মুয়াত্তা ইমাম মালিক অধ্যায় "তালাক"

তালাক অধ্যায়

পরিচ্ছেদ

আল-বাত্তা [১] তালাকের বর্ণনা

[১] স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর বিচ্ছেদ ঘটে এমন তালাক দেয়াকে তালাক-ই-আল-বাত্তা বলা হয়।

১১৪০

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ إِنِّي طَلَّقْتُ امْرَأَتِي مِائَةَ تَطْلِيقَةٍ فَمَاذَا تَرَى عَلَيَّ فَقَالَ لَهُ ابْنُ عَبَّاسٍ طَلُقَتْ مِنْكَ لِثَلَاثٍ وَسَبْعٌ وَتِسْعُونَ اتَّخَذْتَ بِهَا آيَاتِ اللهِ هُزُوًا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, এক ব্যক্তি ইবন আব্বাস (রা)-এর নিকট বলল : আমি আমার স্ত্রীকে একশত তালাক দিয়েছি। আমার সম্পর্কে এ বিষয়ে আপনার কি অভিমত ? ইবনু আব্বাস (রা) তাকে বললেন : তিন তালাক দ্বারা তুমি তোমার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছ। অবশিষ্ট সাতান্নব্বই তালাক দ্বারা তুমি আল্লাহর আয়াত বিদ্রপ করেছ। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৪১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَجُلًا جَاءَ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ فَقَالَ إِنِّي طَلَّقْتُ امْرَأَتِي ثَمَانِيَ تَطْلِيقَاتٍ فَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَمَاذَا قِيلَ لَكَ قَالَ قِيلَ لِي إِنَّهَا قَدْ بَانَتْ مِنِّي فَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ صَدَقُوا مَنْ طَلَّقَ كَمَا أَمَرَهُ اللهُ فَقَدْ بَيَّنَ اللهُ لَهُ وَمَنْ لَبَسَ عَلَى نَفْسِهِ لَبْسًا جَعَلْنَا لَبْسَهُ مُلْصَقًا بِهِ لَا تَلْبِسُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ وَنَتَحَمَّلُهُ عَنْكُمْ هُوَ كَمَا يَقُولُوْنَ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, এক ব্যক্তি আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসঊদ (রা)-এর নিকট এসে বলল : আমি আমার স্ত্রীকে দুইশত তালাক দিয়েছি। ইবনু মাসঊদ (রা) বললেন : তোমাকে কি বলা হয়েছে? সে বলল : আমাকে জানান হয়েছে যে, আমার স্ত্রী আমার নিকট হতে পৃথক হয়ে গিয়েছে। ইবনু মাসঊদ (রা) বললেন : মুফতীগণ ঠিকই বলেছেন। যে আল্লাহর নির্দেশ মুতাবিক তালাক প্রদান করে তার হুকুম আল্লাহ বর্ণনা করেছেন। আর যে ব্যক্তি নিজের প্রতি কোন প্রকার সন্দেহজনক আচরণ করে আমরা তার সন্দেহ তার উপরই আরোপ করব। তোমরা নিজেদের প্রতি সন্দেহজনক আচরণ করো না, যাতে তোমাদের জন্য আমাদের বিপদে পড়তে হয়। মুফতীগণ যা বলেছেন তাই ফতওয়া (সিদ্ধান্ত)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৪২

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ قَالَ لَهُ الْبَتَّةُ مَا يَقُولُ النَّاسُ فِيهَا قَالَ أَبُو بَكْرٍ فَقُلْتُ لَهُ كَانَ أَبَانُ بْنُ عُثْمَانَ يَجْعَلُهَا وَاحِدَةً فَقَالَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ لَوْ كَانَ الطَّلَاقُ أَلْفًا مَا أَبْقَتْ الْبَتَّةُ مِنْهَا شَيْئًا مَنْ قَالَ الْبَتَّةَ فَقَدْ رَمَى الْغَايَةَ الْقُصْوَى.

আবূ বাকর ইবউ হাযম (র) থেকে বর্ণিতঃ

উমার ইবনু আবদুল ‘আযীয (র) তালাক-ই আল-বাত্তা সম্পর্কে লোকে কি বলে। [অর্থাৎ সাহাবা ও তাঁদের পরবর্তী উলামাগণের এ বিষয়ে কি অভিমত?] ইহা আবূ বাকর ইবন হাযমের কাছে জানতে চাইলে আবূ বাকর বললেন : আবান ইবউ উসমান উহাকে এক তালাক গণ্য করতেন। ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয বললেন : তিনের পরিবর্তে তালাক এক হাজার হলেও তালাক-ই আল-বাত্তা উহার একটিও অবশিষ্ট রাখবে না। যে ব্যক্তি আল-বাত্তা বলল, সে শেষ সীমানায় তীর নিক্ষেপ করল। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৪৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ كَانَ يَقْضِي فِي الَّذِي يُطَلِّقُ امْرَأَتَهُ الْبَتَّةَ أَنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحَبُّ مَا سَمِعْتُ إِلَيَّ فِي ذَلِكَ.

ইবনু শিহাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

কেউ নিজের স্ত্রীকে তালাক-ই আল-বাত্তা দিলে মারওয়ান ইবনু হাকাম (র) উহাতে তিন তালাক হয়েছে বলে ফতওয়া দিতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : এই বিষয়ে যা আমি শুনেছি তন্মধ্যে এটাই আমার কাছে পছন্দীয়।

পরিচ্ছেদ

খালিয়্যা, বারিয়্যা এবং অনুরূপ অন্যান্য কিনায়া তালাকের জন্য প্রযোজ্য শব্দসমূহের বর্ণনা

১১৪৪

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّهُ كُتِبَ إِلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ مِنْ الْعِرَاقِ أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِامْرَأَتِهِ حَبْلُكِ عَلَى غَارِبِكِ فَكَتَبَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ إِلَى عَامِلِهِ أَنْ مُرْهُ يُوَافِينِي بِمَكَّةَ فِي الْمَوْسِمِ فَبَيْنَمَا عُمَرُ يَطُوفُ بِالْبَيْتِ إِذْ لَقِيَهُ الرَّجُلُ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَقَالَ عُمَرُ مَنْ أَنْتَ فَقَالَ أَنَا الَّذِي أَمَرْتَ أَنْ أُجْلَبَ عَلَيْكَ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ أَسْأَلُكَ بِرَبِّ هَذِهِ الْبَنِيَّةِ مَا أَرَدْتَ بِقَوْلِكَ حَبْلُكِ عَلَى غَارِبِكِ فَقَالَ لَهُ الرَّجُلُ لَوْ اسْتَحْلَفْتَنِي فِي غَيْرِ هَذَا الْمَكَانِ مَا صَدَقْتُكَ أَرَدْتُ بِذَلِكَ الْفِرَاقَ فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ هُوَ مَا أَرَدْتَ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

ইরাক হতে ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-এর নিকট লেখা হল যে, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বলেছে حَبْلُكِ عَلَى غَارِبِكِ [তোমার রজ্জু তোমার ঘাড়ে] ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রা) তার নিযুক্ত ইরাকের প্রশাসকের নিকট পত্র লিখলেন হজ্জ মওসুমে সে ব্যক্তিকে আমার সাথে মিলিত হতে নির্দেশ দাও। উমার যখন বায়তুল্লাহর তওয়াফ করেছিলেন তখন এক ব্যক্তি তাঁর সম্মুখে এসে সালাম করল। ‘উমার বললেন, তুমি কে? সে ব্যক্তি বলল, আমি সেই ব্যক্তি, যে ব্যক্তিকে আপনার নিকট (হজ্জ মওসুমে) উপস্থিত হতে নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। তারপর ‘উমার (রা) বললেন, এই (পবিত্র কাবা) গৃহের মালিকের কসম দিয়ে তোমাকে আমি প্রশ্ন করছি যে, তুমি তোমার সেই বক্তব্য حَبْلُكِ عَلَى غَارِبِكِ হবে এর দ্বারা কি উদ্দেশ্য করেছ? সেই ব্যক্তি বলল, এই স্থান ব্যতীত অন্য কোথাও আপনি আমাকে হলফ করালে আমি সত্য কথা বলতাম না। আমি (এই বক্তব্য দ্বারা স্ত্রীকে) বিদায় (দেয়া)-এর নিয়্যত করেছি। ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বললেন, তুমি যা নিয়্যত করেছ তাই। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৪৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ كَانَ يَقُولُ فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ أَنْتِ عَلَيَّ حَرَامٌ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ قَالَ مَالِك وَذَلِكَ أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, যে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে “তুমি আমার জন্য হারাম” এরূপ বলেছে সেই ব্যক্তি সম্পর্কে আলী ইবনু আবি তালিব (রা) বলেছেন যে, উহা তিন তালাক গণ্য হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : এ বিষয়ে আমি যা শুনেছি তন্মধ্যে এটাই উত্তম।

১১৪৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَقُولُ فِي الْخَلِيَّةِ وَالْبَرِيَّةِ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ كُلُّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا.

নাফি’ থেকে বর্ণিতঃ

বারিয়্যা এবং খালিয়্যা উভয় শব্দের প্রত্যেকটির দ্বারা তিন তালাক প্রযোজ্য হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৪৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ أَنَّ رَجُلًا كَانَتْ تَحْتَهُ وَلِيدَةٌ لِقَوْمٍ فَقَالَ لِأَهْلِهَا شَأْنَكُمْ بِهَا فَرَأَى النَّاسُ أَنَّهَا تَطْلِيقَةٌ وَاحِدَةٌ.

কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (র) থেকে বর্ণিতঃ

কোন এক গোত্রের দাসী এক ব্যক্তির স্ত্রী ছিল। সে ব্যক্তি উক্ত দাসীর অভিভাবকদের বলল : আপনারা তার দায়িত্বভার গ্রহণ করুন। এটা দ্বারা লোকেরা এক তালাক প্রদান করেছে বলে অনুমান করলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৪৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُولُ فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ بَرِئْتِ مِنِّي وَبَرِئْتُ مِنْكِ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ بِمَنْزِلَةِ الْبَتَّةِ. قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ أَوْ بَائِنَةٌ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ لِلْمَرْأَةِ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا وَيُدَيَّنُ فِي الَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا أَوَاحِدَةً أَرَادَ أَمْ ثَلَاثًا فَإِنْ قَالَ وَاحِدَةً أُحْلِفَ عَلَى ذَلِكَ وَكَانَ خَاطِبًا مِنْ الْخُطَّابِ لِأَنَّهُ لَا يُخْلِي الْمَرْأَةَ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا زَوْجُهَا وَلَا يُبِينُهَا وَلَا يُبْرِيهَا إِلَّا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ وَالَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا تُخْلِيهَا وَتُبْرِيهَا وَتُبِينُهَا الْوَاحِدَةُ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ইবন শিহাব (র)-কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বলল : “আমি তোমার হতে দায়িত্বমুক্ত হয়েছি। তুমিও আমার হতে দায়িত্বমুক্ত।” এটা দ্বারা তালাক-ই আল-বাত্তা-এর মতো তিন তালাক প্রযোজ্য হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে বলল : “তুমি দায়িত্বমুক্ত” “তুমি আমা হতে পৃথক”। মালিক (র) বলেন : সে স্ত্রী যার সাথে সহবাস করা হয়েছে এরূপ হলে তবে তার স্বামীর উপরিউক্ত বাক্যগুলোর দ্বারা তার উপর তিন তালাক বর্তাবে। আর যদি স্ত্রী এমন হয় যার সাথে সহবাস করা হয়নি, তবে ধর্মত স্বামীকে বিশ্বাস করা হবে এবং তার কাছে জিজ্ঞেস করা হবে সে উপরিউক্ত বাক্যগুলো দ্বার এক তালাক উদ্দেশ্য করেছে, না তিন তালাক। যদি সে এক তালাক উদ্দেশ্য করেছে বলে প্রকাশ করে তা হলে এই বিষয়ে সেই ব্যক্তিকে হলফ দেয়া হবে। (যেহেতু স্বামীর উক্তির দ্বারা স্ত্রীর প্রতি এক তালাক বায়েন প্রযোজ্য হয়েছে, তাই পুনর্বিবাহ ছাড়া স্বামী সেই স্ত্রীকে গ্রহণ করতে পারবে না) তাই সে বিবাহের প্রস্তাবকারী হিসেবে অন্য লোকদের মতো একজন বলে গণ্য হবে। এর কারণ এই যে, যে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করা হয়েছে সে স্ত্রী তিন তালাক ছাড়া দায়িত্বমুক্ত বা স্বামী হতে পৃথক হবে না। আর যার সাথে সঙ্গম হয়নি সে স্ত্রী এক তালাক দ্বারা দায়িত্বমুক্ত ও পৃথক হয়ে যায়।
মালিক (র) বলেছেন : এ বিষয়ে যা আমি শুনেছি তন্মধ্যে এটাই আমার কাছে উত্তম।

পরিচ্ছেদ

স্ত্রীকে তালাকের অধিকার প্রদানের বর্ণনা

১১৪৯

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَجُلًا جَاءَ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ فَقَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنِّي جَعَلْتُ أَمْرَ امْرَأَتِي فِي يَدِهَا فَطَلَّقَتْ نَفْسَهَا فَمَاذَا تَرَى فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ أُرَاهُ كَمَا قَالَتْ، فَقَالَ الرَّجُلُ لَا تَفْعَلْ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ أَنَا أَفْعَلُ أَنْتَ فَعَلْتَهُ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, এক ব্যক্তি আব্দুল্লাহ্ ইবন উমার (রা)-এর কাছে এসে বলল : হে আবূ আবদুর রহমান! আমি আমার স্ত্রীর হস্তে তার অধিকার ন্যস্ত করেছি। সে নিজকে তালাক প্রদান করেছে : এই বিষয়ে আপনার কি অভিমত? ইবনু ‘উমার (রা) বললেন : আমার মতে যেমন বলেছে তেমন হবে। সে ব্যক্তি বলল : হে আবূ আবদুর রহমান! এরূপ করবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইবনু উমার বললেন : আমি করিতেছি, না তুমি করেছ (অর্থাৎ স্ত্রীর হাতে ক্ষমতা প্রদান করলে কেন)?

১১৫০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَقُوْلُ: إِذَا مَلَّكَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ أَمْرَهَا فَالْقَضَاءُ مَا قَضَتْ بِهِ إِلَّا أَنْ يُنْكِرَ عَلَيْهَا وَيَقُولُ لَمْ أُرِدْ إِلَّا وَاحِدَةً فَيَحْلِفُ عَلَى ذَلِكَ وَيَكُونُ أَمْلَكَ بِهَا مَا كَانَتْ فِي عِدَّتِهَا.

নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

আব্দুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) বলতেন : যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে (তালাকের) ক্ষমতা প্রদান করে তবে (এক বা একাধিক তালাকের ব্যাপারে) স্ত্রীর ফয়সালাই ফয়সালা। হ্যাঁ, সে যদি উহা অস্বীকার করে এবং বলে, আমি এক তালাক ছাড়া অন্য কিছু উদ্দেশ্য করিনি এবং সেই মতে সে হলফ করেও বলে, তবে ইদ্দতের সময়ের মধ্যে স্ত্রীর অধিকার বিবেচিত হবে স্বামী (অর্থাৎ ইচ্ছা করলে স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদ

যে অধিকার প্রদানে এক তালাক ওয়াজিব হয়

১১৫১

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ سَعِيدِ بْنِ سُلَيْمَانَ بْنِ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ عَنْ خَارِجَةَ بْنِ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ كَانَ جَالِسًا عِنْدَ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ فَأَتَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَتِيقٍ وَعَيْنَاهُ تَدْمَعَانِ فَقَالَ لَهُ زَيْدٌ مَا شَأْنُكَ فَقَالَ مَلَّكْتُ امْرَأَتِي أَمْرَهَا فَفَارَقَتْنِي فَقَالَ لَهُ زَيْدٌ مَا حَمَلَكَ عَلَى ذَلِكَ قَالَ الْقَدَرُ فَقَالَ زَيْدٌ ارْتَجِعْهَا إِنْ شِئْتَ فَإِنَّمَا هِيَ وَاحِدَةٌ وَأَنْتَ أَمْلَكُ بِهَا.

খারিজা ইবনু যায়দ ইবনু সাবিত (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি যায়দ ইবনু সাবিত (রা)-এর কাছে বসা ছিলেন। এই সময় তার কাছে মুহাম্মাদ ইবনু আবী আতীক এলেন। তার চক্ষুদ্বয় অশ্র“সিক্ত ছিল, যায়দ তাঁর উদ্দেশ্যে বললেন : তোমার ব্যাপার কি? তিনি বললেন : আমার স্ত্রীকে আমি ক্ষমতা প্রদান করেছিলাম। সে আমাকে পরিত্যাগ করেছে। যায়দ বললেন : এইরূপ ক্ষমতা কি জন্য প্রদান করলে? তিনি বললেন : তকদীর। যায়দ বললেন : তুমি স্ত্রীর দিকে প্রত্যাবর্তন কর যদি তোমার ইচ্ছা হয়, কারণ উহা এক তালাক মাত্র। তুমি সেই স্ত্রীর অধিক হকদার। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৫২

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ رَجُلًا مِنْ ثَقِيفٍ مَلَّكَ امْرَأَتَهُ أَمْرَهَا فَقَالَتْ أَنْتَ الطَّلَاقُ فَسَكَتَ ثُمَّ قَالَتْ أَنْتَ الطَّلَاقُ فَقَالَ بِفِيكِ الْحَجَرُ ثُمَّ قَالَتْ أَنْتَ الطَّلَاقُ فَقَالَ بِفَاكِ الْحَجَرُ فَاخْتَصَمَا إِلَى مَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ فَاسْتَحْلَفَهُ مَا مَلَّكَهَا إِلَّا وَاحِدَةً وَرَدَّهَا إِلَيْهِ قَالَ مَالِك قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ فَكَانَ الْقَاسِمُ يُعْجِبُهُ هَذَا الْقَضَاءُ وَيَرَاهُ أَحْسَنَ مَا سَمِعَ فِي ذَلِكَ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ وَأَحَبُّهُ إِلَيَّ.

কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ ইবন আবী বাকর (র) থেকে বর্ণিতঃ

সাকীফ গোত্রের এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে (তালাকের) ক্ষমতা প্রদান করল। সেই স্ত্রী বলল : তোমাকে তালাক। স্বামী চুপ রইল। স্ত্রী পুনরায় বলল : তোমাকে তালাক। সে ব্যক্তি বলল : তোমার মুখে প্রস্তর (পতিত হোক)। স্ত্রী পুনরায় বলল : তোমাকে তালাক। সে বলল : তোমার মুখে পাথর। উভয়ে বিচার প্রার্থী হয়ে মারওয়ান ইবন হাকামের কাছে উপস্থিত হল। মারওয়ান স্বামীর নিকট হতে এই বিষয়ে হলফ তলব করল যে, সে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রয়োগের দ্বারা এক তালাক ব্যতীত অন্য কিছু উদ্দেশ্য করেনি। অতঃপর স্ত্রীকে তার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : ‘আবদুর রহমান (র) বলেছেন : কাসিম (র) এই ফয়সালা খুব পছন্দ করতেন এবং এই বিষয়ে যা শুনেছেন তন্মধ্যে এটাকে উত্তম বলে গণ্য করতেন।
মালিক (র) বলেন : আমি এই বিষয়ে যা শুনেছি তন্মধ্যে এটাই সর্বোত্তম এবং আমার নিকট সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয়।

পরিচ্ছেদ

যে ক্ষমতা প্রদান তালাকের কারণ হয় না তার বর্ণনা

১১৫৩

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ أَنَّهَا خَطَبَتْ عَلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ قَرِيبَةَ بِنْتَ أَبِي أُمَيَّةَ فَزَوَّجُوهُ ثُمَّ إِنَّهُمْ عَتَبُوا عَلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَقَالُوا مَا زَوَّجْنَا إِلَّا عَائِشَةَ فَأَرْسَلَتْ عَائِشَةُ إِلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لَهُ فَجَعَلَ أَمْرَ قَرِيبَةَ بِيَدِهَا فَاخْتَارَتْ زَوْجَهَا فَلَمْ يَكُنْ ذَلِكَ طَلَاقًا.

কাসিম ইবন মুহাম্মাদ ইবন আবী বাকর (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আয়িশা (রা) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি আবদুর রহমান ইবনু আবী বাকর (রা)-এর জন্য কুরায়যা বিনত আবী উমাইয়ার বিবাহের প্রস্তাব করলেন, (কন্যা কর্তৃপক্ষ) তাঁর কাছে বিবাহ দিলেন। তারপর (কোন কারণে) তাঁরা আবদুর রহমানের উপর অসন্তুষ্ট হলেন [১] এবং তারা বললেন : আমরা আয়িশা (রা)-এর কারণে বিবাহে সম্মত হয়েছি। ‘আয়িশা (রা) আবদুর রহমানের কাছে লোক প্রেরণ করলেন এবং তাদের বক্তব্য অবহিত করলেন। আবদুর রহমান কুরায়যার বিষয় কুরায়যার উপর ন্যস্ত করলেন। কুরায়যা (রা) তাঁর স্বামীকে গ্রহণ করলেন। [২] ইহা তালাক বলে গণ্য হল না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

[১] আবদুর রহমান ইবনু আবূ বাকর (রা) রূঢ় প্রকৃতির ছিলেন। একদিন কোন বিষয়ে তাঁর স্ত্রী অসন্তুষ্ট হয়ে বললেনঃ আপনার সম্পর্কে আমাকে পূর্বেই সতর্ক করা হয়েছিল। -আওজাযুল মাসালিক
[২] অর্থাৎ আবদুর রহমান (রা) কুরায়যা (রা)-কে তাঁর নিকট থাকা না থাকার অধিকার প্রদান করলেন। উত্তরে কুরায়যা (রা) বললেনঃ আমি আবূ বাকর (রা)-এর পুত্রকে ত্যাগ করব না। -আওজাযুল মাসালিক

১১৫৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَوَّجَتْ حَفْصَةَ بِنْتَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُنْذِرَ بْنَ الزُّبَيْرِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ غَائِبٌ بِالشَّامِ فَلَمَّا قَدِمَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ قَالَ وَمِثْلِي يُصْنَعُ هَذَا بِهِ وَمِثْلِي يُفْتَاتُ عَلَيْهِ فَكَلَّمَتْ عَائِشَةُ الْمُنْذِرَ بْنَ الزُّبَيْرِ فَقَالَ الْمُنْذِرُ فَإِنَّ ذَلِكَ بِيَدِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ مَا كُنْتُ لِأَرُدَّ أَمْرًا قَضَيْتِهِ فَقَرَّتْ حَفْصَةُ عِنْدَ الْمُنْذِرِ وَلَمْ يَكُنْ ذَلِكَ طَلَاقًا.

আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুর রহমানের কন্যা হাফসাকে মুনযির ইবনু যুবায়র-এর নিকট বিবাহ দিলেন। আবদুর রহমান ছিলেন তখন সিরিয়াতে (তিনি তাই এই বিবাহে অনুপস্থিত ছিলেন)। আবদুর রহমান যখন সিরিয়া হতে প্রত্যাবর্তন করলেন (এবং এই বিবাহের সংবাদ অবগত হলেন) তিনি বললেন : আমার মতো লোকের সাথে ইহা করা হল, আমার ব্যাপারে আমাকে উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হল। অতঃপর আয়িশা (রা) মুনযির ইবনু যুবায়র-এর সাথে আলোচনা করলেন। মুনযির বললেন : আবদুর রহমানের হাতেই এর (এই বিবাহ বহাল রাখা না রাখার) ক্ষমতা রয়েছে। আবদুর রহমান বললেন : যে ব্যাপারে আপনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন আমি তাকে পরিবর্তন করব না, তাই হাফসা মুনযিরের কাছেই রইলেন এবং ইহা তালাক বলে গণ্য হয়নি। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৫৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ وَأَبَا هُرَيْرَةَ سُئِلَا عَنْ الرَّجُلِ يُمَلِّكُ امْرَأَتَهُ أَمْرَهَا فَتَرُدُّ بِذَلِكَ إِلَيْهِ وَلَا تَقْضِي فِيهِ شَيْئًا فَقَالَا لَيْسَ ذَلِكَ بِطَلَاقٍ ১৭و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ قَالَ إِذَا مَلَّكَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ أَمْرَهَا فَلَمْ تُفَارِقْهُ وَقَرَّتْ عِنْدَهُ فَلَيْسَ ذَلِكَ بِطَلَاقٍ قَالَ مَالِك فِي الْمُمَلَّكَةِ إِذَا مَلَّكَهَا زَوْجُهَا أَمْرَهَا ثُمَّ افْتَرَقَا وَلَمْ تَقْبَلْ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَلَيْسَ بِيَدِهَا مِنْ ذَلِكَ شَيْءٌ وَهُوَ لَهَا مَا دَامَا فِي مَجْلِسِهِمَا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, আব্দুল্লাহ্ ইবনু উমার এবং আবূ হুরায়রা (রা)-কে প্রশ্ন করা হল এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে, যে ব্যক্তি স্ত্রীকে তার নিজের বিষয়ে ইখতিয়ার দিয়েছে। স্ত্রী উক্ত ক্ষমতা স্বামীর দিকে ফিরিয়ে দিয়েছে এবং এই ব্যাপারে নিজে ক্ষমতা প্রয়োগ করেনি। (এটার কি হুকুম) তাঁরা উভয়ে বললেন, ইহা তালাক নয়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যিব (র) বলেন : কোন ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে তার (বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যাপারে) ক্ষমতা প্রদান করলে সে যদি স্বামীকে ত্যাগ না করে এবং তার স্ত্রীরূপে বহাল থাকে, তবে এটা তালাক বলে গণ্য হবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : যেই স্ত্রীলোকের প্রতি তার স্বামী ক্ষমতা অর্পণ করল, অতঃপর তারা উভয়ে মজলিস ত্যাগ করে পৃথক হয়ে গেল। স্ত্রী সেই ক্ষমতা গ্রহণ করেনি। তবে সেই স্ত্রীর হাতে আর কোন ক্ষমতা থাকবে না। তার হাতে ততক্ষণ ক্ষমতা থাকবে যতক্ষণ তারা সেই মসজিস ত্যাগ না করে।

পরিচ্ছেদ

স্ত্রীর সাথে মিলিত হবে না বলে শপথ করলে তার কি হুকুম

১১৫৬

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ أَنَّهُ كَانَ يَقُوْلُ: إِذَا آلَى الرَّجُلُ مِنْ امْرَأَتِهِ لَمْ يَقَعْ عَلَيْهِ طَلَاقٌ وَإِنْ مَضَتْ الْأَرْبَعَةُ الْأَشْهُرِ حَتَّى يُوقَفَ فَإِمَّا أَنْ يُطَلِّقَ وَإِمَّا أَنْ يَفِيءَ قَالَ مَالِك وَذَلِكَ الْأَمْرُ عِنْدَنَا.

আলী ইবনু আবী তালিব (রা) থেকে বর্ণিতঃ

কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর ব্যাপারে ‘ঈলা’ করলে উহাতে তালাক হবে না। যদি ঈলার পর চার মাস অতিবাহিত হয় (সে কিছু না করে), তবে তাকে বন্দী করা হবে, হয়ত সে তালাক দিবে নতুবা ঈলা হতে ফিরে আসবে (অর্থাৎ স্ত্রীকে গ্রহণ করে কসমের কাফ্ফারা দিবে)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে এটাই সিদ্ধান্ত।

১১৫৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُوْلُ: أَيُّمَا رَجُلٍ آلَى مِنْ امْرَأَتِهِ فَإِنَّهُ إِذَا مَضَتْ الْأَرْبَعَةُ الْأَشْهُرِ وُقِفَ حَتَّى يُطَلِّقَ أَوْ يَفِيءَ وَلَا يَقَعُ عَلَيْهِ طَلَاقٌ إِذَا مَضَتْ الْأَرْبَعَةُ الْأَشْهُرِ حَتَّى يُوْقَفَ.
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ وَأَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ كَانَا يَقُولَانِ فِي الرَّجُلِ يُولِي مِنْ امْرَأَتِهِ إِنَّهَا إِذَا مَضَتْ الْأَرْبَعَةُ الْأَشْهُرِ فَهِيَ تَطْلِيقَةٌ وَلِزَوْجِهَا عَلَيْهَا الرَّجْعَةُ مَا كَانَتْ فِي الْعِدَّةِ.

