সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "মাগাযী" হাদিস নং - ৩৯৪৯ থেকে ৪০০০
মাগাযী ৩৯৪৯ - ৪৪৭৩‘উশায়রাহ বা ‘উসাইরাহ্র যুদ্ধ
ইব্নু ইসহাক (রহঃ) বলেন,
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথম আবওয়া-র যুদ্ধ করেন, অতঃপর তিনি
বুওয়াত্ব, অতঃপর ‘উশায়রার যুদ্ধ করেন।
৩৯৪৯
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَهْبٌ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، كُنْتُ إِلَى جَنْبِ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ،
فَقِيلَ لَهُ كَمْ غَزَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَزْوَةٍ قَالَ
تِسْعَ عَشْرَةَ. قِيلَ كَمْ غَزَوْتَ أَنْتَ مَعَهُ قَالَ سَبْعَ عَشْرَةَ.
قُلْتُ فَأَيُّهُمْ كَانَتْ أَوَّلَ قَالَ الْعُسَيْرَةُ أَوِ الْعُشَيْرُ.
فَذَكَرْتُ لِقَتَادَةَ فَقَالَ الْعُشَيْرُ.
তিনি বলেন, আমি যায়দ ইব্নু আরকামের পাশে
ছিলাম। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়টি
যুদ্ধ করেছেন? তিনি বললেন, ঊনিশটি। আবার জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কয়টি যুদ্ধে তাঁর
সঙ্গে ছিলেন? তিনি বললেন, সতেরটিতে। বললাম, এসব যুদ্ধের কোনটি সর্বপ্রথম সংগঠিত
হয়েছিল? তিনি বললেন, ‘উশাইরাহ বা ‘উশায়র। বিষয়টি আমি ক্বাতাদাহ (রহঃ)-এর কাছে
উল্লেখ করলে তিনিও বললেন, ‘উশায়র।
[৪৪০৪, ৪৪৭১; মুসলিম ১৫/৩৫, হাঃ ১২৫৪] (আ.প্র. ৩৬৫৮, ই.ফা. ৩৬৬১)
[৪৪০৪, ৪৪৭১; মুসলিম ১৫/৩৫, হাঃ ১২৫৪] (আ.প্র. ৩৬৫৮, ই.ফা. ৩৬৬১)
৬৪/২. অধ্যায়ঃ
বাদ্র যুদ্ধে নিহতদের ব্যাপারে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর ভবিষ্যদ্বাণী
৩৯৫০
أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ حَدَّثَنَا شُرَيْحُ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ
حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ مَيْمُوْنٍ أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ
مَسْعُوْدٍ حَدَّثَ عَنْ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ أَنَّهُ قَالَ كَانَ صَدِيْقًا
لِأُمَيَّةَ بْنِ خَلَفٍ وَكَانَ أُمَيَّةُ إِذَا مَرَّ بِالْمَدِيْنَةِ نَزَلَ
عَلَى سَعْدٍ وَكَانَ سَعْدٌ إِذَا مَرَّ بِمَكَّةَ نَزَلَ عَلَى أُمَيَّةَ
فَلَمَّا قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ انْطَلَقَ
سَعْدٌ مُعْتَمِرًا فَنَزَلَ عَلَى أُمَيَّةَ بِمَكَّةَ فَقَالَ لِأُمَيَّةَ
انْظُرْ لِيْ سَاعَةَ خَلْوَةٍ لَعَلِّيْ أَنْ أَطُوْفَ بِالْبَيْتِ فَخَرَجَ بِهِ
قَرِيْبًا مِنْ نِصْفِ النَّهَارِ فَلَقِيَهُمَا أَبُوْ جَهْلٍ فَقَالَ يَا أَبَا
صَفْوَانَ مَنْ هَذَا مَعَكَ فَقَالَ هَذَا سَعْدٌ فَقَالَ لَهُ أَبُوْ جَهْلٍ
أَلَا أَرَاكَ تَطُوْفُ بِمَكَّةَ آمِنًا وَقَدْ أَوَيْتُمْ الصُّبَاةَ
وَزَعَمْتُمْ أَنَّكُمْ تَنْصُرُوْنَهُمْ وَتُعِيْنُوْنَهُمْ أَمَا وَاللهِ
لَوْلَا أَنَّكَ مَعَ أَبِيْ صَفْوَانَ مَا رَجَعْتَ إِلَى أَهْلِكَ سَالِمًا
فَقَالَ لَهُ سَعْدٌ وَرَفَعَ صَوْتَهُ عَلَيْهِ أَمَا وَاللهِ لَئِنْ
مَنَعْتَنِيْ هَذَا َلأَمْنَعَنَّكَ مَا هُوَ أَشَدُّ عَلَيْكَ مِنْهُ طَرِيْقَكَ
عَلَى الْمَدِيْنَةِ فَقَالَ لَهُ أُمَيَّةُ لَا تَرْفَعْ صَوْتَكَ يَا سَعْدُ
عَلَى أَبِي الْحَكَمِ سَيِّدِ أَهْلِ الْوَادِيْ فَقَالَ سَعْدٌ دَعْنَا عَنْكَ
يَا أُمَيَّةُ فَوَاللهِ لَقَدْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
يَقُوْلُ إِنَّهُمْ قَاتِلُوْكَ قَالَ بِمَكَّةَ قَالَ لَا أَدْرِيْ فَفَزِعَ
لِذَلِكَ أُمَيَّةُ فَزَعًا شَدِيْدًا فَلَمَّا رَجَعَ أُمَيَّةُ إِلَى أَهْلِهِ
قَالَ يَا أُمَّ صَفْوَانَ أَلَمْ تَرَيْ مَا قَالَ لِيْ سَعْدٌ قَالَتْ وَمَا
قَالَ لَكَ قَالَ زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا أَخْبَرَهُمْ أَنَّهُمْ قَاتِلِيَّ
فَقُلْتُ لَهُ بِمَكَّةَ قَالَ لَا أَدْرِيْ فَقَالَ أُمَيَّةُ وَاللهِ لَا
أَخْرُجُ مِنْ مَكَّةَ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ اسْتَنْفَرَ أَبُوْ جَهْلٍ
النَّاسَ قَالَ أَدْرِكُوْا عِيْرَكُمْ فَكَرِهَ أُمَيَّةُ أَنْ يَخْرُجَ
فَأَتَاهُ أَبُوْ جَهْلٍ فَقَالَ يَا أَبَا صَفْوَانَ إِنَّكَ مَتَى مَا يَرَاكَ
النَّاسُ قَدْ تَخَلَّفْتَ وَأَنْتَ سَيِّدُ أَهْلِ الْوَادِيْ تَخَلَّفُوْا
مَعَكَ فَلَمْ يَزَلْ بِهِ أَبُوْ جَهْلٍ حَتَّى قَالَ أَمَّا إِذْ غَلَبْتَنِيْ
فَوَاللهِ لَأَشْتَرِيَنَّ أَجْوَدَ بَعِيْرٍ بِمَكَّةَ ثُمَّ قَالَ أُمَيَّةُ يَا
أُمَّ صَفْوَانَ جَهِّزِيْنِيْ فَقَالَتْ لَهُ يَا أَبَا صَفْوَانَ وَقَدْ
نَسِيْتَ مَا قَالَ لَكَ أَخُوْكَ الْيَثْرِبِيُّ قَالَ لَا مَا أُرِيْدُ أَنْ
أَجُوْزَ مَعَهُمْ إِلَّا قَرِيْبًا فَلَمَّا خَرَجَ أُمَيَّةُ أَخَذَ لَا يَنْزِلُ
مَنْزِلًا إِلَّا عَقَلَ بَعِيْرَهُ فَلَمْ يَزَلْ بِذَلِكَ حَتَّى قَتَلَهُ اللهُ
عَزَّ وَجَلَّ بِبَدْرٍ
সা’দ
ইব্নু মু‘আয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, তাঁর ও উমাইয়াহ ইব্নু খালফের
মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। উমাইয়াহ মদিনায় আসলে সা’দ ইব্নু মু’আযের মেহমান হত এবং সা‘দ
(রাঃ) মক্কায় গেলে উমাইয়াহ্র আতিথ্য গ্রহণ করতেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদিনায় হিজরাত করার পর একবার সা‘দ (রাঃ) ‘উমরাহ করার
উদ্দেশ্যে মাক্কাহ গেলেন এবং উমাইয়াহ্র বাড়িতে অবস্থান করলেন। তিনি উমাইয়াহ্কে
বললেন, আমাকে এমন একটি নিরিবিলি সময়ের কথা বল যখন আমি বাইতুল্লাহ্র তাওয়াফ করতে
পারব। তাই দুপুরের কাছাকাছি সময়ে একদিন উমাইয়াহ তাঁকে সঙ্গে নিয়ে বের হল, তখন
তাদের সঙ্গে আবূ জাহলের দেখা হল। তখন সে (উমাইয়াহ্কে লক্ষ্য করে) বলল, হে আবূ
সফ্ওয়ান! তোমার সঙ্গে ইনি কে? সে বলল, ইনি সা‘দ। তখন আবূ জাহ্ল তাকে (সা‘দ ইব্নু
ম‘আযকে) বলল, আমি তোমাকে নিরাপদে মক্কায় তাওয়াফ করতে দেখছি অথচ তোমরা
ধর্মত্যাগীদের আশ্রয় দিয়েছ এবং তাদেরকে সাহায্য ও সহযোগিতা করে চলেছ। আল্লাহ্র
কসম, তুমি আবূ সফওয়ানের (উমাইয়াহ) সঙ্গে না থাকলে তোমার পরিজনদের কাছে নিরাপদে
ফিরে যেতে পারতে না। সা‘দ (রাঃ) এর চেয়েও উচ্চঃস্বরে বললেন, আল্লাহ্র কসম, তুমি
এতে যদি আমাকে বাধা দাও তাহলে আমিও এমন একটি বিষয়ে তোমাকে বাধা দেব যা তোমার জন্য
এর চেয়েও কঠিন হবে। মাদীনাহ্র পার্শ্ব দিয়ে তোমার যাতায়াতের রাস্তা (বন্ধ করে
দেব)। তখন উমাইয়াহ তাকে বলল, হে সা‘দ! এ উপত্যকার সর্দার আবুল হাকামের সঙ্গে এরূপ
উচ্চঃস্বরে কথা বলো না। তখন সা‘দ (রাঃ) বললেন, হে উমাইয়াহ! তুমি চুপ কর। আল্লাহ্র
কসম, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে,
তারা তোমরা হত্যাকারী। ‘উমাইয়াহ জিজ্ঞেস করল, মক্কার বুকে? সা‘দ (রাঃ) বললেন, তা
জানি না। উমাইয়াহ এতে অত্যন্ত ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ল। এরপর উমাইয়াহ বাড়ী গিয়ে তার
(স্ত্রীকে) বলল, হে উম্মু সফওয়ান! সা‘দ আমার ব্যাপারে কি বলেছে জান? সে বলল, সা‘দ
তোমাকে কী বলেছে? উমাইয়াহ বলল, সে বলেছে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাদেরকে জানিছেন যে, তারা আমার হত্যাকারী। তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম,
তা কি মক্কায়? সে বলল, তা জানি না। অতঃপর ‘উমাইয়াহ বলল, আল্লাহ্র কসম, আমি কখনো
মাক্কাহ হতে বের হব না। কিন্তু বদর যুদ্ধের দিন আগত হলে আবূ জাহ্ল সকল জনসাধারণকে
সদলবলে বের হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলল, তোমরা তোমাদের কাফেলা রক্ষা করার জন্য আগ্রসর
হও। উমাইয়াহ বের হওয়াকে অপছন্দ করলে আবূ জাহ্ল এসে তাকে বলল, হে আবূ সফ্ওয়ান।
তুমি এ উপত্যকার অধিবাসীদের নেতা, তাই লোকেরা যখন দেখবে তুমি পেছনে রয়ে গেছ তখন
তারাও তোমার সঙ্গে পেছনেই থেকে যাবে। এ বলে আবূ জাহ্ল তার সঙ্গে পীড়াপীড়ি করতে
থাকলে সে বলল, তুমি যেহেতু আমাকে বাধ্য করে ফেলছ তাই আল্লাহ্র কসম! অবশ্যই আমি
এমন একটি উষ্ট্র ক্রয় করব যা মক্কার মধ্যে সবচেয়ে ভাল। এরপর উমাইয়াহ (স্ত্রীকে)
বলল, হে উম্মু সফ্ওয়ান! আমার সফরের ব্যবস্থা কর। স্ত্রী বলল, হে আবূ সফ্ওয়ান!
তোমার মাদীনাহবাসী ভাই যা বলেছিলেন তা কি তুমি ভুলে গিয়েছ? সে বলল, না। আমি তাদের
সঙ্গে মাত্র কিছু দূর যেতে চাই। রওয়ানা হওয়ার পর রাস্তায় যে মান্যিলেই উমাইয়াহ
কিছুক্ষণ অবস্থান করেছে সেখানেই সে তার উট বেঁধে রেখেছে। সারা রাস্তায় সে এমন করল,
শেষে বদর প্রান্তরে মহান আল্লাহ্ তাকে হত্যা করলেন। [৩৬৩২]
(আ.প্র. ৩৬৫৯, ই.ফা. ৩৬৬২)
(আ.প্র. ৩৬৫৯, ই.ফা. ৩৬৬২)
৬৪/৩. অধ্যায়ঃ
বদর যুদ্ধের ঘটনা ও মহান আল্লাহ্র বাণী
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ “আর এ
তো সুনিশ্চিত যে, আল্লাহ বাদ্র যুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করেছিলেন, অথচ তোমরা ছিলে
দুর্বল, সুতরাং তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর, যেন তোমরা শুকরগুজারী করতে পার। স্মরণ কর,
তুমি মু’মিনদের বলেছিলেঃ তোমাদের জন্য একি যথেষ্ট নয় যে, আসমান হতে অবতীর্ণ হওয়া
তিন হাজার মালায়িকাহ দিয়ে তোমাদের রব তোমাদের সাহায্য করবেন? হ্যাঁ, অবশ্যই। যদি
তোমরা ধৈর্যধারণ কর এবং তাক্ওয়া অবলম্বন কর; তবে কাফির বাহিনী অতর্কিতে তোমাদের
উপর আক্রমণ করলে আল্লাহ পাঁচ হাজার চিহ্নিত মালায়িকাহ দিয়ে তোমাদের সাহায্য করবেন।
এটা তো আল্লাহ শুধু এজন্য করেছেন যেন তোমাদের জন্য সুসংবাদ হয়, যাতে তোমাদের অন্তর
প্রশান্তি লাভ করে। আর সাহায্য তো শুধুমাত্র পরাক্রমশালী মহাবিজ্ঞ আল্লাহ্র তরফ
হতে হয়ে থাকে। যাতে ধ্বংস করে দেন কাফিরদের কোন দলকে অথবা লাঞ্ছিত করে দেন তাদের,
যেন তারা নিরাশ হয়ে ফিরে যায়।” (সূরা আলে ‘ইমরান ৩/১২৩-১২৭)
ওয়াহশী (রাঃ) বলেন, বাদ্র যুদ্ধের দিন হাম্যাহ (রাঃ) তু’আয়মা ইব্নু আদী ইব্নু খিয়ারকে হত্যা করেছিলেন। আল্লাহ্র বানীঃ “স্মরণ কর, আল্লাহ্ তোমাদের সঙ্গে ওয়াদা করেছিলেন যে, দু’টি দলের একটি তোমাদের করতলগত হবে।” (সূরা আনফাল ৮/৭)
ওয়াহশী (রাঃ) বলেন, বাদ্র যুদ্ধের দিন হাম্যাহ (রাঃ) তু’আয়মা ইব্নু আদী ইব্নু খিয়ারকে হত্যা করেছিলেন। আল্লাহ্র বানীঃ “স্মরণ কর, আল্লাহ্ তোমাদের সঙ্গে ওয়াদা করেছিলেন যে, দু’টি দলের একটি তোমাদের করতলগত হবে।” (সূরা আনফাল ৮/৭)
৩৯৫১
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ
شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبٍ أَنَّ عَبْدَ
اللهِ بْنَ كَعْبٍ قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ لَمْ أَتَخَلَّفْ
عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَزْوَةٍ غَزَاهَا إِلَّا فِيْ
غَزْوَةِ تَبُوْكَ غَيْرَ أَنِّيْ تَخَلَّفْتُ عَنْ غَزْوَةِ بَدْرٍ وَلَمْ
يُعَاتَبْ أَحَدٌ تَخَلَّفَ عَنْهَا إِنَّمَا خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم يُرِيْدُ عِيْرَ قُرَيْشٍ حَتَّى جَمَعَ اللهُ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ
عَدُوِّهِمْ عَلَى غَيْرِ مِيْعَادٍ
‘আবদুল্লাহ
ইব্নু কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি কা’ব ইব্নু মালিক (রাঃ)-কে
বলতে শুনেছি যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সব যুদ্ধে অংশ
গ্রহণ করেছেন তার মধ্যে তাবূকের যুদ্ধ ব্যতীত অন্য কোন যুদ্ধে আমি অনুপস্থিত ছিলাম
না। তবে বদর যুদ্ধে আমি অনুপস্থিত ছিলাম। কিন্তু বদর যুদ্ধে যারা যোগদান করেননি
তাদেরকে কোন প্রকার দোষারোপ করা হয়নি। আসলে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কুরাইশ কাফিলার উদ্দেশ্যেই যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু পূর্ব নির্ধারিত
পরিকল্পনা ব্যতীতই আল্লাহ্ তা’আলা তাদের (মুসলিমদের) সঙ্গে তাদের দুশমনদের মুকাবালা
করিয়ে দেন। [২৭৫৭]
(আ.প্র. ৩৬৬০, ই.ফা. ৩৬৬৩)
(আ.প্র. ৩৬৬০, ই.ফা. ৩৬৬৩)
৬৪/৪. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ
স্মরণ কর, তোমরা সাহায্য
প্রার্থনা করছিলে তোমাদের রবের কাছে, তিনি তোমাদের প্রার্থনার জবাবে বললেনঃ অবশ্যই
