মুয়াত্তা ইমাম মালিক অধ্যায় "দিয়াত"
পরিচ্ছেদঃ
১
দিয়াত সম্পর্কিত
আলোচনা
১৫৫৮
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ
أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ فِي
الْكِتَابِ الَّذِي كَتَبَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
لِعَمْرِو بْنِ حَزْمٍ فِي الْعُقُولِ أَنَّ فِي النَّفْسِ مِائَةً مِنْ الْإِبِلِ
وَفِي الْأَنْفِ إِذَا أُوعِيَ جَدْعًا مِائَةٌ مِنْ الْإِبِلِ وَفِي
الْمَأْمُومَةِ ثُلُثُ الدِّيَةِ وَفِي الْجَائِفَةِ مِثْلُهَا وَفِي الْعَيْنِ
خَمْسُونَ وَفِي الْيَدِ خَمْسُونَ وَفِي الرِّجْلِ خَمْسُونَ وَفِي كُلِّ
أُصْبُعٍ مِمَّا هُنَالِكَ عَشْرٌ مِنْ الْإِبِلِ وَفِي السِّنِّ خَمْسٌ وَفِي
الْمُوضِحَةِ خَمْسٌ
আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবু বাকর ইব্নু মুহাম্মাদ ইব্নু আমর ইব্নু হাযম (র) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
দিয়াতের
ব্যাপারে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে পত্র তাকে লিখেছিলেন উহাতে
উল্লেখ ছিল, জীবনের দিয়াত বা বিনিময় এক শত উট। যখন পূর্ণ নাক কাটা যায় এবং স্থানটি
সম্পূর্ণ সমান হয়ে যায় তখন উহার দিয়াত একশত উট। যখম মাথার মগজ পর্যন্ত পৌঁছেছে
উহাতে ১/৩ দিয়াত, পেটের যখমেও দিয়াতের ১/৩। চক্ষুর দিয়াত পঞ্চাশ উট, হাত এবং
পায়েরও পঞ্চাশ উট করে দিয়াত রয়েছে। প্রতিটি অঙ্গুলির দিয়াত দশ উট। প্রতিটি দাঁতের
পাঁচ উট। হাড় বাহির করে দিয়েছে এমন যখমের দিয়াত পাঁচ উট। (সহীহ, নাসাঈ ৪৮৫১,
আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [ইরওয়া] ২২৮৯)
পরিচ্ছেদঃ
২
দিয়াত কিভাবে গ্রহণ
করা হবে ?
১৫৫৯
حَدَّثَنِي مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ
الْخَطَّابِ قَوَّمَ الدِّيَةَ عَلَى أَهْلِ الْقُرَى فَجَعَلَهَا عَلَى أَهْلِ
الذَّهَبِ أَلْفَ دِينَارٍ وَعَلَى أَهْلِ الْوَرِقِ اثْنَيْ عَشَرَ أَلْفَ
دِرْهَمٍ قَالَ مَالِك فَأَهْلُ الذَّهَبِ أَهْلُ الشَّامِ وَأَهْلُ مِصْرَ
وَأَهْلُ الْوَرِقِ أَهْلُ الْعِرَاقِ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ أَنَّ الدِّيَةَ تُقْطَعُ فِي
ثَلَاثِ سِنِينَ أَوْ أَرْبَعِ سِنِينَ قَالَ مَالِك وَالثَّلَاثُ أَحَبُّ مَا
سَمِعْتُ إِلَيَّ فِي ذَلِكَ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ عِنْدَنَا أَنَّهُ لَا يُقْبَلُ
مِنْ أَهْلِ الْقُرَى فِي الدِّيَةِ الْإِبِلُ وَلَا مِنْ أَهْلِ الْعَمُودِ
الذَّهَبُ وَلَا الْوَرِقُ وَلَا مِنْ أَهْلِ الذَّهَبِ الْوَرِقُ وَلَا مِنْ
أَهْلِ الْوَرِقِ الذَّهَبُ
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
উমার (রা) যখন ঐ সমস্ত গ্রাম্য
লোকের উপর দিয়াতের মূল্য লাগাতেন, যাদের নিকট স্বর্ণ হত তখন স্বর্ণওয়ালাদের উপর এক
হাজার দীনার এবং রৌপ্যওয়ালাদের উপর বার হাজার দিরহাম নির্দিষ্ট করে দিতেন।
(হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, শাম ও মিসরের অধিবাসিগণ স্বর্ণওয়ালা, আর ইরাকের অধিবাসিগণ
রৌপ্যওয়ালা।
মালিক (র) পর্যন্ত খবর পৌঁছেছে যে, লোকের নিকট হতে তিন অথবা চার চৎসরের মধ্যে
দিয়াত উশুল করা হবে।
মালিক (র) বলেন, আমার মতে তিন বৎসরে দিয়াত উশুল করা পছন্দনীয়।
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে ইহা একটি সর্বসম্মত বিষয় যে, দিয়াতে গ্রামবাসীদের
নিকট হতে উট নেয়া হবে না। আর তাবুওয়ালাদের নিকট হতে সোনা চান্দি নেয়া হবে না। আর
স্বর্ণওয়ালাদের নিকট হতে রৌপ্য এবং রৌপ্যওয়ালাদের নিকট হতে স্বর্ণ নেয়া হবে না।
পরিচ্ছেদঃ
৩
ইচ্ছাকৃত হত্যার
দিয়াত, যখন নিহত ব্যক্তির ওয়ারিস দিয়াতের উপর সম্মত হয় এবং পাগলের দিয়াত
১
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّ ابْنَ شِهَابٍ كَانَ يَقُولُ فِي دِيَةِ الْعَمْدِ
إِذَا قُبِلَتْ خَمْسٌ وَعِشْرُونَ بِنْتَ مَخَاضٍ وَخَمْسٌ وَعِشْرُونَ بِنْتَ
لَبُونٍ وَخَمْسٌ وَعِشْرُونَ حِقَّةً وَخَمْسٌ وَعِشْرُونَ جَذَعَةً
ইবনু শিহাব (র)
থেকে বর্ণিতঃ
যখন ইচ্ছাকৃত হত্যায় নিহত
ব্যক্তির ওয়ারিসগণ দিয়াতের উপর সম্মত হয়ে যায় তখন দিয়াত পঁচিশটি বিনত মাখায়,
পঁচিশটি বিনত লবুন, পঁচিশটিই হিক্কা ও পঁচিশটি জায্আ হবে।
বিনত মাখায়, বিনত লবুন, হিককা ও জায্আ এদের সম্পর্কে যাকাত অধ্যায়ে বর্ণনা করা
হয়েছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৫৬০
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
أَنَّ مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ كَتَبَ إِلَى مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ
أَنَّهُ أُتِيَ بِمَجْنُونٍ قَتَلَ رَجُلًا فَكَتَبَ إِلَيْهِ مُعَاوِيَةُ أَنْ
اعْقِلْهُ وَلَا تُقِدْ مِنْهُ فَإِنَّهُ لَيْسَ عَلَى مَجْنُونٍ قَوَدٌ
قَالَ مَالِك فِي الْكَبِيرِ وَالصَّغِيرِ إِذَا قَتَلَا رَجُلًا جَمِيعًا عَمْدًا
أَنَّ عَلَى الْكَبِيرِ أَنْ يُقْتَلَ وَعَلَى الصَّغِيرِ نِصْفُ الدِّيَةِ
قَالَ مَالِك وَكَذَلِكَ الْحُرُّ وَالْعَبْدُ يَقْتُلَانِ الْعَبْدَ فَيُقْتَلُ
الْعَبْدُ وَيَكُونُ عَلَى الْحُرِّ نِصْفُ قِيمَتِهِ
ইয়াহ্ইয়া ইব্নু
সাঈদ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
মারওয়ান মু‘আবিয়াকে লিখলেন, আমার
নিকট এক উন্মাদকে আনা হয়েছে, সে এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। মু‘আবিয়া উত্তরে
লিখলেন, তাকে বন্দী করে রাখ, তা হতে কিসাস নিয়ো না। কেননা উন্মাদের কিসাস নেই।
(হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, যদি কোন বালেগ ও নাবালেগ মিলিত হয়ে কাউকেও ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা
করে, তবে বালেগ হতে কিসাস নিয়ে হবে আর নাবালেগের উপর অর্ধদিয়াত ওয়াজিব হবে।
মালিক (র) বলেন, যদি কোন স্বাধীন ও দাস মিলিত হয়ে কোন দাসকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা
করে, তবে গোলামকে তো কিসাসে হত্যা করা হবে, আর স্বাধীন ব্যক্তির উপর ঐ গোলামের
অর্ধেক মূল্য ওয়াজিব হবে।
পরিচ্ছেদঃ
৪
ভুলে হত্যা করার দিয়াত
প্রসঙ্গে
১৫৬১
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ
عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ وَسُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ رَجُلًا مِنْ بَنِي سَعْدِ
بْنِ لَيْثٍ أَجْرَى فَرَسًا فَوَطِئَ عَلَى إِصْبَعِ رَجُلٍ مِنْ جُهَيْنَةَ
فَنُزِيَ مِنْهَا فَمَاتَ فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ لِلَّذِي ادُّعِي
عَلَيْهِمْ أَتَحْلِفُونَ بِاللهِ خَمْسِينَ يَمِينًا مَا مَاتَ مِنْهَا فَأَبَوْا
وَتَحَرَّجُوا وَقَالَ لِلْآخَرِينَ أَتَحْلِفُونَ أَنْتُمْ فَأَبَوْا فَقَضَى
عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ بِشَطْرِ الدِّيَةِ عَلَى السَّعْدِيِّينَ قَالَ مَالِك
وَلَيْسَ الْعَمَلُ عَلَى هَذَا
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّ ابْنَ شِهَابٍ وَسُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ
وَرَبِيعَةَ بْنَ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ كَانُوا يَقُولُونَ دِيَةُ الْخَطَإِ
عِشْرُونَ بِنْتَ مَخَاضٍ وَعِشْرُونَ بِنْتَ لَبُونٍ وَعِشْرُونَ ابْنَ لَبُونٍ
ذَكَرًا وَعِشْرُونَ حِقَّةً وَعِشْرُونَ جَذَعَةًََََ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ عِنْدَنَا أَنَّهُ لَا قَوَدَ
بَيْنَ الصِّبْيَانِ وَإِنَّ عَمْدَهُمْ خَطَأٌ مَا لَمْ تَجِبْ عَلَيْهِمْ
الْحُدُودُ وَيَبْلُغُوا الْحُلُمَ وَإِنَّ قَتْلَ الصَّبِيِّ لَا يَكُونُ إِلَّا
خَطَأً وَذَلِكَ لَوْ أَنَّ صَبِيًّا وَكَبِيرًا قَتَلَا رَجُلًا حُرًّا خَطَأً
كَانَ عَلَى عَاقِلَةِ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا نِصْفُ الدِّيَةِ
قَالَ مَالِك وَمَنْ قُتِلَ خَطَأً فَإِنَّمَا عَقْلُهُ مَالٌ لَا قَوَدَ فِيهِ
وَإِنَّمَا هُوَ كَغَيْرِهِ مِنْ مَالِهِ يُقْضَى بِهِ دَيْنُهُ وَتَجُوزُ فِيهِ
وَصِيَّتُهُ فَإِنْ كَانَ لَهُ مَالٌ تَكُونُ الدِّيَةُ قَدْرَ ثُلُثِهِ ثُمَّ
عَفَا عَنْ دِيَتِهِ فَذَلِكَ جَائِزٌ لَهُ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ مَالٌ غَيْرُ
دِيَتِهِ جَازَ لَهُ مِنْ ذَلِكَ الثُّلُثُ إِذَا عَفَا عَنْهُ وَأَوْصَى بِهََََِ
ইরাক ইব্নু মালিক ও
সুলায়মান ইব্নু ইয়াসার (র) থেকে বর্ণিতঃ
বানি সা‘দের এক ব্যক্তি ঘোড়া
দৌড়াল যাতে জুহায়নাহ্ গোত্রের এক ব্যক্তির অঙ্গুলি নষ্ট করে দিল; অঙ্গুলি হতে এত
রক্ত ঝরল যে, তাতে ঐ ব্যক্তি মারা গেল। উমার (রা) প্রথমে তো বনী সা‘দকে বললেন,
তোমরা এই কথার উপর পঞ্চাশ বার কসম করতে পার যে, এই ব্যক্তি অঙ্গুলি নষ্ট হওয়ার
দরুন মরেনি; তারা এতে সম্মত হল না। যখন তারা কসম করল না তিনি বানী সা’দ গোত্রের
লোকদের বললেন, তোমরা কসম করবে কি? তারাও এতে সম্মত হল না। অতঃপর তিনি বানী সা‘দ
হতে অর্ধেক দিয়াত দিতে ফয়সালা দিলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, এই হাদীসের উপর আমল করা হবে না। ইব্নু শিহাব, সুলায়মান ইব্নু
ইয়াসার ও রবী‘আ ইবনু আবী আবদুর রহমান বলেন, ভুলবশত হত্যার দিয়াতে কুড়িটি বিনত
মাখায, কুড়িটি বিনত লবুন, কুড়িটি ইব্নু লাবুনের, কুড়িটি হিক্কা এবং কুড়িটি জায‘আ
দেয়া হয়ে থাকে।
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে এটা একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত যে, নাবালেগদের কাছে
থেকে কিসাস নেয়া হবে না, যদিও সে স্বেচ্ছায় হত্যা করে। এই ধরনের হত্যা ভুলবশত
হত্যার পর্যায়ে পড়বে। বালেগ না হওয়া পর্যন্ত এই হুকুম অর্থাৎ তার উপর শাস্তি
বর্তাবে না তার বালেগ হওয়া পর্যন্ত।
এজন্যই যদি কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে কাউকেও হত্যা করে, তবে ইহা ভুলক্রমে হত্যা
হয়েছে মনে করতে হবে। যদি নাবালেগ ও বালেগ মিলিতভাবে কাউকেও হত্যা করে, প্রত্যেকের
জন্য অর্ধেক দিয়াত নির্ধারিত হবে।
মালিক (র) বলেন, যে ব্যক্তি ভুলক্রমে নিহত হয়, তাতে দিয়াত হবে, এতে কিসাস হবে না,
যা দ্বারা তার ঋণ আদায় করা হবে, তার ওসীয়ত আদায় করা হবে। যদি তার নিকট দিয়াতের ১/৩
পরিমাণ মাল থাকে আর দিয়াত ক্ষমা করে দেয়া হয় তবে তা বৈধ। যদি এত মাল না থাকে তবে
১/৩-এর পরিমাণ ক্ষমা করতে পারে। অবশিষ্ট যা থাকে, উহা ওয়ারিসদের হক। (হাদীসটি ইমাম
মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদঃ
৫
ভুলে কাউকে আহত করার
দিয়াত
১
حَدَّثَنِي مَالِك أَنَّ الْأَمْرَ الْمُجْتَمَعُ
عَلَيْهِ عِنْدَهُمْ فِي الْخَطَإِ أَنَّهُ لَا يُعْقَلُ حَتَّى يَبْرَأَ
الْمَجْرُوحُ وَيَصِحَّ وَأَنَّهُ إِنْ كُسِرَ عَظْمٌ مِنْ الْإِنْسَانِ يَدٌ أَوْ
رِجْلٌ أَوْ غَيْرُ ذَلِكَ مِنْ الْجَسَدِ خَطَأً فَبَرَأَ وَصَحَّ وَعَادَ
لِهَيْئَتِهِ فَلَيْسَ فِيهِ عَقْلٌ فَإِنْ نَقَصَ أَوْ كَانَ فِيهِ عَثَلٌ
فَفِيهِ مِنْ عَقْلِهِ بِحِسَابِ مَا نَقَصَ مِنْهُ قَالَ مَالِك فَإِنْ كَانَ
ذَلِكَ الْعَظْمُ مِمَّا جَاءَ فِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ عَقْلٌ مُسَمًّى فَبِحِسَابِ مَا فَرَضَ فِيهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا كَانَ مِمَّا لَمْ يَأْتِ فِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَقْلٌ مُسَمًّى وَلَمْ تَمْضِ فِيهِ سُنَّةٌ وَلَا
عَقْلٌ مُسَمًّى فَإِنَّهُ يُجْتَهَدُ فِيهِ
قَالَ مَالِك وَلَيْسَ فِي الْجِرَاحِ فِي الْجَسَدِ إِذَا كَانَتْ خَطَأً عَقْلٌ
إِذَا بَرَأَ الْجُرْحُ وَعَادَ لِهَيْئَتِهِ فَإِنْ كَانَ فِي شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ
عَثَلٌ أَوْ شَيْنٌ فَإِنَّهُ يُجْتَهَدُ فِيهِ إِلَّا الْجَائِفَةَ فَإِنَّ
فِيهَا ثُلُثَ دِيَةِ النَّفْسِ
قَالَ مَالِك وَلَيْسَ فِي مُنَقِّلَةِ الْجَسَدِ عَقْلٌ وَهِيَ مِثْلُ مُوضِحَةِ
الْجَسَدِ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ عِنْدَنَا أَنَّ الطَّبِيبَ إِذَا
خَتَنَ فَقَطَعَ الْحَشَفَةَ إِنَّ عَلَيْهِ الْعَقْلَ وَأَنَّ ذَلِكَ مِنْ الْخَطَإِ
الَّذِي تَحْمِلُهُ الْعَاقِلَةُ وَأَنَّ كُلَّ مَا أَخْطَأَ بِهِ الطَّبِيبُ أَوْ
تَعَدَّى إِذَا لَمْ يَتَعَمَّدْ ذَلِكَ فَفِيهِ الْعَقْلُ
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
আমাদের মতে, ভুলের একটি সর্বসম্মত
বিধান রয়েছে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আঘাতের ক্ষত ভাল না হয়ে যায় ততক্ষণ ঐ আঘাতজনিত
