সহিহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "দুই ঈ’দ" হাদিস নং -৯৪৮ থেকে ৯৮৯

দু’ ‘ঈদ ও এতে সুন্দর পোষাক পরিধান করা।

৯৪৮

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، قَالَ أَخَذَ عُمَرُ جُبَّةً مِنْ إِسْتَبْرَقٍ تُبَاعُ فِي السُّوقِ، فَأَخَذَهَا فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ابْتَعْ هَذِهِ تَجَمَّلْ بِهَا لِلْعِيدِ وَالْوُفُودِ‏.‏ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّمَا هَذِهِ لِبَاسُ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ ‏"‏‏.‏ فَلَبِثَ عُمَرُ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَلْبَثَ، ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِجُبَّةِ دِيبَاجٍ، فَأَقْبَلَ بِهَا عُمَرُ، فَأَتَى بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّكَ قُلْتَ ‏"‏ إِنَّمَا هَذِهِ لِبَاسُ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ ‏"‏‏.‏ وَأَرْسَلْتَ إِلَىَّ بِهَذِهِ الْجُبَّةِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ تَبِيعُهَا أَوْ تُصِيبُ بِهَا حَاجَتَكَ ‏"‏‏.‏
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাজারে বিক্রি হচ্ছিল এমন একটি রেশমী জুব্বা নিয়ে ‘উমর (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি এটি ক্রয় করে নিন। ‘ঈদের সময় এবং প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এটি দিয়ে নিজেকে সজ্জিত করবেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ এটি তো তার পোষাক, যার (আখিরাতে) কল্যানের কোন অংশ নেই। এ ঘটনার পর ‘উমর (রাঃ) আল্লাহ্‌র যত দিন ইচ্ছা ততদিন অতিবাহিত করলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিকট একটি রেশমী জুব্বা পাঠালেন, ‘উমর (রাঃ) তা গ্রহণ করেন এবং সেটি নিয়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি তো বলেছিলেন, এটা তার পোষাক যার (আখিরাতে) কল্যাণের কোন অংশ নেই। অথচ আপনি এ জুব্বা আমার নিকট পাঠিয়েছেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেনঃ তুমি এটি বিক্রি করে দাও এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়ে তোমার প্রয়োজন পূরণ কর।

১৩/. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের দিন বর্শা ও ঢালের খেলা।

৯৪৯

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَمْرٌو، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَسَدِيَّ، حَدَّثَهُ عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدِي جَارِيَتَانِ تُغَنِّيَانِ بِغِنَاءِ بُعَاثَ، فَاضْطَجَعَ عَلَى الْفِرَاشِ وَحَوَّلَ وَجْهَهُ، وَدَخَلَ أَبُو بَكْرٍ فَانْتَهَرَنِي وَقَالَ مِزْمَارَةُ الشَّيْطَانِ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَقْبَلَ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ فَقَالَ ‏"‏ دَعْهُمَا ‏"‏ فَلَمَّا غَفَلَ غَمَزْتُهُمَا فَخَرَجَتَا‏.‏ وَكَانَ يَوْمَ عِيدٍ يَلْعَبُ السُّودَانُ بِالدَّرَقِ وَالْحِرَابِ، فَإِمَّا سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَإِمَّا قَالَ ‏"‏ تَشْتَهِينَ تَنْظُرِينَ ‏"‏‏.‏ فَقُلْتُ نَعَمْ‏.‏ فَأَقَامَنِي وَرَاءَهُ خَدِّي عَلَى خَدِّهِ، وَهُوَ يَقُولُ ‏"‏ دُونَكُمْ يَا بَنِي أَرْفِدَةَ ‏"‏‏.‏ حَتَّى إِذَا مَلِلْتُ قَالَ ‏"‏ حَسْبُكِ ‏"‏‏.‏ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَاذْهَبِي ‏"‏‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট এলেন তখন আমার নিকট দু’টি মেয়ে বু’আস যুদ্ধ সংক্রান্ত গান গাইছিল। তিনি বিছানায় শুয়ে পড়লেন এবং চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখলেন। এ সময় আবূ বকর (রাঃ) এসে আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, শয়তানী বাদ্যযন্ত্র [১] (দফ্) বাজান হচ্ছে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট! তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, তাদের ছেড়ে দাও। অতঃপর তিনি যখন অন্য দিকে ফিরলেন তখন আমি তাদের ইঙ্গিত করলাম আর তারা বেরিয়ে গেল।
 [১] দফ্ এক প্রকার এক মুখো ঢোল।

৯৫০

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ دَخَلَ أَبُو بَكْرٍ وَعِنْدِي جَارِيَتَانِ مِنْ جَوَارِي الأَنْصَارِ تُغَنِّيَانِ بِمَا تَقَاوَلَتِ الأَنْصَارُ يَوْمَ بُعَاثَ ـ قَالَتْ وَلَيْسَتَا بِمُغَنِّيَتَيْنِ ـ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ أَمَزَامِيرُ الشَّيْطَانِ فِي بَيْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَذَلِكَ فِي يَوْمِ عِيدٍ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ يَا أَبَا بَكْرٍ إِنَّ لِكُلِّ قَوْمٍ عِيدًا، وَهَذَا عِيدُنَا ‏"‏‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আর ‘ঈদের দিন সুদানীরা বর্শা ও ঢালের খেলা করত। আমি নিজে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করেছিলাম অথবা তিনি নিজেই বলেছিলেন, তুমি কি তাদের খেলা দেখতে চাও? আমি বললাম, হ্যাঁ, অতঃপর তিনি আমাকে তাঁর পিছনে এমনভাবে দাঁড় করিয়ে দিলেন যে, আমার গাল ছিল তাঁর গালের সাথে লাগান। তিনি তাদের বললেন, তোমরা যা করছিলে তা করতে থাক, হে বনূ আরফিদা। পরিশেষে আমি যখন ক্লান্ত হয়ে পড়লাম, তখন তিনি আমাকে বললেন, তোমার দেখা কি যথেষ্ট হয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ, তিনি বললেন, তা হলে চলে যাও।

১৩/. অধ্যায়ঃ

মুসলিমগণের জন্য উভয় ‘ঈদের রীতিনীতি।

৯৫১

حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي زُبَيْدٌ، قَالَ سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ فَقَالَ ‏ "‏ إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ مِنْ يَوْمِنَا هَذَا أَنْ نُصَلِّيَ، ثُمَّ نَرْجِعَ فَنَنْحَرَ، فَمَنْ فَعَلَ فَقَدْ أَصَابَ سُنَّتَنَا ‏"‏‏.‏
বারা'আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে খুত্‌বা দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আমাদের আজকের এ দিনে আমরা যে কাজ প্রথম শুরু করব, তা হল সালাত আদায় করা। অতঃপর ফিরে আসব এবং কুরবাণী করব। তাই যে এ রকম করে সে আমাদের রীতি সঠিকভাবে মান্য করল।

৯৫২

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ دَخَلَ أَبُو بَكْرٍ وَعِنْدِي جَارِيَتَانِ مِنْ جَوَارِي الأَنْصَارِ تُغَنِّيَانِ بِمَا تَقَاوَلَتِ الأَنْصَارُ يَوْمَ بُعَاثَ ـ قَالَتْ وَلَيْسَتَا بِمُغَنِّيَتَيْنِ ـ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ أَمَزَامِيرُ الشَّيْطَانِ فِي بَيْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَذَلِكَ فِي يَوْمِ عِيدٍ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ يَا أَبَا بَكْرٍ إِنَّ لِكُلِّ قَوْمٍ عِيدًا، وَهَذَا عِيدُنَا ‏"‏‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (একদিন আমার ঘরে) আবূ বকর (রাঃ) এলেন তখন আমার কাছে আনসারী দু’টি মেয়ে বু’আস যুদ্ধের দিন আনসারীগণ পরস্পর যা বলেছিলেন সে সম্পর্কে গান গাইছিল। তিনি বলেন, তারা কোন পেশাদার গায়িকা ছিল না। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ঘরে শয়তানী বাদ্যযন্ত্র। আর এটি ছিল ‘ঈদের দিন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ বক্‌র! প্রত্যেক জাতির জন্যই আনন্দ উৎসব রয়েছে আর এ হলো আমাদের আনন্দের দিন।

১৩/. অধ্যায়ঃ

‘ঈদুল ফিতরের দিন বের হবার আগে খাবার খাওয়া।

৯৫৩

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، قَالَ أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يَغْدُو يَوْمَ الْفِطْرِ حَتَّى يَأْكُلَ تَمَرَاتٍ‏.‏ وَقَالَ مُرَجَّى بْنُ رَجَاءٍ حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ قَالَ حَدَّثَنِي أَنَسٌ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَيَأْكُلُهُنَّ وِتْرًا‏.‏
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিত্‌রের দিন কিছু খেজুর না খেয়ে বের হতেন না। অপর এক বর্ণনায় আনাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি তা বিজোড় সংখ্যায় খেতেন।

