সহিহ মুসলিম অধ্যায় "যাকাত" হাদিস নং -২১৫৩ থেকে ২২৭০
১. অধ্যায়:
যে শস্যে দশ ভাগের এক ভাগ ‘উশ্র অথবা অর্ধেক
‘উশ্র
২১৫৩
وَحَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ
بُكَيْرٍ النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، قَالَ سَأَلْتُ
عَمْرَو بْنَ يَحْيَى بْنِ عُمَارَةَ فَأَخْبَرَنِي عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَيْسَ
فِيمَا دُونَ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ صَدَقَةٌ وَلاَ فِيمَا دُونَ خَمْسِ ذَوْدٍ
صَدَقَةٌ وَلاَ فِيمَا دُونَ خَمْسِ أَوَاقٍ صَدَقَةٌ " .
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন, পাঁচ ওসাক্বের [১] কম পরিমাণ শস্যে কোন যাকাত নেই, পাঁচ উটের কম
সংখ্যায় কোন যাকাত নেই এবং পাঁচ উক্বিয়্যার [২] কমে (রৌপ্যের জন্য/পণ্যদ্রব্যের
জন্য) যাকাত নেই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২১৩২, ইসলামিক সেন্টার ২১৩৫)
[১] ওয়াসাক্ব : এক ওয়াসাক্ব ষাট সা’। পাঁচ ওয়াসাক্ব
৩০০ সা’। এক সা’ প্রায় আড়াই কেজি- (ইতহাফুল কিরাম-১৭২ পৃষ্ঠা, আল্লামা সফিউর রহমান
মুবারকপুরী)।
[২] উক্বিয়্যাহ্ : এক উক্বিয়্যাহ্ ৪০ দিরহাম (রৌপ্য টাকা) পাঁচ উক্বিয়্যাহ্ দু’শ
দিরহাম, অথ্যাৎ ৭৩৫ গ্রাম রৌপ্য। (প্রাগুক্ত, ১৭২ পৃষ্ঠা)
২১৫৪
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحِ بْنِ
الْمُهَاجِرِ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، ح وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، كِلاَهُمَا عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ،
عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى، بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَهُ.
‘আম্র ইবনু ইয়াহ্ইয়া থেকে বর্ণিতঃ
‘আম্র ইবনু ইয়াহ্ইয়া এ সানাদের
মাধ্যমে উপরের হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ২১৩৩, ই.সে. ২১৩৬)
২১৫৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو،
بْنُ يَحْيَى بْنِ عُمَارَةَ عَنْ أَبِيهِ، يَحْيَى بْنِ عُمَارَةَ قَالَ سَمِعْتُ
أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ . وَأَشَارَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِكَفِّهِ بِخَمْسِ أَصَابِعِهِ
ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِ حَدِيثِ ابْنِ عُيَيْنَةَ .
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে তাঁর হাতের পাঁচ আঙ্গুলের সাহায্যে ইঙ্গিত
করে বলতে শুনেছি। .......... উপরে বর্ণিত ইবনু ‘উয়ায়নার বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ ।
(ই.ফা. ২১৩৪, ই.সে. ২১৩৭)
২১৫৬
وَحَدَّثَنِي أَبُو كَامِلٍ، فُضَيْلُ بْنُ
حُسَيْنٍ الْجَحْدَرِيُّ حَدَّثَنَا بِشْرٌ، - يَعْنِي ابْنَ مُفَضَّلٍ -
حَدَّثَنَا عُمَارَةُ بْنُ غَزِيَّةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عُمَارَةَ، قَالَ
سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " لَيْسَ فِيمَا دُونَ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ صَدَقَةٌ وَلَيْسَ
فِيمَا دُونَ خَمْسِ ذَوْدٍ صَدَقَةٌ وَلَيْسَ فِيمَا دُونَ خَمْسِ أَوَاقٍ
صَدَقَةٌ " .
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : পাঁচ ওয়াসাক্বের কম পরিমাণ শস্যের কোন যাকাত ধার্য
হয় না। পাঁচ উটের কম সংখ্যক হলে কোন যাকাত ধার্য হয় না এবং পাঁচ উক্বিয়্যার কমে
(রৌপ্যের ) কোন যাকাত নেই। (ই.ফা. ২১৩৫, ই.সে.২১৩৮)
২১৫৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا
وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أُمَيَّةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عُمَارَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَيْسَ فِيمَا دُونَ
خَمْسَةِ أَوْسَاقٍ مِنْ تَمْرٍ وَلاَ حَبٍّ صَدَقَةٌ " .
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : খেজুর ও শস্য পাঁচ ওয়াসাক্বের কম হলে তাতে যাকাত
ধার্য হয় না। (ই.ফা. ২১৩৬, ই.সে. ২১৩৯)
২১৫৮
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي ابْنَ مَهْدِيٍّ - حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أُمَيَّةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ
حَبَّانَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عُمَارَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَيْسَ فِي حَبٍّ وَلاَ تَمْرٍ
صَدَقَةٌ حَتَّى يَبْلُغَ خَمْسَةَ أَوْسُقٍ وَلاَ فِيمَا دُونَ خَمْسِ ذَوْدٍ
صَدَقَةٌ وَلاَ فِيمَا دُونَ خَمْسِ أَوَاقٍ صَدَقَةٌ" .
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন : শস্য ও খেজুর পূর্ণ পাঁচ ওয়াসাক্ব না হলে তাতে কোন যাকাত নেই,
উটের সংখ্যা পাঁচের কম হলে তাতে যাকাত নেই এবং পাঁচ উক্বিয়্যার (বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা
রৌপ্যের) কমে কোন যাকাত নেই। (ই.ফা. ২১৩৭, ই.সে. ২১৪০)
২১৫৯
وَحَدَّثَنِي عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ،
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، عَنْ
إِسْمَاعِيلَ، بْنِ أُمَيَّةَ بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَ حَدِيثِ ابْنِ
مَهْدِيٍّ .
ইসমা’ঈল ইবনু উমাইয়্যাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইসমা’ঈল ইবনু উমাইয়্যাহ্ (রহঃ) থেকে এ
সানাদে ‘আবদুর রহমান ইবনু মাহদী (রহঃ)-এর অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ২১৩৮,
ই.সে. ২১৪১)
২১৬০
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا الثَّوْرِيُّ، وَمَعْمَرٌ، عَنْ
إِسْمَاعِيلَ، بْنِ أُمَيَّةَ بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَ حَدِيثِ ابْنِ
مَهْدِيٍّ وَيَحْيَى بْنِ آدَمَ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ - بَدَلَ التَّمْرِ - ثَمَرٍ
.
ইসমা’ঈল ইবনু উমাইয়্যাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইসমা’ঈল ইবনু উমাইয়্যাহ (রহঃ) এর
সূত্রে এ সানাদে ‘আবদুর রহমান ইবনু মাহদী ও ইয়াহ্ইয়া ইবনু আদাম (রহঃ) এর অনুরূপ
হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি ‘খেজুরের’ পরিবর্তে ‘ফল’ উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা.
২১৩৯, ই.সে. ২১৪২)
২১৬১
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ،
وَهَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ،
أَخْبَرَنِي عِيَاضُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ
" لَيْسَ فِيمَا دُونَ خَمْسِ أَوَاقٍ مِنَ الْوَرِقِ صَدَقَةٌ وَلَيْسَ
فِيمَا دُونَ خَمْسِ ذَوْدٍ مِنَ الإِبِلِ صَدَقَةٌ وَلَيْسَ فِيمَا دُونَ
خَمْسَةِ أَوْسُقٍ مِنَ التَّمْرِ صَدَقَةٌ " .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন : রৌপ্য পরিমাণ পাঁচ উক্বিয়্যার কম হলে তাতে কোন যাকাত নেই, উটের
সংখ্যা পাঁচের কম হলে তাতে কোন যাকাত নেই, আর খেজুর পাঁচ ওয়াসাক্বের কম হলে তাতেও
যাকাত নেই। (ই.ফা. ২১৪০, ই.সে. ২১৪৩)
২১৬২
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ
بْنُ عَمْرِو بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ وَهَارُونُ بْنُ
سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ وَعَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ وَالْوَلِيدُ بْنُ شُجَاعٍ كُلُّهُمْ
عَنِ ابْنِ وَهْبٍ، قَالَ أَبُو الطَّاهِرِ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
وَهْبٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، أَنَّ أَبَا الزُّبَيْرِ، حَدَّثَهُ
أَنَّهُ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ، عَبْدِ اللَّهِ يَذْكُرُ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " فِيمَا سَقَتِ الأَنْهَارُ وَالْغَيْمُ
الْعُشُورُ وَفِيمَا سُقِيَ بِالسَّانِيَةِ نِصْفُ الْعُشْرِ " .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছেন, যে জমি নদী-নালা ও বর্ষার পানিতে সিক্ত হয় তাতে ‘উশ্র
(উৎপাদিত শস্যের দশ ভাগের এক ভাগ যাকাত ) ধার্য হয়। আর যে জমিতে উটের সাহায্যে
পানি সরবরাহ করা হয় তাতে অর্ধেক ‘উশ্র (বিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত ) ধার্য হবে।
(ই.ফা. ২১৪১,ই.সে. ২১৪৪)
২. অধ্যায়:
মুসলিম ব্যক্তির ক্রীতদাস ও ঘোড়ার উপর কোন
যাকাত নেই
২১৬৩
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى
التَّمِيمِيُّ، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ،
عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَيْسَ عَلَى
الْمُسْلِمِ فِي عَبْدِهِ وَلاَ فَرَسِهِ صَدَقَةٌ " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিম ব্যক্তির ক্রীতদাস ও ঘোড়ার উপর কোন যাকাত নেই। (ই.ফা.
২১৪২,ই.সে. ২১৪৫)
২১৬৪
وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ،
وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، حَدَّثَنَا
أَيُّوبُ، بْنُ مُوسَى عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ
عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، - قَالَ عَمْرٌو - عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم وَقَالَ زُهَيْرٌ يَبْلُغُ بِهِ " لَيْسَ عَلَى
الْمُسْلِمِ فِي عَبْدِهِ وَلاَ فَرَسِهِ صَدَقَةٌ " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন: মুসলিম ব্যক্তির ক্রীতদাস ও ঘোড়ার উপর কোন সদাক্বাহ্ (যাকাত) ধার্য
হয় না। (ই.ফা. ২১৪৩, ই.সে.২১৪৬)
২১৬৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا
حَمَّادُ، بْنُ زَيْدٍ ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، كُلُّهُمْ عَنْ خُثَيْمِ بْنِ، عِرَاكِ
بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم . بِمِثْلِهِ .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) এর সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.
২১৪৪, ই.সে. ২১৪৬[ক] )
২১৬৬
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَهَارُونُ
بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، وَأَحْمَدُ بْنُ عِيسَى، قَالُوا حَدَّثَنَا ابْنُ
وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي مَخْرَمَةُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ
سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " لَيْسَ فِي الْعَبْدِ صَدَقَةٌ إِلاَّ صَدَقَةُ الْفِطْرِ
" .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) এর সূত্রে রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, গোলামের জন্য (মনিবের উপর )
যাকাত নেই। তবে সদাক্বায়ে ফিতর আছে। (ই.ফা. ২১৪৫, ই.সে. ২১৪৭)
৩. অধ্যায়ঃ
যাকাত দেয়া এবং যাকাত দেয়া হতে নিবৃত থাকা
সম্পর্কে
২১৬৭
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ،
عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم عُمَرَ عَلَى الصَّدَقَةِ فَقِيلَ مَنَعَ ابْنُ جَمِيلٍ وَخَالِدُ بْنُ
الْوَلِيدِ وَالْعَبَّاسُ عَمُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا يَنْقِمُ ابْنُ جَمِيلٍ إِلاَّ
أَنَّهُ كَانَ فَقِيرًا فَأَغْنَاهُ اللَّهُ وَأَمَّا خَالِدٌ فَإِنَّكُمْ
تَظْلِمُونَ خَالِدًا قَدِ احْتَبَسَ أَدْرَاعَهُ وَأَعْتَادَهُ فِي سَبِيلِ
اللَّهِ وَأَمَّا الْعَبَّاسُ فَهِيَ عَلَىَّ وَمِثْلُهَا مَعَهَا " .
ثُمَّ قَالَ " يَا عُمَرُ أَمَا شَعَرْتَ أَنَّ عَمَّ الرَّجُلِ صِنْوُ
أَبِيهِ " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) 'উমার (রাঃ)-কে যাকাত আদায়ের জন্য পাঠালেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলা হলো, ইবনু জামীল এবং খালিদ ইবনু ওয়ালীদ
ও রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাচা 'আব্বাস (রাঃ) যাকাত
দিতে অস্বীকার করেছেন। এখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
ইবনু জামীল দরিদ্র ছিল আল্লাহ তাকে ধনী করে দিয়েছেন সে প্রতিশোধ সে নিচ্ছে। আর
খালিদ ইবনু ওয়ালীদের কাছে তোমরা যাকাত চেয়ে অবিচার করেছো। কারণ সে তার বর্ম এবং
সম্পদ আল্লাহর পথে ওয়াক্বফ করে রেখেছে। আমার চাচা 'আব্বাস, তার এ বছরের যাকাত ও
তার সমপরিমাণ আরও আমার জিম্মায়। অতঃপর তিনি বললেন, হে 'উমার! তুমি কি উপলব্ধি করছ
না যে, কোন ব্যক্তির চাচা তার পিতার সমতুল্য। (ই.ফা. ২১৪৬, ই.সে. ২১৪৮)
৪. অধ্যায়ঃ
সদাক্বাতুল ফিত্র বা ফিত্রার বর্ণনা
২১৬৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ
بْنِ قَعْنَبٍ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ، ح
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، - وَاللَّفْظُ لَهُ - قَالَ قَرَأْتُ عَلَى
مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَرَضَ زَكَاةَ الْفِطْرِ مِنْ رَمَضَانَ عَلَى النَّاسِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ
صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ عَلَى كُلِّ حُرٍّ أَوْ عَبْدٍ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى مِنَ
الْمُسْلِمِينَ .
ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মুসলিম দাস-দাসী এবং স্বাধীন পুরুষ ও মহিলা সকলের উপর এক সা' হিসেবে
খেজুর বা প্রত্যেক রমাযান মাসে সদাক্বায়ে ফিত্র নির্ধারণ করেছেন। (ই.ফা. ২১৪৭,
ই.সে. ২১৪৯)
২১৬৯
حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا
أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، - وَاللَّفْظُ لَهُ -
قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ عَنْ عُبَيْدِ
اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم زَكَاةَ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ عَلَى
كُلِّ عبد او حر صغير او كبير
ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক স্বাধীন বা ক্রীতদাস ব্যক্তি সে প্রাপ্তবয়স্ক হোক
বা অপ্রাপ্তবয়স্ক- সকলের উপরই এক সা' খেজুর বা সদাক্বায়ি ফিত্র নির্ধারণ করেছেন।
(ই.ফা. ২১৪৮, ই.সে. ২১৫০)
২১৭০
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ،
عُمَرَ قَالَ فَرَضَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صَدَقَةَ رَمَضَانَ عَلَى
الْحُرِّ وَالْعَبْدِ وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعًا
مِنْ شَعِيرٍ . قَالَ فَعَدَلَ النَّاسُ بِهِ نِصْفَ صَاعٍ مِنْ بُرٍّ .
ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আযাদ গোলাম, পুরুষ, স্ত্রী সবার উপর রমাযান মাসের ফিত্রা ফরয করে
দিয়েছেন। রাবী বলেন, এরপর কতক লোক অর্ধ সা' গমকে এর সমান করে নিয়েছে। (ই.ফা. ২১৪৯,
ই.সে. ২১৫১)
২১৭১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم أَمَرَ بِزَكَاةِ الْفِطْرِ صَاعٍ مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعٍ مِنْ
شَعِيرٍ . قَالَ ابْنُ عُمَرَ فَجَعَلَ النَّاسُ عِدْلَهُ مُدَّيْنِ مِنْ
حِنْطَةٍ .
'আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এক সা' খেজুর বা যব দিয়ে সদাক্বায়ি ফিত্রা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।
পরবর্তীতে লোকেরা দু' মুদ্দ গমের মূল্য এক সা' খেজুর বা যবের সমান ধরে নেয়। (ই.ফা.
২১৫০, ই.সে. ২১৫২)
২১৭২
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، أَخْبَرَنَا الضَّحَّاكُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَرَضَ
زَكَاةَ الْفِطْرِ مِنْ رَمَضَانَ عَلَى كُلِّ نَفْسٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ حُرٍّ
أَوْ عَبْدٍ أَوْ رَجُلٍ أَوِ امْرَأَةٍ صَغِيرٍ أَوْ كَبِيرٍ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ
أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ .
'আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এক সা' খেজুর বা যব রমাযানের পরে সদাক্বায়ি ফিত্রা ধার্য করেছেন- সে
(মুসলিম ব্যক্তি) স্বাধীন হোক বা ক্রীতদাস, পুরুষ বা মহিলা, ছোট বা বড় (অর্থাৎ
সকলকেই ফিত্রা দিতে হবে)। (ই.ফা. ২১৫১, ই.সে. ২১৫৩)
২১৭৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ
قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عِيَاضِ بْنِ، عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي سَرْحٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ
الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ كُنَّا نُخْرِجُ زَكَاةَ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ
أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ أَقِطٍ أَوْ
صَاعًا مِنْ زَبِيبٍ .
আবূ সা'ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা এক সা' খাদ্য অর্থাৎ গম, অথবা এক
সা' খেজুর বা এক সা' পনির বা এক সা' শুষ্ক আঙ্গুর সদাক্বায়ি ফিত্রা হিসেবে বের
করতাম। (ই.ফা. ২১৫২, ই.সে. ২১৫৪)
২১৭৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ
بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، - يَعْنِي ابْنَ قَيْسٍ - عَنْ عِيَاضِ، بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كُنَّا نُخْرِجُ إِذْ
كَانَ فِينَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم زَكَاةَ الْفِطْرِ عَنْ كُلِّ
صَغِيرٍ وَكَبِيرٍ حُرٍّ أَوْ مَمْلُوكٍ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ أَوْ صَاعًا مِنْ
أَقِطٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ
زَبِيبٍ فَلَمْ نَزَلْ نُخْرِجُهُ حَتَّى قَدِمَ عَلَيْنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ أَبِي
سُفْيَانَ حَاجًّا أَوْ مُعْتَمِرًا فَكَلَّمَ النَّاسَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَكَانَ
فِيمَا كَلَّمَ بِهِ النَّاسَ أَنْ قَالَ إِنِّي أُرَى أَنَّ مُدَّيْنِ مِنْ
سَمْرَاءِ الشَّامِ تَعْدِلُ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ فَأَخَذَ النَّاسُ بِذَلِكَ .
قَالَ أَبُو سَعِيدٍ فَأَمَّا أَنَا فَلاَ أَزَالُ أُخْرِجُهُ كَمَا كُنْتُ
أُخْرِجُهُ أَبَدًا مَا عِشْتُ .
আবূ সা'ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
জীবদ্দশায় আমরা ছোট, বড়, স্বাধীন, ক্রীতদাস- প্রত্যেকের পক্ষ থেকে এক সা' খাদ্য
(অর্থাৎ গম) বা এক সা' পনির, বা এক সা' যব বা এক সা' খেজুর বা এক সা' শুষ্ক আঙ্গুর
ফিত্রা হিসেবে বের করতাম। আমরা এভাবেই ফিত্রা আদায় করে আসছিলাম। শেষ পর্যন্ত যখন
মু'আবিয়াহ্ (রাঃ) হাজ্জ বা 'উমরার উদ্দেশে আমাদের মাঝে গমন করলেন, তিনি লোকদের
উদ্দেশে ওয়ায করলেন এবং বললেনঃ আমি জানি যে, সিরিয়ার দু' মুদ্দ লাল গম এক সা'
খেজুরের সমান। সুতরাং লোকেরা তার এ অভিমত গ্রহণ করল।
আবূ সা'ঈদ বলেন, কিন্তু আমি যতদিন জীবিত থাকব ততদিন পূর্বের ন্যায় যে পরিমাণে ও যে
নিয়মে দিচ্ছিলাম সেভাবেই দিতে থাকব। (ই.ফা. ২১৫৩, ই.সে. ২১৫৫)
২১৭৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أُمَيَّةَ،
قَالَ أَخْبَرَنِي عِياضُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي سَرْحٍ،
أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ كُنَّا نُخْرِجُ زَكَاةَ
الْفِطْرِ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِينَا عَنْ كُلِّ صَغِيرٍ
وَكَبِيرٍ حُرٍّ وَمَمْلُوكٍ مِنْ ثَلاَثَةِ أَصْنَافٍ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ صَاعًا
مِنْ أَقِطٍ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ فَلَمْ نَزَلْ نُخْرِجُهُ كَذَلِكَ حَتَّى كَانَ
مُعَاوِيَةُ فَرَأَى أَنَّ مُدَّيْنِ مِنْ بُرٍّ تَعْدِلُ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ .
قَالَ أَبُو سَعِيدٍ فَأَمَّا أَنَا فَلاَ أَزَالُ أُخْرِجُهُ كَذَلِكَ .
আবূ সা'ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাঝে বর্তমান
থাকা অবস্থায় আমরা ছোট-বড়, আযাদ-গোলাম প্রত্যেকের পক্ষ থেকে তিন ধরনের জিনিস যথা-
এক সা' খেজুর অথবা এক সা' পনির অথবা এক সা' বার্লি (যব) দিয়ে ফিত্রা আদায় করতাম।
আমরা এভাবেই ফিত্রা আদায় করে আসছিলাম। অতঃপর মু'আবিয়াহ্ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে রায়
দিলেন যে, দু'মুদ্দ গম এক সা' খেজুরের সমান (বিনিময়ের দিক থেকে)।
আবূ সা'ঈদ (রাঃ) বলেন, কিন্তু আমি পূর্বের নিয়মেই ফিত্রা আদায় করে আসছি। (ই.ফা.
২১৫৪, ই.সে. ২১৫৭)
২১৭৬
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنِ الْحَارِثِ
بْنِ، عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي ذُبَابٍ عَنْ عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ أَبِي سَرْحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كُنَّا نُخْرِجُ
زَكَاةَ الْفِطْرِ مِنْ ثَلاَثَةِ أَصْنَافٍ الأَقِطِ وَالتَّمْرِ وَالشَّعِيرِ .
আবূ সা'ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা তিন প্রকারের জিনিস
যথা- পনির, খেজুর ও বার্লি দিয়ে ফিত্রা আদায় করতাম। (ই.ফা. ২১৫৫, ই.সে. ২১৫৮)
২১৭৭
وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ،
حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عِيَاضِ، بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي سَرْحٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ
مُعَاوِيَةَ، لَمَّا جَعَلَ نِصْفَ الصَّاعِ مِنَ الْحِنْطَةِ عِدْلَ صَاعٍ مِنْ
تَمْرٍ أَنْكَرَ ذَلِكَ أَبُو سَعِيدٍ وَقَالَ لاَ أُخْرِجُ فِيهَا إِلاَّ الَّذِي
كُنْتُ أُخْرِجُ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَاعًا مِنْ
تَمْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ زَبِيبٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ
أَقِطٍ .
আবূ সা'ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মু'আবিয়াহ্ (রাঃ) এক সা' খেজুরের
পরিবর্তে অর্ধ সা' গম (ফিত্রার জন্য) নির্ধারণ করলে আবূ সা'ঈদ (রাঃ) এর বিরোধিতা
করলেন এবং বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় যেভাবে এক
সা' খেজুর বা শুকনা আঙ্গুর বা যব বা পনির দিতাম এখনো আমি সে পরিমাণেই দিব। (ই.ফা.
২১৫৬, ই.সে. ২১৫৬)
৫. অধ্যায়ঃ
ঈদুল ফিত্রের সলাতের পূর্বে যাকাতুল ফিত্র
আদায়ের নির্দেশ
২১৭৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا أَبُو خَيْثَمَةَ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ
ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِزَكَاةِ
الْفِطْرِ أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ .
ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) লোকদেরকে (ঈদের) সলাতের উদ্দেশে বের হওয়ার পূর্বে ফিত্রা আদায়ের নির্দেশ
দিয়েছেন। (ই.ফা. ২১৫৭, ই.সে. ২১৫৯)
২১৭৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، أَخْبَرَنَا الضَّحَّاكُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ
عَبْدِ، اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ
بِإِخْرَاجِ زَكَاةِ الْفِطْرِ أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى
الصَّلاَةِ .
'আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ঈদের সলাতের উদ্দেশে বের হওয়ার পূর্বেই সদাক্বায়ি ফিত্র পরিশোধ করার
নির্দেশ দিয়েছেন। (ই.ফা. ২১৫৮, ই.সে. ২১৬০)
৬. অধ্যায়ঃ
যাকাত আদায় করতে বাধাদানকারীর অপরাধ
২১৮০
وَحَدَّثَنِي سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا حَفْصٌ، - يَعْنِي ابْنَ مَيْسَرَةَ الصَّنْعَانِيَّ - عَنْ زَيْدِ
بْنِ أَسْلَمَ، أَنَّ أَبَا صَالِحٍ، ذَكْوَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا
هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ
صَاحِبِ ذَهَبٍ وَلاَ فِضَّةٍ لاَ يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا إِلاَّ إِذَا كَانَ
يَوْمُ الْقِيَامَةِ صُفِّحَتْ لَهُ صَفَائِحَ مِنْ نَارٍ فَأُحْمِيَ عَلَيْهَا
فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَيُكْوَى بِهَا جَنْبُهُ وَجَبِينُهُ وَظَهْرُهُ كُلَّمَا
بَرَدَتْ أُعِيدَتْ لَهُ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ
حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ الْعِبَادِ فَيُرَى سَبِيلُهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ
وَإِمَّا إِلَى النَّارِ " . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَالإِبِلُ قَالَ
" وَلاَ صَاحِبُ إِبِلٍ لاَ يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا وَمِنْ حَقِّهَا حَلَبُهَا
يَوْمَ وِرْدِهَا إِلاَّ إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ
قَرْقَرٍ أَوْفَرَ مَا كَانَتْ لاَ يَفْقِدُ مِنَهَا فَصِيلاً وَاحِدًا تَطَؤُهُ
بِأَخْفَافِهَا وَتَعَضُّهُ بِأَفْوَاهِهَا كُلَّمَا مَرَّ عَلَيْهِ أُولاَهَا
رُدَّ عَلَيْهِ أُخْرَاهَا فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ
حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ الْعِبَادِ فَيُرَى سَبِيلُهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ
وَإِمَّا إِلَى النَّارِ " . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَالْبَقَرُ
وَالْغَنَمُ قَالَ " وَلاَ صَاحِبُ بَقَرٍ وَلاَ غَنَمٍ لاَ يُؤَدِّي
مِنْهَا حَقَّهَا إِلاَّ إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ
قَرْقَرٍ لاَ يَفْقِدُ مِنْهَا شَيْئًا لَيْسَ فِيهَا عَقْصَاءُ وَلاَ جَلْحَاءُ
وَلاَ عَضْبَاءُ تَنْطِحُهُ بِقُرُونِهَا وَتَطَؤُهُ بِأَظْلاَفِهَا كُلَّمَا
مَرَّ عَلَيْهِ أُولاَهَا رُدَّ عَلَيْهِ أُخْرَاهَا فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ
خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ الْعِبَادِ فَيُرَى سَبِيلُهُ
إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ " . قِيلَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ فَالْخَيْلُ قَالَ " الْخَيْلُ ثَلاَثَةٌ هِيَ لِرَجُلٍ وِزْرٌ
وَهِيَ لِرَجُلٍ سِتْرٌ وَهِيَ لِرَجُلٍ أَجْرٌ فَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ وِزْرٌ
فَرَجُلٌ رَبَطَهَا رِيَاءً وَفَخْرًا وَنِوَاءً عَلَى أَهْلِ الإِسْلاَمِ فَهِيَ
لَهُ وِزْرٌ وَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ سِتْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِي سَبِيلِ
اللَّهِ ثُمَّ لَمْ يَنْسَ حَقَّ اللَّهِ فِي ظُهُورِهَا وَلاَ رِقَابِهَا فَهِيَ
لَهُ سِتْرٌ وَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ أَجْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِي سَبِيلِ
اللَّهِ لأَهْلِ الإِسْلاَمِ فِي مَرْجٍ وَرَوْضَةٍ فَمَا أَكَلَتْ مِنْ ذَلِكَ
الْمَرْجِ أَوِ الرَّوْضَةِ مِنْ شَىْءٍ إِلاَّ كُتِبَ لَهُ عَدَدَ مَا أَكَلَتْ
حَسَنَاتٌ وَكُتِبَ لَهُ عَدَدَ أَرْوَاثِهَا وَأَبْوَالِهَا حَسَنَاتٌ وَلاَ
تَقْطَعُ طِوَلَهَا فَاسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ إِلاَّ كَتَبَ اللَّهُ
لَهُ عَدَدَ آثَارِهَا وَأَرْوَاثِهَا حَسَنَاتٍ وَلاَ مَرَّ بِهَا صَاحِبُهَا
عَلَى نَهْرٍ فَشَرِبَتْ مِنْهُ وَلاَ يُرِيدُ أَنْ يَسْقِيَهَا إِلاَّ كَتَبَ
اللَّهُ لَهُ عَدَدَ مَا شَرِبَتْ حَسَنَاتٍ " . قِيلَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ فَالْحُمُرُ قَالَ " مَا أُنْزِلَ عَلَىَّ فِي الْحُمُرِ شَىْءٌ
إِلاَّ هَذِهِ الآيَةُ الْفَاذَّةُ الْجَامِعَةُ { فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ
ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ * وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ}
" .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
সোনা-রূপার অধিকারী যেসব লোক এ হাক্ব (যাকাত) আদায় করে না, ক্বিয়ামাতের দিন তার ঐ
সোনা-রূপা দিয়ে তার জন্য আগুনের অনেক পাত তৈরী করা হবে, অতঃপর তা জাহান্নামের
আগুনে গরম করা হবে। অতঃপর তা দিয়ে কপালদেশ ও পার্শ্বদেশ ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। যখনই
ঠাণ্ডা হয়ে আসবে পুনরায় তা উত্তপ্ত করা হবে। এরূপ করা হবে এমন একদিন যার পরিমাণ
হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। আর তার এরূপ শাস্তি লোকদের বিচার শেষ না হওয়া
পর্যন্ত চলতে থাকবে। অতঃপর তাদের কেউ পথ ধরবে জান্নাতের আর জাহান্নামের দিকে।
জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! উটের (মালিকের) কী অবস্থা হবে? তিনি বললেন, যে
উটের মালিক তার উটের হাক্ব আদায় করবে না তার উটের হাক্বগুলোর মধ্যে পানি পানের
তারিখে তার দুধ দোহন করে অন্যদেরকে দান করাও একটি হাক্ব, যখন ক্বিয়ামাতের দিন আসবে
তাকে এক সমতল ময়দানে উপুড় করে ফেলা হবে। অতঃপর তার উটগুলো মোটাতাজা হয়ে আসবে। এর
বাচ্চাগুলোও এদের অনুসরণ করবে। এগুলো আপন আপন খুর দ্বারা তাকে পায়ে মাড়াতে থাকবে
এবং মুখ দ্বারা কামড়াতে থাকবে। এভাবে যখন একটি পশু তাকে অতিক্রম করবে অপরটি অগ্রসর
হবে। সারাদিন তাকে এরূপ শাস্তি দেয়া হবে। এ দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের
সমান। অতঃপর বান্দাদের বিচার শেষ হবে। তাদের কেউ জান্নাতের দিকে আর কেউ
জাহান্নামের দিকে পথ ধরবে।
অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো- হে আল্লাহর রসূল! গরু-ছাগলের (মালিকদের) কী অবস্থা হবে?
উত্তরে তিনি বললেন, যেসব গরু ছাগলের মালিক এর হাক্ব আদায় করবে না ক্বিয়ামাতের দিন
তাকে এক সমতল ভূমিতে উপুর করে ফেলে রাখা হবে। আর তার সে সব গরু ছাগল তাকে শিং দিয়ে
আঘাত করতে থাকবে এবং খুর দিয়ে মাড়াতে থাকবে। সেদিন তার একটি গরু বা ছাগলের শিং
বাঁকা বা শিং ভাঙ্গা থাকবে না এবং তাকে মাড়ানোর ব্যাপারে একটিও অনুপস্থিত দেখতে
পাবে না। যখন এদের প্রথমটি অতিক্রম করবে দ্বিতীয়টা এর পিছে পিছে এসে যাবে। সারাদিন
তাকে এভাবে পিষা হবে। এ দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অতঃপর
বান্দাদের বিচার শেষ হবে এবং তাদের কেউ জান্নাতের দিকে আর কেউ জাহান্নামের দিকে পথ
ধরবে।
অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! ঘোড়ার (মালিকের) কী অবস্থা হবে? তিনি
(উত্তরে) বললেন, ঘোড়া তিন প্রকারের- (ক) যে ঘোড়া তার মালিকের জন্য গুনাহের কারণ
হয়, (খ) যে ঘোড়া তার মালিকের পক্ষে আবরণ স্বরূপ এবং (গ) যে ঘোড়া মালিকের জন্য
সাওয়াবের কারণ স্বরূপ। বস্তুতঃ সে ঘোড়াই তার মালিকের জন্য বোঝা বা গুনাহের কারণ
হবে, যা সে লোক দেখানোর জন্য অহংকার প্রকাশের জন্য এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুতা
করার উদ্দেশে পোষে। আর যে ব্যক্তি তার ঘোড়াকে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য পোষে
এবং এর পিঠে সওয়ার হওয়া এবং খাবার ও ঘাস দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহর হাক্ব ভুলে না, এ
ঘোড়া তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখার জন্য আবরণ হবে।
আর যে ব্যক্তি মুসলিমদের সাহায্যের জন্য আল্লাহর রাস্তায় ঘোড়া পোষে এবং কোন
চরণভূমি বা ঘাসের বাগানে লালন পালন করতে দেয় তার এ ঘোড়া তার জন্য সাওয়াবের কারণ
হবে। তার ঘোড়া চারণভূমি অথবা বাগানে যা কিছু খাবে তার সমপরিমাণ তার জন্য সাওয়াব
লেখা হবে। এমনকি এর গোবর ও প্রস্রাবে সাওয়াব লেখা যাবে। আর যদি তা রশি ছিঁড়ে একটি
বা দু'টি মাঠেও বিচরণ করে তাহলে তার পদচিহ্ন ও গোবরের সমপরিমাণ নেকী তার জন্য লেখা
হবে। এছাড়া মালিক যদি কোন নদীর তীরে নিয়ে যায়- আর সে নদী থেকে পানি পান করে অথচ
তাকে পানি পান করানোর ইচ্ছা মালিকের ছিল না তথাপি পানির পরিমাণ তার 'আমালনামায়
সাওয়াব লেখা হবে।
অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! গাধা সম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন, গাধা
সম্পর্কে কোন আয়াত আমার কাছে অবতীর্ণ হয়নি। তবে ব্যাপক অর্থবোধক এ আয়াতটি আমার উপর
অবতীর্ণ হয়েছে, যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ একটি ভাল কাজ করবে সে তার শুভ প্রতিফল পাবে
আর যে এক অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করবে সে তার মন্দফল ভোগ করবে (অর্থাৎ আলোচ্য আয়াত
দ্বারা বুঝা যায় যে, গাধার যাকাত দিলে তারও সাওয়াব পাওয়া যাবে।) (ই.ফা. ২১৫৯,
ই.সে. ২১৬১)
২১৮১
وَحَدَّثَنِي يُونُسُ بْنُ عَبْدِ
الأَعْلَى الصَّدَفِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي
هِشَامُ، بْنُ سَعْدٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ بِمَعْنَى
حَدِيثِ حَفْصِ بْنِ مَيْسَرَةَ إِلَى آخِرِهِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ " مَا
مِنْ صَاحِبِ إِبِلٍ لاَ يُؤَدِّي حَقَّهَا " . وَلَمْ يَقُلْ "
مِنْهَا حَقَّهَا " . وَذَكَرَ فِيهِ " لاَ يَفْقِدُ مِنْهَا
فَصِيلاً وَاحِدًا " . وَقَالَ " يُكْوَى بِهَا جَنْبَاهُ
وَجَبْهَتُهُ وَظَهْرُهُ " .
যায়দ ইবনু আসলাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি এ সূত্রে হাফস্ ইবনু মায়সারাহ্
কর্তৃক বর্ণিত (উপরের) হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। মায়সারার হাদীসের
সর্বশেষ মর্মানুযায়ী তিনি বলেছেন, (আরবী) কিন্তু তিনি (আরবী) বলেননি এবং এ হাদীসে
(আরবী) উল্লেখ করেছেন এবং (আরবী) বলেছেন। এতে আরো উল্লেখ আছে "উটের একটি
দুধের বাচ্চাও যাকাতের হিসাব থেকে বাদ যাবে না।" এ সূত্রে আরো আছে, সঞ্চিত
সোনা-রূপা গরম করে তা দিয়ে তার উভয় পার্শ্বদেশ, কপাল ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। (ই.ফা.
২১৬০, ই.সে. ২১৬২)
২১৮২
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
الْمَلِكِ الأُمَوِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ الْمُخْتَارِ،
حَدَّثَنَا سُهَيْلُ، بْنُ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ صَاحِبِ كَنْزٍ
لاَ يُؤَدِّي زَكَاتَهُ إِلاَّ أُحْمِيَ عَلَيْهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَيُجْعَلُ
صَفَائِحَ فَيُكْوَى بِهَا جَنْبَاهُ وَجَبِينُهُ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَ
عِبَادِهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ ثُمَّ يُرَى
سَبِيلَهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ وَمَا مِنْ صَاحِبِ
إِبِلٍ لاَ يُؤَدِّي زَكَاتَهَا إِلاَّ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ كَأَوْفَرِ
مَا كَانَتْ تَسْتَنُّ عَلَيْهِ كُلَّمَا مَضَى عَلَيْهِ أُخْرَاهَا رُدَّتْ
عَلَيْهِ أُولاَهَا حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَ عِبَادِهِ فِي يَوْمٍ كَانَ
مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ ثُمَّ يُرَى سَبِيلَهُ إِمَّا إِلَى
الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ وَمَا مِنْ صَاحِبِ غَنَمٍ لاَ يُؤَدِّي
زَكَاتَهَا إِلاَّ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ كَأَوْفَرِ مَا كَانَتْ
فَتَطَؤُهُ بِأَظْلاَفِهَا وَتَنْطِحُهُ بِقُرُونِهَا لَيْسَ فِيهَا عَقْصَاءُ
وَلاَ جَلْحَاءُ كُلَّمَا مَضَى عَلَيْهِ أُخْرَاهَا رُدَّتْ عَلَيْهِ أُولاَهَا
حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَ عِبَادِهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ
أَلْفَ سَنَةٍ مِمَّا تَعُدُّونَ ثُمَّ يُرَى سَبِيلَهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ
وَإِمَّا إِلَى النَّارِ " . قَالَ سُهَيْلٌ فَلاَ أَدْرِي أَذَكَرَ
الْبَقَرَ أَمْ لاَ . قَالُوا فَالْخَيْلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ "
الْخَيْلُ فِي نَوَاصِيهَا - أَوْ قَالَ - الْخَيْلُ مَعْقُودٌ فِي نَوَاصِيهَا -
قَالَ سُهَيْلٌ أَنَا أَشُكُّ - الْخَيْرُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ الْخَيْلُ
ثَلاَثَةٌ فَهْىَ لِرَجُلٍ أَجْرٌ وَلِرَجُلٍ سِتْرٌ وَلِرَجُلٍ وِزْرٌ فَأَمَّا
الَّتِي هِيَ لَهُ أَجْرٌ فَالرَّجُلُ يَتَّخِذُهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ
وَيُعِدُّهَا لَهُ فَلاَ تُغَيِّبُ شَيْئًا فِي بُطُونِهَا إِلاَّ كَتَبَ اللَّهُ
لَهُ أَجْرًا وَلَوْ رَعَاهَا فِي مَرْجٍ مَا أَكَلَتْ مِنْ شَىْءٍ إِلاَّ كَتَبَ
اللَّهُ لَهُ بِهَا أَجْرًا وَلَوْ سَقَاهَا مِنْ نَهْرٍ كَانَ لَهُ بِكُلِّ
قَطْرَةٍ تُغَيِّبُهَا فِي بُطُونِهَا أَجْرٌ - حَتَّى ذَكَرَ الأَجْرَ فِي
أَبْوَالِهَا وَأَرْوَاثِهَا - وَلَوِ اسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ كُتِبَ
لَهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ تَخْطُوهَا أَجْرٌ وَأَمَّا الَّذِي هِيَ لَهُ سِتْرٌ
فَالرَّجُلُ يَتَّخِذُهَا تَكَرُّمًا وَتَجَمُّلاً وَلاَ يَنْسَى حَقَّ ظُهُورِهَا
وَبُطُونِهَا فِي عُسْرِهَا وَيُسْرِهَا وَأَمَّا الَّذِي عَلَيْهِ وِزْرٌ
فَالَّذِي يَتَّخِذُهَا أَشَرًا وَبَطَرًا وَبَذَخًا وَرِيَاءَ النَّاسِ فَذَاكَ
الَّذِي هِيَ عَلَيْهِ وِزْرٌ " . قَالُوا فَالْحُمُرُ يَا رَسُولَ
اللَّهِ قَالَ " مَا أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَىَّ فِيهَا شَيْئًا إِلاَّ
هَذِهِ الآيَةَ الْجَامِعَةَ الْفَاذَّةَ { فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ
خَيْرًا يَرَهُ * وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ} " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
যে সব ধনাঢ্য ব্যক্তি নিজেদের ধন-সম্পদের যাকাত আদায় করে না, ক্বিয়ামাতের দিন
তাদের এ সম্পদ জাহান্নামের আগুনে গরম করে পাত তৈরী করা হবে এবং তা দিয়ে তাদের
দেহের উভয় পার্শ্ব ও ললাটে দাগ দেয়া হবে। তার শাস্তি বান্দাদের বিচার শেষ না হওয়া
পর্যন্ত চলতে থাকবে। এ সময়কার একটি দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান।
অতঃপর কেউ তার পথ ধরবে জান্নাতের দিকে আর কেউ জাহান্নামের দিকে। আর যে সব উটের
মালিকেরা যাকাত আদায় করবে না তাদেরকে একটি মাঠে উপুড় করে শুইয়ে রাখা হবে এবং ঐ সব
উট স্থুলদেহ নিয়ে আসবে যেমনটি তারা পৃথিবীতে ছিল এবং এগুলো তাদের পা দিয়ে মাড়াতে
মাড়াতে অগ্রসর হবে। এভাবে যখনই সে দলটি অতিক্রম করবে পুনরায় এর প্রথম দল এসে
পৌঁছবে। এগুলো এভাবে তাদেরকে মাড়াতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা তাঁর
বান্দাদের বিচার শেষ না করবেন। আর এ কাজ এমন একদিন করা হবে, যা পঞ্চাশ হাজার বছরের
সমান হবে। অতঃপর কেউ তার পথ ধরবে- হয় জান্নাতের দিকে না হয় জাহান্নামের দিকে। আর
যে সব ছাগলের মালিকরা তার যাকাত আদায় করবে না, তাদেরকে একটি সমতল মাঠে উপুড় করে
ফেলে রাখা হবে এবং তার সে ছাগলগুলো যেমনটি পৃথিবীতে ছিল তার চেয়ে মোটা তাজা
অবস্থায় এসে তাদের খুর দিয়ে দলিত করতে এবং শিং দিয়ে আঘাত করতে করতে অগ্রসর হবে।
অথচ সেদিন কোন একটি শিং বাঁকা, শিংহীন বা শিং ভাঙ্গা হবে না। যখন এদের শেষ দল
অতিক্রম করবে পুনরায় প্রথম দল এসে পৌঁছবে। আর এভাবে ‘আযাব চলতে থাকবে যতক্ষণ না
আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদের বিচার সমাপ্ত করেন। এ শাস্তি এমন দিনে হবে যার পরিমাণ
হবে তোমাদের হিসাবানুসারে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অতঃপর কেউ তার পথ ধরবে
জান্নাতের দিকে আর কেউ জাহান্নামের দিকে। বর্ণনাকারী সুহায়ল বলেন, তিনি গরুর কথা
বলেছেন কিনা তা আমি জানি না। এবার সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! ঘোড়া
সম্পর্কে কী হবে? উত্তরে তিনি বললেন, (আরবী) ঘোড়ার ললাটে কল্যাণ রয়েছে; অথবা
বললেন, (আরবী) ঘোড়া তার কপালের সাথে আবদ্ধ করা হয়েছে। বর্ণনাকারী সুহায়ল বলেন,
আমার সন্দেহ হচ্ছে তিনি হয়ত বলেছেনঃ (আরবী) ঘোড়ার মধ্যে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত কল্যাণ
থাকবে। অতঃপর তিনি বলেন, ঘোড়া তিন প্রকার। ঘোড়া কারো জন্য গুনাহের কারণ, কারো জন্য
আবরণ, আবার কারো জন্য সাওয়াবের বিষয়। ঘোড়া সাওয়াবের কারণ হবে সে ব্যক্তির জন্য যে
আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশে পোষে এবং এজন্য প্রস্তুত রাখে। এ ঘোড়া যা কিছু খাবে
বা পান করবে তার মালিকের জন্য সাওয়াবের কারণ হবে। যদি সে এটাকে কোন মাঠে চরায়
তাহলে এ ঘোড়া যা খাবে তা তার ‘আমালনামায় সাওয়াব হিসেবে লেখা হবে। আর যদি কোন
জলাশয়ে এ ঘোড়া পানি পান করে তবে এর প্রতি ফোঁটা পানির বিনিময়ে তার জন্য সাওয়াব
লেখা হবে। এমনকি এর প্রস্রাব ও পায়খানার পরিবর্তেও মালিক সাওয়াব পাবে বলে উল্লেখ
করেছেন। আর যদি এটি দু' একটি টিলা অতিক্রম করে তাহলে প্রত্যেক কদম অতিক্রমের
বিনিময়েও সাওয়াব লেখা হবে। আর সেই ঘোড়া মালিকের জন্য আবরণ স্বরূপ যা সে অপরের
উপকার করার জন্য এবং নিজের সৌন্দর্যের জন্য লালন পালন করেছে এবং সে সকল সময়ই এর
পেট ও পিঠের হাক্ব আদায় করেছে (অর্থাৎ ঘোড়ার পানাহারের প্রতি যত্নবান ছিল এবং
বন্ধু ও গরীবদেরকে মাঝে মাঝে চড়তে ও ব্যবহার করতে দিয়েছে)। আর যে ঘোড়া তার মালিকের
জন্য গুনাহের কারণ হবে তা হলো- যে একে লোক দেখানো, গর্ব এবং অসৎ উদ্দেশ্য
চরিতার্থের জন্য লালন পালন করেছে। অতঃপর সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! গাধা
সম্পর্কে কী হবে? উত্তরে তিনি বললেন, গাধা সম্পর্কে আমার কাছে কোন আয়াত নাযিল
হয়নি। তবে এ অতুলনীয় ও ব্যাপক অর্থবোধক আয়াতটি নাযিল হয়েছে, “যে ব্যক্তি অণু
পরিমাণ ভাল কাজ করবে সে তার প্রতিদান পাবে, আর যে ব্যক্তি এক অণু পরিমান মন্দ কাজ
করবে সেও তার প্রতিফল ভোগ করবে"- (সূরাহ্ যিলযাল ৯৯: ৭-৮)। (ই.ফা. ২১৬১,
ই.সে. ২১৬৩)
(আরবী)
২১৮৩
وَحَدَّثَنَاهُ قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، - يَعْنِي الدَّرَاوَرْدِيَّ - عَنْ سُهَيْلٍ،
بِهَذَا الإِسْنَادِ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ
সুহায়ল (রাঃ) থেকে এ সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ২১৬২,
ই.সে. ২১৬৪)
২১৮৪
وَحَدَّثَنِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ بَزِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ
الْقَاسِمِ، حَدَّثَنَا سُهَيْلُ بْنُ أَبِي صَالِحٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ
بَدَلَ عَقْصَاءُ عَضْبَاءُ وَقَالَ " فَيُكْوَى بِهَا جَنْبُهُ وَظَهْرُهُ
" . وَلَمْ يَذْكُرْ جَبِينُهُ
সুহায়ল ইবনু আবূ সালিহ (রহঃ) থেকে এ সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি (আরবী)
এর স্থলে (আরবী) বলেছেন এবং ললাটে দাগ দেয়ার কথা উল্লেখ করা ছাড়া কেবল
"পার্শ্ব এবং পার্শ্ব দাগ দেয়া হবে" কথাটি উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ২১৬৩,
ই.সে. ২১৬৫)
২১৮৫
وَحَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ
الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ،
أَنَّ بُكَيْرًا، حَدَّثَهُ عَنْ ذَكْوَانَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " إِذَا لَمْ يُؤَدِّ الْمَرْءُ
حَقَّ اللَّهِ أَوِ الصَّدَقَةَ فِي إِبِلِهِ " . وَسَاقَ الْحَدِيثَ
بِنَحْوِ حَدِيثِ سُهَيْلٍ عَنْ أَبِيهِ .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ "যখন কোন ব্যক্তি তার আল্লাহর হাক্ব অথবা তার উটের
সদাক্বাহ্ (যাকাত) আদায় করবেন না ..... অবশিষ্ট বর্ণনা সুহায়ল থেকে তাঁর পিতার
সূত্রে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ২১৬৪, ই.সে. ২১৬৬)
২১৮৬
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، -
وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ،
أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ، عَبْدِ اللَّهِ
الأَنْصَارِيَّ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" مَا مِنْ صَاحِبِ إِبِلٍ لاَ يَفْعَلُ فِيهَا حَقَّهَا إِلاَّ جَاءَتْ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرَ مَا كَانَتْ قَطُّ وَقَعَدَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ
تَسْتَنُّ عَلَيْهِ بِقَوَائِمِهَا وَأَخْفَافِهَا وَلاَ صَاحِبِ بَقَرٍ لاَ
يَفْعَلُ فِيهَا حَقَّهَا إِلاَّ جَاءَتْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرَ مَا
كَانَتْ وَقَعَدَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ تَنْطِحُهُ بِقُرُونِهَا وَتَطَؤُهُ
بِقَوَائِمِهَا وَلاَ صَاحِبِ غَنَمٍ لاَ يَفْعَلُ فِيهَا حَقَّهَا إِلاَّ جَاءَتْ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرَ مَا كَانَتْ وَقَعَدَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ
تَنْطِحُهُ بِقُرُونِهَا وَتَطَؤُهُ بِأَظْلاَفِهَا لَيْسَ فِيهَا جَمَّاءُ وَلاَ
مُنْكَسِرٌ قَرْنُهَا وَلاَ صَاحِبِ كَنْزٍ لاَ يَفْعَلُ فِيهِ حَقَّهُ إِلاَّ
جَاءَ كَنْزُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا أَقْرَعَ يَتْبَعُهُ فَاتِحًا فَاهُ
فَإِذَا أَتَاهُ فَرَّ مِنْهُ فَيُنَادِيهِ خُذْ كَنْزَكَ الَّذِي خَبَأْتَهُ
فَأَنَا عَنْهُ غَنِيٌّ فَإِذَا رَأَى أَنْ لاَ بُدَّ مِنْهُ سَلَكَ يَدَهُ فِي
فِيهِ فَيَقْضَمُهَا قَضْمَ الْفَحْلِ " . قَالَ أَبُو الزُّبَيْرِ
سَمِعْتُ عُبَيْدَ بْنَ عُمَيْرٍ يَقُولُ هَذَا الْقَوْلَ ثُمَّ سَأَلْنَا جَابِرَ
بْنَ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ مِثْلَ قَوْلِ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ
. وَقَالَ أَبُو الزُّبَيْرِ سَمِعْتُ عُبَيْدَ بْنَ عُمَيْرٍ يَقُولُ قَالَ
رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا حَقُّ الإِبِلِ قَالَ " حَلَبُهَا عَلَى
الْمَاءِ وَإِعَارَةُ دَلْوِهَا وَإِعَارَةُ فَحْلِهَا وَمَنِيحَتُهَا وَحَمْلٌ
عَلَيْهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ " .
জাবির ইবনু 'আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ
উটের যে কোন মালিক তার হাক্ব (যাকাত) আদায় করবে না, ক্বিয়ামাতের দিন সে উপস্থিত
হবে এবং উটগুলোও কয়েকগুন বড় হয়ে আসবে। অতঃপর তাকে এক সমতল মাঠে উপুড় করে ফেলা হবে।
এসব পশু নিজ নিজ পা ও খুর দিয়ে তাকে পদদলিত করতে থাকবে। আর যে সব গরুর মালিক এর
হাক্ব (যাকাত) আদায় করবে না, ক্বিয়ামাতের দিন ঐ গরুগুলো অনেক মোটা তাজা হয়ে আসবে।
তাকে এক সমতল মাঠে ফেলে এগুলো তাকে শিং দিয়ে আঘাত করবে এবং পা দিয়ে মাড়াবে। আর যে
সব ছাগলের মালিক এর হাক্ব আদায় করবে না ক্বিয়ামাতের দিন এগুলো অনেক অনেকগুন বড় দেহ
নিয়ে এসে তাকে এক সমতল ময়দানে ফেলে শিং মারতে থাকবে এবং পা দিয়ে মারতে থাকবে আর
এগুলোর কোন একটিও শিংহীন বা শিং ভাঙ্গা হবে না। যে সব ধনাগারের মালিক এর হাক্ব
আদায় করবে না ক্বিয়ামাতের দিন তার গচ্ছিত সম্পদ একটি টাক মাথার বিষধর অজগর সাপ হয়ে
মুখ হাঁ করে তার পিছু ধাওয়া করবে। মালিক পালাবার জন্য দৌড়াতে থাকবে আর পিছন থেকে ঐ
সাপ তাকে ডেকে ডেকে বলতে থাকবে- তোমার গচ্ছিত সম্পদ নিয়ে যাও। কারণ এগুলো আমার
প্রয়োজন নেই। অতঃপর যখন সে (মালিক) দেখবে এ সাপ তাকে ছাড়ছে না, তখন সে এর মুখে
নিজের হাত ঢুকিয়ে দিবে। সাপ তার হাত উটের মত চিবাতে থাকবে। যুবায়র (রাঃ) বলেন, আমি
'উবায়দুল্লাহ ইবনু 'উমায়রকেও এই একই কথা বলতে শুনেছি। অতঃপর আমরা জাবির ইবনু
'আবদুল্লাহকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও 'উবায়দ বিন উমায়রর অনুরূপ কথা
বললেন।
আবূ যুবায়র বলেন, আমি 'উবায়দ ইবনু 'উমায়রকে বলতে শুনেছি- এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল,
'হে আল্লাহর রসূল! উটের হাক্ব কী? তিনি বললেনঃ পানির কাছে বসে দুধ দোহন করা, তার
পানির বালতি ধার দেয়া, আর প্রয়োজনের জন্য উট চাইলে তাও ধার দেয়া, এর বীর্য (বীজ)
দেয়া এবং আল্লাহর পথে এর পিঠে অপর লোকদেরকে (জিহাদের জন্য) আরোহণ করতে দেয়া।
(ই.ফা. ২১৬৫, ই.সে. ২১৬৭)
২১৮৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ، عَنْ أَبِي
الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " مَا مِنْ صَاحِبِ إِبِلٍ وَلاَ بَقَرٍ وَلاَ غَنَمٍ لاَ
يُؤَدِّي حَقَّهَا إِلاَّ أُقْعِدَ لَهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِقَاعٍ قَرْقَرٍ
تَطَؤُهُ ذَاتُ الظِّلْفِ بِظِلْفِهَا وَتَنْطِحُهُ ذَاتُ الْقَرْنِ بِقَرْنِهَا
لَيْسَ فِيهَا يَوْمَئِذٍ جَمَّاءُ وَلاَ مَكْسُورَةُ الْقَرْنِ " .
قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا حَقُّهَا قَالَ " إِطْرَاقُ فَحْلِهَا
وَإِعَارَةُ دَلْوِهَا وَمَنِيحَتُهَا وَحَلَبُهَا عَلَى الْمَاءِ وَحَمْلٌ
عَلَيْهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلاَ مِنْ صَاحِبِ مَالٍ لاَ يُؤَدِّي زَكَاتَهُ
إِلاَّ تَحَوَّلَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا أَقْرَعَ يَتْبَعُ صَاحِبَهُ
حَيْثُمَا ذَهَبَ وَهُوَ يَفِرُّ مِنْهُ وَيُقَالُ هَذَا مَالُكَ الَّذِي كُنْتَ
تَبْخَلُ بِهِ فَإِذَا رَأَى أَنَّهُ لاَ بُدَّ مِنْهُ أَدْخَلَ يَدَهُ فِي فِيهِ
فَجَعَلَ يَقْضَمُهَا كَمَا يَقْضَمُ الْفَحْلُ " .
জাবির ইবনু ‘‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যে সব উট, গরু ও ছাগলের মালিক এর হাক্ব আদায় করবে না ক্বিয়ামাতের
দিন তাকে এক সমতল মাঠে উপুড় করে ফেলে রাখা হবে; অতঃপর খুর বিশিষ্ট জন্তু তাকে খুর
দিয়ে দলিত মথিত করবে এবং শিং বিশিষ্ট জন্তু তাকে শিং দিয়ে আঘাত করবে। আর সে দিন এর
কোন একটি জন্তুই শিং বিহীন বা শিং ভাঙ্গা হবে না। আমরা (সাহাবীগন) বললাম, হে
আল্লাহর রসূল! এদের হাক্ব কি? তিনি বললেনঃ এদের নরগুলো (মাদীগুলোর জন্য) বীর্য
গ্রহনের জন্য দেয়া, পানি পানের জন্য বালতি চাইলে দেয়া, দুধ পান করতে চাইলে পান
করানো, পানি পান করার সময় দুধ দোহন করা এবং গরীব মিসকিনকে দেয়া, আর আল্লাহর পথে
পিঠে অপরকে আরোহন করানো এবং যোদ্ধা বহনের জন্য চাইলে দেয়া। আর যে সম্পদের মালিক
তার মালের যাকাত আদায় করবে না, ক্বিয়ামাতের দিন তার এ মাল সম্পদকে একটি টাকপড়া
বিষধর অজগর সাপে রুপান্তরিত করা হবে এবং সে তার মালিকের পিছে ধাওয়া করবে। মালিক
পালানোর উদ্দেশ্যে যেখানে যাবে এটাও সেখানে গিয়ে উপস্থিত হবে। তাকে বলা হবে, এ হল
তোমার সে সম্পদ যাতে তুমি কৃপনতার আশ্রয় নিয়েছিলে এবং যাকাত দেয়া থেকে বিরত ছিলে।
অতঃপর যখন সে দেখবে যে সাপের কবল থেকে আর পালানোর কোন উপায় নেই তখন সে তার মুখে
হাত ঢুকিয়ে দিবে এবং সাপ তার হাত উটের মত চিবাতে থাকবে। (ই.ফা. ২১৬৬, ই.সে. ২১৬৮)
৭. অধ্যায়ঃ
যাকাত আদায়কারীকে সন্তুষ্ট করা
২১৮৮
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ، فُضَيْلُ بْنُ
حُسَيْنٍ الْجَحْدَرِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ هِلاَلٍ
الْعَبْسِيُّ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ جَاءَ نَاسٌ مِنَ
الأَعْرَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا إِنَّ نَاسًا
مِنَ الْمُصَدِّقِينَ يَأْتُونَنَا فَيَظْلِمُونَنَا . قَالَ فَقَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ارْضُوا مُصَدِّقِيكُمْ " . قَالَ
جَرِيرٌ مَا صَدَرَ عَنِّي مُصَدِّقٌ مُنْذُ سَمِعْتُ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم إِلاَّ وَهُوَ عَنِّي رَاضٍ .
জারীর ইবনু ‘‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কয়েকজন গ্রাম্য লোক এসে রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর কাছে অভিযোগ করলেন যে, কোন কোন যাকাত আদায়কারী আমাদের কাছে গিয়ে
আমাদের উপরে যুলুম করে। (ভাল ভাল জন্তু ও মালামাল যাকাত হিসেবে নিয়ে আসে অথচ
শারী’আতের বিধানানুযায়ী মধ্যম ধরনের বস্তু যাকাত হিসেবে গ্রহন করা উচিৎ)
বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
“তোমরা যাকাত আদায়কারীদেরকে সন্তষ্ট করে দিবে (যদিও তার কিছু বাড়াবাড়ি করে)।
জারীর (রাঃ) বলেন, রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে এ কথা
শুনার পর যখনই কোন যাকাত আদায়কারী আমার কাছে আসত আমি তাকে সন্তষ্ট না করে ছাড়তাম
না। (ই.ফা. ২১৬৭, ই.সে. ২১৬৯)
২১৮৯
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ سُلَيْمَانَ، ح وَحَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ، بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، ح وَحَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا أَبُو أُسَامَةَ، كُلُّهُمْ عَنْ مُحَمَّدِ، بْنِ أَبِي
إِسْمَاعِيلَ بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ .
মুহাম্মাদ ইবনু আবূ ইসমা’ঈল (রহঃ) তারা সকলেই মুহাম্মাদ
ইবনু ইসমা’ঈল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.
২১৬৮, ই.সে. ২১৭০)
৮. অধ্যায়ঃ
যারা যাকাত আদায় করবে না তাদেরকে কঠোর শাস্তি
দেয়া
২১৯০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنِ الْمَعْرُورِ بْنِ
سُوَيْدٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ انْتَهَيْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَهُوَ جَالِسٌ فِي ظِلِّ الْكَعْبَةِ . فَلَمَّا رَآنِي قَالَ "
هُمُ الأَخْسَرُونَ وَرَبِّ الْكَعْبَةِ " . قَالَ فَجِئْتُ حَتَّى
جَلَسْتُ فَلَمْ أَتَقَارَّ أَنْ قُمْتُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ فِدَاكَ
أَبِي وَأُمِّي مَنْ هُمْ قَالَ " هُمُ الأَكْثَرُونَ أَمْوَالاً إِلاَّ
مَنْ قَالَ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا - مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ
وَعَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ - وَقَلِيلٌ مَا هُمْ مَا مِنْ صَاحِبِ إِبِلٍ
وَلاَ بَقَرٍ وَلاَ غَنَمٍ لاَ يُؤَدِّي زَكَاتَهَا إِلاَّ جَاءَتْ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ أَعْظَمَ مَا كَانَتْ وَأَسْمَنَهُ تَنْطِحُهُ بِقُرُونِهَا
وَتَطَؤُهُ بِأَظْلاَفِهَا كُلَّمَا نَفِدَتْ أُخْرَاهَا عَادَتْ عَلَيْهِ
أُولاَهَا حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বা’বার ছায়ায় বসা ছিলেন। এমন সময় আমি গিয়ে তার কাছে
উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে দেখে বললেন, কা’বার প্রভুর শপথ! তারাই ক্ষতির মধ্যে
নিমজ্জিত। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি গিয়ে তার কাছে বসলাম কিন্তু অনতিবিলম্বে
দাঁড়িয়ে বললাম, “হে আল্লাহর রসূল! আমার মাতা-পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক, সে
ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা কারা?” তিনি বলেনঃ এরা হল সব ধনাঢ্য ব্যক্তি তবে তারা নয় এদিকে
ওদিকে সামনে থেকে, পিছন থেকে, ডান দিক থেকে ও বাম দিক থেকে অকাতরে (আল্লাহর পথে)
খরচ করে। তবে সংখ্যায় এরা খুব কম। আর যে সব উট, গরু ও ছাগলের মালিক এর যাকাত আদায়
করবে না, কিয়ামতের দিন উট, গরু, ছাগল মোটা-তাজা অবস্থায় মালিকের নিকট আসবে এবং
তাকে (মালিককে) ওদের পা ও ক্ষুর দিয়ে দলিত মথিত করবে এবং শিং দিয়ে আঘাত করবে। এর
শেষ পশুটি অতিক্রম করলে প্রথমটি পুনরায় এসে ঐরূপ করতে আরম্ভ করবে। আর এভাবে চলতে
থাকবে যতক্ষন না বান্দাদের বিচার শেষ হবে। (ই.ফা. ২১৬৯, ই.সে. ২১৭১)
২১৯১
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ
بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنِ
الْمَعْرُورِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ انْتَهَيْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَهُوَ جَالِسٌ فِي ظِلِّ الْكَعْبَةِ . فَذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ
وَكِيعٍ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا عَلَى
الأَرْضِ رَجُلٌ يَمُوتُ فَيَدَعُ إِبِلاً أَوْ بَقَرًا أَوْ غَنَمًا لَمْ يُؤَدِّ
زَكَاتَهَا " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা’বাহ শরীফের ছায়ায় বসে ছিলেন। এমন সময় আমি তাঁর কাছে গিয়ে
হাজির হলাম। হাদীসটির বাকি অংশে বর্ণনাকারী ওয়াকী’-এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।
পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, তিনি বলেছেনঃ “সে মহান প্রভুর শপথ যাঁর হাতে আমার জীবন!
যেসব লোক উট, গরু ও ছাগল রেখে মারা যায় এবং যাকাত আদায় করেনি ....।“ (ই.ফা. ২১৭০,
ই.সে. ২১৭২)
২১৯২
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
سَلاَّمٍ الْجُمَحِيُّ، حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ، - يَعْنِي ابْنَ مُسْلِمٍ - عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " مَا يَسُرُّنِي أَنَّ لِي أُحُدًا ذَهَبًا تَأْتِي عَلَىَّ
ثَالِثَةٌ وَعِنْدِي مِنْهُ دِينَارٌ إِلاَّ دِينَارٌ أُرْصِدُهُ لِدَيْنٍ عَلَىَّ
" .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি উহুদ পাহাড় আমার জন্য স্বর্ণে পরিনত হয় এবং তিন
দিনের বেশী আমার কাছে এক দীনারও অবশিষ্ট থাকুক-এটা আমি চাই না। তবে আমার উপর যে ঋণ
রয়েছে তা পরিশোধ করার পরিমাণ অর্থ আমার কাছে থাকুক। (ই.ফা. ২১৭১, ই.সে. ২১৭৩)
২১৯৩
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
زِيَادٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِمِثْلِهِ .
মুহাম্মাদ ইবনু যিয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রাহ (রাঃ)
থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উপরের হাদীসের অনুরূপ হাদীস
শুনেছি। (ই.ফা. ২১৭২, ই.সে. ২১৭৪)
৯. অধ্যায়ঃ
সদাক্বাহ্ প্রদানে উৎসাহ প্রদান
২১৯৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَأَبُو
بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَابْنُ نُمَيْرٍ وَأَبُو كُرَيْبٍ كُلُّهُمْ عَنْ
أَبِي مُعَاوِيَةَ، - قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، - عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ، عَنْ أَبِي، ذَرٍّ قَالَ كُنْتُ أَمْشِي
مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي حَرَّةِ الْمَدِينَةِ عِشَاءً وَنَحْنُ
نَنْظُرُ إِلَى أُحُدٍ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
يَا أَبَا ذَرٍّ " . قَالَ قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ .
قَالَ " مَا أُحِبُّ أَنَّ أُحُدًا ذَاكَ عِنْدِي ذَهَبٌ أَمْسَى ثَالِثَةً
عِنْدِي مِنْهُ دِينَارٌ إِلاَّ دِينَارًا أُرْصِدُهُ لِدَيْنٍ إِلاَّ أَنْ
أَقُولَ بِهِ فِي عِبَادِ اللَّهِ هَكَذَا - حَثَا بَيْنَ يَدَيْهِ - وَهَكَذَا -
عَنْ يَمِينِهِ - وَهَكَذَا - عَنْ شِمَالِهِ " . قَالَ ثُمَّ مَشَيْنَا
فَقَالَ " يَا أَبَا ذَرٍّ " . قَالَ قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا
رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " إِنَّ الأَكْثَرِينَ هُمُ الأَقَلُّونَ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ إِلاَّ مَنْ قَالَ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا " . مِثْلَ
مَا صَنَعَ فِي الْمَرَّةِ الأُولَى قَالَ ثُمَّ مَشَيْنَا قَالَ " يَا
أَبَا ذَرٍّ كَمَا أَنْتَ حَتَّى آتِيَكَ " . قَالَ فَانْطَلَقَ حَتَّى
تَوَارَى عَنِّي - قَالَ - سَمِعْتُ لَغَطًا وَسَمِعْتُ صَوْتًا - قَالَ -
فَقُلْتُ لَعَلَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عُرِضَ لَهُ - قَالَ -
فَهَمَمْتُ أَنْ أَتَّبِعَهُ قَالَ ثُمَّ ذَكَرْتُ قَوْلَهُ " لاَ تَبْرَحْ
حَتَّى آتِيَكَ " . قَالَ فَانْتَظَرْتُهُ فَلَمَّا جَاءَ ذَكَرْتُ لَهُ
الَّذِي سَمِعْتُ - قَالَ - فَقَالَ " ذَاكَ جِبْرِيلُ أَتَانِي فَقَالَ
مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِكَ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ
" . قَالَ قُلْتُ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ قَالَ " وَإِنْ
زَنَى وَإِنْ سَرَقَ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা দুপুরের পর আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে মাদীনার কঙ্করময় মাঠ দিয়ে চলছিলাম এবং
আমরা উহুদ পাহাড়ের দিকে তাকাচ্ছিলাম। রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাকে বললেনঃ “যদি এ উহুদ পাহাড় আমার জন্য স্বর্ণে পরিণত হয় তাহলে তিন দিন
অতিবাহিত হওয়ার পর ঋণ পরিশোধ করার পরিমান অর্থ ছাড়া অতিরিক্ত একটি দীনারও আমার
কাছে অবশিষ্ট থাক তা আমি পছন্দ করি না। তা আমার হস্তগত হলে আমি আল্লাহর বান্দাদের
মধ্যে এভাবে বন্টন করে দিব। তিনি সামনের দিকে, ডানে এবং বামে হাতের ইংগিতে এক এক
ভরা মুঠ দেখালেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আমরা আবার অগ্রসর হলাম। তিনি আবার বললেন,
হে আবূ যার! আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি হাজির আছি। তিনি বললেন, ক্বিয়ামাতের
দিন অঢেল সম্পদের মালিকেরা কম সাওয়াব লাভ করবে। তবে যারা সৎপাত্রে যথোচিতভাবে
এভাবে দান করবে তাদের সাওয়াব কোন অংশেই কম হবে না। তিনি মুষ্টি ভরে পূর্বের ন্যায়
ইংগিত করে দেখালেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা চলতে থাকলাম। কিছু দূর অগ্রসর হলে তিনি
বললেন, হে আবূ যার! তুমি এখানে অপেক্ষা কর এবং আমার ফিরে না আসা পর্যন্ত কোথাও
যাবে না। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি চলে গেলেন এবং আমার দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেলেন। তারপর
আমি কিছু গোলমাল ও শব্দ শুনতে পেয়ে মনে করলাম, বোধ হয় রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। আমি তাঁকে খোঁজার জন্য মনস্থ
করলাম। কিন্তু সাথে সাথে এ স্থান ত্যাগ না করার জন্য তার নির্দেশ আমার মনে পড়ে
গেল। তাই আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম। অতঃপর তিনি ফিরে আসলে আমি যা কিছু শুনেছিলাম তা
তাকে জানালাম। তিনি বললেন, তুমি যার শব্দ শুনেছ তিনি ছিলেন জিবরীল। তিনি আমার কাছে
এসেছিলেন এবং আমাকে বলেছেন, “আপনার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন
প্রকার শির্ক না করা অবস্থায় মারা যাবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। বর্ণনাকারী বলেন,
আমি বললাম, যদি সে যিনা করে এবং চুরি করে (তবুও কি) তিনি বললেন, যদিও সে যিনা করে
এবং চুরি করে তবুও। (ই.ফা. ২১৭৩, ই.সে. ২১৭৫)
২১৯৫
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ، - وَهُوَ ابْنُ رُفَيْعٍ - عَنْ
زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ خَرَجْتُ لَيْلَةً مِنَ اللَّيَالِي
فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَمْشِي وَحْدَهُ لَيْسَ مَعَهُ
إِنْسَانٌ قَالَ فَظَنَنْتُ أَنَّهُ يَكْرَهُ أَنْ يَمْشِيَ مَعَهُ أَحَدٌ - قَالَ
- فَجَعَلْتُ أَمْشِي فِي ظِلِّ الْقَمَرِ فَالْتَفَتَ فَرَآنِي فَقَالَ "
مَنْ هَذَا " . فَقُلْتُ أَبُو ذَرٍّ جَعَلَنِي اللَّهُ فِدَاءَكَ .
قَالَ " يَا أَبَا ذَرٍّ تَعَالَهْ " . قَالَ فَمَشَيْتُ مَعَهُ
سَاعَةً فَقَالَ " إِنَّ الْمُكْثِرِينَ هُمُ الْمُقِلُّونَ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ إِلاَّ مَنْ أَعْطَاهُ اللَّهُ خَيْرًا فَنَفَحَ فِيهِ يَمِينَهُ
وَشِمَالَهُ وَبَيْنَ يَدَيْهِ وَوَرَاءَهُ وَعَمِلَ فِيهِ خَيْرًا " .
قَالَ فَمَشَيْتُ مَعَهُ سَاعَةً فَقَالَ " اجْلِسْ هَا هُنَا " .
