মুয়াত্তা ইমাম মালিক অধ্যায় "শরাবের বর্ণনা"
পরিচ্ছেদঃ
১
মদ্য পানের শাস্তি
১৫৪৩
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ أَنَّهُ
أَخْبَرَهُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ خَرَجَ عَلَيْهِمْ فَقَالَ إِنِّي
وَجَدْتُ مِنْ فُلَانٍ رِيحَ شَرَابٍ فَزَعَمَ أَنَّهُ شَرَابُ الطِّلَاءِ وَأَنَا
سَائِلٌ عَمَّا شَرِبَ فَإِنْ كَانَ يُسْكِرُ جَلَدْتُهُ فَجَلَدَهُ عُمَرُ
الْحَدَّ تَامًّا
সায়িব ইব্নু ইয়াযীদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁকে
সংবাদ দেয়া হয়েছে, উমার (রা) তাদের কাছে এসে বললেন, আমি অমুকের (উমার-তনয়
উবায়দুল্লাহর) মুখ হতে মদের গন্ধ পেলাম। সে বলে, আমি আঙ্গুরের রস পান করেছি। আমি
বললাম, যদি তাতে মাদকতা থাকে তা হলে শাস্তি দিব। অতঃপর উমার ইব্নু খাত্তাব (রা)
তাকে পূর্ণ শাস্তি প্রদান করলেন। [১] (ইমাম বুখারী মুয়াল্লাক সনদে বর্ণনা করেন
৭/১৩৯, এবং আল্লামা হাফেজ ইবনু হাজার আসকালানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)
[১] মূলে طملا শব্দ রয়েছে।
যদি আঙ্গুরকে এত পাকান হয় যে, তা গাঢ় হয়ে যায়, যেমন দুই-তৃতীয়াংশ শুকিয়ে এক-তৃতীয়াংশ
থেকে যায় তখন উহাকে طلا বলে। উবায়দুল্লাহকে
আশিটি বেত্রাঘাত মারা হয়েছিল।
১৫৪৪
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ثَوْرِ بْنِ زَيْدٍ الدِّيلِيِّ أَنَّ عُمَرَ بْنَ
الْخَطَّابِ اسْتَشَارَ فِي الْخَمْرِ يَشْرَبُهَا الرَّجُلُ فَقَالَ لَهُ عَلِيُّ
بْنُ أَبِي طَالِبٍ نَرَى أَنْ تَجْلِدَهُ ثَمَانِينَ فَإِنَّهُ إِذَا شَرِبَ
سَكِرَ وَإِذَا سَكِرَ هَذَى وَإِذَا هَذَى افْتَرَى أَوْ كَمَا قَالَ فَجَلَدَ
عُمَرُ فِي الْخَمْرِ ثَمَانِينَ
সাওর ইবনু যাইদ (র)
থেকে বর্ণিতঃ
উমার
(রা) মদ্য পানের শাস্তির ব্যাপারে সাহাবীদের কাছে পরামর্শ চেয়েছিলেন। আলী (রা)
বললেন, আমার মতে তাকে আশিটি বেত্রাঘাত লাগান যেতে পারে। কেননা মানুষ মদ্য পান করে
মাতাল হবে আর মাতাল হলে অকথ্য কথা বলবে। অতঃপর উমার (রা) মদ্য পানের শাস্তি আশি
বেত্রাঘাত নির্ধারিত করলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৫৪৫
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ حَدِّ الْعَبْدِ
فِي الْخَمْرِ فَقَالَ بَلَغَنِي أَنَّ عَلَيْهِ نِصْفَ حَدِّ الْحُرِّ فِي
الْخَمْرِ وَأَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ وَعُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ وَعَبْدَ
اللهِ بْنَ عُمَرَ قَدْ جَلَدُوا عَبِيدَهُمْ نِصْفَ حَدِّ الْحُرِّ فِي الْخَمْرِ
বর্ণণাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
ইব্নু
শিহাবকে প্রশ্ন করা হল, যদি কোন দাস মদ্য পান করে, তবে তার শাস্তি কি ? তিনি
বললেন, আমি জানি মদ্য পানে দাসের শাস্তি স্বাধীন লোকের অর্ধেক। আর উমার ইব্নু
খাত্তাব, উসমান ইব্নু আফফান ও আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার (রা) মদ্য পানের জন্য নিজেদের
দাসদেরকে অর্ধেক শাস্তি দিয়েছিলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৫৪৬
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
