জামে' আত-তিরমিজি - অধ্যায় "জানাযা" হাদিস নং- ৯৬৫- ১০৭৯
১. অনুচ্ছেদঃ
রোগভোগের সাওয়াব
৯৬৫
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو
مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ
يُصِيبُ الْمُؤْمِنَ شَوْكَةٌ فَمَا فَوْقَهَا إِلاَّ رَفَعَهُ اللَّهُ بِهَا
دَرَجَةً وَحَطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةً " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ وَأَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ وَأَبِي
هُرَيْرَةَ وَأَبِي أُمَامَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَنَسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عَمْرٍو وَأَسَدِ بْنِ كُرْزٍ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ أَزْهَرَ وَأَبِي مُوسَى . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি কোন মু'মিন ব্যক্তির দেহে কাঁটা বিদ্ধ হয় অথবা সে যদি
এর চেয়ে বেশি কিছুতে আক্রান্ত হয় তবে এর বিনিময়ে আল্লাহ্ তা'আলা তাকে তার
মর্যাদা এক ধাপ বাড়িয়ে দেন এবং তার একটি গুনাহ মাফ করে দেন।
-সহীহ্, রাওযুন নাযীর (৮১৯), মুসলিম, বুখারী, সংক্ষিপ্ত।
সাদ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস, আবূ উবাইদা ইবনুল জাররাহ, আবূ হুরাইরা,
আবূ উমামা, আবূ সাঈদ, আনাস, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, আসাদ ইবনু কুরয, জাবির, ইবনু আব্দুল্লাহ
আবদুর রাহমান ইবনু আযহার ও আবূ মূসা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশা
(রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯৬৬
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ،
حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ
عَطَاءٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، رضى الله
عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ شَيْءٍ
يُصِيبُ الْمُؤْمِنَ مِنْ نَصَبٍ وَلاَ حَزَنٍ وَلاَ وَصَبٍ حَتَّى الْهَمُّ
يَهُمُّهُ إِلاَّ يُكَفِّرُ اللَّهُ بِهِ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ فِي هَذَا الْبَابِ . قَالَ وَسَمِعْتُ
الْجَارُودَ يَقُولُ سَمِعْتُ وَكِيعًا يَقُولُ لَمْ يُسْمَعْ فِي الْهَمِّ
أَنَّهُ يَكُونُ كَفَّارَةً إِلاَّ فِي هَذَا الْحَدِيثِ . قَالَ وَقَدْ رَوَى
بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى
الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু'মিন ব্যক্তির প্রতি যে কোন ধরণের দুঃখ-কষ্ট, দুশ্চিন্তা
ও রোগ, এমনকি তুচ্ছ যেকোন চিন্তাই আসুক না কেন, এর বিনিময়ে আল্লাহ্ তা'আলা তার
গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন।
-হাসান সহীহ, সহীহাহ (২৫০৩), মুসলিম, বুখারী সংক্ষিপ্ত।বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনায়
আনহু সায়্যিয়াতিহির পরিবর্তে মিন সায়্যিয়াতিহী উল্লেখ আছে। আর উহাই সংরক্ষিত।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। ওয়াকী বলেছেন, তিনি এই হাদীসটি
ছাড়া আরকোন রিওয়ায়াতে দুশ্চিন্তাও যে গুনাহর কাফফারা হয় এমন কথা শুনেননি। আবূ হুরাইরা
(রাঃ)-এর সূত্রেও এই হাদীসটি কেউ কেউ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
২. অনুচ্ছেদঃ
রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া
৯৬৭
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ،
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ، عَنْ أَبِي
قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ الرَّحَبِيِّ، عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ الْمُسْلِمَ إِذَا عَادَ أَخَاهُ
الْمُسْلِمَ لَمْ يَزَلْ فِي خُرْفَةِ الْجَنَّةِ " . وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَلِيٍّ وَأَبِي مُوسَى وَالْبَرَاءِ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ وَجَابِرٍ
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ثَوْبَانَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَرَوَى أَبُو
غِفَارٍ وَعَاصِمٌ الأَحْوَلُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ أَبِي
الأَشْعَثِ عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ عَنْ ثَوْبَانَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم نَحْوَهُ . وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ مَنْ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ
عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ فَهُوَ أَصَحُّ . قَالَ مُحَمَّدٌ
وَأَحَادِيثُ أَبِي قِلاَبَةَ إِنَّمَا هِيَ عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ إِلاَّ هَذَا
الْحَدِيثَ فَهُوَ عِنْدِي عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মুসলমান তার কোন (রুগ্ন) মুসলিম ভাইকে দেখতে গেলে সে (যতক্ষণ
সেখানে থাকে ততক্ষণ) যেন জান্নাতের ফল আহরণ করতে থাকে।
-সহীহ, মুসলিম (৮/১৩)।
আলী, আবূ মূসা, বারাআ, আবূ হুরাইরা, আনাস ও জাবির (রাঃ) হতেও এই
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। সাওবান (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
এই হাদীসটি আবূ গিফার ও আসিম আল-আহওয়াল (রহঃ) এরকমই বর্ণনা করেছেন আবূ কিলাবা হতে,
তিনি আবুল আশআস হতে, তিনি আবূ আসমা হতে, তিনি সাওবান (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে। তিরমিয়ী বলেন, মুহাম্মাদ আল-বুখারী (রহঃ)-কে
আমি বলতে শুনেছি, যারা আবুল আশআস হতে আবূ আসমার সূত্রে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন তাদের
সনদসূত্র অধিকতর সহীহ্। মুহাম্মাদ (বুখারী) আরও বলেছেনঃ আবূ কিলাবার হাদীসগুলি আবূ
আমরের সূত্রেই বর্ণিত, কিন্তু এই হাদীসটি আবুল আশ্ আসের বরাতে আবূ আসমা হতেই আমি জানতে
পেরেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ وَزِيرٍ الْوَاسِطِيُّ، حَدَّثَنَا
يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ
أَبِي الأَشْعَثِ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم نَحْوَهُ . وَزَادَ فِيهِ قِيلَ مَا خُرْفَةُ الْجَنَّةِ قَالَ
" جَنَاهَا " .
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ،
عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ حَدِيثِ خَالِدٍ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ
عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ حَمَّادِ
بْنِ زَيْدٍ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(উপরের হাদীসের) এরকমই বর্ণিত আছে। তবে এই
বর্ণনাতে আরো আছেঃ প্রশ্ন করা হল, ‘খুরফাতুল জান্নাত কি? তিনি বলেনঃ এটা হচ্ছে
জান্নাতের কুড়ানো ফল।
- সহিহ, মুসলিম।
উপরোক্ত হাদীসের মতই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে আহ্মদ ইবনু আবদা আয-যাববী (রহঃ)...সাওবান (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত আছে। কিন্তু এই সনদে
আবুল-আশআসের উল্লেখ নেই। আবূ ঈসা বলেন, হাম্মাদ ইবনু যাইদ হতেও এই হাদীসকে কেউ কেউ
বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তারা মারফূহিসেবে বর্ণনা করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯৬৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ،
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ ثُوَيْرٍ،
هُوَ ابْنُ أَبِي فَاخِتَةَ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ أَخَذَ عَلِيٌّ بِيَدِي قَالَ
انْطَلِقْ بِنَا إِلَى الْحَسَنِ نَعُودُهُ . فَوَجَدْنَا عِنْدَهُ أَبَا مُوسَى
فَقَالَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ أَعَائِدًا جِئْتَ يَا أَبَا مُوسَى أَمْ
زَائِرًا فَقَالَ لاَ بَلْ عَائِدًا . فَقَالَ عَلِيٌّ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَعُودُ مُسْلِمًا غُدْوَةً
إِلاَّ صَلَّى عَلَيْهِ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ حَتَّى يُمْسِيَ وَإِنْ عَادَهُ
عَشِيَّةً إِلاَّ صَلَّى عَلَيْهِ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ حَتَّى يُصْبِحَ
وَكَانَ لَهُ خَرِيفٌ فِي الْجَنَّةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَلِيٍّ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ
وَجْهٍ مِنْهُمْ مَنْ وَقَفَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ . وَأَبُو فَاخِتَةَ اسْمُهُ
سَعِيدُ بْنُ عِلاَقَةَ .
সুওয়াইর (রহঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার হাত ধরে আলী (রাঃ) বললেন, আমার
সাথে চল, অসুস্থ হুসাইনকে দেখে আসি। আমরা তার নিকটে গিয়ে মূসা (রাঃ)-কে হাযির
পেলাম। আলী (রাঃ) বললেন, হে আবূ মূসা! আপনি কি রোগী দেখতে এসেছেন না এমনি বেড়াতে
এসেছেন? তিনি বললেন, না, রোগী দেখতে এসেছি। আলী (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ কোন মুসলমান যদি অন্যকোন
মুসলিম রোগীকে সকাল বেলা দেখতে যায় তাহলে সত্তর হাজার ফেরেশতা তার জন্য সন্ধ্যা
পর্যন্ত দু'আ করতে থাকে। সে যদি সন্ধ্যায় তাকে দেখতে যায় তবে সত্তর হাজার
ফেরেশতা ভোর পর্যন্ত তার জন্য দু'আ করতে থাকে এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ফলের
বাগান তৈরী হয়।
-সহীহ, তবে হাদীসে বর্ণিত যায়িরাণ শব্দের পরিবর্তে শামিতান শব্দ আছে।-সহীহাহ
(১৩৬৭), আর-রা ওয (১১৫৫)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। এটি একাধিকসূত্রে আলী
(রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। এটিকে মারফু না করে কেউ কেউ মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী
আবূ ফাখিতার নাম সাঈদ, পিতার নাম ইলাকা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩. অনুচ্ছেদঃ
মৃত্যু কামনা করা নিষেধ
৯৭০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ حَارِثَةَ بْنِ
مُضَرِّبٍ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى خَبَّابٍ وَقَدِ اكْتَوَى فِي بَطْنِهِ فَقَالَ
مَا أَعْلَمُ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَقِيَ مِنَ
الْبَلاَءِ مَا لَقِيتُ لَقَدْ كُنْتُ وَمَا أَجِدُ دِرْهَمًا عَلَى عَهْدِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَفِي نَاحِيَةٍ مِنْ بَيْتِي أَرْبَعُونَ أَلْفًا
وَلَوْلاَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَانَا - أَوْ نَهَى - أَنْ
نَتَمَنَّى الْمَوْتَ لَتَمَنَّيْتُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَأَبِي
هُرَيْرَةَ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ خَبَّابٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ قَالَ " لاَ يَتَمَنَّيَنَّ أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ لِضُرٍّ نَزَلَ
بِهِ وَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي
وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي ."
হারিসা ইবনু মুযাররিব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা খাববাব (রাঃ)-এর নিকট আমি
হাযির হলাম। তখন তার পেটে (গরম কিছু দিয়ে) তিনি সেঁক দিচ্ছিলেন। তিনি বললেন, আমি
যত বিপদের সম্মুখীন হয়েছি, জানি না, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর আর কোন সাহাবী এত বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন কি-না। একটি দিরহামও আমার
নিকটে ছিল না (নিঃস্ব ছিলাম) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
যুগে। আর এখন চল্লিশহাজার দিরহাম আমার ঘরের কোণে পড়ে আছে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি আমাদেরকে মৃত্যু কামনা করতে নিষেধ না
করতেন তবে অবশ্যই আমি মৃত্যু কামনা করতাম।
-সহীহ, আহ্কামুল জানায়িয (৫৯), নাসাঈতে শুধুমাত্র মৃত্যু কামনা নিষেধ বর্ণিত আছে।
আবূ হুরাইরা, আনাস ও জাবির (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। খাববাব (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯৭১
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে কোন লোক যেন কোন দুঃখ-কষ্টে জড়িয়ে পড়ার কারণে
মৃত্যু কামনা না করে। বরং সে যেন বলে, হে আল্লাহ! যে পর্যন্ত বেঁচে থাকা আমার জন্য
কল্যাণকর হয় আমাকে সে পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখ এবং আমার জন্য যখন মৃত্যু কল্যাণকর
হয় তখন আমাকে মৃত্যু দাও।
-সহীহ, ইবনু মাজাহ (৪২৬৫), বুখারী, মুসলিম।
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন আলী ইবনু হুজ্র ইসমাঈল ইবনু ইবরাহীম হতে,
তিনি আব্দুল আযীয ইবনু সুহাইব হতে, তিনি আনাস ইবনু মালিক হতে তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪. অনুচ্ছেদঃ
ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে রোগীর জন্য (আল্লাহ তা'আলার) আশ্রয়
প্রার্থনা করা
৯৭২
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ
الْبَصْرِيُّ الصَّوَّافُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ
عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ
جِبْرِيلَ، أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ
اشْتَكَيْتَ قَالَ " نَعَمْ " . قَالَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ وَعَيْنِ حَاسِدٍ بِاسْمِ
اللَّهِ أَرْقِيكَ وَاللَّهُ يَشْفِيكَ .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকটে জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি কি অসুস্থ? তিনি
বললেন, হ্যাঁ। তখন জিবরীল (আঃ) পাঠ করলেনঃ “আমি আপনাকে আল্লাহ তা'আলার নামে ঝাড়ছি
এমন সকল কিছু হতে যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং সকল প্রকার অনিষ্টকর প্রাণী ও সকল
হিংসুটে দৃষ্টি হতে। আল্লাহ তা'আলার নামে আমি আপনাকে ঝাড়ছি, আপনাকে আল্লাহ তা'আলা
সুস্থতা দান করুন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৫২৩), মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯৭৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، قَالَ دَخَلْتُ
أَنَا وَثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ، عَلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ فَقَالَ ثَابِتٌ يَا
أَبَا حَمْزَةَ اشْتَكَيْتُ . فَقَالَ أَنَسٌ أَفَلاَ أَرْقِيكَ بِرُقْيَةِ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَلَى . قَالَ " اللَّهُمَّ
رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ الْبَاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شَافِيَ إِلاَّ
أَنْتَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَنَسٍ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَسَأَلْتُ أَبَا زُرْعَةَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقُلْتُ لَهُ
رِوَايَةُ عَبْدِ الْعَزِيزِ عَنْ أَبِي نَضْرَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ أَصَحُّ أَوْ
حَدِيثُ عَبْدِ الْعَزِيزِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كِلاَهُمَا صَحِيحٌ . وَرَوَى
عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ
بْنِ صُهَيْبٍ عَنْ أَبِي نَضْرَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَعَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ
بْنِ صُهَيْبٍ عَنْ أَنَسٍ .
আবদুল আযীয ইবনু সুহাইব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ও সাবিত আল-বুনানী আনাস (রাঃ)-এর
নিকটে গেলাম। সাবিত বললেন, হে আবূ হামযা! আমি অসুস্থ অনুভব করছি। আনাস (রাঃ)
বললেন, আমি কি তোমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
ঝাড়ফুঁকের দু'আ পাঠ করে ঝাড়ব না? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আনাস (রাঃ) বললেনঃ “হে
আল্লাহ, মানবজাতির প্রভু! কষ্ট-ক্লেশ বিতাড়নকারী, রোগ হতে আপনি মুক্তি দিন,
নিরাময়কারী তো আপনিই, আর কোন সুস্থতা দানকারী নেই আপনি ব্যতীত। এমন সুস্থতা আপনি
দান করুন আর কোন রোগ যেন থাকতে না পারে"।
-সহীহ, বুখারী।
আনাস ও আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ সাঈদ
(রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। তিনি বলেন, আবূ যুরআকে আমি
প্রশ্ন করলামঃ বেশি সহীহ্ কোনটি, আবদুল আযীয-আবূ নাযরা হতে তিনি আবূ সাঈদ (রাঃ)-এর
সূত্রে বর্ণিত রিওয়ায়াতটি না আবদুল আযীয-আনাস (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি? তিনি
উভয় হাদীসকেই সহীহ্ বলেছেন। আব্দুস সামাদ ইবনু আবদুল ওয়ারিস তার পিতা হতে আবদুল আযীয
ইবনু সুহাইব হতে, তিনি আবূ নাযরা হতে, তিনি আবূ সাঈদ হতে এবং আব্দুল আযীয ইবনু সুহাইব
হতে, তিনি আনাস (রাঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫. অনুচ্ছেদঃ
ওয়াসিয়াতের জন্য উৎসাহ দেওয়া
৯৭৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " مَا حَقُّ امْرِئٍ مُسْلِمٍ يَبِيتُ لَيْلَتَيْنِ وَلَهُ
شَيْءٌ يُوصِي فِيهِ إِلاَّ وَوَصِيَّتُهُ مَكْتُوبَةٌ عِنْدَهُ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ أَبِي أَوْفَى . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি ওয়াসিয়াত করার মত সম্পদ কোন মুসলমান ব্যক্তির নিকট থাকে
তবে নিজের নিকট ওয়াসিয়াতনামা লিখে না রেখে সেলোক যেন দুই রাতও অতিবাহিত না করে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৬৯৯), বুখারী, মুসলিম।
ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু
উমার (রাঃ)-এর হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬. অনুচ্ছেদঃ
এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশ সম্পদের ওয়াসিয়াত করা
৯৭৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ
السَّائِبِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ سَعْدِ بْنِ
مَالِكٍ، قَالَ عَادَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا مَرِيضٌ
فَقَالَ " أَوْصَيْتَ " . قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ "
بِكَمْ " . قُلْتُ بِمَالِي كُلِّهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ . قَالَ
" فَمَا تَرَكْتَ لِوَلَدِكَ " . قُلْتُ هُمْ أَغْنِيَاءُ
بِخَيْرٍ . قَالَ " أَوْصِ بِالْعُشْرِ " . فَمَا زِلْتُ
أُنَاقِصُهُ حَتَّى قَالَ " أَوْصِ بِالثُّلُثِ وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ
" . قَالَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَنَحْنُ نَسْتَحِبُّ أَنْ يَنْقُصَ
مِنَ الثُّلُثِ لِقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَالثُّلُثُ
كَثِيرٌ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ سَعْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ
وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ " وَالثُّلُثُ كَبِيرٌ " . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ أَنْ يُوصِيَ الرَّجُلُ
بِأَكْثَرَ مِنَ الثُّلُثِ وَيَسْتَحِبُّونَ أَنْ يَنْقُصَ مِنَ الثُّلُثِ .
قَالَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ كَانُوا يَسْتَحِبُّونَ فِي الْوَصِيَّةِ الْخُمُسَ
دُونَ الرُّبُعِ وَالرُّبُعَ دُونَ الثُّلُثِ وَمَنْ أَوْصَى بِالثُّلُثِ فَلَمْ
يَتْرُكْ شَيْئًا وَلاَ يَجُوزُ لَهُ إِلاَّ الثُّلُثُ .
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ
أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ سَعْدِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ عَادَنِي
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا مَرِيضٌ فَقَالَ " أَوْصَيْتَ
" . قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ " بِكَمْ " . قُلْتُ
بِمَالِي كُلِّهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ . قَالَ " فَمَا تَرَكْتَ
لِوَلَدِكَ " . قُلْتُ هُمْ أَغْنِيَاءُ بِخَيْرٍ . قَالَ "
أَوْصِ بِالْعُشْرِ " . فَمَا زِلْتُ أُنَاقِصُهُ حَتَّى قَالَ "
أَوْصِ بِالثُّلُثِ وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ " . قَالَ أَبُو عَبْدِ
الرَّحْمَنِ وَنَحْنُ نَسْتَحِبُّ أَنْ يَنْقُصَ مِنَ الثُّلُثِ لِقَوْلِ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ " . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَعْدٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ وَقَدْ رُوِيَ
عَنْهُ " وَالثُّلُثُ كَبِيرٌ " . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ
أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ أَنْ يُوصِيَ الرَّجُلُ بِأَكْثَرَ مِنَ الثُّلُثِ
وَيَسْتَحِبُّونَ أَنْ يَنْقُصَ مِنَ الثُّلُثِ . قَالَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ
كَانُوا يَسْتَحِبُّونَ فِي الْوَصِيَّةِ الْخُمُسَ دُونَ الرُّبُعِ وَالرُّبُعَ
دُونَ الثُّلُثِ وَمَنْ أَوْصَى بِالثُّلُثِ فَلَمْ يَتْرُكْ شَيْئًا وَلاَ
يَجُوزُ لَهُ إِلاَّ الثُّلُثُ .
সা'দ ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি অসুস্থ হলে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে এলেন। তিনি বললেনঃ তুমি কি
ওয়াসিয়াত করেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কতটুকু? আমি বললাম, আল্লাহ্
তা'আলার রাস্তায় আমার সবটুকু সম্পদ দিয়ে দিয়েছি। তিনি বললেনঃ তোমার সন্তানদের
জন্য কি রাখলে? তিনি বললেন, তারা বেশ ধনী। তিনি বললেনঃ দশ ভাগের এক অংশ ওয়াসিয়াত
কর। সা'দ (রাঃ) বলেন, আমি বরাবর “তা খুবই কম” বলতে লাগলাম। তিনি শেষে বললেনঃ
ওয়াসিয়াত কর তিন ভাগের এক অংশ। আর তিন ভাগের এক অংশও বেশি হয়ে যাচ্ছে।
সহীহ, ইরওয়া (৮৯৯), সহীহ আবূ দাউদ (২৫৫০), বুখারী, মুসলিম দশভাগের একভাগ ওয়াসিয়াত
কর এই অংশ বাদে। এ অংশটুকু যঈফ।
আবূ আবদুর রাহমান বলেন, আমরা এক-তৃতীয়াংশের কম ওয়াসিয়াত করাকে
মুস্তাহাব মনে করি। কেননা, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
এক-তৃতীয়াংশও অনেক বেশি।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। সা'দ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এটি একাধিকসূত্রে বর্ণিত আছে। কোন কোন বর্ণনায় কাবীর"
শব্দ এবং কোন কোন বর্ণনায় ‘কাসীর" শব্দের উল্লেখ রয়েছে।
এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করার কথা বলেছেন। তারা এক তৃতীয়াংশের বেশি পরিমাণ ওয়াসিয়াত
করাকে জায়িয মনে করেন না, বরং এক তৃতীয়াংশেরও কম সম্পদ ওয়াসিয়াত করাকে মুস্তাহাব
মনে করেন। সুফিয়ান সাওরী বলেনঃ এক-চতুর্থাংশের চেয়ে এক-পঞ্চমাংশ এবং এক-তৃতীয়াংশের
চেয়ে এক-চতুর্থাংশ ওয়াসিয়াত করাকে পূর্ববর্তী আলিমগণ মুস্তাহাব মনে করতেন। এক-তৃতীয়াংশ
পরিমাণ সম্পত্তি যে লোক ওয়াসিয়াত করল সে লোক তো আর কিছু রাখল না। তার জন্য এক-তৃতীয়াংশের
বেশি ওয়াসিয়াত করা জায়িয নয়।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
৭. অনুচ্ছেদঃ
অন্তিম সময়ের লোককে তালকীন দেয়া এবং তার জন্য দু’আ করা
৯৭৬
حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ
خَلَفٍ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ
غَزِيَّةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عُمَارَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَقِّنُوا مَوْتَاكُمْ لاَ إِلَهَ
إِلاَّ اللَّهُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأُمِّ
سَلَمَةَ وَعَائِشَةَ وَجَابِرٍ وَسُعْدَى الْمُرِّيَّةِ وَهِيَ امْرَأَةُ
طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ .
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের মাঝে অন্তিম সময়ের ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে "লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহ" পাঠ করে শুনাও।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৪৪, ১৪৪৫), মুসলিম।
আবূ হুরাইরা, উম্মু সালামা, আইশা, জাবির ও তালহা ইবনু উবাইদুল্লাহ
(রাঃ)-এর স্ত্রী সু’দা আল-মুরিয়্যা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯৭৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو
مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ قَالَ
لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا حَضَرْتُمُ الْمَرِيضَ
أَوِ الْمَيِّتَ فَقُولُوا خَيْرًا فَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ يُؤَمِّنُونَ عَلَى مَا
تَقُولُونَ " . قَالَتْ فَلَمَّا مَاتَ أَبُو سَلَمَةَ أَتَيْتُ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَبَا سَلَمَةَ
مَاتَ . قَالَ " فَقُولِي اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَلَهُ وَأَعْقِبْنِي
مِنْهُ عُقْبَى حَسَنَةً " . قَالَتْ فَقُلْتُ فَأَعْقَبَنِي اللَّهُ
مِنْهُ مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنْهُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ
أَبُو عِيسَى شَقِيقٌ هُوَ ابْنُ سَلَمَةَ أَبُو وَائِلٍ الأَسَدِيُّ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أُمِّ سَلَمَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ كَانَ
يُسْتَحَبُّ أَنْ يُلَقَّنَ الْمَرِيضُ عِنْدَ الْمَوْتِ قَوْلَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ
اللَّهُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا قَالَ ذَلِكَ مَرَّةً فَمَا
لَمْ يَتَكَلَّمْ بَعْدَ ذَلِكَ فَلاَ يَنْبَغِي أَنْ يُلَقَّنَ وَلاَ يُكْثَرَ
عَلَيْهِ فِي هَذَا . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ لَمَّا حَضَرَتْهُ
الْوَفَاةُ جَعَلَ رَجُلٌ يُلَقِّنُهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَكْثَرَ
عَلَيْهِ فَقَالَ لَهُ عَبْدُ اللَّهِ إِذَا قُلْتُ مَرَّةً فَأَنَا عَلَى ذَلِكَ
مَا لَمْ أَتَكَلَّمْ بِكَلاَمٍ . وَإِنَّمَا مَعْنَى قَوْلِ عَبْدِ اللَّهِ
إِنَّمَا أَرَادَ مَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " مَنْ
كَانَ آخِرُ قَوْلِهِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ " .
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন অসুস্থ বা মৃত লোকের নিকটে তোমরা হাযির হলে তার
সম্বন্ধে ভাল কথা বলবে। কেননা, তোমরা যেসব কথা বল সে প্রসঙ্গে ফেরেশতাগণ আমীন বলে
থাকেন। উন্মু সালামা (রাঃ) বলেন, আবূ সালামা (রাঃ) মারা যাবার পর আমি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আবূ
সালামা মারা গিয়েছে। তিনি বললেনঃ তুমি বল, “হে আল্লাহ আমাকে এবং তাকে ক্ষমা করে
দিন এবং তার পরে আমাকে তার চেয়ে আরও উত্তম পরিণতি দান করুন। উম্মু সালামা (রাঃ)
বলেন, আমি বুঝতে পারলাম যে, আল্লাহ্ তা'আলা তার পরবর্তীতে আমাকে তার চাইতে উত্তম
ব্যক্তি দান করেছেন। তিনি হচ্ছেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৪৭), মুসলিম।
শাকীক হচ্ছেন ইবনু সালামা আবূ ওয়াইল আসাদী। উন্মু সালামা (রাঃ)
বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
মুমূর্য রোগীকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর তালকীন করা মুস্তাহাব। একদল আলিম বলেন, এই কালিমা
যদি সে একবার পাঠ করে নেয় তবে পরে অন্যকথা না বললে পুনরায় তাকে তালকীন করা অনুচিত
এবং বারবার এই বিষয়ে তাকে চাপ প্রয়োগ করা উচিত নয়। ইবনুল মুবারাকের মৃত্যুর সময়
হাযির হলে তাঁকে কোন এক লোক লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর তালকীন করতে থাকে তখন তিনি বললেন,
আমি একবার তা বলেছি পরে অন্য কোন কথা না বলা পর্যন্ত আমি এই কথার উপরই প্রতিষ্ঠিত আছি।
আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক (রহঃ)-এর এই কথার তাৎপর্য এটাই যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছেঃ “যে লোকের শেষ কথা "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
হবে সে লোক জান্নাতে যাবে"।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৮. অনুচ্ছেদঃ
মৃত্যু যন্ত্রণা প্রসঙ্গে
৯৭৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا
اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ مُوسَى بْنِ سَرْجِسَ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ
مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم وَهُوَ بِالْمَوْتِ وَعِنْدَهُ قَدَحٌ فِيهِ مَاءٌ وَهُوَ يُدْخِلُ
يَدَهُ فِي الْقَدَحِ ثُمَّ يَمْسَحُ وَجْهَهُ بِالْمَاءِ ثُمَّ يَقُولُ "
اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى غَمَرَاتِ الْمَوْتِ " . أَوْ "
سَكَرَاتِ الْمَوْتِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মুমূর্য অবস্থায় দেখেছি একটি পানি ভর্তি বাটি তার
সামনে রাখা ছিল। তিনি সেই বাটিতে তার হাত প্রবেশ করাচ্ছিলেন এবং পানি দিয়ে তার
মুখমণ্ডল মলছিলেন আর বলছিলেনঃ "হে আল্লাহু! মৃত্যুকষ্ট ও মৃত্যুযন্ত্রণা
হ্রাসে আমায় সহায়তা করুন।"
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৬২৩)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৯৭৯
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ
الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا مُبَشِّرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْحَلَبِيُّ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا أَغْبِطُ أَحَدًا بِهَوْنِ مَوْتٍ بَعْدَ الَّذِي رَأَيْتُ
مِنْ شِدَّةِ مَوْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ سَأَلْتُ أَبَا
زُرْعَةَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ وَقُلْتُ لَهُ مَنْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
الْعَلاَءِ فَقَالَ هُوَ ابْنُ الْعَلاَءِ بْنِ اللَّجْلاَجِ . وَإِنَّمَا
عَرَّفَهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু যন্ত্রণা দেখার পর হতে আমার আর কোন ঈর্ষা হয় না
অন্য কোন ব্যক্তির সহজ মৃত্যু হলে।
-সহীহ, মুখতাসার শামায়িল মুহাম্মাদীয়া (৩২৫), বুখারী।
ইমাম তিরমিযী বলেনঃ আমি আবূ যুরআকে এ হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম
এবং তাকে বললামঃ আব্দুর রাহমান ইবনুল আ'লা ব্যক্তিটি কে? তিনি বললেনঃ ব্যক্তিটি হলেন
আল আলা-ইবনুল লাজলাজ।
এই হাদীসটিকে তিনি শুধুমাত্র উল্লেখিত সূত্রেই জেনেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯৮০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ، قَالَ
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا حُسَامُ بْنُ
الْمِصَكِّ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو مَعْشَرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ
عَلْقَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ نَفْسَ الْمُؤْمِنِ تَخْرُجُ رَشْحًا وَلاَ
أُحِبُّ مَوْتًا كَمَوْتِ الْحِمَارِ " . قِيلَ وَمَا مَوْتُ الْحِمَارِ
قَالَ " مَوْتُ الْفَجْأَةِ " .
আলকামা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ)-কে
বলতে শুনেছি, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে
বলতে শুনেছি, অবশ্যই মুমিনের আত্মা (মৃত্যুর সময়) ঘামের সাথে বের হয়, আমি গাধার
মত মৃত্যুকে পছন্দ করি না, তাকে প্রশ্ন করা হল, গাধার মত মৃত্যু কি? তিনি বললেন,
হঠাৎ মৃত্যু।
অত্যন্ত দুর্বল। আল-ইলালুল মুতানাহিয়াহ (১৪৮৮)
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
৯. অনুচ্ছেদঃ
(যার আমলনামায় প্রথমে ও শেষে ভাল কাজ পাওয়া যাবে তাকে
ক্ষমা করে দেওয়া হবে)
৯৮১
حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ،
حَدَّثَنَا مُبَشِّرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْحَلَبِيُّ، عَنْ تَمَّامِ بْنِ
نَجِيحٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ حَافِظَيْنِ رَفَعَا إِلَى اللَّهِ مَا
حَفِظَا مِنْ لَيْلٍ أَوْ نَهَارٍ فَيَجِدُ اللَّهُ فِي أَوَّلِ الصَّحِيفَةِ
وَفِي آخِرِ الصَّحِيفَةِ خَيْرًا إِلاَّ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى أُشْهِدُكُمْ
أَنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي مَا بَيْنَ طَرَفَىِ الصَّحِيفَةِ " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : বান্দার আমল নাম লিপিবদ্ধকারী দু'জন ফেরেশতা দিবারাত্রির
যখনই আমল নামা নিয়ে আল্লাহর কাছে পৌছে, আর আল্লাহ তা'আলা আমল নামার প্রথমে ও শেষে
কল্যাণ (দেখতে) পান তখন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ তোমাদেরকে এই কথার উপর সাক্ষি রাখছি
যে, আমার বান্দার আমল নামার মাঝখানে যা আছে তা আমি ক্ষমা করে দিলাম।
অত্যন্ত দুর্বল,যঈফা (২২৩৯)
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
১০. অনুচ্ছেদঃ
মু’মিনদের মৃত্যুর সময় কপাল ঘামে
৯৮২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنِ الْمُثَنَّى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " الْمُؤْمِنُ يَمُوتُ بِعَرَقِ الْجَبِينِ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَقَدْ قَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لا نَعْرِفُ لِقَتَادَةَ
سَمَاعًا مِنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ .
আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদা (রাঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ কপালের ঘামসহ মু’মিনের মৃত্যু হয়।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৫২)।
ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। একদল মুহাদ্দিস বলেন, কাতাদা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদা হতে
কোন কিছু শুনেছেন বলে আমাদের জানা নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১১. অনুচ্ছেদঃ
(মৃত্যুর সময় আল্লাহর নিকট কল্যাণের আশা করা)
৯৮৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي
زِيَادٍ الْكُوفِيُّ، وَهَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْبَزَّازُ
الْبَغْدَادِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا سَيَّارٌ، هُوَ ابْنُ حَاتِمٍ حَدَّثَنَا
جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم دَخَلَ عَلَى شَابٍّ وَهُوَ فِي الْمَوْتِ فَقَالَ " كَيْفَ
تَجِدُكَ " . قَالَ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَرْجُو
اللَّهَ وَإِنِّي أَخَافُ ذُنُوبِي . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " لاَ يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبِ عَبْدٍ فِي مِثْلِ هَذَا الْمَوْطِنِ
إِلاَّ أَعْطَاهُ اللَّهُ مَا يَرْجُو وَآمَنَهُ مِمَّا يَخَافُ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا
الْحَدِيثَ عَنْ ثَابِتٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এক যুবকের নিকট গেলেন। তখন সে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল। তিনি বললেনঃ তোমার
কেমন অনুভব হচ্ছে? যুবকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ, আল্লাহ্ তা'আলার
রাহমাতের আশা করছি, কিন্তু আবার ভয়ও পাচ্ছি আমার গুনাহগুলোর কারণে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে বান্দার হৃদয়ে এরকম সময়ে এরূপ
দুই বিপরীত জিনিস একত্র হয়, আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই তার কাংক্ষিত জিনিস তাকে দান
করেন এবং তাকে তার বিপদাশংকা হতে নিরাপদ রাখেন।
-হাসান, ইবনু মা-জাহ (৪২৬১)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। হাদীসটিকে কোন কোন বর্ণনাকারী
মুরসাল হিসেবে সাবিতের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
১২. অনুচ্ছেদঃ
মৃত্যুসংবাদ ফলাও করে প্রচার করা মাকরূহ
৯৮৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ
الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا حَكَّامُ بْنُ سَلْمٍ، وَهَارُونُ بْنُ الْمُغِيرَةِ،
عَنْ عَنْبَسَةَ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِيَّاكُمْ
وَالنَّعْىَ فَإِنَّ النَّعْىَ مِنْ عَمَلِ الْجَاهِلِيَّةِ " . قَالَ
عَبْدُ اللَّهِ وَالنَّعْىُ أَذَانٌ بِالْمَيِّتِ . وَفِي الْبَابِ عَنْ
حُذَيْفَةَ .
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ সাবধান! তোমরা মৃত্যুর খবর ঘোষণা থেকে নিবৃত্ত থাক। যেহেতু এটা জাহিলী
যুগের কাজ। আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন, ‘নাঈ’ শব্দের অর্থ মৃত্যুর খবর ঢালাও করে ঘোষণা
করা।
যঈফ, তাখরীজু ইসলাহিল মাসাজিদ (১০৮)
এই অনুচ্ছেদে হুযাইফা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৯৮৫
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْوَلِيدِ
الْعَدَنِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنْ
إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، نَحْوَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ
وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ وَالنَّعْىُ أَذَانٌ بِالْمَيِّتِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ عَنْبَسَةَ عَنْ أَبِي حَمْزَةَ . وَأَبُو
حَمْزَةَ هُوَ مَيْمُونٌ الأَعْوَرُ وَلَيْسَ هُوَ بِالْقَوِيِّ عِنْدَ أَهْلِ
الْحَدِيثِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
. وَقَدْ كَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ النَّعْىَ وَالنَّعْىُ عِنْدَهُمْ أَنْ
يُنَادَى فِي النَّاسِ أَنَّ فُلاَنًا مَاتَ لِيَشْهَدُوا جَنَازَتَهُ . وَقَالَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ بَأْسَ أَنْ يُعْلِمَ أَهْلَ قَرَابَتِهِ
وَإِخْوَانَهُ . وَرُوِيَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ أَنَّهُ قَالَ لاَ بَأْسَ بِأَنْ
يُعْلِمَ الرَّجُلُ قَرَابَتَهُ .
আব্দুল্লাহ ইবনুল ওয়ালীদ থেকে বর্ণিতঃ
সাঈদ ইবনু আব্দুর রহমান আল-মাখযুমী আব্দুল্লাহ
ইবনুল ওয়ালীদ হতে তিনি সুফিয়ান সাওরী হতে তিনি আবু হামযাহ হতে তিনি আল-কামা হতে
তিনি আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তা মারফুরূপে বর্ণনা
করা হয়নি এবং তাতে আন-নাইউ আযানুন বিলমায়্যিত" এই কথারও উল্লেখ নেই।
যঈফ
আবু ঈসা বলেন, আবু হামযা হতে আনবাসার রিওয়ায়াতের তুলনায় এই
রিওয়ায়াতটি অনেক বেশী সহীহ। আৰূ হামযার নাম মাইমূন আল-আওয়ার। হাদীস বিশেষজ্ঞগণের
মতে তিনি নির্ভরযোগ্য রাবী নন। আবূ ঈসা বলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি গরীব।
একদল আলিম ‘নাঈ’ মাকরুহ বলেছেন। তাদের মতে ‘নাঈ’ হল লোকদের মাঝে এই বলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া
যে, অমুক ব্যক্তি মারা গেছে। অতএব তারা যেন তার জানাযায় উপস্থিত হয়। কিছু আলিম বলেছেন,
মৃতের ভাই-বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনকে তার মৃত্যুর সংবাদ দেয়াতে কোন অপরাধ নেই। ইবরাহীম
নাখঈ বলেন, আত্মীয়-স্বজনের মৃত্যুসংবাদ দেয়াতে কোন সমস্যা নেই।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৯৮৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْقُدُّوسِ بْنُ بَكْرِ بْنِ خُنَيْسٍ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ
بْنُ سُلَيْمٍ الْعَبْسِيُّ، عَنْ بِلاَلِ بْنِ يَحْيَى الْعَبْسِيِّ، عَنْ
حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ، قَالَ إِذَا مِتُّ فَلاَ تُؤْذِنُوا بِي أَحَدًا إِنِّي
أَخَافُ أَنْ يَكُونَ نَعْيًا فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَنْهَى عَنِ النَّعْىِ . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার মৃত্যু হলে এই বিষয়ে তোমরা
কোন ঘোষণা দিবে না। আমার ভয় হয় যে, এটা মৃত্যুর সংবাদ প্রচার বলে ধরা হবে। আমি
মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
নিষেধ করতে শুনেছি।
-হাসান, ইবনু মা-জাহ (১৪৭৬)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
১৩. অনুচ্ছেদঃ
প্রথম আঘাতেই ধৈর্যধারণ করা
৯৮৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا
اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ سِنَانٍ، عَنْ
أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الصَّبْرُ فِي
الصَّدْمَةِ الأُولَى " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ
هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রকৃত ধৈর্য হচ্ছে বিপদের প্রথম ধাক্কাতেই ধৈর্যধারণ করা।
সহীহ, আহকা-মুল জানা-য়িজ (২২ পৃঃ), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা হাদীসটিকে এই সূত্রে গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯৮৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ،
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
الصَّبْرُ عِنْدَ الصَّدْمَةِ الأُولَى " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিপদের প্রথম আঘাতেই ধৈর্য ধরতে হবে।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৪. অনুচ্ছেদঃ
মৃত লোককে চুমা দেয়া
৯৮৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ
عَاصِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ،
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَبَّلَ عُثْمَانَ بْنَ مَظْعُونٍ وَهُوَ
مَيِّتٌ وَهُوَ يَبْكِي . أَوْ قَالَ عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ . وَفِي الْبَابِ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ وَعَائِشَةَ قَالُوا إِنَّ أَبَا بَكْرٍ قَبَّلَ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مَيِّتٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উসমান ইবনু মাযউন (রাঃ)-কে মৃত অবস্থায়
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুম্বন করেছিলেন আর কাঁদছিলেন।
অথবা বর্ণনাকারী বলেন, তার দু'চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছিল।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৫৬)।
ইবনু আব্বাস, জাবির ও আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মারা যাবার পর
আবূ বাকার (রাঃ) তাকে চুমা দিয়েছেন।
আইশা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৫. অনুচ্ছেদঃ
লাশের গোসল দেয়া
৯৯০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ،
حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا خَالِدٌ، وَمَنْصُورٌ، وَهِشَامٌ، فَأَمَّا
خَالِدٌ وَهِشَامٌ فَقَالاَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَحَفْصَةَ وَقَالَ مَنْصُورٌ عَنْ
مُحَمَّدٍ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ قَالَتْ تُوُفِّيَتْ إِحْدَى بَنَاتِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " اغْسِلْنَهَا وِتْرًا ثَلاَثًا أَوْ خَمْسًا
أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ إِنْ رَأَيْتُنَّ وَاغْسِلْنَهَا بِمَاءٍ وَسِدْرٍ
وَاجْعَلْنَ فِي الآخِرَةِ كَافُورًا أَوْ شَيْئًا مِنْ كَافُورٍ فَإِذَا
فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي " . فَلَمَّا فَرَغْنَا آذَنَّاهُ فَأَلْقَى
إِلَيْنَا حِقْوَهُ فَقَالَ " أَشْعِرْنَهَا بِهِ " . قَالَ
هُشَيْمٌ وَفِي حَدِيثِ غَيْرِ هَؤُلاَءِ وَلاَ أَدْرِي وَلَعَلَّ هِشَامًا
مِنْهُمْ قَالَتْ وَضَفَّرْنَا شَعْرَهَا ثَلاَثَةَ قُرُونٍ . قَالَ هُشَيْمٌ
أَظُنُّهُ قَالَ فَأَلْقَيْنَاهُ خَلْفَهَا . قَالَ هُشَيْمٌ فَحَدَّثَنَا
خَالِدٌ مِنْ بَيْنِ الْقَوْمِ عَنْ حَفْصَةَ وَمُحَمَّدٍ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ قَالَتْ
وَقَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَابْدَأْنَ
بِمَيَامِنِهَا وَمَوَاضِعِ الْوُضُوءِ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ
سُلَيْمٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أُمِّ عَطِيَّةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ
إِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ أَنَّهُ قَالَ غُسْلُ الْمَيِّتِ كَالْغُسْلِ مِنَ
الْجَنَابَةِ . وَقَالَ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ لَيْسَ لِغُسْلِ الْمَيِّتِ
عِنْدَنَا حَدٌّ مُؤَقَّتٌ وَلَيْسَ لِذَلِكَ صِفَةٌ مَعْلُومَةٌ وَلَكِنْ
يُطَهَّرُ . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ إِنَّمَا قَالَ مَالِكٌ قَوْلاً مُجْمَلاً
يُغَسَّلُ وَيُنْقَى وَإِذَا أُنْقِيَ الْمَيِّتُ بِمَاءٍ قَرَاحٍ أَوْ مَاءٍ
غَيْرِهِ أَجْزَأَ ذَلِكَ مِنْ غُسْلِهِ وَلَكِنْ أَحَبُّ إِلَىَّ أَنْ يُغْسَلَ
ثَلاَثًا فَصَاعِدًا لاَ يُنْقَصُ عَنْ ثَلاَثٍ لِمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " اغْسِلْنَهَا ثَلاَثًا أَوْ خَمْسًا " . وَإِنْ
أَنْقَوْا فِي أَقَلَّ مِنْ ثَلاَثِ مَرَّاتٍ أَجْزَأَ وَلاَ يَرَى أَنَّ قَوْلَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّمَا هُوَ عَلَى مَعْنَى الإِنْقَاءِ ثَلاَثًا
أَوْ خَمْسًا وَلَمْ يُؤَقِّتْ . وَكَذَلِكَ قَالَ الْفُقَهَاءُ وَهُمْ أَعْلَمُ
بِمَعَانِي الْحَدِيثِ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ وَتَكُونُ الْغَسَلاَتُ
بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَيَكُونُ فِي الآخِرَةِ شَيْءٌ مِنْ كَافُورٍ .
উম্মু আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর এক কন্যা (যাইনাব) মারা গেলে তিনি বললেনঃ তোমরা বেজোড় সংখ্যায়
তিন বার বা পাঁচ বার অথবা প্রয়োজনে এর চেয়েও অধিক বার তাকে গোসল দিতে পার। বরই
পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল দাও। আর শেষবার পানিতে কর্পূর বা কিছু পরিমাণ কর্পূর
ঢেলে দাও। তোমাদের গোসল করানো শেষ হয়ে গেলে আমাকে জানিয়ে দিও। অতএব, তার গোসল
শেষ করে আমরা তাঁকে জানালাম। তিনি তাঁর লুঙ্গি আমাদের দিকে ছুড়ে দিলেন এবং বললেনঃ
তাঁর শরীরে এটিকে জড়িয়ে দাও। হুশাইম বলেন, এদের (খালিদ, মানসূর) ব্যতীত অন্যদের,
হয়ত হিশামও তাদের একজন, বর্ণনায় আছে যে, উম্মু আতিয়্যা (রাঃ) বলেন, আমরা তাঁর
চুলকে তিন ভাগে বিন্যস্ত করলাম। হুশাইম বলেন, আমার ধারণায় তিনি এও বলেছেনঃ তাঁর
চুলগুলোকে আমরা তাঁর পিছন দিকে ছেড়ে দিলাম।
হুশাইম বলেন, এদের মধ্যে খালিদ আমাকে হাফসা ও মুহাম্মাদ-উম্মু আতিয়্যা (রাঃ)-এর
সূত্রে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাদেরকে বললেনঃ তাঁর ডান পাশ দিযে তার ওযুর স্থানসমূহ হতে গোসল শুরু কর।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৫৮), বুখারী, মুসলিম।
উম্মু সুলাইম (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। উম্মু
আতিয়্যা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী
আলিমগণ আমল করেছেন। ইবরাহীম নাখঈ (রহঃ) বলেন, নাপাক ব্যক্তির গোসলের নিয়মের মতই মৃতের
গোসল করানোর নিয়ম। ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন, আমাদের মতে মৃত ব্যক্তির গোসল করানোর ধরাবাধা
কোন নিয়ম নেই। আসল কাজ হচ্ছে তাকে পাকসাফ করা। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, মালিক (রহঃ)
একটি অস্পষ্ট কথা বলেছেন যে, মৃত ব্যক্তিকে পরিষ্কার পানি বা অন্য কোন পানি দ্বারা
গোসল করিয়ে তার দেহ হতে ময়লা দূর করে দিলেই যথেষ্ট। কিন্তু আমার মতে মৃত ব্যক্তিকে
তিন বা ততোধিক বার বেজোড় সংখ্যায় গোসল করানো মুস্তাহাব। তবে যেন তিন হতে কম না হয়।
কেননা, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাকে তোমরা তিনবার
অথবা পাঁচবার গোসল করাও। যদি তিনবারের কমেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায় এবং তাই যথেষ্ট
হয়। তবে তাঁর এই বক্তব্য তিন বার বা পাঁচ বার-এর কোন অর্থ হয়না। এই বিষয়ে তিনি কোন
নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারিত করে দেননি একথা বলা যায়না। ফকীহগণও এরকম কথা বলেছেন। হাদীসের
প্রকৃত মর্ম তারাই হৃদয়ংগম করতে পারেন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ) বলেন, বরই পাতা মিশ্রিত
পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে এবং শেষবারে কর্পূর মিশ্রিত পানি দিয়ে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৬. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির জন্য কস্তুরি ব্যবহার করা
৯৯১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ،
حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، وَشَبَابَةُ، قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
خُلَيْدِ بْنِ جَعْفَرٍ، سَمِعَ أَبَا نَضْرَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَطْيَبُ
الطِّيبِ الْمِسْكُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কস্তুরি সবচাইতে উত্তম সুগন্ধি।
-সহীহ, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯৯২
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ،
حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ خُلَيْدِ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِي
نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنِ
الْمِسْكِ فَقَالَ " هُوَ أَطْيَبُ طِيبِكُمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ
الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ وَقَدْ كَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ الْمِسْكَ لِلْمَيِّتِ . قَالَ وَقَدْ رَوَاهُ الْمُسْتَمِرُّ بْنُ
الرَّيَّانِ أَيْضًا عَنْ أَبِي نَضْرَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم . قَالَ عَلِيٌّ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْمُسْتَمِرُّ بْنُ
الرَّيَّانِ ثِقَةٌ . قَالَ يَحْيَى خُلَيْدُ بْنُ جَعْفَرٍ ثِقَةٌ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কস্তুরি প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হল। তিনি বললেনঃ তোমাদের সুগন্ধিগুলোর মধ্যে
এটা হলো সবচাইতে উত্তম সুগন্ধি।
-সহীহ, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী একদল
আলিম আমল করেছেন। এই অভিমত আহমাদ ও ইসহাকের। মৃতের জন্য কণ্ডুরি ব্যবহারকে অন্য একদল
আলিম মাকরূহ বলেছেন। এই হাদীস আল-মুস্তামির ইবনুর রাইয়্যানও আবূ নাযরা হতে, তিনি আবূ
সাঈদ (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা
করেছেন। ইয়াহইয়া ইবনু সাইদ বলেন; আল-মুসতামির ইবনুর রাইয়্যান ও খুলাইদ ইবনু জাফর
দুজনেই নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৭.অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানোর পর গোসল করা
৯৯৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ الْمُخْتَارِ،
عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مِنْ غُسْلِهِ الْغُسْلُ وَمِنْ
حَمْلِهِ الْوُضُوءُ " . يَعْنِي الْمَيِّتَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَلِيٍّ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ مَوْقُوفًا . وَقَدِ
اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الَّذِي يُغَسِّلُ الْمَيِّتَ فَقَالَ بَعْضُ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ
إِذَا غَسَّلَ مَيِّتًا فَعَلَيْهِ الْغُسْلُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ عَلَيْهِ
الْوُضُوءُ . وَقَالَ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ أَسْتَحِبُّ الْغُسْلَ مِنْ غُسْلِ
الْمَيِّتِ وَلاَ أَرَى ذَلِكَ وَاجِبًا . وَهَكَذَا قَالَ الشَّافِعِيُّ .
