জামে' আত-তিরমিজি - অধ্যায় "ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্য" হাদিস নং- ১২০৫- ১৩২১
ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্য
১. অনুচ্ছেদঃ
সন্দেহজনক জিনিস পরিহার করা
১২০৫
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، أَنْبَأَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ مُجَالِدٍ، عَنِ
الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهُ
صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " الْحَلاَلُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ
وَبَيْنَ ذَلِكَ أُمُورٌ مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَدْرِي كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ أَمِنَ
الْحَلاَلِ هِيَ أَمْ مِنَ الْحَرَامِ فَمَنْ تَرَكَهَا اسْتِبْرَاءً لِدِينِهِ
وَعِرْضِهِ فَقَدْ سَلِمَ وَمَنْ وَاقَعَ شَيْئًا مِنْهَا يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَ
الْحَرَامَ كَمَا أَنَّهُ مَنْ يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَهُ
أَلاَ وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى أَلاَ وَإِنَّ حِمَى اللَّهِ مَحَارِمُهُ
" .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ،
عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ
بَشِيرٍ .
নু’মান
ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ হালালও সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট এবং এ দুটির মাঝে
অনেক সন্দেহজনক বিষয় আছে। তা হালাল হবে না হারাম হবে সেটা অনেকেই জানে না। যে লোক
এই সন্দেহজনক বিষয়গুলো নিজের দ্বীন এবং মান-ইজ্জাতের হিফাযাতের উদ্দেশ্যে ছেড়ে
দেবে সে নিরাপদ হল। যে লোক এর কিছুতে লিপ্ত হল তার হারাম কাজে লিপ্ত হওয়ারও সংশয়
থেকে গেল। (উদাহরণস্বরূপ) নিষিদ্ধ এলাকার আশেপাশে যে লোক পশু চড়ায়, তার এতে
প্রবেশের ভয় আছে। জেনে রাখ! প্রতিটি সরকারেরই কিছু সংরক্ষিত এলাকা থাকে। সাবধান!
আল্লাহ তা’আলার সংরক্ষিত এলাকা হল ‘তাঁর হারাম করা বিষয়গুলো’।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৯৮৪), বুখারী, মুসলিম
হান্নাদ ওয়াকী হতে, তিনি যাকারিয়া ইবনু আবী যাইদা হতে,
তিনি শা’বী হতে, তিনি নু’মান ইবনু বাশীর হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে অনুরূপ অর্থে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
একাধিক বর্ণনাকারী নুমান (রাঃ)-এর সূত্রে একই বিষয়বস্তু সম্বলিত হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২. অনুচ্ছেদঃ
সূদ গ্রহণ প্রসঙ্গে
১২০৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ
وَشَاهِدَيْهِ وَكَاتِبَهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ
وَجَابِرٍ وَأَبِي جُحَيْفَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
.
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) –সূদখোর, সূদ দাতা সূদের সাক্ষীদ্বয় ও সূদের (চুক্তি বা হিসাব) লেখককে
অভিসম্পাত করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৭৭)
উমার, আলী, জাবির ও আবূ জুহাইফা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩. অনুচ্ছেদঃ
মিথ্যা ও প্রতারণা ইত্যাদির
বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি
১২০৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّنْعَانِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ
شُعْبَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ
أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْكَبَائِرِ قَالَ "
الشِّرْكُ بِاللَّهِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ وَقَتْلُ النَّفْسِ وَقَوْلُ
الزُّورِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ وَأَيْمَنَ بْنِ
خُرَيْمٍ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কাবীরা গুনাহ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার সাথে অংশী স্থাপন করা, পিতা-মাতার অবাধ্য
হওয়া, মানুষকে মেরে ফেলা এবং মিথ্যা কথা বলা (কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত)।
সহীহ্, গাইয়াতুল মারাম (২৭৭), বুখারী, মুসলিম
আবূ বাক্রা, আইমান ইবনু খুরাইম ও ইবনু উমর (রাঃ) হতেও
এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্
গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪. অনুচ্ছেদঃ
ব্যবসায়ীদের প্রসঙ্গে এবং
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের এই নামকরণ করেন
১২০৮
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ،
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ
قَيْسِ بْنِ أَبِي غَرَزَةَ، قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم وَنَحْنُ نُسَمَّى السَّمَاسِرَةَ فَقَالَ " يَا مَعْشَرَ
التُّجَّارِ إِنَّ الشَّيْطَانَ وَالإِثْمَ يَحْضُرَانِ الْبَيْعَ فَشُوبُوا
بَيْعَكُمْ بِالصَّدَقَةِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ
عَازِبٍ وَرِفَاعَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ قَيْسِ بْنِ أَبِي غَرَزَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . رَوَاهُ مَنْصُورٌ وَالأَعْمَشُ وَحَبِيبُ بْنُ أَبِي
ثَابِتٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي غَرَزَةَ .
وَلاَ نَعْرِفُ لِقَيْسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غَيْرَ هَذَا .
কাইস
ইবনু আবী গারাযা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন। আমাদেরকে ‘সামাসিরাহ’ (দালাল) বলা হত। তিনি
বললেনঃ হে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়! শাইতান ও গুনাহ ব্যবসায়িক লেনদেনের সময় এসে
হাযির হয়। অতএব, ব্যবসায়ের সাথে তোমরা দান-খায়রাতও যুক্ত কর।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৪৫)
বারাআ ইবনু আযিব ও রিফাআ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস
বর্ণিত আছে। কাইস ইবনু আবী গাযারা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্
বলেছেন। মানসূর, আ’মাশ, হাবীব ইবনু আবী সাবিত, এবং আরও অনেকে আবূ ওয়াইল-এর সূত্রে
কাইস ইবনু গারাযা হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর এই একটি হাদীসই বর্ণনা করেছেন বলে আমরা জানি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপরোক্ত হাদীসের মত হাদীস হান্নাদ হতে, তিনি আবূ মুআবিয়া
হতে, তিনি আ’মাশ হতে, তিনি শাকীক হতে, তিনি কাইস ইবনু আবূ গারাযা (রাঃ) হতে এই সনদেও
বর্ণিত আছে। এ সূত্রটিও সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২০৯
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ،
حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ
أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " التَّاجِرُ
الصَّدُوقُ الأَمِينُ مَعَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ الثَّوْرِيِّ عَنْ أَبِي حَمْزَةَ . وَأَبُو
حَمْزَةَ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَابِرٍ وَهُوَ شَيْخٌ بَصْرِيٌّ .
আবূ
সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সত্যবাদী ও
বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীরা (আখিরাতে) নাবীগণ, সিদ্দীকগণ (সত্যবাদীগণ) ও শহীদগণের সাথে
থাকবে।
যঈফ, গায়াতুল মারাম (১৬৭) (বেচা-কেনার হাদীস)
আবূ ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান। শুধুমাত্র উপরোক্ত (সুফিয়ান-আবূ
হামযা) সূত্রেই আমরা হাদীসটি অবগত হয়েছি। আবূ হামযার নাম আবদুল্লাহ, পিতা জাবির। তিনি
বসরার বয়স্ক আলিম ছিলেন। সুওয়াইদ-ইবনুল মুবারাক হতে, তিনি সুফিয়ান হতে, তিনি আবূ
হামযা (রাহঃ) হতে এই সনদেও উপরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১২১০
حَدَّثَنَا أَبُو
سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ عُبَيْدِ بْنِ
رِفَاعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّهُ خَرَجَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم إِلَى الْمُصَلَّى فَرَأَى النَّاسَ يَتَبَايَعُونَ فَقَالَ "
يَا مَعْشَرَ التُّجَّارِ " . فَاسْتَجَابُوا لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم وَرَفَعُوا أَعْنَاقَهُمْ وَأَبْصَارَهُمْ إِلَيْهِ فَقَالَ "
إِنَّ التُّجَّارَ يُبْعَثُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فُجَّارًا إِلاَّ مَنِ اتَّقَى
اللَّهَ وَبَرَّ وَصَدَقَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَيُقَالُ إِسْمَاعِيلُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ رِفَاعَةَ أَيْضًا
.
ইসমাঈল
ইবনু উবাইদ ইবনু রিফাআ (রাঃ) হতে পালাক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (রিফাআ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সাথে ঈদের মাঠে রাওয়ানা হলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের কেনা-বেচায় জড়িত দেখে বলেনঃ হে ব্যবসায়ী
সম্প্রদায়! তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ডাকে সাড়া
দিল এবং নিজেদের ঘাড় ও চোখ উঠিয়ে তাঁর দিকে তাকালো। তিনি বললেনঃ কিয়ামাতের দিন
ব্যবসায়ীদের ফাসিক বা গুনাহগাররূপে উঠানো হবে, কিন্তু যেসব ব্যবসায়ী আল্লাহ্
তা'আলাকে ভয় করে, নির্ভুলভাবে কাজ করে এবং সততা ধারণ করে তারা এর ব্যতিক্রম।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২১৪৬), আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইসমাঈলের পিতাকে
উবাইদুল্লাহও বলা হয়।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৫. অনুচ্ছেদঃ
নিজের পণ্য প্রসঙ্গে যে লোক
মিথ্যা শপথ করে
১২১১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ
بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، قَالَ
أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ مُدْرِكٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ بْنَ عَمْرِو
بْنِ جَرِيرٍ، يُحَدِّثُ عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " ثَلاَثَةٌ لاَ يَنْظُرُ اللَّهُ
إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
" . قُلْتُ مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَدْ خَابُوا وَخَسِرُوا
فَقَالَ " الْمَنَّانُ وَالْمُسْبِلُ إِزَارَهُ وَالْمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ
بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ
وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي أُمَامَةَ بْنِ ثَعْلَبَةَ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ
وَمَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي ذَرٍّ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
আল্লাহ্ তা’আলা কিয়ামাতের দিবসে তিন শ্রেণীর লোকের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেন না,
তাদেরকে পবিত্র করবেন না, উপরন্তু তাদের জন্য রয়েছে ভয়ানক শাস্তি। আমরা প্রশ্ন
করলাম, হে আল্লাহর রাসূল। এরা কারা? এরা তো ব্যর্থ ও ধ্বংস হল। তিনি বললেনঃ (তারা
হল) উপকার করার পর তার খোঁটাদানকারী, পায়ের গোড়ালির নিচে কাপড় পরিধানকারী এবং
নিজের পণ্যদ্রব্য মিথ্যা শপথ করে বিক্রয়কারী।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২০৮)
ইবনু মাসঊদ, আবূ হুরাইরা, আবূ উমামা ইবনু সা’লাবা, ইমরান
ইবনু হুসাইন ও মা’কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা
বলেন, আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬. অনুচ্ছেদঃ
সকালে ব্যবসায়ের কাজে বের
হওয়া
১২১২
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ
بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، حَدَّثَنَا يَعْلَى بْنُ
عَطَاءٍ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ حَدِيدٍ، عَنْ صَخْرٍ الْغَامِدِيِّ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اللَّهُمَّ بَارِكْ لأُمَّتِي فِي
بُكُورِهَا " . قَالَ وَكَانَ إِذَا بَعَثَ سَرِيَّةً أَوْ جَيْشًا
بَعَثَهُمْ أَوَّلَ النَّهَارِ وَكَانَ صَخْرٌ رَجُلاً تَاجِرًا وَكَانَ إِذَا
بَعَثَ تِجَارَةً بَعَثَهُمْ أَوَّلَ النَّهَارِ فَأَثْرَى وَكَثُرَ مَالُهُ .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَبُرَيْدَةَ وَأَنَسٍ
وَابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ صَخْرٍ
الْغَامِدِيِّ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَلاَ نَعْرِفُ لِصَخْرٍ الْغَامِدِيِّ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غَيْرَ هَذَا الْحَدِيثِ . وَقَدْ رَوَى
سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ هَذَا الْحَدِيثَ
.
সাখ্র
আল-গামিদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ “হে আল্লাহ্! আমার উন্মাতের ভোর বেলার মধ্যে তাদেরকে বারকাত ও
প্রাচুর্য দান করুন।” বর্ণনাকারী বলেন, যখন তিনি কোথাও কোন ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ
বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতেন, তখন তাদেরকে দিনের প্রথম অংশেই পাঠাতেন। সাখ্র
(রাঃ) ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার ব্যবসায়ীদের পাঠাতে ইচ্ছা করলে তাদেরকে
দিনের প্রথম অংশেই পাঠাতেন। ফলে তিনি অনেক সম্পদের মালিক হন।
সহীহ্, ‘তিনি ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ বাহিনী দিনের প্রথম অংশেই প্রেরণ করতেন’ অংশটুকু
যঈফ রাওযুন নাযীর (৪৯০), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩৪৫), বেচা-কেনার হাদীস, যঈফা (৪১৭৮)
আলী, ইবনু মাসঊদ, বুরাইদা, আনাস, ইবনু উমার, ইবনু আব্বাস
ও জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সাখ্র আল-গামিদী
(রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
এই একটি মাত্র হাদীসই আমরা সাখ্র (রাঃ)-এর নিকট হতে জেনেছি। এ হাদীসটি সুফিয়ান সাওরী
শুবা হতে, তিনি ইয়া’লা ইবনু আতা হতে পরম্পরায় বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭. অনুচ্ছেদঃ
নির্দিষ্ট মেয়াদে মূল্য
পরিশোধের শর্তে বাকীতে ক্রয়-বিক্রয়ের অনুমতি
১২১৩
حَدَّثَنَا أَبُو
حَفْصٍ، عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، أَخْبَرَنَا
عُمَارَةُ بْنُ أَبِي حَفْصَةَ، أَخْبَرَنَا عِكْرِمَةُ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
كَانَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَوْبَانِ قِطْرِيَّانِ
غَلِيظَانِ فَكَانَ إِذَا قَعَدَ فَعَرِقَ ثَقُلاَ عَلَيْهِ فَقَدِمَ بَزٌّ مِنَ
الشَّامِ لِفُلاَنٍ الْيَهُودِيِّ . فَقُلْتُ لَوْ بَعَثْتَ إِلَيْهِ
فَاشْتَرَيْتَ مِنْهُ ثَوْبَيْنِ إِلَى الْمَيْسَرَةِ . فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ
فَقَالَ قَدْ عَلِمْتُ مَا يُرِيدُ إِنَّمَا يُرِيدُ أَنْ يَذْهَبَ بِمَالِي أَوْ
بِدَرَاهِمِي . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كَذَبَ
قَدْ عَلِمَ أَنِّي مِنْ أَتْقَاهُمْ لِلَّهِ وَآدَاهُمْ لِلأَمَانَةِ "
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَنَسٍ وَأَسْمَاءَ بِنْتِ
يَزِيدَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ
. وَقَدْ رَوَاهُ شُعْبَةُ أَيْضًا عَنْ عُمَارَةَ بْنِ أَبِي حَفْصَةَ .
قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ فِرَاسٍ الْبَصْرِيَّ يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا
دَاوُدَ الطَّيَالِسِيَّ يَقُولُ سُئِلَ شُعْبَةُ يَوْمًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ
فَقَالَ لَسْتُ أُحَدِّثُكُمْ حَتَّى تَقُومُوا إِلَى حَرَمِيِّ بْنِ عُمَارَةَ بْنِ
أَبِي حَفْصَةَ فَتُقَبِّلُوا رَأْسَهُ . قَالَ وَحَرَمِيٌّ فِي الْقَوْمِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى أَىْ إِعْجَابًا بِهَذَا الْحَدِيثِ .
আইশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর পরনের দু’টি মোটা কিতরী কাপড় ছিল। যখন তিনি বসতেন তখন তাঁর দেহের
ঘামে কাপড় দু’টি ভিজে ভারী হয়ে যেত। একবার কোন এক ইয়াহূদীর সিরিয়া হতে কাপড়ের
চালান এলে আমি বললাম, আপনি যদি তার নিকট হতে সুবিধামত সময়ে মূল্য পরিশোধের শর্তে
লোক পাঠিয়ে একজোড়া কাপড় কিনে নিতেন। তিনি তার নিকট লোক পাঠালেন। ইয়াহূদী বলল,
আমি জানি সে (মুহাম্মদ) কি করতে চায়। সে আমার মাল অথবা নগদ অর্থ হস্তগত করার
পরিকল্পনা করছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে
মিথ্যা বলেছে। তার ভাল করেই জানা আছে যে, তাদের মধ্যে আমি বেশি আল্লাহ ভীরু এবং
সবচেয়ে বেশি আমানাত ফিরতদাতা।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
ইবনু আব্বাস, আনাস ও ইয়াযীদের কন্যা আসমা (রাঃ) হতেও
এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান
সহীহ্ গারীব। এ হাদীসটি শুবা উমারা ইবনু আবী হাফসা হতে বর্ণনা করেছেন। আবূ দাউদ তায়ালিসী
বলেন, এই হাদীস প্রসঙ্গে শুবাকে একদিন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি তোমাদের নিকট এই
হাদীস বর্ণনা করব না যে পর্যন্ত না তোমরা উঠে গিয়ে হারামী ইবনু উমারার মাথায় চুমা
দিচ্ছ। তখন তারা তার মাথায় চুম্বন করল। উক্ত মাজলিসেই হারামী (রহঃ) হাযির ছিলেন। আবূ
ঈসা বলেন, এই হাদীসের বর্ণনাকারী হারামীর প্রতি সম্মান দেখানো ছিল এই কথার উদ্দেশ্য।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، وَعُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، عَنْ
هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ تُوُفِّيَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَدِرْعُهُ مَرْهُونَةٌ بِعِشْرِينَ صَاعًا مِنْ
طَعَامٍ أَخَذَهُ لأَهْلِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মারা যাবার সময় তাঁর লৌহবর্ম বিশ সা’ খাদ্যশস্যের বিনিময়ে বন্ধক রাখা
ছিল। তা তিনি নিজ পরিবারের জন্য নিয়েছিলেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৩৯)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২১৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ هِشَامٍ الدَّسْتَوَائِيِّ،
عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، ح قَالَ مُحَمَّدٌ وَحَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ
هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ مَشَيْتُ
إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِخُبْزِ شَعِيرٍ وَإِهَالَةٍ سَنِخَةٍ
وَلَقَدْ رُهِنَ لَهُ دِرْعٌ عِنْدَ يَهُودِيٍّ بِعِشْرِينَ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ
أَخَذَهُ لأَهْلِهِ وَلَقَدْ سَمِعْتُهُ ذَاتَ يَوْمٍ يَقُولُ " مَا
أَمْسَى فِي آلِ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم صَاعُ تَمْرٍ وَلاَ صَاعُ حَبٍّ
" . وَإِنَّ عِنْدَهُ يَوْمَئِذٍ لَتِسْعُ نِسْوَةٍ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের
নিকট গেলাম যবের রুটি ও বাসী চর্বি নিয়ে। তখন এক ইয়াহূদীর নিকট বিশ সা’
খাদ্যশস্যের বিনিময়ে তাঁর লৌহবর্মটি বন্ধক ছিল। তিনি তাঁর পরিবারের লোকদের জন্য
তা নিয়েছিলেন। আমি একদিন তাঁকে বলতে শুনলামঃ মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লামের) পরিবার-পরিজনের নিকট কোন রাতে না এক সা’ পরিমাণ খেজুর আর না এক সা’
পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুদ ছিল। এ সময় তার নয়জন স্ত্রী ছিল।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৪৩৭), বুখারী।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮. অনুচ্ছেদঃ
লেনদেনের শর্তাবলী লিপিবদ্ধ
করা
১২১৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، أَخْبَرَنَا عَبَّادُ بْنُ لَيْثٍ، صَاحِبُ الْكَرَابِيسِيِّ
الْبَصْرِيُّ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْمَجِيدِ بْنُ وَهْبٍ، قَالَ قَالَ لِي
الْعَدَّاءُ بْنُ خَالِدِ بْنِ هَوْذَةَ أَلاَ أُقْرِئُكَ كِتَابًا كَتَبَهُ لِي
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ قُلْتُ بَلَى . فَأَخْرَجَ لِي
كِتَابًا " هَذَا مَا اشْتَرَى الْعَدَّاءُ بْنُ خَالِدِ بْنِ هَوْذَةَ
مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اشْتَرَى مِنْهُ عَبْدًا أَوْ
أَمَةً لاَ دَاءَ وَلاَ غَائِلَةَ وَلاَ خِبْثَةَ بَيْعَ الْمُسْلِمِ الْمُسْلِمَ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ
إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبَّادِ بْنِ لَيْثٍ وَقَدْ رَوَى عَنْهُ هَذَا الْحَدِيثَ
غَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْحَدِيثِ .
আবদুল
মাজীদ ইবনু ওয়াহ্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল-আদ্দা ইবনু খালিদ ইবনু হাওযা (রাঃ) আমাকে
বললেন, যে চুক্তিপত্র রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে লিখে
দেন তা কি তোমাকে পড়ে শুনাব? আমি বললাম, হ্যাঁ। আমার সামনে তিনি একটি পত্র বের
করলেন। তাতে লিখা ছিলঃ “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট
হতে আল-আদ্দা ইবনু খালিদ ইবনু হাওযা একটি গোলাম বা দাসী কিনলো (এটি তার দলীল), যার
কোন অসুখ নেই, যা পলায়নপর নয় এবং চরিত্রহীনও নয়। এ হলো এক মুসলমানের সাথে অন্য
মুসলমানের ক্রয়-বিক্রয়”।
হাসান, ইবনু মা-জাহ (২২৫১)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। আমরা এই হাদীসটি
শুধু আব্বাদ ইবনু লাইসের সূত্রেই জেনেছি। একাধিক হাদীস বিশারদ তার নিকট হতে এ হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৯. অনুচ্ছেদঃ
ওজনপাত্র ও পরিমাপপাত্র
প্রসঙ্গে
১২১৭
حَدَّثَنَا سَعِيدُ
بْنُ يَعْقُوبَ الطَّالْقَانِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
الْوَاسِطِيُّ، عَنْ حُسَيْنِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لأَصْحَابِ الْمِكْيَالِ
وَالْمِيزَانِ " إِنَّكُمْ قَدْ وُلِّيتُمْ أَمْرَيْنِ هَلَكَتْ فِيهِ
الأُمَمُ السَّالِفَةُ قَبْلَكُمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ حُسَيْنِ بْنِ قَيْسٍ .
