সুনানে আবু দাউদ - অধ্যায় "সালাতুল ইসতিস্কা (বৃষ্টি প্রার্থনার সালাত)" হাদীস ১১৬১-১১৯৭
অনুচ্ছেদ-২৫৮
ইসতিস্কা সালাত ও তার
বর্ণনা
১১৬১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ ثَابِتٍ
الْمَرْوَزِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم خَرَجَ بِالنَّاسِ لِيَسْتَسْقِيَ فَصَلَّى بِهِمْ
رَكْعَتَيْنِ جَهَرَ بِالْقِرَاءَةِ فِيهِمَا وَحَوَّلَ رِدَاءَهُ وَرَفَعَ
يَدَيْهِ فَدَعَا وَاسْتَسْقَى وَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ .
‘আব্বাদ ইবনু তামীম (রহঃ) হতে তার চাচার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৃষ্টি প্রার্থনার সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে
লোকদের নিয়ে বের হলেন এবং তাদেরকে নিয়ে ক্বিবলামুখী হয়ে দু’ রাক‘আত সালাত আদায়
করেন। উভয় রাক‘আতে স্বরবে ক্বিরআত পাঠ করেন, অতঃপর স্বীয় চাদর উল্টিয়ে নিয়ে দু’হাত
উঠিয়ে বৃষ্টির জন্য দু‘আ করেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৬২
حَدَّثَنَا ابْنُ السَّرْحِ، وَسُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ،
قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ،
وَيُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَبَّادُ بْنُ تَمِيمٍ
الْمَازِنِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ عَمَّهُ، - وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يَقُولُ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا
يَسْتَسْقِي فَحَوَّلَ إِلَى النَّاسِ ظَهْرَهُ يَدْعُو اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ -
قَالَ سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ وَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ وَحَوَّلَ رِدَاءَهُ ثُمَّ
صَلَّى رَكْعَتَيْنِ - قَالَ ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ - وَقَرَأَ فِيهِمَا زَادَ ابْنُ
السَّرْحِ يُرِيدُ الْجَهْرَ .
ইবনু শিহাব (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমাকে ‘আব্বাদ ইবনু তামীম আল-মাযিনী (রহঃ) জানালেন, তিনি তার চাচাকে– যিনি
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অন্যতম সহাবী ছিলেন- বলতে
শুনেছেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইসতিসকা সালাতের
জন্য বের হলেন এবং লোকদের দিকে পিঠ ফিরিয়ে মহা মহীয়ান আল্লাহর কাছে দু‘আ করেন।
বর্ণনাকারী সুলায়মান ইবনু দাঊদ বলেন, তিনি ক্বিবলাহমুখী হয়ে স্বীয় চাদর উল্টিয়ে
নিয়ে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করেন। ইবনু আবূ যি’বের বর্ণনায় রয়েছে, তিনি উভয়
রাক‘আতে ক্বিরাআত পাঠ করেন। ইবনুস সারাহ্র বর্ণনায় রয়েছে, তিনি ক্বিরাআতে
উচ্চস্বরে পাঠ করেছেন।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম। তবে মুসলিমে ক্বিরাআত ও উচ্চস্বরে পাঠের কথা নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৬৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَوْفٍ، قَالَ قَرَأْتُ فِي
كِتَابِ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ - يَعْنِي الْحِمْصِيَّ - عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ سَالِمٍ، عَنِ الزُّبَيْدِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ مُسْلِمٍ، بِهَذَا
الْحَدِيثِ بِإِسْنَادِهِ لَمْ يَذْكُرِ الصَّلاَةَ قَالَ وَحَوَّلَ رِدَاءَهُ
فَجَعَلَ عِطَافَهُ الأَيْمَنَ عَلَى عَاتِقِهِ الأَيْسَرِ وَجَعَلَ عِطَافَهُ
الأَيْسَرَ عَلَى عَاتِقِهِ الأَيْمَنِ ثُمَّ دَعَا اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ .
মুহাম্মাদ ইবনু
মুসলিম (রহঃ) হতে নিজস্ব সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
তবে
তার বর্ণনায় সালাত আদায়ের কথা উল্লেখ নেই। বর্ণনাকারী বলেন, “তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় চাদর উল্টিয়ে নেন। তিনি ডান স্কন্ধের উপরে রাখা চাদরের
ডান পার্শ্বকে বাম কাঁধের উপর এবং বাম কাঁধের উপরে রাখা চাদরের বাম পার্শ্বকে ডান
কাঁধের উপর রাখলেন। তারপর মহা মহীয়ান আল্লাহর কাছে দু‘আ করলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৬৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْعَزِيزِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، أَنَّ
عَبْدَ اللَّهِ بْنَ زَيْدٍ، قَالَ اسْتَسْقَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَعَلَيْهِ خَمِيصَةٌ لَهُ سَوْدَاءُ فَأَرَادَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم أَنْ يَأْخُذَ بِأَسْفَلِهَا فَيَجْعَلَهُ أَعْلاَهَا فَلَمَّا ثَقُلَتْ
قَلَبَهَا عَلَى عَاتِقِهِ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু
যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৃষ্টির জন্য দু‘আ করেন। তখন
তাঁর শরীরে কালো বর্ণের একটি চাদর জড়ানো ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) চাদরের নীচের অংশকে উল্টিয়ে উপরে উঠানোর সময় ভারী বোধ করায় তিনি তা
কাঁধের উপরে রেখেই উল্টিয়ে নেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৫৯
ইসতিস্কার সালাত কখন
চাদর উল্টিয়ে পরিধান করবে?
১১৬৫
حَدَّثَنَا النُّفَيْلِيُّ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي
شَيْبَةَ، نَحْوَهُ قَالاَ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا
هِشَامُ بْنُ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كِنَانَةَ، قَالَ أَخْبَرَنِي
أَبِي قَالَ، أَرْسَلَنِي الْوَلِيدُ بْنُ عُتْبَةَ - قَالَ عُثْمَانُ ابْنُ
عُقْبَةَ وَكَانَ أَمِيرَ الْمَدِينَةِ - إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ أَسْأَلُهُ عَنْ
صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الاِسْتِسْقَاءِ فَقَالَ خَرَجَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُتَبَذِّلاً مُتَوَاضِعًا مُتَضَرِّعًا حَتَّى
أَتَى الْمُصَلَّى - زَادَ عُثْمَانُ فَرَقِيَ عَلَى الْمِنْبَرِ ثُمَّ اتَّفَقَا
- وَلَمْ يَخْطُبْ خُطَبَكُمْ هَذِهِ وَلَكِنْ لَمْ يَزَلْ فِي الدُّعَاءِ
وَالتَّضَرُّعِ وَالتَّكْبِيرِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَمَا يُصَلِّي فِي
الْعِيدِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَالإِخْبَارُ لِلنُّفَيْلِيِّ وَالصَّوَابُ
ابْنُ عُتْبَةَ .
‘আব্বাদ ইবনু তামীম
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ
ইবনু যায়িদ (রাঃ) তাঁকে বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ইসতিস্কা সালাত আদায়ের উদ্দেশে ঈদগাহে যান এবং যখন দু‘আর ইচ্ছে করেন তখন
ক্বিবলাহমুখী হয়ে স্বীয় চাদরখানা উল্টিয়ে নেন।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৬৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ، - يَعْنِي ابْنَ بِلاَلٍ - عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ
مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ زَيْدٍ،
أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ إِلَى الْمُصَلَّى
يَسْتَسْقِي وَأَنَّهُ لَمَّا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ اسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ
ثُمَّ حَوَّلَ رِدَاءَهُ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু
যায়িদ আল-মাযিনী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ
ইবনু যায়িদ আল-মাযিনী (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ঈদগাহে গিয়ে ইসতিস্কার সালাত আদায় করলেন। তিনি ক্বিবলাহমুখী হওয়ার সময় স্বীয়
চাদরখানা উল্টিয়ে নিলেন।
সহীহঃ মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৬৭
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، أَنَّهُ سَمِعَ عَبَّادَ بْنَ تَمِيمٍ، يَقُولُ
سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ زَيْدٍ الْمَازِنِيَّ، يَقُولُ خَرَجَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْمُصَلَّى فَاسْتَسْقَى وَحَوَّلَ رِدَاءَهُ
حِينَ اسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ .
