জামে' আত-তিরমিজি - অধ্যায় "কিয়ামত ও মর্মস্পর্শী বিষয়" হাদিস নং- ২৪১৫- ২৫২২
কিয়ামত ও মর্মস্পর্শী বিষয়
১. অনুচ্ছেদঃ
কিয়ামত প্রসঙ্গে
২৪১৫
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ خَيْثَمَةَ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " مَا مِنْكُمْ مِنْ رَجُلٍ إِلاَّ سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ تَرْجُمَانٌ فَيَنْظُرُ
أَيْمَنَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى شَيْئًا إِلاَّ شَيْئًا قَدَّمَهُ ثُمَّ يَنْظُرُ
أَشْأَمَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى شَيْئًا إِلاَّ شَيْئًا قَدَّمَهُ ثُمَّ يَنْظُرُ
تِلْقَاءَ وَجْهِهِ فَتَسْتَقْبِلُهُ النَّارُ " . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أَنْ يَقِيَ وَجْهَهُ حَرَّ
النَّارِ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ فَلْيَفْعَلْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
حَدَّثَنَا أَبُو السَّائِبِ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، يَوْمًا بِهَذَا الْحَدِيثِ
عَنِ الأَعْمَشِ، فَلَمَّا فَرَغَ وَكِيعٌ مِنْ هَذَا الْحَدِيثِ قَالَ مَنْ كَانَ
هَا هُنَا مِنْ أَهْلِ خُرَاسَانَ فَلْيَحْتَسِبْ فِي إِظْهَارِ هَذَا الْحَدِيثِ
بِخُرَاسَانَ لأَنَّ الْجَهْمِيَّةَ يُنْكِرُونَ هَذَا . اسْمُ أَبِي السَّائِبِ
سَلْمُ بْنُ جُنَادَةَ بْنِ سَلْمِ بْنِ خَالِدِ بْنِ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ
الْكُوفِيُّ .
আদী
ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের সকলের সাথেই তার প্রতিপালক
আল্লাহ তা'আলা কিয়ামত দিবসে কথা বলবেন। তার ও তার প্রতিপালকের মধ্যে কোন দোভাষী
থাকবে না। সে তার ডানপাশে তাকিয়ে তার দুনিয়াবী জীবনে পাঠানো আমল ব্যতীত আর কোন
কিছুই দেখতে পাবে না। সে তার বাম পাশে তাকিয়েও তার দুনিয়াবী জীবনে কৃত আমল
ব্যতীত আর কোন কিছুই দেখতে পাবে না। তারপর সে তার সম্মুখে তাকাতেই জাহান্নাম দেখতে
পাবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে
ব্যক্তিই এক টুকরা খেজুরের বিনিময়ে হলেও জাহান্নাম হতে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হয়
সে যেন তাই করে।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৮৫), বুখারী, মুসলিম।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। আবুস সাইব বলেন,
উপরোক্ত হাদীসটি একদিন ওয়াকী (রাহঃ) আমাদের নিকট ‘আমাশের সূত্রে বর্ণনা করেন। বর্ণনাশেষে
তিনি বলেন, যদি খুরাসানবাসী কোন ব্যক্তি এখানে উপস্থিত থাকে তাহলে সে যেন এ হাদীসটি
খুরাসানে প্রচার করাকে সাওয়াবের কাজ মনে করে। কেননা, জাহমিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ
এটা (মানুষের সাথে আল্লাহ্ তা'আলার কথা বলার বিষয়টি) অস্বীকার করে। আবুস সাইবের নাম
সালম ইবনু জুনাদা ইবনু সালম ইবনু খালিদ ইবনু জাবির ইবনু সামুরা আল-কূফী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪১৬
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا حُصَيْنُ بْنُ نُمَيْرٍ
أَبُو مِحْصَنٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ قَيْسٍ الرَّحَبِيُّ، حَدَّثَنَا
عَطَاءُ بْنُ أَبِي رَبَاحٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَزُولُ قَدَمَا ابْنِ آدَمَ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ عَنْ
عُمْرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَا أَبْلاَهُ وَمَالِهِ مِنْ
أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ
مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ الْحُسَيْنِ
بْنِ قَيْسٍ . وَحُسَيْنُ بْنُ قَيْسٍ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ
. وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَرْزَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ .
ইবনু
মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ
হওয়ার আগপর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ্ তা'আলার নিকট হতে সরতে পারবে না।
তার জীবনকাল সম্পর্কে, কিভাবে অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কি কাজে তা
বিনাশ করেছে ; তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা হতে তা উপার্জন করেছে এবং তা কি কি
খাতে খরচ করেছে এবং সে যত টুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল সে মুতাবিক কি কি আমল করেছে।
সহীহ, সহীহাহ্ (৯৪৬), তা’লীকুর রাগীব (১/৭৬), রাওযুন নাযীর (৬৪৮)।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এ হাদীসটি শুধুমাত্র হুসাইন ইবনু কাইসের রিওয়ায়াত হিসাবে
ইবনু মাসউদ (রাঃ)-এর বরাতে (দায়িত্বে) জেনেছি। হাদীসের বর্ণনাকারী হুসাইন ইবনু কাইস
তার স্মৃতিশক্তির দুর্বলতার জন্য সমালোচিত। আবূ বারযা ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪১৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا
الأَسْوَدُ بْنُ عَامِرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ أَبِي بَرْزَةَ
الأَسْلَمِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ
تَزُولُ قَدَمَا عَبْدٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ عُمْرِهِ فِيمَا
أَفْنَاهُ وَعَنْ عِلْمِهِ فِيمَا فَعَلَ وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ
وَفِيمَا أَنْفَقَهُ وَعَنْ جِسْمِهِ فِيمَا أَبْلاَهُ " . قَالَ هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَسَعِيدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جُرَيْجٍ هُوَ
بَصْرِيٌّ وَهُوَ مَوْلَى أَبِي بَرْزَةَ وَأَبُو بَرْزَةَ اسْمُهُ نَضْلَةُ بْنُ
عُبَيْدٍ .
আবূ
বারযা আল-আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন বান্দার পদদ্বয় (কিয়ামাত দিবসে)
এতটুকুও সরবে না, তাকে এ কয়টি বিষয় সম্পর্কে যে পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ না করা হবেঃ
কিভাবে তার জীববনকালকে অতিবাহিত করেছে; তার অর্জিত জ্ঞান অনুযায়ী কি আমল করেছে ;
কোথা হতে তার ধন-সম্পদ উপার্জন করেছে ও কোন কোন খাতে ব্যয় করেছে এবং কি কি কাজে
তার শরীর বিনাশ করেছে।
সহীহ্, প্রাগুক্ত, তাখরীজ ইক্তিযাউল ইলমি আল-আমাল (১৫/১)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান স’হীহ্। সাঈদ ইবনু আব্দুল্লাহ
ইবনু জুরাইজ ছিলেন বসরার অধিবাসী এবং আবূ বারযা আল-আসলামী (রাঃ)-এর মুক্তদাস। আবূ বারযা
(রাঃ)-এর নাম নাযলা ইবনু উবাইদ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২. অনুচ্ছেদঃ
হিসাব-নিকাশ
ও প্রতিশোধ প্রসঙ্গে
২৪১৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ،
عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَتَدْرُونَ مَا
الْمُفْلِسُ " . قَالُوا الْمُفْلِسُ فِينَا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ
لاَ دِرْهَمَ لَهُ وَلاَ مَتَاعَ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" الْمُفْلِسُ مِنْ أُمَّتِي مَنْ يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِصَلاَتِهِ
وَصِيَامِهِ وَزَكَاتِهِ وَيَأْتِي قَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا وَأَكَلَ
مَالَ هَذَا وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا فَيَقْعُدُ فَيَقْتَصُّ هَذَا
مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ
أَنْ يُقْتَصَّ مَا عَلَيْهِ مِنَ الْخَطَايَا أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَ
عَلَيْهِ ثُمَّ طُرِحَ فِي النَّارِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি জান,
দেউলিয়া কে? তারা বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)!
আমাদের মধ্যে দেউলিয়া হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার দিরহামও (নগদ অর্থ) নেই, কোন সম্পদও
নেই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে
সেই ব্যক্তি হচ্ছে দেউলিয়া যে কিয়ামাত দিবসে নামায, রোযা, যাকাতসহ বহু আমল নিয়ে
উপস্থিত হবে এবং এর সাথে সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো
সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কারো রক্ত প্রবাহিত (হত্যা) করেছে, কাউকে মারধর করেছে,
ইত্যাদি অপরাধও নিয়ে আসবে। সে তখন বসবে এবং তার নেক আমল হতে এ ব্যক্তি কিছু নিয়ে
যাবে, ও ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে। এভাবে সম্পূর্ণ বদলা (বিনিময়) নেয়ার আগেই তার সৎ
আমল নিঃশেষ হয়ে গেলে তাদের গুনাহসমূহ তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে, তারপর তাকে
জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
সহীহ, সহীহাহ্ (৮৪৫), আহকামুল জানাইয (৪), মুসলিম।
আবূ ঈ’সা বলেন, এ হাদীসটি হাসান স’হীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪১৯
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، وَنَصْرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْكُوفِيُّ،
قَالَ حَدَّثَنَا الْمُحَارِبِيُّ، عَنْ أَبِي خَالِدٍ، يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
رَحِمَ اللَّهُ عَبْدًا كَانَتْ لأَخِيهِ عِنْدَهُ مَظْلَمَةٌ فِي عِرْضٍ أَوْ
مَالٍ فَجَاءَهُ فَاسْتَحَلَّهُ قَبْلَ أَنْ يُؤْخَذَ وَلَيْسَ ثَمَّ دِينَارٌ
وَلاَ دِرْهَمٌ فَإِنْ كَانَتْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ حَسَنَاتِهِ وَإِنْ
لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ حَمَّلُوا عَلَيْهِ مِنْ سَيِّئَاتِهِمْ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ سَعِيدٍ
الْمَقْبُرِيِّ . وَقَدْ رَوَاهُ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ عَنْ سَعِيدٍ
الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
نَحْوَهُ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সেই বান্দার উপর আল্লাহ তা’আলা রাহমাত
বর্ষণ করুন, যে তার কোন ভাইয়ের মান-সম্মান ও ধন-সম্পদের ব্যাপারে যুলুম করেছে।
কিয়ামাত দিবসে এ ব্যাপারে তাকে পাকড়াও করার পূর্বেই যেন সে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির
কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। কারণ, সে স্থানে (আখিরাতে) দিরহাম, দীনারের (বিনিময়
প্রদানের) ব্যবস্থার থাকবে না। সুতরাং তার কোন ভালো আমল থাকলে (যুলুমের পরিমাণ
অনুযায়ী) তা নিয়ে যাওয়া হবে। আর যদি কোন ভালো আমল না থাকে, তাহলে মাযলুমদের গুনাহ
তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
সহীহ্, সহীহাহ্ (৩২৬৫)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং সাঈদ আল-মাকবুরীর
রিওয়ায়াত হিসেবে গারীব। মালিক ইবনু আনাস-সাঈদ আল-মাকবুরী হতে, তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ)
হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রেও উপরের হাদীসের
মতোই বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪২০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ،
عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَتُؤَدَّنَّ
الْحُقُوقُ إِلَى أَهْلِهَا حَتَّى يُقَادَ لِلشَّاةِ الْجَلْحَاءِ مِنَ الشَّاةِ
الْقَرْنَاءِ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي ذَرٍّ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ
أُنَيْسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিঃসন্দেহে (কিয়ামাত দিবসে) সকল
হকদারের হক আদায় করা হবে। এমনকি শিংবিহীন বকরীর পক্ষে শিংবিশিষ্ট বকরীর (গুতোর)
বদলা নেওয়া হবে।
সহীহ, সহীহাহ্ (১৫৮৮)।
আবূ যার ও আব্দুল্লাহ ইবনু উনাইস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪২১
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ، حَدَّثَنِي سُلَيْمُ
بْنُ عَامِرٍ، حَدَّثَنَا الْمِقْدَادُ، صَاحِبُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا
كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ أُدْنِيَتِ الشَّمْسُ مِنَ الْعِبَادِ حَتَّى تَكُونَ
قِيدَ مِيلٍ أَوِ اثْنَيْنِ " . قَالَ سُلَيْمٌ لاَ أَدْرِي أَىَّ
الْمِيلَيْنِ عَنَى أَمَسَافَةَ الأَرْضِ أَمِ الْمِيلَ الَّذِي تُكْتَحَلُ بِهِ
الْعَيْنُ قَالَ " فَتَصْهَرُهُمُ الشَّمْسُ فَيَكُونُونَ فِي الْعَرَقِ
بِقَدْرِ أَعْمَالِهِمْ فَمِنْهُمْ مَنْ يَأْخُذُهُ إِلَى عَقِبَيْهِ وَمِنْهُمْ
مَنْ يَأْخُذُهُ إِلَى رُكْبَتَيْهِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَأْخُذُهُ إِلَى حَقْوَيْهِ
وَمِنْهُمْ مَنْ يُلْجِمُهُ إِلْجَامًا " . فَرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يُشِيرُ بِيَدِهِ إِلَى فِيهِ أَىْ يُلْجِمُهُ إِلْجَامًا .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ وَابْنِ عُمَرَ .
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী মিকদাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ কিয়ামাত দিবসে
সূ্র্যকে মানুষের এত নিকটে আনা হবে যে, তা মাত্র এক অথবা দু’মাইল ব্যবধানে থাকবে।
সুলাইম ইবনু আমির (রাহঃ) বলেন, আমি জানি না উক্ত মাইল দ্বারা যামীনের দূরত্ব
জ্ঞাপক মাইল বুঝানো হয়েছে, না চোখের সুরমা লাগানোর শলাকা বুঝানো হয়েছে। তিনি বলেন,
সূর্য তাদের গলিয়ে দেবে। তারা তখন নিজেদের আমল (গুনাহ) অনুপাতে ঘামের মধ্যে
হাবুডুবু খাবে। আর তা কারো পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত, কারো হাঁটু পর্যন্ত, কারো কোমর
পর্যন্ত এবং কারো মুখ পর্যন্ত ঘাম পৌঁছে লাগামের মতো বেষ্টন করবে। এই কথা বলার পর
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাত দ্বারা মুখের দিকে ইশারা
করেন, অর্থাৎ লাগামের মতো বেষ্টন করাকে বুঝালেন।
সহীহ, সহীহাহ্ (১৩৮২), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূ সাঈদ ও ইবনু
উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪২২
حَدَّثَنَا أَبُو زَكَرِيَّا، يَحْيَى بْنُ دُرُسْتَ الْبَصْرِيُّ
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ، قَالَ حَمَّادٌ وَهُوَ عِنْدَنَا مَرْفُوعٌ (يَوْمَ يَقُومُ النَّاسُ
لِرَبِّ الْعَالَمِينَ ) قَالَ يَقُومُونَ فِي الرَّشْحِ إِلَى أَنْصَافِ
آذَانِهِمْ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ
نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাম্মাদ (রাহঃ) বলেন,
আমাদের নিকট এ হাদীসটি মারফূভাবে অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর বাণী হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। “মানুষ যেদিন জগতসমূহের প্রতিপালকের সামনে
দাঁড়াবে” (সূরাঃ মুতাফফিফীন-৬) আয়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ কানের অর্ধেক পর্যন্ত
ঘামে ডুবে থাকাবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকবে।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪২৭৮), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। উপরোক্ত হাদীসের
অনুরূপ হাদীস হান্নাদ-ঈসা ইবনু ইউনুস হতে, তিনি ইবনু আওন হতে, তিনি নাফি হতে, তিনি
ইবুন উমার (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই
সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩. অনুচ্ছেদঃ
হাশরের
ময়দানের অবস্থা
২৪২৩
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ
الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ النُّعْمَانِ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حُفَاةً عُرَاةً
غُرْلاً كَمَا خُلِقُوا ثُمَّ قَرَأََ (كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ
نُعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ ) وَأَوَّلُ مَنْ يُكْسَى
مِنَ الْخَلاَئِقِ إِبْرَاهِيمُ وَيُؤْخَذُ مِنْ أَصْحَابِي بِرِجَالٍ ذَاتَ
الْيَمِينِ وَذَاتَ الشِّمَالِ فَأَقُولُ يَا رَبِّ أَصْحَابِي . فَيُقَالُ
إِنَّكَ لاَ تَدْرِي مَا أَحْدَثُوا بَعْدَكَ إِنَّهُمْ لَمْ يَزَالُوا
مُرْتَدِّينَ عَلَى أَعْقَابِهِمْ مُنْذُ فَارَقْتَهُمْ . فَأَقُولُ كَمَا قَالَ
الْعَبْدُ الصَّالِحُْ: (إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ
تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ) ".
