জামে' আত-তিরমিজি - অধ্যায় "কিতাবুল সিয়াম (রোযা)" হাদিস নং- ৬৮২- ৮০৮
কিতাবুল সিয়াম (রোযা)
১. অনুচ্ছেদঃ
রমযান মাসের ফাযীলাত
৬৮২
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ بْنِ كُرَيْبٍ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ
بْنُ عَيَّاشٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا كَانَ أَوَّلُ
لَيْلَةٍ مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ صُفِّدَتِ الشَّيَاطِينُ وَمَرَدَةُ الْجِنِّ
وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ النَّارِ فَلَمْ يُفْتَحْ مِنْهَا بَابٌ. وَفُتِّحَتْ
أَبْوَابُ الْجَنَّةِ فَلَمْ يُغْلَقْ مِنْهَا بَابٌ وَيُنَادِي مُنَادٍ يَا
بَاغِيَ الْخَيْرِ أَقْبِلْ وَيَا بَاغِيَ الشَّرِّ أَقْصِرْ وَلِلَّهِ عُتَقَاءُ
مِنَ النَّارِ وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَسَلْمَانَ .
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ শাইতান ও দুষ্ট জিন্দেরকে রমযান মাসের প্রথম রাতেই শৃঙ্খলাবদ্ধ
করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয় এবং এর একটি দরজাও তখন আর খোলা হয়
না, খুলে দেওয়া হয় জান্নাতের দরজাগুলো এবং এর একটি দরজাও তখন আর বন্ধ করা হয় না।
(এ মাসে) একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকেনঃ হে কল্যাণ অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। হে
পাপাসক্ত! বিরত হও। আর বহু লোককে আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ হতে এ মাসে জাহান্নাম থেকে
মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং প্রত্যেক রাতেই এরূপ হতে থাকে।
-সহীহ্ ইবনু মা-জাহ (১৬৪২)
আবদুর রাহমান ইবনু আওফ, ইবনু মাসঊদ ও সালমান (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৮৩
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ،
وَالْمُحَارِبِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ صَامَ
رَمَضَانَ وَقَامَهُ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ
ذَنْبِهِ وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ
مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ " . هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ الَّذِي رَوَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ
حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ رِوَايَةِ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ عَنِ
الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي
بَكْرٍ .
قَالَ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ، فَقَالَ
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الرَّبِيعِ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، قَوْلَهُ " إِذَا كَانَ أَوَّلُ لَيْلَةٍ مِنْ
شَهْرِ رَمَضَانَ " . فَذَكَرَ الْحَدِيثَ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَهَذَا
أَصَحُّ عِنْدِي مِنْ حَدِيثِ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঈমানের সাথে এবং
সাওয়াবের আশা করে যে লোক রমযান মাসের রোযা পালন করলো এবং (ইবাদাতের উদ্দেশ্যে)
রাতে জেগে রইলো, তার পূর্ববর্তী গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর ঈমানের সাথে
এবং সাওয়াবের আশা করে যে লোক লাইলাতুল কাদ্রের (ইবাদাতের জন্য) রাতে জেগে থাকে,
তার পূর্ববর্তী গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হয়।
-সহীহ্ ইবনু মা-জাহ (১৩২৬), বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা আবূ বাক্র ইবনু আইয়াসের সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর
বর্ণিত হাদীসটিকে গারীব বলেছেন। আমরা আমাশ-আবূ সালিহ-এর সূত্রে বর্ণিত আবূ হুরায়রা
(রাঃ)-এর হাদীসটিকে শুধুমাত্র আবূ বাক্র ইবনু আইয়াসের মাধ্যমেই জেনেছি। আমি এ হাদীস
প্রসঙ্গে মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, হাসান ইবনুর রাবী, আবুল আহওয়াস
হতে, তিনি আমাশ হতে, তিনি মুজাহিদ হতে তাঁর বক্তব্য হিসাবে বর্ণিত রমযান মাসের প্রথম
রাতে...... হাদীসের শেষ পর্যন্ত। মুহাম্মাদ বলেন, আমার নিকটে এই সনদটি আবূ বাক্র ইবনু
আইয়াসের তুলনায় বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২. অনুচ্ছেদঃ
রমযান মাস আসার
পূর্বক্ষণে রোযা পালন করো না
৬৮৪
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم " لاَ تَقَدَّمُوا الشَّهْرَ بِيَوْمٍ وَلاَ بِيَوْمَيْنِ
إِلاَّ أَنْ يُوَافِقَ ذَلِكَ صَوْمًا كَانَ يَصُومُهُ أَحَدُكُمْ صُومُوا
لِرُؤْيَتِهِ وَأَفْطِرُوا لِرُؤْيَتِهِ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَعُدُّوا
ثَلاَثِينَ ثُمَّ أَفْطِرُوا " . رَوَى مَنْصُورُ بْنُ الْمُعْتَمِرِ
عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ عَنْ بَعْضِ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِنَحْوِ هَذَا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ بَعْضِ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا أَنْ يَتَعَجَّلَ
الرَّجُلُ بِصِيَامٍ قَبْلَ دُخُولِ شَهْرِ رَمَضَانَ لِمَعْنَى رَمَضَانَ وَإِنْ
كَانَ رَجُلٌ يَصُومُ صَوْمًا فَوَافَقَ صِيَامُهُ ذَلِكَ فَلاَ بَأْسَ بِهِ
عِنْدَهُمْ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমযান মাস আসার
একদিন কিংবা দুইদিন পূর্ব থেকে তোমরা (নফল) রোযা পালন করো না। হ্যাঁ, তবে তোমাদের
কারো পূর্ব অভ্যাস অনুযায়ী রোযা পালনের দিন পড়ে গেলে সে ঐ দিনের রোযা পালন করতে
পারবে। তোমরা রোযা রাখ চাঁদ দেখে এবং রোযা শেষও কর চাঁদ দেখেই। (২৯ তারিখে) আকাশ
মেঘাচ্ছন্ন থাকলে ত্রিশ দিন পুরো কর চাঁদ দেখতে না পেলে), এরপর ইফ্তার কর (রোযা
শেষ কর)।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৫০ ও ১৬৫৫), বুখারী, মুসলিম
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু সংখ্যক
সাহাবী হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেন। তাদের মতে
রমযান মাস শুরুর অব্যবহিত পূর্বে রমযানের মর্যাদার লক্ষ্যে রোযা পালন করা মাকরূহ্।
তবে কোন নির্ধারিত দিনে রোযা আদায়ের পূর্ব-অভ্যাস কারো থাকলে এবং রমযানের আগের দিন
সেই দিন হলে তবে এদিনে তার রোযা পালনে কোন সমস্যা নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৮৫
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْمُبَارَكِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ
أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَقَدَّمُوا شَهْرَ رَمَضَانَ بِصِيَامٍ
قَبْلَهُ بِيَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ رَجُلٌ كَانَ يَصُومُ
صَوْمًا فَلْيَصُمْهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রমযান মাস
শুরুর এক দিন বা দু’দিন আগে রোযা পালন করো না। হ্যাঁ, তবে যে লোক অভ্যাসমত রোযা
পালন করে সে লোক ঐ দিনে রোযা পালন করতে পারে।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৫০), বুখারী, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩. অনুচ্ছেদঃ
সন্দেহযুক্ত দিনে
রোযা পালন করা মাকরূহ্
৬৮৬
حَدَّثَنَا
أَبُو سَعِيدٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ
الأَحْمَرُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ قَيْسٍ الْمُلاَئِيِّ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ
صِلَةَ بْنِ زُفَرَ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ فَأُتِيَ بِشَاةٍ
مَصْلِيَّةٍ فَقَالَ كُلُوا . فَتَنَحَّى بَعْضُ الْقَوْمِ فَقَالَ إِنِّي
صَائِمٌ . فَقَالَ عَمَّارٌ مَنْ صَامَ الْيَوْمَ الَّذِي يَشُكُّ فِيهِ
النَّاسُ فَقَدْ عَصَى أَبَا الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَمَّارٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنَ
التَّابِعِينَ وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَمَالِكُ بْنُ أَنَسٍ
وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ
كَرِهُوا أَنْ يَصُومَ الرَّجُلُ الْيَوْمَ الَّذِي يُشَكُّ فِيهِ وَرَأَى
أَكْثَرُهُمْ إِنْ صَامَهُ فَكَانَ مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ أَنْ يَقْضِيَ يَوْمًا
مَكَانَهُ .
সিলা ইবনু যুফার
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ)-এর নিকটে আমরা উপস্থিত ছিলাম। একটি ভুনা বক্রী
(খাবারের উদ্দেশ্যে) নিয়ে আসা হলে তিনি বললেন, তোমরা সকলেই খাও। কিন্তু কোন এক
লোক দূরে সরে গিয়ে বলল, আমি রোযাদার। আম্মার (রাঃ) বললেন, সন্দেহযুক্ত দিনে যে
লোক রোযা পালন করে সে লোক আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নাফারমানী করে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৪৫)
আবূ হুরায়রা ও আনাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা আম্মার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈদের মধ্যে
বেশিরভাগই আমল করেছেন। সুফিয়ান সাওরী, মালিক ইবনু আনাস, আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক,
শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর এরকমই অভিমত। সন্দেহের দিনে রোযা পালন করাকে তারা
মাকরূহ বলেছেন। উক্ত দিনে কেউ রোযা পালন করলে আর তা রমযান মাস হলে, তথাপিও বেশিরভাগ
আলিমের মত অনুযায়ী সে লোককে এই দিনের স্থলে একটি কাযা রোযা পালন করতে হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪. অনুচ্ছেদঃ
রমযান মাস নির্ধারণের
উদ্দেশ্যে শাবানের চাঁদের গণনা
৬৮৭
حَدَّثَنَا
مُسْلِمُ بْنُ حَجَّاجٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو
مُعَاوِيَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَحْصُوا
هِلاَلَ شَعْبَانَ لِرَمَضَانَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي
هُرَيْرَةَ لاَ نَعْرِفُهُ مِثْلَ هَذَا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ
. وَالصَّحِيحُ مَا رُوِيَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ أَبِي سَلَمَةَ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ
تَقَدَّمُوا شَهْرَ رَمَضَانَ بِيَوْمٍ وَلاَ يَوْمَيْنِ " . وَهَكَذَا
رُوِيَ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوُ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ
عَمْرٍو اللَّيْثِيِّ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রমযানের মাস
নির্ধারণের জন্য শাবানের চাঁদেরও হিসাব রাখ।
-হাসান, সহীহা (৫৬৫)
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি গারীব। এ হাদীস
আবূ মুআবিয়ার সূত্র ব্যতীত আর কোন সূত্রে আমরা জানতে সক্ষম হইনি। সহীহ্ রিওয়ায়াত
হলঃ মুহাম্মাদ ইবনু আম্র-আবূ সালামা হতে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমযান মাসকে তোমরা এক দিন
বা দু’দিন এগিয়ে সামনে নিয়ে আসবে না। ইয়াহইয়া ইবনু কাসীর হতে তিনি আবূ সালামা হতে,
তিনি আবূ হুরায়রা হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে মুহাম্মাদ
ইবনু আমর আল-লাইসীর হাদীসের মতই হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৫. অনুচ্ছেদঃ
চাঁদ দেখে রোযা আরম্ভ
করা এবং চাঁদ দেখে রোযা শেষ করা
৬৮৮
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ
عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" لاَ تَصُومُوا قَبْلَ رَمَضَانَ صُومُوا لِرُؤْيَتِهِ وَأَفْطِرُوا
لِرُؤْيَتِهِ فَإِنْ حَالَتْ دُونَهُ غَيَايَةٌ فَأَكْمِلُوا ثَلاَثِينَ يَوْمًا
" . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي بَكْرَةَ وَابْنِ
عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রমযানের
পূর্বে রোযা রেখ না। তোমরা রমযানের চাঁদ দেখার পর রোযা রাখা আরম্ভ কর এবং চাঁদ
দেখার পর তা ভাঙ্গ। মেঘের কারণে চাঁদ দেখা না গেলে তবে ত্রিশ দিন পূর্ণ কর।
-সহীহ আবূ দাঊদ (২০১৬)
আবূ হুরায়রা, আবূ বক্রা ও ইবনু উমর (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস
বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। তাঁর
নিকট হতে এটি একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬. অনুচ্ছেদঃ
উনত্রিশ দিনেও একমাস
পূর্ণ হয়
৬৮৯
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ،
أَخْبَرَنِي عِيسَى بْنُ دِينَارٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ
بْنِ أَبِي ضِرَارٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ مَا صُمْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم تِسْعًا وَعِشْرِينَ أَكْثَرُ مِمَّا صُمْنَا ثَلاَثِينَ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ وَسَعْدِ بْنِ أَبِي
وَقَّاصٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَنَسٍ وَجَابِرٍ وَأُمِّ سَلَمَةَ
وَأَبِي بَكْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الشَّهْرُ
يَكُونُ تِسْعًا وَعِشْرِينَ " .
ইবনু মাসঊদ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা যতবার ত্রিশ
দিন রোযা পালন করেছি, এর চেয়ে বেশি ঊনত্রিশ দিন রোযা পালন করেছি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৫৮)
উমার, আবূ হুরায়রা, আইশা, সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস, ইবনু আব্বাস,
ইবনু উমার, আনাস, জা-বির, উম্মু সালামা ও আবূ বাক্রা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস
বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ উনত্রিশ দিনেও
মাস পূর্ণ হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৯০
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ
أَنَسٍ، أَنَّهُ قَالَ آلَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ نِسَائِهِ
شَهْرًا فَأَقَامَ فِي مَشْرُبَةٍ تِسْعًا وَعِشْرِينَ يَوْمًا قَالُوا يَا
رَسُولَ اللَّهِ إِنَّكَ آلَيْتَ شَهْرًا فَقَالَ " الشَّهْرُ تِسْعٌ
وَعِشْرُونَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার এক মাসের জন্য তাঁর
স্ত্রীদের সাথে ঈলা (শপথ) করেন। ঘরের মাচানের একটি কক্ষে তিনি ২৯ দিন থাকেন।
লোকেরা বলল, হে রাসূলুল্লাহ! আপনি তো এক মাসের জন্য ঈলা (শপথ) করেছিলেন? তিনি
বললেনঃ এই মাসটি ঊনত্রিশ দিনের।
-সহীহ, বুখারী।
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদঃ ৭
সাক্ষ্যের ভিত্তিতে
রোযা রাখা
৬৯১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ أَبِي ثَوْرٍ، عَنْ
سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنِّي رَأَيْتُ الْهِلاَلَ . قَالَ
" أَتَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَتَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا
رَسُولُ اللَّهِ " . قَالَ نَعَمْ . قَالَ " يَا بِلاَلُ
أَذِّنْ فِي النَّاسِ أَنْ يَصُومُوا غَدًا " .
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ الْجُعْفِيُّ، عَنْ زَائِدَةَ،
عَنْ سِمَاكٍ، نَحْوَهُ بِهَذَا الإِسْنَادِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ
عَبَّاسٍ فِيهِ اخْتِلاَفٌ . وَرَوَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، وَغَيْرُهُ، عَنْ
سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً
وَأَكْثَرُ أَصْحَابِ سِمَاكٍ رَوَوْا عَنْ سِمَاكٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ
عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا تُقْبَلُ شَهَادَةُ رَجُلٍ وَاحِدٍ فِي
الصِّيَامِ . وَبِهِ يَقُولُ ابْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ
وَأَهْلُ الْكُوفَةِ . قَالَ إِسْحَاقُ لاَ يُصَامُ إِلاَّ بِشَهَادَةِ
رَجُلَيْنِ . وَلَمْ يَخْتَلِفْ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الإِفْطَارِ أَنَّهُ لاَ
يُقْبَلُ فِيهِ إِلاَّ شَهَادَةُ رَجُلَيْنِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, কোন এক বিদুঈন ব্যক্তি নবীর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এসে
বলল, আমি (রামাযানের) নতুন চাঁদ দেখেছি। তিনি বললেন তুমি কি এ কথার সাক্ষ্য দাও
যে, আল্লাহ্ তা‘আলা ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই? তুমি কি আরো সাক্ষ্য দাও যে,
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্ তা‘আলার রাসূল? সে বলল,
হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ হে বিলাল! লোকদের মধ্যে ঘোষণা করে দাও তারা যেন আগামীকাল হতে
রোযা রাখে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৬৫২)
অন্য একটি সূত্রেও একই রকম হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবূ ঈসা বলেন,
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের সনদে মতের অমিল আছে। সুফিয়ান সাওরী প্রমুখ এটিকে
সিমাক ইবনু হারব, ইকরিমার সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ আলিম এই হাদীস অনুযায়ী আমল করার কথা
বলেছেন। তাঁরা বলেন, রোযার ব্যাপারে এক ব্যক্তির সাক্ষ্যের ভিত্তিতে রোযা রাখা যাবে।
ইবনুল মুবারক, শাফিঈ, আহ্মাদ ও কূফাবাসীদের এই মত। ইসহাক বলেন, দুই ব্যক্তির সাক্ষ্য
ব্যতীত রোযা রাখা যাবে না। তবে রোযা ভেঙে ফেলার ব্যাপারে আলিমদের মধ্যে মতের অমিল নেই
যে, এই ব্যাপারে দুই ব্যক্তির সাক্ষ্য আবশ্যিক।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৮. অনুচ্ছেদঃ
ঈদের দুই মাস কম হয়
না
৬৯২
حَدَّثَنَا
أَبُو سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ
الْمُفَضَّلِ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي
بَكْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
شَهْرَا عِيدٍ لاَ يَنْقُصَانِ رَمَضَانُ وَذُو الْحِجَّةِ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي بَكْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا
الْحَدِيثُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم مُرْسَلاً . قَالَ أَحْمَدُ مَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ "
شَهْرَا عِيدٍ لاَ يَنْقُصَانِ " . يَقُولُ لاَ يَنْقُصَانِ مَعًا فِي
سَنَةٍ وَاحِدَةٍ شَهْرُ رَمَضَانَ وَذُو الْحِجَّةِ إِنْ نَقَصَ أَحَدُهُمَا
تَمَّ الآخَرُ . وَقَالَ إِسْحَاقُ مَعْنَاهُ " لاَ يَنْقُصَانِ "
يَقُولُ وَإِنْ كَانَ تِسْعًا وَعِشْرِينَ فَهُوَ تَمَامٌ غَيْرُ نُقْصَانٍ .
وَعَلَى مَذْهَبِ إِسْحَاقَ يَكُونُ يَنْقُصُ الشَّهْرَانِ مَعًا فِي سَنَةٍ
وَاحِدَةٍ .
আবূ বাক্রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দুই ঈদের মাস রমযান
ও যুলহিজ্জা (একসঙ্গে) কম হয় না।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৫৯), বুখারী, মুসলিম
আবূ বাক্রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। আবদুর
রাহমান ইবনু আবূ বাক্রার সূত্রে এ হাদীসটি মুরসাল হিসেবেও বর্ণিত আছে। ইমাম আহ্মাদ
এ হাদীসের তাৎপর্য প্রসঙ্গে বলেনঃ "একসাথে দুই ঈদের মাস কম হয় না। অর্থাৎ একই
বৎসর একটি মাস কম হয়ে গেলে (২৯ দিন হলে) অন্যটি পূর্ণ হবে" (৩০ দিন হবে)। ইসহাক
বলেন, কম হবে না অর্থ হচ্ছে উনত্রিশ দিনে মাস হলেও পূর্ণ মাস হিসাবে এটি গণ্য হবে,
তাতে কোনরকম অপূর্ণতা নেই। ইসহাক (রহঃ)-এর মতানুসারে এই দুই মাস একই বছরে কম (২৯ দিনে)
হতে পারে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯. অনুচ্ছেদঃ
প্রত্যেক অঞ্চলের
লোকদের জন্য তাদের চাঁদ দেখাই ধর্তব্য হবে
৬৯৩
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي حَرْمَلَةَ، أَخْبَرَنِي كُرَيْبٌ، أَنَّ أُمَّ الْفَضْلِ
بِنْتَ الْحَارِثِ، بَعَثَتْهُ إِلَى مُعَاوِيَةَ بِالشَّامِ . قَالَ فَقَدِمْتُ
الشَّامَ فَقَضَيْتُ حَاجَتَهَا وَاسْتُهِلَّ عَلَىَّ هِلاَلُ رَمَضَانَ وَأَنَا
بِالشَّامِ فَرَأَيْنَا الْهِلاَلَ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ ثُمَّ قَدِمْتُ
الْمَدِينَةَ فِي آخِرِ الشَّهْرِ فَسَأَلَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ ثُمَّ ذَكَرَ
الْهِلاَلَ فَقَالَ مَتَى رَأَيْتُمُ الْهِلاَلَ فَقُلْتُ رَأَيْنَاهُ لَيْلَةَ
الْجُمُعَةِ . فَقَالَ أَأَنْتَ رَأَيْتَهُ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ فَقُلْتُ رَآهُ
النَّاسُ وَصَامُوا وَصَامَ مُعَاوِيَةُ . قَالَ لَكِنْ رَأَيْنَاهُ لَيْلَةَ
السَّبْتِ فَلاَ نَزَالُ نَصُومُ حَتَّى نُكْمِلَ ثَلاَثِينَ يَوْمًا أَوْ نَرَاهُ
. فَقُلْتُ أَلاَ تَكْتَفِي بِرُؤْيَةِ مُعَاوِيَةَ وَصِيَامِهِ قَالَ لاَ
هَكَذَا أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى
هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ لِكُلِّ أَهْلِ بَلَدٍ
رُؤْيَتَهُمْ .
কুরাইব (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
মুআবিয়া
(রাঃ)-এর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে উম্মুল ফাযল বিনতুল হারিস (রাঃ) তাকে শামে
(সিরিয়ায়) প্রেরণ করেন। কুরাইব (রহঃ) বলেন, সিরিয়ায় পৌঁছার পর আমি উম্মুল ফাযল
(রাঃ)-এর কাজটি শেষ করলাম। আমি সিরিয়ায় থাকা অবস্থায়ই রমযান মাসের চাঁদ দেখতে
পাওয়া গেল। আমরা জুমু’আর রাতে (বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়) চাঁদ দেখতে পেলাম। রমযানের
শেষের দিকে আমি মাদীনায় ফিরে আসলাম। ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমাকে (কুশলাদি) জিজ্ঞাসা
করার পর চাঁদ দেখা প্রসঙ্গে উল্লেখ করে বললেন, কোন্ দিন তোমরা চাঁদ দেখতে
পেয়েছিলে? আমি বললাম, জুমু’আর রাতে চাঁদ দেখতে পেয়েছি। তিনি বললেন, জুমু’আর রাতে
তুমি কি স্বয়ং চাঁদ দেখতে পেয়েছ? আমি বললাম, লোকেরা দেখতে পেয়েছে এবং তারা
রোযাও পালন করেছে, মুআবিয়া (রাঃ)-ও রোযা পালন করেছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন,
কিন্তু আমরা শনিবার (শুক্রবার দিবাগত) রাত্রে চাঁদ দেখেছি। অতএব ত্রিশ দিন পুরো না
হওয়া পর্যন্ত অথবা চাঁদ না দেখা পর্যন্ত আমরা রোযা পালন করতে থাকব। আমি বললাম,
মুআবিয়া (রাঃ)-এর চাঁদ দেখা ও তার রোযা থাকা আপনার জন্য কি যথেষ্ট নয়? তিনি
বলেন, না। আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করতে
নির্দেশ দিয়েছেন।
- সহিহ, সহিহ আবু দাউদ (১০২১), মুসলিম।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্
গারীব বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতে প্রত্যেক
অঞ্চলের লোকদের জন্য তাদের চাঁদ দেখাই ধর্তব্য হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০. অনুচ্ছেদঃ
যে সব খাদ্য সামগ্ৰী
দিয়ে ইফতার করা মুস্তাহাব
৬৯৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُمَرَ بْنِ عَلِيٍّ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ
عَامِرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ
وَجَدَ تَمْرًا فَلْيُفْطِرْ عَلَيْهِ وَمَنْ لاَ فَلْيُفْطِرْ عَلَى مَاءٍ
فَإِنَّ الْمَاءَ طَهُورٌ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَلْمَانَ بْنِ
عَامِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ لاَ نَعْلَمُ أَحَدًا رَوَاهُ عَنْ
شُعْبَةَ مِثْلَ هَذَا غَيْرَ سَعِيدِ بْنِ عَامِرٍ وَهُوَ حَدِيثٌ غَيْرُ مَحْفُوظٍ
وَلاَ نَعْلَمُ لَهُ أَصْلاً مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ عَنْ
أَنَسٍ . وَقَدْ رَوَى أَصْحَابُ شُعْبَةَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ
عَاصِمٍ الأَحْوَلِ عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ عَنِ الرَّبَابِ عَنْ سَلْمَانَ
بْنِ عَامِرٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ
سَعِيدِ بْنِ عَامِرٍ . وَهَكَذَا رَوَوْا عَنْ شُعْبَةَ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ
حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ عَنْ سَلْمَانَ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ شُعْبَةُ عَنِ
الرَّبَابِ . وَالصَّحِيحُ مَا رَوَاهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ
عُيَيْنَةَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ
سِيرِينَ عَنِ الرَّبَابِ عَنْ سَلْمَانَ بْنِ عَامِرٍ . وَابْنُ عَوْنٍ يَقُولُ
عَنْ أُمِّ الرَّائِحِ بِنْتِ صُلَيْعٍ عَنْ سَلْمَانَ بْنِ عَامِرٍ . وَالرَّبَابُ
هِيَ أُمُّ الرَّائِحِ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি
(ইফ্তারের সময়) খেজুর পায় সে যেন তা দিয়ে ইফ্তর করে। আর যে ব্যক্তি তা না পায় সে
যেন পানি দিয়ে ইফ্তার করে। যেহেতু পানি পবিত্র বা পবিত্রকারী।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৬৯৯)
এই অনুচ্ছেদে সালমান ইবনু আমির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
ঈসা বলেন, এই হাদীসটি শুবার সূত্রে সাঈদ ইবনু আমির ছাড়া অন্য কেউ এরকম বর্ণনা করেছেন
বলে আমাদের জানা নেই। এই হাদীসটি মাহফূয (নির্ভরযোগ্য) নয়। আবদুল আযীয ইবনু সুহাইব-আনাস
(রাঃ)সূত্রে বর্ণিত হাদীস হিসাবে এটির কোন ভিত্তি আছে বলে আমাদের জানা নেই। শুবার শাগরিদ্গণ
এই হাদীস শুবা হতে তিনি আসিম আল-আহওয়াল হতে তিনি হাফসা বিনতি সীরীন হতে তিনি রাবাব
হতে তিনি সালমান ইবনু আমির হতে তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে বর্ণনা করেছেন। সাঈদ ইবনু আমিরের রিওয়াতের তুলনায় এটি বেশী সহীহ্। তারপর তারা শুবা,
আসিম, হাফসা বিনতি সীরীন, সালমান ইবনু আমিরের সনদেও এটি বর্ণনা করেছেন। এতে শুবা রাবাব-এর
নাম উল্লেখ করেননি। সুফিয়ান সাওরী, ইবনু উআইনা প্রমুখ রাবী আসিম আল-আহওয়াল, হাফসা বিনতি
সীরীন, রাবাব, সালমান ইবনু আমির হতে এই বর্ণনাটিই সহীহ। রাবাব হলেন উম্মুর রায়িহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৬৯৫
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ
عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، ح وَحَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ
عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، . وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ أَنْبَأَنَا سُفْيَانُ
بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ، عَنِ
الرَّبَابِ، عَنْ سَلْمَانَ بْنِ عَامِرٍ الضَّبِّيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَفْطَرَ أَحَدُكُمْ فَلْيُفْطِرْ عَلَى تَمْرٍ
" . زَادَ ابْنُ عُيَيْنَةَ " فَإِنَّهُ بَرَكَةٌ فَمَنْ لَمْ
يَجِدْ فَلْيُفْطِرْ عَلَى مَاءٍ فَإِنَّهُ طَهُورٌ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সালমান ইবনু আমির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন ইফ্তার করে তখন সে
যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে। ইবনু উআইনার বর্ণনায় আরো আছেঃ এতে বারকাত রয়েছে। কেউ
যদি তা না পায় তবে সে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কেননা পানি পবিত্র বা পবিত্রকারী।
এ বর্ণনাটিও যঈফ।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৬৯৬
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا جَعْفَرُ
بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ " كَانَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُفْطِرُ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ عَلَى رُطَبَاتٍ
فَإِنْ لَمْ تَكُنْ رُطَبَاتٌ فَتُمَيْرَاتٍ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تُمَيْرَاتٌ حَسَا
حَسَوَاتٍ مِنْ مَاءٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
غَرِيبٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرُوِيَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم كَانَ يُفْطِرُ فِي الشِّتَاءِ عَلَى تَمَرَاتٍ وَفِي الصَّيْفِ عَلَى
الْمَاءِ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মাগরিবের) নামায আদায়ের
পূর্বেই কয়েকটা তাজা খেজুর দ্বারা ইফ্তার করতেন। তিনি তাজা খেজুর না পেলে
কয়েকটা শুকনো খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন আর শুকনো খেজুরও না পেলে তবে কয়েক ঢোক
পানি পান করতেন।
-সহীহ্, ইরওয়া (৯২২), সহীহ আবূ দাঊদ (২০৪০)
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। অপর বর্ণনায় আছেঃ শীতের
সময় শুকনো খেজুর দ্বারা এবং গ্রীষ্মের সময় পানি দ্বারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইফ্তার করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১১. অনুচ্ছেদঃ
ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল
আয্হা সম্মিলিতভাবে পালন করা
৬৯৭
أَخْبَرَنِي
مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ،
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ مُحَمَّدٍ الأَخْنَسِيِّ، عَنْ سَعِيدٍ
الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " الصَّوْمُ يَوْمَ تَصُومُونَ وَالْفِطْرُ يَوْمَ تُفْطِرُونَ
وَالأَضْحَى يَوْمَ تُضَحُّونَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَفَسَّرَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ هَذَا الْحَدِيثَ فَقَالَ
إِنَّمَا مَعْنَى هَذَا أَنَّ الصَّوْمَ وَالْفِطْرَ مَعَ الْجَمَاعَةِ وَعُظْمِ
النَّاسِ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যেদিন তোমরা সবাই রোযা পালন কর সে দিন
হল রোযা। যেদিন তোমরা সবাই রোযা ভঙ্গ কর সে দিন হল ঈদুল ফিত্র। আর যেদিন তোমরা
সবাই কুরবানী কর সে দিন হল ঈদুল আয্হা।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৬০)
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান গারীব বলেছেন। এই হাদীসটি ব্যাখ্যা
করতে গিয়ে কোন কোন আলিম বলেন, এক সাথে এবং অধিক সংখ্যকের সাথে রোযা ও ঈদ পালন করতে
হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১২. অনুচ্ছেদঃ
যখন রাত আসে এবং দিন
চলে যায় তখন রোযাদার ইফতার করবে
৬৯৮
حَدَّثَنَا
هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ،
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ عُمَرَ
بْنِ الْخَطَّابِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِذَا أَقْبَلَ اللَّيْلُ وَأَدْبَرَ النَّهَارُ وَغَابَتِ الشَّمْسُ فَقَدْ
أَفْطَرْتَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ أَبِي أَوْفَى وَأَبِي
سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
উমার ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রাত আসে, দিন
চলে যায় এবং সূর্য অস্তমিত হয় তখন তুমি ইফতার কর।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২০৩৬), ইরওয়া (৯১৬), বুখারী, মুসলিম
ইবনু আবূ আওফা ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৩. অনুচ্ছেদঃ
বিলম্ব না করে ইফতার
করা
৬৯৯
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ
سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، ح قَالَ وَأَخْبَرَنَا أَبُو مُصْعَبٍ، قِرَاءَةً
عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَزَالُ النَّاسُ
بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الْفِطْرَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعَائِشَةَ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ الَّذِي
اخْتَارَهُ أَهْلُ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمُ اسْتَحَبُّوا تَعْجِيلَ الْفِطْرِ . وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ
وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
সাহল ইবনু সা’দ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যত দিন পর্যন্ত
লোকেরা বিলম্ব না করে ইফ্তার করবে তত দিন পর্যন্ত তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে।
-সহীহ, ইরওয়া (৯১৭)
আবূ হুরায়রা, ইবনু আব্বাস, আইশা ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও
এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। সূর্যাস্তের
পরপরই ইফ্তার করাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবীগণ
ও অপরাপর আলিম মুস্তাহাব বলে মনে করেন। ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকের এরকমই অভিমত
রয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭০০
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ
الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ قُرَّةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ
أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَحَبُّ عِبَادِي إِلَىَّ
أَعْجَلُهُمْ فِطْرًا " .
