সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "তাকদির" হাদিস নং - ৬৫৯৪ থেকে ৬৬২০
তাক্দীর-৬৫৯৪ – ৬৬২০
[৫২] তাক্বদীরের ভাল-মন্দের
উপর বিশ্বাস করা ঈমানের একটি অন্যতম রুকন। (ফাতহুল বারী)
৬৫৯৪
أَبُو الْوَلِيدِ هِشَامُ بْنُ عَبْدِ
الْمَلِكِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ أَنْبَأَنِي سُلَيْمَانُ الأَعْمَشُ قَالَ سَمِعْتُ
زَيْدَ بْنَ وَهْبٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم وَهُوَ الصَّادِقُ الْمَصْدُوقُ قَالَ إِنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ فِي
بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا ثُمَّ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ يَكُونُ
مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ يَبْعَثُ اللهُ مَلَكًا فَيُؤْمَرُ بِأَرْبَعٍ
بِرِزْقِهِ وَأَجَلِهِ وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ فَوَاللهِ إِنَّ أَحَدَكُمْ أَوْ
الرَّجُلَ يَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا
غَيْرُ بَاعٍ أَوْ ذِرَاعٍ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ
أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَدْخُلُهَا وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ
الْجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا غَيْرُ ذِرَاعٍ أَوْ
ذِرَاعَيْنِ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ
فَيَدْخُلُهَا قَالَ آدَمُ إِلاَّ ذِرَاعٌ
তিনি বলেন, সত্যবাদী ও সত্যবাদী স্বীকৃত
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকেই আপন আপন
মাতৃগর্ভে চল্লিশ দিন পর্যন্ত (শুক্র হিসেবে) জমা থাকে। তারপর ঐরকম চল্লিশ দিন
রক্তপিন্ড, তারপর ঐরকম চল্লিশ দিন গোশত পিন্ডাকারে থাকে। তারপর আল্লাহ্ একজন
ফেরেশতা পাঠান এবং তাকে রিযিক, মৃত্যু, দুর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য- এ চারটি বিষয় লিখার
জন্য আদেশ দেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, আল্লাহর কসম! তোমাদের মাঝে যে কেউ অথবা বলেছেন,
কোন ব্যক্তি জাহান্নামীদের ‘আমাল করতে থাকে। এমনকি তার ও জাহান্নামের মাঝে মাত্র
একহাত বা এক গজের তফাৎ থাকে। এমন সময় তাক্দীর তার ওপর প্রাধান্য লাভ করে আর তখন সে
জান্নাতীদের ‘আমাল করা শুরু করে দেয়। ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করে। আর এক ব্যক্তি
জান্নাতীদের ‘আমাল করতে থাকে। এমন কি তার ও জান্নাতের মাঝে মাত্র এক হাত বা দু’হাত
তফাৎ থাকে। এমন সময় তাক্দীর তার উপর প্রাধান্য লাভ করে আর অমনি সে জাহান্নামীদের
‘আমাল শুরু করে দেয়। ফলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ [বুখারী
(রহ.)] বলেন যে, আদাম তার বর্ণনায় কেবল ذِرَاعٌ (এক গজ) বলেছেন।[2] [৩২০৮]
(আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৪২)
তাকদীর[১]
[১] তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর বিশ্বাস করা ঈমানের একটি অন্যতম রুকন। (ফাতহুল বারী)
[2] অতীতে যা ঘটেছে, বর্তমানে যা ঘটছে এবং ভবিষ্যতে যা ঘটবে সবই আল্লাহ তা‘আলার চোখের সামনে রয়েছে। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সবই তিনি সমানভাবে জ্ঞাত। প্রত্যেকটি মানুষ কখন জন্মিবে, কখন মরবে আর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কোন মুহূর্তে কোন আমাল করবে সবই তাঁর জানা। মৃত্যুর পর কেউ জান্নাতে যাবে, না জাহান্নামে যাবে কিংবা প্রথমে জাহান্নামে যাওয়ার পর আবার জান্নাতে যাবে- এ সব কিছুই তাঁর জানা। মাতৃগর্ভে ১২০ দিন পর আল্লাহ ফেরেশতা পাঠিয়ে লিখিয়ে দেন কতটা রিযিক সে পাবে, কখন কোথায় মরবে, সে জান্নাতী হবে, না জাহান্নামী হবে। তিনি তো সবই জানেন, আর তাই তিনি লিখিয়ে দেন। ভাগ্যে লিখে দেয়ার কারণে কেউ জান্নাতী-জাহান্নামী হয় না, নিজের আমলের কারণেই জান্নাতী জাহান্নামী হয়। বান্দার ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত আল্লাহর জানা কথাগুলো আগেই লিখে দেয়ার নামই তাকদীর। তাকদীর গড়ার দায়-দায়িত্ব বান্দার, তাকদীর গড়ার স্বাধীনতা আল্লাহ তাঁর বান্দাকে দিয়ে রেখেছেন। আল্লাহ বলেন আল্লাহ কোন জাতির ভাগ্য পরিবর্ত করেন না যে পর্যন্ত তারা নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন না করে- (সূরা রাদ-১১)। অবশ্য আল্লাহ মানুষকে বিভিন্নভাবে ফযীলাত বা প্রাধান্য দিয়ে দুনিয়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা দান করেন। কিন্তু দুনিয়াবী প্রতিষ্ঠার সঙ্গে আখিরাতের সফলতা বা ব্যর্থতার কোন সম্পর্ক নাই। কেউ জান্নাতের পথে যেতে যেতে শেষ মুহূর্তে জাহান্নামে চলে গেলেও তার জন্য সে নিজেই দায়ী। আর আল্লাহ- যিনি তাকদীর লেখান তিনি ভালভাবেই জানেন যে, শেষ মুহূর্তে ঐ ব্যক্তি নিজেই দিক পরিবর্তন করে জাহান্নামে পৌঁছবে, যদিও সে সারাজীবন জান্নাতে যাওয়ার কাজই করেছে। কারণ আল্লাহ্ তা‘আলা বান্দাকে বিবেক বুদ্ধি দান করেছেন এবং তাকে ভাল ও মন্দ উভয় পথ দেখিয়ে দিয়েছেন, তার বিবেক-বুদ্ধিকে স্বাধীনভাবে ব্যবহার করার স্বাধীনতাও দিয়েছেন আর এর দ্বারা তাকে পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছেন। এছাড়া আল্লাহ্ তা‘আলা মানুষসহ কোন কিছুকেই বেকার সৃষ্টি করেননি। অতএব তিনি যখন কোন কিছুকেই বেকার হিসেবে সৃষ্টি করেননি তখন বিবেকসম্পন্ন এ মানব জাতিকে যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়ে তাদেরকে তো পরীক্ষা করবেনই। আল্লাহ্ তা‘আলা ভাল আর মন্দের সৃষ্টিকর্তা, তিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন মানব ও দানব জাতিদ্বয়কে পরীক্ষা করার জন্যই। কিন্তু এ পরীক্ষায় কে কেমন ফলাফল করবে সে সম্পর্কে আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর অগ্রিম জ্ঞান দ্বারাই অবগত রয়েছেন। সেটিই হচ্ছে তাকদীর যার কোন ব্যতিক্রম হবে না। এ তাকদীরের উপর প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির ঈমান আনা মু’মিন হওয়ার জন্য অন্যতম শর্ত।
সারা জীবন ভাল কাজ করে শেষ জীবনে মন্দ কাজ করে জাহান্নামে যাওয়ার পরিণতি এড়ানোর জন্যই আল্লাহ বলেছেন- তোমরা মুসলমান না থাকা আবস্থায় কক্ষনো মরোনা অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামের উপর কায়েম থাক- (আল-ইমরান-১০২)
হাদীসটি থেকে জানা যায় :
(১) মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের সত্যতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। কারণ যিনি তুচ্ছ কাদামাটি হতে রক্ত, গোশত, হাড্ডি, ভ্রুণ তারপর রূহ ফুঁকে সৃষ্টিজীব বানাতে সক্ষম, তিনি মৃত্যুর পর বিক্ষিপ্ত ধূলি কণাতে মিশ্রিত সৃষ্টিজীবকে তাঁর সামনে একত্রিত করতেও সক্ষম।
(২) মানুষের সর্বশেষ আমলই গুরুত্বপূর্ণ।
