সহীহ মুসলিম অধ্যায় "সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা ও শিষ্টাচার" হাদিস নং -৬৩৯৪ থেকে ৬৬১৫
সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা ও শিষ্টাচার ৬৩৯৪ - ৬৬১৫
১.
অধ্যায়ঃ
মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার ও উভয়ের মধ্যে কে তা পাওয়ার
অধিক হাক্দার
৬৩৯৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ
جَمِيلِ بْنِ طَرِيفٍ الثَّقَفِيُّ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا
جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ
مَنْ أَحَقُّ النَّاسِ بِحُسْنِ صَحَابَتِي قَالَ " أُمُّكَ " .
قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ " ثُمَّ أُمُّكَ " . قَالَ ثُمَّ مَنْ
قَالَ " ثُمَّ أُمُّكَ " . قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ " ثُمَّ
أَبُوكَ " . وَفِي حَدِيثِ قُتَيْبَةَ مَنْ أَحَقُّ بِحُسْنِ صَحَابَتِي
وَلَمْ يَذْكُرِ النَّاسَ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! মানুষের মধ্যে আমার সদ্ব্যবহারের সর্বাপেক্ষা
হাক্দার ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরেও
তোমার মা। সে বলল তারপর কে? তিনি বললেন, তারপরও তোমার মা। সে বলল, এরপর কে? তিনি
বললেন, এরপর তোমার পিতা। আর কুতাইবাহ্ বর্ণিত হাদিসে “আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার
সর্বাপেক্ষা যোগ্য কে” – এর উল্লেখ আছে।
তিনি (কুতাইবাহ্) তাঁর রিওয়ায়াতে “মানুষ” শব্দটি উল্লেখ করেন নি। (ই.ফা. ৭ম খণ্ড,
৬২৬৯; ই.সে. ৮ম খণ্ড, ৬৩১৮)
৬৩৯৫
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ
الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيُّ حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
عُمَارَةَ، بْنِ الْقَعْقَاعِ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَحَقُّ بِحُسْنِ الصُّحْبَةِ قَالَ "
أُمُّكَ ثُمَّ أُمُّكَ ثُمَّ أُمُّكَ ثُمَّ أَبُوكَ ثُمَّ أَدْنَاكَ أَدْنَاكَ
" .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! (মানুষের মধ্যে) সদ্ব্যবহার পাওয়ার
সর্বাধিক অধিকারী ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, তোমার মা। তারপরও তোমার মা। তারপরও
তোমার মা। তারপর তোমার পিতা। অতঃপর তোমার নিকটবর্তী জন। এরপর তোমার নিকটবর্তী জন।
(ই.ফা. ৬২৭০; ই.সে. ৬৩১৯)
৬৩৯৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا شَرِيكٌ، عَنْ عُمَارَةَ، وَابْنِ، شُبْرُمَةَ عَنْ أَبِي،
زُرْعَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم . فَذَكَرَ بِمِثْلِ حَدِيثِ جَرِيرٍ وَزَادَ فَقَالَ "
نَعَمْ وَأَبِيكَ لَتُنَبَّأَنَّ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আগমন করলো। এরপর তিনি জারীর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা
করেন। এতে তিনি অতিরিক্ত বলেছেন, এরপর সে বলল, হ্যাঁ। ‘তোমার পিতার শপথ!’ তুমি
অবশ্যই অবগত হবে। (ই.ফা. ৬২৭১; ই.সে. ৬৩২০)
৬৩৯৭
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ،
حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَلْحَةَ، ح وَحَدَّثَنِي
أَحْمَدُ، بْنُ خِرَاشٍ حَدَّثَنَا حَبَّانُ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، كِلاَهُمَا
عَنِ ابْنِ شُبْرُمَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ فِي حَدِيثِ وُهَيْبٍ مَنْ أَبَرُّ
وَفِي حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ طَلْحَةَ أَىُّ النَّاسِ أَحَقُّ مِنِّي بِحُسْنِ
الصُّحْبَةِ ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِ حَدِيثِ جَرِيرٍ .
ইবনু শুব্রুমাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে উহায়ব বর্ণিত হাদীসে (সর্বাপেক্ষা
সদ্ব্যবহার পাওয়ার যোগ্য কে?) উল্লেখ রয়েছে।
আর মুহাম্মাদ ইবনু তালহার হাদীসে মানুষের মধ্যে আমার সদ্ব্যবহারের সর্বাপেক্ষা
বেশী অধিকার কার রয়েছে। এরপর তিনি জারীর বর্ণিত হাদীসের মতোই উল্লেখ করেছেন।
(ই.ফা. ৬২৭২; ই.সে. ৬৩২১)
৬৩৯৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ،
عَنْ حَبِيبٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى، -
يَعْنِي ابْنَ سَعِيدٍ الْقَطَّانَ - عَنْ سُفْيَانَ، وَشُعْبَةَ قَالاَ
حَدَّثَنَا حَبِيبٌ، عَنْ أَبِي الْعَبَّاسِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو،
قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَسْتَأْذِنُهُ فِي
الْجِهَادِ فَقَالَ " أَحَىٌّ وَالِدَاكَ " . قَالَ نَعَمْ .
قَالَ " فَفِيهِمَا فَجَاهِدْ " .
‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আম্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আসলো। এরপর সে তাঁর নিকট জিহাদে অংশগ্রহণের অনুমতি চাইল। তখন
তিনি বললেন, তোমার মাতা-পিতা কি জীবিত আছেন? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে
তাদের উভয়ের (খিদমাত করে) সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা কর। (ই.ফা. ৬২৭৩; ই.সে. ৬৩২২)
৬৩৯৯
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ،
حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ حَبِيبٍ، سَمِعْتُ أَبَا
الْعَبَّاسِ، سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، يَقُولُ جَاءَ
رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . فَذَكَرَ بِمِثْلِهِ . قَالَ
مُسْلِمٌ أَبُو الْعَبَّاسِ اسْمُهُ السَّائِبُ بْنُ فَرُّوخَ الْمَكِّيُّ .
আবুল ‘আব্বাস থেকে বর্ণিতঃ
আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্র ইবনুল ‘আস (রাঃ)-কে
বলতে শুনেছি যে, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে
আসলো! এরপর বর্ণনাকারী আগের মতো উল্লেখ করেন।
ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেন, আবুল ‘আব্বাস-এর আসল নাম সায়িব ইবনু ফার্রুখ আল মাক্কী
(রহঃ)। (ই.ফা. ৬২৭৪; ই.সে. ৬৩২৩)
৬৪০০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، أَخْبَرَنَا
ابْنُ بِشْرٍ، عَنْ مِسْعَرٍ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا
مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، ح وَحَدَّثَنِي الْقَاسِمُ بْنُ
زَكَرِيَّاءَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ، الْجُعْفِيُّ عَنْ زَائِدَةَ،
كِلاَهُمَا عَنِ الأَعْمَشِ، جَمِيعًا عَنْ حَبِيبٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ
.
আবূ কুরায়ব (রহঃ), মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ও কাসিম
ইবনু যাকারিয়্যা (রহঃ) হাবীব (রহঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে হুবহু বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৬২৭৫; ই.সে.
৬৩২৪)
৬৪০১
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ،
عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، أَنَّ نَاعِمًا، مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ
حَدَّثَهُ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ أَقْبَلَ رَجُلٌ
إِلَى نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أُبَايِعُكَ عَلَى الْهِجْرَةِ
وَالْجِهَادِ أَبْتَغِي الأَجْرَ مِنَ اللَّهِ . قَالَ " فَهَلْ مِنْ
وَالِدَيْكَ أَحَدٌ حَىٌّ " . قَالَ نَعَمْ بَلْ كِلاَهُمَا . قَالَ
" فَتَبْتَغِي الأَجْرَ مِنَ اللَّهِ " . قَالَ نَعَمْ . قَالَ
" فَارْجِعْ إِلَى وَالِدَيْكَ فَأَحْسِنْ صُحْبَتَهُمَا " .
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্র ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)- এর দরবারে আগমন করলো। এরপর সে বলল, আমি আপনার নিকট হিজরত ও জিহাদের
জন্য বাই’আত গ্রহণ করব। (এর দ্বারা) আমি আল্লাহর কাছে পুরস্কার ও বিনিময় আশা করি।
তিনি বললেন, তোমার পিতা-মাতার মধ্যে কেউ জীবিত আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ, তারা দুজনেই
জীবিত। তিনি আবার বললেন, সত্যিই কি! তুমি আল্লাহর নিকট প্রতিদান আকাঙ্খা করছ? সে
বলল, হ্যাঁ! তিনি বললেন, তাহলে তুমি তোমার পিতা-মাতার কাছে ফিরে যাও এবং তাদের
দু’জনের সঙ্গে সদাচরণ কর। (ই.ফা. ৬২৭৬; ই.সে. ৬৩২৫)
২.
অধ্যায়ঃ
নফল সলাত ও অন্য যে কোন নফল ‘ইবাদতের উপর মাতা-পিতার
খিদমাত অগ্রাধিকার প্রাপ্ত
৬৪০২
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ،
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ هِلاَلٍ،
عَنْ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ كَانَ جُرَيْجٌ
يَتَعَبَّدُ فِي صَوْمَعَةٍ فَجَاءَتْ أُمُّهُ . قَالَ حُمَيْدٌ فَوَصَفَ لَنَا
أَبُو رَافِعٍ صِفَةَ أَبِي هُرَيْرَةَ لِصِفَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم أُمَّهُ حِينَ دَعَتْهُ كَيْفَ جَعَلَتْ كَفَّهَا فَوْقَ حَاجِبِهَا ثُمَّ
رَفَعَتْ رَأْسَهَا إِلَيْهِ تَدْعُوهُ فَقَالَتْ يَا جُرَيْجُ أَنَا أُمُّكَ
كَلِّمْنِي . فَصَادَفَتْهُ يُصَلِّي فَقَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي .
فَاخْتَارَ صَلاَتَهُ فَرَجَعَتْ ثُمَّ عَادَتْ فِي الثَّانِيَةِ فَقَالَتْ يَا
جُرَيْجُ أَنَا أُمُّكَ فَكَلِّمْنِي . قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي .
فَاخْتَارَ صَلاَتَهُ فَقَالَتِ اللَّهُمَّ إِنَّ هَذَا جُرَيْجٌ وَهُوَ ابْنِي
وَإِنِّي كَلَّمْتُهُ فَأَبَى أَنْ يُكَلِّمَنِي اللَّهُمَّ فَلاَ تُمِتْهُ حَتَّى
تُرِيَهُ الْمُومِسَاتِ . قَالَ وَلَوْ دَعَتْ عَلَيْهِ أَنْ يُفْتَنَ لَفُتِنَ
. قَالَ وَكَانَ رَاعِي ضَأْنٍ يَأْوِي إِلَى دَيْرِهِ - قَالَ - فَخَرَجَتِ
امْرَأَةٌ مِنَ الْقَرْيَةِ فَوَقَعَ عَلَيْهَا الرَّاعِي فَحَمَلَتْ فَوَلَدَتْ
غُلاَمًا فَقِيلَ لَهَا مَا هَذَا قَالَتْ مِنْ صَاحِبِ هَذَا الدَّيْرِ . قَالَ
فَجَاءُوا بِفُئُوسِهِمْ وَمَسَاحِيهِمْ فَنَادَوْهُ فَصَادَفُوهُ يُصَلِّي فَلَمْ
يُكَلِّمْهُمْ - قَالَ - فَأَخَذُوا يَهْدِمُونَ دَيْرَهُ فَلَمَّا رَأَى ذَلِكَ
نَزَلَ إِلَيْهِمْ فَقَالُوا لَهُ سَلْ هَذِهِ - قَالَ - فَتَبَسَّمَ ثُمَّ مَسَحَ
رَأْسَ الصَّبِيِّ فَقَالَ مَنْ أَبُوكَ قَالَ أَبِي رَاعِي الضَّأْنِ .
فَلَمَّا سَمِعُوا ذَلِكَ مِنْهُ قَالُوا نَبْنِي مَا هَدَمْنَا مِنْ دَيْرِكَ
بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ . قَالَ لاَ وَلَكِنْ أَعِيدُوهُ تُرَابًا كَمَا كَانَ
ثُمَّ عَلاَهُ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জুরায়জ (বানী ইসরাঈলের একজন আবিদ
ব্যক্তি) তাঁর ‘ইবাদাতখানায় ‘ইবাদাতে নিমগ্ন থাকতেন। (একবার) তাঁর মাতা তাঁর কাছে
আসলেন।
হুমায়দ (রহঃ) বলেন, আমাদের কাছে আবূ রাফি‘ এমন ভঙ্গিতে ব্যক্ত করেন, যেমনভাবে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মায়ের ডাকের ভঙ্গিতে আবূ
হুরায়রা্ (রাঃ)-এর কাছে ব্যক্ত করেছেন। কিভাবে তাঁর হাত তাঁর ভ্রুর উপর রাখছিলেন।
এরপর তাঁর দিকে মাথা উঁচু করে তাকে ডাকছিলেন। বললেন, হে জুরায়জ! আমি তোমার মা,
আমার সাথে কথা বলো। এ কথা এমন অবস্থায় বলছিলেন, যখন জুরায়জ সলাতে নিমগ্ন ছিলেন।
তখন তিনি মনে মনে বলতে লাগলেন, “হে আল্লাহ! (একদিকে) আমার মা আর (অপরদিকে) আমার
সলাত (আমি কী করি?)”। রাবী বলেন, অবশেষে তিনি তাঁর সলাতকে অগ্রাধিকার দিলেন এবং
তাঁর মা ফিরে গেলেন। পরে তিনি দ্বিতীয়বার আসলেন এবং বললেন, হে জুরায়জ! আমি তোমার
মা, তুমি আমার সঙ্গে কথা বলো। তিনি বললেন, ইয়া আল্লাহ! আমার মা, আমার সলাত। তখন
তিনি তাঁর সলাতে ব্যস্ত রইলেন। তখন তাঁর মা বললেন, “হে আল্লাহ! এ জুরায়জ আমারই
ছেলে। আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছিলাম। সে আমার সাথে কথা বলতে অস্বীকার করল। হে
আল্লাহ! তার মৃত্যু দিয়ো না, যে পর্যন্ত তাকে ব্যভিচারিণীর মুখ না দেখাও।”
তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যদি তাঁর মাতা তাঁর বিরুদ্ধে অন্য
কোন বিপদের জন্য বদদু‘আ করতেন তাহলে অবশ্যই সে বিপদে পতিত হত।
তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, এক মেষ রাখাল জুরায়জ-এর
‘ইবাদাতখানার নিকটেই (মাঝে মাঝে) আশ্রয় নিত। তিনি বলেন, এরপর গ্রাম থেকে এক মহিলা
বের হয়ে এলে। উক্ত রাখাল তার সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। এতে মহিলাটি গর্ভবতী হয়ে
পড়ে এবং একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয়। তখন লোকেরা তাকে জিজ্ঞেস করলো, এ (সন্তান)
কোথা থেকে? সে উত্তর দিল, এ ‘ইবাদাতখানায় যে বাস করে, তার থেকে। তিনি বলেন, এরপর
তারা শাবল-কোদাল ইত্যাদি নিয়ে এলো এবং চিৎকার করে ডাক দিল। তখন জুরায়জ সলাতে মশগুল
ছিলেন। কাজেই তিনি তাদের সাথে কথা বললেন না। তিনি বলেন, এরপর তারা তাঁর
‘ইবাদাতখানা ধ্বংস করতে লাগল। তিনি এ অবস্থা দেখে নীচে নেমে এলেন। এরপর তারা বলল,
এ মহিলাকে জিজ্ঞেস করো (সে কী বলছে)। তিনি বলেন, তখন জুরায়জ মুচকি হেসে শিশুটির
মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, তোমার পিতা কে? তখন শিশুটি বলল, আমার পিতা সে মেষ রাখাল।
যখন তারা সে শিশুটির মুখে এ কথা শুনতে পেল তখন তারা বলল, (হে দরবেশ) আমরা তোমার
‘ইবাদাতখানার (গীর্জার) যতটুকু ভেঙ্গে ফেলেছি তা সোনা-রূপা দিয়ে পুনঃনির্মাণ করে
দেব। তিনি বললেন, না; বরং তোমরা মাটি দ্বারাই পূর্বের ন্যায় তা নির্মাণ করে দাও।
এরপর তিনি তাঁর ‘ইবাদাতগাহে উঠে বসলেন। (ই.ফা. ৬২৭৭; ই.সে. ৬৩২৬)
৬৪০৩
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " لَمْ يَتَكَلَّمْ فِي الْمَهْدِ إِلاَّ ثَلاَثَةٌ عِيسَى
ابْنُ مَرْيَمَ وَصَاحِبُ جُرَيْجٍ وَكَانَ جُرَيْجٌ رَجُلاً عَابِدًا فَاتَّخَذَ
صَوْمَعَةً فَكَانَ فِيهَا فَأَتَتْهُ أُمُّهُ وَهُوَ يُصَلِّي فَقَالَتْ يَا
جُرَيْجُ . فَقَالَ يَا رَبِّ أُمِّي وَصَلاَتِي . فَأَقْبَلَ عَلَى صَلاَتِهِ
فَانْصَرَفَتْ فَلَمَّا كَانَ مِنَ الْغَدِ أَتَتْهُ وَهُوَ يُصَلِّي فَقَالَتْ
يَا جُرَيْجُ فَقَالَ يَا رَبِّ أُمِّي وَصَلاَتِي فَأَقْبَلَ عَلَى صَلاَتِهِ
فَانْصَرَفَتْ فَلَمَّا كَانَ مِنَ الْغَدِ أَتَتْهُ وَهُوَ يُصَلِّي فَقَالَتْ
يَا جُرَيْجُ . فَقَالَ أَىْ رَبِّ أُمِّي وَصَلاَتِي . فَأَقْبَلَ عَلَى
صَلاَتِهِ فَقَالَتِ اللَّهُمَّ لاَ تُمِتْهُ حَتَّى يَنْظُرَ إِلَى وُجُوهِ
الْمُومِسَاتِ . فَتَذَاكَرَ بَنُو إِسْرَائِيلَ جُرَيْجًا وَعِبَادَتَهُ
وَكَانَتِ امْرَأَةٌ بَغِيٌّ يُتَمَثَّلُ بِحُسْنِهَا فَقَالَتْ إِنْ شِئْتُمْ
لأَفْتِنَنَّهُ لَكُمْ - قَالَ - فَتَعَرَّضَتْ لَهُ فَلَمْ يَلْتَفِتْ إِلَيْهَا
فَأَتَتْ رَاعِيًا كَانَ يَأْوِي إِلَى صَوْمَعَتِهِ فَأَمْكَنَتْهُ مِنْ
نَفْسِهَا فَوَقَعَ عَلَيْهَا فَحَمَلَتْ فَلَمَّا وَلَدَتْ قَالَتْ هُوَ مِنْ
جُرَيْجٍ . فَأَتَوْهُ فَاسْتَنْزَلُوهُ وَهَدَمُوا صَوْمَعَتَهُ وَجَعَلُوا
يَضْرِبُونَهُ فَقَالَ مَا شَأْنُكُمْ قَالُوا زَنَيْتَ بِهَذِهِ الْبَغِيِّ
فَوَلَدَتْ مِنْكَ . فَقَالَ أَيْنَ الصَّبِيُّ فَجَاءُوا بِهِ فَقَالَ دَعُونِي
حَتَّى أُصَلِّيَ فَصَلَّى فَلَمَّا انْصَرَفَ أَتَى الصَّبِيَّ فَطَعَنَ فِي بَطْنِهِ
وَقَالَ يَا غُلاَمُ مَنْ أَبُوكَ قَالَ فُلاَنٌ الرَّاعِي - قَالَ - فَأَقْبَلُوا
عَلَى جُرَيْجٍ يُقَبِّلُونَهُ وَيَتَمَسَّحُونَ بِهِ وَقَالُوا نَبْنِي لَكَ
صَوْمَعَتَكَ مِنْ ذَهَبٍ . قَالَ لاَ أَعِيدُوهَا مِنْ طِينٍ كَمَا كَانَتْ .
فَفَعَلُوا . وَبَيْنَا صَبِيٌّ يَرْضَعُ مِنْ أُمِّهِ فَمَرَّ رَجُلٌ رَاكِبٌ
عَلَى دَابَّةٍ فَارِهَةٍ وَشَارَةٍ حَسَنَةٍ فَقَالَتْ أُمُّهُ اللَّهُمَّ
اجْعَلِ ابْنِي مِثْلَ هَذَا . فَتَرَكَ الثَّدْىَ وَأَقْبَلَ إِلَيْهِ فَنَظَرَ
إِلَيْهِ فَقَالَ اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلْنِي مِثْلَهُ . ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى
ثَدْيِهِ فَجَعَلَ يَرْتَضِعُ . قَالَ فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَحْكِي ارْتِضَاعَهُ بِإِصْبَعِهِ
السَّبَّابَةِ فِي فَمِهِ فَجَعَلَ يَمُصُّهَا . قَالَ وَمَرُّوا بِجَارِيَةٍ وَهُمْ
يَضْرِبُونَهَا وَيَقُولُونَ زَنَيْتِ سَرَقْتِ . وَهِيَ تَقُولُ حَسْبِيَ
اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ . فَقَالَتْ أُمُّهُ اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلِ
ابْنِي مِثْلَهَا . فَتَرَكَ الرَّضَاعَ وَنَظَرَ إِلَيْهَا فَقَالَ اللَّهُمَّ
اجْعَلْنِي مِثْلَهَا . فَهُنَاكَ تَرَاجَعَا الْحَدِيثَ فَقَالَتْ حَلْقَى
مَرَّ رَجُلٌ حَسَنُ الْهَيْئَةِ فَقُلْتُ اللَّهُمَّ اجْعَلِ ابْنِي مِثْلَهُ .
فَقُلْتَ اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلْنِي مِثْلَهُ . وَمَرُّوا بِهَذِهِ الأَمَةِ
وَهُمْ يَضْرِبُونَهَا وَيَقُولُونَ زَنَيْتِ سَرَقْتِ . فَقُلْتُ اللَّهُمَّ
لاَ تَجْعَلِ ابْنِي مِثْلَهَا . فَقُلْتَ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِثْلَهَا
قَالَ إِنَّ ذَاكَ الرَّجُلَ كَانَ جَبَّارًا فَقُلْتُ اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلْنِي
مِثْلَهُ . وَإِنَّ هَذِهِ يَقُولُونَ لَهَا زَنَيْتِ . وَلَمْ تَزْنِ وَسَرَقْتِ
وَلَمْ تَسْرِقْ فَقُلْتُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِثْلَهَا .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
তিনজন ব্যতীত কেউ দোলনায় কথা বলেনি। তাঁদের মধ্যে একজন ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম (‘আঃ)।
আরেকজন জুরায়জ সম্পর্কিত শিশুটি। জুরায়জ ছিলেন একজন ‘ইবাদাতগুজার ব্যক্তি। তিনি
একটি ‘ইবাদাতখানা তৈরি করে সেখানে অবস্থান করতেন। এক সময় তাঁর কাছে তাঁর মা আসলেন।
তিনি সে সময় সলাতে নিমগ্ন ছিলেন। মা ডাকলেন, হে জুরায়জ! তখন তিনি (মনে মনে) বলতে
লাগলেন, হে আমার প্রতিপালক! (একদিকে) আমার মা আর (অন্যদিকে) আমার সলাত। এরপর তিনি
সলাতে মগ্ন থাকলেন। মা ফিরে গেলেন। পরের দিন তিনি আবার তার কাছে এলেন। তখনও তিনি
সলাত আদায় করছিলেন। তিনি বললেন, হে জুরায়জ! তখন তিনি (মনে মনে) বললেন, হে আমার
প্রতিপালক! একদিকে আমার মা (আমাকে ডাকছেন) আর (অন্য দিকে) আমার সলাত। এরপর তিনি
সলাতে মশগুল রইলেন। মা ফিরে গেলেন। এরপরের দিন আবার এলেন। তখনও তিনি সলাতেই রত
ছিলেন। এবারও (মা) বললেন, হে জুরায়জ! তখন তিনি (মনে মনে) বললেন, হে আমার
প্রতিপালক! (একদিকে) আমার মা (আমাকে ডাকছেন)। (অন্যদিকে) আমার সালাত। এরপর তিনি
সলাতেই লিপ্ত রইলেন। এবার তার মা বললেন, হে আল্লাহ! বদ্কার স্ত্রীলোকের সম্মুখীন
করার আগ পর্যন্ত তুমি তার মৃত্যু দিয়ো না। এরপর বানু ইসরাঈলদের মধ্যে জুরায়জ ও তার
‘ইবাদাত সম্পর্কে আলোচনা হতে লাগল। (বানী ইসরাঈলের মধ্যে) সৌন্দর্য্য উপমেয় এক
দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোক ছিল। সে বলল, যদি তোমরা চাও তাহলে আমি তোমাদের সামনে তাকে
(জুরায়জকে) ফিতনায় ফেলতে পারি। তিনি বলেন, এরপর সে জুরায়জের সামনে নিজেকে পেশ করে।
কিন্তু জুরায়জ তার প্রতি ভ্রুক্ষেপও করেননি। অবশেষে সে এক মেষ রাখালের নিকট আসে।
সে জুরায়েজের ‘ইবাদাতখানায় মাঝে মধ্যে যাওয়া-আশা করত। সে তাকে নিজের দিকে প্রলুদ্ধ
করল। সে (রাখাল) তার উপর অনুরক্ত হলো। এতে সে গর্ভবতী হয়ে গেল। যখন সে সন্তান
প্রসব করল তখন বলে দিল যে, এ সন্তান জুরায়জের। লোকেরা (এ কথা শুনে) তাঁর কাছে এসে
জড়ো হলো এবং তাঁকে নীচে নামতে বাধ্য করল এবং তারা তার ‘ইবাদাতখানা ভেঙ্গে ফেলল আর
তাঁকে প্রহার করতে লাগল। তখন তিনি (জুরায়জ) জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের ব্যাপার কী?
তারা বলল, তুমি তো এ দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোকের সাথে ব্যভিচার করেছো এবং তোমার পক্ষ
থেকে সে সন্তান প্রসব করেছে। তখন তিনি বললেন, শিশুটি কোথায়? তারা শিশুটি নিয়ে এলো।
এরপর তিনি বললেন, আমাকে একটু অবকাশ দাও, আমি সলাত আদায় করে নেই। তারপর তিনি সলাত
আদায় করলেন এবং সলাত শেষে শিশুটির কাছে এলেন। এরপর তিনি শিশুটির পেটে টোকা দিয়ে
বললেন, হে বৎস! তোমার পিতা কে? সে উত্তর করল। অমুক রাখাল। বর্ণনাকারী বলেন, তখন
লোকেরা জুরায়জের দিকে এগিয়ে আসলো এবং তাঁকে চুম্বন করতে এবং তাঁর গায়ে হাত বুলাতে
লাগল। এরপর বলল, আমরা আপনার ‘ইবাদাতখানা স্বর্ণ দ্বারা নির্মাণ করে দিব। তিনি
বললেন, না বরং পুনরায় মাটি দিয়ে তৈরি করে দাও, যেমন ছিল। লোকেরা তাই করল। (তৃতীয়
জন) একদা এক শিশু তার মায়ের দুধ পান করছিল। তখন উত্তম পোষাকে সজ্জিত এক লোক একটি হৃষ্টপুষ্ট
সওয়ারীর উপর আরোহণ করে সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। তখন তার মা বলল, “হে আল্লাহ! তুমি আমার
ছেলেকে এর মত বানিয়ে দাও। তখন শিশুটি মাতৃস্তন ছেড়ে তার প্রতি লক্ষ করে বলল, “হে
আল্লাহ! তুমি আমাকে এর মত বানিও না।” এরপর সে আবার স্তনের দিকে ফিরে দুধ পান করতে
লাগল। রাবী বলেন, মনে হয় যেন আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কে এখনো দেখছি যে, তিনি তাঁর শাহাদাত আঙ্গুলি নিজ মুখে দিয়ে তা চুষে সে শিশুটির
দুধ পানের দৃশ্য দেখাচ্ছেন। এরপর তিনি বর্ণনা করলেন যে, কিছু লোক একজন যুবতীকে
নিয়ে যাচ্ছিল এবং তাকে তারা প্রহার করছিল এবং বলাবলি করছিল যে, তুই ব্যভিচার
করেছিস, তুই চুরি করেছিস। আর সে বলছিল, আল্লাহর উপরই আমার ভরসা; আর তিনিই উত্তম
কর্মবিধায়ক। তখন তার মা বলল, হে আল্লাহ! তুমি আমার পুত্রকে এর (দাসীর) মত বানিও
না। তখন শিশুটি দুধপান ছেড়ে তার (দাসীর) প্রতি লক্ষ্য করে বলল, “হে আল্লাহ! তুমি
আমাকে এর (দাসীর) মত বানিয়ে দাও।” সে সময় মা ও পুত্রের মধ্যে কথোপকথন হলো। তখন মা
বলল, ঠাটা পড়ুক (এ কেমন কথা)। সুদর্শন এক ব্যক্তি যাচ্ছিল। তখন আমি বললাম, “হে
আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে এর মত বানিও”। আর তুমি বললে, “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে এর
মত বানিও না” এরপর লোকেরা এ দাসীকে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন তারা তাঁকে প্রহার করছিল এবং
বলছিল, তুই ব্যভিচার করেছিস এবং তুই চুরি করেছিস। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি
আমার পুত্রকে তার মত বানিও না। আর তুমি বললে, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মতো
বানাও। সে বলল, সে আরোহী ব্যক্তি ছিল অত্যাচারী। তাই আমি বলেছি, হে আল্লাহ! তুমি
আমাকে তার মত বানিও না। আর যে দাসীকে ওরা বলছিল, তুই যিনা করেছিস। আসলে সে
ব্যভিচারে লিপ্ত হয় নি এবং বলছিল, চুরি করেছিস, অথচ সে চুরি করেনি। তাই আমি বললাম,
“হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মত বানিয়ে দাও”। (ই.ফা. ৬২৭৮; ই.সে. ৬৩২৭)
৩.
অধ্যায়ঃ
ধ্বংস সে ব্যক্তির, যে পিতা-মাতা অথবা একজনকে বার্ধক্যে
পেয়েও জান্নাত পেল না
৬৪০৪
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ،
حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " رَغِمَ أَنْفُ ثُمَّ رَغِمَ
أَنْفُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ " . قِيلَ مَنْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ
" مَنْ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا
فَلَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ নাক ধূলিমলিন হোক, আবারও নাক ধূলিমলিন হোক, আবারও নাক ধূলিমলিন
হোক। জিজ্ঞেস করা হল, কোন্ ব্যক্তির, হে আল্লাহর রসূল? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি
তার পিতা-মাতা উভয়কে অথবা একজনকে বার্ধক্যাবস্থায় পেল অথচ সে জান্নাতে প্রবেশ করতে
পারল না। (ই.ফা. ৬২৭৯; ই.সে. ৬৩২৮)
৬৪০৫
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " رَغِمَ أَنْفُهُ ثُمَّ رَغِمَ
أَنْفُهُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُهُ " . قِيلَ مَنْ يَا رَسُولَ اللَّهِ
قَالَ " مَنْ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ أَحَدَهُمَا أَوْ
كِلَيْهِمَا ثُمَّ لَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সে ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, আবার সে ব্যক্তির নাক
ধূলিমলিন হোক, আবার তার নাক ধূলিমলিন হোক। জিজ্ঞেস করা হলো, কার হে আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতা উভয়কে
কিংবা তাদের একজনকে বার্ধক্যজনিত অবস্থায় পেল, এরপরেও সে জান্নাতে প্রবেশ করতে
পারল না। (ই. ফা. ৬২৮০, ই.সে. ৬৩২৯)
৬৪০৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ،
حَدَّثَنِي سُهَيْلٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " رَغِمَ أَنْفُهُ " . ثَلاَثًا
ثُمَّ ذَكَرَ مِثْلَهُ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ তার নাক ধূলিমলিন হোক- কথাটি তিনবার বলেছেন। এরপর তিনি উক্ত
হাদীসের মতোই উল্লেখ করেছেন। (ই. ফা. ৬২৮১, ই.সে. ৬৩৩০)
৪.