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা
বলেনঃ আমার বান্দাদের মাঝে যারা তাড়াতাড়ি ইফ্তার করে তারাই আমার বেশী প্রিয়।
যঈফ, মিশকাত (১৯৮৯), তা‘লীকুর রাগীব (২/৯৫), তা‘লীকুল জিয়াদ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৭০১
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا أَبُو عَاصِمٍ، وَأَبُو
الْمُغِيرَةِ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আব্দুল্লাহ ইব্নু
আবদুর রহমান থেকে বর্ণিতঃ
আব্দুল্লাহ
ইব্নু আবদুর রহমান...... আওযাঈ হতে উপোরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন।
য‘ঈফঃ দেখুন পূর্বের হাদীস
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৭০২
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ
عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي عَطِيَّةَ، قَالَ دَخَلْتُ أَنَا وَمَسْرُوقٌ، عَلَى
عَائِشَةَ فَقُلْنَا يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ رَجُلاَنِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَحَدُهُمَا يُعَجِّلُ الإِفْطَارَ وَيُعَجِّلُ
الصَّلاَةَ وَالآخَرُ يُؤَخِّرُ الإِفْطَارَ وَيُؤَخِّرُ الصَّلاَةَ . قَالَتْ
أَيُّهُمَا يُعَجِّلُ الإِفْطَارَ وَيُعَجِّلُ الصَّلاَةَ قُلْنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ مَسْعُودٍ . قَالَتْ هَكَذَا صَنَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
. وَالآخَرُ أَبُو مُوسَى . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
وَأَبُو عَطِيَّةَ اسْمُهُ مَالِكُ بْنُ أَبِي عَامِرٍ الْهَمْدَانِيُّ وَيُقَالُ
مَالِكُ بْنُ عَامِرٍ الْهَمْدَانِيُّ وَابْنُ عَامِرٍ أَصَحُّ .
আবূ আতিয়্যা (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ও মাস্রূক আইশা (রাঃ)-এর নিকটে গিয়ে বললাম, হে উম্মুল মু’মিনীন!
রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুজন সাহাবীর মধ্যে একজন ইফ্তার
করেন এবং নামায আদায় করেন বিলম্ব না করে আর অন্যজন ইফ্তার করেন এবং নামায আদায়
করেন বিলম্ব করে। তিনি বললেন, তাঁদের মধ্যে কে অবিলম্বে ইফ্তার করেন এবং নামায
আদায় করেন? আমরা বললাম, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)। তিনি বললেন, এভাবেই
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করেছেন। অপর সাহাবী ছিলেন আবূ
মূসা (রাঃ)।
-সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (২০৩৯), মুসলিম
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আবূ আতিয়্যার নাম
মালিক, পিতা আবূ আমির হামদানী, মতান্তরে ইবনু আমির এবং এটিই অধিকতর সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৪. অনুচ্ছেদঃ
বিলম্ব করে সাহ্রী
খাওয়া
৭০৩
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا
هِشَامٌ الدَّسْتَوَائِيُّ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ
زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، قَالَ تَسَحَّرْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
ثُمَّ قُمْنَا إِلَى الصَّلاَةِ . قَالَ قُلْتُ كَمْ كَانَ قَدْرُ ذَلِكَ قَالَ
قَدْرُ خَمْسِينَ آيَةً .
যাইদ ইবনু সাবিত
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সাহ্রী খাওয়া শেষ
করেই আমরা নামায আদায় করতে দাঁড়ালাম। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম,
কি পরিমাণ ব্যবধান ছিল এ দুটির মাঝে তিনি বললেন, পঞ্চাশ আয়াতের সমপরিমাণ
(তিলাওয়াতের সময়)।
-সহীহ, বুখারী, মুসলিম
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭০৪
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ هِشَامٍ، بِنَحْوِهِ إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ
قَدْرُ قِرَاءَةِ خَمْسِينَ آيَةً . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ حُذَيْفَةَ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ اسْتَحَبُّوا تَأْخِيرَ
السُّحُورِ .
হিশাম (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
উপরোক্ত হাদীসের ন্যায় বর্ণনা করেছেন হান্নাদ ওয়াকী হতে, তিনি
হিশাম হতে। তাতে আছে “পঞ্চাশ আয়াত পাঠের সমপরিমাণ”। হুযাইফা (রাঃ) হতেও এই
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে
হাসান সহীহ্ বলেছেন। এরকম মতই ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকের। বিলম্ব করে সাহ্রী
খাওয়াকে তাঁরা মুস্তাহাব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
১৫. অনুচ্ছেদঃ
ফজরের (সুবহি
সাদিকের) বর্ণনা
৭০৫
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا مُلاَزِمُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
النُّعْمَانِ، عَنْ قَيْسِ بْنِ طَلْقٍ، حَدَّثَنِي أَبِي طَلْقُ بْنُ عَلِيٍّ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " كُلُوا وَاشْرَبُوا
وَلاَ يَهِيدَنَّكُمُ السَّاطِعُ الْمُصْعِدُ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى
يَعْتَرِضَ لَكُمُ الأَحْمَرُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَدِيِّ
بْنِ حَاتِمٍ وَأَبِي ذَرٍّ وَسَمُرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ طَلْقِ
بْنِ عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَالْعَمَلُ عَلَى
هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّهُ لاَ يَحْرُمُ عَلَى الصَّائِمِ الأَكْلُ
وَالشُّرْبُ حَتَّى يَكُونَ الْفَجْرُ الأَحْمَرُ الْمُعْتَرِضُ . وَبِهِ
يَقُولُ عَامَّةُ أَهْلِ الْعِلْمِ .
তাল্ক ইবনু আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা (ভোররাতে) পানাহার করে যাও।
তোমাদের যেন উর্ধ্বগামী আলোকরশ্মি খাবার থেকে বিরত না রাখে। তোমরা পানাহার করে
যেতে পার লাল দীপ্তিটুকু প্রশস্তভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত।
-হাসান সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২০৩৩)
আদী ইবনু হাতিম, আবূ যার ও সামুরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস
বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা তাল্ক ইবনু আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে এই সূত্রে হাসান গারীব
বলেছেন। এ হাদীস মোতাবেক আলিমগণ অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, রোযা পালনকারীর জন্য ফজরের
লালচে আলো প্রস্থে বিস্তৃত না হওয়া পর্যন্ত পানাহার অবৈধ নয়। এটাই বেশিরভাগ আলিমের
মত।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
৭০৬
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، وَيُوسُفُ بْنُ عِيسَى، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ أَبِي هِلاَلٍ،
عَنْ سَوَادَةَ بْنِ حَنْظَلَةَ، هُوَ الْقُشَيْرِيُّ عَنْ سَمُرَةَ بْنِ
جُنْدَبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ
يَمْنَعَنَّكُمْ مِنْ سُحُورِكُمْ أَذَانُ بِلاَلٍ وَلاَ الْفَجْرُ الْمُسْتَطِيلُ
وَلَكِنِ الْفَجْرُ الْمُسْتَطِيرُ فِي الأُفُقِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
সামুরা ইবনু জুনদাব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদেরকে যেন সাহ্রী
খাওয়া হতে বিরত না রাখে বিলালের আযান এবং দিগন্তবৃত্তে প্রকাশিত ভোরের আলো (সুবহে
কাযিব), দিগন্তবৃত্তে উদ্ভাসিত বিস্তৃত আলো (সুবহি সাদিক) ব্যতীত।
-সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৩১), মুসলিম
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৬. অনুচ্ছেদঃ
রোযা থাকা অবস্থায়
গীবাত করা প্রসঙ্গে কঠোর হুঁশিয়ারি
৭০৭
حَدَّثَنَا
أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ،
أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ لَمْ
يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ بِأَنْ يَدَعَ
طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অন্যায় কথাবার্তা (গীবাত, মিথ্যা,
গালিগালাজ, অপবাদ, অভিসম্পাত ইত্যাদি) ও কাজ যে লোক (রোযা থাকা অবস্থায়) ছেড়ে না
দেয়, সে লোকের পানাহার ত্যাগে আল্লাহ্ তা’আলার কোন প্রয়োজন নেই।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৮৯), বুখারী
আনাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে
হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৭. অনুচ্ছেদঃ
সাহ্রী খাওয়ার
ফাযীলাত
৭০৮
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، وَعَبْدِ الْعَزِيزِ
بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " تَسَحَّرُوا فَإِنَّ فِي السُّحُورِ بَرَكَةً " . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَجَابِرِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعَمْرِو بْنِ الْعَاصِ وَالْعِرْبَاضِ
بْنِ سَارِيَةَ وَعُتْبَةَ بْنِ عَبْدٍ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাহ্রী খাও, কেননা, সাহ্রী
খাওয়ার মধ্যে বারকাত আছে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৯২), বুখারী, মুসলিম
আবূ হুরায়রা, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ, ইবনু
আব্বাস, আমর ইবনুল আস, ইরবায ইবনু সারিয়া, উতবা ইবনু আবদ ও আবূ দারদা (রাঃ) হতেও এ
অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্
বলেছেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আরও বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ
আমাদের ও আহ্লি কিতাবদের (ইয়াহুদী ও খৃষ্টান) রোযার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সাহ্রী
খাওয়া।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭০৯
وَرُوِيَ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " فَصْلُ مَا بَيْنَ
صِيَامِنَا وَصِيَامِ أَهْلِ الْكِتَابِ أَكْلَةُ السَّحَرِ " .
حَدَّثَنَا بِذَلِكَ قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ مُوسَى بْنِ عَلِيٍّ
عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي قَيْسٍ مَوْلَى عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ عَنْ عَمْرِو بْنِ
الْعَاصِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِذَلِكَ . قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَهْلُ مِصْرَ يَقُولُونَ مُوسَى بْنُ عَلِيٍّ وَأَهْلُ
الْعِرَاقِ يَقُولُونَ مُوسَى بْنُ عُلَىٍّ وَهُوَ مُوسَى بْنُ عَلِيِّ بْنِ
رَبَاحٍ اللَّخْمِيُّ .
কুতাইবা থেকে
বর্ণিতঃ
উপরোক্ত
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন কুতাইবা লাইস হতে, তিনি মূসা ইবনু আলী হতে, তিনি তার পিতা
(আলী) হতে, তিনি আবূ কাইস হতে, তিনি আমর ইবনুল আস (রাঃ)-এর সূত্রে, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে।
-সহীহ, হিজাবুল মারআতিল মুসলিমা (পৃঃ ৮৮), সহীহ আবূ দাঊদ (২০২৯), মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেন। এ হাদীসটির বর্ণনাকারী
মূসা প্রসঙ্গে মিসরবাসী (মুহাদ্দিসগণ) বলেন, মূসা ইবনু আলী এবং ইরাকবাসী (মুহাদ্দিসগণ)
বলেন, মূসা ইবনু উলাই। তিনি হলেন মূসা ইবনু উলাই ইবনু রাবাহ্ আল-লাখ্মী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৮. অনুচ্ছেদঃ
সফরে থাকাবস্থায়
রোযা পালন করা মাকরূহ
৭১০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ
مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ إِلَى مَكَّةَ عَامَ الْفَتْحِ فَصَامَ حَتَّى
بَلَغَ كُرَاعَ الْغَمِيمِ وَصَامَ النَّاسُ مَعَهُ فَقِيلَ لَهُ إِنَّ النَّاسَ
قَدْ شَقَّ عَلَيْهِمُ الصِّيَامُ وَإِنَّ النَّاسَ يَنْظُرُونَ فِيمَا فَعَلْتَ
. فَدَعَا بِقَدَحٍ مِنْ مَاءٍ بَعْدَ الْعَصْرِ فَشَرِبَ وَالنَّاسُ
يَنْظُرُونَ إِلَيْهِ فَأَفْطَرَ بَعْضُهُمْ وَصَامَ بَعْضُهُمْ فَبَلَغَهُ أَنَّ
نَاسًا صَامُوا فَقَالَ " أُولَئِكَ الْعُصَاةُ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ كَعْبِ بْنِ عَاصِمٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " لَيْسَ مِنَ الْبِرِّ الصِّيَامُ فِي
السَّفَرِ " . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الصَّوْمِ فِي السَّفَرِ
فَرَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ أَنَّ الْفِطْرَ فِي السَّفَرِ أَفْضَلُ حَتَّى رَأَى بَعْضُهُمْ
عَلَيْهِ الإِعَادَةَ إِذَا صَامَ فِي السَّفَرِ . وَاخْتَارَ أَحْمَدُ
وَإِسْحَاقُ الْفِطْرَ فِي السَّفَرِ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ إِنْ وَجَدَ قُوَّةً
فَصَامَ فَحَسَنٌ وَهُوَ أَفْضَلُ وَإِنْ أَفْطَرَ فَحَسَنٌ . وَهُوَ قَوْلُ
سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَمَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ
. وَقَالَ الشَّافِعِيُّ وَإِنَّمَا مَعْنَى قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
" لَيْسَ مِنَ الْبِرِّ الصِّيَامُ فِي السَّفَرِ " . وَقَوْلُهُ
حِينَ بَلَغَهُ أَنَّ نَاسًا صَامُوا فَقَالَ " أُولَئِكَ الْعُصَاةُ
" . فَوَجْهُ هَذَا إِذَا لَمْ يَحْتَمِلْ قَلْبُهُ قَبُولَ رُخْصَةِ
اللَّهِ فَأَمَّا مَنْ رَأَى الْفِطْرَ مُبَاحًا وَصَامَ وَقَوِيَ عَلَى ذَلِكَ
فَهُوَ أَعْجَبُ إِلَىَّ .
জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মক্কা
বিজয়ের বছর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার উদ্দেশ্যে
রাওয়ানা হন। তিনি রোযা রাখেন এবং লোকেরাও তাঁর সাথে রোযা রাখে। কুরাউল গামীমে
পৌঁছানোর পর তাঁকে বলা হল, রোযা রাখা লোকদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আপনি কি
করেন তারা সেই অপেক্ষায় আছে। আসরের নামায আদায়ের পর তিনি এক পেয়ালা পানি চেয়ে
আনালেন এবং তা পান করলেন। তখন লোকেরা তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখছিল। ফলে তাদের
মধ্যেকার কিছু লোক রোযা ভাঙ্গলো এবং কিছু লোক রোযা থাকল। তখনও কিছু লোক রোযা
অবস্থায় আছে এ কথা তাঁর নিকটে পৌঁছলে তিনি বললেনঃ এরা হচ্ছে অবাধ্য নাফরমান।
-সহীহ, ইরওয়া (৪/৫৭), মুসলিম
কা’ব ইবনু আসিম, ইবনু আব্বাস ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেনঃ
“সফরের মাঝে রোযা পালন করাটা সাওয়াবের কাজ নয়”।
আলিমদের মধ্যে সফরে থাকাবস্থায় রোযা পালন করা প্রসঙ্গে মতবিরোধ আছে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্যদের মতানুযায়ী
সফরে থাকা অবস্থায় রোযা পালন না করাই উত্তম। এমনকি কারো কারো মতানুযায়ী সফরে থাকাবস্থায়
কোন লোক রোযা পালন করলে তাকে আবার সে রোযা কাযা করতে হবে। সফরে রোযা না পালনের পক্ষে
ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাক অভিমত দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
অন্য আরেকদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও আলিম বলেছেন শক্তি-সামর্থ্যবান লোকে যদি সফরে রোযা পালন
করে তাহলে তা ভাল এবং তাই উত্তম, রোযা আদায় না করলে তাকেও ভাল বলেছেন। সুফিয়ান সাওরী,
মালিক ইবনু আনাস ও আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাকের.এই মত। ইমাম শাফিঈ বলেন, “সফরে থাকাবস্থায়
রোযা পালন করা সাওয়াবের কাজ নয়" এবং "এরা নাফরমান" এই কথার তাৎপর্য
হচ্ছে, যে লোকের অন্তর আল্লাহ্র দেয়া অবকাশ (রুখসাত) গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয় সে
লোকের ক্ষেত্রে ঐ কথা প্রযোজ্য। কিন্তু সফরে রোযা ভেঙ্গে ফেলাকে যে লোক জায়িয মনে
করে এবং রোযা রাখার সামর্থ্য থাকায় রোযা পালন করে, তা আমার নিকটে পছন্দনীয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৯. অনুচ্ছেদঃ
সফরে রোযা পালনের
অনুমতি প্রসঙ্গে
৭১১
حَدَّثَنَا
هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ،
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ حَمْزَةَ بْنَ
عَمْرٍو الأَسْلَمِيَّ، سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الصَّوْمِ
فِي السَّفَرِ وَكَانَ يَسْرُدُ الصَّوْمَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " إِنْ شِئْتَ فَصُمْ وَإِنْ شِئْتَ فَأَفْطِرْ " . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ
مَسْعُودٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَبِي الدَّرْدَاءِ وَحَمْزَةَ بْنِ
عَمْرٍو الأَسْلَمِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ أَنَّ حَمْزَةَ
بْنَ عَمْرٍو سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আসলাম গোত্রের হামযা
ইবনু আমর (রাঃ) সফরে থাকাবস্থায় রোযা পালন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন। আর তিনি প্রায়ই
রোযা পালন করতেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ
ইচ্ছা করলে তুমি রোযা পালন করতেও পার আবার ইচ্ছা করলে ভাঙ্গতেও পার।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৬২), বুখারী, মুসলিম
আনাস ইবনু মালিক, আবূ সাঈদ, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ, আবদুল্লাহ ইবনু
আমর, আবূ দারদা ও হামযা ইবনু আমর আসলামী (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা বলেন, আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত ‘হামযা ইবনু আমর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করেছেন’ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭১২
حَدَّثَنَا
نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ يَزِيدَ أَبِي مَسْلَمَةَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ، قَالَ كُنَّا نُسَافِرُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فِي رَمَضَانَ فَمَا يَعِيبُ عَلَى الصَّائِمِ صَوْمَهُ وَلاَ عَلَى الْمُفْطِرِ
إِفْطَارَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রমযান মাসেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা সফরে
গিয়েছি। কিন্তু রোযাদারকে সফরে রোযা পালনের কারণে কিংবা রোযা ভঙ্গকারীকে রোযা
ভেঙ্গেফেলার কারণে কোনরকম দোষারোপ করতেন না।
-সহীহা (৩/১৪৩), মুসলিম
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
৭১৩
حَدَّثَنَا
نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا
الْجُرَيْرِيُّ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الأَعْلَى بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنِ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ
أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كُنَّا نُسَافِرُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم فَمِنَّا الصَّائِمُ وَمِنَّا الْمُفْطِرُ فَلاَ يَجِدُ
الْمُفْطِرُ عَلَى الصَّائِمِ وَلاَ الصَّائِمُ عَلَى الْمُفْطِرِ فَكَانُوا
يَرَوْنَ أَنَّهُ مَنْ وَجَدَ قُوَّةً فَصَامَ فَحَسَنٌ وَمَنْ وَجَدَ ضَعْفًا
فَأَفْطَرَ فَحَسَنٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ সাঈদ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা সফরে যেতাম।
আমাদের মধ্যে রোযাদার এবং রোযা ভঙ্গকারী উভয়েই থাকতেন। রোযাদারের বিরুদ্ধে রোযা
ভঙ্গকারী এবং রোযা ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে রোযাদার কোনরকম অভিযোগ করেননি। তারা মনে
করতেন, শক্তিশালী লোক রোযা পালন করলে তা ভালই করেছে এবং দুর্বল লোক রোযা পালন না
করলে তাও ভাল করেছে।
-সহীহ, মুসলিম
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২০. অনুচ্ছেদঃ
যুদ্ধক্ষেত্রে
সৈনিকদের রোযা ভেঙে ফেলার অনুমতি আছে
৭১৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ
مَعْمَرِ بْنِ أَبِي حُيَيَّةَ، عَنِ ابْنِ الْمُسَيَّبِ، أَنَّهُ سَأَلَهُ عَنِ
الصَّوْمِ، فِي السَّفَرِ فَحَدَّثَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالَ
غَزَوْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي رَمَضَانَ غَزْوَتَيْنِ
يَوْمَ بَدْرٍ وَالْفَتْحِ فَأَفْطَرْنَا فِيهِمَا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُمَرَ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم أَنَّهُ أَمَرَ بِالْفِطْرِ فِي غَزْوَةٍ غَزَاهَا . وَقَدْ رُوِيَ
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ نَحْوُ هَذَا أَنَّهُ رَخَّصَ فِي الإِفْطَارِ
عِنْدَ لِقَاءِ الْعَدُوِّ وَبِهِ يَقُولُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ .
সাঈদ ইবনুল
মুসায়্যিব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাকে
সফরে রোযা রাখা প্রসঙ্গে প্রম্ন করা হলে তিনি বলেন, উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)
বলেছেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে রামাযান
মাসে দু’টি যুদ্ধ করেছি- বদর ও মক্কা বিজয় যুদ্ধ। এ সময় আমরা রোযা ভেঙ্গে ফেলেছি।
সনদ দুর্বল
এই অনুচ্ছেদে আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন,
উপোরোক্ত হাদীসটি শুধুমাত্র এই সূত্রেই আমরা জেনেছি। আর আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত
আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক যুদ্ধে রোযা ভেঙে
ফেলার হুকুম করেছিলেন। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতেও এরকমই বর্ণিত আছে যে, তিনি শত্রুর
মুখোমুখি হওয়ার সময় রোযা না রাখার সম্মতি (রুখসাত) দিয়েছেন। কোন কোন আলিমেরও এই মত।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
২১. অনুচ্ছেদঃ
গর্ভবতী নারী ও
দুগ্ধদানকারিণী মায়ের জন্য রোযা ভঙ্গের অনুমতি আছে
৭১৫
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، وَيُوسُفُ بْنُ عِيسَى، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا
أَبُو هِلاَلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَوَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ،
رَجُلٌ مِنْ بَنِي عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ قَالَ أَغَارَتْ عَلَيْنَا خَيْلُ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَوَجَدْتُهُ يَتَغَدَّى فَقَالَ " ادْنُ فَكُلْ " . فَقُلْتُ
إِنِّي صَائِمٌ . فَقَالَ " ادْنُ أُحَدِّثْكَ عَنِ الصَّوْمِ أَوِ
الصِّيَامِ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى وَضَعَ عَنِ الْمُسَافِرِ الصَّوْمَ وَشَطْرَ
الصَّلاَةِ وَعَنِ الْحَامِلِ أَوِ الْمُرْضِعِ الصَّوْمَ أَوِ الصِّيَامَ
" . وَاللَّهِ لَقَدْ قَالَهُمَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
كِلْتَيْهِمَا أَوْ إِحْدَاهُمَا فَيَا لَهْفَ نَفْسِي أَنْ لاَ أَكُونَ طَعِمْتُ
مِنْ طَعَامِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
أُمَيَّةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ الْكَعْبِيِّ
حَدِيثٌ حَسَنٌ وَلاَ نَعْرِفُ لأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ هَذَا عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم غَيْرَ هَذَا الْحَدِيثِ الْوَاحِدِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ الْحَامِلُ
وَالْمُرْضِعُ تُفْطِرَانِ وَتَقْضِيَانِ وَتُطْعِمَانِ . وَبِهِ يَقُولُ
سُفْيَانُ وَمَالِكٌ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ
تُفْطِرَانِ وَتُطْعِمَانِ وَلاَ قَضَاءَ عَلَيْهِمَا وَإِنْ شَاءَتَا قَضَتَا
وَلاَ إِطْعَامَ عَلَيْهِمَا . وَبِهِ يَقُولُ إِسْحَاقُ .
আবদুল্লাহ ইবনু
কা’ব গোত্রের আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমাদের উপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অশ্বারোহী
বাহিনী হঠাৎ আক্রমণ করল। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নিকট এলাম। আমি তাঁকে সকালের খাবার খাওয়ারত অবস্থায় পেলাম। তিনি বললেনঃ কাছে আস
এবং খাও। আমি বললাম, আমি রোযা আছি। তিনি বললেনঃ সামনে আস, আমি তোমাকে রোযা
প্রসঙ্গে কথা বলব। আল্লাহ তা’আলা মুসাফির লোকের রোযা ও অর্ধেক নামায কমিয়ে
দিয়েছেন আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিণী মহিলাদের রোযা মাফ করে দিয়েছেন। আনাস (রাঃ)
বলেন, আল্লাহ্র শপথ! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুজনের
কিংবা একজনের কথা বলেছেন। আমার আফসোস এই যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমি খাবার খাইনি।
-হাসান সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৬৭)
আবূ উমাইয়্যা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
ঈসা আনাস ইবনু মালিক আল-কা’বী (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে এই একটি মাত্র হাদীস ছাড়া তার (আনাস)
সূত্রে বর্ণিত অন্য কোন হাদীস আছে বলে আমাদের জানা নেই। এই হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম
আমল করেছেন। অন্য একদল আলিম বলেন, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিণী মহিলাগণ রোযা ভেঙ্গে ফেলবে,
পরে এর কাযা আদায় করবে এবং (মিসকীনদের) খাওয়াবে। এরকম অভিমতই প্রকাশ করেছেন সুফিয়ান,
মালিক, শাফিঈ ও আহ্মাদ (রহঃ)। অন্য আরেকদল আলিম বলেন এরা রোযা আদায় করবে না এবং মিসকীনদের
খাবার খাওয়াবে। কাযা রোযা পালন করাটা তাদের উপর জরুরী নয়, ইচ্ছা করলে কাযা আদায়
করবে, তাহলে মিসকীন খাওয়াতে হবে না। এরকম অভিমত ইসহাকেরও।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
২২. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির পক্ষ
হতে রোযা আদায় করা
৭১৬
حَدَّثَنَا
أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، وَمُسْلِمٍ الْبَطِينِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ،
وَعَطَاءٍ، وَمُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنَّ أُخْتِي مَاتَتْ وَعَلَيْهَا
صَوْمُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ . قَالَ " أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ
عَلَى أُخْتِكِ دَيْنٌ أَكُنْتِ تَقْضِينَهُ " . قَالَتْ نَعَمْ .
قَالَ " فَحَقُّ اللَّهِ أَحَقُّ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
بُرَيْدَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একটি মহিলা এসে
বলল, আমার বোন মারা গেছে, অথচ তার উপর পরস্পর দুমাসের রোযা কাযা অবস্থায় আছে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ দেখ কোন ঋণ যদি তোমার
বোনের উপর থাকত তাহলে কি তুমি সেটা পরিশোধ করতে? সে বলল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে আল্লাহ তা’আলার হাক (অধিকার)
সবচেয়ে অগ্রগণ্য।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৫৮), বুখারী, মুসলিম
বুরাইদা, ইবনু উমার ও আইশা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭১৭
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا
الإِسْنَادِ نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا، يَقُولُ جَوَّدَ أَبُو خَالِدٍ
الأَحْمَرُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الأَعْمَشِ، . قَالَ مُحَمَّدٌ وَقَدْ رَوَى
غَيْرُ أَبِي خَالِدٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، مِثْلَ رِوَايَةِ أَبِي خَالِدٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى وَرَوَى أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، هَذَا الْحَدِيثَ
عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُسْلِمٍ الْبَطِينِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ
سَلَمَةَ بْنَ كُهَيْلٍ وَلاَ عَنْ عَطَاءٍ وَلاَ عَنْ مُجَاهِدٍ . وَاسْمُ
أَبِي خَالِدٍ سُلَيْمَانُ بْنُ حَيَّانَ .
