সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "স্বপ্নের ব্যখ্যা প্রদান" হাদিস নং - ৬৯৮২ থেকে ৭০৪৭
স্বপ্নের ব্যখ্যা প্রদান-৬৯৮২ – ৭০৪৭
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওয়াহীর শুরু হয় ভাল স্বপ্নের মাধ্যমে ।
৬৯৮২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ،.
وَحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، قَالَ الزُّهْرِيُّ فَأَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، عَنْ عَائِشَةَ
ـ رضى الله عنها ـ أَنَّهَا قَالَتْ أَوَّلُ مَا بُدِئَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم مِنَ الْوَحْىِ الرُّؤْيَا الصَّادِقَةُ فِي النَّوْمِ، فَكَانَ
لاَ يَرَى رُؤْيَا إِلاَّ جَاءَتْ مِثْلَ فَلَقِ الصُّبْحِ، فَكَانَ يَأْتِي
حِرَاءً فَيَتَحَنَّثُ فِيهِ ـ وَهْوَ التَّعَبُّدُ ـ اللَّيَالِيَ ذَوَاتِ
الْعَدَدِ، وَيَتَزَوَّدُ لِذَلِكَ ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى خَدِيجَةَ فَتُزَوِّدُهُ
لِمِثْلِهَا، حَتَّى فَجِئَهُ الْحَقُّ وَهْوَ فِي غَارِ حِرَاءٍ فَجَاءَهُ
الْمَلَكُ فِيهِ فَقَالَ اقْرَأْ. فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" فَقُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي حَتَّى بَلَغَ
مِنِّي الْجَهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِي. فَقَالَ اقْرَأْ. فَقُلْتُ مَا أَنَا
بِقَارِئٍ. فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي الثَّانِيَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّي
الْجَهْدَ، ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ اقْرَأْ. فَقُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ.
فَغَطَّنِي الثَّالِثَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدُ، ثُمَّ أَرْسَلَنِي
فَقَالَ اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ ". حَتَّى بَلَغَ {مَا
لَمْ يَعْلَمْ} فَرَجَعَ بِهَا تَرْجُفُ بَوَادِرُهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى
خَدِيجَةَ فَقَالَ " زَمِّلُونِي زَمِّلُونِي ". فَزَمَّلُوهُ
حَتَّى ذَهَبَ عَنْهُ الرَّوْعُ فَقَالَ " يَا خَدِيجَةُ مَا لِي
". وَأَخْبَرَهَا الْخَبَرَ وَقَالَ " قَدْ خَشِيتُ عَلَى نَفْسِي
". فَقَالَتْ لَهُ كَلاَّ أَبْشِرْ، فَوَاللَّهِ لاَ يُخْزِيكَ اللَّهُ
أَبَدًا، إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ، وَتَصْدُقُ الْحَدِيثَ، وَتَحْمِلُ
الْكَلَّ، وَتَقْرِي الضَّيْفَ، وَتُعِينُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ. ثُمَّ
انْطَلَقَتْ بِهِ خَدِيجَةُ حَتَّى أَتَتْ بِهِ وَرَقَةَ بْنَ نَوْفَلِ بْنِ
أَسَدِ بْنِ عَبْدِ الْعُزَّى بْنِ قُصَىٍّ ـ وَهْوَ ابْنُ عَمِّ خَدِيجَةَ أَخُو
أَبِيهَا، وَكَانَ امْرَأً تَنَصَّرَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ، وَكَانَ يَكْتُبُ
الْكِتَابَ الْعَرَبِيَّ فَيَكْتُبُ بِالْعَرَبِيَّةِ مِنَ الإِنْجِيلِ مَا شَاءَ
اللَّهُ أَنْ يَكْتُبَ، وَكَانَ شَيْخًا كَبِيرًا قَدْ عَمِيَ ـ فَقَالَتْ لَهُ
خَدِيجَةُ أَىِ ابْنَ عَمِّ اسْمَعْ مِنِ ابْنِ أَخِيكَ. فَقَالَ وَرَقَةُ ابْنَ
أَخِي مَاذَا تَرَى فَأَخْبَرَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَا رَأَى فَقَالَ
وَرَقَةُ هَذَا النَّامُوسُ الَّذِي أُنْزِلَ عَلَى مُوسَى، يَا لَيْتَنِي فِيهَا
جَذَعًا أَكُونُ حَيًّا، حِينَ يُخْرِجُكَ قَوْمُكَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم" أَوَمُخْرِجِيَّ هُمْ ". فَقَالَ وَرَقَةُ
نَعَمْ، لَمْ يَأْتِ رَجُلٌ قَطُّ بِمَا جِئْتَ بِهِ إِلاَّ عُودِيَ، وَإِنْ
يُدْرِكْنِي يَوْمُكَ أَنْصُرْكَ نَصْرًا مُؤَزَّرًا. ثُمَّ لَمْ يَنْشَبْ
وَرَقَةُ أَنْ تُوُفِّيَ، وَفَتَرَ الْوَحْىُ فَتْرَةً حَتَّى حَزِنَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم فِيمَا بَلَغَنَا حُزْنًا غَدَا مِنْهُ مِرَارًا كَىْ
يَتَرَدَّى مِنْ رُءُوسِ شَوَاهِقِ الْجِبَالِ، فَكُلَّمَا أَوْفَى بِذِرْوَةِ
جَبَلٍ لِكَىْ يُلْقِيَ مِنْهُ نَفْسَهُ، تَبَدَّى لَهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ يَا
مُحَمَّدُ إِنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ حَقًّا. فَيَسْكُنُ لِذَلِكَ جَأْشُهُ
وَتَقِرُّ نَفْسُهُ فَيَرْجِعُ، فَإِذَا طَالَتْ عَلَيْهِ فَتْرَةُ الْوَحْىِ
غَدَا لِمِثْلِ ذَلِكَ، فَإِذَا أَوْفَى بِذِرْوَةِ جَبَلٍ تَبَدَّى لَهُ
جِبْرِيلُ فَقَالَ لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {فَالِقُ
الإِصْبَاحِ} ضَوْءُ الشَّمْسِ بِالنَّهَارِ، وَضَوْءُ الْقَمَرِ بِاللَّيْلِ.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওয়াহীর শুরু হয় ঘুমের ঘোরে
ভালো স্বপ্নের মাধ্যমে। তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন তা ভোরের আলোর মত উদ্ভাসিত হতো।
তিনি হেরা গুহায় গিয়ে সেখানে বেশ কয়েক রাত ‘ইবাদাতে কাটিয়ে দিতেন এবং এজন্য খাদ্য
দ্রব্যও সঙ্গে নিয়ে যেতেন। এরপর খাদীজাহ (রাঃ)-এর কাছে ফিরে আসতেন এবং তিনি তাকে এরূপ
খাদ্য দ্রব্য তৈরি করে দিতেন। শেষে তাঁর কাছে সত্যের বাণী (ওয়াহী) আসল। আর এ সময়
তিনি হেরা গুহায় ছিলেন।
সেখানে ফেরেশতা এসে তাঁকে বলল, আপনি পড়ুন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি বললামঃ আমি তো পাঠক নই। তখন তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে চেপে ধরলেন। এমনকি এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিলেন এবং বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমি পাঠক নই। তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে শক্ত করে চেপে ধরলেন। এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। অতঃপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমি তো পাঠক নই। এরপর তিনি তৃতীয়বার আমাকে শক্ত করে এমন চেপে ধরলেন যে, এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পাঠ করুন, আপনার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন......যা সে জানত না (সূরাহ আল-ইনশিরাহ ৯৪/১-৫) এ আয়াত পর্যন্ত।
এরপর তিনি তা নিয়ে খাদীজাহ (রাঃ)-এর কাছে কম্পিত হৃদয়ে ফিরে এলেন। আর বললেন, আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। ফলে তাঁরা তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলেন। অবশেষে তাঁর থেকে ভীতি দূর হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, হে খাদীজাহ! আমার কী হল? এবং তাকে সমস্ত ঘটনা জানালেন। আর বললেনঃ আমি আমার জীবন সম্পর্কে শঙ্কাবোধ করছি। খাদীজাহ (রাঃ) তাকে বললেন, কক্ষনো না। আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আল্লাহর কসম, আল্লাহ্ আপনাকে কখনই লাঞ্ছিত করবেন না। কেননা, আপনি তো আত্মীয়তার বন্ধন জুড়ে রাখেন, সত্যকথা বলেন, অনাথ অক্ষমদের বোঝা বহন করেন, মেহমানদের মেহমানদারী করেন এবং হকের পথে আগত যাবতীয় বিপদে সাহায্য করেন। অতপর খাদীজাহ (রাঃ) তাঁকে নিয়ে চললেন। অতঃপর তাঁকে নিয়ে ওরাকা ইবনু নাওফল ইবনু আসাদ ইবনু ‘আবদুল উযযা ইবনু কুসাই-এর কাছে এলেন। আর তিনি, খাজীদাহ (রাঃ)-এর চাচার পুত্র (চাচাত ভাই) এবং তার পিতার পক্ষ থেকে চাচাও ছিলেন। তিনি জাহিলীয়াতের যুগে খৃষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরবী কিতাব লিখতেন। তাই সে ইন্জীল আরবীতে অনুবাদ করতেন- যতখানি লেখা আল্লাহর মনযুর হত। তিনি ছিলেন অতি বৃদ্ধ, দৃষ্টিশক্তিহীন লোক। খাদীজাহ (রাঃ) তাকে বললেন, হে আমার চাচাতো ভাই! তোমার ভাতিজার কথা শুন। তখন ওরাকা বললেন, হে ভাতিজা! তুমি কী দেখেছ?
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা কিছু দেখেছিলেন তা তাকে জানালেন। তখন ওরাকা বললেন, এতো আল্লাহর সেই নামুস (দূত) যাঁকে মূসা (আঃ)-এর কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল। হায় আফসোস! যদি সেদিন আমি জীবিত থাকতাম যেদিন তোমার কাওম তোমাকে বের করে দেবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ঃ তারা কি আমাকে বের করে দেবে? ওরাকা বললেন, হ্যাঁ তুমি যা নিয়ে এসেছ, এমন বস্তু নিয়ে কোনদিনই কেউ আসেনি যার সঙ্গে শত্রুতা করা হয়নি। যদি তোমার জীবনকাল আমাকে পায়, তাহলে আমি সর্বতোভাবে তোমাকে সাহায্য করব। এরপর কিছু দিনের মধ্যেই ওরাকার মৃত্যু হয়। আর কিছু দিনের জন্য ওয়াহীও বন্ধ থাকে। এমনকি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থার কারণে অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন। এমনকি আমরা এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে, তিনি পর্বতের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাবার জন্য একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন। যখনই নিজেকে ফেলে দেয়ার জন্য পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিব্রীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলতেন, হে মুহাম্মাদ! নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রাসূল। এতে তাঁর অস্থিরতা দূর হত এবং নিজ মনে শান্তিবোধ করতেন। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন। ওয়াহী বন্ধ অবস্থা যখন তাঁর উপর দীর্ঘ হত তখনই তিনি ঐরূপ উদ্দেশে দ্রুত চলে যেতেন। যখনই তিনি পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিব্রীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে আগের মত বলতেন। [৩]
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, فَالِقُ الإِصْبَاحِ অর্থ দিনের বেলায় সূর্যের আলো ও রাতের বেলায় চাঁদের আলো। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১১)
সেখানে ফেরেশতা এসে তাঁকে বলল, আপনি পড়ুন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি বললামঃ আমি তো পাঠক নই। তখন তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে চেপে ধরলেন। এমনকি এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিলেন এবং বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমি পাঠক নই। তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে শক্ত করে চেপে ধরলেন। এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। অতঃপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমি তো পাঠক নই। এরপর তিনি তৃতীয়বার আমাকে শক্ত করে এমন চেপে ধরলেন যে, এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পাঠ করুন, আপনার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন......যা সে জানত না (সূরাহ আল-ইনশিরাহ ৯৪/১-৫) এ আয়াত পর্যন্ত।
এরপর তিনি তা নিয়ে খাদীজাহ (রাঃ)-এর কাছে কম্পিত হৃদয়ে ফিরে এলেন। আর বললেন, আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। ফলে তাঁরা তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলেন। অবশেষে তাঁর থেকে ভীতি দূর হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, হে খাদীজাহ! আমার কী হল? এবং তাকে সমস্ত ঘটনা জানালেন। আর বললেনঃ আমি আমার জীবন সম্পর্কে শঙ্কাবোধ করছি। খাদীজাহ (রাঃ) তাকে বললেন, কক্ষনো না। আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আল্লাহর কসম, আল্লাহ্ আপনাকে কখনই লাঞ্ছিত করবেন না। কেননা, আপনি তো আত্মীয়তার বন্ধন জুড়ে রাখেন, সত্যকথা বলেন, অনাথ অক্ষমদের বোঝা বহন করেন, মেহমানদের মেহমানদারী করেন এবং হকের পথে আগত যাবতীয় বিপদে সাহায্য করেন। অতপর খাদীজাহ (রাঃ) তাঁকে নিয়ে চললেন। অতঃপর তাঁকে নিয়ে ওরাকা ইবনু নাওফল ইবনু আসাদ ইবনু ‘আবদুল উযযা ইবনু কুসাই-এর কাছে এলেন। আর তিনি, খাজীদাহ (রাঃ)-এর চাচার পুত্র (চাচাত ভাই) এবং তার পিতার পক্ষ থেকে চাচাও ছিলেন। তিনি জাহিলীয়াতের যুগে খৃষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরবী কিতাব লিখতেন। তাই সে ইন্জীল আরবীতে অনুবাদ করতেন- যতখানি লেখা আল্লাহর মনযুর হত। তিনি ছিলেন অতি বৃদ্ধ, দৃষ্টিশক্তিহীন লোক। খাদীজাহ (রাঃ) তাকে বললেন, হে আমার চাচাতো ভাই! তোমার ভাতিজার কথা শুন। তখন ওরাকা বললেন, হে ভাতিজা! তুমি কী দেখেছ?
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা কিছু দেখেছিলেন তা তাকে জানালেন। তখন ওরাকা বললেন, এতো আল্লাহর সেই নামুস (দূত) যাঁকে মূসা (আঃ)-এর কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল। হায় আফসোস! যদি সেদিন আমি জীবিত থাকতাম যেদিন তোমার কাওম তোমাকে বের করে দেবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ঃ তারা কি আমাকে বের করে দেবে? ওরাকা বললেন, হ্যাঁ তুমি যা নিয়ে এসেছ, এমন বস্তু নিয়ে কোনদিনই কেউ আসেনি যার সঙ্গে শত্রুতা করা হয়নি। যদি তোমার জীবনকাল আমাকে পায়, তাহলে আমি সর্বতোভাবে তোমাকে সাহায্য করব। এরপর কিছু দিনের মধ্যেই ওরাকার মৃত্যু হয়। আর কিছু দিনের জন্য ওয়াহীও বন্ধ থাকে। এমনকি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থার কারণে অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন। এমনকি আমরা এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে, তিনি পর্বতের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাবার জন্য একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন। যখনই নিজেকে ফেলে দেয়ার জন্য পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিব্রীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলতেন, হে মুহাম্মাদ! নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রাসূল। এতে তাঁর অস্থিরতা দূর হত এবং নিজ মনে শান্তিবোধ করতেন। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন। ওয়াহী বন্ধ অবস্থা যখন তাঁর উপর দীর্ঘ হত তখনই তিনি ঐরূপ উদ্দেশে দ্রুত চলে যেতেন। যখনই তিনি পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিব্রীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে আগের মত বলতেন। [৩]
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, فَالِقُ الإِصْبَاحِ অর্থ দিনের বেলায় সূর্যের আলো ও রাতের বেলায় চাঁদের আলো। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১১)
৯১/২. অধ্যায় :
নেক্কার লোকদের স্বপ্ন ।
এবং আল্লাহ্র বাণী : আল্লাহ
তাঁর রসূলকে প্রকৃত সত্য স্বপ্নই দেখিয়েছিলেন । আল্লাহ্র ইচ্ছায় তোমরা অবশ্য
অবশ্যই মাসজিদে হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে, মস্তক মুন্ডিত অবস্থায় ও চুল কেটে,
ভয়ভীতিহীন হয়ে । আল্লাহ জানেন, যা তোমরা জান না । (সেই স্বপ্ন তো পূর্ণ হবেই)
তদুপরি তিনি দিলেন (হুদাইবিয়ার, চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে) তাৎক্ষণিক বিজয় ।
(সূরাহ আল-ফাত্হ ৪৮/২৭)
৬৯৮৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ
مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নেক্কার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের
ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। [১৪৫](আধুনিক প্রকাশনী- ,৬৪৯৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১২)
[১৪৫]
নবী ভিন্ন সাধারণ মানুষের কাছে ওহী আসে না, কিন্তু নেককার মানুষকে ভাল স্বপ্নের মাধ্যমে
জানিয়ে দেন যা আল্লাহ জানাতে চান । এটা নবুওতের ক্ষুদ্র একটা অংশ ।
৯১/৩. অধ্যায় :
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণী: ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে হয় ।
৬৯৮৪
أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ
حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا
سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ عَنْ النَّبِيِّ قَالَ الرُّؤْيَا
الصَّادِقَةُ مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ.
আবূ
ক্বাতাদাহ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে হয় আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে
থাকে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৩)
৬৯৮৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا
يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا،
وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا
هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا
لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".
আবূ
সা‘ঈদ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন
স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এ জন্য
আল্লাহ্র প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয়
কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর ক্ষতি থেকে আল্লাহ্র আশ্রয়
চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না।
(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৪)
৯১/৪. অধ্যায় :
ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ
ভাগের এক ভাগ ।
৬৯৮৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ ـ وَأَثْنَى عَلَيْهِ
خَيْرًا لَقِيتُهُ بِالْيَمَامَةِ ـ عَنْ أَبِيهِ، حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ،
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا
الصَّالِحَةُ مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَإِذَا حَلَمَ
فَلْيَتَعَوَّذْ مِنْهُ وَلْيَبْصُقْ عَنْ شِمَالِهِ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ
". وَعَنْ أَبِيهِ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي قَتَادَةَ عَنْ
أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ.
আবূ
ক্বাতাদাহ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ
থেকে হয়ে থাকে। তাই যখন কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে তখন যেন তার থেকে আশ্রয় চায় এবং বাম
দিকে থু থু ফেলে। তাহলে স্বপ্ন আর তার কোন ক্ষতি করবে না। [৩২৭২]
আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইয়াহ্ইয়া ইব্নু আবূ কাসীর).....ক্বাতাদাহ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে একই রূপ বর্ণনা করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৫)
আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইয়াহ্ইয়া ইব্নু আবূ কাসীর).....ক্বাতাদাহ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে একই রূপ বর্ণনা করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৫)
৬৯৮৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى
الله عليه وسلم قَالَ " رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ
وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".