অধ্যায়ঃ
পিতা-মাতার বন্ধু-বান্ধব প্রমুখের সঙ্গে সম্পর্ক বজায়
রাখার মর্যাদা
৬৪০৭
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ
بْنُ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي
سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ أَبِي الْوَلِيدِ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَجُلاً، مِنَ
الأَعْرَابِ لَقِيَهُ بِطَرِيقِ مَكَّةَ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ عَبْدُ اللَّهِ
وَحَمَلَهُ عَلَى حِمَارٍ كَانَ يَرْكَبُهُ وَأَعْطَاهُ عِمَامَةً كَانَتْ عَلَى
رَأْسِهِ فَقَالَ ابْنُ دِينَارٍ فَقُلْنَا لَهُ أَصْلَحَكَ اللَّهُ إِنَّهُمُ
الأَعْرَابُ وَإِنَّهُمْ يَرْضَوْنَ بِالْيَسِيرِ . فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ
إِنَّ أَبَا هَذَا كَانَ وُدًّا لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَإِنِّي سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ أَبَرَّ الْبِرِّ
صِلَةُ الْوَلَدِ أَهْلَ وُدِّ أَبِيهِ " .
‘‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মাক্কায় এক রাস্তায় ‘‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-
এর সাথে এক বেদুঈনের সাক্ষাৎ হলো। ‘‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁকে সালাম দিলেন এবং তিনি
যে গাধার পিঠে আরোহণ করতেন, সে গাধাটি তাকে আরোহনের জন্য দিয়ে দিলেন। তিনি তাঁর
মাথার পাগড়ীটিও তাকে দান করলেন। তখন ‘‘আবদুল্লাহ ইবনু দীনার (রহঃ) তাঁকে বললেন যে,
আমরা তাকে বললাম, আল্লাহ আপনার কল্যাণ করুন। বেদুঈনরা তো অল্পতেই তুষ্ট হয়ে যায়।
(এত দেয়ার প্রয়োজন কি ছিল?) তখন ‘‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ ব্যক্তির
পিতা ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)- এর বন্ধু ছিলেন। আর আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি যে, কোন ব্যক্তির সর্বোত্তম নেকীর কাজ হচ্ছে
তার পিতার বন্ধুর সঙ্গে সহমর্মিতার সম্পর্ক বজায় রাখা। (ই. ফা. ৬২৮২, ই.সে. ৬৩৩১)
৬৪০৮
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، عَنِ ابْنِ،
الْهَادِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ،
أَنَّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبَرُّ الْبِرِّ أَنْ
يَصِلَ الرَّجُلُ وُدَّ أَبِيهِ " .
‘‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার হলো পিতার বন্ধুর সাথে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখা। (ই. ফা. ৬২৮৩,
ই.সে. ৬৩৩২)
৬৪০৯
حَدَّثَنَا حَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ
الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا
أَبِي، وَاللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ جَمِيعًا عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
أُسَامَةَ بْنِ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ،
أَنَّهُ كَانَ إِذَا خَرَجَ إِلَى مَكَّةَ كَانَ لَهُ حِمَارٌ يَتَرَوَّحُ
عَلَيْهِ إِذَا مَلَّ رُكُوبَ الرَّاحِلَةِ وَعِمَامَةٌ يَشُدُّ بِهَا رَأْسَهُ
فَبَيْنَا هُوَ يَوْمًا عَلَى ذَلِكَ الْحِمَارِ إِذْ مَرَّ بِهِ أَعْرَابِيٌّ
فَقَالَ أَلَسْتَ ابْنَ فُلاَنِ بْنِ فُلاَنٍ قَالَ بَلَى . فَأَعْطَاهُ
الْحِمَارَ وَقَالَ ارْكَبْ هَذَا وَالْعِمَامَةَ - قَالَ - اشْدُدْ بِهَا
رَأْسَكَ . فَقَالَ لَهُ بَعْضُ أَصْحَابِهِ غَفَرَ اللَّهُ لَكَ أَعْطَيْتَ
هَذَا الأَعْرَابِيَّ حِمَارًا كُنْتَ تَرَوَّحُ عَلَيْهِ وَعِمَامَةً كُنْتَ
تَشُدُّ بِهَا رَأْسَكَ . فَقَالَ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ مِنْ أَبَرِّ الْبِرِّ صِلَةَ الرَّجُلِ أَهْلَ
وُدِّ أَبِيهِ بَعْدَ أَنْ يُوَلِّيَ " . وَإِنَّ أَبَاهُ كَانَ صَدِيقًا
لِعُمَرَ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন তিনি মাক্কা্হ্ অভিমুখে রওনা হতেন তখন তাঁর
সাথে একটি গাধা থাকত। উটের সওয়ারীতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে ক্ষণিক স্বস্তি লাভের জন্য
তাতে আরোহণ করতেন। আর তাঁর সঙ্গে একটি পাগড়ী থাকত, যা দিয়ে তিনি মাথা বেঁধে নিতেন।
কোন একসময় তিনি উক্ত গাধায় আরোহণ করে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর পাশ দিয়ে একজন বেদুঈন
অতিক্রম করছিল। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি অমুক এর পুত্র অমুক নও? সে বলল,
হ্যাঁ। তখন তিনি তাকে গাধাটি দিয়ে দিলেন এবং বললেন, এতে আরোহণ কর। তিনি তাঁকে
পাগড়ীটিও দান করলেন এবং বললেন, এটি দ্বারা তোমার মাথা বেঁধে নাও। তখন তাঁর
সঙ্গীদের কেউ কেউ তাঁকে বললেন, আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন। আপনি এ বেদুঈনকে গাধাটি
দিয়ে দিলেন, যার উপর আরোহণ করে আপনি স্বস্তি লাভ করতেন এবং পাগড়ীটিও দান করলেন,
যার দ্বারা আপনার মাথা বাঁধতেন। তখন তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার হলো কোন ব্যক্তির
পিতার ইন্তি্কালের পর তার বন্ধু-বান্ধবের সাথে সদ্ব্যবহার বজায় রাখা। আর এ
বেদুঈনের পিতা ছিলেন ‘উমার (রাঃ)-এর অন্তরঙ্গ বন্ধু। (ই. ফা. ৬২৮৪, ই.সে. ৬৩৩৩)
৫.
অধ্যায়ঃ
পাপ-পুণ্যের ব্যাখ্যা
৬৪১০
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمِ بْنِ
مَيْمُونٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ صَالِحٍ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّوَّاسِ
بْنِ سَمْعَانَ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم عَنِ الْبِرِّ وَالإِثْمِ فَقَالَ " الْبِرُّ حُسْنُ الْخُلُقِ
وَالإِثْمُ مَا حَاكَ فِي صَدْرِكَ وَكَرِهْتَ أَنْ يَطَّلِعَ عَلَيْهِ النَّاسُ
" .
নাও্ওয়াস ইবনু সাম’আন আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)- কে পূণ্য ও পাপ সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তখন তিনি জবাব দিলেন, পূণ্য
হলো উন্নত চরিত্র। আর পাপ হলো যা তোমার অন্তরে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে এবং
লোকে তা জানুক তা তুমি অপছন্দ করো। (ই. ফা. ৬২৮৫, ই.সে. ৬৩৩৪)
৬৪১১
حَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ
الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي مُعَاوِيَةُ، -
يَعْنِي ابْنَ صَالِحٍ - عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ نَوَّاسِ بْنِ سِمْعَانَ، قَالَ أَقَمْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ سَنَةً مَا يَمْنَعُنِي مِنَ الْهِجْرَةِ إِلاَّ
الْمَسْأَلَةُ كَانَ أَحَدُنَا إِذَا هَاجَرَ لَمْ يَسْأَلْ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم عَنْ شَىْءٍ - قَالَ - فَسَأَلْتُهُ عَنِ الْبِرِّ وَالإِثْمِ
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْبِرُّ حُسْنُ الْخُلُقِ
وَالإِثْمُ مَا حَاكَ فِي نَفْسِكَ وَكَرِهْتَ أَنْ يَطَّلِعَ عَلَيْهِ النَّاسُ
" .
নাও্ওয়াস ইবনু সাম’আন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মাদীনাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে এক বছর অবস্থান করি। আর একটি মাত্র কারণ আমাকে হিজরত
থেকে বিরত রাখে। তা হলো দ্বীনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করার সুযোগ। আমাদের কেউ যখন
হিজরত করে আসত তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে কোন
কিছুই জিজ্ঞেস করত না। তিনি বলেন, অতএব আমি তাঁকে পূণ্য ও পাপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তর দিলেন, সদাচরণই পূণ্য
আর যা তোমার অন্তরে সন্দেহের উদ্রেক করে এবং লোকে তা জানুক তা তুমি পছন্দ করো না,
তাই পাপ। (ই. ফা. ৬২৮৬, ই.সে. ৬৩৩৫)
৬.
অধ্যায়ঃ
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা এবং তা বিচ্ছিন্ন করা হারাম
৬৪১২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ
جَمِيلِ بْنِ طَرِيفِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الثَّقَفِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ
عَبَّادٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، - وَهُوَ ابْنُ إِسْمَاعِيلَ - عَنْ
مُعَاوِيَةَ، - وَهُوَ ابْنُ أَبِي مُزَرِّدٍ مَوْلَى بَنِي هَاشِمٍ - حَدَّثَنِي
عَمِّي أَبُو الْحُبَابِ، سَعِيدُ بْنُ يَسَارٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ
الْخَلْقَ حَتَّى إِذَا فَرَغَ مِنْهُمْ قَامَتِ الرَّحِمُ فَقَالَتْ هَذَا
مَقَامُ الْعَائِذِ مِنَ الْقَطِيعَةِ . قَالَ نَعَمْ أَمَا تَرْضَيْنَ أَنْ
أَصِلَ مَنْ وَصَلَكِ وَأَقْطَعَ مَنْ قَطَعَكِ قَالَتْ بَلَى . قَالَ فَذَاكَ
لَكِ " . ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
اقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ { فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ
تُفْسِدُوا فِي الأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ * أُولَئِكَ الَّذِينَ
لَعَنَهُمُ اللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَى أَبْصَارَهُمْ * أَفَلاَ يَتَدَبَّرُونَ
الْقُرْآنَ أَمْ عَلَى قُلُوبٍ أَقْفَالُهَا} " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যখন সৃষ্টিকুল সৃষ্টি করে তা সমাপ্ত করলেন, তখন
‘রাহিম’ দন্ডায়মান হলো এবং বলল, এ হচ্ছে আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা থেকে
আশ্রয় প্রার্থনাকারীর স্থান। তিনি বললেন, হ্যাঁ। তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, যে
তোমাকে সংযুক্ত রাখবে আমিও তাঁর সাথে সম্পর্ক রাখব, আর যে তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে
দিবে আমিও তাকে পৃথক করে দিব? তখন সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তোমার জন্য তাই হবে।
এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি তোমরা চাও তাহলে
তিলাওয়াত করতে পার, “তোমরা কি অস্বীকার করতে পারবে যে, তাদের উপর দায়িত্ব অর্পণ
করলে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও ফাসাদ সৃষ্টি করবে এবং তোমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক
বিচ্ছিন্ন করে দিবে, এরাই তারা-যাদের উপর আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন। এরপর তিনি
তাদের বধির করে দিয়েছেন ও তাদের চক্ষুসমূহ দৃষ্টিহীন করে দিয়েছেন। তারা কি কুরআন
সম্পর্কে অভিনিবেশ সহকারে চিন্তা করে না, না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ?” (সূরাহ্
মুহাম্মাদ ৩৭:২২-২৪) (ই. ফা. ৬২৮৭, ই.সে. ৬৩৩৬)
৬৪১৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، - وَاللَّفْظُ لأَبِي بَكْرٍ - قَالاَ
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي مُزَرِّدٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ
رُومَانَ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " الرَّحِمُ مُعَلَّقَةٌ بِالْعَرْشِ تَقُولُ مَنْ وَصَلَنِي
وَصَلَهُ اللَّهُ وَمَنْ قَطَعَنِي قَطَعَهُ اللَّهُ " .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ রহিম অর্থাৎ আত্মীয়তা বা রক্তের সম্পর্ক আল্লাহর ‘আর্শের সাথে
ঝুলন্ত রয়েছে। সে বলে, যে ব্যক্তি আমার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে আল্লাহ তার সাথে
সম্পর্ক ঠিক রাখবেন। আর যে আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আল্লাহ তার সাথে
সম্পর্কচ্ছেদ করবেন। (ই. ফা. ৬২৮৮, ই.সে. ৬৩৩৭)
৬৪১৪
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ
أَبِي عُمَرَ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ،
بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعٌ " . قَالَ ابْنُ أَبِي
عُمَرَ قَالَ سُفْيَانُ يَعْنِي قَاطِعَ رَحِمٍ .
জুবায়র ইবনু মুত’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ (আত্মীয়তা) ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
ইবনু আবূ ‘উমার (রাঃ) সুফ্ইয়ান থেকে বর্ণনা করেন, অর্থাৎ- আত্মীয়তা ছিন্নকারী। (ই.
ফা. ৬২৮৯, ই.সে. ৬৩৩৮)
৬৪১৫
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ
بْنِ أَسْمَاءَ الضُّبَعِيُّ، حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ
أَبَاهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ
يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ " .
জুবায়র ইবনু মুত’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক বিছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। (ই. ফা.
৬২৯০, ই.সে. ৬৩৩৯)
৬৪১৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَهُ وَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم .
যুহরী (রহঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে তাঁর মতোই বর্ণিত আছে। আর তিনি বলেন, আমি
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছি। (ই. ফা. ৬২৯১, ই.সে.
৬৩৪০)
৬৪১৭
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى
التُّجِيبِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَقُولُ " مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ أَوْ
يُنْسَأَ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি তার জীবিকার প্রশস্ততা কিংবা দীর্ঘায়ু
পছন্দ করে, সে যেন তার আত্মীয়ের সাথে সদ্ব্যবহার করে। (ই.ফা. ৬২৯২, ই.সে. ৬৩৪১)
৬৪১৮
وَحَدَّثَنِي عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ
شُعَيْبِ بْنِ اللَّيْثِ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ جَدِّي، حَدَّثَنِي عُقَيْلُ
بْنُ، خَالِدٍ قَالَ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَحَبَّ أَنْ يُبْسَطَ
لَهُ فِي رِزْقِهِ وَيُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার জীবিকার প্রশস্ততা চায় ও দীর্ঘায়ু কামনা করে, সে যেন তার
আত্মীয়দের সাথে সদাচরণ করে। (ই.ফা. ৬২৯৩, ই.সে. ৬৩৪২)
৬৪১৯
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى - قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ الْعَلاَءَ بْنَ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي، هُرَيْرَةَ أَنَّ رَجُلاً،
قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ لِي قَرَابَةً أَصِلُهُمْ وَيَقْطَعُونِي
وَأُحْسِنُ إِلَيْهِمْ وَيُسِيئُونَ إِلَىَّ وَأَحْلُمُ عَنْهُمْ وَيَجْهَلُونَ
عَلَىَّ . فَقَالَ " لَئِنْ كُنْتَ كَمَا قُلْتَ فَكَأَنَّمَا
تُسِفُّهُمُ الْمَلَّ وَلاَ يَزَالُ مَعَكَ مِنَ اللَّهِ ظَهِيرٌ عَلَيْهِمْ مَا
دُمْتَ عَلَى ذَلِكَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার আত্মীয়-স্বজন আছেন। আমি তাদের সাথে
সদাচরণ করি; কিন্তু তারা আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। আমি তাদের উপকার করে থাকি;
কিন্তু তারা আমার অপকার করে। আমি তাদের সহনশীলতা প্রদর্শন করে থাকি আর তারা আমার
সঙ্গে মূর্খসুলভ আচরণ করে। তখন তিনি বললেন, তুমি যা বললে, তাহলে যদি প্রকৃত অবস্থা
তাই হয় তুমি যেন তাদের উপর জ্বলন্ত অঙ্গার নিক্ষেপ করছ। আর সর্বদা তোমার সঙ্গে আল্লাহর
তরফ থেকে তাদের বিপক্ষে একজন সাহায্যকারী (ফেরেশ্তা) থাকবে, যতক্ষণ তুমি এ
অবস্থায় বহাল থাকবে। (ই. ফা. ৬২৯৪, ই. সে. ৬৩৪৩)
৭.
অধ্যায়:
একে অপরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ ও পশ্চাতে শত্রুতা হারাম
৬৪২০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ
قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ
تَحَاسَدُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا وَلاَ
يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثٍ " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ তোমরা প্রতিহিংসা করবে না, পরস্পর বিদ্বেষ করবে না এবং একে অপরের পশ্চাতে
শত্রুতা করবে না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে যাও। আর কোন
মুসলিম ব্যক্তির জন্য তার ভাই এর সাথে তিন দিনের বেশি সময় কথা-বার্তা পরিত্যাগ করা
বৈধ নয়। (ই.ফা. ৬২৯৫, ই.সে. ৬৩৪৪)
৬৪২১
حَدَّثَنَا
حَاجِبُ بْنُ الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْوَلِيدِ الزُّبَيْدِيُّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ
مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ح
وَحَدَّثَنِيهِ حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي
يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِمِثْلِ حَدِيثِ مَالِكٍ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে
মালিক-এর বর্ণিত হাদীসের সদৃশ বর্ণিত। (ই.ফা. ৬২৯৬, ই.সে. ৬৩৪৫)
৬৪২২
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ
أَبِي عُمَرَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ،
بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ ابْنُ عُيَيْنَةَ " وَلاَ تَقَاطَعُوا
" .
যুহরী (রহঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত। তবে ইবনু ‘উয়াইনাহ্
(আরবী) (এবং তোমরা পরস্পর সম্পর্ক বিছিন্ন করো না) বাড়িয়ে বলেছেন। (ই.ফা. ৬২৯৭,
ই.সে. ৬৩৪৬)
৬৪২৩
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ، حَدَّثَنَا
يَزِيدُ يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
وَعَبْدُ، بْنُ حُمَيْدٍ كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، جَمِيعًا عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . أَمَّا رِوَايَةُ يَزِيدَ
عَنْهُ فَكَرِوَايَةِ سُفْيَانَ عَنِ الزُّهْرِيِّ يَذْكُرُ الْخِصَالَ
الأَرْبَعَةَ جَمِيعًا وَأَمَّا حَدِيثُ عَبْدِ الرَّزَّاقِ " وَلاَ
تَحَاسَدُوا وَلاَ تَقَاطَعُوا وَلاَ تَدَابَرُوا " .
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুহরী (রহঃ) থেকে উক্ত সানাদে বর্ণনা করেন।
তবে যুহরী (রহঃ)-এর সূত্রে ইয়াযীদ-এর বর্ণনা, যুহরীর থেকে সুফ্ইয়ান-এর বর্ণনার
অনুরূপ। তিনি চারটি বৈশিষ্ট্য একত্রে উল্লেখ করেছেন। আর ‘আবদুর রায্যাক (রহঃ)-এর
বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, (আরবী) (তোমরা একে অপরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করবে না
অথবা সম্পর্ক ছিন্ন করবে না কিংবা পশ্চাতে শত্রুতা করবে না)। (ই.ফা. ৬২৯৮, ই.সে.
৬৩৪৭)
৬৪২৪
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ،
أَنَّوسلم قَالَ " لاَ تَحَاسَدُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَقَاطَعُوا
وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا " .
আনাস (রাঃ)-এর সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমরা একে অপরের সাথে হিংসা-বিদ্বেষ
পোষণ করবে না এবং পরস্পর শত্রুতা করবে না, পারস্পরিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করবে না
এবং তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে থাকবে। (ই.ফা. ৬২৯৯, ই.সে. ৬৩৪৮)
৬৪২৫
حَدَّثَنِيهِ عَلِيُّ بْنُ نَصْرٍ
الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، بِهَذَا
الإِسْنَادِ مِثْلَهُ وَزَادَ " كَمَا أَمَرَكُمُ اللَّهُ " .
শু’বাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
শু’বাহ্ (রাঃ) উক্ত সানাদের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন। তবে তিনি অতিরিক্ত বলেছেন, (আরবী)(যেভাবে আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ
দিয়েছেন)। (ই.ফা. ৬২৯৯, ই.সে. ৬৩৪৯)
৮.
অধ্যায়:
শার‘ঈ ওযর ব্যতিরেকে কোন মুসলিমের সাথে তিন দিনের বেশি
সম্পর্কচ্ছেদ করা হারাম
৬৪২৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ
قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ،
اللَّيْثِيِّ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " لاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ
ثَلاَثِ لَيَالٍ يَلْتَقِيَانِ فَيُعْرِضُ هَذَا وَيُعْرِضُ هَذَا وَخَيْرُهُمَا
الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلاَمِ " .
আবূ আইয়ূব আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন: কোন মুসলিমের জন্য তার ভাই এর সঙ্গে তিন দিনের অধিক সময় সম্পর্ক ছিন্ন
রাখা বৈধ নয়। দু’জনের সাক্ষাৎ ঘটলে একজন এদিকে মুখ ফিরিয়ে, অন্যজন ঐদিকে ঘাড়
বাঁকিয়ে থাকে। তবে তাদের মধ্যে সে-ই উত্তম, যে প্রথমে সালাম করে। (ই.ফা. ৬৩০০,
ই.সে. ৬৩৫০)
৬৪২৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ قَالُوا حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، ح وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ،
أَخْبَرَنِي يُونُسُ، ح وَحَدَّثَنَا حَاجِبُ، بْنُ الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، عَنِ الزُّبَيْدِيِّ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، وَمُحَمَّدُ، بْنُ رَافِعٍ وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ
عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، كُلُّهُمْ عَنِ الزُّهْرِيِّ،
بِإِسْنَادِ مَالِكٍ وَمِثْلِ حَدِيثِهِ إِلاَّ قَوْلَهُ " فَيُعْرِضُ هَذَا
وَيُعْرِضُ هَذَا " . فَإِنَّهُمْ جَمِيعًا قَالُوا فِي حَدِيثِهِمْ
غَيْرَ مَالِكٍ " فَيَصُدُّ هَذَا وَيَصُدُّ هَذَا " .
যুহরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুহরী (রাঃ) থেকে সকলেই মালিক-এর সানাদে ও তাঁর
হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। তবে তাঁর বক্তব্য (আরবী) (সেও মুখ ফিরিয়ে নিল
এবং তিনিও মুখ ফিরিয়ে নিলেন) এর পরিবর্তে মালিক ব্যতীত তাঁদের সকলেই বর্ণনা করেন
(আরবী) (তিনিও বিরত থাকলেন, সেও বিরত থাকল) (ই.ফা. ৬৩০১, ই.সে. ৬৩৫১)
৬৪২৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، أَخْبَرَنَا الضَّحَّاكُ، - وَهُوَ
ابْنُ عُثْمَانَ - عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يَحِلُّ لِلْمُؤْمِنِ أَنْ
يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ " .
‘‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ কোন ঈমানদারের জন্য তার ভাইকে তিন দিনের বেশি পরিত্যাগ করা জায়িয নয়।
(ই.ফা. ৬৩০২, ই.সে. ৬৩৫১[ক])
৬৪২৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، - يَعْنِي ابْنَ مُحَمَّدٍ - عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لاَ هِجْرَةَ بَعْدَ ثَلاَثٍ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন: তিন দিনের পরও হিজরত (কথাবার্তা পরিত্যাগ) বৈধ নয়। (ই.ফা. ৬৩০৩, ই.সে.
৬৩৫২)
৯.
অধ্যায়:
খারাপ ধারণা, দোষ খোঁজা, লিপ্সা, ধোঁকাবাজি ইত্যাদি হারাম
৬৪৩০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ
قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِيَّاكُمْ
وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الْحَدِيثِ وَلاَ تَحَسَّسُوا وَلاَ
تَجَسَّسُوا وَلاَ تَنَافَسُوا وَلاَ تَحَاسَدُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ
تَدَابَرُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন: তোমরা খারাপ ধারণা করা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা, খারাপ ধারণা প্রসূত বিষয়
সর্বাপেক্ষা মিথ্যা। আর তোমরা ছিদ্রান্বেষণ করো না, গোয়েন্দাগিরি করো না, সুপ্তদোষ
অনুসন্ধান করো না, তোমরা পরস্পর লিপ্সা করো না, পরস্পর পরস্পরের প্রতি শত্রুতা করো
না, হিংসা করো না; একে অন্যের পিছনে লেগে থেকো না বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা
হিসেবে ভাই ভাই হয়ে যাও। (ই.ফা. ৬৩০৪, ই.সে. ৬৩৫৩)
৬৪৩১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، - يَعْنِي ابْنَ مُحَمَّدٍ - عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لاَ تَهَجَّرُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَحَسَّسُوا وَلاَ يَبِعْ
بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا "
.
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন: তোমরা পরস্পর সম্পর্ক ছিন্ন করো না। একে অন্যের পেছনে শত্রুতা করো না, একে
অন্যের ছিদ্রান্বেষণ করো না, অন্যের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর তুমি ক্রয়-বিক্রয়ের চেষ্টা
করো না; বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে বসবাস করতে থাকো।
(ই.ফা. ৬৩০৫, ই.সে. ৬৩৫৪)
৬৪৩২
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي،
هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ
تَحَاسَدُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَجَسَّسُوا وَلاَ تَحَسَّسُوا وَلاَ
تَنَاجَشُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: তোমরা পরস্পরকে হিংসা করবে না, একে অপরের সাথে শত্রুতা পোষণ করবে
না, সুপ্তদোষ সন্ধান করবে না, গুপ্ত ভুল-ভ্রান্তি অনুসন্ধান করো না এবং পরস্পরকে
ধোঁকায় ফেলবে না। আর তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভ্রাতৃ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকো।
(ই.ফা. ৬৩০৬, ই.সে. ৬৩৫৫)
৬৪৩৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ
الْحُلْوَانِيُّ، وَعَلِيُّ بْنُ نَصْرٍ الْجَهْضَمِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا
وَهْبُ، بْنُ جَرِيرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ
" لاَ تَقَاطَعُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَحَاسَدُوا
وَكُونُوا إِخْوَانًا كَمَا أَمَرَكُمُ اللَّهُ " .
আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আ’মাশ (রহঃ) থেকে এ সানাদে বর্ণিত যে, তোমরা একে
অপরের সাথে আত্মীয়তা সম্পর্কচ্ছেদ করো না, একে অপরের পেছনে দুশমনি করো না, পরস্পরে
বিদ্বেষ পোষণ করো না, পরস্পরে হিংসা করো না। আর তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই
ভাই পরিণত হয়ে যাও, যেমন আল্লাহ তা’আলা তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। (ই.ফা. ৬৩০৭,
ই.সে. ৬৩৫৬)
৬৪৩৪
وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ
الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا حَبَّانُ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ،
عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَنَافَسُوا وَكُونُوا عِبَادَ
اللَّهِ إِخْوَانًا " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
তোমরা পরস্পরে বিদ্বেষ করবে না, একে অন্যের পেছনে শত্রুতায় আবদ্ধ হয়ো না, পরস্পরে
লিপ্সা করবে না বরং তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে থাকো। (ই.ফা. ৬৩০৮,
ই.সে. ৬৩৫৭)
১০.
অধ্যায়:
মুসলিমের উপর যুল্ম করা, তাকে অপদস্ত করা, হেয় জ্ঞান করা
হারাম এবং তার খুন, ইযযত-আবরু ও সম্পদও হারাম
৬৪৩৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ
بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، - يَعْنِي ابْنَ قَيْسٍ - عَنْ أَبِي، سَعِيدٍ
مَوْلَى عَامِرِ بْنِ كُرَيْزٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَحَاسَدُوا وَلاَ تَنَاجَشُوا وَلاَ
تَبَاغَضُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ
وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا . الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ لاَ
يَظْلِمُهُ وَلاَ يَخْذُلُهُ وَلاَ يَحْقِرُهُ . التَّقْوَى هَا هُنَا "
. وَيُشِيرُ إِلَى صَدْرِهِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ " بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ
الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ
حَرَامٌ دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর হিংসা করো না, পরস্পর ধোঁকাবাজি করো না, পরস্পর
বিদ্বেষ পোষণ করো না, একে অপরের ক্ষতি করার উদ্দেশে আগোচরে শত্রুতা করো না এবং একে
অন্যের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয়ের চেষ্টা করবে না। তোমরা আল্লাহর বান্দা
হিসেবে ভাই ভাই হয়ে থাকো। এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সে তার উপর অত্যাচার করবে
না, তাকে অপদস্ত করবে না এবং হেয় প্রতিপন্ন করবে না। তাক্ওয়া এখানে, এ কথা বলে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনবার তাঁর বক্ষের প্রতি ইঙ্গিত
করলেন। একজন মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার ভাইকে হেয় জ্ঞান করে।
কোন মুসলিমের উপর প্রত্যেক মুসলিমের জান-মাল ও ইয্যত-আবরু হারাম। (ই.ফা. ৬৩০৯,
ই.সে. ৬৩৫৮)
৬৪৩৬
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ
بْنُ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ أُسَامَةَ، - وَهُوَ ابْنُ
زَيْدٍ - أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ، مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَامِرِ بْنِ
كُرَيْزٍ يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا، هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم . فَذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ دَاوُدَ وَزَادَ وَنَقَصَ وَمِمَّا
زَادَ فِيهِ " إِنَّ اللَّهَ لاَ يَنْظُرُ إِلَى أَجْسَادِكُمْ وَلاَ
إِلَى صُوَرِكُمْ وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ " . وَأَشَارَ
بِأَصَابِعِهِ إِلَى صَدْرِهِ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: ……. এরপর উসামাহ্ ইবনু যায়দ দাউদ-এর হাদীসের অনুরূপ উল্লেখ
করেছেন। তবে এ বর্ণনায় তিনি সামান্য কম-বেশি করেছেন। তারা উভয়ে যতটুকু বাড়িয়ে
বলেছেন, তা হচ্ছে “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের দেহকায় ও বাহ্যিক আকৃতির প্রতি
দৃষ্টিপাত করেন না; বরং তিনি তোমাদের অন্তরসমূহের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন।” (এ বলে)
তিনি তাঁর আঙ্গুলের মাধ্যমে স্বীয় বক্ষের দিকে ইঙ্গিত করেন। (ই.ফা. ৬৩১০, ই.সে.
৬৩৫৯)
৬৪৩৭
حَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا
كَثِيرُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ بُرْقَانَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ،
الأَصَمِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّ اللَّهَ لاَ يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَلَكِنْ
يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের বাহ্যিক চাল-চলন ও বিত্ত-বৈভবের প্রতি
দৃষ্টিপাত করেন না; বরং তিনি দৃষ্টি দিয়ে থাকেন তোমাদের অন্তর ও ‘আমলের প্রতি।
(ই.ফা. ৬৩১১, ই.সে. ৬৩৬০)
১১.
অধ্যায়:
শত্রুতা ও পরস্পরকে পরিত্যাগ করা নিষিদ্ধ হওয়ার বিবরণ
৬৪৩৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ
مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، فِيمَا قُرِئَ عَلَيْهِ عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
تُفْتَحُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَيَوْمَ الْخَمِيسِ
فَيُغْفَرُ لِكُلِّ عَبْدٍ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا إِلاَّ رَجُلاً كَانَتْ
بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَخِيهِ شَحْنَاءُ فَيُقَالُ أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى
يَصْطَلِحَا أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى
يَصْطَلِحَا " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়।
এরপর এমন সব বান্দাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়, যারা আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করে
না। তবে সে ব্যক্তিকে নয়, যার ভাই ও তার মধ্যে শত্রুতা বিদ্যমান। এরপর বলা হবে, এ
দু’জনকে আপোষ মীমাংসা করার জন্য অবকাশ দাও, এ দু’জনকে আপোষ মীমাংসা করার জন্য
সুযোগ দাও, এ দু’জনকে আপোষ মীমাংসা করার জন্য সুযোগ দাও। (ই.ফা. ৬৩১২, ই.সে. ৬৩৬১)
৬৪৩৯
حَدَّثَنِيهِ زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا
جَرِيرٌ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ،
الضَّبِّيُّ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ الدَّرَاوَرْدِيِّ، كِلاَهُمَا عَنْ سُهَيْلٍ،
عَنْ أَبِيهِ، بِإِسْنَادِ مَالِكٍ نَحْوَ حَدِيثِهِ غَيْرَ أَنَّ فِي حَدِيثِ
الدَّرَاوَرْدِيِّ " إِلاَّ الْمُتَهَاجِرَيْنِ " . مِنْ
رِوَايَةِ ابْنِ عَبْدَةَ وَقَالَ قُتَيْبَةُ " إِلاَّ الْمُهْتَجِرَيْنِ
" .