আবূ কুরাইব আবূ
খালিদ আল-আহমার থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আ’মাশ হতে এই সনদে উপরোক্ত হাদীসের মতই হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আবূ ঈসা ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। মুহাম্মাদ
(বুখারী) বলেন, আবূ খালিদ আল-আহ্মার এই হাদীসটি আ’মাশ হতে বর্ণনার ক্ষেত্রে উত্তম
কাজ করেছেন। তিনি আরও বলেন, আবূ খালিদ ব্যতীত আরো অনেকে আ’মাশ (রহঃ) হতে আবূ
খালিদের মতই বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, আবূ মুআবিয়া প্রমুখ এই হাদীসটিকে আমাশ
হতে, তিনি মুসলিম আল-বাতীন হতে, তিনি সাঈদ ইবনু জুবাইর হতে, তিনি ইবনু আব্বাস
(রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা
করেছেন। কিন্তু এতে তাঁরা বর্ণনাকারী সালামা ইবনু কুহাইল, আতা ও মুজাহিদের নাম
উল্লেখ করেননি। আবূ খালিদের নাম সুলাইমান ইবনু হাইয়্যান।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
২৩. অনুচ্ছেদঃ
রোযার কাফ্ফারা
৭১৮
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْثَرُ بْنُ الْقَاسِمِ، عَنْ أَشْعَثَ، عَنْ مُحَمَّدٍ،
عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صِيَامُ شَهْرٍ فَلْيُطْعِمْ عَنْهُ مَكَانَ كُلِّ
يَوْمٍ مِسْكِينًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ لاَ
نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَالصَّحِيحُ عَنِ ابْنِ
عُمَرَ مَوْقُوفٌ قَوْلُهُ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي هَذَا الْبَابِ
فَقَالَ بَعْضُهُمْ يُصَامُ عَنِ الْمَيِّتِ . وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ
وَإِسْحَاقُ قَالاَ إِذَا كَانَ عَلَى الْمَيِّتِ نَذْرُ صِيَامٍ يَصُومُ عَنْهُ
وَإِذَا كَانَ عَلَيْهِ قَضَاءُ رَمَضَانَ أَطْعَمَ عَنْهُ . وَقَالَ مَالِكٌ
وَسُفْيَانُ وَالشَّافِعِيُّ لاَ يَصُومُ أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ . قَالَ وَأَشْعَثُ
هُوَ ابْنُ سَوَّارٍ . وَمُحَمَّدٌ هُوَ عِنْدِي ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
أَبِي لَيْلَى .
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি এক মাসের রোযা অসম্পন্ন
রেখে মৃত্যু বরণ করে তার পক্ষ হতে প্রতিদিনের রোযার জন্য একজন করে মিস্কীনকে যেন
খাওয়ানো হয়।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৭৫৭)
আবূ ঈসা বলেন, শুধুমাত্র এই সনদেই আমরা ইবনু উমার (রাঃ) বর্ণিত
হাদীসটি মারফূ হিসেবে অবগত হয়েছি। ইবনু উমার (রাঃ)-এর উক্তি হিসাবে মাওকূফরূপে বর্ণনাটিই
সহীহ্। মৃতের পক্ষ হতে জীবিতরা রোযা রাখতে পারবে কি না এই প্রসঙ্গে আলিমগণের মাঝে মতের
অমিল আছে। একদল আলিম বলেছেন, মৃত ব্যক্তির পক্ষে রোযা রাখা যায়। আহ্মাদ ও ইসহাকের এই
মত। তারা বলেন, মৃত ব্যক্তির ওপর যদি মানতের রোযা অসম্পন্ন থাকে তবে তার পক্ষ হতে সেই
রোযা রাখা যাবে। আর যদি তার দায়িত্বে রামাযান মাসের রোযা বাকি থাকে তবে তার পক্ষ থেকে
মিসকীনদের খাওয়াতে হবে। ইমাম মালিক, সুফিয়ান ও শাফিঈ বলেন, একজন অন্য জনের পক্ষ হতে
রোযা রাখতে পারবে না। আশআস হলেন সাওয়ারের পুত্র এবং মুহাম্মদ হলেন আবদুল রহমান ইবনু
আবী লাইলার পুত্র।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
২৪. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদার ব্যক্তি বমি
করলে
৭১৯
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْمُحَارِبِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
ثَلاَثٌ لاَ يُفْطِرْنَ الصَّائِمَ الْحِجَامَةُ وَالْقَىْءُ وَالاِحْتِلاَمُ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ حَدِيثٌ
غَيْرُ مَحْفُوظٍ . وَقَدْ رَوَى عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ
وَعَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ
زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ مُرْسَلاً . وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
. وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ .
قَالَ سَمِعْتُ أَبَا دَاوُدَ السِّجْزِيَّ يَقُولُ سَأَلْتُ أَحْمَدَ بْنَ حَنْبَلٍ
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ فَقَالَ أَخُوهُ عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ لاَ بَأْسَ بِهِ . قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَذْكُرُ
عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمَدِينِيِّ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدِ
بْنِ أَسْلَمَ ثِقَةٌ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ ضَعِيفٌ .
قَالَ مُحَمَّدٌ وَلاَ أَرْوِي عَنْهُ شَيْئًا .
আবূ সাঈদ খুদরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তিনটি জিনিস
রোযা ভঙ্গ করে নাঃ রক্তমোক্ষণ, বমি ও স্বপ্নদোষ।
যঈফ, তাখরীজ হাকীকাতুস্ সিয়াম (২১-২২), যঈফ আবূ দাঊদ (৪০৯)
আবূ ঈসা বলেন, আবূ সাঈদ খুদরীর হাদীসটি নির্ভরযোগ্য নয়। আবদুল্লাহ
ইবনু যাইদ ইবনু আসলাম, আবদুল আযীয ইবনু মুহাম্মদ প্রমুখ এই হাদীসটিকে যাইদ ইবনু আসলাম
হতে মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। এতে তারা আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)-এর নাম উল্লেখ করেননি।
আবদুর রহমান ইবনু যাইদ ইবনু আসলাম হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল। আমি আবূ দাউদ সিজযীকে বলতে
শুনেছি, আমি আহমাদ ইবনু হাম্বলকে আবদুর রহমান ইবনু যাইদ ইবনু আসলাম প্রসঙ্গে প্রশ্ন
করলে তিনি বলেন, তার ভাই আবদুল্লাহ ইবনু যাইদ সম্পর্কে কোন সমস্যা নেই। মুহাম্মাদ
(বুখারী)-কে আলী ইবনু আবদুল্লাহ্ হতে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, আবদুল্লাহ্
হতে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, আবদুল্লাহ্ ইবনু আসলাম নির্ভরযোগ্য রাবী,
কিন্তু আবদুর রহমান ইবনু যাইদ ইবনু আসলাম দুর্বল রাবী। মুহাম্মদ আরও বলেন, আমি তার
হতে কিছু্ই বর্ণনা করি না।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
২৫. অনুচ্ছেদঃ
যে লোক (রোযা
থাকাবস্থায়) ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে
৭২০
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ
حَسَّانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ ذَرَعَهُ الْقَىْءُ فَلَيْسَ عَلَيْهِ
قَضَاءٌ وَمَنِ اسْتَقَاءَ عَمْدًا فَلْيَقْضِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ وَثَوْبَانَ وَفَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ
هِشَامٍ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عِيسَى بْنِ يُونُسَ . وَقَالَ مُحَمَّدٌ لاَ أَرَاهُ
مَحْفُوظًا . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ
وَجْهٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلاَ يَصِحُّ
إِسْنَادُهُ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ وَثَوْبَانَ وَفَضَالَةَ
بْنِ عُبَيْدٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَاءَ فَأَفْطَرَ .
وَإِنَّمَا مَعْنَى هَذَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ صَائِمًا
مُتَطَوِّعًا فَقَاءَ فَضَعُفَ فَأَفْطَرَ لِذَلِكَ . هَكَذَا رُوِيَ فِي بَعْضِ
الْحَدِيثِ مُفَسَّرًا . وَالْعَمَلُ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَى حَدِيثِ
أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ الصَّائِمَ إِذَا
ذَرَعَهُ الْقَىْءُ فَلاَ قَضَاءَ عَلَيْهِ وَإِذَا اسْتَقَاءَ عَمْدًا فَلْيَقْضِ
. وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ
وَإِسْحَاقُ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোকের রোযা থাকাবস্থায় বমি হলে সে
লোককে ঐ রোযার কাযা আদায় করতে হবে না। কিন্তু কোন লোক ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে তাকে
কাযা রোযা আদায় করতে হবে।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৭৬)
আবূ দারদা, সাওবান ও ফাযালা ইবনু উবাইদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান গারীব বলেছেন।
এই হাদীসটি ঈসা ইবনু ইউনুসের সূত্র ছাড়া হিশাম ইবনু সীরীন-এর সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হতে বর্ণিত আছে বলে আমাদের জানা নেই। মুহাম্মাদ বুখারী বলেন, আমি ঈসা ইবনু ইউনুসকে
একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী বলে মনে করি না। আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর হাদীসটি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে। কিন্তু
এর সনদগুলো সহীহ্ নয়। আবূ দারদা, সাওবান ও ফাযালা ইবনু উবাইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে
যে, “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বমি করলেন এবং রোযা পালন করা
ছেড়ে দিলেন।” এ হাদীসের মর্ম হল এই যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
নফল রোযা পালন করছিলেন। বমি হওয়াতে তিনি দুর্বল হয়ে পড়ায় রোযা ভেঙ্গে ফেলেন। এ বিষয়টি
কোন কোন হাদীসে বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। আলিমগণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে আবূ হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের ভিত্তিতে বলেন, রোযাদার
ব্যক্তির অনিচ্ছাকৃত বমি হলে তার কোন কাযা আদায় করতে হবে না। কিন্তু কোন লোক ইচ্ছাকৃতভাবে
বমি করলে সে কাযা রোযা আদায় করবে। ইমাম শাফিঈ, সুফিয়ান সাওরী, আহ্মাদ ও ইসহাকের এই
অভিমত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৬. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদার ব্যক্তি
ভুলবশতঃ কিছু পানাহার করলে
৭২১
حَدَّثَنَا
أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ حَجَّاجِ بْنِ
أَرْطَاةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَكَلَ أَوْ شَرِبَ
نَاسِيًا فَلاَ يُفْطِرْ فَإِنَّمَا هُوَ رِزْقٌ رَزَقَهُ اللَّهُ " .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভুলবশতঃ যে লোক
(রোযা থাকা অবস্থায়) কিছু খায় বা পান করে সে যেন রোযা ভেঙ্গে না ফেলে। কেননা, এটা
এমন এক রিযিক যা আল্লাহ্ তা’আলা তাকে ভোজন করিয়েছেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৭৩), নাসা-ঈ
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭২২
حَدَّثَنَا
أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ عَوْفٍ، عَنِ ابْنِ
سِيرِينَ، وَخِلاَسٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
مِثْلَهُ أَوْ نَحْوَهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَأُمِّ
إِسْحَاقَ الْغَنَوِيَّةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ
الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ
وَإِسْحَاقُ . وَقَالَ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ إِذَا أَكَلَ فِي رَمَضَانَ نَاسِيًا
فَعَلَيْهِ الْقَضَاءُ . وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ .
আবূ সাঈদ আল-আশাজ্জ
আবূ উসামা থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
সাঈদ আল-আশাজ্জ আবূ উসামা হতে, তিনি আউফ হতে, তিনি ইবনু সীরীন হতে, তিনি খাল্লাস
হতে, তিনি হুরায়রা (রাঃ) হতে, তিনি নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে উপরোক্ত হাদীসের ন্যায় বর্ণনা করেছেন।
-সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস
আবূ সাঈদ ও উম্মু ইসহাক আল-গানাবিয়্যা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
এ হাদীস অনুযায়ী বেশিরভাগ আলিম আমল করতে বলেছেন। সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক
বলেন, ভুলবশতঃ পানাহার করলে রোযা নষ্ট হয় না। ইমাম মালিক বলেন, কোন লোক রমযান মাসে
ভুলবশতঃ পানাহার করলে সে লোককে এর কাযা আদায় করতে হবে। কিন্তু প্রথমোক্ত অভিমতই বেশি
সঠিক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৭. অনুচ্ছেদঃ
নিজের ইচ্ছায় রোযা
ভেঙে ফেললে
৭২৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ
بْنُ مَهْدِيٍّ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ،
حَدَّثَنَا أَبُو الْمُطَوِّسِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَفْطَرَ يَوْمًا مِنْ
رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ رُخْصَةٍ وَلاَ مَرَضٍ لَمْ يَقْضِ عَنْهُ صَوْمُ الدَّهْرِ
كُلِّهِ وَإِنْ صَامَهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ
لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ
أَبُو الْمُطَوِّسِ اسْمُهُ يَزِيدُ بْنُ الْمُطَوِّسِ وَلاَ أَعْرِفُ لَهُ غَيْرَ
هَذَا الْحَدِيثِ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন
অজুহাত ছাড়া বা রোগ ছাড়া রামাযান মাসের একটি রোযা ভেঙে ফেলে, তার পুরো জিন্দেগীর
রোযা দিয়েও এর ক্ষতিপূরণ হবে না। যদিও সে জীবনভর রোযা রাখে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৬৭২)
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরার হাদীসটি আমরা শুধুমাত্র উপোরোক্ত সূত্রেই
অবগত হয়েছি। আমি মুহাম্মাদ বুখারীকে বলতে শুনেছি, আবুল মুতাওবিস-এর নাম ইয়াযীদ এবং
পিতার নাম মুতাওবিস। এই হাদীস ব্যতীত তার সূত্রে বর্ণিত অন্য কোন হাদীস আছে কি না তা
আমাদের জানা নেই।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
২৮. অনুচ্ছেদঃ
রমযানের রোযা ভঙ্গের
কাফ্ফারা
৭২৪
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ
الْجَهْضَمِيُّ، وَأَبُو عَمَّارٍ وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ وَاللَّفْظُ لَفْظُ أَبِي
عَمَّارٍ قَالاَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ
حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَتَاهُ رَجُلٌ
فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْتُ . قَالَ " وَمَا أَهْلَكَكَ
" . قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ . قَالَ "
هَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُعْتِقَ رَقَبَةً " . قَالَ لاَ . قَالَ
" فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ "
. قَالَ لاَ . قَالَ " فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُطْعِمَ سِتِّينَ
مِسْكِينًا " . قَالَ لاَ . قَالَ " اجْلِسْ " .
فَجَلَسَ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ - وَالْعَرَقُ
الْمِكْتَلُ الضَّخْمُ قَالَ " تَصَدَّقْ بِهِ " . فَقَالَ مَا
بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَحَدٌ أَفْقَرَ مِنَّا . قَالَ فَضَحِكَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ . قَالَ " فَخُذْهُ
فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ
وَعَائِشَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي
هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ
أَهْلِ الْعِلْمِ فِي مَنْ أَفْطَرَ فِي رَمَضَانَ مُتَعَمِّدًا مِنْ جِمَاعٍ
وَأَمَّا مَنْ أَفْطَرَ مُتَعَمِّدًا مِنْ أَكْلٍ أَوْ شُرْبٍ فَإِنَّ أَهْلَ
الْعِلْمِ قَدِ اخْتَلَفُوا فِي ذَلِكَ فَقَالَ بَعْضُهُمْ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ
وَالْكَفَّارَةُ . وَشَبَّهُوا الأَكْلَ وَالشُّرْبَ بِالْجِمَاعِ . وَهُوَ
قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ
بَعْضُهُمْ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ وَلاَ كَفَّارَةَ عَلَيْهِ لأَنَّهُ إِنَّمَا
ذُكِرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْكَفَّارَةُ فِي الْجِمَاعِ وَلَمْ
تُذْكَرْ عَنْهُ فِي الأَكْلِ وَالشُّرْبِ . وَقَالُوا لاَ يُشْبِهُ الأَكْلُ
وَالشُّرْبُ الْجِمَاعَ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ . وَقَالَ
الشَّافِعِيُّ وَقَوْلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لِلرَّجُلِ الَّذِي
أَفْطَرَ فَتَصَدَّقَ عَلَيْهِ " خُذْهُ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ "
. يَحْتَمِلُ هَذَا مَعَانِيَ يَحْتَمِلُ أَنْ تَكُونَ الْكَفَّارَةُ عَلَى مَنْ
قَدَرَ عَلَيْهَا وَهَذَا رَجُلٌ لَمْ يَقْدِرْ عَلَى الْكَفَّارَةِ فَلَمَّا
أَعْطَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا وَمَلَكَهُ فَقَالَ الرَّجُلُ
مَا أَحَدٌ أَفْقَرَ إِلَيْهِ مِنَّا . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" خُذْهُ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ " . لأَنَّ الْكَفَّارَةَ
إِنَّمَا تَكُونُ بَعْدَ الْفَضْلِ عَنْ قُوتِهِ . وَاخْتَارَ الشَّافِعِيُّ
لِمَنْ كَانَ عَلَى مِثْلِ هَذَا الْحَالِ أَنْ يَأْكُلَهُ وَتَكُونَ
الْكَفَّارَةُ عَلَيْهِ دَيْنًا فَمَتَى مَا مَلَكَ يَوْمًا مَا كَفَّرَ .
সমস্যা? রিপোর্ট করুন!
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক লোক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে
আল্লাহর রাসূল! আমিতো ধংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাকে ধ্বংস করল? সে বলল,
আমি রোযা থাকাবস্থায় স্ত্রীসংগম করেছি। তিনি বললেন, তুমি কি একটি গোলাম মুক্ত করতে
পারবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি একসাথে দু’মাস রোযা রাখতে পারবে? সে বলল,
না। তিনি বললেনঃ তুমি কি ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াতে পারবে? সে বলল, না। তিনি তাকে
বললেনঃ তুমি বস। লোকটি বসে রয়ল। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট এক (বড়) ঝুড়িভর্তি খেজুর আসলো। তিনি তাকে বললেনঃ এগুলো নিয়ে
দান-খায়রাত করে দাও। সে বলল, আমার চেয়ে দরিদ্র মাদীনার পাথরময় দুপ্রান্তের মাঝে আর
কেউ নেই। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, (তার কথায়) তিনি হেসে দিলেন, এমনকি তাঁর চোয়ালের
দাঁত দেখা গেলো। তিনি বললেনঃ এগুলো নাও এবং তোমার পরিবারবর্গকে খাওয়াও।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৭১), বুখারী, মুসলিম
ইবনু উমার, আইশা ও আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
আলিমগণ এ হাদীসের ভিত্তিতে বলেন, রমযান মাসে কোন লোক স্বেচ্ছায় স্ত্রীসংগম দ্বারা রোযা
ভেঙ্গে ফেললে প্রত্যেকটি রোযার জন্য তাকে একটি করে দাস মুক্ত করতে হবে অথবা দু’মাস
একটানা রোযা পালন করতে হবে অথবা ষাটজন গরীব লোককে খাওয়াতে হবে। কিন্তু পানাহারের মাধ্যমে
স্বেচ্ছায় কোন লোক রোযা ভেঙ্গে ফেললে তার কাফ্ফারা প্রসঙ্গে আলিমগণের মধ্যে মতবিরোধ
আছে। একদল আলিম বলেন, তাকে রোযার কাযা ও কাফ্ফারা দুটোই আদায় করতে হবে। পানাহারকে
তাঁরা স্ত্রীসংগমের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে মনে করেন। এরকমই অভিমত সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল
মুবারাক ও ইসহাকের। অন্য একদল আলিম বলেন, তাকে কাযা রোযা আদায় করতে হবে কিন্তু কাফ্ফারা
আদায় করতে হবে না। কারণ, স্ত্রীসংগমের ক্ষেত্রেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে কাফ্ফারার উল্লেখ আছে, পানাহারের ক্ষেত্রে এর কোন উল্লেখ নেই। তারা
বলেন, স্ত্রীসংগমের সাথে পানাহারের সাদৃশ্য নেই। এরকম অভিমত ইমাম শাফিঈ ও আহ্মাদ
(রহঃ)-এর। ইমাম শাফিঈ বলেন, যে লোক রোযা ভেঙ্গে ফেলেছিলো সে লোককে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উক্ত খেজুর দান করেছিলেন। তাঁর উক্তি “নাও, তোমার পরিবারবর্গকে
তা খাওয়াও” বাক্যাংশ বিভিন্ন অর্থ বহন করে। এমনও হতে পারে যে, যে ব্যক্তির সামর্থ আছে
তাকে কাফ্ফারা আদায় করতে হয়। কিন্তু এ লোকটি কাফ্ফারা আদায় করার মত সামর্থবান ছিল
না। পরে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে কিছু দান করে তার মালিক
বানিয়ে দিলে সে বলল, আমাদের চেয়ে বেশি অভাবগ্রস্ত এ এলাকায় অন্য কোন লোক নেই। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “নিয়ে নাও এবং তোমার পরিবারবর্গকে খাওয়াও”।
কেননা, কাফ্ফারা বাধ্যতামুলক হয় জীবনধারণের কোন অতিরিক্ত সম্পদ থাকলেই। এরকম অবস্থাসম্পন্ন
লোক সম্বন্ধে ইমাম শাফিঈর অভিমত হচ্ছে, সে লোক ঐ মাল ভোগ করতে পারে। আর কাফ্ফারা তার
দায়িত্বে ঋণ হিসাবে থেকে যাবে। সে যে সময়ে তা দিতে সমর্থ হবে সে সময়েই কাফ্ফারা আদায়
করতে হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৯. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদারের মিসওয়াক
করা
৭২৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم مَا لاَ أُحْصِي يَتَسَوَّكُ وَهُوَ صَائِمٌ . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ
بِالسِّوَاكِ لِلصَّائِمِ بَأْسًا إِلاَّ أَنَّ بَعْضَ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا
السِّوَاكَ لِلصَّائِمِ بِالْعُودِ الرَّطْبِ وَكَرِهُوا لَهُ السِّوَاكَ آخِرَ
النَّهَارِ وَلَمْ يَرَ الشَّافِعِيُّ بِالسِّوَاكِ بَأْسًا أَوَّلَ النَّهَارِ
وَلاَ آخِرَهُ وَكَرِهَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ السِّوَاكَ آخِرَ النَّهَارِ .
আমির ইবনু রাবীআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে রোযা থাকা অবস্থায়
অসংখ্যবার মিসওয়াক করতে দেখেছি।
যঈফ, ইরওয়া (৬৮)
এই অনুচ্ছেদে আইশা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন,
আমির ইবনু রাবীআর হাদীসটি হাসান। এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ বলেন, রোযাদারের মিসওয়াক
করায় কোন সমস্যা নেই। তবে একদল আলিম কাঁচা ডাল দিয়ে এবং দিনের শেষাংশে মিসওয়াক করা
অপছন্দ করেছেন। ইমাম শাফিঈ দিনের যে কোন অংশে মিসওয়াক করাতে কোন সমস্যা মনে করেন না।
ইমাম আহমাদ ও ইসহাক দিনের শেষাংশে মিস্ওয়াক করা মাকরূহ মনে করেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩০. অনুচ্ছেদঃ
রোযা থাকা অবস্থায়
সুরমা ব্যবহার করা
৭২৬
حَدَّثَنَا
عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ وَاصِلٍ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَطِيَّةَ،
حَدَّثَنَا أَبُو عَاتِكَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ اشْتَكَتْ عَيْنِي أَفَأَكْتَحِلُ وَأَنَا
صَائِمٌ قَالَ " نَعَمْ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
رَافِعٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ
بِالْقَوِيِّ وَلاَ يَصِحُّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي هَذَا
الْبَابِ شَيْءٌ . وَأَبُو عَاتِكَةَ يُضَعَّفُ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ
الْعِلْمِ فِي الْكُحْلِ لِلصَّائِمِ فَكَرِهَهُ بَعْضُهُمْ وَهُوَ قَوْلُ
سُفْيَانَ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَرَخَّصَ بَعْضُ
أَهْلِ الْعِلْمِ فِي الْكُحْلِ لِلصَّائِمِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকটে এসে বলল,
আমার চোখ ব্যথা করে। আমি রোযা থাকা অবস্থায় তাতে সুরমা লাগাতে পারি কি? তিনি
বললেনঃ হ্যাঁ।
সনদ দুর্বল
এই অনুচ্ছেদে আবূ রাফি (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন,
আনাসের হাদীসের সনদ খুব একটা মজবুত নয়। এই বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে সহীহ্ কিছু বর্ণিত নেই। আবূ আতিকা একজন দুর্বল রাবী। রোযা থাকা অবস্থায়
সুরমা ব্যবহার প্রসঙ্গে আলিমগণের মধ্যে মতের অমিল আছে। সুফিয়ান, ইবনুল মুবারাক, আহমাদ
ও ইসহাকের মতে রোযা থাকা অবস্থায় সুরমা ব্যবহার করা মাকরূহ। ইমাম শাফিঈর মতে তা ব্যবহারের
সম্মতি আছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩১. অনুচ্ছেদঃ
রোযা থাকাবস্থায়
(স্ত্রীকে) চুমু দেয়া
৭২৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، وَقُتَيْبَةُ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ زِيَادِ بْنِ
عِلاَقَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم كَانَ يُقَبِّلُ فِي شَهْرِ الصَّوْمِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَحَفْصَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأُمِّ سَلَمَةَ
وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ فِي الْقُبْلَةِ
لِلصَّائِمِ فَرَخَّصَ بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْقُبْلَةِ
لِلشَّيْخِ وَلَمْ يُرَخِّصُوا لِلشَّابِّ مَخَافَةَ أَنْ لاَ يَسْلَمَ لَهُ
صَوْمُهُ وَالْمُبَاشَرَةُ عِنْدَهُمْ أَشَدُّ . وَقَدْ قَالَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ الْقُبْلَةُ تَنْقُصُ الأَجْرَ وَلاَ تُفْطِرُ الصَّائِمَ . وَرَأَوْا
أَنَّ لِلصَّائِمِ إِذَا مَلَكَ نَفْسَهُ أَنْ يُقَبِّلَ وَإِذَا لَمْ يَأْمَنْ
عَلَى نَفْسِهِ تَرَكَ الْقُبْلَةَ لِيَسْلَمَ لَهُ صَوْمُهُ . وَهُوَ قَوْلُ
سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রমযান
মাসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (রোযা থাকাবস্থায় স্ত্রীকে)
চুমু দিতেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৮৩), মুসলিম, বুখারী অনুরূপ
উমার ইবনুল খাত্তাব, হাফ্সা, আবূ সাঈদ, উম্মু সালামা, ইবনু আব্বাস,
আনাস ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত
হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। রোযা থাকাবস্থায় চুমু দেয়া প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্য আলিমদের মধ্যে মতপার্থক্য
আছে। বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ
সাহাবী চুমু দেয়ার অনুমতি দিয়েছেন, কিন্তু যুবকদেরকে রোযা ভেঙ্গে যাওয়ার ভয়ে এই
অনুমতি দেননি। আর তাদের মতে স্ত্রীকে আলিঙ্গন করার বিষয়টি আর বেশি মারাত্মক। আর কোন
আলিম বলেন, চুম্বনে রোযার সাওয়াব কমে, কিন্তু তাতে রোযা নষ্ট হয় না। তাদের মতে, রোযা
পালনকারী নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে সে চুম্বন করতে পারে। আর যদি নিয়ন্ত্রণের
ক্ষেত্রে তার আস্থা না থাকে তাহলে সে চুম্বন করবে না, যাতে করে রোযার হিফাযাত করা তার
পক্ষে সম্ভব হয়। এরকম মতই সুফিয়ান সাওরী ও শাফিঈর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২. অনুচ্ছেদঃ
রোযা থাকাবস্থায়
স্বামী-স্ত্রীর আলিঙ্গন
৭২৮
حَدَّثَنَا
ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي مَيْسَرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يُبَاشِرُنِي وَهُوَ صَائِمٌ وَكَانَ أَمْلَكَكُمْ لإِرْبِهِ
.
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে রোযা থাকাবস্থায়
আলিঙ্গন করতেন। তবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিনি তোমাদের চেয়ে অনেক বেশি
সামর্থবান ছিলেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৮৪), বুখারী, মুসলিম
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭২৯
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ،
عَنْ عَلْقَمَةَ، وَالأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يُقَبِّلُ وَيُبَاشِرُ وَهُوَ صَائِمٌ وَكَانَ أَمْلَكَكُمْ
لإِرْبِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو
مَيْسَرَةَ اسْمُهُ عَمْرُو بْنُ شُرَحْبِيلَ . وَمَعْنَى لإِرْبِهِ لِنَفْسِهِ
.
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রোযা থাকাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
(স্ত্রীকে) চুম্বন দিতেন এবং আলিঙ্গন করতেন। আর তিনি তোমাদের চেয়ে অনেক বেশি
নিয়ন্ত্রণের অধিকারী ছিলেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৭৮), বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। আবূ মাইসারার নাম আম্র
এবং পিতার নাম শুরাহ্বীল। লিইরবিহি অর্থ ‘তাঁর নিজের উপর’।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
রাত থাকাবস্থায়
সংকল্প (নিয়্যাত) না করলে রোযা হয় না
৭৩০
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى
بْنُ أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ
سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ لَمْ يُجْمِعِ الصِّيَامَ قَبْلَ الْفَجْرِ
فَلاَ صِيَامَ لَهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ حَفْصَةَ حَدِيثٌ لاَ
نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ
نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَوْلُهُ وَهُوَ أَصَحُّ وَهَكَذَا أَيْضًا رُوِيَ
هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ الزُّهْرِيِّ مَوْقُوفًا وَلاَ نَعْلَمُ أَحَدًا رَفَعَهُ
إِلاَّ يَحْيَى بْنَ أَيُّوبَ . وَإِنَّمَا مَعْنَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ لاَ صِيَامَ لِمَنْ لَمْ يُجْمِعِ الصِّيَامَ قَبْلَ طُلُوعِ الْفَجْرِ
فِي رَمَضَانَ أَوْ فِي قَضَاءِ رَمَضَانَ أَوْ فِي صِيَامِ نَذْرٍ إِذَا لَمْ
يَنْوِهِ مِنَ اللَّيْلِ لَمْ يُجْزِهِ وَأَمَّا صِيَامُ التَّطَوُّعِ فَمُبَاحٌ
لَهُ أَنْ يَنْوِيَهُ بَعْدَ مَا أَصْبَحَ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ
وَإِسْحَاقَ .
