সহিহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "সালাতের ওয়াক্তসমূহ" হাদিস নং -৫৯১ থেকে ৬০০

৫৯১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي قَالَتْ، عَائِشَةُ ابْنَ أُخْتِي مَا تَرَكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم السَّجْدَتَيْنِ بَعْدَ الْعَصْرِ عِنْدِي قَطُّ‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে ভাগ্নে! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট উপস্থিত থাকার কালে ‘আসরের পরবর্তী দু’রাক’আত কখনও ছাড়েননি।
৫৯২
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، قَالَ حَدَّثَنَا الشَّيْبَانِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الأَسْوَدِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ رَكْعَتَانِ لَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدَعُهُمَا سِرًّا وَلاَ عَلاَنِيَةً رَكْعَتَانِ قَبْلَ صَلاَةِ الصُّبْحِ، وَرَكْعَتَانِ بَعْدَ الْعَصْرِ‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দু’রাকাত সালাত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন অবস্থাতেই ছাড়তেন না। তাহলো ফজরের সালাতের পূর্বের দু’রাকাত ও আসরের পরের দু’রাকাত।
৫৯৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ رَأَيْتُ الأَسْوَدَ وَمَسْرُوقًا شَهِدَا عَلَى عَائِشَةَ قَالَتْ مَا كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَأْتِينِي فِي يَوْمٍ بَعْدَ الْعَصْرِ إِلاَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ‏.‏
’আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে দিনই আসরের পর আমার নিকট আসতেন সে দিনই দু’রাকাত সালাত আদায় করতেন।
/৩৪ অধ্যায়ঃ
মেঘলা দিনে জলদি সালাত আদায় করা।
৫৯৪
حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ أَبِي كَثِيرٍ ـ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، أَنَّ أَبَا الْمَلِيحِ، حَدَّثَهُ قَالَ كُنَّا مَعَ بُرَيْدَةَ فِي يَوْمٍ ذِي غَيْمٍ فَقَالَ بَكِّرُوا بِالصَّلاَةِ فَإِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ تَرَكَ صَلاَةَ الْعَصْرِ حَبِطَ عَمَلُهُ ‏"‏‏.
আবূ মালীহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মেঘলা দিনে আমরা বুরাইদা (রাঃ) -এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি বললেন, শীঘ্র সালাত আদায় করে নাও। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছেন, যে ব্যক্তি আসরের সালাত ছেড়ে দেয় তার সমস্ত আমাল বিনষ্ট হয়ে যায়।
/৩৫ অধ্যায়ঃ
সময় চলে যাওয়ার পর আযান দেয়া।
৫৯৫
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مَيْسَرَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سِرْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً فَقَالَ بَعْضُ الْقَوْمِ لَوْ عَرَّسْتَ بِنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَخَافُ أَنْ تَنَامُوا عَنِ الصَّلاَةِ ‏"‏‏.‏ قَالَ بِلاَلٌ أَنَا أُوقِظُكُمْ‏.‏ فَاضْطَجَعُوا وَأَسْنَدَ بِلاَلٌ ظَهْرَهُ إِلَى رَاحِلَتِهِ، فَغَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ فَنَامَ، فَاسْتَيْقَظَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَقَالَ ‏"‏ يَا بِلاَلُ أَيْنَ مَا قُلْتَ ‏"‏‏.‏ قَالَ مَا أُلْقِيَتْ عَلَىَّ نَوْمَةٌ مِثْلُهَا قَطُّ‏.‏ قَالَ ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ قَبَضَ أَرْوَاحَكُمْ حِينَ شَاءَ، وَرَدَّهَا عَلَيْكُمْ حِينَ شَاءَ، يَا بِلاَلُ قُمْ فَأَذِّنْ بِالنَّاسِ بِالصَّلاَةِ ‏"‏‏.‏ فَتَوَضَّأَ فَلَمَّا ارْتَفَعَتِ الشَّمْسُ وَابْيَاضَّتْ قَامَ فَصَلَّى‏.‏
