেকেঃ আঙ্গুর, খেজুর, গম, যব ও মধু। আর খামর মদ) হল তা, যা বিবেক লোপ করে দেয়। আর তিনটি এমন বিষয় আছে যে, আমি চাচ্ছিলাম যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে সেগুলো স্পষ্টভাবে বর্ণনা না করা পর্যন্ত তিনি যেন আমাদের নিকট হতে বিচ্ছিন্ন না হয়ে যান। বিষয়গুলো হল, দাদার মীরাস, কালালার ব্যাখ্যা এবং সুদের প্রকারসমূহ। রাবী আবূ হাইয়্যান বলেন, আমি বললামঃ হে আবূ আমর! এক প্রকারের পানীয় জিনিস যা সিন্ধু অঞ্চলে চাউল দিয়ে তৈরী করা হয়, তার হুকুম কী? তিনি বললেনঃ সেটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আমলে ছিল না। কিংবা তিনি বলেছেনঃ সেটি ‘উমার -এর আমলে ছিল না।
হাম্মাদ সূত্রে আবূ হাইয়্যান থেকে হাজ্জাজ
الْعِنَبِ আঙ্গুর) এর জায়গায় الزَّبِيب কিসমিস) বলেছেন। [৪৬১৯; মুসলিম ৫৪০/৬, হাঃ ৩৩২] আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৪)

৫৫৮৯

حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي السَّفَرِ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ عُمَرَ قَالَ الْخَمْرُ يُصْنَعُ مِنْ خَمْسَةٍ مِنَ الزَّبِيبِ وَالتَّمْرِ وَالْحِنْطَةِ وَالشَّعِيرِ وَالْعَسَلِ.
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, মদ প্রস্তুত করা হয় পাঁচটি বস্তু থেকে। সেগুলো হলঃ কিসমিস, খেজুর, গম, যব ও মধু। [মুসলিম ৫৪/৬, হাঃ ৩০৩২]আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৫)

৭৪/. অধ্যায়ঃ

যে ব্যক্তি মদকে ভিন্ন নামে নামকরণ ক'রে তা হালাল মনে করে।

৫৫৯০

وَقَالَ هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ حَدَّثَنَا عَطِيَّةُ بْنُ قَيْسٍ الْكِلاَبِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ غَنْمٍ الأَشْعَرِيُّ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو عَامِرٍ أَوْ أَبُو مَالِكٍ الأَشْعَرِيُّ وَاللهِ مَا كَذَبَنِي سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ لَيَكُونَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّونَ الْحِرَ وَالْحَرِيرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ وَلَيَنْزِلَنَّ أَقْوَامٌ إِلٰى جَنْبِ عَلَمٍ يَرُوحُ عَلَيْهِمْ بِسَارِحَةٍ لَهُمْ يَأْتِيهِمْ يَعْنِي الْفَقِيرَ لِحَاجَةٍ فَيَقُوْلُونَ ارْجِعْ إِلَيْنَا غَدًا فَيُبَيِّتُهُمْ اللهُ وَيَضَعُ الْعَلَمَ وَيَمْسَخُ آخَرِينَ قِرَدَةً وَخَنَازِيرَ إِلٰى يَوْمِ الْقِيَامَةِ.
'আবদুর রহমান ইবনু গানাম আশ'আরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার নিকট আবূ আমির কিংবা আবূ মালিক আশ'আরী বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ্‌র কসম! তিনি আমার কাছে মিথ্যে কথা বলেননি। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে অবশ্যই এমন কতগুলো দলের সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, রেশমী কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল জ্ঞান করবে। তেমনি এমন অনেক দল হবে, যারা পাহাড়ের ধারে বসবাস করবে, বিকেল বেলায় যখন তারা পশুপাল নিয়ে ফিরবে তখন তাদের নিকট কোন অভাব নিয়ে ফকীর আসলে তারা বলবে, আগামী দিন সকালে তুমি আমাদের নিকট এসো। এদিকে রাতের অন্ধকারেই আল্লাহ্ তাদের ধ্বংস করে দেবেন। পর্বতটি ধ্বসিয়ে দেবেন, আর বাকী লোকদেরকে তিনি কেয়ামতের দিন পর্যন্ত বানর ও শূকর বানিয়ে রাখবেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৬)

৭৪/. অধ্যায়ঃ

বড় ও ছোট পাত্রে 'নবীয' প্রস্তুত করা।

৫৫৯১

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي حَازِمٍ قَالَ سَمِعْتُ سَهْلاً يَقُوْلُ أَتٰى أَبُو أُسَيْدٍ السَّاعِدِيُّ فَدَعَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي عُرْسِه„ فَكَانَتْ امْرَأَتُه“ خَادِمَهُمْ وَهِيَ الْعَرُوسُ قَالَ أَتَدْرُونَ مَا سَقَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْقَعْتُ لَه“ تَمَرَاتٍ مِنَ اللَّيْلِ فِي تَوْرٍ.
সাহ্‌ল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ উসাইদ সা'ঈদী (রাঃ) এসে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর বিয়ের দাওয়াত দিলেন। তখন তাঁর স্ত্রী নববধূ তাঁদের মধ্যে পরিবেশনকারিণী ছিলেন। তিনি বলেন, তোমরা কি জান আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কী জিনিস পান করতে দিয়েছিলাম? (তিনি বলেন) আমি রাতেই কয়েকটি খেজুর একটি পাত্রের মধ্যে ভিজিয়ে রেখেছিলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৭)

৭৪/. অধ্যায়ঃ

বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে পুনঃ অনুমতি প্রদান।

৫৫৯২

يُوسُفُ بْنُ مُوسٰى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ سَالِمٍ عَنْ جَابِرٍ قَالَ نَهٰى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الظُّرُوفِ فَقَالَتْ الأَنْصَارُ إِنَّه“ لاَ بُدَّ لَنَا مِنْهَا قَالَ فَلاَ إِذًا وَقَالَ خَلِيفَةُ حَدَّثَنَا يَحْيٰى بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ عَنْ جَابِرٍ بِهٰذَا حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بِهٰذَا وَقَالَ فِيهِ لَمَّا نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ الأَوْعِيَةِ.
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কতগুলো পাত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন। তখন আনসারগণ বললেনঃ সেগুলো ছাড়া আমাদের কোন গত্যন্তর নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে ব্যবহার করতে পার।
খালীফাহ (রাঃ) বলেন, ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা'ঈদ আমাদের কাছে সুফিয়ান, মানসূর, সালিম ইবনু আবুল জাদ-জাবির (রহঃ) থেকে এরকমই বর্ণনা করেন।(আধুনিক প্রকাশনী- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৯)

৫৫৯৩

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ أَبِي مُسْلِمٍ الأَحْوَلِ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ أَبِي عِيَاضٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ لَمَّا نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ الأَسْقِيَةِ قِيلَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْسَ كُلُّ النَّاسِ يَجِدُ سِقَاءً فَرَخَّصَ لَهُمْ فِي الْجَرِّ غَيْرِ الْمُزَفَّتِ.
'আবদুল্লাহ্‌ ইবনু 'আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক রকমের পাত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলা হল, সব মানুষের নিকট তো মশ্‌ক মওজুদ নেই। ফলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের কলসীর জন্য অনুমতি দেন, তবে আলকাতরার প্রলেপ দেয়া পাত্রের জন্য অনুমতি দেননি।[মুসলিম ৩৬/৬, হাঃ ২০০০]আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৯)

৫৫৯৪

مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيٰى عَنْ سُفْيَانَ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ سُوَيْدٍ عَنْ عَلِيٍّ نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ الدُّبَّاءِ وَالْمُزَفَّتِ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ الأَعْمَشِ بِهٰذَا.
'আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুব্বা ও মুযাফ্‌ফাত ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। 'উসমান (রহঃ) বলেন, জারীর (রহঃ) সূত্রে এরকমই বর্ণনা করেছেন। [মুসলিম ৩৬/৬, হাঃ ১৯৯৪, আহমাদ ৬৩৪]আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮০)

৫৫৯৫

عُثْمَانُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ قُلْتُ لِلأَسْوَدِ هَلْ سَأَلْتَ عَائِشَةَ أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ عَمَّا يُكْرَه“ أَنْ يُنْتَبَذَ فِيهِ فَقَالَ نَعَمْ قُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ عَمَّ نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُنْتَبَذَ فِيهِ قَالَتْ نَهَانَا فِي ذ‘لِكَ أَهْلَ الْبَيْتِ أَنْ نَنْتَبِذَ فِي الدُّبَّاءِ وَالْمُزَفَّتِ قُلْتُ أَمَا ذَكَرَتْ الْجَرَّ وَالْحَنْتَمَ قَالَ إِنَّمَا أُحَدِّثُكَ مَا سَمِعْتُ أَفَأُحَدِّثُ مَا لَمْ أَسْمَعْ.
ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আসওয়াদকে জিজ্ঞেস করলাম যে, আপনি কি উম্মুল মু'মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, কোন্ কোন্ পাত্রের মধ্যে 'নবীয' তৈরী করা মাকরূহ। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি বলেছিলাম, হে উম্মুল মু'মিনীন! কোন্ কোন্ পাত্রের মধ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নবীয তৈরী করতে নিষেধ করেছেন? তখন তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের অর্থাৎ আহলে বায়তকে দুব্বা ও মুযাফফাত নামক পাত্রে নবীয তৈরী করতে নিষেধ করেছেন। (ইবরাহীম বলেন) আমি বললামঃ ‘আয়িশা (রাঃ) কি জার (মাটির কলসী) ও হানতাম (মাটির সবুজ পাত্র) এর কথা উল্লেখ করেননি? তিনি বললেন, আমি যা শুনেছি কেবল তাই তোমাকে বর্ণনা করেছি। আমি যা শুনিনি তাও কি আমি তোমাদের কাছে বর্ণনা করব?[মুসলিম ৩৬/৬, হাঃ ১৯৯৫, আহমাদ ২৪২৫৬]আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮১)