أَنَّهُ سَمِعَ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ يَقُولُ مَا مِنْ شَيْءٍ إِلَّا اللهُ
يُحِبُّ أَنْ يُعْفَى عَنْهُ مَا لَمْ يَكُنْ حَدًّا
قَالَ يَحْيَى قَالَ مَالِك وَالسُّنَّةُ عِنْدَنَا أَنَّ كُلَّ مَنْ شَرِبَ شَرَابًا
مُسْكِرًا فَسَكِرَ أَوْ لَمْ يَسْكَرْ فَقَدْ وَجَبَ عَلَيْهِ الْحَدُّ
ইয়াহ্ইয়া ইব্নু
সাঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব বলতেন, হদ্দ
বা নির্ধারিত শাস্তি ব্যতীত এমন কোন গুনাহ নেই যা আল্লাহ্ ক্ষমা করতে ইচ্ছা করেন
না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের মতে, যে মদের মধ্যে মাদকতা রয়েছে, তা পানকারী মাতাল হোক বা
না হোক তার জন্য শাস্তি আবশ্যক।
পরিচ্ছেদঃ
২
যে পাত্রে নাবীয
প্রস্তুত করা নিষেধ
১৫৪৭
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَطَبَ النَّاسَ فِي بَعْضِ مَغَازِيهِ
قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ فَأَقْبَلْتُ نَحْوَهُ فَانْصَرَفَ قَبْلَ أَنْ
أَبْلُغَهُ فَسَأَلْتُ مَاذَا قَالَ فَقِيلَ لِي نَهَى أَنْ يُنْبَذَ فِي
الدُّبَّاءِ وَالْمُزَفَّتِ
আবদুল্লাহ্ ইব্নু
উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন যুদ্ধে ভাষণ দান করছিলেন। আমিও তা শ্রবণের
নিমিত্তে সেই দিকে রওয়ানা হলাম। কিন্তু আমার তথায় উপস্থিত হওয়ার পূর্বেই তিনি ভাষণ
শেষ করে ফেললেন। আমি অন্যান্য লোকের কাছে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেছেন? তারা বলল, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম লাউয়ের খোল এবং বাহিরে আলকাতরা মাখা পাত্রে নাবীয প্রস্তুত করতে নিষেধ
করেছেন। (সহীহ, মুসলিম ১৯৯৭, মুলত হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম শরীফে রয়েছে)
১৫৪৮
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ الْعَلَاءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَعْقُوبَ
عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ نَهَى أَنْ يُنْبَذَ فِي الدُّبَّاءِ وَالْمُزَفَّتِ
আবূ হুরায়রা (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাউয়ের খোল ও বহিরাংশে আলকাতরা মাখা পাত্রে নাবীয
প্রস্তুত করতে নিষেধ করেছেন। (বুখারী ৫৫৮৭, মুসলিম ১৯৯২)
পরিচ্ছেদঃ
৩
যে দুই বস্তু মিলিয়ে
নাবীয বানান নিষিদ্ধ
১৫৪৯
و
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ
يَسَارٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى أَنْ يُنْبَذَ
الْبُسْرُ وَالرُّطَبُ جَمِيعًا وَالتَّمْرُ وَالزَّبِيبُ جَمِيعًا
আতা ইব্নু ইয়াসার
(র) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁচা ও পাকা খেজুর একত্রে ভিজিয়ে রাখতে এবং আঙ্গুর
ও খেজুর একত্রে ভিজিয়ে রাখতে নিষেধ করেছেন। কেননা এতে সত্বর মাদকতা আসার সন্দেহ
রয়েছে। (বুখারী ৫৬০, মুসলিম ১৯৮৬, জাবের (রা) থেকে মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা করেন তবে
ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)
১৫৫০
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ الثِّقَةِ عِنْدَهُ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ
بْنِ الْأَشَجِّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحُبَابِ الْأَنْصَارِيِّ عَنْ
أَبِي قَتَادَةَ الْأَنْصَارِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ نَهَى أَنْ يُشْرَبَ التَّمْرُ وَالزَّبِيبُ جَمِيعًا وَالزَّهْوُ
وَالرُّطَبُ جَمِيعًا قَالَ مَالِك وَهُوَ الْأَمْرُ الَّذِي لَمْ يَزَلْ عَلَيْهِ
أَهْلُ الْعِلْمِ بِبَلَدِنَا أَنَّهُ يُكْرَهُ ذَلِكَ لِنَهْيِ رَسُولِ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْهُ
আবূ কাতাদা আনসারী
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আঙ্গুর ও খেজুর মিলিয়ে নাবীয তৈরি করে পান করতে নিষেধ করেছেন এবং কাঁচা
ও পাকা খেজুর মিলিয়ে নাবীয তৈরী করে পান করতে নিষেধ করেছেন। (বুখারী ৫৬০২, মুসলিম
১৯৮৮)
মালিক (র) বলেন, আমাদের এতদঞ্চলের আলিমগণ ইহাকে মাকরূহ্ মনে করেন। কেননা
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহা নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
৪
মদ্য পান হারাম হওয়া
১৫৫১
و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ
أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا قَالَتْ
سُئِلَ رَسُولُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ الْبِتْعِ فَقَالَ كُلُّ
شَرَابٍ أَسْكَرَ فَهُوَ حَرَامٌ
উম্মুল মু‘মিনীন
আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট মধু দ্বারা প্রস্তুত
নাবীয সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, যে পানীয় মাদকতা আনয়ন করে তাই হারাম।
(বুখারী ৫৫৮৬, মুসলিম ২০০১)
১৫৫২
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ
عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ عَنْ الْغُبَيْرَاءِ
فَقَالَ لَا خَيْرَ فِيهَا وَنَهَى عَنْهَا قَالَ مَالِك فَسَأَلْتُ زَيْدَ بْنَ
أَسْلَمَ مَا الْغُبَيْرَاءُ فَقَالَ هِيَ الْأُسْكَرْكَةُ
আতা ইব্নু ইয়াসার
(রা) থেকে বর্ণিতঃ
গুবায়রা
(জোয়ার হতে প্রস্তুত) শরাব সম্বন্ধে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, উহাতে কোন উপকারিতা নেই। তিনি উহা পান করতে নিষেধ
করেছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৫৫৩
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ فِي
الدُّنْيَا ثُمَّ لَمْ يَتُبْ مِنْهَا حُرِمَهَا فِي الْآخِرَةِ
আবদুল্লাহ্ ইব্নু
উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পৃথিবীতে মদ্য পান করবে, অতঃপর
তাওবা না করবে, সেই ব্যক্তি আখেরাতের শরাব হতে বঞ্চিত থাকবে। (বুখারী ৫৫৭৫, মুসলিম
২০০৩)
পরিচ্ছেদঃ
৫
মদ হারাম হওয়া
সম্পর্কে
১৫৫৪
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ ابْنِ وَعْلَةَ الْمِصْرِيِّ
أَنَّهُ سَأَلَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ عَمَّا يُعْصَرُ مِنْ الْعِنَبِ
فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَهْدَى رَجُلٌ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ رَاوِيَةَ خَمْرٍ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ اللهَ حَرَّمَهَا قَالَ لَا فَسَارَّهُ رَجُلٌ
إِلَى جَنْبِهِ فَقَالَ لَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَ سَارَرْتَهُ