আব্দুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

কেউ স্ত্রীর সাথে ‘ঈলা’ করলে তবে চার মাস অতিবাহিত হলে তাকে বন্দী করা হবে, যাবৎ তালাক না দেয় অথবা কসম ভঙ্গ করে কাফফারা আদায় করে স্ত্রীকে গ্রহণ করবে। চার মাস অতিবাহিত হলে তাকে বন্দী না করা পর্যন্ত তালাক প্রযোজ্য হবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইবনু শিহাব (র) হতে বর্ণিত, সাঈদ ইবনু মুসায়্যিব এবং আবদুর রহমান ইবনু আবূ বাকর (রা) তারা উভয়ে বলতেন : যে ব্যাক্তি স্ত্রীর সাথে ঈলা করেছে, চার মাস অতিবাহিত হলে তা এক তালাক গণ্য হবে। ইদ্দতের ভিতর সে ব্যক্তি স্ত্রীর দিকে রুজূ ‘(উহাকে গ্রহণ) করতে পারবে।

১১৫৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ كَانَ يَقْضِي فِي الرَّجُلِ إِذَا آلَى مِنْ امْرَأَتِهِ أَنَّهَا إِذَا مَضَتْ الْأَرْبَعَةُ الْأَشْهُرِ فَهِيَ تَطْلِيقَةٌ وَلَهُ عَلَيْهَا الرَّجْعَةُ مَا دَامَتْ فِي عِدَّتِهَا قَالَ مَالِك وَعَلَى ذَلِكَ كَانَ رَأْيُ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يُولِي مِنْ امْرَأَتِهِ فَيُوقَفُ فَيُطَلِّقُ عِنْدَ انْقِضَاءِ الْأَرْبَعَةِ الْأَشْهُرِ ثُمَّ يُرَاجِعُ امْرَأَتَهُ أَنَّهُ إِنْ لَمْ يُصِبْهَا حَتَّى تَنْقَضِيَ عِدَّتُهَا فَلَا سَبِيلَ لَهُ إِلَيْهَا وَلَا رَجْعَةَ لَهُ عَلَيْهَا إِلَّا أَنْ يَكُونَ لَهُ عُذْرٌ مِنْ مَرَضٍ أَوْ سِجْنٍ أَوْ مَا أَشْبَهَ ذَلِكَ مِنْ الْعُذْرِ فَإِنَّ ارْتِجَاعَهُ إِيَّاهَا ثَابِتٌ عَلَيْهَا فَإِنْ مَضَتْ عِدَّتُهَا ثُمَّ تَزَوَّجَهَا بَعْدَ ذَلِكَ فَإِنَّهُ إِنْ لَمْ يُصِبْهَا حَتَّى تَنْقَضِيَ الْأَرْبَعَةُ الْأَشْهُرِ وُقِفَ أَيْضًا فَإِنْ لَمْ يَفِئْ دَخَلَ عَلَيْهِ الطَّلَاقُ بِالْإِيلَاءِ الْأَوَّلِ إِذَا مَضَتْ الْأَرْبَعَةُ الْأَشْهُرِ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ عَلَيْهَا رَجْعَةٌ لِأَنَّهُ نَكَحَهَا ثُمَّ طَلَّقَهَا قَبْلَ أَنْ يَمَسَّهَا فَلَا عِدَّةَ لَهُ عَلَيْهَا وَلَا رَجْعَةَ.
قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يُولِي مِنْ امْرَأَتِهِ فَيُوقَفُ بَعْدَ الْأَرْبَعَةِ الْأَشْهُرِ فَيُطَلِّقُ ثُمَّ يَرْتَجِعُ وَلَا يَمَسُّهَا فَتَنْقَضِي أَرْبَعَةُ أَشْهُرٍ قَبْلَ أَنْ تَنْقَضِيَ عِدَّتُهَا إِنَّهُ لَا يُوقَفُ وَلَا يَقَعُ عَلَيْهِ طَلَاقٌ وَإِنَّهُ إِنْ أَصَابَهَا قَبْلَ أَنْ تَنْقَضِيَ عِدَّتُهَا كَانَ أَحَقَّ بِهَا وَإِنْ مَضَتْ عِدَّتُهَا قَبْلَ أَنْ يُصِيبَهَا فَلَا سَبِيلَ لَهُ إِلَيْهَا وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ.
قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يُولِي مِنْ امْرَأَتِهِ ثُمَّ يُطَلِّقُهَا فَتَنْقَضِي الْأَرْبَعَةُ الْأَشْهُرِ قَبْلَ انْقِضَاءِ عِدَّةِ الطَّلَاقِ قَالَ هُمَا تَطْلِيقَتَانِ إِنْ هُوَ وُقِفَ وَلَمْ يَفِئْ وَإِنْ مَضَتْ عِدَّةُ الطَّلَاقِ قَبْلَ الْأَرْبَعَةِ الْأَشْهُرِ فَلَيْسَ الْإِيلَاءُ بِطَلَاقٍ وَذَلِكَ أَنَّ الْأَرْبَعَةَ الْأَشْهُرِ الَّتِي كَانَتْ تُوقَفُ بَعْدَهَا مَضَتْ وَلَيْسَتْ لَهُ يَوْمَئِذٍ بِامْرَأَةٍ.
قَالَ مَالِك وَمَنْ حَلَفَ أَنْ لَا يَطَأَ امْرَأَتَهُ يَوْمًا أَوْ شَهْرًا ثُمَّ مَكَثَ حَتَّى يَنْقَضِيَ أَكْثَرُ مِنْ الْأَرْبَعَةِ الْأَشْهُرِ فَلَا يَكُونُ ذَلِكَ إِيلَاءً وَإِنَّمَا يُوقَفُ فِي الْإِيلَاءِ مَنْ حَلَفَ عَلَى أَكْثَرَ مِنْ الْأَرْبَعَةِ الْأَشْهُرِ فَأَمَّا مَنْ حَلَفَ أَنْ لَا يَطَأَ امْرَأَتَهُ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ أَوْ أَدْنَى مِنْ ذَلِكَ فَلَا أَرَى عَلَيْهِ إِيلَاءً لِأَنَّهُ إِذَا دَخَلَ الْأَجَلُ الَّذِي يُوقَفُ عِنْدَهُ خَرَجَ مِنْ يَمِينِهِ وَلَمْ يَكُنْ عَلَيْهِ وَقْفٌ قَالَ مَالِك مَنْ حَلَفَ لِامْرَأَتِهِ أَنْ لَا يَطَأَهَا حَتَّى تَفْطِمَ وَلَدَهَا فَإِنَّ ذَلِكَ لَا يَكُونُ إِيلَاءً وَقَدْ بَلَغَنِي أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ سُئِلَ عَنْ ذَلِكَ فَلَمْ يَرَهُ إِيلَاءً.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

মারওয়ান ইবনু হাকাম (র) ফয়সালা দিতেন, যে ব্যক্তি স্ত্রীর সাথে ‘ঈলা’ করেছে, তবে চার মাস অতিবাহিত হলে তা এক তালাক বলে গণ্য হবে। ইদ্দতের ভিতর স্ত্রীর দিকে রুজূ করার ইখতিয়ার স্বামীর থাকবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : ইবনু শিহাব (যুহরী)-এর অভিমতও অনুরূপ ছিল।
মালিক (র) বলেন : স্ত্রীর সাথে কোন লোক ‘ঈলা’ করলে তাকে বাধ্য করা হবে। চার মাস অতিবাহিত হলে সে স্ত্রীকে তালাক দিবে। অতঃপর যে রুজু করবে, তবে সে ব্যক্তি স্ত্রীর সাথে মিলিত না হলে এবং এইরূপে ইদ্দত খতম হয়ে গেলে সে আর রুজু করতে পারবে না। হ্যাঁ, যদি তার কোন ওযর থাকে, (যেমন) বন্দী থাকা, রোগ বা অনুরূপ অন্য কোন ‘ওযর, তবে (মৌখিকভাবে) তা রুজূ গ্রহণযোগ্য হবে। আর যদি ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার পর সে পুনরায় সেই স্ত্রীকে বিবাহ করে তাবে যদি সে স্ত্রীর সাথে মিলিত না হয় এবং সেই অবস্থায় চার মাস অতিবাহিত হয় তবে তাকে বাধ্য করা হবে। সে স্ত্রীর দিকে প্রত্যাবর্তন না করলে প্রথম ‘ঈলা’-র দ্বারা স্ত্রীর উপর তালাক প্রযোজ্য হবে না। চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আর স্ত্রীর দিকে রুজূ‘ করার ক্ষমতাও তার থাকবে না। কারণ সে বিবাহ করেছে এবং সহবাসের পূর্বে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে, এরূপ অবস্থাতে ইদ্দতও নাই এবং রুজূ‘র অধিকারও থাকবে না।
মালিক (র) বলেন : যে ব্যক্তি স্ত্রীর সাথে ‘ঈলা’ করেছে, চার মাসের পর সে ব্যক্তিকে বাধ্য করা হবে। সে তালাক প্রদান করবে অতঃপর রুজূ‘ করবে, কিন্তু (রুজূ‘করার পর) স্ত্রীর সাথে সঙ্গম না করলে তালাক প্রযোজ্য হবে না। আর যদি ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বে স্ত্রীর সাথে মিলিত হয় তবে সে সেই স্ত্রীর (দিকে রুজূ‘করার) অধিক হকদার হবে। আর যদি মিলিত হওয়ার পূর্বে ইদ্দত শেষ হয়ে যায় তবে সেই স্ত্রীকে রাখার কোন ইখতিয়ার তার নেই।
মালিক (র) বলেন, এটাই উত্তম, যা আমি এই বিষয়ে শুনেছি।
মালিক (র) বলেন : যে ব্যক্তি স্ত্রীর সাথে ‘ঈলা’ করে, অতঃপর স্ত্রীকে তালাক প্রদান করে, তারপর তালাকের ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বে চারমাস অতিবাহিত হয়, মালিক (র) বলেন : তখন যদি সে ঈলার উপর স্থির থাকে এবং প্রত্যাবর্তন না করে তবে এটা দুই তালাক বলে গণ্য হবে। আর যদি চারমাস অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে তালাকের ইদ্দত খতম হয়ে যায়, তবে ‘ঈলা’ তালাক বলে গণ্য হবে না। কারণ, যে চারমাস অতিবাহিত হওয়ার পর তাকে বাধ্য করা হতে সেই চারমাস (সময়) অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় সে আর তার স্ত্রী রইল না।
মালিক (র) বলেন : যে ব্যক্তি একদিন অথবা একমাস স্ত্রীর সাথে বসবাস করবে না বলে হলফ করল, অতঃপর চার মাসের অধিক সময় এভাবে অতিবাহিত হল, তবে ইহা ঈলা বলে গণ্য হবে না। কারণ, চার মাসের অধিক সময় স্ত্রীর সাথে সহবাস করবে না বলে হলফ করাকে ঈলা গণ্য করা হয়। আর যে ব্যক্তি চারমাস অথবা ইহা হতে কম সময়ের জন্য হলফ করে আমি তাকে ঈলা বলে মনে করি না। কারণ, সে সময় অতিবাহিত হওয়ার পর, স্বামীকে বাধ্য করার নিয়ম রয়েছে তা অতিক্রম করার পূর্বে সে তার শপথ হতে বের হয়ে আসবে তখন তাকে আর বাধ্য করা যাবে না।
মালিক (র) বলেন : বাচ্চার দুধ না ছাড়ান পর্যন্ত স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করবে বলে হলফ করলে তা ‘ঈলা’ বলে গণ্য হবে না।
মালিক (র) বলেন : আমার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, আলী ইবনু আবী তালীব (রা)-কে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি এটা ‘ঈলা’ নয় বলে মত প্রকাশ করেছেন।

পরিচ্ছেদ

ক্রীতদাসের ‘ঈলা’

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَأَلَ ابْنَ شِهَابٍ عَنْ إِيلَاءِ الْعَبْدِ فَقَالَ هُوَ نَحْوُ إِيلَاءِ الْحُرِّ وَهُوَ عَلَيْهِ وَاجِبٌ وَإِيلَاءُ الْعَبْدِ شَهْرَانِ.
মালিক (র) ইবনু শিহাব (র)-এর নিকট ক্রীতদাসের ঈলা সম্বন্ধে প্রশ্ন করেছেন, তিনি বললেন : ক্রীতদাসের ‘ঈলা’ স্বাধীন ব্যক্তির ঈলার মতো। সেই ঈলা তার উপর ওয়াজিব হবে। আর ক্রীতদাসের ‘ঈলা’র সময় হচ্ছে দুই মাস। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদ

আযাদ ব্যক্তির যিহার

১১৫৯

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ سَعِيدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ أَنَّهُ سَأَلَ الْقَاسِمَ بْنَ مُحَمَّدٍ عَنْ رَجُلٍ طَلَّقَ امْرَأَةً إِنْ هُوَ تَزَوَّجَهَا فَقَالَ الْقَاسِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ إِنَّ رَجُلًا جَعَلَ امْرَأَةً عَلَيْهِ كَظَهْرِ أُمِّهِ إِنْ هُوَ تَزَوَّجَهَا فَأَمَرَهُ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ إِنْ هُوَ تَزَوَّجَهَا أَنْ لَا يَقْرَبَهَا حَتَّى يُكَفِّرَ كَفَّارَةَ الْمُتَظَاهِرِ.

সাঈদ ইবনু আমর ইবনু সুলায়মান যুরাক্কী (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (র)-এর নিকট প্রশ্ন করলেন এক ব্যক্তি সম্বন্ধে, যে লোক স্ত্রীকে বলল : আমি তোমাকে বিবাহ করলে তুমি তালাক। কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ বললেন : এক ব্যক্তি জনৈকা মহিলার সাথে এই বলে যিহার [১] করল, তার জন্য সে তার মাতার পিঠের তুল্য, যদি সে তাকে বিবাহ করে। উমার ইবনু খাত্তাব (রা) সেই ব্যক্তিকে নির্দেশ দিলেন যে, যদি সে তাকে বিবাহ করে তবে যিহারকারীর মতো কাফ্ফারা না দেওয়া পর্যন্ত সে যেন ঐ স্ত্রীর নিকট না যায়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

[১] তুমি আমার কাছে আমার মায়ের পিঠের তুল্য, তুমি আমার মায়ের সমান, এইরূপ বলার নাম যিহার।

১১৬০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَجُلًا سَأَلَ الْقَاسِمَ بْنَ مُحَمَّدٍ وَسُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ عَنْ رَجُلٍ تَظَاهَرَ مِنْ امْرَأَتِهِ قَبْلَ أَنْ يَنْكِحَهَا فَقَالَا إِنْ نَكَحَهَا فَلَا يَمَسَّهَا حَتَّى يُكَفِّرَ كَفَّارَةَ الْمُتَظَاهِرِ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, এক ব্যক্তি কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (র) এবং সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র)-এর নিকট প্রশ্ন করল এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে, যে ব্যক্তি এক স্ত্রীলোকের সাথে যিহার করেছে তাকে বিবাহ করার পূর্বে। তারা উভয়ে বললেন : যদি সেই স্ত্রীলোককে বিবাহ করে তাবে সে যিহারের কাফ্ফারা না দেওয়া পর্যন্ত উক্ত স্ত্রীকে স্পর্শও করবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৬১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ قَالَ فِي رَجُلٍ تَظَاهَرَ مِنْ أَرْبَعَةِ نِسْوَةٍ لَهُ بِكَلِمَةٍ وَاحِدَةٍ إِنَّهُ لَيْسَ عَلَيْهِ إِلَّا كَفَّارَةٌ وَاحِدَةٌ.

উরওয়া ইবনু যুবায়র (র) থেকে বর্ণিতঃ

সেই ব্যক্তিকে একটি মাত্র কাফ্ফারা দিতে হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) রবি’আ ইবনু আবদুর রহমান (র) হতে অনুরূপ রেওয়ায়ত করেছেন। মালিক (র) বলেন : এই ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্তও অনুরূপ।
মালিক (র) বলেন : আল্লাহ তা‘আলা তার কিতাবে যিহারের কাফ্ফারা সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন যে, স্ত্রীকে স্পর্শ করার পূর্বে সে একটি ক্রীতদাস আযাদ করবে। যে ইহার সামর্থ্য রাখে না, সে স্ত্রীকে স্পর্শ করার পূর্বে একাধারে দুই মাস রোযা পালন করবে। আর যে ব্যক্তি ইহারও ক্ষমতা রাখে না সে ষাটজন মিসকীনকে আহার করাবে।

১১৬২

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ أَنَّهُ سَمِعَ رَجُلًا يَسْأَلُ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ عَنْ رَجُلٍ قَالَ لِامْرَأَتِهِ كُلُّ امْرَأَةٍ أَنْكِحُهَا عَلَيْكِ مَا عِشْتِ فَهِيَ عَلَيَّ كَظَهْرِ أُمِّي فَقَالَ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ يُجْزِيهِ عَنْ ذَلِكَ عِتْقُ رَقَبَةٍ.

হিশাম ইবনু উরওয়া (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি জনৈক লোককে উরওয়া ইবনু যুবায়র (র)-এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনেছেন এক ব্যক্তি সম্পর্কে, যে নিজের স্ত্রীকে বলেছে “তুমি বেঁচে থাকা পর্যন্ত তোমার উপর যে কোন স্ত্রীলোককে আমি বিবাহ করি, সে আমার জন্য আমার জননীর পিঠের তুল্য।” উরওয়া ইবনু যুবায়র (র) বললেন : এই উক্তির জন্য একটি ক্রীতদাসকে আযাদ করলেই যথেষ্ট হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদ

ক্রীতদাসের যিহার

১১৬৩

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَأَلَ ابْنَ شِهَابٍ عَنْ ظِهَارِ الْعَبْدِ فَقَالَ نَحْوُ ظِهَارِ الْحُرِّ قَالَ مَالِك يُرِيدُ أَنَّهُ يَقَعُ عَلَيْهِ كَمَا يَقَعُ عَلَى الْحُرِّ قَالَ مَالِك وَظِهَارُ الْعَبْدِ عَلَيْهِ وَاجِبٌ وَصِيَامُ الْعَبْدِ فِي الظِّهَارِ شَهْرَانِ.
قَالَ مَالِك فِي الْعَبْدِ يَتَظَاهَرُ مِنْ امْرَأَتِهِ إِنَّهُ لَا يَدْخُلُ عَلَيْهِ إِيلَاءٌ وَذَلِكَ أَنَّهُ لَوْ ذَهَبَ يَصُومُ صِيَامَ كَفَّارَةِ الْمُتَظَاهِرِ دَخَلَ عَلَيْهِ طَلَاقُ الْإِيلَاءِ قَبْلَ أَنْ يَفْرُغَ مِنْ صِيَامِهِ

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ইবনু শিহাব (র)-কে দাসের যিহার সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন। তিনি বললেন : ক্রীতদাসের যিহার আযাদ ব্যক্তির যিহারের মতো। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : এটার উদ্দেশ্য হচ্ছে যিহারের দ্বারা আযাদ ব্যক্তির উপর যা বর্তাবে ক্রীতদাসের উপরও তাই বর্তাবে।
মালিক (র) বলেন : ক্রীতদাসের যিহার তার উপর ওয়াজিব হবে। যিহারের ব্যাপারে ক্রীতদাস দুই মাস সিয়াম পালন করবে।
যে ক্রীতদাস নিজের স্ত্রীর সাথে যিহার করেছে, সে উহার উপর ‘ঈলা’ ঢুকাতে পারবে না, কারণ সে যিহারের কাফ্ফারা রোযা পালন করলে তার রোযা হতে অবকাশ পাওয়ার পূর্বেই স্ত্রীর উপর ‘ঈলা’-এর তালাক প্রযোজ্য হবে (কারণ, তার মতে ক্রীতদাসের ঈলার সময় দুই মাস)।

পরিচ্ছেদ ১০

আযাদীর ইখতিয়ার অর্থাৎ স্ত্রী কর্তৃক তালাকের অধিকার প্রাপ্তির পর নিজের অধিকার প্রয়োগ সম্পর্কিত

১১৬৪

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ أَنَّهَا قَالَتْ: كَانَ فِي بَرِيرَةَ ثَلَاثُ سُنَنٍ فَكَانَتْ إِحْدَى السُّنَنِ الثَّلَاثِ أَنَّهَا أُعْتِقَتْ فَخُيِّرَتْ فِي زَوْجِهَا وَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْوَلَاءُ لِمَنْ أَعْتَقَ وَدَخَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْبُرْمَةُ تَفُورُ بِلَحْمٍ فَقُرِّبَ إِلَيْهِ خُبْزٌ وَأُدْمٌ مِنْ أُدْمِ الْبَيْتِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَلَمْ أَرَ بُرْمَةً فِيهَا لَحْمٌ فَقَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ وَلَكِنْ ذَلِكَ لَحْمٌ تُصُدِّقَ بِهِ عَلَى بَرِيرَةَ وَأَنْتَ لَا تَأْكُلُ الصَّدَقَةَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هُوَ عَلَيْهَا صَدَقَةٌ وَهُوَ لَنَا هَدِيَّةٌ.

কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (র) থেকে বর্ণিতঃ

‘আয়িশা উম্মুল মু’মিনীন (রা) বলেছেন : বারীরা (রা) সম্পর্কে তিনটি আহকাম জারি করা হয়েছিল। তিনটির সুন্নত বা আহকামের একটি ছিল :
তাকে আযাদ করা হয় এবং তাকে আযাদীর পর স্বামীর সাথে থাকার ব্যাপারে ইখতিয়ার প্রদান করা হয়। (দ্বিতীয় সুন্নত এই) রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে কর্তা আযাদ করবে সেই সম্পত্তির উত্তরাধিকার লাভ করবে। (তৃতীয় সুন্নত এই) রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারীরা (রা)-এর গৃহে প্রবেশ করলেন। তখন ডেকচিতে গোশত সিদ্ধ হচ্ছিল। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে রুটি এবং গৃহে মওজুদ ব্যঞ্জন উপস্থিত করা হল। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : আমি কি ডেকচিতে গোশত সিদ্ধ হতে দেখিনি? (তবে আমার নিকট গোশত পেশ না করার কারণ কি?) তারা বললেন : হ্যাঁ হে রসূলুল্লাহ! তবে উহা ছিল এমন গোশত যা বরীরাকে সদকা স্বরূপ দেওয়া হয়েছিল। আপনি তো সদকার বস্তু আহার করেন না। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : উহা বারীরার জন্য ছিল সদকা কিন্তু (বারীরা মালিক হওয়ার পর) উহা আমাদের জন্য হচ্ছে হাদিয়া। (বুখারী ৫২৭৯, মুসলিম ১৫০৪)

১১৬৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ فِي الْأَمَةِ تَكُونُ تَحْتَ الْعَبْدِ فَتَعْتِقُ إِنَّ الْأَمَةَ لَهَا الْخِيَارُ مَا لَمْ يَمَسَّهَا قَالَ مَالِك وَإِنْ مَسَّهَا زَوْجُهَا فَزَعَمَتْ أَنَّهَا جَهِلَتْ أَنَّ لَهَا الْخِيَارَ فَإِنَّهَا تُتَّهَمُ وَلَا تُصَدَّقُ بِمَا ادَّعَتْ مِنْ الْجَهَالَةِ وَلَا خِيَارَ لَهَا بَعْدَ أَنْ يَمَسَّهَا.

নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

আব্দুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) বলতেন : কোন ক্রীতদাসী কোন ক্রীতদাসের স্ত্রী থাকলে অতঃপর সেই ক্রীতদাসীকে (মালিক কর্তৃক) আযাদ করা হলে তবে স্বামী তার সাথে সহবাস না করা পর্যন্ত (বিবাহে থাকা না থাকার ব্যাপারে) ক্রীতদাসীর ইখতিয়ার থাকবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : যদি তার স্বামী তার সাথে সহবাস করার পরে সে ধারণা করে যে, ইখতিয়ারের সম্পর্কে সে অজ্ঞ ছিল তবে তাকে সত্যবাদিনী মনে করা হবে না, তার অজ্ঞতার দাবি গ্রহণযোগ্য হবে না, সহবাসের পর তার ইখতিয়ারও অবশিষ্ট থাকবে না।

১১৬৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنَّ مَوْلَاةً لِبَنِي عَدِيٍّ يُقَالُ لَهَا زَبْرَاءُ أَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا كَانَتْ تَحْتَ عَبْدٍ وَهِيَ أَمَةٌ يَوْمَئِذٍ فَعَتَقَتْ قَالَتْ فَأَرْسَلَتْ إِلَيَّ حَفْصَةُ زَوْجُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَعَتْنِي فَقَالَتْ إِنِّي مُخْبِرَتُكِ خَبَرًا وَلَا أُحِبُّ أَنْ تَصْنَعِي شَيْئًا إِنَّ أَمْرَكِ بِيَدِكِ مَا لَمْ يَمْسَسْكِ زَوْجُكِ فَإِنْ مَسَّكِ فَلَيْسَ لَكِ مِنْ الْأَمْرِ شَيْءٌ قَالَتْ فَقُلْتُ هُوَ الطَّلَاقُ ثُمَّ الطَّلَاقُ ثُمَّ الطَّلَاقُ فَفَارَقَتْهُ ثَلَاثًا.

উরওয়া ইবনু যুবায়র (রা) থেকে বর্ণিতঃ

বনী আদী কর্তৃক আযাদীপ্রাপ্ত জনৈক ক্রীতদাসী যার নাম যাবরা’ ছিল, সে উরওয়া ইবনু যুবায়রের নিকট ব্যক্ত করেছে যে, সে জনৈক ক্রীতদাসের স্ত্রী ছিল তখন সে (নিজেও) ক্রীতদাসী ছিল। পরে তাকে মুক্তি প্রদান করা হয়। সে বলল : অতঃপর নবীপত্নী হাফসা (রা) আমাকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন : আমি তোমাকে একটি সংবাদ বলব, তুমি তাড়াতাড়ি কোন সিদ্ধান্ত নিবে তা আমি পছন্দ করি না। তোমার স্বামী তোমার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত তোমার অধিকার তোমারই উপর ন্যস্ত থাকবে। তবে তোমার স্বামী তোমার সাথে মিলিত হলে তোমার কোন অধিকার থাকবে না। সে বলল, এর উত্তরে আমি বললাম, আমি তাকে তালাক দিলাম, পুনরায় তালাক, পুনরায় তালাক, তাকে তিন তালাক দিয়ে পরিত্যাগ করল। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৬৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ قَالَ أَيُّمَا رَجُلٍ تَزَوَّجَ امْرَأَةً وَبِهِ جُنُونٌ أَوْ ضَرَرٌ فَإِنَّهَا تُخَيَّرُ فَإِنْ شَاءَتْ قَرَّتْ وَإِنْ شَاءَتْ فَارَقَت.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন : এমন কোন পুরুষ যে উন্মাদ বা রুগ্ন সে যদি কোন মহিলাকে বিবাহ করে, তবে সেই মহিলাকে অধিকার দেয়া হবে। যদি সে ইচ্ছা করে তা হলে সেই স্বামীর সঙ্গে অবস্থান করবে, আর যদি ইচ্ছা করে বিচ্ছেদ ঘটাবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৬৮

قَالَ مَالِك فِي الْأَمَةِ تَكُونُ تَحْتَ الْعَبْدِ ثُمَّ تَعْتِقُ قَبْلَ أَنْ يَدْخُلَ بِهَا أَوْ يَمَسَّهَا إِنَّهَا إِنْ اخْتَارَتْ نَفْسَهَا فَلَا صَدَاقَ لَهَا وَهِيَ تَطْلِيقَةٌ وَذَلِكَ الْأَمْرُ عِنْدَنَا ْ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

যে ক্রীতদাসী কোন ক্রীতদাসের অধীনে থাকা অবস্থায় তার সঙ্গে সঙ্গম বা তাকে স্পর্শ করার পূর্বে স্বাধীন হয়ে যায় এবং নিজের স্বাধীন অধিকার নিজে গ্রহণ করে নেয় তবে সে মোহর পাবে না। আর ইহা এক তালাক বলে গণ্য হবে। মাসয়ালা আমাদের নিকটও তাই।

১১৬৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُوْلُ: إِذَا خَيَّرَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ فَاخْتَارَتْهُ فَلَيْسَ ذَلِكَ بِطَلَاقٍ قَالَ مَالِك وَذَلِكَ أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ.
قَالَ مَالِك فِي الْمُخَيَّرَةِ إِذَا خَيَّرَهَا زَوْجُهَا فَاخْتَارَتْ نَفْسَهَا فَقَدْ طَلُقَتْ ثَلَاثًا وَإِنْ قَالَ زَوْجُهَا لَمْ أُخَيِّرْكِ إِلَّا وَاحِدَةً فَلَيْسَ لَهُ ذَلِكَ وَذَلِكَ أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُهُ.
قَالَ مَالِك وَإِنْ خَيَّرَهَا فَقَالَتْ قَدْ قَبِلْتُ وَاحِدَةً وَقَالَ لَمْ أُرِدْ هَذَا وَإِنَّمَا خَيَّرْتُكِ فِي الثَّلَاثِ جَمِيعًا أَنَّهَا إِنْ لَمْ تَقْبَلْ إِلَّا وَاحِدَةً أَقَامَتْ عِنْدَهُ عَلَى نِكَاحِهَا وَلَمْ يَكُنْ ذَلِكَ فِرَاقًا إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু শিহাব (র)-কে বলতে শুনেছেন যে, যখন কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে অধিকার প্রদান করে এবং স্ত্রী নিজেকেই গ্রহণ করে তা হলে ইহা তালাক বলে গণ্য হবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : আমি যা শুনেছি তন্মধ্যে এটাই উত্তম।
মালিক (র) অধিকার প্রাপ্ত মহিলা সম্পর্কে বলেন : যখন কোন মহিলাকে তার স্বামী অধিকার প্রদান করে, অতঃপর সেই স্ত্রী নিজ সত্তাকেই গ্রহণ করে তা হলে ইহা তিন তালাক বলে গণ্য হবে। আর যদি স্বামী বলে যে, তোমাকে শুধুমাত্র এক তালাকের অধিকার প্রদান করছি, তবে এইরূপ কথা বলার অধিকার স্বামীর নেই।
মালিক (র) বলেন, এটাই উত্তম এ ব্যাপারে যা আমি শুনেছি।
মালিক (র) বলেন : যদি স্ত্রীকে অধিকার প্রদান করে, অতঃপর স্ত্রী বলল : আমি এক তালাক গ্রহণ করলাম এবং স্বামী বলল : আমি এরূপ ইচ্ছা করিনি বরং আমি তোমাকে পূর্ণ তিন তালাকের অধিকার প্রদান করেছি। স্ত্রী যদি এক তালাক ব্যতীত গ্রহণ না করে তবে সে এই স্বামীর বিবাহে থাকবে। এই অবস্থায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটবে না।

