জামে' আত-তিরমিজি - অধ্যায় "যুদ্ধাভিযান" হাদিস নং- ১৫৪৮- ১৬১৮
যুদ্ধাভিযান
১. অনুচ্ছেদঃ
যুদ্ধ শুরুর পূর্বে (শত্রুদেরকে) ইসলামের দাওয়াত দেয়া
১৫৪৮
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ
أَبِي الْبَخْتَرِيِّ، أَنَّ جَيْشًا، مِنْ جُيُوشِ الْمُسْلِمِينَ كَانَ
أَمِيرَهُمْ سَلْمَانُ الْفَارِسِيُّ حَاصَرُوا قَصْرًا مِنْ قُصُورِ فَارِسَ
فَقَالُوا يَا أَبَا عَبْدِ اللَّهِ أَلاَ نَنْهَدُ إِلَيْهِمْ قَالَ دَعُونِي
أَدْعُهُمْ كَمَا سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدْعُوهُمْ .
فَأَتَاهُمْ سَلْمَانُ فَقَالَ لَهُمْ إِنَّمَا أَنَا رَجُلٌ مِنْكُمْ فَارِسِيٌّ
تَرَوْنَ الْعَرَبَ يُطِيعُونَنِي فَإِنْ أَسْلَمْتُمْ فَلَكُمْ مِثْلُ الَّذِي
لَنَا وَعَلَيْكُمْ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْنَا وَإِنْ أَبَيْتُمْ إِلاَّ دِينَكُمْ
تَرَكْنَاكُمْ عَلَيْهِ وَأَعْطُونَا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَأَنْتُمْ صَاغِرُونَ
. قَالَ وَرَطَنَ إِلَيْهِمْ بِالْفَارِسِيَّةِ وَأَنْتُمْ غَيْرُ مَحْمُودِينَ
. وَإِنْ أَبَيْتُمْ نَابَذْنَاكُمْ عَلَى سَوَاءٍ . قَالُوا مَا نَحْنُ
بِالَّذِي نُعْطِي الْجِزْيَةَ وَلَكِنَّا نُقَاتِلُكُمْ . فَقَالُوا يَا أَبَا
عَبْدِ اللَّهِ أَلاَ نَنْهَدُ إِلَيْهِمْ قَالَ لاَ . فَدَعَاهُمْ ثَلاَثَةَ
أَيَّامٍ إِلَى مِثْلِ هَذَا ثُمَّ قَالَ انْهَدُوا إِلَيْهِمْ . قَالَ
فَنَهَدْنَا إِلَيْهِمْ فَفَتَحْنَا ذَلِكَ الْقَصْرَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ بُرَيْدَةَ وَالنُّعْمَانِ بْنِ مُقَرِّنٍ وَابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ
. وَحَدِيثُ سَلْمَانَ حَدِيثٌ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ
عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ . وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ أَبُو الْبَخْتَرِيِّ
لَمْ يُدْرِكْ سَلْمَانَ لأَنَّهُ لَمْ يُدْرِكْ عَلِيًّا وَسَلْمَانُ مَاتَ
قَبْلَ عَلِيٍّ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم إِلَى هَذَا وَرَأَوْا أَنْ يُدْعَوْا قَبْلَ الْقِتَالِ
وَهُوَ قَوْلُ إِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ قَالَ إِنْ تُقُدِّمَ إِلَيْهِمْ فِي
الدَّعْوَةِ فَحَسَنٌ يَكُونُ ذَلِكَ أَهْيَبَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ لاَ دِعْوَةَ الْيَوْمَ . وَقَالَ أَحْمَدُ لاَ أَعْرِفُ الْيَوْمَ
أَحَدًا يُدْعَى . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ لاَ يُقَاتَلُ الْعَدُوُّ حَتَّى
يُدْعَوْا إِلاَّ أَنْ يَعْجَلُوا عَنْ ذَلِكَ فَإِنْ لَمْ يَفْعَلْ فَقَدْ
بَلَغَتْهُمُ الدَّعْوَةُ .
আবূল বাখতারী (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
মুসলমানদের কোন এক
সেনাবাহিনী পারস্যের একটি দুর্গ অবরোধ করে। সালমান ফারসী (রাঃ) এই বাহিনীর সেনাপতি
ছিলেন। সেনাবাহিনীর মুজাহিদগণ বললেন, হে আবদুল্লাহর পিতা! আমরা কি তাদের উপর
ঝাঁপিয়ে পড়ব না? তিনি বললেন, আমি যেভাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে তাদের (ইসলাম গ্রহণের) দাওয়াত দিতে শুনেছি, তোমরা আমাকেও সেভাবে
দাওয়াত দিতে দাও। সালমান (রাঃ) তাদের নিকট এসে বললেন, আমি তোমাদের মাঝেরই একজন
পারস্যবাসী। তোমরা দেখতে পাচ্ছ, আরবরা আমার আনুগত্য করছে। তোমরা যদি ইসলাম গ্রহণ
কর তবে তোমরাও আমাদের মতই অধিকার পাবে এবং আমাদের উপর যে দায় আসে তোমাদের উপরও
সেরকম দায় আসবে। তোমরা যদি এ দাওয়াত ক্ববূল করতে অসম্মত হও এবং তোমাদের ধর্মের উপর
অবিচল থাকতে চাও, তবে আমরা তোমাদেরকে তোমাদের ধর্মের উপর ছেড়ে দিব। কিন্তু
এক্ষেত্রে তোমরা আমাদের অনুগত্য স্বীকার করে আমাদেরকে জিয্ইয়া দিবে। রাবী বলেন,
তিনি তাদেরকে এ কথাগুলো ফারসী ভাষায় বলেন। (তিনি আরো বলেন) এই অবস্থায় তোমরা
প্রশংসিত হবে না। তোমরা যদি এটাও (জিয্ইয়া প্রদান) অস্বীকার কর তবে আমরা তোমাদের
বিরুদ্ধে সমানভাবে লড়বো। তারা বলল, আমরা জিয্ইয়া প্রদানে সম্মত নই, বরং আমরা
তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। মুসলিম সেনানীগণ বললেন, হে আবদুল্লাহর পিতা! আমরা কি
তাদেরকে আক্রমণ করব না? তিনি বললেন, না। রাবী বলেন, তিনি এভাবে তাদেরকে তিন দিন
যাবত আহ্বান করতে থাকেন। তারপর তিনি মুসলিম বাহিনীকে নির্দেশ দিলেন, প্রস্তুত হও
এবং তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়। রাবী বলেন, আমরা তাদেরকে আক্রমণ করে সেই দুর্গ দখল
করলাম।
যঈফ, ইরওয়া (৫/৮৭)।
এ অনুচ্ছেদে বুরাইদা, নুমান ইবনু মুকাররিন, ইবনু উমার ও ইবনু আব্বাস
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। সালমান (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান। আমরা শুধু আতা ইবনুস
সায়িবের সূত্রেই এ হাদীসটি জেনেছি। আমি মুহাম্মাদ (বুখারী)-কে বলতে শুনেছি, আবূল বাখতারী
সালমান (রাঃ)-এর দেখা পাননি। কেননা তিনি আলী (রাঃ)-এর দেখা পাননি। আর সালমান (রাঃ)
আলী (রাঃ)-এর পূর্বে মারা যান।
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তার পরবর্তীগণ
এ হাদীসের মতই মত দিয়েছেন। তাদের মতে, যুদ্ধ শুরু করার পূর্বে ইসলামের দাওয়াত দিতে
হবে। ইসহাক ইবনু ইবরাহীমেরও এই মত। তিনি বলেন, যদি আক্রমণ করার পূর্বে শত্রুবাহিনীকে
ইসলামের দাওয়াত দেয়া হয় তবে তা উত্তম এবং তা তাদের মনে প্রভাব ও ভীতির সঞ্চার করবে।
কিছু বিশেষজ্ঞ আলিম বলেন, আজকাল আর এরূপ দাওয়াত দেয়ার প্রয়োজন নেই। ইমাম আহমাদ বলেন,
বর্তমানে এ ধরনের আহ্বান করার কোন প্রয়োজনীয়তা দেখছি না। ইমাম শাফিঈ বলেন, শত্রুকে
ইসলামের দাওয়াত না দেয়া পর্যন্ত যুদ্ধ শুরু করা যাবে না। কিন্তু তাদেরকে তাড়াতাড়ি দাওয়াত
গ্রহণ করার জন্য বলতে হবে। অবশ্য দাওয়াত না দিলে কোন সমস্যা নেই। কেননা তাদের কাছে
ইতিপূর্বেই ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২. অনুচ্ছেদঃ
(আযান শুনলে বা
মাসজিদ দেখলে আক্রমণ না করা)
১৫৪৯
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الْعَدَنِيُّ الْمَكِّيُّ، - وَيُكْنَى بِأَبِي عَبْدِ
اللَّهِ الرَّجُلُ الصَّالِحُ هُوَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ نَوْفَلِ بْنِ مُسَاحِقٍ عَنِ ابْنِ
عِصَامٍ الْمُزَنِيِّ عَنْ أَبِيهِ وَكَانَتْ لَهُ صُحْبَةٌ قَالَ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا بَعَثَ جَيْشًا أَوْ سَرِيَّةً يَقُولُ لَهُمْ
" إِذَا رَأَيْتُمْ مَسْجِدًا أَوْ سَمِعْتُمْ مُؤَذِّنًا فَلاَ تَقْتُلُوا
أَحَدًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَهُوَ
حَدِيثُ ابْنِ عُيَيْنَةَ .
ইবনু ইসাম
আল-মুযানী (রহঃ) হতে তার পিতার থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (ইসাম) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছোট বা বড় কোন যুদ্ধাভিযানে
প্রেরণকালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদেরকে বলতেনঃ তোমরা কোন মাসজিদ দেখলে অথবা
মুয়াযযিনের আযান শুনলে সেখানকার কাউকে হত্যা করবে না।
যঈফ, যঈফ আবূ দাউদ (৪৫৪)। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এটি ইবনু উআইনার
রিওয়ায়াত।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩. অনুচ্ছেদঃ
রাতের বেলা অথবা
অতর্কিতে হামলা
১৫৫০
حَدَّثَنَا
الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ
حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ خَرَجَ
إِلَى خَيْبَرَ أَتَاهَا لَيْلاً وَكَانَ إِذَا جَاءَ قَوْمًا بِلَيْلٍ لَمْ
يُغِرْ عَلَيْهِمْ حَتَّى يُصْبِحَ فَلَمَّا أَصْبَحَ خَرَجَتْ يَهُودُ
بِمَسَاحِيهِمْ وَمَكَاتِلِهِمْ فَلَمَّا رَأَوْهُ قَالُوا مُحَمَّدٌ وَافَقَ
وَاللَّهِ مُحَمَّدٌ الْخَمِيسَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" اللَّهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ
قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِينَ " .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবার অভিযানের যাত্রা করে সেখানে রাতের বেলা
গিয়ে পৌছান। তিনি রাতের বেলা কোন সম্প্রদায়ের এলাকায় পৌছালে ভোর না হলে হামলা
করতেন না। ইয়াহূদীরা ভোর হলে তাদের চিরাচরিত অভ্যাস মোতাবিক কোদাল ও ঝুড়িসহ
(কৃষিকাজে) বের হল। তাঁকে দেখে এরা বলল, মুহাম্মাদ এসে গেছেন। আল্লাহর শপথ!
মুহাম্মাদ তাঁর সমস্ত বাহিনীসহ এসে গেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহু আকবার! খাইবার ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আমরা যখন কোন
সম্প্রদায়ের এলাকায় যাই তখন সতর্ককৃত লোকদের ভোর বেলাটা খুবই শোচনীয় হয়ে থাকে।
সহীহ্, নাসা-ঈ
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৫১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ مُعَاذٍ،
عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي
طَلْحَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا ظَهَرَ عَلَى قَوْمٍ
أَقَامَ بِعَرْصَتِهِمْ ثَلاَثًا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ وَحَدِيثُ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ
رَخَّصَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي الْغَارَةِ بِاللَّيْلِ وَأَنْ
يَبِيتُوا وَكَرِهَهُ بَعْضُهُمْ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ لاَ بَأْسَ
أَنْ يُبَيَّتَ الْعَدُوُّ لَيْلاً . وَمَعْنَى قَوْلِهِ وَافَقَ مُحَمَّدٌ
الْخَمِيسَ يَعْنِي بِهِ الْجَيْشَ .
আনাস (রাঃ) হতে আবু
তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন সম্প্রদায়ের
বিরুদ্ধে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিজয়ী হলে তাদের এলাকায় তিন
দিন অবস্থান করতেন।
সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (২৪১৪), নাসা-ঈ
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আনাসের সূত্রে হুমাইদের হাদীসটিও
হাসান সহীহ। রাতে শক্রর এলাকায় গিয়ে অতর্কিত হামলার পক্ষে একদল অভিজ্ঞ আলিম সম্মতি
প্রদান করেছেন। এটাকে অন্য একদল অভিজ্ঞ আলিম মাকরূহ বলেছেন। ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাক বলেন,
রাতের বেলা শক্রর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনায় কোন সমস্যা নেই। ‘ওয়াফাকা মুহাম্মাদ
আল-খামীস’’ -এর অর্থ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে রয়েছে
তার পূর্ণাঙ্গ সেনাবাহিনী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪. অনুচ্ছেদঃ
অগ্নিসংযোগ ও
(বাড়িঘর) ধ্বংস সাধন
১৫৫২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَرَّقَ نَخْلَ بَنِي النَّضِيرِ وَقَطَعَ
وَهِيَ الْبُوَيْرَةُ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( مَا قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ
أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا فَبِإِذْنِ اللَّهِ وَلِيُخْزِيَ
الْفَاسِقِينَ ) . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . وَهَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ ذَهَبَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى
هَذَا وَلَمْ يَرَوْا بَأْسًا بِقَطْعِ الأَشْجَارِ وَتَخْرِيبِ الْحُصُونِ .
وَكَرِهَ بَعْضُهُمْ ذَلِكَ وَهُوَ قَوْلُ الأَوْزَاعِيِّ . قَالَ
الأَوْزَاعِيُّ وَنَهَى أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ يَزِيدَ أَنْ يَقْطَعَ شَجَرًا
مُثْمِرًا أَوْ يُخَرِّبَ عَامِرًا وَعَمِلَ بِذَلِكَ الْمُسْلِمُونَ بَعْدَهُ .
وَقَالَ الشَّافِعِيُّ لاَ بَأْسَ بِالتَّحْرِيقِ فِي أَرْضِ الْعَدُوِّ وَقَطْعِ
الأَشْجَارِ وَالثِّمَارِ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَقَدْ تَكُونُ فِي مَوَاضِعَ لاَ
يَجِدُونَ مِنْهُ بُدًّا فَأَمَّا بِالْعَبَثِ فَلاَ تُحَرَّقُ . وَقَالَ
إِسْحَاقُ التَّحْرِيقُ سُنَّةٌ إِذَا كَانَ أَنْكَى فِيهِمْ .
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
বানূ নাযীরের
বুওয়ায়রাস্থ খেজুর বাগানে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
অগ্নিসংযোগ করেন এবং গাছগুলো কেটে ফেলেন। আল্লাহ তা'আলা এই বিষয়ে আয়াত অবতীর্ণ
করেনঃ “তোমরা যেসব খেজুরের গাছ কেটেছ বা এদের কাণ্ডের উপর যেগুলোকে স্বঅবস্থায়
দাঁড়িয়ে থাকতে দিয়েছ, তা সবই আল্লাহ্ তা'আলার অনুমতিক্রমেই করেছ, যাতে তিনি
ফাসেকদের লাঞ্ছিত করতে পারেন”(সূরাঃ হাশর- ৫)।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮৪৪), নাসা-ঈ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি
হাসান সহীহ। এ হাদীস মোতাবিক একদল অভিজ্ঞ আলিম মত দিয়েছেন। যুদ্ধাবস্থায় গাছপালা
কর্তন এবং দুর্গসমূহের ধ্বংস করায় কোন সমস্যা নেই বলে তারা মনে করেন। কিছু আলিম তা
মাকরূহ বলেছেন। এই মত দিয়েছেন ইমাম আওযাঈও। তিনি বলেন, ফলবান বৃক্ষ কাটতে এবং জনপদ
ধ্বংস করতে আবূ বাক্র (রাঃ) বারণ করেছেন। মুসলমানগণও তাঁর পরবর্তী সময়ে এই নীতির
অনুসরণ করেছেন। ইমাম শাফিঈ বলেন, শক্র বাহিনীর কৃষিক্ষেত্রে আগুন লাগিয়ে দেওয়া এবং
ফলবান বা যে কোন ধরনের গাছ কাটাতে কোন সমস্যা নেই। ইমাম আহ্মাদ বলেন, প্রয়োজনবোধে
তা করা যাবে, কিন্তু বিনা প্রয়োজনে আগুন লাগানো যাবে না। ইমাম ইসহাক বলেন, শক্রর প্রতি
প্রবল আক্রমণের উদ্দেশ্যে এরূপ করাই সুন্নাত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫. অনুচ্ছেদঃ
গনিমত (যুদ্ধলব্ধ
মাল) বিষয়ে
১৫৫৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْمُحَارِبِيُّ
الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَسْبَاطُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ
التَّيْمِيِّ، عَنْ سَيَّارٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " إِنَّ اللَّهَ فَضَّلَنِي عَلَى الأَنْبِيَاءِ أَوْ
قَالَ أُمَّتِي عَلَى الأُمَمِ وَأَحَلَّ لَنَا الْغَنَائِمَ " . وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَبِي ذَرٍّ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَبِي
مُوسَى وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي أُمَامَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَسَيَّارٌ هَذَا يُقَالُ لَهُ سَيَّارٌ مَوْلَى بَنِي
مُعَاوِيَةَ . وَرَوَى عَنْهُ سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ
بَحِيرٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ .
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنِ
الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " فُضِّلْتُ عَلَى الأَنْبِيَاءِ
بِسِتٍّ أُعْطِيتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَأُحِلَّتْ لِيَ
الْغَنَائِمُ وَجُعِلَتْ لِيَ الأَرْضُ مَسْجِدًا وَطَهُورًا وَأُرْسِلْتُ إِلَى
الْخَلْقِ كَافَّةً وَخُتِمَ بِيَ النَّبِيُّونَ " . هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ উমামা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাকে আল্লাহ তা'আলা সকল নাবীদের উপর
মাৰ্যাদা দিয়েছেন; অথবা তিনি বলেছেনঃ সকল উম্মাতের উপর আমার উম্মাতকে মার্যাদা
দিয়েছেন এবং গনিমতের সম্পদকে আমার জন্য বৈধ করেছেন।
সহীহ্, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৪০০১), ইরওয়া (১৫২, ২৮৫)
আলী, আবূ যার, আব্দুল্লাহ ইবনু আমর, আবূ মূসা ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান
সহীহ্ বলেছেন। সাইয়্যারের ব্যাপারে কথিত আছে যে, তিনি বানূ মুআবিয়ার মুক্তদাস
ছিলেন। তার নিকট হতে সুলাইমান আত-তাইমী, আবদুল্লাহ ইবনু বুহাইর এবং আরো কয়েকজন
বর্ণনাকারী হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাকে সকল নাবীর উপর ছয়টি বিষয়ে শ্ৰেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে।
ব্যাপকার্থক ভাবকে সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশের যোগ্যতা আমাকে দেওয়া হয়েছে,
প্রভাব-প্রতিপত্তি দান করে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে, গনিমত (যুদ্ধলন্ধ সম্পদ)
আমার জন্য বৈধ করা হয়েছে, আমার জন্য সকল যমীন মাসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম
করা হয়েছে, সকল সৃষ্টির জন্য আমাকে নবী করে পাঠানো হয়েছে এবং নাবীদের আগমণধারা
আমাকে দিয়ে শেষ করা হয়েছে।
সহীহ্, ইরওয়া (২৮৫), মুসলিম, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
৬. অনুচ্ছেদঃ
গনিমতের মধ্যে ঘোড়ার
প্রাপ্য পরিমাণ
১৫৫৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ،
وَحُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُلَيْمُ بْنُ أَخْضَرَ، عَنْ
عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَسَمَ فِي النَّفَلِ لِلْفَرَسِ بِسَهْمَيْنِ
وَلِلرَّجُلِ بِسَهْمٍ .