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ
النُّعْمَانِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ فَذَكَرَ نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে মানুষকে খালি পায়ে,
উলঙ্গ শরীরে ও খাৎনাবিহীন অবস্থায় হাযির করা হবে, যেভাবে প্রথমবার সৃষ্টি করা
হয়েছিল। তারপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেনঃ “আমি যেভাবে প্রথমবার সৃষ্টির সূচনা
করেছিলাম সেভাবেই আবার সৃষ্টি করব। প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করা আমার কর্তব্য, আমি তা
পালন করবই” (সূরাঃ আম্বিয়া-১০৪)। ইবরাহীম (আঃ)-কে সকল সৃষ্টির মধ্যে সর্বপ্রথম
পোশাক পরিধান করানো হবে। আমার সাহাবীগণের মধ্যকার কিছু সংখ্যক লোককে বন্দী করে
ডানে-বামে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি বলব, হে প্রভু! এরা তো আমার অনুসারী। আমাকে তখন
বলা হবে, আপনি তো জানেন না, আপনার পরে এরা যে কি সব বিদ’আতী কাজ করেছে। আপনি তাদের
কাছ থেকে পৃথক হওয়ার পর হতে তারা পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতে আরম্ভ করেছে। তখন আমি
আল্লাহ্ তা’আলার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাহ [ঈ’সা (আঃ)-এর] মতো বলব, (সূরাঃ মাইদা-১১৮):
“আপনি যদি তাদের শাস্তি দেন তাহলে তারা তো আপনারই বান্দাহ, আর যদি তাদেরকে ক্ষমা
করেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনি মহা পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়”।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
মুহাম্মাদ ইব্ন বাশশার ও মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না-মুহাম্মদ
ইবনু জাফর হতে, তিনি শুবা হতে, তিনি মুগীরা ইবনু নু’মান হতে এই সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের
মতোই বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪২৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ،
أَخْبَرَنَا بَهْزُ بْنُ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّكُمْ مَحْشُورُونَ
رِجَالاً وَرُكْبَانًا وَتُجَرُّونَ عَلَى وُجُوهِكُمْ " . وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
বাহ্য
ইবনু হাকীম (রাহঃ) হতে তার বাবা, অতঃপর তার দাদা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ (কিয়ামাত দিবসে)
তোমাদের পায়ে হাঁটিয়ে, সাওয়ারী হিসেবে এবং কিছু সংখ্যককে মুখের উপর উপুর করে টেনে
হাযির করা হবে।
সহীহ, ফাযাইলুশ্শাম (১৩)।
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪. অনুচ্ছেদঃ
কিয়ামাত
ও মর্মষ্পর্শী বিষয়
২৪২৫
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ
عَلِيٍّ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " يُعْرَضُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثَلاَثَ
عَرَضَاتٍ فَأَمَّا عَرْضَتَانِ فَجِدَالٌ وَمَعَاذِيرُ وَأَمَّا الْعَرْضَةُ
الثَّالِثَةُ فَعِنْدَ ذَلِكَ تَطِيرُ الصُّحُفُ فِي الأَيْدِي فَآخِذٌ
بِيَمِينِهِ وَآخِذٌ بِشِمَالِهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَلاَ يَصِحُّ
هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ قِبَلِ أَنَّ الْحَسَنَ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
. وَقَدْ رَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَلِيٍّ الرِّفَاعِيِّ عَنِ
الْحَسَنِ عَنْ أَبِي مُوسَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَلاَ يَصِحُّ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ قِبَلِ أَنَّ الْحَسَنَ لَمْ يَسْمَعْ
مِنْ أَبِي مُوسَى .
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিন মানুষকে তিনবার হাযির
করা হবে। দুইবারের হাযিরা হবে ঝগড়া-বিবাদ ও বিভিন্ন ওযর-আপত্তি শুনানী প্রসঙ্গে
এবং তৃতীয়বারের হাযিরাতে প্রত্যেকের (নিজ নিজ) আমলনামা উড়তে থাকবে। কেউ তা পাবে
ডান হাতে আর কেউ পাবে বাম হাতে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৪২৭৭)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সনদের দিক দিয়ে সহীহ নয়। কারণ
হাসান বাসরী (রহঃ) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে কিছু
শুনেননি। কিছু রাবী আলী আর-রিফাঈর সূত্রে আল-হাসান হতে তিনি আবূ মূসা (রাঃ) হতে তিনি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন। এ বর্ণনাটিও
সহীহ নয়, কারণ হাসান আবূ মূসার নিকট হাদীস শুনেন নাই।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৫. অনুচ্ছেদঃ
সহজ
হিসাব
২৪২৬
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ
عُثْمَانَ بْنِ الأَسْوَدِ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ نُوقِشَ
الْحِسَابَ هَلَكَ " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ
تَعَالَى يَقُولَُ: (فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ * فَسَوْفَ
يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا ) قَالَ " ذَلِكَ الْعَرْضُ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ حَسَنٌ وَرَوَاهُ أَيُّوبُ أَيْضًا عَنِ
ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ
পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যার হিসাব গ্রহণ করা হবে সে তো ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি বললাম, হে
আল্লাহ্র রসূল (স্বল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম)! আল্লাহ্ তা’আলা তো বলেছেন,
“যে ব্যক্তির ডান হাতে তার আমলনামা প্রদান করা হবে, খুব সহজেই তার হিসাব-নিকাশ
হবে” (সূরাঃ ইনশিকাক-৭-৮)। তিনি বললেনঃ সেটা তো শুধু নামমাত্র উপস্থাপন করা।
সহীহ, যিলালুল জান্নাত (৮৮৫), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীসটি ইবনু
আবী মুলাইকার সূত্রে আইয়্যূব (রাহঃ)-ও বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬. অনুচ্ছেদঃ
দুনিয়ার
সঞ্চিত সম্পদ পরকালে ব্যয় করার আকাঙ্খা
২৪২৭
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ،
أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ الْحَسَنِ، وَقَتَادَةَ، عَنْ
أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يُجَاءُ بِابْنِ
آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُ بَذَجٌ فَيُوقَفُ بَيْنَ يَدَىِ اللَّهِ
فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ أَعْطَيْتُكَ وَخَوَّلْتُكَ وَأَنْعَمْتُ عَلَيْكَ
فَمَاذَا صَنَعْتَ . فَيَقُولُ يَا رَبِّ جَمَعْتُهُ وَثَمَّرْتُهُ فَتَرَكْتُهُ
أَكْثَرَ مَا كَانَ فَارْجِعْنِي آتِكَ بِهِ . فَيَقُولُ لَهُ أَرِنِي مَا قَدَّمْتَ
. فَيَقُولُ يَا رَبِّ جَمَعْتُهُ وَثَمَّرْتُهُ فَتَرَكْتُهُ أَكْثَرَ مَا
كَانَ فَارْجِعْنِي آتِكَ بِهِ . فَإِذَا عَبْدٌ لَمْ يُقَدِّمْ خَيْرًا
فَيُمْضَى بِهِ إِلَى النَّارِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رَوَى
هَذَا الْحَدِيثَ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الْحَسَنِ قَوْلَهُ وَلَمْ يُسْنِدُوهُ .
وَإِسْمَاعِيلُ بْنُ مُسْلِمٍ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কিয়ামাতের দিন আদম-সন্তানকে ভেড়ার (সদ্য
প্রসূত) বাচ্চার ন্যায় অবস্থায় হাযির করা হবে। তারপর তাকে আল্লাহ তা’আলার সামনে
দাঁড় করানো হবে। আল্লাহ তা’আলা তাকে প্রশ্ন করবেন, আমি তোমাকে ক্ষেত-খামার,
দাস-দাসী ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দান করেছিলাম এবং আরো বিভিন্ন ধরণের অনুগ্রহ
দিয়েছিলাম। তুমি কি আমল করে এসেছ? সে বলবে, হে রব! আমি সেগুলো সঞ্চয় করে রেখেছি,
বহু গুণে বৃদ্ধি করেছি এবং যা ছিল তার চাইতে অনেক বাড়িয়ে রেখে এসেছি। আমাকে
একটুখানি ফেরত যেতে দিন, আমি সেগুলো আপনার নিকটে নিয়ে আসব। তিনি তাকে বলবেন, তুমি
কি কি আমল করে এসেছ আগে তা আমাকে দেখাও। অতঃপর দেখা যাবে সে এমন এক বান্দা, যে কোন
ভাল কাজই করে নাই, ফলে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
যঈফ, তা’লীকুর রাগীব (৩/১১)
আবূ ঈসা বলেন, একাধিক রাবী উপরোক্ত হাদীসটি হাসান বাসরী
(রহঃ)-এর বক্তব্য হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তারা এটিকে মুসনাদ হাদীস হিসাবে বর্ণনা করেননি।
রাবী ইসমাঈল ইবনু মুসলিম তার স্মরণশক্তির দূর্বলতার জন্য সমালোচিত। এ অনুচ্ছেদে আবূ
হুরাইরা ও আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৪২৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الزُّهْرِيُّ الْبَصْرِيُّ،
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ سُعَيْرٍ أَبُو مُحَمَّدٍ التَّمِيمِيُّ الْكُوفِيُّ،
حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَعَنْ أَبِي
سَعِيدٍ، قَالاَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يُؤْتَى
بِالْعَبْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ أَلَمْ أَجْعَلْ لَكَ
سَمْعًا وَبَصَرًا وَمَالاً وَوَلَدًا وَسَخَّرْتُ لَكَ الأَنْعَامَ وَالْحَرْثَ
وَتَرَكْتُكَ تَرْأَسُ وَتَرْبَعُ فَكُنْتَ تَظُنُّ أَنَّكَ مُلاَقِيَّ يَوْمَكَ
هَذَا قَالَ فَيَقُولُ لاَ . فَيَقُولُ لَهُ الْيَوْمَ أَنْسَاكَ كَمَا
نَسِيتَنِي " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
وَمَعْنَى قَوْلِهِ " الْيَوْمَ أَنْسَاكَ " . يَقُولُ الْيَوْمَ
أَتْرُكُكَ فِي الْعَذَابِ . هَكَذَا فَسَّرُوهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ
فَسَّرَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ هَذِهِ الآيَةَ: ( الْيَوْمَ نَنْسَاهُمْ )
قَالُوا إِنَّمَا مَعْنَاهُ الْيَوْمَ نَتْرُكُهُمْ فِي الْعَذَابِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারা দুজনেই বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিন কোন
বান্দাকে উপস্থিত করা হবে। আল্লাহ্ তা’আলা তাকে প্রশ্ন করবেন, আমি কি তোমাকে কান,
চোখ, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি দেইনি এবং তোমার অধীনে জীব-জন্তু ও খেত-খামার
দেইনি? তোমাকে তো স্বাধীনভাবে ছেড়ে রেখেছিলাম সর্দারী করতে এবং মানুষের নিকট হতে
এক-চতুর্থাংশ গ্রহণ করতে (জাহিলী যুগের একটি রীতি)। তুমি কি ধারণা করতে যে, এই
দিনে আমার সাথে তোমার সাক্ষাৎ হবে? সে বলবে, না। তিনি তাকে বলবেন, তুমি যেভাবে
আমাকে ভুলে গিয়েছিলে, আমিও আজ তোমাকে ভুলে গেলাম।
সহীহ, যিলালুল জান্নাত (৬৩২), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্ গারীব। “তোমাকে ভুলে গেলাম”
কথার অর্থ এই যে, আমি আজ তোমাকে শাস্তি প্রদান করলাম। আবূ ঈসা বলেন, কিছু আলিম (“আজ
আমি তাদের ভুলে গেছি”) (সূরাঃ আরাফ-৫১) আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, আজ আমি তাদের শাস্তি
কার্যকর করলাম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭. অনুচ্ছেদঃ
পৃথিবী
তার বৃত্তান্ত পেশ করবে
২৪২৯
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلمْ (يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا
) قَالَ " أَتَدْرُونَ مَا أَخْبَارُهَا " . قَالُوا اللَّهُ
وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " فَإِنَّ أَخْبَارَهَا أَنْ تَشْهَدَ
عَلَى كُلِّ عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ بِمَا عَمِلَ عَلَى ظَهْرِهَا أَنْ تَقُولَ عَمِلَ
كَذَا وَكَذَا يَوْمَ كَذَا وَكَذَا قَالَ فَهَذِهِ أَخْبَارُهَا " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) “যে দিন পৃথিবী তার বৃত্তান্ত পরিবেশন করবে”
(সূরাঃ যিলযাল-৪) তিলাওয়াত করে প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি জান পৃথিবীর পরিবেশনযোগ্য
বৃত্তান্ত কি? সাহাবীগণ বললেন, আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি
বললেন, তার বৃত্তান্ত এই যে, সে সমস্ত নারী-পুরুষের সেইসব কাজের সাক্ষ্য দিবে, যা
তারা তার উপরে করেছে। সে বলবে, অমুক দিন অমুক ব্যক্তি এই এই কাজ করেছে। এভাবে সে
সাক্ষ্য দেবে। তিনি বললেন, এটাই হবে পৃথিবীর পেশকৃত বৃত্তান্ত।
দুর্বল সনদ
এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৮. অনুচ্ছেদঃ
শিঙ্গার
ফুৎকার প্রসঙ্গে
২৪৩০
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَسْلَمَ الْعِجْلِيِّ،
عَنْ بِشْرِ بْنِ شَغَافٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِي،
قَالَ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا
الصُّورُ قَالَ " قَرْنٌ يُنْفَخُ فِيهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ سُلَيْمَانَ
التَّيْمِيِّ وَلاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِهِ .
আবদুল্লাহ
ইবনু আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক
গ্রাম্য লোক নাবীর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এসে প্রশ্ন করল,
শিঙ্গা কি? তিনি বললেনঃ এটা একটা শিং যাতে ফুৎকার দেয়া হবে।
সহীহ, সহীহাহ্ (১০৮০)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। একাধিক বর্ণনাকারী সুলাইমান
আত-তাইমীর সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র তার রিওয়ায়াত
হিসাবেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৩১
حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا خَالِدٌ
أَبُو الْعَلاَءِ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كَيْفَ أَنْعَمُ وَصَاحِبُ الْقَرْنِ قَدِ
الْتَقَمَ الْقَرْنَ وَاسْتَمَعَ الإِذْنَ مَتَى يُؤْمَرُ بِالنَّفْخِ فَيَنْفُخُ
" . فَكَأَنَّ ذَلِكَ ثَقُلَ عَلَى أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ لَهُمْ " قُولُوا حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ
عَلَى اللَّهِ تَوَكَّلْنَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
. وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ عَطِيَّةَ عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
আবূ
সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি কিভাবে নিশ্চিন্তে আরাম করতে
পারি, অথচ শিঙ্গাওয়ালা (ফেরেশতা ইসরাফীল আ:) মুখে শিঙ্গা নিয়ে অধীর আগ্রহে কান
পেতে শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার নির্দেশ শোনার অপেক্ষায় আছেন, কখন ফুঁ দেয়ার নির্দেশ
প্রদান করা হবে, আর অমনি তিনি ফুঁ দিবেন। বিষয়টি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের নিকট অত্যন্ত ভীতিকর মনে হলো। তখন তিনি তাদেরকে
বললেনঃ তোমরা বল যে, আমাদের জন্য আল্লাহ্ তা’আলাই যথেষ্ট, তিনি কতই না উত্তম
কর্মবিধানকারী। আমরা আল্লাহ্ তা’আলার উপর ভরসা করলাম।
সহীহ, সহীহাহ্ (২০৭৯)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। এ সূত্র ছাড়াও আতিয়্যা
হতে, তিনি আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে এই সূত্রে হাদীসটি একইরকম বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯. অনুচ্ছেদঃ
পুলসিরাতের
অবস্থা
২৪৩২
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ،
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَعْدٍ، عَنِ
الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" شِعَارُ الْمُؤْمِنِ عَلَى الصِّرَاطِ رَبِّ سَلِّمْ سَلِّمْ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ الْمُغِيرَةِ بْنِ
شُعْبَةَ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ
. وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
মুগীরা
ইবনু শুবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পুলসিরাত পার হওয়ার সময় মু’মিনদের
নিদর্শন হবেঃ হে প্রভু! রক্ষা কর রক্ষা কর।
যঈফ, যঈফা (১৯৭৩)
আবূ ঈসা বলেন, মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত হিসাবে
এ হাদীসটি গারীব। শুধুমাত্র আবদুর রহমান ইবনু ইসহাকের সূত্রেই আমরা এ হাদীস জেনেছি।
এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরা0ইরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৪৩৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الصَّبَّاحِ الْهَاشِمِيُّ، حَدَّثَنَا
بَدَلُ بْنُ الْمُحَبَّرِ، حَدَّثَنَا حَرْبُ بْنُ مَيْمُونٍ الأَنْصَارِيُّ أَبُو
الْخَطَّابِ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ
سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَشْفَعَ لِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ
فَقَالَ " أَنَا فَاعِلٌ " . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
فَأَيْنَ أَطْلُبُكَ قَالَ " اطْلُبْنِي أَوَّلَ مَا تَطْلُبُنِي عَلَى
الصِّرَاطِ " . قَالَ قُلْتُ فَإِنْ لَمْ أَلْقَكَ عَلَى الصِّرَاطِ
قَالَ " فَاطْلُبْنِي عِنْدَ الْمِيزَانِ " . قُلْتُ فَإِنْ لَمْ
أَلْقَكَ عِنْدَ الْمِيزَانِ قَالَ " فَاطْلُبْنِي عِنْدَ الْحَوْضِ
فَإِنِّي لاَ أُخْطِئُ هَذِهِ الثَّلاَثَ الْمَوَاطِنَ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
.
