সহিহ মুসলিম অধ্যায় "ঈমান" হাদিস নং -৩০১ থেকে ৪২১

৩০১
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ هَاشِمٍ الْعَبْدِيُّ، حَدَّثَنَا بَهْزُ بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أُتِيتُ فَانْطَلَقُوا بِي إِلَى زَمْزَمَ فَشُرِحَ عَنْ صَدْرِي ثُمَّ غُسِلَ بِمَاءِ زَمْزَمَ ثُمَّ أُنْزِلْتُ ‏"‏ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমার নিকট ফেরেশতা আসলেন এবং তাঁরা আমাকে নিয়ে যামযামে গেলেন। আমার বুক চিরে ফেলা হলো। তারপর যামযামের পানি দিয়ে আমাকে গোসল করানো হলো। এরপর নির্ধারিত স্থানে আমাকে ফিরিয়ে আনা হলো। (ই.ফা. ৩০৯; ই.সে. ৩২০)

৩০২

حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَتَاهُ جِبْرِيلُ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَلْعَبُ مَعَ الْغِلْمَانِ فَأَخَذَهُ فَصَرَعَهُ فَشَقَّ عَنْ قَلْبِهِ فَاسْتَخْرَجَ الْقَلْبَ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ عَلَقَةً فَقَالَ هَذَا حَظُّ الشَّيْطَانِ مِنْكَ ‏.‏ ثُمَّ غَسَلَهُ فِي طَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ بِمَاءِ زَمْزَمَ ثُمَّ لأَمَهُ ثُمَّ أَعَادَهُ فِي مَكَانِهِ وَجَاءَ الْغِلْمَانُ يَسْعَوْنَ إِلَى أُمِّهِ - يَعْنِي ظِئْرَهُ - فَقَالُوا إِنَّ مُحَمَّدًا قَدْ قُتِلَ ‏.‏ فَاسْتَقْبَلُوهُ وَهُوَ مُنْتَقَعُ اللَّوْنِ ‏.‏ قَالَ أَنَسٌ وَقَدْ كُنْتُ أَرَى أَثَرَ ذَلِكَ الْمِخْيَطِ فِي صَدْرِهِ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট জিবরীল (‘আঃ) এলেন, তখন তিনি শিশুদের সাথে খেলছিলেন। তিনি তাঁকে ধরে শোয়ালেন এবং বুক চিরে ফেরে তাঁর হৃদপিণ্ডটি বের করে আনলেন। তারপর তিনি তাঁর বক্ষ থেকে একটি রক্তপিণ্ড বের করলেন এবং বললেন, এ অংশটি হলো শয়তানের। এরপর হৃদপিণ্ডটি একটি স্বর্ণের পাত্রে রেখে যমযমের পানি দিয়ে ধৌত করলেন এবং তার অংশগুলো জড়ো করে আবার তা যথাস্থানে পুনঃস্থাপর করলেন। তখন ঐ শিশুরা দৌড়ে তাঁর দুধ মায়ের (হালীমা-এর) কাছে গেল এবং বললো, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হত্যা করা হয়েছে। কথাটি শুনে সবাই সেদিকে এগিয়ে গিয়ে দেখল তিনি ভয়ে বিবর্ণ হয়ে আছেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বুকে সে সেলাই এর চিহ্ন দেখেছি। (ই.ফা. ৩১০; ই.সে. ৩২১)

৩০৩

حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ، - وَهُوَ ابْنُ بِلاَلٍ - قَالَ حَدَّثَنِي شَرِيكُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي نَمِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يُحَدِّثُنَا عَنْ لَيْلَةَ، أُسْرِيَ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ مَسْجِدِ الْكَعْبَةِ أَنَّهُ جَاءَهُ ثَلاَثَةُ نَفَرٍ قَبْلَ أَنْ يُوحَى إِلَيْهِ وَهُوَ نَائِمٌ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِقِصَّتِهِ نَحْوَ حَدِيثِ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ وَقَدَّمَ فِيهِ شَيْئًا وَأَخَّرَ وَزَادَ وَنَقَصَ ‏.‏
শারীক ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ নামির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে রাতে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কা’বার মাসজিদ থেকে মি’রাজে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সে রাত সম্পর্কে আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, ওয়াহী প্রাপ্তির পূর্বে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন মাসজিদুল হারামে নিদ্রিত অবস্থায় ছিলেন। এরূপে বর্ণনাকারী পূর্ব বর্ণিত সাবিতুল বুনানীর হাদীসেরই অনুরূপ বর্ণনা করে যান। তবে এ বর্ণনায় শব্দের কিছু আগপাছ ও কমবেশি রয়েছে। (ই.ফা. ৩১১; ই.সে. ৩২২)

৩০৪

وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى التُّجِيبِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ أَبُو ذَرٍّ يُحَدِّثُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ فُرِجَ سَقْفُ بَيْتِي وَأَنَا بِمَكَّةَ فَنَزَلَ جِبْرِيلُ صلى الله عليه وسلم فَفَرَجَ صَدْرِي ثُمَّ غَسَلَهُ مِنْ مَاءِ زَمْزَمَ ثُمَّ جَاءَ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ مُمْتَلِئٍ حِكْمَةً وَإِيمَانًا فَأَفْرَغَهَا فِي صَدْرِي ثُمَّ أَطْبَقَهُ ثُمَّ أَخَذَ بِيَدِي فَعَرَجَ بِي إِلَى السَّمَاءِ فَلَمَّا جِئْنَا السَّمَاءَ الدُّنْيَا قَالَ جِبْرِيلُ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - لِخَازِنِ السَّمَاءِ الدُّنْيَا افْتَحْ ‏.‏ قَالَ مَنْ هَذَا قَالَ هَذَا جِبْرِيلُ ‏.‏ قَالَ هَلْ مَعَكَ أَحَدٌ قَالَ نَعَمْ مَعِيَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ قَالَ فَأُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ فَفَتَحَ - قَالَ - فَلَمَّا عَلَوْنَا السَّمَاءَ الدُّنْيَا فَإِذَا رَجُلٌ عَنْ يَمِينِهِ أَسْوِدَةٌ وَعَنْ يَسَارِهِ أَسْوِدَةٌ - قَالَ - فَإِذَا نَظَرَ قِبَلَ يَمِينِهِ ضَحِكَ وَإِذَا نَظَرَ قِبَلَ شِمَالِهِ بَكَى - قَالَ - فَقَالَ مَرْحَبًا بِالنَّبِيِّ الصَّالِحِ وَالاِبْنِ الصَّالِحِ - قَالَ - قُلْتُ يَا جِبْرِيلُ مَنْ هَذَا قَالَ هَذَا آدَمُ صلى الله عليه وسلم وَهَذِهِ الأَسْوِدَةُ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ نَسَمُ بَنِيهِ فَأَهْلُ الْيَمِينِ أَهْلُ الْجَنَّةِ وَالأَسْوِدَةُ الَّتِي عَنْ شِمَالِهِ أَهْلُ النَّارِ فَإِذَا نَظَرَ قِبَلَ يَمِينِهِ ضَحِكَ وَإِذَا نَظَرَ قِبَلَ شِمَالِهِ بَكَى - قَالَ - ثُمَّ عَرَجَ بِي جِبْرِيلُ حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الثَّانِيَةَ ‏.‏ فَقَالَ لِخَازِنِهَا افْتَحْ - قَالَ - فَقَالَ لَهُ خَازِنُهَا مِثْلَ مَا قَالَ خَازِنُ السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَفَتَحَ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ فَذَكَرَ أَنَّهُ وَجَدَ فِي السَّمَوَاتِ آدَمَ وَإِدْرِيسَ وَعِيسَى وَمُوسَى وَإِبْرَاهِيمَ - صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِمْ أَجْمَعِينَ - وَلَمْ يُثْبِتْ كَيْفَ مَنَازِلُهُمْ غَيْرَ أَنَّهُ ذَكَرَ أَنَّهُ قَدْ وَجَدَ آدَمَ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فِي السَّمَاءِ الدُّنْيَا وَإِبْرَاهِيمَ فِي السَّمَاءِ السَّادِسَةِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَلَمَّا مَرَّ جِبْرِيلُ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِإِدْرِيسَ - صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ - قَالَ مَرْحَبًا بِالنَّبِيِّ الصَّالِحِ وَالأَخِ الصَّالِحِ - قَالَ - ثُمَّ مَرَّ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا فَقَالَ هَذَا إِدْرِيسُ - قَالَ - ثُمَّ مَرَرْتُ بِمُوسَى - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَقَالَ مَرْحَبًا بِالنَّبِيِّ الصَّالِحِ وَالأَخِ الصَّالِحِ - قَالَ - قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالَ هَذَا مُوسَى - قَالَ - ثُمَّ مَرَرْتُ بِعِيسَى فَقَالَ مَرْحَبًا بِالنَّبِيِّ الصَّالِحِ وَالأَخِ الصَّالِحِ ‏.‏ قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ - قَالَ - ثُمَّ مَرَرْتُ بِإِبْرَاهِيمَ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَقَالَ مَرْحَبًا بِالنَّبِيِّ الصَّالِحِ وَالاِبْنِ الصَّالِحِ - قَالَ - قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالَ هَذَا إِبْرَاهِيمُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِي ابْنُ حَزْمٍ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ وَأَبَا حَبَّةَ الأَنْصَارِيَّ كَانَا يَقُولاَنِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ ثُمَّ عَرَجَ بِي حَتَّى ظَهَرْتُ لِمُسْتَوًى أَسْمَعُ فِيهِ صَرِيفَ الأَقْلاَمِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ حَزْمٍ وَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ فَفَرَضَ اللَّهُ عَلَى أُمَّتِي خَمْسِينَ صَلاَةً - قَالَ - فَرَجَعْتُ بِذَلِكَ حَتَّى أَمُرَّ بِمُوسَى فَقَالَ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلاَمُ مَاذَا فَرَضَ رَبُّكَ عَلَى أُمَّتِكَ - قَالَ - قُلْتُ فَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسِينَ صَلاَةً ‏.‏ قَالَ لِي مُوسَى عَلَيْهِ السَّلاَمُ فَرَاجِعْ رَبَّكَ فَإِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تُطِيقُ ذَلِكَ - قَالَ - فَرَاجَعْتُ رَبِّي فَوَضَعَ شَطْرَهَا - قَالَ - فَرَجَعْتُ إِلَى مُوسَى - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَأَخْبَرْتُهُ قَالَ رَاجِعْ رَبَّكَ فَإِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تُطِيقُ ذَلِكَ - قَالَ - فَرَاجَعْتُ رَبِّي فَقَالَ هِيَ خَمْسٌ وَهْىَ خَمْسُونَ لاَ يُبَدَّلُ الْقَوْلُ لَدَىَّ - قَالَ - فَرَجَعْتُ إِلَى مُوسَى فَقَالَ رَاجِعْ رَبَّكَ ‏.‏ فَقُلْتُ قَدِ اسْتَحْيَيْتُ مِنْ رَبِّي - قَالَ - ثُمَّ انْطَلَقَ بِي جِبْرِيلُ حَتَّى نَأْتِيَ سِدْرَةَ الْمُنْتَهَى فَغَشِيَهَا أَلْوَانٌ لاَ أَدْرِي مَا هِيَ - قَالَ - ثُمَّ أُدْخِلْتُ الْجَنَّةَ فَإِذَا فِيهَا جَنَابِذُ اللُّؤْلُؤِ وَإِذَا تُرَابُهَا الْمِسْكُ ‏"‏ ‏.‏
আবূ যার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি মাক্কাতে ছিলাম। আমার ঘরের ছাদ ফাঁক করা হলো। তখন জিবরীল (‘আঃ) অবতরণ করলেন। তিনি আমার বুক ছিড়ে ফেললেন। এরপর তা যমযমের পানি দিয়ে ধৌত করলেন। তারপর হিকমাত ও ঈমানে পরিপূর্ণ একটি পাত্র আনা হলো এবং এতে তা রাখা হলো, পুনঃ তা আমার বুকে ঢেলে বুক বন্ধ করে দিলেন। এরপর আমার হাত ধরলেন এবং ঊর্ধ্বাকাশে যাত্রা করলেন। আমরা যখন প্রথম আসমানে গিয়ে পৌঁছলাম, তখন জিবরীল (‘আঃ) এ আসমানের দারোয়ানকে বললেন, দরজা খুলুন, তিনি বললেন কে? বললেন, জিবরীল। দারোয়ান বললেন, আপনার সাথে কি অন্য কেউ আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমার সাথে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আছেন। দারোয়ান বললেন, তাঁর কাছে আপনাকে পাঠানো হয়েছিল কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর দরজা খুলে দেয়া হলো। আমরা প্রবেশ করে দেখি, এক ব্যক্তি তাঁর ডানে একদল মানুষ এবং বাঁয়ে একদল মানুষ। যখন তিনি ডান দিকে তাকান তখন হাসেন, আর যখন বাঁ দিকে তাকান তখন কাঁদেন। তিনি আমাকে বললেন, মারহাবা হে সুযোগ্য নাবী। হে সুযোগ্য সন্তান! রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি জিবরীলকে বললাম, ইনি কে? তিনি বললেন, ইনি আদাম (‘আঃ) আর ডান ও বাঁয়ের এ লোকগুলো তাঁর বংশধর। ডান দিকের লোকেরা হচ্ছে জান্নাতবাসী আর বাম দিকের লোকেরা হচ্ছে জাহান্নামবাসী। আর এ কারণেই তিনি ডান দিকে তাকালে হাসেন এবং বাঁ দিকে তাকালে কাঁদেন। তারপর জিবরীল (‘আঃ) আমাকে নিয়ে ঊর্ধ্বারোহণ করলেন এবং দ্বিতীয় আসমানে পৌছলেন এবং এর দারোয়ানকে বললেন, দরজা খুলুন। তিনি প্রথম আসমানের দারোয়ানের ন্যায় প্রশ্নোত্তর করে দরজা খুলে দিলেন। আনাস (রাঃ) বলেন, এরপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে, তিনি আসমানসমূহে আদাম, ইদ্‌রীস, মূসা এবং ইবরাহীম (‘আঃ)-এর সাথে দেখা করেছেন। আদাম (‘আঃ) প্রথম আসমানে এবং ইবরাহীম (‘আঃ) ৬ষ্ঠ আসমানে। এ ছাড়া অন্যান্য ‘নাবীর অবস্থান সম্পর্কে এ রিওয়ায়াতে কিছু উল্লেখ নেই।
আনাস (রাঃ) বলেন, যখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও জিবরীল (‘আঃ) ইদ্‌রীস (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, মারহাবা, হে সুযোগ্য নাবী! সুযোগ্য ভ্রাতা! রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? জিবরীল (‘আঃ) উত্তর দিলেন; ইনি ইদ্‌রীস (‘আঃ)। তারপর আমরা মূসা (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনিও বললেন, মারহাবা হে সুযোগ্য নাবী, সু্যোগ্য ভ্রাতা! জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? তিনি জবাব দিলেন, ইনি মূসা (‘আঃ)। তারপর আমরা ‘ঈসা (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনিও বললেন, ইনি ‘ঈসা (‘আঃ)। তারপর আমরা ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম তিনিও বললেন, মারহাবা হে সুযোগ্য নাবী! সু্যোগ্য সন্তান! জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? তিনি বললেন, ইনি ইবরাহীম (‘আঃ)।
ইবনু শিহাব, ইবনু হায্‌ম, ইবনু ‘আব্বাস ও আবূ হাব্বাহ্‌ আনসারী থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তারপর জিবরীল (‘আঃ) আমাকে নিয়ে আরো ঊর্ধ্বে চললেন। আমরা এমন এক স্তরে পৌছলাম যে তথায় আমি কলম-এর খশখশ শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম।
ইবনু হাযম ও আনাস ইবনু মালিক বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ তা’আলা আমার উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সলাত ফারয করেন। আমি এ নিয়ে ফেরার পথে মূসা (‘আঃ)-এর সাথে দেখা হয়। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার প্রতিপালক আপনার উম্মাতের উপর কি ফারয করেছেন? আমি উত্তরে বললাম, তাদের উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সলাত ফারয করা হয়েছে। মূসা (‘আঃ) আমাকে বললেন, আপনি আপনার প্রতিপালকের নিকট ফিরে যান; কেননা আপনার উম্মাত এতে সক্ষম হবে না। তাই আমি আল্লাহর দরবারে ফিরে গেলাম। তখন আল্লাহ এর অর্ধেক কমিয়ে দিলেন। আমি আবার ফিরে এসে মূসা (‘আঃ)-কে জানালে তিনি বললেন, না। আপনি পুনরায় ফিরে যান; কেননা আপনার উম্মাত এতেও সক্ষম হবে না। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তারপর আমি আল্লাহর দরবারে ফিরে গেলে তিনি বললেন, এ নির্দেশ পাঁচ, আর পাঁচই পঞ্চাশের সমান করে দিলাম, আমার কথার কোন রদবদল নেই। এরপর আমি মূসা (‘আঃ)-এর নিকট ফিরে আসি। তিনি তখনো বললেন, আপনি ফিরে যান আল্লাহর দরবারে। আমি বললামঃ আমার লজ্জা লাগছে। তারপর জিবরীল (‘আঃ) আমাকে ‘সিদ্‌রাতুল মুন্‌তাহা’ নিয়ে চললেন, আমরা পৌছলাম। তা এর বিচিত্র রঙে আবৃত যে, আমি বুঝতে পারছি না যে, আসলে তা কী? তারপর আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হলো। তথায় ছিল মুক্তার গম্বুজ আর তার মাটি ছিল মিশকের। (ই.ফা. ৩১২; ই.সে. ৩২৩)

৩০৫

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، - لَعَلَّهُ قَالَ - عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ، - رَجُلٌ مِنْ قَوْمِهِ - قَالَ قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ بَيْنَا أَنَا عِنْدَ الْبَيْتِ بَيْنَ النَّائِمِ وَالْيَقْظَانِ إِذْ سَمِعْتُ قَائِلاً يَقُولُ أَحَدُ الثَّلاَثَةِ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ ‏.‏ فَأُتِيتُ فَانْطُلِقَ بِي فَأُتِيتُ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ فِيهَا مِنْ مَاءِ زَمْزَمَ فَشُرِحَ صَدْرِي إِلَى كَذَا وَكَذَا ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قَتَادَةُ فَقُلْتُ لِلَّذِي مَعِي مَا يَعْنِي قَالَ إِلَى أَسْفَلِ بَطْنِهِ ‏"‏ فَاسْتُخْرِجَ قَلْبِي فَغُسِلَ بِمَاءِ زَمْزَمَ ثُمَّ أُعِيدَ مَكَانَهُ ثُمَّ حُشِيَ إِيمَانًا وَحِكْمَةً ثُمَّ أُتِيتُ بِدَابَّةٍ أَبْيَضَ يُقَالُ لَهُ الْبُرَاقُ فَوْقَ الْحِمَارِ وَدُونَ الْبَغْلِ يَقَعُ خَطْوُهُ عِنْدَ أَقْصَى طَرْفِهِ فَحُمِلْتُ عَلَيْهِ ثُمَّ انْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَا السَّمَاءَ الدُّنْيَا فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ صلى الله عليه وسلم فَقِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ ‏.‏ قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ - قَالَ - فَفَتَحَ لَنَا وَقَالَ مَرْحَبًا بِهِ وَلَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ - قَالَ - فَأَتَيْنَا عَلَى آدَمَ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِقِصَّتِهِ ‏.‏ وَذَكَرَ أَنَّهُ لَقِيَ فِي السَّمَاءِ الثَّانِيَةِ عِيسَى وَيَحْيَى - عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ - وَفِي الثَّالِثَةِ يُوسُفَ وَفِي الرَّابِعَةِ إِدْرِيسَ وَفِي الْخَامِسَةِ هَارُونَ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَسَلَّمَ - قَالَ ‏"‏ ثُمَّ انْطَلَقْنَا حَتَّى انْتَهَيْنَا إِلَى السَّمَاءِ السَّادِسَةِ فَأَتَيْتُ عَلَى مُوسَى عَلَيْهِ السَّلاَمُ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَقَالَ مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ ‏.‏ فَلَمَّا جَاوَزْتُهُ بَكَى فَنُودِيَ مَا يُبْكِيكَ قَالَ رَبِّ هَذَا غُلاَمٌ بَعَثْتَهُ بَعْدِي يَدْخُلُ مِنْ أُمَّتِهِ الْجَنَّةَ أَكْثَرُ مِمَّا يَدْخُلُ مِنْ أُمَّتِي ‏.‏ - قَالَ - ثُمَّ انْطَلَقْنَا حَتَّى انْتَهَيْنَا إِلَى السَّمَاءِ السَّابِعَةِ فَأَتَيْتُ عَلَى إِبْرَاهِيمَ ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ فِي الْحَدِيثِ وَحَدَّثَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ رَأَى أَرْبَعَةَ أَنْهَارٍ يَخْرُجُ مِنْ أَصْلِهَا نَهْرَانِ ظَاهِرَانِ وَنَهْرَانِ بَاطِنَانِ ‏"‏ فَقُلْتُ يَا جِبْرِيلُ مَا هَذِهِ الأَنْهَارُ قَالَ أَمَّا النَّهْرَانِ الْبَاطِنَانِ فَنَهْرَانِ فِي الْجَنَّةِ وَأَمَّا الظَّاهِرَانِ فَالنِّيلُ وَالْفُرَاتُ ‏.‏ ثُمَّ رُفِعَ لِيَ الْبَيْتُ الْمَعْمُورُ فَقُلْتُ يَا جِبْرِيلُ مَا هَذَا قَالَ هَذَا الْبَيْتُ الْمَعْمُورُ يَدْخُلُهُ كُلَّ يَوْمٍ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ إِذَا خَرَجُوا مِنْهُ لَمْ يَعُودُوا فِيهِ آخِرُ مَا عَلَيْهِمْ ‏.‏ ثُمَّ أُتِيتُ بِإِنَاءَيْنِ أَحَدُهُمَا خَمْرٌ وَالآخَرُ لَبَنٌ فَعُرِضَا عَلَىَّ فَاخْتَرْتُ اللَّبَنَ فَقِيلَ أَصَبْتَ أَصَابَ اللَّهُ بِكَ أُمَّتُكَ عَلَى الْفِطْرَةِ ‏.‏ ثُمَّ فُرِضَتْ عَلَىَّ كُلَّ يَوْمٍ خَمْسُونَ صَلاَةً ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ ذَكَرَ قِصَّتَهَا إِلَى آخِرِ الْحَدِيثِ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাবী বলেন, আনাস (রাঃ) সম্ভবত তাঁর সম্প্রদায়ের জনৈক মালিক ইবনু সা’সা’আহ্‌ (রাঃ) বলেন যে, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, একদিন আমি কা’বা শরীফের নিকটে নিদ্রা ও জাগরণের মাঝামাঝি ছিলাম। তখন তিন ব্যক্তির মধ্যবর্তী একজনকে কথা বলতে শুনতে পেলাম। যা হোক তিনি আমার নিকট এসে আমাকে নিয়ে গেলেন। তারপর আমার নিকট একটি স্বর্ণের পাত্র আনা হলো, তাতে যমযমের পানি ছিল। এরপর তিনি আমার বক্ষদেশ এখান থেকে ওখান পর্যন্ত বিদীর্ণ করলেন। বর্ণনাকারী কাতাদাহ্‌ (রহঃ) বলেন, আমি আমার পার্শ্বস্থ একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘এখান থেকে ওখান পর্যন্ত’ বলে কি বুঝাতে চেয়েছেন? তিনি জবাব দিলেন, “বুক থেকে পেটের নীচ পর্যন্ত।” রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, এরপর আমার হৃদপিণ্ডটি বের করা হলো এবং যমযমের পানি দিয়ে তা ধুয়ে পুনরায় যথাস্থানে স্থাপন করে দেয়া হলো। ঈমান ও হিকমাতে আমার হৃদয় পূর্ণ করে দেয়া হলো। এরপর আমার নিকট বুরাক নামের একটি সাদা জন্তু উপস্থিত করা হয়। এটি গাধা থেকে কিছু বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট। যতদূর দৃষ্টি যায় একেক পদক্ষেপে সে ততদূর চলে। এর উপর আমাকে আরোহণ করানো হলো। আমরা চললাম এবং দুনিয়ার আসমান পর্যন্ত পৌছলাম। জিবরীল (‘আঃ) দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, কে? তিনি বললেন, জিবরীল। জিজ্ঞস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, আমার সাথে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আছেন। দ্বাররক্ষী বললেন, তাঁর কাছে আপনাকে পাঠানো হয়েছিল কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর দরজা খুলে দিলেন এবং বললেন, মারহাবা! কত সম্মানিত আগন্তুকের আগমন হয়েছে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তারপর আমরা আদাম (‘আঃ)-এর নিকট আসলাম ..... এভাবে বর্ণনাকারী পূর্ণ হাদীসটি বর্ণনা করে যান। তবে এ রিওয়ায়াতে বলা হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দ্বিতীয় আসমান ‘ঈসা ও ইয়াহ্‌ইয়া, তৃতীয় আসমানে ইউসুফ, চতুর্থ আসমানে ইদ্‌রীস, পঞ্চম আসমানে হারূন (‘আঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তারপর আমরা ষষ্ঠ আসমানে গিয়ে পৌছি এবং মূসা (‘আঃ)-এর নিকট গিয়ে তাঁকে সালাম দেই। তিনি বললেন, মারহাবা, হে সুযোগ্য ‘নাবী, সুযোগ্য ভ্রাতা! এরপর আমরা তাঁকে অতিক্রম করে চলে গেলে তিনি কাঁদতে শুরু করলেন। আওয়াজ এল, তুমি কেন কাঁদছো? তিনি জবাব দিলেন, প্রভু! এ বালককে আপনি আমার পরে পাঠিয়েছেন, অথচ আমার উম্মাত অপেক্ষা তাঁর উম্মাত অধিক সংখ্যায় জান্নাতে প্রবেশ করবে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমরা আবার চললাম এবং সপ্তম আসমানে গিয়ে পৌছলাম ও ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট আসলাম। সহাবা তা এ হাদীসে আরো উল্লেখ করেন যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেন, সেখানে তিনি চারটি নহর দেখেছেন। [৭২] তন্মধ্যে দু’টি প্রকাশ্য ও দু’টি অপ্রকাশ্য। সবগুলোই সিদরাতুল মুনতাহার গোড়া হতে প্রবাহিত। ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি বললাম, হে জিবরীল! এ নহরগুলো কি? তিনি বললেন, অপ্রকাশ্য নহরদ্বয় তো জান্নাতের নহর আর প্রকাশ্যগুলো নীল ও ফুরাত। অর্থাৎ এ দু’টি নহরের সাদৃশ্য রয়েছে জান্নাতের ঐ দু’টি নহরের সাথে। এরপর আমাকে বাইতুল মা’মূর-এ উঠানো হলো। বললাম, হে জিবরীল! এ কি? তিনি বললেন, এ হচ্ছে ‘বাইতুল মা’মূর’। প্রত্যহ এতে সত্তর হাজার ফেরেশতা (তাওয়াফের জন্য) প্রবেশ করে। তারা একবার তাওয়াফ সেরে বের হলে কখনো আর ফের তাওয়াফের সুযোগ হয় না তাদের। তারপর আমার সম্মুখে দু’টি পাত্র পেশ করা হলো- একটি শরাবের, অপরটি দুধের। আমি দুধের পাত্রটি গ্রহণ করলাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনি ঠিক করেছেন। আল্লাহ আপনার উম্মাতকেও আপনার ওয়াসীলায় ফিত্‌রাহ-এর উপর কায়িম রাখুন। তারপর আমার উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সলাত ফারয করা হয় ..... এভাবে বর্ণনাকারী হাদীসের শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেন। (ই.ফা ৩১৩, ই.সে ৩২৪)
 [৭২] প্রিয়’নাবী ৪টি নহর দেখলেন। ২টি যাহিরী আর ২টি বাত্বিনী। যাহিরী বা প্রকাশ্য নহর ছিল, নীল এবং ফুরাত।এর তাৎপর্য সম্ভবত এই যে, তাঁর দ্বীন নীল এবং ফুরাতে সজীব এলাকা সমূহে বিস্তার লাভ করবে। অর্থাৎ এখানকার অধিবাসীরা বংশ পরম্পরায় মুসলিম হবে। এটার অর্থ এ নয় যে, এই দু’টি নহরের পানির উৎস জান্নাতে রয়েছে। নীল নদী আফ্রিকার মিসর রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গেছে এবং ফুরাত নদী ইরাকের কুফার নিকটে অবস্থিত। (সংক্ষিপ্ত নাবাবী)

৩০৬

حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَذَكَرَ نَحْوَهُ وَزَادَ فِيهِ ‏ "‏ فَأُتِيتُ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ مُمْتَلِئٍ حِكْمَةً وَإِيمَانًا فَشُقَّ مِنَ النَّحْرِ إِلَى مَرَاقِّ الْبَطْنِ فَغُسِلَ بِمَاءِ زَمْزَمَ ثُمَّ مُلِئَ حِكْمَةً وَإِيمَانًا ‏"‏ ‏.‏
মালিক ইবনু সা’সা’আহ্‌ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে রাবী এতে ..... এরপর আমার নিকট ঈমান ও হিকমাত ভর্তি একটি রেকাবী আনা হলো এবং আমার বুকের উপরিভাগ হতে পেটের নিম্নাংশ পর্যন্ত বিদীর্ণ করা হলো ও যামযামের পানি দিয়ে ধৌত করে হিকমাত ও ঈমান দিয়ে পরিপূর্ণ করে দেয়া হলো, এ অংশটুকু অতিরিক্ত বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা ৩১৪, ই.সে ৩২৫)

৩০৭

حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الْعَالِيَةِ، يَقُولُ حَدَّثَنِي ابْنُ عَمِّ، نَبِيِّكُمْ صلى الله عليه وسلم - يَعْنِي ابْنَ عَبَّاسٍ - قَالَ ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ أُسْرِيَ بِهِ فَقَالَ ‏"‏ مُوسَى آدَمُ طُوَالٌ كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ ‏"‏ عِيسَى جَعْدٌ مَرْبُوعٌ ‏"‏ ‏.‏ وَذَكَرَ مَالِكًا خَازِنَ جَهَنَّمَ وَذَكَرَ الدَّجَّالَ ‏.‏
ইবনু ‘আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মি’রাজ ভ্রমনের কথা উল্লেখ করে বলেনঃ মূসা (‘আঃ) হচ্ছেন শা্নূয়াহ গোত্রীয় লোকদের ন্যায় দীর্ঘদেহী, গন্দুম (গম) বর্ণের। ‘ঈসা (‘আঃ) মধ্যমাকৃতি সুঠাম দেহ বিশিষ্ট। তাছাড়া রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাহান্নামের রক্ষী মালিক ও দাজ্জালের কথা উল্লেখ করেছিলেন। (ই.ফা. ৩১৫; ই.সে. ৩২৬)

৩০৮

وَحَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَمِّ، نَبِيِّكُمْ صلى الله عليه وسلم ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَرَرْتُ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِي عَلَى مُوسَى بْنِ عِمْرَانَ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - رَجُلٌ آدَمُ طُوَالٌ جَعْدٌ كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ وَرَأَيْتُ عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ مَرْبُوعَ الْخَلْقِ إِلَى الْحُمْرَةِ وَالْبَيَاضِ سَبِطَ الرَّأْسِ ‏"‏ ‏.‏ وَأُرِيَ مَالِكًا خَازِنَ النَّارِ وَالدَّجَّالَ ‏.‏ فِي آيَاتٍ أَرَاهُنَّ اللَّهُ إِيَّاهُ فَلاَ تَكُنْ فِي مِرْيَةٍ مِنْ لِقَائِهِ ‏.‏ قَالَ كَانَ قَتَادَةُ يُفَسِّرُهَا أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ لَقِيَ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلاَمُ ‏.‏
ইবনু ‘আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মি’রাজের রাত্রে আমি মূসা (‘আঃ) এর নিকট দিয়ে গিয়েছি। তিনি দেখতে গন্দুম বর্ণের, দীর্ঘদেহী অনেকটা দেখতে শানূয়াহ গোত্রীয় লোকদের ন্যায়। ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম (‘আঃ) কে দেখেছি, তাঁর রং ছিল শ্বেত লোহিত, সুঠামদেহী আর তাঁর চুলগুলো ছিল স্বাভাবিক। বর্ণনাকারী বলেন, যে নিদর্শনসমুহ কেবল তাকেই দেখানো হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে জাহান্নামের রক্ষী মালিককে এবং দাজ্জালকে দেখানো হয়। “অতএব তুমি তাঁর সাক্ষাত সম্পর্কে সন্দেহ করো না”। (সূরাহ ‘আস সাজদাহ ৪১ : ২৩)
এ আয়াতের তাফসীরে কাতাদাহ (রহঃ) বলতেন যে, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মূসা (আঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। (ই.ফা. ৩১৬, ই.সে. ৩২৭)

৩০৯

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، وَسُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ، قَالاَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا دَاوُدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِوَادِي الأَزْرَقِ فَقَالَ ‏"‏ أَىُّ وَادٍ هَذَا ‏"‏ ‏.‏ فَقَالُوا هَذَا وَادِي الأَزْرَقِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى مُوسَى - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - هَابِطًا مِنَ الثَّنِيَّةِ وَلَهُ جُؤَارٌ إِلَى اللَّهِ بِالتَّلْبِيَةِ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ أَتَى عَلَى ثَنِيَّةِ هَرْشَى ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ أَىُّ ثَنِيَّةٍ هَذِهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا ثَنِيَّةُ هَرْشَى قَالَ ‏"‏ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى يُونُسَ بْنِ مَتَّى - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - عَلَى نَاقَةٍ حَمْرَاءَ جَعْدَةٍ عَلَيْهِ جُبَّةٌ مِنْ صُوفٍ خِطَامُ نَاقَتِهِ خُلْبَةٌ وَهُوَ يُلَبِّي ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ حَنْبَلٍ فِي حَدِيثِهِ قَالَ هُشَيْمٌ يَعْنِي لِيفًا ‏.‏
ইবনু ‘আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন আযরাক উপত্যকা অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, তখন বললেন, এটি কোন উপত্যকা? সঙ্গীগন উত্তর দিলেন, আযরাক উপত্যকা। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি যেন মূসা (‘আঃ) কে গিরিপথ থেকে অবতরন করতে দেখেছি, তিনি উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়াহ পাঠ করছিলেন। [৭৩] তারপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হারশা গিরিপথে আসলেন। তিনি বললেন, এটি কোন গিরিপথ? সঙ্গীগন বললেন, হারশা গিরিপথ। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি যেন ইউনুস ইবনু মাত্তা (‘আঃ) কে দেখছি। তিনি সুঠামদেহী লাল ঊটের পিঠে আরোহিত। গায়ে একটি পশমী জোব্বা, আর তাঁর ঊটের রশিটি খেজুরের ছাল দিয়ে তৈরি।
ইবনু হাম্বাল তাঁর হাদীসে বলেনঃ হুশায়ম বলেছেন, এর অর্থ খেজুর বৃক্ষের ছাল। (ই.ফা. ৩১৭, ই.সে. ৩২৮)
[৭৩] প্রশ্ন হলো যে, ‘নাবী (আঃ), যিনি মারা গেছেন তিনি কি করে হাজ্জ করবেন ও তালবিয়্যাহ পাঠ পড়বেন? কাযী ইয়ায কয়েকভাবে এর ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁর মধ্যে তিনি বলেছেন যে, হতে পারে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এট মিরাজ ছাড়া অন্য কোন রাতে স্বপ্নে দেখেছিলেন এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তাঁর পুর্ব ‘নাবীদের হাজ্জ উদাহরন স্বরুপ দেখিয়েছেন। (সংখিপ্ত নাবাবী)
 [৭৩] প্রশ্ন হলো যে, ‘নাবী; যিনি মারা গেছেন, তিনি কি করে হাজ্জ করবেন ও তালবিয়্যাহ পাঠ করবেন? কাযী ইয়ায কয়েকভাবে এর ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। তার মধ্যে তিনি বলেছেন যে, হতে পারে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটা মি’রাজ ছাড়া অন্য কোন রাতে স্বপ্নে দেখেছিলেন এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তার পূর্ব ‘নাবীদের হাজ্জ উদাহরণ স্বরুপ দেখিছেন। (সংক্ষিপ্ত নাবাবী)

৩১০

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ دَاوُدَ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ سِرْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ فَمَرَرْنَا بِوَادٍ فَقَالَ ‏"‏ أَىُّ وَادٍ هَذَا ‏"‏ ‏.‏ فَقَالُوا وَادِي الأَزْرَقِ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى مُوسَى صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ مِنْ لَوْنِهِ وَشَعْرِهِ شَيْئًا لَمْ يَحْفَظْهُ دَاوُدُ وَاضِعًا إِصْبَعَيْهِ فِي أُذُنَيْهِ لَهُ جُؤَارٌ إِلَى اللَّهِ بِالتَّلْبِيَةِ مَارًّا بِهَذَا الْوَادِي ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ ثُمَّ سِرْنَا حَتَّى أَتَيْنَا عَلَى ثَنِيَّةٍ فَقَالَ ‏"‏ أَىُّ ثَنِيَّةٍ هَذِهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا هَرْشَى أَوْ لِفْتٌ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى يُونُسَ عَلَى نَاقَةٍ حَمْرَاءَ عَلَيْهِ جُبَّةُ صُوفٍ خِطَامُ نَاقَتِهِ لِيفٌ خُلْبَةٌ مَارًّا بِهَذَا الْوَادِي مُلَبِّيًا ‏"‏ ‏.‏
ইবনু আব্বাস (রাযি :) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে আমরা মাক্কাহ ও মাদীনার মধ্যকার এক স্থানে সফর করছিলাম। আমরা একটি উপত্যকা অতিক্রম করছি, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, এটি কোন উপত্যকা? সঙ্গীগন উত্তর করলেন, আযরাক উপত্যকা। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি যেন এখনো মূসা (‘আঃ) কে দেখতে পাচ্ছি, তিনি তাঁর কর্নদ্বয়ের ছিদ্রে অঙ্গুলি রেখে উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়াহ পাঠ করে এ উপত্যকা অতিক্রম করে যাচ্ছেন। বর্ণনাকারী বলেন, এখানে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মূসা (‘আঃ) এর দেহের বর্ন ও চুলের আকৃতি সম্পর্কে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু রাবী দাঊদ তা স্মরণ রাখতে পারেননি। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, তারপর আমরা সামনে আরো অগ্রসর হলাম এবং একটি গিরিপথে এসে পৌছলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, এটি কোন গিরিপথ? সঙ্গীগন বললেন হারশা কিংবা লিফত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি যেন এখনো ইউনুস (‘আঃ) কে দেখতে পাচ্ছি তালবিয়াহ পাঠ করা অবস্থায় তিনি গিরিপথে গিরিপথ অতিক্রম করে যাচ্ছেন। তাঁর গায়ে একটি পশমি জুব্বা, আর তিনি একটি লাল উটের পিঠে আরোহিত। তাঁর উটের রশিটি খেজুর বৃক্ষের ছাল দ্বারা তৈরি। (ই.ফা. ৩১৮, ই.সে. ৩২৯)