উবাদাহ
ইব্নু সামিত (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
সাবিত, হুমায়দ, ইসহাক ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ ও শু‘আয়ব (রহঃ) আনাস (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে একই রূপ বর্ণনা করেছেন। [মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬৪, আহমাদ ১২০৩৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৬)
সাবিত, হুমায়দ, ইসহাক ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ ও শু‘আয়ব (রহঃ) আনাস (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে একই রূপ বর্ণনা করেছেন। [মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬৪, আহমাদ ১২০৩৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৬)
৬৯৮৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
قَزَعَةَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ
بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ
وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ". رَوَاهُ ثَابِتٌ وَحُمَيْدٌ
وَإِسْحَاقُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَشُعَيْبٌ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ
ভাগের এক ভাগ। [৭০১৭; মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬৩, আহমাদ ৭১৮৬] (আধুনিক প্রকাশনী-
৬৫০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৭)
৬৯৮৯
إِبْرَاهِيمُ بْنُ
حَمْزَةَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي حَازِمٍ وَالدَّرَاوَرْدِيُّ عَنْ يَزِيدَ عَنْ
عَبْدِ اللهِ بْنِ خَبَّابٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ سَمِعَ
رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ جُزْءٌ مِنْ
سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنْ النُّبُوَّةِ
আবূ
সা‘ঈদ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, ভাল স্বপ্ন
নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫০৫ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৬৫১৮)
৯১/৫. অধ্যায়
সুসংবাদ বহনকারী বিষয়সমূহ
৬৯৯০
أَبُو الْيَمَانِ
أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ
أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
لَمْ يَبْقَ مِنْ النُّبُوَّةِ إِلاَّ الْمُبَشِّرَاتُ قَالُوا وَمَا
الْمُبَشِّرَاتُ قَالَ الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি।
সু-সংবাদ বহনকারী বিষয়াদি ব্যতীত নবুয়তের আর কিছু অবশিষ্ট নেই। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস
করলেন, সু-সংবাদ বহনকারী বিষয়াদি কী? তিনি বললেন, ভাল স্বপ্ন। [১৪৬](আধুনিক
প্রকাশনী- ৬৫০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৯)
[১৪৬]
মুত্তাকী মু’মিনদের অনেক স্বপ্ন সত্য হলেও তার উপর ভিত্তি করে কোন শার’য়ী বিধান পরিবর্তন,
সংযোজন বা বিয়োজন বৈধ নয় । সুতরাং কারো কোন বিষয়ে স্বপ্ন দেখা শার’য়ী দলীল হিসাবে যেমন
বিবেচিত হবে না, তেমনি কোন কর্মের মূল উৎস স্বপ্ন হলেও তা ইসলামী বিধান হিসাবে বিবেচিত
হবে না । (ফাতহুল বারী)
৯১/৬. অধ্যায়
ইউসুফ (আঃ)-এর স্বপ্ন ।
এবং আল্লাহ্র বাণী : স্মরণ
কর, ইউসুফ যখন তার পিতাকে বলেছিল, ‘হে আব্বাজান! আমি (স্বপ্নে) দেখেছি এগারটি
তারকা আর সূর্য ও চন্দ্র; দেখলাম তারা আমাকে সাজদাহ করছে ।’ তার পিতা বললেন, ‘হে
আমার পুত্র! তোমার স্বপ্নের কথা তোমার ভাইদের কাছে বর্ণনা করো না । যদি কর তাহলে
তারা তোমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করবে । শাইত্বন তো মানুষের প্রকাশ্য দুশমন । (স্বপ্নে
যেমন দেখেছ) এভাবে তোমার প্রতিপালক তোমাকে মনোনীত করবেন, তোমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা
শিক্ষা দিবেন এবং তিনি তাঁর অনুগ্রহ তোমার প্রতি আর ইয়া‘কূব পরিবারের প্রতি পূর্ণ
করবেন যেভাবে তিনি তা পূর্বে তোমার পিতৃ-পুরুষ ইব্রাহীম ও ইসহাকের প্রতি পূর্ণ
করেছিলেন, নিশ্চয়ই তোমার রব্ব সর্বজ্ঞ, বড়ই প্রজ্ঞাবান ।- (সূরাহ ইউসুফ ১২/৪-৬) ।
এবং আল্লাহ্র বাণী : ‘সে তার পিতামাতাকে সিংহাসনে উঠিয়ে নিল আর সকলে তার সম্মানে
সাজদাহ্য় ঝুঁকে পড়ল । ইউসুফ বলল, ‘হে পিতা! এ-ই হচ্ছে আমার সে আগের দেখা স্বপ্নের
ব্যাখ্যা । আমার রব্ব একে সত্যে পরিণত করেছেন, তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন যে,
তিনি আমাকে কয়েদখানা থেকে বের করে এনেছেন । আর শাইত্বন আমার আর আমার ভাইদের মধ্যে
বিভেদ সৃষ্টি করার পরও তিনি আপানাদেরকে মরু অঞ্চল থেকে এখানে (মিশরে) এনে দিয়েছেন
। আমার রব্ব যা করতে ইচ্ছে করেন তা সূক্ষ্ম উপায়ে বাস্তবায়িত করে থাকেন, তিনি বড়ই
বিজ্ঞ, বড়ই প্রজ্ঞাময় । হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে রাজত্ব দান করেছ, আর আমাকে
বিভিন্ন কথার ব্যাখ্যা বিদ্যা শিখিয়েছ । আসমান যমীনের সৃষ্টিকর্তা! তুমিই দুনিয়া
আর আখিরাতে আমার অভিভাবক, তুমি মুসলিম অবস্থায় আমার মৃত্যু দান করো এবং
সৎকর্মশীলদের মধ্যে আমাকে অন্তর্ভুক্ত করো ।’ - (সূরাহ ইউসুফ ১২/১০০-১০১) ।
আবূ আবদুল্লাহ বলেন, (আরবী) সবগুলোর অর্থ একই । (আরবী) অর্থ পল্লী হতে ।
আবূ আবদুল্লাহ বলেন, (আরবী) সবগুলোর অর্থ একই । (আরবী) অর্থ পল্লী হতে ।
৯১/৭. অধ্যায় :
ইব্রাহীম (আঃ)-এর স্বপ্ন
এবং আল্লাহ্র বাণী : “অতঃপর
সে যখন তার পিতার সাথে চলাফিরা করার বয়সে পৌঁছল, তখন ইব্রাহীম বলল, ‘বৎস! আমি
স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে যব্হ করছি, এখন বল, তোমার অভিমত কী? সে বলল, ‘হে
পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তাই করুন, আল্লাহ্ চাইলে আপনি আমাকে
ধৈর্যশীলই পাবেন । দু’জনেই যখন আনুগত্যে মাথা নুইয়ে দিল । আর ইব্রাহীম তাকে উপুড়
ক’রে শুইয়ে দিল । তখন আমি তাকে ডাক দিলাম, ‘হে ইব্রাহীম! স্বপ্নে দেয়া আদেশ তুমি
সত্যে পরিণত করেই ছাড়লে । এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি ।” (সূরাহ
আস্-সাফফাত ৩৭/১০২-১০৫)
মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, ‘আস্লামা’ শব্দের অর্থ তাদেরকে যে বিষয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তা তারা মেনে নিল । আর ‘তাল্লাহু’ শব্দের অর্থ তার চেহারা মাটিতে রাখল ।
মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, ‘আস্লামা’ শব্দের অর্থ তাদেরকে যে বিষয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তা তারা মেনে নিল । আর ‘তাল্লাহু’ শব্দের অর্থ তার চেহারা মাটিতে রাখল ।
৯১/৮. অধ্যায় :
একাধিক লোকের একই স্বপ্ন
দেখা ।
৬৯৯১
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ
اللهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ أُنَاسًا أُرُوا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي السَّبْعِ
الأَوَاخِرِ وَأَنَّ أُنَاسًا أُرُوا أَنَّهَا فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْتَمِسُوهَا فِي السَّبْعِ الأَوَاخِرِ
ইব্নু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে,
একদল লোককে শবে কাদ্র (রমাযানের) শেষ সাত রাতের মধ্যে রয়েছে বলে স্বপ্নে দেখানো
হয়েছে। আর কিছু সংখ্যক লোককে তা শেষ দশ রাতের মাঝে আছে দেখানো হয়েছে। তখন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা শবে কাদ্র শেষ সাত রাতের মধ্যেই
খোঁজ কর। (আধুনিক প্রকাশনী- ,৬৫০৭ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২০)
৯১/৯. অধ্যায় :
বন্দী, বিশৃঙ্খলাকারী ও
মুশরিকদের স্বপ্ন ।
আল্লাহ্ বলেনঃ তার সঙ্গে
দু’যুবকও কারাগারে প্রবেশ করেছিল । তাদের একজন বলল, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম যে আমি মদ
তৈরি করছি ।’ অন্যজন বলল, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি মাথায় রুটি বহন করছি আর পাখী
তাত্থেকে খাচ্ছে । আমাদেরকে এর ব্যাখ্যা বলে দাও, আমরা দেখছি তুমি একজন সৎকর্মশীল
লোক ।’ সে (ইউসুফ) বলল, ‘তোমাদেরকে যে খাবার দেয়া হয় তা আসার আগেই আমি তোমাদেরকে
তার ব্যাখ্যা জানিয়ে দেব । আমার প্রতিপালক আমাকে যে জ্ঞান দান করেছেন এটা সেই
জ্ঞানেরই অংশ । যে সম্প্রদায় আল্লাহ্তে বিশ্বাস করে না আর আখিরাতে অবিশ্বাসী, আমি
তাদের নিয়ম নীতি পরিত্যাগ করেছি । আমি আমার পূর্বপুরুষ ইব্রাহীম, ইসহাক ও
ইয়া‘কূবের আদর্শের অনুসরণ করি । আল্লাহ্র সাথে কোন কিছুকে শরীক করা আমার কাজ নয় ।
এটা আমাদের প্রতি ও মানুষের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ, কিন্তু অধিকাংশ লোকই শোকর
করে না । হে আমার জেলের সঙ্গীদ্বয়! ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপালক ভালো, না মহাপরাক্রমশালী
এক আল্লাহ্? তাঁকে বাদ দিয়ে তোমরা যার ‘ইবাদাত করছ তা কতকগুলো নাম ছাড়া আর কিছুই
নয়, যে নামগুলো তোমরা আর তোমাদের পিতৃ পুরুষরা রেখেছ । এ ব্যাপারে আল্লাহ্ কোন
প্রমাণ নাযিল করেননি । আল্লাহ ছাড়া কোন বিধান দাতা নেই । তিনি আদেশ করেছেন যে,
তোমরা তাঁকে ছাড়া আর কারো ‘ইবাদাত করবে না, এটাই সঠিক দ্বীন, কিন্তু অধিকাংশ
মানুষই তা জানে না । হে আমার জেলের সঙ্গীদ্বয়! তোমাদের দু’জনের একজন তার প্রভুকে
মদ পান করাবে আর অন্যজনকে শূলে দেয়া হবে, আর পাখী তার মস্তক ঠুকরে খাবে । তোমরা
দু’জন যে সম্পর্কে জানতে চেয়েছ তার ফায়সালা হয়ে গেছে । তাদের দু’জনের মধ্যে যে জন
মুক্তি পাবে ব’লে সে (ইউসুফ) মনে করল তাকে বলল, ‘তোমার প্রভুর কাছে আমার সম্পর্কে
বলিও ।’ কিন্তু শয়তান তাকে তার প্রভুর কাছে ইউসুফের কথা উল্লেখ করতে ভুলিয়ে দিল ।
ফলে ইউসুফ বেশ কয়েক বছর কারাগারে আটক থেকে গেল । রাজা বললেন, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম
সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভী, সাতটি জীর্ণশীর্ণ গাভী তাদেরকে খাচ্ছে । (আর দেখলাম) সাতটি
সবুজ সতেজ শীষ আর অন্য সাতটি শুকনো । ওহে সভাষদগণ! আমার কাছে তোমরা আমার স্বপ্নের
ব্যাখ্যা কর যদি তোমরা ব্যাখ্যা করতে পার ।’ তারা বলল, ‘এতো অস্পষ্ট স্বপ্নের কথা,
আর আমরা এ ধরনের স্বপ্ন ব্যাখ্যায় অভিজ্ঞ নই ।’ দু’জনের মধ্যে যে জন জেল থেকে
মুক্তি পেয়েছিল আর দীর্ঘকাল পর যার স্মরণ হল সে বলল, ‘আমি তোমাদেরকে তার ব্যাখ্যা
বলে দেব, তবে তোমরা আমাকে (জেলখানায় ইউসুফের কাছে) পাঠাও । সে বলল, ‘হে সত্যবাদী
ইউসুফ! সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভী, যাদেরকে খাচ্ছে জীর্ণশীর্ণ সাতটি গাভী আর সাতটি
সবুজ সতেজ শীষ আর অন্যগুলো শুকনো । (আমাদেরকে এর ব্যাখ্যা জানিয়ে দাও) যাতে আমি
তাদের কাছে ফিরে যেতে পারি আর তারা জেনে নিতে পারে ।’ সে (ইউসুফ) বলল, ‘সাত বছর
তোমরা এক নাগাড়ে চাষ করবে, অতঃপর যখন ফসল কাটবে তখন তোমরা যে সামান্য পরিমাণ খাবে
তা বাদে শিষ সমেত সংরক্ষণ করবে । এরপর আসবে সাতটি কঠিন বছর । এ সময়ের জন্য পূর্বে
যা তোমরা সঞ্চয় করেছিলে তা লোকে খাবে, কেবল সেই অল্পটূকু বাদে যা তোমরা সঞ্চয় করবে
। এর পর আসবে একটা বছর যখন মানুষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে আর মানুষ প্রচুর
ভোগবিলাস করবে ।’ রাজা বলল, ‘তোমরা তাকে (ইউসুফকে) আমার কাছে নিয়ে এসো ।’ দূত যখন
তার কাছে আসলো তখন ইউসুফ বলল, ‘তোমরা প্রভুর কাছে ফিরে যাও । (সূরাহ ইউসুফ
১২/৩৬-৫০)
(আরবী)-এর আসল রূপ (আরবী) শব্দ থেকে ‘ইয়্তাকারা’ । (আরবী) অর্থ যুগ । (আরবী) ও পড়া যায়, অর্থ ভুলে যাওয়া । ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন (আরবী) আঙুর ও তেল নিংড়িয়ে রস বের করবে । (আরবী) তোমরা সংরক্ষণ করবে ।
(আরবী)-এর আসল রূপ (আরবী) শব্দ থেকে ‘ইয়্তাকারা’ । (আরবী) অর্থ যুগ । (আরবী) ও পড়া যায়, অর্থ ভুলে যাওয়া । ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন (আরবী) আঙুর ও তেল নিংড়িয়ে রস বের করবে । (আরবী) তোমরা সংরক্ষণ করবে ।
৬৯৯২
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ، حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَنَّ
سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ، وَأَبَا، عُبَيْدٍ أَخْبَرَاهُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَوْ
لَبِثْتُ فِي السِّجْنِ مَا لَبِثَ يُوسُفُ، ثُمَّ أَتَانِي الدَّاعِي لأَجَبْتُهُ
".
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইউসুফ (আ:) যতদিন
জেলে কাটিয়েছেন, যদি আমি ততদিন কাটাতাম, আর আমার কাছে (বাদশাহ্র) আহবানকারী আসত,
সেক্ষেত্রে আমি অবশ্যই তার ডাকে সাড়া দিতাম। [১৪৭](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫০৮, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬৫২১)
[১৪৭] রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যা বলেছেন, তাঁর সে কথা তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ ছাড়া আর কিছুই নয় ।
৯১/১০. অধ্যায় :
যে লোক স্বপ্নে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখে ।
৬৯৯৩
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا
عَبْدُ اللهِ عَنْ يُونُسَ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ أَنَّ
أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مَنْ
رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَسَيَرَانِي فِي الْيَقَظَةِ وَلاَ يَتَمَثَّلُ
الشَّيْطَانُ بِي قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ قَالَ ابْنُ سِيرِينَ إِذَا رَآهُ فِي
صُورَتِهِ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : যে লোক আমাকে
স্বপ্নে দেখে সে শীঘ্রই জাগ্রত অবস্থাতেও আমাকে দেখবে। কেননা শয়তান আমার আকৃতি
ধরতে পারে না। [১১০; মুসলিম ৪২/১, হাঃ ২২৬৬, আহমাদ ৮৫১৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫০৮,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২২)
৬৯৯৪
مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُخْتَارٍ حَدَّثَنَا ثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ
عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَنْ رَآنِي فِي
الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِي فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لاَ يَتَخَيَّلُ بِي وَرُؤْيَا
الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنْ النُّبُوَّةِ.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে আমাকে ঘুমন্ত
অবস্থায় দেখল সে আমাকেই দেখল। কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধরতে পারে না। আর মু’মিনের
স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। [৬৯৮৩; মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬৪, আহমাদ
১২০৩৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২৩)
৬৯৯৫
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ أَخْبَرَنِي أَبُو
سَلَمَةَ عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَمَنْ رَأَى
شَيْئًا يَكْرَهُهُ فَلْيَنْفِثْ عَنْ شِمَالِهِ ثَلاَثًا وَلْيَتَعَوَّذْ مِنْ
الشَّيْطَانِ فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ وَإِنَّ الشَّيْطَانَ لاَ يَتَرَاءَى بِي
আবূ
ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভালো স্বপ্ন আল্লাহ্র তরফ
থেকে ও খারাপ স্বপ্ন শয়তানের তরফ থেকে হয়ে থাকে। কেউ এমন কিছু দেখল, যা সে অপছন্দ
করে, সে যেন বামদিকে তিনবার থুথু ফেলে এবং শয়তান থেকে আশ্রয় চায়। তাহলে এ স্বপ্ন
তার কোন ক্ষতি করবে না। আর শয়তান আমার আকৃতি ধরতে পারে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫১১,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২৪)
৬৯৯৬
خَالِدُ بْنُ خَلِيٍّ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنِي الزُّبَيْدِيُّ عَنْ الزُّهْرِيِّ
قَالَ أَبُو سَلَمَةَ قَالَ أَبُو قَتَادَةَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
مَنْ رَآنِي فَقَدْ رَأَى الْحَقَّ تَابَعَهُ يُونُسُ وَابْنُ أَخِي الزُّهْرِيِّ.
আবূ
ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে আমাকে স্বপ্নে দেখে সে
প্রকৃতই দেখে। ইউনুস ও ইব্নু আখীয্ যুহরী (রহঃ) যুবায়দীর অনুসরণ করেছেন।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৬৫১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২৫)
৬৯৯৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ
يُوسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ
خَبَّابٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ مَنْ رَآنِي فَقَدْ رَأَى الْحَقَّ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لاَ
يَتَكَوَّنُنِي.
আবূ
সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, যে আমাকে স্বপ্ন দেখে সে
প্রকৃতই দেখে। কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধরতে পারে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫১৩,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২৬)
৯১/১১. অধ্যায় :
রাতের স্বপ্ন ।
সামুরাহ (রাঃ) এ সম্পর্কে
হাদীস বর্ণনা করেছেন ।
৬৯৯৮
أَحْمَدُ بْنُ
الْمِقْدَامِ الْعِجْلِيُّ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
الطُّفَاوِيُّ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ
قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أُعْطِيتُ مَفَاتِيحَ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ
بِالرُّعْبِ وَبَيْنَمَا أَنَا نَائِمٌ الْبَارِحَةَ إِذْ أُتِيتُ بِمَفَاتِيحِ
خَزَائِنِ الأَرْضِ حَتَّى وُضِعَتْ فِي يَدِي قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَذَهَبَ
رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنْتُمْ تَنْتَقِلُونَهَا.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাকে সংক্ষিপ্ত অথচ
বিস্তারিত অর্থবহ বাক্য দান করা হয়েছে। এবং আমাকে ভীতি সঞ্চারক প্রভাব দ্বারা
সাহায্য করা হয়েছে। এক রাতে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। সে সময় ভূপৃষ্ঠের সকল ভান্ডারের
চাবি আমার কাছে এনে আমার হাতে রাখা হলো। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চলে গেছেন। আর তোমরা ঐ ভান্ডারগুলো সংগ্রহ করে
চলেছ। [১৪৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২৭)
[১৪৮]
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর শেষ নবীকে অল্প কথায় বিস্তারিত অর্থবোধক কথা বলার যে শক্তি দিয়েছেন,
কোন মানুষের পক্ষেই তা আয়ত্ত করা সম্ভব নয় । এক মাসের দূরত্বে থেকেও শত্রুরা তাঁর ভয়ে
ভীত হয়ে পড়ত । নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র হাতে ভান্ডার সমূহের চাবি
দেয়া হয়েছিল যার ফলশ্রুতিতে ওমর (রাঃ)’র আমলেই অবস্থা এমন হয়েছিল যে যাকাত গ্রহণ করার
লোক খুজেঁ পাওয়া যায়নি ।
৬৯৯৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ
مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ
رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أُرَانِي اللَّيْلَةَ عِنْدَ الْكَعْبَةِ
فَرَأَيْتُ رَجُلاً آدَمَ كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ مِنْ أُدْمِ الرِّجَالِ
لَهُ لِمَّةٌ كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ مِنْ اللِّمَمِ قَدْ رَجَّلَهَا
تَقْطُرُ مَاءً مُتَّكِئًا عَلَى رَجُلَيْنِ أَوْ عَلَى عَوَاتِقِ رَجُلَيْنِ
يَطُوفُ بِالْبَيْتِ فَسَأَلْتُ مَنْ هَذَا فَقِيلَ الْمَسِيحُ ابْنُ مَرْيَمَ
ثُمَّ إِذَا أَنَا بِرَجُلٍ جَعْدٍ قَطَطٍ أَعْوَرِ الْعَيْنِ الْيُمْنَى
كَأَنَّهَا عِنَبَةٌ طَافِيَةٌ فَسَأَلْتُ مَنْ هَذَا فَقِيلَ الْمَسِيحُ
الدَّجَّالُ.