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট নিবেদন করলাম যে, তিনি যেন
কিয়ামাত দিবসে আমার জন্য সুপারিশ করেন। তিনি বললেন, ঠিক আছে আমি সুপারিশ করব। আমি
তাকে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি
আপনাকে কোথায় খোঁজ করব? তিনি বললেন, তুমি সর্বপ্রথম আমাকে পুলসিরাতের সামনে খোঁজ
করবে। আমি বললাম, পুলসিরাতে যদি আপনাকে না পাই? তিনি বললেন, তাহলে মীযানের ঐখানে
খুঁজবে। আমি আবার বললাম, মীযানের ঐখানেও যদি আপনাকে না পাই? তিনি বললেন, তাহলে
হাওযে কাওসারের সামনে খুঁজবে। আমি এ তিনটি জায়গায় যে কোন একটিতে অবশ্যই উপস্থিত
থাকব।
সহীহ, মিশকাত (৫৫৯৫), তা’লীকুর রাগীব (৪/২১১)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীসটি
শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০. অনুচ্ছেদঃ
শাফা’আত
প্রসঙ্গে
২৪৩৪
أَخْبَرَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا أَبُو حَيَّانَ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ
عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم بِلَحْمٍ فَرُفِعَ إِلَيْهِ الذِّرَاعُ فَأَكَلَهُ وَكَانَتْ
تُعْجِبُهُ فَنَهَسَ مِنْهَا نَهْسَةً ثُمَّ قَالَ " أَنَا سَيِّدُ
النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ هَلْ تَدْرُونَ لِمَ ذَاكَ يَجْمَعُ اللَّهُ
النَّاسَ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ فَيُسْمِعُهُمُ الدَّاعِي
وَيَنْفُذُهُمُ الْبَصَرُ وَتَدْنُو الشَّمْسُ مِنْهُمْ فَيَبْلُغُ النَّاسُ مِنَ
الْغَمِّ وَالْكَرْبِ مَا لاَ يُطِيقُونَ وَلاَ يَحْتَمِلُونَ فَيَقُولُ النَّاسُ
بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ أَلاَ تَرَوْنَ مَا قَدْ بَلَغَكُمْ أَلاَ تَنْظُرُونَ مَنْ
يَشْفَعُ لَكُمْ إِلَى رَبِّكُمْ فَيَقُولُ النَّاسُ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ
عَلَيْكُمْ بِآدَمَ . فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ أَنْتَ أَبُو الْبَشَرِ
خَلَقَكَ اللَّهُ بِيَدِهِ وَنَفَخَ فِيكَ مِنْ رُوحِهِ وَأَمَرَ الْمَلاَئِكَةَ
فَسَجَدُوا لَكَ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى مَا نَحْنُ فِيهِ أَلاَ
تَرَى مَا قَدْ بَلَغَنَا فَيَقُولُ لَهُمْ آدَمُ إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ
الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ
مِثْلَهُ وَإِنَّهُ قَدْ نَهَانِي عَنِ الشَّجَرَةِ فَعَصَيْتُ نَفْسِي نَفْسِي
نَفْسِي اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى نُوحٍ . فَيَأْتُونَ نُوحًا
فَيَقُولُونَ يَا نُوحُ أَنْتَ أَوَّلُ الرُّسُلِ إِلَى أَهْلِ الأَرْضِ وَقَدْ
سَمَّاكَ اللَّهُ عَبْدًا شَكُورًا اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى مَا
نَحْنُ فِيهِ أَلاَ تَرَى مَا قَدْ بَلَغَنَا فَيَقُولُ لَهُمْ نُوحٌ إِنَّ رَبِّي
قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ
بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَإِنَّهُ قَدْ كَانَ لِي دَعْوَةٌ دَعَوْتُهَا عَلَى قَوْمِي
نَفْسِي نَفْسِي نَفْسِي اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى إِبْرَاهِيمَ
. فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ فَيَقُولُونَ يَا إِبْرَاهِيمُ أَنْتَ نَبِيُّ
اللَّهِ وَخَلِيلُهُ مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ
تَرَى مَا نَحْنُ فِيهِ فَيَقُولُ إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا
لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَإِنِّي قَدْ
كَذَبْتُ ثَلاَثَ كَذَبَاتٍ فَذَكَرَهُنَّ أَبُو حَيَّانَ فِي الْحَدِيثِ نَفْسِي
نَفْسِي نَفْسِي اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى مُوسَى . فَيَأْتُونَ
مُوسَى فَيَقُولُونَ يَا مُوسَى أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ فَضَّلَكَ اللَّهُ
بِرِسَالَتِهِ وَبِكَلاَمِهِ عَلَى الْبَشَرِ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ
تَرَى مَا نَحْنُ فِيهِ فَيَقُولُ إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا
لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَإِنِّي قَدْ
قَتَلْتُ نَفْسًا لَمْ أُومَرْ بِقَتْلِهَا نَفْسِي نَفْسِي نَفْسِي اذْهَبُوا
إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى عِيسَى . فَيَأْتُونَ عِيسَى فَيَقُولُونَ يَا
عِيسَى أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ وَكَلِمَتُهُ أَلْقَاهَا إِلَى مَرْيَمَ وَرُوحٌ
مِنْهُ وَكَلَّمْتَ النَّاسَ فِي الْمَهْدِ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ
تَرَى مَا نَحْنُ فِيهِ فَيَقُولُ عِيسَى إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ
غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ
وَلَمْ يَذْكُرْ ذَنْبًا نَفْسِي نَفْسِي نَفْسِي اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي
اذْهَبُوا إِلَى مُحَمَّدٍ . قَالَ فَيَأْتُونَ مُحَمَّدًا فَيَقُولُونَ يَا
مُحَمَّدُ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ وَخَاتَمُ الأَنْبِيَاءِ وَقَدْ غُفِرَ لَكَ مَا
تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى
مَا نَحْنُ فِيهِ فَأَنْطَلِقُ فَآتِي تَحْتَ الْعَرْشِ فَأَخِرُّ سَاجِدًا
لِرَبِّي ثُمَّ يَفْتَحُ اللَّهُ عَلَىَّ مِنْ مَحَامِدِهِ وَحُسْنِ الثَّنَاءِ
عَلَيْهِ شَيْئًا لَمْ يَفْتَحْهُ عَلَى أَحَدٍ قَبْلِي ثُمَّ يُقَالُ يَا مُحَمَّدُ
ارْفَعْ رَأْسَكَ سَلْ تُعْطَهُ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ . فَأَرْفَعُ رَأْسِي
فَأَقُولُ يَا رَبِّ أُمَّتِي يَا رَبِّ أُمَّتِي يَا رَبِّ أُمَّتِي .
فَيَقُولُ يَا مُحَمَّدُ أَدْخِلْ مِنْ أُمَّتِكَ مَنْ لاَ حِسَابَ عَلَيْهِ مِنَ
الْبَابِ الأَيْمَنِ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ وَهُمْ شُرَكَاءُ النَّاسِ فِيمَا
سِوَى ذَلِكَ مِنَ الأَبْوَابِ ثُمَّ قَالَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّ مَا
بَيْنَ الْمِصْرَاعَيْنِ مِنْ مَصَارِيعِ الْجَنَّةِ كَمَا بَيْنَ مَكَّةَ
وَهَجَرَ وَكَمَا بَيْنَ مَكَّةَ وَبُصْرَى " . وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ وَأَنَسٍ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ وَأَبِي سَعِيدٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو حَيَّانَ
التَّيْمِيُّ اسْمُهُ يَحْيَى بْنُ سَعِيدِ بْنِ حَيَّانَ كُوفِيٌّ وَهُوَ ثِقَةٌ
وَأَبُو زُرْعَةَ بْنُ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ اسْمُهُ هَرِمٌ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময়
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে গোশত আনা হলো। তারপর
তাঁকে সামনের একটি রান উঠিয়ে দেয়া হলো। তিনি তা খুবই পছন্দ করতেন- আর তিনি তা দাঁত
দিয়ে ছিড়ে ছিড়ে খেতে থাকলেন। তারপর তিনি বললেনঃ কিয়ামাত দিবসে আমিই হবো সকল
মানুষের নেতা। তোমরা কি জান এর কারণ কি? আল্লাহ্ তা’আলা সেদিন পূর্বেকার ও পরের
সকল মানুষকে এক জায়গায় সমবেত করবেন। একজনের আওয়াজই সবার কাছে পৌছে যাবে এবং সবাই
একজনের দৃষ্টিসীমার মধ্যে থাকবে।
সূর্য তাদের খুব নিকটে এসে যাবে। মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ ও সামর্থ্যের অতীত
দুর্ভাবনায় পড়ে যাবে এবং ধৈর্য্যহারা হয়ে পড়বে। তারা পরস্পরকে বলবে, তোমরা কি এ
দুঃসহ বিপদ দেখতে পাচ্ছ না? তোমাদের প্রভুর নিকট তোমাদের জন্য সুপারিশ করতে পারে
এরূপ কাউকে খুঁজে দেখছ না কেন? লোকেরা একে অপরকে বলবে, তোমাদের উচিত আদম (আ:)-এর
কাছে যাওয়া। অতএব, তারা আদম (আ:)-এর নিকট গিয়ে বলবে, আপনি তো মানব জাতির আদি পিতা।
আল্লাহ্ তা’আলা আপনাকে তাঁর নিজ হাতে বানিয়েছেন এবং আপনার মধ্যে তাঁর সৃষ্ট রূহ্
ফুঁকে দিয়েছেন। তারপর ফেরেশতাদের নির্দেশ দিলে তারা আপনাকে সাজদাহ করেছেন। আপনি
আমাদের জন্য আপনার প্রভুর নিকট সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না আমরা কি
অবস্থার মধ্যে পতিত আছি? আপনি কি লক্ষ্য করছেন না আমরা দুঃখ-দুর্দশার শেষ সীমায়
পৌঁছে গেছি! আদম (আ:) তাদেরকে বলবেন, আমার প্রভু তো আজ এতই ক্রোধান্বিত হয়েছেন
যেরূপ ইতিপূর্বে আর কখনো হননি এবং পরেও কখনো হবেন না। তিনি আমাকে একটি গাছের
ব্যাপারে (তার ফল খেতে) নিষেধ করেছিলেন। আমি সেটা অমান্য করেছি। নাফসী, নাফসী,
নাফসী (অর্থাৎ- আমারই তো কোন উপায় দেখছি না)। তোমরা অন্য কারো নিকটে যাও। তোমরা
বরং নূহ্ (আ:)-এর নিকট যাও। তারা তখন নূহ্ (আ:)-এর নিকট গিয়ে বলবে, হে নূহ! আপনি
তো দুনিয়াবাসীদের জন্য প্রথম রাসূল। আল্লাহ্ তা’আলা আপনাকে ‘আব্দ শাকূর’ (কৃতজ্ঞ
বান্দাহ) উপাধি দিয়েছেন, আপনি আমাদের জন্য আপনার প্রভুর নিকট সুপারিশ করুন। আপনি
কি দেখতে পাচ্ছেন না যে, আমরা কি অবস্থায় পতিত আছি, আপনি কি লক্ষ্য করছেন না আমরা
দু:খ-দুর্দশার শেষ সীমায় পৌঁছে গেছি! নূহ্ (আ:) তাদেরকে বলবেন, আজ আমার প্রতিপালক
এতই রাগান্বিত হয়েছেন যেমনটি এরপূর্বে আর কখনো হননি এবং পরেও হবেন না। আমাকে একটি
দু’আ করার অধিকার দেয়া হয়েছিল (যে উদ্দেশ্যেই দু’আ করব আল্লাহ্ তা’আলা তা ক্ববূল
করবেন বলে অঙ্গীকার ছিল)। কিন্তু আমি আমর উম্মাতের বিরুদ্ধে সেই দু’আ করেছি।
নাফসী, নাফসী, নাফসী। তোমরা অন্য কারো কাছে যাও। তোমরা বরং ইবরাহীম (আ:)-এর নিকট
যাও। তারা ইবরাহীম (আ:)-এর নিকট গিয়ে বলবে, হে ইবরাহীম ! আপনি আল্লাহ্র নবী এবং
দুনিয়াবাসীদের মধ্যে তাঁর অন্তরঙ্গ বন্ধু। আমরা কি অবস্থার মধ্যে পতিত আছি আপনি
দেখতে পাচ্ছেন না? আপনি আমাদের জন্য আপনার প্রভুর নিকট সুপারিশ করুন। তিনি বলবেন,
আমার পরোয়ারদিগার আজ এতই রাগান্বিত হয়েছেন, যেমনটি এরপূর্বে তিনি আর কখনো হননি এবং
পরেও কখনো হবেন না। আমি তিনটি মিথ্যা কথা বলেছি। আবূ হাইয়্যান তাঁর বর্ণিত হাদীসে
সেগুলো উল্লেখ করেছেন। নাফসী, নাফসী, নাফসী (আমি আজ আমার নিজের চিন্তায় অস্থির)।
তোমরা বরং অন্য কারো নিকট যাও, তোমরা মূসা (আ:)-এর নিকট যাও। তখন তারা মূসা
(আ:)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলবে, হে মূসা ! আপনি তো আল্লাহ্র রাসূল, আল্লাহ্ তাঁর
রিসালাত ও বাক্যালাপ দ্বারা আপনাকে মানুষের উপর মর্যাদা প্রদান করেছেন। আপনি কি
আমাদের প্রাণান্তকর এ করুণ অবস্থা দেখছেন না? আপনি আমাদের জন্য আপনার প্রভুর নিকট
সুপারিশ করুন। তিনি বলবেন, আল্লাহ্ তা’আলা তো আজ এতই ক্রোধান্বিত হয়েছেন, যেমনটি
এরপূর্বে তিনি আর কখনো হননি আর পরেও হবেন না। আমি তো এক লোককে হত্যা করেছি। অথচ
তাকে হত্যার নির্দেশ আমাকে প্রদান করা হয়নি। নাফসী, নাফসী, নাফসী। তোমরা বরং অন্য
কারো নিকট যাও। তোমরা ঈসা (আ:)-এর নিকট যাও। তখন ঈসা (আ:)-এর নিকট গিয়ে তারা বলবে,
হে ঈসা ! আপনি আল্লাহ্র রাসূল, তাঁর একটি বাণী যা তিনি মারইয়ামের গর্ভে নিক্ষেপ
করেছেন এবং তাঁর সৃষ্ট আত্মা। আপনি দোলনায় থাকাবস্থায় মানুষের সাথে কথা বলেছেন।
আপনি কি আমাদের এ করুণ অবস্থা দেখছেন না? আপনি আমাদের জন্য আপনার প্রভুর নিকট
সুপারিশ করুন। তখন ঈসা (আ:) বলবেন, আমার পরোয়ারদিগার আজ এতই রাগান্বিত হয়েছেন,
যেমনটি এর আগে তিনি আর কখনো হননি এবং পরে কখনো হবেন না। তিনি কোন গুনাহের কথা
উল্লেখ করবেন না। তিনি বললেন, নাফসী, নাফসী, নাফসী। তোমরা অন্য কারো নিকট যাও।
তোমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যাও। তখন তারা
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হাযির হয়ে বলবে, হে
মুহাম্মাদ ! আপনি আল্লাহ্র রাসূল, নাবীগণের মধ্যে সর্বশেষ নাবী, আপনার পূর্বাপর
সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়েছে। আপনি কি দেখছেন না আমরা কি অবস্থায় পতিত আছি!
আপনি আমাদের জন্য আপনার প্রভুর নিকট সুপারিশ করুন। তখন আমি রাওয়ানা হয়ে আরশের নীচে
উপস্থিত হবো। তারপর আমার প্রভুর উদ্দেশ্যে সাজদায় লুটিয়ে পড়ব। তারপর আল্লাহ তা’আলা
আমার জন্য তাঁর প্রশংসা ও সর্বোত্তম গুণগানের এমন কিছু উন্মুক্ত করে দিবেন যা আমার
পূর্বে আর কারো জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। তারপর বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! তুমি মাথা
উঠাও এবং আবেদন কর, তোমার আবেদন পূরণ করা হবে, সুপারিশ কর তোমার সুপারিশ ক্ববূল
করা হবে। তারপর আমি মাথা তুলে বলব, হে পরোয়ারদিগার! আমার উম্মাত, হে পরোয়ারদিগার!
আমার উম্মাত (তাদের রক্ষা করুন)। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, হে মুহাম্মাদ! তোমার
উম্মাতের মধ্যে যাদের কোন হিসাব-নিকাশ নেই তাদেরকে তুমি জান্নাতের ডান দরজা দিয়ে
প্রবেশ করাও। অধিকন্তু তারা অন্য মানুষের সাথে শরীক হয়ে অন্যান্য দরজা দিয়ে প্রবেশ
করার অধিকারও পাবে। তারপর তিনি বললেন, যার হাতে আমার প্রাণ সেই মহান সত্তার শপথ!
জান্নাতের দরজার দুটি চৌকাঠের মধ্যকার ব্যবধান মক্কা ও হাজার এবং মক্কা ও বুসরার
মধ্যকার ব্যবধানের সমান।
সহীহ, তাখরীজ তাহাভীয়া (১৯৮), যিলালুল জান্নাত (৮১১)।
আবূ বাক্র সিদ্দীক, আনাস, উক্বা ইবনু আমির ও আবূ সাঈদ
(রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবূ
হাইয়্যান আত-তাইমীর নাম ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ ইবনু হাইয়্যান। তিনি কূফার অধিবাসী এবং
বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী। আবূ যুরআ ইবনু আমর ইবনু জারীর-এর নাম হারিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১. অনুচ্ছেদঃ
কাবীরা
গুনাহের অপরাধীদের জন্য শাফায়াত
২৪৩৫
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " شَفَاعَتِي لأَهْلِ الْكَبَائِرِ مِنْ أُمَّتِي " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
. وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে আমার শাফা’আত
রয়েছে কাবীরা গুনাহের অপরাধীদের জন্য।
সহীহ, মিশকাত (৫৫৯৯), আয্যিলাল (৮৩১-৮৩২), রাওযুন নাযীর (৬৫)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং এ সূত্রে গারীব।
জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৩৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ
مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " شَفَاعَتِي لأَهْلِ الْكَبَائِرِ مِنْ
أُمَّتِي " . قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيٍّ فَقَالَ لِي جَابِرٌ يَا
مُحَمَّدُ مَنْ لَمْ يَكُنْ مِنْ أَهْلِ الْكَبَائِرِ فَمَا لَهُ وَلِلشَّفَاعَةِ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ يُسْتَغْرَبُ
مِنْ حَدِيثِ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ .
জাবির
ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে কাবীরা
গুনাহগারদের জন্যই আমার সুপারিশ।
সহীহ, প্রাগুক্ত।
মুহাম্মাদ ইবনু আলী বলেন, জাবির (রাঃ) আমাকে বললেন, হে
মুহাম্মাদ ইবনু আলী! যে লোক কাবীরা গুনাহ্ করে নাই তার সুপারিশের দি দরকার?