৩১১

حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ ابْنِ عَبَّاسٍ فَذَكَرُوا الدَّجَّالَ فَقَالَ إِنَّهُ مَكْتُوبٌ بَيْنَ عَيْنَيْهِ كَافِرٌ ‏.‏ قَالَ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لَمْ أَسْمَعْهُ ‏.‏ قَالَ ذَاكَ وَلَكِنَّهُ قَالَ ‏ "‏ أَمَّا إِبْرَاهِيمُ فَانْظُرُوا إِلَى صَاحِبِكُمْ وَأَمَّا مُوسَى فَرَجُلٌ آدَمُ جَعْدٌ عَلَى جَمَلٍ أَحْمَرَ مَخْطُومٍ بِخُلْبَةٍ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِ إِذَا انْحَدَرَ فِي الْوَادِي يُلَبِّي ‏"‏ ‏.‏
মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। উপস্থিত সবাই দাজ্জালের আলোচনা উঠালেন। তখন কোন একজন বললেন, তার (দাজ্জালের) দু’ চোখের মাঝামাঝিতে “কাফির” শব্দ খচিত আছে। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন কিছু বলেছেন বলে আমি শুনিনি। তবে এতটুকু বলতে শুনেছি যে, ইবরাহীম (‘আঃ) এর আকৃতি জানতে হলে তোমাদের এ সাথীরই (নিজের দিকে ইঙ্গিত) দিকে তাকাও। (তিনি অনুরুপই ছিলেন) আর মূসা (‘আঃ) ছিলেন গন্দুমী বর্ণের সুঠামদেহী। তাকে লাল বর্ণের একটি ঊটের পিঠে আরোহিত দেখেছি। আমি যেন তাকে এখনো তালবিয়াহ পাঠ করা অবস্থায় উপত্যকার ঢালু দিয়ে নামতে দেখেছি। (ই.ফা. ৩১৯, ই.সে. ৩৩০)

৩১২

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ عُرِضَ عَلَىَّ الأَنْبِيَاءُ فَإِذَا مُوسَى ضَرْبٌ مِنَ الرِّجَالِ كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ وَرَأَيْتُ عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَإِذَا أَقْرَبُ مَنْ رَأَيْتُ بِهِ شَبَهًا عُرْوَةُ بْنُ مَسْعُودٍ وَرَأَيْتُ إِبْرَاهِيمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ فَإِذَا أَقْرَبُ مَنْ رَأَيْتُ بِهِ شَبَهًا صَاحِبُكُمْ - يَعْنِي نَفْسَهُ - وَرَأَيْتُ جِبْرِيلَ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَإِذَا أَقْرَبُ مَنْ رَأَيْتُ بِهِ شَبَهًا دِحْيَةُ ‏"‏ ‏.‏ وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ رُمْحٍ ‏"‏ دِحْيَةُ بْنُ خَلِيفَةَ ‏"‏ ‏.‏
জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন য, আমার নিকট ‘নাবীগনকে উপস্থিত করা হলো, তখন মূসা (‘আঃ) কে দেখলাম একজন মধ্যম ধরনের মানুষ, অনেকটা শানূয়াহ গোত্রীয় লোকদের ন্যায়। আর ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম (‘আঃ) কে দেখলাম, তাঁর নিকটতম ব্যক্তি হলেন ‘উরওয়াহ ইবনু মাস’ঊদ। ইবরাহীম (‘আঃ) কে দেখলাম, তাঁর অনেকটা কাছাকাছি সদৃশ ব্যক্তি হচ্ছেন তোমাদের এ সাথী অর্থাৎ স্বয়ং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। জিবরীল (‘আঃ) কে দেখলাম তাঁর কাছাকাছি সদৃশ ব্যক্তি হচ্ছেন দিহইয়া। ইবনু রুমহ-এর বর্ণনায় আছে, দিহইয়া ইবনু খলীফার ন্যায়। (ই.ফা. ৩২০; ই.সে. ৩৩১)

৩১৩

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، - وَتَقَارَبَا فِي اللَّفْظِ - قَالَ ابْنُ رَافِعٍ حَدَّثَنَا وَقَالَ عَبْدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ حِينَ أُسْرِيَ بِي لَقِيتُ مُوسَى - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - ‏"‏ ‏.‏ فَنَعَتَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ فَإِذَا رَجُلٌ - حَسِبْتُهُ قَالَ - مُضْطَرِبٌ رَجِلُ الرَّأْسِ كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ - قَالَ - وَلَقِيتُ عِيسَى ‏"‏ ‏.‏ فَنَعَتَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ فَإِذَا رَبْعَةٌ أَحْمَرُ كَأَنَّمَا خَرَجَ مِنْ دِيمَاسٍ ‏"‏ ‏.‏ - يَعْنِي حَمَّامًا - قَالَ ‏"‏ وَرَأَيْتُ إِبْرَاهِيمَ - صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ - وَأَنَا أَشْبَهُ وَلَدِهِ بِهِ - قَالَ - فَأُتِيتُ بِإِنَاءَيْنِ فِي أَحَدِهِمَا لَبَنٌ وَفِي الآخَرِ خَمْرٌ فَقِيلَ لِي خُذْ أَيَّهُمَا شِئْتَ ‏.‏ فَأَخَذْتُ اللَّبَنَ فَشَرِبْتُهُ ‏.‏ فَقَالَ هُدِيتَ الْفِطْرَةَ أَوْ أَصَبْتَ الْفِطْرَةَ أَمَا إِنَّكَ لَوْ أَخَذْتَ الْخَمْرَ غَوَتْ أُمَّتُكَ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মি’রাজ রজনীতে আমি মূসা (‘আঃ) এর সাথে দেখা করেছি। এরপর ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দেহের আকৃতি বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দেহের আকৃতি বর্ণনা করেছেন যে, তিনি মৃদু কোঁকড়ানো চুল বিশিষ্ট। দেখতে শানুয়াহ গোত্রের লোকদের ন্যায়। ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি ঈসা (‘আঃ) এর সাথে দেখা করেছি। এরপর তিনি ‘ঈসা আ এর আকৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, তিনি মধ্যম ধরনের লোহিত বর্ণের পুরুষ। মনে হচ্ছিল এক্ষুনি যেন গোসলখানা থেকে বেরিয়ে আসলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি ইবরাহীম (‘আঃ) কে দেখেছি। তাঁর সন্তানদের মধ্যে আমিই সবচেয়ে বেশী তাঁর সাদৃশ্যের অধিকারী। এরপর আমার সম্মুখে দু’টি পাত্র পেশ করা হয়, এর একটি দুধের অপরটি শরাবের। আমাকে বলা হলো, এর মধ্যে যেটা আপনার ইচ্ছা সেটা গ্রহন করুন। আমি দুধ গ্রহন করে তা পান করলাম। জিবরীল (‘আঃ) আমাকে বললেন, আপনাকে ফিতরাহ এরই হিদায়াত করা হয়েছে। আপনি যদি শরাব গ্রহন করতেন তবে আপনার উম্মাত গোমরাহ হয়ে যেত। (ই.ফা. ৩২১; ই.সে. ৩৩২)

৭৫. অধ্যায়ঃ

মারইয়াম পুত্র ‘ঈসা ('আ) ও মাসীহিদ দাজ্জাল- এর বর্ণনা।

৩১৪

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ أَرَانِي لَيْلَةً عِنْدَ الْكَعْبَةِ فَرَأَيْتُ رَجُلاً آدَمَ كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ مِنْ أُدْمِ الرِّجَالِ لَهُ لِمَّةٌ كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ مِنَ اللِّمَمِ قَدْ رَجَّلَهَا فَهِيَ تَقْطُرُ مَاءً مُتَّكِئًا عَلَى رَجُلَيْنِ - أَوْ عَلَى عَوَاتِقِ رَجُلَيْنِ - يَطُوفُ بِالْبَيْتِ فَسَأَلْتُ مَنْ هَذَا فَقِيلَ هَذَا الْمَسِيحُ ابْنُ مَرْيَمَ ‏.‏ ثُمَّ إِذَا أَنَا بِرَجُلٍ جَعْدٍ قَطَطٍ أَعْوَرِ الْعَيْنِ الْيُمْنَى كَأَنَّهَا عِنَبَةٌ طَافِيَةٌ فَسَأَلْتُ مَنْ هَذَا فَقِيلَ هَذَا الْمَسِيحُ الدَّجَّالُ ‏"‏ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসুলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, একরাতে (স্বপ্নে) আমি কা’বা শরীফের কাছে আমাকে দেখতে পেলাম। গোধুম (গম) বর্ণের এক ব্যক্তিকে দেখলাম। এ বর্ণের যত লোক তোমরা দেখেছ তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর।ঘাড় পর্যন্ত লম্বা চুল ছিল তাঁর। তিনি এ চুল আচড়িয়ে রেখেছেন আর তা থেকে পানি ঝরছিল। দু’জনের উপর বা বর্ণনাকারী বলেন, দু’জনের কাধের উপর ভর করে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করছেন। জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? বলা হলো ইনি মাসীহ ইবনু মারইয়াম। [৭৪] তারপর দেখি আরেক ব্যক্তি, অধিক কোকড়ানো চুল, ডান চক্ষুটি টেরা যেন একটি আঙুর ফুলে আছে। জিজ্ঞেস করলাম, এ কে? বলা হলো, মাসীহুদ দাজ্জাল। [৭৫] (ই.ফা. ৩২২; ই.সে. ৩৩৩)
 [৭৪] ‘ঈসা আ কে এজন্য মাসীহ বলা হয় যে, যখন তিনি কোন অসুস্থ ব্যক্তির উপর হাত ফিরাতেন তখন সে ভাল হয়ে যেত এবং কেউ কেউ বলেন যে, তাঁর পায়ের তলা বরাবর ছিল, গভীর ছিলনা। এজন্য মাসীহ বলা হয়েছে আরো অনেকেই বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং দাজ্জালকেও মাসীহ বলা হয়েছে। এজন্য যে, তাঁর চক্ষু বসা হবে ও ডান চক্ষু কানা হবে। আবার কেউ বলেছেন, শেষ যুগে যখন সে বের হবে তখন সারা দুনিয়া বিচরন করবে। যার জন্য তাকে মাসীহ বলা হয়েছে। (সংক্ষিপ্ত নাবাবী)
[৭৫] ইবনু ‘উমার (রাযিঃ) এর বর্ণিত এ হাদীস থেকে এটাই প্রমানিত হয় যে, ‘ঈসা (‘আঃ)-এর তাওয়াফের ঘটনা ‘নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্বপ্নযোগে ছিল। কেননা, এ হাদীসে দাজ্জালের তাওয়াফ করার বর্ণনাও এসেছে। যদিও সহীহ হাদীস হতে প্রমান আছে যে, দাজ্জাল মাক্কাহ ও মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবেনা। কাযী ইয়ায (রহঃ) বলেন যে, সম্ভবত এর ব্যাখ্যা এ হতে পারে যে, দাজ্জালের মাক্কাহ ও মাদীনায় প্রবেশ করতে না দেয়া ওই যুগের সাথে খাস যখন সে ফাসাদে লিপ্ত হবে।

৩১৫

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ الْمُسَيَّبِيُّ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، - يَعْنِي ابْنَ عِيَاضٍ - عَنْ مُوسَى، - وَهُوَ ابْنُ عُقْبَةَ - عَنْ نَافِعٍ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا بَيْنَ ظَهْرَانَىِ النَّاسِ الْمَسِيحَ الدَّجَّالَ فَقَالَ ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى لَيْسَ بِأَعْوَرَ أَلاَ إِنَّ الْمَسِيحَ الدَّجَّالَ أَعْوَرُ عَيْنِ الْيُمْنَى كَأَنَّ عَيْنَهُ عِنَبَةٌ طَافِيَةٌ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَرَانِي اللَّيْلَةَ فِي الْمَنَامِ عِنْدَ الْكَعْبَةِ فَإِذَا رَجُلٌ آدَمُ كَأَحْسَنِ مَا تَرَى مِنْ أُدْمِ الرِّجَالِ تَضْرِبُ لِمَّتُهُ بَيْنَ مَنْكِبَيْهِ رَجِلُ الشَّعَرِ يَقْطُرُ رَأْسُهُ مَاءً ‏.‏ وَاضِعًا يَدَيْهِ عَلَى مَنْكِبَىْ رَجُلَيْنِ وَهُوَ بَيْنَهُمَا يَطُوفُ بِالْبَيْتِ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا فَقَالُوا الْمَسِيحُ ابْنُ مَرْيَمَ ‏.‏ وَرَأَيْتُ وَرَاءَهُ رَجُلاً جَعْدًا قَطَطًا أَعْوَرَ عَيْنِ الْيُمْنَى كَأَشْبَهِ مَنْ رَأَيْتُ مِنَ النَّاسِ بِابْنِ قَطَنٍ وَاضِعًا يَدَيْهِ عَلَى مَنْكِبَىْ رَجُلَيْنِ يَطُوفُ بِالْبَيْتِ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا هَذَا الْمَسِيحُ الدَّجَّالُ ‏"‏ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সহাবাদের সম্মুখে দাজ্জালের কথা উল্লেখ করে বললেন, অবশ্যই আল্লাহ তা’য়ালা টেরা চোখ বিশিষ্ট নন। জেনে রাখ দাজ্জালের ডান চোখ টেরা যেন ফোলা একটি আঙ্গুর। ইবনু উ’মার (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাআল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, একবার আমি স্বপ্নে আমাকে কা’বার কাছে পেলাম। গোধুম বর্ণের এক ব্যক্তিকে দেখলাম। এ বর্ণের তোমরা যত লোক দেখেছ তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর। চুল তাঁর কাধ পর্যন্ত ঝুলছিল। তাঁর চুলগুলো ছিল সোজা। তা থেকে তখন পানি ঝরছিল। তিনি দু’ ব্যক্তির কাধে হাত রেখে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করছিলেন। জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? বলা হলো, ইনি মাসীহ ইবনু মারইয়াম। তাঁরই পেছনে দেখলাম, আরেক ব্যক্তি, অধিক কোকড়ানো চুল। তার ডান চোখ ছিল টেরা। সে দেখতে ছিল ইবনু কাতান-এর ন্যায়। সেও দু ব্যক্তির কাধে হাত রেখে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করছিল। জিজ্ঞেস করলাম, এ কে? বলা হলো, মাসিহুদ দাজ্জাল। (ই.ফা. ৩২৩; ই.সে. ৩৩৪)

৩১৬

حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا حَنْظَلَةُ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ رَأَيْتُ عِنْدَ الْكَعْبَةِ رَجُلاً آدَمَ سَبِطَ الرَّأْسِ وَاضِعًا يَدَيْهِ عَلَى رَجُلَيْنِ ‏.‏ يَسْكُبُ رَأْسُهُ - أَوْ يَقْطُرُ رَأْسُهُ - فَسَأَلْتُ مَنْ هَذَا فَقَالُوا عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ أَوِ الْمَسِيحُ ابْنُ مَرْيَمَ - لاَ نَدْرِي أَىَّ ذَلِكَ قَالَ - وَرَأَيْتُ وَرَاءَهُ رَجُلاً أَحْمَرَ جَعْدَ الرَّأْسِ أَعْوَرَ الْعَيْنِ الْيُمْنَى أَشْبَهُ مَنْ رَأَيْتُ بِهِ ابْنُ قَطَنٍ فَسَأَلْتُ مَنْ هَذَا فَقَالُوا الْمَسِيحُ الدَّجَّالُ ‏"‏ ‏.‏
ইবনু ‘উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি স্বপ্নযোগে কা’বার নিকটে খাড়া চুল বিশিষ্ট বাদামী রংয়ের এক ব্যক্তিকে দু’জন লোকের কাধের উপর হাত রাখা অবস্থায় দেখেছি। তাঁর মাথা থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছিল অথবা বলেছেন, ফোটা ফোটা পানি পড়ছিল। আমি জানতে চাইলাম, ইনি কে? লোকেরা বললো, ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম (‘আঃ) অথবা বলেছেন, আল মাসীহ ইবনু মারইয়াম (‘আঃ)। সালিম বলেন, ইবনু ‘উমার (রাযি) সঠিকভাবে অবগত নন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোনটি বলেছেন। তবে তিনি এ কথাও বলেছেন যে, তাঁর পেছনে আমি এমন ব্যক্তিকেও দেখেছি, যে রক্তবর্ণের, স্থুল দেহী, মাথার চুল কোকড়ানো, ডান চোখ কানা, আকৃতিতে আমার দেখা (কাফির) ইবনু কাতানের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। আমি জানতে চাইলাম, এ লোকটি কে? তারা বললেন, এ হলো ‘মাসীহে দাজ্জাল’। (ই.ফা. ৩২৪; ই.সে. ৩৩৫)

৩১৭

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لَمَّا كَذَّبَتْنِي قُرَيْشٌ قُمْتُ فِي الْحِجْرِ فَجَلاَ اللَّهُ لِي بَيْتَ الْمَقْدِسِ فَطَفِقْتُ أُخْبِرُهُمْ عَنْ آيَاتِهِ وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَيْهِ ‏"‏ ‏.‏
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, (মি’রাজের সংবাদে) কুরায়শরা আমাকে মিথ্যাবাদি বলে অপবাদ দিল। তখন আমি হাজরে আসওয়াদের পাশে দাঁড়ালে আল্লাহ্‌ তা’আলা আমার সম্মুখে বাইতুল মাকদাসকে তুলে ধরেন, আর আমি চোখে দেখেই তাঁর সকল সকল নিদর্শনাবলী উল্লেখ করে যেতে লাগলাম। (ই.ফা. ৩২৫, ই, সে, ৩৩৬)

৩১৮

حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ بَيْنَمَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي أَطُوفُ بِالْكَعْبَةِ فَإِذَا رَجُلٌ آدَمُ سَبِطُ الشَّعْرِ بَيْنَ رَجُلَيْنِ يَنْطِفُ رَأْسُهُ مَاءً - أَوْ يُهَرَاقُ رَأْسُهُ مَاءً - قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا هَذَا ابْنُ مَرْيَمَ ‏.‏ ثُمَّ ذَهَبْتُ أَلْتَفِتُ فَإِذَا رَجُلٌ أَحْمَرُ جَسِيمٌ جَعْدُ الرَّأْسِ أَعْوَرُ الْعَيْنِ كَأَنَّ عَيْنَهُ عِنَبَةٌ طَافِيَةٌ ‏.‏ قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا الدَّجَّالُ ‏.‏ أَقْرَبُ النَّاسِ بِهِ شَبَهًا ابْنُ قَطَنٍ ‏"‏ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, একদিন আমি ঘুমিয়েছিলাম। তখন দেখি যে, আমি কা’বা তাওয়াফ করছি। বাদামী বর্ণের মধ্যমাকৃতির এক ব্যক্তিকে সেখানে দেখলাম। তাঁর চুল গুলো ছিল সোজা। তিনি দু’জনের কাধে ভর করে তওয়াফ করছেন। আর তাঁর মাথা হতে টপটপ করে পানি ঝরছে। বর্ণনাকারী বলেন, এখানে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘হয়তো’ ‘অথবা’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? বলা হয় ইনি ইবনু মারিয়াম (আঃ)। তারপর আমি চোখ ফিরিয়ে তাকালাম; লোহিত বর্ণের মোটা এক ব্যক্তিকে দেখলাম, তাঁর চুলগুলো ছিল কোঁকড়ানো। তার চোখ ছিল টেরা, যেন একটি ফোলা আঙ্গুর। জিজ্ঞেস করলাম, এ কে? বলা হলো, এ হলো দাজ্জাল। তার নিকটতম সদৃশ হলো ইবনু কাতান। (ই, ফা.৩২৬, ই সে.৩৩৭)

৩১৯

وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حُجَيْنُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، - وَهُوَ ابْنُ أَبِي سَلَمَةَ - عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْفَضْلِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لَقَدْ رَأَيْتُنِي فِي الْحِجْرِ وَقُرَيْشٌ تَسْأَلُنِي عَنْ مَسْرَاىَ فَسَأَلَتْنِي عَنْ أَشْيَاءَ مِنْ بَيْتِ الْمَقْدِسِ لَمْ أُثْبِتْهَا ‏.‏ فَكُرِبْتُ كُرْبَةً مَا كُرِبْتُ مِثْلَهُ قَطُّ قَالَ فَرَفَعَهُ اللَّهُ لِي أَنْظُرُ إِلَيْهِ مَا يَسْأَلُونِي عَنْ شَىْءٍ إِلاَّ أَنْبَأْتُهُمْ بِهِ وَقَدْ رَأَيْتُنِي فِي جَمَاعَةٍ مِنَ الأَنْبِيَاءِ فَإِذَا مُوسَى قَائِمٌ يُصَلِّي فَإِذَا رَجُلٌ ضَرْبٌ جَعْدٌ كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ وَإِذَا عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - قَائِمٌ يُصَلِّي أَقْرَبُ النَّاسِ بِهِ شَبَهًا عُرْوَةُ بْنُ مَسْعُودٍ الثَّقَفِيُّ وَإِذَا إِبْرَاهِيمُ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - قَائِمٌ يُصَلِّي أَشْبَهُ النَّاسِ بِهِ صَاحِبُكُمْ - يَعْنِي نَفْسَهُ - فَحَانَتِ الصَّلاَةُ فَأَمَمْتُهُمْ فَلَمَّا فَرَغْتُ مِنَ الصَّلاَةِ قَالَ قَائِلٌ يَا مُحَمَّدُ هَذَا مَالِكٌ صَاحِبُ النَّارِ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ ‏.‏ فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ فَبَدَأَنِي بِالسَّلاَمِ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি হাজরে আসওয়াদ এর নিকট ছিলাম। এ সময় কুরায়শরা আমাকে আমার মি’রাজ সম্পর্কে প্রশ্ন করতে শুরু করে। তারা আমাকে বাইতুল মাকদাসের এমন সব বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লাগল যা আমি ভালভাবে দেখিনি। ফলে আমি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়লাম।রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তারপর আল্লাহ্‌ তা’আলা আমার সামনে বাইতুল মাকদাসকে উদ্ভাসিত করে দিলেন এবং আমি তা দেখছিলাম। তারা আমকে যে প্রশ্ন করছিল তাঁর জবাব দিতে লাগলাম। এরপর ‘নাবীদের এক জামা’আতে ও আমি নিজেকে উদ্ভাসিত দেখলাম। মূসা (আঃ)-কে সালাতে দণ্ডায়মান দেখলাম। তিনি শানূয়াহ গোত্রের লোকদের ন্যায় মধ্যমাকৃতি। তাঁর ছুল ছিল কোঁকড়ানো। ‘ঈসা (আঃ)-কে ও সালাতে দাঁড়ানো দেখলাম। তিনি তোমাদের এ সাথীর মতই দেখতে অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তারপর সলাতের সময় হলো, আমি তাঁদের ইমামত করলাম। সলাত শেষে এক ব্যক্তি আমাকে বললেন, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! ইনি জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক ‘মালিক’ ওকে সালাম করুন। আমি তাঁর দিকে তাকালাম। তিনি আমাকে আগেই সালাম করলেন। (ই.ফা. ৩২৭; ই.সে. ৩৩৮)

৭৬. অধ্যায়ঃ

সিদরাতুল মুনতাহার আলোচনা।

৩২০

وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ مِغْوَلٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، جَمِيعًا عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، - وَأَلْفَاظُهُمْ مُتَقَارِبَةٌ - قَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ مِغْوَلٍ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ عَدِيٍّ، عَنْ طَلْحَةَ، عَنْ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لَمَّا أُسْرِيَ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم انْتُهِيَ بِهِ إِلَى سِدْرَةِ الْمُنْتَهَى وَهِيَ فِي السَّمَاءِ السَّادِسَةِ إِلَيْهَا يَنْتَهِي مَا يُعْرَجُ بِهِ مِنَ الأَرْضِ فَيُقْبَضُ مِنْهَا وَإِلَيْهَا يَنْتَهِي مَا يُهْبَطُ بِهِ مِنْ فَوْقِهَا فَيُقْبَضُ مِنْهَا قَالَ ‏{‏ إِذْ يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشَى‏}‏ قَالَ فَرَاشٌ مِنْ ذَهَبٍ ‏.‏ قَالَ فَأُعْطِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثًا أُعْطِيَ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسَ وَأُعْطِيَ خَوَاتِيمَ سُورَةِ الْبَقَرَةِ وَغُفِرَ لِمَنْ لَمْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ مِنْ أُمَّتِهِ شَيْئًا الْمُقْحِمَاتُ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে মি’রাজ রজনীতে ‘সিদ্‌রাতুল মুন্‌তাহা’ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হলো। এটি ষষ্ঠ আসমানে অবস্থিত। [৭৬] জমিন থেকে যা কিছু উত্থিত হয় তা সে পর্যন্ত এসে পৌছে এবং সেখানে থেকে তা গ্রহণ করা হয়। তদ্রূপ ঊর্ধ্বলোক থেকে যা কিছু অবতরণ হয় তাও এ পর্যন্ত এসে পৌছে এবং সেখান থেকে তা গ্রহণ করা হয়। এরপর ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিলাওয়াত করলেনঃ “ যখন প্রান্তবর্তী বাদরী বৃক্ষটি যা দ্বারা আচ্ছাদিত হবার, তা দ্বারা আচ্ছাদিত হলো” – (সূরাহ আন্‌ নাজম ৫৩ : ১৬) এবং বলেন, এখানে ‘যা দ্বারা’ কথাটির অর্থ সোনার পতঙ্গসমূহ। তিনি বলেন, তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তিনটি বিষয় দান করা হলো, পাঁচ ওয়াক্ত সলাত। সূরাহ আল-বাকারায় শেষ দু’ আয়াত এবং শির্‌ক মুক্ত উম্মাতের মারাত্মক গুনাহ তাওবার মাধ্যমে ক্ষমার সুসংবাদ”। [৭৭] (ই.ফা. ৩২৮; ই.সে. ৩৩৯)
 [৭৬] ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন যে, প্রত্যেক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, সিদরাতুল মুনতাহা ষষ্ঠ আসমানে। শুধু আনাস (রাযিঃ) –এর বর্ণিত হাদীস সমূহে আছে যে, সিদরাতুল মুনতাহা সপ্তম আসমানের উপরে। কাযী ইয়ায বলেনঃ সঠিক এবং অধিকাংশের মত এটাই। এ দু’ প্রকার হাদীসের মধ্যে সামঞ্জস্য এভাবে করা যায় যে, ‘সিদরাতুল মুনতাহা’র জড় বা গোড়া ষষ্ঠ আসমানে এবং এ গাছের ডালপাতা সপ্তম আসমানের উপর পর্যন্ত গেছে। কারণ খুব বড় গাছ। খলীল বলেনঃ সিদরাতুল মুনতাহা একটি গাছ যা সপ্তম আসমানে আছে। যা আসমান সমূহ এবং জান্নাত সমূহকে ছায়া করে আছে।
[৭৭] মারাত্মক গুনাহ ক্ষমার অর্থ এ উম্মাহর যে ব্যক্তি শিরক মুক্ত অবস্থায় মারা যাবে, সে চিরস্তায়ী জাহান্নামে থাকবে না। বরং আল্লাহ্‌ তাকে যখনই হোক ক্ষমা করে দিবেন। হে আল্লাহ্‌! তোমার খাস রহমতে শিরক হতে আমাদের বাচিয়ে রেখ এবং তাওহিদের উপর যেন আমাদের সমাপ্তি হয় এ প্রার্থনা করি। (সক্ষিপ্ত নাবাবী)

৩২১

وَحَدَّثَنِي أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبَّادٌ، - وَهُوَ ابْنُ الْعَوَّامِ - حَدَّثَنَا الشَّيْبَانِيُّ، قَالَ سَأَلْتُ زِرَّ بْنَ حُبَيْشٍ عَنْ قَوْلِ اللَّهِ، عَزَّ وَجَلَّ ‏{‏ فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى‏}‏ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ مَسْعُودٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَأَى جِبْرِيلَ لَهُ سِتُّمِائَةِ جَنَاحٍ ‏.‏
শাইবানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি যির ইবনু হুবায়শকে “তাদের মধ্যে দু’ ধনুকের ব্যবধান ছিল কিংবা তাঁর ও কম”-(সূরাহ আন্‌ নাজ্‌ম ৫৩ : ৯)। এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বললেন, ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) আমাকে বলেছেন, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরীল (আঃ)-কে দেখেছিলেন, তাঁর ছয়শ’ ডানা আছে (ই.ফা. ৩২৯; ই.সে. ৩৪০)

৩২২

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ زِرٍّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ ‏{‏ مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَى‏}‏ قَالَ رَأَى جِبْرِيلَ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - لَهُ سِتُّمِائَةِ جَنَاحٍ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তিনি যা দেখেছেন তাঁর অন্তকরণ তা অস্বীকার করেনি”-(সূরাহ আন্‌ নাজ্‌ম ৫৩ : ১১)। আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন এবং এর ব্যাখা প্রসঙ্গে বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরীল (আঃ)-কে দেখেছিলেন তাঁর ছয়শ’ ডানা আছে। (ই.ফা. ৩৩০; ই.সে. ৩৪১)

৩২৩

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سُلَيْمَانَ الشَّيْبَانِيِّ، سَمِعَ زِرَّ بْنَ حُبَيْشٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ ‏{‏ لَقَدْ رَأَى مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَى‏}‏ قَالَ رَأَى جِبْرِيلَ فِي صُورَتِهِ لَهُ سِتُّمِائَةِ جَنَاحٍ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিতঃ
“তিনি তো তাঁর প্রতিপালকের মহান নিদর্শনাবলী দেখেছিলেন”-(সূরাহ আন্‌ নাজ্‌ম ৫৩ : ১৮)। এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন এবং এর ব্যাখা প্রসঙ্গে বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরীল (আঃ)-কে তাঁর আকৃতিতে দেখেছিলেন, তাঁর ছয়শ’ ডানা আছে। (ই.ফা. ৩৩১; ই.সে. ৩৪২)

৭৭.অধ্যায়ঃ

মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “নিশ্চয় তিনি তাঁকে দ্বিতীয়বার দেখেছেন”-(সূরাহ আন্‌ নাজ্‌ম ৫৩ : ১৩) নাবী( সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি ইসরা মি’রাজের রাত্রে তাঁর প্রভূকে দেখেছেন?

৩২৪

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، ‏{‏ وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى‏}‏ قَالَ رَأَى جِبْرِيلَ ‏.‏
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“নিশ্চয় তিনি তাকে আরেকবার দেখেছিলেন”-(সূরাহ আন্‌ নাজ্‌ম ৫৩ : ১৩) আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরীল (আঃ)-কে দেখেছিলেন। (ই.ফা. ৩৩২; ই.সে. ৩৪৩)

৩২৫

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ جَمِيعًا عَنْ وَكِيعٍ، - قَالَ الأَشَجُّ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، - حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ زِيَادِ بْنِ الْحُصَيْنِ أَبِي جَهْمَةَ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ ‏{‏ مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَى‏}‏ ‏{‏ وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى‏}‏ قَالَ رَآهُ بِفُؤَادِهِ مَرَّتَيْنِ ‏.‏
ইবনু ‘আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর প্রতিপালককে অন্তর দ্বারা অনুভূতির মাধ্যমে দেখেছেন। (ই.ফা. ৩৩৩, ই সে.৩৪৪)

৩২৬

ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র বাণীঃ “তিনি যা দেখেছেন, তাঁর অন্তকরণ তা অস্বীকার করেনি” “এবং নিশ্চয়ই তিনি তাঁকে আরেক বার দেখেছেন” (সূরাহ আন্‌ নাজ্‌ম ৫৩ :১১ ও ১৩) আয়াতদ্বয়ের ব্যাখ্যা হচ্ছেঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর প্রভূকে হৃদয় অন্তকরণ দ্বারাই দেখেছেন। (অর্থাৎ বাহ্যিক চোখে প্রত্যক্ষ করেননি)। (ই.ফা. ৩৩৪; ই.সে. ৩৪৫)

৩২৭

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، حَدَّثَنَا أَبُو جَهْمَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏
আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আবূ জাহমাহ এ সানাদে উপরোক্ত হাদীসের অবিকল বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৩৩৫; ই.সে. ৩৪৬)

৩২৮

حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ دَاوُدَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ كُنْتُ مُتَّكِئًا عِنْدَ عَائِشَةَ فَقَالَتْ يَا أَبَا عَائِشَةَ ثَلاَثٌ مَنْ تَكَلَّمَ بِوَاحِدَةٍ مِنْهُنَّ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ ‏.‏ قُلْتُ مَا هُنَّ قَالَتْ مَنْ زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم رَأَى رَبَّهُ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ ‏.‏ قَالَ وَكُنْتُ مُتَّكِئًا فَجَلَسْتُ فَقُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْظِرِينِي وَلاَ تَعْجَلِينِي أَلَمْ يَقُلِ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ‏{‏ وَلَقَدْ رَآهُ بِالأُفُقِ الْمُبِينِ‏}‏ ‏{‏ وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى‏}‏ ‏.‏ فَقَالَتْ أَنَا أَوَّلُ هَذِهِ الأُمَّةِ سَأَلَ عَنْ ذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏"‏ إِنَّمَا هُوَ جِبْرِيلُ لَمْ أَرَهُ عَلَى صُورَتِهِ الَّتِي خُلِقَ عَلَيْهَا غَيْرَ هَاتَيْنِ الْمَرَّتَيْنِ رَأَيْتُهُ مُنْهَبِطًا مِنَ السَّمَاءِ سَادًّا عِظَمُ خَلْقِهِ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَتْ أَوَلَمْ تَسْمَعْ أَنَّ اللَّهَ يَقُولُ ‏{‏ لاَ تُدْرِكُهُ الأَبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ الأَبْصَارَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ‏}‏ أَوَلَمْ تَسْمَعْ أَنَّ اللَّهَ يَقُولُ ‏{‏ وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلاَّ وَحْيًا أَوْ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولاً فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ إِنَّهُ عَلِيٌّ حَكِيمٌ‏}‏ قَالَتْ وَمَنْ زَعَمَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَتَمَ شَيْئًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ وَاللَّهُ يَقُولُ ‏{‏ يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ‏}‏ ‏.‏ قَالَتْ وَمَنْ زَعَمَ أَنَّهُ يُخْبِرُ بِمَا يَكُونُ فِي غَدٍ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ وَاللَّهُ يَقُولُ ‏{‏ قُلْ لاَ يَعْلَمُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ الْغَيْبَ إِلاَّ اللَّهُ‏}‏ ‏.‏
মাসরূক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়িশাহ্‌ (রাঃ) -এর মাজলিসে হেলান দিয়ে বসেছিলেন। তখন তিনি বলছেন, হে আবূ ‘আয়িশাহ্‌। তিনটি কথা এমন, যে এর কোন একটি বললো, সে আল্লাহ্‌ সম্পর্কে ভীষণ অপবাদ দিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সেগুলি কি? তিনি বললেন, যে এ কথা বলে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর প্রতিপালককে দেখেছেন, সে আল্লাহ্‌র উপর ভীষণ অপবাদ দিল। রাবী মাসরূক বলেন, আমি তো হেলান দেয়া অবস্থায় ছিলাম, এবার সোজা হয়ে বসলাম। বললাম, হে উম্মুল মু’মিনীন! থামুন। আমাকে সময় দিন, ব্যস্ত হবেন না। আল্লাহ্‌ তা’আলা কুরআনে কি বলেননি? “তিনি (রসূল) তো তাঁকে (আল্লাহকে) স্পষ্ট দিগন্তে দেখেছেন।-(সূরাহঃ আত তাকভীর ৮১ : ২৩)। অন্যত্র “নিশ্চয় তিনি তাঁকে আরেকবার দেখেছিলেন” -(সূরাহ আন নাজম ৫৩ : ১৩)। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমিই এ উম্মাতের প্রথম ব্যক্তি, যে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছেনঃ তিনি তো ছিলেন জিবরীল (আঃ)। কেবল মাত্র এ দু’বারই আমি তাঁকে তাঁর আসল আকৃতিতে দেখেছি। আমি তাঁকে আসমান থেকে অবতরণ করতে দেখেছি। তাঁর বিরাট দেহ ঢেকে ফেলেছিল আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী সব স্থানটুকু। ‘আয়িশা (রাঃ) আরো বলেন, তুমি শোননি? আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেনঃ “তিনি (আল্লাহ্‌) দৃষ্টির অধিগম্য নন, তবে দৃষ্টিশক্তি তাঁর অধিগত এবং তিনি সূক্ষদর্শী ও সম্যক পরিজ্ঞাত” (সূরাহ আল আন’আম ৬ : ১০৩)। এরূপে তুমি কি শোননি? আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “মানুষের এমন মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ্‌ তাঁর সাথে কথা বলবেন, ওয়াহীর মাধ্যম ব্যতিরেকে, অথবা পর্দার অন্তরাল ব্যতিরেখে, অথবা এমন দূত প্রেরণ ব্যতিরেকে যে তাঁর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ব্যক্ত করেন, তিনি সমুন্নত ও প্রজ্ঞাময়”-(সূরাহ আশ শূরা ৪২ : ৫১)। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আর ঐ ব্যক্তিও আল্লাহ্‌র উপর ভীষণ অপবাদ দেয়, যে এমন কথা বলে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্‌র কিতাবের কোন কথা গোপন রেখেছেন। কেননা আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ “হে রসূল! আপনার প্রতিপালকের নিকট হ’তে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার করুন, যদি তা না করেন তবে আপনি তাঁর বার্তা প্রচারই করলেন না-(সূরাহ আল মায়িদাহ ৫ : ৬৭)। তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ) আরো বলেন, যে ব্যক্তি এ কথা বলে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্‌র ওয়াহী ব্যতীত আগামীকাল কি হবে তা অবহিত করতে পারেন, সেও আল্লাহ্‌র উপর ভীষণ অপবাদ দেয়। কেননা আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, “বল, আসমান ও জমিনে আল্লাহ্‌ ব্যতীত গায়েব সম্পর্কে কেউ জানে না”- (সূরাহ আন্‌ নাম্‌ল ২৭ : ৬৫)। (ই.ফা. ৩৩৬; ই.সে. ৩৪৭)।