ক্ষতের দিয়াত আদায় করা হবে না। যদি হাত অথবা পায়ের হাড় ভেঙ্গে যায়, অতঃপর পুনঃ
জোড়া লেগে পূর্বের মতো ভাল হয়ে যায়, তবে উহাতে দিয়াত নেই। যদি কোন প্রকার ত্রুটি
থেকে যায় তবে ত্রুটির পরিমাণ দিয়াত হবে। যদি ঐ হাড় এইরূপ হয় যে, যার ব্যাপারে রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে দিয়াত সাব্যস্ত হয়েছে, তবে ঐ পরিমাণ দিয়াত
অনিবার্যভাবে নির্ধারিত হবে। অন্যথায় বিবেচনান্তে উপযুক্ত দিয়াত গ্রহণ করা হবে।
মালিক (র) বলেন, ভুলক্রমে শরীরে যে আঘাতজনিত ক্ষত হয়েছে যদি তা এমনভাবে ভাল হয়ে
যায় যে, আঘাতের কোন চিহ্নও না থাকে, তবে দিয়াত নেই। যদি কোন ত্রুটি বা কোন ক্ষতের
চিহ্ন থেকে যায়, তবে তার উপযুক্ত দিয়াত দিতে হবে। পেটের ক্ষতে ১/৩ দিয়াত অনিবার্য
দেয়া হবে। আর যে আঘাত লাগার দরুন জোড়া খুলে যায়, হাড় স্থানচ্যুত হয়ে যায়, উহাতে
দিয়াত নেই। যেমন ঐ আঘাতে দিয়াত নেই, যাতে হাড় বের হয়ে যায়।
মালিক (র) বলেন, এটা আমাদের কাছে একটি সর্বসম্মত বিধান যে, যদি হাজ্জাম খতনা করবার
সময় ভুলে অতিরিক্ত জায়গা কেটে ফেলে তবে তার দিয়াত দিতে হবে। এইরূপে যদি চিকিৎসক
ভুলে কোন ত্রুটি করে ফেলে, তবে তাতে দিয়াত দিতে হবে (যদি ইচ্ছাকৃতভাবে এইরূপ করে,
তবে কিসাস হবে) ।
পরিচ্ছেদঃ
৬
স্ত্রীলোকের দিয়াত
১
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ
سَعِيدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ تُعَاقِلُ
الْمَرْأَةُ الرَّجُلَ إِلَى ثُلُثِ الدِّيَةِ إِصْبَعُهَا كَإِصْبَعِهِ
وَسِنُّهَا كَسِنِّهِ وَمُوضِحَتُهَا كَمُوضِحَتِهِ وَمُنَقِّلَتُهَا
كَمُنَقِّلَتِهِ
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ وَبَلَغَهُ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ
الزُّبَيْرِ أَنَّهُمَا كَانَا يَقُولَانِ مِثْلَ قَوْلِ سَعِيدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ فِي الْمَرْأَةِ أَنَّهَا تُعَاقِلُ الرَّجُلَ إِلَى ثُلُثِ دِيَةِ
الرَّجُلِ فَإِذَا بَلَغَتْ ثُلُثَ دِيَةِ الرَّجُلِ كَانَتْ إِلَى النِّصْفِ مِنْ
دِيَةِ الرَّجُلِ
قَالَ مَالِك وَتَفْسِيرُ ذَلِكَ أَنَّهَا تُعَاقِلُهُ فِي الْمُوضِحَةِ
وَالْمُنَقِّلَةِ وَمَا دُونَ الْمَأْمُومَةِ وَالْجَائِفَةِ وَأَشْبَاهِهِمَا
مِمَّا يَكُونُ فِيهِ ثُلُثُ الدِّيَةِ فَصَاعِدًا فَإِذَا بَلَغَتْ ذَلِكَ كَانَ
عَقْلُهَا فِي ذَلِكَ النِّصْفَ مِنْ عَقْلِ الرَّجُلِ
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُولُ مَضَتْ السُّنَّةُ
أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا أَصَابَ امْرَأَتَهُ بِجُرْحٍ أَنَّ عَلَيْهِ عَقْلَ ذَلِكَ
الْجُرْحِ وَلَا يُقَادُ مِنْهُ
قَالَ مَالِك وَإِنَّمَا ذَلِكَ فِي الْخَطَإِ أَنْ يَضْرِبَ الرَّجُلُ
امْرَأَتَهُ فَيُصِيبَهَا مِنْ ضَرْبِهِ مَا لَمْ يَتَعَمَّدْ كَمَا يَضْرِبُهَا
بِسَوْطٍ فَيَفْقَأُ عَيْنَهَا وَنَحْوَ ذَلِكَ قَالَ مَالِك فِي الْمَرْأَةِ
يَكُونُ لَهَا زَوْجٌ وَوَلَدٌ مِنْ غَيْرِ عَصَبَتِهَا وَلَا قَوْمِهَا فَلَيْسَ
عَلَى زَوْجِهَا إِذَا كَانَ مِنْ قَبِيلَةٍ أُخْرَى مِنْ عَقْلِ جِنَايَتِهَا
شَيْءٌ وَلَا عَلَى وَلَدِهَا إِذَا كَانُوا مِنْ غَيْرِ قَوْمِهَا وَلَا عَلَى
إِخْوَتِهَا مِنْ أُمِّهَا إِذَا كَانُوا مِنْ غَيْرِ عَصَبَتِهَا وَلَا قَوْمِهَا
فَهَؤُلَاءِ أَحَقُّ بِمِيرَاثِهَا وَالْعَصَبَةُ عَلَيْهِمْ الْعَقْلُ مُنْذُ
زَمَانِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْيَوْمِ
وَكَذَلِكَ مَوَالِي الْمَرْأَةِ مِيرَاثُهُمْ لِوَلَدِ الْمَرْأَةِ وَإِنْ
كَانُوا مِنْ غَيْرِ قَبِيلَتِهَا وَعَقْلُ جِنَايَةِ الْمَوَالِي عَلَى
قَبِيلَتِهَا
সাঈদ ইব্নু
মুসায়্যাব ( থেকে বর্ণিতঃ
১/৩ পর্যন্ত পুরুষ স্ত্রী উভয়ের
দিয়াত সমান। যেমন দিয়াত সাব্যস্ত করার ব্যাপারে স্ত্রীলোকের অঙ্গুলি পুরুষের
অঙ্গুলির মতো, স্ত্রীলোকের দাঁত পুরুষের দাঁতের মতো। স্ত্রীদের মোওযেহা (ঐ যখম
যাতে হাড় দেখা যায়) পুরুষদের মোওযেহার মতো, অনুরূপভাবে স্ত্রীলোকের মুনকিলাহ (ঐ
যখম যাতে হাড় স্থানচ্যুত হয়ে যায়) পুরুষের মুনকিলাহ্র মতো। (হাদীসটি ইমাম মালিক
এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইব্নু শিহাব ও উরওয়া ইব্নু যুবাইর (র) স্ত্রীদের ব্যাপারে সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাবের
মতো বলতেন যে, স্ত্রীগণ ১/৩ দিয়াত পর্যন্ত পুরুষদের মতো হবে, অতঃপর পুরুষদের অর্ধ
দিয়াতের সমপরিমাণ হবে। মালিক (র) বলেন, এর ব্যাখ্যা এই যে, মোযিহাহ্ এবং
মুনাক্কিলাতে মহিলাদের দিয়াত পুরুষের অনুরূপ। কিন্তু মুযিহাহ এবং জারিফাহ্ যার
দিয়াত ১/৩ অথবা তার বেশী এ ক্ষেত্রে মহিলার দিয়াত পুরুষের অর্ধেক।
ইব্নু শিহাব (র) বলতেন, এই নিয়ম চলে এসেছে যে, যদি পুরুষ নিজের স্ত্রীকে আঘাত
দ্বারা ক্ষতি করে দেয়, তবে তা হতে দিয়াত নেয়া হবে, কিন্তু কিসাস হবে না। (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, এই ব্যবস্থা তখনই হবে যখন পুরুষ ভুলে আঘাত করে। যদি ইচ্ছাকৃতভাবে
এইরূপ করে তবে কিসাস অনিবার্য হবে। যেমন স্ত্রীকে বেত দ্বারা আঘাত করাতে তার চোখ
নষ্ট হয়ে গেছে।
মালিক (র) বলেন, যে স্ত্রীলোকের স্বামী বা সন্তান তার সম্প্রদায়ের না হয়ে অন্য
সম্প্রদায়ের হয়, সেই স্ত্রীলোকদের অপরাধের দিয়াতে স্বামী শরীক হবে না। এইরূপে তার
বাচ্চা ও বৈমাত্রেয় ভাই যখন ভিন্ন গোত্রের হবে, সেও দিয়াতে শরীক হবে না। কেননা
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় হতে আজ পর্যন্ত সমগোত্রের উপরই
দিয়াত হয়ে থাকে। কিন্তু মীরাসে সন্তান ও বৈমাত্রের ভাই মালিক হবে। যেমন
স্ত্রীলোকের মুক্ত দাসের মীরাস তার সন্তানকে দেয়া হবে, যদিও তার গোত্রের না হয়।
কিন্তু তাদের অপরাধের দিয়াত স্ত্রীর স্বগোত্রের উপর বর্তাবে।
পরিচ্ছেদঃ
৭
গর্ভস্থ সন্তানের
দিয়াত
১৫৬২
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ
عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
أَنَّ امْرَأَتَيْنِ مِنْ هُذَيْلٍ رَمَتْ إِحْدَاهُمَا الْأُخْرَى فَطَرَحَتْ
جَنِينَهَا فَقَضَى فِيهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
بِغُرَّةٍ عَبْدٍ أَوْ وَلِيدَةٍ
আবূ হুরায়রা (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
হুযাইলের
দুই স্ত্রীলোক পরস্পর মারামারি করতে যেয়ে একে অপরের প্রতি পাথর নিক্ষেপ করল, যাতে
তার পেটের বাচ্চা বাহির হয়ে গেল। এতে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একটি দাস বা একটি দাসী দিয়াত দেয়ালেন। (বুখারী ৫৭৫৯, মুসলিম ১৬৮১)
১৫৬৩
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ
سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
قَضَى فِي الْجَنِينِ يُقْتَلُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ بِغُرَّةٍ عَبْدٍ أَوْ
وَلِيدَةٍ فَقَالَ الَّذِي قُضِيَ عَلَيْهِ كَيْفَ أَغْرَمُ مَا لَا شَرِبَ وَلَا
أَكَلْ وَلَا نَطَقَ وَلَا اسْتَهَلْ وَمِثْلُ ذَلِكَ بَطَلْ فَقَالَ رَسُولُ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا هَذَا مِنْ إِخْوَانِ الْكُهَّانِ
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُ
كَانَ يَقُولُ الْغُرَّةُ تُقَوَّمُ خَمْسِينَ دِينَارًا أَوْ سِتَّ مِائَةِ
دِرْهَمٍ وَدِيَةُ الْمَرْأَةِ الْحُرَّةِ الْمُسْلِمَةِ خَمْسُ مِائَةِ دِينَارٍ
أَوْ سِتَّةُ آلَافِ دِرْهَمٍ
قَالَ مَالِك فَدِيَةُ جَنِينِ الْحُرَّةِ عُشْرُ دِيَتِهَا وَالْعُشْرُ خَمْسُونَ
دِينَارًا أَوْ سِتُّ مِائَةِ دِرْهَمٍ
قَالَ مَالِك وَلَمْ أَسْمَعْ أَحَدًا يُخَالِفُ فِي أَنَّ الْجَنِينَ لَا تَكُونُ
فِيهِ الْغُرَّةُ حَتَّى يُزَايِلَ بَطْنَ أُمِّهِ وَيَسْقُطُ مِنْ بَطْنِهَا
مَيِّتًا
قَالَ مَالِك و سَمِعْت أَنَّهُ إِذَا خَرَجَ الْجَنِينُ مِنْ بَطْنِ أُمِّهِ
حَيًّا ثُمَّ مَاتَ أَنَّ فِيهِ الدِّيَةَ كَامِلَةً قَالَ مَالِك وَلَا حَيَاةَ
لِلْجَنِينِ إِلَّا بِالْاسْتِهْلَالِ فَإِذَا خَرَجَ مِنْ بَطْنِ أُمِّهِ
فَاسْتَهَلَّ ثُمَّ مَاتَ فَفِيهِ الدِّيَةُ كَامِلَةً
وَنَرَى أَنَّ فِي جَنِينِ الْأَمَةِ عُشْرَ ثَمَنِ أُمِّهِ
قَالَ مَالِك وَإِذَا قَتَلَتْ الْمَرْأَةُ رَجُلًا أَوْ امْرَأَةً عَمْدًا
وَالَّتِي قَتَلَتْ حَامِلٌ لَمْ يُقَدْ مِنْهَا حَتَّى تَضَعَ حَمْلَهَا وَإِنْ
قُتِلَتْ الْمَرْأَةُ وَهِيَ حَامِلٌ عَمْدًا أَوْ خَطَأً فَلَيْسَ عَلَى مَنْ
قَتَلَهَا فِي جَنِينِهَا شَيْءٌ فَإِنْ قُتِلَتْ عَمْدًا قُتِلَ الَّذِي
قَتَلَهَا وَلَيْسَ فِي جَنِينِهَا دِيَةٌ وَإِنْ قُتِلَتْ خَطَأً فَعَلَى
عَاقِلَةِ قَاتِلِهَا دِيَتُهَا وَلَيْسَ فِي جَنِينِهَا دِيَةٌ و حَدَّثَنِي
يَحْيَى
سُئِلَ مَالِك عَنْ جَنِينِ الْيَهُودِيَّةِ وَالنَّصْرَانِيَّةِ يُطْرَحُ فَقَالَ
أَرَى أَنَّ فِيهِ عُشْرَ دِيَةِ أُمِّهِ
সাঈদ ইব্নু
মুসায়্যাব (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম গর্ভস্থ সন্তান হত্যার ব্যাপারে একটি দাস অথবা দাসী দিয়াত দেয়ার আদেশ
করেছেন। যার উপর দিয়াতের আদেশ হয়েছে, সে বলল আমি এই সন্তানের রক্তপণ কেন আদায় করব,
যে খায়নি, পান করেনি, কথা বলেনি, ক্রন্দনও করেনি। এইরূপ সন্তান হত্যার অপরাধ তো
ক্ষমাযোগ্য। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন লোকটি তো (কাহিন)
যাদুকরের ভাই। (বুখারী ৫৭৫৮, ৫৭৬০, ইমাম মুসলিম হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রা) থেকে
বর্ণনা করেছেন, মুসলিম ১৬৮১, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)
রবী‘আ ইব্নু আবী আব্দুর রহমান বলতেন, দাস বা দাসীর মূল্য যা গর্ভস্থ শিশুর জন্য
দেয়া হয় পঞ্চাশ দীনার অথবা ছয় শত দিরহাম হওয়া উচিত। আর স্বাধীন মুসলমানের স্ত্রীর
দিয়াত পাঁচ শত দীনার বা ছয় হাজার দিরহাম। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা
করেছেন)
মালিক (র) বলেন, স্বাধীনা রমণীর গর্ভস্থ বাচ্চার দিয়াত স্ত্রীলোকের দিয়াতের দশমাংশ
আর উহা পঞ্চাশ দীনার বা ছয় শত দিরহাম। গর্ভস্থ বাচ্চার দিয়াত ঐ সময় দেয়া অনিবার্য
হয় যখন বাচ্চা মরে পেট হতে বের হয়ে পড়ে। আমি এতে কাউকেও ইখতিলাফ করতে দেখিনি। যদি
বাচ্চা পেট হতে জীবিত বের হয়ে মারা যায় তবে পূর্ণ দিয়াত দিতে হবে।
মালিক (র) বলেন, সন্তানের ক্রন্দন দ্বারা বুঝা যাবে যে, সে জীবিত না মৃত। যদি
ক্রন্দন করে মারা যায় তবে পূর্ণ দিয়াত দেয়া অনিবার্য হবে। দাসীর পেটের সন্তানের
বেলায় দাসীর মূল্যের দশমাংশ দিয়াত দিতে হবে।
মালিক (র) বলেন, যদি গর্ভবতী স্ত্রী কোন পুরুষ অথবা স্ত্রীলোককে হত্যা করে, তবে
তার সন্তান প্রসবের পূর্বে তার হতে কিসাস নেয়া হবে না। যদি গর্ভবতী স্ত্রীলোককে
কেউ হত্যা করে, ইচ্ছাকৃতই হোক বা ভুলক্রমেই হোক, তার গর্ভস্থ সন্তানের দিয়াত
অনিবার্য হবে না, বরং যদি তাকে ইচ্ছাকৃত হত্যা করা হয়ে থাকে, তবে হত্যাকারীকে হত্যা
করা হবে আর যদি ভুলক্রমে হত্যা করা হয়ে থাকে, তবে দিয়াত দিতে হবে। হত্যা ভুল ক্রমে
হলে তার দিয়াত নিকটাত্মীয়দের উপর বর্তাবে।
মালিক (র)-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যদি কেউ ইহুদী বা খৃস্টান স্ত্রীলোকের গর্ভস্থ
বাচ্চাকে হত্যা করে বের করে দেয় উহার হুকুম কি ? তিনি উত্তর দিলেন, তার মাতার
দিয়াতের ১/১০ অংশ দিতে হবে।
পরিচ্ছেদঃ
৮
যাতে পূর্ণ দিয়াত দেয়া
জরুরী হয়
১
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ
سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ فِي الشَّفَتَيْنِ الدِّيَةُ
كَامِلَةً فَإِذَا قُطِعَتْ السُّفْلَى فَفِيهَا ثُلُثَا الدِّيَةِ
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَأَلَ ابْنَ شِهَابٍ عَنْ الرَّجُلِ
الْأَعْوَرِ يَفْقَأُ عَيْنَ الصَّحِيحِ فَقَالَ ابْنُ شِهَابٍ إِنْ أَحَبَّ
الصَّحِيحُ أَنْ يَسْتَقِيدَ مِنْهُ فَلَهُ الْقَوَدُ وَإِنْ أَحَبَّ فَلَهُ
الدِّيَةُ أَلْفُ دِينَارٍ أَوْ اثْنَا عَشَرَ أَلْفَ دِرْهَمٍ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ فِي كُلِّ زَوْجٍ مِنْ
الْإِنْسَانِ الدِّيَةَ كَامِلَةً وَأَنَّ فِي اللِّسَانِ الدِّيَةَ كَامِلَةً
وَأَنَّ فِي الْأُذُنَيْنِ إِذَا ذَهَبَ سَمْعُهُمَا الدِّيَةَ كَامِلَةً اصْطُلِمَتَا
أَوْ لَمْ تُصْطَلَمَا وَفِي ذَكَرِ الرَّجُلِ الدِّيَةُ كَامِلَةً وَفِي
الْأُنْثَيَيْنِ الدِّيَةُ كَامِلَةً
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ فِي ثَدْيَيْ
