সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "ওজু" হাদিস নং -২২১ থেকে ২৪৭

২২১
حَدَّثَنَا خَالِدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ فَبَالَ فِي طَائِفَةِ الْمَسْجِدِ، فَزَجَرَهُ النَّاسُ، فَنَهَاهُمُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم، فَلَمَّا قَضَى بَوْلَهُ أَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِذَنُوبٍ مِنْ مَاءٍ، فَأُهْرِيقَ عَلَيْهِ‏.‏
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (২১৯)
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার এক বেদুঈন এসে মসজিদের এক পাশে পেশাব করে দিল। তা দেখে লোকজন তাকে ধমকাতে লাগল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের নিষেধ করলেন। তার পেশাব শেষ হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদেশে এর উপর এক বালতি পানি ঢেলে দেওয়া হল।
(২১৯ নম্বর হাদিসের অনুরুপ)

/৫৯. অধ্যায়ঃ

বাচ্চাদের পেশাব।

২২২

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، أَنَّهَا قَالَتْ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِصَبِيٍّ، فَبَالَ عَلَى ثَوْبِهِ، فَدَعَا بِمَاءٍ فَأَتْبَعَهُ إِيَّاهُ‏.‏
উম্মুল মু’মিনীন মা ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একটি ছেলে শিশুকে আনা হল। শিশুটি তাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল। তিনি পানি আনালেন এবং এর উপর ঢেলে দিলেন।
(৫৪৬৮, ৬০০২, ৬৩৫৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২২)

২২৩

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ أُمِّ قَيْسٍ بِنْتِ مِحْصَنٍ، أَنَّهَا أَتَتْ بِابْنٍ لَهَا صَغِيرٍ، لَمْ يَأْكُلِ الطَّعَامَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَأَجْلَسَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حِجْرِهِ، فَبَالَ عَلَى ثَوْبِهِ، فَدَعَا بِمَاءٍ فَنَضَحَهُ وَلَمْ يَغْسِلْهُ‏.‏
উম্মু কায়স বিন্‌ত মিহসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তাঁর এমন একটি ছোট ছেলেকে নিয়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলেন যে তখনো খাবার খেতে শিখেনি। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিশুটিকে তাঁর কোলে বসালেন। তখন সে তাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল। তিনি পানি আনিয়ে এর উপর ছিটিয়ে দিলেন এবং তা ধৌত করলেন না। [১]
(৫৬৯৩; মুসলিম ২/৩১, হাঃ ২৮৭, আহমাদ ২৭০৬৪, ২৭০৭২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২৩)
 [১] পেশাব অপবিত্র। তবে পেশাব লেগে যাওয়া বস্তুকে পবিত্র করার পদ্ধতি দু রকম। এক : প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি অথবা দুগ্ধপোষ্য মেয়ে হলে তার পেশাব অবশ্যই ধুয়ে ফেলতে হবে। দুই : যদি দুগ্ধপোষ্য ছেলে হয় তবে পানির ছিটা দিলে তা পবিত্র হয়ে যাবে।

/৬০. অধ্যায়ঃ

দাঁড়িয়ে ও বসে পেশাব করা।

২২৪

حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ أَتَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سُبَاطَةَ قَوْمٍ فَبَالَ قَائِمًا، ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ، فَجِئْتُهُ بِمَاءٍ فَتَوَضَّأَ‏.‏
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা গোত্রের ময়লা আবর্জনা ফেলার স্থানে আসলেন। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে পেশাব করলেন। [১] অতঃপর পানি আনতে বললেন। আমি তাঁকে পানি এনে দিলে তিনি উযূ করলেন।[১]
(২২৫, ২২৬, ২৪৭১ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২৪)
 [১] সাধারণত বসে পেশাব করাই ছিল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অভ্যাস । এ জন্যই হযরত আয়িশা (রাঃ) বলেন, "যে ব্যাক্তি তোমাদের বলবে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে পেশাব করেছেন -– তার কথা বিশ্বাস করো না" (তিরমিযী, নাসাঈ) । এই একটি মাত্র স্থানেই তাঁর অভ্যাসের ব্যতিক্রম পাওয়া যায় । এর কারণ সম্পর্কে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, "রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোমর ব্যাথার কারণে দাঁড়িয়ে পেশাব করেছেন ।" (বায়হাকী, হাকেম)

/৬১. অধ্যায়ঃ

সাথীর নিকট বসে পেশাব করা এবং দেয়ালের আড়াল করা।

২২৫

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ رَأَيْتُنِي أَنَا وَالنَّبِيُّ، صلى الله عليه وسلم نَتَمَاشَى، فَأَتَى سُبَاطَةَ قَوْمٍ خَلْفَ حَائِطٍ، فَقَامَ كَمَا يَقُومُ أَحَدُكُمْ فَبَالَ، فَانْتَبَذْتُ مِنْهُ، فَأَشَارَ إِلَىَّ فَجِئْتُهُ، فَقُمْتُ عِنْدَ عَقِبِهِ حَتَّى فَرَغَ‏.‏
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমার স্মরণ আছে যে, একদা আমি ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সাথে চলছিলাম। তিনি দেয়ালের পিছনে মহল্লার একটি আবর্জনা ফেলার জায়গায় এলেন। অতঃপর তোমাদের কেউ যেভাবে দাঁড়ায় সে ভাবে দাঁড়িয়ে তিনি পেশাব করলেন। এ সময় আমি তাঁর নিকট হতে সরে যাচ্ছিলাম কিন্তু তিনি আমাকে ইঙ্গিত করলেন। আমি এসে তাঁর পেশাব করা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে রইলাম।
(২২৪; মুসলিম ২/২২, হাঃ ২৭৩, আহমাদ ২৩৩০১, ২৩৪০৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২৫)