হাফসা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ফজরের পূর্বেই যে লোক রোযা থাকার
নিয়্যাত করেনি তার রোযা (ক্ববূল) হয়নি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭০০)
আবূ ঈসা বলেন, শুধুমাত্র উল্লেখিত সূত্রেই হাফসা (রাঃ) হতে বর্ণিত
এ হাদীসটি আমরা মারফূভাবে জেনেছি। এ হাদীসটি ইবনু উমার (রাঃ)-এর উক্তি হিসাবেও বর্ণিত
আছে এবং এটিই বেশি সহীহ্। এভাবেই হাদীসটি যুহরী হতে মাওকূফ হিসেবে বর্ণিত আছে। ইয়াহইয়া
ইবনু আইয়্যূব ছাড়া অন্য কেউ হাদীসটি মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেননি। কিছু আলিমের মতানুযায়ী
এই হাদীসটির অর্থ হচ্ছেঃ রাত থাকতেই অর্থাৎ ফজর উদিত হওয়ার পূর্বেই রমযানের রোযা অথবা
কাযা বা মানতের রোযার ক্ষেত্রে কোন লোক নিয়্যাত না করলে তার রোযা আদায় হবে না। কিন্তু
ভোর হওয়ার পরও নফল রোযার নিয়্যাত করা যায়। এরকম মতই ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকের।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
নফল রোযা ভেঙ্গে ফেলা
প্রসঙ্গে
৭৩১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنِ ابْنِ
أُمِّ هَانِئٍ، عَنْ أُمِّ هَانِئٍ، قَالَتْ كُنْتُ قَاعِدَةً عِنْدَ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم فَأُتِيَ بِشَرَابٍ فَشَرِبَ مِنْهُ ثُمَّ نَاوَلَنِي
فَشَرِبْتُ مِنْهُ فَقُلْتُ إِنِّي أَذْنَبْتُ فَاسْتَغْفِرْ لِي . فَقَالَ
" وَمَا ذَاكِ " . قَالَتْ كُنْتُ صَائِمَةً فَأَفْطَرْتُ .
فَقَالَ " أَمِنْ قَضَاءٍ كُنْتِ تَقْضِينَهُ " . قَالَتْ لاَ .
قَالَ " فَلاَ يَضُرُّكِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ وَعَائِشَةَ .
উম্মু হানী (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে আমি বসা ছিলাম।
তাঁর কাছে কিছু শরবত নিয়ে আসা হল। তা হতে তিনি পান করলেন, তারপর আমাকে তা দিলেন।
আমিও তা হতে কিছু পান করলাম। আমি বললাম, আমি তো অপরাধ করে ফেলেছি। আপনি আমার জন্য
ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি বললেনঃ তা কিভাবে? আমি বললাম, আমি রোযা রেখেছিলাম, তা
ভেঙ্গে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ তুমি কোন রোযার কাযা আদায় করছিলে কি? তিনি বললেন, না।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে এতে তোমার কোন ক্ষতি
নেই।
-সহীহ্, তাখরীজুল মিশকাত (২০৭৯), সহীহ আবূ দাঊদ (২১২০)
আবূ সাঈদ ও আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৩২
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ
كُنْتُ أَسْمَعُ سِمَاكَ بْنَ حَرْبٍ يَقُولُ أَحَدُ ابْنَىْ أُمِّ هَانِئٍ
حَدَّثَنِي فَلَقِيتُ، أَنَا أَفْضَلَهُمَا، وَكَانَ، اسْمُهُ جَعْدَةَ وَكَانَتْ
أُمُّ هَانِئٍ جَدَّتَهُ فَحَدَّثَنِي عَنْ جَدَّتِهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَيْهَا فَدَعَى بِشَرَابٍ فَشَرِبَ ثُمَّ نَاوَلَهَا
فَشَرِبَتْ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمَا إِنِّي كُنْتُ صَائِمَةً .
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الصَّائِمُ الْمُتَطَوِّعُ
أَمِينُ نَفْسِهِ إِنْ شَاءَ صَامَ وَإِنْ شَاءَ أَفْطَرَ " . قَالَ
شُعْبَةُ فَقُلْتُ لَهُ أَأَنْتَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ أُمِّ هَانِئٍ قَالَ لاَ
أَخْبَرَنِي أَبُو صَالِحٍ وَأَهْلُنَا عَنْ أُمِّ هَانِئٍ . وَرَوَى حَمَّادُ بْنُ
سَلَمَةَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ فَقَالَ عَنْ هَارُونَ ابْنِ
بِنْتِ أُمِّ هَانِئٍ عَنْ أُمِّ هَانِئٍ . وَرِوَايَةُ شُعْبَةَ أَحْسَنُ .
هَكَذَا حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ عَنْ أَبِي دَاوُدَ فَقَالَ "
أَمِينُ نَفْسِهِ " . وَحَدَّثَنَا غَيْرُ مَحْمُودٍ عَنْ أَبِي دَاوُدَ
فَقَالَ " أَمِيرُ نَفْسِهِ أَوْ أَمِينُ نَفْسِهِ " . عَلَى
الشَّكِّ وَهَكَذَا رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ شُعْبَةَ " أَمِينُ
أَوْ أَمِيرُ نَفْسِهِ " عَلَى الشَّكِّ . قَالَ وَحَدِيثُ أُمِّ هَانِئٍ
فِي إِسْنَادِهِ مَقَالٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ
مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّ الصَّائِمَ
الْمُتَطَوِّعَ إِذَا أَفْطَرَ فَلاَ قَضَاءَ عَلَيْهِ إِلاَّ أَنْ يُحِبَّ أَنْ
يَقْضِيَهُ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ
وَالشَّافِعِيِّ .
উম্মু হানী (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে আসেন এবং পানীয় আনতে বলেন। তা হতে
তিনি নিজে পান করলেন, তারপর উম্মু হানীকে দিলেন এবং তিনিও তা পান করলেন। তারপর
উম্মু হানী (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তো রোযা রেখেছিলাম। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নফল রোযা পালনকারী নিজের আমানাতদার। সে
ব্যক্তি চাইলে রোযা পূর্ণও করতে পারে আবার ভাঙ্গতেও পারে।
-সহীহ, প্রাগুক্ত
শুবা বলেন, আমি জা’দাকে বললাম আপনি কি উম্মু হানী (রাঃ) হতে এ
হাদীসটি শুনেছেন? তিনি বলেন, না। আবূ সালিহ্ ও আমাদের পরিবারের লোকজন উম্মু হানী (রাঃ)-এর
মারফতে আমার নিকট তা বর্ণনা করেছেন। হাম্মাদ ইবনু সালামা এই হাদীস সিমাক হতে, তিনি
উম্মু হানীর দৌহিত্র হারূন হতে, তিনি উম্মু হানী (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। শুবার
রিওয়াতটি অধিক হাসান। মাহমূদ ইবনু গাইলান আবূ দাঊদের সূত্রে এটিকে বর্ণনা করেছেন।
তিনি এতে বলেছেন, “রোযা পালনকারী নিজের আমানাতদার”। আবূ দাঊদের সূত্রে মাহমূদ ব্যতীত
অন্য বর্ণনাকারীগণ সংশয়পূর্ণভাবে বর্ণনা করেছেন যে, “রোযাদার ব্যক্তি নিজের উপর ক্ষমতাবান
অথবা নিজের আমানাতদার”। শুবা হতেও একাধিক সূত্রে দ্বিধা সহকারে এরকমই বর্ণিত আছে। উম্মু
হানী (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসের সনদ প্রসঙ্গে বিরূপ বক্তব্য আছে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্যদের
মতে নফল রোযা পালনকারী যদি তা ভেঙ্গে ফেলে তাহলে তার উপর কোন কাযা নেই। তবে ইচ্ছা করলে
(মুস্তাহাব হিসাবে) সে লোক কাযা আদায় করতে পারে। এ মত সুফিয়ান সাওরী, আহ্মাদ, ইসহাক
ও শাফিঈর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
রাত্রি চলে যাওয়ার
পর নফল রোযা রাখা
৭৩৩
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ يَحْيَى، عَنْ عَمَّتِهِ،
عَائِشَةَ بِنْتِ طَلْحَةَ عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، قَالَتْ دَخَلَ
عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا فَقَالَ " هَلْ
عِنْدَكُمْ شَيْءٌ " . قَالَتْ قُلْتُ لاَ . قَالَ " فَإِنِّي
صَائِمٌ " .
উম্মুল মু’মিনীন
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন আমার নিকট আসলেন এবং
বললেনঃ তোমার কাছে (খাওয়ার) কোন কিছু আছে কি? আমি বললাম, না। তিনি বললেনঃ তাহলে
আমি রোযা রাখলাম।
-হাসান সহীহ, ইরওয়া (৯৬৫), সহীহ আবূ দাঊদ (২১১৯), মুসলিম
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
৭৩৪
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ السَّرِيِّ، عَنْ سُفْيَانَ،
عَنْ طَلْحَةَ بْنِ يَحْيَى، عَنْ عَائِشَةَ بِنْتِ طَلْحَةَ، عَنْ عَائِشَةَ
أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَأْتِينِي
فَيَقُولُ " أَعِنْدَكِ غَدَاءٌ " . فَأَقُولُ لاَ . فَيَقُولُ
" إِنِّي صَائِمٌ " . قَالَتْ فَأَتَانِي يَوْمًا فَقُلْتُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ قَدْ أُهْدِيَتْ لَنَا هَدِيَّةٌ . قَالَ "
وَمَا هِيَ " . قَالَتْ قُلْتُ حَيْسٌ . قَالَ " أَمَا إِنِّي
قَدْ أَصْبَحْتُ صَائِمًا " . قَالَتْ ثُمَّ أَكَلَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
মু’মিনদের মাতা
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমার নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসতেন এবং বলতেনঃ
তোমার নিকট সকালের খাবার কোন কিছু আছে কি? আমি বলতাম, না। তিনি বলতেনঃ আমি রোযা
রাখলাম। আইশা (রাঃ) বলেন, তিনি একদিন আমার নিকট আসলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র
রাসূল! কিছু উপহার এসেছে আমাদের জন্য। তিনি বললেনঃ তা কি? আমি বললাম, ‘হাইস’। তিনি
বললেনঃ আমি তো সকাল হতে রোযা রেখেছি। আইশা (রাঃ) বলেন, তারপর তিনি তা খেলেন।
-হাসান সহীহ, প্রাগুক্ত
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ বলেন,
তালহা ইবনু সাঈদ হাদীস শাস্ত্রে বিশেষজ্ঞ নন।
(খেজুর, ছাতু ও ঘি এর সংমিশ্রনে তৈরী খাদ্যকে “হাইস" বলে- অনুবাদক)
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
৩৬. অনুচ্ছেদঃ
(নফল) রোযা ভেঙ্গে
ফেললে তার কাযা করা অপরিহার্য
৭৩৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا كَثِيرُ
بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ بُرْقَانَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ
عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُنْتُ أَنَا وَحَفْصَةُ، صَائِمَتَيْنِ
فَعُرِضَ لَنَا طَعَامٌ اشْتَهَيْنَاهُ فَأَكَلْنَا مِنْهُ فَجَاءَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَبَدَرَتْنِي إِلَيْهِ حَفْصَةُ وَكَانَتِ ابْنَةَ
أَبِيهَا فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا كُنَّا صَائِمَتَيْنِ فَعُرِضَ
لَنَا طَعَامٌ اشْتَهَيْنَاهُ فَأَكَلْنَا مِنْهُ . قَالَ " اقْضِيَا
يَوْمًا آخَرَ مَكَانَهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى صَالِحُ بْنُ
أَبِي الأَخْضَرِ وَمُحَمَّدُ بْنُ أَبِي حَفْصَةَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ
الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ مِثْلَ هَذَا . وَرَوَاهُ مَالِكُ
بْنُ أَنَسٍ وَمَعْمَرٌ وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ وَزِيَادُ بْنُ سَعْدٍ
وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنَ الْحُفَّاظِ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَائِشَةَ مُرْسَلاً
. وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ عُرْوَةَ وَهَذَا أَصَحُّ .
لأَنَّهُ رُوِيَ عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ سَأَلْتُ الزُّهْرِيَّ قُلْتُ لَهُ
أَحَدَّثَكَ عُرْوَةُ عَنْ عَائِشَةَ قَالَ لَمْ أَسْمَعْ مِنْ عُرْوَةَ فِي هَذَا
شَيْئًا وَلَكِنِّي سَمِعْتُ فِي خِلاَفَةِ سُلَيْمَانَ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ
مِنْ نَاسٍ عَنْ بَعْضِ مَنْ سَأَلَ عَائِشَةَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ .
حَدَّثَنَا بِذَلِكَ عَلِيُّ بْنُ عِيسَى بْنِ يَزِيدَ الْبَغْدَادِيُّ حَدَّثَنَا
رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ . وَقَدْ ذَهَبَ
قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ فَرَأَوْا عَلَيْهِ الْقَضَاءَ إِذَا
أَفْطَرَ وَهُوَ قَوْلُ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, আমি ও হাফসা (রাঃ) দু'জনেই রোযা (নফল) ছিলাম। আমাদের সামনে খাবার আসলো এবং
সে খাবারের প্রতি আমাদের লোভ জাগলো। তাই আমরা তা খেয়ে ফেললাম। তারপর রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসলেন। হাফসা (রাঃ) আমার আগেই তার নিকটে
গেলেন। আর তিনি ছিলেন পিতার কন্যা। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা দু'জন রোযা
ছিলাম। আমাদের সামনে লোভজনক খাবার আসলে আমরা তা খেয়ে ফেললাম। তিনি বলেনঃ তোমরা
দু’জনে এর বদলে আর একদিন রোযা রেখে নিও।
যঈফ, যঈফ আবূ দাউদ (৪২৩)
আবু ঈসা বলেন, সালিহ্ ইবনু আবুল আখ্যার ও মুহাম্মাদ ইবনু আবু হাফসা
তাদের এই হাদীসটিকে যুহরী, উরওয়া, আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। মালিক
ইবনু আনাস, মা’মার, উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার, যিয়াদ ইবনু সা'দ প্রমুখ যুহরীর সূত্রে
আইশা (রাঃ)-এর নিকট হতে এই হাদীসটি মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এতে তারা উরওয়ার
নাম উল্লেখ করেননি। এই সনদ সূত্রটিই অনেক বেশী সহীহ। যেহেতু ইবনু জুরাইজ বলেন, আমি
যুহরীকে প্রশ্ন করলামঃ আপনার নিকট আইশা (রাঃ)-এর বরাতে উরওয়া কিছু বর্ণনা করেছেন কি?
তিনি বললেন, এই হাদীস প্রসঙ্গে আমি উরওয়ার নিকটে কিছু শুনিনি। তবে সুলাইমান ইবনু আবদুল
মালিকের শাসনামলে (৭১৫-৭১৭ খৃঃ) কিছু সংখ্যক ব্যক্তির মাধ্যমে আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে
আমি এটি শ্রবণ করেছি। ইমাম তিরমিয়ী বলেনঃ আমাদের নিকট এই ঘটনা বর্ণনা করেছেন আলী ইবনু
ঈসা রাওহ ইবনু উবাদার সূত্রে ইবনু জুরাইজ হতে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল সাহাবী ও তাবিঈ এই হাদীস
অনুযায়ী আমল করার পক্ষে অভিমত দিয়েছেন। অর্থাৎ নফল রোযা ভেঙ্গে ফেললে তার কাযা আদায়
করতে হবে। ইমাম মালিকের ফতোয়াও তাই।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ
শা’বানকে রমযানের
সাথে মিলানো
৭৩৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ
أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ مَا رَأَيْتُ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ إِلاَّ
شَعْبَانَ وَرَمَضَانَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ أُمِّ سَلَمَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ .
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ، أَيْضًا عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ،
أَنَّهَا قَالَتْ مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي شَهْرٍ أَكْثَرَ
صِيَامًا مِنْهُ فِي شَعْبَانَ كَانَ يَصُومُهُ إِلاَّ قَلِيلاً بَلْ كَانَ
يَصُومُهُ كُلَّهُ .
উম্মু সালামা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি শা’বান ও রমযান ছাড়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
একটানা দু’মাসের রোযা পালন করতে দেখিনি।
-সহীহ ইবনু মা-জাহ (১৩৪৮)
আইশা (রাঃ)-এর সূত্রেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা
উম্মু সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৩৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو حَدَّثَنَا أَبُو
سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِذَلِكَ .
وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ هُوَ
جَائِزٌ فِي كَلاَمِ الْعَرَبِ إِذَا صَامَ أَكْثَرَ الشَّهْرِ أَنْ يُقَالَ صَامَ
الشَّهْرَ كُلَّهُ وَيُقَالُ قَامَ فُلاَنٌ لَيْلَهُ أَجْمَعَ . وَلَعَلَّهُ
تَعَشَّى وَاشْتَغَلَ بِبَعْضِ أَمْرِهِ . كَأَنَّ ابْنَ الْمُبَارَكِ قَدْ
رَأَى كِلاَ الْحَدِيثَيْنِ مُتَّفِقَيْنِ يَقُولُ إِنَّمَا مَعْنَى هَذَا
الْحَدِيثِ أَنَّهُ كَانَ يَصُومُ أَكْثَرَ الشَّهْرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَقَدْ رَوَى سَالِمٌ أَبُو النَّضْرِ وَغَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ
أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ نَحْوَ رِوَايَةِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
আবূ
সালামার সূত্রে আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শা’বান মাসের অনুরূপ অন্য কোন মাসে এত বেশি
(নফল) রোযা পালন করতে দেখিনি। কিছু অংশ ছাড়া এ মাসের পুরো মাসটাই, বলতে কি সারা
মাসটাই তিনি (নফল) রোযা রাখতেন।
-হাসান সহীহ, প্রাগুক্ত
এ হাদীস প্রসঙ্গে ইবনুল মুবারাক বলেছেন, যদি কোন লোক মাসের বেশিরভাগ
দিন রোযা পালন করে তবে আরবী বাগধারা অনুযায়ী বলা যায় সে লোক সারা মাসই রোযা পালন
করেছে। যেমন আরবরা বলে থাকে, অমুক লোক সম্পূর্ণ রাত (নামাযে) দাঁড়িয়েছিল। অথচ সে
লোক রাতের খাবারে এবং অন্যান্য প্রয়োজনে কিছু সময় ব্যয় করেছে। ইবনুল মুবারাক এর
প্রেক্ষিতে মনে করেন, হাদীস দুটির তাৎপর্য একই। হাদীসটির তাৎপর্য হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট
মাসের বেশিরভাগ দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা পালন করতেন।
আবূ ঈসা বলেন, সালিম আবূ নাযর এবং আরও অনেকে আবূ সালামার সূত্রে আইশা হতে মুহাম্মাদ
ইবনু আমরের মতই হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
৩৮. অনুচ্ছেদঃ
রমযান মাসের
সম্মানার্থে শা’বান মাসের শেষ অর্ধেকে রোযা পালন করা মাকরূহ
৭৩৮
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا بَقِيَ نِصْفٌ مِنْ شَعْبَانَ فَلاَ
تَصُومُوا " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ عَلَى هَذَا اللَّفْظِ
. وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ يَكُونَ
الرَّجُلُ مُفْطِرًا فَإِذَا بَقِيَ مِنْ شَعْبَانَ شَيْءٌ أَخَذَ فِي الصَّوْمِ
لِحَالِ شَهْرِ رَمَضَانَ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَا يُشْبِهُ قَوْلَهُمْ حَيْثُ قَالَ صلى الله
عليه وسلم " لاَ تَقَدَّمُوا شَهْرَ رَمَضَانَ بِصِيَامٍ إِلاَّ أَنْ يُوَافِقَ
ذَلِكَ صَوْمًا كَانَ يَصُومُهُ أَحَدُكُمْ " . وَقَدْ دَلَّ فِي هَذَا
الْحَدِيثِ أَنَّمَا الْكَرَاهِيَةُ عَلَى مَنْ يَتَعَمَّدُ الصِّيَامَ لِحَالِ
رَمَضَانَ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শা’বান মাসের
অর্ধেক বাকী থাকতে তোমরা আর রোযা পালন করো না।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৫১)
আবূ ঈসা আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্
বলেছেন। এই শব্দে এ সূত্র ছাড়া আর কোন বর্ণনা আছে কি না তা আমাদের জানা নেই। কোন কোন
আলিমদের মতানুযায়ী এই হাদীসটি সে সব লোকের জন্য প্রযোজ্য যে সাধারণতঃ (শা’বানের) রোযা
পালন করে না, কিন্তু শা’বান মাসের কিছু দিন বাকী থাকতেই রমযানের সম্মানার্থে রোযা পালন
শুরু করে দেয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্ত অভিমতের সাথে
সাদৃশ্যপূর্ণ একটি হাদীস আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর মারফতেও বর্ণিত আছে। তা এই যে, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (শা’বানের) রোযা রেখে তোমরা রমযানকে স্বাগত
জানাবে না। তবে কারো নির্ধারিত দিনগুলোর রোযার সাথে এই দিনের রোযার মিল পড়ে গেলে ভিন্ন
কথা। এ হাদীস হতে জানা গেল যে, কোন ব্যক্তির রমযানকে স্বাগত জানানোর জন্য (শা’বানের)
রোযা রাখা মাকরূহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৯. অনুচ্ছেদঃ
মধ্য শা'বান রাতের
ফযীলত
৭৩৯
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا
الْحَجَّاجُ بْنُ أَرْطَاةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عُرْوَةَ،
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ فَقَدْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً
فَخَرَجْتُ فَإِذَا هُوَ بِالْبَقِيعِ فَقَالَ " أَكُنْتِ تَخَافِينَ أَنْ
يَحِيفَ اللَّهُ عَلَيْكِ وَرَسُولُهُ " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
إِنِّي ظَنَنْتُ أَنَّكَ أَتَيْتَ بَعْضَ نِسَائِكَ . فَقَالَ " إِنَّ اللَّهَ
عَزَّ وَجَلَّ يَنْزِلُ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ إِلَى السَّمَاءِ
الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لأَكْثَرَ مِنْ عَدَدِ شَعْرِ غَنَمِ كَلْبٍ " .
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
عَائِشَةَ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ الْحَجَّاجِ
. وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يُضَعِّفُ هَذَا الْحَدِيثَ وَقَالَ يَحْيَى بْنُ أَبِي
كَثِيرٍ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ عُرْوَةَ وَالْحَجَّاجُ بْنُ أَرْطَاةَ لَمْ يَسْمَعْ
مِنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক রাতে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে হারিয়ে
ফেললাম (বিছানায় পেলাম না)। আমি (তাঁর সন্ধানে) বের হলাম। এসে দেখলাম তিনি বাকী
কবরস্তানে আছেন। তিনি বলেনঃ তুমি কি ভয় করছ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার প্রতি কোন
অবিচার করবেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অনুমান করলাম আপনি আপনার অন্য কোন
বিবির নিকটে গিয়েছেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা মধ্য শা'বানে (১৫ তারিখের রাতে)
দুনিয়ার কাছের আকাশে অবতীর্ণ হন। তারপর কালব গোত্রের বকরী পালের লোমের চেয়েও
বেশী সংখ্যক লোককে তিনি মাফ করে দেন।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৩৮৯)
এই অনুচ্ছেদে আবু বাকর সিদীক (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
ঈসা বলেন, হাজ্জাজের বরাতে এই সূত্রটি ব্যতীত অন্য কোন সূত্রে আইশা (রাঃ)-এর হাদীসটি
প্রসঙ্গে আমরা কিছুই অবগত নই। আমি মুহাম্মাদ আল-বুখারীকে উল্লেখিত হাদীসকে দুর্বল বলতে
শুনেছি। তিনি বলেছেন, রাবী ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর উরওয়া (রহঃ) হতে কোন হাদীস শুনেননি।
মুহাম্মাদ আল-বুখারী আরও বলেন, এমনিভাবে হাজ্জাজও ইয়াহইয়া ইবনু আবু কাসীরের নিকট
হতে কিছুই শুনেননি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৪০. অনুচ্ছেদঃ
মুহার্রামের রোযা
৭৪০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ صِيَامِ شَهْرِ
رَمَضَانَ شَهْرُ اللَّهِ الْمُحَرَّمُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমযান মাসের রোযার
পরে আল্লাহ্ তা’আলার মাস মুহার্রামের রোযাই সবচেয়ে ফাযীলাতপূর্ণ।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭৪২), মুসলিম
আবূ ঈসা আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৪১
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ
سَأَلَهُ رَجُلٌ فَقَالَ أَىُّ شَهْرٍ تَأْمُرُنِي أَنْ أَصُومَ بَعْدَ شَهْرِ
رَمَضَانَ قَالَ لَهُ مَا سَمِعْتُ أَحَدًا يَسْأَلُ عَنْ هَذَا إِلاَّ رَجُلاً
سَمِعْتُهُ يَسْأَلُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا قَاعِدٌ فَقَالَ
يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ شَهْرٍ تَأْمُرُنِي أَنْ أَصُومَ بَعْدَ شَهْرِ
رَمَضَانَ قَالَ " إِنْ كُنْتَ صَائِمًا بَعْدَ شَهْرِ رَمَضَانَ فَصُمِ
الْمُحَرَّمَ فَإِنَّهُ شَهْرُ اللَّهِ فِيهِ يَوْمٌ تَابَ اللَّهُ فِيهِ عَلَى
قَوْمٍ وَيَتُوبُ فِيهِ عَلَى قَوْمٍ آخَرِينَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আলী (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, এক ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করল, রামাযান মাসের পর কোন মাসের রোযা রাখতে আপনি
আমাকে আদেশ করেন? তিনি তাকে বললেন, এই বিষয়ে আমি কাউকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনিনি। তবে হ্যাঁ এক সময় আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকটে বসা ছিলাম। এই সময় এক
ব্যক্তি এসে তাঁকে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! রামাযান মাসের পর আর কোন মাসের রোযা
পালনে আপনি আমাকে আদেশ করেন? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ রামাযান মাসের পর তুমি যদি আরো রোযা রাখতে ইচ্ছুক হও তবে মুহাররামের রোযা
রাখ। যেহেতু এটা আল্লাহ তা'আলার মাস। এই মাসে এমন একটি দিবস আছে যেদিন আল্লাহ
তা'আলা এক গোত্রের তাওবা ক্ববুল করেছিলেন এবং তিনি আরোও অনেক গোত্রের তাওবাও এই
দিনে কুবুল করবেন।
যঈফ, তা’লীকুর রাগীব (২/৭৭)
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৪১. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর দিন রোযা
পালন প্রসঙ্গে
৭৪২
حَدَّثَنَا
الْقَاسِمُ بْنُ دِينَارٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، وَطَلْقُ
بْنُ غَنَّامٍ، عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ زِرٍّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ،
قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ مِنْ غُرَّةِ كُلِّ
شَهْرٍ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ وَقَلَّمَا كَانَ يُفْطِرُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدِ اسْتَحَبَّ
قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ صِيَامَ يَوْمِ الْجُمُعَةِ وَإِنَّمَا يُكْرَهُ
أَنْ يَصُومَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ لاَ يَصُومُ قَبْلَهُ وَلاَ بَعْدَهُ . قَالَ
وَرَوَى شُعْبَةُ عَنْ عَاصِمٍ هَذَا الْحَدِيثَ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
আবদুল্লাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, প্রত্যেক মাসের শুরুতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিন
দিন রোযা পালন করতেন এবং জুমুআর দিনের রোযা খুব কমই ভাঙ্গতেন।
-হাসান, তাখরীজুল মিশকাত (২০৫৮) তা’লীক আলা ইবনু খুযাইমা (২১৪৯), সহীহ্ আবূ দাঊদ
(২১১৬)
ইবনু উমার ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ঈসা আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান গারীব বলেছেন। জুমু’আর দিন
রোযা পালন করাকে বিশেষজ্ঞ আলিমগণের একদল মুস্তাহাব বলেছেন, জুমু’আর আগের বা পরের দিন
রোযা পালন না করে শুধু জুমু’আর দিন রোযা পালন করাকে মাকরূহ বলেছেন। আসিম (রহঃ)-এর বরাতে
শুবাও এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে এটিকে তিনি মারফূভাবে বর্ণনা করেননি (মাওকুফভাবে
বর্ণনা করেছেন)।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৪২. অনুচ্ছেদঃ
শুধুমাত্র জুমু’আর
দিন রোযা পালন করা মাকরূহ্
৭৪৩
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
لاَ يَصُومُ أَحَدُكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلاَّ أَنْ يَصُومَ قَبْلَهُ أَوْ
يَصُومَ بَعْدَهُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَجَابِرٍ
وَجُنَادَةَ الأَزْدِيِّ وَجُوَيْرِيَةَ وَأَنَسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَكْرَهُونَ لِلرَّجُلِ أَنْ
يَخْتَصَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ بِصِيَامٍ لاَ يَصُومُ قَبْلَهُ وَلاَ بَعْدَهُ .
وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে কোন
ব্যক্তি যেন শুধুমাত্র জুমু’আর দিনে রোযা না রাখে জুমু’আর আগের দিন বা পরের দিন
রোযা না রেখে।
-সহীহ্ ইবনু মা-জাহ (১৭২৩), বুখারী, মুসলিম
আলী, জাবির, জুনাদা আল-আয্দী, জুওয়াইরিয়া, আনাস এবং আবদুল্লাহ
ইবনু আমর (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী
বিশেষজ্ঞ আলিমগণ মত প্রকাশ করেছেন। তারা আগের বা পরের দিনের সাথে না মিলিয়ে শুধুমাত্র
জুমু’আর দিনে রোযা পালন করাকে মাকরূহ্ বলেছেন। ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাকও এই কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৩. অনুচ্ছেদঃ
শনিবারের রোযা পালন
প্রসঙ্গে
৭৪৪
حَدَّثَنَا
حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ حَبِيبٍ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ
يَزِيدَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُسْرٍ، عَنْ
أُخْتِهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ
تَصُومُوا يَوْمَ السَّبْتِ إِلاَّ فِيمَا افْتَرَضَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ فَإِنْ
لَمْ يَجِدْ أَحَدُكُمْ إِلاَّ لِحَاءَ عِنَبَةٍ أَوْ عُودَ شَجَرَةٍ
فَلْيَمْضُغْهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
وَمَعْنَى كَرَاهَتِهِ فِي هَذَا أَنْ يَخُصَّ الرَّجُلُ يَوْمَ السَّبْتِ
بِصِيَامٍ لأَنَّ الْيَهُودَ تُعَظِّمُ يَوْمَ السَّبْتِ .
আবদুল্লাহ ইবনু
বুসর (রহঃ) হতে তার বোন থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের উপর ফরযকৃত রোযা ছাড়া তোমরা
শনিবারে আর অন্য কোন রোযা পালন করো না। আঙ্গুরের লতার বাকল বা গাছের ডাল ছাড়া
তোমাদের কেউ যদি আর কিছু না পায় (সেদিনের আহারের জন্য) তবে সে যেন তাই চিবিয়ে
নেয় (রোযা ভাঙ্গার জন্য)।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭২৬)
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। শুধুমাত্র শনিবারের দিনকে
রোযা পালনের জন্য নির্দিষ্ট করে নেয়াই মাকরূহ হওয়ার কারণ। কেননা, শনিবারের প্রতি
ইয়াহূদীরা বিশেষ মর্যাদা প্রদর্শন করে থাকে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৪. অনুচ্ছেদঃ
সোমবার ও বৃহস্পতিবার
রোযা পালন প্রসঙ্গে
৭৪৫
حَدَّثَنَا
أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ الْفَلاَّسُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
دَاوُدَ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنْ رَبِيعَةَ
الْجُرَشِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يَتَحَرَّى صَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
حَفْصَةَ وَأَبِي قَتَادَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সোমবার ও বৃহস্পতিবারের
রোযার প্রতি বেশি খেয়াল রাখতেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭৩৯)
হাফসা, আবূ কাতাদা, আবূ হুরায়রা ও উসামা ইবনু যাইদ (রাঃ) হতেও
এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা এই সূত্রে আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে
হাসান গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৪৬
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، وَمُعَاوِيَةُ بْنُ
هِشَامٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ خَيْثَمَةَ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ مِنَ
الشَّهْرِ السَّبْتَ وَالأَحَدَ وَالاِثْنَيْنِ وَمِنَ الشَّهْرِ الآخَرِ
الثُّلاَثَاءَ وَالأَرْبِعَاءَ وَالْخَمِيسَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَرَوَى عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ
سُفْيَانَ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাসের শনি, রবি ও
সোমবার রোযা রাখতেন এবং অপর মাসের মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন।
যঈফ, তাখরীজুল মিশকাত, তাহকীক ছানী (২০৫৯),
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান। আবদুর রহমান ইবনু মাহ্দী এই
হাদীসটি সুফিয়ান (রহঃ) হতে (মাওকূফ হিসেবে) বর্ণনা করেছেন, তবে মারফূ করেননি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৭৪৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
رِفَاعَةَ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " تُعْرَضُ
الأَعْمَالُ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ فَأُحِبُّ أَنْ يُعْرَضَ عَمَلِي
وَأَنَا صَائِمٌ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ فِي
هَذَا الْبَابِ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহ
তা’আলার দরবারে) আমল পেশ করা হয়। সুতরাং আমার আমলসমূহ যেন রোযা পালনরত অবস্থায় পেশ
করা হোক এটাই আমার পছন্দনীয়।
-সহীহ্, তাখরীজুল মিশকাত (২০৫৬), তা’লীকুর রাগীব (৮৪/২), ইরওয়া (৯৪৯)
এই অনুচ্ছেদে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান
গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৫. অনুচ্ছেদঃ
বুধবার ও
বৃহস্পতিবারের রোযা রাখা প্রসঙ্গে
৭৪৮
حَدَّثَنَا
الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْحَرِيرِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ مَدُّويَهْ، قَالاَ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا هَارُونُ بْنُ سَلْمَانَ،
عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ مُسْلِمٍ الْقُرَشِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَأَلْتُ
أَوْ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ صِيَامِ الدَّهْرِ فَقَالَ
" إِنَّ لأَهْلِكَ عَلَيْكَ حَقًّا صُمْ رَمَضَانَ وَالَّذِي يَلِيهِ
وَكُلَّ أَرْبِعَاءٍ وَخَمِيسٍ فَإِذًا أَنْتَ قَدْ صُمْتَ الدَّهْرَ وَأَفْطَرْتَ
" . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
مُسْلِمٍ الْقُرَشِيِّ حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى بَعْضُهُمْ عَنْ هَارُونَ بْنِ
سَلْمَانَ عَنْ مُسْلِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ .
উবাইদুল্লাহ্ ইবনু
মুসলিম আল-কুরাশী (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে পুরো বছর রোযা
রাখা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম বা তাঁকে প্রশ্ন করা হল। তিনি বলেনঃ তোমার উপর অবশ্যই
তোমার পরিবারের অধিকার আছে। অতএব তুমি রামাযান ও এর পরের মাস (শাওয়ালের ছয়টি নফল
রোযা) এবং প্রতি বুধ ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখ। এই পদ্ধতি মানলে তুমি যেন পুরো বছরই
রোযা রাখলে এবং রোযা ভেঙে ফেলার সুযোগ পেলে।
যঈফ, যঈফ আবূ দাঊদ (৪২০)
এ অনুচ্ছেদে আইশা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন,
মুসলিম আল-কুরাশীর হাদীসটি গারীব। কেউ কেউ এটিকে হারূন ইবনু সালমান হতে তিনি মুসলিম
ইবনু উবাইদুল্লাহ্ হতে তিনি তার পিতা উবাইদুল্লাহ্ (রহঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৪৬. অনুচ্ছেদঃ
আরাফার দিন রোযা
পালনের ফাযীলাত
৭৪৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ
بْنُ زَيْدٍ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْبَدٍ
الزِّمَّانِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ
يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي
قَتَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدِ اسْتَحَبَّ أَهْلُ الْعِلْمِ صِيَامَ يَوْمِ
عَرَفَةَ إِلاَّ بِعَرَفَةَ .
আবূ কাতাদা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আরাফাতের
দিনের রোযা সম্পর্কে আশা করি যে, তিনি এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী
এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৩০), মুসলিম
আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ
কাতাদা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। আরাফাতে অবস্থানরত ব্যক্তিদের ছাড়া
অন্যদের জন্য এই দিনে রোযা পালন করাকে বিশেষজ্ঞ আলিমগণ মুস্তাহাব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৭. অনুচ্ছেদঃ
আরাফাতে অবস্থানকালে
সে দিনের রোযা পালন করা মাকরূহ্
৭৫০
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، حَدَّثَنَا
أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم أَفْطَرَ بِعَرَفَةَ وَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ أُمُّ الْفَضْلِ بِلَبَنٍ
فَشَرِبَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَأُمِّ
الْفَضْلِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ حَجَجْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم فَلَمْ يَصُمْهُ يَعْنِي يَوْمَ عَرَفَةَ وَمَعَ أَبِي بَكْرٍ فَلَمْ
يَصُمْهُ وَمَعَ عُمَرَ فَلَمْ يَصُمْهُ وَمَعَ عُثْمَانَ فَلَمْ يَصُمْهُ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ
الإِفْطَارَ بِعَرَفَةَ لِيَتَقَوَّى بِهِ الرَّجُلُ عَلَى الدُّعَاءِ وَقَدْ صَامَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ يَوْمَ عَرَفَةَ بِعَرَفَةَ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরাফাতে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন। সেদিন তাঁর জন্য
উম্মুল ফাদল (রাঃ) কিছু দুধ পাঠিয়েছিলেন। তিনি তা পান করেন।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২১০৯), তা’লীক আলা ইবনু খুযাইমা (২১০২), উম্মুল ফাযল হতে
(বুখারী ও মুসলিম )
আবূ হুরায়রা, ইবনু উমার ও উম্মুল ফাযল (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
ইবনু উমার (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমি
হাজ্জ করেছি কিন্তু আরাফার দিন তিনি রোযা পালন করেননি; আবূ বাক্র (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ
করেছি, তিনিও সেদিন রোযা পালন করেননি; উমার (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, তিনিও সেদিন
রোযা পালন করেননি এবং উসমান (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি কিন্তু তিনিও রোযা পালন করেননি।
এ হাদীস অনুযায়ী বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ আলিম আমলের কথা বলেছেন। তাঁরা আরাফার দিন দু’আর
ক্ষেত্রে শক্তিলাভের জন্য রোযা পালন না করাকে মুস্তাহাব বলেছেন। অবশ্য আরাফাতে অবস্থানকালে
কোন কোন আলিম সে দিনের রোযা পালন করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৫১
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ، وَإِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ، عَنْ
أَبِيهِ، قَالَ سُئِلَ ابْنُ عُمَرَ عَنْ صَوْمِ، يَوْمِ عَرَفَةَ بِعَرَفَةَ
فَقَالَ حَجَجْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَصُمْهُ وَمَعَ
أَبِي بَكْرٍ فَلَمْ يَصُمْهُ وَمَعَ عُمَرَ فَلَمْ يَصُمْهُ وَمَعَ عُثْمَانَ
فَلَمْ يَصُمْهُ . وَأَنَا لاَ أَصُومُهُ وَلاَ آمُرُ بِهِ وَلاَ أَنْهَى عَنْهُ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ
عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ رَجُلٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . وَأَبُو
نَجِيحٍ اسْمُهُ يَسَارٌ وقد سمع من ابن عمر.
ইবনু আবূ নাজীহ্
(রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আরাফাতের দিন রোযা পালন প্রসঙ্গে ইবনু উমার (রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হাজ্জ করেছি,
তিনি সেদিন রোযা পালন করেননি। আবূ বাক্র (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, ঐ দিন তিনিও
রোযা পালন করেননি। উমার (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, ঐ দিন তিনিও রোযা পালন
করেননি। উসমান (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, ঐ দিন তিনিও রোযা পালন করেননি। এ দিন
আমি নিজেও রোযা পালন করিনা, কাউকে রোযা রাখতেও বলি না এবং নিষেধও করি না।
-সনদ সহীহ্
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। এই হাদীসটি ইবনু আবূ নাজীহ্,
তার পিতা আবূ নাজীহ্ হতে, তিনি জনৈক ব্যক্তি হতে, তিনি ইবনু উমার (রাঃ)-এর সূত্রেও
বর্ণিত হয়েছে। আবূ নাজীহ্-এর নাম ইয়াসার।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৮. অনুচ্ছেদঃ
আশূরার দিন রোযা
পালনের উৎসাহ প্রদান করা
৭৫২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ
بْنُ زَيْدٍ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْبَدٍ
الزِّمَّانِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" صِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ
يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ
وَمُحَمَّدِ بْنِ صَيْفِيٍّ وَسَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ وَهِنْدِ بْنِ أَسْمَاءَ
وَابْنِ عَبَّاسٍ وَالرُّبَيِّعِ بِنْتِ مُعَوِّذِ بْنِ عَفْرَاءَ وَعَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ سَلَمَةَ الْخُزَاعِيِّ عَنْ عَمِّهِ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الزُّبَيْرِ ذَكَرُوا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ حَثَّ
عَلَى صِيَامِ يَوْمِ عَاشُورَاءَ . قَالَ أَبُو عِيسَى لاَ نَعْلَمُ فِي شَيْءٍ
مِنَ الرِّوَايَاتِ أَنَّهُ قَالَ " صِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ كَفَّارَةُ
سَنَةٍ " . إِلاَّ فِي حَدِيثِ أَبِي قَتَادَةَ . وَبِحَدِيثِ أَبِي
قَتَادَةَ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
আবূ কাতাদা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আমি আশাপোষণ
করি যে, তিনি আশূরার রোযার মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের (গুনাহ্) ক্ষমা করে দিবেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৩৮), মুসলিম
এই অনুচ্ছেদে আলী, মুহাম্মাদ ইবনু সাইফী, সালামা ইবনুল আকওয়া,
হিন্দ ইবনু আসমা, ইবনু আব্বাস, রুবাই বিনতু মুআওবিয ইবনু আফ্রা, আবদুর রাহমান ইবনু
সালামা আল-খুযাঈ, তার চাচার বরাতে এবং আবদুল্লাহ্ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) প্রমুখ বর্ণনা
করেনঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদেরকে আশূরার দিন রোযা পালন করতে
উৎসাহিত করেছেন।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি ছাড়া আর অন্য কোন বর্ণনায় “আশূরার
দিনের রোযা এক বছরের (গুনাহের) কাফ্ফারা স্বরূপ” এই কথা উল্লেখ আছে বলে আমাদের জানা
নেই। ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাক (রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ)-এর হাদীস অনুযায়ীই অভিমত ব্যক্ত
করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৯. অনুচ্ছেদঃ
আশূরার দিন রোযা পালন
না করার সুযোগ
৭৫৩
حَدَّثَنَا
هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ،
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ
عَاشُورَاءُ يَوْمًا تَصُومُهُ قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُهُ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ صَامَهُ
وَأَمَرَ النَّاسَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا افْتُرِضَ رَمَضَانُ كَانَ رَمَضَانُ هُوَ
الْفَرِيضَةَ وَتَرَكَ عَاشُورَاءَ فَمَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ
. وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَقَيْسِ بْنِ سَعْدٍ وَجَابِرِ بْنِ
سَمُرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَمُعَاوِيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَالْعَمَلُ عِنْدَ
أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَى حَدِيثِ عَائِشَةَ وَهُوَ حَدِيثٌ صَحِيحٌ لاَ يَرَوْنَ
صِيَامَ يَوْمِ عَاشُورَاءَ وَاجِبًا إِلاَّ مَنْ رَغِبَ فِي صِيَامِهِ لِمَا
ذُكِرَ فِيهِ مِنَ الْفَضْلِ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, কুরাইশরা জাহিলী যুগে এমন একটি দিনে রোযা রাখত যে দিনটি ছিল আশূরা। সেদিন
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও রোযা পালন করতেন। তিনি মাদীনায়
আসার পরও ঐ রোযা পালন করেছেন এবং রোযা পালনের জন্য লোকদেরকেও আদেশ করেছেন। রমযান
মাসের রোযা ফরয হওয়ার পর এটাই ফরয হিসাবে রয়ে গেল এবং তিনি আশূরার রোযা ছেড়ে
দিলেন। ফলে এই দিনে যে লোক ইচ্ছা করে সে রোযা পালন করতে পারে আর যে ইচ্ছা না করে
সে তা ছেড়েও দিতে পারে।
-সহীহ, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২১১০), বুখারী, মুসলিম
ইবনু মাসঊদ, কাইস ইবনু সা’দ, জাবির ইবনু সামুরা, ইবনু উমার ও মুআবিয়া
(রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল
করার মত ব্যক্ত করেছেন। এই হাদীস সহীহ্। আশূরার রোযাকে তারা ওয়াজিব মনে করেন না। কিন্তু
কোন ব্যক্তির এই দিনে রোযা রাখার আগ্রহ হলে সে তা রাখতে পারে। কারণ, বিভিন্ন হাদীসে
এই দিনের রোযা প্রসঙ্গে অনেক ফাযীলাতের কথা উল্লেখ আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫০. অনুচ্ছেদঃ
কোন্টি আশূরার দিন?
৭৫৪
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ حَاجِبِ بْنِ عُمَرَ،
عَنِ الْحَكَمِ بْنِ الأَعْرَجِ، قَالَ انْتَهَيْتُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ وَهُوَ
مُتَوَسِّدٌ رِدَاءَهُ فِي زَمْزَمَ فَقُلْتُ أَخْبِرْنِي عَنْ يَوْمِ عَاشُورَاءَ
أَىُّ يَوْمٍ هُوَ أَصُومُهُ فَقَالَ إِذَا رَأَيْتَ هِلاَلَ الْمُحَرَّمِ
فَاعْدُدْ ثُمَّ أَصْبِحْ مِنَ التَّاسِعِ صَائِمًا . قَالَ فَقُلْتُ أَهَكَذَا
كَانَ يَصُومُهُ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ .
হাকাম ইবনুল আ’রাজ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। তখন তিনি যমযম কূপের সামনে তার চাদরকে
বালিশের মত করে হেলান দেওয়া অবস্থায় ছিলেন। আমি বললাম, আমাকে আশূরা প্রসঙ্গে কিছু
বলে দিন তো, কোন দিনটিতে আমি রোযা রাখব? তিনি বললেন, যখন মুহার্রামের চাঁদ দেখতে
পাবে তখন হতেই তুমি দিন গুনতে থাকবে। আর রোযা শুরু করবে নয় তারিখ ভোর হতে। আমি
বললাম, এভাবেই কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা পালন
করতেন? তিনি বললেন হ্যাঁ।
-সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২১১৪), মুসলিম
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৫৫
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِصَوْمِ
عَاشُورَاءَ يَوْمَ الْعَاشِرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي يَوْمِ
عَاشُورَاءَ فَقَالَ بَعْضُهُمْ يَوْمُ التَّاسِعِ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ يَوْمُ
الْعَاشِرِ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ قَالَ صُومُوا التَّاسِعَ
وَالْعَاشِرَ وَخَالِفُوا الْيَهُودَ . وَبِهَذَا الْحَدِيثِ يَقُولُ
الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, (মুহার্রামের) দশম তারিখে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আশূরার রোযা পালন করতে আদেশ করেছেন।
-সহীহ, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২১১৩), মুসলিম আরও পূর্ণাঙ্গ রূপে।
আবূ ঈসা ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্
বলেছেন। আলিমগণের মধ্যে আশূরার দিন প্রসঙ্গে দ্বিমত রয়েছে। কেউ কেউ (মুহার্রামের)
নয় তারিখের কথা বলেন, আবার অন্য একদল দশ তারিখের কথা বলেছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন,
তোমরা নয় ও দশ (এই দুই দিন) রোযা পালন কর এবং (এই ক্ষেত্রে) ইয়াহূদীদের বিপরীত কর।
এই হাদীস অনুযায়ী মত প্রকাশ করেছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫১. অনুচ্ছেদঃ
যুলহিজ্জা মাসের
(প্রথম) দশ দিন রোযা পালন প্রসঙ্গে
৭৫৬
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ،
عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم صَائِمًا فِي الْعَشْرِ قَطُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا رَوَى غَيْرُ
وَاحِدٍ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنِ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ .
وَرَوَى الثَّوْرِيُّ وَغَيْرُهُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ
إِبْرَاهِيمَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمْ يُرَ صَائِمًا فِي
الْعَشْرِ . وَرَوَى أَبُو الأَحْوَصِ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ
عَائِشَةَ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنِ الأَسْوَدِ . وَقَدِ اخْتَلَفُوا
عَلَى مَنْصُورٍ فِي هَذَا الْحَدِيثِ وَرِوَايَةُ الأَعْمَشِ أَصَحُّ وَأَوْصَلُ
إِسْنَادًا . قَالَ وَسَمِعْتُ أَبَا بَكْرٍ مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ يَقُولُ
سَمِعْتُ وَكِيعًا يَقُولُ الأَعْمَشُ أَحْفَظُ لإِسْنَادِ إِبْرَاهِيمَ مِنْ
مَنْصُورٍ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি কখনও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (যুলহিজ্জা
মাসের) দশ দিন রোযা পালন করতে দেখিনি।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭২৯), মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি একাধিক বর্ণনাকারী আমাশ হতে, তিনি ইব্রাহীম
হতে, তিনি আসওয়াদ হতে, তিনি আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে এভাবেই বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসটিকে
সাওরী প্রমুখ বর্ণনাকারী মানসূর হতে, তিনি ইবরাহীম... সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এই দশ দিন কখনও রোযা অবস্থায় দেখা যায়নি। এই
হাদীসটিকে আবূল আহওয়াস মানসূর হতে, তিনি ইবরাহীম হতে, তিনি আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা
করেছেন। তিনি বর্ণনাকারী আসওয়াদের উল্লেখ করেননি। এই হাদীসের সনদে মানসূরের পরবর্তী
বর্ণনাকারীগণ উক্ত মতবিরোধ করেছেন। আমাশের বর্ণনাটিই এই সনদগুলোর মধ্যে অধিক সহীহ্
এবং মুত্তাসিল। ওয়াকী বলেন, মানসূরের নিকট হতে বর্ণনার ক্ষেত্রে ইবরাহীম অপেক্ষা আমাশ
বেশি বিশ্বস্ত সংরক্ষক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২. অনুচ্ছেদঃ
যুলহিজ্জা মাসের দশ
দিনের সৎকাজের ফাযীলাত
৭৫৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُسْلِمٍ، هُوَ
الْبَطِينُ وَهُوَ ابْنُ عِمْرَانَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ
أَيَّامٍ الْعَمَلُ الصَّالِحُ فِيهِنَّ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ هَذِهِ
الأَيَّامِ الْعَشْرِ " . فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَلاَ
الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" وَلاَ الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ إِلاَّ رَجُلٌ خَرَجَ بِنَفْسِهِ
وَمَالِهِ فَلَمْ يَرْجِعْ مِنْ ذَلِكَ بِشَيْءٍ " . وَفِي الْبَابِ عَنِ
ابْنِ عُمَرَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَجَابِرٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন কোন দিন নেই যে
দিনসমূহের সৎকাজ আল্লাহ্ তা’আলার নিকট যুলহিজ্জা মাসের এই দশ দিনের সৎকাজ অপেক্ষা
বেশি প্রিয়। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ্ তা’আলার পথে জিহাদ করাও
কি (এত প্রিয়) নয়? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
আল্লাহ তা’আলার পথে জিহাদও তার চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। তবে জান-মাল নিয়ে যদি কোন
লোক আল্লাহ তা’আলার পথে জিহাদে বের হয় এবং এ দু’টির কোনটিই নিয়ে যদি সে আর ফিরে
না আসতে পারে তার কথা (অর্থাৎ সেই শহীদের মর্যাদা) আলাদা।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭২৭), বুখারী
ইবনু উমার, আবূ হুরায়রা, আবদুল্লাহ ইবনু আমর ও জাবির (রাঃ) হতেও
এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান
সহীহ্ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৫৮
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ نَافِعٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مَسْعُودُ بْنُ وَاصِلٍ، عَنْ
نَهَّاسِ بْنِ قَهْمٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَا مِنْ
أَيَّامٍ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ أَنْ يُتَعَبَّدَ لَهُ فِيهَا مِنْ عَشْرِ ذِي
الْحِجَّةِ يَعْدِلُ صِيَامُ كُلِّ يَوْمٍ مِنْهَا بِصِيَامِ سَنَةٍ وَقِيَامُ
كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْهَا بِقِيَامِ لَيْلَةِ الْقَدْرِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مَسْعُودِ بْنِ
وَاصِلٍ عَنِ النَّهَّاسِ . قَالَ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ
فَلَمْ يَعْرِفْهُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ مِثْلَ هَذَا . وَقَالَ قَدْ
رُوِيَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم مُرْسَلاً شَيْءٌ مِنْ هَذَا . وَقَدْ تَكَلَّمَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ
فِي نَهَّاسِ بْنِ قَهْمٍ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন কোন দিন নেই যে দিনগুলোর (নফল)
ইবাদাত আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট যিলহাজ্জ মাসের দশ দিনের ইবাদাত হতে বেশী প্রিয়। এই
দশ দিনের প্রতিটি রোযা এক বছরের রোযার সমকক্ষ এবং এর প্রতিটি রাতের ইবাদাত কাদ্রের
রাতের ইবাদাতের সমকক্ষ।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৭২৮),
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি গারীব। শুধু উল্লেখিত সূত্রেই আমরা হাদীসটি
জেনেছি। আমি মুহাম্মাদ আল-বুখারীকে এই হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনিও এই সূত্র ব্যতীত
অনুরূপ কিছু বলতে পারেননি। তিনি বলেন, কাতাদা হতে সাঈদ ইব্নুল মুসায়্যিব (রহঃ)-এর
সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উল্লিখিত হাদীসের কিছু
অংশ মুরসাল হিসেবে বর্ণিত আছে। ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সাঈদ (রহঃ) নাহ্হাস ইবনু কাহ্ম-এর
স্মরণশক্তির সমালোচনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৫৩. অনুচ্ছেদঃ
শাওয়াল মাসের ছয়
দিন রোযা পালন করা
৭৫৯
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ
سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم " مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ
شَوَّالٍ فَذَلِكَ صِيَامُ الدَّهْرِ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ
وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَثَوْبَانَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي أَيُّوبَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدِ اسْتَحَبَّ قَوْمٌ صِيَامَ سِتَّةِ أَيَّامٍ
مِنْ شَوَّالٍ بِهَذَا الْحَدِيثِ . قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ هُوَ حَسَنٌ هُوَ
مِثْلُ صِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ . قَالَ ابْنُ
الْمُبَارَكِ وَيُرْوَى فِي بَعْضِ الْحَدِيثِ " وَيُلْحَقُ هَذَا
الصِّيَامُ بِرَمَضَانَ " . وَاخْتَارَ ابْنُ الْمُبَارَكِ أَنْ تَكُونَ
سِتَّةَ أَيَّامٍ فِي أَوَّلِ الشَّهْرِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ
الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ إِنْ صَامَ سِتَّةَ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ
مُتَفَرِّقًا فَهُوَ جَائِزٌ . قَالَ وَقَدْ رَوَى عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ
مُحَمَّدٍ عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ وَسَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ
ثَابِتٍ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَذَا .
وَرَوَى شُعْبَةُ عَنْ وَرْقَاءَ بْنِ عُمَرَ عَنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ هَذَا
الْحَدِيثَ . وَسَعْدُ بْنُ سَعِيدٍ هُوَ أَخُو يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
الأَنْصَارِيِّ وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْحَدِيثِ فِي سَعْدِ بْنِ
سَعِيدٍ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ . حَدَّثَنَا هَنَّادٌ قَالَ أَخْبَرَنَا
الْحُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ الْجُعْفِيُّ عَنْ إِسْرَائِيلَ أَبِي مُوسَى عَنِ
الْحَسَنِ الْبَصْرِيِّ قَالَ كَانَ إِذَا ذُكِرَ عِنْدَهُ صِيَامُ سِتَّةِ
أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ فَيَقُولُ وَاللَّهِ لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ بِصِيَامِ
هَذَا الشَّهْرِ عَنِ السَّنَةِ كُلِّهَا .
আবূ আইয়ূব আনসারী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক রমযান মাসে
রোযা পালন করলো, তারপর শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করলো, সে লোক যেন সম্পূর্ণ
বছরই রোযা পালন করলো।
-হাসান সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭১৬), মুসলিম
জাবির, আবূ হুরায়রা ও সাওবান (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ঈসা আবূ আইয়ূব (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। একদল বিশেষজ্ঞ
আলিম এই হাদীসের ভিত্তিতে শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করাকে মুস্তাহাব মনে করেন।
ইবনুল মুবারাক বলেন, প্রতি মাসে তিন দিন রোযা পালনের মত এটিও মুস্তাহাব। এ রোযা রমযানের
রোযার পরপরই পালনের কথা কোন কোন হাদীসে উল্লেখ আছে। তাই তিনি এই ছয়টি রোযা শাওয়াল
মাসের শুরুর দিকে পালন করাকে বেশি পছন্দীয় মনে করেছেন তিনি আরও বলেছেনঃ শাওয়াল মাসের
ভিন্ন ভিন্ন দিনের রোযা পালন করাও জায়িয আছে।
আবূ ঈসা বলেন, বর্ণনাকারী আবদুল আযীয ইবনু মুহাম্মাদ এই হাদীসটি সাফওয়ান ইবনু সুলাইম
ও সা’দ ইবনু সাঈদের সূত্রে উমার ইবনু সাবিত হতে আবূ আইয়ূব (রাঃ)-এর সনদে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। শুবা (রাঃ) এই হাদীস ওয়ার্কা
ইবনু উমার হতে সা’দ ইবনু সাঈদ (রহঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এই সা’দ ইবনু সাঈদ হলেন
ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ আল-আনসারীর ভাই। একদল হাদীস বিশেষজ্ঞ তার স্মৃতিশক্তির সমালোচনা
করেছেন।
হাসান বাসরী হতে বর্ণিত আছে যে, তার নিকট শাওয়ালের ছয়টি রোযার উল্লেখ করা হলে তিনি
বললেন, আল্লাহর শপথ তিনি পূর্ণ বৎসরের পরিবর্তে এই মাসের রোযার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ
করেছেন। সনদ সহীহ্, মাকতু।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
৫৪. অনুচ্ছেদঃ
প্রতি মাসে তিন দিন
রোযা পালন করা
৭৬০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ أَبِي
الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ عَهِدَ إِلَىَّ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم ثَلاَثَةً أَنْ لاَ أَنَامَ إِلاَّ عَلَى وِتْرٍ وَصَوْمَ ثَلاَثَةِ
أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَأَنْ أُصَلِّيَ الضُّحَى .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনটি বিষয়ে আমার নিকট হতে
প্রতিশ্রুতি নেন। আমি যেন বিত্র আদায়ের পূর্বে না ঘুমাই, প্রত্যেক মাসে তিন দিন
রোযা আদায় করি এবং চাশ্তের নামায নিয়মিত আদায় করি।
-সহীহ্, ইরওয়া (৯৪৬), সহীহ আবূ দাঊদ (১২৮৬), বুখারী, মুসলিম
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৬১
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ،
عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ سَامٍ، يُحَدِّثُ عَنْ مُوسَى بْنِ
طَلْحَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " يَا أَبَا ذَرٍّ إِذَا صُمْتَ مِنَ الشَّهْرِ ثَلاَثَةَ
أَيَّامٍ فَصُمْ ثَلاَثَ عَشْرَةَ وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ وَخَمْسَ عَشْرَةَ "
. وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي قَتَادَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَقُرَّةَ
بْنِ إِيَاسٍ الْمُزَنِيِّ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي عَقْرَبٍ
وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعَائِشَةَ وَقَتَادَةَ بْنِ مِلْحَانَ وَعُثْمَانَ بْنِ أَبِي
الْعَاصِي وَجَرِيرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي ذَرٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ
. وَقَدْ رُوِيَ فِي بَعْضِ الْحَدِيثِ أَنَّ " مَنْ صَامَ ثَلاَثَةَ
أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ كَانَ كَمَنْ صَامَ الدَّهْرَ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেছেনঃ হে আবূ যার! তুমি প্রতি মাসে তিন
দিন রোযা পালন করতে চাইলে তের, চৌদ্দ ও পনের তারিখে তা পালন কর।
-হাসান সহীহ্, ইরওয়া (৯৪৭), মিশকাত তাহকীক ছানী (২০৫৭)
আবূ কাতাদা, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, কুররা ইবনু ইয়াস আল-মুযানী,
আবদুল্লাহ্ ইবনু মাসঊদ, আবূ আকরাব, ইবনু আব্বাস, আইশা, কাতাদা ইবনু মিলহান, উসমান
ইবনু আবুল আস ও জারীর (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ যার
(রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। কোন কোন হাদীসে বর্ণিত আছেঃ প্রতি মাসে যে
লোক তিন দিন রোযা পালন করলো সে যেন সারা বছর রোযা পালন করলো।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
৭৬২
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ أَبِي
عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " مَنْ صَامَ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ فَذَلِكَ
صِيَامُ الدَّهْرِ " . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ تَصْدِيقَ
ذَلِكَ فِي كِتَابِهِ : (مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا
) . الْيَوْمُ بِعَشَرَةِ أَيَّامٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي شِمْرٍ وَأَبِي
التَّيَّاحِ عَنْ أَبِي عُثْمَانَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم .
আবূ যার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতি মাসে যে লোক
তিন দিন রোযা পালন করে তা যেন সারা বছরই রোযা পালনের সমান। আল্লাহ্ তা’আলা এর
সমর্থনে তার কিতাবে আয়াত অবতীর্ণ করেছেনঃ “কোন লোক যদি একটি সাওয়াবের কাজ করে
তাহলে তার প্রতিদান হচ্ছে এর দশ গুণ” (সূরাঃ আন‘আম- ১৬০)। সুতরাং এক দিন দশ দিনের
সমান।
-সহীহ্, ইরওয়া
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। শুবা এই হাদীসটি আবূ শিম্র
হতে ও আবূত তাইয়্যাহ হতে, তারা উভয়ে উসমান হতে, তিনি আবূ হুরায়রা হতে, তিনি নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৬৩
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
يَزِيدَ الرِّشْكِ، قَالَ سَمِعْتُ مُعَاذَةَ، قَالَتْ قُلْتُ لِعَائِشَةَ أَكَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ
قَالَتْ نَعَمْ . قُلْتُ مِنْ أَيِّهِ كَانَ يَصُومُ قَالَتْ كَانَ لاَ يُبَالِي
مِنْ أَيِّهِ صَامَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
قَالَ وَيَزِيدُ الرِّشْكُ هُوَ يَزِيدُ الضُّبَعِيُّ وَهُوَ يَزِيدُ بْنُ
الْقَاسِمِ وَهُوَ الْقَسَّامُ وَالرِّشْكُ هُوَ الْقَسَّامُ بِلُغَةِ أَهْلِ
الْبَصْرَةِ .
মু’আযাহ (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
আমি
আইশা (রাঃ)-কে বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি প্রতি
মাসে তিন দিন রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি আবার বললাম, কোন্ কোন্ তারিখে
তিনি এই রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, তিনি যে কোন দিন এই রোযা রাখতেন, এই বিষয়ে তিনি
কোন সংকোচ করতেন না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭০৮), মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। বর্ণনাকারী ইয়াযীদ আর-রিশ্ক
হলেন ইয়াযীদ আয-যুবাঈ এবং ইনিই ইয়াযীদ ইবনুল কাসিম। ইনি ছিলেন বণ্টনকারী। বসরাবাসীদের
ভাষায় ‘রিশ্ক’ অর্থ বণ্টনকারী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৫. অনুচ্ছেদঃ
রোযা পালনের ফাযীলাত
৭৬৪
حَدَّثَنَا
عِمْرَانُ بْنُ مُوسَى الْقَزَّازُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ
رَبَّكُمْ يَقُولُ كُلُّ حَسَنَةٍ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِائَةِ
ضِعْفٍ وَالصَّوْمُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ الصَّوْمُ جُنَّةٌ مِنَ النَّارِ
وَلَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ وَإِنْ
جَهِلَ عَلَى أَحَدِكُمْ جَاهِلٌ وَهُوَ صَائِمٌ فَلْيَقُلْ إِنِّي صَائِمٌ
" . وَفِي الْبَابِ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ
وَكَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ وَسَلاَمَةَ بْنِ قَيْصَرٍ وَبَشِيرِ ابْنِ الْخَصَاصِيَةِ
. وَاسْمُ بَشِيرٍ زَحْمُ بْنُ مَعْبَدٍ وَالْخَصَاصِيَةُ هِيَ أُمُّهُ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের প্রতিপালক
বলেন, “প্রতিটি সৎ কাজের প্রতিদান হলো দশ গুণ হতে সাত শত গুণ পর্যন্ত। কিন্তু রোযা
শুধুমাত্র আমার জন্যই এবং এর প্রতিদান আমি নিজেই দিব।” রোযা জাহান্নাম হতে
(বাঁচার) ঢালস্বরূপ। আল্লাহ্ তা’আলার নিকট রোযা পালনকারীর মুখের গন্ধ কন্তুরী ও
মিশ্ক আম্বরের গন্ধের চেয়েও অধিক পছন্দনীয়। তোমাদের কোন রোযা পালনকারীর সাথে
যদি কোন জাহিল মূৰ্খতা সুলভ আচরণ করে তবে সে যেন বলে, আমি রোযাদার।
-সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (২/৫৭-৫৮), সহীহ আবূ দাঊদ (২০৪৬)
মুআয ইবনু জাবাল, সাহ্ল ইবনু সা’দ, কা’ব ইবনু উজরা, সালামা ইবনু
কাইসার ও বাশীর ইবনুল খাসাসিয়্যা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। বাশীর
(রাঃ)-এর নাম যাহ্ম ইবনু মা’বাদ, খাসাসিয়্যা হলেন তাঁর মাতা। আবূ ঈসা এই সূত্রে আবূ
হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৬৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، عَنْ هِشَامِ
بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَبَابًا يُدْعَى
الرَّيَّانَ يُدْعَى لَهُ الصَّائِمُونَ فَمَنْ كَانَ مِنَ الصَّائِمِينَ دَخَلَهُ
وَمَنْ دَخَلَهُ لَمْ يَظْمَأْ أَبَدًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
সাহ্ল ইবনু সা’দ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "রাইয়্যান" নামে জান্নাতে
একটি দরজা আছে। রোযা পালনকারীকে এই দরজা দিয়ে প্রবেশের জন্য ডাকা হবে। যে সব লোক
রোযা পালন করে তারা এই দরজা দিয়ে (জান্নাতে) প্রবেশ করবে। আর তাতে যে লোক প্রবেশ
করবে সে আর কখনও পিপাসার্ত হবে না।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৪০), “পিপাসার্ত হবে না" বাক্যাংশ ব্যতীত - বুখারী,
মুসলিম
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান, সহীহ্ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৬৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ
أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ حِينَ يُفْطِرُ
وَفَرْحَةٌ حِينَ يَلْقَى رَبَّهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোযা পালনকারীর
জন্য দু’টি আনন্দ আছে- একটি আনন্দ যখন সে ইফ্তার করে এবং আরেকটি আনন্দ যখন সে তার
প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করবে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৩৮), মুসলিম
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৬. অনুচ্ছেদঃ
সারা বছর রোযা পালন
করা প্রসঙ্গে
৭৬৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ
بْنُ زَيْدٍ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْبَدٍ،
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ بِمَنْ صَامَ
الدَّهْرَ قَالَ " لاَ صَامَ وَلاَ أَفْطَرَ " . أَوْ "
لَمْ يَصُمْ وَلَمْ يُفْطِرْ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عَمْرٍو وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ الشِّخِّيرِ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ
وَأَبِي مُوسَى . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي قَتَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
. وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ صِيَامَ الدَّهْرِ وَأَجَازَهُ
قَوْمٌ آخَرُونَ وَقَالُوا إِنَّمَا يَكُونُ صِيَامُ الدَّهْرِ إِذَا لَمْ
يُفْطِرْ يَوْمَ الْفِطْرِ وَيَوْمَ الأَضْحَى وَأَيَّامِ التَّشْرِيقِ فَمَنْ
أَفْطَرَ هَذِهِ الأَيَّامَ فَقَدْ خَرَجَ مِنْ حَدِّ الْكَرَاهِيَةِ وَلاَ
يَكُونُ قَدْ صَامَ الدَّهْرَ كُلَّهُ . هَكَذَا رُوِيَ عَنْ مَالِكِ بْنِ
أَنَسٍ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ نَحْوًا
مِنْ هَذَا وَقَالاَ لاَ يَجِبُ أَنْ يُفْطِرَ أَيَّامًا غَيْرَ هَذِهِ
الْخَمْسَةِ الأَيَّامِ الَّتِي نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْهَا
يَوْمِ الْفِطْرِ وَيَوْمِ الأَضْحَى وَأَيَّامَ التَّشْرِيقِ .
আবূ কাতাদা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! সে সব লোকের কাজগুলো কেমন যে সব লোক সারা
বছর রোযা পালন করে? তিনি বললেনঃ তার রোযা পালনও হল না, ইফতারও হলো না।
-সহীহ্, ইরওয়া (৯৫২), মুসলিম
আবদুল্লাহ ইবনু আমর, আবদুল্লাহ ইবনু শিখ্খীর, ইমরান ইবনু হুসাইন
ও আবূ মূসা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ কাতাদা (রাঃ) হতে
বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। সারা বছর রোযা পালন করাকে আলিমগণের একদল মাকরূহ্ মনে
করেন। আরেক দল আলিম সারা বছর রোযা পালন করা জায়িয মনে করেন। তারা বলেন, ঈদুল ফিতর,
ঈদুল আযহা ও আইয়্যামে তাশ্রীকের দিনও (কুরবানীর দিনের পরবর্তী তিন দিন) যদি কোন লোক
রোযা পালন করে তবে সেটা হবে সারা বছর রোযা (যা মাকরূহ্)। যেসব লোক এই দিনগুলোতে রোযা
পালন করবে না সে উপরোক্ত মাকরূহ-এর মধ্যে পড়বে না এবং সে সারা বছর রোযাদার হবে না।
একইরকম অভিমত ইমাম মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) হতেও বর্ণিত আছে। ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক
(রহঃ)-এর বক্তব্যও এটাই। তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, আইয়্যামে তাশ্রীক এই পাঁচ দিন রোযা পালন করতে নিষেধ করেছেন।
সেই পাঁচটি দিন ছাড়া অন্য কোন দিনের রোযা ত্যাগ করা ওয়াজিব নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৭. অনুচ্ছেদঃ
অব্যাহতভাবে রোযা
পালন করা
৭৬৮
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ صِيَامِ النَّبِيِّ، صلى الله عليه
وسلم قَالَتْ كَانَ يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ قَدْ صَامَ وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ
قَدْ أَفْطَرَ . قَالَتْ وَمَا صَامَ رَسُولُ اللَّهُ صلى الله عليه وسلم
شَهْرًا كَامِلاً إِلاَّ رَمَضَانَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَابْنِ
عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু
শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রোযা পালন প্রসঙ্গে
আইশা (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) রোযা পালন করেই যেতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি তো রোযা পালন করেই
যাচ্ছেন। আবার রোযা পালন হতে তিনি বিরত থাকতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি বুঝি আর
রোযা পালন করবেন না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনও রমযান
মাস ব্যতীত সম্পূর্ণ মাস রোযা পালন করেননি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭১০), বুখারী, মুসলিম
আনাস ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৬৯
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ صَوْمِ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم
قَالَ كَانَ يَصُومُ مِنَ الشَّهْرِ حَتَّى نَرَى أَنَّهُ لاَ يُرِيدُ أَنْ
يُفْطِرَ مِنْهُ وَيُفْطِرُ حَتَّى نَرَى أَنَّهُ لاَ يُرِيدُ أَنْ يَصُومَ مِنْهُ
شَيْئًا وَكُنْتَ لاَ تَشَاءُ أَنْ تَرَاهُ مِنَ اللَّيْلِ مُصَلِّيًا إِلاَّ
رَأَيْتَهُ مُصَلِّيًا وَلاَ نَائِمًا إِلاَّ رَأَيْتَهُ نَائِمًا . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর রোযা প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি
বলেন, কোন মাসে তিনি রোযা পালন করতে শুরু করলে মনে হত যে, তাঁর হয়তো আর রোযা
ত্যাগের ইচ্ছা নেই। আবার যখন তিনি রোযা পালন করা ছেড়ে দিতেন তখন মনে হত তিনি হয়তো
আর রোযা পালন করবেন না। তুমি যদি তাঁকে রাতে নামায রত অবস্থায় দেখতে ইচ্ছা করতে
তবে সে অবস্থায়ই দেখতে পেতে। আর তুমি যদি তাঁকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে ইচ্ছা করতে
তবে সে অবস্থায়ই দেখতে পেতে।
-সহীহ, বুখারী (১৯৭২), মুসলিম (৩/১৬২) নামাযের বাক্যাংশ বাদে সংক্ষিপ্তভাবে।
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৭০
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مِسْعَرٍ، وَسُفْيَانَ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ
أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي الْعَبَّاسِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَفْضَلُ الصَّوْمِ صَوْمُ
أَخِي دَاوُدَ كَانَ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا وَلاَ يَفِرُّ إِذَا
لاَقَى " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو
الْعَبَّاسِ هُوَ الشَّاعِرُ الْمَكِّيُّ الأَعْمَى وَاسْمُهُ السَّائِبُ بْنُ
فَرُّوخَ . قَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ أَفْضَلُ الصِّيَامِ أَنْ تَصُومَ
يَوْمًا وَتُفْطِرَ يَوْمًا . وَيُقَالُ هَذَا هُوَ أَشَدُّ الصِّيَامِ .
আবদুল্লাহ ইবনু আমর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার ভাই দাঊদ
(‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রোযা হল সবচেয়ে উত্তম রোযা। তিনি একদিন রোযা পালন করতেন
এবং একদিন পালন করতেন না। আর যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর মুখোমুখী হলে তিনি পালাতেন না।
-সহীহ্, বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। বর্ণনাকারী আবূল আব্বাস
একজন মক্কার কবি ছিলেন এবং তিনি একজন অন্ধ ব্যক্তি। তার নাম সাইব ইবনু ফার্রূখ। কিছু
বিশেষজ্ঞ আলিম বলেন, সবচেয়ে উত্তম (নফল) রোযা হচ্ছে সেই রোযা যা একদিন পরপর পালন করা
হয়। বলা হয় যে, এই নিয়মে রোযা রাখা কঠিন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৮. অনুচ্ছেদঃ
দুই ঈদের দিন রোযা
পালন করা মাকরূহ্
৭৭১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ
بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي عُبَيْدٍ،
مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ شَهِدْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ
فِي يَوْمِ النَّحْرِ بَدَأَ بِالصَّلاَةِ قَبْلَ الْخُطْبَةِ ثُمَّ قَالَ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَى عَنْ صَوْمِ هَذَيْنِ
الْيَوْمَيْنِ أَمَّا يَوْمُ الْفِطْرِ فَفِطْرُكُمْ مِنْ صَوْمِكُمْ وَعِيدٌ
لِلْمُسْلِمِينَ وَأَمَّا يَوْمُ الأَضْحَى فَكُلُوا مِنْ لُحُومِ نُسُكِكُمْ .
قَالَ هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو عُبَيْدٍ مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ عَوْفٍ اسْمُهُ سَعْدٌ وَيُقَالُ لَهُ مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
أَزْهَرَ أَيْضًا وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَزْهَرَ هُوَ ابْنُ عَمِّ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ عَوْفٍ .
আবদুর রাহ্মা্ন
ইবনু আওফ (রাঃ)-এর মুক্তদাস আবূ উবাইদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে কুরবানীর দিন দেখতে পেয়েছি যে, খুত্বা
দেওয়ার আগে প্রথমে তিনি নামায আদায় করলেন। এরপর তিনি বললেন, এই দুই ঈদের দিন রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি রোযা পালন করতে নিষেধ করতে শুনেছি।
ঈদুল ফিত্রের দিন হল তোমাদের (সারা মাসের) রোযা ভঙ্গের দিন এবং মুসলিমদের ঈদের
দিন। আর তোমরা ঈদুল আযহার দিন তোমাদের কুরবানীর গোশ্ত খাবে।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭২২), বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। আবদুর রাহমান ইবনু আওফ
(রাঃ)-এর মুক্ত দাস আবূ উবাইদের নাম সা’দ। তাকে আবদুর রাহমান ইবনু আযহারের মাওলাও বলা
হয়। আবদুর রাহমান ইবনু আযহার হলেন আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)-এর চাচাত ভাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৭২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
يَحْيَى، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ نَهَى رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ صِيَامَيْنِ يَوْمِ الأَضْحَى وَيَوْمِ الْفِطْرِ
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَعَائِشَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ
وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَعَمْرُو بْنُ يَحْيَى هُوَ ابْنُ عُمَارَةَ بْنِ أَبِي
الْحَسَنِ الْمَازِنِيُّ الْمَدَنِيُّ وَهُوَ ثِقَةٌ رَوَى عَنْهُ سُفْيَانُ
الثَّوْرِيُّ وَشُعْبَةُ وَمَالِكُ بْنُ أَنَسٍ .
আবূ সাঈদ আল-খুদ্রী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’দিন রোযা পালন করতে বারণ
করেছেনঃ ঈদুল আয্হা এবং ঈদুল ফিত্রের দিন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭২১), বুখারী, ইরওয়া (৯৬২), আর রাওয (৬৪৩), সহীহ্ আবূ দাঊদ
(২০৮৮), মুসলিম।
উমার, আলী, আইশা, আবূ হুরায়রা, উক্বা ইবনু আমির ও আনাস (রাঃ)
হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে
হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, আমর
ইবনু ইয়াহ্ইয়া হলেন ইবনু উমারা ইবনু আবূল হাসান আল-মাযিনী আল-মাদানী। তিনি একজন বিশ্বস্ত
ও নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী। সুফিয়ান সাওরী, শুবা ও মালিক ইবনু আনাস তাঁর সূত্রে হাদীস
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৯. অনুচ্ছেদঃ
আইয়্যামে তাশ্রীক-এ
রোযা পালন করা মাকরূহ্
৭৭৩
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُلَىٍّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
يَوْمُ عَرَفَةَ وَيَوْمُ النَّحْرِ وَأَيَّامُ التَّشْرِيقِ عِيدُنَا أَهْلَ
الإِسْلاَمِ وَهِيَ أَيَّامُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَلِيٍّ وَسَعْدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرٍ وَنُبَيْشَةَ وَبِشْرِ بْنِ
سُحَيْمٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُذَافَةَ وَأَنَسٍ وَحَمْزَةَ بْنِ عَمْرٍو
الأَسْلَمِيِّ وَكَعْبِ بْنِ مَالِكٍ وَعَائِشَةَ وَعَمْرِو بْنِ الْعَاصِ
وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ عُقْبَةَ بْنِ
عَامِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ يَكْرَهُونَ الصِّيَامَ أَيَّامَ التَّشْرِيقِ إِلاَّ أَنَّ قَوْمًا
مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ رَخَّصُوا
لِلْمُتَمَتِّعِ إِذَا لَمْ يَجِدْ هَدْيًا وَلَمْ يَصُمْ فِي الْعَشْرِ أَنْ
يَصُومَ أَيَّامَ التَّشْرِيقِ . وَبِهِ يَقُولُ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ
وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَهْلُ
الْعِرَاقِ يَقُولُونَ مُوسَى بْنُ عَلِيِّ بْنِ رَبَاحٍ وَأَهْلُ مِصْرَ
يَقُولُونَ مُوسَى بْنُ عُلَىٍّ . وَقَالَ سَمِعْتُ قُتَيْبَةُ يَقُولُ سَمِعْتُ
اللَّيْثَ بْنَ سَعْدٍ يَقُولُ قَالَ مُوسَى بْنُ عَلِيٍّ لاَ أَجْعَلُ أَحَدًا
فِي حِلٍّ صَغَّرَ اسْمَ أَبِي .
উক্বা ইবনু আমির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাদের মুসলিম
জনগণের ঈদের দিন হচ্ছে আরাফার দিন, কুরবানীর দিন ও তাশ্রীকের দিন। এ দিনগুলো
হচ্ছে পানাহারের দিন।
-সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৯০), ইরওয়া (৪/১৩০)
আলী, সা’দ, আবূ হুরায়রা, জাবির, নুবাইশা, বিশ্র ইবনু সুহাইম,
আবদুল্লাহ ইবনু হুযাফা, আনাস, হামযা ইবনু আমর আল-আসলামী, কা’ব ইবনু মালিক, আইশা, আমর
ইবনুল আস ও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা
উকবা ইবনু আমির হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ
আলিমগণ আমল করেছেন। তাশ্রীকের দিনগুলোতে রোযা পালন করাকে তারা মাকরূহ্ (হারাম) মনে
করেন। কিন্তু তামাত্তু হাজ্জ পালনকারীর জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্য আলিম এই দিনগুলোতে রোযা পালনের সুযোগ
দিয়েছেন- যদি তারা কুরবানীর জানোয়ার না পায় এবং প্রথম দশ দিনের মধ্যে রোযা পালন করতে
না পেরে থাকে। এরকম মতই প্রকাশ করেছেন ইমাম মালিক, শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক (রহঃ)। আবূ
ঈসা বলেন, ইরাকবাসী মুহাদ্দিসগণ বলেন, (বর্ণানাকারী নাম) মূসা ইবনু আলী ইবনু রাবাহ্।
মিসরবাসীগণ বলেন, মূসা ইবনু উলাই। আবূ ঈসা আরও বলেন, কুতাইবাকে আমি বলতে শুনেছি, তিনি
বলতে শুনেছেন যে, মূসা ইবনু আলী বলেছেন,আমার পিতার নাম তাসগীররূপে (উলাই) উচ্চারণ কারো
জন্য হালাল মনে করি না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬০. অনুচ্ছেদঃ
রোযা থাকা অবস্থান
রক্তক্ষরণ করানো
৭৭৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ النَّيْسَابُورِيُّ،
وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَيَحْيَى بْنُ مُوسَى، قَالُوا حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَارِظٍ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ رَافِعِ
بْنِ خَدِيجٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَفْطَرَ
الْحَاجِمُ وَالْمَحْجُومُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ
عَلِيٍّ وَسَعْدٍ وَشَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ وَثَوْبَانَ وَأُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ
وَعَائِشَةَ وَمَعْقِلِ بْنِ سِنَانٍ وَيُقَالُ ابْنُ يَسَارٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ
وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي مُوسَى وَبِلاَلٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ
رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَذُكِرَ عَنْ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ
أَنَّهُ قَالَ أَصَحُّ شَيْءٍ فِي هَذَا الْبَابِ حَدِيثُ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ
. وَذُكِرَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ أَنَّهُ قَالَ أَصَحُّ شَيْءٍ فِي
هَذَا الْبَابِ حَدِيثُ ثَوْبَانَ وَشَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ لأَنَّ يَحْيَى بْنَ
أَبِي كَثِيرٍ رَوَى عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ الْحَدِيثَيْنِ جَمِيعًا حَدِيثَ
ثَوْبَانَ وَحَدِيثَ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمُ
الْحِجَامَةَ لِلصَّائِمِ حَتَّى أَنَّ بَعْضَ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم احْتَجَمَ بِاللَّيْلِ مِنْهُمْ أَبُو مُوسَى الأَشْعَرِيُّ وَابْنُ عُمَرَ
وَبِهَذَا يَقُولُ ابْنُ الْمُبَارَكِ . قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ إِسْحَاقَ
بْنَ مَنْصُورٍ يَقُولُ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ مَنِ احْتَجَمَ
وَهُوَ صَائِمٌ فَعَلَيْهِ الْقَضَاءُ . قَالَ إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ
وَهَكَذَا قَالَ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ .
وَقَالَ أَبُو عِيسَى وَأَخْبَرَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ
قَالَ قَالَ الشَّافِعِيُّ قَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ احْتَجَمَ وَهُوَ صَائِمٌ وَرُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ قَالَ " أَفْطَرَ الْحَاجِمُ وَالْمَحْجُومُ " . وَلاَ
أَعْلَمُ وَاحِدًا مِنْ هَذَيْنِ الْحَدِيثَيْنِ ثَابِتًا وَلَوْ تَوَقَّى رَجُلٌ
الْحِجَامَةَ وَهُوَ صَائِمٌ كَانَ أَحَبَّ إِلَىَّ وَلَوِ احْتَجَمَ صَائِمٌ لَمْ
أَرَ ذَلِكَ أَنْ يُفْطِرَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا كَانَ قَوْلُ
الشَّافِعِيِّ بِبَغْدَادَ وَأَمَّا بِمِصْرَ فَمَالَ إِلَى الرُّخْصَةِ وَلَمْ
يَرَ بِالْحِجَامَةِ لِلصَّائِمِ بَأْسًا وَاحْتَجَّ بِأَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم احْتَجَمَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ وَهُوَ مُحْرِمٌ صَائِمٌ .