আবদুল্লাহ্
ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক রাতে আমাকে কা‘বার নিকট স্বপ্ন
দেখানো হল। তখন আমি গৌর বর্ণের সুন্দর এক পুরুষকে দেখলাম। তার মাথায় খুবই সুন্দর
লম্বা চুল ছিল, যেগুলো আঁচড়ে রাখা হয়েছে। চুল থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি ঝরছিল। তিনি
দু’জনের ওপর অথবা বলেছেন,দু’জনের কাধেঁর ওপর ভর করে বায়তুল্লাহ্র তাওয়াফ করেছেন।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কে? বলা হল : মাসীহ্ ইবনু মারইয়াম। এরপর আরেক লোকের সঙ্গে
আমার সাক্ষাৎ ঘটল। সে ছিল কোঁকড়ানো চুলওয়ালা, ডান চোখ কানা, চোখটি যেন (পানির
ওপর) ভাসমান আঙুর। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কে? বলা হল মাসীহ্ দাজ্জাল। (আধুনিক
প্রকাশনী- ৬৫১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২৮)
৭০০০
يَحْيَى حَدَّثَنَا
اللَّيْثُ عَنْ يُونُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ
أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ كَانَ يُحَدِّثُ أَنَّ رَجُلاً أَتَى رَسُولَ اللهِ صلى الله
عليه وسلم فَقَالَ إِنِّي أُرِيتُ اللَّيْلَةَ فِي الْمَنَامِ وَسَاقَ الْحَدِيثَ
وَتَابَعَهُ سُلَيْمَانُ بْنُ كَثِيرٍ وَابْنُ أَخِي الزُّهْرِيِّ وَسُفْيَانُ
بْنُ حُسَيْنٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَقَالَ الزُّبَيْدِيُّ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ أَوْ أَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ شُعَيْبٌ وَإِسْحَاقُ بْنُ يَحْيَى عَنْ الزُّهْرِيِّ كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَكَانَ مَعْمَرٌ لاَ يُسْنِدُهُ حَتَّى كَانَ بَعْدُ.
وَقَالَ الزُّبَيْدِيُّ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ أَوْ أَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ شُعَيْبٌ وَإِسْحَاقُ بْنُ يَحْيَى عَنْ الزُّهْرِيِّ كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَكَانَ مَعْمَرٌ لاَ يُسْنِدُهُ حَتَّى كَانَ بَعْدُ.
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক লোক রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল,
আমি রাতে স্বপ্ন দেখেছি। এরপর পুরো হাদীসটি বর্ণনা করেন। সুলায়মান ইব্নু কাসীর, ইব্নু
আখীয যুহরী ও সুফিয়ান ইব্নু হুসায়ন (রহঃ).....ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) সূত্রে
নবী.....থেকে ইউনুস (রহঃ)এর অনুসরণ করেছেন।
যুবায়দী (রহঃ).....ইব্নু ‘আব্বাস অথবা আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন শু’আয়ব, ইসহাক ইবনু ইয়াহ্ইয়া, আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করতেন। মা‘মার (রহঃ) প্রথম এ হাদীসের সনদ বর্ণনা করতেন না। কিন্তু পরবর্তীতে করতেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২৯)
যুবায়দী (রহঃ).....ইব্নু ‘আব্বাস অথবা আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন শু’আয়ব, ইসহাক ইবনু ইয়াহ্ইয়া, আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করতেন। মা‘মার (রহঃ) প্রথম এ হাদীসের সনদ বর্ণনা করতেন না। কিন্তু পরবর্তীতে করতেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২৯)
৯১/১২. অধ্যায় :
দিনে সপ্ন দেখা ।
ইব্নু ‘আউন (রহঃ) ইবনু
সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, দিনের সপ্ন রাতের সপ্নের মত ।
৭০০১
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدْخُلُ عَلَى أُمِّ حَرَامٍ بِنْتِ مِلْحَانَ،
وَكَانَتْ تَحْتَ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، فَدَخَلَ عَلَيْهَا يَوْمًا فَأَطْعَمَتْهُ،
وَجَعَلَتْ تَفْلِي رَأْسَهُ، فَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ
اسْتَيْقَظَ وَهْوَ يَضْحَكُ.
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রায়ই উম্মু হারাম বিনত
মিলহান (রাঃ)-এর গৃহে যেতেন। আর সে ছিল ‘উবাদাহ ইব্নু সামিত (রাঃ)-এর স্ত্রী।
একদা তিনি তার কাছে এলেন। সে তাকে খানা খাওয়াল। তারপর তারঁ মাথার উঁকুন বাছতে শুরু
করল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমিয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর
হেসে হেসে জেগে উঠলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩০)
৭০০২
قَالَتْ فَقُلْتُ مَا
يُضْحِكُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا
عَلَىَّ، غُزَاةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ، يَرْكَبُونَ ثَبَجَ هَذَا الْبَحْرِ،
مُلُوكًا عَلَى الأَسِرَّةِ أَوْ مِثْلَ الْمُلُوكِ عَلَى الأَسِرَّةِ ".
شَكَّ إِسْحَاقُ. قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ
يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ، فَدَعَا لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ
وَضَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ اسْتَيْقَظَ وَهْوَ يَضْحَكُ. فَقُلْتُ مَا يُضْحِكُكَ يَا
رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا عَلَىَّ، غُزَاةً
فِي سَبِيلِ اللَّهِ ". كَمَا قَالَ فِي الأُولَى. قَالَتْ فَقُلْتُ
يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ. قَالَ "
أَنْتِ مِنَ الأَوَّلِينَ ". فَرَكِبَتِ الْبَحْرَ فِي زَمَانِ
مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ فَصُرِعَتْ عَنْ دَابَّتِهَا حِينَ خَرَجَتْ
مِنَ الْبَحْرِ، فَهَلَكَتْ.
উম্মু
হারাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মু
হারাম (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি কেন হাসলেন? তিনি বললেনঃ
আমার উম্মাতের একদল লোককে আমার কাছে পেশ করা হয়েছে। যারা আল্লাহ্র রাস্তায়
যুদ্ধরত সাগরের মধ্যে জাহাজের ওপর আরোহণ করে বাদশাহ্র সিংহাসনে অথবা বাদশাহ্দের
মত তারা সিংহাসনে বসে আছে। ইসহাক রাবী সন্দেহ করেছেন। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আমি
বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল। আপনি আল্লাহর কাছে দু‘আ করুন,তিনি যেন আমাকে তাদের দলে
অর্ন্তভুক্ত করে দেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জন্য
দু‘আ করলেন। এরপর আবার তিনি মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হেসে হেসে
জেগে উঠলেন। আমি বললাম, আপনি হাসলেন কেন হে আল্লাহর রসূল? তিনি বললেনঃ আল্লাহর
রাস্তায় জিহাদে লিপ্ত আমার একদল উম্মাতকে আমার কাছে পেশ করা হয়েছে। আগের মত এ দল
সম্পর্কেও বললেন। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল। আপনি
আল্লাহর কাছে দু‘আ করুন, তিনি যেন আমাকে এ দলভুক্ত করে দেন। তিনি বললেনঃ তুমি
প্রথম দলের অন্তভূক্ত। উম্মু হারাম (রাঃ) মু‘আবীয়াহ ইব্নু সুফ্ইয়ান (রাঃ)-এর
আমলে সামুদ্রিক জাহাজে উঠেন এবং সমুদ্র থেকে পেরিয়ে আসার সময় আপন সাওয়ারী থেকে
মাটিতে পড়ে গিয়ে মারা যান।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩০)
৯১/১৩. অধ্যায় :
নারীদের সপ্ন
৭০০৩
سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ
حَدَّثَنِي اللَّيْثُ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِي
خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَنَّ أُمَّ الْعَلاَءِ امْرَأَةً مِنْ
الأَنْصَارِ بَايَعَتْ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّهُمْ
اقْتَسَمُوا الْمُهَاجِرِينَ قُرْعَةً قَالَتْ فَطَارَ لَنَا عُثْمَانُ بْنُ
مَظْعُونٍ وَأَنْزَلْنَاهُ فِي أَبْيَاتِنَا فَوَجِعَ وَجَعَهُ الَّذِي تُوُفِّيَ
فِيهِ فَلَمَّا تُوُفِّيَ غُسِّلَ وَكُفِّنَ فِي أَثْوَابِهِ دَخَلَ رَسُولُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْكَ أَبَا السَّائِبِ
فَشَهَادَتِي عَلَيْكَ لَقَدْ أَكْرَمَكَ اللهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم وَمَا يُدْرِيكِ أَنَّ اللهَ أَكْرَمَهُ فَقُلْتُ بِأَبِي أَنْتَ يَا
رَسُولَ اللهِ فَمَنْ يُكْرِمُهُ اللهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
أَمَّا هُوَ فَوَاللهِ لَقَدْ جَاءَهُ الْيَقِينُ وَاللهِ إِنِّي لأرْجُو لَهُ
الْخَيْرَ وَ وَاللهِ مَا أَدْرِيْ وَأَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
مَاذَا يُفْعَلُ بِي فَقَالَتْ وَاللهِ لاَ أُزَكِّي بَعْدَهُ أَحَدًا أَبَدًا.
খারিজাহ
ইব্নু যায়দ ইব্নু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে,
উম্মুল আলা নামক এক আনসারী মহিলা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর কাছে বাই‘আত গ্রহণ করেন। তিনি তাকেঁ জানান যে, আনসারগণ লটারির
সাহায্যে মুহাজিরগণকে ভাগ করে নিয়েছিল। আমাদের ভাগে আসলেন উসমান ইব্নু মাযউন
(রাঃ)। আমরা তাকে আমাদের ঘরের মেহমান করে নিলাম। এরপর তিনি এমন এক ব্যথায় আক্রান্ত
হলেন যে, সে ব্যথায় তার মৃত্যু হল। মৃত্যুর পর তাঁকে গোসল দেয়া হল। তাঁর কাপড় দিয়েই
তাকেঁ কাফন পরানো হল। এমন সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এলেন। উম্মুল আলা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, তোমার ওপর আল্লাহ্র রহমত হোক, হে আবূ
সাইব! আমার সাক্ষ্য তোমার বেলায় এটাই যে আল্লাহ্ তোমাকে সম্মানিত করেছেন। তখন
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি কী করে জানলে যে
আল্লাহ্ তাকে সম্মানিত করেছেন? আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার প্রতি আমার
পিতা কুরবান হোক! তাহলে কাকে আল্লাহ্ সম্মানিত করবেন? তখন রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্র কসম! তাঁর ব্যাপার তো হল,
তার মৃত্যু হয়ে গেছে। আল্লাহ্র কসম! তার জন্য আমি কল্যাণই আশা করি। আল্লাহ্র
কসম! আমি আল্লাহ্র রসূল হওয়া সত্ত্বেও জানি না, আমার সঙ্গে কী ব্যবহার করা হবে?
তখন উম্মুল আলা (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমি আগামীতে কখনো কারো পবিত্র হওয়ার
সাক্ষ্য দেব না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩১)
৭০০৪
أَبُو الْيَمَانِ
أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ بِهَذَا وَقَالَ مَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ
بِهِ قَالَتْ وَأَحْزَنَنِي فَنِمْتُ فَرَأَيْتُ لِعُثْمَانَ عَيْنًا تَجْرِي
فَأَخْبَرْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ذَلِكَ عَمَلُهُ.
যুহরী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুহরী
(রহঃ) থেকে এ হাদীসে বলা হয়েছে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ আমি জানি না, তার সঙ্গে কী ব্যবহার করা হবে? উম্মুল আলা (রাঃ) বললেন, আমি
এতে চিন্তিত হয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। তখন আমি স্বপ্নে ‘উসমান ইবনু মাযউন (রাঃ) এর জন্য
প্রবহমান ঝর্ণা দেখতে পেলাম। আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে এ সম্পর্কে জানালাম। তিনি বললেনঃ এটা তার ‘আমল। (আধুনিক প্রকাশনী-
৬৫১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩২)
৯১/১৪. অধ্যায় :
খারাপ স্বপ্ন শয়তানের তরফ
থেকে হয়ে থাকে । কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখলে সে যেন তার বাম দিকে থু থু নিক্ষেপ করে
এবং আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করে ।
৭০০৫
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ أَنَّ
أَبَا قَتَادَةَ الأَنْصَارِيَّ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَفُرْسَانِهِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا حَلَمَ أَحَدُكُمْ
الْحُلُمَ يَكْرَهُهُ فَلْيَبْصُقْ عَنْ يَسَارِهِ وَلْيَسْتَعِذْ بِاللهِ مِنْهُ
فَلَنْ يَضُرَّهُ.
আবূ
ক্বাতাদাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যিনি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহাবী ও অশ্বারোহী যোদ্ধা ছিলেন। তিনি
বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, ভালো
স্বপ্ন আল্লাহ্র তরফ থেকে এবং খারাপ স্বপ্ন শয়তানের তরফ থেকে হয়ে থাকে। যখন
তোমাদের কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে অপছন্দনীয় মনে হয়, তখন সে যেন তার
বামদিকে থু থু নিক্ষেপ করে এবং এ স্বপ্ন থেকে আল্লাহ্র আশ্রয় চায়। সেক্ষেত্রে এ
স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৩)
৯১/১৫. অধ্যায় :
স্বপ্নে দুধ দেখা ।
৭০০৬
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي
حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُتِيتُ
بِقَدَحِ لَبَنٍ، فَشَرِبْتُ مِنْهُ، حَتَّى إِنِّي لأَرَى الرِّيَّ يَخْرُجُ مِنْ
أَظْفَارِي، ثُمَّ أَعْطَيْتُ فَضْلِي ". يَعْنِي عُمَرَ. قَالُوا
فَمَا أَوَّلْتَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " الْعِلْمَ ".
ইবনু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমি
একবার ঘুমিয়ে ছিলাম। আমার কাছে একটি দুধের পেয়ালা পেশ করা হল, আমি তা থেকে
পরিতৃপ্ত হয়ে পান করলাম। তৃপ্তির চিহ্ন আমার নখ দিয়ে প্রকাশ পেতে লাগল। অতঃপর বাকী
অংশ অবশিষ্টাংশ ‘উমারকে দিলাম। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এর
কী ব্যাখ্যা দিলেন। তিনি বললেনঃ ইল্ম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৬৫৩৪)
৯১/১৬. অধ্যায় :
যখন স্বপ্নে নিজের চারদিকে
কিংবা নখে দুধ প্রবাহিত হতে দেখে ।
৭০০৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ
عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ
صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، حَدَّثَنِي حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عُمَرَ، أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ يَقُولُ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُتِيتُ
بِقَدَحِ لَبَنٍ، فَشَرِبْتُ مِنْهُ، حَتَّى إِنِّي لأَرَى الرِّيَّ يَخْرُجُ مِنْ
أَطْرَافِي، فَأَعْطَيْتُ فَضْلِي عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ". فَقَالَ
مَنْ حَوْلَهُ فَمَا أَوَّلْتَ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ "
الْعِلْمَ ".
আবদুল্লাহ্
ইব্নু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একবার আমি
ঘুমিয়েছিলাম। আমার কাছে দুধের একটি পেয়ালা হাজির করা হল। আমি পরিতৃপ্ত হয়ে তা থেকে
পান করলাম। এমনকি তৃপ্তির চিহ্ন আমার চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছিল। অতঃপর বাকী অংশ ‘উমার
ইবনু খাত্তাবকে দিলাম। তাঁর পাশের লোকজন জিজ্ঞেস করলেন, আপনি এর কী ব্যাখ্যা
দিচ্ছেন হে আল্লাহ্র রসূল? তিনি বললেনঃ ইল্ম। [১৪৯] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫২২,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৫)
[১৪৯]
স্বপ্নের মধ্যে দুধ দেখলে তার কি ব্যাখ্যা করা হবে-এ সম্পর্কে ইমাম মুহাল্লাব বলেন,
দুধ ফিতরাত, সুন্নাত, কোরআন ও ইলমের প্রমাণ বহন করে । উল্লেখিত হাদীস হতে আরও জানা
যায়:
(১) বড়দের দেখা স্বপ্ন তাদের চেয়ে ছোটদের নিকট বর্ণনা করার বৈধতা ।
(২) আল্লাহ্ সম্পর্কে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জ্ঞানের যে পরিমাণ সে পর্যন্ত কেউ পৌছতে পারবে না । (ফাতহুল বারী)
স্বপ্ন মূলত তিন প্রকারঃ
১. ভাল ও সৎ স্বপ্ন : এ স্বপ্ন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে সুসংবাদ স্বরূপ এবং নবুওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ । [এ মর্মে সহীহ্ হাদীস বর্ণিত হয়েছে ।
২. অপছন্দনীয় খারাপ স্বপ্নঃ এ স্বপ্ন শয়তানের কুমন্ত্রনা থেকে দেখানো হযে থাকে, যাতে এর দ্বারা আদম সন্তান চিন্তিত হয় এবং শয়তান তাকে নিয়ে ঘুমের মধ্যে খেলা করতে পার ।
৩. জাগ্রত অবস্থায় যে বিষয়ে মানুষ নিজে নিজে কথা বলে অথবা চিন্তা করে সে বিষয়টি ঘুমের মধ্যে দেখা । এ তৃতীয় প্রকারের স্বপ্নের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বপ্ন দেখবে তার জাগ্রত অবস্থায় অভ্যাসগুলো অর্ন্তভুক্ত হবে । যেমন কোন ব্যক্তির অভ্যাস হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ে খাদ্য খাওয়া কিন্ত সে সে সময়ে ঘুমিয়ে গিয়ে স্বপ্নে দেখে যে, সে খাচ্ছে, অথবা সে পানাহার না করে ঘুমিয়ে গিয়ে স্বপ্নে দেখে যে বমি করছে ।
[উল্লেখ্য কোন ব্যক্তি মন্দ বা অপছন্দনীয় স্বপ্ন দেখলে তা নিয়ে চিন্তিত না হয়ে, সে সে স্বপ্ন দেখার সময় যেদিকে কাত হয়ে শুয়ে ছিল সেদিক পরিবর্তন করে অন্য দিকে কাত হয়ে শুবে, তিনবার আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বনির রজীম পাঠ করবে, বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলবে । এতেও স্বাভাবিকতা ফিরে না আসলে বিছানা ছেড়ে উঠে অযু করে দু’রাক‘আত নফল সলাত আদায় করবে । এ ধরনের স্বপ্ন কাউকে জানাবে না । আর কোন খুশির স্বপ্ন দেখলে তা শুধুমাত্র সে ব্যক্তিকেই জানাবে যে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম ।]
(১) বড়দের দেখা স্বপ্ন তাদের চেয়ে ছোটদের নিকট বর্ণনা করার বৈধতা ।
(২) আল্লাহ্ সম্পর্কে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জ্ঞানের যে পরিমাণ সে পর্যন্ত কেউ পৌছতে পারবে না । (ফাতহুল বারী)
স্বপ্ন মূলত তিন প্রকারঃ
১. ভাল ও সৎ স্বপ্ন : এ স্বপ্ন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে সুসংবাদ স্বরূপ এবং নবুওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ । [এ মর্মে সহীহ্ হাদীস বর্ণিত হয়েছে ।
২. অপছন্দনীয় খারাপ স্বপ্নঃ এ স্বপ্ন শয়তানের কুমন্ত্রনা থেকে দেখানো হযে থাকে, যাতে এর দ্বারা আদম সন্তান চিন্তিত হয় এবং শয়তান তাকে নিয়ে ঘুমের মধ্যে খেলা করতে পার ।
৩. জাগ্রত অবস্থায় যে বিষয়ে মানুষ নিজে নিজে কথা বলে অথবা চিন্তা করে সে বিষয়টি ঘুমের মধ্যে দেখা । এ তৃতীয় প্রকারের স্বপ্নের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বপ্ন দেখবে তার জাগ্রত অবস্থায় অভ্যাসগুলো অর্ন্তভুক্ত হবে । যেমন কোন ব্যক্তির অভ্যাস হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ে খাদ্য খাওয়া কিন্ত সে সে সময়ে ঘুমিয়ে গিয়ে স্বপ্নে দেখে যে, সে খাচ্ছে, অথবা সে পানাহার না করে ঘুমিয়ে গিয়ে স্বপ্নে দেখে যে বমি করছে ।
[উল্লেখ্য কোন ব্যক্তি মন্দ বা অপছন্দনীয় স্বপ্ন দেখলে তা নিয়ে চিন্তিত না হয়ে, সে সে স্বপ্ন দেখার সময় যেদিকে কাত হয়ে শুয়ে ছিল সেদিক পরিবর্তন করে অন্য দিকে কাত হয়ে শুবে, তিনবার আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বনির রজীম পাঠ করবে, বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলবে । এতেও স্বাভাবিকতা ফিরে না আসলে বিছানা ছেড়ে উঠে অযু করে দু’রাক‘আত নফল সলাত আদায় করবে । এ ধরনের স্বপ্ন কাউকে জানাবে না । আর কোন খুশির স্বপ্ন দেখলে তা শুধুমাত্র সে ব্যক্তিকেই জানাবে যে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম ।]
৯১/১৭. অধ্যায়
স্বপ্নের মধ্যে জামা দেখা ।
৭০০৮
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ
اللهِ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنِي أَبِي عَنْ صَالِحٍ عَنْ
ابْنِ شِهَابٍ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو أُمَامَةَ بْنُ سَهْلٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا
سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَمَا
أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُ النَّاسَ يُعْرَضُونَ عَلَيَّ وَعَلَيْهِمْ قُمُصٌ مِنْهَا
مَا يَبْلُغُ الثَّدْيَ وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ دُونَ ذَلِكَ وَمَرَّ عَلَيَّ
عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَعَلَيْهِ قَمِيصٌ يَجُرُّهُ قَالُوا مَا أَوَّلْتَهُ
يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الدِّينَ.
