সহিহ মুসলিম অধ্যায় "মুসাফিরদের সালাত ও তার কসর" হাদিস নং -১৬০১ থেকে ১৭২১
১৬০১
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ
جَمِيعًا عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ
الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، كِلاَهُمَا عَنْ
مَنْصُورٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَفِي رِوَايَةِ شُعْبَةَ عَنْ أَبِي يَحْيَى
الأَعْرَجِ، .
আবূ বাকর ইবনু শায়বাহ্, মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও ইবনু বাশ্শার, ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ..... উভয়ে মানসূর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই
সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে শু’বাহ্ (রহঃ) ইয়াহ্ইয়া আল আ‘রাজ (রহঃ) থেকে
বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৮৬, ই.সে. ১৫৯৩)
১৭. অধ্যায়ঃ
রাতের সলাত, নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রাতের সলাতের রাক‘আত সংখ্যা, বিত্র সলাত
এক রাক’আত এবং এক রাক’আত সলাত আদায় সহীহ্ সাব্যস্ত
১৬০২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ
عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي بِاللَّيْلِ
إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يُوتِرُ مِنْهَا بِوَاحِدَةٍ فَإِذَا فَرَغَ مِنْهَا
اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ حَتَّى يَأْتِيَهُ الْمُؤَذِّنُ فَيُصَلِّي
رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা এগার রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। তার
মধ্যে এক রাক‘আত বিত্র আদায় করতেন। সলাত শেষ করে তিনি ডান পাশে ফিরে শুতেন। অতঃপর
ভোরে মুয়ায্যিন আসলে তিনি (উঠে) সংক্ষিপ্তভাবে দু‘ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন।
(ই.ফা. ১৫৮৭, ই.সে. ১৫৯৪)
১৬০৩
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ
بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ،
عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّي فِيمَا بَيْنَ أَنْ يَفْرُغَ مِنْ صَلاَةِ الْعِشَاءِ - وَهِيَ الَّتِي
يَدْعُو النَّاسُ الْعَتَمَةَ - إِلَى الْفَجْرِ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً
يُسَلِّمُ بَيْنَ كُلِّ رَكْعَتَيْنِ وَيُوتِرُ بِوَاحِدَةٍ فَإِذَا سَكَتَ
الْمُؤَذِّنُ مِنْ صَلاَةِ الْفَجْرِ وَتَبَيَّنَ لَهُ الْفَجْرُ وَجَاءَهُ
الْمُؤَذِّنُ قَامَ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ثُمَّ اضْطَجَعَ عَلَى
شِقِّهِ الأَيْمَنِ حَتَّى يَأْتِيَهُ الْمُؤَذِّنُ لِلإِقَامَةِ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সলাত ও ফাজ্রের
সলাতের মধ্যবর্তী সময়ে এগার রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। এর মধ্যে এক রাক‘আত বিত্র
আদায় করতেন এবং প্রতি দু‘রাকআতে সালাম ফিরাতেন। ‘ইশার সলাত কে লোকজন ঐ সময়ে
‘আতামাহ্’ বলত। মুয়ায্যিন আযান দিয়ে শেষ করলে এবং ফাজ্রের সময় স্পষ্ট হয়ে উঠলে
মুয়ায্যিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসত। তখন তিনি
সংক্ষিপ্তভাবে দু‘ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। এরপর ডান কাত হয়ে শুয়ে পড়তেন। পরে
মুয়ায্যিন পুনরায় ইক্বামাতের জন্য আসত (তখন উঠে তিনি সলাত আদায় করতেন)। (ই.ফা.
১৫৮৮, ই. সে ১৫৯৫)
১৬০৪
وَحَدَّثَنِيهِ
حَرْمَلَةُ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ،
بِهَذَا الإِسْنَادِ . وَسَاقَ حَرْمَلَةُ الْحَدِيثَ بِمِثْلِهِ غَيْرَ أَنَّهُ
لَمْ يَذْكُرْ وَتَبَيَّنَ لَهُ الْفَجْرُ وَجَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ . وَلَمْ
يَذْكُرِ الإِقَامَةَ . وَسَائِرُ الْحَدِيثِ بِمِثْلِ حَدِيثِ عَمْرٍو سَوَاءً
.
ইবনু
শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই
সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে হারমালাহ্ (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে- “ফজরের সময়
স্পষ্ট হয়ে উঠলে মুয়াজ্জিন তাঁর কাছে আসত” কথাটি উল্লেখ করেননি। আর তিনি
ইক্বামাতের কথাও উল্লেখ করেননি। এছাড়া হাদীসের অবশিষ্ট অংশ তিনি ‘আম্র ইবনু হারিস
বর্ণিত হাদীসের মতো হুবহু বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৮৯, ই.সে. ১৫৯৬)
১৬০৫
وَحَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ نُمَيْرٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا
هِشَامٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً يُوتِرُ مِنْ ذَلِكَ
بِخَمْسٍ لاَ يَجْلِسُ فِي شَىْءٍ إِلاَّ فِي آخِرِهَا .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা তের রাক‘আত সলাত
আদায় করতেন। এর মধ্যে পাঁচ রাক‘আত আদায় করতেন বিত্র এবং এতে একেবারে শেষে ছাড়া
কোন বৈঠক করতেন না। (ই.ফা. ১৫৯০, ই.সে. ১৫৯৭)
১৬০৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، ح
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَأَبُو أُسَامَةَ كُلُّهُمْ
عَنْ هِشَامٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ .
আবু
বাকর ইবনু আবূ শায়বাহ্ এবং আবূ কুরায়ব (রহঃ) ..... সকলে হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই
সানাদে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৯১, ই.সে. ১৫৯৮)
১৬০৭
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ
بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ عِرَاكِ
بْنِ مَالِكٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً
بِرَكْعَتَىِ الْفَجْرِ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা ফাজ্রের দু‘রাকআত সুন্নাতসহ তের
রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৯২, ই.সে. ১৫৯৯)
১৬০৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ
الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَأَلَ
عَائِشَةَ كَيْفَ كَانَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي
رَمَضَانَ قَالَتْ مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَزِيدُ فِي
رَمَضَانَ وَلاَ فِي غَيْرِهِ عَلَى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يُصَلِّي أَرْبَعًا
فَلاَ تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّي أَرْبَعًا فَلاَ
تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّي ثَلاَثًا فَقَالَتْ عَائِشَةُ
فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَتَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوتِرَ فَقَالَ "
يَا عَائِشَةُ إِنَّ عَيْنَىَّ تَنَامَانِ وَلاَ يَنَامُ قَلْبِي " .
আবূ
সালামাহ্ ইবনু ‘আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
‘আয়িশা (রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রমাযান মাসের
(রাতের) সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) রমাযান মাসে কিংবা অন্য কোন সময়ে রাতের বেলা এগার রাক‘আতের বেশী সলাত
আদায় করতেন না। প্রথম চার রাক‘আত তিনি এমনভাবে আদায় করতেন যে, তার সৌন্দর্য
সম্পর্কে আর কি জিজ্ঞেস করবে? তারপর চার রাক‘আত তিনি এত সুন্দর করে আদায় করতেন যে,
তার সৌন্দর্য সম্পর্কে ও দীর্ঘতা সম্বন্ধে আর কি জিজ্ঞেস করবে? এরপর তিনি আরো তিন
রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, এ কথা শুনে আমি জিজ্ঞেস করলাম যে, হে
আল্লাহর রসূল! আপনি বিত্র সলাত আদায়ের পূর্বেই ঘুমাতেন? জবাবে তিনি বললেন, হে
‘আয়িশাহ্! আমার চোখ দুটি ঘুমায় কিন্তু আমার হৃদয়-মন ঘুমায় না। (ই.ফা. ১৫৯৩, ই.সে.
১৬০০)
১৬০৯
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ
يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ كَانَ يُصَلِّي ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً
يُصَلِّي ثَمَانَ رَكَعَاتٍ ثُمَّ يُوتِرُ ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ
جَالِسٌ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ قَامَ فَرَكَعَ ثُمَّ يُصَلِّي
رَكْعَتَيْنِ بَيْنَ النِّدَاءِ وَالإِقَامَةِ مِنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ .
আবূ
সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ) -কে রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
(রাতের) সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ তের রাক‘আত আদায় করতেন। প্রথমে
তিনি আট রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। তারপর বিত্র আদায় করতেন। সবশেষে বসে বসে আরো দু‘
রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। পরে রুকু করার সময় উঠে দাঁড়িয়ে রুকু’ করতেন। অতঃপর ফাজ্রের
সলাতের আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়েও দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা.
১৫৯৪, ই.সে. ১৬০১)
১৬১০
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ
بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ
يَحْيَى، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، ح وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ بِشْرٍ
الْحَرِيرِيُّ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ، - يَعْنِي ابْنَ سَلاَّمٍ - عَنْ يَحْيَى
بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ، أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ
عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . بِمِثْلِهِ غَيْرَ أَنَّ
فِي حَدِيثِهِمَا تِسْعَ رَكَعَاتٍ قَائِمًا يُوتِرُ مِنْهُنَّ .
আবূ
সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
‘আয়িশা (রাঃ) কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সলাত সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করেছিলেন। ..... পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করলেন। তবে তাদের উভয়ের
বর্ণিত হাদীসে দাঁড়িয়ে নয় রাক‘আত সলাত আদায় করার কথা উল্লেখ আছে এবং তার মধ্যে
বিতরের সলাত ও অন্তর্ভূক্ত আছে। (ই.ফা. ১৫৯৫, ই.সে. ১৬০২)
১৬১১
وَحَدَّثَنَا عَمْرٌو
النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
أَبِي لَبِيدٍ، سَمِعَ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ أَتَيْتُ عَائِشَةَ فَقُلْتُ أَىْ
أُمَّهْ أَخْبِرِينِي عَنْ صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
فَقَالَتْ كَانَتْ صَلاَتُهُ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ وَغَيْرِهِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ
رَكْعَةً بِاللَّيْلِ مِنْهَا رَكْعَتَا الْفَجْرِ .
আবূ
সালামাহ্ (রাঃ} থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আম্মাজান! আমাকে
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সলাত সম্পর্কে অবহিত করুন তো।
তিনি বললেনঃ রমাযান ও অন্যান মাসে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ফাজ্রের দু’ রাক‘আত (সুন্নাত) সলাত সহ রাতের বেলা মোট তের রাক‘আত সলাত আদায়
করতেন। (ই.ফা. ১৫৯৬, ই.সে. ১৬০৩)
১৬১২
حَدَّثَنَا ابْنُ
نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا حَنْظَلَةُ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ
مُحَمَّدٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ، تَقُولُ كَانَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم مِنَ اللَّيْلِ عَشَرَ رَكَعَاتٍ وَيُوتِرُ بِسَجْدَةٍ
وَيَرْكَعُ رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فَتِلْكَ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাতের এক বেলা রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দশ রাক‘আত
সলাত আদায় করতেন। আর এক রাক‘আত বিত্র এবং দু’ রাক‘আত ফাজ্রের সুন্নাতসহ মোট তের
রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৯৭, ই.সে. ১৬০৪)
১৬১৩
وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، ح وَحَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو خَيْثَمَةَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ
سَأَلْتُ الأَسْوَدَ بْنَ يَزِيدَ عَمَّا حَدَّثَتْهُ عَائِشَةُ، عَنْ صَلاَةِ،
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ كَانَ يَنَامُ أَوَّلَ اللَّيْلِ
وَيُحْيِي آخِرَهُ ثُمَّ إِنْ كَانَتْ لَهُ حَاجَةٌ إِلَى أَهْلِهِ قَضَى
حَاجَتَهُ ثُمَّ يَنَامُ فَإِذَا كَانَ عِنْدَ النِّدَاءِ الأَوَّلِ - قَالَتْ -
وَثَبَ - وَلاَ وَاللَّهِ مَا قَالَتْ قَامَ - فَأَفَاضَ عَلَيْهِ الْمَاءَ -
وَلاَ وَاللَّهِ مَا قَالَتِ اغْتَسَلَ . وَأَنَا أَعْلَمُ مَا تُرِيدُ - وَإِنْ
لَمْ يَكُنْ جُنُبًا تَوَضَّأَ وُضُوءَ الرَّجُلِ لِلصَّلاَةِ ثُمَّ صَلَّى
الرَّكْعَتَيْنِ .
আবূ
ইসহাক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে ‘আস্ওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ-এর কাছে বর্ণিত রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ
রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের প্রথমভাগে ঘুমাতেন এবং
শেষভাগে জাগতেন। এ সময় যদি স্ত্রীদের সাহচর্য লাভের প্রয়োজন হ'ত তাহলে তা পূরণ
করতেন এবং এরপর আবার ঘুমাতেন। ফাজ্রের আযানের সময় (তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে) তিনি
ত্বরিতে উঠতেন। আল্লাহর শপথ! তিনি [আয়িশাহ্ (রাঃ)] বলেননি যে, তিনি গোসল করতেন।
তার উদ্দেশ্য আকাঙ্খা আমি ভাল করেই জানতাম। তিনি নাপাক না হয়ে থাকলে কোন লোক শুধু
সলাতের জন্য যেভাবে ওযূ করে থাকে সেভাবে ওযূ করতেন এবং তারপর ফাজ্রের দু’ রাক‘আত
সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৯৮, ই.সে. ১৬০৫)
১৬১৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ
بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ،
حَدَّثَنَا عَمَّارُ بْنُ رُزَيْقٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ
حَتَّى يَكُونَ آخِرَ صَلاَتِهِ الْوِتْرُ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা যে সলাত আদায়
করতেন তাতে সর্বশেষে আদায় করতেন বিত্র সলাত। (ই. ফা. ১৫৯৯, ই.সে. ১৬০৬)
১৬১৫
حَدَّثَنِي هَنَّادُ بْنُ
السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَشْعَثَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
مَسْرُوقٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ عَمَلِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَتْ كَانَ يُحِبُّ الدَّائِمَ . قَالَ قُلْتُ أَىَّ حِينٍ كَانَ
يُصَلِّي فَقَالَتْ كَانَ إِذَا سَمِعَ الصَّارِخَ قَامَ فَصَلَّى .
মাসরূক্ব
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর 'আমাল সম্পর্কে
‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) নিয়মিত ‘আমালকে পছন্দ করতেন। মাসরূক্ব বলেন, আমি তাঁকে আবার জিজ্ঞেস
করলাম : তিনি সলাত আদায় করতেন কোন্ সময়? ‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তিনি যখন মোরগের ডাক
শুনতেন তখন উঠে সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৬০০, ই.সে. ১৬০৭)
১৬১৬
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ بِشْرٍ، عَنْ مِسْعَرٍ، عَنْ سَعْدٍ، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا أَلْفَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم السَّحَرُ الأَعْلَى فِي بَيْتِي - أَوْ عِنْدِي - إِلاَّ نَائِمًا .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমার ঘরে অথবা আমার কাছে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় সব সময় ‘সুবহে কাযিব’ (সাহরীর শুরু) এর সময় হয়ে যেত। (ই.ফা.
১৬০১, ই.সে. ১৬০৮)
১৬১৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ
بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَنَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، قَالَ أَبُو
بَكْرٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا
صَلَّى رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فَإِنْ كُنْتُ مُسْتَيْقِظَةً حَدَّثَنِي وَإِلاَّ
اضْطَجَعَ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ফাজ্রের দু’ রাক‘আত নাফ্ল (সলাত) আদায় করার পর আমি জাগ্রত থাকলে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সাথে কথাবার্তা বলতেন। অন্যথায় শুয়ে
পড়তেন। (ই.ফা. ১৬০২, ই.সে. ১৬০৯)
১৬১৮
وَحَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي
عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ زِيَادِ بْنِ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي
عَتَّابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم مِثْلَهُ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ
হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬০৩, ই.সে. ১৬১০)
১৬১৯
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ
بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ تَمِيمِ بْنِ سَلَمَةَ،
عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ فَإِذَا أَوْتَرَ قَالَ "
قُومِي فَأَوْتِرِي يَا عَائِشَةُ " .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা সলাত আদায় করতেন।
তাঁর বিত্র পড়া শেষ হয়ে গেলে তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বলতেন : হে
‘আয়িশাহ্! ওঠো এবং বিত্র পড়। (ই.ফা. ১৬০৪, ই.সে. ১৬১১)
১৬২০
وَحَدَّثَنِي هَارُونُ
بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ
بِلاَلٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ
مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ
يُصَلِّي صَلاَتَهُ بِاللَّيْلِ وَهِيَ مُعْتَرِضَةٌ بَيْنَ يَدَيْهِ فَإِذَا
بَقِيَ الْوِتْرُ أَيْقَظَهَا فَأَوْتَرَتْ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রাতের বেলা সলাত আদায় করতেন তখন ‘আয়িশা
(রাঃ) তাঁর সামনে তাড়াতাড়ি শুয়ে থাকতেন। সলাত শেষে যখন তাঁর শুধুমাত্র বিত্র পড়া
বাকি থাকত তখন তিনি ‘আয়িশাহ্ কে জাগিয়ে দিতেন। আর তিনি [আয়িশাহ্ (রাঃ)] তখন উঠে
বিত্র আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৬০৫,ই.সে.১৬১২)
১৬২১
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى
بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي يَعْفُورٍ، -
وَاسْمُهُ وَاقِدٌ وَلَقَبُهُ وَقْدَانُ - ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَ أَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ
الأَعْمَشِ، كِلاَهُمَا عَنْ مُسْلِمٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
مِنْ كُلِّ اللَّيْلِ قَدْ أَوْتَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَانْتَهَى وِتْرُهُ إِلَى السَّحَرِ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, সারা রাতের যে কোন সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিত্র
আদায় করেছেন। এমন কি কোন কোন সময় রাতের শেষভাগেও তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বিত্র সলাত আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৬০৬, ই.সে. ১৬১৩)
১৬২২
وَحَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ،
عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ وَثَّابٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ،
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مِنْ كُلِّ اللَّيْلِ قَدْ أَوْتَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم مِنْ أَوَّلِ اللَّيْلِ وَأَوْسَطِهِ وَآخِرِهِ فَانْتَهَى
وِتْرُهُ إِلَى السَّحَرِ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, সারা রাতের যে কোন অংশে রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বিত্র সলাত আদায় করেছেন। তিনি রাতের প্রথমভাগে, মধ্যভাগে, শেষভাগে এবং এমনি ভোরে
বিত্র আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৬০৭, ই.সে. ১৬১৪)
১৬২৩
حَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ
حُجْرٍ، حَدَّثَنَا حَسَّانُ، - قَاضِي كِرْمَانَ - عَنْ سَعِيدِ بْنِ مَسْرُوقٍ،
عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُلَّ اللَّيْلِ
قَدْ أَوْتَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَانْتَهَى وِتْرُهُ إِلَى
آخِرِ اللَّيْلِ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, সারা রাতের মধ্যে যে কোন সময় রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বিত্রের সলাত আদায় করেছেন। এমনকি তিনি শেষ রাতেও বিত্র আদায় করেছেন।
(ই.ফা. ১৬০৮, ই.সে. ১৬১৫)
১৮. অধ্যায়ঃ
রাত্রিকালীন সলাত- আর যে
ঘুমিয়ে পড়ে অথবা অসুস্থ হয়ে পড়ে
১৬২৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ
سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامِ بْنِ
عَامِرٍ، أَرَادَ أَنْ يَغْزُوَ، فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ
فَأَرَادَ أَنْ يَبِيعَ عَقَارًا لَهُ بِهَا فَيَجْعَلَهُ فِي السِّلاَحِ
وَالْكُرَاعِ وَيُجَاهِدَ الرُّومَ حَتَّى يَمُوتَ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ
لَقِيَ أُنَاسًا مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ فَنَهَوْهُ عَنْ ذَلِكَ وَأَخْبَرُوهُ
أَنَّ رَهْطًا سِتَّةً أَرَادُوا ذَلِكَ فِي حَيَاةِ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَنَهَاهُمْ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ "
أَلَيْسَ لَكُمْ فِيَّ أُسْوَةٌ " . فَلَمَّا حَدَّثُوهُ بِذَلِكَ
رَاجَعَ امْرَأَتَهُ وَقَدْ كَانَ طَلَّقَهَا وَأَشْهَدَ عَلَى رَجْعَتِهَا فَأَتَى
ابْنَ عَبَّاسٍ فَسَأَلَهُ عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى أَعْلَمِ أَهْلِ الأَرْضِ بِوِتْرِ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَالَ عَائِشَةُ . فَأْتِهَا
فَاسْأَلْهَا ثُمَّ ائْتِنِي فَأَخْبِرْنِي بِرَدِّهَا عَلَيْكَ فَانْطَلَقْتُ
إِلَيْهَا فَأَتَيْتُ عَلَى حَكِيمِ بْنِ أَفْلَحَ فَاسْتَلْحَقْتُهُ إِلَيْهَا
فَقَالَ مَا أَنَا بِقَارِبِهَا لأَنِّي نَهَيْتُهَا أَنْ تَقُولَ فِي هَاتَيْنِ
الشِّيعَتَيْنِ شَيْئًا فَأَبَتْ فِيهِمَا إِلاَّ مُضِيًّا . - قَالَ -
فَأَقْسَمْتُ عَلَيْهِ فَجَاءَ فَانْطَلَقْنَا إِلَى عَائِشَةَ فَاسْتَأْذَنَّا
عَلَيْهَا فَأَذِنَتْ لَنَا فَدَخَلْنَا عَلَيْهَا . فَقَالَتْ أَحَكِيمٌ
فَعَرَفَتْهُ . فَقَالَ نَعَمْ . فَقَالَتْ مَنْ مَعَكَ قَالَ سَعْدُ بْنُ
هِشَامٍ . قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قَالَ ابْنُ عَامِرٍ فَتَرَحَّمَتْ عَلَيْهِ
وَقَالَتْ خَيْرًا - قَالَ قَتَادَةُ وَكَانَ أُصِيبَ يَوْمَ أُحُدٍ . فَقُلْتُ
يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ خُلُقِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم . قَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ قُلْتُ بَلَى . قَالَتْ فَإِنَّ
خُلُقَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ الْقُرْآنَ . - قَالَ -
فَهَمَمْتُ أَنْ أَقُومَ وَلاَ أَسْأَلَ أَحَدًا عَنْ شَىْءٍ حَتَّى أَمُوتَ ثُمَّ
بَدَا لِي فَقُلْتُ أَنْبِئِينِي عَنْ قِيَامِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
. فَقَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ { يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ} قُلْتُ بَلَى
. قَالَتْ فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ افْتَرَضَ قِيَامَ اللَّيْلِ فِي
أَوَّلِ هَذِهِ السُّورَةِ فَقَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَأَصْحَابُهُ حَوْلاً وَأَمْسَكَ اللَّهُ خَاتِمَتَهَا اثْنَىْ عَشَرَ شَهْرًا
فِي السَّمَاءِ حَتَّى أَنْزَلَ اللَّهُ فِي آخِرِ هَذِهِ السُّورَةِ التَّخْفِيفَ
فَصَارَ قِيَامُ اللَّيْلِ تَطَوُّعًا بَعْدَ فَرِيضَةٍ . - قَالَ - قُلْتُ يَا
أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم . فَقَالَتْ كُنَّا نُعِدُّ لَهُ سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ فَيَبْعَثُهُ
اللَّهُ مَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَيَتَسَوَّكُ وَيَتَوَضَّأُ
وَيُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ لاَ يَجْلِسُ فِيهَا إِلاَّ فِي الثَّامِنَةِ
فَيَذْكُرُ اللَّهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يَنْهَضُ وَلاَ يُسَلِّمُ
ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي التَّاسِعَةَ ثُمَّ يَقْعُدُ فَيَذْكُرُ اللَّهَ
وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا ثُمَّ يُصَلِّي
رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ وَهُوَ قَاعِدٌ فَتِلْكَ إِحْدَى عَشْرَةَ
رَكْعَةً يَا بُنَىَّ فَلَمَّا أَسَنَّ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَأَخَذَ اللَّحْمَ أَوْتَرَ بِسَبْعٍ وَصَنَعَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِثْلَ
صَنِيعِهِ الأَوَّلِ فَتِلْكَ تِسْعٌ يَا بُنَىَّ وَكَانَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى صَلاَةً أَحَبَّ أَنْ يُدَاوِمَ عَلَيْهَا وَكَانَ
إِذَا غَلَبَهُ نَوْمٌ أَوْ وَجَعٌ عَنْ قِيَامِ اللَّيْلِ صَلَّى مِنَ النَّهَارِ
ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً وَلاَ أَعْلَمُ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَرَأَ الْقُرْآنَ كُلَّهُ فِي لَيْلَةٍ وَلاَ صَلَّى لَيْلَةً إِلَى الصُّبْحِ
وَلاَ صَامَ شَهْرًا كَامِلاً غَيْرَ رَمَضَانَ . - قَالَ - فَانْطَلَقْتُ إِلَى
ابْنِ عَبَّاسِ فَحَدَّثْتُهُ بِحَدِيثِهَا فَقَالَ صَدَقَتْ لَوْ كُنْتُ
أَقْرَبُهَا أَوْ أَدْخُلُ عَلَيْهَا لأَتَيْتُهَا حَتَّى تُشَافِهَنِي بِهِ . -
قَالَ - قُلْتُ لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكَ لاَ تَدْخُلُ عَلَيْهَا مَا حَدَّثْتُكَ
حَدِيثَهَا .
