সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "শপথের কাফফারা" হাদিস নং - ৬৭০৮ থেকে ৬৭২২

শপথের কাফ্‌ফারা-৬৭০৮ – ৬৭২২

আল্লাহ্‌র বাণীঃ এরপর কাফ্‌ফারা দশজন দরিদ্রকে খাওয়ানো-(সূরা আল-মায়িদা ৫/৮৯)।
যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা হচ্ছেঃ “ফিদিয়া-এর মধ্যে সওম, সদকা অথবা কুরবানী করা।” (আল-বাকারা ২/১৯৬) ইব্‌নু ‘আব্বাস, ‘আত্বা ও ইকরামা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, কুরআন মাজীদে যেখানে (আরবী) (অথবা, অথবা) শব্দ আছে কুরআনের অনুসারীদের জন্য সেখানে যে কোন একটি পন্থা গ্রহণের অধিকার রয়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা’ব (রাঃ)-কে ফিদিয়া আদায়ের ব্যাপারে যে কোন একটি পন্থা গ্রহণের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন।

৬৭০৮

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا أَبُو شِهَابٍ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ، قَالَ أَتَيْتُهُ يَعْنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏"‏ ادْنُ ‏"‏‏.‏ فَدَنَوْتُ فَقَالَ ‏"‏ أَيُؤْذِيكَ هَوَامُّكَ ‏"‏‏.‏ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فِدْيَةٌ مِنْ صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ ‏"‏‏.‏ وَأَخْبَرَنِي ابْنُ عَوْنٍ عَنْ أَيُّوبَ قَالَ صِيَامُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ، وَالنُّسُكُ شَاةٌ، وَالْمَسَاكِينُ سِتَّةٌ‏.‏
কা’ব ইব্‌নু উজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হাযির হলাম। তখন তিনি বললেনঃ কাছে এসো। তখন আমি তাঁর কাছে গেলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমাকে কি তোমার উকুন কষ্ট দিচ্ছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ সওম অথবা সদকা অথবা কুরবানী করে ফিদিয়া আদায় কর। ইব্‌নু আউন আইউব থেকে আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, সওম তিন দিন, কুরবানী একটি বক্‌রী আর মিস্‌কীনের সংখ্যা হচ্ছে ছয়। [৮৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫১)
 [৮৩] শপথ ভঙ্গের কাফ্‌ফারা হল দশজন মিস্‌কিনকে খানা খাওয়ানো অথবা তিন দিন সিয়াম পালন অথবা একটি ছাগল কুরবানী (সাদাক্বাহ) করা। (ফাতহুল বারী)

৮৪/. অধ্যায়ঃ

আর ধনী ও গরীব কখন কার উপর কাফ্‌ফারা ওয়াজিব হয়।
আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ তোমাদের জন্য নিজেদের কসমের বাধ্যবাধকতা থেকে নিস্কৃতি পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন, আল্লাহ তোমাদের মালিক-মনিব-রক্ষক, আর তিনি সবর্জ্ঞাতা, মহা প্রজ্ঞার অধিকারী-(সূরা আল-বাকারা ৬৬/১-২)

৬৭০৯

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ سَمِعْتُهُ مِنْ فِيهِ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ هَلَكْتُ قَالَ وَمَا شَأْنُكَ قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ قَالَ تَسْتَطِيعُ تُعْتِقُ رَقَبَةً قَالَ لاَ قَالَ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لاَ قَالَ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُطْعِمَ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لاَ قَالَ اجْلِسْ فَجَلَسَ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ وَالْعَرَقُ الْمِكْتَلُ الضَّخْمُ قَالَ خُذْ هَذَا فَتَصَدَّقْ بِهِ قَالَ أَعَلَى أَفْقَرَ مِنَّا فَضَحِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ قَالَ أَطْعِمْهُ عِيَالَكَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এক লোক এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ তোমার কী হয়েছে? লোকটি বলল, রমযানে (দিনের বেলা) আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সঙ্গম করেছি। তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে পার? লোকটি বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি কি এক নাগাড়ে দু’ মাস সওম পালন করতে পার? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তা হলে কি তুমি ষাটজন মিস্‌কীনকে খানা খাওয়াতে পারবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ বস। লোকটি বসল। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এক ‘আরক’ আনা হলো যাতে ছিল খেজুর। আর ‘আরক’ হল মাপ করার জন্য বড় ধরণের পাত্র। তিনি বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং তা সদকা করে দাও। লোকটি বলল, আমার চেয়েও অভাবীকে (তা দান করব)? তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেসে ফেললেনঃ এমন কি তাঁর মাড়ির দাঁত পর্যন্ত দেখা গেল। তিনি বললেনঃ এটা তোমার পরিজনকেই খাওয়াও। [৮৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫২)
 [৮৪] ইসলামের পথ যে কত প্রশস্ত, কত উদার ও সংকীর্ণতামুক্ত-অত্র হাদিসটি তার স্পষ্ট প্রমাণ।