আবূ
সা‘ঈদ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি একবার
ঘুমিয়েছিলাম। একদল লোককে স্বপ্নে দেখলাম, তাদেরকে আমার কাছে আনা হচ্ছে। তাদের গায়ে
ছিল জামা। কারো কারো জামা স্তন পর্যন্ত, আর কারো কারো তার নিচ পর্যন্ত।‘উমর ইব্নু
খাত্তাব আমার নিকট দিয়ে গেল। তার গায়ের জামা মাটিতে হেঁচড়ে চলছিল। সহাবাগণ জিজ্ঞেস
করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি কী ব্যাখ্যা দিলেন। তিনি বললেনঃ দ্বীন। (আধুনিক
প্রকাশনী- ৬৬২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৬)
৯১/১৮.অধ্যায় :
স্বপ্নের মধ্যে জামা
হেঁচড়িয়ে চলতে দেখা ।
৭০০৯
سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ
حَدَّثَنِي اللَّيْثُ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِي أَبُو
أُمَامَةَ بْنُ سَهْلٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ
رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُ
النَّاسَ عُرِضُوا عَلَيَّ وَعَلَيْهِمْ قُمُصٌ فَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ الثَّدْيَ
وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ دُونَ ذَلِكَ وَعُرِضَ عَلَيَّ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ
وَعَلَيْهِ قَمِيصٌ يَجْتَرُّهُ قَالُوا فَمَا أَوَّلْتَهُ يَا رَسُولَ اللهِ
قَالَ الدِّينَ.
আবূ
সা‘ঈদ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি। তিনি
বলেছেনঃ আমি একসময় ঘুমিয়ে ছিলাম। আমি দেখলাম, আমার কাছে একদল লোককে আনা হল, তাদের
গায়ে ছিল জামা। কারো কারো জামা স্তন পযন্ত। আর কারো কারো এর নিচ পর্যন্ত। আর ‘উমার
ইব্নু খাত্তাবকে এমন অবস্থায় আমার কাছে আনা হল যে, সে তার গায়ের জামা হেঁচড়িয়ে
চলছিল। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি এর কী ব্যাখ্যা দিলেন। তিনি
বললেনঃ দ্বীন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৭)
৯/১৯.অধ্যায় :
স্বপ্নের মধ্যে সবুজ রং ও
সবুজ বাগান দেখা ।
৭০১০
عَبْدُ اللهِ بْنُ
مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ حَدَّثَنَا حَرَمِيُّ بْنُ عُمَارَةَ حَدَّثَنَا قُرَّةُ
بْنُ خَالِدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ قَالَ قَالَ قَيْسُ بْنُ عُبَادٍ
كُنْتُ فِي حَلْقَةٍ فِيهَا سَعْدُ بْنُ مَالِكٍ وَابْنُ عُمَرَ فَمَرَّ عَبْدُ
اللهِ بْنُ سَلاَمٍ فَقَالُوا هَذَا رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَقُلْتُ لَهُ
إِنَّهُمْ قَالُوا كَذَا وَكَذَا قَالَ سُبْحَانَ اللهِ مَا كَانَ يَنْبَغِي
لَهُمْ أَنْ يَقُولُوا مَا لَيْسَ لَهُمْ بِهِ عِلْمٌ إِنَّمَا رَأَيْتُ
كَأَنَّمَا عَمُودٌ وُضِعَ فِي رَوْضَةٍ خَضْرَاءَ فَنُصِبَ فِيهَا وَفِي
رَأْسِهَا عُرْوَةٌ وَفِي أَسْفَلِهَا مِنْصَفٌ وَالْمِنْصَفُ الْوَصِيفُ فَقِيلَ
ارْقَهْ فَرَقِيتُهُ حَتَّى أَخَذْتُ بِالْعُرْوَةِ فَقَصَصْتُهَا عَلَى رَسُولِ
اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَمُوتُ
عَبْدُ اللهِ وَهُوَ آخِذٌ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى.
কায়স
ইব্নু ‘উবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি এক মজলিসে ছিলাম। যেখানে সা‘দ ইব্নু মালিক (রাঃ) এবং ইব্নু 'উমার
(রাঃ)-ও ছিলেন। এ সময় ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু সালাম (রাঃ) ঐ পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকেরা
বলল, ঐ লোকটি জান্নাতবাসীদের একজন। আমি তাঁকে বললাম,লোকেরা এমন এমন বলছে। তিনি
বললেন, সুবহানাল্লাহ্! তাদের জন্য উচিত নয় মতামত ব্যক্ত করা, যে বিষয় সম্পর্কে
তাদের কোন জ্ঞান নেই। আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম, যেন একটা স্তম্ভ একটি সবুজ বাগানে
রাখা হয়েছে এবং সেটা যেখানে রাখা হয়েছে তার উপর ভাগে একটি রশি ছিল। আর নিচের দিকে
ছিল একজন খাদিম। ‘মিনসাফ’ অর্থ খাদিম। বলা হল, এ স্তম্ভ বেয়ে উপরে উঠ। আমি উপরের
দিকে উঠে রশিটি ধরে ফেললাম। এরপর এ স্বপ্ন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর কাছে বর্ণনা করেছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছিলেনঃ ‘আবদুল্লাহ্ মযবূত রশি ধরা অবস্থায় মারা যাবে। (আধুনিক
প্রকাশনী- ৬৫২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৮)
৯১/২০. অধ্যায় :
স্বপ্নের ভিতর মহিলার নিকাব
খুলে যাওয়া ।
৭০১১
عُبَيْدُ بْنُ
إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ
عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُرِيتُكِ فِي
الْمَنَامِ مَرَّتَيْنِ إِذَا رَجُلٌ يَحْمِلُكِ فِي سَرَقَةٍ مِنْ حَرِيرٍ
فَيَقُولُ هَذِهِ امْرَأَتُكَ فَأَكْشِفُهَا فَإِذَا هِيَ أَنْتِ فَأَقُولُ إِنْ
يَكُنْ هَذَا مِنْ عِنْدِ اللهِ يُمْضِهِ
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাকে আমায়
দু’বার স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। আমি দেখলাম, এক ব্যক্তি তোমাকে রেশমী এক টুকরা কাপড়ে
জড়িয়ে বয়ে নিয়ে আসছে আর বলছে ইনি আপনার স্ত্রী। আমি তার নিকাব উম্মোচন করে দেখতে
পাই যে ঐ মহিলাটি তুমিই এবং আমি বলেছি, যদি এটা আল্লাহ্র তরফ থেকে হয়ে থাকে তা
হলে তিনি তা সত্যে পরিণত করবেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৯)
৯১/২১. অধ্যায় :
স্বপ্নের ভিতর রেশমী কাপড়
দেখা ।
৭০১২
مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا
أَبُو مُعَاوِيَةَ أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ
رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُرِيتُكِ قَبْلَ أَنْ أَتَزَوَّجَكِ
مَرَّتَيْنِ رَأَيْتُ الْمَلَكَ يَحْمِلُكِ فِي سَرَقَةٍ مِنْ حَرِيرٍ فَقُلْتُ
لَهُ اكْشِفْ فَكَشَفَ فَإِذَا هِيَ أَنْتِ فَقُلْتُ إِنْ يَكُنْ هَذَا مِنْ
عِنْدِ اللهِ يُمْضِهِ ثُمَّ أُرِيتُكِ يَحْمِلُكِ فِي سَرَقَةٍ مِنْ حَرِيرٍ
فَقُلْتُ اكْشِفْ فَكَشَفَ فَإِذَا هِيَ أَنْتِ فَقُلْتُ إِنْ يَكُ هَذَا مِنْ
عِنْدِ اللهِ يُمْضِهِ.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাকে
(‘আয়িশাহকে) বিয়ে করার আগে দু’বার আমাকে দেখানো হয়েছে। আমি দেখেছি, একজন ফেরেশ্তা
তোমাকে রেশমী এক টুক্রা কাপড়ে জড়িয়ে বয়ে নিয়ে আসছে। আমি বললাম, আপনি নিকাব সরিয়ে
দিন। যখন সে নিকার সরিয়ে দিল তখন আমি দেখতে পেলাম যে, সেই মহিলা তুমিই। আমি তখন
বললাম, এটা যদি আল্লাহ্র তরফ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তিনি তা সত্যে পরিণত করবেন।
এরপর আবার আমাকে দেখানো হল যে, ফেরেশতা তোমাকে রেশমী এক টুকরা কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে
নিয়ে আসছে। আমি বললাম, আপনি (তার নিকাব) সরিয়ে দিন। সে তা সরিয়ে দিলে আমি দেখতে
পাই যে, সেই মহিলা তুমিই। তখন আমি বললাম : এটা যদি আল্লাহ্র তরফ থেকে হয়ে থাকে
তাহলে তিনি সত্যে পরিণত করবেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪০)
৯১/২২. অধ্যায় :
স্বপ্নে হতে চাবি দেখা ।
৭০১৩
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ
عُفَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ،
أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " بُعِثْتُ بِجَوَامِعِ
الْكَلِمِ، وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ، وَبَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُتِيتُ بِمَفَاتِيحِ
خَزَائِنِ الأَرْضِ، فَوُضِعَتْ فِي يَدِي ". قَالَ مُحَمَّدٌ
وَبَلَغَنِي أَنَّ جَوَامِعَ الْكَلِمِ أَنَّ اللَّهَ يَجْمَعُ الأُمُورَ
الْكَثِيرَةَ الَّتِي كَانَتْ تُكْتَبُ فِي الْكُتُبِ قَبْلَهُ فِي الأَمْرِ
الْوَاحِدِ وَالأَمْرَيْنِ. أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে,
আমাকে সংক্ষিপ্ত অথচ বিস্তারিত অর্থবহ বাণী দিয়ে পাঠানো হয়েছে এবং ভীতি সঞ্চারকারী
প্রভাব দিয়ে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। একবার আমি ঘুমিয়েছিলাম। আমার কাছে পৃথিবীর
ভান্ডারসমূহের চাবি পেশ করে আমার সামনে দেয়া হল। (আবূ ‘আবদুল্লাহ্) মুহাম্মাদ
বুখারী (রহঃ) বলেন, আমার কাছে এ কথা পৌঁছেছে যে, ‘সংক্ষিপ্ত অথচ বিশদ অর্থবহ
বাণী’-এর অর্থ হল, আল্লাহ্র অনেক বিষয় যা আগের কিতাবসমূহে লেখা হত একটি অথবা
দু’টি বিষয়ে বিন্যস্ত করে দেন। অথবা এর অর্থ তেমনি কিছু। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫২৮,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪১)
৯১/২৩. অধ্যায় :
স্বপ্নের মধ্যে হাতল অথবা
আংটায় ঝুলা ।
৭০১৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ
مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا أَزْهَرُ عَنْ ابْنِ عَوْنٍ ح و حَدَّثَنِي خَلِيفَةُ
حَدَّثَنَا مُعَاذٌ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ عَنْ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا قَيْسُ
بْنُ عُبَادٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَلاَمٍ قَالَ رَأَيْتُ كَأَنِّي فِي
رَوْضَةٍ وَوَسَطَ الرَّوْضَةِ عَمُودٌ فِي أَعْلَى الْعَمُودِ عُرْوَةٌ فَقِيلَ
لِي ارْقَهْ قُلْتُ لاَ أَسْتَطِيعُ فَأَتَانِي وَصِيفٌ فَرَفَعَ ثِيَابِي
فَرَقِيتُ فَاسْتَمْسَكْتُ بِالْعُرْوَةِ فَانْتَبَهْتُ وَأَنَا مُسْتَمْسِكٌ
بِهَا فَقَصَصْتُهَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ تِلْكَ
الرَّوْضَةُ رَوْضَةُ الإِسْلاَمِ وَذَلِكَ الْعَمُودُ عَمُودُ الإِسْلاَمِ
وَتِلْكَ الْعُرْوَةُ عُرْوَةُ الْوُثْقَى لاَ تَزَالُ مُسْتَمْسِكًا
بِالإِسْلاَمِ حَتَّى تَمُوتَ
আবদুল্লাহ্
ইব্নু সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন আমি একটি বাগানে আছি। বাগানের মাঝে একটি স্তম্ভ।
স্তম্ভের শিরোভাগে একটি হাতল। তখন আমাকে বলা হল, উপরের দিকে উঠ। আমি বললাম, পারছি
না। তখন আমার কাছে একজন খাদিম আসল এবং আমার কাপড় গুটিয়ে দিল। আমি উপরের দিকে উঠতে
উঠতে হাতলটি ধরে ফেললাম। হাতলটি ধরে থাকা অবস্থায় আমি জেগে গেলাম। তারপর এ স্বপ্ন
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি বললেনঃ ঐ
বাগান ইসলামের বাগান, ঐ স্তম্ভ ইসলামের স্তম্ভ, আর ঐ হাতল হল মযবুত হাতল। তুমি
মৃত্যু অবধি ইসলামকে শক্তভাবে ধরে থাকবে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫২৯, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬৫৪২)
৯১/২৪. অধ্যায় :
স্বপ্নের ভিতর নিজের বালিশের
নিচে তাঁবুর খুটিঁ দেখা ।
৯১/২৫. অধ্যায় :
স্বপ্নে মোটা রেশমী কাপড়
দেখা ও জান্নাতে প্রবেশ করতে দেখা ।
৭০১৫
مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ
حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ رَأَيْتُ
فِي الْمَنَامِ كَأَنَّ فِي يَدِي سَرَقَةً مِنْ حَرِيرٍ لاَ أَهْوِي بِهَا إِلَى
مَكَانٍ فِي الْجَنَّةِ إِلاَّ طَارَتْ بِي إِلَيْهِ فَقَصَصْتُهَا عَلَى
حَفْصَةَ.
ইব্নু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি স্বপ্নে দেখতে পাই, আমার হাতে যেন রেশমী এক টুক্রা কাপড়। জান্নাতের
যেখানেই তা আমি নিক্ষেপ করি তা আমাকে সেখানেই উড়িয়ে নিয়ে যায়। এ স্বপ্ন আমি হাফসাহ
(রাঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলাম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩০ প্রথমাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৬৫৪৩ প্রথমাংশ)
৭০১৬
فَقَصَّتْهَا حَفْصَةُ
عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ أَخَاكِ رَجُلٌ صَالِحٌ أَوْ
قَالَ إِنَّ عَبْدَ اللهِ رَجُلٌ صَالِحٌ.
হাফসাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আর
হাফসাহ (রাঃ) তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বর্ণনা করলেন।
তখন তিনি বললেনঃ তোমার ভাই একজন নেককার লোক। অথবা বললেনঃ ‘আবদুল্লাহ্ তো একজন
নেককার লোক। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩০ শেষাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৩ শেষাংশ)
৯১/২৬. অধ্যায় :
স্বপ্নে বন্ধন দেখা ।
৭০১৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ صَبَّاحٍ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، سَمِعْتُ عَوْفًا، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ سِيرِينَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم" إِذَا اقْتَرَبَ الزَّمَانُ لَمْ تَكَدْ تَكْذِبُ
رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ، وَرُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ
جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ. " قَالَ مُحَمَّدٌ وَأَنَا أَقُولُ هَذِهِ
قَالَ وَكَانَ يُقَالُ الرُّؤْيَا ثَلاَثٌ حَدِيثُ النَّفْسِ، وَتَخْوِيفُ
الشَّيْطَانِ، وَبُشْرَى مِنَ اللَّهِ، فَمَنْ رَأَى شَيْئًا يَكْرَهُهُ فَلاَ
يَقُصُّهُ عَلَى أَحَدٍ، وَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ. قَالَ وَكَانَ يُكْرَهُ
الْغُلُّ فِي النَّوْمِ، وَكَانَ يُعْجِبُهُمُ الْقَيْدُ، وَيُقَالُ الْقَيْدُ
ثَبَاتٌ فِي الدِّينِ. وَرَوَى قَتَادَةُ وَيُونُسُ وَهِشَامٌ وَأَبُو هِلاَلٍ
عَنِ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَأَدْرَجَهُ بَعْضُهُمْ كُلَّهُ فِي الْحَدِيثِ، وَحَدِيثُ عَوْفٍ أَبْيَنُ.
وَقَالَ يُونُسُ لاَ أَحْسِبُهُ إِلاَّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي
الْقَيْدِ. قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ لاَ تَكُونُ الأَغْلاَلُ إِلاَّ فِي
الأَعْنَاقِ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন ক্বিয়ামাত
নিকটবর্তী হবে তখন মু’মিনের স্বপ্ন খুব কমই অবাস্তবায়িত থাকবে। আর মু’মিনের স্বপ্ন
নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর নবুয়তের কোন কিছুই অসত্য হতে পারে না। রাবী
মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেন, আমি এমন বলছি। তিনি বলেন, এ কথা বলা হয় যে, স্বপ্ন তিন
প্রকার, মনের কল্পনা, শয়তানের তরফ থেকে ভয় দেখানো এবং আল্লাহ্র তরফ হতে সুসংবাদ।
তাই যদি কেউ অপছন্দনীয় কিছু দেখে তবে সে যেন তা কারো কাছে বর্ণনা না করে। বরং উঠে
যেন (নফল) সালাত আদায় করে নেয়। রাবী বলেন, স্বপ্নে শিকল দেখা অপছন্দনীয় মনে করা হত
এবং পায়ে বেড়ি দেখাকে তারা পছন্দ করতেন। বলা হত, পায়ে বেড়ি দেখার ব্যাখ্যা হলো
দ্বীনের ওপর অবিচল থাকা।
ক্বাতাদাহ, ইউনুস, হিশাম ও আবূ হিলাল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উক্ত হাদীসকে বর্ণনা করেছেন। আর কেউ কেউ এসবকে হাদীসের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত করেছেন। (অপরদিকে) আউফের বর্ণনা কৃত হাদীস সুস্পষ্ট। ইউনুস (রহঃ) বলেছেন, আমি বন্ধনের ব্যাখ্যাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তরফ থেকেই মনে করি। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ [ইমামু বুখারী (রহঃ) বলেন, শিকল গলাতেই বাঁধা হয়।[মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬৩, আহমাদ ১০৫৯৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৪)
ক্বাতাদাহ, ইউনুস, হিশাম ও আবূ হিলাল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উক্ত হাদীসকে বর্ণনা করেছেন। আর কেউ কেউ এসবকে হাদীসের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত করেছেন। (অপরদিকে) আউফের বর্ণনা কৃত হাদীস সুস্পষ্ট। ইউনুস (রহঃ) বলেছেন, আমি বন্ধনের ব্যাখ্যাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তরফ থেকেই মনে করি। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ [ইমামু বুখারী (রহঃ) বলেন, শিকল গলাতেই বাঁধা হয়।[মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬৩, আহমাদ ১০৫৯৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৪)
৯১/২৭. অধ্যায় :
স্বপ্নের ভিতর প্রবাহিত
ঝর্ণা দেখা ।
৭০১৮
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا
عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ خَارِجَةَ بْنِ زَيْدِ
بْنِ ثَابِتٍ عَنْ أُمِّ الْعَلاَءِ وَهِيَ امْرَأَةٌ مِنْ نِسَائِهِمْ بَايَعَتْ
رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ طَارَ لَنَا عُثْمَانُ بْنُ مَظْعُونٍ
فِي السُّكْنَى حِينَ اقْتَرَعَتْ الأَنْصَارُ عَلَى سُكْنَى الْمُهَاجِرِينَ
فَاشْتَكَى فَمَرَّضْنَاهُ حَتَّى تُوُفِّيَ ثُمَّ جَعَلْنَاهُ فِي أَثْوَابِهِ
فَدَخَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ رَحْمَةُ اللهِ
عَلَيْكَ أَبَا السَّائِبِ فَشَهَادَتِي عَلَيْكَ لَقَدْ أَكْرَمَكَ اللهُ قَالَ
وَمَا يُدْرِيكِ قُلْتُ لاَ أَدْرِي وَاللهِ قَالَ أَمَّا هُوَ فَقَدْ جَاءَهُ
الْيَقِينُ إِنِّي لأرْجُو لَهُ الْخَيْرَ مِنْ اللهِ وَاللهِ مَا أَدْرِي وَأَنَا
رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا يُفْعَلُ بِي وَلاَ بِكُمْ قَالَتْ أُمُّ
الْعَلاَءِ فَوَاللهِ لاَ أُزَكِّي أَحَدًا بَعْدَهُ قَالَتْ وَرَأَيْتُ
لِعُثْمَانَ فِي النَّوْمِ عَيْنًا تَجْرِي فَجِئْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ ذَاكِ عَمَلُهُ يَجْرِي لَهُ.
