সহিহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "সালাতের ওয়াক্তসমূহ" হাদিস নং -৫৬১ থেকে ৫৭০
৫৬১
৫৬২
حَدَّثَنَا الْمَكِّيُّ
بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي عُبَيْدٍ، عَنْ سَلَمَةَ،
قَالَ كُنَّا نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْمَغْرِبَ إِذَا
تَوَارَتْ بِالْحِجَابِ.
সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সূর্য পর্দার আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়ার
সাথে সাথেই আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে মাগরিবের সালাত
আদায় করতাম।
حَدَّثَنَا آدَمُ،
قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، قَالَ
سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم سَبْعًا جَمِيعًا وَثَمَانِيًا جَمِيعًا.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) (মাগরিব ও ‘ইশার) সাত রাক’আত ও (যুহর ও ‘আসরের) আট রাক’আত একত্রে আদায়
করেছেন।
৯/১৯. অধ্যায়ঃ
মাগরিবকে ‘ইশা বলা যিনি অপছন্দ করেন।
৫৬৩
حَدَّثَنَا أَبُو
مَعْمَرٍ ـ هُوَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو ـ قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْوَارِثِ، عَنِ الْحُسَيْنِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ،
قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ الْمُزَنِيُّ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " لاَ تَغْلِبَنَّكُمُ الأَعْرَابُ عَلَى اسْمِ صَلاَتِكُمُ
الْمَغْرِبِ ". قَالَ الأَعْرَابُ وَتَقُولُ هِيَ الْعِشَاءُ.
‘আবদুল্লাহ্ মুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ বেদুঈনরা মাগরিবের সালাতের নামের ব্যাপারে তোমাদের উপর যেন
প্রভাব বিস্তার না করে। রাবী (‘আবদুল্লাহ্ মুযানী (রাঃ) বলেন, বেদুঈনরা মাগরিবকে
‘ইশা বলে থাকে।
৯/২০. অধ্যায়ঃ
‘ইশা ও আতামাহ-এর বর্ণনা এবং যিনি এতে কোনো আপত্তি
করেন না।
[১] ইশার সালাত দেরী করে আদায় করেছেন এর জন্য (اَخَّرُ الْعَشَاءَ)না বলে (اَعْتَمَ)
শব্দটি ব্যবহার করেছেন। যাতে বর্ণনায় ইশা ও আতামা বলার ইঙ্গিত পাওয়া যায় । অর্থাৎ
তিনি তার বর্ণনায় ইশা ও আতামা দু’টো শব্দই ব্যবহার করেছেন।
[২] শেষ ইশা বলে ইশার সালাতকেই বুঝানো হয়েছে। কেননা, কোন কোন ক্ষেত্রে মাগরিবকেও ইশা বলা হয়।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন যে, মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কষ্টকর সালাত হল ‘ইশা ও ফজর। তিনি আরও বলেছেন যে, তারা যদি জানতো, আতামা (ইশা) ও ফজরে কি কল্যাণ নিহিত আছে। ইমাম বুখারী (রহঃ)বলেন, ‘ইশা শব্দ ব্যবেহার করাই উত্তম। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ “ইশা সালাতের পর”- (সূরাহ্ আন-নূর ২৪/৫৮)।
আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আমরা পালাক্রমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এখানে ‘ইশার সালাতের সময় যেতাম। একবার তিনি তা দেরী করে আদায় করেন। ইবনু ‘আব্বাস ও ‘আয়িশা (রাঃ) হতে (এরূপ) বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশা দেরী করে আদায় করেন। বর্ণনাকারীদের কেউ কেউ বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আতামাহকে দেরী করে আদায় করেন। জাবির (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায় করলেন। আবূ বারযা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত বিলম্বে আদায় করতেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শেষ ‘ইশা বিলম্বে আদায় করলেন। ইবনু উমর, আবূ আইয়ূব ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিব ও ‘ইশার সালাত আদায় করেন।
[২] শেষ ইশা বলে ইশার সালাতকেই বুঝানো হয়েছে। কেননা, কোন কোন ক্ষেত্রে মাগরিবকেও ইশা বলা হয়।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন যে, মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কষ্টকর সালাত হল ‘ইশা ও ফজর। তিনি আরও বলেছেন যে, তারা যদি জানতো, আতামা (ইশা) ও ফজরে কি কল্যাণ নিহিত আছে। ইমাম বুখারী (রহঃ)বলেন, ‘ইশা শব্দ ব্যবেহার করাই উত্তম। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ “ইশা সালাতের পর”- (সূরাহ্ আন-নূর ২৪/৫৮)।
আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আমরা পালাক্রমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এখানে ‘ইশার সালাতের সময় যেতাম। একবার তিনি তা দেরী করে আদায় করেন। ইবনু ‘আব্বাস ও ‘আয়িশা (রাঃ) হতে (এরূপ) বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশা দেরী করে আদায় করেন। বর্ণনাকারীদের কেউ কেউ বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আতামাহকে দেরী করে আদায় করেন। জাবির (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায় করলেন। আবূ বারযা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত বিলম্বে আদায় করতেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শেষ ‘ইশা বিলম্বে আদায় করলেন। ইবনু উমর, আবূ আইয়ূব ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিব ও ‘ইশার সালাত আদায় করেন।
৫৬৪
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ،
قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ،
قَالَ سَالِمٌ أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ صَلَّى لَنَا رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً صَلاَةَ الْعِشَاءِ ـ وَهْىَ الَّتِي يَدْعُو
النَّاسُ الْعَتَمَةَ ـ ثُمَّ انْصَرَفَ فَأَقْبَلَ عَلَيْنَا فَقَالَ "
أَرَأَيْتُمْ لَيْلَتَكُمْ هَذِهِ فَإِنَّ رَأْسَ مِائَةِ سَنَةٍ مِنْهَا لاَ
يَبْقَى مِمَّنْ هُوَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ أَحَدٌ ".
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিয়ে ‘ইশার সালাত আদায় করেন, যে সালাতকে লোকেরা
‘আতামা’ বলে থাকে। অতঃপর তিনি ফিরে আমাদের দিকে মুখ করে বললেন, আজকের এ রাত
সম্পর্কে তোমরা জান কি? এ রাত হতে নিয়ে একশ’ বছরের শেষ মাথায় আজ যারা ভূপৃষ্ঠে আছে
তাদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না।
৯/২১. অধ্যায়ঃ
‘ইশার সালাতের সময় লোকজন একত্রিত হয়ে গেলে বা
দেরিতে এলে।
৫৬৫
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ
بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ،
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو ـ هُوَ ابْنُ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ ـ قَالَ
سَأَلْنَا جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ صَلاَةِ النَّبِيِّ، صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ كَانَ يُصَلِّي الظُّهْرَ بِالْهَاجِرَةِ، وَالْعَصْرَ وَالشَّمْسُ
حَيَّةٌ، وَالْمَغْرِبَ إِذَا وَجَبَتْ، وَالْعِشَاءَ إِذَا كَثُرَ النَّاسُ
عَجَّلَ، وَإِذَا قَلُّوا أَخَّرَ، وَالصُّبْحَ بِغَلَسٍ.
মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমর ইবনু হাসান ইবনু ‘আলী (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-কে
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সালাত সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি
বললেন, মধ্যাহ্ন গড়ালেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত আদায়
করতেন এবং সূর্য সতেজ থাকতে ‘আসর আদায় করতেন। আর সূর্য পর্দার আড়ালে ঢাকা পড়ে
যাবার সাথে সাথে মাগরিব আদায় করতেন। ‘ইশার সালাতে লোকদের আধিক্য হলেই দ্রুত আদায়
করে নিতেন আর সংখ্যায় কম হলে দেরীতে আদায় করতেন। ফজরের সালাত অন্ধকার থাকতেই আদায়
করতেন।
৯/২২. অধ্যায়ঃ
‘ইশার সালাতের মর্যাদা।
৫৬৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى
بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ،
عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ قَالَتْ، أَعْتَمَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً بِالْعِشَاءِ، وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ يَفْشُوَ الإِسْلاَمُ،
فَلَمْ يَخْرُجْ حَتَّى قَالَ عُمَرُ نَامَ النِّسَاءُ وَالصِّبْيَانُ. فَخَرَجَ
فَقَالَ لأَهْلِ الْمَسْجِدِ " مَا يَنْتَظِرُهَا أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ
الأَرْضِ غَيْرُكُمْ ".