وَقَالَ أَحْمَدُ مَنْ غَسَّلَ مَيِّتًا أَرْجُو أَنْ لاَ يَجِبَ عَلَيْهِ
الْغُسْلُ وَأَمَّا الْوُضُوءُ فَأَقَلُّ مَا قِيلَ فِيهِ . وَقَالَ إِسْحَاقُ
لاَ بُدَّ مِنَ الْوُضُوءِ . قَالَ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ لاَ بَأْسَ أَنْ لاَ يَغْتَسِلَ وَلاَ يَتَوَضَّأَ
مَنْ غَسَّلَ الْمَيِّتَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানোর পর গোসল করতে হবে এবং লাশ বহন করার পর
ওযু করতে হবে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৬৩)।
আলী ও আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরাইরা
(রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। এটি মাওকূফ হিসেবেও আবূ হুরাইরা
(রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। আলিমদের মাঝে লাশকে গোসল করানোর পর গোসল করার বিষয়ে মতের অমিল
রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল সাহাবী ও অপরাপর
আলিম বলেন, মৃত ব্যক্তিকে কোন লোক গোসল করানোরপরে তাকেও গোসল করতে হবে। কেউ কেউ বলেন,
তাকে ওযু করতে হবে। মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানোর পর নিজে
গোসল করা মুস্তাহাব, আমি এটাকে বাধ্যতামূলক বলে মনে করি না। একই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈও।
ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে যে লোক গোসল করাবে আমার ধারণা মতে তার উপর গোসল
ওয়াজিব নয়, ওযুই তার জন্য যথেষ্ট হবে। ইসহাক (রহঃ) বলেন, অবশ্যই তাকে ওযু করতে হবে।
আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক (রহঃ) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানোর পর গোসলদানকারীর জন্য
ওযু বা গোসল কোনটাই ওয়াজিব নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৮. অনুচ্ছেদঃ
কাফনের জন্য যেরূপ কাপড় উত্তম
৯৯৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا بِشْرُ
بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " الْبَسُوا مِنْ ثِيَابِكُمُ الْبَيَاضَ فَإِنَّهَا مِنْ
خَيْرِ ثِيَابِكُمْ وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ " . وَفِي الْبَابِ
عَنْ سَمُرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ
عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ الَّذِي يَسْتَحِبُّهُ أَهْلُ
الْعِلْمِ . وَقَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ أَحَبُّ إِلَىَّ أَنْ يُكَفَّنَ فِي
ثِيَابِهِ الَّتِي كَانَ يُصَلِّي فِيهَا . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ
أَحَبُّ الثِّيَابِ إِلَيْنَا أَنْ يُكَفَّنَ فِيهَا الْبَيَاضُ وَيُسْتَحَبُّ
حُسْنُ الْكَفَنِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাদা রঙ্গের পোশাক পর। কেননা, তোমাদের জন্য তা
সবচাইতে উত্তম পোশাক। তোমাদের মৃত ব্যক্তিদের এটা দিয়েই কাফন দাও।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৭২)।
সামুরা, ইবনু উমার ও আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আলিমগণও
এটাকে মুস্তাহাব বলেছেন। ইবনুল মুবারাক বলেন, যে পোশাক পরিধান করে মৃত ব্যক্তি নামায
আদায় করত তাকে তা দিয়ে কাফন দেয়াই আমার নিকট বেশি পছন্দনীয়। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক
(রহঃ) বলেন, সাদা কাপড়ে কাফন দেয়াই আমরা পছন্দ করি। উত্তম কাপড় দিয়ে কাফন দেওয়াই
মুস্তাহাব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৯. অনুচ্ছেদঃ
(উত্তম কাপড় দিয়ে কাফন দেওয়া)
৯৯৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، عَنْ
هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا وَلِيَ أَحَدُكُمْ
أَخَاهُ فَلْيُحَسِّنْ كَفَنَهُ " . وَفِيهِ عَنْ جَابِرٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ قَالَ
سَلاَّمُ بْنُ أَبِي مُطِيعٍ فِي قَوْلِهِ " وَلْيُحَسِّنْ أَحَدُكُمْ
كَفَنَ أَخِيهِ " قَالَ هُوَ الصِّفَاقُ لَيْسَ بِالْمُرْتَفِعِ .
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি তোমাদের মাঝে কোন লোক তার কোন ভাইয়ের ওয়ালী হয় তবে
সে যেন তার জন্য উত্তম কাফনের ব্যবস্থা করে।
-সহীহ, সহীহাহু (১৪২৫), আহকামুল জানা-য়িজ (৫৮), মুসলিম জাবির হতে।
জাবির (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। ইবনুল মুবারাক বলেনঃ "সে যেন তার জন্য উত্তম কাফনের
ব্যবস্থা করে" সাল্লাম ইবনু আবূ মুতী এই কথার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার
ক্ষেত্রে এটা অতি উত্তম হতে হবে, কাফনের কাপড় অধিক মূল্যের হতে হবে তা নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২০. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কি
পরিমাণ কাপড় দিয়ে কাফন দেয়া হয়েছিল?
৯৯৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَفْصُ
بْنُ غِيَاثٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
كُفِّنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي ثَلاَثَةِ أَثْوَابٍ بِيضٍ يَمَانِيَةٍ
لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلاَ عِمَامَةٌ . قَالَ فَذَكَرُوا لِعَائِشَةَ
قَوْلَهُمْ فِي ثَوْبَيْنِ وَبُرْدِ حِبَرَةٍ . فَقَالَتْ قَدْ أُتِيَ
بِالْبُرْدِ وَلَكِنَّهُمْ رَدُّوهُ وَلَمْ يُكَفِّنُوهُ فِيهِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তিনটি ইয়ামানী সাদা কাপড় দিয়ে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কাফন দেওয়া হয়েছিল। এতে
জামা ও পাগড়ী ছিল না। বর্ণনাকারী (উরওয়া) বলেন, লোকেরা আইশা (রাঃ)-কে বলল, কেউ
কেউ বলেন, দু'টি কাপড় ও একটি লম্বা রেখাযুক্ত চাদর দ্বারা তাকে কাফন দেওয়া
হয়েছে। আইশা (রাঃ) বলেন, একটি চাদর আনা হয়েছিল কিন্তু তাঁরা তা ফিরিয়ে দেন এবং
তাঁকে সেটা দিয়ে কাফন দেননি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৬৯),বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯৯৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ السَّرِيِّ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ
عَقِيلٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم كَفَّنَ حَمْزَةَ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فِي نَمِرَةٍ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ
مُغَفَّلٍ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ فِي كَفَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
رِوَايَاتٌ مُخْتَلِفَةٌ وَحَدِيثُ عَائِشَةَ أَصَحُّ الأَحَادِيثِ الَّتِي
رُوِيَتْ فِي كَفَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَالْعَمَلُ عَلَى حَدِيثِ
عَائِشَةَ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ . قَالَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ يُكَفَّنُ الرَّجُلُ فِي
ثَلاَثِ أَثْوَابٍ إِنْ شِئْتَ فِي قَمِيصٍ وَلِفَافَتَيْنِ وَإِنْ شِئْتَ فِي
ثَلاَثِ لَفَائِفَ وَيُجْزِئُ ثَوْبٌ وَاحِدٌ إِنْ لَمْ يَجِدُوا ثَوْبَيْنِ
وَالثَّوْبَانِ يُجْزِيَانِ وَالثَّلاَثَةُ لِمَنْ وَجَدَهَا أَحَبُّ إِلَيْهِمْ
. وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . قَالُوا تُكَفَّنُ
الْمَرْأَةُ فِي خَمْسَةِ أَثْوَابٍ .
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
শুধুমাত্র একটি পশমী চাদর দ্বারা হামযা ইবনু
আবদুল মুত্তালিব (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাফন
দিয়েছিলেন।
-হাসান, আল-আহকাম (৫৯,৬০)।
আলী, ইবনু আব্বাস, আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল ও ইবনু উমার (রাঃ)
হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান
সহীহ্ বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাফনের প্রসঙ্গে
বিভিন্ন রকম হাদীস আছে। আইশ (রাঃ)-এর হাদীস তন্মধ্যে সবচাইতে সহীহ্। এই হাদীস অনুযায়ী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর
আলিমগণ আমল করেছেন। সুফিয়ান সাওরী বলেন, পুরুষদেরকে তিনটি কাপড়ে কাফন দেওয়া হবে-
দু'টি চাদর ও একটি জামা বা তিনটি চাদরেই কাফন দেওয়া যায়। দু'টো কাপড় না পাওয়া গেলে
একটিতেই যথেষ্ট হবে। আর তিনটি না পাওয়া গেলে দুটিই যথেষ্ট। তিনটি পাওয়া গেলে তা বেশি
উত্তম। এই অভিমত ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর। তারা বলেন, মহিলাদেরকে পাঁচটি
কাপড়ে কাফন দেওয়া হবে।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
২১. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির পরিবার-পরিজনদের জন্য খাবার তৈরী করে পাঠানো
৯৯৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ،
وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ
جَعْفَرِ بْنِ خَالِدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ، قَالَ
لَمَّا جَاءَ نَعْىُ جَعْفَرٍ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم "
اصْنَعُوا لأَهْلِ جَعْفَرٍ طَعَامًا فَإِنَّهُ قَدْ جَاءَهُمْ مَا يَشْغَلُهُمْ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ كَانَ بَعْضُ
أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّ أَنْ يُوَجَّهَ إِلَى أَهْلِ الْمَيِّتِ شَيْءٌ
لِشُغْلِهِمْ بِالْمُصِيبَةِ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَجَعْفَرُ بْنُ خَالِدٍ هُوَ ابْنُ سَارَةَ وَهُوَ ثِقَةٌ رَوَى عَنْهُ
ابْنُ جُرَيْجٍ .
আবদুল্লাহ্ ইবনু জাফর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাফর (রাঃ)-এর শহীদ হওয়ার খবর এলে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা জাফরের পরিবারের
জন্য খাবার তৈরী কর। কেননা, এমন খবর তাদের নিকটে এসেছে যা তাদেরকে ব্যতিব্যস্ত
রেখেছে।
-হাসান, ইবনু মা-জাহ (১৬১০), মিশকাত (১৭৩৯)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। মৃত ব্যক্তির পরিবারের
দুঃখ-কষ্ট জনিত ব্যস্ততার কারণে তাদেরকে কিছু পাঠানোকে একদল আলিম মুস্তাহাব বলেছেন।
এই অভিমত ইমাম শাফিঈর। জাফর ইবনু খালিদ হচ্ছেন ইবনু সা-রাহ, তিনি একজন নির্ভরযোগ্য
বর্ণনাকারী। ইবনু জুরাইজও তার বরাতে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
২২. অনুচ্ছেদঃ
বিপদের সময় কপালে হাত চাপড়ানো ও জামার বুক ছেঁড়া নিষেধ
৯৯৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي زُبَيْدٌ
الأَيَامِيُّ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَيْسَ مِنَّا مَنْ شَقَّ
الْجُيُوبَ وَضَرَبَ الْخُدُودَ وَدَعَا بِدَعْوَةِ الْجَاهِلِيَّةِ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যেসব লোক (মৃত্যুশোকে) জামার বুক ছিড়ে, গাল চাপড়ায় ও জাহিলী
যুগের ন্যায় হা-হুতাশ করে সেসব লোক আমাদের দলভুক্ত নয়।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৮৪), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৩. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ করে কাঁদা মাকরূহ্
১০০০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ،
حَدَّثَنَا قُرَّانُ بْنُ تَمَّامٍ الأَسَدِيُّ، وَمَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ،
وَيَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ عُبَيْدٍ الطَّائِيِّ، عَنْ عَلِيِّ
بْنِ رَبِيعَةَ الأَسَدِيِّ، قَالَ مَاتَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يُقَالُ لَهُ
قَرَظَةُ بْنُ كَعْبٍ فَنِيحَ عَلَيْهِ فَجَاءَ الْمُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةُ
فَصَعِدَ الْمِنْبَرَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَقَالَ مَا بَالُ
النَّوْحِ فِي الإِسْلاَمِ أَمَا إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَقُولُ " مَنْ نِيحَ عَلَيْهِ عُذِّبَ بِمَا نِيحَ عَلَيْهِ
" . وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَأَبِي مُوسَى وَقَيْسِ بْنِ
عَاصِمٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَجُنَادَةَ بْنِ مَالِكٍ وَأَنَسٍ وَأُمِّ عَطِيَّةَ
وَسَمُرَةَ وَأَبِي مَالِكٍ الأَشْعَرِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ الْمُغِيرَةِ
حَدِيثٌ غَرِيبٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আলী ইবনু রাবীআ আল-আসাদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কারাযা ইবনু কা’ব নামক এক আনসারী
মারা গেলে তার জন্য বিলাপ করে কান্নাকাটি শুরু হয়। এমতাবস্থায় মুগীরা ইবনু শুবা
(রাঃ) এসে মিম্বারে উঠলেন এবং আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পর বললেন, ইসলামে
বিলাপ করে কাঁদার বিধান কোথায়? সাবধান! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তির জন্য বিলাপ করে কাঁদা হয় তাকে বিলাপের
কারণে শাস্তি দেওয়া হয়।
-সহীহ, আল আহকাম (২৮, ২৯), বুখারী, মুসলিম।
উমার, আলী, আবূ মূসা, কাইস ইবনু আসিম, আবূ হুরাইয়া, জুনাদা ইবনু
মালিক, আনাস, উম্মু আতিয়্যা, সামুরা ও আবূ মালিক আল-আশআরী (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। মুগীরা (রাঃ) হতে বর্ণিত এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০০১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ،
حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، وَالْمَسْعُودِيُّ، عَنْ
عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ أَبِي الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَرْبَعٌ فِي أُمَّتِي مِنْ
أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ لَنْ يَدَعَهُنَّ النَّاسُ النِّيَاحَةُ وَالطَّعْنُ فِي
الأَحْسَابِ وَالْعَدْوَى أَجْرَبَ بَعِيرٌ فَأَجْرَبَ مِائَةَ بَعِيرٍ مَنْ
أَجْرَبَ الْبَعِيرَ الأَوَّلَ وَالأَنْوَاءُ مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا وَكَذَا
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতদের মাঝে জাহিলী যুগের চারটি (খারাপ) বিষয় আছে।
তারা কখনও এগুলো (পুরোপুরি) ছাড়বে না: মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ সহকারে ক্ৰন্দন
করা, বংশ তুলে গালি দেওয়া, সংক্রামক রোগ সংক্রমিত হওয়ার ধারণা, একটি উট সংক্রমিত
হলে একশ’টি উটে তা সংক্রমিত হওয়া। কিন্তু প্রশ্ন হলো, প্রথমটি কিভাবে সংক্রমিত
হল? আর নক্ষত্রের প্রভাব মান্য করা অর্থাৎ অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের উপর
বৃষ্টি হলো।
-হাসান, সহীহাহ্ (৭৩৫)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
২৪. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির জন্য কান্নাকাটি করা মাকরূহ
১০০২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي
زِيَادٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا أَبِي،
عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْمَيِّتُ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ
عَلَيْهِ " . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَعِمْرَانَ بْنِ
حُصَيْنٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ الْبُكَاءَ عَلَى الْمَيِّتِ قَالُوا
الْمَيِّتُ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ . وَذَهَبُوا إِلَى هَذَا
الْحَدِيثِ . وَقَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ أَرْجُو إِنْ كَانَ يَنْهَاهُمْ فِي
حَيَاتِهِ أَنْ لاَ يَكُونَ عَلَيْهِ مِنْ ذَلِكَ شَيْءٌ .
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তির জন্য তার পরিবারের লোকদের কান্নাকাটির কারণে
তাকে শাস্তি দেওয়া হয়।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৯৩), বুখারী, মুসলিম।
ইবনু উমার ও ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস
বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীসের ভিত্তিতে একদল আলিম,
মৃত ব্যক্তির জন্য কান্নাকাটি করা অপছন্দ করেছেন। তারা বলেন, তাকে তার পরিবারের কান্নাকাটির
কারণে শাস্তি দেওয়া হয়। উক্ত হাদীসকে তারা দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ইবনুল মুবারাক
বলেন, আমি আশা করি যদি মৃত ব্যক্তি তার পরিবারের লোকদেরকে তার জীবিতাবস্থায় কাঁদতে
বারণ করে যায় তাহলে তাদের কান্নার কারণে তার কিছু হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০০৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ،
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي أَسِيدُ بْنُ أَبِي أَسِيدٍ،
أَنَّ مُوسَى بْنَ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَا مِنْ مَيِّتٍ يَمُوتُ
فَيَقُومُ بَاكِيهِ فَيَقُولُ وَاجَبَلاَهُ وَاسَيِّدَاهُ أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ
إِلاَّ وُكِّلَ بِهِ مَلَكَانِ يَلْهَزَانِهِ أَهَكَذَا كُنْتَ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর তার জন্য ক্ৰন্দনকারীরা যখন কাঁদে
আর বলে, হায় আমাদের পাহাড়! হে আমাদের নেতা বা অনুরূপ কোন কথা, তখন দুইজন ফেরেশতা
ঐ মৃত ব্যক্তির জন্য নিয়োগ করা হয়। তারা তার বুকে ঘুষি মারে আর বলতে থাকে, তুমি
কি এরূপ ছিলে?
হাসান, ইবনু মা-জাহ (১৫৯৪)
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
২৫. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির জন্য কান্নাকাটি করার অনুমতি
১০০৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا
عَبَّادُ بْنُ عَبَّادٍ الْمُهَلَّبِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ
يَحْيَى بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " الْمَيِّتُ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ
" . فَقَالَتْ عَائِشَةُ يَرْحَمُهُ اللَّهُ لَمْ يَكْذِبْ وَلَكِنَّهُ
وَهِمَ إِنَّمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِرَجُلٍ مَاتَ
يَهُودِيًّا " إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ وَإِنَّ أَهْلَهُ لَيَبْكُونَ عَلَيْهِ
" . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَقَرَظَةَ بْنِ كَعْبٍ
وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ
وَجْهٍ عَنْ عَائِشَةَ . وَقَدْ ذَهَبَ أَهْلُ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا
وَتَأَوَّلُوا هَذِهِ الآيَةَ (ألَّا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى ) وَهُوَ
قَوْلُ الشَّافِعِيِّ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তির জন্য তার পরিবারের লোকদের কান্নাকাটির কারণে তাকে
শাস্তি দেওয়া হয়। আইশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁকে (ইবনু উমারকে) রহম
করুন। তিনি মিথ্যা বলেননি, বরং ভুল বুঝেছেন। এক ব্যক্তি প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, যে ইয়াহুদী অবস্থায় মারা গিয়েছিলঃ
মৃত ব্যক্তিকে (তার গুনাহের কারণে) শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, আর তার জন্য তার পরিবারের
লোকেরা কাঁদছে।
-সহীহ্, আহকা-মুল জানা-য়িজ (২৮), বুখারী, মুসলিম৷
ইবনু আব্বাস, কারাযা ইবনু কা’ব, আবূ হুরাইরা, ইবনু মাসউদ ও উসামা
ইবনু যাইদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীস আইশা (রাঃ) হতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
এই হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তারা "ওয়ালা তাযিরু ওয়াযিরাতুন
বিযরা উখরা" (একজন অপরজনের বোঝা বহন করবে না) আয়াত দলীল হিসাবে উপস্থাপন করেছেন।
এই অভিমত ইমাম শাফিঈরও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০০৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ،
أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ
جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخَذَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ فَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى ابْنِهِ إِبْرَاهِيمَ
فَوَجَدَهُ يَجُودُ بِنَفْسِهِ فَأَخَذَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فَوَضَعَهُ فِي حِجْرِهِ فَبَكَى فَقَالَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ أَتَبْكِي
أَوَلَمْ تَكُنْ نَهَيْتَ عَنِ الْبُكَاءِ قَالَ " لاَ وَلَكِنْ نَهَيْتُ
عَنْ صَوْتَيْنِ أَحْمَقَيْنِ فَاجِرَيْنِ صَوْتٍ عِنْدَ مُصِيبَةٍ خَمْشِ وُجُوهٍ
وَشَقِّ جُيُوبٍ وَرَنَّةِ شَيْطَانٍ " . وَفِي الْحَدِيثِ كَلاَمٌ
أَكْثَرُ مِنْ هَذَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)-এর হাত ধরে তাকে
নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ পুত্র ইবরাহীম
(রাঃ)-এর নিকটে গেলেন। তাঁকে তিনি মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পেলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে কোলে তুলে নিলেন এবং কাঁদলেন। আবদুর রাহমান (রাঃ)
তাকে বললেন, আপনিও কাঁদছেন? আপনি কি কান্না করতে বারণ করেননি? তিনি বললেনঃ না, বরং
আমি দুইটি নির্বোধ সুলভ ও পাপাচারমূলক চিৎকার নিষেধ করেছিঃ বিপদের সময় চিৎকার
করা, মুখমণ্ডলে আঘাত করা এবং জামার সম্মুখভাগ ছিড়ে ফেলা আর শাইতানের মত (চিৎকার)
কান্নাকাটি করা।
-হাসান, হাদীসটিতে আরো অনেক বক্তব্য আছে।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
১০০৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ،
قَالَ وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا
مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ
حَزْمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَمْرَةَ، أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا، سَمِعَتْ
عَائِشَةَ، وَذُكِرَ، لَهَا أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، يَقُولُ إِنَّ الْمَيِّتَ
لَيُعَذَّبُ بِبُكَاءِ الْحَىِّ عَلَيْهِ . فَقَالَتْ عَائِشَةُ غَفَرَ اللَّهُ
لأَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَمَا إِنَّهُ لَمْ يَكْذِبْ وَلَكِنَّهُ نَسِيَ أَوْ
أَخْطَأَ إِنَّمَا مَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى يَهُودِيَّةٍ
يُبْكَى عَلَيْهَا فَقَالَ " إِنَّهُمْ لَيَبْكُونَ عَلَيْهَا وَإِنَّهَا
لَتُعَذَّبُ فِي قَبْرِهَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ
.
আমর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আইশা (রাঃ)-এর নিকট শুনেছেন যে, তার নিকট
উল্লেখ করা হল যে, ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে জীবিতদের কান্নাকাটির
কারণে শাস্তি দেওয়া হয় (এ কথা শুনে) আইশা (রাঃ) বললেন, আবদুর রাহমানের বাবাকে
আল্লাহ তা'আলা ক্ষমা করুন। তিনি মিথ্যা বলেননি। তবে তিনি হয়ত ভুলে গেছেন বা
সঠিকভাবে বুঝতে পারেননি। (প্রকৃত বিষয় এই যে,) কোন এক ইয়াহুদী নারীর লাশের বা
কবরের পাশ দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাচ্ছিলেন। তখন
তার জন্য কান্নাকাটি করা হচ্ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তখন বললেনঃ তার জন্য তো এরা কান্নাকাটি করছে, অথচ তাকে কবরের মাঝে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
-সহীহ, আল-আহকাম (২৮), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৬. অনুচ্ছেদঃ
জানাযার (লাশের) আগে আগে চলা
১০০৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
وَأَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَمَحْمُودُ بْنُ
غَيْلاَنَ، قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ،
عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
وَأَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ يَمْشُونَ أَمَامَ الْجَنَازَةِ .
সালিম (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকর ও উমার (রাঃ)-কে জানাযার আগে আগে চলতে দেখেছি।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৪৮২)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০০৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ
الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ مَنْصُورٍ،
وَبَكْرٍ الْكُوفِيِّ، وَزِيَادٍ، وَسُفْيَانَ، كُلُّهُمْ يَذْكُرُ أَنَّهُ
سَمِعَهُ مِنَ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ
رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ يَمْشُونَ
أَمَامَ الْجَنَازَةِ .
সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকর ও উমার (রাঃ)-কে জানাযার আগে আগে
চলতে দেখেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০০৯
ثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ كَانَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ يَمْشُونَ أَمَامَ
الْجَنَازَةِ . قَالَ الزُّهْرِيُّ وَأَخْبَرَنِي سَالِمٌ أَنَّ أَبَاهُ كَانَ
يَمْشِي أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ هَكَذَا رَوَاهُ ابْنُ جُرَيْجٍ وَزِيَادُ بْنُ
سَعْدٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ نَحْوَ
حَدِيثِ ابْنِ عُيَيْنَةَ . وَرَوَى مَعْمَرٌ وَيُونُسُ بْنُ يَزِيدَ وَمَالِكٌ
وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنَ الْحُفَّاظِ عَنِ الزُّهْرِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم كَانَ يَمْشِي أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ الزُّهْرِيُّ
وَأَخْبَرَنِي سَالِمٌ أَنَّ أَبَاهُ كَانَ يَمْشِي أَمَامَ الْجَنَازَةِ .
وَأَهْلُ الْحَدِيثِ كُلُّهُمْ يَرَوْنَ أَنَّ الْحَدِيثَ الْمُرْسَلَ فِي ذَلِكَ
أَصَحُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ مُوسَى يَقُولُ قَالَ
عَبْدُ الرَّزَّاقِ قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ حَدِيثُ الزُّهْرِيِّ فِي هَذَا مُرْسَلٌ
أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عُيَيْنَةَ . قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ وَأَرَى
ابْنَ جُرَيْجٍ أَخَذَهُ عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى
هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ زِيَادٍ وَهُوَ ابْنُ سَعْدٍ
وَمَنْصُورٍ وَبَكْرٍ وَسُفْيَانَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ
. وَإِنَّمَا هُوَ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ رَوَى عَنْهُ هَمَّامٌ .
وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الْمَشْىِ أَمَامَ الْجَنَازَةِ فَرَأَى بَعْضُ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ
أَنَّ الْمَشْىَ أَمَامَهَا أَفْضَلُ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ
. قَالَ وَحَدِيثُ أَنَسٍ فِي هَذَا الْبَابِ غَيْرُ مَحْفُوظٍ .