আমি তোমাদের সাহায্য করব এক হাজার মালায়িকাহ দিয়ে, যারা ক্রমান্বয়ে এসে পৌঁছবে। আর
আল্লাহ্ এ সাহায্য করলেন শুধু সুসংবাদ দেয়ার জন্য এবং যেন তোমাদের অন্তর প্রশান্ত
হয়। আর সাহায্য তো কেবল আল্লাহ্র তরফ হতেই হয়। নিশ্চয় আল্লাহ্ পরাক্রমশালী,
হিকমাতওয়ালা। স্মরণ কর, আল্লাহ্ তোমাদেরকে তন্দ্রাচ্ছন্ন করেন নিজের পক্ষ হতে
স্বস্তি প্রদানের জন্য এবং তোমাদের উপর আসমান হতে পানি বর্ষণ করেন তা দিয়ে
তোমাদেরকে পবিত্র করার জন্য এবং যাতে তোমাদের হতে অপসারিত করে দেন শায়ত্বনের
কুমন্ত্রণা, আর যাতে তোমাদের অন্তর সুদৃঢ় করেন এবং যার ফলে তোমাদের পা স্থির করে
দিতে পারেন। স্মরণ কর, তোমার রব মালায়িকাহ্কে প্রত্যাদেশ করেন- নিশ্চয় আমি
তোমাদের সঙ্গে আছি, সুতরাং মু’মিনদের দৃঢ়চিত্ত রাখ। অচিরেই আমি কাফিরদের অন্তরে
আতংক সঞ্চার করে দেব, অতএব, আঘাত কর তাদের গর্দানের উপর এবং আঘাত কর তাদের
আঙ্গুলির জোড়ায় জোড়ায়। (সূরা আনফাল ৮/৯-১৩)
৩৯৫২
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ مُخَارِقٍ عَنْ طَارِقِ
بْنِ شِهَابٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ مَسْعُوْدٍ يَقُوْلُ شَهِدْتُ مِنَ
الْمِقْدَادِ بْنِ الْأَسْوَدِ مَشْهَدًا لَأَنْ أَكُوْنَ صَاحِبَهُ أَحَبُّ
إِلَيَّ مِمَّا عُدِلَ بِهِ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَدْعُوْ
عَلَى الْمُشْرِكِيْنَ فَقَالَ لَا نَقُوْلُ كَمَا قَالَ قَوْمُ مُوْسَى {اذْهَبْ
أَنْتَ وَرَبُّكَ فَقَاتِلَا} وَلَكِنَّا نُقَاتِلُ عَنْ يَمِيْنِكَ وَعَنْ
شِمَالِكَ وَبَيْنَ يَدَيْكَ وَخَلْفَكَ فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
أَشْرَقَ وَجْهُهُ وَسَرَّهُ يَعْنِيْ قَوْلَهُ
ইব্নু
মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মিকদাদ ইব্নু আসওয়াদের এমন
একটি বিষয় দেখেছি যা আমি করলে তা দুনিয়ার সব কিছুর তুলনায় আমার নিকট প্রিয় হত।
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলেন, তখন তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুশরিকদের বিরুদ্ধে দু’আ করছিলেন। এতে মিকদাদ
ইব্নু আসওয়াদ (রাঃ) বললেন, মূসা (আঃ) এর কাওম যেমন বলেছিল যে, “তুমি আর তোমার
প্রতিপালক যাও এবং যুদ্ধ কর”- (সূরা আল-মায়িদাহ ৫/২৪)। আমরা তেমন বলব না, বরং আমরা
আপনার ডানে, বামে, সামনে, পিছনে সর্বদিক থেকে যুদ্ধ করব। ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ)
বলেন, আমি দেখলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল
এবং তার কথা তাঁকে খুব আনন্দিত করল।
[৪৬০৯] (আ.প্র. ৩৬৬১, ই.ফা. ৩৬৬৪)
[৪৬০৯] (আ.প্র. ৩৬৬১, ই.ফা. ৩৬৬৪)
৩৯৫৩
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ حَوْشَبٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ بَدْرٍ اللهُمَّ إِنِّيْ أَنْشُدُكَ
عَهْدَكَ وَوَعْدَكَ اللهُمَّ إِنْ شِئْتَ لَمْ تُعْبَدْ فَأَخَذَ أَبُوْ بَكْرٍ
بِيَدِهِ فَقَالَ حَسْبُكَ فَخَرَجَ وَهُوَ يَقُوْلُ {سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ
وَيُوَلُّوْنَ الدُّبُرَ}
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাদ্রের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, হে আল্লাহ্! আমি আপনার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার
পূরণ করার জন্য প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ্! আপনি যদি চান (কাফিররা জয়লাভ করুক)
তাহলে আপনার ‘ইবাদত আর হবে না। আবূ বকর (রাঃ) তাঁর হাত ধরে বললেন, যথেষ্ট হয়েছে।
তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পড়তে পড়তে বের হলেনঃ
“শীঘ্রই দুশমনরা পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে”- (সূরা ক্বামার ৫৪/৪৫)।
[২৯১৫] (আ.প্র. ৩৬৬২, ই.ফা. ৩৬৬৫)
[২৯১৫] (আ.প্র. ৩৬৬২, ই.ফা. ৩৬৬৫)
৬৪/৫. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই
৩৯৫৪
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ
أَخْبَرَهُمْ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الْكَرِيْمِ أَنَّهُ سَمِعَ مِقْسَمًا
مَوْلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ الْحَارِثِ يُحَدِّثُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ
سَمِعَهُ يَقُوْلُ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ} عَنْ
بَدْرٍ وَالْخَارِجُوْنَ إِلَى بَدْرٍ
‘আবদুল্লাহ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “মু’মিনদের মধ্যে তারা সমান নয়
যারা (বাদ্রে না গিয়ে) বসে ছিল”- (সূরা আন-নিসা ৪/৯৫)। এবং যারা বাদ্রে হাজির
হয়েছিল মর্মে (আয়াতটি) বদর এবং তদুদ্দেশে ঘর ছেড়ে বের হওয়া সাহাবীদের ব্যাপারে
(নাযিল হয়)।
[৪৫৯৫] (আ.প্র. ৩৬৬৩, ই.ফা. ৩৬৬৬)
[৪৫৯৫] (আ.প্র. ৩৬৬৩, ই.ফা. ৩৬৬৬)
৬৪/৬. অধ্যায়ঃ
বাদ্র যুদ্ধে যোগদানকারীর সংখ্যা
৩৯৫৫
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ
عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ اسْتُصْغِرْتُ أَنَا وَابْنُ عُمَرَ حَدَّثَنيِْ مَحْمُوْدٌ
حَدَّثَنَا وَهْبٌ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ
اسْتُصْغِرْتُ أَنَا وَابْنُ عُمَرَ يَوْمَ بَدْرٍ وَكَانَ الْمُهَاجِرُوْنَ
يَوْمَ بَدْرٍ نَيِّفًا عَلَى سِتِّيْنَ وَالأَنْصَارُ نَيِّفًا وَأَرْبَعِيْنَ
وَمِائَتَيْنِ
বারা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাদ্রের দিন আমাকে ও ইব্নু
‘উমারকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক গণ্য করা হয়েছিল। [১]
[৩৯৫৬] (আ.প্র. ৩৬৬৪, ই.ফা. নেই)
[৩৯৫৬] (আ.প্র. ৩৬৬৪, ই.ফা. নেই)
[১] অর্থাৎ
বারা ইব্নু ‘আযির ও আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমার (রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অল্প বয়স্ক গণ্য করায় তারা বাদ্র যুদ্ধে অংশ নিতে পারেননি।
৩৯৫৬
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ
عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ اسْتُصْغِرْتُ أَنَا وَابْنُ عُمَرَ حَدَّثَنيِْ مَحْمُوْدٌ
حَدَّثَنَا وَهْبٌ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ
اسْتُصْغِرْتُ أَنَا وَابْنُ عُمَرَ يَوْمَ بَدْرٍ وَكَانَ الْمُهَاجِرُوْنَ
يَوْمَ بَدْرٍ نَيِّفًا عَلَى سِتِّيْنَ وَالأَنْصَارُ نَيِّفًا وَأَرْبَعِيْنَ
وَمِائَتَيْنِ
বারা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাদ্রের দিন আমাকে ও ইব্নু
‘উমারকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক গণ্য করা হয়েছিল, এ যুদ্ধে মুহাজিরদের সংখ্যা ছিল ষাটের
বেশী এবং আনসারদের সংখ্যা ছিল দুশ’ চল্লিশেরও অধিক। [২]
[৩৯৫৫] (আ.প্র. ৩৬৬৫, ই.ফা. ৩৬৬৭)
[৩৯৫৫] (আ.প্র. ৩৬৬৫, ই.ফা. ৩৬৬৭)
[২] মুসলিম
হবার কারণে যারা অমানসিক নির্যাতন ও নিপীড়ন সহ্য করে আশ্রয়ের জন্য মাদীনাহ্ গমন করেছিলেন
তারা মুহাজির হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মাদিনাহবাসীদের মধ্য হতে যারা মুহাজিরদের বিভিন্নভাবে
সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তারা আনসার নামে পরিচিত ছিলেন।
৩৯৫৭
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ
قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ يَقُوْلُ حَدَّثَنِيْ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ مِمَّنْ
شَهِدَ بَدْرًا أَنَّهُمْ كَانُوْا عِدَّةَ أَصْحَابِ طَالُوْتَ الَّذِيْنَ
جَازُوْا مَعَهُ النَّهَرَ بِضْعَةَ عَشَرَ وَثَلَاثَ مِائَةٍ قَالَ الْبَرَاءُ
لَا وَاللهِ مَا جَاوَزَ مَعَهُ النَّهَرَ إِلَّا مُؤْمِنٌ
বারা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর যে সব সাহাবী বাদ্রে উপস্থিত ছিলেন তারা আমার কাছে বর্ণনা করেছেন
যে, তাদের সংখ্যা তালুতের যে সব সঙ্গী নদী পার হয়েছিলেন তাদের সমান ছিল। তাদের
সংখ্যা ছিল তিনশ’ দশেরও কিছু বেশী। বারা’ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র কসম, ঈমানদার
ব্যতীত আর কেউই তাঁর সঙ্গে নদী পার হতে পারেনি।
[৩৯৫৮-৩৯৫৯] (আ.প্র. ৩৬৬৬, ই.ফা. ৩৬৬৮)
[৩৯৫৮-৩৯৫৯] (আ.প্র. ৩৬৬৬, ই.ফা. ৩৬৬৮)
৩৯৫৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ
عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ كُنَّا أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ نَتَحَدَّثُ أَنَّ عِدَّةَ
أَصْحَابِ بَدْرٍ عَلَى عِدَّةِ أَصْحَابِ طَالُوْتَ الَّذِيْنَ جَاوَزُوْا مَعَهُ
النَّهَرَ وَلَمْ يُجَاوِزْ مَعَهُ إِلَّا مُؤْمِنٌ بِضْعَةَ عَشَرَ وَثَلَاثَ
مِائَةٍ
বারা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণ পরস্পর আলোচনা করতাম যে, বদর যুদ্ধে
অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের সংখ্যা তালুতের সঙ্গে যারা নদী পার হয়েছিলেন তাদের সমানই
ছিল এবং তিনশ’ দশ জনের অধিক ঈমানদার ব্যতীত কেউ তাঁর সঙ্গে নদী পার হতে পারেনি।
[৩৯৫৭] (আ.প্র. ৩৬৬৭, ই.ফা. ৩৬৬৯)
[৩৯৫৭] (আ.প্র. ৩৬৬৭, ই.ফা. ৩৬৬৯)
৩৯৫৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ عَنْ
أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ ح و حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ
أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ كُنَّا
نَتَحَدَّثُ أَنَّ أَصْحَابَ بَدْرٍ. ثَلَاثُ مِائَةٍ وَبِضْعَةَ عَشَرَ بِعِدَّةِ
أَصْحَابِ طَالُوْتَ الَّذِيْنَ جَاوَزُوْا مَعَهُ النَّهَرَ وَمَا جَاوَزَ مَعَهُ
إِلَّا مُؤْمِنٌ
বারা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা পরস্পর আলোচনা করতাম যে, বদর
যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীগণের সংখ্যা তিনশ’ দশ জনেরও কিছু অধিক ছিল, তালুতের যে
সংখ্যক সাথী তাঁর সঙ্গে নদী পার হয়েছিল; মু’মিন ব্যতীত কেউ তার সঙ্গে নদী পার হতে
পারেনি।
[৩৯৫৭] (আ.প্র. ৩৬৬৮, ই.ফা. ৩৬৭০)
[৩৯৫৭] (আ.প্র. ৩৬৬৮, ই.ফা. ৩৬৭০)
৬৪/৭. অধ্যায়ঃ
কুরাইশ কাফির শায়বাহ, ‘উত্বাহ, ওয়ালীদ এবং আবূ জাহ্ল ইব্নু
হিশামের বিরুদ্ধে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দু‘আ এবং এদের ধ্বংস
হওয়ার বিবরণ
৩৯৬০
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ
عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُوْنٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ
اسْتَقْبَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْكَعْبَةَ فَدَعَا عَلَى نَفَرٍ مِنْ
قُرَيْشٍ عَلَى شَيْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ وَعُتْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ
وَالْوَلِيْدِ بْنِ عُتْبَةَ وَأَبِيْ جَهْلِ بْنِ هِشَامٍ فَأَشْهَدُ بِاللهِ
لَقَدْ رَأَيْتُهُمْ صَرْعَى قَدْ غَيَّرَتْهُمْ الشَّمْسُ وَكَانَ يَوْمًا
حَارًّا
‘আবদুল্লাহ
ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কা’বার দিকে মুখ করে কুরাইশ কতিপয় লোকের তথা- শায়বাহ্ ইব্নু রাবী’আ,
‘উত্বাহ ইব্নু রাবী’আ, ওয়ালীদ ইব্নু ‘উত্বাহ এবং আবূ জাহ্ল ইব্নু হিশামের
বিরুদ্ধে দু‘আ করেন। আমি আল্লাহ্র নামে সাক্ষ্য দিচ্ছি, অবশ্যই আমি এ সমস্ত
লোকদেরকে (বাদ্রের ময়দানে) নিহত হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখেছি। প্রচণ্ড রোদ
তাদের দেহগুলোকে বিকৃত করে দিয়েছিল। দিনটি ছিল প্রচণ্ড গরম।
[২৪০] (আ.প্র. ৩৬৬৯, ই.ফা. ৩৬৭১)
[২৪০] (আ.প্র. ৩৬৬৯, ই.ফা. ৩৬৭১)
৬৪/৮. অধ্যায়ঃ
আবূ জাহলের হত্যা
৩৯৬১
ابْنُ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ
أَخْبَرَنَا قَيْسٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ أَنَّهُ أَتَى أَبَا جَهْلٍ وَبِهِ رَمَقٌ
يَوْمَ بَدْرٍ فَقَالَ أَبُوْ جَهْلٍ هَلْ أَعْمَدُ مِنْ رَجُلٍ قَتَلْتُمُوْهُ
‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, বদর যুদ্ধের দিন আবূ জাহ্ল যখন
মৃত্যুর মুখোমুখী তখন তিনি (‘আবদুল্লাহ) তার কাছে গেলেন। তখন আবূ জাহ্ল বলল, (আজ)
তোমরা যাকে হত্যা করলে তার চেয়ে নির্ভরযোগ্য লোক আর আছে কি?