وَحُسَيْنُ بْنُ قَيْسٍ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا بِإِسْنَادٍ
صَحِيحٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ مَوْقُوفًا .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ওজন ও পরিমাপকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেনঃ তোমাদের উপর (ওজন ও পরিমাপ করার)এমন দু’টি
দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যাতে (ত্রুটি করার অপরাধে) তোমাদের আগেকার অনেক জাতি ধ্বংস
হয়েছে।
যঈফ, সহীহ কথা হল হাদীসটি মাওকূফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (২৮৯০), বেচা কেনার হাদীস।
আবূ ঈসা বলেন, আমরা এই হাদীসটি শুধুমাত্র হুসাইন ইবনু
কাইসের সূত্রেই মারফূ হিসাবে জেনেছি। হুসাইন কে হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল বলে উল্লেখ করা
হয়েছে। এই হাদীসটি সহীহ সনদে ইবনু আব্বাস(রা) হতে মাওকূফ হিসেবেও বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
১০. অনুচ্ছেদঃ
যে অধিক মূল্য প্রস্তাব করে
তার নিকটে বিক্রয় করা (নিলাম ডাক)
১২১৮
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ
بْنُ مَسْعَدَةَ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ شُمَيْطِ بْنِ عَجْلاَنَ،
حَدَّثَنَا الأَخْضَرُ بْنُ عَجْلاَنَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ الْحَنَفِيِّ، عَنْ
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَاعَ حِلْسًا
وَقَدَحًا وَقَالَ " مَنْ يَشْتَرِي هَذَا الْحِلْسَ وَالْقَدَحَ "
. فَقَالَ رَجُلٌ أَخَذْتُهُمَا بِدِرْهَمٍ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم " مَنْ يَزِيدُ عَلَى دِرْهَمٍ مَنْ يَزِيدُ عَلَى دِرْهَمٍ
" فَأَعْطَاهُ رَجُلٌ دِرْهَمَيْنِ فَبَاعَهُمَا مِنْهُ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ الأَخْضَرِ بْنِ
عَجْلاَنَ . وَعَبْدُ اللَّهِ الْحَنَفِيُّ الَّذِي رَوَى عَنْ أَنَسٍ هُوَ
أَبُو بَكْرٍ الْحَنَفِيُّ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ
الْعِلْمِ لَمْ يَرَوْا بَأْسًا بِبَيْعِ مَنْ يَزِيدُ فِي الْغَنَائِمِ وَالْمَوَارِيثِ
. وَقَدْ رَوَى الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ
الْحَدِيثِ عَنِ الأَخْضَرِ بْنِ عَجْلاَنَ هَذَا الْحَدِيثَ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (উটের পিঠে
বিছানোর) একটি ছালা (বা মোটা কাপড়) এবং একটি কাঠের পাত্র বেচার প্রস্তাব করেন এবং
তিনি বলেনঃ কে এই ছালা ও পাত্রটি কিনবে? এক লোক বলল, আমি এ দু’টি এক দিরহামে কিনতে
চাই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কে এক দিরহামের বেশী দিবে, কে
এক দি্রহামের বেশী দিবে? এক ব্যক্তি তাঁকে দুই দিরহাম দিয়ে তাঁর নিকট হতে জিনিস
দু’টি কিনলো।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২১৯৮)
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান। আমরা শুধুমাত্র আখযারের
সূত্রেই এ হাদীসটি অবগত হয়েছি। আব্দুল্লাহ হানাফী যিনি আনাস (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণনা
করেছেন তাঁর উপনাম আবূ বাক্র। একদল বিশেষজ্ঞ আলিম এই হাদীস অনুযায়ী আমল করার মত দিয়েছেন।
তাদের মতে গানীমাত ও ওয়ারিসী সম্পত্তি নিলাম ডাকের মাধ্যমে বিক্রয় করাতে কোন সমস্যা
নেই। মুতামির-সহ একাধিক রাবী উক্ত হাদীস আখযারের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১১. অনুচ্ছেদঃ
মোদাব্বার গোলাম বিক্রয়
১২১৯
حَدَّثَنَا ابْنُ
أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ،
عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ رَجُلاً، مِنَ الأَنْصَارِ دَبَّرَ غُلاَمًا لَهُ فَمَاتَ
وَلَمْ يَتْرُكْ مَالاً غَيْرَهُ فَبَاعَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فَاشْتَرَاهُ نُعَيْمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ النَّحَّامِ . قَالَ جَابِرٌ
عَبْدًا قِبْطِيًّا مَاتَ عَامَ الأَوَّلِ فِي إِمَارَةِ ابْنِ الزُّبَيْرِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ
وَجْهٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ
عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ لَمْ يَرَوْا بِبَيْعِ الْمُدَبَّرِ بَأْسًا . وَهُوَ قَوْلُ
الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَكَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ
مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ بَيْعَ الْمُدَبَّرِ
. وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَمَالِكٍ وَالأَوْزَاعِيِّ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনসার বংশের এক লোক মৃত্যুবরণ করল তার গোলামকে মুদাব্বার
করার পর। সে লোকটি আর কোন সম্পদ রেখে যায়নি ঐ গোলামটি ব্যতীত। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একে বিক্রয় করলেন। তাকে কিনলেন নুআইম ইবনু
আবদুল্লাহ ইবনু নাহহাম (রাঃ)। জাবির (রাঃ) বলেন, সে ছিল কিবতী বংশোদ্ভূত গোলাম। সে
ইবনু যুবাইর (রাঃ)-এর খিলাফাতের প্রথম বছর মৃত্যুবরণ করেন।
সহীহ্, ইরওয়া (১২৮৮), বেচা-কেনার হাদীস, বুখারী, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এটা বিভিন্ন
সূত্রে জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম আমল করেছেন। তারা মুদাব্বার
গোলাম বিক্রয়ে কোন সমস্যা আছে বলে মনে করেন না। এই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ
ও ইসহাক । মুদাব্বার গোলাম বিক্রয় করাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
অপর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম মাকরূহ্ বলেছেন। এই মত দিয়েছেন সুফিয়ান
সাওরী, মালিক ও আওযাঈ। মালিক মৃত্যুবরণ করার পর গোলাম আযাদ হবে, এই শর্তে কোন গোলাম
আযাদ করাকে "মোদাব্বার" বলা হয়। -অনুবাদক
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২. অনুচ্ছেদঃ
বাজারে পৌঁছার পূর্বে শহরের
বাইরে গিয়ে পণ্যদ্রব্য কেনা নিষেধ
১২২০
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ،
حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِي
عُثْمَانَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ
نَهَى عَنْ تَلَقِّي الْبُيُوعِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ
عَبَّاسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عُمَرَ وَرَجُلٍ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পণ্যদ্রব্য আমদানী করে আনা কাফিলার দিকে এগিয়ে গিয়ে পণ্য
ক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৮০), মুসলিম
আলী, ইবনু আব্বাস, আবূ হুরাইরা, আবূ সাঈদ, ইবনু উমার
(রাঃ)-সহ আরো একজন সাহাবী হতে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২২১
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ
بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ الرَّقِّيُّ، حَدَّثَنَا
عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو الرَّقِّيُّ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى أَنْ
يُتَلَقَّى الْجَلَبُ فَإِنْ تَلَقَّاهُ إِنْسَانٌ فَابْتَاعَهُ فَصَاحِبُ
السِّلْعَةِ فِيهَا بِالْخِيَارِ إِذَا وَرَدَ السُّوقَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَيُّوبَ وَحَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ تَلَقِّيَ
الْبُيُوعِ وَهُوَ ضَرْبٌ مِنَ الْخَدِيعَةِ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ
وَغَيْرِهِ مِنْ أَصْحَابِنَا .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বাজারে পণ্যদ্রব্য নিয়ে আসা লোকের সামনে এগিয়ে গিয়ে
তাদের নিকট হতে পণ্য ক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বারণ করেছেন। (ব্যবসায়ীদের) কোন ব্যক্তি যদি এগিয়ে গিয়ে তার পণ্যদ্রব্য কিনে,
তবে বাজারে পৌঁছার পর বিক্রেতা বিক্রয় বাতিল করার স্বাধীনতা পাবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৭৮), মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, আইয়্যূবের বর্ণিত হাদীস হিসেবে হাদীসটি
হাসান গারীব। আর ইবনু মাসঊদের হাদীসটি হাসান সহীহ্। পণ্যদ্রব্য বাজারে আসার আগেই বাজারের
বাইরে গিয়ে তা কেনাকে একদল বিশেষজ্ঞ আলিম মাকরূহ্ বলেছেন। তারা মনে করেন এটা এক প্রকারের
প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি। এই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈ ও অন্যান্য আলিমগণ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩. অনুচ্ছেদঃ
শহরের লোকেরা গ্রামাঞ্চলের
লোকদের পণ্যদ্রব্য বিক্রয় করবে না
১২২২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ قُتَيْبَةُ
يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يَبِيعُ حَاضِرٌ
لِبَادٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ طَلْحَةَ وَجَابِرٍ وَأَنَسٍ
وَابْنِ عَبَّاسٍ وَحَكِيمِ بْنِ أَبِي يَزِيدَ عَنْ أَبِيهِ وَعَمْرِو بْنِ
عَوْفٍ الْمُزَنِيِّ جَدِّ كَثِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَرَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ শহরাঞ্চলের লোকেরা গ্রামাঞ্চলের লোকদের পণ্যদ্রব্য বিক্রয় করবে
না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৭৫), নাসা-ঈ
তালহা, জাবির, আনাস, ইবনু আব্বাস, হাকীম ইবনু আবূ ইয়াযীদ
তার পিতার সূত্রে, আমর ইবনু আওফ (রাঃ) এবং আরো একজন সাহাবী হতে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২২৩
حَدَّثَنَا نَصْرُ
بْنُ عَلِيٍّ، وَأَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " لاَ يَبِيعُ حَاضِرٌ لِبَادٍ دَعُوا النَّاسَ
يَرْزُقُ اللَّهُ بَعْضَهُمْ مِنْ بَعْضٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَحَدِيثُ جَابِرٍ فِي هَذَا هُوَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ أَيْضًا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ
بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ كَرِهُوا أَنْ يَبِيعَ حَاضِرٌ لِبَادٍ . وَرَخَّصَ بَعْضُهُمْ فِي
أَنْ يَشْتَرِيَ حَاضِرٌ لِبَادٍ . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ يُكْرَهُ أَنْ يَبِيعَ
حَاضِرٌ لِبَادٍ وَإِنْ بَاعَ فَالْبَيْعُ جَائِزٌ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ শহরের মানুষগণ গ্রামের মানুষদের পণ্যদ্রব্য বিক্রয় করবে না।
লোকদেরকে তাদের স্বাভাবিক অবস্থার উপর ছেড়ে দাও। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা এক দলের
মাধ্যমে অন্য দলের রিযিকের ব্যবস্থা করেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৭৬), বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান
সহীহ্। আর জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিও হাসান সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম আমল করেছেন।
গ্রাম-গঞ্জের লোকের পক্ষে শহরে বসবাসকারীদের বিক্রয় করাকে তারা মাকরূহ্ বলেছেন। তাদের
মধ্যে আবার কেউ কেউ এ ধরণের বিক্রয়ের অনুমতি দিয়েছেন। এ ধরণের বিক্রয় করাকে ইমাম
শাফিঈ মাকরূহ্ বলেছেন। তবে কেউ যদি তা বিক্রয় করে তবে তা জায়িয হবে বলে মত ব্যক্ত
করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪. অনুচ্ছেদঃ
মুহাকালা ও মুযাবানা ধরণের
ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ
১২২৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الإِسْكَنْدَرَانِيُّ،
عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَزَيْدِ بْنِ
ثَابِتٍ وَسَعْدٍ وَجَابِرٍ وَرَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَالْمُحَاقَلَةُ بَيْعُ الزَّرْعِ بِالْحِنْطَةِ . وَالْمُزَابَنَةُ بَيْعُ
الثَّمَرِ عَلَى رُءُوسِ النَّخْلِ بِالتَّمْرِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا بَيْعَ الْمُحَاقَلَةِ
وَالْمُزَابَنَةِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাকালা ও মুযাবানা ধরণের ক্রয়-বিক্রয়কে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষিদ্ধ করেছেন।
সহীহ্, ইরওয়া (২৩৫৪)
ইবনু উমার, ইবনু আব্বাস, যাইদ ইবনু সাবিত, সা’দ, জাবির,
রাফি ইবনু খাদীজ ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন,
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। মুহাকালা বলা হয় ক্ষেতের ফসলকে
সংগৃহীত গমের বিনিময়ে বিক্রয়কে। আর মুযাবানা বলা হয় শুকনো খেজুরের বিনিময়ে গাছের
(অসংগৃহীত) খেজুর বিক্রয়কে। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। তারা মাকরূহ্
বলে মত দিয়েছেন মুহাকালা ও মুযাবানা ধরণের ক্রয়-বিক্রয় করাকে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২২৫
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ،
أَنَّ زَيْدًا أَبَا عَيَّاشٍ، سَأَلَ سَعْدًا عَنِ الْبَيْضَاءِ، بِالسُّلْتِ
فَقَالَ أَيُّهُمَا أَفْضَلُ قَالَ الْبَيْضَاءُ . فَنَهَى عَنْ ذَلِكَ .
وَقَالَ سَعْدٌ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُسْأَلُ عَنِ
اشْتِرَاءِ التَّمْرِ بِالرُّطَبِ فَقَالَ لِمَنْ حَوْلَهُ " أَيَنْقُصُ
الرُّطَبُ إِذَا يَبِسَ " . قَالُوا نَعَمْ . فَنَهَى عَنْ ذَلِكَ .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
يَزِيدَ، عَنْ زَيْدٍ أَبِي عَيَّاشٍ، قَالَ سَأَلْنَا سَعْدًا فَذَكَرَ نَحْوَهُ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَصْحَابِنَا .
আবদুল্লাহ
ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ আইয়্যাশ যাইদ (রহঃ) বার্লির বিনিময়ে গম বিক্রয় করা
প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি সা’দ (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলেনঃ তখন তিনি (সা’দ) বললেন, এ
দু’টির মধ্যে কোনটি অপেক্ষাকৃত উত্তম? তিনি (যাইদ) বললেন, গম। তারপর তিনি (সা’দ) এ
ধরণের বিক্রয় করা নিষেধ করলেন তিনি আরও বললেন, আমি তাজা খেজুরকে শুকনো খেজুরের
বিনিময়ে বিক্রয় করা যায় কি-না সেই প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনেছি। তিনি তাঁর পাশের লোকদের প্রশ্ন করলেন
যে, খেজুর শুকালে কি (ওজনে) কমে যায়? তারা বললেন, হ্যাঁ। তারপর এ ধরণের বিক্রয়কে
তিনি নিষিদ্ধ করে দিলেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৬৪)
হান্নাদ বর্ণনা করেছেন ওয়াকী হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু
ইয়াযীদ হতে, তিনি যাইদ আবূ আইয়্যাশ (রহঃ) হতে, তিনি বলেন, সা’দ (রাঃ)-কে আমরা প্রশ্ন
করলাম….উপরের হাদীসের মত।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। এই মত দিয়েছেন
ইমাম শাফিঈ এবং আমাদের সাথীরাও।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫. অনুচ্ছেদঃ
ফল পরিপুষ্ট বা ব্যবহারের
উপযোগী হওয়ার পূর্বে বিক্রয় করা নিষেধ
১২২৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ
نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ
بَيْعِ النَّخْلِ حَتَّى يَزْهُوَ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খেজুরের লাল বা হলুদ বর্ণ না আসা পর্যন্ত তা বিক্রয় করতে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২২৭
وَبِهَذَا
الإِسْنَادِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ السُّنْبُلِ
حَتَّى يَبْيَضَّ وَيَأْمَنَ الْعَاهَةَ نَهَى الْبَائِعَ وَالْمُشْتَرِيَ .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَعَائِشَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ
عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ
كَرِهُوا بَيْعَ الثِّمَارِ قَبْلَ أَنْ يَبْدُوَ صَلاَحُهَا . وَهُوَ قَوْلُ
الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
বর্ণনাকারী
থেকে বর্ণিতঃ
একই সনদ সূত্রে আরো বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শীষ জাতীয় ফসল (ধান, গম ইত্যাদি) বিক্রয় করতে নিষেধ
করেছেন যতক্ষণ তা পেকে সাদা না হয়।
সহীহ্, প্রাগুক্ত
আনাস, আইশা, আবূ হুরাইরা, ইবনু আব্বাস, জাবির, আবূ সাঈদ
ও যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, ইবনু উমার
(রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম অমল করেছেন। ফল পরিপক্ক হওয়ার আগেই
বিক্রয় করা তাদের মতে মাকরূহ্। এই মত পোষণ করেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২২৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ
بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، وَعَفَّانُ،
وَسُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ
حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ
بَيْعِ الْعِنَبِ حَتَّى يَسْوَدَّ وَعَنْ بَيْعِ الْحَبِّ حَتَّى يَشْتَدَّ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا
إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কাল রং ধারণ না করা পর্যন্ত আঙ্গুরকে এবং হৃষ্টপুষ্ট না
হওয়া পর্যন্ত শস্যকে বিক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২১৭)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এটাকে শুধু
হাম্মাদ ইবনু সালামার সূত্রেই মারফু হিসেবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬. অনুচ্ছেদঃ
পশুর গর্ভস্থিত বাচ্চার
বাচ্চা বিক্রয় করা নিষেধ
১২২৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ
ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ حَبَلِ
الْحَبَلَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَحَبَلُ
الْحَبَلَةِ نِتَاجُ النِّتَاجِ وَهُوَ بَيْعٌ مَفْسُوخٌ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ
وَهُوَ مِنْ بُيُوعِ الْغَرَرِ . وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ
أَيُّوبَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . وَرَوَى عَبْدُ
الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ وَغَيْرُهُ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ
وَنَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَهَذَا
أَصَحُّ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(পশুর) গর্ভস্থিত বাচ্চার বাচ্চা বিক্রি করতে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৯৭), মুসলিম, বুখারী
আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস ও আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতেও
এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান
সহীহ্। এ হাদীস মোতাবিক অভিজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। ‘হাবলুল হাবল’ বলতে বাচ্চার বাচ্চা
বুঝায়। এভাবে বিক্রয় করাটা আলিমদের মতে বাতিল বলে গণ্য হবে। এটা ক্রয়-বিক্রয়ে এক
প্রকারের প্রতারণা। শুবা-আইয়্যূব হতে, তিনি সাঈদ ইবনু জুবাইর হতে, তিনি ইবনু আব্বাস
(রাঃ)-এর সূত্রে উল্লেখিত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনু উমারের এ হাদীসটি আবূল ওয়াহ্হাব
আস-সাকাফী এবং অন্যান্যরা আইয়্যূব হতে, তিনি সাঈদ ইবনু জুবাইর হতে, তিনি নাফি হতে,
তিনি ইবনু উমার হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন
এবং এ সূত্রটি অনেক বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭. অনুচ্ছেদঃ
প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয়
নিষিদ্ধ
১২৩০
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، أَنْبَأَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ
أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ نَهَى رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعِ الْغَرَرِ وَبَيْعِ الْحَصَاةِ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَنَسٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا بَيْعَ
الْغَرَرِ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَمِنْ بُيُوعِ الْغَرَرِ بَيْعُ السَّمَكِ فِي
الْمَاءِ وَبَيْعُ الْعَبْدِ الآبِقِ وَبَيْعُ الطَّيْرِ فِي السَّمَاءِ وَنَحْوُ
ذَلِكَ مِنَ الْبُيُوعِ . وَمَعْنَى بَيْعِ الْحَصَاةِ أَنْ يَقُولَ الْبَائِعُ
لِلْمُشْتَرِي إِذَا نَبَذْتُ إِلَيْكَ بِالْحَصَاةِ فَقَدْ وَجَبَ الْبَيْعُ
فِيمَا بَيْنِي وَبَيْنَكَ . وَهَذَا شَبِيهٌ بِبَيْعِ الْمُنَابَذَةِ وَكَانَ
هَذَا مِنْ بُيُوعِ أَهْلِ الْجَاهِلِيَّةِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয় করতে এবং কাঁকর
নিক্ষেপে ক্রয়-বিক্রয় নির্ধারিত করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৯৪), মুসলিম
ইবনু উমার, ইবনু আব্বাস, আবূ সাঈদ ও আনাস (রাঃ) হতেও এ
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান
সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। তারা প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয়
করাকে নিষিদ্ধ বলেছেন। ইমাম শাফিঈ বলেছেন, প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে রয়েছে
পানির মধ্যের মাছ, পলাতক গোলাম, শূন্যে উড়ন্ত পাখি বা অনুরূপ পর্যায়ের কোন কিছুর
ক্রয়-বিক্রয়। কাঁকর নিক্ষেপে বিক্রয়ের ধরণ হলঃ যদি বিক্রেতা ক্রেতাকে বলে, তোমার
দিকে আমি যখন কোন কাঁকর ছুড়ে মারবো তখন তোমার ও আমার মাঝে বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে ক্রয়-বিক্রয়
করাটা। এটা মুনাবাযা ধরণের ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এটাও জাহিলী যুগের প্রথা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৮. অনুচ্ছেদঃ
একই বিক্রয়ে দুই প্রকারের
শর্ত নিষেধ
১২৩১
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ،
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
عَنْ بَيْعَتَيْنِ فِي بَيْعَةٍ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عَمْرٍو وَابْنِ عُمَرَ وَابْنِ مَسْعُودٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي
هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ وَقَدْ فَسَّرَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا بَيْعَتَيْنِ فِي
بَيْعَةٍ . أَنْ يَقُولَ أَبِيعُكَ هَذَا الثَّوْبَ بِنَقْدٍ بِعَشَرَةٍ وَبِنَسِيئَةٍ
بِعِشْرِينَ وَلاَ يُفَارِقُهُ عَلَى أَحَدِ الْبَيْعَيْنِ فَإِذَا فَارَقَهُ
عَلَى أَحَدِهِمَا فَلاَ بَأْسَ إِذَا كَانَتِ الْعُقْدَةُ عَلَى وَاحِدٍ
مِنْهُمَا . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَمِنْ مَعْنَى نَهْىِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم عَنْ بَيْعَتَيْنِ فِي بَيْعَةٍ أَنْ يَقُولَ أَبِيعُكَ دَارِي هَذِهِ
بِكَذَا عَلَى أَنْ تَبِيعَنِي غُلاَمَكَ بِكَذَا فَإِذَا وَجَبَ لِي غُلاَمُكَ
وَجَبَ لَكَ دَارِي . وَهَذَا يُفَارِقُ عَنْ بَيْعٍ بِغَيْرِ ثَمَنٍ مَعْلُومٍ
وَلاَ يَدْرِي كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَلَى مَا وَقَعَتْ عَلَيْهِ صَفْقَتُهُ
.
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দুই ধরণের বিক্রয় ব্যবস্থার মাধ্যমে (দুই ধরনের
শর্তে) একই জিনিসের বিক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, মিশকাত (২৮৬৮), ইরওয়া (৫/১৪৯)
আবদুল্লাহ ইবনু আমর, ইবনু উমার ও ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতেও
এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি
হাসান সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেন। “বাইআতাইনে ফী বাইআতিন”-এর ব্যাখ্যায়
একদল বিশেষজ্ঞ আলিম বলেছেনঃ ক্রেতাকে বিক্রেতা বলল, এই কাপড়টি দশ টাকায় যদি নগদ মূল্যে
ক্রয় করা হয়, তবে বাকীতে ক্রয় করলে বিশ টাকা। এই দুটি বিক্রয় প্রস্তাবের মধ্যে
কোন একটিকে কোন পক্ষই নাকচ করল না। কিন্তু কোন একটি প্রস্তাব যদি গ্রহণ করে নেয় এবং
সে অনুযায়ী চুক্তি হয় তবে তাতে কোন সমস্যা নেই।
ইমাম শাফিঈ বলেছেন, একই বিক্রয়ে দুই ধরণের বিক্রয় অন্তর্ভুক্ত করতে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। তার দৃষ্টান্ত হলঃ কোন লোক বলল,
আমি তোমার নিকট এত টাকায় আমার এই ঘর বিক্রয় করব এই শর্তে যে, আমার নিকট তোমার গোলামটিও
এত টাকায় বিক্রয় করতে হবে। তোমার গোলাম যখন আমার অধীনে আসবে আমার ঘরও তখন তোমার অধীনে
চলে যাবে। এই প্রকারের ক্রয়-বিক্রয় ঐ ক্রয়-বিক্রয় হতে ভিন্ন যেখানে পণ্যের মধ্যে
কোনটিরই মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি বিধায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে বিক্রিত দ্রব্যের
মূল্য সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯. অনুচ্ছেদঃ
যে জিনিস আয়ত্তে নেই তার
অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ
১২৩২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ،
عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَقُلْتُ يَأْتِينِي الرَّجُلُ يَسْأَلُنِي مِنَ الْبَيْعِ مَا لَيْسَ عِنْدِي
أَبْتَاعُ لَهُ مِنَ السُّوقِ ثُمَّ أَبِيعُهُ قَالَ " لاَ تَبِعْ مَا
لَيْسَ عِنْدَكَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عُمَرَ .
হাকীম
ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট জানার জন্য বললাম, আমার নিকট এসে কোন লোক এমন জিনিস কিনতে চায়
যা আমার নিকট নেই। আমি এভাবে বিক্রয় করতে পারি কি যে, তা বাজার হতে ক্রয় করে এনে
তাকে দিব? তিনি বলেনঃ যা তোমার অধিকারে নেই তা তুমি বিক্রয় কর না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৮৭)
আব্দুল্লাহ ইবনু উমার হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৩৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ
مَاهَكَ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ نَهَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم أَنْ أَبِيعَ مَا لَيْسَ عِنْدِي . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ . قَالَ إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ قُلْتُ لأَحْمَدَ مَا مَعْنَى
نَهَى عَنْ سَلَفٍ وَبَيْعٍ قَالَ أَنْ يَكُونَ يُقْرِضُهُ قَرْضًا ثُمَّ
يُبَايِعُهُ عَلَيْهِ بَيْعًا يَزْدَادُ عَلَيْهِ وَيَحْتَمِلُ أَنْ يَكُونَ
يُسْلِفُ إِلَيْهِ فِي شَيْءٍ فَيَقُولُ إِنْ لَمْ يَتَهَيَّأْ عِنْدَكَ فَهُوَ
بَيْعٌ عَلَيْكَ . قَالَ إِسْحَاقُ يَعْنِي ابْنَ رَاهَوَيْهِ كَمَا قَالَ
قُلْتُ لأَحْمَدَ وَعَنْ بَيْعِ مَا لَمْ تَضْمَنْ قَالَ لاَ يَكُونُ عِنْدِي
إِلاَّ فِي الطَّعَامِ مَا لَمْ تَقْبِضْ . قَالَ إِسْحَاقُ كَمَا قَالَ فِي
كُلِّ مَا يُكَالُ أَوْ يُوزَنُ . قَالَ أَحْمَدُ إِذَا قَالَ أَبِيعُكَ هَذَا الثَّوْبَ
وَعَلَىَّ خِيَاطَتُهُ وَقَصَارَتُهُ فَهَذَا مِنْ نَحْوِ شَرْطَيْنِ فِي بَيْعٍ
وَإِذَا قَالَ أَبِيعُكَهُ وَعَلَىَّ خِيَاطَتُهُ فَلاَ بَأْسَ بِهِ أَوْ قَالَ
أَبِيعُكَهُ وَعَلَىَّ قَصَارَتُهُ فَلاَ بَأْسَ بِهِ إِنَّمَا هُوَ شَرْطٌ
وَاحِدٌ . قَالَ إِسْحَاقُ كَمَا قَالَ .
হাকীম
ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার হাতে নেই এমনসব বস্তু বিক্রয় করতে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। ইসহাক ইবনু মানসূর বলেন,
ইমাম আহ্মাদকে আমি প্রশ্ন করলাম, “ঋণ ও বিক্রয় একত্রে জায়িয নয়” এ কথার অর্থ কি?
তিনি বললেন, কোন লোককে ঋণও প্রদান করলে এবং এর সাথে সাথে তার নিকট তোমার পণ্যও চড়া
দামে বিক্রয় করলে। অথবা এরূপও হতে পারে যে, কোন জিনিস (বন্ধক রেখে) তাকে ঋণ দিয়ে
বললে, তোমার এটা (বন্ধক) এতো দামে বিক্রীত বলে গণ্য হবে যদি ঐটা পরিশোধ করতে না পার।
ইসহাক আরও বলেন, আমি ইমাম আহ্মাদকে পুনরায় বললাম, “লোকসানের দায়িত্ব গ্রহণ না করা
পর্যন্ত বিক্রয় হয় না” কথার অর্থ কি? তিনি বললেন, আমার মতে শুধু খাদ্যদ্রব্যের বেলায়
এটা প্রযোজ্য হবে অর্থাৎ যতক্ষণ এটা তোমার হস্তগত না হবে ততক্ষণ তা বিক্রয় করতে পারবে
না। ইসহাক বলেন, পরিমাপ যন্ত্র বা পাত্র দিয়ে যা মাপা হয় সেই সব ক্ষেত্রে এই নীতি
প্রযোজ্য। ইমাম আহ্মাদ বলেন, যদি এভাবে বলা হয়ঃ আমি এ কাপড় তোমার নিকট বিক্রয় করলাম
এবং এর সেলাই ও ধোয়ার কাজ আমার দায়িত্বে, তবে একই বিক্রয়ের মধ্যে এটাও দু’টি শর্তারোপের
একটি উদাহরণ। সে যদি এরূপ বলেঃ এটা তোমার নিকট বিক্রয় করলাম এবং আমিই এটা ধুয়েও দিব,
তবে এতে কোন সমস্যা নেই। কেননা, একটি শর্ত করা হয়েছে (দুটি নয়)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৩৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ،
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، حَتَّى
ذَكَرَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لاَ يَحِلُّ سَلَفٌ وَبَيْعٌ وَلاَ شَرْطَانِ فِي بَيْعٍ وَلاَ رِبْحُ
مَا لَمْ يُضْمَنْ وَلاَ بَيْعُ مَا لَيْسَ عِنْدَكَ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ حَكِيمِ
بْنِ حِزَامٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ قَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ . رَوَى
أَيُّوبُ السَّخْتِيَانِيُّ وَأَبُو بِشْرٍ عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ عَنْ
حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى هَذَا الْحَدِيثَ عَوْفٌ
وَهِشَامُ بْنُ حَسَّانَ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَهَذَا حَدِيثٌ مُرْسَلٌ إِنَّمَا رَوَاهُ
ابْنُ سِيرِينَ عَنْ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ عَنْ
حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ .
আবদুল্লাহ
ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
ঋণ ও বিক্রয় একত্রে জায়িয নয় এবং দুই প্রকারের শর্তও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে জুড়ে
দেয়া জায়িয নয়, মুনাফা গ্রহণও জায়িয নয় যতক্ষণনা লোকসানের দায়িত্ব না নেয়া
হয়, তোমার আয়ত্তে নেই এমন বস্তু বিক্রয় করাও জায়িয নয়।
হাসান সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৮৮)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। একাধিক সূত্রে
হাকীম (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটি বর্ণিত আছে। আইয়ূব সাখতিয়ানী ও আবূ বিশর বর্ণনা করেছেন,
ইউসুফ ইবনু মাহিক হতে, তিনি হাকীম ইবনু হিযাম হতে। আউফ এবং হিশাম ইবনু হাস্সান বর্ণনা
করেছেন, ইবনু সীরীন হতে, তিনি হাকীম ইবনু হিযাম হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে। এর পরবর্তী বর্ণনাটি মুরসাল। প্রকৃত পক্ষে ইবনু সীরীন বর্ণনা করেছেন,
আইয়ুব সাখতিয়ানী হতে, তিনি ইউসুফ ইবনু মাহাক হতে, তিনি হাকীম ইবনু হিযাম হতে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
১২৩৫
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ
بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، وَعَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْخُزَاعِيُّ
الْبَصْرِيُّ أَبُو سَهْلٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا عَبْدُ
الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ ابْنِ
سِيرِينَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ،
قَالَ نَهَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَبِيعَ مَا لَيْسَ
عِنْدِي . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى وَكِيعٌ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ يَزِيدَ
بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ
. وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ وَرِوَايَةُ عَبْدِ
الصَّمَدِ أَصَحُّ . وَقَدْ رَوَى يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ هَذَا الْحَدِيثَ
عَنْ يَعْلَى بْنِ حَكِيمٍ عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عِصْمَةَ عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا
أَنْ يَبِيعَ الرَّجُلُ مَا لَيْسَ عِنْدَهُ .