৮৪/. অধ্যায়ঃ

যে ব্যক্তি কাফ্‌ফারা আদায়ে দরিদ্রকে সাহায্য করে।

৬৭১০

مُحَمَّدُ بْنُ مَحْبُوبٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ هَلَكْتُ فَقَالَ وَمَا ذَاكَ قَالَ وَقَعْتُ بِأَهْلِي فِي رَمَضَانَ قَالَ تَجِدُ رَقَبَةً قَالَ لاَ قَالَ هَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لاَ قَالَ فَتَسْتَطِيعُ أَنْ تُطْعِمَ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لاَ قَالَ فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ الأَنْصَارِ بِعَرَقٍ وَالْعَرَقُ الْمِكْتَلُ فِيهِ تَمْرٌ فَقَالَ اذْهَبْ بِهَذَا فَتَصَدَّقْ بِهِ قَالَ أَعَلَى أَحْوَجَ مِنَّا يَا رَسُولَ اللهِ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَهْلُ بَيْتٍ أَحْوَجُ مِنَّا ثُمَّ قَالَ اذْهَبْ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক লোক রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ সেটা কী? লোকটি বলল, রমযানে (দিনের বেলা) আমি স্ত্রী সহবাস করেছি। তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে পারবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি দু’মাস লাগাতার সওম পালন করতে পারবে? সে বলল, না। তাহলে কি তুমি ষাটজন মিস্‌কীনকে খাদ্য খাওয়াতে পারবে? লোকটি বলল, না। রাবী বলেন, এমন সময় এক আনসার লোক একটি ‘আরক’ নিয়ে আসল। আর আরক হচ্ছে পরিমাপ পাত্র; তার মাঝে খেজুর ছিল। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটা নিয়ে গিয়ে সদকা করে দাও। সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার চেয়ে অভাবী লোককে কি তা দান করব? যিনি আপনাকে হকের সাথে পাঠিয়েছেন সেই সত্ত্বার কসম! মদীনার দু’উপত্যকার মাঝে আমার চেয়ে বেশি অভাবী আর কেউ নেই। এরপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যাও, এগুলো নিয়ে তোমার পরিবারকে খাওয়াও। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫৩)

৮৪/. অধ্যায়ঃ

দশজন মিস্‌কীনকে কাফ্‌ফারা প্রদান করা; তারা নিকটাত্মীয়ই হোক বা দূরেরই হোক।

৬৭১১

عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ هَلَكْتُ قَالَ وَمَا شَأْنُكَ قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ قَالَ هَلْ تَجِدُ مَا تُعْتِقُ رَقَبَةً قَالَ لاَ قَالَ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لاَ قَالَ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُطْعِمَ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لاَ أَجِدُ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ فَقَالَ خُذْ هَذَا فَتَصَدَّقْ بِهِ فَقَالَ أَعَلَى أَفْقَرَ مِنَّا مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَفْقَرُ مِنَّا ثُمَّ قَالَ خُذْهُ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার কী হয়েছে? লোকটি বলল, রমযানে (দিনের বেলায়) আমি স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি। তিনি বললেনঃ একটি গোলাম আযাদ করার মত তুমি কিছু পাবে কি? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি একনাগাড়ে দু’মাস সওম পালন করতে পারবে কি? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি ষাটজন মিস্‌কীনকে খাওয়াতে পারবে কি? সে বলল, আমার কাছে কিছুই নেই। এমন সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে একটি ‘আরক’ আনা হল, যাতে খেজুর ছিল। তখন তিনি বললেনঃ এটা নাও এবং গিয়ে তা সদকা করে দাও। সে বলল, আমার চেয়ে বেশি অভাবীকে কি দেব? এখানকার দু’ উপত্যকার মাঝে আমাদের চেয়ে অভাবী তো কেউ নেই। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং তোমার পরিবারকে খাওয়াও।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫৪)