১৩/. অধ্যায়ঃ

কুরবাণীর দিন আহার করা।

৯৫৪

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ ذَبَحَ قَبْلَ الصَّلاَةِ فَلْيُعِدْ ‏"‏‏.‏ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ هَذَا يَوْمٌ يُشْتَهَى فِيهِ اللَّحْمُ‏.‏ وَذَكَرَ مِنْ جِيرَانِهِ فَكَأَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَدَّقَهُ، قَالَ وَعِنْدِي جَذَعَةٌ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ شَاتَىْ لَحْمٍ، فَرَخَّصَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلاَ أَدْرِي أَبَلَغَتِ الرُّخْصَةُ مَنْ سِوَاهُ أَمْ لاَ‏.‏
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতের পূর্বে যে যবেহ্ করবে তাকে পুনরায় যবেহ্ করতে হবে। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, আজকের এ দিনটিতে গোশত খাবার আকাঙ্ক্ষা করা হয়। সে তার প্রতিবেশীদের অবস্থা উল্লেখ করল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেন তার কথার সত্যতা স্বীকার করলেন। সে বলল, আমার নিকট এখন ছয় মাসের এমন একটি মেষ শাবক আছে, যা আমার নিকট দু’টি হৃষ্টপুষ্ট বক্‌রীর চাইতেও অধিক পছন্দনীয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে সেটা কুরবাণী করার অনুমতি দিলেন। অবশ্য আমি জানি না, এ অনুমতি তাকে ছাড়া অন্যদের জন্যও কি-না?

৯৫৫

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ خَطَبَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الأَضْحَى بَعْدَ الصَّلاَةِ فَقَالَ ‏"‏ مَنْ صَلَّى صَلاَتَنَا وَنَسَكَ نُسُكَنَا فَقَدْ أَصَابَ النُّسُكَ، وَمَنْ نَسَكَ قَبْلَ الصَّلاَةِ فَإِنَّهُ قَبْلَ الصَّلاَةِ، وَلاَ نُسُكَ لَهُ ‏"‏‏.‏ فَقَالَ أَبُو بُرْدَةَ بْنُ نِيَارٍ خَالُ الْبَرَاءِ يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَإِنِّي نَسَكْتُ شَاتِي قَبْلَ الصَّلاَةِ، وَعَرَفْتُ أَنَّ الْيَوْمَ يَوْمُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ، وَأَحْبَبْتُ أَنْ تَكُونَ شَاتِي أَوَّلَ مَا يُذْبَحُ فِي بَيْتِي، فَذَبَحْتُ شَاتِي وَتَغَدَّيْتُ قَبْلَ أَنْ آتِيَ الصَّلاَةَ‏.‏ قَالَ ‏"‏ شَاتُكَ شَاةُ لَحْمٍ ‏"‏‏.‏ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَإِنَّ عِنْدَنَا عَنَاقًا لَنَا جَذَعَةً هِيَ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ شَاتَيْنِ، أَفَتَجْزِي عَنِّي قَالَ ‏"‏ نَعَمْ، وَلَنْ تَجْزِيَ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ
বারা'আ ইব্‌নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল আযহার দিন সালাতের পর আমাদের উদ্দেশে খুত্‌বা দান করেন। খুত্‌বা্‌য় তিনি বলেনঃ যে আমাদের মত সালাত আদায় করল এবং আমাদের মত কুরবাণী করল, সে কুরবাণীর রীতিনীতি যথাযথ পালন করল। আর যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বে কুরবাণী করল তা সালাতের পূর্বে হয়ে গেল, এতে তার কুরবাণী হবে না। বারা'আ-এর মামা আবূ বুরদাহ্ ইব্‌নু নিয়ার (রাঃ) তখন বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার জানা মতে আজকের দিনটি পানাহারের দিন। তাই আমি পছন্দ করলাম যে, আমার ঘরে সর্বপ্রথম যবেহ্ করা হোক আমার বক্‌রীই। তাই আমি আমার বক্‌রীটি যবেহ্ করেছি এবং সালাতে আসার পূর্বে তা দিয়ে নাশ্‌তাও করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার বক্‌রীটি গোশ্‌তের উদ্দেশ্যে যবেহ্ করা হয়েছে। তখন তিনি আরয করলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাদের নিকট এমন একটা ছয় মাসের মেষ শাবক আছে যা আমার নিকট দু’টি বক্‌রীর চাইতেও পছন্দনীয়। এটি (কুরবাণী করলে) কি আমার জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তবে তুমি ছাড়া অন্য কারো জন্য যথেষ্ট হবে না।

১৩/. অধ্যায়ঃ

মিম্বার না নিয়ে ‘ঈদমাঠে গমন।

৯৫৬

حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي زَيْدٌ، عَنْ عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي سَرْحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَخْرُجُ يَوْمَ الْفِطْرِ وَالأَضْحَى إِلَى الْمُصَلَّى، فَأَوَّلُ شَىْءٍ يَبْدَأُ بِهِ الصَّلاَةُ ثُمَّ يَنْصَرِفُ، فَيَقُومُ مُقَابِلَ النَّاسِ، وَالنَّاسُ جُلُوسٌ عَلَى صُفُوفِهِمْ، فَيَعِظُهُمْ وَيُوصِيهِمْ وَيَأْمُرُهُمْ، فَإِنْ كَانَ يُرِيدُ أَنْ يَقْطَعَ بَعْثًا قَطَعَهُ، أَوْ يَأْمُرَ بِشَىْءٍ أَمَرَ بِهِ، ثُمَّ يَنْصَرِفُ‏.‏ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ فَلَمْ يَزَلِ النَّاسُ عَلَى ذَلِكَ حَتَّى خَرَجْتُ مَعَ مَرْوَانَ وَهْوَ أَمِيرُ الْمَدِينَةِ فِي أَضْحًى أَوْ فِطْرٍ، فَلَمَّا أَتَيْنَا الْمُصَلَّى إِذَا مِنْبَرٌ بَنَاهُ كَثِيرُ بْنُ الصَّلْتِ، فَإِذَا مَرْوَانُ يُرِيدُ أَنْ يَرْتَقِيَهُ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ، فَجَبَذْتُ بِثَوْبِهِ فَجَبَذَنِي فَارْتَفَعَ، فَخَطَبَ قَبْلَ الصَّلاَةِ، فَقُلْتُ لَهُ غَيَّرْتُمْ وَاللَّهِ‏.‏ فَقَالَ أَبَا سَعِيدٍ، قَدْ ذَهَبَ مَا تَعْلَمُ‏.‏ فَقُلْتُ مَا أَعْلَمُ وَاللَّهِ خَيْرٌ مِمَّا لاَ أَعْلَمُ‏.‏ فَقَالَ إِنَّ النَّاسَ لَمْ يَكُونُوا يَجْلِسُونَ لَنَا بَعْدَ الصَّلاَةِ فَجَعَلْتُهَا قَبْلَ الصَّلاَةِ‏.‏
আবূ সা’ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিত্‌র ও ‘ঈদুল আযহার দিন ‘ঈদমাঠে যেতেন এবং সেখানে তিনি প্রথম যে কাজ শুরু করতেন তা হল সালাত। আর সালাত শেষ করে তিনি লোকদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন এবং তাঁরা তাঁদের কাতারে বসে থাকতেন। তিনি তাঁদের নসীহত করতেন, উপদেশ দিতেন এবং নির্দেশ দান করতেন। যদি তিনি কোন সেনাদল পাঠাবার ইচ্ছা করতেন, তবে তাদের আলাদা করে নিতেন। অথবা যদি কোন বিষয়ে নির্দেশ জারী করার ইচ্ছা করতেন তবে তা জারি করতেন। অতঃপর তিনি ফিরে যেতেন। আবূ সা’ঈদ (রাঃ) বলেন, লোকেরা বরাবর এ নিয়মই অনুসরণ করে আসছিল। অবশেষে যখন মারওয়ান মদীনার ‘আমীর হলেন, তখন ’ঈদুল আযহা বা ‘ঈদুল ফিত্‌রের উদ্দেশে আমি তাঁর সঙ্গে বের হলাম। আমরা যখন ‘ঈদমাঠে পৌঁছলাম তখন সেখানে একটি মিম্বর দেখতে পেলাম, সেটি কাসীর ইব্‌নু সাল্‌ত (রাঃ) তৈরী করেছিলেন। মারওয়ান সালাত আদায়ের পূর্বেই এর উপর আরোহণ করতে উদ্যত হলেন। আমি তাঁর কাপড় টেনে ধরলাম। কিন্তু তিনি কাপড় ছাড়িয়ে খুত্‌বা দিলেন। আমি তাকে বললাম, আল্লাহ্‌র কসম! তোমরা (রসূলের সুন্নাত) পরিবর্তন করে ফেলেছ। সে বলল, হে আবূ সা’ঈদ! তোমরা যা জানতে, তা গত হয়ে গেছে। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি যা জানি, তা তার চেয়ে ভাল, যা আমি জানি না। সে তখন বলল, লোকজন সালাতের পর আমাদের জন্য বসে থাকে না, তাই ওটা সালাতের আগেই করেছি।