হাকীম
ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাকে নিষেধ করেছেন আমার কাছে নেই এমন জিনিস বিক্রয় করতে।
সহীহ্, দেখুন হাদীস নং (১২৩২, ১২৩৩)
আবূ ঈসা বলেন, ওয়াকী এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, ইয়াযীদ
ইবনু ইবরাহীম হতে, তিনি ইবনু সীরীন হতে, তিনি আইয়্যূব হতে, তিনি হাকীম ইবনু হিযাম হতে।
এতে ওয়াকী ইউসুফ ইবনু মাহাকের উল্লেখ করেননি। আব্দুস সামাদের সনদ সূত্রটি অনেক বেশি
সহীহ্। ইয়াহইয়া ইবনু কাসীর এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইয়া’লা ইবনু হাকীম হতে, তিনি
ইউসুফ ইবনু মাহাক হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু ইসমাহ হতে, তিনি হাকীম ইবনু হিযাম হতে,
তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসায়াম হতে। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল
করেন। তারা হস্তগতহীন জিনিসের ক্রয়-বিক্রয়কে মাকরূহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০. অনুচ্ছেদঃ
‘ওয়ালা’র স্বত্ব বিক্রয় অথবা
হেবা করা মাকরূহ
১২৩৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، قَالَ حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، وَشُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ الْوَلاَءِ
وَهِبَتِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ
إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَقَدْ رَوَى
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ
نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ نَهَى عَنْ
بَيْعِ الْوَلاَءِ وَهِبَتِهِ . وَهُوَ وَهَمٌ وَهِمَ فِيهِ يَحْيَى بْنُ
سُلَيْمٍ . وَرَوَى عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ
نُمَيْرٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ دِينَارٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَهَذَا
أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ يَحْيَى بْنِ سُلَيْمٍ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ওয়ালা’ স্বত্ব বিক্রয় করতে অথবা তা দান করতে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৭৪৭,২৭৪৮)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আমরা এ হাদীসটি
শুধু আব্দুল্লাহ ইবনু দীনারের সূত্রেই ইবনু উমার হতে জেনেছি। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ
আমল করেছেন। উপরোক্ত হাদীসটি ইবনু উমার (রাঃ) হতে অন্য একটি সূত্রেও বর্ণিত আছে, কিন্তু
তার সনদে বিপত্তি আছে [উবাইদুল্লাহ ও আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর মাঝে নাফি (রহঃ)-এর নাম যোগ
করার]। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সুলাইম এই ভুল করেছেন। আবদুল ওয়াহ্হাব আস-সাকাকী, আবদুল্লাহ
ইবনু নুমাইর এবং আরও অনেকে উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার হতে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু দীনার হতে,
তিনি ইবনু উমার হতে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সনদ
সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এই সনদসূত্রটি ইয়াহ্ইয়া ইবনু সুলাইমের সনদের চেয়ে অনেক বেশি
সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১. অনুচ্ছেদঃ
পশুর বিনিময়ে পশু ধারে
বিক্রয় করা নিষেধ
১২৩৭
حَدَّثَنَا أَبُو
مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ مُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ،
عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ،
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ الْحَيَوَانِ
بِالْحَيَوَانِ نَسِيئَةً . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ
وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَمُرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَسَمَاعُ الْحَسَنِ مِنْ سَمُرَةَ صَحِيحٌ هَكَذَا قَالَ عَلِيُّ بْنُ
الْمَدِينِيِّ وَغَيْرُهُ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ فِي بَيْعِ
الْحَيَوَانِ بِالْحَيَوَانِ نَسِيئَةً وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ
وَأَهْلِ الْكُوفَةِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ فِي بَيْعِ
الْحَيَوَانِ بِالْحَيَوَانِ نَسِيئَةً وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَإِسْحَاقَ
.
সামুরা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পশুর বিনিময়ে পশু ধারে (করজে) বিক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৭০)
ইবনু আব্বাস, জাবির ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সামুরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। আলী
ইবনুল মাদীনী ও অন্যান্যের মতে সামুরা (রাঃ)-এর নিকট হাসান (রহঃ) হাদীস শ্রবণ করেছেন। এ হাদীস মোতাবিক রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ সাহাবী ও অন্যান্য আলিমগন আমল করেছেন।
তাদের মতে, পশুর বিনিময়ে পশু ধারে বিক্রয় করা জায়িয নয়। এই মত দিয়েছেন সুফিয়ান
সাওরী ও কূফাবাসী আলিমগণ। ইমাম আহ্মাদও একই রকম মত দিয়েছেন। পশুর বিনিময়ে পশু ধারে
বিক্রয় করার পক্ষে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অপর একদল সাহাবী
ও অন্যান্য আলিমগন সন্মতি দিয়েছেন। এই মত ইমাম শাফিঈ ও ইসহাকের।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৩৮
حَدَّثَنَا أَبُو
عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ،
عَنِ الْحَجَّاجِ، وَهُوَ ابْنُ أَرْطَاةَ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْحَيَوَانُ اثْنَانِ
بِوَاحِدٍ لاَ يَصْلُحُ نَسِيئًا وَلاَ بَأْسَ بِهِ يَدًا بِيَدٍ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’টি পশুর বদলে একটি পশু ধারে (করজে) বিক্রয় করা জায়িয নয়,
কিন্তু উপস্থিত (নগদ) লেনদেন হলে কোন সমস্যা নেই।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৭১)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২. অনুচ্ছেদঃ
দু’টি গোলামের বিনিময়ে একটি
গোলাম ক্রয়-বিক্রয় করা
১২৩৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ
جَاءَ عَبْدٌ فَبَايَعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْهِجْرَةِ وَلاَ
يَشْعُرُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ عَبْدٌ فَجَاءَ سَيِّدُهُ
يُرِيدُهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " بِعْنِيهِ "
. فَاشْتَرَاهُ بِعَبْدَيْنِ أَسْوَدَيْنِ ثُمَّ لَمْ يُبَايِعْ أَحَدًا بَعْدُ
حَتَّى يَسْأَلَهُ أَعَبْدٌ هُوَ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّهُ لاَ بَأْسَ بِعَبْدٍ بِعَبْدَيْنِ يَدًا بِيَدٍ
. وَاخْتَلَفُوا فِيهِ إِذَا كَانَ نَسِيئًا .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট একজন ক্রিতদাস এসে হিজরাতের উদ্দেশ্যে তাঁর নিকট শপথ করে। সে
যে ক্রীতদাস রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটা জানতেন না। তার
মালিক এসে উপস্থিত হল তাকে ফেরত নেয়ার জন্য। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি একে আমার নিকট বিক্রয় করে দাও। তিনি তাকে কিনলেন দুইটি
হাবশী গোলামের বিনিময়ে। এরপর হতে কারো বাইআত গ্রহণের পূর্বে তিনি প্রশ্ন করে
নিতেন, সে ক্রীতদাস কি না।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম
আনাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা
ৰলেন, জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। আলিমগণ এ হাদীস মোতাবিক আমল করেন।
তাদের মতে দুটো গোলামের বিনিময়ে একটি গোলাম কেনাতে কোন সমস্যা নেই, তবে নগদ লেন-দেন
হতে হবে। বাকীর মাধ্যমে এ জাতীয় লেনদেন সম্পাদন প্রসঙ্গে তাদের মধ্যে মতের অমিল আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩. অনুচ্ছেদঃ
গমের বিনিময়ে সমপরিমাণ গম
বেচা-কেনা করতে হবে, অতিরিক্ত দেয়া-নেয়া নিষেধ
১২৪০
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ
بْنُ نَصْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي
الأَشْعَثِ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ
مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ
مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالشَّعِيرُ
بِالشَّعِيرِ مِثْلاً بِمِثْلٍ فَمَنْ زَادَ أَوِ ازْدَادَ فَقَدْ أَرْبَى بِيعُوا
الذَّهَبَ بِالْفِضَّةِ كَيْفَ شِئْتُمْ يَدًا بِيَدٍ وَبِيعُوا الْبُرَّ
بِالتَّمْرِ كَيْفَ شِئْتُمْ يَدًا بِيَدٍ وَبِيعُوا الشَّعِيرَ بِالتَّمْرِ
كَيْفَ شِئْتُمْ يَدًا بِيَدٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَبِلاَلٍ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُبَادَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ
خَالِدٍ بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ " بِيعُوا الْبُرَّ بِالشَّعِيرِ
كَيْفَ شِئْتُمْ يَدًا بِيَدٍ " . وَرَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ
عَنْ خَالِدٍ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ عَنْ عُبَادَةَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْحَدِيثَ وَزَادَ فِيهِ قَالَ خَالِدٌ قَالَ
أَبُو قِلاَبَةَ " بِيعُوا الْبُرَّ بِالشَّعِيرِ كَيْفَ شِئْتُمْ "
فَذَكَرَ الْحَدِيثَ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ
يَرَوْنَ أَنْ يُبَاعَ الْبُرُّ بِالْبُرِّ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالشَّعِيرُ
بِالشَّعِيرِ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ فَإِذَا اخْتَلَفَ الأَصْنَافُ فَلاَ بَأْسَ
أَنْ يُبَاعَ مُتَفَاضِلاً إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ . وَهَذَا قَوْلُ أَكْثَرِ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ
وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
قَالَ الشَّافِعِيُّ وَالْحُجَّةُ فِي ذَلِكَ قَوْلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم " بِيعُوا الشَّعِيرَ بِالْبُرِّ كَيْفَ شِئْتُمْ يَدًا بِيَدٍ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ
تُبَاعَ الْحِنْطَةُ بِالشَّعِيرِ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ . وَهُوَ قَوْلُ
مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ .
উবাদা
ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সমপরিমাণ
স্বর্ণের পরিবর্তে সমপরিমাণ স্বর্ণ হতে হবে; সমপরিমাণ রূপার পরিবর্তে সমপরিমাণ
রূপা হতে হবে; সমপরিমাণ খেজুরের পরিবর্তে সমপরিমাণ খেজুর হতে হবে; সমপরিমাণ গমের
পরিবর্তে সমপরিমাণ গম হতে হবে; সমপরিমাণ লবণের পরিবর্তে সমপরিমাণ লবণ হতে হবে এবং
সমপরিমাণ যবের পরিবর্তে সমপরিমাণ যব হতে হবে। যে লোক এ সবের লেনদেনে বেশি পরিমাণ
দিবে অথবা নিবে সে সূদে লেনদেনকারী বলে বিবেচিত হবে। তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী রূপার
পরিমাণের পরিবর্তে স্বর্ণের পরিমাণ নির্ধারণ করে নগদ বিক্রয় করতে পার। তোমাদের
ইচ্ছানুযায়ী খেজুরের পরিমাণের পরিবর্তে গমের পরিমাণ নির্ধারণ করে নগদ বিক্রয়
করতে পার। তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী খেজুরের পরিমাণের পরিবর্তে যবের পরিমাণ ঠিক করে
নগদ বিক্রয় করতে পার।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৫৪), মুসলিম
আবূ সাঈদ, আবূ হুরাইরা, বিলাল ও আনাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। উবাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
উল্লেখিত হাদীসের অপর এক বর্ণনায় আছেঃ “তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী গমের পরিমাণের পরিবর্তে
যবের পরিমাণ নির্ধারণ করে নগদ বিক্রয় করতে পার”। আর এক বর্ণনায় আছেঃ “তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী
বার্লির পরিমাণের পরিবর্তে গমের পরিমাণ নির্ধারণ করে (পরিমাণে কম-বেশি করে) নগদ বিক্রয়
করতে পার”। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। তাদের মতে, সমপরিমাণ গমের
পরিবর্তে সমপরিমাণ গম এবং সমপরিমাণ যবের পরিবর্তে সম-পরিমাণ যব বিক্রয় করতে কোন সমস্যা
নেই। বিনিময়ের বস্তু দুটি যদি একই প্রজাতির না হয় তাহলে পরিমাণে কম-বেশি হলে কোন
সমস্যা নেই, কিন্তু সেই ক্ষেত্রে নগদ আদান-প্রদান হতে হবে। এই মত প্রকাশ করেছেন রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈ। সুফিয়ান
সাওরী, আহ্মাদ ও ইসহাকেরও এই মত। শাফিঈ বলেন, এ কথার দলীল হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ “তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী গমের পরিমাণের পরিবর্তে যবের
পরিমাণ ঠিক করে নগদ বিক্রয় করতে পার”। একদল আলিমের মতে যবের পরিবর্তে গমের পরিমাণ
বেশি নির্ধারণ করে বিক্রয় করা মাকরূহ্, উভয়ের পরিমাণ সমান থাকতে হবে। ইমাম মালিক
এই মত পোষণ করেন। কিন্তু প্রথম মতই অনেক বেশি সহীহ্ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪. অনুচ্ছেদঃ
মুদ্রার বিনিময়
১২৪১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ، أَخْبَرَنَا حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا شَيْبَانُ، عَنْ
يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ نَافِعٍ، قَالَ انْطَلَقْتُ أَنَا وَابْنُ،
عُمَرَ إِلَى أَبِي سَعِيدٍ فَحَدَّثَنَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ سَمِعَتْهُ أُذُنَاىَ هَاتَانِ يَقُولُ " لاَ تَبِيعُوا
الذَّهَبَ بِالذَّهَبِ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالْفِضَّةَ بِالْفِضَّةِ إِلاَّ
مِثْلاً بِمِثْلٍ لاَ يُشَفُّ بَعْضُهُ عَلَى بَعْضٍ وَلاَ تَبِيعُوا مِنْهُ
غَائِبًا بِنَاجِزٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَهِشَامِ بْنِ عَامِرٍ
وَالْبَرَاءِ وَزَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ وَفَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ وَأَبِي بَكْرَةَ
وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ وَبِلاَلٍ . قَالَ وَحَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الرِّبَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ إِلاَّ مَا رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ كَانَ
لاَ يَرَى بَأْسًا أَنْ يُبَاعَ الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ مُتَفَاضِلاً وَالْفِضَّةُ
بِالْفِضَّةِ مُتَفَاضِلاً إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ . وَقَالَ إِنَّمَا
الرِّبَا فِي النَّسِيئَةِ . وَكَذَلِكَ رُوِيَ عَنْ بَعْضِ أَصْحَابِهِ شَيْءٌ
مِنْ هَذَا وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ رَجَعَ عَنْ قَوْلِهِ حِينَ
حَدَّثَهُ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ
قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ
وَإِسْحَاقَ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ لَيْسَ فِي
الصَّرْفِ اخْتِلاَفٌ .
নাফি
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ সাঈদ (রাঃ)-এর নিকট আমি ও ইবনু উমার (রাঃ)
গেলাম। তিনি আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, আমার দুটো কানই রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেঃ তোমরা স্বর্ণের পরিবর্তে
স্বর্ণ বিক্রয় কর না পরিমাণে সমান না রেখে। একইভাবে তোমরা রূপার পরিবর্তে রূপা
বিক্রয় কর না পরিমাণে সমান সমান না রেখে। একটি অন্যটি হতে পরিমাণে কম-বেশি করা
যাবে না। উপস্থিত বস্তুর পরিবর্তে অনুপস্থিত বস্তু বিক্রয় কর না।
সহীহ্, ইরওয়া (৫/১৮৯), বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ
আবূ বাকার, উমার, উসমান, আবূ হুরাইরা, হিশাম ইবনু আমির,
বারাআ, যাইদ ইবনু আরকাম, ফাযালী ইবনু উবাইদ, আবূ বাক্রা, ইবনু উমার, আবূ দারদা ও বিলাল
(রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সূদের অনুচ্ছেদে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আবূ সাঈদ কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈগণ আমল করেছেন।
তবে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছেঃ “স্বর্ণের পরিবর্তে স্বর্ণ এবং রূপার পরিবর্তে
রূপা নগদ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে পরিমাণে কম-বেশি করাতে তিনি কোন সমস্যা মনে করেন না।
তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র ধার-কর্জের ক্ষেত্রেই (কম-বেশি করলে) সূদ হয়।”
অন্য কতিপয় সাহাবী হতেও একইরকম বর্ণিত আছে। কিন্তু এও বর্ণিত আছে যে, তাকে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই হাদীসটি আবূ সাঈদ (রাঃ) শুনানোর পর তিনি
(ইবনু আব্বাস) তার উপরোক্ত বক্তব্য বাতিল করেন। (আবূ ঈসা বলেন), উল্লেখিত দুটি মতের
মধ্যে প্রথম মতই অনেক বেশি সহীহ্ ।
আবূ সাঈদের হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। এই মত সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক,
শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকেরও। ইবনুল মুবারাক বলেন, মুদ্রার বিনিময় জায়িয হওয়া প্রসঙ্গে
কোন দ্বিমত নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৪২
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ
بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا
حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ،
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كُنْتُ أَبِيعُ الإِبِلَ بِالْبَقِيعِ فَأَبِيعُ
بِالدَّنَانِيرِ فَآخُذُ مَكَانَهَا الْوَرِقَ وَأَبِيعُ بِالْوَرِقِ فَآخُذُ
مَكَانَهَا الدَّنَانِيرَ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَوَجَدْتُهُ خَارِجًا مِنْ بَيْتِ حَفْصَةَ فَسَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ
" لاَ بَأْسَ بِهِ بِالْقِيمَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ عَنْ
سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . وَرَوَى دَاوُدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ
هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ مَوْقُوفًا .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ لاَ بَأْسَ أَنْ
يَقْتَضِيَ الذَّهَبَ مِنَ الْوَرِقِ وَالْوَرِقَ مِنَ الذَّهَبِ . وَهُوَ
قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَدْ كَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ ذَلِكَ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বাকি নামক বাজারে উটের ব্যবসা করতাম। আমি
কখনও স্বর্ণ মুদ্রার বদলে উট বিক্রয় করতাম কিন্তু দাম নেয়ার সময় রৌপ্যমুদ্রা
নিতাম। আবার কখনও রৌপ্য মুদ্রার বদলে তা বিক্রয় করতাম এবং দাম নেয়ার সময় স্বর্ণ
মুদ্রা নিতাম। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে
তাঁকে হাফসা (রাঃ)-এর ঘর হতে বেরিয়ে আসতে দেখলাম। আমি এ সম্পর্কে তাঁকে প্রশ্ন
করলে তিনি বলেনঃ এরূপ দাম গ্রহণ করায় কোন সমস্যা নাই।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২২৬২)
আবূ ঈসা বলেন, সিমাক ইবনু হারবের সূত্রেই আমরা এই হাদীসটি
মারফূ হিসাবে জেনেছি। কিন্তু দাঊদ ইবনু আবূ হিন্দ সাইদ ইবনু জুবাইরের সূত্রে ইবনু উমারের
এ হাদীসটি মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। একদল বিশেষজ্ঞ আলিম এই হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন।
তাদের মতে স্বর্ণ মুদ্রার পরিবর্তে রৌপ্যমুদ্রা অথবা রৌপ্যমুদ্রার পরিবর্তে স্বর্ণ
মুদ্রা নিতে কোন সমস্যা নেই। ইমাম আহমাদ ও ইসহাকের এই মত। একদল সাহাবী ও তাবিঈর মতে
এরুপ করা মাকরূহ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১২৪৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ
بْنِ الْحَدَثَانِ، أَنَّهُ قَالَ أَقْبَلْتُ أَقُولُ مَنْ يَصْطَرِفُ
الدَّرَاهِمَ فَقَالَ طَلْحَةُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ وَهُوَ عِنْدَ عُمَرَ بْنِ
الْخَطَّابِ أَرِنَا ذَهَبَكَ ثُمَّ ائْتِنَا إِذَا جَاءَ خَادِمُنَا نُعْطِكَ
وَرِقَكَ . فَقَالَ عُمَرُ كَلاَّ وَاللَّهِ لَتُعْطِيَنَّهُ وَرِقَهُ أَوْ
لَتَرُدَّنَّ إِلَيْهِ ذَهَبَهُ فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" الْوَرِقُ بِالذَّهَبِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ
رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ
وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ . وَمَعْنَى قَوْلِهِ " إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ " يَقُولُ
يَدًا بِيَدٍ .
মালিক
ইবনু আওস ইবনু হাদসান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এই বলতে বলতে সামনে এগিয়ে গেলাম, কে রূপার
মুদ্রা পরিবর্তন করবে? তালহা ইবনু উবাইদুল্লাহ এ সময়ে উমার ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ)-এর নিকট ছিলেন। তিনি বললেন, তোমার স্বর্ণ আমাদেরকে দেখাও এবং (কিছুক্ষণ) পরে
আমাদের কাছে আস। আমাদের খাদিম আসার পরই তোমাকে রূপার মুদ্রা প্রদান করব। উমার
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! তা কখনও হতে পারে না। হয় এখনই তাকে
রূপার মুদ্রা প্রদান কর না হয় তাকে তার স্বর্ণ ফেরত দাও। কেননা, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ স্বর্ণের পরিবর্তে রূপার মুদ্রা নগদ
আদান-প্রদান না হলে তা গ্রহণ করা সূদের অন্তর্ভুক্ত। গমের পরিবর্তে গম নগদ
আদান-প্রদান না হলে তা সূদের অন্তর্ভুক্ত; যবের পরিবর্তে যবের নগদ বিনিময় না হলে
তা সূদের অন্তর্ভুক্ত এবং খেজুরের পরিবর্তে খেজুরের নগদ বিনিময় না হলে সুদ হবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৫৩), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী
আলিমগণ আমল করেছেন। ‘হাআ ওয়া হাআ’-এর অর্থ ‘নগদ ও উপস্থিত বিনিময়’ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫. অনুচ্ছেদঃ
তাবীরের পর খেজুর গাছ ক্রয়
করা এবং সম্পদশালী গোলাম ক্রয় করা
১২৪৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ
أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ "
مَنِ ابْتَاعَ نَخْلاً بَعْدَ أَنْ تُؤَبَّرَ فَثَمَرَتُهَا لِلَّذِي بَاعَهَا
إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ وَمَنِ ابْتَاعَ عَبْدًا وَلَهُ مَالٌ
فَمَالُهُ لِلَّذِي بَاعَهُ إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ . وَحَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . هَكَذَا رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ "
مَنِ ابْتَاعَ نَخْلاً بَعْدَ أَنْ تُؤَبَّرَ فَثَمَرَتُهَا لِلْبَائِعِ إِلاَّ
أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ وَمَنْ بَاعَ عَبْدًا وَلَهُ مَالٌ فَمَالُهُ لِلْبَائِعِ
إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ " . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ نَافِعٍ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنِ
ابْتَاعَ نَخْلاً قَدْ أُبِّرَتْ فَثَمَرَتُهَا لِلْبَائِعِ إِلاَّ أَنْ
يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ " . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ
عُمَرَ عَنْ عُمَرَ أَنَّهُ قَالَ مَنْ بَاعَ عَبْدًا وَلَهُ مَالٌ فَمَالُهُ
لِلْبَائِعِ إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ . هَكَذَا رَوَى عُبَيْدُ
اللَّهِ بْنُ عُمَرَ وَغَيْرُهُ عَنْ نَافِعٍ الْحَدِيثَيْنِ . وَقَدْ رَوَى
بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم أَيْضًا . وَرَوَى عِكْرِمَةُ بْنُ خَالِدٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ حَدِيثِ سَالِمٍ . وَالْعَمَلُ عَلَى
هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ
وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدِيثُ
الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَصَحُّ مَا جَاءَ فِي هَذَا الْبَابِ .
সালিম
(রহঃ) হতে তার পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (পিতা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ তাবীরের পর কোন লোক খেজুর বাগান কিনলে এর ফলের মালিক
হবে বিক্রেতা, যদি ক্রয়কারীর জন্য (মালিকানা) শর্ত করা না হয়। যদি কোন লোক
সম্পদশালী গোলাম কিনে তবে ঐ সম্পদের অধিকারী হবে বিক্রেতা, ক্রেতার জন্য ঐ সম্পদের
যদি কোনরূপ শর্ত করা না হয়।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২১০, ২২১২), নাসা-ঈ
জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু
উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। একইভাবে একাধিক সূত্রে যুহরী হতে, তিনি
সালিমের সূত্রে, তিনি ইবনু উমারের সূত্রে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক তাবীরের পর খেজুর গাছ কিনলে বিক্রেতাই তার ফল
ভোগ করবে, যদি ক্রয়কারী এর মালিকানার কোন শর্ত না করে থাকে। একইভাবে কোন লোক যদি সম্পদশালী
গোলাম কিনে তবে বিক্রেতা তার সম্পদের অধিকারী হবে, যদি ক্রেতার জন্য কোন শর্ত নির্ধারণ
করা না হয়। ইবনু উমর (রাঃ)-এর সূত্রে নাফি (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাবীরের কাজ পূর্ণ হওয়ার পর কোন লোক খেজুর বাগান কিনলে
এর ফল বিক্রেতা পাবে, কিন্তু ক্রেতার জন্য শর্ত করা হলে তা সে পাবে। নাফি (রাঃ) হতে
ইবনু উমার (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি উমার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন,
যদি কোন লোক সম্পদশালী গোলাম কিনে তবে বিক্রেতাই এই সম্পদের মালিক হবে, কিন্তু ক্রেতার
জন্য শর্ত করা হলে তা সে পাবে। একইরকম হাদীস আরো কয়েকটি সূত্রে বর্ণিত আছে।
এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। একই কথা বলেছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও।
ইমাম বুখারী বলেছেন, সালিমের সূত্রে যুহুরী হতে বর্ণিত ইবনু উমারের হাদীসটি এ অনুচ্ছেদে
সর্বাধিক সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৬. অনুচ্ছেদঃ
একে অপর হতে আলাদা হওয়ার
পূর্ব পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের (ক্রয়-বিক্রয় প্রত্যাখ্যানের) স্বাধীনতা
বজায় থাকে
১২৪৫
حَدَّثَنَا وَاصِلُ
بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ
سَعِيدٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَقُولُ " الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ
يَتَفَرَّقَا أَوْ يَخْتَارَا " . قَالَ فَكَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَا
ابْتَاعَ بَيْعًا وَهُوَ قَاعِدٌ قَامَ لِيَجِبَ لَهُ الْبَيْعُ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَاب عَنْ أَبِي بَرْزَةَ وَحَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ
وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَسَمُرَةَ وَأَبِي
هُرَيْرَةَ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ قَوْلُ
الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَقَ وَقَالُوا الْفُرْقَةُ بِالْأَبْدَانِ لَا
بِالْكَلَامِ وَقَدْ قَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مَعْنَى قَوْلِ النَّبِيِّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا يَعْنِي الْفُرْقَةَ
بِالْكَلَامِ وَالْقَوْلُ الْأَوَّلُ أَصَحُّ لِأَنَّ ابْنَ عُمَرَ هُوَ رَوَى
عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَعْنَى مَا
رَوَى وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يُوجِبَ الْبَيْعَ مَشَى
لِيَجِبَ لَهُ وَهَكَذَا رُوِيَ عَنْ أَبِي بَرْزَةَ الْأَسْلَمِيِّ
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
বলতে শুনেছিঃ ক্রেতা ও বিক্রেতা একে অপর হতে আলাদা না হওয়া পর্যন্ত অথবা উভয়ে
ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করতে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত তাদের জন্য ক্রয়-বিক্রয়
বাতিল করার স্বাধীনতা বজায় থাকে। বর্ণনাকারী বলেন, বসে থাকাবস্থায় ইবনু উমার
(রাঃ) কোন জিনিস কিনলে (তা নির্ধারিত করার জন্য) উঠে দাড়িয়ে যেতেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৮১), নাসা-ঈ
আবূ বারযা, হাকীম ইবনু হিযাম, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, সামুরা,
আবূ হুরাইরা ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু উমার (রাঃ)
হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল সাহাবী ও
তাবিঈ আমল করেছেন। এই মত প্রকাশ করেছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও। তারা বলেন, একে
অপর হতে আলাদা হওয়ার অর্থ হচ্ছেঃ সশরীরে আলাদা হওয়া, বাক্যালাপ বন্ধ করা নয়। অপর
একদল আলিম বলেছেন, আলাদা হওয়ার অর্থ হচ্ছে কথাবার্তা বন্ধ হওয়া (অর্থাৎ চুক্তি অনুষ্ঠিত
হলে এবং আলোচনার প্রসঙ্গ পরিবর্তিত হলে স্বাধীনতা বজায় থাকবে না)। কিন্তু প্রথম মতই
অধিকতর সহীহ্। কেননা, এ হাদীসের বর্ণনাকারী ইবনু উমার (রাঃ)। এজন্য তিনিই এ হাদীসের
মর্ম বেশি ভাল বুঝতে পেরেছেন। তার প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, তিনি ক্রয়-বিক্রয় বাধ্যতামূলক
করতে চাইলে উঠে দাঁড়িয়ে যেতেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৪৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنْ صَالِحٍ أَبِي الْخَلِيلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ
حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا
بُورِكَ لَهُمَا فِي بَيْعِهِمَا وَإِنْ كَتَمَا وَكَذَبَا مُحِقَتْ بَرَكَةُ بَيْعِهِمَا
" . هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَبِي بَرْزَةَ وَحَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ وَعَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَسَمُرَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ
بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ وَقَالُوا
الْفُرْقَةُ بِالأَبْدَانِ لاَ بِالْكَلاَمِ . وَقَدْ قَالَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ مَعْنَى قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " مَا لَمْ
يَتَفَرَّقَا " . يَعْنِي الْفُرْقَةَ بِالْكَلاَمِ . وَالْقَوْلُ
الأَوَّلُ أَصَحُّ لأَنَّ ابْنَ عُمَرَ هُوَ رَوَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَعْنَى مَا رَوَى وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ إِذَا
أَرَادَ أَنْ يُوجِبَ الْبَيْعَ مَشَى لِيَجِبَ لَهُ . وَهَكَذَا رُوِيَ عَنْ
أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ أَنَّ رَجُلَيْنِ اخْتَصَمَا إِلَيْهِ فِي فَرَسٍ
بَعْدَ مَا تَبَايَعَا . وَكَانُوا فِي سَفِينَةٍ فَقَالَ لاَ أَرَاكُمَا
افْتَرَقْتُمَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا " . وَقَدْ ذَهَبَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَهْلِ الْكُوفَةِ وَغَيْرِهِمْ إِلَى أَنَّ
الْفُرْقَةَ بِالْكَلاَمِ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَهَكَذَا رُوِيَ
عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ
كَيْفَ أَرُدُّ هَذَا وَالْحَدِيثُ فِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
صَحِيحٌ . وَقَوَّى هَذَا الْمَذْهَبَ . وَمَعْنَى قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم " إِلاَّ بَيْعَ الْخِيَارِ " . مَعْنَاهُ أَنْ
يُخَيِّرَ الْبَائِعُ الْمُشْتَرِيَ بَعْدَ إِيجَابِ الْبَيْعِ فَإِذَا خَيَّرَهُ
فَاخْتَارَ الْبَيْعَ فَلَيْسَ لَهُ خِيَارٌ بَعْدَ ذَلِكَ فِي فَسْخِ الْبَيْعِ
وَإِنْ لَمْ يَتَفَرَّقَا . هَكَذَا فَسَّرَهُ الشَّافِعِيُّ وَغَيْرُهُ .
