সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "তাহাজ্জুদ" হাদিস নং -১১৭১ থেকে ১১৮৭
১১৭১
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَمَّتِهِ
عَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم ح و حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا
يَحْيَى هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَمْرَةَ
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يُخَفِّفُ الرَّكْعَتَيْنِ اللَّتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الصُّبْحِ حَتَّى إِنِّي
لَأَقُولُ هَلْ قَرَأَ بِأُمِّ الْكِتَابِ.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ফজরের সালাতের পূর্বের দু’রাক’আত (সুন্নাত) এত সংক্ষিপ্ত করতেন এমনকি আমি
(মনে মনে) বলতাম, তিনি কি (শুধু) উম্মুল কিতাব (সূরা ফাতিহা) তিলাওয়াত করলেন?
(আ.প্র. ১০৯৭, ই.ফা. ১১০২)
(আ.প্র. ১০৯৭, ই.ফা. ১১০২)
১৯/২৯. অধ্যায়:
ফরজ
সালাতের পর নফল সালাত।
১১৭২
مُسَدَّدٌ قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ
قَالَ أَخْبَرَنَا نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ
صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ الظُّهْرِ
وَسَجْدَتَيْنِ بَعْدَ الظُّهْرِ وَسَجْدَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ
وَسَجْدَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ وَسَجْدَتَيْنِ بَعْدَ الْجُمُعَةِ فَأَمَّا
الْمَغْرِبُ وَالْعِشَاءُ فَفِي بَيْتِهِ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সঙ্গে যুহরের পূর্বে দু’রাক’আত, যুহরের পর দু’রাক’আত, মাগরিবের পর
দু’রাক’আত, ’ইশার পর দু’রাক’আত এবং জুমু’আর পর দু’রাক’আত সালাত আদায় করেছি। তবে
মাগরিব ও ’ইশার পরের সালাত তিনি তাঁর ঘরে আদায় করতেন। (৯৩৭)
(আ.প্র. ১০৯৭, ই.ফা. ১১০৩)
(আ.প্র. ১০৯৭, ই.ফা. ১১০৩)
১১৭৩
وَحَدَّثَتْنِي أُخْتِي حَفْصَةُ أَنَّ النَّبِيَّ كَانَ يُصَلِّي
رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ بَعْدَ مَا يَطْلُعُ الْفَجْرُ وَكَانَتْ سَاعَةً لاَ
أَدْخُلُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيهَا وَقَالَ ابْنُ أَبِي
الزِّنَادِ عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ بَعْدَ الْعِشَاءِ فِي
أَهْلِهِ تَابَعَهُ كَثِيرُ بْنُ فَرْقَدٍ وَأَيُّوبُ عَنْ نَافِعٍ.
ইবনু
’উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমার বোন (উম্মুল মু’মিনীন) হাফসা (রাঃ) আমাকে
হাদীস শুনিয়েছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজর হবার পর
সংক্ষিপ্ত দু’রাক’আত সালাত আদায় করতেন। (ইব্নু ’উমর (রাঃ) বলেন,) এটি ছিল এমন
একটি সময়, যখন আমরা কেউ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমতে হাযির
হতাম না। ইব্নু আবু যিনাদ (রহঃ) বলেছেন, মূসা ইব্নু ’উক্বাহ (রাঃ) নাফি’ (রহঃ)
হতে ’ইশার পরে তাঁর পরিজনের মধ্যে কথাটি বর্ণনা করেছেন।
(৬১৮; মুসলিম ৬/১৫, হাঃ ৭২৯) (আ.প্র. ১০৯৭ শেষাংশ, ই.ফা. ১১০৩ শেষাংশ)
(৬১৮; মুসলিম ৬/১৫, হাঃ ৭২৯) (আ.প্র. ১০৯৭ শেষাংশ, ই.ফা. ১১০৩ শেষাংশ)
১৯/৩০. অধ্যায়:
ফর্জের
পর নফল সালাত না আদায় করা।
১১৭৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ
عَمْرٍو، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الشَّعْثَاءِ، جَابِرًا قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ
عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم ثَمَانِيًا جَمِيعًا وَسَبْعًا جَمِيعًا. قُلْتُ يَا أَبَا الشَّعْثَاءِ
أَظُنُّهُ أَخَّرَ الظُّهْرَ وَعَجَّلَ الْعَصْرَ وَعَجَّلَ الْعِشَاءَ وَأَخَّرَ
الْمَغْرِبَ. قَالَ وَأَنَا أَظُنُّهُ.