পরিচ্ছেদ ১১

খুলা [১] তালাকের বর্ণনা

[১] দাম্পত্য জীবন সুখের না হলে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকলে অথবা মনের মিল না হলে স্বামী তালাক দিতে রাযী না হলে অথবা অন্য কোন কারণে স্ত্রীর জন্য এটা বৈধ হবে যে, সে অর্থ অথবা মোহর স্বামীকে দিয়ে বলে আমাকে পরিত্যাগ কর, স্বামী যদি বলে আমি তোমাকে পরিত্যাগ করলাম, এর নাম খুলা।

১১৭০

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ عَنْ حَبِيبَةَ بِنْتِ سَهْلٍ الْأَنْصَارِيِّ أَنَّهَا كَانَتْ تَحْتَ ثَابِتِ بْنِ قَيْسِ بْنِ شَمَّاسٍ وَأَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ إِلَى الصُّبْحِ فَوَجَدَ حَبِيبَةَ بِنْتَ سَهْلٍ عِنْدَ بَابِهِ فِي الْغَلَسِ فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ هَذِهِ فَقَالَتْ أَنَا حَبِيبَةُ بِنْتُ سَهْلٍ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ مَا شَأْنُكِ قَالَتْ لَا أَنَا وَلَا ثَابِتُ بْنُ قَيْسٍ لِزَوْجِهَا فَلَمَّا جَاءَ زَوْجُهَا ثَابِتُ بْنُ قَيْسٍ قَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَذِهِ حَبِيبَةُ بِنْتُ سَهْلٍ قَدْ ذَكَرَتْ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ تَذْكُرَ فَقَالَتْ حَبِيبَةُ يَا رَسُولَ اللهِ كُلُّ مَا أَعْطَانِي عِنْدِي.
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِثَابِتِ بْنِ قَيْسٍ خُذْ مِنْهَا فَأَخَذَ مِنْهَا وَجَلَسَتْ فِي بَيْتِ أَهْلِهَا

হাবীবা বিন্ত সাহল আনসারী (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি সাবিত ইবনু কায়স ইবনু সাম্মাসের স্ত্রী ছিলেন। একদিন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাযের জন্য বের হলেন। এমন সময় হাবীবা বিন্ত সাহালকে প্রভাতে আপন গৃহের দ্বারে উপস্থিত পেলেন। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কে হে? তিনি বললেন : ইয়া রসূলাল্লাহ্! আমি হাবীবা বিন্ত সাহল। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : কি ব্যাপার তোমার? তিনি বললেন : আমি আর আমার স্বামী সাবিত ইবনু কায়স-এর সঙ্গে একত্রে থাকতে চাই না। তার স্বামী সাবিত ইবনু কায়স এলে রসূলাল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন : হাবীবা বিন্ত সাহল আল্লাহর ইচ্ছায় তোমার বিষয়ে যা বলার বলেছে।
হাবীবা বললেন : ইয়া রসূলাল্লাহ্! সে যা আমাকে দিয়েছে উহা আমার নিকট রয়েছে। তারপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাবিতকে উদ্দেশ্য করে বললেন : হাবীবা হতে (বাগান) গ্রহণ কর। সে তার নিকট হতে উহা গ্রহণ করল এবং হাবীবা তার পরিজনের কাছে চলে গেলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৭১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ مَوْلَاةٍ لِصَفِيَّةَ بِنْتِ أَبِي عُبَيْدٍ أَنَّهَا اخْتَلَعَتْ مِنْ زَوْجِهَا بِكُلِّ شَيْءٍ لَهَا فَلَمْ يُنْكِرْ ذَلِكَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ ২০৮৪-قَالَ مَالِك فِي الْمُفْتَدِيَةِ الَّتِي تَفْتَدِي مِنْ زَوْجِهَا أَنَّهُ إِذَا عُلِمَ أَنَّ زَوْجَهَا أَضَرَّ بِهَا وَضَيَّقَ عَلَيْهَا وَعُلِمَ أَنَّهُ ظَالِمٌ لَهَا مَضَى الطَّلَاقُ وَرَدَّ عَلَيْهَا مَالَهَا قَالَ فَهَذَا الَّذِي كُنْتُ أَسْمَعُ وَالَّذِي عَلَيْهِ أَمْرُ النَّاسِ عِنْدَنَا.
قَالَ مَالِك لَا بَأْسَ بِأَنْ تَفْتَدِيَ الْمَرْأَةُ مِنْ زَوْجِهَا بِأَكْثَرَ مِمَّا أَعْطَاهَا.

সাফিয়্যা বিন্ত আবূ উবাইদ-এর জনৈকা ক্রীতদাসী থেকে বর্ণিতঃ

যাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে, সে তার স্বামী হতে (খুলা) বিচ্ছেদ গ্রহণ করেছে। তার নিকট যে সম্পদ ছিল উহার বিনিময়ে ‘আব্দুল্লাহ্ ইবনু’ উমার (র) এর প্রতি অস্বীকৃতি জানালেন না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : যে স্ত্রী (বিচ্ছেদের বিনিময়ে) স্বামীকে মাল প্রদান করেছে, যদি প্রকাশ পায় যে, স্বামী তার ক্ষতি সাধন করেছে এবং (দুর্ব্যবহার করে মাল প্রদানে) তাকে বাধ্য করেছে। এবং আরও প্রকাশিত হয় যে, সে স্ত্রীর প্রতি জুলুমকারী ছিল, তবে তালাক প্রযোজ্য হবে এবং স্ত্রীর মাল স্ত্রীকে ফেরত দেয়া হবে। মালিক (র) বলেন, এটা আমি শুনেছি, আমাদের মতে এটাই লোকের মধ্যে প্রচলিত নিয়ম।
মালিক (র)-এর মতে স্বামী যা দিয়েছে তা হতে অধিক মাল বিচ্ছেদের ফিদায়া স্বরূপ স্ত্রী কর্তৃক প্রদান করতে কোন ক্ষতি নাই।

পরিচ্ছেদ ১২

খুলা তালাক ও এর ইদ্দত

১১৭২

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ رُبَيِّعَ بِنْتَ مُعَوَّذِ بْنِ عَفْرَاءَ جَاءَتْ هِيَ وَعَمُّهَا إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ فَأَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا اخْتَلَعَتْ مِنْ زَوْجِهَا فِي زَمَانِ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ فَبَلَغَ ذَلِكَ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ فَلَمْ يُنْكِرْهُ وَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ عِدَّتُهَا عِدَّةُ الْمُطَلَّقَةِ.
১১৮৪-و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ وَسُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ وَابْنَ شِهَابٍ كَانُوا يَقُولُونَ عِدَّةُ الْمُخْتَلِعَةِ مِثْلُ عِدَّةِ الْمُطَلَّقَةِ ثَلَاثَةُ قُرُوءٍ.
قَالَ مَالِك فِي الْمُفْتَدِيَةِ إِنَّهَا لَا تَرْجِعُ إِلَى زَوْجِهَا إِلَّا بِنِكَاحٍ جَدِيدٍ فَإِنْ هُوَ نَكَحَهَا فَفَارَقَهَا قَبْلَ أَنْ يَمَسَّهَا لَمْ يَكُنْ لَهُ عَلَيْهَا عِدَّةٌ مِنْ الطَّلَاقِ الْآخَرِ وَتَبْنِي عَلَى عِدَّتِهَا الْأُولَى قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ.
قَالَ مَالِك إِذَا افْتَدَتْ الْمَرْأَةُ مِنْ زَوْجِهَا بِشَيْءٍ عَلَى أَنْ يُطَلِّقَهَا فَطَلَّقَهَا طَلَاقًا مُتَتَابِعًا نَسَقًا فَذَلِكَ ثَابِتٌ عَلَيْهِ فَإِنْ كَانَ بَيْنَ ذَلِكَ صُمَاتٌ فَمَا أَتْبَعَهُ بَعْدَ الصُّمَاتِ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.

নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

রুবাইয়ে বিনত মুয়াব্বিয ইবনু আফরা (রা) তার ফুফুসহ ‘আব্দুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) সমীপে উপস্থিত হলেন এবং তাকে জ্ঞাত করলেন যে, তিনি তার স্বামীর নিকট হতে খুলা’ তালাক গ্রহণ করেছেন। উসমান ইবনু ‘আফফান (রা)-এর খিলাফতকালে উসমান ইবনু ‘আফফান (রা) উহা অবগত হলেন এবং উহা বহাল রাখলেন। ‘আব্দুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রা) বললেন : খুলা গ্রহণ করবার ইদ্দত তালাক প্রাপ্তা স্ত্রীলোকের ইদ্দতের মতো। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : তার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সাঈদ ইবনু মুসায়্যিব, সুলায়মান ইবনু ইয়াসার ও ইবনু শিহাব (র) তারা সকলেই বলতেন : খুলা’ তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীলোকের ইদ্দত তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীলোকের মতো তিন ঋতু। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : যে স্ত্রীলোক মালের বিনিময়ে তালাক গ্রহণ করেছে, সে নূতন বিবাহ ছাড়া স্বামীর নিকট যাবে না। যদি স্বামী সেই স্ত্রীলোককে বিবাহ করে এবং স্পর্শ করার পূর্বে তালাক প্রদান করে তবে স্ত্রীলোকের জন্য পরবর্তী তালাকের ইদ্দত পালন করতে হবে না। প্রথম তালাকের ইদ্দতের সময় পূর্ণ করবে। মালিক (র) বলেন : এই বিষয়ে যা আমি শুনেছি তন্মধ্যে এটাই সর্বোত্তম।
মালিক (র) বলেন : যে স্ত্রী স্বামীকে এই শর্তে মাল প্রদান করল যে, সে তাকে তালাক দিবে : অতঃপর সে একাধারে (তিন তালাক) প্রয়োগ করল, তবে এই সব তালাকই প্রযোজ্য হবে। আর যদি তালাকের মাঝখানে নীরবতা পাওয়া যায়, তবে নীরবতার পর যেই তালাক দিয়েছে উহা গ্রহণযোগ্য হবে না।

পরিচ্ছেদ ১৩

লি ‘আন [১] সম্পর্কিত

[১] কোন ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রীকে যিনার অপবাদ দিলে অথবা স্ত্রী যে সন্তান প্রসব করেছে উহাকে তার সন্তান নয় বলে ঘোষণা করলে তবে স্ত্রী কাযীর নিকট মোকদ্দমা দায়ের করবে, ফরিয়াদ দায়ের করা হলে কাযী উভয়কে কসম করতে বলবে, যার নিয়ম সূরা-এ-নূরে উল্লিখিত হয়েছে। কসম অনুষ্ঠানের পর কাযী তাদেরকে পৃথক করে দিবেন। এর মাধ্যমে উক্ত মহিলা ঐ পুরুষের জন্য চীরতরে হারাম হয়ে যাবে।

১১৭৩

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ السَّاعِدِيَّ أَخْبَرَهُ أَنَّ عُوَيْمِرًا الْعَجْلَانِيَّ جَاءَ إِلَى عَاصِمِ بْنِ عَدِيٍّ الْأَنْصَارِيِّ فَقَالَ لَهُ يَا عَاصِمُ أَرَأَيْتَ رَجُلًا وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِهِ رَجُلًا أَيَقْتُلُهُ فَتَقْتُلُونَهُ أَمْ كَيْفَ يَفْعَلُ سَلْ لِي يَا عَاصِمُ عَنْ ذَلِكَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلَ عَاصِمٌ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ فَكَرِهَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَسَائِلَ وَعَابَهَا حَتَّى كَبُرَ عَلَى عَاصِمٍ مَا سَمِعَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا رَجَعَ عَاصِمٌ إِلَى أَهْلِهِ جَاءَهُ عُوَيْمِرٌ فَقَالَ يَا عَاصِمُ مَاذَا قَالَ لَكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ عَاصِمٌ لِعُوَيْمِرٍ لَمْ تَأْتِنِي بِخَيْرٍ قَدْ كَرِهَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَسْأَلَةَ الَّتِي سَأَلْتُهُ عَنْهَا فَقَالَ عُوَيْمِرٌ وَاللهِ لَا أَنْتَهِي حَتَّى أَسْأَلَهُ عَنْهَا فَقَامَ عُوَيْمِرٌ حَتَّى أَتَى رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَسَطَ النَّاسِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ أَرَأَيْتَ رَجُلًا وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِهِ رَجُلًا أَيَقْتُلُهُ فَتَقْتُلُونَهُ أَمْ كَيْفَ يَفْعَلُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ أُنْزِلَ فِيكَ وَفِي صَاحِبَتِكَ فَاذْهَبْ فَأْتِ بِهَا.
قَالَ سَهْلٌ فَتَلَاعَنَا وَأَنَا مَعَ النَّاسِ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا فَرَغَا مِنْ تَلَاعُنِهِمَا قَالَ عُوَيْمِرٌ كَذَبْتُ عَلَيْهَا يَا رَسُولَ اللهِ إِنْ أَمْسَكْتُهَا فَطَلَّقَهَا ثَلَاثًا قَبْلَ أَنْ يَأْمُرَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
قَالَ مَالِك قَالَ ابْنُ شِهَابٍ فَكَانَتْ تِلْكَ بَعْدُ سُنَّةَ الْمُتَلَاعِنَيْنِ.

আসিম ইবনু আদী আনসার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

ওয়াইমির আজলানী (রা) আগমন করলেন এবং তাকে বললেন : হে আসিম এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে ভিন্ন ব্যক্তিকে (অবৈধ কর্মে লিপ্ত) পেলে। সে ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করবে কি? যার ফলে প্রতিশোধ স্বরূপ নিহত ব্যক্তির সম্প্রদায়ের লোকেরা তাকে হত্যা করবে অথবা অন্য কিরূপ করিবে? হে আসিম; আপনি এই বিষয়ে আমার জন্য রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট প্রশ্ন করুন। আসিম! এই ব্যাপারে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট প্রশ্ন করলেন।
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সকল প্রশ্নকে অপছন্দ করলেন এবং তজ্জন্য তাকে তিরস্কার করলেন। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে যা শুনলেন তা আসিমের নিকট অতি ভারী মনে হল।
আসিম যখন পরিজনের নিকট প্রত্যাবর্তন করলেন, তার নিকট তখন ‘উওয়াইমির উপস্থিত হলেন এবং বললেন, হে আসিম! রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে কি বলেছেন? আসিম বললেন : আপনি আমার কাছে কোন ভাল বিষয় নিয়ে আসেননি। আমি যে মাসআলার বিষয়ে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট প্রশ্ন করেছি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না পছন্দ করেছেন। ‘উওয়াইমির বললেন : এই বিষয়ে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে প্রশ্ন না করে আমি ক্ষান্ত হব না। তারপর ‘উওয়াইমির অগ্রসর হলেন এবং রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমীপে উপস্থিত হলেন এবং লোকের মাঝখানে আসন গ্রহণ করলেন। তারপর বললেন : ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনি কি হুকুম দেন সেই ব্যক্তি সম্পর্কে, যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে অন্য লোককে দেখতে পেল সে কি উক্ত ব্যক্তিকে হত্যা করবে? ফলে, কিসাসস্বরূপ লোকেরা তাকেও হত্যা করবে? অথবা সে ব্যক্তি অন্য কিরূপ করবে? রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তোমার এবং তোমার স্ত্রী বিষয়ে আয়াত নাযিল হয়েছে, তুমি যাও তাকে নিয়ে আস। সাহল বলেন : তারপর তারা উভয়ে লি’আন করল, অন্য লোকজনের সাথে আমিও তখন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তারা উভয়ে লি’আন হতে অবসর গ্রহণ করার পর ‘উওয়াইমির বললেন, এই ঘটনার পর যদি এই স্ত্রীকে রাখি তবে আমি তার সম্বন্ধে মিথ্যাবাদী বলে গণ্য হব। তারপর স্ত্রীকে তিন তালাক দিলেন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কোন নির্দেশ দেওয়ার পূর্বে। (বুখারী ৫২৫৯, মুসলিম ১৪৯২)
মালিক (র) বলেন : ইবনু শিহাব (র) বলেছেন, এই ঘটনার পর লি’আয়িশারীদের জন্য এক হুকুম নির্ধারিত রয়েছেন।

১১৭৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَجُلًا لَاعَنَ امْرَأَتَهُ فِي زَمَانِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَانْتَفَلَ مِنْ وَلَدِهَا فَفَرَّقَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَهُمَا وَأَلْحَقَ الْوَلَدَ بِالْمَرْأَةِ .
قَالَ مَالِك قَالَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى { وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلَّا أَنْفُسُهُمْ فَشَهَادَةُ أَحَدِهِمْ أَرْبَعُ شَهَادَاتٍ بِاللهِ إِنَّهُ لَمِنْ الصَّادِقِينَ وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَةَ اللهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنْ الْكَاذِبِينَ وَيَدْرَأُ عَنْهَا الْعَذَابَ أَنْ تَشْهَدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللهِ إِنَّهُ لَمِنْ الْكَاذِبِينَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنْ الصَّادِقِينَ }.
قَالَ مَالِك السُّنَّةُ عِنْدَنَا أَنَّ الْمُتَلَاعِنَيْنِ لَا يَتَنَاكَحَانِ أَبَدًا وَإِنْ أَكْذَبَ نَفْسَهُ جُلِدَ الْحَدَّ وَأُلْحِقَ بِهِ الْوَلَدُ وَلَمْ تَرْجِعْ إِلَيْهِ أَبَدًا وَعَلَى هَذَا السُّنَّةُ عِنْدَنَا الَّتِي لَا شَكَّ فِيهَا وَلَا اخْتِلَافَ.
قَالَ مَالِك وَإِذَا فَارَقَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ فِرَاقًا بَاتًّا لَيْسَ لَهُ عَلَيْهَا فِيهِ رَجْعَةٌ ثُمَّ أَنْكَرَ حَمْلَهَا لَاعَنَهَا إِذَا كَانَتْ حَامِلًا وَكَانَ حَمْلُهَا يُشْبِهُ أَنْ يَكُونَ مِنْهُ إِذَا ادَّعَتْهُ مَا لَمْ يَأْتِ دُونَ ذَلِكَ مِنْ الزَّمَانِ الَّذِي يُشَكُّ فِيهِ فَلَا يُعْرَفُ أَنَّهُ مِنْهُ قَالَ فَهَذَا الْأَمْرُ عِنْدَنَا وَالَّذِي سَمِعْتُ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ
قَالَ مَالِك وَإِذَا قَذَفَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ بَعْدَ أَنْ يُطَلِّقَهَا ثَلَاثًا وَهِيَ حَامِلٌ يُقِرُّ بِحَمْلِهَا ثُمَّ يَزْعُمُ أَنَّهُ رَآهَا تَزْنِي قَبْلَ أَنْ يُفَارِقَهَا جُلِدَ الْحَدَّ وَلَمْ يُلَاعِنْهَا وَإِنْ أَنْكَرَ حَمْلَهَا بَعْدَ أَنْ يُطَلِّقَهَا ثَلَاثًا لَاعَنَهَا قَالَ وَهَذَا الَّذِي سَمِعْتُ
قَالَ مَالِك وَالْعَبْدُ بِمَنْزِلَةِ الْحُرِّ فِي قَذْفِهِ وَلِعَانِهِ يَجْرِي مَجْرَى الْحُرِّ فِي مُلَاعَنَتِهِ غَيْرَ أَنَّهُ لَيْسَ عَلَى مَنْ قَذَفَ مَمْلُوكَةً حَدٌّ قَالَ مَالِك وَالْأَمَةُ الْمُسْلِمَةُ وَالْحُرَّةُ النَّصْرَانِيَّةُ وَالْيَهُودِيَّةُ تُلَاعِنُ الْحُرَّ الْمُسْلِمَ إِذَا تَزَوَّجَ إِحْدَاهُنَّ فَأَصَابَهَا وَذَلِكَ أَنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ فِي كِتَابِهِ { وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ } فَهُنَّ مِنْ الْأَزْوَاجِ وَعَلَى هَذَا الْأَمْرُ عِنْدَنَا
قَالَ مَالِك وَالْعَبْدُ إِذَا تَزَوَّجَ الْمَرْأَةَ الْحُرَّةَ الْمُسْلِمَةَ أَوْ الْأَمَةَ الْمُسْلِمَةَ أَوْ الْحُرَّةَ النَّصْرَانِيَّةَ أَوْ الْيَهُودِيَّةَ لَاعَنَهَا.
২১قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يُلَاعِنُ امْرَأَتَهُ فَيَنْزِعُ وَيُكَذِّبُ نَفْسَهُ بَعْدَ يَمِينٍ أَوْ يَمِينَيْنِ مَا لَمْ يَلْتَعِنْ فِي الْخَامِسَةِ إِنَّهُ إِذَا نَزَعَ قَبْلَ أَنْ يَلْتَعِنَ جُلِدَ الْحَدَّ وَلَمْ يُفَرَّقْ بَيْنَهُمَا
قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يُطَلِّقُ امْرَأَتَهُ فَإِذَا مَضَتْ الثَّلَاثَةُ الْأَشْهُرِ قَالَتْ الْمَرْأَةُ أَنَا حَامِلٌ قَالَ إِنْ أَنْكَرَ زَوْجُهَا حَمْلَهَا لَاعَنَهَا.
২১قَالَ مَالِك فِي الْأَمَةِ الْمَمْلُوكَةِ يُلَاعِنُهَا زَوْجُهَا ثُمَّ يَشْتَرِيهَا إِنَّهُ لَا يَطَؤُهَا وَإِنْ مَلَكَهَا وَذَلِكَ أَنَّ السُّنَّةَ مَضَتْ أَنَّ الْمُتَلَاعِنَيْنِ لَا يَتَرَاجَعَانِ أَبَدًا
قَالَ مَالِك إِذَا لَاعَنَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ قَبْلَ أَنْ يَدْخُلَ بِهَا فَلَيْسَ لَهَا إِلَّا نِصْفُ الصَّدَاقِ

আব্দুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর প্রতি লি’আন করেছে এবং ছেলের নসবকে অস্বীকার করেছে। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয়কে পৃথক করে দিয়েছেন এবং স্ত্রীকে ছেলেটি প্রদান করেছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন :
وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلَّا أَنْفُسُهُمْ فَشَهَادَةُ أَحَدِهِمْ أَرْبَعُ شَهَادَاتٍ بِاللهِ إِنَّهُ لَمِنْ الصَّادِقِينَ وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَةَ اللهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنْ الْكَاذِبِينَ وَيَدْرَأُ عَنْهَا الْعَذَابَ أَنْ تَشْهَدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللهِ إِنَّهُ لَمِنْ الْكَاذِبِينَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنْ الصَّادِقِيْنَ.
“এবং যারা নিজেদের স্ত্রীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথচ নিজেরা ব্যতীত তাদের কোন সাক্ষী নেই, তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য এই হবে যে, সে আল্লাহ্‌র নামে চারবার শপথ করে বলবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী এবং পঞ্চাশবারে বলবে, সে মিথ্যাবাদী হলে তার উপর নেমে আসবে আল্লাহ্‌র লা’নত। তবে স্ত্রীর শাস্তি রহিত হবে যদি সে চারবার আল্লাহর নামে শপথ করে সাক্ষ্য দেয় যে, তার স্বামীই মিথ্যাবাদী এবং পঞ্চমবারে বলে, ‘তার স্বামী সত্যবাদী হলে তার নিজের উপর নেমে আসবে আল্লাহর গযব।”
মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট বিধান হল এই, লি’আয়িশারী তারা পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে না, যদি স্বামী মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হয়, তবে তাকে শাস্তি (প্রয়োগ) দেয়া হবে এবং ছেলেকে তার সাথে যুক্ত করা হবে। স্ত্রী সেই স্বামীর নিকট আর কখনো ফিরে যাবে না। মালিক (র) বলেন, আমাদের নিকট এটাই নিয়ম যাতে কোন প্রকার মতানৈক্য বা সন্দেহ নেই।
মালিক (র) বলেন : কোন ব্যক্তি যদি স্ত্রীকে বায়েন তালাক দেয় যাতে স্ত্রীর দিকে তার রুজূ করার অধিকার থাকে না, তারপর স্ত্রীর গর্ভ অস্বীকার করে, তবে তাকে লি’আন করতে হবে। যদি স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয় এবং স্ত্রীর গর্ভধারণ সেই ব্যক্তির পক্ষ হতে হওয়ারই সম্ভাবনা অধিক থাকে এবং স্ত্রীও উহার দাবি করে। অবশ্য যদি তালাকের পর এইরূপ দীর্ঘ সময় অতিবাহিত না হয় যাতে স্বামী হতে গর্ভধারণের সন্দেহ সৃষ্টি হয়। যাতে এ গর্ভধারণ উক্ত স্বামী দ্বারা হয়েছে বলে অনুমান করা যায় না। আমাদের নিকট এটাই হুকুম আর এটাই আমি বিজ্ঞ আলিমদের নিকট হতে শুনেছি।
মালিক (র) বলেন : তখন কোন ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ করল। তিন তালাক দেয়ার পর স্ত্রী যখন অন্তঃসত্ত্বা অথচ সে ব্যক্তি এই গর্ভধারণ তার পক্ষ হতে হয়েছে বলে স্বীকারও করে, তারপর সে ধারণা করে যে, সে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পূর্বে যিনা করতে দেখেছে, তবে তাকে শাস্তি দেয়া হবে (অর্থাৎ তার উপর ইসলামী বিধানমতে হদ জারি করা হবে) সে লি’আন করবে না। আর যদি তিন তালাক দেয়ার পর সেই স্ত্রীর গর্ভধারণ (তার পক্ষ হতে হওয়ার ব্যাপার) সে অস্বীকার করে সে লি’আন করবে। মালিক (র) বলেন : আমি এরূপই শুনেছি।
মালিক (র) বলেন : যিনার অপবাদারোপ করা এবং লি’আন এর ব্যাপারে ক্রীতদাস ও স্বাধীন ব্যক্তির হুকুম একই। অর্থাৎ এই দুই ব্যাপারে ক্রীতদাসের হুকুম আযাদ ব্যক্তির মতো। কিন্তু নিজের ক্রীতদাসীর প্রতি অপবাদ দিলে মনিবের উপর হদ জারি হবে না। অর্থাৎ মনিবকে শাস্তি দেয়া হবে না।
মালিক (র) বলেন : মুসলিম ক্রীতদাসী, খ্রীস্টান ও ইহুদী স্বাধীন স্ত্রীলোক স্বাধীন মুসলিম স্বামীর প্রতি লি’আন করবে, যদি সেই মুসলিম এদের কাউকেও বিবাহ করে এবং তার সাথে সহবাস করে থাকে। কারণ আল্লাহ্ কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেছেন :
وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ
“যারা স্ত্রীগণের প্রতি অপবাদ দেয়া”। উপরিউক্ত মহিলাগণও স্ত্রীর অন্তর্ভুক্ত। (তাই তাদের প্রতি অপবাদ আরোপ করলে লি’আন করতে হবে।) মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট এটাই সিদ্ধান্ত।
মালিক (র) বলেন : কোন মুসলিম আযাদ নারীকে অথবা মুসলিম ক্রীতদাসীকে অথবা আযাদ খ্রীস্টান অথবা ইহুদী নারীকে কোন ক্রীতদাস বিবাহ করলে সে স্ত্রীর সাথে লি’আন করতে পারবে।
মালিক (র) বলেন : যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর সাথে লি’আন করেছে, অতঃপর সে এটা হতে ফিরে আসে (রুজূ’ করে) এবং মিথ্যা বলেছে বলে স্বীকার করে, একবার অথবা দুইবার কসম খাওয়ার পর পঞ্চমবারের লা’নত উচ্চারণ না করা পর্যন্ত। সে যদি লি’আন সমাপ্ত করার পূর্বে রুজূ’ করে তবে তাকে হদ লাগানো (শাস্তি দেয়া) হবে এবং তাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো হবে না।
মালিক (র) বলেন : ক্রীতদাসী স্ত্রীর সাথে তার স্বামী লি’আন করেছে, অতঃপর সে ক্রীতদাসীকে খরিদ করেছে, তবে সে মালিক হলেও এর সাথে সহবাস করতে পারবে না। কারণ নিয়ম হচ্ছে, পরস্পর লি’আয়িশারী কখনও একে অপরের প্রতি প্রত্যাবর্তন (রুজূ’) করতে পারে না।
মালিক (র) বলেন : কোন ব্যক্তি স্ত্রীর সাথে সংগত হওয়ার পূর্বে স্ত্রীর সাথে লি’আন করলে তবে সে মহরের অর্ধেক পাবে।

পরিচ্ছেদ ১৪

যে দম্পতি লি’আন করেছে তাদের সন্তানের মিরাস

১১৭৫

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ كَانَ يَقُولُ فِي وَلَدِ الْمُلَاعَنَةِ وَوَلَدِ الزِّنَا إِنَّهُ إِذَا مَاتَ وَرِثَتْهُ أُمُّهُ حَقَّهَا فِي كِتَابِ اللهِ تَعَالَى وَإِخْوَتُهُ لِأُمِّهِ حُقُوقَهُمْ وَيَرِثُ الْبَقِيَّةَ مَوَالِي أُمِّهِ إِنْ كَانَتْ مَوْلَاةً وَإِنْ كَانَتْ عَرَبِيَّةً وَرِثَتْ حَقَّهَا وَوَرِثَ إِخْوَتُهُ لِأُمِّهِ حُقُوقَهُمْ وَكَانَ مَا بَقِيَ لِلْمُسْلِمِينَ قَالَ مَالِك وَبَلَغَنِي عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ مِثْلُ ذَلِكَ وَعَلَى ذَلِكَ أَدْرَكْتُ أَهْلَ الْعِلْمِ بِبَلَدِنَا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, যে স্ত্রীলোক ও তার স্বামীর মধ্যে লি’আন অনুষ্ঠিত হয়েছে সেই স্ত্রীলোকের সন্তান এবং জারজ সন্তানের ব্যাপারে উরওয়া ইবনু যুবায়ের (র) বলতেন সেই সন্তানের মৃত্যু হলে তার মাতা আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী তার নির্ধারিত অংশ পাবে এবং তার ভগ্নিগণও তাদের অংশ পাবে। অবশিষ্ট যা থাকে তা পাবে তার জননীকে যে আযাদ করেছে সে, যদি সে আযাদ স্ত্রীলোক হয়। আর যদি সে স্ত্রীলোক আরবী (আযাদ) হয় তবে সে তার অংশ পাবে। এবং তার ভগ্নিগণও তাদের অংশ পাবে। অবশিষ্ট মাল মুসলমানদের কল্যাণের জন্যে (বায়তুলমালে) থাকবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : সুলায়মান ইবনু ইয়াসারের নিকট হতেও আমার কাছে অনুরূপ রেওয়ায়ত পৌঁছেছে।
মালিক (র) বলেন : আমাদের শহরবাসী আলেমগণকেও আমি এই ফায়সালার উপর পেয়েছি।

পরিচ্ছেদ ১৫

বাকিরা (কুমারী) স্ত্রীলোকের তালাক

১১৭৬

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ ثَوْبَانَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِيَاسِ بْنِ الْبُكَيْرِ أَنَّهُ قَالَ: طَلَّقَ رَجُلٌ امْرَأَتَهُ ثَلَاثًا قَبْلَ أَنْ يَدْخُلَ بِهَا ثُمَّ بَدَا لَهُ أَنْ يَنْكِحَهَا فَجَاءَ يَسْتَفْتِي فَذَهَبْتُ مَعَهُ أَسْأَلُ لَهُ فَسَأَلَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ وَأَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَا لَا نَرَى أَنْ تَنْكِحَهَا حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَكَ قَالَ فَإِنَّمَا طَلَاقِي إِيَّاهَا وَاحِدَةٌ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ إِنَّكَ أَرْسَلْتَ مِنْ يَدِكَ مَا كَانَ لَكَ مِنْ فَضْلٍ.

মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াস ইবনু বুকাইর (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন : এক ব্যক্তি সহবাসের পূর্বে স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছে, তারপর সেই স্ত্রীকে সে বিবাহ করার ইচ্ছা করল। তাই সে ফতোয়া জিজ্ঞেস করতে এল। ফতোয়া জিজ্ঞেস করার জন্য আমিও তার সাথে গমন করলাম। অতঃপর এই বিষয়ে আব্দুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস ও আবূ হুরায়রা (রা)-এর নিকট সে জিজ্ঞেস করল। তারা উভয়ে বললেন : তোমার জন্য তাকে বিবাহ করার কোন পথ দেখি না, যতক্ষণ না তুমি ছাড়া অন্য স্বামীর সাথে বিবাহের মাধ্যমে সহবাস হয়। সে বলল : আমি তাকে একত্রে তিন তালাক দিয়েছি। ইবনু আব্বাস (রা) বললেন, তোমার হাতে এই ব্যাপারে যতদূর ক্ষমতা ছিল তুমি তা পূর্ণভাবে প্রয়োগ করে ফেলেছ। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৭৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ
الْأَشَجِّ عَنْ النُّعْمَانِ بْنِ أَبِي عَيَّاشٍ الْأَنْصَارِيِّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ أَنَّهُ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ يَسْأَلُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ عَنْ رَجُلٍ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ثَلَاثًا قَبْلَ أَنْ يَمَسَّهَا قَالَ عَطَاءٌ فَقُلْتُ إِنَّمَا طَلَاقُ الْبِكْرِ وَاحِدَةٌ فَقَالَ لِي عَبْدُ اللهِ بْنُ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ إِنَّمَا أَنْتَ قَاصٌّ الْوَاحِدَةُ تُبِينُهَا وَالثَّلَاثَةُ تُحَرِّمُهَا حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ.

আতা ইবনু ইয়াসার (র) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর ইবনু আস (রা)-এর নিকট এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করতে এল, যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে স্পর্শ করার পূর্বে তিন তালাক দিয়েছে। আতা বললেন, কুমারীর জন্য হচ্ছে এক তালাক। তখন আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর আমাকে বলল : তুমি তো হলে একজন বক্তা (ফতোয়া দেয়া তোমার কাজ নয়)। এক তালাক তাকে স্বামী হতে পৃথক করবে এবং তিন তালাক তাকে হারাম করবে যাবৎ সে (স্ত্রী) অন্য স্বামীর পাণি গ্রহণ না করে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৭৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْأَشَجِّ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي عَيَّاشٍ الْأَنْصَارِيِّ أَنَّهُ كَانَ جَالِسًا مَعَ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ وَعَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ فَجَاءَهُمَا مُحَمَّدُ بْنُ إِيَاسِ بْنِ الْبُكَيْرِ فَقَالَ إِنَّ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ثَلَاثًا قَبْلَ أَنْ يَدْخُلَ بِهَا فَمَاذَا تَرَيَانِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ الزُّبَيْرِ إِنَّ هَذَا الْأَمْرَ مَا لَنَا فِيهِ قَوْلٌ فَاذْهَبْ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ فَإِنِّي تَرَكْتُهُمَا عِنْدَ عَائِشَةَ فَسَلْهُمَا ثُمَّ ائْتِنَا فَأَخْبِرْنَا فَذَهَبَ فَسَأَلَهُمَا فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لِأَبِي هُرَيْرَةَ أَفْتِهِ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ فَقَدْ جَاءَتْكَ مُعْضِلَةٌ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ الْوَاحِدَةُ تُبِينُهَا وَالثَّلَاثَةُ تُحَرِّمُهَا حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ مِثْلَ ذَلِكَ.
قَالَ مَالِك وَعَلَى ذَلِكَ الْأَمْرُ عِنْدَنَا
২১১১-وَالثَّيِّبُ إِذَا مَلَكَهَا الرَّجُلُ فَلَمْ يَدْخُلْ بِهَا إِنَّهَا تَجْرِي مَجْرَى الْبِكْرِ الْوَاحِدَةُ تُبِينُهَا وَالثَّلَاثُ تُحَرِّمُهَا حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ

মু’আবিয়া ইবনু আবি ‘আইয়াশ আনসারী (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু যুবায়র (রা) ও আসিম ইবনু উমার (রা)-এর সাথে বসা ছিলেন। এমন সময় তাদের কাছে মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াস ইবনু বুকাইর উপস্থিত হলেন এবং বললেন : এক বেদুঈন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে সঙ্গমের পূর্বে তিন তালাক দিয়েছে সে ব্যাপারে আপনাদের অভিমত কি? আবদুল্লাহ্ ইবনু যুবায়র বললেন : এ বিষয়ে আমাদের নিকট কোন রেওয়ায়ত পৌঁছেনি, তাই তুমি আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আব্বাস ও আবূ হুরায়রা (রা)-এর কাছে যাও এবং তাদের উভয়ের নিকট প্রশ্ন কর। আমি তাদের উভয়কে ‘আয়িশা সিদ্দীকা (রা)-এর নিকট দেখে এসেছি। তাদের নিকট হতে ফতোয়া জিজ্ঞেস করার পর আমার কাছে এসে বলে যাবে।
মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াস সেখানে গেলেন এবং উভয়কে প্রশ্ন করলেন। ইবনু ‘আব্বাস আবূ হুরায়রা (রা)-কে বললেন, হে আবূ হুরায়রা! আপনি ফতোয়া বলুন। আপনার নিকট কঠিন মাস’আলা উপস্থিত হয়েছে। আবূ হুরায়রা (রা) বললেন : এক তালাক স্ত্রীকে স্বামী হতে পৃথক করবে (বিচ্ছেদ ঘটাবে), তিন তালাক তাকে হারাম করে দিবে যতক্ষণ না সে অন্য স্বামীর পাণি গ্রহণ না করে। ইবনু আব্বাসও অনুরূপ বললেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, এই বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্তও অনুরূপ।
মালিক (র) বলেন : অকুমারী নারীর কেউ মালিক হলে এবং উহার সাথে সংগত না হলে তবে তালাকের ব্যাপারে তারও কুমারীর মতো মাস’আলা হবে। এক তালাক তাকে পৃথক করবে এবং তিন তালাক তাকে হারাম করবে যতক্ষণ না সে অন্য স্বামীর পাণি গ্রহণ না করে।

পরিচ্ছেদ ১৬

পীড়িত ব্যক্তির তালাক

১১৭৯

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ وَكَانَ أَعْلَمَهُمْ بِذَلِكَ وَعَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ الْبَتَّةَ وَهُوَ مَرِيضٌ فَوَرَّثَهَا عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ مِنْهُ بَعْدَ انْقِضَاءِ عِدَّتِهَا.

আবূ সালমা ইবনু আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রা) তার স্ত্রীকে আল-বাত্তা (পূর্ণ) তালাক প্রদান করলেন। তখন তিনি পীড়িত ছিলেন। সেই স্ত্রীকে ‘উসমান (রা) ‘আবদুর রহমান ইবনু আওফের সম্পদ হতে মীরাস দিলেন ইদ্দত সমাপ্তির পর। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৮০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْفَضْلِ عَنْ الْأَعْرَجِ أَنَّ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ وَرَّثَ نِسَاءَ ابْنِ مُكْمِلٍ مِنْهُ وَكَانَ طَلَّقَهُنَّ وَهُوَ مَرِيضٌ.

আ’রজ (র) থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু মুকমিলের পত্নীগণকে তার সম্পত্তি হতে উসমান ইবনু আফফান (রা) মীরাস দিয়েছেন। ইবনু মুকমিল [১] তাদেরকে তালাক দিয়েছিলেন পীড়িত অবস্থায়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

[১] অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনু মুকমিল ইবনু আউফ ইবনু আবদুল হারিস। তিনি সাহাবী কিনা এ বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে।

১১৮১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ رَبِيعَةَ بْنَ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ يَقُولُ بَلَغَنِي أَنَّ امْرَأَةَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ سَأَلَتْهُ أَنْ يُطَلِّقَهَا فَقَالَ إِذَا حِضْتِ ثُمَّ طَهُرْتِ فَآذِنِينِي فَلَمْ تَحِضْ حَتَّى مَرِضَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ فَلَمَّا طَهُرَتْ آذَنَتْهُ فَطَلَّقَهَا الْبَتَّةَ أَوْ تَطْلِيقَةً لَمْ يَكُنْ بَقِيَ لَهُ عَلَيْهَا مِنْ الطَّلَاقِ غَيْرُهَا وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ يَوْمَئِذٍ مَرِيضٌ فَوَرَّثَهَا عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ مِنْهُ بَعْدَ انْقِضَاءِ عِدَّتِهَا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রবী’আ ইবনু আবী ‘আবদির রহমানকে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন : আমার নিকট রেওয়ায়াত পৌঁছেছে যে, ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রা)-এর এক স্ত্রী তার নিকট তালাক চাইলেন। তিনি বলেন : তোমার মাসিক ঋতুর পর তুমি যখন পবিত্র হও তখন আমাকে অবগত করিও। তার ঋতু আসার পূর্বে আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ অসুস্থ হয়ে পড়লেন। সে যখন ঋতু হতে পবিত্র হল তখন ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফকে খরব দিল। তিনি স্ত্রীকে আল-বাত্তা তালাক দিলেন অথবা এমন তালাক দিলেন যে তালাক দেয়ার পরে আর কোন তালাক দেয়ার অবকাশ থাকে না। ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ তখন পীড়িত ছিলেন। অতঃপর ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর ‘উসমান (রা) ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফের সম্পদ হতে স্ত্রীকে মীরাস দিলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৮২

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ قَالَ كَانَتْ عِنْدَ جَدِّي حَبَّانَ امْرَأَتَانِ هَاشِمِيَّةٌ وَأَنْصَارِيَّةٌ فَطَلَّقَ الْأَنْصَارِيَّةَ وَهِيَ تُرْضِعُ فَمَرَّتْ بِهَا سَنَةٌ ثُمَّ هَلَكَ عَنْهَا وَلَمْ تَحِضْ فَقَالَتْ أَنَا أَرِثُهُ لَمْ أَحِضْ فَاخْتَصَمَتَا إِلَى عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ فَقَضَى لَهَا بِالْمِيرَاثِ فَلَامَتْ الْهَاشِمِيَّةُ عُثْمَانَ فَقَالَ هَذَا عَمَلُ ابْنِ عَمِّكِ هُوَ أَشَارَ عَلَيْنَا بِهَذَا يَعْنِي عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ.

মুহাম্মদ ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু হাব্বান (র) থেকে বর্ণিতঃ

আমার দাদা হাব্বানের ছিল দুই পত্নী। একজন হাশিমী বংশের অপর জন আনসার গোত্রের। তারপর তিনি আনসারী স্ত্রীকে তালাক দিলেন। তখন সেই স্ত্রী সন্তানকে দুধপান করাচ্ছিল। এইরূপ এক বৎসর অতিবাহিত হলে পর হাব্বান ইন্তেকাল করেন। তার স্ত্রী আর ঋতুমতী হয়নি। স্ত্রী দাবি করল যে, আমি তার মীরাস (সম্পদের অংশ) পাব। আমার মাসিক ঋতু আসেনি। বিবাদ নিয়ে উভয় পত্নী উসমান ইবনু আফফান (রা)-এর নিকট উপস্থিত হল। উসমান (রা) আনসারী পত্নীনর জন্য মীরাস প্রদানের ফয়সালা দিলেন। এতে হাশিমীয় পত্নী উসমান (রা)-কে দোষারোপ [১] করলেন। তিনি (উসমান রা)বললেন : এটা তোমার চাচাতো ভাই এর ফয়সালা। তিনি আমাদেরকে এ পরামর্শ দিয়েছেন। চাচাতো ভাই হলেন ‘আলী ইবনু আবী তালিব (রা)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

[১] হাশিমীয় স্ত্রী বললেন, আনসারী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের পর কিভাবে তাকে মীরাস দেয়া হল? উত্তরে উসমান ইবনু আফফান (রা) বললেন ঃ আমি এই বিষয়ে আলিমদের সাথে পরামর্শ করেছি। বিশেষভাবে তোমার চাচাতো ভাই আলী ইবনু আবূ তালিবের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

 

১১৮৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُولُ إِذَا طَلَّقَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ ثَلَاثًا وَهُوَ مَرِيضٌ فَإِنَّهَا تَرِثُهُ ২১১৮-قَالَ مَالِك وَإِنْ طَلَّقَهَا وَهُوَ مَرِيضٌ قَبْلَ أَنْ يَدْخُلَ بِهَا فَلَهَا نِصْفُ الصَّدَاقِ وَلَهَا الْمِيرَاثُ وَلَا عِدَّةَ عَلَيْهَا وَإِنْ دَخَلَ بِهَا ثُمَّ طَلَّقَهَا فَلَهَا الْمَهْرُ كُلُّهُ وَالْمِيرَاثُ الْبِكْرُ وَالثَّيِّبُ فِي هَذَا عِنْدَنَا سَوَاءٌ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ইবনু শিহাবকে বলতে শুনেছেন, কোন ব্যক্তি পীড়িতাবস্থায় স্ত্রীকে তিন তালাক দিলে তবে সে (স্বামীর) মীরাস পাবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : যদি কোন ব্যক্তি তার পীড়িত অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দেয় তার সাথে সংগত হওয়ার পূর্বে তবে সে স্ত্রী মহরের অর্ধেক পাবে এবং সে (স্বামীর) মীরাস পাবে, তার ইদ্দত পালন করতে হবে না। আর যদি সে স্ত্রীর সাথে সংগত হয়ে তারপর তালাক দেয় তবে সে পূর্ণ মহর এর হকদার হবে এবং মীরাসও পাবে।
মালিক (র) বলেন : কুমারী এবং অকুমারী এই ব্যাপারে আমাদের মতে সমান।

পরিচ্ছেদ ১৭

তালাক প্রাপ্তাকে মুত‘আ [১] প্রদানের বর্ণনা

[১] সদ্ব্যবহারের নিদর্শনস্বরূপ তালাকের পর স্ত্রীকে এক জোড়া কাপড় বা অন্য কিছু প্রদান করাকে মুত’আ বলা হয়। সকল প্রকার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে নফল (বাধ্যতামূলক নয়) স্বরূপ মুত’আ প্রদান করা যায়। কিন্তু যে স্ত্রীর মহর ধার্য করা হয় নি এবং সঙ্গমের পূর্বে তাকে তালাক দেয়া হয়েছে সেই স্ত্রীকে মুত’আ প্রদান করা ওয়াজিব।

১১৮৪

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ طَلَّقَ امْرَأَةً لَهُ فَمَتَّعَ بِوَلِيدَةٍ.
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ لِكُلِّ مُطَلَّقَةٍ مُتْعَةٌ إِلَّا الَّتِي تُطَلَّقُ وَقَدْ فُرِضَ لَهَا صَدَاقٌ وَلَمْ تُمْسَسْ فَحَسْبُهَا نِصْفُ مَا فُرِضَ لَهَا

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ তার এক স্ত্রীকে তালাক দিলেন এবং এক ক্রীতদাসী তাকে মুত’আ স্বরূপ দান করলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
নাফি’ (র) হতে বর্ণিত, আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) বলতেন, প্রত্যেক তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী মুত’আ পাবে। তবে যে স্ত্রীর মহর ধায্য করা হয়েছে এবং তাকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দেয়া হয়েছে, সে ধার্যকৃত মহরের অর্ধেক মাত্র পাবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৮৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُ قَالَ: لِكُلِّ مُطَلَّقَةٍ مُتْعَةٌ قَالَ مَالِك وَبَلَغَنِي عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ مِثْلُ ذَلِكَ. ২১২৩-قَالَ مَالِك لَيْسَ لِلْمُتْعَةِ عِنْدَنَا حَدٌّ مَعْرُوفٌ فِي قَلِيلِهَا وَلَا كَثِيرِهَا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু শিহাব (র) বলতেন প্রত্যেক তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর জন্য মুত’আ রয়েছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : কাশিম মুহাম্মদ (র) হতেও অনুরূপ রেওয়ায়ত আমার কাছে পৌঁছেছে।
মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট মুত’আর ব্যাপারে কম-বেশি কোন নির্দিষ্ট পরিমাণে নাই।

পরিচ্ছেদ ১৮

ক্রীতদাসের তালাক

১১৮৬

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ نُفَيْعًا مُكَاتَبًا كَانَ لِأُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْ عَبْدًا لَهَا كَانَتْ تَحْتَهُ امْرَأَةٌ حُرَّةٌ فَطَلَّقَهَا اثْنَتَيْنِ ثُمَّ أَرَادَ أَنْ يُرَاجِعَهَا فَأَمَرَهُ أَزْوَاجُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَأْتِيَ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ فَيَسْأَلَهُ عَنْ ذَلِكَ فَلَقِيَهُ عِنْدَ الدَّرَجِ آخِذًا بِيَدِ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ فَسَأَلَهُمَا فَابْتَدَرَاهُ جَمِيعًا فَقَالَا حَرُمَتْ عَلَيْكَ حَرُمَتْ عَلَيْكَ.

সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) থেকে বর্ণিতঃ

নুফা“ঈ নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্নী উম্মে সালমা (রা)-এর মুকাতব [১] অথবা ক্রীতদাস ছিল; তাঁর স্ত্রী ছিল আযাদ। সে তাকে দুই তালাক দিয়ে পুনরায় রুজূ করার ইচ্ছা করল। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী (রা) তাকে উসমান ইবনু আফফান (রা)-এর নিকট যাওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং এই বিষয়ে তার নিকট প্রশ্ন করতে বললেন। যায়দ ইবনু সাবিত (রা)-এর হাত ধরাবস্থায় মসজিদের সিঁড়ির নিকটে তার সাক্ষাত পেল। সে (এই মাস’আলার ব্যাপারে) উভয়ের কাছে প্রশ্ন করলে তাঁরা উভয়ে সাথে সাথে উত্তর দিলেন। তোমার উপর হারাম হয়েছে, তোমার উপর হারাম হয়েছে (তার স্ত্রী তাহার উপর হারাম)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

[১] মুকাতব: টাকা অথবা অন্য কিছুর বিনিময়ে যে ক্রীতদাসের মুক্তি ধার্য করা হয়েছে।

১১৮৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّ نُفَيْعًا مُكَاتَبًا كَانَ لِأُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَلَّقَ امْرَأَةً حُرَّةً تَطْلِيقَتَيْنِ فَاسْتَفْتَى عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ فَقَالَ حَرُمَتْ عَلَيْكَ.

সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যিব (র) থেকে বর্ণিতঃ

নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্নী উম্মে সালমা (রা)-এর মুকাতব নুফা’ঈ তার আযাদ স্ত্রীকে দুই তালাক দিলেন, অতঃপর উসমান ইবনু আফফান (রা)-এর নিকট ফতোয়া জিজ্ঞেস করলেন। ‘উসমান (রা) উত্তরে বললেন, তোমার জন্য হারাম হয়েছে । (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৮৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْحَارِثِ التَّيْمِيِّ أَنَّ نُفَيْعًا مُكَاتَبًا كَانَ لِأُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتَفْتَى زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ فَقَالَ إِنِّي طَلَّقْتُ امْرَأَةً حُرَّةً تَطْلِيقَتَيْنِ فَقَالَ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ حَرُمَتْ عَلَيْكَ.

মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম ইবনু হারিস তায়মী (র) থেকে বর্ণিতঃ

নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী উম্মি সালামা (রা)-এর মুকাতব নুফা’ই যায়দ ইবনু সাবিত (রা)-এর নিকট ফতোয়া চাইলেন এই বলে আমি আযাদ স্ত্রীকে দুই তালাক দিয়েছি। এখন ফতোয়া কি? যায়দ ইবনু সাবিত বললেন : (তোমার জন্য) এই স্ত্রী হারাম হয়ে গিয়েছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৮৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَقُوْلُ: إِذَا طَلَّقَ الْعَبْدُ امْرَأَتَهُ تَطْلِيقَتَيْنِ فَقَدْ حَرُمَتْ عَلَيْهِ حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ حُرَّةً كَانَتْ أَوْ أَمَةً وَعِدَّةُ الْحُرَّةِ ثَلَاثُ حِيَضٍ وَعِدَّةُ الْأَمَةِ حَيْضَتَانِ.

আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

কোন ক্রীতদাস স্ত্রীকে দুই তালাক প্রদান করলে সে স্ত্রী তার জন্য হারাম হবে যাবৎ দ্বিতীয় স্বামীর পাণি গ্রহণ না করবে; (স্ত্রী) আযাদ হোক বা ক্রীতদাসী হোক। আর আযাদ স্ত্রীলোকের ইদ্দত হচ্ছে তিন হায়য (মাসিক ঋতু), ক্রীতদাসীর ইদ্দত হচ্ছে দুই হায়য। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৯০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَقُوْلُ: مَنْ أَذِنَ لِعَبْدِهِ أَنْ يَنْكِحَ فَالطَّلَاقُ بِيَدِ الْعَبْدِ لَيْسَ بِيَدِ غَيْرِهِ مِنْ طَلَاقِهِ شَيْءٌ فَأَمَّا أَنْ يَأْخُذَ الرَّجُلُ أَمَةَ غُلَامِهِ أَوْ أَمَةَ وَلِيدَتِهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ.

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

যে নিজের ক্রীতদাসকে বিবাহ করার অনুমতি দিয়েছে তার ক্রীতদাসের তালাকের ক্ষমতা থাকবে, অন্যের হাতে তালাকের কোন ক্ষমতা থাকবে না। তবে ক্রীতদাস ও ক্রীতদাসীর বাদীকে নিজের অধিকারে রাখতে কোন দোষ নাই। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদ ১৯

বাদীর খোরপোশের বর্ণনা যখন উহাকে অন্তঃসত্ত্বাবস্থায় তালাক দেয়া হয়

قَالَ مَالِك لَيْسَ عَلَى حُرٍّ وَلَا عَبْدٍ طَلَّقَا مَمْلُوكَةً وَلَا عَلَى عَبْدٍ طَلَّقَ حُرَّةً طَلَاقًا بَائِنًا نَفَقَةٌ وَإِنْ كَانَتْ حَامِلًا إِذَا لَمْ يَكُنْ لَهُ عَلَيْهَا رَجْعَةٌ ২১৩২-قَالَ مَالِك وَلَيْسَ عَلَى حُرٍّ أَنْ يَسْتَرْضِعَ لِابْنِهِ وَهُوَ عَبْدُ قَوْمٍ آخَرِينَ وَلَا عَلَى عَبْدٍ أَنْ يُنْفِقَ مِنْ مَالِهِ عَلَى مَا يَمْلِكُ سَيِّدُهُ إِلَّا بِإِذْنِ سَيِّدِهِ.
মালিক (র) বলেন : যে আযাদ পুরুষ ক্রীতদাসীকে বায়েন তালাক দিয়েছে এবং যে ক্রীতদাস ক্রীতদাসী (স্ত্রী)-কে অথবা আযাদ স্ত্রীকে বায়েন তালাক দিয়েছে, তাদের কারো উপর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর খোরপেশ প্রদান জরুরী হবে না, স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হলেও যদি স্বামীর রুজূ’ করার অধিকার না থাকে (রুজূ’ করার অধকার থাকিলে স্ত্রী খোরপোশের হকদার হবে)।
মালিক (র) বলেন : কোন আযাদ ব্যক্তির জন্য তার ছেলের দুগ্ধপানের খরচ বহন করা জরুরী নয়, যদি সেই ছেলে অন্য সম্প্রদায়ের ক্রীতদাস হয়। কোন ক্রীতদাসের অধিকার নেই তার মনিবের মাল হতে এমন লোকের জন্য ব্যয় করার যার মালিক তার মনিব নয়, তবে মনিবের অনুমতি নিয়ে খরচ করতে পারবে।

পরিচ্ছেদ ২০

যে স্ত্রীর স্বামী নিরুদ্দেশ তার ইদ্দত

১১৯১

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالَ: أَيُّمَا امْرَأَةٍ فَقَدَتْ زَوْجَهَا فَلَمْ تَدْرِ أَيْنَ هُوَ فَإِنَّهَا تَنْتَظِرُ أَرْبَعَ سِنِينَ ثُمَّ تَعْتَدُّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا ثُمَّ تَحِلُّ
২১৩৫-قَالَ مَالِك وَإِنْ تَزَوَّجَتْ بَعْدَ انْقِضَاءِ عِدَّتِهَا فَدَخَلَ بِهَا زَوْجُهَا أَوْ لَمْ يَدْخُلْ بِهَا فَلَا سَبِيلَ لِزَوْجِهَا الْأَوَّلِ إِلَيْهَا
قَالَ مَالِك وَذَلِكَ الْأَمْرُ عِنْدَنَا وَإِنْ أَدْرَكَهَا زَوْجُهَا قَبْلَ أَنْ تَتَزَوَّجَ فَهُوَ أَحَقُّ بِهَا
২১৩৬-قَالَ مَالِك وَأَدْرَكْتُ النَّاسَ يُنْكِرُونَ الَّذِي قَالَ بَعْضُ النَّاسِ عَلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أَنَّهُ قَالَ يُخَيَّرُ زَوْجُهَا الْأَوَّلُ إِذَا جَاءَ فِي صَدَاقِهَا أَوْ فِي امْرَأَتِهِ قَالَ مَالِك وَبَلَغَنِي أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالَ فِي الْمَرْأَةِ يُطَلِّقُهَا زَوْجُهَا وَهُوَ غَائِبٌ عَنْهَا ثُمَّ يُرَاجِعُهَا فَلَا يَبْلُغُهَا رَجْعَتُهُ وَقَدْ بَلَغَهَا طَلَاقُهُ إِيَّاهَا فَتَزَوَّجَتْ أَنَّهُ إِنْ دَخَلَ بِهَا زَوْجُهَا الْآخَرُ أَوْ لَمْ يَدْخُلْ بِهَا فَلَا سَبِيلَ لِزَوْجِهَا الْأَوَّلِ الَّذِي كَانَ طَلَّقَهَا إِلَيْهَا قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحَبُّ مَا سَمِعْتُ إِلَيَّ فِي هَذَا وَفِي الْمَفْقُودِ.

সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যিব (র) থেকে বর্ণিতঃ

উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বলেছেন, যেই স্ত্রীর স্বামী নিরুদ্দেশ জানে না সে কোথায়, সে স্ত্রী চার বৎসর অপেক্ষা করবে। অতঃপর চারমাস দশদিন ইদ্দত পালন করবে। তারপর অন্যত্র তার বিবাহ হালাল হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর সে যদি বিবাহ করে তবে স্বামী তার সাথে সংগম করুক বা না করুক তার পূর্ববর্তী স্বামীর জন্য তাকে গ্রহণ করার কোন পথ নেই।
মালিক (র) বলেন : এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। আর বিবাহের পূর্বে তার সাথে প্রথম স্বামীর সাক্ষাত হলে তবে তিনিই অধিক হকদার হবেন।
মালিক (র) বলেন : কিছু লোক বলে থাকে যে, উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বলেছেন : প্রথম স্বামী এলে তাকে ইখতিয়ার দেয়া হবে (দ্বিতীয় স্বামী হতে) মহর ফেরত লওয়া অথবা (মহর ফেরত না লইয়া) স্ত্রী ফেরত লওয়া।
মালিক (র) বলেন : উমার ইবনু খাত্তাব (রা) এই ধরনের ইখতিয়ার দিয়েছেন বলে কিছু লোককে অস্বীকার করতে পেয়েছি।
মালিক (র) বলেন : আমার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বলেছেন, স্বামী স্ত্রীর নিকট উপস্থিত নেই, এমন স্ত্রীকে স্বামী তালাক দিয়েছে। অতঃপর স্ত্রীকে পুনরায় গ্রহণ করতে চেয়েছে। কিন্তু সে যে রুজূ’ করতে চেয়েছে এই খরব তার স্ত্রীর নিকট পৌঁছেনি। শুধু তাকে তালাক দেওয়ার সংবাদই সে পেয়েছে। তাই সে স্বামী গ্রহণ করেছে। দ্বিতীয় স্বামী তার সাথে সংগত হোক না হোক প্রথম স্বামী যে তাকে তালাক দিয়েছিল তার পক্ষে স্ত্রীকে পাওয়ার আর কোন পথ নেই।
মালিক (র) বলেন : এই বিষয়ে এবং নিরুদ্দেশের বিষয়ে আমি যা শুনেছি তন্মধ্যে এটা আমার কাছে পছন্দনীয়।

পরিচ্ছেদ ২১

তালাকের ইদ্দতে উল্লিখিত ‘আকরা’ [১] এবং ঋতুমতী স্ত্রীলোকের তালাকের বর্ণনা


[১] قرء-এর বহু বচন اقراء এটি হারয এবং তুহর উভয় অর্থে ব্যবহার হয়।

১১৯২

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ وَهِيَ حَائِضٌ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُرْهُ فَلْيُرَاجِعْهَا ثُمَّ يُمْسِكْهَا حَتَّى تَطْهُرَ ثُمَّ تَحِيضَ ثُمَّ تَطْهُرَ ثُمَّ إِنْ شَاءَ أَمْسَكَ بَعْدُ وَإِنْ شَاءَ طَلَّقَ قَبْلَ أَنْ يَمَسَّ فَتِلْكَ الْعِدَّةُ الَّتِي أَمَرَ اللهُ أَنْ يُطَلَّقَ لَهَا النِّسَاءُ.

নাফি’(র) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) তার স্ত্রীকে তালাক দিলেন। তার স্ত্রী তখন ঋতুমতী, উমার ইবনু খাত্তাব (রা) এই ব্যাপারে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তাকে নির্দেশ দাও যেন সে স্ত্রীর দিকে প্রত্যাবর্তন করে, তারপর পবিত্রতা লাভ করা পর্যন্ত পুনরায় ঋতু আসা এবং উহা হতে পবিত্র হওয়া পর্যন্ত স্ত্রীকে এমনই রাখবে। অতঃপর ইচ্ছা করলে স্ত্রী হিসেবে রাখবে অথবা ইচ্ছ করলে সহবাসের পূর্বে তালাক দিবে। এটাই সেই ইদ্দত যার প্রতি লক্ষ্য রেখে স্ত্রীদেরকে তালাক দেওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আল নির্দেশ দিয়েছেন। (বুখারী ৫২৫২, ৫২৫৩, মুসলিম ১৪৭১)

১১৯৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ أَنَّهَا انْتَقَلَتْ حَفْصَةَ بِنْتَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ حِينَ دَخَلَتْ فِي الدَّمِ مِنْ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ فَذُكِرَ ذَلِكَ لِعَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ فَقَالَتْ صَدَقَ عُرْوَةُ وَقَدْ جَادَلَهَا فِي ذَلِكَ نَاسٌ فَقَالُوا إِنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ فِي كِتَابِهِ { ثَلَاثَةَ قُرُوءٍ }فَقَالَتْ عَائِشَةُ صَدَقْتُمْ تَدْرُونَ مَا الْأَقْرَاءُ إِنَّمَا الْأَقْرَاءُ الْأَطْهَارُ.

উরওয়া ইবনু যুবায়র (র) থেকে বর্ণিতঃ

হাফসা বিন্ত ‘আবদির রহমান ইবনু আবী বাক্র সিদ্দীক (রা)-কে (তার স্বামী মুনজির ইবনু যুবায়র কর্তৃক তাকে তালাক দেওয়ার পর) যখন তিনি তৃতীয় ঋতুতে প্রবেশ করেছিলেন তখন তার স্বামীর গৃহ হতে নিয়ে যাওয়া হয়। ইবনু শিহাব বলেন : ‘আমর বিন্ত আবদির রহমানের নিকট এই ঘটনা উল্লেখ করা হল। তিনি বললেন : উরওয়া ইবনু যুবায়র (রা) কি বলেছেন অনেক লোক এই বিষয়ে আয়িশা (রা)-এর সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছেন। তারা বললেন : আল্লাহ তা’আলা কুরাআনে ইরশাদ করেছেন : তিন কুরূ অর্থাৎ তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীগণ তিন কুরূ (তুহর পর্যন্ত ইদ্দত পালন করবে)। (উত্তরে) আয়িশা (রা) বললেন, আপনারা ঠিকই বলেছেন কিন্তু আকরা-এর অর্থ কি তা আপনারা জানেন কি? আক্রা হচ্ছে তুহর (ঋতুর পরের পবিত্রতা)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৯৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ يَقُولُ مَا أَدْرَكْتُ أَحَدًا مِنْ فُقَهَائِنَا إِلَّا وَهُوَ يَقُولُ هَذَا يُرِيدُ قَوْلَ عَائِشَةَ.

ইবনু শিহাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ বাক্র ইবনু ‘আবদির রহমান (র)-কে আমি বলতে শুনেছি, আমাদের ফকীহদের প্রত্যেককে ‘আয়িশার উক্তির মতো এই ব্যাপারে কথা বলতে শুনেছি। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৯৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ وَزَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ الْأَحْوَصَ هَلَكَ بِالشَّامِ حِينَ دَخَلَتْ امْرَأَتُهُ فِي الدَّمِ مِنْ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ وَقَدْ كَانَ طَلَّقَهَا فَكَتَبَ مُعَاوِيَةُ بْنُ أَبِي سُفْيَانَ إِلَى زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ يَسْأَلُهُ عَنْ ذَلِكَ فَكَتَبَ إِلَيْهِ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ إِنَّهَا إِذَا دَخَلَتْ فِي الدَّمِ مِنْ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ وَبَرِئَ مِنْهَا وَلَا تَرِثُهُ وَلَا يَرِثُهَا.

সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) থেকে বর্ণিতঃ

আহ্ওয়াস (রা) সিরিয়াতে ইন্তেকাল করলেন। তখন তার স্ত্রী, যাকে তিনি পূর্বে তালাক দিয়েছিলেন, তৃতীয় ঋতুতে প্রবেশ করেছিলেন। মু’আবিয়া ইবনু আবী সুফিয়ান এই বিষয়ে প্রশ্ন করে যায়দ ইবনু সাবিত (রা)-এর কাছে পত্র লিখলেন। যায়দ (রা) (উত্তরে) তার নিকট লিখলেন, স্ত্রী যদি তৃতীয় ঋতুতে প্রবেশ করে তবে সে স্বামী হতে পৃথক হয়ে গিয়েছে। তার স্বামীও তা হতে পৃথক হয়েছে। সে স্বামীর মীরাস পাবে না, তার স্বামীও তার মীরাস পাবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৯৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ وَسَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ وَأَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَسُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ وَابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُمْ كَانُوا يَقُولُونَ إِذَا دَخَلَتْ الْمُطَلَّقَةُ فِي الدَّمِ مِنْ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ فَقَدْ بَانَتْ مِنْ زَوْجِهَا وَلَا مِيرَاثَ بَيْنَهُمَا وَلَا رَجْعَةَ لَهُ عَلَيْهَا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ, সালিম ইবনু ‘আবদুল্লাহ, আবূ বাক্র ইবনু আবদির রহমান, সুলায়মান ইবনু ইয়াসার ও ইবনু শিহাব (র) তারা সকলে বলতেন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীলোকে তৃতীয় ঋতুস্রাবে প্রবেশ করলে সে স্বামী হতে পৃথক হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে মীরাস চলবে না, আর স্বামীর জন্য স্ত্রীর দিকে রুজূ’ করা চলবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৯৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُوْلُ: إِذَا طَلَّقَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ فَدَخَلَتْ فِي الدَّمِ مِنْ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ وَبَرِئَ مِنْهَا قَالَ مَالِك وَهُوَ الْأَمْرُ عِنْدَنَا.

নাফি’ (র) হতে বর্ণিত, আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

কোন ব্যক্তি স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর স্ত্রী তৃতীয় ঋতুস্রাবে প্রবেশ করলে স্বামী হতে পৃথক হয়ে যাবে এবং স্বামী তা হতে পৃথক হয়ে যাবে। স্ত্রী স্বামীর মীরাস পাবে না এবং স্বামীও স্ত্রীর মীরাস পাবে না। মালিক (র) বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত অনুরূপ। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৯৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ الْفُضَيْلِ بْنِ أَبِي عَبْدِ اللهِ مَوْلَى الْمَهْرِيِّ أَنَّ الْقَاسِمَ بْنَ مُحَمَّدٍ وَسَالِمَ بْنَ عَبْدِ اللهِ كَانَا يَقُولَانِ إِذَا طُلِّقَتْ الْمَرْأَةُ فَدَخَلَتْ فِي الدَّمِ مِنْ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ فَقَدْ بَانَتْ مِنْهُ وَحَلَّتْ.

কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ থেকে বর্ণিতঃ

কোন স্ত্রী তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর তৃতীয় ঋতুস্রাবে প্রবেশ করলে সে স্বামী হতে পৃথক হয়ে যাবে এবং (অন্য স্বামীর পাণি গ্রহণ করার জন্য) হালাল হয়ে যাবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১১৯৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ وَابْنِ شِهَابٍ وَسُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ أَنَّهُمْ كَانُوا يَقُولُونَ إِنَّ عِدَّةَ الْمُخْتَلِعَةِ ثَلَاثَةُ قُرُوءٍ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যিব ইবনু শিহাব ও সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) এরা সকলে বলতেন, খুলা’ তালাক গ্রহণকারিণীর ইদ্দত হচ্ছে তিন কুরূ (তিন হায়েয)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২০০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُوْلُ: عِدَّةُ الْمُطَلَّقَةِ الْأَقْرَاءُ وَإِنْ تَبَاعَدَتْ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ইবনু শিহাব (র)-কে বলতে শুনেছেন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীলোকের ইদ্দত হচ্ছে আকরা যদিও উহা অধিক ব্যবধানে হয়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২০১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ رَجُلٍ مِنْ الْأَنْصَارِ أَنَّ امْرَأَتَهُ سَأَلَتْهُ الطَّلَاقَ فَقَالَ لَهَا إِذَا حِضْتِ فَآذِنِينِي فَلَمَّا حَاضَتْ آذَنَتْهُ فَقَالَ إِذَا طَهُرْتِ فَآذِنِينِي فَلَمَّا طَهُرَتْ آذَنَتْهُ فَطَلَّقَهَا
قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ.

ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ

সে আনসারীর স্ত্রী তার কাছে তালাক চাইল। তখন স্ত্রীকে বললেন, তোমার ঋতুস্রাব উপস্থিত হলে আমাকে সংবাদ দিও, অতঃপর স্ত্রীর ঋতুস্রাব হলে তাকে খবর দিল। তিনি বললেন : যখন তুমি পবিত্রতা অর্জন কর, তখন সংবাদ দিও। সে পবিত্র হওয়ার পর খবর দিল, তারপর স্বামী তাকে তালাক দিল। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদ ২২

যেই গৃহে স্ত্রীকে তালাক দেয়া হয় সে গৃহে ইদ্দত পালন করা

১২০২

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ وَسُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ أَنَّهُ سَمِعَهُمَا يَذْكُرَانِ أَنَّ يَحْيَى بْنَ سَعِيدِ بْنِ الْعَاصِ طَلَّقَ ابْنَةَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَكَمِ الْبَتَّةَ فَانْتَقَلَهَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْحَكَمِ فَأَرْسَلَتْ عَائِشَةُ أُمُّ الْمُؤْمِنِينَ إِلَى مَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ وَهُوَ يَوْمَئِذٍ أَمِيرُ الْمَدِينَةِ فَقَالَتْ اتَّقِ اللهَ وَارْدُدْ الْمَرْأَةَ إِلَى بَيْتِهَا فَقَالَ مَرْوَانُ فِي حَدِيثِ سُلَيْمَانَ إِنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ غَلَبَنِي وَقَالَ مَرْوَانُ فِي حَدِيثِ الْقَاسِمِ أَوَ مَا بَلَغَكِ شَأْنُ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ فَقَالَتْ عَائِشَةُ لَا يَضُرُّكَ أَنْ لَا تَذْكُرَ حَدِيثَ فَاطِمَةَ. فَقَالَ مَرْوَانُ إِنْ كَانَ بِكِ الشَّرُّ فَحَسْبُكِ مَا بَيْنَ هَذَيْنِ مِنْ الشَّرِّ.

ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ ইবনুল আ’স (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুর রহমান ইবনু হাকাম (র)-এর কন্যাকে তালাকে আল-বাত্তা (বায়েন তালাক) দিলেন। আবদুর রহমান ইবনু হাকাম কন্যাকে (স্বামীর গৃহ হতে নিজ গৃহে) সরিয়ে নিলেন। উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রা) মারওয়ান ইবন হাকামের নিকট লোক প্রেরণ করলেন। মারওয়ান তখন মদীনার গভর্নর। আয়িশা (রা) বললেন : আল্লাহকে ভয় করুন এবং (ইদ্দত পালনরতা) স্ত্রীকে তার স্বামীর গৃহে ফেরত পাঠান। সুলায়মানের রেওয়ায়ত সম্পর্কে মারওয়ান বললেন : আপনার নিকট ফাতেমা বিনত কায়েসের ব্যাপার পৌঁছে নাই কি? আয়িশা (রা) বললেন : ফাতেমার ঘটনা [১] উল্লেখ না করলে আপনার কোন ক্ষতি নেই (অর্থাৎ ইহাতে কোন দলীল নাই)। মারওয়ান বললেন : যদি আপনার দৃষ্টিতে স্বামীর গৃহে ফাতেমার ইদ্দত পালনে কোন অসুবিধা থাকে তবে যেহেতু উভয়ের মধ্যে (আবূ আমর ও তার স্ত্রী আমরা) যথেষ্ট অসুবিধা রয়েছে (যে কারণে স্বামীগৃহ ত্যাগ করে অন্যত্র ইদ্দত পালন করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে) তাই ইহা আপনার সন্তুষ্টির জন্য যথেষ্ট। (সহীহ, বুখারী ৫৩২২)

[১] ফাতেমা বিন্ত কায়স ইব্নু খালিদ ছিলেন ইরাকের গভর্নর যাহ্হাক ইবনু কায়স-এর বোন। তাকে বিবাহ করেন আবূ ‘আমর ইবনু হাযম (রা)। আবূ ‘আমর ছিলেন খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রা)-এর চাচাতো ভাই। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ‘আলী ইবনু আবি তালিবের সাথে ইয়ামানে প্রেরণ করেন। সেই সময় তিনি তার স্ত্রীকে অবশিষ্ট তৃতীয় তালাক প্রদান করেন। ইদ্দতকালীন সময়ে আবূ ‘আমর ইয়ামানে ইন্তিকাল করেন। বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি স্বামীগৃহ ত্যাগ করে অন্যত্র ইদ্দত পালনের জন্য রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অনুমতি চাইলেন। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন এবং তাকে অন্ধ সাহাবী ইবনু উম্মে মাকতুম (রা)-এর গৃহে উদ্দত পালন করার নির্দেশ দিলেন।

১২০৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ بِنْتَ سَعِيدِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ كَانَتْ تَحْتَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ فَطَلَّقَهَا الْبَتَّةَ فَانْتَقَلَتْ فَأَنْكَرَ ذَلِكَ عَلَيْهَا عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ.

নাফি’(র) থেকে বর্ণিতঃ

সাঈদ ইবনু যায়দ ইবনু আমর ইবনু নুফাইল (রা)-এর কন্যা ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর ইবনু উসমান ইবনু আফফান (র)-এর বিবাহ দিলেন। তিনি স্ত্রীকে তালাকে আল-বাত্তা প্রদান করলে সে (স্বামীর গৃহ হতে) সরে যায়। ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রা) উহার প্রতি সমর্থন জানালেন না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২০৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ طَلَّقَ امْرَأَةً لَهُ فِي مَسْكَنِ حَفْصَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ طَرِيقَهُ إِلَى الْمَسْجِدِ فَكَانَ يَسْلُكُ الطَّرِيقَ الْأُخْرَى مِنْ أَدْبَارِ الْبُيُوتِ كَرَاهِيَةَ أَنْ يَسْتَأْذِنَ عَلَيْهَا حَتَّى رَاجَعَهَا.

নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) তার জনৈকা স্ত্রীকে নবী-পত্নী হাফসা (রা)-এর গৃহে তালাক দিলেন। এই গৃহ তাহার মসজিদে গমনের পথে অবস্থিত ছিল। তাই তিনি অন্য পথে গৃহের পেছন দিয়ে মসজিদে গমন করতেন। এটা এজন্য যে, স্ত্রীর দিকে রুজূ’ না করা পর্যন্ত অনুমতি নিয়ে তাহার নিকট যাওয়াকে তিনি ভাল মনে করতেন না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২০৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ سُئِلَ عَنْ الْمَرْأَةِ يُطَلِّقُهَا زَوْجُهَا وَهِيَ فِي بَيْتٍ بِكِرَاءٍ عَلَى مَنْ الْكِرَاءُ فَقَالَ سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ عَلَى زَوْجِهَا قَالَ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ عِنْدَ زَوْجِهَا قَالَ فَعَلَيْهَا قَالَ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ عِنْدَهَا قَالَ فَعَلَى الْأَمِيْرِ.

ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ

সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র)-এর নিকট প্রশ্ন করা হল এরূপ স্ত্রীলোক সম্বন্ধে, যাকে স্বামী তালাক দিয়েছে ভাড়াটে গৃহে। এখন ভাড়ার দায়িত্ব কার উপর বর্তাবে? সা’ঈদ বললেন : ভাড়ার দায়িত্ব স্বামীর উপর ন্যস্ত থাকবে। প্রশ্নকারী বলিল : স্বামী যদি ভাড়া দেওয়ার সামর্থ্য না রাখে? তিনি বললেন, তবে উহা প্রদানের দায়িত্ব স্ত্রীর উপর বর্তাবে। প্রশ্নকারী বলল : যদি স্ত্রীরও সামর্থ্য না থাকে? সা’ঈদ বললেন : তখন শহরের শাসনকর্তার উপর দায়িত্ব বর্তাবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদ ২৩

তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর খোরপোশের বর্ণনা

১২০৬

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ يَزِيدَ مَوْلَى الْأَسْوَدِ بْنِ سُفْيَانَ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ أَنَّ أَبَا عَمْرِو بْنَ حَفْصٍ طَلَّقَهَا الْبَتَّةَ وَهُوَ غَائِبٌ بِالشَّامِ فَأَرْسَلَ إِلَيْهَا وَكِيلُهُ بِشَعِيرٍ فَسَخِطَتْهُ فَقَالَ وَاللهِ مَا لَكِ عَلَيْنَا مِنْ شَيْءٍ فَجَاءَتْ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ لَيْسَ لَكِ عَلَيْهِ نَفَقَةٌ وَأَمَرَهَا أَنْ تَعْتَدَّ فِي بَيْتِ أُمِّ شَرِيكٍ ثُمَّ قَالَ تِلْكَ امْرَأَةٌ يَغْشَاهَا أَصْحَابِي اعْتَدِّي عِنْدَ عَبْدِ اللهِ بْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ فَإِنَّهُ رَجُلٌ أَعْمَى تَضَعِينَ ثِيَابَكِ عِنْدَهُ فَإِذَا حَلَلْتِ فَآذِنِينِي قَالَتْ فَلَمَّا حَلَلْتُ ذَكَرْتُ لَهُ أَنَّ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ وَأَبَا جَهْمِ بْنَ هِشَامٍ خَطَبَانِي
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَّا أَبُو جَهْمٍ فَلَا يَضَعُ عَصَاهُ عَنْ عَاتِقِهِ وَأَمَّا مُعَاوِيَةُ فَصُعْلُوكٌ لَا مَالَ لَهُ انْكِحِي أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ قَالَتْ فَكَرِهْتُهُ ثُمَّ قَالَ انْكِحِي أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ فَنَكَحْتُهُ فَجَعَلَ اللهُ فِي ذَلِكَ خَيْرًا وَاغْتَبَطْتُ بِهِ.

ফাতেমা বিনত কায়েস হতে বর্ণিত, আবূ আমর ইবনু হাফস (রা) থেকে বর্ণিতঃ

তাকে তালাকে আল-বাত্তা দিলেন। তার স্বামী তখন সিরিয়াতে ছিলেন। অতঃপর তার উকীলকে গমসহ তাঁর নিকট পাঠালেন। তিনি তাকে অতি অল্প মনে করলেন। তাঁর উকীল বললেন, আমাদের কাছে তোমার প্রাপ্য আর কিছু নেই। তিনি (ফাতেমা) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে উপস্থিত হলেন এবং এই ঘটনা উল্লেখ করলে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার জন্য তোমার খোরপোশ প্রদান জরুরী নয় এবং ফাতেমাকে উম্মে শারীকের গৃহে ইদ্দত পালন করতে তিনি নির্দেশ দিলেন। তারপর বললেন : (উম্মে শারীক এমন একজন মহিলা) যার গৃহে আমার সাহাবিগণ সর্বদা যাতায়াত করে থাকেন। তুমি ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু উম্মে মকতুমের গৃহে ইদ্দত পালন কর, কারণ তিনি একজন অন্ধ ব্যক্তি। তোমার বস্ত্র তার নিকট উন্মুক্ত হলেও (এতে তোমার কোন অসুবিধা হবে না)। ইদ্দত শেষ হওয়ার পর তুমি অন্যের জন্য হালাল হয়ে গেলে আমাকে খবর দিও। ফাতেমা বললেন : আমি হালাল হওয়ার পর রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আমার বিষয় উল্লেখ করলাম এবং বললাম, মুয়াবিয়া ইবনু আবি সুফিয়ান (রা) ও আবূ জাহম ইবনু হিশাম (রা) তারা উভয়ে আমার কাছে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছেন। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবূ জাহম তার গর্দান হতে লাঠি নামায় না। আর মুয়াবিয়া দরিদ্র ব্যক্তি। তার ধন-সম্পদ নাই। তুমি উসামা ইবনু যায়দ (রা)-কে বিবাহ কর। ফাতেমা বললেন, আমি উসামাকে অপছন্দ করি। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় বললেন : তুমি উসামা ইবনু যায়দ (রা)-কে বিবাহ কর। তারপর আমি তাকে বিবাহ করি এবং আল্লাহ্ ইহাতে অনেক মঙ্গল দান করেছেন, যার কারণে আমার প্রতি ঈর্ষা করা হত। (সহীহ, মুসলিম ১৪৮০)

১২০৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُوْلُ: الْمَبْتُوتَةُ لَا تَخْرُجُ مِنْ بَيْتِهَا حَتَّى تَحِلَّ وَلَيْسَتْ لَهَا نَفَقَةٌ إِلَّا أَنْ تَكُونَ حَامِلًا فَيُنْفَقُ عَلَيْهَا حَتَّى تَضَعَ حَمْلَهَا قَالَ مَالِك وَهَذَا الْأَمْرُ عِنْدَنَا.

ইবনু শিহাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

যে স্ত্রীকে বায়েন তালাক দেয়া হয়েছে, সে নিজ গৃহ হতে (ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বে) হালাল না হওয়া পর্যন্ত বের হবে না। তার জন্য খোরপোশও নাই, কিন্তু যদি গর্ভবতী হয় তবে সন্তান প্রসব পর্যন্ত স্বামী তার খোরপোশ দিবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : এই ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্তও অনুরূপ।

পরিচ্ছেদ ২৫

তালাকের ইদ্দত সম্পর্কীয় বিবিধ বর্ণনা

১২০৯

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ وَعَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ قُسَيْطٍ اللَّيْثِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ قَالَ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، أَيُّمَا امْرَأَةٍ طُلِّقَتْ فَحَاضَتْ حَيْضَةً أَوْ حَيْضَتَيْنِ ثُمَّ رَفَعَتْهَا حَيْضَتُهَا فَإِنَّهَا تَنْتَظِرُ تِسْعَةَ أَشْهُرٍ فَإِنْ بَانَ بِهَا حَمْلٌ فَذَلِكَ وَإِلَّا اعْتَدَّتْ بَعْدَ التِّسْعَةِ أَشْهُرٍ ثَلَاثَةَ أَشْهُرٍ ثُمَّ حَلَّتْ.
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ الطَّلَاقُ لِلرِّجَالِ وَالْعِدَّةُ لِلنِّسَاءِ.