قَالَ فَأَجْلَسَنِي فِي قَاعٍ حَوْلَهُ حِجَارَةٌ فَقَالَ لِيَ " اجْلِسْ
هَا هُنَا حَتَّى أَرْجِعَ إِلَيْكَ " . قَالَ فَانْطَلَقَ فِي
الْحَرَّةِ حَتَّى لاَ أَرَاهُ فَلَبِثَ عَنِّي فَأَطَالَ اللَّبْثَ ثُمَّ إِنِّي
سَمِعْتُهُ وَهُوَ مُقْبِلٌ وَهُوَ يَقُولُ " وَإِنْ سَرَقَ وَإِنْ زَنَى
" . قَالَ فَلَمَّا جَاءَ لَمْ أَصْبِرْ فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ جَعَلَنِي
اللَّهُ فِدَاءَكَ مَنْ تُكَلِّمُ فِي جَانِبِ الْحَرَّةِ مَا سَمِعْتُ أَحَدًا
يَرْجِعُ إِلَيْكَ شَيْئًا . قَالَ " ذَاكَ جِبْرِيلُ عَرَضَ لِي فِي
جَانِبِ الْحَرَّةِ فَقَالَ بَشِّرْ أُمَّتَكَ أَنَّهُ مَنْ مَاتَ لاَ يُشْرِكُ
بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ . فَقُلْتُ يَا جِبْرِيلُ وَإِنْ سَرَقَ
وَإِنْ زَنَى قَالَ نَعَمْ . قَالَ قُلْتُ وَإِنْ سَرَقَ وَإِنْ زَنَى قَالَ
نَعَمْ . قَالَ قُلْتُ وَإِنْ سَرَقَ وَإِنْ زَنَى قَالَ نَعَمْ وَإِنْ شَرِبَ
الْخَمْرَ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক রাতে আমি বাইরে বের
হলাম। হঠাত রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে একাকী চলতে দেখলাম,
তাঁর সাথে অন্য কোন লোক ছিল না। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি ধারণা করলাম, তিনি বোধ
হয় কাউকে সাথী করতে পছন্দ করছেন না, তাই এভাবে একাকী চলছেন (অন্যথায় সাহাবিগণ তো
কোন সময়েই তাকে একাকী বের হতে দিতেন না)। আবূ যার (রাঃ) বলেন, তাই আমি চাঁদের
আলোকে বা ছায়ায় চলতে লাগলাম (যাতে তিনি আমাকে দেখতে না পান)। তিনি পিছনের দিকে
ফিরে আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন কে? আমি বললাম “আবূ যার! আল্লাহ আমাকে আপনার
খিদমাতে উৎসর্গকারী হিসেবে কবুল করুন”। তিনি বললেন, হে আবূ যার! আমার সাথে এসো।
আবূ যার (রাঃ) বলেন, তারপর কিছু সময় তাঁর সাথে চলার পর তিনি বললেন, যারা এ পার্থিব
জীবনে অগাধ সম্পদের মালিক তারা কিয়ামাতের দিন নিঃস্ব হবে। তবে যাদেরকে আল্লাহ
তা’আলা সম্পদ দানের পর তারা নিজেদের সম্পদ ডানে, বামে, সামনে, পিছনে ছড়িয়ে দিবে
এবং এর দ্বারা বিভিন্নমুখী পূন্যের কাজ করবে তারা এর ব্যতিক্রম। (অর্থাৎ এরা ধনী
হলেও পরকালে মর্যাদার দিক থেকে কোন প্রকার পিছিয়ে থাকবে না।) আবূ যার (রাঃ) বলেন,
অতঃপর আমি কিছু সময় তাঁর সাথে হাঁটার পর তিনি আমাকে বললেন, এখানে তুমি বসে থাক।
বর্ণনাকারী বলেন, তিনি আমাকে এমন একটি পরিষ্কার স্থানে বসালেন যার চতুষ্পার্শে
পাথর ছিল। তিনি আমাকে বললেন, আমার ফিরে আসা পর্যন্ত তুমি এখানে বসে থাকবে। আবূ যার
(রাঃ) আরও বললেন, অতঃপর তিনি পাথুরে মাঠের মধ্যে চলে গেলেন এবং এতদূরে গেলেন যে,
আমি তাঁকে দেখতে পাচ্ছিলাম না। সেখানে তিনি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অবস্থান করলেন।
তারপর আমি তাঁকে আসতে আসতে এ কথা বলতে শুনলাম, “যদিও চুরি করে, যদিও যিনা করে।”
তিনি যখন ফিরে আসলেন আমি আর ধৈর্য ধরতে পারলাম না। তাই তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হে
আল্লাহর রসূল! আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গ হিসেবে কবুল করুন, ঐ পাথুরে স্থানে
আপনি কার সাথে আলাপ করছিলেন? আমিতো আপনার কথার জবাব দানকারী কাউকে দেখতে পাইনি!
তিনি বললেন, জিবরীল (‘আঃ)। পাথুরে স্থানে আমার আগেই তিনি এসেছিলেন এবং আমাকে
বলেছেন, “আপনি আপনার উম্মাতকে সুসংবাদ দিন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শির্ক না করা
অবস্থায় মারা যাবে, সে জান্নাতে যাবে। “অতঃপর আমি বললাম, হে জিবরীল! যদি আমার সে
উম্মাত চুরি করে এবং যিনা করে? তিনি এবারো বললেন, তবুও। তিনি বলেন, আমি পুনরায়
বললামঃ যদিও সে চুরি করে এবং যিনায় লিপ্ত হয়? তিনি বললেন, হ্যা যদিও সে শরাব (মাদক
দ্রব্য) পান করে। (ই.ফা. ২১৭৪, ই.সে. ২১৭৬)
১০. অধ্যায়ঃ
সম্পদ পুঞ্জিভুতকারী ও তাদের শাস্তির ভয়াবহতা
সম্পর্কে
২১৯৬
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ أَبِي،
الْعَلاَءِ عَنِ الأَحْنَفِ بْنِ قَيْسٍ، قَالَ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَبَيْنَا
أَنَا فِي، حَلْقَةٍ فِيهَا مَلأٌ مِنْ قُرَيْشٍ إِذْ جَاءَ رَجُلٌ أَخْشَنُ
الثِّيَابِ أَخْشَنُ الْجَسَدِ أَخْشَنُ الْوَجْهِ فَقَامَ عَلَيْهِمْ فَقَالَ
بَشِّرِ الْكَانِزِينَ بِرَضْفٍ يُحْمَى عَلَيْهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَيُوضَعُ
عَلَى حَلَمَةِ ثَدْىِ أَحَدِهِمْ حَتَّى يَخْرُجَ مِنْ نُغْضِ كَتِفَيْهِ
وَيُوضَعُ عَلَى نُغْضِ كَتِفَيْهِ حَتَّى يَخْرُجَ مِنْ حَلَمَةِ ثَدْيَيْهِ
يَتَزَلْزَلُ قَالَ فَوَضَعَ الْقَوْمُ رُءُوسَهُمْ فَمَا رَأَيْتُ أَحَدًا
مِنْهُمْ رَجَعَ إِلَيْهِ شَيْئًا - قَالَ - فَأَدْبَرَ وَاتَّبَعْتُهُ حَتَّى
جَلَسَ إِلَى سَارِيَةٍ فَقُلْتُ مَا رَأَيْتُ هَؤُلاَءِ إِلاَّ كَرِهُوا مَا
قُلْتَ لَهُمْ . قَالَ إِنَّ هَؤُلاَءِ لاَ يَعْقِلُونَ شَيْئًا إِنَّ خَلِيلِي
أَبَا الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم دَعَانِي فَأَجَبْتُهُ فَقَالَ "
أَتَرَى أُحُدًا " . فَنَظَرْتُ مَا عَلَىَّ مِنَ الشَّمْسِ وَأَنَا
أَظُنُّ أَنَّهُ يَبْعَثُنِي فِي حَاجَةٍ لَهُ فَقُلْتُ أَرَاهُ . فَقَالَ
" مَا يَسُرُّنِي أَنَّ لِي مِثْلَهُ ذَهَبًا أُنْفِقُهُ كُلَّهُ إِلاَّ
ثَلاَثَةَ دَنَانِيرَ " . ثُمَّ هَؤُلاَءِ يَجْمَعُونَ الدُّنْيَا لاَ
يَعْقِلُونَ شَيْئًا . قَالَ قُلْتُ مَا لَكَ وَلإِخْوَتِكَ مِنْ قُرَيْشٍ لاَ
تَعْتَرِيهِمْ وَتُصِيبُ مِنْهُمْ . قَالَ لاَ وَرَبِّكَ لاَ أَسْأَلُهُمْ عَنْ
دُنْيَا وَلاَ أَسْتَفْتِيهِمْ عَنْ دِينٍ حَتَّى أَلْحَقَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ
.
আহনাফ ইবনু ক্বায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মাদীনায় আসার পর একদা
কুরায়শদের এক সমাবেশে বসা ছিলাম। সেখানে তাদের (গোত্রীয় নেতা) দলপতিও উপস্থিত ছিল।
এমন সময় মোটা কাপড় পরিহিত সুঠাম দেহের অধিকারী ও রুক্ষ চেহারার এক ব্যক্তি আসল।
এসে দাঁড়িয়ে বলল, সম্পদ কুক্ষিগতকারীদের সুসংবাদ দাও যে, একটি পাথর জাহান্নামের
আগুনে উত্তপ্ত করে, তাদের কারো বুকের মাঝখানে রাখা হবে। এমনকি তার কাঁধের হাড় ভেদ
করে বেরিয়ে যাবে এবং কাঁধের হাড়ের উপর রাখা হলে তা স্তনের বোঁটা ভেদ করে বেরিয়ে
যাবে এবং পাথরটি (আগুনের উত্তাপের ফলে) কাঁপতে থাকবে। বর্ণনাকারী বলেন, উপস্থিত
লোকেরা সবাই মাথা নত করে থাকল এবং তার বক্তব্যের প্রত্যুত্তরে কাউকে কিছু বলতে
দেখলাম না। অতঃপর সে পিছন ফিরে এসে একটি খুটির কাছে বসে পড়ল, আমিও তাকে অনুসরণ
করলাম। অর্থাৎ তার কাছে এসে বসলাম। অতঃপর আমি বললাম যে, এরাতো তোমার প্রতি
অসন্তুষ্ট হয়েছে বলে আমি দেখতে পাচ্ছি। তিনি (উত্তরে) বললেন, এরা (দ্বীন সম্পর্কে)
কিছুই বোঝে না বা জ্ঞান রাখে না। আমার বন্ধুবর আবূল ক্বাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) একবার আমাকে ডাকলেন এবং আমি উপস্থিত হলাম। অতঃপর তিনি বললেন, “তুমি
উহুদ পাহাড় দেখতে পাচ্ছ? আমি তখন সূর্যের দিকে আমার দৃষ্টি নিবন্ধ করলাম এবং ধারণা
করলাম তিনি হয়তো আমাকে কোন কাজে পাঠাবেন। আমি বললাম, হ্যাঁ দেখতে পাচ্ছি। অতঃপর
তিনি বললেন, আমি এটা চাই না যে, এ পাহাড় আমার জন্য সোনা হোক আর যদি এত অঢেল
সম্পদের মালিক আমি হয়েও যাই তাহলে ঋন পরিশোধের জন্য, শুধু তিন দীনার রেখে বাকি সব
খরচ করে দিব। অতঃপর এরা শুধু দুনিয়া সঞ্চয় করেছে, আর কিছুই বুঝছে না। বর্ণনাকারী
বলেন, আমি তাকে বললাম তুমি ও তোমার কুরায়শ গোত্রীয় ভাইদের কী হয়েছে; তুমি তাদের
কাছে প্রয়োজনে কেন যাওনা, মেলামেশা কর না আর কেন বা কোন কিছু গ্রহন করো না? উত্তরে
সে বললো, তোমার প্রভুর শপথ! আমি আল্লাহ তাঁর রাসূলের সাথে সাক্ষাতের পূর্বে
(অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত) তাদের কাছে পার্থিব কোন কিছু চাই না এবং দ্বীন সম্পর্কেও
কোন কিছু জিজ্ঞেস করব না। (ই.ফা. ২১৭৫, ই.সে. ২১৭৭)
২১৯৭
وَحَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ،
حَدَّثَنَا أَبُو الأَشْهَبِ، حَدَّثَنَا خُلَيْدٌ الْعَصَرِيُّ، عَنِ الأَحْنَفِ،
بْنِ قَيْسٍ قَالَ كُنْتُ فِي نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ فَمَرَّ أَبُو ذَرٍّ وَهُوَ
يَقُولُ بَشِّرِ الْكَانِزِينَ بِكَىٍّ فِي ظُهُورِهِمْ يَخْرُجُ مِنْ جُنُوبِهِمْ
وَبِكَىٍّ مِنْ قِبَلِ أَقْفَائِهِمْ يَخْرُجُ مِنْ جِبَاهِهِمْ . - قَالَ -
ثُمَّ تَنَحَّى فَقَعَدَ . - قَالَ - قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا هَذَا أَبُو
ذَرٍّ . قَالَ فَقُمْتُ إِلَيْهِ فَقُلْتُ مَا شَىْءٌ سَمِعْتُكَ تَقُولُ
قُبَيْلُ قَالَ مَا قُلْتُ إِلاَّ شَيْئًا قَدْ سَمِعْتُهُ مِنْ نَبِيِّهِمْ صلى
الله عليه وسلم . قَالَ قُلْتُ مَا تَقُولُ فِي هَذَا الْعَطَاءِ قَالَ خُذْهُ
فَإِنَّ فِيهِ الْيَوْمَ مَعُونَةً فَإِذَا كَانَ ثَمَنًا لِدِينِكَ فَدَعْهُ.
আহ্নাফ ইবনু ক্বায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি কুরায়শ গোত্রের
কতিপয় লোকের সাথে বসা ছিলাম। এমন সময় আবূ যার (রাঃ) সেখানে এসে বলতে লাগলেন, অগাধ
সম্পদ পুঞ্জিভুতকারীদেরকে এমন এক দাগের সুসংবাদ দাও যা পিঠে লাগানো হবে এবং
পার্শ্বদেশ ভেদ করে বের হবে। আর ঘাড়ে লাগানো হবে এবং তা কপাল ভেদ করে বের হবে।
অতঃপর তিনি এক পাশে গিয়ে বসলেন। আমি লোকদেরকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? তারা
(উত্তরে) বলল, ইনি আবূ যার (রাঃ)। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি তাঁর কাছে গিয়ে
দাঁড়িয়ে বললাম, একটু আগে আপনাকে যে কথাটি বলতে শুনলাম তা কী কথা ছিল? তিনি (আবূ
যার) বললেন, আমি তো সে কথাই বলছিলাম যা আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর কাছ থেকে শুনেছি। রাবী বলেন, আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, এসব দান
(অর্থাৎ আমীরগন গনীমাতের মালের যে অংশ মুসলিমদেরকে দিচ্ছে) এ সম্পর্কে আপনার মত
কী? তিনি বললেন, তোমরা তা গ্রহন করতে থাক, কেননা ব্যয়ভার বহনের জন্য এর দ্বারা এখন
সাহায্য হচ্ছে। কিন্তু যখন এ দান বা গনিমাত তোমার দ্বীনের বিনিময়ে (মানে হলো দ্বীন
ও ঈমান বিক্রি করা তোমাকে দ্বীনের পরিপন্থি কাজে ব্য্যবহারের চেষ্টা কল্পে হয়) তখন
এ দান গ্রহন করো না। (ই.ফা. ২১৭৬, ই.সে. ২১৭৮)
১১. অধ্যায়ঃ
দানশীলতার ফাযীলাত
২১৯৮
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " قَالَ اللَّهُ
تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَا ابْنَ آدَمَ أَنْفِقْ أُنْفِقْ عَلَيْكَ " .
وَقَالَ " يَمِينُ اللَّهِ مَلأَى - وَقَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ مَلآنُ -
سَحَّاءُ لاَ يَغِيضُهَا شَىْءٌ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন, মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “হে আদম সন্তানেরা! তোমরা অকাতরে দান করতে
থাক, আমিও তোমাদের উপর ব্যয় করব”। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও
বলেন, আল্লাহর ডান হাত প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ। রাত দিন অনবরত দান করলেও তা মোটেই
কমছে না। (ই.ফা. ২১৭৭, ই.সে. ২১৭৯)
২১৯৯
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ بْنُ هَمَّامٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرُ بْنُ رَاشِدٍ،
عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، أَخِي وَهْبِ بْنِ مُنَبِّهٍ قَالَ هَذَا مَا
حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ
أَحَادِيثَ مِنْهَا . وَقَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّ اللَّهَ قَالَ لِي أَنْفِقْ أُنْفِقْ عَلَيْكَ " .
وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَمِينُ اللَّهِ مَلأَى لاَ
يَغِيضُهَا سَحَّاءُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ أَرَأَيْتُمْ مَا أَنْفَقَ مُذْ
خَلَقَ السَّمَاءَ وَالأَرْضَ فَإِنَّهُ لَمْ يَغِضْ مَا فِي يَمِينِهِ "
. قَالَ " وَعَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ وَبِيَدِهِ الأُخْرَى الْقَبْضُ
يَرْفَعُ وَيَخْفِضُ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) থেকে কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। তার একটি নিম্নরুপ। তিনি বলেন,
রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আমাকে বলেছেন,
‘খরচ কর, তোমার উপরও খরচ করা হবে। রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আরো বলেছেন, আল্লাহ তা’আলার হাত আরো প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ। রাত দিন ব্যয় করা সত্বেও
তা মোটেই কমছে না। একটু ভেবে দেখ! আসমান যমীন সৃষ্টি থেকে এ পর্যন্ত যে বিপুল
পরিমান ব্যয় করেছেন এতে তার হাত একটুও খালি হয়নি। তিনি বলেন, তাঁর (আল্লাহর) ‘আরশ পানির
উপর এবং তাঁর অপর হাতে রয়েছে মৃত্যু। যাকে ইচ্ছা করেন উপরে উঠান ও উন্নত করেন। আর
যাকে চান নিচু করেন, অবনত করেন। (ই.ফা. ২১৭৮, ই.সে. ২১৮০)
১২. অধ্যায়ঃ
পরিবার-পরিজন ও দাস-দাসীদের ভরণ-পোষনের
ফাযীলাত এবং তা না করার অপরাধ
২২০০
حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ،
وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، كِلاَهُمَا عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ، - قَالَ أَبُو
الرَّبِيعِ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، - حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ،
عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " أَفْضَلُ دِينَارٍ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ دِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى
عِيَالِهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ عَلَى دَابَّتِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ
وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى أَصْحَابِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ " . قَالَ
أَبُو قِلاَبَةَ وَبَدَأَ بِالْعِيَالِ ثُمَّ قَالَ أَبُو قِلاَبَةَ وَأَىُّ
رَجُلٍ أَعْظَمُ أَجْرًا مِنْ رَجُلٍ يُنْفِقُ عَلَى عِيَالٍ صِغَارٍ يُعِفُّهُمْ
أَوْ يَنْفَعُهُمُ اللَّهُ بِهِ وَيُغْنِيهِمْ .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন
ব্যাক্তি যে সব দীনার (বা স্বর্ণমুদ্রা) ব্যয় করে থাকে এর মধ্যে ঐ দীনারটি উত্তম
যা সে তার পরিবার-পরিজনের উদ্দেশে খরচ করে। অনুরূপ ভাবে আল্লাহর পথে (অর্থাৎ
জিহাদের উদ্দেশ্যে) তার আরোহনের জন্তুর জন্য সে যে দীনার ব্যয় করে তা উত্তম এবং
আল্লাহর পথে তার সঙ্গী সাথীদের জন্য যে দীনার ব্যয় করে তা উত্তম।
আবূ ক্বীলাবাহ্ বলেন, তিনি পরিবারের লোকজন দিয়ে শুরু করেছেন। অতঃপর আবূ ক্বিলাবাহ
(রাঃ) আরো বলেন, ওই ব্যক্তির চেয়ে আর কে বেশী সাওয়াবের অধিকারী যে তার ছোট ছোট
সন্তানদের জন্য খরচ করে এবং আল্লাহ তা’য়ালা এর বিনিময়ে তাদেরকে পবিত্র রাখেন,
উপকৃত করেন এবং অভাব মুক্ত রাখেন। (ই.ফা. ২১৭৯, ই.সে. ২১৮১)
২২০১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَأَبُو كُرَيْبٍ - وَاللَّفْظُ لأَبِي
كُرَيْبٍ - قَالُوا حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُزَاحِمِ بْنِ
زُفَرَ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " دِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَدِينَارٌ
أَنْفَقْتَهُ فِي رَقَبَةٍ وَدِينَارٌ تَصَدَّقْتَ بِهِ عَلَى مِسْكِينٍ
وَدِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ عَلَى أَهْلِكَ أَعْظَمُهَا أَجْرًا الَّذِي أَنْفَقْتَهُ
عَلَى أَهْلِكَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একটি দীনার তুমি আল্লাহর পথে ব্যয় করলে, একটি দীনার
গোলাম আযাদ করার জন্য এবং একটি দীনার মিসকীনদেরকে দান করলে এবং আর একটি তোমার
পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করলে। এর মধ্যে (সাওয়াবের দিক থেকে) ওই দীনারটিই উত্তম
যা তুমি পরিবারের লোকদের জন্য ব্যয় করলে। (ই.ফা. ২১৮০, ই.সে. ২১৮২)
২২০২
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مُحَمَّدٍ
الْجَرْمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبْجَرَ
الْكِنَانِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، عَنْ خَيْثَمَةَ،
قَالَ كُنَّا جُلُوسًا مَعَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو إِذْ جَاءَهُ قَهْرَمَانٌ
لَهُ فَدَخَلَ فَقَالَ أَعْطَيْتَ الرَّقِيقَ قُوتَهُمْ قَالَ لاَ . قَالَ
فَانْطَلِقْ فَأَعْطِهِمْ . قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" كَفَى بِالْمَرْءِ إِثْمًا أَنْ يَحْبِسَ عَمَّنْ يَمْلِكُ قُوتَهُ
" .
খায়সামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি ‘‘আবদুল্লাহ ইবনু
‘আম্র (রাঃ) -এর সাথে বসা ছিলাম, এমন সময় তার কোষাধ্যক্ষ আসলেন। তিনি বললেন, তুমি
কি গোলামদের খাবার ব্যবস্থা করেছ? তিনি বললেন, না। অতঃপর তিনি বলেন, তুমি গিয়ে
তাদের খাবার দিয়ে আসো। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যাদের ভরণ-পোষণ করা, ব্যায়ভার বহন করা কর্তব্য তা না করে আটকে
রাখাই কোন ব্যক্তির গুনাহগার হওয়ার জন্য যথেষ্ট। (ই.ফা. ২১৮১, ই.সে. ২১৮৩)
১৩. অধ্যায়ঃ
সর্বপ্রথম নিজের জন্য, অতঃপর ঘরের লোকের জন্য,
অতঃপর আত্মীয়-স্বজনের জন্য ব্যয় করা
২২০৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ أَعْتَقَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي عُذْرَةَ
عَبْدًا لَهُ عَنْ دُبُرٍ، فَبَلَغَ ذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
. فَقَالَ " أَلَكَ مَالٌ غَيْرُهُ " . فَقَالَ لاَ . فَقَالَ
" مَنْ يَشْتَرِيهِ مِنِّي " . فَاشْتَرَاهُ نُعَيْمُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ الْعَدَوِيُّ بِثَمَانِمِائَةِ دِرْهَمٍ فَجَاءَ بِهَا رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَدَفَعَهَا إِلَيْهِ ثُمَّ قَالَ " ابْدَأْ بِنَفْسِكَ
فَتَصَدَّقْ عَلَيْهَا فَإِنْ فَضَلَ شَىْءٌ فَلأَهْلِكَ فَإِنْ فَضَلَ عَنْ
أَهْلِكَ شَىْءٌ فَلِذِي قَرَابَتِكَ فَإِنْ فَضَلَ عَنْ ذِي قَرَابَتِكَ شَىْءٌ
فَهَكَذَا وَهَكَذَا " . يَقُولُ فَبَيْنَ يَدَيْكَ وَعَنْ يَمِينِكَ
وَعَنْ شِمَالِكَ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বনু ‘উয্রাহ্ গোত্রের এক
ব্যক্তি তার এক গোলামকে তার মৃত্যুর পর মুক্ত হওয়ার কথা দিলেন। অতঃপর এ সংবাদ
রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কানে পৌছলে তিনি বললেন, এ ছাড়া
তোমার কাছে কি আর কোন সম্পদ আছে? তিনি বললেন, না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, এমন কে আছ যে আমার কাছ থেকে এ গোলামটিকে ক্রয় করবে? নু’আয়ম ইবনু
‘‘আবদুল্লাহ আল ‘আদাবী (রাঃ) তাকে আটশ’ দিরহামে ক্রয় করলেন। তারপর তিনি রসূলুলাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এ দিরহামগুলো নিয়ে আসলেন। তিনি তা গোলামের
মালিককে বুঝিয়ে দিয়ে বললেন, “এ অর্থ তুমি প্রথমে তোমার নিজের জন্য ব্যয় কর, তারপর
যদি কিছু বাকি থাকে তাহলে তোমার পরিবারের লোকদের জন্য তা ব্যয় কর, অতঃপর তোমার
নিকটাত্মীয়দের জন্য ব্যয় কর, এরপর ও যদি কিছু অবকাশ থাকে তাহলে তা এদিকে সেদিকে
ব্যয় কর”। এ বলে তিনি সামনে ডানে ও বামে হাত দিয়ে ইঙ্গিত করলেন। (ই.ফা. ২১৮২,
ই.সে. ২১৮৪)
২২০৪
وَحَدَّثَنِي يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ
الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنِي ابْنَ عُلَيَّةَ - عَنْ
أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ رَجُلاً، مِنَ الأَنْصَارِ
- يُقَالُ لَهُ أَبُو مَذْكُورٍ - أَعْتَقَ غُلاَمًا لَهُ عَنْ دُبُرٍ يُقَالُ
لَهُ يَعْقُوبُ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ اللَّيْثِ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ মাযকুর নামে আনসার সম্প্রদায়ের এক
ব্যক্তি ছিল। তার মৃত্যুর পর তার গোলাম আযাদ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তার নাম ছিল
ইয়া’কুব। হাদিসের অবশিষ্ট অংশ লায়স বর্ণিত হাদীসের সমার্থবোধক। (ই.ফা. ২১৮৩, ই.সে.