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে আমরা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে ছিলাম। যাত্রী দলের কেউ কেউ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! রাতের এ শেষ প্রহরের আমদের নিয়ে যদি একটু বিশ্রাম নিতেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার ভয় হচ্ছে সালাতের সময়ও তোমরা ঘুমিয়ে থকবে। বিলাল (রাঃ) বললেন, আমি আপনাদের জাগিয়ে দিব। কাজেই সবাই শুয়ে পড়লেন। এ দিকে বিলাল (রাঃ) তার হাওদার গায়ে একটু হেলান দিয়ে বসলেন। এতে তাঁর দু’চোখ মুদে আসলো। ফলে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। সূর্য কেবল উঠতে শুরু করেছে, এমন সময় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাগ্রত হলেন এবং বিলাল (রাঃ) -কে ডেকে বললেন, হে বিলাল! তোমার কথা গেলো কোথায়? বিলাল (রাঃ) বললেন, আমার এতো অধিক ঘুম আর কখনও পায়নি। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ তায়ালা যখন ইচ্ছা করেছেন তখন তোমাদের রূহ কবয করে নিয়েছেন; আবার যখন ইচ্ছা করেছেন তখন তা তোমাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। হে বিলাল! উঠ, লোকদের জন্য সালাতের আযান দাও। অতঃপর তিনি উযু করলেন এবং সূর্য যখন উপরে উঠল এবং উজ্জ্বল হলো তখন তিনি দাঁড়ালেন এবং সালাত আদায় করলেন।
/৩৬ অধ্যায়ঃ
সময় চলে যাওয়ার পর লোকদের নিয়ে জামা’আতে সালাত আদায় করা।
৫৯৬
حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، جَاءَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ، فَجَعَلَ يَسُبُّ كُفَّارَ قُرَيْشٍ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا كِدْتُ أُصَلِّي الْعَصْرَ حَتَّى كَادَتِ الشَّمْسُ تَغْرُبُ‏.‏ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ وَاللَّهِ مَا صَلَّيْتُهَا ‏"‏‏.‏ فَقُمْنَا إِلَى بُطْحَانَ، فَتَوَضَّأَ لِلصَّلاَةِ، وَتَوَضَّأْنَا لَهَا فَصَلَّى الْعَصْرَ بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ، ثُمَّ صَلَّى بَعْدَهَا الْمَغْرِبَ‏.‏
জাবির ইবনু 'আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খন্দকের দিন সূর্য অস্ত যাওয়ার পর 'উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এসে কুরাইশ গোত্রীয় কাফিরদের ভর্ৎসনা করতে লাগলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি এখনও আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি, এমন কি সূর্য অস্ত যায় যায়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন আল্লাহর শপথ! আমিও তা আদায় করিনি। অতঃপর আমরা উঠে বুতহানের দিকে গেলাম। সেখানে তিনি সালাত জন্য উযু করলেন এবং আমরাও উযু করলাম; অতঃপর সূর্য ডুবে গেলে আসরের সালাত আদায় করেন, অতঃপর মাগরিবের সালাত আদায় করেন।
/৩৭ অধ্যায়ঃ
কেউ যদি কোন ওয়াক্তের সালাত আদায় করতে ভুলে যায়, তাহলে যখন স্মরণ হবে, তখন সে তা আদায় করে নিবে। সে সালাত ব্যতীত অন্য সালাত পুনরায় আদায় করতে হবে না।