৮৪/. অধ্যায়ঃ

মদীনার সা’ ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুদ্দ এবং এর বরকত। আর মদীনাবাসী এত্থেকে যুগ যুগ ধরে ওয়ারিশসূত্রে যা লাভ করেছেন

৬৭১২

عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ مَالِكٍ الْمُزَنِيُّ حَدَّثَنَا الْجُعَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ كَانَ الصَّاعُ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُدًّا وَثُلُثًا بِمُدِّكُمْ الْيَوْمَ فَزِيدَ فِيهِ فِي زَمَنِ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ
সায়িব ইব্‌নু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে সা’ ছিল তোমাদের এখনকার মুদ্দের এক মুদ্দ ও এক মুদ্দের তৃতীয়াংশ পরিমাণ। অতঃপর ‘উমর ইব্‌নু আবদুল আযীয (রহঃ)-এর যুগে তার পরিমাণ বর্দ্ধিত করা হয়েছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫৫)

৬৭১৩

مُنْذِرُ بْنُ الْوَلِيدِ الْجَارُودِيُّ حَدَّثَنَا أَبُو قُتَيْبَةَ وَهْوَ سَلْمٌ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ قَالَ كَانَ ابْنُ عُمَرَ يُعْطِي زَكَاةَ رَمَضَانَ بِمُدِّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْمُدِّ الأَوَّلِ وَفِي كَفَّارَةِ الْيَمِينِ بِمُدِّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبُو قُتَيْبَةَ قَالَ لَنَا مَالِكٌ مُدُّنَا أَعْظَمُ مِنْ مُدِّكُمْ وَلاَ نَرَى الْفَضْلَ إِلاَّ فِي مُدِّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ لِي مَالِكٌ لَوْ جَاءَكُمْ أَمِيرٌ فَضَرَبَ مُدًّا أَصْغَرَ مِنْ مُدِّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِأَيِّ شَيْءٍ كُنْتُمْ تُعْطُونَ قُلْتُ كُنَّا نُعْطِي بِمُدِّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَفَلاَ تَرَى أَنَّ الأَمْرَ إِنَّمَا يَعُودُ إِلَى مُدِّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) রমযানের ফিত্‌রা আদায় করতেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুদ্দ তথা প্রথম মুদ্দ-এর দ্বারা। আর কসমের কাফ্‌ফারাতেও তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুদ্দ ব্যবহার করতেন। আবূ কুতাইবা বলেন, মালিক (রাঃ) আমাদেরকে বলেছেন যে, আমাদের মুদ্দ তোমাদের মুদ্দের চেয়ে বড়। আর আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুদ্দেই ফযীলত দেখতে পাই। রাবী বলেন, আমাকে মালিক (রাঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কাছে কোন শাসক এসে যদি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুদ্দ থেকে তোমাদের মুদ্দকে ছোট করে দেন, তাহলে তোমরা কিসের মাধ্যমে (ওজন করে) মানুষদেরকে দিতে? আমি বললাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুদ্দ দিয়েই দিতাম। তিনি বললেন, তোমরা কি দেখছ না যে, সাম্প্রতিককালে লেনদেনের বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুদ্দের দিকে ফিরে যাচ্ছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫৬)

৬৭১৪

عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ اللهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ فِي مِكْيَالِهِمْ وَصَاعِهِمْ وَمُدِّهِمْ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’আ করেছেনঃ হে আল্লাহ্‌! তুমি তাদের পরিমাপে সা’-এ এবং মুদ্দে বরকত দান কর। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫৭)

৮৪/. অধ্যায়ঃ

আল্লাহ্‌র বাণীঃ অথবা গোলাম আযাদ করা-(সূরা আল-মায়িদা ৫/৮৯)। এবং কোন্ প্রকারে গোলাম আযাদ করা উত্তম।

৬৭১৫

مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ رُشَيْدٍ حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ عَنْ أَبِي غَسَّانَ مُحَمَّدِ بْنِ مُطَرِّفٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ مَرْجَانَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً مُسْلِمَةً أَعْتَقَ اللهُ بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهُ عُضْوًا مِنْ النَّارِ حَتَّى فَرْجَهُ بِفَرْجِهِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ যে লোক একটি মুসলিম গোলাম আযাদ করবে আল্লাহ্‌ সে গোলামের প্রত্যেকটি অঙ্গের বিনিময়ে জাহান্নামের আগুন হতে তার প্রত্যেকটি অঙ্গকে মুক্ত করবেন। এমন কি গোলামের গুপ্তাঙ্গের বিনিময়ে তার গুপ্তাঙ্গকেও। [৮৫](আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫৮)