ইব্নু
’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আট রাক’আত একত্রে (যুহ্র ও ’আসরের) এবং সাত রাক’আত
একত্রে (মাগরিব-’ইশার) সালাত আদায় করেছি। সে ক্ষেত্রে সুন্নাত আদায় করা হয়নি। ’আম্র
(রহঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আবুশ্ শা’সা ! আমার ধারণা, তিনি যুহ্র শেষ ওয়াক্তে এবং
আসর প্রথম ওয়াক্তে আর ’ইশা প্রথম ওয়াক্তে ও মাগরিব শেষ ওয়াক্তে আদায় করেছিলেন।
তিনি বলেছেন, আমিও তাই মনে করি।
১৯/৩১.অধ্যায়:
সফরে
যুহা সালাত আদায় করা।
১১৭৫
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ
تَوْبَةَ، عَنْ مُوَرِّقٍ، قَالَ قُلْتُ لاِبْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ
أَتُصَلِّي الضُّحَى قَالَ لاَ. قُلْتُ فَعُمَرُ. قَالَ لاَ. قُلْتُ فَأَبُو
بَكْرٍ. قَالَ لاَ. قُلْتُ فَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ
إِخَالُهُ.
মুওয়ার্রিক
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইব্নু ’উমর (রাঃ)-কে প্রশ্ন
করলাম, আপনি কি যুহা সালাত আদায় করে থাকেন? তিনি বললেন, না। আমি প্রশ্ন করলাম, আবূ
উমর (রাঃ) তা আদায় করতেন কি? তিনি বললেন, না। আমি প্রশ্ন করলাম, আবূ বকর (রাঃ)?
তিনি বললেন, না। আমি প্রশ্ন করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)? তিনি
বললেন, আমি তা মনে করি না।
১১৭৬
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ،
قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِي لَيْلَى، يَقُولُ مَا حَدَّثَنَا
أَحَدٌ، أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى غَيْرَ
أُمِّ هَانِئٍ فَإِنَّهَا قَالَتْ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ
بَيْتَهَا يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ فَاغْتَسَلَ وَصَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ فَلَمْ
أَرَ صَلاَةً قَطُّ أَخَفَّ مِنْهَا، غَيْرَ أَنَّهُ يُتِمُّ الرُّكُوعَ
وَالسُّجُودَ.
’আবদুর
রহমান ইব্নু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উম্মু হানী (রাঃ) ব্যতীত অন্য কেউ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে চাশ্তের সালাত আদায় করতে দেখেছেন, এমন
আমাদের নিকট কেউ বর্ণনা করেননি। তিনি উম্মু হানী (রাঃ) অবশ্য বলেছেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন (পূর্বাহ্নে) তাঁর ঘরে গিয়ে
গোসল করেছেন। (তিনি বলেছেন) যে, আমি আর কখনো (তাঁর) অনুরূপ সংক্ষিপ্ত সালাত
দেখিনি। তবে কির’আত ছাড়া তিনি রুকু ও সিজদা পূর্ণাঙ্গরূপে আদায় করেছিলেন।
১৯/৩২. অধ্যায়:
যারা
যুহা সালাত আদায় করেন না, তবে বিষয়টিকে প্রশস্ত মনে করেন (কারো ইচ্ছাধীন মনে
করেন)।
১১৭৭
حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ مَا
رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَبَّحَ سُبْحَةَ الضُّحَى، وَإِنِّي
لأُسَبِّحُهَا.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যুহা-এর সালাত আদায় করতে আমি দেখিনি। তবে আমি তা আদায় করে
থাকি।
১৯/৩৩. অধ্যায়:
মুকিম
অবস্থায় যুহা সালাত আদায় করা।
ইতবান ইবন্ মালিক (রাঃ)
বিষয়টি নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উল্লেখ করেছেন।
১১৭৮
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا
عَبَّاسٌ الْجُرَيْرِيُّ ـ هُوَ ابْنُ فَرُّوخَ ـ عَنْ أَبِي عُثْمَانَ
النَّهْدِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه قَالَ أَوْصَانِي خَلِيلِي
بِثَلاَثٍ لاَ أَدَعُهُنَّ حَتَّى أَمُوتَ صَوْمِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ
شَهْرٍ، وَصَلاَةِ الضُّحَى، وَنَوْمٍ عَلَى وِتْرٍ.