২১৮৫)
১৪. অধ্যায়ঃ
নিকটাত্মীয়, স্বামী, সন্তান ও পিতামাতার জন্য
ব্যয় করার ফাযীলাত যদিও তারা মুশরিক হয়
২২০৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ
قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي، طَلْحَةَ
أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ كَانَ أَبُو طَلْحَةَ أَكْثَرَ
أَنْصَارِيٍّ بِالْمَدِينَةِ مَالاً وَكَانَ أَحَبَّ أَمْوَالِهِ إِلَيْهِ
بَيْرَحَى وَكَانَتْ مُسْتَقْبِلَةَ الْمَسْجِدِ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَدْخُلُهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَاءٍ فِيهَا طَيِّبٍ . قَالَ أَنَسٌ
فَلَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ { لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا
مِمَّا تُحِبُّونَ} قَامَ أَبُو طَلْحَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ فِي كِتَابِهِ { لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ
حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ} وَإِنَّ أَحَبَّ أَمْوَالِي إِلَىَّ
بَيْرَحَى وَإِنَّهَا صَدَقَةٌ لِلَّهِ أَرْجُو بِرَّهَا وَذُخْرَهَا عِنْدَ
اللَّهِ فَضَعْهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ حَيْثُ شِئْتَ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " بَخْ ذَلِكَ مَالٌ رَابِحٌ ذَلِكَ مَالٌ رَابِحٌ قَدْ
سَمِعْتُ مَا قُلْتَ فِيهَا وَإِنِّي أَرَى أَنْ تَجْعَلَهَا فِي الأَقْرَبِينَ
" . فَقَسَمَهَا أَبُو طَلْحَةَ فِي أَقَارِبِهِ وَبَنِي عَمِّهِ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাদীনায় আনসার সম্প্রদায়ের মধ্যে আবূ ত্বলহাহ্ (রাঃ)
প্রচুর সম্পদের মালিক ছিলেন। তাঁর সকল সম্পদের মধ্যে “বায়রুহা” নামক বাগানটি তাঁর
সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ ছিল। এটি মাসজিদে নাবাবীর সামনেই অবস্থিত ছিল। রসূলুলাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওই বাগানে যেতেন এবং এর মিষ্টি পানি পান
করতেন।
আনাস (রাঃ) বলেন, যখন এ আয়াত- “তোমরা যতক্ষন তোমাদের নিজেদের প্রিয় জিনিস (আল্লাহর
পথে) ব্যয় না করবে- ততক্ষন কিছুতেই প্রকৃত পুণ্য লাভ করতে পারবে না” (সূরাহ আল
ইমরান ৩ঃ ৯২) অবতীর্ণ হল, আবূ ত্বলহাহ্ (রাঃ) রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, মহান আল্লাহ তায়ালা তার কিতাবে বলেন, “তোমরা
কিছুতেই প্রকৃত পুণ্য লাভ করতে পারবে না যতক্ষন তোমাদের প্রিয় জিনিস আল্লাহর পথে
ব্যয় না করবে”। আর আমার সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ হল “বায়রাহা” নামক বাগানটি। আমি তা
আল্লাহর পথে সদাক্বাহ্ (দান) করলাম। আমি এর থেকে কল্যাণ পেতে চাই এবং আল্লাহর কাছে
এর সাওয়াব জমা হওয়ার আশা রাখি। কাজেই ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি আপনার ইচ্ছামত তা
ব্যয় করুন’। রসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, অত্যান্ত ভাল
কথা; এটা তো খুব লাভজনক সম্পদ। এটা তো খুব লাভজনক সম্পদ। তোমার প্রিয়জন ও
নিকটবর্তী আত্মীয়দের মাঝে তা বন্টন করে দাও। অতঃপর আবূ ত্বলহাহ্ (রাঃ) এটা তাঁর
আত্মীয়-স্বজন ও তাঁর চাচাতো ভাইদের মধ্যে বন্টন করে দিলেন। (ই.ফা. ২১৮৪, ই.সে.
২১৮৬)
২২০৬
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ،
حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ
أَنَسٍ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ { لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى
تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ} قَالَ أَبُو طَلْحَةَ أُرَى رَبَّنَا يَسْأَلُنَا
مِنْ أَمْوَالِنَا فَأُشْهِدُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنِّي قَدْ جَعَلْتُ أَرْضِي
بَرِيحَا لِلَّهِ . قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
اجْعَلْهَا فِي قَرَابَتِكَ " . قَالَ فَجَعَلَهَا فِي حَسَّانَ بْنِ
ثَابِتٍ وَأُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “তোমাদের প্রিয় বস্তু
(আল্লাহর পথে) ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কিছুতেই প্রকৃত সাওয়াব লাভ করতে
পারবেনা”- এ আয়াত যখন অবতীর্ণ হল আবূ ত্বলহাহ্ (রাঃ) বলেন, এ তো মহা সুযোগ।
আমাদের প্রতিপালক মহান আল্লাহ তা’আলা নিজেই আমাদের কাছ থেকে মাল চাচ্ছেন। তাই হে
আল্লাহর রসূল! আমি আপনাকে স্বাক্ষী রেখে আমার “বায়রাহা” নামক বাগানটি আল্লাহর জন্য
দান করলাম। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ তুমি তোমার এ বাগান তোমার আত্মীয়- স্বজনদের মধ্যে বন্টন করে দাও। আনাস
(রাঃ) বলেন, তিনি এটা হাস্সান বিন সাবিত ও উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) -এর মধ্যে বন্টন
করে দিলেন। (ই.ফা. ২১৮৫, ই.সে. ২১৮৭)
২২০৭
حَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ
الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، عَنْ بُكَيْرٍ، عَنْ
كُرَيْبٍ، عَنْ مَيْمُونَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ، أَنَّهَا أَعْتَقَتْ وَلِيدَةً فِي
زَمَانِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " لَوْ أَعْطَيْتِهَا أَخْوَالَكِ كَانَ
أَعْظَمَ لأَجْرِكِ " .
'আব্দুল্লাহর স্ত্রী যায়নাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -এর সময় একটি দাসী আযাদ করে দেন। অতঃপর আমি এ কথা রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জানালাম। তিনি বললেন, “যদি তুমি এ দাসীটি
তোমার মামাদের দান করতে তাহলে অনেক বেশী সাওয়াব পেতে।” (ই.ফা. ২১৮৬, ই.সে. ২১৮৮)
২২০৮
حَدَّثَنَا حَسَنُ بْنُ الرَّبِيعِ،
حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَمْرِو
بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ زَيْنَبَ، امْرَأَةِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " تَصَدَّقْنَ يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ وَلَوْ
مِنْ حُلِيِّكُنَّ " . قَالَتْ فَرَجَعْتُ إِلَى عَبْدِ اللَّهِ فَقُلْتُ
إِنَّكَ رَجُلٌ خَفِيفُ ذَاتِ الْيَدِ وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَدْ أَمَرَنَا بِالصَّدَقَةِ فَأْتِهِ فَاسْأَلْهُ فَإِنْ كَانَ ذَلِكَ يَجْزِي
عَنِّي وَإِلاَّ صَرَفْتُهَا إِلَى غَيْرِكُمْ . قَالَتْ فَقَالَ لِي عَبْدُ
اللَّهِ بَلِ ائْتِيهِ أَنْتِ . قَالَتْ فَانْطَلَقْتُ فَإِذَا امْرَأَةٌ مِنَ
الأَنْصَارِ بِبَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَاجَتِي حَاجَتُهَا -
قَالَتْ - وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أُلْقِيَتْ عَلَيْهِ
الْمَهَابَةُ - قَالَتْ - فَخَرَجَ عَلَيْنَا بِلاَلٌ فَقُلْنَا لَهُ ائْتِ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبِرْهُ أَنَّ امْرَأَتَيْنِ بِالْبَابِ
تَسْأَلاَنِكَ أَتَجْزِي الصَّدَقَةُ عَنْهُمَا عَلَى أَزْوَاجِهِمَا وَعَلَى
أَيْتَامٍ فِي حُجُورِهِمَا وَلاَ تُخْبِرْهُ مَنْ نَحْنُ - قَالَتْ - فَدَخَلَ
بِلاَلٌ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ فَقَالَ لَهُ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ هُمَا " . فَقَالَ
امْرَأَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ وَزَيْنَبُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " أَىُّ الزَّيَانِبِ " . قَالَ امْرَأَةُ عَبْدِ اللَّهِ
. فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَهُمَا أَجْرَانِ
أَجْرُ الْقَرَابَةِ وَأَجْرُ الصَّدَقَةِ " .
‘আব্দুল্লাহর স্ত্রী যায়নাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহিলাদের উদ্দেশ্য করে বললেন, হে নারী সমাজ! তোমরা (দান)
সদাক্বাহ্ কর যদিও তা তোমাদের গহনাপত্রের মাধ্যমে হয়। যায়নাব (রাঃ) বলেন, এ কথা
শুনে আমি গিয়ে আমার স্বামী ‘‘‘আবদুল্লাহকে বললাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে সদাক্বাহ্ করতে বলেছেন। আর তুমি তো গরীব অভাবী
মানুষ, তাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস
কর, তোমাকে দান করলে তা দান হিসেবে গণ্য হবে কিনা? তা না হলে অপর কাউকে দান করব!
রাবী বলেন, আমার স্বামী ‘আবদুল্লাহ আমাকে বললেন, বরং তুমি যাও। অতঃপর আমিই গেলাম
এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরজায় আনসার সম্প্রদায়ের
অপর এক মহিলাকে একই উদ্দেশ্যে দাঁড়ানো দেখলাম। কারণ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হলেন অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী ও প্রভাবশালী লোক। অতঃপর
বিলাল (রাঃ) বের হয়ে আসলে আমরা তাঁকে বললাম, আপনি গিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলুন, দু’’জন মহিলা দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। তারা আপনার কাছে
জানতে চাচ্ছে- যদি তারা তাদের নিজ স্বামীকে দান করে এবং তাদের ঘরেই প্রতিপালিত
ইয়াতীমকে দান করে তাহলে কি তা আদায় হবে? আর অনুরোধ হলো আমাদের পরিচয় তাঁকে জানাবেন
না। রাবী বলেন, অতঃপর বিলাল (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
-এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, মহিলাদ্বয় কে কে? তিনি বললেন জনৈক আনসার গোত্রের এবং অপরজন
যায়নাব? তিনি বললেন, ‘‘আবদুল্লাহর স্ত্রী যায়নাব। অতঃপর তাঁকে রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তারা উভয়েই তাদের দানের জন্য দ্বিগুণ
সাওয়াব পাবে। এক-নিকটাত্নীয়দের সাথে সদ্ব্যবহারের জন্য। দুই-সদাক্বাহ্ করার জন্য।
(ই.ফা. ২১৮৭, ই.সে. ২১৮৯)
২২০৯
حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ يُوسُفَ
الأَزْدِيُّ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا أَبِي،
حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنِي شَقِيقٌ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ
زَيْنَبَ، امْرَأَةِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ فَذَكَرْتُ لإِبْرَاهِيمَ
فَحَدَّثَنِي عَنْ أَبِي عَبَيْدَةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ عَنْ زَيْنَبَ
امْرَأَةِ عَبْدِ اللَّهِ . بِمِثْلِهِ سَوَاءً قَالَ قَالَتْ كُنْتُ فِي
الْمَسْجِدِ فَرَآنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ "
تَصَدَّقْنَ وَلَوْ مِنْ حُلِيِّكُنَّ " . وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِنَحْوِ
حَدِيثِ أَبِي الأَحْوَصِ .
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) -এর স্ত্রী যায়নাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
...... পূর্বের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত
হয়েছে। তাতে এও আছে- যায়নাব (রাঃ) বলেন, আমি মাসজিদের ভিতরে ছিলাম, রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখে বললেন-“ “সদাক্বাহ্ দাও যদিও তা
তোমার গহনাপত্রের মাধ্যম হয়।”” (ই.ফা.২১৮৮,ই.সে.২১৯০)
২২১০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ
الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ
اللَّهِ هَلْ لِي أَجْرٌ فِي بَنِي أَبِي سَلَمَةَ أُنْفِقُ عَلَيْهِمْ وَلَسْتُ
بِتَارِكَتِهِمْ هَكَذَا وَهَكَذَا إِنَّمَا هُمْ بَنِيَّ . فَقَالَ "
نَعَمْ لَكِ فِيهِمْ أَجْرُ مَا أَنْفَقْتِ عَلَيْهِمْ " .
যায়নাব বিনতে আবূ সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আবূ
সালামার সন্তানদের জন্য আমি যা খরচ করি তার বিনিময়ে আমি কি সাওয়াব পাব? আর আমি চাই
না যে, তারা আমার হাত ছাড়া হয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়ুক। কেননা তারা তো আমারই সন্তান।
অতঃপর তিনি (উত্তরে ) বললেনঃ হ্যাঁ, তাদেরকে তুমি যা দান করবে তার সাওয়াব পাবে।
(ই.ফা. ২১৮৯, ই.সে. ২১৯১)
২২১১
وَحَدَّثَنِي سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، ح وَحَدَّثَنَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ، جَمِيعًا عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ بِمِثْلِهِ
.
হিশাম ‘উরওয়াহ থেকে এ সুত্র থেকে বর্ণিতঃ
উপরের হাদিসের অনুরূপ হাদীস বর্ণিত
হয়েছে। (ই.ফা. ২১৯০, ই.সে. ২১৯২)
২২১২
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ
الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيٍّ، - وَهُوَ
ابْنُ ثَابِتٍ - عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ
الْبَدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ
الْمُسْلِمَ إِذَا أَنْفَقَ عَلَى أَهْلِهِ نَفَقَةً وَهُوَ يَحْتَسِبُهَا كَانَتْ
لَهُ صَدَقَةً " .
আবূ মাস’’ঊদ আল বাদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ মুসলিম ব্যক্তি সাওয়াবের আশায় তার পরিবার-পরিজনের জন্য যা কিছু খরচ
করবে তা সবই তার জন্য সদাক্বাহ্ অর্থাৎ দান হিসেবে গণ্য হবে। (ই.ফা. ২১৯১, ই.সে.
২১৯৩)
২২১৩
وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
وَأَبُو بَكْرِ بْنُ نَافِعٍ كِلاَهُمَا عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرٍ، ح
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، جَمِيعًا عَنْ شُعْبَةَ، فِي
هَذَا الإِسْنَادِ .
শু’বাহ্ (রহঃ) থেকে এ সুত্র থেকে বর্ণিতঃ
উপরের হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
(ই.ফা. ২১৯২, ই.সে. ২১৯৪)
২২১৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ،
عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَسْمَاءَ، قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أُمِّي
قَدِمَتْ عَلَىَّ وَهْىَ رَاغِبَةٌ - أَوْ رَاهِبَةٌ - أَفَأَصِلُهَا قَالَ
" نَعَمْ " .
আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর
রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার আম্মা এসেছেন। তবে তিনি আমাদের
দ্বীনের অনুসারী হতে আগ্রহী নন বা ইসলাম গ্রহণে বিমুখ, এখন আমি কি তার সাথে
সৌজন্যমূলক ব্যবহার করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (ই.ফা. ২১৯৩, ই.সে. ২১৯৫)
২২১৫
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ
بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ، قَالَتْ قَدِمَتْ عَلَىَّ أُمِّي وَهِيَ
مُشْرِكَةٌ فِي عَهْدِ قُرَيْشٍ إِذْ عَاهَدَهُمْ فَاسْتَفْتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدِمَتْ عَلَىَّ أُمِّي وَهْىَ
رَاغِبَةٌ أَفَأَصِلُ أُمِّي قَالَ " نَعَمْ صِلِي أُمَّكِ " .
আবূ বাকরের কন্যা আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার আম্মা আমার কাছে
এসেছেন যে সময় কুরায়শদের সাথে সন্ধি বলবৎ ছিল আর তখন তিনি মুশরিকা ছিলেন। আসমা
(রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বললাম, আমার
মা আমার কাছে এসেছেন আশা নিয়ে। আমি কি আমার আম্মার সাথে সদ্ব্যবহার করব? উত্তরে
তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি তোমার আম্মার সাথে
সৌজন্যমূলক আচরণ কর। (ই.ফা. ২১৯৪, ই.সে. ২১৯৬)
১৫. অধ্যায়ঃ
মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে দান করে তার জন্য
সাওয়াব পৌছানো
২২১৬
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ،
عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَجُلاً، أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أُمِّيَ افْتُلِتَتْ نَفْسَهَا وَلَمْ
تُوصِ وَأَظُنُّهَا لَوْ تَكَلَّمَتْ تَصَدَّقَتْ أَفَلَهَا أَجْرٌ إِنْ
تَصَدَّقْتُ عَنْهَا قَالَ " نَعَمْ ".
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)! আমার মা হঠাৎ করে মারা গেছেন এবং কোন ওয়াসিয়্যাত করতে পারেননি। আমার মনে
হয়, তিনি যদি কথা বলতে পারতেন তাহলে ওয়াসিয়্যাত করে যেতেন। এখন আমি যদি তার পক্ষ
থেকে সদাক্বাহ্ করি তাহলে কি তিনি সাওয়াব পাবেন? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ। (ই.ফা.
২১৯৫, ই.সে. ২১৯৭)
২২১৭
وَحَدَّثَنِيهِ زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
أَبُو أُسَامَةَ، ح وَحَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ
مُسْهِرٍ، ح حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا شُعَيْبُ بْنُ
إِسْحَاقَ، كُلُّهُمْ عَنْ هِشَامٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . وَفِي حَدِيثِ أَبِي
أُسَامَةَ وَلَمْ تُوصِ . كَمَا قَالَ ابْنُ بِشْرٍ وَلَمْ يَقُلْ ذَلِكَ
الْبَاقُونَ .
যুহায়র ইবনু হারব, আবূ কুরায়ব, ‘আলী ইবনু হুজ্র ও হাকাম
ইবনু মূসা (রহঃ) ... থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণনাকারী হিশাম এ সানাদের মাধ্যমে উপরের হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা
করেছেন।
আর আবূ উসামার হাদীসে “তিনি ওয়াসিয়্যাত করেননি”” বলা হয়েছে যেমনটি ইবনু বিশর এর
বর্ণনায় রয়েছে। কিন্তু বাকী রাবীগণ এ কথা বর্ণনা করেননি। (ই.ফা. ২১৯৬, ই.সে. ২১৯৮)
১৬. অধ্যায়ঃ
সকল প্রকার সৎ কাজই সদাক্বাহ্
২২১৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ الْعَوَّامِ، كِلاَهُمَا عَنْ أَبِي مَالِكٍ
الأَشْجَعِيِّ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، فِي حَدِيثِ
قُتَيْبَةَ قَالَ قَالَ نَبِيُّكُمْ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ ابْنُ أَبِي
شَيْبَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " كُلُّ مَعْرُوفٍ
صَدَقَةٌ " .
হুজায়ফাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তবে কুতায়বাহ্ (রহঃ) -এর হাদীসে রয়েছে
যে, “তোমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন”।” আর ইবনু শাইবাহ্
(রহঃ) এর হাদীসে আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ““প্রতিটি
ভাল কাজই সদাক্বাহ্ অর্থাৎ দান হিসেবে গণ্য।”” (ই.ফা. ২১৯৭, ই.সে. ২১৯৯)
২২১৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ
بْنِ أَسْمَاءَ الضُّبَعِيُّ، حَدَّثَنَا مَهْدِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ، حَدَّثَنَا
وَاصِلٌ، مَوْلَى أَبِي عُيَيْنَةَ عَنْ يَحْيَى بْنِ عُقَيْلٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ
يَعْمَرَ، عَنْ أَبِي الأَسْوَدِ الدِّيلِيِّ، عَنْ أَبِي، ذَرٍّ أَنَّ نَاسًا،
مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالُوا لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالأُجُورِ يُصَلُّونَ كَمَا
نُصَلِّي وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَيَتَصَدَّقُونَ بِفُضُولِ أَمْوَالِهِمْ
. قَالَ " أَوَلَيْسَ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ مَا تَصَّدَّقُونَ
إِنَّ بِكُلِّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةً وَكُلِّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلِّ
تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلِّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ وَأَمْرٌ بِالْمَعْرُوفِ
صَدَقَةٌ وَنَهْىٌ عَنْ مُنْكَرٍ صَدَقَةٌ وَفِي بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ
" . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَأْتِي أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ
وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ قَالَ " أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِي
حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ فَكَذَلِكَ إِذَا وَضَعَهَا فِي الْحَلاَلِ
كَانَ لَهُ أَجْرٌ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর কিছু সংখ্যক সাহাবী তার কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! ধন সম্পদের
মালিকরা তো সব সাওয়াব নিয়ে নিচ্ছে। কেননা আমরা যেভাবে সালাত আদায় করি তারাও সেভাবে
আদায় করে। আমরা যেভাবে সিয়াম পালন করি তারাও সেভাবে সিয়াম পালন করে। কিন্তু তারা
তাদের অতিরিক্ত সম্পদ দান করে সাওয়াব লাভ করছে অথচ আমাদের পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে
না। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা কি তোমাদেরকে
এমন কিছু দান করেননি যা সদাক্বাহ্ করে তোমরা সাওয়াব পেতে পার? আর তা হলো প্রতেক
তাসবীহ (সুবহা-নাল্ল-হ) একটি সদাক্বাহ্, প্রত্যেক তাকবীর (আল্ল-হু-আকবার) একটি
সদাক্বাহ্, প্রত্যেক তাহমীদ (আলহামদু লিল্লাহ) বলা একটি সদাক্বাহ্, প্রত্যেক
‘‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্-হ’’ বলা একটি সদাক্বাহ্, প্রত্যেক ভাল কাজের আদেশ দেয়া এবং
মন্দ কাজ করতে দেখলে নিষেধ করা ও বাধা দেয়া একটি সদাক্বাহ্। এমনকি তোমাদের শরীরের
অংশে সদাক্বাহ্ রয়েছে। অর্থাৎ আপন স্ত্রীর সাথে সহবাস করাও একটি সদাক্বাহ্।
সাহাবীগণ বললেন, ‘‘হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদের
কেউ তার কাম প্রবৃত্তিকে চরিতার্থ করবে বৈধ পথে আর এতেও কি তার সাওয়াব হবে? তিনি
বললেন, তোমরা বল দেখি, যদি তোমাদের কেউ হারাম পথে নিজের চাহিদা মেটাতে বা যিনা করত
তাহলে কি তার গুনাহ হত না? অনুরূপভাবে যখন সে হালাল বা বৈধ পথে কামাচার করবে তাতে
তার সাওয়াব হবে। (ই.ফা. ২১৯৮, ই.সে. ২২০০)
২২২০
حَدَّثَنَا حَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ
الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو تَوْبَةَ الرَّبِيعُ بْنُ نَافِعٍ، حَدَّثَنَا
مُعَاوِيَةُ، - يَعْنِي ابْنَ سَلاَّمٍ - عَنْ زَيْدٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا
سَلاَّمٍ، يَقُولُ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ فَرُّوخَ، أَنَّهُ سَمِعَ
عَائِشَةَ، تَقُولُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
إِنَّهُ خُلِقَ كُلُّ إِنْسَانٍ مِنْ بَنِي آدَمَ عَلَى سِتِّينَ وَثَلاَثِمَائَةِ
مَفْصِلٍ فَمَنْ كَبَّرَ اللَّهَ وَحَمِدَ اللَّهَ وَهَلَّلَ اللَّهَ وَسَبَّحَ
اللَّهَ وَاسْتَغْفَرَ اللَّهَ وَعَزَلَ حَجَرًا عَنْ طَرِيقِ النَّاسِ أَوْ
شَوْكَةً أَوْ عَظْمًا عَنْ طَرِيقِ النَّاسِ وَأَمَرَ بِمَعْرُوفٍ أَوْ نَهَى
عَنْ مُنْكَرٍ عَدَدَ تِلْكَ السِّتِّينَ وَالثَّلاَثِمِائَةِ السُّلاَمَى
فَإِنَّهُ يَمْشِي يَوْمَئِذٍ وَقَدْ زَحْزَحَ نَفْسَهُ عَنِ النَّارِ "
. قَالَ أَبُو تَوْبَةَ وَرُبَّمَا قَالَ " يُمْسِي " .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’‘আলা প্রত্যেক আদাম সন্তানকেই ৩৬০ টি গ্রন্থি বিশিষ্ট
করে সৃষ্টি করেছেন। অতএব যে ব্যক্তি ঐ সংখ্যা পরিমাণ ‘আল্ল-হ-আকবার’ বলবে,
‘‘আলহামদু লিল্লাহ’’ বলবে, ‘‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’’ বলবে, ‘‘সুবহা-নাল্ল-হ’’
বলবে, ‘‘আস্তাগফিরুল্ল-হ’’ বলবে, মানুষের চলার পথ থেকে একটি পাথর বা একটি কাঁটা বা
একটি হাড় সরাবে, সৎ কাজের আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে, সে ক্বিয়ামাতের
দিন এমনভাবে চলাফেরা করবে যে, সে নিজেকে ৩৬০ (গ্রন্থি) সংখ্যা পরিমাণ জাহান্নাম
থেকে দূরে রাখবে অর্থাৎ বেঁচে থাকবে। আবূ তাওবাহ্ তাঁর বর্ণনায় এ কথাও উল্লেখ করেছেন
যে, সে এ অবস্থায় সন্ধ্যা করবে। (ই.ফা. ২১৯৯, ই.সে. ২২০১)
২২২১
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ، حَدَّثَنِي
مُعَاوِيَةُ، أَخْبَرَنِي أَخِي، زَيْدٌ بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَهُ غَيْرَ
أَنَّهُ قَالَ " أَوْ أَمَرَ بِمَعْرُوفٍ " . وَقَالَ "
فَإِنَّهُ يُمْسِي يَوْمَئِذٍ " .