(৩) বাহ্যিকভাবে অনেক সৌভাগ্যবান ব্যক্তি মন্দ আমল করবে এবং অনেক দুর্ভাগা ভাল আমল করবে। কিন্তু আল্লাহর ইলমে তার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ বা নির্ধারণ করা হয়েছে তার কোনই পবিরর্তন হবে না। । [উল্লেখ্য আল্লাহ্ মানুষকে সৃষ্টি করে তাকে বিবেক-বুদ্ধি দান করে ভালো-মন্দ উভয় পথ দেখিয়ে তা গ্রহণ এবং বর্জন করার স্বাধীনতা প্রদান করেছেন। এ স্বাধীনতা দেয়ার মূল কারণ তাকে পরীক্ষা করা যে, সে কোন পথের যাত্রী হচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর পূর্ব জ্ঞান দ্বারা জানেন যে, সে ভাল পথ অবলম্বন করবে নাকি মন্দ পথ অবলম্বন করবে। আর এ অগ্রীম জ্ঞান দ্বারাই তিনি নির্ধারণ করে দিয়েছেন যে, কে জান্নাতী আর কে জাহান্নামী]।
(৪) আমলের কিছু রয়েছে অগ্রবর্তী এবং কিছু রয়েছে পরবর্তী। সুতরাং অগ্রবর্তী তাক্বদীর যা আল্লাহর ইলমে রয়েছে। আর পরবর্তী তাক্বদীর যা মায়ের গর্ভস্থ সন্তানের উপর নির্ধারণ করা হয়। যেমন হাদীসে এসেছে, আর এই পরবর্তী তাক্বদীরগুলো অনেক সময় পরিবর্তন হয়। মুসলিম শরীফে আব্দুল্লাহ বিন উমারের মারফু সূত্রে বর্ণিত كتب الله مقادير الخلائق قبل ان يخلق السماوات والأرض بخمسين الف سنة হাদীসটি আল্লাহ তা‘আলার ইলম অনুসারে লাওহে মাহফূজে যা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তার উপর আমল হয়েছে।
(৫) শেষ পরিণতির খারাপী থেকে আল্লাহর আশ্রয় কামনার প্রতি উৎসাহ।
(৬) ভাল ও মন্দের সব কিছুই আল্লাহর নির্ধারিত তাক্বদীর ও সৃষ্টি। باب كيف كانت يمين النبي রাসূল (সাঃ) শপথ করার সময় যে শব্দগুলো দ্বারা অবিরাম বা বেশী বেশী শপথ করতেন তা চার প্রকার।
(১) والذي نفسي بيده (২) والذي نفسي محمد بيده (৩) والله (৪) ورب الكعبة , আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণবাচক শব্দ ছাড়া অন্য নামে শপথ নিষিদ্ধ। যেমন মা-বাবার শপথ, কুরআনের শপথ ইত্যাদি।
আল্লাহ তা‘আলা তার কোন সৃষ্ট জীবের শপথ করতে পারেন যেমন তিনি শপথ করে বলেন : والشمس وضحها, والعصر ইত্যাদি। (ফাতহুল বারী)
[১] তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর বিশ্বাস করা ঈমানের একটি অন্যতম রুকন। (ফাতহুল বারী)
[2] অতীতে যা ঘটেছে, বর্তমানে যা ঘটছে এবং ভবিষ্যতে যা ঘটবে সবই আল্লাহ তা‘আলার চোখের সামনে রয়েছে। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সবই তিনি সমানভাবে জ্ঞাত। প্রত্যেকটি মানুষ কখন জন্মিবে, কখন মরবে আর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কোন মুহূর্তে কোন আমাল করবে সবই তাঁর জানা। মৃত্যুর পর কেউ জান্নাতে যাবে, না জাহান্নামে যাবে কিংবা প্রথমে জাহান্নামে যাওয়ার পর আবার জান্নাতে যাবে- এ সব কিছুই তাঁর জানা। মাতৃগর্ভে ১২০ দিন পর আল্লাহ ফেরেশতা পাঠিয়ে লিখিয়ে দেন কতটা রিযিক সে পাবে, কখন কোথায় মরবে, সে জান্নাতী হবে, না জাহান্নামী হবে। তিনি তো সবই জানেন, আর তাই তিনি লিখিয়ে দেন। ভাগ্যে লিখে দেয়ার কারণে কেউ জান্নাতী-জাহান্নামী হয় না, নিজের আমলের কারণেই জান্নাতী জাহান্নামী হয়। বান্দার ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত আল্লাহর জানা কথাগুলো আগেই লিখে দেয়ার নামই তাকদীর। তাকদীর গড়ার দায়-দায়িত্ব বান্দার, তাকদীর গড়ার স্বাধীনতা আল্লাহ তাঁর বান্দাকে দিয়ে রেখেছেন। আল্লাহ বলেন আল্লাহ কোন জাতির ভাগ্য পরিবর্ত করেন না যে পর্যন্ত তারা নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন না করে- (সূরা রাদ-১১)। অবশ্য আল্লাহ মানুষকে বিভিন্নভাবে ফযীলাত বা প্রাধান্য দিয়ে দুনিয়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা দান করেন। কিন্তু দুনিয়াবী প্রতিষ্ঠার সঙ্গে আখিরাতের সফলতা বা ব্যর্থতার কোন সম্পর্ক নাই। কেউ জান্নাতের পথে যেতে যেতে শেষ মুহূর্তে জাহান্নামে চলে গেলেও তার জন্য সে নিজেই দায়ী। আর আল্লাহ- যিনি তাকদীর লেখান তিনি ভালভাবেই জানেন যে, শেষ মুহূর্তে ঐ ব্যক্তি নিজেই দিক পরিবর্তন করে জাহান্নামে পৌঁছবে, যদিও সে সারাজীবন জান্নাতে যাওয়ার কাজই করেছে। কারণ আল্লাহ্ তা‘আলা বান্দাকে বিবেক বুদ্ধি দান করেছেন এবং তাকে ভাল ও মন্দ উভয় পথ দেখিয়ে দিয়েছেন, তার বিবেক-বুদ্ধিকে স্বাধীনভাবে ব্যবহার করার স্বাধীনতাও দিয়েছেন আর এর দ্বারা তাকে পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছেন। এছাড়া আল্লাহ্ তা‘আলা মানুষসহ কোন কিছুকেই বেকার সৃষ্টি করেননি। অতএব তিনি যখন কোন কিছুকেই বেকার হিসেবে সৃষ্টি করেননি তখন বিবেকসম্পন্ন এ মানব জাতিকে যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়ে তাদেরকে তো পরীক্ষা করবেনই। আল্লাহ্ তা‘আলা ভাল আর মন্দের সৃষ্টিকর্তা, তিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন মানব ও দানব জাতিদ্বয়কে পরীক্ষা করার জন্যই। কিন্তু এ পরীক্ষায় কে কেমন ফলাফল করবে সে সম্পর্কে আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর অগ্রিম জ্ঞান দ্বারাই অবগত রয়েছেন। সেটিই হচ্ছে তাকদীর যার কোন ব্যতিক্রম হবে না। এ তাকদীরের উপর প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির ঈমান আনা মু’মিন হওয়ার জন্য অন্যতম শর্ত।
সারা জীবন ভাল কাজ করে শেষ জীবনে মন্দ কাজ করে জাহান্নামে যাওয়ার পরিণতি এড়ানোর জন্যই আল্লাহ বলেছেন- তোমরা মুসলমান না থাকা আবস্থায় কক্ষনো মরোনা অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামের উপর কায়েম থাক- (আল-ইমরান-১০২)
হাদীসটি থেকে জানা যায় :
(১) মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের সত্যতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। কারণ যিনি তুচ্ছ কাদামাটি হতে রক্ত, গোশত, হাড্ডি, ভ্রুণ তারপর রূহ ফুঁকে সৃষ্টিজীব বানাতে সক্ষম, তিনি মৃত্যুর পর বিক্ষিপ্ত ধূলি কণাতে মিশ্রিত সৃষ্টিজীবকে তাঁর সামনে একত্রিত করতেও সক্ষম।
(২) মানুষের সর্বশেষ আমলই গুরুত্বপূর্ণ।
(৩) বাহ্যিকভাবে অনেক সৌভাগ্যবান ব্যক্তি মন্দ আমল করবে এবং অনেক দুর্ভাগা ভাল আমল করবে। কিন্তু আল্লাহর ইলমে তার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ বা নির্ধারণ করা হয়েছে তার কোনই পবিরর্তন হবে না। । [উল্লেখ্য আল্লাহ্ মানুষকে সৃষ্টি করে তাকে বিবেক-বুদ্ধি দান করে ভালো-মন্দ উভয় পথ দেখিয়ে তা গ্রহণ এবং বর্জন করার স্বাধীনতা প্রদান করেছেন। এ স্বাধীনতা দেয়ার মূল কারণ তাকে পরীক্ষা করা যে, সে কোন পথের যাত্রী হচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর পূর্ব জ্ঞান দ্বারা জানেন যে, সে ভাল পথ অবলম্বন করবে নাকি মন্দ পথ অবলম্বন করবে। আর এ অগ্রীম জ্ঞান দ্বারাই তিনি নির্ধারণ করে দিয়েছেন যে, কে জান্নাতী আর কে জাহান্নামী]।
(৪) আমলের কিছু রয়েছে অগ্রবর্তী এবং কিছু রয়েছে পরবর্তী। সুতরাং অগ্রবর্তী তাক্বদীর যা আল্লাহর ইলমে রয়েছে। আর পরবর্তী তাক্বদীর যা মায়ের গর্ভস্থ সন্তানের উপর নির্ধারণ করা হয়। যেমন হাদীসে এসেছে, আর এই পরবর্তী তাক্বদীরগুলো অনেক সময় পরিবর্তন হয়। মুসলিম শরীফে আব্দুল্লাহ বিন উমারের মারফু সূত্রে বর্ণিত كتب الله مقادير الخلائق قبل ان يخلق السماوات والأرض بخمسين الف سنة হাদীসটি আল্লাহ তা‘আলার ইলম অনুসারে লাওহে মাহফূজে যা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তার উপর আমল হয়েছে।
(৫) শেষ পরিণতির খারাপী থেকে আল্লাহর আশ্রয় কামনার প্রতি উৎসাহ।
(৬) ভাল ও মন্দের সব কিছুই আল্লাহর নির্ধারিত তাক্বদীর ও সৃষ্টি। باب كيف كانت يمين النبي রাসূল (সাঃ) শপথ করার সময় যে শব্দগুলো দ্বারা অবিরাম বা বেশী বেশী শপথ করতেন তা চার প্রকার।