৮৪/. অধ্যায়ঃ

কাফ্‌ফারা আদায়ের ক্ষেত্রে মুদাব্বার, উম্মু ওয়ালাদ, মুকাতাব এবং যিনার সন্তান আযাদ করা। এবং তাউস বলেছেন, (কাফ্‌ফারায়) উম্মু ওয়ালাদ এবং মুদাব্বার আযাদ করা যাবে।

৬৭১৬

أَبُو النُّعْمَانِ أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ عَمْرٍو عَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَجُلاً مِنْ الأَنْصَارِ دَبَّرَ مَمْلُوكًا لَهُ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ مَالٌ غَيْرُهُ فَبَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَنْ يَشْتَرِيهِ مِنِّي فَاشْتَرَاهُ نُعَيْمُ بْنُ النَّحَّامِ بِثَمَانِ مِائَةِ دِرْهَمٍ فَسَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يَقُولُ عَبْدًا قِبْطِيًّا مَاتَ عَامَ أَوَّلَ
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনসার গোত্রের এক লোক তার গোলামকে মুদাব্বির বানালো (মনিবের মৃত্যু হলে গোলাম মুক্ত হয়ে যাবে)। ঐ গোলাম ছাড়া তার আর কোন মাল ছিল না। খবরটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পৌঁছল। তিনি বললেনঃ গোলামটিকে আমার নিকট হতে কে কিনে নেবে? নু’আয়ম ইব্‌নু নাহ্‌হা (রাঃ) তাকে আটশ’ দিরহামের বিনিময়ে কিনে নিল। রাবী ‘আম্‌র (রাঃ) বলেন, আমি জাবির ইব্‌নু ‘আব্দুল্লাহ্‌ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, গোলামটি ছিল কিব্‌তী আর (আযাদ করার) প্রথম বর্ষেই সে মারা গিয়েছিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫৯)

৮৪/. অধ্যায়ঃ

যখন কেউ এমন গোলাম আযাদ করে যার উপর তার ও অন্যের মালিকানা আছে অথবা কাফ্‌ফারার ক্ষেত্রে গোলাম আযাদ করলে উক্ত গোলামের পরিত্যক্ত সম্পদ কে পাবে?

৬৭১৭

سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ الْحَكَمِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا أَرَادَتْ أَنْ تَشْتَرِيَ بَرِيرَةَ فَاشْتَرَطُوا عَلَيْهَا الْوَلاَءَ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ اشْتَرِيهَا فَإِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْتَقَ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বারীরা নামক বাঁদীকে কিনতে চাইলে তার মালিকগণ শর্ত আরোপ করল যে এর পরিত্যক্ত সম্পদের মালিক তারাই হবে। ‘আয়িশা (রাঃ) বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তুমি তাকে কিনে নাও। কেননা আযাদকৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদের মালিকানা ঐ ব্যক্তির জন্য যে তাকে আযাদ করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬০)