উম্মুল
‘আলা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যিনি
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর হাতে বায়‘আত করেছিলেন তিনি
তাদের একজন। তিনি বলেন, যখন মুহাজিরদের বাসস্থান নির্ধারণের জন্য আনসারগণ লটারী
দিলেন, তখন আমাদের ঘরে বসবাসের জন্য ‘উসমান ইব্নু মাযউন (রাঃ) আমাদের ভাগে পড়েন।
তিনি রোগগ্রস্ত হয়ে পড়লে আমরা তাঁর সেবা-শুশ্রূষা করি। অবশেষে তিনি মারা যান। এরপর
আমরা তাকে তার কাপড় দিয়েই কাফন পরিয়ে দেই। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আমাদের ঘরে আসলেন। আমি বললাম, হে আবূ সাঈব! তোমার ওপর আল্লাহ্র রহমত
হোক। তোমার বেলায় আমার সাক্ষ্য এই যে, আল্লাহ্ তোমাকে সম্মানিত করেছেন। তিনি
বললেনঃতুমি কী করে জানলে? আমি বললাম, আল্লাহ্র কসম! আমি জানি না। তিনি বললেনঃতার
তো মৃত্যু হয়ে গেছে, আমি তার জন্য আল্লাহ্র পক্ষ থেকে কল্যাণই আশা করছি। আল্লাহ্র
কসম! আমি আল্লাহ্র রসূল হওয়া সত্ত্বেও জানি না যে, আমার সঙ্গে এবং তোমাদের সঙ্গে
কী ব্যবহার করা হবে? উম্মুল আলা (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমি আর কক্ষনো কারো
পবিত্রতার প্রত্যয়ন করব না। উম্মুল আলা (রাঃ) বলেন, আমি স্বপ্নে ‘উসমান (রাঃ)-এর
জন্য প্রবাহিত ঝর্ণা দেখেছি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)–এর
কাছে এসে সেটা বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেনঃএটা তাঁর ‘আমাল’ তার জন্য জারি থাকবে।
(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৫)
৯১/২৮. অধ্যায় :
স্বপ্নে কূপ থেকে এমনভাবে
পানি তুলতে দেখা যে লোকদের পিপাসা মিটে যায় । নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) থেকে এ ব্যাপারে হাদীস আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন ।
৭০১৯
يَعْقُوبُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ بْنِ كَثِيرٍ حَدَّثَنَا شُعَيْبُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا صَخْرُ
بْنُ جُوَيْرِيَةَ حَدَّثَنَا نَافِعٌ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ حَدَّثَهُ قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَا أَنَا عَلَى بِئْرٍ أَنْزِعُ مِنْهَا
إِذْ جَاءَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ فَأَخَذَ أَبُو بَكْرٍ الدَّلْوَ فَنَزَعَ
ذَنُوبًا أَوْ ذَنُوبَيْنِ وَفِي نَزْعِهِ ضَعْفٌ فَغَفَرَ اللهُ لَهُ ثُمَّ
أَخَذَهَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ مِنْ يَدِ أَبِي بَكْرٍ فَاسْتَحَالَتْ فِي
يَدِهِ غَرْبًا فَلَمْ أَرَ عَبْقَرِيًّا مِنْ النَّاسِ يَفْرِي فَرْيَهُ حَتَّى
ضَرَبَ النَّاسُ بِعَطَنٍ.
ইব্নু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ একবার (আমি স্বপ্নে
দেখলাম) আমি একটি কূপের কাছে বসে কূপ থেকে পানি তুলছি। এমন সময় আমার কাছে আবূ বাক্র
ও ‘উমার আসল। আবূ বাক্র বালতিটি হাতে নিয়ে এক বা দু’বালতি পানি উঠাল। আর তার
উঠানোতে কিছুটা দুর্বলতা ছিল। আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করুন। এরপর আবূ বাক্রের হাত
থেকে ‘উমার তা নিল। তার হাতে বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল। আমি কোন শক্তিশালী লোককে
‘উমারের মত এত অভিজ্ঞ কর্মঠ দেখিনি। যার ফলে লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলো নিয়ে
বাসস্থানে পৌঁছে গেল। [১৫০](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৬)
[১৫০]
ইসলামের নিয়ম নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ সাধনকে এখানে বালতি দিয়ে পানি
উঠানো দ্বারা বুঝানো হয়েছে । আল্লাহর রসূলের পর প্রথম খলীফা আবূ বাকরের আমলে যুদ্ধ-বিদ্রোহের
কারণে খেলাফাত পরিচালনা ও তা থেকে সুফল লাভের ধারা বিঘ্নিত হয় । অত:পর ‘উমার (রাঃ)
দায়িত্ব গ্রহণ করলে তিনি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে খেলাফাত পরিচালনা করেন । ইসলামী হুকুমাত
রাজ্যে রাজ্যে বিস্তৃতি লাভ করে এবং মানুষেরা এর সুফল লাভ করে চরমভাবে তৃপ্ত হয় ।
৯১/২৯. অধ্যায় :
স্বপ্নে দুর্বলতার সঙ্গে কূপ
থেকে এক বা দু’বালতি পানি তুলতে দেখা ।
৭০২০
أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ
حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ
عَنْ رُؤْيَا النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ قَالَ
رَأَيْتُ النَّاسَ اجْتَمَعُوا فَقَامَ أَبُو بَكْرٍ فَنَزَعَ ذَنُوبًا أَوْ
ذَنُوبَيْنِ وَفِي نَزْعِهِ ضَعْفٌ وَاللهُ يَغْفِرُ لَهُ ثُمَّ قَامَ ابْنُ
الْخَطَّابِ فَاسْتَحَالَتْ غَرْبًا فَمَا رَأَيْتُ مِنْ النَّاسِ مَنْ يَفْرِي
فَرْيَهُ حَتَّى ضَرَبَ النَّاسُ بِعَطَنٍ.
সালিমের
পিতা [‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমার (রাঃ)] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
আবূ বাক্র ও ‘উমার (রাঃ) সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
স্বপ্ন বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
আমি লোকদেরকে জড় হতে দেখলাম। তখন আবূ বাক্র দাঁড়িয়ে এক বা দু’বালতি পানি উঠালো।
আর তার উঠানোতে কিছু দুর্বলতা ছিল। আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করুন। এরপর ইব্নুল
খাত্তাব দাঁড়াল। আর তার হাতে বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল। আমি লোকদের মধ্যে ‘উমারের মত
এতটা অভিজ্ঞ কর্মঠ কাউকে দেখিনি। যার ফলে লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলো নিয়ে
বাসস্থানে পৌঁছে গেল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৭)
৭০২১
سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ
حَدَّثَنِي اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِي
سَعِيدٌ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي عَلَى قَلِيبٍ وَعَلَيْهَا دَلْوٌ
فَنَزَعْتُ مِنْهَا مَا شَاءَ اللهُ ثُمَّ أَخَذَهَا ابْنُ أَبِي قُحَافَةَ
فَنَزَعَ مِنْهَا ذَنُوبًا أَوْ ذَنُوبَيْنِ وَفِي نَزْعِهِ ضَعْفٌ وَاللهُ
يَغْفِرُ لَهُ ثُمَّ اسْتَحَالَتْ غَرْبًا فَأَخَذَهَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ
فَلَمْ أَرَ عَبْقَرِيًّا مِنْ النَّاسِ يَنْزِعُ نَزْعَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ
حَتَّى ضَرَبَ النَّاسُ بِعَطَنٍ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একবার আমি ঘুমিয়ে
ছিলাম। দেখলাম, আমি একটি কূপের কাছে আছি। আর এর নিকট একটি বালতি আছে। আমি কূপ থেকে
পানি উঠালাম - যতখানি আল্লাহ্র ইচ্ছা ছিল। এরপর বালতিটি ইব্নু আবূ কুহাফা নিলেন।
তিনি কূপ থেকে এক বা দু’বালতি পানি উঠালেন। তার উঠানোতে কিছুটা দুর্বলতা ছিল।
আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করুন। তারপর বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল। তখন তা ‘উমার ইব্নুল
খাত্তাব নিলেন। আমি কোন শক্তিশালী লোককে ‘উমারের মত পানি উঠাতে দেখিনি। অবশেষে
লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলো নিয়ে বাসস্থানে পৌঁছে গেল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩৫,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৮)
৯১/৩০. অধ্যায় :
স্বপ্নে বিশ্রাম করতে দেখা ।
৭০২২
إِسْحَاقُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ هَمَّامٍ أَنَّهُ
سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَا
أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُ أَنِّي عَلَى حَوْضٍ أَسْقِي النَّاسَ فَأَتَانِي أَبُو
بَكْرٍ فَأَخَذَ الدَّلْوَ مِنْ يَدِي لِيُرِيحَنِي فَنَزَعَ ذَنُوبَيْنِ وَفِي
نَزْعِهِ ضَعْفٌ وَاللهُ يَغْفِرُ لَهُ فَأَتَى ابْنُ الْخَطَّابِ فَأَخَذَ مِنْهُ
فَلَمْ يَزَلْ يَنْزِعُ حَتَّى تَوَلَّى النَّاسُ وَالْحَوْضُ يَتَفَجَّرُ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি একবার ঘুমিয়ে
ছিলাম। দেখলাম, আমি একটি হাউযের নিকট হতে লোকদেরকে পানি পান করাচ্ছি। তখন আমার
কাছে আবূ বাক্র আসল। আমাকে বিশ্রাম দেয়ার জন্য আমার হাত থেকে সে বালতিটি নিয়ে গেল
এবং দু’বালতি পানি উঠাল। আর তার উঠানোতে কিছুটা দুর্বলতা ছিল। আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা
করুন। এরপর ইব্নুল খাত্তাব এসে তার নিকট হতে তা নিয়ে নিল এবং পানি উঠাতে থাকল।
অবশেষে লোকেরা (তৃপ্ত হয়ে) ফিরে গেল, অথচ হাউযের পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। (আধুনিক
প্রকাশনী- ৬৫৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৯)
৯১/৩১. অধ্যায় :
স্বপ্নে প্রাসাদ দেখা ।
৭০২৩
سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ
حَدَّثَنِي اللَّيْثُ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي
سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ بَيْنَا نَحْنُ جُلُوسٌ
عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي
فِي الْجَنَّةِ فَإِذَا امْرَأَةٌ تَتَوَضَّأُ إِلَى جَانِبِ قَصْرٍ قُلْتُ لِمَنْ
هَذَا الْقَصْرُ قَالُوا لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَذَكَرْتُ غَيْرَتَهُ
فَوَلَّيْتُ مُدْبِرًا قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَبَكَى عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ
ثُمَّ قَالَ أَعَلَيْكَ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللهِ أَغَارُ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে উপবিষ্ট
ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমি একবার নিদ্রিত ছিলাম। আমি আমাকে জান্নাতে দেখতে পেলাম।
একজন মহিলা একটি প্রাসাদের পাশে উযূ করছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এই প্রাসাদটি কার?
তারা বলল, ‘উমারের। তখন তার আত্মমর্যাদাবোধের কথা স্মরণ করলাম। তাই আমি ফিরে এলাম।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এ কথা শুনে ‘উমার ইব্নুল খাত্তাব (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং
বললেন, আমার পিতা-মাতা আপনার ওপর কুরবান হোক! হে আল্লাহ্র রসূল (আপনার কাছেও কি)
আমি আত্মমর্যাদাবোধ প্রদর্শন করব? (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৬৫৫০)
৭০২৪
عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ
حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلْتُ الْجَنَّةَ فَإِذَا أَنَا بِقَصْرٍ
مِنْ ذَهَبٍ فَقُلْتُ لِمَنْ هَذَا فَقَالُوا لِرَجُلٍ مِنْ قُرَيْشٍ فَمَا
مَنَعَنِي أَنْ أَدْخُلَهُ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ إِلاَّ مَا أَعْلَمُ مِنْ
غَيْرَتِكَ قَالَ وَعَلَيْكَ أَغَارُ يَا رَسُولَ اللهِ
জাবির
ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি জান্নাতে
প্রবেশ করলাম। আমি আমাকে একটা স্বর্ণের প্রাসাদের কাছে দেখতে পেলাম। তখন আমি
জিজ্ঞেস করলাম, এটা কার? তারা বলল, কুরাইশের এক লোকের। হে ইবনুল খাত্তাব! এ
প্রাসাদে ঢুকতে আমাকে কিছুই বাধা দিচ্ছিল না। কেবল তোমার আত্মমর্যাদাবোধ, যা আমার
জানা ছিল। ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার কাছেও কি আমি
আত্মমর্যাদাবোধ দেখাবো? (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫১)
৯১/৩২. অধ্যায় :
স্বপ্নে ওযূ করতে দেখা ।
৭০২৫
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ
الْمُسَيَّبِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ رَسُولِ
اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي فِي الْجَنَّةِ
فَإِذَا امْرَأَةٌ تَتَوَضَّأُ إِلَى جَانِبِ قَصْرٍ فَقُلْتُ لِمَنْ هَذَا
الْقَصْرُ فَقَالُوا لِعُمَرَ فَذَكَرْتُ غَيْرَتَهُ فَوَلَّيْتُ مُدْبِرًا
فَبَكَى عُمَرُ وَقَالَ عَلَيْكَ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللهِ
أَغَارُ
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক সময় আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট
উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমি একবার নিদ্রিত ছিলাম। আমি আমাকে জান্নাতে
দেখতে পেলাম এবং (দেখতে পেলাম) যে এক মহিলা একটি প্রাসাদের পাশে ওযূ করছে। আমি
বললাম : এ প্রাসাদটি কার? তারা বলল, উমারের। তখন তার আত্মমর্যাদাবোধের কথা মনে করে
আমি ফিরে এলাম। তা শুনে ‘উমার (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, আমার পিতা-মাতা আপনার
ওপর কুরবান হোক। হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার কাছেও কি আমি আত্মমর্যাদাবোধ দেখাব?
(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫২)
৯১/৩৩. অধ্যায় :
স্বপ্নে কা‘বা গৃহ তাওয়াফ
করা ।
৭০২৬
أَبُو الْيَمَانِ
أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عُمَرَ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي أَطُوفُ بِالْكَعْبَةِ فَإِذَا
رَجُلٌ آدَمُ سَبْطُ الشَّعَرِ بَيْنَ رَجُلَيْنِ يَنْطُفُ رَأْسُهُ مَاءً
فَقُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا ابْنُ مَرْيَمَ فَذَهَبْتُ أَلْتَفِتُ فَإِذَا رَجُلٌ
أَحْمَرُ جَسِيمٌ جَعْدُ الرَّأْسِ أَعْوَرُ الْعَيْنِ الْيُمْنَى كَأَنَّ
عَيْنَهُ عِنَبَةٌ طَافِيَةٌ قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا هَذَا الدَّجَّالُ
أَقْرَبُ النَّاسِ بِهِ شَبَهًا ابْنُ قَطَنٍ وَابْنُ قَطَنٍ رَجُلٌ مِنْ بَنِي
الْمُصْطَلِقِ مِنْ خُزَاعَةَ.
আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমার (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি একবার ঘুমিয়ে
ছিলাম। তখন আমি আমাকে কা‘বা গৃহ তাওয়াফরত অবস্থায় দেখতে পেলাম। এমন সময় সোজা
চুলওয়ালা একজন পুরুষকে দু’জন পুরুষের মাঝে দেখলাম, যার মাথা থেকে পানি ঝরছিল। আমি
জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? তারা বলল, ইব্নু মারইয়াম। এরপর আমি ফিরে আসতে লাগলাম। এ
সময় একজন লাল রঙ্গের মোটাসোটা, কোঁকড়ান চুলওয়ালা, ডান চোখ কানা ব্যক্তিকে দেখলাম।
তার চোখটি যেন ভাসমান আঙুর। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ ব্যক্তি কে? তারা বলল, এ হচ্ছে
দাজ্জাল। তার সঙ্গে সবচেয়ে সাদৃশ্যপূর্ণ লোক হল ইব্নু কাতান। আর ইব্নু কাতান হল
বনু মুস্তালিক গোত্রের খুযাআ বংশের একজন লোক। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪০, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৩)
৯১/৩৪. অধ্যায় :
স্বপ্নের ভিতর নিজের বাকী
পানীয় থেকে অন্যকে দেয়া ।
৭০২৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي
حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ،
قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " بَيْنَا
أَنَا نَائِمٌ أُتِيتُ بِقَدَحِ لَبَنٍ فَشَرِبْتُ مِنْهُ، حَتَّى إِنِّي لأَرَى
الرِّيَّ يَجْرِي، ثُمَّ أَعْطَيْتُ فَضْلَهُ عُمَرَ ". قَالُوا فَمَا
أَوَّلْتَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " الْعِلْمُ ".
আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমার থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি যে,
আমি একবার ঘুমিয়ে ছিলাম। আমি দেখলাম দুধের একটা পেয়ালা আমাকে দেয়া হল। তা থেকে আমি
(এত অধিক) পান করলাম যে, আমা হতে তৃপ্তির চিহ্ন প্রকাশিত হচ্ছিল। অতঃপর
(অবশিষ্টাংশ) উমরকে দিলাম। সহাবাগণ বললেন, এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী দিলেন হে
আল্লাহ্র রসূল? তিনি বললেনঃ ইল্ম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৬৫৫৪)
৯১/৩৫. অধ্যায় :
স্বপ্নে নিরাপদ মনে করা ও
ভীতি দূর হতে দেখা ।
৭০২৮
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ
سَعِيدٍ حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا صَخْرُ بْنُ جُوَيْرِيَةَ
حَدَّثَنَا نَافِعٌ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ قَالَ إِنَّ رِجَالاً مِنْ أَصْحَابِ
رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانُوا يَرَوْنَ الرُّؤْيَا عَلَى عَهْدِ
رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَيَقُصُّونَهَا عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله
عليه وسلم فَيَقُولُ فِيهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا شَاءَ اللهُ
وَأَنَا غُلاَمٌ حَدِيثُ السِّنِّ وَبَيْتِي الْمَسْجِدُ قَبْلَ أَنْ أَنْكِحَ
فَقُلْتُ فِي نَفْسِي لَوْ كَانَ فِيكَ خَيْرٌ لَرَأَيْتَ مِثْلَ مَا يَرَى هَؤُلاَءِ
فَلَمَّا اضْطَجَعْتُ ذَاتَ لَيْلَةٍ قُلْتُ اللهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ فِيَّ
خَيْرًا فَأَرِنِي رُؤْيَا فَبَيْنَمَا أَنَا كَذَلِكَ إِذْ جَاءَنِي مَلَكَانِ
فِي يَدِ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مِقْمَعَةٌ مِنْ حَدِيدٍ يُقْبِلاَنِ بِي إِلَى
جَهَنَّمَ وَأَنَا بَيْنَهُمَا أَدْعُو اللهَ اللهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ
جَهَنَّمَ ثُمَّ أُرَانِي لَقِيَنِي مَلَكٌ فِي يَدِهِ مِقْمَعَةٌ مِنْ حَدِيدٍ
فَقَالَ لَنْ تُرَاعَ نِعْمَ الرَّجُلُ أَنْتَ لَوْ كُنْتَ تُكْثِرُ الصَّلاَةَ
فَانْطَلَقُوا بِي حَتَّى وَقَفُوا بِي عَلَى شَفِيرِ جَهَنَّمَ فَإِذَا هِيَ
مَطْوِيَّةٌ كَطَيِّ الْبِئْرِ لَهُ قُرُونٌ كَقَرْنِ الْبِئْرِ بَيْنَ كُلِّ
قَرْنَيْنِ مَلَكٌ بِيَدِهِ مِقْمَعَةٌ مِنْ حَدِيدٍ وَأَرَى فِيهَا رِجَالاً
مُعَلَّقِينَ بِالسَّلاَسِلِ رُءُوسُهُمْ أَسْفَلَهُمْ عَرَفْتُ فِيهَا رِجَالاً
مِنْ قُرَيْشٍ فَانْصَرَفُوا بِي عَنْ ذَاتِ الْيَمِينِ.
ইব্নু
‘উমার থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশ ক’জন সহাবী
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে স্বপ্ন দেখতেন। অতঃপর
তারা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে তা বর্ণনা করতেন।
আর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যাখ্যা দিতেন যা আল্লাহ্
ইচ্ছা করতেন। আমি তখন অল্প বয়সের যুবক। আর বিয়ের আগে মাসজিদই ছিল আমার ঘর। আমি মনে
মনে নিজেকে সম্বোধন করে বললাম, যদি তোমার মধ্যে কোন কল্যাণ থাকত তাহলে তুমি তাদের
মত স্বপ্ন দেখতে। আমি এক রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে বললাম, হে আল্লাহ্! আপনি যদি
জানেন যে, আমার মধ্যে কোন কল্যাণ আছে তাহলে আমাকে কোন একটি স্বপ্ন দেখান। আমি ঐ
অবস্থায়ই (ঘুমিয়ে) থাকলাম। দেখলাম আমার কাছে দু’জন ফেরেশ্তা এসেছেন। তাদের
প্রত্যেকের হাতেই লোহার একটি করে হাতুড়ি। তারা আমাকে নিয়ে (জাহান্নামের দিকে)
এগোচ্ছে। আর আমি তাদের দু’জনের মাঝে থেকে আল্লাহ্র কাছে দু‘আ করছি, হে আল্লাহ্!