(আ.প্র. ৩৬৭০, ই.ফা. ৩৬৭২)
(আ.প্র. ৩৬৭০, ই.ফা. ৩৬৭২)
৩৯৬২
أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ
التَّيْمِيُّ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم ح و عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ عَنْ سُلَيْمَانَ
التَّيْمِيِّ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَنْ
يَنْظُرُ مَا صَنَعَ أَبُوْ جَهْلٍ فَانْطَلَقَ ابْنُ مَسْعُوْدٍ فَوَجَدَهُ قَدْ
ضَرَبَهُ ابْنَا عَفْرَاءَ حَتَّى بَرَدَ قَالَ أَأَنْتَ أَبُوْ جَهْلٍ قَالَ
فَأَخَذَ بِلِحْيَتِهِ قَالَ وَهَلْ فَوْقَ رَجُلٍ قَتَلْتُمُوْهُ أَوْ رَجُلٍ
قَتَلَهُ قَوْمُهُ قَالَ أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ أَنْتَ أَبُوْ جَهْلٍ
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (বাদ্রের দিন) নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আবূ জাহলের কী অবস্থা হল কেউ তা দেখতে পার কি? তখন
ইব্নু মাস‘ঊদ (রাঃ) বের হলেন এবং দেখতে পেলেন যে, ‘আফ্রার দুই পুত্র তাকে
এমনিভাবে মেরেছে যে, মুমূর্ষু অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। ‘আবদুল্লাহ ইব্নু মাস‘ঊদ
(রাঃ) বললেন, তুমিই কি আবূ জাহ্ল? রাবী বলেনঃ আবূ জাহ্ল বললঃ সেই লোকটির চেয়ে
উত্তম আর কেউ আছে কি যাকে তার গোত্রের লোকেরা হত্যা করল অথবা বলল তোমরা যাকে হত্যা
করলে? আহমদ বিন ইউনুসের বর্ণনায় এসেছে, তুমি আবূ জাহ্ল।
[৩৯৬৩, ৪০২০] (আ.প্র. ৩৬৭১, ই.ফা. ৩৬৭৩)
[৩৯৬৩, ৪০২০] (আ.প্র. ৩৬৭১, ই.ফা. ৩৬৭৩)
৩৯৬৩
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ عَدِيٍّ عَنْ
سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يَوْمَ بَدْرٍ مَنْ يَنْظُرُ مَا فَعَلَ أَبُوْ جَهْلٍ فَانْطَلَقَ ابْنُ
مَسْعُوْدٍ فَوَجَدَهُ قَدْ ضَرَبَهُ ابْنَا عَفْرَاءَ حَتَّى بَرَدَ فَأَخَذَ
بِلِحْيَتِهِ فَقَالَ أَنْتَ أَبَا جَهْلٍ قَالَ وَهَلْ فَوْقَ رَجُلٍ قَتَلَهُ
قَوْمُهُ أَوْ قَالَ قَتَلْتُمُوْهُ
حَدَّثَنِي ابْنُ الْمُثَنَّى أَخْبَرَنَا مُعَاذُ بْنُ مُعَاذٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ أَخْبَرَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ نَحْوَهُ
حَدَّثَنِي ابْنُ الْمُثَنَّى أَخْبَرَنَا مُعَاذُ بْنُ مُعَاذٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ أَخْبَرَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ نَحْوَهُ
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, বাদ্রের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আবূ জাহ্ল কী করল, তোমাদের কে তা জেনে আসবে? তখন ইব্নু
মাস‘উদ (রাঃ) চলে গেলেন এবং তিনি দেখতে পেলেন, ‘আফরার দুই পুত্র তাকে এমনিভাবে
পিটিয়েছে যে, সে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে আছে। তখন তিনি তার দাড়ি ধরে বললেন, তুমি কি
আবূ জাহ্ল? উত্তরে সে বলল, সেই লোকটির চেয়ে উত্তম আর কেউ আছে কি যাকে তার গোত্রের
লোকেরা হত্যা করল অথবা বলল তোমরা যাকে হত্যা করলে? [৩]
ইব্নু মুসান্না (রহঃ)..... আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে অনুরূপ একটি রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে।
[৩৯৬২] (আ.প্র. ৩৬৭২, ই.ফা. ৩৬৭৪)
ইব্নু মুসান্না (রহঃ)..... আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে অনুরূপ একটি রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে।
[৩৯৬২] (আ.প্র. ৩৬৭২, ই.ফা. ৩৬৭৪)
[৩] কুরায়শদের
এতবড় একজন প্রভাবশালী সেনাপতি যে কিনা অল্প বয়স্ক দুজন সহোদর মু‘আয ও মু‘আওয়িয এর হাতে
নিহত হলো। এটি আল্লাহ্ তা‘আলার বিশেষ নিদর্শন। কারণ এটা কাফিরদের জন্য ছিল একটি লজ্জাজনক
ও বিরাট ক্ষতির ব্যাপার। দ্বিতীয়ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নেতৃত্বে সংঘটিত প্রথম যুদ্ধে কাফিররা এক হাজার থাকলেও মুসলিমদের সংখ্যা ছিল মাত্র
তিনশত তেরজন। তথাপি আল্লাহ্র অশেষ রাহমাতে মুসলিমগণ এ যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং তাদের
মনোবল অনেকগুণ বেড়ে যায়। হাদীসে আবূ জাহালের মৃত্যুপূর্ব অবস্থা বর্ণিত হয়েছে।
৩৯৬৪
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَتَبْتُ عَنْ يُوْسُفَ بْنِ
الْمَاجِشُوْنِ عَنْ صَالِحِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ فِيْ
بَدْرٍ يَعْنِيْ حَدِيْثَ ابْنَيْ عَفْرَاءَ
বর্ণনাকারী
থেকে বর্ণিতঃ
ইব্রাহীমের দাদা থেকে বদর তথা ‘আফ্রার দুই
ছেলের সম্পর্কে এক রেওয়ায়ত বর্ণনা করেছেন।
[৩১৪১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ নেই, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৭৫)
[৩১৪১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ নেই, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৭৫)
৩৯৬৫
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الرَّقَاشِيُّ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ قَالَ
سَمِعْتُ أَبِيْ يَقُوْلُ حَدَّثَنَا أَبُوْ مِجْلَزٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ
عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ أَنَّهُ قَالَ أَنَا أَوَّلُ مَنْ يَجْثُوْ
بَيْنَ يَدَيْ الرَّحْمَنِ لِلْخُصُوْمَةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَقَالَ قَيْسُ
بْنُ عُبَادٍ وَفِيْهِمْ أُنْزِلَتْ {هٰذَانِ خَصْمَانِ اخْتَصَمُوْا فِيْ
رَبِّهِمْ} قَالَ هُمْ الَّذِيْنَ تَبَارَزُوْا يَوْمَ بَدْرٍ حَمْزَةُ وَعَلِيٌّ
وَعُبَيْدَةُ أَوْ أَبُوْ عُبَيْدَةَ بْنُ الْحَارِثِ وَشَيْبَةُ بْنُ رَبِيْعَةَ
وَعُتْبَةُ بْنُ رَبِيْعَةَ وَالْوَلِيْدُ بْنُ عُتْبَةَ
‘আলী
ইব্নু আবূ ত্বলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সর্বপ্রথম আমিই ক্বিয়ামাতের দিন
দয়াময়ের সামনে বিবাদ মীমাংসার জন্য হাঁটু গেড়ে বসব। ক্বায়স ইব্নু ‘উবাদ (রাঃ)
বলেন, এদের সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়েছেঃ “এরা দু’টি বিবদমান পক্ষ তাদের প্রতিপালক
সম্পর্কে বিতর্ক করে”- (সূরা হাজ্জ ২২/১৯)। তিনি বলেন, (মুসলিম পক্ষের) তারা হলেন
হাম্যা, ‘আলী ও ‘উবাইদাহ অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) আবূ ‘উবাইদাহ ইব্নুল হারিস
(রাঃ) (অপরপক্ষে) শায়বা বিন রাবী‘আহ, ‘উত্বাহ বিন রাবী‘আহ এবং ওয়ালীদ ইব্নু ‘উত্বাহ
যারা বদর যুদ্ধের দিন পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন [৪]।
[৩৯৬৭, ৪৭৪৪] (আ.প্র. ৩৬৭৩, ই.ফা. ৩৬৭৬)
[৩৯৬৭, ৪৭৪৪] (আ.প্র. ৩৬৭৩, ই.ফা. ৩৬৭৬)
[৪] বাদ্রের যুদ্ধের দিন মল্ল যুদ্ধের মাধ্যমে যুদ্ধ
শুরু হয়েছিল। হামযাহ (রাঃ) শাইবাহ ইব্নু রাবী‘আহ্কে, ‘আলী (রাঃ) ওয়ালিদ ইব্নু ‘উত্বাহ্কে
মল্ল যুদ্ধে পরাজিত করে তাদেরকে হত্যা করেন। কিন্তু ‘উবাইদাহ (রাঃ) ‘উত্বাহ ইব্নু
রাবী‘আহ্কে মারাত্মকভাবে আহত করলেও তিনিও মারাত্মক আহত হন এবং পরে শহীদ হন। হামযাহ
(রাঃ) ও ‘আলী (রাঃ) ‘উতবাহ ইব্নু রাবী‘আহকে হত্যার ব্যাপারে ‘উবাইদাহকে সহযোগিতা করেছিলেন।
৩৯৬৬
قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْ هَاشِمٍ عَنْ أَبِيْ مِجْلَزٍ
عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ قَالَ نَزَلَتْ {هٰذَانِ خَصْمَانِ
اخْتَصَمُوْا فِيْ رَبِّهِمْ} فِيْ سِتَّةٍ مِنْ قُرَيْشٍ عَلِيٍّ وَحَمْزَةَ
وَعُبَيْدَةَ بْنِ الْحَارِثِ وَشَيْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ وَعُتْبَةَ بْنِ
رَبِيْعَةَ وَالْوَلِيْدِ بْنِ عُتْبَةَ
আবূ
যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ “এরা দু’টি বিবদমান দল তারা
তাদের প্রতিপালক সম্বন্ধে বিতর্ক করে”-(সূরাহ হাজ্জ ২২/১৯) আয়াতটি কুরাইশ গোত্রীয়
ছয়জন লোক সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। তারা হলেন, (মুসলিম পক্ষ) ‘আলী, হামযাহ,
‘উবাইদাহ ইবনুল হারিস (রাঃ) ও (কাফির পক্ষে) শায়বা ইব্নু রাবী‘আহ, ‘উত্বাহ ইব্নু
রাবী‘আহ এবং ওয়ালীদ ইব্নু ‘উত্বাহ।
[৩৯৬৮, ৩৯৬৯, ৪৭৪৩] (আ.প্র. ৩৬৭৪, ই.ফা. ৩৬৭৭)
[৩৯৬৮, ৩৯৬৯, ৪৭৪৩] (আ.প্র. ৩৬৭৪, ই.ফা. ৩৬৭৭)
৩৯৬৭
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ الصَّوَّافُ حَدَّثَنَا يُوْسُفُ بْنُ
يَعْقُوْبَ كَانَ يَنْزِلُ فِيْ بَنِيْ ضُبَيْعَةَ وَهُوَ مَوْلًى لِبَنِيْ
سَدُوْسَ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ عَنْ أَبِيْ مِجْلَزٍ عَنْ قَيْسِ
بْنِ عُبَادٍ قَالَ قَالَ عَلِيٌّ فِيْنَا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ {هٰذَانِ
خَصْمَانِ اخْتَصَمُوْا فِيْ رَبِّهِمْ}
কায়স
ইব্নু উবাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) বলেছেনঃ “এরা দু’টি
বিবদমান পক্ষ, তারা তাদের প্রতিপালক সম্পর্কে বিতর্ক করে”-(সূরা হাজ্জ ২২/১৯)
আয়াতটি আমাদের সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়েছে।
[৩৯৬৫] (আ.প্র. ৩৬৭৫, ই.ফা. ৩৬৭৮)
[৩৯৬৫] (আ.প্র. ৩৬৭৫, ই.ফা. ৩৬৭৮)
৩৯৬৮
يَحْيَى بْنُ جَعْفَرٍ أَخْبَرَنَا وَكِيْعٌ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ أَبِيْ
هَاشِمٍ عَنْ أَبِيْ مِجْلَزٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ
يُقْسِمُ لَنَزَلَتْ هَؤُلَاءِ الآيَاتُ فِيْ هَؤُلَاءِ الرَّهْطِ السِّتَّةِ
يَوْمَ بَدْرٍ نَحْوَهُ
কায়স
ইব্নু উবাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(তিনি বলেছেন) আমি আবূ যার (রাঃ)-কে কসম করে
বলতে শুনেছি যে, উপর্যুক্ত আয়াতগুলো উল্লিখিত বাদ্রের দিন ঐ ছয় ব্যক্তি সম্পর্কে
অবতীর্ণ হয়েছিল।
[৩৯৬৬] (আ.প্র. ৩৬৭৬, ই.ফা. ৩৬৭৯)
[৩৯৬৬] (আ.প্র. ৩৬৭৬, ই.ফা. ৩৬৭৯)
৩৯৬৯
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ الدَّوْرَقِيُّ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ
أَخْبَرَنَا أَبُوْ هَاشِمٍ عَنْ أَبِيْ مِجْلَزٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ قَالَ
سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ يُقْسِمُ قَسَمًا إِنَّ هَذِهِ الآيَةَ {هٰذَانِ خَصْمَانِ
اخْتَصَمُوْا فِيْ رَبِّهِمْ} نَزَلَتْ فِي الَّذِيْنَ بَرَزُوْا يَوْمَ بَدْرٍ
حَمْزَةَ وَعَلِيٍّ وَعُبَيْدَةَ بْنِ الْحَارِثِ وَعُتْبَةَ وَشَيْبَةَ ابْنَيْ
رَبِيْعَةَ وَالْوَلِيْدِ بْنِ عُتْبَ
ক্বায়স
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি আবূ যার (রাঃ)-কে কসম করে
বলতে শুনেছি যে, “এরা দু’টি বিবদমান পক্ষ তারা তাদের প্রতিপালক সম্বন্ধে বিতর্ক
করে” আয়াতটি বাদ্রের দিন পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হামযা, ‘আলী, ‘উবাইদাহ ইব্নুল
হারিস, রাবী‘আহ্র দুই পুত্র ‘উত্বাহ ও শায়বাহ এবং ওয়ালীদ ইব্নু ‘উত্বাহ্র
সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয়েছে।
[৩৯৬৬] (আ.প্র. ৩৬৭৭, ই.ফা. ৩৬৮০)
[৩৯৬৬] (আ.প্র. ৩৬৭৭, ই.ফা. ৩৬৮০)
৩৯৭০
أَحْمَدُ بْنُ سَعِيْدٍ أَبُوْ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ
مَنْصُوْرٍ السَّلُوْلِيُّ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ أَبِيْهِ
عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ سَأَلَ رَجُلٌ الْبَرَاءَ وَأَنَا أَسْمَعُ قَالَ أَشَهِدَ
عَلِيٌّ بَدْرًا قَالَ بَارَزَ وَظَاهَرَ
আবূ
ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি শুনলাম, এক ব্যক্তি বারা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস
করল, ‘আলী (রাঃ) কি বাদ্রের যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন? তিনি বললেন, ‘আলী ঐ যুদ্ধে
মুকাবালা করেছিলেন এবং হাক্কে বিজয়ী করেছিলেন।
(আ.প্র. ৩৬৭৮, ই.ফা. ৩৬৮১)
(আ.প্র. ৩৬৭৮, ই.ফা. ৩৬৮১)
৩৯৭১
عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ يُوْسُفُ بْنُ
الْمَاجِشُوْنِ عَنْ صَالِحِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
عَوْفٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ كَاتَبْتُ أُمَيَّةَ
بْنَ خَلَفٍ فَلَمَّا كَانَ يَوْمَ بَدْرٍ فَذَكَرَ قَتْلَهُ وَقَتْلَ ابْنِهِ
فَقَالَ بِلَالٌ لَا نَجَوْتُ إِنْ نَجَا أُمَيَّةُ
‘আবদুর
রাহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমাইয়া ইব্নু খালফে্র সঙ্গে
একটি চুক্তি করেছিলাম। বদর যুদ্ধের দিন তিনি ‘উমাইয়াহ ইব্নু খালাফ ও তার পুত্রের
নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করলে বিলাল (রাঃ) বললেন, যদি ‘উমাইয়াহ ইব্নু খালাফ প্রাণে