الْمَرْأَةِ الدِّيَةَ كَامِلَةً قَالَ مَالِك وَأَخَفُّ ذَلِكَ عِنْدِي
الْحَاجِبَانِ وَثَدْيَا الرَّجُل
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا أُصِيبَ مِنْ أَطْرَافِه
أَكْثَرُ مِنْ دِيَتِهِ فَذَلِكَ لَهُ إِذَا أُصِيبَتْ يَدَاهُ وَرِجْلَاهُ
وَعَيْنَاهُ فَلَهُ ثَلَاثُ دِيَاتٍ
قَالَ مَالِك فِي عَيْنِ الْأَعْوَرِ الصَّحِيحَةِ إِذَا فُقِئَتْ خَطَأً إِنَّ
فِيهَا الدِّيَةَ كَامِلَةً ِِِِ ِِِِ
সাঈদ ইব্নু
মুসায়্যিব (র) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলতেন, উভয় ঠোঁটে পূর্ণ
দিয়াত রয়েছে। যদি নিচের ঠোঁট কেটে ফেলা হয়ে থাকে তবে উহাতে দুই-তৃতীয়াংশ দিয়াত
দিতে হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমি ইব্নু শিহাব যুহরীর কাছে জিজ্ঞেস করেছিলাম, যদি কোন কানা লোক
কোন চক্ষুবিশিষ্ট লোকের চক্ষু উপড়িয়ে ফেলে, তবে কি হুকুম ? তিনি বললেন, যদি ইচ্ছা
করে, তবে তার চক্ষু উপড়িয়ে ফেলতে পারে। আর যদি ইচ্ছা করে তবে এক হাজার দীনার বা
বার হাজার দিরহাম নিবে।
মালিক (র) বলেন, আমার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, যে অঙ্গ শরীরে দুই দুইটি রয়েছে,
যদি কেউ উভয়টি নষ্ট করে দেয়, তবে পূর্ণ দিয়াত দিতে হবে, আর জিহ্বাতে পূর্ণ দিয়াত
হয়। যদি দুই কানে এইরূপ চোট লাগে যাতে শ্রবণশক্তি বিলুপ্ত হয়ে যায় যদিও কান কাটা
না যায় তবুও পূর্ণ দিয়াত দিতে হয়। এইরূপে পুরুষের লজ্জাস্থান ও অণ্ডকোষের পূর্ণ
দিয়াত রয়েছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমার কাছে রেওয়ায়েত পৌঁছেছে যে, যদি কোন মহিলার স্তনদ্বয় কেটে
ফেলা হয়, তবে উহাতে হবে পূর্ণ দিয়াত। আর যদি ভ্রু কামিয়ে ফেলে এবং পুরুষের উভয়
স্তন কেটে ফেলে, তবে পূর্ণ দিয়াত হবে না।
মালিক (র) বলেন, যদি কোন ব্যক্তির উভয় হাত, উভয় পা এবং উভয় চক্ষু নষ্ট করে দেয়,
তবে ভিন্ন ভিন্নভাবে পূর্ণ দিয়াত দিতে হবে, পায়ের ভিন্ন, হাতের ভিন্ন এবং চক্ষুর
ভিন্ন ভিন্ন দিয়াত দিতে হবে অর্থাৎ তিন দিয়াতে অথবা তিন হাজার দীনার বা ৩৬ হাজার
দিরহাম দিতে হবে।
মালিক (র) বলেন, যদি কেউ এক চোখ কানা ব্যক্তির ভাল চক্ষু ভুলে নষ্ট করে ফেলে, তবে
পূর্ণ দিয়াত দিতে হবে।
পরিচ্ছেদঃ
৯
চক্ষু ঠিক রেখে যদি
চক্ষুর দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে উহার দিয়াত সম্বন্ধে হুকুম
১
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ
سَعِيدٍ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ كَانَ يَقُولُ
فِي الْعَيْنِ الْقَائِمَةِ إِذَا طَفِئَتْ مِائَةُ دِينَارٍِِِِ
قَالَ يَحْيَى و سُئِلَ مَالِك عَنْ شَتَرِ الْعَيْنِ وَحِجَاجِ الْعَيْنِ فَقَالَ
لَيْسَ فِي ذَلِكَ إِلَّا الْاجْتِهَادُ إِلَّا أَنْ يَنْقُصَ بَصَرُ الْعَيْنِ
فَيَكُونُ لَهُ بِقَدْرِ مَا نَقَصَ مِنْ بَصَرِ الْعَيْنِ
-قَالَ يَحْيَى قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا فِي الْعَيْنِ الْقَائِمَةِ
الْعَوْرَاءِ إِذَا طَفِئَتْ وَفِي الْيَدِ الشَّلَّاءِ إِذَا قُطِعَتْ إِنَّهُ
لَيْسَ فِي ذَلِكَ إِلَّا الْاجْتِهَادُ وَلَيْسَ فِي ذَلِكَ عَقْلٌ مُسَمًّىِِِِ
যায়দ ইব্নু সাবিত
(রা) থেকে বর্ণিতঃ
যদি চক্ষু ঠিক থাকে কিন্তু
দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যায় তবে এক শত দীনার দিয়াত দিতে হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক
এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, যদি কেউ কারো চক্ষুর উপরের চামড়া কেটে ফেলে অথবা চক্ষুর
চতুষ্পার্শ্বের গোল হাড় ভেঙ্গে ফেলে তবে উহা চিন্তা করে উপযুক্ত পরিমাণ দিয়াত দিতে
হবে। যদি দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে তবে ক্ষতির পরিমাণ দিয়াত দিতে হবে।
মালিক (র) বলেন, যদি কেউ করো ঐ চক্ষু নষ্ট করে ফেলে যা বাহ্য দৃষ্টিতে ঠিক থাকলেও
উহাতে দৃষ্টিশক্তি ছিল না অথবা ঐরূপ একটি হাত কেটে ফেলে যা অক্ষম ছিল, তবে দিয়াত
দেয়া অনিবার্য হবে না। হ্যাঁ, বিচারকের (মতে) বিচারে যা স্থির হয় সেইরূপ দিয়াত
দিতে হবে।
পরিচ্ছেদঃ
১০
ক্ষত করার দিয়াত
১
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ
سَعِيدٍ أَنَّهُ سَمِعَ سُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ يَذْكُرُ أَنَّ الْمُوضِحَةَ فِي
الْوَجْهِ مِثْلُ الْمُوضِحَةِ فِي الرَّأْسِ إِلَّا أَنْ تَعِيبَ الْوَجْهَ
فَيُزَادُ فِي عَقْلِهَا مَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ عَقْلِ نِصْفِ الْمُوضِحَةِ فِي
الرَّأْسِ فَيَكُونُ فِيهَا خَمْسَةٌ وَسَبْعُونَ دِينَارًا
قَالَ مَالِك وَالْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ فِي الْمُنَقِّلَةِ خَمْسَ عَشَرَةَ
فَرِيضَةً قَالَ وَالْمُنَقِّلَةُ الَّتِي يَطِيرُ فِرَاشُهَا مِنْ الْعَظْمِ
وَلَا تَخْرِقُ إِلَى الدِّمَاغِ وَهِيَ تَكُونُ فِي الرَّأْسِ وَفِي الْوَجْهِ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ عِنْدَنَا أَنَّ الْمَأْمُومَةَ
وَالْجَائِفَةَ لَيْسَ فِيهِمَا قَوَدٌ قَالَ مَالِك وَالْمَأْمُومَةُ مَا خَرَقَ
الْعَظْمَ إِلَى الدِّمَاغِ وَلَا تَكُونُ الْمَأْمُومَةُ إِلَّا فِي الرَّأْسِ
وَقَدْ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ لَيْسَ فِي الْمَأْمُومَةِ قَوَدٌ.
قَالَ مَالِك وَمَا يَصِلُ إِلَى الدِّمَاغِ إِذَا خَرَقَ الْعَظْمَ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّهُ لَيْسَ فِيمَا دُونَ الْمُوضِحَةِ مِن
الشِّجَاجِ عَقْلٌ حَتَّى تَبْلُغَ الْمُوضِحَةَ وَإِنَّمَا الْعَقْلُ فِي
الْمُوضِحَةِ فَمَا فَوْقَهَا وَذَلِكَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ انْتَهَى إِلَى الْمُوضِحَةِ فِي كِتَابِهِ لِعَمْرِو بْنِ حَزْمٍ
فَجَعَلَ فِيهَا خَمْسًا مِنْ الْإِبِلِ وَلَمْ تَقْضِ الْأَئِمَّةُ فِي
الْقَدِيمِ وَلَا فِي الْحَدِيثِ فِيمَا دُونَ الْمُوضِحَةِ بِعَقْلٍ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ قَالَ كُلُّ نَافِذَةٍ فِي عُضْوٍ مِنْ الْأَعْضَاءِ
فَفِيهَا ثُلُثُ عَقْلِ ذَلِكَ الْعُضْوِ حَدَّثَنِي مَالِك كَانَ ابْنُ شِهَابٍ
لَا يَرَى ذَلِكَْْْْ
وَأَنَا لَا أَرَى فِي نَافِذَةٍ فِي عُضْوٍ مِنْ الْأَعْضَاءِ فِي الْجَسَدِ
أَمْرًا مُجْتَمَعًا عَلَيْهِ وَلَكِنِّي أَرَى فِيهَا الْاجْتِهَادَ يَجْتَهِدُ
الْإِمَامُ فِي ذَلِكَ وَلَيْسَ فِي ذَلِكَ أَمْرٌ مُجْتَمَعٌ عَلَيْهِ عِنْدَنَا
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ الْمَأْمُومَةَ وَالْمُنَقِّلَةَ
وَالْمُوضِحَةَ لَا تَكُونُ إِلَّا فِي الْوَجْهِ وَالرَّأْسِ فَمَا كَانَ فِي
الْجَسَدِ مِنْ ذَلِكَ فَلَيْسَ فِيهِ إِلَّا الْاجْتِهَادُ قَالَ مَالِك فَلَا
أَرَى اللَّحْيَ الْأَسْفَلَ وَالْأَنْفَ مِنْ الرَّأْسِ فِي جِرَاحِهِمَا
لِأَنَّهُمَا عَظْمَانِ مُنْفَرِدَانِ وَالرَّأْسُ بَعْدَهُمَا عَظْمٌ وَاحِدٌْْْْ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ
أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ أَقَادَ مِنْ الْمُنَقِّلَةِ
ইয়াহ্ইয়া ইব্নু
সাঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি সুলায়মান ইব্নু ইয়াসার হতে
শ্রবণ করেছেন, তিনি বলতেন, চেহারার ক্ষত যাতে হাড় দেখা যায়, মাথার হাড় দেখা যাওয়া
অবস্থায় যখমের মতো, কিন্তু তার জন্য যদি চেহারা দেখতে বিকৃত হয়ে যায়, তবে দিয়াত
বাড়িয়ে দেয়া হবে। মাথার অর্ধেক পর্যন্ত যে ক্ষত হবে উহার জন্য ৭৫ দীনার দেয়া জরুরী
হয়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের মতে ইহা একটি সর্বসম্মত বিধান যে, ‘মুনাক্কিলা’ হলে ১৫ উট
দিতে হবে।
মালিক (র) বলেন, মুনাক্কিলা ঐ ক্ষতকে বলে যাতে হাড় স্থানচ্যুত হয়ে যায়, আর এই আঘাত
মাথার মগজ পর্যন্ত না পৌঁছে। এই আঘাত মাথা ও চেহারায় সীমিত থাকে।
মালিক (র) বলেন, আমাদের নিকট এই বিধান সর্বসম্মত যে, মামুমা ও জায়িফাতে কিসাস নেই,
যুহরীও এইরূপ বলেছেন।
মালিক (র) বলেন, মামুমা ঐ ক্ষতকে বলা হয় যাতে হাড় ভেঙ্গে মাথার মগজ পর্যন্ত পৌঁছে
আর এই ক্ষত মাথায়ই হয়ে থাকে। অবশ্য এই আঘাতে হাড় ভাঙ্গলেও উহা মগজের ক্ষতি করে না।
মালিক (র) বলেন, আমাদের নিকট ইহা সর্বসম্মত বিধান যে, মুযিহা হতে অল্প ক্ষতে দিয়াত
নেই যতক্ষণ উহা মুযিহা পর্যন্ত না পৌঁছে। মুযিহা বা তদূর্ধ্ব ক্ষতে দিয়াত দিতে
হবে। কেননা আমর ইব্নু হাযমের হাদীসে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, মুযিহায় পাঁচ উট; এর নিম্নের পরিমাণ বর্ণনা করেননি। আর কোন ইমামও বর্তমানে
বা অতীতে মুযিহার নিম্ন পরিমাণ দিয়াতের আদেশ করেননি।
সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব বলেন, শরীরের কোন অঙ্গে আঘাত লেগে ছিদ্র হলে তাতে ঐ অঙ্গের
দিয়াতে এক তৃতীয়াংশ দিয়াত দিতে হবে।
মালিক (র) বলেন, ইব্নু শিহাব যুহরীর এমনটি মনে করেন না। মালিক (র) বলেন, আমার
নিকটও এমন ক্ষতের কোন পরিমাণ নির্দিষ্ট নেই, বরং ইহা বিচারকের বিচারের উপর নির্ভর
করবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের নিকট এটা সর্বসম্মত বিধান যে, মামুমা, মুনাফিক ও মুযিহা
শুধু মাথা ও চেহারায় হয়ে থাকে। যদি অন্য কোন স্থানে হয় তবে বিচারকের রায়ের উপর আমল
করা হবে
মালিক (র) বলেন, নিচের চোয়াল ও নাক মাথায় ধরা হবে না, বরং এই দুইটি পৃথক অঙ্গ।
এদের অতিরিক্ত মাথা আর একটি পৃথক হাড়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইব্নু যুবাইর মুনাক্কিলার কিসাস নিয়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১১
অঙ্গুলির দিয়াত
১
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ
أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُ قَالَ سَأَلْتُ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ كَمْ
فِي إِصْبَعِ الْمَرْأَةِ فَقَالَ عَشْرٌ مِنْ الْإِبِلِ فَقُلْتُ كَمْ فِي
إِصْبَعَيْنِ
قَالَ عِشْرُونَ مِنْ الْإِبِلِ فَقُلْتُ كَمْ فِي ثَلَاثٍ فَقَالَ ثَلَاثُونَ
مِنْ الْإِبِلِ فَقُلْتُ كَمْ فِي أَرْبَعٍ قَالَ عِشْرُونَ مِنْ الْإِبِلِ فَقُلْتُ
حِينَ عَظُمَ جُرْحُهَا وَاشْتَدَّتْ مُصِيبَتُهَا نَقَصَ عَقْلُهَا فَقَالَ
سَعِيدٌ أَعِرَاقِيٌّ أَنْتَ فَقُلْتُ بَلْ عَالِمٌ مُتَثَبِّتٌ أَوْ جَاهِلٌ
مُتَعَلِّمٌ فَقَالَ سَعِيدٌ هِيَ السُّنَّةُ يَا ابْنَ أَخِي
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا فِي أَصَابِعِ الْكَفِّ إِذَا قُطِعَتْ فَقَدْ
تَمَّ عَقْلُهَا وَذَلِكَ أَنَّ خَمْسَ الْأَصَابِعِ إِذَا قُطِعَتْ كَانَ
عَقْلُهَا عَقْلَ الْكَفِّ خَمْسِينَ مِنْ الْإِبِلِ فِي كُلِّ إِصْبَعٍ عَشَرَةٌ
مِنْ الْإِبِلِ
قَالَ مَالِك وَحِسَابُ الْأَصَابِعِ ثَلَاثَةٌ وَثَلَاثُونَ دِينَارًا وَثُلُثُ
دِينَارٍ فِي كُلِّ أُنْمُلَةٍ وَهِيَ مِنْ الْإِبِلِ ثَلَاثُ فَرَائِضَ وَثُلُثُ
فَرِيضَةٍ
বর্ণণাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
রবীআ ইব্নু আবদির রহমান (র) সাঈদ
ইব্নু মুসায়্যাব (র)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, মহিলাদের আঙ্গুলির দিয়াত কি ? তিনি
বললেন, দশটি উট। আমি আবার প্রশ্ন করলাম, দুই আঙ্গুলিতে ? তিনি বললেন, কুড়িটি উট।
আমি আবার বললাম, তিন অঙ্গুলিতে ? তিনি বললেন, ত্রিশটি উট। আমি জিজ্ঞেস করলাম,
চারটি অঙ্গুলিতে ? তিনি বললেন, কুড়িটি উট। আমি বললাম, যখন ক্ষত বর্ধিত হল, কষ্ট
বেড়ে গেল, তখন দিয়াত কমে গেল ? সাঈদ ইব্নু মুসায়্যিব (রা) বললেন, তুমি ইরাকের
অধিবাসী? [১] আমি বললাম, না, আমি যতটুকু জানি, তাতে স্থির থাকি। আর যা জানি না, তা
জিজ্ঞেস করে নেই। সাঈদ বললেন, ভাতিজা, সুন্নত এটাই। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে
বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে ইহা একটি সর্বসম্মত বিধান যে, যখন পূর্ণ এক হাতের
সমস্ত আঙ্গুলি কেটে ফেলা হয়, তবে প্রতিটি আঙ্গুলি দশ উটের হিসাবে দিয়াত দিতে হবে।
তা হলে পঞ্চাশ উট দিতে হবে। যদি সমস্ত আঙ্গুলিই কাটা হয়, তখনও এর দিয়াত পূর্ণ
হাতের তথা ৫০ উট হবে। যদি হাতসহ কাটা যায় তবে দীনারের হিসাবে তত দীনার হবে। মালিক
(র) বলেন, আঙ্গুলের অগ্রভাগের দিয়াত তেত্রিশ দীনার ও এক দীনারের এক তৃতীয়াংশ। উটের
হিসাবে তিন উট এবং এক উটের এক তৃতীয়াংশ।
[১] ইরাকের লোকের বদনাম ছিল যে, তাঁরা হাদীস ছেড়ে প্রতিটি বিষয়ে
যুক্তি অনুসন্ধান করতেন। তাই সাঈদ জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমিও কি ইরাকী লোক যে, হাদীসের কথা
শুনেও প্রশ্ন করছ?