সুহায়ল (রাঃ)-এর পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
মালিক-এর সানাদে তার হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন। তবে দারাওয়ার্দী (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে ইবনু ‘আবদাহ্-এর বর্ণনায় (আরবী)
“কিন্তু সম্পর্কচ্ছেদকারী দু’ব্যক্তিকে ক্ষমা করা হবে না” উল্লেখ আছে। আর
কুতাইবাহ্ (রাঃ) বলেছেন, (আরবী) (তবে সম্পর্ক বিচ্ছিন্নকারী দু’জনকে ক্ষমা করা হবে
না)। (ই.ফা. ৬৩১২, ই.সে. ৬৩৬২)
৬৪৪০
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ مُسْلِمِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، سَمِعَ أَبَا
هُرَيْرَةَ، رَفَعَهُ مَرَّةً قَالَ " تُعْرَضُ الأَعْمَالُ فِي كُلِّ
يَوْمِ خَمِيسٍ وَاثْنَيْنِ فَيَغْفِرُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي ذَلِكَ
الْيَوْمِ لِكُلِّ امْرِئٍ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا إِلاَّ امْرَأً كَانَتْ
بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَخِيهِ شَحْنَاءُ فَيُقَالُ ارْكُوا هَذَيْنِ حَتَّى
يَصْطَلِحَا ارْكُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا " .
মারফূ‘ সানাদে আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রতি বৃহস্পতিবার ও সোমবার ‘আমাল পেশ
করা হয়। তখন আল্লাহ তা’আলা সেদিন প্রত্যেক এমন বান্দাকে ক্ষমা করেন, যারা তাঁর
সাথে কোন কিছুকে অংশীদার স্থির করে না। তবে এমন ব্যক্তিকে নয়, যার ভাই ও তার মধ্যে
শত্রুতা আছে। তখন বলা হবে, এ দু’জনকে অবকাশ দাও যতক্ষণ না তারা সংশোধনের দিকে ফিরে
আসে। (ই.ফা. ৬৩১৩, ই.সে. ৬৩৬৩)
৬৪৪১
حَدَّثَنَا أَبُو الطَّاهِرِ، وَعَمْرُو
بْنُ سَوَّادٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ،
أَنَسٍ عَنْ مُسْلِمِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " تُعْرَضُ
أَعْمَالُ النَّاسِ فِي كُلِّ جُمُعَةٍ مَرَّتَيْنِ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَيَوْمَ
الْخَمِيسِ فَيُغْفَرُ لِكُلِّ عَبْدٍ مُؤْمِنٍ إِلاَّ عَبْدًا بَيْنَهُ وَبَيْنَ
أَخِيهِ شَحْنَاءُ فَيُقَالُ اتْرُكُوا - أَوِ ارْكُوا - هَذَيْنِ حَتَّى يَفِيئَا
" .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সূত্রে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মানুষের ‘আমাল (সপ্তাহে দু’বার) সোমবার
ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহর দরবারে) উপস্থাপন করা হয়। এরপর প্রত্যেক মু’মিন বান্দাকে
ক্ষমা করা হয়। তবে সে ব্যক্তিকে নয়, যার ভাই-এর সাথে তার দুশমনি রয়েছে। তখন বলা
হবে, এ দু’জনকে বর্জন করো অথবা অবকাশ দাও যতক্ষণ না তারা মীমাংসার প্রতি
প্রত্যাবর্তন করে। (ই.ফা. ৬৩১৪, ই.সে. ৬৩৬৪)
১২.
অধ্যায়:
আল্লাহর জন্য ভালবাসার ফাযীলাত
৬৪৪২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ
مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، فِيمَا قُرِئَ عَلَيْهِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ،
الرَّحْمَنِ بْنِ مَعْمَرٍ عَنْ أَبِي الْحُبَابِ، سَعِيدِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَيْنَ الْمُتَحَابُّونَ بِجَلاَلِي
الْيَوْمَ أُظِلُّهُمْ فِي ظِلِّي يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلِّي " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: কিয়ামাতের দিন আল্লাহ বলবেন, আমার মহত্ত্বের কারণে একে অপরের
প্রতি ভালবাসা স্থাপনকারীরা কোথায়? আজ আমি তাদেরকে আমার বিশেষ ছায়ায় ছায়া প্রদান
করব। আজ এমন দিন, যেদিন আমার ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া নেই। (ই.ফা. ৬৩১৫, ই.সে.
৬৩৬৫)
৬৪৪৩
حَدَّثَنِي عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ
حَمَّادٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " أَنَّ
رَجُلاً زَارَ أَخًا لَهُ فِي قَرْيَةٍ أُخْرَى فَأَرْصَدَ اللَّهُ لَهُ عَلَى
مَدْرَجَتِهِ مَلَكًا فَلَمَّا أَتَى عَلَيْهِ قَالَ أَيْنَ تُرِيدُ قَالَ أُرِيدُ
أَخًا لِي فِي هَذِهِ الْقَرْيَةِ . قَالَ هَلْ لَكَ عَلَيْهِ مِنْ نِعْمَةٍ
تَرُبُّهَا قَالَ لاَ غَيْرَ أَنِّي أَحْبَبْتُهُ فِي اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ .
قَالَ فَإِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكَ بِأَنَّ اللَّهَ قَدْ أَحَبَّكَ كَمَا
أَحْبَبْتَهُ فِيهِ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক
ব্যক্তি তার ভাইয়ের সাক্ষাতের জন্য অন্য এক গ্রামে গেল। আল্লাহ তা’আলা তার জন্য
পথিমধ্যে একজন ফেরেশ্তা নিযুক্ত করলেন। সে ব্যক্তি যখন ফেরেশ্তার কাছে পৌছল, তখন
ফেরেশতা জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছো? সে বলল, আমি এ গ্রামে
আমার এক ভাইয়ের সাথে দেখা করার জন্য যেতে চাই। ফেরেশ্তা বললেন, তার কাছে কি তোমার
কোন অবদান আছে, যা তুমি আরো প্রবৃদ্ধি করতে চাও? সে বলল, না। আমি তো শুধু আল্লাহর
জন্যই তাকে ভালবাসি। ফেরেশতা বললেন, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে (তাঁর দূত হয়ে) তোমার
কাছে অবহিত করার জন্য এসেছি যে, আল্লাহ তোমাকে ভালবাসেন, যেমন তুমি তোমার ভাইকে
তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ভালবেসেছ। (ই.ফা. ৬৩১৬, ই.সে. ৬৩৬৬)
৬৪৪৪
قَالَ الشَّيْخُ أَبُو أَحْمَدَ
أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ زَنْجُويَهْ الْقُشَيْرِيُّ حَدَّثَنَا
عَبْدُ، الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، بِهَذَا
الإِسْنَادِ نَحْوَهُ .
হাম্মাদ বিন সালামাহ্ থেকে বর্ণিতঃ
হাম্মাদ বিন সালামাহ্ এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন। (ই.ফা. নেই, ই.সে. নেই)
১৩.
অধ্যায়:
রোগীর সেবা-শুশ্রূষার মর্যাদা
৬৪৪৫
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ،
وَأَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، - يَعْنِيَانِ
ابْنَ زَيْدٍ - عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ
ثَوْبَانَ، قَالَ أَبُو الرَّبِيعِ رَفَعَهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَفِي حَدِيثِ سَعِيدٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
عَائِدُ الْمَرِيضِ فِي مَخْرَفَةِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَرْجِعَ " .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ রাবী‘ বলেছেন, তিনি হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। আর সা’ঈদের হাদীসে রয়েছে যে, তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোগীর সেবা শুশ্রূষাকারী
বেহেশ্তের ফলমূল আহরণে রত থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে না প্রত্যাবর্তন করে। (ই.ফা.
৬৩১৭, ই.সে. ৬৩৬৭)
৬৪৪৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى
التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ
أَبِي، أَسْمَاءَ عَنْ ثَوْبَانَ، مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ عَادَ مَرِيضًا
لَمْ يَزَلْ فِي خُرْفَةِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَرْجِعَ " .
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
আযাদকৃত গোলাম সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: যে ব্যক্তি কোন রোগীর সেবা-শুশ্রূষা করতে থাকে সে প্রত্যাবর্তন
না করা পর্যন্ত বেহেশ্তের ফলমূল আহরণে রত থাকে। (ই.ফা. ৬৩১৮, ই.সে. নেই)
৬৪৪৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ
الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ أَبِي
قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ الرَّحَبِيِّ، عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ الْمُسْلِمَ إِذَا عَادَ أَخَاهُ
الْمُسْلِمَ لَمْ يَزَلْ فِي خُرْفَةِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَرْجِعَ " .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
যখন কোন মুসলিম তার মুসলিম ভাইয়ের রোগ সেবায় নিয়োজিত হয় তখন সে প্রত্যাবর্তন না
করা পর্যন্ত জান্নাতের ফল-ফলাদি আহরণে রত থাকে। (ই.ফা. ৬৩১৯, ই.সে. ৬৩৬৮)
৬৪৪৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، جَمِيعًا عَنْ يَزِيدَ، - وَاللَّفْظُ
لِزُهَيْرٍ - حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا عَاصِمٌ الأَحْوَلُ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، - وَهُوَ أَبُو قِلاَبَةَ - عَنْ أَبِي
الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ الرَّحَبِيِّ، عَنْ ثَوْبَانَ،
مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " مَنْ عَادَ مَرِيضًا لَمْ يَزَلْ فِي خُرْفَةِ الْجَنَّةِ
" . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا خُرْفَةُ الْجَنَّةِ قَالَ "
جَنَاهَا " .
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
আযাদকৃত গোলাম সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, যে ব্যক্তি কোন রোগীর সেবা করে, সে খুরফাতুল জান্নাতে রত থাকে। জিজ্ঞেস করা
হলো, হে আল্লাহর রসূল! খুরফাতুল জান্নাত কী? তিনি বললেন, এর ফল-ফলাদি সংগ্রহ করা।
(ই.ফা. ৬৩২০, ই.সে. ৬৩৬৯)
৬৪৪৯
حَدَّثَنِي سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، بِهَذَا
الإِسْنَادِ .
‘আসিম আহওয়াল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আসিম আহওয়াল (রহঃ) থেকে এ সানাদে বর্ণনা করেছেন।
(ই.ফা. ৬৩২১, ই.সে. ৬৩৭০)
৬৪৫০
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمِ بْنِ
مَيْمُونٍ، حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ،
عَنْ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَا
ابْنَ آدَمَ مَرِضْتُ فَلَمْ تَعُدْنِي . قَالَ يَا رَبِّ كَيْفَ أَعُودُكَ
وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ . قَالَ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ عَبْدِي فُلاَنًا
مَرِضَ فَلَمْ تَعُدْهُ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ عُدْتَهُ لَوَجَدْتَنِي
عِنْدَهُ يَا ابْنَ آدَمَ اسْتَطْعَمْتُكَ فَلَمْ تُطْعِمْنِي . قَالَ يَا رَبِّ
وَكَيْفَ أُطْعِمُكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ . قَالَ أَمَا عَلِمْتَ
أَنَّهُ اسْتَطْعَمَكَ عَبْدِي فُلاَنٌ فَلَمْ تُطْعِمْهُ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ
لَوْ أَطْعَمْتَهُ لَوَجَدْتَ ذَلِكَ عِنْدِي يَا ابْنَ آدَمَ اسْتَسْقَيْتُكَ
فَلَمْ تَسْقِنِي . قَالَ يَا رَبِّ كَيْفَ أَسْقِيكَ وَأَنْتَ رَبُّ
الْعَالَمِينَ قَالَ اسْتَسْقَاكَ عَبْدِي فُلاَنٌ فَلَمْ تَسْقِهِ أَمَا إِنَّكَ
لَوْ سَقَيْتَهُ وَجَدْتَ ذَلِكَ عِنْدِي " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা কিয়ামাতের দিনে বলবেন, হে আদাম সন্তান! আমি অসুস্থ
হয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমার সেবা-শুশ্রূষা করনি। সে বলবে, হে পরওয়ারদিগার! আমি কী
করে তোমার সেবা-শুশ্রূষা করব, অথচ তুমি সারা জাহানের প্রতিপালক। আল্লাহ বলবেন,
তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল, আর তুমি তার সেবা করনি,
তুমি কি জানতে না যে, তুমি তার সেবা-শুশ্রূষা করলে আমাকে তার কাছেই পেতে। হে আদাম
সন্তান! আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমাকে খেতে দাওনি। সে
(বান্দা) বলবে, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমি কী করে তোমাকে আহার করাতে পারি? তুমি তো
সারা জাহানের প্রতিপালক। তিনি (আল্লাহ) বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক
বান্দা তোমার কাছে আহার চেয়েছিল? তুমি তাকে খেতে দাওনি। তুমি কি জানতে না যে, যদি
তুমি তাকে আহার করাতে তাহলে তা অবশ্যই আমার কাছে পেতে। হে আদাম সন্তান! আমি তোমার
কাছে পানীয় চেয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমাকে পানি পান করাওনি। সে (বান্দা) বলবে, হে
আমার পরওয়ারদিগার! আমি কী করে তোমাকে পান করাব, অথচ তুমি সারা জাহানের প্রতিপালক।
তিনি (আল্লাহ) বলবেন, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানীয় চেয়েছিল, তুমি তাকে পান
করাওনি। যদি তুমি তাকে পান করাতে, তবে তা আমার কাছে পেয়ে যেতে। (ই.ফা. ৬৩২২, ই.সে.
৬৩৭১)
১৪.
অধ্যায়ঃ
মু’মিন ব্যক্তি কোন রোগ, দুশ্চিন্তা ইত্যাদিতে পতিত হলে
এমনকি তার গায়ে কাঁটাবিদ্ধ হওয়াও তার সাওয়াব
৬৪৫১
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ، عُثْمَانُ
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ
قَالَتْ عَائِشَةُ مَا رَأَيْتُ رَجُلاً أَشَدَّ عَلَيْهِ الْوَجَعُ مِنْ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَفِي رِوَايَةِ عُثْمَانَ مَكَانَ الْوَجَعِ
وَجَعًا .
মাসরূক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, আমি রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাইতে অধিকতর রোগ যন্ত্রণার কষ্ট অন্য কোন
ব্যক্তির উপর দেখিনি। ‘উসমানের বর্ণনায় (আরবী)-এর স্থলে (আরবী) উল্লেখ রয়েছে।
(ই.ফা. ৬৩২৩, ই.সে. ৬৩৭২)
৬৪৫২
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ،
أَخْبَرَنِي أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، ح وَحَدَّثَنِي بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، أَخْبَرَنَا
مُحَمَّدٌ، - يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ - كُلُّهُمْ عَنْ شُعْبَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ،
ح وَحَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ نَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، ح
وَحَدَّثَنَا ابْنُ، نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا مُصْعَبُ بْنُ الْمِقْدَامِ، كِلاَهُمَا
عَنْ سُفْيَانَ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِإِسْنَادِ جَرِيرٍ مِثْلَ حَدِيثِهِ .
আ’মাশ থেকে জারীর থেকে বর্ণিতঃ
আ’মাশ থেকে জারীর-এর সানাদে তাঁর হাদীসের অনুরূপ
হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৩২৪, ই.সে. ৬৩৭৩)
৬৪৫৩
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ إِسْحَاقُ
أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ
إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ سُوَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ،
قَالَ دَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُوعَكُ
فَمَسِسْتُهُ بِيَدِي فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّكَ لَتُوعَكُ وَعْكًا
شَدِيدًا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَجَلْ إِنِّي
أُوعَكُ كَمَا يُوعَكُ رَجُلاَنِ مِنْكُمْ " . قَالَ فَقُلْتُ ذَلِكَ
أَنَّ لَكَ أَجْرَيْنِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
أَجَلْ " . ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا
مِنْ مُسْلِمٍ يُصِيبُهُ أَذًى مِنْ مَرَضٍ فَمَا سِوَاهُ إِلاَّ حَطَّ اللَّهُ
بِهِ سَيِّئَاتِهِ كَمَا تَحُطُّ الشَّجَرَةُ وَرَقَهَا " . وَلَيْسَ فِي
حَدِيثِ زُهَيْرٍ فَمَسِسْتُهُ بِيَدِي .
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে আসলাম। তখন তিনি জ্বরাক্রান্ত ছিলেন। আমি তাঁকে
আমার হাতে স্পর্শ করে বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)!
আপনি তো ভীষণভাবে জ্বরাক্রান্ত। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, আমি এ পরিমাণ জ্বরে ভুগছি, যে পরিমাণ তোমাদের দু’জনের হয়ে
থাকে। তিনি বলেন, আমি বললাম, এ কারণেই আপনার জন্য দ্বিগুণ প্রতিদান রয়েছে। তখন
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কোন মুসলিম ব্যক্তির জ্বর
কিংবা অন্য কোন কারণে বিপদ আপতিত হলে তার বিনিময়ে আল্লাহ তা’আলা এমনভাবে তার
অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দেন যেভাবে বৃক্ষাদি পাতা ঝরায়।
তবে যুহায়র বর্ণিত হাদীসে ‘আমি আমার হাতে তাকে স্পর্শ করি’ অংশটুকু উল্লেখ নেই।
(ই.ফা. ৬৩২৫, ই.সে. ৬৩৭৪)
৬৪৫৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنِي
مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، ح
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ،
وَيَحْيَى بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي غَنِيَّةَ، كُلُّهُمْ عَنِ
الأَعْمَشِ، بِإِسْنَادِ جَرِيرٍ . نَحْوَ حَدِيثِهِ وَزَادَ فِي حَدِيثِ أَبِي
مُعَاوِيَةَ قَالَ " نَعَمْ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا عَلَى
الأَرْضِ مُسْلِمٌ " .
আ’মাশ থেকে জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আ’মাশ থেকে জারীর (রাঃ)-এর সানাদে তাঁর বর্ণিত
হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। আর আবূ মু’আবিয়াহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে
অতিরিক্ত আছে, তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, সে সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! পৃথিবীতে
এমন কোন মুসলিম ব্যক্তি নেই...’ (শেষ পর্যন্ত)। (ই.ফা. ৬৩২৬, ই.সে. ৬৩৭৫)
৬৪৫৫
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا
جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، قَالَ دَخَلَ
شَبَابٌ مِنْ قُرَيْشٍ عَلَى عَائِشَةَ وَهِيَ بِمِنًى وَهُمْ يَضْحَكُونَ
فَقَالَتْ مَا يُضْحِكُكُمْ قَالُوا فُلاَنٌ خَرَّ عَلَى طُنُبِ فُسْطَاطٍ
فَكَادَتْ عُنُقُهُ أَوْ عَيْنُهُ أَنْ تَذْهَبَ . فَقَالَتْ لاَ تَضْحَكُوا
فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَا مِنْ
مُسْلِمٍ يُشَاكُ شَوْكَةً فَمَا فَوْقَهَا إِلاَّ كُتِبَتْ لَهُ بِهَا دَرَجَةٌ
وَمُحِيَتْ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةٌ " .
আসওয়াদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কয়েকজন কুরাইশী যুবক ‘আয়িশা (রাঃ)-এর
কাছে আগমন করল। তখন তিনি মিনায় অবস্থান করছিলেন। সে সময় তারা হাসছিল। ‘আয়িশা (রাঃ)
বললেন, কোন্ বিষয় তোমাদেরকে হাসাচ্ছে? তারা বলল, অমুক ব্যক্তি তাঁবুর রশির উপর
পড়ে গেছে। ফলে তার গর্দান কিংবা চোখ নিষ্পিষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। তিনি বললেন, তোমরা
হেসো না। কেননা আমি শুনেছি, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন: যে কোন মুসলিমের গায়ে একটি কাঁটা বিদ্ধ হয় কিংবা তার চেয়েও অধিক ছোট্ট কোন
আঘাত লাগে, তার বিনিময়ে তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং তার একটি গুনাহ ক্ষমা করে
দেয়া হয়। (ই.ফা. ৬৩২৭, ই.সে. ৬৩৭৬)
৬৪৫৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ وَاللَّفْظُ لَهُمَا ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
الْحَنْظَلِيُّ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا
أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا
يُصِيبُ الْمُؤْمِنَ مِنْ شَوْكَةٍ فَمَا فَوْقَهَا إِلاَّ رَفَعَهُ اللَّهُ بِهَا
دَرَجَةً أَوْ حَطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةً " .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: কোন ঈমানদার ব্যক্তির শরীরে একটি মাত্র কাঁটার আঘাত কিংবা তার
চাইতেও কোন নগণ্য আঘাত লাগলে আল্লাহ তা’আলা তার একটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেন কিংবা তার
একটি গুনাহ্ মোচন করে দেন। (ই.ফা. ৬৩২৮, ই.সে. ৬৩৭৭)
৬৪৫৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" لاَ تُصِيبُ الْمُؤْمِنَ شَوْكَةٌ فَمَا فَوْقَهَا إِلاَّ قَصَّ اللَّهُ
بِهَا مِنْ خَطِيئَتِهِ " .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: কোন ঈমানদার ব্যক্তির দেহে একটি কাঁটা বিদ্ধ হলে কিংবা তার চেয়ে
অধিক ক্ষুদ্র কোন মুসীবাত আপতিত হলে তার পরিবর্তে আল্লাহ তা’আলা তার একটি গুনাহ
মাফ করে দেন। (ই.ফা. ৬৩২৯, ই.সে. ৬৩৭৮)
৬৪৫৮
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، بِهَذَا الإِسْنَادِ .
আবূ কুরায়ব (রহঃ) হিশাম-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
আবূ কুরায়ব (রহঃ) হিশাম-এর সূত্রে এ সানাদে অনুরূপ
বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৩৩০, ই.সে. ৬৩৭৮)
৬৪৫৯
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا
ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، وَيُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَا مِنْ مُصِيبَةٍ يُصَابُ بِهَا
الْمُسْلِمُ إِلاَّ كُفِّرَ بِهَا عَنْهُ حَتَّى الشَّوْكَةِ يُشَاكُهَا "
.
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
কোন মুসলিমের উপর কোন বিপদ নিপতিত হলে তার বিনিময়ে তার গুনাহের কাফ্ফারা হয়ে যায়,
এমনকি ক্ষুদ্রতর কোন কাঁটা বিদ্ধ হলেও। (ই.ফা. ৬৩৩১, ই.সে. ৬৩৮০)
৬৪৬০
حَدَّثَنَا أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا
ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ خُصَيْفَةَ،
عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يُصِيبُ
الْمُؤْمِنَ مِنْ مُصِيبَةٍ حَتَّى الشَّوْكَةِ إِلاَّ قُصَّ بِهَا مِنْ
خَطَايَاهُ أَوْ كُفِّرَ بِهَا مِنْ خَطَايَاهُ " . لاَ يَدْرِي يَزِيدُ
أَيَّتُهُمَا قَالَ عُرْوَةُ .
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন: ঈমানদার ব্যক্তির উপর কোন বিপদাপদ আসলে, এমনকি একটি কাঁটা বিদ্ধ হলেও তার
বিনিময়ে তার অপরাধ মোচন করা হয় কিংবা তার গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়।
ইয়াযীদ স্মরণ রাখতে পারেননি যে, ‘উরওয়াহ্ (রহঃ) কোন্ শব্দটি উল্লেখ করেছেন, (আরবী)
না (আরবী) (তবে শাব্দিক অর্থ একই, অর্থাৎ ক্ষমা করে দেয়া)। (ই.ফা. ৬৩৩২, ই.সে.
৬৩৮১)
৬৪৬১
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنَا حَيْوَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ
الْهَادِ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا مِنْ شَىْءٍ
يُصِيبُ الْمُؤْمِنَ حَتَّى الشَّوْكَةِ تُصِيبُهُ إِلاَّ كَتَبَ اللَّهُ لَهُ
بِهَا حَسَنَةً أَوْ حُطَّتْ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةٌ " .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, ঈমানদার ব্যক্তির উপর কোন বিপদ আপতিত হলে, এমনকি
কোন কাঁটা বিঁধলেও তার বিনিময়ে তাকে একটি প্রতিদান দেয়া হয়; কিংবা তার একটি গুনাহ্
ক্ষমা করে দেয়া হয়। (ই.ফা. ৬৩৩৩, ই.সে. ৬৩৮২)
৬৪৬২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الْوَلِيدِ
بْنِ، كَثِيرٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ
يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، وَأَبِي، هُرَيْرَةَ أَنَّهُمَا سَمِعَا رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا يُصِيبُ الْمُؤْمِنَ مِنْ
وَصَبٍ وَلاَ نَصَبٍ وَلاَ سَقَمٍ وَلاَ حَزَنٍ حَتَّى الْهَمِّ يُهَمُّهُ إِلاَّ
كُفِّرَ بِهِ مِنْ سَيِّئَاتِهِ " .
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী ও আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারা উভয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছেন যে, কোন ঈমানদার ব্যক্তির এমন কোন ব্যথা-বেদনা,
রোগ-ব্যাধি, দুঃখ-কষ্ট পৌঁছে না, এমনকি দুর্ভাবনা পর্যন্ত, যার প্রতিদানে তার কোন
গুনাহ্ ক্ষমা করা হয় না। (ই.ফা. ৬৩৩৪, ই.সে. ৬৩৮৩)
৬৪৬৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ كِلاَهُمَا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، -
وَاللَّفْظُ لِقُتَيْبَةَ - حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ مُحَيْصِنٍ، شَيْخٍ
مِنْ قُرَيْشٍ سَمِعَ مُحَمَّدَ بْنَ قَيْسِ بْنِ مَخْرَمَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ { مَنْ يَعْمَلْ سُوءًا يُجْزَ بِهِ}
بَلَغَتْ مِنَ الْمُسْلِمِينَ مَبْلَغًا شَدِيدًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " قَارِبُوا وَسَدِّدُوا فَفِي كُلِّ مَا يُصَابُ بِهِ
الْمُسْلِمُ كَفَّارَةٌ حَتَّى النَّكْبَةِ يُنْكَبُهَا أَوِ الشَّوْكَةِ
يُشَاكُهَا " . قَالَ مُسْلِمٌ هُوَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
مُحَيْصِنٍ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এ আয়াত (আরবী) “যে ব্যক্তি মন্দ
কাজ করে, তার প্রতিফল সে ভোগ করবে”- (সূরাহ্ আন্ নিসা ৪ : ১২৩) অবতীর্ণ হলো তখন
কতিপয় মুসলিম ভয়ানক দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতোমরা মধ্যম পন্থা অবলম্বন করো এবং সঠিক পন্থা গ্রহণ
করো। একজন মুসলিম তার প্রত্যেকটি বিপদের পরিবর্তে এমনকি সে আছাড় খেলে কিংবা তার
শরীরে কোন কাঁটা বিদ্ধ হলেও তাতে তার (গুনাহের) কাফফারাহ্ হয়ে যায়।
ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেন, ‘উমার ইবনু ‘আবদুর রহ্মান ইবনু মুহাইসিন মাক্কার অধিবাসী
ছিলেন। (ই.ফা. ৬৩৩৫, ই.সে. ৬৩৮৪)
৬৪৬৪
حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ
الْقَوَارِيرِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ
الصَّوَّافُ، حَدَّثَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، حَدَّثَنَا جَابِرُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَى أُمِّ السَّائِبِ
أَوْ أُمِّ الْمُسَيَّبِ فَقَالَ " مَا لَكِ يَا أُمَّ السَّائِبِ أَوْ يَا
أُمَّ الْمُسَيَّبِ تُزَفْزِفِينَ " . قَالَتِ الْحُمَّى لاَ بَارَكَ
اللَّهُ فِيهَا . فَقَالَ " لاَ تَسُبِّي الْحُمَّى فَإِنَّهَا تُذْهِبُ
خَطَايَا بَنِي آدَمَ كَمَا يُذْهِبُ الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ " .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
একদিন উম্মু সায়িব কিংবা উম্মুল মুসাইয়্যাব (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে বললেন, তোমার কি
হয়েছে হে উম্মু সায়িব অথবা উম্মুল মুসাইয়্যাব! কাঁদছ কেন? তিনি বললেন, ভীষণ জ্বর,
একে আল্লাহ বর্ধিত না করুন। তখন তিনি বললেন, তুমি জ্বরকে গালমন্দ করো না। কেননা
জ্বর আদাম সন্তানের পাপরাশি মোচন করে দেয়, যেভাবে হাঁপর লোহার মরিচিকা দূরীভূত
করে। (ই.ফা. ৬৩৩৬, ই.সে. ৬৩৮৫)
৬৪৬৫
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ
الْقَوَارِيرِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، وَبِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ،
قَالاَ حَدَّثَنَا عِمْرَانُ أَبُو بَكْرٍ، حَدَّثَنِي عَطَاءُ بْنُ أَبِي
رَبَاحٍ، قَالَ قَالَ لِي ابْنُ عَبَّاسٍ أَلاَ أُرِيكَ امْرَأَةً مِنْ أَهْلِ
الْجَنَّةِ قُلْتُ بَلَى . قَالَ هَذِهِ الْمَرْأَةُ السَّوْدَاءُ أَتَتِ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ إِنِّي أُصْرَعُ وَإِنِّي أَتَكَشَّفُ
فَادْعُ اللَّهَ لِي . قَالَ " إِنْ شِئْتِ صَبَرْتِ وَلَكِ الْجَنَّةُ
وَإِنْ شِئْتِ دَعَوْتُ اللَّهَ أَنْ يُعَافِيَكِ . قَالَتْ أَصْبِرُ .
قَالَتْ فَإِنِّي أَتَكَشَّفُ فَادْعُ اللَّهَ أَنْ لاَ أَتَكَشَّفَ . فَدَعَا
لَهَا .
‘আতা ইবনু রাবাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) আমাকে
বলেছেন, আমি কি তোমাকে এক জান্নাতী মহিলার কথা বলব? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন,
এক কৃষ্ণকায় মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলেছিল,
আমি মৃগীরোগে আক্রান্ত হই এবং এ অবস্থায় আমি উলঙ্গ হয়ে পড়ি। অতএব আপনি আমার জন্য
আল্লাহ নিকট দু’আ করুন। তিনি বললেন, যদি তুমি চাও, ধৈর্যধারণ কর। তাহলে তোমার জন্য
বিনিময় রয়েছে জান্নাত। আর যদি তুমি চাও তাহলে আমি আল্লাহর দরবারে দু’আ করি যেন
তিনি তোমাকে আরোগ্যতা দান করেন। তখন সে বলল, আমি ধৈয্যধারণ করব। তবে আমি যে সে
অবস্থায় সতর খুলে ফেলি। কাজেই আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন যেন আমি সতর খুলে না
ফেলি। তখন তিনি তার জন্য দু’আ করলেন। (ই.ফা. ৬৩৩৭, ই.সে. ৬৩৮৬)
১৫.