১৩/. অধ্যায়ঃ

পায়ে হেঁটে বা সওয়ারীতে আরোহণ করে ‘ঈদের জামা’আতে যাওয়া এবং আযান ও ইক্বামাত ব্যতীত খুত্বা্র পূর্বে সালাত আদায় করা।

৯৫৭

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَنَسٌ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ،‏.‏ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي فِي الأَضْحَى وَالْفِطْرِ، ثُمَّ يَخْطُبُ بَعْدَ الصَّلاَةِ‏.‏
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল আযহা ও ‘ঈদুল ফিত্‌রের দিন সালাত আদায় করতেন। আর সালাতের পরে খুত্‌বা দিতেন।

৯৫৮

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، قَالَ أَخْبَرَنَا هِشَامٌ، أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَهُمْ قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ يَوْمَ الْفِطْرِ، فَبَدَأَ بِالصَّلاَةِ قَبْلَ الْخُطْبَةِ‏.‏ قَالَ وَأَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ، أَرْسَلَ إِلَى ابْنِ الزُّبَيْرِ فِي أَوَّلِ مَا بُويِعَ لَهُ إِنَّهُ لَمْ يَكُنْ يُؤَذَّنُ بِالصَّلاَةِ يَوْمَ الْفِطْرِ، إِنَّمَا الْخُطْبَةُ بَعْدَ الصَّلاَةِ‏.‏ وَأَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَعَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالاَ لَمْ يَكُنْ يُؤَذَّنُ يَوْمَ الْفِطْرِ وَلاَ يَوْمَ الأَضْحَى‏.‏ وَعَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَامَ فَبَدَأَ بِالصَّلاَةِ، ثُمَّ خَطَبَ النَّاسَ بَعْدُ، فَلَّمَا فَرَغَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَزَلَ فَأَتَى النِّسَاءَ، فَذَكَّرَهُنَّ وَهْوَ يَتَوَكَّأُ عَلَى يَدِ بِلاَلٍ، وَبِلاَلٌ بَاسِطٌ ثَوْبَهُ، يُلْقِي فِيهِ النِّسَاءُ صَدَقَةً‏.‏ قُلْتُ لِعَطَاءٍ أَتَرَى حَقًّا عَلَى الإِمَامِ الآنَ أَنْ يَأْتِيَ النِّسَاءَ فَيُذَكِّرَهُنَّ حِينَ يَفْرُغُ قَالَ إِنَّ ذَلِكَ لَحَقٌّ عَلَيْهِمْ، وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يَفْعَلُوا
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিত্‌রের দিন বের হন। অতঃপর খুত্‌বা্‌র পূর্বে সালাত শুরু করেন।

৯৫৯

قَالَ وَأَخْبَرَنِي عَطَاءٌ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ أَرْسَلَ إِلَى ابْنِ الزُّبَيْرِ فِي أَوَّلِ مَا بُويِعَ لَهُ إِنَّهُ لَمْ يَكُنْ يُؤَذَّنُ بِالصَّلاَةِ يَوْمَ الْفِطْرِ إِنَّمَا الْخُطْبَةُ بَعْدَ الصَّلاَةِ.
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাবী বলেন, আমাকে ‘আতা (রহঃ) বলেছেন যে, ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ) এর বায়’আত গ্রহণের প্রথম দিকে ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁর কাছে এ বলে লোক পাঠালেন যে, ‘ঈদুল ফিত্‌রের সালাতে আযান দেয়া হতো না এবং খুত্‌বা হল সালাতের পরে।

৯৬০

و أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ وَعَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالاَ لَمْ يَكُنْ يُؤَذَّنُ يَوْمَ الْفِطْرِ وَلاَ يَوْمَ الْأَضْحَى.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) ও জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ঈদুল ফিতরের সালাতে কিংবা ‘ঈদুল আযহার সালাতে আযান দেয়া হত না।

৯৬১

وَعَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَامَ فَبَدَأَ بِالصَّلاَةِ ثُمَّ خَطَبَ النَّاسَ بَعْدُ فَلَمَّا فَرَغَ نَبِيُّ اللهِ نَزَلَ فَأَتَى النِّسَاءَ فَذَكَّرَهُنَّ وَهُوَ يَتَوَكَّأُ عَلَى يَدِ بِلَالٍ وَبِلاَلٌ بَاسِطٌ ثَوْبَهُ يُلْقِي فِيهِ النِّسَاءُ صَدَقَةً قُلْتُ لِعَطَاءٍ أَتَرَى حَقًّا عَلَى الْإِمَامِ الْآنَ أَنْ يَأْتِيَ النِّسَاءَ فَيُذَكِّرَهُنَّ حِينَ يَفْرُغُ قَالَ إِنَّ ذَلِكَ لَحَقٌّ عَلَيْهِمْ وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يَفْعَلُوا.
জাবির ইব‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে প্রথমে সালাত আদায় করলেন এবং পরে লোকদের উদ্দেশে খুত্‌বা দিলেন। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুত্‌বা শেষ করলেন, তিনি (মিম্বর হতে) নেমে মহিলাগণের (কাতারের) নিকট আসলেন এবং তাঁদের নসীহত করলেন। তখন তিনি বিলাল (রাঃ)-এর হাতে ভর করেছিলেন এবং বিলাল (রাঃ) তাঁর কাপড় ছড়িয়ে ধরলে, নারীরা এতে সদাকার বস্তু ফেলতে লাগলেন। আমি ‘আতা (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি এখনো যরুরী মনে করেন যে, ইমাম খুত্‌বা শেষ করে নারীদের নিকট এসে তাদের নসীহত করবেন? তিনি বললেন, নিশ্চয় তা তাদের জন্য অবশ্যই জরুরী। তাদের কী হয়েছে যে, তাঁরা তা করবে না?

১৩/. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের সালাতের পর খুতবা।

৯৬২

حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ شَهِدْتُ الْعِيدَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ ـ رضى الله عنهم ـ فَكُلُّهُمْ كَانُوا يُصَلُّونَ قَبْلَ الْخُطْبَةِ‏.‏
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বক্‌র, ‘উমর এবং ‘উসমান (রাঃ)-এর সঙ্গে সালাতে হাযির ছিলাম। সকলেই খুত্‌বার আগে সালাত আদায় করতেন।

৯৬৩

حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ ـ رضى الله عنهما ـ يُصَلُّونَ الْعِيدَيْنِ قَبْلَ الْخُطْبَةِ‏.‏
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর এবং ‘উমর (রাঃ) উভয়ে ‘ঈদের সালাত খুতবার আগে আদায় করতেন।

৯৬৪

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى يَوْمَ الْفِطْرِ رَكْعَتَيْنِ، لَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلاَ بَعْدَهَا، ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ وَمَعَهُ بِلاَلٌ، فَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ، فَجَعَلْنَ يُلْقِينَ، تُلْقِي الْمَرْأَةُ خُرْصَهَا وَسِخَابَهَا‏.‏
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিত্‌রে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করেন। এর পূর্বে ও পরে কোন সালাত আদায় করেননি। অতঃপর বিলাল (রাঃ)-কে সঙ্গে নিয়ে নারীদের নিকট এলেন এবং সদাকা প্রদানের জন্য তাদের নির্দেশ দিলেন। তখন তাঁরা দিতে লাগলেন। নারীদের কেউ দিলেন আংটি, আবার কেউ দিলেন গলার হার।