পরিচ্ছেদঃ
১২
দাঁতের দিয়াত
১৫৬৪
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ
أَسْلَمَ عَنْ مُسْلِمِ بْنِ جُنْدُبٍ عَنْ أَسْلَمَ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ
الْخَطَّابِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ
قَضَى فِي الضِّرْسِ بِجَمَلٍ وَفِي التَّرْقُوَةِ بِجَمَلٍ وَفِي الضِّلَعِ
بِجَمَلٍ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ سَمِعَ
سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ يَقُولُ قَضَى عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فِي
الْأَضْرَاسِ بِبَعِيرٍ بَعِيرٍ وَقَضَى مُعَاوِيَةُ بْنُ أَبِي سُفْيَانَ فِي
الْأَضْرَاسِ بِخَمْسَةِ أَبْعِرَةٍ خَمْسَةِ أَبْعِرَةٍ قَالَ سَعِيدُ بْنُ
الْمُسَيَّبِ فَالدِّيَةُ تَنْقُصُ فِي قَضَاءِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَتَزِيدُ
فِي قَضَاءِ مُعَاوِيَةَ فَلَوْ كُنْتُ أَنَا لَجَعَلْتُ فِي الْأَضْرَاسِ
بَعِيرَيْنِ بَعِيرَيْنِ فَتِلْكَ الدِّيَةُ سَوَاءٌ وَكُلُّ مُجْتَهِدٍ مَأْجُورٌ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ إِذَا أُصِيبَتْ السِّنُّ فَاسْوَدَّتْ
فَفِيهَا عَقْلُهَا تَامًّا فَإِنْ طُرِحَتْ بَعْدَ أَنْ اسْوَدَّتْ فَفِيهَا
عَقْلُهَا أَيْضًا تَامًّا
উমার ইব্নুল
খাত্তাব (রা)-এর গোলাম আসলাম (রা) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইব্নুল খাত্তাব একটি দাঁতে
এক উট, হাঁসুলির হাড়ের জন্য এক উট এবং পাঁজরের জন্য এক উট দিয়াতের ফায়সালা
দিয়েছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সাঈদ (রা), সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব (রা)-কে বলতেন শুনেছেন, উমার
ইব্নুল খাত্তাব (রা) প্রতি দাঁতে এক উটের ফায়সালা দিয়েছেন। মুআবিয়া ইব্নু আবী
সুফিয়ান (রা) প্রতি দাঁতে পাঁচ উটের আদেশ করতেন। উমার (রা) কমিয়ে দিয়েছেন আর
মুআবিয়া বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমি হলে প্রতি দাঁতে দুই দুই উট ধার্য করতাম যেন দিয়াত
পূর্ণ হয়ে যায়। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব (রা) বলতেন, যখন দাঁতে আঘাত লাগে আর উহা কালো হয়ে যায়, তবে
পূর্ণ দিয়াত দিতে হবে। যদি কালো হয়ে পড়ে যায় তবুও পূর্ণ দিয়াত দিতে হবে। (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
[১] উপরের বারটি বড় দাঁত প্রতিটি দাঁতে ৫ উট হবে ১২ * ৫ = ৬০
উট এবং দুই দিকের ২০ টি দাঁতে ২টি করে ২০ * ২ = ৪০ উট হল। ৬০ + ৪০ = ১০০ উটের দিয়াত
পূর্ণ হয়ে যাবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩
দাঁতের দিয়াত কার্যকর
সম্পর্কে
১৫৬৫
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ دَاوُدَ بْنِ
الْحُصَيْنِ عَنْ أَبِي غَطَفَانَ بْنِ طَرِيفٍ الْمُرِّيِّ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ
أَنَّ مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ بَعَثَهُ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ
يَسْأَلُهُ مَاذَا فِي الضِّرْسِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبَّاسٍ فِيهِ خَمْسٌ
مِنْ الْإِبِلِ قَالَ فَرَدَّنِي مَرْوَانُ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ
فَقَالَ أَتَجْعَلُ مُقَدَّمَ الْفَمِ مِثْلَ الْأَضْرَاسِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ
بْنُ عَبَّاسٍ لَوْ لَمْ تَعْتَبِرْ ذَلِكَ إِلَّا بِالْأَصَابِعِ عَقْلُهَا سَوَاءٌ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ
أَنَّهُ كَانَ يُسَوِّي بَيْنَ الْأَسْنَانِ فِي الْعَقْلِ وَلَا يُفَضِّلُ
بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ
قَالَ مَالِك وَالْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ مُقَدَّمَ الْفَمِ وَالْأَضْرَاسِ
وَالْأَنْيَابِ عَقْلُهَا سَوَاءٌ وَذَلِكَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِي السِّنِّ خَمْسٌ مِنْ الْإِبِلِ وَالضِّرْسُ سِنٌّ
مِنْ الْأَسْنَانِ لَا يَفْضُلُ بَعْضُهَا عَلَى بَعْضٍ
আবূ গাতফান ইব্নু
তারীফ মুরবী (র) থেকে বর্ণিতঃ
মারওয়ান ইব্নু হাকাম তাঁকে
আবদুল্লাহ ইব্নু আব্বাস (রা)-এর নিকট জিজ্ঞেস করতে পাঠালেন যে, মাঢ়ীর দাঁতের দিয়াত
কি ? আবদুল্লাহ্ ইব্নু আব্বাস (রা) বললেন, পাঁচ উট। তিনি আবার জিজ্ঞেস করতে
পাঠালেন যে, সম্মুখের দাঁত ও মাঢ়ীর দাঁতের দিয়াত কি সমান হবে? ইব্নু আব্বাস বললেন,
যদি তোমরা দাঁতের ব্যাপারে অঙ্গুলির সাথে সমঞ্জস্য করে নিতে, তবে ভাল ছিল। [১]
(হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
হিশাম ইব্নু উরওয়া (র) তার পিতা উরওয়া ইব্নু যুবাইর (র) হতে বর্ণনা করেন, তিনি
সমস্ত দাঁতের দিয়াত সমান ধার্য করতেন, কোন দাঁতের বেশি কোন দাঁতের কম ধার্য করতেন
না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে মাঢ়ীর দাঁত, সম্মুখের বড় দাঁত ও পাশের ছোট দাঁত
সমস্তই এক সমান। কেননা রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি দাঁতে
পাঁচ উট দিয়াতের আদেশ করেছেন। মাঢ়ীর দাঁত বা অন্য কোন দাঁতেরই কোন দাঁতের উপর
শ্রেষ্ঠত্ব নেই।
[১] হাতের অঙ্গুলির ছোট বড় হওয়া সত্ত্বেও এবং কোনটি বেশি উপকারী,
কোনটি কম উপকারী হওয়া সত্ত্বেও উহাদের দিয়াত সমান। অতএব দাঁতও কোনটি বেশি দরকারী, কোনটি
কম দরকারী হওয়া সত্ত্বেও তাদের দিয়াত সমান হবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৪
দাসদের যখমের দিয়াত
১
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ
سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ وَسُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ كَانَا يَقُولَانِ فِي
مُوضِحَةِ الْعَبْدِ نِصْفُ عُشْرِ ثَمَنِهِ
و حَدَّثَنِي مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ كَانَ
يَقْضِي فِي الْعَبْدِ يُصَابُ بِالْجِرَاحِ أَنَّ عَلَى مَنْ جَرَحَهُ قَدْرَ مَا
نَقَصَ مِنْ ثَمَنِ الْعَبْدِ
قَالَ مَالِك وَالْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ فِي مُوضِحَةِ الْعَبْدِ نِصْفَ عُشْرِ
ثَمَنِهِ وَفِي مُنَقِّلَتِهِ الْعُشْرُ وَنِصْفُ الْعُشْرِ مِنْ ثَمَنِهِ وَفِي
مَأْمُومَتِهِ وَجَائِفَتِهِ فِي كُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا ثُلُثُ ثَمَنِهِ
وَفِيمَا سِوَى هَذِهِ الْخِصَالِ الْأَرْبَعِ مِمَّا يُصَابُ بِهِ الْعَبْدُ مَا
نَقَصَ مِنْ ثَمَنِهِ يُنْظَرُ فِي ذَلِكَ بَعْدَ مَا يَصِحُّ الْعَبْدُ
وَيَبْرَأُ كَمْ بَيْنَ قِيمَةِ الْعَبْدِ بَعْدَ أَنْ أَصَابَهُ الْجُرْحُ
وَقِيمَتِهِ صَحِيحًا قَبْلَ أَنْ يُصِيبَهُ هَذَا ثُمَّ يَغْرَمُ الَّذِي
أَصَابَهُ مَا بَيْنَ الْقِيمَتَيْنِ
قَالَ مَالِك فِي الْعَبْدِ إِذَا كُسِرَتْ يَدُهُ أَوْ رِجْلُهُ ثُمَّ صَحَّ
كَسْرُهُ فَلَيْسَ عَلَى مَنْ أَصَابَهُ شَيْءٌ فَإِنْ أَصَابَ كَسْرَهُ ذَلِكَ
نَقْصٌ أَوْ عَثَلٌ كَانَ عَلَى مَنْ أَصَابَهُ قَدْرُ مَا نَقَصَ مِنْ ثَمَنِ
الْعَبْدِ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا فِي الْقِصَاصِ بَيْنَ الْمَمَالِيكِ كَهَيْئَةِ
قِصَاصِ الْأَحْرَارِ نَفْسُ الْأَمَةِ بِنَفْسِ الْعَبْدِ وَجُرْحُهَا بِجُرْحِهِ
فَإِذَا قَتَلَ الْعَبْدُ عَبْدًا عَمْدًا خُيِّرَ سَيِّدُ الْعَبْدِ الْمَقْتُولِ
فَإِنْ شَاءَ قَتَلَ وَإِنْ شَاءَ أَخَذَ الْعَقْلَ فَإِنْ أَخَذَ الْعَقْلَ
أَخَذَ قِيمَةَ عَبْدِهِ وَإِنْ شَاءَ رَبُّ الْعَبْدِ الْقَاتِلِ أَنْ يُعْطِيَ
ثَمَنَ الْعَبْدِ الْمَقْتُولِ فَعَلَ وَإِنْ شَاءَ أَسْلَمَ عَبْدَهُ فَإِذَا
أَسْلَمَهُ فَلَيْسَ عَلَيْهِ غَيْرُ ذَلِكَ وَلَيْسَ لِرَبِّ الْعَبْدِ
الْمَقْتُولِ إِذَا أَخَذَ الْعَبْدَ الْقَاتِلَ وَرَضِيَ بِهِ أَنْ يَقْتُلَهُ
وَذَلِكَ فِي الْقِصَاصِ كُلِّهِ بَيْنَ الْعَبِيدِ فِي قَطْعِ الْيَدِ
وَالرِّجْلِ وَأَشْبَاهِ ذَلِكَ بِمَنْزِلَتِهِ فِي الْقَتْلِ
قَالَ مَالِك فِي الْعَبْدِ الْمُسْلِمِ يَجْرَحُ الْيَهُودِيَّ أَوْ
النَّصْرَانِيَّ إِنَّ سَيِّدَ الْعَبْدِ إِنْ شَاءَ أَنْ يَعْقِلَ عَنْهُ مَا قَدْ
أَصَابَ فَعَلَ أَوْ أَسْلَمَهُ فَيُبَاعُ فَيُعْطِي الْيَهُودِيَّ أَوْ
النَّصْرَانِيَّ مِنْ ثَمَنِ الْعَبْدِ دِيَةَ جُرْحِهِ أَوْ ثَمَنَهُ كُلَّهُ
إِنْ أَحَاطَ بِثَمَنِهِ وَلَا يُعْطِي الْيَهُودِيَّ وَلَا النَّصْرَانِيَّ
عَبْدًا مُسْلِمًا
সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব
(র) ও সুলায়মান ইব্নু ইয়াসার (র) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা উভয়ে বলতেন, দাসের ক্ষতে
তার মূল্যের ১/২০ অংশ হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, মারওয়ান ইব্নু হাকাম ঐ ব্যক্তিকে, যে কোন দাসকে ক্ষত করে দিত,
আদেশ করতেন যে, এই ক্ষতের দরুন তার মূল্যের যতটুকু কমে গেল তাকে ততটুকু জরিমানা
দিতে হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে সিদ্ধান্ত এই যে, দাসের ক্ষেত্রে হাড় দেখা যায়, এমন
আঘাতে তার মূল্যের ১/২০ আর যে ক্ষতের দরুন হাড় স্থানচ্যুত হয় উহাতে তার মূল্যের
১/১০ ও ১/২ আর মামুমায় [১] ও জাইফার প্রতিটার জন্য তার মূল্যের ১/৩০ দিতে হবে। উহা
ব্যতীত প্রত্যেক আঘাতের জন্য তার মূল্যের যে ক্ষতি হবে তা আদায় করতে হবে। যখন দাস
সুস্থ হয়ে যাবে, তখন দেখতে হবে আঘাতের পূর্বে কি মূল্য ছিল এবং আঘাতের জন্য কত কম
হল, উহা দিতে হবে।
মালিক (র) বলেন, যদি কেউ দাসের হাত-পা ভেঙ্গে ফেলে, পরে সে ভাল হয়ে যায়, তবে কোন
ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। হ্যাঁ, যদি কোন ত্রুটি থেকে যায় এবং এতে তার মূল্য কমে
যায়, তবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
মালিক (র) বলেন, দাস ও দাসীর ব্যাপারে স্বাধীনদের মতো কিসাস দিতে হবে। যদি দাস
ইচ্ছাকৃতভাবে কোন দাসীকে হত্যা করে, তবে দাসকেও কিসাসে হত্যা করতে হবে। যদি আঘাত
করে তাহলে তাকেও অনুরূপ আঘাত করা হবে। যদি এক দাস অন্য কোন দাসকে ইচ্ছাকৃতভাবে
মেরে ফেলে, তবে নিহতের মালিকের ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে, হয় হত্যাকারীকে হত্যা করবে
অথবা দিয়াত অর্থাৎ গোলামের মূল্য নিয়ে নিবে। অনুরূপভাবে হত্যাকারীর মালিকের ইচ্ছার
উপর নির্ভর করবে, হয় নিহত ব্যক্তির মূল্য আদায় করবে এবং হত্যাকারীকে নিজের নিকট
থাকতে দিবে অথবা নিহতের মালিক দিয়াতের উপর রাযী হয়ে হত্যাকারীকে নিয়ে নিবে, তা হলে
তাকে হত্যা করবে না।
মালিক (র) বলেন, যদি কোন মুসলমান দাস কোন ইহুদী অথবা খ্রিস্টানকে যখম করে ফেলে তবে
দাসের মালিক ইচ্ছা করলে দিয়াত দিয়ে দিবে বা ঐ দাস বিনিময়ে দিয়ে দিবে এবং দাসকে
বিক্রয় করে তার ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করবে। কিন্তু ঐ মুসলমান গোলামকে অমুসলমানের নিকট
থাকতে দেয়া হবে না।
[১] মস্তকে আঘাত পেলে মামুমা বলা হয়।
পরিচ্ছেদঃ
১৫
যিম্মী কাফিরের দিয়াত
১
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ
عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ قَضَى أَنَّ دِيَةَ الْيَهُودِيِّ أَوْ
النَّصْرَانِيِّ إِذَا قُتِلَ أَحَدُهُمَا مِثْلُ نِصْفِ دِيَةِ الْحُرِّ
الْمُسْلِمِ
-قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنْ لَا يُقْتَلَ مُسْلِمٌ بِكَافِرٍ إِلَّا
أَنْ يَقْتُلَهُ مُسْلِمٌ قَتْلَ غِيلَةٍ فَيُقْتَلُ بِهِ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ سُلَيْمَانَ
بْنَ يَسَارٍ كَانَ يَقُولُ دِيَةُ الْمَجُوسِيِّ ثَمَانِيَ مِائَةِ دِرْهَمٍ
قَالَ مَالِك وَهُوَ الْأَمْرُ عِنْدَنَا