উমার ইবনু খাত্তাব (রা) থেকে বর্ণিতঃ

যেই স্ত্রীকে তালাক দেয়া হয়েছে তারপর হায়য (মাসিক ঋতু) এসেছে এক হায়য বা দুই হায়য, অতঃপর তার ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সেই স্ত্রী নয় মাস যাবত অপেক্ষা করবে (ইতিমধ্যে) গর্ভ প্রকাশ পেলে, তবে সন্তান প্রসব দ্বারা ইদ্দত পালন করবে, নতুবা নয় মাসের পর তিন মাস ইদ্দত পালন করবে, তারপর সে অন্যের জন্য হালাল হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) হতে বর্ণিত : সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যিব (র) বলতেন, পুরুষের জন্য হল তালাকের অধিকার আর স্ত্রীদের জন্য হল ইদ্দত। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২১০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ قَالَ: عِدَّةُ الْمُسْتَحَاضَةِ سَنَةٌ قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا فِي الْمُطَلَّقَةِ الَّتِي تَرْفَعُهَا حَيْضَتُهَا حِينَ يُطَلِّقُهَا زَوْجُهَا أَنَّهَا تَنْتَظِرُ تِسْعَةَ أَشْهُرٍ فَإِنْ لَمْ تَحِضْ فِيهِنَّ اعْتَدَّتْ ثَلَاثَةَ أَشْهُرٍ فَإِنْ حَاضَتْ قَبْلَ أَنْ تَسْتَكْمِلَ الْأَشْهُرَ الثَّلَاثَةَ اسْتَقْبَلَتْ الْحَيْضَ وَإِنْ مَرَّتْ بِهَا تِسْعَةُ أَشْهُرٍ قَبْلَ أَنْ تَحِيضَ اعْتَدَّتْ ثَلَاثَةَ أَشْهُرٍ فَإِنْ حَاضَتْ الثَّانِيَةَ قَبْلَ أَنْ تَسْتَكْمِلَ الْأَشْهُرَ الثَّلَاثَةَ اسْتَقْبَلَتْ الْحَيْضَ فَإِنْ مَرَّتْ بِهَا تِسْعَةُ أَشْهُرٍ قَبْلَ أَنْ تَحِيضَ اعْتَدَّتْ ثَلَاثَةَ أَشْهُرٍ فَإِنْ حَاضَتْ الثَّالِثَةَ كَانَتْ قَدْ اسْتَكْمَلَتْ عِدَّةَ الْحَيْضِ فَإِنْ لَمْ تَحِضْ اسْتَقْبَلَتْ ثَلَاثَةَ أَشْهُرٍ ثُمَّ حَلَّتْ وَلِزَوْجِهَا عَلَيْهَا فِي ذَلِكَ الرَّجْعَةُ قَبْلَ أَنْ تَحِلَّ إِلَّا أَنْ يَكُونَ قَدْ بَتَّ طَلَاقَهَا.
২১৬৬-قَالَ مَالِك السُّنَّةُ عِنْدَنَا أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا طَلَّقَ امْرَأَتَهُ وَلَهُ عَلَيْهَا رَجْعَةٌ فَاعْتَدَّتْ بَعْضَ عِدَّتِهَا ثُمَّ ارْتَجَعَهَا ثُمَّ فَارَقَهَا قَبْلَ أَنْ يَمَسَّهَا أَنَّهَا لَا تَبْنِي عَلَى مَا مَضَى مِنْ عِدَّتِهَا وَأَنَّهَا تَسْتَأْنِفُ مِنْ يَوْمَ طَلَّقَهَا عِدَّةً مُسْتَقْبَلَةً وَقَدْ ظَلَمَ زَوْجُهَا نَفْسَهُ وَأَخْطَأَ إِنْ كَانَ ارْتَجَعَهَا وَلَا حَاجَةَ لَهُ بِهَا.
২১৬৭-قَالَ مَالِك وَالْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ الْمَرْأَةَ إِذَا أَسْلَمَتْ وَزَوْجُهَا كَافِرٌ ثُمَّ أَسْلَمَ فَهُوَ أَحَقُّ بِهَا مَا دَامَتْ فِي عِدَّتِهَا فَإِنْ انْقَضَتْ عِدَّتُهَا فَلَا سَبِيلَ لَهُ عَلَيْهَا وَإِنْ تَزَوَّجَهَا بَعْدَ انْقِضَاءِ عِدَّتِهَا لَمْ يُعَدَّ ذَلِكَ طَلَاقًا وَإِنَّمَا فَسَخَهَا مِنْهُ الْإِسْلَامُ بِغَيْرِ طَلَاقٍ.

সাঈদ ইবনু মুসায়্যিব (র) থেকে বর্ণিতঃ

মুসতাহাজা (রোগের কারণে যার অনিয়মিত স্রাব হয়) ঐ নারীর ইদ্দত হচ্ছে এক বৎসর। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীলোক সম্পর্কে আমাদের মাস’আলা হল, এই তালাকপ্রাপ্তা হওয়ার পর যেই স্ত্রীলোকের রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, সে নয় মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। এই নয় মাসের মধ্যে ঋতুস্রাব না হলে তবে তিন মাস ইদ্দত পালন করবে। আর তিন মাস পূর্ণ করার পূর্বে যদি ঋতুস্রাব হয় তবে পুনরায় হায়য-এর ইদ্দত পালন শুরু করবে। কিন্তু যদি হায়য আসার পূর্বে নয় মাস পূর্ণ হয়ে যায় তবে তিন মাস ইদ্দত পালন করবে। আর তৃতীয় মাসে উপনীত হয়েছে এমন অবস্থায় যদি ঋতুস্রাব হয় তবে সে ইদ্দতের সময় পূর্ণ করেছে। অন্য পক্ষে যদি তার ঋতুস্রাব না হয় তবে তিনমাস ইদ্দত পূর্ণ করবে। তারপর অন্য স্বামীর রুজূ করার অধিকার থাকবে, কিন্তু যদি সে বায়েন তালাক দিয়ে থাকে তবে আর রুজূ করতে পারবে না।

মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট সুন্নাত (নিয়ম হল) এই যে, যদি কোন কোন লোক তার স্ত্রীকে তালাক দেয় এবং সেই স্ত্রীকে পুনরায় গ্রহণ করার (রুজূ’ করা) ইখতিয়ারও তার থাকে, এমতাবস্থায় স্ত্রী কিছু ইদ্দত পালন করেছে। অতঃপর স্বামী তার প্রতি রুজূ’ করেছে এবং তাকে স্পর্শ করার পূর্বে পুনরায় তালাক দিয়েছে। তবে সেই স্ত্রী ইদ্দতের যা অতীত হয়েছে উহার উপর ভিত্তি করবে না বরং সে তাকে (দ্বিতীয়বার) তালাক দেওয়ার দিন হতে নূতনভাবে ইদ্দত পালন করবে, তার স্বামী এইরূপ করে নিজের ক্ষতি করেছে এবং তার আবশ্যক না থাকলে স্ত্রীর দিকে রুজূ’ করে সে ভুল করেছেন।
মালিক (র) বলেন : স্ত্রী যদি ইসলাম গ্রহণ করে তার স্বামী (তখনও) কাফের। তারপর স্বামীও ইসলাম গ্রহণ করল, তবে আমাদের নিকট ফয়সালা হচ্ছে এই : ইদ্দতে থাকা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তার স্বামী তার হকদার হবে, আর যদি ইদ্দত শেষ হয়ে যায় তবে তার জন্য স্ত্রীকে পাওয়ার কোন পথ নেই। আর যদি ইদ্দত সমাপ্তির পর তাকে বিবাহ করে তবে পূর্বে প্রদত্ত তালাক তালাক বলে গণ্য হবে না। এই ঘটনায় স্ত্রীকে বিচ্ছেদ করিয়েছে ইসলাম গ্রহণ, তালাক নয়।

পরিচ্ছেদ ২৬

পঞ্চায়েত বা সালিসের ব্যক্তিদ্বয়

১২১১

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ قَالَ فِي الْحَكَمَيْنِ اللَّذَيْنِ قَالَ اللهُ تَعَالَى { وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِنْ أَهْلِهَا إِنْ يُرِيدَا إِصْلَاحًا يُوَفِّقْ اللهُ بَيْنَهُمَا إِنَّ اللهَ كَان عَلِيمًا خَبِيرًا }إِنَّ إِلَيْهِمَا الْفُرْقَةَ بَيْنَهُمَا وَالْاجْتِمَاعَ قَالَ مَالِك وَذَلِكَ أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ الْحَكَمَيْنِ يَجُوزُ قَوْلُهُمَا بَيْنَ الرَّجُلِ وَامْرَأَتِهِ فِي الْفُرْقَةِ وَالْاجْتِمَاعِ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, আলী ইবনু আবি তালীব (রা) হাকামান (সালিসের ব্যক্তিদ্বয়) সম্পর্কে বলেছেন (যাদের বিষয়ে) আল্লাহ তা’আলা বলেছেন
وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِنْ أَهْلِهَا إِنْ يُرِيدَا إِصْلَاحًا يُوَفِّقْ اللهُ بَيْنَهُمَا إِنَّ اللهَ كَان عَلِيمًا خَبِيْرًا.
অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে তোমরা যদি বিবাদের আশংকা কর তবে স্বামীর পরিজন হতে একজন এবং স্ত্রীর পরিজন হতে একজন হাকাম (ফয়সালাকারী, বিবাদ মীমাংসাকারী) প্রেরণ কর যদি তারা উভয়ে মীমাংসার ইচ্ছা করেন। আল্লাহ তাদের তওফীক দান করবেন, আল্লাহ নিশ্চয় সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে অবহিত।
অর্থাৎ তাদের হাতে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের বিচ্ছেদ ও মিলন এই দুইয়ের সুযোগ রয়েছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, সালিসের ব্যক্তিদ্বয়ের ফয়সালা স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ ও মিলনের ব্যাপারে প্রযোজ্য হবে, এটাই সর্বোত্তম যা আমি আলিম ব্যক্তিদের নিকট শুনেছি।

পরিচ্ছেদ ২৭

যাকে বিবাহ করা হয়নি তাকে তালাক দেয়ার কসম খাওয়া সম্পর্কে বর্ণনা

১২১২

و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ وَعَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ وَعَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُودٍ وَسَالِمَ بْنَ عَبْدِ اللهِ وَالْقَاسِمَ بْنَ مُحَمَّدٍ وَابْنَ شِهَابٍ وَسُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ كَانُوا يَقُولُونَ إِذَا حَلَفَ الرَّجُلُ بِطَلَاقِ الْمَرْأَةِ قَبْلَ أَنْ يَنْكِحَهَا ثُمَّ أَثِمَ إِنَّ ذَلِكَ لَازِمٌ لَهُ إِذَا نَكَحَهَ
৭৯و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُودٍ كَانَ يَقُولُ فِيمَنْ قَالَ كُلُّ امْرَأَةٍ أَنْكِحُهَا فَهِيَ طَالِقٌ إِنَّهُ إِذَا لَمْ يُسَمِّ قَبِيلَةً أَوْ امْرَأَةً بِعَيْنِهَا فَلَا شَيْءَ عَلَيْهِ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ اااا.
২১৭৩-قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ أَنْتِ الطَّلَاقُ وَكُلُّ امْرَأَةٍ أَنْكِحُهَا فَهِيَ طَالِقٌ وَمَالُهُ صَدَقَةٌ إِنْ لَمْ يَفْعَلْ كَذَا وَكَذَا فَحَنِثَ.
قَالَ أَمَّا نِسَاؤُهُ فَطَلَاقٌ كَمَا قَالَ وَأَمَّا قَوْلُهُ كُلُّ امْرَأَةٍ أَنْكِحُهَا فَهِيَ طَالِقٌ فَإِنَّهُ إِذَا لَمْ يُسَمِّ امْرَأَةً بِعَيْنِهَا أَوْ قَبِيلَةً أَوْ أَرْضًا أَوْ نَحْوَ هَذَا فَلَيْسَ يَلْزَمُهُ ذَلِكَ وَلْيَتَزَوَّجْ مَا شَاءَ وَأَمَّا مَالُهُ فَلْيَتَصَدَّقْ بِثُلُثِهََََِ اااا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, উমার ইবনু খাত্তাব (রা) আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) আবদুল্লাহ্ ইবনু মাসঊদ (রা), সালিম ইবনু আবদিল্লাহ্ (র), কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (র) ইবনু শিহাব (র) এবং সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) তারা সকলেই বলতেন : কোন লোক বিবাহের পূর্বে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার কসম খেলে তারপর কসম ভাঙ্গলেও বিবাহ করার পর তালাক অবশ্যম্ভাবী হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : তার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, আবদুল্লাহ্ ইবনু মাসঊদ (রা) বলতেন, যে ব্যক্তি বলেছে : যে কোন নারীকে আমি বিবাহ করি সে তালাকপ্রাপ্তা হবে, যদি সে কোন গোত্রকে নির্দিষ্ট না করে অথবা কোন নারীকে নির্দিষ্ট না করে তবে তার উপর জরুরী হবে না। মালিক (র) বলেন, এটাই উত্তম যা আমি শুনেছি। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে বলল, তোমাকে তালাক এবং যে কোন নারীকে বিবাহ করি তাকেও তালাক এবং আমার মাল সব (আল্লাহর রাস্তায়) সদকাস্বরূপ। যদি আমি অমুক অমুক কাজ না করি। পরে কসম ভেঙ্গেছে (এবং সেই সেই কাজও করেনি)। তিনি [মালিক (র)] বলেন : সে ব্যক্তির স্ত্রী তালাক হয়ে যাইবে যেমন সে বলেছে, আর তার উক্তি : যে কোন নারীকে আমি বিবাহ করি উহার প্রতি তালাক, ইহার বিধান সে যদি কোন নারীকে অথবা গোত্রকে অথবা কোন স্থানকে অথবা এরূপ অন্য কিছুকে নির্দিষ্ট না করে থাকে তবে এইরূপ কসমের দ্বারা তার উপর কিছুই বাধ্যতামূলক হবে না, যত ইচ্ছা সে বিবাহ করতে পারবে। আর তার মালের এক তৃতীয়াংশ সদকা করে দিতে হবে।

পরিচ্ছেদ ২৪

তালাকপ্রাপ্তা বাদীর ইদ্দতের বর্ণনা ও বিধান

১২০৮

قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا فِي طَلَاقِ الْعَبْدِ الْأَمَةَ إِذَا طَلَّقَهَا وَهِيَ أَمَةٌ ثُمَّ عَتَقَتْ بَعْدُ فَعِدَّتُهَا عِدَّةُ الْأَمَةِ لَا يُغَيِّرُ عِدَّتَهَا عِتْقُهَا كَانَتْ لَهُ عَلَيْهَا رَجْعَةٌ أَوْ لَمْ تَكُنْ لَهُ عَلَيْهَا رَجْعَةٌ لَا تَنْتَقِلُ عِدَّتُهَا قَالَ مَالِك وَمِثْلُ ذَلِكَ الْحَدُّ يَقَعُ عَلَى الْعَبْدِ ثُمَّ يَعْتِقُ بَعْدَ أَنْ يَقَعَ عَلَيْهِ الْحَدُّ فَإِنَّمَا حَدُّهُ حَدُّ عَبْدٍ.
২১৫৯قَالَ مَالِك وَالْحُرُّ يُطَلِّقُ الْأَمَةَ ثَلَاثًا وَتَعْتَدُّ بِحَيْضَتَيْنِ وَالْعَبْدُ يُطَلِّقُ الْحُرَّةَ تَطْلِيقَتَيْنِ وَتَعْتَدُّ ثَلَاثَةَ قُرُوء، ২১৬قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ تَكُونُ تَحْتَهُ الْأَمَةُ ثُمَّ يَبْتَاعُهَا، فَيَعْتِقُهَا إِنَّهَا تَعْتَدُّ عِدَّةَ الْأَمَةِ حَيْضَتَيْنِ مَا لَمْ يُصِبْهَا فَإِنْ أَصَابَهَا بَعْدَ مِلْكِهِ إِيَّاهَا قَبْلَ عِتَاقِهَا لَمْ يَكُنْ عَلَيْهَا إِلَّا الْاسْتِبْرَاءُ بِحَيْضَةٍ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

ক্রীতদাস তার ক্রীতদাসী স্ত্রীকে ক্রীতদাসী থাক অবস্থায় তালাক দিল। তারপর স্ত্রী মুক্তিলাভ করল। এমতাবস্থায় আমাদের মতে তার ইদ্দত হবে ক্রীতদাসীর ইদ্দত। মুক্তিলাভ তার ইদ্দতে কোন পরিবর্তন আনবে না। তাঁর স্বামী তার দিকে প্রত্যাবর্তন করার অধিকার থাকুক আর না থাকুক কোন অবস্থাতেই ইদ্দত পরিবর্তিত হবে না।
মালিক (র) বলেন : (ইসলামী বিধান মুতাবিক অপরাধের শাস্তি)-এর ব্যাপারও অনুরূপ। ক্রীতদাসের উপর হদ এর শাস্তি নির্ধারণ করা হল। অতঃপর তাকে মুক্তি দেয়া হল। তার ক্ষেত্রেও হদ ক্রীতদাসের মতোই হবে।
মালিক (র) বলেন : আযাদ ব্যক্তি ক্রীতদাসীকে তিন তালাক দিতে পারবে। সে দুই হায়য (মাসিক ঋতু) ইদ্দত পালন করবে আর ক্রীতদাস আযাদ রমনীকে দুই তালাক দিতে পারবে, সে ইদ্দত পালন করবে তিন কুরূ।
মালিক (র) বলেন : যে ব্যক্তির স্ত্রী ক্রীতদাসী, অতঃপর উহাকে সে ক্রয় করল এবং আযাদ করে দিল, সেও ক্রীতদাসীর মতো দুই হায়য ইদ্দত পালন করবে যাবৎ তার সাথে সহবাস না করা হয়। আর যদি মালিক হওয়ার পর স্বামী তার সাথে সহবাস করে থাকে মুক্তি প্রদানের পূর্বে, তবে ইস্তিবরা (জরায়ূকে অন্যের বীর্য হতে মুক্ত করা) তার উপর এক হায়য ব্যতীত অন্য কিছু নাই।

পরিচ্ছেদ ২৮

স্ত্রীসহবাসে অক্ষম ব্যক্তিকে সময় প্রদান সম্পর্কে বিধান

১২১৩

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ كَانَ يَقُوْلُ: مَنْ تَزَوَّجَ امْرَأَةً فَلَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يَمَسَّهَا فَإِنَّهُ يُضْرَبُ لَهُ أَجَلٌ سَنَةً فَإِنْ مَسَّهَا وَإِلَّا فُرِّقَ بَيْنَهُمَا.

সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যিব (র) থেকে বর্ণিতঃ

যে ব্যক্তি কোন নারীকে বিবাহ করেছে এবং তার সাথে সহবাস করার ক্ষমতা তার নাই, তবে তাকে এক বৎসর সময় দেয়া হবে। (এই সময়ের মধ্যে) যদি স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে পারে তবে মহিলাটি তার স্ত্রী থাকবে, অন্যথায় উভয়কে পৃথক করে দেয়া হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২১৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَأَلَ ابْنَ شِهَابٍ مَتَى يُضْرَبُ لَهُ الْأَجَلُ أَمِنْ يَوْمِ يَبْنِي بِهَا أَمْ مِنْ يَوْمِ تُرَافِعُهُ إِلَى السُّلْطَانِ فَقَالَ بَلْ مِنْ يَوْمِ تُرَافِعُهُ إِلَى السُّلْطَانِ ২১৭৭-قَالَ مَالِك فَأَمَّا الَّذِي قَدْ مَسَّ امْرَأَتَهُ ثُمَّ اعْتَرَضَ عَنْهَا فَإِنِّي لَمْ أَسْمَعْ أَنَّهُ يُضْرَبُ لَهُ أَجَلٌ وَلَا يُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু শিহাবের নিকট প্রশ্ন করলেন, স্বামীকে কখন হতে সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে? নির্জন বাস হতে না (হাকিমের নিকট) বিষয় উপস্থাপিত হওয়ার সময় হতে? তিনি বললেন, সময় দেয়া হবে হাকিমের নিকট মোকদ্দমা উপস্থাপনের দিন হতে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছে, অতঃপর সহবাসে অক্ষমতা প্রকাশ পেয়েছে এই ব্যক্তির জন্য কোন সময় নির্দিষ্ট করা এবং তাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো হবে না। এই সম্পর্কে আমি (মালিক) কিছুই শুনি নাই, অর্থাৎ এই ব্যাপারে পূর্ববর্তী ফকীহদের নিকট হতে কোন রেওয়ায়ত বা সিদ্ধান্তের কথা তিনি শুনেন নিই।

পরিচ্ছেদ ২৯

তালাকের বিবিধ প্রসঙ্গ

১২১৫

و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُ قَالَ بَلَغَنِي أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِرَجُلٍ مِنْ ثَقِيفٍ أَسْلَمَ وَعِنْدَهُ عَشْرُ نِسْوَةٍ حِينَ أَسْلَمَ الثَّقَفِيُّ أَمْسِكْ مِنْهُنَّ أَرْبَعًا وَفَارِقْ سَائِرَهُنَّ.

ইবনু শিহাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

আমার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সাকীফ গোত্রের এক ব্যক্তি মুসলমান হয়েছেন। তার দশটি বিবি ছিল। যখন তিনি ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন, তখন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে উহাদের মধ্য হতে চারটিকে রাখতে এবং অন্য সকলকে ত্যাগ করতে নির্দেশ দিলেন। (সহীহ, তিরমিযী ১১২৮, ইবনু মাজা ১৯৫৩, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন, সহীহ ও যয়ীফ সুনানে তিরমিযী, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত সনদটি মুরসাল)

১২১৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ وَحُمَيْدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَعُبَيْدَ اللهِ بْنَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ وَسُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ كُلُّهُمْ يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ يَقُوْلُ: أَيُّمَا امْرَأَةٍ طَلَّقَهَا زَوْجُهَا تَطْلِيقَةً أَوْ تَطْلِيقَتَيْنِ ثُمَّ تَرَكَهَا حَتَّى تَحِلَّ وَتَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ فَيَمُوتَ عَنْهَا أَوْ يُطَلِّقَهَا ثُمَّ يَنْكِحُهَا زَوْجُهَا الْأَوَّلُ فَإِنَّهَا تَكُونُ عِنْدَهُ عَلَى مَا بَقِيَ مِنْ طَلَاقِهَا، قَالَ مَالِك وَعَلَى ذَلِكَ السُّنَّةُ عِنْدَنَا الَّتِي لَا اخْتِلَافَ فِيْهَا.

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আমি উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-কে বলতে শুনেছি, যে স্ত্রীকে তার স্বামী এক তালাক অথবা দুই তালাক দিয়েছে, তারপর ইদ্দতের সময় অতিবাহিত করে হালাল হওয়া এবং দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত তাকে প্রথম স্বামী পরিত্যাগ করে রেখেছে, এমতাবস্থায় দ্বিতীয় স্বামী তাকে বিবাহ করার পর দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যু হওয়া অথবা সেই স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর প্রথম স্বামী পুনরায় সেই স্ত্রীকে বিবাহ করেছে, তবে সেই স্ত্রী অবশিষ্ট (এক অথবা দুই) তালাকের অধিকারিনী হয়ে প্রথম স্বামীর স্ত্রীরূপে বহাল থাকবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকটও মাস’আলার ফয়সালা এইরূপ, ইহাতে কোন মাতনৈক্য নাই।

১২১৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ثَابِتِ بْنِ الْأَحْنَفِ أَنَّهُ تَزَوَّجَ أُمَّ وَلَدٍ لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدِ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ فَدَعَانِي عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدِ بْنِ الْخَطَّابِ فَجِئْتُهُ فَدَخَلْتُ عَلَيْهِ فَإِذَا سِيَاطٌ مَوْضُوعَةٌ وَإِذَا قَيْدَانِ مِنْ حَدِيدٍ وَعَبْدَانِ لَهُ قَدْ أَجْلَسَهُمَا فَقَالَ طَلِّقْهَا وَإِلَّا وَالَّذِي يُحْلَفُ بِهِ فَعَلْتُ بِكَ كَذَا وَكَذَا قَالَ فَقُلْتُ هِيَ الطَّلَاقُ أَلْفًا قَالَ فَخَرَجْتُ مِنْ عِنْدِهِ فَأَدْرَكْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ بِطَرِيقِ مَكَّةَ فَأَخْبَرْتُهُ بِالَّذِي كَانَ مِنْ شَأْنِي فَتَغَيَّظَ عَبْدُ اللهِ وَقَالَ لَيْسَ ذَلِكَ بِطَلَاقٍ وَإِنَّهَا لَمْ تَحْرُمْ عَلَيْكَ فَارْجِعْ إِلَى أَهْلِكَ
قَالَ فَلَمْ تُقْرِرْنِي نَفْسِي حَتَّى أَتَيْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ وَهُوَ يَوْمَئِذٍ بِمَكَّةَ أَمِيرٌ عَلَيْهَا فَأَخْبَرْتُهُ بِالَّذِي كَانَ مِنْ شَأْنِي وَبِالَّذِي قَالَ لِي عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ قَالَ فَقَالَ لِي عَبْدُ اللهِ بْنُ الزُّبَيْرِ لَمْ تَحْرُمْ عَلَيْكَ فَارْجِعْ إِلَى أَهْلِكَ وَكَتَبَ إِلَى جَابِرِ بْنِ الْأَسْوَدِ الزُّهْرِيِّ وَهُوَ أَمِيرُ الْمَدِينَةِ يَأْمُرُهُ أَنْ يُعَاقِبَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَأَنْ يُخَلِّيَ بَيْنِي وَبَيْنَ أَهْلِي قَالَ فَقَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَجَهَّزَتْ صَفِيَّةُ امْرَأَةُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ امْرَأَتِي حَتَّى أَدْخَلَتْهَا عَلَيَّ بِعِلْمِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ ثُمَّ دَعَوْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ يَوْمَ عُرْسِي لِوَلِيمَتِي فَجَاءَنِي.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুর রহমান ইবনু যায়দ ইবনু খাত্তাব (রা)-এর উম্মে ওয়ালাদ-কে সাবিতুল আহ্নাফ (র) বিবাহ করলেন। সাবিত বলেন : আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান ইবনু যায়দ ইবনু খাত্তাব (রা) আমাকে ডেকে পাঠালেন, আমি তার কাছে এলাম এবং তার সমীপে প্রবেশ করে দেখলাম, সেখানে কয়েকটি চাবুক ও দুইটি লৌহ শিকল (আর তার কাছে রয়েছে) উপবিষ্ট তার দুইজন ক্রীতদাস। তারপর আমাকে বললেন, তুমি স্ত্রীকে তালাক দাও, নতুবা আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে এইরূপ করব (অর্থাৎ চাবুক মারব ও শিকল পরাব)। সাবিত বললেন : (চাপ দেখে) আমি বললাম, এই স্ত্রীকে তালাক এক হাজার বার। তারপর সাবিত বলেন আমি তার নিকট হতে প্রস্থান করলাম।
মক্কার পথে আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা)-এর সাক্ষাত পেলাম, আমি তাকে আমার ব্যাপার অবহিত করলাম। (শুনে) ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) রাগান্বিত হলেন এবং বললেন : ইহা (কোন) তালাক নয়, তোমার স্ত্রী তোমার জন্য হারাম হয়নি। তুমি তোমার স্ত্রী গ্রহণ কর, আমার মনে (কিন্তু) শান্তি এল না। তাই আমি আবদুল্লাহ্ ইবনু যুবায়র (রা)-এর নিকট হাযির হলাম। তিনি ছিলেন তখন মক্কার শাসনকর্তা। আমি তাকে বিষয়টি অবহিত করলাম এবং আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) যা বলেছেন তাও জানালাম (ঘটনা শুনে) আবদুল্লাহ্ ইবনু যুবায়র (রা) আমাকে বললেন : তোমার স্ত্রী তোমার জন্য হারাম হয়নি, তুমি তার দিকে রুজূ’ কর। তিনি জাবির ইবনু আসওয়াদ যুহরী তৎকালীন মদীনার গভর্নরকে নির্দেশ দিয়ে লিখলেন, আবদুল্লাহ্ ইবনু আবদুর রহমানকে শাস্তি দাও এবং সাবিতের স্ত্রীর সাথে তার মিলনের পথে বাধা অপসারিত কর। সাবিত বলেন : তখন আমি মদীনাতে যাই। অতঃপর আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা)-এর পত্নী সফিয়্যা তাঁর স্বামীর জ্ঞাতসারে আমার স্ত্রীকে সজ্জিত করে আমার নিকট প্রেরণ করলেন। অতঃপর আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা)-কে ওয়ালীমার যিয়াফতে আমন্ত্রণ জানালাম। তিনি তা গ্রহণ করেন এবং ওয়ালীমায় যোগদান করেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২১৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ قَرَأَ { يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا طَلَّقْتُمْ النِّسَاءَ فَطَلِّقُوهُنَّ } لِقُبُلِ عِدَّتِهِنَّ قَالَ مَالِك يَعْنِي بِذَلِكَ أَنْ يُطَلِّقَ فِي كُلِّ طُهْرٍ مَرَّةً.

আবদুল্লাহ্ ইবনু দীনার থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) পাঠ করলেন :
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا طَلَّقْتُمْ النِّسَاءَ فَطَلِّقُوهُنَّ لِقُبُلِ عِدَّتِهِنَّ.
হে নবী, তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীগণকে তালাক দিতে ইচ্ছা কর তাদেরকে তালাক দিও ইদ্দতের প্রারম্ভিক (সময়ের) প্রতি লক্ষ্য করে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : প্রতি তুহরে (ঋতু হতে পবিত্র থাকার সময়ে) একটি করে তালাক দেওয়া ইহার উদ্দেশ্য।

১২১৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ قَالَ: كَانَ الرَّجُلُ إِذَا طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ثُمَّ ارْتَجَعَهَا قَبْلَ أَنْ تَنْقَضِيَ عِدَّتُهَا كَانَ ذَلِكَ لَهُ وَإِنْ طَلَّقَهَا أَلْفَ مَرَّةٍ فَعَمَدَ رَجُلٌ إِلَى امْرَأَتِهِ فَطَلَّقَهَا حَتَّى إِذَا شَارَفَتْ انْقِضَاءَ عِدَّتِهَا رَاجَعَهَا ثُمَّ طَلَّقَهَا ثُمَّ قَالَ لَا وَاللهِ لَا آوِيكِ إِلَيَّ وَلَا تَحِلِّينَ أَبَدًا فَأَنْزَلَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى { الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ } فَاسْتَقْبَلَ النَّاسُ الطَّلَاقَ جَدِيدًا مِنْ يَوْمِئِذٍ مَنْ كَانَ طَلَّقَ مِنْهُمْ أَوْ لَمْ يُطَلِّقْ.