৫৫৯৬

مُوسٰى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الشَّيْبَانِيُّ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِي أَوْفٰى قَالَ نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْجَرِّالأَخْضَرِ قُلْتُ أَنَشْرَبُ فِي الأَبْيَضِ قَالَ لاَ.
মূসা বিন ইসমাঈল (রহঃ)......... 'আবদুল্লাহ্‌ ইবনু আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সবুজ রং এর কলসী ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। আমি বললামঃ তাহলে সাদা রং এর পাত্রে (নবীয) পান করা যাবে কি? তিনি বললেনঃ না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮২)

৭৪/. অধ্যায়ঃ

শুকনো খেজুরের রস যতক্ষণ তা নেশা না সৃষ্টি করে।

৫৫৯৭

يَحْيٰى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ الْقَارِيُّ عَنْ أَبِي حَازِمٍ قَالَ سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ السَّاعِدِيَّ أَنَّ أَبَا أُسَيْدٍ السَّاعِدِيَّ دَعَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لِعُرْسِه„ فَكَانَتْ امْرَأَتُه“ خَادِمَهُمْ يَوْمَئِذٍ وَهِيَ الْعَرُوسُ فَقَالَتْ مَا تَدْرُونَ مَا أَنْقَعْتُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْقَعْتُ لَه“ تَمَرَاتٍ مِنَ اللَّيْلِ فِي تَوْرٍ.
সাহল ইবনু সা'দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ উসাইদ সা'ঈদী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর ওলীমার দাওয়াত করেছিলেন। সেদিন তার স্ত্রী নববধু অবস্থায় সবার খিদমত করছিলেন। তিনি বললেনঃ আপনারা কি জানেন, আমি রসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কিসের রস পান করতে দিয়েছিলাম? আমি তাঁর জন্য রাতে কতকগুলো খেজুর পাত্রে ভিজিয়ে রেখেছিলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৩)

৭৪/১০. অধ্যায়ঃ

'বাযাক' (অর্থাৎ আঙ্গুরের হালকা জাল দেয়া রস)-এর বর্ণনা।
এবং যারা নেশা সৃষ্টিকারী সকল পানীয় নিষিদ্ধ বলেন তার বর্ণনা। ‘উমর, আবূ 'উবাইদাহ ও মু' আয (রাঃ) 'তিলা' অর্থাৎ আঙ্গুরের যে রসকে পাকিয়ে এক-তৃতীয়াংশ করা হয়েছে, তা পান করা জায়িয মনে করেন। বারা ও আবূ জুহাইফাহ (রাঃ) পাকিয়ে অর্ধেক থাকতে রস পান করেছেন। ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ আমি তাজা অবস্থার আঙ্গুরের রস পান করেছি। ‘উমর (রাঃ) বলেছেনঃ আমি উবাইদুল্লাহর মুখ হতে শরাবের গন্ধ পেয়েছি এবং তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেসও করেছি। যদি তা নেশার সৃষ্টি করত, তাহলে আমি বেত্রাঘাত করতাম।

৫৫৯৮

مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي الْجُوَيْرِيَةِ قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ عَنِ الْبَاذَقِ فَقَالَ سَبَقَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم الْبَاذَقَ فَمَا أَسْكَرَ فَهُوَ حَرَامٌ قَالَ الشَّرَابُ الْحَلاَلُ الطَّيِّبُ قَالَ لَيْسَ بَعْدَ الْحَلاَلِ الطَّيِّبِ إِلاَّ الْحَرَامُ الْخَبِيثُ.
আবুল জুওয়াইরিয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনু 'আব্বাস (রাঃ)-কে 'বাযাক' সম্বন্ধে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি উত্তর দিলেনঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) 'বাযাক' উৎপাদনের আগে বিদায় হয়ে গেছেন। কাজেই যে বস্তু নেশা জন্মায় তা-ই হারাম। তিনি বলেন, হালাল পানীয় পবিত্র। তিনি বলেন, হালাল ও পবিত্র পানীয় ছাড়া অন্য সব পানীয় ঘৃণ্য হারাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৪)

৫৫৯৯

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُحِبُّ الْحَلْوَاءَ وَالْعَسَلَ‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিষ্টি ও মধু পছন্দ করতেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৫)

৭৪/১১. অধ্যায়ঃ

যারা মনে করেন নেশাদার হবার পর কাঁচা ও পাকা খেজুর একসঙ্গে মিশানো ঠিক নয় এবং উভয়ের রসকে একত্র করা ঠিক নয়।

৫৬০০

مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ قَالَ إِنِّي لأَسْقِي أَبَا طَلْحَةَ وَأَبَا دُجَانَةَ وَسُهَيْلَ بْنَ الْبَيْضَاءِ خَلِيطَ بُسْرٍ وَتَمْرٍ إِذْ حُرِّمَتْ الْخَمْرُ فَقَذَفْتُهَا وَأَنَا سَاقِيهِمْ وَأَصْغَرُهُمْ وَإِنَّا نَعُدُّهَا يَوْمَئِذٍ الْخَمْرَ وَقَالَ عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ سَمِعَ أَنَسًا.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ ত্বলহা, আবূ দুজনা এবং সুহাইল ইবনু বাইযা -কে কাঁচা ও শুকনো খেজুরের মেশানো রস পান করাচ্ছিলাম। এ সময়ে মদ হারাম করা হল, তখন আমি তা ফেলে দিলাম। আমি ছিলাম তাঁদের পরিবেশনকারী এবং তাঁদের সবার ছোট। সে সময় আমরা এটিকে মদ গণ্য করতাম।
‘আমর ইবনু হারিস বলেনঃ ক্বাতাদাহ (রহ.) আমাদের নিকট
عَنْ أَنَسٍ এর স্থলে سَمِعَ أَنَساً বর্ণনা করেছেন। [২৪৬৪] আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৬

৫৬০১

أَبُو عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ أَنَّه“ سَمِعَ جَابِرًا يَقُوْلُ نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ الزَّبِيبِ وَالتَّمْرِ وَالْبُسْرِ وَالرُّطَبِ.
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিসমিস, শুকনো খেজুর, কাঁচা ও পাকা খেজুর মিশাতে নিষেধ করেছেন। [মুসলিম ৩৬/৫, হাঃ ১৯৮৬, আহমাদ ১৪২০৩]আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৭)

৫৬০২

مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنَا يَحْيٰى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُجْمَعَ بَيْنَ التَّمْرِ وَالزَّهْوِ وَالتَّمْرِ وَالزَّبِيبِ وَلْيُنْبَذْ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَلٰى حِدَةٍ.
আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুরমা ও আধাপাকা খেজুর এবং খুরমা ও কিসমিস একত্র করতে নিষেধ করেছেন। আর এগুলোর প্রত্যেকটিকে আলাদাভাবে ভিজিয়ে 'নবীয' তৈরী করা যাবে।[মুসলিম ৩৬/৫, হাঃ ১৯৮৮, আহমাদ ২২৬৯২]আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৮)

৭৪/১২. অধ্যায়ঃ

দুধ পান করা
মহান আল্লাহর বাণীঃ "পান করাই ওদের পেটের গোবর আর রক্তের মাঝ থেকে বিশুদ্ধ দুগ্ধ যা পানকারীদের জন্য খুবই উপাদেয়।" [৪৯] (নাহল ১৬ : ৬৬)
[৪৯] গোবর ও রক্তের মাঝখান দিয়ে পরিষ্কার দুধ বের করা সম্পর্কে আবদুল্লাহ্‌ ইবনে আব্বাস বলেনঃ জন্তুর ভক্ষিত ঘাস তার পাকস্থলীতে একত্রিত হলে তা সিদ্ধ করে। পাকস্থলীর এই ক্রিয়ার ফলে খাদ্যের বিষ্ঠা নীচে বসে যায় এবং দুধ উপরে থেকে যায়। দুধের উপর থাকে রক্ত। এরপর যকৃত এই তিন প্রকার বস্তুকে পৃথকভাবে তাদের স্থানে ভাগ করে দেয়, রক্ত পৃথক করে রগের মধ্যে চালায় এবং দুধ পৃথক করে রগের মধ্যে চালায় এবং দুধ পৃথক করে জন্তুর স্তনে পৌঁছে দেয়। এখন পাকস্থলীতে শুধু বিষ্ঠা থেকে যায়, যা গোবর হয়ে বের হয়ে আসে। (মাআরেফুল কুরআন বাংলা সংস্করণ পৃঃ ৭৪৬)