(১) والذي نفسي بيده (২) والذي نفسي محمد بيده (৩) والله (৪) ورب الكعبة , আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণবাচক শব্দ ছাড়া অন্য নামে শপথ নিষিদ্ধ। যেমন মা-বাবার শপথ, কুরআনের শপথ ইত্যাদি।
আল্লাহ তা‘আলা তার কোন সৃষ্ট জীবের শপথ করতে পারেন যেমন তিনি শপথ করে বলেন : والشمس وضحها, والعصر ইত্যাদি। (ফাতহুল বারী)
৬৫৯৫
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ
أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ وَكَّلَ اللهُ بِالرَّحِمِ مَلَكًا فَيَقُولُ أَيْ رَبِّ نُطْفَةٌ أَيْ
رَبِّ عَلَقَةٌ أَيْ رَبِّ مُضْغَةٌ فَإِذَا أَرَادَ اللهُ أَنْ يَقْضِيَ
خَلْقَهَا قَالَ أَيْ رَبِّ أَذَكَرٌ أَمْ أُنْثَى أَشَقِيٌّ أَمْ سَعِيدٌ فَمَا
الرِّزْقُ فَمَا الأَجَلُ فَيُكْتَبُ كَذَلِكَ فِي بَطْنِ أُمِّهِ
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহ্ রেহেমে (মাতৃগর্ভে) একজন
ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, হে প্রতিপালক! এটি বীর্য। হে প্রতিপালক! এটি
রক্তপিণ্ড। হে প্রতিপালক! এটি গোশ্তপিণ্ড। আল্লাহ্ যখন তার সৃষ্টি পূর্ণ করতে
চান, তখন ফেরেশতা বলে, হে প্রতিপালক! এটি নর হবে, না নারী? এটি দুর্ভাগা হবে, না
ভাগ্যবান? তার রিযক কী পরিমাণ হবে? তার জীবনকাল কী হবে? তখন (আল্লাহ্র নির্দেশমত)
তার মায়ের পেটে থাকাকালে ঐ রকমই লিখে দেয়া হয়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৩৫, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬১৪৩)
৮২/২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র ইলম-মুতাবিক (লেখার পর) কলম শুকিয়ে গেছে।
আল্লাহ্র বাণীঃ “আল্লাহ্
জেনে শুনেই তাকে গোমরাহ করেছেন”- (সূরা জাসিয়াহ ৪৫/২৩) আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন,
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেনঃ যার সম্মুখীন তুমি হবে
(তোমার যা ঘটবে) তা লেখার পর কলম শুকিয়ে গেছে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, (আরবী)
তাদের উপর নেকবখতি প্রাধান্য বিস্তার করেছে।
৬৫৯৬
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا يَزِيدُ الرِّشْكُ قَالَ سَمِعْتُ
مُطَرِّفَ بْنَ عَبْدِ اللهِ بْنِ الشِّخِّيرِ يُحَدِّثُ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ
حُصَيْنٍ قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُعْرَفُ
أَهْلُ الْجَنَّةِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَلِمَ يَعْمَلُ
الْعَامِلُونَ قَالَ كُلٌّ يَعْمَلُ لِمَا خُلِقَ لَهُ أَوْ لِمَا يُسِّرَ لَهُ
‘ইমরান
ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ্র
রসূল! জাহান্নামীদের থেকে জান্নাতীদেরকে চেনা যাবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। সে বলল,
তাহলে ‘আমলকারীরা ‘আমল করবে কেন? তিনি বললেনঃ প্রতিটি লোক ঐ ‘আমলই করে যার জন্য
তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অথবা যা তার জন্য সহজ করা হয়েছে। [৭৫৫১; মুসলিম ৩৮/১, হাঃ
২৬৪৯] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৪৪)
৮২/৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ মানুষ যা করবে এ সম্পর্কে আল্লাহ্ই সবচেয়ে বেশি
জানেন।
৬৫৯৭
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ
أَبِي بِشْرٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ سُئِلَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَوْلاَدِ الْمُشْرِكِينَ فَقَالَ اللهُ
أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (একবার) রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মুশরিকদের নাবালিগ সন্তানাদি সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, তারা (বাঁচলে) কী ‘আমল করত এ ব্যাপারে
আল্লাহ্ই সবচেয়ে বেশি জানেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৪৫)
৬৫৯৮
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يُونُسَ عَنْ ابْنِ
شِهَابٍ قَالَ وَأَخْبَرَنِي عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا
هُرَيْرَةَ يَقُولُ سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذَرَارِيِّ
الْمُشْرِكِينَ فَقَالَ اللهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মুশরিকদের নাবালিগ সন্তানাদি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে
তিনি বললেনঃ তারা যা করত এ ব্যাপারে আল্লাহ্ সবচেয়ে বেশি জানেন।(আধুনিক প্রকাশনী-
৬১৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৪৬)
৬৫৯৯
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم مَا مِنْ مَوْلُودٍ إِلاَّ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ
يُهَوِّدَانِهِ وَيُنَصِّرَانِهِ كَمَا تُنْتِجُونَ الْبَهِيمَةَ هَلْ تَجِدُونَ
فِيهَا مِنْ جَدْعَاءَ حَتَّى تَكُونُوا أَنْتُمْ تَجْدَعُونَهَا
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন সন্তান যখন জন্ম লাভ করে, তখন স্বভাবধর্মের (ইসলামের)
ওপরই জন্ম লাভ করে। অতঃপর তার পিতামাতা তাকে ইয়াহূদী বা নাসারা বানিয়ে দেয়। যেমন
কোন চতুষ্পদ জন্তু যখন বাচ্চা প্রদান করে তখন কি কানকাটা দেখতে পাও যতক্ষণ না
তোমরা তার কান কেটে দাও?(আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৪৭)
৬৬০০
قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ أَفَرَأَيْتَ مَنْ يَمُوتُ وَهُوَ صَغِيرٌ قَالَ
اللهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তখন সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্র
রসূল! নাবালিগ অবস্থায় যে মারা যায় তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? তিনি বললেনঃ তারা
যা করত এ ব্যাপারে আল্লাহ্ সবচেয়ে বেশি জানেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৩৯, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬১৪৭)
৮২/৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ আল্লাহ্র বিধান সুনির্ধারণে নির্ধারিত। (সূরা আহযাব
৩৩/৩৮)
৬৬০১
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ
الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
لاَ تَسْأَلْ الْمَرْأَةُ طَلاَقَ أُخْتِهَا لِتَسْتَفْرِغَ صَحْفَتَهَا
وَلْتَنْكِحْ فَإِنَّ لَهَا مَا قُدِّرَ لَهَا
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন নারী নিজে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে যেন অন্য নারীর
তালাক না চায়। কেননা, তার জন্য (তাকদীরে) যা নির্ধারিত আছে তাই সে পাবে। (আধুনিক
প্রকাশনী- ৬১৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৪৮)
৬৬০২
مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ
أَبِي عُثْمَانَ عَنْ أُسَامَةَ قَالَ كُنْتُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم إِذْ جَاءَهُ رَسُولُ إِحْدَى بَنَاتِهِ وَعِنْدَهُ سَعْدٌ وَأُبَيُّ بْنُ