হিশাম ইবনু ইস্হাক
ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু কিনানাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমার পিতা আমাকে বলেছেন, রসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ইসতিকার সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে আল-ওয়ালীদ ইবনু ‘উতবাহ আমাকে ইবনু ‘আব্বাসের
নিকট পাঠালেন। ‘উসমান ইবনু ‘উক্ববাহ বলেন, ওয়ালীদ ইবনু ‘উতবাহ তখন মাদীনাহ্র
গভর্ণর ছিলেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম পুরাতন বেশভূষায় ভয় ও বিনয়ী অবস্থায় বের হয়ে ঈদগাহে গেলেন। অতঃপর
তিনি মিম্বারে উঠেন এবং প্রচলিত নিয়মে খুত্ববাহ না দিয়ে তিনি সারাক্ষণ
কাকুতি-মিনতি, দু’আ ও তাকবীর পাঠেরত ছিলেন। অতঃপর তিনি ঈদের সলাতের মত দু' রাক’আত
সলাত আদায় করেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-
২৬০
ইসতিস্কার সলাতে
দু’হাত উত্তোলন সম্পর্কে
১১৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ،
أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ حَيْوَةَ، وَعُمَرَ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ
الْهَادِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عُمَيْرٍ، مَوْلَى بَنِي آبِي
اللَّحْمِ أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتَسْقِي عِنْدَ
أَحْجَارِ الزَّيْتِ قَرِيبًا مِنَ الزَّوْرَاءِ قَائِمًا يَدْعُو يَسْتَسْقِي
رَافِعًا يَدَيْهِ قِبَلَ وَجْهِهِ لاَ يُجَاوِزُ بِهِمَا رَأْسَهُ .
বনী আবূল লাহ্মের
মুক্তদাস উমাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ‘আযযাওরার’ নিকটবর্তী ‘আহ্জারুয্
যায়িত’ নামক স্থানে ইসতিস্কার সলাত আদায় করতে দেখেছেন। তিনি বৃষ্টি বর্ষণের
জন্য দাঁড়িয়ে হাত দু’টিকে চেহারার সম্মুখে মাথার উপরিভাগ পর্যন্ত উঠিয়ে দু’আ
করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৬৯
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ، عَنْ يَزِيدَ الْفَقِيرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ أَتَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَوَاكِي فَقَالَ
" اللَّهُمَّ اسْقِنَا غَيْثًا مُغِيثًا مَرِيئًا مَرِيعاً نَافِعًا غَيْرَ
ضَارٍّ عَاجِلاً غَيْرَ آجِلٍ " . قَالَ فَأَطْبَقَتْ عَلَيْهِمُ
السَّمَاءُ .
জাবির ইবনু
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে কতিপয় লোক (বৃষ্টি না
হওয়ায়) ক্রন্দনরত অবস্থায় এলে তিনি দু’আ করলেনঃ হে আল্লাহ! আমাদেরকে বিলম্বে
নয় বরং তাড়াতাড়ি ক্ষতিমুক্ত-কল্যাণময়, তৃপ্তিদায়ক, সজীবতা দানকারী, মুষল
ধারায় বৃষ্টি বর্ষণ করো। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তাদের উপর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে
যায় (এবং বৃষ্টি হয়)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৭০
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ
بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِي شَىْءٍ مِنَ
الدُّعَاءِ إِلاَّ فِي الاِسْتِسْقَاءِ فَإِنَّهُ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى
يُرَى بَيَاضُ إِبْطَيْهِ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নাবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসতিস্কা ছাড়া অন্য কোন দু’আতে দু’ হাত
উঠাননি। তিনি হাত দু’টিকে এতটুকু উঠাতেন যে, তাঁর বগলদ্বয়ের সাদা অংশ দেখা যেত।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৭১
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ،
حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، أَخْبَرَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ،
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَسْتَسْقِي هَكَذَا يَعْنِي وَمَدَّ
يَدَيْهِ وَجَعَلَ بُطُونَهُمَا مِمَّا يَلِي الأَرْضَ حَتَّى رَأَيْتُ بَيَاضَ
إِبْطَيْهِ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নাবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বৃষ্টির জন্য এরূপে দু’আ করেছেন। অর্থাৎ তিনি
দু' হাত প্রশস্ত করে দু’ হাতের তালুকে যমীনের দিকে রেখেছেন। এমনকি আমি তাঁর বগলের
সাদা অংশ দেখেছি।
সহীহঃ মুসলিম সংক্ষেপে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৭২
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ،
أَخْبَرَنِي مَنْ، رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَدْعُو عِنْدَ أَحْجَارِ
الزَّيْتِ بَاسِطًا كَفَّيْهِ .
মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এ হাদীস আমাকে এমন এক ব্যক্তি অবহিত করেছেন, যিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-কে ‘আহ্জারুয্ যায়িত’ নামক স্থানের সন্নিকটে দু' হাত প্রশস্ত করে
দু’আ করতে দেখেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৭৩
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ،
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ نِزَارٍ، حَدَّثَنِي الْقَاسِمُ بْنُ مَبْرُورٍ، عَنْ
يُونُسَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، - رضى الله
عنها - قَالَتْ شَكَى النَّاسُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُحُوطَ
الْمَطَرِ فَأَمَرَ بِمِنْبَرٍ فَوُضِعَ لَهُ فِي الْمُصَلَّى وَوَعَدَ النَّاسَ
يَوْمًا يَخْرُجُونَ فِيهِ قَالَتْ عَائِشَةُ فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم حِينَ بَدَا حَاجِبُ الشَّمْسِ فَقَعَدَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَكَبَّرَ
صلى الله عليه وسلم وَحَمِدَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ ثُمَّ قَالَ "
إِنَّكُمْ شَكَوْتُمْ جَدْبَ دِيَارِكُمْ وَاسْتِئْخَارَ الْمَطَرِ عَنْ إِبَّانِ
زَمَانِهِ عَنْكُمْ وَقَدْ أَمَرَكُمُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ تَدْعُوهُ
وَوَعَدَكُمْ أَنْ يَسْتَجِيبَ لَكُمْ " . ثُمَّ قَالَ " {
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ * الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ * مَلِكِ يَوْمِ
الدِّينِ } لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ اللَّهُمَّ أَنْتَ
اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الْغَنِيُّ وَنَحْنُ الْفُقَرَاءُ أَنْزِلْ
عَلَيْنَا الْغَيْثَ وَاجْعَلْ مَا أَنْزَلْتَ لَنَا قُوَّةً وَبَلاَغًا إِلَى
حِينٍ " . ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ فَلَمْ يَزَلْ فِي الرَّفْعِ حَتَّى
بَدَا بَيَاضُ إِبْطَيْهِ ثُمَّ حَوَّلَ عَلَى النَّاسِ ظَهْرَهُ وَقَلَّبَ أَوْ
حَوَّلَ رِدَاءَهُ وَهُوَ رَافِعٌ يَدَيْهِ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ
وَنَزَلَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ فَأَنْشَأَ اللَّهُ سَحَابَةً فَرَعَدَتْ
وَبَرَقَتْ ثُمَّ أَمْطَرَتْ بِإِذْنِ اللَّهِ فَلَمْ يَأْتِ مَسْجِدَهُ حَتَّى
سَالَتِ السُّيُولُ فَلَمَّا رَأَى سُرْعَتَهُمْ إِلَى الْكِنِّ ضَحِكَ صلى الله
عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ فَقَالَ " أَشْهَدُ أَنَّ اللَّهَ
عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ وَأَنِّي عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ " .
قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِسْنَادُهُ جَيِّدٌ أَهْلُ
الْمَدِينَةِ يَقْرَءُونَ { مَلِكِ يَوْمِ الدِّينِ } وَإِنَّ هَذَا
الْحَدِيثَ حُجَّةٌ لَهُمْ .