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায় করতে বিলম্ব করলেন। এ হলো ব্যাপকভাবে ইসলাম
প্রসারের পূর্বের কথা। (সালাতের জন্য) তিনি বেরিয়ে আসেননি, এমন কি ‘উমর (রাঃ)
বললেন, মহিলা ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। অতঃপর তিনি বেরিয়ে এলেন এবং মসজিদের লোকদের
লক্ষ্য করে বললেনঃ “তোমরা ব্যতীত যমীনের অধিবাসীদের কেউ ‘ইশার সালাতের জন্য
অপেক্ষায় নেই।”
৫৬৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْعَلاَءِ، قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي
بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ كُنْتُ أَنَا وَأَصْحَابِي الَّذِينَ،
قَدِمُوا مَعِي فِي السَّفِينَةِ نُزُولاً فِي بَقِيعِ بُطْحَانَ، وَالنَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ، فَكَانَ يَتَنَاوَبُ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم عِنْدَ صَلاَةِ الْعِشَاءِ كُلَّ لَيْلَةٍ نَفَرٌ مِنْهُمْ، فَوَافَقْنَا
النَّبِيَّ ـ عليه السلام ـ أَنَا وَأَصْحَابِي وَلَهُ بَعْضُ الشُّغْلِ فِي
بَعْضِ أَمْرِهِ فَأَعْتَمَ بِالصَّلاَةِ حَتَّى ابْهَارَّ اللَّيْلُ، ثُمَّ
خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى بِهِمْ، فَلَمَّا قَضَى صَلاَتَهُ
قَالَ لِمَنْ حَضَرَهُ " عَلَى رِسْلِكُمْ، أَبْشِرُوا إِنَّ مِنْ نِعْمَةِ
اللَّهِ عَلَيْكُمْ أَنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ مِنَ النَّاسِ يُصَلِّي هَذِهِ
السَّاعَةَ غَيْرُكُمْ ". أَوْ قَالَ " مَا صَلَّى هَذِهِ
السَّاعَةَ أَحَدٌ غَيْرُكُمْ ". لاَ يَدْرِي أَىَّ الْكَلِمَتَيْنِ
قَالَ. قَالَ أَبُو مُوسَى فَرَجَعْنَا فَفَرِحْنَا بِمَا سَمِعْنَا مِنْ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم.
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ও আমার সাথীরা-যারা (আবিসিনিয়া
হতে) জাহাজ মারফত আমার সঙ্গে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন- বাকী‘য়ে বুতহানের একটা মুক্ত
এলাকায় বসবাসরত ছিলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থাকতেন মদীনায়।
বুতহানের অধিবাসীরা পালাক্রমে একদল করে প্রতি রাতে ‘ইশার সালাতের সময় আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর খিদমতে আসতেন। পালাক্রমে ‘ইশার সালাতের
সময় আমি ও আমার কতিপয় সঙ্গী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে
হাযির হলাম। তখন তিনি কোনো কাজে খুব ব্যস্ত ছিলেন, ফলে সালাত আদায়ে বিলম্ব করলেন।
এমন কি রাত অর্ধেক হয়ে গেলো। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে
এলেন এবং সবাইকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষে তিনি উপস্থিত ব্যক্তিদেরকে
বললেনঃ প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্থানে বসে যাও। তোমাদের সুসংবাদ দিচ্ছি যে, আল্লাহর
পক্ষ হতে তোমাদের জন্য এটি এক নিয়ামত যে, তোমরা ছাড়া মানুষের মধ্যে কেউ এ মুহূর্তে
সালাত আদায় করছে না। কিংবা তিনি বলেছিলেনঃ তোমরা ছাড়া কোনো উম্মাত এ সময় সালাত
আদায় করেনি। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন্ বাক্যটি
বলেছিলেন বর্ণনাকারী তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এ কথা শুনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত মনে
বাড়ি ফিরলাম।
৯/২৩. অধ্যায়ঃ
‘ইশার সালাতের পূর্বে ঘুমানো অপছন্দনীয়।
৫৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ سَلاَمٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، قَالَ
حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ، عَنْ أَبِي الْمِنْهَالِ، عَنْ أَبِي بَرْزَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَكْرَهُ النَّوْمَ قَبْلَ
الْعِشَاءِ وَالْحَدِيثَ بَعْدَهَا.