৮৪/. অধ্যায়ঃ

কসমের ভিতর ইনশাআল্লাহ্‌ বলা।

৬৭১৮

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ عَنْ أَبِي بُرْدَةَ بْنِ أَبِي مُوسَى عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ قَالَ أَتَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي رَهْطٍ مِنْ الأَشْعَرِيِّينَ أَسْتَحْمِلُهُ فَقَالَ وَاللهِ لاَ أَحْمِلُكُمْ مَا عِنْدِي مَا أَحْمِلُكُمْ ثُمَّ لَبِثْنَا مَا شَاءَ اللهُ فَأُتِيَ بِإِبِلٍ فَأَمَرَ لَنَا بِثَلاَثَةِ ذَوْدٍ فَلَمَّا انْطَلَقْنَا قَالَ بَعْضُنَا لِبَعْضٍ لاَ يُبَارِكُ اللهُ لَنَا أَتَيْنَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَسْتَحْمِلُهُ فَحَلَفَ أَنْ لاَ يَحْمِلَنَا فَحَمَلَنَا فَقَالَ أَبُو مُوسَى فَأَتَيْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْنَا ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ مَا أَنَا حَمَلْتُكُمْ بَلْ اللهُ حَمَلَكُمْ إِنِّي وَاللهِ إِنْ شَاءَ اللهُ لاَ أَحْلِفُ عَلَى يَمِينٍ فَأَرَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا إِلاَّ كَفَّرْتُ عَنْ يَمِينِي وَأَتَيْتُ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ
আবূ মূসা-আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একবার কতক আশ’আরী লোকের সাথে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে একটি বাহন চাওয়ার জন্য এলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিতে পারব না। আমার কাছে কিছু নেই যা বাহন হিসাবে তোমাদেরকে দিতে পারি। অতঃপর আল্লাহ্‌ যতক্ষণ চাইলেন আমরা অবস্থান করলাম। এমন সময় তাঁর কাছে কিছু উট আনা হল। তখন তিনি আমাদেরকে তিনটি উট দেয়ার নির্দেশ দিলেন। আমরা যখন রওনা দিলাম, তখন আমরা বলাবলি করলাম যে, আল্লাহ্‌ বরকত দেবেন না। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য যখন এলাম তখন তিনি আমাদেরকে বাহন দেবেন না বলে শপথ করলেন। তারপরেও আমাদেরকে বাহন দিলেন। আবূ মূসা বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম এবং বিষয়টি তাঁর কাছে উল্লেখ করলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমি তো তোমাদেরকে বাহন দেইনি; বরং আল্লাহ্‌ দিয়েছেন। আল্লাহ্‌র শপথ! ইনশাআল্লাহ্‌ আমি যখন কোন ব্যাপারে শপথ করি আর তার উল্টোটির মাঝে কল্যাণ দেখতে পাই তখন কসমের কাফ্‌ফারা আদায় করি। আর যেটি কল্যাণকর সেটিই করি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৫১ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬১)

৬৭১৯

أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ وَقَالَ إِلاَّ كَفَّرْتُ عَنْ يَمِينِي وَأَتَيْتُ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ أَوْ أَتَيْتُ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ وَكَفَّرْتُ
হাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি আমার কসমের কাফ্‌ফারা আদায় করি আর যেটি কল্যাণকর সেটি করি। অথবা বলেছেনঃ যেটি কল্যাণকর সেটি করি এবং আর (কসমের) কাফ্‌ফারা আদায় করি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬২)

৬৭২০

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حُجَيْرٍ، عَنْ طَاوُسٍ، سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ سُلَيْمَانُ لأَطُوفَنَّ اللَّيْلَةَ عَلَى تِسْعِينَ امْرَأَةً، كُلٌّ تَلِدُ غُلاَمًا يُقَاتِلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ‏.‏ فَقَالَ لَهُ صَاحِبُهُ ـ قَالَ سُفْيَانُ يَعْنِي الْمَلَكَ ـ قُلْ إِنْ شَاءَ اللَّهُ‏.‏ فَنَسِيَ، فَطَافَ بِهِنَّ، فَلَمْ تَأْتِ امْرَأَةٌ مِنْهُنَّ بِوَلَدٍ، إِلاَّ وَاحِدَةٌ بِشِقِّ غُلاَمٍ‏.‏ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَرْوِيهِ قَالَ ‏"‏ لَوْ قَالَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ، لَمْ يَحْنَثْ وَكَانَ دَرَكًا فِي حَاجَتِهِ ‏"‏‏.‏ وَقَالَ مَرَّةً قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ لَوِ اسْتَثْنَى ‏"‏‏.‏ وَحَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنِ الأَعْرَجِ مِثْلَ حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ‏.‏
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সুলাইমান (‘আঃ) একবার বলেছিলেন যে, অবশ্যই আজ রাতে আমি নব্বইজন স্ত্রীর সাথে মিলিত হব। তারা প্রত্যেকেই পুত্র সন্তান দিবে যারা আল্লাহ্‌র রাস্তায় জিহাদ করবে। তখন তার সাথী (রাবী সুফিয়ান সাথী দ্বারা ফেরেশতা বুঝিয়েছেন) তাকে বলল, আপনি ইন্‌শাআল্লাহ্‌ বলুন। কিন্তু তিনি তা ভুলে গেলেন এবং স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হলেন। কিন্ত একজন ছাড়া অন্য কোন স্ত্রীর কোন সন্তান হল না; আর সেটাও ছিল অপূর্ণাঙ্গ। আবূ হুরায়রা (রাঃ) এ ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনি কসমের মাঝে ইনশা আল্লাহ্‌ বললে তাঁর কসমও ভঙ্গ হত না, আর উদ্দেশ্যও পূর্ণ হত। [৮৬] একবার আবূ হুরায়রা (রাঃ) এরূপ বর্ণনা করলেন যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনি যদি ‘ইস্তিসনা’ করতেন (অর্থাৎ ইনশা আল্লাহ্‌ বলতেন)। আবূ যিনাদ আ’রাজের সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের মত বর্ণনা করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬৩)
 [৮৬] আল্লাহর সাহায্য ও অনুমোদন ছাড়া বান্দার কোন কাজ ফলপ্রসূ হয় না।