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উক্ত সূত্রে হাসান গারীব। এটিকে জাফর ইবনু মুহাম্মাদের রিওয়ায়াতের
হিসাবেই গারীব বলা হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২. অনুচ্ছেদঃ
সত্তরহাজার
লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে
২৪৩৭
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَرَفَةَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
عَيَّاشٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ الأَلْهَانِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا
أُمَامَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" وَعَدَنِي رَبِّي أَنْ يُدْخِلَ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعِينَ
أَلْفًا لاَ حِسَابَ عَلَيْهِمْ وَلاَ عَذَابَ مَعَ كُلِّ أَلْفٍ سَبْعُونَ
أَلْفًا وَثَلاَثُ حَثَيَاتٍ مِنْ حَثَيَاتِهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ
উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আমার প্রভূ আমার সাথে অঙ্গীকার করেছেন যে,
তিনি আমার উম্মাতের মধ্যে সত্তরহাজার লোককে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যাদের কোন
হিসাবও নেয়া হবে না এবং শাস্তিও প্রদান করা হবে না। আর প্রতি হাজারের সাথে থাকবে
আরো সত্তরহাজার। আর আমার পরোয়ারদিগারের দুই হাতের মুঠির তিনমুঠি পরিমাণ।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪২৮৬)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৩৮
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ كُنْتُ مَعَ
رَهْطٍ بِإِيلِيَاءَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْهُمْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَقُولُ " يَدْخُلُ الْجَنَّةَ بِشَفَاعَةِ رَجُلٍ مِنْ أُمَّتِي
أَكْثَرُ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ " . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ سِوَاكَ
قَالَ " سِوَاىَ " . فَلَمَّا قَامَ قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا
هَذَا ابْنُ أَبِي الْجَذْعَاءِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَابْنُ أَبِي الْجَذْعَاءِ هُوَ عَبْدُ اللَّهِ وَإِنَّمَا
يُعْرَفُ لَهُ هَذَا الْحَدِيثُ الْوَاحِدُ .
আবদুল্লাহ
ইবনু শাকীক্ব (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একটি
দলের সাথে ইলিয়া (বাইতুল মাকদিসের একটি নগর) নামক জায়গায় অবস্থান করছিলাম। দলের
একজন লোক বলল, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে
শুনেছিঃ আমার উম্মাতের একজন লোকের সুপারিশে তামীম বংশের সকল ব্যক্তির চেয়ে বেশি
সংখ্যক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহ্র রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি ব্যতীত অন্য কারো সুপারিশে? তিনি বললেন,
হ্যাঁ আমি ছাড়াই। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর বর্ণনাকারী উঠে দাঁড়ালে আমি প্রশ্ন
করলাম, ইনি কে? লোকেরা বলল, ইনি হলেন ইবনু আবুল জায’আ (রাঃ)।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪৩১৬)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। ইবনু আবুল
জায’আ হলেন আবদুল্লাহ (রাঃ)। আমরা তাঁর নিকট হতে এই একটি হাদীসই জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩. অনুচ্ছেদঃ
আমি
শাফা’আতের প্রস্তাবই গ্রহণ করলাম
২৪৩৯
حَدَّثَنَا أَبُو هِشَامٍ الرِّفَاعِيُّ، مُحَمَّدُ بْنُ يَزِيدَ
الْكُوفِيُّ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ الْيَمَانِ، عَنْ جِسْرٍ أَبِي جَعْفَرٍ،
عَنِ الْحَسَنِ الْبَصْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" يَشْفَعُ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي مِثْلِ
رَبِيعَةَ وَمُضَرَ " .
হাসান
বাসরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) কিয়ামাতের দিন
রবীআ ও মুদার গোত্রের সমসংখ্যক লোকের জন্য সুপারিশ করবে।
দুর্বল সনদ, মুরসাল
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৪৪০
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، أَخْبَرَنَا
الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ عَطِيَّةَ،
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
إِنَّ مِنْ أُمَّتِي مَنْ يَشْفَعُ لِلْفِئَامِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَشْفَعُ
لِلْقَبِيلَةِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَشْفَعُ لِلْعُصْبَةِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَشْفَعُ
لِلرَّجُلِ حَتَّى يَدْخُلُوا الْجَنَّةَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবূ
সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে কেউ বিরাট
জনগোষ্ঠীর জন্য সুপারিশ করবে, কেউ একটি গোত্রের জন্য, কেউ একটি ছোট দলের জন্য, কেউ
একজন লোকের জন্য সুপারিশ করবে এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
যঈফ, মিশকাত (৫৬০২)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৪৪১
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْمَلِيحِ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَتَانِي آتٍ مِنْ عِنْدِ
رَبِّي فَخَيَّرَنِي بَيْنَ أَنْ يُدْخِلَ نِصْفَ أُمَّتِي الْجَنَّةَ وَبَيْنَ
الشَّفَاعَةِ فَاخْتَرْتُ الشَّفَاعَةَ وَهِيَ لِمَنْ مَاتَ لاَ يُشْرِكُ
بِاللَّهِ شَيْئًا " . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي الْمَلِيحِ عَنْ رَجُلٍ
آخَرَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَلَمْ يَذْكُرْ عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ
طَوِيلَةٌ .
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي
الْمَلِيحِ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
نَحْوَهُ .
আওফ
ইবনু মালিক আল-আশজাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ হতে একজন
আগন্তুক আমার সামনে আসলেন এবং দুইটি প্রস্তাবের যে কোন একটি গ্রহণের ইখতিয়ার
(স্বাধীনতা) দিলেনঃ (১) হয় আমার উম্মাতের অর্ধেক সংখ্যক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ
করবে অথবা (২) আমার সুপারিশের সুযোগ থাকবে। আমি সুপারিশ করাকেই বেছে নিলাম। আর তা
হবে সেই সকল ব্যক্তির জন্য যে সকল ব্যক্তি আল্লাহ্ তা’আলার সাথে কোন শরীক না করে
মৃত্যুবরণ করেছে।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪৩১৭)।
এ হাদীসটি আবুল মালীহ (রাহঃ) হতে অপর এক সাহাবীর বরাতে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে। এই সূত্রে আওফ ইবনু
মালিক (রাঃ)-এর উল্লেখ নেই। হাদীসটিতে আরো বিস্তৃত বিবরণ আছে। উপরোক্ত হাদীসের ন্যায়
হাদীস কুতাইবা-আবূ আওয়ানা হতে, তিনি কাতাদা হতে, তিনি আবুল মালীহ হতে, তিনি আওফ ইবনু
মালিক (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪. অনুচ্ছেদঃ
হাওযে
কাওসারের বর্ণনা
২৪৪২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ شُعَيْبِ
بْنِ أَبِي حَمْزَةَ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ فِي
حَوْضِي مِنَ الأَبَارِيقِ بِعَدَدِ نُجُومِ السَّمَاءِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার হাওযে কাওসারের পাশে আকাশের
তারকার সমসংখ্যক পানপাত্র রয়েছে।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪৩০৪), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং উপরোক্ত সূত্রে
গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৪৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ نِيزَكَ
الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكَّارٍ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا
سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ لِكُلِّ نَبِيٍّ
حَوْضًا وَإِنَّهُمْ يَتَبَاهَوْنَ أَيُّهُمْ أَكْثَرُ وَارِدَةً وَإِنِّي أَرْجُو
أَنْ أَكُونَ أَكْثَرَهُمْ وَارِدَةً " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رَوَى الأَشْعَثُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ هَذَا
الْحَدِيثَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ
عَنْ سَمُرَةَ وَهُوَ أَصَحُّ .
সামুরা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক নাবীর জন্য একটি করে হাওয
হবে। আর এ নিয়ে তাঁরা পরস্পর গর্ববোধ করবেন যে, কার হাওযে কত বেশি লোক অবতরণ করবে।
আমি দৃঢ়ভাবে আশা করি যে, আমার হাওযেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোক আসবে।
সহীহ, তাখরীজু তাহাভীয়া (১৯৭), মিশকাত (৫৫৯৪), সহীহাহ্ (১৫৮৯)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীসটি আশআস ইবনু মালিক
(রাহঃ) হাসান বাসরীর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে ‘মুরসাল’
হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এই সূত্রে সামুরার (রাঃ) উল্লেখ নেই এবং এটিই সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫. অনুচ্ছেদঃ
হাওযের
পানপাত্রের বর্ণনা
২৪৪৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
صَالِحٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُهَاجِرِ، عَنِ الْعَبَّاسِ، عَنْ أَبِي
سَلاَّمٍ الْحَبَشِيِّ، قَالَ بَعَثَ إِلَىَّ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ
فَحُمِلْتُ عَلَى الْبَرِيدِ . قَالَ فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ قَالَ يَا
أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ لَقَدْ شَقَّ عَلَى مَرْكَبِي الْبَرِيدُ . فَقَالَ يَا
أَبَا سَلاَّمٍ مَا أَرَدْتُ أَنْ أَشُقَّ عَلَيْكَ وَلَكِنْ بَلَغَنِي عَنْكَ
حَدِيثٌ تُحَدِّثُهُ عَنْ ثَوْبَانَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي
الْحَوْضِ فَأَحْبَبْتُ أَنْ تُشَافِهَنِي بِهِ . قَالَ أَبُو سَلاَّمٍ
حَدَّثَنِي ثَوْبَانُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " حَوْضِي
مِنْ عَدَنَ إِلَى عَمَّانَ الْبَلْقَاءِ مَاؤُهُ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ
وَأَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ وَأَكَاوِيبُهُ عَدَدُ نُجُومِ السَّمَاءِ مَنْ شَرِبَ
مِنْهُ شَرْبَةً لَمْ يَظْمَأْ بَعْدَهَا أَبَدًا أَوَّلُ النَّاسِ وُرُودًا
عَلَيْهِ فُقَرَاءُ الْمُهَاجِرِينَ الشُّعْثُ رُءُوسًا الدُّنْسُ ثِيَابًا
الَّذِينَ لاَ يَنْكِحُونَ الْمُتَنَعِّمَاتِ وَلاَ تُفْتَحُ لَهُمُ السُّدَدُ
" . قَالَ عُمَرُ لَكِنِّي نَكَحْتُ الْمُتَنَعِّمَاتِ وَفُتِحَ لِيَ
السُّدَدُ وَنَكَحْتُ فَاطِمَةَ بِنْتَ عَبْدِ الْمَلِكِ لاَ جَرَمَ أَنِّي لاَ
أَغْسِلُ رَأْسِي حَتَّى يَشْعَثَ وَلاَ أَغْسِلُ ثَوْبِي الَّذِي يَلِي جَسَدِي
حَتَّى يَتَّسِخَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ مَعْدَانَ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ
عَنْ ثَوْبَانَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَأَبُو سَلاَّمٍ
الْحَبَشِيُّ اسْمُهُ مَمْطُورٌ وَهُوَ شَامِيٌّ ثِقَةٌ .
আবূ
সাল্লাম আল-হাবশী (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উমার ইবনু
আবদুল আযীয (রাহঃ) এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করেন আমাকে তাঁর সাথে সাক্ষাতের জন্য নিয়ে
যাওয়ার উদ্দেশ্যে। সে একটি খচ্চরের পিঠে আমাকে বহন করিয়ে নিয়ে চললো। তারপর তিনি
(আবূ সাল্লাম) খালীফার দরবারে হাযির হয়ে বললেন, আমীরুল মু’মিনীন! আমাকে এই খচ্চরের
পিঠে সাওয়ার হয়ে আসতে খুবই কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। তিনি বললেন, হে আবূ সাল্লাম! আমি
আপনাকে কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্যে এখানে আনিনি, বরং আমি শুনতে পেলাম, আপনি নাকি হাওযে
কাওসার সম্পর্কে সাওবান (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন? অতএব, আমি পছন্দ করলাম যে, আপনি আমার সামনে
তা বর্ণনা করবেন। আবূ সাল্লাম বলেন, সাওবান (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইয়ামান দেশের আদান হতে
সিরিয়ার অন্তর্গত বালকা শহরের আম্মান নামক জায়গার দূরত্বের সমান হবে আমার হাওযের
দৈর্ঘ্য-প্রস্থের পরিমান। এর পানির রং দুধের চেয়ে সাদা, মধুর চেয়ে মিষ্টি এবং
পানপাত্রের সংখ্যা হবে আকাশের তারকার সমসংখ্যক। যে ব্যক্তি তা হতে এক ঢোক পানি পান
করবে, সে আর কখনো পিপাসার্ত হবে না। সর্বপ্রথম এর পানি পানের সৌভাগ্য অর্জন করবে
দরিদ্র মুহাজিরগণ, যাদের মাথার চুল উষ্কখুষ্ক, পোশাক ধূলিমলিন, যারা ধনীর
দুলালীদের বিয়ে করেননি এবং যাদের জন্য বন্ধ দরজা খোলা হতো না। উমার (রাহঃ) বলেন,
কিন্তু আমি তো সুখ-স্বাচ্ছন্দে লালিতা-পালিতাকে বিয়ে করেছি, আমার জন্য বন্ধ দরজা
খোলা হয়, আমি খালীফা আবদুল মালিকের আদরের দুলালী ফাতিমাকে বিয়ে করেছি। আমার মাথার
চুল ধূলিমলিন হওয়ার আগ পর্যন্ত তা ধুবো না এবং আমার পরনের জামা ময়লাযুক্ত না হওয়া
পর্যন্ত ধুবো না।
হাদীসের মারফূ অংশটুকু সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪৩০৩)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি এই সূত্রে গারীব। এ হাদীসটি মা’দান
ইবনু আবী তালহা হতে সাওবান (রাঃ) এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে বর্ণিত আছে। আবূ সাল্লাম আল-হাবশীর নাম মামতূর, তিনি সিরিয়ার অধিবাসী এবং নির্ভরযোগ্য
বর্ণনাকারী।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
২৪৪৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ الصَّمَدِ
الْعَمِّيُّ عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا أَبُو عِمْرَانَ
الْجَوْنِيُّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الصَّامِتِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ
قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا آنِيَةُ الْحَوْضِ قَالَ " وَالَّذِي
نَفْسِي بِيَدِهِ لآنِيَتُهُ أَكْثَرُ مِنْ عَدَدِ نُجُومِ السَّمَاءِ
وَكَوَاكِبِهَا فِي لَيْلَةٍ مُظْلِمَةٍ مُصْحِيَةٍ مِنْ آنِيَةِ الْجَنَّةِ مَنْ
شَرِبَ مِنْهَا شَرْبَةً لَمْ يَظْمَأْ آخِرَ مَا عَلَيْهِ عَرْضُهُ مِثْلُ
طُولِهِ مَا بَيْنَ عَمَّانَ إِلَى أَيْلَةَ مَاؤُهُ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ
اللَّبَنِ وَأَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ
الْيَمَانِ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ وَابْنِ
عُمَرَ وَحَارِثَةَ بْنِ وَهْبٍ وَالْمُسْتَوْرِدِ بْنِ شَدَّادٍ . - وَرُوِيَ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " حَوْضِي
كَمَا بَيْنَ الْكُوفَةِ إِلَى الْحَجَرِ الأَسْوَدِ " .