যু্হরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকর ও উমার (রাঃ) জানাযার আগে আগে চলতেন। যুহরী বলেন, আমাকে
সালিম (রহঃ) জানিয়েছেন যে, তার পিতাও জানাযার আগে আগে যেতেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ।
আনাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন,
অনেকগুলো সূত্রে ইবনু উমার (রাঃ)-এর হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। যুহরী (রহঃ) হতে বর্ণিত
যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানাযার আগে আগে যেতেন। সালিম
(রহঃ) বর্ণনা করেন যে, তার পিতা জানাযার আগে আগে যেতেন। হাদীস বিশারদগণ সকলেই (যুহরী
হতে বৰ্ণিত) মুরসাল হাদীসটিকে বেশি সহী্হ্ বলেছেন। ইবনুল মুবারাক বলেন, এই বিষয়ে ইবনু
উয়াইনার হাদীসটি হতে যুহরীর মুরসাল রিওয়ায়াতটি বেশি সহী্হ্। আমার মনে হয় ইবনু উআইনা
হতে ইবনু জুরাইয এটিকে গ্রহণ করেছেন
আবূ্ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাম্মাম ইবনু ইয়াহইয়া যিয়াদ হতে এবং মানসূর, বাকর ও সুফিয়ান
যুহরী হতে, সালিমের বরাতে তার পিতা হতে বর্ণনা করেছেন।
আলিমদের মাঝে জানাযার আগে আগে চলা প্রসঙ্গে মত পার্থক্য আছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর কিছু সংখ্যক আলিমের মতে জানাযার
আগে আগে চলা উত্তম। এই মত ইমাম শাফিঈ ও আহমাদ (রহঃ)-এর।
আবূ ঈসা বলেন, এই অনুচ্ছেদে আনাস (রাঃ)-এর বর্ণিত (পরবর্তী) হাদীস অরক্ষিত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০১০
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ،
عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا
بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ كَانُوا يَمْشُونَ أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ
أَبُو عِيسَى سَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ
خَطَأٌ أَخْطَأَ فِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ وَإِنَّمَا يُرْوَى هَذَا الْحَدِيثُ
عَنْ يُونُسَ عَنِ الزُّهْرِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا
بَكْرٍ وَعُمَرَ كَانُوا يَمْشُونَ أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ الزُّهْرِيُّ
وَأَخْبَرَنِي سَالِمٌ أَنَّ أَبَاهُ كَانَ يَمْشِي أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ
مُحَمَّدٌ وَهَذَا أَصَحُّ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকার, উমার এবং উসমান (রাঃ) জানাযার আগে আগে চলতেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৪৮৩)।
আবূ ঈসা বলেন, আমি এই হাদীস সম্পর্কে মুহাম্মাদ আল-বুখারীকে প্রশ্ন
করলে তিনি বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু বাকার এ হাদীসের সনদে ভুল করেছেন। মূলতঃ ইউনুস-যুহরীর
সূত্রে হাদীসে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ
বাকার ও উমার (রাঃ) জানাযার আগে আগে যেতেন। যুহরী বলেন, সালিম আমাকে অবহিত করেছেন যে,
তার পিতাও জানাযার আগে আগে যেতেন। মুহাম্মাদ আল-বুখারী বলেন, এটিই হলো বেশি সহীহ্ বর্ণনা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদঃ ২৭
জানাযার পিছে পিছে যাওয়া
১০১১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ،
حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ يَحْيَى، إِمَامِ بَنِي
تَيْمِ اللَّهِ عَنْ أَبِي مَاجِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ
سَأَلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْمَشْىِ خَلْفَ الْجَنَازَةِ
فَقَالَ " مَا دُونَ الْخَبَبِ فَإِنْ كَانَ خَيْرًا عَجَّلْتُمُوهُ
وَإِنْ كَانَ شَرًّا فَلاَ يُبَعَّدُ إِلاَّ أَهْلُ النَّارِ الْجَنَازَةُ
مَتْبُوعَةٌ وَلاَ تَتْبَعُ وَلَيْسَ مِنْهَا مَنْ تَقَدَّمَهَا " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ يُعْرَفُ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
مَسْعُودٍ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ
إِسْمَاعِيلَ يُضَعِّفُ حَدِيثَ أَبِي مَاجِدٍ هَذَا . وَقَالَ مُحَمَّدٌ قَالَ
الْحُمَيْدِيُّ قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ قِيلَ لِيَحْيَى مَنْ أَبُو مَاجِدٍ هَذَا
قَالَ طَائِرٌ طَارَ فَحَدَّثَنَا . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ إِلَى هَذَا رَأَوْا أَنَّ
الْمَشْىَ خَلْفَهَا أَفْضَلُ . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ
وَإِسْحَاقُ . قَالَ إِنَّ أَبَا مَاجِدٍ رَجُلٌ مَجْهُولٌ لاَ يُعْرَفُ
إِنَّمَا يُرْوَى عَنْهُ حَدِيثَانِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ . وَيَحْيَى إِمَامُ
بَنِي تَيْمِ اللَّهِ ثِقَةٌ يُكْنَى أَبَا الْحَارِثِ وَيُقَالُ لَهُ يَحْيَى
الْجَابِرُ وَيُقَالُ لَهُ يَحْيَى الْمُجْبِرُ أَيْضًا وَهُوَ كُوفِيٌّ رَوَى
لَهُ شُعْبَةُ وَسُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَأَبُو الأَحْوَصِ وَسُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ .
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জানাযার পিছে পিছে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি
বলেন : দৌড়ের চেয়ে কিছুটা ধীরে চলবে। যদি সে ভাল ব্যক্তি হয় তাহলে তোমরা তাকে
তাড়াতাড়ি তার জায়গায় পৌছে দিলে। সে মন্দ ব্যক্তি হলে তাড়াতাড়ি এক
জাহান্নামীকে বিতাড়িত করা হল। লাশের অনুসরণ করা হয়। লাশ কারো অনুসরণ করে না। যে
ব্যক্তি লাশের আগে আগে চলে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৪৮৪),
আবূ ঈসা বলেনঃ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি আমরা শুধু
উপরোক্ত সূত্রেই জেনেছি। মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল আল-বুখারী আবূ মাযিদ বর্ণিত এ হাদীসটিকে
তার কারণে যঈফ বলেছেন। ইয়াহইয়াকে আবু মাযিদ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য
করেন, একটি পাখি উড়ে এসে আমাদেরকে হাদীস শুনিয়েছে (রাবী অপরিচিত)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম এ হাদীস অনুসারে আমল করেছেন।
তাদের মতে জানাযার পিছে পিছে যাওয়াই অতিশয় ভাল। ইমাম সাওরী ও ইসহাক (রহঃ)-এর এ অভিমত।
আবু মাযিদ একজন অখ্যাত ও অপরিচিত রাবী। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) সূত্রে তার দুটি হাদীস বর্ণিত
আছে। তাইমুল্লাহ গোত্রের ইমাম ইয়াহইয়া বিশ্বস্ত রাবী। তার উপনাম আবুল হারিস। তাকে
ইয়াহইয়া আল-জাবির এবং ইয়াহইয়া আল-মুজবিরও বলা হয়। তিনি ছিলেন কূফার বাসিন্দা।
শুবা, সুফিয়ান সাওর, আবুল আহওয়াস ও সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা তার সূত্রে হাদীস বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদঃ ২৮
সাওয়ার হয়ে জানাযার পিছে পিছে চলা মাকরূহ
১০১২
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ،
أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ
رَاشِدِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم فِي جَنَازَةٍ فَرَأَى نَاسًا رُكْبَانًا فَقَالَ " أَلاَ
تَسْتَحْيُونَ إِنَّ مَلاَئِكَةَ اللَّهِ عَلَى أَقْدَامِهِمْ وَأَنْتُمْ عَلَى
ظُهُورِ الدَّوَابِّ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ
شُعْبَةَ وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ثَوْبَانَ قَدْ
رُوِيَ عَنْهُ مَوْقُوفًا قَالَ مُحَمَّدٌ الْمَوْقُوفُ مِنْهُ أَصَحُّ .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একটি জানাযায় উপস্থিত হওয়ার
উদ্দেশে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে বের হলাম।
তিনি কিছু ব্যক্তিকে আরোহী অবস্থায় দেখে বললেন ; তোমাদের কি শরম নেই? আল্লাহ
তা'আলার ফেরেশতাগণ পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন আর তোমরা পশুর পিঠে সাওয়ার হয়ে যাচ্ছো!
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৪৮০),
এই অনুচ্ছেদে মুগীরা ইবনু শুবা ও জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) হতেও
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সাওবান (রাঃ)-এর হাদীসটি মাওকূফরূপেও বর্ণিত আছে।
মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেন, মাওকূফ বর্ণনাটিই অনেক বেশী সহীহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
২৯. অনুচ্ছেদঃ
জানাযায় সাওয়ার হয়ে যাওয়ার অনুমতি প্রসঙ্গে
১০১৩
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ،
حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، قَالَ
سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ، يَقُولُ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم فِي جَنَازَةِ أَبِي الدَّحْدَاحِ وَهُوَ عَلَى فَرَسٍ لَهُ يَسْعَى وَنَحْنُ
حَوْلَهُ وَهُوَ يَتَوَقَّصُ بِهِ .
সিমাক ইবনু হারব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ)-কে আমি
বলতে শুনেছিঃ আমরা ইবনুদ দাহ্দাহ-এর জানাযাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে উপস্থিত ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁর ঘোড়ার পিঠে সাওয়ার অবস্থায় ছিলেন। আমরা তাঁর চারপাশে ছিলাম এবং
সেটি আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছিলো এবং ঘোড়ার চলার তালে তালে তিনি দুলছিলেন।
-সহীহ, আল আহকাম (৭৫), মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০১৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الصَّبَّاحِ الْهَاشِمِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو قُتَيْبَةَ، عَنِ الْجَرَّاحِ، عَنْ
سِمَاكٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
اتَّبَعَ جَنَازَةَ أَبِي الدَّحْدَاحِ مَاشِيًا وَرَجَعَ عَلَى فَرَسٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনুদ দাহদাহ-এর জানাযায় রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পায়ে হেটে যান, কিন্তু ফিরে আসেন ঘোড়ার
পিঠে সাওয়ার হয়ে।
-সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩০. অনুচ্ছেদঃ
জানাযা (লাশ) নিয়ে তাড়াতাড়ি এগিয়ে যাওয়া
১০১৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، سَمِعَ سَعِيدَ بْنَ
الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " أَسْرِعُوا بِالْجَنَازَةِ فَإِنْ يَكُنْ خَيْرًا
تُقَدِّمُوهَا إِلَيْهِ وَإِنْ يَكُنْ شَرًّا تَضَعُوهُ عَنْ رِقَابِكُمْ "
. وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي
هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ জানাযা (লাশ) নিয়ে তোমরা তাড়াতাড়ি এগিয়ে চল। কেননা, সে যদি ভাল লোক হয়
তাহলে তোমরা উত্তম পরিণতির দিকে তাকে এগিয়ে দিলে। আর যদি সে খারাপ লোক হয়ে থাকে
তাহলে তাকে তোমাদের গর্দান হতে তাড়াতাড়ি নামিয়ে রাখলে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৭৭), বুখারী, মুসলিম।
আবূ বাকরা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরাইরা
(রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহী্হ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১. অনুচ্ছেদঃ
উহুদ যুদ্ধের শহীদগণ ও হামযা (রাঃ) প্রসঙ্গে আলোচনা
১০১৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو
صَفْوَانَ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، قَالَ أَتَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى حَمْزَةَ يَوْمَ
أُحُدٍ فَوَقَفَ عَلَيْهِ فَرَآهُ قَدْ مُثِّلَ بِهِ فَقَالَ " لَوْلاَ
أَنْ تَجِدَ صَفِيَّةُ فِي نَفْسِهَا لَتَرَكْتُهُ حَتَّى تَأْكُلَهُ الْعَافِيَةُ
حَتَّى يُحْشَرَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ بُطُونِهَا " . قَالَ ثُمَّ
دَعَا بِنَمِرَةٍ فَكَفَّنَهُ فِيهَا فَكَانَتْ إِذَا مُدَّتْ عَلَى رَأْسِهِ
بَدَتْ رِجْلاَهُ وَإِذَا مُدَّتْ عَلَى رِجْلَيْهِ بَدَا رَأْسُهُ . قَالَ
فَكَثُرَ الْقَتْلَى وَقَلَّتِ الثِّيَابُ . قَالَ فَكُفِّنَ الرَّجُلُ
وَالرَّجُلاَنِ وَالثَّلاَثَةُ فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ ثُمَّ يُدْفَنُونَ فِي
قَبْرٍ وَاحِدٍ فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُ عَنْهُمْ
" أَيُّهُمْ أَكْثَرُ قُرْآنًا " . فَيُقَدِّمُهُ إِلَى
الْقِبْلَةِ . قَالَ فَدَفَنَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ
يُصَلِّ عَلَيْهِمْ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ أَنَسٍ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . النَّمِرَةُ
الْكِسَاءُ الْخَلَقُ . وَقَدْ خُولِفَ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ فِي رِوَايَةِ
هَذَا الْحَدِيثِ فَرَوَى اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ .
وَرَوَى مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ ثَعْلَبَةَ عَنْ
جَابِرٍ . وَلاَ نَعْلَمُ أَحَدًا ذَكَرَهُ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَنَسٍ
إِلاَّ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ . وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ
فَقَالَ حَدِيثُ اللَّيْثِ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ جَابِرٍ أَصَحُّ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) উহুদের যুদ্ধের দিন হামযা (রাঃ)-এর লাশের নিকটে এলেন। সেখানে
দাঁড়িয়ে তিনি দেখতে পেলেন, তার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে তাকে বিকৃত করা
হয়েছে। তিনি বললেনঃ (হামযার বোন) সাফিয়্যা তাঁর মনে আঘাত পাবে এমন ভয় যদি না হতো
তাহলে আমি এই অবস্থায়ই তাঁর লাশ ছেড়ে যেতাম। তাকে হিংস্র জীবজন্তু খেয়ে ফেলত
এবং সে এদের পেট হতেই কিয়ামাতের দিন বেরিয়ে আসত। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি
একটি সাদা-কালো ডোরাযুক্ত চাদর নিয়ে আসতে বললেন এবং সেটা দিয়ে তার কাফন পরান। তা
এত ছোট ছিল যে, মাথার দিকে টানলে তার দু'পা বেরিয়ে যেত, আবার তার পায়ের দিকে
টানলে তার মাথা বেরিয়ে যেত। বর্ণনাকারী বলেন, নিহতের পরিমাণ ছিল অনেক বেশি কিন্তু
কাপড় কম ছিল। তাই এক কাপড়ে একজন, দুইজন, এমনকি তিনজনকেও একসাথে কাফন পরানো হয়
এবং একই কবরে দাফন করা হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
প্রশ্ন করতেনঃ এদের মধ্যে কার বেশি কুরআন জানা আছে? তাকেই তিনি কিবলার সম্মুখে
এগিয়ে রাখতেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লাশগুলোর দাফন
সম্পন্ন করলেন, কিন্তু তাদের জানাযা আদায় করেননি।
-সহীহ, আল আহকাম (৫৯, ৬০)।
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন।
আমরা আনাস (রাঃ)-এর এই হাদীস সম্পর্কে উপরোক্ত সূত্র ব্যতীত আর কোন সূত্রে জানতে পারিনি।
হাদীসে বর্ণিত নামিরা অর্থ পুরাতন কাপড়। উসামা ইবনু যাইদের বর্ণনা সম্পর্কে মতভেদ
আছে। লাইস ইবনু সা'দ বৰ্ণনা করেছেন ইবনু শিহাব হতে, তিনি আব্দুর রাহমান ইবনু কা’ব ইবনু
মালিক হতে, তিনি জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু যাইদ হতে, আর মামার বর্ণনা করেছেন যুহরী
হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু সালাবা হতে, তিনি জাবির হতে। এই হাদীসটি আনাস (রাঃ) হতে
যুহরীর সূত্রে উসামা (রাঃ) ব্যতীত অন্য কেউ বর্ণনা করেননি। লাইস ইবনু সা’দ-ইবনু শিহাব
হতে, তিনি আবদুর রাহমান ইবনু কা’ব হতে, তিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ হতে এই সূত্রে বর্ণিত
হাদীস সম্বন্ধে মুহাম্মাদ বুখারীকে আমি প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এই সূত্রটি বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২. অনুচ্ছেদঃ
(জানাযায় শারীক হওয়া)
১০১৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ،
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ مُسْلِمٍ الأَعْوَرِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعُودُ الْمَرِيضَ
وَيَشْهَدُ الْجَنَازَةَ وَيَرْكَبُ الْحِمَارَ وَيُجِيبُ دَعْوَةَ الْعَبْدِ
وَكَانَ يَوْمَ بَنِي قُرَيْظَةَ عَلَى حِمَارٍ مَخْطُومٍ بِحَبْلٍ مِنْ لِيفٍ
عَلَيْهِ إِكَافُ لِيفٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ
إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مُسْلِمٍ عَنْ أَنَسٍ . وَمُسْلِمٌ الأَعْوَرُ يُضَعَّفُ
وَهُوَ مُسْلِمُ بْنُ كَيْسَانَ الْمُلاَئِيُّ تُكُلِّمَ فِيهِ وَقَدْ رَوَى
عَنْهُ شُعْبَةُ وَسُفْيَانُ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) অসুস্থকে দেখতে যেতেন, জানাযায় উপস্থিত হতেন, গাধার পিঠে সাওয়ার
হতেন এবং কেনা গোলামের দাওয়াতও ক্ববুল করতেন। বানূ কুরাইযার (যুদ্ধের) দিন তিনি
একটি গাধার পিঠে সাওয়ার ছিলেন। এর লাগাম ও গদি ছিল খেজুর গাছের বাকলের তৈরী।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৪১৭৮)।
আবু ঈসা বলেন, আমরা এ হাদীসটি শুধু মুসলিম হতে আনাস (রাঃ) সূত্রেই
জেনেছি। কিন্তু মুসলিম আল-আওয়ার হাদীস শাস্ত্রে যঈফ। তার পিতার নাম কাইসান আল-মুলাঈ।
তার সম্পর্কে সমালোচনা করা হয়েছে। শুবা এবং সুফিয়ান মুলাঈ তার নিকট হতে হাদীস বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
মৃত্যুর স্থান ও দাফনের স্থান)
১০১৮
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي
مُلَيْكَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَمَّا قُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم اخْتَلَفُوا فِي دَفْنِهِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا مَا نَسِيتُهُ قَالَ " مَا قَبَضَ
اللَّهُ نَبِيًّا إِلاَّ فِي الْمَوْضِعِ الَّذِي يُحِبُّ أَنْ يُدْفَنَ فِيهِ
" . ادْفِنُوهُ فِي مَوْضِعِ فِرَاشِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُلَيْكِيُّ
يُضَعَّفُ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ
هَذَا الْوَجْهِ فَرَوَاهُ ابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَيْضًا .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পর তার দাফন সম্পর্কে সাহাবীগণের মাঝে মতের অমিল দেখা দেয়।
আবূ বাকার (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট
হতে আমি কিছু শুনেছি, তা আমি ভুলিনি। তিনি বলেছেনঃ যে স্থানে আল্লাহ তা'আলা তাঁর
নাবীকে দাফন হওয়ার ইচ্ছা করেন সে স্থানেই তাঁর মৃত্যু দেন। তোমরা তাঁকে তাঁর শয্যাস্থানে
দাফন কর।
-সহীহ্, আল আহকাম (১৩৭, ১৩৮), মুসলিম, মুখতাসার শামায়িল (৩২৬)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা গারীব বলেছেন। স্মরণশক্তির দিক হতে আবদুর
রাহমান ইবনু আবূ বাকারকে দুর্বল বলা হয়েছে। আরো কয়েকটি সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত আছে।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) এই হাদীসটিকে আবূ বাকার (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
(মৃত ব্যক্তির উত্তম গুণ বর্ণনা করা)
১০১৯
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ أَنَسٍ الْمَكِّيِّ، عَنْ عَطَاءٍ،
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
اذْكُرُوا مَحَاسِنَ مَوْتَاكُمْ وَكُفُّوا عَنْ مَسَاوِيهِمْ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . سَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ عِمْرَانُ
بْنُ أَنَسٍ الْمَكِّيُّ مُنْكَرُ الْحَدِيثِ وَرَوَى بَعْضُهُمْ عَنْ عَطَاءٍ
عَنْ عَائِشَةَ . قَالَ وَعِمْرَانُ بْنُ أَبِي أَنَسٍ مِصْرِيٌّ أَقْدَمُ
وَأَثْبَتُ مِنْ عِمْرَانَ بْنِ أَنَسٍ الْمَكِّيِّ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
তোমরা তোমাদের মৃত লোকদের ভালো দিকগুলো আলোচনা কর এবং তাদের খারাপ দিকগুলো আলোচনা
থেকে ক্ষান্ত হও।
যঈফ, মিশকাত (১৬৭৮), রাওযুন্ নাযীর (৪৮২)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমি মুহাম্মাদ (বুখারী)-কে বলতে
শুনেছি যে, ইমরান ইবনু আনাস আল-মাক্কী একজন উপেক্ষিত রাবী অর্থাৎ তার বর্ণিত হাদীস
অগ্রাহ্য। কোন কোন রাবী এ হাদীসটি আতা হতে আইশা (রাঃ) সূত্রেও বর্ণনা করেছেন। ইমরান
ইবনু আবী আনাস আল-মিসরী এই ইমরান ইবনু আনাস আল-মাক্কীর তুলনায় বেশী উল্লেখযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার পূর্বে বসা
১০২০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، عَنْ بِشْرِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ سُلَيْمَانَ بْنِ جُنَادَةَ بْنِ أَبِي أُمَيَّةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
جَدِّهِ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم إِذَا اتَّبَعَ الْجَنَازَةَ لَمْ يَقْعُدْ حَتَّى تُوضَعَ فِي
اللَّحْدِ فَعَرَضَ لَهُ حَبْرٌ فَقَالَ هَكَذَا نَصْنَعُ يَا مُحَمَّدُ . قَالَ
فَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ " خَالِفُوهُمْ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَبِشْرُ بْنُ رَافِعٍ
لَيْسَ بِالْقَوِيِّ فِي الْحَدِيثِ .
উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন লাশের সাথে যদি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেতেন তাহলে কবরে তা না রাখা পর্যন্ত তিনি
বসতেন না। একদা এক ইয়াহুদী পণ্ডিত তাকে বলল, হে মুহাম্মাদ! আমরাও এরূপ করি। এরপর
হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার)
আগেই বসতে লাগলেন এবং বললেনঃ তোমরা তাদের বিপরীত কর।
-হাসান, ইবনু মা-জাহ (১৫৪৫)।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা গারীব বলেছেন। হাদীস শাস্ত্রে বিশ্র ইবনু
রাফি খুব একটা শক্তিশালী নন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩৬. অনুচ্ছেদঃ
বিপদের মাঝে সাওয়াবের আশায় ধৈর্য ধরার ফাযীলাত
১০২১
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ
أَبِي سِنَانٍ، قَالَ دَفَنْتُ ابْنِي سِنَانًا وَأَبُو طَلْحَةَ الْخَوْلاَنِيُّ
جَالِسٌ عَلَى شَفِيرِ الْقَبْرِ فَلَمَّا أَرَدْتُ الْخُرُوجَ أَخَذَ بِيَدِي
فَقَالَ أَلاَ أُبَشِّرُكَ يَا أَبَا سِنَانٍ . قُلْتُ بَلَى . فَقَالَ
حَدَّثَنِي الضَّحَّاكُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَرْزَبٍ عَنْ أَبِي مُوسَى
الأَشْعَرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا
مَاتَ وَلَدُ الْعَبْدِ قَالَ اللَّهُ لِمَلاَئِكَتِهِ قَبَضْتُمْ وَلَدَ عَبْدِي
. فَيَقُولُونَ نَعَمْ . فَيَقُولُ قَبَضْتُمْ ثَمَرَةَ فُؤَادِهِ .
فَيَقُولُونَ نَعَمْ . فَيَقُولُ مَاذَا قَالَ عَبْدِي فَيَقُولُونَ حَمِدَكَ
وَاسْتَرْجَعَ . فَيَقُولُ اللَّهُ ابْنُوا لِعَبْدِي بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ
وَسَمُّوهُ بَيْتَ الْحَمْدِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ সিনান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার ছেলে সিনানকে আমি দাফন করলাম।
কবরের কিনারায় আবূ তালহা আল-খাওলানী (রহঃ) বসা অবস্থায় ছিলেন। কবর হতে আমি যখন
উঠে আসতে চাইলাম তখন আমার হাত ধরে তিনি বললেন, হে আবূ সিনান! তোমাকে কি আমি
সুসংবাদ দিব না? আমি বললাম, অবশ্যই দিন। তিনি বললেন, আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) হতে
যাহ্হাক ইবনু আবদুর রাহমান ইবনু আর্যাব (রহঃ) আমাকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন বান্দার কোন সন্তান মারা গেলে
তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফেরেশতাদের প্রশ্ন করেন, তোমরা আমার বান্দার সন্তানকে কি
ছিনিয়ে আনলে? তারা বলে, হ্যাঁ। পুনরায় আল্লাহ তা'আলা প্রশ্ন করেন, তোমরা তার
হৃদয়ের টুকরাকে ছিনিয়ে আনলে? তারা বলে, হ্যাঁ। পুনরায় তিনি প্রশ্ন করেন, তখন
আমার বান্দা কি বলেছে? তারা বলে, সে আপনার প্রতি প্রশংসা করেছে এবং ইন্না লিল্লাহি
ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পাঠ করেছে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, জান্নাতের মধ্যে আমার
এই বান্দার জন্য একটি ঘর তৈরী কর এবং তার নাম রাখ “বাইতুল হাম্দ" বা
প্রশংসালয়।
-হাসান, সহীহাহ (১৪০৮)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ
জানাযার নামাযের তাকবীর
১০২২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ،
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى عَلَى النَّجَاشِيِّ فَكَبَّرَ أَرْبَعًا
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ أَبِي أَوْفَى وَجَابِرٍ
وَيَزِيدَ بْنِ ثَابِتٍ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَيَزِيدُ بْنُ ثَابِتٍ
هُوَ أَخُو زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَهُوَ أَكْبَرُ مِنْهُ شَهِدَ بَدْرًا وَزَيْدٌ
لَمْ يَشْهَدْ بَدْرًا . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ
مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ يَرَوْنَ التَّكْبِيرَ
عَلَى الْجَنَازَةِ أَرْبَعَ تَكْبِيرَاتٍ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ
الثَّوْرِيِّ وَمَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ
وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
নাজাশীর জন্য চার তাকবীরের মাধ্যমে (গায়বী) জানাযার নামায আদায় করেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৩৪), বুখারী, মুসলিম।
ইবনু আব্বাস, ইবনু আবী আওফা, জাবির, আনাস ও ইয়াযীদ ইবনু সাবিত
(রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, ইয়াযীদ ইবনু সাবিত (রাঃ)
যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ)-এর বড় ভাই। বদরের যুদ্ধে তিনি অংশ গ্রহণ করেছিলেন কিন্তু যাইদ
(রাঃ) অংশ গ্রহণ করেননি। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্
বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ
সাহাবী ও অপরাপর আলিমের মতে চার তাকবীরে জানায়ার নামায আদায় করতে হবে। এই মত ইমাম
সুফিয়ান সাওরী, মালিক ইবনু আনাস, ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকের।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০২৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، قَالَ كَانَ زَيْدُ بْنُ
أَرْقَمَ يُكَبِّرُ عَلَى جَنَائِزِنَا أَرْبَعًا وَإِنَّهُ كَبَّرَ عَلَى
جَنَازَةٍ خَمْسًا فَسَأَلْنَاهُ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يُكَبِّرُهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ رَأَوُا التَّكْبِيرَ عَلَى
الْجَنَازَةِ خَمْسًا . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ إِذَا كَبَّرَ الإِمَامُ
عَلَى الْجَنَازَةِ خَمْسًا فَإِنَّهُ يُتَّبَعُ الإِمَامُ .