‘আয়িশাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে লোকজন অনাবৃষ্টির
অভিযোগ পেশ করলে তিনি একটি মিম্বার স্থাপনের নির্দেশ দিলেন। সেটি তাঁর ঈদগাহে রাখা
হলো এবং তিনি লোকদেরকে ওয়াদা দিলেন যে, তিনি তাদেরকে নিয়ে একদিন সেখানে যাবেন।
‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, একদা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য
উদিত হওয়ার পর বের হয়ে মিম্বারের উপর বসে তাকবীর বলে মহা মহীয়ান আল্লাহর
প্রশংসা করেন এবং বলেনঃ তোমরা তোমাদের অনাবৃষ্টির অভিযোগ করেছ। অথচ মহান আল্লাহ
তোমাদেরকে আদেশ করেছেন তোমরা তাকে ডাকো, তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিতে ওয়াদাবদ্ধ।
অতঃপর তিনি বলেনঃ সকল প্রশংসা বিশ্ব জগতের রব আল্লাহর জন্য, যিনি দয়ালু ও অতিশয়
মেহেরবান, শেষ বিচারের দিনের মালিক। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই। তিনি যা ইচ্ছা
করেন তাই করেন। হে আল্লাহ! আপনিই আল্লাহ, আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নাই, আপনি সম্পদশালী
আর আমরা ফকীর ও মুখাপেক্ষী। কাজেই আমাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণ করুন এবং আপনি যা
কিছু বর্ষণ করবেন, তদ্দ্বারা আমাদের জন্য প্রবল শক্তি ও প্রত্যাশিত লক্ষ্যে পৌছার
ব্যবস্থা করে দিন। অতঃপর তিনি দু’ হাত এতোটা উঁচু করলেন যে, তাঁর বগলের শুভ্রতা
দেখা গেলো। অতঃপর হাত উঠানো অবস্থায়ই তিনি লোকদের দিকে স্বীয় পিঠ ঘুরিয়ে দিয়ে
চাদরটি উল্টিয়ে নিলেন। এরপর তিনি লোকজনের দিকে ফিরে মিম্বার হতে নেমে দু' রাকা’আত
সলাত আদায় করলেন। এ সময় মহান আল্লাহ এক খণ্ড মেঘের আবির্ভাব ঘটালেন, যার মধ্যে
গর্জন ও বিদ্যুৎ চমকাতে লাগলো এবং আল্লাহর ইচ্ছায় বৃষ্টিপাত হলো। এমনকি তিনি
মসজিদ পর্যন্ত আসতে না আসতেই পথপঘাট পানিতে প্লাবিত হয়ে গেলো। যখন লোকজনকে
বাড়ি-ঘরের দিকে দৌড়াতে দেখলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এমনভাবে হাসলেন যে, তার সামনের পাটির দাঁত দেখা গেলো। অতঃপর তিনি বললেন, আমি
সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চই আল্লাহ সকল বস্তুর উপর ক্ষমতবান এবং আমি আল্লাহর বান্দা
ও তাঁর রসূল। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, এ হাদীসটি গরীব। তথাপি হাদীসটির সানাদ
ভাল।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১১৭৪
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ،
عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، وَيُونُسُ بْنُ
عُبَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ أَصَابَ أَهْلَ الْمَدِينَةِ قَحْطٌ
عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَبَيْنَمَا هُوَ يَخْطُبُنَا
يَوْمَ جُمُعَةٍ إِذْ قَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكَ الْكُرَاعُ
هَلَكَ الشَّاءُ فَادْعُ اللَّهَ أَنْ يَسْقِيَنَا فَمَدَّ يَدَيْهِ وَدَعَا قَالَ
أَنَسٌ وَإِنَّ السَّمَاءَ لَمِثْلُ الزُّجَاجَةِ فَهَاجَتْ رِيحٌ ثُمَّ
أَنْشَأَتْ سَحَابَةً ثُمَّ اجْتَمَعَتْ ثُمَّ أَرْسَلَتِ السَّمَاءُ عَزَالِيَهَا
فَخَرَجْنَا نَخُوضُ الْمَاءَ حَتَّى أَتَيْنَا مَنَازِلَنَا فَلَمْ يَزَلِ
الْمَطَرُ إِلَى الْجُمُعَةِ الأُخْرَى فَقَامَ إِلَيْهِ ذَلِكَ الرَّجُلُ أَوْ
غَيْرُهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ تَهَدَّمَتِ الْبُيُوتُ فَادْعُ اللَّهَ
أَنْ يَحْبِسَهُ فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ
" حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا " . فَنَظَرْتُ إِلَى السَّحَابِ
يَتَصَدَّعُ حَوْلَ الْمَدِينَةِ كَأَنَّهُ إِكْلِيلٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবদ্দশায় একবার মাদীনাহ্বাসী
দুর্ভিক্ষে পতিত হয়। ঐ সময়ের জুমু’আহর দিন তিনি আমাদের উদ্দেশে খুত্ববাহ দানকালে
এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললো, হে আল্লাহর রসূল! (অনাবৃষ্টির কারণে) উট-বকরি ইত্যাদি
প্রায় ধ্বংসের মুখে। সুতরাং আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য বৃষ্টি বর্ষণের দু’আ করুন।
অতঃপর তিনি হাত প্রসারিত করে দু’আ করলেন। আনাস (রাঃ) বলেন, তিনি দু’আ করার পূর্বে
পর্যন্ত আকাশ মেঘমুক্ত স্বচ্ছ কাঁচের ন্যায় পরিস্কার ছিল, (দু’আ করার পর) হঠাৎ বায়ু
প্রবাহিত হয়ে এক খণ্ড মেঘ প্রস্তুত হলো, অতঃপর বিভিন্ন খণ্ড একত্র হয়ে আকাশে
অঝোর ধারায় বৃষ্টি বর্ষিত হলো। এমনকি আমরা বৃষ্টিতে ভিজে বাড়িঘরে ফিরে এলাম এবং
একটানা পরবর্তী জুমু’আহ পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে থাকলো। এ জুমু’আহতে ঐ লোক অথবা অন্য
কেউ দাঁড়িয়ে বললো, হে আল্লাহর রসূল! (অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে) ঘর-বাড়ি ধসে
যাচ্ছে, কাজেই বৃষ্টি বন্ধের জন্য আল্লাহর কাছে দু’আ করুন। তার কথায় রসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুচকি হেসে দু’আ করলেন, (হে আল্লাহ!) আমাদের
আশেপাশে বৃষ্টি দাও, আমাদের উপরে নয়। বর্ণনাকারী বলেন, আমি মেঘের দিকে তাকিয়ে
দেখতে পেলাম, তা মদীনাহ্র আশেপাশে উঁচু উঁচু সুদৃশ্য চূড়ার মত বিক্ষিপ্ত হয়ে
যাচ্ছে।
সহীহঃ বুখারী। মুসলিম সংক্ষেপে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৭৫
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ حَمَّادٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي
نَمِرٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ فَذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ عَبْدِ
الْعَزِيزِ قَالَ فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدَيْهِ بِحِذَاءِ
وَجْهِهِ فَقَالَ " اللَّهُمَّ اسْقِنَا " . وَسَاقَ نَحْوَهُ
.
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দু’ হাত স্বীয়
চেহারা বরাবর উঠিয়ে দু’আ করলেনঃ হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃষ্টি দাও। অতঃপর পূর্বের
হাদীসের অনুরূপ।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম সংক্ষেপে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৭৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ
مَالِكٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ ح وَحَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ صَالِحٍ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ قَادِمٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَسْقَى قَالَ " اللَّهُمَّ اسْقِ
عِبَادَكَ وَبَهَائِمَكَ وَانْشُرْ رَحْمَتَكَ وَأَحْىِ بَلَدَكَ الْمَيِّتَ "
. هَذَا لَفْظُ حَدِيثِ مَالِكٍ .