বেঁচে যেত তাহলে আমি সফল হতাম না। [৫]
[২৩০১] (আ.প্র. ৩৬৭৯, ই.ফা. ৩৬৮২)
[২৩০১] (আ.প্র. ৩৬৭৯, ই.ফা. ৩৬৮২)
[৫] বিলাল
(রাঃ) উমাইয়া বিন খালাফের ক্রীতদাস ছিলেন। বিলাল (রাঃ) ইসলাম কবূল করলে এই ইসলামের
ঘোর শত্রু তা মেনে নিতে পারলো না। ফলে তাকে অসহনীয় নির্যাতন স্বীকার করতে হয় এমনকি
দুপুর রোদের উত্তপ্ত বালুর উপর শুইয়ে বুকের উপর বিশাল আকৃতির পাথর চাপা দিয়ে তাকে ইসলাম
ত্যাগ করতে বাধ্য করতে চেয়েছিল কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে ধৈর্য প্রদান করেছিলেন
এবং তিনি ইসলাম ত্যাগ করেননি। অতঃপর আবূ বাক্র (রাঃ) তাকে ক্রয় করে আযাদ করে দিয়েছিলেন।
বাদ্র যুদ্ধে উমাইয়াহ ও তার পুত্র নিহত হওয়ার কথা শুনে বিলাল (রাঃ) এভাবেই তার অভিব্যক্তি
বর্ণনা করেছেন।
৩৯৭২
عَبْدَانُ بْنُ عُثْمَانَ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ
أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ الْأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم أَنَّهُ قَرَأَ {وَالنَّجْمِ} فَسَجَدَ بِهَا وَسَجَدَ مَنْ مَعَهُ
غَيْرَ أَنَّ شَيْخًا أَخَذَ كَفًّا مِنْ تُرَابٍ فَرَفَعَهُ إِلَى جَبْهَتِهِ
فَقَالَ يَكْفِيْنِيْ هَذَا قَالَ عَبْدُ اللهِ فَلَقَدْ رَأَيْتُهُ بَعْدُ قُتِلَ
كَافِرًا
‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা
নাজ্ম তিলাওয়াত করলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে সাজ্দাহ করলেন। এক বৃদ্ধ ব্যতীত নাবীজীর
নিকট যারা উপস্থিত ছিলেন তারা সকলেই সাজ্দাহ করলেন। সে বৃদ্ধ একমুষ্ঠি মাটি উঠিয়ে
কপালে লাগিয়ে বলল, আমার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, কিছু দিন পর
আমি তাকে কাফির অবস্থায় নিহত হতে দেখেছি। [৬]
[১০৬৭] (আ.প্র. ৩৬৮০, ই.ফা. ৩৬৮৩ প্রথমাংশ)
[১০৬৭] (আ.প্র. ৩৬৮০, ই.ফা. ৩৬৮৩ প্রথমাংশ)
[৬] বৃদ্ধটি
ছিল ইসলামের ঘোরতর শত্রু উমাইয়া বিন খালাফ।
৩৯৭৩
أَخْبَرَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوْسُفَ
عَنْ مَعْمَرٍ أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ عُرْوَةَ قَالَ كَانَ فِي الزُّبَيْرِ
ثَلَاثُ ضَرَبَاتٍ بِالسَّيْفِ إِحْدَاهُنَّ فِيْ عَاتِقِهِ قَالَ إِنْ كُنْتُ
لَأُدْخِلُ أَصَابِعِيْ فِيْهَا قَالَ ضُرِبَ ثِنْتَيْنِ يَوْمَ بَدْرٍ
وَوَاحِدَةً يَوْمَ الْيَرْمُوْكِ قَالَ عُرْوَةُ وَقَالَ لِيْ عَبْدُ الْمَلِكِ
بْنُ مَرْوَانَ حِيْنَ قُتِلَ عَبْدُ اللهِ بْنُ الزُّبَيْرِ يَا عُرْوَةُ هَلْ
تَعْرِفُ سَيْفَ الزُّبَيْرِ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَمَا فِيْهِ قُلْتُ فِيْهِ
فَلَّةٌ فُلَّهَا يَوْمَ بَدْرٍ قَالَ صَدَقْتَ :
بِـهِـنَّ فُـلُوْلٌ مِـنْ قِـرَاعِ الْـكَـتَـائِـبِ
ثُمَّ رَدَّهُ عَلَى عُرْوَةَ قَالَ هِشَامٌ فَأَقَمْنَاهُ بَيْنَنَا ثَلَاثَةَ آلَافٍ وَأَخَذَهُ بَعْضُنَا وَلَوَدِدْتُ أَنِّيْ كُنْتُ أَخَذْتُهُ
بِـهِـنَّ فُـلُوْلٌ مِـنْ قِـرَاعِ الْـكَـتَـائِـبِ
ثُمَّ رَدَّهُ عَلَى عُرْوَةَ قَالَ هِشَامٌ فَأَقَمْنَاهُ بَيْنَنَا ثَلَاثَةَ آلَافٍ وَأَخَذَهُ بَعْضُنَا وَلَوَدِدْتُ أَنِّيْ كُنْتُ أَخَذْتُهُ
হিশামের
পিতা (‘উরওয়াহ) (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (তার পিতা) যুবায়রের শরীরে তিনটি
মারাত্মক জখমের চিহ্ন বিদ্যমান ছিল। এর একটি ছিল তার স্কন্ধে। ‘উরওয়াহ বলেন, আমি
আমার আঙ্গুলগুলো ঐ ক্ষতস্থানে ঢুকিয়ে দিতাম, বর্ণনাকারী ‘উরওয়াহ বলেন, ঐ আঘাত
তিনটির দু’টি ছিল বদর যুদ্ধের এবং একটি ছিল ইয়ারমুক যুদ্ধের। ‘উরওয়াহ বলেন,
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু যুবায়র শহীদ হলেন তখন ‘আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান আমাকে বললেন, হে
‘উরওয়াহ, যুবায়রের তরবারি তুমি কি চিন? আমি বললাম হাঁ চিনি। ‘আবদুল মালিক বললেন,
এর কি কোন নিশানা আছে? আমি বললাম, এর ধারে এক জায়গায় ভাঙ্গা আছে যা বদর যুদ্ধের
দিন ভেঙ্গে ছিল। তখন তিনি বললেন, হাঁ তুমি ঠিক বলেছ, (তারপর তিনি একটি কবিতাংশ
আবৃত্তি করলেন)
بِـهِـنَّ فُـلُوْلٌ مِـنْ قِـرَاعِ الْـكَـتَـائِـبِ
সে তরবারির ভাঙ্গন ছিল শত্রু সেনাদের আঘাত করার কারণে। এরপর ‘আবদুল মালিক তরবারি খানা ‘উরওয়ার নিকট ফিরিয়ে দিলেন। হিশাম বলেন, আমরা নিজেরা এর মূল্য স্থির করেছিলাম তিন হাজার দিরহাম। এরপর আমাদের এক ব্যক্তি সেটা নিল। আমার ইচ্ছে হয়েছিল যদি আমি তরবারিটি নিয়ে নিতাম।
[৩৭২১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৩ শেষাংশ)
بِـهِـنَّ فُـلُوْلٌ مِـنْ قِـرَاعِ الْـكَـتَـائِـبِ
সে তরবারির ভাঙ্গন ছিল শত্রু সেনাদের আঘাত করার কারণে। এরপর ‘আবদুল মালিক তরবারি খানা ‘উরওয়ার নিকট ফিরিয়ে দিলেন। হিশাম বলেন, আমরা নিজেরা এর মূল্য স্থির করেছিলাম তিন হাজার দিরহাম। এরপর আমাদের এক ব্যক্তি সেটা নিল। আমার ইচ্ছে হয়েছিল যদি আমি তরবারিটি নিয়ে নিতাম।
[৩৭২১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৩ শেষাংশ)
৩৯৭৪
حَدَّثَنَا فَرْوَةُ حَدَّثَنَا عَلِيٌّ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ
كَانَ سَيْفُ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ مُحَلًّى بِفِضَّةٍ قَالَ هِشَامٌ
وَكَانَ سَيْفُ عُرْوَةَ مُحَلًّى بِفِضَّةٍ
হিশামের
পিতা (‘উরওয়াহ) (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুবায়র (রাঃ)-এর তরবারি রৌপ্যের কারুকার্য
মণ্ডিত ছিল। হিশাম (রহঃ) বলেন, ‘উরওয়াহ (রহঃ)-এর তরবারিটিও রৌপ্যের কারুকার্য
মন্ডিত ছিল।
(আ.প্র. ৩৬৮২, ই.ফা. ৩৬৮৪)
(আ.প্র. ৩৬৮২, ই.ফা. ৩৬৮৪)
৩৯৭৫
أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ
عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ أَصْحَابَ رَسُوْلِ اللهِصلى الله عليه وسلم
قَالُوْا لِلزُّبَيْرِ يَوْمَ الْيَرْمُوْكِ أَلَا تَشُدُّ فَنَشُدَّ مَعَكَ
فَقَالَ إِنِّيْ إِنْ شَدَدْتُ كَذَبْتُمْ فَقَالُوْا لَا نَفْعَلُ فَحَمَلَ
عَلَيْهِمْ حَتَّى شَقَّ صُفُوْفَهُمْ فَجَاوَزَهُمْ وَمَا مَعَهُ أَحَدٌ ثُمَّ
رَجَعَ مُقْبِلًا فَأَخَذُوْا بِلِجَامِهِ فَضَرَبُوْهُ ضَرْبَتَيْنِ عَلَى
عَاتِقِهِ بَيْنَهُمَا ضَرْبَةٌ ضُرِبَهَا يَوْمَ بَدْرٍ قَالَ عُرْوَةُ كُنْتُ
أُدْخِلُ أَصَابِعِيْ فِيْ تِلْكَ الضَّرَبَاتِ أَلْعَبُ وَأَنَا صَغِيْرٌ قَالَ
عُرْوَةُ وَكَانَ مَعَهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ الزُّبَيْرِ يَوْمَئِذٍ وَهُوَ ابْنُ
عَشْرِ سِنِيْنَ فَحَمَلَهُ عَلَى فَرَسٍ وَوَكَّلَ بِهِ رَجُلًا
‘উরওয়াহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইয়ারমুকের দিন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবাগণ যুবায়র (রাঃ) কে বলেন যে, (মুশরিকদের প্রতি)
আপনি কি আক্রমণ জোরদার করবেন না তাহলে আমরাও আপনার সঙ্গে আক্রমণ জোরদার করব। তখন
তিনি বলেন, আমি যদি আক্রমণ জোরালো করি তখন তোমরা পিছে সরে পড়বে। তখন তারা বললেন,
আমরা তা করব না। এরপর তিনি তাদের উপর আক্রমণ করলেন। এমনকি শত্রুদের ব্যুহ ভেদ করে
সামনে এগিয়ে গেলেন। তাদের সঙ্গে আর কেউই ছিল না। ফেরার সময় শত্রুর মুখে পড়লে তাঁর
ঘোড়ার লাগাম ধরে ফেলে এবং তাঁর কাঁধের উপর দু’টি আঘাত করে, যে আঘাত দু’টির মাঝেই
রয়েছে বদর দিনের আঘাতের চিহ্নটি। ‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, বাল্যবস্থায় ঐ ক্ষত
চিহ্নগুলোতে আমার সবগুলো আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে আমি খেলা করতাম। ‘উরওয়াহ (রহঃ) আরো
বলেন, ঐদিন তার সঙ্গে ‘আবদুল্লাহ ইব্নু যুবায়র (রাঃ)-ও ছিলেন, তখন তার বয়স ছিল দশ
বছর। যুবায়র (রাঃ), তাকে ঘোড়ার পিঠে উঠিয়ে নিলেন এবং এক ব্যক্তিকে তার দেখাশোনার
দায়িত্ব দিলেন। [৩৭২১]
(আ.প্র. ৩৬৮৩, ই.ফা. ৩৬৮৫)
(আ.প্র. ৩৬৮৩, ই.ফা. ৩৬৮৫)
৩৯৭৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ سَمِعَ رَوْحَ بْنَ عُبَادَةَ حَدَّثَنَا
سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ عَرُوْبَةَ عَنْ قَتَادَةَ قَالَ ذَكَرَ لَنَا أَنَسُ بْنُ
مَالِكٍ عَنْ أَبِيْ طَلْحَةَ أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ
يَوْمَ بَدْرٍ بِأَرْبَعَةٍ وَعِشْرِيْنَ رَجُلًا مِنْ صَنَادِيْدِ قُرَيْشٍ
فَقُذِفُوْا فِيْ طَوِيٍّ مِنْ أَطْوَاءِ بَدْرٍ خَبِيْثٍ مُخْبِثٍ وَكَانَ إِذَا
ظَهَرَ عَلَى قَوْمٍ أَقَامَ بِالْعَرْصَةِ ثَلَاثَ لَيَالٍ فَلَمَّا كَانَ
بِبَدْرٍ الْيَوْمَ الثَّالِثَ أَمَرَ بِرَاحِلَتِهِ فَشُدَّ عَلَيْهَا رَحْلُهَا
ثُمَّ مَشَى وَاتَّبَعَهُ أَصْحَابُهُ وَقَالُوْا مَا نُرَى يَنْطَلِقُ إِلَّا
لِبَعْضِ حَاجَتِهِ حَتَّى قَامَ عَلَى شَفَةِ الرَّكِيِّ فَجَعَلَ يُنَادِيْهِمْ
بِأَسْمَائِهِمْ وَأَسْمَاءِ آبَائِهِمْ يَا فُلَانُ بْنَ فُلَانٍ وَيَا فُلَانُ
بْنَ فُلَانٍ أَيَسُرُّكُمْ أَنَّكُمْ أَطَعْتُمْ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَإِنَّا
قَدْ وَجَدْنَا مَا وَعَدَنَا رَبُّنَا حَقًّا فَهَلْ وَجَدْتُمْ مَا وَعَدَ
رَبُّكُمْ حَقًّا قَالَ فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا تُكَلِّمُ مِنْ
أَجْسَادٍ لَا أَرْوَاحَ لَهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
وَالَّذِيْ نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ مَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ لِمَا أَقُوْلُ
مِنْهُمْ قَالَ قَتَادَةُ أَحْيَاهُمْ اللهُ حَتَّى أَسْمَعَهُمْ قَوْلَهُ
تَوْبِيخًا وَتَصْغِيْرًا وَنَقِيْمَةً وَحَسْرَةً وَنَدَمًا
আবূ
ত্বলহা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বাদ্রের দিন আল্লাহ্র নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশে চব্বিশজন কুরাইশ সর্দারের লাশ বদর প্রান্তরের
একটি নোংরা আবর্জনাপূর্ণ কূপে নিক্ষেপ করা হল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কোন দলের বিরুদ্ধে জয় লাভ করলে সে স্থানের পার্শ্বে তিন দিন অবস্থান
করতেন। বদর প্রান্তরে অবস্থানের পর তৃতীয় দিনে তিনি তাঁর সাওয়ারী প্রস্তুত করার
আদেশ দিলেন, সাওয়ারীর জিন শক্ত করে বাঁধা হল। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পদব্রজে অগ্রসর হলে সাহাবীগণও তাঁর পেছনে পেছনে চললেন। তাঁরা
বলেন, আমরা ভাবছিলাম, কোন প্রয়োজনে তিনি কোথাও যাচ্ছেন। অতঃপর তিনি ঐ কূপের কিনারে
গিয়ে দাঁড়ালেন এবং কূপে নিক্ষিপ্ত ঐ নিহত ব্যক্তিদের নাম ও তাদের পিতার নাম ধরে
ডাকতে শুরু করলেন, হে অমুকের পুত্র অমুক, হে অমুকের পুত্র অমুক! তোমরা কি এখন
অনুভব করতে পারছ যে, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য তোমাদের জন্য পরম খুশীর বিষয়
ছিল? আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন আমরা তো তা সত্য পেয়েছি,
তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন তোমরাও তা সত্য পেয়েছ কি?
বর্ণনাকারী বলেন, ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)! আপনি আত্মাহীন দেহগুলোর সঙ্গে কী কথা বলছেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, ঐ মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, আমি যা
বলেছি তা তাদের চেয়ে তোমরা অধিক শুনতে পাচ্ছ না। ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কথার মাধ্যমে তাদেরকে ধমক, লাঞ্ছনা,
দুঃখ-কষ্ট, আফসোস এবং লজ্জা দেয়ার জন্য (সাময়িকভাবে) তাদের দেহে প্রাণসঞ্চার
করেছিলেন।
[৩০৬৫; মুসলিম ৫১/১৭, হাঃ ২৮৭৫, আহমদ হাঃ ১২০২] (আ.প্র. ৩৬৮৪, ই.ফা. ৩৬৮৬)
[৩০৬৫; মুসলিম ৫১/১৭, হাঃ ২৮৭৫, আহমদ হাঃ ১২০২] (আ.প্র. ৩৬৮৪, ই.ফা. ৩৬৮৬)
৩৯৭৭
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرٌو عَنْ عَطَاءٍ عَنْ
ابْنِ عَبَّاسٍ {اَلَّذِيْنَ بَدَّلُوْا نِعْمَةَ اللهِ كُفْرًا} قَالَ هُمْ
وَاللهِ كُفَّارُ قُرَيْشٍ قَالَ عَمْرٌو هُمْ قُرَيْشٌ وَمُحَمَّدٌ صلى الله عليه
وسلم نِعْمَةُ اللهِ {وَأَحَلُّوْا قَوْمَهُمْ دَارَ الْبَوَارِ} قَالَ النَّارَ
يَوْمَ بَدْرٍ
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি {اَلَّذِيْنَ بَدَّلُوْا نِعْمَةَ اللهِ كُفْرًا}
অর্থাৎ ‘‘যারা আল্লাহর অনুগ্রহের পরিবর্তে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে’’ সূরা ইবরাহীম-এর
২৮ আয়াতাংশ সম্পর্কে বলেছেন, আল্লাহর কসম, এরা হল কাফির কুরাইশ গোষ্ঠী। ‘আমর (রহ.)