যুরারাহ্
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা‘দ
ইবনু হিশাম ইবনু 'আমির (রহঃ) আল্লাহর পথে (আজীবন) লড়াই করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করলেন। তাই তিনি মাদীনায় আগমন করলেন। তিনি চাচ্ছিলেন এ উদ্দেশে তিনি তার জমি-জমা
বিক্রি করে তা দ্বারা অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধের ঘোড়া কিনবেন এবং রোমান অর্থাৎ
খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে আমৃত্যু জিহাদ করবেন। তাই মদীনায় এসে তিনি মাদীনাহ্বাসী কিছু
লোকের সাথে সাক্ষাৎ করলে তারা তাঁকে ঐরূপ করতে নিষেধ করলেন। তারা তাকে এ কথাও
জানালেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবদ্দশায় ছয়জন লোকের একটি
দল এ একই করতে চাইলে আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা করতে
নিষেধ করেছিলেন : আমার জীবন ও কর্মে কি তোমাদের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ নেই? তারা
(মাদীনাহ্বাসী) যখন তাকে এ কথাটি শুনালেন তখন তিনি তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিলেন
(রুজ‘আত করলেন) এবং কিছু লোককে এ ব্যাপারে সাক্ষী রাখলেন। কেননা এ কাজের (জিহাদের)
জন্য তিনি তার স্ত্রীকে ত্বলাক দিয়েছিলেন। এরপর তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস-এর
কাছে এসে তাঁকে রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিত্র সলাত
আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস তাঁকে বললেনঃ
রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিত্র সলাত সম্পর্কে পৃথিবীর
অধিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী জানে আমি এমন একজন লোকের সন্ধান কি তোমাকে দিব না?
তিনি (সা‘দ ইবনু হিশাম ইবনু 'আমির) বললেনঃতিনি কে? ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আব্বাস
বললেনঃ তিনি হলেন ‘আয়িশা (রাঃ)। তার কাছে গিয়ে তুমি জিজ্ঞেস করবে, তারপর তোমাকে
দেয়া তাঁর জবাব আমাকে এসে জানাবে। আমি তখন তাঁর কাছে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হলাম।
প্রথমে আমি হাকীম ইবনু আফ্লাহ-র কাছে গেলাম। আমি তাকে আমার সাথে তাঁর (‘আয়িশাহ্)
এ দু’ দলের ব্যাপারে কোন কিছু বলতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্ত তিনি তা না শুনে বরং
একটি পক্ষাবলম্বন করেছিলেন। সা‘দ ইবনু হিশাম ইবনু 'আমির বলেনঃ তখন আমি তাঁকে ক্বসম
দিয়ে যেতে বললাম। তাই তিনি যেতে রাজি হলেন। আমরা ‘আয়িশা (রাঃ) এর কাছে গিয়ে তাঁকে
অবহিত করলে তিনি আমাদেরকে অনুমতি দান করলেন। আমরা তাঁর কাছে গেলে তিনি হাকীম আফ্লাহ
কে চিনতে পারলেন। তাই বললেনঃ আরে , এ যে হাকীম? তিনি (হাকীম ইবনু আফ্লাহ) বললেনঃ
হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন : তোমার সাথে কে আছে? তিনি বললেন ” সা‘দ ইবনু হিশাম
(ইবনু আমির)। তিনি প্রশ্ন করলেন। কোন্ হিশাম? হাকীম ইবনু আফ্লাহ বললেনঃ আমিরের
পুত্র হিশাম। এ কথা শুনে তিনি তার প্রতি খুব স্নেহপ্রবণ হলেন এবং তার ব্যাপারে ভাল
মন্তব্য করলেন। ক্বাতাদাহ্ বর্ণনা করলেন : আফ্লাহ উহুদের যু্দ্ধে শাহীদ হয়েছিলেন।
এরপর আমি বললাম : হে উম্মুল মু‘মিনীন! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর আখলাক্ব সম্পর্কে আমাকে কিছু অবহিত করুন। এ কথা শুনে তিনি আমাকে
বললেন, তুমি কি কুরআন পড় না? আমি বললাম হ্যাঁ, পড়ি। তিনি বললেন, আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আখলাক্ব তো ছিল কুরআন। সা‘দ ইবনু হিশাম ইবনু 'আমির
বলেছেনঃ আমি তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম উঠে চলে আসি এবং মৃত্যু পর্যন্ত এ
ব্যাপারে আর কাউকে কিছু জিজ্ঞেস না করি। কিন্তু আমার মনে আবার একটি নতুন ধারণা
জাগল। তাই আমি বললাম : আমাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
রাতের ইবাদাত (ক্বিয়ামুল লায়ল) সম্পর্কে কিছু অবহিত করুন। তিনি এবার আমাকে জিজ্ঞেস
করলেন : তুমি কি সুরাহ্ “ইয়া আইয়ুহাল মুযযা্ম্মিল” পড় না? আমি বললাম-হ্যাঁ পড়ি।
তিনি বললেন ” মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ এ সূরার প্রথমভাগে “ক্বিয়ামুল লায়ল” বা
রাতের ‘ইবাদাত বন্দেগী ফরয করে দিয়েছেন। তাই এক বছর পর্যন্ত নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণ রাতের বেলা ‘ইবাদাত করেছেন। মহান আল্লাহ
বারো মাস পর্যন্ত এ সূরার শেষাংশ আসমানে ঠেকিয়ে রেখেছিলেন (অর্থাৎ বারো মাস
পর্যন্ত এ সূরার শেষাংশ অবতীর্ণ করেননি)। অবশেষে (বারো মাস পরে) এ সূরার শেষে
আল্লাহ তা‘আলা রাতের ‘ইবাদাতের হুকুম লঘু করে আয়াত অবতীর্ণ করলেন। আর এ কারণে রাত
জেগে ‘ইবাদাত যেখানে ফরয ছিল সেখানে তা নাফ্ল বা ঐচ্ছিক হয়ে গেল। সা‘দ ইবনু হিশাম
বলেনঃ আমি বললাম, হে উম্মূল মুমিনীন! রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর বিত্র সলাত সম্পর্কে আমাকে কিছু অবহিত করুন। তিনি বললেনঃ আমরা তাঁর
জন্য মিসওয়াক এবং ওযূর পানি প্রস্তুত করে রাখতাম। অতঃপর রাতের বেলা মহান আল্লাহ
যখন চাইতেন তখন তাঁকে জাগিয়ে দিতেন। তিনি উঠে মিসওয়াক করতেন। ওযূ করতেন এবং নয়
রাক‘আত (বিত্র) সলাত আদায় করতেন। এতে অষ্টম রাক‘আত ছাড়া বসতেন না। এ বৈঠকে তিনি
আল্লাহকে স্মরণ করতেন, তাঁর প্রশংসা করতেন এবং তার কাছে প্রার্থনা করতেন। অতঃপর
এমনভাবে সালাম ফিরাতেন যে আমরা তা শুনতে পেতাম। এবার সালাম ফিরানোর পর ঘরে বসেই
তিনি দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। তারপর বললেনঃ হে বৎস! এ এগার রাক‘আত সলাত তিনি
রাতে আদায় করতেন। পরবর্তীতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বয়স বেড়ে
গিয়েছিল এবং শরীরও কিছুটা মাংসল হয়ে গিয়েছিল তখন তিনি সাত রাক‘আত বিত্র আদায়
করতেন। এক্ষেত্রেও তিনি শেষের দু’ রাক‘আত সলাত পূর্বের মতো করেই আদায় করতেন : হে
বৎস! এভাবে তিনি নয় রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কোন সলাত আদায় করলে তা সর্বদা নিয়মিত আদায় করা পছন্দ করতেন। যখন ঘুমের
প্রাবল্য বা ব্যথা-বেদনার কারণে তিনি রাতে ‘ইবাদাত (সলাত আদায়) করতে পারতেন না,
তখন দিনের বেলা বারো রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এক রাতে পুরো কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করেছেন বা সকাল পর্যন্ত সারা রাত আদায়
করেছেন কিংবা রমাযান মাস ছাড়া সারা মাস সিয়াম (রোযা) পালন করেছেন এমনটি আমি কখনো
দেখিনি। সা'দ ইবনু হিশাম ইবনু 'আমির বর্ণনা করেছেন পরে আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু
'আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে এসে ‘আয়িশা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটি বর্ণনা করলে তিনি
বললেনঃ তিনি সঠিক বলেছেন। আমি যদি তাঁর কাছে থাকতাম বা তাঁর কাছে যেতাম তাহলে নিজে
তাঁর মুখ থেকে হাদীসটি শুনতে পেতাম। সা‘দ ইবনু হিশাম বললেনঃ আমার যদি জানা থাকত
যে, আপনি তাঁর কাছে যান না, তাহলে আপনাকে আমি তাঁর কথা বলতাম না। (ই.ফা. ১৬০৯,
ই.সে. ১৬১৬)
১৬২৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، أَنَّهُ
طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ثُمَّ انْطَلَقَ إِلَى الْمَدِينَةِ لِيَبِيعَ عَقَارَهُ .
فَذَكَرَ نَحْوَهُ .
সা'দ
ইবনু হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
তার স্ত্রীকে ত্বলাক্ব দিয়ে নিজের জমিজমা বিক্রি করার জন্য মদীনায় আসলেন .....
পুর্বোক্ত হাদীসের মতো বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬১০, ই.সে. ১৬১৭)
১৬২৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا
سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ
أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، أَنَّهُ قَالَ انْطَلَقْتُ إِلَى عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ فَسَأَلْتُهُ عَنِ الْوِتْرِ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ
بِقِصَّتِهِ وَقَالَ فِيهِ قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قُلْتُ ابْنُ عَامِرٍ . قَالَتْ
نِعْمَ الْمَرْءُ كَانَ عَامِرٌ أُصِيبَ يَوْمَ أُحُدٍ .
সা'দ
ইবনু হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে তাঁকে রসুলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিত্র সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। এ
পর্যন্ত বর্ণনা করার পর তিনি হাদীসটি হুবহু পূর্বে বর্ণিত হাদীসের মতো বর্ণনা
করলেন। তবে এতে তিনি এ কথাও বর্ণনা করেছেন যে, আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেনঃ কোন্ হিশাম?
তখন আমি বললাম 'আমির-এর পুত্র হিশাম। এ কথা শুনে তিনি বললেনঃ 'আমির কত উত্তম মানুষ
ছিলেন। তিনি উহুদ যুদ্ধে শাহাদাত লাভ করেছিলেন। (ই.ফা. ১৬১১, ই.সে. ১৬১৮)
১৬২৭
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ
الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى،
أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامٍ، كَانَ جَارًا لَهُ فَأَخْبَرَهُ أَنَّهُ، طَلَّقَ
امْرَأَتَهُ . وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ سَعِيدٍ وَفِيهِ قَالَتْ
مَنْ هِشَامٌ قَالَ ابْنُ عَامِرٍ . قَالَتْ نِعْمَ الْمَرْءُ كَانَ أُصِيبَ
مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ . وَفِيهِ فَقَالَ
حَكِيمُ بْنُ أَفْلَحَ أَمَا إِنِّي لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكَ لاَ تَدْخُلُ عَلَيْهَا
مَا أَنْبَأْتُكَ بِحَدِيثِهَا .
যুরারাহ্
ইবনু আওফা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা’দ
ইবনু হিশাম (রহঃ) ছিলেন তাঁর প্রতিবেশী। তিনি যুরারাহ্কে স্বীয় স্ত্রীকে ত্বলাক
দেয়ার কথা জানালেন। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি সা‘ঈদ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ
অর্থবোধক হাদীস বর্ণনা করলেন যাতে এ কথাও বর্ণিত হয়েছে যে, ‘আয়িশা (রাঃ) জিজ্ঞেস
করলেন : কোন্ হিশাম-এর কথা বলছ? তখন হাকীম ইবনু আফ্লাহ বললেনঃ‘আমিরের পুত্র
হিশামের কথা বলছি। এ কথা শুনে ‘আয়িশাহ্ বলে উঠলেন- ‘আমির কত ভাল লোক ছিলেন। তিনি
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে উহুদ যুদ্ধে শারীক হয়ে
শাহাদাত বরণ করেছেন। এ হাদীসে এ কথাও বর্ণিত হয়েছে যে, হাকীম ইবনু আফ্লাহ
বললেনঃযদি আমার জানা থাকত যে, আপনি ‘আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে যান না তাহলে আমি আপনাকে
তার সম্পর্কে বলতাম না। (ই.ফা. ১৬১২, ই.সে. ১৬১৯)
১৬২৮
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ
مَنْصُورٍ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، جَمِيعًا عَنْ أَبِي عَوَانَةَ، قَالَ
سَعِيدٌ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ
أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم كَانَ إِذَا فَاتَتْهُ الصَّلاَةُ مِنَ اللَّيْلِ مِنْ وَجَعٍ أَوْ
غَيْرِهِ صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ব্যথা-বেদনা
বা অন্য কোন কারণে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রাত্রিকালীন
কোন সলাত ক্বাযা হয়ে গেলে দিনের বেলা তিনি বারো রাক‘আত সলাত আদায় করে নিতেন।
(ই,ফা. ১৬১৩, ই.সে.১৬২০)
১৬২৯
وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى، - وَهُوَ ابْنُ يُونُسَ - عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا عَمِلَ
عَمَلاً أَثْبَتَهُ وَكَانَ إِذَا نَامَ مِنَ اللَّيْلِ أَوْ مَرِضَ صَلَّى مِنَ
النَّهَارِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً . قَالَتْ وَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَامَ لَيْلَةً حَتَّى الصَّبَاحِ وَمَا صَامَ شَهْرًا
مُتَتَابِعًا إِلاَّ رَمَضَانَ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন 'আমাল বা কাজ করলে তা
সর্বদা অর্থাৎ নিয়মিতভাবে করতেন। আর রাতের বেলা ঘুমিয়ে পড়লে বা অসুস্থ হলে
পরিবর্তে দিনের বেলা বারো রাক‘আত সলাত আদায় করে নিতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেনঃ আমি
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কখনো ভোর পর্যন্ত সারারাত জেগে
ইবাদাত করতে বা রমাযান মাস ছাড়া এক নাগাড়ে পুরো মাস সিয়াম পালন করতে দেখেনি।
(ই.ফা. ১৬১৪, ই.সে. ১৬২১)
১৬৩০
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ
مَعْرُوفٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، ح وَحَدَّثَنِي أَبُو
الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ بْنِ
يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، وَعُبَيْدِ اللَّهِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَاهُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدٍ
الْقَارِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ نَامَ عَنْ حِزْبِهِ أَوْ عَنْ شَىْءٍ
مِنْهُ فَقَرَأَهُ فِيمَا بَيْنَ صَلاَةِ الْفَجْرِ وَصَلاَةِ الظُّهْرِ كُتِبَ
لَهُ كَأَنَّمَا قَرَأَهُ مِنَ اللَّيْلِ " .
‘উমার
ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ তার (রাতের
বেলার) অযীফাহ্ বা করণীয় কাজ কিংবা তার কিছু অংশ করতে ভুলে গেলে তা যদি সে ফাজ্র
ও যুহরের সলাতের মধ্যবর্তী কোন এক সময়ে আদায় করে নেয় তাহলে তা এমনভাবে তার জন্য
লিখে নেয়া হবে যেন সে তা রাতের বেলায়ই সম্পন্ন করেছে। (ই.ফা. ১৬১৫, ই.সে. ১৬২২)
১৯. অধ্যায়ঃ
যখন উটের বাচ্চা গরম অনুভব
করে (দিনের উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়) তখনই সলাতুল আও্ওয়াবীন (চাশ্তের সলাতের সময়)
১৬৩১
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ
بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - وَهُوَ ابْنُ
عُلَيَّةَ - عَنْ أَيُّوبَ، عَنِ الْقَاسِمِ الشَّيْبَانِيِّ، أَنَّ زَيْدَ بْنَ
أَرْقَمَ، رَأَى قَوْمًا يُصَلُّونَ مِنَ الضُّحَى فَقَالَ أَمَا لَقَدْ عَلِمُوا
أَنَّ الصَّلاَةَ فِي غَيْرِ هَذِهِ السَّاعَةِ أَفْضَلُ . إِنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " صَلاَةُ الأَوَّابِينَ حِينَ تَرْمَضُ
الْفِصَالُ " .
ক্বাসিম
আশ্ শায়বানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যায়দ
ইবনু আর্ক্বাম (রাঃ) একদল লোককে ‘যুহা’ বা চাশ্তের সলাত আদায় করতে দেখে বললেনঃ
এখন তো লোকজন জেনে নিয়েছে যে , এ সময় ব্যতীত অন্য সময় সলাত আদায় করা উত্তম বা
সর্বাধিক মর্যাদার। কেননা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
‘সলাতুল আওয়াবীন’ বা আল্লাহকে অধিক স্মরনকারী বান্দাদের সলাতের সময় হল তখন, যখন
সূর্যতাপে উটের বাচ্চাদের পা গরম হয়ে যায়। (ই.ফা. ১৬১৬, ই.সে. ১৬২৩)
১৬৩২
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ
حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ أَبِي عَبْدِ
اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ زَيْدِ بْنِ
أَرْقَمَ، قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى أَهْلِ قُبَاءٍ
وَهُمْ يُصَلُّونَ فَقَالَ " صَلاَةُ الأَوَّابِينَ إِذَا رَمِضَتِ الْفِصَالُ
" .