৫৬০৩

عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ أُتِيَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِه„ بِقَدَحِ لَبَنٍ وَقَدَحِ خَمْرٍ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে রাতে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ভ্রমণ করানো হয়, সে রাতে তাঁর সামনে পেশ করা হয়েছিল দুধের একটি পেয়ালা এবং শরাবের একটি পেয়ালা।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৯)

৫৬০৪

الْحُمَيْدِيُّ سَمِعَ سُفْيَانَ أَخْبَرَنَا سَالِمٌ أَبُو النَّضْرِ أَنَّه“ سَمِعَ عُمَيْرًا مَوْلٰى أُمِّ الْفَضْلِ يُحَدِّثُ عَنْ أُمِّ الْفَضْلِ قَالَتْ شَكَّ النَّاسُ فِي صِيَامِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ عَرَفَةَ فَأَرْسَلْتُ إِلَيْهِ بِإِنَاءٍ فِيهِ لَبَنٌ فَشَرِبَ فَكَانَ سُفْيَانُ رُبَّمَا قَالَ شَكَّ النَّاسُ فِي صِيَامِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ عَرَفَةَ فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ أُمُّ الْفَضْلِ فَإِذَا وُقِّفَ عَلَيْهِ قَالَ هُوَ عَنْ أُمِّ الْفَضْلِ.
উম্মুল ফায্‌ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আরাফার দিন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সিয়াম পালনের ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ করে। তখন আমি তাঁর নিকট দুধ ভর্তি একটা পেয়ালা পাঠালাম। তিনি তা পান করলেন। বর্ণনাকারী সুফিয়ান অনেক সময় এভাবে বলতেন, আরাফার দিন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সিয়াম পালন সম্পর্কে লোকেরা সন্দেহ করছিল। তখন উম্মুল ফায্‌ল (রাঃ) তাঁর কাছে দুধ পাঠিয়েছিলেন। হাদীসটি মাউসূল না মুরসাল, এ সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছেন, এটি উম্মুল ফায্‌ল (রাঃ) হতে বর্ণিত।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯০)

৫৬০৫

قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ وَأَبِي سُفْيَانَ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ جَاءَ أَبُو حُمَيْدٍ بِقَدَحٍ مِنْ لَبَنٍ مِنَ النَّقِيعِ فَقَالَ لَه“ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَلاَّ خَمَّرْتَه“ وَلَوْ أَنْ تَعْرُضَ عَلَيْهِ عُودًا.
জাবির ইবনু 'আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুমাইদ (রাঃ) এক বাটি দুধ নিয়ে আসলেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেনঃ এটিকে ঢাকলে না কেন? একটি কাঠি দিয়ে হলেও ঢেকে রাখা দরকার।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯১)

৫৬০৬

عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا صَالِحٍ يَذْكُرُ أُرَاه“ عَنْ جَابِرٍ قَالَ جَاءَ أَبُو حُمَيْدٍ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ مِنَ النَّقِيعِ بِإِنَاءٍ مِنْ لَبَنٍ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَلاَّ خَمَّرْتَه“ وَلَوْ أَنْ تَعْرُضَ عَلَيْهِ عُودًا
وَحَدَّثَنِي أَبُو سُفْيَانَ عَنْ جَابِرٍ عَنْ النَّبِيِّصلى الله عليه وسلم بِهٰذَا.
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুমাইদ (রাঃ) নামক এক আনসারী নাফি' নামক জায়গা থেকে এক পেয়ালা দুধ নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেনঃ এটিকে ঢেকে আননি কেন? এর উপর থেকে কাঠি দিয়ে হলেও ঢেকে রাখা দরকার।
আবূ সুফিয়ান (রহঃ) এ হাদীসটি জাবির (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এরকমই বর্ণনা করেছেন। [৫৬০৫; মুসলিম ৩৬/১২, হাঃ ২০১১] আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯২)

৫৬০৭

مَحْمُودٌ أَخْبَرَنَا النَّضْرُ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ قَالَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ مَكَّةَ وَأَبُو بَكْرٍ مَعَه“ قَالَ أَبُو بَكْرٍ مَرَرْنَا بِرَاعٍ وَقَدْ عَطِشَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبُو بَكْرٍ فَحَلَبْتُ كُثْبَةً مِنْ لَبَنٍ فِي قَدَحٍ فَشَرِبَ حَتّٰى رَضِيتُ وَأَتَانَا سُرَاقَةُ بْنُ جُعْشُمٍ عَلٰى فَرَسٍ فَدَعَا عَلَيْهِ فَطَلَبَ إِلَيْهِ سُرَاقَةُ أَنْ لاَ يَدْعُوَ عَلَيْهِ وَأَنْ يَرْجِعَ فَفَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم.
বারা‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা থেকে রওয়ানা হলেন, তখন তাঁর সাথে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ)। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আমরা এক রাখালের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। সে সময়ে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন খুব পিপাসার্ত। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আমি তখন একটি পাত্রে ভেড়ার দুধ দুইলাম। তিনি তা পান করলেন, আমি খুব খুশি হলাম। এমন সময় সুরাকা ইবনু জু‘শুম একটি ঘোড়ার উপর চড়ে আমাদের কাছে আসলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বদ দু‘আ করতে চাইলে সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আরয করল, যেন তিনি তার জন্য বদ দু‘আ না করেন এবং সে যেন নির্বিঘ্নে ফিরে যেতে পারে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাই করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৩)

৫৬০৮

أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ نِعْمَ الصَّدَقَةُ اللِّقْحَةُ الصَّفِيُّ مِنْحَةً وَالشَّاةُ الصَّفِيُّ مِنْحَةً تَغْدُو بِإِنَاءٍ وَتَرُوحُ بِآخَرَ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ উত্তম সদকা হল উপহার স্বরূপ দেয়া দুধেল উটনী কিংবা বক্‌রী, যা সকালে একটি পাত্র পূর্ণ করে আর বিকালে পূর্ণ করে আরেকটি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৪)

৫৬০৯

أَبُو عَاصِمٍ عَنْ الأَوْزَاعِيِّ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم شَرِبَ لَبَنًا فَمَضْمَضَ وَقَالَ إِنَّ لَه“ دَسَمًا.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুধপান করেছেন, এরপর তিনি কুলি করেছেন এবং বলেছেনঃ এর মধ্যে তৈল আছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯৯১), ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৫)

৫৬১০

وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ طَهْمَانَ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رُفِعْتُ إِلٰى السِّدْرَةِ فَإِذَا أَرْبَعَةُ أَنْهَارٍ نَهَرَانِ ظَاهِرَانِ وَنَهَرَانِ بَاطِنَانِ فَأَمَّا الظَّاهِرَانِ النِّيلُ وَالْفُرَاتُ وَأَمَّا الْبَاطِنَانِ فَنَهَرَانِ فِي الْجَنَّةِ فَأُتِيتُ بِثَلاَثَةِ أَقْدَاحٍ قَدَحٌ فِيهِ لَبَنٌ وَقَدَحٌ فِيهِ عَسَلٌ وَقَدَحٌ فِيهِ خَمْرٌ فَأَخَذْتُ الَّذِي فِيهِ اللَّبَنُ فَشَرِبْتُ فَقِيلَ لِي أَصَبْتَ الْفِطْرَةَ أَنْتَ وَأُمَّتُكَ.
قَالَ هِشَامٌ وَسَعِيدٌ وَهَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الأَنْهَارِ نَحْوَه“ وَلَمْ يَذْكُرُوا ثَلاَثَةَ أَقْدَاحٍ.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার সম্মুখে ‘সিদ্‌রাতুল মুনতাহা’ তুলে ধরা হল। তখন দেখলাম চারটি নহর। দু‘টি নহর হল যাহেরী, আর দু‘টি নহর হল বাতেনী। যাহেরী দু‘টি হল, নীল ও ফোরাত। আর বাতেনী দু‘টি হল, জান্নাতের দু‘টি নহর। আমার সম্মুখে তিনটি পেয়ালা তুলে ধরা হল, একটি পেয়ালায় আছে দুধ, একটি পেয়ালায় আছে মধু আর একটিতে শরাব। আমি দুধের পেয়ালাটি গ্রহণ করলাম এবং পান করলাম। তখন আমাকে বলা হল, আপনি এবং আপনার উম্মাত স্বভাবজাত বস্তু গ্রহণ করেছেন। তবে তাঁরা তিনটি পেয়ালার কথা উল্লেখ করেননি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৯৯২), ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৫)