/৬২. অধ্যায়ঃ

গোত্রের আবর্জনা ফেলার স্থানে পেশাব করা।

২২৬

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، قَالَ كَانَ أَبُو مُوسَى الأَشْعَرِيُّ يُشَدِّدُ فِي الْبَوْلِ وَيَقُولُ إِنَّ بَنِي إِسْرَائِيلَ كَانَ إِذَا أَصَابَ ثَوْبَ أَحَدِهِمْ قَرَضَهُ‏.‏ فَقَالَ حُذَيْفَةُ لَيْتَهُ أَمْسَكَ، أَتَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُبَاطَةَ قَوْمٍ فَبَالَ قَائِمًا‏.‏
আবূ ওয়াইল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আবূ মূসা (রাঃ) পেশাবের ব্যাপারে খুব কঠোরতা আরোপ করতেন এবং বলতেন : বনী ইসরাঈলের কারো কাপড়ে (পেশাব) লাগলে তা কেটে ফেলত। হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আবূ মূসা (রাঃ) যদি এ হতে বিরত থাকতেন (তবে ভাল হত)। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহল্লার আবর্জনা ফেলার স্থানে গিয়ে দাঁড়িয়ে পেশাব করেছেন।
(২২৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২৬)

/৬৩. অধ্যায়ঃ

রক্ত ধুয়ে ফেলা।

২২৭

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَتْنِي فَاطِمَةُ، عَنْ أَسْمَاءَ، قَالَتْ جَاءَتِ امْرَأَةٌ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ أَرَأَيْتَ إِحْدَانَا تَحِيضُ فِي الثَّوْبِ كَيْفَ تَصْنَعُ قَالَ ‏ "‏ تَحُتُّهُ، ثُمَّ تَقْرُصُهُ بِالْمَاءِ، وَتَنْضَحُهُ وَتُصَلِّي فِيهِ ‏"‏‏.
আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈকা মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেনঃ (হে আল্লাহর রসূল!) বলুন, আমাদের কারো কাপড়ে হায়যের রক্ত লেগে গেলে সে কী করবে? তিনি বললেনঃ সে তা ঘষে ফেলবে, তারপর পানি দিয়ে রগড়াবে এবং ভাল করে ধুয়ে ফেলবে। অতঃপর সেই কাপড়ে সালাত আদায় করবে।
(৩০৭; মুসলিম ২/৩৩, হাঃ ২৯১, আহমাদ ৬৯৯৮, ২৭০৪৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২৭)

২২৮

حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ جَاءَتْ فَاطِمَةُ ابْنَةُ أَبِي حُبَيْشٍ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي امْرَأَةٌ أُسْتَحَاضُ فَلاَ أَطْهُرُ، أَفَأَدَعُ الصَّلاَةَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ لاَ، إِنَّمَا ذَلِكِ عِرْقٌ، وَلَيْسَ بِحَيْضٍ، فَإِذَا أَقْبَلَتْ حَيْضَتُكِ فَدَعِي الصَّلاَةَ، وَإِذَا أَدْبَرَتْ فَاغْسِلِي عَنْكِ الدَّمَ ثُمَّ صَلِّي ‏"‏‏.‏ قَالَ وَقَالَ أَبِي ‏"‏ ثُمَّ تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلاَةٍ، حَتَّى يَجِيءَ ذَلِكَ الْوَقْتُ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ফাতিমা বিন্‌তু আবূ হুবায়শ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি একজন রক্ত-প্রদর রোগগ্রস্তা (ইস্তিহাযাহ) মহিলা। আমি কখনো পবিত্র হতে পারি না। এমতাবস্থায় আমি কি সালাত পরিত্যাগ করবো?’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ না, এতো শিরা হতে নির্গত রক্ত; হায়য নয়। তাই যখন তোমার হায়য আসবে তখন সালাত ছেড়ে দিও। আর যখন তা বন্ধ হবে তখন রক্ত ধুয়ে ফেলবে, তারপর সালাত আদায় করবে।
বর্ণনাকারী বলেন, আমার পিতা বলেছেনঃ অতঃপর এভাবে আরেক হায়য না আসা পর্যন্ত প্রত্যেক সালাতের জন্য উযূ করবে।
(মুসলিম ৩/১৪, হাঃ ৩৩৩, আহমাদ ২৪৫৭৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২৮)