আবূ
যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি প্রশ্ন
করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! হাওযে কাওসারের
পানপাত্রের সংখ্যা কত হবে? তিনি বললেনঃ সেই মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার
প্রাণ! অন্ধকার রাতের আকাশের গ্রহ ও তারকারাজির সংখ্যার চেয়েও বেশি হবে এর
পানপাত্রের সংখ্যা। আর সেগুলো হবে জান্নাতের পাত্র। তা হতে যে লোক একবার পান করবে,
সে তার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আর কখনো তৃষ্ণার্ত হবে না। এর দৈর্ঘ্য-প্রস্থ
সমান যা সিরিয়ার অন্তর্গত ‘আম্মান’ হতে ইয়ামানের ‘আইলার’ (দূরত্বের) সমান। এর পানি
হবে দুধের চেয়েও সাদা এবং মধুর চেয়েও মিষ্টি।
সহীহ, আয্যিলাল (৭২১), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। হুযাইফা
ইবনুল ইয়ামান, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, আবূ বারযা আল-আস্লামী, ইবনু উমার, হারিসা ইবনু
ওয়াহ্ব ও আল-মুসতাওরিদ ইবনু শাদ্দাদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু
উমার (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত হাদীসে
এ কথাটুকু উল্লেখ আছেঃ “কূফা ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যকার দূরত্বের সমান হবে আমার হাওযের
বিস্তৃতি”।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬. অনুচ্ছেদঃ
এই
উম্মাতের সত্তরহাজার বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে
২৪৪৬
حَدَّثَنَا أَبُو حَصِينٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ يُونُسَ،
كُوفِيٌّ حَدَّثَنَا عَبْثَرُ بْنُ الْقَاسِمِ، حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ، هُوَ ابْنُ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ
لَمَّا أُسْرِيَ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم جَعَلَ يَمُرُّ بِالنَّبِيِّ
وَالنَّبِيَّيْنِ وَمَعَهُمُ الْقَوْمُ وَالنَّبِيِّ وَالنَّبِيَّيْنِ وَمَعَهُمُ
الرَّهْطُ وَالنَّبِيِّ وَالنَّبِيِّينَ وَلَيْسَ مَعَهُمْ أَحَدٌ حَتَّى مَرَّ
بِسَوَادٍ عَظِيمٍ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا قِيلَ مُوسَى وَقَوْمُهُ وَلَكِنِ ارْفَعْ
رَأْسَكَ فَانْظُرْ . قَالَ فَإِذَا سَوَادٌ عَظِيمٌ قَدْ سَدَّ الأُفُقَ مِنْ
ذَا الْجَانِبِ وَمِنْ ذَا الْجَانِبِ فَقِيلَ هَؤُلاَءِ أُمَّتُكَ وَسِوَى
هَؤُلاَءِ مِنْ أُمَّتِكَ سَبْعُونَ أَلْفًا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ
حِسَابٍ . فَدَخَلَ وَلَمْ يَسْأَلُوهُ وَلَمْ يُفَسِّرْ لَهُمْ فَقَالُوا
نَحْنُ هُمْ . وَقَالَ قَائِلُونَ هُمْ أَبْنَاؤُنَا الَّذِينَ وُلِدُوا عَلَى
الْفِطْرَةِ وَالإِسْلاَمِ . فَخَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ
" هُمُ الَّذِينَ لاَ يَكْتَوُونَ وَلاَ يَسْتَرْقُونَ وَلاَ
يَتَطَيَّرُونَ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ " . فَقَامَ عُكَّاشَةُ
بْنُ مِحْصَنٍ فَقَالَ أَنَا مِنْهُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " نَعَمْ
" . ثُمَّ قَامَ آخَرُ فَقَالَ أَنَا مِنْهُمْ فَقَالَ " سَبَقَكَ
بِهَا عُكَّاشَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিরাজের রাত্রিতে যখন ঊর্ধারোহণ করলেন, তখন
তিনি নবী ও নাবীগণের দলের পাশ দিয়ে যান। তিনি তখন দেখতে পেলেন তাদের সাথে আছে
তাদের উম্মাতগণ। কোথাও বা একজন নবী ও তাঁর সাথে আছে ছোট একটি দল। আর কোন কোন নাবীর
সাথে কেউ নেই। অবশেষে তিনি একটি বিরাট দলের পাশদিয়ে এগিয়ে গেলেন। তিনি বলেনঃ আমি
প্রশ্ন করলাম, এ বিরাট দলটি কারা? বলা হলো, মূসা (আ:) ও তাঁর উম্মাতগণ। আপনি আপনার
মাথা তুলে দেখুন। তিনি বলেন, তখন আমি মাথা তুলে দেখলাম, অসংখ্য মানুষের একদল যারা
আকাশের এই দিগন্ত ও সেই দিগন্ত পূর্ণ করে আছে। বলা হলো, এরা আপনার উম্মাত। আপনার
উম্মাতের মধ্যে এরা ছাড়াও সত্তরহাজার লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। একথা
বলার পর তিনি ঘরের ভিতর ঢুকলেন, কিন্তু এ ব্যাপারে তারা তাকে প্রশ্ন করেনি এবং
তিনিও এর ব্যাখ্যা করে বলেননি। তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি শুরু করলেন। কেউ বলেন,
আমরাই সেই দলের, যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কেউ বলেন, তারা আমাদের
সন্তান যারা ইসলামী ফিতরাতে জন্মগ্রহণ করেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ইতিমধ্যে বেরিয়ে এসে বলেনঃ যারা গায়ে গরম লোহার দাগ দেয় না, ঝাড়ফুঁক
করে না, ফাল অর্থ্যাৎ শুভাশুভ লক্ষণ নির্ণয় করে না এবং তাদের প্রভুর উপর পূর্ণ
নির্ভরশীল থাকে, তারা হবে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশকারী দল। একথা শুনার পর
উক্কাশা ইবনু মিহসান (রাঃ) দাঁড়িয়ে বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি কি সেই দলের অন্তর্ভূক্ত? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারপর
আরেকজন এসে বলল, আমিও কি সেই দলের অন্তর্ভূক্ত? তিনি বললেন, উক্কাশা তোমার
অগ্রবর্তী হয়ে গেছে।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবনু মাসঊদ ও আবূ
হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭. অনুচ্ছেদঃ
কতই
না নিকৃষ্ট সেই ব্যক্তি
২৪৪৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَزِيعٍ، حَدَّثَنَا
زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، حَدَّثَنَا أَبُو عِمْرَانَ الْجَوْنِيُّ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ، قَالَ مَا أَعْرِفُ شَيْئًا مِمَّا كُنَّا عَلَيْهِ عَلَى عَهْدِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . فَقُلْتُ أَيْنَ الصَّلاَةُ قَالَ أَوَلَمْ
تَصْنَعُوا فِي صَلاَتِكُمْ مَا قَدْ عَلِمْتُمْ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ أَبِي عِمْرَانَ
الْجَوْنِيِّ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَنَسٍ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা দ্বীনের
ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে যে অবস্থায়
ছিলাম বর্তমানে তো সেগুলো দেখতেই পাচ্ছি না। (বর্ণনাকারী বলেন) আমি বললাম,
বর্তমানে নামাযের অবস্থা কি? তিনি বললেন, তোমরা কি নামাযের ভিতর এমন সব কাজ কর নি
যা তোমরা জান (প্রতিটি আমলে নতুন নতুন নিয়ম প্রবেশ করেছে)?
সহীহ, বুখারী (৫২৯, ৫৩০)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং এই সুত্রে আবূ ইমরান
আল-জাওনীর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব। আনাস (রাঃ) হতে ভিন্ন সূত্রেও হাদিসটি বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৪৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الأَزْدِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا هَاشِمٌ، وَهُوَ ابْنُ
سَعِيدٍ الْكُوفِيُّ حَدَّثَنِي زَيْدٌ الْخَثْعَمِيُّ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ
عُمَيْسٍ الْخَثْعَمِيَّةِ، قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ " بِئْسَ الْعَبْدُ عَبْدٌ تَخَيَّلَ وَاخْتَالَ وَنَسِيَ
الْكَبِيرَ الْمُتَعَالِ بِئْسَ الْعَبْدُ عَبْدٌ تَجَبَّرَ وَاعْتَدَى وَنَسِيَ
الْجَبَّارَ الأَعْلَى بِئْسَ الْعَبْدُ عَبْدٌ سَهَا وَلَهَا وَنَسِيَ
الْمَقَابِرَ وَالْبِلَى بِئْسَ الْعَبْدُ عَبْدٌ عَتَا وَطَغَى وَنَسِيَ
الْمُبْتَدَا وَالْمُنْتَهَى بِئْسَ الْعَبْدُ عَبْدٌ يَخْتِلُ الدُّنْيَا
بِالدِّينِ بِئْسَ الْعَبْدُ عَبْدٌ يَخْتِلُ الدِّينَ بِالشُّبُهَاتِ بِئْسَ
الْعَبْدُ عَبْدٌ طَمَعٌ يَقُودُهُ بِئْسَ الْعَبْدُ عَبْدٌ هَوًى يُضِلُّهُ
بِئْسَ الْعَبْدُ عَبْدٌ رَغَبٌ يُذِلُّهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَلَيْسَ إِسْنَادُهُ
بِالْقَوِيِّ .
আসমা
বিনতু উমাইস আল-খাসআমিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ সেই ব্যক্তি কতই
না খারাপ যে নিজেকে বড় মনে করে এবং অহংকার করে আর আল্লাহ্ তা’আলাকে ভুলে যায়। সেই
ব্যক্তি কতই না খারাপ, যে যালিম হয়ে যুলুম করে এবং পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তা’আলাকে
ভুলে যায়। সেই ব্যক্তি কতই না খারাপ, যে সত্যবিমুখ হয়ে অনর্থক কাজে লিপ্ত হয় এবং
গোরস্থান ও মাটিতে মিশে যাওয়ার কথা ভুলে যায়। সেই ব্যক্তি কতই না খারাপ, যে
বিদ্রোহী হয়ে অবাধ্যতা করে এবং তার সূচনা ও পরিণতিকে ভুলে যায়। আর সেই ব্যক্তি কতই
না খারাপ যে দ্বীনের বিনিময়ে দুনিয়া হাসিল করার পথ অবলম্বন করে। আর সেই ব্যক্তি
কতই না খারাপ যে সন্দেহজনক বিষয়ের উপর আমল করে দ্বীনের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করে।
সেই ব্যক্তি কতই না খারাপ যে লালসার গোলাম হয়ে যায়, লালসা তাকে টেনে নিয়ে যায়। সেই
ব্যক্তি কতই না খারাপ যাকে তার প্রবৃত্তি ভুল পথে পরিচালিত করে। সেই ব্যক্তি কতই
না খারাপ যাকে প্রবৃত্তির চাহিদা লাঞ্ছিত করে।
যঈফ, মিশকাত তাহকীক ছানী (৫১১৫), যঈফা (২০২৬) যিলাল (৯-১০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই
আমরা এ হাদীস জেনেছি। এর সনদ তেমন মজবুত নয়।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৮. অনুচ্ছেদঃ
মু’মিনকে
সাহায্য করার সাওয়াব
২৪৪৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ الْمُؤَدِّبُ، حَدَّثَنَا عَمَّارُ
بْنُ مُحَمَّدِ ابْنُ أُخْتِ، سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ حَدَّثَنَا أَبُو
الْجَارُودِ الأَعْمَى، وَاسْمُهُ، زِيَادُ بْنُ الْمُنْذِرِ الْهَمْدَانِيُّ عَنْ
عَطِيَّةَ الْعَوْفِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَيُّمَا مُؤْمِنٍ أَطْعَمَ مُؤْمِنًا عَلَى
جُوعٍ أَطْعَمَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ ثِمَارِ الْجَنَّةِ وَأَيُّمَا
مُؤْمِنٍ سَقَى مُؤْمِنًا عَلَى ظَمَإٍ سَقَاهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنَ
الرَّحِيقِ الْمَخْتُومِ وَأَيُّمَا مُؤْمِنٍ كَسَا مُؤْمِنًا عَلَى عُرْىٍ
كَسَاهُ اللَّهُ مِنْ خُضْرِ الْجَنَّةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا عَنْ عَطِيَّةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ مَوْقُوفٌ
وَهُوَ أَصَحُّ عِنْدَنَا وَأَشْبَهُ .
আবূ
সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ঈমানদার ব্যক্তি কোন ক্ষুধার্ত
ঈমানদার ব্যক্তিকে খাদ্য দান করে, কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা তাকে জান্নাতের ফল
খাওয়াবেন। যে মু’মিন ব্যক্তি কোন তৃষ্ণার্ত মু’মিন ব্যক্তিকে পানি পান করাবে কিয়ামাতের
দিন আল্লাহ তা’আলা তাকে সীলমোহর করা খাঁটি “রাহীক মাখতূম” পান করাবেন। যে মু’মিন
ব্যক্তি কোন বস্ত্রহীন মু’মিন ব্যক্তিকে পোশাক দান করে, কিয়ামাতের দিন আল্লাহ
তা’আলা তাকে জান্নাতে সবুজ পোশাক পরাবেন।
যইফ, মিশকাত (১৯১৩), যঈফ আবূ দাঊদ (৩০০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীসটি আতিয়্যা হতে
আবূ সাঈদ (রাঃ) সূত্রে মাওকূফরূপে বর্ণিত হয়েছে। আমাদের মতে মাওকূফ বর্ণনাটি অনেক বেশী
সহীহ ও সমাঞ্জস্যপূর্ণ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৪৫০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي النَّضْرِ، حَدَّثَنَا أَبُو
النَّضْرِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَقِيلٍ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو فَرْوَةَ،
يَزِيدُ بْنُ سِنَانٍ التَّمِيمِيُّ حَدَّثَنِي بُكَيْرُ بْنُ فَيْرُوزَ، قَالَ
سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" مَنْ خَافَ أَدْلَجَ وَمَنْ أَدْلَجَ بَلَغَ الْمَنْزِلَ أَلاَ إِنَّ
سِلْعَةَ اللَّهِ غَالِيَةٌ أَلاَ إِنَّ سِلْعَةَ اللَّهِ الْجَنَّةُ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
حَدِيثِ أَبِي النَّضْرِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক ভয় পায় সে ভোররাতেই যাত্রা
শুরু করে, আর ভোররাতেই যে লোক যাত্রা শুরু করে, সে গন্তব্য স্থলে পৌঁছতে পারে।
জেনে রাখ, আল্লাহ তা‘আলার পণ্য খুবই দামী। জেনে রাখ, আল্লাহ তা‘আলার পণ্য হল
জান্নাত।
সহীহ, সহীহাহ্ (৯৫৪, ২৩৩৫), মিশকাত তাহকীক ছানী (৫৩৪৮)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে
শুধুমাত্র আবুন নাযরের সুত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯. অনুচ্ছেদঃ
বৈধ
অক্ষতিকর বিষয় ছেড়ে দেওয়ার ফাযীলত
২৪৫১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي النَّضْرِ، حَدَّثَنَا أَبُو
النَّضْرِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَقِيلٍ الثَّقَفِيُّ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَقِيلٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنِي رَبِيعَةُ بْنُ يَزِيدَ،
وَعَطِيَّةُ بْنُ قَيْسٍ، عَنْ عَطِيَّةَ السَّعْدِيِّ، وَكَانَ، مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" لاَ يَبْلُغُ الْعَبْدُ أَنْ يَكُونَ مِنَ الْمُتَّقِينَ حَتَّى يَدَعَ
مَا لاَ بَأْسَ بِهِ حَذَرًا لِمَا بِهِ الْبَأْسُ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
.
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী আতিয়্যা আস-সাদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন বান্দা ক্ষতিকর কাজে জড়িয়ে পড়ার
ভয়ে বৈধ অক্ষতিকর বিষয় না ছেড়ে দেয়া পর্যন্ত মুত্তাকীদের পর্যায়ে উন্নীত হতে পারবে
না।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৪২১৫)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। শুধুমাত্র উপরোক্ত
সূত্রেই আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে জেনেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২০. অনুচ্ছেদঃ
আমার
কাছে এলে তোমাদের যে অবস্থা হয় তা বহাল থাকলে
২৪৫২
حَدَّثَنَا عَبَّاسٌ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ،
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ الْقَطَّانُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ الشِّخِّيرِ، عَنْ حَنْظَلَةَ الأُسَيْدِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَوْ أَنَّكُمْ تَكُونُونَ كَمَا تَكُونُونَ
عِنْدِي لأَظَلَّتْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ بِأَجْنِحَتِهَا " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ
هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ عَنْ حَنْظَلَةَ الأُسَيْدِيِّ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
হানযালা
আল-উসাইদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আমার সামনে এসে যেরূপ অবস্থায়
থাক, সদা-সর্বদা যদি এভাবেই থাকতে, তাহলে নিশ্চয়ই ফেরেশতারা তাদের ডানা দিয়ে
তোমাদের উপর ছায়া বিস্তার করে রাখত।
হাসান সহীহ, সহীহাহ্ (১৯৭৬), মুসলিম অনুরূপ।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এ হাদিসটি হানযালা আল-উসাইদী (রাঃ)
হতে অন্য সূত্রেও বর্ণিত আছে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
২১. অনুচ্ছেদঃ
প্রতিটি
জিনিসের উত্থান-পতন আছে
২৪৫৩
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ سَلْمَانَ أَبُو عُمَرَ الْبَصْرِيُّ،
حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنِ الْقَعْقَاعِ
بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ لِكُلِّ شَيْءٍ شِرَّةً وَلِكُلِّ شِرَّةٍ
فَتْرَةً فَإِنْ كَانَ صَاحِبُهَا سَدَّدَ وَقَارَبَ فَارْجُوهُ وَإِنْ أُشِيرَ
إِلَيْهِ بِالأَصَابِعِ فَلاَ تَعُدُّوهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . - وَقَدْ رُوِيَ عَنْ
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ "
بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يُشَارَ إِلَيْهِ بِالأَصَابِعِ فِي دِينٍ
أَوْ دُنْيَا إِلاَّ مَنْ عَصَمَهُ اللَّهُ " .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সকল কাজের পিছনে থাকে প্রেরণা ও
উদ্দীপনা, আর উদ্দীপনার পিছনেই লুকিয়ে থাকে অলসতা ও কর্মবিমুখতা। কাজেই যে লোক
সোজা পথে চলে এবং নিজেকে মাঝামাঝি পর্যায়ে সোজাভাবে কাজে অটল রাখতে পারে তার সফলতা
অর্জনের আশা করতে পার। আর যদি তার দিকে আঙ্গুলে ইঙ্গিত করা হয় (লোক দেখানো আমল
করলে) তাহলে তাকে সফলকাম ব্যক্তিদের মধ্যে গন্য করো না।
হাসান, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৫৩২৫), তা’লীকুর রাগীব (১/৪৬), আয্যিলাল (১/২৮)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং উপরোক্ত সূত্রে
গারীব। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ “কারো অনিষ্টতার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, তার দিকে তার দ্বীন কিংবা
দুনিয়ার ব্যাপারে আঙ্গুল দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়। তবে যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা হিফাযাত
করেন তার কথা আলাদা।”
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২২. অনুচ্ছেদঃ
মানুষ
কামনা-বাসনা ও বিপদাপদে বেষ্টিত
২৪৫৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي يَعْلَى، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ
خُثَيْمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ خَطَّ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم خَطًّا مُرَبَّعًا وَخَطَّ فِي وَسَطِ الْخَطِّ خَطًّا وَخَطَّ
خَارِجًا مِنَ الْخَطِّ خَطًّا وَحَوْلَ الَّذِي فِي الْوَسَطِ خُطُوطًا فَقَالَ
" هَذَا ابْنُ آدَمَ وَهَذَا أَجَلُهُ مُحِيطٌ بِهِ وَهَذَا الَّذِي فِي
الْوَسَطِ الإِنْسَانُ وَهَذِهِ الْخُطُوطُ عُرُوضُهُ إِنْ نَجَا مِنْ هَذَا
يَنْهَشُهُ هَذَا وَالْخَطُّ الْخَارِجُ الأَمَلُ " . هَذَا حَدِيثٌ
صَحِيحٌ .