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার খলীল ও বন্ধু [নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] আমাকে তিনটি কাজের ওসিয়্যাত (বিশেষ আদেশ)
করেছেন, মৃত্যু পর্যন্ত তা আমি পরিত্যাগ করব না। (তা হলঃ)
১. প্রতি মাসে তিনদিন সিয়াম পালন করা।
২. সালাতুয-যোহা (চাশত এর সালাত আদায় করা)।
৩. বিত্র (সালাত) আদায় করে শয়ন করা।
১. প্রতি মাসে তিনদিন সিয়াম পালন করা।
২. সালাতুয-যোহা (চাশত এর সালাত আদায় করা)।
৩. বিত্র (সালাত) আদায় করে শয়ন করা।
১১৭৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْجَعْدِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ سِيرِينَ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ الأَنْصَارِيَّ، قَالَ قَالَ
رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ ـ وَكَانَ ضَخْمًا ـ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
إِنِّي لاَ أَسْتَطِيعُ الصَّلاَةَ مَعَكَ. فَصَنَعَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم طَعَامًا، فَدَعَاهُ إِلَى بَيْتِهِ، وَنَضَحَ لَهُ طَرَفَ حَصِيرٍ بِمَاءٍ
فَصَلَّى عَلَيْهِ رَكْعَتَيْنِ. وَقَالَ فُلاَنُ بْنُ فُلاَنِ بْنِ جَارُودٍ
لأَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ أَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي
الضُّحَى فَقَالَ مَا رَأَيْتُهُ صَلَّى غَيْرَ ذَلِكَ الْيَوْمِ.
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক স্থুল দেহ বিশিষ্ট আনসারী নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আরয্ করলেন, আমি আপনার সঙ্গে
(জামা‘আতে) সালাত আদায় করতে পারি না। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর উদ্দেশে খাবার তৈরি করে তাঁকে দাওয়াত করে নিজ বাড়িতে নিয়ে এলেন এবং
একটি চাটাই এর এক অংশে (কোমল ও পরিচ্ছন্ন করার উদ্দেশে) পানি ছিটিয়ে (তা বিছিয়ে)
দিলেন। তখন তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] সে চাটাইয়ের উপরে
দু’রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। ইব্নু জারূদ (রহঃ) আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ)-কে
জিজ্ঞেস করলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি চাশ্ত-এর সালাত আদায়
করতেন? আনাস (রাঃ) বললেন, সেদিন বাদে অন্য সময়ে তাঁকে এ সালাত আদায় করতে দেখিনি।
১৯/৩৪. অধ্যায় :
যুহরের
(ফরজের) পূর্বে দু’রাক‘আত সালাত।
১১৮০
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ
زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ
حَفِظْتُ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَشْرَ رَكَعَاتٍ رَكْعَتَيْنِ
قَبْلَ الظُّهْرِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ
فِي بَيْتِهِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ فِي بَيْتِهِ، وَرَكْعَتَيْنِ
قَبْلَ صَلاَةِ الصُّبْحِ، وَكَانَتْ سَاعَةً لاَ يُدْخَلُ عَلَى النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فِيهَا. حَدَّثَتْنِي حَفْصَةُ، أَنَّهُ كَانَ إِذَا أَذَّنَ
الْمُؤَذِّنُ وَطَلَعَ الْفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ.