৩২৯

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَ حَدِيثِ ابْنِ عُلَيَّةَ وَزَادَ قَالَتْ وَلَوْ كَانَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم كَاتِمًا شَيْئًا مِمَّا أُنْزِلَ عَلَيْهِ لَكَتَمَ هَذِهِ الآيَةَ ‏{‏ وَإِذْ تَقُولُ لِلَّذِي أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَنْعَمْتَ عَلَيْهِ أَمْسِكْ عَلَيْكَ زَوْجَكَ وَاتَّقِ اللَّهَ وَتُخْفِي فِي نَفْسِكَ مَا اللَّهُ مُبْدِيهِ وَتَخْشَى النَّاسَ وَاللَّهُ أَحَقُّ أَنْ تَخْشَاهُ‏}‏
মুহাম্মাদ ইবনু আল মুসান্না (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উক্ত সানাদে ইবনু ‘উলাইয়্যাহ-এর হাদীসে অবিকল বর্ণনা করেছেন। তবে এতে এতটুকু অতিরিক্ত আছে, ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, যদি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উপর অবতীর্ণ ওয়াহীর কোন অংশ গোপন করতেন তবে তিনি এ আয়াতটি অবশ্য গোপন করতেনঃ “স্মরণ করুন, আল্লাহ্‌ যাকে অনুগ্রহ দান করেছেন এবং আপনিও যার [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পোষ্য পুত্র যায়দ] প্রতি অনুগ্রহ করেছেন আপনি তাকে বলেছিলেন “তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখ এবং আল্লাহ্‌ কে ভয় কর। আর আপনি আপনার অন্তরে গোপন করেছিলেন। অথচ আল্লাহ্‌ তা প্রকাশকারী। আপনি লোককে ভয় করেছিলেন, অথচ আল্লাহকে ভয় করা আপনার জন্য অধিকতর সঙ্গত” - (সূরাহ আল আহযাব ৩৩ : ৩৭)। (ই.ফা. ৩৩৭; ই.সে. ৩৪৮)

৩৩০

حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ هَلْ رَأَى مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم رَبَّهُ فَقَالَتْ سُبْحَانَ اللَّهِ لَقَدْ قَفَّ شَعْرِي لِمَا قُلْتَ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِقِصَّتِهِ ‏.‏ وَحَدِيثُ دَاوُدَ أَتَمُّ وَأَطْوَلُ ‏.‏
মাসরূক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)–কে জিজ্ঞেস করলাম- নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর রবকে দেখেছেন কি? জবাবে তিনি (আতঙ্ক বা আশ্চর্যের সাথে) বললেন, সুবহানাল্লাহ্‌! তোমার কথা শুনে আমার শরীরের পশম কাঁটা দিয়ে খাড়া হয়ে গেছে। অতঃপর হাদীসের পূর্ণ বিবরণ বর্ণনা করেছেন। তবে এ প্রসঙ্গে দাঊদের হাদীসটিই পরিপূর্ণ ও বিস্তৃত। (ই.ফা. ৩৩৮; ই.সে. ৩৪৯)

৩৩১

وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ، عَنِ ابْنِ أَشْوَعَ، عَنْ عَامِرٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ فَأَيْنَ قَوْلُهُ ‏{‏ ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّى * فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى * فَأَوْحَى إِلَى عَبْدِهِ مَا أَوْحَى‏}‏ قَالَتْ إِنَّمَا ذَاكَ جِبْرِيلُ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْتِيهِ فِي صُورَةِ الرِّجَالِ وَإِنَّهُ أَتَاهُ فِي هَذِهِ الْمَرَّةِ فِي صُورَتِهِ الَّتِي هِيَ صُورَتُهُ فَسَدَّ أُفُقَ السَّمَاءِ ‏.‏
মাসরূক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আমি ‘আয়িশা (রাঃ)–কে বললাম, (আপনি তো বলেন, মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর প্রতিপালককে দেখেননি) তাহলে আল্লাহর এ বাণীর জবাব কি? “এমনকি দুই ধনুকের সমান কিংবা তার চেয়েও কম দূরত্ব থেকে গেল। তখন আল্লাহর বান্দাকে যে ওয়াহী পৌছার ছিল তা পৌছে দিল”- (সূরাহ আন নাজম ৫৩ : ৯-১১)। ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, ইনি তো হলেন জিবরীল (আঃ)। সাধারণত তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর কাছে আসতেন মানুষের আকৃতিতে। কিন্তু এবার এসেছিলেন তাঁর আসল রূপে। তাঁর দেহ আকাশের সীমা ঢেকে ফেলেছিল। (ই.ফা. ৩৩৯; ই.সে. ৩৫০)

৭৮. অধ্যায়ঃ

রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণীঃ তা ছিল উজ্জ্বল জ্যোতি আমি তা দেখেছি। অন্য বর্ণনায়ঃ আমি উজ্জ্বল জ্যোতি দেখেছি।

৩৩২

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ رَأَيْتَ رَبَّكَ قَالَ ‏ "‏ نُورٌ أَنَّى أَرَاهُ ‏"‏ ‏.‏
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে জিজ্ঞেস করেছি, আপনি কি আপনার প্রতিপালককে দেখেছেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তিনি (আল্লাহ্‌) নূর, তা আমি কি রূপে দেখবো? (ই.ফা. ৩৪০; ই.সে. ৩৫১)

৩৩৩

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، كِلاَهُمَا عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ قُلْتُ لأَبِي ذَرٍّ لَوْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَسَأَلْتُهُ فَقَالَ عَنْ أَىِّ شَىْءٍ كُنْتَ تَسْأَلُهُ قَالَ كُنْتُ أَسْأَلُهُ هَلْ رَأَيْتَ رَبَّكَ قَالَ أَبُو ذَرٍّ قَدْ سَأَلْتُ فَقَالَ ‏ "‏ رَأَيْتُ نُورًا ‏"‏ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আবূ যার (রাঃ)-কে বললাম, যদি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর দেখা পেতাম তবে অবশ্যই তাঁকে একটি কথা জিজ্ঞেস করতাম। আবূ যার (রাঃ) বললেন, কি জিজ্ঞেস করতে? তিনি বলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করতাম যে, আপনি কি আপনার প্রতিপালককে দেখেছেন? আবূ যার (রাঃ) বললেন, এ কথা তো আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি বলেছেন, আমি নূর দেখেছি। (ই.ফা. ৩৪১; ই.সে. ৩৫২)

৭৯. অধ্যায়ঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণী- নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তা’আলাকে নিদ্রা স্পর্শ করে না; তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেনঃ “নূরই তাঁর আড়াল, যদি তা প্রকাশ পেত তাহলে তাঁর চেহারার জ্যোতি সৃষ্টি জগতের যতদুর পর্যন্ত পৌঁছতো তা পুড়ে ছারখার করে দিতো”

৩৩৪

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ قَامَ فِينَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِخَمْسِ كَلِمَاتٍ فَقَالَ ‏ "‏ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لاَ يَنَامُ وَلاَ يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَنَامَ يَخْفِضُ الْقِسْطَ وَيَرْفَعُهُ يُرْفَعُ إِلَيْهِ عَمَلُ اللَّيْلِ قَبْلَ عَمَلِ النَّهَارِ وَعَمَلُ النَّهَارِ قَبْلَ عَمَلِ اللَّيْلِ حِجَابُهُ النُّورُ - وَفِي رِوَايَةِ أَبِي بَكْرٍ النَّارُ - لَوْ كَشَفَهُ لأَحْرَقَتْ سُبُحَاتُ وَجْهِهِ مَا انْتَهَى إِلَيْهِ بَصَرُهُ مِنْ خَلْقِهِ ‏"‏ ‏.‏ - وَفِي رِوَايَةِ أَبِي بَكْرٍ عَنِ الأَعْمَشِ وَلَمْ يَقُلْ حَدَّثَنَا ‏.‏
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে পাঁচটি কথা বললেনঃ (১) আল্লাহ্‌ কখনও নিদ্রা যান না। (২) নিদ্রিত হওয়া তাঁর সাজেও না। (৩) তিনি তাঁর ইচ্ছানুসারে মীযান (দাঁড়িপাল্লা) নামান এবং উত্তোলন করেন। (৪) দিনের পূর্বেই রাতের সকল ‘আমাল তাঁর কাছে পেশ করা হয়। রাতের পূর্বেই দিনের সকল ‘আমাল তাঁর কাছে পেশ করা হয়। (৫) তিনি নূরের পর্দায় আচ্ছাদিত। আবূ বকর (রাঃ)-এর আরেক বর্ণনায় (আরবী) (আলো) এর পরিবর্তে (আরবী) (আগুন) শব্দের উল্লেখ রয়েছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যদি সে আবরণ খুলে দেয়া হয়, তবে তাঁর নুরের আলোচ্ছটা সৃষ্টি জগতের দৃশ্যমান সব কিছু ভস্ম করে দিবে। (ই.ফা. ৩৪২, ই সে. ৩৫৩)

৩৩৫

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ قَالَ قَامَ فِينَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ ‏.‏ ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِ حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ وَلَمْ يَذْكُرْ ‏ "‏ مِنْ خَلْقِهِ ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ حِجَابُهُ النُّورُ ‏.‏
আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পূর্ব বর্ণিত সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এ রিওয়ায়াতে বলা হয়েছে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সম্মুখে চারটি কথা নিয়ে দাঁড়ালেন। বর্ণনাকারী আবূ মু’আবিয়ার হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি (আরবী) ‘সৃষ্টি জগতের’ শব্দ উল্লেখ করেননি এবং তিনি (আরবী) ‘তিনি নূরের পর্দায় আচ্ছাদিত’ শব্দ উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ৩৪৩; ই.সে. ৩৫৪)

৩৩৬

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ قَامَ فِينَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِأَرْبَعٍ ‏ "‏ إِنَّ اللَّهَ لاَ يَنَامُ وَلاَ يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَنَامَ يَرْفَعُ الْقِسْطَ وَيَخْفِضُهُ وَيُرْفَعُ إِلَيْهِ عَمَلُ النَّهَارِ بِاللَّيْلِ وَعَمَلُ اللَّيْلِ بِالنَّهَارِ ‏"‏ ‏.‏
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সম্মুখে চারটি কথা নিয়ে আলোচনা করে বলেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা কখনো নিদ্রা যান না আর নিদ্রা তাঁর জন্য শোভাও পায় না, তিনি তুলাদণ্ড উচু এবং নীচু করেন, তাঁর নিকট রাতের পূর্বেই দিনের ‘আমাল উত্থিত হয় এবং দিনের পূর্বে রাতের ‘আমাল উত্থিত হয়। (ই.ফা. ৩৪৪; ই.সে. ৩৫৫)

৮০. অধ্যায়ঃ

আখিরাতে মু’মিনগণ তাদের প্রভুকে দেখতে পাবে

৩৩৭

حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، وَأَبُو غَسَّانَ الْمِسْمَعِيُّ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ جَمِيعًا عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ عَبْدِ الصَّمَدِ، - وَاللَّفْظُ لأَبِي غَسَّانَ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ الصَّمَدِ، - حَدَّثَنَا أَبُو عِمْرَانَ الْجَوْنِيُّ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ جَنَّتَانِ مِنْ فِضَّةٍ آنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا وَجَنَّتَانِ مِنْ ذَهَبٍ آنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا وَمَا بَيْنَ الْقَوْمِ وَبَيْنَ أَنْ يَنْظُرُوا إِلَى رَبِّهِمْ إِلاَّ رِدَاءُ الْكِبْرِيَاءِ عَلَى وَجْهِهِ فِي جَنَّةِ عَدْنٍ ‏"‏ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, দু’টি জান্নাত এমন যে, এগুলোর বাসনপত্র ও সমুদয় সামগ্রী রূপার তৈরি। অন্য দু’টি জান্নাত এমন, যেগুলোর পাত্রাদি ও সমুদয় সামগ্রী স্বর্ণের তৈরি। ‘আদ্‌ন নামক জান্নাতে জান্নাতীগণ আল্লাহর দর্শন লাভ করবেন। এ সময় তাঁদের ও আল্লাহর মাঝে তাঁর মহিমার চাদর ব্যতীত আর কোন অন্তরায় থাকবে না। (ই.ফা. ৩৪৫; ই.সে. ৩৫৬)

৩৩৮

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ مَيْسَرَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ صُهَيْبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِذَا دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ - قَالَ - يَقُولُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى تُرِيدُونَ شَيْئًا أَزِيدُكُمْ فَيَقُولُونَ أَلَمْ تُبَيِّضْ وُجُوهَنَا أَلَمْ تُدْخِلْنَا الْجَنَّةَ وَتُنَجِّنَا مِنَ النَّارِ - قَالَ - فَيَكْشِفُ الْحِجَابَ فَمَا أُعْطُوا شَيْئًا أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنَ النَّظَرِ إِلَى رَبِّهِمْ عَزَّ وَجَلَّ ‏"‏ ‏.‏
সুহায়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, জান্নাতীগণ যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে তখন আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে বলবেন, তোমরা কি চাও, আমি আরো অনুগ্রহ বাড়িয়ে দেই? তারা বলবে, আপনি কি আমাদের চেহারাগুলো আলোকোজ্জ্বল করে দেননি, আমাদের জান্নাতে দাখিল করেননি এবং জাহান্নাম থেকে নাযাত দেননি? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, এরপর আল্লাহ তা’আলা আবরণ তুলে নিবেন। আল্লাহর দর্শন লাভের চেয়ে অধিক পছন্দনীয় জিনিস আর কিছুই তাদের দেয়া হয়নি। [৭৮] (ই.ফা. ৩৪৬; ই.সে. ৩৫৭)
 [৭৮] আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআন মাজীদের মধ্যে সূরাহ আল আন’আম-এর ১০৩ নং আয়াতে ইরশাদ করেন : “দৃষ্টিসমূহ তাঁকে পেতে পারেন না অবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে পেয়ে থাকেন। তিনি অত্যন্ত সূক্ষ্মদর্শী, সুবিজ্ঞ।”
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের ‘আক্বীদাহ্‌ (বিশ্বাস) হল, এ জগতে আল্লাহ তা’আলাকে দেখা সম্ভব নয়। যেমন মূসা (‘আঃ) বলেছিলেন, “হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে দেখা দাও।” উত্তরে আল্লাহ বললেন, “তুমি কস্মিনকালেও আমাকে দেখতে পারবে না” – (সূরাহ আল আ’রাফ ৭ : ১৪৩) যখন মূসা (‘আঃ) তাঁর প্রতিপালকের দেখার সুযোগ পেলেন না, তখন অন্য জিন্‌ বা মানুষের পক্ষে কিভাবে তা সম্ভব হতে পারে? তবে পরকালে মু’মিনগণ আল্লাহ তা’আলার দর্শন লাভে ধন্য হবে। যা সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমের হাদীস দ্বারা এবং পবিত্র কুরআনের সূরাহ কিয়ামাহ-এর ২৩ নং আয়াত দ্বারা প্রমানিত। আর কাফিররা সেদিন শাস্তি স্বরূপ আল্লাহকে দেখার গৌরব হতে বঞ্চিত হবে।

৩৩৯

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ ثُمَّ تَلاَ هَذِهِ الآيَةَ ‏{‏ لِلَّذِينَ أَحْسَنُوا الْحُسْنَى وَزِيَادَةٌ‏}‏
হাম্মাদ ইবনু সালামাহ্‌ (রাঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তবে এতে তিনি আরো বলেন, তারপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত তিলাওয়াত করেনঃ “যারা ভাল ‘আমাল করে তাদের জন্য আছে কল্যাণ (জান্নাত) এবং আরো অধিক কিছু (আল্লাহর দর্শন) ”-(সূরাহ ইউনুস ১০ : ২৬) (ই.ফা. ৩৪৭; ই.সে. ৩৫৮)

৮১. অধ্যায়ঃ

মহান আল্লাহর দর্শন পথের জ্ঞান

৩৪০

حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ نَاسًا قَالُوا لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ هَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ هَلْ تُضَارُّونَ فِي الشَّمْسِ لَيْسَ دُونَهَا سَحَابٌ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَإِنَّكُمْ تَرَوْنَهُ كَذَلِكَ يَجْمَعُ اللَّهُ النَّاسَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُولُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ شَيْئًا فَلْيَتَّبِعْهُ ‏.‏ فَيَتَّبِعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الشَّمْسَ الشَّمْسَ وَيَتَّبِعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الْقَمَرَ الْقَمَرَ وَيَتَّبِعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الطَّوَاغِيتَ الطَّوَاغِيتَ وَتَبْقَى هَذِهِ الأُمَّةُ فِيهَا مُنَافِقُوهَا فَيَأْتِيهِمُ اللَّهُ - تَبَارَكَ وَتَعَالَى - فِي صُورَةٍ غَيْرِ صُورَتِهِ الَّتِي يَعْرِفُونَ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ ‏.‏ فَيَقُولُونَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْكَ هَذَا مَكَانُنَا حَتَّى يَأْتِيَنَا رَبُّنَا فَإِذَا جَاءَ رَبُّنَا عَرَفْنَاهُ ‏.‏ فَيَأْتِيهِمُ اللَّهُ تَعَالَى فِي صُورَتِهِ الَّتِي يَعْرِفُونَ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ ‏.‏ فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا ‏.‏ فَيَتَّبِعُونَهُ وَيُضْرَبُ الصِّرَاطُ بَيْنَ ظَهْرَىْ جَهَنَّمَ فَأَكُونُ أَنَا وَأُمَّتِي أَوَّلَ مَنْ يُجِيزُ وَلاَ يَتَكَلَّمُ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ الرُّسُلُ وَدَعْوَى الرُّسُلِ يَوْمَئِذٍ اللَّهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ ‏.‏ وَفِي جَهَنَّمَ كَلاَلِيبُ مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ هَلْ رَأَيْتُمُ السَّعْدَانَ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَإِنَّهَا مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يَعْلَمُ مَا قَدْرُ عِظَمِهَا إِلاَّ اللَّهُ تَخْطَفُ النَّاسَ بِأَعْمَالِهِمْ فَمِنْهُمُ الْمُؤْمِنُ بَقِيَ بِعَمَلِهِ وَمِنْهُمُ الْمُجَازَى حَتَّى يُنَجَّى حَتَّى إِذَا فَرَغَ اللَّهُ مِنَ الْقَضَاءِ بَيْنَ الْعِبَادِ وَأَرَادَ أَنْ يُخْرِجَ بِرَحْمَتِهِ مَنْ أَرَادَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ أَمَرَ الْمَلاَئِكَةَ أَنْ يُخْرِجُوا مِنَ النَّارِ مَنْ كَانَ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا مِمَّنْ أَرَادَ اللَّهُ تَعَالَى أَنْ يَرْحَمَهُ مِمَّنْ يَقُولُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ‏.‏ فَيَعْرِفُونَهُمْ فِي النَّارِ يَعْرِفُونَهُمْ بِأَثَرِ السُّجُودِ تَأْكُلُ النَّارُ مِنِ ابْنِ آدَمَ إِلاَّ أَثَرَ السُّجُودِ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَى النَّارِ أَنْ تَأْكُلَ أَثَرَ السُّجُودِ ‏.‏ فَيُخْرَجُونَ مِنَ النَّارِ وَقَدِ امْتَحَشُوا فَيُصَبُّ عَلَيْهِمْ مَاءُ الْحَيَاةِ فَيَنْبُتُونَ مِنْهُ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ ثُمَّ يَفْرُغُ اللَّهُ تَعَالَى مِنَ الْقَضَاءِ بَيْنَ الْعِبَادِ وَيَبْقَى رَجُلٌ مُقْبِلٌ بِوَجْهِهِ عَلَى النَّارِ وَهُوَ آخِرُ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولاً الْجَنَّةَ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ اصْرِفْ وَجْهِي عَنِ النَّارِ فَإِنَّهُ قَدْ قَشَبَنِي رِيحُهَا وَأَحْرَقَنِي ذَكَاؤُهَا فَيَدْعُو اللَّهَ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَدْعُوَهُ ثُمَّ يَقُولُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى هَلْ عَسَيْتَ إِنْ فَعَلْتُ ذَلِكَ بِكَ أَنْ تَسْأَلَ غَيْرَهُ ‏.‏ فَيَقُولُ لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهُ ‏.‏ وَيُعْطِي رَبَّهُ مِنْ عُهُودٍ وَمَوَاثِيقَ مَا شَاءَ اللَّهُ فَيَصْرِفُ اللَّهُ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ فَإِذَا أَقْبَلَ عَلَى الْجَنَّةِ وَرَآهَا سَكَتَ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَسْكُتَ ثُمَّ يَقُولُ أَىْ رَبِّ قَدِّمْنِي إِلَى بَابِ الْجَنَّةِ ‏.‏ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ أَلَيْسَ قَدْ أَعْطَيْتَ عُهُودَكَ وَمَوَاثِيقَكَ لاَ تَسْأَلُنِي غَيْرَ الَّذِي أَعْطَيْتُكَ وَيْلَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا أَغْدَرَكَ ‏.‏ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ وَيَدْعُو اللَّهَ حَتَّى يَقُولَ لَهُ فَهَلْ عَسَيْتَ إِنْ أَعْطَيْتُكَ ذَلِكَ أَنْ تَسْأَلَ غَيْرَهُ ‏.‏ فَيَقُولُ لاَ وَعِزَّتِكَ ‏.‏ فَيُعطِي رَبَّهُ مَا شَاءَ اللَّهُ مِنْ عُهُودٍ وَمَوَاثِيقَ فَيُقَدِّمُهُ إِلَى بَابِ الْجَنَّةِ فَإِذَا قَامَ عَلَى بَابِ الْجَنَّةِ انْفَهَقَتْ لَهُ الْجَنَّةُ فَرَأَى مَا فِيهَا مِنَ الْخَيْرِ وَالسُّرُورِ فَيَسْكُتُ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَسْكُتَ ثُمَّ يَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْخِلْنِي الْجَنَّةَ ‏.‏ فَيَقُولُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى لَهُ أَلَيْسَ قَدْ أَعْطَيْتَ عُهُودَكَ وَمَوَاثِيقَكَ أَنْ لاَ تَسْأَلَ غَيْرَ مَا أُعْطِيتَ وَيْلَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا أَغْدَرَكَ ‏.‏ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ لاَ أَكُونُ أَشْقَى خَلْقِكَ ‏.‏ فَلاَ يَزَالُ يَدْعُو اللَّهَ حَتَّى يَضْحَكَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى مِنْهُ فَإِذَا ضَحِكَ اللَّهُ مِنْهُ قَالَ ادْخُلِ الْجَنَّةَ ‏.‏ فَإِذَا دَخَلَهَا قَالَ اللَّهُ لَهُ تَمَنَّهْ ‏.‏ فَيَسْأَلُ رَبَّهُ وَيَتَمَنَّى حَتَّى إِنَّ اللَّهَ لَيُذَكِّرُهُ مِنْ كَذَا وَكَذَا حَتَّى إِذَا انْقَطَعَتْ بِهِ الأَمَانِيُّ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى ذَلِكَ لَكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ وَأَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ لاَ يَرُدُّ عَلَيْهِ مِنْ حَدِيثِهِ شَيْئًا ‏.‏ حَتَّى إِذَا حَدَّثَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَنَّ اللَّهَ قَالَ لِذَلِكَ الرَّجُلِ وَمِثْلُهُ مَعَهُ ‏.‏ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ مَعَهُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ ‏.‏ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ مَا حَفِظْتُ إِلاَّ قَوْلَهُ ذَلِكَ لَكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ ‏.‏ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ أَشْهَدُ أَنِّي حَفِظْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَوْلَهُ ذَلِكَ لَكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ ‏.‏ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ وَذَلِكَ الرَّجُلُ آخِرُ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولاً الْجَنَّةَ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কয়েকজন সহাবা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! কিয়ামাত দিবসে আমরা কি আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাবো? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখতে কি তোমাদের পরস্পরের মাঝে কষ্ট হয়? সহাবাগণ বললেন, না। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে কি তোমাদের পরস্পরের কষ্টবোধ হয়? তাঁরা বললেন, না। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তদ্রূপ তোমরা তাঁকেও দেখবে। কিয়ামাত দিবসে আল্লাহ সকল মানুষকে জমায়েত করে বলবেন, পৃথিবীতে তোমাদের যে যার ‘ইবাদাত করেছিলে আজ তাকেই অনুসরণ কর। তখন যারা সূর্যের উপাসনা করতো, তারা সূর্যের সাথে থাকবে। যারা চন্দ্রের উপাসনা করতো, তারা চন্দ্রের সাথে থাকবে। আর যারা আল্লাহদ্রোহীদের (তাগূতের) উপাসনা করতো, তারা আল্লাহদ্রোহীদের সাথে জমায়েত হয়ে যাবে। কেবল এ উম্মাত অবশিষ্ট থাকবে। তন্মধ্যে মুনাফিকরাও থাকবে। তখন আল্লাহ তা’আলা তাদের নিকট এমন আকৃতিতে উপস্থিত হবেন যা তারা চিনে না। তারপর (আল্লাহ তা’আলা) বলবেন, আমি তোমাদের প্রতিপালক (সুতরাং তোমরা আমার পিছনে চল)। তারা বলবে, না’ঊযুবিল্লাহ। আমাদের প্রভু না আসা পর্যন্ত আমরা এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবো। আর তিনি যখন আসবেন, তখন আমরা তাকে চিনতে পারবো। এরপর আল্লাহ তা’আলা তাদের নিকট তাদের পরিচিত আকৃতিতে আসবেন, বলবেন : আমি তোমাদের প্রভু। তারা বলবে, হ্যাঁ, আপনি আমাদের প্রভু। এ বলে তারা তাঁকে অনুসরণ করবে। এমন সময়ে জাহান্নামের উপর দিয়ে সিরাত (সাঁকো) বসানো হবে। [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন] আর আমি ও আমার উম্মাতই হব প্রথম এ পথ অতিক্রমকারী। সেদিন রসূলগণ ব্যতীত অন্য কেউ মুখ খোলারও সাহস করবে না। আর রসূলগণও কেবল এ দু’আ করবেন। হে আল্লাহ! নিরাপত্তা দাও, নিরাপত্তা দাও। আর জাহান্নামে থাকবে সা’দান বৃক্ষের কাঁটার মত অনেক কাঁটাযুক্ত লৌহদণ্ড। তোমরা সা’দান বৃক্ষটি দেখেছ কি? সহাবাগণ বললেন, হ্যাঁ দেখেছি। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তা সা’দান বৃক্ষের কাঁটার মতই, তবে সেটা যে কত বিরাট তা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না। পাপ কাজের জন্য কাঁটার আংটাগুলো ছোবল দিতে থাকবে। তাদের কেউ কেউ মু’মিন (যারা সাময়িক জাহান্নামী) তারা রক্ষা পাবে, আর কেউ তো শাস্তি ভোগ করে নাযাত পাবে। এরপর আল্লাহ বান্দাদের মধ্যে ফায়সালা হতে অবসর হলে স্বীয় রহমাতে কিছু সংখ্যক জাহান্নামীদের (জাহান্নাম হতে) বের করতে দেয়ার ইচ্ছা করবেন তখন ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিবেন যারা কালিমায় বিশ্বাসী ও শির্‌ক করেনি যাদের উপর আল্লাহ তা’আলা রহম করতে চাইবেন যে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আসো। আর যাদের উপর আল্লাহ তা’আলা দয়া করতে চেয়েছেন তারা ঐ সকল লোক যারা ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলত। অতঃপর ফেরেশতাগণ তাদের সনাক্ত করবেন। তারা সাজদাহ চিহ্নের সাহায্যে তাদের চিনবেন। কারণ, অগ্নি মানুষের দেহের সবকিছু জ্বালিয়ে ফেললেও সাজদার স্থান অক্ষত থাকবে। আল্লাহ তা’আলা সাজদার চিহ্ন নষ্ট করা হারাম (নিষিদ্ধ) করে দিয়েছেন। মোটকথা, ফেরেশতাগণ এদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে আনবে এমন অবস্থায় যে, তাদের দেহ আগুনে দগ্ধ। তাদের উপর ‘মাউল-হায়াত’ (সঞ্জীবনী পানি) ঢেলে দেয়া হবে। তখন তারা এতে এমনভাবে সতেজ হয়ে উঠবে যেমনভাবে শস্য অঙ্কুর পানিসিক্ত উর্বর জমিতে সতেজ হয়ে উঠে। তারপর আল্লাহ তা’আলা বান্দাদের বিচার সমাপ্ত করবেন। শেষে এক ব্যক্তি থেকে যাবে। তার মুখমণ্ডল হবে জাহান্নামের দিকে। এই হবে সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী। সে বলবে, হে আমার প্রভু! (অনুগ্রহ করে) আমার মুখটি জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দিন। কারণ জাহান্নামের দুর্গন্ধ আমাকে অসহনীয় কষ্ট দিচ্ছে; এর লেলিহান অগ্নিশিখা আমাকে দগ্ধ করে দিচ্ছে। আল্লাহ যতদিন চান ততদিন পর্যন্ত সে তাঁর নিকট দু’আ করতে থাকবে। পরে আল্লাহ বলবেন, তোমার এ দু’আ কবূল করলে তুমি কি আরো কিছু কামনা করবে? সে বিভিন্ন ধরণের ও’য়াদা ও অঙ্গীকার করে বলবে যে, জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দিবেন। তার চেহারা যখন জান্নাতের দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে, আর সে জান্নাত দেখবে, তখন আল্লাহ যতদিন চান সে নীরব থাকবে। পরে আবার বলবে, হে আমার প্রতিপালক! কেবল জান্নাতের দরজা পর্যন্ত আমাকে পৌঁছে দিন। আল্লাহ তাকে বলবেন, তুমি না অঙ্গীকার দিয়েছিলে যে, আমি তোমাকে যা দিয়েছি তা ছাড়া আর কিছু চাইবে না। হে আদাম সন্তান! তুমি হতভাগা ও তুমি সাংঘাতিক ওয়া’দাভঙ্গকারী। তখন সে বলবে, হে আমার রব! এই বলে আল্লাহর কাছে দু’আ করতে থাকবে। আল্লাহ বলবেন, তুমি যা চাও তা যদি দিয়ে দেই তবে আর কিছু চাইবে না তো? সে বলবে, আপনার ইজ্জতের কসম! আর কিছু চাইব না। এভাবে সে তার অক্ষমতা (আল্লাহর কাছে) পেশ করতে থাকবে যতদিন আল্লাহর ইচ্ছা হয়। তারপর তাকে জান্নাতের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেয়া হবে। এবার যখন সে জান্নাতের দরজায় দাঁড়াবে, তখন জান্নাত তার সামনে উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে। সে জান্নাতের সমৃদ্ধি ও সুখ দেখতে থাকবে। সেখানে আল্লাহ যতক্ষণ চান সে ততক্ষণ চুপ করে থাকবে। পরে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিন। আল্লাহ বলবেন, তুমি না সকল ধরণের ওয়া’দা ও অঙ্গীকার করে বলেছিলে, আমি যা দান করেছি এর চাইতে বেশি আর কিছু চাইবে না? হে হতভাগা আদাম সন্তান! তুমি তো ভীষণ ওয়াদাভঙ্গকারী। সে বলবে, হে আমার রব! আমি যেন আপনার সৃষ্টির সবচেয়ে দুর্ভাগা না হই। সে বার বার দু’আ করতে থাকবে। পরিশেষে তার অবস্থা দেখে আল্লাহ তা’আলা হেসে ফেলবেন। আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। (জান্নাতে প্রবেশের পর) আল্লাহ তাকে বলবেন, (যা চাওয়ার) চাও। তখন সে তার সকল কামনা চেয়ে শেষ করবে। এরপর আল্লাহ নিজেই স্মরন করায়ে বলবেন, অমুক অমুকটা চাও। এভাবে তার কামনা শেষ হয়ে গেলে আল্লাহ বলবেন, তোমাকে এ সব এবং এর সমপরিমাণ আরো দেয়া হলো।
‘আতা ইবনু ইয়াযীদ বলেন, এবং আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত এ হাদীসের কোন কথাই রদ করেননি। তবে আবূ হুরায়রা (রাঃ) যখন এ কথা উল্লেখ করলেন, “আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যক্তিকে বলবেন, তোমাকে এ সব এবং এর সমপরিমাণ আরো দেয়া হলো” তখন আবূ সা’ঈদ (রাঃ) বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা! বরং তা সহ আরো দশগুণ দেয়া হবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে “এর সম-পরিমাণ” এ শব্দ স্মরণ রেখেছি। আবূ সা’ঈদ (রাঃ) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে “আরো দশগুণ” এ শব্দ সংরক্ষিত রেখেছি।
রাবী বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) পরিশেষে বলেন, এ ব্যক্তি হবে জান্নাতে সর্বশেষ প্রবেশকারী। (ই.ফা. ৩৪৮; ই.সে. ৩৫৯)

৩৪১

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ، أَخْبَرَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، وَعَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ اللَّيْثِيُّ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَخْبَرَهُمَا أَنَّ النَّاسَ قَالُوا لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمِثْلِ مَعْنَى حَدِيثِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সহাবাগণ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! কিয়ামাতের দিন আমরা কি আমাদের রবকে দেখতে পাব? ..... এরপর রাবী ইবরাহীম ইবনু সা’দ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ উল্লেখ করেন। (ই.ফা. ৩৪৯; ই.সে. ৩৬০)

৩৪২

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنَّ أَدْنَى مَقْعَدِ أَحَدِكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ أَنْ يَقُولَ لَهُ تَمَنَّ ‏.‏ فَيَتَمَنَّى وَيَتَمَنَّى فَيَقُولُ لَهُ هَلْ تَمَنَّيْتَ فَيَقُولُ نَعَمْ ‏.‏ فَيَقُولُ لَهُ فَإِنَّ لَكَ مَا تَمَنَّيْتَ وَمِثْلَهُ مَعَهُ ‏"‏ ‏.‏
হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) আমাদেরকে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কতিপয় হাদীস বর্ণনা করেন। তন্মধ্যে এটিও ছিল, তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ের জান্নাতীকে বলা হবে যে, তুমি কামনা কর। সে কামনা করতে থাকবে এবং আরো কামনা করবে। আল্লাহ তাকে বলবেন, তোমার যা কামনা করার তা কি করেছ? সে বলবে, জ্বী! আল্লাহ বলবেন, যা কামনা করেছ তা এবং এর অনুরূপ তোমাকে প্রদান করা হল। (ই.ফা. ৩৫০; ই.সে. ৩৬১)