মু’‘আবিয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ প্রসঙ্গে একটি হাদীস বর্ণিত আছে।
তিনি বলেন, আমার ভাই যায়দ এ সানাদে উপরের হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি
এখানে ““আও ‘আমারা বিল মা’‘রূফ”” (সৎকাজের আদেশ দিবে) এ কথাটি ব্যতীত উল্লেখ
করেছেন এবং অন্য সূত্রে তিনি বলেছেন যে, “সে ঐ দিন ঐ অবস্থায় সন্ধ্যা করবে। ”
(ই.ফা. ২২০০, ই.সে. ২২০২)
২২২২
وَحَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ نَافِعٍ
الْعَبْدِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ كَثِيرٍ، حَدَّثَنَا عَلِيٌّ، - يَعْنِي
ابْنَ الْمُبَارَكِ - حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ زَيْدِ بْنِ سَلاَّمٍ، عَنْ
جَدِّهِ أَبِي سَلاَّمٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ، بْنُ فَرُّوخَ أَنَّهُ
سَمِعَ عَائِشَةَ، تَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
خُلِقَ كُلُّ إِنْسَانٍ " . بِنَحْوِ حَدِيثِ مُعَاوِيَةَ عَنْ زَيْدٍ
. وَقَالَ " فَإِنَّهُ يَمْشِي يَوْمَئِذٍ " .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিটি মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অতঃপর রাবী
যায়দের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর হাদীসের মধ্যে ““সেদিন সে চলাফেরা
করবে”” কথাটি বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ২২০১, ই.সে. ২২০৩)
২২২৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي،
بُرْدَةَ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ صَدَقَةٌ " . قِيلَ أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ
يَجِدْ قَالَ " يَعْتَمِلُ بِيَدَيْهِ فَيَنْفَعُ نَفْسَهُ وَيَتَصَدَّقُ
" . قَالَ قِيلَ أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ قَالَ " يُعِينُ
ذَا الْحَاجَةِ الْمَلْهُوفَ " . قَالَ قِيلَ لَهُ أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ
يَسْتَطِعْ قَالَ " يَأْمُرُ بِالْمَعْرُوفِ أَوِ الْخَيْرِ " .
قَالَ أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ يَفْعَلْ قَالَ " يُمْسِكُ عَنِ الشَّرِّ
فَإِنَّهَا صَدَقَةٌ " .
সা’ঈদ ইবনু আবূ বুরদাহ (রহঃ) তাঁর পিতার সূত্রে তাঁর
দাদা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
প্রত্যেক মুসলিমের উপর সদাক্বাহ্ করা ওয়াজিব। প্রশ্ন করা হলো, যদি সদাক্বাহ্ করার
জন্য কিছু না পায় তবে? তিনি বললেন, তবে সে নিজ হাতে উপার্জন করবে এবং নিজে উপকৃত
হবে ও সদাক্বাহ্ করবে। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হল, যদি সে এতেও সক্ষম না হয় তবে কী
হবে? তিনি বললেন, তাহলে সে অসহায় আর্ত মানুষের সাহায্য করবে। রাবী বলেন, আবার
জিজ্ঞেস করা হল, যদি সে এতেও সক্ষম না হয়? তিনি বললেন, তাহলে সৎ কাজের কিংবা
কল্যাণের আদেশ করবে। আবারো জিজ্ঞেস করা হল, যদি সে তাও না করে? তিনি বললেন, তবে
মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে। কেননা এটাও সদাক্বাহ্। (ই.ফা. ২২০২, ই.সে. ২২০৪)
২২২৪
وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ،
بِهَذَا الإِسْنَادِ.
শু’বাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(ই.ফা. ২২০৩, ই.সে. নেই)
২২২৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ بْنُ هَمَّامٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ
بْنِ، مُنَبِّهٍ قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ مُحَمَّدٍ،
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كُلُّ سُلاَمَى مِنَ النَّاسِ عَلَيْهِ
صَدَقَةٌ كُلَّ يَوْمٍ تَطْلُعُ فِيهِ الشَّمْسُ - قَالَ - تَعْدِلُ بَيْنَ
الاِثْنَيْنِ صَدَقَةٌ وَتُعِينُ الرَّجُلَ فِي دَابَّتِهِ فَتَحْمِلُهُ عَلَيْهَا
أَوْ تَرْفَعُ لَهُ عَلَيْهَا مَتَاعَهُ صَدَقَةٌ - قَالَ - وَالْكَلِمَةُ
الطَّيِّبَةُ صَدَقَةٌ وَكُلُّ خَطْوَةٍ تَمْشِيهَا إِلَى الصَّلاَةِ صَدَقَةٌ
وَتُمِيطُ الأَذَى عَنِ الطَّرِيقِ صَدَقَةٌ " .
হাম্মাদ ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুরায়রাহ (রাঃ)
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করলেন। এর
মধ্যে একটি হলো- রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক
ব্যক্তির শরীরের প্রত্যেকটি গ্রন্থির উপর প্রতিদিনের সদাক্বাহ্ ধার্য রয়েছে।
দু’ব্যক্তির মধ্যে ইনসাফ করে দেয়াও একটি সদাক্বাহ্। কোন ব্যক্তিকে সওয়ারীর উপর
আরোহণে সাহায্য করা অথবা তার মালামাল সওয়ারীর উপরে তুলে দেয়াও একটি সদাক্বাহ্।
তিনি আরো বলেন, সকল প্রকার ভাল কথাই এক একটি সদাক্বাহ্, সালাত আদায়ের জন্য মাসজিদে
যেতে যতটি পদক্ষেপ ফেলা হয় তার প্রতিটিই এক একটি সদাক্বাহ্ এবং রাস্তা থেকে
কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করাও একটি সদাক্বাহ্। (ই.ফা. ২২০৪, ই.সে. ২২০৫)
১৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়কারী ও ব্যয় করতে
কৃপণতাপ্রকাশকারী সম্পর্ক
২২২৬
وَحَدَّثَنِي الْقَاسِمُ بْنُ زَكَرِيَّا،
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ، - وَهُوَ ابْنُ
بِلاَلٍ - حَدَّثَنِي مُعَاوِيَةُ بْنُ أَبِي مُزَرِّدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" مَا مِنْ يَوْمٍ يُصْبِحُ الْعِبَادُ فِيهِ إِلاَّ مَلَكَانِ
يَنْزِلاَنِ فَيَقُولُ أَحَدُهُمَا اللَّهُمَّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا .
وَيَقُولُ الآخَرُ اللَّهُمَّ أَعْطِ مُمْسِكًا تَلَفًا " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক বান্দা যখন সকালে ওঠে দু’জন মালাক
(ফেরেশতা) অবতীর্ণ হন। তাদের জনৈক বলেন, “হে আল্লাহ! খরচকারীর ধন আরো বাড়িয়ে দাও”
এবং দ্বিতীয়জন বলেন, “হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দাও।” (ই.ফা. ২২০৫, ই.সে. ২২০৬)
১৮. অধ্যায়ঃ
যে সময় সদাক্বাহ্ গ্রহণকারী পাওয়া যাবে না সে
সময় আসার পূর্বে দান করার প্রতি উৎসাহিত করা প্রসঙ্গে
২২২৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، ح
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مَعْبَدِ بْنِ خَالِدٍ، قَالَ
سَمِعْتُ حَارِثَةَ بْنَ وَهْبٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَقُولُ " تَصَدَّقُوا فَيُوشِكُ الرَّجُلُ يَمْشِي بِصَدَقَتِهِ
فَيَقُولُ الَّذِي أُعْطِيَهَا لَوْ جِئْتَنَا بِهَا بِالأَمْسِ قَبِلْتُهَا
فَأَمَّا الآنَ فَلاَ حَاجَةَ لِي بِهَا . فَلاَ يَجِدُ مَنْ يَقْبَلُهَا
" .
হারিসাহ্ ইবনু ওয়াহ্ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা সদাক্বাহ্ দাও, এমন এক সময় আসবে মানুষ তার
সদাক্বাহ্ নিয়ে যাকে দিতে যাবে সে বলবে, যদি তুমি গতকাল আসতে তাহলে আমি এটা গ্রহণ
করতাম। এখন আমার আর প্রয়োজন নেই। অতঃপর সে সদাক্বাহ্ নেয়ার মতো কোন লোক পাবে না।
(ই.ফা. ২২০৬, ই.সে.২২০৭)
২২২৮
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَرَّادٍ
الأَشْعَرِيُّ، وَأَبُو كُرَيْبٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو
أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَيَأْتِيَنَّ عَلَى النَّاسِ
زَمَانٌ يَطُوفُ الرَّجُلُ فِيهِ بِالصَّدَقَةِ مِنَ الذَّهَبِ ثُمَّ لاَ يَجِدُ
أَحَدًا يَأْخُذُهَا مِنْهُ وَيُرَى الرَّجُلُ الْوَاحِدُ يَتْبَعُهُ أَرْبَعُونَ
امْرَأَةً يَلُذْنَ بِهِ مِنْ قِلَّةِ الرِّجَالِ وَكَثْرَةِ النِّسَاءِ "
. وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ بَرَّادٍ " وَتَرَى الرَّجُلَ " .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মানুষের উপর এমন এক
যুগ আসবে যখন কোন লোক তার স্বর্ণের সদাক্বাহ্ নিয়ে ঘুরতে থাকবে কিন্তু নেয়ার মতো
কোন লোক পাবে না। আর একজন পুরুষের পিছনে চল্লিশ জন করে নারীকে অনুসরণ করতে দেখা
যাবে। পুরুষের সংখ্যা কম এবং স্ত্রী লোকের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে তারা এদের কাছে
আশ্রয় নিবে।
আর ইবনু বার্রাদের বর্ণনায় বলে হয়েছে-“তুমি দেখতে পাবে কোন ব্যক্তিকে”। (ই.ফা.
২২০৭, ই.সে.২২০৮)
২২২৯
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْقَارِيُّ - عَنْ
سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَكْثُرَ الْمَالُ
وَيَفِيضَ حَتَّى يَخْرُجَ الرَّجُلُ بِزَكَاةِ مَالِهِ فَلاَ يَجِدُ أَحَدًا
يَقْبَلُهَا مِنْهُ وَحَتَّى تَعُودَ أَرْضُ الْعَرَبِ مُرُوجًا وَأَنْهَارًا
" .
আবূ হূরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাত অনুষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত সম্পদের প্রাচুর্য না
আসবে। এমনকি কোন ব্যক্তি সম্পদের যাকাত নিয়ে ঘুরবে কিন্তু নেয়ার মত লোক পাবে না।
আরবের মাঠ ঘাট তখন চারণভূমি ও নদী-নালায় পরিনত হবে। (ই.ফা. ২২০৮, ই.সে.২২০৯)
২২৩০
وَحَدَّثَنَا أَبُو الطَّاهِرِ، حَدَّثَنَا
ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي يُونُسَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَقُومُ
السَّاعَةُ حَتَّى يَكْثُرَ فِيكُمُ الْمَالُ فَيَفِيضَ حَتَّى يُهِمَّ رَبَّ
الْمَالِ مَنْ يَقْبَلُهُ مِنْهُ صَدَقَةً وَيُدْعَى إِلَيْهِ الرَّجُلُ فَيَقُولُ
لاَ أَرَبَ لِي فِيهِ " .
আবূ হূরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ যতক্ষণ পর্যন্ত ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পেয়ে এর প্লাবণ সৃষ্টি না হবে
ততক্ষণ ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে না। আর তখন মানুষের প্রাচুর্য এমন চরম রুপ লাভ করবে
যে, ধন-সম্পদের মালিকেরা এ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়বে যে, তার যাকাত কে গ্রহণ করবে ও
এমন লোক কোথায় পাওয়া যাবে। সদাক্বাহ্ গ্রহণের জন্য কাউকে ডাকা হলে সে বলবে, আমার
এর প্রয়োজন নেই। (ই.ফা. ২২০৯, ই.সে.২২১০)
২২৩১
وَحَدَّثَنَا وَاصِلُ بْنُ عَبْدِ
الأَعْلَى، وَأَبُو كُرَيْبٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَزِيدَ الرِّفَاعِيُّ -
وَاللَّفْظُ لِوَاصِلٍ - قَالُوا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " تَقِيءُ الأَرْضُ أَفْلاَذَ كَبِدِهَا أَمْثَالَ
الأُسْطُوَانِ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ فَيَجِيءُ الْقَاتِلُ فَيَقُولُ فِي
هَذَا قَتَلْتُ . وَيَجِيءُ الْقَاطِعُ فَيَقُولُ فِي هَذَا قَطَعْتُ رَحِمِي
. وَيَجِيءُ السَّارِقُ فَيَقُولُ فِي هَذَا قُطِعَتْ يَدِي ثُمَّ يَدَعُونَهُ
فَلاَ يَأْخُذُونَ مِنْهُ شَيْئًا " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জমিন তার বক্ষস্থিত সোনা রুপা স্তম্ভের ন্যায় কলিজার
টুকরাসহ বমি করে দিবে। অতঃপর হত্যাকারী এসে বলবে, আমি তো এর জন্যই খুন করেছিলাম।
আত্মীয়তা বন্ধন ছিন্নকারী এসে বলবে, এর জন্যই তো আমি আত্মীয়তা ছিন্ন করেছিলাম এবং
তাদের হাক্ব নষ্ট করেছিলাম। আত্মীয়তা বন্ধন ছিন্নকারী এসে বলবে, এর জন্যই তো আমি
আত্মীয়তা ছিন্ন করেছিলাম এবং তাদের হাক্ব নষ্ট করেছিলাম। চোর এসে বলবে, এসবের
জন্যই তো আমার হাত কাটা হয়েছে। তারপর সকলেই একে ছেড়ে দিবে এবং কেউই এর থেকে কিছুই
নিবে না। (ই.ফা. ২২১০, ই.সে.২২১১)
১৯. অধ্যায়ঃ
হালাল উপার্জন থেকে সদাক্বাহ্ গ্রহণ এবং
সদাক্বার মাল রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে
২২৩২
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَسَارٍ،
أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " مَا تَصَدَّقَ أَحَدٌ بِصَدَقَةٍ مِنْ طَيِّبٍ - وَلاَ يَقْبَلُ اللَّهُ
إِلاَّ الطَّيِّبَ - إِلاَّ أَخَذَهَا الرَّحْمَنُ بِيَمِينِهِ وَإِنْ كَانَتْ
تَمْرَةً فَتَرْبُو فِي كَفِّ الرَّحْمَنِ حَتَّى تَكُونَ أَعْظَمَ مِنَ الْجَبَلِ
كَمَا يُرَبِّي أَحَدُكُمْ فَلُوَّهُ أَوْ فَصِيلَهُ " .
আবূ হূরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পবিত্র অর্থাৎ হালাল দ্বারা সদাক্বাহ্
দেয়- আর আল্লাহ্ পবিত্র বা হালাল মাল ছাড়া গ্রহণ করেন না- করুণাময় আল্লাহ্ তার
সদাক্বাহ্ ডান হাতে গ্রহণ করেন, যদিও তা একটি খেজুর হয়। অতঃপর এ সদাক্বাহ্ দয়াময়
আল্লাহ্র হাতে বৃদ্ধি পেতে থাকে। অবশেষে তা পাহাড়ের চেয়েও অনেক বড় হয়ে যাবে-যেমন
তোমাদের কেউ তার ঘোড়ার বা উটের বাচ্চাকে লালন পালন করে এবং সে দিন দিন বড় হতে
থাকে। (ই.ফা. ২২১১, ই.সে.২২১২)
২২৩৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - يَعْنِي ابْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْقَارِيَّ - عَنْ
سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " لاَ يَتَصَدَّقُ أَحَدٌ بِتَمْرَةٍ مِنْ كَسْبٍ طَيِّبٍ
إِلاَّ أَخَذَهَا اللَّهُ بِيَمِينِهِ فَيُرَبِّيهَا كَمَا يُرَبِّي أَحَدُكُمْ
فَلُوَّهُ أَوْ قَلُوصَهُ حَتَّى تَكُونَ مِثْلَ الْجَبَلِ أَوْ أَعْظَمَ "
.
আবূ হূরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ কোন ব্যক্তি তার হালাল ও পবিত্র উপার্জিত একটি খেজুর দান করলে
আল্লাহ্ তা’আলা ডান হাতে তা গ্রহণ করেন এবং তোমাদের কেউ যেভাবে উটের বা ঘোড়ার
বাচ্চা লালন পালন করে বড় করে থাকে, তিনিও সেভাবে এটা বাড়াতে থাকেন। অবশেষে তা
পাহাড় অথবা এর চেয়েও অনেক বড় হয়। (ই.ফা. ২২১২, ই.সে.২২১৩)
২২৩৪
وَحَدَّثَنِي أُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامَ،
حَدَّثَنَا يَزِيدُ، - يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ - حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ
الْقَاسِمِ، ح وَحَدَّثَنِيهِ أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ الأَوْدِيُّ، حَدَّثَنَا
خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ، - يَعْنِي ابْنَ بِلاَلٍ -
كِلاَهُمَا عَنْ سُهَيْلٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . فِي حَدِيثِ رَوْحٍ "
مِنَ الْكَسْبِ الطَّيِّبِ فَيَضَعُهَا فِي حَقِّهَا " . وَفِي حَدِيثِ
سُلَيْمَانَ " فَيَضَعُهَا فِي مَوْضِعِهَا " .
সুহায়ল (রহঃ) থেকে এ সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
তবে (রাবীদের বর্ণনায় কিছুটা শাব্দিক পার্থক্য রয়েছে) রাওহ্ (রহঃ)-এর হাদীসে রয়েছে
বৈধ উপার্জন হতে, অতঃপর খরচ করে সে তা তার প্রাপ্য স্থানে এবং সুলায়মানের হাদীসে
“অতঃপর সে ব্যয় করে তা যথাস্থানে”। (ই.ফা. ২২১৩, ই.সে.২২১৪)
২২৩৫
وَحَدَّثَنِيهِ أَبُو الطَّاهِرِ،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ
زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ حَدِيثِ يَعْقُوبَ عَنْ سُهَيْلٍ .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ ... উপরের হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ২২১৪, ই.সে.২২১৫)
২২৩৬
وَحَدَّثَنِي أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ
بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ مَرْزُوقٍ،
حَدَّثَنِي عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ
اللَّهَ طَيِّبٌ لاَ يَقْبَلُ إِلاَّ طَيِّبًا وَإِنَّ اللَّهَ أَمَرَ
الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ فَقَالَ { يَا أَيُّهَا
الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا
تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} وَقَالَ { يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ
طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} " . ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ
أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ يَا رَبِّ يَا رَبِّ
وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ وَغُذِيَ
بِالْحَرَامِ فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
“আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর
আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম
দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভালো
কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত”। (সূরাহ্ আল মু’মিনূন ২৩:৫১)
তিনি (আল্লাহ্) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছ শোন! আমি তোমাদের যে সব পবিত্র
জিনিস রিয্ক্ব হিসেবে দিয়েছি তা খাও”- (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২:১৭২)। অতঃপর
তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে
ধুলি ধূসরিত রুক্ষ্ণ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে
আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং
আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু’আ তিনি করে কবুল করতে পারেন?” (ই.ফা. ২২১৫,
ই.সে.২২১৬)
২০. অধ্যায়ঃ
দানের জন্য উদ্বুদ্ধ করা যদিও তা এক টুকরা
খেজুর বা ভালো কথা বলার মাধ্যমে হয়, সদাক্বাহ্ জাহান্নামের অগ্নি থেকে
হিফাযাতকারী
২২৩৭
حَدَّثَنَا عَوْنُ بْنُ سَلاَّمٍ
الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْجُعْفِيُّ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْقِلٍ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ، قَالَ
سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنِ اسْتَطَاعَ
مِنْكُمْ أَنْ يَسْتَتِرَ مِنَ النَّارِ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ فَلْيَفْعَلْ
" .
’আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি
জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাকার সামর্থ্য রাখে সে যেন একটা খেজুর দিয়ে হলেও তাই
করে। (অর্থাৎ দান যতই ক্ষুদ্র হোক তাঁকে খাটো করে দেখা যাবে না। সামান্য দানও কবূল
হলে নাযাতের ওয়াসীলাহ্ হতে পারে)। (ই.ফা. ২২১৬, ই.সে.২২১৭)
২২৩৮
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ
السَّعْدِيُّ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَعَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، قَالَ
ابْنُ حُجْرٍ حَدَّثَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ،
حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ خَيْثَمَةَ، عَنْ عَدِيِّ، بْنِ حَاتِمٍ قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ
سَيُكَلِّمُهُ اللَّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ تُرْجُمَانٌ فَيَنْظُرُ
أَيْمَنَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إِلاَّ مَا قَدَّمَ وَيَنْظُرُ أَشْأَمَ مِنْهُ فَلاَ
يَرَى إِلاَّ مَا قَدَّمَ وَيَنْظُرُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَلاَ يَرَى إِلاَّ النَّارَ
تِلْقَاءَ وَجْهِهِ فَاتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ " . زَادَ
ابْنُ حُجْرٍ قَالَ الأَعْمَشُ وَحَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ عَنْ خَيْثَمَةَ
مِثْلَهُ وَزَادَ فِيهِ " وَلَوْ بِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ " .
وَقَالَ إِسْحَاقُ قَالَ الأَعْمَشُ عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ عَنْ خَيْثَمَةَ .
‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
তোমাদের প্রত্যকেকেই আল্লাহ্ তা’আলার সাথে কথা বলতে হবে তা এমনভাবে যে, আল্লাহ্
ও বান্দার মধ্যে কোন দোভাষী থাকবে না। সে ডান দিকে তাকালে তাঁর পৃথিবীতে করা
যাবতীয় কাজ দেখতে পাবে। আর বাম দিকে তাকালেও সে তার কৃতকর্ম (ছাড়া আর কিছু) দেখতে
পাবে না- যা তার মুখের কাছেই থাকবে। সুতরাং এক টুকরো খেজুর দিয়ে হলেও জাহান্নামের
আগুন থেকে নিষ্কৃতি লাভ কর।
ইবনু হুজ্র (রহঃ) ... খায়সামাহ্ (রহঃ) থেকে অবিকল বর্ণিত হয়েছে। তবে তাঁর
বর্ণনায় “একটি পবিত্র এবং ভালো কথার মাধ্যমে হলেও” কথাটি বর্ধিত বর্ণনা রয়েছে।
ইসহাক্ব (রহঃ) ‘আম্র ইবনু মুর্রাহ্ (রহঃ)-এর সুত্রে খায়সামাহ্ (রহঃ) থেকে
বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ২২১৭, ই.সে.২২১৮)
২২৩৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ خَيْثَمَةَ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ
حَاتِمٍ، قَالَ ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم النَّارَ فَأَعْرَضَ
وَأَشَاحَ ثُمَّ قَالَ " اتَّقُوا النَّارَ " . ثُمَّ أَعْرَضَ
وَأَشَاحَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ كَأَنَّمَا يَنْظُرُ إِلَيْهَا ثُمَّ قَالَ
" اتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ فَمَنْ لَمْ يَجِدْ
فَبِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ " . وَلَمْ يَذْكُرْ أَبُو كُرَيْبٍ كَأَنَّمَا
وَقَالَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ .
’আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
জাহান্নামের শাস্তির কথা উল্লেখ করে মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং চরম অস্বস্তির ভাব
প্রকাশ করলেন- “তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে আত্মরক্ষা কর”। তিনি পুনরায় মুখ
ফিরিয়ে নিলেন ও এমন ভাব প্রকাশ করলেন যাতে আমাদের মনে হচ্ছিল যে, তিনি তা দেখেছেন।
অতঃপর তিনি বলেন, তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে আত্মরক্ষা কর যদি তা এক টুকরা
খেজুরের বিনিময়েও হয়। আর যার এ সামর্থ্যটুকু নেই সে যেন ভাল কথার মাধ্যমে তা করে”।
বর্ণনাকারী আবূ কুরায়ব-এর বর্ণনায় (আরবী) ‘যেন’ শব্দটির উল্লেখ নেই। তিনি বলেন,
আবূ মু’আবিয়াহ্ আমার কাছে বলেন এবং আ’মাশ তার কাছে এ হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা.
২২১৮, ই.সে.২২১৯)
২২৪০
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ خَيْثَمَةَ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ
حَاتِمٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ ذَكَرَ النَّارَ
فَتَعَوَّذَ مِنْهَا وَأَشَاحَ بِوَجْهِهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ ثُمَّ قَالَ "
اتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا فَبِكَلِمَةٍ
طَيِّبَةٍ " .
‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) জাহান্নামের কথা উল্লেখ করে (আল্লাহ্র কাছে) এর থেকে আশ্রয় প্রার্থনা
করলেন এবং তিনবার মুখ ফিরিয়ে অস্বস্তির ভাব প্রকাশ করলেন। অতঃপর তিনি বললেন, তোমরা
জাহান্নামের আগুন থেকে আত্মরক্ষা কর যদি তা এক টুকরো খেজুরের মাধ্যমেও হয়। আর যদি
তোমরা এতটুকু দান করতেও সমর্থ না হও তাহলে ভাল কথার মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে বাঁচো।
(ই.ফা. ২২১৯, ই.সে.২২২০)
২২৪১
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى
الْعَنَزِيُّ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
عَوْنِ، بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ عَنِ الْمُنْذِرِ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِيهِ،
قَالَ كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي صَدْرِ النَّهَارِ
قَالَ فَجَاءَهُ قَوْمٌ حُفَاةٌ عُرَاةٌ مُجْتَابِي النِّمَارِ أَوِ الْعَبَاءِ
مُتَقَلِّدِي السُّيُوفِ عَامَّتُهُمْ مِنْ مُضَرَ بَلْ كُلُّهُمْ مِنْ مُضَرَ
فَتَمَعَّرَ وَجْهُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِمَا رَأَى بِهِمْ مِنَ
الْفَاقَةِ فَدَخَلَ ثُمَّ خَرَجَ فَأَمَرَ بِلاَلاً فَأَذَّنَ وَأَقَامَ فَصَلَّى
ثُمَّ خَطَبَ فَقَالَ " { يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ
الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ} إِلَى آخِرِ الآيَةِ { إِنَّ
اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا} وَالآيَةَ الَّتِي فِي الْحَشْرِ {
اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنْظُرْ نَفْسٌ مَا قَدَّمَتْ لِغَدٍ وَاتَّقُوا اللَّهَ}
تَصَدَّقَ رَجُلٌ مِنْ دِينَارِهِ مِنْ دِرْهَمِهِ مِنْ ثَوْبِهِ مِنْ صَاعِ
بُرِّهِ مِنْ صَاعِ تَمْرِهِ - حَتَّى قَالَ - وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ "
. قَالَ فَجَاءَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ بِصُرَّةٍ كَادَتْ كَفُّهُ تَعْجِزُ
عَنْهَا بَلْ قَدْ عَجَزَتْ - قَالَ - ثُمَّ تَتَابَعَ النَّاسُ حَتَّى رَأَيْتُ
كَوْمَيْنِ مِنْ طَعَامٍ وَثِيَابٍ حَتَّى رَأَيْتُ وَجْهَ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَتَهَلَّلُ كَأَنَّهُ مُذْهَبَةٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " مَنْ سَنَّ فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ
أَجْرُهَا وَأَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا بَعْدَهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ
أُجُورِهِمْ شَىْءٌ وَمَنْ سَنَّ فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ
عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَوِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ
يَنْقُصَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَىْءٌ " .
মুনযির ইবনু জারীর থেকে তাঁর পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমরা ভোরের দিকে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এ সময় তাঁর
কাছে পাদুকাবিহীন, বস্ত্রহীন, গলার চামড়ার আবা পরিহিত এবং নিজেদের তরবারি ঝুলন্ত
অবস্থায় একদল লোক আসল। এদের অধিকাংশ কিংবা সকলেই মুযার গোত্রের লোক ছিল। অভাব
অনটনে তাদের এ করুণ অবস্থা দেখে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
মুখমণ্ডল পরিবর্তিত ও বিষন্ন হয়ে গেল। তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন, অতঃপর বেরিয়ে
আসলেন। তিনি বিলাল (রাঃ)-কে আযান দিতে নির্দেশ দিলেন। বিলাল (রাঃ) আযান ও ইক্বামাত
দিলেন। সলাত শেষ করে তিনি উপস্থিত মুসল্লীদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন এবং এ আয়াত পাঠ
করলেনঃ “হে মানব জাতি! তোমরা নিজেদের প্রতিপালককে ভয় কর যিনি তোমাদের একটি মাত্র
ব্যক্তি থেকে [আদম (‘আঃ)]! থেকে সৃষ্টি করেছেন। ... নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’আলা
তোমাদের রক্ষণাবেক্ষণকারী”- (সূরাহ্ আন্ নিসা ৪:১)। অতঃপর তিনি সূরাহ হাশ্রের
শেষের দিকের এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। প্রত্যেক
ব্যক্তি যেন ভবিষ্যতের জন্য কী সঞ্চয় করেছে সেদিকে লক্ষ্য করে”-(সূরাহ্ আল হাশ্র
৫৯:১৮)। অতঃপর উপস্থিত লোকদের কেউ তার দীনার, কেউ দিরহাম, কেউ কাপড়, কেউ এক সা’আটা
ও কেউ এক সা’ খেজুর দান করল। অবশেষে তিনি বললেন, অন্ততঃ এক টুকরা খেজুর হলেও নিয়ে
আসো। বর্ণনাকারী বলেন, আনসার সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি একটি বিরাট থলি নিয়ে আসলেন।
এর ভারে তার হাত অবসাদ্গ্রস্ত হয়ে যাচ্ছিল কিংবা অবশ হয়ে গেল। রাবী আরো বলেন,
অতঃপর লোকেরা সারিবদ্ধভাবে একের পর এক দান করতে থাকল। ফলে খাদ্য ও কাপড়ের দুটি
স্তূপ হয়ে গেল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেহারা মুবারক
খাঁটি সোনার ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে হাসতে লাগল। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোন উত্তম প্রথা বা কাজের
প্রচলন করে সে তার এ কাজের সাওয়াব পাবে এবং তার পরে যারা তার এ কাজ দেখে তা করবে
সে এর বিনিময়েও সাওয়াব পাবে। তবে এতে তাদের সাওয়াব কোন অংশে কমানো হবে না। আর যে
ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে (ইসলামের পরিপন্থী) কোন খারাপ প্রথা বা কাজের প্রচলন করবে,
তাকে তার এ কাজের বোঝা (গুনাহ এবং শাস্তি) বহন করতে হবে। তারপর যারা তাকে অনুসরণ
করে এ কাজ করবে তাদের সমপরিমাণ বোঝাও তাকে বইতে হবে। তবে এতে তাদের অপরাধ ও শাস্তি
কোন অংশেই কমবে না। (ই.ফা. ২২২০, ই.সে. ২২২১)
২২৪২
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، ح وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُعَاذٍ، الْعَنْبَرِيُّ حَدَّثَنَا أَبِي قَالاَ، جَمِيعًا حَدَّثَنَا شُعْبَةُ،
حَدَّثَنِي عَوْنُ بْنُ أَبِي جُحَيْفَةَ، قَالَ سَمِعْتُ الْمُنْذِرَ بْنَ
جَرِيرٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَدْرَ
النَّهَارِ . بِمِثْلِ حَدِيثِ ابْنِ جَعْفَرٍ وَفِي حَدِيثِ ابْنِ مُعَاذٍ مِنَ
الزِّيَادَةِ قَالَ ثُمَّ صَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ خَطَبَ .
মুন্যির ইবনু জারীর (রাঃ) থেকে তাঁর পিতার সূত্র থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা দিনের প্রথম ভাগে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম ... ইবনু জা’ফারের
বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। আর মু’আয (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে আরো আছে : (আরবী)
“অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সলাত আদায় করলেন এবং ভাষণ
দিলেন” উক্তিটি অতিরিক্ত বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ২২২১, ই.সে.২২২২)
২২৪৩
حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ
الْقَوَارِيرِيُّ، وَأَبُو كَامِلٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ الأُمَوِيُّ
قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنِ
الْمُنْذِرِ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كُنْتُ جَالِسًا عِنْدَ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم فَأَتَاهُ قَوْمٌ مُجْتَابِي النِّمَارِ وَسَاقُوا الْحَدِيثَ
بِقِصَّتِهِ وَفِيهِ فَصَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ صَعِدَ مِنْبَرًا صَغِيرًا فَحَمِدَ
اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ " أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ اللَّهَ
أَنْزَلَ فِي كِتَابِهِ { يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ} الآيَةَ
" .
মুন্যির ইবনু জারীর (রাঃ) থেকে তাঁর পিতার সূত্র থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বসা ছিলাম। এ সময় চামড়ার আবা পরিহিত একদল লোক আসলেন
... পূর্বের হাদীসের অনুরূপ। এতে আরো আছে, অতঃপর তিনি যুহরের সলাত আদায় করলেন।
অতঃপর ছোট একটি মিম্বারে উঠে আল্লাহ্ তা’আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন। অতঃপর বললেন,
আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর কিতাবে নাযিল করেছেন-“হে মানব গোষ্ঠী! তোমরা তোমাদের প্রভুকে
ভয় কর। (ই.ফা. ২২২২, ই.সে.২২২৩)
২২৪৪
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُوسَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ،
يَزِيدَ وَأَبِي الضُّحَى عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هِلاَلٍ الْعَبْسِيِّ،
عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ جَاءَ نَاسٌ مِنَ الأَعْرَابِ إِلَى
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمُ الصُّوفُ فَرَأَى سُوءَ حَالِهِمْ
. قَدْ أَصَابَتْهُمْ حَاجَةٌ . فَذَكَرَ بِمَعْنَى حَدِيثِهِمْ .
জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, পশমী কাপড় পরিহিত অবস্থায়
গ্রাম থেকে কয়েক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে
আসল। তিনি তাদের দুরবস্থা দেখেন। তারা অভাব অনটনে নিমজ্জিত আছে। হাদীসের অবশিষ্ঠ
বর্ণনা পূর্বের হাদীসসমূহের অনুরূপ। (ই.ফা. ২২২৩, ই.সে.২২২৪)
২১. অধ্যায়ঃ
সদাক্বাহ্ করার জন্য পারিশ্রমিকের বোঝা বহন
করা, দানকারীর দান পরিমাণে কম করলে খোঁটা দেয়া বা তাকে হেয় মনে করা কঠোরভাবে
নিষিদ্ধ
২২৪৫
حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ،
حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، ح وَحَدَّثَنِيهِ بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ،
- وَاللَّفْظُ لَهُ - أَخْبَرَنَا مُحَمَّدٌ، - يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ - عَنْ
شُعْبَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ
أُمِرْنَا بِالصَّدَقَةِ . قَالَ كُنَّا نُحَامِلُ - قَالَ - فَتَصَدَّقَ أَبُو
عَقِيلٍ بِنِصْفِ صَاعٍ - قَالَ - وَجَاءَ إِنْسَانٌ بِشَىْءٍ أَكْثَرَ مِنْهُ
فَقَالَ الْمُنَافِقُونَ إِنَّ اللَّهَ لَغَنِيٌّ عَنْ صَدَقَةِ هَذَا وَمَا
فَعَلَ هَذَا الآخَرُ إِلاَّ رِيَاءً فَنَزَلَتْ { الَّذِينَ يَلْمِزُونَ
الْمُطَّوِّعِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ فِي الصَّدَقَاتِ وَالَّذِينَ لاَ يَجِدُونَ
إِلاَّ جُهْدَهُمْ} وَلَمْ يَلْفِظْ بِشْرٌ بِالْمُطَّوِّعِينَ .
আবূ মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা বোঝা বহনকারী শ্রমিক
ছিলাম, আমাদেরকে দান-খায়রাত করার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো। অতঃপর আবূ ‘আক্বীল অর্ধ
সা’ সদাক্বাহ্ করল এবং আরেক ব্যক্তি এর চেয়ে কিছু বেশী নিয়ে আসল। মুনাফিক্বরা
বলতে লাগল আল্লাহ্র কাছে সামান্য দানের কোন মূল্য নেই এবং তিনি এর মুখাপেক্ষী নন।
আর দ্বিতীয় ব্যক্তি (আবূ ‘আক্বীল) শুধু লোক দেখানোর উদ্দেশেই দান করেছেন। অতঃপর এ
আয়াত নাযিল হলো: “যারা বিদ্রূপ করে স্বেচ্ছায় ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে সদাক্বাহ্
প্রদানকারী মু’মিনদেরকে, আর তাদেরকে যাদের পারিশ্রমিক ছাড়া কোন আয় বা সামর্থ্য
নেই”- (সূরাহ আত্ ত্বওবাহ্ ৯:৭৯)। বিশ্রের বর্ণনায় (আরবী) শব্দটি নেই। (ই.ফা.
২২২৪, ই.সে.২২২৫)
২২৪৬
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ الرَّبِيعِ، ح وَحَدَّثَنِيهِ إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ،
أَخْبَرَنَا أَبُو دَاوُدَ، كِلاَهُمَا عَنْ شُعْبَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ .
وَفِي حَدِيثِ سَعِيدِ بْنِ الرَّبِيعِ قَالَ كُنَّا نُحَامِلُ عَلَى ظُهُورِنَا
.
শু’বাহ্ (রাঃ) থেকে এ সুত্র থেকে বর্ণিতঃ
এ হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
সা’ঈদ ইবনু রবী’-এর বর্ণনায় আছে: আবূ মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, আমরা পিঠে করে বোঝা বহন
করতাম। (ই.ফা. ২২২৫, ই.সে.২২২৬)
২২. অধ্যায়ঃ
দুগ্ধবতী জন্তু বিনামূল্যে দান করার ফাযীলাত
২২৪৭
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، يَبْلُغُ بِهِ " أَلاَ رَجُلٌ يَمْنَحُ أَهْلَ
بَيْتٍ نَاقَةً تَغْدُو بِعُسٍّ وَتَرُوحُ بِعُسٍّ إِنَّ أَجْرَهَا لَعَظِيمٌ
" .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
“যে ব্যক্তি কোন পরিবারকে এমন একটি
উস্ট্রী দান করে যা সকাল ও সন্ধ্যা বড় একটি পাত্র ভর্তি দুধ দেয়, এর বিনিময়ে তার
অনেক সাওয়াব হয়।” (ই.ফা. ২২২৬, ই.সে.২২২৭)
২২৪৮
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ
أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ عَدِيٍّ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ
اللَّهِ، بْنُ عَمْرٍو عَنْ زَيْدٍ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي
حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ
نَهَى فَذَكَرَ خِصَالاً وَقَالَ " مَنْ مَنَحَ مَنِيحَةً غَدَتْ
بِصَدَقَةٍ وَرَاحَتْ بِصَدَقَةٍ صَبُوحِهَا وَغَبُوقِهَا " .
আবূ হুরায়ারাহ্ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি কিছু সংখ্যক কাজ ও অভ্যাস
পরিত্যাগের নির্দেশ দান করলেন। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি মানীহাহ্ (অর্থাৎ দুগ্ধবতী
জন্তু বিনামূল্যে দুধ পানের জন্য) দান করে, সকাল সন্ধ্যায় যখনই এর দুধ পান করা হয়
তখনই সে একটি করে সদাকার সাওয়াব লাভ করে। (ই.ফা. ২২২৭, ই.সে.২২২৮)
২৩. অধ্যায়ঃ
দানশীল ব্যক্তি ও কৃপণ ব্যক্তির উদাহরণ
২২৪৯
حَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ عَمْرٌو وَحَدَّثَنَا
سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ قَالَ وَقَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ عَنِ الْحَسَنِ بْنِ
مُسْلِمٍ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " مَثَلُ الْمُنْفِقِ وَالْمُتَصَدِّقِ كَمَثَلِ رَجُلٍ عَلَيْهِ
جُبَّتَانِ أَوْ جُنَّتَانِ مِنْ لَدُنْ ثُدِيِّهِمَا إِلَى تَرَاقِيهِمَا فَإِذَا
أَرَادَ الْمُنْفِقُ - وَقَالَ الآخَرُ فَإِذَا أَرَادَ الْمُتَصَدِّقُ - أَنْ
يَتَصَدَّقَ سَبَغَتْ عَلَيْهِ أَوْ مَرَّتْ وَإِذَا أَرَادَ الْبَخِيلُ أَنْ
يُنْفِقَ قَلَصَتْ عَلَيْهِ وَأَخَذَتْ كُلُّ حَلْقَةٍ مَوْضِعَهَا حَتَّى تُجِنَّ
بَنَانَهُ وَتَعْفُوَ أَثَرَهُ " . قَالَ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ
فَقَالَ يُوَسِّعُهَا فَلاَ تَتَّسِعُ .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ খরচকারী ও দান-খয়রাতকারী (এখানে বর্ণনাকারীর ভুল হয়ে গেছে সঠিক কথা
হল- কৃপণ ও সদাক্বাক্বারির) উদাহরণ ঐ ব্যক্তির ন্যায় যার পরনে দু’টি জামা অথবা
দু’টি বর্ম রয়েছে (বর্ম সম্পর্কে বর্ণনাকারী বলেন, যখন সদাক্বাকারী সদাক্বাহ্
দিতে ইচ্ছা করে) তখন ঐ বর্ম প্রশস্ত হয়ে যায় এবং তার সমস্ত শরীরে ছেয়ে যায়। আর যখন
কৃপণ ব্যক্তি ব্যয় করতে চায় তখন ঐ বর্ম তার জন্য সঙ্কীর্ণ হয়ে এবং বর্মের পরিধি
স্ব-স্ব স্থানে কমে যায়। এমনকি তার সব গ্রন্থিগুলো আবৃত করে ফেলে এবং তার পায়ের
চিহ্নগুলোও মুছে ফেলে। বর্ণনাকারী বলেন, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) তার বর্ণিত হাদীসে
বলেছেন, “অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সে তা প্রশস্ত করতে
চায় কিন্তু প্রশস্ত হয় না।” (ই.ফা. ২২২৮, ই.সে.২২২৯)
২২৫০
حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ عُبَيْدِ
اللَّهِ أَبُو أَيُّوبَ الْغَيْلاَنِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، - يَعْنِي
الْعَقَدِيَّ - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ نَافِعٍ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ
مُسْلِمٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ ضَرَبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " مَثَلَ الْبَخِيلِ وَالْمُتَصَدِّقِ كَمَثَلِ رَجُلَيْنِ
عَلَيْهِمَا جُنَّتَانِ مِنْ حَدِيدٍ قَدِ اضْطُرَّتْ أَيْدِيهِمَا إِلَى
ثُدَيِّهِمَا وَتَرَاقِيهِمَا فَجَعَلَ الْمُتَصَدِّقُ كُلَّمَا تَصَدَّقَ
بِصَدَقَةٍ انْبَسَطَتْ عَنْهُ حَتَّى تُغَشِّيَ أَنَامِلَهُ وَتَعْفُوَ أَثَرَهُ
وَجَعَلَ الْبَخِيلُ كُلَّمَا هَمَّ بِصَدَقَةٍ قَلَصَتْ وَأَخَذَتْ كُلُّ
حَلْقَةٍ مَكَانَهَا " . قَالَ فَأَنَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَقُولُ بِإِصْبَعِهِ فِي جَيْبِهِ فَلَوْ رَأَيْتَهُ يُوَسِّعُهَا
وَلاَ تَوَسَّعُ .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কৃপণ ও দাতার উদাহরণ দিতে গিয়ে এমন দু’ব্যক্তির উল্লেখ করেন
যাদের গায়ে রয়েছে দু’টি লৌহবর্ম। এর কারণে তাদের দু’হাত তাদের বুকের ও গলার
হাঁসুলির সাথে লেগে গেছে। অতঃপর দাতা যখন দান করতে চায় ঐ বর্ম প্রশস্ত হয়ে যায় এবং
তার গ্রন্থগুলো আবৃত করে ফেলে। এমনকি তার পদচিহ্নকেও মুছে দেয়, আর কৃপণ ব্যক্তি
যখন দান করতে চায় তখন তার বর্ম সংকুচিত হয়ে কষে যায় এবং এর প্রতিটি কড়া নিজ নিজ
স্থানে ফেঁসে যায়। বর্ণনাকারী বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কে তাঁর হাত দিয়ে জামার কলারের দিকে ইঙ্গিত করতে দেখেছি। আর যদি তোমরা
তাকে দেখতে তাহলে সে বলত, প্রশস্ত করতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ঐ বর্ম প্রশস্ত
হচ্ছিল না। (ই.ফা. ২২২৯, ই.সে.২২৩০)
২২৫১
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ إِسْحَاقَ الْحَضْرَمِيُّ، عَنْ وُهَيْبٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَثَلُ الْبَخِيلِ وَالْمُتَصَدِّقِ
مَثَلُ رَجُلَيْنِ عَلَيْهِمَا جُنَّتَانِ مِنْ حَدِيدٍ إِذَا هَمَّ
الْمُتَصَدِّقُ بِصَدَقَةٍ اتَّسَعَتْ عَلَيْهِ حَتَّى تُعَفِّيَ أَثَرَهُ وَإِذَا
هَمَّ الْبَخِيلُ بِصَدَقَةٍ تَقَلَّصَتْ عَلَيْهِ وَانْضَمَّتْ يَدَاهُ إِلَى
تَرَاقِيهِ وَانْقَبَضَتْ كُلُّ حَلْقَةٍ إِلَى صَاحِبَتِهَا " . قَالَ
فَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " فَيَجْهَدُ أَنْ
يُوَسِّعَهَا فَلاَ يَسْتَطِيعُ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কৃপণ ও দানশীলদের উদাহরণ হচ্ছে এমন দু’ব্যক্তির মতো
যাদের পরনে দু’টো লৌহবর্ম রয়েছে। অতঃপর দানশীল ব্যক্তি যখন দান করার ইচ্ছা করল তার
বর্ম প্রশস্ত হয়ে গেল এমনকি তার পায়ের চিহ্ন পর্যন্ত মুছে ফেলতে লাগল। কিন্তু যখন
কৃপণ ব্যক্তি দান করার ইচ্ছা করল তখন তা সঙ্কীর্ণ হয়ে গেল এবং তার হাত গলার সাথে
আটকে পড়ল আর প্রতিটি গ্রন্থি অপরটির সাথে কষে গেল। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ তারপর সে তা
প্রশস্ত করার চেষ্টা করে কিন্তু তা করতে সক্ষম হয় না। (ই.ফা. ২২৩০, ই.সে.২২৩১)
২৪. অধ্যায়ঃ
সদাক্বাহ্ যদি কোন ফাসিক্ব বা অনুরূপ কোন অসৎ
ব্যক্তির হাতে পড়ে তাহলেও দাতা এর সাওয়াব পাবে
২২৫২
حَدَّثَنِي سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنِي حَفْصُ بْنُ مَيْسَرَةَ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ أَبِي،
الزِّنَادِ عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " قَالَ رَجُلٌ لأَتَصَدَّقَنَّ اللَّيْلَةَ بِصَدَقَةٍ
فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدِ زَانِيَةٍ فَأَصْبَحُوا
يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ اللَّيْلَةَ عَلَى زَانِيَةٍ . قَالَ اللَّهُمَّ لَكَ
الْحَمْدُ عَلَى زَانِيَةٍ لأَتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ . فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ
فَوَضَعَهَا فِي يَدِ غَنِيٍّ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ عَلَى
غَنِيٍّ . قَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى غَنِيٍّ لأَتَصَدَّقَنَّ
بِصَدَقَةٍ . فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدِ سَارِقٍ فَأَصْبَحُوا
يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ عَلَى سَارِقٍ . فَقَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ
عَلَى زَانِيَةٍ وَعَلَى غَنِيٍّ وَعَلَى سَارِقٍ . فَأُتِيَ فَقِيلَ لَهُ
أَمَّا صَدَقَتُكَ فَقَدْ قُبِلَتْ أَمَّا الزَّانِيَةُ فَلَعَلَّهَا تَسْتَعِفُّ
بِهَا عَنْ زِنَاهَا وَلَعَلَّ الْغَنِيَّ يَعْتَبِرُ فَيُنْفِقُ مِمَّا أَعْطَاهُ
اللَّهُ وَلَعَلَّ السَّارِقَ يَسْتَعِفُّ بِهَا عَنْ سَرِقَتِهِ " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ এক ব্যক্তি বলল, আমি আজ রাতে কিছু দান-খয়রাত করব। অতঃপর সে
সদাক্বাহ্ নিয়ে বের হয়ে এক যিনাকারীকে তা অর্পণ করল। ভোরে লোকেরা বলাবলি করতে লাগল
যে, আজ রাতে এক ব্যক্তি যিনাকারীকে দান-খয়রাত করেছে। অতঃপর সে ব্যক্তি বলল, হে
আল্লাহ্! সকল প্রশংসা তোমার জন্য। আমার প্রদত্ত সদাক্বাহ্ তো যিনাকারীর হাতে গিয়ে
পড়েছে। এরপর সে (আবার) বলল, আজ আমি আরো কিছু সদাক্বাহ্ করব। অতঃপর সে তা নিয়ে বের
হয়ে এক ধনী লোকের হাতে অর্পণ করল। লোকজন ভোরে আলাপ করতে লাগল যে, আজ রাতে কে যেন
এক ধনী লোককে সদাক্বাহ্ দিয়ে গেছে। সে বলল, হে আল্লাহ! সকল প্রশংসা তোমার জন্য।
আমার সদাক্বাহ্ তো ধনীর হাতে গিয়ে পড়েছে। তারপর সে পুনরায় বলল, আমি আজ রাতে কিছু
সদাক্বাহ্ দিব। সদাক্বাহ্ নিয়ে বের হয়ে সে এক চোরের হাতে অর্পণ করল। অতঃপর সকালে
লোকজন বলাবলি করতে লাগল আজ রাতে কে যেন চোরকে সদাক্বাহ্ দিয়েছে। সে বলল, হে
আল্লাহ! সকল প্রশংসা তোমারাই। আমার প্রদত্ত সদাক্বাহ্ যিনাকারী, ধনী ও চোরের হাতে
পড়ে গেছে। অতঃপর এক ব্যক্তি (মালাক বা সে যুগের কোন নাবী) এসে তাকে বলল, তোমার
প্রদত্ত সকল সদাক্বাহ্ই কবুল হয়েছে। যিনাকারীকে দেয়া সদাক্বাহ্ কবুল হওয়ার কারণ
হলো- সম্ভবতঃ সে ঐ রাতে যিনা থেকে বিরত ছিল (কেননা সে পেটের জ্বালায় এ কাজ করত)।
ধনী ব্যক্তিকে যে সদাক্বাহ্ দেয়া হয়েছিল তা কবূল হওয়ার কারণ হলো ধনী ব্যক্তি এতে
লজ্জিত হয়ে হয়ত নাসীহাত গ্রহণ করেছে এবং আল্লাহর দেয়া সম্পদ থেকে সেও দান করবে বলে
সঙ্কল্প করেছে। আর চোরকে দেয়া সদাক্বাহ্ কবূল হওয়ার কারণ হলো সম্ভবতঃ সে ঐ রাতে
চুরি থেকে বিরত ছিল। কেননা সেও পেটের তাগিদে চুরি করত। (ই.ফা. ২২৩১, ই.সে.২২৩২)
২৫. অধ্যায়ঃ
আমানাতদার কোষাধ্যক্ষ ও স্ত্রী লোকের সদাক্বায়
সাওয়াব হওয়া সম্পর্কে, স্ত্রী স্বামীর প্রকাশ্য অনুমতি সাপেক্ষে অথবা প্রচলিত
প্রথামত স্বামীর সম্পদ থেকে দান করলে সে তার সাওয়াব পাবে
২২৫৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَأَبُو عَامِرٍ الأَشْعَرِيُّ وَابْنُ نُمَيْرٍ وَأَبُو كُرَيْبٍ
كُلُّهُمْ عَنْ أَبِي أُسَامَةَ، - قَالَ أَبُو عَامِرٍ حَدَّثَنَا أَبُو
أُسَامَةَ، - حَدَّثَنَا بُرَيْدٌ، عَنْ جَدِّهِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي
مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ الْخَازِنَ
الْمُسْلِمَ الأَمِينَ الَّذِي يُنْفِذُ - وَرُبَّمَا قَالَ يُعْطِي - مَا أُمِرَ
بِهِ فَيُعْطِيهِ كَامِلاً مُوَفَّرًا طَيِّبَةً بِهِ نَفْسُهُ فَيَدْفَعُهُ إِلَى
الَّذِي أُمِرَ لَهُ بِهِ - أَحَدُ الْمُتَصَدِّقَيْنِ " .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ যে মুসলিম আমানাতদার কোষাধ্যক্ষ নির্দেশ মুতাবিক যথাযথভাবে হুকুম
পালন করে বা দান করে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রাপককে পূর্ণমাত্রায় দান করে, সেও
জনৈক দাতা হিসেবে গণ্য, অর্থাৎ সেও মূল মালিকের সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ করবে। (ই.ফা.