বলেন, এরা হচ্ছে কুরাইশ গোষ্ঠী এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম
হচ্ছেন আল্লাহর নি‘য়ামাত এবং {وَأَحَلُّوْا قَوْمَهُمْ دَارَ الْبَوَارِ}
(নিজেদের জাতিকে তারা নামিয়ে আনে ধ্বংসের পর্যায়ে) সূরা ইবরাহীম-এর ২৮ আয়াতাংশের
মাঝে বর্ণিত الْبَوَارِ এর
অর্থ হচ্ছে النَّار
জাহান্নাম। (অর্থাৎ বদর যুদ্ধের দিন তারা তাদের জাতিকে জাহান্নামে পৌঁছিয়ে দিয়েছে।)
[৪৭০০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৭)
[৪৭০০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৭)
৩৯৭৮
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ
عَنْ أَبِيْهِ قَالَ ذُكِرَ عِنْدَ عَائِشَةَ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَفَعَ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ الْمَيِّتَ يُعَذَّبُ فِيْ قَبْرِهِ
بِبُكَاءِ أَهْلِهِ فَقَالَتْ وَهَلَ إِنَّمَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم إِنَّهُ لَيُعَذَّبُ بِخَطِيئَتِهِ وَذَنْبِهِ وَإِنَّ أَهْلَهُ لَيَبْكُوْنَ
عَلَيْهِ الآنَ
হিশামের
পিতা (‘উরওয়াহ) (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবার
পরিজনদের কান্নাকাটি করার ফলে কবরে শাস্তি দেয়া হয়। ইব্নু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কথাটি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর নিকট উল্লেখ
করা হলে তিনি বললেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো বলেছেন, মৃত
ব্যক্তির অন্যায় ও পাপের কারণে তাকে কবরে শাস্তি দেয়া হয়। অথচ তখনও তার পরিবারের
লোকেরা তার জন্য কান্নাকাটি করছে।
[১২৮৮] (আ.প্র. ৩৬৮৬, ই.ফা. ৩৬৮৮)
[১২৮৮] (আ.প্র. ৩৬৮৬, ই.ফা. ৩৬৮৮)
৩৯৭৯
قالت وَذَاكَ مِثْلُ قَوْلِهِ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
قَامَ عَلَى الْقَلِيْبِ وَفِيْهِ قَتْلَى بَدْرٍ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ فَقَالَ
لَهُمْ مَا قَالَ إِنَّهُمْ لَيَسْمَعُوْنَ مَا أَقُوْلُ إِنَّمَا قَالَ إِنَّهُمُ
الآنَ لَيَعْلَمُوْنَ أَنَّ مَا كُنْتُ أَقُوْلُ لَهُمْ حَقٌّ ثُمَّ قَرَأَتْ
{إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰى} {وَمَا أَنْتَ بِمُسْمِعٍ مَّنْ فِي
الْقُبُوْرِ} يَقُوْلُ حِيْنَ تَبَوَّءُوْا مَقَاعِدَهُمْ مِنْ النَّارِ
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ কথাটি ঐ কথাটিরই মত যা রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ কূপের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, যে কূপে বদর
যুদ্ধে নিহত মুশরিকদের নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তিনি তাদেরকে যা বলার বললেন (এবং
জানালেন) যে, আমি যা বলছি তারা তা সবই শুনতে পাচ্ছে। তিনি বললেন, এখন তারা ভালভাবে
জানতে পারছে যে, আমি তাদেরকে যা বলছিলাম তা ছিল সঠিক। এরপর ‘আয়িশাহ (রাঃ) {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰى}
অর্থাৎ ‘‘তুমি তো মৃতকে শুনাতে পারবে না’’- (সূরাহ নামল ২৭/৮০) {وَمَا أَنْتَ بِمُسْمِعٍ مَّنْ فِي الْقُبُوْرِ}
অর্থাৎ ‘‘এবং তুমি শুনাতে সমর্থ হবে না তাদেরকে যারা কবরে রয়েছে’’- (সূরাহ ফাতির
৩৫/২২) আয়াতাংশ দু’টো তিলাওয়াত করলেন। ‘উরওয়াহ (রহ.) বলেন, এর মানে হচ্ছে
জাহান্নামে যখন তারা তাদের আসন গ্রহণ করে নেবে।
[১৩৭১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৮)
[১৩৭১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৮)
৩৯৮০
عُثْمَانُ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ
عُمَرَ قَالَ وَقَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى قَلِيْبِ بَدْرٍ فَقَالَ
هَلْ وَجَدْتُمْ مَا وَعَدَ رَبُّكُمْ حَقًّا ثُمَّ قَالَ إِنَّهُمُ الآنَ
يَسْمَعُوْنَ مَا أَقُوْلُ فَذُكِرَ لِعَائِشَةَ فَقَالَتْ إِنَّمَا قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّهُمُ الآنَ لَيَعْلَمُوْنَ أَنَّ الَّذِيْ
كُنْتُ أَقُوْلُ لَهُمْ هُوَ الْحَقُّ ثُمَّ قَرَأَتْ {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ
الْمَوْتٰى} حَتَّى قَرَأَتْ الآيَةَ
ইব্ন
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বাদরে অবস্থিত কূপের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, (হে মুশরিকগণ) তোমাদের রব
তোমাদের কাছে যা ওয়াদা করেছিলেন তা তোমরা সত্য হিসেবে পেয়েছ কি? পরে তিনি বললেন, এ
মুহূর্তে তাদেরকে আমি যা বলছি তারা তা সবই শুনতে পাচ্ছে। এ বিষয়টি ‘আয়িশাহ (রাঃ)
এর সামনে উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা
বলেছেন তার অর্থ হল, তারা এখন জানতে পারছে যে, আমি তাদেরকে যা বলতাম তাই সঠিক ছিল।
এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেন: {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰى}
‘‘তুমি তো মৃতকে শুনাতে পার না’’- (সূরাহ নামল ২৭/৮০) এভাবে পুরো আয়াতটি তিলাওয়াত
করলেন।
[১৩৭০-৩৭১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৯)
[১৩৭০-৩৭১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৯)
৩৯৮১
عُثْمَانُ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ
عُمَرَ قَالَ وَقَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى قَلِيْبِ بَدْرٍ فَقَالَ
هَلْ وَجَدْتُمْ مَا وَعَدَ رَبُّكُمْ حَقًّا ثُمَّ قَالَ إِنَّهُمُ الآنَ
يَسْمَعُوْنَ مَا أَقُوْلُ فَذُكِرَ لِعَائِشَةَ فَقَالَتْ إِنَّمَا قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّهُمُ الآنَ لَيَعْلَمُوْنَ أَنَّ الَّذِيْ
كُنْتُ أَقُوْلُ لَهُمْ هُوَ الْحَقُّ ثُمَّ قَرَأَتْ {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ
الْمَوْتٰى} حَتَّى قَرَأَتْ الآيَةَ
ইব্ন
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বাদরে অবস্থিত কূপের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, (হে মুশরিকগণ) তোমাদের রব
তোমাদের কাছে যা ওয়াদা করেছিলেন তা তোমরা সত্য হিসেবে পেয়েছ কি? পরে তিনি বললেন, এ
মুহূর্তে তাদেরকে আমি যা বলছি তারা তা সবই শুনতে পাচ্ছে। এ বিষয়টি ‘আয়িশাহ (রাঃ)
এর সামনে উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা
বলেছেন তার অর্থ হল, তারা এখন জানতে পারছে যে, আমি তাদেরকে যা বলতাম তাই সঠিক ছিল।
এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেন: {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰى}
‘‘তুমি তো মৃতকে শুনাতে পার না’’- (সূরাহ নামল ২৭/৮০) এভাবে পুরো আয়াতটি তিলাওয়াত
করলেন।
[১৩৭০-৩৭১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৯)
[১৩৭০-৩৭১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৯)
৬৪/৯. অধ্যায়ঃ
বাদ্র যুদ্ধে যোগদানকারীগণের মর্যাদা
৩৯৮২
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو
حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ عَنْ حُمَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا يَقُوْلُ
أُصِيْبَ حَارِثَةُ يَوْمَ بَدْرٍ وَهُوَ غُلَامٌ فَجَاءَتْ أُمُّهُ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَدْ عَرَفْتَ
مَنْزِلَةَ حَارِثَةَ مِنِّيْ فَإِنْ يَكُنْ فِي الْجَنَّةِ أَصْبِرْ وَأَحْتَسِبْ
وَإِنْ تَكُ الْأُخْرَى تَرَى مَا أَصْنَعُ فَقَالَ وَيْحَكِ أَوَهَبِلْتِ
أَوَجَنَّةٌ وَاحِدَةٌ هِيَ إِنَّهَا جِنَانٌ كَثِيْرَةٌ وَإِنَّهُ فِيْ جَنَّةِ
الْفِرْدَوْسِ
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলতেন, হারিসাহ (রাঃ) একজন নও জওয়ান লোক
ছিলেন। বদর যুদ্ধে তিনি শাহাদাত বরণ করার পর তাঁর আম্মা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)! হারিসাহ আমার কত প্রিয় ছিল আপনি তা অবশ্যই জানেন। সে যদি জান্নাতী হয়
তাহলে আমি সবর করব এবং আল্লাহ্র নিকট সাওয়াবের আশা পোষণ করব। আর যদি ব্যাপার অন্য
রকম হয় তাহলে আপনি তো দেখতেই পাবেন, আমি যা করব। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কী হল, তুমি কি অজ্ঞান হয়ে গেলে? জান্নাত কি একটি?
জান্নাত অনেকগুলি, সে তো জান্নাতুল ফিরদাউসে রয়েছে।
[২৮০৯] (আ.প্র. ৩৬৮৮, ই.ফা. ৩৬৯০)
[২৮০৯] (আ.প্র. ৩৬৮৮, ই.ফা. ৩৬৯০)
৩৯৮৩
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ إِدْرِيْسَ
قَالَ سَمِعْتُ حُصَيْنَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ
عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ قَالَ بَعَثَنِيْ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا مَرْثَدٍ الْغَنَوِيَّ وَالزُّبَيْرَ
بْنَ الْعَوَّامِ وَكُلُّنَا فَارِسٌ قَالَ انْطَلِقُوْا حَتَّى تَأْتُوْا
رَوْضَةَ خَاخٍ فَإِنَّ بِهَا امْرَأَةً مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ مَعَهَا كِتَابٌ
مِنْ حَاطِبِ بْنِ أَبِيْ بَلْتَعَةَ إِلَى الْمُشْرِكِيْنَ فَأَدْرَكْنَاهَا
تَسِيْرُ عَلَى بَعِيْرٍ لَهَا حَيْثُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
فَقُلْنَا الْكِتَابُ فَقَالَتْ مَا مَعَنَا كِتَابٌ فَأَنَخْنَاهَا
فَالْتَمَسْنَا فَلَمْ نَرَ كِتَابًا فَقُلْنَا مَا كَذَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَنُجَرِّدَنَّكِ فَلَمَّا رَأَتْ
الْجِدَّ أَهْوَتْ إِلَى حُجْزَتِهَا وَهِيَ مُحْتَجِزَةٌ بِكِسَاءٍ
فَأَخْرَجَتْهُ فَانْطَلَقْنَا بِهَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَدْ خَانَ اللهَ وَرَسُوْلَهُ
وَالْمُؤْمِنِيْنَ فَدَعْنِيْ فَلِأَضْرِبَ عُنُقَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ مَا
حَمَلَكَ عَلَى مَا صَنَعْتَ قَالَ حَاطِبٌ وَاللهِ مَا بِيْ أَنْ لَا أَكُوْنَ
مُؤْمِنًا بِاللهِ وَرَسُوْلِهِ أَرَدْتُ أَنْ يَكُوْنَ لِيْ عِنْدَ الْقَوْمِ
يَدٌ يَدْفَعُ اللهُ بِهَا عَنْ أَهْلِيْ وَمَالِيْ وَلَيْسَ أَحَدٌ مِنْ
أَصْحَابِكَ إِلَّا لَهُ هُنَاكَ مِنْ عَشِيْرَتِهِ مَنْ يَدْفَعُ اللهُ بِهِ عَنْ
أَهْلِهِ وَمَالِهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَدَقَ وَلَا تَقُوْلُوْا لَهُ إِلَّا
خَيْرًا فَقَالَ عُمَرُ إِنَّهُ قَدْ خَانَ اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَالْمُؤْمِنِيْنَ
فَدَعْنِيْ فَلِأَضْرِبَ عُنُقَهُ فَقَالَ أَلَيْسَ مِنْ أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ
لَعَلَّ اللهَ اطَّلَعَ إِلَى أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ اعْمَلُوْا مَا شِئْتُمْ
فَقَدْ وَجَبَتْ لَكُمُ الْجَنَّةُ أَوْ فَقَدْ غَفَرْتُ لَكُمْ فَدَمَعَتْ
عَيْنَا عُمَرَ وَقَالَ اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ
‘আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ মারসাদ, যুবায়র (রাঃ) ও আমাকে কোন স্থানে প্রেরণ
করেছিলেন এবং আমরা সকলেই ছিলাম অশ্বারোহী। তিনি আমাদেরকে বললেন, তোমরা যাও। যেতে
যেতে তোমরা ‘রাওযা খাখ’ নামক জায়গায় পৌঁছে সেখানে একজন মুশরিকা নারী দেখতে পাবে।
তার কাছে মুশরিকদের প্রতি লিখিত হাতিব ইব্নু আবূ বালতার একটি চিঠি আছে। (সেটা
নিয়ে আসবে।) ‘আলী (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নির্দেশিত জায়গায় গিয়ে তাকে ধরে ফেললাম। সে তখন তার একটি উটের উপর চড়ে
পথ অতিক্রম করছিল। আমরা তাকে বললাম, পত্রখানা আমাদের নিকট দিয়ে দাও। সে বলল, আমার
নিকট কোন পত্র নেই। আমরা তখন তার উটটিকে বসিয়ে তার তল্লাশী করলাম। কিন্তু পত্রখানা
বের করতে পারলাম না। আমরা বললাম, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
মিথ্যা বলেননি। তোমাকে চিঠি বের করতেই হবে। নতুবা আমরা তোমাকে উলঙ্গ করে ছাড়ব। যখন
আমাদের শক্ত মনোভাব বুঝতে পারল তখন স্ত্রীলোকটি তার কোমরের পরিহিত বস্ত্রের গিঁটে
কাপড়ের পুঁটুলির মধ্য থেকে চিঠিখানা বের করে দিল। আমরা তা নিয়ে রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলাম। ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! সে তো আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল
এবং মু’মিনদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান
উড়িয়ে দিই। তখন নবী [হাতিব ইব্নু আবূ বালতা (রাঃ) কে ডেকে] বললেন, তোমাকে এ কাজ
করতে কিসে বাধ্য করল? হাতিব (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র কসম! আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের
প্রতি আমি অবিশ্বাসী নই। বরং আমার মূল উদ্দেশ্য হল শত্রু দলের প্রতি কিছু অনুগ্রহ
করা যাতে আল্লাহ্ এ উসিলায় আমার মাল এবং পরিবার ও পরিজনকে রক্ষা করেন। আর আপনার
সাহাবীদের প্রত্যেকেরই কোন না কোন আত্মীয় সেখানে রয়েছে, যার দ্বারা আল্লাহ্ তার
ধন-মাল ও পরিজনকে রক্ষা করছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
সে ঠিক কথাই বলেছে। সুতরাং তোমরা তার সম্পর্কে ভাল ব্যতীত আর কিছু বলো না। তখন
‘উমার (রাঃ) বললেন, সে তো আল্লাহ্, তাঁর রসূল ও মু’মিনদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
সুতরাং আপনি আমাকে ছেড়ে দিন, আমি তাঁর গর্দান উড়িয়ে দেই। রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে কি বাদ্রী সাহাবী নয়? অবশ্যই বদর
যুদ্ধে যোগদানকারীদেরকে বুঝে শুনেই আল্লাহ্ বলেছেনঃ “তোমাদের যা ইচ্ছে কর”
তোমাদের জন্য জান্নাত অবধারিত অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে
দিয়েছি। এতে ‘উমার (রাঃ)-এর দু’নয়ন অশ্রু সিক্ত হয়ে উঠল। তিনি বললেন, আল্লাহ্ ও
তাঁর রসূলই সবচেয়ে অধিক জ্ঞাত। [৭]
[৩০০৭] (আ.প্র. ৩৬৮৯, ই.ফা. ৩৬৯১)