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে আমি দশ রাক‘আত সালাত আমার স্মৃতিতে সংরক্ষণ করে রেখেছি। যুহরের
পূর্বে দু’রাক‘আত পরে দু’রাক‘আত, মাগরিবের পরে দু’রাক‘আত তাঁর ঘরে, ‘ইশার পরে
দু’রাক‘আত তাঁর ঘরে এবং দু’রাক‘আত সকালের (ফজ্রের) সালাতের পূর্বে। [ইব্নু ‘উমর
(রাঃ) বলেন] আর সময়টি ছিল এমন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নিকট (সচরাচর) কোন লোককে প্রবেশ করতে দেয়া হত না।
১১৮১
حَدَّثَتْنِي حَفْصَةُ أَنَّهُ كَانَ إِذَا أَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ وَطَلَعَ
الْفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ
উম্মুল
মু’মিনীন হাফ্সা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন মুআয্যিন আযান দিতেন এবং ফজর উদিত হত তখন
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’রাক‘আত সালাত আদায় করতেন।
১১৮২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ
إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْتَشِرِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ
رضى الله عنها ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَدَعُ أَرْبَعًا
قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْغَدَاةِ. تَابَعَهُ ابْنُ أَبِي
عَدِيٍّ وَعَمْرٌو عَنْ شُعْبَةَ.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যুহরের পূর্বে চার রাক‘আত এবং (ফজ্রের পূর্বে) দু’রাক‘আত সালাত ছাড়তেন
না। ইব্নু আবূ আদী ও ‘আমর (রহঃ) শু‘বাহ (রহঃ) হতে হাদীস বর্ণনায় ইয়াহ্ইয়া
(রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।
১৯/৩৫. অধ্যায় :
মাগরিবের
(ফরজ এর) পূর্বে সালাত।
১১৮৩
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنِ
الْحُسَيْنِ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ
الْمُزَنِيُّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " صَلُّوا قَبْلَ
صَلاَةِ الْمَغْرِبِ ". ـ قَالَ فِي الثَّالِثَةِ ـ لِمَنْ شَاءَ
كَرَاهِيَةَ أَنْ يَتَّخِذَهَا النَّاسُ سُنَّةً.
‘আবদুল্লাহ্
মুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ তোমরা মাগরিবের (ফরজের) পূর্বে
(নফল) সালাত আদায় করবে; লোকেরা এ ‘আমলকে সুন্নাত হিসেবে গ্রহণ করতে পারে, এটার
কারণে তৃতীয়বারে তিনি বললেনঃ এ তার জন্য যে ইচ্ছে করে।
১১৮৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، قَالَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ
أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ أَبِي حَبِيبٍ، قَالَ سَمِعْتُ
مَرْثَدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ الْيَزَنِيَّ، قَالَ أَتَيْتُ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ
الْجُهَنِيَّ فَقُلْتُ أَلاَ أُعْجِبُكَ مِنْ أَبِي تَمِيمٍ يَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ
قَبْلَ صَلاَةِ الْمَغْرِبِ. فَقَالَ عُقْبَةُ إِنَّا كُنَّا نَفْعَلُهُ عَلَى
عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. قُلْتُ فَمَا يَمْنَعُكَ الآنَ قَالَ
الشُّغْلُ.
মার্সাদ
ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ ইয়াযানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উক্বাহ ইব্নু জুহানী
(রাঃ)-এর নিকট গিয়ে তাঁকে বললাম, আবূ তামীম (রহঃ) সম্পর্কে এ কথা বলে কি আমি
আপনাকে বিস্মিত করে দিব না যে, তিনি মাগরিবের (ফরজ) সালাতের পূর্বে দু’ রাক‘আত
(নফল) সালাত আদায় করে থাকেন। ‘উক্বাহ (রাঃ) বললেন, (এতে বিস্ময়ের কী আছে?)
আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে তো আমরা তা আদায়
করতাম। আমি প্রশ্ন করলাম, তা হলে এখন কিসে আপনাকে বাধা দিচ্ছে? তিনি বললেন,
কর্মব্যাস্ততা।
১৯/৩৬. অধ্যায় :
নফল
সালাত জামা‘আতের সাথে আদায় করা।
এ বিষয়ে আনাস ও ‘আয়িশা (রাঃ)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।
১১৮৫
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا
أَبِي، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي مَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ
الأَنْصَارِيُّ، أَنَّهُ عَقَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، وَعَقَلَ
مَجَّةً مَجَّهَا فِي وَجْهِهِ مِنْ بِئْرٍ كَانَتْ فِي دَارِهِمْ. فَزَعَمَ
مَحْمُودٌ أَنَّهُ سَمِعَ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ الأَنْصَارِيّ َ ـ رضى الله عنه
ـ وَكَانَ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ كُنْتُ أُصَلِّي لِقَوْمِي بِبَنِي سَالِمٍ، وَكَانَ يَحُولُ بَيْنِي
وَبَيْنَهُمْ وَادٍ إِذَا جَاءَتِ الأَمْطَارُ فَيَشُقُّ عَلَىَّ اجْتِيَازُهُ
قِبَلَ مَسْجِدِهِمْ، فَجِئْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ لَهُ
إِنِّي أَنْكَرْتُ بَصَرِي، وَإِنَّ الْوَادِيَ الَّذِي بَيْنِي وَبَيْنَ قَوْمِي
يَسِيلُ إِذَا جَاءَتِ الأَمْطَارُ فَيَشُقُّ عَلَىَّ اجْتِيَازُهُ، فَوَدِدْتُ
أَنَّكَ تَأْتِي فَتُصَلِّي مِنْ بَيْتِي مَكَانًا أَتَّخِذُهُ مُصَلًّى.
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " سَأَفْعَلُ ".
فَغَدَا عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله
عنه ـ بَعْدَ مَا اشْتَدَّ النَّهَارُ فَاسْتَأْذَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَأَذِنْتُ لَهُ فَلَمْ يَجْلِسْ حَتَّى قَالَ " أَيْنَ تُحِبُّ
أَنْ أُصَلِّيَ مِنْ بَيْتِكَ ". فَأَشَرْتُ لَهُ إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي
أُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ فِيهِ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَكَبَّرَ وَصَفَفْنَا وَرَاءَهُ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ
وَسَلَّمْنَا حِينَ سَلَّمَ، فَحَبَسْتُهُ عَلَى خَزِيرٍ يُصْنَعُ لَهُ فَسَمِعَ
أَهْلُ الدَّارِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي بَيْتِي فَثَابَ رِجَالٌ
مِنْهُمْ حَتَّى كَثُرَ الرِّجَالُ فِي الْبَيْتِ. فَقَالَ رَجُلٌ مِنْهُمْ مَا
فَعَلَ مَالِكٌ لاَ أَرَاهُ. فَقَالَ رَجُلٌ مِنْهُمْ ذَاكَ مُنَافِقٌ لاَ
يُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" لاَ تَقُلْ ذَاكَ أَلاَ تَرَاهُ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ.
يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ ". فَقَالَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ
أَعْلَمُ. أَمَّا نَحْنُ فَوَاللَّهِ لاَ نَرَى وُدَّهُ وَلاَ حَدِيثَهُ إِلاَّ
إِلَى الْمُنَافِقِينَ. قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ
اللَّهُ. يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ ". قَالَ مَحْمُودٌ
فَحَدَّثْتُهَا قَوْمًا فِيهِمْ أَبُو أَيُّوبَ صَاحِبُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فِي غَزْوَتِهِ الَّتِي تُوُفِّيَ فِيهَا وَيَزِيدُ بْنُ مُعَاوِيَةَ
عَلَيْهِمْ بِأَرْضِ الرُّومِ، فَأَنْكَرَهَا عَلَىَّ أَبُو أَيُّوبَ قَالَ
وَاللَّهِ مَا أَظُنُّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا قُلْتَ
قَطُّ. فَكَبُرَ ذَلِكَ عَلَىَّ فَجَعَلْتُ لِلَّهِ عَلَىَّ إِنْ سَلَّمَنِي
حَتَّى أَقْفُلَ مِنْ غَزْوَتِي أَنْ أَسْأَلَ عَنْهَا عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ ـ
رضى الله عنه ـ إِنْ وَجَدْتُهُ حَيًّا فِي مَسْجِدِ قَوْمِهِ، فَقَفَلْتُ
فَأَهْلَلْتُ بِحَجَّةٍ أَوْ بِعُمْرَةٍ، ثُمَّ سِرْتُ حَتَّى قَدِمْتُ
الْمَدِينَةَ فَأَتَيْتُ بَنِي سَالِمٍ، فَإِذَا عِتْبَانُ شَيْخٌ أَعْمَى
يُصَلِّي لِقَوْمِهِ فَلَمَّا سَلَّمَ مِنَ الصَّلاَةِ سَلَّمْتُ عَلَيْهِ
وَأَخْبَرْتُهُ مَنْ أَنَا، ثُمَّ سَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ الْحَدِيثِ
فَحَدَّثَنِيهِ كَمَا حَدَّثَنِيهِ أَوَّلَ مَرَّةٍ.