আবদুর রাহমান ইবনু আবী লাইলা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের জানাযাগুলোতে যাইদ ইবনু
আরকাম (রাঃ) চারবার তাকবীর দিতেন। কিন্তু এক জানাযায় তিনি পাঁচবার তাকবীর দিলেন।
তাকে এই বিষয়ে আমরা প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) পাঁচ তাকবীরও দিতেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫০৫), মুসলিম।
যাইদ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্
বলেছেন। এই মত গ্রহণ করেছেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু
সাহাবী ও অপরাপর আলিমগণ। তাদের মতে জানাযা নামাযে পাঁচবার তাকবীর পাঠ করতে হবে। ইমাম
আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ) বলেন, জানাযার নামাযে যদি ইমাম সাহেব পাঁচবার তাকবীর পাঠ করেন
তবে মুক্তাদীদেরকে তার অনুসরণ করতে হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ
জানাযার নামাযের দু'আ
১০২৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا هِقْلُ بْنُ زِيَادٍ،
حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، حَدَّثَنِي أَبُو
إِبْرَاهِيمَ الأَشْهَلِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم إِذَا صَلَّى عَلَى الْجَنَازَةِ قَالَ " اللَّهُمَّ اغْفِرْ
لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيرِنَا وَكَبِيرِنَا
وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا " .
قَالَ يَحْيَى وَحَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ ذَلِكَ وَزَادَ فِيهِ
" اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الإِسْلاَمِ
وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الإِيمَانِ " . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَعَائِشَةَ وَأَبِي
قَتَادَةَ وَعَوْفِ بْنِ مَالِكٍ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
وَالِدِ أَبِي إِبْرَاهِيمَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَرَوَى هِشَامٌ
الدَّسْتَوَائِيُّ وَعَلِيُّ بْنُ الْمُبَارَكِ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ يَحْيَى
بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً . وَرَوَى عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ عَنْ يَحْيَى
بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم . وَحَدِيثُ عِكْرِمَةَ بْنِ عَمَّارٍ غَيْرُ مَحْفُوظٍ وَعِكْرِمَةُ
رُبَّمَا يَهِمُ فِي حَدِيثِ يَحْيَى . وَرُوِيَ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ أَصَحُّ
الرِّوَايَاتِ فِي هَذَا حَدِيثُ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ أَبِي
إِبْرَاهِيمَ الأَشْهَلِيِّ عَنْ أَبِيهِ . وَسَأَلْتُهُ عَنِ اسْمِ أَبِي
إِبْرَاهِيمَ فَلَمْ يَعْرِفْهُ .
আবূ ইবরাহীম আল-আশহালী (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) জানাযার নামায পড়তেন তখন এই দু'আ পাঠ করতেনঃ "হে আল্লাহ! আপনি
আমাদের মধ্যকার জীবিত, মৃত, উপস্থিত, অনুপস্থিত, ছোট, বড় এবং পুরুষ ও মহিলা
সবাইকেই মাফ করুন"। ইয়াহইয়া বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আমাকে আবূ সালামা ইবনু আবদুর রাহমান একই
রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এই বর্ণনাতে আরো আছেঃ “হে আল্লাহ! আমাদের মাঝে যে
ব্যক্তিকে আপনি বাঁচিয়ে রাখেন তাকে ইসলামের উপর বাঁচিয়ে রাখুন এবং যে ব্যক্তিকে
মৃত্যু দেন তাকে ঈমানের সহিত মৃত্যু দান করুন"।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৯৮)
আবদুর রাহমান ইবনু আওফ, আবূ কাতাদা, জাবির ও আওফ ইবনু মালিক (রাঃ)
হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ইবরাহীমের পিতা হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ
ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীসটিকে মুরসাল হিসেবে ইয়াহইয়া ইবনু আবী কাসীর-আবূ
সালামা ইবনু আবদুর রাহমানের সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে হিশাম আদ-দাস্তাওয়াঈ ও আলী ইবনুল মুবারাক মুর্সাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইকরিমা
ইবনু আম্মার এটিকে ইয়াহইয়া ইবনু আবী কাসীর-আবূ সালামা হতে আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। ইকরিমা ইবনু আম্মারের রিওয়ায়াত
সংরক্ষিত নয়। ইয়াহইয়ার সূত্রে হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে অনেক সময় তিনি বিভ্রান্তিতে
পতিত হন। ইয়াহইয়া ইবনু আবী কাসীর হতে আব্দুল্লাহ ইবনু আবী কাতাদার বরাতে তার পিতার
সূত্রে ও নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীসটি বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা বলেন, মুহাম্মদ আল-বুখারী বলেছেন, ইয়াহইয়া ইবনু আবী কাসীর-আবূ ইবরাহীম আল-আশহালী
হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত রিওয়ায়াতটি এই অনুচ্ছেদে সবচেয়ে বেশি সহীহ্। আমি তাকে
আবূ ইবরাহীম আল-আশহালীর নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি তা বলতে পারেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০২৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ
صَالِحٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ،
عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّي عَلَى مَيِّتٍ فَفَهِمْتُ مِنْ صَلاَتِهِ عَلَيْهِ " اللَّهُمَّ
اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ وَاغْسِلْهُ بِالْبَرَدِ وَاغْسِلْهُ كَمَا يُغْسَلُ
الثَّوْبُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ أَصَحُّ شَيْءٍ فِي هَذَا الْبَابِ هَذَا
الْحَدِيثُ .
আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মৃত ব্যক্তির জানাযার নামায
আদায় কালে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যে দু'আ পাঠ
করতে শুনেছি আমি তার বাক্যগুলি মনে রেখেছিঃ “হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন, তাকে
দয়া করুন এবং তাকে এমনভাবে (আপনার দয়ার) শিশির বিন্দু দিয়ে ধৌত করুন যেভাবে
কাপড় ধোয়া হয়"।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫০০) মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল
বুখারী (রহঃ) এটাকেই এই অনুচ্ছেদের সবচেয়ে বেশি সহীহ্ হাদীস বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৯. অনুচ্ছেদঃ
জানাযার নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ
১০২৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ،
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ عُثْمَانَ، عَنِ
الْحَكَمِ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم قَرَأَ عَلَى الْجَنَازَةِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ أُمِّ شَرِيكٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ لَيْسَ
إِسْنَادُهُ بِذَلِكَ الْقَوِيِّ . إِبْرَاهِيمُ بْنُ عُثْمَانَ هُوَ أَبُو
شَيْبَةَ الْوَاسِطِيُّ مُنْكَرُ الْحَدِيثِ . وَالصَّحِيحُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
قَوْلُهُ مِنَ السُّنَّةِ الْقِرَاءَةُ عَلَى الْجَنَازَةِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ
.
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জানাযার নামাযে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৯৫), বুখারী।
উম্মু শারীক (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা
বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসের সনদ খুব একটা মজবুত নয়। বর্ণনাকারী ইবরাহীম
ইবনু উসমান হচ্ছেন আবূ শাইবা আল-ওয়াসিতী। তিনি প্রত্যাখ্যাত বর্ণনাকারী অর্থাৎ তার
বর্ণিত হাদীস প্রত্যাখ্যাত। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর বক্তব্য হিসাবে বর্ণিত রিওয়ায়াতটিই
সহীহ্। তিনি বলেন, জানাযার নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করা সুন্নাত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০২৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَعْدِ
بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عَوْفٍ، أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ، صَلَّى
عَلَى جَنَازَةٍ فَقَرَأَ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَقُلْتُ لَهُ فَقَالَ إِنَّهُ
مِنَ السُّنَّةِ أَوْ مِنْ تَمَامِ السُّنَّةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ
يَخْتَارُونَ أَنْ يُقْرَأَ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ بَعْدَ التَّكْبِيرَةِ
الأُولَى . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يُقْرَأُ فِي الصَّلاَةِ عَلَى الْجَنَازَةِ إِنَّمَا
هُوَ ثَنَاءٌ عَلَى اللَّهِ وَالصَّلاَةُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَالدُّعَاءُ لِلْمَيِّتِ . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَغَيْرِهِ مِنْ أَهْلِ
الْكُوفَةِ . وَطَلْحَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَوْفٍ هُوَ ابْنُ أَخِي
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ رَوَى عَنْهُ الزُّهْرِيُّ .
তালহা ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) এক মৃত ব্যক্তির জানাযা আদায়
করলেন এবং তাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন। তাকে এ প্রসঙ্গে আমি প্রশ্ন করলে তিনি
বললেন, এটা সুন্নাত অথবা সুন্নাতের পূর্ণতা দানকারী।
-সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস।
এ হাদিসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিমগণ আমল
করেছেন। জানাযার নামাযে প্রথম তাকবীর পাঠ করার পর সূরা ফাতিহা পাঠকে তারা পছন্দ করেছেন।
এই মত ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকেরও। অপর একদল বিশেষজ্ঞ আলিম বলেছেন, জানাযার নামাযে
সূরা ফাতিহা পাঠ করবে না। কেননা, এটা হচ্ছে আল্লাহ্র প্রশংসা, নাবীর প্রতি দরূদ পাঠ
এবং মৃতের জন্য দু’য়া করা। এই মত সুফিয়ান সাওরী ও কুফাবাসী আলিমদের। রাবী তালহা ইবনু
উবাইদুল্লাহ ইবনু আউফ হলেন আব্দুল রাহমান ইবনু আউফের ভ্রাতুষ্পুত্র। তার নিকট হতে যুহরী
হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪০. অনুচ্ছেদঃ
জানাযার নামাযের ধরণ ও মৃত ব্যক্তির জন্য সুপারিশ
১০২৮
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، وَيُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
إِسْحَاقَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ مَرْثَدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
الْيَزَنِيِّ، قَالَ كَانَ مَالِكُ بْنُ هُبَيْرَةَ إِذَا صَلَّى عَلَى جَنَازَةٍ
فَتَقَالَّ النَّاسَ عَلَيْهَا جَزَّأَهُمْ ثَلاَثَةَ أَجْزَاءٍ ثُمَّ قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ صَلَّى عَلَيْهِ ثَلاَثَةُ
صُفُوفٍ فَقَدْ أَوْجَبَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ
وَأُمِّ حَبِيبَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَمَيْمُونَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ مَالِكِ بْنِ هُبَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
هَكَذَا رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ . وَرَوَى
إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ هَذَا الْحَدِيثَ
وَأَدْخَلَ بَيْنَ مَرْثَدٍ وَمَالِكِ بْنِ هُبَيْرَةَ رَجُلاً . وَرِوَايَةُ هَؤُلاَءِ
أَصَحُّ عِنْدَنَا .
মারসাদ ইবনু আবদুল্লাহ আল-ইয়াযানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন মালিক ইবনু হুবাইরা (রাঃ)
জানাযার নামায আদায় করতেন তখন লোকজনের উপস্থিতি অল্প হলে তাদেরকে তিনি তিন সারিতে
ভাগ করতেন। তারপর তিনি বলতেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ যে ব্যক্তির জানাযার নামায তিন কাতার লোক আদায় করেছে তার জন্য (জান্নাত)
অবধারিত হয়েছে।
-হাসান, আহকামুল জানায়িয (১২৮)।
আইশা, উম্মু হাবীবা, আবূ হুরাইরা ও মাইমূনা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। মালিক ইবনু হুবাইরা হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন।
অনেক বর্ণনাকারী মুহাম্মদ ইবনু ইসহাকের সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইব্রাহীম ইবনু
সা’দ ও মুহাম্মদ ইবনু ইসহাক হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি মারসাদ ও মালিক
ইবনু হুরাইরার মাঝে আরও একজন বর্ণনাকারী উল্লেখ করেছেন। পূর্বোক্ত বর্ণনাই আমার মতে
বেশী সহীহ্।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
১০২৯
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ أَيُّوبَ، . وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ
مَنِيعٍ، وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
يَزِيدَ، رَضِيعٌ كَانَ لِعَائِشَةَ - عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " لاَ يَمُوتُ أَحَدٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ فَتُصَلِّي
عَلَيْهِ أُمَّةٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يَبْلُغُونَ أَنْ يَكُونُوا مِائَةً
فَيَشْفَعُوا لَهُ إِلاَّ شُفِّعُوا فِيهِ " . وَقَالَ عَلِيُّ بْنُ
حُجْرٍ فِي حَدِيثِهِ " مِائَةً فَمَا فَوْقَهَا " . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ أَوْقَفَهُ بَعْضُهُمْ
وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি কোন মুসলমান মারা যাওয়ার পর একশত জনের একদল মুসলমান তার
জানাযার নামায আদায় করে এবং তারা তার জন্য সুপারিশ করে, তবে তার জন্য তাদের
সুপারিশকে ক্ববূল করা হবে। আলী (ইবনু হুজর) তার বর্ণিত হাদীসে (একশতের স্থলে) একশত
বা ততোধিক’ বাক্য উল্লেখ করেছেন।
-সহীহ্, আল আহকাম (৯৮), মুসলিম।
আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
এ হাদীসটিকে কিছু বর্ণনাকারী মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, মারফূ হিসেবে নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪১. অনুচ্ছেদঃ
সূর্য উদয় এবং অস্ত যাওয়ার সময় জানাযার নামায আদায় করা
মাকরূহ
১০৩০
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ،
عَنْ مُوسَى بْنِ عُلَىِّ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ
الْجُهَنِيِّ، قَالَ ثَلاَثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا حِينَ
تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ
الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى
تَغْرُبَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ يَكْرَهُونَ الصَّلاَةَ عَلَى الْجَنَازَةِ فِي هَذِهِ
السَّاعَاتِ . وَقَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ مَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ أَنْ
نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا . يَعْنِي الصَّلاَةَ عَلَى الْجَنَازَةِ .
وَكَرِهَ الصَّلاَةَ عَلَى الْجَنَازَةِ عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَعِنْدَ
غُرُوبِهَا وَإِذَا انْتَصَفَ النَّهَارُ حَتَّى تَزُولَ الشَّمْسُ . وَهُوَ
قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . قَالَ الشَّافِعِيُّ لاَ بَأْسَ بِالصَّلاَةِ
عَلَى الْجَنَازَةِ فِي السَّاعَاتِ الَّتِي تُكْرَهُ فِيهِنَّ الصَّلاَةُ .
উকবা ইবনু আমির আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এমন তিনটি সময় আছে যে সময়ে আমাদেরকে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায আদায় করতে অথবা আমাদের মৃত
ব্যক্তিদের দাফন সম্পন্ন করতে বারণ করতেনঃ চক্ মক্ করে সূর্য উঠার সময় হতে তা
সম্পূর্ণভাবে না উঠা পর্যন্ত; দুপুরের সময় সূর্য ঠিক (মাথার উপর) সোজা হয়ে যাওয়া
হতে যতক্ষণ পর্যন্ত তা ঢলে না পড়ে এবং যে সময় সূর্য ডুবার সময় হয়, সম্পূর্ণভাবে তা
ডুবে না যাওয়া পর্যন্ত।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫১৯), মুসলিম।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদল সাহাবী ও একদল আলিম আমল করেছেন। জানাযার
নামায উল্লেখিত ওয়াক্তসমূহে আদায় করাকে তারা মাকরূহ বলেছেন। ইবনুল মুবারাক বলেছেন,
‘মৃতকে দাফন না করার’ কথা বলে এ হাদীসে জানাযার নামায না আদায় করা বুঝানো হয়েছে। সূর্য
উদয়ের সময়, ঠিক দুপুরে এবং সূর্য ডুবার সময় তিনি জানাযার নামায আদায় করাকে মাকরূহ্
বলেছেন। এই মত গ্রহণ করেছেন ইমাম, আহমাদ ও ইসহাক। ইমাম শাফিঈ বলেছেন, যেসব ওয়াক্তে
নামায আদায় করা মাকরূহ্ সেসব ওয়াক্তে জানাযার নামায আদায় করাতে কোন সমস্যা নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪২. অনুচ্ছেদঃ
শিশুদের জন্য জানাযার নামায আদায় করা
১০৩১
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ آدَمَ ابْنُ بِنْتِ
أَزْهَرَ السَّمَّانِ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ
عُبَيْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ زِيَادِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ حَيَّةَ،
عَنْ أَبِيهِ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " الرَّاكِبُ خَلْفَ الْجَنَازَةِ وَالْمَاشِي حَيْثُ شَاءَ
مِنْهَا وَالطِّفْلُ يُصَلَّى عَلَيْهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ رَوَاهُ إِسْرَائِيلُ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ
عُبَيْدِ اللَّهِ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ قَالُوا يُصَلَّى عَلَى
الطِّفْلِ وَإِنْ لَمْ يَسْتَهِلَّ بَعْدَ أَنْ يُعْلَمَ أَنَّهُ خُلِقَ .
وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ আরোহী ব্যক্তি লাশের পিছে পিছে যাবে, আর পায়ে হাঁটা ব্যক্তি যেদিক দিয়ে
ইচ্ছা সেদিক দিয়ে যেতে পারবে এবং শিশুর (লাশের) জানাযাও আদায় করতে হবে।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৫০৭)।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। ইসরাঈল এবং আরও অনেকে
হাদীসটিকে সাঈদ ইবনু উবাইদুল্লাহ হতে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম আমল করেছেন।
পূর্ণাঙ্গ দেহ বিশিষ্ট বাচ্চা জন্মানোর পর চিৎকার না করলেও তার জানাযা নামায আদায় করতে
হবে। এই কথা বলেছেন ইমাম আহমাদ ও ইসহাক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৩. অনুচ্ছেদঃ
ভূমিষ্ঠ হয়ে চিৎকার না করলে সেই শিশুর জানাযা আদায় না করা
১০৩২
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ
بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَزِيدَ الْوَاسِطِيُّ، عَنْ
إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُسْلِمٍ الْمَكِّيِّ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الطِّفْلُ لاَ يُصَلَّى
عَلَيْهِ وَلاَ يَرِثُ وَلاَ يُورَثُ حَتَّى يَسْتَهِلَّ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ قَدِ اضْطَرَبَ النَّاسُ فِيهِ فَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ
أَبِي الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَرْفُوعًا
. وَرَوَى أَشْعَثُ بْنُ سَوَّارٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ عَنْ
جَابِرٍ مَوْقُوفًا . وَرَوَى مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي
رَبَاحٍ عَنْ جَابِرٍ مَوْقُوفًا . وَكَأَنَّ هَذَا أَصَحُّ مِنَ الْحَدِيثِ
الْمَرْفُوعِ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا قَالُوا لاَ
يُصَلَّى عَلَى الطِّفْلِ حَتَّى يَسْتَهِلَّ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ
الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন শিশু যদি জন্মগ্রহণ করার পরে চিৎকার না করে তবে তার জানাযার
নামায আদায় করতে হবে না, সে কোন ব্যক্তির ওয়ারিস হবে না এবং তারও কেউ ওয়ারিস হবে
না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৫০৮)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসের বর্ণনায় রাবীগণের গরমিল আছে। এটাকে একদল
মারফূ হাদীস রূপে জাবির (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন, আশআস ইবনু সাওওয়ার এবং আরও
অনেকে এটাকে জাবির হতে মাওকূফ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক আতা ইবনু
আবূ বারাহ-এর বরাতে জাবির হতে মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। মারফূ বর্ণনা হতে মাওকূফ
বর্ণনাটিই বেশী সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী একদল বিশেষজ্ঞ আলিম আমল করেছেন। শিশু জন্মগ্রহণ
করার পর চিৎকার না করলে তাদের মত অনুযায়ী তার জানাযা আদায় করবে না। এই মত দিয়েছেন সুফিয়ান
সাওরী ও শাফিঈ (রহঃ)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৪. অনুচ্ছেদঃ
জানাযার নামায মাসজিদে আদায় করা
১০৩৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبْدِ الْوَاحِدِ بْنِ
حَمْزَةَ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ،
قَالَتْ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى سُهَيْلِ ابْنِ
بَيْضَاءَ فِي الْمَسْجِدِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ . قَالَ الشَّافِعِيُّ
قَالَ مَالِكٌ لاَ يُصَلَّى عَلَى الْمَيِّتِ فِي الْمَسْجِدِ . وَقَالَ
الشَّافِعِيُّ يُصَلَّى عَلَى الْمَيِّتِ فِي الْمَسْجِدِ . وَاحْتَجَّ بِهَذَا
الْحَدِيثِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সুহাইল ইবনু বাইযা (রাঃ)-এর জানাযা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদের অভ্যন্তর ভাগে আদায়
করেছেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫১৮)।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম
আমল করেন। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, ইমাম মালিক (রহঃ) বলেছেন, জানাযার নামায মসজিদের
অভ্যন্তরভাগে আদায় করা যাবে না। শাফিঈ (রহঃ) বলেন, মসজিদে জানাযার নামায আদায় করা যায়।
এ হাদীস নিজের অনুকূলে তিনি দলীল হিসেবে উপস্থাপন করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৫. অনুচ্ছেদঃ
ইমাম সাহেব পুরুষ ও স্ত্রীলোকের জানাযার নামায আদায়ে কোথায়
দাঁড়াবে?
১০৩৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُنِيرٍ،
عَنْ سَعِيدِ بْنِ عَامِرٍ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي غَالِبٍ، قَالَ صَلَّيْتُ
مَعَ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَلَى جَنَازَةِ رَجُلٍ فَقَامَ حِيَالَ رَأْسِهِ ثُمَّ
جَاءُوا بِجَنَازَةِ امْرَأَةٍ مِنْ قُرَيْشٍ فَقَالُوا يَا أَبَا حَمْزَةَ صَلِّ
عَلَيْهَا . فَقَامَ حِيَالَ وَسَطِ السَّرِيرِ . فَقَالَ لَهُ الْعَلاَءُ
بْنُ زِيَادٍ هَكَذَا رَأَيْتَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَامَ عَلَى
الْجَنَازَةِ مُقَامَكَ مِنْهَا وَمِنَ الرَّجُلِ مُقَامَكَ مِنْهُ قَالَ نَعَمْ
. فَلَمَّا فَرَغَ قَالَ احْفَظُوا . وَفِي الْبَابِ عَنْ سَمُرَةَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ وَقَدْ رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ
عَنْ هَمَّامٍ مِثْلَ هَذَا . وَرَوَى وَكِيعٌ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ هَمَّامٍ
فَوَهِمَ فِيهِ فَقَالَ عَنْ غَالِبٍ عَنْ أَنَسٍ . وَالصَّحِيحُ عَنْ أَبِي
غَالِبٍ . وَقَدْ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ
وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ أَبِي غَالِبٍ مِثْلَ رِوَايَةِ هَمَّامٍ . وَاخْتَلَفُوا
فِي اسْمِ أَبِي غَالِبٍ هَذَا فَقَالَ بَعْضُهُمْ يُقَالُ اسْمُهُ نَافِعٌ
وَيُقَالُ رَافِعٌ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا وَهُوَ
قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
আবূ গালিব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস (রাঃ)-এর সাথে আমি এক লোকের
জানাযার নামায আদায় করলাম। তিনি লাশের মাথা বরাবর দাঁড়ালেন। তারপর লোকেরা কুরাইশ
বংশের এক মহিলার লাশ নিয়ে আসলো। তার বলল, হে হামযার পিতা! এর জানাযা আদায় করুন।
তিনি তার খাটিয়ার মাঝ বরাবর দাঁড়ালেন। তাকে আলা ইবনু যিয়াদ (রহঃ) বললেন,
স্ত্রীলোকটির খাটিয়ার মাঝ বরাবর এবং পুরুষ লোকটির মাথা বরাবর আপনি যেভাবে
দাঁড়ালেন, এভাবে কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দাঁড়াতে
দেখেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। নামায শেষে তিনি বললেন, তোমরা এই নিয়ম ভালোভাবে স্মরণ
রাখ।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৯৪)।
সামুরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আনাস (রাঃ) হতে
বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। হাম্মামের সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী একইরকম
হাদীস বর্ণনা করেছেন। এই হাদীস হাম্মামের সূত্রে ওয়াকী (রহঃ) বর্ণনা করেছন, কিন্তু
তিনি সনদে গড়মিল করেছেন। তিনি বলেছেন গালিব আনাস হতে, সঠিক হল আবূ গালিব। আব্দুল ওযারিস
এবং আরও অনেকে হাম্মামের মতই আবূ গালিব হতে বর্ণনা করেছেন। আবূ গালিবের নাম নিয়ে মত
পার্থক্য আছে। কেউ বলেছেন, তার নাম নাফি, কেউ বলেছেন রাফি। এ হাদীস অনুযায়ী একদল আমিল
আমল করেছেন। এই মত আহমাদ ও ইসহাকেরও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৩৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، وَالْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ
حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ
جُنْدَبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى عَلَى امْرَأَةٍ فَقَامَ
وَسَطَهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ
رَوَاهُ شُعْبَةُ عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ .
সামুরা ইবনু জুনদাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এক মহিলার জানাযা আদায় করলেন, তিনি তার কোমর বরাবর দাঁড়ালেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৪৯৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। হুসাইন আল-মুআল্লিমের সূত্রে
শুবা (রহঃ) এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৬. অনুচ্ছেদঃ
শহীদ ব্যক্তির জানাযা আদায় না করা
১০৩৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا
اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ
مَالِكٍ، أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم كَانَ يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ فِي الثَّوْبِ
الْوَاحِدِ ثُمَّ يَقُولُ " أَيُّهُمَا أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ
" . فَإِذَا أُشِيرَ لَهُ إِلَى أَحَدِهِمَا قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ
وَقَالَ " أَنَا شَهِيدٌ عَلَى هَؤُلاَءِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
وَأَمَرَ بِدَفْنِهِمْ فِي دِمَائِهِمْ وَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْهِمْ وَلَمْ
يُغَسَّلُوا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا
الْحَدِيثُ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
وَرُوِيَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ ثَعْلَبَةَ بْنِ أَبِي
صُعَيْرٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَمِنْهُمْ مَنْ ذَكَرَهُ عَنْ
جَابِرٍ . وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الصَّلاَةِ عَلَى الشَّهِيدِ
فَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ يُصَلَّى عَلَى الشَّهِيدِ . وَهُوَ قَوْلُ أَهْلِ
الْمَدِينَةِ وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ
يُصَلَّى عَلَى الشَّهِيدِ . وَاحْتَجُّوا بِحَدِيثِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم أَنَّهُ صَلَّى عَلَى حَمْزَةَ . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ
الْكُوفَةِ وَبِهِ يَقُولُ إِسْحَاقُ .