৩৪৩

وَحَدَّثَنِي سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنِي حَفْصُ بْنُ مَيْسَرَةَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ نَاسًا، فِي زَمَنِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ نَعَمْ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ هَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ بِالظَّهِيرَةِ صَحْوًا لَيْسَ مَعَهَا سَحَابٌ وَهَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ صَحْوًا لَيْسَ فِيهَا سَحَابٌ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ اللَّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلاَّ كَمَا تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ أَحَدِهِمَا إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ أَذَّنَ مُؤَذِّنٌ لِيَتَّبِعْ كُلُّ أُمَّةٍ مَا كَانَتْ تَعْبُدُ ‏.‏ فَلاَ يَبْقَى أَحَدٌ كَانَ يَعْبُدُ غَيْرَ اللَّهِ سُبْحَانَهُ مِنَ الأَصْنَامِ وَالأَنْصَابِ إِلاَّ يَتَسَاقَطُونَ فِي النَّارِ حَتَّى إِذَا لَمْ يَبْقَ إِلاَّ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللَّهَ مِنْ بَرٍّ وَفَاجِرٍ وَغُبَّرِ أَهْلِ الْكِتَابِ فَيُدْعَى الْيَهُودُ فَيُقَالُ لَهُمْ مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ قَالُوا كُنَّا نَعْبُدُ عُزَيْرَ ابْنَ اللَّهِ ‏.‏ فَيُقَالُ كَذَبْتُمْ مَا اتَّخَذَ اللَّهُ مِنْ صَاحِبَةٍ وَلاَ وَلَدٍ فَمَاذَا تَبْغُونَ قَالُوا عَطِشْنَا يَا رَبَّنَا فَاسْقِنَا ‏.‏ فَيُشَارُ إِلَيْهِمْ أَلاَ تَرِدُونَ فَيُحْشَرُونَ إِلَى النَّارِ كَأَنَّهَا سَرَابٌ يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا فَيَتَسَاقَطُونَ فِي النَّارِ ‏.‏ ثُمَّ يُدْعَى النَّصَارَى فَيُقَالُ لَهُمْ مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ قَالُوا كُنَّا نَعْبُدُ الْمَسِيحَ ابْنَ اللَّهِ ‏.‏ فَيُقَالُ لَهُمْ كَذَبْتُمْ ‏.‏ مَا اتَّخَذَ اللَّهُ مِنْ صَاحِبَةٍ وَلاَ وَلَدٍ ‏.‏ فَيُقَالُ لَهُمْ مَاذَا تَبْغُونَ فَيَقُولُونَ عَطِشْنَا يَا رَبَّنَا فَاسْقِنَا ‏.‏ - قَالَ - فَيُشَارُ إِلَيْهِمْ أَلاَ تَرِدُونَ فَيُحْشَرُونَ إِلَى جَهَنَّمَ كَأَنَّهَا سَرَابٌ يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا فَيَتَسَاقَطُونَ فِي النَّارِ حَتَّى إِذَا لَمْ يَبْقَ إِلاَّ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللَّهَ تَعَالَى مِنْ بَرٍّ وَفَاجِرٍ أَتَاهُمْ رَبُّ الْعَالَمِينَ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى فِي أَدْنَى صُورَةٍ مِنَ الَّتِي رَأَوْهُ فِيهَا ‏.‏ قَالَ فَمَا تَنْتَظِرُونَ تَتْبَعُ كُلُّ أُمَّةٍ مَا كَانَتْ تَعْبُدُ ‏.‏ قَالُوا يَا رَبَّنَا فَارَقْنَا النَّاسَ فِي الدُّنْيَا أَفْقَرَ مَا كُنَّا إِلَيْهِمْ وَلَمْ نُصَاحِبْهُمْ ‏.‏ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ ‏.‏ فَيَقُولُونَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْكَ لاَ نُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا - مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا - حَتَّى إِنَّ بَعْضَهُمْ لَيَكَادُ أَنْ يَنْقَلِبَ ‏.‏ فَيَقُولُ هَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ آيَةٌ فَتَعْرِفُونَهُ بِهَا فَيَقُولُونَ نَعَمْ ‏.‏ فَيُكْشَفُ عَنْ سَاقٍ فَلاَ يَبْقَى مَنْ كَانَ يَسْجُدُ لِلَّهِ مِنْ تِلْقَاءِ نَفْسِهِ إِلاَّ أَذِنَ اللَّهُ لَهُ بِالسُّجُودِ وَلاَ يَبْقَى مَنْ كَانَ يَسْجُدُ اتِّقَاءً وَرِيَاءً إِلاَّ جَعَلَ اللَّهُ ظَهْرَهُ طَبَقَةً وَاحِدَةً كُلَّمَا أَرَادَ أَنْ يَسْجُدَ خَرَّ عَلَى قَفَاهُ ‏.‏ ثُمَّ يَرْفَعُونَ رُءُوسَهُمْ وَقَدْ تَحَوَّلَ فِي صُورَتِهِ الَّتِي رَأَوْهُ فِيهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ فَقَالَ أَنَا رَبُّكُمْ ‏.‏ فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا ‏.‏ ثُمَّ يُضْرَبُ الْجِسْرُ عَلَى جَهَنَّمَ وَتَحِلُّ الشَّفَاعَةُ وَيَقُولُونَ اللَّهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ ‏"‏ ‏.‏ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا الْجِسْرُ قَالَ ‏"‏ دَحْضٌ مَزِلَّةٌ ‏.‏ فِيهِ خَطَاطِيفُ وَكَلاَلِيبُ وَحَسَكٌ تَكُونُ بِنَجْدٍ فِيهَا شُوَيْكَةٌ يُقَالُ لَهَا السَّعْدَانُ فَيَمُرُّ الْمُؤْمِنُونَ كَطَرْفِ الْعَيْنِ وَكَالْبَرْقِ وَكَالرِّيحِ وَكَالطَّيْرِ وَكَأَجَاوِيدِ الْخَيْلِ وَالرِّكَابِ فَنَاجٍ مُسَلَّمٌ وَمَخْدُوشٌ مُرْسَلٌ وَمَكْدُوسٌ فِي نَارِ جَهَنَّمَ ‏.‏ حَتَّى إِذَا خَلَصَ الْمُؤْمِنُونَ مِنَ النَّارِ فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ بِأَشَدَّ مُنَاشَدَةً لِلَّهِ فِي اسْتِقْصَاءِ الْحَقِّ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ لِلَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لإِخْوَانِهِمُ الَّذِينَ فِي النَّارِ يَقُولُونَ رَبَّنَا كَانُوا يَصُومُونَ مَعَنَا وَيُصَلُّونَ وَيَحُجُّونَ ‏.‏ فَيُقَالُ لَهُمْ أَخْرِجُوا مَنْ عَرَفْتُمْ ‏.‏ فَتُحَرَّمُ صُوَرُهُمْ عَلَى النَّارِ فَيُخْرِجُونَ خَلْقًا كَثيرًا قَدْ أَخَذَتِ النَّارُ إِلَى نِصْفِ سَاقَيْهِ وَإِلَى رُكْبَتَيْهِ ثُمَّ يَقُولُونَ رَبَّنَا مَا بَقِيَ فِيهَا أَحَدٌ مِمَّنْ أَمَرْتَنَا بِهِ ‏.‏ فَيَقُولُ ارْجِعُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ دِينَارٍ مِنْ خَيْرٍ فَأَخْرِجُوهُ ‏.‏ فَيُخْرِجُونَ خَلْقًا كَثِيرًا ثُمَّ يَقُولُونَ رَبَّنَا لَمْ نَذَرْ فِيهَا أَحَدًا مِمَّنْ أَمَرْتَنَا ‏.‏ ثُمَّ يَقُولُ ارْجِعُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ نِصْفِ دِينَارٍ مِنْ خَيْرٍ فَأَخْرِجُوهُ ‏.‏ فَيُخْرِجُونَ خَلْقًا كَثِيرًا ثُمَّ يَقُولُونَ رَبَّنَا لَمْ نَذَرْ فِيهَا مِمَّنْ أَمَرْتَنَا أَحَدًا ‏.‏ ثُمَّ يَقُولُ ارْجِعُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ فَأَخْرِجُوهُ ‏.‏ فَيُخْرِجُونَ خَلْقًا كَثِيرًا ثُمَّ يَقُولُونَ رَبَّنَا لَمْ نَذَرْ فِيهَا خَيْرًا ‏"‏ ‏.‏ وَكَانَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ يَقُولُ إِنْ لَمْ تُصَدِّقُونِي بِهَذَا الْحَدِيثِ فَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ ‏{‏ إِنَّ اللَّهَ لاَ يَظْلِمُ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ وَإِنْ تَكُ حَسَنَةً يُضَاعِفْهَا وَيُؤْتِ مِنْ لَدُنْهُ أَجْرًا عَظِيمًا‏}‏ ‏"‏ فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ شَفَعَتِ الْمَلاَئِكَةُ وَشَفَعَ النَّبِيُّونَ وَشَفَعَ الْمُؤْمِنُونَ وَلَمْ يَبْقَ إِلاَّ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ فَيَقْبِضُ قَبْضَةً مِنَ النَّارِ فَيُخْرِجُ مِنْهَا قَوْمًا لَمْ يَعْمَلُوا خَيْرًا قَطُّ قَدْ عَادُوا حُمَمًا فَيُلْقِيهِمْ فِي نَهْرٍ فِي أَفْوَاهِ الْجَنَّةِ يُقَالُ لَهُ نَهْرُ الْحَيَاةِ فَيَخْرُجُونَ كَمَا تَخْرُجُ الْحِبَّةُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ أَلاَ تَرَوْنَهَا تَكُونُ إِلَى الْحَجَرِ أَوْ إِلَى الشَّجَرِ مَا يَكُونُ إِلَى الشَّمْسِ أُصَيْفِرُ وَأُخَيْضِرُ وَمَا يَكُونُ مِنْهَا إِلَى الظِّلِّ يَكُونُ أَبْيَضَ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَأَنَّكَ كُنْتَ تَرْعَى بِالْبَادِيَةِ قَالَ ‏"‏ فَيَخْرُجُونَ كَاللُّؤْلُؤِ فِي رِقَابِهِمُ الْخَوَاتِمُ يَعْرِفُهُمْ أَهْلُ الْجَنَّةِ هَؤُلاَءِ عُتَقَاءُ اللَّهِ الَّذِينَ أَدْخَلَهُمُ اللَّهُ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ عَمَلٍ عَمِلُوهُ وَلاَ خَيْرٍ قَدَّمُوهُ ثُمَّ يَقُولُ ادْخُلُوا الْجَنَّةَ فَمَا رَأَيْتُمُوهُ فَهُوَ لَكُمْ ‏.‏ فَيَقُولُونَ رَبَّنَا أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَدًا مِنَ الْعَالَمِينَ ‏.‏ فَيَقُولُ لَكُمْ عِنْدِي أَفْضَلُ مِنْ هَذَا فَيَقُولُونَ يَا رَبَّنَا أَىُّ شَىْءٍ أَفْضَلُ مِنْ هَذَا ‏.‏ فَيَقُولُ رِضَاىَ فَلاَ أَسْخَطُ عَلَيْكُمْ بَعْدَهُ أَبَدًا ‏"‏ ‏.‏
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে কতিপয় লোক তাঁকে জিজ্ঞেস করে বলল, হে আল্লাহর রসূল! কিয়ামাত দিবসে আমরা কি আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাবো? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ! তিনি আরো বললেনঃ দুপুরে মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে কি তোমাদের কষ্ট হয়? চন্দ্রের চৌদ্দ তারিখে মেঘমুক্ত অবস্থায় চন্দ্র দেখতে কি তোমাদের কষ্ট হয়? সকলে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! তা হয় না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ঠিক তদ্রূপ কিয়ামাত দিবসে তোমাদের বারাকাতময় মহামহিম প্রতিপালককে দেখতে কোনই কষ্ট অনুভব হবে না যেমন চন্দ্র ও সূর্য দেখতে কষ্ট অনুভব কর না। সে দিন এক ঘোষণাকারী ঘোষণা দিবে, ‘যে যার উপাসনা করতো সে আজ তার অনুসরণ করুক।’ তখন আল্লাহ ব্যতীত তারা অন্য দেব-দেবী ও মূর্তিপূজার বেদীর উপাসনা করত তাদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না; সকলেই জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। সৎ হোক বা অসৎ যারা আল্লাহর ‘ইবাদাত করত তারাই কেবল অবশিষ্ট থাকবে এবং কিতাবীদের (যারা দেব-দেবী ও বেদীর উপাসক ছিল না তারাও বাকী থাকবে)। এরপর ইয়াহূদীদেরকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তোমরা কার ‘ইবাদাত করতে? তারা বলবে, আল্লাহর পুত্র ‘উযায়র-এর। তাদেরকে বলা হবে মিথ্যা বলছো। আল্লাহ কোন স্ত্রী বা সন্তান গ্রহণ করেননি। তোমরা কি চাও? তারা বলবে, হে আল্লাহ! আমাদের খুবই পিপাসা পেয়েছে। আমাদের পিপাসা নিবারণ করুন। প্রার্থনা শুনে তাদেরকে ইঙ্গিত করে মরীচিকাময় জাহান্নামের দিকে জমায়েত করা হবে। সেখানে আগুনের লেলিহান শিখা যেন পানির ঢেউ খেলবে। এর একাংশ আরেক অংশকে গ্রাস করতে থাকবে। তারা এতে ঝাঁপিয়ে পড়বে। এরপর খৃস্টানদেরকে ডাকা হবে, বলা হবে, তোমরা কার ‘ইবাদাত করতে? তারা বলবে, আল্লাহর পুত্র মাসীহ-এর (‘ঈসার) উপাসনা করতাম। বলা হবে, মিথ্যা বলছ। আল্লাহ কোন স্ত্রী বা সন্তান গ্রহণ করেননি। জিজ্ঞেস করা হবে, এখন কি চাও? তারা বলবে, হে আমাদের রব! আমাদের দারুণ পিপাসা পেয়েছে, আমাদের পিপাসা নিবারণ করুন। তখন তাদেরকেও পানির ঘাটে যাবার ইঙ্গিত করে জাহান্নামের দিকে হাকিয়ে নিয়ে জমায়েত করা হবে। এটিকে মরীচিকার ন্যায় মনে হবে। সেখানে আগুনের লেলিহান শিখা যেন পানির ঢেউ খেলবে। এর একাংশ অপর অংশকে গ্রাস করে নিবে। তারা তখন জাহান্নামে ঝাঁপিয়ে পড়তে থাকবে। শেষে সৎ হোক বা অসৎ এক আল্লাহর উপাসক ব্যতীত আর কেউ (ময়দানে) অবশিষ্ট থাকবে না। তখন আল্লাহ তা’আলা পরিচিত আকৃতিতে তাদের নিকট আসবেন। বলবেন, সবাই তাদের স্ব স্ব উপাস্যের অনুসরণ করে চলে গেছে, আর তোমরা কার অপেক্ষা করছ? তারা বলবে, হে আমাদের প্রভু! যেখানে আমরা বেশী মুখাপেক্ষী ছিলাম সে দুনিয়াতেই আমরা অপরাপর মানুষ থেকে পৃথক থেকেছি এবং তাদের সঙ্গী হইনি। তখন আল্লাহ বলবেন, আমিই তো তোমাদের প্রভু। মু’মিনরা বলবে, “আমরা তোমার থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি” আল্লাহর সঙ্গে আমরা কিছুই শারীক করি না। এ কথা তারা দুই বা তিনবার বলবে। এমন কি কেউ কেউ অবাধ্যতা প্রদর্শনেও অবতীর্ণ হয়ে যাবে। আল্লাহ বলবেন, আচ্ছা, তোমাদের নিকট এমন কোন নিদর্শন আছে যদ্বারা তাঁকে তোমরা চিনতে পার? তারা বলবে অবশ্যই আছে। এরপর পায়ের ‘সাক’ (গোছা) উন্মোচিত হবে। তখন পৃথিবীতে যারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাজদাহ্‌ করত, সে মূহুর্তে তাদেরকে আল্লাহ সাজদাহ্‌ করার অনুমতি দিবেন এবং তারা সবাই সাজদাহ্‌বনত হয়ে পড়বে। আর যে কারো ভয়-ভীতি কিংবা লোক দেখানোর জন্য সাজদাহ্‌ করতো তার মেরুদণ্ড শক্ত ও অনমনীয় করে দেয়া হবে। যখনই তারা সাজদাহ্‌ করতে ইচ্ছা করবে তখনই তারা চিত হয়ে পড়ে যাবে। অতঃপর তারা তাদের মাথা উঠাবে এবং তিনি তাঁর আসলরূপে আবির্ভূত হবেন। অতঃপর বলবেন, আমি তোমাদের রব, তারা বলবে, হ্যাঁ! আপনি আমাদের রব। তারপর জাহান্নামের উপর “জাস্‌র” (পুল) স্থাপন করা হবে। শাফা’আতেরও অনুমতি দেয়া হবে। মানুষ বলতে থাকবে, হে আল্লাহ! আমাদের নিরাপত্তা দিন, আমাদের নিরাপত্তা দিন। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! “জাস্‌র” কী? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটি এমন স্থান যেখানে পা পিছলে যায়। সেখানে আছে নানা প্রকারের লৌহ শলাকা ও কাঁটা, দেখতে নাজ্‌দের সা’দান বৃক্ষের কাঁটার ন্যায়। মু’মিনগণের কেউ তো এ পথ চোখের পলকের গতিতে, কেউ বিদ্যুৎ গতিতে, কেউ বায়ুর গতিতে, কেউ উত্তম অশ্ব গতিতে, কেউ উষ্ট্রের গতিতে অতিক্রম করবে। কেউ তো অক্ষত অবস্থায় নাযাত পাবে, আর কেউ তো হবে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় নাযাতপ্রাপ্ত। আর কতককে কাঁটাবিদ্ধ অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। অবশেষে মু’মিনগণ জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সে সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, ঐ দিন মু’মিনগণ তাদের ঐ সব ভাইদের স্বার্থে আল্লাহর সাথে এত অধিক বিতর্কে লিপ্ত হবে যারা জাহান্নামে রয়ে গেছে যে, তোমাদের পার্থিব অধিকারের ক্ষেত্রেও এমন বিতর্কে লিপ্ত হয়ো না। তারা বলবে, হে রব! এরা তো আমাদের সাথেই সিয়াম, সলাত আদায় করত, হাজ্জ করত। তখন তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে যে, যাও, তোমাদের পরিচিতদের উদ্ধার করে আন। উল্লেখ্য এরা জাহান্নামে পতিত হলেও মুখমণ্ডল ‘আযাব থেকে রক্ষিত থাকবে। (তাই তাদেরকে চিনতে কোন অসুবিধা হবে না।) মু’মিনগণ জাহান্নাম হতে এক বিরাট দলকে উদ্ধার করে আনবে। এদের অবস্থা এমন হবে যে, কারোর তো পায়ের নলা পর্যন্ত, আবার কারো হাঁটু পর্যন্ত দেহ আগুন ছাই করে দিবে। উদ্ধার শেষ করে মু’মিনগণ বলবে, হে রব! যাদের সম্পর্কে আপনি নির্দেশ প্রদান করেছিলেন, তাদের মাঝে আর কেউ অবশিষ্ট নেই। আল্লাহ বলবেন, পুনরায় যাও, যার অন্তরে এক দীনার পরিমাণও ঈমান অবশিষ্ট পাবে তাকেও উদ্ধার করে আন। তখন তারা আরো একদলকে উদ্ধার করে এনে বলবে, হে রব! অনুমতিপ্রাপ্তদের কাউকেও রেখে আসিনি। আল্লাহ বলবেন : আবার যাও, যার অন্তরে অর্ধ দীনার পরিমাণও ঈমান অবশিষ্ট পাবে তাকেও বের করে আন। তখন আবার এক বিরাট দলকে উদ্ধার করে এনে তারা বলবে, হে রব! যাদের আপনি উদ্ধার করতে বলেছিলেন তাদের কাউকে ছেড়ে আসিনি। আল্লাহ বলবেন : আবার যাও, যার অন্তরে অণু পরিমাণও ঈমান বিদ্যমান, তাকেও উদ্ধার করে আন। তখন আবারও এক বিরাট দলকে উদ্ধার করে এনে তারা বলবে, হে রব! যাদের কথা বলেছিলেন তাদের কাউকেও রেখে আসিনি।
সহাবা আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) বলেন, তোমরা যদি এ হাদীসের ব্যাপারে আমাকে সত্যবাদী মনে না কর তবে এর সমর্থনে নিম্নোক্ত আয়াতটি যদি চাও তবে তিলাওয়াত করতে পার : “আল্লাহ অণু পরিমাণও যুল্‌ম করেন না এবং অণু পরিমাণ নেক কাজ হলেও আল্লাহ তা দ্বিগুণ করে দেন এবং তাঁর নিকট হতে মহাপুরস্কার প্রদান করেন”— (সূরাহ আন্‌ নিসা ৪ : ৪০)। এরপর আল্লাহ তা’আলা বলবেন : ফেরেশতারা সুপারিশ করলেন, নাবীগণও সুপারিশ করলেন এবং মু’মিনরাও সুপারিশ করেছে, কেবলমাত্র আরহামুর রাহিমীন-পরম দয়াময়ই রয়ে গেছেন। এরপর তিনি জাহান্নাম থেকে এক মুঠো তুলে আনবেন, ফলে এমন একদল লোক মুক্তি পাবে যারা কখনো কোন সৎকর্ম করেনি এবং আগুনে জ্বলে লাল হয়ে গেছে। পরে তাদেরকে জান্নাতের প্রবেশ মুখের ‘নাহরুল হায়াতে’ ফেলে দেয়া হবে। তারা এতে এমনভাবে সতেজ হয়ে উঠবে, যেমনভাবে শস্য অঙ্কুর স্রোতবাহিত পানি ভেজা উর্বর জমিতে সতেজ হয়ে উঠে। (রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ) তোমরা কি কোন বৃক্ষ কিংবা পাথরের আড়াল কোন শস্যদানা অঙ্কুরিত হতে দেখনি? যেগুলো সূর্য কিরণের মাঝে থাকে সেগুলো হলদে ও সবুজ রূপ ধারণ করে আর যেগুলো ছায়াযুক্ত স্থানে থাকে সেগুলো সাদা হয়ে যায়। সহাবাগণ বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! মনে হয় আপনি যেন গ্রামাঞ্চলে পশু চরিয়েছেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এরপর তারা নহর থেকে মুক্তার ন্যায় ঝকঝকে অবস্থায় উঠে আসবে এবং তাদের গ্রীবাদেশে মোহরাঙ্কিত থাকবে যা দেখে জান্নাতীগণ তাদের চিনতে পারবেন। এরা হর ‘উতাকাউল্লাহ’-আল্লাহর পক্ষ থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত। আল্লাহ তা’আলা সৎ ‘আমাল ব্যতীতই তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন। এরপর আল্লাহ তাদেরকে লক্ষ্য করে বলবেন : যাও, জান্নাতে প্রবেশ কর। আর যা কিছু দেখছ সব কিছু তোমাদেরই। তারা বলবে, হে রব! আপনি আমাদেরকে এত দিয়েছেন যা সৃষ্টজগতের কাউকে দেননি। আল্লাহ বলবেন : তোমাদের জন্য আমার নিকট এর চেয়েও উত্তম বস্তু আছে। তারা বলবে, কী সে উত্তম বস্তু? আল্লাহ বলবেন : সে হলো আমার সন্তুষ্টি। এরপর আর কখনো তোমাদের উপর অসন্তুষ্ট হবো না।
ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেনঃ শাফা’আত সম্পর্কীয় এ হাদীসটি আমি ‘ঈসা ইবনু হাম্মাদ যুগবাতুর মিসরী-এর নিকট পাঠ করতে বললাম, আপনি লায়স ইবনু সা’দ থেকে নিজে এ হাদীসটি শুনেছেন? আমি কি আপনার পক্ষ থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করতে পারি? তিনি উত্তর করলেন, হ্যাঁ! এরপর আমি ‘ঈসা ইবনু হাম্মাদকে হাদীসটি এ সূত্রে শুনিয়েছি যে, ‘ঈসা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি আমাদের প্রভুকে দেখতে পাবো? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তর করলেন : মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে ভীড়ের কারণে তোমাদের কি কোন অসুবিধা হয়? আমরা বললাম, না .....। এভাবে হাদীসটির শেষ পর্যন্ত তুলে ধরলাম। এ হাদীসটি হাফিয ইবনু মাইসারাহ্‌ বর্ণিত হাদিসেরই অনুরূপ। তিনি (আরবী) এ অংশটুকুর পর (আরবী) অর্থাৎ তাদের বলা হবে : তোমাদের জন্য রয়েছে যা তোমরা দেখছ।
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) বলেন, আমার কাছে রিওয়ায়াতে পৌঁছেছে যে, ‘জাস্‌র’ (পুল) চুল অপেক্ষা অধিক সূক্ষ্ম ও তরবারি অপেক্ষা অধিক তীক্ষ্ণ।
তাছাড়া লায়সের হাদীসে (আরবী) বাক্যটির পরবর্তী অংশগুলো উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ৩৫১; ই.সে. ৩৬২)

৩৪৪

قَالَ مُسْلِمٌ قَرَأْتُ عَلَى عِيسَى بْنِ حَمَّادٍ زُغْبَةَ الْمِصْرِيِّ هَذَا الْحَدِيثَ فِي الشَّفَاعَةِ وَقُلْتُ لَهُ أُحَدِّثُ بِهَذَا الْحَدِيثِ عَنْكَ أَنَّكَ سَمِعْتَ مِنَ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ فَقَالَ نَعَمْ ‏.‏ قُلْتُ لِعِيسَى بْنِ حَمَّادٍ أَخْبَرَكُمُ اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ خَالِدِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِلاَلٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَرَى رَبَّنَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ هَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ إِذَا كَانَ يَوْمٌ صَحْوٌ ‏"‏ ‏.‏ قُلْنَا لاَ ‏.‏ وَسُقْتُ الْحَدِيثَ حَتَّى انْقَضَى آخِرُهُ وَهُوَ نَحْوُ حَدِيثِ حَفْصِ بْنِ مَيْسَرَةَ ‏.‏ وَزَادَ بَعْدَ قَوْلِهِ بِغَيْرِ عَمَلٍ عَمِلُوهُ وَلاَ قَدَمٍ قَدَّمُوهُ ‏"‏ فَيُقَالُ لَهُمْ لَكُمْ مَا رَأَيْتُمْ وَمِثْلُهُ مَعَهُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ بَلَغَنِي أَنَّ الْجِسْرَ أَدَقُّ مِنَ الشَّعْرَةِ وَأَحَدُّ مِنَ السَّيْفِ ‏.‏ وَلَيْسَ فِي حَدِيثِ اللَّيْثِ ‏"‏ فَيَقُولُونَ رَبَّنَا أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَدًا مِنَ الْعَالَمِينَ ‏"‏ وَمَا بَعْدَهُ فَأَقَرَّ بِهِ عِيسَى بْنُ حَمَّادٍ ‏.‏
যায়দ ইবনু আসলাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পূর্ব বর্ণিত হাদীসদ্বয়ের সানাদের হাফ্‌স ইবনু মাইসারার অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এ রিওয়ায়াতে শব্দগুলো কিছু কম বর্ণনা আছে। (ই.ফা. ৩৫২; ই.সে. ৩৬৩)

৮২. অধ্যায়ঃ

শাফা’আত ও তাওহীদবাদীদের জাহান্নাম থেকে উদ্ধার লাভের প্রমাণ

৩৪৫

وَحَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى بْنِ عُمَارَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ يُدْخِلُ اللَّهُ أَهْلَ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ يُدْخِلُ مَنْ يَشَاءُ بِرَحْمَتَهِ وَيُدْخِلُ أَهْلَ النَّارِ النَّارَ ثُمَّ يَقُولُ انْظُرُوا مَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجُوهُ ‏.‏ فَيُخْرَجُونَ مِنْهَا حُمَمًا قَدِ امْتَحَشُوا ‏.‏ فَيُلْقَوْنَ فِي نَهْرِ الْحَيَاةِ أَوِ الْحَيَا فَيَنْبُتُونَ فِيهِ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ إِلَى جَانِبِ السَّيْلِ أَلَمْ تَرَوْهَا كَيْفَ تَخْرُجُ صَفْرَاءَ مُلْتَوِيَةً ‏"‏ ‏.‏
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জান্নাতীদেরকে আল্লাহ তা’আলা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তাঁর রহমাতেই তিনি যাকে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। তারপর (ফেরেশতাদেরকে) বলবেন : যার অন্তরে সরিষা দানা পরিমাণও ঈমান দেখতে পাবে তাকেও জাহান্নাম থেকে উদ্ধার করে আনবে এবং তারা এমন কিছু লোককে সেখান থেকে বের করে আনবে, যারা আগুনে জ্বলে কালো হয়ে গেছে এবং ‘হায়াত’ বা ‘হায়া’ নামক নহরে নিক্ষেপ করবে। তখন তারা এতে এমন সতেজ হয়ে উঠবে যেমনভাবে শস্য অঙ্কুর স্রোতবাহিত পলিতে সতেজ হয়ে উঠে। তোমরা কি দেখনি, কত সুন্দররূপে সে শস্যদানা কেমনভাবে হলদে মাথা মোড়ানো অবস্থায় অঙ্কুরিত হয়? (ই.ফা. ৩৫৩; ই.সে. ৩৬৪)

৩৪৬

وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، ح وَحَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، أَخْبَرَنَا خَالِدٌ، كِلاَهُمَا عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالاَ فَيُلْقَوْنَ فِي نَهْرٍ يُقَالُ لَهُ الْحَيَاةُ ‏.‏ وَلَمْ يَشُكَّا ‏.‏ وَفِي حَدِيثِ خَالِدٍ كَمَا تَنْبُتُ الْغُثَاءَةُ فِي جَانِبِ السَّيْلِ ‏.‏ وَفِي حَدِيثِ وُهَيْبٍ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ فِي حَمِئَةٍ أَوْ حَمِيلَةِ السَّيْلِ ‏.‏
উহায়ব ও খালিদ উভয়ে ‘আম্‌র ইবনু ইয়াহ্‌ইয়ার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
উপরের হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অতঃপর তাদেরকে (জাহান্নাম থেকে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত লোকদের) ‘হায়াত’ নামক নহরে ফেলে দেয়া হবে। খালিদের বর্ণনায় আছে, প্লাবনে সিক্ত মাটিতে বীজ যেমন অঙ্কুরিত হয়ে উঠে। উহায়বের বর্ণনায় রয়েছে : যেমন বীজ আপনা আপনি তরতাজা হয়ে ওঠে পানির স্রোতের কিনারায় কাদা মাটির মধ্যে। (ই.ফা. ৩৫৪; ই.সে. ৩৬৫)

৩৪৭

وَحَدَّثَنِي نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا بِشْرٌ، - يَعْنِي ابْنَ الْمُفَضَّلِ - عَنْ أَبِي مَسْلَمَةَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَمَّا أَهْلُ النَّارِ الَّذِينَ هُمْ أَهْلُهَا فَإِنَّهُمْ لاَ يَمُوتُونَ فِيهَا وَلاَ يَحْيَوْنَ وَلَكِنْ نَاسٌ أَصَابَتْهُمُ النَّارُ بِذُنُوبِهِمْ - أَوْ قَالَ بِخَطَايَاهُمْ - فَأَمَاتَهُمْ إِمَاتَةً حَتَّى إِذَا كَانُوا فَحْمًا أُذِنَ بِالشَّفَاعَةِ فَجِيءَ بِهِمْ ضَبَائِرَ ضَبَائِرَ فَبُثُّوا عَلَى أَنْهَارِ الْجَنَّةِ ثُمَّ قِيلَ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ أَفِيضُوا عَلَيْهِمْ ‏.‏ فَيَنْبُتُونَ نَبَاتَ الْحِبَّةِ تَكُونُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ كَأَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ كَانَ بِالْبَادِيَةِ ‏.‏
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জাহান্নামীদের মধ্যে যারা প্রকৃত জাহান্নামী তাদের মৃত্যুও ঘটবে না এবং তারা বেঁচেও থাকবে না। তবে তন্মধ্যে তাদের এমন কতিপয় লোকও থাকবে যারা গুনাহের দায়ে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। এরপর আল্লাহ তা‘আলা (তাদের উপর পতিত ‘আযাবের নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলে) তাদেরকে কিছুকাল নির্জীব করে রেখে দিবেন। অবশেষে তারা পুড়ে কয়লার মতো হয়ে যাবে। এ সময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে শাফা‘আতের অনুমতি হবে। তখন এদেরকে দলে দলে নিয়ে আসা হবে এবং জান্নাতের নহরগুলোতে ছড়িয়ে দেয়া হবে। পরে বলা হবে, হে জান্নাতীরা! তোমরা এদের গায়ে পানি ঢেলে দাও। ফলতঃ স্রোতবাহিত পলিতে গজিয়ে উঠা শস্য দানার ন্যায় তারা সজীব হয়ে উঠবে। উপস্থিতদের মধ্যে একজন বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেন এককালে গ্রামে অবস্থান করতেন। (ই.ফা. ৩৫৫; ই.সে. ৩৬৬)

৩৪৮

وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي مَسْلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ إِلَى قَوْلِهِ ‏ "‏ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ ‏"‏ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرْ مَا بَعْدَهُ ‏.‏
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ‘ফী হামীলিস সাইলি’ কথাটি পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন। তবে পরবর্তী অংশটুকু উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৩৫৬; ই.সে. ৩৬৭)

৮৩. অধ্যায়ঃ

জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ ব্যক্তি

৩৪৯

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، كِلاَهُمَا عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ عُثْمَانُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبِيدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنِّي لأَعْلَمُ آخِرَ أَهْلِ النَّارِ خُرُوجًا مِنْهَا وَآخِرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولاً الْجَنَّةَ رَجُلٌ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ حَبْوًا فَيَقُولُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى لَهُ اذْهَبْ فَادْخُلِ الْجَنَّةَ فَيَأْتِيهَا فَيُخَيَّلُ إِلَيْهِ أَنَّهَا مَلأَى فَيَرْجِعُ فَيَقُولُ يَا رَبِّ وَجَدْتُهَا مَلأَى ‏.‏ فَيَقُولُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى لَهُ اذْهَبْ فَادْخُلِ الْجَنَّةَ - قَالَ - فَيَأْتِيهَا فَيُخَيَّلُ إِلَيْهِ أَنَّهَا مَلأَى فَيَرْجِعُ فَيَقُولُ يَا رَبِّ وَجَدْتُهَا مَلأَى فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ اذْهَبْ فَادْخُلِ الْجَنَّةَ فَإِنَّ لَكَ مِثْلَ الدُّنْيَا وَعَشَرَةَ أَمْثَالِهَا أَوْ إِنَّ لَكَ عَشَرَةَ أَمْثَالِ الدُّنْيَا - قَالَ - فَيَقُولُ أَتَسْخَرُ بِي - أَوْ أَتَضْحَكُ بِي - وَأَنْتَ الْمَلِكُ ‏"‏ قَالَ لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ضَحِكَ حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ ‏.‏ قَالَ فَكَانَ يُقَالُ ذَاكَ أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً ‏.‏
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জাহান্নাম থেকে সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ও জান্নাতে সর্বশেষ প্রবেশকারী লোকটিকে আমি অবশ্যই জানি। সে হামাগুড়ি দিয়ে বা হেচঁড়িয়ে হেচঁড়িয়ে জাহান্নাম থেকে বেরিয়ে আসবে। আল্লাহ তা‘আলা তাকে বলবেন : যাও জান্নাতে প্রবেশ করো। সে সেখানে আসবে। আর তার ধারণা হবে যে, তাতো পূর্ণ হয়ে গেছে। সেখানে কোন স্থান নেই তাই সে ফিরে এসে বলবে, হে প্রভু! আমিতো তা পরিপূর্ণ পেয়েছি। আল্লাহ তা‘আলা আবার তাকে বলবেন : যাও জান্নাতে প্রবেশ করো। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এ ব্যক্তি সেখানে আসলে তার ধারণা হবে যে, তাতো পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। সে ফিরে এসে বলবে, হে প্রভু! আমিতো তা পূর্ণ পেয়েছি। আল্লাহ তাকে পুনরায় বলবেন : যাও জান্নাতে প্রবেশ করো। তোমাকে দুনিয়ার মতো এবং তার দশগুণ দেয়া হলো। অথবা তিনি বলেছেন, তোমাকে পৃথিবীর দশগুণ দেয়া হলো। অতঃপর সে বলবে, আপনি কি আমার সাথে ঠাট্টা করছেন? অথবা সে বলবে, এ সময় আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এমনভাবে হাসতে দেখেছি যে, তাঁর মাড়ির দাঁত পর্যন্ত প্রকাশ হয়ে পড়েছিল। তিনি বলেনঃ এ হবে সবচেয়ে নিম্নশ্রেণীর জান্নাতী। (ই.ফা.৩৫৭; ই.সে. ৩৬৮)

৩৫০

وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ - وَاللَّفْظُ لأَبِي كُرَيْبٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبِيدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنِّي لأَعْرِفُ آخِرَ أَهْلِ النَّارِ خُرُوجًا مِنَ النَّارِ رَجُلٌ يَخْرُجُ مِنْهَا زَحْفًا فَيُقَالُ لَهُ انْطَلِقْ فَادْخُلِ الْجَنَّةَ - قَالَ - فَيَذْهَبُ فَيَدْخُلُ الْجَنَّةَ فَيَجِدُ النَّاسَ قَدْ أَخَذُوا الْمَنَازِلَ فَيُقَالُ لَهُ أَتَذْكُرُ الزَّمَانَ الَّذِي كُنْتَ فِيهِ فَيَقُولُ نَعَمْ ‏.‏ فَيُقَالُ لَهُ تَمَنَّ ‏.‏ فَيَتَمَنَّى فَيُقَالُ لَهُ لَكَ الَّذِي تَمَنَّيْتَ وَعَشَرَةُ أَضْعَافِ الدُّنْيَا - قَالَ - فَيَقُولُ أَتَسْخَرُ بِي وَأَنْتَ الْمَلِكُ ‏"‏ قَالَ فَلَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ضَحِكَ حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জাহান্নাম থেকে সর্বশেষ বের হয়ে আসা লোকটিকে অবশ্যই আমি জানি। সে হেচঁড়িয়ে হেচঁড়িয়ে জাহান্নাম থেকে বেরিয়ে আসবে। তারপর তাকে বলা হবে, যাও জান্নাতে প্রবেশ করো। সে গিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করে লোকদেরকে দেখতে পাবে যে, তারা পূর্বেই জান্নাতের সকল স্থান দখল করে রেখেছে। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমার কি পূর্বকালের কথা (জাহান্নামের) স্মরণ আছে? সে বলবে, হ্যাঁ! তাকে বলা হবে : তুমি কামনা করো। সে তখন কামনা করবে। তখন তাকে বলা হবে, যাও, তোমার আশা পূর্ণ করলাম। সেই সাথে পৃথিবীর আরও দশগুণ বেশি প্রদান করলাম। লোকটি বলবে, আপনি সর্বশক্তিমান প্রভু! আর আপনি আমার সাথে তামাশা করছেন? সহাবা বলেন, এ কথাটি বলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এত হাসলেন যে, তাঁর মাড়ির দাঁত প্রকাশিত হয়ে গেল। (ই.ফা. ৩৫৮; ই.সে.৩৬৯)