৭৪/১৩. অধ্যায়ঃ

সুপেয় পানি তালাশ করা।

৫৬১১

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ كَانَ أَبُو طَلْحَةَ أَكْثَرَ أَنْصَارِيٍّ بِالْمَدِينَةِ مَالاً مِنْ نَخْلٍ، وَكَانَ أَحَبُّ مَالِهِ إِلَيْهِ بَيْرَحَاءَ، وَكَانَتْ مُسْتَقْبِلَ الْمَسْجِدِ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدْخُلُهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَاءٍ فِيهَا طَيِّبٍ‏.‏ قَالَ أَنَسٌ فَلَمَّا نَزَلَتْ ‏{‏لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ‏}‏ قَامَ أَبُو طَلْحَةَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ ‏{‏لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ‏}‏ وَإِنَّ أَحَبَّ مَالِي إِلَىَّ بَيْرُحَاءَ، وَإِنَّهَا صَدَقَةٌ لِلَّهِ أَرْجُو بِرَّهَا وَذُخْرَهَا عِنْدَ اللَّهِ فَضَعْهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ حَيْثُ أَرَاكَ اللَّهُ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ بَخٍ ذَلِكَ مَالٌ رَابِحٌ ـ أَوْ رَايِحٌ شَكَّ عَبْدُ اللَّهِ ـ وَقَدْ سَمِعْتُ مَا قُلْتَ وَإِنِّي أَرَى أَنْ تَجْعَلَهَا فِي الأَقْرَبِينَ ‏"‏‏.‏ فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ أَفْعَلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَقَسَمَهَا أَبُو طَلْحَةَ فِي أَقَارِبِهِ وَفِي بَنِي عَمِّهِ‏.‏ وَقَالَ إِسْمَاعِيلُ وَيَحْيَى بْنُ يَحْيَى رَايِحٌ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ ত্বলহা ছিলেন মদিনার আনসারদের মধ্যে সবার চেয়ে অধিক খেজুর গাছের মালিক। আর তাঁর নিকট তাঁর প্রিয় সম্পত্তি ছিল ‘‘বাইরুহা’’ নামক বাগানটি। সেটি ছিল মসজিদে নববীর ঠিক সামনে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাগানে যেতেন এবং সেখানকার উৎকৃষ্ট পানি পান করতেন।’’ আনাস বলেন, যখন আয়াত অবতীর্ণ হলঃ ‘‘তোমরা তোমাদের প্রিয়বস্তু খরচ না করা পর্যন্ত কক্ষনো পুণ্য লাভ করবে না’’সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/৯২)।তখন আবূ ত্বলহা দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ্ ইরশাদ করেছেনঃ‘‘তোমরা তোমাদের প্রিয়বস্তু খরচ না করা পর্যন্ত কক্ষনো পুণ্য লাভ করবে না’’ - আর আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ হল ‘‘বাইরুহা’’ বাগান। এটিকে আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে সদাকাহ করে দিলাম। আমি আল্লাহর কাছে এর সাওয়াব এবং সঞ্চয় আশা করি। হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এটিকে গ্রহণ করুন, আল্লাহর ইচ্ছেয় যেখানে ব্যয় করতে আপনি ভাল মনে করেন, সেখানে ব্যয় করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ খুব ভাল, এটিতো লাভজনক কিংবা বলেছেন) মুনাফা দানকারী। কথাটিতে রাবী ‘আবদুল্লাহ সন্দেহ পোষণ করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি যা বলেছ, আমি তা শুনেছি। তবে আমি ভাল মনে করি যে, তুমি এটিকে আত্মীয়দের মাঝে বণ্টন করে দেবে। আবূ ত্বলহা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি তাই করব। এরপর আবূ ত্বলহা বাগানটি তাঁর আত্মীয়দের মধ্যে এবং তাঁর চাচাত ভাইদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন।ইসমাঈল ও ইয়াহ্ইয়া رَابِحٌ এর জায়গায় رَايِحٌ বলেছেন। [১৪৬১] আধুনিক প্রকাশনী- ৫২০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৬)

৭৪/১৪. অধ্যায়ঃ

পানি মিশ্রিত দুধ পান করা।

৫৬১২

عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّه“ رَأٰى رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم شَرِبَ لَبَنًا وَأَتٰى دَارَه“ فَحَلَبْتُ شَاةً فَشُبْتُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْبِئْرِ فَتَنَاوَلَ الْقَدَحَ فَشَرِبَ وَعَنْ يَسَارِه„ أَبُو بَكْرٍ وَعَنْ يَمِينِه„ أَعْرَابِيٌّ فَأَعْطٰى الأَعْرَابِيَّ فَضْلَه“ ثُمَّ قَالَ الأَيْمَنَ فَالأَيْمَنَ.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর বাড়ীতে এসে দুধ পান করতে দেখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি একটি ছাগী দোহন করলাম এবং কূপের পানি মিশিয়ে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পেশ করলাম। তিনি পেয়ালাটি নিয়ে পান করেন। তাঁর বাঁদিকে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ) ও ডানদিকে ছিল এক বেদুঈন। তিনি বেদুঈনকে তাঁর অতিরিক্ত দুধ দিলেন। এরপর বললেনঃ ডান দিকের আছে অগ্রাধিকার।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৭)

৫৬১৩

عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْحَارِثِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلٰى رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ وَمَعَه“ صَاحِبٌ لَه“ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنْ كَانَ عِنْدَكَ مَاءٌ بَاتَ هٰذِهِ اللَّيْلَةَ فِي شَنَّةٍ وَإِلاَّ كَرَعْنَا قَالَ وَالرَّجُلُ يُحَوِّلُ الْمَاءَ فِي حَائِطِه„ قَالَ فَقَالَ الرَّجُلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ عِنْدِي مَاءٌ بَائِتٌ فَانْطَلِقْ إِلَى الْعَرِيشِ قَالَ فَانْطَلَقَ بِهِمَا فَسَكَبَ فِي قَدَحٍ ثُمَّ حَلَبَ عَلَيْهِ مِنْ دَاجِنٍ لَه“ قَالَ فَشَرِبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ شَرِبَ الرَّجُلُ الَّذِي جَاءَ مَعَهُ.
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের এক লোকের কাছে গেলেন। তাঁর সাথে ছিলেন তাঁর এক সাহাবী। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারীকে বললেনঃ তোমার কাছে যদি মশকে রাখা গত রাতের পানি থাকে তাহলে আমাদের পান করাও। আর না থাকলে আমরা সামনে গিয়ে পান করব। রাবী বলেন, লোকটি তখন তার বাগানে পানি দিচ্ছিল। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার কাছে গত রাতের পানি আছে। আপনি কুটীরে চলুন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর লোকটি তাঁদের দু‘জনকে নিয়ে গেল এবং একটি পেয়ালায় পানি নিয়ে তাতে তার একটা বক্‌রীর দুধ দোহন করল। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা পান করলেন, তাঁর সাথে আগন্তুক লোকটিও পান করলেন।( আধুনিক প্রকাশনী- ৫২০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৮)

৭৪/১৫. অধ্যায়ঃ

মিষ্টান্ন ও মধু পান করা।
যুহরী (রহঃ) বলেছেন, ভয়ানক অবস্থার সৃষ্টি হলেও মানুষের পেশাব পান করা হালাল নয়। কেননা, পেশাব অপবিত্র। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদঃ “তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সকল পবিত্র জিনিস।” (সূরা আল-মায়িদাহঃ ৪ ও ৫)
ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) নেশাদ্রব্য সম্পর্কে বলেছেনঃ আল্লাহ তোমাদের উপর যে সব বস্তু হারাম করেছেন তাতে তোমাদের জন্য কোন রোগমুক্তির উপাদান নেই।

৫৬১৪

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، قَالَ أَخْبَرَنِي هِشَامٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُعْجِبُهُ الْحَلْوَاءُ وَالْعَسَلُ‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট সর্বাধিক পছন্দনীয় দ্রব্য ছিল মিষ্টিদ্রব্য ও মধু।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৯)

৭৪/১৬. অধ্যায়ঃ

দাঁড়ানো অবস্থায় পান করা।

৫৬১৫

أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَيْسَرَةَ عَنْ النَّزَّالِ قَالَ أَتٰى عَلِيٌّ عَلٰى بَابِ الرَّحَبَةِ فَشَرِبَ قَائِمًا فَقَالَ إِنَّ نَاسًا يَكْرَه“ أَحَدُهُمْ أَنْ يَشْرَبَ وَهُوَ قَائِمٌ وَإِنِّي رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَعَلَ كَمَا رَأَيْتُمُونِي فَعَلْتُ.
নায্‌যাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুফা মসজিদের ফটকে ‘আলী (রাঃ)-এর নিকট পানি আনা হলে তিনি দাঁড়িয়ে তা পান করলেন। এরপর তিনি বললেনঃ লোকজনের মধ্যে কেউ কেউ দাঁড়িয়ে পান করাকে মাকরূহ মনে করে, অথচ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি, তোমরা আমাকে যেমনভাবে পান করতে দেখলে তিনিও তেমনি করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০০)