যায়দ
ইবনু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুবাবাসীদের এলাকায়
গেলেন। সে সময় তারা সলাত আদায় করছিলেন। এ দেখে তিনি বললেনঃ ‘সলাতুল আও্ওয়াবীন’ বা
চাশ্তের সলাতের উত্তম সময় হ'ল যখন সূর্যতাপে বালু গরম হাওয়ার কারণে উটের
বাচ্চাগুলো পা উত্তপ্ত হতে শুরু করে। (ই.ফা. ১৬১৭, ই.সে. ১৬২৪)
২০. অধ্যায়ঃ
রাত্রিকালের সলাত দু' দু'
রাক‘আত, আর রাত্রির শেষে এক রাক‘আত বিতর
১৬৩৩
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى
بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ، وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ
دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم عَنْ صَلاَةِ اللَّيْلِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" صَلاَةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا خَشِيَ أَحَدُكُمُ الصُّبْحَ
صَلَّى رَكْعَةً وَاحِدَةً تُوتِرُ لَهُ مَا قَدْ صَلَّى " .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জনৈক
ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাতের সলাত সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ রাতের সলাত দু‘ দু‘ রাক‘আত করে আদায় করবে। যখন ভোর হওয়ার
সম্ভাবনা দেখবে তখন এক রাক‘আত সলাত আদায় করে নিবে। যে সলাত আদায় করেছে এভাবে তা
বিতরে পরিণত হবে। (ই.ফা. ১৬১৮, ই.সে. ১৬২৫)
১৬৩৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ
بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ
زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ،
عَنْ أَبِيهِ، سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ح وَحَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا
عَمْرٌو، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، ح وَحَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ
سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ
صَلاَةِ اللَّيْلِ فَقَالَ " مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا خَشِيتَ الصُّبْحَ
فَأَوْتِرْ بِرَكْعَةٍ " .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জনৈক
ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে রাতের (নাফ্ল) সলাত সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন-রাতের সলাত দু‘ দু‘ রাক‘আত করে আদায় করবে। তবে ভোর হয়ে
আসছে দেখলে এক রাক‘আত বিত্র আদায় করে নিবে। (ই.ফা. ১৬১৯, ই.সে. ১৬২৬)
১৬৩৫
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ
بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، أَنَّ
ابْنَ شِهَابٍ، حَدَّثَهُ أَنَّ سَالِمَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ
وَحُمَيْدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ حَدَّثَاهُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، أَنَّهُ قَالَ قَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ كَيْفَ صَلاَةُ اللَّيْلِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" صَلاَةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا خِفْتَ الصُّبْحَ فَأَوْتِرْ
بِوَاحِدَةٍ " .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, (একদিন) জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল-হে আল্লাহর রসূল! রাতের সলাত কীভাবে আদায়
করতে হবে? জবাবে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ রাতের সলাত
দু‘ দু‘ রাক‘আত করে আদায় করবে। অতঃপর যখন ভোর হয়ে আসছে বলে মনে করবে তখন এক রাক‘আত
বিত্র আদায় করবে। (ই.ফা. ১৬২০, ই.সে. ১৬২৭)
১৬৩৬
وَحَدَّثَنِي أَبُو
الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ،
وَبُدَيْلٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ،
أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ
السَّائِلِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ صَلاَةُ اللَّيْلِ قَالَ "
مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا خَشِيتَ الصُّبْحَ فَصَلِّ رَكْعَةً وَاجْعَلْ آخِرَ
صَلاَتِكَ وِتْرًا " . ثُمَّ سَأَلَهُ رَجُلٌ عَلَى رَأْسِ الْحَوْلِ
وَأَنَا بِذَلِكَ الْمَكَانِ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلاَ
أَدْرِي هُوَ ذَلِكَ الرَّجُلُ أَوْ رَجُلٌ آخَرُ فَقَالَ لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন
জনৈক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করল : হে আল্লাহর
রসূল! রাতের সলাত কিভাবে আদায় করতে হবে? আমি সে সময় প্রশ্নকারী ও নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মাঝে (দাঁড়িয়ে) ছিলাম। জবাবে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ দু’ রাক‘আত দু’ রাকআত সলাত আদায় করবে।
আর বিত্র পড়ে তোমার সলাত শেষ করবে। (‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার বলেন) এক বছর পর জনৈক
ব্যক্তি তাকে একই প্রশ্ন করল। আমি জানি না এ ব্যক্তি পূর্বের প্রশ্নকারী সে
ব্যক্তি না অন্য আরেক ব্যক্তি। এবারও আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর পাশে একই স্থানে ছিলাম। তিনি তাকে পূর্বের মতই জবাব দিলেন। (ই.ফা.
১৬২১, ই.সে. ১৬২৮)
১৬৩৭
وَحَدَّثَنِي أَبُو
كَامِلٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، وَبُدَيْلٌ، وَعِمْرَانُ بْنُ
حُدَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، ح وَحَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْغُبَرِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ،
وَالزُّبَيْرُ بْنُ الْخِرِّيتِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ، قَالَ سَأَلَ رَجُلٌ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم . فَذَكَرَا
بِمِثْلِهِ وَلَيْسَ فِي حَدِيثِهِمَا ثُمَّ سَأَلَهُ رَجُلٌ عَلَى رَأْسِ
الْحَوْلِ وَمَا بَعْدَهُ .
'আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করল।
এতটুকু বর্ণনা করার পর উভয়ে (আবূ কামিল ও মুহাম্মাদ ইবনু ‘উবায়দ আল গুবারী) পূর্ব
বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করলেন। তবে তাদের বর্ণিত হাদীসে ‘অতঃপর এক বছর
পরে তাঁকে জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল’ এবং এর পরের কথাগুলোর উল্লেখ নেই। (ই.ফা.
১৬২২, ই.সে. ১৬২৯)
১৬৩৮
وَحَدَّثَنَا هَارُونُ
بْنُ مَعْرُوفٍ، وَسُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ جَمِيعًا عَنِ ابْنِ أَبِي
زَائِدَةَ، - قَالَ هَارُونُ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، - أَخْبَرَنِي
عَاصِمٌ الأَحْوَلُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " بَادِرُوا الصُّبْحَ بِالْوِتْرِ
" .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভোর হওয়ার পূর্বেই বিত্র আদায় কর।
(ই.ফা. ১৬২৩, ই.সে. ১৬৩০)
১৬৩৯
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ
بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ رُمْحٍ، أَخْبَرَنَا
اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، قَالَ مَنْ صَلَّى مِنَ اللَّيْلِ
فَلْيَجْعَلْ آخِرَ صَلاَتِهِ وِتْرًا فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
كَانَ يَأْمُرُ بِذَلِكَ .
আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যে ব্যক্তি রাতের বেলায় নাফ্ল সলাত আদায় করবে সে যেন বিত্র সলাত সর্বশেষে
আদায় করবে। কেননা, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এভাবেই সলাত
আদায় করতে আদেশ করতেন। (ই.ফা. ১৬২৪, ই.সে. ১৬৩১)
১৬৪০
وَحَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ،
حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ الْمُثَنَّى،
قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، كُلُّهُمْ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ
ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " اجْعَلُوا
آخِرَ صَلاَتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْرًا " .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের রাতের সলাত বিত্র দিয়ে শেষ
কর। (ই.ফা. ১৬২৫, ই.সে. ১৬৩২)
১৬৪১
وَحَدَّثَنِي هَارُونُ
بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ
جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، كَانَ يَقُولُ مَنْ صَلَّى
مِنَ اللَّيْلِ فَلْيَجْعَلْ آخِرَ صَلاَتِهِ وِتْرًا قَبْلَ الصُّبْحِ كَذَلِكَ
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُهُمْ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, কেউ রাতের বেলা সলাত আদায় করলে সে যেন ফাজ্রের পূর্বে শেষ সলাত হিসেবে বিত্র
আদায় করে নেয়। কেননা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে
(সাহাবীগণকে) এভাবে (সলাত আদায় করতে) আদেশ করতেন। (ই.ফা. ১৬২৬, ই.সে. ১৬৩৩)
১৬৪২
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ
بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، قَالَ
حَدَّثَنِي أَبُو مِجْلَزٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " الْوِتْرُ رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ " .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শেষ রাতে বিত্র
সলাতের সময়। আর বিত্র সলাত এক রাক‘আত মাত্র (অথবা শেষ রাতে বিত্র সলাত এক রাক‘আত
আদায় করবে)। (ই.ফা. ১৬২৭, ই.সে. ১৬৩৪)
১৬৪৩
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي
مِجْلَزٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يُحَدِّثُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " الْوِتْرُ رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ " .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিত্র সলাত রাতের শেষাংশে এক রাক‘আত
মাত্র আদায় করতে হয়। (ই.ফা. ১৬২৮, ই.সে. ১৬৩৫)
১৬৪৪
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ
بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا
قَتَادَةُ، عَنْ أَبِي مِجْلَزٍ، قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ عَنِ الْوِتْرِ،
فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " رَكْعَةٌ
مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ " . وَسَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ فَقَالَ سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ
اللَّيْلِ " .
আবূ
মিজলায (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইবনু 'আব্বাস ('আবদুল্লাহ) (রাঃ)-কে বিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি
বললেন, আমি রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি : এক
রাক‘আত সলাত রাতের শেষ ভাগে আদায় করতে হবে। তিনি (আবূ মিজলায) আরো বলেছেনঃ আমি
একইভাবে ইবনু ‘উমার ('আবদুল্লাহ) (রাঃ)-কেও বিষয়টি জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনিও
বলেছিলেন : আমি রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি
বিত্র সলাত এক রাক‘আত, (সলাত ) রাতের শেষ ভাগে আদায় করতে হবে। (ই.ফা. ১৬২৯, ই.সে.
১৬৩৬)
১৬৪৫
وَحَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، وَهَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ،
عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ كَثِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، حَدَّثَهُمْ أَنَّ رَجُلاً نَادَى
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ كَيْفَ أُوتِرُ صَلاَةَ اللَّيْلِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " مَنْ صَلَّى فَلْيُصَلِّ مَثْنَى مَثْنَى فَإِنْ أَحَسَّ أَنْ
يُصْبِحَ سَجَدَ سَجْدَةً فَأَوْتَرَتْ لَهُ مَا صَلَّى " . قَالَ أَبُو
كُرَيْبٍ عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ . وَلَمْ يَقُلِ ابْنِ عُمَرَ
.
‘আবদুল্লাহ
ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জনৈক
ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে উচ্চৈঃস্বরে ডাকল। তিনি
তখন মাসজিদে ছিলেন। সে বলল : হে আল্লাহর রসূল! আমি রাতের সলাত কীভাবে বিত্র বা
বেজোড় সলাত আদায় করব? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ
কেউ রাতে (নাফ্ল) সলাত আদায় করলে দু‘রা ’আত দু‘ রাক‘আত করে আদায় করবে। অতঃপর ভোর
হওয়ার আভাস পেলে এক রাক‘আত সলাত আদায় করে নিবে। এ এক রাক‘আত সলাতই সে যত সলাত আদায়
করছে সেগুলোকে বিত্র বা বেজোড় করে দিবে।
আবূ কুরায়ব তার বর্ণনায় 'আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ)-এর নাম উল্লেখ না করে
‘উবায়দুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ১৬৩০, ই.সে. ১৬৩৭)
১৬৪৬
حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ
هِشَامٍ، وَأَبُو كَامِلٍ قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ سِيرِينَ، قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ قُلْتُ أَرَأَيْتَ الرَّكْعَتَيْنِ
قَبْلَ صَلاَةِ الْغَدَاةِ أَأُطِيلُ فِيهِمَا الْقِرَاءَةَ قَالَ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى وَيُوتِرُ
بِرَكْعَةٍ - قَالَ - قُلْتُ إِنِّي لَسْتُ عَنْ هَذَا أَسْأَلُكَ . قَالَ
إِنَّكَ لَضَخْمٌ أَلاَ تَدَعُنِي أَسْتَقْرِئُ لَكَ الْحَدِيثَ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى وَيُوتِرُ
بِرَكْعَةٍ وَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْغَدَاةِ كَأَنَّ الأَذَانَ
بِأُذُنَيْهِ . قَالَ خَلَفٌ أَرَأَيْتَ الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْغَدَاةِ
وَلَمْ يَذْكُرْ صَلاَةِ .
আনাস
ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, ফাজ্রের সলাতের পূর্বের
দু‘ রাক‘আত সলাতে আমি কিরাআত দীর্ঘায়িত করে থাকি-এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী? তিনি
বললেনঃরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা নাফ্ল সলাত দু‘
দু‘ রাক‘আত করে আদায় করতেন এবং এক রাক‘আত বিত্র বা বেজোড় আদায় করতেন। আনাস ইবনু
সীরীন বলেন-এ সময় আমি বললাম : আমি তো আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করছি না। (আমার এ কথা
বলার পর) তিনি বললেনঃতুমি তো মোটা বুদ্ধির লোক দেখছি! তুমি কি আমাকে হাদীসটা
(পুরো) বলতে দিবে না।! রসুলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা
নাফ্ল সলাত দু‘ দু‘ রাক‘আত করে আদায় করতেন এবং পরে এক রাক‘আত বিত্র বা বেজোড়
আদায় করতেন। আর ফাজ্রের সলাতের পুর্বে দু‘ রাক‘আত নাফ্ল এমনভাবে আদায় করতেন যেন
তিনি ‘ইক্বামাত' বা তাকবীর শুনতে পাচ্ছেন।
খালাফ ইবনু হিশাম তাঁর বর্ণনাতে “ফাজ্রের পূর্বের দু‘ রাক‘আত সলাত সম্পর্কে আপনার
মতামত কী” কথাটি উল্লেখ করেছেন। তিনি ‘সলাত’ শব্দটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৬৩১,
ই.সে. ১৬৩৮)
১৬৪৭
وَحَدَّثَنَا ابْنُ
الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ .
بِمِثْلِهِ وَزَادَ وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ . وَفِيهِ
فَقَالَ بَهْ بَهْ إِنَّكَ لَضَخْمٌ .
আনাস
ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, “আমি আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম” ..... পূর্ব বর্ণিত
হাদীসের অনুরূপ। তবে তার বর্ণনাতে তিনি এতটুকু কথা অধিক বলেছেন যে, আর তিনি রাতের
শেষভাগে এক রাক‘আত বিত্র আদায় করতেন। তাঁর বর্ণনাতে এ কথাও উল্লেখ আছে যে,
‘আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার বললেনঃ আরে থামো থামো! তুমি তো মোটা বুদ্ধির লোক দেখছি।
(ই.ফা. ১৬৩২, ই.সে. ১৬৩৯)
১৬৪৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ،
قَالَ سَمِعْتُ عُقْبَةَ بْنَ حُرَيْثٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يُحَدِّثُ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " صَلاَةُ اللَّيْلِ
مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا رَأَيْتَ أَنَّ الصُّبْحَ يُدْرِكُكَ فَأَوْتِرْ
بِوَاحِدَةٍ " . فَقِيلَ لاِبْنِ عُمَرَ مَا مَثْنَى مَثْنَى قَالَ أَنْ
يُسَلِّمَ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসুলূল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রাতের সলাত (নাফ্ল সলাত ) দু’ রাক‘আত
করে আদায় করবে। তবে যখন দেখবে যে, সকাল হয়ে যাচেছ তখন এক রাক‘আত বিত্র আদায় করবে।
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হল-দু‘ দু‘ রাক‘আত কীভাবে আদায় করতে
হবে? তিনি বললেনঃ প্রতি দু‘ রাক‘আত আদায় করে সালাম ফিরাবে। (ই.ফা.১৬৩৩, ই.সে.
১৬৪০)
১৬৪৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ
بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَوْتِرُوا قَبْلَ
أَنْ تُصْبِحُوا " .
আবূ
সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভোর (ফাজ্র) হবার পূর্বেই বিত্র
সলাত আদায় কর। (ই.ফা. ১৬৩৪,ই.সে. ১৬৪১)
১৬৫০
وَحَدَّثَنِي إِسْحَاقُ
بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ يَحْيَى،
قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو نَضْرَةَ الْعَوَقِيُّ، أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ،
أَخْبَرَهُمْ أَنَّهُمْ، سَأَلُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْوِتْرِ
فَقَالَ " أَوْتِرُوا قَبْلَ الصُّبْحِ " .
আবূ
সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারা
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফাজ্রের ওয়াক্তের পূর্বেই বিত্র
আদায় করে নাও। (ই.ফা. ১৬৩৫, ই.সে. ১৬৪২)
২১.অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি এ আশঙ্কা করে যে,
সে শেষ রাত্রে (ঘুম থেকে) জাগ্রত হতে পারবে না, সে যেন রাতের প্রথম অংশেই তা আদায়
করে নেয়।
১৬৫১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ
بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصٌ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " مَنْ خَافَ أَنْ لاَ يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ
أَوَّلَهُ وَمَنْ طَمِعَ أَنْ يَقُومَ آخِرَهُ فَلْيُوتِرْ آخِرَ اللَّيْلِ
فَإِنَّ صَلاَةَ آخِرِ اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ وَذَلِكَ أَفْضَلُ " .
وَقَالَ أَبُو مُعَاوِيَةَ مَحْضُورَةٌ .
জাবির
ইবনু 'আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শেষ রাতে জাগতে
পারবে না বলে কারো আশঙ্কা হলে সে যেন রাতের প্রথমভাগেই ('ইশার সলাতের পর) বিত্র
আদায় করে নেয়। আর কেউ যদি শেষ রাতে জাগতে আগ্রহী থাকে (অর্থাৎ শেষ রাতে জাগতে
পারবে বলে নিশ্চিত হতে পারে) তাহলে সে যেন শেষভাগে বিত্র আদায় করে নেয়। কেননা,
শেষ রাতের সলাতে (মালাকগণের) উপস্থিতি থাকে। আর এটাই সর্বোত্তম ব্যবস্থা। হাদীসটি
বর্ণনাকারীর আবূ মু‘আবিয়াহ্ (আরবী) শব্দের পরিবর্তে (আরবী) শব্দ উল্লেখ করেছেন।
(ই.ফা. ১৬৩৬, ই.সে. ১৬৪৩)
১৬৫২
وَحَدَّثَنِي سَلَمَةُ
بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَعْيَنَ، حَدَّثَنَا مَعْقِلٌ، - وَهُوَ
ابْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ - عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " أَيُّكُمْ خَافَ أَنْ لاَ
يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ ثُمَّ لْيَرْقُدْ وَمَنْ وَثِقَ
بِقِيَامٍ مِنَ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ مِنْ آخِرِهِ فَإِنَّ قِرَاءَةَ آخِرِ
اللَّيْلِ مَحْضُورَةٌ وَذَلِكَ أَفْضَلُ " .
জাবির
ইবনু 'আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ
যদি শেষ রাতে জাগতে পারবে না বলে আশঙ্কা করে তাহলে বিত্র সলাত আদায় করে ঘুমাবে।
আর যার শেষরাতে জাগতে পারার আত্মবিশ্বাস বা নিশ্চয়তা আছে সে শেষ রাতে বিত্র আদায়
করবে। কেননা শেষ রাতের কুরআন পাঠে মালায়িকাহ্ উপস্থিত থাকে। আর এটা সর্বাপেক্ষা
উত্তমও বটে। (ই.ফা. ১৬৩৭, ই.সে. ১৬৪৪)
২২. অধ্যায়ঃ
ঐ সলাত সর্বোত্তম যাতে
ক্বিরাআত লম্বা করা হয়
১৬৫৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ
حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو عَاصِمٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي
أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" أَفْضَلُ الصَّلاَةِ طُولُ الْقُنُوتِ " .
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে সলাতে দীর্ঘক্ষন
দাঁড়িয়ে ক্বিরাআত পড়া হয় সে সলাতই সর্বোত্তম সলাত। (ই.ফা. ১৬৩৮, ই.সে. ১৬৪৫)
১৬৫৪
وَحَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو
مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ
سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الصَّلاَةِ أَفْضَلُ قَالَ
" طُولُ الْقُنُوتِ " . قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ
عَنِ الأَعْمَشِ .
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল :
কোন্ সলাত সবচেয়ে উত্তম? জবাবে তিনি বলেছিলেন : দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে যে সলাত আদায়
করা হয় সে সলাত সবচেয়ে উত্তম। আবূ বাক্র ইবনু আবূ শায়বাহ্ বলেছেন যে, হাদীসটি আবূ
মু‘আবিয়াহ্ আ‘মাশের নিকট থেকে শুনে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬৩৯, ই.সে. ১৬৪৬)
২৩. অধ্যায়ঃ
রাতে এমন একটি সময় রয়েছে যে
সময় দু‘আ কবূল হয়
১৬৫৫
وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ
بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ،
عَنْ جَابِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ "
إِنَّ فِي اللَّيْلِ لَسَاعَةً لاَ يُوَافِقُهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ
خَيْرًا مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ إِلاَّ أَعْطَاهُ إِيَّاهُ وَذَلِكَ
كُلَّ لَيْلَةٍ " .
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি : সারা রাতের
মধ্যে এমন একটি বিশেষ সময় আছে যে সময়ে কোন মুসলিম আল্লাহর কাছে দুন্ইয়া ও আখিরাতের
কোন কল্যাণ প্রার্থনা করলে তিনি তাকে তা দান করেন। আর ঐ বিশেষ সময়টি প্রত্যেক
রাতেই থাকে। (ই.ফা. ১৬৪০, ই.সে. ১৬৪৭)
১৬৫৬
وَحَدَّثَنِي سَلَمَةُ
بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَعْيَنَ، حَدَّثَنَا مَعْقِلٌ، عَنْ
أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إِنَّ مِنَ اللَّيْلِ سَاعَةً لاَ يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ
يَسْأَلُ اللَّهَ خَيْرًا إِلاَّ أَعْطَاهُ إِيَّاهُ " .
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রাতের মধ্যে একটি বিশেষ সময় আছে, সে
সময় কোন মুসলিম বান্দা যদি আল্লাহর কাছে কোন কল্যাণ প্রার্থনা করে তাহলে তিনি তাকে
তা দান করেন। (ই.ফা. ১৬৪১, ই.সে. ১৬৪৮)
২৪.অধ্যায়ঃ
শেষ রাতে যিক্র ও প্রার্থনা
করা এবং দু‘আ কবূল হওয়ার আলোচনা
১৬৫৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي عَبْدِ
اللَّهِ الأَغَرِّ، وَعَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَنْزِلُ
رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ
يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ فَيَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ
وَمَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ وَمَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ "
.
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক রাতে যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ
থাকে তখন আমাদের প্রতিপালক মহান ও কল্যাণময় আল্লাহ দুন্ইয়ার আসমানে অবতরণ করে
বলতে থাকেন : কে এমন আছ, যে এখন আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিব। এখন কে এমন
আছ যে, আমার কাছে প্রার্থনা করবে, আমি তাকে দান করব। আর কে এমন আছ, যে আমার কাছে
ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। (ই.ফা. ১৬৪২, ই.সে. ১৬৪৯)
১৬৫৮
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ
بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
الْقَارِيُّ - عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَنْزِلُ
اللَّهُ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا كُلَّ لَيْلَةٍ حِينَ يَمْضِي ثُلُثُ
اللَّيْلِ الأَوَّلُ فَيَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ أَنَا الْمَلِكُ مَنْ ذَا الَّذِي
يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ ذَا الَّذِي يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ مَنْ
ذَا الَّذِي يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ فَلاَ يَزَالُ كَذَلِكَ حَتَّى
يُضِيءَ الْفَجْرُ " .
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ প্রত্যেক
রাতে যখন রাতের প্রথম তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হয় তখন আল্লাহ তা‘আলা দুন্ইয়ার আসমানে
অবতরণ করে বলতে থাকেন-আমিই একমাত্র বাদশাহ্! কে এমন আছ আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে
সাড়া দিব। কে এমন আছ আমার কাছে প্রার্থনা করবে, আমি তাকে দান করব। কে এমন আছ যে
আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করব, ফাজ্রের আলো ছড়িয়ে না পড়া পর্যন্ত
আল্লাহ তা‘আলা এরূপ বলতে থাকেন। (ই.ফা. ১৬৪৩, ই.সে. ১৬৫০)
১৬৫৯
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ،
حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِذَا مَضَى شَطْرُ اللَّيْلِ أَوْ ثُلُثَاهُ يَنْزِلُ اللَّهُ تَبَارَكَ
وَتَعَالَى إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ هَلْ مِنْ سَائِلٍ يُعْطَى هَلْ
مِنْ دَاعٍ يُسْتَجَابُ لَهُ هَلْ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى
يَنْفَجِرَ الصُّبْحُ " .