আব্দুল্লাহ
ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন
আমাদেরকে (বুঝানোর) উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
একটি বর্গাকৃতির চতুর্ভুজ আঁকলেন, তারপর এর মাঝ বরাবর একটি লম্বারেখা টানলেন,
তারপর একটি লম্বারেখা টানলেন চতুর্ভুজের বাইরে দিয়ে, তারপর মাঝের লম্বারেখার
চারিদিকে অনেকগুলো রেখা টানলেন এবং বললেনঃ এটি হলো আদম-সন্তান এবং বেষ্টনী হলো তার
জীবনকালের সীমা, যা তাকে বেষ্টন করে রেখেছে। মাঝের লম্বারেখাটি হলো মানুষ, এর
চারপাশের রেখাসমূহ হলো তার বিপদাপদ। এর একটি হতে সে মুক্তি পেলে অন্যটি তাকে দংশন
করে। আর বাইরের রেখাটি হলো তার কামনা-বাসনা।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৫৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَهْرَمُ
ابْنُ آدَمَ وَيَشِبُّ مِنْهُ اثْنَانِ الْحِرْصُ عَلَى الْمَالِ وَالْحِرْصُ
عَلَى الْعُمُرِ " . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আদম-সন্তান বৃদ্ধ হওয়ার পরেও তার দুটি
স্বভাব যুবকই থাকেঃ সম্পদের লোভ ও বেঁচে থাকার লালসা।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪২৩৪), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেল, এ হাদীদটি হাসান সহী্হ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৫৬
حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، مُحَمَّدُ بْنُ فِرَاسٍ الْبَصْرِيُّ
حَدَّثَنَا أَبُو قُتَيْبَةَ، سَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ حَدَّثَنَا أَبُو الْعَوَّامِ،
وَهُوَ عِمْرَانُ الْقَطَّانُ عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ الشِّخِّيرِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" مَثَلُ ابْنِ آدَمَ وَإِلَى جَنْبِهِ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ مَنِيَّةً
إِنْ أَخْطَأَتْهُ الْمَنَايَا وَقَعَ فِي الْهَرَمِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনুশ শিখখীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আদম-সন্তানকে নিরানব্বইটি (অসংখ্য)
বিপদাপদ দ্বারা বেষ্টন করেই সৃষ্টি করা হয়। বিপদসমূহ অতিক্রান্ত হলেও সে বার্ধক্যে
উপনীত হয়।
হাসান, ২০৫৮ নং হাদীসে পূর্বে উল্লেখ হয়েছে।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৩. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর কত সময় দরুদ পড়বে
২৪৫৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَقِيلٍ، عَنِ الطُّفَيْلِ بْنِ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ،
عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا ذَهَبَ
ثُلُثَا اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا
اللَّهَ اذْكُرُوا اللَّهَ جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ جَاءَ
الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ " . قَالَ أُبَىٌّ
قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُكْثِرُ الصَّلاَةَ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ
لَكَ مِنْ صَلاَتِي فَقَالَ " مَا شِئْتَ " . قَالَ قُلْتُ
الرُّبُعَ . قَالَ " مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ
" . قُلْتُ النِّصْفَ . قَالَ " مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ
فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ " . قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ . قَالَ "
مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ " . قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ
صَلاَتِي كُلَّهَا . قَالَ " إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ
ذَنْبُكَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
উবাই
ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাতের
দুই-তৃতীয়াংশ চলে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুম
থেকে জেগে দাঁড়িয়ে বলতেনঃ হে মানবগণ! তোমরা আল্লাহ্ তা’আলাকে স্মরণ কর, তোমরা
আল্লাহ্ তা’আলাকে স্মরণ কর। কম্পন সৃষ্টিকারী প্রথম শিঙ্গাধ্বনি এসে পড়েছে এবং এর
পরপর আসবে পরবর্তী শিঙ্গাধ্বনি। মৃত্যু তার ভয়াবহতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে, মৃত্যু
তার ভয়াবহতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। উবাই (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি তো খুব অধিক হারে আপনার প্রতি দরুদ পাঠ
করি। আপনার প্রতি দরুদ পাঠের জন্য আমি আমার সময়ের কতটুকু খরচ করবো? তিনি বললেন,
তুমি যতক্ষণ ইছা কর। আমি বললাম, এক-চতুর্থাংশ সময়? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু ইচ্ছা
কর, তবে এর চেয়ে অধিক পরিমাণে পাঠ করতে পারলে এতে তোমারই মঙ্গল হবে। আমি বললাম,
তাহলে আমি কি অর্ধেক সময় দরুদ পাঠ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ চাও, যদি এর
চেয়েও বাড়াতে পারো সেটা তোমার জন্যই কল্যাণকর। আমি বললাম, তাহলে দুই-তৃতীয়াংশ সময়
দরুদ পাঠ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ ইচ্ছা কর, তবে এর চেয়েও বাড়াতে পারলে
তোমারই ভাল। আমি বললাম, তাহলে আমার পুরো সময়টাই আপনার দরুদ পাঠে কাটিয়ে দিব? তিনি
বললেনঃ তোমার চিন্তা ও কষ্টের জন্য তা যথেষ্ট হবে এবং তোমার পাপসমূহ ক্ষমা করা হবে।
হাসানঃ সহীহাহ (৯৫৪), ফাযলুস সালাত আল্লান্নাবী (১৩,১৪)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৪. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ্কে
যথাযথ লজ্জা করা
২৪৫৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ،
عَنْ أَبَانَ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ الصَّبَّاحِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ مُرَّةَ
الْهَمْدَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اسْتَحْيُوا مِنَ اللَّهِ حَقَّ الْحَيَاءِ
" . قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا لَنَسْتَحْيِي وَالْحَمْدُ
لِلَّهِ . قَالَ " لَيْسَ ذَاكَ وَلَكِنَّ الاِسْتِحْيَاءَ مِنَ اللَّهِ
حَقَّ الْحَيَاءِ أَنْ تَحْفَظَ الرَّأْسَ وَمَا وَعَى وَتَحْفَظَ الْبَطْنَ وَمَا
حَوَى وَتَتَذَكَّرَ الْمَوْتَ وَالْبِلَى وَمَنْ أَرَادَ الآخِرَةَ تَرَكَ
زِينَةَ الدُّنْيَا فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدِ اسْتَحْيَا مِنَ اللَّهِ حَقَّ
الْحَيَاءِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا
نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ أَبَانَ بْنِ إِسْحَاقَ عَنِ
الصَّبَّاحِ بْنِ مُحَمَّدٍ .
আব্দুল্লাহ
ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহ্ তা’আলাকে যথাযথভাবে
লজ্জা কর। আমরা বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)!
আমরা তো নিশ্চয়ই লজ্জা করি, সকল প্রশংসা আল্লাহ্ তা’আলার জন্য। তিনি বললেনঃ তা
নয়, বরং আল্লাহ্ তা’আলাকে যথাযথভাবে লজ্জা করার অর্থ এই যে, তুমি তোমার মাথা এবং
এর মধ্যে যা কিছু রয়েছে তা সংরক্ষন করবে এবং পেট ও এর এর মধ্যে যা কিছু রয়েছে তা
হিফাযত করবে, মৃত্যুকে এবং এরপর পঁচে-গলে যাবার কথা স্মরণ করবে। আর যে লোক পরকালের
আশা করে, সে যেন দুনিয়াবী জাঁকজমক পরিহার করে। যে লোক এইসকল কাজ করতে পারে সে-ই
আল্লাহ্কে যথাযথভাবে লজ্জা করে।
হাসানঃ রাওযুন নাযীর (৬০১), মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (১৬০৮)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি গারীব। আমরা এই হাদীসটি শুধুমাত্র
আব্বাস ইবনু ইসহাক হতে আস-সাব্বাহ ইবনু মুহাম্মদের সূত্রেই এভাবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৫. অনুচ্ছেদঃ
কোন
ব্যক্তি বুদ্ধিমান
২৪৫৯
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ،
عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ
الْمُبَارَكِ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ ضَمْرَةَ بْنِ
حَبِيبٍ، عَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
الْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ وَالْعَاجِزُ
مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا وَتَمَنَّى عَلَى اللَّهِ " . قَالَ
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . قَالَ وَمَعْنَى قَوْلِهِ " مَنْ دَانَ نَفْسَهُ
" . يَقُولُ حَاسَبَ نَفْسَهُ فِي الدُّنْيَا قَبْلَ أَنْ يُحَاسَبَ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ . وَيُرْوَى عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ حَاسِبُوا
أَنْفُسَكُمْ قَبْلَ أَنْ تُحَاسَبُوا وَتَزَيَّنُوا لِلْعَرْضِ الأَكْبَرِ
وَإِنَّمَا يَخِفُّ الْحِسَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى مَنْ حَاسَبَ نَفْسَهُ
فِي الدُّنْيَا . وَيُرْوَى عَنْ مَيْمُونِ بْنِ مِهْرَانَ قَالَ لاَ يَكُونُ
الْعَبْدُ تَقِيًّا حَتَّى يُحَاسِبَ نَفْسَهُ كَمَا يُحَاسِبُ شَرِيكَهُ مِنْ
أَيْنَ مَطْعَمُهُ وَمَلْبَسُهُ .
শাদ্দাদ
ইবনু আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সেই ব্যক্তি বুদ্ধিমান যে নিজের নাফসকে নিয়ন্ত্রণে
রাখে এবং মৃত্যুর পরবর্তী সময়ের জন্য কাজ করে। আর সেই ব্যক্তি নির্বোধ ও অক্ষম যে
তার নাফসের দাবির অনুসরণ করে আর আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে বৃথা আশা পোষণ করে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৪২৬০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। “মান দানা নাফসাহু” বাক্যাংশের
তাৎপর্য এই যে, কিয়ামাতের দিন আত্মাকে হিসাবের সম্মুখীন করার পূর্বেই যে ব্যক্তি দুনিয়াতে
নিজের নাফসের হিসাব-নিকাশ নেয়। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, “হিসাবের সম্মুখীন হওয়ার
পূর্বেই তোমরা নিজেদের কৃতকর্মের হিসাব নাও এবং মহাসমাবেশে হাযির হওয়ার জন্য প্রস্তুত
হয়ে যাও। যে ব্যক্তি দুনিয়াতে তার হিসাব-নিকাশ নেয়, কিয়ামাতের দিন তার হিসাব অত্যন্ত
হালকা ও সহজ হবে”। মাইমূন ইবনু মিহরান বলেন, কোন ব্যক্তি খাঁটি মুত্তাকী হতে পারবে
না যে পর্যন্ত না সে আত্মসমালোচনা করবে। যেমন কোন ব্যক্তি তার শরীকের নিকট হতে পুঙ্খানুপুঙ্খ
হিসেব নেয় যে, সে খাদ্যদ্রব্য ও কাপড়-চোপড় কোথা থেকে কত মূল্যে সংগ্রহ করেছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৬. অনুচ্ছেদঃ
মৃত্যুকে
অধিক পরিমাণ স্মরণ করার ফাযীলাত
২৪৬০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنُ مَدُّويَهْ التِّرْمِذِيُّ،
حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ الْحَكَمِ الْعُرَنِيُّ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ
بْنُ الْوَلِيدِ الْوَصَّافِيُّ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ
دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُصَلاَّهُ فَرَأَى نَاسًا كَأَنَّهُمْ
يَكْتَشِرُونَ قَالَ " أَمَا إِنَّكُمْ لَوْ أَكْثَرْتُمْ ذِكْرَ هَاذِمِ
اللَّذَّاتِ لَشَغَلَكُمْ عَمَّا أَرَى فَأَكْثِرُوا مِنْ ذِكْرِ هَاذِمِ
اللَّذَّاتِ الْمَوْتِ فَإِنَّهُ لَمْ يَأْتِ عَلَى الْقَبْرِ يَوْمٌ إِلاَّ
تَكَلَّمَ فِيهِ فَيَقُولُ أَنَا بَيْتُ الْغُرْبَةِ وَأَنَا بَيْتُ الْوَحْدَةِ
وَأَنَا بَيْتُ التُّرَابِ وَأَنَا بَيْتُ الدُّودِ . فَإِذَا دُفِنَ الْعَبْدُ
الْمُؤْمِنُ قَالَ لَهُ الْقَبْرُ مَرْحَبًا وَأَهْلاً أَمَا إِنْ كُنْتَ لأَحَبَّ
مَنْ يَمْشِي عَلَى ظَهْرِي إِلَىَّ فَإِذْ وُلِّيتُكَ الْيَوْمَ وَصِرْتَ إِلَىَّ
فَسَتَرَى صَنِيعِي بِكَ . قَالَ فَيَتَّسِعُ لَهُ مَدَّ بَصَرِهِ وَيُفْتَحُ
لَهُ بَابٌ إِلَى الْجَنَّةِ . وَإِذَا دُفِنَ الْعَبْدُ الْفَاجِرُ أَوِ
الْكَافِرُ قَالَ لَهُ الْقَبْرُ لاَ مَرْحَبًا وَلاَ أَهْلاً أَمَا إِنْ كُنْتَ
لأَبْغَضَ مَنْ يَمْشِي عَلَى ظَهْرِي إِلَىَّ فَإِذْ وُلِّيتُكَ الْيَوْمَ
وَصِرْتَ إِلَىَّ فَسَتَرَى صَنِيعِي بِكَ . قَالَ فَيَلْتَئِمُ عَلَيْهِ حَتَّى
تَلْتَقِيَ عَلَيْهِ وَتَخْتَلِفَ أَضْلاَعُهُ . قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم بِأَصَابِعِهِ فَأَدْخَلَ بَعْضَهَا فِي جَوْفِ بَعْضٍ قَالَ "
وَيُقَيِّضُ اللَّهُ لَهُ سَبْعِينَ تِنِّينًا لَوْ أَنَّ وَاحِدًا مِنْهَا نَفَخَ
فِي الأَرْضِ مَا أَنْبَتَتْ شَيْئًا مَا بَقِيَتِ الدُّنْيَا فَيَنْهَشْنَهُ
وَيَخْدِشْنَهُ حَتَّى يُفْضَى بِهِ إِلَى الْحِسَابِ " . قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّمَا الْقَبْرُ رَوْضَةٌ مِنْ
رِيَاضِ الْجَنَّةِ أَوْ حُفْرَةٌ مِنْ حُفَرِ النَّارِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আবূ
সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময়
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাযে (জানাযার) এসে দেখেন যে,
কিছু লোক হাসাহাসি করছে। তিনি বললেন, ওহে! তোমরা যদি জীবনের স্বাদ ছিন্নকারী
মৃত্যুকে বেশী বেশী মনে করতে তাহলে আমি তোমাদের যে অবস্থায় দেখছি অবশ্যই তা থেকে
বিরত থাকতে। তোমরা জীবনের স্বাদ ছিন্নকারী মৃত্যুকে খুব বেশী স্মরণ কর। কেননা কবর
প্রতিদিন দুনিয়াবাসীকে সম্বোধন করে বলতে থাকে, আমি প্রবাসী মুসাফিরের বাড়ী, আমি
নির্জন কুটির, আমি মাটির ঘর, আমি পোকা-মাকড় ও কীট-পতঙ্গের আস্তানা। তারপর কোন
ঈমানদারকে যখন দাফন করা হয় তখন কবর তাকে বলে, ‘মারহাবা, স্বাগতম’, আমার পিঠের উপর
যত লোক চলাফেরা করেছে তাদের মধ্যে তুমিই ছিলে আমার নিকট সবচাইতে প্রিয়। আজ তোমাকেই
আমার নিকট সমর্পণ করা হয়েছে, আর তুমি আমার কাছেই এসেছ। সুতরাং তুমি শীঘ্রই দেখবে
যে, আমি তোমার সাথে কেমন সৌজন্যমূলক ব্যবহার করি। তারপর কবর তার জন্য দৃষ্টির শেষ
সীমা পর্যন্ত প্রশস্ত হয়ে যাবে এবং জান্নাতের দিকে তার একটি দরজা খুলে দেয়া হবে।
আর অপরাধী পাপী কিংবা কাফিরকে যখন দাফন করা হয় তখন কবর তাকে বলে, তোমার আগমন অশুভ
ও তোমার জন্য স্বাগতম নেই। কেননা আমার উপর যত লোক চলাফেরা করেছে তাদের মধ্যে তুমিই
ছিলে আমার নিকট সবচাইতে ঘৃণিত ও অপ্রিয়। আজ তোমাকেই আমার নিকট সমর্পণ করা হয়েছে
এবং তুমি আমার নিকট ফিরে এসেছ। সুতরাং শীঘ্রই দেখবে, আমি তোমার সাথে কেমন জঘন্য
আচরণ করি। এই বলে সে সংকুচিত হয়ে যাবে এবং তার উপর একেবারে চেপে যাবে, ফলে তার
পাঁজরের হাড়সমূহ পরষ্পরের মধ্যে ঢুকে যাবে। রাবী বলেন, এ সময় রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক হাতের আংগুলসমূহ অপর হাতের আংগুলে ঢুকিয়ে
বললেন, ‘এভাবে’। তিনি আরও বললেন, তার জন্য এরূপ সত্তরটি অজগর সাপ নিয়োগ করা হবে,
তার মধ্যে একটি সাপও যদি যমিনে একবার ফুঁ দেয় তাহলে এতে কোন কিছুই উৎপন্ন হবে না।
তারপর হিসাব-নিকাশ না হওয়া পর্যন্ত সে অজগরগুলো তাকে দংশন করতে থাকবে, খামচাতে
থাকবে। রাবী (আবূ সাঈদ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, কবর হল জান্নাতের উদ্যানসমূহের একটি উদ্যান, অথবা জাহান্নামের গর্তসমূহের
একটি গর্ত।
খুবই দুর্বল, যঈফা (৪৯৯০), স্বাদ কর্তনকারী অংশটুকু সহীহ, সহীহা (২৪০৯)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধুমাত্র
উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃখুবই দুর্বল
২৭. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীরে চাটাইয়ের দাগ পড়া প্রসঙ্গে
২৪৬১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
أَبِي ثَوْرٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَقُولُ أَخْبَرَنِي عُمَرُ بْنُ
الْخَطَّابِ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا
هُوَ مُتَّكِئٌ عَلَى رَمْلِ حَصِيرٍ فَرَأَيْتُ أَثَرَهُ فِي جَنْبِهِ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ طَوِيلَةٌ
.