অধ্যায়:
যুল্ম হারাম
৬৪৬৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ بَهْرَامَ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ، - يَعْنِي ابْنَ
مُحَمَّدٍ الدِّمَشْقِيَّ - حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ
رَبِيعَةَ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيمَا رَوَى عَنِ اللَّهِ، تَبَارَكَ
وَتَعَالَى أَنَّهُ قَالَ " يَا عِبَادِي إِنِّي حَرَّمْتُ الظُّلْمَ
عَلَى نَفْسِي وَجَعَلْتُهُ بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا فَلاَ تَظَالَمُوا يَا عِبَادِي
كُلُّكُمْ ضَالٌّ إِلاَّ مَنْ هَدَيْتُهُ فَاسْتَهْدُونِي أَهْدِكُمْ يَا عِبَادِي
كُلُّكُمْ جَائِعٌ إِلاَّ مَنْ أَطْعَمْتُهُ فَاسْتَطْعِمُونِي أُطْعِمْكُمْ يَا
عِبَادِي كُلُّكُمْ عَارٍ إِلاَّ مَنْ كَسَوْتُهُ فَاسْتَكْسُونِي أَكْسُكُمْ يَا
عِبَادِي إِنَّكُمْ تُخْطِئُونَ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَأَنَا أَغْفِرُ
الذُّنُوبَ جَمِيعًا فَاسْتَغْفِرُونِي أَغْفِرْ لَكُمْ يَا عِبَادِي إِنَّكُمْ
لَنْ تَبْلُغُوا ضَرِّي فَتَضُرُّونِي وَلَنْ تَبْلُغُوا نَفْعِي فَتَنْفَعُونِي
يَا عِبَادِي لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ
كَانُوا عَلَى أَتْقَى قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مِنْكُمْ مَا زَادَ ذَلِكَ فِي
مُلْكِي شَيْئًا يَا عِبَادِي لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ
وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَفْجَرِ قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِنْ
مُلْكِي شَيْئًا يَا عِبَادِي لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ
وَجِنَّكُمْ قَامُوا فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ فَسَأَلُونِي فَأَعْطَيْتُ كُلَّ
إِنْسَانٍ مَسْأَلَتَهُ مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِمَّا عِنْدِي إِلاَّ كَمَا يَنْقُصُ
الْمِخْيَطُ إِذَا أُدْخِلَ الْبَحْرَ يَا عِبَادِي إِنَّمَا هِيَ أَعْمَالُكُمْ
أُحْصِيهَا لَكُمْ ثُمَّ أُوَفِّيكُمْ إِيَّاهَا فَمَنْ وَجَدَ خَيْرًا
فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ وَمَنْ وَجَدَ غَيْرَ ذَلِكَ فَلاَ يَلُومَنَّ إِلاَّ
نَفْسَهُ " . قَالَ سَعِيدٌ كَانَ أَبُو إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيُّ إِذَا
حَدَّثَ بِهَذَا الْحَدِيثِ جَثَا عَلَى رُكْبَتَيْهِ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ
করেন : আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ওহে আমার বান্দারা! আমি আমার নিজ সত্তার উপর
অত্যাচারকে হারাম করে নিয়েছি এবং তোমাদের মধ্যেও তা হারাম বলে ঘোষণা করছি। অতএব
তোমরা একে অপরের উপর অত্যাচার করো না। হে আমার বান্দারা! তোমরা সবাই ছিলে
দিশেহারা, তবে আমি যাকে সুপথ দেখিয়েছি সে ব্যতীত। তোমরা আমার কাছে হিদায়াত
প্রার্থনা কর আমি তোমাদের হিদায়াত দান করব। হে আমার বান্দারা! তোমরা সবাই
ক্ষুধার্ত, তবে আমি যাকে খাদ্য দান করি সে ব্যতীত। তোমরা আমার কাছে আহার্য চাও,
আমি তোমাদের আহার করাব। হে আমার বান্দারা! তোমরা সবাই বস্ত্রহীন, কিন্তু আমি যাকে
পরিধান করাই সে ব্যতীত। তোমারা আমার কাছে পরিধেয় চাও, আমি তোমাদের পরিধান করাব। হে
আমার বান্দারা! তোমরা রাতদিন অপরাধ করে থাকো। আর আমিই সব অপরাধ ক্ষমা করি। সুতরাং
তোমরা আমার কাছে মাগফিরাত প্রার্থনা করো, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিব। হে আমার
বান্দারা! তোমরা কখনো আমার অনিষ্ট করতে পারবে না, যাতে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হই এবং
তোমরা কখনো আমার উপকার করতে পারবে না, যাতে আমি উপকৃত হই। হে আমার বান্দারা!
তোমাদের আদি, তোমাদের অন্ত, তোমাদের মানুষ ও জিন জাতির মধ্যে যার অন্তর আমাকে
সবচাইতে বেশী ভয় পায়, তোমরা সবাই যদি তার মতো হয়ে যাও তাতে আমার রাজত্ব একটুও
বৃদ্ধি পাবে না। হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের আদি, তোমাদের অন্ত, তোমাদের সকল মানুষ
ও জিন জাতির মধ্যে যার অন্তর সবচাইতে পাপিষ্ঠ তোমরা সবাই যদি তার মতো হয়ে যাও তাতে
আমার রাজত্ব কিছুমাত্র হ্রাস পাবে না। হে আমার বান্দা! তোমাদের আদি থেকে অন্ত
পর্যন্ত সকল মানুষ ও জিন যদি কোন বিশাল মাঠে দাঁড়িয়ে সবাই আমার কাছে আবদার করে আর
আমি প্রত্যক ব্যক্তির চাহিদা পূরণ করি তাহলে আমার কাছে যা আছে তাতে এর চাইতে বেশী
হ্রাস পাবে না, যেমন কেউ সমুদ্রে একটি সূচ ডুবিয়ে দিলে যতটুকু তাত্থেকে হ্রাস পায়।
হে আমার বান্দারা! আমি তোমাদের ‘আমালই তোমাদের জন্য সংরক্ষিত রাখি। এরপর
পুরোপুরিভাবে তার বিনিময় প্রদান করে থাকি। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন কল্যাণ অর্জন করে
সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে। আর যে তা ব্যতীত অন্য কিছু পায়, তবে সে যেন নিজেকেই
দোষারোপ করে।
সা‘ঈদ (রহঃ) বলেন, আবূ ইদ্রীস আল খাওলানী (রহঃ) যখন এ হাদীস বর্ণনা করতেন তখন
তিনি দু’হাঁটুর উপর ভর দিয়ে বসতেন। (ই.ফা. ৬৩৩৮, ই.সে. ৬৩৮৭)
৬৪৬৭
حَدَّثَنِيهِ أَبُو بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ،
حَدَّثَنَا أَبُو مُسْهِرٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ، بِهَذَا
الإِسْنَادِ غَيْرَ أَنَّ مَرْوَانَ أَتَمُّهُمَا حَدِيثًا .
সা‘ঈদ ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রাযীঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা‘ঈদ ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রাযীঃ) এ সানাদে রিওয়ায়াত
করেন। তবে তাদের উভয়ের মধ্যে মারওয়ান পূর্ণাঙ্গ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৩৩৮,
ই. সে. ৬৩৮৮)
৬৪৬৮
قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ حَدَّثَنَا بِهَذَا
الْحَدِيثِ الْحَسَنُ، وَالْحُسَيْنُ، ابْنَا بِشْرٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى
قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو مُسْهِرٍ، . فَذَكَرُوا الْحَدِيثَ بِطُولِهِ .
আবূ ইসহাক্ (রহঃ) বলেন, বিশর্ (রহঃ) এর পুত্রদ্বয় হাসান
ও হুসাইন এবং মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহ্ইয়া থেকে বর্ণিতঃ
আমাদের নিকট আবূ মুসহির এ হাদীসটি পুরোটাই বর্ণনা
করেছেন। (ই.ফা. ৬৩৩৮, ই. সে. ৬৩৮৮)
৬৪৬৯
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الصَّمَدِ بْنِ عَبْدِ،
الْوَارِثِ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ،
عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فِيمَا يَرْوِي عَنْ رَبِّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى " إِنِّي
حَرَّمْتُ عَلَى نَفْسِي الظُّلْمَ وَعَلَى عِبَادِي فَلاَ تَظَالَمُوا "
. وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِنَحْوِهِ وَحَدِيثُ أَبِي إِدْرِيسَ الَّذِي ذَكَرْنَاهُ
أَتَمُّ مِنْ هَذَا .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ তাঁর মহিমান্বিত পরওয়ারদিগার ইরশাদ করেন, আমি আমার নিজের উপর ও
বান্দাদের উপর অত্যাচারকে হারাম করে নিয়েছি। অতএব তোমরা পরস্পর পরস্পরকে অত্যাচার
করোনা। অতঃপর রাবী হাদীসটি অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আর আবূ ইদ্রীস (রহঃ) বর্ণিত যে
হাদীসটি আমরা বিবৃত করেছি তা এর চাইতে অধিক পূর্ণাঙ্গ। (ই.ফা. ৬৩৩৯, ই. সে. ৬৩৮৯)
৬৪৭০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ
بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، - يَعْنِي ابْنَ قَيْسٍ - عَنْ عُبَيْدِ،
اللَّهِ بْنِ مِقْسَمٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " اتَّقُوا الظُّلْمَ فَإِنَّ الظُّلْمَ
ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَاتَّقُوا الشُّحَّ فَإِنَّ الشُّحَّ أَهْلَكَ
مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حَمَلَهُمْ عَلَى أَنْ سَفَكُوا دِمَاءَهُمْ وَاسْتَحَلُّوا
مَحَارِمَهُمْ " .
জাবির ইবনু ‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমরা অত্যাচার করা থেকে বিরত থাক। কেননা কিয়ামাত দিবসে অত্যাচার অন্ধকারে
পরিণত হবে। তোমরা কৃপণতা থেকে সাবধান হও। কেননা এ কৃপণতাই তোমাদের আগেকার কাওমকে
ধ্বংস করেছে। এ কৃপণতা তাঁদের খুন-খারাবী ও রক্তপাতে উৎসাহ যুগিয়েছে এবং হারাম
বস্তুসমূহ হালাল জ্ঞান করতে প্রলোভন দিয়েছে। (ই.ফা. ৬৩৪০, ই. সে. ৬৩৯০)
৬৪৭১
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ،
حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ الْمَاجِشُونُ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ، بْنِ دِينَارٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " إِنَّ الظُّلْمَ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন, অবশ্যই যুল্ম কিয়ামাত দিবসে ঘোরতর অন্ধকারে পরিণত হবে। (ই.ফা.
৬৩৪১, ই. সে. ৬৩৯১)
৬৪৭২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ
أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْمُسْلِمُ
أَخُو الْمُسْلِمِ لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يُسْلِمُهُ مَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ
أَخِيهِ كَانَ اللَّهُ فِي حَاجَتِهِ وَمَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً
فَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُ بِهَا كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَمَنْ
سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
সালিম-এর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ইরশাদ করেনঃ এক মুসলিম আরেক মুসলিমের ভাই। সে তার প্রতি অত্যাচার করে না এবং তাকে
দুশমনের হাতে সোপর্দও করে না। যে ব্যক্তি তার ভাই-এর অভাব-অনটন পূরণ করবে আল্লাহ
তার অভাব-অনটন দূরীভূত করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ
তা’আলা তার প্রতিদানে কিয়ামাত দিবসে তাকে বিপদ থেকে পরিত্রাণ দিবেন। আর যে ব্যক্তি
মুসলিমের দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখবে, আল্লাহ তা’আলা কিয়ামাত দিবসে তার দোষ-ত্রুটি
লুকিয়ে রাখবেন। (ই.ফা. ৬৩৪২, ই. সে. ৬৩৯২)
৬৪৭৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - وَهُوَ ابْنُ جَعْفَرٍ
- عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَتَدْرُونَ مَا الْمُفْلِسُ " .
قَالُوا الْمُفْلِسُ فِينَا مَنْ لاَ دِرْهَمَ لَهُ وَلاَ مَتَاعَ . فَقَالَ
" إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِي يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِصَلاَةٍ
وَصِيَامٍ وَزَكَاةٍ وَيَأْتِي قَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا وَأَكَلَ مَالَ
هَذَا وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ
وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يُقْضَى مَا
عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرِحَ فِي النَّارِ
" .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, তোমরা কি বলতে পার অভাবী লোক কে? তাঁরা বললেন, আমাদের মাঝে যার দিরহাম (টাকা
কড়ি) ও ধন-সম্পদ নেই সে তো অভাবী লোক। তখন তিনি বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সে
প্রকৃত অভাবী লোক, যে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন সলাত, সাওম ও যাকাত নিয়ে আসবে; অথচ সে
এ অবস্থায় আসবে যে, সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে অপবাদ দিয়েছে, অমুকের সম্পদ ভোগ
করেছে, অমুককে হত্যা করেছে ও আরেকজনকে প্রহার করেছে। এরপর সে ব্যক্তিকে তার নেক
‘আমাল থেকে দেয়া হবে, অমুককে নেক ‘আমাল থেকে দেয়া হবে। এরপর যদি পাওনাদারের হাক্ব
তার নেক ‘আমাল থেকে পূরণ করা না যায় সে ঋণের পরিবর্তে তাদের পাপের একাংশ তার প্রতি
নিক্ষেপ করা হবে। এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (ই.ফা. ৬৩৪৩, ই. সে.
৬৩৯৩)
৬৪৭৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ،
وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنُونَ
ابْنَ جَعْفَرٍ - عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَتُؤَدُّنَّ الْحُقُوقَ
إِلَى أَهْلِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يُقَادَ لِلشَّاةِ الْجَلْحَاءِ مِنَ
الشَّاةِ الْقَرْنَاءِ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিন প্রত্যেক পাওনাদারকে তার পাওনা চুকিয়ে দিতে হবে। এমনকি শিং
বিশিষ্ট বকরী থেকে শিং বিহীন বকরীর প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে। (ই.ফা. ৬৩৪৪, ই. সে.
৬৩৯৪)
৬৪৭৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا بُرَيْدُ بْنُ أَبِي
بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يُمْلِي لِلظَّالِمِ فَإِذَا
أَخَذَهُ لَمْ يُفْلِتْهُ " . ثُمَّ قَرَأَ { وَكَذَلِكَ أَخْذُ
رَبِّكَ إِذَا أَخَذَ الْقُرَى وَهِيَ ظَالِمَةٌ إِنَّ أَخْذَهُ أَلِيمٌ
شَدِيدٌ}
আবূ মূসা আশ’আরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ অবশ্যই মহান আল্লাহ যালিমকে সুযোগ দেন। এরপর তিনি যখন তাকে
পাকড়াও করেন তখন তাকে ছাড়েন না। এরপর তিনি তিলাওয়াত করেন, “এভাবেই তোমার
প্রতিপালকের পাকড়াও-যখন কোন অত্যাচারী জনপদবাসীকে তিনি পাকড়াও করেন। নিশ্চয়ই তার
পাকড়াও চরম মর্মান্তিক, অতিশয় কঠোর”- (সূরাহ্ হূদ ১১/১০২)। (ই.ফা. ৬৩৪৫, ই. সে.
৬৩৯৫)
১৬.
অধ্যায়ঃ
ভাইকে সাহায্য করা যালিম হোক কিংবা মাযলুম
৬৪৭৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ،
قَالَ اقْتَتَلَ غُلاَمَانِ غُلاَمٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَغُلاَمٌ مِنَ
الأَنْصَارِ فَنَادَى الْمُهَاجِرُ أَوِ الْمُهَاجِرُونَ يَا لَلْمُهَاجِرِينَ .
وَنَادَى الأَنْصَارِيُّ يَا لَلأَنْصَارِ . فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَقَالَ " مَا هَذَا دَعْوَى أَهْلِ الْجَاهِلِيَّةِ "
. قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِلاَّ أَنَّ غُلاَمَيْنِ اقْتَتَلاَ
فَكَسَعَ أَحَدُهُمَا الآخَرَ قَالَ " فَلاَ بَأْسَ وَلْيَنْصُرِ الرَّجُلُ
أَخَاهُ ظَالِمًا أَوْ مَظْلُومًا إِنْ كَانَ ظَالِمًا فَلْيَنْهَهُ فَإِنَّهُ
لَهُ نَصْرٌ وَإِنْ كَانَ مَظْلُومًا فَلْيَنْصُرْهُ " .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনসার ও মুহাজিরদের দু’টি গোলাম
হাতাহাতি করছিল। তখন মুহাজির গোলাম এ বলে চীৎকার দিল, হে মুহাজিরগণ! পক্ষান্তরে
আনসারী গোলামও ডাকল, হে আনসারগণ! তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বের হয়ে বললেন, এ কী ব্যাপার! জাহিলী যুগের লোকেদের মতো হাঁক-ডাক করছ?
তারা বললেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! না, দুটি গোলাম
ঝগড়া করেছে। তাদের একজন অপরজনের পশ্চাতে আঘাত করেছে। তখন তিনি বললেন, এতো মামুলী
ব্যাপার। প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য উচিত যেন সে তার ভাইয়ের সাহায্য করে, সে
অত্যাচারী হোক কিংবা অত্যাচারিত। যদি সে অত্যাচারী হয় তাহলে তাকে (যুল্ম থেকে)
বিরত রাখবে। এ হচ্ছে তার জন্য সাহায্য। আর যদি সে অত্যাচারিত হয় তাহলে তাকে
সাহায্য করবে। (ই.ফা. ৬৩৪৬, ই. সে. ৬৩৯৬)
৬৪৭৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، وَابْنُ
أَبِي، عُمَرَ - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ أَبِي شَيْبَةَ - قَالَ ابْنُ عَبْدَةَ
أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرُونَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ، عُيَيْنَةَ قَالَ
سَمِعَ عَمْرٌو، جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ يَقُولُ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فِي غَزَاةٍ فَكَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ رَجُلاً مِنَ
الأَنْصَارِ فَقَالَ الأَنْصَارِيُّ يَا لَلأَنْصَارِ وَقَالَ الْمُهَاجِرِيُّ يَا
لَلْمُهَاجِرِينَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا
بَالُ دَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَسَعَ
رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ . فَقَالَ "
دَعُوهَا فَإِنَّهَا مُنْتِنَةٌ " . فَسَمِعَهَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
أُبَىٍّ فَقَالَ قَدْ فَعَلُوهَا وَاللَّهِ لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ
لَيُخْرِجَنَّ الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ . قَالَ عُمَرُ دَعْنِي أَضْرِبْ
عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ فَقَالَ " دَعْهُ لاَ يَتَحَدَّثُ النَّاسُ
أَنَّ مُحَمَّدًا يَقْتُلُ أَصْحَابَهُ " .
সুফ্ইয়ান ইবনু ‘উয়াইনাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আমর (রহঃ) জাবির (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, আমরা
এক যুদ্ধে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ছিলাম। তখন একজন
মুহাজির একজন আনসারের পশ্চাতাঘাত করেছিল। সে সময় আনসারী চীৎকার করে বলল, সে আনসার!
আর মুহাজির ব্যক্তি ডাক দিল, হে মুহাজিরগণ! তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, কী ব্যাপার! জাহিলী যুগের মতো হাঁক-ডাক করছ কেন? তারা বলল, হে
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! একজন মুহাজির একজন আনসারীর
পশ্চাতে আঘাত করেছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা
এ ধরণের হাক-ডাক ছেড়ে দাও। কেননা এতো নিন্দনীয় কাজ। এরপর ঘটনাটি ‘আব্দুল্লাহ ইবনু
উবাই শুনে বলল, তারা কি এরূপ কান্ড ঘটিয়েছে? আল্লাহর কসম! আমরা মাদীনায় ফিরে গেলে
সেখানকার শক্তিশালীরা অবশ্যই দুর্বলকে বহিষ্কৃত করে দিবে।
‘উমার (রাঃ) বললেন, (হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)!) আমাকে
অনুমতি দিন, আমি এ মুনাফিকের মস্তক উড়িয়ে দাই। তখন তিনি বললেন, একে ছেড়ে দাও, যাতে
লোকেরা বলতে না পারে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর
সাহাবাদের হত্যা করেন। (ই.ফা. ৬৩৪৭, ই. সে. ৬৩৯৭)
৬৪৭৮
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، قَالَ ابْنُ رَافِعٍ
حَدَّثَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ، قَالَ كَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ
فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ الْقَوَدَ فَقَالَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم " دَعُوهَا فَإِنَّهَا مُنْتِنَةٌ " . قَالَ
ابْنُ مَنْصُورٍ فِي رِوَايَتِهِ عَمْرٌو قَالَ سَمِعْتُ جَابِرًا .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একজন মুহাজির একজন আনসারীকে পশ্চাতে
আঘাত করেছিল। এরপর সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এলো এবং
তাঁর কাছে প্রতিশোধ চাইল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এটা
বাদ দাও। কেননা এ-তো নোংরা কাজ।
ইবনু মানসূর (রহঃ) ‘আম্র বর্ণিত হাদীসে বলেছেন যে, তিনি জাবির (রাঃ)-কে বলতে
শুনেছেন। (ই.ফা. ৬৩৪৮, ই. সে. ৬৩৯৮)
১৭.
অধ্যায়ঃ
মু’মিনদের পারস্পারিক সহমর্মিতা, সহানুভূতি ও সহযোগিতা
৬৪৭৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو عَامِرٍ الأَشْعَرِيُّ قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
إِدْرِيسَ، وَأَبُو أُسَامَةَ ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ أَبُو
كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، وَابْنُ، إِدْرِيسَ وَأَبُو أُسَامَةَ
كُلُّهُمْ عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْمُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِ
كَالْبُنْيَانِ يَشُدُّ بَعْضُهُ بَعْضًا " .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ইরশাদ করেন : একজন মু’মিন ব্যক্তি অপর মু’মিনের জন্য একটি অট্টালিকা
সদৃশ, যার এক অংশ অন্য অংশকে শক্তিশালী করে। (ই.ফা. ৬৩৪৯, ই.সে. ৬৩৯৯)
৬৪৮০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ، عَنِ الشَّعْبِيِّ،
عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" مَثَلُ الْمُؤْمِنِينَ فِي تَوَادِّهِمْ وَتَرَاحُمِهِمْ
وَتَعَاطُفِهِمْ مَثَلُ الْجَسَدِ إِذَا اشْتَكَى مِنْهُ عُضْوٌ تَدَاعَى لَهُ
سَائِرُ الْجَسَدِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى " .
নু’মান ইবনু বাশীর থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিনদের উদাহরন তাদের পারস্পারিক ভালবাসা, দয়ার্দ্রতা ও
সহানুভূতির দিক থেকে একটি মানব দেহের ন্যায় যখন তার একটি অঙ্গ আক্রান্ত হয় তখন তার
সমস্ত দেহ ডেকে আনে তাপ ও অনিদ্রা। (ই.ফা. ৬৩৫০, ই.সে. ৬৪০০)
৬৪৮১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ الْحَنْظَلِيُّ،
أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ،
بَشِيرٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِنَحْوِهِ .
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইসহাক্ আল হান্যালী (রহঃ) ..... নু’মান ইবনু
বাশীর (রাঃ)-এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হুবহু বর্ণনা
করেছেন । (ই.ফা. ৬৩৫১, ই.সে. ৬৪০১)
৬৪৮২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " الْمُؤْمِنُونَ كَرَجُلٍ وَاحِدٍ إِنِ اشْتَكَى
رَأْسُهُ تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ الْجَسَدِ بِالْحُمَّى وَالسَّهَرِ " .
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিন সম্প্রদায় একজন ব্যক্তির ন্যায়। যখন তার মাথায় অসুস্থতা
দেখা দেয় তখন সমস্ত দেহই তাপ ও অনিদ্রায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। (ই.ফা. ৬৩৫২, ই.সে.
৬৪০২)
৬৪৮৩
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ خَيْثَمَةَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " الْمُسْلِمُونَ كَرَجُلٍ وَاحِدٍ إِنِ اشْتَكَى
عَيْنُهُ اشْتَكَى كُلُّهُ وَإِنِ اشْتَكَى رَأْسُهُ اشْتَكَى كُلُّهُ "
.
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ সকল মুসলিম একজন ব্যক্তির সমতুল্য। যদি তার চক্ষু পীড়িত হয় তবে
তার সমগ্র দেহ পীড়িত হয়ে পড়ে। যদি তার মাথা আক্রান্ত হয় তাহলে সমগ্র শরীরই
আক্রান্ত হয়ে পড়ে। (ই.ফা. ৬৩৫৩, ই.সে. ৬৪০৩)
৬৪৮৪
حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا
حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ
النُّعْمَانِ، بْنِ بَشِيرٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু নুমায়র (রহঃ) ..... নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন । (ই.ফা. ৬৩৫৪,
ই.সে. ৬৪০৪)
১৮.
অধ্যায়ঃ
গালি-গালাজ নিষিদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গ
৬৪৮৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ،
وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنُونَ
ابْنَ جَعْفَرٍ - عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْمُسْتَبَّانِ مَا قَالاَ
فَعَلَى الْبَادِئِ مَا لَمْ يَعْتَدِ الْمَظْلُومُ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ দু’ব্যক্তি যখন গালমন্দে লিপ্ত হয় তখন তাদের উভয়ের গুনাহ তার উপরই বর্তাবে,
যে প্রথমে শুরু করে; যতক্ষণ না অত্যাচারিত সীমালঙ্ঘন করে। (ই.ফা. ৬৩৫৫, ই.সে.
৬৪০৫)
১৯.
অধ্যায়ঃ
ক্ষমা ও বিনয়ের মাহাত্ন্য
৬৪৮৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ،
وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - وَهُوَ ابْنُ
جَعْفَرٍ - عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَا نَقَصَتْ صَدَقَةٌ مِنْ مَالٍ
وَمَا زَادَ اللَّهُ عَبْدًا بِعَفْوٍ إِلاَّ عِزًّا وَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ
لِلَّهِ إِلاَّ رَفَعَهُ اللَّهُ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, সদাকাহ্ করাতে সম্পদের হ্রাস হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ্ তার
মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। আর কেউ আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভে বিনীত হলে তিনি তার মর্যাদা
সমুন্নত করে দেন। (ই.ফা. ৬৩৫৬, ই.সে. ৬৪০৬)
২০.
অধ্যায়ঃ
গীবাত করা হারাম
৬৪৮৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ،
وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنِ الْعَلاَءِ،
عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ " . قَالُوا اللَّهُ
وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ
" . قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ قَالَ "
إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدِ اغْتَبْتَهُ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ
بَهَتَّهُ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমরা কি জান, গীবাত কি জিনিস? তাঁরা বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলই অধিক
জ্ঞাত। তিনি বললেন, (গীবাত হলো) তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে
অপছন্দ করে। প্রশ্ন করা হলো, আমি যা বলছি তা যদি আমার ভাই-এর মধ্যে বাস্তবিকই থেকে
থাকে তবে আপনি কি বলেন? তিনি বললেন, তুমি তার সম্পর্কে যা বলছ তা যদি তার মধ্যে
প্রকৃতই থেকে থাকে তাহলেই তুমি তার গীবাত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে তাহলে
তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে। (ই.ফা. ৬৩৫৭, ই.সে. ৬৪০৭)
২১.
অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ যার দোষ-ত্রুটি দুনিয়াতে গোপন রাখেন আখিরাতেও তার
দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখার সু-সংবাদ
৬৪৮৮
حَدَّثَنِي أُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامٍ
الْعَيْشِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، - يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ - حَدَّثَنَا رَوْحٌ،
عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " لاَ يَسْتُرُ اللَّهُ عَلَى عَبْدٍ فِي الدُّنْيَا
إِلاَّ سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
আল্লাহ্ তা’আলা দুনিয়াতে যে বান্দার দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রেখেছেন, কিয়ামাত দিবসেও
তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবেন। (ই.ফা. ৬৩৫৮, ই.সে. ৬৪০৮)
৬৪৮৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لاَ يَسْتُرُ عَبْدٌ عَبْدًا فِي الدُّنْيَا إِلاَّ سَتَرَهُ اللَّهُ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
কোন বান্দা যদি অপর কোন লোকের ত্রুটি-বিচ্যুতি দুনিয়াতে আড়াল করে রাখে আল্লাহ্
তা’আলা তার ত্রুটি-বিচ্যুতি কিয়ামাত দিবসে আড়াল করে রাখবেন। (ই.ফা. ৬৩৫৯, ই.সে.
৬৪০৯)
২২.
অধ্যায়ঃ
কারো দুরাচরণের ভয়ে সহনশীলতা প্রদর্শন
৬৪৯০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَعَمْرٌو النَّاقِدُ وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ
وَابْنُ نُمَيْرٍ كُلُّهُمْ عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، - وَاللَّفْظُ لِزُهَيْرٍ -
قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، - وَهُوَ ابْنُ عُيَيْنَةَ - عَنِ ابْنِ
الْمُنْكَدِرِ، سَمِعَ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ، يَقُولُ حَدَّثَتْنِي
عَائِشَةُ، أَنَّ رَجُلاً، اسْتَأْذَنَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ " ائْذَنُوا لَهُ فَلَبِئْسَ ابْنُ الْعَشِيرَةِ أَوْ بِئْسَ
رَجُلُ الْعَشِيرَةِ " . فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ أَلاَنَ لَهُ
الْقَوْلَ قَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قُلْتَ لَهُ الَّذِي
قُلْتَ ثُمَّ أَلَنْتَ لَهُ الْقَوْلَ قَالَ " يَا عَائِشَةُ إِنَّ شَرَّ
النَّاسِ مَنْزِلَةً عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ وَدَعَهُ أَوْ تَرَكَهُ
النَّاسُ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ " .
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা জনৈক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইল। তখন তিনি বললেন, তোমরা তাকে প্রবেশের
অনুমতি দাও। সে তো বংশের কুসন্তান, তার গোত্রের সর্বাপেক্ষা অসৎ লোক। অতঃপর সে যখন
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে প্রবেশ করল তখন তিনি তার
সাথে নম্র ভাষায় কথা বললেন। কাজেই আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি তো তার সম্বন্ধে যা বলার বললেন। এরপর
তার সাথে নম্র ভাষায় কথা বললেন? তিনি বললেন হে আয়িশাহ্! কিয়ামতের দিনে আল্লাহ্র
নিকট ঐ ব্যক্তি সর্বাধিক নিকৃষ্ট বলে গণ্য হবে, যাকে লোকজন তার দুর্ব্যবহারের দরুন
পরিত্যাগ করে। (ই.ফা. ৬৩৬০, ই.সে. ৬৪১০)
৬৪৯১
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ، عَنِ ابْنِ الْمُنْكَدِرِ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَ مَعْنَاهُ
غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ " بِئْسَ أَخُو الْقَوْمِ وَابْنُ الْعَشِيرَةِ
" .
ইবনু মুন্কাদির (রাঃ) থেকে অত্র সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু মুন্কাদির (রাঃ) থেকে অত্র সানাদে এ মর্মে
বর্ণনা করেছেন। তবে তার বর্ণনায় পার্থক্য এতটুকু যে, তিনি (আরবি) এর স্থলে (আরবি)
(গোত্রের সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট ভাই এবং বংশের কুসন্তান) বলেছেন। (ই.ফা. ৬৩৬১, ই.সে.
৬৪১১)
২৩.
অধ্যায়ঃ
নম্রতার ফাযীলাত
৬৪৯২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُفْيَانَ، حَدَّثَنَا مَنْصُورٌ، عَنْ
تَمِيمِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هِلاَلٍ، عَنْ جَرِيرٍ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ يُحْرَمِ الرِّفْقَ يُحْرَمِ
الْخَيْرَ " .
জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে
ব্যক্তি নম্র আচরণ থেকে বঞ্চিত সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত। (ই.ফা. ৬৩৬২, ই.সে.
৬৪১২)
৬৪৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
نُمَيْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا حَفْصٌ، -
يَعْنِي ابْنَ غِيَاثٍ - كُلُّهُمْ عَنِ الأَعْمَشِ، ح وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ
حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ، بْنُ إِبْرَاهِيمَ - وَاللَّفْظُ لَهُمَا - قَالَ زُهَيْرٌ
حَدَّثَنَا وَقَالَ، إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ
تَمِيمِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هِلاَلٍ الْعَبْسِيِّ، قَالَ
سَمِعْتُ جَرِيرًا، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" مَنْ يُحْرَمِ الرِّفْقَ يُحْرَمِ الْخَيْرَ " .
জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নম্র থেকে বঞ্চিত সে
কল্যাণমূলক সব কিছু থেকে বঞ্চিত। (ই.ফা. ৬৩৬৩, ই.সে. ৬৪১৩)
৬৪৯৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي
إِسْمَاعِيلَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هِلاَلٍ، قَالَ سَمِعْتُ جَرِيرَ بْنَ
عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ
حُرِمَ الرِّفْقَ حُرِمَ الْخَيْرَ أَوْ مَنْ يُحْرَمِ الرِّفْقَ يُحْرَمِ
الْخَيْرَ " .
জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ নম্রতা থেকে বঞ্চিত ব্যক্তি যাবতীয় কল্যাণ থেকে বঞ্চিত। কিংবা
বলেছেন, যে ব্যক্তি নম্রতা থেকে বঞ্চিত হবে সে কল্যাণ থেকে বঞ্চিত থাকবে। (ই.ফা.
৬৩৬৪, ই.সে. ৬৪১৪)
৬৪৯৫
حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى
التُّجِيبِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي حَيْوَةُ،
حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ، عَنْ عَمْرَةَ، -
يَعْنِي بِنْتَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ - عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَا عَائِشَةُ
إِنَّ اللَّهَ رَفِيقٌ يُحِبُّ الرِّفْقَ وَيُعْطِي عَلَى الرِّفْقِ مَا لاَ
يُعْطِي عَلَى الْعُنْفِ وَمَا لاَ يُعْطِي عَلَى مَا سِوَاهُ " .
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ হে আয়িশাহ্! আল্লাহ্ তা’আলা নম্র ব্যবহারকারী। তিনি নম্রতা
পছন্দ করেন। তিনি নম্রতার দরুন এমন কিছু দান করেন যা কঠোরতার দরুন দান করেন না; আর
অন্য কোন কিছুর দরুনও তা দান করেন না। (ই.ফা. ৬৩৬৫, ই.সে. ৬৪১৫)
৬৪৯৬
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ
الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْمِقْدَامِ، -
وَهُوَ ابْنُ شُرَيْحِ بْنِ هَانِئٍ - عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إِنَّ الرِّفْقَ لاَ يَكُونُ فِي شَىْءٍ إِلاَّ زَانَهُ وَلاَ يُنْزَعُ
مِنْ شَىْءٍ إِلاَّ شَانَهُ " .