ইব্‌রাহীম (রহঃ) বলেন, কেউ যদি বিশ বছরও এক ওয়াক্তের সালাত ছেড়ে দিয়ে থাকে তা হলে তাকে শুধু সে ওয়াক্তের সালাতই পুনরায় আদায় করতে হবে।
৫৯৭
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، وَمُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالاَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ مَنْ نَسِيَ صَلاَةً فَلْيُصَلِّ إِذَا ذَكَرَهَا، لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلاَّ ذَلِكَ ‏"‏‏.‏ ‏{‏وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي‏}‏ قَالَ مُوسَى قَالَ هَمَّامٌ سَمِعْتُهُ يَقُولُ بَعْدُ ‏{‏وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي‏}‏‏.‏وَقَالَ حَبَّانُ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি কেউ কোনো সালাতের কথা ভুলে যায়, তাহলে যখনই স্মরণ হবে, তখন তাকে তা আদায় করতে হবে। এ ব্যতীত সে সালাতের অন্য কোনো কাফফারা নেই। (কেননা, আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন) “আমাকে স্মরণের উদ্দেশ্যে সালাত কায়িম কর”-(সূরাহ ত্ব-হা ২০/১৪)

মূসা (রহঃ) বলেন, হাম্মাম (রহঃ) বলেছেন যে, আমি তাকে [কাতাদা (রহঃ)] পরে বলতে শুনেছি, “আমাকে স্মরণের উদ্দেশ্যে সালাত কায়িম কর”-(সূরাহ ত্ব-হা ২০/১৪)

হাব্বান (রহঃ) বলেন, আনাস (রাঃ) -এর সূত্রে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।
/৩৮ অধ্যায়ঃ
একাধিক সালাতের কাযা ক্রমান্বয়ে আদায় করা।
৫৯৮
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ أَبِي كَثِيرٍ ـ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ جَعَلَ عُمَرُ يَوْمَ الْخَنْدَقِ يَسُبُّ كُفَّارَهُمْ وَقَالَ مَا كِدْتُ أُصَلِّي الْعَصْرَ حَتَّى غَرَبَتْ‏.‏ قَالَ فَنَزَلْنَا بُطْحَانَ، فَصَلَّى بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ، ثُمَّ صَلَّى الْمَغْرِبَ
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধকালে এক সময় 'উমর (রাঃ) কুরাইশ কাফিরদের তিরস্কার করতে লাগলেন এবং বললেন, সূর্যাস্তের পূর্বে আমি ‘আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি, [জাবির (রাঃ) বলেন] অতঃপর আমরা বুতহান উপত্যকায় উপস্থিত হলাম। সেখানে তিনি সূর্যাস্তের পর সে সালাত আদায় করলেন, তার পরে মাগরিবের সালাত আদায় করলেন।
/৩৯ অধ্যায়ঃ
ইশার সালাতের পর গল্প গুজব করা মাকরূহ।


(سَامِرُ) শব্দটি (السَّمْرُ) ধাতূ থেকে নির্গত। এর বহুবচন (السُّمَّارُ) এ আয়াতে (سَامِرُ) শব্দটি বহুবচনরূপে ব্যবহৃত হয়েছে।
৫৯৯
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ حَدَّثَنَا عَوْفٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الْمِنْهَالِ، قَالَ انْطَلَقْتُ مَعَ أَبِي إِلَى أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ فَقَالَ لَهُ أَبِي حَدِّثْنَا كَيْفَ، كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الْمَكْتُوبَةَ قَالَ كَانَ يُصَلِّي الْهَجِيرَ وَهْىَ الَّتِي تَدْعُونَهَا الأُولَى حِينَ تَدْحَضُ الشَّمْسُ، وَيُصَلِّي الْعَصْرَ، ثُمَّ يَرْجِعُ أَحَدُنَا إِلَى أَهْلِهِ فِي أَقْصَى الْمَدِينَةِ وَالشَّمْسُ حَيَّةٌ، وَنَسِيتُ مَا قَالَ فِي الْمَغْرِبِ‏.‏ قَالَ وَكَانَ يَسْتَحِبُّ أَنْ يُؤَخِّرَ الْعِشَاءَ‏.‏ قَالَ وَكَانَ يَكْرَهُ النَّوْمَ قَبْلَهَا وَالْحَدِيثَ بَعْدَهَا، وَكَانَ يَنْفَتِلُ مِنْ صَلاَةِ الْغَدَاةِ حِينَ يَعْرِفُ أَحَدُنَا جَلِيسَهُ، وَيَقْرَأُ مِنَ السِّتِّينَ إِلَى الْمِائَةِ‏.‏