فَقَالَ أَمَرْتُهُ أَنْ يَبِيعَهَا فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ الَّذِي حَرَّمَ شُرْبَهَا حَرَّمَ بَيْعَهَا فَفَتَحَ
الرَّجُلُ الْمَزَادَتَيْنِ حَتَّى ذَهَبَ مَا فِيهِمَا
যায়দ ইব্নু আসলাম
(রা) ইব্নু ও‘য়ালা মিসরী থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
আবদুল্লাহ্ ইব্নু আব্বাস (রা)-কে আঙ্গুরের রস সম্বন্ধে প্রশ্ন করেছিলেন। ইব্নু
আব্বাস (রা) বললেন, এক ব্যক্তি উপটৌকনস্বরূপ এক মুশক মদ্য রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দান করেছিলেন। তিনি তাকে বললেন, তুমি কি জান না, আল্লাহ্ ইহা
হারাম করেছেন? সে ব্যক্তি বলল, আমার তো তা জানা ছিল না। ইত্যবসরে এক ব্যক্তি চুপি
চুপি কি যেন তার কানে বলল। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে
জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি বললে? সে বলল, আমি তাকে উহা বিক্রয় করতে বললাম।
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যিনি উহা পান করা হারাম করেছেন,
তিনি উহা বিক্রয় করাও হারাম করেছেন। এতদশ্রবণে ঐ ব্যক্তি মুশকের মুখ খুলে দিল আর
সমস্ত শরাব বয়ে গেল। (সহীহ, মুসলিম ১৫৪৩)
১৫৫৫
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ إِسْحَقَ بْنِ عَبْدِ
اللهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّهُ قَالَ
كُنْتُ أَسْقِي أَبَا عُبَيْدَةَ بْنَ الْجَرَّاحِ وَأَبَا طَلْحَةَ
الْأَنْصَارِيَّ وَأُبَيَّ بْنَ كَعْبٍ شَرَابًا مِنْ فَضِيخٍ وَتَمْرٍ قَالَ
فَجَاءَهُمْ آتٍ فَقَالَ إِنَّ الْخَمْرَ قَدْ حُرِّمَتْ فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ
يَا أَنَسُ قُمْ إِلَى هَذِهِ الْجِرَارِ فَاكْسِرْهَا قَالَ فَقُمْتُ إِلَى
مِهْرَاسٍ لَنَا فَضَرَبْتُهَا بِأَسْفَلِهِ حَتَّى تَكَسَّرَتْ
আনাস ইব্নু মালিক
(র) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আবূ উবায়দা ইব্নু জাররাহ, আবূ তালহা আনসারী ও উবাই ইব্নু কা‘বকে তাজা
খেজুরের শরাব পান করাতাম। ইত্যবসরে এক ব্যক্তি এসে বলল, শরাব হারাম হয়ে গিয়েছে।
এটা শুনে আবূ তালহা বললেন, আনাস, উঠে গিয়ে ঐ সমস্ত ঘটি ভেঙ্গে ফেল। আমি উঠে মিহরাস
[১] (দ্বারা সমস্ত ঘটি ভেঙ্গে ফেললাম। (বুখারী ৫৫৮২, মুসলিম ১৯৮০)
[১]
মিহরাস প্রস্তরখণ্ড যাতে গর্ত থাকে। উহাতে পানি ভরে ওযূ করা হয়।
১৫৫৬
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ دَاوُدَ بْنِ الْحُصَيْنِ
عَنْ وَاقِدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ عَنْ
مَحْمُودِ بْنِ لَبِيدٍ الْأَنْصَارِيِّ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ
حِينَ قَدِمَ الشَّامَ شَكَا إِلَيْهِ أَهْلُ الشَّامِ وَبَاءَ الْأَرْضِ
وَثِقَلَهَا وَقَالُوا لَا يُصْلِحُنَا إِلَّا هَذَا الشَّرَابُ فَقَالَ عُمَرُ
اشْرَبُوا هَذَا الْعَسَلَ قَالُوا لَا يُصْلِحُنَا الْعَسَلُ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ
أَهْلِ الْأَرْضِ هَلْ لَكَ أَنْ نَجْعَلَ لَكَ مِنْ هَذَا الشَّرَابِ شَيْئًا لَا
يُسْكِرُ قَالَ نَعَمْ فَطَبَخُوهُ حَتَّى ذَهَبَ مِنْهُ الثُّلُثَانِ وَبَقِيَ