قَالَ مَالِك وَجِرَاحُ الْيَهُودِيِّ وَالنَّصْرَانِيِّ وَالْمَجُوسِيِّ فِي
دِيَاتِهِمْ عَلَى حِسَابِ جِرَاحِ الْمُسْلِمِينَ فِي دِيَاتِهِمْ الْمُوضِحَةُ
نِصْفُ عُشْرِ دِيَتِهِ وَالْمَأْمُومَةُ ثُلُثُ دِيَتِهِ وَالْجَائِفَةُ ثُلُثُ
دِيَتِهِ فَعَلَى حِسَابِ ذَلِكَ جِرَاحَاتُهُمْ كُلُّهَا
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
তাঁর কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে,
উমার ইবনু আবদুল আযীয (র) বলতেন, ইহুদী ও খ্রিস্টানদের দিয়াত যখন তারা একে অন্যকে
হত্যা করে, স্বাধীন মুসলমানের দিয়াতের অর্ধেক। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা
করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে বিধান এই যে, কোন মুসলমানকে কাফিরের পরিবর্তে হত্যা
করা হবে না। হ্যাঁ, যদি ধোঁকা দিয়ে সে যিম্মীকে হত্যা করে তবে তাকে হত্যা করা হবে।
সুলায়মান ইব্নু ইয়াসার (র) বলতেন, অগ্নিউপাসকদের দিয়াত আট শত দিরহাম। মালিক (র)
বলেন, এটাই আমাদের নিকট বিধান। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, ইহুদী খ্রিস্টানদের ক্ষত করার দিয়াত মুসলমানদের ক্ষত করার দিয়াতের
হিসাবে মুযিহার ১/২০ এবং মামুমা ও জাইফায় ১/৩। এর উপর অন্যগুলোর অনুমান করা যায়।
পরিচ্ছেদঃ
১৬
যে সমস্ত কাজের দিয়াত
হত্যাকারীর স্বীয় মাল হতে দিতে হয়
১
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ
عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ لَيْسَ عَلَى الْعَاقِلَةِ عَقْلٌ
فِي قَتْلِ الْعَمْدِ إِنَّمَا عَلَيْهِمْ عَقْلُ قَتْلِ الْخَطَإِ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُ قَالَ
مَضَتْ السُّنَّةُ أَنَّ الْعَاقِلَةَ لَا تَحْمِلُ شَيْئًا مِنْ دِيَةِ الْعَمْدِ
إِلَّا أَنْ يَشَاءُوا ذَلِكَ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ مِثْلَ ذَلِكَ
قَالَ مَالِك إِنَّ ابْنَ شِهَابٍ قَالَ مَضَتْ السُّنَّةُ فِي قَتْلِ الْعَمْدِ
حِينَ يَعْفُو أَوْلِيَاءُ الْمَقْتُولِ أَنَّ الدِّيَةَ تَكُونُ عَلَى الْقَاتِلِ
فِي مَالِهِ خَاصَّةً إِلَّا أَنْ تُعِينَهُ الْعَاقِلَةُ عَنْ طِيبِ نَفْسٍ
مِنْهَا
قَالَ مَالِك وَالْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ الدِّيَةَ لَا تَجِبُ عَلَى
الْعَاقِلَةِ حَتَّى تَبْلُغَ الثُّلُثَ فَصَاعِدًا فَمَا بَلَغَ الثُّلُثَ فَهُوَ
عَلَى الْعَاقِلَةِ وَمَا كَانَ دُونَ الثُّلُثِ فَهُوَ فِي مَالِ الْجَارِحِ
خَاصَّةً
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الَّذِي لَا اخْتِلَافَ فِيهِ عِنْدَنَا فِيمَنْ قُبِلَتْ
مِنْهُ الدِّيَةُ فِي قَتْلِ الْعَمْدِ أَوْ فِي شَيْءٍ مِنْ الْجِرَاحِ الَّتِي
فِيهَا الْقِصَاصُ أَنَّ عَقْلَ ذَلِكَ لَا يَكُونُ عَلَى الْعَاقِلَةِ إِلَّا
أَنْ يَشَاءُوا وَإِنَّمَا عَقْلُ ذَلِكَ فِي مَالِ الْقَاتِلِ أَوْ الْجَارِحِ
خَاصَّةً إِنْ وُجِدَ لَهُ مَالٌ فَإِنْ لَمْ يُوجَدْ لَهُ مَالٌ كَانَ دَيْنًا
عَلَيْهِ وَلَيْسَ عَلَى الْعَاقِلَةِ مِنْهُ شَيْءٌ إِلَّا أَنْ يَشَاءُوا
قَالَ مَالِك وَلَا تَعْقِلُ الْعَاقِلَةُ أَحَدًا أَصَابَ نَفْسَهُ عَمْدًا أَوْ
خَطَأً بِشَيْءٍ وَعَلَى ذَلِكَ رَأْيُ أَهْلِ الْفِقْهِ عِنْدَنَا وَلَمْ أَسْمَعْ
أَنَّ أَحَدًا ضَمَّنَ الْعَاقِلَةَ مِنْ دِيَةِ الْعَمْدِ شَيْئًا وَمِمَّا
يُعْرَفُ بِهِ ذَلِكَ أَنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ فِي كِتَابِهِ
{ فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ
إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ }
فَتَفْسِيرُ ذَلِكَ فِيمَا نُرَى وَاللهُ أَعْلَمُ أَنَّهُ مَنْ أُعْطِيَ مِنْ
أَخِيهِ شَيْءٌ مِنْ الْعَقْلِ فَلْيَتْبَعْهُ بِالْمَعْرُوفِ وَلْيُؤَدِّ
إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ
قَالَ مَالِك فِي الصَّبِيِّ الَّذِي لَا مَالَ لَهُ وَالْمَرْأَةِ الَّتِي لَا
مَالَ لَهَا إِذَا جَنَى أَحَدُهُمَا جِنَايَةً دُونَ الثُّلُثِ إِنَّهُ ضَامِنٌ
عَلَى الصَّبِيِّ وَالْمَرْأَةِ فِي مَالِهِمَا خَاصَّةً إِنْ كَانَ لَهُمَا مَالٌ
أُخِذَ مِنْهُ وَإِلَّا فَجِنَايَةُ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَ
دَيْنٌ عَلَيْهِ لَيْسَ عَلَى الْعَاقِلَةِ مِنْهُ شَيْءٌ وَلَا يُؤْخَذُ أَبُو
الصَّبِيِّ بِعَقْلِ جِنَايَةِ الصَّبِيِّ وَلَيْسَ ذَلِكَ عَلَيْهِ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا الَّذِي لَا اخْتِلَافَ فِيهِ أَنَّ الْعَبْدَ
إِذَا قُتِلَ كَانَتْ فِيهِ الْقِيمَةُ يَوْمَ يُقْتَلُ وَلَا تَحْمِلُ عَاقِلَةُ
قَاتِلِهِ مِنْ قِيمَةِ الْعَبْدِ شَيْئًا قَلَّ أَوْ كَثُرَ وَإِنَّمَا ذَلِكَ
عَلَى الَّذِي أَصَابَهُ فِي مَالِهِ خَاصَّةً بَالِغًا مَا بَلَغَ وَإِنْ كَانَتْ
قِيمَةُ الْعَبْدِ الدِّيَةَ أَوْ أَكْثَرَ فَذَلِكَ عَلَيْهِ فِي مَالِهِ
وَذَلِكَ لِأَنَّ الْعَبْدَ سِلْعَةٌ مِنْ السِّلَعِ اااا
হিশাম ইব্নু উরওয়া
(র) তদীয় পিতা উরওয়া ইব্নু যুবায়র (র) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলতেন, ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার
দিয়াত উত্তরাধিকারীদের উপর বর্তাবে না (হত্যাকারীর নিজের উপর বর্তাবে)। ভুলক্রমে
হত্যার দিয়াত উত্তরাধিকারীদের উপর বর্তাবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা
করেছেন)
ইবনু শিহাব (র) বলেছেন, নিয়ম হল যে, উত্তরাধিকারীদের উপর ইচ্ছাকৃত হত্যার বোঝা
চাপানো যাবে না। হ্যাঁ, যখন তারা স্বেচ্ছায় দিতে ইচ্ছা করে তবে দিতে পারবে।
(হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (র)-ও এরূপ বলতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, ইব্নু শিহাব (র) বলতেন, সুন্নত এটাই যে, যখন নিহত ব্যক্তির ওয়ারিস
ইচ্ছাকৃত হত্যার কিসাস মাফ করে দেয় এবং দিয়াত নিতে ইচ্ছা করে, তখন ঐ দিয়াত
হত্যাকারীর মাল হতে নেয়া হবে। উত্তরাধিকারীদের উপর পড়বে না, তবে যদি তারা
স্বেচ্ছায় দিতে রাযী হ্ তাহলে পারবে।
মালিক (র) বলেন, আমাদের নিকট এই বিধান রয়েছে যে, যদি দিয়াত ১/৩ হয় বা তদূর্ধ্বে
হয়, তবে উত্তরাধিকারীদের হতে নেয়া হবে, আর যদি দিয়াত ১/৩ হতে কম হয়, তবে
হত্যাকারীর মাল হতে নেয়া হবে।
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে এই বিধান সর্বসম্মত যে, ইচ্ছাকৃত হত্যার বা অন্য কোন
ক্ষত করায় যাতে কিসাস অনিবার্য হয়, যদি দিয়াত নিতে স্বীকার করে নেয়া হয়, তবে উহা
হত্যাকারীর বা ক্ষমাকারীর উপরই বর্তাবে, ওয়ারিসদের উপর বর্তাবে না। যদি তার কাছে
মাল থাকে, তা না হলে তার উপর কিসাস থেকে যাবে। হ্যাঁ, যদি ওয়ারিসগণ স্বেচ্ছায় দিতে
রাযী হয় তবে দিতে পারে।
মালিক (র) বলেন, যদি কেউ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে ক্ষত করে দেয়, তবে তার
দিয়াত ওয়ারিসকে দিতে হবে না। আমি কাউকেও ইচ্ছাকৃত হত্যার দিয়াত ওয়ারিসদের দ্বারা
দেয়াতে শুনিনি। কেননা আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছাকৃত হত্যার ব্যাপারে বলেছেন
فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ
এর তফসীর আমাদের মতে এই- আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাত, যার ভাই কিছু ক্ষমা করে দেয় (কিসাস না
নেয়) তবে নিয়ম মতো তার অনুসরণ করা উচিত। আর দিয়াত ভালভাবে আদায় করা উচিত (বোঝা
গেল, হত্যাকারীর উচিত উত্তম ভাবে আদায় করা)।
মালিক (র) বলেন, যে শিশু ও মহিলার কাছে কোন মাল নেই, সে যদি এমন কোন অপরাধ করে বসে
যাতে এক-তৃতীয়াংশের কম দিয়াত ওয়াজিব হয়, তবে দিয়াত তাদের মালের উপর হবে এবং তাদের
উপর উহা ফরয থেকে যাবে। এমতাবস্থায় কোন ওয়ারিস বা পিতার উপর দিয়াত আসবে না।
মালিক (র) বলেন, আমাদের নিকট সর্বসম্মত বিধান এই যে, গোলামকে যখন হত্যা করা হয়,
তখন হত্যার দিনে তার যে মূল্য তা দিতে হবে। হত্যাকারীর ওয়ারিসদের উপর কিছু হবে না।
হত্যাকারীর নিজস্ব মাল হতে দিয়াত আদায় করতে হবে, যদিও ঐ দাসের মূল্য দিয়াত হতে
অধিক হয়। কেননা দাস পণ্য সমূহের মধ্যে একটি পণ্য।
পরিচ্ছেদঃ
১৭
দিয়াত হতে মীরাস দেয়া
এবং উহাতে কাঠিন্য করা
১৫৬৬
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ
عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ
نَشَدَ النَّاسَ بِمِنًى مَنْ كَانَ عِنْدَهُ عِلْمٌ مِنْ الدِّيَةِ أَنْ
يُخْبِرَنِي فَقَامَ الضَّحَّاكُ بْنُ سُفْيَانَ الْكِلَابِيُّ فَقَالَ كَتَبَ
إِلَيَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ أُوَرِّثَ امْرَأَةَ
أَشْيَمَ الضِّبَابِيِّ مِنْ دِيَةِ زَوْجِهَا فَقَالَ لَهُ عُمَرُ بْنُ
الْخَطَّابِ ادْخُلْ الْخِبَاءَ حَتَّى آتِيَكَ فَلَمَّا نَزَلَ عُمَرُ بْنُ
الْخَطَّابِ
أَخْبَرَهُ الضَّحَّاكُ فَقَضَى بِذَلِكَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ
قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَكَانَ قَتْلُ أَشْيَمَ خَطَأً
ইব্নু শিহাব (র)
থেকে বর্ণিতঃ
উমার
ইব্নু খাত্তার (রা) মিনার দিন লোকদেরকে ডেকে বললেন দিয়াতের ব্যাপারে যার যা কিছু
জানা আছে, সে যেন আমাকে তা বলে। ইত্যবসরে যাহহাকে ইব্নু সুফিয়ান (রা) দাঁড়িয়ে
বললেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে লিখেছেন যে, আমি যেন
আশইয়াম যবাবীর স্ত্রীকে তার স্বামীর দিয়াত হতে মীরাস দেই। উমার (রা) বললেন, তুমি
আমার আসা পর্যন্ত তাঁবুতে অপেক্ষা কর। উমার (রা) এলে যাহহাক তাই বললেন। অতঃপর উমার
(রা) এই আদেশই জারি করলেন। ইব্নু শিহাব বলেন, আশইয়াম ভুলে নিহত হয়েছিল। (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৫৬৭
و حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ
عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ
أَنَّ رَجُلًا مِنْ بَنِي مُدْلِجٍ يُقَالُ لَهُ قَتَادَةُ حَذَفَ ابْنَهُ
بِالسَّيْفِ فَأَصَابَ سَاقَهُ فَنُزِيَ فِي جُرْحِهِ فَمَاتَ فَقَدِمَ سُرَاقَةُ
بْنُ جُعْشُمٍ عَلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ لَهُ
عُمَرُ اعْدُدْ عَلَى مَاءِ قُدَيْدٍ عِشْرِينَ وَمِائَةَ بَعِيرٍ حَتَّى أَقْدَمَ
عَلَيْكَ فَلَمَّا قَدِمَ إِلَيْهِ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ أَخَذَ مِنْ تِلْكَ
الْإِبِلِ ثَلَاثِينَ حِقَّةً وَثَلَاثِينَ جَذَعَةً وَأَرْبَعِينَ خَلِفَةً ثُمَّ
قَالَ أَيْنَ أَخُو الْمَقْتُولِ قَالَ هَأَنَذَا قَالَ خُذْهَا فَإِنَّ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَيْسَ لِقَاتِلٍ شَيْءٌ
و حَدَّثَنِي مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ
وَسُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ سُئِلَا أَتُغَلَّظُ الدِّيَةُ فِي الشَّهْرِ
الْحَرَامِ فَقَالَا لَا وَلَكِنْ يُزَادُ فِيهَا لِلْحُرْمَةِ فَقِيلَ لِسَعِيدٍ
هَلْ يُزَادُ فِي الْجِرَاحِ كَمَا يُزَادُ فِي النَّفْسِ فَقَالَ نَعَمْ قَالَ
مَالِك أُرَاهُمَا أَرَادَا مِثْلَ الَّذِي صَنَعَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فِي
عَقْلِ الْمُدْلِجِيِّ حِينَ أَصَابَ ابْنَهُ
আমর ইব্নু শুআয়েব
(র) থেকে বর্ণিতঃ
বনী মুদলজের এক ব্যক্তি, যার নাম
ছিল কাতাদা, নিজের ছেলেকে তলোয়ারে আঘাত করল, যাতে ঐ ছেলের পায়ে আঘাত লাগল।
ক্ষতস্থান হতে রক্ত বন্ধ না হয়ে ছেলেটি মারা গেল। সুরাকা ইব্নু জু‘শুম উমার
(রা)-এর কাছে এসে ঘটনা বর্ণনা করল। উমার (রা) তাকে বললেন, আমার আগমনের পূর্বেই
তুমি কাদীদের কূপের কাছে ১২০টি উট যোগাড় করে রাখ। যখন তিনি তথায় এলেন ঐ উটের ৩০
হক্কা, ২০টি জাযআ, ৪০টি গর্ভবতী উটনী নিলেন এবং বললেন, নিহত ব্যক্তির ভাই কোথায় ?