আবূ মিনহাল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার পিতার সঙ্গে আবূ বারযা আসলামী (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। আমার পিতা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফারয সালাতসমূহ কোন সময় আদায় করতেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত যাকে তোমরা প্রথম সালাত বলে থাকো, সূর্য ঢলে পড়লে আদায় করতেন। আর তিনি আসরের সালাত এমন সময় আদায় করতেন যে, আমাদের কেউ সূর্য সজীব থাকতেই মদীনার শেষ প্রান্তে নিজ পরিজনের নিকট ফিরে আসতে পারতো। মাগরিব সম্পর্কে তিনি কী বলেছিলেন, তা আমি ভুলে গেছি। অতঃপর আবূ বারযা (রাঃ) বলেন, ইশার সালাত একটু বিলম্বে আদায় করাকে তিনি পছন্দ করতেন। আর ইশার পূর্বে ঘুমানো এবং পরে কথাবার্তা বলা তিনি অপছন্দ করতেন। আর এমন মুহূর্তে তিনি ফজরের সালাত শেষ করতেন যে, আমাদের যে কেউ তার পাশ্ববর্তী ব্যক্তিকে চিনত পারত। এ সালাতে তিনি ষাট হতে একশত আয়াত তিলাওয়াত করতেন।
/৪০ অধ্যায়ঃ
ইশার পর জ্ঞানচর্চা ও কল্যাণকর বিষয়ের আলোচনা।
৬০০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الصَّبَّاحِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَلِيٍّ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ، قَالَ انْتَظَرْنَا الْحَسَنَ وَرَاثَ عَلَيْنَا حَتَّى قَرُبْنَا مِنْ وَقْتِ قِيَامِهِ، فَجَاءَ فَقَالَ دَعَانَا جِيرَانُنَا هَؤُلاَءِ‏.‏ ثُمَّ قَالَ قَالَ أَنَسٌ نَظَرْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ لَيْلَةٍ حَتَّى كَانَ شَطْرُ اللَّيْلِ يَبْلُغُهُ، فَجَاءَ فَصَلَّى لَنَا، ثُمَّ خَطَبَنَا فَقَالَ ‏ "‏ أَلاَ إِنَّ النَّاسَ قَدْ صَلَّوْا ثُمَّ رَقَدُوا، وَإِنَّكُمْ لَمْ تَزَالُوا فِي صَلاَةٍ مَا انْتَظَرْتُمُ الصَّلاَةَ ‏"‏‏.‏ قَالَ الْحَسَنُ وَإِنَّ الْقَوْمَ لاَ يَزَالُونَ بِخَيْرٍ مَا انْتَظَرُوا الْخَيْرَ‏.‏ قَالَ قُرَّةُ هُوَ مِنْ حَدِيثِ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏
কুররা ইবনু খালিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা হাসান বসরী (রহঃ)-এর অপেক্ষায় ছিলাম। তিনি এতো বিলম্বে আসলেন যে, নিয়মিত সালাত শেষে চলে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসলো। এরপর তিনি এসে বললেন, আমাদের এ প্রতিবেশীগণ আমাদের ডেকেছিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, এক রাতে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর অপেক্ষায় ছিলাম। এমন কি প্রায় অর্ধেক রাত হয়ে গেলো, তখন এসে তিনি আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর আমাদের সম্বোধন করে তিনি বললেন, জেনে রাখ! লোকেরা সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়েছে, তবে তোমরা যতক্ষন সালাতের অপেক্ষায় ছিলে ততক্ষন সালাতেই রত ছিলে। হাসান বসরী (রহঃ) বলেন, মানুষ যতক্ষন কল্যাণের অপেক্ষায় থাকে, ততক্ষন তারা কল্যাণেই রত থাকে। কুররা (রহঃ) বলেন, এ উক্তি আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হাদীসের অংশ।

No comments

Powered by Blogger.