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রাতের অর্ধেক অথবা
দু‘ তৃতীয়াংশ অতিক্রম হলে মহান ও বারাকাতময় আল্লাহ দুন্ইয়ার আসমানে অবতরণ করে
বলতে থাকেন : কোন প্রার্থনাকারী আছে কি যাকে দেয়া হবে? কোন আহ্বানকারী আছে কি যার
আহ্বানে সাড়া দেয়া হবে? কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি, যাকে ক্ষমা করা হবে?
আল্লাহ তাআলা ভোর প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত এরূপ বলতে থাকেন। (ই.ফা. ১৬৪৪, ই.সে.
১৬৫১)
১৬৬০
حَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ
الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا مُحَاضِرٌ أَبُو الْمُوَرِّعِ، حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ
سَعِيدٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ مَرْجَانَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ،
يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَنْزِلُ اللَّهُ فِي
السَّمَاءِ الدُّنْيَا لِشَطْرِ اللَّيْلِ أَوْ لِثُلُثِ اللَّيْلِ الآخِرِ
فَيَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ أَوْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ .
ثُمَّ يَقُولُ مَنْ يُقْرِضُ غَيْرَ عَدِيمٍ وَلاَ ظَلُومٍ " . قَالَ
مُسْلِمٌ ابْنُ مَرْجَانَةَ هُوَ سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَمَرْجَانَةُ
أُمُّهُ
ইবনু
মারজানাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ রাতের অর্ধেকের সময় অথবা শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে মহান আল্লাহ
দুন্ইয়ার আসমানে অবতরণ করে বলতে থাকেন : কে আছে আহ্বানকারী? (আহ্বান কর) আমি তার
আহবানে সাড়া দান করব। কে আছে প্রার্থনাকারী? (প্রার্থনা কর) আমি দান করব। এরপর
আল্লাহ তা‘আলা বলতে থাকেন : এমন সত্তাকে কে কর্জ দিবে যিনি কখনো ফকির বা দরিদ্র
হবেন না বা যুল্ম করতে পারেন না? [৩২] ইমাম মুসলিম বলেছেনঃ ইবনু মারজানাহ্ হলেন
সা‘ঈদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ। মারজানাহ্ তার মায়ের নাম। (ই.ফা. ১৬৪৫, ই.সে. ১৬৫২)
[৩২]
কর্জ বলতে সদাক্বাহ, সলাত , সওম, যিকর এবং আল্লাহ তা‘আলার অন্যান্য আনুগত্যমূলক কাজসমূহ
বুঝানো হয়েছে। এ সবের নাম মহান আল্লাহ কর্জ বলে অভিহিত করেছেন, আপন বান্দাদের প্রতি
স্নেহ প্রকাশার্থে এবং উৎসাহ দানের জন্য যেন তারা আনুগত্যমূলক কাজসমূহ চালিয়ে যায়;
কেননা প্রীতি ও প্রেমের সম্পর্ক থাকলেই কর্জ দান করা হয়। এক্ষেত্রে বান্দা নিশ্চিতরূপেই
নিজ প্রদেয় কর্জ ফিরে পাবে বিধায় যেন সন্তষ্টিচিত্তে ‘আমাল চালিয়ে যায়। (মুসলিম শারহে
নাবাবী-১ম খন্ড ২৫৮ পৃষ্ঠা)
১৬৬১
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ
سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ
بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ "
ثُمَّ يَبْسُطُ يَدَيْهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ مَنْ يُقْرِضُ غَيْرَ
عَدُومٍ وَلاَ ظَلُومٍ " .
সা‘দ
ইবনু সা‘ঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা‘দ
ইবনু সা‘ঈদ (রহঃ) থেকে এই একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এতে তিনি অতিরিক্ত
এতটুকু বর্ণনা করেছেন যে, অতঃপর মহান ও বারাকাতময় আল্লাহ নিজের দু‘হাত প্রসারিত
করে বলেনঃ যিনি কখনো দরিদ্র হবেন না, কিংবা যুলম করেন না এমন সত্তাকে ঋন দেয়ার
জন্য কে আছ? (ই.ফা. ১৬৪৬, ই.সে. ১৬৫৩)
১৬৬২
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ،
وَأَبُو بَكْرٍ ابْنَا أَبِي شَيْبَةَ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ
الْحَنْظَلِيُّ - وَاللَّفْظُ لاِبْنَىْ أَبِي شَيْبَةَ - قَالَ إِسْحَاقُ
أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ، عَنِ الأَغَرِّ أَبِي مُسْلِمٍ، يَرْوِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ،
وَأَبِي، هُرَيْرَةَ قَالاَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِنَّ اللَّهَ يُمْهِلُ حَتَّى إِذَا ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ الأَوَّلُ نَزَلَ
إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ هَلْ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ هَلْ مِنْ تَائِبٍ
هَلْ مِنْ سَائِلٍ هَلْ مِنْ دَاعٍ حَتَّى يَنْفَجِرَ الْفَجْرُ " .
আবূ
সা‘ঈদ আল খুদরী ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা অবকাশ
দেন বা দেরী করেন না। এভাবে যখন রাতের প্রথম এক তৃতীয়াংশ অতিক্রম হয়ে যায় তখন তিনি
দুন্ইয়ার আকাশে নেমে এসে বলতে থাকেন : কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি (যে ক্ষমা
প্রার্থনা করবে, আর আমি তাকে ক্ষমা করব)? কোন তাওবাহ্কারী আছে কি (যে তাওবাহ্
করবে আর আমি তার তাওবাহ্ ক্ববুল করব)? কোন প্রার্থনাকারী আছে কি (যে প্রার্থনা
করবে আর আমি তার প্রার্থনা ক্ববূল করব)? কোন আহ্বানকারী আছে কি(আমি যার আহ্বানে
দিব)? এভাবে ফাজ্রের ওয়াক্ত পর্যন্ত তিনি বলতে থাকেন। (ই.ফা. ১৬৪৭,ই.সে. ১৬৫৪)
১৬৬৩
وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . غَيْرَ أَنَّ
حَدِيثَ، مَنْصُورٍ أَتَمُّ وَأَكْثَرُ .
শু‘বাহ্-এর
মাধ্যমে আবূ ইসহাক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই
সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে মানসূর (রহঃ) বর্ণিত হাদীসটি পূর্ণাঙ্গ ও বেশী
স্পষ্ট। (ই.ফা. ১৬৪৮, ই.সে. ১৬৫৫)
২৫. অধ্যায়ঃ
রমাযানে তারাবীহ সলাত আদায়
করা প্রসঙ্গে উৎসাহ প্রদান করা
১৬৬৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ
مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ " .
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে
ব্যক্তি রমাযান মাসে ঈমানের সাথে ও একান্ত আল্লাহর সন্তষ্টির নিমিত্তে তারাবীহ পড়ে
তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। (ই.ফা. ১৬৪৯, ই.সে. ১৬৫৬)
১৬৬৫
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ
حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُرَغِّبُ فِي قِيَامِ رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ أَنْ
يَأْمُرَهُمْ فِيهِ بِعَزِيمَةٍ فَيَقُولُ " مَنْ قَامَ رَمَضَانَ
إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ " .
فَتُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالأَمْرُ عَلَى ذَلِكَ ثُمَّ
كَانَ الأَمْرُ عَلَى ذَلِكَ فِي خِلاَفَةِ أَبِي بَكْرٍ وَصَدْرًا مِنْ خِلاَفَةِ
عُمَرَ عَلَى ذَلِكَ .
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দৃঢ় বা কঠোরভাবে নির্দেশ না
দিয়ে রমাযান মাসের তারাবীহ পড়তে উৎসাহিত করে বলতেন: যে ব্যক্তি ঈমানসহ ও একান্ত
আল্লাহর সন্তষ্টির নিমিত্তে রমাযান মাসের তারাবীহ পড়ল তার পূর্বের সব পাপ ক্ষমা
করে দেয়া হয়। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুবরণ
করলেন। তখনও এ অবস্থা চলছিল (অর্থাৎ মানুষকে তারাবীহ পড়তে নির্দেশ না দিয়ে শুধু
উৎসাহিত করা হত)। আবূ বকর (রাঃ) এর খিলাফতকালে এবং ‘উমার (রাঃ) এর খিলাফতের প্রথম
দিকেও এ নীতি কার্যকর ছিল। (ই.ফা. ১৬৫০, ই.সে. ১৬৫৭)
১৬৬৬
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ
بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ يَحْيَى
بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ،
أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، حَدَّثَهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا
تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا
غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ " .
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমাযান মাসে ঈমান ও একান্ত
আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে সিয়াম পালন করবে তার পূর্ববর্তী সব পাপ ক্ষমা করে
দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ক্বদরের রাতে ঈমানসহ ও একান্ত আল্লাহর সন্তষ্টির নিমিত্তে
সলাত আদায় করবে তারও পূর্ববর্তী সব পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (ই.ফা. ১৬৫১, ই.সে.
১৬৫৮)
১৬৬৭
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ
بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنِي وَرْقَاءُ، عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " مَنْ يَقُمْ لَيْلَةَ الْقَدْرِ فَيُوَافِقُهَا -
أُرَاهُ قَالَ - إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ " .
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ক্বদরের রাতে
জাগরণ করতে গিয়ে তা পেয়ে গেল, তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। (রাবী বলেন) আমার মনে হয়
তিনি ‘ঈমান ও সাওয়াবের আশায়’ কথাটি বলেছেন। (ই.ফা. ১৬৫২, ই.সে. ১৬৫৯)
১৬৬৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ
عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي الْمَسْجِدِ
ذَاتَ لَيْلَةٍ فَصَلَّى بِصَلاَتِهِ نَاسٌ ثُمَّ صَلَّى مِنَ الْقَابِلَةِ
فَكَثُرَ النَّاسُ ثُمَّ اجْتَمَعُوا مِنَ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ أَوِ
الرَّابِعَةِ فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَلَمَّا أَصْبَحَ قَالَ " قَدْ رَأَيْتُ الَّذِي صَنَعْتُمْ فَلَمْ
يَمْنَعْنِي مِنَ الْخُرُوجِ إِلَيْكُمْ إِلاَّ أَنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ
عَلَيْكُمْ " . قَالَ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে সলাত আদায় করলেন।
তাঁর সাথে কিছু সংখ্যক লোকও সলাত আদায় করল। পরের রাতেও তিনি মাসজিদে সলাত আদায়
করলেন। লোকজন সংখ্যায় অনেক বেশী হয়ে গেল। অতঃপর তৃতীয় কিংবা চতুর্থ রাতেও অনেক লোক
এসে একত্র হ‘ল। কিন্তু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর তাদের
সাথে যোগ দিলেন না। সকাল বেলা তিনি সবাইকে বললেনঃ (গত রাতে) তোমরা যা করেছ তা আমি
দেখেছি। তবে শুধু এ আশঙ্কায় আমি তোমাদের সাথে যোগদান করিনি যে, তোমাদের ওপর তা ফরয
করে দেয়া হতে পারে। তিনি (‘আয়িশাহ্) বলেছেনঃ ঘটনাটি রমাযান মাসে সংঘটিত হয়েছে।
(ই.ফা. ১৬৫৩, ই.সে. ১৬৬০)
১৬৬৯
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ
بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ بْنُ
يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ
عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ مِنْ
جَوْفِ اللَّيْلِ فَصَلَّى فِي الْمَسْجِدِ فَصَلَّى رِجَالٌ بِصَلاَتِهِ
فَأَصْبَحَ النَّاسُ يَتَحَدَّثُونَ بِذَلِكَ فَاجْتَمَعَ أَكْثَرُ مِنْهُمْ
فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي اللَّيْلَةِ الثَّانِيَةِ
فَصَلَّوْا بِصَلاَتِهِ فَأَصْبَحَ النَّاسُ يَذْكُرُونَ ذَلِكَ فَكَثُرَ أَهْلُ
الْمَسْجِدِ مِنَ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ فَخَرَجَ فَصَلَّوْا بِصَلاَتِهِ
فَلَمَّا كَانَتِ اللَّيْلَةُ الرَّابِعَةُ عَجَزَ الْمَسْجِدُ عَنْ أَهْلِهِ
فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَطَفِقَ رِجَالٌ
مِنْهُمْ يَقُولُونَ الصَّلاَةَ . فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم حَتَّى خَرَجَ لِصَلاَةِ الْفَجْرِ فَلَمَّا قَضَى الْفَجْرَ
أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ ثُمَّ تَشَهَّدَ فَقَالَ " أَمَّا بَعْدُ
فَإِنَّهُ لَمْ يَخْفَ عَلَىَّ شَأْنُكُمُ اللَّيْلَةَ وَلَكِنِّي خَشِيتُ أَنْ
تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ صَلاَةُ اللَّيْلِ فَتَعْجِزُوا عَنْهَا " .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাড়ী থেকে মাসজিদে গিয়ে সলাত
আদায় করলেন, অনেক লোকও তাঁর সাথে সলাত আদায় করল। পরদিন লোকজন এ ব্যাপার নিয়ে
আলোচনা করল। সুতরাং ঐ দিন রাতে আরো বেশী লোক (মাসজিদে) একত্রিত হ‘ল। ঐ দ্বিতীয়
রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে তাদের মাঝে উপস্থিত
হলেন। সবাই তাঁর সাথে সলাত আদায় করল। পরদিনও লোকজন এ ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করল।
সুতরাং তৃতীয় রাতে লোকের সংখ্যা আরো বেড়ে গেল। রাতেও তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে তাদের মাঝে গেলেন। লোকজন তাঁর সাথে সলাত আদায় করল। কিন্তু
চতুর্থ রাতে লোক সংখ্যা এত বেশী হ‘ল যে, মাসজিদে জায়গা সংকুলান হ‘ল না। কিন্তু
রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে আসলেন না। তাঁদের
মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক লোক সলাত বলে ডাকতে শুরু করল। কিন্তু তিনি ঐ রাতে আর বের
হলেন না। বরং ফাজ্রের ওয়াক্তে বের হলেন। ফাজ্রের সলাত শেষ করে তিনি লোকদের দিকে
ঘুরলেন, তাশাহ্হুদ পড়লেন, তারপর “আম্মাবাদ” বলে শুরু করলেন। তিনি বললেনঃ গতরাতে
তোমাদের ব্যাপারটা আমার অজানা নয়। কিন্তু আমি আশঙ্কা করেছিলাম যে, রাতের এ সলাতটি
তোমাদের জন্য ফরয করে দেয়া হতে পারে। আর তোমরা তা পালন করতে অক্ষম হয়ে পড়বে।
(ই.ফা. ১৬৫৪, ই.সে. ১৬৬১)
১৬৭০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
مِهْرَانَ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا
الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي عَبْدَةُ، عَنْ زِرٍّ، قَالَ سَمِعْتُ أُبَىَّ بْنَ
كَعْبٍ، يَقُولُ - وَقِيلَ لَهُ إِنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ يَقُولُ مَنْ
قَامَ السَّنَةَ أَصَابَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ - فَقَالَ أُبَىٌّ وَاللَّهِ الَّذِي
لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ إِنَّهَا لَفِي رَمَضَانَ - يَحْلِفُ مَا يَسْتَثْنِي -
وَوَاللَّهِ إِنِّي لأَعْلَمُ أَىُّ لَيْلَةٍ هِيَ . هِيَ اللَّيْلَةُ الَّتِي
أَمَرَنَا بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِقِيَامِهَا هِيَ لَيْلَةُ
صَبِيحَةِ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ وَأَمَارَتُهَا أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ فِي
صَبِيحَةِ يَوْمِهَا بَيْضَاءَ لاَ شُعَاعَ لَهَا .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু মাস'উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যে ব্যক্তি সারা বছর রাত জেগে সলাত আদায় করবে সে ক্বদরের রাত প্রাপ্ত হবে। এ
কথা শুনে উবাই ইবনু ক্বা'ব বললেনঃ যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই সে মহান আল্লাহর
ক্বসম! নিশ্চিতভাবে লায়লাতুল ক্বদর রমাযান মাসে। এ কথা বলতে তিনি ক্বসম করলেন
কিন্তু ইন-শা-আল্লাহ বললেন না (অর্থাৎ তিনি নিশ্চিতভাবেই বুঝলেন যে, রমাযান মাসের
মধ্যেই ‘লায়লাতুল ক্বদর’ আছে)। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার
বললেনঃ আল্লাহর কসম! কোন্ রাতটি ক্বদ্রের রাত তাও আমি জানি। সেটি হ'ল এ রাত, যে
রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কে সলাত আদায় করতে
আদেশ করেছেন। সাতাশ রমাযান তারিখের সকালের পূর্বের রাতটিই সে রাত। আর ঐ রাতের
আলামাত বা লক্ষন হ'ল-সে রাত শেষে সকালে সূর্য উদিত হবে তা উজ্জ্বল হবে কিন্তু সে
সময় (উদয়ের সময়) তার কোন তীব্র আলোকরশ্মি থাকবে না (অর্থাৎ দিনের তুলনায় কিছুটা
নিষ্প্রভ হবে)। (ই.ফা. ১৬৫৫, ই.সে. ১৬৬২)
১৬৭১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ،
قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَةَ بْنَ أَبِي لُبَابَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ زِرِّ بْنِ
حُبَيْشٍ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ أُبَىٌّ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
وَاللَّهِ إِنِّي لأَعْلَمُهَا وَأَكْثَرُ عِلْمِي هِيَ اللَّيْلَةُ الَّتِي
أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِقِيَامِهَا هِيَ لَيْلَةُ سَبْعٍ
وَعِشْرِينَ - وَإِنَّمَا شَكَّ شُعْبَةُ فِي هَذَا الْحَرْفِ - هِيَ اللَّيْلَةُ
الَّتِي أَمَرَنَا بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ
وَحَدَّثَنِي بِهَا صَاحِبٌ لِي عَنْهُ .
উবাই
ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
‘লাইলাতুল ক্বদ্র’ বা ক্বদ্রের রাত সম্পর্কে বলেনঃ আল্লাহর ক্বসম! আমি রাতটি
সম্পর্কে জানি এবং এ ব্যাপারে আমি যা জানি তা হচ্ছে, যে রাতে রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সলাত আদায় করতে আদেশ করেছেন সেটিই
অর্থাৎ সাতাশ তারিখের রাতই ক্বদ্রের রাত। হাদীসটির ঐ অংশ সম্পর্কে যে রাতে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে সলাত আদায় করতে আদেশ
করেছেন।
শু‘বাহ্ সন্দেহ পোষন করেছেন। বর্ণনাকারী শু‘বাহ্ বলেছেনঃ আমার এক বন্ধু (‘আবদাহ্
ইবনু আবূ লুবাবাহ্ ) তার থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬৫৬, ই.সে. ১৬৬৩)
১৬৭২
وَحَدَّثَنِي عُبَيْدُ
اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، بِهَذَا
الإِسْنَادِ . نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ إِنَّمَا شَكَّ شُعْبَةُ . وَمَا
بَعْدَهُ .
শু‘বাহ্
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই
সানাদে হাদীসটি অনুরূপভাবে বর্ণনা করেছেন। তবে শু‘বাহ্ এ বর্ণনাতে সন্দেহ পোষন
করেছেন এবং এর পরের কথাগুলো উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৬৫৭, ই.সে. ১৬৬৪)
২৬. অধ্যায়ঃ
রাত্রিকালীণ সলাতে দু‘আ ও
ক্বিয়াম
১৬৭৩
حَدَّثَنِي عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ هَاشِمِ بْنِ حَيَّانَ الْعَبْدِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ،
- يَعْنِي ابْنَ مَهْدِيٍّ - حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ،
عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ لَيْلَةً عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ
فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنَ اللَّيْلِ فَأَتَى حَاجَتَهُ ثُمَّ
غَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ ثُمَّ نَامَ ثُمَّ قَامَ فَأَتَى الْقِرْبَةَ
فَأَطْلَقَ شِنَاقَهَا ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءًا بَيْنَ الْوُضُوءَيْنِ وَلَمْ
يُكْثِرْ وَقَدْ أَبْلَغَ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى فَقُمْتُ فَتَمَطَّيْتُ
كَرَاهِيَةَ أَنْ يَرَى أَنِّي كُنْتُ أَنْتَبِهُ لَهُ فَتَوَضَّأْتُ فَقَامَ
فَصَلَّى فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ بِيَدِي فَأَدَارَنِي عَنْ يَمِينِهِ
فَتَتَامَّتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ اللَّيْلِ ثَلاَثَ
عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ اضْطَجَعَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ وَكَانَ إِذَا نَامَ
نَفَخَ فَأَتَاهُ بِلاَلٌ فَآذَنَهُ بِالصَّلاَةِ فَقَامَ فَصَلَّى وَلَمْ
يَتَوَضَّأْ وَكَانَ فِي دُعَائِهِ " اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي
نُورًا وَفِي بَصَرِي نُورًا وَفِي سَمْعِي نُورًا وَعَنْ يَمِينِي نُورًا وَعَنْ
يَسَارِي نُورًا وَفَوْقِي نُورًا وَتَحْتِي نُورًا وَأَمَامِي نُورًا وَخَلْفِي
نُورًا وَعَظِّمْ لِي نُورًا " . قَالَ كُرَيْبٌ وَسَبْعًا فِي
التَّابُوتِ فَلَقِيتُ بَعْضَ وَلَدِ الْعَبَّاسِ فَحَدَّثَنِي بِهِنَّ فَذَكَرَ
عَصَبِي وَلَحْمِي وَدَمِي وَشَعَرِي وَبَشَرِي وَذَكَرَ خَصْلَتَيْنِ .
'আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি এক রাতে আমার খালা মায়মূনাহ্-এর [রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর স্ত্রীর] ঘরে কাটালাম। (আমি দেখলাম) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) রাতের বেলা উঠলেন এবং প্রাকৃতিক প্রয়োজন সেরে এসে মুখমন্ডল এবং দু‘হাত
ধুলেন। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমালেন। পরে পুনরায় উঠে
মশকের পাশে গেলেন এবং এর বন্ধন খুলে ওযূ করলেন। ওযূতে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) মধ্যমপন্থা অবলম্বন করলেন (অর্থাৎ ওযূ করতে খুব যত্নও নিলেন না আবার
একেবারে খুব হালকাভাবেও ওযূ করলেন না)। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বেশী পানি ব্যবহার করলেন না। তবে পূর্ণাঙ্গ ওযূ করলেন। তারপর দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করলেন।
আমি সে সময় উঠলাম এবং তাঁর কাজকর্ম দেখার জন্য জেগে ছিলাম বা সতর্কভাবে তা লক্ষ্য
করছিলাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটা যেন না ভেবে বসেন তাই
আড়মোড়া ভাঙ্গলাম। এবার আমি ওযূ করলাম এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সলাত আদায় করতে দাঁড়ালেন, অতঃপর আমিও তাঁর বা পাশে দাঁড়ালাম। তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে আমার হাত ধরে ঘুরিয়ে এনে তাঁর ডান পাশে
দাঁড় করিয়ে দিলেন। এভাবে রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রাতের
সলাত তের রাক‘আত শেষ হল। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমিয়ে
পড়লেন। এমনকি (ঘুমের মধ্যে তাঁর) নাক ডাকতে শুরু করল। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) স্বভাবতঃ যখনই ঘুমাতেন তখন নাক ডাকত। পরে বিলাল (রাঃ) তাঁকে সলাতের
কথা বলে গেলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘আল্ল-হুমাজ্‘আল
ফী ক্বল্বী নূরাওঁ ওয়া ফী বাসারী নূরাওঁ, ওয়া ফী সাম‘ঈ নূরাওঁ ওয়া আই ইয়ামীনী
নূরাওঁ, ওয়া 'আই ইয়াসা-রী নূরাওঁ, ওয়া ফাওক্বী নূরাওঁ, ওয়া তাহতী নূরাওঁ, ওয়া
আমা-মী নূরাওঁ, ওয়া খল্ফী নূরাওঁ, ওয়া ‘আযযিম্লী নূরা”-(অর্থাৎ হে আল্লাহ ! তুমি
আমার হৃদয়ে আলো দান কর, আমার চোখে আলো দান কর, আমার কানে বা শ্রবণ শক্তিতে আলো দান
কর। আমার ডান দিকে আলো দান কর, আমার বাঁ দিকে আলো দান কর, আমার উপর দিকে আলো দান
কর, আমার নীচের দিকে আলো দান কর, আমার সামনে আলো দান কর, আমার পিছনে আলো দান কর
এবং আমার আলোকে বিশাল করে দাও।) বর্ণনাকারী কুরায়ব বলেছেনঃ তিনি এরূপ আরো সাতটি
কথা বলেছিলেন যা আমি ভূলে গিয়েছি। হাদীসের বর্ণনাকারী সালামাহ্ ইবনু কুহায়ল বলেনঃ
এরপর আমি ‘আব্বাস (রাঃ) এর এক পুত্রের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি ঐগুলো (অবশিষ্ট
সাতটি) আমার কাছে বর্ণনা করলেন। তাতে তিনি উল্লেখ করলেন : আমার
স্নায়ুতন্ত্রীসমূহে, আমার শরীরের গোশতে , আমার রক্তে, আমার চুলে এবং আমার
গাত্রচর্মে আলো দান কর। এছাড়াও তিনি আরো দুটি বিষয় উল্লেখ করে বললেনঃ এ দুটিতে
তিনি আলো চেয়েছেন। (ই.ফা. ১৬৫৮,ই.সে. ১৬৬৫)
১৬৭৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ
كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ،
بَاتَ لَيْلَةً عِنْدَ مَيْمُونَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ - وَهِيَ خَالَتُهُ -
قَالَ فَاضْطَجَعْتُ فِي عَرْضِ الْوِسَادَةِ وَاضْطَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم وَأَهْلُهُ فِي طُولِهَا فَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم حَتَّى انْتَصَفَ اللَّيْلُ أَوْ قَبْلَهُ بِقَلِيلٍ أَوْ بَعْدَهُ بِقَلِيلٍ
اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يَمْسَحُ النَّوْمَ عَنْ
وَجْهِهِ بِيَدِهِ ثُمَّ قَرَأَ الْعَشْرَ الآيَاتِ الْخَوَاتِمَ مِنْ سُورَةِ آلِ
عِمْرَانَ ثُمَّ قَامَ إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقَةٍ فَتَوَضَّأَ مِنْهَا فَأَحْسَنَ
وُضُوءَهُ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى . قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقُمْتُ فَصَنَعْتُ
مِثْلَ مَا صَنَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ ذَهَبْتُ فَقُمْتُ
إِلَى جَنْبِهِ فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ الْيُمْنَى
عَلَى رَأْسِي وَأَخَذَ بِأُذُنِي الْيُمْنَى يَفْتِلُهَا فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ
ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ
ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَوْتَرَ ثُمَّ اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَ الْمُؤَذِّنُ
فَقَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
একদিন উম্মুল মুমিনীন মায়মুনাহ্ (রাঃ) এর ঘরে রাত কাটালেন। মায়মূনাহ্ (রাঃ) তাঁর
খালা। তিনি বলেছেন, আমি বিছানাতে আড়াআড়িভাবে শুলাম। এরপরে রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমিয়ে পড়লেন। রাতের অর্ধেকের কিছু পূর্বে
অথবা অর্ধেকের কিছু পর তিনি জেগে উঠলেন এবং মুখমন্ডলের উপর হাত রগড়িয়ে ঘুমের আলস্য
দূর করতে থাকলেন। এরপর সূরাহ্ আ-লি ‘ইমরান এর শেষ দশটি আয়াত পাঠ করলেন এবং (ঘরে)
ঝুলানো একটি মশকের পাশে গিয়ে উত্তমরূপে ওযূ করলেন। অতঃপর তিনি উঠে সলাত আদায়
করলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন : তখন আমিও উঠে দাঁড়ালাম এবং
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা যা করেছিলেন আমিও তাই করলাম।
তারপর তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম এবং তাঁর ডান হাত আমার মাথার উপর রাখলেন আর আমার
ডান কান ধরে মোচড়াতে থাকলেন।[৩৩] তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’
রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। তারপর আরো দু’ রাকআত সলাত আদায় করলেন। পরে আরো দু’
রাক‘আত, এরপর আরো দু’ রাক‘আত এবং পরে আরো দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। আর সর্বশেষে
বিত্র পড়লেন।[৩৪] তারপর শুয়ে পড়লেন। অবশেষে মুয়ায্যিন এসে সলাত সম্পর্কে অবহিত
করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে সংক্ষেপে দু’ রাক‘আত সলাত আদায়
করলেন এবং তারপর বাড়ী থেকে (মাসজিদে) গিয়ে ফাজ্রের সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৬৫৯,
ই.সে. ১৬৬৬)
[৩৩]
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবনু 'আব্বাস (রাঃ)-এর কান মলেছিলেন তার তন্দ্রা
দূর করার জন্য কিংবা মামুর বা মুক্তাদী হিসেবে ডান পাশে দাঁড় করানোর জন্য। (মুসলিম
শরহে নাবাবী- ১ম ২৬০ পৃষ্ঠা)
[৩৪] এ হাদীসের বর্ণনানুযায়ী রাতের সলাত বিত্রসহ তের রাক‘আত আদায় করা যায়। পাঁচ সালামে
দশ রাক‘আত, অতঃপর বিতরের নিয়্যাত করে দু’ রাক‘আত আদায় করে সালাম ফিরাবে। আর এগার রাক‘আত
আদায় করলে পাঁচ সালামে দশ রাক‘আত পড়ে এক রাক‘আত বিত্র অথবা চার সালামে আট রাক‘আত আর
তিন রাক‘আত বিত্র এক সালামেও আদায় করতে পারবে। এ সকল নিয়মে রাতের সলাত এ অধ্যায়ের
সবগুলো হাদীসের উপর ‘আমাল হয়ে যাবে।
১৬৭৫
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ
بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ
عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْفِهْرِيِّ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ،
بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ ثُمَّ عَمَدَ إِلَى شَجْبٍ مِنْ مَاءٍ فَتَسَوَّكَ
وَتَوَضَّأَ وَأَسْبَغَ الْوُضُوءَ وَلَمْ يُهْرِقْ مِنَ الْمَاءِ إِلاَّ قَلِيلاً
ثُمَّ حَرَّكَنِي فَقُمْتُ . وَسَائِرُ الْحَدِيثِ نَحْوُ حَدِيثِ مَالِكٍ .
মাখরামাহ্
ইবনু সুলাইমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই
সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে এতে তিনি এতটুকু অতিরিক্ত বলেছেন, এরপর তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি পুরনো মশকের কাছে গেলেন এবং মিসওয়াক করে
ওযূ করলেন। তিনি বেশী পানি খরচ না করেই উত্তমরূপে ওযূ করলেন তারপর আমাকে ঝাঁকুনি
দিলেন। তখন আমি উঠলাম। এরপর তিনি হাদীসের অবশিষ্ট অংশটুকু মালিক বর্ণিত হাদীসের
অনুরূপ বর্ণনা করলেন। (ই.ফা. ১৬৬০, ই.সে. ১৬৬৭)
১৬৭৬
حَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ
سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنَا عَمْرٌو، عَنْ عَبْدِ
رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى
ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ قَالَ نِمْتُ عِنْدَ مَيْمُونَةَ
زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
عِنْدَهَا تِلْكَ اللَّيْلَةَ فَتَوَضَّأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَنِي فَجَعَلَنِي عَنْ
يَمِينِهِ فَصَلَّى فِي تِلْكَ اللَّيْلَةِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ نَامَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى نَفَخَ وَكَانَ إِذَا نَامَ نَفَخَ
ثُمَّ أَتَاهُ الْمُؤَذِّنُ فَخَرَجَ فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ . قَالَ
عَمْرٌو فَحَدَّثْتُ بِهِ بُكَيْرَ بْنَ الأَشَجِّ فَقَالَ حَدَّثَنِي كُرَيْبٌ
بِذَلِكَ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী মাইমূনাহ্র (খালা) ঘরে
আমি ঘুমালাম আর সেই রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার ঘরে
ছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর ঘরে রাত্রি যাপন
করলেন। রাতে তিনি ওযূ করে সলাত আদায় করতে দাঁড়ালে আমিও তাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম।
তখন তিনি আমাকে ধরে তাঁর ডান পাশে দাঁড় করালেন। ঐ রাতে তিনি তের রাক‘আত সলাত আদায়
করলেন এবং তারপর ঘুমালেন। ঘুমের মধ্যে তিনি নাক ডাকলেন। আর তিনি যখনই ঘুমাতেন নাক
ডাকত। পরে মুয়াযযিন তাঁর কাছে আসলেন তিনি (মাসজিদে) চলে গেলেন এবং নতুন ওযূ না
করেই সলাত আদায় করলেন। হাদীসের বর্ণনাকারী 'আম্র বলেছেন, আমি বুকায়র ইবনুল
আশাজ্জ-এর কাছে এ হাদীস বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ আমার কাছেও তিনি হাদীসটি
অনুরূপভাবে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬৬১, ই.সে. ১৬৬৮)
১৬৭৭
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، أَخْبَرَنَا الضَّحَّاكُ، عَنْ
مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ لَيْلَةً عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ
فَقُلْتُ لَهَا إِذَا قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَيْقِظِينِي
. فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ
الأَيْسَرِ فَأَخَذَ بِيَدِي فَجَعَلَنِي مِنْ شِقِّهِ الأَيْمَنِ فَجَعَلْتُ
إِذَا أَغْفَيْتُ يَأْخُذُ بِشَحْمَةِ أُذُنِي - قَالَ - فَصَلَّى إِحْدَى
عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ احْتَبَى حَتَّى إِنِّي لأَسْمَعُ نَفَسَهُ رَاقِدًا
فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُ الْفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদিন রাতে আমি আমার খালা মায়মূনাহ্ বিনতু হারিস-এর ঘরে রাত্রি যাপন করলাম।
আমি তাঁকে বললাম, রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (রাতে) যখন উঠবেন
তখন আপনি আমাকে জাগিয়ে দিবেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) উঠলে আমিও উঠলাম এবং তাঁর বাম পাশে দিয়ে দাঁড়ালাম। তখন তিনি আমার হাত ধরে
তাঁর ডান পাশে নিলেন। পরে যখনই আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছিলাম তখন তিনি আমার কানের
নিম্নভাগ ধরে টান দিচ্ছিলেন। 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস বলেন-তিনি এগার রাক‘আত সলাত
আদায় করলেন। এরপর তিনি শুয়ে থাকলেন। আমি তাঁর নাক ডাকানোর শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম।
অতঃপর ফাজ্রের সময় স্পষ্ট হয়ে গেলে তিনি সংক্ষিপ্তাকারে দু’ রাক‘আত সলাত আদায়
করলেন। (ই.ফা. ১৬৬২, ই.সে. ১৬৬৯)
১৬৭৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي
عُمَرَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، - قَالَ ابْنُ أَبِي
عُمَرَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، - عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ كُرَيْبٍ،
مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ بَاتَ عِنْدَ خَالَتِهِ
مَيْمُونَةَ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ اللَّيْلِ
فَتَوَضَّأَ مِنْ شَنٍّ مُعَلَّقٍ وُضُوءًا خَفِيفًا - قَالَ وَصَفَ وُضُوءَهُ
وَجَعَلَ يُخَفِّفُهُ وَيُقَلِّلُهُ - قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقُمْتُ فَصَنَعْتُ
مِثْلَ مَا صَنَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ جِئْتُ فَقُمْتُ عَنْ
يَسَارِهِ فَأَخْلَفَنِي فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ فَصَلَّى ثُمَّ اضْطَجَعَ
فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ ثُمَّ أَتَاهُ بِلاَلٌ فَآذَنَهُ بِالصَّلاَةِ فَخَرَجَ
فَصَلَّى الصُّبْحَ وَلَمْ يَتَوَضَّأْ . قَالَ سُفْيَانُ وَهَذَا لِلنَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم خَاصَّةً لأَنَّهُ بَلَغَنَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم تَنَامُ عَيْنَاهُ وَلاَ يَنَامُ قَلْبُهُ .
আবদুল্লাহ
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
তাঁর খালা [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী] মায়মুনাহ্-এর
ঘরে রাত্রি যাপন করলেন। রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে
ঝুলিয়ে রাখা একটি পুরনো মশক থেকে পানি নিয়ে হালকাভাবে ওযূ করলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু
'আব্বাসের আযাদকৃত ক্রীতদাস কুরায়ব বলেছেনঃ ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস বলেন, তখন
আমিও উঠলাম এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা যা করেছিলেন আমিও তাই
করলাম এবং পরে গিয়ে তাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। কিন্তু তিনি আমাকে তাঁর পিছন দিক দিয়ে
ঘুরিয়ে ডান পাশে নিয়ে দাঁড় করালেন। এরপর সলাত আদায় করে তিনি শয্যা গ্রহণ করলেন এবং
ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনকি নাকও ডাকলেন। পরে বিলাল এসে তাঁকে সলাতের সময়ের কথা জানালে
তিনি গিয়ে ফাজ্রের সলাত আদায় করলেন। কিন্তু নতুন ওযূ করলেন না। হাদীসের
বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান বলেছেন, এ ব্যবস্থা শুধু (ঘুমানোর পর নতুন ওযূ না করে সলাত
আদায় করা) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য নির্দিষ্ট। কেননা আমরা
এ কথা জানি যে, তাঁর চোখ দুটি ঘুমায় কিন্তু হৃদয় মন ঘুমায় না। (ই.ফা. ১৬৬৩, ই.সে.
১৬৭০)
১৬৭৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، - وَهُوَ ابْنُ جَعْفَرٍ - حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنْ سَلَمَةَ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ فِي
بَيْتِ خَالَتِي مَيْمُونَةَ فَبَقَيْتُ كَيْفَ يُصَلِّي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم - قَالَ - فَقَامَ فَبَالَ ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ وَكَفَّيْهِ ثُمَّ
نَامَ ثُمَّ قَامَ إِلَى الْقِرْبَةِ فَأَطْلَقَ شِنَاقَهَا ثُمَّ صَبَّ فِي
الْجَفْنَةِ أَوِ الْقَصْعَةِ فَأَكَبَّهُ بِيَدِهِ عَلَيْهَا ثُمَّ تَوَضَّأَ
وُضُوءًا حَسَنًا بَيْنَ الْوُضُوءَيْنِ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي فَجِئْتُ فَقُمْتُ
إِلَى جَنْبِهِ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ - قَالَ - فَأَخَذَنِي فَأَقَامَنِي عَنْ
يَمِينِهِ فَتَكَامَلَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَ
عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ نَامَ حَتَّى نَفَخَ وَكُنَّا نَعْرِفُهُ إِذَا نَامَ
بِنَفْخِهِ ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الصَّلاَةِ فَصَلَّى فَجَعَلَ يَقُولُ فِي
صَلاَتِهِ أَوْ فِي سُجُودِهِ " اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا
وَفِي سَمْعِي نُورًا وَفِي بَصَرِي نُورًا وَعَنْ يَمِينِي نُورًا وَعَنْ
شِمَالِي نُورًا وَأَمَامِي نُورًا وَخَلْفِي نُورًا وَفَوْقِي نُورًا وَتَحْتِي
نُورًا وَاجْعَلْ لِي نُورًا أَوْ قَالَ وَاجْعَلْنِي نُورًا " .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একদা আমার খালা মায়মূনাহ্-এর ঘরে রাত্রিযাপন করলাম আর রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কীভাবে সলাত আদায় করেন তার প্রতি লক্ষ্য
রাখলাম। তিনি (আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস) বলেছেনঃ (রাতে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে প্রস্রাব করলেন এবং মুখমন্ডল ও দু’ হাতের কব্জি পর্যন্ত
ধুয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। পরে আবার উঠে মশকের পাশে গেলেন, এর বাঁধন খুললেন এবং বড় থালা বা
কাষ্ঠ নির্মিত প্লেটে পানি ঢাললেন। পরে হাত দিয়ে তা নীচু করলেন এবং দু’ ওযুর
মাঝামাঝি উত্তম ওযূ করলেন (অর্থাৎ অত্যধিক যত্নের সাথে ওযূ করলেন না, আবার খুব
হালকাভাবেও করলেন না)। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত আদায়
করতে দাঁড়ালে আমিও উঠে গিয়ে তাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ধরে তাঁর ডান পাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। মোট তের রাক‘আত
সলাত দ্বারা তাঁর সলাত শেষ হল। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ঘুমিয়ে পড়লেন। তখন নাক ডাকতে শুরু করল। আমরা নাক ডাকানোর আওয়াজ শুনে তাঁর ঘুমানো
বুঝতে পারতাম। তারপর সলাতের জন্য (মাসজিদে) চলে গেলেন এবং সলাত আদায় করলেন। সলাতের
মধ্যে অথবা সিজদায় গিয়ে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ বলে দু‘আ করতে
থাকলেন “আল্ল-হুম্মাজ্’আল ফী ক্বলবী নূরাওঁ ওয়া ফী সাম’ঈ নূরাওঁ ওয়া ফী বাসারী
নূরাওঁ ওয়া ‘আই ইয়ামীনী নূরাওঁ ওয়া ‘আন্ শিমালী নূরাওঁ ওয়া আমা-মী নূরাওঁ ওয়া খলফী
নূরাওঁ ওয়া ফাওক্বী নূরাওঁ ওয়া তাহ্তী নূরাওঁ ওয়াজ ‘আল্লী নূরান্ আও ক্ব-লা
ওয়াজ্‘আলনী নূরা-” -(অর্থাৎ- হে আল্লাহ ! তুমি আমার হৃদয়-মনে আলো দান কর, আমর
শ্রবণ শক্তিতে আলো দান কর, আমার ডান দিকে আলো দান কর, আমার বাম দিকে আলো দান কর,
আমার উপর দিকে আলো দান কর, আমার নীচের দিকে আলো দান কর এবং আমার জন্য আলো সৃষ্টি
কর। অথবা তিনি বললেনঃ আমাকে আলোতে পরিণত করে দাও।) (ই.ফা. ১৬৬৪, ই.সে. ১৬৭১)
১৬৮০
وَحَدَّثَنِي إِسْحَاقُ
بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ،
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ كُهَيْلٍ، عَنْ بُكَيْرٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، . قَالَ سَلَمَةُ فَلَقِيتُ كُرَيْبًا فَقَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ
كُنْتُ عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
. ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِ حَدِيثِ غُنْدَرٍ . وَقَالَ " وَاجْعَلْنِي
نُورًا " . وَلَمْ يَشُكَّ .
'আবদুল্লাহ
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আমার খালা মায়মূনাহ্-এর কাছে ছিলাম। সে সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে আসলেন। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি গুনদার (রহঃ)
বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বিষয়বস্তু উল্লেখ করলেন। এতে তিনি “ওয়াজ্’আলনী নূরান”
অর্থাৎ আমাকে আলো বানিয়ে দাও কথাটি বলতে কোনরূপ সন্দেহ প্রকাশ করলেন না। (ই.ফা.
১৬৬৫, ই.সে. ১৬৭২)
১৬৮১
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আমার খালা মায়মূনাহ্-এর ঘরে রাত্রি যাপন করলাম। অতঃপর পূর্ণ হাদীসটি
বর্ণনা করেন কিন্তু হাতের কব্জিদ্বয় ও মুখমন্ডল ধোয়ার কথা উল্লেখ করেননি। বর্ণনাতে
তিনি বলেছেনঃ পরে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মশকের পাশে গেলেন, এটির
বাঁধন খুললেন এবং দু‘ ওযূর মাঝামাঝি ওযূ করলেন। এরপর বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন।
অতঃপর আবার উঠে মশকের পাশে গিয়ে ওটির বন্ধন খুললেন এবং ওযূ যেমনটি হওয়া দরকার
তেমনি করলেন। আর তিনি আমাকে এতে বলেছেন, “আ’যিম্ লী নূরান ” অর্থাৎ ‘(হে আল্লাহ!)