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)
বর্ণনা করেছেনঃ কোন এক সময় আমি রাসূল্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট গিয়ে দেখলাম একটি মাদুরের উপর তিনি কাৎ হয়ে শুয়ে আছেন। আমি তাঁর
শরীরের পিঠের অংশে মাদুরের দাগ দেখতে পেলাম।
সহীহঃ তাখরীজুত তারগীব (৪/১১৪), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। হাদীসটিতে
একটি দীর্ঘ ঘটনা আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৮. অনুচ্ছেদঃ
দুনিয়াবী
আসক্তি ধ্বংসের কারণ হবে
২৪৬২
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، عَنْ مَعْمَرٍ، وَيُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَنَّ عُرْوَةَ بْنَ
الزُّبَيْرِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّ
عَمْرَو بْنَ عَوْفٍ وَهُوَ حَلِيفُ بَنِي عَامِرِ بْنِ لُؤَىٍّ وَكَانَ شَهِدَ
بَدْرًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم - أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ أَبَا عُبَيْدَةَ بْنَ الْجَرَّاحِ فَقَدِمَ
بِمَالٍ مِنَ الْبَحْرَيْنِ وَسَمِعَتِ الأَنْصَارُ بِقُدُومِ أَبِي عُبَيْدَةَ
فَوَافَوْا صَلاَةَ الْفَجْرِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا
صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم انْصَرَفَ فَتَعَرَّضُوا لَهُ
فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ رَآهُمْ ثُمَّ قَالَ
" أَظُنُّكُمْ سَمِعْتُمْ أَنَّ أَبَا عُبَيْدَةَ قَدِمَ بِشَيْءٍ "
. قَالُوا أَجَلْ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " فَأَبْشِرُوا
وَأَمِّلُوا مَا يَسُرُّكُمْ فَوَاللَّهِ مَا الْفَقْرَ أَخْشَى عَلَيْكُمْ
وَلَكِنِّي أَخْشَى أَنْ تُبْسَطَ الدُّنْيَا عَلَيْكُمْ كَمَا بُسِطَتْ عَلَى
مَنْ قَبْلَكُمْ فَتَنَافَسُوهَا كَمَا تَنَافَسُوهَا فَتُهْلِكَكُمْ كَمَا
أَهْلَكَتْهُمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
‘আমর
ইবনু ‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ ‘উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ (রাঃ)-কে
(বাহরাইনে) প্রেরণ করেন। পরে তিনি বাহরাইন হতে কিছু ধন-দৌলত নিয়ে মাদীনায় ফিরে
আসেন। আনসারগণ আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ)-এর ফিরে আসার খবর পেয়ে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ফজরের নামাযে উপস্থিত হন। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাজ আদায় শেষে মুসল্লীদের দিকে মুখ ফিরিয়ে
বসলেন। আনসারগন তখন তার নিকটে এসে গেলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাদের দেখে সামান্য হেসে বললেন, আমার ধারনা তোমরা হয়তো শুনেছো যে, আবূ
‘ঊবাইদাহ কিছু ধন-সম্পদ নিয়ে ফিরে এসেছে। তারা বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহ্র রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তিনি বললেন তাহলে তোমরা সুখবর গ্রহণ কর।
তোমারা যাতে সন্তুষ্ট হবে এমন বিষয়ের আশা পোষণ কর। আল্লাহ্র কসম! আমি তোমাদের
গরিবী ও অভাব-অনটনের ভয় করি না, বরং ভয় করি পৃথিবীটা তোমাদের জন্য সম্প্রসারিত করা
হবে, তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য যেভাবে করা হয়েছিল। তারপর তোমরা পৃথিবীর প্রতি
অনুরক্ত হয়ে যাবে, যেভাবে তারা অনুরক্ত হয়েছিল। ফলে পৃথিবী তোমাদের বিনাশ করে
দিবে, যেভাবে তাদেরকে বিনাশ করেছিল।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৩৯৯৭), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯. অনুচ্ছেদঃ
গ্রহণকারীর
চাইতে প্রদানকারী উত্তম
২৪৬৩
حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، وَابْنِ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ
حَكِيمَ بْنَ حِزَامٍ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَأَعْطَانِي ثُمَّ سَأَلْتُهُ فَأَعْطَانِي ثُمَّ سَأَلْتُهُ فَأَعْطَانِي ثُمَّ
قَالَ " يَا حَكِيمُ إِنَّ هَذَا الْمَالَ خَضِرَةٌ حُلْوَةٌ فَمَنْ
أَخَذَهُ بِسَخَاوَةِ نَفْسٍ بُورِكَ لَهُ فِيهِ وَمَنْ أَخَذَهُ بِإِشْرَافِ
نَفْسٍ لَمْ يُبَارَكْ لَهُ فِيهِ وَكَانَ كَالَّذِي يَأْكُلُ وَلاَ يَشْبَعُ وَالْيَدُ
الْعُلْيَا خَيْرٌ مِنَ الْيَدِ السُّفْلَى " . فَقَالَ حَكِيمٌ فَقُلْتُ
يَا رَسُولَ اللَّهِ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لاَ أَرْزَأُ أَحَدًا بَعْدَكَ
شَيْئًا حَتَّى أُفَارِقَ الدُّنْيَا . فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يَدْعُو حَكِيمًا
إِلَى الْعَطَاءِ فَيَأْبَى أَنْ يَقْبَلَهُ ثُمَّ إِنَّ عُمَرَ دَعَاهُ
لِيُعْطِيَهُ فَأَبَى أَنْ يَقْبَلَ مِنْهُ شَيْئًا فَقَالَ عُمَرُ إِنِّي
أُشْهِدُكُمْ يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِينَ عَلَى حَكِيمٍ أَنِّي أَعْرِضُ عَلَيْهِ
حَقَّهُ مِنْ هَذَا الْفَىْءِ فَيَأْبَى أَنْ يَأْخُذَهُ . فَلَمْ يَرْزَأْ
حَكِيمٌ أَحَدًا مِنَ النَّاسِ شَيْئًا بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
حَتَّى تُوُفِّيَ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
হাকীম
ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আমি কিছু ধন-সম্পদ চাইলাম। তিনি আমাকে
(সেটা) দিলেন। আমি আবার চাইলে তিনি আবারো দিলেন। আমি আবার চাইলে তিনি আবারো দিলেন,
তারপর বললেন, হে হাকীম! ধন-দৌলত হলো সবুজ-শ্যামল ও লোভনীয় বস্তু। সুতরাং যে লোক
এটাকে উদার মনে গ্রহণ করবে, তার জন্যে এতেই মঙ্গল ও রাহমত প্রদান করা হবে। আর যে
লোক তা লোভাতুর মনোভাব নিয়ে গ্রহণ করবে, সে তাতে বারকাত ও মঙ্গল্প্রাপ্ত হবে না।
সে এমন লোকের সাথে তুলনীয়, যে খাদ্য গ্রহণ করে প্রচুর কিন্তু তৃপ্ত হয় না। উপরের
হাত (দাতার হাত) নিচের (প্রার্থনাকারীর) হাত হতে উত্তম। হাকীম (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম,
হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! সেই মহান সত্তার শপথ,
যিনি আপনাকে সত্যসহকারে প্রেরণ করেছেন! আমি মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত আপনার পর
আর কারো নিকট প্রার্থনা করে তার সম্পদে কমতি করবো না। তারপর আবূ-বাকর (রাঃ) তার
আমলে হাকীম (রাঃ)-কে কিছু দেয়ার জন্য ডেকে পাঠান। কিন্তু তিনি তা নিতে অসম্মতি
জানান। তারপর উমার (রাঃ)-ও তাকে কিছু দেয়ার জন্য ডেকে পাঠান। কিন্তু তিনি কিছু
নিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। অতঃপর উমার (রাঃ) বলেন, হে মুসলিম সমাজ! আমি হাকীমের
ব্যাপারে তোমাদেরকে সাক্ষী করছি যে, আমি তাকে গানীমাতের সম্পদ হতে তার প্রাপ্য
উপস্থাপন করেছি, কিন্তু তিনি তা নিতে অসম্মতি জানান। তারপর হাকীম (রাঃ) মৃত্যুর
পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরে আর
কারো নিকট হতে কোন কিছুই নেননি।
সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৬৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو صَفْوَانَ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ عَوْفٍ، قَالَ ابْتُلِينَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
بِالضَّرَّاءِ فَصَبَرْنَا ثُمَّ ابْتُلِينَا بِالسَّرَّاءِ بَعْدَهُ فَلَمْ
نَصْبِرْ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবদুর
রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আমাদেরকে বিপদাপদ দিয়ে পরীক্ষা করা
হয়েছে। আমরা এতে ধৈর্য ধারণ করেছি। তাঁর মৃত্যুর পরে সুখ-স্বাচ্ছন্দ ও আরাম-আয়িশ
দ্বারা আমাদেরকে পরীক্ষা করা হলে আমরা ধৈয্য ও সহনশীলতার স্বাক্ষর রাখতে পারিনি।
সনদ সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি হাসান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০. অনুচ্ছেদঃ
--
২৪৬৫
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ صَبِيحٍ،
عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبَانَ، وَهُوَ الرَّقَاشِيُّ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ كَانَتِ الآخِرَةُ
هَمَّهُ جَعَلَ اللَّهُ غِنَاهُ فِي قَلْبِهِ وَجَمَعَ لَهُ شَمْلَهُ وَأَتَتْهُ
الدُّنْيَا وَهِيَ رَاغِمَةٌ وَمَنْ كَانَتِ الدُّنْيَا هَمَّهُ جَعَلَ اللَّهُ
فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ وَفَرَّقَ عَلَيْهِ شَمْلَهَ وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ
الدُّنْيَا إِلاَّ مَا قُدِّرَ لَهُ " .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তির একমাএ চিন্তার বিষয় হবে
পরকাল, আল্লাহ্ সেই ব্যক্তির অন্তরকে অভাবমুক্ত করে দিবেন এবং তার যাবতীয়
বিচ্ছিন্ন কাজ একত্রিত করে সুসংযত করে দিবেন, তখন তার নিকট দুনিয়াটা নগণ্য হয়ে
দেখা দিবে। আর যে ব্যক্তির একমাএ চিন্তার বিষয় হবে দুনিয়া, আল্লাহ্ তা’আলা সেই
ব্যক্তির গরীবি ও অভাব-অনটন দুচোখের সামনে লাগিয়ে রাখবেন এবং তার কাজগুলো এলোমেলো
ও ছিন্নভিন্ন করে দিবেন। তার জন্য যা নির্দিষ্ট রয়েছে, দুনিয়াতে সে এর চাইতে বেশি
পাবে না।
সহীহঃ সহীহা (৯৪৯-৯৫০)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৬৬
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ،
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ زَائِدَةَ بْنِ نَشِيطٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي خَالِدٍ
الْوَالِبِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ تَفَرَّغْ لِعِبَادَتِي
أَمْلأْ صَدْرَكَ غِنًى وَأَسُدَّ فَقْرَكَ وَإِلاَّ تَفْعَلْ مَلأْتُ يَدَيْكَ
شُغْلاً وَلَمْ أَسُدَّ فَقْرَكَ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
. وَأَبُو خَالِدٍ الْوَالِبِيُّ اسْمُهُ هُرْمُزُ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ হে আদম সন্তান!
তুমি আমার ইবাদাতের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা কর, আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যে পূর্ণ
করে দিব এবং তোমার অভাব দূর করে দিব। তুমি তা না করলে আমি তোমার দুইহাত
কর্মব্যস্ততায় পরিপূর্ণ করে দিব এবং তোমার অভাব-অনটন রহিত করবো না।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪১০৭)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি হাসান গারীব। আবূ খালিদ আল-ওয়ালিবীর
নাম হুরমুয।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১. অনুচ্ছেদঃ
ওজন
করায় বারাকাত চলে গেল
২৪৬৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ
عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم وَعِنْدَنَا شَطْرٌ مِنْ شَعِيرٍ فَأَكَلْنَا مِنْهُ مَا شَاءَ
اللَّهُ ثُمَّ قُلْتُ لِلْجَارِيَةِ كِيلِيهِ فَكَالَتْهُ فَلَمْ يَلْبَثْ أَنْ
فَنِيَ . قَالَتْ فَلَوْ كُنَّا تَرَكْنَاهُ لأَكَلْنَا مِنْهُ أَكْثَرَ مِنْ
ذَلِكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَمَعْنَى قَوْلِهَا
شَطْرٌ تَعْنِي شَيْئًا .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর সময় আমাদের ঘরে সামান্য কিছু যব
ছিল। আল্লাহ্ তা’আলার ইচ্ছানুযায়ী আমরা তা থেকে খেতে থাকলাম। আমি একদিন দাসীকে
বললাম, এগুলো কৌটা দ্বারা পরিমাপ কর। সে তা পরিমাপ করল। এরপর কিছু দিনের মধ্যে তা শেষ
হয়ে গেল। তিনি {আয়িশাহ (রাঃ)} বলেন, আমরা এগুলো এমনি রেখে দিলে (যদি না পরিমাপ
করতাম) আরো অধিক দিন খেতে পারতাম।
সহীহঃ বুখারী (৬৪৫১), মুসলিম (৮/২১৮) সংক্ষেপিত।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি সহীহ। শাতরুন শব্দের অর্থ সামান্য
কিছু।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২. অনুচ্ছেদঃ
ছবিযুক্ত
কাপড় দিয়ে পর্দা না বানানো
২৪৬৮
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ
أَبِي هِنْدٍ، عَنْ عَزْرَةَ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
الْحِمْيَرِيِّ، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ لَنَا
قِرَامُ سِتْرٍ فِيهِ تَمَاثِيلُ عَلَى بَابِي فَرَآهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَقَالَ " انْزِعِيهِ فَإِنَّهُ يُذَكِّرُنِي الدُّنْيَا
" . قَالَتْ وَكَانَ لَنَا سَمَلُ قَطِيفَةٍ عَلَمُهَا مِنْ حَرِيرٍ
كُنَّا نَلْبَسُهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের ঘরের
দরজায় একটি পাতলা রঙিন পর্দা ঝুলানো ছিল, এতে কিছু ছবি ছিল। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা দেখে বললেনঃ এটা খুলে নামিয়ে ফেলো। যেহেতু,
এটা আমাকে দুনিয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি [আয়িশাহ (রাঃ)] আরো বলেন, আমাদের নিকট
একটি রেশমি বুটিদার চাদর ছিল, আমরা তা পরিধান করতাম।
সহীহঃ গাইয়াতুল মারাম (১৩৬), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি হাসান সহীহ এবং উপযুক্ত সূত্রে
গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৬৯
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ،
عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَتْ وِسَادَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم الَّتِي يَضْطَجِعُ عَلَيْهَا مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيفٌ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘুমানোর বালিশটি ছিল চামড়ার তৈরি এবং তার
ভিতর ছিল খেজুর গাছের ছাল-বাকলে ভরা।
সহীহঃ মুখতাসার শামায়িল (২৮২), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদিসটি সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
দানকৃত
বস্তুই অবশিষ্ট থাকে
২৪৭০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي مَيْسَرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ،
أَنَّهُمْ ذَبَحُوا شَاةً فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مَا
بَقِيَ مِنْهَا " . قَالَتْ مَا بَقِيَ مِنْهَا إِلاَّ كَتِفُهَا .