[৩০০৭] (আ.প্র. ৩৬৮৯, ই.ফা. ৩৬৯১)
[৭] হাতিব
(রাঃ) ছিলেন বাদ্রী সাহাবী। তথাপি তিনি যেটি করেছিলেন তা গুপ্তচরবৃত্তি হিসেবে করেননি
বরং তিনি মনে করছিলেন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অকস্মাৎ মাক্কাহ্
আক্রমণ করলে তার পরিবার পরিজনকে তারা হত্যা করতে পারে এবং তার সহায় সম্পদের ক্ষতি করতে
পারে। এমন অনেকেরই পরিবার সেখানে ছিল যাদের এরূপ ক্ষতি হতে পারে যাদেরকে আশ্রয় দেয়ার
মতো কোন একটি পরিবারও মাক্কাহ্তে ছিল না। হাদীসটি হতে যা প্রমানিত হয়ঃ
(১) আল্লাহ্র নাবীর মু’জিযাহ,
(২) তাঁর কথার উপর সাহাবীদের অগাধ বিশ্বাস,
(৩) প্রতিপক্ষকে জিজ্ঞেস না করে কোন বিষয় মন্তব্য না করা,
(৪) কাউকে মুরতাদ মনে করলেও দায়িত্বশীলের অনুমতি ছাড়া তাকে হত্যা না করা,
(৫) বাদ্রী সাহাবীর ফাযীলাত,
(৬) অন্যায়ের বিরুদ্ধে ‘উমার (রাঃ)-এর কঠোরতা,
(৭) আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ফায়সালাই চূড়ান্ত,
(৮) নিজের ভুল বুঝার পড়ে অনুতপ্ত হওয়া।
(১) আল্লাহ্র নাবীর মু’জিযাহ,
(২) তাঁর কথার উপর সাহাবীদের অগাধ বিশ্বাস,
(৩) প্রতিপক্ষকে জিজ্ঞেস না করে কোন বিষয় মন্তব্য না করা,
(৪) কাউকে মুরতাদ মনে করলেও দায়িত্বশীলের অনুমতি ছাড়া তাকে হত্যা না করা,
(৫) বাদ্রী সাহাবীর ফাযীলাত,
(৬) অন্যায়ের বিরুদ্ধে ‘উমার (রাঃ)-এর কঠোরতা,
(৭) আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ফায়সালাই চূড়ান্ত,
(৮) নিজের ভুল বুঝার পড়ে অনুতপ্ত হওয়া।
৬৪/১০. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই
৩৯৮৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ حَدَّثَنَا أَبُوْ أَحْمَدَ
الزُّبَيْرِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْغَسِيْلِ عَنْ حَمْزَةَ
بْنِ أَبِيْ أُسَيْدٍ وَالزُّبَيْرِ بْنِ الْمُنْذِرِ بْنِ أَبِيْ أُسَيْدٍ عَنْ
أَبِيْ أُسَيْدٍ قَالَ قَالَ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ
بَدْرٍ إِذَا أَكْثَبُوْكُمْ فَارْمُوْهُمْ وَاسْتَبْقُوْا نَبْلَكُمْ
আবূ
উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বলেছিলেন, দুশমনরা তোমাদের নিকটবর্তী হলে তোমরা তীর
চালনা করবে এবং তীর ব্যবহারে সংযম অবলম্বন করবে।
[২৯০০] (আ.প্র. ৩৬৯০, ই.ফা. ৩৬৯২)
[২৯০০] (আ.প্র. ৩৬৯০, ই.ফা. ৩৬৯২)
৩৯৮৫
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أَحْمَدَ
الزُّبَيْرِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْغَسِيْلِ عَنْ حَمْزَةَ
بْنِ أَبِيْ أُسَيْدٍ وَالْمُنْذِرِ بْنِ أَبِيْ أُسَيْدٍ عَنْ أَبِيْ أُسَيْدٍ
قَالَ قَالَ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ بَدْرٍ إِذَا
أَكْثَبُوْكُمْ يَعْنِيْ كَثَرُوْكُمْ فَارْمُوْهُمْ وَاسْتَبْقُوْا نَبْلَكُمْ
আবূ
উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, তারা তোমাদের
নিকটবর্তী হলে তাদের প্রতি তীর চালনা করবে এবং তীর ব্যবহারে সংযম অবলম্বন করবে।
[২৯০০] (আ.প্র. ৩৬৯০, ই.ফা. ৩৬৯৩)
[২৯০০] (আ.প্র. ৩৬৯০, ই.ফা. ৩৬৯৩)
৩৯৮৬
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ
قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ قَالَ جَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم عَلَى الرُّمَاةِ يَوْمَ أُحُدٍ عَبْدَ اللهِ بْنَ جُبَيْرٍ فَأَصَابُوْا
مِنَّا سَبْعِيْنَ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ
أَصَابُوْا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ يَوْمَ بَدْرٍ أَرْبَعِيْنَ وَمِائَةً سَبْعِيْنَ
أَسِيْرًا وَسَبْعِيْنَ قَتِيْلًا قَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ يَوْمٌ بِيَوْمِ بَدْرٍ
وَالْحَرْبُ سِجَالٌ
বারাআ
ইব্নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উহূদ যুদ্ধের দিন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ ইব্নু যুবায়রকে তীরন্দাজ বাহিনীর
নেতা নিযুক্ত করেছিলেন। তারা (মুশরিকরা) আমাদের সত্তর জনকে শহীদ করে দেয়। বদর
যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার সাহাবীগণ
মুশরিকদের একশ চল্লিশ জনকে নিহত ও গ্রেফতার করে ফেলেছিলেন। যাদের সত্তর জন বন্দী
হয়েছিল এবং সত্তর জন নিহত হয়েছিল। আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ) [৮] বললেন, আজকের দিন বাদ্রের
বদলা। যুদ্ধ কূপের বালতির মত যাতে হাত বদল হয়।
[৩০৩৯] (আ.প্র. ৩৬৯১, ই.ফা. ৩৬৯৪)
[৩০৩৯] (আ.প্র. ৩৬৯১, ই.ফা. ৩৬৯৪)
[৮]
আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ) উহূদ যুদ্ধের সময় কাফিরদের পক্ষাবলম্বন করে যুদ্ধ করেছিলেন কারণ
তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন মাক্কাহ্ বিজয়ের সময়।
৩৯৮৭
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدٍ عَنْ
جَدِّهِ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى أُرَاهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ وَإِذَا الْخَيْرُ مَا جَاءَ اللهُ بِهِ مِنَ الْخَيْرِ بَعْدُ
وَثَوَابُ الصِّدْقِ الَّذِيْ آتَانَا بَعْدَ يَوْمِ بَدْرٍ
আবূ
মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, আমি স্বপ্নে [৯] যে কল্যাণ দেখেছিলাম সে তো ঐ কল্যাণ যা পরবর্তী সময়ে
আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদেরকে দান করেছেন। আর উত্তম প্রতিদান বিষয়ে যা দেখেছিলাম তা তো
আল্লাহ্ আমাদেরকে দান করেছেন বদর যুদ্ধের পর।
[৩৬২২] (আ.প্র. ৩৬৯২, ই.ফা. ৩৬৯৫)
[৩৬২২] (আ.প্র. ৩৬৯২, ই.ফা. ৩৬৯৫)
[৯]
একদা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বপ্নে কতক গরু কুরবানী করতে
দেখেন এবং ইঙ্গিত লাভ করেন কতকগুলো কল্যাণকর বিষয়ের। তিনি গরু কুরবানী করাকে উহূদ যুদ্ধে
মুসলিমদের শাহাদাত লাভ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেন এবং দ্বিতীয় বাদ্রের পর মুসলিমগণ যে
ঈমানী শক্তি লাভ করেছিলেন সেটিকে তিনি স্বপ্নে দেখা কল্যাণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন।
৩৯৮৮
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ
أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ إِنِّيْ لَفِي
الصَّفِّ يَوْمَ بَدْرٍ إِذْ الْتَفَتُّ فَإِذَا عَنْ يَمِيْنِيْ وَعَنْ يَسَارِيْ
فَتَيَانِ حَدِيْثَا السِّنِّ فَكَأَنِّيْ لَمْ آمَنْ بِمَكَانِهِمَا إِذْ قَالَ
لِيْ أَحَدُهُمَا سِرًّا مِنْ صَاحِبِهِ يَا عَمِّ أَرِنِيْ أَبَا جَهْلٍ فَقُلْتُ
يَا ابْنَ أَخِيْ وَمَا تَصْنَعُ بِهِ قَالَ عَاهَدْتُ اللهَ إِنْ رَأَيْتُهُ أَنْ
أَقْتُلَهُ أَوْ أَمُوْتَ دُوْنَهُ فَقَالَ لِي الآخَرُ سِرًّا مِنْ صَاحِبِهِ
مِثْلَهُ قَالَ فَمَا سَرَّنِيْ أَنِّيْ بَيْنَ رَجُلَيْنِ مَكَانَهُمَا
فَأَشَرْتُ لَهُمَا إِلَيْهِ فَشَدَّا عَلَيْهِ مِثْلَ الصَّقْرَيْنِ حَتَّى
ضَرَبَاهُ وَهُمَا ابْنَا عَفْرَاءَ
‘আবদুর
রাহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, বাদ্রের দিন সৈনিক সারিতে
দাঁড়িয়ে আমি এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখলাম, আমার ডানে ও বামে কম বয়সের দু’জন যুবক তাদের
মত অল্প বয়স্ক দু’জন যুবকের পাশে আমি নিজেকে নিরাপদ বোধ করছিলাম না। এমতাবস্থায়
তাদের একজন তার সঙ্গী থেকে লুকিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল চাচাজী, আবূ জাহ্ল কোনটি
আমাকে দেখিয়ে দিন? আমি বললাম, ভাতিজা, তা দিয়ে তুমি কী করবে? সে বলল, আমি আল্লাহ্র
সঙ্গে অঙ্গীকার করেছি, তাকে দেখলে তাকে হত্যা করব অন্যথায় নিজেই শহীদ হয়ে যাব।
এরপর দ্বিতীয় যুবকটিও তাঁর সঙ্গী থেকে লুকিয়ে আমাকে এভাবেই জিজ্ঞেস করল। আমি এত
সন্তুষ্ট হলাম যে, দু’জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মাঝে আমি ততটুকু সন্তুষ্ট হতাম না।
এরঃপর আমি তাদের দু’জনকে ইশারায় আবূ জাহ্লকে দেখিয়ে দিলাম। তখন তারা বাজ পাখির
তীব্রতায় তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে তাকে আঘাত করল। এরা হল ‘আফরার দু‘পুত্র।
[৩১৪১] (আ.প্র. ৩৬৯৩, ই.ফা. ৩৬৯৬)
[৩১৪১] (আ.প্র. ৩৬৯৩, ই.ফা. ৩৬৯৬)
৩৯৮৯
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ أَخْبَرَنَا ابْنُ
شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُمَرُ بْنُ أَسِيْدِ بْنِ جَارِيَةَ الثَّقَفِيُّ
حَلِيْفُ بَنِيْ زُهْرَةَ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ أَبِيْ
هُرَيْرَةَ قَالَ بَعَثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَشَرَةً عَيْنًا
وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ عَاصِمَ بْنَ ثَابِتٍ الْأَنْصَارِيَّ جَدَّ عَاصِمِ بْنِ
عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ حَتَّى إِذَا كَانُوْا بِالْهَدَةِ بَيْنَ عَسْفَانَ
وَمَكَّةَ ذُكِرُوْا لِحَيٍّ مِنْ هُذَيْلٍ يُقَالُ لَهُمْ بَنُوْ لِحْيَانَ
فَنَفَرُوْا لَهُمْ بِقَرِيْبٍ مِنْ مِائَةِ رَجُلٍ رَامٍ فَاقْتَصُّوْا
آثَارَهُمْ حَتَّى وَجَدُوْا مَأْكَلَهُمْ التَّمْرَ فِيْ مَنْزِلٍ نَزَلُوْهُ
فَقَالُوْا تَمْرُ يَثْرِبَ فَاتَّبَعُوْا آثَارَهُمْ فَلَمَّا حَسَّ بِهِمْ
عَاصِمٌ وَأَصْحَابُهُ لَجَئُوْا إِلَى مَوْضِعٍ فَأَحَاطَ بِهِمُ الْقَوْمُ
فَقَالُوْا لَهُمْ انْزِلُوْا فَأَعْطُوْا بِأَيْدِيْكُمْ وَلَكُمُ الْعَهْدُ
وَالْمِيْثَاقُ أَنْ لَا نَقْتُلَ مِنْكُمْ أَحَدًا فَقَالَ عَاصِمُ بْنُ ثَابِتٍ
أَيُّهَا الْقَوْمُ أَمَّا أَنَا فَلَا أَنْزِلُ فِيْ ذِمَّةِ كَافِرٍ ثُمَّ قَالَ
اللهُمَّ أَخْبِرْ عَنَّا نَبِيَّكَ صلى الله عليه وسلم فَرَمَوْهُمْ بِالنَّبْلِ
فَقَتَلُوْا عَاصِمًا وَنَزَلَ إِلَيْهِمْ ثَلَاثَةُ نَفَرٍ عَلَى الْعَهْدِ
وَالْمِيْثَاقِ مِنْهُمْ خُبَيْبٌ وَزَيْدُ بْنُ الدَّثِنَةِ وَرَجُلٌ آخَرُ
فَلَمَّا اسْتَمْكَنُوْا مِنْهُمْ أَطْلَقُوْا أَوْتَارَ قِسِيِّهِمْ
فَرَبَطُوْهُمْ بِهَا.
قَالَ الرَّجُلُ الثَّالِثُ هَذَا أَوَّلُ الْغَدْرِ وَاللهِ لَا أَصْحَبُكُمْ إِنَّ لِيْ بِهَؤُلَاءِ أُسْوَةً يُرِيْدُ الْقَتْلَى فَجَرَّرُوْهُ وَعَالَجُوْهُ فَأَبَى أَنْ يَصْحَبَهُمْ فَانْطُلِقَ بِخُبَيْبٍ وَزَيْدِ بْنِ الدَّثِنَةِ حَتَّى بَاعُوْهُمَا بَعْدَ وَقْعَةِ بَدْرٍ فَابْتَاعَ بَنُو الْحَارِثِ بْنِ عَامِرِ بْنِ نَوْفَلٍ خُبَيْبًا وَكَانَ خُبَيْبٌ هُوَ قَتَلَ الْحَارِثَ بْنَ عَامِرٍ يَوْمَ بَدْرٍ فَلَبِثَ خُبَيْبٌ عِنْدَهُمْ أَسِيْرًا حَتَّى أَجْمَعُوْا قَتْلَهُ فَاسْتَعَارَ مِنْ بَعْضِ بَنَاتِ الْحَارِثِ مُوْسًى يَسْتَحِدُّ بِهَا فَأَعَارَتْهُ فَدَرَجَ بُنَيٌّ لَهَا وَهِيَ غَافِلَةٌ حَتَّى أَتَاهُ فَوَجَدَتْهُ مُجْلِسَهُ عَلَى فَخِذِهِ وَالْمُوْسَى بِيَدِهِ قَالَتْ فَفَزِعْتُ فَزْعَةً عَرَفَهَا خُبَيْبٌ فَقَالَ أَتَخْشَيْنَ أَنْ أَقْتُلَهُ مَا كُنْتُ لِأَفْعَلَ ذَلِكَ قَالَتْ وَاللهِ مَا رَأَيْتُ أَسِيْرًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ خُبَيْبٍ وَاللهِ لَقَدْ وَجَدْتُهُ يَوْمًا يَأْكُلُ قِطْفًا مِنْ عِنَبٍ فِيْ يَدِهِ وَإِنَّهُ لَمُوْثَقٌ بِالْحَدِيْدِ وَمَا بِمَكَّةَ مِنْ ثَمَرَةٍ وَكَانَتْ تَقُوْلُ إِنَّهُ لَرِزْقٌ رَزَقَهُ اللهُ خُبَيْبًا فَلَمَّا خَرَجُوْا بِهِ مِنَ الْحَرَمِ لِيَقْتُلُوْهُ فِي الْحِلِّ قَالَ لَهُمْ خُبَيْبٌ دَعُوْنِيْ أُصَلِّيْ رَكْعَتَيْنِ فَتَرَكُوْهُ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ فَقَالَ وَاللهِ لَوْلَا أَنْ تَحْسِبُوْا أَنَّ مَا بِيْ جَزَعٌ لَزِدْتُ ثُمَّ قَالَ اللهُمَّ أَحْصِهِمْ عَدَدًا وَاقْتُلْهُمْ بَدَدًا وَلَا تُبْقِ مِنْهُمْ أَحَدًا ثُمَّ أَنْشَأَ يَقُوْلُ :
فَـلَسـْتُ أُبَـالِيْ حِيْنَ أُقْتَـلُ مُسْـلِـمًا عَـلَـى أَيِّ جَـنْـبٍ كَـانَ لِلهِ مَـصْـرَعِـي
وَذَلِـكَ فِيْ ذَاتِ الإِلَـهِ وَإِنْ يَـشَــأْ يُـبَـارِكْ عَـلَـى أَوْصَـالِ شِـلْـوٍ مُـمَـزَّعِ
ثُمَّ قَامَ إِلَيْهِ أَبُوْ سِرْوَعَةَ عُقْبَةُ بْنُ الْحَارِثِ فَقَتَلَهُ وَكَانَ خُبَيْبٌ هُوَ سَنَّ لِكُلِّ مُسْلِمٍ قُتِلَ صَبْرًا الصَّلَاةَ وَأَخْبَرَ أَصْحَابَهُ يَوْمَ أُصِيْبُوْا خَبَرَهُمْ وَبَعَثَ نَاسٌ مِنْ قُرَيْشٍ إِلَى عَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ حِيْنَ حُدِّثُوْا أَنَّهُ قُتِلَ أَنْ يُؤْتَوْا بِشَيْءٍ مِنْهُ يُعْرَفُ وَكَانَ قَتَلَ رَجُلًا عَظِيْمًا مِنْ عُظَمَائِهِمْ فَبَعَثَ اللهُ لِعَاصِمٍ مِثْلَ الظُّلَّةِ مِنْ الدَّبْرِ فَحَمَتْهُ مِنْ رُسُلِهِمْ فَلَمْ يَقْدِرُوْا أَنْ يَقْطَعُوْا مِنْهُ شَيْئًا وَقَالَ كَعْبُ بْنُ مَالِكٍ ذَكَرُوْا مَرَارَةَ بْنَ الرَّبِيْعِ الْعَمْرِيَّ وَهِلَالَ بْنَ أُمَيَّةَ الْوَاقِفِيَّ رَجُلَيْنِ صَالِحَيْنِ قَدْ شَهِدَا بَدْرًا
قَالَ الرَّجُلُ الثَّالِثُ هَذَا أَوَّلُ الْغَدْرِ وَاللهِ لَا أَصْحَبُكُمْ إِنَّ لِيْ بِهَؤُلَاءِ أُسْوَةً يُرِيْدُ الْقَتْلَى فَجَرَّرُوْهُ وَعَالَجُوْهُ فَأَبَى أَنْ يَصْحَبَهُمْ فَانْطُلِقَ بِخُبَيْبٍ وَزَيْدِ بْنِ الدَّثِنَةِ حَتَّى بَاعُوْهُمَا بَعْدَ وَقْعَةِ بَدْرٍ فَابْتَاعَ بَنُو الْحَارِثِ بْنِ عَامِرِ بْنِ نَوْفَلٍ خُبَيْبًا وَكَانَ خُبَيْبٌ هُوَ قَتَلَ الْحَارِثَ بْنَ عَامِرٍ يَوْمَ بَدْرٍ فَلَبِثَ خُبَيْبٌ عِنْدَهُمْ أَسِيْرًا حَتَّى أَجْمَعُوْا قَتْلَهُ فَاسْتَعَارَ مِنْ بَعْضِ بَنَاتِ الْحَارِثِ مُوْسًى يَسْتَحِدُّ بِهَا فَأَعَارَتْهُ فَدَرَجَ بُنَيٌّ لَهَا وَهِيَ غَافِلَةٌ حَتَّى أَتَاهُ فَوَجَدَتْهُ مُجْلِسَهُ عَلَى فَخِذِهِ وَالْمُوْسَى بِيَدِهِ قَالَتْ فَفَزِعْتُ فَزْعَةً عَرَفَهَا خُبَيْبٌ فَقَالَ أَتَخْشَيْنَ أَنْ أَقْتُلَهُ مَا كُنْتُ لِأَفْعَلَ ذَلِكَ قَالَتْ وَاللهِ مَا رَأَيْتُ أَسِيْرًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ خُبَيْبٍ وَاللهِ لَقَدْ وَجَدْتُهُ يَوْمًا يَأْكُلُ قِطْفًا مِنْ عِنَبٍ فِيْ يَدِهِ وَإِنَّهُ لَمُوْثَقٌ بِالْحَدِيْدِ وَمَا بِمَكَّةَ مِنْ ثَمَرَةٍ وَكَانَتْ تَقُوْلُ إِنَّهُ لَرِزْقٌ رَزَقَهُ اللهُ خُبَيْبًا فَلَمَّا خَرَجُوْا بِهِ مِنَ الْحَرَمِ لِيَقْتُلُوْهُ فِي الْحِلِّ قَالَ لَهُمْ خُبَيْبٌ دَعُوْنِيْ أُصَلِّيْ رَكْعَتَيْنِ فَتَرَكُوْهُ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ فَقَالَ وَاللهِ لَوْلَا أَنْ تَحْسِبُوْا أَنَّ مَا بِيْ جَزَعٌ لَزِدْتُ ثُمَّ قَالَ اللهُمَّ أَحْصِهِمْ عَدَدًا وَاقْتُلْهُمْ بَدَدًا وَلَا تُبْقِ مِنْهُمْ أَحَدًا ثُمَّ أَنْشَأَ يَقُوْلُ :