সে বলল, আমি উপস্থিত আছি। তিনি বললেন, তুমি এই উট নিয়ে যাও। কেননা রসূল
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হত্যাকারী কোন মীরাস পাবে না। [১] (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব (র) ও সুলায়মান ইব্নু ইয়াসার (র)-কে জিজ্ঞেস করা হল, যদি কেউ
হারাম মাসসমূহে কাউকেও হত্যা করে, তবে তার দিয়াতের ব্যাপারে কি কঠোরতা অবলম্বন করা
হবে? তিনি বললেন, না, বরং ঐ সকল মাস হারাম মাস হওয়ার দরুন দিয়াত বাড়িয়ে নিয়ে হবে।
অতঃপর সাঈদের কাছে জিজ্ঞেস করা হল, যদি কেউ এই মাসে কাউকেও আহত করে দেয়, তবু সেই
হত্যার মতো উহার দিয়াতও বৃদ্ধি পাবে? সাঈদ বললেন, হ্যাঁ। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে
বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমার মনে হয় বাড়িয়ে দেয়ারও উহাই উদ্দেশ্য যেমন মুদলজীর দিয়াত উমার
(রা) করেছেন, যখন সে তার ছেলেকে মেরেছিল। [২]
[১] তার পিতা উপস্থিত থাকলেও যেহেতু সে-ই হত্যা করেছে সেইজন্য
মীরাস হতে বঞ্চিত রইল, শুধু ভাই-ই পেল।
[২] অর্থাৎ দিয়াতের একশত উট ঠিকই রইল, কিন্তু তিন প্রকারের উট নিয়ে তাতে কাঠিন্য করা
হল।
১৫৬৮
و حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ
عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ
أَنَّ رَجُلًا مِنْ الْأَنْصَارِ يُقَالُ لَهُ أُحَيْحَةُ بْنُ الْجُلَاحِ كَانَ
لَهُ عَمٌّ صَغِيرٌ هُوَ أَصْغَرُ مِنْ أُحَيْحَةَ وَكَانَ عِنْدَ أَخْوَالِهِ
فَأَخَذَهُ أُحَيْحَةُ فَقَتَلَهُ فَقَالَ أَخْوَالُهُ كُنَّا أَهْلَ ثُمِّهِ
وَرُمِّهِ حَتَّى إِذَا اسْتَوَى عَلَى عُمَمِهِ غَلَبَنَا حَقُّ امْرِئٍ فِي
عَمِّهِ قَالَ عُرْوَةُ فَلِذَلِكَ لَا يَرِثُ قَاتِلٌ مَنْ قَتَلَ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الَّذِي لَا اخْتِلَافَ فِيهِ عِنْدَنَا أَنَّ قَاتِلَ
الْعَمْدِ لَا يَرِثُ مِنْ دِيَةِ مَنْ قَتَلَ شَيْئًا وَلَا مِنْ مَالِهِ وَلَا
يَحْجُبُ أَحَدًا وَقَعَ لَهُ مِيرَاثٌ وَأَنَّ الَّذِي يَقْتُلُ خَطَأً لَا
يَرِثُ مِنْ الدِّيَةِ شَيْئًا وَقَدْ اخْتُلِفَ فِي أَنْ يَرِثَ مِنْ مَالِهِ
لِأَنَّهُ لَا يُتَّهَمُ عَلَى أَنَّهُ قَتَلَهُ لِيَرِثَهُ وَلِيَأْخُذَ مَالَهُ
فَأَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ يَرِثَ مِنْ مَالِهِ وَلَا يَرِثُ مِنْ دِيَتِهِ
উরওয়া ইব্নু যুবাইর
(র) থেকে বর্ণিতঃ
এক আনসার ব্যক্তি ছিলেন। তার নাম
ছিল উহায়হা ইব্নু জুলাহ। তার একজন চাচা ছিল। সে উহায়হা হতে বয়সে ছোট ছিল। সে তার
নানা বাড়িতে বাস করত। উহায়হা তাকে ধরে মেরে ফেলল (হত্যা করল)। তার মামারা বলল,
আমরা তাকে লালন-পালন করেছি, যখন সে জওয়ান হল, তখন তার চাচারা আমাদের উপর বিজয়ী হল
এবং সে দিয়াত নিয়ে ফেলল। উরওয়া বলেন, এজন্য হত্যাকারী নিহত ব্যক্তির ওয়ারিস হয় না।
[১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে এটা একটি সর্বসম্মত বিধান যে, ইচ্ছাকৃত হত্যাকারী
নিহত ব্যক্তির ওয়ারিস হয়নি। দিয়াত হোক বা অন্য কোন মাল হোক, এমন কি সে কোন
ওয়ারিসকে বঞ্চিতও করতে পারে। ভুলবশত হত্যায়ও হত্যাকারী নিহতের দিয়াতের ওয়ারিস হয়
না। নিহতের অন্যান্য মালে ভুলে হত্যাকারী হওয়া সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে তবে আমার মতে
অন্যান্য মালের ওয়ারিস হয়।
[১] উহায়হা তাকে হত্যা করা সত্ত্বেও তার দিয়াতের ওয়ারিস হল,
আর যারা লালন-পালন করেছে তার দিয়াত হতে বঞ্চিত রইল। জাহিলী যুগে হত্যাকারী নিহত ব্যক্তির
ওয়ারিস হত। কিন্তু ইসলামে হত্যাকারী নিহত ব্যক্তির ওয়ারিস হয় না।
পরিচ্ছেদঃ
১৮
দিয়াতের বিভিন্ন বিধান
১৫৬৯
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ
سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ وَأَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ جَرْحُ
الْعَجْمَاءِ جُبَارٌ وَالْبِئْرُ جُبَارٌ وَالْمَعْدِنُ جُبَارٌ وَفِي الرِّكَازِ
الْخُمُسُ قَالَ مَالِك وَتَفْسِيرُ الْجُبَارِ أَنَّهُ لَا دِيَةَ فِيهِ
و قَالَ مَالِك الْقَائِدُ وَالسَّائِقُ وَالرَّاكِبُ كُلُّهُمْ ضَامِنُونَ لِمَا
أَصَابَتْ الدَّابَّةُ إِلَّا أَنْ تَرْمَحَ الدَّابَّةُ مِنْ غَيْرِ أَنْ يُفْعَلَ
بِهَا شَيْءٌ تَرْمَحُ لَهُ وَقَدْ قَضَى عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فِي الَّذِي
أَجْرَى فَرَسَهُ بِالْعَقْلِ قَالَ مَالِك فَالْقَائِدُ وَالرَّاكِبُ
وَالسَّائِقُ أَحْرَى أَنْ يَغْرَمُوا مِنْ الَّذِي أَجْرَى فَرَسَهُ
قَالَ مَالِك وَالْأَمْرُ عِنْدَنَا فِي الَّذِي يَحْفِرُ الْبِئْرَ عَلَى
الطَّرِيقِ أَوْ يَرْبِطُ الدَّابَّةَ أَوْ يَصْنَعُ أَشْبَاهَ هَذَا عَلَى
طَرِيقِ الْمُسْلِمِينَ أَنَّ مَا صَنَعَ مِنْ ذَلِكَ مِمَّا لَا يَجُوزُ لَهُ
أَنْ يَصْنَعَهُ عَلَى طَرِيقِ الْمُسْلِمِينَ فَهُوَ ضَامِنٌ لِمَا أُصِيبَ فِي
ذَلِكَ مِنْ جَرْحٍ أَوْ غَيْرِهِ فَمَا كَانَ مِنْ ذَلِكَ عَقْلُهُ دُونَ ثُلُثِ
الدِّيَةِ فَهُوَ فِي مَالِهِ خَاصَّةً وَمَا بَلَغَ الثُّلُثَ فَصَاعِدًا فَهُوَ
عَلَى الْعَاقِلَةِ وَمَا صَنَعَ مِنْ ذَلِكَ مِمَّا يَجُوزُ لَهُ أَنْ يَصْنَعَهُ
عَلَى طَرِيقِ الْمُسْلِمِينَ فَلَا ضَمَانَ عَلَيْهِ فِيهِ وَلَا غُرْمَ وَمِنْ
ذَلِكَ الْبِئْرُ يَحْفِرُهَا الرَّجُلُ لِلْمَطَرِ وَالدَّابَّةُ يَنْزِلُ
عَنْهَا الرَّجُلُ لِلْحَاجَةِ فَيَقِفُهَا عَلَى الطَّرِيقِ فَلَيْسَ عَلَى
أَحَدٍ فِي هَذَا غُرْمٌ
و قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَنْزِلُ فِي الْبِئْرِ فَيُدْرِكُهُ رَجُلٌ آخَرُ
فِي أَثَرِهِ فَيَجْبِذُ الْأَسْفَلُ الْأَعْلَى فَيَخِرَّانِ فِي الْبِئْرِ
فَيَهْلِكَانِ جَمِيعًا أَنَّ عَلَى عَاقِلَةِ الَّذِي جَبَذَهُ الدِّيَةَ
قَالَ مَالِك فِي الصَّبِيِّ يَأْمُرُهُ الرَّجُلُ يَنْزِلُ فِي الْبِئْرِ أَوْ
يَرْقَى فِي النَّخْلَةِ فَيَهْلِكُ فِي ذَلِكَ أَنَّ الَّذِي أَمَرَهُ ضَامِنٌ
لِمَا أَصَابَهُ مِنْ هَلَاكٍ أَوْ غَيْرِهِ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الَّذِي لَا اخْتِلَافَ فِيهِ عِنْدَنَا أَنَّهُ لَيْسَ
عَلَى النِّسَاءِ وَالصِّبْيَانِ عَقْلٌ يَجِبُ عَلَيْهِمْ أَنْ يَعْقِلُوهُ مَعَ
الْعَاقِلَةِ فِيمَا تَعْقِلُهُ الْعَاقِلَةُ مِنْ الدِّيَاتِ وَإِنَّمَا يَجِبُ
الْعَقْلُ عَلَى مَنْ بَلَغَ الْحُلُمَ مِنْ الرِّجَالِ
و قَالَ مَالِك فِي عَقْلِ الْمَوَالِي تُلْزَمُهُ الْعَاقِلَةُ إِنْ شَاءُوا
وَإِنْ أَبَوْا كَانُوا أَهْلَ دِيوَانٍ أَوْ مُقْطَعِينَ وَقَدْ تَعَاقَلَ
النَّاسُ فِي زَمَنِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي زَمَانِ
أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ قَبْلَ أَنْ يَكُونَ دِيوَانٌ وَإِنَّمَا كَانَ
الدِّيوَانُ فِي زَمَانِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَلَيْسَ لِأَحَدٍ أَنْ يَعْقِلَ
عَنْهُ غَيْرُ قَوْمِهِ وَمَوَالِيهِ لِأَنَّ الْوَلَاءَ لَا يَنْتَقِلُ وَلِأَنَّ
النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الْوَلَاءُ لِمَنْ أَعْتَقَ
قَالَ مَالِك وَالْوَلَاءُ نَسَبٌ ثَابِتٌ
قَالَ مَالِك وَالْأَمْرُ عِنْدَنَا فِيمَا أُصِيبَ مِنْ الْبَهَائِمِ أَنَّ عَلَى
مَنْ أَصَابَ مِنْهَا شَيْئًا قَدْرَ مَا نَقَصَ مِنْ ثَمَنِهَا
قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَكُونُ عَلَيْهِ الْقَتْلُ فَيُصِيبُ حَدًّا مِنْ
الْحُدُودِ أَنَّهُ لَا يُؤْخَذُ بِهِ وَذَلِكَ أَنَّ الْقَتْلَ يَأْتِي عَلَى
ذَلِكَ كُلِّهِ إِلَّا الْفِرْيَةَ فَإِنَّهَا تَثْبُتُ عَلَى مَنْ قِيلَتْ لَهُ
يُقَالُ لَهُ مَا لَكَ لَمْ تَجْلِدْ مَنْ افْتَرَى عَلَيْكَ فَأَرَى أَنْ
يُجْلَدَ الْمَقْتُولُ الْحَدَّ مِنْ قَبْلِ أَنْ يُقْتَلَ ثُمَّ يُقْتَلَ وَلَا
أَرَى أَنْ يُقَادَ مِنْهُ فِي شَيْءٍ مِنْ الْجِرَاحِ إِلَّا الْقَتْلَ لِأَنَّ
الْقَتْلَ يَأْتِي عَلَى ذَلِكَ كُلِّهِ
و قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ الْقَتِيلَ إِذَا وُجِدَ بَيْنَ
ظَهْرَانَيْ قَوْمٍ فِي قَرْيَةٍ أَوْ غَيْرِهَا لَمْ يُؤْخَذْ بِهِ أَقْرَبُ
النَّاسِ إِلَيْهِ دَارًا وَلَا مَكَانًا وَذَلِكَ أَنَّهُ قَدْ يُقْتَلُ
الْقَتِيلُ ثُمَّ يُلْقَى عَلَى بَابِ قَوْمٍ لِيُلَطَّخُوا بِهِ فَلَيْسَ
يُؤَاخَذُ أَحَدٌ بِمِثْلِ ذَلِكَ
قَالَ مَالِك فِي جَمَاعَةٍ مِنْ النَّاسِ اقْتَتَلُوا فَانْكَشَفُوا وَبَيْنَهُمْ
قَتِيلٌ أَوْ جَرِيحٌ لَا يُدْرَى مَنْ فَعَلَ ذَلِكَ بِهِ إِنَّ أَحْسَنَ مَا
سُمِعَ فِي ذَلِكَ أَنَّ عَلَيْهِ الْعَقْلَ وَأَنَّ عَقْلَهُ عَلَى الْقَوْمِ
الَّذِينَ نَازَعُوهُ وَإِنْ كَانَ الْجَرِيحُ أَوْ الْقَتِيلُ مِنْ غَيْرِ
الْفَرِيقَيْنِ فَعَقْلُهُ عَلَى الْفَرِيقَيْنِ جَمِيعًا
আবূ হুরায়রা (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পশুর যখম করার বদলা নেই। কূপে পড়ে মৃত্যুবরণ করার বদলা নেই।
খনিতে পড়ে মৃত্যুবরণ করলে বদলা নেই আর মাটির নিচে প্রোথিত মালের পঞ্চমাংশ রয়েছে। (বুখারী
১৪৯৯, মুসলিম ১৭১০)
মালিক (র) বলেন, জবার শব্দের ব্যাখ্যা হল যে, উহাতে দিয়াত নেই।
মালিক (র) বলেন, যে ব্যক্তি কোন পশুকে সম্মুখ দিক হতে টেনে নেয় বা পিছন দিক হতে
ধাওয়া করে নিয়ে যায় বা উহার উপর আরোহণ অবস্থায় থাকে, সেই জন্তু কাউকে যখম করলে ঐ
ব্যক্তিকে উহার দিয়াত দিতে হবে। উক্ত জন্তু নিজেই কাউকে লাথি মারে বা শিং দিয়ে
আঘাত করে, তবে ঐ জন্তুর মালিকের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। যে ব্যক্তি ঘোড়ায় চড়ে
দৌড়িয়ে যাবার কালে কাউকে পদদলিত করে, তাকে দিয়াত দিতে হবে। উমার (রা) উহার দিয়াত
দেওয়ার ফায়সালা দিয়েছিলেন।
মালিক (র) বলেন, যখন ঘোড়া দৌড়ানেওয়ালার দিয়াত দিতে হল, তখন সম্মুখ ও পিছনের দিক
হতে হাঁকিয়ে নিয়ে গেলে তো তাকে দিয়াত দিতে হবেই।
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে এটা একটি সর্বসম্মত বিধান যে, যদি কেউ রাস্তায় কূপ
খনন করে বা পশু বেঁধে রাখে বা কেউ এমন কাজ করে যা রাস্তায় করা অন্যায় মনে করা হয়।
আর উহার কারণে কারো কোন কষ্ট হয় তবে এই ব্যক্তি দায়ী হবে, ১/৩ পর্যন্ত দিয়াত সে
নিজের মাল হতে দিবে। আর দিয়াতের পরিমাণ এক তৃতীয়াংশের বেশি হলে তার নিকটাত্মীয়দের
সম্পদ হতে দেয়া হবে। কিন্তু যদি এমন কোন কাজ করে, যা সাধারণত অন্যায় মনে করা হয়
না, তবে তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না, যেমন বৃষ্টির জন্য গর্ত করল বা পশু হতে নেমে
পশুটিকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখল।
মালিক (র) বলেন, কোন ব্যক্তি কূপে অবতরণ করল, পরে আর এক ব্যক্তি অবতরণ করল, অতঃপর