আমি জাহান্নাম থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এরপর আমাকে দেখান হল যে, একজন
ফেরেশ্তা আমার কাছে এসেছেন। তাঁর হাতে লোহার একটি হাতুড়ি। সে আমাকে বলল, তোমার
অবশ্যই কোন ভয় নেই। তুমি খুবই ভাল লোক, যদি অধিক করে সলাত আদায় করতে। তারা আমাকে
নিয়ে চলল, অবশেষে তারা আমাকে জাহান্নামের (ধারে এনে) দাঁড় করাল, (যা দেখতে) কূপের
মত গোল আকৃতির। আর কূপের মত এরও রয়েছে অনেক শিং। আর দু’শিং-এর মাঝখানে একজন ফেরেশ্তা,
যার হাতে লোহার একটি হাতুড়ি। আর আমি এতে কিছু লোককে (জাহান্নামে) শিকল পরিহিত
দেখলাম। তাদের মাথা ছিল নিচের দিকে। কুরাইশের এক ব্যক্তিকে সেখানে আমি চিনে
ফেললাম। অতঃপর তারা আমাকে ডান দিকে নিয়ে ফিরল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪২, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৫)
৭০২৯
فَقَصَصْتُهَا عَلَى
حَفْصَةَ فَقَصَّتْهَا حَفْصَةُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ
رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ عَبْدَ اللهِ رَجُلٌ صَالِحٌ لَوْ كَانَ
يُصَلِّي مِنْ اللَّيْلِ فَقَالَ نَافِعٌ فَلَمْ يَزَلْ بَعْدَ ذَلِكَ يُكْثِرُ
الصَّلاَةَ.
ইব্নু
‘উমার থেকে বর্ণিতঃ
এ
ঘটনা (স্বপ্ন) আমি হাফসাহ (রাঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলাম। আর হাফসাহ (রাঃ) তা
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বর্ণনা করলেন : তখন
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘আবদুল্লাহ্ তো নেক্কার
লোক। নাফি‘ (রহঃ) বলেন, এরপর থেকে তিনি সর্বদা অধিক করে (নফল) সলাত আদায় করতেন।
[১৫১](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪২ শেষাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৫)
[১৫১] হাদীসের
শিক্ষা :
(১) নফল বা তাহাজ্জুদ নামাযের ফযীলত ।
(২) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আব্দুল্লাহ্ ইবনু ওমরের শিষ্টাচারিতা ও তাঁকে ভয় করা-যার কারনে তিনি স্বীয় স্বপ্ন বর্ণনা করেননি ।
(৩) স্বপ্ন বর্ণনা করার ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্বের বৈধতা ।
(৪) মসজিদে রাত্রী যাপনের বৈধতা ।
(৫) সুন্নাত পরিহার সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন ।
(৬) কোন কোন স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রয়োজন হয় না । (ফাতহুল বারী)
(১) নফল বা তাহাজ্জুদ নামাযের ফযীলত ।
(২) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আব্দুল্লাহ্ ইবনু ওমরের শিষ্টাচারিতা ও তাঁকে ভয় করা-যার কারনে তিনি স্বীয় স্বপ্ন বর্ণনা করেননি ।
(৩) স্বপ্ন বর্ণনা করার ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্বের বৈধতা ।
(৪) মসজিদে রাত্রী যাপনের বৈধতা ।
(৫) সুন্নাত পরিহার সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন ।
(৬) কোন কোন স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রয়োজন হয় না । (ফাতহুল বারী)
৯১/৩৬. অধ্যায় :
স্বপ্নে ডান দিক গ্রহণ করতে
দেখা ।
৭০৩০
عَبْدُ اللهِ بْنُ
مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ
الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ كُنْتُ غُلاَمًا شَابًّا
عَزَبًا فِي عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَكُنْتُ أَبِيتُ فِي
الْمَسْجِدِ وَكَانَ مَنْ رَأَى مَنَامًا قَصَّهُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم فَقُلْتُ اللهُمَّ إِنْ كَانَ لِي عِنْدكَ خَيْرٌ فَأَرِنِي مَنَامًا
يُعَبِّرُهُ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَنِمْتُ فَرَأَيْتُ مَلَكَيْنِ
أَتَيَانِي فَانْطَلَقَا بِي فَلَقِيَهُمَا مَلَكٌ آخَرُ فَقَالَ لِي لَنْ تُرَاعَ
إِنَّكَ رَجُلٌ صَالِحٌ فَانْطَلَقَا بِي إِلَى النَّارِ فَإِذَا هِيَ مَطْوِيَّةٌ
كَطَيِّ الْبِئْرِ وَإِذَا فِيهَا نَاسٌ قَدْ عَرَفْتُ بَعْضَهُمْ فَأَخَذَا بِي
ذَاتَ الْيَمِينِ فَلَمَّا أَصْبَحْتُ ذَكَرْتُ ذَلِكَ لِحَفْصَةَ.
ইব্নু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে অবিবাহিত যুবক ছিলাম।
আমি মাসজিদেই রাত কাটাতাম। আর যারাই স্বপ্নে কিছু দেখত তারা তা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বর্ণনা করত। আমি বললাম, হে আল্লাহ্! যদি তোমার নিকট
আমার জন্য কোন কল্যাণ নিহিত থাকে, তাহলে আমাকে কোন স্বপ্ন দেখাও, যাতে রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান করেন। আমি
ঘুমিয়ে গেলাম, তখন দেখতে পেলাম যে দু’জন ফেরেশতা আমার কাছে এসে আমাকে নিয়ে চলল,
এরপর তাদের সঙ্গে অপর একজন ফেরেশতার সাক্ষাৎ ঘটল। সে আমাকে বলল, তোমার কোন ভয়ের
কারণ নেই। তুমি তো একজন নেক্কার লোক। এরপর তারা আমাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে চলল,
এটি যেন কূপের মত গোলাকার নির্মিত। আর এর মধ্যে বেশ কিছু লোক রয়েছে। এদের কতককে
আমি চিনতে পারলাম। এরপর তারা আমাকে ডানদিকে নিয়ে চলল। যখন সকাল হল, আমি হাফসাহ
(রাঃ)-এর নিকট সব ঘটনা উল্লেখ করলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪৩ প্রথমাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৬৫৫৬)
৭০৩১
فَزَعَمَتْ حَفْصَةُ
أَنَّهَا قَصَّتْهَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ عَبْدَ
اللهِ رَجُلٌ صَالِحٌ لَوْ كَانَ يُكْثِرُ الصَّلاَةَ مِنْ اللَّيْلِ قَالَ
الزُّهْرِيُّ وَكَانَ عَبْدُ اللهِ بَعْدَ ذَلِكَ يُكْثِرُ الصَّلاَةَ مِنْ
اللَّيْلِ.
হাফসাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পরে
হাফসাহ (রাঃ) বললেন যে, তিনি তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে
বর্ণনা করেছেন। আর তিনি বলেছেন: ‘আবদুল্লাহ্ নেক্কার লোক। (তিনি আরও বলেছেন) যদি
সে রাতে অধিক করে সলাত আদায় করত। যুহরী (রহঃ) বলেন, এরপর থেকে ‘আবদুল্লাহ্ (ইব্নু
‘উমার) (রাঃ) রাতে অধিক করে সলাত আদায় করতে লাগলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪৩ শেষাংশ,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৬)
৯১/৩৭. অধ্যায় :
স্বপ্নে পেয়ালা দেখা ।
৭০৩২
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ
اللهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم يَقُولُ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُتِيتُ بِقَدَحِ لَبَنٍ فَشَرِبْتُ مِنْهُ
ثُمَّ أَعْطَيْتُ فَضْلِي عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالُوا فَمَا أَوَّلْتَهُ يَا
رَسُولَ اللهِ قَالَ الْعِلْمَ.
আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমি
একবার ঘুমিয়ে ছিলাম। দেখলাম, আমার কাছে দুধের একটি পিয়ালা আনা হল। আমি তা থেকে পান
করলাম। এরপর আমার বাকী অংশ ‘উমার ইব্নু খাত্তাবকে দিলাম। সহাবাগণ বললেন, হে
আল্লাহ্র রসূল! আপনি এর ব্যাখ্যা কী দিলেন। তিনি বললেনঃ .....ইল্ম। (আধুনিক
প্রকাশনী- ৬৫৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৭)
৯১/৩৮. অধ্যায় :
স্বপ্নে কোন কিছু উড়তে দেখা
।
৭০৩৩
سَعِيدُ بْنُ مُحَمَّدٍ
أَبُو عَبْدِ اللهِ الْجَرْمِيُّ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ
حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ عُبَيْدَةَ بْنِ نَشِيطٍ قَالَ قَالَ
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ سَأَلْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ عَنْ
رُؤْيَا رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم الَّتِي ذَكَرَ.
উবাইদুল্লাহ্
ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সব স্বপ্নের উল্লেখ
করেছেন আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম।
(আধুনিক প্রকাশনী- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৮)
৭০৩৪
فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ
ذُكِرَ لِي أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ
رَأَيْتُ أَنَّهُ وُضِعَ فِي يَدَيَّ سِوَارَانِ مِنْ ذَهَبٍ فَفُظِعْتُهُمَا
وَكَرِهْتُهُمَا فَأُذِنَ لِي فَنَفَخْتُهُمَا فَطَارَا فَأَوَّلْتُهُمَا
كَذَّابَيْنِ يَخْرُجَانِ فَقَالَ عُبَيْدُ اللهِ أَحَدُهُمَا الْعَنْسِيُّ
الَّذِي قَتَلَهُ فَيْرُوزٌ بِالْيَمَنِ وَالْآخَرُ مُسَيْلِمَةُ
আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমার কাছে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি একবার ঘুমিয়ে ছিলাম, আমাকে দেখানো
হলো যে আমার হাত দু’টিতে স্বর্ণের দু’টি চুড়ি রাখা হয়েছে। আমি সে দু’টি কেটে
ফেললাম এবং অপছন্দ করলাম। অতঃপর আমাকে অনুমতি দেয়া হল, আমাই উভয়টিকে ফুঁ দিলাম,
ফলে উভয়টি উড়ে গেল। আমি চুড়ি দু’টির এ ব্যাখ্যা করলাম যে, দু’জন মিথ্যা নবুয়তের
দাবিদার বের হবে। ‘উবাইদুল্লাহ্ (রহঃ) বলেন, এদের একজন হল, আল আন্সী যাকে
ইয়ামানে ফায়রূয (রাঃ) কতল করেছেন। আর অন্যজন হল মুসাইলিমা।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪৫
, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৮)
৯১/৩৯. অধ্যায় :
স্বপ্নে গরু যব্হ হতে দেখা
।
৭০৩৫
مُحَمَّدُ بْنُ
الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدٍ عَنْ جَدِّهِ أَبِي بُرْدَةَ
عَنْ أَبِي مُوسَى أُرَاهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَأَيْتُ فِي
الْمَنَامِ أَنِّي أُهَاجِرُ مِنْ مَكَّةَ إِلَى أَرْضٍ بِهَا نَخْلٌ فَذَهَبَ
وَهَلِي إِلَى أَنَّهَا الْيَمَامَةُ أَوْ هَجَرٌ فَإِذَا هِيَ الْمَدِينَةُ
يَثْرِبُ وَرَأَيْتُ فِيهَا بَقَرًا وَاللهِ خَيْرٌ فَإِذَا هُمْ الْمُؤْمِنُونَ
يَوْمَ أُحُدٍ وَإِذَا الْخَيْرُ مَا جَاءَ اللهُ مِنْ الْخَيْرِ وَثَوَابِ
الصِّدْقِ الَّذِي آتَانَا اللهُ بِهِ بَعْدَ يَوْمِ بَدْرٍ.
আবূ
মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম যে আমি
মাক্কাহ থেকে এমন এক জায়গার দিকে হিজরাত করছি যেখানে খেজুর গাছ আছে। তখন আমার
ধারণা হল, সেই জায়গাটি 'ইয়ামামা' অথবা 'হাজার' হবে। অথচ সে জায়গাটি হল মাদীনাহ তথা
ইয়াসরিব। আর আমি (স্বপ্নে) সেখানে একটি গরু দেখলাম। আল্লাহ্র কসম! এটা কল্যাণকরই।
গরুর ব্যাখ্যা হল উহুদের যুদ্ধে (শাহাদাত প্রাপ্ত) মু’মিনগণ। আর কল্যাণের ব্যাখ্যা
হল এটাই, যে কল্যাণ আল্লাহ্ আমাদের দিয়েছেন এবং সত্যের বিনিময় যা আল্লাহ্ বদর
যুদ্ধের পর আমাদেরকে প্রদান করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৬৫৫৯)
৯১/৪০. অধ্যায় :
স্বপ্নে ফুঁ দেয়া ।
৭০৩৬
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ
بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا بِهِ أَبُو
هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " نَحْنُ
الآخِرُونَ السَّابِقُونَ ".
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমরা সর্বশেষ এবং সর্বপ্রথম। (আধুনিক
প্রকাশনী- ৬৫৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬০)
৭০৩৭
وَقَالَ رَسُولُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ إِذْ أُوتِيتُ خَزَائِنَ الأَرْضِ
فَوُضِعَ فِي يَدَيَّ سِوَارَانِ مِنْ ذَهَبٍ فَكَبُرَا عَلَيَّ وَأَهَمَّانِي
فَأُوحِيَ إِلَيَّ أَنْ انْفُخْهُمَا فَنَفَخْتُهُمَا فَطَارَا فَأَوَّلْتُهُمَا
الْكَذَّابَيْنِ اللَّذَيْنِ أَنَا بَيْنَهُمَا صَاحِبَ صَنْعَاءَ وَصَاحِبَ
الْيَمَامَةِ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেছেনঃ একবার আমি নিদ্রিত ছিলাম। দেখলাম
আমাকে পৃথিবীর ভান্ডারসমূহ দেয়া হয়েছে। আর আমার হাতে স্বর্ণের দু’টি চুড়ি রাখা হয়,
যা আমার কাছে কষ্টকর মনে হল। আর আমাকে চিন্তায় ফেলে দিল। তখন আমাকে নির্দেশ করা
হল, যেন আমি চুড়ি দু’টিতে ফুঁ দেই। তাই আমি ও দু’টিতে ফুঁ দিলাম (চুড়ি দু’টি উড়ে
গেল)। আমি চুড়ি দু’টির ব্যাখ্যা এভাবে করলাম যে, (নবুয়তের) দু’জন মিথ্যা দাবিদার
রয়েছে, যাদের মাঝখানে আমি আছি। সান‘আর বাসিন্দা (আলআনসী) ও ইয়ামামার বাসিন্দা
(মুসায়লিমা)।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬০)
৯১/৪১. অধ্যায় :
কেউ স্বপ্নে দেখল যে, সে
একদিক থেকে একটা জিনিস বের করে অন্য জায়গায় রেখেছে ।
৭০৩৮
إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ
اللهِ حَدَّثَنِي أَخِي عَبْدُ الْحَمِيدِ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ عَنْ
مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَأَيْتُ كَأَنَّ امْرَأَةً سَوْدَاءَ
ثَائِرَةَ الرَّأْسِ خَرَجَتْ مِنْ الْمَدِينَةِ حَتَّى قَامَتْ بِمَهْيَعَةَ
وَهِيَ الْجُحْفَةُ فَأَوَّلْتُ أَنَّ وَبَاءَ الْمَدِينَةِ نُقِلَ إِلَيْهَا.
সালিমার
পিতা ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি দেখেছি যেন এলোমেলো চুলওয়ালা একজন
কালো মহিলা মাদীনাহ থেকে বের হয়ে মাহইয়াআ নামক স্থানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে আর এটিকে
জুহ্ফা বলা হয়। আমি এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা করলাম যে, মাদীনাহর মহামারী সেখানে
স্থানান্তরিত হল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬১)
৯১/৪২. অধ্যায় :
স্বপ্নে কালো মহিলা দেখা ।
৭০৩৯
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي
بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا مُوسَى حَدَّثَنِي
سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ فِي رُؤْيَا النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم فِي الْمَدِينَةِ رَأَيْتُ امْرَأَةً سَوْدَاءَ ثَائِرَةَ
الرَّأْسِ خَرَجَتْ مِنْ الْمَدِينَةِ حَتَّى نَزَلَتْ بِمَهْيَعَةَ
فَتَأَوَّلْتُهَا أَنَّ وَبَاءَ الْمَدِينَةِ نُقِلَ إِلَى مَهْيَعَةَ وَهِيَ
الْجُحْفَةُ
আবদুল্লাহ্
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
মাদীনাহ সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্বপ্নের বর্ণনা
প্রসঙ্গে বলেন। তিনি বলেছেনঃ আমি দেখেছি এলোমেলো চুল ওয়ালা একজন কালো মহিলা মাদীনাহ
থেকে বের হয়েছে। অবশেষে মাহইয়ায়া নামক জায়গায় অবস্থান নিয়েছে। আমি এর ব্যাখ্যা
করলাম যে, মদীনার মহামারী মাহইয়া‘আহ তথা জুহ্ফা নামক জায়গায় স্থানান্তরিত
হল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬২)
৯১/৪৩. অধ্যায় :
স্বপ্নে এলোমেলো চুল ওয়ালা
মহিলা দেখা ।
৭০৪০
إِبْرَاهِيمُ بْنُ
الْمُنْذِرِ حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ
عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ رَأَيْتُ امْرَأَةً سَوْدَاءَ ثَائِرَةَ الرَّأْسِ خَرَجَتْ مِنْ
الْمَدِينَةِ حَتَّى قَامَتْ بِمَهْيَعَةَ فَأَوَّلْتُ أَنَّ وَبَاءَ الْمَدِينَةِ
نُقِلَ إِلَى مَهْيَعَةَ وَهِيَ الْجُحْفَةُ.
সালিমার
পিতা ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখেছি। এলোমেলো চুলওয়ালা
একজন কালো মহিলা মাদীনাহ থেকে বের হয়ে মাহইয়ায়া তথা জুহ্ফা নামক জায়গায় গিয়ে
থেমেছে। আমি এর ব্যাখ্যা করলাম যে, মদীনার মহামারী সেখানে স্থানান্তরিত হল।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৬৫৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬৩)
৯১/৪৪. অধ্যায় :
স্বপ্নে নিজেকে তরবারী
নাড়াচাড়া করতে দেখা ।
৭০৪১
مُحَمَّدُ بْنُ
الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ
أَبِي بُرْدَةَ عَنْ جَدِّهِ أَبِي بُرْدَةَ عَنْ أَبِي مُوسَى أُرَاهُ عَنْ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَأَيْتُ فِي رُؤْيَايَ أَنِّي هَزَزْتُ
سَيْفًا فَانْقَطَعَ صَدْرُهُ فَإِذَا هُوَ مَا أُصِيبَ مِنْ الْمُؤْمِنِينَ
يَوْمَ أُحُدٍ ثُمَّ هَزَزْتُهُ أُخْرَى فَعَادَ أَحْسَنَ مَا كَانَ فَإِذَا هُوَ
مَا جَاءَ اللهُ بِهِ مِنْ الْفَتْحِ وَاجْتِمَاعِ الْمُؤْمِنِينَ.
আবূ
মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্বপ্ন বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, তিনি
বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম একটা তরবারী নাড়াচাড়া করছি। আর এ মধ্যভাগ ভেঙ্গে গেল।
এর ব্যাখ্যা হল বিপদ, যা উহুদের যুদ্ধে মু’মিনদের ভাগ্যে ঘটেছে। আবার আমি তরবারিটি
নাড়লাম। এতে তরবারীটি আগের থেকে সুন্দর অবস্থায় ফিরে এল। এর ব্যাখ্যা হল আল্লাহ্র
দেয়া বিজয় ও মু’মিনদের ঐক্য। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬৪)
৯১/৪৫. অধ্যায় :
যে ব্যক্তি স্বীয় স্বপ্ন
বর্ণনায় মিথ্যা বলল ।
৭০৪২
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ
اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ
عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ تَحَلَّمَ بِحُلْمٍ لَمْ يَرَهُ
كُلِّفَ أَنْ يَعْقِدَ بَيْنَ شَعِيرَتَيْنِ وَلَنْ يَفْعَلَ وَمَنْ اسْتَمَعَ
إِلَى حَدِيثِ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ أَوْ يَفِرُّونَ مِنْهُ صُبَّ فِي
أُذُنِهِ الْآنُكُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمَنْ صَوَّرَ صُورَةً عُذِّبَ وَكُلِّفَ
أَنْ يَنْفُخَ فِيهَا وَلَيْسَ بِنَافِخٍ قَالَ سُفْيَانُ وَصَلَهُ لَنا أَيُّوبُ
وَقَالَ قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ عِكْرِمَةَ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَوْلَهُ مَنْ كَذَبَ فِي رُؤْيَاهُ وَقَالَ شُعْبَةُ عَنْ
أَبِي هَاشِمٍ الرُّمَّانِيِّ سَمِعْتُ عِكْرِمَةَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ
قَوْلَهُ مَنْ صَوَّرَ صُورَةً وَمَنْ تَحَلَّمَ وَمَنْ اسْتَمَعَ حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ خَالِدٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ
قَالَ مَنْ اسْتَمَعَ وَمَنْ تَحَلَّمَ وَمَنْ صَوَّرَ نَحْوَهُ تَابَعَهُ هِشَامٌ
عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَوْلَهُ.