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সহধর্মিণী
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
নম্রতা যে কোন বিষয়কে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে। আর যে কোন বিষয় থেকে নম্রতা বিদূরিত হলে
তাকে কলুষিত করে। (ই.ফা. ৬৩৬৬, ই.সে. ৬৪১৬)
৬৪৯৭
حَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، سَمِعْتُ الْمِقْدَامَ بْنَ شُرَيْحِ بْنِ هَانِئٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ
وَزَادَ فِي الْحَدِيثِ رَكِبَتْ عَائِشَةُ بَعِيرًا فَكَانَتْ فِيهِ صُعُوبَةٌ
فَجَعَلَتْ تُرَدِّدُهُ فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" عَلَيْكِ بِالرِّفْقِ " . ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِهِ .
শু’বাহ্ থেকে বর্ণিতঃ
মিক্বদাম ইবনু শুরায়হ্ ইবনু হানী (রহঃ) -কে এ
সানাদে বর্ণনা করতে শুনেছেন। তিনি তাঁর হাদীসে বাড়িয়ে বলেছেন, আয়িশাহ্ (রাঃ) একটি
উটের পিঠে সওয়ার হয়েছিলেন। উটটি ছিল কঠোর স্বভাবের। তাই তিনি তাকে শক্তভাবে
ফিরাচ্ছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, তোমার
উচিত নম্র ব্যবহার করা। পরবর্তী অংশ রাবী উক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.
৬৩৬৭, ই.সে. ৬৪১৭)
২৪.
অধ্যায়ঃ
চতুষ্পদ প্রাণী ইত্যাদিকে অভিশাপ করা থেকে বিরত থাকা
৬৪৯৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُلَيَّةَ، قَالَ زُهَيْرٌ
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي
قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي الْمُهَلَّبِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ، حُصَيْنٍ قَالَ
بَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ وَامْرَأَةٌ
مِنَ الأَنْصَارِ عَلَى نَاقَةٍ فَضَجِرَتْ فَلَعَنَتْهَا فَسَمِعَ ذَلِكَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " خُذُوا مَا عَلَيْهَا وَدَعُوهَا
فَإِنَّهَا مَلْعُونَةٌ " . قَالَ عِمْرَانُ فَكَأَنِّي أَرَاهَا الآنَ تَمْشِي
فِي النَّاسِ مَا يَعْرِضُ لَهَا أَحَدٌ .
ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক সফরে ছিলেন। সে সময় এক আনসার মহিলা একটি উষ্ট্রীর
পিঠে আরোহী ছিলেন। তিনি (তার আচরণে) বিরক্ত হয়ে তার উপর অভিসম্পাত করলেন। তখন
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা শুনে বললেন, এর উপরে যা আছে তা
নিয়ে নাও এবং একে ছেড়ে দাও। কেননা সে তো অভিশপ্ত হয়ে পড়েছে।
ইমরান (রাঃ) বলেন, আমি যেন সে উষ্ট্রীকে এখনও দেখতে পাচ্ছি, যে মানুষের মাঝে হেঁটে
বেড়াচ্ছে; অথচ কেউ তার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছে না। (ই.ফা. ৬৩৬৮, ই.সে. ৬৪১৮)
৬৪৯৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
وَأَبُو الرَّبِيعِ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، وَهُوَ ابْنُ زَيْدٍ ح
وَحَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا الثَّقَفِيُّ، كِلاَهُمَا عَنْ
أَيُّوبَ، بِإِسْنَادِ إِسْمَاعِيلَ . نَحْوَ حَدِيثِهِ إِلاَّ أَنَّ فِي
حَدِيثِ حَمَّادٍ قَالَ عِمْرَانُ فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهَا نَاقَةً
وَرْقَاءَ وَفِي حَدِيثِ الثَّقَفِيِّ فَقَالَ " خُذُوا مَا عَلَيْهَا
وَأَعْرُوهَا فَإِنَّهَا مَلْعُونَةٌ " .
ইসমা’ঈলের সানাদে আইয়ূব থেকে বর্ণিতঃ
ইসমা’ঈলের সানাদে আইয়ূব থেকে তাঁর হাদীসের অনুরূপ
বর্ণনা করেছেন। তবে হাম্মাদ কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে ইমরান বলেছেন- (আরবি) (আমি যেন
সে মেটো রং-এর উষ্ট্রীটি এখনো দেখতে পাচ্ছি); আর সাকাফী (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আরবি) ‘এর উপর যা কিছু
আছে তা নামিয়ে ফেলো এবং তাকে মুক্ত করে দাও। কেননা সে তো অভিশপ্ত’। (ই.ফা. ৬৩৬৯,
ই.সে. ৬৪১৯)
৬৫০০
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ الْجَحْدَرِيُّ،
فُضَيْلُ بْنُ حُسَيْنٍ حَدَّثَنَا يَزِيدُ، - يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ -
حَدَّثَنَا التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ أَبِي بَرْزَةَ
الأَسْلَمِيِّ، قَالَ بَيْنَمَا جَارِيَةٌ عَلَى نَاقَةٍ عَلَيْهَا بَعْضُ مَتَاعِ
الْقَوْمِ إِذْ بَصُرَتْ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَتَضَايَقَ بِهِمُ
الْجَبَلُ فَقَالَتْ حَلْ اللَّهُمَّ الْعَنْهَا . قَالَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم " لاَ تُصَاحِبُنَا نَاقَةٌ عَلَيْهَا لَعْنَةٌ "
.
আবূ বারযাহ্ আল আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার একটি বালিকা একটি উট্নীর উপর
আরোহিত ছিল। সেটির উপরে তার গোত্রের কিছু মালামালও ছিল। হঠাৎ সে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পেল। আর পাহাড়ের কারণে তাদের পথটি ছিল সংকীর্ণ। ফলে
উটের রশি টেনে বালিকাটি বলল- (আরবি) (উট চালনার শব্দ) ‘হে আল্লাহ্! এর উপর
অভিসম্পাত বর্ষণ করুন’। রাবী বলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ যে উট্নীর উপর অভিসম্পাত করা হয়েছে, সেটি যেন আমাদের সাথে না থাকে। (ই.ফা.
৬৩৭০, ই.সে. ৬৪২০)
৬৫০১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
الأَعْلَى، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، ح وَحَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، - يَعْنِي ابْنَ سَعِيدٍ - جَمِيعًا عَنْ
سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ فِي حَدِيثِ الْمُعْتَمِرِ
" لاَ ايْمُ اللَّهِ لاَ تُصَاحِبُنَا رَاحِلَةٌ عَلَيْهَا لَعْنَةٌ مِنَ
اللَّهِ " . أَوْ كَمَا قَالَ .
সুলাইমান আত্ তাইমী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর তিনি
মু’তামির (রহঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে এটুকু বাড়িয়ে বলেছেন, “আল্লাহ্র কসম! আমাদের
সাথে যেন সে উট্নীটি না থাকে, যার উপর আল্লাহ্র পক্ষ থেকে অভিশাপ বর্ষণ করা
হয়েছে, কিংবা তিনি এরূপ কিছু বলেছেন।” (ই.ফা. ৬৩৭১, ই.সে. ৬৪২১)
৬৫০২
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ
الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ، - وَهُوَ ابْنُ
بِلاَلٍ - عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ
يَنْبَغِي لِصِدِّيقٍ أَنْ يَكُونَ لَعَّانًا " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ একজন সিদ্দীকের পক্ষে অভিসম্পাতকারী হওয়া সমীচীন নয়। (ই.ফা. ৬৩৭২, ই.সে.
৬৪২২)
৬৫০৩
حَدَّثَنِيهِ أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ
عَبْدِ، الرَّحْمَنِ بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ .
‘আলা ইবনু ‘আবদুর রহমান (রহঃ) সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
অত্র সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.
৬৩৭২, ই.সে. ৬৪২৩)
৬৫০৪
حَدَّثَنِي سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنِي حَفْصُ بْنُ مَيْسَرَةَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، أَنَّ عَبْدَ
الْمَلِكِ، بْنَ مَرْوَانَ بَعَثَ إِلَى أُمِّ الدَّرْدَاءِ بِأَنْجَادٍ مِنْ
عِنْدِهِ فَلَمَّا أَنْ كَانَ ذَاتَ لَيْلَةٍ قَامَ عَبْدُ الْمَلِكِ مِنَ
اللَّيْلِ فَدَعَا خَادِمَهُ فَكَأَنَّهُ أَبْطَأَ عَلَيْهِ فَلَعَنَهُ فَلَمَّا أَصْبَحَ
قَالَتْ لَهُ أُمُّ الدَّرْدَاءِ سَمِعْتُكَ اللَّيْلَةَ لَعَنْتَ خَادِمَكَ حِينَ
دَعَوْتَهُ . فَقَالَتْ سَمِعْتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَكُونُ اللَّعَّانُونَ شُفَعَاءَ وَلاَ
شُهَدَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
যায়দ ইবনু আসলাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান উম্মু দারদাহ্ (রাঃ)-এর
নিকট তার নিজের পক্ষ থেকে সৌন্দর্য বর্ধক কিছু গৃহ সামগ্রী পাঠালেন। এক রাতে
‘আবদুল মালিক নিদ্রা থেকে জেগে তার খাদিমকে ডাকলেন। সে তার নিকট আসতে দেরি করলে তিনি
তাকে অভিসম্পাত করলেন। রাত্রি শেষে উম্মু দারদাহ্ (রাঃ) তাঁকে বললেন, আমি শুনলাম
যখন আপনি রাতে আপনার খাদিমকে ডেকেছিলেন তখন তাকে লা’নাত করেছেন। অতঃপর তিনি বললেন,
আমি আবূ দারদাহ্ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ অভিসম্পাতকারীরা কিয়ামাত দিবসে সুপারিশকারী কিংবা সাক্ষ্যদাতা
হতে পারবে না। (ই.ফা. ৬৩৭৩, ই.সে. ৬৪২৪)
৬৫০৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو غَسَّانَ الْمِسْمَعِيُّ وَعَاصِمُ بْنُ النَّضْرِ التَّيْمِيُّ
قَالُوا حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، كِلاَهُمَا عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ
زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ بِمِثْلِ مَعْنَى حَدِيثِ حَفْصِ
بْنِ مَيْسَرَةَ .
যায়দ ইবনু আসলাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অত্র সানাদে হাফস্ ইবনু মাইসারাহ্ (রহঃ)-এর হাদীসের
অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৩৭৪, ই.সে. ৬৪২৫)
৬৫০৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ
زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، وَأَبِي، حَازِمٍ عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ، عَنْ أَبِي
الدَّرْدَاءِ، سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ "
إِنَّ اللَّعَّانِينَ لاَ يَكُونُونَ شُهَدَاءَ وَلاَ شُفَعَاءَ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ " .
আবূ দারদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, অভিসম্পাতকারীরা কিয়ামাত দিবসে সাক্ষী ও
সুপারিশকারী হতে পারবে না। (ই.ফা. ৬৩৭৫, ই.সে. ৬৪২৬)
৬৫০৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ،
وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَرْوَانُ، - يَعْنِيَانِ الْفَزَارِيَّ
- عَنْ يَزِيدَ، - وَهُوَ ابْنُ كَيْسَانَ - عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ عَلَى الْمُشْرِكِينَ قَالَ
" إِنِّي لَمْ أُبْعَثْ لَعَّانًا وَإِنَّمَا بُعِثْتُ رَحْمَةً "
.
আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহকে বলা হলো, হে আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি মুশরিকদের উপর বদ্দু’আ করুন। তিনি
বললেন, আমি তো অভিসম্পাতকারীরূপে প্রেরিত হইনি; বরং প্রেরিত হয়েছি রহ্মাত স্বরূপ।
(ই.ফা. ৬৩৭৬, ই.সে. ৬৪২৭)
২৫.
অধ্যায়ঃ
যাদের উপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
অভিসম্পাত করেছেন, তিরস্কার করেছেন অথবা বদদু‘আ করেছেন; অথচ তারা এর যোগ্য নয়
তাদের জন্য তা হবে পবিত্রতা, পুরস্কার ও রহ্মাত স্বরূপ
৬৫০৮
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ دَخَلَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلاَنِ
فَكَلَّمَاهُ بِشَىْءٍ لاَ أَدْرِي مَا هُوَ فَأَغْضَبَاهُ فَلَعَنَهُمَا
وَسَبَّهُمَا فَلَمَّا خَرَجَا قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَصَابَ مِنَ الْخَيْرِ
شَيْئًا مَا أَصَابَهُ هَذَانِ قَالَ " وَمَا ذَاكِ " . قَالَتْ
قُلْتُ لَعَنْتَهُمَا وَسَبَبْتَهُمَا قَالَ " أَوَمَا عَلِمْتِ مَا
شَارَطْتُ عَلَيْهِ رَبِّي قُلْتُ اللَّهُمَّ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ فَأَىُّ
الْمُسْلِمِينَ لَعَنْتُهُ أَوْ سَبَبْتُهُ فَاجْعَلْهُ لَهُ زَكَاةً وَأَجْرًا
" .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা দু’জন লোক রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে আসলো। তারা তাঁর সঙ্গে কোন বিষয়ে
আলোচনা করল। তা কী ছিল, আমি জানি না। অতঃপর তারা তাঁকে রাগান্বিত করেছিল। তিনি
তাদের উভয়কে অভিসম্পাত করলেন এবং তিরস্কার করলেন। যখন তারা বের হয়ে গেল আমি বললাম,
হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। যারা (আপনার কাছ থেকে)
কল্যাণ লাভ করে। এরা দু’জনে তার কিছুই পাবে না। তিনি বললেন, সে কী ব্যাপার! তিনি
[আয়িশাহ্ (রাঃ)] বললেন, আপনি তো তাদের উভয়কে অভিসম্পাত করেছেন এবং ধিক্কার
দিয়েছেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি জান
আমার প্রতিপালকের সাথে এ বিষয়ে আমি কী শর্তারোপ করেছি? আমি বলেছিলাম, “হে আল্লাহ্!
আমি একজন মানুষ। আমি কোন মুসলিমকে লা’নত করলে কিংবা তিরস্কার করলে তা তুমি তার
জন্য পবিত্রতা ও পুরস্কার বানিয়ে দিও।” (ই.ফা. ৬৩৭৭, ই.সে. ৬৪২৮)
৬৫০৯
حَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح
وَحَدَّثَنَاهُ عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ السَّعْدِيُّ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
وَعَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، جَمِيعًا عَنْ عِيسَى بْنِ يُونُسَ، كِلاَهُمَا عَنِ
الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . نَحْوَ حَدِيثِ جَرِيرٍ وَقَالَ فِي حَدِيثِ
عِيسَى فَخَلَوَا بِهِ فَسَبَّهُمَا وَلَعَنَهُمَا وَأَخْرَجَهُمَا .
আ’মাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আ’মাশ (রাঃ) থেকে এ সানাদে জারীর সূত্রে বর্ণিত
হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি ঈসা (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে বলেন, এরপর
তারা তাঁর সঙ্গে একান্তে মিলিত হলেন, তখন তিনি তাদের উভয়কে তিরস্কার করলেন এবং
তাদেরকে লা’নাত দিয়ে বের করে দিলেন। (ই.ফা. ৬৩৭৮, ই.সে. ৬৪২৯)
৬৫১০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
اللَّهُمَّ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ فَأَيُّمَا رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ
سَبَبْتُهُ أَوْ لَعَنْتُهُ أَوْ جَلَدْتُهُ فَاجْعَلْهَا لَهُ زَكَاةً وَرَحْمَةً
" .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ “হে আল্লাহ্! আমি তো একজন মানুষ। সুতরাং আমি কোন মুসলিমকে
গাল-মন্দ করলে কিংবা তাকে অভিশাপ করলে অথবা আঘাত করলে তখন তুমি তার জন্য তা
পবিত্রতা ও রহ্মাত অর্জনের উপায় বানিয়ে দিও।” (ই.ফা. ৬৩৭৯, ই.সে. ৬৪৩০)
৬৫১১
وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا
أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ إِلاَّ أَنَّ فِيهِ " زَكَاةً
وَأَجْرًا " .
জাবির (রাঃ)-এর সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
জাবির (রাঃ)-এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তার হাদীসে (আরবী) (করুণা)-এর
স্থলে (আরবী) (সাওয়াব) উল্লেখিত হয়েছে। (ই.ফা. ৬৩৮০, ই.সে. ৬৪৩১)
৬৫১২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ، بْنُ إِبْرَاهِيمَ أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، كِلاَهُمَا عَنِ
الأَعْمَشِ، بِإِسْنَادِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ . مِثْلَ حَدِيثِهِ
غَيْرَ أَنَّ فِي، حَدِيثِ عِيسَى جَعَلَ " وَأَجْرًا " . فِي
حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ وَجَعَلَ " وَرَحْمَةً " . فِي حَدِيثِ
جَابِرٍ .
আ‘মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের
অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে ‘ঈসা (রহঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে (আরবী) (বানিয়ে
দাও) উল্লেখ আছে। আর আবূ হুরায়রা্-এর হাদীসে (আরবী) (পুরস্কার) কথাটি উল্লেখ রয়েছে
এবং জাবির (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসে (আরবী) (বানিয়ে দাও রহ্মাত) কথাটির
উল্লেখ আছে।
(ই.ফা. ৬৩৮১, ই.সে. ৬৪৩১ [ক])
৬৫১৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ، - يَعْنِي ابْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِزَامِيَّ -
عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " اللَّهُمَّ إِنِّي أَتَّخِذُ عِنْدَكَ عَهْدًا
لَنْ تُخْلِفَنِيهِ فَإِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ فَأَىُّ الْمُؤْمِنِينَ آذَيْتُهُ
شَتَمْتُهُ لَعَنْتُهُ جَلَدْتُهُ فَاجْعَلْهَا لَهُ صَلاَةً وَزَكَاةً وَقُرْبَةً
تُقَرِّبُهُ بِهَا إِلَيْكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
“হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট থেকে যে বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি, তুমি কখনো তার
বিপরীত করো না। আমি তো একজন মানুষ মাত্র। সুতরাং আমি কোন মু’মিন ব্যক্তিকে কষ্ট
দিলে, গাল-মন্দ করলে, অভিসম্পাত করলে, তাকে কোড়া লাগালে তা তার জন্য রহ্মাত,
পবিত্রতা ও নৈকট্যের কারণ বানিয়ে দাও, যার দ্বারা সে কিয়ামাত দিবসে তোমার নৈকট্য
লাভ করতে পারে। (ই.ফা. ৬৩৮২, ই.সে. ৬৪৩২)
৬৫১৪
حَدَّثَنَاهُ ابْنُ أَبِي عُمَرَ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ
إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ " أَوْ جَلَدُّهُ " . قَالَ أَبُو
الزِّنَادِ وَهِيَ لُغَةُ أَبِي هُرَيْرَةَ وَإِنَّمَا هِيَ " جَلَدْتُهُ "
.
আবূ যিনাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ যিনাদ (রহঃ) এ সানাদে তার অনুরূপ বর্ণনা
করেছেন। পার্থক্য এতটুকু যে, তিনি বলেছেন, (আরবী) (কিংবা আমি দোর্রা মেরেছি)।
আবূ যিনাদ (রহঃ) বলেন, এ শব্দটি আবূ হুরায়রা্ (রাঃ)-এর পরিভাষা মাত্র। আসলে এর
অর্থ (আরবী) (অর্থাৎ-আমি তাকে শাস্তি দিয়েছি)। (ই.ফা. ৬৩৮৩, ই.সে. ৬৪৩৩)
৬৫১৫
حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ مَعْبَدٍ،
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ
أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِنَحْوِهِ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা্ (রাঃ)-এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ রকমই বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৩৮৪, ই.সে. ৬৪৩৪)
৬৫১৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ سَالِمٍ، مَوْلَى
النَّصْرِيِّينَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " اللَّهُمَّ إِنَّمَا مُحَمَّدٌ
بَشَرٌ يَغْضَبُ كَمَا يَغْضَبُ الْبَشَرُ وَإِنِّي قَدِ اتَّخَذْتُ عِنْدَكَ
عَهْدًا لَنْ تُخْلِفَنِيهِ فَأَيُّمَا مُؤْمِنٍ آذَيْتُهُ أَوْ سَبَبْتُهُ أَوْ
جَلَدْتُهُ فَاجْعَلْهَا لَهُ كَفَّارَةً وَقُرْبَةً تُقَرِّبُهُ بِهَا إِلَيْكَ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
নাসরিয়্যিন-এর আযাদকৃত গোলাম সালিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আবূ হুরায়রা্ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ তো
একজন মানুষ। তিনি রাগান্বিত হন যেভাবে একজন মানুষ রাগান্বিত হয়। আর আমি আপনার কাছ
থেকে যে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছি আপনি কখনো তার উল্টো করবেন না। অতএব কোন মু’মিনকে
আমি দুঃখ দিলে কিংবা তাকে তিরস্কার করলে অথবা তাকে কোড়া লাগালে তা আপনি তার জন্য
কাফ্ফারাহ্ ও নৈকট্য লাভের সোপান বানিয়ে দিন; যার দ্বারা কিয়ামাত দিবসে সে আপনার
নৈকট্য অর্জন করতে পারে।” (ই.ফা. ৬৩৮৫, ই.সে. ৬৪৩৫)
৬৫১৭
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي
سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " اللَّهُمَّ فَأَيُّمَا عَبْدٍ
مُؤْمِنٍ سَبَبْتُهُ فَاجْعَلْ ذَلِكَ لَهُ قُرْبَةً إِلَيْكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
" .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, “হে আল্লাহ্! আমি কোন ঈমানদার বান্দাকে মন্দ কথা
বললে তুমি তা তার জন্য কিয়ামাত দিবসে তোমার সান্নিধ্য লাভের ওয়াসীলা বানিয়ে দিও।”
(ই.ফা. ৬৩৮৬, ই.সে. ৬৪৩৬)
৬৫১৮
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعَبْدُ
بْنُ حُمَيْدٍ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَمِّهِ، حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ
الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَقُولُ " اللَّهُمَّ إِنِّي اتَّخَذْتُ عِنْدَكَ عَهْدًا
لَنْ تُخْلِفَنِيهِ فَأَيُّمَا مُؤْمِنٍ سَبَبْتُهُ أَوْ جَلَدْتُهُ فَاجْعَلْ
ذَلِكَ كَفَّارَةً لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, “হে আল্লাহ্! আমি আপনার নিকট থেকে যে বিষয়ে
প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি, আপনি কখনো তার বিপরীত করবেন না। কাজেই আমি কোন মু’মিন
ব্যক্তিকে কষ্ট দিলে কিংবা গালি বা শাস্তি বিধান কায়িম করলে আপনি তার জন্য কিয়ামাত
দিবসে কাফ্ফারাহ্ বানিয়ে দিন।” (ই.ফা. ৬৩৮৭, ই.সে. ৬৪৩৭)
৬৫১৯
حَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ،
وَحَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ
قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ
عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ وَإِنِّي اشْتَرَطْتُ عَلَى رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ
أَىُّ عَبْدٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ سَبَبْتُهُ أَوْ شَتَمْتُهُ أَنْ يَكُونَ ذَلِكَ
لَهُ زَكَاةً وَأَجْرًا " .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি তো একজন মানুষ। অতএব আমি আমার
পালনকর্তার সাথে এ শর্ত করে নিয়েছি যে, মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত কোন বান্দাকে আমি
ভৎর্সনা করলে কিংবা তিরস্কার করলে তা যেন তার জন্য পবিত্রতা ও পুরস্কার হিসেবে
গণ্য করা হয়। (ই.ফা. ৬৩৮৮, ই.সে. ৬৪৩৮)
৬৫২০
حَدَّثَنِيهِ ابْنُ أَبِي خَلَفٍ،
حَدَّثَنَا رَوْحٌ، ح وَحَدَّثَنَاهُ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو
عَاصِمٍ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ .
ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অত্র সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.
৬৩৮৮, ই.সে. ৬৪৩৯)
৬৫২১
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَأَبُو
مَعْنٍ الرَّقَاشِيُّ - وَاللَّفْظُ لِزُهَيْرٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا عُمَرُ، بْنُ
يُونُسَ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ أَبِي
طَلْحَةَ، حَدَّثَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ كَانَتْ عِنْدَ أُمِّ سُلَيْمٍ
يَتِيمَةٌ وَهِيَ أُمُّ أَنَسٍ فَرَأَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
الْيَتِيمَةَ فَقَالَ " آنْتِ هِيَهْ لَقَدْ كَبِرْتِ لاَ كَبِرَ سِنُّكِ
" . فَرَجَعَتِ الْيَتِيمَةُ إِلَى أُمِّ سُلَيْمٍ تَبْكِي فَقَالَتْ
أُمُّ سُلَيْمٍ مَا لَكِ يَا بُنَيَّةُ قَالَتِ الْجَارِيَةُ دَعَا عَلَىَّ
نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ لاَ يَكْبَرَ سِنِّي فَالآنَ لاَ
يَكْبَرُ سِنِّي أَبَدًا - أَوْ قَالَتْ قَرْنِي - فَخَرَجَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ
مُسْتَعْجِلَةً تَلُوثُ خِمَارَهَا حَتَّى لَقِيَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا لَكِ يَا
أُمَّ سُلَيْمٍ " . فَقَالَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَدَعَوْتَ عَلَى
يَتِيمَتِي قَالَ " وَمَا ذَاكِ يَا أُمَّ سُلَيْمٍ " . قَالَتْ
زَعَمَتْ أَنَّكَ دَعَوْتَ أَنْ لاَ يَكْبَرَ سِنُّهَا وَلاَ يَكْبَرَ قَرْنُهَا -
قَالَ - فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ " يَا
أُمَّ سُلَيْمٍ أَمَا تَعْلَمِينَ أَنَّ شَرْطِي عَلَى رَبِّي أَنِّي اشْتَرَطْتُ
عَلَى رَبِّي فَقُلْتُ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ أَرْضَى كَمَا يَرْضَى الْبَشَرُ
وَأَغْضَبُ كَمَا يَغْضَبُ الْبَشَرُ فَأَيُّمَا أَحَدٍ دَعَوْتُ عَلَيْهِ مِنْ
أُمَّتِي بِدَعْوَةٍ لَيْسَ لَهَا بِأَهْلٍ أَنْ تَجْعَلَهَا لَهُ طَهُورًا
وَزَكَاةً وَقُرْبَةً يُقَرِّبُهُ بِهَا مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
وَقَالَ أَبُو مَعْنٍ يُتَيِّمَةٌ . بِالتَّصْغِيرِ فِي الْمَوَاضِعِ
الثَّلاَثَةِ مِنَ الْحَدِيثِ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস (রাঃ)-এর মা উম্মু সুলায়মা-এর
নিকট এক ইয়াতীম মেয়ে ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখে
বললেন, এ তুমি সে মেয়ে? তুমি তো অনেক বড় হয়েছ; কিন্তু তুমি দীর্ঘায়ু হবে না। তখন
ইয়াতীম মেয়েটি উম্মু সুলায়মের নিকট এসে কাঁদতে লাগল। তখন উম্মু সুলায়ম (রাঃ)
বললেন, তোমার কী হয়েছে? হে আমার স্নেহের মেয়ে! মেয়েটি বলল, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বদ্দু’আ করেছেন।তিনি বলেছেন, আমি দীর্ঘায়ু হব না।
সুতরাং এখন থেকে আমি বয়সে আর বড় হব না। অথবা সে (আরবী) এর স্থলে (আরবী) (আমার
সমবয়সী) বলেছিল। এ কথা শুনে উম্মু সুলায়ম (রাঃ) তাড়াতাড়ি গায়ে চাদর দিয়ে বেরিয়ে
পড়েন এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে দেখা করেন। তখন
তাঁর উদ্দেশে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কী ব্যাপার,
হে উম্মু সুলায়ম! তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)!
আপনি কি আমার ইয়াতীম মেয়েটিকে বদ্দু’আ করেছেন? তিনি বললেন, হে উম্মু সুলায়ম! এটা
কেমন কথা! বদ্দু’আ করব কেন? উম্মু সুলায়ম বললেন, সে তো মনে করেছে যে, আপনি তাকে
বদ্দু’আ করেছেন যেন তার বয়স না বাড়ে কিংবা তার সমবয়সীর বয়স বৃদ্ধি না পায়। রাবী
বলেন , তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হেসে বললেন, হে
উম্মু সুলায়ম! তুমি বোধহয় জান না যে, আমার রবের সাথে এ মর্মে আমি শর্ত করেছি এবং
আমি বলেছি যে, আমি একজন মানুষ মাত্র। মানুষ যাতে সন্তুষ্ট থাকে আমিও তাতে সন্তুষ্ট
হই। আমিও রাগান্বিত হই যেভাবে মানুষ রাগান্বিত হয়ে থাকে। সুতরাং আমি আমার উম্মতের
কোন লোকের বিরুদ্ধে বদ্দু’আ করলে সে যদি তার যোগ্য না হয় তাহলে তা তার জন্য
পবিত্রতা, আত্মশুদ্ধি ও নৈকট্যর সোপান বানিয়ে দাও, যার দ্বারা কিয়ামাতের দিনে সে
তোমার নৈকট্য অর্জন করতে পারে।
আবূ মা’ন (রহঃ) উল্লেখিত এক হাদীসে তিন জায়গায় (আরবী)-এর স্থলে (আরবী) শব্দ বর্ণনা
করেছেন, যার অর্থ ছোট ইয়াতীম মেয়ে। (ই.ফা. ৬৩৮৯, ই.সে. ৬৪৪০ )
৬৫২২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى
الْعَنَزِيُّ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ بَشَّارٍ، - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى
- قَالاَ حَدَّثَنَا أُمَيَّةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي
حَمْزَةَ الْقَصَّابِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كُنْتُ أَلْعَبُ مَعَ
الصِّبْيَانِ فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَوَارَيْتُ خَلْفَ
بَابٍ - قَالَ - فَجَاءَ فَحَطَأَنِي حَطْأَةً وَقَالَ " اذْهَبْ وَادْعُ
لِي مُعَاوِيَةَ " . قَالَ فَجِئْتُ فَقُلْتُ هُوَ يَأْكُلُ - قَالَ -
ثُمَّ قَالَ لِيَ " اذْهَبْ وَادْعُ لِي مُعَاوِيَةَ " . قَالَ
فَجِئْتُ فَقُلْتُ هُوَ يَأْكُلُ فَقَالَ " لاَ أَشْبَعَ اللَّهُ بَطْنَهُ
" . قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى قُلْتُ لأُمَيَّةَ مَا حَطَأَنِي قَالَ
قَفَدَنِي قَفْدَةً .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন আমি বালকদের সাথে খেলায়
লিপ্ত ছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে আসলেন।
তখন আমি একটি দরজার পিছনে লুকিয়ে থাকলাম। তিনি বলেন, তিনি আমাকে তাঁর হাতে (আদর
করে) চড় দিলেন এবং বললেন, যাও, মু’আবিয়াকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে আসো। তিনি বলেন,
তখন আমি তার নিকট গেলাম এবং বললাম, তিনি খাচ্ছিলেন। (আমি ফিরে আসলাম) তিনি বলেন,
তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, যাও , মু’আবিয়াকে
আমার নিকট ডেকে নিয়ে আসো। তিনি বলেন, তখন আমি তার নিকট গেলাম এবং (ফিরে এসে)
বললাম, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাচ্ছেন। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ্
যেন তার পেটভর্তি না করেন।
ইবনুল মুসান্না (রহঃ) বলেন, আমি উমাইয়্যাকে বললাম, (আরবী) ‘আমাকে চড় মেরেছেন’-এর
অর্থ কি? তিনি বললেন, (আরবী) অর্থাৎ-তিনি আমাকে আদর করেছেন। (ই.ফা. ৬৩৯০, ই.সে.
৬৪৪১)
৬৫২৩
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ،
أَخْبَرَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنَا أَبُو
حَمْزَةَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَقُولُ كُنْتُ أَلْعَبُ مَعَ الصِّبْيَانِ
فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاخْتَبَأْتُ مِنْهُ . فَذَكَرَ
بِمِثْلِهِ .
আবূ হামযাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলতে
শুনেছি, তিনি বলেন, আমি কিছু ছেলের সাথে খেলায় লিপ্ত ছিলাম। অকস্মাৎ রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তথায় আসলেন আমি তাত্থেকে লুকিয়ে থাকলাম।…
তারপর তিনি তার হুবহু হাদীস উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ৬৩৯১, ই.সে. ৬৪৪২)
২৬.
অধ্যায়ঃ
দ্বি-মুখী লোকের নিন্দা ও তার এ কাজে হারামকরণ প্রসঙ্গে
৬৫২৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ
قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ مِنْ
شَرِّ النَّاسِ ذَا الْوَجْهَيْنِ الَّذِي يَأْتِي هَؤُلاَءِ بِوَجْهٍ وَهَؤُلاَءِ
بِوَجْهٍ " .