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، عَنْ سُلَيْمِ بْنِ أَخْضَرَ، نَحْوَهُ . وَفِي الْبَابِ عَنْ
مُجَمِّعِ بْنِ جَارِيَةَ، وَابْنِ، عَبَّاسٍ وَابْنِ أَبِي عَمْرَةَ عَنْ
أَبِيهِ، . وَهَذَا حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ
وَالأَوْزَاعِيِّ وَمَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ
وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ قَالُوا لِلْفَارِسِ ثَلاَثَةُ أَسْهُمٍ سَهْمٌ لَهُ
وَسَهْمَانِ لِفَرَسِهِ وَلِلرَّاجِلِ سَهْمٌ .
ইবনু উমর (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গনিমতের মধ্যে দুই অংশ ঘোড়ার জন্য এবং এক অংশ
সৈনিকের জন্য নির্ধারণ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮৫৪), নাসা-ঈ
মুহাম্মাদ ইবনু বাশ্শার আব্দুর রাহমান ইবনু মাহদী হতে, তিনি সুলাইম
ইবনু আখযার হতে এই সূত্রেও অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। মুজাম্মি ইবনু জারিয়া, ইবনু
আব্বাস ও ইবনু আবূ আম্রাহ্ হতে তার বাবার সূত্রে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু
উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত এই হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীস মোতাবিক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বেশির ভাগ অভিজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিমগণ আমল করেছেন। একই
মত দিয়েছেন সুফিয়ান সাওরী, আওযাঈ, মালিক ইবনু আনাস, ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহ্মাদ
ও ইসহাকও। তারা বলেন, গনিমতের মধ্যে অশ্বারোহী যোদ্ধা তিন অংশ পাবে। তার নিজের জন্য
এক অংশ এবং তার ঘোড়ার জন্য দুই অংশ। আর পদাতিক যোদ্ধা এক অংশ পাবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭. অনুচ্ছেদঃ
সারিয়্যা ( ক্ষুদ্র
অভিযান ) প্রসঙ্গে
১৫৫৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الأَزْدِيُّ الْبَصْرِيُّ، وَأَبُو عَمَّارٍ وَغَيْرُ
وَاحِدٍ قَالُوا حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ يُونُسَ بْنِ
يَزِيدَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" خَيْرُ الصَّحَابَةِ أَرْبَعَةٌ وَخَيْرُ السَّرَايَا أَرْبَعُمِائَةٍ
وَخَيْرُ الْجُيُوشِ أَرْبَعَةُ آلاَفٍ وَلاَ يُغْلَبُ اثْنَا عَشَرَ أَلْفًا مِنْ
قِلَّةٍ " . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ يُسْنِدُهُ كَبِيرُ أَحَدٍ
غَيْرُ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ وَإِنَّمَا رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ
الزُّهْرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً . وَقَدْ رَوَاهُ
حِبَّانُ بْنُ عَلِيٍّ الْعَنَزِيُّ عَنْ عُقَيْلٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ
اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم . وَرَوَاهُ اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ عُقَيْلٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সফরসঙ্গী চার জন হওয়া উত্তম , চার শত
সৈনিক নিয়ে গঠিত ক্ষুদ্র বাহিনী উত্তম, চার হাজার সৈনিক নিয়ে গঠিত পূর্ণ বাহিনী
উত্তম এবং বার হাজার সৈন্য নিয়ে গঠিত বাহিনী সংখ্যাসল্পতার কারণে পরাজিত হবে না।
(পরাজিত হলে তা ঈমানের দুর্বলতার কারনেই)।
যঈফ, সহিহাহ নতুন সংস্করণ( ৯৮৬)।
এ হাদিসটি হাসান গারীব। জারীর ইবনু হাযিম ব্যতীত আর কোন প্রবীন
রাবী এটাকে মুসনাদ হিসেবে বর্ণনা করেননি। যুহরী হতে এ হাদীসটি মুরসাল হিসেবেই বর্ণিত
হয়েছে। হাব্বান ইবনু ‘আলী আল–‘আনাযী–‘উকাইল হতে , তিনি যুহরী হতে , তিনি ‘উবায়দুল্লাহ
ইবনু আবদুল্লাহ হতে তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। অপরদিকে লাইস ইবনু সাদ–‘উকাইল সূত্রে,
তিনি যুহরীর সূত্রে , তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বরাতে
এটাকে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৮. অনুচ্ছেদঃ
ফাই-এর প্রাপক কে?
১৫৫৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ
إِسْمَاعِيلَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ
هُرْمُزَ، أَنَّ نَجْدَةَ الْحَرُورِيَّ، كَتَبَ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ يَسْأَلُهُ
هَلْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَغْزُو بِالنِّسَاءِ وَهَلْ كَانَ
يَضْرِبُ لَهُنَّ بِسَهْمٍ فَكَتَبَ إِلَيْهِ ابْنُ عَبَّاسٍ كَتَبْتَ إِلَىَّ
تَسْأَلُنِي هَلْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَغْزُو بِالنِّسَاءِ
وَكَانَ يَغْزُو بِهِنَّ فَيُدَاوِينَ الْمَرْضَى وَيُحْذَيْنَ مِنَ الْغَنِيمَةِ
وَأَمَّا يُسْهِمُ فَلَمْ يَضْرِبْ لَهُنَّ بِسَهْمٍ . وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَنَسٍ وَأُمِّ عَطِيَّةَ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ
الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ يُسْهَمُ لِلْمَرْأَةِ
وَالصَّبِيِّ . وَهُوَ قَوْلُ الأَوْزَاعِيِّ قَالَ الأَوْزَاعِيُّ وَأَسْهَمَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلصِّبْيَانِ بِخَيْبَرَ وَأَسْهَمَتْ أَئِمَّةُ
الْمُسْلِمِينَ لِكُلِّ مَوْلُودٍ وُلِدَ فِي أَرْضِ الْحَرْبِ .
قَالَ الأَوْزَاعِيُّ وَأَسْهَمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلنِّسَاءِ
بِخَيْبَرَ وَأَخَذَ بِذَلِكَ الْمُسْلِمُونَ بَعْدَهُ . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ
عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ عَنِ الأَوْزَاعِيِّ
بِهَذَا . وَمَعْنَى قَوْلِهِ وَيُحْذَيْنَ مِنَ الْغَنِيمَةِ يَقُولُ يُرْضَخُ
لَهُنَّ بِشَيْءٍ مِنَ الْغَنِيمَةِ يُعْطَيْنَ شَيْئًا .
ইয়াযীদ ইবনু
হুরমুয (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে
হারূরা এলাকার (খারিজী নেতা) নাজদা চিঠির মাধ্যমে প্রশ্ন করে যে, মহিলাদেরকে কি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুদ্ধের মাঠে নিয়ে যেতেন এবং
তাদের জন্য কি গনিমতে অংশ নির্ধারণ করতেন? উত্তরে ইবনু আব্বাস (রাঃ) তাকে লিখলেন,
তুমি আমাকে চিঠির মাধ্যমে প্রশ্ন করেছ যে, মহিলাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুদ্ধের মাঠে অংশগ্রহণ করাতেন কি-না এবং গানীমতের অংশ তাদের
জন্য নির্ধারণ করতেন কি-না। তিনি তাদেরকে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যেতেন। তারা অসুস্থ
যোদ্ধাদের সেবাযত্ন করত। গনিমতের সম্পদ হতে তাদেরকে প্রদান করা হত, কিন্তু তিনি
তাদের জন্য অংশ নির্ধারণ করেননি।
সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (২৪৩৮), মুসলিম
আনাস ও উন্মু আতিয়্যা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীস মোতাবিক বেশির ভাগ অভিজ্ঞ আলিম আমল করেছেন। এই মত দিয়েছেন
সুফিয়ান সাওরী এবং শাফিঈও (গনিমতের কোন অংশ মহিলারা পাবে না)। কয়েকজন আলিম বলেছেন,
গনিমতের ভাগ মহিলা এবং শিশুদেরকেও প্রদান করতে হবে। আওযাঈর এই মত। তিনি বলেন, খাইবারের
যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিশুদেরকে গনিমতের ভাগ প্রদান
করেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে ভূমিষ্ঠ শিশুদেরকে মুসলিম নেতৃবৃন্দ গনিমতের ভাগ প্রদান করেছেন।
আওযাঈ আরো বলেন, খাইবারের যুদ্ধে মহিলাদের জন্যও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) গনিমতে অংশ নির্ধারন করেছেন। মুসলমানগণ পরবর্তীতে এ নীতিই অনুসরণ করেছেন।
ইমাম তিরমিযী বলেন, আমাদের নিকট একথাগুলো আলী ইবনু খাশরামের সূত্রে, তিনি ঈসা ইবনু
ইউনুসের সূত্রে, তিনি আওযাঈর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। “ইউহ্যাইনা মিনাল গানীমাহ”-এর অর্থ
“তাদেরকে (মহিলাদেরকে) গনিমত হতে অল্প কিছু দেয়া হল, তাদেরকে কিছু দেয়া হল”।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯. অনুচ্ছেদঃ
গোলামকে (গনিমতের)
অংশ দেওয়া হবে কি?
১৫৫৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدٍ،
عَنْ عُمَيْرٍ، مَوْلَى آبِي اللَّحْمِ قَالَ شَهِدْتُ خَيْبَرَ مَعَ سَادَتِي
فَكَلَّمُوا فِيَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَعْلَمُوهُ أَنِّي
مَمْلُوكٌ . قَالَ فَأَمَرَ بِي فَقُلِّدْتُ السَّيْفَ فَإِذَا أَنَا أَجُرُّهُ
فَأَمَرَ لِي بِشَيْءٍ مِنْ خُرْثِيِّ الْمَتَاعِ وَعَرَضْتُ عَلَيْهِ رُقْيَةً
كُنْتُ أَرْقِي بِهَا الْمَجَانِينَ فَأَمَرَنِي بِطَرْحِ بَعْضِهَا وَحَبْسِ
بَعْضِهَا . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ لاَ
يُسْهَمَ لِلْمَمْلُوكِ وَلَكِنْ يُرْضَخُ لَهُ بِشَيْءٍ . وَهُوَ قَوْلُ
الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
আবুল লাহমের মুক্তদাস
উমাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
খাইবারের যুদ্ধে আমার মনিবদের সাথে অংশগ্রহন করি। তারা আমার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে কথা বললেন। তারা তাঁকে আরো জানান যে,
আমি ক্রীতদাস। বর্ণনাকারী উমাইর (রাঃ) বলেন, আমার ব্যপারে তাঁর হুকুম মোতাবিক আমার
গলায় তরবারি ঝুলিয়ে দেয়া হল। তরবারিটিকে আমি মাটিতে হেঁচড়িয়ে হেঁচড়িয়ে হাটছিলাম।
তিনি গনিমতের মধ্য হতে কিছু তৈজসপত্র আমাকে দিতে বললেন। আমি তাঁকে কয়েকটি মন্ত্র
শুনালাম, যেগুলো দিয়ে আমি পাগলদের ঝাড়ফুঁক করতাম। তিনি এর কিছু বাদ দেয়ার এবং
কিছু রাখার জন্য আমাকে নির্দেশ দেন।
সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (২৪৪০)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি
হাসান সহীহ্। এ হাদীস মোতাবিক একদল অভিজ্ঞ আলিম আমল করেছেন। তারা মনে করেন গোলামের
জন্য গনিমতের সম্পদে কোন নির্ধারিত অংশ নেই, তবে অল্পপরিমাণ দেওয়া যায়। এই মত দিয়েছেন
সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহ্মাদ এবং ইসহাকও।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০. অনুচ্ছেদঃ
যুদ্ধে মুসলমানদের
সাথে যিম্মী (অমুসলিম নাগরিক) অংশ নিলে তাকে গনিমতের অংশ দেওয়া হবে কি না ?
১৫৫৮
حَدَّثَنَا
الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنِ
الْفُضَيْلِ بْنِ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نِيَارٍ
الأَسْلَمِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم خَرَجَ إِلَى بَدْرٍ حَتَّى إِذَا كَانَ بِحَرَّةِ الْوَبَرِ لَحِقَهُ
رَجُلٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ يَذْكُرُ مِنْهُ جُرْأَةً وَنَجْدَةً فَقَالَ لَهُ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَلَسْتَ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ
" . قَالَ لاَ . قَالَ " ارْجِعْ فَلَنْ أَسْتَعِينَ بِمُشْرِكٍ
" . وَفِي الْحَدِيثِ كَلاَمٌ أَكْثَرُ مِنْ هَذَا . هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ
قَالُوا لاَ يُسْهَمُ لأَهْلِ الذِّمَّةِ وَإِنْ قَاتَلُوا مَعَ الْمُسْلِمِينَ
الْعَدُوَّ . وَرَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ يُسْهَمَ لَهُمْ إِذَا
شَهِدُوا الْقِتَالَ مَعَ الْمُسْلِمِينَ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদরের যুদ্ধে রাওনা হলেন। তিনি ওয়াবরার
প্রস্তরময় এলাকায় পৌঁছলে মুশরিক সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি তাঁর সাথে মিলিত হল। তার
সাহসিকতা ও বীরত্বের খ্যাতি ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে
বললেনঃ তুমি কি আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূলের উপর বিশ্বাসী নও? সে বলল, না। তিনি
বললেন, তুমি ফিরে যাও, আমি কখনো কোন মুশরিকের সাহায্য নিব না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮৩২), মুসলিম
এ হাদীসে আরো বক্তব্য আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব। কিছু বিশেষজ্ঞ
আলিম এ হাদীসের বক্তব্য অনুযায়ী আমাল করেছেন। তারা বলেন, যিম্মীদেরকে গনিমতের অংশ দেওয়া
যাবে না যদিও তারা শত্রুর বিরুদ্ধে মুসলমানদের সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহন করে। অপর একদল
বিশেষজ্ঞ আলিম বলেছেন, তারা মুসলমানদের সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহন করলে তাদেরকে গনিমতের
অংশ দেওয়া হবে। যেমন যুহরীর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইয়হূদী এক গোষ্ঠী
অমুসলিমকে গনিমতের অংশ দিয়েছিলেন, যারা তাঁর সাথে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলো।
হাদিসটি বর্ণনা করেছেন কুতাইবা ইবনু সাঈদ আব্দুল ওয়ারিস ইবনু সাঈদ হতে, তিনি আযরা ইবনু
সাবিত হতে, তিনি যুহরী হতে। সনদ দুর্বল।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৫৯
حَدَّثَنَا
أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا بُرَيْدُ
بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ جَدِّهِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ
أَبِي مُوسَى، قَالَ قَدِمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي
نَفَرٍ مِنَ الأَشْعَرِيِّينَ خَيْبَرَ فَأَسْهَمَ لَنَا مَعَ الَّذِينَ
افْتَتَحُوهَا . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالَ الأَوْزَاعِيُّ مَنْ لَحِقَ
بِالْمُسْلِمِينَ قَبْلَ أَنْ يُسْهَمَ لِلْخَيْلِ أُسْهِمَ لَهُ . وَبُرَيْدٌ
يُكْنَى أَبَا بُرَيْدَةَ وَهُوَ ثِقَةٌ وَرَوَى عَنْهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ
وَابْنُ عُيَيْنَةَ وَغَيْرُهُمَا .