وَمِمَّا يُقَوِّي قَوْلَ مَنْ يَقُولُ الْفُرْقَةُ بِالأَبْدَانِ لاَ
بِالْكَلاَمِ حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم .
হাকীম
ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্রেতা-বিক্রেতা একে অপর হতে আলাদা না হওয়া পর্যন্ত উভয়ের জন্য
(ক্রয়-বিক্রয় বাতিল করার) স্বাধীনতা বজায় থাকে। যদি তারা দুজনেই সততা অবলম্বন
করে এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে তবে তাদের এই লেন-দেনে বরকত হয়। যদি তারা
মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে এবং দোষ-ত্রুটিগুলো গোপন করে রাখে তবে তাদের
ক্রয়-বিক্রয়ের বারকাত তুলে নেয়া হয়।
সহীহ্, ইরওয়া (১২৮১), বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ
এ হাদীসটি সহীহ্। আবূ বারযা আসলামী (রাঃ) হতেও একইভাবে
বর্ণিত আছে যে, নৌকায় বসে দুটি লোক একটি ঘোড়া কেনা-বেচা করল। এরপর দুজনের মধ্যে ঝগড়া
সৃষ্টি হলে তারা আবূ বারযা (রাঃ)-এর নিকট এর সমাধান চায়। তখন তিনিও নৌকায় ছিলেন।
তিনি বললেন, আমি তোমাদের দুজনকে একে অপর হতে আলাদা হতে দেখি না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “ক্রেতা ও বিক্রেতা একে অপরে আলাদা না হওয়া পর্যন্ত
উভয়ের বেচা-কেনা বাতিল করার স্বাধীনতা বজায় থাকে।”
কূফার আলিমগণ বলেন, আলাদা হওয়ার অর্থ কথাবার্তা হতে আলাদা হওয়া। সুফিয়ান সাওরীরও
এই মত। একইরকম মত ইমাম মালিক হতেও বর্ণিত হয়েছে। ইবনুল মুবারাক বলেন, এ হাদীসের দলীল
(সশরীরে পৃথক হওয়ার) আমি কিভাবে খণ্ডন করতে পারি? অথচ এ হাদীস সহীহ্ সনদে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত হয়েছে যা এই মতকেই মজবুত করে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ স্বাধীনতামূলক ক্রয়-বিক্রয়ের অর্থ
হলঃ ক্রয়-বিক্রয় বাধ্যতামূলক হওয়ার পরও যদি বিক্রেতা ক্রেতাকে তা বাতিলের স্বাধীনতা
প্রদান করে কিন্তু ক্রেতা তারপরও তা ক্রয় ঠিক রাখে, তারপর উভয়ে পৃথক না হলেও ক্রয়-বিক্রয়
বাতিল করার স্বাধীনতা আর থাকে না। এ হাদীসের ব্যাখ্যা ইমাম শাফিঈ ও অন্যান্যরা এরূপই
করেছেন। কিন্তু ইবনু উমারের হাদীস দ্বারা সশরীরে পৃথক হওয়ার মতটি প্রমাণিত হয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৪৭
أَخْبَرَنَا
بِذَلِكَ، قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ
عَجْلاَنَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ
مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَفْقَةَ خِيَارٍ وَلاَ يَحِلُّ لَهُ
أَنْ يُفَارِقَ صَاحِبَهُ خَشْيَةَ أَنْ يَسْتَقِيلَهُ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَمَعْنَى هَذَا أَنْ يُفَارِقَهُ بَعْدَ
الْبَيْعِ خَشْيَةَ أَنْ يَسْتَقِيلَهُ وَلَوْ كَانَتِ الْفُرْقَةُ بِالْكَلاَمِ
وَلَمْ يَكُنْ لَهُ خِيَارٌ بَعْدَ الْبَيْعِ لَمْ يَكُنْ لِهَذَا الْحَدِيثِ
مَعْنًى حَيْثُ قَالَ صلى الله عليه وسلم " وَلاَ يَحِلُّ لَهُ أَنْ
يُفَارِقَهُ خَشْيَةَ أَنْ يَسْتَقِيلَهُ " .
আমর
ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে একে অপর হতে আলাদা না হওয়া পর্যন্ত তাদের জন্য
(ক্রয়-বিক্রয় প্রত্যাখ্যানের) স্বাধীনতা বজায় থাকে, কিন্তু স্বাধীনতামূলক
বেচা-কেনা হলে (আলাদা হওয়ার পরও স্বাধীনতা বজায় থাকে)। দুজনের মধ্যে যে কোন একজন
ক্রয় বা বিক্রয় প্রত্যাখ্যান করতে পারে, এই ভয়ে তাড়াতাড়ি আলাদা হওয়াও বৈধ
নয়।
হাসান সহীহ্, ইরওয়া (১৩১১)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। এ হাদীসের তাৎপর্য
হলঃ
কোন জিনিস বিক্রয়ের পর ক্রেতা বা বিক্রেতা তা ফেরত দিতে বা নিতে পারে-এই ভয়ে তাড়াতাড়ি
করে আলাদা হওয়া উচিত নয়। যদি কথার দ্বারা পৃথক হওয়া নির্ধারিত হত এবং বিক্রয়ের
পর স্বাধীনতা না থাকত, তাহলে “ক্রয়-বিক্রয় বাতিলের ভয়ে তাড়াতাড়ি আলাদা হয়ে যাওয়া
বৈধ নয়’’। এ হাদীসের কোন অর্থই হত না।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
২৭. অনুচ্ছেদঃ
ক্রয়-বিক্রয়ের পর একে
অপরের সন্তুষ্টি ছাড়া আলাদা না হওয়া
১২৪৮
حَدَّثَنَا نَصْرُ
بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ،
وَهُوَ الْبَجَلِيُّ الْكُوفِيُّ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ بْنَ عَمْرِو بْنِ
جَرِيرٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لاَ يَتَفَرَّقَنَّ عَنْ بَيْعٍ إِلاَّ عَنْ تَرَاضٍ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্রেতা ও
বিক্রেতা ক্রয়-বিক্রয়ের পর দুজনেই একে অপরের সন্তুষ্টি ছাড়া আলাদা হবে না।
হাসান সহীহ্, ইরওয়া (৫/১২৫, ১২৬)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা গরীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
১২৪৯
حَدَّثَنَا عُمَرُ
بْنُ حَفْصٍ الشَّيْبَانِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ
أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَيَّرَ
أَعْرَابِيًّا بَعْدَ الْبَيْعِ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক বেদুইনকে
বিক্রয় সম্পন্ন হওয়ার পরেও তা বাতিলের স্বাধীনতা প্রদান করেছিলেন।
হাসান, বেচা-কেনার হাদীস
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৮. অনুচ্ছেদঃ
যে লোক ক্রয়-বিক্রয়ের কালে
প্রতারিত হয়
১২৫০
حَدَّثَنَا يُوسُفُ
بْنُ حَمَّادٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى،
عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَجُلاً، كَانَ فِي عُقْدَتِهِ
ضَعْفٌ وَكَانَ يُبَايِعُ وَأَنَّ أَهْلَهُ أَتَوُا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ احْجُرْ عَلَيْهِ . فَدَعَاهُ نَبِيُّ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَنَهَاهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي لاَ أَصْبِرُ
عَنِ الْبَيْعِ . فَقَالَ " إِذَا بَايَعْتَ فَقُلْ هَاءَ وَهَاءَ وَلاَ
خِلاَبَةَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ .
وَحَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ
عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَقَالُوا يُحْجَرُ عَلَى الرَّجُلِ الْحُرِّ فِي
الْبَيْعِ وَالشِّرَاءِ إِذَا كَانَ ضَعِيفَ الْعَقْلِ . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ
وَإِسْحَاقَ . وَلَمْ يَرَ بَعْضُهُمْ أَنْ يُحْجَرَ عَلَى الْحُرِّ الْبَالِغِ
.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এক ব্যক্তি খুবই দুর্বল ছিল। সে
ক্রয়-বিক্রয় করত (কিন্তু ঠকে যেত)। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর
কাছে এসে তার পরিবারের লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তাকে ক্রয়-বিক্রয় হতে বিরত
থাকতে বলুন। নাৰী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ডেকে ক্রয়-বিক্রয়
করতে নিষেধ করলেন। সে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! ক্রয়-বিক্রয় হতে বিরত থাকার
কাজটি আমার ধৈর্যের উরধে। তিনি বললেনঃ যখন তুমি ক্রয়-বিক্রয় করবে তখন বলবে নগদ
লেন-দেন হবে এবং যেন প্রতারণা না করা হয়।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩৫৪), নাসা-ঈ
আবূ ঈসা বলেন, ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস
বর্ণিত আছে। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। এ হাদীস অনুযায়ী একদল
আলিম আমল করেছেন। তারা বলেন, দুর্বল জ্ঞানের অধিকারী লোক স্বাধীন হলেও তাকে ক্রয়-বিক্রয়
হতে বিরত রাখা উচিত। এই মত ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাকের। অন্য একদল আলিমের মতে, প্রাপ্তবয়স্ক
স্বাধীন লোকের উপর (আর্থিক লেন-দেনে) প্রতিবন্ধকতা (হাজর) আরোপ করা উচিত নয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯. অনুচ্ছেদঃ
দুধ জমিয়ে স্তন ফুলানো পশুর
বর্ণনা
১২৫১
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
زِيَادٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" مَنِ اشْتَرَى مُصَرَّاةً فَهُوَ بِالْخِيَارِ إِذَا حَلَبَهَا إِنْ شَاءَ
رَدَّهَا وَرَدَّ مَعَهَا صَاعًا مِنْ تَمْرٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَرَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ (দুধ জমা করে) স্তন ফুলানো পশু যদি কোন ব্যক্তি কিনে তবে তার জন্য (ক্রয়
বাতিল করার) স্বাধীনতা আছে। সে চাইলে দুধ দোহনের পর তা ফেরত দিতে পারবে। তবে তাকে
এর সাথে এক সা খেজুরও দিতে হবে।
সহীহ্ ইবনু মা-জাহ (২২৩৯), নাসা-ঈ
আবূ ঈসা বলেন, আনাস (রাঃ) এবং আরও একজন সাহাবী হতেও এ
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " مَنِ اشْتَرَى مُصَرَّاةً فَهُوَ بِالْخِيَارِ ثَلاَثَةَ
أَيَّامٍ فَإِنْ رَدَّهَا رَدَّ مَعَهَا صَاعًا مِنْ طَعَامٍ لاَ سَمْرَاءَ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَصْحَابِنَا مِنْهُمُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ
وَإِسْحَاقُ . وَمَعْنَى قَوْلِهِ " لاَ سَمْرَاءَ " . يَعْنِي
لاَ بُرَّ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ স্তনে দুধ
জমা করে রাখা পশুকে যদি কোন লোক কিনে তবে সে (ক্রয় বাতিলের জন্য) তিন দিনের স্বাধীনতা
পাবে। সে তা ফেরত দিলে এর সাথে গম ব্যতীত এক সা' খাদ্যদ্রব্যও প্রদান করবে।
সহীহ্, প্রাগুক্, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আমাদের সাথীদের
মতে এ হাদীস অনুযায়ী আমল করতে হবে। তাদের অন্তর্ভুক্ত আছেন ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক।
“লা সামরা” অর্থঃ ‘গম ব্যতীত অন্য কিছু’।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০. অনুচ্ছেদঃ
পশু বিক্রয়ের সময় এর পিঠে
চড়ার শর্ত রাখা
১২৫৩
حَدَّثَنَا ابْنُ
أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ زَكَرِيَّا، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ
جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ بَاعَ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بَعِيرًا وَاشْتَرَطَ ظَهْرَهُ إِلَى أَهْلِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ جَابِرٍ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ . يَرَوْنَ الشَّرْطَ فِي الْبَيْعِ
جَائِزًا إِذَا كَانَ شَرْطًا وَاحِدًا . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ
. وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَجُوزُ الشَّرْطُ فِي الْبَيْعِ وَلاَ
يَتِمُّ الْبَيْعُ إِذَا كَانَ فِيهِ شَرْطٌ .
জাবির
ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তিনি
একটি উট বিক্রয় করেন এবং শর্ত রাখেন এর পিঠে আরোহণ করে বাড়ী পর্যন্ত পৌছানোর।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২০৫), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। জাবির (রাঃ)
হতে বিভিন্ন সূত্রে উল্লেখিত বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীস অনুযায়ী একদল সাহাবী ও তাবিঈ
আমল করেছেন। তাদের মতে, একটিমাত্র শর্ত ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলে তা জায়িয।
এই মত দিয়েছেন ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাকও। অন্য একদল আলিম বলেন, ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে
শর্তারোপ করা জায়িয নয়। শর্ত আরোপ করলে এ ধরণের ক্রয়-বিক্রয় জায়িয হবে না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১. অনুচ্ছেদঃ
বন্ধকী জিনিসের ব্যবহার
প্রসঙ্গে
১২৫৪
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، وَيُوسُفُ بْنُ عِيسَى، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ زَكَرِيَّا،
عَنْ عَامِرٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " الظَّهْرُ يُرْكَبُ إِذَا كَانَ مَرْهُونًا وَلَبَنُ الدَّرِّ
يُشْرَبُ إِذَا كَانَ مَرْهُونًا وَعَلَى الَّذِي يَرْكَبُ وَيَشْرَبُ نَفَقَتُهُ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ
مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَامِرٍ الشَّعْبِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
وَقَدْ رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ مَوْقُوفًا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ
بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُ
أَهْلِ الْعِلْمِ لَيْسَ لَهُ أَنْ يَنْتَفِعَ مِنَ الرَّهْنِ بِشَيْءٍ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ বাহনের পশুকে বন্ধক রাখা হলে তার পিঠে আরোহণ করা যাবে। দুগ্ধবতী
পশুকে বন্ধক রাখা হলে তার দুধ পান করা যাবে। যে লোক আরোহণ করবে এবং দুধ পান করবে
তাকে পশুর খরচও প্রদান করতে হবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৪৪০), বুখারী
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আমরা এ হাদীসটিকে
কেবল আমিরের সূত্রেই আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে মারফূভাবে জেনেছি। এটিকে আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর
সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী আবূ সালিহ (রহঃ) হতে মাওকূফভাবে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী
একদল আলিম আমল করেছেন। এই মত দিয়েছেন ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাকও। অপর একদল আলিমের মতে,
বন্ধক রাখা জিনিস ব্যবহার করা জায়িয নয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২. অনুচ্ছেদঃ
স্বর্ণ ও পুঁতির দানা খচিত
মালা কেনা প্রসঙ্গে
১২৫৫
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ أَبِي شُجَاعٍ، سَعِيدِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ
خَالِدِ بْنِ أَبِي عِمْرَانَ، عَنْ حَنَشٍ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ فَضَالَةَ بْنِ
عُبَيْدٍ، قَالَ اشْتَرَيْتُ يَوْمَ خَيْبَرَ قِلاَدَةً بِاثْنَىْ عَشَرَ
دِينَارًا فِيهَا ذَهَبٌ وَخَرَزٌ فَفَصَّلْتُهَا فَوَجَدْتُ فِيهَا أَكْثَرَ مِنِ
اثْنَىْ عَشَرَ دِينَارًا فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ " لاَ تُبَاعُ حَتَّى تُفَصَّلَ " .
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ أَبِي شُجَاعٍ،
سَعِيدِ بْنِ يَزِيدَ بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ لَمْ
يَرَوْا أَنْ يُبَاعَ السَّيْفُ مُحَلًّى أَوْ مِنْطَقَةٌ مُفَضَّضَةٌ أَوْ مِثْلُ
هَذَا بِدَرَاهِمَ حَتَّى يُمَيَّزَ وَيُفَصَّلَ . وَهُوَ قَوْلُ ابْنِ
الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُ
أَهْلِ الْعِلْمِ فِي ذَلِكَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ .
ফাযালা
ইবনু উবাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি খাইবারের যুদ্ধের সময় বার দীনারে একটি মালা
ক্রয় করলাম। এতে স্বর্ণ ও পুঁতির দানা মিশানো ছিল। আমি এগুলোকে আলাদা করে বার
দীনারের বেশি পরিমাণ স্বর্ণ পেলাম। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট এটা উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তা বিক্রয় করা যাবে না যতক্ষণ না
তা আলাদা করা হবে।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। ইবনুল মুবারকও
উল্লিখিত সনদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল সাহাবী ও অপরাপর
আলিম আমল করেছেন। তাদের মতে রূপার কারুকার্য খচিত তরবারি, কোমরবন্ধ, তরবারির খাপ ইত্যাদি
দিরহামের বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয় করতে হলে এর সাথে রূপা পৃথক করে নিতে হবে। এই মত দিয়েছেন
ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও। অন্য একদল সাহাবী ও অপরাপর আলিম এগুলো আলাদা
না করেই তা ক্রয়-বিক্রয়ের সম্মতি দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
গোলাম বিক্রয়ের সময়
ওয়ালার শর্ত করা নিষেধ
১২৫৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ،
أَنَّهَا أَرَادَتْ أَنْ تَشْتَرِيَ، بَرِيرَةَ فَاشْتَرَطُوا الْوَلاَءَ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " اشْتَرِيهَا فَإِنَّمَا الْوَلاَءُ
لِمَنْ أَعْطَى الثَّمَنَ أَوْ لِمَنْ وَلِيَ النِّعْمَةَ " . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
قَالَ وَمَنْصُورُ بْنُ الْمُعْتَمِرِ يُكْنَى أَبَا عَتَّابٍ . حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرٍ الْعَطَّارُ الْبَصْرِيُّ عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْمَدِينِيِّ قَالَ
سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ سَعِيدٍ يَقُولُ إِذَا حُدِّثْتَ عَنْ مَنْصُورٍ فَقَدْ
مَلأْتَ يَدَكَ مِنَ الْخَيْرِ لاَ تُرِدْ غَيْرَهُ . ثُمَّ قَالَ يَحْيَى مَا
أَجِدُ فِي إِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ وَمُجَاهِدٍ أَثْبَتَ مِنْ مَنْصُورٍ .
قَالَ وَأَخْبَرَنِي مُحَمَّدٌ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي الأَسْوَدِ قَالَ
قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ مَنْصُورٌ أَثْبَتُ أَهْلِ الْكُوفَةِ
.
আইশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বারীরা নাম্নী গোলামকে কিনতে চাইলেন, কিন্তু মালিক
পক্ষ ওয়ালার শর্ত আরোপ করল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ তুমি তাকে কিনতে পার। কেননা, যে লোক মূল্য পরিশোধ করে অথবা এর মালিক হয়
সেই ওয়ালার অধিকারী হয়।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৫২১), নাসা-ঈ
ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশা
(রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ
আলিমগণ আমল করেছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ বলেন, যখন তোমার নিকট মানসূরের সূত্রে বর্ণনা
করা হয় তখন তুমি মনে করবে যে, তুমি তোমার হাত কল্যাণে পরিপূর্ণ করলে। আমি ইবরাহীম
নাখঈ ও মুজাহিদ হতে রিওয়ায়াতের ক্ষেত্রে মানসূরের তুলনায় বেশি আস্থাভাজন অন্য কাউকে
পাইনি। আবদুর রাহমান ইবনু মাহ্দী বলেন, কুফাবাসীদের মধ্যে মানসূর সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য
লোক।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
প্রতিনিধি কর্তৃক দ্রব্য
ক্রয়-বিক্রয় করে মূলধন ও মুনাফা মালিককে দিয়ে দেয়া
১২৫৭
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ أَبِي حُصَيْنٍ، عَنْ
حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم بَعَثَ حَكِيمَ بْنَ حِزَامٍ يَشْتَرِي لَهُ أُضْحِيَّةً
بِدِينَارٍ فَاشْتَرَى أُضْحِيَّةً فَأُرْبِحَ فِيهَا دِينَارًا فَاشْتَرَى
أُخْرَى مَكَانَهَا فَجَاءَ بِالأُضْحِيَّةِ وَالدِّينَارِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " ضَحِّ بِالشَّاةِ وَتَصَدَّقْ بِالدِّينَارِ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ لاَ نَعْرِفُهُ
إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَحَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ لَمْ يَسْمَعْ
عِنْدِي مِنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ .
হাকীম
ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের জন্য
এক দীনারে একটি কুরবানীর পশু কেনার উদ্দেশ্য তাকে (বাজারে) পাঠান। তিনি (এক
দীনারে) একটি পশু কিনে (তা আবার বিক্রয় করে) এক দীনার লাভ করেন। এর পরিবর্তে তিনি
আরও একটি পশু কিনেন। তারপর তিনি একটি পশু ও এক দীনারসহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে চলে আসেন। তিনি বললেনঃ বকরীটা কুরবানী কর এবং
দীনারটি দান-খাইরাত কর।
যঈফ, বেচা-কেনার হাদীস অধ্যায়
আবূ ঈসা বলেন, হাকীম ইবনু হিযামের হাদীসটি আমরা শুধু উল্লেখিত
সূত্রেই জেনেছি। আমার মতে হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) এর নিকট হতে হাবীব ইবনু আবূ সাবিত
কিছু শুনেননি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১২৫৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا حَبَّانُ، وَهُوَ ابْنُ هِلاَلٍ أَبُو
حَبِيبٍ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا هَارُونُ الأَعْوَرُ الْمُقْرِئُ، وَهُوَ ابْنُ
مُوسَى الْقَارِئُ حَدَّثَنَا الزُّبَيْرُ بْنُ الْخِرِّيتِ، عَنْ أَبِي لَبِيدٍ،
عَنْ عُرْوَةَ الْبَارِقِيِّ، قَالَ دَفَعَ إِلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم دِينَارًا لأَشْتَرِيَ لَهُ شَاةً فَاشْتَرَيْتُ لَهُ شَاتَيْنِ فَبِعْتُ
إِحْدَاهُمَا بِدِينَارٍ وَجِئْتُ بِالشَّاةِ وَالدِّينَارِ إِلَى النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم . فَذَكَرَ لَهُ مَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ فَقَالَ لَهُ "
بَارَكَ اللَّهُ لَكَ فِي صَفْقَةِ يَمِينِكَ " . فَكَانَ يَخْرُجُ
بَعْدَ ذَلِكَ إِلَى كُنَاسَةِ الْكُوفَةِ فَيَرْبَحُ الرِّبْحَ الْعَظِيمَ
فَكَانَ مِنْ أَكْثَرِ أَهْلِ الْكُوفَةِ مَالاً .