كَعْبٍ وَمُعَاذٌ أَنَّ ابْنَهَا يَجُودُ بِنَفْسِهِ فَبَعَثَ إِلَيْهَا لِلَّهِ
مَا أَخَذَ وَلِلَّهِ مَا أَعْطَى كُلٌّ بِأَجَلٍ فَلْتَصْبِرْ وَلْتَحْتَسِبْ
উসামাহ
ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে ছিলাম। তাঁর সঙ্গে সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ, ‘উবাই ইব্ন
কা’ব ও মু’আয ইবনু জাবালও ছিলেন। এমন সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর কোন এক কন্যার পাঠানো এক লোক খবর নিয়ে এলো যে, তাঁর পুত্র সন্তান
মরণাপন্ন। তখন তিনি লোকটির মারফত কন্যাকে বলে পাঠালেন যে, আল্লাহ্র জন্যই- যা
তিনি নিয়ে যান। আর আল্লাহ্র জন্যই- যা তিনি দান করেন। প্রত্যেকের জন্য একটি সময়
নির্ধারিত রয়েছে। কাজেই সে যেন ধৈর্য ধারণ করে এবং সাওয়াবের আশা করে। (আধুনিক
প্রকাশনী- ৬১৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৪৯)
৬৬০৩
حِبَّانُ بْنُ مُوسَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ
الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَيْرِيزٍ الجُمَحِيُّ أَنَّ
أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ بَيْنَمَا هُوَ جَالِسٌ عِنْدَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم جَاءَ رَجُلٌ مِنْ الأَنْصَارِ فَقَالَ يَا رَسُولَ
اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّا نُصِيبُ سَبْيًا وَنُحِبُّ الْمَالَ كَيْفَ تَرَى
فِي الْعَزْلِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَوَإِنَّكُمْ
لَتَفْعَلُونَ ذَلِكَ لاَ عَلَيْكُمْ أَنْ لاَ تَفْعَلُوا فَإِنَّهُ لَيْسَتْ
نَسَمَةٌ كَتَبَ اللهُ أَنْ تَخْرُجَ إِلاَّ هِيَ كَائِنَةٌ
আবূ
সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় আনসারদের এক লোক এসে বলল, হে আল্লাহ্র
রসূল! আমরা তো বাঁদীদের সঙ্গে সংগত হই অথচ মালকে ভালবাসি। কাজেই ‘আযল’র ব্যাপারে
আপনার অভিমত কি? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা কি
এ কাজ কর? তোমাদের জন্য এটা করা আর না করা দুটোই সমান। কেননা, যে কোন জীবন যা পয়দা
হওয়াকে আল্লাহ্ লিখে দিয়েছেন তা পয়দা হবেই।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৪, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬১৫০)
৬৬০৪
مُوسَى بْنُ مَسْعُودٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي
وَائِلٍ عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ لَقَدْ خَطَبَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
خُطْبَةً مَا تَرَكَ فِيهَا شَيْئًا إِلَى قِيَامِ السَّاعَةِ إِلاَّ ذَكَرَهُ
عَلِمَهُ مَنْ عَلِمَهُ وَجَهِلَهُ مَنْ جَهِلَهُ إِنْ كُنْتُ لأرَى الشَّيْءَ
قَدْ نَسِيتُ فَأَعْرِفُ مَا يَعْرِفُ الرَّجُلُ إِذَا غَابَ عَنْهُ فَرَآهُ
فَعَرَفَهُ
হুযাইফা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) একবার আমাদের প্রতি এমন একটি ভাষণ প্রদান করলেন যাতে কেয়ামত পর্যন্ত যা
সংঘটিত হবে এমন কোন কথাই বাদ দেননি। এগুলো মনে রাখা যার সৌভাগ্য হয়েছে সে স্মরণ
রেখেছে আর যে ভুলে যাবার সে ভুলে গেছে। আমি ভুলে যাওয়া কোন কিছু যখন দেখতে পাই তখন
তা চিনতে পারি এভাবে যেমন, কোন ব্যক্তি কাউকে হারিয়ে ফেললে আবার যখন তাকে দেখতে পায়
তখন চিনতে পারে। [মুসলিম ৫২/৬, হাঃ ২৮৯১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৪৩, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬১৫১)
৬৬০৫
عَبْدَانُ عَنْ أَبِي حَمْزَةَ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ سَعْدِ بْنِ
عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمٰنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ قَالَ كُنَّا
جُلُوسًا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَعَهُ عُودٌ يَنْكُتُ فِي
الأَرْضِ وَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ قَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنْ
النَّارِ أَوْ مِنْ الْجَنَّةِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ الْقَوْمِ أَلاَ نَتَّكِلُ يَا
رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ثُمَّ
قَرَأَ فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى الْآيَةَ
‘আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তাঁর সঙ্গে ছিল একটুকরা খড়ি। যা
দিয়ে তিনি মাটির উপর দাগ টানছিলেন। তিনি তখন বললেনঃ তোমাদের মাঝে এমন কোন লোক নেই
যার ঠিকানা জাহান্নামে বা জান্নাতে লেখা হয়নি। লোকদের ভিতর থেকে এক ব্যক্তি বলল,
হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি তাহলে (এর উপর) নির্ভর করব না? তিনি বললেনঃ না, তোমরা
‘আমাল কর। কেননা, প্রত্যেকের জন্য ‘আমাল সহজ করে দেয়া হয়েছে। এরপর তিনি তিলাওয়াত
করলেনঃ فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى الْآيَةَ ।
[১৩৬২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৫২)
৮২/৫. অধ্যায়ঃ
আমলের (ভাল-মন্দ) নির্ভর করে শেষ অবস্থার ওপর
৬৬০৬
حِبَّانُ بْنُ مُوسَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ
الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ
شَهِدْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم لِرَجُلٍ مِمَّنْ مَعَهُ يَدَّعِي الإِسْلاَمَ هَذَا مِنْ
أَهْلِ النَّارِ فَلَمَّا حَضَرَ الْقِتَالُ قَاتَلَ الرَّجُلُ مِنْ أَشَدِّ
الْقِتَالِ وَكَثُرَتْ بِهِ الْجِرَاحُ فَأَثْبَتَتْهُ فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ أَرَأَيْتَ
الرَّجُلَ الَّذِي تَحَدَّثْتَ أَنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ قَدْ قَاتَلَ فِي
سَبِيلِ اللهِ مِنْ أَشَدِّ الْقِتَالِ فَكَثُرَتْ بِهِ الْجِرَاحُ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَمَا إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَكَادَ بَعْضُ
الْمُسْلِمِينَ يَرْتَابُ فَبَيْنَمَا هُوَ عَلَى ذَلِكَ إِذْ وَجَدَ الرَّجُلُ
أَلَمَ الْجِرَاحِ فَأَهْوَى بِيَدِهِ إِلَى كِنَانَتِهِ فَانْتَزَعَ مِنْهَا
سَهْمًا فَانْتَحَرَ بِهَا فَاشْتَدَّ رِجَالٌ مِنْ الْمُسْلِمِينَ إِلَى رَسُولِ
اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَدَّقَ
اللهُ حَدِيثَكَ قَدْ انْتَحَرَ فُلاَنٌ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم يَا بِلاَلُ قُمْ فَأَذِّنْ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلاَّ
مُؤْمِنٌ وَإِنَّ اللهَ لَيُؤَيِّدُ هَذَا الدِّينَ بِالرَّجُلِ الْفَاجِرِ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খায়বারের যুদ্ধে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সঙ্গীগণের মধ্য হতে ইসলামের দাবি করছিল এমন এক ব্যক্তির
ব্যাপারে বললেন যে, এই লোকটি জাহান্নামী। যখন যুদ্ধ শুরু হল, লোকটি ভীষণভাবে যুদ্ধ
করল। এতে সে অত্যন্ত ক্ষতবিক্ষত হলো। তবু সে অটল রইল। সাহাবীগণের মাঝ থেকে একজন
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বললো, হে আল্লাহ্র রাসূল!