আবূ মূসা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
খাইবার নামক অঞ্চলে আশআরী বংশের একদল লোকের সাথে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট হাযির হই। তিনি খাইবারের যুদ্ধের বিজয়দের সাথে
আমাদেরকেও (গনিমতের) ভাগ দিয়েছেন।
সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (২৪৩৬), নাসা-ঈ
এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। এ হাদীস মোতাবিক কিছু অভিজ্ঞ আলিম
আমল করেছেন। আওযাঈ বলেন, গনিমতের অংশ যোদ্ধাদের মাঝে বণ্টিত হওয়ার পূর্বে যারা মুসলমানদের
সাথে মিলিত হবে তাদেরকেও গনিমতের অংশ প্রদান করা হবে। বুরাইদের উপনাম আবূ বুরাইদাহ।
তিনি একজন বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী। সুফিয়ান সাওরী, ইবনু উয়াইনা এবং আরো অনেকে তার নিকট
হতে হাদীস বর্ণনা করছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১. অনুচ্ছেদঃ
মুশরিকদের
হাঁড়ি-পাতিল ব্যবহার প্রসঙ্গে
১৫৬০
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَخْزَمَ الطَّائِيُّ، حَدَّثَنَا
أَبُو قُتَيْبَةَ، سَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَيُّوبَ،
عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي ثَعْلَبَةَ الْخُشَنِيِّ، قَالَ سُئِلَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ قُدُورِ الْمَجُوسِ فَقَالَ " أَنْقُوهَا
غَسْلاً وَاطْبُخُوا فِيهَا " . وَنَهَى عَنْ كُلِّ سَبُعٍ وَذِي نَابٍ
. وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ عَنْ أَبِي
ثَعْلَبَةَ رَوَاهُ أَبُو إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيُّ عَنْ أَبِي ثَعْلَبَةَ . وَأَبُو
قِلاَبَةَ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أَبِي ثَعْلَبَةَ إِنَّمَا رَوَاهُ عَنْ أَبِي
أَسْمَاءَ عَنْ أَبِي ثَعْلَبَةَ .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ حَيْوَةَ بْنِ
شُرَيْحٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَبِيعَةَ بْنَ يَزِيدَ الدِّمَشْقِيَّ، يَقُولُ
أَخْبَرَنِي أَبُو إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيُّ، عَائِذُ اللَّهِ بْنُ عُبَيْدِ
اللَّهِ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا ثَعْلَبَةَ الْخُشَنِيَّ، يَقُولُ أَتَيْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا بِأَرْضِ قَوْمٍ
أَهْلِ كِتَابٍ نَأْكُلُ فِي آنِيَتِهِمْ قَالَ " إِنْ وَجَدْتُمْ غَيْرَ
آنِيَتِهِمْ فَلاَ تَأْكُلُوا فِيهَا فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا فَاغْسِلُوهَا وَكُلُوا
فِيهَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ সা’লাবা
আল-খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাজূসীদের
(অগ্নি উপাসক) হাঁড়ি-পাতিল ব্যবহার প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেনঃ এগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করে
নাও, তারপর এতে রান্নাবান্না কর। তিনি নখর ও শিকারী দাঁতযুক্ত হিংস্র প্রাণীও
(খেতে) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২০৭, ৩২৩২), নাসা’ঈ
এ হাদীসটি আবূ সা’লাবা (রাঃ)-এর নিকট হতে অন্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীসটি
আবূ সা’লাবা (রাঃ) হতে আবূ ইদরীস আলা খাওলানীও বর্ণনা করেছেন। আবূ সালাবা (রাঃ)-এর
নিকট হতে আবূ কিলাবা (রহঃ) কখনো হাদীস শুনেননি। বরং এ হাদীসটি তিনি আবূ আসমার
মাধ্যমে আবূ সালাবা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
আবূ সালাবা আল খুশানী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট এসে বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমরা আহলে কিতাবের এলাকায় থাকি।
আমরা কি তাদের পাত্রে আহার করব? তিনি বললেনঃ তোমরা তাদের পাত্র ব্যতীত অন্য পাত্র
সেটাতে খাওয়া-দাওয়া করা থেকে বিরত থাক। আর অন্য পাত্র যোগাতে না পারলে এগুলো পানি
দিয়ে পারিস্কার করে নাও, তারপর এতে খাও।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩২০৭), নাসা’ঈ, এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২. অনুচ্ছেদঃ
কোন যোদ্ধাকে নফল
(অতিরিক্ত) প্রদান
১৫৬১
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
الْحَارِثِ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ مُوسَى، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ أَبِي سَلاَّمٍ،
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم كَانَ يُنَفِّلُ فِي الْبَدْأَةِ الرُّبُعَ وَفِي الْقُفُولِ الثُّلُثَ
. وَفِي الْبَابِ عَنْ سَعْدٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَحَبِيبِ بْنِ مَسْلَمَةَ
وَمَعْنِ بْنِ يَزِيدَ وَابْنِ عُمَرَ وَسَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ . وَحَدِيثُ
عُبَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَبِي سَلاَّمٍ
عَنْ رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ
سُلَيْمَانَ بْنِ مُوسَى، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ أَبِي سَلاَّمٍ، عَنْ أَبِي
أُمَامَةَ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
كَانَ يُنَفِّلُ فِي الْبَدْأَةِ الرُّبُعَ وَفِي الْقُفُولِ الثُّلُثَ . وَفِي
الْبَابِ عَنْ سَعْدٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَحَبِيبِ بْنِ مَسْلَمَةَ وَمَعْنِ بْنِ
يَزِيدَ وَابْنِ عُمَرَ وَسَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ . وَحَدِيثُ عُبَادَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَبِي سَلاَّمٍ عَنْ
رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.
উবাদা ইবনুস সামিত
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আক্রমনের প্রথম ভাগে এক-চতুর্থাংশ এবং ফিরতি আক্রমনের
ক্ষেত্রে এক-তৃতীয়াংশ নফল (অতিরিক্ত) দান করতেন।
সহীহ্, হাদীসটির সনদ দুর্বল, কিন্তু সহীহ্ আবূ দাঊদে এর শাহিদ আছে। হাদীস নং
(২৪৫৫ )
এ অনুচ্ছেদে ইবনু আব্বাস, হাবীব ইবনু মাসলামা, মাআন ইবনু ইয়াযীদ,
ইবনু উমার ও সালামা ইবনুল আকওয়া (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, উবাদা
(রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান। উল্লেখিত হাদীসটি আবূ সাল্লাম হতে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর এক সাহাবীর বরাতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বর্ণিত আছে।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, বদর যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) নাফল (নির্দিষ্ট অংশ হতে অতিরিক্ত) হিসাবে তাঁর ‘যুল-ফাকার’ নামক তলোয়ারখানা
তাকে দিয়েছিলেন। তিনি উহুদের যুদ্ধের দিন এ বিষয়ে একটি স্বপ্ন দেখেছিলেন। সনদ হাসান
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। এ হাদীসটি আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই
ইবনু আবিয যিনাদের হাদীস হিসাবে জেনেছি। অভিজ্ঞ আলিমগনের মধ্যে গনিমতের এক-পঞ্চমাংশ
থেকে পুরস্কার হিসাবে অতিরিক্ত দেওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে। মালিক ইবনু আনাস (রহঃ)
বলেন, কোন বর্ণনা আমার নিকট পৌছেনি যে, সকল যুদ্ধেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) পুরস্কার দিয়েছেন। আমি এ ধরণের বর্ণনাই পেয়েছি যে, তিনি যোদ্ধাদের কোন
কোন যুদ্ধে পুরস্কৃত করেছেন। ইমামের বিশেষ বিবেচনার উপর বিষয়টি নির্ভরশীল। তিনি চাইলে
প্রাথমিকভাবে অথবা শেষ গনিমত হিসাবে তা দিতে পারেন। ইসহাক ইবনু মানসূর বলেন, আমি ইমাম
আহ্মাদকে বললাম সন্দেহহীনভাবে বলা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এক-পঞ্চমাংশের পর এক-চতুর্থাংশ যুদ্ধের প্রারম্ভভাগে এবং এক-পঞ্চমাংশের পর এক-তৃতীয়াংশ
প্রত্যাবর্তনের সময় দান করেছেন। ইমাম আহ্মাদ বলেন, হ্যাঁ, প্রথমে গনিমত হতে খুমুস
(এক-পঞ্চমাংশ) আলাদা করতে হবে। তারপর বাকি সম্পদ হতে পুরস্কার (নাফল) দেওয়া যায় এবং
তা যেন এই পরিমানকে ছাড়িয়ে না যায়। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসে ইবনুল মুসাইয়্যিবের উক্তির
উপর এই কথা বলা যায় যে, খুমুস হতে পুরস্কার প্রদান করা হবে। ইসহাকও একই কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
১৩. অনুচ্ছেদঃ
হত্যাকারী নিহতের
মালপত্র পাবে
১৫৬২
حَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ،
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ
كَثِيرِ بْنِ أَفْلَحَ، عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ، مَوْلَى أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِي
قَتَادَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ قَتَلَ
قَتِيلاً لَهُ عَلَيْهِ بَيِّنَةٌ فَلَهُ سَلَبُهُ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ .
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ
يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ . وَفِي الْبَابِ عَنْ
عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ، وَخَالِدِ بْنِ الْوَلِيدِ، وَأَنَسٍ، وَسَمُرَةَ بْنِ
جُنْدَبٍ، . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو مُحَمَّدٍ هُوَ نَافِعٌ
مَوْلَى أَبِي قَتَادَةَ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ
قَوْلُ الأَوْزَاعِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ لِلإِمَامِ أَنْ يُخْرِجَ مِنَ السَّلَبِ الْخُمُسَ . وَقَالَ
الثَّوْرِيُّ النَّفَلُ أَنْ يَقُولَ الإِمَامُ مَنْ أَصَابَ شَيْئًا فَهُوَ لَهُ
وَمَنْ قَتَلَ قَتِيلاً فَلَهُ سَلَبُهُ فَهُوَ جَائِزٌ وَلَيْسَ فِيهِ الْخُمُسُ
. وَقَالَ إِسْحَاقُ السَّلَبُ لِلْقَاتِلِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ شَيْئًا
كَثِيرًا فَرَأَى الإِمَامُ أَنْ يُخْرِجَ مِنْهُ الْخُمُسَ كَمَا فَعَلَ عُمَرُ
بْنُ الْخَطَّابِ .
আবূ কাতাদা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শত্রু পক্ষের কোন সৈনিককে
কোন লোক হত্যা করলে এবং এর প্রমাণ তার নিকট থাকলে সে নিহতের অস্ত্রশস্ত্র ও
জিনিসপত্র পাবে।
সহীহ্, ইরওয়া (৫/৫২-৫৩), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৪৩), নাসা-ঈ
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসের সাথে আরও ঘটনা আছে।
ইবনু আবী উমার হতে সুফিয়ানের বরাতে ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদের সূত্রেও অনুরূপ হাদীস বর্ণিত
হয়েছে। আওফ ইবনু মালিক, খালিদ ইবনুল ওয়ালীদ, আনাস ও সামুরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবূ মুহাম্মাদের নাম নাফি, তিনি আবূ কাতাদা
(রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম। এ হাদীস মোতাবিক একদল সাহাবী ও অপরাপর আলিমগণ আমল করেছেন।
এই অভিমত (হত্যাকারী নিহতের মালপত্র পাবে) দিয়েছেন ইমাম আওযাঈ, শাফিঈ এবং আহ্মাদও।
আরেকদল অভিজ্ঞ আলিম বলেন, দলনেতার এই মালপত্র হতে খুমুস বের করে নেওয়ার অধিকার আছে।
সুফিয়ান সাওরী বলেন, যে লোক যা পেয়েছে তা তারই হবে এবং শত্রুপক্ষের কোন লোককে যে ব্যক্তি
খুন করল সে তার মালপত্রের অধিকারী হবে। দলনেতার এরূপ ঘোষনাই হল নাফল (পুরস্কার) এবং
তাতে কোন খুমুস নেই। ইসহাক (রহঃ) বলেছেন, হত্যাকারী নিহতের মালপত্রের অধিকারী হবে।
তবে যদি মালপত্রের পরিমাণ অধিক হয় তবে দলনেতা চাইলে সেটা হতে খুমুস বের করতে পারেন,
যেভাবে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বের করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪. অনুচ্ছেদঃ
গনিমতের সম্পদ
বণ্টনের আগে বিক্রয় করা নিষেধ
১৫৬৩
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ جَهْضَمِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ
شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ نَهَى رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ شِرَاءِ الْمَغَانِمِ حَتَّى تُقْسَمَ . وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
.
আবূ সাঈদ আল-খুদরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, গনিমতের
মাল ভাগ করার আগে তা বিক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, মিশকাত তাহকীক ছানী (৪০১৫-৪০১৬)
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে
আবূ ঈসা গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫. অনুচ্ছেদঃ
গর্ভবতী বন্দিনীদের
সাথে সহবাস করা নিষেধ
১৫৬৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى النَّيْسَابُورِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ النَّبِيلُ،
عَنْ وَهْبٍ أَبِي خَالِدٍ، قَالَ حَدَّثَتْنِي أُمُّ حَبِيبَةَ بِنْتُ عِرْبَاضِ
بْنِ سَارِيَةَ، أَنَّ أَبَاهَا، أَخْبَرَهَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم نَهَى أَنْ تُوطَأَ السَّبَايَا حَتَّى يَضَعْنَ مَا فِي بُطُونِهِنَّ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ رُوَيْفِعِ بْنِ ثَابِتٍ . وَحَدِيثُ
عِرْبَاضٍ حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ
وَقَالَ الأَوْزَاعِيُّ إِذَا اشْتَرَى الرَّجُلُ الْجَارِيَةَ مِنَ السَّبْىِ
وَهِيَ حَامِلٌ فَقَدْ رُوِيَ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أَنَّهُ قَالَ لاَ
تُوطَأُ حَامِلٌ حَتَّى تَضَعَ . قَالَ الأَوْزَاعِيُّ وَأَمَّا الْحَرَائِرُ
فَقَدْ مَضَتِ السُّنَّةُ فِيهِنَّ بِأَنْ أُمِرْنَ بِالْعِدَّةِ . قَالَ
حَدَّثَنِي بِذَلِكَ عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ قَالَ حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ
عَنِ الأَوْزَاعِيِّ .
উম্মু হাবীবা বিনতু
ইরবায ইবনু সারিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাকে তার বাবা
(ইরবায) জানিয়েছেন যে, গর্ভবতী যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে সন্তান প্রসব হওয়ার আগ
পর্যন্ত সহবাস করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন।
সহীহ্, দেখুন হাদীস নং (১৪৭৪)
আবূ ঈসা বলেন, রুয়াইফি ইবনু সাবিত (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস
বর্ণিত আছে। আর ইরবাযের হাদীসটি গারীব। এ হাদীস অনুসারে আলিমগণ আমল করেছেন। ইমাম আওযাঈ
বলেন, গর্ভবতী বন্দিনী দাসী কোন লোক কিনলে সেই ব্যাপারে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন,
সন্তান প্রসব হওয়ার আগ পর্যন্ত তার সাথে সহবাস করা যাবে না। আওযাঈ আরো বলেন, মুক্ত
যুদ্ধবন্দিনীর বিষয়ে বিধান হল, তাদের সাথে ইদ্দাত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সহবাস করা যাবে
না। আলী ইবনু খাশরাম ঈসা ইবনু ইউনুসের সূত্রে আওযাঈ হতে এই উক্তিটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬. অনুচ্ছেদঃ
মুশরিকদের খাবার
প্রসঙ্গে
১৫৬৫
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ، عَنْ شُعْبَةَ، أَخْبَرَنِي سِمَاكُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ
قَبِيصَةَ بْنَ هُلْبٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم عَنْ طَعَامِ النَّصَارَى فَقَالَ " لاَ يَتَخَلَّجَنَّ
فِي صَدْرِكَ طَعَامٌ ضَارَعْتَ فِيهِ النَّصْرَانِيَّةَ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ مَحْمُودًا، وَقَالَ، عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى
عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ قَبِيصَةَ بْنِ هُلْبٍ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ .
قَالَ مَحْمُودٌ وَقَالَ وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ
مُرِّيِّ بْنِ قَطَرِيٍّ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم مِثْلَهُ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنَ
الرُّخْصَةِ فِي طَعَامِ أَهْلِ الْكِتَابِ .
কাবীসা ইবনু হুল্ব
(রহঃ) হতে তার বাবার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (পিতা) বলেন,
নাসারাদের বানানো খাবারের প্রসঙ্গে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ তোমার মনে কোন খাবারের ব্যাপারে (অযথা)
সন্দেহ ও দ্বিধা-সংকোচ সৃষ্টি হওয়া ঠিক নয়। তুমি এরকম অমূলক সংশয়ে পড়ে গেলে
নাসারাদের অনুরূপ হয়ে গেলে।
হাসান, ইবনু মা-জাহ (২৮৩০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমি মাহমূদকে বলতে শুনেছি উবাইদুল্লাহ
ইবনু মূসা বলেছেন, ইসরাঈল সিমাক হতে, তিনি কাবীসা হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ওয়াহাব ইবনু জারীর বলেন,
শুবা সিমাক হতে, তিনি মুরাই ইবনু ক্বাত্বারী হতে, তিনি আদী ইবনু হাতিম হতে, তিনি নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণনা কারেছেন। এ হাদীস মোতাবিক আলিমগণ
আমল করেছেন। ইয়াহূদী-নাসারাদের খাদ্য খাওয়ার অনুমতি আছে বলে তারা মনে করেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৭. অনুচ্ছেদঃ
কয়েদীদের একে অপর
থেকে আলাদা করা নিষেধ
১৫৬৬
حَدَّثَنَا
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ الشَّيْبَانِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ،
أَخْبَرَنِي حُيَىٌّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، عَنْ أَبِي
أَيُّوبَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ "
مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ وَالِدَةٍ وَوَلَدِهَا فَرَّقَ اللَّهُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ
أَحِبَّتِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَلِيٍّ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ كَرِهُوا التَّفْرِيقَ بَيْنَ السَّبْىِ بَيْنَ الْوَالِدَةِ
وَوَلَدِهَا وَبَيْنَ الْوَلَدِ وَالْوَالِدِ وَبَيْنَ الإِخْوَةِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَسَمِعْتُ الْبُخَارِيَّ يَقُولُ سَمِعَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ
الْحُبُلِيُّ مِنْ أَبِي أَيُّوبَ .
আবূ আইয়্যূব (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ (বন্দিনী) মা ও
তার সন্তানকে একে অপর হতে যে লোক আলাদা করল, আল্লাহ তা’আলা কিয়ামত দিবসে তার এবং
তার প্রিয়জনদের পরস্পর হতে আলাদা করবেন।
হাসান, মিশকাত (৩৩৬১)
আবূ ঈসা বলেন, আলী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আর
এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তৎপরবর্তীগণ আমল করেছেন। বন্দিনী মা-সন্তান, পিতা-পুত্র এবং ভাইদেরকে
পরস্পর হতে আলাদা করাকে তারা নিষিদ্ধ বলেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৮. অনুচ্ছেদঃ
বন্দীদের মেরে ফেলা
বা মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্ত করে দেওয়া (বা বিনিময় আদায় করা)
১৫৬৭
حَدَّثَنَا
أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ أَبِي السَّفَرِ، - وَاسْمُهُ أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
الْهَمْدَانِيُّ وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الْحَفَرِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ
سُفْيَانَ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامٍ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ عَبِيدَةَ، عَنْ
عَلِيٍّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ
جِبْرَائِيلَ هَبَطَ عَلَيْهِ فَقَالَ لَهُ خَيِّرْهُمْ يَعْنِي أَصْحَابَكَ فِي
أُسَارَى بَدْرٍ الْقَتْلَ أَوِ الْفِدَاءَ عَلَى أَنْ يُقْتَلَ مِنْهُمْ قَابِلاً
مِثْلُهُمْ . قَالُوا الْفِدَاءَ وَيُقْتَلَ مِنَّا " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَأَنَسٍ وَأَبِي بَرْزَةَ وَجُبَيْرِ بْنِ
مُطْعِمٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ
الثَّوْرِيِّ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ أَبِي زَائِدَةَ .
وَرَوَى أَبُو أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ عَبِيدَةَ عَنْ
عَلِيٍّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ . وَرَوَى ابْنُ عَوْنٍ
عَنِ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ عَبِيدَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً
. وَأَبُو دَاوُدَ الْحَفَرِيُّ اسْمُهُ عُمَرُ بْنُ سَعْدٍ .