‘আমর ইবনু শু‘আইব
(রাঃ) তার পিতা হতে তার দাদার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৃষ্টির জন্য দু’আ করার সময় বলতেনঃ হে
আল্লাহ! আপনি আপনার বান্দাদের ও প্রাণীদেরকে পানি দান করুন, আপনার রহমাত বিস্তৃত
করুন এবং আপনার মৃত শহরকে (শুস্ক ভূমিকে) জীবিত করুন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৬১
সূর্যগ্রহণের সলাত
১১৭৭
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا
إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ عُبَيْدِ
بْنِ عُمَيْرٍ، أَخْبَرَنِي مَنْ، أُصَدِّقُ وَظَنَنْتُ أَنَّهُ يُرِيدُ عَائِشَةَ
قَالَ كُسِفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَامَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قِيَامًا شَدِيدًا يَقُومُ بِالنَّاسِ ثُمَّ
يَرْكَعُ ثُمَّ يَقُومُ ثُمَّ يَرْكَعُ ثُمَّ يَقُومُ ثُمَّ يَرْكَعُ فَرَكَعَ
رَكْعَتَيْنِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ ثَلاَثُ رَكَعَاتٍ يَرْكَعُ الثَّالِثَةَ ثُمَّ
يَسْجُدُ حَتَّى إِنَّ رِجَالاً يَوْمَئِذٍ لَيُغْشَى عَلَيْهِمْ مِمَّا قَامَ
بِهِمْ حَتَّى إِنَّ سِجَالَ الْمَاءِ لَتُصَبُّ عَلَيْهِمْ يَقُولُ إِذَا رَكَعَ
" اللَّهُ أَكْبَرُ " . وَإِذَا رَفَعَ " سَمِعَ اللَّهُ
لِمَنْ حَمِدَهُ " . حَتَّى تَجَلَّتِ الشَّمْسُ ثُمَّ قَالَ "
إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لاَ يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ
وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ يُخَوِّفُ بِهِمَا
عِبَادَهُ فَإِذَا كُسِفَا فَافْزَعُوا إِلَى الصَّلاَةِ " .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে সূর্যগ্রহণ হলে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের নিয়ে সালাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন।
অতঃপর রুকু’ করে আবার দাঁড়ালেন। আবার রুকু’ করলেন এবং আবার দাঁড়ালেন। অতঃপর রুকু’
করলেন। এভাবে দু' রাক'আত সলাত আদায় করলেন এবং প্রত্যেক রাক'আতে তিনটি করে রুকু’
করার পর সাজদাহ্ করলেন। সলাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ফলে কতিপয় লোক অজ্ঞান হয়ে
যায় এবং তাদের উপর পানি ঢালা হয়। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকু’
করার সময় 'আল্লাহু আকবার’; আর রুকু’ হতে মাথা উঠানোর সময় 'সামিআল্লাহু লিমান
হামিদাহ' বলেছেন এবং তাঁর সলাত অবস্থায়ই সূর্যগ্রহণ শেষ হয়ে যায়। অতঃপর তিনি
বললেনঃ সূর্য কিংবা চন্দ্রগ্রহণ কারোর জন্ম বা মৃত্যুর কারণে হয় না, বরং তা
মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর নিদর্শনসমূহের দু'টি নিদর্শন। তিনি এর দ্বারা স্বীয় বান্দাদেরকে
ভয় দেখিয়ে থাকেন। সুতরাং কখনো গ্রহণ হলে তোমরা সলাত আদায়ে মনোনিবেশ করবে।
সহীহঃ মুসলিম। কিন্তু (তিন রাক’আত) কথাটি শায। মাহফূয হচ্ছেঃ (দুই রাক’আত)। যেমন
বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে। এছাড়া সামনে ১১৮০ নং এ আসছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-
২৬২
যিনি বলেন,
সূর্যগ্রহণের সলাতে রুকূ’ হবে চারটি
১১৭৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى،
عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ، حَدَّثَنِي عَطَاءٌ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ،
قَالَ كُسِفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَكَانَ ذَلِكَ فِي الْيَوْمِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ إِبْرَاهِيمُ ابْنُ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّاسُ إِنَّمَا كُسِفَتْ لِمَوْتِ
إِبْرَاهِيمَ ابْنِهِ صلى الله عليه وسلم فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فَصَلَّى بِالنَّاسِ سِتَّ رَكَعَاتٍ فِي أَرْبَعِ سَجَدَاتٍ كَبَّرَ ثُمَّ قَرَأَ
فَأَطَالَ الْقِرَاءَةَ ثُمَّ رَكَعَ نَحْوًا مِمَّا قَامَ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ
فَقَرَأَ دُونَ الْقِرَاءَةِ الأُولَى ثُمَّ رَكَعَ نَحْوًا مِمَّا قَامَ ثُمَّ
رَفَعَ رَأْسَهُ فَقَرَأَ الْقِرَاءَةَ الثَّالِثَةَ دُونَ الْقِرَاءَةِ
الثَّانِيَةِ ثُمَّ رَكَعَ نَحْوًا مِمَّا قَامَ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ
فَانْحَدَرَ لِلسُّجُودِ فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ قَامَ فَرَكَعَ ثَلاَثَ
رَكَعَاتٍ قَبْلَ أَنْ يَسْجُدَ لَيْسَ فِيهَا رَكْعَةٌ إِلاَّ الَّتِي قَبْلَهَا
أَطْوَلُ مِنَ الَّتِي بَعْدَهَا إِلاَّ أَنَّ رُكُوعَهُ نَحْوٌ مِنْ قِيَامِهِ
قَالَ ثُمَّ تَأَخَّرَ فِي صَلاَتِهِ فَتَأَخَّرَتِ الصُّفُوفُ مَعَهُ ثُمَّ
تَقَدَّمَ فَقَامَ فِي مَقَامِهِ وَتَقَدَّمَتِ الصُّفُوفُ فَقَضَى الصَّلاَةَ
وَقَدْ طَلَعَتِ الشَّمْسُ فَقَالَ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ
الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ لاَ
يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ بَشَرٍ فَإِذَا رَأَيْتُمْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ فَصَلُّوا
حَتَّى تَنْجَلِيَ " . وَسَاقَ بَقِيَّةَ الْحَدِيثِ .
জাবির ইবনু
‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পুত্র ইবরাহীমের মৃত্যুর দিনে সূর্যগ্রহণ
হলে লোকজন মন্তব্য করলো, ইবরাহিমের মৃত্যুর কারনেই গ্রহণ লেগেছে। অতঃপর তিনি
লোকদেরকে নিয়ে চার সাজদাহ্ ও ছয় রুকূ’সহ সালাত আদায় করেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকবীর বলে সলাত আরম্ভ করে দীর্ঘক্ষণ ক্বিরাআত পড়েন। অতঃপর
দাড়ানোর অনুরূপ সময় রুকূ’তে অতিবাহিত করেন। অতঃপর মাথা উঠিয়ে প্রথমবারের চেয়ে
কিছুটা কম সময় ক্বিরআত পড়েন। অতঃপর দাড়ানোর অনুরূপ সময় রুকু’তে অতিবাহিত করেন।
অতঃপর মাথা উঠিয়ে তৃতীয়বারের ক্বিরাআত পড়েন যা ছিল দ্বিতীয়বারের চেয়ে কিছুটা কম।
অতঃপর তিনি রুকু’তে গিয়ে দাড়ানোর অনুরূপ সময় অতিবাহিত করে মাথা উঠান, অতঃপর
সাজদাহ্ করেন। তিনি দু’টি সাজদাহ্ করার পর দ্বিতীয় রাক’আতের জন্য দাড়ান এবং এ
রাক’আতেও তিনি সাজদাহ্র পূর্বে তিনটি রুকু’ করেন। তাঁর দ্বিতীয় রাক’আতে দাড়ানোর
সময়ও দীর্ঘ ছিল, তবে তা প্রথম রাক’আতের প্রত্যেকটি ক্বিয়ামের চেয়ে কম সময় ছিল এবং
রুকু’তে অবস্থানের সময় ছিল দাড়ানোর সমপরিমাণ। অতঃপর তিনি সালাতের মধ্যেই পেছনের
দিকে সরে আসেন, ফলে মুসল্লীদের কাতারগুলোও তাঁর সাথে সাথে সরে গেল। অতঃপর তিনি
আবার সস্থানে আসলে সবগুলো কাতার সম্মুখে অগ্রসর হয়। এভাবে তিনি সালাত সমাপ্ত করলেন
এবং এ সময়ের মধ্যে সূর্যও গ্রহণমুক্ত হয়ে যায়। অতঃপর তিনি বলেনঃ হে লোকেরা! নিশ্চয়
সূর্য ও চন্দ্র মহাপরাক্রমশালী মহান আল্লাহর নিদর্শনসমূহের দু’টি নিদর্শন। কোনো
ব্যক্তির মৃত্যুর কারণে এ দু’টির গ্রহণ হয় না। অতএব তোমরা গ্রহণ হতে দেখলে তা
গ্রাসমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সলাত আদায় করবে। হাদীসের অবশিষ্ট অংশ ও এভাবে বর্ণিত
হয়েছে।
সহিহঃ মুসলিম। কিন্তু (ছয় রাক’আত) কথাটি শায। মাহফুজ হচ্ছে (চার রাক’আত। যেমন
সামনে আসছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৭৯
حَدَّثَنَا مُؤَمَّلُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا
إِسْمَاعِيلُ، عَنْ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ
كُسِفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي يَوْمٍ
شَدِيدِ الْحَرِّ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِأَصْحَابِهِ
فَأَطَالَ الْقِيَامَ حَتَّى جَعَلُوا يَخِرُّونَ ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ ثُمَّ
رَفَعَ فَأَطَالَ ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ ثُمَّ رَفَعَ فَأَطَالَ ثُمَّ سَجَدَ
سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ قَامَ فَصَنَعَ نَحْوًا مِنْ ذَلِكَ فَكَانَ أَرْبَعَ
رَكَعَاتٍ وَأَرْبَعَ سَجَدَاتٍ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ .
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে প্রচন্ড গরমের
দিনে সূর্যগ্রহণ হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর
সাহাবীদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করেন। তিনি এত দীর্ঘ সময় সালাতে দাড়িয়ে থাকলেন যে,
লোকজন বেহুশ হয়ে পড়ছিল। তিনি দীর্ঘক্ষণ রুকূ’ করলেন। অতঃপর মাথা উঠিয়ে দীর্ঘক্ষণ
দাঁড়িয়ে রইলেন। অতঃপর দু’টি সাজদাহ্ করলেন। অতঃপর উঠে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় রাক’আতেও
প্রায় প্রথম রাক’আতের অনুরূপ করলেন। এতে পুরো সলাত চার রুকু’ ও চার সাজদাহ্
বিশিষ্ট হলো। এরপর বর্নণাকারী পুরো হাদিস বর্ণনা করেন।
সহিহঃ মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৮০
حَدَّثَنَا ابْنُ السَّرْحِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، ح
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ،
عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، عَنْ
عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ خُسِفَتِ الشَّمْسُ فِي
حَيَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم إِلَى الْمَسْجِدِ فَقَامَ فَكَبَّرَ وَصَفَّ النَّاسُ وَرَاءَهُ
فَاقْتَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قِرَاءَةً طَوِيلَةً ثُمَّ
كَبَّرَ فَرَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلاً ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ "
سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ " . ثُمَّ
قَامَ فَاقْتَرَأَ قِرَاءَةً طَوِيلَةً هِيَ أَدْنَى مِنَ الْقِرَاءَةِ الأُولَى
ثُمَّ كَبَّرَ فَرَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلاً هُوَ أَدْنَى مِنَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ
ثُمَّ قَالَ " سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ
" . ثُمَّ فَعَلَ فِي الرَّكْعَةِ الأُخْرَى مِثْلَ ذَلِكَ فَاسْتَكْمَلَ
أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ وَأَرْبَعَ سَجَدَاتٍ وَانْجَلَتِ الشَّمْسُ قَبْلَ أَنْ
يَنْصَرِفَ .
নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবদ্দশায় সূর্যগ্রহণ
সংঘটিত হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদের দিকে বের হন।
তিনি আল্লাহু আকবার বলে সালাত আরম্ভ করেন এবং লোকজন তাঁর পেছনে কাতারবদ্ধ হয়ে
দাঁড়িয়ে যান। অতঃপর তিনি লম্বা ক্বিরাআত পাঠ করেন, তারপর তাকবীর বলে রু’কুতে গিয়ে
দীর্ঘক্ষণ তাতে অতিবাহিত করেন। এরপর মাথা তুলে "সামি'আল্লাহু লিমান হামিদাহ্
রব্বানা ওয়ালাকাল হাম্দ" বলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যান। অতঃপর আবার লম্বা
ক্বিরাআত পড়েন, তবে তা প্রথমবারের চেয়ে কম দীর্ঘ ছিল। অতঃপর তাকবীর বলে দীর্ঘক্ষণ
রুকু’ করেন, তবে তা প্রথমবারের চেয়ে কম দীর্ঘ ছিল। অতঃপর "সামি'আল্লাহু লিমান
হামিদা্হ্ ,রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ " বলেন। অতঃপর দ্বিতীয় রাক’আতেও অনুরূপ
করেন। এভাবে তিনি পুরো সলাত চার রুকু’ ও চার সাজদাহ্ সহকারে আদায় করেন। সালাত
শেষে প্রত্যাবর্তনের পূর্বেই সূর্য গ্রাসমুক্ত হয়ে যায়।
সহিহঃ বুখারী ও মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৮১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا
عَنْبَسَةُ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ كَانَ كَثِيرُ بْنُ
عَبَّاسٍ يُحَدِّثُ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، كَانَ يُحَدِّثُ أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ مِثْلَ حَدِيثِ
عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ صَلَّى
رَكْعَتَيْنِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ رَكْعَتَيْنِ .
কাসীর ইবনু ‘আব্বাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
'আব্দুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হাদিস বর্ণনা করতেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সূর্যগ্রহণ এর সময় সালাত আদায় করেছেন। অতঃপর অবশিষ্ট বর্ণনা 'উরওয়াহ হতে
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে বর্ণিত
হাদিসের অনুরূপ। তিনি বলেন, তিনি দু' রাক’আত সলাত আদায় করেছেন এবং প্রতি রাক’আতে
দু'টি করে রুকূ’ করেছেন।
সহিহঃ বুখারি ও মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৮২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْفُرَاتِ بْنِ خَالِدٍ أَبُو
مَسْعُودٍ الرَّازِيُّ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي
جَعْفَرٍ الرَّازِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ الرَّازِيِّ، قَالَ
أَبُو دَاوُدَ وَحُدِّثْتُ عَنْ عُمَرَ بْنِ شَقِيقٍ، حَدَّثَنَا أَبُو جَعْفَرٍ
الرَّازِيُّ، - وَهَذَا لَفْظُهُ وَهُوَ أَتَمُّ - عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ أَنَسٍ،
عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ انْكَسَفَتِ الشَّمْسُ
عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَإِنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم صَلَّى بِهِمْ فَقَرَأَ بِسُورَةٍ مِنَ الطُّوَلِ وَرَكَعَ خَمْسَ
رَكَعَاتٍ وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ قَامَ الثَّانِيَةَ فَقَرَأَ سُورَةً مِنَ
الطُّوَلِ وَرَكَعَ خَمْسَ رَكَعَاتٍ وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ كَمَا
هُوَ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ يَدْعُو حَتَّى انْجَلَى كُسُوفُهَا .
উবাই ইবনু কা’ব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে সূর্যগ্রহণ হলে
তিনি সাহাবীদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করেন। তিনি সলাতে দীর্ঘ সূরাহ তিলাওয়াত করেন।
তিনি প্রথম রাক’আতে পাচটি রুকূ’ ও দুটি সাজদাহ্ করেন। অতঃপর দ্বিতীয় রাক’আতে
দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সূরাহ তিলাওয়াত করেন। তাতেও পাঁচটি রুকূ’ ও দু'টি সাজদাহ্ করেন।
অতঃপর ক্বিবলামুখী হয়ে বসে দু'আ করতে থাকেন। এমতাবস্থায় সূর্য গ্রাসমুক্ত হয়ে যায়।
[১১৮২]
[১১৮২] আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। আহমাদ(৫/১৩৪), তাবরীযী
একে মিশকাত (হাদীসঃ ১৪২৯) গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। এর সানাদ দুর্বল। সানাদে আবু জাফা'র
রাযী দুর্বল স্মরণশক্তি মন্দ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১১৮৩
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ
سُفْيَانَ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ صَلَّى فِي كُسُوفِ
الشَّمْسِ فَقَرَأَ ثُمَّ رَكَعَ ثُمَّ قَرَأَ ثُمَّ رَكَعَ ثُمَّ قَرَأَ ثُمَّ
رَكَعَ ثُمَّ قَرَأَ ثُمَّ رَكَعَ ثُمَّ سَجَدَ وَالأُخْرَى مِثْلُهَا .