রাফি ইবনু খাদীজ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক রক্তক্ষরণ করে এবং যাহার
রক্তক্ষরণ করানো হয় তাদের দু’জনের রোযাই নষ্ট হয়ে যায়।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৭৯-১৬৮১)
আলী, সা’দ, শাদ্দাদ ইবনু আওস, সাওবান, উসামা ইবনু যাইদ, আইশা,
মা’কিল ইবনু সিনান (বলা হয় ইনি মালিক ইবনু ইয়াসার), আবূ হুরায়রা, ইবনু আব্বাস, আবূ
মূসা ও বিলাল (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা রাফি ইবনু খাদীজ হতে
বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। আহ্মাদ ইবনু হাম্বাল (রহঃ) বলেন, রাফি ইবনু
খাদীজ (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসই এ বিষয়ে সবচেয়ে সহীহ্ হাদীস এবং আলী ইবনু আবদুল্লাহ
(রহঃ) বলেন, সাওবান শাদ্দাদ ইবনু আউস হতে বর্ণিত হাদীসই হচ্ছে এ বিষয়ে সবচেয়ে সহীহ্
হাদীস। ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহঃ) আবূ কিলাবা (রাঃ) হতে সাওবান ও শাদ্দাদ ইবনু
আওমের দু’টি হাদীসই বর্ণনা করেছেন।
রোযা অবস্থায় রক্তক্ষরণ করানোকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর
একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপারাপর আলিমের একটি দল মাকরূহ্ মনে করেন। এমনকি অনেক সাহাবী
(রমযানের) রাতে তা করাতেন যেমন আবূ মূসা আল-আশাআরী ও ইবনু উমার (রাঃ)। এরকম মতপ্রকাশ
করেছেন ইবনুল মুবারাকও। আবদুর রাহমান ইবনু মাহদী বলেছেন, কেউ যদি রোযা থাকা অবস্থায়
রক্তক্ষরণ করায় তাহলে তাকে এর কাযা আদায় করতে হবে। এরকম মত দিয়েছেন আহ্মাদ ইবনু হাম্বাল
ও ইসহাকও। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেছেন, রোযা পালনরত অবস্থায়ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রক্তক্ষরণ করিয়েছেন। আবার এটাও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেনঃ রক্তক্ষরণকারী এবং যে লোকের রক্তক্ষরণ
করা হয় তাদের উভয়ের রোযাই বাতিল হয়ে গেল। আমার এ দু’টি হাদীসের মধ্যে একটিও সঠিক বলে
জানা নেই। কোন ব্যক্তি যদি রোযা থাকাবস্থায় রক্তক্ষরণ করানো হতে দূরে থাকে তাহলে সেটাই
আমার মতে বেশী পছন্দনীয়। আর যদি কোন লোক তার রোযা থাকাবস্থায় রক্তক্ষরণ করায় সেক্ষেত্রে
আমি মনে অরি না এতে তার রোযা বাতিল হয়। আবূ ঈসা বলেন, বাগদাদে থাকা অবস্থায় ইমাম শাফিঈর
মত ছিল এটাই। কিন্তু এই বিষয়ে তিনি মিসরে যাওয়ার পর রক্তক্ষরণের অনুমতির পক্ষপাতী ছিলেন
এবং কোন রকম সমস্যা আছে বলে মনে করেননি রোযা থাকাবস্থায় রক্তমোক্ষণ করানোতে। তার এই
মতের সমর্থনে তিনি দলীল হিসেবে বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
রোযা ও ইহ্রাম অবস্থায় বিদায় হাজ্জে রক্তক্ষরণ করিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬১. অনুচ্ছেদঃ
এই বিষয়ে
(রক্তক্ষরণের) অনুমতি প্রসঙ্গে
৭৭৫
حَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ احْتَجَمَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مُحْرِمٌ صَائِمٌ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَهَكَذَا رَوَى وُهَيْبٌ نَحْوَ رِوَايَةِ
عَبْدِ الْوَارِثِ . وَرَوَى إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ
عِكْرِمَةَ مُرْسَلاً وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রোযা পালন ও ইহরাম অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
রক্তক্ষরণ করিয়েছেন।
-সহীহ্, এই অর্থে “রোযা থাকাবস্থায় তিনি রক্তক্ষরণ করিয়েছেন”, বুখারী, ইবনু মা-জাহ
(১৬৮২)
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা সহীহ্ বলেছেন। আবদুল ওয়ারিসের বর্ণনার ন্যায়
ওহাইবও বর্ণনা করেছেন। ইসমাঈল ইবনু ইবারাহীম আইয়্যূব হতে তিনি ইকরিমা হতে মুর্সাল রূপে
বর্ণনা করেছেন ইবনু আব্বাসের উল্লেখ না করে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৭৬
حَدَّثَنَا
أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ الأَنْصَارِيُّ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ الشَّهِيدِ، عَنْ مَيْمُونِ بْنِ
مِهْرَانَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم احْتَجَمَ
وَهُوَ صَائِمٌ . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা থাকাবস্থায় রক্তক্ষরণ করিয়েছেন।
-সহীহ্, প্রাগুক্ত
আবূ ঈসা বলেন, উপরোক্ত সূত্রে হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৭৭
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ يَزِيدَ
بْنِ أَبِي زِيَادٍ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم احْتَجَمَ فِيمَا بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ وَهُوَ مُحْرِمٌ
صَائِمٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَجَابِرٍ
وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ وَلَمْ يَرَوْا بِالْحِجَامَةِ
لِلصَّائِمِ بَأْسًا . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَمَالِكِ بْنِ
أَنَسٍ وَالشَّافِعِيِّ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা ও মদীনার মাঝখানে ইহ্রাম
ও রোযা অবস্থায় রক্তক্ষরণ করিয়েছেন।
এই শব্দের হাদীসটি মুনকার। প্রাগুক্ত।
এই অনুচ্ছেদে আবূ সাঈদ, জাবির ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ঈসা বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এক দল সাহাবী ও তাবিঈ এই হাদীস অনুসারে অভিমত দিয়েছেন যে,
রোযাব্রত অবস্থায় রক্তক্ষরণ (শিঙ্গা লাগানো) করানোতে কোন সমস্যা নেই। সুফিয়ান সাওরী,
মালিক ইবনু আনাস ও শাফিঈ (রহঃ)-এর একই মত।
হাদিসের মানঃ মুনকার
৬২. অনুচ্ছেদঃ
সাওমে বিসাল মাকরূহ্
৭৭৮
حَدَّثَنَا
نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، وَخَالِدُ بْنُ
الْحَارِثِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تُوَاصِلُوا
" . قَالُوا فَإِنَّكَ تُوَاصِلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ "
إِنِّي لَسْتُ كَأَحَدِكُمْ إِنَّ رَبِّي يُطْعِمُنِي وَيَسْقِينِي " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ وَابْنِ عُمَرَ
وَجَابِرٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَبَشِيرِ ابْنِ الْخَصَاصِيَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ
أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا الْوِصَالَ فِي الصِّيَامِ . وَرُوِيَ عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنَّهُ كَانَ يُوَاصِلُ الأَيَّامَ وَلاَ يُفْطِرُ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাওমে বিসাল
কর না। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি তো সাওমে বিসাল করেন। তিনি বললেনঃ
আমি তো তোমাদের কারো মত নই। আমাকে আমার প্রতিপালক পানাহার করান।
সহীহ্, বুখারী
আলী, আবূ হুরায়রা, আইশা, ইবনু উমার, জাবির, আবূ সাঈদ ও বাশীর ইবনুল
খাসাসিয়্যা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আনাস (রাঃ)-এর হাদীসটিকে
হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। সাওমে বিসালকে তারা মাকরূহ্
বলে মত দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একাধিক দিন
সাওমে বিসাল করতেন এবং ইফ্তার করতেন না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৩. অনুচ্ছেদঃ
রোযা পালন করতে ইচ্ছা
পোষণকারীর নাপাক অবস্থায় ফজর হওয়া
৭৭৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، قَالَ أَخْبَرَتْنِي عَائِشَةُ،
وَأُمُّ سَلَمَةَ زَوْجَا النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم كَانَ يُدْرِكُهُ الْفَجْرُ وَهُوَ جُنُبٌ مِنْ أَهْلِهِ ثُمَّ
يَغْتَسِلُ فَيَصُومُ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ
قَوْلُ سُفْيَانَ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَدْ قَالَ قَوْمٌ
مِنَ التَّابِعِينَ إِذَا أَصْبَحَ جُنُبًا يَقْضِي ذَلِكَ الْيَوْمَ .
وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ .
আবূ বাক্র ইবনু
আবদুর রাহমান ইবনু হারিস ইবনু হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী আইশা ও
উম্মু সালামা (রাঃ) জানিয়েছেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর (কোন কোন সময়) কোন স্ত্রীর (সাথে সহবাসের) কারণে নাপাক অবস্থায় ফজর
হয়ে যেত। এরপর তিনি গোসল করতেন এবং রোযা পালন করতেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭০৩), বুখারী, মুসলিম
আইশা ও উম্মু সালামা হতে বর্ণিত হাদীসকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্
বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ
সাহাবী ও তাবিঈ আমল করেছেন। এ মত দিয়েছেন সুফিয়ান, শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক (রহঃ)।
তাবিঈগণের একটি দল বলেন, সহবাসজনিত কারণে নাপাক অবস্থায় কোন লোকের ফজর হয়ে গেলে সে
লোককে এই দিনের রোযার কাযা করতে হবে। তবে প্রথমে বর্ণিত মতটিই অধিক সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৪. অনুচ্ছেদঃ
রোযা থাকাবস্থায়
দাওয়াত গ্রহণ করা
৭৮০
حَدَّثَنَا
أَزْهَرُ بْنُ مَرْوَانَ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَوَاءٍ،
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إِذَا دُعِيَ أَحَدُكُمْ إِلَى طَعَامٍ فَلْيُجِبْ فَإِنْ كَانَ صَائِمًا
فَلْيُصَلِّ " . يَعْنِي الدُّعَاءَ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কাউকে খাবারের
দাওয়াত দেওয়া হলে সে লোক যেন তা গ্রহণ করে। সে রোযাদার হলে (দাওয়াতকারীর জন্য)
যেন দু’আ করে।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৫০), মুসলিম
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৮১
حَدَّثَنَا
نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " إِذَا دُعِيَ أَحَدُكُمْ وَهُوَ صَائِمٌ فَلْيَقُلْ
إِنِّي صَائِمٌ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَكِلاَ الْحَدِيثَيْنِ فِي هَذَا
الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কোন রোযাদারকে যদি
খাবারের দাওয়াত দেওয়া হয় তাহলে সে যেন বলে, আমি রোযা আছি।
-সহীহ, প্রাগুক্ত
আবূ ঈসা আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত উভয় হাদীসকেই হাসান সহীহ্
বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৫. অনুচ্ছেদঃ
স্বামীর অনুমতি ছাড়া
স্ত্রীর (নফল) রোযা আদায় করা মাকরূহ্
৭৮২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَنَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَصُومُ الْمَرْأَةُ وَزَوْجُهَا شَاهِدٌ
يَوْمًا مِنْ غَيْرِ شَهْرِ رَمَضَانَ إِلاَّ بِإِذْنِهِ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ
أَبِي الزِّنَادِ عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عُثْمَانَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মহিলা যেন স্বামীর
উপস্থিতিতে তার অনুমতি ছাড়া রমযান মাসের রোযা ব্যতীত একদিনও অন্য কোন (নফল) রোযা
পালন না করে।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৬১), নাসা-ঈ- রমযানের উল্লেখ ব্যতীত।
ইবনু আব্বাস ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ঈসা আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীসটি
আবূয যানাদ হতে, তিনি মূসা ইবনু আবূ উসমান হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি আবূ হুরায়রা
(রাঃ) হতে তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রেও বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৬. অনুচ্ছেদঃ
রমযানের রোযার কাযা
আদায়ের ক্ষেত্রে বিলম্ব করা প্রসঙ্গে
৭৮৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ السُّدِّيِّ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ الْبَهِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا كُنْتُ أَقْضِي مَا
يَكُونُ عَلَىَّ مِنْ رَمَضَانَ إِلاَّ فِي شَعْبَانَ حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. قَالَ وَقَدْ رَوَى يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيُّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ
عَنْ عَائِشَةَ نَحْوَ هَذَا .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি শাবান মাস ব্যতীত আমার রমযান মাসের কাযা রোযা আদায় করতে পারতাম না (কোন
সংগত ওজরবশত), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকাল
পর্যন্ত এই অবস্থা ছিল।
-সহীহ্, ইরওয়া (৯৪৪), রাওযুন নাযীর (৭৬৩), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৭৬), তামামুল
মিন্নাহ, বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। হাদীসটিকে ইয়াহ্ইয়া
ইবনু সাইদ আনসারী (রহঃ) আবূ সালামা হতে আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদারের সামনে
খাবার খেলে তার (রোযাদারের) ফাযীলাত
৭৮৪
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ
لَيْلَى، عَنْ مَوْلاَتِهَا، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
الصَّائِمُ إِذَا أَكَلَ عِنْدَهُ الْمَفَاطِيرُ صَلَّتْ عَلَيْهِ الْمَلاَئِكَةُ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ حَبِيبِ
بْنِ زَيْدٍ عَنْ لَيْلَى عَنْ جَدَّتِهِ أُمِّ عُمَارَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
লাইলা (রহঃ) হতে
তাঁর আযাদকারিনী মহিলা (উম্মু উমারা) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোযাদার ব্যক্তির সামনে বেরোযদার
লোকেরা যদি খাবার খায় তাহলে ফেরেশতাগণ তার (রোযাদারের) জন্য দু‘আ করেন।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৭৪৮),
আবূ ঈসা বলেন, শুবা এই হাদীসটি হাবীব ইবনু যাইদ..... তাঁর পিতামহী
উম্মু উমারা (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৭৮৫
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
حَبِيبِ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ سَمِعْتُ مَوْلاَةً، لَنَا يُقَالُ لَهَا لَيْلَى
تُحَدِّثُ عَنْ جَدَّتِهِ أُمِّ عُمَارَةَ بِنْتِ كَعْبٍ الأَنْصَارِيَّةِ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَيْهَا فَقَدَّمَتْ إِلَيْهِ طَعَامًا
فَقَالَ " كُلِي " . فَقَالَتْ إِنِّي صَائِمَةٌ . فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ الصَّائِمَ تُصَلِّي عَلَيْهِ
الْمَلاَئِكَةُ إِذَا أُكِلَ عِنْدَهُ حَتَّى يَفْرُغُوا " . وَرُبَّمَا
قَالَ " حَتَّى يَشْبَعُوا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ وَهُوَ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ شَرِيكٍ .
হাবীব ইবনু যাইদ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমাদের আযাদকৃত দাসী লায়লাকে উম্মু উমারা বিনতু কা’ব আল-আনসারিয়্যা (রাঃ)-এর
সূত্রে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এক সময় তার বাড়িতে আসেন। তখন তিনি তাঁর সামনে খাবার আনলেন। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তুমিও খাও। তিনি বলেন, আমি (নফল)
রোযা রেখেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ রোযাদার
ব্যক্তির সামনে বেরোযদার লোকেরা যদি খায় তাহলে ফেরেশতাগণ তার (রোযাদারের) জন্য
দু‘আ করেন। রাবী কোন কোন সময় “হাত্তা ইয়াফরুগূ” (খাওয়া শেষ না করা পর্যন্ত)-এর
জায়গায় “হাত্তা ইয়াশবাউ” (পরিতৃপ্ত না হওয়া পর্যন্ত) শব্দ বর্ণনা করেছেন।
যঈফ, প্রাগুক্ত।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। এই হাদীসটি শারীকের হাদীসের
চাইতে অধিক সহীহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৭৮৬
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ مَوْلاَةٍ، لَهُمْ يُقَالُ لَهَا
لَيْلَى عَنْ جَدَّتِهِ أُمِّ عُمَارَةَ بِنْتِ كَعْبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ " حَتَّى يَفْرُغُوا أَوْ
يَشْبَعُوا " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأُمُّ عُمَارَةَ هِيَ جَدَّةُ
حَبِيبِ بْنِ زَيْدٍ الأَنْصَارِيِّ .
উম্মু উমারা বিনতি
কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মু
উমারা বিনতি কা’ব (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর একই রকম হাদীস বর্ণিত আছে। তবে এই বর্ণনায় “হাত্তা ইয়াফরুগূ আও
ইয়াশবাঊ” শব্দাবলীর উল্লেখ নেই। (পূর্বের হাদীসের ন্যায়)।
এটিও যঈফ,
আবূ ঈসা বলেন, উম্মু উমারা (রাঃ) হলেন হাবীব ইবনু যাইদ আল-আনসারী
(রহঃ)-এর পিতামহী।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৬৮. অনুচ্ছেদঃ
ঋতুবতী মহিলার রোযা
কাযা করা ও নামায কাযা না করা প্রসঙ্গে
৭৮৭
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عُبَيْدَةَ، عَنْ
إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُنَّا نَحِيضُ عَلَى
عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ نَطْهُرُ فَيَأْمُرُنَا
بِقَضَاءِ الصِّيَامِ وَلاَ يَأْمُرُنَا بِقَضَاءِ الصَّلاَةِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ مُعَاذَةَ عَنْ عَائِشَةَ
أَيْضًا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ نَعْلَمُ
بَيْنَهُمُ اخْتِلاَفًا أَنَّ الْحَائِضَ تَقْضِي الصِّيَامَ وَلاَ تَقْضِي
الصَّلاَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَعُبَيْدَةُ هُوَ ابْنُ مُعَتِّبٍ الضَّبِّيُّ
الْكُوفِيُّ يُكْنَى أَبَا عَبْدِ الْكَرِيمِ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমরা মাসিক ঋতুর পর
পবিত্র হলে তখন আমাদেরকে তিনি রোযার কাযা আদায়ের হুকুম করতেন কিন্তু নামায কাযা
আদায়ের কথা বলতেন না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৬৩১) মুসলিম, বুখারীতে নামাযের কথা উল্লেখ নেই।
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। মুআযা হতে আইশা (রাঃ)-এর সূত্রেও
এ হাদীসটি বর্ণিত আছে। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করার কথা বলেছেন। এই বিষয়ে তাদের
মাঝে কোন মতভেদ আছে বলে আমাদের জানা নেই অর্থাৎ ঋতুবতী মহিলাকে তার বাদপড়ে যাওয়া
রোযার কাযা আদায় করতে হবে কিন্তু নামাযের কাযা করতে হবে না। আবূ ঈসা বলেন, বর্ণনাকারী
উবাইদা হলেন ইবনু মুআত্তিব আয যাব্বী আল-কূফী তাঁর উপনাম আবূ আবদুল কারীম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৯. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদারের নাকের
ভিতরে পানি পৌঁছানো মাকরূহ্
৭৮৮
حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَبْدِ الْحَكَمِ الْبَغْدَادِيُّ الْوَرَّاقُ، وَأَبُو
عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ،
حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَاصِمَ بْنَ لَقِيطِ بْنِ
صَبْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي عَنِ
الْوُضُوءِ، . قَالَ " أَسْبِغِ الْوُضُوءَ وَخَلِّلْ بَيْنَ
الأَصَابِعِ وَبَالِغْ فِي الاِسْتِنْشَاقِ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَائِمًا "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ كَرِهَ أَهْلُ
الْعِلْمِ السَّعُوطَ لِلصَّائِمِ وَرَأَوْا أَنَّ ذَلِكَ يُفْطِرُهُ وَفِي
الْحَدِيثِ مَا يُقَوِّي قَوْلَهُمْ .
লাকীত ইবনু সাবিরা
(রহঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! ওযূ প্রসঙ্গে আমাকে জানিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ
ভালোভাবে ওযূ কর, আঙ্গুলগুলোর মাঝে খিলাল কর এবং রোযা পালনকারী নাহলে নাকের গভীরে
পানি পৌঁছাও।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪০৭)
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। রোযা পালনকারীর জন্য
নাক দিয়ে ঔষধ গ্রহণ করাকে আলিমগণ মাকরূহ্ বলেছেন। এরফলে রোযা ভেঙ্গে যায় বলে তারা
মনে করেন। এই মতের পক্ষে উল্লেখিত হাদীস হতে জোরালো সমর্থন পাওয়া যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭০. অনুচ্ছেদঃ
কোন ব্যক্তি কোন
সম্প্রদায়ের মেহমান হলে তাদের অনুমতি ব্যতীত (নফল) রোযা রাখবে না
৭৮৯
حَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ الْعَقَدِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ وَاقِدٍ
الْكُوفِيُّ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ نَزَلَ عَلَى قَوْمٍ
فَلاَ يَصُومَنَّ تَطَوُّعًا إِلاَّ بِإِذْنِهِمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ مُنْكَرٌ لاَ نَعْرِفُ أَحَدًا مِنَ الثِّقَاتِ رَوَى هَذَا
الْحَدِيثَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ . وَقَدْ رَوَى مُوسَى بْنُ دَاوُدَ عَنْ
أَبِي بَكْرٍ الْمَدِينِيِّ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ
عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوًا مِنْ هَذَا . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ ضَعِيفٌ أَيْضًا . وَأَبُو بَكْرٍ ضَعِيفٌ عِنْدَ أَهْلِ
الْحَدِيثِ وَأَبُو بَكْرٍ الْمَدَنِيُّ الَّذِي رَوَى عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ اسْمُهُ الْفَضْلُ بْنُ مُبَشِّرٍ وَهُوَ أَوْثَقُ مِنْ هَذَا وَأَقْدَمُ
.
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ কোন
সম্প্রদায়ের অতিথি হলে সে যেন তাদের সম্মতি ছাড়া নফল রোযা না রাখে।
খুবই দুর্বল, ইবনু মাজাহ (১৭৬৩),
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি মুনকার। কোন নির্ভরযোগ্য রাবী হিশাম
ইবনু উরওয়া হতে এই হাদীসটি রিওয়াত করেছেন বলে আমরা অবগত নই। মূসা ইবনু দাঊদ, আবূ বাকর
মাদানী হতে তিনি হিশাম ইবনু উরওয়া-তৎপিতা উরওয়া হতে তিনি আইশা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একই রকম এক হাদীস বর্ণনা করেছেন। এই রিওয়াতটিও
যঈফ। আবূ বাক্র বিশেষজ্ঞদের মতে দুর্বল। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে আবূ বাক্র
আল মাদানী উপনামের যে রাবী হাদীস রিওয়াত করেছেন তার নাম আল-ফাযল ইবনু মুবাশশির। তিনি
এই আবূ বাক্র আল মাদানী হতে বেশী বিশ্বস্ত ও অগ্রগণ্য।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
৭১. অনুচ্ছেদঃ
ইতিকাফের বর্ণনা
৭৯০
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ،
عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
وَعُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ
يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ وَأَبِي لَيْلَى وَأَبِي سَعِيدٍ
وَأَنَسٍ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ
وَعَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা ও আইশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রমযানের
শেষদশকেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ইতিকাফ
করতেন।
-সহীহ, ইরওয়া (৯৬৬), সহীহ আবূ দাঊদ (২১২৫), বুখারী, মুসলিম
উবাই ইবনু কা’ব, আবূ লাইলা, আবূ সাঈদ, আনাস ও ইবনু উমার (রাঃ)
হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরায়রা ও আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে
আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৯১
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ
عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
إِذَا أَرَادَ أَنْ يَعْتَكِفَ صَلَّى الْفَجْرَ ثُمَّ دَخَلَ فِي مُعْتَكَفِهِ
. قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
عَنْ عَمْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً . رَوَاهُ مَالِكٌ
وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَمْرَةَ مُرْسَلاً .
وَرَوَاهُ الأَوْزَاعِيُّ وَسُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَقُولُونَ إِذَا أَرَادَ الرَّجُلُ
أَنْ يَعْتَكِفَ صَلَّى الْفَجْرَ ثُمَّ دَخَلَ فِي مُعْتَكَفِهِ . وَهُوَ قَوْلُ
أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ وَإِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ
إِذَا أَرَادَ أَنْ يَعْتَكِفَ فَلْتَغِبْ لَهُ الشَّمْسُ مِنَ اللَّيْلَةِ
الَّتِي يُرِيدُ أَنْ يَعْتَكِفَ فِيهَا مِنَ الْغَدِ وَقَدْ قَعَدَ فِي
مُعْتَكَفِهِ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَمَالِكِ بْنِ أَنَسٍ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিকাফ করার ইচ্ছা
করতেন তখন ফজরের নামায আদায় করে ইতিকাফের জায়গায় প্রবেশ করতেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৭১), বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ-আম্রার সূত্রে এই হাদীসটি
মুরসালরূপে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীসটি ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ হতে আমরার সূত্রে ইমাম
মালিক (রহঃ) এবং একাধিক বর্ণনাকারী মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। আওযাঈ ও সুফিয়ান সাওরী-ইয়াহ্ইয়া
ইবনু সাঈদ হতে, তিনি আমরা হতে, তিনি আইশা (রাঃ) হতে এই হাদীসটিকে বর্ণনা করেছেন। এ
হাদীস অনুযায়ী কোন কোন আলিমের মতে, কোন ব্যক্তি ইতিকাফ করতে চাইলে ফজরের নামায আদায়ের
পর তাকে ইতিকাফের জায়গায় প্রবেশ করতে হবে। ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীমের এই
মত। অপর একদল আলিম বলেছেন, যে দিন হতে কোন ব্যক্তি ইতিকাফ শুরু করতে চায় সে দিনের
পূর্বের রাতের সন্ধ্যায় সূর্য ডুবে যাওয়ার পর যেন সে ব্যক্তি ইতিকাফে বসে। এরকম মতই
সুফিয়ান সাওরী ও মালিক ইবনু আনাস (রহঃ)-এর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭২. অনুচ্ছেদঃ
লাইলাতুল কাদর
(কাদরের রাত্রি)
৭৯২
حَدَّثَنَا
هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ،
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُجَاوِرُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ
وَيَقُولُ " تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ
رَمَضَانَ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَأُبَىٍّ وَجَابِرِ بْنِ
سَمُرَةَ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَابْنِ عُمَرَ وَالْفَلَتَانِ بْنِ
عَاصِمٍ وَأَنَسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُنَيْسٍ وَأَبِي
بَكْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَبِلاَلٍ وَعُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَوْلُهَا يُجَاوِرُ
يَعْنِي يَعْتَكِفُ . وَأَكْثَرُ الرِّوَايَاتِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم أَنَّهُ قَالَ " الْتَمِسُوهَا فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ فِي كُلِّ
وِتْرٍ " . وَرُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي لَيْلَةِ
الْقَدْرِ أَنَّهَا لَيْلَةُ إِحْدَى وَعِشْرِينَ وَلَيْلَةُ ثَلاَثٍ وَعِشْرِينَ
وَخَمْسٍ وَعِشْرِينَ وَسَبْعٍ وَعِشْرِينَ وَتِسْعٍ وَعِشْرِينَ وَآخِرُ لَيْلَةٍ
مِنْ رَمَضَانَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى قَالَ الشَّافِعِيُّ كَأَنَّ
هَذَا عِنْدِي وَاللَّهُ أَعْلَمُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ
يُجِيبُ عَلَى نَحْوِ مَا يُسْأَلُ عَنْهُ يُقَالُ لَهُ نَلْتَمِسُهَا فِي
لَيْلَةِ كَذَا فَيَقُولُ الْتَمِسُوهَا فِي لَيْلَةِ كَذَا . قَالَ
الشَّافِعِيُّ وَأَقْوَى الرِّوَايَاتِ عِنْدِي فِيهَا لَيْلَةُ إِحْدَى
وَعِشْرِينَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ
أَنَّهُ كَانَ يَحْلِفُ أَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ . وَيَقُولُ
أَخْبَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِعَلاَمَتِهَا فَعَدَدْنَا
وَحَفِظْنَا . وَرُوِيَ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ أَنَّهُ قَالَ لَيْلَةُ الْقَدْرِ
تَنْتَقِلُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ عَبْدُ بْنُ
حُمَيْدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ أَبِي
قِلاَبَةَ بِهَذَا .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রমযান মাসের শেষের দশদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
মাসজিদে থাকতেন (ইতিকাফ করতেন)। তিনি বলতেনঃ রমযান মাসের শেষের দশদিন তোমরা কাদরের
রাতকে খোঁজ কর।
-সহীহ্, বুখারী, মুসলিম
উমার, উবাই ইবনু কা’ব, জাবির ইবনু সামুরা, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ,
ইবনু উমার, ফালাতান ইবনু আসিম, আনাস, আবূ সাঈদ, আবদুল্লাহ ইবনু উনাইস, আবূ বাক্রা,
ইবনু আব্বাস, বিলাল ও উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। ‘ইউজাবিরু’ শব্দের অর্থ
তিনি ইতিকাফ করতেন। এই ক্ষেত্রে বেশিরভাগ হাদীসের শব্দ হচ্ছেঃ শেষ দশদিনের প্রতি বিজোড়
রাত্রে তোমরা লাইলাতুল কাদর খোঁজ কর। লাইলাতুল কাদর প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে যে, তা হল একুশ, তেইশ, পঁচিশ, সাতাশ, ঊনত্রিশ
বা রমযানের শেষরাত্র।
ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, আমার মতে এর অর্থ হল, আল্লাহ তা’আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেভাবেই উত্তর প্রদান করতেন তাঁকে যেভাবে প্রশ্ন
করা হত। তাঁর কাছে কোন ব্যক্তি প্রশ্ন করেছে, অমুক রাত্রে কি আমরা তা খোঁজ করব? উত্তরে
তিনি বলেছেন, তোমরা অমুক রাত্রে তা খোঁজ কর। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) আরও বলেন, আমার নিকটে
একুশ তারিখ সম্পর্কিত রিওয়ায়াতটি হচ্ছে এ বিষয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী। আবূ ঈসা বলেন,
উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) শপথ করে বলতেনঃ তা হল সাতাশ তারিখের রাত্রি।
তিনি আরও বলতেন, এর আলামত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন এবং তা আমরা হিসাব করে রেখেছি এবং স্মরণ রেখেছি।
আবূ কিলাবা (রাঃ) বলেন, লাইলাতুল কাদর শেষ দশকের মাঝে আবর্তিত হতে থাকে। আব্দ ইবনু
হুমাইদ আবদুর রাযযাক হতে, তিনি মা’মার হতে, তিনি আইয়ূব হতে, তিনি আবূ কিলাবা (রাঃ)
হতে এই বক্তব্যটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৯৩
حَدَّثَنَا
وَاصِلُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
عَيَّاشٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ زِرٍّ، قَالَ قُلْتُ لأُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ أَنَّى
عَلِمْتَ أَبَا الْمُنْذِرِ أَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ قَالَ بَلَى
أَخْبَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَنَّهَا لَيْلَةٌ
صَبِيحَتُهَا تَطْلُعُ الشَّمْسُ لَيْسَ لَهَا شُعَاعٌ " . فَعَدَدْنَا
وَحَفِظْنَا وَاللَّهِ لَقَدْ عَلِمَ ابْنُ مَسْعُودٍ أَنَّهَا فِي رَمَضَانَ
وَأَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ وَلَكِنْ كَرِهَ أَنْ يُخْبِرَكُمْ
فَتَتَّكِلُوا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যির (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-কে আমি বললাম, হে আবুল মুনযির! এই যে সাতাশের রাত
লাইলাতুল কাদর আপনি সেটা কি করে জানতে পারলেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ অবশ্যই, আমাদেরকে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, এই রাত্রের পরবর্তী
সকালে সূর্য উদিত হয় ক্ষীণ আলো নিয়ে দীপ্তিহীন অবস্থায়। আমরা সেটাকে গুনে এবং
স্মরণ করে রেখেছি। আল্লাহ তা’আলার শপথ! ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-ও জানেন যে, সেটা হচ্ছে
রমযানের রাত্র এবং সাতাশেরই রাত্র। কিন্তু তোমাদেরকে তিনি তা জানাতে পছন্দ করেননি,
তোমরা যদি পরে এটার উপর নির্ভর করে বসে থাক।
-সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (১২৪৭), মুসলিম অনুরূপ
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৯৪
حَدَّثَنَا
حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا
عُيَيْنَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، ذُكِرَتْ
لَيْلَةُ الْقَدْرِ عِنْدَ أَبِي بَكْرَةَ فَقَالَ مَا أَنَا بِمُلْتَمِسِهَا،
لِشَيْءٍ سَمِعْتُهُ مِنْ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ فِي
الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ فَإِنِّي سَمِعْتُهُ يَقُولُ " الْتَمِسُوهَا فِي
تِسْعٍ يَبْقَيْنَ أَوْ فِي سَبْعٍ يَبْقَيْنَ أَوْ فِي خَمْسٍ يَبْقَيْنَ أَوْ فِي
ثَلاَثٍ أَوْ آخِرِ لَيْلَةٍ " . قَالَ وَكَانَ أَبُو بَكْرَةَ يُصَلِّي
فِي الْعِشْرِينَ مِنْ رَمَضَانَ كَصَلاَتِهِ فِي سَائِرِ السَّنَةِ فَإِذَا
دَخَلَ الْعَشْرُ اجْتَهَدَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
আবদুর রাহমান (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, লাইলাতুল কাদর প্রসঙ্গে একবার আবূ বাক্রা (রাঃ)-এর কাছে আলোচনা হল। তিনি
বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি বাণী শোনার কারণে
আমি রমযান মাসের শেষ দশদিন ব্যতীত অন্য কোন রাত্রে লাইলাতুল কাদরকে খোঁজ করি না।
আমি তাঁকে বলতে শুনেছিঃ তোমরা কাদরের রাত্রে খোঁজ কর রমযানের নয়দিন বাকী থাকতে বা
সাতদিন বাকী থাকতে বা পাঁচদিন বাকী থাকতে বা তিন দিন বাকী থাকতে অথবা এর শেষ
রাত্রে।
-সহীহ, মিশকাত তাহকীক ছানী (২০৯২)
বর্ণনাকারী বলেন, রমযানের বিশদিন পর্যন্ত আবূ বাক্রা (রাঃ) সারা
বছরের মতই নামায আদায় করতেন, কিন্তু তিনি শেষ দশদিন আসলে যতটুকু সম্ভব সাধনা করতেন।
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৩. অনুচ্ছেদঃ
লাইলাতুল কাদ্র
সম্পর্কেই
৭৯৫
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ، عَنْ هُبَيْرَةَ بْنِ يَرِيمَ، عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم كَانَ يُوقِظُ أَهْلَهُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আলী (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রমযানের
শেষ দশদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পরিবারের সদস্যদেরকে
(ইবাদাতে মগ্ন থাকার জন্য) ঘুম থেকে উঠাতেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭৬৮), বুখারী, মুসলিম
আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৯৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ
عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَجْتَهِدُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ
مَا لاَ يَجْتَهِدُ فِي غَيْرِهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রমযানের শেষ দশদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
(ইবাদাতে) এত বেশি সাধনা করতেন যে, অন্য কোন সময়ে এরকম সাধনা করতেন না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৬৭)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৪. অনুচ্ছেদঃ
শীতকালের রোযা
৭৯৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ،
عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ نُمَيْرِ بْنِ عَرِيبٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ مَسْعُودٍ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْغَنِيمَةُ الْبَارِدَةُ
الصَّوْمُ فِي الشِّتَاءِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ مُرْسَلٌ
. عَامِرُ بْنُ مَسْعُودٍ لَمْ يُدْرِكِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ
وَالِدُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَامِرٍ الْقُرَشِيِّ الَّذِي رَوَى عَنْهُ شُعْبَةُ
وَالثَّوْرِيُّ .