আলী (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে, জিবরাঈল (আঃ) তাঁর নিকট এসে বলেন,
বদরের বন্দীদের ব্যাপারে তাদেরকে অর্থাৎ আপনার সাহাবীদেরকে ইখতিয়ার (স্বাধীনতা)
দিন। হয় তাদেরকে তারা মেরে ফেলুক অথবা তাদের (সাহাবীদের) সমান সংখ্যক লোক আগামী
বছর নিহত হওয়ার শর্তে মুক্তিপণ গ্রহণ করে তাদেরকে মুক্ত করে দিক। তারা (সাহাবীগণ)
বললেন, আমাদের মধ্য হতে সম-সংখ্যক লোক মারা গেলেও আমরা তাদেরকে মুক্তিপণ গ্রহণ করে
ছেড়ে দিব।
সহীহ্, মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৯৭৩), ইরওয়া (৫/৪৮-৪৯)
ইবনু মাসঊদ, আনাস, আবূ বারযা ও জুবাইর ইবনু মুতঈম (রাঃ) হতেও এ
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা সাওরীর সূত্রে হাসান গারীব বলেছেন।
আমারা এ হাদীসটি শুধুমাত্র ইবনু আবী যাইদা বর্ণিত হাদীস হিসাবেই জেনেছি। আবূ উসামা-হিশাম
হতে, তিনি ইবনু সীরীন হতে, তিনি উবাইদা হতে, তিনি আলী (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে একইরকম বর্ণিত হয়েছে। এটি মুরসাল
হাদীসরূপে ইবনু আওন-ইবনু সীরীন হতে, তিনি উবাইদা হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আবূ দাঊদ আল-হাফারীর নাম উমার, পিতা সা’দ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৬৮
حَدَّثَنَا
ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي
قِلاَبَةَ، عَنْ عَمِّهِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم فَدَى رَجُلَيْنِ مِنَ الْمُسْلِمِينَ بِرَجُلٍ مِنَ
الْمُشْرِكِينَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَعَمُّ
أَبِي قِلاَبَةَ هُوَ أَبُو الْمُهَلَّبِ وَاسْمُهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
عَمْرٍو وَيُقَالُ مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو وَأَبُو قِلاَبَةَ اسْمُهُ عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ الْجَرْمِيُّ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ
أَنَّ لِلإِمَامِ أَنْ يَمُنَّ عَلَى مَنْ شَاءَ مِنَ الأُسَارَى وَيَقْتُلَ مَنْ
شَاءَ مِنْهُمْ وَيَفْدِيَ مَنْ شَاءَ . وَاخْتَارَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ الْقَتْلَ
عَلَى الْفِدَاءِ . وَقَالَ الأَوْزَاعِيُّ بَلَغَنِي أَنَّ هَذِهِ الآيَةَ
مَنْسُوخَةٌ قَوْلُهُ تَعَالَى: (فَإِِمَّا مَنًّا بَعْدُ وَإِمَّا فِدَاءً)
نَسَخَتْهَا: (وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ ) حَدَّثَنَا بِذَلِكَ
هَنَّادٌ حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ عَنِ الأَوْزَاعِيِّ . قَالَ إِسْحَاقُ
بْنُ مَنْصُورٍ قُلْتُ لأَحْمَدَ إِذَا أُسِرَ الأَسِيرُ يُقْتَلُ أَوْ يُفَادَى
أَحَبُّ إِلَيْكَ قَالَ إِنْ قَدَرُوا أَنْ يُفَادُوا فَلَيْسَ بِهِ بَأْسٌ وَإِنْ
قُتِلَ فَمَا أَعْلَمُ بِهِ بَأْسًا . قَالَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ
الإِثْخَانُ أَحَبُّ إِلَىَّ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ مَعْرُوفًا فَأَطْمَعُ بِهِ
الْكَثِيرَ .
ইমরান ইবনু হুসাইন
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
দু’জন মুসলমান
বন্দীকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন মুশ্রিক বন্দীর সাথে
বিনিময় করেছেন।
সহীহ্, মুসলিম (৫/৭৮)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আবূ কিলাবার চাচার নাম
আবুল মুহাল্লাব আবদুর রাহমান ইবনু আমর, মতান্তরে তার নাম মুআবিয়া ইবনু উমার। আর আবূ
কিলাবার নাম আবদুল্লাহ ইবনু যাইদ আল-জারমী। এ হাদীস মোতাবিক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈগন আমল করেছেন। তাদের মতে
নেতা চাইলে কোন বন্দীকে অনুগ্রহ প্রদর্শনপূর্বক মুক্তি দিতে পারেন, মেরে ফেলতে পারেন
অথবা বিনিময় গ্রহণ করে ছেড়েও দিতে পারেন। বিনিময় নিয়ে মুক্তি দেওয়ার পরিবর্তে মেরে
ফেলাকেই কিছু অভিজ্ঞ আলিম উত্তম মনে করেন। আওযাঈ বলেন, আমি জানতে পেরেছি, নিম্নলিখিত
আয়াত মানসূখ (বাতিল) হয়ে গেছেঃ “তারপর হয় অনুগ্রহ করবে অথবা বিনিময় গ্রহণ করে মুক্ত
করে দিবে” (সূরাঃ মুহাম্মাদ- ৪)। নাসিখ (বাতিলকারী) আয়াত হলঃ “তাদেরকে যে জায়গাতেই
পাও সেখানেই মেরে ফেল’’ (সূরাঃ বাকারা- ১৯১, সূরাঃ নিসা- ৯১)। ইবনুল মুবারাক আওযাঈ
হতে এই উক্তি বর্ণনা করেছেন।
ইসহাক ইবনু মানসুর বলেন, আহ্মাদকে আমি প্রশ্ন করলাম, কাফির যোদ্ধা বন্দী অবস্থায় এলে
আপনি তাকে মেরে ফেলা পছন্দ করেন না বিনিময় নিয়ে মুক্তি দেওয়া পছন্দ করেন ? তিনি উত্তরে
বললেন, বিনিময় দিতে রাযি হলে তা নিয়ে তাকে মুক্তি দেওয়াতেও কোন সমস্যা নেই অথবা মেরে
ফেলতেও কোন আপত্তি নেই। ইসহাক বলেন, তাকে মেরে ফেলাটাই আমি উত্তম বলে মনে করি। তবে
সে প্রসিদ্ধি লাভ করলে এবং তার ব্যাপারে নানাবিধ আশা করার সুযোগ থাকলে (তাকে মুক্তি
দেওয়াই উচিত)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯. অনুচ্ছেদঃ
নারী ও শিশুদের মেরে
ফেলা নিষেধ
১৫৬৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَخْبَرَهُ
أَنَّ امْرَأَةً وُجِدَتْ فِي بَعْضِ مَغَازِي رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
مَقْتُولَةً فَأَنْكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَلِكَ وَنَهَى عَنْ
قَتْلِ النِّسَاءِ وَالصِّبْيَانِ . وَفِي الْبَابِ عَنْ بُرَيْدَةَ وَرَبَاحٍ
وَيُقَالُ رِيَاحُ بْنُ الرَّبِيعِ وَالأَسْوَدِ بْنِ سَرِيعٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ
وَالصَّعْبِ بْنِ جَثَّامَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ كَرِهُوا قَتْلَ النِّسَاءِ
وَالْوِلْدَانِ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ .
وَرَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي الْبَيَاتِ وَقَتْلِ النِّسَاءِ فِيهِمْ
وَالْوِلْدَانِ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ وَرَخَّصَا فِي الْبَيَاتِ .
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
একজন মহিলাকে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কোন এক যুদ্ধে মৃত অবস্থায়
পাওয়া গেল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এতে খুবই অসুন্তুষ্টি
প্রকাশ করেন এবং নারী ও শিশুদের মেরে ফেলতে বারণ করেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮৪১), নাসা-ঈ
বুরাইদা, রাবাহ তাকে রিয়াহ ইবনুর রাবীও বলা হয়। আসওয়াদ ইবনু সারী’
, ইবনু আব্বাস ও সা’ব ইবনু জাস্সামা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস মোতাবিক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্য অভিজ্ঞ আলিম আমল করেছেন। নারী ও শিশুদের
মেরে ফেলাকে তারা জঘন্য কাজ বলেছেন। এই মতটি দিয়েছেন সুফিয়ান সাওরী ও শাফিঈও। রাতের
বেলা আক্রমণ এবং এমতাবস্থায় নারী ও শিশুদের মেরে ফেলার পক্ষে অন্য একদল অভিজ্ঞ আলিম
সম্মতি প্রদান করেছেন। এই অভিমত দিয়েছেন আহ্মাদ ও ইসহাক। রাতের বেলা অতর্কিত আক্রমণের
সুযোগ তারা দু’জনেই রেখেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৭০
حَدَّثَنَا
نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
قَالَ أَخْبَرَنِي الصَّعْبُ بْنُ جَثَّامَةَ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
إِنَّ خَيْلَنَا أَوْطَأَتْ مِنْ نِسَاءِ الْمُشْرِكِينَ وَأَوْلاَدِهِمْ .
قَالَ " هُمْ مِنْ آبَائِهِمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
সা’ব ইবনু জাসসামা
(রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! মুশ্রিকদের
নারী ও শিশুদেরকে আমাদের অশ্বারোহী বাহিনী পদদলিত করেছে। তিনি বললেনঃ তারা তাদের
বাপ-দাদার সাথেই সম্পৃক্ত।
হাসান, ইবনু মা-জাহ (২৮৩৯), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২০. অনুচ্ছেদঃ
(কোন লোককে আগুনে
পুড়িয়ে ফেলা বৈধ নয়)
১৫৭১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ
سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ بَعَثَنَا رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي بَعْثٍ فَقَالَ " إِنْ وَجَدْتُمْ فُلاَنًا
وَفُلاَنًا لِرَجُلَيْنِ مِنْ قُرَيْشٍ فَأَحْرِقُوهُمَا بِالنَّارِ " .
ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ أَرَدْنَا الْخُرُوجَ
" إِنِّي كُنْتُ أَمَرْتُكُمْ أَنْ تَحْرِقُوا فُلاَنًا وَفُلاَنًا
بِالنَّارِ وَإِنَّ النَّارَ لاَ يُعَذِّبُ بِهَا إِلاَّ اللَّهُ فَإِنْ
وَجَدْتُمُوهُمَا فَاقْتُلُوهُمَا " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ وَحَمْزَةَ بْنِ عَمْرٍو الأَسْلَمِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ
أَهْلِ الْعِلْمِ . وَقَدْ ذَكَرَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ بَيْنَ سُلَيْمَانَ
بْنِ يَسَارٍ وَبَيْنَ أَبِي هُرَيْرَةَ رَجُلاً فِي هَذَا الْحَدِيثِ وَرَوَى
غَيْرُ وَاحِدٍ مِثْلَ رِوَايَةِ اللَّيْثِ وَحَدِيثُ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ
أَشْبَهُ وَأَصَحُّ . قَالَ الْبُخَارِيُّ وَسُلَيْمَانُ بْنُ يَسَارٍ قَدْ
سَمِعَ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَحَدِيثُ حَمْزَةَ بْنِ
عَمْرٍو فِي هَذَا الْبَابِ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদেরকে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি যুদ্ধে প্রেরণ করেন। তিনি
বলে দেন, তোমরা কুরাইশ বংশের অমুক অমুক লোকের নাগাল পেলে তাদের দু’জনকেই আগুনে
পুড়িয়ে ফেলবে। যখন আমরা যাত্রা শুরু করলাম তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আবার বললেনঃ আমি তোমাদের নির্দেশ দিয়েছিলাম, অমুক অমুক লোককে তোমরা
আগুনে পুড়িয়ে ফেলবে। আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়ার অধিকারী আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্য
কেউ নয়। অতএব তোমরা অমুক ও অমুকের নাগাল পেলে তবে তাদের দু’জনকেই মেরে ফেলবে।
সহীহ্ বুখারী
ইবনু আব্বাস ও হামযা ইবনু আমর আল-আসলামী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্
বলেছেন। এ হাদীস মোতাবিক অভিজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। এই হাদীসের সনদে সুলাইমান ইবনু
ইয়াসার ও আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর মাঝখানে মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক আরও একজন বর্ণনাকারীর
উল্লেখ করেছেন। এই হাদীসটি একাধিক বর্ণনাকারী লাইসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। লাইস ইবনু
সা’দের হাদীস অনেক বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১. অনুচ্ছেদঃ
গনিমতের সম্পদ
আত্মসাৎ করা
১৫৭২
حَدَّثَنِي
أَبُو رَجَاءٍ، قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ " مَنْ مَاتَ وَهُوَ بَرِيءٌ مِنْ ثَلاَثٍ الْكِبْرِ
وَالْغُلُولِ وَالدَّيْنِ دَخَلَ الْجَنَّةَ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ .
সাওবান (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক তিনটি বিষয়ে
অর্থাৎ অহংকার, গনিমতের সম্পদ আত্মসাৎ ও ঋণ হতে মুক্ত অবস্থায় মারা গেল সে
জান্নাতে প্রবেশ করবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৪১২)
আবূ হুরাইরা ও যাইদ ইবনু খালিদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৭৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ
مَعْدَانَ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " مَنْ فَارَقَ الرُّوحُ الْجَسَدَ وَهُوَ بَرِيءٌ مِنْ
ثَلاَثٍ الْكَنْزِ وَالْغُلُولِ وَالدَّيْنِ دَخَلَ الْجَنَّةَ " .
هَكَذَا قَالَ سَعِيدٌ الْكَنْزَ وَقَالَ أَبُو عَوَانَةَ فِي حَدِيثِهِ الْكِبْرَ
وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ مَعْدَانَ وَرِوَايَةُ سَعِيدٍ أَصَحُّ .
সাওবান (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি তিনটি বিষয়
হতে মুক্ত থাকা অবস্থায় তার রুহ তার দেহ হতে আলাদা হলে সে জান্নাতে যাবেঃ সম্পদ
পুঞ্জীভূত করা, গানীমতের মাল আত্মসাৎ করা ও ঋণ।
হাদীসে বর্ণিত শব্দ শাজ, সহীহা (২৭৮৫)।
সাঈদ তাঁর বর্ণনায় আল–কানয এবং আবূ আওয়ানা তাঁর বর্ণনায় আল-কিবর
(অহংকার) শব্দের উল্লেখ করেছেন। আবূ আওয়ানার বর্ণনায় “মা’দান” রাবীর উল্লেখ করেননি।
সাঈদের বর্ণনাটি অনেক বেশী সহীহ।
হাদিসের মানঃশায
১৫৭৪
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ
الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا سِمَاكٌ أَبُو
زُمَيْلٍ الْحَنَفِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَقُولُ حَدَّثَنِي عُمَرُ
بْنُ الْخَطَّابِ، قَالَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ فُلاَنًا قَدِ
اسْتُشْهِدَ . قَالَ " كَلاَّ قَدْ رَأَيْتُهُ فِي النَّارِ بِعَبَاءَةٍ
قَدْ غَلَّهَا قَالَ قُمْ يَا عَلِيُّ فَنَادِ إِنَّهُ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ
إِلاَّ الْمُؤْمِنُونَ ثَلاَثًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
উমার ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বলা হল, হে আল্লাহ্র
রাসূল! অমুক লোক শহীদ হয়েছে। তিনি বললেনঃ কোন অবস্থাতেই নয়, গনিমতের একটি আলখাল্লা
(লম্বা ঢিলা জামা) আত্মসাৎ করায় আমি তাকে জাহান্নামে দেখতে পাচ্ছি। তিনি বললেনঃ হে
উমার! উঠ এবং তিনবার ঘোষণা দাও- ঈমানদার লোক ব্যতীত অন্য কেউ জান্নাতে যেতে পারবে
না।
সহীহ্, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২. অনুচ্ছেদঃ
মহিলাদের যুদ্ধে
অংশগ্রহণ
১৫৭৫
حَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ الصَّوَّافُ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ
الضُّبَعِيُّ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَغْزُو بِأُمِّ سُلَيْمٍ وَنِسْوَةٍ مَعَهَا مِنَ الأَنْصَارِ
يَسْقِينَ الْمَاءَ وَيُدَاوِينَ الْجَرْحَى . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي
الْبَابِ عَنِ الرُّبَيِّعِ بِنْتِ مُعَوِّذٍ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উম্মু
সুলাইম (রাঃ) ও তার সাথের আনসার মহিলাদের নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে তারা পানি পান করাতেন এবং
আহতদের জখমে ঔষধ লাগিয়ে দিতেন।
সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২২৮৪), মুসলিম
আবূ ঈসা বলেছেন, রুবাই বিনতি মুআওয়্যিয (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আর এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩. অনুচ্ছেদঃ
মুশরিকদের উপহার নেয়া
১৫৭৬
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ سَعِيدٍ الْكِنْدِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ
سُلَيْمَانَ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ ثُوَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَلِيٍّ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ كِسْرَى أَهْدَى إِلَيْهِ فَقَبِلَ مِنْهُ
وَأَنَّ الْمُلُوكَ أَهْدَوْا إِلَيْهِ فَقَبِلَ مِنْهُمْ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَثُوَيْرٌ هُوَ
ابْنُ أَبِي فَاخِتَةَ وَأَبُو فَاخِتَةَ اسْمُهُ سَعِيدُ بْنُ عِلاَقَةَ
وَثُوَيْرٌ يُكْنَى أَبَا جَهْمٍ .
আলী (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য কিসরা (পারস্য সম্রাট) উপহার পাঠালে
তিনি তা নেন। বিভিন্ন দেশের রাজা–বাদশাগণ তাঁর জন্য উপহার পাঠালে তিনি তা গ্রহণ
করেছেন।
খুবই দুর্বল, তা’লীক আলার রাওযাতুন নাদিয়্যাহ (২/১৬৩)।
এ অনুচ্ছেদে জাবির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেছেন
, এ হাদিসটি হাসান গারীব। সুওয়াইর ইবনু আবূ ফাখিতার নাম সাঈদ, পিতার নাম ইলাকা। সুওয়াইব–এর
উপনাম আবূ জাহম।
হাদিসের মানঃখুবই দুর্বল
২৪. অনুচ্ছেদঃ
মুশ্রিকদের দেওয়া
উপহার গ্রহণ করা প্রসঙ্গে
১৫৭৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، عَنْ عِمْرَانَ الْقَطَّانِ،
عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، هُوَ ابْنُ الشِّخِّيرِ عَنْ
عِيَاضِ بْنِ حِمَارٍ، أَنَّهُ أَهْدَى لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَدِيَّةً
لَهُ أَوْ نَاقَةً فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَسْلَمْتَ
" . قَالَ لاَ . قَالَ " فَإِنِّي نُهِيتُ عَنْ زَبْدِ
الْمُشْرِكِينَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَمَعْنَى قَوْلِهِ " إِنِّي نُهِيتُ عَنْ زَبْدِ الْمُشْرِكِينَ "
. يَعْنِي هَدَايَاهُمْ وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ
كَانَ يَقْبَلُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ هَدَايَاهُمْ وَذُكِرَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ
الْكَرَاهِيَةُ وَاحْتُمِلَ أَنْ يَكُونَ هَذَا بَعْدَ مَا كَانَ يَقْبَلُ
مِنْهُمْ ثُمَّ نَهَى عَنْ هَدَايَاهُمْ .
ইয়ায ইবনু হিমার
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তার একটি
উষ্ট্রী বা অন্য কিছু উপহার হিসাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর সামনে উপস্থাপন করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ তুমি কি ইসলাম ধর্ম ক্ববূল করেছ? তিনি বলেন, না (পরে তিনি ইসলাম
ধর্ম ক্ববূল করেন)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
মুশরিকদের উপহার নিতে আমাকে বারণ করা হয়েছে।
হাসান সহীহ্, প্রাগুক্ত (২/১৬৪)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। ‘যাব্দুল মুশ্রিকীন’
অর্থ ‘মুশরিকদের দেওয়া উপহার’। অবশ্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে এও বর্ণিত আছে যে, মুশ্রিকদের উপহার তিনি নিতেন। এ হাদীসে মাকরূহ্ হওয়ার কথা বলা
হয়েছে। এটাও হতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগে উপহার
নিতেন। তারপর তা নিতে তাঁকে বারণ করে দেওয়া হয়েছে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
২৫. অনুচ্ছেদঃ
কৃতজ্ঞতার সিজদা
১৫৭৮
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا بَكَّارُ بْنُ
عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَتَاهُ أَمْرٌ فَسُرَّ بِهِ فَخَرَّ لِلَّهِ
سَاجِدًا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ
إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ بَكَّارِ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ رَأَوْا سَجْدَةَ
الشُّكْرِ . وَبَكَّارُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ مُقَارِبُ
الْحَدِيثِ .