৩৫১

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ آخِرُ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ رَجُلٌ فَهُوَ يَمْشِي مَرَّةً وَيَكْبُو مَرَّةً وَتَسْفَعُهُ النَّارُ مَرَّةً فَإِذَا مَا جَاوَزَهَا الْتَفَتَ إِلَيْهَا فَقَالَ تَبَارَكَ الَّذِي نَجَّانِي مِنْكِ لَقَدْ أَعْطَانِيَ اللَّهُ شَيْئًا مَا أَعْطَاهُ أَحَدًا مِنَ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ ‏.‏ فَتُرْفَعُ لَهُ شَجَرَةٌ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْنِنِي مِنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ فَلأَسْتَظِلَّ بِظِلِّهَا وَأَشْرَبَ مِنْ مَائِهَا ‏.‏ فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَا ابْنَ آدَمَ لَعَلِّي إِنْ أَعْطَيْتُكَهَا سَأَلْتَنِي غَيْرَهَا ‏.‏ فَيَقُولُ لاَ يَا رَبِّ ‏.‏ وَيُعَاهِدُهُ أَنْ لاَ يَسْأَلَهُ غَيْرَهَا وَرَبُّهُ يَعْذِرُهُ لأَنَّهُ يَرَى مَا لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَيْهِ فَيُدْنِيهِ مِنْهَا فَيَسْتَظِلُّ بِظِلِّهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَائِهَا ثُمَّ تُرْفَعُ لَهُ شَجَرَةٌ هِيَ أَحْسَنُ مِنَ الأُولَى فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْنِنِي مِنْ هَذِهِ لأَشْرَبَ مِنْ مَائِهَا وَأَسْتَظِلَّ بِظِلِّهَا لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهَا ‏.‏ فَيَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ أَلَمْ تُعَاهِدْنِي أَنْ لاَ تَسْأَلَنِي غَيْرَهَا فَيَقُولُ لَعَلِّي إِنْ أَدْنَيْتُكَ مِنْهَا تَسْأَلُنِي غَيْرَهَا ‏.‏ فَيُعَاهِدُهُ أَنْ لاَ يَسْأَلَهُ غَيْرَهَا وَرَبُّهُ يَعْذِرُهُ لأَنَّهُ يَرَى مَا لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَيْهِ فَيُدْنِيهِ مِنْهَا فَيَسْتَظِلُّ بِظِلِّهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَائِهَا ‏.‏ ثُمَّ تُرْفَعُ لَهُ شَجَرَةٌ عِنْدَ بَابِ الْجَنَّةِ هِيَ أَحْسَنُ مِنَ الأُولَيَيْنِ ‏.‏ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْنِنِي مِنْ هَذِهِ لأَسْتَظِلَّ بِظِلِّهَا وَأَشْرَبَ مِنْ مَائِهَا لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهَا ‏.‏ فَيَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ أَلَمْ تُعَاهِدْنِي أَنْ لاَ تَسْأَلَنِي غَيْرَهَا قَالَ بَلَى يَا رَبِّ هَذِهِ لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهَا ‏.‏ وَرَبُّهُ يَعْذِرُهُ لأَنَّهُ يَرَى مَا لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَيْهَا فَيُدْنِيهِ مِنْهَا فَإِذَا أَدْنَاهُ مِنْهَا فَيَسْمَعُ أَصْوَاتَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْخِلْنِيهَا ‏.‏ فَيَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ مَا يَصْرِينِي مِنْكَ أَيُرْضِيكَ أَنْ أُعْطِيَكَ الدُّنْيَا وَمِثْلَهَا مَعَهَا قَالَ يَا رَبِّ أَتَسْتَهْزِئُ مِنِّي وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ ‏"‏ ‏.‏ فَضَحِكَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَقَالَ أَلاَ تَسْأَلُونِّي مِمَّ أَضْحَكُ فَقَالُوا مِمَّ تَضْحَكُ قَالَ هَكَذَا ضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَقَالُوا مِمَّ تَضْحَكُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ مِنْ ضِحْكِ رَبِّ الْعَالَمِينَ حِينَ قَالَ أَتَسْتَهْزِئُ مِنِّي وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ فَيَقُولُ إِنِّي لاَ أَسْتَهْزِئُ مِنْكَ وَلَكِنِّي عَلَى مَا أَشَاءُ قَادِرٌ ‏"‏ ‏.‏
ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সবার শেষে এক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। সে একবার সম্মুখে হাঁটবে আবার একবার উপুড় হয়ে পড়ে যাবে। জাহান্নামের আগুন তাকে ঝাপটা দিবে। অগ্নিসীমা অতিক্রম করার পর সে তার দিকে ফিরে দেখবে এবং বলবে, সে সত্ত্বা কত মহিমাময় যিনি আমাকে তোমা হতে নাযাত দিয়েছেন। তিনি আমাকে এমন জিনিস দান করেছেন যা পূর্বের বা পরের কাউকেও প্রদান করেননি। এরপর তার সামনে একটি গাছ উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে; (যা দেখে) সে বলবে, হে প্রতিপালক! আমাকে এ গাছটির নিকটবর্তী করে দিন, যেন আমি এর ছায়া গ্রহণ করতে পারি এবং এর নীচে প্রবাহিত পানি থেকে পিপাসা নিবারণ করতে পারি। আল্লাহ তা‘আলা বলবেন : হে আদাম সন্তান! যদি আমি তোমাকে তা দান করি, তবে হয়ত তুমি আবার অন্য একটির প্রার্থনা করে বসবে। তখন সে বলবে, না, হে প্রভু! এর অতিরিক্ত কিছু চাইব না, বলে সে আল্লাহ তা’আলার নিকট কসম করবে এবং আল্লাহও তার ওযর গ্রহণ করবেন। কারণ সে এমন সব জিনিস প্রত্যক্ষ করেছে যা দেখে সবর করা যায় না। অতএব আল্লাহ তা‘আলা তাকে এ গাছটির নিকটবর্তী করে দিবেন। আর সে তার ছায়া গ্রহণ করবে ও পানি পান করবে। তারপর আবার একটি গাছ উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে; যেটি প্রথমটি অপেক্ষা অধিক সুন্দর। তা দেখেই সে প্রার্থনা করবে, হে পরওয়ারদিগার! আমাকে এ গাছের নিকটবর্তী করে দিন, যেন আমি তা থেকে পানি পান করতে পারি এবং এর ছায়া গ্রহণ করতে পারি। এরপর আর কিছুর প্রার্থনা করবো না। আল্লাহ উত্তর দিবেন : আদম সন্তান! তুমি না আমার কসম করে বলেছিলে, আর কোনটির প্রার্থনা জানাবে না। তিনি আরো বলবেন : যদি আমি তোমাকে তার নিকটবর্তী করে দেই তবে তুমি হয়ত আরো কিছুর জন্য প্রার্থনা করবে। সে আর কিছু চাইবে না বলে কসম করবে। আল্লাহ তা‘আলা তার এ ওযর কবূল করবেন। কারণ সে এমন সব জিনিস প্রত্যক্ষ করেছে যা দেখে সবর করা যায় না। অতঃপর তিনি তাকে এর নিকটবর্তী করে দিবেন। আর সে এর ছায়া গ্রহণ করবে ও পানি পান করবে। এরপর আবার জান্নাতের দরজার কাছে আরেকটি গাছ উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে, এটি পূর্বের দু’টি গাছ অপেক্ষাও সুন্দর। তাই সে বলে উঠবে, হে প্রতিপালক! আমাকে এ গাছের নিকটবর্তী করে দিন, যেন আমি এর ছায়া গ্রহণ করতে পারি ও পানি পান করতে পারি। আমি আর কিছু প্রার্থনা করবো না। আল্লাহ বলবেন : হে আদাম সন্তান! তুমি আমার নিকট আর কিছু চাইবে না বলে কসম করনি? সে উত্তরে বলবে, অবশ্যই করেছি। হে প্রভু! তবে এটিই। আর কিছু চাইবো না। আল্লাহ তার ওযর গ্রহণ করবেন, কারণ সে এমন সব জিনিস প্রত্যক্ষ করছে যা দেখে সবর করা যায় না। তিনি তাকে এর নিকটবর্তী করে দিবেন। যখন তাকে নিকটবর্তী করে দেয়া হবে! আর জান্নাতীদের কন্ঠস্বর তার কান ধ্বনিত হবে, তখন সে বলবে, হে প্রতিপালক! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিন। আল্লাহ বলবেন : হে আদাম সন্তান! তোমার কামনা কোথায় গিয়ে শেষ হবে? আমি যদি তোমাকে পৃথিবী এবং তার সমপরিমাণ বস্তু দান করি তবে কি তুমি পরিতৃপ্ত হবে? সে বলবে, হে প্রতিপালক! আপনি ঠাট্রা বিদ্রূপ করছেন। আপনি তো সারা জাহানের প্রতিপালক।
এ কথাটি বর্ণনা করতে গিয়ে বর্ণনাকারী ইবনে মাস’ঊদ (রাঃ) হেসে ফেললেন। আর বললেন, আমি কেন হাসছি তা তোমরা জিজ্ঞেস করবে না? তারা বলল, কেন হাসছেন? তখন তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও অনুরূপ হেসেছিলেন। সহাবাগণ জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রসূল! কেন হাসছেন? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এজন্য যে, ঐ ব্যক্তিটির এ উক্তি “আপনি আমার সাথে ঠাট্রা বিদ্রূপ করছেন, আপনিতো সারা জাহানের প্রতিপালক” শুনে আল্লাহ রব্বুল আলামীন হেসেছেন বলে আমি হাসলাম। যা হোক আল্লাহ তাকে বলবেন : তোমার সাথে ঠাট্টা করছি না। মনে রেখ, আমি আমার সকল ইচ্ছার উপর ক্ষমতাবান। (ই.ফা. ৩৫৯; ই.সে. ৩৭০)

৮৪. অধ্যায়ঃ

নিম্ন জান্নাতী, তথায় তার মর্যাদা

৩৫২

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ أَبِي عَيَّاشٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ إِنَّ أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً رَجُلٌ صَرَفَ اللَّهُ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ قِبَلَ الْجَنَّةِ وَمَثَّلَ لَهُ شَجَرَةً ذَاتَ ظِلٍّ فَقَالَ أَىْ رَبِّ قَدِّمْنِي إِلَى هَذِهِ الشَّجَرَةِ أَكُونُ فِي ظِلِّهَا ‏"‏ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِنَحْوِ حَدِيثِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَلَمْ يُذْكُرْ ‏"‏ فَيَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ مَا يَصْرِينِي مِنْكَ ‏"‏ ‏.‏ إِلَى آخِرِ الْحَدِيثِ وَزَادَ فِيهِ ‏"‏ وَيُذَكِّرُهُ اللَّهُ سَلْ كَذَا وَكَذَا فَإِذَا انْقَطَعَتْ بِهِ الأَمَانِيُّ قَالَ اللَّهُ هُوَ لَكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ - قَالَ - ثُمَّ يَدْخُلُ بَيْتَهُ فَتَدْخُلُ عَلَيْهِ زَوْجَتَاهُ مِنَ الْحُورِ الْعِينِ فَتَقُولاَنِ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَاكَ لَنَا وَأَحْيَانَا لَكَ - قَالَ - فَيَقُولُ مَا أُعْطِيَ أَحَدٌ مِثْلَ مَا أُعْطِيتُ ‏"‏ ‏.‏
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন : নিম্নতম জান্নাতী ঐ ব্যক্তি, যার মুখমন্ডলটি আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামের দিক থেকে সরিয়ে জান্নাতের দিকে করে দিবেন। তার সামনে একটি ছায়াযুক্ত গাছ উদ্ভাসিত করা হবে। সে ব্যক্তি প্রার্থনা জানাবে, হে প্রতিপ্রালক! আমাকে এ গাছ পর্যন্ত এগিয়ে দিন। আমি এ ছায়ায় অবস্থান করতে চাই। ..... এভাবে তিনি ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ)-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে এ হাদীসে (আরবী) (অর্থাৎ হে আদাম সন্তান! তোমাকে আমা হতে কিসে দূরে রেখেছিল)-এর উল্লেখ নেই। অবশ্য এতটুকু বলেছেন যে, আল্লাহ তাকে বিভিন্ন নি’আমাতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলবেন : এটি চাও। এভাবে যখন তার সকল আকাঙ্ক্ষা সমাপ্ত হয়ে যাবে তখন আল্লাহ বলবেন : যাও তোমাকে এসব সম্পদ প্রদান করলাম, সেই সাথে আরও দশগুণ দান করলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তখন লোকটি (জান্নাতে) তার গৃহে প্রবেশ করবে। তার সাথে ডাগর আঁখি বিশিষ্ট দু’জন হুর তার পত্নী হিসেবে প্রবেশ করবে। আর তারা বলবে, সকল প্রশংসা সে আল্লাহর জন্য যিনি আপনাকে আমাদের জন্য এবং আমাদেরকে আপনার জন্য সৃষ্টি করেছেন। লোকটি বলবে, আমাকে যা দেয়া হয়েছে, এমন আর কাউকে দেয়া হয়নি। (ই.ফা. ৩৬০; ই.সে. ৩৭১)

৩৫৩

قَالَ وَحَدَّثَنِي بِشْرُ بْنُ الْحَكَمِ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، حَدَّثَنَا مُطَرِّفٌ، وَابْنُ، أَبْجَرَ سَمِعَا الشَّعْبِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ الْمُغِيرَةَ بْنَ شُعْبَةَ، يُخْبِرُ بِهِ النَّاسَ عَلَى الْمِنْبَرِ قَالَ سُفْيَانُ رَفَعَهُ أَحَدُهُمَا - أُرَاهُ ابْنَ أَبْجَرَ - قَالَ ‏"‏ سَأَلَ مُوسَى رَبَّهُ مَا أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً قَالَ هُوَ رَجُلٌ يَجِيءُ بَعْدَ مَا أُدْخِلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ فَيُقَالُ لَهُ ادْخُلِ الْجَنَّةَ ‏.‏ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ كَيْفَ وَقَدْ نَزَلَ النَّاسُ مَنَازِلَهُمْ وَأَخَذُوا أَخَذَاتِهِمْ فَيُقَالُ لَهُ أَتَرْضَى أَنْ يَكُونَ لَكَ مِثْلُ مُلْكِ مَلِكٍ مِنْ مُلُوكِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ رَضِيتُ رَبِّ ‏.‏ فَيَقُولُ لَكَ ذَلِكَ وَمِثْلُهُ وَمِثْلُهُ وَمِثْلُهُ وَمِثْلُهُ ‏.‏ فَقَالَ فِي الْخَامِسَةِ رَضِيتُ رَبِّ ‏.‏ فَيَقُولُ هَذَا لَكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ وَلَكَ مَا اشْتَهَتْ نَفْسُكَ وَلَذَّتْ عَيْنُكَ ‏.‏ فَيَقُولُ رَضِيتُ رَبِّ ‏.‏ قَالَ رَبِّ فَأَعْلاَهُمْ مَنْزِلَةً قَالَ أُولَئِكَ الَّذِينَ أَرَدْتُ غَرَسْتُ كَرَامَتَهُمْ بِيَدِي وَخَتَمْتُ عَلَيْهَا فَلَمْ تَرَ عَيْنٌ وَلَمْ تَسْمَعْ أُذُنٌ وَلَمْ يَخْطُرْ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَمِصْدَاقُهُ فِي كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ‏{‏ فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ‏}‏ الآيَةَ ‏.‏
মুগীরাহ ইবনু শু’বাহ (রাঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত আছে যে, একবার মূসা (‘আঃ) তাঁর প্রতিপালককে জিজ্ঞেস করেছিলেন, জান্নাতের সবচেয়ে নিম্ন স্তরের মর্যাদা লোক কে হবে? তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ সে হলো এমন এক ব্যক্তি যে জান্নাতীদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর পর আসবে। তাকে বলা হবে, জান্নাতে প্রবেশ কর। সে বলবে, হে প্রতিপালক! তা কিরূপে হবে? জান্নাতীগণ তো নিজ নিজ আবাসের অধিকারী হয়ে গেছেন। তারা তাদের প্রাপ্য নিয়েছেন। তাকে বলা হবে, পৃথিবীর কোন সম্রাটের সাম্রাজ্যের সমপরিমাণ সম্পদ নিয়ে তুমি সন্তুষ্ট হবে? সে বলবে, হে প্রভূ! আমি খুশী। আল্লাহ বলবেন : তোমাকে উক্ত পরিমাণ সম্পদ দেয়া হলো। সাথে দেয়া হলো আরো সমপরিমাণ, আরো সমপরিমাণ, আরো সমপরিমাণ। পঞ্চমবারে সে বলে উঠবে, আমি সন্তুষ্ট, হে আমার রব! তিনি (আল্লাহ) বলবেন : এটা তোমার জন্য এবং আরো দশগুণ দেয়া হলো। তাছাড়া তোমার জন্য রয়েছে এমন জিনিস যা দ্বারা মন তৃপ্ত হয় চোখ জুড়ায়। সে (লোকটি) বলবে, হে আমার প্রভু! আমি পরিতৃপ্ত। মুসা (‘আঃ) বললেনঃ তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ কে? আল্লাহ বলবেন : এরা তারাই, যাদের মর্যাদা আমি চূড়ান্তভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছি। তিনি (আল্লাহ) বলবেন : ওরা তারাই যাদের জন্য আমি নিজ হস্তে তাদের মর্যাদা উন্নীত করেছি। আর তার উপর মোহর মেরে দিয়েছি। এমন জিনিস তাদের জন্য রেখেছি যা কোন চক্ষু কখনো দেখেনি, কোন কান কখনো শুনেনি, কারো অন্তরে কখনো কল্পনায়ও উদয় হয়নি। বর্ণনাকারী বলেন, কুরআন মাজীদের এ আয়াতটি এর সত্যায়ন করে : “কেউ জানে না তাদের জন্য নয়নপ্রীতিকর কী লুকায়িত রাখা হয়েছে তাদের কৃতকর্মের পুরস্কার স্বরূপ” – (সূরাহ আস-সাজদাহ ৪১ : ১৭)। (ই.ফা. ৩৬১, ই.সে. ৩৭২)

৩৫৪

حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ الأَشْجَعِيُّ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبْجَرَ، قَالَ سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ الْمُغِيرَةَ بْنَ شُعْبَةَ، يَقُولُ عَلَى الْمِنْبَرِ إِنَّ مُوسَى - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - سَأَلَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ عَنْ أَخَسِّ أَهْلِ الْجَنَّةِ مِنْهَا حَظًّا ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِنَحْوِهِ ‏.‏
মুগীরাহ ইবনু শু’বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মূসা (‘আঃ) আল্লাহ তা‘আলাকে জান্নাতের সর্বনিম্ন ব্যক্তিটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন ..... এরপর বর্ণনাকারী পূর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৩৬২; ই.সে. ৩৭৩)

৩৫৫

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنِ الْمَعْرُورِ بْنِ سُوَيْدٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنِّي لأَعْلَمُ آخِرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولاً الْجَنَّةَ وَآخِرَ أَهْلِ النَّارِ خُرُوجًا مِنْهَا رَجُلٌ يُؤْتَى بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُقَالُ اعْرِضُوا عَلَيْهِ صِغَارَ ذُنُوبِهِ وَارْفَعُوا عَنْهُ كِبَارَهَا ‏.‏ فَتُعْرَضُ عَلَيْهِ صِغَارُ ذُنُوبِهِ فَيُقَالُ عَمِلْتَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا كَذَا وَكَذَا وَعَمِلْتَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا كَذَا وَكَذَا ‏.‏ فَيَقُولُ نَعَمْ ‏.‏ لاَ يَسْتَطِيعُ أَنْ يُنْكِرَ وَهُوَ مُشْفِقٌ مِنْ كِبَارِ ذُنُوبِهِ أَنْ تُعْرَضَ عَلَيْهِ ‏.‏ فَيُقَالُ لَهُ فَإِنَّ لَكَ مَكَانَ كُلِّ سَيِّئَةٍ حَسَنَةً ‏.‏ فَيَقُولُ رَبِّ قَدْ عَمِلْتُ أَشْيَاءَ لاَ أَرَاهَا هَا هُنَا ‏"‏ ‏.‏ فَلَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ضَحِكَ حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ ‏.‏
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন : জাহান্নাম হতে সবার শেষে উদ্ধারপ্রাপ্ত ও জান্নাতে সবার শেষে প্রবেশকারী লোকটিকে আমি অবশ্যই জানি। কিয়ামাতের দিন তাকে উপস্থিত করে ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে যে, এ ব্যক্তির সগীরা গুনাহগুলো তার সামনে পেশ কর, আর কবীরা গুনাহসমূহ (আলাদা) তুলে রাখ। সুতরাং ফেরেশতাগণ তার সম্মুখে সগীরা গুনাহগুলো উপস্থিত করবেন। আর ঐ ব্যক্তিকে (ধমকের সুরে) বলা হবে, তুমি অমুক দিন এ পাপ কাজ করেছিলে? অমুক দিন সে কাজ করেছিলে? সে বলবে, হ্যাঁ। সে কোনটি অস্বীকার করতে পারবে না। আর কবীরা গুনাহসমূহ পেশ করা হবে কিনা বলে সে ভয় করতে থাকবে। অতঃপর তাকে বলা হবে, তোমার এক একটি গুনাহের পরিবর্তে এক একটি নেকী দেয়া হলো। লোকটি বলবে, হে প্রতিপালক! আমি আরো অনেক অন্যায় কাজ করেছি, যেগুলো এখানে দেখছি না। অবশ্য রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এমনভাবে হাসতে দেখেছি যে তাঁর মাড়ির দাঁতগুলো পর্যন্ত ভেসে উঠল। (ই.ফা. ৩৬৩; ই.সে. ৩৭৪)

৩৫৬

وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، كِلاَهُمَا عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏
আ‘মাশ (রহঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে উক্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৩৬৪; ই.সে. ৩৭৫)

৩৫৭

حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، كِلاَهُمَا عَنْ رَوْحٍ، قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ الْقَيْسِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يُسْأَلُ عَنِ الْوُرُودِ، فَقَالَ نَجِيءُ نَحْنُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَنْ كَذَا، وَكَذَا، انْظُرْ أَىْ ذَلِكَ فَوْقَ النَّاسِ - قَالَ - فَتُدْعَى الأُمَمُ بِأَوْثَانِهَا وَمَا كَانَتْ تَعْبُدُ الأَوَّلُ فَالأَوَّلُ ثُمَّ يَأْتِينَا رَبُّنَا بَعْدَ ذَلِكَ فَيَقُولُ مَنْ تَنْظُرُونَ فَيَقُولُونَ نَنْظُرُ رَبَّنَا ‏.‏ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ ‏.‏ فَيَقُولُونَ حَتَّى نَنْظُرَ إِلَيْكَ ‏.‏ فَيَتَجَلَّى لَهُمْ يَضْحَكُ - قَالَ - فَيَنْطَلِقُ بِهِمْ وَيَتَّبِعُونَهُ وَيُعْطَى كُلُّ إِنْسَانٍ مِنْهُمْ - مُنَافِقٍ أَوْ مُؤْمِنٍ - نُورًا ثُمَّ يَتَّبِعُونَهُ وَعَلَى جِسْرِ جَهَنَّمَ كَلاَلِيبُ وَحَسَكٌ تَأْخُذُ مَنْ شَاءَ اللَّهُ ثُمَّ يَطْفَأُ نُورُ الْمُنَافِقِينَ ثُمَّ يَنْجُو الْمُؤْمِنُونَ فَتَنْجُو أَوَّلُ زُمْرَةٍ وُجُوهُهُمْ كَالْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ سَبْعُونَ أَلْفًا لاَ يُحَاسَبُونَ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ كَأَضْوَإِ نَجْمٍ فِي السَّمَاءِ ثُمَّ كَذَلِكَ ثُمَّ تَحِلُّ الشَّفَاعَةُ وَيَشْفَعُونَ حَتَّى يَخْرُجَ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَكَانَ فِي قَلْبِهِ مِنَ الْخَيْرِ مَا يَزِنُ شَعِيرَةً فَيُجْعَلُونَ بِفِنَاءِ الْجَنَّةِ وَيَجْعَلُ أَهْلُ الْجَنَّةِ يَرُشُّونَ عَلَيْهِمُ الْمَاءَ حَتَّى يَنْبُتُوا نَبَاتَ الشَّىْءِ فِي السَّيْلِ وَيَذْهَبُ حُرَاقُهُ ثُمَّ يَسْأَلُ حَتَّى تُجْعَلَ لَهُ الدُّنْيَا وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهَا مَعَهَا ‏.‏
আবূ যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহকে কুরআনে উল্লেখিত (আরবী) অর্থাৎ (পুলসিরাতের উপর দিয়ে) অতিক্রম করতে হবে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উত্তরে বলেছিলেন, কিয়ামাতের দিন আমরা এরূপে আসব। তিনি মাথা উঁচু করে দেখালেন। এরপর একে একে প্রত্যেক জাতিকে তাদের নিজ নিজ দেব-দেবী ও উপাস্যের নামসহ ডাকা হবে। তারপর আল্লাহ আমাদের (মু’মিনদের) নিকট এসে জিজ্ঞেস করবেন, তোমরা কার অপেক্ষায় রয়েছ? মু’মিনগণ বলবে, আমাদের প্রতিপালকের অপেক্ষায় আছি। তিনি বলবেন, আমিই তো তোমাদের প্রতিপালক। তারা বলবে, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে না দেখব (আমরা তা মানছি না)। এরপর আল্লাহ তখন এমনভাবে উদ্ভাসিত হবেন যে, তিনি হাসছেন। অনন্তর তিনি তাদের নিয়ে চলবেন এবং মু’মিনগণ তাঁর অনুসরণ করবে। মুনাফিক কি মু’মিন প্রত্যেক মানুষকেই নূর প্রদান করা হবে। তারপর তারা এর অনুসরণ করবে। জাহান্নামের পুলের উপর থাকবে কাঁটাযুক্ত লৌহ শলাকা। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে সেগুলো পাকড়াও করবে। মুনাফিকদের নূর নিভে যাবে। আর মু’মিনগণ নাযাত পাবেন। প্রথম দল হবে সত্তর হাজার লোকের, তাদের কোন হিসাবই নেয়া হবে না। তাদের চেহারা হবে পূর্ণিমা রাতের চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল। তারপর আরেক দল আসবে তাদের মুখমন্ডল হবে আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রের ন্যায় দীপ্ত। এভাবে পর্যায়ক্রমে সকলে পার হয়ে যাবে। তারপর শাফা’আতের অনুমতি প্রদান করা হবে। ফলে সকলেই শাফা’আত করবে। এমনকি যে ব্যক্তি “লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” স্বীকার করেছে এবং যার অন্তরে সামান্য যব পরিমাণ ঈমান অবশিষ্ট আছে তাকেও জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে। পরে এদেরকে জান্নাতের আঙিনায় জমায়েত করা হবে, আর জান্নাতীগণ তাদের গায়ে পানি সিঞ্চন করবেন, ফলে তারা এমনভাবে সতেজ হয়ে উঠবে যেমনভাবে কোন উদ্ভিদ স্রোতবাহিত পানির ধারে সতেজ হয়ে উঠে। আগুনে পোড়া দাগসমূহ মুছে যাবে। এরপর তারা আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রার্থনা জানাবে। আল্লাহ তাদের প্রার্থনা কবুল করবেন। তাদের প্রত্যেককে পৃথিবীর ন্যায় এবং তৎসহ আরো দশগুণ প্রতিদান দেয়া হবে। (ই.ফা. ৩৬৫; ই.সে. ৩৭৬)

৩৫৮

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرٍو، سَمِعَ جَابِرًا، يَقُولُ سَمِعَهُ مِنَ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم بِأُذُنِهِ يَقُولُ ‏ "‏ إِنَّ اللَّهَ يُخْرِجُ نَاسًا مِنَ النَّارِ فَيُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ ‏"‏ ‏.‏
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি দুই কানে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ইরশাদ করতে শুনেছেন : আল্লাহ তা‘আলা কতিপয় লোককে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (ই.ফা. ৩৬৬; ই.সে. ৩৭৭)

৩৫৯

حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَمْرِو بْنِ دِينَارٍ أَسَمِعْتَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنَّ اللَّهَ يُخْرِجُ قَوْمًا مِنَ النَّارِ بِالشَّفَاعَةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ نَعَمْ ‏.‏
আবূ রাবী’ হাম্মাদ ইবনু যায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আমর ইবনু দীনারকে আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা কতিপয় মানুষকে শাফা’আতের মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে বের করবেন। তখন তিনি বললেন, হ্যাঁ! (ই.ফা. ৩৬৭; ই.সে. ৩৭৮)

৩৬০

حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ سُلَيْمٍ الْعَنْبَرِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي يَزِيدُ الْفَقِيرُ، حَدَّثَنَا جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنَّ قَوْمًا يُخْرَجُونَ مِنَ النَّارِ يَحْتَرِقُونَ فِيهَا إِلاَّ دَارَاتِ وُجُوهِهِمْ حَتَّى يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ ‏"‏ ‏.‏
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একদল লোককে জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে। এদের মুখমন্ডল ব্যতীত সারা দেহ জ্বলে পুড়ে গেছে। অবশেষে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। (ই.ফা. ৩৬৮; ই.সে. ৩৭৯)

৩৬১

وَحَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ دُكَيْنٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، - يَعْنِي مُحَمَّدَ بْنَ أَبِي أَيُّوبَ - قَالَ حَدَّثَنِي يَزِيدُ الْفَقِيرُ، قَالَ كُنْتُ قَدْ شَغَفَنِي رَأْىٌ مِنْ رَأْىِ الْخَوَارِجِ فَخَرَجْنَا فِي عِصَابَةٍ ذَوِي عَدَدٍ نُرِيدُ أَنْ نَحُجَّ ثُمَّ نَخْرُجَ عَلَى النَّاسِ - قَالَ - فَمَرَرْنَا عَلَى الْمَدِينَةِ فَإِذَا جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ يُحَدِّثُ الْقَوْمَ - جَالِسٌ إِلَى سَارِيَةٍ - عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَإِذَا هُوَ قَدْ ذَكَرَ الْجَهَنَّمِيِّينَ - قَالَ - فَقُلْتُ لَهُ يَا صَاحِبَ رَسُولِ اللَّهِ مَا هَذَا الَّذِي تُحَدِّثُونَ وَاللَّهُ يَقُولُ ‏{‏ إِنَّكَ مَنْ تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهُ‏}‏ وَ ‏{‏ كُلَّمَا أَرَادُوا أَنْ يَخْرُجُوا مِنْهَا أُعِيدُوا فِيهَا‏}‏ فَمَا هَذَا الَّذِي تَقُولُونَ قَالَ فَقَالَ أَتَقْرَأُ الْقُرْآنَ قُلْتُ نَعَمْ ‏.‏ قَالَ فَهَلْ سَمِعْتَ بِمَقَامِ مُحَمَّدٍ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - يَعْنِي الَّذِي يَبْعَثُهُ اللَّهُ فِيهِ قُلْتُ نَعَمْ ‏.‏ قَالَ فَإِنَّهُ مَقَامُ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم الْمَحْمُودُ الَّذِي يُخْرِجُ اللَّهُ بِهِ مَنْ يُخْرِجُ ‏.‏ - قَالَ - ثُمَّ نَعَتَ وَضْعَ الصِّرَاطِ وَمَرَّ النَّاسِ عَلَيْهِ - قَالَ - وَأَخَافُ أَنْ لاَ أَكُونَ أَحْفَظُ ذَاكَ - قَالَ - غَيْرَ أَنَّهُ قَدْ زَعَمَ أَنَّ قَوْمًا يَخْرُجُونَ مِنَ النَّارِ بَعْدَ أَنْ يَكُونُوا فِيهَا - قَالَ - يَعْنِي فَيَخْرُجُونَ كَأَنَّهُمْ عِيدَانُ السَّمَاسِمِ ‏.‏ قَالَ فَيَدْخُلُونَ نَهْرًا مِنْ أَنْهَارِ الْجَنَّةِ فَيَغْتَسِلُونَ فِيهِ فَيَخْرُجُونَ كَأَنَّهُمُ الْقَرَاطِيسُ ‏.‏ فَرَجَعْنَا قُلْنَا وَيْحَكُمْ أَتُرَوْنَ الشَّيْخَ يَكْذِبُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَرَجَعْنَا فَلاَ وَاللَّهِ مَا خَرَجَ مِنَّا غَيْرُ رَجُلٍ وَاحِدٍ أَوْ كَمَا قَالَ أَبُو نُعَيْمٍ ‏.‏
ইয়াযীদ আল ফাকীর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খারিজীদের একটি মত আমার মনকে দৃঢ়ভাবে কেড়ে নিয়েছিল। (কবীরা গুনাহকারী সর্বদা জাহান্নামে থাকবে, কখনো বের হবে না) (বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য লোকদের সাথে আলোচনা করাও আমাদের উদ্দেশ্য ছিল)। আমরা একবার একটি দলের সাথে হাজ্জে যাত্রা করি। আমরা মাদীনাহ দিয়ে যাচ্ছিলাম, দেখি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) একটি খুঁটির পাশে বসে লোকদেরকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস বর্ণনা করছেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি জাহান্নামীদের আলোচনা তুললেন। আমি বললাম, হে রসূলের সহাবা। আপনারা এ কি বলছেন? অথচ আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন : “যাকে আপনি অগ্নিতে নিক্ষেপ করলেন, তাকে তো আপনি নিশ্চয়ই হেয় করলেন” – (সূরাহ আ-লি ‘ইমরান ৩ : ১৯২)। আরো ইরশাদ করেন : “যখনই তারা জাহান্নাম হতে বেরোবার চেষ্টা করবে তখনই তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হবে” – (সূরাহ আস-সাজদাহ ৪১ : ২০)। এ বিষয়ে আপনারা কী বলছেন। জাবির (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি কুরআন পাঠ কর? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে তুমি মুহাম্মাদ (এর সম্মানিত) আসন, যেথায় আল্লাহ তাঁকে (কিয়ামাত দিবসে) সমাসীন করবেন, সে আসনের কথা শুন নি? বললাম, হ্যাঁ। জাবির (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সে আসনটি হচ্ছে “মাকামে মাহমূদ” যার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা যাকে জাহান্নাম থেকে বের করার বের করবেন। বর্ণনাকারী আরো বলেন, আলোচনাটি পুরোপুরি সংক্ষরণ করতে পারিনি বলে আমার আশঙ্কা হয়। তবে তিনি অবশ্যই এ কথা ধারণা করেছেন যে, কতিপয় মানুষ কিছুকাল জাহান্নামে অবস্থান করার পর তাদেরকে বের করা হবে। জাহান্নাম দগ্ধীভূত হয়ে যখন রোদে পোড়া তিল গাছের ন্যায় কালো বর্ণ ধারণ করবে, তখন তাদেরকে বের করে আনা হবে। এরপর তারা জান্নাতের একটি নহরে নেমে গোসল করবে। পরে সকলে কাগজের ন্যায় সাদা ধবধবে হয়ে সে নহর থেকে উঠে আসবে। ইয়াযীদ (রহঃ) বলেন, এ হাদীস নিয়ে আমরা আমাদের এলাকায় ফিরে এলাম এবং (সকলকে) বললাম, অকল্যাণ হোক তোমাদের! তোমরা কি মনে কর যে, এ বৃদ্ধ (জাবির) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর মিথ্যারোপ করতে পারেন? পরিশেষে আমরা সকলেই (ঐ ভ্রান্ত বিশ্বাস) থেকে ফিরে আসি। আল্লাহর কসম মাত্র এক ব্যক্তি ছাড়া কেউ আমাদের এ সঠিক ‘আকীদাহ পরিত্যাগ করেনি। আবূ নু’আয়ম এরূপই বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৩৬৯; ই.সে. ৩৮০)

৩৬২

حَدَّثَنَا هَدَّابُ بْنُ خَالِدٍ الأَزْدِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، وَثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ أَرْبَعَةٌ فَيُعْرَضُونَ عَلَى اللَّهِ فَيَلْتَفِتُ أَحَدُهُمْ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ إِذْ أَخْرَجْتَنِي مِنْهَا فَلاَ تُعِدْنِي فِيهَا ‏.‏ فَيُنْجِيهِ اللَّهُ مِنْهَا ‏"‏ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন : চার ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে বের করে আল্লাহর সমীপে উপস্থিত করা হবে। তন্মধ্যে একজন বারবার পশ্চাৎ দিকে ফিরে তাকাবে আর বলবে, হে আমার রব! যখন আমাকে এ জাহান্নাম থেকে বের করেছেন, তখন আমাকে আর সেখানে ফিরিয়ে নিবেন না। আল্লাহ তা‘আলা এ লোকটিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে দিবেন। (ই.ফা. ৩৭০; ই.সে. ৩৮১)

৩৬৩

حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ، فُضَيْلُ بْنُ حُسَيْنٍ الْجَحْدَرِيُّ وَمُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْغُبَرِيُّ - وَاللَّفْظُ لأَبِي كَامِلٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ يَجْمَعُ اللَّهُ النَّاسَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَهْتَمُّونَ لِذَلِكَ - وَقَالَ ابْنُ عُبَيْدٍ فَيُلْهَمُونَ لِذَلِكَ - فَيَقُولُونَ لَوِ اسْتَشْفَعْنَا عَلَى رَبِّنَا حَتَّى يُرِيحَنَا مِنْ مَكَانِنَا هَذَا - قَالَ - فَيَأْتُونَ آدَمَ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُونَ أَنْتَ آدَمُ أَبُو الْخَلْقِ خَلَقَكَ اللَّهُ بِيَدِهِ وَنَفَخَ فِيكَ مِنْ رُوحِهِ وَأَمَرَ الْمَلاَئِكَةَ فَسَجَدُوا لَكَ اشْفَعْ لَنَا عِنْدَ رَبِّكَ حَتَّى يُرِيحَنَا مِنْ مَكَانِنَا هَذَا ‏.‏ فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - فَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ فَيَسْتَحْيِي رَبَّهُ مِنْهَا - وَلَكِنِ ائْتُوا نُوحًا أَوَّلَ رَسُولٍ بَعَثَهُ اللَّهُ - قَالَ - فَيَأْتُونَ نُوحًا صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - فَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ فَيَسْتَحْيِي رَبَّهُ مِنْهَا - وَلَكِنِ ائْتُوا إِبْرَاهِيمَ صلى الله عليه وسلم الَّذِي اتَّخَذَهُ اللَّهُ خَلِيلاً ‏.‏ فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - وَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ فَيَسْتَحْيِي رَبَّهُ مِنْهَا - وَلَكِنِ ائْتُوا مُوسَى صلى الله عليه وسلم الَّذِي كَلَّمَهُ اللَّهُ وَأَعْطَاهُ التَّوْرَاةَ ‏.‏ قَالَ فَيَأْتُونَ مُوسَى - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - وَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ فَيَسْتَحْيِي رَبَّهُ مِنْهَا - وَلَكِنِ ائْتُوا عِيسَى رُوحَ اللَّهِ وَكَلِمَتَهُ ‏.‏ فَيَأْتُونَ عِيسَى رُوحَ اللَّهِ وَكَلِمَتَهُ فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ ‏.‏ وَلَكِنِ ائْتُوا مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم عَبْدًا قَدْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ فَيَأْتُونِي فَأَسْتَأْذِنُ عَلَى رَبِّي فَيُؤْذَنُ لِي فَإِذَا أَنَا رَأَيْتُهُ وَقَعْتُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللَّهُ فَيُقَالُ يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ قُلْ تُسْمَعْ سَلْ تُعْطَهْ اشْفَعْ تُشَفَّعْ ‏.‏ فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأَحْمَدُ رَبِّي بِتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِيهِ رَبِّي ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا فَأُخْرِجُهُمْ مِنَ النَّارِ وَأُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ ثُمَّ أَعُودُ فَأَقَعُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَدَعَنِي ثُمَّ يُقَالُ ارْفَعْ رَأْسَكَ يَا مُحَمَّدُ قُلْ تُسْمَعْ سَلْ تُعْطَهْ اشْفَعْ تُشَفَّعْ ‏.‏ فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأَحْمَدُ رَبِّي بِتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِيهِ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا فَأُخْرِجُهُمْ مِنَ النَّارِ وَأُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ - قَالَ فَلاَ أَدْرِي فِي الثَّالِثَةِ أَوْ فِي الرَّابِعَةِ قَالَ - فَأَقُولُ يَا رَبِّ مَا بَقِيَ فِي النَّارِ إِلاَّ مَنْ حَبَسَهُ الْقُرْآنُ أَىْ وَجَبَ عَلَيْهِ الْخُلُودُ ‏"‏ ‏.‏ - قَالَ ابْنُ عُبَيْدٍ فِي رِوَايَتِهِ قَالَ قَتَادَةُ أَىْ وَجَبَ عَلَيْهِ الْخُلُودُ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন : হাশরের দিনে আল্লাহ তা‘আলা সকল মানুষকে একত্রিত করবেন। তখন সংকট মুক্তির জন্য ও সুপারিশ প্রার্থনার ব্যাপারে তারা তৎপর হবে। এখানে বর্ণনাকারী ইবনু ‘উবায়দ (আরবী) শব্দ ব্যবহার করেছেন। অর্থ অন্তরে উদয় হওয়া। তারা বলবে, আমরা যদি (কাউকে) আল্লাহর নিকট সুপারিশের জন্য অনুরোধ করতাম। যেন তিনি আমাদের এ (সংকটময়) স্থান থেকে মুক্তি দেন। সে মতে, তারা আদাম (‘আঃ)-এর নিকট এসে বলবে, আপনি আদাম (‘আঃ), আপনি মানুষের (আদি) পিতা, আল্লাহ তা‘আলা স্বহস্তে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, আপনার দেহে আত্মা ফুঁকেছেন, আপনাকে সাজদাহ করার জন্য ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, তাই তাঁরা আপনাকে সাজদাহও করেছেন। সুতরাং আপনি আমাদের পক্ষ হতে প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করুন। যেন তিনি আমাদেরকে এ (সংকটময়) স্থান থেকে মুক্তি দেন। তিনি তাঁর কৃত ত্রুটির কথা স্মরণ করবেন এবং প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করতে লজ্জাবোধ করবেন। তিনি বলবেন, আমি এর যোগ্য নই। তোমরা নূহ (‘আঃ) এর নিকটে যাও। তিনি প্রথম রসূল। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকেই সর্বপ্রথম রসূলরুপে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তখন সকল মানুষ নূহ (‘আঃ)-এর নিকট এসে (অনুরোধ) করবে। তিনিও তাঁর কৃত ত্রুটির কথা স্মরণ করবেন এবং প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করতে লজ্জাবোধ করবেন। তিনি বলবেনঃ আমি এর যোগ্য নই। তোমরা ইবরাহীমের নিকট যাও। তাঁকে আল্লাহ তা‘আলা বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন। তখন সবাই ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট আসবে। তিনি স্বীয় কৃত ত্রুটির কথা স্মরণ করবেন এবং প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করতে লজ্জাবোধ করবেন এবং বলবেন, আমি এর যোগ্য নই। তোমরা মূসার নিকট যাও। আল্লাহ তাঁর সাথে কপোথোকথন করেছেন। তাঁকে আল্লাহ তাওরাত প্রদান করেছেন। তখন সবাই মূসা (‘আঃ)-এর নিকট আসবে। তিনি তাঁর কৃত ত্রুটির কথা স্মরণ করবেন এবং প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করতে লজ্জাবোধ করবেন এবং বলবেন, আমি এর উপযুক্ত নই। তোমরা ‘ঈসা (আঃ)-এর নিকট যাও, তিনি আল্লাহ প্রদত্ত ‘কালিমা’। তখন সবাই ‘ঈসা (‘আঃ)-এর নিকট আসবে। তিনি বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের যোগ্য নই, তবে তোমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যাও। তিনি আল্লাহর এমন বান্দা যে, তাঁর পূর্বাপর সকল ত্রুটি ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তখন সবাই আমার নিকট আসবে, আর আমি আল্লাহর কাছে অনুমতি প্রার্থনা করবো। আমাকে অনুমতি দেয়া হবে। তখন আমি তাঁকে দেখামাত্র সাজদাহবনত হয়ে যাবো। যতক্ষণ আল্লাহ ইচ্ছা করবেন আমাকে এ অবস্থায় রেখে দিবেন; তারপর বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা তুলুন, বলুন, আপনার অনুরোধ শোনা হবে, আপনি প্রার্থনা করুন তা পূর্ণ করা হবে, আপনি শাফা’আত করুন, আপনার শাফা’আত কবূল করা হবে। তারপর আমি মাথা তুলবো এবং আমার প্রতিপালকের এমন প্রশংসা করবো যা আমার রব আমাকে শিখিয়ে দিবেন। এরপর আমি সুপারিশ করবো। আমার জন্য (শাফা’আতের) সীমা নির্ধারিত করে দেয়া হবে। সে মতে, আমি তাদেরকে জাহান্নাম থেকে উদ্ধার করে এনে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। পুনরায় আমি শাফা’আতের জন্য আসবো এবং সাজদাহবনত হব। যতক্ষণ আল্লাহ এ অবস্থায় আমাকে রাখতে ইচ্ছা করবেন, ততক্ষণ রেখে দিবেন। পরে বলা হবে : হে মুহাম্মাদ! (মাথা) তুলুন, বলুন, আপনার অনুরোধ শোনা হবে; প্রার্থনা করুন তা পূর্ণ করা হবে; সুপারিশ করুন, আপনার সুপারিশ কবূল করা হবে। তারপর আমি মাথা তুলব এবং আমার প্রতিপালকের এমন প্রশংসা করব যা আমার রব আমাকে শিখিয়ে দিবেন। অতঃপর আমি শাফা’আত করবো। আমার জন্য (শাফা’আতের) সীমা নির্ধারিত করে দেয়া হবে। সে মতে, আমি এদেরকে জাহান্নাম থেকে উদ্ধার করে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। বর্ণনাকারী বলেন, নিশ্চিতভাবে স্মরণ নেই, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তৃতীয় কিংবা চতুর্থবারে এ কথা উল্লেখ করেছিলেন যে, আমি বলব : হে আমার প্রতিপালক! কুরআন যাদেরকে বাধা দিয়েছে অর্থাৎ যার উপর জাহান্নামে সর্বদা থাকা অবধারিত হয়েছে। তারা ছাড়া জাহান্নামে আর কেউ অবশিষ্ট নেই। ইবনু ‘উবায়দ বলেন, তাঁর বর্ণনায় কাতাদাহ (রহঃ) বলেছেন, তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামে পড়ে থাকবে। (ই.ফা. ৩৭১; ই.সে. ৩৮২)