৫৬১৬

آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ مَيْسَرَةَ سَمِعْتُ النَّزَّالَ بْنَ سَبْرَةَ يُحَدِّثُ عَنْ عَلِيٍّ أَنَّه“ صَلّٰى الظُّهْرَ ثُمَّ قَعَدَ فِي حَوَائِجِ النَّاسِ فِي رَحَبَةِ الْكُوفَةِ حَتّٰى حَضَرَتْ صَلاَةُ الْعَصْرِ ثُمَّ أُتِيَ بِمَاءٍ فَشَرِبَ وَغَسَلَ وَجْهَه“ وَيَدَيْهِ وَذَكَرَ رَأْسَه“ وَرِجْلَيْهِ ثُمَّ قَامَ فَشَرِبَ فَضْلَه“ وَهُوَ قَائِمٌ ثُمَّ قَالَ إِنَّ نَاسًا يَكْرَهُونَ الشُّرْبَ قِيَامًا وَإِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَنَعَ مِثْلَ مَا صَنَعْتُ.
নায্‌যাল ইবনু সাবরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ)-এর সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি যুহরের সালাত আদায় করলেন। এরপর তিনি মানুষের নানান প্রয়োজনে কূফা মসজিদের চত্বরে বসে পড়লেন। অবশেষে ‘আসরের সালাত আদায়ের সময় হয়ে গেল। তখন পানি আনা হল। তিনি পানি পান করলেন এবং নিজের মুখমন্ডল ও উভয় হাত ধৌত করলেন। বর্ণনাকারী আদাম এখানে তাঁর মাথা ও দু‘পায়ের কথা উল্লেখ করেন। অতঃপর বর্ণনাকারী বলেন এরপর ‘আলী (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং তিনি দাঁড়ানো অবস্থায় অযূর উদ্বৃত্ত পানি পান করে নিলেন। এরপর তিনি বললেনঃ লোকজন দাঁড়িয়ে পান করাকে ঘৃণা করে, অথচ আমি যেমন করেছি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও তেমন করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০১)

৫৬১৭

أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ شَرِبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَائِمًا مِنْ زَمْزَمَ.
আবূ নু‘আইম (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ানো অবস্থায় যমযমের পানি পান করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫২০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০২)

৭৪/১৭. অধ্যায়ঃ

উটের পিঠে আরোহী অবস্থায় পান করা।

৫৬১৮

مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي سَلَمَةَ أَخْبَرَنَا أَبُو النَّضْرِ عَنْ عُمَيْرٍ مَوْلٰى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ أُمِّ الْفَضْلِ بِنْتِ الْحَارِثِ أَنَّهَا أَرْسَلَتْ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِقَدَحِ لَبَنٍ وَهُوَ وَاقِفٌ عَشِيَّةَ عَرَفَةَ فَأَخَذَ بِيَدِه„ فَشَرِبَهُ
উম্মুল ফায্‌ল বিনতু হারিস (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এক পেয়ালা দুধ পাঠিয়ে ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফাতে বিকালে অবস্থান করছিলেন। তিনি তাঁর হাত দিয়ে পেয়ালাটি নিলেন এবং তা পান করলেন। [১৬৫৮]
আবুন নাযর থেকে মালিক
عَلٰى بَعِيرِه„ তাঁর উটের উপর ছিলেন) কথাটি বৃদ্ধি করেছেন। আধুনিক প্রকাশনী- ৫২০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৩)

৭৪/১৮. অধ্যায়ঃ

পান করার ব্যাপারে ডানের, তারপর ক্রমান্বয়ে ডানের ব্যক্তির অগ্রাধিকার।

৫৬১৯

إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ بِلَبَنٍ قَدْ شِيبَ بِمَاءٍ وَعَنْ يَمِينِه„ أَعْرَابِيٌّ وَعَنْ شِمَالِه„ أَبُو بَكْرٍ فَشَرِبَ ثُمَّ أَعْطٰى الأَعْرَابِيَّ وَقَالَ الأَيْمَنَ فَالأَيْمَنَ.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সম্মুখে পানি মেশানো দুধ পেশ করা হলে। তাঁর ডান পার্শ্বে ছিল এক বেদুঈন ও বাম পার্শ্বে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ)। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুধ পান করলেন। তারপর বেদুঈন লোকটিকে তা দিয়ে বললেনঃ ডানের লোকের অধিকার আগে। এরপর তার ডানের লোকের। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫২০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৪)

৭৪/১৯. অধ্যায়ঃ

পান করতে দেয়ার ব্যাপারে বয়োজ্যেষ্ঠ লোককে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য তার ডানে অবস্থিত লোক থেকে অনুমতি গ্রহণ করতে হবে কি?

৫৬২০

إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ أَبِي حَازِمِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ بِشَرَابٍ فَشَرِبَ مِنْه“ وَعَنْ يَمِينِه„ غُلاَمٌ وَعَنْ يَسَارِهِ الأَشْيَاخُ فَقَالَ لِلْغُلاَمِ أَتَأْذَنُ لِي أَنْ أُعْطِيَ هَؤُلاَءِ فَقَالَ الْغُلاَمُ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ لاَ أُوثِرُ بِنَصِيبِي مِنْكَ أَحَدًا قَالَ فَتَلَّه“ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي يَدِهِ.
সাহ্‌ল ইবনু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে শরবত পেশ করা হল, তিনি তা থেকে পান করলেন। তাঁর ডানে ছিল একটি বালক, আর বামে ছিলেন কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বালকটিকে বললেনঃ তুমি কি আমাকে অনুমতি দেবে যে, আমি ঐ বয়স্ক লোকদের আগে পান করতে দেই? বালকটি বললঃ আল্লাহ্‌র কসম! হে আল্লাহ্‌র রসুল! আপনার নিকট হতে আমার ভাগ পাওয়ার ব্যাপারে আমি কাউকে আমার উপর অগ্রাধিকার দেব না। রাবী বললেনঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন পেয়ালাটি তার হাতে তুলে দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৫)

৭৪/২০. অধ্যায়ঃ

অঞ্জলি ভরে হাউজের পানি পান করা।

৫৬২১

يَحْيٰى بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْحَارِثِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلٰى رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ وَمَعَه“ صَاحِبٌ لَه“ فَسَلَّمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَصَاحِبُه“ فَرَدَّ الرَّجُلُ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي وَهِيَ سَاعَةٌ حَارَّةٌ وَهُوَ يُحَوِّلُ فِي حَائِطٍ لَه“ يَعْنِي الْمَاءَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنْ كَانَ عِنْدَكَ مَاءٌ بَاتَ فِي شَنَّةٍ وَإِلاَّ كَرَعْنَا وَالرَّجُلُ يُحَوِّلُ الْمَاءَ فِي حَائِطٍ فَقَالَ الرَّجُلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ عِنْدِي مَاءٌ بَاتَ فِي شَنَّةٍ فَانْطَلَقَ إِلَى الْعَرِيشِ فَسَكَبَ فِي قَدَحٍ مَاءً ثُمَّ حَلَبَ عَلَيْهِ مِنْ دَاجِنٍ لَه“ فَشَرِبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ أَعَادَ فَشَرِبَ الرَّجُلُ الَّذِي جَاءَ مَعَهُ.
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের এক লোকের নিকট গেলেন। তাঁর সাথে ছিল তাঁর এক সাহাবী। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবী সালাম দিলে লোকটি সালামের জবাব দিল। এরপর সে বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার জন্য আমার পিতা ও মাতা কুরবান! এটি ছিল প্রচন্ড গরমের সময়। এ সময় লোকটি তার বাগানে পানি দিচ্ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যদি তোমার কাছে গতরাতের মশ্‌কে রাখা পানি থাকে তাহলে আমাদের পান করাতে পার। তা নাহলে আমরা আমাদের সামনের পানি থেকে পার করে নেব। তখন লোকটি বাগানে পানি দিচ্ছিল। এরপর লোকটি বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার কাছে গতরাতের মশ্‌কে রাখা পানি আছে। এরপর সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কুটীরে নিয়ে গেল। একটি পাত্রে কিছু পানি ঢেলে তাতে ঘরে পোষা বক্‌রীর দুধ দোহন করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা পান করলেন। এরপর সে আবার দোহন করল। তখন তাঁর সঙ্গে যিনি এসেছিলেন তিনি তা পান করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৬)

৭৪/২১. অধ্যায়ঃ

ছোটরা বড়দের খিদমত করবে।

৫৬২২

مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ عَنْ أَبِيهِ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا قَالَ كُنْتُ قَائِمًا عَلَى الْحَيِّ أَسْقِيهِمْ عُمُومَتِي وَأَنَا أَصْغَرُهُمْ الْفَضِيخَ فَقِيلَ حُرِّمَتْ الْخَمْرُ فَقَالَ اكْفِئْهَا فَكَفَأْنَا قُلْتُ لِأَنَسٍ مَا شَرَابُهُمْ قَالَ رُطَبٌ وَبُسْرٌ فَقَالَ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَنَسٍ وَكَانَتْ خَمْرَهُمْ فَلَمْ يُنْكِرْ أَنَسٌ
وَحَدَّثَنِي بَعْضُ أَصْحَابِي أَنَّه“ سَمِعَ أَنَسًا يَقُوْلُ كَانَتْ خَمْرَهُمْ يَوْمَئِذٍ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার বংশের লোকদের মধ্যে দাঁড়িয়ে তাদেরকে অর্থাৎ আমার চাচাদেরকে “ফাযীখ” নামক শরাব পান করাচ্ছিলাম। আমি ছিলাম তাঁদের মাঝে সবার চেয়ে ছোট। এমন সময় বলা হলঃ শরাব হারাম হয়ে গেছে। তাঁরা বললেনঃ এ শরাবগুলো ঢেলে দাও। আমি তা ঢেলে দিলাম। বর্ণনাকারী (সুলাইমান তাইমী ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলামঃ তাদের শরাব কী দিয়ে তৈরী ছিল? তিনি বললেনঃ কাঁচা ও পাকা খেজুরের তৈরী। আনাস (রাঃ)-এর পুত্র আবু বক্‌র বললেন, এটিই ছিল তাঁদের যুগের শরাব। তাতে আনাস (রাঃ) কোন অসম্মতি ব্যক্ত করেননি।
সুলাইমান বলেন, আমার কতক বন্ধু আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তিনি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেনঃ সে যুগে এটিই ছিলা তাঁদের শরাব।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৭)