৯৬৫

حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا زُبَيْدٌ، قَالَ سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ فِي يَوْمِنَا هَذَا أَنْ نُصَلِّيَ، ثُمَّ نَرْجِعَ فَنَنْحَرَ، فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدْ أَصَابَ سُنَّتَنَا، وَمَنْ نَحَرَ قَبْلَ الصَّلاَةِ فَإِنَّمَا هُوَ لَحْمٌ قَدَّمَهُ لأَهْلِهِ، لَيْسَ مِنَ النُّسْكِ فِي شَىْءٍ ‏"‏‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يُقَالُ لَهُ أَبُو بُرْدَةَ بْنُ نِيَارٍ يَا رَسُولَ اللَّهِ، ذَبَحْتُ وَعِنْدِي جَذَعَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُسِنَّةٍ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ اجْعَلْهُ مَكَانَهُ، وَلَنْ تُوفِيَ أَوْ تَجْزِيَ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ ‏"‏‏.‏
বারা'আ ইব্‌নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আজকের এ দিনে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে সালাত আদায় করা। অতঃপর আমরা ফিরে আসব এবং কুরবাণী করব। কাজেই যে ব্যক্তি তা করল, সে আমাদের নিয়ম পালন করল। যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বে কুরবাণী করল, তা শুধু গোশ্‌ত বলেই গণ্য হবে, যা সে পরিবারবর্গের জন্য পূর্বেই করে ফেলেছে। এতে কুরবাণীর কিছুই নেই। তখন আবূ বুরদাহ ইব্‌নু নিয়ার (রাঃ) নামক এক আনসারী বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি তো যবেহ্ করে ফেলেছি। এখন আমার নিকট এমন একটি মেষ শাবক আছে যা এক বছর বয়সের মেষের চেয়ে উৎকৃষ্ট। তিনি বললেন, সেটির স্থলে এটাকে যবেহ্ করে দাও। তবে তোমার পর অন্য কারো জন্য তা যথেষ্ট হবে না।

১৩/. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের জামা’আতে এবং হারাম শরীফে অস্ত্রবহন করা নিষিদ্ধ।
হাসান বাসরী (রহঃ) বলেছেন, শত্রুর ভয় ছাড়া ‘ঈদের দিনে অস্ত্র বহণ করতে তাদের নিষেধ করা হয়েছে।

৯৬৬

حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ يَحْيَى أَبُو السُّكَيْنِ، قَالَ حَدَّثَنَا الْمُحَارِبِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُوقَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ كُنْتُ مَعَ ابْنِ عُمَرَ حِينَ أَصَابَهُ سِنَانُ الرُّمْحِ فِي أَخْمَصِ قَدَمِهِ، فَلَزِقَتْ قَدَمُهُ بِالرِّكَابِ، فَنَزَلْتُ فَنَزَعْتُهَا وَذَلِكَ بِمِنًى، فَبَلَغَ الْحَجَّاجَ فَجَعَلَ يَعُودُهُ فَقَالَ الْحَجَّاجُ لَوْ نَعْلَمُ مَنْ أَصَابَكَ‏.‏ فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ أَنْتَ أَصَبْتَنِي‏.‏ قَالَ وَكَيْفَ قَالَ حَمَلْتَ السِّلاَحَ فِي يَوْمٍ لَمْ يَكُنْ يُحْمَلُ فِيهِ، وَأَدْخَلْتَ السِّلاَحَ الْحَرَمَ وَلَمْ يَكُنِ السِّلاَحُ يُدْخَلُ الْحَرَمَ‏.‏
সা’ঈদ ইব্‌নু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)-এর সংগে ছিলাম যখন বর্শার অগ্রভাগ তাঁর পায়ের তলদেশে বিদ্ধ হয়েছিল। ফলে তাঁর পা রেকাবের সঙ্গে আটকে গিয়েছিল। আমি তখন নেমে সেটি টেনে বের করে ফেললাম। এটা ঘটেছিল মিনায়। এ সংবাদ হাজ্জাজের নিকট পৌঁছলে তিনি তাঁকে দেখতে আসেন। হাজ্জাজ বললো, যদি আমি জানতে পারতাম কে আপনাকে আঘাত করেছে, (তবে তাকে শাস্তি দিতাম)। তখন ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বললেন, তুমিই আমাকে আঘাত করেছ। সে বলল, তা কিভাবে? ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বললেন, তুমিই সেদিন (ঈদের দিন) অস্ত্র ধারণ করেছ, যে দিন অস্ত্র বহন করা হতো না। তুমিই অস্ত্রকে হারামের মধ্যে প্রবেশ করিয়েছ অথচ হারামের মধ্যে কখনো অস্ত্র প্রবেশ করা হয় না।

৯৬৭

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يَعْقُوبَ، قَالَ حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَعِيدِ بْنِ الْعَاصِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ دَخَلَ الْحَجَّاجُ عَلَى ابْنِ عُمَرَ وَأَنَا عِنْدَهُ، فَقَالَ كَيْفَ هُوَ فَقَالَ صَالِحٌ‏.‏ فَقَالَ مَنْ أَصَابَكَ قَالَ أَصَابَنِي مَنْ أَمَرَ بِحَمْلِ السِّلاَحِ فِي يَوْمٍ لاَ يَحِلُّ فِيهِ حَمْلُهُ، يَعْنِي الْحَجَّاجَ‏.‏
সা‘ঈদ ইব্‌নু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)- এর নিকট হাজ্জাজ এলো। আমি তখন তাঁর নিকট ছিলাম। হাজ্জাজ জিজ্ঞেস করলো, তিনি কেমন আছেন? ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বললেন, ভাল। হাজ্জাজ জিজ্ঞেস করলো, আপনাকে কে আঘাত করেছে? তিনি বললেন আমাকে সে ব্যক্তি আঘাত করেছে যে, সে দিন অস্ত্র বহনের আদেশ দিয়েছে যে দিন তা বহন করা বৈধ নয়। অর্থাৎ হাজ্জাজ।

১৩/১০. অধ্যায়ঃ

ঈদের সালাতের জন্য সকাল সকাল রওআনা হওয়া ।
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু বুস্‌র (রাঃ) বলেছেন, আমরা চাশ্‌তের সালাতের সময় ‘ঈদের সালাত সমাপ্ত করতাম।

৯৬৮

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ زُبَيْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ خَطَبَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ النَّحْرِ قَالَ ‏"‏ إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ بِهِ فِي يَوْمِنَا هَذَا أَنْ نُصَلِّيَ ثُمَّ نَرْجِعَ فَنَنْحَرَ، فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدْ أَصَابَ سُنَّتَنَا، وَمَنْ ذَبَحَ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ فَإِنَّمَا هُوَ لَحْمٌ عَجَّلَهُ لأَهْلِهِ، لَيْسَ مِنَ النُّسُكِ فِي شَىْءٍ ‏"‏‏.‏ فَقَامَ خَالِي أَبُو بُرْدَةَ بْنُ نِيَارٍ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنَا ذَبَحْتُ قَبْلَ أَنْ أُصَلِّيَ وَعِنْدِي جَذَعَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُسِنَّةٍ‏.‏ قَالَ ‏"‏ اجْعَلْهَا مَكَانَهَا ـ أَوْ قَالَ اذْبَحْهَا ـ وَلَنْ تَجْزِيَ جَذَعَةٌ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ ‏"‏‏.‏
বারাআ ইব্‌নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানীর দিন আমাদের উদ্দেশে খুত্‌বা দেন। তিনি বলেন, আজকের দিনে আমাদের প্রথম কাজ হল সালাত আদায় করা। অতঃপর ফিরে এসে কুরবানী করা। যে ব্যক্তি এরূপ করবে সে আমাদের রীতি পালন করল। যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বেই যবেহ্ করবে, তা শুধু গোশতের জন্যই হবে, যা সে পরিবারের জন্য তাড়াতাড়ি করে ফেলেছে। কুরবানী সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। তখন আমার মামা আবূ বুরদাহ ইব্‌নু নিয়ার (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমি তো সালাতের পূর্বেই যবেহ্‌ করে ফেলেছি। তবে এখন আমার নিকট এমন একটি মেষশাবক আছে যা ‘মুসিন্না’ [১] মেষের চাইতেও উত্তম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার স্থলে এটিই (কুরবানী) করে নাও। অথবা তিনি বললেনঃ এটিই যবেহ্‌ কর। তবে তুমি ব্যতীত আর কারো জন্যই মেষ শাবক যথেষ্ট হবে না।
[১] ‘মুসিন্না’ অর্থ যার বয়স এক বছর পূর্ণ হয়ে দ্বিতীয় বছরে পড়েছে।

১৩/১১. অধ্যায়ঃ

তাশ্‌রীকের দিনগুলোতে ‘আমলের গুরুত্ব।
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, وَاذكُرُوا اللهِ فِي اَيَّامِ مَعلُومَاتٍ (সূরা আল-বাকারা ২/২০৩) দ্বারা (যিলহাজ্জ মাসের) দশ দিন বুঝায় এবং وَالاَيَّامُ المَعدُودَاتُ দ্বারা ‘আইয়ামুত তাশরীক’ বুঝায়। ইব্‌নু ‘উমর ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) এই দশ দিন তাকবীর বলতে বলতে বাজারের দিকে যেতেন এবং তাদের তাকবীরের সঙ্গে অন্যরাও তাকবীর বলত। মুহাম্মদ ইব্‌নু ‘আলী (রহঃ) নফল [১] সালাতের পরেও তাকবীর বলতেন।
[১] এটি তাঁর নিজস্ব মত। অন্য ইমামগণের মতে শুধু ফরয সালাতের পরেই তাকবীর বলতে হয়।