উবাই ইবনু কা'ব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে সূর্যগ্রহণ হলে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত আদায় করেন। তিনি তাতে ক্বিরাআত পড়ে রুকূ’
করেন, অতঃপর ক্বিরাআত পড়ে রুকূ’ করেন, পুনরায় ক্বিরাআত পড়ে রুকূ’ করেন, আবার
ক্বিরাআত পড়ে রুকূ’ করেন, অতঃপর সাজদাহ্ করেন এবং দ্বিতীয় রাক’আতেও অনুরূপ করেন।
(অর্থাৎ প্রতি রাক’আতে চারটি রুকূ’)। [১১৮৩]
[১১৮৩] নাসায়ী (অধ্যায়ঃ সূর্যগ্রহণ, অনুঃ সূর্যগ্রহণের সালাতের
নিয়ম, হাঃ ১৪৬৭) ত্বাউস হতে ইবনু ‘আব্বাস সূত্রে।
হাদিসের মানঃমুনকার
১১৮৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ،
حَدَّثَنَا الأَسْوَدُ بْنُ قَيْسٍ، حَدَّثَنِي ثَعْلَبَةُ بْنُ عِبَادٍ
الْعَبْدِيُّ، مِنْ أَهْلِ الْبَصْرَةِ أَنَّهُ شَهِدَ خُطْبَةً يَوْمًا
لِسَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ قَالَ قَالَ سَمُرَةُ بَيْنَمَا أَنَا وَغُلاَمٌ مِنَ
الأَنْصَارِ نَرْمِي غَرَضَيْنِ لَنَا حَتَّى إِذَا كَانَتِ الشَّمْسُ قِيدَ
رُمْحَيْنِ أَوْ ثَلاَثَةٍ فِي عَيْنِ النَّاظِرِ مِنَ الأُفُقِ اسْوَدَّتْ حَتَّى
آضَتْ كَأَنَّهَا تَنُّومَةٌ فَقَالَ أَحَدُنَا لِصَاحِبِهِ انْطَلِقْ بِنَا إِلَى
الْمَسْجِدِ فَوَاللَّهِ لَيُحْدِثَنَّ شَأْنُ هَذِهِ الشَّمْسِ لِرَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فِي أُمَّتِهِ حَدَثًا قَالَ فَدَفَعْنَا فَإِذَا هُوَ بَارِزٌ
فَاسْتَقْدَمَ فَصَلَّى فَقَامَ بِنَا كَأَطْوَلِ مَا قَامَ بِنَا فِي صَلاَةٍ
قَطُّ لاَ نَسْمَعُ لَهُ صَوْتًا قَالَ ثُمَّ رَكَعَ بِنَا كَأَطْوَلِ مَا رَكَعَ
بِنَا فِي صَلاَةٍ قَطُّ لاَ نَسْمَعُ لَهُ صَوْتًا ثُمَّ سَجَدَ بِنَا كَأَطْوَلِ
مَا سَجَدَ بِنَا فِي صَلاَةٍ قَطُّ لاَ نَسْمَعُ لَهُ صَوْتًا . ثُمَّ فَعَلَ
فِي الرَّكْعَةِ الأُخْرَى مِثْلَ ذَلِكَ قَالَ فَوَافَقَ تَجَلِّي الشَّمْسِ
جُلُوسَهُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ قَالَ ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ قَامَ فَحَمِدَ
اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَشَهِدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَشَهِدَ
أَنَّهُ عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ثُمَّ سَاقَ أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ خُطْبَةَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
সামুরাহ ইবনু
জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ও এক আনসারী যুবক তীর চালনা করছিলাম। এমন সময় সূর্য যখন লোকদের নজরে
আনুমানিক দুই বা তিন তীর পরিমাণ উপরে উঠেছিল তখন তা কালজিরা বা কালো ফলের মত হয়ে
যায়। তখন আমাদের একজন তার সাথীকে বলল, চলো মসজিদে যাই। আল্লাহর শপথ, রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উম্মাতের উপর এ সূর্যের কারণে নিশ্চয়ই নতুন
কিছু ঘটতে যাচ্ছে। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা গিয়ে দেখি, তিনি বেরিয়ে এসে সম্মুখে
অগ্রসর হয়ে সলাত আরম্ভ করেছেন। তিনি আমাদেরকে নিয়ে সলাতে এত দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে
থাকলেন যে, ইতিপূর্বে কখনো তিনি এত দীর্ঘক্ষণ দাঁড়াননি। তবে (নিঃশব্দে ক্বিরাআত
পড়ায়) আমরা সলাতের মধ্যে তাঁর কোন শব্দ শুনতে পাইনি। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি
আমাদেরকে নিয়ে রুকূ’ করলেন এবং এত লম্বা রুকূ’ করলেন যে, ইতিপূর্বে কখনো এত দীর্ঘ
রুকূ’ করেননি। এতেও আমরা তাঁর (তাসবীহ পাঠের) শব্দ শুনতে পাইনি। বর্ণনাকারী বলেন,
অতঃপর তিনি এত দীর্ঘ সাজদাহ্ করলেন যে, ইতিপূর্বে সলাতে কখনো এরূপ দীর্ঘ সাজদাহ্
করেননি। এতেও আমরা তাঁর কোনও শব্দ শুনতে পাইনি। অতঃপর দ্বিতীয় রাক’আতেও অনূরুপ
করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি দ্বিতীয় রাক’আতে বসা অবস্থায় থাকতেই সূর্য
গ্রাসমুক্ত হয়ে যায়। অতঃপর তিনি সালাম ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে আল্লাহর যথাযথ প্রশংসা ও গুণ
বর্ণনা করে সাক্ষ্য দেন যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই এবং আরো সাক্ষ্য দেন
যে, তিনি তাঁর বান্দাহ্ ও রসূল। অতঃপর আহমাদ ইবনু ইউনূস (রহঃ) তার বর্ণনায় নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ভাষণের বর্ণনা দেন। [১১৮৪]
[১১৮৪] এর সানাদ দুর্বল। এটি বর্ণনা করেছেন বুখারী 'আফ’আলুল
‘ইবাদ' গ্রন্থে এবং নাসায়ী (অধ্যায়ঃ সূর্য গ্রহণ, অনুঃ ১৫, হাঃ ১৪৮৩), তিরমীযী (অধ্যায়ঃ
সলাত, অনুঃ সূর্যগ্রহণ এর সলাতে ক্বিরআত, হাঃ ৫৬২, ইমাম তিরমীযী বলেন, সামুরাহর হাদীসটি
হাসান সহিহ), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ সলাত ক্বায়িম, অনুঃ সূর্যগ্রহণ এর সলাত সম্পর্কে),
আহমাদ (৫/১৬), এর সানাদ দুর্বল। সানাদে সা’রাবাহ ইবনু আব্বাদ সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ
মাক্ববূল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১১৮৫
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا
وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ قَبِيصَةَ
الْهِلاَلِيِّ، قَالَ كُسِفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَخَرَجَ فَزِعًا يَجُرُّ ثَوْبَهُ وَأَنَا مَعَهُ يَوْمَئِذٍ
بِالْمَدِينَةِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ فَأَطَالَ فِيهِمَا الْقِيَامَ ثُمَّ
انْصَرَفَ وَانْجَلَتْ فَقَالَ " إِنَّمَا هَذِهِ الآيَاتُ يُخَوِّفُ
اللَّهُ بِهَا فَإِذَا رَأَيْتُمُوهَا فَصَلُّوا كَأَحْدَثِ صَلاَةٍ
صَلَّيْتُمُوهَا مِنَ الْمَكْتُوبَةِ " .