الثُّلُثُ فَأَتَوْا بِهِ عُمَرَ فَأَدْخَلَ فِيهِ عُمَرُ إِصْبَعَهُ ثُمَّ رَفَعَ
يَدَهُ فَتَبِعَهَا يَتَمَطَّطُ فَقَالَ هَذَا الطِّلَاءُ هَذَا مِثْلُ طِلَاءِ
الْإِبِلِ فَأَمَرَهُمْ عُمَرُ أَنْ يَشْرَبُوهُ فَقَالَ لَهُ عُبَادَةُ بْنُ
الصَّامِتِ أَحْلَلْتَهَا وَاللهِ فَقَالَ عُمَرُ كَلَّا وَاللهِ اللهُمَّ إِنِّي
لَا أُحِلُّ لَهُمْ شَيْئًا حَرَّمْتَهُ عَلَيْهِمْ وَلَا أُحَرِّمُ عَلَيْهِمْ
شَيْئًا أَحْلَلْتَهُ لَهُمْ
মাহমুদ ইব্নু লবীদ
আনসারী (র) থেকে বর্ণিতঃ
উমার
(রা) যখন শাম দেশে আগমন করলেন, তখন শামের বাসিন্দার মধ্যে কেউ তাঁর নিকট শাম দেশের
মহামারী ও আবহাওয়া সম্বন্ধে অভিযোগ করল এবং বলল, এখানে শরাব পান করা ছাড়া
স্বাস্থ্য ঠিক থাকে না। উমার (রা) বললেন তোমরা মধু পান কর। তারা বলল, মধুও
স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পারে না। এমন সময় এক ব্যক্তি বলল, আমি আপনার জন্য এমন এমনভাবে
শরাব তৈরি করব যাতে মাদকতা থাকবে না। তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর তারা উহাকে এমনভাবে
বানাল যে, উহার দুই-তৃতীয়াংশ শুকিয়ে এক-তৃতীয়াংশ বাকী রইল। অতঃপর উহা উমার (রা)-এর
কাছে নিয়ে এল। তিনি তাতে আঙ্গুল দিয়ে দেখলেন, উহা চপ চপ করছে! তিনি বললেন, এই রস
তো উটের রসের মতোই হল। তিনি উহা পান করবার অনুমতি দান করলেন। উবাদাহ ইব্নু সামিত
(রা) বলেন, আল্লাহর কসম আপনি তো তা হালাল করে দিলেন। উমার (রা) বললেন, না, আল্লাহ্র
কসম! হে আল্লাহ, আমি কখনও ঐ বস্তু হালাল করিনি, যা আপনি হারাম করেছেন, আর না এমন
বস্তু হারাম করেছি, যা আপনি হালাল করেছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা
করেছেন)
১৫৫৭
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عُمَرَ
أَنَّ رِجَالًا مِنْ أَهْلِ الْعِرَاقِ قَالُوا لَهُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ
إِنَّا نَبْتَاعُ مِنْ ثَمَرِ النَّخْلِ وَالْعِنَبِ فَنَعْصِرُهُ خَمْرًا
فَنَبِيعُهَا فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ إِنِّي أُشْهِدُ اللهَ عَلَيْكُمْ
وَمَلَائِكَتَهُ وَمَنْ سَمِعَ مِنْ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ أَنِّي لَا آمُرُكُمْ
أَنْ تَبِيعُوهَا وَلَا تَبْتَاعُوهَا وَلَا تَعْصِرُوهَا وَلَا تَشْرَبُوهَا
وَلَا تَسْقُوهَا فَإِنَّهَا رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ
আবদুল্লাহ ইব্নু
উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর নিকট ইরাকের লোকেরা জিজ্ঞেস করল, আমরা খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান ক্রয় করে থাকি। আর উহার শরাব বানিয়ে বিক্রয় করে থাকি। আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার (রা) বললেন, আমি আল্লাহকে ও তাঁর ফিরিশতাগণকে আর যে জিন ও মানুষ শুনছে, তাদেরকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি তোমাদেরকে উহা বিক্রয় করার, খরিদ করার, প্রস্তুত করার, পান করার ও কাউকে পান করাবার অনুমতি দিচ্ছি না। কেননা শরাব নাপাক ও শয়তানী কাজ। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
No comments