আমার আলোকে বড় করে দাও।’ তবে এতে তিনি “ওয়াজ্‘আলনী নূরান” অর্থাৎ- ‘আমাকে নূর বা
আলো বানিয়ে দাও’ কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৬৬৬, ই.সে. ১৬৭৩)
১৬৮২
وَحَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَهَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو
الأَحْوَصِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ مَسْرُوقٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ
أَبِي رِشْدِينٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ عِنْدَ
خَالَتِي مَيْمُونَةَ . وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ وَلَمْ يَذْكُرْ غَسْلَ الْوَجْهِ
وَالْكَفَّيْنِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ ثُمَّ أَتَى الْقِرْبَةَ فَحَلَّ شِنَاقَهَا
فَتَوَضَّأَ وُضُوءًا بَيْنَ الْوُضُوءَيْنِ ثُمَّ أَتَى فِرَاشَهُ فَنَامَ ثُمَّ
قَامَ قَوْمَةً أُخْرَى فَأَتَى الْقِرْبَةَ فَحَلَّ شِنَاقَهَا ثُمَّ تَوَضَّأَ
وُضُوءًا هُوَ الْوُضُوءُ وَقَالَ " أَعْظِمْ لِي نُورًا " .
وَلَمْ يَذْكُرْ " وَاجْعَلْنِي نُورًا " .
কুরায়ব
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে
(তাঁর ঘরে) রাত্রি যাপন করলেন। তিনি বলেছেনঃ রাতের বেলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে একটি মশকের পাশে গেলেন এবং তা থেকে পানি ঢেলে ওযূ করলেন।
এতে তিনি অধিক পানি ব্যবহার করলেন না বা ওযূ সংক্ষিপ্তও করলেন না। এতটুকু বর্ণনা
করার পর তিনি হাদীসটি পূর্বের হাদীসটির অনুরূপ বর্ণনা করলেন। তবে এতে তিনি এ কথাও
বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ রাতে ঊনিশটি কথা বলে
দু'আ করলেন।
সালামাহ্ ইবনু কুহায়ল বলেছেন-কুরায়ব ঐ কথাগুলো সব আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। আমি
তার বারোটি মাত্র মনে রাখতে পেরেছি আর অবশিষ্টগুলো ভুলে গিয়েছি। তিনি তাঁর দুআয়
বলেছিলেন ” “হে আল্লাহ ! তুমি আমার জন্য আমার হৃদয় মনে আলো দান কর, আমার জিহ্বা বা
বাকশক্তিতে আলো দান কর। আমার শ্রবণশক্তিতে আলো দান কর, আমার দৃষ্টিশক্তিতে আলো দান
কর, আমার উপর দিকে আলো দান কর, আমার নীচের দিকে আলো দান কর, আমার ডান দিকে আলো দান
কর, আমার বাঁ দিকে আলো দান কর, আমার সামনে আলো দান কর, আমার পিছন দিকে আলো দান কর,
আমার নিজের মধ্যে আলো সৃষ্টি করে দাও এবং আমার আলোকে বিশালতা দান কর। (ই,ফা. ১৬৬৭,
ই.সে. ১৬৭৪)
১৬৮৩
وَحَدَّثَنِي أَبُو
بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ، أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ، أَخْبَرَنِي شَرِيكُ بْنُ أَبِي نَمِرٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، أَنَّهُ قَالَ رَقَدْتُ فِي بَيْتِ مَيْمُونَةَ لَيْلَةَ كَانَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَهَا لأَنْظُرَ كَيْفَ صَلاَةُ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم بِاللَّيْلِ - قَالَ - فَتَحَدَّثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
مَعَ أَهْلِهِ سَاعَةً ثُمَّ رَقَدَ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ وَفِيهِ ثُمَّ قَامَ
فَتَوَضَّأَ وَاسْتَنَّ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একরাতে আমার খালা [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী]
মায়মূনাহ্-এর ঘরে ঘুমালেন। উক্ত রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে
কিভাবে সলাত আদায় করেন তা দেখা ছিল আমার উদ্দেশ্য। 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস
বলেছেনঃ তিনি তাঁর স্ত্রীর সাথে কিছুক্ষন কথাবার্তা বললেন এবং তারপর ঘুমিয়ে পড়লেন।
.......এতটুকু বলার পর পূর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে এতে এতটুকু
কথা অধিক আছে যে, তিনি উঠে ওযূ ও মিসওয়াক করলেন। (ই.ফা. ১৬৬৮, ই.সে. ১৬৭৫)
১৬৮৪
حَدَّثَنَا وَاصِلُ بْنُ
عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ حُصَيْنِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ،
أَنَّهُ رَقَدَ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَيْقَظَ
فَتَسَوَّكَ وَتَوَضَّأَ وَهُوَ يَقُولُ { إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَوَاتِ
وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لآيَاتٍ لأُولِي الأَلْبَابِ}
فَقَرَأَ هَؤُلاَءِ الآيَاتِ حَتَّى خَتَمَ السُّورَةَ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى
رَكْعَتَيْنِ فَأَطَالَ فِيهِمَا الْقِيَامَ وَالرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ ثُمَّ
انْصَرَفَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ ثُمَّ فَعَلَ ذَلِكَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ سِتَّ
رَكَعَاتٍ كُلَّ ذَلِكَ يَسْتَاكُ وَيَتَوَضَّأُ وَيَقْرَأُ هَؤُلاَءِ الآيَاتِ
ثُمَّ أَوْتَرَ بِثَلاَثٍ فَأَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ فَخَرَجَ إِلَى الصَّلاَةِ
وَهُوَ يَقُولُ " اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا وَفِي لِسَانِي
نُورًا وَاجْعَلْ فِي سَمْعِي نُورًا وَاجْعَلْ فِي بَصَرِي نُورًا وَاجْعَلْ مِنْ
خَلْفِي نُورًا وَمِنْ أَمَامِي نُورًا وَاجْعَلْ مِنْ فَوْقِي نُورًا وَمِنْ
تَحْتِي نُورًا . اللَّهُمَّ أَعْطِنِي نُورًا "
আবদুল্লাহ
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন
রাতে তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুম থেকে জেগে উঠে
মিসওয়াক ও ওযূ করলেন। এ সময় তিনি (কুরআন মাজীদের এ আয়াতগুলো) পড়ছিলেন : (আরবি)
“আসমান ও জমিনের সৃষ্টি কৌশলে এবং রাত ও দিনের পালাক্রমে আগমন নির্গমনে সুধী ও
জ্ঞানীজনদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে”- (সূরাহ্ আলি ইমরান ৩ : ১৯০)। এভাবে তিনি
সূরার শেষ পর্যন্ত পড়লেন। এরপর উঠে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। এতে তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বিয়াম, রুকু ও সিজদাহ্ দীর্ঘায়িত করলেন এবং
শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনকি নাক ডেকে ঘুমালেন। তিনবার তিনি এরূপ করলেন এবং এভাবে
তিনি ছয় রাক‘আত সলাত আদায় করলেন প্রত্যেক বার তিনি মিসওয়াক করলেন, ওযূ করলেন এবং এ
আয়াতগুলো পড়লেন। সর্বশেষে তিন রাক‘আত বিত্র পড়লেন। অতঃপর মুয়ায্যিন আযান দিলে
তিনি সলাতের জন্য (মাসজিদে ) চলে গেলেন। তখন তিনি এ বলে দুআ করেছিলেন:
“আল্ল-হুম্মআজ্’আল ফী ক্বলবী নূরাওঁ ওয়াফী লিসা-নী নূরাওঁ ওয়াজ’আল ফী সাম’ঈ নূরাওঁ
ওয়াজ্’আল ফী বাসারী নূরাওঁ ওয়াজ্’আল মিন খলফী নূরাওঁ ওয়ামিন আমা-মী নূরাওঁ ওয়াজ্’আল
মিন ফাওক্বী নূরাওঁ ওয়ামিন তাহ্তী নূরান্, আল্ল-হুম্মা আ’ত্বিনী নূরা-” অর্থাৎ
হে আল্লাহ আমার হৃদয় মনে আলো (নূর) সৃষ্টি করে দাও, আমার দৃষ্টিশক্তিতে আলো সৃষ্টি
করে দাও, আমার পিছন দিকে আলো সৃষ্টি করে দাও, আমার সামনের দিকে আলো সৃষ্টি করে দাও
, আমার উপর দিক থেকে আলো সৃষ্টি করে দাও এবং আমার নীচের দিক থেকেও আলো সৃষ্টি করে
দাও। হে আল্লাহ ! আমাকে নূর বা আলো দান কর।) (ই.ফা. ১৬৬৯, ই.সে. ১৬৭৬)
১৬৮৫
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ
بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ،
أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ ذَاتَ لَيْلَةٍ عِنْدَ
خَالَتِي مَيْمُونَةَ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي
مُتَطَوِّعًا مِنَ اللَّيْلِ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى
الْقِرْبَةِ فَتَوَضَّأَ فَقَامَ فَصَلَّى فَقُمْتُ لَمَّا رَأَيْتُهُ صَنَعَ
ذَلِكَ فَتَوَضَّأْتُ مِنَ الْقِرْبَةِ ثُمَّ قُمْتُ إِلَى شِقِّهِ الأَيْسَرِ
فَأَخَذَ بِيَدِي مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِهِ يَعْدِلُنِي كَذَلِكَ مِنْ وَرَاءِ
ظَهْرِهِ إِلَى الشِّقِّ الأَيْمَنِ . قُلْتُ أَفِي التَّطَوُّعِ كَانَ ذَلِكَ
قَالَ نَعَمْ .
'আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একরাতে আমি আমার খালা [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
স্ত্রী] মায়মুনাহ্ এর কাছে (তাঁর ঘরে) রাত্রি যাপন করলাম। রাতের বেলা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাফ্ল সলাত আদায় করতে উঠলেন। তিনি মশকের পাশে
গিয়ে ওযূ করলেন এবং তারপর সলাত আদায় করতে দাঁড়ালেন। তাঁকে এরূপ করতে দেখে আমিও উঠে
মশকের পানি দিয়ে ওযূ করলাম। তারপর তাঁর বাম পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পিঠের দিক থেকে আমার হাত ধরে সোজা তাঁর
পিঠের দিকে দিয়ে নিয়ে ডান পাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। হাদীসের বর্ণনাকারী ‘আত্বা বলেন,
আমি জিজ্ঞেস করলাম, তিনি নাফ্ল সলাত আদায়কালে এরূপ করেছিলেন। জবাবে তিনি
('আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস) বললেনঃ হ্যাঁ। (ই.ফা. ১৬৭০, ই.সে. ১৬৭৭)
১৬৮৬
وَحَدَّثَنِي هَارُونُ
بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ
جَرِيرٍ، أَخْبَرَنِي أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ قَيْسَ بْنَ سَعْدٍ، يُحَدِّثُ عَنْ
عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بَعَثَنِي الْعَبَّاسُ إِلَى النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَهُوَ فِي بَيْتِ خَالَتِي مَيْمُونَةَ فَبِتُّ مَعَهُ تِلْكَ
اللَّيْلَةَ فَقَامَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ
فَتَنَاوَلَنِي مِنْ خَلْفِ ظَهْرِهِ فَجَعَلَنِي عَلَى يَمِينِهِ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদিন আমার পিতা ‘আব্বাস আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
কাছে পাঠালেন। সেদিন আমার খালা মায়মূনাহ্-এর ঘরে ছিলেন। উক্ত রাতে আমি তাঁর সাথে
কাটালাম। রাতে তিনি সলাত আদায় করতে উঠলে আমিও উঠলাম এবং গিয়ে তাঁর বাম পাশে
দাঁড়ালাম। কিন্তু তিনি আমাকে তাঁর পিছন দিক দিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে ডান পাশে দাঁড় করিয়ে
দিলেন। (ই.ফা. ১৬৭১, ই.সে. ১৬৭৮)
১৬৮৭
وَحَدَّثَنَا ابْنُ
نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ . نَحْوَ حَدِيثِ
ابْنِ جُرَيْجٍ وَقَيْسِ بْنِ سَعْدٍ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একদিন আমার খালা মায়মুনাহ্-এর ঘরে রাত্রি যাপন করলাম। এ পর্যন্ত বর্ণনা
করার পর বর্ণনা কারী ইবনু জুরায়জ ও ক্বায়স ইবনু সা’দ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস
বর্ণনা করলেন। (ই. ফা. ১৬৭২, ই.সে. ১৬৭৯)
১৬৮৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ
بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ
الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ،
يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ
ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা তের রাক‘আত সলাত
আদায় করতেন। ই.ফা. ১৬৭৩,ই.সে. ১৬৮০)
১৬৮৯
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ
بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ،
عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ قَيْسِ بْنِ مَخْرَمَةَ، أَخْبَرَهُ عَنْ
زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّهُ قَالَ لأَرْمُقَنَّ صَلاَةَ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اللَّيْلَةَ فَصَلَّى . رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ
ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ طَوِيلَتَيْنِ طَوِيلَتَيْنِ طَوِيلَتَيْنِ ثُمَّ
صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ثُمَّ صَلَّى
رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ
وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ
اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ثُمَّ أَوْتَرَ فَذَلِكَ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً .
যায়দ
ইবনু খালিদ আল জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাতে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সলাত দেখব।
রাতের বেলা প্রথমে তিনি সংক্ষিপ্ত ভাবে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। তারপর অনেক
অনেক দীর্ঘায়িত করে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। তারপর দু’রাক‘আত সলাত আদায় করলেন
যা পূর্বের দু’ রাক‘আত থেকে কম দীর্ঘ ছিল। এরপর দু’ রাক‘আত আদায় করলেন যা পূর্বের
দু’ রাক‘আত থেকে কম দীর্ঘায়িত ছিল। এরপর দু’ রাক‘আত আদায় করলেন যা পূর্বের দু’
রাক‘আত থেকে কম দীর্ঘায়িত ছিল। পরে আরো দু’রাক‘আত আদায় করলেন যা পূর্বের দু’
রাক‘আত থেকেও কম দীর্ঘায়িত ছিল। এরপর বিত্র অর্থাৎ এক রাক‘আত সলাত আদায় করলেন এবং
এভাবে মোট তের রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। (ই.ফা. ১৬৭৪ ই.সে. ১৬৮১)
১৬৯০
وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ
بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ الْمَدَائِنِيُّ أَبُو
جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي
سَفَرٍ فَانْتَهَيْنَا إِلَى مَشْرَعَةٍ فَقَالَ " أَلاَ تُشْرِعُ يَا
جَابِرُ " . قُلْتُ بَلَى - قَالَ - فَنَزَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم وَأَشْرَعْتُ - قَالَ - ثُمَّ ذَهَبَ لِحَاجَتِهِ وَوَضَعْتُ لَهُ
وَضُوءًا - قَالَ - فَجَاءَ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ
خَالَفَ بَيْنَ طَرَفَيْهِ فَقُمْتُ خَلْفَهُ فَأَخَذَ بِأُذُنِي فَجَعَلَنِي عَنْ
يَمِينِهِ .
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, কোন এক সফরে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে
ছিলাম। এক সময়ে আমরা এক (পানির কিনারে) ঘাটে গিয়ে পৌছলাম। তিনি আমাকে জিঞ্জেস
করলেনঃ জাবির তুমি কি ঘাট পার হবে না? আমি বললাম, হ্যাঁ। জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ
বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অপর পারে গিয়ে অবতরণ করলে
আমি ও পার হলাম। (জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ বর্ণনা করেছেন যে,) এরপর রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারতে গেলে আর আমি তাঁর ওযুর
পানি প্রস্তত করে রাখলাম। (তিনি বর্ণনা করেছেন) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এসে ওযু করলেন এবং একখানা মাত্র কাপড় গায়ে জড়িয়ে সালাতে দাঁড়ালেন।
কাপড় খানার আচল বিপরীত দিকের দু’ কাধে দিলেন। তখন আমি গিয়ে তাঁর পিছনে দাড়ালাম।
কিন্তু তিনি আমার কান ধরে তাঁর ডান পাশে খাড়া করে দিলেন। (ই.ফা. ১৬৭৫, ই.সে. ১৬৮২)
১৬৯১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
يَحْيَى، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ جَمِيعًا عَنْ هُشَيْمٍ، - قَالَ
أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، - أَخْبَرَنَا أَبُو حُرَّةَ، عَنِ الْحَسَنِ،
عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ لِيُصَلِّيَ افْتَتَحَ صَلاَتَهُ
بِرَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে সলাত আদায় করতে উঠলে
সংক্ষিপ্তভাবে দু’ রাক‘আত (প্রথম দু’ রাক‘আত) সলাত শুরু করতেন। (ই.ফা. ১৬৭৬, ই.সে.
১৬৮৩)
১৬৯২
وَحَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ
مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي، هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إذا قام من الليل يصلي افتتح صلاته بركعتين خفيفتين
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ রাতের সলাত আদায় করতে
শুরু করলে সে যেন সংক্ষিপ্তভাবে দু’ রাক‘আত সলাত দিয়ে শুরু করে। (ই.ফা. ১৬৭৭.
ই.সে. ১৬৮৪)
১৬৯৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ
بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ طَاوُسٍ،
عَنِ ابْنِ، عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ
إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ مِنْ جَوْفِ اللَّيْلِ " اللَّهُمَّ لَكَ
الْحَمْدُ أَنْتَ نُورُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيَّامُ
السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ
وَمَنْ فِيهِنَّ أَنْتَ الْحَقُّ وَوَعْدُكَ الْحَقُّ وَقَوْلُكَ الْحَقُّ
وَلِقَاؤُكَ حَقٌّ وَالْجَنَّةُ حَقٌّ وَالنَّارُ حَقٌّ وَالسَّاعَةُ حَقٌّ
اللَّهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْكَ
أَنَبْتُ وَبِكَ خَاصَمْتُ وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ فَاغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ
وَأَخَّرْتُ وَأَسْرَرْتُ وَأَعْلَنْتُ أَنْتَ إِلَهِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ
" .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাতের
বেলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সলাত আদায় করতে উঠতেন তখন
এ বলে দু’আ করতেনঃ “আল্লা-হুম্মা লাকাল হাম্দু আন্তা নূরুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্যি
ওয়ালাকাল হাম্দু আন্তা ক্বইয়্যামুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্যি ওয়ালাকাল হাম্দু
আন্তা রব্বুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্যি ওয়ামান ফীহিন্না আন্তাল হাক্কু ওয়া
ওয়া‘দুকাল হাক্কু’ ওয়াক্বাওলুকাল হাক্কু ওয়ালিক্বা-উকা হাক্কুন্ ওয়াল জান্নাতু
হাক্কুন্ ওয়ান্না-রু হাক্কুন ওয়াস্ সা-‘আতু হাক্কুন, আল্ল-হুম্মা লাকা আস্লামতু
ওয়াবিকা আ-মান্তু ওয়া 'আলায়কা তাওয়াক্কালতু ওয়া ইলায়কা আনাব্তু ওয়াবিকা খা-সাম্তু
ওয়া ইলায়কা হা-কাম্তু ফাগ্ফিরলী মা-ক্বদ্দাম্তু ওয়া আখ্খারতু ওয়া আস্রার্তু
ওয়া আ’লান্তু আন্তা ইলা-হী লা-ইলা-হা ইল্লা- আন্তা” (অর্থাৎ - হে আল্লাহ! তোমার
জন্যই সব প্রশংসা। তুমি আসমান ও জমিনের নূর বা আলো। তোমার জন্যই সব প্রশংসা, তুমিই
আসমান ও জমিনের ব্যবস্থাপক। তোমার জন্যই সব প্রশংসা তুমিই আসমান জমিনের এবং এ সবের
মধ্যে অবস্থিত সবকিছুর প্রতিপালক। তুমিই হাক্ব বা সত্য। তোমার ওয়া’দা সত্য, তোমার
সব বাণী সত্য। তোমার সাথে সাক্ষাতের বিষয়টি সত্য। জান্নাত সত্য, জাহান্নামও সত্য
এবং ক্বিয়ামতও সত্য। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছেই আত্মসমর্পণ করেছি, তোমারই প্রতি
ঈমান এনেছি, তোমার অপর তাওয়াক্কুল বা নির্ভর করেছি, তোমার কাছেই প্রত্যাবর্তন
করেছি, তোমারই জন্যে অন্যদের সাথে বিবাদ করেছি এবং তোমার কাছেই ফায়সালা চেয়েছি।
তাই তুমি আমার আগের ও পরের এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে কৃত সব পাপ ক্ষমা করে দাও।
একমাত্র তুমিই আমার ইলাহ। তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই)। (ই.ফা. ১৬৭৮, ই.সে. ১৬৮৫)
১৬৯৪
حَدَّثَنَا عَمْرٌو
النَّاقِدُ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ وَابْنُ أَبِي عُمَرَ قَالُوا حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، كِلاَهُمَا عَنْ سُلَيْمَانَ
الأَحْوَلِ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم . أَمَّا حَدِيثُ ابْنِ جُرَيْجٍ فَاتَّفَقَ لَفْظُهُ مَعَ حَدِيثِ مَالِكٍ
لَمْ يَخْتَلِفَا إِلاَّ فِي حَرْفَيْنِ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ مَكَانَ قَيَّامُ قَيِّمُ
وَقَالَ وَمَا أَسْرَرْتُ وَأَمَّا حَدِيثُ ابْنِ عُيَيْنَةَ فَفِيهِ بَعْضُ
زِيَادَةٍ وَيُخَالِفُ مَالِكًا وَابْنَ جُرَيْجٍ فِي أَحْرُفٍ .
আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উপরে বর্ণিত হাদীস টি বর্ণনা করেছেন। তবে
শুধু দু’টি শব্দ ছাড়া ইবনু জুরায়জ বর্ণিত হাদীসের শব্দসমূহ মালিক বর্ণিত হাদীসের
শব্দসমূহের অনুরূপ। দু’টি স্থানের একটি ইবনু জুরায়জ (আরবী) শব্দের পরিবর্তে (আরবী)
শাব্দটি উল্লেখ করেছেন। আর অপর স্থানটিতে শুধু (আরবী) কথাটি উল্লেখ করেছেন। আর
ইবনু ‘উয়াইনাহ্ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ হাদীসটিতে কিছু অতিরিক্ত শব্দ আছে এবং
অনেকগুলো শব্দের ব্যাপারে তিনি মালিকের এবং ইবনু জুরায়জ-এর সাথে পার্থক্য করেছেন।
(ই.ফা.১৬৭৯, ই.সে. ১৬৮৬)
১৬৯৫
وَحَدَّثَنَا شَيْبَانُ
بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ، - وَهُوَ ابْنُ مَيْمُونٍ - حَدَّثَنَا
عِمْرَانُ، الْقَصِيرُ عَنْ قَيْسِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ وَاللَّفْظُ
قَرِيبٌ مِنْ أَلْفَاظِهِمْ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এই
একই সানাদে হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। এ
হাদীসের শব্দ উপরের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ১৬৮০ ই.সে ১৬৮৭)
১৬৯৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، وَأَبُو
مَعْنٍ الرَّقَاشِيُّ قَالُوا حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا
عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، حَدَّثَنِي
أَبُو سَلَمَةَ، بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ
أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ بِأَىِّ شَىْءٍ كَانَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَفْتَتِحُ صَلاَتَهُ إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ قَالَتْ كَانَ إِذَا قَامَ مِنَ
اللَّيْلِ افْتَتَحَ صَلاَتَهُ " اللَّهُمَّ رَبَّ جِبْرَائِيلَ
وَمِيكَائِيلَ وَإِسْرَافِيلَ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ
وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيمَا كَانُوا فِيهِ
يَخْتَلِفُونَ اهْدِنِي لِمَا اخْتُلِفَ فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِكَ إِنَّكَ
تَهْدِي مَنْ تَشَاءُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ " .
‘আবদুর
রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিঞ্জেস করলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা যখন সলাত আদায় করতেন তখন কীভাবে তাঁর সলাত শুরু
করতেন? জবাবে ‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ রাতে যখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সলাত আদায় করতে উঠতেন তখন এ দু’আটি পড়ে সলাত শুরু করতেনঃ “ আল্ল-হুম্মা
রব্বা জিবরীলা ওয়া মীকাঈলা ওয়া ইস্রা-ফীলা ফা-ত্বিরাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্যি
‘আ-লিমান গয়বি ওয়াশ্ শাহা-দাতি আন্তা তাহ্কুমু বায়না 'ইবা-দিকা ফীমা-কা-নূ ফীহি
ইয়াখ্তালিফূ নাহ্দিনী লিমাখ তুলিফা ফীহি মিনাল হাক্কি বি ইয্নিকা ইন্নাকা তাহ্দী
মান্ তাশা-উ ইলা- সিরা-ত্বিম মুসতাক্বীম” (অর্থাৎ - হে আল্লাহ্! জিব্রীল, মীকাঈল
ও ইসরাফীলের প্রতিপালক, আসমান ও জমিনের স্রষ্টা, প্রকাশ্য ও গোপন বিষয়সমূহের
জ্ঞানের অধিকারী। তোমার বান্দারা যেসব বিষয়ে মতানৈক্য পোষণ করে তুমিই সেগুলোর
ফায়সালা করবে। সত্য ও ন্যায়ের যেসব বিষয়ে মতানৈক্য পোষণ করা হয়েছে সে বিষয়ে তুমি
আমাকে পথ দেখাও। তুমিই তো যাকে ইচ্ছা সরল-সহজ পথ দেখিয়ে থাকো )। (ই.ফা. ১৬৮১ ই.সে.
১৬৮৮)
১৬৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا يُوسُفُ الْمَاجِشُونُ، حَدَّثَنِي
أَبِي، عَنْ عَبْدِ، الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي
رَافِعٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم أَنَّهُ كَانَ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ قَالَ " وَجَّهْتُ
وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ
الْمُشْرِكِينَ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ
الْعَالَمِينَ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ
اللَّهُمَّ أَنْتَ الْمَلِكُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ . أَنْتَ رَبِّي وَأَنَا
عَبْدُكَ ظَلَمْتُ نَفْسِي وَاعْتَرَفْتُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي ذُنُوبِي
جَمِيعًا إِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ وَاهْدِنِي لأَحْسَنِ
الأَخْلاَقِ لاَ يَهْدِي لأَحْسَنِهَا إِلاَّ أَنْتَ وَاصْرِفْ عَنِّي سَيِّئَهَا
لاَ يَصْرِفُ عَنِّي سَيِّئَهَا إِلاَّ أَنْتَ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ
كُلُّهُ فِي يَدَيْكَ وَالشَّرُّ لَيْسَ إِلَيْكَ أَنَا بِكَ وَإِلَيْكَ
تَبَارَكْتَ وَتَعَالَيْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ " .
وَإِذَا رَكَعَ قَالَ " اللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ
أَسْلَمْتُ خَشَعَ لَكَ سَمْعِي وَبَصَرِي وَمُخِّي وَعَظْمِي وَعَصَبِي "
. وَإِذَا رَفَعَ قَالَ " اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ
السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا بَيْنَهُمَا وَمِلْءَ مَا شِئْتَ
مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ " . وَإِذَا سَجَدَ قَالَ " اللَّهُمَّ لَكَ
سَجَدْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ
وَصَوَّرَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ
الْخَالِقِينَ " . ثُمَّ يَكُونُ مِنْ آخِرِ مَا يَقُولُ بَيْنَ التَّشَهُّدِ
وَالتَّسْلِيمِ " اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ
وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَسْرَفْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ
مِنِّي أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ
" .
‘আলী
ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যখন সলাত আদায় করতে দাঁড়াতেন তখন এ বলে শুরু করতেনঃ “ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজ্হিয়া
লিল্লাযী ফাত্বারাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্যা হানীফাওঁ ওয়ামা– আনা-মিনাল
মুশরিকীনা ইন্না সলা-তী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহ্ইয়া-ইয়া ওয়া মামা-তী লিল্লা-হি রব্বিল
‘আ-লামীনা লা শারীকা লাহূ ওয়াবি যা-লিক উমিরতু ওয়া আনা- মিনাল মুসলিমীন,
আল্ল-হুম্মা আনতাল মালিকু লা- ইলা-হা ইল্লা – আনতা আন্তা রব্বি ওয়া আনা- আব্দুকা
যলাম্তু নাফ্সী ওয়া‘তারাফ্তু বিযাম্বী ফাগফিরলী যুনূবী জামী’আন ইন্নাহূ লা-
ইয়াগ্ফিরুয্ যুনূবা ইল্লা-আন্তা ওয়াহদিনী লিআহ্সানিল আখলা-ক্বি লা-ইয়াহ্দী
লিআহ্সানিহা- ইল্লা- আন্তা ওয়াস্রিফ ‘আন্নি সাইয়্যিআহা-লা- ইয়াস্রিফু ‘আন্নী
সাইয়্যিআহা- ইল্লা- আন্তা লাব্বায়কা! ওয়া সা’দায়কা! ওয়াল খায়রু কুল্লুহূ ফী
ইয়াদায়কা ওয়াশ্ শুর্রু লায়সা ইলায়কা আনা –বিকা ওয়া ইলায়কা তাবা-রাকতা ওয়াতা
‘আ-লাইয়তা আস্তাগ্ফিরুকা ওয়া আতূবু ইলায়ক” (অর্থাৎ- আমি একনিষ্ট হয়ে আমার মুখ সে
মহান সত্তার দিকে ফিরিয়ে দিলাম যিনি আসমান ও জমিনকে সৃষ্টি করেছেন। আর আমি
মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। আমার সলাত , আমার কুরবানী, আমার জীবন ও মৃত্যু সবকিছুই
আল্লাহর জন্য যিনি সারা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক। তাঁর কোন শরীক নেই। আমি এ জন্যই
আদিষ্ট হয়েছি। আমি মুসলীম বা আত্মসমর্পণকারী। হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম বাদশাহ।
তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তুমি আমার প্রতিপালক, আর আমি তোমার বান্দা। আমি নিজে
আমার প্রতি যুলুম করেছি। আমি আমার পাপ স্বীকার করছি। সুতরাং তুমি আমার সব পাপ
ক্ষমা করে দাও। কেননা তুমি ছাড়া আর কেউ পাপ ক্ষমা করতে পারে না।আমাকে সর্বোত্তম
আখলাক বা নৈতিকতার পথ দেখাও। তুমি ছাড়া এ পথ আর কেউ দেখাতে সক্ষম নয়। আর আখলাক্ব
বা নৈতিকতর মন্দ দিকগুলো আমার থেকে দূরে রাখ। তুমি ছাড়া আর কেউ মন্দগুলোকে দূরে
রাখতে সক্ষম নয়। আমি তোমার সামনে হাজির আছি – তোমার আনুগত্য করতে প্রস্তত আছি। সব
রকম কল্যাণের মালিক তুমিই। অকল্যাণের দায় দায়িত্ব তোমার নয়। আমার সব কামনা বাসনা
তোমার কাছেই কাম্য। আমার শক্তি-সামর্থ্যও তোমারই দেয়া। তুমি কল্যাণময়, তুমি মহান।
আমি তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তোমার কাছেই তাওবাহ্ করছি)।আর রুকু করার
সময় বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মা লাকা রাকা’তু ওয়াবিকা আ-মান্তু ওয়ালাকা আস্লাম্তু খশা’আ
লাকা সাম’ঈ ওয়া বাসারী ওয়া মুখ্খী ওয়া ‘আয্মী ওয়া ‘আসাবী” -(অর্থাৎ -হে আল্লাহ্!
তোমার উদ্দেশ্যেই আত্মসমর্পণ করলাম। আমার কান, চোখ, মগজ, হাড় এবং সব স্নায়ুতন্ত্রী
তোমার কাছে নত ও বশীভূত হ’ল)। আর রুকু থেকে বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মা রব্বানা– লাকাল
হা্মদু মিলআস্ সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল আল আর্যি ওয়ামিলআ মা- বায়নাহুমা ওয়ামিলআ মা-
শি’তা মিন শাইয়িন্ বা’দু”-( অর্থাৎ - হে আল্লাহ্! হে আমার প্রতিপালক, সব প্রশংসা
তোমারই প্রাপ্য। আসমান ভর্তি প্রশংসা একমাত্র তোমারই প্রাপ্য)। আর যখন সিজদায়
যেতেন তখন বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মা লাকা সাজাদ্তু ওয়াবিকা আ-মান্তু ওয়ালাকা আস্লাম্তু
সাজাদা ওয়াজহী লিল্লাহী খালাক্বাহূ ওয়াসাও্ ওয়ারাহূ ওয়াশাক্বক্বা সাম’আহূ ওয়া
বাসারাহূ তাবা-রাকাল্ল-হু আহসানুল খ-লিক্বীন”- (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তোমারই উদ্দেশে
আমি সাজদাহ্ করলাম। তোমারই প্রতি আমি ঈমান পোষণ করেছি। তোমার উদ্দেশে আমি
আত্মসমর্পণ করেছি। আমার মুখমণ্ডল সে মহান সত্তার উদ্দেশে সাজদাহ্ করল যিনি তাকে
সৃষ্টি করেছেন এবং আকৃতি দান করেছেন আর কান ও চোখ ফুটিয়ে শোনা ও দেখার উপযোগী করে
তৈরী করেছেন। মহা কল্যাণময় আল্লাহ, তিনি কতই না উত্তম সৃষ্টিকারী)। অতঃপর সবশেষে
তাশাহ্হুদ ও সালামের মধ্য বর্তী সময়ে তিনি বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মাগ্ফীর্লী মা-
ক্বদ্দাম্তু ওয়ামা- আখ্খার্তু ওয়ামা- আস্সরার্তু ওয়ামা- আ’লান্তু ওয়ামা- আস্রাফ্তু
ওয়ামা- আন্তা আ’লামু বিহী মিন্নী আন্তাল মুক্বদ্দিমু ওয়া আন্তাল মুআখ্খিরু লা-
ইলা-হা ইল্লা- আন্তা” (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি আমার পূর্বের ও পরের, গোপনে এবং
প্রকাশ্যে কৃত গুনাহ ক্ষমা করে দাও। আর যে সব ব্যাপারে আমি বাড়াবাড়ি করেছি তাও
ক্ষমা করে দাও। আমার কৃত যেসব পাপ সম্পর্কে তুমি আমার চাইতে বেশী জান তাও ক্ষমা
করে দাও। তুমিই আদি এবং তুমিই অন্ত, তুমি ছাড়া আর কেউ ইলাহ নেই )। (ই.ফা. ১৬৮২,
ই.সে. ১৬৮৯)
১৬৯৮
وَحَدَّثَنَاهُ زُهَيْرُ
بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، ح وَحَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ، إِبْرَاهِيمَ أَخْبَرَنَا أَبُو النَّضْرِ، قَالَ حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَمِّهِ،
الْمَاجِشُونِ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ عَنِ الأَعْرَجِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَفْتَحَ الصَّلاَةَ كَبَّرَ
ثُمَّ قَالَ " وَجَّهْتُ وَجْهِي " . وَقَالَ " وَأَنَا
أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ " . وَقَالَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ
الرُّكُوعِ قَالَ " سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ
الْحَمْدُ " . وَقَالَ " وَصَوَّرَهُ فَأَحْسَنَ صُوَرَهُ
" . وَقَالَ وَإِذَا سَلَّمَ قَالَ " اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا
قَدَّمْتُ " . إِلَى آخِرِ الْحَدِيثِ وَلَمْ يَقُلْ بَيْنَ التَّشَهُّدِ
وَالتَّسْلِيمِ .
আ’রাজ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই
সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এতে তিনি বলেছেনঃ সলাত শুরু করার সময় রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকবীর বলতেনঃ তারপরে “ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহী”
বলতেন। এরপর শেষের দিকে “ওয়া আনা-আও্ওয়ালুল মুসলিমীন” বলতেন। এ হাদীসে তিনি আর
বলেছেনঃ যখন তিনি রুকু’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন “সামি ‘আল্ল-হু-লিমান হামিদাহ,
রব্বানা- ওয়ালাকাল হাম্দ” এবং তিনি “ওয়া সাও্ওয়ারাহূ ফা আহ্সানা সুওয়ারাহূ” –ও
বলতেন (অর্থাৎ তিনি আকৃতি দান করেছেন এবং উত্তম আকৃতি দান করেছেন)। এ বর্ণনাতে আরো
আছে, তিনি যখন সালাম ফিরাতেন তখন “আল্ল-হুম্মাগ্ ফিরলী মা-ক্বদ্দামতু” কথাটি থেকে
শুরু করে পূর্বোক্ত হাদীসের শেষ পর্যন্ত বলতেন। আর তিনি তাশাহুদ ও সালামের কথা
বলেননি। (ই.ফা. ১৬৮৩, ই.সে. ১৬৯০)
২৭. অধ্যায়ঃ
রাতের সালাতে ক্বিরাআত দীর্ঘ
করা মুস্তাহাব
১৬৯৯
وَحَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو
مُعَاوِيَةَ ح وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، كُلُّهُمْ عَنِ الأَعْمَشِ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ،
نُمَيْرٍ - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ
سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ الْمُسْتَوْرِدِ بْنِ الأَحْنَفِ، عَنْ صِلَةَ بْنِ
زُفَرَ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
ذَاتَ لَيْلَةٍ فَافْتَتَحَ الْبَقَرَةَ فَقُلْتُ يَرْكَعُ عِنْدَ الْمِائَةِ .
ثُمَّ مَضَى فَقُلْتُ يُصَلِّي بِهَا فِي رَكْعَةٍ فَمَضَى فَقُلْتُ يَرْكَعُ
بِهَا . ثُمَّ افْتَتَحَ النِّسَاءَ فَقَرَأَهَا ثُمَّ افْتَتَحَ آلَ عِمْرَانَ
فَقَرَأَهَا يَقْرَأُ مُتَرَسِّلاً إِذَا مَرَّ بِآيَةٍ فِيهَا تَسْبِيحٌ سَبَّحَ
وَإِذَا مَرَّ بِسُؤَالٍ سَأَلَ وَإِذَا مَرَّ بِتَعَوُّذٍ تَعَوَّذَ ثُمَّ رَكَعَ
فَجَعَلَ يَقُولُ " سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ " . فَكَانَ
رُكُوعُهُ نَحْوًا مِنْ قِيَامِهِ ثُمَّ قَالَ " سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ
حَمِدَهُ " . ثُمَّ قَامَ طَوِيلاً قَرِيبًا مِمَّا رَكَعَ ثُمَّ سَجَدَ
فَقَالَ " سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى " . فَكَانَ سُجُودُهُ
قَرِيبًا مِنْ قِيَامِهِ . قَالَ وَفِي حَدِيثِ جَرِيرٍ مِنَ الزِّيَادَةِ
فَقَالَ " سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ"
.
হুযায়ফাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক রাতে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাথে তাহাজ্জুদের
সলাত আদায় করলাম। তিনি সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ পড়তে শুরু করলে আমি ভাবলাম তিনি হয়ত
একশ আয়াত পড়ে রুকু’ করবেন। কিন্তু এর পরেও তিনি পড়ে চললেন। তখন আমি চিন্তা করলাম।
তিনি এর (সূরা আল বাক্বারাহ্ ) দ্বারা পুরা দু’ রাকাত পড়ে সালাম ফিরাবেন। কিন্তু
তিনি এরপরেও পড়তে থাকলে আমি ভাবলাম সূরাটি শেষ করে তিনি রুকু করবেন। কিন্তু এরপর
তিনি সূরাহ নিসা পড়তে শুরু করলেন এবং তা পাঠ করলেন, অতঃপর তিনি সুরাহ্ আ-লি
‘ইমরান শুরু করলেন এবং তা পাঠ করলেন। তিনি থেমে থেমে ধীরে ধীরে পড়ছিলেন এবং তাসবীর
আয়াত আসলে তাসবীহ পড়ছিলেন আর কিছু চাওয়ার আয়াত আসলে চাইলেন। যখন আশ্রয় প্রার্থনা
করার কোন আয়াত পড়ছিলেন তখন প্রার্থনা করছিলেন। অতঃপর তিনি রুকু’ করলেন। রুকু’তে
তিনি বলতে থাকলেন, “সুবহা-না রাব্বিয়াল ‘আযীম” (আমার মহান প্রভূ পবিত্র, আমি তাঁর
পবিত্রতা বর্ণনা করছি)। তাঁর রুকু’ ক্বিয়ামের মতই দীর্ঘ ছিল। এরপর “সামি আল্ল-হু
লিমান হামিদাহ” (আল্লাহ শুনে থাকেন যে তাঁর প্রশংসা করে) বললেনঃ এরপর যতক্ষন সময়
রুকু’ করেছিলেন প্রায় ততক্ষণ সময় পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেন। এরপর সাজদাহ্ করলেন।
সাজদাতে তিনি বললেন, “সুবহা-না রাব্বিয়াল আ’লা” (মহান সুউচ্চ সত্তা আমার প্রভূ
পবিত্র, আমি তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করছি)। তাঁর এ সাজদায়ও প্রায় ক্বিয়ামের সময়ের
মতো দীর্ঘায়িত হলো। হাদীসটির বর্ণনা কারী বলেন যে, জারীর বর্ণিত হাদীসে এতটুকু কথা
অধিক আছেঃ তিনি [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকু’ থেকে উঠে]
বললেন, “সামি’আল্ল-হু লিমান হামিদাহ, রব্বানা- লাকাল হাম্দ” ( আল্লাহ শুনেন যে ব্যক্তি
তাঁর প্রশংসা করে। হে আমাদের প্রতিপালক, তোমার জন্যই সব প্রশংসা)। ( ই.ফা. ১৬৮৪,
ই.সে. ১৬৯১)
১৭০০
وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ
بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، كِلاَهُمَا عَنْ جَرِيرٍ، -
قَالَ عُثْمَانُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، - عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ،
قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَأَطَالَ حَتَّى هَمَمْتُ بِأَمْرِ سَوْءٍ قَالَ قِيلَ وَمَا هَمَمْتَ بِهِ قَالَ
هَمَمْتُ أَنْ أَجْلِسَ وَأَدَعَهُ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদিন আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সলাত আদায়
করলাম। এ সালাতে তিনি ক্বিরআত এত দীর্ঘায়িত করলেন যে, আমি একটি মন্দ ইচ্ছা করে
বসলাম। আবূ ওয়ায়িল বলেছেনঃ তাঁকে (‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদকে ) জিঞ্জেস করা হ’ল,
আপনি কী ধরণের মন্দ ইচ্ছা করেছিলেন? জবাবে তিনি বললেনঃ আমি বসে পড়ার এবং তাঁর
পিছনে এ সলাত পরিত্যাগ করার ইচ্ছা করেছিলাম। ( ই.ফা. ১৬৮৫, ই.সে. ১৬৯২)
১৭০১
وَحَدَّثَنَاهُ
إِسْمَاعِيلُ بْنُ الْخَلِيلِ، وَسُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ
مُسْهِرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَهُ .
আ’মাশ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই
সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬৮৬, ই.সে. ১৬৯৩)
২৮. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি রাত্র ঘুমিয়ে
সকাল করল তার প্রসঙ্গে আলোচনা ।
১৭০২
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ
بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ، قَالَ عُثْمَانُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ
مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ ذُكِرَ عِنْدَ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ نَامَ لَيْلَةً حَتَّى أَصْبَحَ قَالَ "
ذَاكَ رَجُلٌ بَالَ الشَّيْطَانُ فِي أُذُنَيْهِ " . أَوْ قَالَ "
فِي أُذُنِهِ " .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, জনৈক ব্যক্তি সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর
কাছে বলা হ’ল যে, সে সকাল পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটায় (অর্থাৎ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়ে না
) এ কথা শুনে তিনি বললেনঃ ঐ লোকটি এমন যার কানে শাইত্বন পেশাব করে দিয়েছে অথবা
বলেছেন, দু’ কানে।[৩৫] ( ই.ফা. ১৬৮৭, ই.সে.১৬৯৮)
[৩৫] শাইত্বনের পেসাব দ্বারা শাইত্বন কর্তৃক ব্যক্তির
বিপর্যয় বুঝানো হয়েছে । এ ক্ষেত্রে উপহাসচ্ছলে তাঁকে উজ্জীবিত করা উদ্দেশ্য । (মুসলিম
শারহে নাবাবী-১ম খণ্ড ২৬৪পৃষ্টা)
১৭০৩
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ
بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَلِيِّ
بْنِ حُسَيْنٍ، أَنَّ الْحُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ، حَدَّثَهُ عَنْ عَلِيِّ بْنِ
أَبِي طَالِبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم طَرَقَهُ وَفَاطِمَةَ فَقَالَ
" أَلاَ تُصَلُّونَ " . فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّمَا
أَنْفُسُنَا بِيَدِ اللَّهِ فَإِذَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَنَا بَعَثَنَا .
فَانْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ قُلْتُ لَهُ ذَلِكَ ثُمَّ
سَمِعْتُهُ وَهُوَ مُدْبِرٌ يَضْرِبُ فَخِذَهُ وَيَقُولُ " وَكَانَ
الإِنْسَانُ أَكْثَرَ شَىْءٍ جَدَلاً " .