আমির ইবনু মাসঊদ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, শীতকালের রোযা হচ্ছে বিনা পরিশ্রমে
যুদ্ধলব্ধ মালের অনুরূপ।
-সহীহ, সহীহা (১৯২২), আর-রাওয (৬৯)
আবূ ঈসা হাদীসটিকে মুরসাল বলেছেন। কারণ, আমির ইবনু মাসঊদ (রহঃ)-এর
সাক্ষাৎ ঘটেনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে। যার সূত্রে
শুবা ও সাওরী হাদীস বর্ণনা করেছেন তিনি হলেন ইবরাহীম ইবনু আমির আল-কুরাশীর পিতা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৫. অনুচ্ছেদঃ
“যেসব লোক রোযা
আদায়ের সমর্থ হয়েও..." প্রসঙ্গে
৭৯৮
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ
بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الأَشَجِّ، عَنْ يَزِيدَ، مَوْلَى سَلَمَةَ
بْنِ الأَكْوَعِ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ :
(وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ ) كَانَ مَنْ
أَرَادَ مِنَّا أَنْ يُفْطِرَ وَيَفْتَدِيَ حَتَّى نَزَلَتِ الآيَةُ الَّتِي
بَعْدَهَا فَنَسَخَتْهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
غَرِيبٌ . وَيَزِيدُ هُوَ ابْنُ أَبِي عُبَيْدٍ مَوْلَى سَلَمَةَ بْنِ
الأَكْوَعِ .
সালামা ইবনু আকওয়া
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন এই আয়াত অবতীর্ণ হলঃ “যেসব লোক রোযা আদায়ের ক্ষেত্রে সামর্থবান হয়েও
(না রাখবে) সেসব লোক যেন একজন মিসকীনের আহার দেয়" আমাদের মধ্যে তখন যার
ইচ্ছা হত সে রোযা পালন না করে তার পরিবর্তে ফিদ্ইয়া আদায় করত। অতঃপর এর পরবর্তী
আয়াত “তোমাদের মধ্যে যে লোক রমযান মাস পায় সে লোক যেন রোযা পালন করে” অবতীর্ণ
হলে উপরের আয়াতের (সূরাঃ বাকারা- ১৮৪) বিধান বাতিল হয়ে যায়।
-সহীহ্ ইরওয়া (৪/২২), বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন। ইয়াযীদ হলেন, ইবনু
আবূ উবাইদ সালামা ইবনু আকওয়ার মুক্তদাস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৬. অনুচ্ছেদঃ
খাবারের পর কোন লোক
সফরের উদ্দেশ্যে বের হলে
৭৯৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ،
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ، أَنَّهُ قَالَ
أَتَيْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ فِي رَمَضَانَ وَهُوَ يُرِيدُ سَفَرًا وَقَدْ
رُحِلَتْ لَهُ رَاحِلَتُهُ وَلَبِسَ ثِيَابَ السَّفَرِ فَدَعَا بِطَعَامٍ فَأَكَلَ
فَقُلْتُ لَهُ سُنَّةٌ قَالَ سُنَّةٌ . ثُمَّ رَكِبَ .
মুহাম্মাদ ইবনু
কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রমযান মাসে আমি আনাস (রাঃ)-এর নিকট আসলাম। তখন তিনি সফরের উদ্দেশ্যে বের
হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁর সফরের উট-টিতে হাওদা বেঁধে দেওয়া হল। তিনি সফরের
পোশাক পরলেন এবং খাবার নিয়ে আসতে বললেন, তারপর তিনি তা খেলেন। আমি বললাম, এটা কি
সুন্নাত? তিনি বললেন, সুন্নাত। তারপর তিনি জন্তুযানে আরোহণ করলেন।
-সহীহ্ (তাসহীহ হাদীসে ইফতারিস সা-য়িমি কাবলা সাফারিহি বা’দাল ফাজরি(পৃঃ ১৩-২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৮০০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، قَالَ
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ
أَتَيْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ فِي رَمَضَانَ فَذَكَرَ نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَمُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ هُوَ ابْنُ أَبِي
كَثِيرٍ هُوَ مَدِينِيٌّ ثِقَةٌ وَهُوَ أَخُو إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ .
وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ هُوَ ابْنُ نَجِيحٍ وَالِدُ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ الْمَدِينِيِّ وَكَانَ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ يُضَعِّفُهُ . وَقَدْ
ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ وَقَالُوا لِلْمُسَافِرِ
أَنْ يُفْطِرَ فِي بَيْتِهِ قَبْلَ أَنْ يَخْرُجَ وَلَيْسَ لَهُ أَنْ يَقْصُرَ
الصَّلاَةَ حَتَّى يَخْرُجَ مِنْ جِدَارِ الْمَدِينَةِ أَوِ الْقَرْيَةِ .
وَهُوَ قَوْلُ إِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيِّ .
মুহাম্মাদ ইবনু
কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রমযান মাসে আমি আনাস (রাঃ)-এর নিকট আসলাম। ......
পূর্বোক্ত হাদীসের মতই।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু জাফর হলেন ইবনু
আবূ কাসীর মাদীনী, তিনি একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী। তিনি ইসমাঈল ইবনু জাফরের ভাই।
আবদুল্লাহ ইবনু জাফর হলেন ইবনু নাজীহ; তিনি আলী ইবনু আবদুল্লাহ মাদীনীর পিতা। তাঁকে
ইয়াহ্ইয়া ইবনু মাঈন দুর্বল বর্ণনাকারী বলেছেন। এ হাদীসটির ভিত্তিতে কোন কোন আলিম
বলেন, কোন মুসাফির লোক বাড়ী হতে সফরের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পূর্বে রোযা ভঙ্গ করে
পানাহার করে নিতে পারবে, কিন্তু নামায কসর করতে পারবে না তার গ্রাম বা নগরপ্রাচীর অতিক্রম
না হওয়া পর্যন্ত। এরকম মতই প্রকাশ করেছেন ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
৭৭. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদারের জন্য উপহার
৮০১
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ سَعْدِ بْنِ طَرِيفٍ،
عَنْ عُمَيْرِ بْنِ مَأْمُونٍ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ " تُحْفَةُ الصَّائِمِ الدُّهْنُ وَالْمِجْمَرُ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِذَاكَ لاَ
نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ سَعْدِ بْنِ طَرِيفٍ . وَسَعْدُ بْنُ طَرِيفٍ
يُضَعَّفُ وَيُقَالُ عُمَيْرُ بْنُ مَأْمُومٍ أَيْضًا .
হাসান ইবনু আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোযাদারের জন্য
তোহফা হল তৈল ও লোবান জাতীয় সুগন্ধি।
মাওযূ, যঈফা (১৬৬০),
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি গারীব, এর সনদ খুব একটা মজবুত নয়। সা’দ
ইবনু তারীফ ব্যতীত অন্য কোন সূত্রে এই প্রসঙ্গে আমরা জানি না। সা’দকে দুর্বল রাবী বলা
হয়েছে। উমাইর ইবনু মামূনকে উমাইর ইবনু মামূমও বলা হয়।
হাদিসের মানঃ জাল হাদিস
৭৮. অনুচ্ছেদঃ
কোন সময়ে ঈদুল ফিত্র
ও ঈদুল আয্হা হয়
৮০২
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ الْيَمَانِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " الْفِطْرُ يَوْمَ يُفْطِرُ النَّاسُ وَالأَضْحَى يَوْمَ
يُضَحِّي النَّاسُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى سَأَلْتُ مُحَمَّدًا قُلْتُ
لَهُ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ سَمِعَ مِنْ عَائِشَةَ قَالَ نَعَمْ يَقُولُ
فِي حَدِيثِهِ سَمِعْتُ عَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
غَرِيبٌ صَحِيحٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকেরা যেদিন রোযা
ভেঙ্গে ফেলে সেদিন হল ঈদুল ফিত্র এবং লোকেরা যেদিন কুরবানী করে সেদিন ঈদুল আয্হা।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৬০)
আবূ ঈসা বলেন, মুহাম্মাদ (বুখারী)-কে আমি প্রশ্ন করলাম, আইশা
(রাঃ)-এর নিকট কি মুহাম্মাদ ইবনু মুনকাদির হাদীস শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তার হাদীসে
তিনি বলেন, আইশা (রাঃ)-এর নিকট আমি শুনেছি। এই সূত্রে আবূ ঈসা হাদীসটিকে হাসান গারীব
সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৯. অনুচ্ছেদঃ
ইতিকাফ ভঙ্গ করার পর
পুনরায় ইতিকাফ করা
৮০৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، قَالَ أَنْبَأَنَا
حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم يَعْتَكِفُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ فَلَمْ يَعْتَكِفْ
عَامًا فَلَمَّا كَانَ فِي الْعَامِ الْمُقْبِلِ اعْتَكَفَ عِشْرِينَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الْمُعْتَكِفِ إِذَا قَطَعَ
اعْتِكَافَهُ قَبْلَ أَنْ يُتِمَّهُ عَلَى مَا نَوَى فَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ إِذَا نَقَضَ اعْتِكَافَهُ وَجَبَ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ . وَاحْتَجُّوا
بِالْحَدِيثِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ مِنِ اعْتِكَافِهِ
فَاعْتَكَفَ عَشْرًا مِنْ شَوَّالٍ . وَهُوَ قَوْلُ مَالِكٍ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ
إِنْ لَمْ يَكُنْ عَلَيْهِ نَذْرُ اعْتِكَافٍ أَوْ شَيْءٌ أَوْجَبَهُ عَلَى
نَفْسِهِ وَكَانَ مُتَطَوِّعًا فَخَرَجَ فَلَيْسَ عَلَيْهِ أَنْ يَقْضِيَ إِلاَّ
أَنْ يُحِبَّ ذَلِكَ اخْتِيَارًا مِنْهُ وَلاَ يَجِبُ ذَلِكَ عَلَيْهِ . وَهُوَ
قَوْلُ الشَّافِعِيِّ . قَالَ الشَّافِعِيُّ فَكُلُّ عَمَلٍ لَكَ أَنْ لاَ
تَدْخُلَ فِيهِ فَإِذَا دَخَلْتَ فِيهِ فَخَرَجْتَ مِنْهُ فَلَيْسَ عَلَيْكَ أَنْ
تَقْضِيَ إِلاَّ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
.
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রমযানের শেষ দশদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিকাফ
করতেন। কিন্তু তিনি এক বছর ইতিকাফ করতে সক্ষম হননি। তাই তিনি পরের বছর বিশ দিন
ইতিকাফ করেন।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২১২৬)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা আনাস ইবনু মালিকের হাদীস হিসেবে হাসান গারীব
সহীহ্ বলেছেন। আলিমগণের মধ্যে নিয়্যাত করার পর পূর্ণ করার আগেই ইতিকাফ ছেড়ে দেওয়া
প্রসঙ্গে মতভেদ রয়েছে। একদল আলিম তার কাযা আদায় করাকে ওয়াজিব বলেছেন। নিম্নোক্ত
হাদীসটি দ্বারা তারা দলীল গ্রহণ করেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ইতিকাফ ত্যাগ করে বেরিয়ে আসলেন, পরে শাওয়াল মাসের দশদিন ইতিকাফ করেন।" এরকম
মত ইমাম মালিক (রহঃ)-এরও। অন্য একদল আলিম বলেন, মানত বা নিজেদের জন্য অবশ্য পালনীয়
ইতিকাফ যদি না হয়ে থাকে এবং যদি নফল ইতিকাফ হয়ে থাকে তাহলে এমতাবস্থায় ইতিকাফ ছেড়ে
বের হয়ে গেলে তার কাযা আদায় করা ওয়াজিব নয়। যদি কেউ স্বেচ্ছায় কাযা করে তবে তা
করতে পারে কিন্তু তা তার উপর ওয়াজিব নয়। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) এই মত দিয়েছেন। তিনি বলেন,
তোমার জন্য যেসব আমল ছেড়ে দেয়া জায়িয তুমি যদি এ ধরণের কোন আমল করতে শুরু কর এবং
তা পূর্ণ না করে ছেড়ে দাও তাহলে তোমার উপর এ ধরণের কোন আমল কাযা করা ওয়াজিব নয় শুধুমাত্র
হাজ্জ ও উমরা ব্যতীত। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৮০. অনুচ্ছেদঃ
প্রয়োজনবোধে
ইতিকাফকারী বের হতে পারে কি না?
৮০৪
حَدَّثَنَا
أَبُو مُصْعَبٍ الْمَدَنِيُّ، قِرَاءَةً عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ،
عَنْ عُرْوَةَ، وَعَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اعْتَكَفَ أَدْنَى إِلَىَّ رَأْسَهُ
فَأُرَجِّلُهُ وَكَانَ لاَ يَدْخُلُ الْبَيْتَ إِلاَّ لِحَاجَةِ الإِنْسَانِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . هَكَذَا رَوَاهُ غَيْرُ
وَاحِدٍ عَنْ مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ وَعَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ
. وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ
عَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ . وَالصَّحِيحُ عَنْ عُرْوَةَ وَعَمْرَةَ عَنْ
عَائِشَةَ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ইতিকাফে থাকতেন, আমার
দিকে তাঁর মাথা এগিয়ে দিতেন এবং আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম। মানবীয় প্রয়োজন
(প্রশ্ৰাব-পায়খানা) ব্যতীত তিনি ঘরে আসতেন না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৬৩৩) ও (১৭৭৮)
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে
একাধিক বর্ণনাকারী হাদীসটি একইরকম বর্ণনা করেছেন। তবে আইশা (রাঃ) হতে উরওয়া ও আম্রা
(রহঃ)-এর সনদটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৮০৫
حَدَّثَنَا
بِذَلِكَ، قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ
عُرْوَةَ، وَعَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ إِذَا اعْتَكَفَ الرَّجُلُ أَنْ لاَ يَخْرُجَ مِنِ اعْتِكَافِهِ إِلاَّ
لِحَاجَةِ الإِنْسَانِ وَاجْتَمَعُوا عَلَى هَذَا أَنَّهُ يَخْرُجُ لِقَضَاءِ
حَاجَتِهِ لِلْغَائِطِ وَالْبَوْلِ . ثُمَّ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي
عِيَادَةِ الْمَرِيضِ وَشُهُودِ الْجُمُعَةِ وَالْجَنَازَةِ لِلْمُعْتَكِفِ
فَرَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ أَنْ يَعُودَ الْمَرِيضَ وَيُشَيِّعَ الْجَنَازَةَ وَيَشْهَدَ
الْجُمُعَةَ إِذَا اشْتَرَطَ ذَلِكَ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ
وَابْنِ الْمُبَارَكِ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ لَيْسَ لَهُ أَنْ يَفْعَلَ شَيْئًا
مِنْ هَذَا وَرَأَوْا لِلْمُعْتَكِفِ إِذَا كَانَ فِي مِصْرٍ يُجَمَّعُ فِيهِ أَنْ
لاَ يَعْتَكِفَ إِلاَّ فِي مَسْجِدِ الْجَامِعِ لأَنَّهُمْ كَرِهُوا الْخُرُوجَ
لَهُ مِنْ مُعْتَكَفِهِ إِلَى الْجُمُعَةِ وَلَمْ يَرَوْا لَهُ أَنْ يَتْرُكَ
الْجُمُعَةَ فَقَالُوا لاَ يَعْتَكِفُ إِلاَّ فِي مَسْجِدِ الْجَامِعِ حَتَّى لاَ
يَحْتَاجُ إِلَى أَنْ يَخْرُجَ مِنْ مُعْتَكَفِهِ لِغَيْرِ قَضَاءِ حَاجَةِ
الإِنْسَانِ لأَنَّ خُرُوجَهُ لِغَيْرِ قَضَاءِ حَاجَةِ الإِنْسَانِ قَطْعٌ
عِنْدَهُمْ لِلاِعْتِكَافِ . وَهُوَ قَوْلُ مَالِكٍ وَالشَّافِعِيِّ . وَقَالَ
أَحْمَدُ لاَ يَعُودُ الْمَرِيضَ وَلاَ يَتْبَعُ الْجَنَازَةَ عَلَى حَدِيثِ
عَائِشَةَ . وَقَالَ إِسْحَاقُ إِنِ اشْتَرَطَ ذَلِكَ فَلَهُ أَنْ يَتْبَعَ
الْجَنَازَةَ وَيَعُودَ الْمَرِيضَ .
ইবনু শিহাব থেকে
বর্ণিতঃ
ইবনু
শিহাব হতে উরওয়া ও আম্রা-আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে লাইস ইবনু সা’দও হাদীসটিকে বর্ণনা
করেছেন।
-সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস
এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ বলেছেন, মানবীয় প্রয়োজন ছাড়া ইতিকাফকারী
ইতিকাফস্থল হতে বাইরে বের হতে পারবে না। তারা সকলেই এই বিষয়ে একমত যে, অবশ্যই সে প্রশ্ৰাব-পায়খানার
প্রয়োজন হলে বের হতে পারবে। তবে ইতিকাফকারী রোগী দেখা, জুমু’আ ও জানাযার নামাযে অংশগ্রহণ
করতে পারবে কি না তাদের মাঝে এ বিষয়ে মতপার্থক্য আছে। কোন কোন সাহাবী ও তাবিঈর মতে
সে লোক যদি ইতিকাফে বসার সময় এসব প্রয়োজনে বের হওয়ার শর্ত করে থাকে তাহলে সে লোক
রোগী দেখতে, জানাযায় এবং জুমু’আর নামাযে উপস্থিত হতে পারবে। এরকম মতই দিয়েছেন সুফিয়ান
সাওরী ও ইবনুল মুবারাক। কোন কোন আলিম বলেন, সে লোক উল্লিখিত উদ্দেশ্যে বাইরে বের হতে
পারবে না। তাদের মতে শহরে বসবাসকারী জামে মাসজিদ ব্যতীত আর অন্য কোথাও ইতিকাফ করবে
না। জুমু’আর জন্য ইতিকাফের জায়গা ছেড়ে বের হওয়াকেও তারা মাকরূহ্ বলেন, আবার জুমু’আ
ত্যাগ করাকেও তারা জায়িয মনে করেন না। সুতরাং তারা বলেন, ইতিকাফ শুধু জামে মাসজিদেই
আদায় করবে যেন ইতিকাফস্থল হতে মানবীয় প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়ার প্রয়োজন না হয়।
মানবীয় প্রয়োজন ছাড়া বের হলে ইতিকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে। এরকম মত প্রকাশ করেন ইমাম মালিক
ও শাফিঈ।
ইমাম আহ্মাদ বলেন, আইশা (রাঃ)-এর হাদীসের আলোকে সে লোক রোগী দেখতে ও জানাযায় অংশগ্রহণের
উদ্দেশ্যে বের হতে পারবে না। ইমাম ইসহাক বলেন, এই বিষয়ে সে লোক যদি পূর্বেই নিজে নিজে
শর্ত করে নেয় তবে জানাযায় অংশগ্রহণ ও রোগী দেখার উদ্দেশ্যে বাইরে বের হতে পারবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৮১. অনুচ্ছেদঃ
রমযান মাসের কিয়াম
(রাত্রের ইবাদাত)
৮০৬
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفُضَيْلِ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي
هِنْدٍ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْجُرَشِيِّ، عَنْ جُبَيْرِ
بْنِ نُفَيْرٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ صُمْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَلَمْ يُصَلِّ بِنَا حَتَّى بَقِيَ سَبْعٌ مِنَ الشَّهْرِ فَقَامَ
بِنَا حَتَّى ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ ثُمَّ لَمْ يَقُمْ بِنَا فِي السَّادِسَةِ
وَقَامَ بِنَا فِي الْخَامِسَةِ حَتَّى ذَهَبَ شَطْرُ اللَّيْلِ فَقُلْنَا لَهُ
يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ نَفَّلْتَنَا بَقِيَّةَ لَيْلَتِنَا هَذِهِ فَقَالَ
" إِنَّهُ مَنْ قَامَ مَعَ الإِمَامِ حَتَّى يَنْصَرِفَ كُتِبَ لَهُ قِيَامُ
لَيْلَةٍ " . ثُمَّ لَمْ يُصَلِّ بِنَا حَتَّى بَقِيَ ثَلاَثٌ مِنَ
الشَّهْرِ وَصَلَّى بِنَا فِي الثَّالِثَةِ وَدَعَا أَهْلَهُ وَنِسَاءَهُ فَقَامَ
بِنَا حَتَّى تَخَوَّفْنَا الْفَلاَحَ . قُلْتُ لَهُ وَمَا الْفَلاَحُ قَالَ
السُّحُورُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَاخْتَلَفَ
أَهْلُ الْعِلْمِ فِي قِيَامِ رَمَضَانَ فَرَأَى بَعْضُهُمْ أَنْ يُصَلِّيَ
إِحْدَى وَأَرْبَعِينَ رَكْعَةً مَعَ الْوِتْرِ . وَهُوَ قَوْلُ أَهْلِ
الْمَدِينَةِ وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَهُمْ بِالْمَدِينَةِ . وَأَكْثَرُ
أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَى مَا رُوِيَ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَغَيْرِهِمَا مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عِشْرِينَ رَكْعَةً . وَهُوَ قَوْلُ
سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ . وَقَالَ
الشَّافِعِيُّ وَهَكَذَا أَدْرَكْتُ بِبَلَدِنَا بِمَكَّةَ يُصَلُّونَ عِشْرِينَ
رَكْعَةً . وَقَالَ أَحْمَدُ رُوِيَ فِي هَذَا أَلْوَانٌ . وَلَمْ يَقْضِ
فِيهِ بِشَيْءٍ . وَقَالَ إِسْحَاقُ بَلْ نَخْتَارُ إِحْدَى وَأَرْبَعِينَ
رَكْعَةً عَلَى مَا رُوِيَ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ . وَاخْتَارَ ابْنُ
الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ الصَّلاَةَ مَعَ الإِمَامِ فِي شَهْرِ
رَمَضَانَ . وَاخْتَارَ الشَّافِعِيُّ أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ وَحْدَهُ إِذَا
كَانَ قَارِئًا . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَالنُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ
وَابْنِ عَبَّاسٍ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা রোযা পালন
করেছি। তিনি আমাদেরকে নিয়ে রমযান মাসে কোন (নফল) নামায আদায় করেননি। অবশেষে তিনি
রমযানের সাত দিন বাকী থাকতে আমাদেরকে নিয়ে নামাযে দাঁড়ালেন। এতে এক-তৃতীয়াংশ
রাত চলে গেল। আমাদেরকে নিয়ে তিনি ষষ্ঠ রাতে নামাযের উদ্দেশ্যে দাঁড়াননি। তিনি
আবার আমাদের নিয়ে পঞ্চম রাতে নামাযের উদ্দেশ্যে দাঁড়ান। এতে অর্ধেক রাত চলে গেল।
আমরা তাকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল। যদি আমাদের বাকী রাতটিও নামায আদায় করে পার
করে দিতেন। তিনি বললেনঃ ইমামের সাথে যদি কোন লোক (ফরয) নামাযে শামিল হয় এবং
ইমামের সাথে নামায আদায় শেষ করে তাহলে সে লোকের জন্য সারা রাত (নফল) নামায
আদায়ের সাওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর মাসের তিন রাত বাকী থাকা পর্যন্ত তিনি আর
আমাদের নিয়ে নামায আদায় করেননি। আবার তিনি তৃতীয় (২৭শে) রাত থাকতে আমাদের নিয়ে
নামাযের জন্য দাঁড়ালেন। তাঁর পরিজন ও স্ত্রীগণকেও তিনি এ রাতে ডেকে তুললেন। এত
(দীর্ঘ)-সময় ধরে তিনি নামায আদায় করলেন যে, যার ফলে সাহ্রীর সময় চলে যাওয়ার
সংশয় হল আমাদের মনে। বর্ণনাকারী জুবাইর ইবনু নুফাইর বলেন, আবূ বকর (রাঃ)-কে আমি
বললামঃ ফালাহ্" কি? তিনি বললেন, সাহ্রী খাওয়া।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৩২৭)
আবূ ঈসা হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। আলিমগণের মধ্যে রমযানের
রাতসমূহে (তারাবীহ্ নামায ও নফল ইবাদাতের উদ্দেশ্যে) দণ্ডায়মান হওয়া প্রসঙ্গে দ্বিমত
আছে। কোন কোন আলিম বলেন, বিতর সহকারে এর রাক’আত সংখ্যা একচল্লিশ। মাদীনায় বসবাসকারীদের
অভিমত এটাই এবং এরকমই আমল করেন এখানকার লোকেরা। কিন্তু আলী ও উমার (রাঃ) প্রমুখ সাহাবায়ি
কিরাম হতে বর্ণিত রিওয়ায়াত অনুযায়ী বেশিরভাগ আলিমের অভিমত অর্থাৎ (তারাবীহ্) বিশ রাক’আত।
এই মত সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক ও শাফিঈ (রহঃ)-এর। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, আমাদের
মক্কা নগরীর লোকদেরকেও বিশ রাক’আত আদায় করতে দেখেছি। আহ্মাদ (রহঃ) বলেন, এই বিষয়ের
উপর বিভিন্ন প্রকার রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে। এই ব্যাপারে তিনি কোন রকম সিদ্ধান্ত দেননি।
ইসহাক বলেন, আমরা উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-এর বর্ণনানুযায়ী একচল্লিশ রাক’আত আদায় করাকেই
পছন্দ করি।
রমযান মাসে ইমামের সাথে তারাবীহ্ আদায় করাকে ইবনুল মুবারাক, আহ্মাদ ও ইসহাক সমর্থন
করেছেন। ইমাম শাফিঈ কুরআনের হাফিয ব্যক্তির জন্য একাকী (তারাবীহ্র) নামায আদায় করাকে
উত্তম বলেছেন। আইশা, নু’মান ইবনু বাশীর ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস
বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
·
৮২. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদারকে ইফতার
করানোর ফাযীলাত
৮০৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ
بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا
كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الصَّائِمِ
شَيْئًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যাইদ ইবনু খালিদ
আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন রোযা পালনকারীকে
যে লোক ইফতার করায় সে লোকের জন্যও রোযা পালনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে। কিন্তু এর
ফলে রোযা পালনকারীর সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কমানো হবে না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৪৬)
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৮৩. অনুচ্ছেদঃ
রমযান মাসে (রাত্রের
ইবাদাত) দণ্ডায়মান হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা এবং এর ফাযীলাত
৮০৮
حَدَّثَنَا
عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُرَغِّبُ فِي قِيَامِ رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ أَنْ
يَأْمُرَهُمْ بِعَزِيمَةٍ وَيَقُولُ " مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا
وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ " . فَتُوُفِّيَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالأَمْرُ عَلَى ذَلِكَ ثُمَّ كَانَ الأَمْرُ
كَذَلِكَ فِي خِلاَفَةِ أَبِي بَكْرٍ وَصَدْرًا مِنْ خِلاَفَةِ عُمَرَ بْنِ
الْخَطَّابِ عَلَى ذَلِكَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ أَيْضًا عَنِ
الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ عن النبي قال أبو عيسى هذا حديث حسن
صحيح.
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রমযানের (রাত্র জেগে) ইবাদাত-বন্দিগীতে মাশ্গুল থাকতে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উৎসাহিত করতেন, তবে সেটাকে বাধ্যতামূলক হিসেবে
নির্দেশ দেননি। তিনি বলতেনঃ ঈমানের সাথে এবং সাওয়াবের আশা করে যে লোক রমযান মাসে
(রাতে ইবাদাতে) দন্ডায়মান হবে সে লোকের পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হবে। এ
নিয়মই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু পর্যন্ত চালু
ছিল। এ বিষয়টি আবূ বকর (রাঃ)-এর খিলাফত এবং উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-আর খিলাফতের
প্রথম দিকেও এমনই ছিল।
-সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (১২৪১), নাসা-ঈ, ইমাম বুখারীর মতে মৃত্যু পর্যন্ত...এই
বাক্যাংশটি যুহরী হাদীসে সংযোগ করেছেন।
আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। যুহরী-উরওয়া হতে,
তিনি আইশা (রাঃ)-হতে এই সূত্রেও এই হাদীসটি বর্ণিত আছে। এই হাদীসিটিকে আবূ ঈসা হাসান
সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
No comments