নিচের ব্যক্তি উপরের ব্যক্তিকে টানল। এতে উভয়ে পড়ে মারা গেল। এখন যে টেনেছিল, তার ওয়ারিসদের
উপর দিয়াত দেয়া অনিবার্য হবে।
মালিক (র) বলেন, যদি কেউ বাচ্চাকে কূপে নামায় কিংবা গাছে উঠায় এবং এতে বাচ্চাটি
মারা যায় তবে তাকে দিয়াত দিতে হবে।
মালিক (র) বলেন, আমাদের নিকট সর্বসম্মত বিধান এই যে, দিয়াতদাতা স্ত্রীলোক এবং
বাচ্চা হবে না। শুধুমাত্র বালেগ পুরুষ হতে দিয়াত উশুল করা হবে।
মালিক (র) বলেন, মুক্ত দাসের দিয়াত তার ওয়ারিসদের উপর বর্তাবে যদিও সে সরকারী
দফতরে বেতনভোগী হোক না কেন, যেমন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ
বাকর (রা)-এর সময়ে ছিল। কেননা দফতর উমার (রা)-এর আবিষ্কার। অতএব প্রত্যেকের দিয়াত
তাদের মালিক এবং সম্প্রদায় আদায় করবে। কেননা এদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিও তারাই পেয়ে
থাকে। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দাসের পরিত্যক্ত মাল তার
মালিকই পাবে, যে তাকে মুক্ত করেছে।
মালিক (র) বলেন, যদি কারো পশু কারো কোনরূপ অনিষ্ট সাধন করে, তবে এই অনিষ্ট সাধনের
দ্বারা ঐ বস্তুর মূল্যে যে স্বল্পতা আসবে তা তাকে আদায় করতে হবে।
মালিক (র) বলেন, যদি কোন ব্যক্তি কিসাসে অভিযুক্ত হয়, পরে সে আবার কোন এমন কাজ করে
বসে যাতে তার উপর নির্দিষ্ট শাস্তি ওয়াজিব হয়, তবে তার জন্য মৃত্যুই যথেষ্ট, আর
শাস্তি ভোগ করতে হবে না। তবে অপবাদের শাস্তি তাকে ভোগ করতে হবে। অতঃপর হত্যা করা
হবে। যদি সে কাউকে ক্ষত করে দেয়, তবে ক্ষতের কিসাস নেয়া আবশ্যকীয় নয়, হত্যা করাই
যথেষ্ট।
মালিক (র) বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত এই যে, যদি কোন মৃতদেহ কোন গ্রামে পাওয়া যায়
অথবা কারো দরজায় পাওয়া যায়, তবে ইহা আবশ্যকীয় নয় যে, ঐ লাশের আশেপাশের লোককে
গ্রেফতার করতে হবে। কেননা প্রায়ই এরূপ হয়ে থাকে, কোন লোক কাউকে মেরে অন্যের দরজায়
রেখে যায়, যেন সে গ্রেফতার হয়।
মালিক (র) বলেন, কয়েকজন লোক পরস্পর ঝগড়া করল। পরে যখন ঝগড়া থেমে গেল, তখন তাদের
মধ্যে একজনকে মৃত অথবা আহত অবস্থায় পাওয়া গেল। কিন্তু গোলমালের দরুন কে মেরেছে বা
ক্ষত করেছে তা জানা গেল না। তবে দ্বিতীয় পক্ষের লোকের উপর উহার দিয়াত ওয়াজিব হবে।
যদি এমন হয় যে, ঐ ব্যক্তি তৃতীয় পক্ষের লোক হয়, তবে উভয় পক্ষের উপর দিয়াত ওয়াজিব
হবে। [১]
[১] দ্বিতীয় পক্ষ বলতে ঐ দলকে বুঝাবে ঐ লোকটি যে দলের নয়।
১৯১৯
- بَاب مَا جَاءَ فِي الْغِيلَةِ وَالسِّحْرِ প
ধোঁকা দিয়ে বা যাদু
করে কাউকে হত্যা করা
১৫৭০
و
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَتَلَ نَفَرًا خَمْسَةً أَوْ
سَبْعَةً بِرَجُلٍ وَاحِدٍ قَتَلُوهُ قَتْلَ غِيلَةٍ وَقَالَ عُمَرُ لَوْ
تَمَالَأَ عَلَيْهِ أَهْلُ صَنْعَاءَ لَقَتَلْتُهُمْ جَمِيعًا
সাঈদ ইব্নু
মুসায়্যাব (র) থেকে বর্ণিতঃ
উমার
ইবনু খাত্তাব (রা) এক ব্যক্তির হত্যার দায়ে পাঁচ অথবা সাত জনের এক দলকে হত্যা
করেছিল, যারা ধোঁকা দিয়ে সেই ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। অতঃপর তিনি বললেন, যদি এই
ব্যক্তির হত্যা কার্যে সমস্ত সান‘আবাসীও শরীক হত, তবে আমি সকলকেই হত্যা করতাম।
(হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৫৭১
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَعْدِ بْنِ زُرَارَةَ أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ حَفْصَةَ
زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَتَلَتْ جَارِيَةً لَهَا
سَحَرَتْهَا وَقَدْ كَانَتْ دَبَّرَتْهَا فَأَمَرَتْ بِهَا فَقُتِلَتْ
قَالَ مَالِك السَّاحِرُ الَّذِي يَعْمَلُ السِّحْرَ وَلَمْ يَعْمَلْ ذَلِكَ لَهُ
غَيْرُهُ هُوَ مَثَلُ الَّذِي قَالَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي كِتَابِهِ {
وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنْ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ }
فَأَرَى أَنْ يُقْتَلَ ذَلِكَ إِذَا عَمِلَ ذَلِكَ هُوَ نَفْسُهُ
মুহাম্মাদ ইব্নু
আবদির রহমান ইব্নু সা’দ ইব্নু যুরারাহ (র) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাঁর কাছে রেওয়ায়াত
পৌঁছেছে যে, উম্মুল মু’মিনীন হাফসা (রা) এক দাসীকে হত্যা করেছিলেন, যে দাসী তাঁর
উপর জাদু করেছিল। এর পূর্বে তিনি উহাকে মুদাব্বার করে ছিলেন। পরে তাকে হত্যা
করলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, যে জাদু জানে এবং জাদু করে, তাকে হত্যা করাই উচিত।
পরিচ্ছেদঃ
২০
ইচ্ছাকৃত হত্যায় যা
ওয়াজিব হয়
১৫৭২
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ عُمَرَ بْنِ
حُسَيْنٍ مَوْلَى عَائِشَةَ بِنْتِ قُدَامَةَ أَنَّ عَبْدَ الْمَلِكِ بْنَ
مَرْوَانَ أَقَادَ وَلِيَّ رَجُلٍ مِنْ رَجُلٍ قَتَلَهُ بِعَصًا فَقَتَلَهُ
وَلِيُّهُ بِعَصًا
قَالَ مَالِك وَالْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ الَّذِي لَا اخْتِلَافَ فِيهِ
عِنْدَنَا أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا ضَرَبَ الرَّجُلَ بِعَصًا أَوْ رَمَاهُ بِحَجَرٍ
أَوْ ضَرَبَهُ عَمْدًا فَمَاتَ مِنْ ذَلِكَ فَإِنَّ ذَلِكَ هُوَ الْعَمْدُ وَفِيهِ
الْقِصَاص
قَالَ مَالِك فَقَتْلُ الْعَمْدِ عِنْدَنَا أَنْ يَعْمِدَ الرَّجُلُ إِلَى
الرَّجُلِ فَيَضْرِبَهُ حَتَّى تَفِيظَ نَفْسُهُ وَمِنْ الْعَمْدِ أَيْضًا أَنْ
يَضْرِبَ الرَّجُلُ الرَّجُلَ فِي النَّائِرَةِ تَكُونُ بَيْنَهُمَا ثُمَّ
يَنْصَرِفُ عَنْهُ وَهُوَ حَيٌّ فَيُنْزَى فِي ضَرْبِهِ فَيَمُوتُ فَتَكُونُ فِي
ذَلِكَ الْقَسَامَةُ ُُُُ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّهُ يُقْتَلُ فِي الْعَمْدِ الرِّجَالُ
الْأَحْرَارُ بِالرَّجُلِ الْحُرِّ الْوَاحِدِ وَالنِّسَاءُ بِالْمَرْأَةِ
كَذَلِكَ وَالْعَبِيدُ بِالْعَبْدِ كَذَلِكَ ُُُُ
আয়িশা বিনতি
মুদামার আযাদকৃত দাস উমার ইব্নু হুসাইন (র) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তিকে
একটি কাঠের আঘাতে হত্যা করল। আবদুল মালিক ইব্নু মারওয়ান (র) তাকে নিহত ব্যক্তির
ওলীর (অভিভাবকের) কাছে সোপর্দ করলেন। সেও তাকে কাঠের আঘাতে হত্যা করল। (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে এটা একটি সর্বসম্মত বিধান যে, যদি কোন ব্যক্তি কাউকেও
কাঠ অথবা পাথর দ্বারা ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করে আর ঐ ব্যক্তি তাতে নিহত হয়, তবে কিসাস
নেওয়া হবে।
মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে ইচ্ছাকৃত হত্যা এই যে, কেউ কাউকে ইচ্ছা করে এত মারে
যে, তাতে তার প্রাণ বের হয়ে যায়। আর ইচ্ছাকৃত হত্যার এক প্রকার ইহাও যে কারো সাথে
শত্রুতাবশত তাকে একটা আঘাত লাগাল, ফলে ঐ ব্যক্তি তখনকার মতো জীবিত থাকলেও পরে দেখা
গেল ঐ আঘাতেই তার প্রাণ বের হয়ে গিয়েছে। এতে কাসামা নেওয়া ওয়াজিব হবে।
মালিক (র) বলেন, ইচ্ছাকৃত একজন স্বাধীন ব্যক্তি হত্যার দায়ে একাধিক স্বাধীন
ব্যক্তিকে হত্যা করা যাবে, যদি তারা সকলেই এ আঘাতে শরীক থাকে। স্ত্রীদের ও দাসদেরও
এই একই হুকুম।
পরিচ্ছেদঃ
২১
হত্যার কিসাস প্রসঙ্গে
১
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ
مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ كَتَبَ إِلَى مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ يَذْكُرُ
أَنَّهُ أُتِيَ بِسَكْرَانَ قَدْ قَتَلَ رَجُلًا فَكَتَبَ إِلَيْهِ مُعَاوِيَةُ
أَنْ اقْتُلْهُ بِهِ
قَالَ يَحْيَى قَالَ مَالِك أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي تَأْوِيلِ هَذِهِ الْآيَةِ
قَوْلِ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى { الْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ
} فَهَؤُلَاءِ الذُّكُورُ { وَالْأُنْثَى بِالْأُنْثَى } أَنَّ الْقِصَاصَ يَكُونُ
بَيْنَ الْإِنَاثِ كَمَا يَكُونُ بَيْنَ الذُّكُورِ وَالْمَرْأَةُ الْحُرَّةُ
تُقْتَلُ بِالْمَرْأَةِ الْحُرَّةِ كَمَا يُقْتَلُ الْحُرُّ بِالْحُرِّ
وَالْأَمَةُ تُقْتَلُ بِالْأَمَةِ كَمَا يُقْتَلُ الْعَبْدُ بِالْعَبْدِ
وَالْقِصَاصُ يَكُونُ بَيْنَ النِّسَاءِ كَمَا يَكُونُ بَيْنَ الرِّجَالِ
وَالْقِصَاصُ أَيْضًا يَكُونُ بَيْنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَذَلِكَ أَنَّ
اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ فِي كِتَابِهِ
{ وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيهَا أَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ وَالْعَيْنَ
بِالْعَيْنِ وَالْأَنْفَ بِالْأَنْفِ وَالْأُذُنَ بِالْأُذُنِ وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ
وَالْجُرُوحَ قِصَاصٌ }
فَذَكَرَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى
{ أَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ }
فَنَفْسُ الْمَرْأَةِ الْحُرَّةِ بِنَفْسِ الرَّجُلِ الْحُرِّ وَجُرْحُهَا
بِجُرْحِهِ
قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يُمْسِكُ الرَّجُلَ لِلرَّجُلِ فَيَضْرِبُهُ فَيَمُوتُ
مَكَانَهُ أَنَّهُ إِنْ أَمْسَكَهُ وَهُوَ يَرَى أَنَّهُ يُرِيدُ قَتْلَهُ قُتِلَا
بِهِ جَمِيعًا وَإِنْ أَمْسَكَهُ وَهُوَ يَرَى أَنَّهُ إِنَّمَا يُرِيدُ الضَّرْبَ
مِمَّا يَضْرِبُ بِهِ النَّاسُ لَا يَرَى أَنَّهُ عَمَدَ لِقَتْلِهِ فَإِنَّهُ
يُقْتَلُ الْقَاتِلُ وَيُعَاقَبُ الْمُمْسِكُ أَشَدَّ الْعُقُوبَةِ وَيُسْجَنُ
سَنَةً لِأَنَّهُ أَمْسَكَهُ وَلَا يَكُونُ عَلَيْهِ الْقَتْلُ
قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقْتُلُ الرَّجُلَ عَمْدًا أَوْ يَفْقَأُ عَيْنَهُ
عَمْدًا فَيُقْتَلُ الْقَاتِلُ أَوْ تُفْقَأُ عَيْنُ الْفَاقِئِ قَبْلَ أَنْ
يُقْتَصَّ مِنْهُ أَنَّهُ لَيْسَ عَلَيْهِ دِيَةٌ وَلَا قِصَاصٌ وَإِنَّمَا كَانَ
حَقُّ الَّذِي قُتِلَ أَوْ فُقِئَتْ عَيْنُهُ فِي الشَّيْءِ بِالَّذِي ذَهَبَ
وَإِنَّمَا ذَلِكَ بِمَنْزِلَةِ الرَّجُلِ يَقْتُلُ الرَّجُلَ عَمْدًا ثُمَّ يَمُوتُ
الْقَاتِلُ فَلَا يَكُونُ لِصَاحِبِ الدَّمِ إِذَا مَاتَ الْقَاتِلُ شَيْءٌ دِيَةٌ
وَلَا غَيْرُهَا وَذَلِكَ لِقَوْلِ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى
{ كُتِبَ عَلَيْكُمْ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى الْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ
بِالْعَبْدِ }
قَالَ مَالِك فَإِنَّمَا يَكُونُ لَهُ الْقِصَاصُ عَلَى صَاحِبِهِ الَّذِي
قَتَلَهُ وَإِذَا هَلَكَ قَاتِلُهُ الَّذِي قَتَلَهُ فَلَيْسَ لَهُ قِصَاصٌ وَلَا
دِيَةٌ قَالَ مَالِك لَيْسَ بَيْنَ الْحُرِّ وَالْعَبْدِ قَوَدٌ فِي شَيْءٍ مِنْ
الْجِرَاحِ وَالْعَبْدُ يُقْتَلُ بِالْحُرِّ إِذَا قَتَلَهُ عَمْدًا وَلَا