‘আলী
ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন রাতের বেলা তাঁর ও ফাত্বিমাহ্ (রাঃ)–এর
কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কি (তাহাজ্জুদের) সলাত আদায় কর না? তখন আমি বললাম,
হে আল্লাহর রাসূল! আমরা সবাই তো আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। তিনি ইচ্ছা করলে আমাদেরকে
জাগিয়ে দিতে পারেন। [‘আলী (রাঃ) বলেছেন] আমি এ কথা বললেঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিরে গেলেন। যখন তিনি ফিরে যাচ্ছিলেন, আমি শুনলাম তখন তিনি
উরুর উপরে সজোরে হাত চাপড়ে বলছেনঃ মানুষ অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিতর্ক করতে অভ্যস্ত।
(ই.ফা. ১৬৮৮, ই.সে. ১৬৯৫)
১৭০৪
حَدَّثَنَا عَمْرٌو
النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ عَمْرٌو حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم " يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ
عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ ثَلاَثَ عُقَدٍ إِذَا نَامَ بِكُلِّ عُقْدَةٍ
يَضْرِبُ عَلَيْكَ لَيْلاً طَوِيلاً فَإِذَا اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ
انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ وَإِذَا تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَتَانِ فَإِذَا صَلَّى
انْحَلَّتِ الْعُقَدُ فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طَيِّبَ النَّفْسِ وَإِلاَّ أَصْبَحَ
خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلاَنَ " .
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
এটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত পৌছিয়েছেন। তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন নিদ্রা যায় তখন
শাইত্বন তাঁর মাথার শেষ প্রান্তে অর্থাৎ ঘাড়ে তিনটা গিরা দেয়। প্রত্যেকটা গিরাতে
সে ফুঁক দিয়ে বলে, এখনো অনেক রাত আছে (ঘুমিয়ে থাক) তাই যখন সে ঘুম থেকে জেগে আল্লাহর
নাম উচ্চারণ করে তখন একটি গিরা খুলে যায়। এরপর সে ওযু করলে আরো একটি গিরাসহ মোট
দু’টি গিরা খুলে যায়। আর যখন সে (তাহাজ্জুদের ) সলাত আদায় করে তখন সবগুলো গিরা
খুলে যায়। এভাবে সে কর্মতৎপর ও প্রফুল্ল মনের অধিকারী হয়ে সকাল জেগে উঠে। অন্যথায়
মানুষ বিমর্ষ ও অলস মন নিয়ে জেগে উঠে। ( ই.ফা. ১৬৮৯, ইউ.সে. ১৬৯৬)
২৯. অধ্যায়ঃ
নাফ্ল সলাত নিজ গৃহে আদায়
করা মুস্তাহাব, মাসজিদে আদায়ও জায়িয
১৭০৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنِي
نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ، عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
اجْعَلُوا مِنْ صَلاَتِكُمْ فِي بُيُوتِكُمْ وَلاَ تَتَّخِذُوهَا قُبُورًا
" .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কিছু কিছু সলাত বাড়ীতে আদায়
করবে। (বাড়ীতে কোন সলাত না আদায় করে) বাড়ীকে তোমরা ক্ববর সদৃশ করে রেখো না। (ই.ফা.
১৬৯০,ই.সে. ১৬৯৭)
১৭০৬
وَحَدَّثَنَا ابْنُ
الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، أَخْبَرَنَا أَيُّوبُ، عَنْ نَافِعٍ،
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " صَلُّوا
فِي بُيُوتِكُمْ وَلاَ تَتَّخِذُوهَا قُبُورًا " .
'আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা বাড়ীতেও সলাত আদায় কর। বাড়ী
গুলোকে ক্ববর সদৃশ করে রেখো না। (ই. ফ. ১৬৯১, ই.সে. ১৬৯৮)
১৭০৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو
مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا قَضَى أَحَدُكُمُ الصَّلاَةَ
فِي مَسْجِدِهِ فَلْيَجْعَلْ لِبَيْتِهِ نَصِيبًا مِنْ صَلاَتِهِ فَإِنَّ اللَّهَ
جَاعِلٌ فِي بَيْتِهِ مِنْ صَلاَتِهِ خَيْرًا " .
জাবির
ইবনু 'আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন
মাসজিদে সলাত আদায় করবে তখন সে যেন বাড়ীতে আদায় করার জন্যও তার সলাতের কিছু অংশ
রেখে দেয়। কেননা তার সলাতের কারণে আল্লাহ তা'আলা তার বাড়ীতে বারাকাত ও কল্যাণ দান
করে থাকেন। (ই.ফা. ১৬৯২, ই.সে. ১৬৯৯)
১৭০৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ بَرَّادٍ الأَشْعَرِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، قَالاَ
حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي
مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَثَلُ الْبَيْتِ
الَّذِي يُذْكَرُ اللَّهُ فِيهِ وَالْبَيْتِ الَّذِي لاَ يُذْكَرُ اللَّهُ فِيهِ
مَثَلُ الْحَىِّ وَالْمَيِّتِ " .
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ঘরে আল্লাহকে স্মরণ করা হয় আর যে
ঘরে আল্লাহকে স্মরণ করা হয় না এরূপ দু'টি ঘরের তুলনা করা যায় জীবিত ও মৃতের সঙ্গে।
(ই.ফা. ১৬৯৩, ই.সে. ১৭০০)
১৭০৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ
بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
الْقَارِيُّ - عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ مَقَابِرَ
إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْفِرُ مِنَ الْبَيْتِ الَّذِي تُقْرَأُ فِيهِ سُورَةُ
الْبَقَرَةِ " .
আবূ
হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের ঘরসমূহকে ক্ববর সদৃশ করে রেখো
না (অর্থাৎ নাফ্ল সলাত সমূহ বাড়ীতে আদায় করবে, কারণ যে ঘরে সূরাহ্ বাক্বারাহ্ পাঠ
করা হয় শাইত্বন সে ঘর থেকে পালিয়ে যায়)। (ই.ফা. ১৬৯৪, ই.সে. ১৭০১)
১৭১০
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سَالِمٌ أَبُو النَّضْرِ، مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ
اللَّهِ عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، قَالَ احْتَجَرَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حُجَيْرَةً بِخَصَفَةٍ أَوْ حَصِيرٍ فَخَرَجَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فِيهَا - قَالَ - فَتَتَبَّعَ
إِلَيْهِ رِجَالٌ وَجَاءُوا يُصَلُّونَ بِصَلاَتِهِ - قَالَ - ثُمَّ جَاءُوا
لَيْلَةً فَحَضَرُوا وَأَبْطَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْهُمْ -
قَالَ - فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ فَرَفَعُوا أَصْوَاتَهُمْ وَحَصَبُوا الْبَابَ
فَخَرَجَ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُغْضَبًا فَقَالَ
لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا زَالَ بِكُمْ
صَنِيعُكُمْ حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُكْتَبُ عَلَيْكُمْ فَعَلَيْكُمْ
بِالصَّلاَةِ فِي بُيُوتِكُمْ فَإِنَّ خَيْرَ صَلاَةِ الْمَرْءِ فِي بَيْتِهِ
إِلاَّ الصَّلاَةَ الْمَكْتُوبَةَ " .
যায়দ
ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, খেজুর পাতা অথবা চাটাই দিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
একটি ছোট কামরা তৈরী করে তাতে সলাত আদায় করতে গেলেন। এ দেখে কিছু সংখ্যক লোক এসে
তাঁর সাথে সলাত আদায় করলেন। যায়দ ইবনু সাবিত বলেনঃ অন্য এক রাতেও লোকজন এসে জমা
হ'ল। কিন্তু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সে রাতে) দেরী করলেন
এবং এমনকি তিনি সে রাতে আসলেন না। তাই লোকজন উচ্চৈঃস্বরে তাঁকে ডাকাডাকি করল এবং
বাড়ীর দরজায় কঙ্কর ছুঁড়তে শুরু করল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) রাগান্বিত হয়ে তাদের মাঝে এসে বললেনঃ তোমরা যখন ক্রমাগত এরূপ করছিলে তখন
আমার ধারণা হ'ল যে, এ সলাত হয়ত তোমাদের জন্য ফরয করে দেয়া হবে। অতএব তোমরা বাড়িতেই
(নাফ্ল) আদায় করবে। কেননা ফরয সলাত ছাড়া অন্যসব সলাত বাড়ীতে আদায় করা মানুষের
জন্য সর্বোত্তম। (ই.ফা. ১৬৯৫, ই.সে. ১৭০২)
১৭১১
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ
بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ
عُقْبَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا النَّضْرِ، عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ زَيْدِ
بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اتَّخَذَ حُجْرَةً فِي
الْمَسْجِدِ مِنْ حَصِيرٍ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِيهَا
لَيَالِيَ حَتَّى اجْتَمَعَ إِلَيْهِ نَاسٌ . فَذَكَرَ نَحْوَهُ وَزَادَ فِيهِ
" وَلَوْ كُتِبَ عَلَيْكُمْ مَا قُمْتُمْ بِهِ " .
যায়দ
ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাটাই দ্বারা ঘিরে মাসজিদের মধ্যে
একটি কামরা বানালেন এবং কয়েক রাত পর্যন্ত সেখানে সলাত আদায় করলেন। তা দেখে কিছু
লোক সেখানে সমবেত হ'ল। এতটুকু বর্ণনা করার পর বর্ণনাকারী উপরে বর্ণিত হাদীসের
অনুরূপ বর্ণনা করলেন। এর বর্ণনাতে এতটুকু অধিক বর্ণনা হয়েছে যে, এ সলাতে যদি
তোমাদের জন্য ফরয করে দেয়া হ'ত তাহলে তোমরা তা আদায় করতে সক্ষম হতে না। (ই.ফা.
১৬৯৬, ই.সে. ১৭০৩)
৩০. অধ্যায়ঃ
রাতের সলাত ও অন্যান্য
ক্ষেত্রে নিয়মিত 'আমালের ফযীলাত
১৭১২
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، - يَعْنِي الثَّقَفِيَّ - حَدَّثَنَا عُبَيْدُ
اللَّهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ،
أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَصِيرٌ وَكَانَ
يُحَجِّرُهُ مِنَ اللَّيْلِ فَيُصَلِّي فِيهِ فَجَعَلَ النَّاسُ يُصَلُّونَ
بِصَلاَتِهِ وَيَبْسُطُهُ بِالنَّهَارِ فَثَابُوا ذَاتَ لَيْلَةٍ فَقَالَ
" يَا أَيُّهَا النَّاسُ عَلَيْكُمْ مِنَ الأَعْمَالِ مَا تُطِيقُونَ
فَإِنَّ اللَّهَ لاَ يَمَلُّ حَتَّى تَمَلُّوا وَإِنَّ أَحَبَّ الأَعْمَالِ إِلَى
اللَّهِ مَا دُووِمَ عَلَيْهِ وَإِنْ قَلَّ " . وَكَانَ آلُ مُحَمَّدٍ
صلى الله عليه وسلم إِذَا عَمِلُوا عَمَلاً أَثْبَتُوهُ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একখানা চাটাই ছিল। রাতের
বেলা তিনি এ চাটাই দিয়ে একটি কামরা বানাতেন এবং তার মধ্যে সলাত আদায় করতেন। লোকজন
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে এ সলাত আদায় করত এবং দিনের
বেলা বিছিয়ে নিত। এক রাতে লোকজন বেশী ভীড় করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) লোকজনকে সম্বোধন করে বললেনঃ হে লোকজন যতটা 'আমাল তোমরা স্থায়ীভাবে করতে
সক্ষম হবে ততটা 'আমাল করবে। কেননা আল্লাহ তা'আলা তোমাদের 'ইবাদাতের সাওয়াব দিতে
ক্লান্ত হবেন না। বরং তোমরাই 'ইবাদাত বন্দেগী করতে করতে ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়বে।
আর কম হলেও আল্লাহর কাছে স্থায়ী 'আমাল সর্বাপেক্ষা বেশী পছন্দনীয়। (বর্ণনাকারী
বলেন) মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসারী ও বংশধরগণ যে
'আমাল করতেন তা স্থায়ীভাবে সর্বদাই করতেন। (ই.ফা. ১৬৯৭, ই.সে. ১৭০৪)
১৭১৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَلَمَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ عَائِشَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ أَىُّ الْعَمَلِ أَحَبُّ إِلَى
اللَّهِ قَالَ " أَدْوَمُهُ وَإِنْ قَلَّ " .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ মর্মে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, আল্লাহ তা'আলার
কাছে কোন্ ধরনের 'আমাল সবচাইতে বেশী প্রিয়। জবাবে তিনি বলেছিলেনঃ কম হলেও যে 'আমাল
স্থায়ী (সে 'আমাল আল্লাহ তা'আলার কাছে সবচাইতে বেশী প্রিয়)। (ই.ফা. ১৬৯৮, ই.সে.
১৭০৫)
১৭১৪
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ
بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ،
عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ سَأَلْتُ أُمَّ
الْمُؤْمِنِينَ عَائِشَةَ قَالَ قُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ كَيْفَ كَانَ
عَمَلُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ كَانَ يَخُصُّ شَيْئًا مِنَ
الأَيَّامِ قَالَتْ لاَ . كَانَ عَمَلُهُ دِيمَةً وَأَيُّكُمْ يَسْتَطِيعُ مَا
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْتَطِيعُ .
'আলক্বামাহ্
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি উম্মুল মু'মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম। বললামঃ হে উম্মুল
মু'মিনীন! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর 'আমাল কেমন ছিল। তিনি
কি কোন নির্দিষ্ট 'ইবাদাতের জন্য কোন বিশেষ দিন নির্দিষ্ট করে নিতেন? জবাবে ‘আয়িশা
(রাঃ) বললেনঃ না। তবে তাঁর 'আমাল ছিল স্থায়ী প্রকৃতির। আর তোমাদের মধ্যে কে এমন
আছে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কাজ করতে পারেন সেও সে কাজ
করতে পারবে? (ই.ফা. ১৬৯৯, ই.সে. ১৭০৬)
১৭১৫
وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا
سَعْدُ بْنُ سَعِيدٍ، أَخْبَرَنِي الْقَاسِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ،
قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَحَبُّ الأَعْمَالِ
إِلَى اللَّهِ تَعَالَى أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ " . قَالَ وَكَانَتْ
عَائِشَةُ إِذَا عَمِلَتِ الْعَمَلَ لَزِمَتْهُ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর কাছে এমন
'আমাল সবচেয়ে প্রিয় যা কম হলেও স্থায়ীভাবে করা হয়। হাদীসের বর্ণনাকারী ক্বাসিম
ইবনু মুহাম্মাদ বলেছেনঃ ‘আয়িশা (রাঃ) কোন্ 'আমাল শুরু করলে তা স্থায়ী ও অবশ্য
করণীয় করে নিতেন। (ই.ফা. ১৭০০, ই.সে. ১৭০৭)
৩১. অধ্যায়ঃ
সলাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে
অথবা কুরআন পাঠ ও যিক্রে জিহবা জড়িয়ে যেতে লাগলে, ঘুমিয়ে পড়া কিংবা বিশ্রাম নেয়ার
আদেশ, যাতে তা কেটে যায়
১৭১৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا
ابْنُ عُلَيَّةَ، ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ،
عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم الْمَسْجِدَ وَحَبْلٌ مَمْدُودٌ بَيْنَ سَارِيَتَيْنِ فَقَالَ
" مَا هَذَا " . قَالُوا لِزَيْنَبَ تُصَلِّي فَإِذَا كَسِلَتْ
أَوْ فَتَرَتْ أَمْسَكَتْ بِهِ . فَقَالَ " حُلُّوهُ لِيُصَلِّ
أَحَدُكُمْ نَشَاطَهُ فَإِذَا كَسِلَ أَوْ فَتَرَ قَعَدَ " . وَفِي
حَدِيثِ زُهَيْرٍ " فَلْيَقْعُدْ " .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে প্রবেশ করে
দেখলেন মাসজিদের দু'টি খুঁটির মাঝে রশি বেঁধে টানানো আছে। এ দেখে তিনি জিজ্ঞেস
করলেনঃ এটা কিসের জন্য? সবাই বললঃ এটা যায়নাবের রশি। তিনি সলাত আদায় করতে করতে যখন
ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়েন তখন এ রশিটা দিয়ে নিজেকে আটকে রাখেন। এ কখা শুনে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটি খুলে ফেল। তোমরা সানন্দ
সাগ্রহ ও স্বতঃস্ফূর্ততা নিয়ে সলাত আদায় করবে। সলাত আদায় করতে করতে কেউ যখন
ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়বে তখন বসে আদায় করবে। যুহায়র বর্ণিত হাদীসে (আরবী) শব্দ
আছে যার অর্থ হ'ল সে যেন বসে পড়ে। (ই.ফা. ১৭০১, ই.সে. ১৭০৮)
১৭১৭
وَحَدَّثَنَاهُ شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْوَارِثِ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم مِثْلَهُ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ
হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৭০২, ই.সে. ১৭০৯)
১৭১৮
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، وَمُحَمَّدُ بْنُ
سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ،
زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّ الْحَوْلاَءَ بِنْتَ
تُوَيْتِ بْنِ حَبِيبِ بْنِ أَسَدِ بْنِ عَبْدِ الْعُزَّى مَرَّتْ بِهَا
وَعِنْدَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ هَذِهِ الْحَوْلاَءُ
بِنْتُ تُوَيْتٍ وَزَعَمُوا أَنَّهَا لاَ تَنَامُ اللَّيْلَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " لاَ تَنَامُ اللَّيْلَ خُذُوا مِنَ الْعَمَلِ مَا
تُطِيقُونَ فَوَاللَّهِ لاَ يَسْأَمُ اللَّهُ حَتَّى تَسْأَمُوا " .
'উরওয়াহ্
ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রাঃ) তাঁকে বলেছেন যে,
হাওলা বিনতু তুওয়াইত ইবনু হাবীব ইবনু আসাদ ইবনু 'আবদুল 'উয্যা একদিন তাঁর কাছে
গেলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাঁর কাছে গেলেন।
‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললামঃ এ হ'ল হাওলা বিনতু তুওয়াইত। লোকজন বলে থাকে যে, সে
রাতে ঘুমায় না। অর্থাৎ সারারাত 'ইবাদাত-বন্দেগী করে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথায় বিস্মিত হয়ে বললেনঃ সে রাতেও ঘুমায় না? তোমরা নাফ্ল
‘আমাল ততটুকু কর যতটুকু তোমাদের সাধ্য আছে। আল্লাহর ক্বসম, তিনি পুরস্কার দিতে
ক্লান্ত হবেন না। বরং তোমরাই ('ইবাদাতে) ক্লান্ত হয়ে পড়বে। (ই.ফা. ১৭০৩, ই.সে.
১৭১০)
১৭১৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو
كُرَيْبٍ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ، عُرْوَةَ ح
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ دَخَلَ
عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدِي امْرَأَةٌ فَقَالَ "
مَنْ هَذِهِ " . فَقُلْتُ امْرَأَةٌ لاَ تَنَامُ تُصَلِّي . قَالَ
" عَلَيْكُمْ مِنَ الْعَمَلِ مَا تُطِيقُونَ فَوَاللَّهِ لاَ يَمَلُّ
اللَّهُ حَتَّى تَمَلُّوا " . وَكَانَ أَحَبَّ الدِّينِ إِلَيْهِ مَا
دَاوَمَ عَلَيْهِ صَاحِبُهُ وَفِي حَدِيثِ أَبِي أُسَامَةَ أَنَّهَا امْرَأَةٌ مِنْ
بَنِي أَسَدٍ .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন সময় আমার কাছে
আসলেন যখন আমার কাছে একজন মহিলা উপস্থিত ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ কে? আমি
বললামঃ এ সেই মহিলা যে রাতের বেলা না ঘুমিয়ে সলাত আদায় করে। (এ কথা শুনে) তিনি
বললেনঃ তোমরা ততটুকু পরিমাণ 'আমাল করবে যা স্থায়ীভাবে করতে পারবে। আমি আল্লাহর শপথ
করে বলছি, আল্লাহ তা'আলা (তোমাদের 'আমালের) সওয়াব বা পুরস্কার দিতে অক্ষম হবেন না।
বরং তোমরাই 'আমাল করতে অক্ষম হয়ে পড়বে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর দ্বীনের ততটুকু 'আমাল অত্যধিক পছন্দনীয় ছিল 'আমালকারী যা স্থায়ীভাবে
করতে পারবে। আবূ উসামাহ্ বর্ণিত হাদীসে উল্লেখিত আছে, উক্ত মহিলা ছিলেন বানী আসাদ
গোত্রের একজন। (ই.ফা. ১৭০৪, ই.সে. ১৭১১)
১৭২০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي
ح، وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، جَمِيعًا عَنْ
هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، بْنُ سَعِيدٍ - وَاللَّفْظُ
لَهُ - عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا نَعَسَ
أَحَدُكُمْ فِي الصَّلاَةِ فَلْيَرْقُدْ حَتَّى يَذْهَبَ عَنْهُ النَّوْمُ فَإِنَّ
أَحَدَكُمْ إِذَا صَلَّى وَهُوَ نَاعِسٌ لَعَلَّهُ يَذْهَبُ يَسْتَغْفِرُ
فَيَسُبُّ نَفْسَهُ " .
‘আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ সলাত আদায়কালে
তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে শুয়ে ঘুমিয়ে নিবে এবং তন্দ্রা বা ঘুম দূর হলে পরে আবার
সলাত আদায় করবে। কারণ, তোমরা কেউ হয়ত তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় সলাত আদায় করলে দু'আ ও
ক্ষমা প্রার্থনার স্থলে নিজেকে ভৎর্সনা (বদ্দু'আ) করে ফেলবে। (ই.ফা. ১৭০৫, ই.সে.
১৭১২)
১৭২১
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا
حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ مِنَ اللَّيْلِ فَاسْتَعْجَمَ الْقُرْآنُ عَلَى
لِسَانِهِ فَلَمْ يَدْرِ مَا يَقُولُ فَلْيَضْطَجِعْ " .
হাম্মাম
ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) আমার কাছে আল্লাহর রসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কিছু সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করেছেন। তার মধ্যে একটি হাদীস হ'ল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে থেকে কেউ যদি রাতে সলাত আদায় করতে ওঠে আর (ঘুমের প্রভাবে) তার কুরআন তিলাওয়াত আড়ষ্টতা আসে অর্থাৎ সে কি বলছে সে সম্পর্কে তার কোন চেতনা না থাকে তাহলে যেন সে শুয়ে (ঘুমিয়ে) পড়ে। (ই.ফা. ১৭০৬, ই.সে. ১৭১৩)
No comments