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেছেন, যে লোক এমন স্বপ্ন দেখার ভান করল যা সে দেখেনি তাকে দু’টি যবের দানায় গিট
দেয়ার জন্য বাধ্য করা হবে। অথচ সে তা কখনও পারবে না। যে কেউ কোন এক দলের কথার দিকে
কান লাগাল। অথচ তারা এটা পছন্দ করে না অথবা বলেছেন, অথচ তারা তার থেকে পলায়নপর।
ক্বিয়ামাতের দিন তার উভয় কানে সীসা ঢেলে দেয়া হবে। আর যে কেউ প্রাণীর ছবি আঁকে
তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং তাতে প্রাণ ফুঁকে দেয়ার জন্য বাধ্য করা হবে। কিন্তু সে
প্রাণ ফুঁকতে পারবে না। সুফ্ইয়ান বলেছেন, আইউব এ হাদীসটি আমাদেরকে মওসুল রূপে
বর্ণনা করেছেন।
কুতাইবাহ (রহঃ) বলেন, আবূ আওয়ানা (রহঃ).....আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে তাঁর উক্তি বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি নিজের স্বপ্ন মিথ্যা বর্ণনা করে।
শু’বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে তাঁর উক্তি বর্ণনা করেন, যে কেউ ছবি আঁকে.....যে কেউ মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করে.....যে কেউ কান লাগায়.....।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। (তিনি বলেন) যে কেউ কান লাগাবে…..যে কেউ মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করবে.....যে কেউ ছবি আঁকবে.....অবশিষ্ট হাদীস একই রকম বর্ণনা করেছেন.....। হিশাম (রহঃ) ইকরামাহ থেকে ইব্নু ‘আব্বাস সূত্রে খালিদ এর অনুসরণ করেছেন। [১৫২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬৬)
কুতাইবাহ (রহঃ) বলেন, আবূ আওয়ানা (রহঃ).....আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে তাঁর উক্তি বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি নিজের স্বপ্ন মিথ্যা বর্ণনা করে।
শু’বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে তাঁর উক্তি বর্ণনা করেন, যে কেউ ছবি আঁকে.....যে কেউ মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করে.....যে কেউ কান লাগায়.....।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। (তিনি বলেন) যে কেউ কান লাগাবে…..যে কেউ মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করবে.....যে কেউ ছবি আঁকবে.....অবশিষ্ট হাদীস একই রকম বর্ণনা করেছেন.....। হিশাম (রহঃ) ইকরামাহ থেকে ইব্নু ‘আব্বাস সূত্রে খালিদ এর অনুসরণ করেছেন। [১৫২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬৬)
[১] এই হাদীসটিতে তিনটি হুকুম শামিল রয়েছে, যথা
:
(১) মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করা, (২) যে ব্যক্তি চায়, তার কথা কেউ শ্রবণ না করুক এমন কথা শ্রবণ করা এবং (৩) ছবি সংক্রান্ত।
ইমাম ত্ববারী মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা সম্পর্কে বলেন, এ ব্যাপারে শাস্তি দেয়ার ওয়াদা তীব্র হয়েছে। অথচ সজাগ থাকা অবস্থায় মিথ্যা বলা কখনও কখনও তার চাইতে অধিকতর মারাত্মক অন্যায়। যেমন : হত্যা, হাদ্দ অথবা সম্পদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়া। কারণ স্বপ্নের ব্যাপারে মিথ্যারোপ যেন আল্লাহর উপরেই মিথ্যারোপ করা যে আল্লাহ তাকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন অথচ তা সে দেখেনি। আর আল্লাহর উপর মিথ্যা বলা সৃষ্টিকুলের উপর মিথ্যা বলার চাইতে অধিকতর গুরুতর।
এর প্রমাণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
{وَيَقُولُ الْأَشْهَادُ هَؤُلاءِ الَّذِينَ كَذَبُوا عَلَى رَبِّهِمْ} (هود: من الآية১৮)
আর স্বপ্নের ব্যাপারে মিথ্যা বলা যেন প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর উপরেই মিথ্যা বলা। তার প্রমাণ, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন الرؤيا جزء من النبوة সুতরাং যা নবুওয়াতের অংশ তা তো আল্লাহর পক্ষ থেকেই হবে।
(১) মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করা, (২) যে ব্যক্তি চায়, তার কথা কেউ শ্রবণ না করুক এমন কথা শ্রবণ করা এবং (৩) ছবি সংক্রান্ত।
ইমাম ত্ববারী মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা সম্পর্কে বলেন, এ ব্যাপারে শাস্তি দেয়ার ওয়াদা তীব্র হয়েছে। অথচ সজাগ থাকা অবস্থায় মিথ্যা বলা কখনও কখনও তার চাইতে অধিকতর মারাত্মক অন্যায়। যেমন : হত্যা, হাদ্দ অথবা সম্পদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়া। কারণ স্বপ্নের ব্যাপারে মিথ্যারোপ যেন আল্লাহর উপরেই মিথ্যারোপ করা যে আল্লাহ তাকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন অথচ তা সে দেখেনি। আর আল্লাহর উপর মিথ্যা বলা সৃষ্টিকুলের উপর মিথ্যা বলার চাইতে অধিকতর গুরুতর।
এর প্রমাণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
{وَيَقُولُ الْأَشْهَادُ هَؤُلاءِ الَّذِينَ كَذَبُوا عَلَى رَبِّهِمْ} (هود: من الآية১৮)
আর স্বপ্নের ব্যাপারে মিথ্যা বলা যেন প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর উপরেই মিথ্যা বলা। তার প্রমাণ, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন الرؤيا جزء من النبوة সুতরাং যা নবুওয়াতের অংশ তা তো আল্লাহর পক্ষ থেকেই হবে।
৭০৪৩
عَلِيُّ بْنُ مُسْلِمٍ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللهِ
بْنِ دِينَارٍ مَوْلَى ابْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ مِنْ أَفْرَى الْفِرَى أَنْ يُرِيَ
عَيْنَيْهِ مَا لَمْ تَرَ.
ইব্নু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সবচেয়ে নিকৃষ্ট মিথ্যা হল আপন চক্ষু
দিয়ে এমন কিছু দেখার (দাবি করা) যা চক্ষুদয় দেখতে পায়নি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৫৪,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬৭)
৯১/৪৬. অধ্যায় :
পছন্দনীয় নয় স্বপ্নে এমন
কিছু দেখলে তা কারো কাছে না বলা এবং সে সম্পর্কে কোন আলোচনা না করা ।
৭০৪৪
سَعِيدُ بْنُ الرَّبِيعِ
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا
سَلَمَةَ يَقُولُ لَقَدْ كُنْتُ أَرَى الرُّؤْيَا فَتُمْرِضُنِي حَتَّى سَمِعْتُ
أَبَا قَتَادَةَ يَقُولُ وَأَنَا كُنْتُ لأرَى الرُّؤْيَا تُمْرِضُنِي حَتَّى
سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنْ
اللهِ فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يُحِبُّ فَلاَ يُحَدِّثْ بِهِ إِلاَّ مَنْ
يُحِبُّ وَإِذَا رَأَى مَا يَكْرَهُ فَلْيَتَعَوَّذْ بِاللهِ مِنْ شَرِّهَا وَمِنْ
شَرِّ الشَّيْطَانِ وَلْيَتْفِلْ ثَلاَثًا وَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا أَحَدًا
فَإِنَّهَا لَنْ تَضُرَّهُ.
আবূ
সালামাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যা আমাকে রোগাক্রান্ত করে ফেলত। অবশেষে আমি আবূ
ক্বাতাদাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যা আমাকে
রোগাক্রান্ত করে দিত। শেষে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে
শুনেছি, ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। তাই যখন কেউ পছন্দনীয় কোন
স্বপ্ন দেখে তখন এমন লোকের কাছেই বলবে, যাকে সে পছন্দ করে। আর যখন অপছন্দনীয় কোন
স্বপ্ন দেখে তখন যেন সে এর ক্ষতি ও শয়তানের ক্ষতি থেকে আল্লাহ্র আশ্রয় চায় এবং
তিনবার থু থু ফেলে আর সে যেন তা কারো কাছে বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন
ক্ষতি করবে না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬৮)
৭০৪৫
إِبْرَاهِيمُ بْنُ
حَمْزَةَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي حَازِمٍ وَالدَّرَاوَرْدِيُّ عَنْ يَزِيدَ بْنِ
عَبْدِ اللهِ بْنِ أُسَامَةَ بْنِ الْهَادِ اللَّيْثِيِّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ
خَبَّابٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صلى الله
عليه وسلم يَقُولُ إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ الرُّؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّهَا مِنْ
اللهِ فَلْيَحْمَدْ اللهَ عَلَيْهَا وَلْيُحَدِّثْ بِهَا وَإِذَا رَأَى غَيْرَ
ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ فَإِنَّمَا هِيَ مِنْ الشَّيْطَانِ فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ
شَرِّهَا وَلاَ يَذْكُرْهَا لِأَحَدٍ فَإِنَّهَا لَنْ تَضُرَّهُ.
আবূ
সা‘ঈদ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, যখন কেউ এমন
কোন স্বপ্ন দেখে যা সে পছন্দ করে, তবে মনে করবে যে তা আল্লাহ্র তরফ থেকে হয়েছে।
তখন যেন সে এজন্য আল্লাহ্র শোকর আদায় করে এবং তা বর্ণনা করে। আর যখন এর বিপরীত
কোন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে না, মনে করবে তা শয়তানের তরফ থেকে হয়েছে। তখন
যেন সে এর অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্র আশ্রয় চায় এবং তা কারো কাছে বর্ণনা না করে। তাহলে
এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না। [১৫৩](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৬৫৬৯)
[১] এই হাদীসের মধ্যে সরকারকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের
জন্য তার বিরুদ্ধে অন্দোলন করতে বের হওয়া পরিহার করার প্রমাণ রয়েছে। এমনকি সরকার যদি
অত্যাচারও করে। যেমন ত্ববারানীতে ইয়াযীদ ইবনু সালামা আল জু’ফী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
يارسول اله إن كان علينا أمراء يأخذون بالحق الذي علينا ويمنعونا الحق الذي لنا أنقاتلهم؟ قال لا، عليهم ما حملوا وعليكم ما حملته
এবং ইমাম মুসলিম মারফু সূত্রে উম্মু সালামাহ থেকে বর্ণনা করেন :
سيكون أمراء فيعرفون وينكرون فمن كره برئ ومن أنكر مسلم، لكن من رضي وتابع قالوا، أفلا نقاتلهم؟ قال: لا، ما صلوا
ফিকাহবীদগণ সকলে একমত হয়েছেন যে, বিজয়ী সরকারের আনুগত্য করা ও তার জিহাদে অংশগ্রহণ করা ওয়াজিব। আর সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বের হওয়ার চেয়ে তার আনুগত্য করা অতি উত্তম। কেননা আনুগত্যের মাধ্যমেই খুনা-খুনী রোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। কিন্তু যদি সরকারের মাঝে সুস্পষ্ট কুফর দেখা যায় তাহলে ঐ ক্ষেত্রে তার আনুগত্য করা জায়েয না। বরং তখন যাদের আন্দোলন করার শক্তি রয়েছে তাদের আন্দোলন করা ওয়াজিব। [এটিও শর্ত সাপেক্ষে]। (ফাতহুল বারী)
يارسول اله إن كان علينا أمراء يأخذون بالحق الذي علينا ويمنعونا الحق الذي لنا أنقاتلهم؟ قال لا، عليهم ما حملوا وعليكم ما حملته
এবং ইমাম মুসলিম মারফু সূত্রে উম্মু সালামাহ থেকে বর্ণনা করেন :
سيكون أمراء فيعرفون وينكرون فمن كره برئ ومن أنكر مسلم، لكن من رضي وتابع قالوا، أفلا نقاتلهم؟ قال: لا، ما صلوا
ফিকাহবীদগণ সকলে একমত হয়েছেন যে, বিজয়ী সরকারের আনুগত্য করা ও তার জিহাদে অংশগ্রহণ করা ওয়াজিব। আর সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বের হওয়ার চেয়ে তার আনুগত্য করা অতি উত্তম। কেননা আনুগত্যের মাধ্যমেই খুনা-খুনী রোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। কিন্তু যদি সরকারের মাঝে সুস্পষ্ট কুফর দেখা যায় তাহলে ঐ ক্ষেত্রে তার আনুগত্য করা জায়েয না। বরং তখন যাদের আন্দোলন করার শক্তি রয়েছে তাদের আন্দোলন করা ওয়াজিব। [এটিও শর্ত সাপেক্ষে]। (ফাতহুল বারী)
৯১/৪৭. অধ্যায় :
ভুল ব্যাখ্যাকারীর ব্যখ্যাকে
প্রথমেই চূড়ান্ত বলে মনে না করা ।
৭০৪৬
حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ
بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ
اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله
عنهما ـ كَانَ يُحَدِّثُ أَنَّ رَجُلاً أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ إِنِّي رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ فِي الْمَنَامِ ظُلَّةً تَنْطِفُ السَّمْنَ
وَالْعَسَلَ، فَأَرَى النَّاسَ يَتَكَفَّفُونَ مِنْهَا فَالْمُسْتَكْثِرُ
وَالْمُسْتَقِلُّ، وَإِذَا سَبَبٌ وَاصِلٌ مِنَ الأَرْضِ إِلَى السَّمَاءِ،
فَأَرَاكَ أَخَذْتَ بِهِ فَعَلَوْتَ، ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ آخَرُ فَعَلاَ
بِهِ، ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ آخَرُ فَعَلاَ بِهِ ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ
آخَرُ فَانْقَطَعَ ثُمَّ وُصِلَ. فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ يَا رَسُولَ اللَّهِ
بِأَبِي أَنْتَ وَاللَّهِ لَتَدَعَنِّي فَأَعْبُرَهَا. فَقَالَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم " اعْبُرْ ". قَالَ أَمَّا الظُّلَّةُ
فَالإِسْلاَمُ، وَأَمَّا الَّذِي يَنْطِفُ مِنَ الْعَسَلِ وَالسَّمْنِ
فَالْقُرْآنُ حَلاَوَتُهُ تَنْطُفُ، فَالْمُسْتَكْثِرُ مِنَ الْقُرْآنِ
وَالْمُسْتَقِلُّ، وَأَمَّا السَّبَبُ الْوَاصِلُ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ
فَالْحَقُّ الَّذِي أَنْتَ عَلَيْهِ تَأْخُذُ بِهِ فَيُعْلِيكَ اللَّهُ، ثُمَّ
يَأْخُذُ بِهِ رَجُلٌ مِنْ بَعْدِكَ فَيَعْلُو بِهِ، ثُمَّ يَأْخُذُ رَجُلٌ آخَرُ
فَيَعْلُو بِهِ، ثُمَّ يَأْخُذُهُ رَجُلٌ آخَرُ فَيَنْقَطِعُ بِهِ ثُمَّ يُوَصَّلُ
لَهُ فَيَعْلُو بِهِ، فَأَخْبِرْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ بِأَبِي أَنْتَ أَصَبْتُ
أَمْ أَخْطَأْتُ. قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَصَبْتَ
بَعْضًا وَأَخْطَأْتَ بَعْضًا ". قَالَ فَوَاللَّهِ لَتُحَدِّثَنِّي بِالَّذِي
أَخْطَأْتُ. قَالَ " لاَ تُقْسِمْ ".