২২৩২, ই.সে.২২৩৩)
২২৫৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى،
وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، -
قَالَ يَحْيَى - أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ
مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِذَا أَنْفَقَتِ الْمَرْأَةُ مِنْ طَعَامِ بَيْتِهَا غَيْرَ مُفْسِدَةٍ
كَانَ لَهَا أَجْرُهَا بِمَا أَنْفَقَتْ وَلِزَوْجِهَا أَجْرُهُ بِمَا كَسَبَ
وَلِلْخَازِنِ مِثْلُ ذَلِكَ لاَ يَنْقُصُ بَعْضُهُمْ أَجْرَ بَعْضٍ شَيْئًا
" .
’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন কোন স্ত্রীলোক ক্ষতির মনোভাব না নিয়ে স্বামীর
ঘরের খাদ্যদ্রব্য দান করে, সে তার দানের সাওয়াব পাবে এবং তার স্বামীও তার
উপার্জনের সাওয়াব পাবে। অনুরূপভাবে এ সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারীও মালিকের সমপরিমাণ
সাওয়াব পাবে। এতে একজনের দ্বারা অপরজনের প্রাপ্য সাওয়াব মোটেও কমবে না। (ই.ফা.
২২৩৩, ই.সে.২২৩৪)
২২৫৫
وَحَدَّثَنَاهُ ابْنُ أَبِي عُمَرَ،
حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ عِيَاضٍ، عَنْ مَنْصُورٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ
" مِنْ طَعَامِ زَوْجِهَا " .
মানসূর (রহঃ)-এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
উপরের হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণিত
হয়েছে। তবে এ সূত্রে “তার ঘরে খাদ্যশস্যের” পরিবর্তে তার “স্বামীর খাদ্যশস্যের”
কথা উল্লেখ আছে। (ই.ফা. ২২৩৪, ই.সে.২২৩৫)
২২৫৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ
مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِذَا أَنْفَقَتِ الْمَرْأَةُ مِنْ بَيْتِ زَوْجِهَا غَيْرَ مُفْسِدَةٍ
كَانَ لَهَا أَجْرُهَا وَلَهُ مِثْلُهُ بِمَا اكْتَسَبَ وَلَهَا بِمَا أَنْفَقَتْ
وَلِلْخَازِنِ مِثْلُ ذَلِكَ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْتَقِصَ مِنْ أُجُورِهِمْ
شَيْئًا " .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোনরূপ ক্ষতির মনোভাব ছাড়া স্ত্রী যখন তার স্বামীর
ঘর থেকে খরচ করে, স্বামী স্ত্রী উভয়েই এর সমান সাওয়াব লাভ করে। স্বামী সাওয়াব পায়
তার উপার্জনের জন্য এবং স্ত্রী সাওয়াব পায় তার দানের জন্য। অনুরূপভাবে কোষাধ্যক্ষও
সাওয়াব পাবে। তবে এদের সাওয়াব লাভের কারণে পরস্পরের সাওয়াবের কোন কমতি হবে না।
(ই.ফা. ২২৩৫, ই.সে. ২২৩৬)
২২৫৭
وَحَدَّثَنَاهُ ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا
أَبِي وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ
আ’মাশ (রহঃ)-এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
উপরের হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণিত
হয়েছে। (ই.ফা. ২২৩৬, ই.সে.২২৩৭)
২৬. অধ্যায়ঃ
ক্রীতদাস তার মনিবের সম্পদ হতে যে পরিমাণ
সম্পদ ব্যয় করতে পারবে
২২৫৮
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ جَمِيعًا عَنْ حَفْصِ، بْنِ
غِيَاثٍ - قَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا حَفْصٌ، - عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدٍ،
عَنْ عُمَيْرٍ، مَوْلَى آبِي اللَّحْمِ قَالَ كُنْتُ مَمْلُوكًا فَسَأَلْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَأَتَصَدَّقُ مِنْ مَالِ مَوَالِيَّ بِشَىْءٍ
قَالَ " نَعَمْ وَالأَجْرُ بَيْنَكُمَا نِصْفَانِ " .
আবূ লাহ্ম-এর [‘আবদুল্লাহ (রাঃ)] আযাদকৃত গোলাম ‘উমায়র
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ছিলাম ক্রীতদাস। তাই
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমি কি আমার
মালিকের সম্পদ থেকে কিছু দান করতে পারি? তিনি বললেন, হ্যাঁ; আর তোমরা দু’জনকেই এর
অর্ধেক সাওয়াব পাবে। (ই.ফা. ২২৩৭, ই.সে. ২২৩৮)
২২৫৯
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، - يَعْنِي ابْنَ إِسْمَاعِيلَ - عَنْ يَزِيدَ، - يَعْنِي
ابْنَ أَبِي عُبَيْدٍ - قَالَ سَمِعْتُ عُمَيْرًا، مَوْلَى آبِي اللَّحْمِ قَالَ
أَمَرَنِي مَوْلاَىَ أَنْ أُقَدِّدَ، لَحْمًا فَجَاءَنِي مِسْكِينٌ فَأَطْعَمْتُهُ
مِنْهُ فَعَلِمَ بِذَلِكَ مَوْلاَىَ فَضَرَبَنِي فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَدَعَاهُ . فَقَالَ " لِمَ
ضَرَبْتَهُ " . فَقَالَ يُعْطِي طَعَامِي بِغَيْرِ أَنْ آمُرَهُ .
فَقَالَ " الأَجْرُ بَيْنَكُمَا " .
আবূ লাহম (রাঃ)-এর মুক্ত গোলাম ‘উমায়র (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার মালিক আমাকে গোশ্ত
শুকানোর জন্য নির্দেশ দিলেন। আমার কাছে জৈনক মিসকীন আসলো। আমি তাকে এ থেকে খাওয়ার
জন্য দিলাম। এটা টের পেয়ে আমার মালিক আমাকে মারধর করলেন। আমি রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে তাঁকে ব্যাপারটি জানালাম। তিনি
তাঁকে ডেকে এনে বললেন, তুমি একে মারলে কেন? আমার মালিক বলেন, আমার খাদ্যদ্রব্য
আমার অনুমতি ছাড়াই সে দান করে। তিনি বলেন, তোমরা দু’জনেই এর সমান সাওয়াব পাবে।
(ই.ফা. ২২৩৮, ই.সে. ২২৩৯)
২২৬০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ
مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " لاَ تَصُمِ الْمَرْأَةُ وَبَعْلُهَا شَاهِدٌ إِلاَّ
بِإِذْنِهِ وَلاَ تَأْذَنْ فِي بَيْتِهِ وَهُوَ شَاهِدٌ إِلاَّ بِإِذْنِهِ وَمَا
أَنْفَقَتْ مِنْ كَسْبِهِ مِنْ غَيْرِ أَمْرِهِ فَإِنَّ نِصْفَ أَجْرِهِ لَهُ
" .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করলেন। তার একটি এই
যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ স্বামীর উপস্থিতিতে
তার অনুমতি ছাড়া স্ত্রী যেন (নফল) রোযা না রাখে। তার উপস্থিতিতে তার অনুমতি ছাড়া
সে যেন তার ঘরে প্রবেশ করার জন্য অন্য কাউকে অনুমতি না দেয়। তার (স্বামীর) নির্দেশ
ছাড়া সে তার উপার্জিত সম্পদ থেকে যা কিছু দান করবে তাতেও সে (স্বামী) অর্ধেক
সাওয়াব পাবে। (ই.ফা. ২২৩৯, ই.সে. ২২৪০)
২৭. অধ্যায়ঃ
দান-খায়রাতের সাথে অন্যান্য সাওয়াবের কাজও করা
ফযীলত
২২৬১
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ
بْنُ يَحْيَى التُّجِيبِيُّ، - وَاللَّفْظُ لأَبِي الطَّاهِرِ - قَالاَ حَدَّثَنَا
ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ نُودِيَ فِي
الْجَنَّةِ يَا عَبْدَ اللَّهِ هَذَا خَيْرٌ . فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلاَةِ
دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّلاَةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجِهَادِ دُعِيَ مِنْ
بَابِ الْجِهَادِ ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ
الصَّدَقَةِ ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصِّيَامِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الرَّيَّانِ
" ، قَالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا عَلَى أَحَدٍ
يُدْعَى مِنْ تِلْكَ الْأَبْوَابِ مِنْ ضَرُورَةٍ ، فَهَلْ يُدْعَى أَحَدٌ مِنْ
تِلْكَ الْأَبْوَابِ كُلِّهَا ؟ ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ : " نَعَمْ وَأَرْجُو أَنْ تَكُونَ مِنْهُمْ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি নিজ সম্পদ থেকে আল্লাহর রাস্তায় জোড়া খরচ করে জান্নাতে
তাকে এই বলে ডাকা হবে যে, ওহে আল্লাহর বান্দা! এখানে আসো, এখানে তোমার জন্য উত্তম
ও কল্যাণ রয়েছে। যে ব্যক্তি নামাযী তাকে সলাতের দরজা দিয়ে ডাকা হবে, যে ব্যক্তি
মুজাহিদ তাকে জিহাদের দরজা দিয়ে ডাকা হবে। সদাক্বাহ্ দানকারীকে সদাক্বার দরজা দিয়ে
ডাকা হবে এবং রোযাদারকে রোযার দরজা রাইয়্যান দিয়ে ডাকা হবে। আবূ বকর (রাঃ) বললেন,
হে আল্লাহর রসূল! কোন ব্যক্তিকে সবগুলো দরজা দিয়ে ডাকা হবে কি? অর্থাৎ এমন কোন
ব্যক্তি হবে কি যাকে সবগুলো দরজা দিয়েই ডাকা হবে? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, আর আমি আশা করি তুমিই হবে তাদের মধ্যে সে
ব্যক্তি। (ই.ফা. ২২৪০, ই.সে.২২৪১)
২২৬২
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ،
وَالْحَسَنُ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا
يَعْقُوبُ، - وَهُوَ ابْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ - حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ
صَالِحٍ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ، الرَّزَّاقِ
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، كِلاَهُمَا عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِإِسْنَادِ يُونُسَ
وَمَعْنَى حَدِيثِهِ .
যুহরী (রহঃ)-এর সূত্রে ইউনুস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
(ই.ফা. ২২৪১, ই.সে. ২২৪২)
২২৬৩
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، حَدَّثَنَا
شَيْبَانُ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا
شَبَابَةُ، حَدَّثَنِي شَيْبَانُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ
أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَمِعَ
أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ دَعَاهُ خَزَنَةُ الْجَنَّةِ كُلُّ
خَزَنَةِ بَابٍ أَىْ فُلُ هَلُمَّ " . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ يَا رَسُولَ
اللَّهِ ذَلِكَ الَّذِي لاَ تَوَى عَلَيْهِ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " إِنِّي لأَرْجُو أَنْ تَكُونَ مِنْهُمْ " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জোড়ায় খরচ করবে
জান্নাতের দরজাগুলোর প্রত্যেক কোষাধ্যক্ষ তাকে ডেকে বলবে, হে অমুক ! এখানে আসো,
এখানে আসো। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! যাকে এভাবে সবগুলো দরজা থেকে
ডাকা হবে সে অসুবিধায় পড়ে যাবে না তো? তার কোন প্রকার অনিষ্টের সম্ভাবনা নেই তো?
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি নিশ্চিতই আশা করি তুমিই
হবে তাদের সেই ব্যক্তি। (ই.ফা. ২২৪২, ই.সে. ২২৪৩)
২২৬৪
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا
مَرْوَانُ، - يَعْنِي الْفَزَارِيَّ - عَنْ يَزِيدَ، - وَهُوَ ابْنُ كَيْسَانَ -
عَنْ أَبِي حَازِمٍ الأَشْجَعِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَصْبَحَ مِنْكُمُ الْيَوْمَ صَائِمًا
" . قَالَ أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه أَنَا . قَالَ " فَمَنْ
تَبِعَ مِنْكُمُ الْيَوْمَ جَنَازَةً " . قَالَ أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه
أَنَا . قَالَ " فَمَنْ أَطْعَمَ مِنْكُمُ الْيَوْمَ مِسْكِينًا "
. قَالَ أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه أَنَا . قَالَ " فَمَنْ عَادَ
مِنْكُمُ الْيَوْمَ مَرِيضًا " . قَالَ أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه أَنَا
. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا اجْتَمَعْنَ فِي
امْرِئٍ إِلاَّ دَخَلَ الْجَنَّةَ " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আজ তোমাদের মধ্যে কে রোযা রেখেছে? আবূ বকর (রাঃ)
বললেন, আমি। তিনি বললেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে জানাযার সাথে গেছে? আবূ বকর (রাঃ)
বললেন, আমি। তিনি বললেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে মিসকীনকে খাবার দিয়েছে? আবূ বকর
(রাঃ) বললেন, আমি। তিনি বললেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখতে গেছে?
আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ যখন কোন ব্যক্তির মধ্যে এসব কাজের সমাবেশ ঘটে, সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে।
(ই.ফা. ২২৪৩, ই.সে.২২৪৪)
২৮. অধ্যায়ঃ
খয়রাত করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা; দান-খয়রাত করে
তা গুনে রাখার কুফল
২২৬৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصٌ، - يَعْنِي ابْنَ غِيَاثٍ - عَنْ هِشَامٍ، عَنْ
فَاطِمَةَ بِنْتِ الْمُنْذِرِ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ، - رضى الله
عنها - قَالَتْ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَنْفِقِي
- أَوِ انْضَحِي أَوِ انْفَحِي - وَلاَ تُحْصِي فَيُحْصِيَ اللَّهُ عَلَيْكِ
" .
আবূ বাক্রের কন্যা আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ খরচ করো তবে কত খরচ করলে তা গুনে রেখো না।
তাহলে আল্লাহ তা’আলা তোমাকে গুনে গুনে দিবেন। (অর্থাৎ কম দিবেন) (ই.ফা. ২২৪৪,
ই.সে.২২৪৫)
২২৬৬
وَحَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ،
وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ أَبِي،
مُعَاوِيَةَ - قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَازِمٍ، - حَدَّثَنَا
هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ حَمْزَةَ، وَعَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ
الْمُنْذِرِ، عَنْ أَسْمَاءَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" انْفَحِي - أَوِ انْضَحِي أَوْ أَنْفِقِي - وَلاَ تُحْصِي فَيُحْصِيَ
اللَّهُ عَلَيْكِ وَلاَ تُوعِي فَيُوعِيَ اللَّهُ عَلَيْكِ " .
আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ খরচ করো তবে কত খরচ করলে তার হিসাব রেখো না। তাহলে
আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে গুনে গুনে দিবেন। আর জমা করে রেখো না তাহলে আল্লাহ জমা
করে রাখবেন। (অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে দিবেন না।) (ই.ফা. ২২৪৫, ই.সে.২২৪৬)
২২৬৭
وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ حَمْزَةَ، عَنْ
أَسْمَاءَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهَا نَحْوَ حَدِيثِهِمْ
.
আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাকে বললেন ...... পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ২২৪৬, ই.সে. ২২৪৭)
২২৬৮
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ،
وَهَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ،
قَالَ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ، أَنَّ عَبَّادَ
بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، أَخْبَرَهُ عَنْ أَسْمَاءَ، بِنْتِ أَبِي
بَكْرٍ أَنَّهَا جَاءَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا نَبِيَّ
اللَّهِ لَيْسَ لِي شَىْءٌ إِلاَّ مَا أَدْخَلَ عَلَىَّ الزُّبَيْرُ فَهَلْ
عَلَىَّ جُنَاحٌ أَنْ أَرْضَخَ مِمَّا يُدْخِلُ عَلَىَّ فَقَالَ "
ارْضَخِي مَا اسْتَطَعْتِ وَلاَ تُوعِي فَيُوعِيَ اللَّهُ عَلَيْكِ " .
আবূ বাক্রের কন্যা আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! যুবায়র আমাকে যা কিছু দেয়, এছাড়া
আমার কাছে আর কোন মালামাল নেই। আমি যদি এ থেকে দান করি তাহলে আমার কি গুনাহ হবে?
তিনি বললেন, তুমি তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী দান কর; কিন্তু পুঞ্জিভূত করে রেখো না।
যদি জমা করে রাখো তাহলে আল্লাহ্ জমা করে রাখবেন। তোমাকে দিবেন না। (ই.ফা. ২২৪৭,
ই.সে. ২২৪৮)
২৯. অধ্যায়ঃ
দান-খয়রাত পরিমাণ যতই কম হোকনা কেন তা
সত্ত্বেও উৎসাহ দেয়া-তা অবহেলা করা যাবে না
২২৬৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ "
يَا نِسَاءَ الْمُسْلِمَاتِ لاَ تَحْقِرَنَّ جَارَةٌ لِجَارَتِهَا وَلَوْ فِرْسِنَ
شَاةٍ " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলতেনঃ হে মুসলিম মহিলাগণ! তোমাদের কোন প্রতিবেশী যদি ছাগলের খুরও উপহার
দেয় তবুও তা তুচ্ছজ্ঞান করবে না অর্থাৎ দাতা যেন লজ্জার বশীভূত হয়ে দান থেকে বিরত
না থাকে এবং গ্রহীতাও যেন অল্প বলে অবজ্ঞা না করে। (ই.ফা. ২২৪৮, ই.সে. ২২৪৯)
৩০. অধ্যায়ঃ
গোপনে দান-খয়রাত করার ফাযীলাত
২২৭০
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ،
وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، جَمِيعًا عَنْ يَحْيَى الْقَطَّانِ، - قَالَ
زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، - عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَنِي
خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " سَبْعَةٌ
يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ الإِمَامُ
الْعَادِلُ وَشَابٌّ نَشَأَ بِعِبَادَةِ اللَّهِ وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي
الْمَسَاجِدِ وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا
عَلَيْهِ وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّي
أَخَافُ اللَّهَ . وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ
يَمِينُهُ مَا تُنْفِقُ شِمَالُهُ وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ
عَيْنَاهُ " .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তা’আলা এমন একদিন (ক্বিয়ামাতের দিন) তাঁর (‘আর্শের) ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া অবশিষ্ট থাকবে না। (১) ন্যায়পরায়ণ ইমাম (জনগণের নেতা), (২) ঐ যুবক, যে আল্লাহ্ তা’আলার ‘ইবাদাতে মশগুল থেকে বড় হয়েছে, (৩) সে ব্যক্তি, যার অন্তর মাসজিদের সাথে লেগে রয়েছে (অর্থাৎ জামা’আতের সাথে সলাত আদায়ে যত্নবান), (৪) সে দু’ব্যক্তি, যারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একে অপরকে ভালবাসে ও পরস্পর মিলিত হয় এবং এ জন্যই (পরস্পর) বিচ্ছিন্ন হয়, (৫) যে ব্যক্তিকে কোন অভিজাত এবং সুন্দরী রমনী (ব্যভিচারের জন্য) আহ্বান জানায় আর তার জবাবে সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি, (৬) যে ব্যক্তি এতটা গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত কী দান করে তা তার বাম হাত টের পায়না এবং (৭) যে ব্যক্তি একাকী বসে আল্লাহকে স্মরণ করে আর তার চোখ দু’টো (আল্লাহ্র ভয় বা ভালবাসায়) অশ্রুপাত করে। (ই.ফা. ২২৪৯, ই.সে. ২২৫০)
No comments