فَـلَسـْتُ أُبَـالِيْ حِيْنَ أُقْتَـلُ مُسْـلِـمًا عَـلَـى أَيِّ جَـنْـبٍ كَـانَ لِلهِ مَـصْـرَعِـي
وَذَلِـكَ فِيْ ذَاتِ الإِلَـهِ وَإِنْ يَـشَــأْ يُـبَـارِكْ عَـلَـى أَوْصَـالِ شِـلْـوٍ مُـمَـزَّعِ
ثُمَّ قَامَ إِلَيْهِ أَبُوْ سِرْوَعَةَ عُقْبَةُ بْنُ الْحَارِثِ فَقَتَلَهُ وَكَانَ خُبَيْبٌ هُوَ سَنَّ لِكُلِّ مُسْلِمٍ قُتِلَ صَبْرًا الصَّلَاةَ وَأَخْبَرَ أَصْحَابَهُ يَوْمَ أُصِيْبُوْا خَبَرَهُمْ وَبَعَثَ نَاسٌ مِنْ قُرَيْشٍ إِلَى عَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ حِيْنَ حُدِّثُوْا أَنَّهُ قُتِلَ أَنْ يُؤْتَوْا بِشَيْءٍ مِنْهُ يُعْرَفُ وَكَانَ قَتَلَ رَجُلًا عَظِيْمًا مِنْ عُظَمَائِهِمْ فَبَعَثَ اللهُ لِعَاصِمٍ مِثْلَ الظُّلَّةِ مِنْ الدَّبْرِ فَحَمَتْهُ مِنْ رُسُلِهِمْ فَلَمْ يَقْدِرُوْا أَنْ يَقْطَعُوْا مِنْهُ شَيْئًا وَقَالَ كَعْبُ بْنُ مَالِكٍ ذَكَرُوْا مَرَارَةَ بْنَ الرَّبِيْعِ الْعَمْرِيَّ وَهِلَالَ بْنَ أُمَيَّةَ الْوَاقِفِيَّ رَجُلَيْنِ صَالِحَيْنِ قَدْ شَهِدَا بَدْرًا
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইব্নু ‘উমার ইব্নু খাত্তাবের নাতি আসিম ইব্নু সাবিত
আনসারীর পরিচালনায় দশজন সাহাবীর একটি দল গোয়েন্দা কাজের জন্য পাঠালেন। তাঁরা উসফান
ও মক্কার মধ্যবর্তী স্থান হান্দায় পৌঁছলে হুযাইল গোত্রের একটি শাখা বানু লিহয়ানকে
তাদের আগমনের কারণ সম্পর্কে জানানো হয়। (এ সংবাদ শুনে) তারা প্রায় একশ’ জন
তীরন্দাজ প্রস্তুত হয়ে মুসলিমদের বিপক্ষে যুদ্ধ করার জন্য রওয়ানা হয়ে তাদের
পদচিহ্ন ধরে পথ চলতে আরম্ভ করে। যেতে যেতে তারা এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যেখানে
অবস্থান করে সাহাবীগণ খেজুর খেয়েছিলেন। তা দেখে বানু লিহ্য়ানের লোকেরা ইয়াসরিবের
খেজুর বলে তাদের পদচিহ্ন অনুসরণ করে তাদেরকে খুঁজতে লাগল। আসিম ও তাঁর সঙ্গীগণ
তাদের আগমন সম্পর্কে বুঝতে পেরে একটি স্থানে গিয়ে আশ্রয় নেন। লিহয়ান কাওমের লোকেরা
তাদেরকে ঘিরে ফেলে। তারপর তারা মুসলিমদেরকে নিচে নেমে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে
বলল, তোমাদেরকে ওয়াদা দিচ্ছি, আমরা তোমাদের কাউকে হত্যা করব না। তখন আসিম ইব্নু
সাবিত (রাঃ) বললেন, হে আমার সাথী ভ্রাতৃবৃন্দ! কাফিরের নিরাপত্তায় আশ্বস্ত হয়ে আমি
কখনো নিচে নামবো না। তারপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ্! আমাদের খবর আপনার নাবীকে
জানিয়ে দিন। এরপর তারা মুসলিমদের প্রতি তীর ছুঁড়তে শুরু করল এবং ‘আসিমকে (ছয়জন সহ)
শহীদ করে ফেলল। বাকী তিনজন, খুবায়ব, যায়দ ইব্নু দাসিনা এবং অপর একজন তাদের ওয়াদা
ও প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করে তাদের নিকট নেমে আসলেন। শত্রুগণ তাঁদেরকে পরাস্ত করে
নিজেদের ধনুকের রশি খুলে তা দিয়ে তাদেরকে বেঁধে ফেলল। এ দেখে তৃতীয়জন বললেন, এটাই
প্রথম বিশ্বাসঘাতকতা। আল্লাহ্র কসম, আমি তোমাদের সঙ্গে যাব না, আমার জন্য শহীদ
সঙ্গীদের আদর্শই অনুসরণীয়। অর্থাৎ আমিও শহীদ হয়ে যাব। তারা তাকে বহু টানা হেচড়া
করল। কিন্তু তিনি তাদের সঙ্গে যেতে অস্বীকার করলেন। (তারা তাঁকে শহীদ করে দিল)
এরপর খুবায়ব এবং যায়িদ ইব্নু দাসিনাকে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে বিক্রি করে দিল। এটা ছিল
বদর যুদ্ধের পরের ঘটনা। বদর যুদ্ধে খুবায়ব যেহেতু হারিস ইব্নু আমিরকে হত্যা
করেছিলেন। তাই (বদলা নেয়ার জন্য) হারিস ইব্নু আমির ইব্নু নাওফিলের পুত্রগণ তাঁকে
ক্রয় করে নিল। খুবায়ব তাদের নিকট বন্দী অবস্থায় কাটাতে লাগলেন। এরপর তারা সবাই
তাকে হত্যা করার দৃঢ় সংকল্প করল। তিনি হারিসের কোন এক কন্যার নিকট থেকে
ক্ষৌরকর্মের জন্য একটি ক্ষুর চেয়ে নিলেন। হারিসের কন্যার অসতর্ক অবস্থায় তার একটি
ছোট বাচ্চা খুবাইবের কাছে গিয়ে পৌঁছল। হারিসের কন্যা দেখতে পেল খুবায়র তার
বাচ্চাকে কোলে নিয়ে রানের উপর বসিয়ে ক্ষুরখানা হাতে ধরে আছেন। হারিসের কন্যা
বর্ণনা করেছে, আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়লাম, খুবায়ব তা বুঝতে পারলেন, তিনি বললেন, আমি
শিশুটিকে মেরে ফেলব বলে তুমি কি ভয় পেয়েছ? আমি কখনো এমন কাজ করব না। সে আরো বলেছে,
আল্লাহ্র কসম! আমি খুবায়বের মত উত্তম বন্দী আর কখনো দেখিনি। আল্লাহ্র কসম একদিন
আমি তাকে আঙ্গুরের গুচ্ছ হাতে নিয়ে আঙ্গুর খেতে দেখেছি। অথচ সে লোহার শিকলে বাঁধা
ছিল এবং সে সময় মক্কায় কোন ফলই ছিল না। হারিসের কন্যা বলত, ঐ আঙ্গুরগুলো আল্লাহ্
তা‘আলা খুবায়বকে রিয্কস্বরূপ দান করেছিলেন। অবশেষে একদিন তারা খুবায়বকে হত্যা
করার জন্য যখন হারামের সীমানার বাইরে নিয়ে গেল তখন খুবায়ব (রাঃ) তাদেরকে বললেন,
আমাকে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করার সুযোগ দাও, তারা সুযোগ দিলে তিনি দু’ রাক‘আত
সালাত আদায় করে বললেন, আল্লাহ্র কসম। আমি মৃত্যু ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছি, তোমরা এ কথা
না ভাবলে আমি সালাত আরো দীর্ঘায়িত করতাম। এরপর তিনি এ বলে দু’আ করলেন, হে আল্লাহ্!
তাদেরকে এক এক করে গুণে রাখ, তাদেরকে বিক্ষিপ্তভাবে হত্যা কর এবং তাদের একজনকেও
বাকী রেখ না। এরপর তিনি আবৃত্তি করলেনঃ
“আমি যখন মুসলিম হয়ে মৃত্যুর সৌভাগ্য লাভ করেছি, তাই আমার কোনই ভয় নেই।
আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যে কোন অবস্থাতেই আমার মৃত্যু হোক।
তা যেহেতু একমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্যই,
তাই তিনি ইচ্ছে করলে আমার প্রতিটি কর্তিত অঙ্গে বারাকাত প্রদান করতে পারেন।”
এরপর হারিসের পুত্র আবূ সারুআ ‘উকবাহ তাঁর দিকে দাঁড়াল এবং তাঁকে শহীদ করে দিল। এভাবেই খুবায়ব (রাঃ) সে সব মুসলিমের জন্য দু’ রাক’আত সলাতের সুন্নত চালু করে গেলেন যারা ধৈর্যের সঙ্গে শাহাদাত বরণ করেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐদিনই সাহাবীদেরকে জানিয়েছিলেন যে দিন তাঁরা শত্রু বেষ্টিত হয়ে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। কুরাইশদের নিকট আসিম (রাঃ)-এর নিহত হওয়ার খবর পৌছলে তারা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আসিমের শরীরের কোন অঙ্গ কেটে আনার জন্য কতক কুরাইশ কাফিরকে প্রেরণ করল। যেহেতু (বাদ্রের দিন) আসিম ইব্নু সাবিত তাদের একজন বড় নেতাকে হত্যা করেছিলেন। এদিকে আল্লাহ্ ‘আসিমের লাশকে হিফাযাত করার জন্য মেঘের মত এক ঝাঁক মৌমাছি পাঠিয়ে দিলেন। মৌমাছিগুলো আসিম (রাঃ)-এর লাশকে শত্রু সেনাদের হাত থেকে রক্ষা করল। ফলে তারা তাঁর দেহের কোন অঙ্গ কেটে নিতে পারল না। কা‘ব ইব্নু মালিক (রাঃ) বলেন, মুরারাহ ইব্নু রাবী‘ আল ‘উমারী এবং হিলাল ইব্নু ‘উমাইয়াহ আল ওয়াকিফী [১০] সম্পর্কে লোকেরা বলেছেন যে, তাঁরা দু’জনই আল্লাহ্র নেক বান্দা ছিলেন এবং দু’জনই বদর যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন।
[৩০৪৫] (আ.প্র. ৩৬৯৪, ই.ফা. ৩৬৯৭)
“আমি যখন মুসলিম হয়ে মৃত্যুর সৌভাগ্য লাভ করেছি, তাই আমার কোনই ভয় নেই।
আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যে কোন অবস্থাতেই আমার মৃত্যু হোক।
তা যেহেতু একমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্যই,
তাই তিনি ইচ্ছে করলে আমার প্রতিটি কর্তিত অঙ্গে বারাকাত প্রদান করতে পারেন।”
এরপর হারিসের পুত্র আবূ সারুআ ‘উকবাহ তাঁর দিকে দাঁড়াল এবং তাঁকে শহীদ করে দিল। এভাবেই খুবায়ব (রাঃ) সে সব মুসলিমের জন্য দু’ রাক’আত সলাতের সুন্নত চালু করে গেলেন যারা ধৈর্যের সঙ্গে শাহাদাত বরণ করেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐদিনই সাহাবীদেরকে জানিয়েছিলেন যে দিন তাঁরা শত্রু বেষ্টিত হয়ে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। কুরাইশদের নিকট আসিম (রাঃ)-এর নিহত হওয়ার খবর পৌছলে তারা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আসিমের শরীরের কোন অঙ্গ কেটে আনার জন্য কতক কুরাইশ কাফিরকে প্রেরণ করল। যেহেতু (বাদ্রের দিন) আসিম ইব্নু সাবিত তাদের একজন বড় নেতাকে হত্যা করেছিলেন। এদিকে আল্লাহ্ ‘আসিমের লাশকে হিফাযাত করার জন্য মেঘের মত এক ঝাঁক মৌমাছি পাঠিয়ে দিলেন। মৌমাছিগুলো আসিম (রাঃ)-এর লাশকে শত্রু সেনাদের হাত থেকে রক্ষা করল। ফলে তারা তাঁর দেহের কোন অঙ্গ কেটে নিতে পারল না। কা‘ব ইব্নু মালিক (রাঃ) বলেন, মুরারাহ ইব্নু রাবী‘ আল ‘উমারী এবং হিলাল ইব্নু ‘উমাইয়াহ আল ওয়াকিফী [১০] সম্পর্কে লোকেরা বলেছেন যে, তাঁরা দু’জনই আল্লাহ্র নেক বান্দা ছিলেন এবং দু’জনই বদর যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন।
[৩০৪৫] (আ.প্র. ৩৬৯৪, ই.ফা. ৩৬৯৭)
[১০]
এ দু’জন বাদ্রী সাহাবী ছিলেন। তহাপিও তারা বিনা ওযরে তাবূক যুদ্ধে অংশ নেয়া হতে বিরত
ছিলেন। ফলে আল্লাহ্র নির্দেশে তাদেরকে কিছুদিনের জন্য বয়কট করা হয়। অতঃপর তারা খালিসভাবে
আল্লাহ্র নিকট তওবা করলে আল্লাহ্ তা‘আলা তা কবূল করেন এবং তারা পুনরায় মুসলিমদের
সাথে স্বাভাবিক জীবন শুরু করেন।
৩৯৯০
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ نَافِعٍ
أَنَّ ابْنَ عُمَرَ ذُكِرَ لَهُ أَنَّ سَعِيْدَ بْنَ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ
نُفَيْلٍ وَكَانَ بَدْرِيًّا مَرِضَ فِيْ يَوْمِ جُمُعَةٍ فَرَكِبَ إِلَيْهِ
بَعْدَ أَنْ تَعَالَى النَّهَارُ وَاقْتَرَبَتْ الْجُمُعَةُ وَتَرَكَ الْجُمُعَةَ
নাফি‘
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা’ঈদ ইব্নু ‘আমর ইব্নু নুফায়ল (রাঃ) ছিলেন
বদর যুদ্ধে যোগদানকারী একজন সাহাবী। তিনি জুমু‘আহ্র দিন অসুস্থ হয়ে পড়লে ইব্নু
‘উমারের নিকট জুমু‘আহ্র দিন এ খবর পৌঁছলে তিনি সাওয়ারীর পিঠে আরোহণ করে তাঁকে
দেখতে গেলেন। তখন বেলা হয়ে গেছে এবং জুমু‘আহ্র সলাতের সময়ও ঘনিয়ে আসছে দেখে তিনি
জুমু‘আহ্র সালাত ছেড়ে দিলেন।
(আ.প্র. ৩৬৯৫, ই.ফা. ৩৬৯৮)
(আ.প্র. ৩৬৯৫, ই.ফা. ৩৬৯৮)
৩৯৯১
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ
حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ أَبَاهُ كَتَبَ
إِلَى عُمَرَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْأَرْقَمِ الزُّهْرِيِّ يَأْمُرُهُ أَنْ
يَدْخُلَ عَلَى سُبَيْعَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ الْأَسْلَمِيَّةِ فَيَسْأَلَهَا عَنْ
حَدِيْثِهَا وَعَنْ مَا قَالَ لَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ
اسْتَفْتَتْهُ فَكَتَبَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْأَرْقَمِ إِلَى عَبْدِ
اللهِ بْنِ عُتْبَةَ يُخْبِرُهُ أَنَّ سُبَيْعَةَ بِنْتَ الْحَارِثِ أَخْبَرَتْهُ
أَنَّهَا كَانَتْ تَحْتَ سَعْدِ بْنِ خَوْلَةَ وَهُوَ مِنْ بَنِيْ عَامِرِ بْنِ
لُؤَيٍّ وَكَانَ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا فَتُوُفِّيَ عَنْهَا فِيْ حَجَّةِ
الْوَدَاعِ وَهِيَ حَامِلٌ فَلَمْ تَنْشَبْ أَنْ وَضَعَتْ حَمْلَهَا بَعْدَ
وَفَاتِهِ فَلَمَّا تَعَلَّتْ مِنْ نِفَاسِهَا تَجَمَّلَتْ لِلْخُطَّابِ فَدَخَلَ
عَلَيْهَا أَبُو السَّنَابِلِ بْنُ بَعْكَكٍ رَجُلٌ مِنْ بَنِيْ عَبْدِ الدَّارِ
فَقَالَ لَهَا مَا لِيْ أَرَاكِ تَجَمَّلْتِ لِلْخُطَّابِ تُرَجِّيْنَ النِّكَاحَ
فَإِنَّكِ وَاللهِ مَا أَنْتِ بِنَاكِحٍ حَتَّى تَمُرَّ عَلَيْكِ أَرْبَعَةُ
أَشْهُرٍ وَعَشْرٌ قَالَتْ سُبَيْعَةُ فَلَمَّا قَالَ لِيْ ذَلِكَ جَمَعْتُ
عَلَيَّ ثِيَابِيْ حِيْنَ أَمْسَيْتُ وَأَتَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم فَسَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ فَأَفْتَانِيْ بِأَنِّيْ قَدْ حَلَلْتُ حِيْنَ
وَضَعْتُ حَمْلِيْ وَأَمَرَنِيْ بِالتَّزَوُّجِ إِنْ بَدَا لِيْ تَابَعَهُ
أَصْبَغُ عَنْ ابْنِ وَهْبٍ عَنْ يُوْنُسَ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ
عَنْ ابْنِ شِهَابٍ وَسَأَلْنَاهُ فَقَالَ أَخْبَرَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ ثَوْبَانَ مَوْلَى بَنِيْ عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ أَنَّ مُحَمَّدَ
بْنَ إِيَاسِ بْنِ الْبُكَيْرِ وَكَانَ أَبُوْهُ شَهِدَ بَدْرًا أَخْبَرَهُ
‘উবাইদুল্লাহ
ইব্নু ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উতবাহ থেকে বর্ণিতঃ
তার পিতা ‘উমার ইব্নু ‘আবদুল্লাহ ইব্নু
আরকাম আয যুহরী সুবাই‘আহ বিনত হারিস আসলামিয়্যা (রাঃ) এর কাছে গিয়ে তার ঘটনা ও
(গর্ভবতী মহিলার ইদ্দত সম্পর্কে) তার প্রশ্নের উত্তরে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাকে যা বলেছিলেন সে সম্পর্কে পত্র মারফত জিজ্ঞেস করে জানতে আদেশ
করলেন। এরপর ইব্নু ‘আবদুল্লাহ ইব্নু আরকাম (রাঃ) ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উতবাহ্কে
লিখে জানালেন যে, সুবাই‘আহ বিনতুল হাসির তাকে জানিয়েছেন যে, তিনি বানু আমির ইব্নু