৯৬৯

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُسْلِمٍ الْبَطِينِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏"‏ مَا الْعَمَلُ فِي أَيَّامِ الْعَشْرِ أَفْضَلَ مِنَ الْعَمَلِ فِي هَذِهِ ‏"‏‏.‏ قَالُوا وَلاَ الْجِهَادُ قَالَ ‏"‏ وَلاَ الْجِهَادُ، إِلاَّ رَجُلٌ خَرَجَ يُخَاطِرُ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ فَلَمْ يَرْجِعْ بِشَىْءٍ ‏"‏‏.‏
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের ‘আমলের চেয়ে অন্য কোন দিনের ‘আমলই উত্তম নয়। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, জিহাদও কি (উত্তম) নয়? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ জিহাদও নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা ছাড়া যে নিজের জান ও মালের ঝুঁকি নিয়েও জিহাদে যায় এবং কিছুই নিয়ে ফিরে আসে না।

১৩/১২. অধ্যায়ঃ

মিনা’র দিনগুলোতে এবং সকালে আরাফায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলা
‘উমর (রাঃ) মিনায় নিজের তাবূতে তাকবীর বলতেন। মসজিদের লোকেরা তা শুনে তারাও তাকবীর বলতেন এবং বাজারের লোকেরাও তাকবীর বলতেন। ফলে সমস্ত মিনা তাকবীরে আওয়াযে গুঞ্জরিত হয়ে উঠত। ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সে দিনগুলোতে মিনায় তাকবীর বলতেন এবং সালাতের পরে, বিছানায়, খীমায়, মজলিসে এবং চলার সময় এ দিনগুলোতে তাকবীর বলতেন। মাইমূনা (রাঃ) কুরবানীর দিন তাকবীর বলতেন এবং মহিলারা আবান ইব্‌নু ’উসমান ও ‘উমর ইব্‌নু ’আবদুল ’আযীয (রহঃ)- এর পিছনে তাশরীকের রাতগুলোতে মসজিদে পুরুষদের সঙ্গে সঙ্গে তাকবীর বলতেন।

৯৭০

حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الثَّقَفِيُّ، قَالَ سَأَلْتُ أَنَسًا وَنَحْنُ غَادِيَانِ مِنْ مِنًى إِلَى عَرَفَاتٍ عَنِ التَّلْبِيَةِ كَيْفَ كُنْتُمْ تَصْنَعُونَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ كَانَ يُلَبِّي الْمُلَبِّي لاَ يُنْكَرُ عَلَيْهِ، وَيُكَبِّرُ الْمُكَبِّرُ فَلاَ يُنْكَرُ عَلَيْهِ‏.‏
মুহাম্মদ ইব্‌নু আবূ বাক্‌র সাক্বাফী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা সকাল বেলা মিনা হতে যখন ‘আরাফাতের দিকে যাচ্ছিলাম, তখন আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ)-এর নিকট তালবিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কিরূপ করতেন? তিনি বললেন, তালবিয়া পাঠকারী তালবিয়া পড়ত, তাকে নিষেধ করা হতো না। তাকবীর পাঠকারী তাকবীর পাঠ করত, তাকেও নিষেধ করা হতো না।

৯৭১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ كُنَّا نُؤْمَرُ أَنْ نَخْرُجَ يَوْمَ الْعِيدِ، حَتَّى نُخْرِجَ الْبِكْرَ مِنْ خِدْرِهَا، حَتَّى نُخْرِجَ الْحُيَّضَ فَيَكُنَّ خَلْفَ النَّاسِ، فَيُكَبِّرْنَ بِتَكْبِيرِهِمْ، وَيَدْعُونَ بِدُعَائِهِمْ يَرْجُونَ بَرَكَةَ ذَلِكَ الْيَوْمِ وَطُهْرَتَهُ‏.‏
উম্মু ‘আতিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন আমাদের বের হবার আদেশ দেয়া হত। এমন কি আমরা কুমারী মেয়েদেরকেও অন্দর মহল হতে বের করতাম এবং ঋতুবতী মেয়েদেরকেও। তারা পুরুষদের পিছনে থাকতো এবং তাদের তাকবীরের সাথে তাকবীর বলতো এবং তাদের দু’আর সাথে দু’আ করত- সে দিনের বরকত এবং পবিত্রতা তারা আশা করত।

১৩/১৩. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের দিন যুদ্ধের হাতিয়ারের সম্মুখে সালাত আদায়।

৯৭২

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، قَالَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ تُرْكَزُ الْحَرْبَةُ قُدَّامَهُ يَوْمَ الْفِطْرِ وَالنَّحْرِ ثُمَّ يُصَلِّي‏.‏
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে যুদ্ধের হাতিয়ার রেখে দেয়া হত। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করতেন।

১৩/১৪. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের দিন ইমামের সামনে বর্শা পুঁতে সালাত আদায় করা।

৯৭৩

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالَ حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَمْرٍو، قَالَ أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَغْدُو إِلَى الْمُصَلَّى، وَالْعَنَزَةُ بَيْنَ يَدَيْهِ، تُحْمَلُ وَتُنْصَبُ بِالْمُصَلَّى بَيْنَ يَدَيْهِ فَيُصَلِّي إِلَيْهَا‏.‏
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে বর্শা পুঁতে দেয়া হত। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করতেন।

১৩/১৫. অধ্যায়ঃ

নারীদের ও ঋতুবতীদের ‘ঈদগাহে যাওয়া।

৯৭৪

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ أُمِرْنَا أَنْ نُخْرِجَ، الْعَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ‏.‏ وَعَنْ أَيُّوبَ عَنْ حَفْصَةَ بِنَحْوِهِ‏.‏ وَزَادَ فِي حَدِيثِ حَفْصَةَ قَالَ أَوْ قَالَتِ الْعَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ، وَيَعْتَزِلْنَ الْحُيَّضُ الْمُصَلَّى‏.
উম্মু ‘আতিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন (‘ঈদের সালাতের উদ্দেশে) যুবতী ও পর্দানশীন মেয়েদের নিয়ে যাবার জন্য আমাদের নির্দেশ দেয়া হতো। আইয়ুব (রহঃ) হতে হাফসা (রাঃ) সূত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে এবং হাফসা (রাঃ) হতে বর্ণিত রিওয়ায়াতে অতিরিক্ত বর্ণনা আছে, ‘ঈদগাহে ঋতুবতী নারীরা আলাদা থাকতেন।

১৩/১৬. অধ্যায়ঃ

বালকদের ‘ঈদমাঠে গমন।

৯৭৫

حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَبَّاسٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، قَالَ خَرَجْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ فِطْرٍ أَوْ أَضْحَى، فَصَلَّى ثُمَّ خَطَبَ، ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ فَوَعَظَهُنَّ وَذَكَّرَهُنَّ، وَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ‏.‏
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে ‘ঈদুল ফিতর বা আযহার দিন বের হলাম। তিনি সালাত আদায় করলেন। অতঃপর খুতবা দিলেন। অতঃপর নারীদের নিকট গিয়ে তাঁদের নসীহত করলেন এবং তাঁদেরকে সদকা করার নির্দেশ দিলেন।

১৩/১৭. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের খুতবা দেয়ার সময় মুসল্লীদের প্রতি ইমামের মুখ করে দাঁড়ানো।
আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুসল্লীদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন।

৯৭৬

حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَلْحَةَ، عَنْ زُبَيْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أَضْحًى إِلَى الْبَقِيعِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ وَقَالَ ‏"‏ إِنَّ أَوَّلَ نُسُكِنَا فِي يَوْمِنَا هَذَا أَنْ نَبْدَأَ بِالصَّلاَةِ، ثُمَّ نَرْجِعَ فَنَنْحَرَ، فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدْ وَافَقَ سُنَّتَنَا، وَمَنْ ذَبَحَ قَبْلَ ذَلِكَ فَإِنَّمَا هُوَ شَىْءٌ عَجَّلَهُ لأَهْلِهِ، لَيْسَ مِنَ النُّسُكِ فِي شَىْءٍ ‏"‏‏.‏ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي ذَبَحْتُ وَعِنْدِي جَذَعَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُسِنَّةٍ‏.‏ قَالَ ‏"‏ اذْبَحْهَا، وَلاَ تَفِي عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ ‏"‏‏.‏
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল আযহার দিন বাকী‘তে (নামক কবরস্থানে) যান। অতঃপর তিনি দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করে আমাদের দিকে মুখ করে দাঁড়ালেন এবং তিনি বললেন, আজকের দিনের প্রথম ‘ইবাদাত হল সালাত আদায় করা। অতঃপর ফিরে গিয়ে কুরবানী করা। যে ব্যক্তি এরূপ করবে সে আমাদের নীতি অনুযায়ী কাজ করবে। আর যে এর পূর্বেই যবেহ্‌ করবে তা হলে তার যবেহ্ হবে এমন একটি কাজ, যা সে নিজের পরিবারবর্গের জন্যই তাড়াতাড়ি করে ফেলেছে, এর সাথে কুরবানীর কোন সম্পর্ক নেই। তখন এক ব্যক্তি [আবূ বুরদাহ ইব্‌নু নিয়ার (রাঃ)] দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমি (পূবেই) যবেহ্‌ করে ফেলেছি। এখন আমার নিকট এমন একটি মেষশাবক আছে যা পূর্ণবয়স্ক মেষের চেয়ে উত্তম। (এটা কুরবানী করব কি?) তিনি বললেন, এটাই যবেহ্ কর। তবে তোমার পর আর কারো জন্য তা যথেষ্ট হবে না।