উরওয়া
আল-বারিকী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাকে তাঁর নিজের জন্য একটি ছাগল কেনার উদ্দেশ্যে একটি দীনার প্রদান
করলেন। আমি তাঁর জন্য দু’টি ছাগল কিনলাম। আমি এর মধ্য হতে একটিকে এক দীনারের
বিনিময়ে বিক্রয় করে দিলাম। তারপর আমি একটি ছাগল ও একটি দীনারসহ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলাম। (অধঃস্তন বর্ণনাকারী বলেন)
তিনি তাঁকে পুরো ঘটনা বর্ণনা করে শুনালেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তোমার ডান হাতের
ব্যবসায়ে বারকাত দান করুন। তিনি কূফার অদূরে কুনাসা নামক জায়গায় চলে যান এবং
ব্যবসায়ে অনেক মুনাফা অর্জন করেন। ফলে তিনি কূফার সম্পদশালী লোকে পরিণত হন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
উপরোক্ত হাদীসের মত আবূ লাবীদের সূত্রেও বর্ণিত আছে। এ
হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম মত দিয়েছেন। একই কথা বলেছেন ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাকও। এ হাদীস
অনুযায়ী অন্য একদল আলিম মত গ্রহণ করেননি। তাদের মধ্যে ইমাম শাফিঈ অন্যতম। সাঈদ ইবনু
যাইদ হাম্মাদ ইবনু যাইদের ভাই, আবূ লাবীদের নাম লিমাযাহ্ পিতার নাম যাব্বার।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
মুকাতাব গোলামের মূল্য
পরিশোধ করার মত টাকা থাকলে
১২৫৯
حَدَّثَنَا هَارُونُ
بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْبَزَّازُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا
حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَصَابَ الْمُكَاتَبُ
حَدًّا أَوْ مِيرَاثًا وَرِثَ بِحِسَابِ مَا عَتَقَ مِنْهُ " . وَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " يُؤَدِّي الْمُكَاتَبُ بِحِصَّةِ مَا
أَدَّى دِيَةَ حُرٍّ وَمَا بَقِيَ دِيَةَ عَبْدٍ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَهَكَذَا رَوَى يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ عِكْرِمَةَ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرَوَى خَالِدٌ
الْحَذَّاءُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ عَلِيٍّ قَوْلَهُ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ . وَقَالَ أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمُ الْمُكَاتَبُ عَبْدٌ مَا بَقِيَ
عَلَيْهِ دِرْهَمٌ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ
وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
মুকাতাব গোলামের দিয়াত বা ওয়ারিসী স্বত্ব পাওয়ার সুযোগ এলে সে যতটুকু পরিমাণ
মুক্ত হয়েছে ততটুকু অংশ পরিমাণ মালিক হবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আরও বলেছেনঃ মুকাতাব গোলামের যতটুকু অংশ মুক্ত তাকে ততটুকু মুক্তির
সমান দিয়াত প্রদান করতে হবে এবং বাকীগুলোর জন্য গোলামের সমান পরিমাণ দিয়াত
প্রদান করতে হবে।
সহীহ্, ইরওয়া (১৭২৬)
উন্মু সালামা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনু কাছীর
ও ইকরিমা হতে, তিনি ইবনু আব্বাস হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে উপরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। ইকরামার সূত্রে আলী (রাঃ)-এর বক্তব্য হিসাবেও
এটাকে খালিদ আল-হাযযা বর্ণনা করেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল সাহাবী ও তাবিঈ আমল করেছেন।
কিন্তু বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈ বলেন, মুকাতাব গোলামের চুক্তিকৃত টাকার মধ্যে
এক দিরহাম অনাদায়ী থাকলেও সে গোলামই গণ্য হবে (এবং গোলামের সমান আইনগত সুযোগ-সুবিধা
পাবে)। এই মত দিয়েছেন সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৬০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي
أُنَيْسَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ يَقُولُ " مَنْ
كَاتَبَ عَبْدَهُ عَلَى مِائَةِ أُوقِيَّةٍ فَأَدَّاهَا إِلاَّ عَشْرَ أَوَاقٍ
أَوْ قَالَ عَشَرَةَ دَرَاهِمَ ثُمَّ عَجَزَ فَهُوَ رَقِيقٌ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ
أَنَّ الْمُكَاتَبَ عَبْدٌ مَا بَقِيَ عَلَيْهِ شَيْءٌ مِنْ كِتَابَتِهِ .
وَقَدْ رَوَى الْحَجَّاجُ بْنُ أَرْطَاةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ نَحْوَهُ .
আমর
ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (দাদা) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর এক বক্তৃতায় বলতে শুনেছিঃ একশত উকিয়া প্রদানের শর্তে কোন
লোক তার গোলামকে মুক্তির চুক্তিপত্র প্রদান করল। সে চুক্তির মূল্য পরিশোধ করতে
থাকল। কিন্তু দশ উকিয়া বা দশ দিরহাম পরিমাণ পরিশোধ করতে সে অসমর্থ হয়ে পড়ল।
এরকম পরিস্থিতিতে সে গোলামই রয়ে যাবে।
হাসান, ইবনু মা-জাহ (২৫১৯)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গরীব বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী
বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈ আমল করেছেন। তাদের মতে, মুকাতাব গোলাম গোলামই রয়ে
যাবে চুক্তিকৃত পরিমাণ টাকার অল্প পরিমাণ বাকী থাকলেও। হাজ্জাজ ইবনু আরতাত ও আমর ইবনু
শুআইব হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১২৬১
حَدَّثَنَا سَعِيدُ
بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ نَبْهَانَ، مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ
أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا
كَانَ عِنْدَ مُكَاتَبِ إِحْدَاكُنَّ مَا يُؤَدِّي فَلْتَحْتَجِبْ مِنْهُ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَمَعْنَى هَذَا
الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَى التَّوَرُّعِ وَقَالُوا لاَ يُعْتَقُ
الْمُكَاتَبُ وَإِنْ كَانَ عِنْدَهُ مَا يُؤَدِّي حَتَّى يُؤَدِّيَ .
উম্মু
সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমাদের কোন মহিলার মুকাতাব ক্রীতদাসের নিকটে নিজেদের স্বাধীন করার মত
সম্পদ থাকলে সে যেন তার থেকে পর্দা করে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২৫২০)
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। বিশেষজ্ঞ আলিমদের
মতে এই হাদীসের মর্মার্থ হলঃ তাকওয়া ও পরহিযগারী হাসিলের জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা
হিসেবে পর্দা করা কর্তব্য। তারা বলেন, মুকাতাব ক্রীতদাসের নিকটে নিজেকে মুক্ত করার
মত সম্পদ থাকলে সে ক্রীতদাস হিসেবেই বিবেচিত। চুক্তি অনুযায়ী সকল দেনা পাওনা মিটিয়ে
দেবার পরই সে মুক্ত বলে বিবেচিত হবে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৬. অনুচ্ছেদঃ
দেউলিয়া লোকের নিকট
পাওনাদারের মাল পাওয়া গেলে
১২৬২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ
بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ،
عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ
" أَيُّمَا امْرِئٍ أَفْلَسَ وَوَجَدَ رَجُلٌ سِلْعَتَهُ عِنْدَهُ
بِعَيْنِهَا فَهُوَ أَوْلَى بِهَا مِنْ غَيْرِهِ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ سَمُرَةَ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي
هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ
أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ هُوَ أُسْوَةُ الْغُرَمَاءِ . وَهُوَ قَوْلُ أَهْلِ
الْكُوفَةِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
কোন লোক দেউলিয়া (মুফলিস) বলে ঘোষিত হওয়ার পরেও কোন ব্যক্তি নিজের মাল
পূর্বাবস্থায় তার নিকট পেয়ে গেলে সে তাতে অন্য লোকদের চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার
পাবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩৫৮), নাসা-ঈ
সামুরা ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস
অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। একথা বলেছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও। অন্য একদল
আলিম বলেছেন, দেউলিয়াত্ব লোকের নিকট কোন ব্যক্তি তার মাল পূর্বাবস্থায় পেলেও তাকে
তা অন্যান্য পাওনাদারদের সাথে সমান ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। কূফাবাসী আলিমদের এই অভিমত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ
কোন মুসলমানের পক্ষে কোন
যিম্মীকে শারাব (মদ) বিক্রয় করতে দেওয়া নিষেধ
১২৬৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ مُجَالِدٍ، عَنْ أَبِي
الْوَدَّاكِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ كَانَ عِنْدَنَا خَمْرٌ لِيَتِيمٍ
فَلَمَّا نَزَلَتِ الْمَائِدَةُ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
عَنْهُ وَقُلْتُ إِنَّهُ لِيَتِيمٍ . فَقَالَ " أَهْرِيقُوهُ "
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوُ هَذَا . وَقَالَ بِهَذَا بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ وَكَرِهُوا أَنْ تُتَّخَذَ الْخَمْرُ خَلاًّ وَإِنَّمَا كُرِهَ مِنْ
ذَلِكَ وَاللَّهُ أَعْلَمُ أَنْ يَكُونَ الْمُسْلِمُ فِي بَيْتِهِ خَمْرٌ حَتَّى
يَصِيرَ خَلاًّ . وَرَخَّصَ بَعْضُهُمْ فِي خَلِّ الْخَمْرِ إِذَا وُجِدَ قَدْ
صَارَ خَلاًّ . أَبُو الْوَدَّاكِ اسْمُهُ جَبْرُ بْنُ نَوْفٍ .
আবূ
সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের নিকট এক ইয়াতীম বালকের শারাব ছিল। সূরা
মাইদা (৯০-৯১ আয়াত) অবতীর্ণ হলে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে বললাম, এই মদ এক ইয়াতীম বালকের। তিনি
বললেনঃ এগুলো ঢেলে ফেলে দাও।
সহীহ্ মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৬৪৮), পরবর্তী (১৩১৬) নং হাদীসটি এই হাদীসের সহায়ক
আবূ ঈসা বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
এ হাদীসটি একাধিক সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয় সাল্লাম) হতে বর্ণিত হয়েছে।
এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম মত দিয়েছেন। শারাবকে সিরকাতে পরিবর্তন করাকে তারা মাকরূহ
বলেছেন। প্রকৃতপক্ষে মাকরূহ মনে করার কারণ হলঃ শারাব থেকে সিরকা তৈরীর উদ্দেশ্যে একজন
মুসলমানের ঘরে শারাব থাকাটা আপত্তিকর মনে হয়। আল্লাহ্ তা’আলাই অধিক ভালো জানেন। শারাব
যদি সিরকা অবস্থায় পাওয়া যায় তবে একদল আলিমের মতে এই সিরকা ব্যবহার করা জায়িয।
আবূল ওয়াদ্দাকের নাম জুব্র পিতা নাওফ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ
আমানাতদারী রক্ষা করা
১২৬৪
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا طَلْقُ بْنُ غَنَّامٍ، عَنْ شَرِيكٍ، وَقَيْسٍ، عَنْ أَبِي
حَصِينٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم " أَدِّ الأَمَانَةَ إِلَى مَنِ ائْتَمَنَكَ وَلاَ تَخُنْ
مَنْ خَانَكَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ وَقَالُوا إِذَا
كَانَ لِلرَّجُلِ عَلَى آخَرَ شَيْءٌ فَذَهَبَ بِهِ فَوَقَعَ لَهُ عِنْدَهُ شَيْءٌ
فَلَيْسَ لَهُ أَنْ يَحْبِسَ عَنْهُ بِقَدْرِ مَا ذَهَبَ لَهُ عَلَيْهِ .
وَرَخَّصَ فِيهِ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنَ التَّابِعِينَ . وَهُوَ قَوْلُ
الثَّوْرِيِّ وَقَالَ إِنْ كَانَ لَهُ عَلَيْهِ دَرَاهِمُ فَوَقَعَ لَهُ عِنْدَهُ
دَنَانِيرُ فَلَيْسَ لَهُ أَنْ يَحْبِسَ بِمَكَانِ دَرَاهِمِهِ إِلاَّ أَنْ يَقَعَ
عِنْدَهُ لَهُ دَرَاهِمُ فَلَهُ حِينَئِذٍ أَنْ يَحْبِسَ مِنْ دَرَاهِمِهِ
بِقَدْرِ مَا لَهُ عَلَيْهِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমার নিকট যে লোক কোন কিছু আমানাত রেখেছে তাকে তা ফিরিয়ে দাও। যে লোক
তোমার খিয়ানাত করেছে তুমি তার খিয়ানাত (ক্ষতিসাধন) কর না।
সহীহ্, মিশকাত (২৯৩৪), সহীহা (৪২৩০), রাওযুন নায়ীর (১৬)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গরীব বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী
একদল আলিম মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, এক লোক নিজের কিছু আমানাত রাখল অন্য লোকের নিকট,
কিন্তু সে তা ফিরত দিল না। ঘটনাচক্রে প্রথমোক্ত ব্যক্তির হাতে শেষোক্ত ব্যক্তির কোন
মাল এসে পড়লো। এক্ষেত্রে সে লোক যে পরিমাণ সম্পদ প্রথমোক্ত ব্যক্তি হতে আত্মসাৎ করেছিল,
সেই সম্পদ হতে প্রথমোক্ত ব্যক্তি তার পাওনা পরিমাণ কেটে রাখতে পারবে না, কিন্তু কিছু
তাবিঈ কেটে রাখার সম্মতি দিয়েছেন। সুফিয়ান সাওরীও এই মত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এক
লোক কিছু দিরহাম রাখল অন্য লোকের নিকট। সে তা আত্মসাৎ করল। ঘটনাচক্রে প্রথমোক্ত ব্যক্তির
হাতে শেষোক্ত ব্যক্তির কিছু দীনার এসে পড়ল। এক্ষেত্রে প্রথমোক্ত ব্যক্তি তার দিরহামের
পরিবর্তে দীনার রাখতে পারবে না। হ্যাঁ ঐ ব্যক্তির দিরহাম যদি তার হাতে আসে তাহলে সে
তার দিরহামের সমপরিমাণ দিরহাম কেটে রাখতে পারবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৯. অনুচ্ছেদঃ
আরিয়া অর্থাৎ ধারে নিয়ে
আসা জিনিস ফেরত দিতে হবে
১২৬৫
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ،
وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ
شُرَحْبِيلَ بْنِ مُسْلِمٍ الْخَوْلاَنِيِّ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، قَالَ سَمِعْتُ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي خُطْبَتِهِ عَامَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ
" الْعَارِيَةُ مُؤَدَّاةٌ وَالزَّعِيمُ غَارِمٌ وَالدَّيْنُ مَقْضِيٌّ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ سَمُرَةَ وَصَفْوَانَ بْنِ
أُمَيَّةَ وَأَنَسٍ . قَالَ وَحَدِيثُ أَبِي أُمَامَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ .
وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَيْضًا
مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ .
আবূ
উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি
তাঁর বিদায় হাজ্জের বক্তৃতায় বলতে শুনেছিঃ ধার করা বস্তু ফেরত দিতে হবে,
যামিনদার পাওনা পরিশোধ করার দায় বহন করবে এবং ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩৯৮)
সামুরা, সাফওয়ান ইবনু উমাইয়্যা ও আনাস (রাঃ) হতেও এ
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব
বলেছেন। এ হাদীসটি একাধিক সূত্রে আবূ উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৬৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" عَلَى الْيَدِ مَا أَخَذَتْ حَتَّى تُؤَدِّيَ " . قَالَ
قَتَادَةُ ثُمَّ نَسِيَ الْحَسَنُ فَقَالَ هُوَ أَمِينُكَ لاَ ضَمَانَ عَلَيْهِ
. يَعْنِي الْعَارِيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ إِلَى هَذَا وَقَالُوا يَضْمَنُ صَاحِبُ الْعَارِيَةِ .
وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ لَيْسَ عَلَى صَاحِبِ
الْعَارِيَةِ ضَمَانٌ إِلاَّ أَنْ يُخَالِفَ . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ
وَأَهْلِ الْكُوفَةِ وَبِهِ يَقُولُ إِسْحَاقُ .
সামুরা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
কোন ব্যক্তি যা গ্রহণ করেছে তা ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত এর জন্য সে দায়বদ্ধ
থাকবে। কাতাদা বলেন, পরবর্তীতে হাসান এ হাদীস ভুলে যান। ফলে তিনি বলেছেন, সে তোমার
আমানতদার, তার উপর এর ক্ষতিপূরণ আরোপ করা হবে না অর্থাৎ তা আরিয়া।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২৪০০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী
ও তাবিঈ এ হাদীস অনুসারে মত দিয়েছেন। অর্থাৎ কর্জ গ্রহণকারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
শাফিঈ ও আহ্মাদের এই মত। অপর একদল সাহাবী ও তাবিঈ বলেছেন, কর্জ গ্রহণকারীকে ক্ষতিপূরণ
দিতে হবে না, কিন্তু আমানাতদাতার কথার খিলাপ করলে ক্ষতিপুরণ দিতে হবে। সুফিয়ান সাওরী
ও কূফাবাসী আলিমদের এই মত। ইসহাকও এই মত দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪০. অনুচ্ছেদঃ
মজুতদারি (ইহ্তিকার)
প্রসঙ্গে
১২৬৭
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ،
عَنْ مَعْمَرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نَضْلَةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ يَحْتَكِرُ إِلاَّ خَاطِئٌ " .
فَقُلْتُ لِسَعِيدٍ يَا أَبَا مُحَمَّدٍ إِنَّكَ تَحْتَكِرُ . قَالَ وَمَعْمَرٌ
قَدْ كَانَ يَحْتَكِرُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَإِنَّمَا رُوِيَ عَنْ سَعِيدِ
بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ كَانَ يَحْتَكِرُ الزَّيْتَ وَالْحِنْطَةَ وَنَحْوَ
هَذَا . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَأَبِي
أُمَامَةَ وَابْنِ عُمَرَ . وَحَدِيثُ مَعْمَرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا احْتِكَارَ الطَّعَامِ
. وَرَخَّصَ بَعْضُهُمْ فِي الاِحْتِكَارِ فِي غَيْرِ الطَّعَامِ . وَقَالَ
ابْنُ الْمُبَارَكِ لاَ بَأْسَ بِالاِحْتِكَارِ فِي الْقُطْنِ وَالسَّخْتِيَانِ
وَنَحْوِ ذَلِكَ .
মা’মার
ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নাযলাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ “শুধুমাত্র দুর্নীতিপরায়ণ মানুষই মজুতদারি করে থাকে”।
আমি (মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম) সাঈদকে বললাম, হে মুহাম্মাদের পিতা! আপনিও তো
মজুতদারি করে থাকেন। তিনি বললেন, মজুতদারি তো মা’মারও করতেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৫৪), মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব প্রসঙ্গে বর্ণিত
আছে যে, তিনি তেল, গম ও এই জাতীয় জিনিস মজুত করতেন।
উমার, আলী, আবূ উমামা ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। মা’মার
(রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীস মোতাবিক আলিমগণ আমল করেছেন। খাদ্যদ্রব্যের
মজুতদারি করাকে তারা মাকরূহ বলেছেন। খাদ্যদ্রব্য ব্যতীত অন্য কিছুর মজুতদারি করার পক্ষে
কিছু সংখ্যক আলিম অনুমতি দিয়েছেন। ইবনুল মুবারাক বলেছেন, তুলা, ছাগলের চামড়া বা ঐ
ধরণের অন্য কিছুর মজুতদারি করাতে কোন সমস্যা নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪১. অনুচ্ছেদঃ
স্তনে দুধ জমিয়ে পশু
বিক্রয় করা প্রসঙ্গে
১২৬৮
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ،
حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ
تَسْتَقْبِلُوا السُّوقَ وَلاَ تُحَفِّلُوا وَلاَ يُنَفِّقْ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي
هُرَيْرَةَ . وَحَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا بَيْعَ الْمُحَفَّلَةِ وَهِيَ
الْمُصَرَّاةُ لاَ يَحْلُبُهَا صَاحِبُهَا أَيَّامًا أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ
لِيَجْتَمِعَ اللَّبَنُ فِي ضَرْعِهَا فَيَغْتَرَّ بِهَا الْمُشْتَرِي . وَهَذَا
ضَرْبٌ مِنَ الْخَدِيعَةِ وَالْغَرَرِ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বাজারের
বাইরে গিয়ে পণ্যদ্রব্য আনিত বণিকদলের সাথে মিলিত হবে না, পশুর স্তনে দুধ জমিয়ে
রাখবে না এবং দাম বৃদ্ধি করে একজন অন্যজনের পণ্য বিক্রয় করে দেওয়ার অপকৌশল
অবলম্বন করবে না।
হাসান, বেচা-কেনার হাদীস
আবূ ঈসা বলেন, ইবনু মাসঊদ ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ
হাদীস মোতাবিক আলিমগণ আমল করেছেন। তাদের মতে কয়েক দিনের দুধ পশুর স্তনে জমিয়ে স্তন
ফুলিয়ে তা বিক্রয় করা মাকরূহ। এতে ক্রেতা ধোঁকার মধ্যে পড়ে যায়। এটাও এক ধরণের
প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৪২. অনুচ্ছেদঃ
কোন মুসলমানের সম্পদ
আত্মসাতের জন্য মিথ্যা শপথ করা
১২৬৯
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ،
حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ وَهُوَ فِيهَا فَاجِرٌ لِيَقْتَطِعَ بِهَا
مَالَ امْرِئٍ مُسْلِمٍ لَقِيَ اللَّهَ وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ " .
فَقَالَ الأَشْعَثُ بْنُ قَيْسٍ فِيَّ وَاللَّهِ لَقَدْ كَانَ ذَلِكَ كَانَ
بَيْنِي وَبَيْنَ رَجُلٍ مِنَ الْيَهُودِ أَرْضٌ فَجَحَدَنِي فَقَدَّمْتُهُ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" أَلَكَ بَيِّنَةٌ " . قُلْتُ لاَ . فَقَالَ لِلْيَهُودِيِّ
" احْلِفْ " . فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِذًا يَحْلِفَ
فَيَذْهَبَ بِمَالِي . فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: (إِنَّ الَّذِينَ
يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلاً ) . إِلَى
آخِرِ الآيَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ
وَأَبِي مُوسَى وَأَبِي أُمَامَةَ بْنِ ثَعْلَبَةَ الأَنْصَارِيِّ وَعِمْرَانَ
بْنِ حُصَيْنٍ . وَحَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ মিথ্যা শপথের মাধ্যমে যদি কোন লোক কোন মুসলমানের ধন-সম্পদ
আত্মসাৎ করে তবে সে এরূপ অবস্থায় আল্লাহ্ তা’আলার সামনে উপস্থিত হবে যে, তিনি তার
প্রতি খুবই অসন্তুষ্ট থাকবেন। আশআস ইবনু কাইস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! তিনি এ
হাদীসটি আমার সম্পর্কে বলেছেন। আমার ও এক ইয়াহূদীর মধ্যে একটি শরীকানা যমি ছিল।
কিন্তু সে আমার অংশ দিতে অস্বীকার করে বসে। আমি তাকে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট আসি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ তোমার সাক্ষীপ্রমাণ আছে কি? আমি বললাম, না। তিনি ইয়াহূদীকে
বললেনঃ শপথ কর। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এ তো শপথ করবেই এবং আমার সম্পদ
আত্মসাৎ করবে। আল্লাহ তা’আলা তখন এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “যারা আল্লাহ্ তা’আলার
সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথসমূহ সামান্য স্বার্থের বিনিময়ে বিক্রয়
করে, আখিরাতে তাদের জন্য কোন অংশ নেই। কিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ তা’আলা না তাদের
সাথে কথা বলবেন, না তাদের প্রতি তাকাবেন আর না তাদেরকে পবিত্র করবেন। তাদের জন্য
রয়েছে কঠিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (সূরাঃ আলে-ইমরান - ৭৭)।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩২৩), নাসা-ঈ
আবূ ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে ওয়াইল ইবনু হুজর, আবূ মূসা,
আবূ উমামা ও ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে
বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৩. অনুচ্ছেদঃ
ক্রেতা-বিক্রেতা পরস্পরের
মধ্যে মতবিরোধ হলে
১২৭০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عَوْنِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِذَا اخْتَلَفَ الْبَيِّعَانِ فَالْقَوْلُ قَوْلُ الْبَائِعِ
وَالْمُبْتَاعُ بِالْخِيَارِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
مُرْسَلٌ عَوْنُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ لَمْ يُدْرِكِ ابْنَ مَسْعُودٍ . وَقَدْ رُوِيَ
عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم هَذَا الْحَدِيثُ أَيْضًا وَهُوَ مُرْسَلٌ أَيْضًا . قَالَ
أَبُو عِيسَى قَالَ إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ قُلْتُ لأَحْمَدَ إِذَا اخْتَلَفَ
الْبَيِّعَانِ وَلَمْ تَكُنْ بَيِّنَةٌ قَالَ الْقَوْلُ مَا قَالَ رَبُّ
السِّلْعَةِ أَوْ يَتَرَادَّانِ . قَالَ إِسْحَاقُ كَمَا قَالَ وَكُلُّ مَنْ
كَانَ الْقَوْلُ قَوْلَهُ فَعَلَيْهِ الْيَمِينُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا
رُوِيَ عَنْ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنَ التَّابِعِينَ مِنْهُمْ شُرَيْحٌ
وَغَيْرُهُ نَحْوُ هَذَا .
ইবনু
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্রয়কারী ও ৰিক্রয়কারীদের মধ্যে মত পার্থক্য হলে বিক্রেতার মতই
বেশি প্রাধান্য পাবে, তবে ক্রয়কারীর ক্রয় বাতিলের স্বাধীনতা থাকবে।
সহীহ্, ইরওয়া (১৩২২, ১৩২৪), বেচা-কেনার হাদীস
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা মুরসাল বলেছেন। ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর
সাথে কখনও আওন ইবনু আবদুল্লাহ্র সাক্ষাৎ ঘটেনি। ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর এ হাদীসটি কাসিম
ইবনু আবদুর রাহমানও ইবনু মাসঊদ হতে, তিনি নাৰী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে বর্ণনা করেছেন। এ বর্ণনাটিও মুরসাল। ইসহাক ইবনু মানসূর বলেন, আমি ইমাম আহ্মাদকে
প্রশ্ন করলাম, ক্রয়কারী ও বিক্রয়কারী একে অপরের সাথে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়লে এবং কোন
সাক্ষী না থাকলে কি করতে হবে? তিনি বললেন, বিক্রেতার মতই বেশি প্রাধান্য পাবে অথবা
দুজনই ক্রয়-বিক্রয় বাতিল করবে। ইমাম ইসহাক কিছুটা এভাবে বলেছেন, যার মতকে বিনা প্রমাণে
গ্রহণ করা হবে তাকে শপথ করাতে হবে। কিছু সংখ্যক তাবিঈও একইরকম কথা বলেছেন। শুরাইহ
(রাহঃ) তাদের অন্যতম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৪. অনুচ্ছেদঃ
উদ্বৃত্ত পানি বিক্রয় করা
১২৭১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْعَطَّارُ، عَنْ
عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي الْمِنْهَالِ، عَنْ إِيَاسِ بْنِ عَبْدٍ
الْمُزَنِيِّ، قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعِ الْمَاءِ
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَبُهَيْسَةَ عَنْ أَبِيهَا وَأَبِي
هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ وَأَنَسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ إِيَاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّهُمْ كَرِهُوا بَيْعَ الْمَاءِ . وَهُوَ
قَوْلُ ابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَدْ
رَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي بَيْعِ الْمَاءِ . مِنْهُمُ الْحَسَنُ
الْبَصْرِيُّ .