আবূ বাক্রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এমন একটি সুখবর আসে যে, তিনি তাতে
খুবই আনন্দিত হন এবং সিজদায় লুটিয়ে পড়েন।
হাসান, ইবনু মা-জাহ (১৩৯৪)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। আমরা শুধুমাত্র উল্লেখিত
সনদ সূত্রেই বাক্কার ইবনু আবদুল আযীযের বর্ণিত হাদীসে তা জেনেছি। এ হাদীস মোতাবিক বেশির
ভাগ আলিম আমল করেছেন। কৃতজ্ঞতার সিজদা বৈধ হওয়ার পক্ষে তারা অভিমত দিয়েছেন। বাক্কার
ইবনু আব্দুল আজীজ ইবনু আবী বাকরাহ হাদীসের (বর্ণনার) উপযোগী।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৬. অনুচ্ছেদঃ
স্ত্রীলোক বা
ক্রীতদাস কর্তৃক (কাউকে) নিরাপত্তা দান
১৫৭৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَكْثَمَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ كَثِيرِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ
رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إِنَّ الْمَرْأَةَ لَتَأْخُذُ لِلْقَوْمِ " . يَعْنِي تُجِيرُ
عَلَى الْمُسْلِمِينَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ هَانِئٍ . وَهَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا فَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
وَكَثِيرُ بْنُ زَيْدٍ قَدْ سَمِعَ مِنَ الْوَلِيدِ بْنِ رَبَاحٍ وَالْوَلِيدُ
بْنُ رَبَاحٍ سَمِعَ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَهُوَ مُقَارِبُ الْحَدِيثِ .
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ
مُسْلِمٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ
أَبِي مُرَّةَ، مَوْلَى عَقِيلِ بْنِ أَبِي طَالِبٍ عَنْ أُمِّ هَانِئٍ، أَنَّهَا
قَالَتْ أَجَرْتُ رَجُلَيْنِ مِنْ أَحْمَائِي فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " قَدْ أَمَّنَّا مَنْ أَمَّنْتِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ أَجَازُوا أَمَانَ الْمَرْأَةِ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ
أَجَازَا أَمَانَ الْمَرْأَةِ وَالْعَبْدِ . وَأَبُو مُرَّةَ مَوْلَى عَقِيلِ
بْنِ أَبِي طَالِبٍ وَيُقَالُ لَهُ أَيْضًا مَوْلَى أُمِّ هَانِئٍ وَاسْمُهُ
يَزِيدُ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أَنَّهُ أَجَازَ أَمَانَ
الْعَبْدِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ وَعَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عَمْرٍو عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " ذِمَّةُ
الْمُسْلِمِينَ وَاحِدَةٌ يَسْعَى بِهَا أَدْنَاهُمْ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَمَعْنَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ مَنْ أَعْطَى الأَمَانَ
مِنَ الْمُسْلِمِينَ فَهُوَ جِائِزٌ عَلَى كُلِّهِمْ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহিলারাও তাদের সম্প্রদায়ের পক্ষে (কাউকে) আশ্রয়
দিতে পারে।
হাসান, মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৯৭৮)
উম্মু হানী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব। ইমাম
বুখারীর নিকট আমি প্রশ্ন করলে তিনি এটিকে সহীহ হাদীস বলেন।
কাছীর ইবনু যাইদ আল-ওয়ালীদ ইবনু রাবাহ-এর নিকট হাদীস শুনেছেন। আর আল-ওয়ালীদ ইবনু
রাবাহ আবূ হুরাইরার নিকট হাদীস শুনেছেন। তিনি হাদীস বর্ণনা করার উপযোগী।
আবূ তালিবের কন্যা উম্মু হানী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমার শ্বশুর
পক্ষের আত্মীয়দের মধ্যে দুইজন লোককে আমি নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিলাম।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে লোককে তুমি নিরাপত্তা
প্রদান করেছ আমরাও তাকে নিরাপত্তা দিলাম।
সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৪৬৮), সহীহা (২০৪৯), নাসা-ঈ সংক্ষিপ্তভাবে।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস মোতাবিক অভিজ্ঞ আলিমগণ আমল
করেছেন। নারীরাও কোন লোককে নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিতে পারে বলে তারা মনে করেন।
এই মত দিয়েছেন ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাকও। নারী ও গোলামদের দ্বারা কোন লোকের নিরাপত্তা
দানকে তারা দু’জনেই বৈধ বলেছেন। অন্যান্য সূত্রেও উপরোক্ত হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।
আবূ মুররা (রহঃ) আকীল ইবনু আবূ তালিবের মুক্ত দাস, তাকে উম্মু হানী (রাঃ)-এর
মুক্তদাসও বলা হয়। তার নাম ইয়াযীদ। উমার (রাঃ)-এর ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, গোলাম
কর্তৃক নিরাপত্তা দান করাকে তিনি অনুমোদন করেছেন। আলী ইবনু আবূ তালিব ও আবদুল্লাহ
ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ “মুসলমানদের যিম্মা এক সমান, তাদের সাধারণ লোকও (কাউকে) নিজ দায়িত্বে
নিরাপত্তা দেওয়ার অধিকারী”। আবূ ঈসা বলেনঃ অভিজ্ঞ আলিমগণের মতে এ হাদীসের অর্থ
হচ্ছে কোন মুসলমান লোক যদি (শত্রু পক্ষের) কোন লোককে মুসলমানদের পক্ষে নিরাপত্তার
ওয়াদা দেয় তবে তা সমগ্র মুসলিম সমাজের পক্ষে গণ্য হবে।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
২৭. অনুচ্ছেদঃ
বিশ্বাসঘাতকতা
প্রসঙ্গে
১৫৮০
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ،
قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو الْفَيْضِ، قَالَ سَمِعْتُ سُلَيْمَ بْنَ عَامِرٍ،
يَقُولُ كَانَ بَيْنَ مُعَاوِيَةَ وَبَيْنَ أَهْلِ الرُّومِ عَهْدٌ وَكَانَ
يَسِيرُ فِي بِلاَدِهِمْ حَتَّى إِذَا انْقَضَى الْعَهْدُ أَغَارَ عَلَيْهِمْ
فَإِذَا رَجُلٌ عَلَى دَابَّةٍ أَوْ عَلَى فَرَسٍ وَهُوَ يَقُولُ اللَّهُ أَكْبَرُ
وَفَاءٌ لاَ غَدْرٌ . وَإِذَا هُوَ عَمْرُو بْنُ عَبَسَةَ فَسَأَلَهُ
مُعَاوِيَةُ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ " مَنْ كَانَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ قَوْمٍ عَهْدٌ فَلاَ يَحُلَّنَّ
عَهْدًا وَلاَ يَشُدَّنَّهُ حَتَّى يَمْضِيَ أَمَدُهُ أَوْ يَنْبِذَ إِلَيْهِمْ
عَلَى سَوَاءٍ " . قَالَ فَرَجَعَ مُعَاوِيَةُ بِالنَّاسِ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সুলাইম ইবনু আমির
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একটি সন্ধিচুক্তি
মুআবিয়া (রাঃ) ও রুমবাসীদের মধ্যে কার্যকর ছিল। তিনি (মুআবিয়া) তাদের জনপদে
(সৈন্যসহ) চলাফেরা করতেন। এমতাবস্থায় চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে অতর্কিতে
তাদেরকে আক্রমণ করেন। এমন সময় শোনা গেল, পশুর পিঠে অথবা ঘোড়ায় সাওয়ার হয়ে একজন লোক
বলছে, ‘আল্লাহু আকবার’। চুক্তির সময় পূর্ণ কর, বিশ্বাসঘাতকতা কর না। আমর ইবনু
আবাসা (রাঃ) ছিলেন এই আরোহী ব্যক্তি। এ বিষয়ে মুআবিয়া (রাঃ) তাকে প্রশ্ন করলে তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ কোন
জাতির সাথে যে লোকের চুক্তি আছে সে যেন এই চুক্তি ভঙ্গ না করে এবং তার বিপরীত কিছু
না করে। চুক্তির সময় শেষ না হওয়ার আগ পর্যন্ত অথবা প্রতিপক্ষকে পরিষ্কারভাবে
জানানোর আগ পর্যন্ত এটা ভঙ্গ করা যাবে না। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর মুআবিয়া (রাঃ)
নিজের লোকদের নিয়ে ফিরে আসেন।
সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৪৬৪)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৮. অনুচ্ছেদঃ
প্রত্যেক
বিশ্বাসঘাতকের হাতে কিয়ামাতের দিন একটি করে পতাকা থাকবে
১৫৮১
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ
حَدَّثَنِي صَخْرُ بْنُ جُوَيْرِيَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ الْغَادِرَ
يُنْصَبُ لَهُ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَلِيٍّ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ
وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَسَأَلْتُ
مُحَمَّدًا عَنْ حَدِيثِ سُوَيْدٍ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ عُمَارَةَ بْنِ
عُمَيْرٍ عَنْ عَلِيٍّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لِكُلِّ
غَادِرٍ لِوَاءٌ " . فَقَالَ لاَ أَعْرِفُ هَذَا الْحَدِيثَ مَرْفُوعًا
.
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ প্রত্যেক
বিশ্বাসঘাতকের জন্যে কিয়ামাত দিবসে একটি করে পতাকা স্থাপন করা হবে।
সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৪৬১)
আলী, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ, আবূ সাঈদ আল-খুদরী ও আনাস (রাঃ) হতেও
এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। তিনি আরও বলেনঃ
“প্রত্যেক বিশ্বাস ঘাতকের জন্য পতাকা থাকবে” আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত এই হাদীস সম্পর্কে
আমি মুহাম্মদ (বুখারী)-কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ হাদীসটি মারফূ’ হিসাবে আমার জানা
নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯. অনুচ্ছেদঃ
সালিশ মেনে
আত্মসমর্পণ
১৫৮২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ أَبِي
الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّهُ قَالَ رُمِيَ يَوْمَ الأَحْزَابِ سَعْدُ بْنُ
مُعَاذٍ فَقَطَعُوا أَكْحَلَهُ أَوْ أَبْجَلَهُ فَحَسَمَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم بِالنَّارِ فَانْتَفَخَتْ يَدُهُ فَتَرَكَهُ فَنَزَفَهُ الدَّمُ
فَحَسَمَهُ أُخْرَى فَانْتَفَخَتْ يَدُهُ فَلَمَّا رَأَى ذَلِكَ قَالَ اللَّهُمَّ
لاَ تُخْرِجْ نَفْسِي حَتَّى تُقِرَّ عَيْنِي مِنْ بَنِي قُرَيْظَةَ .
فَاسْتَمْسَكَ عِرْقُهُ فَمَا قَطَرَ قَطْرَةً حَتَّى نَزَلُوا عَلَى حُكْمِ سَعْدِ
بْنِ مُعَاذٍ فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ فَحَكَمَ أَنْ يُقْتَلَ رِجَالُهُمْ
وَيُسْتَحْيَى نِسَاؤُهُمْ يَسْتَعِينُ بِهِنَّ الْمُسْلِمُونَ . فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَصَبْتَ حُكْمَ اللَّهِ فِيهِمْ
" . وَكَانُوا أَرْبَعَمِائَةٍ فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قَتْلِهِمُ
انْفَتَقَ عِرْقُهُ فَمَاتَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
وَعَطِيَّةَ الْقُرَظِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَبُو الْوَلِيدِ الدِّمَشْقِيُّ،
حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " اقْتُلُوا شُيُوخَ الْمُشْرِكِينَ وَاسْتَحْيُوا
شَرْخَهُمْ " . وَالشَّرْخُ الْغِلْمَانُ الَّذِينَ لَمْ يُنْبِتُوا .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَرَوَاهُ
الْحَجَّاجُ بْنُ أَرْطَاةَ عَنْ قَتَادَةَ نَحْوَهُ .
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সা’দ ইবনু
মুআয (রাঃ) আহ্যাব যুদ্ধের দিন তীরবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এতে তার বাহুর মাঝখানের রগ
কেটে যায়। তার ক্ষতস্থানে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগুনের
সেঁক দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন। তারপর তার হাত ফুলে যায়। আগুনের সেঁক দেওয়া বন্ধ করলে
আবার রক্তক্ষরণ হতে থাকে। আবার তিনি তার ক্ষতস্থানে আগুনের সেঁক দেন। তার হাত
পুনরায় ফুলে উঠে। তিনি (সা’দ) নিজের এ অবস্থা দেখে বলেন, ‘হে আল্লাহ! আমার জীবনকে
কেড়ে নিও না বানূ কুরাইযার চরম পরিণতি দেখে আমার চোখ না জুড়ানো পর্যন্ত। ” তার জখম
হতে সাথে সাথে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে গেল। এরপর আর একটি ফোঁটাও বের হয়নি। সা’দ ইবনু
মুআয (রাঃ)-কে তারা (বানূ কুরাইযা) সালিশ মানতে রাজী হয়। তিনি (রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) তার (সা’দের) নিকট লোক পাঠালেন (সমাধানের
জন্য)। তিনি সমাধান দিলেন যে, বানূ কুরাইযা গোত্রের পুরুষদেরকে মেরে ফেলা হবে এবং
মহিলাদেরকে বাঁচিয়ে রাখা হবে। মুসলমানগণ তাদের দ্বারা বিভিন্ন রকম কাজ আদায় করতে
পারবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাদের ব্যাপারে
তোমার মত সম্পূর্ণ আল্লাহ্ তা’আলার মতের অনুরূপ হয়েছে। তারা (পুরুষগণ) সংখ্যায় ছিল
চার শত। লোকেরা তাদেরকে মেরে ফেলা সমাপ্ত করলে, তার ক্ষতস্থান হতে আবার রক্ত পড়া
আরম্ভ হল এবং তিনি মৃত্যু বরণ করলেন।
সহীহ্, ইরওয়া (৫/৩৮-৩৯)
আবূ সাঈদ ও আতিয়্যা আল-কুরাযী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৮৩
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَبُو الْوَلِيدِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا
الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ
الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " اقْتُلُوا شُيُوخَ الْمُشْرِكِينَ وَاسْتَحْيُوا شَرْخَهُمْ
" . وَالشَّرْخُ الْغِلْمَانُ الَّذِينَ لَمْ يُنْبِتُوا . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَرَوَاهُ الْحَجَّاجُ بْنُ
أَرْطَاةَ عَنْ قَتَادَةَ نَحْوَهُ .
সামুরা ইবনু জুনদুব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “বয়স্ক মুশরিকদের হত্যা কর এবং তাদের
অপ্রাপ্তবয়স্ক বালকদের জীবিত রাখ।”
যঈফ, মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৯৫২) যঈফ আবূ দাউদ (২৫৯)।
শারখঃ যার এখনও লজ্জাস্থানের লোম গজায়নি সে বালক। আবূ ঈসা বলেন,
এ হাদিসটি হাসান সহীহ গারীব। হাজ্জাজ ইবনু আরতাতও কাতাদার সূত্রে এ হাদীস এভাবেই বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৫৮৪
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ
عُمَيْرٍ، عَنْ عَطِيَّةَ الْقُرَظِيِّ، قَالَ عُرِضْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم يَوْمَ قُرَيْظَةَ فَكَانَ مَنْ أَنْبَتَ قُتِلَ وَمَنْ لَمْ
يُنْبِتْ خُلِّيَ سَبِيلُهُ فَكُنْتُ مِمَّنْ لَمْ يُنْبِتْ فَخُلِّيَ سَبِيلِي
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّهُمْ يَرَوْنَ الإِنْبَاتَ بُلُوغًا إِنْ
لَمْ يُعْرَفِ احْتِلاَمُهُ وَلاَ سِنُّهُ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
আতিয়্যা আল-কুরাযী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদেরকে
বানূ কুরাইযার যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
কাছে আনা হল। যাদের লজ্জাস্থানের লোম উঠেছে (বালেগদের) তাদেরকে হত্যা করা হল, আর
যাদের তা উঠেনি (নাবালেগদের) তাদেরকে মুক্ত করে দেওয়া হল। আমার লজ্জাস্থানে তখনও
লোম উঠেনি। একারণে আমাকে মুক্ত করে দেওয়া হল।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৫৪১)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস মোতাবিক একদল
অভিজ্ঞ আলিম আমল করেছেন। তাদের মতে, যে লোকের বয়স এবং বীর্যপাতের ব্যাপারে সঠিকভাবে
অনুমান করা না যাবে- তার নাভির নীচের লোম উঠাই বয়ঃপ্রাপ্তির লক্ষণ বলে গণ্য হবে। এই
অভিমত দিয়েছেন ইমাম আহ্মাদ এবং ইসহাকও।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০. অনুচ্ছেদঃ
বন্ধুত্বের চুক্তি
প্রসঙ্গে
১৫৮৫
حَدَّثَنَا
حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ
الْمُعَلِّمُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فِي خُطْبَتِهِ " أَوْفُوا
بِحِلْفِ الْجَاهِلِيَّةِ فَإِنَّهُ لاَ يَزِيدُهُ يَعْنِي الإِسْلاَمَ إِلاَّ
شِدَّةً وَلاَ تُحْدِثُوا حِلْفًا فِي الإِسْلاَمِ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَأُمِّ سَلَمَةَ وَجُبَيْرِ بْنِ
مُطْعِمٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَقَيْسِ بْنِ عَاصِمٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আমর ইবনু শুআইব
(রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর এক খুতবায় বলেনঃ জাহিলী আমলের
চুক্তিসমূহকে তোমরা পূর্ণ কর। কেননা ইসলাম এটাকে আরো মজবুত করবে। তোমরা আর নতুন
করে ইসলামে একইরকম চুক্তি করবে না।
হাসান, মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৯৮৩)
আবদুর রাহ্মান ইবনু আওফ, উম্মু সালামা, জুবাইর ইবনু মুতঈম, আবূ
হুরাইরা, ইবনু আব্বাস ও কাইস ইবনু আসিম (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ
হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩১. অনুচ্ছেদঃ
অগ্নিপূজকদের নিকট
হতে কর আদায় প্রসঙ্গে
১৫৮৬
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ
بْنُ أَرْطَاةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ بَجَالَةَ بْنِ عَبْدَةَ، قَالَ
كُنْتُ كَاتِبًا لِجَزْءِ بْنِ مُعَاوِيَةَ عَلَى مَنَاذِرَ فَجَاءَنَا كِتَابُ
عُمَرَ انْظُرْ مَجُوسَ مَنْ قِبَلَكَ فَخُذْ مِنْهُمُ الْجِزْيَةَ فَإِنَّ عَبْدَ
الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ أَخْبَرَنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
أَخَذَ الْجِزْيَةَ مِنْ مَجُوسِ هَجَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ .
বাজালা ইবনু আবদা
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মানাযির
নামক অঞ্চলে আমি জায ইবনু মুআবিয়ার সচিব ছিলাম। আমাদের নিকট উমার (রাঃ)-এর চিঠি
আসল। তিনি লিখেছেন, তোমাদের এ অঞ্চলের অগ্নিপূজকদের দেখ এবং তাদের নিকট হতে কর
সংগ্রহ কর। আমাকে আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ) জানিয়েছেন যে, হাজার এলাকার
অগ্নিপূজকদের নিকট হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর আদায়
করেছেন।
সহীহ্, ইরওয়া (১২৪৯), বুখারী
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৮৭
حَدَّثَنَا
ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارٍ، عَنْ بَجَالَةَ، أَنَّ عُمَرَ، كَانَ لاَ يَأْخُذُ الْجِزْيَةَ مِنَ
الْمَجُوسِ حَتَّى أَخْبَرَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ أَنَّ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم أَخَذَ الْجِزْيَةَ مِنْ مَجُوسِ هَجَرَ . وَفِي الْحَدِيثِ
كَلاَمٌ أَكْثَرُ مِنْ هَذَا . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
বাজালা (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
অগ্নিপূজকদের হতে
উমার (রাঃ) কর সংগ্রহ করতেন না যে পর্যন্ত না তাকে আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)
জানান যে, হাজার এলাকার অগ্নিপূজকদের নিকট হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কর সংগ্রহ করেছেন।
সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস
এ হাদীসে আরো অনেক কথা আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৮৮
حَدَّثَنَا
الْحُسَيْنُ بْنُ أَبِي كَبْشَةَ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ
بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ،
قَالَ أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْجِزْيَةَ مِنْ مَجُوسِ الْبَحْرَيْنِ
وَأَخَذَهَا عُمَرُ مِنْ فَارِسَ وَأَخَذَهَا عُثْمَانُ مِنَ الْفُرْسِ .
وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا فَقَالَ هُوَ مَالِكٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
সাইব ইবনু ইয়াযীদ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাহরাইনের মাজূসীদের নিকট হতে
জিযইয়া গ্রহণ করেন। উমার (রাঃ) পারস্যের মাজূসীদের নিকট হতে এবং উসমান (রাঃ)
ফুরস-এর মাজূসীদের নিকট হতে তা আদায় করেন।
ইমাম তিরমিযী বলেনঃ আমি মুহাম্মাদ (বুখারী)-কে এই হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করায় তিনি
বলেনঃ মালিক যুহরীর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে
বর্ণনা করেছেন। অতএব হাদীসটি মুরসাল, ইরওয়া (৫/৯০)।
হাদিসের মানঃমুরসাল
৩২. অনুচ্ছেদঃ
যিম্মীদের (অমুসলিম
নাগরিক) সম্পদ হতে যা নেওয়া যাবে
১৫৮৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ
أَبِي الْخَيْرِ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
إِنَّا نَمُرُّ بِقَوْمٍ فَلاَ هُمْ يُضَيِّفُونَا وَلاَ هُمْ يُؤَدُّونَ مَا
لَنَا عَلَيْهِمْ مِنَ الْحَقِّ وَلاَ نَحْنُ نَأْخُذُ مِنْهُمْ . فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنْ أَبَوْا إِلاَّ أَنْ تَأْخُذُوا
كَرْهًا فَخُذُوا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
وَقَدْ رَوَاهُ اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ أَيْضًا
. وَإِنَّمَا مَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّهُمْ كَانُوا يَخْرُجُونَ فِي
الْغَزْوِ فَيَمُرُّونَ بِقَوْمٍ وَلاَ يَجِدُونَ مِنَ الطَّعَامِ مَا يَشْتَرُونَ
بِالثَّمَنِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنْ أَبَوْا أَنْ
يَبِيعُوا إِلاَّ أَنْ تَأْخُذُوا كَرْهًا فَخُذُوا " . هَكَذَا رُوِيَ فِي
بَعْضِ الْحَدِيثِ مُفَسَّرًا وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رضى
الله عنه أَنَّهُ كَانَ يَأْمُرُ بِنَحْوِ هَذَا .
উকবা ইবনু আমির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! এমন একটি সম্প্রদায়ের এলাকা দিয়ে আমরা চলাচল করি যারা
আমাদের মেহমানদারীও করে না এবং তাদের উপর আমাদের প্রাপ্য অধিকারও আদায় করে না।
আমরাও তাদের নিকট হতে জোরপূর্বক আমাদের প্রাপ্য অধিকার আদায় করি না। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তারা তোমাদের বল প্রয়োগ ব্যতীত
মেহমানদারী করতে না চাইলে তোমরা জোরপূর্বকই তা আদায় কর।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৬৭৬), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। এটিকে ইয়াযীদ ইবনু হাবীবের
সূত্রেও লাইস ইবনু সা’দ বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসের তাৎপর্য হল, মুসলিম যোদ্ধারা অভিযানে
গমন করত। তখন এমন সব যিম্মীদের লোকালয় পেরিয়ে যেতে হত যেখানে ইচ্ছা করলেও খাবার-দাবার
কিনতে পাওয়া যেত না। এরূপ ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর নির্দেশ ছিলঃ তারা খাবার বিক্রয় করতে অস্বীকার করলে এবং জোরখাটিয়ে আদায় করা ছাড়া
আর কোন উপায় না থাকলে তবে তাদের নিকট হতে শক্তি খাটিয়েই তা কিনে নাও। কয়েকটি হাদীসে
এরূপ ব্যাখ্যার উল্লেখ আছে। এরকম পরিস্থিতিতে উমার (রাঃ)-ও এরূপ নির্দেশই দিতেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
হিজরাত প্রসঙ্গে
১৫৯০
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ،
حَدَّثَنَا مَنْصُورُ بْنُ الْمُعْتَمِرِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ فَتْحِ
مَكَّةَ " لاَ هِجْرَةَ بَعْدَ الْفَتْحِ وَلَكِنْ جِهَادٌ وَنِيَّةٌ
وَإِذَا اسْتُنْفِرْتُمْ فَانْفِرُوا " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَبِي سَعِيدٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُبْشِيٍّ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ سُفْيَانُ
الثَّوْرِيُّ عَنْ مَنْصُورِ بْنِ الْمُعْتَمِرِ نَحْوَ هَذَا .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মক্কা
বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এই বিজয়ের পর
আর হিজরাত নেই। হ্যাঁ জিহাদ ও (তার) সংকল্প বজায় থাকবে। অতএব যখন জিহাদে
অংশগ্রহণের জন্য তোমাদেরকে ডাকা হবে তখন তোমরা তার জন্যে বেরিয়ে পড়।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৭৭৩), নাসা-ঈ
আবূ সাঈদ, আবদুল্লাহ ইবনু আমর ও আবদুল্লাহ ইবনু হুবশী (রাঃ) হতেও
এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীসটি
সুফিয়ান সাওরীও মানসূরের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর শপথের বর্ণনা
১৫৯১
حَدَّثَنَا
سَعِيدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأُمَوِيُّ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ،
عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ
جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، فِي قَوْلِهِ تَعَالَى: (لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ
عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ ) قَالَ جَابِرٌ
بَايَعْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى أَنْ لاَ نَفِرَّ وَلَمْ
نُبَايِعْهُ عَلَى الْمَوْتِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ
الأَكْوَعِ وَابْنِ عُمَرَ وَعُبَادَةَ وَجَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ
أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ عِيسَى بْنِ يُونُسَ عَنِ
الأَوْزَاعِيِّ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ قَالَ قَالَ جَابِرُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ وَلَمْ يُذْكَرْ فِيهِ أَبُو سَلَمَةَ .
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ
(রাঃ) হতে আল্লাহ্ তা‘আলার এই বাণী প্রসঙ্গে বর্ণিত আছেঃ “আল্লাহ্ তা‘আলা অবশ্যই
মু’মিন লোকদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন গাছের নীচে তোমার নিকট তারা শপথ করছিল।
তাদের অন্তরের অবস্থা তাঁর জানা ছিল। এজন্যই তাদের উপর তিনি প্রশান্তি অবতীর্ণ
করেন এবং তাদেরকে নিকটবর্তী বিজয় দান করেন” (সূরাঃ ফাত্হ-১৮)। জাবির (রাঃ) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আমরা শপথ করলাম
(প্রতিজ্ঞা করলাম) যে, আমরা যুদ্ধক্ষেত্র হতে পালাবো না। কিন্তু আমরা তাঁর নিকট
মৃত্যুর বাই’আত করিনি।
সহীহ্, মুসলিম আয়াতের উল্লেখ ব্যতীত
সালামা ইবনুল আকওয়া, ইবনু উমার, উবাদা ও জারীর ইবনু আবদুল্লাহ
(রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি অন্য একটি সূত্রেও
বর্ণিত আছে। কিন্তু আবূ সালামার নাম তাতে উল্লেখ নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৯২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي
عُبَيْدٍ، قَالَ قُلْتُ لِسَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ عَلَى أَىِّ شَيْءٍ
بَايَعْتُمْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْحُدَيْبِيَةِ قَالَ
عَلَى الْمَوْتِ . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইয়াযীদ ইবনু আবূ
উবাইদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালামা
ইবনুল আকওয়া (রাঃ)-কে আমি প্রশ্ন করলামঃ হুদাইবিয়ার দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আপনারা কি বিষয়ে শপথ করেছিলেন? তিনি বললেন, মৃত্যুর
শপথ করেছিলাম (যে পর্যন্ত জীবন থাকবে যুদ্ধ করতে থাকব, পালিয়ে যাবো না)।
সহীহ্, নাসা-ঈ
এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৯৩
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كُنَّا نُبَايِعُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فَيَقُولُ لَنَا
" فِيمَا اسْتَطَعْتُمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ كِلاَهُمَا .
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট (নির্দেশ) শুনার ও সে
মোতাবিক আনুগত্যের শপথ নিতাম। তিনি আমাদের বলতেনঃ তোমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব।
সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৬০৬), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। উভয় হাদীসের অর্থই সঠিক।
কেননা তাঁর নিকট প্রয়োজনবোধে মৃত্যুবরণের জন্য তাঁর একদল সাহাবী শপথ (বাই’আত) করেছেন।
তারা বলেছেন, ‘আমরা মৃত্যুবরণ করার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত আপনার আগে আগে প্রতিরক্ষা
রচনা করে চলব’। সাহাবীদের অন্য দল তাঁর নিকট প্রাণভয়ে যুদ্ধক্ষেত্র হতে না পালানোর
শপথ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৯৪
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي
الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لَمْ نُبَايِعْ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْمَوْتِ إِنَّمَا بَايَعْنَاهُ عَلَى أَنْ لاَ
نَفِرَّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَمَعْنَى كِلاَ
الْحَدِيثَيْنِ صَحِيحٌ قَدْ بَايَعَهُ قَوْمٌ مِنْ أَصْحَابِهِ عَلَى الْمَوْتِ
وَإِنَّمَا قَالُوا لاَ نَزَالُ بَيْنَ يَدَيْكَ حَتَّى نُقْتَلَ وَبَايَعَهُ
آخَرُونَ فَقَالُوا لاَ نَفِرُّ .
জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আমরা কোন সময়ই মৃত্যুর
শপথ করিনি, বরং আমরা তাঁর নিকট যুদ্ধক্ষেত্র হতে পালিয়ে না যাওয়ার শপথ করেছি।
সহীহ্, মুসলিম ১৫৯১ নং হাদীসটি উল্লেখ হয়েছে
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
শপথ (বাই‘আত)
প্রত্যাখ্যানের পরিণতি
১৫৯৫
حَدَّثَنَا
أَبُو عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ
وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ رَجُلٌ بَايَعَ إِمَامًا فَإِنْ أَعْطَاهُ وَفَى لَهُ
وَإِنْ لَمْ يُعْطِهِ لَمْ يَفِ لَهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَعَلَى ذَلِكَ الْأَمْرُ بِلَا اخْتِلَافٍ.
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিন প্রকার লোকের সাথে
আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাত দিবসে কথা বলবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের
জন্য রয়েছে খুবই বেদনাদায়ক শাস্তি। এদের মধ্যকার একজন হলঃ ইমামের নিকট যে লোক
আনুগত্যের শপথ করেছে। ইমাম (রাষ্ট্রপ্রধান) তাকে কোন সুযোগ-সুবিধা দিলে তবে সে শপথ
ঠিক রাখে। তিনি তাকে কোন সুযোগ-সুবিধা না দিলে তবে সে শপথ পূর্ণ করে না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২০৭), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীসের বক্তব্য সম্পর্কে
কোন মতবিরোধ নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৬. অনুচ্ছেদঃ
গোলামের শপথ প্রসঙ্গে
১৫৯৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ
جَابِرٍ، أَنَّهُ قَالَ جَاءَ عَبْدٌ فَبَايَعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم عَلَى الْهِجْرَةِ وَلاَ يَشْعُرُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ
عَبْدٌ فَجَاءَ سَيِّدُهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم "
بِعْنِيهِ " . فَاشْتَرَاهُ بِعَبْدَيْنِ أَسْوَدَيْنِ وَلَمْ يُبَايِعْ
أَحَدًا بَعْدُ حَتَّى يَسْأَلَهُ أَعَبْدٌ هُوَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي الزُّبَيْرِ .
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট একজন গোলাম এসে হিজরাতের
শপথ নিল। সে যে গোলাম তা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানতেন
না। তার মনিব এসে উপস্থিত হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাকে বললেনঃ আমার নিকট একে বিক্রয় করে দাও। তিনি দু’টি কালো গোলামের বিনিময়ে তাকে
কিনলেন। এরপর হতে তিনি কোন লোককে শপথ করাতেন না সে গোলাম কি-না তা প্রশ্ন না করা
পর্যন্ত।
সহীহ্, মুসলিম
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। জাবির
(রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব সহীহ্ বলেছেন। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র
আবুয যুবাইরের সূত্রে জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ
মহিলাদের শপথ
প্রসঙ্গে
১৫৯৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ ابْنِ الْمُنْكَدِرِ،
سَمِعَ أُمَيْمَةَ بِنْتَ رُقَيْقَةَ، تَقُولُ بَايَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فِي نِسْوَةٍ فَقَالَ لَنَا " فِيمَا اسْتَطَعْتُنَّ
وَأَطَقْتُنَّ " . قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَرْحَمُ بِنَا مِنَّا
بِأَنْفُسِنَا . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ بَايِعْنَا . قَالَ سُفْيَانُ
تَعْنِي صَافِحْنَا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِنَّمَا قَوْلِي لِمِائَةِ امْرَأَةٍ كَقَوْلِي لاِمْرَأَةٍ وَاحِدَةٍ "
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ
وَأَسْمَاءَ بِنْتِ يَزِيدَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ . وَرَوَى
سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَمَالِكُ بْنُ أَنَسٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ نَحْوَهُ . قَالَ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ
هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ لاَ أَعْرِفُ لأُمَيْمَةَ بِنْتِ رُقَيْقَةَ غَيْرَ
هَذَا الْحَدِيثِ . وَأُمَيْمَةُ امْرَأَةٌ أُخْرَى لَهَا حَدِيثٌ عَنْ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
মুহাম্মাদ ইবনুল
মুনকাদির (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রুকাইকার মেয়ে
উমাইমা (রাঃ) কে বলতে শুনেছেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট কয়েকজন মহিলার সাথে শপথ গ্রহণ করি। তিনি আমাদেরকে বললেনঃ তোমাদের
যোগ্যতা ও শক্তি মোতাবিক (দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন করবে)। আমি বললাম, আমাদের
নিজেদের চাইতে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল আমাদের উপর অনেক বেশি অনুগ্রহশীল। আমি আরো
বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদেরকে শপথ করান। সুফিয়ান বলেন, তার কথার অর্থ ছিল,
আমাদের হাত স্পর্শ করুন (যেভাবে পুরুষদের হাত স্পর্শ করে শপথ করা হয়)। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমার বক্তব্য একজন মহিলার প্রতি যেমন
একশত জন মহিলার উপরেও ঠিক তেমনই।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮৭৪)
আইশা, আবদুল্লাহ ইবনু আমর ও আসমা বিনতু ইয়াযীদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্নিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে
শুধুমাত্র মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদিরের সূত্রেই জেনেছি। সুফিয়ান সাওরী, মালিক ও অন্যান্যরা
মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদিরের সূত্রে এ হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। আমি এ হাদীস বিষয়ে
মুহাম্মাদ (বুখারী)-কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, উমাইমা বিনতু রুকাইকা (রাঃ) হতে বর্ণিত
এটি ব্যতীত আর কোন হাদীস আছে কি-না তা আমার জানা নেই। উমাইমা (রাঃ) নামক আরো একজন মহিলা
আছেন যিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ
বদরের যুদ্ধে
অংশগ্রহণকারী সাহীবীদের সংখ্যা
১৫৯৮
حَدَّثَنَا
وَاصِلُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
عَيَّاشٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ كُنَّا نَتَحَدَّثُ أَنَّ
أَصْحَابَ، بَدْرٍ يَوْمَ بَدْرٍ كَعِدَّةِ أَصْحَابِ طَالُوتَ ثَلاَثِمِائَةٍ
وَثَلاَثَةَ عَشَرَ رَجُلاً . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ الثَّوْرِيُّ
وَغَيْرُهُ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ .
বারাআ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা একে
অপরের সাথে বলাবলি করতাম যে, বদরের যুদ্ধে বাদরী বাহিনীতে সাহাবীগণের পরিমাণ ছিল
তালূত বাহিনীর মত তিন শত তেরজন।
সহীহ্, বুখারী
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীসটি আবূ ইসহাকের সূত্রে সুফিয়ান সাওরী এবং অন্যান্যরাও
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৯. অনুচ্ছেদঃ
খুমুস
(এক-পঞ্চমাংশ)-এর এ বিবরণ
১৫৯৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ
عَبَّادٍ الْمُهَلَّبِيُّ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِوَفْدِ عَبْدِ الْقَيْسِ "
آمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا خُمُسَ مَا غَنِمْتُمْ " . قَالَ وَفِي
الْحَدِيثِ قِصَّةٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ،
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، نَحْوَهُ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল কাইস বংশের
প্রতিনিধি দলকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি
তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি, তোমরা গনিমতের যে সম্পদ লাভ করবে তার মধ্য হতে এক
এক-পঞ্চামাংশ (বাইতুল মালে) দিয়ে দেবে।
সহীহ্, সংক্ষিপ্ত বুখারী (৪০), আল ঈমান, আবূ উবাইদ (৫৯/১), নাসা-ঈ
এ হাদীসের সাথে একটি ঘটনা আছে।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। উপরোক্ত হাদীসের মত অন্য একটি সূত্রেও ইবনু
আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪০. অনুচ্ছেদঃ
গনিমতের সম্পদ হতে
বন্টনের আগে নেওয়া নিষেধ
১৬০০
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبَايَةَ بْنِ رِفَاعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
جَدِّهِ، رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فِي سَفَرٍ فَتَقَدَّمَ سَرَعَانُ النَّاسِ فَتَعَجَّلُوا مِنَ الْغَنَائِمِ
فَاطَّبَخُوا وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي أُخْرَى النَّاسِ فَمَرَّ
بِالْقُدُورِ فَأَمَرَ بِهَا فَأُكْفِئَتْ ثُمَّ قَسَمَ بَيْنَهُمْ فَعَدَلَ
بَعِيرًا بِعَشْرِ شِيَاهٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
عَبَايَةَ، عَنْ جَدِّهِ، رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ أَبِيهِ .