১৩/১৮. অধ্যায়ঃ

‘ঈদগাহে চিহ্ন রাখা।

৯৭৭

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَابِسٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، قِيلَ لَهُ أَشَهِدْتَ الْعِيدَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ، وَلَوْلاَ مَكَانِي مِنَ الصِّغَرِ مَا شَهِدْتُهُ، حَتَّى أَتَى الْعَلَمَ الَّذِي عِنْدَ دَارِ كَثِيرِ بْنِ الصَّلْتِ فَصَلَّى ثُمَّ خَطَبَ ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ، وَمَعَهُ بِلاَلٌ، فَوَعَظَهُنَّ وَذَكَّرَهُنَّ، وَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ، فَرَأَيْتُهُنَّ يُهْوِينَ بِأَيْدِيهِنَّ يَقْذِفْنَهُ فِي ثَوْبِ بِلاَلٍ، ثُمَّ انْطَلَقَ هُوَ وَبِلاَلٌ إِلَى بَيْتِهِ‏.‏
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে কখনো ‘ঈদে উপস্থিত হয়েছেন? তিনি বললেন হাঁ। যদি তাঁর নিকট আমার মর্যাদা না থকত তা হলে কম বয়সী হবার কারণে আমি ‘ঈদে উপস্থিত হতে পারতাম না। তিনি বের হয়ে কাসীর ইব্‌নু সলাতের গৃহের নিকট স্থাপিত নিশানার নিকট এলেন এবং সালাত আদায় করলেন। অতঃপর খুতবা দিলেন। অতঃপর তিনি মহিলাগণের নিকট উপস্থিত হলেন। তখন তাঁর সঙ্গে বিলাল (রাঃ) ছিলেন। তিনি নারীদের উপদেশ দিলেন, নসীহত করলেন এবং দান সদকা করার জন্য নির্দেশ দিলেন। আমি তখন নারীদেরকে হতে বাড়িয়ে বিলাল (রাঃ)- এর কাপড়ে দান সামগ্রী ফেলতে দেখলাম। অতঃপর তিনি এবং বিলাল (রাঃ) নিজ বাড়ির দিকে চলে গেলেন।

১৩/১৯. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের দিন নারীদের প্রতি ইমামের নসীহত করা।

৯৭৮

حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ نَصْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ قَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْفِطْرِ، فَصَلَّى فَبَدَأَ بِالصَّلاَةِ ثُمَّ خَطَبَ، فَلَمَّا فَرَغَ نَزَلَ فَأَتَى النِّسَاءَ، فَذَكَّرَهُنَّ وَهْوَ يَتَوَكَّأُ عَلَى يَدِ بِلاَلٍ وَبِلاَلٌ بَاسِطٌ ثَوْبَهُ، يُلْقِي فِيهِ النِّسَاءُ الصَّدَقَةَ‏.‏ قُلْتُ لِعَطَاءٍ زَكَاةَ يَوْمِ الْفِطْرِ قَالَ لاَ وَلَكِنْ صَدَقَةً يَتَصَدَّقْنَ حِينَئِذٍ، تُلْقِي فَتَخَهَا وَيُلْقِينَ‏.‏ قُلْتُ أَتُرَى حَقًّا عَلَى الإِمَامِ ذَلِكَ وَيُذَكِّرُهُنَّ قَالَ إِنَّهُ لَحَقٌّ عَلَيْهِمْ، وَمَا لَهُمْ لاَ يَفْعَلُونَهُ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিতরের দিন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলেন, পরে খুতবা দিলেন। খুতবা শেষে নেমে নারীদের নিকট আসলেন এবং তাঁদের নসীহত করলেন। তখন তিনি বিলাল (রাঃ)-এর হাতের উপর ভর দিয়ে ছিলেন এবং বিলাল (রাঃ) তাঁর কাপড় প্রসারিত করে ধরলেন। এতে নারীগণ দান সামগ্রী ফেলতে লাগলেন আমি (ইব্‌নু জুরায়জ) আত্বা (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, এ কি ‘ঈদুল ফিতরের সদকা? তিনি বললেন না, বরং এ সাধারণ সদকা যা তাঁরা ঐ সময় দিচ্ছিলেন। কোন মহিলা তাঁর আংটি দান করলে অন্যান্য নারীরাও তাঁদের আংটি দান করতে লাগলেন। আমি আতা (রহঃ)-কে (আবার), জিজ্ঞেস করলাম, মহিলাগণকে উপদেশ দেয়া কি ইমামের জন্য জরুরী? তিনি বললেন, অবশ্যই, তাদের উপর তা জরুরী। তাঁদের (অর্থাৎ ইমামগণের) কী হয়েছে যে, তাঁরা তা করবেন না?

৯৭৯

قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ وَأَخْبَرَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ شَهِدْتُ الْفِطْرَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ ـ رضى الله عنهم ـ يُصَلُّونَهَا قَبْلَ الْخُطْبَةِ، ثُمَّ يُخْطَبُ بَعْدُ، خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِ حِينَ يُجْلِسُ بِيَدِهِ، ثُمَّ أَقْبَلَ يَشُقُّهُمْ حَتَّى جَاءَ النِّسَاءَ مَعَهُ بِلاَلٌ فَقَالَ ‏{‏يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَاءَكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ‏}‏ الآيَةَ ثُمَّ قَالَ حِينَ فَرَغَ مِنْهَا ‏"‏ آنْتُنَّ عَلَى ذَلِكَ ‏"‏‏.‏ قَالَتِ امْرَأَةٌ وَاحِدَةٌ مِنْهُنَّ لَمْ يُجِبْهُ غَيْرُهَا نَعَمْ‏.‏ لاَ يَدْرِي حَسَنٌ مَنْ هِيَ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَتَصَدَّقْنَ ‏"‏ فَبَسَطَ بِلاَلٌ ثَوْبَهُ ثُمَّ قَالَ هَلُمَّ لَكُنَّ فِدَاءٌ أَبِي وَأُمِّي، فَيُلْقِينَ الْفَتَخَ وَالْخَوَاتِيمَ فِي ثَوْبِ بِلاَلٍ‏.‏ قَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ الْفَتَخُ الْخَوَاتِيمُ الْعِظَامُ كَانَتْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ‏.‏
ইব্‌নু জুরায়জ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাসান ইব্‌নু মুসলিম (রহঃ) তাউস (রহঃ) এর মাধ্যমে ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) হতে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বক্‌র, ‘উমর ও উসমান (রাঃ)-এর সঙ্গে ‘ঈদুল ফিতরে আমি উপস্থিত ছিলাম। তাঁরা খুতবার পূর্বে সালাত আদায় করতেন, পরে খুতবা দিতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন, আমি যেন দেখতে পাচ্ছি তিনি হাতের ইঙ্গিতে (লোকদের) বসিয়ে দিচ্ছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআনের এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “হে নবী ! যখন ঈমানদার মহিলাগণ আপনার নিকট এ শর্তে বায়‘আত করতে আসেন يَا اَيُّهَا النَّبِيُّ اِذَا جَاءَكَ المُؤمِنَاتَ يُبَايِعنَكَ - الاية (সূরাহ মুমতাহিনাহ ৬০/১২)। এ আয়াত শেষ করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা এ বায়‘আতের উপর আছ? তাঁদের মধ্যে একজন মহিলা বলল, হাঁ, সে ছাড়া আর কেউ এর জবাব দিল না। হাসান (রহঃ) জানেন না, সে মহিলা কে? অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা সদকা কর। সে সময় বিলাল (রাঃ) তাঁর কাপড় প্রসারিত করে বললেন, আমার মা-বাপ আপনাদের জন্য কুরবান হোক, আসুন, আপনারা দান করুন। তখন নারীগণ তাঁদের ছোট-বড় আংটিগুলো বিলাল (রাঃ)-এর কাপড়ের মধ্যে ফেলতে লাগলেন। আবদুর রাযযাক (রহঃ) বলেন, --- হলো বড় আংটি যা জাহিলী যুগে ব্যবহৃত হতো।