হিশাম ইবনু উরওয়া (র) থেকে বর্ণিতঃ

পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন (পূর্বে নিয়ম ছিল) স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পর ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পূর্বে উহার দিকে রুজূ’ করার অধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির ছিল, যদিও স্ত্রীকে হাজার তালাক দিয়ে থাকে। এক ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে তালাক দিল। যখনই ইদ্দত সমাপ্তির প্রান্তে পৌঁছেছে তখন স্বামী তার দিকে রুজূ’ করল। তারপর আবার তালাক দিল, অতঃপর সে বলল : আমি তোমাকে আর কখনও আমার নিকট আশ্রয় দেব না, আমার জন্য তুমি কখনও হালাল হবে না। তারপর আল্লাহ তা’আলা (আয়াত) নাযিল করলেন :
الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ.
অর্থাৎ এই তালাক দুই বার। অতঃপর স্ত্রীকে হয় বিধিমত রেখে দিবে অথবা সদয়ভাবে মুক্ত করে দিবে।
সেই দিন হতে লোকেরা নূতনভাবে গণনা আরম্ভ করল, যারা (ইতিপূর্বে) তালাক দিয়েছিল তারাও এবং যারা তালাক দেয়নি তারাও। (যয়ীফ, তিরমিযী ১১৯২, আলবানী হাদীসটি যয়ীফ বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ সুনানে তিরমিযী] মুরসাল আর ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)

১২২০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ثَوْرِ بْنِ زَيْدٍ الدِّيلِيِّ أَنَّ الرَّجُلَ كَانَ يُطَلِّقُ امْرَأَتَهُ ثُمَّ يُرَاجِعُهَا وَلَا حَاجَةَ لَهُ بِهَا وَلَا يُرِيدُ إِمْسَاكَهَا كَيْمَا يُطَوِّلُ بِذَلِكَ عَلَيْهَا الْعِدَّةَ لِيُضَارَّهَا فَأَنْزَلَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى { وَلَا تُمْسِكُوهُنَّ ضِرَارًا لِتَعْتَدُوا وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُ } يَعِظُهُمْ اللهُ بِذَلِكَ.

সাওর ইবনু যায়দ দীলি (র) থেকে বর্ণিতঃ

লোকে স্ত্রীর ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে এবং ইদ্দতকে তার উপর দীর্ঘ করার জন্য তালাক দিয়ে পুনরায় উহার দিকে রুজূ’ করত অর্থাৎ তার সেই স্ত্রীর কোন আবশ্যক নাই এবং উহাকে রাখার কোন ইচ্ছা নাই। তাই আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেছেন।
وَلَا تُمْسِكُوهُنَّ ضِرَارًا لِتَعْتَدُوا وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُ.
অর্থাৎ কিন্তু অন্যায়রূপে তাদের (স্ত্রীদের) ক্ষতি করে সীমালংঘন উদ্দেশ্যে তাদেরকে তোমরা আটকে রেখ না। যে এইরূপ করে, সে নিজের প্রতি জুলুম করে।
আল্লাহ তাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন এর দ্বারা। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২২১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ وَسُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ سُئِلَا عَنْ طَلَاقِ السَّكْرَانِ فَقَالَا إِذَا طَلَّقَ السَّكْرَانُ جَازَ طَلَاقُهُ وَإِنْ قَتَلَ قُتِلَ بِهِ قَالَ مَالِك وَعَلَى ذَلِكَ الْأَمْرُ عِنْدَنَا.
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ كَانَ يَقُولُ إِذَا لَمْ يَجِدْ الرَّجُلُ مَا يُنْفِقُ عَلَى امْرَأَتِهِ فُرِّقَ بَيْنَهُمَا قَالَ مَالِك وَعَلَى ذَلِكَ أَدْرَكْتُ أَهْلَ الْعِلْمِ بِبَلَدِنَا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যিব এবং সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) তাদের উভয়কে নেশাগ্রস্থ (মাতাল) ব্যক্তির তালাক সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। উভয়ে উত্তর দিলেন, নেশাগ্রস্থ মাতাল ব্যক্তি তালাক দিলে তার তালাক বৈধ হবে। সে কোন ব্যক্তিকে হত্যা করলে (কিসাসস্বরূপ) তাকেও হত্যা করা হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, এই ফতোয়াই আমাদের নিকট গৃহীত বা সর্বাধিক সংগত।
মালিক (র)-এর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সাঈদ ইবনু মুসায়্যিব (র) বলতেন : স্ত্রীর খোরপোশ দিতে স্বামী অক্ষম হলে তাদের উভয়কে পৃথক করে দেয়া হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের শহরের আলিম সমাজকে আমি এই মাস‘আলার উপর (এইরূপ ফতোয়া দিতে ও আমল করতে) দেখেছি।

পরিচ্ছেদ ৩০

স্বামীর মৃত্যু হয়েছে, স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা তার ইদ্দতের বিবরণ

১২২২

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ قَيْسٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُ قَالَ سُئِلَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبَّاسٍ وَأَبُو هُرَيْرَةَ عَنْ الْمَرْأَةِ الْحَامِلِ يُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ آخِرَ الْأَجَلَيْنِ وَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ إِذَا وَلَدَتْ فَقَدْ حَلَّتْ فَدَخَلَ أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَلَى أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلَهَا عَنْ ذَلِكَ فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ وَلَدَتْ سُبَيْعَةُ الْأَسْلَمِيَّةُ بَعْدَ وَفَاةِ زَوْجِهَا بِنِصْفِ شَهْرٍ فَخَطَبَهَا رَجُلَانِ أَحَدُهُمَا شَابٌّ وَالْآخَرُ كَهْلٌ فَحَطَّتْ إِلَى الشَّابِّ فَقَالَ الشَّيْخُ لَمْ تَحِلِّي بَعْدُ وَكَانَ أَهْلُهَا غَيَبًا وَرَجَا إِذَا جَاءَ أَهْلُهَا أَنْ يُؤْثِرُوهُ بِهَا فَجَاءَتْ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ قَدْ حَلَلْتِ فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ.

আবূ সালমা ইবনু ‘আবদির রহমান (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আব্বাস ও আবূ হুরায়রা (রা)-কে প্রশ্ন করা হল এমন স্ত্রীলোক সম্বন্ধে, যে অন্তঃসত্ত্বা ও তার স্বামী ইন্তিকাল করেছে। ইবনু আব্বাস (রা) উত্তরে বললেন : চার মাস দশ দিন এবং সন্তান প্রসব করা। নির্ধারিত এতদুভয় সময়ের মধ্যে যে সময় দীর্ঘ সে সময় ইদ্দতের সময় বলে বিবেচিত হবে।
আবূ হুরায়রা (রা) বললেন : সন্তান প্রসব করলে সে অন্যের জন্য হালাল হবে। অতঃপর সালমা ইবনু ‘আবদির রহমান নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্নী উম্মে সালমা (রা)-এর সমীপে উপস্থিত হলেন এবং তার নিকট এই ব্যাপারে প্রশ্ন করলেন। উম্মে সালমা (রা) বললেন : সুবাইয়া [১] আসলামিয়া (রা) তার স্বামীর ওফাতের অর্ধমাস পর সন্তান প্রসব করলেন। এর পর দুই ব্যক্তি তাকে বিবাহ করার প্রস্তাব প্রেরণ করলেন। তাদের একজন যুবক ও অপর জন হচ্ছে আধাবয়সী, তিনি যুবকের (প্রস্তাবের) দিকে ঝুকে পড়লেন। অধাবয়সী (প্রস্তাবকারী) বললেন : তুমি এখন হালাল হওনি। সুবাইয়ার পরিজন ছিল অনুপস্থিত। তাই তিনি আশা করলেন যে, তারা এলে সুবাইয়া (এর বিবাহ) সম্পর্কে তারা আধা বয়সী প্রস্তাবকারীকে অগ্রাধিকার দিবেন। সুবাইয়া রসূলুল্লাহ্ (সা)-এর খেদমতে উপস্থিত হলেন এবং রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তার ব্যাপার উল্লেখ করলেন। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন : তুমি হালাল হয়ে গিয়েছ, যাকে ইচ্ছা তুমি বিবাহ করতে পার। (সহীহ, নাসাঈ ৩৫০৯, ৩৫১০, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [আসসিল সিলাহ আস সহীহা ৩২৭৪])

[১] সুবাইয়া হচ্ছেন হারিসের কন্যা এবং সাদ ইবনু খাওলা (রা)-এর স্ত্রী। আল্লামা আইনী (র) বলেন, হুদায়বিয়ার সন্ধির পর তিনি ইসলাম প্রহণকারী মহিলাদের মধ্যে প্রথম মহিলা।

১২২৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ الْمَرْأَةِ يُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا وَهِيَ حَامِلٌ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ إِذَا وَضَعَتْ حَمْلَهَا فَقَدْ حَلَّتْ فَأَخْبَرَهُ رَجُلٌ مِنْ الْأَنْصَارِ كَانَ عِنْدَهُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالَ لَوْ وَضَعَتْ وَزَوْجُهَا عَلَى سَرِيرِهِ لَمْ يُدْفَنْ بَعْدُ لَحَلَّتْ.

নাফি (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা)-কে প্রশ্ন করা হল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সম্পর্কে, যার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বললেন : সন্তান প্রসব করলে সে হালাল হয়ে যাবে। তার নিকট উপস্থিত জনৈক আনসারী তাকে খবর দিলেন যে, উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বলেছেন : যদি সে প্রসব করে (অথচ) তার স্বামী এখনও খাটে, তাকে এখনও দাফন করা হয়নি, তবু সে হালাল হয়ে গিয়েছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২২৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ سُبَيْعَةَ الْأَسْلَمِيَّةَ نُفِسَتْ بَعْدَ وَفَاةِ زَوْجِهَا بِلَيَالٍ فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ حَلَلْتِ فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ.

হিশাম ইবনু উরওয়া (র) থেকে বর্ণিতঃ

মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রা) তার নিকট বলেছেন : সুবাইয়া আসলামিয়া তার স্বামীর ওফাতের কয়েক রাত্র পর সন্তান প্রসব করলেন।
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন : তুমি হালাল হয়ে গিয়েছে, এখন যাকে ইচ্ছা বিবাহ করতে পার। (সহীহ, বুখারী ৫৩২০)

১২২৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ وَأَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ اخْتَلَفَا فِي الْمَرْأَةِ تُنْفَسُ بَعْدَ وَفَاةِ زَوْجِهَا بِلَيَالٍ فَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ إِذَا وَضَعَتْ مَا فِي بَطْنِهَا فَقَدْ حَلَّتْ لِلْأَزْوَاجِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ آخِرَ الْأَجَلَيْنِ فَجَاءَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَقَالَ أَنَا مَعَ ابْنِ أَخِي يَعْنِي أَبَا سَلَمَةَ فَبَعَثُوا كُرَيْبًا مَوْلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ إِلَى أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُهَا عَنْ ذَلِكَ فَجَاءَهُمْ فَأَخْبَرَهُمْ أَنَّهَا قَالَتْ: وَلَدَتْ سُبَيْعَةُ الْأَسْلَمِيَّةُ بَعْدَ وَفَاةِ زَوْجِهَا بِلَيَالٍ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ قَدْ حَلَلْتِ فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ قَالَ مَالِك وَهَذَا الْأَمْرُ الَّذِي لَمْ يَزَلْ عَلَيْهِ أَهْلُ الْعِلْمِ عِنْدَنَا.

সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস এবং আবূ সালমা ইবনু আবদির রহমান ইবনু আউফ (র) তারা উভয়ে মতানৈক্য করলেন সেই স্ত্রী সম্পর্কে, যে স্ত্রী স্বামীর ওফাতের কয়েক রাত্রি পর সন্তান প্রসব করেছে। আবূ সালমা (র) বললেন : তার পেটে যা রয়েছে (অর্থাৎ সন্তান) যখন তা প্রসব করল তখন সে হালাল হয়ে গেল। ইবনু আব্বাস (রা) বললেন : দুই নির্দিষ্ট সময় (চার মাস দশ দিন ও সন্তান প্রসব)-এর সর্বশেষ সময়ই তার হালাল হওয়ায় সীমা। (ইতিমধ্যে) আবূ হুরায়রা (রা) এলেন ও বললেন : আমি আমার ভাতিজা অর্থাৎ আবূ সালমা আবদির রহমানের সাথে একমত। তারপর তারা সকলে আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস কর্তৃক আযাদ ক্রীতদাস কুরাইব (র)-কে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্নী উম্মে সালমা (রা)-কে এই বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্য প্রেরণ করলেন। তিনি (প্রশ্ন উত্তর নিয়ে) তাদের কাছে ফিরে এলেন এবং তাদের জানালেন যে, তিনি (উম্মে সালমা) (রা) বলেছেন : সুবাইয়া আসলামিয়া তার স্বামীর ওফাতের কয়েক রাত্রি পর সন্তান প্রসব করলেন এবং এই ব্যাপার রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানালে। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তুমি হালাল হয়েছ, এখন যাকে ইচ্ছা বিবাহ করতে পার। (সহীহ, মুসলিম ১৪৮৫)
মালিক (র) বলেন : এই ব্যাপারে মাস’আলা অনুরূপ, যার উপর আমাদের শহরের (মদীনার) উলামাগণ এই মতের উপরই রয়েছেন।

পরিচ্ছেদ ৩১

যার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে তার জন্য ইদ্দত পালনার্থে নিজ গৃহে অবস্থান করা

১২২৬

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ سَعْدِ بْنِ إِسْحَقَ بْنِ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ عَنْ عَمَّتِهِ زَيْنَبَ بِنْتِ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ أَنَّ الْفُرَيْعَةَ بِنْتَ مَالِكِ بْنِ سِنَانٍ وَهِيَ أُخْتُ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَخْبَرَتْهَا أَنَّهَا جَاءَتْ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَسْأَلُهُ أَنْ تَرْجِعَ إِلَى أَهْلِهَا فِي بَنِي خُدْرَةَ فَإِنَّ زَوْجَهَا خَرَجَ فِي طَلَبِ أَعْبُدٍ لَهُ أَبَقُوا حَتَّى إِذَا كَانُوا بِطَرَفِ الْقَدُومِ لَحِقَهُمْ فَقَتَلُوهُ قَالَتْ فَسَأَلْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ أَرْجِعَ إِلَى أَهْلِي فِي بَنِي خُدْرَةَ فَإِنَّ زَوْجِي لَمْ يَتْرُكْنِي فِي مَسْكَنٍ يَمْلِكُهُ وَلَا نَفَقَةٍ قَالَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَمْ قَالَتْ فَانْصَرَفْتُ حَتَّى إِذَا كُنْتُ فِي الْحُجْرَةِ نَادَانِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْ أَمَرَ بِي فَنُودِيتُ لَهُ فَقَالَ كَيْفَ قُلْتِ فَرَدَّدْتُ عَلَيْهِ الْقِصَّةَ الَّتِي ذَكَرْتُ لَهُ مِنْ شَأْنِ زَوْجِي فَقَالَ امْكُثِي فِي بَيْتِكِ حَتَّى يَبْلُغَ الْكِتَابُ أَجَلَهُ قَالَتْ فَاعْتَدَدْتُ فِيهِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا قَالَتْ فَلَمَّا كَانَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ أَرْسَلَ إِلَيَّ فَسَأَلَنِي عَنْ ذَلِكَ فَأَخْبَرْتُهُ فَاتَّبَعَهُ وَقَضَى بِهِ.

যায়নাব বিন্ত কা’ব ইবনু উজরাহ (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ সাঈদ খুদরী (রা)-এর ভগ্নী ফুরাইয়া বিন্ত মালিক ইবনু সিনান (রা) তাকে খবর দিয়েছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমীপে বনী খুদরায় তাঁর পরিজনের নিকট চলে যাওয়ার (অনুমতি সম্পর্কে) সওয়াল করার জন্য উপস্থিত হলেন, কারণ তার স্বামী কয়েকটি পলাতক ক্রীতদাসের সন্ধানে বের হয়েছিলেন। যখন (মদীনা হতে ছয় মাইল দূরে অবস্থিত) কাদুম নামক স্থানের কাছে পৌঁছে তাদেরকে পেলেন। তখন ক্রীতদাসরা তাকে হত্যা করল। ফুরাইয়া বলেন : অতঃপর আমি বনী খুদরাতে আমার পরিজনের নিকট ফিরে যাওয়ার বিষয় রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট প্রশ্ন করলাম এবং বললাম, আমার স্বামী তার মালিকানাধীন কোন গৃহ আমার জন্য রেখে যাননি এবং কোন খোরপোশেরও ব্যবস্থা করে যাননি। ফুরাইয়া বলেন : রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : হ্যাঁ, (তুমি তোমার পরিজনের নিকট যেতে পার) ফুরাইয়া বলেন, আমি ফিরে এসে আমার কক্ষে প্রবেশ করেছি। এমন সময় আমাকে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার আহ্বান করলেন অথবা আহ্বান করতে নির্দেশ দিলেন। আমি তার আহ্বানে উপস্থিত হলে তিনি বললেন, তুমি কি বলেছিলে (পুনরায় বল)। আমার স্বামীর যে ঘটনা আমি তার কাছে উল্লেখ করেছিলাম পুনরায় সেই ঘটনা বর্ণনা করলাম। (ঘটনা শ্রবণ করার পর) তিনি বললেন : তোমার গৃহেই অবস্থান কর ইদ্দত শেষ হওয়া পর্যন্ত। ফুরাইয়া বলেন : আমি ইহার পর সেই গৃহে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করলাম। তিনি বলেন : উসমান ইবনু আফ্ফান (রা) আমার নিকট লোক প্রেরণ করলে আমি তাঁকে ঐ ঘটনার খবর দিলাম। তিনি তা অনুসরণ করলেন এবং সেই মুতাবিক ফয়সালাও দিলেন। (সহীহ, আবূ দাঊদ ২৩০০, তিরমিযী ১২০৪, নাসাঈ ৩৫২৮, ৩৫২৯, ইবনু মাজাহ ২০৩১, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ সুনানে আবূ দাঊদ])

১২২৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ حُمَيْدِ بْنِ قَيْسٍ الْمَكِّيِّ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ يَرُدُّ الْمُتَوَفَّى عَنْهُنَّ أَزْوَاجُهُنَّ مِنْ الْبَيْدَاءِ يَمْنَعُهُنَّ الْحَجَّ.
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ السَّائِبَ بْنَ خَبَّابٍ تُوُفِّيَ وَإِنَّ امْرَأَتَهُ جَاءَتْ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ فَذَكَرَتْ لَهُ وَفَاةَ زَوْجِهَا وَذَكَرَتْ لَهُ حَرْثًا لَهُمْ بِقَنَاةَ وَسَأَلَتْهُ هَلْ يَصْلُحُ لَهَا أَنْ تَبِيتَ فِيهِ فَنَهَاهَا عَنْ ذَلِكَ فَكَانَتْ تَخْرُجُ مِنْ الْمَدِينَةِ سَحَرًا فَتُصْبِحُ فِي حَرْثِهِمْ فَتَظَلُّ فِيهِ يَوْمَهَا ثُمَّ تَدْخُلُ الْمَدِينَةَ إِذَا أَمْسَتْ فَتَبِيتُ فِي بَيْتِهَا.

সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বলেন, স্বামীর মৃত্যু হয়েছে (উক্ত স্ত্রী ইদ্দত পালনরত ছিল) এরূপ স্ত্রীদেরকে বাইদা নামক স্থান হতে ফেরত পাঠাতেন এবং হজ্জ হতে বিরত রাখতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ (র) হতে বর্ণিত, তার কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সায়িব ইবনু খব্বাব (রা) ইন্তেকাল করলেন। তার স্ত্রী আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা)-এর নিকট উপস্থিত হলে এবং তার স্বামীর মৃত্যু সংবাদ উল্লেখ করলেন, আর কানাত নামক স্থানে তার স্বামীর একটি শস্যক্ষেত্রের বিষয় তার কাছে উল্লেখ করলেন এবং ইহা জানতে চাইলেন তার জন্য সেই শস্যক্ষেত্রে রাত্রি যাপন করা বৈধ কিনা? তিনি উহা হতে তাকে বারণ করলেন। তাই তিনি মদীনা হতে রাত্রির শেষ ভাগে বের হতেন, ফজরের শেষে পৌঁছে যেতেন, পূর্ণ দিন তথায় অবস্থান করে সন্ধ্যায় আবার মদীনায় প্রত্যাবর্তন করতেন এবং আপন গৃহে রাত্রি যাপন করতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২২৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ فِي الْمَرْأَةِ الْبَدَوِيَّةِ يُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا إِنَّهَا تَنْتَوِي حَيْثُ انْتَوَى أَهْلُهَا، قَالَ مَالِك وَهَذَا الْأَمْرُ عِنْدَنَا.

হিশাম ইবনু উরওয়া (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলতেন, গ্রামাঞ্চলের স্ত্রীলোক যার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে সে আপন পরিজন যেই স্থানে অবস্থান করে সেই স্থানে অবস্থান করবে। (মালিক (র) বললেন : আমাদের নিকটও ফয়সালা অনুরূপ।) (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২২৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُوْلُ: لَا تَبِيتُ الْمُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا وَلَا الْمَبْتُوتَةُ إِلَّا فِي بَيْتِهَا.

নাফি (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলতেন, যে নারীর স্বামী ওফাত পেয়েছে সে এবং যে স্ত্রীকে তালাক দেয়া হয়েছে সেই স্ত্রীলোক আপন স্বামীর গৃহ ব্যতীত অন্য কোথাও রাত্রি যাপন করবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদ ৩২

উম্মে ওয়ালাদ-এর ইদ্দত তার কর্তার মৃত্যু হলে

১২৩০

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ الْقَاسِمَ بْنَ مُحَمَّدٍ يَقُوْلُ: إِنَّ يَزِيدَ بْنَ عَبْدِ الْمَلِكِ فَرَّقَ بَيْنَ رِجَالٍ وَبَيْنَ نِسَائِهِمْ وَكُنَّ أُمَّهَاتِ أَوْلَادِ رِجَالٍ هَلَكُوا فَتَزَوَّجُوهُنَّ بَعْدَ حَيْضَةٍ أَوْ حَيْضَتَيْنِ فَفَرَّقَ بَيْنَهُمْ حَتَّى يَعْتَدِدْنَ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا فَقَالَ الْقَاسِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ سُبْحَانَ اللهِ يَقُولُ اللهُ فِي كِتَابِهِ { وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا } مَا هُنَّ مِنْ الْأَزْوَاجِ.

ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ

আমি কাসিম ইবনু মুহাম্মাদকে বলতে শুনেছি, ইয়াযিদ ইবনু ‘আবদিল মালিক (র) কতিপয় পুরুষ ও তাদের স্ত্রীদের মধ্যে বিচ্ছেদ করে দিয়েছেন। সেই স্ত্রীগণ ছিল কতিপয় লোকের উম্মে ওয়ালাদ। তারা (তাদের কর্তারা) ইন্তেকাল করেছেন : অতঃপর এক হায়য অথবা দুই হায়য-এর পর তাদেরকে (উপরিউক্ত লোকগুলো) বিবাহ করে তাই তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ করানো হয়েছে যেন তারা চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করে। কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ বললেন, সুবহান্নাল্লাহ। আল্লাহ্ তা’আলা কিতাবে ইরশাদ করেছেন :
وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا.
“তোমাদের মধ্যে সপত্নীক অবস্থায় যাদের মৃত্যু আসন্ন তারা যেন তাদের স্ত্রীদেরকে গৃহ হতে বহিষ্কার করে তাদের এক বৎসরের ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করে। (অথচ) উম্মে ওয়ালাদগণ পত্নী নয়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২৩১

و حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ قَالَ: عِدَّةُ أُمِّ الْوَلَدِ إِذَا تُوُفِّيَ عَنْهَا سَيِّدُهَا حَيْضَةٌ.
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ عِدَّةُ أُمِّ الْوَلَدِ إِذَا تُوُفِّيَ عَنْهَا سَيِّدُهَا حَيْضَةٌ قَالَ مَالِك وَهُوَ الْأَمْرُ عِنْدَنَا قَالَ مَالِك وَإِنْ لَمْ تَكُنْ مِمَّنْ تَحِيضُ فَعِدَّتُهَا ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ

নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) বলেছেন, উম্মে ওয়ালাদ-এর মৃত্যু হলে তার ইদ্দত হচ্ছে এক হায়য। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (র) হতে বর্ণিত, কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (র) বলতেন, উম্মে ওয়ালাদ-এর কর্তার মৃত্যু হলে তার ইদ্দত হবে এক হায়য। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকটও মাস’আলা এইরূপ।
মালিক (র) বলেন : উম্মে ওয়ালাদ-এর যদি ঋতুস্রাব না হয় তবে তার ইদ্দত হবে তিন মাস।

পরিচ্ছেদ ৩৩

বাঁদীর ইদ্দত - যদি তার কর্তা কিংবা স্বামীর মৃত্যু হয়

১২৩২

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ وَسُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ كَانَا يَقُوْلَانِ عِدَّةُ الْأَمَةِ إِذَا هَلَكَ عَنْهَا زَوْجُهَا شَهْرَانِ وَخَمْسُ لَيَالٍ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব ও সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) তারা উভয়ে বলতেন : ক্রীতদাসীর স্বামীর মৃত্যু হলে তার ইদ্দত হবে দুই মাস পাঁচ রাত্রি। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) ইবনু শিহাব হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

১২৩৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ مِثْلَ ذَلِكَ قَالَ مَالِك فِي الْعَبْدِ يُطَلِّقُ الْأَمَةَ طَلَاقًا لَمْ يَبُتَّهَا فِيهِ لَهُ عَلَيْهَا فِيهِ الرَّجْعَةُ ثُمَّ يَمُوتُ وَهِيَ فِي عِدَّتِهَا مِنْ طَلَاقِهِ إِنَّهَا تَعْتَدُّ عِدَّةَ الْأَمَةِ الْمُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا شَهْرَيْنِ وَخَمْسَ لَيَالٍ وَإِنَّهَا إِنْ عَتَقَتْ وَلَهُ عَلَيْهَا رَجْعَةٌ ثُمَّ لَمْ تَخْتَرْ فِرَاقَهُ بَعْدَ الْعِتْقِ حَتَّى يَمُوتَ وَهِيَ فِي عِدَّتِهَا مِنْ طَلَاقِهِ اعْتَدَّتْ عِدَّةَ الْحُرَّةِ الْمُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا وَذَلِكَ أَنَّهَا إِنَّمَا وَقَعَتْ عَلَيْهَا عِدَّةُ الْوَفَاةِ بَعْدَ مَا عَتَقَتْ فَعِدَّتُهَا عِدَّةُ الْحُرَّةِ قَالَ مَالِك وَهَذَا الْأَمْرُ عِنْدَنَا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

ক্রীতদাস (স্বামী) ক্রীতদাসী (স্ত্রী)-কে এমন তালাক দিল যা বাইন নয় এবং উহাতে স্ত্রীর দিকে রুজূ’ করার ইখতিয়ার আছে। তারপর তার মৃত্যু ঘটল এবং স্ত্রী তখন তালাকের ইদ্দত পালন করছে। তবে সে যে ক্রীতদাসীর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে তার মতো ইদ্দত পালন করবে, আর ইহা দুই মাস পাচ রাত্রি। আর যদি তাকে মুক্তি দান করা হয় তার স্বামীর রুজূ করার ক্ষমতা থাকাবস্থায়, তারপর তার স্বামীর মৃত্যুকাল পর্যন্ত সে স্বামী হতে বিচ্ছেদ গ্রহণ করে নাই এবং সে তখনও তালাকের ইদ্দতে রয়েছে, তবে সে (ক্রীতদাসী) আযাদ মহিলার মতো (যার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে) চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করবে। ইহা এজন্য যে, আযাদ হওয়ার পর তার উপর (স্বামীর) ওফাতের ইদ্দত বর্তায়েছে। তাই তার ইদ্দত হবে আযাদ স্ত্রীর ইদ্দতের মতো। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
(মালিক (র) বলেন : এটাই আমাদের নির্ধারিত মত।)