লুয়াই গোত্রের সাদ ইব্নু খাওলার স্ত্রী ছিলেন, সা‘দ (রাঃ) বদর যুদ্ধে
অংশগ্রহণকারী ছিলেন। তিনি বিদায় হাজ্জের বছর মারা যান। তখন তার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন।
তার ইন্তিকালের কিছুদিন পরেই তিনি সন্তান প্রসব করলেন। এরপর নিফাস থেকে পবিত্র
হয়েই তিনি বিবাহের পয়গাম দাতাদের উদ্দেশ্যে সাজসজ্জা আরম্ভ করলেন। এ সময় আবদুদ্দার
গোত্রের আবুস সানাবিল ইব্নু বা’কাক নামক এক ব্যক্তি তাকে গিয়ে বললেন, কী ব্যাপার,
আমি তোমাকে দেখছি যে, তুমি বিবাহের আশায় পয়গাম দাতাদের উদ্দেশ্যে সাজসজ্জা আরম্ভ
করে দিয়েছ? আল্লাহ্র কসম! চার মাস দশদিন অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে তুমি বিবাহ করতে
পারবে না। সুবাই‘আহ (রাঃ) বলেন, (আবুস সানাবিল আমাকে) এ কথা বলার পর আমি ঠিকঠাক মত
কাপড় চোপড় পরিধান করে বিকেল বেলা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট গেলাম এবং এ সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন, যখন
আমি সন্তান প্রসব করেছি তখন থেকেই আমি হালাল হয়ে গেছি। এরপর তিনি আমাকে বিয়ে করার
নির্দেশ দিলেন যদি আমার ইচ্ছে হয়। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, আসবাগ.... ইউনুসের
সূত্রে লায়সের মতই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। লায়স (রহঃ) বলেছেন, ইউনুস আমার নিকট ইব্নু
শিহাব থেকে বর্ণনা করেছেন। ইব্নু শিহাব (রহঃ) বলেন, বানু আমির ইব্নু লুয়াই
গোত্রের আযাদকৃত গোলাম মুহাম্মাদ ইব্নু আবদুর রহমান ইব্নু সাওবান আমাকে সংবাদ
দিয়েছেন যে, বদর যুদ্ধে যোগদানকারী মুহাম্মাদ ইব্নু ইয়াস ইব্নু বুকায়র-এর পিতা
তাকে জানিছেন। [৫৩১৯; মুসলিম ১৮/৮, হাঃ ১৪৮৪] (আ.প্র. ৩৬৯৫, ই.ফা. ৩৬৯৮)
৬৪/১১. অধ্যায়ঃ
বাদ্র যুদ্ধে মালায়িকাহ্র যোগদান
৩৯৯২
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ أَخْبَرَنَا جَرِيْرٌ عَنْ يَحْيَى بْنِ
سَعِيْدٍ عَنْ مُعَاذِ بْنِ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ الزُّرَقِيِّ عَنْ أَبِيْهِ
وَكَانَ أَبُوْهُ مِنْ أَهْلِ بَدْرٍ قَالَ جَاءَ جِبْرِيْلُ إِلَى النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فَقَالَ مَا تَعُدُّوْنَ أَهْلَ بَدْرٍ فِيْكُمْ قَالَ مِنْ
أَفْضَلِ الْمُسْلِمِيْنَ أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا قَالَ وَكَذَلِكَ مَنْ شَهِدَ
بَدْرًا مِنَ الْمَلَائِكَةِ
মু‘আয
বিন রিফাআ‘ ইব্নু রাফি ‘যুরাকী (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তার পিতা বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদের একজন। তিনি
বলেন, একদা জিব্রীল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে
বললেন, আপনারা বদর যুদ্ধে যোগদানকারী মুসলিমদরকে কিরুপ গণ্য করেন? তিনি বললেন,
তারা সর্বোত্তম মুসলিম অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) এরূপ কোন শব্দ তিনি বলেছিলেন।
জিব্রীল (আঃ) বললেন, মালায়িকাদের মধ্যে বদর যুদ্ধে যোগদানকারীগনও তেমনি মর্যাদার
অধিকারী।
[৩৯৯৪] (আ.প্র. ৩৬৯৬, ই.ফা. ৩৬৯৯)
[৩৯৯৪] (আ.প্র. ৩৬৯৬, ই.ফা. ৩৬৯৯)
৩৯৯৩
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ مُعَاذِ
بْنِ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ وَكَانَ رِفَاعَةُ مِنْ أَهْلِ بَدْرٍ وَكَانَ
رَافِعٌ مِنْ أَهْلِ الْعَقَبَةِ فَكَانَ يَقُوْلُ لِابْنِهِ مَا يَسُرُّنِيْ
أَنِّيْ شَهِدْتُ بَدْرًا بِالْعَقَبَةِ قَالَ سَأَلَ جِبْرِيْلُ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم بِهَذَا حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ أَخْبَرَنَا
يَزِيْدُ أَخْبَرَنَا يَحْيَى سَمِعَ مُعَاذَ بْنَ رِفَاعَةَ أَنَّ مَلَكًا سَأَلَ
النَّبِيَّ نَحْوَهُ وَعَنْ يَحْيَى أَنَّ يَزِيْدَ بْنَ الْهَادِ أَخْبَرَهُ
أَنَّهُ كَانَ مَعَهُ يَوْمَ حَدَّثَهُ مُعَاذٌ هَذَا الْحَدِيْثَ فَقَالَ
يَزِيْدُ فَقَالَ مُعَاذٌ إِنَّ السَّائِلَ هُوَ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَام
মু‘আয
ইব্নু রিফাআ‘ ইব্নু রাফি‘ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রিফাআ‘ (রাঃ) ছিলেন বদর যুদ্ধে যোগদানকারী
একজন সাহাবী আর রাফি‘ (রাঃ) ছিলেন বায়‘আতে আকাবায় উপস্থিত একজন সাহাবী। রাফি‘
(রাঃ) তার পুত্র (রিফাআ‘)-কে বলতেন, বায়‘আতে ‘আকাবায় শরীক থাকার চেয়ে বদর যুদ্ধে
হাজির থাকা আমার কাছে অধিক আনন্দের বিষয় বলে মনে হয় না। কেননা জিব্রীল (আঃ) এ
বিষয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন।
(আ.প্র. ৩৬৯৭, ই.ফা. ৩৭০০)
(আ.প্র. ৩৬৯৭, ই.ফা. ৩৭০০)
৩৯৯৪
দুঃখিত! আরবী অংশ এখনো সংযুক্ত করা হয়নি।
মু‘আয
ইব্নু রিফাআ‘ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একজন মালাইকা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। (ভিন্ন সনদে) ইয়াহ্ইয়া হতে বর্ণিত যে, ইয়াযীদ
ইবনুল হাদ (রহঃ) তাকে জানিয়েছেন যে, যেদিন মু‘আয (রাঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছিলেন
সেদিন আমি তার কাছেই ছিলাম। ইয়াযীদ বলেছেন, মু‘আয (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে,
প্রশ্নকারী ফেরেশ্তা হলেন জিব্রীল (আঃ)।
[৩৯৯২] (আ.প্র. ৩৬৯৮, ই.ফা. ৩৭০১)
[৩৯৯২] (আ.প্র. ৩৬৯৮, ই.ফা. ৩৭০১)
৩৯৯৫
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا
خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ يَوْمَ بَدْرٍ هَذَا جِبْرِيْلُ آخِذٌ بِرَأْسِ فَرَسِهِ عَلَيْهِ أَدَاةُ
الْحَرْبِ
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বাদ্রের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন, এই তো জিবরীল (আঃ) সমর সাজে সজ্জিত হয়ে অশ্বের মস্তক হস্তে ধারণ
করে আছে।
[৪০৪১] (আ.প্র. ৩৬৯৯, ই.ফা. ৩৭০২)
[৪০৪১] (আ.প্র. ৩৬৯৯, ই.ফা. ৩৭০২)
৬৪/১২. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই
৩৯৯৬
خَلِيْفَةُ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ
حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ مَاتَ أَبُوْ زَيْدٍ وَلَمْ
يَتْرُكْ عَقِبًا وَكَانَ بَدْرِيًّا
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আবূ যায়দ (রাঃ) মারা যান। তিনি
কোন সন্তানাদি ছেড়ে যাননি। তিনি ছিলেন বাদ্রী সাহাবী।
[৩৮১০] (আ.প্র. হাদীস নেই, ই.ফা. ৩৭০৩)
[৩৮১০] (আ.প্র. হাদীস নেই, ই.ফা. ৩৭০৩)
৩৯৯৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِيْ
يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ خَبَّابٍ أَنَّ
أَبَا سَعِيْدِ بْنَ مَالِكٍ الْخُدْرِيَّ قَدِمَ مِنْ سَفَرٍ فَقَدَّمَ إِلَيْهِ
أَهْلُهُ لَحْمًا مِنْ لُحُوْمِ الْأَضْحَى فَقَالَ مَا أَنَا بِآكِلِهِ حَتَّى
أَسْأَلَ فَانْطَلَقَ إِلَى أَخِيْهِ لِأُمِّهِ وَكَانَ بَدْرِيًّا قَتَادَةَ بْنِ
النُّعْمَانِ فَسَأَلَهُ فَقَالَ إِنَّهُ حَدَثَ بَعْدَكَ أَمْرٌ نَقْضٌ لِمَا
كَانُوْا يُنْهَوْنَ عَنْهُ مِنْ أَكْلِ لُحُوْمِ الْأَضْحَى بَعْدَ ثَلَاثَةِ
أَيَّامٍ
ইব্নু
খব্বাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সা‘ঈদ ইব্নু মালিক খুদ্রী (রাঃ) সফর
থেকে গৃহে প্রত্যাবর্তনের পর তার পরিবারের লোকেরা তাঁকে কুরবানীর গোশ্ত থেকে কিছু
গোশ্ত খেতে দিলেন। তিনি বললেন, আমি জিজ্ঞেস না করে এ গোশ্ত খেতে পারি না। তারপর
তিনি তার মায়ের গর্ভজাত ভ্রাতা কাতাদাহ ইব্নু নু’মানের কাছে গিয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস
করলেন। তিনি ছিলেন একজন বাদ্রী সাহাবী। তখন তিনি তাকে বললেন, তিন দিন পর কুরবানীর
গোশ্ত খাওয়ার ক্ষেত্রে তোমাদের প্রতি যে নিষেধাজ্ঞা ছিল পরে তা পুরোপুরিভাবে রহিত
করে দেয়া হয়েছে।
[৫৫৬৮] (আ.প্র. ৩৭০০, ই.ফা. ৩৭০৪)
[৫৫৬৮] (আ.প্র. ৩৭০০, ই.ফা. ৩৭০৪)
৩৯৯৮
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامِ
بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ قَالَ الزُّبَيْرُ لَقِيْتُ يَوْمَ بَدْرٍ
عُبَيْدَةَ بْنَ سَعِيْدِ بْنِ الْعَاصِ وَهُوَ مُدَجَّجٌ لَا يُرَى مِنْهُ إِلَّا
عَيْنَاهُ وَهُوَ يُكْنَى أَبُوْ ذَاتِ الْكَرِشِ فَقَالَ أَنَا أَبُوْ ذَاتِ
الْكَرِشِ فَحَمَلْتُ عَلَيْهِ بِالْعَنَزَةِ فَطَعَنْتُهُ فِيْ عَيْنِهِ فَمَاتَ
قَالَ هِشَامٌ فَأُخْبِرْتُ أَنَّ الزُّبَيْرَ قَالَ لَقَدْ وَضَعْتُ رِجْلِيْ
عَلَيْهِ ثُمَّ تَمَطَّأْتُ فَكَانَ الْجَهْدَ أَنْ نَزَعْتُهَا وَقَدْ انْثَنَى
طَرَفَاهَا قَالَ عُرْوَةُ فَسَأَلَهُ إِيَّاهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم فَأَعْطَاهُ فَلَمَّا قُبِضَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخَذَهَا
ثُمَّ طَلَبَهَا أَبُوْ بَكْرٍ فَأَعْطَاهُ فَلَمَّا قُبِضَ أَبُوْ بَكْرٍ
سَأَلَهَا إِيَّاهُ عُمَرُ فَأَعْطَاهُ إِيَّاهَا فَلَمَّا قُبِضَ عُمَرُ
أَخَذَهَا ثُمَّ طَلَبَهَا عُثْمَانُ مِنْهُ فَأَعْطَاهُ إِيَّاهَا فَلَمَّا
قُتِلَ عُثْمَانُ وَقَعَتْ عِنْدَ آلِ عَلِيٍّ فَطَلَبَهَا عَبْدُ اللهِ بْنُ
الزُّبَيْرِ فَكَانَتْ عِنْدَهُ حَتَّى قُتِلَ
‘উরওয়াহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যুবায়র (রাঃ) বলেছেন, বাদ্রের দিন
আমি ‘উবাইদাহ ইব্নু সা‘ঈদ ইব্নু আস (রাঃ) কে এমনভাবে বস্ত্রাবৃত দেখলাম যে, তার
দু’চোখ ব্যতীত আর কোন কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। তাকে আবূ যাতুল কারিশ বলে ডাকা হত।
সে বলল, আমি আবূ যাতুল কারিশ। (তা শুনে) বর্শা দিয়ে আমি তার উপর হামলা চালালাম এবং
তার চোখ ফুঁড়ে দিলাম। সে তক্ষুণি মারা গেল। হিশাম বলেন, আমাকে জানানো হয়েছে যে,
যুবায়র (রাঃ) বলেছেন, ‘উবাইদাহ ইব্নু সা‘ঈদ ইব্নু আসের লাশের উপর পা রেখে বেশ
শক্তি খাটিয়ে আমি বর্শাটি টেনে বের করলাম। এতে বর্শার দু’ প্রান্তভাগ বাঁকা হয়ে
যায়। ‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুবায়র
নিকট বর্শাটি চাইলে তিনি তা তাঁকে দিয়ে দেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পর তিনি তা নিয়ে যান এবং পরে আবূ বকর (রাঃ) তা চাইলে তিনি
তাকে বর্শাটি দিয়ে দেন। আবূ বাক্রের মৃত্যুর পর ‘উমার (রাঃ) তা চাইলেন। তিনি তাকে
বর্শাটি দিয়ে দিলেন। কিন্তু ‘উমারের মৃত্যুর পর যুবায়র (রাঃ) পুনরায় বর্শাটি নিয়ে
যান। এরপর ‘উসমান (রাঃ) তার নিকট বর্শাখানা চাইলে তিনি ‘উসমানকে তা দিয়ে দেন। তবে
‘উসমানের শাহাদাতের পর তা ‘আলীর লোকজনের হাতে যাওয়ার পর ‘আবদুল্লাহ ইব্নু যুবায়র
(রাঃ) তা চেয়ে নিয়ে যান। অতঃপর শহীদ হওয়া পর্যন্ত বর্শাটি তাঁর নিকটই বিদ্যমান ছিল।
(আ.প্র. ৩৭০১, ই.ফা. ৩৭০৫)
(আ.প্র. ৩৭০১, ই.ফা. ৩৭০৫)
৩৯৯৯
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ
أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ إِدْرِيْسَ عَائِذُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عُبَادَةَ
بْنَ الصَّامِتِ وَكَانَ شَهِدَ بَدْرًا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ بَايِعُوْنِي
আবূ
ইদরীস ‘আয়িযুল্লাহ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উবাদাহ ইব্নু সামিত (রাঃ)- যিনি বদর যুদ্ধে
অংশগ্রহণ করেছিলেন- বর্ণনা করেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
আমার হাতে বায়‘আত গ্রহণ কর।
[১৮] (আ.প্র. ৩৭০২, ই.ফা. ৩৭০৬)
[১৮] (আ.প্র. ৩৭০২, ই.ফা. ৩৭০৬)
৪০০০
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ
شِهَابٍ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهَا زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ أَبَا حُذَيْفَةَ وَكَانَ
مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَبَنَّى سَالِمًا
وَأَنْكَحَهُ بِنْتَ أَخِيْهِ هِنْدَ بِنْتَ الْوَلِيْدِ بْنِ عُتْبَةَ وَهُوَ
مَوْلًى لِامْرَأَةٍ مِنَ الْأَنْصَارِ كَمَا تَبَنَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم زَيْدًا وَكَانَ مَنْ تَبَنَّى رَجُلًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ دَعَاهُ
النَّاسُ إِلَيْهِ وَوَرِثَ مِنْ مِيْرَاثِهِ حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى
{ادْعُوْهُمْ لِآبَآئِهِمْ} فَجَاءَتْ سَهْلَةُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فَذَكَرَ الْحَدِيْثَ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বদর যুদ্ধে যোগদানকারী সহাবী আবূ হুযাইফাহ (রাঃ) এক আনসারী
মহিলার আযাদকৃত গোলাম সালিমকে পালকপুত্র গ্রহণ করেন, যেমন রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়দকে পালকপুত্র গ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি তাকে
তার ভ্রাতুস্পুত্রী হিন্দা বিন্তে ওয়ালীদ ইবনু উতবার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন।
জাহিলীয়্যাতের যুগে কেউ পালকপুত্র গ্রহণ করলে লোকেরা তাকে পালনকারীর প্রতিই
সম্বোধন করত এবং সে তার ছেড়ে যাওয়া সম্পদের উত্তরাধিকারী হত। অবশেষে আল্লাহ্
তা‘আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেন, {ادْعُوْهُمْ لِآبَآئِهِمْ} অর্থাৎ ‘‘তোমরা তাদেরকে
ডাক তাদের পিতার পরিচয়ে।’’ এরপর (আবূ হুযাইফাহর স্ত্রী সাহলাহ নাবী সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে হাদীসে বর্ণিত ঘটনা বর্ণনা করলেন।
[৫০৮৮] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭০৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭০৭)
[৫০৮৮] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭০৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭০৭)
No comments