يُقْتَلُ الْحُرُّ بِالْعَبْدِ وَإِنْ قَتَلَهُ عَمْدًا وَهُوَ أَحْسَنُ مَا
سَمِعْتُُُُُ
মালিক (র)- থেকে
বর্ণিতঃ
মারওয়ান ইব্নু হাকাম (র) মুয়াবিয়া
ইব্নু আবি সুফয়ান (রা)-এর কাছে লিখলেন, এক ব্যক্তি মাতাল অবস্থায় কাউকে হত্যা করল।
মুয়াবিয়া (রা) তাকে লিখলেন, তুমিও তাকে হত্যা কর। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে
বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,
الْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ
بِالْعَبْدِ وَالْأُنْثَى بِالْأُنْثَى
এই আয়াতের তফসীরে আমি যা শুনেছি তা এই, এই আয়াতে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন, স্বাধীনের
পরিবর্তে স্বাধীন ব্যক্তিকে, দাসের পরিবর্তে দাসকে স্ত্রীলোকের পরিবর্তে
স্ত্রীলোককে হত্যা করা হবে। অতএব স্ত্রীদের মধ্যেও পুরুষদের মতো কিসাস নেওয়া হবে।
কেননা আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন,
وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيهَا أَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ
وَالْعَيْنَ بِالْعَيْنِ وَالْأَنْفَ
بِالْأَنْفِ وَالْأُذُنَ بِالْأُذُنِ
وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ وَالْجُرُوحَ
قِصَاصٌ
অর্থাৎ প্রাণের পরিবর্তে প্রাণ, চক্ষুর পরিবর্তে চক্ষু, নাকের পরিবর্তে নাক, কানের
পরিবর্তে কান, দাঁতের পরিবর্তে দাঁত, ক্ষতের পরিবর্তে ক্ষত।
অতএব, পুরুষের পরিবর্তে স্ত্রী এবং স্ত্রীর পরিবর্তে পুরুষ হত্যা করা হবে। এইরূপ
যখন একে অন্যকে যখম করে তখনও কিসাস নেওয়া হবে।
মালিক (র) বলেন, যদি কেউ কাউকে ধরে রাখে আর দ্বিতীয় ব্যক্তি এসে তাকে হত্যা করে আর
যদি সাব্যস্ত হয় যে, ঐ ব্যক্তিও তাকে হত্যা করার জন্য ধরেছিল, তবে এ নিহত ব্যক্তির
পরিবর্তে উভয়কে হত্যা করতে হবে। যদি ঐ ব্যক্তি তাকে মেরে ফেলার জন্য না ধরে থাকে,
বরং তার ইচ্ছা ছিল দ্বিতীয় ব্যক্তি যাকে সে ধরেছে তাকে সাধারণভাবে প্রহার করবে,
তবে এই অবস্থায় এই ব্যক্তি হত্যার পরিবর্তে কঠিন শাস্তির উপযুক্ত হবে। আর শাস্তির
পর এক বৎসর বন্দী থাকবে। আর হত্যাকারীকে হত্যা করা হবে।
মালিক (র) বলেন, এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে ইচ্ছা করে হত্যা করল অথবা তার চক্ষু
নষ্ট করে ফেলল। এখন হত্যাকারী হতে কিসাস নেয়ার পূর্বেই তাকে অন্য এক ব্যক্তি হত্যা
করে বসল বা তার চক্ষু নষ্ট করে দিল; এই অবস্থায় তার উপর দিয়াত বা কিসাস কিছুই
বর্তাবে না। কেননা যাকে হত্যা করা হয়েছিল তার হক ছিল হত্যাকারীর প্রাণে বা
চক্ষুতে। এখন হত্যাকারী ব্যক্তিও নেই, তার চক্ষুও নেই।
এর উপমা এইরূপ, যেমন যদি এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে ইচ্ছা করে হত্যা করে আর
হত্যাকারী নিজেই মরে যায় এখন হত্যাকাণ্ডে মৃত ব্যক্তির ওয়ারিসদের কিছুই মিলবে না।
কেননা যখন হত্যাকারীই মরে গেল, এখন না কিসাস রইল, না দিয়াত।
মালিক (র) বলেন, যদি কোন দাস স্বেচ্ছায় স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করে সেই দাসকে
হত্যা করা হবে। যদি স্বাধীন ব্যক্তি কোন দাসকে স্বেচ্ছায় হত্যা করে, তবে স্বাধীন
ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে না। [১]
[১] ইমাম আবূ হানীফা (র)-এর মতে স্বাধীন ব্যক্তি দাসকে হত্যা
করলে সেই স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে।
পরিচ্ছেদঃ
২২
ইচ্ছাকৃত হত্যায় ক্ষমা
করা
১
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ أَدْرَكَ مَنْ
يَرْضَى مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ يَقُولُونَ فِي الرَّجُلِ إِذَا أَوْصَى أَنْ
يُعْفَى عَنْ قَاتِلِهِ إِذَا قَتَلَ عَمْدًا إِنَّ ذَلِكَ جَائِزٌ لَهُ وَأَنَّهُ
أَوْلَى بِدَمِهِ مِنْ غَيْرِهِ مِنْ أَوْلِيَائِهِ مِنْ بَعْدِهِ
قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَعْفُو عَنْ قَتْلِ الْعَمْدِ بَعْدَ أَنْ
يَسْتَحِقَّهُ وَيَجِبَ لَهُ إِنَّهُ لَيْسَ عَلَى الْقَاتِلِ عَقْلٌ يَلْزَمُهُ
إِلَّا أَنْ يَكُونَ الَّذِي عَفَا عَنْهُ اشْتَرَطَ ذَلِكَ عِنْدَ الْعَفْوِ
عَنْهُ
قَالَ مَالِك فِي الْقَاتِلِ عَمْدًا إِذَا عُفِيَ عَنْهُ أَنَّهُ يُجْلَدُ
مِائَةَ جَلْدَةٍ وَيُسْجَنُ سَنَةً
قَالَ مَالِك وَإِذَا قَتَلَ الرَّجُلُ عَمْدًا وَقَامَتْ عَلَى ذَلِكَ
الْبَيِّنَةُ وَلِلْمَقْتُولِ بَنُونَ وَبَنَاتٌ فَعَفَا الْبَنُونَ وَأَبَى
الْبَنَاتُ أَنْ يَعْفُونَ فَعَفْوُ الْبَنِينَ جَائِزٌ عَلَى الْبَنَاتِ وَلَا
أَمْرَ لِلْبَنَاتِ مَعَ الْبَنِينَ فِي الْقِيَامِ بِالدَّمِ وَالْعَفْوِ عَنْهُ
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
কয়েকজন বিশিষ্ট আলিম হতে শ্রবণ
করেছেন, তাঁরা বলতেন, যদি মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে নিহত ব্যক্তি হত্যাকারীকে ক্ষমা
করে দেয়, তবে এটা ইচ্ছাকৃত হত্যায় বৈধ হবে। কেননা ওয়ারিসদের চেয়ে নিহত ব্যক্তির
নিজের রক্তের উপর অধিক অধিকার রয়েছে।
মালিক (র) বলেন, যদি কোন ব্যক্তি হত্যাকারীকে তার ইচ্ছাকৃত হত্যা ক্ষমা করে দেয়,
তবে হত্যাকারীর উপর দিয়াতের বোঝা থাকবে না। হ্যাঁ, যদি কিসাস ক্ষমা করে দিয়াত
সাব্যস্ত করে নেয়, তবে তা ভিন্ন কথা।
ইমাম মালিক (র) আরো বলেন, ইচ্ছাকৃত হত্যাকারীকে যদি নিহত ব্যক্তি মৃত্যুর পূর্ব
মুহূর্তে ক্ষমা করে দেয় তাহলে হত্যাকারীকে একশত বেত্রাঘাত করা হবে এবং এক বৎসর
জেলখানায় বন্দি করে রাখা হবে।
মালিক (র) বলেন, যদি কোন ব্যক্তিকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয়, আর সাক্ষীদের
দ্বারা হত্যা সাব্যস্তও হয় এবং নিহতের ছেলে ও মেয়ে থাকে, ছেলেরা তো ক্ষমা করে দেয়,
কিন্তু মেয়েরা ক্ষমা না করে, তবে কোন অসুবিধা থাকবে না। খুন মাফ হয়ে যাবে। কেননা
ছেলেরা থাকতে মেয়েরা ধর্তব্য নয়।
২৩২৩ - بَاب الْقِصَاصِ فِي الْجِرَاحِ
পরিচ্ছেদঃ ২৩ ক্ষত করার কিসাস
পরিচ্ছেদঃ
২৩
ক্ষত করার কিসাস
১
قَالَ يَحْيَى قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ
عَلَيْهِ عِنْدَنَا أَنَّ مَنْ كَسَرَ يَدًا أَوْ رِجْلًا عَمْدًا أَنَّهُ يُقَادُ
مِنْهُ وَلَا يَعْقِلُ
قَالَ مَالِك وَلَا يُقَادُ مِنْ أَحَدٍ حَتَّى تَبْرَأَ جِرَاحُ صَاحِبِهِ
فَيُقَادُ مِنْهُ فَإِنْ جَاءَ جُرْحُ الْمُسْتَقَادِ مِنْهُ مِثْلَ جُرْحِ
الْأَوَّلِ حِينَ يَصِحُّ فَهُوَ الْقَوَدُ وَإِنْ زَادَ جُرْحُ الْمُسْتَقَادِ
مِنْهُ أَوْ مَاتَ فَلَيْسَ عَلَى الْمَجْرُوحِ الْأَوَّلِ الْمُسْتَقِيدِ شَيْءٌ
وَإِنْ بَرَأَ جُرْحُ الْمُسْتَقَادِ مِنْهُ وَشَلَّ الْمَجْرُوحُ الْأَوَّلُ أَوْ
بَرَأَتْ جِرَاحُهُ وَبِهَا عَيْبٌ أَوْ نَقْصٌ أَوْ عَثَلٌ فَإِنَّ
الْمُسْتَقَادَ مِنْهُ لَا يَكْسِرُ الثَّانِيَةَ وَلَا يُقَادُ بِجُرْحِهِ قَالَ
وَلَكِنَّهُ يُعْقَلُ لَهُ بِقَدْرِ مَا نَقَصَ مِنْ يَدِ الْأَوَّلِ أَوْ فَسَدَ
مِنْهَا وَالْجِرَاحُ فِي الْجَسَدِ عَلَى مِثْلِ ذَلِكَ
قَالَ مَالِك وَإِذَا عَمَدَ الرَّجُلُ إِلَى امْرَأَتِهِ فَفَقَأَ عَيْنَهَا أَوْ
كَسَرَ يَدَهَا أَوْ قَطَعَ إِصْبَعَهَا أَوْ شِبْهَ ذَلِكَ مُتَعَمِّدًا لِذَلِكَ
فَإِنَّهَا تُقَادُ مِنْهُ وَأَمَّا الرَّجُلُ يَضْرِبُ امْرَأَتَهُ بِالْحَبْلِ
أَوْ بِالسَّوْطِ فَيُصِيبُهَا مِنْ ضَرْبِهِ مَا لَمْ يُرِدْ وَلَمْ يَتَعَمَّدْ
فَإِنَّهُ يَعْقِلُ مَا أَصَابَ مِنْهَا عَلَى هَذَا الْوَجْهِ وَلَا يُقَادُ
مِنْهُ
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ أَبَا بَكْرِ بْنَ
مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ أَقَادَ مِنْ كَسْرِ الْفَخِذِ
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
আমাদের কাছে সর্বসম্মত বিধান
রয়েছে যে, যদি কোন ব্যক্তি কারো হাত অথবা পা ভেঙ্গে ফেলে, তবে তার উপর কিসাস
ওয়াজিব হবে, দিয়াত নয়।
মালিক (র) বলেন, সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত কিসাস নেয়া হবে না। এখন যদি ক্ষতকারীর যখমও
ভাল হয়ে যাকে ক্ষত করা হয়েছে, তার মতো হয়ে যায় তবে ভালই, আর যদি যে ক্ষত করেছে তার
ক্ষত বেড়ে যায় আর এই ক্ষতের কারণে তার মৃত্যু ঘটে, তবে যাকে যখম করা হয়েছে তার
ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। যদি ক্ষতকারীর ক্ষত একেবারে ভাল হয়ে যায় আর যাকে ক্ষত করা
হয়েছে তার হাত একেবারে বেকার হয়ে যায় বা উহাতে অন্য কোন ত্রুটি থেকে যায়, তবে ক্ষত
যে করেছে তার নিকট হতে দ্বিতীয়বার কিসাস নেয়া হবে না। হ্যাঁ, ক্ষতি অনুসারে দিয়াত
নেয়া যেতে পারে।
মালিক (র) বলেন, যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে স্বীয় স্ত্রীর চক্ষু নষ্ট করে ফেলে বা হাত
ভেঙ্গে ফেলে বা অঙ্গুলি কেটে ফেলে তবে তার নিকট হতে কিসাস নেয়া হবে। যদি তাকে সতর্ক
করার জন্য রশি অথবা কোড়া দ্বারা প্রহার করা হয় এবং অনিচ্ছায় কোন স্থানে লেগে ক্ষত
কিংবা অন্য কোন ক্ষতি হল তবে দিয়াত ওয়াজিব হবে, কিসাস ওয়াজিব হবে না। (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদঃ
২৪
সায়িবার [১] অপরাধ ও
তার দিয়াত
[১] সায়িবা ঐ দাসকে বলা হয় যাকে মুক্ত করার সময় তার মালিক
এই শর্ত করে। তোমার উত্তরাধিকারী হব না। এইরূপ দাসের প্রভুর উপর দিয়াত অনিবার্য হয়
না।
১৫৭৩
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ
عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ
أَنَّ سَائِبَةً أَعْتَقَهُ بَعْضُ الْحُجَّاجِ فَقَتَلَ ابْنَ رَجُلٍ مِنْ بَنِي
عَائِذٍ فَجَاءَ الْعَائِذِيُّ أَبُو الْمَقْتُولِ إِلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ
يَطْلُبُ دِيَةَ ابْنِهِ فَقَالَ عُمَرُ لَا دِيَةَ لَهُ فَقَالَ الْعَائِذِيُّ
أَرَأَيْتَ لَوْ قَتَلَهُ ابْنِي فَقَالَ عُمَرُ إِذًا تُخْرِجُونَ دِيَتَهُ
فَقَالَ هُوَ إِذًا كَالْأَرْقَمِ إِنْ يُتْرَكْ يَلْقَمْ وَإِنْ يُقْتَلْ
يَنْقَمْ
সুলায়মান ইব্নু
ইয়াসার (র) থেকে বর্ণিতঃ
এক
সায়িবা যাকে কোন হাজী মুক্ত করে দিয়েছিল- অতঃপর সে বনী আয়েযের এক ব্যক্তিকে হত্যা
করল। নিহতের পিতা স্বীয় সন্তানের দিয়াত চাইবার জন্য উমার (রা)-এর কাছে এল। তিনি
বললেন, উহার দিয়াত নেই। সে ব্যক্তি বলল, যদি আমার ছেলে ঐ সায়িবাকে হত্যা করত, তবে
কি হত ? উমার (রা) বললেন, তা হলে তোমাকে তার দিয়াত আদায় করতে হত। সে ব্যক্তি বলল,
এক বিষধর সর্প, যদি ছেড়ে দাও, তবে দংশন করবে আর যদি মেরে ফেল তবে বদলা দিতে হবে।
[১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
[১] জাহিলিয়া যুগে মানুষের আকীদা ছিল, যে সমস্ত সাপের বদলা নেয়া হয় যদি কেউ সেই ধরনের সাপকে মেরে ফেলে সেও মরে যায়। এই সায়িবাকে সাপের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
No comments