মুয়াত্তা ইমাম মালিক যবেহ সম্পর্কিত অধ্যায়

যবেহ সম্পর্কিত অধ্যায়

পরিচ্ছেদ

যবেহ করার সময় বিসমিল্লাহ বলা

১০৩২

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقِيلَ لَهُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ نَاسًا مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ يَأْتُونَنَا بِلُحْمَانٍ وَلَا نَدْرِي هَلْ سَمَّوْا اللهَ عَلَيْهَا أَمْ لَا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَمُّوا اللهَ عَلَيْهَا ثُمَّ كُلُوهَا قَالَ مَالِك وَذَلِكَ فِي أَوَّلِ الْإِسْلَامِ.

হিশাম ইবনু উরওয়াহ (র) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : গ্রাম হতে লোকেরা আমাদের জন্য গোশত নিয়ে আসে, জানি না এতে যবেহ করার সময় বিসমিল্লাহ বলা হয়েছিল কিনা। (উহা আমরা খেতে পারি কি?) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : নিজেরা বিসমিল্লাহ বলে খেয়ে নিও। (সহীহ, ইমাম বুখারী আয়িশা (রা) থেকে বর্ণনা করেন [বুখারী ৭৩৯৮] তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)
মালিক (র) বলেন : এই জবাবটি ইসলামের প্রথম যুগের। [১]

[১] হাদীসটির মর্ম হল, কোন মুসলমান যদি গোশত নিয়ে আসে তবে অনর্থক সন্দেহ করো না। বরং মনের দ্বিধা দূর করার জন্য নিজেই বিসমিল্লাহ বলে খেয়ে নাও।

১০৩৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَيَّاشِ بْنِ أَبِي رَبِيعَةَ الْمَخْزُومِيَّ أَمَرَ غُلَامًا لَهُ أَنْ يَذْبَحَ ذَبِيحَةً فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَذْبَحَهَا قَالَ لَهُ سَمِّ اللهَ فَقَالَ لَهُ الْغُلَامُ قَدْ سَمَّيْتُ فَقَالَ لَهُ سَمِّ اللهَ وَيْحَكَ قَالَ لَهُ قَدْ سَمَّيْتُ اللهَ فَقَالَ لَهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَيَّاشٍ وَاللهِ لَا أَطْعَمُهَا أَبَدًا.

ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস ইবনু আবী রবীয়া মাখযুমী (রা) স্বীয় গোলামকে একটি পশু যবেহ করতে নির্দেশ দেন। যবেহ করার সময় ‘আবদুল্লাহ তাকে বললেন : বিসমিল্লাহ বলে নাও। সে বলল : হ্যাঁ, বলেছি। ‘আবদুল্লাহ পুনরায় বলিলেন : কম বখত বিসমিল্লাহ বলে নাও। সে বলল : বলেছি। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস ইবনু আবী রবীয়া (রা) তখন বললেন : আল্লাহর কসম, এই গোশত আমি খাব না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদ

প্রয়োজনবশত যে প্রকারের যবেহ বৈধ

১০৩৪

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ رَجُلًا مِنْ الْأَنْصَارِ مِنْ بَنِي حَارِثَةَ كَانَ يَرْعَى لِقْحَةً لَهُ بِأُحُدٍ فَأَصَابَهَا الْمَوْتُ فَذَكَّاهَا بِشِظَاظٍ فَسُئِلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ لَيْسَ بِهَا بَأْسٌ فَكُلُوْهَا.

আতা ইবনু ইয়াসার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

বনূ হারিসা গোত্রের আনসারী জনৈক ব্যক্তি উহুদের নিকট তার দুধালো উষ্ট্রী চরাচ্ছিল। উষ্ট্রীটি মৃত্যুমুখী হলে তিনি একটি ধারাল লাকড়ি দ্বারা উষ্ট্রীটি যবেহ করেন। অতঃপর এই বিষয়ে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : এতে কোন দোষ নেই। তুমি তা খেতে পার। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১০৩৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ رَجُلٍ مِنْ الْأَنْصَارِ عَنْ مُعَاذِ بْنِ سَعْدٍ أَوْ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ أَنَّ جَارِيَةً لِكَعْبِ بْنِ مَالِكٍ كَانَتْ تَرْعَى غَنَمًا لَهَا بِسَلْعٍ فَأُصِيبَتْ شَاةٌ مِنْهَا فَأَدْرَكَتْهَا فَذَكَّتْهَا بِحَجَرٍ فَسُئِلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ لَا بَأْسَ بِهَا فَكُلُوهَا.

মুআয ইবনু সা’দ (রা) থেকে বর্ণিতঃ

কা’ব ইবনু মালিক (রা)-এর দাসী মদীনার অদূরবর্তী সলা নামক স্থানে বকরী চরাচ্ছিল। হঠাৎ একটি বকরী মারা যাচ্ছিল দেখে সে একটি ধারাল পাথর দ্বারা তাকে যবেহ করে ফেলে। পরে এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন : এতে কোন দোষ নেই। তুমি তা খেতে পার। (সহীহ, বুখারী ৫৫০৫)

১০৩৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ثَوْرِ بْنِ زَيْدٍ الدِّيلِيِّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ ذَبَائِحِ نَصَارَى الْعَرَبِ فَقَالَ لَا بَأْسَ بِهَا وَتَلَا هَذِهِ الْآيَةَ { وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ }.