ইয়াস
ইবনু আবদ আল-মুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পানি
বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৪৭৬)
জাবির, বুহাইসা (তার পিতার সূত্রে), আবূ হুরাইরা, আইশা,
আনাস ও আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইয়াস (রাঃ)
হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী বেশিরভাগ আলিম
আমল করার পক্ষে সম্মতি দিয়েছেন।
পানি বিক্রয়কে তারা মাকরূহ বলেছেন। এই মত দিয়েছেন ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহ্মাদ
ও ইসহাক। পানি বিক্রয়ের পক্ষে কিছু আলিম অনুমতি প্রদান করেছেন। তাদের মধ্যে হাসান
বাসরী অন্যতম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৭২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ
يُمْنَعُ فَضْلُ الْمَاءِ لِيُمْنَعَ بِهِ الْكَلأُ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو الْمِنْهَالِ اسْمُهُ عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مُطْعِمٍ كُوفِيٌّ وَهُوَ الَّذِي رَوَى عَنْهُ حَبِيبُ بْنُ
أَبِي ثَابِتٍ . وَأَبُو الْمِنْهَالِ سَيَّارُ بْنُ سَلاَمَةَ بَصْرِيٌّ
صَاحِبُ أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ঘাস হতে
বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে লোকদের কোন প্রকার বাধা
দেওয়া নিষেধ।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৪৭৮), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আবূল মিনহালের
নাম আবদুর রাহমান, পিতা মুতঈম। তিনি কূফার অধিবাসী ছিলেন এবং তার নিকট হতে হাবীব ইবনু
আবূ সাবিত হাদীস বর্ণনা করেছেন। অপরদিকে আবূল মিনহাল সাইয়্যার ইবনু সালামা বাসরার
বাসিন্দা ছিলেন এবং তিনি আবূ বারযা আল-আসলামী (রাঃ)-এর সহচর ছিলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৫. অনুচ্ছেদঃ
পাল দেওয়ার উদ্দেশ্যে ষাঁড়
প্রদান করে মজুরি নেওয়া উচিত নয়
১২৭৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ، وَأَبُو عَمَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ،
قَالَ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحَكَمِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ،
قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ عَسْبِ الْفَحْلِ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ
بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُهُمْ فِي قَبُولِ الْكَرَامَةِ
عَلَى ذَلِكَ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, পাল দেওয়ার উদ্দেশ্যে ষাঁড় প্রদান করে মজুরি
নিতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, বুখারী
আবূ হুরাইরা, আনাস ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
এ হাদীসের সমর্থনে একদল আলিম মত দিয়েছেন। পাল দেওয়ার বিনিময়ে পুরস্কার গ্রহণের পক্ষে
অন্য একদল আলিম অনুমতি প্রদান করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৭৪
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ
بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْخُزَاعِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ،
عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ حُمَيْدٍ الرُّؤَاسِيِّ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ
رَجُلاً، مِنْ كِلاَبٍ سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ عَسْبِ
الْفَحْلِ فَنَهَاهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا نُطْرِقُ الْفَحْلَ فَنُكْرَمُ
. فَرَخَّصَ لَهُ فِي الْكَرَامَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ حُمَيْدٍ عَنْ
هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পাল দেওয়ার উদ্দেশ্যে ষাঁড় প্রদান করে মজুরি নেওয়া
প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট কিলাব গোত্রের এক লোক
প্রশ্ন করলে তিনি তা নিতে বারণ করেন। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা পাল দেওয়ার
উদ্দেশ্যে ষাঁড় দেই এবং আমাদেরকে (দাবি ব্যতীতই) পুরস্কার স্বরূপ কিছু দেওয়া হয়।
তিনি তাকে এ ধরণের পুরুস্কার নেওয়ার অনুমতি দেন।
সহীহ্, মিশকাত তাহকীক ছানী (২৮৬৬), বেচা-কেনার হাদীস
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গরীব বলেছেন। আমরা এ হাদীসটি
শুধু উল্লেখিত সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬. অনুচ্ছেদঃ
কুকুরের বিক্রয় মূল্য
প্রসঙ্গে
১২৭৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ يَحْيَى
بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَارِظٍ، عَنِ
السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " كَسْبُ الْحَجَّامِ خَبِيثٌ وَمَهْرُ الْبَغِيِّ
خَبِيثٌ وَثَمَنُ الْكَلْبِ خَبِيثٌ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي مَسْعُودٍ وَجَابِرٍ وَأَبِي
هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ عُمَرَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ رَافِعٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى
هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا ثَمَنَ الْكَلْبِ . وَهُوَ
قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ فِي ثَمَنِ كَلْبِ الصَّيْدِ .
রাফি
ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
রক্তক্ষরণের মজুরি ঘৃণিত, ব্যভিচারের বিনিময় মূল্য জঘন্য এবং কুকুরের বিক্রয়
মূল্যও ঘৃণিত।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম
উমার, আলী, ইবনু মাসঊদ, আবূ মাসঊদ, জাবির, আবূ হুরাইরা,
ইবনু আব্বাস, ইবনু উমার ও আবদুল্লাহ ইবনু জাফার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস
মোতাবিক বেশিরভাগ আলিম আমল করেছেন। কুকুরের বিক্রয় মূল্য গ্রহণকে তারা মাকরূহ বলেছেন।
এই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক। শিকারী কুকুরের বিক্রয় মূল্য গ্রহণের
পক্ষে কিছু আলিম অনুমতি প্রদান করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৭৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ،
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، ح وَحَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ،
عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم عَنْ ثَمَنِ الْكَلْبِ وَمَهْرِ الْبَغِيِّ وَحُلْوَانِ الْكَاهِنِ . هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
মাসঊদ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কুকুরের বিক্রয় মূল্য, যিনার বিনিময় এবং গণকের উপঢৌকন গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৫৯), নাসা-ঈ
এ হাদীসটি হাসান সহীহ্
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭. অনুচ্ছেদঃ
রক্তক্ষরণ কাজের বিনিময়ে
মজুরি গ্রহণ করা
১২৭৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ،
عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ ابْنِ مُحَيِّصَةَ، أَخِي
بَنِي حَارِثَةَ عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ اسْتَأْذَنَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فِي إِجَارَةِ الْحَجَّامِ فَنَهَاهُ عَنْهَا فَلَمْ يَزَلْ يَسْأَلُهُ
وَيَسْتَأْذِنُهُ حَتَّى قَالَ " اعْلِفْهُ نَاضِحَكَ وَأَطْعِمْهُ
رَقِيقَكَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ وَأَبِي
جُحَيْفَةَ وَجَابِرٍ وَالسَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
مُحَيِّصَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ
الْعِلْمِ . وَقَالَ أَحْمَدُ إِنْ سَأَلَنِي حَجَّامٌ نَهَيْتُهُ وَآخُذُ
بِهَذَا الْحَدِيثِ .
মুহাইয়্যিসা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রক্তক্ষরণের মজুরি নেওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অনুমতি চাইলে তিনি তাকে তা নিতে
নিষেধ করেন। তিনি তাঁর নিকট বারবার কাকুতি-মিনতি করতে থাকলেন। অবশেষে তিনি বললেনঃ
এই আয় তোমার পানি বহনকারী উট এবং তোমার গোলামের খাবারের জন্য খরচ কর।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৬৬), বেচা-কেনার হাদীস
রাফি ইবনু খাদীজ, আবূ জুহাইফা, জাবির ও সাইব ইবনু ইয়াযীদ
(রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। মুহাইয়্যিসা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী কিছু সংখ্যক আলিম আমল করেছেন। ইমাম
আহ্মাদ বলেছেন, আমার নিকট রক্তক্ষরণকারী মজুরি নেওয়ার অনুমতি চাইলে আমি তাকে অনুমতি
প্রদান করব না এবং নিজের মতের সপক্ষে এই হাদীসটি দলীল হিসাবে উপস্থাপন করব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৮. অনুচ্ছেদঃ
রক্তক্ষরণ কাজের মজুরি
নেওয়ার অনুমতি প্রসঙ্গে
১২৭৮
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، قَالَ
سُئِلَ أَنَسٌ عَنْ كَسْبِ الْحَجَّامِ، فَقَالَ أَنَسٌ احْتَجَمَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم وَحَجَمَهُ أَبُو طَيْبَةَ فَأَمَرَ لَهُ بِصَاعَيْنِ مِنْ
طَعَامٍ وَكَلَّمَ أَهْلَهُ فَوَضَعُوا عَنْهُ مِنْ خَرَاجِهِ وَقَالَ "
إِنَّ أَفْضَلَ مَا تَدَاوَيْتُمْ بِهِ الْحِجَامَةُ " . أَوْ "
إِنَّ مِنْ أَمْثَلِ دَوَائِكُمُ الْحِجَامَةَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ فِي كَسْبِ الْحَجَّامِ .
وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ .
হুমাইদ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রক্তক্ষরণকারীর পারিশ্রমিক প্রসঙ্গে আনাস
(রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) রক্তক্ষরণ করিয়েছেন। আবূ তাইবা তাঁর রক্তক্ষরণ করেন। তিনি তাকে দুই সা’
পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য দেওয়ার হুকুম দেন। তার মালিক পরিবারের সাথে তিনি আলোচনা করলে
তারা তার উপর ধার্যকৃত অর্থের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তিনি বলেনঃ তোমরা যেসব চিকিৎসা
গ্রহণ কর সে সবের মধ্যে রক্তক্ষরণ উত্তম চিকিৎসা। অথবা তোমাদের ঔষধগুলোর মধ্যে
রক্তক্ষরণ উত্তম ঔষধ।
সহীহ্, মুখতাসার শামাইল (৩০৯), বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ
আলী, ইবনু আব্বাস ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। রক্তক্ষরণের
মজুরি গ্রহণের পক্ষে একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈ সম্মতি দিয়েছেন। ইমাম শাফিঈরও এই
মত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৯. অনুচ্ছেদঃ
কুকুর ও বিড়ালের বিক্রয়
মূল্য নেওয়া মাকরূহ
১২৭৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ حُجْرٍ، وَعَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، قَالاَ أَنْبَأَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ،
عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ نَهَى رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ ثَمَنِ الْكَلْبِ وَالسِّنَّوْرِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ فِي إِسْنَادِهِ اضْطِرَابٌ وَلاَ يَصِحُّ فِي ثَمَنِ
السِّنَّوْرِ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ بَعْضِ
أَصْحَابِهِ عَنْ جَابِرٍ . وَاضْطَرَبُوا عَلَى الأَعْمَشِ فِي رِوَايَةِ هَذَا
الْحَدِيثِ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ ثَمَنَ الْهِرِّ
وَرَخَّصَ فِيهِ بَعْضُهُمْ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَرَوَى ابْنُ
فُضَيْلٍ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي حَازِمٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুকুর ও বিড়ালের বিক্রয় মূল্য নিতে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৬১), মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসের সনদে গরমিল আছে। বিড়ালের মূল্য
সম্পর্কে সহীহ্ হাদীস নেই। এই হাদীসটি আ’মাশের কোন কোন শাগরিদ জাবির (রাঃ) হতেও বর্ণনা
করেছেন। আ’মাশের স্তরে এসে বর্ণনাকারীগণ গরমিল করেছেন। বিড়ালের বিক্রয় মূল্য নেওয়াকে
একদল বিশেষজ্ঞ আলিম মাকরূহ বলেছেন, কিন্তু তা গ্রহণের পক্ষে অন্য দল সম্মতি প্রদান
করেছেন। এই শেষোক্ত মত পোষণ করেন ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাক। হাদীসটি ইবনু ফুযাইল আ’মাশ
হতে, তিনি আবূ হাযিম হতে, তিনি আবূ হুরাইরা হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে অন্যভাবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৮০
حَدَّثَنَا يَحْيَى
بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا عُمَرُ بْنُ زَيْدٍ
الصَّنْعَانِيُّ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ نَهَى النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم عَنْ أَكْلِ الْهِرِّ وَثَمَنِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَعُمَرُ بْنُ زَيْدٍ لاَ نَعْرِفُ كَبِيرَ أَحَدٍ رَوَى عَنْهُ
غَيْرَ عَبْدِ الرَّزَّاقِ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বিড়ালের গোশত খেতে এবং এর বিক্রয় মূল্য নিতে নিষেধ করেছেন।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩২৫০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আবদুর রাযযাক ব্যতীত অন্য
কোন বড় আলিম উমার ইবনু যাইদের নিকট হতে বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১২৮১
أَخْبَرَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي
الْمُهَزِّمِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ نَهَى عَنْ ثَمَنِ الْكَلْبِ، إِلاَّ
كَلْبَ الصَّيْدِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ يَصِحُّ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ . وَأَبُو الْمُهَزِّمِ اسْمُهُ يَزِيدُ بْنُ سُفْيَانَ وَتَكَلَّمَ
فِيهِ شُعْبَةُ بْنُ الْحَجَّاجِ وَضَعَّفَهُ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ جَابِرٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوُ هَذَا وَلاَ يَصِحُّ إِسْنَادُهُ أَيْضًا
.
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, শিকারী কুকুর ব্যতীত অন্যান্য কুকুরের বিক্রয়
মূল্য নিতে নিষেধ করা হয়েছে।
হাসান, তা’লীক আলা রাওযাতিন্ নাদিয়্যাহ্ (২/৯৪)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উল্লেখিত সনদসূত্রে সহীহ্ নয়।
আবূল মুহাযযিমের নাম ইয়াযীদ, পিতা সুফিয়ান। শুবা ইবনুল হাজ্জাজ তার সমালোচনা করেছেন
এবং তাকে দুর্বল বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে জাবির
(রাঃ)-ও উল্লেখিত হাদীসের মত একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এই সূত্রটিও সহীহ্
নয়।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৫১. অনুচ্ছেদঃ
গায়িকা ক্রয়-বিক্রয়
নিষিদ্ধ
১২৮২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، أَخْبَرَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ زَحْرٍ،
عَنْ عَلِيِّ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنْ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَبِيعُوا الْقَيْنَاتِ وَلاَ
تَشْتَرُوهُنَّ وَلاَ تُعَلِّمُوهُنَّ وَلاَ خَيْرَ فِي تِجَارَةٍ فِيهِنَّ
وَثَمَنُهُنَّ حَرَامٌ فِي مِثْلِ هَذَا أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : ( وَمِنَ
النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ )
إِلَى آخِرِ الآيَةِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ بْنِ
الْخَطَّابِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي أُمَامَةَ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ
مِثْلَ هَذَا مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ
فِي عَلِيِّ بْنِ يَزِيدَ وَضَعَّفَهُ وَهُوَ شَامِيٌّ .
আবূ
উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
গায়িকা বিক্রয় কর না, ক্রয়ও কর না এবং তাদেরকে গানের প্রশিক্ষণও দিও না। এদের
ব্যবসায়ের মধ্যে কোনরকম কল্যাণ নেই এবং এদের বিনিময় মূল্য হারাম। এই আয়াত এ
ধরণের লোকদের বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেঃ “মানুষের মধ্যে কিছু এমন ধরণের লোকও আছে,
যে মন ভুলানো কথা ক্রয় করে আনে, যেন আল্লাহ্ তা’আলার পথ হতে লোকদেরকে তাদের অজান্তেই
বিভ্রান্ত করতে পারে এবং আল্লাহ্ তা’আলার পথকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে। এই ধরণের
লোকদের জন্য আছে কঠিন ও অপমানজনক শাস্তি” (সূরাঃ লুকমান-৬)।
যঈফ, সহীহা (২৯২২), তবে আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার ঘটনা বর্ণনা সহীহ্
উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আমরা শুধু
উল্লেখিত সনদ সূত্রেই আবূ উমামা (রাঃ)-এর হাদীসটি জেনেছি। কিছু হাদীস বিশারদ আলী ইবনু
ইয়াযীদের সমালোচনা করেছেন এবং তাকে হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল বলেছেন। তিনি একজন সিরিয়ার
অধিবাসী ছিলেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৫২. অনুচ্ছেদঃ
দুই সহোদর ভাই অথবা মা ও
সন্তানকে বিক্রয়ের সময় পৃথক করা নিষেধ
১২৮৩
حَدَّثَنَا عُمَرُ
بْنُ حَفْصٍ الشَّيْبَانِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، قَالَ
أَخْبَرَنِي حُيَىُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ
الْحُبُلِيِّ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَقُولُ " مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الْوَالِدَةِ وَوَلَدِهَا فَرَّقَ
اللَّهُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَحِبَّتِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ
আইয়্যূব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ মা ও তার সন্তানদের পরস্পর হতে যে ব্যক্তি পৃথক করে
ফেলবে, আল্লাহ্ তা’আলা ঐ ব্যক্তি ও তার প্রিয়জনকে পরস্পর হতে কিয়ামাতের দিন পৃথক
করে দিবেন।
হাসান, মিশকাত (৩৩৬১)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১২৮৪
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ
بْنُ قَزَعَةَ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ حَمَّادِ
بْنِ سَلَمَةَ، عَنِ الْحَجَّاجِ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ مَيْمُونِ بْنِ أَبِي
شَبِيبٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ وَهَبَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
غُلاَمَيْنِ أَخَوَيْنِ فَبِعْتُ أَحَدَهُمَا فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " يَا عَلِيُّ مَا فَعَلَ غُلاَمُكَ " .
فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ " رُدَّهُ رُدَّهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ كَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمُ التَّفْرِيقَ بَيْنَ
السَّبْىِ فِي الْبَيْعِ وَيُكْرَهُ أَنْ يُفَرَّقَ بَيْنَ الْوَالِدَةِ
وَوَلَدِهَا وَبَيْنَ الْوَالِدِ وَالْوَلَدِ وَبَيْنَ الإِخْوَةِ وَالأَخَوَاتِ
فِي الْبَيْعِ . وَرَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي التَّفْرِيقِ بَيْنَ
الْمُوَلَّدَاتِ الَّذِينَ وُلِدُوا فِي أَرْضِ الإِسْلاَمِ . وَالْقَوْلُ
الأَوَّلُ أَصَحُّ . وَرُوِيَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ أَنَّهُ فَرَّقَ
بَيْنَ وَالِدَةٍ وَوَلَدِهَا فِي الْبَيْعِ فَقِيلَ لَهُ فِي ذَلِكَ فَقَالَ
إِنِّي قَدِ اسْتَأْذَنْتُهَا بِذَلِكَ فَرَضِيَتْ .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাকে দু’জন ক্রীতদাস দান করেন। এরা ছিল আপন ভাই। আমি তাদের একজনকে বেচে
দিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আলী! তোমার আর
একটি গোলাম কোথায়? আমি বিষয়টি তাঁকে জানালে তিনি বললেনঃ তাকে ফেরত নিয়ে আস,
তাকে ফেরত নিয়ে আস।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২২৪৯) অন্য শব্দে সংক্ষিপ্তভাবে সহীহ সনদে আবূ দাউদে আছে। (২৪১৫)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী
ও তাবিঈ কয়েদীদের বিক্রয় করার সময় (হাদীসে উল্লেখিত সম্পর্ক থাকলে) পরম্পর হতে আলাদা
করতে মানা করেছেন। অবশ্য কিছু আলিম ইসলামী রাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী কয়েদীদের একে অপরের
নিকট হতে আলাদা করে বিক্রয় করার সম্মতি দিয়েছেন। কিন্তু প্রথম মতই বেশী সহীহ। ইবরাহীম
নাখঈ প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, তিনি মা ও তার সন্তানকে আলাদা আলাদাভাবে বিক্রয় করেছেন।
তাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি তার (সন্তানের মায়ের) সম্মতি নিয়ে
তা করেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৫৩. অনুচ্ছেদঃ
গোলাম কিনে তাকে কাজে
নিযুক্ত করার পর দোষ-ত্রুটি ধরা পড়লে
১২৮৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، وَأَبُو عَامِرٍ
الْعَقَدِيُّ عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ مَخْلَدِ بْنِ خُفَافٍ، عَنْ
عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَضَى أَنَّ
الْخَرَاجَ بِالضَّمَانِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
আইশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফায়সালা
করেছেনঃ ক্ষতির দায় বহনের শর্তেই উপকারিতা ভোগের অধিকার সৃষ্টি হয়।
হাসান, ইবনু মা-জাহ (২২৪২, ২২৪৩)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। হাদীসটি একাধিক
সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১২৮৬
حَدَّثَنَا أَبُو
سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ أَخْبَرَنَا عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ الْمُقَدَّمِيُّ،
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم قَضَى أَنَّ الْخَرَاجَ بِالضَّمَانِ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى اسْتَغْرَبَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ هَذَا الْحَدِيثَ مِنْ حَدِيثِ
عُمَرَ بْنِ عَلِيٍّ . قُلْتُ تَرَاهُ تَدْلِيسًا قَالَ لاَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَقَدْ رَوَى مُسْلِمُ بْنُ خَالِدٍ الزَّنْجِيُّ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ
هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ وَرَوَاهُ جَرِيرٌ عَنْ هِشَامٍ أَيْضًا . وَحَدِيثُ جَرِيرٍ
يُقَالُ تَدْلِيسٌ دَلَّسَ فِيهِ جَرِيرٌ . لَمْ يَسْمَعْهُ مِنْ هِشَامِ بْنِ
عُرْوَةَ . وَتَفْسِيرُ الْخَرَاجِ بِالضَّمَانِ هُوَ الرَّجُلُ يَشْتَرِي
الْعَبْدَ فَيَسْتَغِلُّهُ ثُمَّ يَجِدُ بِهِ عَيْبًا فَيَرُدُّهُ عَلَى
الْبَائِعِ فَالْغَلَّةُ لِلْمُشْتَرِي لأَنَّ الْعَبْدَ لَوْ هَلَكَ هَلَكَ مِنْ
مَالِ الْمُشْتَرِي . وَنَحْوُ هَذَا مِنَ الْمَسَائِلِ يَكُونُ فِيهِ
الْخَرَاجُ بِالضَّمَانِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى اسْتَغْرَبَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَعِيلَ هَذَا الْحَدِيثَ مِنْ
حَدِيثِ عُمَرَ بْنِ عَلِيٍّ قُلْتُ تَرَاهُ تَدْلِيسًا قَالَ لَا
আইশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফায়সালা করেছেনঃ
ক্ষতির দায় বহনের শর্তেই উপকারিতা ভোগের অধিকার সৃষ্টি হয়।
হাসান, দেখুন পূর্বের হাদীস
এ হাদীসটি হিশাম ইবনু উরওয়ার সনদসূত্রে হাসান সহীহ্
গারীব। হিশাম ইবনু উরওয়া হতে মুসলিম ইবনু খালিদ এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। জারীরও হিশাম
হতে বর্ণনা করেছেন। জারীরের বর্ণনায় তাদলীস আছে। জারীর তাদলীস করেছেন। হিশাম হতে তিনি তা শুনতে পাননি।
“আল-খারাজ বিয-যামান”-এর ব্যাখ্যা হলঃ যেমন এক লোক একটি গোলাম কিনলো । সে তাকে দিয়ে
কাজও করাল। তারপর তার নিকট এর দোষ ধরা পড়ল। বিক্রেতাকে গোলামটি ফিরত প্রদান করতে হবে,
তবে তাকে দিয়ে কাজ করানোর আয় ক্রয়কারীই ভোগ করবে। কারণ, গোলামটি তার নিকট ফিরতের
পূর্বে মৃত্যু বরণ করলে এই আর্থিক ক্ষতি ক্রেতাকেই বহন করতে হত, বিক্রেতার কোন রকম
ক্ষতি হত না। এজন্যই তাকে দিয়ে সুবিধা ভোগের অধিকার অর্জিত হয়েছে। অনুরূপ ক্ষেত্রসমূহে
“আল-খারাজ বিয যামান” নীতি প্রযোজ্য। আবূ ঈসা বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল এই হাদীসটিকে
উমার ইবনু আলীর হাদীস হিসেবে গারীব মনে করেন, আমি বললাম, আপনিকি হাদীসটিকে তাদলীস মনে
করেন, তিনি বললেন, না।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৫৪. অনুচ্ছেদঃ
বাগানের ভিতর দিয়ে চলাচলের
সময় ফল খাওয়ার অনুমতি
১২৮৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
سُلَيْمٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ دَخَلَ حَائِطًا
فَلْيَأْكُلْ وَلاَ يَتَّخِذْ خُبْنَةً " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَعَبَّادِ بْنِ شُرَحْبِيلَ وَرَافِعِ بْنِ عَمْرٍو
وَعُمَيْرٍ مَوْلَى آبِي اللَّحْمِ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ إِلاَّ
مِنْ حَدِيثِ يَحْيَى بْنِ سُلَيْمٍ . وَقَدْ رَخَّصَ فِيهِ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ لاِبْنِ السَّبِيلِ فِي أَكْلِ الثِّمَارِ وَكَرِهَهُ بَعْضُهُمْ إِلاَّ
بِالثَّمَنِ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (অপরের)
বাগানে প্রবেশের পর কোন লোক তা হতে খেতে পারে কিন্তু পুটুলি বেঁধে সাথে করে নিয়ে
যেতে পারবে না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩০১), দেখুন পরবর্তী হাদীস
আবদুল্লাহ ইবনু আমর, আব্বাস ইবনু শুরাহ্বিল, রাফি ইবনু
আমর, আবূ লাহামের মুক্তদাস উমাইর ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে । ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা গারীব বলেছেন । আমরা এটাকে শুধু
ইয়াহ্ইয়া ইবনু সুলাইমের সনদসূত্রেই জেনেছি । মুসাফিরদেরকে (পথিমধ্যে) বাগানের ফল খাওয়ার
পক্ষে একদল আলিম অনুমতি প্রদান করেছেন, আর একদল মূল্য প্রদান না করে ফল খাওয়া মাকরূহ
বলেছেন ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৮৮
حَدَّثَنَا أَبُو
عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ الْخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ
مُوسَى، عَنْ صَالِحِ بْنِ أَبِي جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ رَافِعِ بْنِ
عَمْرٍو، قَالَ كُنْتُ أَرْمِي نَخْلَ الأَنْصَارِ فَأَخَذُونِي فَذَهَبُوا بِي
إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " يَا رَافِعُ لِمَ تَرْمِي
نَخْلَهُمْ " . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ الْجُوعُ . قَالَ
" لاَ تَرْمِ وَكُلْ مَا وَقَعَ أَشْبَعَكَ اللَّهُ وَأَرْوَاكَ "
. هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
রাফি
ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি আনসারদের খেজুর গাছে ঢিল ছুঁড়ে বেড়াতাম।
তারা আমাকে গ্রেফতার করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নিকটে নিয়ে আসলে তিনি বললেনঃ হে রাফি। তুমি তাদের খেজুর গাছে কেন ঢিল ছুঁড়? আমি
বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! ক্ষুধার কারণে। তিনি বললেনঃ আর ঢিল ছুঁড়বে না, নীচে
যা পড়বে তা খাবে। আল্লাহ তা‘আলা তোমার পেট পূর্ণ করে দিন এবং তোমাকে সম্পূর্ণরূপে
তৃপ্ত করুন।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২২৯৯) এ হাদীসটি হাসান, গারীব সহীহ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১২৮৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
سُئِلَ عَنِ الثَّمَرِ الْمُعَلَّقِ فَقَالَ " مَنْ أَصَابَ مِنْهُ مِنْ
ذِي حَاجَةٍ غَيْرَ مُتَّخِذٍ خُبْنَةً فَلاَ شَىْءَ عَلَيْهِ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আমর
ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদা থেকে বর্ণিতঃ
আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার
সূত্রে বর্ণিত আছে, গাছের বোঁটায় ঝুলন্ত ফল প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ যদি কোন লোক নিরুপায় হয়ে তা খায় কিন্তু
পুটুলি বেঁধে না নিয়ে যায় তবে তার কোন অন্যায় হবে না ।
হাসান, ইরওয়া (২৪১৩)
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান বলেছেন ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৫৫. অনুচ্ছেদঃ
বিক্রীত জিনিস হতে
অনির্দিষ্ট পরিমাণ বাদ দেওয়া নিষেধ
১২৯০
حَدَّثَنَا زِيَادُ
بْنُ أَيُّوبَ الْبَغْدَادِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبَّادُ بْنُ الْعَوَّامِ، قَالَ
أَخْبَرَنِي سُفْيَانُ بْنُ حُسَيْنٍ، عَنْ يُونُسَ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنْ عَطَاءٍ،
عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنِ
الْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ وَالْمُخَابَرَةِ وَالثُّنْيَا إِلاَّ أَنْ
تُعْلَمَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ يُونُسَ بْنِ عُبَيْدٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ جَابِرٍ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘মুহাকালা’, ‘মুযাবানা’, ‘মুখাবারা’ ও ‘সুন্য়া’ ধরণের
কেনা-বেচাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন, যদি না
(পরিমাণ) অবগত হয়।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা উল্লেখিত সনদসূত্রে হাসান সহীহ্
গারীব বলেছেন ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৬. অনুচ্ছেদঃ
খাদ্যশস্য ক্রয় করার পর তা
হস্তগত হওয়ার পূর্বে বিক্রয় করা নিষেধ
১২৯১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ
طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" مَنِ ابْتَاعَ طَعَامًا فَلاَ يَبِعْهُ حَتَّى يَسْتَوْفِيَهُ "
. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَأَحْسِبُ كُلَّ شَيْءٍ مِثْلَهُ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا بَيْعَ الطَّعَامِ حَتَّى يَقْبِضَهُ
الْمُشْتَرِي . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِيمَنِ ابْتَاعَ
شَيْئًا مِمَّا لاَ يُكَالُ وَلاَ يُوزَنُ مِمَّا لاَ يُؤْكَلُ وَلاَ يُشْرَبُ
أَنْ يَبِيعَهُ قَبْلَ أَنْ يَسْتَوْفِيَهُ . وَإِنَّمَا التَّشْدِيدُ عِنْدَ
أَهْلِ الْعِلْمِ فِي الطَّعَامِ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক
খাদ্যশস্য কিনে তা হস্তগত হওয়ার পূর্বে যেন বিক্রয় না করে। ইবনু আব্বাস (রাঃ)
বলেন, আমি মনে করি এই নির্দেশ প্রত্যেক বস্তুর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৮৬৮,২১৭১) নাসা-ঈ
জাবির ইবনু উমার ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
এ হাদীস অনু্যায়ী বেশিরভাগ আলিম আমল করেছেন। কোন জিনিস কিনে হস্তগত হওয়ার পূর্বেই তা
বিক্রয়কে তারা মাকরূহ্ বলেছেন। অন্য একদল আলিম বলেছেন, যদি কোন জিনিস খাদ্যশস্য বা
পানীয় দ্রব্য না হয় এবং ওজন-পরিমাপ না করে তা ক্রয়-বিক্রয়ের প্রচলন থাকে তবে এরকম জিনিস
কিনে হস্তগত হওয়ার পূর্বে বিক্রয় করা যেতে পারে। তাদের মতে উল্লেখিত নিষেধাজ্ঞা শুধু
খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাক একথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৭. অনুচ্ছেদঃ
কোন লোক তার ভাইয়ের বিক্রয়ের
উপর যেন বিক্রয়ের প্রস্তাব না দেয়
১২৯২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يَبِيعُ بَعْضُكُمْ عَلَى
بَيْعِ بَعْضٍ وَلاَ يَخْطُبُ بَعْضُكُمْ عَلَى خِطْبَةِ بَعْضٍ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَسَمُرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " لاَ يَسُومُ الرَّجُلُ عَلَى سَوْمِ
أَخِيهِ " . وَمَعْنَى الْبَيْعِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ هُوَ السَّوْمُ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের
মধ্যে কোন লোক যেন অন্যের বিক্রয়ের প্রস্তাবের উপর নিজের বিক্রয়ের প্রস্তাব না
দেয়। একইভাবে তোমাদের মধ্যে কেউ যেন অন্যের বিয়ের প্রস্তাবের উপর নিজের বিয়ের
প্রস্তাব না দেয়।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৮৬৮,২১৭১), নাসা-ঈ
আবূ হুরাইরা ও সামুরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেনঃ “অন্যের দর-দামের উপর কোন ব্যক্তি যেন নিজের দর-দাম
না করে”। একদল আলিমের মতে এ হাদীসে “বাই” বেচা-কেনা অর্থ দরদাম করা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৮. অনুচ্ছেদঃ
মদের ব্যবসায় এবং
তৎসম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা
১২৯৩
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ
بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ سَمِعْتُ
لَيْثًا، يُحَدِّثُ عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبَّادٍ، عَنْ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي
طَلْحَةَ، أَنَّهُ قَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ إِنِّي اشْتَرَيْتُ خَمْرًا
لأَيْتَامٍ فِي حِجْرِي . قَالَ " أَهْرِقِ الْخَمْرَ وَاكْسِرِ
الدِّنَانَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَعَائِشَةَ وَأَبِي
سَعِيدٍ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ أَبِي طَلْحَةَ رَوَى الثَّوْرِيُّ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ السُّدِّيِّ
عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبَّادٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ أَبَا طَلْحَةَ كَانَ عِنْدَهُ .
وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ اللَّيْثِ .
আবূ
তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমি কিছু মদ কিনেছি আমার
অধীনস্ত কয়েকটি ইয়াতীমের জন্য। তিনি বলেনঃ তা ঢেলে ফেলে দাও এবং পাত্রগুলো ভাঙ্গে
ফেল।
হাসান, মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৬৫৯)
জাবির, আইশা, আবূ সাঈদ, ইবনু মাসঊদ, ইবনু উমার ও আনাস
(রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সাওরী আবূ তালহার এ হাদীসটি
সুদ্দী হতে, তিনি ইয়াহ্ইয়া ইবনু আব্বাস হতে আনাস (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এই
পরবর্তী সূত্রটি প্রথম সূত্রের চেয়ে অধিক সহীহ্।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৫৯. অনুচ্ছেদঃ
মদ হতে সিরকা বানানো নিষেধ
১২৯৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ
السُّدِّيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبَّادٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ سُئِلَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيُتَّخَذُ الْخَمْرُ خَلاًّ قَالَ " لاَ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মদকে সিরকা বানানো বিষয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ না, তা করা যাবে না।
সহীহ্, মিশকাত, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৯৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ مُنِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا عَاصِمٍ، عَنْ شَبِيبِ بْنِ بِشْرٍ،
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي
الْخَمْرِ عَشَرَةً عَاصِرَهَا وَمُعْتَصِرَهَا وَشَارِبَهَا وَحَامِلَهَا
وَالْمَحْمُولَةَ إِلَيْهِ وَسَاقِيَهَا وَبَائِعَهَا وَآكِلَ ثَمَنِهَا
وَالْمُشْتَرِيَ لَهَا وَالْمُشْتَرَاةَ لَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَنَسٍ . وَقَدْ رُوِيَ نَحْوُ هَذَا عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
.
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, শারাবের সাথে সম্পৃক্ত দশ শ্রেণীর লোককে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অভিসম্পাত করেছেন। এরা হলঃ মদ
তৈরিকারী, মদের ফরমায়েশকারী, মদ পানকারী, মদ বহনকারী, যার জন্য মদ বহন করা হয়, মদ
পরিবেশনকারী, মদ বিক্রয়কারী, এর মূল্য ভোগকারী, মদ ক্রেতা এবং যার জন্য মদ ক্রয়
করা হয়।
হাসান সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৩৮১)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা আনাসের হাদীস হিসেবে গারীব বলেছেন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুরূপ হাদীস ইবনু আব্বাস, ইবনু
মাসঊদ ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৬০. অনুচ্ছেদঃ
মালিকের বিনা অনুমতিতে তার
পশুর দুধ দোহন করা
১২৯৬
حَدَّثَنَا أَبُو
سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَتَى أَحَدُكُمْ عَلَى مَاشِيَةٍ فَإِنْ
كَانَ فِيهَا صَاحِبُهَا فَلْيَسْتَأْذِنْهُ فَإِنْ أَذِنَ لَهُ فَلْيَحْتَلِبْ
وَلْيَشْرَبْ وَلاَ يَحْمِلْ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهَا أَحَدٌ فَلْيُصَوِّتْ
ثَلاَثًا فَإِنْ أَجَابَهُ أَحَدٌ فَلْيَسْتَأْذِنْهُ فَإِنْ لَمْ يُجِبْهُ أَحَدٌ
فَلْيَحْتَلِبْ وَلْيَشْرَبْ وَلاَ يَحْمِلْ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ عُمَرَ وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَمُرَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ
وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَالَ عَلِيُّ بْنُ
الْمَدِينِيِّ سَمَاعُ الْحَسَنِ مِنْ سَمُرَةَ صَحِيحٌ . وَقَدْ تَكَلَّمَ
بَعْضُ أَهْلِ الْحَدِيثِ فِي رِوَايَةِ الْحَسَنِ عَنْ سَمُرَةَ وَقَالُوا
إِنَّمَا يُحَدِّثُ عَنْ صَحِيفَةِ سَمُرَةَ .
সামুরা
ইবনু জুনদাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের
কোন লোক কোন পশু পালের নিকট এসে পড়লে সেখানে এর মালিককে পেলে (দুধ দোহনের জন্য)
তার অনুমতি চাইবে। সে অনুমতি দিলে দুধ দোহাবে এবং পান করবে। কোন লোক যদি সেখানে
উপস্থিত না থাকে তবে তিনবার ডাক দিবে। তার ডাকে কোন লোক সাড়া দিলে তবে তার নিকট
অনুমতি চাইবে। তার ডাকে কোন লোক সাড়া না দিলে সে দুধ দোহাবে, তা পান করবে কিন্তু
সাথে করে নিয়ে যেতে পারবে না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩০০)
উমার ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। সামুরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস
অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। ইমাম আহ্মাদ এবং ইসহাকও একথা বলেছেন। আলী ইবনু মাদীনী
বলেন, সামুরা (রাঃ)-এর নিকট হাসান যে শুনেছেন তা সত্য। সামুরা (রাঃ)-এর নিকট হাসান
বাসরীর হাদীস শুনার ব্যাপারে একদল হাদীস বিশারদ ভিন্নমত পোষণ করেন। তারা বলেছেন, সামুরা
(রাঃ)-এর নিকট হতে হাসান (রহঃ) শুনে বর্ণনা
করেননি, বরঞ্চ তার পান্ডুলিপি হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬১. অনুচ্ছেদঃ
মৃত জীবের চামড়া ও মূর্তি
বিক্রয় করা
১২৯৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ عَطَاءِ
بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَامَ الْفَتْحِ وَهُوَ بِمَكَّةَ يَقُولُ "
إِنَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ حَرَّمَ بَيْعَ الْخَمْرِ وَالْمَيْتَةِ وَالْخِنْزِيرِ
وَالأَصْنَامِ " . فَقِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ شُحُومَ
الْمَيْتَةِ فَإِنَّهُ يُطْلَى بِهَا السُّفُنُ وَيُدْهَنُ بِهَا الْجُلُودُ
وَيَسْتَصْبِحُ بِهَا النَّاسُ قَالَ " لاَ هُوَ حَرَامٌ " .
ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ ذَلِكَ " قَاتَلَ
اللَّهُ الْيَهُودَ إِنَّ اللَّهَ حَرَّمَ عَلَيْهِمُ الشُّحُومَ فَأَجْمَلُوهُ
ثُمَّ بَاعُوهُ فَأَكَلُوا ثَمَنَهُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
জাবির
ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি মক্কা বিজয়ের বছর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে সেখানে থাকাবস্থায় বলতে শুনেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ও তার রাসূল
শারাব, মৃত জীব, শূকর ও মূর্তির ব্যবসা হারাম করেছেন। তাঁকে বলা হল, হে আল্লাহ্র
রাসূল! মৃত জীবের চর্বি প্রসঙ্গে আপনার বক্তব্য কি? এটাতো ব্যবহার করা হয় নৌকায়
প্রলেপের কাজে ও চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার কাজে এবং লোকেরা এটা দিয়ে প্রদীপ
জ্বালায়। তিনি বললেনঃ না, এটা হারাম। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আরো বললেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা ইয়াহুদীদের ধ্বংস করে দিন! আল্লাহ্ তা’আলা
চর্বিকে তাদের জন্য হারাম করে দিয়েছিলেন, কিন্তু তারা তা গলিয়ে বিক্রয় করেছে এবং
এর মূল্য ভক্ষণ করেছে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৬৭), নাসা-ঈ
উমার ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী
আলিমগণ আমল করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬২. অনুচ্ছেদঃ
হেবা (দান) ফিরিয়ে নেওয়া
জঘন্য কাজ
১২৯৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ،
حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَيْسَ لَنَا مَثَلُ السَّوْءِ
الْعَائِدُ فِي هِبَتِهِ كَالْكَلْبِ يَعُودُ فِي قَيْئِهِ " . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ
قَالَ " لاَ يَحِلُّ لأَحَدٍ أَنْ يُعْطِيَ عَطِيَّةً فَيَرْجِعَ فِيهَا
إِلاَّ الْوَالِدَ فِيمَا يُعْطِي وَلَدَهُ " .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
আমাদের জন্য নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করা শোভনীয় নয়। দান (হেবা) করার পর যে লোক
তা আবার ফিরিয়ে নেয় সে এমন এক কুকুরের সমতুল্য যে বমি করার পর তা আবার ভক্ষণ
করে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩৮৫), নাসা-ঈ
এ অনুচ্ছেদে ইবনু উমর (রাঃ)-এর সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ কোন কিছু দান করে তা আবার ফিরিয়ে
নেওয়া কোন ব্যক্তির জন্য হালাল নয়। তবে পিতা নিজ পুত্রকে দান করে তা আবার ফিরিয়ে
নিতে পারে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৯৯
حَدَّثَنَا بِذَلِكَ
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ عَنْ حُسَيْنٍ
الْمُعَلِّمِ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ أَنَّهُ سَمِعَ طَاوُسًا يُحَدِّثُ عَنِ
ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ يَرْفَعَانِ الْحَدِيثَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ رضى
الله عنهما حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ
بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ قَالُوا مَنْ وَهَبَ هِبَةً لِذِي رَحِمٍ مَحْرَمٍ فَلَيْسَ لَهُ
أَنْ يَرْجِعَ فِيهَا وَمَنْ وَهَبَ هِبَةً لِغَيْرِ ذِي رَحِمٍ مَحْرَمٍ فَلَهُ
أَنْ يَرْجِعَ فِيهَا مَا لَمْ يُثَبْ مِنْهَا . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ .
وَقَالَ الشَّافِعِيُّ لاَ يَحِلُّ لأَحَدٍ أَنْ يُعْطِيَ عَطِيَّةً فَيَرْجِعَ
فِيهَا إِلاَّ الْوَالِدَ فِيمَا يُعْطِي وَلَدَهُ . وَاحْتَجَّ الشَّافِعِيُّ
بِحَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لاَ يَحِلُّ لأَحَدٍ أَنْ يُعْطِيَ عَطِيَّةً فَيَرْجِعَ فِيهَا إِلاَّ
الْوَالِدَ فِيمَا يُعْطِي وَلَدَهُ " .
ইবনু
উমার ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু উমার ও ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর সূত্রে উপরোক্ত হাদীসটি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে মারফূ হিসেবে বর্ণিত আছে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩৮৬)
আবূ ঈসা বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান
সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী একদল সাহাবী ও তাবিঈ আমল করেছেন। তারা বলেছেন, কোন ব্যক্তির
পক্ষে নিজের নিকটাত্মীয়কে কিছু দান করে বা উপহার দিয়ে তা ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার
নেই। তবে নিকটাত্মীয় ব্যতীত অন্য কাউকে দান করে এবং তার বিনিময়ে কিছু গ্রহণ না করলে
উক্ত দান ফিরত নেওয়া যায়। সুফিয়ান সাওরীও একথা বলেছেন। শাফিঈ বলেছেন, পিতা ব্যতীত
অন্য কোন লোক দান বা উপহার ফিরিয়ে নিতে পারবে না। তিনি নিজ মতের সপক্ষে উপরে বর্ণিত
ইবনু উমারের হাদীস দলীল হিসাবে গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৩. অনুচ্ছেদঃ
আরাইয়া এবং এই সম্পর্কিত
অনুমতি প্রসঙ্গে
১৩০০
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ،
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى
عَنِ الْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ إِلاَّ أَنَّهُ قَدْ أَذِنَ لأَهْلِ
الْعَرَايَا أَنْ يَبِيعُوهَا بِمِثْلِ خَرْصِهَا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ
هَكَذَا رَوَى مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ هَذَا الْحَدِيثَ . وَرَوَى أَيُّوبُ
وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ وَمَالِكُ بْنُ أَنَسٍ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ
عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنِ الْمُحَاقَلَةِ
وَالْمُزَابَنَةِ . وَبِهَذَا الإِسْنَادِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنْ زَيْدِ بْنِ
ثَابِتٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ رَخَّصَ فِي الْعَرَايَا .
وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ .
যাইদ
ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘মুহাকালা’ ও ‘মুযাবানা’ ধরণের বেচা-কেনাকে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন, কিন্তু ‘আরাইয়ার’ অনুমতি
দিয়েছেন-অনুমানে যে পরিমাণ নির্ধারিত হয় তদানুযায়ী বিক্রয় করতে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৬৮, ২২৬৯), নাসা-ঈ
আবূ হুরাইরা ও জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। যাইদ (রাঃ) হতে মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাকও এরকমই বর্ণনা করেছেন।
আইয়্যূব, উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার এবং মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) নাফির সূত্রে, তিনি ইবনু
উমারের সূত্রে বর্ণনা করেছেন, ‘মুহাকালা’ ও ‘মুযাবানা’ ধরণের কেনা-বেচাকে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষিদ্ধ করেছেন। যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতে ইবনু
উমার (রাঃ) একই সনদে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আরাইয়ার অনুমতি দিয়েছেন।
মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাকের হাদীসের তুলনায় এ হাদীসটি অনেক বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩০১
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ
دَاوُدَ بْنِ حُصَيْنٍ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، مَوْلَى ابْنِ أَبِي أَحْمَدَ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَخَّصَ فِي بَيْعِ
الْعَرَايَا فِيمَا دُونَ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ أَوْ كَذَا .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পাঁচ ওয়াসাকের কম পরিমাণের মধ্যে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরাইয়া পদ্ধতিতে বিক্রয়ের সম্মতি দিয়েছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঁচ ওয়াসাক বা তার কম পরিমাণের মধ্যে আরাইয়া পদ্ধতিতে বিক্রয়ের
অনুমতি প্রদান করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩০২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ
ابْنِ عُمَرَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم أَرْخَصَ فِي بَيْعِ الْعَرَايَا بِخَرْصِهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْهُمُ الشَّافِعِيُّ
وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ وَقَالُوا إِنَّ الْعَرَايَا مُسْتَثْنَاةٌ مِنْ جُمْلَةِ
نَهْىِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذْ نَهَى عَنِ الْمُحَاقَلَةِ
وَالْمُزَابَنَةِ وَاحْتَجُّوا بِحَدِيثِ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَحَدِيثِ أَبِي
هُرَيْرَةَ وَقَالُوا لَهُ أَنْ يَشْتَرِيَ مَا دُونَ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ .
وَمَعْنَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم أَرَادَ التَّوْسِعَةَ عَلَيْهِمْ فِي هَذَا لأَنَّهُمْ شَكَوْا إِلَيْهِ
وَقَالُوا لاَ نَجِدُ مَا نَشْتَرِي مِنَ الثَّمَرِ إِلاَّ بِالتَّمْرِ فَرَخَّصَ
لَهُمْ فِيمَا دُونَ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ أَنْ يَشْتَرُوهَا فَيَأْكُلُوهَا رُطَبًا
.
যাইদ
ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুমান
করে পরিমাণ নির্ধারণ করার পর আরাইয়া পদ্ধতিতে বিক্রয়ের অনুমতি প্রদান করেছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আবূ হুরাইরা
(রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। তাদের
মধ্যে ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও অন্তর্ভুক্ত আছেন। তারা বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘মুহাকালা’ ও ‘মুযাবানা’ নিষিদ্ধ করেছেন এবং তা হতে আরাইয়াকে
বাদ রেখেছেন। তারা দলীল হিসাবে আবূ হুরাইরা ও যাইদ (রাঃ)-এর হাদীসকে গ্রহণ করেছেন।
তাদের মতে আরাইয়ার ফল পাঁচ ওয়াসাকের কম পরিমাণের মধ্যে (পরিপক্ক ফলের বিনিময়ে) কেনা
জায়িয। কিছু সংখ্যক আলিমের মতে, এই নির্দেশের মর্মার্থ এই যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দরিদ্র লোকদেরকে এ ব্যাপারে কিছুটা সুযোগ দিতে চেয়েছেন। কেননা,
তারা তাঁর নিকট আবেদন করে যে, তারা (আরাইয়ার) গাছের কাঁচা ফল কেনার জন্য শুধু পাকা
ফলই দিতে পারে সুতরাং তিনি তাজা খেজুর খাওয়ার সুযোগকে বৃদ্ধির জন্য আরাইয়ার পরিমাণ
পাঁচ ওয়াসাকের কমের মধ্যে সীমাবদ্ধ করেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৪. অনুচ্ছেদঃ
শুকনা ফলের পরিবর্তে গাছের
কাঁচা ফল বিক্রয় নিষিদ্ধ
১৩০৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ
بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ
الْوَلِيدِ بْنِ كَثِيرٍ، حَدَّثَنَا بُشَيْرُ بْنُ يَسَارٍ، مَوْلَى بَنِي
حَارِثَةَ أَنَّ رَافِعَ بْنَ خَدِيجٍ، وَسَهْلَ بْنَ أَبِي حَثْمَةَ، حَدَّثَاهُ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ الْمُزَابَنَةِ
الثَّمَرِ بِالتَّمْرِ إِلاَّ لأَصْحَابِ الْعَرَايَا فَإِنَّهُ قَدْ أَذِنَ
لَهُمْ وَعَنْ بَيْعِ الْعِنَبِ بِالزَّبِيبِ وَعَنْ كُلِّ ثَمَرٍ بِخَرْصِهِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
.
রাফি
ইবনু খাদীজ ও সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
শুকনো ফলের পরিবর্তে গাছের কাঁচা ফল (সংগৃহীত) বিক্রয় করতে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন, কিন্তু আরাইয়া
ব্যবসায়ীদের আরাইয়া করার অনুমতি দিয়েছেন। তিনি একইভাবে তাজা আঙ্গুরের বিনিময়ে
শুকনো আঙ্গুর এবং অনুমানে পরিমাণ নির্ধারণ করে ফল বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা উল্লেখিত সনদসূত্রে হাসান সহীহ্
গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৫. অনুচ্ছেদঃ
ক্রেতাকে বিভ্রান্ত করার
উদ্দেশ্যে (নকল ক্রেতা সেজে) দর-দাম করা
১৩০৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ قُتَيْبَةُ يَبْلُغُ بِهِ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَنَاجَشُوا " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ
أَهْلِ الْعِلْمِ . كَرِهُوا النَّجْشَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَالنَّجْشُ أَنْ
يَأْتِيَ الرَّجُلُ الَّذِي يَفْصِلُ السِّلْعَةَ إِلَى صَاحِبِ السِّلْعَةِ
فَيَسْتَامُ بِأَكْثَرَ مِمَّا تَسْوَى وَذَلِكَ عِنْدَمَا يَحْضُرُهُ
الْمُشْتَرِي يُرِيدُ أَنْ يَغْتَرَّ الْمُشْتَرِي بِهِ وَلَيْسَ مِنْ رَأْيِهِ
الشِّرَاءُ إِنَّمَا يُرِيدُ أَنْ يَخْدَعَ الْمُشْتَرِيَ بِمَا يَسْتَامُ وَهَذَا
ضَرْبٌ مِنَ الْخَدِيعَةِ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَإِنْ نَجَشَ رَجُلٌ
فَالنَّاجِشُ آثِمٌ فِيمَا يَصْنَعُ وَالْبَيْعُ جَائِزٌ لأَنَّ الْبَائِعَ غَيْرُ
النَّاجِشِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর ‘নাজাশ’ (ক্রেতাকে ঠকানোর জন্য দ্রব্যের দরদাম) কর না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৭৪), নাসা-ঈ
ইবনু উমার ও আনাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস
অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। তারা বেচা-কেনার ক্ষেত্রে ‘নাজাশ’ করাকে মাকরূহ বলেছেন।
আবূ ঈসা বলেন, নাজাশ বা তানাজুশ-এর অর্থ হলঃ এক লোক বিক্রেতার মালের দেখাশোনা করে এবং
সে তার মালের দর-দাম প্রসঙ্গে ওয়াকিফহাল। যখন কোন ক্রেতা বিক্রেতার নিকট এসে মালের
দামাদামি করে, তখন সে এসে উপস্থিত হয়। সে নকল ক্রেতার রূপ নিয়ে এসে ক্রেতার চেয়েও
বেশি দাম হাঁকে। এখানে ক্রেতাকে ধোঁকায় ফেলে বিক্রেতার মাল বেশি মূল্যে বিক্রয় করাই
তার উদ্দেশ্য। ইহা এক প্রকার প্রতারণা। ইমাম শাফিঈ বলেছেন, যে লোক ‘নাজাশ’ করে সে গুনাহ্গার
হবে কিন্তু আইনগতভাবে বিক্রয়টি হালাল হবে। কেননা, মূল বিক্রেতা প্রতারণা করেনি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৬. অনুচ্ছেদঃ
ওজনে কিছুটা বেশি দেওয়া
১৩০৫
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ،
وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ
سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ سُوَيْدِ بْنِ قَيْسٍ، قَالَ جَلَبْتُ أَنَا
وَمَخْرَفَةُ الْعَبْدِيُّ، بَزًّا مِنْ هَجَرَ فَجَاءَنَا النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم فَسَاوَمَنَا بِسَرَاوِيلَ وَعِنْدِي وَزَّانٌ يَزِنُ بِالأَجْرِ
فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلْوَزَّانِ " زِنْ وَأَرْجِحْ
" . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ سُوَيْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَهْلُ الْعِلْمِ
يَسْتَحِبُّونَ الرُّجْحَانَ فِي الْوَزْنِ . وَرَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ
عَنْ سِمَاكٍ فَقَالَ عَنْ أَبِي صَفْوَانَ وَذَكَرَ الْحَدِيثَ .
সুয়াইদ
ইবনু কাইস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাজার নামক জায়গা হতে আমি ও মাখরাফা আল-আবদী
(রাঃ) কিছু কাপড় আমদানি করলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের
নিকট এলেন। তিনি আমাদের নিকট হতে একটি পায়জামা কেনার জন্য দামাদামি করলেন। আমাদের
নিকটই একজন কয়াল (পরিমাপক) উপস্থিত ছিল। পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সে ওজন করে দিত।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (দ্রব্যের মূল্য পরিশোধকালে)
কয়ালকে বলেনঃ ওজন কর এবং কিছুটা বেশি দাও।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২২০)
জাবির ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। সুয়াইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। ওজনের সময়
একটু বেশি দেওয়াকে বিশেষজ্ঞ আলিমগণ উত্তম বলেছেন। সিমাকের সূত্রে শুবা উক্ত হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন এবং সনদে আবূ সাফওয়ানকে সিমাকের পরে যোগ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৭. অনুচ্ছেদঃ
অভাবী ঋণগ্রস্তকে সময়
দেওয়া এবং তার সাথে ভদ্রতা বজায় রাখা
১৩০৬
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ سُلَيْمَانَ الرَّازِيُّ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ
قَيْسٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَنْظَرَ
مُعْسِرًا أَوْ وَضَعَ لَهُ أَظَلَّهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تَحْتَ ظِلِّ
عَرْشِهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَبِي الْيَسَرِ وَأَبِي قَتَادَةَ وَحُذَيْفَةَ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَعُبَادَةَ
وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক অভাবী ঋনগ্রস্থকে সুযোগ প্রদান করে অথবা ঋণ মাফ করে দেয়,
কিয়ামাতের দিবসে আল্লাহ্ তা’আলা তাকে নিজের আরশের ছায়ায় আশ্রয় প্রদান করবেন,
যেদিন তাঁর আরশের ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না।
সহীহ্, তা’লীকুর রাগীব (২/৩৭), বেচা-কেনার হাদীস
আবূল ইয়াসার, আবূ কাতাদা, হুযাইফা, ইবনু মাসঊদ ও উবাদা
(রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে
আবূ ঈসা উল্লেখিত সনদসূত্রে হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩০৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ،
حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ أَبِي
مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " حُوسِبَ
رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ فَلَمْ يُوجَدْ لَهُ مِنَ الْخَيْرِ شَيْءٌ
إِلاَّ أَنَّهُ كَانَ رَجُلاً مُوسِرًا وَكَانَ يُخَالِطُ النَّاسَ وَكَانَ
يَأْمُرُ غِلْمَانَهُ أَنْ يَتَجَاوَزُوا عَنِ الْمُعْسِرِ فَقَالَ اللَّهُ عَزَّ
وَجَلَّ نَحْنُ أَحَقُّ بِذَلِكَ مِنْهُ تَجَاوَزُوا عَنْهُ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو الْيَسَرِ كَعْبُ بْنُ
عَمْرٍو .