৭৪/২২. অধ্যায়ঃ

পাত্রগুলো ঢেকে রাখা

৫৬২৩

إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ أَخْبَرَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ أَنَّه“ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ جُنْحُ اللَّيْلِ أَوْ أَمْسَيْتُمْ فَكُفُّوا صِبْيَانَكُمْ فَإِنَّ الشَّيَاطِينَ تَنْتَشِرُ حِينَئِذٍ فَإِذَا ذَهَبَ سَاعَةٌ مِنَ اللَّيْلِ فَحُلُّوهُمْ فَأَغْلِقُوا الأَبْوَابَ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللهِ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لاَ يَفْتَحُ بَابًا مُغْلَقًا وَأَوْكُوا قِرَبَكُمْ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللهِ وَخَمِّرُوا آنِيَتَكُمْ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللهِ وَلَوْ أَنْ تَعْرُضُوا عَلَيْهَا شَيْئًا وَأَطْفِئُوا مَصَابِيحَكُمْ.
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন সন্ধ্যা হয়, তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকে রাখ। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু অংশ অতিক্রম করলে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পার। আর ঘরের দরজা বন্ধ করবে। কেননা, শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। আর তোমরা আল্লাহ্‌র নাম নিয়ে তোমাদের মশকের মুখ বন্ধ করবে এবং আল্লাহ্‌র নাম নিয়ে তোমাদের পাত্রগুলোকে ঢেকে রাখবে, কমপক্ষে পাত্রগুলোর উপর কোন বস্তু আড়াআড়ি করে রেখে। আর (শয্যা গ্রহণের সময়) তোমরা তোমাদের প্রদীপগুলো নিভিয়ে দেবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৮)

৫৬২৪

مُوسٰى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَطْفِئُوا الْمَصَابِيحَ إِذَا رَقَدْتُمْ وَغَلِّقُوا الأَبْوَابَ وَأَوْكُوا الأَسْقِيَةَ وَخَمِّرُوا الطَّعَامَ وَالشَّرَابَ وَأَحْسِبُه“ قَالَ وَلَوْ بِعُودٍ تَعْرُضُه“ عَلَيْهِ.
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যখন ঘুমাবে তখন বাতি নিভিয়ে দেবে, দরজাগুলো বন্ধ করবে, মশ্‌কের মুখ বন্ধ করবে, খাদ্য ও পানীয় দ্রব্যাদি ঢেকে রাখবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে হয় তিনি আরো বলেছেন, কমপক্ষে একটি কাঠ আড়াআড়ি করে পাত্রের উপর রেখে দেবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৯)

৭৪/২৩. অধ্যায়ঃ

মশকের মুখ খুলে তাতে মুখ লাগিয়ে পান করা।

৫৬২৫

آدَمُ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ نَهٰى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ اخْتِنَاثِ الأَسْقِيَةِ يَعْنِي أَنْ تُكْسَرَ أَفْوَاهُهَا فَيُشْرَبَ مِنْهَا.
আবূ সা‘ইদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মশ্‌কের মুখ খুলে, তাতে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১১০)

৫৬২৬

مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّه“ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهٰى عَنْ اخْتِنَاثِ الأَسْقِيَةِ
قَالَ عَبْدُ اللهِ قَالَ مَعْمَرٌ أَوْ غَيْرُه“ هُوَ الشُّرْبُ مِنْ أَفْوَاهِهَا.
আবূ সা‘ইদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘ইখ্‌তিনাসিল আসকিয়া’ (মশ্‌কের মুখ খুলে তাতে মুখ লাগিয়ে পান করা) হতে নিষেধ করতে শুনেছি।
‘আবদুল্লাহ্‌ (রহঃ) বলেন, মা‘মার কিংবা অন্য কেউ বলেছেন, ‘ইখ্‌তিনাস’ হল মশ্‌কের মুখে মুখ লাগিয়ে তাথেকে পানি পান করা। [৫৬২৫; মুসলিম ৩৬/১৪, হাঃ ২০২৩, আহমাদ ১১৬৬২] আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১১১)

৭৪/২৪. অধ্যায়ঃ

মশ্‌কের মুখ থেকে পানি পান করা।

৫৬২৭

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ قَالَ لَنَا عِكْرِمَةُ أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَشْيَاءَ قِصَارٍ حَدَّثَنَا بِهَا أَبُو هُرَيْرَةَ نَهٰى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الشُّرْبِ مِنْ فَمِ الْقِرْبَةِ أَوْ السِّقَاءِ وَأَنْ يَمْنَعَ جَارَه“ أَنْ يَغْرِزَ خَشَبَه“ فِي دَارِهِ.
আইউব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইক্‌রামাহ (রাঃ) আমাদের বললেন, আমি তোমাদের সংক্ষিপ্ত এমন কতকগুলো কথা জানাব কি যেগুলো আমাদের কাছে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন? (তা হল) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বড় কিংবা ছোট মশ্‌কের মুখে পানি পান করতে এবং প্রতিবেশীকে তার দেয়ালের উপর খুঁটি গাড়ার ব্যাপারে বাধা দিতে নিষেধ করেছেন। [৫১](আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১১২)
 [৫১] আলোচ্য হাদীসে মানবিক প্রয়োজনের প্রতি মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। যদি কারো নিকট প্রতিবেশী একান্ত প্রয়োজনে কয়েক দিনের জন্য সাময়িকভাবে কারোর দেওয়ালের উপর খুঁটি, বাঁশ, লাকড়ি ইত্যাদি পুঁতে অস্থায়ীভাবে কাজ করতে চায়, তাকে যেন বাধা দেয়া না হয়। কারণ প্রতিবেশীর নিকট সকলেরই সময়ের প্রয়োজনে ঠেকা থাকতে হয়। আপনি আজকে প্রতিবেশীকে এই কাজে নিষেধ করলে পরবর্তীতে আপনি তার নিকট এর চেয়েও বেশী প্রয়োজনীয় কাজে ঠেকে যাওয়া অসম্ভব নয়। সুতরাং প্রতিবেশীর সাথে পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণভাব রক্ষা করার জন্যই উক্ত হাদীসের একান্ত লক্ষ্য। তবে হাদীসে উল্লেখিত নিষেধ বাণী দ্বারা প্রতিবেশীকে খুঁটি পোঁতার সুযোগ দেয়া ওয়াজিব নয় বরং মুস্তাহাব বটে। (ফাতহুল বারী ৫ম খণ্ড, হাদীস নং ২৪৬৩)

৫৬২৮

مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ أَخْبَرَنَا أَيُّوبُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُشْرَبَ مِنْ فِي السِّقَاءِ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মশকের মুখ থেকে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১১৩)

৫৬২৯

مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ الشُّرْبِ مِنْ فِي السِّقَاءِ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মশ্‌কের মুখ থেকে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১১৪)

৭৪/২৫. অধ্যায়ঃ

পান পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলা।

৫৬৩০

أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيٰى عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا شَرِبَ أَحَدُكُمْ فَلاَ يَتَنَفَّسْ فِي الإِنَاءِ وَإِذَا بَالَ أَحَدُكُمْ فَلاَ يَمْسَحْ ذَكَرَه“ بِيَمِينِه„ وَإِذَا تَمَسَّحَ أَحَدُكُمْ فَلاَ يَتَمَسَّحْ بِيَمِينِهِ.
‘আবদুল্লাহ্‌র পিতা আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি যখন পানি পান করবে সে যেন তখন পানির পাত্রে নিঃশ্বাস না ফেলে। আর তোমাদের কেউ যখন প্রস্রাব করে, সে যেন ডান হাতে তার লজ্জাস্থান স্পর্শ না করে এবং তোমাদের কেউ যখন শৌচ কার্য করে তখন সে যেন ডান হাতে তা না করে। [৫২](আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১১৫)
 [৫২] হাদীসে পানির পাত্রের মধ্যে শ্বাস ত্যাগ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কতইনা সূক্ষ সতর্কতা অবলম্বন করতেন। এর কারণ হল, পানির পাত্রের মধ্যে শ্বাস ত্যাগ করলে যে কোন মুহূর্তে পানি শ্বাসনালীর মধ্যে প্রবেশ করে শ্বাস আদান-প্রদানে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। অনুরূপভাবে নাকের নালীর মধ্যে পানি প্রবেশ করতে পারে। ফলে নাক ও মাথার পর্দার মধ্যে ফুলা ধরতে পারে।