/৬৪. অধ্যায়ঃ

বীর্য ধোয়া এবং ঘষে ফেলা এবং স্ত্রীলোক হতে যা লেগে যায় তা ধুয়ে ফেলা।

২২৯

حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ مَيْمُونٍ الْجَزَرِيُّ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُنْتُ أَغْسِلُ الْجَنَابَةَ مِنْ ثَوْبِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، فَيَخْرُجُ إِلَى الصَّلاَةِ، وَإِنَّ بُقَعَ الْمَاءِ فِي ثَوْبِهِ‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাপড় হতে অপবিত্রতার চিহ্ন ধুয়ে দিতাম এবং কাপড়ে ভিজা চিহ্ন নিয়ে তিনি সালাতে বের হতেন।
(২৩০, ২৩১, ২৩২; মুসলিম ২/৩২, হাঃ ২৮৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২৯)

২৩০

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمْرٌو، عَنْ سُلَيْمَانَ، قَالَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ، ح وَحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مَيْمُونٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنِ الْمَنِيِّ، يُصِيبُ الثَّوْبَ فَقَالَتْ كُنْتُ أَغْسِلُهُ مِنْ ثَوْبِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَيَخْرُجُ إِلَى الصَّلاَةِ وَأَثَرُ الْغَسْلِ فِي ثَوْبِهِ بُقَعُ الْمَاءِ‏.‏
সুলাইমান ইব্‌নু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে কাপড়ে লাগা বীর্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম।’ তিনি বললেনঃ আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাপড় হতে তা ধুয়ে ফেলতাম। তিনি কাপড় ধোয়ার ভিজা দাগ নিয়ে সালাতে বের হতেন।
(২২৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩০)

/৬৫. অধ্যায়ঃ

জানাবাতের অপবিত্রতা বা অন্য কিছু ধোয়ার পর যদি ভিজা চিহ্ন রয়ে যায়।

২৩১

حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مَيْمُونٍ، قَالَ سَأَلْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ فِي الثَّوْبِ تُصِيبُهُ الْجَنَابَةُ قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ كُنْتُ أَغْسِلُهُ مِنْ ثَوْبِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، ثُمَّ يَخْرُجُ إِلَى الصَّلاَةِ وَأَثَرُ الْغَسْلِ فِيهِ بُقَعُ الْمَاءِ‏.‏
‘আমর ইব্‌নু মায়মূন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ কাপড়ে জানাবাতের অপবিত্রতা লাগা সম্পর্কে আমি সুলায়মান ইব্‌নু ইয়াসার (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেনঃ আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাপড় হতে তা ধুয়ে ফেলতাম। অতঃপর তিনি সালাতে বেরিয়ে যেতেন আর তাতে পানি দিয়ে ধোয়ার চিহ্ন অবশিষ্ট থাকত।
(২২৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩১)

২৩২

حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ خَالِدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مَيْمُونِ بْنِ مِهْرَانَ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا كَانَتْ تَغْسِلُ الْمَنِيَّ مِنْ ثَوْبِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، ثُمَّ أَرَاهُ فِيهِ بُقْعَةً أَوْ بُقَعًا‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাপড় হতে বীর্য ধুয়ে ফেলতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তারপর আমি তাতে পানির একটি বা কয়েকটি দাগ দেখতে পেতাম।

(২২৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩২)

/৬৬. অধ্যায়ঃ

উট, চতুষ্পদ জন্তু ও বকরীর পেশাব এবং বকরীর খোঁয়াড় প্রসঙ্গে।
আবু মূসা (রাঃ) দারুল বারীদে (কূফার একটি স্থান, যেখানে সরকারী ডাক বহনকারীরা অবতরণ করতেন) সালাত আদায় করেন । আর তার পাশেই গোবর এবং খালি ময়দান ছিল । তিনি বললেনঃ এ জায়গা এবং ঐ জায়গা একই পর্যায়ের ।