আবূ হুরাইরাহ্, (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ মানুষের মধ্যে দু’ রূপধারী লোক সবচেয়ে নিকৃষ্ট। যে এ দলের নিকট আসে একরূপ
নিয়ে এবং অন্য দলের নিকট আসে অন্য আরেক রূপ নিয়ে। (ই.ফা. ৬৩৯২, ই.সে. ৬৪৪৩)
৬৫২৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ "
إِنَّ شَرَّ النَّاسِ ذُو الْوَجْهَيْنِ الَّذِي يَأْتِي هَؤُلاَءِ بِوَجْهٍ
وَهَؤُلاَءِ بِوَجْهٍ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নিশ্চয়ই তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেনঃ দু’ রুপধারী লোক সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যে ব্যক্তি এ দলের
নিকটে আসে একরূপ নিয়ে ও অন্যদলের কাছে আসে একরূপ নিয়ে। (ই.ফা. ৬৩৯৩, ই.সে. ৬৪৪৪)
৬৫২৬
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " تَجِدُونَ مِنْ شَرِّ
النَّاسِ ذَا الْوَجْهَيْنِ الَّذِي يَأْتِي هَؤُلاَءِ بِوَجْهٍ وَهَؤُلاَءِ
بِوَجْهٍ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে দু’ রূপধারী মানুষকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট পাবে। এক দলের
নিকট আসে একরূপ নিয়ে অন্য দলের কাছে আসে আর একরূপ নিয়ে। (ই.ফা. ৬৩৯৪, ই.সে. ৬৪৪৫)
২৭.
অধ্যায়ঃ
মিথ্যা হারামকরণ ও তা মুবাহ হওয়ার বিবরণ
৬৫২৭
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي
حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، أَنَّ أُمَّهُ أُمَّ كُلْثُومٍ
بِنْتَ عُقْبَةَ بْنِ أَبِي مُعَيْطٍ، وَكَانَتْ، مِنَ الْمُهَاجِرَاتِ الأُوَلِ
اللاَّتِي بَايَعْنَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا
سَمِعَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَقُولُ " لَيْسَ
الْكَذَّابُ الَّذِي يُصْلِحُ بَيْنَ النَّاسِ وَيَقُولُ خَيْرًا وَيَنْمِي
خَيْرًا " . قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَلَمْ أَسْمَعْ يُرَخَّصُ فِي شَىْءٍ
مِمَّا يَقُولُ النَّاسُ كَذِبٌ إِلاَّ فِي ثَلاَثٍ الْحَرْبُ وَالإِصْلاَحُ
بَيْنَ النَّاسِ وَحَدِيثُ الرَّجُلِ امْرَأَتَهُ وَحَدِيثُ الْمَرْأَةِ زَوْجَهَا
.
হিজরতকারিণীদের মধ্যে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর হাতে প্রথম বাই’আত গ্রহণকারিণীদের অন্যতমা সহাবীয়া উম্মু কুলসূম বিনতু
‘উকবাহ ইবনু আবূ মু’আয়ত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, সে ব্যক্তি মিথ্যুক নয়, যে লোকের মধ্যে আপোষে সমাধা
করে দেয়। সে কল্যাণের জন্যই মিথ্যা বলে এবং কল্যাণের জন্যেই চোগলখোরী করে।
ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, তিনটি স্থান ছাড়া আর কোন বিষয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিথ্যা বলার অনুমতি দিয়েছেন বলে আমি শুনিনি। যুদ্ধ কৌশলের
ক্ষেত্রে, মানুষের মধ্যে আপোষ-মীমাংশা করার জন্য, সহধর্মিণীর সাথে স্বামীর কথা ও
স্বামীর সাথে সহধর্মিণীর কথা বলার ক্ষেত্রে। (ই.ফা. ৬৩৯৫, ই.সে. ৬৪৪৬)
৬৫২৮
حَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا
يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُسْلِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ شِهَابٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّفِي حَدِيثِ صَالِحٍ
وَقَالَتْ وَلَمْ أَسْمَعْهُ يُرَخِّصُ فِي شَىْءٍ مِمَّا يَقُولُ النَّاسُ إِلاَّ
فِي ثَلاَثٍ . بِمِثْلِ مَا جَعَلَهُ يُونُسُ مِنْ قَوْلِ ابْنِ شِهَابٍ .
মুহাম্মাদ ইবনু মুসলিম ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু
‘আবদুল্লাহ ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে হুবহু বর্ণনা করেছেন। এছাড়া সালিহ (রহঃ)
বর্ণিত হাদীসে রয়েছে। রাবী বলেন, আর লোকেরা যা বলে তাতে শুধু এ তিনটি ক্ষেত্র
ব্যতীত অন্য কোন ক্ষেত্রে মিথ্যা বলার অনুমতি দানের কথা আমি শুনিনি, যা ইবনু শিহাব
(রহঃ)-এর কথা ইউনুস (রহঃ) বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৩৯৬, ই.সে. ৬৪৪৭)
৬৫২৯
وَحَدَّثَنَاهُ عَمْرٌو النَّاقِدُ،
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ إِلَى قَوْلِهِ " وَنَمَى خَيْرًا
" . وَلَمْ يَذْكُرْ مَا بَعْدَهُ .
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে তাঁর কথা (আরবী) (ভালোর জন্যই চোগলখোরী
করে) পর্যন্ত বর্ণিত আছে। পরবর্তি অংশ তিনি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৬৩৯৭, ই.সে.
৬৪৪৮)
২৮.
অধ্যায়ঃ
চোগলখোরী হারামকরণ
৬৫৩০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ إِنَّ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم قَالَ
" أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ مَا الْعَضْهُ هِيَ النَّمِيمَةُ الْقَالَةُ بَيْنَ
النَّاسِ " . وَإِنَّ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم قَالَ "
إِنَّ الرَّجُلَ يَصْدُقُ حَتَّى يُكْتَبَ صِدِّيقًا وَيَكْذِبُ حَتَّى يُكْتَبَ
كَذَّابًا " .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন, আমি কি তোমাদের হুশিয়ার করবনা, চোগলখোরী কী? তা হচ্ছে কুৎসা রটনা
করা, যা মানুষের মধ্যে বৈরিতার সৃষ্টি করে। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আরও বলেছেন, নিশ্চয়ই কোন ব্যক্তি সত্য কথা বলায় সত্যবাদী লিপিবদ্ধ হয়;
আবার কেউ মিথ্যা কথা বলায় মিথ্যাবাদী লিপিবদ্ধ হয়। (ই.ফা. ৬৩৯৮, ই.সে. ৬৪৪৯)
২৯.
অধ্যায়ঃ
মিথ্যার নিন্দা এবং সত্যের সৌন্দর্যতা ও তার উপকারিতা
৬৫৩১
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ إِسْحَاقُ
أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي
وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّ الصِّدْقَ يَهْدِي إِلَى الْبِرِّ وَإِنَّ الْبِرَّ يَهْدِي إِلَى
الْجَنَّةِ وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَصْدُقُ حَتَّى يُكْتَبَ صِدِّيقًا وَإِنَّ
الْكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الْفُجُورِ وَإِنَّ الْفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ
وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَكْذِبُ حَتَّى يُكْتَبَ كَذَّابًا " .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ সততা সৎকর্মের দিকে পথপ্রদর্শন করে আর সৎকর্ম জান্নাতের পথপ্রদর্শন
করে। নিশ্চয়ই কোন মানুষ সত্য কথা বলায় সত্যবাদী হিসাবে (তার নাম) লিপিবদ্ধ হয়। আর
অসত্য পাপের পথপ্রদর্শন করে এবং পাপ জাহান্নামের দিকে পথপ্রদর্শন করে। নিশ্চয়ই কোন
ব্যক্তি নিথ্যায় রত থাকলে পরিশেষে মিথ্যাবাদী হিসেবেই (তার নাম) লিপিবদ্ধ করা হয়।
(ই.ফা. ৬৩৯৯, ই.সে. ৬৪৫০)
৬৫৩২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَهَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ
مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ الصِّدْقَ بِرٌّ وَإِنَّ
الْبِرَّ يَهْدِي إِلَى الْجَنَّةِ وَإِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَحَرَّى الصِّدْقَ
حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللَّهِ صِدِّيقًا وَإِنَّ الْكَذِبَ فُجُورٌ وَإِنَّ
الْفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ وَإِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَحَرَّى الْكَذِبَ حَتَّى
يُكْتَبَ كَذَّابًا " . قَالَ ابْنُ أَبِي شَيْبَةَ فِي رِوَايَتِهِ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সত্যতা তো পুণ্যের কাজ; আর পুণ্যময় কাজ জান্নাতের পথ দেখিয়ে
দেয়। কোন বান্দা সৎ বলার ইচ্ছা করলে অবশেষে আল্লাহর নিকট তার নাম সত্যবাদী বলে
লিপিবদ্ধ হয়। আর মিথ্যা তো অপরাধ, এ অপরাধ জাহান্নামের পথপ্রদর্শন করে। আর কোন
বান্দা মিথ্যা বলার চিন্তা করার কারণে অবশেষে সে মিথ্যাবাদী হিসাবে লিপিবদ্ধ হয়।
ইবনু আবূ শাইবাহ্ (রহঃ) তাঁর অপর বর্ণিত হাদীসটি ‘আন্ ‘আন্ সূত্রে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৪০০, ই.সে. ৬৪৫১)
৬৫৩৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا
الأَعْمَشُ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ،
حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " عَلَيْكُمْ بِالصِّدْقِ فَإِنَّ الصِّدْقَ
يَهْدِي إِلَى الْبِرِّ وَإِنَّ الْبِرَّ يَهْدِي إِلَى الْجَنَّةِ وَمَا يَزَالُ
الرَّجُلُ يَصْدُقُ وَيَتَحَرَّى الصِّدْقَ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللَّهِ
صِدِّيقًا وَإِيَّاكُمْ وَالْكَذِبَ فَإِنَّ الْكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الْفُجُورِ
وَإِنَّ الْفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ وَمَا يَزَالُ الرَّجُلُ يَكْذِبُ
وَيَتَحَرَّى الْكَذِبَ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللَّهِ كَذَّابًا " .
‘আবদুল্লাহ (ইবনু মাস’ঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ সত্যকে ধারণ করা তোমাদের একান্ত কর্তব্য। কেননা সততা নেক কর্মের
দিকে পথপ্রদর্শন করে আর নেককর্ম জান্নাতের পথপ্রদর্শন করে। কোন ব্যক্তি সর্বদা
সত্য কথা বললে ও সত্য বলার চেষ্টায় রত থাকলে, অবশেষে আল্লাহর নিকট সে সত্যবাদী
হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়। আর তোমরা মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকো! কেননা মিথ্যা পাপের দিকে
পথপ্রদর্শন করে। আর পাপ নিশ্চিত জাহান্নামের দিকে পরিচালিত করে। কোন ব্যক্তি
সর্বদা মিথ্যা কথা বললে এবং মিথ্যার উপর অবিচল থাকার চেষ্টা করলে, অবশেষে সে
আল্লাহর নিকট মিথ্যাবাদীরূপে লিপিবদ্ধ হয়। (ই.ফা. ৬৪০১, ই.সে. ৬৪৫২)
৬৫৩৪
حَدَّثَنَا مِنْجَابُ بْنُ الْحَارِثِ
التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ مُسْهِرٍ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ،
إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، كِلاَهُمَا عَنِ
الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِي حَدِيثِ عِيسَى "
وَيَتَحَرَّى الصِّدْقَ وَيَتَحَرَّى الْكَذِبَ " . وَفِي حَدِيثِ ابْنِ
مُسْهِرٍ " حَتَّى يَكْتُبَهُ اللَّهُ " .
মিনজাব ইবনুল হারিস আত্ তামীমী (রহঃ), ইসহাক্ ইবনু
ইব্রাহীম আল হানযালী (রহঃ) উভয়ে আ’মাশ থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে হুবহু হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি ‘ঈসা
(রহঃ)-এর হাদীসে “সত্য বলার চেষ্টা করে এবং মিথ্যা বলার চেষ্টা করে এবং মিথ্যা
বলার চেষ্টা করে” কথাটি উল্লেখ করেননি। আর ইবনু মুসহির (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে
“অবশেষে আল্লাহ তা লিখবেন” কথাটি উল্লেখ আছে। (ই.ফা. ৬৪০২, ই.সে. ৬৪৫৩)
৩০.
অধ্যায়ঃ
রাগের মুহুর্তে যে নিজেকে বশ করে তার মর্যাদা এবং কিসের
সাহায্যে রাগ দূরীভূত হয়
৬৫৩৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، - وَاللَّفْظُ لِقُتَيْبَةَ - قَالاَ حَدَّثَنَا
جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ
سُوَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " مَا تَعُدُّونَ الرَّقُوبَ فِيكُمْ " . قَالَ
قُلْنَا الَّذِي لاَ يُولَدُ لَهُ . قَالَ " لَيْسَ ذَاكَ بِالرَّقُوبِ
وَلَكِنَّهُ الرَّجُلُ الَّذِي لَمْ يُقَدِّمْ مِنْ وَلَدِهِ شَيْئًا " .
قَالَ " فَمَا تَعُدُّونَ الصُّرَعَةَ فِيكُمْ " . قَالَ قُلْنَا
الَّذِي لاَ يَصْرَعُهُ الرِّجَالُ . قَالَ " لَيْسَ بِذَلِكَ
وَلَكِنَّهُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ " .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা তোমাদের মাঝে কাউকে নিঃসন্তান বলে মনে করো? বর্ণনাকারী বলেন,
আমরা বললাম, যার সন্তান জন্মায় না তাকেই নিঃসন্তান মনে করি। তিনি বললেন, সে
ব্যক্তি মূলতঃ নিঃসন্তান নয়। বরং সে লোকই নিঃসন্তান, যে তার কোন সন্তানকে আগে
পাঠায়নি (অর্থাৎ-যার জীবিতাবস্থায় তার সন্তান মৃত্যুবরণ করেনি)। তিনি বললেন, তোমরা
তোমাদের মাঝে কাকে বীর বিক্রম বলে গণ্য করো? আমরা বললাম, যাকে মানুষেরা কুস্তিতে
ঠকাতে পারে না। তিনি বললেন, মূলতঃ সে বীর বিক্রম নয়; বরং (প্রকৃত বীর সে-ই) যে
রাগের মুহূর্তে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।১ (ই.ফা. ৬৪০৩, ই.সে. ৬৪৫৪)
১(আরবী)-এর মৌলিক অর্থ আরব বিশ্বের কাছে “যার সন্তান নেই”। হাদীসের
মর্মার্থ হচ্ছে তোমরা নিশ্চয়ই বিশ্বাস কর কারো মৃত্যুতে বিপদগ্রস্ত, শোকাহত, দুঃখিত
ব্যক্তি নিঃসন্তান নয়। বরং জীবিতাবস্হায় যার কোন সন্তান মারা যায়নি, ফলে সাওয়াবের আশায়
ধৈর্যের পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হয়নি, সেই প্রকৃতপক্ষে নিঃসন্তান। নিশ্চয়ই ধৈর্যের ও মুসীবাতের
সাওয়াব লিখা হয়।
৬৫৩৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ، بْنُ إِبْرَاهِيمَ أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، كِلاَهُمَا عَنِ
الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَ مَعْنَاهُ .
আ‘মাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আ‘মাশ (রাঃ) হতে এ সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন। (ই.ফা. ৬৪০৪, ই.সে. ৬৪৫৫)
৬৫৩৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَعَبْدُ
الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، قَالاَ كِلاَهُمَا قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرَعَةِ
إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: সে লোক প্রকৃত বীর বিক্রম নয়, যে কুস্তিতে জয়ী হয় বরং প্রকৃত বীর
বিক্রম সে-ই; যে রাগের মুহূর্তে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। (ই.ফা.৬৪০৫,
ই.সে.৬৪৫৬)(আরবী)
৬৫৩৮
حَدَّثَنَا حَاجِبُ بْنُ الْوَلِيدِ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، عَنِ الزُّبَيْدِيِّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ،
أَخْبَرَنِي حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لَيْسَ الشَّدِيدُ
بِالصُّرَعَةِ " . قَالُوا فَالشَّدِيدُ أَيُّمَ هُوَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ قَالَ " الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, সে লোক প্রকৃত বীর বিক্রম নয়, যে কুস্তিতে সফল হয়।
লোকেরা জানতে চাইল, হে আল্লাহর রসূল! তাহলে প্রকৃত বীর কে? তিনি বললেন, প্রকৃত
সাহসী বীর সে-ই, যে রাগের মুহূর্তে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে। (ই.ফা.৬৪০৬, ই.সে.৬৪৫৬
[ক])
৬৫৩৯
وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، جَمِيعًا عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ،
ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ بَهْرَامَ،
أَخْبَرَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، كِلاَهُمَا عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সানাদে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা্ (রাঃ)-এর সানাদে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হুবহু হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.৬৪০৭, ই.সে.৬৪৫৭)
৬৫৪০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى،
وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا وَقَالَ ابْنُ
الْعَلاَءِ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ
ثَابِتٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ صُرَدٍ، قَالَ اسْتَبَّ رَجُلاَنِ عِنْدَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ أَحَدُهُمَا تَحْمَرُّ عَيْنَاهُ
وَتَنْتَفِخُ أَوْدَاجُهُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِنِّي لأَعْرِفُ كَلِمَةً لَوْ قَالَهَا لَذَهَبَ عَنْهُ الَّذِي يَجِدُ أَعُوذُ
بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ " . فَقَالَ الرَّجُلُ وَهَلْ
تَرَى بِي مِنْ جُنُونٍ قَالَ ابْنُ الْعَلاَءِ فَقَالَ وَهَلْ تَرَى . وَلَمْ
يَذْكُرِ الرَّجُلَ
সুলাইমান ইবনু সুরাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)–এর নিকট এসে দু’ব্যক্তি কথা কাটাকাটিতে প্রবৃত্ত হলো এবং তাদের একজনের
দু’ চোখ (রাগে) লাল হয়ে গেল এবং তার রগরেশা খাড়া হয়ে গেল। রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি এমন একটা কালিমাহ্ জানি, যা যে কেউ
পাঠ করলে তার রাগ দূর হয়ে যায়। আর তা হচ্ছে (আরবী) (আমি বিতাড়িত শাইতানের থেকে
আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই)। (এ কথা শুনে) সে ব্যক্তি বলল, আপনি কি আমাকে পাগল মনে
করেছেন?
ইবনুল ‘আলা (রহঃ) তার বর্ণনায় বলেন, তারপর তিনি বললেন, তুমি কি মনে করেছ? (আরবী)
শব্দটি তিনি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা.৬৪০৮, ই.সে.৬৪৫৮) (আরবী)
৬৫৪১
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ
الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، سَمِعْتُ الأَعْمَشَ، يَقُولُ
سَمِعْتُ عَدِيَّ بْنَ ثَابِتٍ، يَقُولُ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ صُرَدٍ، قَالَ
اسْتَبَّ رَجُلاَنِ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ أَحَدُهُمَا
يَغْضَبُ وَيَحْمَرُّ وَجْهُهُ فَنَظَرَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ " إِنِّي لأَعْلَمُ كَلِمَةً لَوْ قَالَهَا لَذَهَبَ ذَا عَنْهُ
أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ " . فَقَامَ إِلَى
الرَّجُلِ رَجُلٌ مِمَّنْ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَتَدْرِي
مَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آنِفًا قَالَ " إِنِّي
لأَعْلَمُ كَلِمَةً لَوْ قَالَهَا لَذَهَبَ ذَا عَنْهُ أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ
الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ " . فَقَالَ لَهُ الرَّجُلُ أَمَجْنُونًا
تَرَانِي
সুলাইমান ইবনু সুরাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)–এর সামনে দু‘ব্যক্তি কথা কাটাকাটি করতে উদ্যত হলো। তাদের একজন কঠিন
রাগান্বিত হলো এবং তার মুখমন্ডল রাগে লাল হয়ে গেল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তার প্রতি তাকিয়ে বললেন, আমি এমন একটা কালিমাহ্ জানি, সে তা পাঠ করে
তার থেকে এ রাগ চলে যাবে। (আর তা হলো) আ‘ঊযু বিল্লাহি মিনাশ্ শাইত্ব-নির রজীম-…
“আমি বিতাড়িত শাইতানের থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই”। সে সময় যারা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণী শুনেছেন, তাদের মধ্য হতে একজন সে
লোকটির নিকট গিয়ে বললেন, তুমি কি জান, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) একটু আগে কি বলেছেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
অবশ্যই আমি এমন একটি কালিমাহ্ জানি, তা যদি সে পাঠ করত তাহলে তার হতে তা (রাগ) চলে
যেত। (আর তা হলো) এ- (আরবী) তারপর সে ব্যক্তি তাকে বলল, তুমি কি আমাকে পাগল মনে
করেছ? (ই.ফা.৬৪০৯, ই.সে.৬৪৫৯)(আরবী)
৬৫৪২
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ
.
আ‘মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.৬৪১০,
ই.সে.৬৪৬০)
৩১.
অধ্যায়:
সৃষ্টিগত ভাবে মানুষ নিজেকে আয়ত্তে রাখতে ক্ষমতা রাখে না
৬৫৪৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ
ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
لَمَّا صَوَّرَ اللَّهُ آدَمَ فِي الْجَنَّةِ تَرَكَهُ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ
يَتْرُكَهُ فَجَعَلَ إِبْلِيسُ يُطِيفُ بِهِ يَنْظُرُ مَا هُوَ فَلَمَّا رَآهُ
أَجْوَفَ عَرَفَ أَنَّهُ خُلِقَ خَلْقًا لاَ يَتَمَالَكُ " .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে যখন আদাম (‘আঃ)-এর আকৃতি সৃষ্টি করেন তখন
আল্লাহ তা‘আলা তাকে নিজের ইচ্ছামত ফেলে রাখলেন। আর ইব্লীস তার চতুর্দিকে প্রদক্ষিণ
করতো এবং দেখতে থাকতো যে, পদার্থটি কি? সে যখন দেখতে পেল তা খালী পাত্র তখন সে
বুঝল যে, তাকে এমন এক স্বভাব দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে, যে নিজকে আয়ত্তে রাখতে পারে
না। (ই.ফা.৬৪১১, ই.সে.৬৪৬১)
৬৫৪৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ نَافِعٍ،
حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ .
হাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাম্মাদ (রহঃ) এ সূত্রে হুবহু বর্ণনা করেছেন।
(ই.ফা.৬৪১২, ই.সে.৬৪৬২)
৩২.
অধ্যায়:
চেহারায় প্রহার করা নিষিদ্বকরণ
৬৫৪৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ
بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ، - يَعْنِي الْحِزَامِيَّ - عَنِ أَبِي،
الزِّنَادِ عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " إِذَا قَاتَلَ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ فَلْيَجْتَنِبِ
الْوَجْهَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: যখন তোমাদের মাঝে কোন ভাই তার ভাই-এর সাথে ঝগড়া-বিবাদ করে তখন সে
যেন তার মুখের উপর আঘাত করা থেকে বিরত থাকে। (ই.ফা.৬৪১৩, ই.সে.৬৪৬৩)
৬৫৪৬
حَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ
بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ " إِذَا ضَرَبَ أَحَدُكُمْ
" .
আবূ যিনাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ যিনাদ (রহঃ) থেকে এ সূত্রে হুবহু হাদীস বর্ণনা
করেছেন। আর তিনি বলেছেন, তোমাদের কোন ভাই যখন অন্য ভাইকে মারে….। (ই.ফা.৬৪১৪,
ই.সে.৬৪৬৪)
৬৫৪৭
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ،
حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا قَاتَلَ أَحَدُكُمْ
أَخَاهُ فَلْيَتَّقِ الْوَجْهَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
তোমাদের কোন ভাই যখন কোন ভাইয়ের সাথে ঝগড়া করে তখন সে যেন মুখমন্ডলকে পরহেয করে
(মুখমন্ডলে প্রহার না করে)। (ই.ফা.৬৪১৫, ই.সে.৬৪৬৫)
৬৫৪৮
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ
الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، سَمِعَ
أَبَا، أَيُّوبَ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " إِذَا قَاتَلَ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ فَلاَ يَلْطِمَنَّ
الْوَجْهَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: তোমাদের মাঝে কোন ব্যক্তি যদি তার ভাইয়ের সাথে মারামারি করে তখন
সে যেন তার চেহারায় চপেটাঘাত না করে। (ই.ফা.৬৪১৬, ই.সে.৬৪৬৬)
৬৫৪৯
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ
الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا الْمُثَنَّى، ح وَحَدَّثَنِي
مُحَمَّدُ بْنُ، حَاتِمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنِ
الْمُثَنَّى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَفِي حَدِيثِ ابْنِ
حَاتِمٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا قَاتَلَ
أَحَدُكُمْ أَخَاهُ فَلْيَجْتَنِبِ الْوَجْهَ فَإِنَّ اللَّهَ خَلَقَ آدَمَ عَلَى
صُورَتِهِ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: আর ইবনু হাহিম-এর বর্ণনায় আছে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে বর্ণিত, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ তার অন্য ভাইকে আঘাত করে সে যেন তার
ভাইয়ের মুখমন্ডলে আঘাত করা হতে বিরত থাকে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা আদাম (‘আঃ)-কে তার
নিজ রূপে সৃষ্টি করেছেন। (ই.ফা.৬৪১৭, ই.সে.৬৪৬৭)
৬৫৫০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
حَدَّثَنِي عَبْدُ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ
يَحْيَى، بْنِ مَالِكٍ الْمَرَاغِيِّ - وَهُوَ أَبُو أَيُّوبَ - عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا
قَاتَلَ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ فَلْيَجْتَنِبِ الْوَجْهَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন: তোমাদের মধ্যে কোন ভাই যদি তার অন্য ভাইকে আঘাত করে, সে যেন তার
মুখমন্ডলে আঘাত করা হতে বিরত থাকে। (ই.ফা.৬৪১৮, ই.সে.৬৪৬৮)
৩৩.
অধ্যায়:
নির্দোষীকে শাস্তিদাতার প্রতি কঠিন ধমকি
৬৫৫১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
هِشَامِ بْنِ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ مَرَّ بِالشَّامِ عَلَى أُنَاسٍ وَقَدْ
أُقِيمُوا فِي الشَّمْسِ وَصُبَّ عَلَى رُءُوسِهِمُ الزَّيْتُ فَقَالَ مَا هَذَا
قِيلَ يُعَذَّبُونَ فِي الْخَرَاجِ . فَقَالَ أَمَا إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ اللَّهَ يُعَذِّبُ الَّذِينَ
يُعَذِّبُونَ فِي الدُّنْيَا " .
হিশাম ইবনু হাকীম ইবনু হিযাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, তিনি একবার সিরিয়ায় কয়েকজন মানুষের
কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যাদেরকে উত্তপ্ত সূর্যতে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল এবং তাদের
মাথার উপর গরম তেল ঢালা হচ্ছিল। তখন তিনি বললেন, এটা কী? তাকে বলা হলো যে, তাদেরকে
খাযনার জন্য সাজা দেয়া হচ্ছে। তখন তিনি বললেন, হুশিয়ার! আমি রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন: নিশ্চয়ই
আল্লাহ তা‘আলা সেসব লোকদের সাজা দিবেন, যারা এ জগতে মানুষকে (অন্যায়) সাজা দেয়।
(ই.ফা.৬৪১৯, ই.সে.৬৪৬৯)
৬৫৫২
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ مَرَّ هِشَامُ بْنُ حَكِيمِ
بْنِ حِزَامٍ عَلَى أُنَاسٍ مِنَ الأَنْبَاطِ بِالشَّامِ قَدْ أُقِيمُوا فِي
الشَّمْسِ فَقَالَ مَا شَأْنُهُمْ قَالُوا حُبِسُوا فِي الْجِزْيَةِ . فَقَالَ
هِشَامٌ أَشْهَدُ لَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" إِنَّ اللَّهَ يُعَذِّبُ الَّذِينَ يُعَذِّبُونَ النَّاسَ فِي الدُّنْيَا
" .
হিশাম (রাঃ)-এর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার হিশাম ইবনু হাকিম ইবনু হিযাম
সিরিয়ার কৃষকদের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এদের কঠিন রৌদ্রে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল।
তিনি বললেন, এদের কী হয়েছে? তারা বলল, জিয্য়ার জন্যে এদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অতঃপর হিশাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাদের সাজা দিবেন
যারা পৃথিবীতে (অন্যায়ভাবে) মানুষকে সাজা দেয়। (ই.ফা.৬৪২০, ই.সে.৬৪৭০)
৬৫৫৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
وَكِيعٌ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، كُلُّهُمْ عَنْ هِشَامٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ فِي
حَدِيثِ جَرِيرٍ قَالَ وَأَمِيرُهُمْ يَوْمَئِذٍ عُمَيْرُ بْنُ سَعْدٍ عَلَى
فِلَسْطِينَ فَدَخَلَ عَلَيْهِ فَحَدَّثَهُ فَأَمَرَ بِهِمْ فَخُلُّوا .
হিশাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হিশাম (রাঃ) থেকে এ সূত্রে হুবহু বর্ণনা করেছেন।
তবে তিনি জারীর বর্ণিত হাদীসে এটুকু বর্ধিত উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বলেছেন, সে
যুগে ফিলিস্তীনে তাদের শাসক (গভর্নর) ছিলেন ‘উমায়র ইবনু সা‘দ। তিনি তাঁর নিকট যান
এবং তার সঙ্গে কথা-বার্তা বলেন। তিনি তাদের ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিলে তারপর তাদেরকে
ছেড়ে দেয়া হয়। (ই.ফা.৬৪২১, ই.সে.৬৪৭১)
৬৫৫৪
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا
ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، بْنِ
الزُّبَيْرِ أَنَّ هِشَامَ بْنَ حَكِيمٍ، وَجَدَ رَجُلاً وَهُوَ عَلَى حِمْصَ
يُشَمِّسُ نَاسًا مِنَ النَّبَطِ فِي أَدَاءِ الْجِزْيَةِ فَقَالَ مَا هَذَا
إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ
اللَّهَ يُعَذِّبُ الَّذِينَ يُعَذِّبُونَ النَّاسَ فِي الدُّنْيَا " .
হিশাম ইবনু হাকীম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি হিমস্ এলাকার একব্যক্তি (আমীর)-কে দেখতে পান
যে, তিনি জিয্য়াহ্ আদায়ের জন্য কৃষকদের সূর্যের তাপে সাজা দিচ্ছেন। তখন তিনি
বললেন, এ কী ব্যাপার? আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে
শুনেছি, তিনি বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সেসব মানুষকে সাজা দিবেন, যারা ইহজগতে
মানুষকে (অন্যায়ভাবে) সাজা দেয়। (ই.ফা.৬৪২২, ই.সে.৬৪৭২)
৩৪.
অধ্যায়:
যে ব্যক্তি মাসজিদে, মার্কেটে বা অন্য কোন লোক সভায় অস্ত্র
সহ প্রবেশ করে, তার প্রতি তীরের ধারালো অংশ আটকানোর নির্দেশ
৬৫৫৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ،
أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا - سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرٍو، سَمِعَ
جَابِرًا، يَقُولُ مَرَّ رَجُلٌ فِي الْمَسْجِدِ بِسِهَامٍ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَمْسِكْ بِنِصَالِهَا " .
‘আম্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি জাবির (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন যে,
এক ব্যক্তি তীরসহ মাসজিদে আগমন করল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাকে বললেন, এর ফলার দিকটা আকঁড়ে ধরে রেখো। (ই.ফা.৬৪২৪, ই.সে.৬৪৭৩)
৬৫৫৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَأَبُو
الرَّبِيعِ، قَالَ أَبُو الرَّبِيعِ حَدَّثَنَا وَقَالَ، يَحْيَى - وَاللَّفْظُ
لَهُ - أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ
جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَجُلاً، مَرَّ بِأَسْهُمٍ فِي الْمَسْجِدِ
قَدْ أَبْدَى نُصُولَهَا فَأُمِرَ أَنْ يَأْخُذَ بِنُصُولِهَا كَىْ لاَ يَخْدِشَ
مُسْلِمًا .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি খোলা তীরসহ মাসজিদে প্রবেশ
করেছিল। সে তীরগুলোর ফলার দিক বের করে রেখেছিল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ফলার দিক আটকে রাখার নির্দেশ দিলেন, যাতে কোন মুসলিমের
গায়ে আঘাত না লাগে। (ই.ফা.৬৪২৩, ই.সে.৬৪৭৪)
৬৫৫৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ أَمَرَ رَجُلاً كَانَ يَتَصَدَّقُ بِالنَّبْلِ فِي الْمَسْجِدِ أَنْ لاَ
يَمُرَّ بِهَا إِلاَّ وَهُوَ آخِذٌ بِنُصُولِهَا . وَقَالَ ابْنُ رُمْحٍ كَانَ
يَصَّدَّقُ بِالنَّبْلِ .