ইব্নু
শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাহমূদ ইব্নু রাবী‘ আনসারী (রাঃ)
আমাকে জনিয়েছেন যে, (শিশুকালে তাঁর দেখা) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর কথা তাঁর ভাল স্মরণ আছে এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁদের বাড়ির কুপ হতে (পানি মুখে নিয়ে বরকতের জন্য) তার মুখমন্ডলে যে ছিটিয়ে
দিচ্ছিলেন সে কথাও তার ভাল মনে আছে।
১১৮৬
فَزَعَمَ مَحْمُودٌ أَنَّهُ سَمِعَ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ
الْأَنْصارِيَّوَكَانَ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُولِ اللهِ يَقُولُ كُنْتُ
أُصَلِّي لِقَوْمِي بِبَنِي سَالِمٍ وَكَانَ يَحُولُ بَيْنِي وَبَيْنَهُمْ وَادٍ
إِذَا جَاءَتْ الْأَمْطَارُ فَيَشُقُّ عَلَيَّ اجْتِيَازُهُ قِبَلَ مَسْجِدِهِمْ
فَجِئْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ لَهُ إِنِّي أَنْكَرْتُ
بَصَرِي وَإِنَّ الْوَادِيَ الَّذِي بَيْنِي وَبَيْنَ قَوْمِي يَسِيلُ إِذَا
جَاءَتْ الْأَمْطَارُ فَيَشُقُّ عَلَيَّ اجْتِيَازُهُ فَوَدِدْتُ أَنَّكَ تَأْتِي
فَتُصَلِّي مِنْ بَيْتِي مَكَانًا أَتَّخِذُهُ مُصَلًّى فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم سَأَفْعَلُ فَغَدَا عَلَيَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى
الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍبَعْدَ مَا اشْتَدَّ النَّهَارُ فَاسْتَأْذَنَ
رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم فَأَذِنْتُ لَهُ فَلَمْ
يَجْلِسْ حَتَّى قَالَ أَيْنَ تُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ مِنْ بَيْتِكَ فَأَشَرْتُ
لَهُ إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي أُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ فِيهِ فَقَامَ رَسُولُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم فَكَبَّرَ وَصَفَفْنَا وَرَاءَهُ
فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ وَسَلَّمْنَا حِينَ سَلَّمَ فَحَبَسْتُهُ
عَلَى خَزِيرٍ يُصْنَعُ لَهُ فَسَمِعَ أَهْلُ الدَّارِ رَسُولَ اللهِ صلى الله
عليه وسلم فِي بَيْتِي فَثَابَ رِجَالٌ مِنْهُمْ حَتَّى كَثُرَ الرِّجَالُ فِي
الْبَيْتِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْهُمْ مَا فَعَلَ مَالِكٌ لاَ أَرَاهُ فَقَالَ رَجُلٌ
مِنْهُمْ ذَاكَ مُنَافِقٌ لاَ يُحِبُّ اللهَ وَرَسُولَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم لاَ تَقُلْ ذَاكَ أَلاَ تَرَاهُ قَالَ لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ
يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللهِ فَقَالَ اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ أَمَّا
نَحْنُ فَوَاللهِ لاَ نَرَى وُدَّهُ وَلاَ حَدِيثَهُ إِلاَّ إِلَى الْمُنَافِقِينَ
قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَإِنَّ اللهَ قَدْ حَرَّمَ عَلَى
النَّارِ مَنْ قَالَ لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللهِ
قَالَ مَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ فَحَدَّثْتُهَا قَوْمًا فِيهِمْ أَبُو أَيُّوبَ