পরিচ্ছেদ ৩৪

আযল [১] -এর বর্ণনা

[১] সহবাসের সময় বাহিরে বীর্যপাত করাকে ‘আযল’ বলা হয়। আযল সম্পর্কে সাহাবী এবং তাদের পরবর্তী আলেমদের মধ্যে বিভিন্ন মত রয়েছে। জাবির ইবনু আব্বাস, সা’দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস, যায়দ ইবনু সাবিত, ইবনু মাসউদ (রা) প্রমুখ সাহাবী আযল বৈধ বলে মত পোষণ করেন। ইবনু মুসায়্যাব, তাউস, আতা, মালিক, শাফিঈ (র) প্রমুখ তাবেয়ী ও ইমাম আযলের অনুমতি দিয়েছেন বলে বর্ণিত হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) একে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন যদি কেউ আযল করেছে বলে আমি জানি তবে তাকে শাস্তি দিব। উমার (রা) তার কোন পুত্রকে আযল করার কারণে শাস্তি দিয়েছেন। উসমান (রা)-ও আযলকে পছন্দ করতেন না। আবূ উসামা (রা) বলেনঃ কোন মুসলমান আযল করে বলে আমি মনে করি না। আলী (রা) আযলকে পছন্দ করতেন না বলে বর্ণিত হয়েছে। প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস হাকিম ইবনু হাজর (র) বর্ণনা করেন যে, ইবনু হাযম (র) আযলকে হারাম জানতেন। কেননা হাদীস শরীফে একে গুপ্ত হত্যা বলা হয়েছে। হাদীসটি মুসলিম এ বর্ণিত হয়েছে। আযল নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ বর্ণনায় আলিমগণ বলেছেনঃ এতে স্ত্রীর হক নষ্ট করা হয় এবং বংশ বৃদ্ধি রোধ করা হয় অথচ রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বংশ বৃদ্ধির প্রতি উৎসাহিত করে বলেছেনঃ অধিক ভালবাসে এবং অধিক সন্তান জন্ম দেয় সেরূপ স্ত্রীকে বিবাহ কর। কারণ আমি আমার উম্মতের আধিক্যের উপর গর্ব করব। -আবূ দাঊদ - অন্য কারণ আযল করাতে তকদীরকে প্রতিরোধ করার চেষ্ট করা হয়। -আওজাযুল মাসালিকসহবাসের সময় বাহিরে বীর্যপাত করাকে ‘আযল’ বলা হয়। আযল সম্পর্কে সাহাবী এবং তাদের পরবর্তী আলেমদের মধ্যে বিভিন্ন মত রয়েছে। জাবির ইবনু আব্বাস, সা’দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস, যায়দ ইবনু সাবিত, ইবনু মাসউদ (রা) প্রমুখ সাহাবী আযল বৈধ বলে মত পোষণ করেন। ইবনু মুসায়্যাব, তাউস, আতা, মালিক, শাফিঈ (র) প্রমুখ তাবেয়ী ও ইমাম আযলের অনুমতি দিয়েছেন বলে বর্ণিত হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) একে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন যদি কেউ আযল করেছে বলে আমি জানি তবে তাকে শাস্তি দিব। উমার (রা) তার কোন পুত্রকে আযল করার কারণে শাস্তি দিয়েছেন। উসমান (রা)-ও আযলকে পছন্দ করতেন না। আবূ উসামা (রা) বলেনঃ কোন মুসলমান আযল করে বলে আমি মনে করি না। আলী (রা) আযলকে পছন্দ করতেন না বলে বর্ণিত হয়েছে। প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস হাকিম ইবনু হাজর (র) বর্ণনা করেন যে, ইবনু হাযম (র) আযলকে হারাম জানতেন। কেননা হাদীস শরীফে একে গুপ্ত হত্যা বলা হয়েছে। হাদীসটি মুসলিম এ বর্ণিত হয়েছে। আযল নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ বর্ণনায় আলিমগণ বলেছেনঃ এতে স্ত্রীর হক নষ্ট করা হয় এবং বংশ বৃদ্ধি রোধ করা হয় অথচ রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বংশ বৃদ্ধির প্রতি উৎসাহিত করে বলেছেনঃ অধিক ভালবাসে এবং অধিক সন্তান জন্ম দেয় সেরূপ স্ত্রীকে বিবাহ কর। কারণ আমি আমার উম্মতের আধিক্যের উপর গর্ব করব। -আবূ দাঊদ - অন্য কারণ আযল করাতে তকদীরকে প্রতিরোধ করার চেষ্ট করা হয়। -আওজাযুল মাসালিক

১২৩৪

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ عَنْ ابْنِ مُحَيْرِيزٍ أَنَّهُ قَالَ: دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ فَرَأَيْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ فَجَلَسْتُ إِلَيْهِ فَسَأَلْتُهُ عَنْ الْعَزْلِ فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَزْوَةِ بَنِي الْمُصْطَلِقِ فَأَصَبْنَا سَبْيًا مِنْ سَبْيِ الْعَرَبِ فَاشْتَهَيْنَا النِّسَاءَ وَاشْتَدَّتْ عَلَيْنَا الْعُزْبَةُ وَأَحْبَبْنَا الْفِدَاءَ فَأَرَدْنَا أَنْ نَعْزِلَ فَقُلْنَا نَعْزِلُ وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَ أَظْهُرِنَا قَبْلَ أَنْ نَسْأَلَهُ فَسَأَلْنَاهُ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ مَا عَلَيْكُمْ أَنْ لَا تَفْعَلُوا مَا مِنْ نَسَمَةٍ كَائِنَةٍ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ إِلَّا وَهِيَ كَائِنَةٌ.

ইবনু মুহায়রিয (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন : আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম। আমি (তথায়) আবূ সাঈদ খুদরী (রা)-কে দেখতে পেলাম এবং আমি তার নিকট বসলাম ও তাকে ‘আযল’ সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। (উত্তরে) আবূ সাঈদ খুদরী (রা) বললেন, আমরা রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ‘বনী মুস্তালিক’ যুদ্ধে বের হলাম। আমরা (সে যুদ্ধে) কিছু সংখ্যাক আরবী যুদ্ধবন্দিনী লাভ করলাম। (এইদিকে) নারীর প্রতি আমাদের প্রবৃত্তি জাগ্রত হল, স্ত্রী সংশ্রব হতে দূরে থাকা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে দাড়াল। (অপরদিকে) উহাদের মূল্য পেতেও আমরা আগ্রহী। তাই (তাদের সাথে) আযল কারার ইচ্ছা করলাম। আমরা বললাম, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্যে বিরাজমান : তার কাছে জিজ্ঞেস করার পূর্বে আমরা আযল করব (এটা কিরূপে হয়)। আমরা এই বিষয়ে তার কাছে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, এটা না করলে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। কিয়ামত দিবস পর্যন্ত যত প্রাণীর জন্ম অবধারিত উহা অবশ্যই অস্তিত্বে আসবে। (বুখারী ২৫৪২, মুসলিম ১৪৩৮)

১২৩৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ كَانَ يَعْزِلُ.

সা’দ ইবনু আবি ওয়াক্কাসের ছেলে আমির ইবনু সা’দ থেকে বর্ণিতঃ

সা’দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস (রা) আযল করতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২৩৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ أَفْلَحَ مَوْلَى أَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ عَنْ أُمِّ وَلَدٍ لِأَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ أَنَّهُ كَانَ يَعْزِلُ.

আবূ আইয়ূব আনসারী (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ আইয়ূব আনসারী (রা) আযল করতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২৩৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ لَا يَعْزِلُ وَكَانَ يَكْرَهُ الْعَزْلَ.

নাফি (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) আযল করতেন না এবং তিনি উহাকে মাকরূহ তাহরীমা জানতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২৩৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ضَمْرَةَ بْنِ سَعِيدٍ الْمَازِنِيِّ عَنْ الْحَجَّاجِ بْنِ عَمْرِو بْنِ غَزِيَّةَ أَنَّهُ كَانَ جَالِسًا عِنْدَ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ فَجَاءَهُ ابْنُ فَهْدٍ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْيَمَنِ فَقَالَ يَا أَبَا سَعِيدٍ إِنَّ عِنْدِي جَوَارِيَ لِي لَيْسَ نِسَائِي اللَّاتِي أُكِنُّ بِأَعْجَبَ إِلَيَّ مِنْهُنَّ وَلَيْسَ كُلُّهُنَّ يُعْجِبُنِي أَنْ تَحْمِلَ مِنِّي أَفَأَعْزِلُ فَقَالَ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ أَفْتِهِ يَا حَجَّاجُ قَالَ فَقُلْتُ يَغْفِرُ اللهُ لَكَ إِنَّمَا نَجْلِسُ عِنْدَكَ لِنَتَعَلَّمَ مِنْكَ قَالَ أَفْتِهِ قَالَ فَقُلْتُ هُوَ حَرْثُكَ إِنْ شِئْتَ سَقَيْتَهُ وَإِنْ شِئْتَ أَعْطَشْتَهُ قَالَ وَكُنْتُ أَسْمَعُ ذَلِكَ مِنْ زَيْدٍ فَقَالَ زَيْدٌ صَدَقَ.

হাজ্জাজ ইবনু আমর ইবনু গাযিয়্যা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি যায়দ ইবনু সাবিত (রা)-এর নিকট বসা ছিলেন। (ইতিমধ্যে) ইয়ামানের বাসিন্দা ইবনু ফাহদ (জনৈক ব্যক্তি) তাঁর নিকট এল এবং বলল, হে আবূ সাঈদ. আমার নিকট কয়েকটি বাদী এমন রয়েছে যে, আমার স্ত্রীগণ তাদের তুলনায় আমার নিকট বেশি পছন্দনীয় নয়।
আমার দ্বারা তাদের প্রত্যেকে অন্তঃসত্ত্বা হোক তা আমি পছন্দ করি না। তবে আমি আযল করতে পারি কি? যায়দ বললেন, হে হাজ্জাজ, তুমি ফতোয়া দাও। আমি বললাম, আল্লাহ আপনাকে মাফ করুন, আমরা আপনার কাছে ইলম শিক্ষার জন্য বসি। তিনি বললেন : হে হাজ্জাজ! ফতোয়া বলে দাও। হাজ্জাজ বললেন : তারপর আমি বললাম, উহা তোমার ক্ষেত্রে তোমার ইচ্ছা, তুমি উহাতে পানি সিঞ্চন কর অথবা উহাকে পিপাসিত ও শুল্ক করে রাখ। তিনি বলেন, আমি এটা যায়দ হতে শুনেছি। অতঃপর যায়দ বললেন : (হাজ্জাজ) সত্য বলেছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
[১]

[১] কেউ কেউ তাঁকে তাবেয়ী বলে উল্লেখ করেছেন।

১২৩৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ حُمَيْدِ بْنِ قَيْسٍ الْمَكِّيِّ عَنْ رَجُلٍ يُقَالُ لَهُ ذَفِيفٌ أَنَّهُ قَالَ سُئِلَ ابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ الْعَزْلِ فَدَعَا جَارِيَةً لَهُ فَقَالَ أَخْبِرِيهِمْ فَكَأَنَّهَا اسْتَحْيَتْ فَقَالَ هُوَ ذَلِكَ أَمَّا أَنَا فَأَفْعَلُهُ يَعْنِي أَنَّهُ يَعْزِلُ ২২১২-قَالَ مَالِك لَا يَعْزِلُ الرَّجُلُ الْمَرْأَةَ الْحُرَّةَ إِلَّا بِإِذْنِهَا وَلَا بَأْسَ أَنْ يَعْزِلَ عَنْ أَمَتِهِ بِغَيْرِ إِذْنِهَا
২২১৩-وَمَنْ كَانَتْ تَحْتَهُ أَمَةُ قَوْمٍ فَلَا يَعْزِلُ إِلَّا بِإِذْنِهِمْ.

যাঈফ (র) থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু আব্বাস (র)-কে প্রশ্ন করা হল আযল সম্পর্কে। তিনি তার জনৈকা দাসীকে ডেকে বললেন, এদেরকে বাতলিয়ে দাও। দাসী লজ্জাবোধ করল। ইবনু আব্বাস বললেন। ইহা তাই (অর্থাৎ আযল করা মুবাহ) আমিও তা করে থাকি অর্থাৎ তিনিও আযল করেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : আযাদ স্ত্রীলোকের ব্যাপারে কোন ব্যক্তি তার অনুমতি ছাড়া উহার সাথে আযল করাতে কোন দোষ নেই, আর কোন ব্যক্তি কোন গোত্রের দাসীকে বিবাহ করলে তবে সেই গোত্রের লোকের অনুমতি ছাড়া সেই দাসীর সাথে আযল করবে না।

পরিচ্ছেদ ৩৫

শোক পালনের ব্যাপারে করণীয়

১২৪০

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ نَافِعٍ عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ بِهَذِهِ الْأَحَادِيثِ الثَّلَاثَةِ قَالَتْ زَيْنَبُ.
دَخَلْتُ عَلَى أُمِّ حَبِيبَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ تُوُفِّيَ أَبُوهَا أَبُو سُفْيَانَ بْنُ حَرْبٍ فَدَعَتْ أُمُّ حَبِيبَةَ بِطِيبٍ فِيهِ صُفْرَةٌ خَلُوقٌ أَوْ غَيْرُهُ فَدَهَنَتْ بِهِ جَارِيَةً ثُمَّ مَسَحَتْ بِعَارِضَيْهَا ثُمَّ قَالَتْ وَاللهِ مَا لِي بِالطِّيبِ مِنْ حَاجَةٍ غَيْرَ أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ تُحِدَّ عَلَى مَيْتٍ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ إِلَّا عَلَى زَوْجٍ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا.

যয়নাব বিন্ত আবূ সালমা (র) নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী উম্মে হাবীবা (রা)-এর ঘরে প্রবেশ করলাম, যখন তার পিতা আবূ সুফিয়ান ইবনু হারব (রা) ইন্তিকাল করেন, তখন তিনি হলুদ বর্ণের কিছু সুগদ্ধি চাইলেন। খুলূক [পাঁচ মিশালী খোশবু যাতে কয়েক প্রকারের সুগন্ধি দ্রব্যের সংমিশ্রণ রয়েছে যাফরান এদের অন্যতম।] ছিল বা অন্য কোন সুগন্ধি। তিনি উহা তার বাদীকে লাগালেন। তারপর তার গণ্ডদ্বয়ে (খোশবু মাখা) হাত বুলালেন, অতঃপর বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমার সুগন্ধির কোন প্রয়োজন নাই। কিন্তু আমি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ্ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে এমন নারীর পক্ষে কোন মৃত ব্যক্তির জন্য তিন রাত্রির বেশি শোক পালন করা হালাল নয়। তবে স্ত্রী স্বামীর জন্য চার মাস দশ দিন (শোক পালন করবে)। (বুখারী ৫৩৩৪, মুসলিম ১৪৮৬)

১২৪১

قَالَتْ زَيْنَبُ ثُمَّ دَخَلْتُ عَلَى زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ تُوُفِّيَ أَخُوهَا فَدَعَتْ بِطِيبٍ فَمَسَّتْ مِنْهُ ثُمَّ قَالَتْ وَاللهِ مَا لِي بِالطِّيبِ حَاجَةٌ غَيْرَ أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ تُحِدُّ عَلَى مَيْتٍ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ إِلَّا عَلَى زَوْجٍ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا.

যয়নাব(র) থেকে বর্ণিতঃ

আমি অতঃপর নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী যয়নাব বিন্ত জাহশ-এর নিকট আগমন করলাম, যখন তার ভাই-এর ওফাত হল তখন। তিনি খোশবু আনালেন এবং উহা হতে স্পর্শ করলেন, তারপর বললেন : আল্লাহ্‌র কসম! আমার কোন খোশবুর আবশ্যকতাই নাই, কিন্তু আমি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিস্বরের উপর বলতে শুনেছি, আল্লাহ্ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে এমন কোন নারীর জন্য তিন রাত্রির অতিরিক্ত কোন মৃত ব্যক্তির জন্য শোক পালন করা হালাল নয়। তবে স্ত্রী স্বামীর জন্য চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে।

১২৪২

قَالَتْ زَيْنَبُ وَسَمِعْتُ أُمِّي أُمَّ سَلَمَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَقُولُ جَاءَتْ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ ابْنَتِي تُوُفِّيَ عَنْهَا زَوْجُهَا وَقَدْ اشْتَكَتْ عَيْنَيْهَا أَفَتَكْحُلُهُمَا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا كُلُّ ذَلِكَ يَقُولُ لَا ثُمَّ قَالَ إِنَّمَا هِيَ { أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا }وَقَدْ كَانَتْ إِحْدَاكُنَّ فِي الْجَاهِلِيَّةِ تَرْمِي بِالْبَعْرَةِ عَلَى رَأْسِ الْحَوْلِ قَالَ حُمَيْدُ بْنُ نَافِعٍ فَقُلْتُ لِزَيْنَبَ وَمَا تَرْمِي بِالْبَعْرَةِ عَلَى رَأْسِ الْحَوْلِ فَقَالَتْ زَيْنَبُ كَانَتْ الْمَرْأَةُ إِذَا تُوُفِّيَ عَنْهَا زَوْجُهَا دَخَلَتْ حِفْشًا وَلَبِسَتْ شَرَّ ثِيَابِهَا وَلَمْ تَمَسَّ طِيبًا وَلَا شَيْئًا حَتَّى تَمُرَّ بِهَا سَنَةٌ ثُمَّ تُؤْتَى بِدَابَّةٍ حِمَارٍ أَوْ شَاةٍ أَوْ طَيْرٍ فَتَفْتَضُّ بِهِ فَقَلَّمَا تَفْتَضُّ بِشَيْءٍ إِلَّا مَاتَ ثُمَّ تَخْرُجُ فَتُعْطَى بَعْرَةً فَتَرْمِي بِهَا ثُمَّ تُرَاجِعُ بَعْدُ مَا شَاءَتْ مِنْ طِيبٍ أَوْ غَيْرِهِ ২২১৮-قَالَ مَالِك وَالْحِفْشُ الْبَيْتُ الرَّدِيءُ وَتَفْتَضُّ تَمْسَحُ بِهِ جِلْدَهَا كَالنُّشْرَةِ.

যয়নাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

আমি আমার মাতা নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী উম্মে সালমা (রা)-কে বলতে শুনেছি, একজন মহিলা রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে উপস্থিত হলেন এবং বললেন : ইয়া রসূলুল্লাহ! আমার কন্যার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে তার চক্ষুতে ব্যথা, আমি কি তার চক্ষুতে সুরমা লাগাতে পারি? (উত্তরে) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : না দুইবার অথবা তিনবার বললেন : প্রতিবার এইরূপ না বললেন। অতঃপর বললেন। ইদ্দত হচ্ছে চার মাস দশ দিন। জাহিলিয়্যা যুগে তোমাদের প্রথা ছিল একজন এক বৎসর পূর্ণ হলে উটের মল ছুড়ে মারত। হুমায়িদ ইবনু নাফি’ বলেন : আমি যয়নাবকে বললাম, এক বৎসর পূর্ণ হলে উটের মল কেন ছুড়ে মারত? যয়নাব (রা) বললেন : কোন মেয়েলোকের স্বামীর মৃত্যু হলে (নিয়ম এই ছিল যে,) সে একটি কুঠরিতে প্রবেশ করত এবং নিকৃষ্ট বস্ত্র পরিধান করত, খোশবু এবং এজাতীয় কোন (সাজ সজ্জার কোন কিছু) বস্তু স্পর্শ করত না। এভাবে এক বৎসর অতিবাহিত হলে পর তার কাছে উপস্থিত করা হত চতুষ্পদ জন্তু গাধা, বকরী অথবা কোন পাখী এবং উহা দ্বারা (তার লজ্জাস্থানে) ঘর্ষণ করা হত, ঘর্ষণ করার পর সেই জীব প্রায় মারা যেত, তারপর সে বদ্ধ ঘর হতে বের হত। অতঃপর তার সম্মুখে উটের মল উপস্থিত করা হত সে উহাকে ছুড়ে মারত। তারপর যা ইচ্ছা খোশবু ইত্যাদি ব্যবহার করত।
মালিক (র) বলেন : হিফশ
حِفْشُ শব্দের অর্থ নিকৃষ্ট ঘর, تَفْتَضُّ -এর অর্থ উহাকে দেহের চামড়ায় ঘর্ষণ করত যেমন করাত।

১২৪৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ أَبِي عُبَيْدٍ عَنْ عَائِشَةَ وَحَفْصَةَ زَوْجَيْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ تُحِدَّ عَلَى مَيْتٍ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ إِلَّا عَلَى زَوْجٍ.

আয়িশা ও হাফসা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে এমন স্ত্রীলোকের জন্য স্বামী ব্যতীত কোন মৃত ব্যক্তির জন্য তিন রাত্রির অতিরিক্ত শোক পালন করা হালাল নয়। (সহীহ, মুসলিম ১৪৯০)

১২৪৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ لِامْرَأَةٍ حَادٍّ عَلَى زَوْجِهَا اشْتَكَتْ عَيْنَيْهَا فَبَلَغَ ذَلِكَ مِنْهَا اكْتَحِلِي بِكُحْلِ الْجِلَاءِ بِاللَّيْلِ وَامْسَحِيهِ بِالنَّهَارِ.

উম্মে সালমা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

স্বামীর জন্য শোক পালন করছিল এমন এক মহিলাকে, যার চক্ষুতে পীড়া হয়েছিল এবং চক্ষুপীড়া চরমে পৌঁছেছিল, বলেছিলেন, ইস্মিদ সুরমা রাত্রিতে চক্ষুতে লাগাও, দিনের বেলায় সুরমা মুছে ফেল। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১২৪৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ وَسُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ أَنَّهُمَا كَانَا يَقُولَانِ فِي الْمَرْأَةِ يُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا إِنَّهَا إِذَا خَشِيَتْ عَلَى بَصَرِهَا مِنْ رَمَدٍ أَوْ شَكْوٍ أَصَابَهَا إِنَّهَا تَكْتَحِلُ وَتَتَدَاوَى بِدَوَاءٍ أَوْ كُحْلٍ وَإِنْ كَانَ فِيهِ طِيبٌ قَالَ مَالِك وَإِذَا كَانَتْ الضَّرُورَةُ فَإِنَّ دِينَ اللهِ يُسْرٌ.

মালিক (রা) থেকে বর্ণিতঃ

তার কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, যে স্ত্রীলোকের স্বামী মারা গিয়েছে (সে ইদ্দত পালনরতা) সেই স্ত্রীলোক সম্পর্কে সালিম ইবনু আবদিল্লাহ ও সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) বলতেন : যদি চক্ষুর প্রতি কোন আশংকা দেখা দেয় চক্ষু উঠা বা অন্য কোন চক্ষুপীড়ার দরুন সে সুরমা লাগাবে এবং সুরমা অথবা অন্য কোন ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা করবে যদিও তাতে সুগন্ধ থাকে।
মালিক (র) বলেন : আবশ্যক হইলে উহা করিবে, কারণ আল্লাহর দ্বীন সহজ।

১২৪৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ صَفِيَّةَ بِنْتَ أَبِي عُبَيْدٍ اشْتَكَتْ عَيْنَيْهَا وَهِيَ حَادٌّ عَلَى زَوْجِهَا عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ فَلَمْ تَكْتَحِلْ حَتَّى كَادَتْ عَيْنَاهَا تَرْمَصَانِ ২২২৩-قَالَ مَالِك تَدَّهِنُ الْمُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا بِالزَّيْتِ وَالشِّبْرَقِ وَمَا أَشْبَهَ ذَلِكَ إِذَا لَمْ يَكُنْ فِيهِ طِيْبٌ ২২২৪-قَالَ مَالِك وَلَا تَلْبَسُ الْمَرْأَةُ الْحَادُّ عَلَى زَوْجِهَا شَيْئًا مِنْ الْحَلْيِ خَاتَمًا وَلَا خَلْخَالًا وَلَا غَيْرَ ذَلِكَ مِنْ الْحَلْيِ وَلَا تَلْبَسُ شَيْئًا مِنْ الْعَصْبِ إِلَّا أَنْ يَكُونَ عَصْبًا غَلِيظًا وَلَا تَلْبَسُ ثَوْبًا مَصْبُوغًا بِشَيْءٍ مِنْ الصِّبْغِ إِلَّا بِالسَّوَادِ وَلَا تَمْتَشِطُ إِلَّا بِالسِّدْرِ وَمَا أَشْبَهَهُ مِمَّا لَا يَخْتَمِرُ فِي رَأْسِهَا.

নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

সফিয়্যা বিন্ত আবী উবাইদ-এর চক্ষুতে রোগ দেখা দিল। তিনি তখন তার স্বামী আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা)-এর মৃত্যুর শোক পালন করছিলেন। তার চক্ষু পীড়িত হয়ে চক্ষুদ্বয়ে ছানি পড়েছে তবুও তিনি সুরমা ব্যবহার করেননি। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : যে স্ত্রীর স্বামী মারা গিয়েছে সে স্ত্রী ইদ্দতের সময় যায়তুন তৈল এবং এ জাতীয় অন্য তৈল, যাতে খোশবু নাই, ব্যবহার করতে পারবে।
মালিক (র) বলেন : স্বামীর জন্য শোক পালনরতা স্ত্রী গহনা পরিধান করবে না, যেমন আংটি, পায়ের চুড়ি বা অন্য কোন গহনা এবং য়ামানী নামক বস্ত্রও পরিধান করবে না। যদি তা মোটা হয় তবে পরিধান করতে পারবে। কেবলমাত্র কাল রঙ ব্যতীত কোন প্রকার রঙ্গীন কাপড় পরিধান করবে না। কুল পাতা বা সেই জাতীয় বস্তু যাতে বর্ণ ও গন্ধ নাই এবং যা সুগন্ধিস্বরূপ ব্যবহৃত হয় না। তা ব্যতীত অন্য কোন দ্রব্য দ্বারা মাথা ধুবে না এবং চিরুনী ব্যবহার করবে না।

১২৪৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَى أُمِّ سَلَمَةَ وَهِيَ حَادٌّ عَلَى أَبِي سَلَمَةَ وَقَدْ جَعَلَتْ عَلَى عَيْنَيْهَا صَبِرًا فَقَالَ مَا هَذَا يَا أُمَّ سَلَمَةَ فَقَالَتْ إِنَّمَا هُوَ صَبِرٌ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ اجْعَلِيهِ فِي اللَّيْلِ وَامْسَحِيهِ بِالنَّهَارِ.
২২২৬-قَالَ مَالِك الْإِحْدَادُ عَلَى الصَّبِيَّةِ الَّتِي لَمْ تَبْلُغْ الْمَحِيضَ كَهَيْئَتِهِ عَلَى الَّتِي قَدْ بَلَغَتْ الْمَحِيضَ تَجْتَنِبُ مَا تَجْتَنِبُ الْمَرْأَةُ الْبَالِغَةُ إِذَا هَلَكَ عَنْهَا زَوْجُهَا. ২২২৭-قَالَ مَالِك تُحِدُّ الْأَمَةُ إِذَا تُوُفِّيَ عَنْهَا زَوْجُهَا شَهْرَيْنِ وَخَمْسَ لَيَالٍ مِثْلَ عِدَّتِهَا. ২২২৮-قَالَ مَالِك لَيْسَ عَلَى أُمِّ الْوَلَدِ إِحْدَادٌ إِذَا هَلَكَ عَنْهَا سَيِّدُهَا وَلَا عَلَى أَمَةٍ يَمُوتُ عَنْهَا سَيِّدُهَا إِحْدَادٌ وَإِنَّمَا الْإِحْدَادُ عَلَى ذَوَاتِ الْأَزْوَاجِ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করলেন উম্মে সালমা (রা)-এর নিকট। তখন তিনি (তার পূর্ব স্বামী) আবূ সালাম (রা)-এর (মৃত্যুর) শোক পালন করছিলেন। তিনি চক্ষুতে সবির (এক প্রকার গাছের নির্যাস) লাগিয়েছিলেন। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে সালমাকে বললেন : ইহা কি? তিনি (উম্মে সালমা) বললেন : ইয়া রসূলুল্লাহ! ইহা সবির। তিনি (রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : ইহা রাত্রিতে ব্যবহার কর এবং দিনে মুছে ফেল। (যয়ীফ, আবূ দাঊদ ২৩০৫, নাসাঈ ৩৫৩৭, আলবানী হাদীসটিকে যয়ীফ বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ] সুনানে আবূ দাঊদ)
মালিক (র) বলেন : যে কিশোরী বালেগা হয়নি, তার শোক পালন বালেগা মহিলার মতো হবে, তার স্বামীর মৃত্যু হলে বালেগা মহিলা যে সব হতে বিরত থাকবে সেও সেই সব (বস্তু বা কার্য) হতে বিরত থাকবে।
মালিক (র) বলেন : বাঁদী তার স্বামীর মৃত্যু হলে তার ইদ্দতের মতো দুই মাস পাঁচ রাত্রি শোক পালন করিবে।
মালিক (র) বলেন : উম্মে ওয়ালাদ এর কর্তার মৃত্যু হইলে তাহাকে শোক পালন করতে হবে না। বাঁদীর কর্তা মারা গেলে তার উপরও শোক পালন নাই। শোক পালন করবে তারা, যাদের স্বামীর মৃত্যু হয়েছে।

১২৪৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَتْ تَقُولُ تَجْمَعُ الْحَادُّ رَأْسَهَا بِالسِّدْرِ وَالزَّيْتِ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তার তাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী উম্মে সালমা (রা) বলতেন : শোক পালনরতা স্ত্রী তার মাথার চুল কুলপতা ও তেল দ্বারা বাঁধতে পারবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

No comments

Powered by Blogger.