জাবির (রাঃ) এর সানাদে রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি মাসজিদে তীর সদাকাহ্
করতেছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে এর ফলার দিকটা ধরে
রাখার নির্দেশ দেন। ইবনে রুমহ্ (রহঃ) বলেন, সে তীর (বর্শা) দান করতেছিল।
(ই.ফা.৬৪২৫, ই.সে.৬৪৭৫)
৬৫৫৮
حَدَّثَنَا هَدَّابُ بْنُ خَالِدٍ،
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ
أَبِي، مُوسَى أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا
مَرَّ أَحَدُكُمْ فِي مَجْلِسٍ أَوْ سُوقٍ وَبِيَدِهِ نَبْلٌ فَلْيَأْخُذْ
بِنِصَالِهَا ثُمَّ لْيَأْخُذْ بِنِصَالِهَا ثُمَّ لْيَأْخُذْ بِنِصَالِهَا "
. قَالَ فَقَالَ أَبُو مُوسَى وَاللَّهِ مَا مُتْنَا حَتَّى سَدَّدْنَاهَا
بَعْضُنَا فِي وُجُوهِ بَعْضٍ .
আবু মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কোন ভাই যদি তার হাতে তীর নিয়ে কোন সভায় কিংবা বাজারে গমন
করে তাহলে সে যেন এর ফলাটা ধরে (আটকে) রাখে। বর্ননা কারী বলেন, এরপর আবু মুসা
(রাঃ) বলেন, 'আল্লাহর শপথ! আমরা একে অন্যের উপর বর্শা হামলা না করা পর্যন্ত
মৃত্যুকে আলিঙ্গন করব না।' (ই.ফা. ৬৪২৬, ই.সে. ৬৪৭৬)
৬৫৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَرَّادٍ
الأَشْعَرِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، - وَاللَّفْظُ لِعَبْدِ اللَّهِ -
قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ
أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا مَرَّ
أَحَدُكُمْ فِي مَسْجِدِنَا أَوْ فِي سُوقِنَا وَمَعَهُ نَبْلٌ فَلْيُمْسِكْ عَلَى
نِصَالِهَا بِكَفِّهِ أَنْ يُصِيبَ أَحَدًا مِنَ الْمُسْلِمِينَ مِنْهَا بِشَىْءٍ
" . أَوْ قَالَ " لِيَقْبِضْ عَلَى نِصَالِهَا " .
আবু মুসা (রহঃ) এর সানাদে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমাদের কোন ভাই যখন হাতে বর্শা নিয়ে
আমাদের মাসজিদে গমন করে কিংবা আমাদের বাজারে গমন করে সে যেন এর ফলাটা নিজের হাতের
মুঠ দিয়ে ধরে রাখে। নতুবা তা দ্বারা কোন মুসলিমের (শরীরে) খোঁচা লাগতে পারে। অথবা
তিনি বলেছেন, সে যেন তার বর্শার ফলাটি আটকে রাখে। (ই.ফা. ৬৪২৭, ই.সে. ৬৪৭৭)
৩৫.
অধ্যায়ঃ
কোন মুসলিমের প্রতি অস্ত্র দিয়ে ইঙ্গিত করা নিষিদ্ধকরণ
৬৫৬০
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَابْنُ
أَبِي عُمَرَ، قَالَ عَمْرٌو حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ
أَيُّوبَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ أَبُو
الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَشَارَ إِلَى أَخِيهِ بِحَدِيدَةٍ
فَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ تَلْعَنُهُ حَتَّى وَإِنْ كَانَ أَخَاهُ لأَبِيهِ
وَأُمِّهِ " .
ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু হুরায়রা্ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি,
তিনি বলেন, আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার
ভাইয়ের প্রতি (লৌহ নির্মিত) মরণাস্ত্র দ্বারা ইঙ্গিত করে সে তা পরিত্যাগ না করা
পর্যন্ত ফেরেশ্তাগণ তাকে অভিসম্পাত করতে থাকে যদিও সে তার আপন ভাই হয়। (ই.ফা.
৬৪২৮, ই.সে. ৬৪৭৮)
৬৫৬১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) এর সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরুপ একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৪২৯,
ই.সে.৬৪৭৯)
৬৫৬২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ
مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " لاَ يُشِيرُ أَحَدُكُمْ إِلَى أَخِيهِ بِالسِّلاَحِ فَإِنَّهُ
لاَ يَدْرِي أَحَدُكُمْ لَعَلَّ الشَّيْطَانَ يَنْزِعُ فِي يَدِهِ فَيَقَعُ فِي
حُفْرَةٍ مِنَ النَّارِ " .
হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আমাদের নিকট অনেকগুলো হাদীস আলোচনা করেন। তন্মধ্যে একটি
হাদীস হচ্ছে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের মধ্যে
কোন ভাই যেন তরবারি দিয়ে তার ভাই-এর প্রতি ইঙ্গিত না করে। কেননা তোমরা জান না,
শাইতান তার মধ্যে হাত রেখে টানতে থাকে তারপর সে জাহান্নামের গর্তে পরে যায়। (ই.ফা.
৬৪৩০, ই.সে.৬৪৮০)
৩৬.
অধ্যায়ঃ
চলাচলের পথ হতে কষ্টদায়ক জিনিস দূর করার ফাযীলাত
৬৫৬৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ
قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ سُمَىٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ عَنْ أَبِي، صَالِحٍ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمْشِي بِطَرِيقٍ وَجَدَ غُصْنَ شَوْكٍ عَلَى الطَّرِيقِ
فَأَخَّرَهُ فَشَكَرَ اللَّهُ لَهُ فَغَفَرَ لَهُ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ একদা এক ব্যক্তি চলাচলের পথ দিয়ে হেটে যাচ্ছিল। তখন সে রাস্তার
উপর একটি কাঁটাযুক্ত ডাল দেখতে পেলো তারপর তা সরিয়ে দিল। আল্লাহ তার এ ভাল কর্মটি
প্রছন্দ করেছেন এবং তাকে (তার পাপ) মাফ করে দিলেন। (ই.ফা. ৬৪৩১, ই.সে. ৬৪৮১)
৬৫৬৪
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَرَّ رَجُلٌ بِغُصْنِ
شَجَرَةٍ عَلَى ظَهْرِ طَرِيقٍ فَقَالَ وَاللَّهِ لأُنَحِّيَنَّ هَذَا عَنِ
الْمُسْلِمِينَ لاَ يُؤْذِيهِمْ . فَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি কাঁটাযুক্ত ডাল দেখে
বলে, আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই মুসলিমদের চলাচলের রাস্তা হতে এটা অপসারণ করবো, যাতে
তাদেরকে কোন কষ্ট না দেয়। ফলে তাকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করানো হয়। (ই.ফা. ৬৪৩২,
ই.সে. ৬৪৮২)
৬৫৬৫
حَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " لَقَدْ رَأَيْتُ رَجُلاً يَتَقَلَّبُ فِي الْجَنَّةِ فِي شَجَرَةٍ
قَطَعَهَا مِنْ ظَهْرِ الطَّرِيقِ كَانَتْ تُؤْذِي النَّاسَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) এর সানাদে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক লোককে একটি গাছের কারনে জান্নাতে
আনন্দ ফূর্তি করতে দেখেছি। এ গাছটি সে রাস্তার উপর হতে দূর করেছিল, যেটি মানুষকে
কষ্ট দিত। (ই.ফা. ৬৪৩৩, ই.সে. ৬৪৮৩)
৬৫৬৬
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ،
حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
إِنَّ شَجَرَةً كَانَتْ تُؤْذِي الْمُسْلِمِينَ فَجَاءَ رَجُلٌ فَقَطَعَهَا
فَدَخَلَ الْجَنَّةَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ একটি গাছ মুসলিমদের (পথ গমন করার সময়) কষ্ট দিত। এক ব্যক্তি এসে সে গাছটি
কেটে ফেললো, এরপর সে জান্নাতে প্রবেশ করলো। (ই.ফা. ৬৪৩৪, ই.সে. ৬৪৮৪)
৬৫৬৭
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ أَبَانَ بْنِ صَمْعَةَ، حَدَّثَنِي أَبُو
الْوَازِعِ حَدَّثَنِي أَبُو بَرْزَةَ، قَالَ قُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ
عَلِّمْنِي شَيْئًا أَنْتَفِعُ بِهِ قَالَ " اعْزِلِ الأَذَى عَنْ طَرِيقِ
الْمُسْلِمِينَ " .
আবূ বারযাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)! আপনি আমাকে এমন একটি বিষয় অবহিত করুন, যার সাহায্যে উপকৃত হতে পারি।
তিনি বললেন, মুসলিমদের চলার পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দিবে। (ই.ফা. ৬৪৩৫,
ই.সে. ৬৪৮৫)
৬৫৬৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ الْحَبْحَابِ، عَنْ أَبِي
الْوَازِعِ، الرَّاسِبِيِّ عَنْ أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ، أَنَّ أَبَا
بَرْزَةَ، قَالَ قُلْتُ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ
إِنِّي لاَ أَدْرِي لَعَسَى أَنْ تَمْضِيَ وَأَبْقَى بَعْدَكَ فَزَوِّدْنِي شَيْئًا
يَنْفَعُنِي اللَّهُ بِهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" افْعَلْ كَذَا افْعَلْ كَذَا - أَبُو بَكْرٍ نَسِيَهُ - وَأَمِرَّ الأَذَى
عَنِ الطَّرِيقِ " .
আবূ বারযাহ্ আল আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর সমীপে আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)! আমি জানি না, হয়ত একদিন আপনি দুনিয়া ত্যাগ করবেন (ইন্তিকাল করবেন) আর
আপনার পর এ অবস্থায় হয়তো আমি বেঁচে থাকব। সুতরাং আমাকে এমন কিছু বানী শিখিয়ে দিন
যা দ্বারা আল্লাহ আমাকে উপকৃত করবেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, এটি করবে, এটি করবে। বর্ণনাকারী আবূ বাকর (রহঃ) তা ভুলে গেছেন।
তিনি নির্দেশ করেছেন যে, চলাচলের পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করবে। (ই.ফা.
৬৪৩৬, ই.সে. ৬৪৮৬)
৩৭.
অধ্যায়ঃ
বিড়াল ও যে প্রাণী (মানুষকে) কষ্ট দেয় না, তাদেরকে সাজা
দেয়া নিষিদ্ধ
৬৫৬৯
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ
بْنِ أَسْمَاءَ بْنِ عُبَيْدٍ الضُّبَعِيُّ، حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ، - يَعْنِي
ابْنَ أَسْمَاءَ - عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِي هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا
حَتَّى مَاتَتْ فَدَخَلَتْ فِيهَا النَّارَ لاَ هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَسَقَتْهَا
إِذْ هِيَ حَبَسَتْهَا وَلاَ هِيَ تَرَكَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ
" .
‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ একটি বিড়ালকে সাজা দেওয়ার অপরাধে একটি মহিলাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এ
বিড়ালটি সে আটকে রেখেছিল। অবশেষে সেটি মারা গেল। এরপর সে কারণে মহিলাটি জাহান্নামে
গমন করলো। সে ঐ বিড়ালটিকে আটকাবস্থায় খাবারও দেয়নি, পানিও পান করায়নি, ভূ-পৃষ্ঠের
কীট-পতঙ্গ খেয়ে সেটাকে জীবন ধারণ করার সুযোগও দেয়নি। (ই.ফা. ৬৪৩৭, ই.সে. ৬৪৮৭)
৬৫৭০
حَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ،
وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ يَحْيَى بْنِ خَالِدٍ، جَمِيعًا عَنْ مَعْنِ
بْنِ عِيسَى، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمَعْنَى حَدِيثِ جُوَيْرِيَةَ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হারূন ইবনু ‘আব্দুল্লাহ ও ‘আব্দুল্লাহ ইবনু জা’ফার
ইবনু ইয়াহ্ইয়া ইবনু খালিদ (রহঃ) ..... ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর সানাদে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে জুওয়াইরিয়াহ্ বর্ণিত হাদীসের অর্থের
হুবুহু হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৪৩৮, ই.সে. ৬৪৮৮)
৬৫৭১
وَحَدَّثَنِيهِ نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ
الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ،
عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِي هِرَّةٍ أَوْثَقَتْهَا فَلَمْ تُطْعِمْهَا
وَلَمْ تَسْقِهَا وَلَمْ تَدَعْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ " .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ একজন মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য শাস্তি দেয়া হয়। সে (মহিলা)
এটিকে বেঁধে রাখে, খাবারও দেয়নি এবং পানিও পান করায়নি; এমনকি ভূ-পৃষ্ঠের কীট-পতঙ্গ
খেতে (বেঁচে থাকার জন্যে) তাকে বন্ধন ছেড়ে দেয়নি। (ই.ফা. ৬৪৩৮, ই.সে. ৬৪৮৯)
৬৫৭২
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ
الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ
سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم بِمِثْلِهِ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাস্র ইবনু ‘আলী আল জাহযামী (রহঃ) ..... আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সানাদে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হুবুহু
হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৪৩৯, ই.সে. ৬৪৯০)
৬৫৭৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ
مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " دَخَلَتِ امْرَأَةٌ النَّارَ مِنْ جَرَّاءِ هِرَّةٍ لَهَا -
أَوْ هِرٍّ - رَبَطَتْهَا فَلاَ هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَلاَ هِيَ أَرْسَلَتْهَا
تُرَمِّمُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ حَتَّى مَاتَتْ هَزْلاً " .
হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আমাদের নিকট অনেকগুলো হাদীস উল্লেখ
করেছেন। তন্মধ্যে একটি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এক
মহিলা একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গমন করে। সে এটিকে মজবুত করে আটকে রাখলো। সে
মহিলা এটিকে খানা দেয়নি, পানীয় দেয়নি এবং তাকে বন্ধন ছেড়ে দেয়নি যে, জমিনের
পোকা-মাকড় খেয়ে বাঁচতে পারে। পরিশেষে বিড়ালটি পানাহারে কাতর হয়ে মারা যায়। (ই.ফা.
৬৪৪০, ই.সে. ৬৪৯১)
৩৮.
অধ্যায়ঃ
অহংকার হারামকরণ
৬৫৭৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُوسُفَ
الأَزْدِيُّ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا أَبِي،
حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي مُسْلِمٍ
الأَغَرِّ، أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَأَبِي،
هُرَيْرَةَ قَالاَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْعِزُّ
إِزَارُهُ وَالْكِبْرِيَاءُ رِدَاؤُهُ فَمَنْ يُنَازِعُنِي عَذَّبْتُهُ "
.
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী ও আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা উভয়ে বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইয্যত ও সম্মান আল্লাহর ভূষণ এবং গর্ব ও অহংকার তাঁর চাদর।
যে লোক এ ক্ষেত্রে আমার সাথে টানা-হেঁচড়া করবে আমি তাকে অবশ্যই সাজা দিব। (ই.ফা.
৬৪৪১, ই.সে. ৬৪৯২)
৩৯.
অধ্যায়ঃ
মানুষকে আল্লাহর দয়া হতে নৈরাশ করার নিষিদ্ধকরণ
৬৫৭৫
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ
مُعْتَمِرِ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِيهِ، حَدَّثَنَا أَبُو عِمْرَانَ
الْجَوْنِيُّ، عَنْ جُنْدَبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَدَّثَ
" أَنَّ رَجُلاً قَالَ وَاللَّهِ لاَ يَغْفِرُ اللَّهُ لِفُلاَنٍ وَإِنَّ
اللَّهَ تَعَالَى قَالَ مَنْ ذَا الَّذِي يَتَأَلَّى عَلَىَّ أَنْ لاَ أَغْفِرَ
لِفُلاَنٍ فَإِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِفُلاَنٍ وَأَحْبَطْتُ عَمَلَكَ " .
أَوْ كَمَا قَالَ .
জুনদাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ এক লোক বলল, আল্লাহর শপথ! আল্লাহ অমুক লোককে মাফ করবেন না। আর আল্লাহ
তা‘আলা বলেন, সে লোক কে? যে শপথ খেয়ে বলে যে, আমি অমুককে মাফ করব না? আমি তাকে মাফ
করে দিলাম এবং তোমার ‘আমাল (শপথ)-কে নষ্ট করে দিলাম, কিংবা সে যেমন বলেছেন। (ই.ফা.
৬৪৪২, ই.সে.৬৪৯৩)
৪০.
অধ্যায়ঃ
অসহায় ও অজ্ঞাত লোকের মর্যাদা
৬৫৭৬
حَدَّثَنِي سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنِي حَفْصُ بْنُ مَيْسَرَةَ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ،
عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " رُبَّ أَشْعَثَ مَدْفُوعٍ بِالأَبْوَابِ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى
اللَّهِ لأَبَرَّهُ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ এলোমেলো চুল বিশিষ্ট বহু লোক রয়েছে যারা আল্লাহর উপর ভরসা করে
কোন ব্যাপারে শপথ করলে আল্লাহ তা‘আলা তা সত্যে পরিণত করে দেন। (ই.ফা. ৬৪৪৩, ই.সে.
৬৪৯৪)
৪১.
অধ্যায়ঃ
‘মানুষ বরবাদ হয়ে গেছে’ উক্তি নিষিদ্ধকরণ
৬৫৭৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ
بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي،
صَالِحٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى
مَالِكٍ عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا قَالَ الرَّجُلُ
هَلَكَ النَّاسُ . فَهُوَ أَهْلَكُهُمْ " . قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ لاَ
أَدْرِي أَهْلَكَهُمْ بِالنَّصْبِ أَوْ أَهْلَكُهُمْ بِالرَّفْعِ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি কোন লোক বলে ‘মানুষ বরবাদ হয়ে গেছে’ তাহলে সে সব লোকের চেয়ে
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
আবূ ইসহাক (রাঃ) বলেন, আমি জানি না যে, তিনি ‘সে তাদের বরবাদ করেছে"- বলেছেন,
‘না তাদের মাঝে সবচেয়ে বেশী ধ্বংসপ্রাপ্ত বলেছেন’? (ই.ফা, ৬৪৪৪, ই.সে. ৬৪৯৫)
৬৫৭৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ رَوْحِ بْنِ الْقَاسِمِ، ح وَحَدَّثَنِي
أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ حَكِيمٍ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، عَنْ
سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ، جَمِيعًا عَنْ سُهَيْلٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ
.
সুহায়ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সুহায়ল (রাঃ) হতে এ সূত্রে হুবহু হাদীস বর্ণনা
করেছেন। (ই.ফা, ৬৪৪৫, ই.সে ৬৪৯৬)
৪২.
অধ্যায়ঃ
প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ ও তাকে সদোপদেশ দেয়া
৬৫৭৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ
مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، عَنِ
اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، وَيَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، كُلُّهُمْ عَنْ يَحْيَى بْنِ
سَعِيدٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، - وَاللَّفْظُ لَهُ -
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، - يَعْنِي الثَّقَفِيَّ - سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ
سَعِيدٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرٍ، - وَهُوَ ابْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ
حَزْمٍ - أَنَّ عَمْرَةَ، حَدَّثَتْهُ أَنَّهَا، سَمِعَتْ عَائِشَةَ، تَقُولُ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا زَالَ
جِبْرِيلُ يُوصِينِي بِالْجَارِ حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ لَيُوَرِّثَنَّهُ
" .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, জিব্ররীল (আঃ) আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে এতো উপদেশ
প্রদান করেন যে, আমি মনে করছিলাম তিনি সম্ভবত তাকে ওয়ারিস বানিয়ে দিবেন। (ই.ফা,
৬৪৪৬, ই.সে ৬৪৯৭)
৬৫৮০
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، حَدَّثَنِي هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর সানদে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে হুবহু বর্ণনা করেছেন। (ই-ফা, ৬৪৪৭, ইসে.৬৪৯৮)
৬৫৮১
حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ
الْقَوَارِيرِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ مُحَمَّدٍ،
عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " مَا زَالَ جِبْرِيلُ يُوصِينِي بِالْجَارِ حَتَّى
ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ " .
ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ জিবরীল (আঃ) আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে এমনভাবে উপদেশ প্রদান করতে
থাকেন যাতে আমি ভেবেছিলাম যে, তিনি হয়তো তাকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবেন। (ইফা,
৬৪৪৮, ই.সে. ৬৪৯৯)
৬৫৮২
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ الْجَحْدَرِيُّ،
وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، - وَاللَّفْظُ لإِسْحَاقَ - قَالَ أَبُو كَامِلٍ
حَدَّثَنَا وَقَالَ، إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ
الصَّمَدِ الْعَمِّيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عِمْرَانَ، الْجَوْنِيُّ عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ الصَّامِتِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " يَا أَبَا ذَرٍّ إِذَا طَبَخْتَ مَرَقَةً فَأَكْثِرْ مَاءَهَا
وَتَعَاهَدْ جِيرَانَكَ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ যারা, যখন তুমি তরকারি রান্না করবে তখন তাতে পানি (শুরুয়া
বা ঝোল) বেশি দিও এবং তোমার প্রতিবেশীকে কিছু প্রদান করো। (ই.ফা, ৬৪৪৯, ই.সে.
৬৫০০)
৬৫৮৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، ح وَحَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي
عِمْرَانَ الْجَوْنِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الصَّامِتِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ،
قَالَ إِنَّ خَلِيلِي صلى الله عليه وسلم أَوْصَانِي " إِذَا طَبَخْتَ
مَرَقًا فَأَكْثِرْ مَاءَهُ ثُمَّ انْظُرْ أَهْلَ بَيْتٍ مِنْ جِيرَانِكَ
فَأَصِبْهُمْ مِنْهَا بِمَعْرُوفٍ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বন্ধু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জোর নির্দেশ করেছেন, যখন তুমি তরকারি রান্না করবে তখন
তাতে পানি বেশি করে দিবে। তারপর তুমি তোমার প্রতিবেশীর পরিজনের প্রতি খেয়াল
রাখবে। অতঃপর তা হতে তাদেরকে কিছু সৌজন্য স্বরূপ পৌছিয়ে দিবে। (ই.ফা. ৬৪৫০, ই.সে
৬৫০১)
৪৩.
অধ্যায়:
সাক্ষাতের সময় হাস্যোজ্জ্বল থাকা মুস্তাহাব
৬৫৮৪
حَدَّثَنِي أَبُو غَسَّانَ الْمِسْمَعِيُّ،
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، - يَعْنِي
الْخَزَّازَ - عَنْ أَبِي عِمْرَانَ الْجَوْنِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الصَّامِتِ،
عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ لِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لاَ
تَحْقِرَنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ شَيْئًا وَلَوْ أَنْ تَلْقَى أَخَاكَ بِوَجْهٍ
طَلْقٍ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাকে বলেছেনঃ ভালো কোন কিছু দান করাকে হীন মনে করে না, এমনকি হোক সেটা
ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ দেয়া। (ই .ফা. ৬৪৫১, ই.সে ৬৫০২)
৪৪.
অধ্যায়:
হারাম নয় এমন বিষয়ে সুপারিশ করা মুস্তাহাব
৬৫৮৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، وَحَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنْ
بُرَيْدِ، بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَاهُ طَالِبُ حَاجَةٍ أَقْبَلَ
عَلَى جُلَسَائِهِ فَقَالَ " اشْفَعُوا فَلْتُؤْجَرُوا وَلْيَقْضِ اللَّهُ
عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِ مَا أَحَبَّ " .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর সমীপে কোন লোক প্রয়োজনের তাকিদ নিয়ে আসলে তিনি তার সাথীদের বলতেন,
তোমরা এর জন্যে সুপারিশ করো, তাহলে তোমাদেরকেও সাওয়াব দেয়া হবে। আর আল্লাহ
তা'আলা তার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মুখ থেকে এমন ফায়সালা
দেবেন যা তিনি পছন্দ করেন। (ই.ফা. ৬৪৫২, ই.সে ৬৫০৩)
৪৫.
অধ্যায়:
ভালো মানুষের সাহচর্য পছন্দ করা এবং খারাপ মানুষের
সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকা
৬৫৮৬
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ
بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم ح
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيُّ، - وَاللَّفْظُ لَهُ -
حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي
مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّمَا مَثَلُ
الْجَلِيسِ الصَّالِحِ وَالْجَلِيسِ السَّوْءِ كَحَامِلِ الْمِسْكِ وَنَافِخِ
الْكِيرِ فَحَامِلُ الْمِسْكِ إِمَّا أَنْ يُحْذِيَكَ وَإِمَّا أَنْ تَبْتَاعَ
مِنْهُ وَإِمَّا أَنْ تَجِدَ مِنْهُ رِيحًا طَيِّبَةً وَنَافِخُ الْكِيرِ إِمَّا
أَنْ يُحْرِقَ ثِيَابَكَ وَإِمَّا أَنْ تَجِدَ رِيحًا خَبِيثَةً " .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
সৎসঙ্গ ও অসৎসঙ্গের উদাহরণ মিশুক বিক্রেতা ও অগ্নিকুণ্ডে ফুৎকারকারীর (কামারের)
ন্যায়। মিশক বিক্রেতা হয়ত তোমাকে কিছু দিবে। (সুগন্ধি নেয়ার জন্যে হাতে কিছুটা
লাগিয়ে দিবে) অথবা তুমি তার কাছ হতে সামান্য ক্রয় করতে পারবে কিংবা তুমি তার
থেকে সুমাণ লাভ করবে। আর অগ্নিচুলায় ফুৎকারকারী হয়ত তোমার কাপড়কে পুড়াবে কিংবা
তুমি তার দুর্গন্ধপ্রাপ্ত হবে। (ই.ফা. ৬৪৫৩, ই.সে. ৬৫০৪)
৪৬.
অধ্যায়:
মেয়ে সন্তানের প্রতি সদাচরণের মর্যাদা
৬৫৮৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قُهْزَاذَ، حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ
سُلَيْمَانَ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ، عَنْ
عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، ح
وَحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ بَهْرَامَ، وَأَبُو
بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ - وَاللَّفْظُ لَهُمَا - قَالاَ أَخْبَرَنَا أَبُو
الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ أَبِي بَكْرٍ، أَنَّأَخْبَرَهُ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَتْ جَاءَتْنِي امْرَأَةٌ وَمَعَهَا ابْنَتَانِ لَهَا فَسَأَلَتْنِي
فَلَمْ تَجِدْ عِنْدِي شَيْئًا غَيْرَ تَمْرَةٍ وَاحِدَةٍ فَأَعْطَيْتُهَا
إِيَّاهَا فَأَخَذَتْهَا فَقَسَمَتْهَا بَيْنَ ابْنَتَيْهَا وَلَمْ تَأْكُلْ
مِنْهَا شَيْئًا ثُمَّ قَامَتْ فَخَرَجَتْ وَابْنَتَاهَا فَدَخَلَ عَلَىَّ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَحَدَّثْتُهُ حَدِيثَهَا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم " مَنِ ابْتُلِيَ مِنَ الْبَنَاتِ بِشَىْءٍ فَأَحْسَنَ
إِلَيْهِنَّ كُنَّ لَهُ سِتْرًا مِنَ النَّارِ " .
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময় আমার নিকট এক মহিলা আসলো।
সে সময় তার সাথে তার দুটি কন্যাও ছিল। সে আমার সমীপে কিছু চাইল। সে মাত্র একটি
খেজুর ছাড়া আমার নিকট কিছু পেল না। আমি সে খেজুরটিই তার হাতে দিলাম। সে খেজুরটি
নিয়েই তা তার দু’কন্যার মাঝে বন্টন করে দিল। নিজে তা হতে কিছুই খেলো না। তারপর সে
এবং তার দু কন্যা উঠে চলে গেল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার
নিকট আসলে তার সমীপে আমি ঘটনাটি বর্ণনা করলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, যে লোক মেয়ে সন্তান প্রতিপালনের পরীক্ষায় আপতিত হয় আর তাদের
সাথে সে সদাচরণ করে, তাহলে তার জন্যে এরা জাহান্নামের প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়াবে।
(ই.ফা. ৬৪৫৪,ই. সে, ৬৫০৫)
৬৫৮৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا بَكْرٌ، - يَعْنِي ابْنَ مُضَرَ - عَنِ ابْنِ الْهَادِ، أَنَّ زِيَادَ،
بْنَ أَبِي زِيَادٍ مَوْلَى ابْنِ عَيَّاشٍ حَدَّثَهُ عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ،
سَمِعْتُهُ يُحَدِّثُ، عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا
قَالَتْ جَاءَتْنِي مِسْكِينَةٌ تَحْمِلُ ابْنَتَيْنِ لَهَا فَأَطْعَمْتُهَا
ثَلاَثَ تَمَرَاتٍ فَأَعْطَتْ كُلَّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا تَمْرَةً وَرَفَعَتْ
إِلَى فِيهَا تَمْرَةً لِتَأْكُلَهَا فَاسْتَطْعَمَتْهَا ابْنَتَاهَا فَشَقَّتِ
التَّمْرَةَ الَّتِي كَانَتْ تُرِيدُ أَنْ تَأْكُلَهَا بَيْنَهُمَا فَأَعْجَبَنِي
شَأْنُهَا فَذَكَرْتُ الَّذِي صَنَعَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ " إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَوْجَبَ لَهَا بِهَا الْجَنَّةَ أَوْ
أَعْتَقَهَا بِهَا مِنَ النَّارِ " .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার এক অসহায় স্ত্রী তার দুটি মেয়ে
সন্তানসহ আমার নিকট আসলো। আমি তাদেরকে তিনটি খেজুর খেতে দিলাম। সে দু মেয়ের
প্রত্যেককে একটি করে খেজুর দিল এবং একটি নিজে খাবার জন্যে তার মুখে তুলল। সে
মুহুর্তে মেয়ে দুটি এ খেজুরটিও খেতে চাইল। সে তখন নিজে খাবার জন্যে যে খেজুরটি
মুখে তুলেছিল সেটি তাদের উভয়ের মাঝে বন্টন করে দিল। তার এ আচরণ আমাকে আশ্চর্য করে
দিল। পরে আমি সে যা করেছে তা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর
সমীপে আলোচনা করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তা'আলা এ কারণে তার জন্যে জান্নাত আবশ্যক
করে দিয়েছেন অথবা তিনি তাকে এ কারণে জাহান্নাম হতে মুক্তি দিয়েছেন। (ই. ফা.৬৪৫৫,
ই.সে.৬৫০৬)
৬৫৮৯
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا
أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ،
عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ عَالَ
جَارِيَتَيْنِ حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنَا وَهُوَ "
. وَضَمَّ أَصَابِعَهُ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুটি মেয়ে সন্তানকে সাবালক হওয়া পর্যন্ত প্রতিপালন
করে, কিয়ামাতের দিনে সে ও আমি এমন পাশাপাশি অবস্থায় থাকব, এ বলে তিনি তার হাতের
আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে দিলেন। (ই-ফা, ৬৪৫৬, ইসে. ৬৫০৭)
৪৭.
অধ্যায়:
সন্তানের মৃত্যুতে যে লোক সাওয়াবের আশা করে তার মর্যাদা
৬৫৯০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ
قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ
يَمُوتُ لأَحَدٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ ثَلاَثَةٌ مِنَ الْوَلَدِ فَتَمَسَّهُ
النَّارُ إِلاَّ تَحِلَّةَ الْقَسَمِ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)-এর সানাদে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন মুসলিমের তিনটি সন্তান মৃত্যুবরণ
করলে তাকে জাহান্নামের আগুন ছুইবে না, শপথ কার্যকরের জন্যে যা দরকার তা ব্যতীত।
(ই.ফা, ৬৪৫৭, ই.সে ৬৫০৮)
৬৫৯১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، بْنُ عُيَيْنَةَ ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، وَابْنُ،
رَافِعٍ عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، كِلاَهُمَا عَنِ الزُّهْرِيِّ،
. بِإِسْنَادِ مَالِكٍ وَبِمَعْنَى حَدِيثِهِ إِلاَّ أَنَّ فِي حَدِيثِ
سُفْيَانَ " فَيَلِجَ النَّارَ إِلاَّ تَحِلَّةَ الْقَسَمِ " .