صَاحِبُ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَتِهِ الَّتِي تُوُفِّيَ
فِيهَا وَيَزِيدُ بْنُ مُعَاوِيَةَ عَلَيْهِمْ بِأَرْضِ الرُّومِ فَأَنْكَرَهَا
عَلَيَّ أَبُو أَيُّوبَ قَالَ وَاللهِ مَا أَظُنُّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ مَا قُلْتَ قَطُّ فَكَبُرَ ذَلِكَ عَلَيَّ فَجَعَلْتُ لِلَّهِ عَلَيَّ
إِنْ سَلَّمَنِي حَتَّى أَقْفُلَ مِنْ غَزْوَتِي أَنْ أَسْأَلَ عَنْهَا عِتْبَانَ
بْنَ مَالِكٍإِنْ وَجَدْتُهُ حَيًّا فِي مَسْجِدِ قَوْمِهِ فَقَفَلْتُ
فَأَهْلَلْتُ بِحَجَّةٍ أَوْ بِعُمْرَةٍ ثُمَّ سِرْتُ حَتَّى قَدِمْتُ
الْمَدِينَةَ فَأَتَيْتُ بَنِي سَالِمٍ فَإِذَا عِتْبَانُ شَيْخٌ أَعْمَى يُصَلِّي
لِقَوْمِهِ فَلَمَّا سَلَّمَ مِنْ الصَّلاَةِ سَلَّمْتُ عَلَيْهِ وَأَخْبَرْتُهُ
مَنْ أَنَا ثُمَّ سَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ الْحَدِيثِ فَحَدَّثَنِيهِ كَمَا
حَدَّثَنِيهِ أَوَّلَ مَرَّةٍ.
মাহমূদ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইতবান ইব্নু মালিক আনসারী (রাঃ)-কে (যিনি
ছিলেন বদর জিহাদে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে
উপস্থিত বদরী সাহাবীগণের অন্যতম) বলতে শুনেছেন যে, আমি আমার কাওম বনূ সালিমের
সালাতে ইমামাত করতাম। আমার ও তাদের (কাওমের মসজিদের) মধ্যে ছিল একটি উপত্যকা।
বৃষ্টি হলে উপত্যকা আমার মসজিদ গমনে বাধা সৃষ্টি করতো এবং এ উপত্যকা অতিক্রম করে
তাদের মসজিদে যাওয়া আমার জন্য কষ্টকর হতো। তাই আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমতে হাযির হয়ে আরয করলাম, (হে আল্লাহ্র রাসূল!) আমি
আমার দৃষ্টিশক্তির কমতি অনুভব করছি (উপরন্তু) আমার ও আমার গোত্রের মধ্যকার
উপত্যকাটি বৃষ্টি হলে প্লাবিত হয়ে যায়। তখন তা পার হওয়া আমার জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে।
তাই আমার একান্ত আশা যে আপনি শুভাগমন করে আমার ঘরের কোন স্থানে সালাত আদায় করবেন;
আমি সে স্থানটিকে সালাতের স্থানরূপে নির্ধারিত করে নিব। আল্লাহ্র রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, শীঘ্রই তা করবো। পরের দিন সূর্যের
উত্তাপ যখন বেড়ে গেল, তখন আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং
আবূ বকর (রাঃ) আসলেন। আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
(প্রবেশের) অনুমতি চাইলে আমি তাঁকে স্বাগত জানালাম, তিনি উপবেশন না করেই আমাকে
জিজ্ঞেস করলেন, তোমার ঘরের কোন্ জায়গায় আমার সালাত আদায় করা তুমি পছন্দ কর? যে
স্থানে সালাত আদায় করা আমার মনঃপূত ছিল, তাঁকে আমি সে স্থানের দিকে ইঙ্গিত করে
দিলাম আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে তাক্বীর
বললেন, আমরা সারিবদ্ধভাবে তাঁর পিছনে দাঁড়ালাম। তিনি দু’রাক‘আত সালাত আদায় করে
সালাম ফিরালেন। তাঁর সালাম ফেরানোর সময় আমরাও সালাম ফিরালাম। অতঃপর তাঁর উদ্দেশে
যে খাযীরা প্রস্তুত করা হচ্ছিল তা আহারের জন্য তাঁর প্রত্যাগমনে আমি বিলম্ব
ঘটালাম। ইতিমধ্যে মহল্লার লোকেরা আমার বাড়িতে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অবস্থানের সংবাদ শুনতে পেয়ে তাঁদের কিছু লোক এসে গেলেন।