২৩৩

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَدِمَ أُنَاسٌ مِنْ عُكْلٍ أَوْ عُرَيْنَةَ، فَاجْتَوَوُا الْمَدِينَةَ، فَأَمَرَهُمُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِلِقَاحٍ، وَأَنْ يَشْرَبُوا مِنْ أَبْوَالِهَا وَأَلْبَانِهَا، فَانْطَلَقُوا، فَلَمَّا صَحُّوا قَتَلُوا رَاعِيَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَاسْتَاقُوا النَّعَمَ، فَجَاءَ الْخَبَرُ فِي أَوَّلِ النَّهَارِ، فَبَعَثَ فِي آثَارِهِمْ، فَلَمَّا ارْتَفَعَ النَّهَارُ جِيءَ بِهِمْ، فَأَمَرَ فَقَطَعَ أَيْدِيَهُمْ وَأَرْجُلَهُمْ، وَسُمِرَتْ أَعْيُنُهُمْ، وَأُلْقُوا فِي الْحَرَّةِ يَسْتَسْقُونَ فَلاَ يُسْقَوْنَ‏.‏
قَالَ أَبُو قِلاَبَةَ فَهَؤُلاَءِ سَرَقُوا وَقَتَلُوا وَكَفَرُوا بَعْدَ إِيمَانِهِمْ، وَحَارَبُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ‏.‏
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ‘উকল বা ‘উরাইনাহ গোত্রের কিছু লোক (ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশে) মদীনায় এলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের (সদকার) উটের নিকট যাবার এবং উটের পেশাব ও দুধ পান করার নির্দেশ দিলেন। তারা সেখানে চলে গেল। অতঃপর তারা সুস্থ হয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাখালকে হত্যা করল এবং উটগুলো তাড়িয়ে নিয়ে গেল। এ সংবাদ দিনের প্রথম ভাগেই (তাঁর নিকট) এসে পৌঁছল। তিনি তাদের পশ্চাদ্ধাবন করার জন্য লোক পাঠালেন। বেলা বাড়লে তাদেরকে পাকড়াও করে আনা হল। অতঃপর তাঁর আদেশে তাদের হাত পা কেটে ফেলা হল। উত্তপ্ত শলাকা দিয়ে তাদের চোখ ফুটিয়ে দেয়া হল এবং গরম পাথুরে ভূমিতে তাদের নিক্ষেপ করা হল। তারা পানি চাইছিল, কিন্তু তাদেরকে পানি দেয়া হয়নি।
আবূ কিলাবাহ (রহঃ) বলেন, এরা চুরি করেছিল, হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল, ঈমান আনার পর কুফরী করেছিল এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল।
(১৫০১, ৩০১৮, ৪১৯২, ৪১৯৩, ৪৬১০, ৫৬৮৫, ৫৬৮৬, ৫৭২৭, ৬৮০২, ৬৮০৩, ৬৮০৪, ৬৮০৫, ৬৮৯৯; মুসলিম ২৮/২, হাঃ ১৬৭১, আহমাদ ১২৯৩৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩৩)

২৩৪

حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو التَّيَّاحِ، يَزِيدُ بْنُ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي قَبْلَ أَنْ يُبْنَى الْمَسْجِدُ فِي مَرَابِضِ الْغَنَمِ‏.‏
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ মসজিদে নাবাবী নির্মিত হবার পূর্বে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বকরীর খোঁয়াড়ে সালাত আদায় করতেন। [১]
(৪২৮, ৪২৯, ১৮৬৪, ২১০৬, ২৭৭১, ২৭৭৪, ২৭৭৯, ৩৯৩২; মুসলিম ৫/১, হাঃ ৫২৪, আহমাদ ১৩০১৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩৪)
 [১] যে পশুর গোশত হালাল তার পেশাব ও গোবর অপবিত্র নয়।

/৬৭. অধ্যায়ঃ

ঘি এবং পানিতে নাপাকী পড়া
যুহরী (রহঃ) বলেনঃ পানিতে অপবিত্রতা পড়লে কান ক্ষতি নেই, যতক্ষণ তার স্বাদ, গন্ধ বা রং বদলে না যায়। হাম্মাদ (রহঃ) বলেনঃ মৃত (পাখির) পালক (পানিতে পড়লে) কোন দোষ নেই। যুহরী (রহঃ) মৃত জন্তু, যথা : হাতী প্রভৃতির হাড় সম্পর্কে বলেনঃ আমি পূর্ববর্তী আলিমদের মধ্যে কিছু আলিমকে পেয়েছি, তাঁরা তা (চিরুণী বানিয়ে) চুল আঁচড়াতেন এবং তার পাত্রে তেল রেখে ব্যবহার করতেন, এতে তাঁরা কোনরূপ দোষ মনে করতেন না। ইব্‌নু সীরীন (রহঃ) ও ইবরাহীম (রহঃ) বলেনঃ হাতীর দাঁতের ব্যবসায়ে কোন দোষ নেই।

২৩৫

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ مَيْمُونَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنْ فَأْرَةٍ سَقَطَتْ فِي سَمْنٍ فَقَالَ ‏ "‏ أَلْقُوهَا وَمَا حَوْلَهَا فَاطْرَحُوهُ‏.‏ وَكُلُوا سَمْنَكُمْ ‏"‏‏.‏
মাইমূনা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘ঘি’য়ে পতিত ইঁদুর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ ‘ইঁদুরটি এবং তার আশ পাশ হতে ফেলে দাও এবং তোমাদের অবশিষ্ট ঘি খাও।
(২৩৬, ৫৫৩৮, ৫৫৩৯, ৫৫৪০ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩৫)

২৩৬

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا مَعْنٌ، قَالَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ مَيْمُونَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنْ فَأْرَةٍ سَقَطَتْ فِي سَمْنٍ فَقَالَ ‏ "‏ خُذُوهَا وَمَا حَوْلَهَا فَاطْرَحُوهُ ‏"‏‏.‏ قَالَ مَعْنٌ حَدَّثَنَا مَالِكٌ مَا لاَ أُحْصِيهِ يَقُولُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ مَيْمُونَةَ‏.‏
মাইমূনা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘ঘি’র মধ্যে ইঁদুর পড়ে যাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেনঃ তা ও তার আশপাশ হতে ফেলে দাও। (আ.প্র. ২৩০)
মা’ন (রহঃ) বলেন, মালিক (রহঃ) আমার নিকট বহুবার এভাবে বর্ণনা করেছেন : ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে এবং ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) মাইমূনা (রাঃ) হতেও।
(ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩৬)