৭৪/২৬. অধ্যায়ঃ

দুই কিংবা তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করা।

৫৬৩১

أَبُو عَاصِمٍ وَأَبُو نُعَيْمٍ قَالاَ حَدَّثَنَا عَزْرَةُ بْنُ ثَابِتٍ قَالَ أَخْبَرَنِي ثُمَامَةُ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَانَ أَنَسٌ يَتَنَفَّسُ فِي الإِنَاءِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا وَزَعَمَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَتَنَفَّسُ ثَلاَثًا.
সুমামা ইবনু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আনাস (রাঃ)-এর নিয়ম ছিল, তিনি দুই কিংবা তিন নিঃশ্বাসে পাত্র হতে পানি পান করতেন। তিনি মনে করতেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করতেন। [৫৩]আধুনিক প্রকাশনী- ৫২২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১১৬)
 [৫৩] তিন শ্বাসে পানি পান না করলে নিম্নে বর্ণিত রোগ ব্যাধি জন্ম নিতে পারেঃ
১। শ্বাসনালীতে পানি ঢুকে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটে যেতে পারে।
২। এমন বিঘ্নতা অধিক হলে মাথার খুলির ভিতর চাপ পড়ে। কারণ পানির শিরাসমূহ মাথার পর্দার সাথে সম্পৃক্ত থাকে। আবার মাথার ভিতর ফ্লয়েড আছে যার সম্পর্ক থাকে পানির সাথে। যদি চুষে বা ধীরে ধীরে পানি পান করা হয় তবে বিপদ ও ক্ষতিকর প্রভাব কখনও মাথার উপর পড়ে না।
৩। পাকস্থলীতে অতিরিক্ত পানি বেশী পরমিাণ জমা হলে বিভিন্ন প্রকার রোগ হয়। যথা পানি যখন ভিতরে ছড়িয়ে পড়ে তখন উপর থেকে চাপ পড়লে হার্ট ও লান্সের ক্ষতি হয়। ডান দিক থেকে চাপ হলে যকৃত এবং বাম থেকে চাপ পড়লে নাড়ি-ভূড়ি উল্টেপাল্টে যায়, এভাবে নানাবিধ ক্ষতি হয়।

৭৪/২৭. অধ্যায়ঃ

স্বর্ণের পাত্রে পানি পান করা

৫৬৩২

حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْحَكَمِ عَنْ ابْنِ أَبِي لَيْلٰى قَالَ كَانَ حُذَيْفَةُ بِالْمَدَايِنِ فَاسْتَسْقٰى فَأَتَاه“ دِهْقَانٌ بِقَدَحِ فِضَّةٍ فَرَمَاه“ بِه„ فَقَالَ إِنِّي لَمْ أَرْمِه„ إِلاَّ أَنِّي نَهَيْتُه“ فَلَمْ يَنْتَهِ وَإِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَانَا عَنِ الْحَرِيرِ وَالدِّيبَاجِ وَالشُّرْبِ فِي آنِيَةِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَقَالَ هُنَّ لَهُمْ فِي الدُّنْيَا وَهِيَ لَكُمْ فِي الآخِرَةِ.
ইবনু আবূ লাইলা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুযাইফা (রাঃ) মাদায়েন অঞ্চলে অবস্থান করছিলেন। এ সময় তিনি পানি পান করতে চাইলেন। তখন এক গ্রামবাসী একটি রূপার পাত্রে পানি এনে তাঁকে দিল। তিনি পানি সহ পেয়ালাটি ছুঁড়ে মারলেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমি এটি ছুঁড়ে ফেলতাম না, কিন্তু আমি তাকে নিষেধ করার পরও সে তা থেকে বিরত হয়নি। অথচ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিষেধ করেছেন মোটা ও পাতলা রেশমের কাপড় পরতে, স্বর্ণ ও রৌপ্যের পান-পাত্র ব্যবহার করতে। তিনি আরো বলেছেনঃ উল্লেখিত বস্তুগুলো হ’ল দুনিয়াতে কাফির সম্প্রদায়ের জন্য; আর আখিরাতে তোমাদের জন্য।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১১৭)

৭৪/২৮. অধ্যায়ঃ

স্বর্ণ ও রৌপ্য পাত্রে পানি পান করা।

৫৬৩৩

مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنّٰى حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ عَنْ ابْنِ عَوْنٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ ابْنِ أَبِي لَيْلٰى قَالَ خَرَجْنَا مَعَ حُذَيْفَةَ وَذَكَرَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ تَشْرَبُوا فِي آنِيَةِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلاَ تَلْبَسُوا الْحَرِيرَ وَالدِّيبَاجَ فَإِنَّهَا لَهُمْ فِي الدُّنْيَا وَلَكُمْ فِي الآخِرَةِ.
ইবনু আবূ লাইলা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা হুযাইফা (রাঃ)-এর সঙ্গে বাইরে বের হলাম। এ সময় তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কথা আলোচনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা স্বর্ণ ও রৌপ্য পাত্রে পান করবে না। আর মোটা বা পাতলা রেশম বস্ত্র পরিধান করবে না। কেননা, এগুলো দুনিয়াতে তাদের (অর্থাৎ অমুসলিমদের) জন্য ভোগ্যবস্তু। আর তোমাদের জন্য হল আখিরাতের ভোগ্যবস্তু।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১১৮)

৫৬৩৪

إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الَّذِي يَشْرَبُ فِي إِنَاءِ الْفِضَّةِ إِنَّمَا يُجَرْجِرُ فِي بَطْنِه„ نَارَ جَهَنَّمَ.
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিনী উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রৌপ্য পাত্রে পান করে সে তো তার উদরে জাহান্নামের অগ্নি প্রবিষ্ট করায়।[মুসলিম ৩৭/১, হাঃ ২০৬৫, আহমাদ ২৬৬৪৪] আধুনিক প্রকাশনী- ৫২২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১১৯)

৫৬৩৫

مُوسٰى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ الأَشْعَثِ بْنِ سُلَيْمٍ عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ سُوَيْدِ بْنِ مُقَرِّنٍ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ أَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِسَبْعٍ وَنَهَانَا عَنْ سَبْعٍ أَمَرَنَا بِعِيَادَةِ الْمَرِيضِ وَاتِّبَاعِ الْجِنَازَةِ وَتَشْمِيتِ الْعَاطِسِ وَإِجَابَةِ الدَّاعِي وَإِفْشَاءِ السَّلاَمِ وَنَصْرِ الْمَظْلُومِ وَإِبْرَارِ الْمُقْسِمِ وَنَهَانَا عَنْ خَوَاتِيمِ الذَّهَبِ وَعَنْ الشُّرْبِ فِي الْفِضَّةِ أَوْ قَالَ آنِيَةِ الْفِضَّةِ وَعَنِ الْمَيَاثِرِ وَالْقَسِّيِّ وَعَنْ لُبْسِ الْحَرِيرِ وَالدِّيبَاجِ وَالإِسْتَبْرَقِ.
বারা’ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সাতটি বিষয়ের হুকুম দিয়েছেন এবং সাতটি বিষয় থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি আমাদের হুকুম দিয়েছেনঃ রোগীর সেবা শুশ্রুষা করতে, জানাযার পেছনে যেতে, হাঁচি প্রদানকারীর জবাব দিতে, দাওয়াতদাতার দাওয়াত গ্রহণ করতে, সালামের প্রসার ঘটাতে, অত্যাচারিতকে সাহায্য করতে এবং শপথকারীকে শপথ রক্ষার সুযোগ করে দিতে। আর আমাদের তিনি নিষেধ করেছেনঃ স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতে, কিংবা তিনি বলেছেন, রৌপ্য পাত্রে পানি পান করতে, মায়াসির অর্থাৎ এক প্রকার নরম ও মসৃণ রেশমী কাপড় কালসী অর্থাৎ রেশম মিশ্রিত কাপড় ব্যবহার করতে এবং পাতলা কিংবা মোটা এবং অলঙ্কার খচিত রেশমী বস্ত্র পরিধান করতে। [১২৩৯; মুসলিম ৩৭/১, হাঃ ২০৬৬, আহমাদ ১৮৫৩০] আধুনিক প্রকাশনী- ৫২২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১২০)

৭৪/২৯. অধ্যায়ঃ

পেয়ালায় পান করা

৫৬৩৬

عَمْرُو بْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمٰنِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ سَالِمٍ أَبِي النَّضْرِ عَنْ عُمَيْرٍ مَوْلٰى أُمِّ الْفَضْلِ عَنْ أُمِّ الْفَضْلِ أَنَّهُمْ شَكُّوا فِي صَوْمِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ عَرَفَةَ فَبَعَثَتْ إِلَيْهِ بِقَدَحٍ مِنْ لَبَنٍ فَشَرِبَهُ.
উম্মুল ফায্‌ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
লোকজন ‘আরাফাহ’র দিনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সিয়াম পালন সম্পর্কে সন্দেহ করল। তখন আমি তাঁর নিকট একটি পেয়ালায় কিছু দুধ পাঠালাম। তিনি তা পান করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১২১)

৭৪/৩০. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম)-এর ব্যবহৃত পেয়ালায় পান করা এবং তাঁর পাত্রসমূহের বর্ণনা।
আবূ বুরদা (রহঃ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ্‌ ইবনু সালাম আমাকে বলেছেনঃ আমি কি তোমাকে সেই পাত্রে পান করতে দেব না যে পাত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পান করেছেন?