যুহরী মালিক-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
যুহরী মালিক-এর সূত্রে তার হুবহু হাদীস বর্ণনা
করেছেন। তাছাড়া সুফইয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে আরো আছে- সে জাহান্নামে গমন
করবে না, শপথ কার্যকরী ব্যতীত। (ই.ফা, ৬৪৫৮, ই.সে. ৬৫০৯)
৬৫৯২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، - يَعْنِي ابْنَ مُحَمَّدٍ - عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
لِنِسْوَةٍ مِنَ الأَنْصَارِ " لاَ يَمُوتُ لإِحْدَاكُنَّ ثَلاَثَةٌ مِنَ
الْوَلَدِ فَتَحْتَسِبَهُ إِلاَّ دَخَلَتِ الْجَنَّةَ " . فَقَالَتِ
امْرَأَةٌ مِنْهُنَّ أَوِ اثْنَيْنِ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " أَوِ
اثْنَيْنِ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছু আনসারী নারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন,
তোমাদের মধ্যে কারো তিনটি সন্তান মৃত্যুবরণ করার পরও সে আল্লাহর প্রতিদানের আশা করে
ধৈর্য ধারণ করলে সে জান্নাতে গমন করবে। অতঃপর এক স্ত্রী বলল, হে আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু'জন সন্তান মৃত্যুবরণ করলে? তিনি বললেন,
দু'জনেও তাই। (ই.ফা. ৬৪৫৯, ই.সে.৬৫১০)
৬৫৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ الْجَحْدَرِيُّ،
فُضَيْلُ بْنُ حُسَيْنٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ،
بْنِ الأَصْبَهَانِيِّ عَنْ أَبِي صَالِحٍ، ذَكْوَانَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ، قَالَ جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَهَبَ الرِّجَالُ بِحَدِيثِكَ فَاجْعَلْ لَنَا
مِنْ نَفْسِكَ يَوْمًا نَأْتِيكَ فِيهِ تُعَلِّمُنَا مِمَّا عَلَّمَكَ اللَّهُ .
قَالَ " اجْتَمِعْنَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا " . فَاجْتَمَعْنَ
فَأَتَاهُنَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَلَّمَهُنَّ مِمَّا عَلَّمَهُ
اللَّهُ ثُمَّ قَالَ " مَا مِنْكُنَّ مِنِ امْرَأَةٍ تُقَدِّمُ بَيْنَ
يَدَيْهَا مِنْ وَلَدِهَا ثَلاَثَةً إِلاَّ كَانُوا لَهَا حِجَابًا مِنَ النَّارِ
" . فَقَالَتِ امْرَأَةٌ وَاثْنَيْنِ وَاثْنَيْنِ وَاثْنَيْنِ فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَاثْنَيْنِ وَاثْنَيْنِ وَاثْنَيْنِ
" .
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক নারী রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) পুরুষ লোকজন আপনার হাদীস শুনতে পায়। কাজেই আপনি আপনার নিকট হতে
আমাদের (নারী সমাজের) জন্যে একটি দিন ঠিক করে দিন (যেদিন আমরা আপনার নিকট একত্র
হই)। আর আল্লাহ আপনাকে যা শিক্ষা দান করেন তা হতে আমাদেরকে শিক্ষা দিন। তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বেশ ভালো তো, অমুক অমুক দিন তোমরা সমবেত
হবে। তারা (নির্দিষ্ট দিনে) একত্র হলো। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাদের সমীপে আসলেন এবং আল্লাহ তাকে যা শিখিয়েছেন তা হতে তাদেরকে
শিখালেন। অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের মাঝে যে কোন মহিলা তার জীবিত থাকতে সন্তান
থেকে তিনটি সন্তান পাঠালেন (অর্থাৎ- তিনটি সন্তান মারা গেল)। সে সন্তানরা বিচার
দিবসে তার জন্যে আড়াল হবে। তখন এক স্ত্রী বলল, দু’জন, দু’জন, দু’জন হলে (কি
বিধান)। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যা, দু’জন,
দু’জন, দু'জনেও এ বিধান। (ই.ফা. ৬৪৬০, ই.সে.৬৫১১)
৬৫৯৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، ح وَحَدَّثَنَا
عُبَيْدُ، اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الأَصْبَهَانِيِّ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ . بِمِثْلِ
مَعْنَاهُ وَزَادَا جَمِيعًا عَنْ شُعْبَةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
الأَصْبَهَانِيِّ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا حَازِمٍ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
قَالَ " ثَلاَثَةً لَمْ يَبْلُغُوا الْحِنْثَ " .
আবদুর রহমান ইবনুল আসবাহানী (রাঃ) এ সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
আবদুর রহমান ইবনুল আসবাহানী (রাঃ) এ সূত্রে তার
সমার্থ হুবহু হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তারা সকলে আবদুর রহমান ইবনু আসবাহানী (রাঃ)
হতে এটুকু বেশি বর্ণনা করেছেন যে, “তিনি বলেন, আমি আবূ হযিমকে আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হতে বলতে শুনেছি"। তিনি বলেন, এমন তিনটি সন্তান যারা সাবালক হয়নি। (ই.ফা,
৬৪৬১, ই.সে ৬৫১২)
৬৫৯৫
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ،
وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، - وَتَقَارَبَا فِي اللَّفْظِ - قَالاَ
حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي السَّلِيلِ، عَنْ أَبِي
حَسَّانَ، قَالَ قُلْتُ لأَبِي هُرَيْرَةَ إِنَّهُ قَدْ مَاتَ لِيَ ابْنَانِ فَمَا
أَنْتَ مُحَدِّثِي عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِحَدِيثٍ تُطَيِّبُ
بِهِ أَنْفُسَنَا عَنْ مَوْتَانَا قَالَ قَالَ نَعَمْ " صِغَارُهُمْ
دَعَامِيصُ الْجَنَّةِ يَتَلَقَّى أَحَدُهُمْ أَبَاهُ - أَوْ قَالَ أَبَوَيْهِ -
فَيَأْخُذُ بِثَوْبِهِ - أَوْ قَالَ بِيَدِهِ - كَمَا آخُذُ أَنَا بِصَنِفَةِ
ثَوْبِكَ هَذَا فَلاَ يَتَنَاهَى - أَوْ قَالَ فَلاَ يَنْتَهِي - حَتَّى
يُدْخِلَهُ اللَّهُ وَأَبَاهُ الْجَنَّةَ " . وَفِي رِوَايَةِ سُوَيْدٍ قَالَ
حَدَّثَنَا أَبُو السَّلِيلِ وَحَدَّثَنِيهِ عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ
حَدَّثَنَا يَحْيَى - يَعْنِي ابْنَ سَعِيدٍ - عَنِ التَّيْمِيِّ بِهَذَا
الإِسْنَادِ وَقَالَ فَهَلْ سَمِعْتَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
شَيْئًا تُطَيِّبُ بِهِ أَنْفُسَنَا عَنْ مَوْتَانَا قَالَ نَعَمْ .
আবূ হাসসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে বললাম,
আমার দুটি ছেলে সন্তান মৃত্যুবরণ করেছে। আপনি কি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ হতে একটি হাদীস উল্লেখ করবেন, যাতে আমাদের মৃতদের ক্ষেত্রে
আপনি আমাদের মনে শান্তি দিতে পারেন। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, তিনি বললেন, হ্যা,
তাদের জন্যে তার ছোটশিশুরা জান্নাতের প্রজাপতি তুল্য। তাদের মাঝে কেউ তার পিতার
সাথে মিলিত হবে, অথবা তিনি বলেছেন বাবা-মা দুজনের সাথে মিলিত হবে। অতঃপর তিনি তার
পরিধানের কাপড় কিংবা বলেছেন, হাত ধরবে, যেমনটি আমি তোমার কাপড়ের আঁচল ধরছি। এরপর
আর তারা তাদের ছাড়বে না, কিংবা রাবী বলেছেন, ধরে থাকা শেষ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত
না আল্লাহ তার বাবা-মাকে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। সুওয়াইদ (রাঃ)-এর বর্ণনায় আরো
রয়েছে, আবূ সালীল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (ই ফা.৬৪৬২,ই-সে,৬৫১৩)
উবাইদুল্লাহ ইবনু সা’ঈদ (রাঃ) ... আত তাইমী (রাঃ) হতে এ সূত্রে হুবহু হাদীস বর্ণনা
করেছেন। তিনি বলেন, আপনি কি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে
এমন কিছু শুনেছেন, যা আমাদের মৃতদের সম্পর্কে আমাদের হৃদয়কে খুশি করে দেয়? তিনি
বললেন, হ্যা। (ই.ফা. ৬৪৬২, ই.সে,৬৫১৪)
৬৫৯৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، وَأَبُو سَعِيدٍ
الأَشَجُّ - وَاللَّفْظُ لأَبِي بَكْرٍ - قَالُوا حَدَّثَنَا حَفْصٌ، - يَعْنُونَ
ابْنَ غِيَاثٍ ح وَحَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ، بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِي،
عَنْ جَدِّهِ، طَلْقِ بْنِ مُعَاوِيَةَ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ
جَرِيرٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَتَتِ امْرَأَةٌ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم بِصَبِيٍّ لَهَا فَقَالَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ لَهُ فَلَقَدْ
دَفَنْتُ ثَلاَثَةً قَالَ " دَفَنْتِ ثَلاَثَةً " . قَالَتْ
نَعَمْ . قَالَ " لَقَدِ احْتَظَرْتِ بِحِظَارٍ شَدِيدٍ مِنَ النَّارِ
" . قَالَ عُمَرُ مِنْ بَيْنِهِمْ عَنْ جَدِّهِ . وَقَالَ الْبَاقُونَ
عَنْ طَلْقٍ . وَلَمْ يَذْكُرُوا الْجَدَّ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক মহিলা একটি ছেলে সন্তান নিয়ে
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। আপনি তার জন্যে আল্লাহর নিকট দুআ করুন। আমি
তিনটি সন্তান কবরস্থ করেছি। তিনি বললেন, তুমি তিনটি সন্তান দাফন করেছ? মহিলা বলল,
হ্যা। তিনি বললেন, তুমি তো অবশ্যই জাহান্নাম হতে একটি শক্ত প্রাচীর তৈরি করেছ।
তাদের মাঝ থেকে উমার তার দাদার সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, অবশিষ্টরা তালুক (রাঃ) হতে রিওয়ায়াত করেছেন। তারা , দাদার শব্দটি
উল্লেখ করেননি। (ই.ফা, ৬৪৬৩, ই.সে, ৬৫১৫)
৬৫৯৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ طَلْقِ بْنِ
مُعَاوِيَةَ، النَّخَعِيِّ أَبِي غِيَاثٍ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ
جَرِيرٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم بِابْنٍ لَهَا فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ يَشْتَكِي
وَإِنِّي أَخَافُ عَلَيْهِ قَدْ دَفَنْتُ ثَلاَثَةً . قَالَ " لَقَدِ احْتَظَرْتِ
بِحِظَارٍ شَدِيدٍ مِنَ النَّارِ " قَالَ زُهَيْرٌ عَنْ طَلْقٍ . وَلَمْ
يَذْكُرِ الْكُنْيَةَ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা তার একটি ছেলে নিয়ে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সমীপে এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! নিশ্চয়ই সে অসুস্থ এবং তার ব্যাপারে আমি ভয়
করছি। আর আমি তিনটি সন্তান কবরস্থ করেছি। তিনি বললেন, তুমি জাহান্নাম হতে বাঁচার
জন্যে একটি শক্ত দেয়াল তৈরি করেছ।
যুহায়র (রহঃ) তাল্ক হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি কুন্ইয়াত (উপনাম) উল্লেখ
করেননি। (ই.ফা. ৬৪৬৪, ই.সে. ৬৫১৬)
৪৮.
অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা‘আলা যখন কোন বান্দাকে মুহাব্বাত করেন তখন তাকে
তার সকল বান্দাদের কাছেও প্রিয় করিয়ে দেন
৬৫৯৮
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ إِذَا أَحَبَّ
عَبْدًا دَعَا جِبْرِيلَ فَقَالَ إِنِّي أُحِبُّ فُلاَنًا فَأَحِبَّهُ - قَالَ -
فَيُحِبُّهُ جِبْرِيلُ ثُمَّ يُنَادِي فِي السَّمَاءِ فَيَقُولُ إِنَّ اللَّهَ
يُحِبُّ فُلاَنًا فَأَحِبُّوهُ . فَيُحِبُّهُ أَهْلُ السَّمَاءِ - قَالَ - ثُمَّ
يُوضَعُ لَهُ الْقَبُولُ فِي الأَرْضِ . وَإِذَا أَبْغَضَ عَبْدًا دَعَا
جِبْرِيلَ فَيَقُولُ إِنِّي أُبْغِضُ فُلاَنًا فَأَبْغِضْهُ - قَالَ -
فَيُبْغِضُهُ جِبْرِيلُ ثُمَّ يُنَادِي فِي أَهْلِ السَّمَاءِ إِنَّ اللَّهَ
يُبْغِضُ فُلاَنًا فَأَبْغِضُوهُ - قَالَ - فَيُبْغِضُونَهُ ثُمَّ تُوضَعُ لَهُ
الْبَغْضَاءُ فِي الأَرْضِ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা যদি কোন বান্দাকে পছন্দ করেন তখন জিব্রীল (‘আঃ)-কে
ডাক দেন এবং বলেন, নিশ্চয়ই আমি অমুক লোককে পছন্দ করি, তুমিও তাকে পছন্দ কর। তিনি
বলেন, তখন জিব্রীল (‘আঃ) তাকে পছন্দ করেন। অতঃপর তিনি আকাশমণ্ডলীতে ঘোষণা দিয়ে
বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক লোককে পছন্দ করেন, সুতরাং আপনারাও তাকে পছন্দ করুন। তখন
আকাশবাসীরা তাকে পছন্দ করে। তিনি বলেন, এরপর দুনিয়াতে তাকে নন্দিত, সমাদৃত করা হয়।
আর আল্লাহ যদি কোন লোকের উপর রাগ করেন তখন জিব্রীল (‘আঃ)-কে ডাক দেন এবং বলেন, আমি
অমুক বান্দার উপর রাগ করেছি, তুমিও তার প্রতি নারাজ হও। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেন, তখন জিব্রীল (‘আঃ) তার উপর রাগান্বিত হন। তারপর তিনি
আকাশবাসীদেরকে ডাক দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা অমুকের উপর রাগান্বিত। কাজেই
আপনারাও তার উপর ক্রোধান্বিত হোন। তিনি বলেন, তখন লোকেরা তার উপর দুশমনি পোষণ করে।
তারপর তার জন্য পৃথিবীতে শত্রু বানিয়ে দেয়া হয়। (ই.ফা. ৬৪৬০৫, ই.সে. ৬৫১৭)
৬৫৯৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - يَعْنِي ابْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْقَارِيَّ - وَقَالَ
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ يَعْنِي الدَّرَاوَرْدِيَّ، ح
وَحَدَّثَنَاهُ سَعِيدُ بْنُ عَمْرٍو الأَشْعَثِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْثَرٌ، عَنِ
الْعَلاَءِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، ح وَحَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ،
حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي مَالِكٌ، - وَهُوَ ابْنُ أَنَسٍ - كُلُّهُمْ
عَنْ سُهَيْلٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ غَيْرَ أَنَّ حَدِيثَ، الْعَلاَءِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ لَيْسَ فِيهِ ذِكْرُ الْبُغْضِ .
সুহায়ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সুহায়ল (রাঃ) এ সূত্রে হুবহু হাদীস বর্ণিত। তাছাড়া
‘আলা ইবনুল মুসাইয়্যাব (রহঃ)-এর হাদীসে (আরবি) (শত্রুতা) শব্দটির উল্লেখ নেই।
(ই.ফা. ৬৪৬৬, ই.সে. ৬৫১৮)
৬৬০০
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا
يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، بْنِ
أَبِي سَلَمَةَ الْمَاجِشُونُ عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، قَالَ كُنَّا
بِعَرَفَةَ فَمَرَّ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ وَهُوَ عَلَى الْمَوْسِمِ
فَقَامَ النَّاسُ يَنْظُرُونَ إِلَيْهِ فَقُلْتُ لأَبِي يَا أَبَتِ إِنِّي أَرَى
اللَّهَ يُحِبُّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ . قَالَ وَمَا ذَاكَ قُلْتُ
لِمَا لَهُ مِنَ الْحُبِّ فِي قُلُوبِ النَّاسِ . فَقَالَ بِأَبِيكَ أَنْتَ
سَمِعْتَ أَبَا هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِ حَدِيثِ جَرِيرٍ عَنْ سُهَيْلٍ .
আবূ সালিহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা ‘আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করছিলাম।
তখন ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) গমন করলেন। সে সময় হাজ্জের মৌসুম, লোকেরা তাঁকে
দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন আমি আমার পিতাকে বললাম, হে আব্বাজান! আমার মনে হয়, আল্লাহ
তা‘আলা ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-কে পছন্দ করেন। তিনি বলেন, সে কি? অর্থাৎ-
তুমি কিভাবে বুঝলে? আমি বললাম, এ কারণে যে, মানুষের হৃদয়ে তার ভালবাসা বদ্ধমূল হয়ে
আছে। তিনি বললেন, তোমার পিতার শপথ! তুমি শুনেছ আবূ হুরায়রা্ (রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণনা করতে। তারপর তিনি সুহায়ল
(রাঃ) হতে জারীর বর্ণিত হাদীসের হুবহু বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৬৪৬৭, ই.সে. ৬৫১৯)
৪৯.
অধ্যায়ঃ
রূহসমূহ সমাজবদ্ধ
৬৬০১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، - يَعْنِي ابْنَ مُحَمَّدٍ - عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" الأَرْوَاحُ جُنُودٌ مُجَنَّدَةٌ فَمَا تَعَارَفَ مِنْهَا ائْتَلَفَ
وَمَا تَنَاكَرَ مِنْهَا اخْتَلَفَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন: রূহসমূহ সমাজবদ্ধ২। সুতরাং যারা পরস্পরে পরিচিতি লাভ করছে তারা দুনিয়াতে
পরস্পরে প্রীতি বন্ধনে আবদ্ধ হয়। আর যারা সেখানে অপরিচিত তারা এখানেও ভিন্ন থাকে।
(ই.ফা. ৬৪৬৮, ই.সে. ৬৫২০)
২ (আরবি) এর মর্ম : রূহ পৃথিবীতে আসার পূর্বে সমাজবদ্ধ বিভিন্ন
শ্রেনীর ছিল। বর্ণিত আছে যে, মানুষকে সৃষ্টি করে সমাজবদ্ধভবে করা হয়েছে। তারপর তা বিভিন্ন
দেহে পৃথকভাবে স্থাপন করা হয়েছে। সুতরাং যার স্বভাব জগতের যার সাথে মিল আছে তাকে সে
ভালবাসবে। আর স্বভাবের সাথে যার মিল নেই, তার থেকে সে ভিন্ন থাকবে।
৬৬০২
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ بُرْقَانَ، حَدَّثَنَا
يَزِيدُ بْنُ الأَصَمِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، بِحَدِيثٍ يَرْفَعُهُ قَالَ
" النَّاسُ مَعَادِنُ كَمَعَادِنِ الْفِضَّةِ وَالذَّهَبِ خِيَارُهُمْ فِي
الْجَاهِلِيَّةِ خِيَارُهُمْ فِي الإِسْلاَمِ إِذَا فَقُهُوا وَالأَرْوَاحُ
جُنُودٌ مُجَنَّدَةٌ فَمَا تَعَارَفَ مِنْهَا ائْتَلَفَ وَمَا تَنَاكَرَ مِنْهَا
اخْتَلَفَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে মারফূ‘ সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মানুষ স্বর্ণ ও রৌপ্যের খনি স্বরূপ।
জাহিলিয়্যাতের সময় যারা সর্বোৎকৃষ্ট তারা ইসলামের সময়ও সর্বোৎকৃষ্ট, যখন তারা
সূক্ষ্ম জ্ঞান অর্জন করেন (দ্বীনের বুঝদার হয়ে থাকেন)। আর আত্মাসমূহ স্বভাবজাত
সমাজবদ্ধ। সেখানে যেসব রূহ পরস্পরে পরিচিতি লাভ করেছিল দুনিয়াতে সেগুলো সম্প্রীতির
বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকে আর সেখানে যেগুলো অপরিচিত ছিল, এখানেও তারা অপরিচিত। (ই.ফা.
৬৪৬৯, ই.সে. ৬৫২০[ক])
৫০.
অধ্যায়ঃ
যাকে যে মানুষ ভালবাসে সে তার সাথেই থাকবে
৬৬০৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ
بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ،
أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ أَعْرَابِيًّا، قَالَ لِرَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَتَى السَّاعَةُ قَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " مَا أَعْدَدْتَ لَهَا " . قَالَ حُبَّ اللَّهِ
وَرَسُولِهِ . قَالَ " أَنْتَ مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক যাযাবর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করল, কিয়ামাত কবে হবে? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাকে বললেন, তুমি কিয়ামাতের জন্যে কি পাথেয় প্রস্তুত করেছ? সে বলল, আমি
বেশি কিছু প্রস্তুত করতে পারিনি। তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের মুহাব্বত। তিনি বললেন,
তুমি তারই সাথী হবে যাকে তুমি মুহাব্বাত কর। (ই.ফা. ৬৪৭০, ই.সে. ৬৫২১)
৬৬০৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ
عَبْدِ، اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ وَابْنُ أَبِي عُمَرَ - وَاللَّفْظُ لِزُهَيْرٍ -
قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ
رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَتَى السَّاعَةُ قَالَ " وَمَا أَعْدَدْتَ
لَهَا " . فَلَمْ يَذْكُرْ كَبِيرًا . قَالَ وَلَكِنِّي أُحِبُّ
اللَّهَ وَرَسُولَهُ . قَالَ " فَأَنْتَ مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ "
.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কিয়ামাত কবে সংঘটিত হবে? তিনি বললেন, তুমি
তার জন্যে কি সংগ্রহ করেছ? তখন সে বেশি কিছু উল্লেখ করতে পারেনি। তিনি বলেন,
কিন্তু আমি আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে মুহাব্বত করি। তিনি বললেন, তুমি তার সাথেই থাকবে
যাকে তুমি মুহাব্বাত কর। (ই.ফা. ৬৪৭১, ই.সে. ৬৫২২)
৬৬০৫
حَدَّثَنِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالَ عَبْدٌ أَخْبَرَنَا وَقَالَ ابْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ،
حَدَّثَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ رَجُلاً، مِنَ الأَعْرَابِ أَتَى رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . بِمِثْلِهِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ مَا أَعْدَدْتُ
لَهَا مِنْ كَثِيرٍ أَحْمَدُ عَلَيْهِ نَفْسِي .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জনৈক বেদুঈন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট আসলো। তারপর তার মতো হুবহু হাদীস বর্ণনা করেছেন। তাছাড়া এ
বর্ণনায় রয়েছে, তিনি বলেন, বেদুঈন লোকটি বলল, আমি কিয়ামাতের জন্যে এমন কোন বেশি
সম্বল তৈরি করিনি, যার জন্য আমি নিজেকে সাধুবাদ দিতে পারি। (ই.ফা. ৬৪৭১, ই.সে.
৬৫২৩)
৬৬০৬
حَدَّثَنِي أَبُو الرَّبِيعِ الْعَتَكِيُّ،
حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، - يَعْنِي ابْنَ زَيْدٍ - حَدَّثَنَا ثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ،
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَتَى السَّاعَةُ قَالَ " وَمَا
أَعْدَدْتَ لِلسَّاعَةِ " . قَالَ حُبَّ اللَّهِ وَرَسُولِهِ قَالَ
" فَإِنَّكَ مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ " . قَالَ أَنَسٌ فَمَا
فَرِحْنَا بَعْدَ الإِسْلاَمِ فَرَحًا أَشَدَّ مِنْ قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم " فَإِنَّكَ مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ " . قَالَ أَنَسٌ
فَأَنَا أُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَأَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ فَأَرْجُو أَنْ
أَكُونَ مَعَهُمْ وَإِنْ لَمْ أَعْمَلْ بِأَعْمَالِهِمْ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলো, অতঃপর বললো, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কিয়ামাত কবে সংঘটিত হবে? তিনি বললেন, তুমি সেদিনের জন্যে কি
পাথেয় সংগ্রহ করেছ? সে বললো, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের মুহাব্বাত। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই
তুমি তার সাথে থাকবে যাকে তুমি মুহাব্বাত কর। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহ ও তাঁর
রসূল, আবূ বকর (রাঃ) ও ‘উমার (রাঃ)-কে পছন্দ করি। সুতরাং আমি আশা রাখি যে,
কিয়ামাতের দিনে আমি তাদের সাথে থাকব, যদিও আমি তাঁদের সমান ‘আমাল করতে পারিনি।
(ই.ফা. ৬৪৭২, ই.সে. ৬৫২৪)
৬৬০৭
حَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ
الْغُبَرِيُّ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ
الْبُنَانِيُّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَلَمْ يَذْكُرْ قَوْلَ أَنَسٍ فَأَنَا أُحِبُّ . وَمَا بَعْدَهُ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর সানাদে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তবে জা‘ফার ইবনু সুলাইমান (রহঃ)-এর বর্ণিত হাদীসে
আনাস-এর উক্তি “আমি ভালবাসি এবং এর পরবর্তী অংশ” উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৬৪৭৩,
ই.সে. ৬৫২৫)
৬৬০৮
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ، عُثْمَانُ
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ،
حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ بَيْنَمَا أَنَا وَرَسُولُ اللَّهِ، صلى
الله عليه وسلم خَارِجَيْنِ مِنَ الْمَسْجِدِ فَلَقِينَا رَجُلاً عِنْدَ سُدَّةِ
الْمَسْجِدِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَتَى السَّاعَةُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " مَا أَعْدَدْتَ لَهَا " . قَالَ فَكَأَنَّ
الرَّجُلَ اسْتَكَانَ ثُمَّ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَعْدَدْتُ لَهَا
كَبِيرَ صَلاَةٍ وَلاَ صِيَامٍ وَلاَ صَدَقَةٍ وَلَكِنِّي أُحِبُّ اللَّهَ
وَرَسُولَهُ . قَالَ " فَأَنْتَ مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ও রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) উভয়ে মাসজিদে নাবাবী হতে বের হচ্ছিলাম। এমন সময় মাসজিদের দরজায় এক
লোকের সাথে সাক্ষাৎ হলো। সে বলল, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)! কিয়ামাত কবে সংঘটিত হবে? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, তুমি কিয়ামাতের জন্যে কি সম্বল সংগ্রহ করেছ? তিনি বলেন, তখন লোকটি নীরব
থাকলো। তারপর সে বলল, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি তো
সেজন্যে বেশি পরিমাণ সলাত, সিয়াম ও সদাকাহ্-খয়রাত সংগ্রহ করিনি। তবে আমি আল্লাহ ও
তাঁর রসূলকে মুহাব্বাত করি। তিনি বললেন, তুমি তার সাথেই থাকবে যাকে তুমি মুহাব্বাত
কর। (ই.ফা. ৬৪৭৪, ই.সে. ৬৫২৬)
৬৬০৯
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ
عَبْدِ الْعَزِيزِ الْيَشْكُرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُثْمَانَ
بْنِ، جَبَلَةَ أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ
سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِنَحْوِهِ .
আনাস (রাঃ)-এর সানাদে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
আনাস (রাঃ)-এর সানাদে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে হুবহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ৬৪৭৫, ই.সে. ৬৫২৭)
৬৬১০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، ح
وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، سَمِعْتُ أَنَسًا، ح
وَحَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ الْمِسْمَعِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
قَالاَ حَدَّثَنَا مُعَاذٌ، - يَعْنِي ابْنَ هِشَامٍ - حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ
.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনাস (রাঃ)-এর সানাদে হুবহু এ হাদীস নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত আছে। (ই.ফা. ৬৪৭৬, ই.সে. ৬৫২৮)
৬৬১১
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ، عُثْمَانُ
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ،
قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ كَيْفَ تَرَى فِي رَجُلٍ أَحَبَّ قَوْمًا وَلَمَّا يَلْحَقْ بِهِمْ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ
" .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলো। অতঃপর সে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বললো, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! সে
লোকটি সম্পর্কে আপনি কী মনে করেন, যে একটি সম্প্রদায়কে মুহাব্বাত করে অথচ সে তাদের
সাথে মিলিত হয়নি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যে যাকে
মুহাব্বাত করে সে তার সঙ্গেই থাকবে। (ই.ফা. ৬৪৭৭, ই.সে. ৬৫২৯)
৬৬১২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، ح وَحَدَّثَنِيهِ
بِشْرُ، بْنُ خَالِدٍ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدٌ، - يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ -
كِلاَهُمَا عَنْ شُعْبَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو
الْجَوَّابِ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ قَرْمٍ، جَمِيعًا عَنْ سُلَيْمَانَ،
عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِمِثْلِهِ .
‘‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ)-এর সানাদে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে তার হুবহু হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.
৬৪৭৮, ই.সে. ৬৫৩০)
৬৬১৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا
ابْنُ، نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم رَجُلٌ . فَذَكَرَ بِمِثْلِ حَدِيثِ جَرِيرٍ عَنِ الأَعْمَشِ .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট আসলো। অতঃপর তিনি আ‘মাশ (রহঃ)-এর সানাদে জারীর (রাঃ) কর্তৃক
বর্ণিত হাদীসের হুবহু উল্লেখ করেন। (ই.ফা. ৬৪৭৯, ই.সে. ৬৫৩১)
৫১.
অধ্যায়ঃ
যদি সৎলোকের গুণ বর্ণনা করা হয় তবে তা সুসংবাদ তার জন্যে
ক্ষতি নয়
৬৬১৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى
التَّمِيمِيُّ، وَأَبُو الرَّبِيعِ، وَأَبُو كَامِلٍ فُضَيْلُ بْنُ حُسَيْنٍ -
وَاللَّفْظُ لِيَحْيَى - قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ،
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ الْجَوْنِيِّ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ الصَّامِتِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم أَرَأَيْتَ الرَّجُلَ يَعْمَلُ الْعَمَلَ مِنَ الْخَيْرِ
وَيَحْمَدُهُ النَّاسُ عَلَيْهِ قَالَ " تِلْكَ عَاجِلُ بُشْرَى
الْمُؤْمِنِ " .
আবূ যার গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সমীপে আবেদন করা হলো, ঐ লোক সম্পর্কে আপনার কি মতামত, যে সৎ ‘আমাল করে
এবং মানুষেরা তার গুণ বর্ণনা করে? তিনি বললেন, এটা মু’মিনের জন্যে দ্রুত সুবার্তা।
[৩] (ই.ফা. ৬৪৮০, ই.সে. ৬৫৩২)
[৩] উলামারা বলেন, তার জন্যে এটা নগদ সুসংবাদ। আর সেটাই পরকালের
প্রতি পরবর্তী সুসংবাদের দলীল। যেমন আল্লাহ বলেন, “আজ তোমার সৌজন্যে জান্নাতের সুসংবাদ।
তাৎক্ষণিক সুসংবাদটি আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্টি ও তার প্রতি মুহাব্বাতের উপর প্রমাণ
স্বরূপ। যা তাকে সকলের নিকট প্রিয় বানিয়ে দেয়।
৬৬১৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ وَكِيعٍ، ح وَحَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ، بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، ح وَحَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنِي عَبْدُ الصَّمَدِ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ،
أَخْبَرَنَا النَّضْرُ، كُلُّهُمْ عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ
الْجَوْنِيِّ، بِإِسْنَادِ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ . بِمِثْلِ حَدِيثِهِ غَيْرَ
أَنَّ فِي، حَدِيثِهِمْ عَنْ شُعْبَةَ غَيْرَ عَبْدِ الصَّمَدِ وَيُحِبُّهُ
النَّاسُ عَلَيْهِ . وَفِي حَدِيثِ عَبْدِ الصَّمَدِ وَيَحْمَدُهُ النَّاسُ .
كَمَا قَالَ حَمَّادٌ .
হাম্মাদ ইবনু যায়দ থেকে বর্ণিতঃ
হাম্মাদ ইবনু যায়দ-এর সূত্রে আবূ ‘ইমরান আল জাওনী (রহঃ) হতে তার হুবহু হাদীস বর্ণিত। তাছাড়া ‘আবদুস্ সামাদ (রহঃ) ব্যতীত শু‘বার সানাদে অন্যান্যদের হাদীসে আছে, ‘এবং লোকেরা তাকে এজন্য মুহাব্বাত করে’ উল্লেখ আছে। আর আবদুস্ সামাদ (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে হাম্মাদ যেভাবে বলেছেন তেমনি ‘মানুষেরা তার শুকরিয়া করে’ উল্লেখ রয়েছে। (ই.ফা. ৬৪৮১, ই .সে. ৬৫৩৩)
No comments