৩৬৪

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ يَجْتَمِعُ الْمُؤْمِنُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَهْتَمُّونَ بِذَلِكَ أَوْ يُلْهَمُونَ ذَلِكَ ‏"‏ ‏.‏ بِمِثْلِ حَدِيثِ أَبِي عَوَانَةَ وَقَالَ فِي الْحَدِيثِ ‏"‏ ثُمَّ آتِيهِ الرَّابِعَةَ - أَوْ أَعُودُ الرَّابِعَةَ - فَأَقُولُ يَا رَبِّ مَا بَقِيَ إِلاَّ مَنْ حَبَسَهُ الْقُرْآنُ ‏"‏ ‏.‏
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, কিয়ামাতের দিন মু’মিনগণ (হাশরের ময়দানে) একত্রিত হবে। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এখানে (আরবী) (এ অবস্থাকে তারা খুব সঙ্কটময় মনে করবে) শব্দ ব্যবহার করেছেন। তারপর বর্ণনাকারী পূর্বোল্লিখিত আবূ ‘আওয়ানার হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে এ হাদীসে বলা হয়েছে যে, এরপর আমি চতুর্থবার এসে বলব, হে প্রভু! আর কেউ অবশিষ্ট নেই, কেবল তারাই আছে যাদেরকে কুরআন আটকে রেখেছে। (ই.ফা. ৩৭২; ই.সে. ৩৮৩)

৩৬৫

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ يَجْمَعُ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُلْهَمُونَ لِذَلِكَ ‏"‏ بِمِثْلِ حَدِيثِهِمَا وَذَكَرَ فِي الرَّابِعَةِ ‏"‏ فَأَقُولُ يَا رَبِّ مَا بَقِيَ فِي النَّارِ إِلاَّ مَنْ حَبَسَهُ الْقُرْآنُ أَىْ وَجَبَ عَلَيْهِ الْخُلُودُ ‏"‏ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, কিয়ামাত দিবসে আল্লাহ তা‘আলা মু’মিন বান্দাদের একত্রিত করবেন। ফলে তারা সেটাকে অতি সঙ্কটময় মনে করবে। বর্ণনাকারী পূর্বোক্ত হাদীসদ্বয়ের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এ রিওয়ায়াতে চতুর্থবারের ব্যাপারে উল্লেখ করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তারপর আমি বলবো, হে প্রতিপালক! আর কেউ অবশিষ্ট নেই। কেবল তারাই আছে যাদেরকে পবিত্র কুরআন আটকে রেখেছে। অর্থাৎ যাদের ব্যাপারে চিরকালের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে। (ই.ফা. ৩৭৩; ই.সে. ৩৮৪)

৩৬৬

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مِنْهَالٍ الضَّرِيرُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، وَهِشَامٌ، صَاحِبُ الدَّسْتَوَائِيِّ عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ح وَحَدَّثَنِي أَبُو غَسَّانَ الْمِسْمَعِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا مُعَاذٌ، - وَهُوَ ابْنُ هِشَامٍ - قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَكَانَ فِي قَلْبِهِ مِنَ الْخَيْرِ مَا يَزِنُ شَعِيرَةً ثُمَّ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَكَانَ فِي قَلْبِهِ مِنَ الْخَيْرِ مَا يَزِنُ بُرَّةً ثُمَّ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَكَانَ فِي قَلْبِهِ مِنَ الْخَيْرِ مَا يَزِنُ ذَرَّةً ‏"‏ ‏.‏ زَادَ ابْنُ مِنْهَالٍ فِي رِوَايَتِهِ قَالَ يَزِيدُ فَلَقِيتُ شُعْبَةَ فَحَدَّثْتُهُ بِالْحَدِيثِ فَقَالَ شُعْبَةُ حَدَّثَنَا بِهِ قَتَادَةُ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالْحَدِيثِ ‏.‏ إِلاَّ أَنَّ شُعْبَةَ جَعَلَ مَكَانَ الذَّرَّةِ ذُرَةً قَالَ يَزِيدُ صَحَّفَ فِيهَا أَبُو بِسْطَامٍ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জাহান্নাম থেকে এমন ব্যক্তিকে বের করে আনা হবে, যে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলেছে এবং তার অন্তরে যব পরিমাণ কল্যাণ (ঈমান) রয়েছে। অতঃপর এমন ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে যে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলেছে এবং তার অন্তরে এক গম পরিমাণ কল্যাণ (ঈমান) আছে। তারপর এমন ব্যক্তিকে দোযখ থেকে বের করে আনা হবে, যে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলেছে এবং তার অন্তরে এক বিন্দু পরিমাণ ঈমান আছে।
ইবনু মিনহালের বর্ণনায় আছে- “ইয়াযীদ বলেছেন, আমি শু’বার সাথে সাক্ষাত করে হাদীসটি তাঁকে বর্ণনা করি। শু’বাহ বললেন, এ হাদীসটি কাতাদাহ (রহঃ) আমাদেরকে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। তবে শু’বাহ ‘যাররাতি’ এর স্থলে বলেছেন ‘যুরাতুন’ (চানা বুট)। ইয়াযীদ বলেছেন, এটি আবূ বাসতাম অর্থাৎ শু’বার ভ্রান্তি। (ই.ফা. ৩৭৪; ই.সে. ৩৮৫)

৩৬৭

حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الْعَتَكِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، حَدَّثَنَا مَعْبَدُ بْنُ هِلاَلٍ الْعَنَزِيُّ، ح وَحَدَّثَنَاهُ سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، حَدَّثَنَا مَعْبَدُ بْنُ هِلاَلٍ الْعَنَزِيُّ، قَالَ انْطَلَقْنَا إِلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَتَشَفَّعْنَا بِثَابِتٍ فَانْتَهَيْنَا إِلَيْهِ وَهُوَ يُصَلِّي الضُّحَى فَاسْتَأْذَنَ لَنَا ثَابِتٌ فَدَخَلْنَا عَلَيْهِ وَأَجْلَسَ ثَابِتًا مَعَهُ عَلَى سَرِيرِهِ فَقَالَ لَهُ يَا أَبَا حَمْزَةَ إِنَّ إِخْوَانَكَ مِنْ أَهْلِ الْبَصْرَةِ يَسْأَلُونَكَ أَنْ تُحَدِّثَهُمْ حَدِيثَ الشَّفَاعَةِ ‏.‏ قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ مَاجَ النَّاسُ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ لَهُ اشْفَعْ لِذُرِّيَّتِكَ ‏.‏ فَيَقُولُ لَسْتُ لَهَا وَلَكِنْ عَلَيْكُمْ بِإِبْرَاهِيمَ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَإِنَّهُ خَلِيلُ اللَّهِ ‏.‏ فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ فَيَقُولُ لَسْتُ لَهَا وَلَكِنْ عَلَيْكُمْ بِمُوسَى - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَإِنَّهُ كَلِيمُ اللَّهِ ‏.‏ فَيُؤْتَى مُوسَى فَيَقُولُ لَسْتُ لَهَا وَلَكِنْ عَلَيْكُمْ بِعِيسَى - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَإِنَّهُ رُوحُ اللَّهِ وَكَلِمَتُهُ ‏.‏ فَيُؤْتَى عِيسَى فَيَقُولُ لَسْتُ لَهَا وَلَكِنْ عَلَيْكُمْ بِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم فَأُوتَى فَأَقُولُ أَنَا لَهَا ‏.‏ فَأَنْطَلِقُ فَأَسْتَأْذِنُ عَلَى رَبِّي فَيُؤْذَنُ لِي فَأَقُومُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَأَحْمَدُهُ بِمَحَامِدَ لاَ أَقْدِرُ عَلَيْهِ الآنَ يُلْهِمُنِيهِ اللَّهُ ثُمَّ أَخِرُّ لَهُ سَاجِدًا فَيُقَالُ لِي يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وَقُلْ يُسْمَعْ لَكَ وَسَلْ تُعْطَهْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَقُولُ رَبِّ أُمَّتِي أُمَّتِي ‏.‏ فَيُقَالُ انْطَلِقْ فَمَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ بُرَّةٍ أَوْ شَعِيرَةٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجْهُ مِنْهَا ‏.‏ فَأَنْطَلِقُ فَأَفْعَلُ ثُمَّ أَرْجِعُ إِلَى رَبِّي فَأَحْمَدُهُ بِتِلْكَ الْمَحَامِدِ ثُمَّ أَخِرُّ لَهُ سَاجِدًا فَيُقَالُ لِي يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وَقُلْ يُسْمَعْ لَكَ وَسَلْ تُعْطَهْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ ‏.‏ فَأَقُولُ أُمَّتِي أُمَّتِي ‏.‏ فَيُقَالُ لِي انْطَلِقْ فَمَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجْهُ مِنْهَا ‏.‏ فَأَنْطَلِقُ فَأَفْعَلُ ثُمَّ أَعُودُ إِلَى رَبِّي فَأَحْمَدُهُ بِتِلْكَ الْمَحَامِدِ ثُمَّ أَخِرُّ لَهُ سَاجِدًا فَيُقَالُ لِي يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وَقُلْ يُسْمَعْ لَكَ وَسَلْ تُعْطَهْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَقُولُ يَا رَبِّ أُمَّتِي أُمَّتِي ‏.‏ فَيُقَالُ لِي انْطَلِقْ فَمَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ أَدْنَى أَدْنَى أَدْنَى مِنْ مِثْقَالِ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجْهُ مِنَ النَّارِ فَأَنْطَلِقُ فَأَفْعَلُ ‏"‏ ‏.‏ هَذَا حَدِيثُ أَنَسٍ الَّذِي أَنْبَأَنَا بِهِ فَخَرَجْنَا مِنْ عِنْدِهِ فَلَمَّا كُنَّا بِظَهْرِ الْجَبَّانِ قُلْنَا لَوْ مِلْنَا إِلَى الْحَسَنِ فَسَلَّمْنَا عَلَيْهِ وَهُوَ مُسْتَخْفٍ فِي دَارِ أَبِي خَلِيفَةَ - قَالَ - فَدَخَلْنَا عَلَيْهِ فَسَلَّمْنَا عَلَيْهِ فَقُلْنَا يَا أَبَا سَعِيدٍ جِئْنَا مِنْ عِنْدِ أَخِيكَ أَبِي حَمْزَةَ فَلَمْ نَسْمَعْ مِثْلَ حَدِيثٍ حَدَّثَنَاهُ فِي الشَّفَاعَةِ قَالَ هِيهِ ‏.‏ فَحَدَّثْنَاهُ الْحَدِيثَ ‏.‏ فَقَالَ هِيهِ ‏.‏ قُلْنَا مَا زَادَنَا ‏.‏ قَالَ قَدْ حَدَّثَنَا بِهِ مُنْذُ عِشْرِينَ سَنَةً وَهُوَ يَوْمَئِذٍ جَمِيعٌ وَلَقَدْ تَرَكَ شَيْئًا مَا أَدْرِي أَنَسِيَ الشَّيْخُ أَوْ كَرِهَ أَنْ يُحَدِّثَكُمْ فَتَتَّكِلُوا ‏.‏ قُلْنَا لَهُ حَدِّثْنَا ‏.‏ فَضَحِكَ وَقَالَ خُلِقَ الإِنْسَانُ مِنْ عَجَلٍ مَا ذَكَرْتُ لَكُمْ هَذَا إِلاَّ وَأَنَا أُرِيدُ أَنْ أُحَدِّثَكُمُوهُ ‏"‏ ثُمَّ أَرْجِعُ إِلَى رَبِّي فِي الرَّابِعَةِ فَأَحْمَدُهُ بِتِلْكَ الْمَحَامِدِ ثُمَّ أَخِرُّ لَهُ سَاجِدًا فَيُقَالُ لِي يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وَقُلْ يُسْمَعْ لَكَ وَسَلْ تُعْطَ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ ‏.‏ فَأَقُولُ يَا رَبِّ ائْذَنْ لِي فِيمَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ‏.‏ قَالَ لَيْسَ ذَاكَ لَكَ - أَوْ قَالَ لَيْسَ ذَاكَ إِلَيْكَ - وَلَكِنْ وَعِزَّتِي وَكِبْرِيَائِي وَعَظَمَتِي وَجِبْرِيَائِي لأُخْرِجَنَّ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَأَشْهَدُ عَلَى الْحَسَنِ أَنَّهُ حَدَّثَنَا بِهِ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ أُرَاهُ قَالَ قَبْلَ عِشْرِينَ سَنَةً وَهُوَ يَوْمَئِذٍ جَمِيعٌ ‏.‏
মা’বাদ ইবনু হিলাল আল ‘আনাযী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর নিকট (আলোচনার উদ্দেশ্যে) যাত্রা করি এবং সুপারিশকারী হিসেবে সাবিতের সাহায্য নিলাম। (বর্ণনাকারী বলেন,) আমরা যখন আনাসের নিকট গিয়ে পৌছি, তখন তিনি সলাতুয্‌ যুহা (চাশ্‌ত) আদায় করছিলেন। সাবিত (রাঃ) আমাদের জন্য অনুমতি চাইলেন। তারপর আমরা আনাস (রাঃ)-এর মাজলিসে প্রবেশ করলাম। আনাস (রাঃ) সাবিতকে চৌকিতে তাঁর পাশে বসালেন। তারপর সাবিত (রাঃ) আনাস (রাঃ)-কে বললেন, হে আবূ হামযাহ্‌! আপনার এ বাস্‌রার ভাইয়েরা আপনার নিকট থেকে শাফা’আত বিষয়ক হাদীস জানতে চাচ্ছে। তখন আনাস (রাঃ) বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে ইরশাদ করেছেন, কিয়ামাতের দিনে মানুষ বিপর্যস্ত অবস্থায় এদিকে সেদিকে ছুটাছুটি করতে থাকবে। অবশেষে সবাই আদাম (‘আঃ)-এর নিকট এসে বলবে, আপনার সন্তানদের জন্য সুপারিশ করুন। তিনি বলবেন, আমি এর উপযুক্ত নই, বরং তোমরা ইবরাহীমের নিকট যাও। কেননা তিনি আল্লাহর বন্ধু। সবাই ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট আসলে তিনি বলবেন, আমি এর যোগ্য নই, তবে তোমরা মুসার নিকট যাও। কেননা, তিনি আল্লাহর সাথে কথোপকথনকারী। তখন সকলে তাঁর নিকট আসবে। তিনি বলবেন, আমি তো এর উপযুক্ত নই, তবে তোমরা ‘ঈসা (‘আঃ)-এর নিকট যাও। তিনি আল্লাহ প্রদত্ত রূহ্‌ ও তাঁর কালিমাহ্‌। এরপর তারা ‘ঈসা (‘আঃ)-এর নিকট আসবে। তিনি বলবেন, আমি এর যোগ্য নই, তবে তোমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যাও। এরপর তারা আমার নিকট আসবে। আমি বলব, ‘আমিই এর জন্য যোগ্য’ আমি যাচ্ছি। অনন্তর আমি আমার পরওয়ারদিগারের অনুমতি প্রার্থনা করব। আমাকে অনুমতি দেয়া হবে। আমি তাঁর সম্মুখে দাঁড়াব এবং এমন প্রশংসাসূচক বাক্যে তাঁর প্রশংসা করতে থাকব যা এখন আমি তা করতে সক্ষম নই; অবশ্য তখনই আল্লাহ্‌ আমাকে তা শিখিয়ে দিবেন। এরপর আমি সাজদায় লুটিয়ে পড়ব। আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠান। বলুন, আপনার কথা শুনা হবে; প্রার্থনা করুন, কবূল করা হবে; শাফা’আত করুন, আপনার শাফা’আত গ্রহণ করা হবে। তখন আমি বলব, হে পরওয়ারদিগার, উম্মাতী, উম্মাতী, (“আমার উম্মাত, আমার উম্মাত”)। এরপর (আমাকে) বলা হবে, চলুন, যার অন্তরে গম বা যব পরিমাণও ঈমান অবশিষ্ট পাবেন তাকে জাহান্নাম থেকে উদ্ধার করে আনুন। আমি যাব (এবং তদনুসারে উদ্ধার করব)। পুনরায় আমার পরওয়ারদিগারের দরবারে ফিরে যাব এবং পুর্বানুরূপ প্রশংসাসূচক বাক্যে তাঁর প্রশংসা করব। এরপর আমি সাজদায় লুটিয়ে পড়ব। আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা তুলুন, বলুন, আপনার কথা শুনা হবে; প্রার্থনা করুন, কবূল করা হবে; সুপারিশ করুন, আপনার সুপারিশ গৃহীত হবে। তখন আমি বলব, হে পরওয়ারদিগার! উম্মাতী, উম্মাতী, (“আমার উম্মাত, আমার উম্মাত”)। বলা হবেঃ যান, যে ব্যক্তির অন্তরে একটি সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান অবশিষ্ট থাকবে তাকেও জাহান্নাম থেকে মুক্ত করুন। এরপর আমি যাব এবং তাদের উদ্ধার করে আনবো। পুনরায় আমি পরওয়ারদিগারের দরবারে ফিরে যাব এবং পুর্বানুরূপ প্রশংসাসূচক বাক্যে তাঁর প্রশংসা করব। এরপর আমি সাজদায় লুটিয়ে পড়ব। আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা তুলুন, বলুন, আপনার কথা শুনা হবে; প্রার্থনা করুন, কবূল করা হবে; শাফা’আত করুন, শাফা’আত গৃহীত হবে। আমি বলবঃ হে পরওয়ারদিগার! উম্মাতী, উম্মাতী, (“আমার উম্মাত, আমার উম্মাত”)। আমাকে বলা হবে, যান, যে ব্যক্তির অন্তরে সরিষার দানার চেয়েও আরো কম পরিমাণ ঈমান পাবেন তাকেও জাহান্নাম থেকে মুক্ত করুন। এরপর আমি যাব এবং তাদের উদ্ধার করে আনব।
বর্ণনাকারী বলেন, আনাস (রাঃ) এ পর্যন্ত আমাদেরকে বলেছেন। এরপর আমরা সেখান থেকে বের হয়ে পথ চলতে শুরু করলাম। এভাবে আমরা যখন “জাব্বান” এলাকায় পৌঁছলাম, তখন নিজেরা বললাম, আমরা যদি হাসান বাস্‌রীর সাথে সাক্ষাৎ করতাম এবং তাঁকে সালাম পেশ করতাম তবে কতই না ভাল হত। সে সময় তিনি আবূ খলীফার ঘরে (হাজ্জাজ বিন ইউসুফের ভয়ে) আত্মগোপন করেছিলেন। আমরা তাঁর বাড়িতে গেলাম এবং তাঁকে সালাম পেশ করলাম। আমরা তাঁকে বললাম, আবূ সা’ঈদ! আমরা আপনার ভাই আবূ হামযার দরবার থেকে আসছি। আজ তিনি আমাদেরকে শাফা’আত সম্পর্কে এমন একটি হাদীস শুনিয়েছেন, যা আর কখনো শুনিনি। তিনি বললেন, আচ্ছা শোনাও তো? তখন আমরা তাঁকে হাদীসটি শুনালাম। তারপর তিনি বললেন, আরও বলো। আমরা বললাম, এর চেয়ে বেশি কিছু তো আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেননি। তখন তিনি বললেন, অথচ আনাস (রাঃ) আমাদের নিকট আজ থেকে বিশ বছর পূর্বে যখন তিনি সুস্থ সবল ছিলেন তখন এ হাদীসটি শুনিয়েছেন। কিন্তু আজ তিনি তোমাদের নিকট কিছু ছেড়ে দিয়েছেন। জানি না, তিনি তা ভুলে গেছেন, না তোমরা এর উপর ভরসা করে ‘আমালের ব্যাপারে শিথিলতা প্রদর্শন করবে আশংকায় তিনি তা বর্ণনা করাটা পছন্দ করেননি। আমরা বললাম, আমাদের তা বর্ণনা করুন। তিনি ঈষৎ হেসে উত্তর করলেন “মানুষকে তাড়াহুড়া করার প্রকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে”-(সূরাহ আল ‘আম্বিয়াহ ২১ : ৩৭)। তোমাদেরকে তা বর্ণনা করব বলেই তো এর উল্লেখ করলাম। তারপর তিনি হাদীসটির অবশিষ্ট অংশ এরূপ বর্ণনা করেছেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এরপর আমি পুনরায় আমার পরওয়ারদিগারের কাছে ফিরে আসব এবং চতুর্থবারও উক্তরূপ প্রশংসাসূচক বাক্যে তাঁর প্রশংসা করব। এরপর আমি সাজদায় লুটিয়ে পড়ব। আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! আপনার মাথা তুলুন, আপনি বলুন, আপনার কথা শুনা হবে; প্রার্থনা করুন তা কবূল করা হবে; সুপারিশ করুন, আপনার সুপারিশ গৃহীত হবে। আমি বলব, হে পরওয়ারদিগার! আমাকে সেসব মানুষের জন্য অনুমতি দিন যারা “আল্লাহ্‌ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই” এ কথা স্বীকার করে। আল্লাহ্‌ বলবেন, না; এটা আপনার দায়িত্বে নয়। বরং আমার ইয্‌যত, প্রতিপত্তি, মহত্ত্ব ও পরাক্রমশীলতার কসম! আমি নিজেই অবশ্য ওদের জাহান্নাম হতে মুক্তি দিব-যারা এ কথার স্বীকৃতি দিয়েছে যে, “আল্লাহ্‌ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই”।
হাদীসটি শেষ করে বর্ণনাকারী বলেন, আমি এ কথার সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হাসান আমাদেরকে হাদীসটি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেন বলে বর্ণনা করেছেন। অবশ্য আমার বিশ্বাস তিনি এ কথা বলেছেন যে, বিশ বছর পূর্বে যখন তিনি পূর্ণ সুস্থ সবল ছিলেন। (ই.ফা. ৩৭৫; ই.সে. ৩৮৬)

৩৬৮

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، - وَاتَّفَقَا فِي سِيَاقِ الْحَدِيثِ إِلاَّ مَا يَزِيدُ أَحَدُهُمَا مِنَ الْحَرْفِ بَعْدَ الْحَرْفِ - قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ حَدَّثَنَا أَبُو حَيَّانَ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا بِلَحْمٍ فَرُفِعَ إِلَيْهِ الذِّرَاعُ وَكَانَتْ تُعْجِبُهُ فَنَهَسَ مِنْهَا نَهْسَةً فَقَالَ ‏ "‏ أَنَا سَيِّدُ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَهَلْ تَدْرُونَ بِمَ ذَاكَ يَجْمَعُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ فَيُسْمِعُهُمُ الدَّاعِي وَيَنْفُذُهُمُ الْبَصَرُ وَتَدْنُو الشَّمْسُ فَيَبْلُغُ النَّاسَ مِنَ الْغَمِّ وَالْكَرْبِ مَا لاَ يُطِيقُونَ وَمَا لاَ يَحْتَمِلُونَ فَيَقُولُ بَعْضُ النَّاسِ لِبَعْضٍ أَلاَ تَرَوْنَ مَا أَنْتُمْ فِيهِ أَلاَ تَرَوْنَ مَا قَدْ بَلَغَكُمْ أَلاَ تَنْظُرُونَ مَنْ يَشْفَعُ لَكُمْ إِلَى رَبِّكُمْ فَيَقُولُ بَعْضُ النَّاسِ لِبَعْضٍ ائْتُوا آدَمَ ‏.‏ فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ يَا آدَمُ أَنْتَ أَبُو الْبَشَرِ خَلَقَكَ اللَّهُ بِيَدِهِ وَنَفَخَ فِيكَ مِنْ رُوحِهِ وَأَمَرَ الْمَلاَئِكَةَ فَسَجَدُوا لَكَ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيهِ أَلاَ تَرَى إِلَى مَا قَدْ بَلَغَنَا فَيَقُولُ آدَمُ إِنَّ رَبِّي غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَإِنَّهُ نَهَانِي عَنِ الشَّجَرَةِ فَعَصَيْتُهُ نَفْسِي نَفْسِي اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى نُوحٍ ‏.‏ فَيَأْتُونَ نُوحًا فَيَقُولُونَ يَا نُوحُ أَنْتَ أَوَّلُ الرُّسُلِ إِلَى الأَرْضِ وَسَمَّاكَ اللَّهُ عَبْدًا شَكُورًا اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى مَا نَحْنُ فِيهِ أَلاَ تَرَى مَا قَدْ بَلَغَنَا فَيَقُولُ لَهُمْ إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَإِنَّهُ قَدْ كَانَتْ لِي دَعْوَةٌ دَعَوْتُ بِهَا عَلَى قَوْمِي نَفْسِي نَفْسِي اذْهَبُوا إِلَى إِبْرَاهِيمَ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ فَيَقُولُونَ أَنْتَ نَبِيُّ اللَّهِ وَخَلِيلُهُ مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيهِ أَلاَ تَرَى إِلَى مَا قَدْ بَلَغَنَا فَيَقُولُ لَهُمْ إِبْرَاهِيمُ إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلاَ يَغْضَبُ بَعْدَهُ مِثْلَهُ ‏.‏ وَذَكَرَ كَذَبَاتِهِ نَفْسِي نَفْسِي اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى مُوسَى ‏.‏ فَيَأْتُونَ مُوسَى صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُونَ يَا مُوسَى أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ فَضَّلَكَ اللَّهُ بِرِسَالاَتِهِ وَبِتَكْلِيمِهِ عَلَى النَّاسِ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيهِ أَلاَ تَرَى مَا قَدْ بَلَغَنَا فَيَقُولُ لَهُمْ مُوسَى صلى الله عليه وسلم إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَإِنِّي قَتَلْتُ نَفْسًا لَمْ أُومَرْ بِقَتْلِهَا نَفْسِي نَفْسِي اذْهَبُوا إِلَى عِيسَى صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَيَأْتُونَ عِيسَى فَيَقُولُونَ يَا عِيسَى أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ وَكَلَّمْتَ النَّاسَ فِي الْمَهْدِ وَكَلِمَةٌ مِنْهُ أَلْقَاهَا إِلَى مَرْيَمَ وَرُوحٌ مِنْهُ فَاشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى مَا نَحْنُ فِيهِ أَلاَ تَرَى مَا قَدْ بَلَغَنَا فَيَقُولُ لَهُمْ عِيسَى صلى الله عليه وسلم إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ - وَلَمْ يَذْكُرْ لَهُ ذَنْبًا - نَفْسِي نَفْسِي اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم فَيَأْتُونِّي فَيَقُولُونَ يَا مُحَمَّدُ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ وَخَاتَمُ الأَنْبِيَاءِ وَغَفَرَ اللَّهُ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى مَا نَحْنُ فِيهِ أَلاَ تَرَى مَا قَدْ بَلَغَنَا فَأَنْطَلِقُ فَآتِي تَحْتَ الْعَرْشِ فَأَقَعُ سَاجِدًا لِرَبِّي ثُمَّ يَفْتَحُ اللَّهُ عَلَىَّ وَيُلْهِمُنِي مِنْ مَحَامِدِهِ وَحُسْنِ الثَّنَاءِ عَلَيْهِ شَيْئًا لَمْ يَفْتَحْهُ لأَحَدٍ قَبْلِي ثُمَّ يُقَالُ يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ سَلْ تُعْطَهْ اشْفَعْ تُشَفَّعْ ‏.‏ فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأَقُولُ يَا رَبِّ أُمَّتِي أُمَّتِي ‏.‏ فَيُقَالُ يَا مُحَمَّدُ أَدْخِلِ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِكَ مَنْ لاَ حِسَابَ عَلَيْهِ مِنَ الْبَابِ الأَيْمَنِ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ وَهُمْ شُرَكَاءُ النَّاسِ فِيمَا سِوَى ذَلِكَ مِنَ الأَبْوَابِ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ إِنَّ مَا بَيْنَ الْمِصْرَاعَيْنِ مِنْ مَصَارِيعِ الْجَنَّةِ لَكَمَا بَيْنَ مَكَّةَ وَهَجَرٍ أَوْ كَمَا بَيْنَ مَكَّةَ وَبُصْرَى ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কিছু গোশ্‌ত আনা হলো। তাঁর নিকট রানের গোশ্‌ত পেশ করা হলো যা তাঁর নিকট খুবই পছন্দনীয় ছিল। এরপর তিনি তা থেকে এক কামড় গ্রহণ করলেন। তারপর বললেন, কিয়ামাত দিবসে আমিই হবো সকল মানুষের সর্দার। তা কীভাবে তোমরা কি জানো? কিয়ামাত দিবসে যখন আল্লাহ্‌ তা’আলা শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত সকল মানুষকে একই মাঠে এমনভাবে জমায়েত করবেন যে, একজনের আহ্বান সকলে শুনতে পাবে, একজনের দৃষ্টি সকলকে দেখতে পাবে। সূর্য নিকটবর্তী হবে। মানুষ অসহনীয় ও চরম দুঃখ-কষ্ট ও পেরেশানীতে নিপতিত হবে। নিজেরা পরস্পর বলাবলি করবে কী দুর্দশায় তোমরা আছ, দেখছ না? কী অবস্থায় তোমরা পৌঁছেছো তা উপলব্ধি করছ না? এমন কাউকে দেখছ না যিনি তোমাদের পরওয়ারদিগারের নিকট তোমাদের জন্য সুপারিশ করবেন? তারপর একজন আরেকজনকে বলবে, তোমরা আদামের কাছে যাও। সুতরাং তারা আদামের কাছে আসবে এবং বলবে, হে আদাম! আপনি মানবকুলের পিতা, আল্লাহ্‌ স্বহস্তে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনার দেহে রূহ ফুঁকে দিয়েছেন। আপনাকে সাজদাহ্‌ করার জন্য ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন; তাঁরা আপনাকে সাজদাহ্‌ করেছেন। আপনি আমাদের জন্য আপনার প্রতিপালকের নিকট শাফা’আত করুন। আপনি দেখছেন না, আমরা যে কি কষ্টে আছি? আপনি দেখছেন না আমরা কষ্টের কোন্‌ সীমায় পৌঁছেছি? আদাম (‘আঃ) উত্তরে বলবেন, আজ আমার পরওয়ারদিগার এতবেশী রাগ করেছেন, যা পূর্বে কখনো করেননি, আর পরেও কখনো এরূপ রাগ করবেন না। তিনি আমাকে একটি বৃক্ষের (ফল খেতে) নিষেধ করেছিলেন আর আমি সে নিষেধ লঙ্ঘন করে ফেলেছি, ‘নাফসী, নাফসী’-(আজ আমার চিন্তায় আমি পেরেশান)। তোমরা অন্য কারোর নিকট গিয়ে চেষ্টা করো, তোমরা নূহের নিকট যাও। তখন তারা নূহ (‘আঃ)-এর নিকট আসবে, বলবে, হে নূহ! আপনি পৃথিবীর প্রথম রসূল। আল্লাহ্‌ আপনাকে “চির কৃতজ্ঞ বান্দা” বলে উপাধি দিয়েছেন। আপনার পরওয়ারদিগারের নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। দেখছেন না, আমরা কোন্‌ অবস্থায় আছি? আমাদের অবস্থা কোন পর্যায়ে পৌছেছে? নূহ (‘আঃ) বলবেন, আজ আমার পরওয়ারদিগার এত রাগ করেছেন যে, এমন রাগ পূর্বেও কখনো করেননি আর পরেও কখনো করবেন না। আমাকে তিনি একটি দু’আ কবূলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আর তা আমি আমার জাতির বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে ফেলেছি। ‘নাফসী, নাফসী’-(আজ আমার চিন্তায় আমি পেরেশান)। তোমরা ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট যাও। তখন তারা ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট আসবে। বলবে, হে ইবরাহীম! আপনি আল্লাহর নাবী, পৃথিবীবাসীদের মধ্য থেকে আপনি আল্লাহর খলীল ও অন্তরঙ্গ বন্ধু। আপনি আপনার পরওয়ারদিগারের নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। দেখছেন না, আমরা কোন্‌ অবস্থায় আছি এবং আমাদের অবস্থা কোন্‌ পর্যায়ে পৌঁছেছে? ইবরাহীম (‘আঃ) তাদেরকে বলবেন, আল্লাহ্‌ আজ এতই রাগ করে আছেন যে, পূর্বে এমন কখনো করেননি আর পরেও কখনো করবেন না। তিনি তাঁর কিছু অসত্য (বাহ্যত) কথনের বিষয় উল্লেখ করবেন। বলবেন, ‘নাফসী, নাফসী’-(আজ আমার চিন্তায় আমি পেরেশান)। তোমরা অন্য কারো নিকট যাও। মূসার নিকট যাও। তারা মূসা (‘আঃ)-এর নিকট আসবে, বলবে, হে মূসা! আপনি আল্লাহর রসূল, আপনাকে তিনি তাঁর রিসালাত ও কালাম দিয়ে মানুষের উপর মর্যাদা দিয়েছেন। আপনার পরওয়ারদিগার নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। দেখছেন না, আমরা কোন্‌ অবস্থায় আছি এবং আমাদের অবস্থা কোন্‌ পর্যায়ে পৌছেছে? মূসা (‘আঃ) তাদের বলবেন : আজ আল্লাহ্‌ এতই রাগ করে আছেন যে, পূর্বে এমন রাগ কখনো করেননি, আর এমন রাগ পরেও কখনো করবেন না। আমি তাঁর হুকুমের পূর্বেই এক ব্যক্তিকে হত্যা করে ফেলেছিলাম। ‘নাফসী, নাফসী’-(আজ আমার চিন্তায় আমি পেরেশান)। তোমরা ‘ঈসা (‘আঃ)-এর নিকট যাও। তারা ‘ঈসা (‘আঃ)-এর নিকট আসবে এবং বলবে, হে ‘ঈসা! আপনি আল্লাহর রসূল, দোলনায় অবস্থানকালেই আপনি মানুষের সাথে বাক্যালাপ করেছেন, আপনি আল্লাহর দেয়া বাণী, যা তিনি মারইয়ামের মধ্যে নিক্ষেপ করে দিয়েছিলেন, আপনি তাঁর দেয়া আত্মা। সুতরাং আপনার পরওয়ারদিগারের নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। দেখছেন না, আমরা কোন অবস্থায় আছি এবং আমাদের অবস্থা কোন্‌ পর্যায়ে পৌঁছেছে? ‘ঈসা (‘আঃ) তাদের বলবেন, আজ আল্লাহ তা’আলা এতই রাগ করে আছেন যে, এরূপ রাগ না পূর্বে কখনো করেছেন আর না পরে কখনো করবেন, তিনি কোন অপরাধের কথা উল্লেখ করবেন না। তিনি বলবেন, ‘নাফসী, নাফসী’-(আজ আমার চিন্তায় আমি পেরেশান)। তোমরা অন্য কারো নিকট যাও। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যাও। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তখন তারা আমার নিকট আসবে এবং বলবে, হে মুহাম্মাদ! আপনি আল্লাহর রসূল, শেষ নাবী, আল্লাহ্‌ আপনার পূর্বাপর সকল ত্রুটি ক্ষমা করে দিয়েছেন। আপনি আপনার পরওয়ারদিগারের নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। দেখছেন না, আমরা কোন অবস্থায় আছি এবং আমাদের অবস্থা কোন্‌ পর্যায়ে পৌঁছেছে? তখন আমি সুপারিশের জন্য যাব এবং ‘আরশের নীচে এসে পরওয়ারদিগারের উদ্দেশ্যে সাজদাহ্‌বনত হব। আল্লাহ্‌ আমার অন্তরকে খুলে দিবেন এবং সর্বোত্তম প্রশংসা ও হাম্‌দ জ্ঞাপনের শিক্ষা গ্রহণ করবেন, যা ইতোপূর্বে আর কাউকে খুলে দেননি। এরপর আল্লাহ্‌ বলবেন, হে মুহাম্মাদ! মাথা উত্তোলন করুন, প্রার্থনা করুন, আপনার প্রার্থনা কবূল করা হবে। সুপারিশ করুন, আপনার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। অনন্তর আমি মাথা তুলব। বলব, হে পরওয়ারদিগার! উম্মাতী, উম্মাতী’ (আমার উম্মাত, আমার উম্মাত’) (এদেরকে মুক্তি দান করুন) তারপর বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! আপনার উম্মাতের যাদের উপর কোন হিসাব নেই তাদেরকে জান্নাতের দরজার ডান দিক দিয়ে প্রবেশ করিয়ে দিন। তারা এছাড়াও অন্য দরজায় মানুষের সঙ্গে শারীক হবে। কসম ঐ সত্ত্বার যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, নিশ্চয় জান্নাতের দু’ চৌকাঠের মধ্যকার দূরত্ব মক্কা ও হাজ্‌রের (বাহরাইনের একটি জনপদের) দূরত্বের মতো। অথবা বর্ণনাকারী বলেন, মক্কা ও বাস্‌রার দূরত্বের ন্যায়। (ই.ফা. ৩৭৬; ই.সে. ৩৮৭)