২৩৭

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ كُلُّ كَلْمٍ يُكْلَمُهُ الْمُسْلِمُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ يَكُونُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَهَيْئَتِهَا إِذْ طُعِنَتْ، تَفَجَّرُ دَمًا، اللَّوْنُ لَوْنُ الدَّمِ، وَالْعَرْفُ عَرْفُ الْمِسْكِ ‏"‏‏.‏
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাস্তায় মুসলিমদের যে যখম হয়, ক্বিয়ামাতের দিন তার প্রতিটি যখম আঘাতকালীন সময়ে যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থাতেই থাকবে। রক্ত ছুটে বের হতে থাকবে। তার রং হবে রক্তের রং কিন্তু গন্ধ হবে মিশকের মত।

(২৮০৩, ৫৫৩৩; মুসলিম ৩৩/২৮, হাঃ ১৮৭৬, আহমাদ ৯১৯৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩৭)

/৬৮. অধ্যায়ঃ

আবদ্ধ পানিতে পেশাব করা।

২৩৮

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو الزِّنَادِ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ هُرْمُزَ الأَعْرَجَ، حَدَّثَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ نَحْنُ الآخِرُونَ السَّابِقُونَ ‏"‏‏
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, আমরা শেষে আগমনকারী এবং (ক্বিয়ামাত দিবসে) অগ্রবর্তী।
(৮৭৬, ৮৯৬, ২৯৫৬, ৩৪৮৬, ৬৬২৪, ৬৮৮৭,৭০৩৬,৭৪৯৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ নাই, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩৮)
এ সনদেই তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন স্থির- যা প্রবাহিত নয় এমন পানিতে কখনো পেশাব না করে। (সম্ভবত) পরে সে আবার তাতে গোসল করবে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩৮ শেষাংশ)

২৩৯

وَبِإِسْنَادِهِ قَالَ ‏ "‏ لاَ يَبُولَنَّ أَحَدُكُمْ فِي الْمَاءِ الدَّائِمِ الَّذِي لاَ يَجْرِي، ثُمَّ يَغْتَسِلُ فِيهِ ‏"‏‏.‏
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তোমাদের কেউ যেন স্থির- যা প্রবাহিত নয় এমন পানিতে কখনো পেশাব না করে। (সম্ভবত) পরে সে আবার তাতে গোসল করবে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩৮ শেষাংশ)

/৬৯. অধ্যায়ঃ

মুসল্লীর পিঠের উপর ময়লা বা মৃত জন্তু ফেললে তার সালাত বাতিল হবে না।
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সালাত আদায়ের অবস্থায় তাঁর কাপড়ে রক্ত দেখলে (সেভাবেই) তা রেখে দিয়ে সেভাবে সালাত আদায় করে নিতেন।
ইব্‌নুল মুসায়্যাব ও শা'বী (রহঃ) বলেন, যখন কেউ সালাত আদায় করে আর তার কাপড়ে রক্ত অথবা জানাবাতের নাপাকী থাকে অথবা সে ক্বিবলাহ ব্যতীত অন্যদিকে মুখ করে অথবা তায়াম্মুম করে সালাত আদায় করে অতঃপর ওয়াক্তের মধ্যেই যদি পানি পেয়ে যায় তবে (সালাত) দুহ্‌রাবে না।