১৩/২০. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের সালাতে যাওয়ার জন্য নারীদের ওড়না না থাকলে।

৯৮০

حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ، قَالَتْ كُنَّا نَمْنَعُ جَوَارِيَنَا أَنْ يَخْرُجْنَ يَوْمَ الْعِيدِ، فَجَاءَتِ امْرَأَةٌ فَنَزَلَتْ قَصْرَ بَنِي خَلَفٍ فَأَتَيْتُهَا فَحَدَّثَتْ أَنَّ زَوْجَ أُخْتِهَا غَزَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثِنْتَىْ عَشْرَةَ غَزْوَةً فَكَانَتْ أُخْتُهَا مَعَهُ فِي سِتِّ غَزَوَاتٍ‏.‏ فَقَالَتْ فَكُنَّا نَقُومُ عَلَى الْمَرْضَى وَنُدَاوِي الْكَلْمَى، فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ، عَلَى إِحْدَانَا بَأْسٌ إِذَا لَمْ يَكُنْ لَهَا جِلْبَابٌ أَنْ لاَ تَخْرُجَ فَقَالَ ‏"‏ لِتُلْبِسْهَا صَاحِبَتُهَا مِنْ جِلْبَابِهَا فَلْيَشْهَدْنَ الْخَيْرَ وَدَعْوَةَ الْمُؤْمِنِينَ ‏"‏‏.‏ قَالَتْ حَفْصَةُ فَلَمَّا قَدِمَتْ أُمُّ عَطِيَّةَ أَتَيْتُهَا، فَسَأَلْتُهَا أَسَمِعْتِ فِي كَذَا وَكَذَا قَالَتْ نَعَمْ، بِأَبِي ـ وَقَلَّمَا ذَكَرَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ قَالَتْ بِأَبِي ـ قَالَ ‏"‏ لِيَخْرُجِ الْعَوَاتِقُ ذَوَاتُ الْخُدُورِ ـ أَوْ قَالَ الْعَوَاتِقُ وَذَوَاتُ الْخُدُورِ شَكَّ أَيُّوبُ ـ وَالْحُيَّضُ، وَيَعْتَزِلُ الْحُيَّضُ الْمُصَلَّى، وَلْيَشْهَدْنَ الْخَيْرَ وَدَعْوَةَ الْمُؤْمِنِينَ ‏"‏‏.‏ قَالَتْ فَقُلْتُ لَهَا آلْحُيَّضُ قَالَتْ نَعَمْ، أَلَيْسَ الْحَائِضُ تَشْهَدُ عَرَفَاتٍ وَتَشْهَدُ كَذَا وَتَشْهَدُ كَذَا
হাফসা বিন্‌ত সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা ‘ঈদের দিন আমাদের যুবতীদের বের হতে নিষেধ করতাম। একদা জনৈকা মহিলা এলেন এবং বনু খালাফের প্রাসাদে অবস্থান করলেন। আমি তাঁর নিকট গেলে তিনি বললেন, তাঁর ভগ্নিপতি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সাথে বারটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, এর মধ্যে ছয়টি যুদ্ধে স্বয়ং তাঁর বোনও স্বামীর সাথে অংশগ্রহণ করেছেন, (মহিলা বলেন) আমার বোন বলেছেন, আমরা রুগ্নদের সেবা করতাম, আহতদের শুশ্রূষা করতাম। একবার তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! যদি আমাদের কারো ওড়না না থাকে, তখন কি সে বের হবে না? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ অবস্থায় তার বান্ধবী যেন তাকে নিজ ওড়না পরিধান করতে দেয় এবং এভাবে মহিলাগণ যেন কল্যাণকর কাজে ও মু‘মিনদের দু’আয় অংশগ্রহণ করেন। হাফসা (রহঃ) বলেন, যখন উম্মু আতিয়্যাহ (রাঃ) এলেন, তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম যে, আপনি কি এসব ব্যাপারে কিছু শুনেছেন? তিনি বললেন, হাঁ, হাফসা (রহঃ) বলেন, আমরা পিতা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর জন্য উৎসর্গিত হোক এবং তিনি যখনই আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নাম উল্লেখ করতেন, তখনই একথা বলতেন। তাঁবুতে অবস্থানকারিণী যুবতীরা এবং ঋতুবতী নারীরা যেন বের হন। তবে ঋতুবতী নারীরা যেন সালাতের স্থান হতে সরে থাকেন। তারা সকলেই যেন কল্যাণকর কাজে ও মু’মিনদের দু’আয় অংশগ্রহণ করেন। হাফসা (রহঃ) বলেন, আমি তাকে বললাম, ঋতুবতী নারীরাও? তিনি বললেন, হাঁ, ঋতুবতী নারী কি আরাফাত এবং অন্যান্য স্থানে উপস্থিত হয় না? (১)

১৩/২১. অধ্যায়ঃ

‘ঈদমাঠে ঋতুবতী নারীদের আলাদা অবস্থান।

৯৮১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، قَالَ قَالَتْ أُمُّ عَطِيَّةَ أُمِرْنَا أَنْ نَخْرُجَ فَنُخْرِجَ الْحُيَّضَ وَالْعَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ‏.‏ قَالَ ابْنُ عَوْنٍ أَوِ الْعَوَاتِقَ ذَوَاتِ الْخُدُورِ، فَأَمَّا الْحُيَّضُ فَيَشْهَدْنَ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِينَ وَدَعْوَتَهُمْ، وَيَعْتَزِلْنَ مُصَلاَّهُمْ‏.‏
উম্মু আতিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (ঈদের দিন) আমাদেরকে বের হবার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তাই আমরা ঋতুবতী, যুবতী এবং তাঁবুতে অবস্থানকারিণী নারীদেরকে নিয়ে বের হতাম। ইব্‌নু ‘আওন (রহঃ)-এর এক বর্ণনায় রয়েছে, অথবা তাঁবুতে অবস্থানকারিণী যুবতী নারীদেরকে নিয়ে বের হতাম। অতঃপর ঋতুবতী মহিলাগণ মুসলমানদের জামা‘আত এবং তাদের দু‘আয় অংশগ্রহণ করতেন। তবে ‘ঈদমাঠে পৃথকভাবে অবস্থান করতেন। (২)
(১) ও (২) অত্র হাদীস দ্বারা নারীদের ‘ঈদের মাঠে গমনের উপর কী পরিমাণ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তা স্পষ্ট প্রমাণিত।

১৩/২২. অধ্যায়ঃ

কুরবানীর দিন ‘ঈদমাঠে নাহর ও যবেহ্।

৯৮২

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي كَثِيرُ بْنُ فَرْقَدٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَنْحَرُ أَوْ يَذْبَحُ بِالْمُصَلَّى‏.‏
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদমাঠে নাহর করতেন কিংবা যবেহ্ করতেন।

১৩/২৩. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের খুতবার সময় ইমাম ও লোকদের কথা বলা এবং খুতবার সময় ইমামের নিকট কোন কিছু জিজ্ঞেস করা হলে।

৯৮৩

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنَا مَنْصُورُ بْنُ الْمُعْتَمِرِ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ النَّحْرِ بَعْدَ الصَّلاَةِ فَقَالَ ‏"‏ مَنْ صَلَّى صَلاَتَنَا وَنَسَكَ نُسْكَنَا فَقَدْ أَصَابَ النُّسُكَ، وَمَنْ نَسَكَ قَبْلَ الصَّلاَةِ فَتِلْكَ شَاةُ لَحْمٍ ‏"‏‏.‏ فَقَامَ أَبُو بُرْدَةَ بْنُ نِيَارٍ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَاللَّهِ لَقَدْ نَسَكْتُ قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ إِلَى الصَّلاَةِ، وَعَرَفْتُ أَنَّ الْيَوْمَ يَوْمُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ فَتَعَجَّلْتُ وَأَكَلْتُ وَأَطْعَمْتُ أَهْلِي وَجِيرَانِي‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ تِلْكَ شَاةُ لَحْمٍ ‏"‏‏.‏ قَالَ فَإِنَّ عِنْدِي عَنَاقَ جَذَعَةٍ، هِيَ خَيْرٌ مِنْ شَاتَىْ لَحْمٍ، فَهَلْ تَجْزِي عَنِّي قَالَ ‏"‏ نَعَمْ، وَلَنْ تَجْزِيَ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ ‏"‏‏.‏
বারাআ ইব্‌নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুরবানীর দিন সালাতের পর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সামনে খুতবা দিলেন। খুতবায় তিনি বললেন, যে আমাদের মতো সালাত আদায় করবে এবং আমাদের কুরবানীর মত কুরবানী করবে, তার কুরবানী যথার্থ বলে গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বে কুরবানী করবে তার সে কুরবানী গোশ্‌ত খাওয়া ছাড়া আর কিছু হবে না। তখন আবূ বুরদাহ্ ইব্‌নু নিয়ার (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর কসম! আমি তো সালাতে বের হবার পূর্বেই কুরবানী করে ফেলেছি। আমি ভেবেছি যে, আজকের দিনটি তো পানাহারের দিন। তাই আমি তাড়াতাড়ি করে ফেলেছি। আমি নিজে খেয়েছি এবং আমার পরিবারবর্গ ও প্রতিবেশীদেরকেও আহার করিয়েছি। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ওটা গোশ্‌ত খাবার বকরী ছাড়া আর কিছু হয়নি। আবূ বুরদাহ (রাঃ) বলেন, তবে আমার নিকট এমন একটি মেষ শাবক আছে যা দুটো (গোশ্‌ত খাওয়ার) বকরীর চেয়ে ভাল। এটা কি আমার পক্ষে কুরবানীর জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তবে তোমার পরে অন্য কারো জন্য যথেষ্ট হবে না।