حَدَّثَنَا بِذَلِكَ، مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ
سُفْيَانَ، . وَهَذَا أَصَحُّ وَعَبَايَةُ بْنُ رِفَاعَةَ سَمِعَ مِنْ، جَدِّهِ
رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ ثَعْلَبَةَ بْنِ الْحَكَمِ،
وَأَنَسٍ، وَأَبِي، رَيْحَانَةَ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
سَمُرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ وَجَابِرٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي أَيُّوبَ
.
রাফি ইবনু খাদীজ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক
(যুদ্ধের) ভ্রমণে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে
ছিলাম। কয়েকটি দ্রুতগামী লোক আগে চলে গেল। তারা দ্রুততার সাথে গনিমতের সম্পদ হতে
কিছু নিয়ে তা রান্না করা শুরু করে দিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) পিছনের দলের সাথে ছিলেন। এই হাঁড়িগুলোর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি
নির্দেশ দিলেন এবং সে অনুযায়ী সেগুলো উলটিয়ে দেওয়া হল। তারপর তিনি গনিমতের সম্পদ
বন্টন করলেন এবং দশ দশটি বকরীর সমান ধরলেন এক একটি উটকে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩১৩৭), নাসা-ঈ
আবূ ঈসা বলেন, সুফিয়ান সাওরী তার পিতা হতে, তিনি আবাইয়া হতে, তিনি
তার দাদা রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ)-এর সূত্রে উল্লেখিত হাদীস বর্ণনা করেছেন, এতে আবাইয়ার
পরে তার পিতা রিফাআর কোন উল্লেখ নেই। মাহ্মূদ ইবনু গাইলান-ওয়াকী হতে, তিনি সুফিয়ানের
সূত্রে উক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং এটি অনেক বেশি সহীহ্।
সালাবা ইবনুল হাকাম, আনাস, আবূ রাইহানা, আবূদ দারদা, আবদুর রাহমান ইবনু সামুরা, যাইদ
ইবনু খালিদ, জাবির, আবূ হুরাইরা ও আবূ আইয়ূব (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে অধিক সহীহ্ বলেছেন। আর আবাইয়া ইবুন রিফাআ ভাবে তার দাদা রাফি
(রাঃ) হতে হাদীস শ্রবণ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬০১
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ
ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
مَنِ انْتَهَبَ فَلَيْسَ مِنَّا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَنَسٍ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বন্টনের পূর্বে যে
ব্যক্তি গনিমতের সম্পদ হতে কিছু গ্রহণ করে সে আমাদের দল ভুক্ত নয়।
সহীহ্, মিশকাত তাহকীক ছানী (২৯৪৭)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ এবং আনাস (রাঃ)-এর রিওয়াত হিসাবে
গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪১. অনুচ্ছেদঃ
আহলে কিতাবদের সালাম
প্রদান প্রসঙ্গে
১৬০২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ
أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَبْدَءُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى
بِالسَّلاَمِ وَإِذَا لَقِيتُمْ أَحَدَهُمْ فِي الطَّرِيقِ فَاضْطَرُّوهُمْ إِلَى
أَضْيَقِهِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَأَنَسٍ وَأَبِي
بَصْرَةَ الْغِفَارِيِّ صَاحِبِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ " لاَ
تَبْدَءُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى " . قَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ
إِنَّمَا مَعْنَى الْكَرَاهِيَةِ لأَنَّهُ يَكُونُ تَعْظِيمًا لَهُ وَإِنَّمَا
أُمِرَ الْمُسْلِمُونَ بِتَذْلِيلِهِمْ وَكَذَلِكَ إِذَا لَقِيَ أَحَدَهُمْ فِي
الطَّرِيقِ فَلاَ يَتْرُكُ الطَّرِيقَ عَلَيْهِ لأَنَّ فِيهِ تَعْظِيمًا لَهُمْ
.
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ইয়াহূদী-নাসারাদের প্রথমে সালাম
প্রদান করো না। তোমরা রাস্তায় চলাচলের সময় তাদের কারো সাথে দেখা হলে তাকে রাস্তার
কিনারায় ঠেলে দিও।
সহীহ্, সহীহা (৭০৪), ইরওয়া (১২৭১), মুসলিম, বুখারী আদাবুল মুফরাদ, ২৮৫৫ নং
হাদীসটির আলোচনা আসবে।
ইবনু উমার, আনাস ও আবূ বাসরা আল-গিফারী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬০৩
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " إِنَّ الْيَهُودَ إِذَا سَلَّمَ عَلَيْكُمْ أَحَدُهُمْ
فَإِنَّمَا يَقُولُ السَّامُ عَلَيْكُمْ فَقُلْ عَلَيْكَ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমাদেরকে কোন
ইয়াহূদী সালাম করে তখন বলে, ‘আসসামু আলাইকুম’ (তোমার মৃত্যু হোক)। তুমি উত্তরে বল,
“আলাইকা” (তোমার হোক)।
সহীহ্, ইরওয়া (৫/১১২), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪২. অনুচ্ছেদঃ
মুশরিকদের সাথে বসবাস
করা নিষেধ
১৬০৪
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ،
عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ سَرِيَّةً إِلَى خَثْعَمٍ فَاعْتَصَمَ نَاسٌ
بِالسُّجُودِ فَأَسْرَعَ فِيهِمُ الْقَتْلُ فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم فَأَمَرَ لَهُمْ بِنِصْفِ الْعَقْلِ وَقَالَ " أَنَا بَرِيءٌ
مِنْ كُلِّ مُسْلِمٍ يُقِيمُ بَيْنَ أَظْهُرِ الْمُشْرِكِينَ " . قَالُوا
يَا رَسُولَ اللَّهِ وَلِمَ قَالَ " لاَ تَرَايَا نَارَاهُمَا " .
জারীর ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খাসআমদের অঞ্চলে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি ছোট বাহিনী প্রেরণ করেন।
সিজদার মাধ্যমে সেখানকার জনগণ আত্মরক্ষা করতে চাইল। কিন্তু দ্রুততার সাথে তাদেরকে
মেরে ফেলা হয়। এ সংবাদ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট
আসলে তিনি তাদের অর্ধেক দিয়াত (রক্তপণ) দেওয়ার জন্য হুকুম দেন। তিনি আরো বলেন,
মুশ্রিকদের সাথে যে সকল মুসলমান বসবাস করে আমি তাদের দায়িত্ব হতে মুক্ত। সাহাবীগণ
বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! তা কেন? তিনি বললেনঃ এইটুকু দূরে থাকবে যেন উভয়ের আগুন
না দেখা যায়।
“অর্ধেক দিয়াত দেওয়ার হুকুম দেন” এই অংশ ব্যতীত হাদীসটি সহীহ্, ইরওয়া (১২০৭),
সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩৭৭)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬০৫
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ
قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، مِثْلَ حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ وَلَمْ يَذْكُرْ
فِيهِ عَنْ جَرِيرٍ، . وَهَذَا أَصَحُّ . وَفِي الْبَابِ عَنْ سَمُرَةَ، .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَكْثَرُ أَصْحَابِ إِسْمَاعِيلَ قَالُوا عَنْ قَيْسِ بْنِ
أَبِي حَازِمٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ سَرِيَّةً وَلَمْ
يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ جَرِيرٍ. وَرَوَاهُ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ عَنْ
الْحَجَّاجِ بْنِ أَرْطَاةَ عَنْ إِسْمَعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ عَنْ قَيْسٍ عَنْ
جَرِيرٍ مِثْلَ حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ قَالَ وَسَمِعْت مُحَمَّدًا يَقُولُ
الصَّحِيحُ حَدِيثُ قَيْسٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
مُرْسَلٌ وَرَوَى سَمُرَةُ بْنُ جُنْدَبٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ قَالَ لَا تُسَاكِنُوا الْمُشْرِكِينَ وَلَا تُجَامِعُوهُمْ فَمَنْ
سَاكَنَهُمْ أَوْ جَامَعَهُمْ فَهُوَ مِثْلُهُمْ
কাইস ইবনু আবূ
হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তবে এই সূত্রে জারীর (রাঃ)-এর উল্লেখ নেই এবং এটিই অনেক বেশি সহীহ্।
সামুরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, ইসমাঈলের বেশিরভাগ
সঙ্গী তার হতে, তিনি কাইস ইবনু আবূ হাযিমের সূত্রে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি ছোট বাহিনী পাঠান। এ সূত্রেও জারীরের
উল্লেখ নেই। আবূ মুআবিয়ার হাদীসের মত হাদীস হাম্মাদ ইবনু সালামা-হাজ্জাজ ইবনু
আরতাত হতে, তিনি ইসমাঈল ইবনু আবূ খালিদ হতে, তিনি কাইস হতে, তিনি জারীর (রাঃ)-এর
সূত্রে বর্ণনা করেছেন। আমি ইমাম বুখারীকে বলতে শুনেছি, সঠিক কথা হল রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে কাইস এর বর্ণনাটি মুরসাল। সামুরা ইবনু
জুনদাব (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ “মুশরিকদের সাথে তোমরা একত্রে বসবাস কর না, তাদের সংসর্গেও যেও না। যে
মানুষ তাদের সাথে বসবাস করবে অথবা তাদের সংসর্গে থাকবে সে তাদের অনুরূপ বলে
বিবেচিত হবে। ”
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৪৩. অনুচ্ছেদঃ
আরব উপদ্বীপ হতে
ইয়াহূদী-নাসারাদের বের করে দেওয়া প্রসঙ্গে
১৬০৬
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْكِنْدِيُّ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ،
أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، عَنْ
عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لَئِنْ عِشْتُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ لأُخْرِجَنَّ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى
مِنْ جَزِيرَةِ الْعَرَبِ " .
উমার ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইনশাআল্লাহ আমি জীবিত থাকলে
ইয়াহূদী-নাসারাদের অবশ্যই আরব উপদ্বীপ হতে বের করে দিব।
সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬০৭
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، وَعَبْدُ
الرَّزَّاقِ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو
الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ أَخْبَرَنِي
عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ " لأُخْرِجَنَّ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى مِنْ جَزِيرَةِ
الْعَرَبِ فَلاَ أَتْرُكُ فِيهَا إِلاَّ مُسْلِمًا " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
উমার ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেনঃ আমি ইহূদী ও নাসারাদের আরব
উপদ্বীপ হতে অবশ্যই বহিষ্কার করব। মুসলমান ব্যতীত অন্য কাউকে সেখানে বসবাস করতে
দিব না।
সহীহ্, সহীহা (১১৩৪), সহীহ্ আবূ দাঊদ, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৪. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রেখে যাওয়া সম্পত্তি প্রসঙ্গে
১৬০৮
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ
بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ جَاءَتْ فَاطِمَةُ إِلَى أَبِي بَكْرٍ فَقَالَتْ مَنْ يَرِثُكَ
قَالَ أَهْلِي وَوَلَدِي . قَالَتْ فَمَا لِي لاَ أَرِثُ أَبِي فَقَالَ أَبُو
بَكْرٍ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ
نُورَثُ " . وَلَكِنِّي أَعُولُ مَنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَعُولُهُ وَأُنْفِقُ عَلَى مَنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يُنْفِقُ عَلَيْهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ
وَطَلْحَةَ وَالزُّبَيْرِ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَسَعْدٍ وَعَائِشَةَ
. وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
إِنَّمَا أَسْنَدَهُ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ وَعَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَطَاءٍ
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ لاَ أَعْلَمُ أَحَدًا
رَوَاهُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
إِلاَّ حَمَّادَ بْنَ سَلَمَةَ . وَرَوَى عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَطَاءٍ عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ نَحْوَ
رِوَايَةِ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ বকর
(রাঃ)-এর নিকট ফাতিমা (রাঃ) এসে বললেন, আপনার উত্তরাধিকারী কে হবে? তিনি বললেন,
আমার স্ত্রী এবং সন্তানগণ। তিনি (ফাতিমা) বললেন, তাহলে আমার পিতার উত্তরাধিকারী
আমি হব না কেন? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ “আমাদের (নাবীদের) কোন উত্তরাধিকারী হয় না। ” তবে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাদের ভরণ-পোষণের যোগার করতেন
আমিও তাদের ভরণ-পোষণের যোগার করে যাব। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যাদের খরচপাতি বহন করতেন আমিও তাদের খরচপাতি বহন করতে থাকব।
সহীহ্, মুখতাসার শামাঈল মুহাম্মাদীয়া (৩৩৭)
উমার, তালহা, যুবাইর, আবদুর রাহমান ইবনু আওফ, সা’দ ও আইশা (রাঃ)
হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা উল্লেখিত সনদ সূত্রে হাসান
গারীব বলেছেন। এই হাদীস আবদুল ওয়াহ্হাব ইবনু আতা হতে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনু আমর হতে
তিনি আবূ সালামা হতে, তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সূত্রে হাম্মাদ ইবনু সালামা বর্ণনা
করেছেন। আমি এই হাদীস প্রসঙ্গে মুহাম্মাদ বুখারীকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ হাদীস
মুহাম্মাদ ইবনু আমর হতে, তিনি আবূ সালামা হতে, তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সূত্রে হাম্মাদ
ইবনু সালামা ছাড়া অন্য কেউ বর্ণনা করেছেন বলে আমার জানা নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬০৯
حَدَّثَنَا
بِذَلِكَ، عَلِيُّ بْنُ عِيسَى الْبَغْدَادِيُّ قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْوَهَّابِ بْنُ عَطَاءٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ فَاطِمَةَ، جَاءَتْ أَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ
رضى الله عنهما تَسْأَلُ مِيرَاثَهَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالاَ سَمِعْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنِّي
لاَ أُورَثُ " . قَالَتْ وَاللَّهِ لاَ أُكَلِّمُكُمَا أَبَدًا .
فَمَاتَتْ وَلاَ تُكَلِّمُهُمَا . قَالَ عَلِيُّ بْنُ عِيسَى مَعْنَى لاَ
أُكَلِّمُكُمَا تَعْنِي فِي هَذَا الْمِيرَاثِ أَبَدًا أَنْتُمَا صَادِقَانِ .
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বাক্র ও উমার
(রাঃ)-এর কাছে ফাতিমা (রাঃ) এসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে তার প্রাপ্য উত্তরাধিকারস্বত্ব দাবি করেন। তারা দু’জুনেই বললেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আমরা বলতে শুনেছিঃ “আমার কেউ ওয়ারিস হয়
না”। ফাতিমা (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি আর কোন সময় (উত্তরাধিকারস্বত্ব
বিষয়ে) আপনাদের উভয়ের সাথে আলোচনা করব না। অতঃপর মৃত্যু পর্যন্তু তিনি আর তাদের
সাথে (এ ব্যাপারে) কথা বলেননি।
সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস।
আলী ইবনু ঈসা বলেন, আমি তোমাদের সাথে কথা বলবনা। এর অর্থ হল উত্তরাধিকার
বিষয়ে তোমরা সত্যবাদী। আবূ বাকার (রাঃ) হতে একাধিক সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬১০
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، أَخْبَرَنَا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا
مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ بْنِ
الْحَدَثَانِ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَدَخَلَ عَلَيْهِ
عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ وَالزُّبَيْرُ بْنُ الْعَوَّامِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ
بْنُ عَوْفٍ وَسَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ ثُمَّ جَاءَ عَلِيٌّ وَالْعَبَّاسُ
يَخْتَصِمَانِ فَقَالَ عُمَرُ لَهُمْ أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ
تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ تَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَاهُ صَدَقَةٌ " . قَالُوا
نَعَمْ . قَالَ عُمَرُ فَلَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ أَبُو بَكْرٍ أَنَا وَلِيُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
فَجِئْتَ أَنْتَ وَهَذَا إِلَى أَبِي بَكْرٍ تَطْلُبُ أَنْتَ مِيرَاثَكَ مِنَ ابْنِ
أَخِيكَ وَيَطْلُبُ هَذَا مِيرَاثَ امْرَأَتِهِ مِنْ أَبِيهَا فَقَالَ أَبُو
بَكْرٍ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ نُورَثُ مَا
تَرَكْنَاهُ صَدَقَةٌ " . وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّهُ لَصَادِقٌ بَارٌّ
رَاشِدٌ تَابِعٌ لِلْحَقِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ
طَوِيلَةٌ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ مَالِكِ بْنِ
أَنَسٍ .
মালিক ইবনু আওস
ইবনু হাদাসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমার
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)–এর সামনে আসলাম। উসমান ইবনু আফফান, যুবাইর ইবনুল আওয়াম, আবদুর
রাহমান ইবনু আওফ ও সা’দ ইবনু ওয়াক্কাস (রাঃ)-ও তার সামনে আসলেন। তারপর আলী ও ইবনু
আব্বাস (রাঃ)-ও আসলেন। তারা দু’জনেই তাদের অভিযোগ উপস্থাপন করলেন। তাদের সবাইকে উমার
(রাঃ) বললেন, আমি আপনাদেরকে সেই আল্লাহর শপথ করে বলছি যাঁর হুকুমে আকাশ এবং যমীন
সুপ্রতিষ্ঠিত আছে! আপনারা কি জানেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ “আমাদের (নবীদের) কোন উত্তরাধিকারী হয় না, আমরা যে সব (সম্পদ)
রেখে যাই তা সাদকা বলে বিবেচিত”? তারা সকলেই বললেন, হ্যাঁ। আবার উমার (রাঃ) বললেন,
আবূ বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মৃত্যুর পর
বললেন, আমি এখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্থলাভিষিক্ত
হয়েছি। (উমার বলেন) তখন আপনি (আব্বাস) ও ইনি (আলী) আবূ বকর (রাঃ) এর নিকট
এসেছিলেন। আপনার ভাইয়ের ছেলের সম্পত্তিতে আপনি নিজের উত্তরাধিকার দাবি করলেন এবং
ইনি তার শ্বশুরের সম্পত্তিতে নিজের উত্তরাধিকার দাবি করলেন। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “আমাদের কোন উত্তরাধিকারী
হয় না, আমরা যা কিছু রেখে যাই তা সাদকা বলে বিবেচিত”। আল্লাহ তা‘আলা জানেন, তিনি
(আবূ বাক্র) সত্যবাদী, সৎকর্মশীল, সৎপথের পথিক এবং সত্য-ন্যায়ের অনুসারী ছিলেন।
সহীহ্, মুখতাসার শামাইল (৩৪১), নাসা-ঈ
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসের সাথে দীর্ঘ বর্ণনা রয়েছে। এ হাদীসটি হাসান
সহীহ গারীব এবং মালিক ইবনু আনাস (রহঃ)-এর রিওয়াত হিসাবে গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৫. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন বললেনঃ এ শহরে আজকের দিনের
পর আর যুদ্ধ করা যাবে না।
১৬১১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا
بْنُ أَبِي زَائِدَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ مَالِكِ بْنِ
الْبَرْصَاءِ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ فَتْحِ
مَكَّةَ يَقُولُ " لاَ تُغْزَى هَذِهِ بَعْدَ الْيَوْمِ إِلَى يَوْمِ
الْقِيَامَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
وَسُلَيْمَانَ بْنِ صُرَدٍ وَمُطِيعٍ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَهُوَ
حَدِيثُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ عَنِ الشَّعْبِيِّ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ
مِنْ حَدِيثِهِ .