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিতঃ

কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- আরবীয় খ্রিস্টান কর্তৃক যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া যায়েয কি না? তিনি বলেন : হ্যাঁ, কোন অসুবিধা নাই। অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াতটি পাঠ করেন, وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ “তাদের সাথে যে ব্যক্তি বন্ধুত্ব করবে সে তাদের মধ্যেই গণ্য হবে”। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

[১] এটা দ্বারা ইবনু আব্বাস (রা)-এর এই কথা বোঝান উদ্দেশ্য ছিল যে, কাফেরদের যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া যায়েয হলেও তাদেরকে নিজেদের পশু যবেহ করতে দেয়া উচিত নয় কারণ উহা তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার শামিল।

১০৩৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ كَانَ يَقُولُ مَا فَرَى الْأَوْدَاجَ فَكُلُوهُ
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ مَا ذُبِحَ بِهِ إِذَا بَضَعَ فَلَا بَأْسَ بِهِ إِذَا اضْطُرِرْتَ إِلَيْهِ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রা) বলতেন : যা ধমনীসমূহ কেটে দেয় তা হতে আহার করতে পার। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যাব (রা) বলতেন : যে জিনিসের সাহায্যে যবেহ করা হয় তা যদি ধমনীসমূহ কেটে দেয় তবে প্রয়োজনের সময় উহা আহার করা যায়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদ

যে ধরনের যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া মাকরূহ

১০৩৮

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي مُرَّةَ مَوْلَى عَقِيلِ بْنِ أَبِي طَالِبٍ أَنَّهُ سَأَلَ أَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ شَاةٍ ذُبِحَتْ فَتَحَرَّكَ بَعْضُهَا فَأَمَرَهُ أَنْ يَأْكُلَهَا ثُمَّ سَأَلَ عَنْ ذَلِكَ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ فَقَالَ إِنَّ الْمَيْتَةَ لَتَتَحَرَّكُ وَنَهَاهُ عَنْ ذَلِكَ ১৭৯১-و سُئِلَ مَالِك عَنْ شَاةٍ تَرَدَّتْ فَتَكَسَّرَتْ فَأَدْرَكَهَا صَاحِبُهَا فَذَبَحَهَا فَسَالَ الدَّمُ مِنْهَا وَلَمْ تَتَحَرَّكْ فَقَالَ مَالِك إِذَا كَانَ ذَبَحَهَا وَنَفَسُهَا يَجْرِي وَهِيَ تَطْرِفُ فَلْيَأْكُلْهَا.

আকীল ইবনু আবূ তালীব (রা) থেকে বর্ণিতঃ

একটি বকরী যবেহ করার পর উহার অংশ বিশেষ (পা) নড়াচড়া করেছিল, উহা খাওয়া কি জায়েয হবে? আবূ হুরায়রা (রা) বললেন : খেতে পার। পরে আবূ মুররা যাইদ ইবনু সাবিত (রা)-কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন : মৃত পশুও অনেক সময় নড়ে উঠতে পারে এবং তা খেতে তিনি নিষেধ করে দিলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : কোন একটি বকরী উপর হতে পড়ে তার পা ভেঙ্গে যায়। তখন মালিক তাকে যবেহ করে ফেলে। যবেহ করার সময় রক্ত বের হয়েছিল বটে, তবে তা নড়াচড়া করেনি। এর গোশত খাওয়া কি জায়েয হবে? মালিক (র) বললেন : যবেহ করার সময় যদি রক্ত প্রবাহিত হয় এবং চক্ষু নড়ে তবে উহার গোশত খেতে পার।

পরিচ্ছেদ :

যবেহকৃত পশুর উদরস্থ বাচ্চার যবেহ

১০৩৯

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُوْلُ: إِذَا نُحِرَتْ النَّاقَةُ فَذَكَاةُ مَا فِي بَطْنِهَا فِي ذَكَاتِهَا إِذَا كَانَ قَدْ تَمَّ خَلْقُهُ وَنَبَتَ شَعَرُهُ فَإِذَا خَرَجَ مِنْ بَطْنِ أُمِّهِ ذُبِحَ حَتَّى يَخْرُجَ الدَّمُ مِنْ جَوْفِهِ.

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

উটনী নাহর করা হলে উহার উদরস্থ বাচ্চাটিরও যবেহ হয়েছে বলে গণ্য হবে। শর্ত হল, বাচ্চার সমস্ত অঙ্গ পূর্ণ হতে হবে এবং উহার লোম গজাতে হবে। আর বাচ্চাটি যদি জীবিত বের হয় তবে রক্ত বের করে দেওয়ার উদ্দেশ্য আলাদাভাবে উহা যবেহ করতে হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১০৪০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ قُسَيْطٍ اللَّيْثِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ ذَكَاةُ مَا فِي بَطْنِ الذَّبِيحَةِ فِي ذَكَاةِ أُمِّهِ إِذَا كَانَ قَدْ تَمَّ خَلْقُهُ وَنَبَتَ شَعَرُهُ.

সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (রা) থেকে বর্ণিতঃ

উদরস্থ বাচ্চাটি যদি পূর্ণাঙ্গ হয়ে থাকে এবং উহার লোম গজিয়ে থাকে তবে মায়ের যবেহ বাচ্চার যবেহ বলে গণ্য হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

No comments

Powered by Blogger.