২৪০

حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ بَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَاجِدٌ ح قَالَ وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ قَالَ حَدَّثَنَا شُرَيْحُ بْنُ مَسْلَمَةَ قَالَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ يُوسُفَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ قَالَ حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ مَيْمُونٍ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ حَدَّثَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي عِنْدَ الْبَيْتِ، وَأَبُو جَهْلٍ وَأَصْحَابٌ لَهُ جُلُوسٌ، إِذْ قَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ أَيُّكُمْ يَجِيءُ بِسَلَى جَزُورِ بَنِي فُلاَنٍ فَيَضَعُهُ عَلَى ظَهْرِ مُحَمَّدٍ إِذَا سَجَدَ فَانْبَعَثَ أَشْقَى الْقَوْمِ فَجَاءَ بِهِ، فَنَظَرَ حَتَّى إِذَا سَجَدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَضَعَهُ عَلَى ظَهْرِهِ بَيْنَ كَتِفَيْهِ وَأَنَا أَنْظُرُ، لاَ أُغَيِّرُ شَيْئًا، لَوْ كَانَ لِي مَنْعَةٌ‏.‏ قَالَ فَجَعَلُوا يَضْحَكُونَ وَيُحِيلُ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ، وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَاجِدٌ لاَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ، حَتَّى جَاءَتْهُ فَاطِمَةُ، فَطَرَحَتْ عَنْ ظَهْرِهِ، فَرَفَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ عَلَيْكَ بِقُرَيْشٍ ‏"‏‏.‏ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ، فَشَقَّ عَلَيْهِمْ إِذْ دَعَا عَلَيْهِمْ ـ قَالَ وَكَانُوا يُرَوْنَ أَنَّ الدَّعْوَةَ فِي ذَلِكَ الْبَلَدِ مُسْتَجَابَةٌ ـ ثُمَّ سَمَّى ‏"‏ اللَّهُمَّ عَلَيْكَ بِأَبِي جَهْلٍ، وَعَلَيْكَ بِعُتْبَةَ بْنِ رَبِيعَةَ، وَشَيْبَةَ بْنِ رَبِيعَةَ، وَالْوَلِيدِ بْنِ عُتْبَةَ، وَأُمَيَّةَ بْنِ خَلَفٍ، وَعُقْبَةَ بْنِ أَبِي مُعَيْطٍ ‏"‏‏.‏ وَعَدَّ السَّابِعَ فَلَمْ يَحْفَظْهُ قَالَ فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لَقَدْ رَأَيْتُ الَّذِينَ عَدَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَرْعَى فِي الْقَلِيبِ قَلِيبِ بَدْرٍ‏.‏
'আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস'ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাজদারত অবস্থায় ছিলেন। অন্য সূত্রে আহমাদ ইব্‌নু 'উসমান (রহঃ)..... 'আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস'ঊদ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা বায়তুল্লার (ক্বাবার) পাশে সালাত আদায় করছিলেন এবং সেখানে আবূ জাহেল ও তার সাথীরা বসা ছিল। এমন সময় তাদের একজন অন্যজনকে বলে উঠল 'তোমাদের মধ্যে কে অমুক গোত্রের উটনীর নাড়িভুঁড়ি এনে মুহাম্মাদ যখন সাজ্‌দা করেন তখন তার পিঠের উপর চাপিয়ে দিতে পারে'? তখন গোত্রের বড় পাষণ্ড ('উকবাহ) তাড়াতাড়ি গিয়ে তা নিয়ে এল এবং তাঁর প্রতি লক্ষ্য রাখল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সাজদায় গেলেন, তখন সে তাঁর পিঠের উপর দুই কাঁধের মাঝখানে তা রেখে দিল। ইব্‌নু মাস'ঊদ (রাঃ) বলেন, আমি (এ দৃশ্য) দেখছিলাম কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না। হায়! আমার যদি বাধা দেবার শক্তি থাকত! তিনি বলেন, তারা হাসতে লাগল এবং একে অন্যের উপর লুটোপুটি খেতে লাগল। আর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন সাজদায় থাকলেন, মাথা উঠালেন না। অবশেষে ফাতিমা (রাঃ) এসে সেটি তাঁর পিঠের উপর হতে ফেলে দিলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা উঠিয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি কুরায়শকে ধ্বংস করুন। এরূপ তিনবার বললেন। তিনি যখন তাদের বদ দু'আ করেন তখন তা তাদের অন্তরে ভয় জাগিয়ে তুলল। বর্ণনাকারী বলেন, তারা জানত যে, এ শহরে দু'আ কবূল হয়। অতঃপর তিনি নাম ধরে বললেনঃ হে আল্লাহ! আবূ জাহেলকে ধ্বংস করুন এবং 'উতবাহ ইব্‌নু রবী'আহ, শায়বাহ ইব্‌নু রবী'আ, ওয়ালীদ ইব্‌নু 'উতবাহ, উমাইয়া বিন খালাফ ও 'উকবাহ ইব্‌নু আবী মু'আইতকে ধ্বংস করুন। রাবী বলেন, তিনি সপ্তম ব্যক্তির নামও বলেছিলেন কিন্তু তিনি স্মরণ রাখতে পারেননি। ইব্‌নু মাস'ঊদ (রাঃ) বলেনঃ সেই সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাদের নাম উচ্চারণ করেছিলেন, তাদের আমি বদরের কূপের মধ্যে নিহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি।
(৫২০, ২৯৩৪, ৩১৮৫, ৩৮৫৪, ৩৯৬০; মুসলিম ৩২/৩৯, হাঃ ১৭৯৪, আহমাদ ৩৭২২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩৯)

/৭০. অধ্যায়ঃ

থুথু, নাকের শ্লেম্মা ইত্যাদি কাপড়ে লেগে গেলে।
'উরওয়াহ (রহঃ) মিসওয়ার ও মারওয়ান (রহঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুদায়বিয়ার সময় বের হলেন। অতঃপর পূর্ণ হাদীস বর্ণনার পর তিনি বলেন, আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সেদিন) যখনই কোন শ্লেম্মা ঝেড়ে ফেলছিলেন, তখন তা তাদের কারো না কারো হাতে পড়ছিল। তারপর তা (বরকত স্বরূপ) ঐ ব্যক্তি তা তার মুখমণ্ডল ও শরীরে মেখে নিচ্ছিল।