আবূ
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির মধ্যে কোন এক লোকের হিসাব নেওয়া হলে তার কোন কাজ
পাওয়া গেল না। সে ছিল ধনীলোক। সে যখন লোকদের সাথে লেন-দেন করত তখন নিজ গোলামদের
হুকুম প্রদান করতঃ অভাবী ঋণগ্রস্থদের সাথে সহানুভূতিপূর্ণ আচরন কর। এতে আল্লাহ্
তা’আলা বলেনঃ আমি ক্ষমা ও সহানুভূতির ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশী উপযোগী। অতএব, (হে
ফেরেশ্তাগণ!) তাকে মুক্তি প্রদান কর।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আবূল ইয়াসাবের
নাম কা’ব, পিতা আমর।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৮. অনুচ্ছেদঃ
ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে
স্বচ্ছল ব্যক্তির টালবাহানা করা অন্যায়
১৩০৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَطْلُ الْغَنِيِّ ظُلْمٌ وَإِذَا
أُتْبِعَ أَحَدُكُمْ عَلَى مَلِيٍّ فَلْيَتْبَعْ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَالشَّرِيدِ بْنِ سُوَيْدٍ الثَّقَفِيِّ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ ঋণ পরিশোধ
করার ক্ষেত্রে সক্ষম ব্যক্তির টালবাহানা করা অন্যায়। তোমাদের কারো পাওনা পরিশোধ
করার জন্য ঋণগ্রস্থ ব্যক্তি কোন সক্ষম ব্যক্তির উপর দায়িত্ব দিলে তা অনুমোদন করা
উচিত।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৪০৩), নাসা-ঈ
ইবনু উমার ও আশ-শারীদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদ হাদীস বর্ণিত
আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩০৯
حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْهَرَوِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، قَالَ
حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ عُبَيْدٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَطْلُ الْغَنِيِّ ظُلْمٌ وَإِذَا
أُحِلْتَ عَلَى مَلِيءٍ فَاتْبَعْهُ وَلاَ تَبِعْ بَيْعَتَيْنِ فِي بَيْعَةٍ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَمَعْنَاهُ أَنَّهُ إِذَا أُحِيلَ أَحَدُكُمْ عَلَى مَلِيٍّ فَلْيَتْبَعْ .
فَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا أُحِيلَ الرَّجُلُ عَلَى مَلِيٍّ
فَاحْتَالَهُ فَقَدْ بَرِئَ الْمُحِيلُ وَلَيْسَ لَهُ أَنْ يَرْجِعَ عَلَى
الْمُحِيلِ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا تَوِيَ مَالُ هَذَا بِإِفْلاَسِ الْمُحَالِ
عَلَيْهِ فَلَهُ أَنْ يَرْجِعَ عَلَى الأَوَّلِ . وَاحْتَجُّوا بِقَوْلِ
عُثْمَانَ وَغَيْرِهِ حِينَ قَالُوا لَيْسَ عَلَى مَالِ مُسْلِمٍ تَوًى . قَالَ
إِسْحَاقُ مَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ " لَيْسَ عَلَى مَالِ مُسْلِمٍ تَوًى
" . هَذَا إِذَا أُحِيلَ الرَّجُلُ عَلَى آخَرَ وَهُوَ يَرَى أَنَّهُ
مَلِيٌّ فَإِذَا هُوَ مُعْدِمٌ فَلَيْسَ عَلَى مَالِ مُسْلِمٍ تَوًى .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
স্বচ্ছল অবস্থা সম্পন্ন লোকদের (ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে) টালবাহানা করা যুলুম।
তোমাকে অবস্থা সম্পন্ন ব্যক্তির উপর সোপর্দ করা হলে তুমি তা আনুমোদন করবে এবং এক
বিক্রয় চুক্তির মধ্যে দুই বিক্রয় (শর্ত) অন্তর্ভুক্ত করবে না।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান
সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীসের তাৎপর্য হলঃ কোন লোক তার (ঋণ ইত্যাদির) দায় স্বচ্ছল লোকের
উপর অর্পণ (হাওয়ালা) করলে সে যেন তা অনুমোদন করে। কিছু আলিম বলেছেন, সক্ষম ব্যক্তির
উপর ঋণ অর্পণ করা হলে এবং পাওনাদার তা অনুমোদন করলে ঋণগ্রস্থ ব্যক্তি দায় মুক্ত হয়ে
যাবে। ঋণদানকারী আর তাকে তাগাদা দিতে পারবে না। এই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ
ও ইসহাক।
অন্য একদল আলিম বলেছেন, সক্ষম অবস্থাসম্পন্ন লোকের উপর যে লোকের ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব
অর্পণ করা হয়েছিল সে যদি দেউলিয়া হয়ে যায়, তবে ঋনদানকারী তার আসল ঋণীকে তাগাদা দেয়ার
অধিকারী হবে। তারা নিজেদের দলীল হিসাবে উসমান (রাঃ) ও অন্যান্য সাহাবীর একটি বক্তব্যকে
গ্রহন করেছেনঃ “মুসলমানের মাল বিলীন হতে পারে না”।
ইসহাক বলেন, ‘মুসলমানের মাল বিলীন হতে পারে না’ কথার তাৎপর্য এই যে, ঋণগ্রহীতা ঋনদাতাকে
অন্য কোন ব্যক্তির নিকট হতে তাকে স্বচ্ছল ভেবে তার ঋণ আদায় করে নেওয়ার কথা বলে। কিন্তু
দেখা গেল যে, সে আসলে দেউলিয়া। এই অবস্থায় মুসলমানের মাল বিনস্ট হতে পারে না (হাওয়ালাকারীকেই
তা পরিশোধ করতে হবে)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৯. অনুচ্ছেদঃ
মুনাবাযা ও মুলামাসা
প্রসঙ্গে
১৩১০
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ
سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعِ الْمُنَابَذَةِ
وَالْمُلاَمَسَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عُمَرَ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ أَنْ يَقُولَ إِذَا نَبَذْتُ إِلَيْكَ الشَّىْءَ فَقَدْ
وَجَبَ الْبَيْعُ بَيْنِي وَبَيْنَكَ . وَالْمُلاَمَسَةُ أَنْ يَقُولَ إِذَا
لَمَسْتَ الشَّىْءَ فَقَدْ وَجَبَ الْبَيْعُ وَإِنْ كَانَ لاَ يَرَى مِنْهُ
شَيْئًا مِثْلَ مَا يَكُونُ فِي الْجِرَابِ أَوْ غَيْرِ ذَلِكَ وَإِنَّمَا كَانَ
هَذَا مِنْ بُيُوعِ أَهْلِ الْجَاهِلِيَّةِ فَنَهَى عَنْ ذَلِكَ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুনাবাযা ও মুলামাসা প্রকারের বেচা-কেনাকে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষিদ্ধ করেছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ
আবূ সাঈদ ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীসের
তাৎপর্য এই যে, বিক্রেতা বললঃ আমি যখন তোমার দিকে কিছু নিক্ষেপ করব তখন তোমার ও আমার
মাঝে বেচা-কেনা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। একে বলে মুনাবাযা। মুলামাসার অর্থ হলঃ বিক্রেতা
ক্রেতাকে বলল, অমুক জিনিসটি তুমি র্স্পষ করলে বেচা-কেনা করাতা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে,
ক্রেতা যদি পণ্যটি না দেখে থাকে তারপরেও, যেমন মোড়কের মধ্যের জিনিস, খাপের মধ্যের তরবারি
ইত্যাদি। এটা এক প্রকার বিক্রয় পদ্ধতি যা জাহিলী যুগে করা হতো। এ উভয় প্রকার বিক্রয়
পদ্ধতিতে বিক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭০. অনুচ্ছেদঃ
খাদ্যশস্য ও ফলের ক্ষেত্রে
অগ্রিম বেচা-কেনা (বাই সালাম)
১৩১১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي الْمِنْهَالِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ
قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ وَهُمْ يُسْلِفُونَ فِي
الثَّمَرِ فَقَالَ " مَنْ أَسْلَفَ فَلْيُسْلِفْ فِي كَيْلٍ مَعْلُومٍ وَوَزْنٍ
مَعْلُومٍ إِلَى أَجَلٍ مَعْلُومٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ
أَبِي أَوْفَى وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبْزَى . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَجَازُوا
السَّلَفَ فِي الطَّعَامِ وَالثِّيَابِ وَغَيْرِ ذَلِكَ مِمَّا يُعْرَفُ حَدُّهُ
وَصِفَتُهُ وَاخْتَلَفُوا فِي السَّلَمِ فِي الْحَيَوَانِ فَرَأَى بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمُ السَّلَمَ
فِي الْحَيَوَانِ جَائِزًا . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ
وَإِسْحَاقَ . وَكَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمُ السَّلَمَ فِي الْحَيَوَانِ . وَهُوَ قَوْلُ
سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ . أَبُو الْمِنْهَالِ اسْمُهُ
عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مُطْعِمٍ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যে সময় মাদীনায় আসেন সে সময় বিভিন্ন ধরণের ফলমূল অগ্রিম বেচা-কেনায় এখানকার লোকজন
অভ্যস্ত ছিল। তিনি বললেনঃ যে লোক অগ্রিম বেচা-কেনা করতে চায় সে যেন পরিমাপ, ওজন ও
মেয়াদ নির্দিষ্ট করে নেয়।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৮০), নাসা-ঈ
ইবনু আবী আওফা ও আবদুর রাহমান ইবনু আবযা (রাঃ) হতেও এ
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসটিকে আবূ ঈসা হাসান
সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী সাহাবী ও তাবীঈগণ আমল করেছেন। তাদের মতে অগ্রিম বেচা-কেনা
জায়িয হবে খাদ্যশস্য, কাপড়-চোপড় এবং যেসব বস্তুর পরিমান, বৈশিষ্ট্য, অবস্থা ও ধরণ নির্ধারণ
করা যায় এমন পণ্যের ক্ষেত্রে।
পশু অগ্রিম বেচা-কেনা করা যায় কিনা এ ব্যাপারে মতের অমিল আছে। পশুর অগ্রিম বেচা-কেনা
করাটা একদল সাহাবী ও তাবিঈর মতে জায়িয। এই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক।
এটাকে আরেকদল আলিম নাজায়িয বলেছেন। সুফিয়ান সাওরী ও কূফাবাসী আলিমগণ এই শেষোক্ত মত
গ্রহন করেছেন। আবূল মিনহালের নাম আব্দুর রহমান, পিতা মুতঈম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭১. অনুচ্ছেদঃ
শরীকানা সম্পদের কোন অংশীদার
তার অংশ বিক্রয়ের ইচ্ছা করলে
১৩১২
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ خَشْرَمٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنْ سُلَيْمَانَ الْيَشْكُرِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ
نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ كَانَ لَهُ شَرِيكٌ فِي
حَائِطٍ فَلاَ يَبِيعُ نَصِيبَهُ مِنْ ذَلِكَ حَتَّى يَعْرِضَهُ عَلَى شَرِيكِهِ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ إِسْنَادُهُ لَيْسَ بِمُتَّصِلٍ
. سَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ سُلَيْمَانُ الْيَشْكُرِيُّ يُقَالُ إِنَّهُ
مَاتَ فِي حَيَاةِ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ وَلَمْ يَسْمَعْ مِنْهُ
قَتَادَةُ وَلاَ أَبُو بِشْرٍ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَلاَ نَعْرِفُ لأَحَدٍ
مِنْهُمْ سَمَاعًا مِنْ سُلَيْمَانَ الْيَشْكُرِيِّ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ عَمْرُو
بْنُ دِينَارٍ فَلَعَلَّهُ سَمِعَ مِنْهُ فِي حَيَاةِ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
. قَالَ وَإِنَّمَا يُحَدِّثُ قَتَادَةُ عَنْ صَحِيفَةِ سُلَيْمَانَ
الْيَشْكُرِيِّ وَكَانَ لَهُ كِتَابٌ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ .
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ الْعَطَّارُ عَبْدُ الْقُدُّوسِ قَالَ قَالَ عَلِيُّ بْنُ
الْمَدِينِيِّ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ قَالَ سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ
ذَهَبُوا بِصَحِيفَةِ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ إِلَى الْحَسَنِ الْبَصْرِيِّ
فَأَخَذَهَا أَوْ قَالَ فَرَوَاهَا وَذَهَبُوا بِهَا إِلَى قَتَادَةَ فَرَوَاهَا
وَأَتَوْنِي بِهَا فَلَمْ أَرْوِهَا . يَقُولُ رَدَدْتُهَا .
জাবির
ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন বাগানের
মালিকানায় কোন ব্যক্তির সাথে তার আরো শরীক থাকলে, সে তার অংশ বিক্রয়ের জন্য
শরীকদেরকে ক্রয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পূর্বে যেন সেটা অন্যের নিকট বিক্রয় না করে।
সহীহ্, ইরওয়া (৫/৩৭৩), বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম অনুরূপ
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসের সনদ পরস্পর সংযুক্ত (মুত্তাসিল)
নয়। আমি ইমাম বুখারীকে বলতে শুনেছিঃ সুলাইমান ইয়াশকুরী প্রসঙ্গে কথিত আছে যে, জাবির
(রাঃ)-এর জিবদ্দশাতেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। আর তার নিকট হতে বিশর ও কাতাদা (রহঃ) কখনও
কিছু শুনেননি। বুখারী আরো বলেন, সুলাইমান ইয়াশকুরীর কাছে আমর ইবনু দীনার ব্যতিত আর
কেউ শুনেছেন বলে আমার জানা নেই। জাবির (রাঃ)-এর জীবদ্দশায় হয়ত আমর তার নিকট হাদীস শুনেছেন।
কাতাদা (রহঃ) সুলাইমান ইয়াশকুরীর পাণ্ডুলিপি হতেই হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি এটা জাবির
(রাঃ)-এর নিকট হতে অর্জন করেছিলেন। সুলাইমান আত-তাইমী বলেছেন, তারা হাসান বাসরীর নিকট
জাবির (রাঃ)-এর পাণ্ডুলিপিটি নিয়ে গেলেন। তিনি এটাকে গ্রহন করলেন বা তা হতে রিওয়াত
করেন। অতঃপর তারা এটাকে কাতাদার নিকট নিয়ে গেলে তিনিও তা হতে রিওয়াত করেন। তারপর এটাকে
তারা আমার কেছে নিয়ে এলে আমি তা হতে রিওয়াত করিনি এবং তা ফেরত দেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭২. অনুচ্ছেদঃ
মুখাবারা ও মুআওয়ামা
১৩১৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ،
عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى
عَنِ الْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ وَالْمُخَابَرَةِ وَالْمُعَاوَمَةِ
وَرَخَّصَ فِي الْعَرَايَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
জাবির
ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘মুহাকালা’,
‘মুযাবানা’, ‘মুখাবারা’ ও ‘মুআওয়ামা’ করতে নিষেধ করেছেন, কিন্তু আরাইয়ার অনুমতি
প্রদান করেছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
মুহাকালাঃ নিদিষ্ট পরিমাণ গমের বিনিময়ে অনুমান করে ক্ষেতের অপ্রস্তুত শস্য বিক্রয়
করা। মুযাবানাঃ নির্দিষ্ট পরিমাণ শুকনা খেজুরের বিনিময়ে গাছের কাঁচা খেজুর অনুমান
করে বিক্রয় করা। মুখাবারাঃ ক্ষেতের এক তৃতীয়াংশ বা চতুর্থাংশের বিনিময়ে জমি ভাড়া
দেওয়া। মুআওয়ামাঃ কোন নির্দিষ্ট বাগানের ফল দুই তিন বৎসরের জন্য অগ্রীম বিক্রয় করা।
অনুবাদক।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৭৩. অনুচ্ছেদঃ
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা
১৩১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ
سَلَمَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، وَثَابِتٍ، وَحُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ غَلاَ
السِّعْرُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا رَسُولَ
اللَّهِ سَعِّرْ لَنَا . فَقَالَ " إِنَّ اللَّهَ هُوَ الْمُسَعِّرُ
الْقَابِضُ الْبَاسِطُ الرَّزَّاقُ وَإِنِّي لأَرْجُو أَنْ أَلْقَى رَبِّي
وَلَيْسَ أَحَدٌ مِنْكُمْ يَطْلُبُنِي بِمَظْلَمَةٍ فِي دَمٍ وَلاَ مَالٍ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর যুগে একবার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে লোকেরা বলতে লাগল, হে
আল্লাহ্র রাসূল! আমাদের জন্য দ্রব্যমূল্য বেঁধে দিন। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তা’আলাই
মূল্য নির্ধারণ করে থাকেন, তিনিই নিয়ন্ত্রণকারী, অপ্রশস্তকারী, প্রশস্তকারী ও
রিযিক দানকারী। আমি আমার প্রতিপালকের সাথে এমন অবস্থায় মিলিত হতে চাই যে, তোমাদের
কোন লোক যেন এ দাবি করতে না পারে (আমার বিরুদ্ধে) যে, তার জান-মালের উপর আমি হস্তক্ষেপ
করেছি।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২০০)
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭৪. অনুচ্ছেদঃ
ব্যবসায়ের মধ্যে প্রতারণা
করা খুবই জঘন্য অপরাধ
১৩১৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم مَرَّ عَلَى صُبْرَةٍ مِنْ طَعَامٍ فَأَدْخَلَ يَدَهُ فِيهَا
فَنَالَتْ أَصَابِعُهُ بَلَلاً فَقَالَ " يَا صَاحِبَ الطَّعَامِ مَا هَذَا
" . قَالَ أَصَابَتْهُ السَّمَاءُ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ
" أَفَلاَ جَعَلْتَهُ فَوْقَ الطَّعَامِ حَتَّى يَرَاهُ النَّاسُ "
. ثُمَّ قَالَ " مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنَّا " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَأَبِي الْحَمْرَاءِ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَبُرَيْدَةَ
وَأَبِي بُرْدَةَ بْنِ نِيَارٍ وَحُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى
هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا الْغِشَّ وَقَالُوا الْغِشُّ حَرَامٌ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন একসময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) (বাজারে) একটি খাদ্যশস্যের স্তূপ অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন। তিনি নিজের
হাতকে স্তূপের মধ্যে প্রবেশ করালেন। তিনি তাঁর হাতে ভিজা অনুভব করেন। স্তূপের
মালিককে তিনি প্রশ্ন করেনঃ এ কি? সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটা বৃষ্টির পানিতে
ভিজে গিয়েছিল। তিনি বললেনঃ ভিজাগুলো স্তূপের উপরে রাখলে না কেন, যাতে লোকেরা
দেখতে পেত? অতঃপর তিনি বললেনঃ প্রতারণাকারী ও ধোঁকাবাজকারীদের সাথে আমাদের কোন
সম্পর্ক নেই।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২২৪)
ইবনু উমার, আবুল হামরাআ, ইবনু আব্বাস, বুরাইদা, আবূ বুরদা,
ইবনু নিয়ার ও হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী
আলিমগণ মত দিয়েছেন। প্রতারণা ও ধোঁকাবাজিকে তারা খুবই জঘন্য অপরাধ হিসাবে উল্লেখ করেছেন
এবং এটাকে হারাম বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭৫. অনুচ্ছেদঃ
উট অথবা অন্য কোন পশু ধার
নেওয়া
১৩১৬
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ صَالِحٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ
كُهَيْلٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ اسْتَقْرَضَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سِنًّا فَأَعْطَاهُ سِنًّا خَيْرًا مِنْ سِنِّهِ
وَقَالَ " خِيَارُكُمْ أَحَاسِنُكُمْ قَضَاءً " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي رَافِعٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ شُعْبَةُ وَسُفْيَانُ عَنْ سَلَمَةَ
. وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ لَمْ يَرَوْا
بِاسْتِقْرَاضِ السِّنِّ بَأْسًا مِنَ الإِبِلِ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ
وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَكَرِهَ بَعْضُهُمْ ذَلِكَ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একটি উঠতি বয়সের উটকে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ধার হিসেবে গ্রহণ করেন। তিনি ফিরত দেওয়ার
সময় এর চেয়েও ভাল উট প্রদান করলেন এবং বললেনঃ তোমাদের মধ্যে সেই বেশি উত্তম যে
উত্তমভাবে ঋণ পরিশোধ করে।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ
আবূ রাফি (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। উক্ত হাদীসটি সালামার
সূত্রে শুবা ও সুফিয়ান (রহঃ) বর্ণনা করেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল বিশেষজ্ঞ আলিম
আমল করেছেন। নির্দিষ্ট বয়সের উট ধার হিসেবে গ্রহণ করাতে তারা কোন সমস্যা মনে করেন
না। এই মত দিয়েছেন শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক। কিন্তু এটাকে অন্য একদল আলিম মাকরূহ মনে
করেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩১৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ
رَجُلاً، تَقَاضَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَغْلَظَ لَهُ فَهَمَّ
بِهِ أَصْحَابُهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " دَعُوهُ
فَإِنَّ لِصَاحِبِ الْحَقِّ مَقَالاً " ثُمَّ قَالَ " اشْتَرُوا
لَهُ بَعِيرًا فَأَعْطُوهُ إِيَّاهُ " . فَطَلَبُوهُ فَلَمْ يَجِدُوا
إِلاَّ سِنًّا أَفْضَلَ مِنْ سِنِّهِ . فَقَالَ " اشْتَرُوهُ فَأَعْطُوهُ
إِيَّاهُ فَإِنَّ خَيْرَكُمْ أَحْسَنُكُمْ قَضَاءً " .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নিজের পাওনা আদায়ের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কঠোর তাগাদা দিল। এর ফলে লোকটির উপর
সাহাবীগণ রেগে গেলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
তাকে উপেক্ষা কর, কেননা, পাওনাদারের অধিকার আছে কথা বলার। তিনি আরো বললেনঃ একটি উট
কিনে তোমরা তাকে প্রদান কর। তারা উটের তালাশ করলেন। কিন্তু তার পাওনা উট হতে অধিক
ভালটি ছাড়া অন্য কোন উট পেলেননা। তিনি বললেনঃ তাকে সেটাই কিনে দাও। কেননা,
তোমাদের মধ্যে উত্তমরূপে ঋণ পরিশোধকারী লোকই উত্তম।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ
এ হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনু বাশ্শার মুহাম্মাদ ইবনু জা’ফার
হতে, তিনি শুবা হতে, তিনি সালামা ইবনু কুহাইল হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩১৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ
بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ
أَنَسٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي
رَافِعٍ، مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ اسْتَسْلَفَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَكْرًا فَجَاءَتْهُ إِبِلٌ مِنَ الصَّدَقَةِ .
قَالَ أَبُو رَافِعٍ فَأَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ
أَقْضِيَ الرَّجُلَ بَكْرَهُ . فَقُلْتُ لاَ أَجِدُ فِي الإِبِلِ إِلاَّ جَمَلاً
خِيَارًا رَبَاعِيًّا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
أَعْطِهِ إِيَّاهُ فَإِنَّ خِيَارَ النَّاسِ أَحْسَنُهُمْ قَضَاءً " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আযাদকৃত গোলাম আবূ রাফি (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উঠতি বয়সের একটি উট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ধার হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তারপর (বাইতুল মালে) যাকাতের উট
আসে। আবূ রাফি (রাঃ) বলেন, ঐ লোকের উঠতি বয়সের উটটি পরিশোধের জন্য রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে নির্দেশ দিলেন। আমি বললাম, (বাইতুল
মালে) ছয় বছর বয়সের উটের চেয়ে ছোট উট পাচ্ছি না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাকে ঐটিই প্রদান কর। কেননা।, উত্তমভাবে ঋণ
পরিশোধকারী ব্যক্তিই লোকদের মধ্যে বেশি উত্তম।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৮৫), মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩১৯
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ سُلَيْمَانَ الرَّازِيُّ، عَنْ مُغِيرَةَ
بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ سَمْحَ
الْبَيْعِ سَمْحَ الشِّرَاءِ سَمْحَ الْقَضَاءِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ جَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رَوَى
بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ يُونُسَ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
ক্রয়-বিক্রয় ও তাগাদার ক্ষেত্রে আল্লাহ্ তা’আলা নম্রতা পছন্দ করেন।
সহীহ্, সহীহা (৮৯০৯)
জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে
আবূ ঈসা গরীব বলেছেন। উপরোক্ত হাদীসটি আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে সাঈদ আল-মাকবুরীর বরাতে
ইবনুস এর সূত্রেও বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩২০
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ
بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَطَاءٍ،
أَخْبَرَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ زَيْدِ بْنِ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " غَفَرَ اللَّهُ لِرَجُلٍ كَانَ قَبْلَكُمْ كَانَ سَهْلاً
إِذَا بَاعَ سَهْلاً إِذَا اشْتَرَى سَهْلاً إِذَا اقْتَضَى " . قَالَ
هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের পূর্বকালের এক লোককে ক্ষমা করে
দিয়েছেন। সে যখন বিক্রয় করত নম্রতা দেখাতো, যখন ক্রয় করত বিনয় প্রদর্শন করতো
এবং যখন ঋণের তাগাদা প্রদান করত তখনও নম্রতা ও ভদ্রতা প্রদর্শন করত।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২০৩), বুখারী অনুরূপ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা উল্লেখিত সনদসূত্রে সহীহ্ হাসান
গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭৬. অনুচ্ছেদঃ
মাসজিদের ভিতরে
ক্রয়-বিক্রয় করা নিষেধ
১৩২১
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ
بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَارِمٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ
مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ خُصَيْفَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ ثَوْبَانَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا رَأَيْتُمْ مَنْ يَبِيعُ أَوْ يَبْتَاعُ فِي
الْمَسْجِدِ فَقُولُوا لاَ أَرْبَحَ اللَّهُ تِجَارَتَكَ وَإِذَا رَأَيْتُمْ مَنْ
يَنْشُدُ فِيهِ ضَالَّةً فَقُولُوا لاَ رَدَّ اللَّهُ عَلَيْكَ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا الْبَيْعَ وَالشِّرَاءَ فِي
الْمَسْجِدِ . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُ
أَهْلِ الْعِلْمِ فِي الْبَيْعِ وَالشِّرَاءِ فِي الْمَسْجِدِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
মসজিদের ভিতরে তোমরা কোন লোককে বেচা-কেনা করতে দেখলে বলবে, আল্লাহ্ তা’আলা যেন
তোমার ব্যবসায়ে কোন লাভ প্রদান না করেন। মাসজিদের মধ্যে তোমরা কোন লোককে হারানো
জিনিসের ঘোষণা দিতে দেখলে বলবে, তোমার হারানো জিনিসকে যেন আল্লাহ্ তা’আলা ফিরিয়ে
না দেন।
সহীহ্, মিশকাত (৭৩৩), ইরওয়া (১৪৯৫)
আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন।
এই হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করার কথা বলেছেন। তাদের মতে মাসজিদের ভিতরে
বেচা-কেনা করা নিষেধ। এই মত দিয়েছেন ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাক (রহঃ)। মাসজিদের ভিতরে বেচা-কেনা
করাটা অন্য একদল বিশেষজ্ঞ আলিমের মতে জায়িয।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
No comments