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক লোক রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল,
আমি গত রাতে স্বপ্নে একখণ্ড মেঘ দেখলাম, যা থেকে ঘি ও মধু ঝরছে। আমি লোকদেরকে
দেখলাম তারা তা থেকে তুলে নিচ্ছে। কেউ অধিক পরিমাণ আবার কেউ কম পরিমাণ। আর দেখলাম,
একটা রশি যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত মিলে রয়েছে। আমি দেখলাম আপনি তা ধরে উপরে উঠছেন।
তারপর অন্য এক লোক তা ধরল ও এর সাহায্যে উপরে উঠে গেল। এরপর আরেক লোক তা ধরে এর
দ্বারা উপরে উঠে গেল। এরপর আরেক লোক তা ধরল। কিন্তু তা ছিঁড়ে গেল। পুনরায় তা জোড়া
লেগে গেল। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার প্রতি আমার পিতা
কুরবান হোক! আল্লাহ্র কসম! আপনি অবশ্যই আমাকে এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ
দিবেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি এর ব্যাখ্যা দাও। আবূ
বকর (রাঃ) বললেন, মেঘের ব্যাখ্যা হল ইসলাম। আর তার থেকে যে ঘি ও মধু ঝরছে তা হল
কুরআন যার মিষ্টতা ঝরছে। কুরআন থেকে কেউ বেশি সংগ্রহ করছে, আর কেউ কম। আসমান থেকে
যমীন পর্যন্ত ঝুলন্ত দড়িটি হচ্ছে ঐ হক (মহাসত্য) যার উপর আপনি প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন।
আপনি তা ধরবেন, আর আল্লাহ্ আপনাকে উচ্চে উঠাবেন। আপনার পরে আরেকজন তা ধরবে। ফলে এর
দ্বারা সে উচ্চে উঠবে। অতঃপর আরেকজন তা ধরে এর মাধ্যমে সে উচ্চে উঠবে। এরপর আরেকজন
তা ধরবে। কিন্তু তা ছিঁড়ে যাবে। পুনরায় তা জোড়া লেগে যাবে, ফলে সে এর দ্বারা উচ্চে
উঠবে। হে আল্লাহ্র রসূল! আমার পিতা আপনার উপর কুরবান হোক। আমাকে বলুন, আমি ঠিক
বলেছি, না ভুল? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কিছু ঠিক বলেছ। আর
কিছু ভুল বলেছ। তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্র কসম! আপনি অবশ্যই আমাকে
বলে দিবেন যা আমি ভুল করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কসম
করো না।[মুসলিম ৪২/৩, হাঃ ২২৬৯, আহমাদ ১৮৯৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৫৭, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬৫৭০)
৯১/৪৮. অধ্যায় :
ফাজ্রের সলাতের পরে
স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেয়া
৭০৪৭
مُؤَمَّلُ بْنُ هِشَامٍ
أَبُو هِشَامٍ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا عَوْفٌ
حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ حَدَّثَنَا سَمُرَةُ بْنُ جُنْدُبٍ قَالَ كَانَ رَسُولُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم مِمَّا يُكْثِرُ أَنْ يَقُولَ لِأَصْحَابِهِ هَلْ رَأَى
أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنْ رُؤْيَا قَالَ فَيَقُصُّ عَلَيْهِ مَنْ شَاءَ اللهُ أَنْ
يَقُصَّ وَإِنَّهُ قَالَ ذَاتَ غَدَاةٍ إِنَّهُ أَتَانِي اللَّيْلَةَ آتِيَانِ
وَإِنَّهُمَا ابْتَعَثَانِي وَإِنَّهُمَا قَالاَ لِي انْطَلِقْ وَإِنِّي
انْطَلَقْتُ مَعَهُمَا وَإِنَّا أَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُضْطَجِعٍ وَإِذَا آخَرُ
قَائِمٌ عَلَيْهِ بِصَخْرَةٍ وَإِذَا هُوَ يَهْوِي بِالصَّخْرَةِ لِرَأْسِهِ
فَيَثْلَغُ رَأْسَهُ فَيَتَهَدْهَدُ الْحَجَرُ هَا هُنَا فَيَتْبَعُ الْحَجَرَ
فَيَأْخُذُهُ فَلاَ يَرْجِعُ إِلَيْهِ حَتَّى يَصِحَّ رَأْسُهُ كَمَا كَانَ ثُمَّ
يَعُودُ عَلَيْهِ فَيَفْعَلُ بِهِ مِثْلَ مَا فَعَلَ الْمَرَّةَ الْأُولَى قَالَ
قُلْتُ لَهُمَا سُبْحَانَ اللهِ مَا هَذَانِ قَالَ قَالاَ لِي انْطَلِقْ انْطَلِقْ
قَالَ فَانْطَلَقْنَا فَأَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُسْتَلْقٍ لِقَفَاهُ وَإِذَا
آخَرُ قَائِمٌ عَلَيْهِ بِكَلُّوبٍ مِنْ حَدِيدٍ وَإِذَا هُوَ يَأْتِي أَحَدَ
شِقَّيْ وَجْهِهِ فَيُشَرْشِرُ شِدْقَهُ إِلَى قَفَاهُ وَمَنْخِرَهُ إِلَى قَفَاهُ
وَعَيْنَهُ إِلَى قَفَاهُ قَالَ وَرُبَّمَا قَالَ أَبُو رَجَاءٍ فَيَشُقُّ قَالَ
ثُمَّ يَتَحَوَّلُ إِلَى الْجَانِبِ الْآخَرِ فَيَفْعَلُ بِهِ مِثْلَ مَا فَعَلَ
بِالْجَانِبِ الأَوَّلِ فَمَا يَفْرُغُ مِنْ ذَلِكَ الْجَانِبِ حَتَّى يَصِحَّ
ذَلِكَ الْجَانِبُ كَمَا كَانَ ثُمَّ يَعُودُ عَلَيْهِ فَيَفْعَلُ مِثْلَ مَا
فَعَلَ الْمَرَّةَ الْأُولَى قَالَ قُلْتُ سُبْحَانَ اللهِ مَا هَذَانِ قَالَ
قَالاَ لِي انْطَلِقْ انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا فَأَتَيْنَا عَلَى مِثْلِ
التَّنُّورِ قَالَ فَأَحْسِبُ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ فَإِذَا فِيهِ لَغَطٌ
وَأَصْوَاتٌ قَالَ فَاطَّلَعْنَا فِيهِ فَإِذَا فِيهِ رِجَالٌ وَنِسَاءٌ عُرَاةٌ
وَإِذَا هُمْ يَأْتِيهِمْ لَهَبٌ مِنْ أَسْفَلَ مِنْهُمْ فَإِذَا أَتَاهُمْ ذَلِكَ
اللهَبُ ضَوْضَوْا قَالَ قُلْتُ لَهُمَا مَا هَؤُلاَءِ قَالَ قَالاَ لِي انْطَلِقْ
انْطَلِقْ قَالَ فَانْطَلَقْنَا فَأَتَيْنَا عَلَى نَهَرٍ حَسِبْتُ أَنَّهُ كَانَ
يَقُولُ أَحْمَرَ مِثْلِ الدَّمِ وَإِذَا فِي النَّهَرِ رَجُلٌ سَابِحٌ يَسْبَحُ
وَإِذَا عَلَى شَطِّ النَّهَرِ رَجُلٌ قَدْ جَمَعَ عِنْدَهُ حِجَارَةً كَثِيرَةً
وَإِذَا ذَلِكَ السَّابِحُ يَسْبَحُ مَا يَسْبَحُ ثُمَّ يَأْتِي ذَلِكَ الَّذِي
قَدْ جَمَعَ عِنْدَهُ الْحِجَارَةَ فَيَفْغَرُ لَهُ فَاهُ فَيُلْقِمُهُ حَجَرًا
فَيَنْطَلِقُ يَسْبَحُ ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَيْهِ كُلَّمَا رَجَعَ إِلَيْهِ فَغَرَ
لَهُ فَاهُ فَأَلْقَمَهُ حَجَرًا قَالَ قُلْتُ لَهُمَا مَا هَذَانِ قَالَ قَالاَ
لِي انْطَلِقْ انْطَلِقْ قَالَ فَانْطَلَقْنَا فَأَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ كَرِيهِ
الْمَرْآةِ كَأَكْرَهِ مَا أَنْتَ رَاءٍ رَجُلاً مَرْآةً وَإِذَا عِنْدَهُ نَارٌ
يَحُشُّهَا وَيَسْعَى حَوْلَهَا قَالَ قُلْتُ لَهُمَا مَا هَذَا قَالَ قَالاَ لِي
انْطَلِقْ انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا فَأَتَيْنَا عَلَى رَوْضَةٍ مُعْتَمَّةٍ
فِيهَا مِنْ كُلِّ لَوْنِ الرَّبِيعِ وَإِذَا بَيْنَ ظَهْرَيْ الرَّوْضَةِ رَجُلٌ
طَوِيلٌ لاَ أَكَادُ أَرَى رَأْسَهُ طُولاً فِي السَّمَاءِ وَإِذَا حَوْلَ
الرَّجُلِ مِنْ أَكْثَرِ وِلْدَانٍ رَأَيْتُهُمْ قَطُّ قَالَ قُلْتُ لَهُمَا مَا
هَذَا مَا هَؤُلاَءِ قَالَ قَالاَ لِي انْطَلِقْ انْطَلِقْ قَالَ فَانْطَلَقْنَا
فَانْتَهَيْنَا إِلَى رَوْضَةٍ عَظِيمَةٍ لَمْ أَرَ رَوْضَةً قَطُّ أَعْظَمَ
مِنْهَا وَلاَ أَحْسَنَ قَالَ قَالاَ لِي ارْقَ فِيهَا قَالَ فَارْتَقَيْنَا
فِيهَا فَانْتَهَيْنَا إِلَى مَدِينَةٍ مَبْنِيَّةٍ بِلَبِنِ ذَهَبٍ وَلَبِنِ
فِضَّةٍ فَأَتَيْنَا بَابَ الْمَدِينَةِ فَاسْتَفْتَحْنَا فَفُتِحَ لَنَا
فَدَخَلْنَاهَا فَتَلَقَّانَا فِيهَا رِجَالٌ شَطْرٌ مِنْ خَلْقِهِمْ كَأَحْسَنِ
مَا أَنْتَ رَاءٍ وَشَطْرٌ كَأَقْبَحِ مَا أَنْتَ رَاءٍ قَالَ قَالاَ لَهُمْ
اذْهَبُوا فَقَعُوا فِي ذَلِكَ النَّهَرِ قَالَ وَإِذَا نَهَرٌ مُعْتَرِضٌ يَجْرِي
كَأَنَّ مَاءَهُ الْمَحْضُ فِي الْبَيَاضِ فَذَهَبُوا فَوَقَعُوا فِيهِ ثُمَّ
رَجَعُوا إِلَيْنَا قَدْ ذَهَبَ ذَلِكَ السُّوءُ عَنْهُمْ فَصَارُوا فِي أَحْسَنِ
صُورَةٍ قَالَ قَالاَ لِي هَذِهِ جَنَّةُ عَدْنٍ وَهَذَاكَ مَنْزِلُكَ قَالَ
فَسَمَا بَصَرِي صُعُدًا فَإِذَا قَصْرٌ مِثْلُ الرَّبَابَةِ الْبَيْضَاءِ قَالَ
قَالاَ لِي هَذَاكَ مَنْزِلُكَ قَالَ قُلْتُ لَهُمَا بَارَكَ اللهُ فِيكُمَا
ذَرَانِي فَأَدْخُلَهُ قَالاَ أَمَّا الْآنَ فَلاَ وَأَنْتَ دَاخِلَهُ قَالَ
قُلْتُ لَهُمَا فَإِنِّي قَدْ رَأَيْتُ مُنْذُ اللَّيْلَةِ عَجَبًا فَمَا هَذَا
الَّذِي رَأَيْتُ قَالَ قَالاَ لِي أَمَا إِنَّا سَنُخْبِرُكَ أَمَّا الرَّجُلُ
الأَوَّلُ الَّذِي أَتَيْتَ عَلَيْهِ يُثْلَغُ رَأْسُهُ بِالْحَجَرِ فَإِنَّهُ
الرَّجُلُ يَأْخُذُ الْقُرْآنَ فَيَرْفُضُهُ وَيَنَامُ عَنْ الصَّلاَةِ
الْمَكْتُوبَةِ وَأَمَّا الرَّجُلُ الَّذِي أَتَيْتَ عَلَيْهِ يُشَرْشَرُ شِدْقُهُ
إِلَى قَفَاهُ وَمَنْخِرُهُ إِلَى قَفَاهُ وَعَيْنُهُ إِلَى قَفَاهُ فَإِنَّهُ
الرَّجُلُ يَغْدُو مِنْ بَيْتِهِ فَيَكْذِبُ الْكَذْبَةَ تَبْلُغُ الْآفَاقَ
وَأَمَّا الرِّجَالُ وَالنِّسَاءُ الْعُرَاةُ الَّذِينَ فِي مِثْلِ بِنَاءِ
التَّنُّورِ فَإِنَّهُمْ الزُّنَاةُ وَالزَّوَانِي وَأَمَّا الرَّجُلُ الَّذِي أَتَيْتَ
عَلَيْهِ يَسْبَحُ فِي النَّهَرِ وَيُلْقَمُ الْحَجَرَ فَإِنَّهُ آكِلُ الرِّبَا
وَأَمَّا الرَّجُلُ الْكَرِيهُ الْمَرْآةِ الَّذِي عِنْدَ النَّارِ يَحُشُّهَا
وَيَسْعَى حَوْلَهَا فَإِنَّهُ مَالِكٌ خَازِنُ جَهَنَّمَ وَأَمَّا الرَّجُلُ
الطَّوِيلُ الَّذِي فِي الرَّوْضَةِ فَإِنَّهُ إِبْرَاهِيمُ صلى الله عليه وسلم
وَأَمَّا الْوِلْدَانُ الَّذِينَ حَوْلَهُ فَكُلُّ مَوْلُودٍ مَاتَ عَلَى
الْفِطْرَةِ قَالَ فَقَالَ بَعْضُ الْمُسْلِمِينَ يَا رَسُولَ اللهِ وَأَوْلاَدُ
الْمُشْرِكِينَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَوْلاَدُ
الْمُشْرِكِينَ وَأَمَّا الْقَوْمُ الَّذِينَ كَانُوا شَطْرٌ مِنْهُمْ حَسَنًا
وَشَطْرٌ قَبِيحًا فَإِنَّهُمْ قَوْمٌ خَلَطُوا عَمَلاً صَالِحًا وَآخَرَ سَيِّئًا
تَجَاوَزَ اللهُ عَنْهُمْ.
সামুরাহ
ইব্নু জুনদাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রায়ই তাঁর সহাবীদেরকে
বলতেন, তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? রাবী বলেন, যাদের ক্ষেত্রে আল্লাহ্র
ইচ্ছা, তারা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে স্বপ্ন
বর্ণনা করতেন। তিনি একদিন সকালে আমাদেরকে বললেনঃ গত রাতে আমার কাছে দু’জন আগন্তুক
আসল। তারা আমাকে উঠাল। আর আমাকে বলল, চলুন। আমি তাদের সঙ্গে চললাম। আমরা কাত হয়ে
শুয়ে থাকা এক লোকের কাছে আসলাম। দেখলাম, অন্য এক লোক তার নিকট পাথর নিয়ে দাঁড়িয়ে
রয়েছে। সে তার মাথায় পাথর নিক্ষেপ করছে। ফলে তার মাথা ফেটে যাচ্ছে। আর পাথর নিচে
গিয়ে পড়ছে। এরপর আবার সে পাথরটি অনুসরণ করে তা আবার নিয়ে আসছে। ফিরে আসতে না আসতেই
লোকটির মাথা আগের মত আবার ভাল হয়ে যায়। ফিরে এসে আবার তেমনি আচরণ করে, যা পূর্বে
প্রথমবার করেছিল। তিনি বলেন, আমি তাদের (সাথীদ্বয়কে) বললাম, সুবহানআল্লাহ্! এরা কারা?
তিনি বললেন, তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন। তিনি বলেন, আমরা চললাম, এরপর আমরা চিৎ
হয়ে শোয়া এক লোকের কাছে আসলাম। এখানেও দেখলাম, তার নিকট এক লোক লোহার আঁকড়া নিয়ে
দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর সে তার চেহারার একদিকে এসে এটা দ্বারা মুখমণ্ডলের একদিক মাথার
পিছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরূপভাবে নাসারন্ধ্র, চোখ ও মাথার পিছন দিক পর্যন্ত চিরে
ফেলছে। আওফ (রহঃ) বলেন, আবূ রাজা (রহঃ) কোন কোন সময় ‘ইয়ুশারশিরু’ শব্দের পরিবর্তে
‘ইয়াশুক্কু’ শব্দ বলতেন। এরপর ঐ লোকটি শায়িত লোকটির অপরদিকে যায় এবং প্রথম দিকের
সঙ্গে যেমন আচরণ করেছে তেমনি আচরণই অপরদিকের সঙ্গেও করে। ঐ দিক হতে অবসর হতে না
হতেই প্রথম দিকটি আগের মত ভাল হয়ে যায়। তারপর আবার প্রথমবারের মত আচরণ করে। তিনি
বলেনঃ আমি বললাম, সুবহানআল্লাহ্! এরা কারা? তিনি বলেন, তারা আমাকে বলল, চলুন,
চলুন। আমরা চললাম এবং চুলার মত একটি গর্তের কাছে পৌঁছলাম। রাবী বলেন, আমার মনে হয়
যেন তিনি বলেছিলেন, আর তথায় শোরগোলের শব্দ ছিল। তিনি বলেন, আমরা তাতে উঁকি মারলাম,
দেখলাম তাতে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী ও পুরুষ রয়েছে। আর নিচ থেকে বের হওয়া আগুনের
লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে। যখনই লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করে, তখনই
তারা উচ্চস্বরে চিৎকার করে উঠে। তিনি বলেন, আমি তাদেরকে বললাম, এরা কারা? তারা
আমাকে বলল, চলুন, চলুন। তিনি বলেন, আমরা চললাম এবং একটা নদীর (তীরে) গিয়ে পৌঁছলাম।
রাবী বলেন, আমার যতদূর মনে পড়ে তিনি বলেছিলেন, নদীটি ছিল রক্তের মত লাল। আর
দেখলাম, এই নদীতে এক ব্যক্তি সাঁতার কাটছে। আর নদীর তীরে অন্য এক লোক আছে এবং সে
তার কাছে অনেকগুলো পাথর একত্রিত করে রেখেছে। আর ঐ সাঁতারকারী লোকটি বেশ কিছুক্ষণ
সাঁতার কাটার পর সে লোক কাছে এসে পৌঁছে যে নিজের নিকট পাথর একত্রিত করে রেখেছে।
সেখানে এসে সে তার মুখ খুলে দেয় আর ঐ লোক তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দেয়। এরপর সে
চলে যায়, সাঁতার কাটতে থাকে; আবার তার কাছে ফিরে আসে, যখনই সে তার কাছে ফিরে আসে
তখনই সে তার মুখ খুলে দেয়, আর ঐ ব্যক্তি তার মুখে একটা পাথর ঢুকিয়ে দেয়। তিনি
বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তার বলল, চলুন, চলুন। তিনি বলেন, আমরা চললাম
এবং এমন একজন কুশ্রী লোকের কাছে এসে পৌঁছলাম, যে তোমার দৃষ্টিতে সবচেয়ে কুশ্রী বলে
মনে হয়। আর দেখলাম, তার নিকট রয়েছে আগুন, যা সে জ্বালাচ্ছে ও তার চতুর্দিকে
দৌড়াচ্ছে। তিনি বলেন, আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, ঐ লোকটি কে? তারা বলল, চলুন,
চলুন। আমরা চললাম এবং একটা সজীব শ্যামল বাগানে হাজির হলাম, যেখানে বসন্তের হরেক
রকম ফুলের কলি রয়েছে। আর বাগানের মাঝে আসমানের থেকে অধিক উঁচু দীর্ঘকায় একজন পুরুষ
রয়েছে যার মাথা যেন আমি দেখতেই পাচ্ছি না। এমনিভাবে তার চারপাশে এত বিপুল সংখ্যক
বালক-বালিকা দেখলাম যে, এত অধিক আর কখনো আমি দেখিনি। আমি তাদেরকে বললাম, উনি কে?
এরা কারা? তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন। আমরা চললাম এবং একটা বিরাট বাগানে গিয়ে
পৌঁছলাম। এমন বড় এবং সুন্দর বাগান আমি আর কখনো দেখিনি। তিনি বলেন, তারা আমাকে বলল,
এর ওপরে চড়ুন। আমরা ওপরে চড়লাম। শেষ পর্যন্ত সোনা-রূপার ইটের তৈরি একটি শহরে গিয়ে
আমরা হাজির হলাম। আমরা শহরের দরজায় পৌঁছলাম এবং দরজা খুলতে বললাম। আমাদের জন্য
দরজা খুলে দেয়া হল, আমরা তাতে প্রবেশ করলাম। তখন সেখানে আমাদের সঙ্গে এমন কিছু লোক
সাক্ষাৎ করল যাদের শরীরের অর্ধেক খুবই সুন্দর, যা তোমার দৃষ্টিতে সবচেয়ে সুন্দর
মনে হয়। আর শরীরের অর্ধেক এমনই কুশ্রী ছিল যা তোমার দৃষ্টিতে সবচেয়ে কুশ্রী মনে
হয়। তিনি বলেন, সাথীদ্বয় ওদেরকে বলল, যাও ঐ নদীতে গিয়ে নেমে পড়। আর সেটা ছিল
প্রশস্ত প্রবাহিত নদী, যার পানি ছিল দুধের মত সাদা। ওরা তাতে গিয়ে নেমে পড়ল। অতঃপর
এরা আমাদের কাছে ফিরে এল, দেখা গেল তাদের এ শ্রীহীনতা দূর হয়ে গেছে এবং তারা খুবই
সুন্দর আকৃতির হয়ে গেছে। তিনি বলেন, তারা আমাকে বলল, এটা জান্নাতে আদন এবং এটা
আপনার বাসস্থান। তিনি বলেন, আমি বেশ উপরের দিকে তাকালাম, দেখলাম ধবধবে সাদা মেঘের
মত একটি প্রাসাদ আছে। তিনি বলেন, তারা আমাকে বলল, এটা আপনার বাসগৃহ। তিনি বলেন,
আমি তাদেরকে বললাম, আল্লাহ্ তোমাদের মাঝে বরকত দিন! আমাকে ছেড়ে দাও। আমি এতে
প্রবেশ করি। তারা বলল, আপনি অবশ্য এতে প্রবেশ করবেন। তবে এখন নয়। তিনি বলেন, আমি এ
রাতে অনেক বিস্ময়কর বিষয় দেখতে পেলাম, এগুলোর তাৎপর্য কী? তারা আমাকে বলল, আচ্ছা!
আমরা আপনাকে বলে দিচ্ছি। ঐ যে প্রথম ব্যক্তিকে যার কাছে আপনি পৌঁছেছিলেন, যার মাথা
পাথর দিয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হচ্ছিল, সে হল ঐ ব্যক্তি যে কুরআন গ্রহণ করে তা ছেড়ে
দিয়েছে। আর ফরয সলাত ছেড়ে ঘুমিয়ে থাকে। আর ঐ ব্যক্তি যার কাছে গিয়ে দেখেছেন যে,
তার মুখের এক ভাগ মাথার পিছন দিক পর্যন্ত, এমনিভাবে নাসারন্ধ্র ও চোখ মাথার পিছন
দিক পর্যন্ত চিরে ফেলা হচ্ছিল সে হল ঐ ব্যক্তি, যে সকালে নিজ ঘর থেকে বের হয়ে এমন
মিথ্যা বলে যা চারদিকে ছড়িয়ে পরে। আর এ সকল উলঙ্গ নারী-পুরুষ যারা চুলা সদৃশ
গর্তের ভিতর আছে তারা হল ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণীর দল। আর ঐ ব্যক্তি, যার কাছে
পৌঁছে দেখেছিলেন যে, সে নদীতে সাঁতার কাটছে ও তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে সে
হল সুদখোর। আর ঐ কুশ্রী ব্যক্তি, যে আগুনের কাছে ছিল এবং আগুন জ্বালাচ্ছিল আর সে
এর চারপাশে দৌড়াচ্ছিল, সে হল জাহান্নামের দারোগা, মালিক ফেরেশ্তা। আর এ দীর্ঘকায়
ব্যক্তি যিনি বাগানে ছিলেন, তিনি হলেন, ইবরাহীম (আঃ)। আর তাঁর আশেপাশের
বালক-বালিকারা হলো ঐসব শিশু, যারা ফিত্রাতের (স্বভাবধর্মের) ওপর মৃত্যুবরণ করেছে।
তিনি বলেন, তখন কিছু সংখ্যক মুসলিম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! মুশরিকদের
শিশু সন্তানরাও কি? তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
মুশরিকদের শিশু সন্তানরাও। আর ঐসব লোক যাদের অর্ধাংশ অতি সুন্দর ও অর্ধাংশ অতি
কুশ্রী তারা হল ঐ সম্প্রদায় যারা সৎ-অসৎ উভয় কাজ মিশ্রিতভাবে করেছে। আল্লাহ্
তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। [৮৪৫; মুসলিম ৪২/৪, হাঃ ২২৭৫, আহমাদ ২০১১৫] (আধুনিক
প্রকাশনী- ৬৫৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭১)
No comments