৩৬৯

وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ وُضِعَتْ بَيْنَ يَدَىْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَصْعَةٌ مِنْ ثَرِيدٍ وَلَحْمٍ فَتَنَاوَلَ الذِّرَاعَ وَكَانَتْ أَحَبَّ الشَّاةِ إِلَيْهِ فَنَهَسَ نَهْسَةً فَقَالَ ‏"‏ أَنَا سَيِّدُ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ نَهَسَ أُخْرَى فَقَالَ ‏"‏ أَنَا سَيِّدُ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمَّا رَأَى أَصْحَابَهُ لاَ يَسْأَلُونَهُ قَالَ ‏"‏ أَلاَ تَقُولُونَ كَيْفَهْ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا كَيْفَهْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ ‏"‏ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ أَبِي حَيَّانَ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ وَزَادَ فِي قِصَّةِ إِبْرَاهِيمَ فَقَالَ وَذَكَرَ قَوْلَهُ فِي الْكَوْكَبِ هَذَا رَبِّي ‏.‏ وَقَوْلَهُ لآلِهَتِهِمْ بَلْ فَعَلَهُ كَبِيرُهُمْ هَذَا ‏.‏ وَقَوْلَهُ إِنِّي سَقِيمٌ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ إِنَّ مَا بَيْنَ الْمِصْرَاعَيْنِ مِنْ مَصَارِيعِ الْجَنَّةِ إِلَى عِضَادَتَىِ الْبَابِ لَكَمَا بَيْنَ مَكَّةَ وَهَجَرٍ أَوْ هَجَرٍ وَمَكَّةَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ لاَ أَدْرِي أَىَّ ذَلِكَ قَالَ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (একদা) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মুখে রুটি ও গোশ্‌তের পাত্র রাখা হলো। তিনি রানের গোশ্‌ত তুলে নিলেন। বস্তুতঃ তিনি বকরীর গোশ্‌তের মধ্যে এ রানের গোশ্‌তই অধিক পছন্দ করতেন। অতঃপর তিনি দাঁত দিয়ে তা একবার কেটে খেলেন। অতঃপর তিনি দাঁত দ্বারা আরো একবার গোশ্‌ত কেটে খেলেন। তারপর বললেন, আমি কিয়ামাতের দিবসে মানুষের সরদার হবো। তিনি যখন তাঁর সহাবাদেরকে দেখলেন, এ ব্যাপারে তাদের কেউই তাঁকে কিছুই জিজ্ঞেস করছে না, তখন তিনি বললেন, আমি কীভাবে সেদিন সকলের নেতা হবো-এ কথা তোমরা আমাকে কেন জিজ্ঞেস করছ না? এবার জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল তা কীভাবে? তিনি বললেন, যেদিন সমস্ত মানুষ বিশ্ব প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে দণ্ডায়মান হবে। অতঃপর হাদীসের অবশিষ্টাংশ উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। অবশ্য ইবরাহীম (‘আঃ)-এর সালামের ঘটনা প্রসঙ্গে এ বর্ণনায় আরো আছে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ইবরাহীম (‘আঃ) নক্ষত্র সম্বন্ধে বলেছিলেন ‘এটাই আমার রব’ তাদের প্রতিমাগুলো ভাঙ্গার ব্যাপারে বলেছিলেন : এ সর্বনাশা কাজ তাদের বড়টাই করেছে এবং (তাদের দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন) ‘আমি অসুস্থ’। তখন তিনি এসব কথা স্মরণ করবেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! জান্নাতের দরজাসমূহের দু’ চৌকাঠের মাঝখানের দূরত্ব ‘মাক্কাহ ও হাজার অথবা হাজার ও মাক্কার মাঝখানের দূরত্বের সমান।
বর্ণনাকারী বলেন, আমার জানা নেই, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোনটি আগে বলেছিলেন। (ই.ফা. ৩৭৭; ই.সে. ৩৮৮)

৩৭০

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَرِيفِ بْنِ خَلِيفَةَ الْبَجَلِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مَالِكٍ الأَشْجَعِيُّ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَأَبُو مَالِكٍ عَنْ رِبْعِيٍّ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالاَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ يَجْمَعُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى النَّاسَ فَيَقُومُ الْمُؤْمِنُونَ حَتَّى تُزْلَفَ لَهُمُ الْجَنَّةُ فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ يَا أَبَانَا اسْتَفْتِحْ لَنَا الْجَنَّةَ ‏.‏ فَيَقُولُ وَهَلْ أَخْرَجَكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ إِلاَّ خَطِيئَةُ أَبِيكُمْ آدَمَ لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ اذْهَبُوا إِلَى ابْنِي إِبْرَاهِيمَ خَلِيلِ اللَّهِ - قَالَ - فَيَقُولُ إِبْرَاهِيمُ لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ إِنَّمَا كُنْتُ خَلِيلاً مِنْ وَرَاءَ وَرَاءَ اعْمِدُوا إِلَى مُوسَى صلى الله عليه وسلم الَّذِي كَلَّمَهُ اللَّهُ تَكْلِيمًا ‏.‏ فَيَأْتُونَ مُوسَى صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ اذْهَبُوا إِلَى عِيسَى كَلِمَةِ اللَّهِ وَرُوحِهِ ‏.‏ فَيَقُولُ عِيسَى صلى الله عليه وسلم لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ ‏.‏ فَيَأْتُونَ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَيَقُومُ فَيُؤْذَنُ لَهُ وَتُرْسَلُ الأَمَانَةُ وَالرَّحِمُ فَتَقُومَانِ جَنَبَتَىِ الصِّرَاطِ يَمِينًا وَشِمَالاً فَيَمُرُّ أَوَّلُكُمْ كَالْبَرْقِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي أَىُّ شَىْءٍ كَمَرِّ الْبَرْقِ قَالَ ‏"‏ أَلَمْ تَرَوْا إِلَى الْبَرْقِ كَيْفَ يَمُرُّ وَيَرْجِعُ فِي طَرْفَةِ يْنٍ ثُمَّ كَمَرِّ الرِّيحِ ثُمَّ كَمَرِّ الطَّيْرِ وَشَدِّ الرِّجَالِ تَجْرِي بِهِمْ أَعْمَالُهُمْ وَنَبِيُّكُمْ قَائِمٌ عَلَى الصِّرَاطِ يَقُولُ رَبِّ سَلِّمْ سَلِّمْ حَتَّى تَعْجِزَ أَعْمَالُ الْعِبَادِ حَتَّى يَجِيءَ الرَّجُلُ فَلاَ يَسْتَطِيعُ السَّيْرَ إِلاَّ زَحْفًا - قَالَ - وَفِي حَافَتَىِ الصِّرَاطِ كَلاَلِيبُ مُعَلَّقَةٌ مَأْمُورَةٌ بِأَخْذِ مَنْ أُمِرَتْ بِهِ فَمَخْدُوشٌ نَاجٍ وَمَكْدُوسٌ فِي النَّارِ ‏"‏ ‏.‏ وَالَّذِي نَفْسُ أَبِي هُرَيْرَةَ بِيَدِهِ إِنَّ قَعْرَ جَهَنَّمَ لَسَبْعُونَ خَرِيفًا ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা সকল মানুষকে একত্রিত করবেন। মু’মিনগণ দাঁড়িয়ে থাকবে। জান্নাত তাদের নিকটবর্তী করা হবে। অবশেষে সবাই আদামের নিকট এসে বলবে, আমাদের জন্য জান্নাত খুলে দেয়ার প্রার্থনা করুন। আদাম (‘আঃ) বলবেন, তোমাদের পিতা আদামের পদস্খলনের কারণেই তো তোমাদেরকে জান্নাত হতে বের করে দেয়া হয়েছিল। সুতরাং আমি এর যোগ্য নই। আমার পুত্র ইবরাহীমের নিকট যাও। তিনি আল্লাহর বন্ধু। [এরপর সবাই ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট এলে] তিনি বলবেন, না, আমিও এর যোগ্য নই, আমি আল্লাহর বন্ধু ছিলাম বটে, তবে তা ছিল দূরে দূরে থেকে। তোমরা মূসার নিকট যাও। কারণ তিনি আল্লাহর সাথে সরাসরি বাক্যালাপ করেছেন। সবাই মূসার নিকট আসবে। তিনি বলবেনঃ আমিও এর যোগ্য নই বরং তোমরা ‘ঈসার নিকট যাও। তিনি আল্লাহর কালিমাহ্‌ ও রূহ্‌। (সবাই তাঁর নিকট আসলে) তিনি বলবেন : আমি তার উপযুক্ত নই। তখন সকলে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসবে। তিনি দু’আর নিমিত্ত দাঁড়াবেন এবং তাঁকে অনুমতি প্রদান করা হবে। আমানাত ও আত্মীয়তার সম্পর্ক, পুল-সিরাতের ডানে-বামে এসে দাঁড়াবে। আর তোমাদের প্রথম দলটি এ সিরাতে, বিদ্যুৎ গতিতে পার হয়ে যাবে। সহাবা বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা উৎসর্গ হোক। আমাকে বলে দিন “বিদ্যুৎ গতির ন্যায়” কথাটির অর্থ কী? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আকাশের বিদ্যুৎ চমক কি কখনো দেখনি? চোখের পলকে এখান থেকে সেখানে চলে যায় আবার ফিরে আসে। তারপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এর পরবর্তী দলগুলো যথাক্রমে বায়ুর বেগে, পাখির গতিতে, তারপর লম্বা দৌড়ের গতিতে পার হয়ে যাবে। প্রত্যেকেই তার ‘আমাল হিসেবে তা অতিক্রম করবে। আর তোমাদের নবী সে অবস্থায় পুলসিরাতের উপর দাঁড়িয়ে এ দু’আ করতে থাকবে, আল্লাহ্‌ এদেরেকে নিরাপদে পৌঁছিয়ে দিন, এদেরেকে নিরাপদে পৌঁছিয়ে দিন। এরূপে মানুষের ‘আমাল মানুষকে চলতে অক্ষম করে দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত তারা এ সিরাত অতিক্রম করতে থাকবে। শেষে এক ব্যক্তিকে দেখা যাবে সে নিতম্বের উপর ভর করে পথ অতিক্রম করছে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো ইরশাদ করেন, সিরাতের উভয় পাশে ঝুলানো থাকবে কাঁটাযুক্ত লৌহ শলাকা। এরা আল্লাহর নির্দেশক্রমে চিহ্নিত পাপীদের পাকড়াও করবে। তন্মধ্যে কাউকে তো ক্ষত-বিক্ষত করেই ছেড়ে দিবে; অতঃপর সে নাজাত পাবে। আর কতক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে জাহান্নামের গর্ভে নিক্ষিপ্ত হবে।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, শপথ সে সত্তার যাঁর হাতে আবূ হুরায়রার প্রাণ! জেনে রেখ, জাহান্নামের গভীরতা সত্তর খারীফ (অর্থাৎ-সত্তর হাজার বছরের পথের ন্যায়।) (ই.ফা. ৩৭৮; ই.সে. ৩৮৯)

৮৫. অধ্যায়ঃ

মহানাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ জান্নাতে প্রবেশের জন্য শাফা’আত করবে সকল মানুষের মধ্যে আমিই প্রথম এবং নাবীগণের মধ্যে আমার অনুসারী সর্বাধিক হবে

৩৭১

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَنَا أَوَّلُ النَّاسِ يَشْفَعُ فِي الْجَنَّةِ وَأَنَا أَكْثَرُ الأَنْبِيَاءِ تَبَعًا ‏"‏ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, আমি প্রথম ব্যক্তি যে লোকদের জান্নাতে প্রবেশ সম্পর্কে আল্লাহর নিকট শাফা’আত করব। আমার অনুসারীর সংখ্যা সমস্ত নাবীগণের অনুসারীদের চেয়ে বেশী। (ই.ফা. ৩৭৯; ই.সে. ৩৯০)

৩৭২

وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَنَا أَكْثَرُ الأَنْبِيَاءِ تَبَعًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ يَقْرَعُ بَابَ الْجَنَّةِ ‏"‏ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামাত দিবসে আমার অনুসারীর সংখ্যা হবে সমস্ত নাবীগণের চেয়ে সর্বাধিক এবং আমিই সবার আগে জান্নাতের কড়া নাড়বো। (ই.ফা. ৩৮০; ই.সে. ৩৯১)

৩৭৩

وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، قَالَ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَنَا أَوَّلُ شَفِيعٍ فِي الْجَنَّةِ لَمْ يُصَدَّقْ نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ مَا صُدِّقْتُ وَإِنَّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ نَبِيًّا مَا يُصَدِّقُهُ مِنْ أُمَّتِهِ إِلاَّ رَجُلٌ وَاحِدٌ ‏"‏ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, জান্নাতে লোকদের প্রবেশ সম্পর্কে আমিই হবো সর্বপ্রথম সুপারিশকারী এবং এত অধিক সংখ্যক মানুষ আমার প্রতি ঈমান এনেছে যা অন্য কোন নাবীর বেলায় হবে না। নাবীদের কেউ কেউ তো এমতাবস্থায়ও আসবেন যাঁর প্রতি মাত্র এক ব্যক্তিই ঈমান এনেছে। (ই.ফা. ৩৮১; ই.সে. ৩৯২)

৩৭৪

وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ آتِي بَابَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَأَسْتَفْتِحُ فَيَقُولُ الْخَازِنُ مَنْ أَنْتَ فَأَقُولُ مُحَمَّدٌ ‏.‏ فَيَقُولُ بِكَ أُمِرْتُ لاَ أَفْتَحُ لأَحَدٍ قَبْلَكَ ‏"‏ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, কিয়ামাত দিবসে আমি জান্নাতের তোরণে এসে দরজা খোলার অনুমতি চাইবো। তখন দ্বাররক্ষী বলবেন, আপনি কে? আমি উত্তর করবো, মুহাম্মাদ। দ্বাররক্ষী বলবেন, “আপনার জন্যই আমি আদিষ্ট হয়েছি, আপনার পূর্বে অন্য কারোর জন্য দরজা খুলিনি।” (ই.ফা. ৩৮২; ই.সে. ৩৯৩)

৮৬. অধ্যায়ঃ

মহানাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উম্মাহ্‌র শাফা’আতের জন্য তাঁর বিশেষ দু’আ গোপন (সংরক্ষণ) রেখেছেন

৩৭৫

وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَمِّهِ، أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ وَأَرَدْتُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ أَنْ أَخْتَبِئَ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, প্রত্যেক নাবীর জন্যই বিশেষ একটি দু’আ নির্ধারিত আছে যা তিনি করবেন (যা তাঁদের উম্মাতের জন্য গ্রহণ করা হবে। কিন্তু তাঁর সে দু’আ দুনিয়াতেই করে ফেলেছেন।) আমি আমার বিশেষ দু’আটি কিয়ামাত দিবসে আমার উম্মাতের শাফা’আতের জন্য গোপনে (সংরক্ষিত) রাখার সংকল্প নিয়েছি। (ই.ফা. ৩৮৩; ই.সে. ৩৯৪)

৩৭৬

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ، - وَهُوَ ابْنُ الْقَعْقَاعِ - عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ يَدْعُو بِهَا فَيُسْتَجَابُ لَهُ فَيُؤْتَاهَا وَإِنِّي اخْتَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেনঃ প্রত্যেক নাবীর জন্য একটি বিশেষ দু’আ আছে। (কিন্তু তাঁরা সে দু’আর প্রয়োগ দুনিয়াতেই করে ফেলেছেন।) আমার বিশেষ দু’আটি কিয়ামাত দিবসে আমার উম্মাতের শাফা’আতের জন্য গোপনে সংরক্ষিত রাখব বলে ইচ্ছা করেছি ইনশা-আল্ল-হ। (ই.ফা. ৩৮৪; ই.সে. ৩৯৫)

৩৭৭

حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَمِّهِ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ أَبِي سُفْيَانَ بْنِ أَسِيدِ بْنِ جَارِيَةَ الثَّقَفِيُّ، مِثْلَ ذَلِكَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏
‘আম্‌র ইবনু আবূ সূফ্‌ইয়ান ইবনু আসীদ ইবনু জারিয়াহ আস্‌ সাকাফী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পূর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৩৮৫; ই.সে. ৩৯৬)

৩৭৮

وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ عَمْرَو بْنَ أَبِي سُفْيَانَ بْنِ أَسِيدِ بْنِ جَارِيَةَ الثَّقَفِيَّ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ لِكَعْبِ الأَحْبَارِ إِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ يَدْعُوهَا فَأَنَا أُرِيدُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ أَنْ أَخْتَبِئَ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ كَعْبٌ لأَبِي هُرَيْرَةَ أَنْتَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَعَمْ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একদিন কা’ব আল আহ্‌বারকে বললেন, রসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ প্রত্যেক নাবীর জন্য একটি বিশেষ দু’আ আছে (তাঁর উম্মাতের জন্য)। কিন্তু তাঁরা দুনিয়াতেই তা করে ফেলেছেন। আমি আমার দু’আটি কিয়ামাত দিবসে আমার উম্মাতের শাফা’আতের জন্য গোপন করে রাখতে ইচ্ছে করেছি। কা’ব (রাঃ) আবূ হুরায়রাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি এ হাদীস রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে সরাসরি শুনেছেন? আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেনঃ হ্যাঁ। (ই.ফা. ৩৮৬; ই.সে. ৩৯৭)

৩৭৯

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ - وَاللَّفْظُ لأَبِي كُرَيْبٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ فَتَعَجَّلَ كُلُّ نَبِيٍّ دَعْوَتَهُ وَإِنِّي اخْتَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَهِيَ نَائِلَةٌ إِنْ شَاءَ اللَّهُ مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِي لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক নাবীর জন্য একটি বিশেষ দু’আ আছে যা কবূল হবে। তন্মধ্যে সকলেই তাদের দু’আ পৃথিবীতেই করে নিয়েছে। আর আমার দু’আটি কিয়ামাত দিবসে আমার উম্মাতের জন্য গোপন রেখে দিয়েছি। আমার উম্মাতের যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছে অথচ কোন প্রকার শির্‌ক করেনি সে ইনশাআল্লাহ আমার এ দু’আ পাবে। (ই.ফা. ৩৮৭; ই.সে. ৩৯৮)

৩৮০

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدٍ، - وَهُوَ ابْنُ زِيَادٍ - قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ دَعَا بِهَا فِي أُمَّتِهِ فَاسْتُجِيبَ لَهُ وَإِنِّي أُرِيدُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ أَنْ أُؤَخِّرَ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, প্রত্যেক নাবীকে একটি বিশেষ দু’আর অনুমতি প্রদান করা হয়েছে; এর মাধ্যমে তিনি যে দু’আ করবেন, আল্লাহ তা অবশ্যই কবূল করবেন। সকল নবী তাঁদের দু’আ করে ফেলেছেন এবং তা কবূলও করা হয়েছে। আর আমি আমার দু’আটি কিয়ামাত দিবসে আমার উম্মাতের শাফা’আতের জন্য গোপনে রেখে দিয়েছি। (ই.ফা. ৩৮৮; ই.সে. ৩৯৯)

৩৮১

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدٍ، - وَهُوَ ابْنُ زِيَادٍ - قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ دَعَا بِهَا فِي أُمَّتِهِ فَاسْتُجِيبَ لَهُ وَإِنِّي أُرِيدُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ أَنْ أُؤَخِّرَ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, প্রত্যেক নাবীকে তাঁর উম্মাতের ব্যাপারে একটি এমন দু’আর অনুমতি দেয়া হয়েছে যা অবশ্যই কবূল করা হবে। তা তাঁরা নিজের উম্মাতের জন্য করে ফেলেছেন। আমি ইনশাআল্লাহ সংকল্প করেছি, আমার দু’আটি পরে কিয়ামাতের দিবসে আমার উম্মাতের শাফা’আতের জন্য করবো। (ই.ফা. ৩৮৯; ই.সে. ৪০০)

৩৮২

حَدَّثَنِي أَبُو غَسَّانَ الْمِسْمَعِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ حَدَّثَانَا - وَاللَّفْظُ، لأَبِي غَسَّانَ - قَالُوا حَدَّثَنَا مُعَاذٌ، - يَعْنُونَ ابْنَ هِشَامٍ - قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ دَعَاهَا لأُمَّتِهِ وَإِنِّي اخْتَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন : প্রত্যেক নাবীর কাছে তাঁর উম্মাতের ক্ষেত্রে প্রয়োগের জন্য একটি দু’আর অনুমতি আছে। প্রত্যেকে আপন উম্মাতের কল্যাণের জন্য তা করেছেন। আর আমি আমার দু’আটি কিয়ামাত দিবসে আমার উম্মাতের শাফা’আতের জন্য অবশিষ্ট রেখে দিয়েছি। (ই.ফা. ৩৯০; ই.সে. ৪০১)

৩৮৩

وَحَدَّثَنِيهِ زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ أَبِي خَلَفٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا رَوْحٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ح
যুহায়র ইবনু হার্‌ব, ইবনু আবূ খালাফ, কাতাদাহ্‌ (রহঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদের উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ৩৯০; ই.সে. ৪০২)

৩৮৪

وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنِيهِ إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعِيدٍ الْجَوْهَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، جَمِيعًا عَنْ مِسْعَرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ غَيْرَ أَنَّ فِي، حَدِيثِ وَكِيعٍ قَالَ قَالَ ‏ "‏ أُعْطِيَ ‏"‏ ‏.‏ وَفِي حَدِيثِ أَبِي أُسَامَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏
কাতাদাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে ওয়াকী’র বর্ণনায় আছে আনসার (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে ওয়াকী’র বর্ণনায় আছে আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক নাবীকে একটি করে দু’আ প্রদান করা হয়েছে। (ই.ফা. ৩৯০; ই.সে. ৪০৩)

৩৮৫

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ ‏.‏
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কাতাদাহ্‌-এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৩৯১; ই.সে. ৪০৪)

৩৮৬

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ قَدْ دَعَا بِهَا فِي أُمَّتِهِ وَخَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏
মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালাফ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, প্রত্যেক নাবীকে একটি গ্রহণীয় বিশেষ দু’আর অনুমতি দেয়া হয়েছে। সবাই তাঁদের দু’আ আপন উম্মাতের কল্যাণের জন্য করে ফেলেছেন, তবে আমি আমার দু’আটি কিয়ামাত দিবসে আমার উম্মাতের শাফা’আতের জন্য গোপনে অবশিষ্ট রেখে দিয়েছি। (ই.ফা. ৩৯২; ই.সে. ৪০৫)

৮৭. অধ্যায়ঃ

উম্মাতের জন্য নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দু’আ ও তাদের প্রতি মায়া-মমতায় তাঁর ক্রন্দন

৩৮৭

حَدَّثَنِي يُونُسُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّدَفِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، أَنَّ بَكْرَ بْنَ سَوَادَةَ، حَدَّثَهُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَلاَ قَوْلَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ فِي إِبْرَاهِيمَ ‏{‏ رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيرًا مِنَ النَّاسِ فَمَنْ تَبِعَنِي فَإِنَّهُ مِنِّي‏}‏ الآيَةَ ‏.‏ وَقَالَ عِيسَى عَلَيْهِ السَّلاَمُ ‏{‏ إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ‏}‏ فَرَفَعَ يَدَيْهِ وَقَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ أُمَّتِي أُمَّتِي ‏"‏ ‏.‏ وَبَكَى فَقَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ وَرَبُّكَ أَعْلَمُ فَسَلْهُ مَا يُبْكِيكَ فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ - عَلَيْهِ الصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ - فَسَأَلَهُ فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمَا قَالَ ‏.‏ وَهُوَ أَعْلَمُ ‏.‏ فَقَالَ اللَّهُ يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ فَقُلْ إِنَّا سَنُرْضِيكَ فِي أُمَّتِكَ وَلاَ نَسُوءُكَ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্‌র ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআনে ইবরাহীম (‘আঃ) এর দু’আ সম্বলিত আয়াতঃ “হে আমার প্রতিপালক! এ সকল প্রতিমা বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সে আমার দলভুক্ত। আর যে আমার অবাধ্য হবে তুমি তো ক্ষমাশীল পরম দয়ালু”-(সূরাহ ইবরাহীম ১৪ : ৩৬) তিলাওয়াত করেন। আর ‘ঈসা (‘আঃ) বলেছেনঃ “তুমি যদি তাদেরকে শাস্তি দাও তবে তারা তো তোমারই বান্দা, আর যদি তাদেরকে ক্ষমা কর, তবে তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়”-(সূরাহ আল মায়িদাহ্‌ ৫ : ১১৮) তারপর তিনি তাঁর উভয় হাত উঠালেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! আমার উম্মাত, আমার উম্মাত! আর কেঁদে ফেললেন। তখন মহান আল্লাহ বললেন, হে জিবরীল! মুহাম্মাদের নিকট যাও, তোমার রব তো সবই জানেন-তাঁকে জিজ্ঞেস কর, তিনি কাঁদছেন কেন? জিবরীল (‘আঃ) এসে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা বলেছিলেন, তা তাঁকে অবহিত করলেন। আর আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ। তখন আল্লাহ তা’আলা বললেন, হে জিবরীল! তুমি মুহাম্মাদের কাছে যাও এবং তাঁকে বল, “নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ) আপনার উম্মাতের ব্যাপারে আপনাকে সন্তুষ্ট করে দিব, আপনাকে অসন্তুষ্ট করব না”।
(ই.ফা. ৩৯৩; ই.সে. ৪০৬)

৮৮.অধ্যায়ঃ

কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী জাহান্নামী, সে কোন শাফা’আত পাবে না এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভকারী বান্দার সাথে আত্মীয়তাঁর সম্পর্কও তার উপকারে আসবে না।

৩৮৮

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَجُلاً، قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيْنَ أَبِي قَالَ ‏"‏ فِي النَّارِ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمَّا قَفَّى دَعَاهُ فَقَالَ ‏"‏ إِنَّ أَبِي وَأَبَاكَ فِي النَّارِ ‏"‏ ‏.‏
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল। আমার পিতা কোথায় আছেন ( জান্নাতে না জাহান্নামে)? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, জাহান্নামে। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি যখন চলে যেতে লাগল, তিনি ডাকলেন এবং বললেন, আমার পিতা এবং তোমার পিতা জাহান্নামে। (ই.ফা. ৩৯৪; ই.সে. ৪০৭)

৮৯. অধ্যায়ঃ

মহান আল্লাহর বাণীঃ “ তোমার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দাও” (সূরাহ্‌ আশ্‌ শু’আরা ২৬ : ২১৪)

৩৮৯

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَمَّا أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ‏{‏ وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ‏}‏ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُرَيْشًا فَاجْتَمَعُوا فَعَمَّ وَخَصَّ فَقَالَ ‏"‏ يَا بَنِي كَعْبِ بْنِ لُؤَىٍّ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ يَا بَنِي مُرَّةَ بْنِ كَعْبٍ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ يَا بَنِي عَبْدِ شَمْسٍ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ يَا بَنِي هَاشِمٍ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ يَا فَاطِمَةُ أَنْقِذِي نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ فَإِنِّي لاَ أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا غَيْرَ أَنَّ لَكُمْ رَحِمًا سَأَبُلُّهَا بِبَلاَلِهَا ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “তোমার নিকটাত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দাও”। (সূরাহ্‌ আশ্‌ শু’আরা ২৬ : ২১৪)। যখন রসূল্ললাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরায়শদের ডাকলেন। তারা একত্রিত হলো। তারপর তিনি তাদের সাধারণ ও বিশেষ সকলকে সম্বোধন করে বললেন, হে কা’ব ইবনু লুওয়াই- এর বংশধর! জাহান্নাম থেকে তাদের আত্মরক্ষা কর। ওহে মুর্‌রাহ্‌ ইবনু কা’ব-এর বংশধর! জাহান্নাম থেকে তোমরা আত্মরক্ষা কর। ওহে ‘আব্‌দ শামস্‌ এর বংশধর! জাহান্নাম থেকে তোমরা আত্মরক্ষা কর। ওহে ‘আব্‌দ মানাফ এর বংশধর। জাহান্নাম থেকে তোমরা নিজেদের বাঁচাও। ওহে হাশিমের বংশধর! জাহান্নাম থেকে তোমরা আত্মরক্ষা কর। ওহে ‘আবদুল মুত্তালিব-এর বংশধর! জাহান্নাম থেকে তোমরা নিজেদের বাঁচাও। ওহে ফাতিমাহ্‌! জাহান্নাম থেকে তুমি নিজেকে বাঁচাও। কারণ, আল্লাহর (‘আযাব) থেকে রক্ষা করার ব্যাপারে আমার কোন ক্ষমতা নেই। অবশ্য আমি তোমাদের সঙ্গে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করব। (ই.ফা. ৩৯৫; ই.সে. ৪০৮)

৩৯০

وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ الْقَوَارِيرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَحَدِيثُ جَرِيرٍ أَتَمُّ وَأَشْبَعُ ‏.‏
‘আবদুল মালিক ইবনু ‘উমার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ বর্ণনা করেছেন; তবে জারীর বর্ণিত হাদীসটি সম্পূর্ণ ও পরিপূর্ণ। (ই.ফা. ৩৯৬; ই.সে. ৪০৯)

৩৯১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَيُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَمَّا نَزَلَتْ ‏{‏ وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ‏}‏ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الصَّفَا فَقَالَ ‏"‏ يَا فَاطِمَةَ بِنْتَ مُحَمَّدٍ يَا صَفِيَّةُ بِنْتَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لاَ أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا سَلُونِي مِنْ مَالِي مَا شِئْتُمْ ‏"‏ ‏.‏
‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এ মর্মে আয়াত নাযিল হয়ঃ “তোমার নিকটাত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দাও”-(সূরাহ্‌ আশ্‌ শু’আরা ২৬ : ২১৪)। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাফা পর্বতের উপর দাঁড়িয়ে বললেন, হে ফাতিমাহ্‌ বিনতু মুহাম্মাদ! হে সাফিয়্যাহ বিনতু ‘আবদুল মুত্তালিব! হে ‘আবদুল মুত্তালিবের বংশধর! আল্লাহর ‘আযাব থেকে তোমাদেরকে রক্ষা করার আমার কোন ক্ষমতা নেই। তোমরা আমার কাছে আমার সম্পদের যা খুশি চাও। (ই.ফা. ৩৯৭; ই.সে. ৪১০)

৩৯২

وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ الْمُسَيَّبِ، وَأَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ أُنْزِلَ عَلَيْهِ ‏{‏ وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ‏}‏ ‏"‏ يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللَّهِ لاَ أُغْنِي عَنْكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لاَ أُغْنِي عَنْكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا يَا عَبَّاسَ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لاَ أُغْنِي عَنْكَ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا يَا صَفِيَّةُ عَمَّةَ رَسُولِ اللَّهِ لاَ أُغْنِي عَنْكِ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا يَا فَاطِمَةُ بِنْتَ رَسُولِ اللَّهِ سَلِينِي بِمَا شِئْتِ لاَ أُغْنِي عَنْكِ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এ মর্মে আয়াত অবতীর্ণ হলো (অর্থ) “তোমার নিকটাত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দাও”-(সূরাহ্‌ আশ্‌ শু’আরা ২৬ : ২১৪)। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে কুরায়শগণ! আল্লাহর (‘আযাব) থেকে তোমরা নিজেদের কিনে নাও (বাঁচাও)। আল্লাহর (‘আযাব) থেকে তোমাদের রক্ষা করার কোন ক্ষমতা আমার নেই। ওহে ‘আবদুল মুত্তালিব-এর বংশধর! তোমাদের আমি রক্ষা করতে পারব না। হে ‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব! তোমাকেও আমি রক্ষা কতে পারব না। হে সাফিয়্যাহ্‌ রসূলুল্লাহ্‌র ফুপু আমি আল্লাহর (‘আযাব) থেকে তোমার কোন উপকার করতে পারব না। হে রসূলুল্লাহ্‌র কন্যা ফাতিমাহ্‌! তোমার যা ইচ্ছা চাও। আল্লাহর (‘আযাব) থেকে আমি তোমাকে রক্ষা করতে পারবো না। (ই.ফা. ৩৯৮; ই.সে. ৪১১)

৩৯৩

وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ ذَكْوَانَ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ هَذَا ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৩৯৯; ই.সে. ৪১২)

৩৯৪

حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ الْجَحْدَرِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ قَبِيصَةَ بْنِ الْمُخَارِقِ، وَزُهَيْرِ بْنِ عَمْرٍو، قَالاَ لَمَّا نَزَلَتْ ‏{‏ وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ‏}‏ قَالَ انْطَلَقَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى رَضْمَةٍ مِنْ جَبَلٍ فَعَلاَ أَعْلاَهَا حَجَرًا ثُمَّ نَادَى ‏"‏ يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافَاهْ إِنِّي نَذِيرٌ إِنَّمَا مَثَلِي وَمَثَلُكُمْ كَمَثَلِ رَجُلٍ رَأَى الْعَدُوَّ فَانْطَلَقَ يَرْبَأُ أَهْلَهُ فَخَشِيَ أَنْ يَسْبِقُوهُ فَجَعَلَ يَهْتِفُ يَا صَبَاحَاهْ ‏"‏ ‏.‏
কাবীসাহ্‌ ইবনু মুখারিক ও যুহায়র ইবনু ‘আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা বলেন, যখন এ মর্মে আয়াত নাযিল হয়, “তোমার নিকটাত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দাও” -(সূরাহ্‌ আশ্‌ শু’আরা ২৬ : ২১৪)। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্বতের বৃহদাকার পাথরের দিকে গেলেন এবং তার মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তর প্রস্তর খণ্ডে আরোহণ করলেন। এরপর তিনি আহ্বান জানালেন, ওহে ‘আব্‌দ মানাফ-এর বংশধর! আমি ( তোমাদের) সতর্ককারী। আমার ও তোমাদের উপমা হলো, এমন এক ব্যক্তির ন্যায়, যে শত্রুকে দেখতে পেয়ে তার লোকদের রক্ষা করার জন্য অগ্রসর হলো, পরে সে আশঙ্কা করল যে, শত্রু তার আগেই এসে যাবে। তখন সে ‘ইয়া সাবাহ্‌’ ( হায় মন্দ প্রভাত!) বলে চিৎকার শুরু করল। (ই.ফা. ৪০০; ই.সে. ৪১৩)

৩৯৫

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، عَنْ أَبِيهِ، حَدَّثَنَا أَبُو عُثْمَانَ، عَنْ زُهَيْرِ بْنِ عَمْرٍو، وَقَبِيصَةَ بْنِ مُخَارِقٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِنَحْوِهِ ‏.‏
যুহায়র ইবনু ‘আম্‌র ও কাবীসাহ্‌ ইবনু মুখারিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪০১; ই.সে. ৪১৪)