আবূ বারযাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার পূর্বে নিদ্রা যাওয়া এবং পরে কথাবার্তা বলা অপছন্দ করতেন।
৯/২৪. অধ্যায়ঃ
ঘুম প্রবল হলে ‘ইশার পূর্বে ঘুমানো।
৫৬৯
حَدَّثَنَا أَيُّوبُ
بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ، قَالَ
صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ
عَائِشَةَ، قَالَتْ أَعْتَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْعِشَاءِ
حَتَّى نَادَاهُ عُمَرُ الصَّلاَةَ، نَامَ النِّسَاءُ وَالصِّبْيَانُ. فَخَرَجَ
فَقَالَ " مَا يَنْتَظِرُهَا أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ غَيْرُكُمْ
". قَالَ وَلاَ يُصَلَّى يَوْمَئِذٍ إِلاَّ بِالْمَدِينَةِ، وَكَانُوا
يُصَلُّونَ فِيمَا بَيْنَ أَنْ يَغِيبَ الشَّفَقُ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ
الأَوَّلِ.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায় করতে দেরী করলেন। ‘উমর (রাঃ) তাঁকে বললেন,
আস্-সালাত। নারী ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। অতঃপর তিনি বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ তোমরা
ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ এ সালাতের জন্য অপেক্ষা করছে না। (রাবী বলেন) তখন মদীনা ছাড়া
অন্য কোথাও সালাত আদায় করা হতো না। (তিনি আরও বলেন যে) পশ্চিম আকাশের ‘শাফাক’
(পশ্চিম আকাশের লাল কিরণ) অন্তর্হিত হবার পর হতে রাতের প্রথম এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে
তাঁরা ‘ইশা সালাত আদায় করতেন।
৫৭০
حَدَّثَنَا مَحْمُودٌ،
قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ
أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شُغِلَ عَنْهَا لَيْلَةً، فَأَخَّرَهَا حَتَّى
رَقَدْنَا فِي الْمَسْجِدِ، ثُمَّ اسْتَيْقَظْنَا ثُمَّ رَقَدْنَا ثُمَّ
اسْتَيْقَظْنَا، ثُمَّ خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ
قَالَ " لَيْسَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ يَنْتَظِرُ الصَّلاَةَ
غَيْرُكُمْ ". وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ لاَ يُبَالِي أَقَدَّمَهَا أَمْ
أَخَّرَهَا إِذَا كَانَ لاَ يَخْشَى أَنْ يَغْلِبَهُ النَّوْمُ عَنْ وَقْتِهَا،
وَكَانَ يَرْقُدُ قَبْلَهَا. قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ قُلْتُ لِعَطَاءٍ وَقَالَ
سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَقُولُ أَعْتَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
لَيْلَةً بِالْعِشَاءِ حَتَّى رَقَدَ النَّاسُ وَاسْتَيْقَظُوا، وَرَقَدُوا
وَاسْتَيْقَظُوا، فَقَامَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَقَالَ الصَّلاَةَ. قَالَ
عَطَاءٌ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَخَرَجَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَأَنِّي
أَنْظُرُ إِلَيْهِ الآنَ، يَقْطُرُ رَأْسُهُ مَاءً، وَاضِعًا يَدَهُ عَلَى
رَأْسِهِ فَقَالَ " لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لأَمَرْتُهُمْ
أَنْ يُصَلُّوهَا هَكَذَا ". فَاسْتَثْبَتُّ عَطَاءً كَيْفَ وَضَعَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى رَأْسِهِ يَدَهُ كَمَا أَنْبَأَهُ ابْنُ
عَبَّاسٍ، فَبَدَّدَ لِي عَطَاءٌ بَيْنَ أَصَابِعِهِ شَيْئًا مِنْ تَبْدِيدٍ،
ثُمَّ وَضَعَ أَطْرَافَ أَصَابِعِهِ عَلَى قَرْنِ الرَّأْسِ ثُمَّ ضَمَّهَا،
يُمِرُّهَا كَذَلِكَ عَلَى الرَّأْسِ حَتَّى مَسَّتْ إِبْهَامُهُ طَرَفَ الأُذُنِ
مِمَّا يَلِي الْوَجْهَ عَلَى الصُّدْغِ، وَنَاحِيَةِ اللِّحْيَةِ، لاَ يُقَصِّرُ
وَلاَ يَبْطُشُ إِلاَّ كَذَلِكَ وَقَالَ " لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى
أُمَّتِي لأَمَرْتُهُمْ أَنْ يُصَلُّوا هَكَذَا ".
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক রাতে কর্মব্যস্ততার কারণে আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায়ে দেরী করলেন, এমন কি আমরা
মসজিদে ঘুমিয়ে পড়লাম। অতঃপর জেগে উঠে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। অতঃপর আবার জেগে উঠলাম।
তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট বেরিয়ে এলেন,
অতঃপর বললেনঃ তোমরা ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ এ সালাতের অপেক্ষা করছে না। ঘুম প্রবল
হবার কারণে ‘ইশার সালাত বিনষ্ট হবার আশংকা না থাকলে ইবনু 'উমর (রাঃ) তা আগে ভাগে
বা বিলম্ব করে আদায় করতে দ্বিধা করতেন না। কখনও কখনও তিনি ‘ইশার পূর্বে নিদ্রাও
যেতেন।
No comments