হারিস ইবনু মালিক
ইবনু বারসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মক্কা বিজয়ের দিন বলতে শুনেছিঃ
আজকের পর কিয়ামাত পর্যন্ত এখানে আর যুদ্ধ করা যাবে না।
সহীহ্, সহীহা (২৪২৭)
ইবনু আব্বাস, সুলাইমান ইবনু সুরাদ ও মুতী’ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। যাকারিয়া ইবনু আবূ যাইদা-শাবী
(রহঃ)-এর সূত্রে উক্ত হাদীসটি বর্ণিত। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র এই সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬. অনুচ্ছেদঃ
যুদ্ধের সঠিক সময়
১৬১২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي،
عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ مُقَرِّنٍ، قَالَ غَزَوْتُ مَعَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَانَ إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ أَمْسَكَ حَتَّى
تَطْلُعَ الشَّمْسُ فَإِذَا طَلَعَتْ قَاتَلَ فَإِذَا انْتَصَفَ النَّهَارُ
أَمْسَكَ حَتَّى تَزُولَ الشَّمْسُ فَإِذَا زَالَتِ الشَّمْسُ قَاتَلَ حَتَّى
الْعَصْرِ ثُمَّ أَمْسَكَ حَتَّى يُصَلِّيَ الْعَصْرَ ثُمَّ يُقَاتِلُ . قَالَ
وَكَانَ يُقَالُ عِنْدَ ذَلِكَ تَهِيجُ رِيَاحُ النَّصْرِ وَيَدْعُو
الْمُؤْمِنُونَ لِجُيُوشِهِمْ فِي صَلاَتِهِمْ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ
رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ مُقَرِّنٍ بِإِسْنَادٍ أَوْصَلَ
مِنْ هَذَا . وَقَتَادَةُ لَمْ يُدْرِكِ النُّعْمَانَ بْنَ مُقَرِّنٍ وَمَاتَ
النُّعْمَانُ بْنُ مُقَرِّنٍ فِي خِلاَفَةِ عُمَرَ .
নুমান ইবনু
মুকাররিন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি।
ফজর হয়ে গেলে সূর্য না উঠা পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ হতে বিরত থাকতেন এবং সূর্য উঠার পর
যুদ্ধ শুরু করতেন। দিনের অর্ধেক চলে যাবার পর তিনি যুদ্ধ স্থগিত করতেন এবং সূর্য
পশ্চিমে ঢলে না পড়া পর্যন্ত তা বন্ধ রাখতেন। সূর্য ঢলে যাওয়ার পর তিনি আবার যুদ্ধ
শুরু করতেন এবং আসর পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখতেন। তারপর আসর নামায আদায়ের জন্য তা
বন্ধ করতেন। নামায শেষে তিনি আবার যুদ্ধে নেমে যেতেন। বলা হত, এ সময় (আল্লাহ
তা‘আলার) সাহায্যের বায়ু প্রবাহিত হয় এবং মু’মিনগণ তাদের নামাযের মাঝে তাদের
সেনাবাহিনীর জন্য দু‘আ করতেন।
যঈফ, মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৯৩৪)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি নুমান ইবনু মুকাররিন (রাঃ) হতে আরও একের
অধিক অবিচ্ছিন্ন (মুত্তাসিল) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। কাতাদা (রহঃ) নুমান ইবনু মুকাররিনের
দেখা পাননি। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-এর খিলাফত কালে নুমান (রাঃ) মারা যান।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৬১৩
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ،
وَالْحَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ،
حَدَّثَنَا أَبُو عِمْرَانَ الْجَوْنِيُّ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
الْمُزَنِيِّ، عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، بَعَثَ
النُّعْمَانَ بْنَ مُقَرِّنٍ إِلَى الْهُرْمُزَانِ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ
فَقَالَ النُّعْمَانُ بْنُ مُقَرِّنٍ شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَكَانَ إِذَا لَمْ يُقَاتِلْ أَوَّلَ النَّهَارِ انْتَظَرَ حَتَّى تَزُولَ
الشَّمْسُ وَتَهُبَّ الرِّيَاحُ وَيَنْزِلَ النَّصْرُ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَعَلْقَمَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ هُوَ أَخُو
بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمُزَنِيِّ .
মাকিল ইবনু ইয়াসার
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ) হুরমুযানের বিরুদ্ধে নু’মান ইবনু মুকাররিন (রাঃ)-কে প্রেরণ করেন। তারপর এ
হাদীসের বিস্তারিত ঘটনা (অন্যত্র) বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন। নু’মান ইবনু মুকাররিন
(রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে (বিভিন্ন
যুদ্ধে) অংশগ্রহণ করেছি। তিনি দিনের প্রথম ভাগে যুদ্ধ আরম্ভ না করলে সূর্য
(পশ্চিমাকাশে) ঢলে পড়ার, বাতাস প্রবাহিত হওয়ার এবং সাহায্য অবতীর্ণ হওয়ার অপেক্ষা
করে যুদ্ধ আরম্ভ করতেন।
সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (২৩৮৫), মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৯৩৩)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আলকামা ইবনু আবদুল্লাহ
(রহঃ) বাক্র ইবনু আবদুল্লাহ আল-মুযানীর ভাই। নু’মান ইবনু মুকাররিন উমার (রাঃ)-এর খিলাফাতকালে
মারা যান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭. অনুচ্ছেদঃ
কুলক্ষণ প্রসঙ্গে
১৬১৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ عِيسَى بْنِ عَاصِمٍ،
عَنْ زِرٍّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " الطِّيَرَةُ مِنَ الشِّرْكِ " . وَمَا مِنَّا
إِلاَّ وَلَكِنَّ اللَّهَ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَحَابِسٍ التَّمِيمِيِّ وَعَائِشَةَ وَابْنِ
عُمَرَ وَسَعْدٍ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
حَدِيثِ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ وَرَوَى شُعْبَةُ أَيْضًا عَنْ سَلَمَةَ هَذَا
الْحَدِيثَ . قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يَقُولُ كَانَ
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ يَقُولُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ " وَمَا مِنَّا إِلاَّ
وَلَكِنَّ اللَّهَ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ " . قَالَ سُلَيْمَانُ
هَذَا عِنْدِي قَوْلُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَمَا مِنَّا.
আবদুল্লাহ ইবনু
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুলক্ষণে বিশ্বাস করা
শিরকের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত। এমন কেউই আমাদের মধ্যে নেই যার মনে এর ধারণা আসে না।
তবে আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর উপর (মু’মিন লোকের) ভরসার কারণে তা দূর করে দেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৫৩৮)
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা, হাবিস আত-তামীমী, আইশা, ইবনু উমার
ও সা’দ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আমরা শুধুমাত্র
আলামা ইবনু কুহাইলের সূত্রেই এটি জেনেছি। এটি সালামা (রহঃ) হতে শুবা (রহঃ)-ও বর্ণনা
করেছেন।
তিনি আরো বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে আমি বলতে শুনেছি, এ হাদীস প্রসঙ্গে সুলাইমান
ইবনু হারব বলতেনঃ “আমাদের মধ্যে এমন কেউই নেই যার মনে এর ধারণা আসে না তবে আল্লাহর
উপর ভরসার কারণে তা দূর করে দেন। ” কথাটুকু ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কথা নয়)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬১৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ هِشَامٍ
الدَّسْتَوَائِيِّ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " لاَ عَدْوَى وَلاَ طِيَرَةَ وَأُحِبُّ الْفَأْلَ
" . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا الْفَأْلُ قَالَ "
الْكَلِمَةُ الطَّيِّبَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সংক্রমণ এবং কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই।
তবে আমি ফাল পছন্দ করি। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! ফাল কি জিনিস? তিনি
বললেনঃ পবিত্র ও উত্তম কথা।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৫৩৭), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬১৬
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، عَنْ حَمَّادِ
بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم كَانَ يُعْجِبُهُ إِذَا خَرَجَ لِحَاجَةٍ أَنْ يَسْمَعَ يَا
رَاشِدُ يَا نَجِيحُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ
.
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন দরকারে বের হওয়ার সময় (কারো মুখে) ‘হে
সঠিক পথের পথিক’, ‘হে সফলকাম’ বাক্য শুনতে পছন্দ করতেন।
সহীহ্, রাওযুন নাযীর (৮৬)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৮. অনুচ্ছেদঃ
যুদ্ধের ব্যাপারে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের) ওয়াসিয়াত (উপদেশ)
১৬১৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ
سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم إِذَا بَعَثَ أَمِيرًا عَلَى جَيْشٍ أَوْصَاهُ فِي خَاصَّةِ نَفْسِهِ
بِتَقْوَى اللَّهِ وَمَنْ مَعَهُ مِنَ الْمُسْلِمِينَ خَيْرًا وَقَالَ "
اغْزُوا بِسْمِ اللَّهِ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ قَاتِلُوا مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ
وَلاَ تَغُلُّوا وَلاَ تَغْدِرُوا وَلاَ تُمَثِّلُوا وَلاَ تَقْتُلُوا وَلِيدًا
فَإِذَا لَقِيتَ عَدُوَّكَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ فَادْعُهُمْ إِلَى إِحْدَى ثَلاَثِ
خِصَالٍ أَوْ خِلاَلٍ أَيَّتَهَا أَجَابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَكُفَّ عَنْهُمُ
ادْعُهُمْ إِلَى الإِسْلاَمِ وَالتَّحَوُّلِ مِنْ دَارِهِمْ إِلَى دَارِ
الْمُهَاجِرِينَ وَأَخْبِرْهُمْ إِنْ فَعَلُوا ذَلِكَ فَإِنَّ لَهُمْ مَا
لِلْمُهَاجِرِينَ وَعَلَيْهِمْ مَا عَلَى الْمُهَاجِرِينَ وَإِنْ أَبَوْا أَنْ
يَتَحَوَّلُوا فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّهُمْ يَكُونُوا كَأَعْرَابِ الْمُسْلِمِينَ
يَجْرِي عَلَيْهِمْ مَا يَجْرِي عَلَى الأَعْرَابِ لَيْسَ لَهُمْ فِي الْغَنِيمَةِ
وَالْفَىْءِ شَيْءٌ إِلاَّ أَنْ يُجَاهِدُوا فَإِنْ أَبَوْا فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ
عَلَيْهِمْ وَقَاتِلْهُمْ وَإِذَا حَاصَرْتَ حِصْنًا فَأَرَادُوكَ أَنْ تَجْعَلَ
لَهُمْ ذِمَّةَ اللَّهِ وَذِمَّةَ نَبِيِّهِ فَلاَ تَجْعَلْ لَهُمْ ذِمَّةَ
اللَّهِ وَلاَ ذِمَّةَ نَبِيِّهِ وَاجْعَلْ لَهُمْ ذِمَّتَكَ وَذِمَمَ أَصْحَابِكَ
لأَنَّكُمْ إِنْ تُخْفِرُوا ذِمَّتَكُمْ وَذِمَمَ أَصْحَابِكُمْ خَيْرٌ مِنْ أَنْ
تُخْفِرُوا ذِمَّةَ اللَّهِ وَذِمَّةَ رَسُولِهِ وَإِذَا حَاصَرْتَ أَهْلَ حِصْنٍ
فَأَرَادُوكَ أَنْ تُنْزِلَهُمْ عَلَى حُكْمِ اللَّهِ فَلاَ تُنْزِلُوهُمْ
وَلَكِنْ أَنْزِلْهُمْ عَلَى حُكْمِكَ فَإِنَّكَ لاَ تَدْرِي أَتُصِيبُ حُكْمَ
اللَّهِ فِيهِمْ أَمْ لاَ " . أَوْ نَحْوَ هَذَا . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَفِي الْبَابِ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ مُقَرِّنٍ . وَحَدِيثُ بُرَيْدَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، عَنْ سُفْيَانَ،
عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ وَزَادَ فِيهِ "
فَإِنْ أَبَوْا فَخُذْ مِنْهُمُ الْجِزْيَةَ فَإِنْ أَبَوْا فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ
عَلَيْهِمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا رَوَاهُ وَكِيعٌ وَغَيْرُ
وَاحِدٍ عَنْ سُفْيَانَ، . وَرَوَى غَيْرُ، مُحَمَّدِ بْنِ بَشَّارٍ عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ مَهْدِيٍّ، وَذَكَرَ، فِيهِ أَمْرَ الْجِزْيَةِ .
সুলাইমান ইবনু
বুরাইদা (রাঃ) হতে তার বাবার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (বুরাইদা) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন বাহিনীর অধিনায়ক মনোনীত করে
কাউকে পাঠানোর সময় বিশেষভাবে তার নিজের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় করার এবং
অধীনস্থ মুসলিম যোদ্ধাদের কল্যাণ কামনা করার পরামর্শ দিতেন। তিনি বলতেনঃ আল্লাহ্
তা’আলার নামে যুদ্ধ শুরু কর, আল্লাহ্ তা’আলার রাস্তায় জিহাদ কর, আল্লাহ্ তা’আলার
সাথে অবাধ্যাচরণকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, গনিমতের সম্পদ আত্মসাৎ কর না,
বিশ্বাসঘাতকতা করা হতে বিরত থাক, (শত্রুসৈন্যের) মৃতব্যক্তির নাক-কান ইত্যাদি কেটে
মৃতদেহ বিকৃত কর না এবং শিশুদের হত্যা কর না। তুমি মুশরিক শত্রুদের সাথে মুখোমুখি
হওয়াকালে তাদেরকে তিনটি বিকল্প প্রস্তাবের যে কোন একটি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাবে।
তারা এ তিনটি প্রস্তাবের যে কোন একটি মেনে নিলে তা গ্রহণ কর এবং তাদেরকে হমলা করা
হতে বিরত থাক। তুমি তাদেরকে ইসলাম ধর্ম ক্ববূল করার জন্য আহ্বান জানাবে এবং হিজরত
করে মুহাজিরদের এলাকায় চলে আসতে বলবে। তাদেরকে জানিয়ে দিবে যে, তারা এ প্রস্তাব
গ্রহণ করলে তারা মুহাজিরদের সমপরিমাণ অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা লাভ করবে এবং যেসব
দায়িত্ব ও কর্তব্য মুহাজিরদের উপর অর্পিত হবে অনুরূপ তাদের উপরও অর্পিত হবে। তারা নিজস্ব
অবস্থান পরিবর্তন করতে সম্মত না হলে তুমি তাদেরকে জানিয়ে দিবে যে, তারা বেদুঈনদের
অনুরূপ বলে বিবেচিত হবে। যা বেদুঈনদের বেলায় কার্যকর হবে তাদের বেলায়ও তাই
প্রযোজ্য হবে। তারা জিহাদে যোগ না দিলে গনিমত ও ফাই হতে কিছুই পাবে না। তারা ইসলাম
ধর্ম ক্ববূল করতে রাজি না হলে তুমি তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহ্ তা’আলার সাহায্য
প্রার্থনা কর এবং তাদের বিপক্ষে যুদ্ধ কর। তুমি কোন দুর্গ ঘেরাও করার পর তারা
তোমার নিকট আল্লাহ্ ও তাঁর নাবীর যিম্মাদারি (নিরাপত্তা) চাইলে তুমি তাদেরকে
আল্লাহ্ তা’আলার যিম্মাদারিও অনুমোদন করবে না আর তাঁর নাবীর যিম্মাদারিও নয়, বরং
তাদের জন্য তোমার এবং তোমার সাথীদের যিম্মাদারি মঞ্জুর করবে। কেননা আল্লাহ্ ও
তাঁর রসূলের যিম্মাদারির খেলাপ করার চেয়ে তোমার ও তোমার সাথীদের যিম্মাদারির খেলাপ
করাই তোমাদের জন্য উত্তম। তুমি কোন দুর্গবাসীদের অবরোধ করার পর তারা তোমার নিকট
আল্লাহ্ তা’আলার ফায়সালা মোতাবিক দুর্গ হতে বের হয়ে আত্নসমর্পণ করতে চাইলে তুমি
তা অনুমোদন করবে না, বরং তুমি তাদেরকে তোমার নিজের ফায়সালা মতো দুর্গ হতে বের করে
আত্নসমর্পণ করাবে। কারণ তুমি তাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলার সঠিক ফায়সালায়
পৌঁছাতে পেরেছ কি-না তা তোমার জানা নেই। অথবা তিনি একই রকম কোন কথা বলেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৮৫৮), মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, নু’মান ইবনু মুকাররিন (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
বুরাইদা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ আলকামা ইবনু মারসাদ (রহঃ) হতেও বর্ণিত হয়েছে। এই বর্ণনায়
আরো আছেঃ তারা (ইসলাম ধর্ম ক্ববূল করতে) অস্বীকার করলে তাদের কাছ থেকে খাজনা আদায়
কর। তারা তাও ফিরিয়ে দিলে তাদের বিরুদ্ধে (যুদ্ধ করার জন্য) আল্লাহ্র সাহায্য
প্রর্থনা কর।
সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি ওয়াকী ও একাধিক বর্ণনাকারী সুফিয়ানের নিকট হতে বর্ণনা
করেছেন। আবদুর রাহমান ইবনু মাহ্দীর সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার ব্যতীত অন্য
বর্ণনাকারীগণ এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তাতেও জিয্রার (খাজনা) উল্লেখ আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬১৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ،
حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ،
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يُغِيرُ
إِلاَّ عِنْدَ صَلاَةِ الْفَجْرِ فَإِنْ سَمِعَ أَذَانًا أَمْسَكَ وَإِلاَّ
أَغَارَ فَاسْتَمَعَ ذَاتَ يَوْمٍ فَسَمِعَ رَجُلاً يَقُولُ اللَّهُ أَكْبَرُ
اللَّهُ أَكْبَرُ . فَقَالَ " عَلَى الْفِطْرَةِ " . فَقَالَ
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . فَقَالَ " خَرَجْتَ مِنَ
النَّارِ " .
قَالَ الْحَسَنُ وَحَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ
سَلَمَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ফজরের
সময়ই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (কোন জনপদে) নৈশ হামলা
করতেন। তিনি আযান শুনলে হামলা হতে বিরত থাকতেন, অন্যথায় হামলা করতেন। একদিন তিনি
কানকে সজাগ রাখলেন। তিনি বললেনঃ ফিতরাতের (ইসলামের) উপর আছে। ঐ লোকটি আবার বলল,
“আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন
মা’বূদ নেই)। তিনি বললেনঃ তুমি জাহান্নাম হতে বেরিয়ে গেলে।
সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩৬৮), মুসলিম
হাসান (রহঃ) বলেন, আবুল ওয়ালীদ-হাম্মাদ ইবনু সালামা (রহঃ)-এর এই
সূত্রে একইরকম বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
No comments