৯৮৪

حَدَّثَنَا حَامِدُ بْنُ عُمَرَ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى يَوْمَ النَّحْرِ، ثُمَّ خَطَبَ فَأَمَرَ مَنْ ذَبَحَ قَبْلَ الصَّلاَةِ أَنْ يُعِيدَ ذَبْحَهُ فَقَامَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، جِيرَانٌ لِي ـ إِمَّا قَالَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ، وَإِمَّا قَالَ بِهِمْ فَقْرٌ ـ وَإِنِّي ذَبَحْتُ قَبْلَ الصَّلاَةِ وَعِنْدِي عَنَاقٌ لِي أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ شَاتَىْ لَحْمٍ‏.‏ فَرَخَّصَ لَهُ فِيهَا‏.‏
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানীর দিন সালাত আদায় করেন, অতঃপর খুতবা দিলেন। অতঃপর নির্দেশ দিলেন, যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বে কুরবানী করেছে সে যেন পুনরায় কুরবানী করে। তখন আনসারদের মধ্য হতে জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমার প্রতিবেশীরা ছিল উপবাসী অথবা বলেছেন দরিদ্র। তাই আমি সালাতের পূর্বেই যবেহ্‌ করে ফেলেছি। তবে আমার নিকট মেষশাবক আছে যা দু’টি হৃষ্টপুষ্ট বকরির চাইতেও আমার নিকট অধিক পছন্দসই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে সেটা কুরবানী করার অনুমতি দেন।

৯৮৫

حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ جُنْدَبٍ، قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ النَّحْرِ ثُمَّ خَطَبَ، ثُمَّ ذَبَحَ فَقَالَ ‏ "‏ مَنْ ذَبَحَ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ فَلْيَذْبَحْ أُخْرَى مَكَانَهَا، وَمَنْ لَمْ يَذْبَحْ فَلْيَذْبَحْ بِاسْمِ اللَّهِ ‏"‏‏.‏
জুনদাব ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানীর দিন সালাত আদায় করেন, অতঃপর খুতবা দেন। অতঃপর যবেহ্ করেন এবং তিনি বলেনঃ সালাতের পূর্বে যে ব্যক্তি যবেহ্‌ করবে তাকে তার স্থলে আর একটি যবেহ্ করতে হবে এবং যে যবেহ্‌ করেনি, আল্লাহর নামে তার যবেহ্‌ করা উচিত।

১৩/২৪. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের দিন প্রত্যাবর্তন করার সময় যে ব্যক্তি ভিন্ন পথে আসে।

৯৮৬

حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو تُمَيْلَةَ، يَحْيَى بْنُ وَاضِحٍ عَنْ فُلَيْحِ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ يَوْمُ عِيدٍ خَالَفَ الطَّرِيقَ‏.‏ تَابَعَهُ يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ عَنْ فُلَيْحٍ‏.‏ وَحَدِيثُ جَابِرٍ أَصَحُّ‏.‏
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদের দিন (বাড়ি ফেরার পথে) ভিন্ন পথে আসতেন। ইউনুস ইব্‌নু মুহাম্মদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণনায় আবূ তুমাইলা ইয়াহইয়া (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। তবে জাবির (রাঃ) হতে হাদীসটি অধিকতর বিশুদ্ধ।

১৩/২৫. অধ্যায়ঃ

কারো ঈদের নামায ছুটে গেলে সে দু’ রাকাত সালাত আদায় করবে।
নারীগণ এবং যারা বাড়ী ও পল্লীতে অবস্থান করে তারাও এরুপ করবে। কেননা, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে মুসলিমগণ! এ হলো আমাদের ‘ঈদ। আর আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) যাবিয়া নামক স্থানে তাঁর আযাদকৃত গোলাম ইবনু আবূ উতবাকে এ আদেশ করেছিলেন। তাই তিনি তার পরিবারবর্গ ও সন্তান সন্ততিদের নিয়ে শহরের অধিবাসীদের ন্যায় তাকবীরসহ সালাত আদায় করেন এবং ইকরিমাহ (রহঃ) বলেছেন, গ্রামের অধিবাসীরা ঈদের দিন সমবেত হয়ে ইমামের ন্যায় দু’ রাক’আত সালাত আদায় করবে। ‘আতা (রহঃ) বলেন, যখন কারো ‘ঈদের সালাত ছুটে যায় তখন সে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করবে।

৯৮৭

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ أَبَا بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ دَخَلَ عَلَيْهَا وَعِنْدَهَا جَارِيَتَانِ فِي أَيَّامِ مِنًى تُدَفِّفَانِ وَتَضْرِبَانِ، وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُتَغَشٍّ بِثَوْبِهِ، فَانْتَهَرَهُمَا أَبُو بَكْرٍ فَكَشَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ وَجْهِهِ فَقَالَ ‏"‏ دَعْهُمَا يَا أَبَا بَكْرٍ فَإِنَّهَا أَيَّامُ عِيدٍ ‏"‏‏.‏ وَتِلْكَ الأَيَّامُ أَيَّامُ مِنًى‏.‏ وَقَالَتْ عَائِشَةُ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتُرُنِي، وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَى الْحَبَشَةِ وَهُمْ يَلْعَبُونَ فِي الْمَسْجِدِ، فَزَجَرَهُمْ عُمَرُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ دَعْهُمْ، أَمْنًا بَنِي أَرْفِدَةَ ‏"‏‏.‏ يَعْنِي مِنَ الأَمْنِ‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবু বক্‌র (রাঃ) তাঁর নিকট এলেন। এসময় মিনার দিবসগুলোর এক দিবসে তাঁর নিকট দুটি মেয়ে দফ বাজাচ্ছিলো, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাদর আবৃত অবস্থায় ছিলেন। তখন আবু বক্‌র (রাঃ) মেয়ে দু’টিকে ধমক দিলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুখমণ্ডল হতে কাপড় সরিয়ে নিয়ে বললেন, হে আবু বক্‌র! ওদের বাধা দিওনা। কেননা, এসব ‘ঈদের দিন। আর সে দিনগুলো ছিলো মিনার দিন।

৯৮৮

وَقَالَتْ عَائِشَةُ رَأَيْتُ النَّبِيَّ يَسْتُرُنِي وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَى الْحَبَشَةِ وَهُمْ يَلْعَبُونَ فِي الْمَسْجِدِ فَزَجَرَهُمْ عُمَرُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم دَعْهُمْ أَمْنًا بَنِي أَرْفِدَةَ يَعْنِي مِنَ الْأَمْنِ.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাবশীরা যখন মসজিদে (এর প্রাঙ্গণে) প্রাঙ্গণে খেলাধূলা করছিল, তখন আমি তাদের দেখছিলাম এবং আমি দেখেছি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে আড়াল করে রেখেছেন। 'উমর (রাঃ) হাবশীদের ধমক দিলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ওদের ধমক দিওনা। হে বনূ আরফিদা! তোমরা যা করছিলে তা কর।

১৩/২৬. অধ্যায়ঃ

‘ঈদের সালাতের আগে ও পরে সালাত আদায় করা’।
আবু মুয়াল্লা (রহঃ) বলেন, আমি সাঈদ (রহঃ)-কে ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বলতে শুনেছি যে, তিনি ‘ঈদের পূর্বে সালাত আদায় করা মাকরুহ মনে করতেন।

৯৮৯

حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنِي عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ، قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ يَوْمَ الْفِطْرِ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ لَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلاَ بَعْدَهَا وَمَعَهُ بِلاَلٌ‏.‏
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিলাল (রাঃ)-কে সঙ্গে নিয়ে ‘ঈদুল ফিতরের দিন বের হয়ে দু’ রাকা’আত সালাত আদায় করেন। তিনি এর পূর্বে ও পরে কোন সালাত আদায় করেননি।

No comments

Powered by Blogger.