৮৪/১০. অধ্যায়ঃ

কসম ভঙ্গ করার পূর্বে এবং পরে কাফ্‌ফারা আদায় করা। [৮৭]
[৮৭] শপথ ভঙ্গের পূর্বে ও পরে কাফফারা আদায় সম্পর্কে ইমামদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। কাফফারা আদায়ের তিনটি অবস্থা (১) শপথের পূর্বে কাফফারা দিলে ইমামদের সর্বসম্মতিক্রমে তা আদায় হবে না। (২) শপথ করে শপথ ভঙ্গের পরে কাফফারা আদায় করলে সর্বসম্মতিক্রমে তা আদায় হবে। (৩) শপথের পরে এবং তা ভঙ্গের পূর্বে কাফ্‌ফারা আদায় নিয়ে ইমামদের মাঝে মতভেদ রয়েছে; (ক) জামহুর উলামাদের মত হল, কাফ্‌ফারা আদায় হয়ে যাবে। (খ) আহলুর রায়ের (ইমাম আবু হানীফা) নিকট আদায় হবে না। ইমাম শাফেয়ীর নিকট সিয়াম পালন ব্যতীত অন্য কাফ্‌ফারা আদায় হয়ে যাবে। তবে মতানৈক্য থাকলেও জামহুরের মতই হাদীসের অনুকূলে। (ফাতহুল বারী)