আব্দুর রাহমান ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জাবির (রাঃ) তাকে জানিয়েছেন যে, উহুদের যুদ্ধের
দুই দুইজন শহীদকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই কাপড়ে
একসাথে কাফন সম্পন্ন করেছেন। তিনি প্রশ্ন করতেনঃ এদের দুজনের মধ্যে কোন ব্যক্তির
বেশী কুরআন মুখস্ত আছে ? তাদের কোন একজনের দিকে ইশারা করা হলে তিনি প্রথমে তাকে
(কিবলার দিকে) কবরে রাখতেন। তারপর তিনি বলতেনঃ এদের জন্য আমি কিয়ামতের দিন সাক্ষী
হব। (বর্ণনাকারী বলেন) তিনি রক্তমাখা দেহেই তাদেরকে দাফন করার হুকুম দিয়েছেন এবং
তাদের জানাযা আদায় করেন নি, এমন কি তাদের গোসলও করানো হয়নি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫১৪), বুখারী।
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। জাবির
(রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। যুহরী তার সনদের ধারাবাহিকতায়
উল্লেখিত হাদীসটি আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। যুহরী হতে আব্দুল্লাহ ইবনু সা’লাবা
ইবনু আবূ সুয়াইবের বরাতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতেও হাদীসটি বর্ণিত
আছে। কোন কোন রাবী হাদীসটি জাবির হতেও বর্ণনা করেছেন। বিশেষজ্ঞ আলিমদের মধ্যে শহীদ
ব্যক্তির জানাযা আদায়ের ব্যাপারে মতের অমিল আছে। একদল আলিম তাদের জানাযা আদায় না করার
কথা বলেছেন। মদীনার আমিলগণ এই মত দিয়েছেন। একইরকম কথা বলেছেন ইমাম শাফিঈ এবং আহমাদও।
অপর একদল আলিম বলেন, শহীদ ব্যক্তিদের জানাযা আদায় করতে হবে। “হামযা (রাঃ)-এর জানাযা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আদায় করেছেন” তারা দলীল হিসেবে এই
হাদীস নিজেদের পক্ষে উপস্থাপন করেছেন। এই মত সুফিয়ান সাওরী এবং কূফাবাসী আলিমদের। একইরকম
মত দিয়েছেন ইমাম ইসহাকও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৭. অনুচ্ছেদঃ
কবরের উপর জানাযা আদায় করা
১০৩৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ،
حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا الشَّيْبَانِيُّ، حَدَّثَنَا الشَّعْبِيُّ،
أَخْبَرَنِي مَنْ، رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَرَأَى قَبْرًا
مُنْتَبِذًا فَصَفَّ أَصْحَابَهُ خَلْفَهُ فَصَلَّى عَلَيْهِ فَقِيلَ لَهُ مَنْ
أَخْبَرَكَهُ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ
وَبُرَيْدَةَ وَيَزِيدَ بْنِ ثَابِتٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ
وَأَبِي قَتَادَةَ وَسَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ
عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ
وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ لاَ يُصَلَّى عَلَى الْقَبْرِ . وَهُوَ قَوْلُ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ
. وَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ إِذَا دُفِنَ الْمَيِّتُ وَلَمْ
يُصَلَّ عَلَيْهِ صُلِّيَ عَلَى الْقَبْرِ . وَرَأَى ابْنُ الْمُبَارَكِ
الصَّلاَةَ عَلَى الْقَبْرِ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ يُصَلَّى عَلَى
الْقَبْرِ إِلَى شَهْرٍ . وَقَالاَ أَكْثَرُ مَا سَمِعْنَا عَنِ ابْنِ
الْمُسَيَّبِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى عَلَى قَبْرِ أُمِّ
سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ بَعْدَ شَهْرٍ .
শাবী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এমন এক ব্যক্তি আমাকে জানিয়েছেন
যিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছেন। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি বিচ্ছিন্ন কবর দেখলেন। অতঃপর তিনি তার
সাহাবীদেরকে তাঁর পিছনে কাতারবন্দী করে দাঁড় করালেন এবং তার উপর (কবরের উপর)
জানাযার নামায আদায় করলেন। বর্ণনাকারীকে প্রশ্ন করা হল, কে আপনাকে জানিয়েছেন?
তিনি বললেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ)।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৩০), বুখারী, মুসলিম।
আনাস, বুরাইদা, ইয়াযীদ ইবনু সাবিত, আবূ হুরাইরা, আমির ইবনু রাবীআ,
আবূ কাতাদা ও সাহল ইবনু হুনাইফ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস
(রাঃ)-এর হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম আমল করেছেন। এই মত
দিয়েছেন ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক। অপর একদল বিশেষজ্ঞ আলিম বলেছেন, জানাযার নামায
কবরের উপর আদায় করাযাবে না। মালিক ইবনু আনাস (রহঃ)-এর এই মত। ইবনুল মুবারাক বলেছেন,
মৃত ব্যক্তিকে যদি জানাযার নামায আদায় না করে দাফন করে তাহলে কবরের উপর জানাযা আদায়
করা যাবে। অর্থাৎ কবরের উপর জানাযা আদায় করা ইবনুল মুবারাকের মতে জায়িয। আহমাদ ও
ইসহাক বলেছেনঃ একমাস পর্যন্ত কবরের উপরে জানাযার নামায পড়া যাবে। তারা উভয়ে বলেছেন,
ইবনুল মুসায়িবের নিকট আমরা যা শুনেছি তা হলঃ সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ)-এর মায়ের কবরের
উপর এক মাস পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানাযার নামায আদায়
করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أُمَّ سَعْدٍ، مَاتَتْ
وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم غَائِبٌ فَلَمَّا قَدِمَ صَلَّى عَلَيْهَا وَقَدْ
مَضَى لِذَلِكَ شَهْرٌ .
সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা’দ (রাঃ)-এর আম্মা ইন্তিকাল করেন। এ সময় নবী
(সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাযির ছিলেন না। তিনি (সফর হতে) প্রত্যাবর্তন
করে তার জানাযার নামায আদায় করেন। ইতিমধ্যে (মৃত্যুর পর) একমাস চলে গিয়েছিল।
যঈফ, ইরওয়া (৩/১৮৩, ১৮৬)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৪৮. অনুচ্ছেদঃ
নাজাশীর জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর জানাযার নামায
১০৩৯
حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ
خَلَفٍ وَحُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ قَالاَ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ،
حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ عُبَيْدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي
الْمُهَلَّبِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " إِنَّ أَخَاكُمُ النَّجَاشِيَّ قَدْ مَاتَ فَقُومُوا
فَصَلُّوا عَلَيْهِ " . قَالَ فَقُمْنَا فَصَفَفْنَا كَمَا يُصَفُّ عَلَى
الْمَيِّتِ وَصَلَّيْنَا عَلَيْهِ كَمَا يُصَلَّى عَلَى الْمَيِّتِ . وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَأَبِي سَعِيدٍ
وَحُذَيْفَةَ بْنِ أَسِيدٍ وَجَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رَوَاهُ
أَبُو قِلاَبَةَ عَنْ عَمِّهِ أَبِي الْمُهَلَّبِ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ
. وَأَبُو الْمُهَلَّبِ اسْمُهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَمْرٍو وَيُقَالُ
مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو .
ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের ভাই নাজাশী মারা গেছেন। তোমরা তার জন্য
দাঁড়িয়ে নামায আদায় কর। বর্ণনাকারী বলেন, মৃত ব্যক্তির জানাযার নামাযের ন্যায়
আমরা দাঁড়িয়ে কাতার বাঁধলাম এবং তার জন্য জানাযার নামায আদায় করলাম।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৩৫), মুসলিম।
আবূ হুরাইরা, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ, আবূ সাঈদ, হুযাইফা ইবনু উসাইদ
ও জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। উল্লেখিত সনদ সূত্রে
হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ গারীব বলেছেন। হাদীসটি আবূ কিলাবা তার চাচা আবূল মুহাল্লাবের
বরাতে ইমরান ইবনু হুসাইন হতে বর্ণনা করেছেন। আবুল মুহাল্লাবের নাম আবদুর রাহমান, পিতার
নাম আমর। অপর মতে তার নাম মুআবিয়া।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৯. অনুচ্ছেদঃ
জানাযার নামাযের ফাযীলাত
১০৪০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا أَبُو
سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" مَنْ صَلَّى عَلَى جَنَازَةٍ فَلَهُ قِيرَاطٌ وَمَنْ تَبِعَهَا حَتَّى
يُقْضَى دَفْنُهَا فَلَهُ قِيرَاطَانِ أَحَدُهُمَا أَوْ أَصْغَرُهُمَا مِثْلُ
أُحُدٍ " . فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لاِبْنِ عُمَرَ فَأَرْسَلَ إِلَى عَائِشَةَ
فَسَأَلَهَا عَنْ ذَلِكَ فَقَالَتْ صَدَقَ أَبُو هُرَيْرَةَ . فَقَالَ ابْنُ
عُمَرَ لَقَدْ فَرَّطْنَا فِي قَرَارِيطَ كَثِيرَةٍ . وَفِي الْبَابِ عَنِ
الْبَرَاءِ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ
وَأَبِي سَعِيدٍ وَأُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ وَابْنِ عُمَرَ وَثَوْبَانَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَدْ رُوِيَ
عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক জানাযার নামায আদায় করল সে লোকের জন্য এক কীরাত
সাওয়াব। আর জানাযার সাথে সাথে যে লোক যায় এবং দাফন সমাপ্ত পর্যন্ত থাকে তার জন্য
দুই কীরাত সাওয়াব। এর একটি অথবা অপেক্ষাকৃত ছোটটি উহুদ পাহাড়ের সমান।
(বর্ণনাকারী বলেন) একথা ইবনু উমারের নিকট আমি বর্ণনা করলে তিনি আইশা (রাঃ)-এর নিকট
পাঠিয়ে এ প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করেন। জবাবে তিনি বললেন, আবূ হুরাইরা সত্য কথা
বলেছেন। ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, আমরা তো তাহলে অনেক কীরাত হতে বঞ্চিত হয়েছি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৩৯), বুখারী, মুসলিম।
বারাআ, আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল, আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ, আবূ সাঈদ,
উবাই ইবনু কা’ব, ইবনু উমার ও সাওবান (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
হুরাইরা (রাঃ)-এর হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। বিভিন্ন সূত্রে উল্লেখিত হাদীসটি
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫০. অনুচ্ছেদঃ
(জানাযা বহন করা প্রসঙ্গে)
১০৪১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالَ
سَمِعْتُ أَبَا الْمُهَزَّمِ، قَالَ صَحِبْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ عَشْرَ سِنِينَ فَسَمِعْتُهُ
يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ
تَبِعَ جَنَازَةً وَحَمَلَهَا ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ مِنْ
حَقِّهَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَرَوَاهُ
بَعْضُهُمْ بِهَذَا الإِسْنَادِ وَلَمْ يَرْفَعْهُ . وَأَبُو الْمُهَزَّمِ
اسْمُهُ يَزِيدُ بْنُ سُفْيَانَ وَضَعَّفَهُ شُعْبَةُ .
আব্বাস ইবনু মানসূর (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি আবূল মুহায্যিমকে বলতে
শুনেছিঃ আমি দশ বছর ধরে আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সান্নিধ্যে ছিলাম। আমি তাকে বলতে
শুনেছি, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে
ব্যক্তি লাশের পিছে পিছে গেল এবং তা তিনবার বহন করল সে মৃত ব্যক্তির প্রতি তার
দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে পালন করল।
যঈফ, মিশকাত (১৬৭০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। কিছু রাবী এ হাদীসটি উল্লেখিত
সনদ সূত্রে মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেননি। আবূল মুহায্যিমের নাম ইয়াযীদ, পিতার নাম সুফিয়ান।
শুবা (রাহঃ) তাকে যঈফ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৫১. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে যেতে দেখে দাঁড়ানো
১০৪২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ،
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ،
عَنْ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إِذَا رَأَيْتُمُ الْجَنَازَةَ فَقُومُوا لَهَا حَتَّى تُخَلِّفَكُمْ أَوْ
تُوضَعَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَجَابِرٍ وَسَهْلِ
بْنِ حُنَيْفٍ وَقَيْسِ بْنِ سَعْدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আমির ইবনু রাবীআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে যেতে দেখলে তোমরা দাঁড়িয়ে যাবে। তোমরা
দাঁড়িয়ে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না তা তোমাদেরকে ছাড়িয়ে যায় অথবা তা মাটিতে না
রাখা হয়।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৪২), বুখারী, মুসলিম।
আবূ সাঈদ, জাবির, সাহল ইবনু হুনাইফ, কাইস ইবনু সা’দ ও আবূ হুরাইরা
(রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আমির ইবনু রাবীআর হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান
সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৪৩
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ
الْجَهْضَمِيُّ، وَالْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ الْحُلْوَانِيُّ، قَالاَ
حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ الدَّسْتَوَائِيُّ، عَنْ
يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا
رَأَيْتُمُ الْجَنَازَةَ فَقُومُوا لَهَا فَمَنْ تَبِعَهَا فَلاَ يَقْعُدَنَّ
حَتَّى تُوضَعَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ فِي هَذَا
الْبَابِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ قَالاَ
مَنْ تَبِعَ جَنَازَةً فَلاَ يَقْعُدَنَّ حَتَّى تُوضَعَ عَنْ أَعْنَاقِ
الرِّجَالِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّهُمْ كَانُوا يَتَقَدَّمُونَ
الْجَنَازَةَ فَيَقْعُدُونَ قَبْلَ أَنْ تَنْتَهِيَ إِلَيْهِمُ الْجَنَازَةُ .
وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ .
আবূ সাঈদ-আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে যেতে দেখলে তোমরা দাঁড়িয়ে যাবে।
লাশের পিছু পিছু যে লোক যাবে সে লোক যেন না বসে যতক্ষণ পর্যন্ত তা নিচে নামিয়ে না
রাখা হয়।
-সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে আবূ সাঈদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্
বলেছেন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ) বলেছেন, কাঁধ হতে মৃত ব্যক্তিকে নিচে নামিয়ে না
রাখা পর্যন্ত লাশের অনুসরণকারী বসবে না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, লাশ ছাড়িয়ে তারা আগে
চলে যেতেন এবং বসে থাকতেন যতক্ষণ পর্যন্ত মৃত ব্যক্তির লাশ না পৌঁছাত। ইমাম শাফিঈর
মতও তাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তিকে দেখে না দাঁড়ানোর অনুমতি প্রসঙ্গে
১০৪৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا
اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ وَاقِدٍ، وَهُوَ ابْنُ
عَمْرِو بْنِ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ مَسْعُودِ
بْنِ الْحَكَمِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، أَنَّهُ ذُكِرَ الْقِيَامُ فِي
الْجَنَائِزِ حَتَّى تُوضَعَ فَقَالَ عَلِيٌّ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم ثُمَّ قَعَدَ . وَفِي الْبَابِ عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ وَابْنِ
عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَفِيهِ رِوَايَةُ أَرْبَعَةٍ مِنَ التَّابِعِينَ بَعْضُهُمْ عَنْ بَعْضٍ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ . قَالَ الشَّافِعِيُّ
وَهَذَا أَصَحُّ شَيْءٍ فِي هَذَا الْبَابِ . وَهَذَا الْحَدِيثُ نَاسِخٌ
لِلْحَدِيثِ الأَوَّلِ " إِذَا رَأَيْتُمُ الْجَنَازَةَ فَقُومُوا
" . وَقَالَ أَحْمَدُ إِنْ شَاءَ قَامَ وَإِنْ شَاءَ لَمْ يَقُمْ .
وَاحْتَجَّ بِأَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَدْ رُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ
قَامَ ثُمَّ قَعَدَ . وَهَكَذَا قَالَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى مَعْنَى قَوْلِ عَلِيٍّ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فِي الْجَنَازَةِ ثُمَّ قَعَدَ . يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم إِذَا رَأَى الْجَنَازَةَ قَامَ ثُمَّ تَرَكَ ذَلِكَ بَعْدُ فَكَانَ لاَ
يَقُومُ إِذَا رَأَى الْجَنَازَةَ .
আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“মৃত ব্যক্তিকে নিচে না রাখা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে
থাকা" প্রসঙ্গে তার সামনে আলোচনা করা হলে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগে দাঁড়াতেন কিন্তু পরবর্তীতে বসে থেকেছেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৪৪), মুসলিম।
হাসান ইবনু আলী ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা সহীহ্ বলেছেন। উল্লেখিত হাদীসের সনদে
চারজন রাবী হলেন তাবিঈ। তাদের মাঝে একজন অন্য জনের নিকট হতে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীস
অনুযায়ী একদল বিশেষজ্ঞ আলিম আমল করেন। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি এ অনুচ্ছেদে
অধিকতর সহীহ। পূর্ববর্তী দাড়ানো প্রসঙ্গে হাদীসের নির্দেশকে এই হাদীস মানসূখ (রহিত)
করে দিয়েছে। ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন, ইচ্ছা করলে কোন লোক দাঁড়াতেও পারে আবার নাও দাঁড়াতে
পারে। “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগে দাঁড়াতেন কিন্তু পরবর্তীতে
বসে থেকেছেন” তিনি দলীল হিসাবে এই হাদীসটিকে পেশ করেছেন। ইসহাক ইবনু ইবরাহীমও একইরকম
কথা বলেছেন। আবূ ঈসা বলেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগে দাঁড়াতেন
কিন্তু পরবর্তীতে বসে থেকেছেন" আলী (রাঃ)-এর এই কথার তাৎপর্য এই যে, মৃত ব্যক্তিকে
নিয়ে যেতে দেখলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়াতেন এবং এ
অভ্যাস পরবর্তী কালে ছেড়ে দিয়েছেন। তারপর তিনি আর লাশ নিয়ে যেতে দেখলে দাঁড়াতেন
না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৩. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ
আমাদের জন্য লাহ্দ কবর এবং অন্যদের জন্য শাক কবর
১০৪৫
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَنَصْرُ بْنُ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْكُوفِيُّ، وَيُوسُفُ بْنُ مُوسَى الْقَطَّانُ
الْبَغْدَادِيُّ، قَالُوا حَدَّثَنَا حَكَّامُ بْنُ سَلْمٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ
عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " اللَّحْدُ لَنَا
وَالشَّقُّ لِغَيْرِنَا " . وَفِي الْبَابِ عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ وَعَائِشَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাদের জন্য লাহ্দ এবং অন্যদের জন্য শাক।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৫৪)।
জারীর ইবনু আবদুল্লাহ, আইশা, ইবনু উমার ও জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাসের হাদীসটিকে উল্লেখিত সনদ সূত্রে আবূ ঈসা হাসান গারীব
বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৪. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার সময় যে দু’আ পাঠ করতে হয়
১০৪৬
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ،
حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ
ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أُدْخِلَ
الْمَيِّتُ الْقَبْرَ - وَقَالَ أَبُو خَالِدٍ مَرَّةً إِذَا وُضِعَ الْمَيِّتُ
فِي لَحْدِهِ قَالَ مَرَّةً " بِسْمِ اللَّهِ وَبِاللَّهِ وَعَلَى مِلَّةِ
رَسُولِ اللَّهِ " . وَقَالَ مَرَّةً " بِسْمِ اللَّهِ
وَبِاللَّهِ وَعَلَى سُنَّةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ
رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرَوَاهُ أَبُو الصِّدِّيقِ النَّاجِيُّ عَنِ
ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي
الصِّدِّيقِ النَّاجِيِّ عَنِ ابْنِ عُمَرَ مَوْقُوفًا أَيْضًا .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মৃত ব্যক্তিকে যখন কবরে রাখা হত; আবূ খালিদের
বর্ণনায় আছে, মৃত ব্যক্তিকে যখন তার কবরে নামানো হত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বলতেনঃ “বিসমিল্লাহি ওয়া বিল্লাহি ওয়া 'আলা মিল্লাতি
রাসূলিল্লাহ”, অপর বর্ণনায় আছেঃ ‘বিসমিল্লাহি ওয়া বিল্লাহি ওয়া 'আলা সুন্নাতি
রাসূলিল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)”।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৫০)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উপরোক্ত সূত্রে হাসান গারীব। এ হাদীসটি
ইবনু উমার (রাঃ) হতে অন্যান্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আবূ সিদ্দীক আন-নাজী হাদীসটিকে
ইবনু উমারের বরাতে নাৰী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। আবূ
সিদ্দীক আন-নাজীর সূত্রে এটা মাওকূফ হিসাবেও আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত
হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৫. অনুচ্ছেদঃ
কবরে লাশের নিচে একটি কাপড় বিছিয়ে দেওয়া
১০৪৭
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَخْزَمَ
الطَّائِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ فَرْقَدٍ، قَالَ سَمِعْتُ
جَعْفَرَ بْنَ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ الَّذِي أَلْحَدَ قَبْرَ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَبُو طَلْحَةَ وَالَّذِي أَلْقَى الْقَطِيفَةَ
تَحْتَهُ شُقْرَانُ مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ
جَعْفَرٌ وَأَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي رَافِعٍ قَالَ سَمِعْتُ
شُقْرَانَ يَقُولُ أَنَا وَاللَّهِ طَرَحْتُ الْقَطِيفَةَ تَحْتَ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فِي الْقَبْرِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ شُقْرَانَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى
عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ فَرْقَدٍ هَذَا الْحَدِيثَ .
জাফর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য যে ব্যক্তি লাহ্দ (সিন্দুকী) কবর খুঁড়েছিলেন সে
ব্যক্তি হচ্ছেন আবূ তালহা (রাঃ)। আর তাঁর (কবরে লাশের) নিচে যে ব্যক্তি পশমী চাদর
বিছিয়ে ছিলেন সে ব্যক্তি হচ্ছেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর মুক্তদাস শুকরান (রাঃ)।
জাফর (রহঃ) বলেন, আবূ রাফির ছেলে উবাইদুল্লাহ আমাকে জানিয়েছেন,
তিনি বলেছেন, শুকরানকে আমি বলতে শুনেছিঃ আল্লাহুর শপথ। কবরের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিচে আমিই পশমী চাদর বিছিয়েছি।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। শুকরানের হাদীসটিকে আবূ ঈসা
হাসান গারীব বলেছেন। উসমান ইবনু ফারকাদের সূত্রে আলী ইবনুল মাদীনীও উল্লেখিত হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৪৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
سَعِيدٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ جُعِلَ
فِي قَبْرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَطِيفَةٌ حَمْرَاءُ .
قَالَ وَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ فِي مَوْضِعٍ آخَرَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ، وَيَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، . وَهَذَا أَصَحُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ الْقَصَّابِ، وَاسْمُهُ، عِمْرَانُ
بْنُ أَبِي عَطَاءٍ وَرُوِيَ عَنْ أَبِي جَمْرَةَ الضُّبَعِيِّ، وَاسْمُهُ، نَصْرُ
بْنُ عِمْرَانَ وَكِلاَهُمَا مِنْ أَصْحَابِ ابْنِ عَبَّاسٍ . وَقَدْ رُوِيَ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ كَرِهَ أَنْ يُلْقَى، تَحْتَ الْمَيِّتِ فِي
الْقَبْرِ شَيْءٌ . وَإِلَى هَذَا ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একটি লাল পশমী চাদর রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কবরে ৰিছিয়ে দেয়া হয়েছিল।
-সহীহ, মুসলিম (৩/৬১)।
অন্য জায়গায় মুহাম্মাদ ইবনু ৰাশশার এই হাদীসের সনদে ইয়াহইয়ার
পূর্বে মুহাম্মাদ ইবনু জাফরের নাম উল্লেখ করেছেন। আর এই সনদটি বেশি সহীহ্। এ হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। শুবা হাদীসটিকে আবূ হাম্যা আল-কাসসাব হতে বর্ণনা করেছেন,
তার নাম ইমরান ইবনু আবূ আতা। আবূ হামযা আয-যুবাঈ হতেও হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে, তার নাম
নাসর ইবনু ইমরান। তারা উভয়েই ইবনু আব্বাসের ছাত্র। বর্ণিত আছে যে, কবরে লাশের নিচে
কিছু দেয়া ইবনু আব্বাস (রাঃ) মাকরূহ্ মনে করতেন। এই হাদীস অনুযায়ী কোন কোন আলিম এই
অভিমত গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৬. অনুচ্ছেদঃ
কবরকে সমান করা
১০৪৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ
حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، أَنَّ عَلِيًّا، قَالَ لأَبِي
الْهَيَّاجِ الأَسَدِيِّ أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِي بِهِ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم " أَنْ لاَ تَدَعَ قَبْرًا مُشْرِفًا إِلاَّ سَوَّيْتَهُ وَلاَ
تِمْثَالاً إِلاَّ طَمَسْتَهُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَكْرَهُونَ أَنْ يُرْفَعَ الْقَبْرُ فَوْقَ
الأَرْضِ . قَالَ الشَّافِعِيُّ أَكْرَهُ أَنْ يُرْفَعَ الْقَبْرُ إِلاَّ
بِقَدْرِ مَا يُعْرَفُ أَنَّهُ قَبْرٌ لِكَيْلاَ يُوطَأَ وَلاَ يُجْلَسَ عَلَيْهِ
.
আবূ ওয়াইল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূল হাইয়ায আলা-আসাদীকে আলী (রাঃ) বললেন, আমি
এমন এক কাজের দায়িত্ব দিয়ে তোমাকে পাঠাব যে কাজ করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে পাঠিয়ে ছিলেন। কোন ধরণের উঁচু কবরকে সমান না করে
ছাড়বে না এবং কোন প্রতিকৃতি না ভেঙ্গে রাখবে না।
-সহীহ্, আল আহকাম (২০৭), ইরওয়া (৭৫৯), তাহযীরুস্ সাজিদ (১৩০), মুসলিম৷
জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আলী (রাঃ) হতে
বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেন। ভূমি
হতে কবর অধিক উঁচু করাকে তার মাকরূহ্ মনে করেন। ইমাম শাফিঈ বলেন, কবর উঁচু করাকে আমি
মাকরূহ বলে মনে করি। তবে এটুকু উঁচু তো অবশ্য করতে হবে যাতে করে লোকেরা বুঝে এটা কবর।
এর ফলে কবরের উপর দিয়ে তারা চলাফিরা করবে না এবং এর উপর বসবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৭. অনুচ্ছেদঃ
কবরের উপর দিয়ে চলাফিরা করা এবং এর উপর বসা, উহার দিকে মুখ
করে সালাত আদায় করা মাকরূহ্
১০৫০
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ، عَنْ بُسْرِ
بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيِّ، عَنْ وَاثِلَةَ
بْنِ الأَسْقَعِ، عَنْ أَبِي مَرْثَدٍ الْغَنَوِيِّ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم " لاَ تَجْلِسُوا عَلَى الْقُبُورِ وَلاَ تُصَلُّوا
إِلَيْهَا " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَمْرِو بْنِ
حَزْمٍ وَبَشِيرِ ابْنِ الْخَصَاصِيَةِ .