৫৬৩৭

سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ ذُكِرَ لِلنَّبِيِّصلى الله عليه وسلم امْرَأَةٌ مِنَ الْعَرَبِ فَأَمَرَ أَبَا أُسَيْدٍ السَّاعِدِيَّ أَنْ يُرْسِلَ إِلَيْهَا فَأَرْسَلَ إِلَيْهَا فَقَدِمَتْ فَنَزَلَتْ فِي أُجُمِ بَنِي سَاعِدَةَ فَخَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتّٰى جَاءَهَا فَدَخَلَ عَلَيْهَا فَإِذَا امْرَأَةٌ مُنَكِّسَةٌ رَأْسَهَا فَلَمَّا كَلَّمَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ أَعُوذُ بِاللهِ مِنْكَ فَقَالَ قَدْ أَعَذْتُكِ مِنِّي فَقَالُوا لَهَا أَتَدْرِينَ مَنْ هٰذَا قَالَتْ لاَ قَالُوا هٰذَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم جَاءَ لِيَخْطُبَكِ قَالَتْ كُنْتُ أَنَا أَشْقٰى مِنْ ذ‘لِكَ فَأَقْبَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَئِذٍ حَتّٰى جَلَسَ فِي سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ هُوَ وَأَصْحَابُه“ ثُمَّ قَالَ اسْقِنَا يَا سَهْلُ فَخَرَجْتُ لَهُمْ بِهٰذَا الْقَدَحِ فَأَسْقَيْتُهُمْ فِيهِ فَأَخْرَجَ لَنَا سَهْلٌ ذ‘لِكَ الْقَدَحَ فَشَرِبْنَا مِنْه“ قَالَ ثُمَّ اسْتَوْهَبَه“ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بَعْدَ ذ‘لِكَ فَوَهَبَه“ لَهُ.
সাহ্‌ল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আরবের এক মহিলার কথা আলোচনা করা হলে, তিনি আবূ উসাইদ সা’ঈদী (রাঃ)-কে আদেশ দিলেন, সেই মহিলার নিকট কাউকে পাঠাতে। তখন তিনি তার নিকট একজনকে পাঠালে সে আসলো এবং সায়িদা গোত্রের দূর্গে অবতরণ করল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে এসে তার কাছে গেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দূর্গে তার কাছে প্রবেশ করে দেখলেন, এক স্ত্রীলোক মাথা ঝুঁকিয়ে বসে আছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন তার সঙ্গে কথাবার্তা বললেন, তখন সে বলে উঠল, আমি আপনার থেকে আল্লাহ্‌র নিকট পানাহ চাই। তখন তিনি বললেনঃ আমি তোমাকে পানাহ দিলাম। তখন লোকেরা তাকে বলল, তুমি কি জান ইনি কে? সে বললঃ না। তারা বললঃ ইনি তো আল্লাহ্‌র রসূল। তোমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে এসেছিলেন। সে বলল, এ মর্যাদা থেকে আমি চিরদিনের জন্য বঞ্চিতা। এরপর সেই দিনই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এগিয়ে গেলেন এবং তিনি ও তাঁর সাহাবীগণ অবশেষে বানী সায়িদার চত্বরে এসে বসে পড়লেন। এরপর বললেনঃ হে সাহল! আমাদের পানি পান করাও। সাহ্‌ল (রাঃ) বলেন, তখন আমি তাঁদের জন্য এ পেয়ালাটিই বের করে আনি এবং তা দিয়ে তাঁদের পান করাই। বর্ণনাকারী বলেন, সাহ্‌ল (রাঃ) তখন আমাদের কাছে সেই পেয়ালা বের করে আনলে আমরা তাতে করে পানি পান করি। তিনি বলেছেনঃ পরবর্তীতে ‘উমর ইবনু ‘আব্দুল ‘আযীয (রহঃ) তাঁর নিকট হতে সেটি দান হিসাবে পেতে চাইলে, তিনি তাঁকে তা হেবা করে দেন। [৫২৫৬; মুসলিম ৩৬/৯, হাঃ ২০০৭] আধুনিক প্রকাশনী- ৫২২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১২২)

৫৬৩৮

الْحَسَنُ بْنُ مُدْرِكٍ قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيٰى بْنُ حَمَّادٍ أَخْبَرَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ قَالَ رَأَيْتُ قَدَحَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَكَانَ قَدْ انْصَدَعَ فَسَلْسَلَه“ بِفِضَّةٍ قَالَ وَهُوَ قَدَحٌ جَيِّدٌ عَرِيضٌ مِنْ نُضَارٍ قَالَ قَالَ أَنَسٌ لَقَدْ سَقَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي هٰذَا الْقَدَحِ أَكْثَرَ مِنْ كَذَا وَكَذَا
قَالَ وَقَالَ ابْنُ سِيرِينَ إِنَّه“ كَانَ فِيهِ حَلْقَةٌ مِنْ حَدِيدٍ فَأَرَادَ أَنَسٌ أَنْ يَجْعَلَ مَكَانَهَا حَلْقَةً مِنْ ذَهَبٍ أَوْ فِضَّةٍ فَقَالَ لَه“ أَبُو طَلْحَةَ لاَ تُغَيِّرَنَّ شَيْئًا صَنَعَه“ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَتَرَكَهُ.
আসিম আহওয়াল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর কাছে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কর্তৃক ব্যবহৃত একটি পেয়ালা দেখেছি। সেটি ফেটে গিয়েছিল। এরপর তিনি তা রূপা দিয়ে জোড়া দেন। বর্ণনাকারী আসিম বলেন, সেটি ছিল উৎকৃষ্ট, চওড়া ও নুযর কাঠের তৈরি। আসিম বলেন, আনাস (রাঃ) বলেছেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ পেয়ালায় বহুবার পানি পান করিয়েছি।

আসিম বলেন, ইবনু সীরীন (রাঃ) বলেছেনঃ পেয়ালাটিতে বৃত্তাকারে লোহা বসানো ছিল। তাই আনাস (রাঃ) ইচ্ছে করেছিলেন, লোহার বৃত্তের জায়গায় সোনা বা রূপার একটি বৃত্ত বসাতে। তখন আবূ তালহা (রাঃ) তাঁকে বললেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেভাবে বানিয়েছেন, তাতে কোন পরিবর্তন করো না। ফলে তিনি তার ইচ্ছে পরিত্যাগ করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১২৩)

৭৪/৩১. অধ্যায়ঃ

বরকত পান করা ও বরকতযুক্ত পানির বর্ণনা।

৫৬৩৯

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ الأَعْمَشِ قَالَ حَدَّثَنِي سَالِمُ بْنُ أَبِي الْجَعْدِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ هٰذَا الْحَدِيثَ قَالَ قَدْ رَأَيْتُنِي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ حَضَرَتْ الْعَصْرُ وَلَيْسَ مَعَنَا مَاءٌ غَيْرَ فَضْلَةٍ فَجُعِلَ فِي إِنَاءٍ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلمبِه„ فَأَدْخَلَ يَدَه“ فِيهِ وَفَرَّجَ أَصَابِعَه“ ثُمَّ قَالَ حَيَّ عَلٰى أَهْلِ الْوُضُوءِ الْبَرَكَةُ مِنَ اللهِ فَلَقَدْ رَأَيْتُ الْمَاءَ يَتَفَجَّرُ مِنْ بَيْنِ أَصَابِعِه„ فَتَوَضَّأَ النَّاسُ وَشَرِبُوا فَجَعَلْتُ لاَ آلُوا مَا جَعَلْتُ فِي بَطْنِي مِنْه“ فَعَلِمْتُ أَنَّه“ بَرَكَةٌ قُلْتُ لِجَابِرٍ كَمْ كُنْتُمْ يَوْمَئِذٍ قَالَ أَلْفًا وَأَرْبَعَ مِائَةٍ تَابَعَه“ عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ عَنْ جَابِرٍ
وَقَالَ حُصَيْنٌ وَعَمْرُو بْنُ مُرَّةَ عَنْ سَالِمٍ عَنْ جَابِرٍ خَمْسَ عَشْرَةَ مِائَةً وَتَابَعَه“ سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ عَنْ جَابِرٍ.
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম, তখন আসরের ওয়াক্ত। অথচ আমাদের সাথে বেঁচে যাওয়া অল্প পানি ছাড়া কিছুই ছিল না। তখন সেটুকু একটি পাত্রে রেখে পাত্রটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে পেশ করা হল। তিনি পাত্রটির মধ্যে নিজের হাত প্রবেশ করালেন এবং আঙ্গুলগুলো ছড়িয়ে দিলেন। এরপর বললেনঃ এসো, যাদের অযূর দরকার আছে। বরকত তো আসে আল্লাহ্‌র নিকট হতে। জাবির (রাঃ) বলেন, তখন আমি দেখলাম নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আঙ্গুলগুলোর ফাঁক থেকে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। লোকজন অযূ করল এবং পানি পান করল। আমিও আমার পেটে যতটুকু সম্ভব ছিল ততটুকু পান করতে কসুর করলাম না। কেননা, আমি জানতাম এটি বরকতের পানি। রাবী বলেন, আমি জাবির (রাঃ)-কে বললামঃ সে দিন আপনারা কত জন ছিলেন? তিনি বললেনঃ এক হাজার চারশ’ জন। জাবির (রাঃ)-এর সূত্রে ‘আম্‌র এরকমই বর্ণনা করেছেন।
সালিম, জাবিরের (রাঃ) সূত্রের মাধ্যমে হুসাইন ও ‘আম্‌র ইবনু মুররা চৌদ্দশ’র জায়গায় পনেরশ’র কথা বলেছেন। সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যাব জাবির (রাঃ) থেকে এরকমই বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫২২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১২৪)

No comments

Powered by Blogger.