২৪১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ بَزَقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي ثَوْبِهِ‏.‏ طَوَّلَهُ ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ قَالَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ حَدَّثَنِي حُمَيْدٌ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা তাঁর কাপড়ে থুথু ফেললেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন যে, ইব্‌নু আবূ মারইয়াম এ হাদীসটি বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন।
(৪০৫, ৪১২, ৪১৩, ৪১৭, ৫৩১, ৫৩২, ৮২২, ১৬১৪ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪০)

/৭১. অধ্যায়ঃ

নবীয (খেজুর, কিসমিস, মনাক্কা, ইত্যাদি ভিজানো পানি) এবং নেশার উদ্রেককারী পানীয় দ্বারা উযূ না-জায়িয।
হাসান (রহঃ) ও আবুল 'আলিয়াহ (রহঃ) একে মাকরূহ বলেছেন। 'আত্বা (রহঃ) বলেনঃ নবীয এবং দুধ দিয়ে উযূ করার চেয়ে তায়াম্মুম করাই আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়।

২৪২

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ كُلُّ شَرَابٍ أَسْكَرَ فَهُوَ حَرَامٌ ‏"‏‏
'আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে সকল পানীয় নেশা সৃষ্টি করে, তা হারাম।
(৫৫৮৫, ৫৫৮৬ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪১)

/৭২. অধ্যায়ঃ

পিতার মুখমণ্ডল হতে কন্যা কর্তৃক রক্ত ধুয়ে ফেলা।
আবুল 'আলিয়াহ (রহঃ) বলেনঃ আমার পায়ে ব্যাথা, তোমরা আমার পা মালিশ করে দাও।

২৪৩

حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، سَمِعَ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ السَّاعِدِيَّ،، وَسَأَلَهُ النَّاسُ، وَمَا بَيْنِي وَبَيْنَهُ أَحَدٌ بِأَىِّ شَىْءٍ دُووِيَ جُرْحُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا بَقِيَ أَحَدٌ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي، كَانَ عَلِيٌّ يَجِيءُ بِتُرْسِهِ فِيهِ مَاءٌ، وَفَاطِمَةُ تَغْسِلُ عَنْ وَجْهِهِ الدَّمَ، فَأُخِذَ حَصِيرٌ فَأُحْرِقَ فَحُشِيَ بِهِ جُرْحُ
আবূ হাযিম থেকে বর্ণিতঃ
যখন আমার এবং সাহল ইব্‌নু সা'দ আস-সা'ঈদী (রাঃ)-র মাঝখানে কেউ ছিল না, তখন লোকে তার নিকট আরয করলঃ (উহুদ যুদ্ধে) কী দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যখমের চিকিৎসা করা হয়েছিল? তখন তিনি বললেনঃ এ ব্যাপারে আমার চেয়ে অধিক জানে এমন কেউ জীবিত নেই। 'আলী (রাঃ) তাঁর ঢালে করে পানি আনছিলেন আর ফাতিমাহ্‌ (রাঃ) তাঁর মুখমণ্ডল হতে রক্ত ধুয়ে দিলেন। অবশেষে চাটাই পুড়িয়ে (তার ছাই) তাঁর ক্ষতস্থানে দেয়া হল।
(২৯০৩, ২৯১১, ৩০৩৭, ৪০৭৫, ৫২৪৮, ৫৭২২ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪২)

/৭৩. অধ্যায়ঃ

মিসওয়াক করা।
ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে রাত কাটিয়ে ছিলাম। তখন [১] তিনি মিসওয়াক করলেন।
[১] তাহাজ্জুদের জন্য ঘুম থেকে উঠে ।

২৪৪

حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدْتُهُ يَسْتَنُّ بِسِوَاكٍ بِيَدِهِ يَقُولُ ‏ "‏ أُعْ أُعْ ‏"‏، وَالسِّوَاكُ فِي فِيهِ، كَأَنَّهُ يَتَهَوَّعُ‏.‏
আবূ বুরদাহ (রহঃ)-র পিতা [আবূ মূসা (রাঃ)] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একবার আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলাম। তখন তাঁকে দেখলাম তিনি মিসওয়াক করছেন এবং মিসওয়াক মুখে দিয়ে তিনি উ' উ' শব্দ করছেন যেন তিনি বমি করছেন।
(মুসলিম ২/১৫, হাঃ ২৫৪, আহমাদ ১৯৭৫৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪৩)

২৪৫

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ يَشُوصُ فَاهُ بِالسِّوَاكِ‏.‏
হুযায়ফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রাতে (সালাতের জন্য) উঠতেন তখন মিসওয়াক দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতেন।

(৮৮৯, ১১৩৬; মুসলিম ২/১৫, হাঃ ২৫৫, আহমাদ ২৩৪৭৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪৪)