৬৭২১

عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ الْقَاسِمِ الْتَّمِيمِيِّ عَنْ زَهْدَمٍ الْجَرْمِيِّ قَالَ كُنَّا عِنْدَ أَبِي مُوسَى وَكَانَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ هَذَا الْحَيِّ مِنْ جَرْمٍ إِخَاءٌ وَمَعْرُوفٌ قَالَ فَقُدِّمَ طَعَامٌ قَالَ وَقُدِّمَ فِي طَعَامِهِ لَحْمُ دَجَاجٍ قَالَ وَفِي الْقَوْمِ رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَيْمِ اللهِ أَحْمَرُ كَأَنَّهُ مَوْلًى قَالَ فَلَمْ يَدْنُ فَقَالَ لَهُ أَبُو مُوسَى ادْنُ فَإِنِّي قَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَأْكُلُ مِنْهُ قَالَ إِنِّي رَأَيْتُهُ يَأْكُلُ شَيْئًا قَذِرْتُهُ فَحَلَفْتُ أَنْ لاَ أَطْعَمَهُ أَبَدًا فَقَالَ ادْنُ أُخْبِرْكَ عَنْ ذَلِكَ أَتَيْنَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي رَهْطٍ مِنْ الأَشْعَرِيِّينَ أَسْتَحْمِلُهُ وَهُوَ يَقْسِمُ نَعَمًا مِنْ نَعَمِ الصَّدَقَةِ قَالَ أَيُّوبُ أَحْسِبُهُ قَالَ وَهُوَ غَضْبَانُ قَالَ وَاللهِ لاَ أَحْمِلُكُمْ وَمَا عِنْدِي مَا أَحْمِلُكُمْ عَلَيْهِ قَالَ فَانْطَلَقْنَا فَأُتِيَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِنَهْبِ إِبِلٍ فَقِيلَ أَيْنَ هَؤُلاَءِ الأَشْعَرِيُّونَ فَأَتَيْنَا فَأَمَرَ لَنَا بِخَمْسِ ذَوْدٍ غُرِّ الذُّرَى قَالَ فَانْدَفَعْنَا فَقُلْتُ لِأَصْحَابِي أَتَيْنَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَسْتَحْمِلُهُ فَحَلَفَ أَنْ لاَ يَحْمِلَنَا ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَيْنَا فَحَمَلَنَا نَسِيَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَمِينَهُ وَاللهِ لَئِنْ تَغَفَّلْنَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَمِينَهُ لاَ نُفْلِحُ أَبَدًا ارْجِعُوا بِنَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلْنُذَكِّرْهُ يَمِينَهُ فَرَجَعْنَا فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَتَيْنَاكَ نَسْتَحْمِلُكَ فَحَلَفْتَ أَنْ لاَ تَحْمِلَنَا ثُمَّ حَمَلْتَنَا فَظَنَنَّا أَوْ فَعَرَفْنَا أَنَّكَ نَسِيتَ يَمِينَكَ قَالَ انْطَلِقُوا فَإِنَّمَا حَمَلَكُمْ اللهُ إِنِّي وَاللهِ إِنْ شَاءَ اللهُ لاَ أَحْلِفُ عَلَى يَمِينٍ فَأَرَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا إِلاَّ أَتَيْتُ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ وَتَحَلَّلْتُهَا تَابَعَهُ حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ وَالْقَاسِمِ بْنِ عَاصِمٍ الْكُلَيْبِيِّ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ وَالْقَاسِمِ التَّمِيمِيِّ عَنْ زَهْدَمٍ بِهَذَا
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ الْقَاسِمِ عَنْ زَهْدَمٍ بِهَذَا
যাহ্‌দাম জারমী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা একবার আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম। আমাদের এবং জার্‌ম সম্প্রদায়ের মাঝে ভ্রাতৃভাব ও সুসম্পর্ক বজায় ছিল। রাবী বলেন, তার জন্য খানা হাজির করা হল, আর তাতে ছিল মুরগীর গোশ্‌ত। তাদের দলের মাঝে বানী তাইমিল্লাহ্‌ সম্প্রদায়ের এক লোক ছিল যার গায়ের রং ছিল লাল যেন দেখতে গোলাম। রাবী বলেন, লোকটি খানার কাছেও গেল না। আবূ মূসা আশ’আরী তাকে বললেন, কাছে এসো (খানা খাও) কেননা, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এর গোশ্‌ত খেতে দেখেছি। লোকটি বলল, আমি একে (মুরগীকে) কিছু খেতে দেখেছি; তাই আমি এটাকে ঘৃণা করি। আর আমি হলফ করেছি যে, আমি এটি কক্ষনো খাব না। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, কাছে এসো; আমি তোমাকে এ সম্পর্কে জানাচ্ছি। একবার আমরা আশ’আরী গো্ত্রের একটি দলের সাথে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য এলাম। তখন তিনি যাকাতের উট বন্টন করছিলেন। আইয়্যুব বলেন, আমার মনে হয় তিনি তখন রাগান্বিত হয়ে বলেছিলেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিব না। আমার কাছে কোন বাহন নেই। রাবী বলেন, তখন আমরা চলে গেলাম। এমন সময় তাঁর নিকট যুদ্ধে প্রাপ্ত কয়েকটি উট আনা হল। তিনি বললেনঃ ঐ আশ’আরী লোকগুলো কোথায়? ঐ আশ’আরী লোকগুলো কোথায়? তখন আমরা ফিরে এলাম এবং রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঁচটি মোটা তাজা সুন্দর উট আমাদেরকে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন। আমরা উটগুলো নিয়ে রওনা হলাম। তখন আমি আমার সাথীদের বললাম, আমরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য এসেছিলাম। আর তিনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করেছিলেন। কিন্ত তারপর আমাদের কাছে লোক পাঠালেন এবং আমাদেরকে বাহন দিলেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কসম ভূলে গেছেন। আল্লাহর কসম! আমরা যদি রসূলুল্লাহ্‌কে (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কসম সম্পর্কে গাফেল রাখি তাহলে তো আমরা কখনও সফলকাম হব না। চল, আমরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ফিরে যাই এবং তাঁর কসমের কথা স্মরণ করিয়ে দেই। অতঃপর আমরা ফিরে গিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমরা আপনার কাছে বাহন চাওয়ার জন্য এসেছিলাম, আপনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করেছিলেন। কিন্তু পরে আবার বাহন দিলেন। এতে আমরা ধারণা করলাম বা বুঝতে পারলাম, আপনি আপনার কসমের কথা ভুলে গেছেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা চলে যাও। আল্লাহ্‌ই তো তোমাদেরকে বাহন দিয়েছেন। আল্লাহ্‌র কসম! নিশ্চয়ই আমি যখন আল্লাহ্‌র ইচ্ছায় কোন ব্যাপারে কসম করি আর অন্যটির ভিতর কল্যাণ দেখতে পাই তখন যেটার মাঝে কল্যাণ আছে সেটা করি এবং কসমের কাফ্‌ফারা আদায় করে দেই। হাম্মাদ ইব্‌নু যায়দ, আইউব, আবূ কিলাবা এবং কাসিম ইব্‌নু আসিম কুলায়বী (রহঃ) থেকে এ হাদীসে ইসমাঈল ইব্‌নু ইব্‌রাহীমের অনুসরণ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬৪)
কুতায়বা সূত্রে যাহদাম (রাঃ) থেকে এ রকমই বর্ণিত আছে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬৫)
আবূ মা’মার সূত্রে যাহদাম (রাঃ) থেকেও এরকমই বর্ণিত আছে।(ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬৬)
 [*] শপথ ভঙ্গের পূর্বে ও পরে কাফফারা আদায় সম্পর্কে ইমামদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। কাফফারা আদায়ের তিনটি অবস্থা (১) শপথের পূর্বে কাফফারা দিলে ইমামদের সর্বসম্মতিক্রমে তা আদায় হবে না। (২) শপথ করে শপথ ভঙ্গের পরে কাফফারা আদায় করলে সর্বসম্মতিক্রমে তা আদায় হবে। (৩) শপথের পরে এবং তা ভঙ্গের পূর্বে কাফ্ফারা আদায় নিয়ে ইমামদের মাঝে মতভেদ রয়েছে : (ক) জামহুর উলামাদের মত হল, কাফ্ফারা আদায় হয়ে যাবে। (খ) আহলুর রায়ের (ইমাম আবু হানীফা) নিকট আদায় হবে না। (সাঃ) ইমাম শাফেয়ীর নিকট সিয়াম পালন ব্যতীত অন্য কাফ্ফারা আদায় হয়ে যাবে। তবে মতানৈক্য থাকলেও জামহুরের মতই হাদীসের অনুকূলে। (ফাতহুল বারী)