ক্বাবীসাহ
আল-হিলালী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে সূর্যগ্রহণ হলে
তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় কাপড় হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে খুব ভয়ের
সাথে বের হলেন। তখন আমি তার সাথে মদিনায় ছিলাম। তিনি দু' রাক’আত সলাত আদায় করালেন
এবং এতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর তাঁর সলাত শেষ হলে সূর্য গ্রাসমুক্ত হয়ে
যায়। এরপর তিনি বলেন, নিশ্চয় এগুলো হচ্ছে নিদর্শন, মহান আল্লাহ এর মাধ্যমে ভীতি
প্রদর্শন করেন। সুতরাং যখন তোমরা এরূপ দেখবে, তখন এর পূর্বে তোমাদের আদায়কৃত
(ফাজরের) ফারয সলাতের ন্যায় সলাত আদায় করবে। [১১৮৫]
[১১৮৫] নাসায়ী (অধ্যায়ঃ সূর্য গ্রহণ, হাঃ ১৪৮৫) আবূ ক্বিলাবাহ
হতে কুবাইসাহ সূত্রে। আহমাদ (১৪০২)।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১১৮৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا
رَيْحَانُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ مَنْصُورٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ
أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ عَامِرٍ، أَنَّ قَبِيصَةَ الْهِلاَلِيَّ،
حَدَّثَهُ أَنَّ الشَّمْسَ كُسِفَتْ بِمَعْنَى حَدِيثِ مُوسَى قَالَ حَتَّى بَدَتِ
النُّجُومُ .
হিলাল ইবনু ‘আমির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ক্বাবীসাহ
আল-হিলালী (রাঃ) তাকে বলেছেন, একদা সূর্যগ্রহণ হয়। অতঃপর মূসা বর্ণিত হাদিসের
অনুরূপ। তিনি বলেন, গ্রহণের কারণে সূর্য এমনভাবে আচ্ছন্ন হয়েছিল যে, তারকারাজি
পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল। [১১৮৬]
[১১৮৬] এর পূর্বেরটি দেখুন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-
২৬৩
সূর্যগ্রহণের সলাতের
ক্বিরআত
১১৮৭
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا
عَمِّي، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي هِشَامُ
بْنُ عُرْوَةَ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي سَلَمَةَ، وَسُلَيْمَانُ بْنُ
يَسَارٍ، كُلُّهُمْ قَدْ حَدَّثَنِي عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
كُسِفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَخَرَجَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى بِالنَّاسِ فَقَامَ فَحَزَرْتُ
قِرَاءَتَهُ فَرَأَيْتُ أَنَّهُ قَرَأَ بِسُورَةِ الْبَقَرَةِ - وَسَاقَ
الْحَدِيثَ - ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ قَامَ فَأَطَالَ الْقِرَاءَةَ
فَحَزَرْتُ قِرَاءَتَهُ فَرَأَيْتُ أَنَّهُ قَرَأَ بِسُورَةِ آلِ عِمْرَانَ .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুগে সূর্যগ্রহণ হওয়ায়
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে এসে লোকদেরকে নিয়ে সলাত
আদায় করলেন। তিনি দাঁড়িয়ে এত দীর্ঘক্ষণ ক্বিরআত পাঠ করেন যে, আমি অনুমান করে
দেখেছি যে, তিনি সূরাহ বাক্বারাহ তিলাওয়াত করেছেন। অতঃপর বর্ণনাকারী হাদীসের বাকী
অংশ বর্ণনা করেন। এরপর তিনি দু’টি সাজদাহ্ করেছেন। তারপর দাঁড়িয়ে এত দীর্ঘ
ক্বিরাআত পাঠ করেন যে, আমি অনুমান করেছি যে, তিনি সূরাহ আলে-‘ইমরান তিলাওয়াত
করেছেন।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৮৮
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ الْوَلِيدِ بْنِ مَزْيَدٍ،
أَخْبَرَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، أَخْبَرَنِي الزُّهْرِيُّ،
أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَرَأَ قِرَاءَةً طَوِيلَةً فَجَهَرَ بِهَا يَعْنِي فِي
صَلاَةِ الْكُسُوفِ .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সূর্যগ্রহণের সলাতে) স্বরবে অত্যাধিক দীর্ঘ
ক্বিরাআত পাঠ করেছেন।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৮৯
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ زَيْدِ
بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، - كَذَا عِنْدَ
الْقَاضِي وَالصَّوَابُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، - قَالَ خُسِفَتِ الشَّمْسُ فَصَلَّى
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ مَعَهُ فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلاً
بِنَحْوٍ مِنْ سُورَةِ الْبَقَرَةِ ثُمَّ رَكَعَ وَسَاقَ الْحَدِيثَ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা সূর্যগ্রহন হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত
এবং তাঁর সাথের লোকেরা সলাত আদায় করেন। তিনি (সলাতে) সূরাহ আল-বাক্বারাহ পড়ার
সমপরিমাণ সময় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন, তারপর রুকূ’ করেন। এরপর বর্ণনাকারী হাদীসের
বাকী অংশটি বর্ণনা করেন।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-
২৬৪
সূর্যগ্রহণের সলাতের
জন্য আহবান করা
১১৯০
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنَا
الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ نَمِرٍ، أَنَّهُ سَأَلَ
الزُّهْرِيَّ فَقَالَ الزُّهْرِيُّ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
كُسِفَتِ الشَّمْسُ فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً فَنَادَى
أَنَّ الصَّلاَةَ جَامِعَةٌ .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা সূর্যগ্রহণ হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক
ব্যক্তিকে ঘোষণা দেয়ার নির্দেশ করেন যে, সলাতের জামা’আত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে
(কাজেই তোমরা একত্রিত হও)।
সহীহঃ মুসলিম। বুখারী তা’লীক্বভাবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৬৫
সূর্যগ্রহণের সময়
সদাক্বাহ করার নির্দেশ
১১৯১
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ هِشَامِ
بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ لاَ يُخْسَفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ
وَلاَ لِحَيَاتِهِ فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ فَادْعُوا اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ
وَكَبِّرُوا وَتَصَدَّقُوا " .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কারো মৃত্যু এবং জন্মের কারণে সূর্য ও
চন্দ্রগ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা তা (সংঘটিত হতে) দেখবে তখন মহা পরাক্রমশালী
আল্লাহর নিকট দু’আ করবে, তাকবীর বলবে এবং সদাক্বাহ করবে।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৬৬
সূর্যগ্রহণের সময়
গোলাম আযাদ করা
১১৯২
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ
بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ فَاطِمَةَ، عَنْ
أَسْمَاءَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُ بِالْعَتَاقَةِ
فِي صَلاَةِ الْكُسُوفِ .
আসমা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্যগ্রহণের সলাতের সময় গোলাম আযাদ
করার আদেশ দিতেন।
সহীহঃ বুখারী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-
২৬৭
যিনি বলেন,
সূর্যগ্রহণের সময় দু’ রাক’আত সলাত আদায় করবে
১১৯৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ أَبِي شُعَيْبٍ الْحَرَّانِيُّ،
حَدَّثَنِي الْحَارِثُ بْنُ عُمَيْرٍ الْبَصْرِيُّ، عَنْ أَيُّوبَ
السَّخْتِيَانِيِّ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ
كُسِفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ
يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ وَيَسْأَلُ عَنْهَا حَتَّى انْجَلَتْ .
নু’মান ইবনু বাশীর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে সূর্যগ্রহণ হলে তিনি
দু’ দু’ রাক’আত সলাত আদায় করেন এবং সূর্য গ্রহণমুক্ত হয়েছে কিনা তা জিজ্ঞেস করেতে
থাকেন।
[১১৯৩] নাসায়ী (অধ্যায়ঃ সূর্যগ্রহণ, হাঃ ১৪৮৪), ইবনু মাজাহ
(অধ্যায়ঃ সলাত ক্বায়িম, অনুঃ সূর্যগ্রহনের সলাত সম্পর্কে, হাঃ ১২৬২), আহমাদ (৪/২৬৯),
ইবনু খুযাইমাহ (হাঃ ১৪০৪)। এর সানাদ দুর্বল।
হাদিসের মানঃমুনকার
১১৯৪
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا
حَمَّادٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عَمْرٍو، قَالَ انْكَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَكَدْ يَرْكَعُ ثُمَّ
رَكَعَ فَلَمْ يَكَدْ يَرْفَعُ ثُمَّ رَفَعَ فَلَمْ يَكَدْ يَسْجُدُ ثُمَّ سَجَدَ
فَلَمْ يَكَدْ يَرْفَعُ ثُمَّ رَفَعَ فَلَمْ يَكَدْ يَسْجُدُ ثُمَّ سَجَدَ فَلَمْ
يَكَدْ يَرْفَعُ ثُمَّ رَفَعَ وَفَعَلَ فِي الرَّكْعَةِ الأُخْرَى مِثْلَ ذَلِكَ
ثُمَّ نَفَخَ فِي آخِرِ سُجُودِهِ فَقَالَ " أُفْ أُفْ " . ثُمَّ
قَالَ " رَبِّ أَلَمْ تَعِدْنِي أَنْ لاَ تُعَذِّبَهُمْ وَأَنَا فِيهِمْ
أَلَمْ تَعِدْنِي أَنْ لاَ تُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ " .
فَفَرَغَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ صَلاَتِهِ وَقَدْ أَمْحَصَتِ
الشَّمْسُ وَسَاقَ الْحَدِيثَ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু
‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে সূর্যগ্রহণ হলে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাতে দাঁড়ান। তিনি এত দীর্ঘক্ষণ
দাঁড়িয়ে থাকলেন যে, রুকূতেই যাচ্ছেন না। অতঃপর রুকূ’ করলেন এবং এত দীর্ঘক্ষণ রুকূ’
করলেন যে, মাথা উঠাবেন বলে মনে হলো না, অবশ্য পরে উঠালেন এবং এত দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে
থাকলেন যে, সাজদাহ্ করার সম্ভাবনাই থাকলো না। অতঃপর সাজদাহ্ করলেন এবং এত
দীর্ঘক্ষণ সাজদাহ্ করলেন যে, মাথা উঠানোর সম্ভাবনাই থাকলো না। অবশ্য পরে মাথা
ঊঠালেন এবং প্রথম সাজদাহ্র পর এত দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলেন যে, দ্বিতীয় সাজদাহ্
করবেন বলে সম্ভাবনা দেখা গেলো না। অতঃপর সাজদাহ্য় গিয়ে এত দীর্ঘক্ষণ সাজদাহ্
করলেন যে, মাথা উঠাবেন বলে মনে হলো না, অতঃপর উঠালেন এবং দ্বিতীয় রাক’আতেও অনুরূপ
করলেন। পরে তিনি সর্বশেষ সাজদাহ্র মধ্যে উহঃ উহঃ শব্দ করলেন এবং বললেনঃ হে আমার
প্রভু! আপনি কি আমাকে এ প্রতিশ্রুতি দেননি যে, আমার বর্তমানে আপনি তাদেরকে শাস্তি
দিবেন না? আপনি কি আমার সাথে ওয়াদা করেননি যে, তারা ক্ষমা চাইতে থাকলে আপনি
তাদেরকে শাস্তি দিবেন না? এ বলে তিনি সলাত হতে অবসর হলে সূর্যও গ্রাসমুক্ত হয়ে
যায়। আর এভাবেই হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
সহীহঃ কিন্তু দুই রুকূ’ উল্লেখসহ। যেমনটি বুখারী ও মুসলিমে আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৯৫
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ
الْمُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا الْجُرَيْرِيُّ، عَنْ حَيَّانَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ بَيْنَمَا أَنَا أَتَرَمَّى، بِأَسْهُمٍ فِي
حَيَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ كُسِفَتِ الشَّمْسُ
فَنَبَذْتُهُنَّ وَقُلْتُ لأَنْظُرَنَّ مَا أُحْدِثَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ الْيَوْمَ فَانْتَهَيْتُ إِلَيْهِ وَهُوَ رَافِعٌ
يَدَيْهِ يُسَبِّحُ وَيُحَمِّدُ وَيُهَلِّلُ وَيَدْعُو حَتَّى حُسِرَ عَنِ
الشَّمْسِ فَقَرَأَ بِسُورَتَيْنِ وَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ .
‘আবদুর রহমান ইবনু
সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবদ্দশায় একটি জায়গাতে
আমি তীর চালনা শিখছিলাম। এমন সময় সূর্যগ্রহণ হলে আমি তীরগুলো ফেলে দিয়ে বলি, আজ
সূর্যগ্রহণের দরুন রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্য কি ঘটে,
তা অবশ্যই স্বচক্ষে দেখবো। আমি তাঁর কাছে গিয়ে দেখলাম, তিনি দু’হাত উঠিয়ে তাসবীহ,
তাহমীদ, কালিমাহ ও দু’আ পাঠরত আছেন। অবশেষে সূর্য গ্রাসমুক্ত হয়ে গেল। তিনি দু’টি
সূরার দ্বারা দু’ রাক’আত সলাত আদায় করলেন।
সহীহঃ মুসলিম সংক্ষেপে।
সূর্যগ্রহণের সলাত বিষয়ক (১১৭৭-১১৯৫ নং) হাদীসসমূহ হতে শিক্ষাঃ
১। সূর্যগ্রহণের সময় সলাত আদায় করা সুন্নাত।
২। এ সলাত হবে দু’ রাক’আত। এ দু’ রাক’আত সলাতে চারটি রুকু দিতে হয়। এ সম্পর্কিত হাদীসই
সর্বাধিক বিশুদ্ধ।
৩। সলাতের ক্বিরাআত হবে দীর্ঘ।
৪। সলাতের শেষে খুত্ববাহ দিতে হয়।
৫। গ্রহণ লাগলে দান-খয়রাত করা, দাস মুক্ত করা, তাকবীর বলা ও দু’আ করা উত্তম।
৬। এ সলাতের জন্য লোকদেরকে আহবান করা সুন্নাত।
৭। সূর্যগ্রহণ মহান আল্লাহর নিদর্শন বিশেষ। এর সাথে কারো জন্ম বা মৃত্যুর কোন সম্পর্ক
নয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-
২৬৮
দুর্যোগকালে সলাত আদায়
১১৯৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ جَبَلَةَ بْنِ
أَبِي رَوَّادٍ، حَدَّثَنِي حَرَمِيُّ بْنُ عُمَارَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ
النَّضْرِ، حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، كَانَتْ ظُلْمَةٌ عَلَى عَهْدِ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ - قَالَ - فَأَتَيْتُ أَنَسًا فَقُلْتُ يَا أَبَا حَمْزَةَ هَلْ كَانَ
يُصِيبُكُمْ مِثْلُ هَذَا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
مَعَاذَ اللَّهِ إِنْ كَانَتِ الرِّيحُ لَتَشْتَدُّ فَنُبَادِرُ الْمَسْجِدَ
مَخَافَةَ الْقِيَامَةِ .
‘উবায়দুল্লাহ ইবনুন
নাদর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমার পিতা বলেছেন, একদা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর সময় একবার (আকাশ)
অন্ধকারাচ্ছন্ন হলে আমি আনাস (রাঃ) এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলাম, হে আবু হাম্যাহ!
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে আপনারা কখনো এরূপ বিপদের
সম্মুখীন হয়েছিলেন কি? তিনি বললেন, “আল্লাহ পানাহ! তখন একটু জোরে বাতাস প্রবাহিত
হলেই আমরা ক্বিয়ামাত হবার আশংকায় দ্রুত দৌড়িয়ে মাসজিদে যেতাম। [১১৯৬]
[১১৯৬] এর সানাদ দুর্বল। আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
এছাড়াও বায়হাক্বী (৩/৩৪২)।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-
২৬৯
বিপদের আলামাত দেখে
সাজদাহ্ করা
১১৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي
صَفْوَانَ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ كَثِيرٍ، حَدَّثَنَا سَلْمُ بْنُ
جَعْفَرٍ، عَنِ الْحَكَمِ بْنِ أَبَانَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، قَالَ قِيلَ لاِبْنِ
عَبَّاسٍ مَاتَتْ فُلاَنَةُ بَعْضُ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَخَرَّ سَاجِدًا فَقِيلَ لَهُ أَتَسْجُدُ هَذِهِ السَّاعَةَ فَقَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا رَأَيْتُمْ آيَةً فَاسْجُدُوا
" . وَأَىُّ آيَةٍ أَعْظَمُ مِنْ ذَهَابِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم
‘ইকরিমাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কোন এক স্ত্রীর ইন্তেকালের সংবাদ দেয়া হলে তিনি সাজদাহ্য় লুটে পড়লেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, এ সময় সাজদাহ্ করার কারণ কি? তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমরা কোন নিদর্শন দেখবে, তখন সাজদাহ্ করবে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রীর ইন্তিকালের চেয়ে বড় নিদর্শন (বিপদ) আর কি হতে পারে! [১১৯৭]
No comments