/৭৪. অধ্যায়ঃ

বয়সে বড় ব্যক্তিকে মিসওয়াক প্রদান করা।

২৪৬

وَقَالَ عَفَّانُ حَدَّثَنَا صَخْرُ بْنُ جُوَيْرِيَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ أَرَانِي أَتَسَوَّكُ بِسِوَاكٍ، فَجَاءَنِي رَجُلاَنِ أَحَدُهُمَا أَكْبَرُ مِنَ الآخَرِ، فَنَاوَلْتُ السِّوَاكَ الأَصْغَرَ مِنْهُمَا، فَقِيلَ لِي كَبِّرْ‏.‏ فَدَفَعْتُهُ إِلَى الأَكْبَرِ مِنْهُمَا ‏"‏‏.‏
قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ اخْتَصَرَهُ نُعَيْمٌ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ عَنْ أُسَامَةَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ‏.
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি (স্বপ্নে) দেখলাম যে, আমি মিসওয়াক করছি। আমার নিকট দু' ব্যক্তি এলেন। একজন অপরজন হতে বয়সে বড়। অতঃপর আমি তাদের মধ্যে কনিষ্ঠ ব্যক্তিকে মিসওয়াক দিতে গেলে আমাকে বলা হলো, 'বড়কে দাও'। তখন আমি তাদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে দিলাম। আবূ 'আবদুল্লাহ বলেন, 'নু'আয়ম, ইব্‌নুল মুবারাক সূত্রে ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) হতে হাদীসটি সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন।
(মুসলিম ৪২/৪, হাঃ ২২৭১, আহমাদ ৬১০৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭২ অনুচ্ছেদ)

/৭৫. অধ্যায়ঃ

উযূ সহ রাতে ঘুমাবার ফযীলত।

২৪৭

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِذَا أَتَيْتَ مَضْجَعَكَ فَتَوَضَّأْ وُضُوءَكَ لِلصَّلاَةِ، ثُمَّ اضْطَجِعْ عَلَى شِقِّكَ الأَيْمَنِ، ثُمَّ قُلِ اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، اللَّهُمَّ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ‏.‏ فَإِنْ مُتَّ مِنْ لَيْلَتِكَ فَأَنْتَ عَلَى الْفِطْرَةِ، وَاجْعَلْهُنَّ آخِرَ مَا تَتَكَلَّمُ بِهِ ‏"‏‏.‏ قَالَ فَرَدَّدْتُهَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا بَلَغْتُ ‏"‏ اللَّهُمَّ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ ‏"‏‏.‏ قُلْتُ وَرَسُولِكَ‏.‏ قَالَ ‏"‏ لاَ، وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ
বারাআ ইব্‌নু 'আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন সালাতের উযূর মতো উযূ করে নেবে। তারপর ডান পাশে শুয়ে বলবেঃ
"হে আল্লাহ! আমার জীবন আপনার নিকট সমর্পণ করলাম। আমার সকল কাজ তোমার নিকট অর্পণ করলাম এবং আমি তোমার আশ্রয় গ্রহণ করলাম তোমার প্রতি আগ্রহ ও ভয় নিয়ে। তুমি ব্যতীত প্রকৃত কোন আশ্রয়স্থল ও পরিত্রাণের স্থান নেই। হে আল্লাহ! আমি ঈমান আনলাম তোমার অবতীর্ণ কিতাবের উপর এবং তোমার প্রেরিত নবীর প্রতি।"
অতঃপর যদি সে রাতেই তোমার মৃত্যু হয় তবে ইসলামের উপর তোমার মৃত্যু হবে। এ কথাগুলো তোমার সর্বশেষ কথায় পরিণত কর। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এ কথাগুলি পুনরায় শুনালাম। যখন
اللَّهُمَّ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ পর্যন্ত পৌছে وَرَسُولِكَ বললাম, তখন তিনি বললেনঃ না; বরং وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ বল। [১]

(৬৩১১, ৬৩১৩, ৬৩১৫, ৭৪৮৮; মুসলিম ৪৮/১৭, হাঃ ২৭১০, আহমাদ ১৮৫৮৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৪০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪৫)
 [১] কুরআন ও সুন্নাহয় বর্ণিত দু'আয় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বর্ণিত শব্দের পরিবর্তন করা যাবে না। এবং দু'আ নিজ পক্ষ হতে তৈরী করাও যাবে না। কারণ 'আমল কবূলের দু'টি শর্ত রয়েছেঃ
(১) ইখলাস বা নিছক আল্লাহর উদ্দেশে হতে হবে।
(২) নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের হুবহু অনুসরণ হতে হবে। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে দু'আ যেভাবে শিক্ষা দিয়েছেন ঠিক সেভাবেই দু'আ পড়তে হবে। দু'আর সঙ্গে শব্দ সংযোজন বা বিয়োজন সম্পূর্ণ অবৈধ বা বিদ'আত। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে আমাদের দেশে রেডিও ও টেলিভিশনে ও বেশীরভাগ মসজিদে আযানের দু'আর মধ্যে অতিরিক্ত শব্দ সংযোজন করা হয় যা বিদ'আত। কিংবা দরুদ পাঠের সময় কিছু কিছু অতিরিক্ত বানানো শব্দ দ্বারা দরুদ পাঠ করা হয় এমনকি নতুন নতুন অনেক দরুদ তৈরী করা হয়েছে সবই বিদ'আত যা আল্লাহর রসূল শিক্ষা দেননি। কারণ, এ অতিরিক্ত শব্দগুলো ও বানানো দরুদগুলো সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।

No comments

Powered by Blogger.