৩৯৬

وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ‏{‏ وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ‏}‏ وَرَهْطَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ ‏.‏ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى صَعِدَ الصَّفَا فَهَتَفَ ‏"‏ يَا صَبَاحَاهْ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالُوا مَنْ هَذَا الَّذِي يَهْتِفُ قَالُوا مُحَمَّدٌ ‏.‏ فَاجْتَمَعُوا إِلَيْهِ فَقَالَ ‏"‏ يَا بَنِي فُلاَنٍ يَا بَنِي فُلاَنٍ يَا بَنِي فُلاَنٍ يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ ‏"‏ فَاجْتَمَعُوا إِلَيْهِ فَقَالَ ‏"‏ أَرَأَيْتَكُمْ لَوْ أَخْبَرْتُكُمْ أَنَّ خَيْلاً تَخْرُجُ بِسَفْحِ هَذَا الْجَبَلِ أَكُنْتُمْ مُصَدِّقِيَّ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا مَا جَرَّبْنَا عَلَيْكَ كَذِبًا ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَإِنِّي نَذِيرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَىْ عَذَابٍ شَدِيدٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَقَالَ أَبُو لَهَبٍ تَبًّا لَكَ أَمَا جَمَعْتَنَا إِلاَّ لِهَذَا ثُمَّ قَامَ فَنَزَلَتْ هَذِهِ السُّورَةُ تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَقَدْ تَبَّ ‏.‏ كَذَا قَرَأَ الأَعْمَشُ إِلَى آخِرِ السُّورَةِ ‏.‏
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এ মর্মে আয়াত নাযিল হয়, “তোমার নিকটাত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দাও”- (সূরাহ্‌ আশ্‌ শু’আরা ২৬ : ২১৪) এবং তাদের মধ্য থেকে তোমার নিষ্ঠাবান সম্প্রদায়কেও।”[৭৯] তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে এলেন এবং সাফা পর্বতে উঠে উচ্চস্বরে ডাক দিলেনঃ হায়, মন্দ প্রভাত! সকলে বলাবলি করতে লাগল, কে এ ব্যক্তি যে ডাক দিচ্ছে? লোকেরা বলল, মুহাম্মাদ। তারপর সবাই তাঁর কাছে উপস্থিত হলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে অমুকের বংশধর! হে অমুকের বংশধর! হে ‘আব্‌দ মানাফ-এর বংশধর! হে ‘আবদুল মুত্তালিব-এর বংশধর! এতে সবাই তাঁর কাছে সমবেত হলো। নাবীজী জিজ্ঞেস করলেনঃ দেখ, যদি আমি তোমাদের এ সংবাদ দেই যে, এ পর্বতের পাদদেশে অশ্বারোহী শত্রু সৈন্য এসে পড়েছে তবে কি তোমরা আমাকে বিশ্বাস করবে? তারা উত্তরে বললঃ তোমাকে কখনো মিথ্যা বলতে তো আমরা দেখিনি। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি তোমাদের সতর্ক করছি সামনের কঠোর ‘আযাব সম্পর্কে।
বর্ণনাকারী বলেন, আবূ লাহাব তখন এই বলে উঠে গেল “তুমি ধ্বংস হও, তুমি এজন্যই কি আমাদের একত্রিত করেছিলে?” তখন এ সূরাহ অবতীর্ণ হয়ঃ “ধ্বংস হোক আবূ লাহাবের দুই হাত এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও …...সূরার শেষ পর্যন্ত।” (সূরাহ্‌ লাহাব ১১১ : ১-৫)
অবশ্য রাবী আ’মাশ (আরবি) এর পরিবর্তে (আরবি) পাঠ করেন। (ই.ফা. ৪০২; ই.সে. ৪১৫)
[৭৯] ইমাম নাবাবী বলেনঃ (অত্র আয়াতটি) এটা কুরআনে অবতীর্ণ হয়েছিল। পরে তার তিলাওয়াত মানসুখ হয়ে গেছে। এখানে এ অংশটুকুর উল্লেখ আছে। তবে বুখারীর বর্ণনায় এটা নেই। (মুসলিম তাহকীক- ফু’আদ ‘আবদুল বাকী ১ম খণ্ড, ১৯৫ পৃষ্ঠা)

৩৯৭

وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ قَالَ صَعِدَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ الصَّفَا فَقَالَ ‏"‏ يَا صَبَاحَاهْ ‏"‏ ‏.‏ بِنَحْوِ حَدِيثِ أَبِي أُسَامَةَ وَلَمْ يَذْكُرْ نُزُولَ الآيَةِ ‏{‏ وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ‏}‏
আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উক্ত সানাদে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন সাফা পর্বতে আরোহণ করেন এবং বলেনঃ হায় ‘মন্দ প্রভাত’! (বাকী অংশ) আবূ উসামার বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। অবশ্য তিনি (আরবী) আয়াতটি অবতরণের কথা উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪০৩; ই.সে. ৪১৬)

৯০. অধ্যায়ঃ

আবূ তালিব-এর জন্য নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শাফা‘আত এবং সে কারণে তার ‘আযাব কম হওয়া

৩৯৮

وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ الْقَوَارِيرِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرِ الْمُقَدَّمِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ الأُمَوِيُّ، قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ نَوْفَلٍ، عَنِ الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، أَنَّهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ نَفَعْتَ أَبَا طَالِبٍ بِشَىْءٍ فَإِنَّهُ كَانَ يَحُوطُكَ وَيَغْضَبُ لَكَ قَالَ ‏ "‏ نَعَمْ هُوَ فِي ضَحْضَاحٍ مِنْ نَارٍ وَلَوْلاَ أَنَا لَكَانَ فِي الدَّرْكِ الأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ ‏"‏ ‏.‏
‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একদিন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি কি আবূ তালিবের কোন উপকার করতে পেরেছেন? তিনি তো আপনার হিফাযাত করতেন, আপনার পক্ষ হয়ে (অন্যের প্রতি) ক্রোধান্বিত হতেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বললেনঃ হ্যাঁ, তিনি কেবল পায়ের গ্রন্থি পর্যন্ত জাহান্নামের আগুনে আছেন, আর যদি আমি না হতাম তবে জাহান্নামের অতল তলেই তিনি অবস্থান করতেন। (ই.ফা. ৪০৪; ই.সে. ৪১৭)

৩৯৯

حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، قَالَ سَمِعْتُ الْعَبَّاسَ، يَقُولُ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَبَا طَالِبٍ كَانَ يَحُوطُكَ وَيَنْصُرُكَ فَهَلْ نَفَعَهُ ذَلِكَ قَالَ ‏ "‏ نَعَمْ وَجَدْتُهُ فِي غَمَرَاتٍ مِنَ النَّارِ فَأَخْرَجْتُهُ إِلَى ضَحْضَاحٍ ‏"‏ ‏.‏
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! নিশ্চয়ই আবূ তালিব তো আপনার হিফাযাত করতেন, আপনাকে সাহায্য করতেন এবং আপনার পক্ষ হয়ে (অন্যদের প্রতি) রাগ করতেন। তার এ কর্ম তার কি কোন উপকারে এসেছে? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বললেনঃ হ্যাঁ। আমি তাকে জাহান্নামের গভীরে পেয়েছিলাম, অতঃপর আমি সেখান থেকে (তার পায়ের) গ্রন্থি পর্যন্ত বের করে আগুনের উপরিভাগে নিয়ে এসেছি। (ই.ফা. ৪০৫; ই.সে. ৪১৮)

৪০০

وَحَدَّثَنِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عُمَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحَارِثِ، قَالَ أَخْبَرَنِي الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِنَحْوِ حَدِيثِ أَبِي عَوَانَةَ ‏.‏
‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ঐ সানাদে পূর্ব বর্ণিত আবূ আওয়ানাহ্‌-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪০৫; ই.সে. ৪১৯)

৪০১

وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذُكِرَ عِنْدَهُ عَمُّهُ أَبُو طَالِبٍ فَقَالَ ‏ "‏ لَعَلَّهُ تَنْفَعُهُ شَفَاعَتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُجْعَلُ فِي ضَحْضَاحٍ مِنْ نَارٍ يَبْلُغُ كَعْبَيْهِ يَغْلِي مِنْهُ دِمَاغُهُ ‏"‏ ‏.‏
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে তাঁর চাচা আবূ তালিব-এর কথা আলোচিত হলে তিনি বলেন, হয়তো কিয়ামাত দিবসে তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কাজে আসবে বলে আশা করি। তাকে জাহান্নামের উপরিভাগে এমনভাবে রাখা হবে যে, আগুন তার পায়ের গিরা পর্যন্ত পৌঁছবে; এতেই তার মগজ উথলাতে থাকবে। (ই.ফা. ৪০৬; ই.সে. ৪২০)

৯১. অধ্যায়ঃ

জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা শাস্তি হওয়া

৪০২

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ أَبِي عَيَّاشٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِنَّ أَدْنَى أَهْلِ النَّارِ عَذَابًا يَنْتَعِلُ بِنَعْلَيْنِ مِنْ نَارٍ يَغْلِي دِمَاغُهُ مِنْ حَرَارَةِ نَعْلَيْهِ ‏"‏ ‏.‏
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জাহান্নামের সবচেয়ে কম ‘আযাব সে ব্যক্তির হবে, যাকে আগুনের দু’টি জুতা পরানো হবে, ফলে এ দু’টির উত্তাপের কারণে তার মগজ উথলাতে থাকবে। (ই.ফা. ৪০৭; ই.সে. ৪২১)

৪০৩

وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ أَهْوَنُ أَهْلِ النَّارِ عَذَابًا أَبُو طَالِبٍ وَهُوَ مُنْتَعِلٌ بِنَعْلَيْنِ يَغْلِي مِنْهُمَا دِمَاغُهُ ‏"‏ ‏.‏
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (চির) জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা শাস্তি হবে আবূ তালিব-এর। তাকে দু’টি (আগুনের) জুতা পরিয়ে দেয়া হবে, ফলে এ দু’টির কারণে তার মগজ পর্যন্ত উথলাতে থাকবে। (ই.ফা. ৪০৮; ই.সে. ৪২২)

৪০৪

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى - قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ، يَقُولُ سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ، يَخْطُبُ وَهْوَ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ إِنَّ أَهْوَنَ أَهْلِ النَّارِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَرَجُلٌ تُوضَعُ فِي أَخْمَصِ قَدَمَيْهِ جَمْرَتَانِ يَغْلِي مِنْهُمَا دِمَاغُهُ ‏"‏ ‏.‏
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বক্তৃতায় বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামাত দিবসে জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা শাস্তি হবে ঐ ব্যক্তির যার দু’ পায়ের তলায় দু’টি জ্বলন্ত কয়লা রাখা হবে, যার কারণে তার মগজ উথলাতে থাকবে। (ই.ফা. ৪০৯; ই.সে. ৪২৩)

৪০৫

وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنَّ أَهْوَنَ أَهْلِ النَّارِ عَذَابًا مَنْ لَهُ نَعْلاَنِ وَشِرَاكَانِ مِنْ نَارٍ يَغْلِي مِنْهُمَا دِمَاغُهُ كَمَا يَغْلِي الْمِرْجَلُ مَا يَرَى أَنَّ أَحَدًا أَشَدُّ مِنْهُ عَذَابًا وَإِنَّهُ لأَهْوَنُهُمْ عَذَابًا ‏"‏ ‏.‏
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা ‘আযাব ঐ ব্যক্তির হবে, যার দু’টি জুতার ফিতা হবে আগুনের। ফলে তার দহনে (চুলা উপরে রাখা) পাতিলের ন্যায় তার মগজ উথলাতে থাকবে। আর তার অনুভব হবে যে, সে বুঝি সর্বাপেক্ষা বেশী শাস্তি ভোগ করছে অথচ এটি হচ্ছে সবচেয়ে হালকা ‘আযাব। (ই.ফা. ৪১০; ই.সে. ৪২৪)

৯২. অধ্যায়ঃ

যে ব্যক্তি কুফ্‌রী অবস্থায় মারা যায় তার কোন ‘আমাল তার উপকারে আসবে না

৪০৬

حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنْ دَاوُدَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ابْنُ جُدْعَانَ كَانَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ يَصِلُ الرَّحِمَ وَيُطْعِمُ الْمِسْكِينَ فَهَلْ ذَاكَ نَافِعُهُ قَالَ ‏ "‏ لاَ يَنْفَعُهُ إِنَّهُ لَمْ يَقُلْ يَوْمًا رَبِّ اغْفِرْ لِي خَطِيئَتِي يَوْمَ الدِّينِ ‏"‏ ‏.‏
‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! ইবনু জুদ’আন জাহিলী যুগে আত্মীয়-স্বজনের হাক্‌ আদায় করত এবং দরিদ্রদের আহার দিত। (আখিরাতে) এসব কর্ম তার উপকারে আসবে কি? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কোন উপকারে আসবে না। সে তো কোন দিন এ কথা বলেনি যে, হে আমার রব! কিয়ামাতের দিন আমার অপরাধ ক্ষমা করে দিও। (ই.ফা. ৪১১; ই.সে. ৪২৫)

৯৩. অধ্যায়ঃ

মু’মিনদের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষা করা ও অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা ও তাদেরকে এড়িয়ে চলা

৪০৭

حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جِهَارًا غَيْرَ سِرٍّ يَقُولُ ‏ "‏ أَلاَ إِنَّ آلَ أَبِي - يَعْنِي فُلاَنًا - لَيْسُوا لِي بِأَوْلِيَاءَ إِنَّمَا وَلِيِّيَ اللَّهُ وَصَالِحُ الْمُؤْمِنِينَ ‏"‏ ‏.
‘আম্‌র ইবনু ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে চুপে চুপে নয় স্পষ্ট বলতে শুনেছি যে, জেনে রেখ! অমুক বংশ (আত্মীয়তার কারণে) আমার বন্ধু নয়, বরং আল্লাহর এবং নেককার মু’মিনগণই হলেন আমার বন্ধু। (ই.ফা. ৪১২; ই.সে. ৪২৬)

৯৪. অধ্যায়ঃ

হিসাব ও শাস্তি ছাড়াই মুসলিমদের একাধিক দল জান্নাতে প্রবেশ করার প্রমাণ

৪০৮

حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَلاَّمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ الْجُمَحِيُّ، حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ، - يَعْنِي ابْنَ مُسْلِمٍ - عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ يَدْخُلُ مِنْ أُمَّتِي الْجَنَّةَ سَبْعُونَ أَلْفًا بِغَيْرِ حِسَابٍ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ مِنْهُمْ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ قَامَ آخَرُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ سَبَقَكَ بِهَا عُكَّاشَةُ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমার উম্মাতের সত্তর হাজার লোক হিসাব ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করবে। জনৈক সহাবা (‘উক্কাশাহ্) বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্‌! আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, আমাকে যেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’আ করলেন, ইয়া আল্লাহ! ওকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন। তারপর আরেকজন সহাবা দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্‌! আমার জন্যও আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, আমাকেও যেন তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ সুযোগ লাভে ‘উক্কাশাহ্ তোমার অগ্রগামী হয়ে গেছে। (ই.ফা. ৪১৩ ই.সে ৪২৭)

৪০৯

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ زِيَادٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏.‏ بِمِثْلِ حَدِيثِ الرَّبِيعِ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি ..... পরবর্তী অংশ উপরোল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ৪১৪ ই.সে ৪২৮)

৪১০

حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، حَدَّثَهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏"‏ يَدْخُلُ مِنْ أُمَّتِي زُمْرَةٌ هُمْ سَبْعُونَ أَلْفًا تُضِيءُ وُجُوهُهُمْ إِضَاءَةَ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَقَامَ عُكَّاشَةُ بْنُ مِحْصَنٍ الأَسَدِيُّ يَرْفَعُ نَمِرَةً عَلَيْهِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ مِنْهُمْ ‏"‏ ثُمَّ قَامَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ سَبَقَكَ بِهَا عُكَّاشَةُ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মাতের একটি দল জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের সংখ্যা হবে সত্তর হাজার। তাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় চমকাতে থাকবে।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, তখন ‘উক্কাশাহ্ ইবনু মিহসান আসাদী দাঁড়ালেন। তাঁর গায়ে একটি চাদর ছিল। বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্‌! আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন তিনি যেন আমাকেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ইয়া আল্লাহ! একে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন। এরপর আরেকজন আনসারী দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন তিনি যেন আমাকেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ সুযোগ লাভে ‘উক্কাশাহ্ তোমার অগ্রগামী হয়ে গেছে। (ই.ফা. ৪১৫; ই.সে. ৪২৯)

৪১১

وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي حَيْوَةُ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو يُونُسَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعُونَ أَلْفًا زُمْرَةٌ وَاحِدَةٌ مِنْهُمْ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর তাদের একটি দলের চেহারা হবে চাঁদের মত (উজ্জ্বল)। (ই.ফা. ৪১৬; ই.সে. ৪৩০)

৪১২

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ الْبَاهِلِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، - يَعْنِي ابْنَ سِيرِينَ - قَالَ حَدَّثَنِي عِمْرَانُ، قَالَ قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعُونَ أَلْفًا بِغَيْرِ حِسَابٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا وَمَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ هُمُ الَّذِينَ لاَ يَكْتَوُونَ وَلاَ يَسْتَرْقُونَ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ ‏"‏ ‏.‏ فَقَامَ عُكَّاشَةُ فَقَالَ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَنْتَ مِنْهُمْ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ سَبَقَكَ بِهَا عُكَّاشَةُ ‏"‏ ‏.‏
‘ইমরান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। লোকেরা জিজ্ঞেস করলো, তারা কারা, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)? তিনি বললেনঃ যারা ক্ষতস্থানে লোহা পুড়ে লাগায় না এবং (জাহিলী যুগের ন্যায়) ঝাড়ফুঁক বা মন্ত্রের দ্বারা চিকিৎসা কামনা করে না বরং তারা আল্লাহর উপর পূর্ণ তাওয়াক্কুল করে। এ সময় ‘উক্কাশাহ্‌ (রাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন, তিনি যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর নাবী! আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন, তিনি আমাকেও যেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। উত্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘উক্কাশাহ্ তোমার আগেই সে দলভুক্ত হয়ে গেছে। (ই.ফা. ৪১৭; ই.সে. ৪৩১)

৪১৩

حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا حَاجِبُ بْنُ عُمَرَ أَبُو خُشَيْنَةَ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ الأَعْرَجِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعُونَ أَلْفًا بِغَيْرِ حِسَابٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ هُمُ الَّذِينَ لاَ يَسْتَرْقُونَ وَلاَ يَتَطَيَّرُونَ وَلاَ يَكْتَوُونَ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ ‏"‏ ‏.‏
‘ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক হিসাব ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করবে। সহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! এরা কারা? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যারা ঝাড়ফুঁক করায় না, পাখি উড়িয়ে শুভাশুভের লক্ষণ মেনে চলে না, অগ্নি দাগ গ্রহণ করে না, বরং সর্বদাই আল্লাহর ওপর নির্ভর করে (তারাই)। (ই.ফা. ৪১৮; ই.সে. ৪৩২)

৪১৪

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، - يَعْنِي ابْنَ أَبِي حَازِمٍ - عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لَيَدْخُلَنَّ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعُونَ أَلْفًا أَوْ سَبْعُمِائَةِ أَلْفٍ - لاَ يَدْرِي أَبُو حَازِمٍ أَيَّهُمَا قَالَ - مُتَمَاسِكُونَ آخِذٌ بَعْضُهُمْ بَعْضًا لاَ يَدْخُلُ أَوَّلُهُمْ حَتَّى يَدْخُلَ آخِرُهُمْ وُجُوهُهُمْ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ ‏"‏ ‏.
সাহ্‌ল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার বা সাত লক্ষ (এখানে রাবী আবূ হাযিম কোন সংখ্যাই নিশ্চিত করে বলতে পারেননি) লোক পাশাপাশি দাঁড়িয়ে একে অন্যের হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের প্রথম ব্যক্তি শেষ ব্যক্তির প্রবেশের আগে প্রবেশ করবে না, বরং সবাই একত্রে প্রবেশ করবে। তাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের মত চমকাতে থাকবে। (ই.ফা. ৪১৯; ই.সে. ৪৩৩)

৪১৫

حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا حُصَيْنُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ كُنْتُ عِنْدَ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ فَقَالَ أَيُّكُمْ رَأَى الْكَوْكَبَ الَّذِي انْقَضَّ الْبَارِحَةَ قُلْتُ أَنَا ‏.‏ ثُمَّ قُلْتُ أَمَا إِنِّي لَمْ أَكُنْ فِي صَلاَةٍ وَلَكِنِّي لُدِغْتُ ‏.‏ قَالَ فَمَاذَا صَنَعْتَ قُلْتُ اسْتَرْقَيْتُ ‏.‏ قَالَ فَمَا حَمَلَكَ عَلَى ذَلِكَ قُلْتُ حَدِيثٌ حَدَّثَنَاهُ الشَّعْبِيُّ ‏.‏ فَقَالَ وَمَا حَدَّثَكُمُ الشَّعْبِيُّ قُلْتُ حَدَّثَنَا عَنْ بُرَيْدَةَ بْنِ حُصَيْبٍ الأَسْلَمِيِّ أَنَّهُ قَالَ لاَ رُقْيَةَ إِلاَّ مِنْ عَيْنٍ أَوْ حُمَةٍ ‏.‏ فَقَالَ قَدْ أَحْسَنَ مَنِ انْتَهَى إِلَى مَا سَمِعَ وَلَكِنْ حَدَّثَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ عُرِضَتْ عَلَىَّ الأُمَمُ فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ وَمَعَهُ الرُّهَيْطُ وَالنَّبِيَّ وَمَعَهُ الرَّجُلُ وَالرَّجُلاَنِ وَالنَّبِيَّ لَيْسَ مَعَهُ أَحَدٌ إِذْ رُفِعَ لِي سَوَادٌ عَظِيمٌ فَظَنَنْتُ أَنَّهُمْ أُمَّتِي فَقِيلَ لِي هَذَا مُوسَى صلى الله عليه وسلم وَقَوْمُهُ وَلَكِنِ انْظُرْ إِلَى الأُفُقِ ‏.‏ فَنَظَرْتُ فَإِذَا سَوَادٌ عَظِيمٌ فَقِيلَ لِي انْظُرْ إِلَى الأُفُقِ الآخَرِ ‏.‏ فَإِذَا سَوَادٌ عَظِيمٌ فَقِيلَ لِي هَذِهِ أُمَّتُكَ وَمَعَهُمْ سَبْعُونَ أَلْفًا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ حِسَابٍ وَلاَ عَذَابٍ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ نَهَضَ فَدَخَلَ مَنْزِلَهُ فَخَاضَ النَّاسُ فِي أُولَئِكَ الَّذِينَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ حِسَابٍ وَلاَ عَذَابٍ فَقَالَ بَعْضُهُمْ فَلَعَلَّهُمُ الَّذِينَ صَحِبُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ وَقَالَ بَعْضُهُمْ فَلَعَلَّهُمُ الَّذِينَ وُلِدُوا فِي الإِسْلاَمِ وَلَمْ يُشْرِكُوا بِاللَّهِ ‏.‏ وَذَكَرُوا أَشْيَاءَ فَخَرَجَ عَلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏"‏ مَا الَّذِي تَخُوضُونَ فِيهِ ‏"‏ ‏.‏ فَأَخْبَرُوهُ فَقَالَ ‏"‏ هُمُ الَّذِينَ لاَ يَرْقُونَ وَلاَ يَسْتَرْقُونَ وَلاَ يَتَطَيَّرُونَ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ ‏"‏ ‏.‏ فَقَامَ عُكَّاشَةُ بْنُ مِحْصَنٍ فَقَالَ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ أَنْتَ مِنْهُمْ ‏"‏ ثُمَّ قَامَ رَجُلٌ آخَرُ فَقَالَ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ سَبَقَكَ بِهَا عُكَّاشَةُ ‏"‏ ‏.‏
হুসায়ন ইবনু ‘আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সা’ঈদ ইবনু যুবায়র-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি প্রশ্ন করলেন, তোমাদের মধ্য হতে কেউ রাতে যে তারকাটি বিচ্যুত হয়েছিল তা দেখেছ কি? আমি বললাম, আমি দেখেছি। অবশ্য আমি রাতের সলাতে রত ছিলাম না; আমাকে বিচ্ছু দংশন করেছিল। সা’ঈদ বললেন, দংশন করার পর তুমি কী করেছিলে? আমি বললাম, ঝাড়ফুঁক করিয়েছি। তিনি বললেন, তোমাকে এ ঝাঁড়ফুক গ্রহণে কিসে উদ্বুদ্ধ করল? আমি বললাম, সে হাদীস যা আমাদেরকে শা’বী বর্ণনা করেছেন। তিনি বললেন, শা’বী কী হাদীস বর্ণনা করেছেন? আমি বললাম, শা’বী বুরাইদাহ্‌ ইবনু হুসায়ন আল আসলামী (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন যে, কুদৃষ্টি বা বিচ্ছু দংশন ব্যতীত অন্য বিষয়ে ঝাড়ফুঁক করানো উচিত নয়।
তিনি বললেন, ভাল বলেছেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন যে, স্বপ্নে আমার সামনে সকল নাবীদের উপস্থিত করা হয়। অতঃপর তখন কোন কোন নাবীকে দেখলাম যে, তাঁর সঙ্গে ছোট্ট একটি দল রয়েছে; আর কাউকে দেখলাম, তাঁর সঙ্গে একজন কিংবা দু’জন লোক আবার কেউ এমনও ছিলেন যে, তাঁর সাথে কেউ নেই। হঠাৎ আমার সামনে এক বিরাট দল দেখা গেল। মনে হলো, এরা আমার উম্মাত। তখন আমাকে বলা হলো, ইনি মূসা (‘আঃ) ও তাঁর উম্মাত; তবে আপনি ওপর দিগন্তে তাকিয়ে দেখুন। আমি ওদিকে তাকালাম, দেখি বিরাট একদল, আবার বলা হলো, আপনি ওপর দিগন্তে তাকিয়ে দেখুন, (আমি ওদিকে তাকিয়ে দেখলাম) এক বিরাট দল। বলা হলো, এরা আপনার উম্মাত। এদের মধ্যে সত্তর হাজার এমন লোক আছে যারা শাস্তি ব্যতীত ও হিসাব ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ বলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ালেন, অতঃপর তাঁর ঘরে চলে গেলেন। তারা উপস্থিত সহাবাগণ তখন এ হিসাব ও ‘আযাববিহীন জান্নাতে প্রবেশকারী কারা হবেন? এ নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন। কেউ বললেন, তাঁরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহাবা। কেউ বললেন, তারা সে সব লোক যারা ইসলামের উপর জন্মলাভ করেছে এবং আল্লাহর সঙ্গে কোন প্রকার শির্‌ক করেনি এবং তাঁরা বহু জিনিসের উল্লেখ করলেন। তারপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের কাছে বেরিয়ে এলেন এবং বললেনঃ তোমরা কী নিয়ে আলোচনা করছিলে? সবাই বিষয়টি (খুলে) বললেন। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের বললেনঃ এরা সে সব লোক যারা ঝাড়ফুঁক করে না বা তা গ্রহণও করে না, পাখি উড়িয়ে শুভাশুভের লক্ষণ মানে না বরং সর্বদাই আল্লাহর উপর নির্ভর করে। তখন ‘উক্কাশাহ্ ইবনু মিহসান (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, আমার জন্যে দু’আ করুন, আল্লাহ যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি তাদেরই একজন থাকবে। তারপর আরেক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমার জন্যও দু’আ করুন, আল্লাহ যেন আমাকেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তর : এ সুযোগ লাভ ‘উক্কাশাহ্ তোমার চাইতে অগ্রগামী হয়ে গেছে। (ই.ফা. ৪২০; ই.সে. ৪৩৪)

৪১৬

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ عُرِضَتْ عَلَىَّ الأُمَمُ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ ذَكَرَ بَاقِيَ الْحَدِيثِ نَحْوَ حَدِيثِ هُشَيْمٍ وَلَمْ يَذْكُرْ أَوَّلَ حَدِيثِهِ ‏.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ স্বপ্নে আমার সামনে সকল উম্মাতকে পেশ করা হয় ..... এভাবে বর্ণনাকারী হুসায়ন বর্ণিত হাদীসের অনুরূপই বর্ণনা করেন। কিন্তু হাদীসটির প্রথমাংশ উল্লেখ করেনি। (ই.ফা. ৪২১; ই.সে. ৪৩৫)

৯৫. অধ্যায়ঃ

জান্নাতীদের অর্ধাংশ এ উম্মাতের (মুহাম্মাদীর) অন্তর্ভুক্ত

৪১৭

حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا رُبُعَ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏"‏ قَالَ فَكَبَّرْنَا ‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏"‏ قَالَ فَكَبَّرْنَا ‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ إِنِّي لأَرْجُو أَنْ تَكُونُوا شَطْرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَسَأُخْبِرُكُمْ عَنْ ذَلِكَ مَا الْمُسْلِمُونَ فِي الْكُفَّارِ إِلاَّ كَشَعْرَةٍ بَيْضَاءَ فِي ثَوْرٍ أَسْوَدَ أَوْ كَشَعْرَةٍ سَوْدَاءَ فِي ثَوْرٍ أَبْيَضَ ‏"‏ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের জিজ্ঞেস করলেন যে, তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট যে, তোমরাই জান্নাতবাসীদের এক চতুর্থাংশ হবে? (‘আবদুল্লাহ বলেন) এ শুনে আমরা (খুশিতে) ‘আল্ল-হু আকবার’ ধ্বনি দিলাম। অতঃপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট যে, তোমরাই জান্নাতবাসীদের এক তৃতীয়াংশ হবে? সহাবা বলেন, আমরা আবার ‘আল্ল-হু আকবার’ ধ্বনি দিলাম। তারপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তবে আমি আশা করি তোমরাই জান্নাতবাসীদের অর্ধেক হবে। আর এ সম্পর্কে তোমাদের অচিরেই বলছি : কাফিরদের ভীড়ে তোমাদের অবস্থান এমনই স্পষ্ট হবে, যেমন কালো ষাঁড়ের গায়ে একটি সাদা পশম অথবা একটি শ্বেত ষাঁড়ের গায়ে কালো পশম। (ই.ফা. ৪২২; ই.সে. ৪৩৬)

৪১৮

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى - قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي قُبَّةٍ نَحْوًا مِنْ أَرْبَعِينَ رَجُلاً فَقَالَ ‏"‏ أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا رُبُعَ أَهْلِ الْجَنَّةِ قَالَ قُلْنَا نَعَمْ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏"‏ فَقُلْنَا نَعَمْ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَرْجُو أَنْ تَكُونُوا نِصْفَ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَذَاكَ أَنَّ الْجَنَّةَ لاَ يَدْخُلُهَا إِلاَّ نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ وَمَا أَنْتُمْ فِي أَهْلِ الشِّرْكِ إِلاَّ كَالشَّعْرَةِ الْبَيْضَاءِ فِي جِلْدِ الثَّوْرِ الأَسْوَدِ أَوْ كَالشَّعْرَةِ السَّوْدَاءِ فِي جِلْدِ الثَّوْرِ الأَحْمَرِ ‏"‏ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা প্রায় চল্লিশজনের মতো রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে একটি তাঁবুতে অবস্থান করছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট যে, তোমরা জান্নাতীদের এক চতুর্থাংশ হবে? আমরা বললাম, হ্যাঁ। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট যে, তোমরা জান্নাতীদের এক তৃতীয়াংশ হবে? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কসম তাঁর যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি আশা করি যে, অবশ্যই তোমরা জান্নাতীদের অর্ধেক হবে। কেননা, কেবল মুসলিমই সেখানে প্রবেশের অনুমতি লাভ করবে। আর মুশরিকদের মধ্যে তোমাদের অবস্থান হবে, যেমন কাল ষাঁড়ের গায়ে একটি সাদা পশম অথবা লাল ষাঁড়ের গায়ে একটি কালো পশমের মতো। (ই.ফা. ৪২৩; ই.সে. ৪৩৭)

৪১৯

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، - وَهْوَ ابْنُ مِغْوَلٍ - عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَسْنَدَ ظَهْرَهُ إِلَى قُبَّةِ أَدَمٍ فَقَالَ ‏"‏ أَلاَ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلاَّ نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللَّهُمَّ اشْهَدْ ‏.‏ أَتُحِبُّونَ أَنَّكُمْ رُبُعُ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْنَا نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ أَتُحِبُّونَ أَنْ تَكُونُوا ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ إِنِّي لأَرْجُو أَنْ تَكُونُوا شَطْرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ مَا أَنْتُمْ فِي سِوَاكُمْ مِنَ الأُمَمِ إِلاَّ كَالشَّعْرَةِ السَّوْدَاءِ فِي الثَّوْرِ الأَبْيَضِ أَوْ كَالشَّعْرَةِ الْبَيْضَاءِ فِي الثَّوْرِ الأَسْوَدِ ‏"‏ ‏.‏
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি তাঁর পৃষ্ঠদেশের সাহায্যে চামড়ার তাঁবুর সাথে হেলান দেয়া ছিলেন। তিনি বললেনঃ সাবধান, মুসলিম ব্যতীত কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। অতঃপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আমি কি (অর্পিত দায়িত্ব) পৌছিয়েছি? হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাকো, তোমরা কি এটা পছন্দ করবে যে, তোমরা জান্নাতীদের এক চতুর্থাংশ হবে? আমরা বললাম, হ্যাঁ! হে আল্লাহর রসূল! অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা কি এটা পছন্দ করবে যে, তোমরা জান্নাতীদের এক তৃতীয়াংশ হবে? তারা বলল, হ্যাঁ; হে আল্লাহর রসূল! তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি আশা রাখি যে, তোমরা হবে জান্নাতীদের অর্ধেক। বস্তুতঃ অন্যান্য উম্মাতের তুলনায় তোমাদের সংখ্যা হবে সাদা বলদের মধ্যে একটি কালো পশমের মতো অথবা তিনি বলেছেনঃ কালো বলদের মধ্যে একটি সাদা পশমের মতো। (ই.ফা. ৪২৪; ই.সে. ৪৩৮)

৯৬. অধ্যায়ঃ

মহান আল্লাহ আদাম (‘আঃ)-কে বলবেন : “যারা জাহান্নামে প্রেরিত হয়েছে তাদের প্রত্যেক এক হাজারের মধ্যে নয়শত নিরানব্বই জনকে বের করে আনো”

৪২০

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ الْعَبْسِيُّ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَا آدَمُ فَيَقُولُ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ فِي يَدَيْكَ - قَالَ - يَقُولُ أَخْرِجْ بَعْثَ النَّارِ ‏.‏ قَالَ وَمَا بَعْثُ النَّارِ قَالَ مِنْ كُلِّ أَلْفٍ تِسْعَمِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِينَ ‏.‏ قَالَ فَذَاكَ حِينَ يَشِيبُ الصَّغِيرُ وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمْلٍ حَمْلَهَا وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَى وَمَا هُمْ بِسُكَارَى وَلَكِنَّ عَذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَاشْتَدَّ ذَلِكَ عَلَيْهِمْ ‏.‏ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّنَا ذَلِكَ الرَّجُلُ فَقَالَ ‏"‏ أَبْشِرُوا فَإِنَّ مِنْ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ أَلْفًا وَمِنْكُمْ رَجُلٌ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَطْمَعُ أَنْ تَكُونُوا رُبُعَ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏"‏ ‏.‏ فَحَمِدْنَا اللَّهَ وَكَبَّرْنَا ثُمَّ قَالَ ‏"‏ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَطْمَعُ أَنْ تَكُونُوا ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏"‏ ‏.‏ فَحَمِدْنَا اللَّهَ وَكَبَّرْنَا ثُمَّ قَالَ ‏"‏ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَطْمَعُ أَنْ تَكُونُوا شَطْرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ إِنَّ مَثَلَكُمْ فِي الأُمَمِ كَمَثَلِ الشَّعْرَةِ الْبَيْضَاءِ فِي جِلْدِ الثَّوْرِ الأَسْوَدِ أَوْ كَالرَّقْمَةِ فِي ذِرَاعِ الْحِمَارِ ‏"‏ ‏.
আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহামহিম আল্লাহ (কিয়ামাত দিবসে) আহ্বান করবেন, হে আদাম! তিনি উত্তরে বলবেন, আমি আপনার সামনে উপস্থিত, আপনার কাছে শুভ কামনা করি এবং সকল কল্যাণ আপনারই হাতে। মহান আল্লাহ বলবেন : জাহান্নামী দলকে বের কর। আদাম (‘আঃ) জিজ্ঞেস করবেন : জাহান্নামী দল কতজনে? মহান আল্লাহ বলবেন : প্রতি হাজার থেকে নয়শ’ নিরানব্বই। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এটাই সে মুহূর্ত যখন বালক হয়ে যাবে বৃদ্ধ, সকল গর্ভবতী তাদের গর্ভপাত করে ফেলবে আর মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়, বস্তুতঃ আল্লাহর ‘আযাব বড়ই কঠিন। রাবী বলেন, কথাগুলো সহাবাগণের কঠিন মনে হলো। তাঁরা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদের মধ্যে কে সে ব্যক্তি? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আনন্দিত হও। ইয়া’জূয ও মা’জূযের সংখ্যা এক হাজার হলে তোমাদের সংখ্যা হবে একজন। তারপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কসম সে সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আশা রাখি যে, তোমরা জান্নাতীদের এক চতুর্থাংশ হবে। (সহাবা বলেন,) আমরা আল্লাহর প্রশংসা করলাম এবং ‘আল্ল-হু আকবার’ ধ্বনি দিলাম। তারপর আবার তিনি বললেন, শপথ সে সত্তার, যাঁর হাতে আমার জীবন! অবশ্যই আমি আশা রাখি, জান্নাতীদের মধ্যে তোমরা তাদের এক তৃতীয়াংশ হবে। সহাবা বলেন, আমরা বললাম ‘আলহাম্‌দু লিল্লাহ’ এবং ‘আল্ল-হু আকবার’ ধ্বনি দিলাম। তারপর আবার রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কসম সে সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি আশা রাখি যে, তোমরা জান্নাতীদের অর্ধেক হবে এবং তোমরা অন্যান্য উম্মাতের মধ্যে কালো ষাঁড়ের গায়ে একটি সাদা পশমের ন্যায় অথবা গাধার পায়ের চিহ্নের সদৃশ। (ই.ফা. ৪২৫; ই.সে. ৪৩৯)

৪২১

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، كِلاَهُمَا عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ غَيْرَ أَنَّهُمَا قَالاَ ‏"‏ مَا أَنْتُمْ يَوْمَئِذٍ فِي النَّاسِ إِلاَّ كَالشَّعْرَةِ الْبَيْضَاءِ فِي الثَّوْرِ الأَسْوَدِ أَوْ كَالشَّعْرَةِ السَّوْدَاءِ فِي الثَّوْرِ الأَبْيَضِ ‏"‏ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرَا ‏"‏ أَوْ كَالرَّقْمَةِ فِي ذِرَاعِ الْحِمَارِ ‏"‏ ‏.‏
আ’মাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উক্ত সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাঁরা উভয়ে বর্ণনা করেন, “তোমরা সকল মানুষের মধ্যে কালো ষাঁড়ের গায়ে একটি সাদা পশমের মতো হবে অথবা সাদা ষাঁড়ের গায়ে কালো পশমের মতো হবে।” তাঁরা “গাধার পায়ের চিহ্নের মতো” এ কথা উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪২৬; ই.সে. ৪৪০)

No comments

Powered by Blogger.