আপনি যে ব্যক্তি সম্পর্কে জাহান্নামী হবে ব’লে বলেছিলেন সে তো ভীষণভাবে আল্লাহ্র
রাস্তায় যুদ্ধ করেছে এবং তাতে সে বিপুলভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। তিনি বললেনঃ জেনে
রাখ, সে জাহান্নামী! এতে কতক মুসলিমের মনে সন্দেহের ভাব হল। আর লোকটি ঐ অবস্থায়
ছিল। হঠাৎ করে সে ক্ষতের যন্ত্রণা অনুভব করতে লাগল আর অমনিই সে স্বীয় হাতটি তীর
রাখার স্থানে বাড়িয়ে দিল এবং একটি তীর বের করে আপন বক্ষে বিঁধিয়ে দিল। তখন কয়েকজন
মুসলিম রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে দৌড়িয়ে গিয়ে বলল,
হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্ আপনার কথাকে সত্য করে দেখালেন। অমুক ব্যক্তি তো
আত্মহত্যা করেছে। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে
বিলাল! উঠ, এবং ঘোষণা কর যে, মু’মিন ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আর
আল্লাহ্ পাপী বান্দাকে দিয়েও এ দ্বীনের সাহায্য করে থাকেন। (আধুনিক প্রকাশনী-
৬১৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৫৩)
৬৬০৭
سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ حَدَّثَنِي أَبُو
حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَجُلاً مِنْ أَعْظَمِ الْمُسْلِمِينَ
غَنَاءً عَنْ الْمُسْلِمِينَ فِي غَزْوَةٍ غَزَاهَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم فَنَظَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَنْظُرَ
إِلَى الرَّجُلِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى هَذَا فَاتَّبَعَهُ
رَجُلٌ مِنْ الْقَوْمِ وَهُوَ عَلَى تِلْكَ الْحَالِ مِنْ أَشَدِّ النَّاسِ عَلَى
الْمُشْرِكِينَ حَتَّى جُرِحَ فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ فَجَعَلَ ذُبَابَةَ
سَيْفِهِ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ حَتَّى خَرَجَ مِنْ بَيْنِ كَتِفَيْهِ فَأَقْبَلَ
الرَّجُلُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُسْرِعًا فَقَالَ أَشْهَدُ
أَنَّكَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ وَمَا ذَاكَ قَالَ قُلْتَ
لِفُلاَنٍ مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ النَّارِ
فَلْيَنْظُرْ إِلَيْهِ وَكَانَ مِنْ أَعْظَمِنَا غَنَاءً عَنْ الْمُسْلِمِينَ
فَعَرَفْتُ أَنَّهُ لاَ يَمُوتُ عَلَى ذَلِكَ فَلَمَّا جُرِحَ اسْتَعْجَلَ
الْمَوْتَ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ ذَلِكَ
إِنَّ الْعَبْدَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ النَّارِ وَإِنَّهُ مِنْ أَهْلِ
الْجَنَّةِ وَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَإِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ
وَإِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالْخَوَاتِيمِ
সাহ্ল
ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সঙ্গে থেকে যে সমস্ত মুসলিম যুদ্ধ করেছেন তাঁদের মাঝে একজন ছিল ভীষণ বেগে
আক্রমণকারী। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে তাকিয়ে বললেনঃ যে
ব্যক্তি কোন জাহান্নামীকে দেখতে পছন্দ করে সে যেন এই লোকটার দিকে তাকায়। লোকদের
ভিতর থেকে এক লোক সেই লোকটির অনুসরণ করল। আর সে তখন ভীষণভাবে মুশরিকদের সঙ্গে
মুকাবিলা করছিল। সে যখম হয়ে তাড়াতাড়ি মৃত্যু কামনা করল। সে তার তরবারীর ধারালো
দিকটি নিজের বুকের উপর চেপে ধরল। এমন কি দু’কাঁধের মাঝ দিয়ে তরবারী বক্ষ ভেদ করল।
(তখন) লোকটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে দৌড়ে এসে বলল, আমি
সাক্ষ্য দিচ্ছি (সত্যিই) আপনি আল্লাহ্র রসূল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কী হল? লোকটি
বলল, আপনি অমুক ব্যক্তি সম্পর্কে বলেছিলেনঃ “যে ব্যক্তি কোন জাহান্নামী লোক দেখতে
পছন্দ করে সে যেন এ লোকটাকে দেখে নেয়।” অথচ লোকটি অন্যান্য মুসলিমের চেয়ে তীব্র
আক্রমণকারী ছিল। তাই আমার ধারণা ছিল এ লোকটির মৃত্যু এমন অবস্থায় হবে না। যখন সে
আঘাত পেল, তাড়াতাড়ি মৃত্যু কামনা করল এবং আত্মহত্যা করে দিল। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথা শুনে বললেনঃ নিশ্চয় কোন বান্দা জাহান্নামীদের ‘আমল
করেন, কিন্তু আসলে সে জান্নাতী। আর কোন বান্দা জান্নাতের অধিবাসীর ‘আমল করেন
কিন্তু আসলে সে জাহান্নামী। নিশ্চয়ই ‘আমলের ভাল-মন্দ নির্ভর করে তার শেষ অবস্থার
উপর। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৫৪)
৮২/৬. অধ্যায়ঃ
বান্দার মানতকে তাক্দীরের প্রতি অর্পণ করা।
৬৬০৮
أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ مُرَّةَ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ
النَّذْرِ وَقَالَ إِنَّهُ لاَ يَرُدُّ شَيْئًا وَإِنَّمَا يُسْتَخْرَجُ بِهِ مِنْ
الْبَخِيلِ
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মানত করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, মানত কোন জিনিষকে দুরে সরিয়ে দিতে
পারে না। এর দ্বারা শুধু কৃপণের কিছু মাল বের হয়ে যায়।[৬৬৯২, ৬৬৯৩; মুসলিম ২৬/২,
হাঃ ১৬৩৯, আহমাদ ৫২৭৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৫৫)
৬৬০৯
بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ
هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ لاَ يَأْتِ ابْنَ آدَمَ النَّذْرُ بِشَيْءٍ لَمْ يَكُنْ قَدْ
قَدَّرْتُهُ وَلَكِنْ يُلْقِيهِ الْقَدَرُ وَقَدْ قَدَّرْتُهُ لَهُ أَسْتَخْرِجُ
بِهِ مِنْ الْبَخِيلِ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ মানত আদম সন্তানকে এমন কিছু এনে
দিতে পারে না যা তাকদীরে নির্ধারিত নেই অথচ সে যে মানতটি করে তাও আমি তাকদীরে
নির্ধারিত করে দিয়েছি যাতে এর মাধ্যমে কৃপণের নিকট হতে (মাল) বের করে নেই। [৬৬৯৪;
মুসলিম ২৬/২, হাঃ ১৬৪০, আহমাদ ৯৩৫১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৬১৫৬)
৮২/৭. অধ্যায়ঃ
‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন শক্তি ও ক্ষমতা নেই প্রসঙ্গে
৬৬১০
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَبُو الْحَسَنِ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ
أَخْبَرَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ عَنْ أَبِي
مُوسَى قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزَاةٍ
فَجَعَلْنَا لاَ نَصْعَدُ شَرَفًا وَلاَ نَعْلُو شَرَفًا وَلاَ نَهْبِطُ فِي وَادٍ
إِلاَّ رَفَعْنَا أَصْوَاتَنَا بِالتَّكْبِيرِ قَالَ فَدَنَا مِنَّا رَسُولُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ ارْبَعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ
فَإِنَّكُمْ لاَ تَدْعُونَ أَصَمَّ وَلاَ غَائِبًا إِنَّمَا تَدْعُونَ سَمِيعًا
بَصِيرًا ثُمَّ قَالَ يَا عَبْدَ اللهِ بْنَ قَيْسٍ أَلاَ أُعَلِّمُكَ كَلِمَةً
هِيَ مِنْ كُنُوزِ الْجَنَّةِ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ
আবূ
মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা যখনই কোন উঁচুস্থানে আরোহণ
করতাম, কোন উঁচুতে থাকতাম এবং কোন উপত্যকা অতিক্রম করতাম তখনই উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর
বলতাম। রাবী বলেন অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকটবর্তী
হলেন এবং বললেনঃ ওহে লোকেরা! তোমরা নিজেদের উপর রহম কর। তোমরা কোন বধির বা কোন
অনুপস্থিত সত্ত্বাকে ডাকছ না বরং তোমরা ডাকছ শ্রবণকারী ও দর্শনকারী সত্ত্বাকে।
এরপর তিনি বললেনঃ হে ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু কায়স! তোমাকে আমি কি এমন একটি কথা শিখিয়ে
দিব না, যা হল জান্নাতের ভান্ডারসমূহের অন্যতম? তা হল- لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ।
]২৯৯২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৫৭
৮২/৮. অধ্যায়ঃ
নিষ্পাপ সে-ই আল্লাহ যাকে রক্ষা করেন।
(আরবী) অর্থ প্রতিরোধকারী-
(সূরা হূদ ১১/৪৩)। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, (আরবী) পথভ্রষ্টতায় মত্ত হওয়া, (আরবী) তাকে
পথভ্রষ্ট করেছে- (সূরাহ্ আশ্ শাম্স ৯১/১০)
৬৬১১
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ
قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ عَنْ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا اسْتُخْلِفَ خَلِيفَةٌ إِلاَّ لَهُ بِطَانَتَانِ
بِطَانَةٌ تَأْمُرُهُ بِالْخَيْرِ وَتَحُضُّهُ عَلَيْهِ وَبِطَانَةٌ تَأْمُرُهُ
بِالشَّرِّ وَتَحُضُّهُ عَلَيْهِ وَالْمَعْصُومُ مَنْ عَصَمَ اللهُ
আবূ
সা’ঈদ খুদ্রী (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যে কোন লোককেই খলীফা বানানো হয় তার
জন্য দু’টি পরামর্শদাতা থাকে। একটা তাকে সৎকর্মের পরামর্শ দেয় এবং এর প্রতি তাকে
উৎসাহিত করে। অন্যটা তাকে মন্দ কাজের পরামর্শ দেয় এবং এর প্রতি তাকে উৎসাহিত করে।
নিষ্পাপ হল সেই আল্লাহ্ যাকে রক্ষা করেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫০ ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬১৫৮)
৮২/৯. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ আমি যে সব জনবসতি ধ্বংস করেছি তাদের জন্য এটা
নিষিদ্ধ করা হয়েছে যে তারা আর ফিরে আসবে না- (সূরা আম্বিয়া ২১/৯৫)।. আল্লাহ্র
বাণীঃ ঈমান এনেছে তারা ছাড়া তোমার সম্প্রদায়ের আর কোন লোক ঈমান আনবে না- (সূরা হূদ
১১/৩৬), আল্লাহ্র বাণীঃ তারা তোমার বান্দাদেরকে গোমরাহ করে দেবে আর কেবল পাপাচারী
কাফির জন্ম দিতে থাকবে- (সূরা নূহ ৭১/২৭)
মানসুর ইব্নু নু’মান......
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাব্শী ভাষায় (আরবী) অর্থ জরুরী হওয়া।
৬৬১২
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ عَنْ ابْنِ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ مَا رَأَيْتُ
شَيْئًا أَشْبَهَ بِاللَّمَمِ مِمَّا قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ كَتَبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ حَظَّهُ مِنْ الزِّنَا
أَدْرَكَ ذَلِكَ لاَ مَحَالَةَ فَزِنَا الْعَيْنِ النَّظَرُ وَزِنَا اللِّسَانِ
الْمَنْطِقُ وَالنَّفْسُ تَمَنَّى وَتَشْتَهِي وَالْفَرْجُ يُصَدِّقُ ذَلِكَ أَوْ
يُكَذِّبُهُ وَقَالَ شَبَابَةُ حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ عَنْ ابْنِ طَاوُسٍ عَنْ
أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ছোট গুনাহর ব্যাপারে যা বলেছেন তার থেকে
যথার্থ উপমা আমি দেখি না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্
আদম সন্তানের উপর যিনার কোন না কোন হিস্সা লিখে দিয়েছেন; তা সে অবশ্যই পাবে।
সুতরাং চোখের যিনা হল (যা হারাম সেদিকে) তাকানো এবং জিহ্বার যিনা হল মুখে বলা। মন
কামনা ও আকাঙ্খা করে, লজ্জাস্থান তাকে সত্য করে অথবা মিথ্যা প্রমাণ করে। [৫৪]
শাবাবা (রহঃ) ও... আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে
এরকম বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৫৯)
[৫৪] আল্লাহ্ নির্দেশ করেছেন- তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে
বিনয়ের সঙ্গে এবং গোপনে আহবান কর, তিনি সীমালংঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না- (আ’রাফ-৫৫,
আরো দ্রষ্টব্য আ’রাফ-২০৫ নং আয়াত)
যা দেখা হারাম সে দিকে দৃষ্টি পড়লেই দৃষ্টি নীচু করে নিতে হবে, তাহলেই প্রথম দৃষ্টির গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। মন নানান কিছু কামনা করে আর তাকে নিয়ন্ত্রণ করা মানুষের দুঃসাধ্য; তাই এজন্য আল্লাহ কাউকে পাকড়াও করবেন না। অতঃপর বাকী থাকল জিহ্বার যিনা, লজ্জাস্থানের যিনা। এ দুটোকে মানুষ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম, এদু’টোকে নিয়ন্ত্রণে রেখে মানুষ যিনার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারে। আর যদি নিয়ন্ত্রণ না করে তাহলে সে যিনার পাপে জড়িয়ে পড়বে।
যা দেখা হারাম সে দিকে দৃষ্টি পড়লেই দৃষ্টি নীচু করে নিতে হবে, তাহলেই প্রথম দৃষ্টির গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। মন নানান কিছু কামনা করে আর তাকে নিয়ন্ত্রণ করা মানুষের দুঃসাধ্য; তাই এজন্য আল্লাহ কাউকে পাকড়াও করবেন না। অতঃপর বাকী থাকল জিহ্বার যিনা, লজ্জাস্থানের যিনা। এ দুটোকে মানুষ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম, এদু’টোকে নিয়ন্ত্রণে রেখে মানুষ যিনার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারে। আর যদি নিয়ন্ত্রণ না করে তাহলে সে যিনার পাপে জড়িয়ে পড়বে।
৮২/১০. অধ্যায়ঃ
(আল্লাহ্র বাণী) আমি তোমাকে (মি’রাজের মাধ্যমে) যে দৃশ্য দেখিয়েছি
তা এবং কুরআনে উল্লেখিত অভিশপ্ত (জাক্কুম) গাছটিও মানুষদের পরীক্ষা করার জন্য (যে
কারা তা বিশ্বাস ক’রে নেক্কার হয় আর কারা তা অবিশ্বাস ক’রে পাপী হয়)। (সূরাহ্
ইসরা ১৭/৬০)
৬৬১৩
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرٌو عَنْ عِكْرِمَةَ
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ {وَمَا جَعَلْنَا الرُّؤْيَا الَّتِي أَرَيْنَاكَ إِلاَّ
فِتْنَةً لِلنَّاسِ} قَالَ هِيَ رُؤْيَا عَيْنٍ أُرِيَهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ قَالَ وَالشَّجَرَةَ