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ
.
আবূ মারসাদ আল-গানাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কবরের উপর তোমরা বসবে না এবং কবরকে সামনে রেখে নামায আদায়
করবে না।
-সহীহ, আল আহকাম (২০৯, ২১০), তাহযীরুস সাজিদ (৩৩), মুসলিম।
আবূ হুরাইরা, আমর ইবনু হাযম ও বাশীর ইবনুল খাসাসিয়া (রাঃ) হতেও
এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। উপরের হাদীসের মত আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক হতেও একটি
সনদ সূত্রে হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৫১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، وَأَبُو
عَمَّارٍ قَالاَ أَخْبَرَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ، عَنْ بُسْرِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ وَاثِلَةَ
بْنِ الأَسْقَعِ، عَنْ أَبِي مَرْثَدٍ الْغَنَوِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم نَحْوَهُ . وَلَيْسَ فِيهِ عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ وَهَذَا الصَّحِيحُ
. قَالَ أَبُو عِيسَى قَالَ مُحَمَّدٌ وَحَدِيثُ ابْنِ الْمُبَارَكِ خَطَأٌ
أَخْطَأَ فِيهِ ابْنُ الْمُبَارَكِ وَزَادَ فِيهِ عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ
الْخَوْلاَنِيِّ وَإِنَّمَا هُوَ بُسْرُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ وَاثِلَةَ
بْنِ الأَسْقَعِ هَكَذَا رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ
بْنِ جَابِرٍ وَلَيْسَ فِيهِ عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيِّ وَبُسْرُ بْنُ
عُبَيْدِ اللَّهِ قَدْ سَمِعَ مِنْ وَاثِلَةَ بْنِ الأَسْقَعِ .
ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম থেকে বর্ণিতঃ
আলী ইবনু হুজর এবং আবূ আম্মার উভয়েই ওয়ালীদ
ইবনু মুসলিম হতে, তিনি আব্দুর রাহমান ইবনু ইয়ামীদ হতে, তিনি বুসর ইবনু
উবাইদুল্লাহ হতে, তিনি ওয়াসিলা ইবনুল আসকা হতে, তিনি মারসাদ আল-গানাবী হতে, তিনি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উপরের হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন।
-সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস।
এই সূত্রে আবূ ইদরীসের নাম উল্লেখ নেই এবং এটাই সহীহ বর্ণনা। আবূ
ঈসা বলেন, ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেছেন, ইবনুল মুবারাক সনদের মধ্যে আবূ ইদরীস আল-খাওলানীর
নাম ভুল বশত যোগ করেছেন। এ ভাবেই অনেক বর্ণনাকারী হাদীসটি আবূ ইদরীসের উল্লেখ না করেই
বর্ণনা করেছেন। ওয়াসিলা ইবনুল আসকা (রাঃ) হতে বুসর ইবনু উবাইদুল্লাহ হাদীস শুনেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৮. অনুচ্ছেদঃ
কবর পাকা করা, এতে ফলক লাগানো নিষেধ
১০৫২
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
الأَسْوَدِ أَبُو عَمْرٍو الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَبِيعَةَ،
عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ نَهَى
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ تُجَصَّصَ الْقُبُورُ وَأَنْ يُكْتَبَ
عَلَيْهَا وَأَنْ يُبْنَى عَلَيْهَا وَأَنْ تُوطَأَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ قَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ جَابِرٍ . وَقَدْ
رَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْهُمُ الْحَسَنُ الْبَصْرِيُّ فِي تَطْيِينِ
الْقُبُورِ . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ لاَ بَأْسَ أَنْ يُطَيَّنَ الْقَبْرُ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কবর পাকা করতে, তার উপর কোন কিছু
লিখতে বা কিছু নির্মাণ করতে এবং তা পদদলিত করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
-সহীহ, আহকামুল জানা-য়িয (২০৪), তাহযীরস সাজিদ (৪০), ইরওয়া (৭৫৭), লিখতে নিষেধ
করেছেন ব্যতীত, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। জাবির (রাঃ) হতে আরো একাধিক
সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। কবরকে কাদা দিয়ে লেপার পক্ষে হাসান বাসরীসহ একদল
আলিম অনুমতি প্রদান করেছেন। ইমাম শাফিঈ বলেছেন কাদা দিয়ে কবর লেপাতে কোন সমস্যা নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৯. অনুচ্ছেদঃ
কবরস্থানে প্রবেশ করে যা বলতে হবে
১০৫৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الصَّلْتِ، عَنْ أَبِي كُدَيْنَةَ، عَنْ قَابُوسِ بْنِ أَبِي
ظَبْيَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ مَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم بِقُبُورِ الْمَدِينَةِ فَأَقْبَلَ عَلَيْهِمْ بِوَجْهِهِ فَقَالَ
" السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الْقُبُورِ يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا
وَلَكُمْ أَنْتُمْ سَلَفُنَا وَنَحْنُ بِالأَثَرِ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ بُرَيْدَةَ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ
عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَأَبُو كُدَيْنَةَ اسْمُهُ يَحْيَى بْنُ
الْمُهَلَّبِ وَأَبُو ظَبْيَانَ اسْمُهُ حُصَيْنُ بْنُ جُنْدُبٍ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) মাদীনার গোরস্তানের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি কবরবাসীদের দিকে মুখ
করে বললেনঃ “আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহ্লাল কুবূর, ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম
আনতুম সালাফুনা ওয়া নাহ্নু বিল আসার।”
যঈফ, মিশকাত (১৭৬৫)
এ অনুচ্ছেদে বুরাইদা ও আইশা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
ঈসা বলেনঃ ইবনু আব্বাস বর্ণিত এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবূ কুদাইনার নাম ইয়াহ্ইয়া, পিতার
নাম মুহাল্লাব। আর আবূ যাব্ইয়ানের নাম হুসাইন, পিতার নাম জুনদুব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৬০. অনুচ্ছেদঃ
কবর যিয়ারাত করার অনুমতি
১০৫৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَالْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، قَالُوا
حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ النَّبِيلُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ
مَرْثَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " قَدْ كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ
الْقُبُورِ فَقَدْ أُذِنَ لِمُحَمَّدٍ فِي زِيَارَةِ قَبْرِ أُمِّهِ فَزُورُوهَا
فَإِنَّهَا تُذَكِّرُ الآخِرَةَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ بُرَيْدَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ بِزِيَارَةِ الْقُبُورِ بَأْسًا
. وَهُوَ قَوْلُ ابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
সুলাইমান ইবনু বুরাইদা (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারাত করতে নিষেধ করেছিলাম। মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর মায়ের কবর যিয়ারাত করার অনুমতি
দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা কবর যিয়ারাত কর। কেননা, তা আখিরাতের কথাকে মনে করিয়ে
দেয়।
-সহীহ্, আল আহকাম (১৭৮, ১৮৮), মুসলিম।
আবূ সাঈদ, ইবনু মাসউদ, আনাস, আবূ হুরাইরা ও উম্মু সালামা (রাঃ)
হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। বুরাইদার হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহী্হ্ বলেছেন।
এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেন। কবর যিয়ারাত করতে তাদের মতে কোন দোষ নেই। এই মত
দিয়েছেন ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬১. অনুচ্ছেদঃ
(মৃত ব্যক্তিকে মৃত্যু স্থলে কবর দেয়া প্রসঙ্গে)
১০৫৫
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ،
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
أَبِي مُلَيْكَةَ، قَالَ تُوُفِّيَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ
بِحُبْشِيٍّ . قَالَ فَحُمِلَ إِلَى مَكَّةَ فَدُفِنَ فِيهَا فَلَمَّا قَدِمَتْ
عَائِشَةُ أَتَتْ قَبْرَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ فَقَالَتْ وَكُنَّا
كَنَدْمَانَىْ جَذِيمَةَ حِقْبَةً مِنَ الدَّهْرِ حَتَّى قِيلَ لَنْ يَتَصَدَّعَا
فَلَمَّا تَفَرَّقْنَا كَأَنِّي وَمَالِكًا لِطُولِ اجْتِمَاعٍ لَمْ نَبِتْ
لَيْلَةً مَعَا ثُمَّ قَالَتْ وَاللَّهِ لَوْ حَضَرْتُكَ مَا دُفِنْتَ إِلاَّ
حَيْثُ مُتَّ وَلَوْ شَهِدْتُكَ مَا زُرْتُكَ .
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ মুলাইকা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ)
হুবশী নামক স্থানে মারা গেলেন। পরে তাকে মক্কায় এনে এখানে কবর দেয়া হল। আইশা (রাঃ)
মক্কায় এসে (ভাই) আবদুর রহমান ইবনু আবূ বাক্রের কবর যিয়ারাতে গেলেন। তিনি কবরের
পাশে দাঁড়িয়ে নিম্নোক্ত কবিতা আবৃত্তি করেনঃ
“আমরা দু’জন জাযীমার দুই সহচর দীর্ঘকাল কাটিয়েছি একসাথে এমনকি বলা হত আমরা কখনো
বিচ্ছিন্ন হব না কিন্তু যখন পৃথক হলাম আমি মালিকের থেকে মনে হচ্ছে এক রাতও কাটাইনি
একসাথে।”
তারপর তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা‘আলার কসম! আমি যদি হাযির থাকতাম তবে আপনার মউতের
জায়গাতেই আপনাকে দাফন করা হত। আমি যদি আপনার দাফনের সময় হাযির থাকতাম, তবে আমি
আপনার কবর যিয়ারাতে আসতাম না।
যঈফ, মিশকাত (১৭১৮)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৬২. অনুচ্ছেদঃ
কবর যিয়ারাত করা মহিলাদের জন্য মাকরূহ্
১০৫৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو
عَوَانَةَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَعَنَ زَوَّارَاتِ
الْقُبُورِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَحَسَّانَ بْنِ ثَابِتٍ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَأَى بَعْضُ
أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ هَذَا كَانَ قَبْلَ أَنْ يُرَخِّصَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم فِي زِيَارَةِ الْقُبُورِ فَلَمَّا رَخَّصَ دَخَلَ فِي رُخْصَتِهِ
الرِّجَالُ وَالنِّسَاءُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّمَا كُرِهَ زِيَارَةُ
الْقُبُورِ لِلنِّسَاءِ لِقِلَّةِ صَبْرِهِنَّ وَكَثْرَةِ جَزَعِهِنَّ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কবর যিয়ারাতকারী মহিলাদের রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অভিসম্পাত করেছেন।
-হাসান, ইবনু মাজাহ (১৫৭৬)।
ইবনু আব্বাস ও হাস্সান ইবনু সাবিত (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস
বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহী্হ্ বলেছেন। একদল বিশেষজ্ঞ আলিম মনে করেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কবর যিয়ারাতের অনুমতি দেওয়ার পূর্বেকার
হাদীস এটি। তিনি কবর যিয়ারাতের অনুমতি দেওয়ার পর এই অনুমতির মধ্যে নারী-পুরুষ সকলেই
অন্তর্ভুক্ত। কোন কোন আলিম মনে করেন, স্ত্রীলোকদের মাঝে অল্প ধৈর্য এবং বেশি অস্থিরতা
থাকার জন্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের কবর যিয়ারাত অপছন্দ
করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৬৩. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির প্রশংসা বর্ণনা করা
১০৫৭
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَمُحَمَّدُ
بْنُ عَمْرٍو السَّوَّاقُ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ الْيَمَانِ، عَنِ
الْمِنْهَالِ بْنِ خَلِيفَةَ، عَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ أَرْطَاةَ، عَنْ عَطَاءٍ،
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ قَبْرًا لَيْلاً
فَأُسْرِجَ لَهُ سِرَاجٌ فَأَخَذَهُ مِنْ قِبَلِ الْقِبْلَةِ وَقَالَ "
رَحِمَكَ اللَّهُ إِنْ كُنْتَ لأَوَّاهًا تَلاَّءً لِلْقُرْآنِ " .
وَكَبَّرَ عَلَيْهِ أَرْبَعًا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَيَزِيدَ
بْنِ ثَابِتٍ وَهُوَ أَخُو زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَكْبَرُ مِنْهُ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ إِلَى هَذَا وَقَالُوا يُدْخَلُ الْمَيِّتُ الْقَبْرَ مِنْ قِبَلِ
الْقِبْلَةِ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ يُسَلُّ سَلاًّ . وَرَخَّصَ أَكْثَرُ أَهْلِ
الْعِلْمِ فِي الدَّفْنِ بِاللَّيْلِ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) রাতের বেলা কবরে প্রবেশ করলেন। তাঁর জন্য একটি আলো জ্বালানো হল। তিনি
কিবলার দিক হতে মৃতদেহ ধরলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ তা'আলা তোমায় রহম করুন! তুমি ছিলে
বেশী নরমদিলের এবং বেশী কুরআন তিলাওয়াতকারী। তিনি তার (নামাযে) চারবার 'আল্লাহু
আকবার' বললেন।
যঈফ, মিশকাত (১৭০৬)তিনি রাত্রে কবরে প্রবেশ করলেন এ অংশটুকু হাসান, আহকামুল
জানায়িয।
এ অনুচ্ছেদে জাবির ও ইয়াযীদ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। ইয়াযীদ (রাঃ) যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ)-এর অগ্রজ। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
বর্ণিত হাদীসটি হাসান। একদল ‘আলিম এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তারা বলেন, মৃতকে কিবলার
দিক হতে কবরে নামাবে। আর একদল ‘আলিমের মতে পায়ের দিক হতে নামাতে হবে। বেশীরভাগ বিশেষজ্ঞ
‘আলিম রাতে মৃতদেহ দাফন করা জায়িয মনে করেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
১০৫৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا
يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ مُرَّ عَلَى
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِجَنَازَةٍ فَأَثْنَوْا عَلَيْهَا خَيْرًا
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَجَبَتْ " . ثُمَّ
قَالَ " أَنْتُمْ شُهَدَاءُ اللَّهِ فِي الأَرْضِ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَكَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একটি মৃত ব্যক্তিকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। লোকজন তার প্রশংসা
করল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার জন্য (জান্নাত)
নির্ধারিত হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেনঃ পৃথিবীতে তোমরা (মু'মিনরা) আল্লাহ্ তা'আলার
সাক্ষী।
-সহীহ, ইবনু মাজাহ (১৪৯১), বুখারী, মুসলিম।
উমার, কা’ব ইবনু উজরা ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস
বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৫৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى،
وَهَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْبَزَّازُ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ أَبِي الْفُرَاتِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِي الأَسْوَدِ الدِّيلِيِّ، قَالَ قَدِمْتُ
الْمَدِينَةَ فَجَلَسْتُ إِلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَمَرُّوا بِجَنَازَةٍ
فَأَثْنَوْا عَلَيْهَا خَيْرًا فَقَالَ عُمَرُ وَجَبَتْ . فَقُلْتُ لِعُمَرَ
وَمَا وَجَبَتْ قَالَ أَقُولُ كَمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَشْهَدُ لَهُ ثَلاَثَةٌ إِلاَّ وَجَبَتْ لَهُ
الْجَنَّةُ " . قَالَ قُلْنَا وَاثْنَانِ قَالَ " وَاثْنَانِ
" . قَالَ وَلَمْ نَسْأَلْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ
الْوَاحِدِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو
الأَسْوَدِ الدِّيلِيُّ اسْمُهُ ظَالِمُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سُفْيَانَ .
আবুল আসওয়াদ আদ-দীলী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মাদীনাতে এসে উমার ইবনুল
খাত্তাব (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে বসলাম। (আমাদের সামনে দিয়ে) লোকেরা একটি লাশ নিয়ে
যাচ্ছিল। তারা তার ভালো গুণাবলীর প্রশংসা করছিল। উমার (রাঃ) বললেন, নির্ধারিত হয়ে
গেল। তাকে আমি প্রশ্ন করলাম, কি নির্ধারিত হলো? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা বলেছেন আমি শুধু তাই বলেছি। তিনি বলেছেনঃ
তিনজন লোকও যদি কোন মুসলমানের পক্ষে উত্তম সাক্ষী দেয় তাহলে তার জন্য জান্নাত
নির্ধারিত হয়ে যায়। উমার (রাঃ) বলেন, আমরা প্রশ্ন করলাম, দু’জন লোক যদি এমন
সাক্ষী দেয়? তিনি বললেনঃ দু’জন লোক (সাক্ষী) দিলেও। উমার (রাঃ) বলেন, তারপর
একজনের সাক্ষ্যের কথা আমরা প্রশ্ন করিনি।
-সহীহ, আল আহকাম (৪৫), বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূল আসওয়াদের নাম যা-লিম,
পিতা আমর এবং দাদা সুফিয়ান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৪. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তির শিশু সন্তান মারা যায় সে ব্যক্তির সাওয়াব
১০৬০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكِ بْنِ
أَنَسٍ، ح وَحَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكُ
بْنُ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ
يَمُوتُ لأَحَدٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ ثَلاَثَةٌ مِنَ الْوَلَدِ فَتَمَسَّهُ
النَّارُ إِلاَّ تَحِلَّةَ الْقَسَمِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
عُمَرَ وَمُعَاذٍ وَكَعْبِ بْنِ مَالِكٍ وَعُتْبَةَ بْنِ عَبْدٍ وَأُمِّ سُلَيْمٍ
وَجَابِرٍ وَأَنَسٍ وَأَبِي ذَرٍّ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي ثَعْلَبَةَ
الأَشْجَعِيِّ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ وَأَبِي سَعِيدٍ
وَقُرَّةَ بْنِ إِيَاسٍ الْمُزَنِيِّ . قَالَ وَأَبُو ثَعْلَبَةَ الأَشْجَعِيُّ
لَهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَدِيثٌ وَاحِدٌ هُوَ هَذَا الْحَدِيثُ
وَلَيْسَ هُوَ الْخُشَنِيَّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মুসলমান ব্যক্তির তিনটি শিশু সন্তান মারা গেলে তাকে
জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না; তবে শপথ ভঙ্গ করে থাকলে (স্পর্শ করবে)।
-সহীহ ইবনু মাজাহ (১৬০৩)।
উমার, মুআয, কা’ব ইবনু মালিক, উতবা ইবনু আবদ, উম্মু সুলাইম, জাবির,
আনাস, আবূ যার, ইবনু মাসউদ, আবূ সা’লাবা আল-আশজাঈ, ইবনু আব্বাস, উকবা ইবনু আমির, আবূ
সাঈদ এবং কুররা ইবনু ইয়াস আল-মুযানী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই একটি মাত্র হাদীসই আবূ সা’লাবা হতে বর্ণিত
আছে। ইনি আবূ সালাবা আল-খুশানী নন। আবূ হুরাইরার হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৬১
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ
الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا الْعَوَّامُ بْنُ
حَوْشَبٍ، عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ، مَوْلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِي
عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ قَدَّمَ ثَلاَثَةً لَمْ يَبْلُغُوا
الْحُلُمَ كَانُوا لَهُ حِصْنًا حَصِينًا مِنَ النَّارِ " . قَالَ أَبُو
ذَرٍّ قَدَّمْتُ اثْنَيْنِ . قَالَ " وَاثْنَيْنِ " . فَقَالَ
أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ سَيِّدُ الْقُرَّاءِ قَدَّمْتُ وَاحِدًا قَالَ "
وَوَاحِدًا وَلَكِنْ إِنَّمَا ذَاكَ عِنْدَ الصَّدْمَةِ الأُولَى " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَأَبُو عُبَيْدَةَ لَمْ يَسْمَعْ
مِنْ أَبِيهِ .
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তিনটি অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান (আল্লাহ্ তা'আলার
কাছে) পাঠিয়েছে, তারা তার জন্য (জাহান্নামের বিরুদ্ধে) সুরক্ষিত কেল্লা হবে। আবূ
যার (রাঃ) বললেন, আমি দু'টি সন্তান আগে পাঠিয়েছি। তিনি বললেনঃ দু'টি পাঠালেও।
কুরআন বিশেষজ্ঞদের নেতা উবাই ইবনু কা'ব (রাঃ) বললেন, আমি একটি আগে পাঠিয়েছি? তিনি
বললেনঃ একটি পাঠালেও। কিন্তু এটা শুধু তার জন্য যে প্রথম চোটেই সহিষ্ণুতা অবলম্বন
করেছে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৬০৬)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আবূ উবাইদা (রাহঃ) তার পিতার কাছে
হাদীস শুনেননি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
১০৬২
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، وَأَبُو
الْخَطَّابِ، زِيَادُ بْنُ يَحْيَى الْبَصْرِيُّ قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ رَبِّهِ
بْنُ بَارِقٍ الْحَنَفِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ جَدِّي أَبَا أُمِّي، سِمَاكَ بْنَ
الْوَلِيدِ الْحَنَفِيَّ يُحَدِّثُ أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ، يُحَدِّثُ
أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ كَانَ
لَهُ فَرَطَانِ مِنْ أُمَّتِي أَدْخَلَهُ اللَّهُ بِهِمَا الْجَنَّةَ " .
فَقَالَتْ لَهُ عَائِشَةُ فَمَنْ كَانَ لَهُ فَرَطٌ مِنْ أُمَّتِكَ قَالَ "
وَمَنْ كَانَ لَهُ فَرَطٌ يَا مُوَفَّقَةُ " . قَالَتْ فَمَنْ لَمْ
يَكُنْ لَهُ فَرَطٌ مِنْ أُمَّتِكَ قَالَ " فَأَنَا فَرَطُ أُمَّتِي لَنْ
يُصَابُوا بِمِثْلِي " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ بَارِقٍ وَقَدْ
رَوَى عَنْهُ غَيْرُ وَاحِدٍ مِنَ الأَئِمَّةِ .
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الْمُرَابِطِيُّ، حَدَّثَنَا حَبَّانُ بْنُ
هِلاَلٍ، أَنْبَأَنَا عَبْدُ رَبِّهِ بْنُ بَارِقٍ، فَذَكَرَ نَحْوَهُ .
وَسِمَاكُ بْنُ الْوَلِيدِ هُوَ أَبُو زُمَيْلٍ الْحَنَفِيُّ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে যার দু'টি মৃত সন্তান থাকবে, তাদের
প্রতিদানে আল্লাহ তা'আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আইশা (রাঃ) তাঁকে প্রশ্ন
করলেন, আপনার উম্মাতের মধ্যে যার একটি মৃত সন্তান থাকবে? তিনি বললেনঃ হে
কল্যাণময়ী! যার এমন একটি সন্তান থাকবে তাকেও। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, আপনার
উম্মাতের মধ্যে যার কোন অগ্রগামী সন্তান নেই? তিনি বললেনঃ আমিই আমার উম্মাতের জন্য
অগ্রগামী। কেননা আমার ইন্তেকালে তারা যে কষ্ট পাবে তেমন আর কারো ইন্তেকালে পাবে
না।
যঈফ, তা'লীকুর রাগীব (৩/৯৩), মিশকাত (১৭৩৫)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। কেননা আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র
আবদু রব্বিহি ইবনু বারিকের সূত্রেই জেনেছি। একাধিক মুহাদ্দিস তার নিকট হতে এ হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন। আহ্মাদ ইবনু সাঈদ-হাব্বান ইবনু হিলাল হতে তিনি আবদে রব্বিহির সূত্রে
উপরের হাদীসের মতই হাদীস বর্ণনা করেছেন। সিমাক ইবনুল ওয়ালীদ, তিনি হলেন আবূ যুমাইল
হানাফী।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৬৫. অনুচ্ছেদঃ
শহীদগণের বর্ণনা
১০৬৩
حَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا
مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ
سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " الشُّهَدَاءُ خَمْسٌ الْمَطْعُونُ وَالْمَبْطُونُ
وَالْغَرِقُ وَصَاحِبُ الْهَدْمِ وَالشَّهِيدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَصَفْوَانَ بْنِ أُمَيَّةَ وَجَابِرِ بْنِ
عَتِيكٍ وَخَالِدِ بْنِ عُرْفُطَةَ وَسُلَيْمَانَ بْنِ صُرَدٍ وَأَبِي مُوسَى
وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ শহীদ পাঁচ প্রকারেরঃ মহামারির কারণে যে লোক মারা যায়, যে পেটের
অসুখের কারণে মারা যায়, পানিতে ডুবে যে লোক মারা যায়, চাপা পড়ে যে লোক মারা যায়
এবং যে লোক আল্লাহ তা'আলার রাস্তায় (যুদ্ধক্ষেত্রে) শহীদ হয়।
-সহীহ, আল আহকাম (৩৮) বুখারী, মুসলিম৷
আনাস, সাফওয়ান ইবনু উমাইয়্যা, জাবির ইবনু আতীক, খালিদ ইবনু উরফুতা,
সুলাইমান ইবনু সুরাদ, আবূ মূসা ও আইশা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৬৪
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ أَسْبَاطِ بْنِ
مُحَمَّدٍ الْقُرَشِيُّ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا أَبُو سِنَانٍ
الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ السَّبِيعِيِّ، قَالَ قَالَ سُلَيْمَانُ
بْنُ صُرَدٍ لِخَالِدِ بْنِ عُرْفُطَةَ أَوْ خَالِدٌ لِسُلَيْمَانَ أَمَا سَمِعْتَ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ قَتَلَهُ بَطْنُهُ
لَمْ يُعَذَّبْ فِي قَبْرِهِ " . فَقَالَ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِهِ نَعَمْ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ فِي هَذَا الْبَابِ وَقَدْ
رُوِيَ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ .
আবূ ইসহাক আস-সাবীঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খালিদ ইবনু উরফুতা (রাঃ)-কে
সুলাইমান ইবনু সুরাদ (রাঃ) অথবা সুলাইমান (রাঃ)-কে খালিদ (রাঃ) প্রশ্ন করলেন, আপনি
কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একথা বলতে শুনেছেনঃ
"যে লোককে পেটের পীড়া মৃত্যু দিয়েছে কবরে সে লোককে কোন রকম শাস্তি দেয়া
হবে না"? তাদের একজন অন্যজনকে বললেন, হ্যাঁ।
-সহীহ, আল আহকাম (৩৮)।
আবূ ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে এ হাদীসটি হাসান গারীব। অন্য সূত্রেও
এটি বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৬. অনুচ্ছেদঃ
মহামারীতে আক্রান্ত এলাকা হতে পালানো নিষেধ
১০৬৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا
حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ،
عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ذَكَرَ
الطَّاعُونَ فَقَالَ " بَقِيَّةُ رِجْزٍ - أَوْ عَذَابٍ أُرْسِلَ عَلَى
طَائِفَةٍ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ فَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا
فَلاَ تَخْرُجُوا مِنْهَا وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَلَسْتُمْ بِهَا فَلاَ
تَهْبِطُوا عَلَيْهَا " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَعْدٍ وَخُزَيْمَةَ
بْنِ ثَابِتٍ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَجَابِرٍ وَعَائِشَةَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
উসামা ইবনু যাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মহামারী প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলোচনা করলেন এবং বললেনঃ যে গযব বা শাস্তি বানী ইসরাঈলের এক
গোষ্ঠীর উপর এসেছিলো, তার বাকী অংশই হচ্ছে মহামারী। অতএব, কোথাও মহামারীর দেখাদিলে
এবং সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা হতে চলে এসো না। অপরদিকে কোন এলাকায়
এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থান না করলে সে জায়গাতে যেও না।
-সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
সা’দ, খুযাইমা ইবনু সাবিত, আবদুর রাহমান ইবনু আওফ, জাবির ও আইশা
(রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। উসামা ইবনু যাইদের হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান
সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ্ তা'আলার সাথে সাক্ষাত লাভকে যে লোক পছন্দ করে
আল্লাহ্ তা'আলাও তার সাক্ষাত লাভকে পছন্দ করেন
১০৬৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مِقْدَامٍ أَبُو
الأَشْعَثِ الْعِجْلِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ
سَمِعْتُ أَبِي يُحَدِّثُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ
الصَّامِتِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَحَبَّ
لِقَاءَ اللَّهِ أَحَبَّ اللَّهُ لِقَاءَهُ وَمَنْ كَرِهَ لِقَاءَ اللَّهِ كَرِهَ
اللَّهُ لِقَاءَهُ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي مُوسَى وَأَبِي
هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক আল্লাহ্ তা'আলার সাক্ষাত লাভ করা পছন্দ করে, তার সাথে
সাক্ষাত করতে আল্লাহ্ তা'আলাও পছন্দ করেন। আল্লাহ্ তা'আলার সাথে সাক্ষাত করতে যে
লোক পছন্দ করে না, তার সাথে সাক্ষাত করতে আল্লাহ্ তা'আলাও পছন্দ করেন না।
-সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
আবূ মূসা, আবূ হুরাইরা ও আইশা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। উবাদা ইবনুস সা-মিত (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৬৭
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا
خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، ح قَالَ
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ
سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا ذَكَرَتْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَحَبَّ لِقَاءَ اللَّهِ أَحَبَّ اللَّهُ
لِقَاءَهُ وَمَنْ كَرِهَ لِقَاءَ اللَّهِ كَرِهَ اللَّهُ لِقَاءَهُ " .
قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ كُلُّنَا نَكْرَهُ الْمَوْتَ . قَالَ
" لَيْسَ ذَلِكَ وَلَكِنَّ الْمُؤْمِنَ إِذَا بُشِّرَ بِرَحْمَةِ اللَّهِ
وَرِضْوَانِهِ وَجَنَّتِهِ أَحَبَّ لِقَاءَ اللَّهِ وَأَحَبَّ اللَّهُ لِقَاءَهُ
وَإِنَّ الْكَافِرَ إِذَا بُشِّرَ بِعَذَابِ اللَّهِ وَسَخَطِهِ كَرِهَ لِقَاءَ اللَّهِ
وَكَرِهَ اللَّهُ لِقَاءَهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি উল্লেখ করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা'আলার সাথে সাক্ষাত করতে
যে লোক পছন্দ করে তার সাথে সাক্ষাত করতে আল্লাহ্ তা'আলাও পছন্দ করেন। আল্লাহ্
তা'আলার সাথে সাক্ষাত করতে যে লোক পছন্দ করে না, তার সাথে সাক্ষাত করাকে আল্লাহ্
তা'আলাও পছন্দ করেন না। আইশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মৃত্যুকে
তো আমরা সবাই অপছন্দ করি। তিনি বললেনঃ এর অর্থ তা নয়, বরং যখন আল্লাহ্ তা'আলার
রাহমাত, তাঁর সন্তোষ ও তাঁর জান্নাতের সুসংবাদ কোন মু'মিন লোককে দেয়া হয় তখন সে
লোক আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাত করতে ইচ্ছা করে এবং তার সাথে সাক্ষাত করাকে আল্লাহ্
তা'আলাও পছন্দ করেন। অপরপক্ষে যখন কাফির লোককে আল্লাহ্র নির্ধারিত আযাব ও তাঁর
গযবের দুঃসংবাদ দেয়া হয় তখন আল্লাহ্ তা'আলার সাথে সাক্ষাত করাকে সে লোক পছন্দ
করে না এবং তার সাথে সাক্ষাত করাকে আল্লাহ্ তা'আলাও পছন্দ করেন না।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪২৬৪), বুখারী, মুসলিম।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৮. অনুচ্ছেদঃ
আত্মহত্যাকারীর (জানাযার নামায) প্রসঙ্গে
১০৬৮
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ عِيسَى،
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، وَشَرِيكٌ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ
حَرْبٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، أَنَّ رَجُلاً، قَتَلَ نَفْسَهُ فَلَمْ
يُصَلِّ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي هَذَا فَقَالَ بَعْضُهُمْ
يُصَلَّى عَلَى كُلِّ مَنْ صَلَّى إِلَى الْقِبْلَةِ وَعَلَى قَاتِلِ النَّفْسِ
. وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ أَحْمَدُ لاَ
يُصَلِّي الإِمَامُ عَلَى قَاتِلِ النَّفْسِ وَيُصَلِّي عَلَيْهِ غَيْرُ الإِمَامِ
.
জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন এক লোক আত্মহত্যা করলে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জানাযা আদায় করেননি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫২৬), মুসলিম।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আলিমদের মাঝে আত্মহত্যাকারীর
জানাযা আদায়ের ব্যাপারে মতের অমিল আছে। একদল আলিম বলেন, কিবলার দিকে ফিরে যেসব লোক
নামায আদায় করে তাদের ও আত্মহত্যাকারীর জানাযা আদায় করা হবে। এই মতের প্রবক্তা হচ্ছেন
সুফিয়ান সাওরী ও ইসহাক (রহঃ)। ইমাম আহমাদ বলেন, আত্মহত্যাকারীর জানাষার নামায ইমাম
সাহেব আদায় করবেন না, তবে অন্যান্য লোকেরা তা আদায় করবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৯. অনুচ্ছেদঃ
ঋণগ্রস্ত লোকের জানাযা
১০৬৯
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ،
حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي قَتَادَةَ،
يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ بِرَجُلٍ
لِيُصَلِّيَ عَلَيْهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " صَلُّوا
عَلَى صَاحِبِكُمْ فَإِنَّ عَلَيْهِ دَيْنًا " . قَالَ أَبُو قَتَادَةَ
هُوَ عَلَىَّ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
بِالْوَفَاءِ " . قَالَ بِالْوَفَاءِ . فَصَلَّى عَلَيْهِ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَسَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ وَأَسْمَاءَ بِنْتِ
يَزِيدَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي قَتَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ কাতাদা (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে
বর্ণিতঃ
কোন এক মৃত ব্যক্তিকে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট জানাযার উদ্দেশ্যে আনা হল।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা তোমাদের সাথীর
জানাযা আদায় কর; কেননা, তার ঋণ (অপরিশোধিত অবস্থায়) আছে। আবূ কাতাদা (রাঃ)
বললেন, তার দেনা পরিশোধ করার দায়িত্ব আমার। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি তা পরিশোধ করে দেবে তো? তিনি বললেন, অবশ্যই পরিশোধ করব।
তারপর তিনি সে ব্যক্তির জানাযার নামায আদায় করলেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৪০৭), বুখারী, মুসলিম।
জাবির, সালামা ইবনুল আকওয়া ও আসমা বিনতু ইয়াযীদ (রাঃ) হতেও এ
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান
সহী্হ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৭০
حَدَّثَنَا أَبُو الْفَضْلِ، مَكْتُومُ
بْنُ الْعَبَّاسِ التِّرْمِذِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ، قَالَ
حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ
أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُؤْتَى بِالرَّجُلِ
الْمُتَوَفَّى عَلَيْهِ الدَّيْنُ فَيَقُولُ " هَلْ تَرَكَ لِدَيْنِهِ مِنْ
قَضَاءٍ " . فَإِنْ حُدِّثَ أَنَّهُ تَرَكَ وَفَاءً صَلَّى عَلَيْهِ
وَإِلاَّ قَالَ لِلْمُسْلِمِينَ " صَلُّوا عَلَى صَاحِبِكُمْ " .
فَلَمَّا فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْفُتُوحَ قَامَ فَقَالَ " أَنَا
أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ فَمَنْ تُوُفِّيَ مِنَ الْمُسْلِمِينَ
فَتَرَكَ دَيْنًا عَلَىَّ قَضَاؤُهُ وَمَنْ تَرَكَ مَالاً فَهُوَ لِوَرَثَتِهِ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ نَحْوَ
حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ صَالِحٍ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ঋণগ্রস্ত মৃত ব্যক্তিকে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট নিয়ে আসা হলে তিনি প্রশ্ন করতেন,
তার ঋণ পরিশোধ করার মত কোন কিছু রেখে গেছে কি এ ব্যক্তি? সে লোক ঋণ পরিশোধ করার মত
সম্পদ রেখে গেছে বলা হলে তবে তিনি তার জানাযার নামায আদায় করতেন। অন্যথায় তিনি
মুসলমানদের বলতেনঃ তোমাদের ভাইয়ের জানাযার নামায তোমরা আদায় কর। তারপর তাঁকে
আল্লাহ তা'আলা অসংখ্য বিজয় দিলে তিনি দাঁড়িয়ে বললেনঃ মু’মিনদের জন্য তাদের
নিজেদের চাইতেও আমি বেশি কল্যাণকামী। অতএব, মুমিনদের মাঝে কোন লোক যদি ঋণগ্রস্ত
হয়ে মারা যায় তবে তা পরিশোধ করার দায়িত্ব আমার। আর ধন-সম্পদ রেখে যে ব্যক্তি
মারা যায় তা তার ওয়ারিসদের প্রাপ্য।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৪১৫), বুখারী, মুসলিম।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। উপরোক্ত হাদীসের মতই
লাইস ইবনু সা’দের সূত্রে ইয়াহইয়া ইবনু বুকাইর ও অন্যরা বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭০. অনুচ্ছেদঃ
কবরের শাস্তি প্রসঙ্গে
১০৭১
حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ
خَلَفٍ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا
قُبِرَ الْمَيِّتُ - أَوْ قَالَ أَحَدُكُمْ أَتَاهُ مَلَكَانِ أَسْوَدَانِ
أَزْرَقَانِ يُقَالُ لأَحَدِهِمَا الْمُنْكَرُ وَالآخَرُ النَّكِيرُ فَيَقُولاَنِ
مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُولُ مَا كَانَ يَقُولُ هُوَ عَبْدُ
اللَّهِ وَرَسُولُهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا
عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ . فَيَقُولاَنِ قَدْ كُنَّا نَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُولُ
هَذَا . ثُمَّ يُفْسَحُ لَهُ فِي قَبْرِهِ سَبْعُونَ ذِرَاعًا فِي سَبْعِينَ
ثُمَّ يُنَوَّرُ لَهُ فِيهِ ثُمَّ يُقَالُ لَهُ نَمْ . فَيَقُولُ أَرْجِعُ إِلَى
أَهْلِي فَأُخْبِرُهُمْ فَيَقُولاَنِ نَمْ كَنَوْمَةِ الْعَرُوسِ الَّذِي لاَ
يُوقِظُهُ إِلاَّ أَحَبُّ أَهْلِهِ إِلَيْهِ . حَتَّى يَبْعَثَهُ اللَّهُ مِنْ
مَضْجَعِهِ ذَلِكَ . وَإِنْ كَانَ مُنَافِقًا قَالَ سَمِعْتُ النَّاسَ
يَقُولُونَ فَقُلْتُ مِثْلَهُ لاَ أَدْرِي . فَيَقُولاَنِ قَدْ كُنَّا نَعْلَمُ
أَنَّكَ تَقُولُ ذَلِكَ . فَيُقَالُ لِلأَرْضِ الْتَئِمِي عَلَيْهِ .
فَتَلْتَئِمُ عَلَيْهِ . فَتَخْتَلِفُ فِيهَا أَضْلاَعُهُ فَلاَ يَزَالُ فِيهَا
مُعَذَّبًا حَتَّى يَبْعَثَهُ اللَّهُ مِنْ مَضْجَعِهِ ذَلِكَ " . وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَالْبَرَاءِ بْنِ
عَازِبٍ وَأَبِي أَيُّوبَ وَأَنَسٍ وَجَابِرٍ وَعَائِشَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ
كُلُّهُمْ رَوَوْا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي عَذَابِ الْقَبْرِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত লোককে বা তোমাদের কাউকে যখন কবরের মধ্যে রাখা হয় তখন
কালো বর্ণের এবং নীল চোখ বিশিষ্ট দু'জন ফেরেশতা আসেন তার নিকট। তাদের মধ্যে একজনকে
মুনকার এবং অন্যজনকে নাকীর বলা হয়। তারা উভয়ে (মৃত ব্যক্তিকে) প্রশ্ন করেনঃ তুমি
এ ব্যক্তির (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর) প্রসঙ্গে কি
বলতে? মৃত ব্যক্তিটি (যদি মু'মিন হয় তাহলে) পূর্বে যা বলত তাই বলবেঃ তিনি আল্লাহর
বান্দা ও তাঁর রাসূল। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত আর কোন মাবূদ
নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রাসূল। তারা
উভয়ে তখন বলবেন, আমরা তো জানতাম তুমি একথাই বলবে। তারপর সে ব্যক্তির কবর
দৈর্ঘ্য-প্রস্থে সত্তর গজ করে প্রশস্ত করা হবে এবং তার জন্য এখানে আলোর ব্যবস্থা
করা হবে। তারপর সে লোককে বলা হবে, তুমি ঘুমিয়ে থাক। তখন সে বলবে, আমার
পরিবার-পরিজনকে সুসংবাদ দেওয়ার জন্য আমি তাদের নিকট ফিরে যেতে চাই। তারা উভয়ে
বলবেন, বাসর ঘরের বরের মত তুমি এখানে এমন গভীর ঘুম দাও, যাকে তার পরিবারের সবচাইতে
প্রিয়জন ব্যতীত আর কোন ব্যক্তি জাগিয়ে তুলতে পারে না। অবশেষে আল্লাহ তা'আলা
কিয়ামাতের দিন তাকে তার বিছানা হতে জাগিয়ে তুলবেন। মৃত লোকটি যদি মুনাফিক হয়
তাহলে (প্রশ্নের উত্তরে) বলবে, তার প্রসঙ্গে লোকেরা একটা কথা বলত আমিও তাই বলতাম।
এর বেশি কিছুই আমি জানি না। ফেরেশতা দু'জন তখন বলবেন, আমরা জানতাম, এ কথাই তুমি
বলবে। তারপর যমীনকে বলা হবে, একে চাপ দাও। সে লোককে এমন শক্ত করে যমীন চাপা দেবে
যে, তার পাঁজরের হাড়গুলো পরস্পরের মাঝে ঢুকে পরবে। (কিয়ামাতের দিন) আল্লাহ তাকে
তার এ বিছানা হতে উঠানো পর্যন্ত সে লোক এভাবেই আযাব পেতে থাকবে।
-হাসান, মিশকাত (১৩০), সহীহাহ্ (১৩৯১)।
আলী, যাইদ ইবনু সাবিত, ইবনু আব্বাস, বারাআ ইবনু আযিব, আবূ আইয়ূব,
আনাস, জাবির, আইশা ও আবূ সাঈদ (রাঃ) সকলেই এ অনুচ্ছেদে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে কবরের শাস্তি সম্পর্কিত হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ হুরাইরা
(রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
১০৭২
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ،
عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا مَاتَ الْمَيِّتُ عُرِضَ عَلَيْهِ
مَقْعَدُهُ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ فَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَمِنْ
أَهْلِ الْجَنَّةِ وَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَمِنْ أَهْلِ النَّارِ
ثُمَّ يُقَالُ هَذَا مَقْعَدُكَ حَتَّى يَبْعَثَكَ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক মারা গেলে তার সামনে সকাল ও সন্ধ্যায় তার
(আখিরাতের) বাসস্থান তুলে ধরা হয়। সে লোক জান্নাতে বসবাসকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলে
তাকে জান্নাতের জায়গা দেখানো হয়। আর যদি সে লোক জাহান্নাম বাসীদের অন্তর্ভুক্ত
হয় তাহলে তাকে জাহান্নামীদের জায়গা দেখানো হয়। তারপর বলা হয়, তোমার থাকার
জায়গা এটাই। তোমাকে কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা'আলা এখানে পাঠাবেন।
-সহীহ্ বুখারী ও মুসলিম।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭১. অনুচ্ছেদঃ
বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে সান্ত্বনা দেয়ার সাওয়াব
১০৭৩
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ عِيسَى،
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَاصِمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا وَاللَّهِ، مُحَمَّدُ بْنُ
سُوقَةَ عَنْ إِبَرْاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ عَزَّى مُصَابًا فَلَهُ
مِثْلُ أَجْرِهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ
نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَلِيِّ بْنِ عَاصِمٍ . وَرَوَى
بَعْضُهُمْ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سُوقَةَ بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ مَوْقُوفًا
وَلَمْ يَرْفَعْهُ . وَيُقَالُ أَكْثَرُ مَا ابْتُلِيَ بِهِ عَلِيُّ بْنُ
عَاصِمٍ بِهَذَا الْحَدِيثِ نَقَمُوا عَلَيْهِ .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে,
তাকেও দুর্দশাগ্রস্তের সমান বদলা দেয়া হয়।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৬০২)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। শুধু আলী ইবনু আসিমের সূত্রেই
আমরা হাদীসটি মারফূ হিসেবে জেনেছি। কিছু রাবী মুহাম্মাদ ইবনু সূকার সূত্রে এটা মাওকূফ
হিসেবে বর্ণনা করেছেন, মারফূ হিসেবে নয়। কথিত আছে যে, আলী ইবনু আসিম এই হাদীসের জন্যে
সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। মুহাদ্দিসগণ তাকে দোষারোপ করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৭২. অনুচ্ছেদঃ
জুমু'আর দিন যে লোক মৃত্যু বরণ করে
১০৭৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، وَأَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ
قَالاَ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِلاَلٍ، عَنْ
رَبِيعَةَ بْنِ سَيْفٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ يَوْمَ
الْجُمُعَةِ أَوْ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ إِلاَّ وَقَاهُ اللَّهُ فِتْنَةَ الْقَبْرِ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَلَيْسَ إِسْنَادُهُ
بِمُتَّصِلٍ . رَبِيعَةُ بْنُ سَيْفٍ إِنَّمَا يَرْوِي عَنْ أَبِي عَبْدِ
الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَلاَ نَعْرِفُ
لِرَبِيعَةَ بْنِ سَيْفٍ سَمَاعًا مِنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو .
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জুমু‘আর দিনে অথবা জুমু‘আর রাতে কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি
মৃত্যুবরণ করে তাহলে কবরের শাস্তি হতে আল্লাহ তাকে রক্ষা করেন।
-হাসান, মিশকাত (১৩৬৭), আল আহকাম (৩৫)।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা গারীব বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, এর সনদ পরস্পর
সংযুক্ত নয়। কেননা আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)-এর নিকট হতে রাবীআ ইবনু সাইফ আব্দুল্লাহ
ইবনু আমর হতে কোন হাদীস শুনেছেন বলে আমাদের জানা নেই। মূলতঃ তিনি আবদুর রহমান আল-হুবুল্লীর
সূত্রে আব্দুল্লাহ ইবনু আমর হতে হাদীস বর্ণনা করেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৭৩. অনুচ্ছেদঃ
তাড়াতাড়ি জানাযার ব্যবস্থা করা
১০৭৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْجُهَنِيِّ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ عُمَرَ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهُ
" يَا عَلِيُّ ثَلاَثٌ لاَ تُؤَخِّرْهَا الصَّلاَةُ إِذَا آنَتْ وَالْجَنَازَةُ
إِذَا حَضَرَتْ وَالأَيِّمُ إِذَا وَجَدْتَ لَهَا كُفْؤًا " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَمَا أَرَى إِسْنَادَهُ بِمُتَّصِلٍ .
আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাকে বলেনঃ হে আলী! তিনটি কাজে দেরি করবে না। নামায- যখন ওয়াক্ত হয়ে যায়;
জানাযা- যখন উপস্থিত হয় এবং বিধবা- যখন তার যোগ্য পাত্র পাওয়া যায়।
যঈফ, মিশকাত (১৪৮৬)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা এর সনদ পরস্পর সংযুক্ত আছে
বলে মনে করি না।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৭৪. অনুচ্ছেদঃ
বিপদগ্রস্তের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের ফাযীলাত
১০৭৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ
الْمُؤَدِّبُ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَتْنَا أُمُّ
الأَسْوَدِ، عَنْ مُنْيَةَ بِنْتِ عُبَيْدِ بْنِ أَبِي بَرْزَةَ، عَنْ جَدِّهَا
أَبِي بَرْزَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ
عَزَّى ثَكْلَى كُسِيَ بُرْدًا فِي الْجَنَّةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَلَيْسَ إِسْنَادُهُ بِالْقَوِيِّ .
আবূ বারযা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক সন্তানহারা মহিলাকে সমবেদনা জানায় তাকে জান্নাতে একটি
কারুকার্য খচিত চাদর পরিয়ে দেয়া হবে।
যঈফ, মিশকাত (১৭৩৮)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব এবং এর সনদ মজবুত নয়।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৭৫. অনুচ্ছেদঃ
জানাযা আদায়ে দুই হাত উঠানো (রাফউল ইয়াদাইন)
১০৭৭
حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ دِينَارٍ
الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبَانَ الْوَرَّاقُ، عَنْ يَحْيَى
بْنِ يَعْلَى الأَسْلَمِيِّ، عَنْ أَبِي فَرْوَةَ، يَزِيدَ بْنِ سِنَانٍ عَنْ
زَيْدٍ، وَهُوَ ابْنُ أَبِي أُنَيْسَةَ عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهُ صلى الله عليه وسلم
كَبَّرَ عَلَى جَنَازَةٍ فَرَفَعَ يَدَيْهِ فِي أَوَّلِ تَكْبِيرَةٍ وَوَضَعَ
الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ
نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي
هَذَا فَرَأَى أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنْ يَرْفَعَ الرَّجُلُ يَدَيْهِ فِي كُلِّ تَكْبِيرَةٍ عَلَى
الْجَنَازَةِ . وَهُوَ قَوْلُ ابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ
وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ إِلاَّ
فِي أَوَّلِ مَرَّةٍ . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ .
وَذُكِرَ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ فِي الصَّلاَةِ عَلَى
الْجَنَازَةِ لاَ يَقْبِضُ يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ . وَرَأَى بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ أَنْ يَقْبِضَ بِيَمِينِهِ عَلَى شِمَالِهِ كَمَا يَفْعَلُ فِي
الصَّلاَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى يَقْبِضُ أَحَبُّ إِلَىَّ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এক জানাযা আদায়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বললেন এবং প্রথম তাকবীরেই শুধু হাত
দুটোকে উঠালেন (রাফউল ইয়াদাইন করলেন)। ডান হাতকে তিনি বাম হাতের উপর রাখলেন।
-হাসান, আল আহকাম (১১৫, ১১৬)।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা গারীব বলেছেন। হাদীসটি শুধুমাত্র উল্লেখিত
সূত্রেই আমরা জেনেছি। আলিমগণের মাঝে জানাযায় কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠানো প্রসঙ্গে মতের
অমিল রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ সাহাবী
ও অপরাপর আলিমের মতে, জানাযায় প্রতি তাকবীরেই হাত দুটোকে উঠাতে হবে। এরকম মত ইবনুল
মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকেরও। অপর একদল বিশেষজ্ঞ আলিম তা শুধুমাত্র প্রথম তাকবীরের
সময়ই করতে হবে বলেছেন। এই মত সুফিয়ান সাওরী ও কূফাবাসী আলিমগণের। ইবনুল মুবারাক বলেন,
জানাযায় ডান হাত দিয়ে বাম হাতকে ধরবে না (দুই হাতই ঝুলিয়ে রাখবে)। অপর একদল আলিম
বলেছেন, অন্যসব নামাযের অনুরূপ জানাযাতেও ডান হাত দিয়ে বাম হাতকে ধরবে। আবূ ঈসা ডান
হাত দিয়ে বাম হাত ধরাকেই উত্তম মনে করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
·
৭৬. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ
মু'মিন ব্যক্তির রূহ্ দেনা পরিশোধ না করা পর্যন্ত দেনার সাথে বন্ধক অবস্থায় থাকে
১০৭৮
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ،
حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ سَعْدِ
بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نَفْسُ الْمُؤْمِنِ مُعَلَّقَةٌ
بِدَيْنِهِ حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ " .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু'মিন ব্যক্তির রূহ্ ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত তার ঋণের
সাথে বন্ধক অবস্থায় থাকে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৪১৩)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০৭৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ
سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " نَفْسُ
الْمُؤْمِنِ مُعَلَّقَةٌ بِدَيْنِهِ حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ وَهُوَ أَصَحُّ مِنَ الأَوَّلِ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ মু'মিন ব্যক্তির রূ্হ্ ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত তার ঋণের সাথে
বন্ধক থাকে।
-সহীহ, পূর্বের হাদীসের কারণে।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। পূর্বোক্ত হাদীসের তুলনায়
এটা বেশি সহী্হ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
No comments