৬৭২২

مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ بْنِ فَارِسٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ عَوْنٍ عَنْ الْحَسَنِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تَسْأَلْ الإِمَارَةَ فَإِنَّكَ إِنْ أُعْطِيتَهَا مِنْ غَيْرِ مَسْأَلَةٍ أُعِنْتَ عَلَيْهَا وَإِنْ أُعْطِيتَهَا عَنْ مَسْأَلَةٍ وُكِلْتَ إِلَيْهَا وَإِذَا حَلَفْتَ عَلَى يَمِينٍ فَرَأَيْتَ غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا فَأْتِ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ وَكَفِّرْ عَنْ يَمِينِكَ تَابَعَهُ أَشْهَلُ بْنُ حَاتِمٍ عَنْ ابْنِ عَوْنٍ وَتَابَعَهُ يُونُسُ وَسِمَاكُ بْنُ عَطِيَّةَ وَسِمَاكُ بْنُ حَرْبٍ وَحُمَيْدٌ وَقَتَادَةُ وَمَنْصُورٌ وَهِشَامٌ وَالرَّبِيعُ
‘আবদুর রাহ্‌মান ইব্‌নু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তুমি নেতৃত্ব চেও না। কেননা, চাওয়া ছাড়া যদি তোমাকে তা দেয়া হয় তাহলে তোমাকে তাতে সাহায্য করা হবে। আর যদি চাওয়ার পর তা তোমাকে দেয়া হয়, তবে তা তোমার দায়িত্বেই ছেড়ে দেয়া হবে (অর্থাৎ এর ভাল মন্দের দায়িত্ব তোমারই থাকবে)। তুমি যখন কোন বিষয়ে কসম কর আর অন্যটির মাঝে কল্যাণ দেখতে পাও, তখন যেটার মাঝে কল্যাণ সেটাই কর। আর তোমার কসমের কাফ্‌ফারা আদায় করে দাও। (৬৬২২)
আশহাল ইব্‌নু হাতিম, ইব্‌নু আউন থেকে এবং উস্‌মান ইব্‌নু আমার-এর অনুসরণ করেছেন এবং ইউনুস, সিমাক ইব্‌নু আতিয়্যা, সিমাক ইব্‌নু হারব্‌, হুমায়দ, ক্বাতাদাহ্‌, মানসুর, হিশাম ও রাবী’ উক্ত বর্ণনায় ইব্‌নু আউন-এর অনুসরণ করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬৭)

No comments

Powered by Blogger.