الْمَلْعُونَةَ فِي الْقُرْآنِ قَالَ هِيَ شَجَرَةُ الزَّقُّومِ
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
وَمَا جَعَلْنَا الرُّؤْيَا الَّتِي.....}
الاية
(আয়াত সম্পর্কে) তিনি বলেনঃ তা হচ্ছে চোখের দেখা। যে রাতে রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বায়তুল মাকদাস পর্যন্ত ভ্রমণ করানো হয়েছিল, সে
রাতে তাঁকে যা দেখানো হয়েছিল। তিনি বলেন, কুরআনের বর্ণিত وَالشَّجَرَةَ الْمَلْعُونَةَ
দ্বারা যাক্কূম গাছকে বোঝানো হয়েছে। [৩৮৮৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫২, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬১৬০)
৮২/১১. অধ্যায়ঃ
আদম (‘আঃ) ও মূসা (‘আঃ) আল্লাহ্র সামনে বাদানুবাদ করেন।
৬৬১৪
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ حَفِظْنَاهُ مِنْ
عَمْرٍو عَنْ طَاوُسٍ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ احْتَجَّ آدَمُ وَمُوسَى فَقَالَ لَهُ مُوسَى يَا آدَمُ أَنْتَ
أَبُونَا خَيَّبْتَنَا وَأَخْرَجْتَنَا مِنْ الْجَنَّةِ قَالَ لَهُ آدَمُ يَا
مُوسَى اصْطَفَاكَ اللهُ بِكَلاَمِهِ وَخَطَّ لَكَ بِيَدِهِ أَتَلُومُنِي عَلَى
أَمْرٍ قَدَّرَهُ اللهُ عَلَيَّ قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَنِي بِأَرْبَعِينَ سَنَةً
فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى ثَلاَثًا قَالَ سُفْيَانُ حَدَّثَنَا
أَبُو الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم مِثْلَهُ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আদম ও মূসা (‘আঃ) (পরস্পরে)
বাদানুবাদ করেন। মূসা (‘আঃ) বলেন, হে আদম, আপনি আমাদের পিতা। আপনি আমাদেরকে বঞ্চিত
করেছেন এবং জান্নাত থেকে আমাদেরকে বের করেছেন। আদম (‘আঃ) তাকে বললেন, হে মূসা!
আল্লাহ্ আপনাকে তো নিজ কথার মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন এবং আপনার জন্য নিজ হাত
দ্বারা লিখেছেন। অতএব আপনি কি আমাকে এমন একটি কাজের ব্যাপারে তিরস্কার করছেন যা
আমাকে সৃষ্টি করার চল্লিশ বছর পূর্বেই আল্লাহ্ নির্ধারিত করে রেখেছেন। তখন আদম
(‘আঃ) মূসা (‘আঃ)-এর উপর বিতর্কে জয়ী হলেন। এ কথাটি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনবার বলেছেন। সুফিয়ানও... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এরূপ বর্ণনা করেছেন। [৩৪০৯; মুসলিম ৪৬/২, হাঃ ২৬৫২,
আহমাদ ৭৩৯১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৩, ই.ফা ৬১৬১)
৮২/১২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ যা দান করেন তা রোধ করার ক্ষমতা কারো নেই।
৬৬১৫
مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ
أَبِي لُبَابَةَ عَنْ وَرَّادٍ مَوْلَى الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ كَتَبَ
مُعَاوِيَةُ إِلَى الْمُغِيرَةِ اكْتُبْ إِلَيَّ مَا سَمِعْتَ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم يَقُولُ خَلْفَ الصَّلاَةِ فَأَمْلَى عَلَيَّ الْمُغِيرَةُ قَالَ
سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ خَلْفَ الصَّلاَةِ لاَ إِلَهَ
إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ اللهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ
وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
وَقَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي عَبْدَةُ أَنَّ وَرَّادًا أَخْبَرَهُ بِهَذَا
ثُمَّ وَفَدْتُ بَعْدُ إِلَى مُعَاوِيَةَ فَسَمِعْتُهُ يَأْمُرُ النَّاسَ بِذَلِكَ
الْقَوْلِ
মুগীরা
ইব্নু শু’বাহ (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম ওয়ার্রাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার মু‘আবিয়াহ (রাঃ) মুগীরাহ
ইবনু শু‘বাহ (রাঃ)-এর নিকট লিখলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সালাতের পর যা পাঠ করতেন এ সম্পর্কে তুমি যা শুনেছ আমার কাছে লিখে পাঠাও। তখন
মুগীরাহ (রাঃ) আমাকে তা লিখে দেয়ার দায়িত্ব দিলেন। তিনি বললেন, আমি নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাতের পরে বলতে শুনেছি لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهচ الخُ
অর্থাৎ আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই, তিনি অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই। হে
আল্লাহ্! তুমি যা দাও তা রোধকারী কেউ নেই। আর তুমি যা রোধ কর তা দানকারী কেউ নেই।
তুমি ব্যতীত ধনীর ধন কোন ফল দিতে পারবে না।
ইবনু জুরায়জ আবদা থেকে বর্ণনা করেন যে, ওয়ার্রাদ তাকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। এরপর আমি মু‘আবিয়াহ (রাঃ)-এর কাছে গিয়েছি। মানুষকে এ কথার নির্দেশ দিতে আমি তাকে শুনেছি। [৮৪৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬২)
ইবনু জুরায়জ আবদা থেকে বর্ণনা করেন যে, ওয়ার্রাদ তাকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। এরপর আমি মু‘আবিয়াহ (রাঃ)-এর কাছে গিয়েছি। মানুষকে এ কথার নির্দেশ দিতে আমি তাকে শুনেছি। [৮৪৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬২)
৮২/১৩. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি আল্লাহ্র আশ্রয় চায় খারাপ পরিণতি ও দুর্ভাগ্য হতে।
এবং (মহান আল্লাহ্র) বাণীঃ
বল, আমি শরণ লইতেছি ঊষার স্রষ্টার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে।
৬৬১৬
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ سُمَيٍّ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ تَعَوَّذُوا بِاللهِ
مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ وَدَرَكِ الشَّقَاءِ وَسُوءِ الْقَضَاءِ وَشَمَاتَةِ
الأَعْدَاءِ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, তোমরা ভয়ানক বিপদ, দুর্ভাগ্যের
অতল তল, মন্দ পরিণতি এবং শত্রুর আনন্দ থেকে আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় চাও। (আধুনিক
প্রকাশনী- ৬১৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৩)
৮২/১৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ মানুষ ও তার অন্তরের মধ্যবর্তী হয়ে থাকেন। [৫৫] (সূরা আনফাল
৮/২৪)
[৫৫] যারা আল্লাহ্র পথে
চলতে চায় আল্লাহ তাদের মনকে সে দিকে ধাবিত করে দেন। কিন্তু যারা সে পথে চলতে
ইচ্ছুক নয়, আল্লাহ তাদের মনকে সে পথের দিকে পরিচালিত করেন না।
৬৬১৭
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَبُو الْحَسَنِ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ
أَخْبَرَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَثِيرًا
مِمَّا كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَحْلِفُ لاَ وَمُقَلِّبِ الْقُلُوبِ
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) অধিকাংশ সময় এ বলে কসম খেতেনঃ কসম অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারীর।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৬১৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৪)
৬৬১৮
عَلِيُّ بْنُ حَفْصٍ وَبِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ
اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ
قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لابْنِ صَيَّادٍ خَبَأْتُ لَكَ
خَبِيئَا قَالَ الدُّخُّ قَالَ اخْسَأْ فَلَنْ تَعْدُوَ قَدْرَكَ قَالَ عُمَرُ
ائْذَنْ لِي فَأَضْرِبَ عُنُقَهُ قَالَ دَعْهُ إِنْ يَكُنْ هُوَ فَلاَ تُطِيقُهُ
وَإِنْ لَمْ يَكُنْ هُوَ فَلاَ خَيْرَ لَكَ فِي قَتْلِهِ
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ইব্নু সাইয়্যাদকে বললেনঃ আমি (একটি কথা) তোমার জন্য গোপন রেখেছি। সে
বললো, তা হচ্ছে (কল্পনার) ধোঁয়া মাত্র। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ দূর হও, তুমি তো তোমার তাক্দীরকে কক্ষনো অতিক্রম করতে পারবে না। তখন ‘উমর
(রাঃ) বললেন, আমাকে অনুমতি দিন আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বললেনঃ ছাড় একে, এ
যদি সেই হয় তবে তুমি (তাকে হত্যা করতে) সক্ষম হবে না। আর যদি সে (দাজ্জাল) না হয়
তবে তাকে হত্যা করায় তোমার কোন কল্যাণ নেই।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৭, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬১৬৫)
৮২/১৫. অধ্যায়ঃ
(আল্লাহ্র বাণীঃ) আল্লাহ্ আমাদের জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন
তাছাড়া অন্য কিছুই আমাদের ঘটবে না- (সুরাহ আত্-তওবা ৯/৫১)।
(আরবী) নির্দিষ্ট করেছেন-
(সূরা আস্ সাফফাত ৩৭/১৬২)। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন (আরবী) যারা পথভ্রষ্ট হয়, হ্যাঁ
যার ব্যাপারে আল্লাহ্ লিখে দিয়েছেন যে, সে জাহান্নামে যাবে- (সুরাহ আ’লা ৮৭/৩)।
(আরবী) দুর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য নির্দিষ্ট করেছেন। জীব-জন্তুকে চারণভূমিতে পৌঁছে দেয়া।
৬৬১৯
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ أَخْبَرَنَا النَّضْرُ
حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ أَبِي الْفُرَاتِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ
يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا سَأَلَتْ رَسُولَ
اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الطَّاعُونِ فَقَالَ كَانَ عَذَابًا يَبْعَثُهُ
اللهُ عَلَى مَنْ يَشَاءُ فَجَعَلَهُ اللهُ رَحْمَةً لِلْمُؤْمِنِينَ مَا مِنْ
عَبْدٍ يَكُونُ فِي بَلَدٍ يَكُونُ فِيهِ وَيَمْكُثُ فِيهِ لاَ يَخْرُجُ مِنْ
الْبَلَدِ صَابِرًا مُحْتَسِبًا يَعْلَمُ أَنَّهُ لاَ يُصِيبُهُ إِلاَّ مَا كَتَبَ
اللهُ لَهُ إِلاَّ كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ شَهِيدٍ
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একবার রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেনঃ এটা একটা
‘আযাব। আল্লাহ যার উপর ইচ্ছে তা পাঠান। আল্লাহ এটা মুসলিমের জন্য রহমত করে
দিয়েছেন। প্লেগে আক্রান্ত শহরে কোন বান্দা যদি ধৈর্য ধরে বিশ্বাসের সাথে অবস্থান
করে, সেখান থেকে বের না হয়, আল্লাহ্ তার জন্য যা লিখেছেন তা ছাড়া কিছুই তাকে
স্পর্শ করবে না, সে অবস্থায় সে শহীদের সওয়াব পাবে। [৫৬](আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৮,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৬)
[৫৬] যারা প্লেগে আক্রান্ত স্থানে অবস্থান করছে তারা
যেন সেখান থেকে বেরিয়ে অন্যত্র চলে না যায়। কারণ সেখানে যারা থাকবে সবারই মৃত্যু হবে
না, যার মৃত্যু প্লেগে হবে নির্ধারিত আছে তারই মৃত্যু হবে। আক্রান্ত এলাকার বাইরে চলে
গেলেও প্লেগে মৃত্যু হতে পারে যদি তা সেভাবেই নির্ধারিত থাকে। তবে বিপদ-ব্যাধি মুক্ত
এলাকা ছেড়ে বিপদ-ব্যাধি আক্রান্ত স্থানে যাওয়া নিষিদ্ধ।
৮২/১৬. অধ্যায়ঃ
(আল্লাহ্র বাণী): আমরা কিছুতেই পথ পেতাম না যদি না আল্লাহ্
আমাদেরকে পথ দেখাতেন- (সূরা আ’রাফ ৭/৪৩), আল্লাহ যদি আমাকে সঠিক পথ দেখাতেন, তাহলে
আমি অবশ্যই মুত্তাক্বীদের অন্তর্ভূক্ত হতাম। (সূরা আয্ যুমার ৪৯/৫৭)
৬৬২০
أَبُو النُّعْمَانِ أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ هُوَ ابْنُ حَازِمٍ عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ عَنْ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم يَوْمَ الْخَنْدَقِ يَنْقُلُ مَعَنَا التُّرَابَ وَهُوَ يَقُولُ
وَاللهِ لَوْلاَ اللهُ مَا اهْـتَدَيْـنَا وَلاَ صُمْنَا وَلاَ صَلَّيْـنَا
فَأَنـْزِلَنْ سَكِينَـةً عَلَـيْـنَا وَثَبِّتْ الأَقْدَامَ إِنْ لاَقَيْنَا
وَالْمُشْرِكُونَ قَدْ بَغَوْا عَلَيْـنَا إِذَا أَرَادُوا فِتـْنَةً أَبَيـْنَا
وَاللهِ لَوْلاَ اللهُ مَا اهْـتَدَيْـنَا وَلاَ صُمْنَا وَلاَ صَلَّيْـنَا
فَأَنـْزِلَنْ سَكِينَـةً عَلَـيْـنَا وَثَبِّتْ الأَقْدَامَ إِنْ لاَقَيْنَا
وَالْمُشْرِكُونَ قَدْ بَغَوْا عَلَيْـنَا إِذَا أَرَادُوا فِتـْنَةً أَبَيـْنَا
বারাআ
ইব্নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি খন্দকের যুদ্ধের দিন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি, তিনি আমাদের সাথে মাটি বহন করেছেন
এবং বলেছেনঃ
আল্লাহ্র কসম! তিনি যদি আমাদেরকে পথ না দেখাতেন তবে আমরা পথ পেতাম না।
সওমও পালন করতাম না, আর সালাতও আদায় করতাম না। কাজেই আমাদের উপর প্রশান্তি অবতীর্ণ করুন। আর যদি আমরা শত্রুর মুকাবিলা করি তবে আমাদেরকে সুদৃঢ় রাখুন। আর মুশরিকরা আমাদের উপর বিদ্রোহী হয়েছে। তারাই আমাদেরকে ফিত্নায় (যুদ্ধে) ফেলতে চেয়েছে, যা আমরা চাইনি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৭)
আল্লাহ্র কসম! তিনি যদি আমাদেরকে পথ না দেখাতেন তবে আমরা পথ পেতাম না।
সওমও পালন করতাম না, আর সালাতও আদায় করতাম না। কাজেই আমাদের উপর প্রশান্তি অবতীর্ণ করুন। আর যদি আমরা শত্রুর মুকাবিলা করি তবে আমাদেরকে সুদৃঢ় রাখুন। আর মুশরিকরা আমাদের উপর বিদ্রোহী হয়েছে। তারাই আমাদেরকে ফিত্নায় (যুদ্ধে) ফেলতে চেয়েছে, যা আমরা চাইনি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৭)
No comments