এমন কি আমার ঘরে অনেক লোকের সমাগম ঘটলো। তাঁদের একজন বললেন, মালিক (ইব্নু দুখায়শিন)
করল কী? তাকে দেখছি না যে? তাঁদের একজন জবাব দিলেন, সে মুনাফিক! আল্লাহ্ ও তাঁর
রাসূলকে ভালবাসে না। আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ
করলেন : এমন কথা বলবে না। তুমি কি লক্ষ্য করছ না যে, আল্লাহ্র সন্তুষ্টি কামনায়
‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহু’ উচ্চারণ করেছে। সে ব্যক্তি বলল, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই
অধিক অবগত। তবে আল্লাহ্র কসম! আমরা মুনাফিকদের সাথেই তার ভালবাসা ও আলাপ-আলোচনা
দেখতে পাই। আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করলেন :
আল্লাহ্ তা‘আলা সে ব্যক্তিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দিয়েছেন, যে ব্যক্তি
আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উদ্দেশে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহু’ উচ্চারণ করে। মাহমূদ (রাঃ)
বলেন, এক যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে একদল লোকের নিকট বর্ণনা করলাম তাঁদের মধ্যে
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী আবূ আইয়ুব (আনসারী)
(রাঃ) ছিলেন। তিনি সে যুদ্ধে ওফাত পেয়েছিলেন। আর ইয়াযীদ ইব্নু মু‘আবিয়া (রাঃ)
রোমানদের দেশে তাদের আমীর ছিলেন। আবূ আইয়ুব (রাঃ) আমার বর্ণিত হাদীসটি অস্বীকার
করে বললেন, আল্লাহ্র কসম! তুমি যে কথা বলেছ তা যে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, তা আমি বিশ্বাস করতে পারি না। ফলে তা আমার
নিকট ভারী মনে হল। তখন আমি আল্লাহ্র নামে প্রতিজ্ঞা করলাম যে, যদি এ যুদ্ধ হতে
প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত তিনি আমাকে নিরাপদ রাখেন, তাহলে আমি ইত্বান ইব্নু মালিক
(রাঃ)-কে তাঁর কাউমের মসজিদের বিষয়ে জিজ্ঞেস করবো, যদি তাঁকে জীবিত অবস্থায় পেয়ে
যাই। অতঃপর আমি ফিরে চললাম এবং হজ্জ কিংবা উমরার নিয়্যাতে ইহরাম করলাম। অতঃপর সফর
করতে করতে আমি মাদীনায় উপনীত হয়ে বনূ সালিম গোত্রে উপস্থিত হলাম। দেখতে পেলাম ‘ইত্বান
(রাঃ) যিনি তখন একজন বৃদ্ধ ও অন্ধ ব্যক্তি কাউমের সালাতে ইমামাত করছেন। তিনি সালাত
সমাপ্ত করলে আমি তাঁকে সালাম দিলাম এবং আমার পরিচয় দিয়ে উক্ত হাদীস সম্পর্কে তাঁকে
জিজ্ঞেস করলাম। তিনি প্রথমবারের মতই হাদীসটি আমাকে শুনালেন।
১৯/৩৭. অধ্যায় :
নফল
সালাত ঘরের মধ্যে আদায় করা।
১১৮৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ
أَيُّوبَ، وَعُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما
ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اجْعَلُوا فى
بُيُوتِكُمْ مِنْ صَلاَتِكُمْ وَلاَ تَتَّخِذُوهَا قُبُورًا ". تَابَعَهُ
عَبْدُ الْوَهَّابِ عَنْ أَيُّوبَ.
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ তোমরা তোমাদের কিছু কিছু সালাত তোমাদের ঘরে
আদায় করবে, তোমাদের ঘরগুলোকে কবর বানাবে না। ‘আবদুল ওহ্হাব (রহঃ) আইউব (রাঃ) হতে
হাদীস বর্ণনায় ওয়াহ্ব (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।
No comments