قَالَ " بَقِيَ كُلُّهَا غَيْرَ كَتِفِهَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو مَيْسَرَةَ هُوَ الْهَمْدَانِيُّ اسْمُهُ
عَمْرُو بْنُ شُرَحْبِيلَ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন
সাহাবীগণ একটি ছাগল যবেহ করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশ্ন
করলেন, এর আর কি বাকী আছে? তিনি [আয়িশা (রাঃ)] বললেন, এর কাঁধের অংশ ছাড়া আর কিছু
বাকী নেই (দান করা হয়েছে)। তিনি বললেন, কাঁধ ব্যতীত সবটুকুই অবশিষ্ট রয়েছে (যা
কিছু দান করা হয়েছে তা-ই আল্লাহ্র নিকট বাকী রয়েছে)।
সহীহঃ সহীহা (২৫৪৪)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি সহীহ। আবূ মাইসারার নাম ‘আমর
ইবনু শুরাহবিল আল-হামদানী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দারিদ্র্যতা
২৪৭১
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا
عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
إِنْ كُنَّا آلَ مُحَمَّدٍ نَمْكُثُ شَهْرًا مَا نَسْتَوْقِدُ بِنَارٍ إِنْ هُوَ
إِلاَّ الْمَاءُ وَالتَّمْرُ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা
মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারের সদস্যগণ সারামাস যাবত
এমন অবস্থায়ও কাটিয়েছি যে, চুলায় আগুন ধরাইনি। আমাদের খাবারের জন্য পানি ও খেজুর
ব্যতীত আর কিছুই থাকতো না।
সহীহঃ মুখতাসার শামায়িল (১১১), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৭২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا رَوْحُ
بْنُ أَسْلَمَ أَبُو حَاتِمٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ،
حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" لَقَدْ أُخِفْتُ فِي اللَّهِ وَمَا يُخَافُ أَحَدٌ وَلَقَدْ أُوذِيتُ
فِي اللَّهِ وَمَا يُؤْذَى أَحَدٌ وَلَقَدْ أَتَتْ عَلَىَّ ثَلاَثُونَ مِنْ بَيْنِ
يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ وَمَا لِي وَلِبِلاَلٍ طَعَامٌ يَأْكُلُهُ ذُو كَبِدٍ إِلاَّ
شَيْءٌ يُوَارِيهِ إِبْطُ بِلاَلٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ . - وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ حِينَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم فَارًّا مِنْ مَكَّةَ وَمَعَهُ بِلاَلٌ إِنَّمَا كَانَ مَعَ
بِلاَلٍ مِنَ الطَّعَامِ مَا يَحْمِلُهُ تَحْتَ إِبْطِهِ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাকে আল্লাহ্র পথে যেভাবে ভয় দেখানো
হয়েছে, আর কাউকে ঐভাবে ভয় দেখানো হয়নি। আমাকে আল্লাহ্ তা’আলার উদ্দেশ্যে যেভাবে
যন্ত্রণা দেয়া হয়েছে আর কোন ব্যক্তিকে সেইভাবে যন্ত্রণা প্রদান করা হয়নি। আমার উপর
দিয়ে ত্রিশটি দিবারাত্রি এমনভাবে অতিবাহিত হয়েছে যে, বিলালের বগলের মধ্যে রক্ষিত
সামান্য খাদ্য ছিল আমার ও বিলালের সম্বল। তা ছাড়া এতটুকু আহারও ছিল না যা কোন
প্রাণধারী প্রাণী খেয়ে বাঁচতে পারে।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (১৫১)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি হাসান সহীহ। এই হাদীসের অর্থ
হলো নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিলাল (রাঃ)-কে নিয়ে যখন মক্কা হতে (তায়িফে)
পলায়ন করেছিলেন, তখন বিলাল (রাঃ) তারঁ বগলের নিচে দাবিয়ে নিতে পারে এতটুকু খাবার সাথে
বহন করে নিয়েছিলেন। তাঁরা এই খাবার খেয়ে দীর্ঘ একমাস অতিবাহিত করেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৭৩
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زِيَادٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ
الْقُرَظِيِّ، حَدَّثَنِي مَنْ، سَمِعَ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ، يَقُولُ
خَرَجْتُ فِي يَوْمٍ شَاتٍ مِنْ بَيْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ
أَخَذْتُ إِهَابًا مَعْطُونًا فَحَوَّلْتُ وَسَطَهُ فَأَدْخَلْتُهُ عُنُقِي
وَشَدَدْتُ وَسَطِي فَحَزَمْتُهُ بِخُوصِ النَّخْلِ وَإِنِّي لَشَدِيدُ الْجُوعِ
وَلَوْ كَانَ فِي بَيْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم طَعَامٌ لَطَعِمْتُ
مِنْهُ فَخَرَجْتُ أَلْتَمِسُ شَيْئًا فَمَرَرْتُ بِيَهُودِيٍّ فِي مَالٍ لَهُ
وَهُوَ يَسْقِي بِبَكَرَةٍ لَهُ فَاطَّلَعْتُ عَلَيْهِ مِنْ ثُلْمَةٍ فِي
الْحَائِطِ فَقَالَ مَا لَكَ يَا أَعْرَابِيُّ هَلْ لَكَ فِي كُلِّ دَلْوٍ
بِتَمْرَةٍ قُلْتُ نَعَمْ فَافْتَحِ الْبَابَ حَتَّى أَدْخُلَ فَفَتَحَ فَدَخَلْتُ
فَأَعْطَانِي دَلْوَهُ فَكُلَّمَا نَزَعْتُ دَلْوًا أَعْطَانِي تَمْرَةً حَتَّى
إِذَا امْتَلأَتْ كَفِّي أَرْسَلْتُ دَلْوَهُ وَقُلْتُ حَسْبِي فَأَكَلْتُهَا
ثُمَّ جَرَعْتُ مِنَ الْمَاءِ فَشَرِبْتُ ثُمَّ جِئْتُ الْمَسْجِدَ فَوَجَدْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِيهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আলী
ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক শীতের
দিনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘর হতে বের হলাম। এর
পূর্বে আমি একটি লোমহীন চামড়া নিয়ে তা মাঝামাঝি কেটে গলায় ঢুকালাম এবং খেজুরের
পাতা দিয়ে কোমরে শক্ত করে বাঁধলাম। আমি তখন খুব বেশী ক্ষুধার্ত ছিলাম। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘরে কোন খাদ্যসামগ্রী থাকলে তা অবশ্য খেয়ে
ফেলতাম। আমি খাদ্যের খোঁজে বের হয়ে গেলাম। তারপর জনৈক ইয়াহূদীর পাশ দিয়ে
যাচ্ছিলাম, সে তার বাগানে (কপিকল জাতীয়) চরকির সাহায্যে কুয়া হতে পানি তুলছিল। আমি
প্রাচীরের একটি ছিদ্র দিয়ে তাকে দেখলাম। সে প্রশ্ন করল, হে বিদুঈন! কি চাও? তুমি
প্রতি বালতির বিনিময়ে একটি করে খেজুর পাবে, আমার বাগানের পানি তুলে দিবে কি? আমি
বললাম, হ্যাঁ, দরজা খোল, আমি ভেতরে আসি। সে দরজা খুললে আমি ভেতরে গেলাম। তারপর সে
একটি বালতি এনে দিল। আমি বালতি ভরে পানি উঠাতে লাগলাম আর সে প্রতি বালতিতে একটি
করে খেজুর দিতে লাগল। অবশেষে খেজুরে আমার হাতের মুঠি ভরে গেল। আমি তখন বালতি রেখে
দিয়ে বললাম, আমার যথেষ্ট হয়েছে। আমি খেজুরগুলো খেয়ে পানি পান করলাম এবং মসজিদে এসে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সেখানে পেলাম।
যঈফ, তা’লীকুর রাগীব (৩/১০৯, ১১০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৪৭৪
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبَّاسٍ الْجُرَيْرِيِّ، قَالَ
سَمِعْتُ أَبَا عُثْمَانَ النَّهْدِيَّ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ
أَصَابَهُمْ جُوعٌ فَأَعْطَاهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَمْرَةً
تَمْرَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার
তাদেরকে দুর্ভিক্ষে পেল। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাদেরকে একটি করে খেজুর দেন।
শাজ, ইবনু মাজাহ (৪১৫৭)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃশায
২৪৭৫
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ،
عَنْ وَهْبِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ بَعَثَنَا
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ ثَلاَثُمِائَةٍ نَحْمِلُ زَادَنَا
عَلَى رِقَابِنَا فَفَنِيَ زَادُنَا حَتَّى إِنْ كَانَ يَكُونُ لِلرَّجُلِ مِنَّا
كُلَّ يَوْمٍ تَمْرَةٌ . فَقِيلَ لَهُ يَا أَبَا عَبْدِ اللَّهِ وَأَيْنَ
كَانَتْ تَقَعُ التَّمْرَةُ مِنَ الرَّجُلِ فَقَالَ لَقَدْ وَجَدْنَا فَقْدَهَا
حِينَ فَقَدْنَاهَا وَأَتَيْنَا الْبَحْرَ فَإِذَا نَحْنُ بِحُوتٍ قَدْ قَذَفَهُ
الْبَحْرُ فَأَكَلْنَا مِنْهُ ثَمَانِيَةَ عَشَرَ يَوْمًا مَا أَحْبَبْنَا .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ
جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . وَرَوَاهُ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ عَنْ وَهْبِ بْنِ كَيْسَانَ
أَتَمَّ مِنْ هَذَا وَأَطْوَلَ .
জাবির
ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক অভিযানে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের তিনশত লোকের একটি বাহিনী
প্রেরণ করেন। আমরা আমাদের রসদপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী আমাদের কাঁধে নিয়ে যাত্রা
শুরু করলাম। রসদ (পাথেয় ছিল খুবই সামান্য, কাজেই তাড়াতাড়ি তা) ফুরিয়ে গেল। এমনকি
প্রতি জনের জন্য দিনশেষে একটি করে খেজুর নির্ধারিত হতো। তাকে বলা হলো, হে আবূ
আব্দুল্লাহ! একজন লোকের জন্য সারাদিনে একটি খেজুরে কি হতো? তিনি বললেন, একটি
খেজুরে কিছুই হতো না, কিন্তু আমরা একটির উপকারিতাও তখন বুঝতে পারলাম, যখন হতে একটি
করে খেজুর পাবার সুযোগও ফুরিয়ে গেল। তারপর আমরা সাগরের সামনে এসে একটি বিরাট
আকারের মৎস্য দেখতে পেলাম। সমুদ্র তা নিক্ষেপ করেছে। আমরা আঠার দিন পর্যন্ত এটা
খেলাম। আমাদের নিকট তা কতই না প্রিয় ছিল।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪১৫৯), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি হাসান সহীহ। এই হাদিসটি জাবির
(রাঃ) হতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। এটিকে ওয়াহাব ইবনু কাইসানের সূত্রে মালিক ইবনু
আনাস (রাঃ) আরো পরিপূর্ন ও লম্বা করে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
দারিদ্রতা
স্বচ্ছলতার চাইতে উত্তম
২৪৭৬
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ زِيَادٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ
الْقُرَظِيِّ، حَدَّثَنِي مَنْ، سَمِعَ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ، يَقُولُ
إِنَّا لَجُلُوسٌ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَسْجِدِ إِذْ
طَلَعَ عَلَيْنَا مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ مَا عَلَيْهِ إِلاَّ بُرْدَةٌ لَهُ
مَرْقُوعَةٌ بِفَرْوٍ فَلَمَّا رَآهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَكَى
لِلَّذِي كَانَ فِيهِ مِنَ النِّعْمَةِ وَالَّذِي هُوَ الْيَوْمَ فِيهِ ثُمَّ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كَيْفَ بِكُمْ إِذَا غَدَا
أَحَدُكُمْ فِي حُلَّةٍ وَرَاحَ فِي حُلَّةٍ وَوُضِعَتْ بَيْنَ يَدَيْهِ صَحْفَةٌ
وَرُفِعَتْ أُخْرَى وَسَتَرْتُمْ بُيُوتَكُمْ كَمَا تُسْتَرُ الْكَعْبَةُ "
. قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ نَحْنُ يَوْمَئِذٍ خَيْرٌ مِنَّا الْيَوْمَ
نَتَفَرَّغُ لِلْعِبَادَةِ وَنُكْفَى الْمُؤْنَةَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " لأَنْتُمُ الْيَوْمَ خَيْرٌ مِنْكُمْ يَوْمَئِذٍ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَيَزِيدُ بْنُ زِيَادٍ هُوَ
ابْنُ مَيْسَرَةَ وَهُوَ مَدَنِيٌّ وَقَدْ رَوَى عَنْهُ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ
وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ وَيَزِيدُ بْنُ زِيَادٍ الدِّمَشْقِيُّ
الَّذِي رَوَى عَنِ الزُّهْرِيِّ رَوَى عَنْهُ وَكِيعٌ وَمَرْوَانُ بْنُ
مُعَاوِيَةَ وَيَزِيدُ بْنُ أَبِي زِيَادٍ كُوفِيٌّ رَوَى عَنْهُ سُفْيَانُ
وَشُعْبَةُ وَابْنُ عُيَيْنَةَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنَ الأَئِمَّةِ .
আলী
ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মসজিদে বসা ছিলাম। এমন সময় চামড়ার
তালিযুক্ত একটি ছেড়া চাদর গায়ে জড়িয়ে মুসআব ইবনু উমাইর (রাঃ) এসে আমাদের সামনে
হাযির হন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার বর্তমান করুণ
অবস্থা দেখে এবং তার পূর্বের স্বচ্ছল অবস্থার কথা মনে করে কেঁদে ফেললেন। তারপর
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে সময় তোমাদের কি অবস্থা
হবে, যখন তোমাদের কেউ সকালে এক জোড়া পোশাক পরবে আর বিকেলে পরবে অন্য জোড়া। আর তার
সামনে খাদ্যভর্তি একটি পেয়ালা রাখা হবে আর অন্যটি উঠিয়ে নেয়া হবে। তোমরা তোমাদের
ঘরগুলো এমনভাবে পর্দায় ঢেকে রাখবে, যেভাবে কা’বা ঘরকে গেলাফে ঢেকে রাখা হয়।
সাহাবীগণ আরয করেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তো তখন বর্তমানের চাইতে অনেক স্বচ্ছল
থাকব। বিপদাপদ ও অভাব-অনটন হতে নিরাপদ থাকব। ফলে ইবাদাত বন্দিগীর জন্য যথেষ্ট অবসর
পাব। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ বরং বর্তমানটাই
তোমাদের জন্য তখনকার তুলনায় অনেক ভালো।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৫৩৬৬) দেখুন হাদীস নং (২৫৯১)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। ইয়াযীদ ইবনু যিয়াদ
হলেন ইবনু মাইসারা, তিনি মাদীনার অধিবাসী। মালিক ইবনু আনাস-সহ একাধিক বিশেষজ্ঞ আলিম
তার সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর ইয়াযীদ ইবনু যিয়াদ আদ-দিমাশকী যুহরীর সূত্রে হাদীস
বর্ণনা করেছেন এবং তার সূত্রে ওয়াকী, মারওয়ান ইবনু মুআবিয়া হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর
কূফার অধিবাসী ইয়াযীদ ইবনু আবূ যিয়াদের সূত্রে সুফিয়ান, শুবা, ইবনু উআইনা-সহ একাধিক
ইমাম হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৬. অনুচ্ছেদঃ
আহলে
সুফফার মধ্যে দুধ বন্টন
২৪৭৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنِي
عُمَرُ بْنُ ذَرٍّ، حَدَّثَنَا مُجَاهِدٌ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ
أَهْلُ الصُّفَّةِ أَضْيَافَ أَهْلِ الإِسْلاَمِ لاَ يَأْوُونَ عَلَى أَهْلٍ وَلاَ
مَالٍ وَاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ إِنْ كُنْتُ لأَعْتَمِدُ
بِكَبِدِي عَلَى الأَرْضِ مِنَ الْجُوعِ وَأَشُدُّ الْحَجَرَ عَلَى بَطْنِي مِنَ
الْجُوعِ وَلَقَدْ قَعَدْتُ يَوْمًا عَلَى طَرِيقِهِمُ الَّذِي يَخْرُجُونَ فِيهِ
فَمَرَّ بِي أَبُو بَكْرٍ فَسَأَلْتُهُ عَنْ آيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ مَا
سَأَلْتُهُ إِلاَّ لِيَسْتَتْبِعَنِي فَمَرَّ وَلَمْ يَفْعَلْ ثُمَّ مَرَّ بِي
عُمَرُ فَسَأَلْتُهُ عَنْ آيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ مَا أَسْأَلُهُ إِلاَّ
لِيَسْتَتْبِعَنِي فَمَرَّ وَلَمْ يَفْعَلْ ثُمَّ مَرَّ بِي أَبُو الْقَاسِمِ صلى
الله عليه وسلم فَتَبَسَّمَ حِينَ رَآنِي وَقَالَ " أَبَا هُرَيْرَةَ
" . قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " الْحَقْ
" . وَمَضَى فَاتَّبَعْتُهُ وَدَخَلَ مَنْزِلَهُ فَاسْتَأْذَنْتُ
فَأَذِنَ لِي فَوَجَدَ قَدَحًا مِنْ لَبَنٍ فَقَالَ " مِنْ أَيْنَ هَذَا
اللَّبَنُ لَكُمْ " . قِيلَ أَهْدَاهُ لَنَا فُلاَنٌ . فَقَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَبَا هُرَيْرَةَ " . قُلْتُ
لَبَّيْكَ . فَقَالَ " الْحَقْ إِلَى أَهْلِ الصُّفَّةِ فَادْعُهُمْ
" . وَهُمْ أَضْيَافُ أَهْلِ الإِسْلاَمِ لاَ يَأْوُونَ عَلَى أَهْلٍ
وَلاَ مَالٍ إِذَا أَتَتْهُ صَدَقَةٌ بَعَثَ بِهَا إِلَيْهِمْ وَلَمْ يَتَنَاوَلْ
مِنْهَا شَيْئًا وَإِذَا أَتَتْهُ هَدِيَّةٌ أَرْسَلَ إِلَيْهِمْ فَأَصَابَ
مِنْهَا وَأَشْرَكَهُمْ فِيهَا فَسَاءَنِي ذَلِكَ وَقُلْتُ مَا هَذَا الْقَدَحُ بَيْنَ
أَهْلِ الصُّفَّةِ وَأَنَا رَسُولُهُ إِلَيْهِمْ فَسَيَأْمُرُنِي أَنْ أُدِيرَهُ
عَلَيْهِمْ فَمَا عَسَى أَنْ يُصِيبَنِي مِنْهُ وَقَدْ كُنْتُ أَرْجُو أَنْ
أُصِيبَ مِنْهُ مَا يُغْنِينِي وَلَمْ يَكُنْ بُدٌّ مِنْ طَاعَةِ اللَّهِ
وَطَاعَةِ رَسُولِهِ فَأَتَيْتُهُمْ فَدَعَوْتُهُمْ فَلَمَّا دَخَلُوا عَلَيْهِ
فَأَخَذُوا مَجَالِسَهُمْ فَقَالَ " أَبَا هُرَيْرَةَ خُذِ الْقَدَحَ
وَأَعْطِهِمْ " . فَأَخَذْتُ الْقَدَحَ فَجَعَلْتُ أُنَاوِلُهُ الرَّجُلَ
فَيَشْرَبُ حَتَّى يُرْوَى ثُمَّ يَرُدُّهُ فَأُنَاوِلُهُ الآخَرَ حَتَّى
انْتَهَيْتُ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ رَوِيَ
الْقَوْمُ كُلُّهُمْ فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْقَدَحَ
فَوَضَعَهُ عَلَى يَدَيْهِ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ فَتَبَسَّمَ فَقَالَ "
أَبَا هُرَيْرَةَ اشْرَبْ " . فَشَرِبْتُ ثُمَّ قَالَ " اشْرَبْ
" . فَلَمْ أَزَلْ أَشْرَبُ وَيَقُولُ " اشْرَبْ " .
حَتَّى قُلْتُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أَجِدُ لَهُ مَسْلَكًا فَأَخَذَ
الْقَدَحَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَسَمَّى ثُمَّ شَرِبَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবু
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সুফফাবাসীগণ
ছিলেন মুসলিমদের অতিথি, তাদের আশ্রয় লাভের মতো ধন-দৌলত, পরিবার-স্বজন কিছুই ছিল
না। আল্লাহর শপথ, যিনি ব্যতীত আর কোন মা'বূদ নেই! আমি ক্ষুধার কষ্টে আমার পেট
মাটিতে চেপে ধরে থাকতাম, আর কখনো পেটে পাথর বেঁধে রাখতাম। কোন একদিন আমি তাদের (সাহাবাদের)
পথে বসে গেলাম। এমন সময় আবূ বাকর (রাঃ) আমাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি আল্লাহর
কিতাবের একটি আয়াত প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করলাম। উদ্দেশ্য ছিল তিনি আমাকে তার পিছনে
যেতে বলেন (এবং কিছু খেতে দেন)। কিন্তু তিনি চলে গেলেন, কিছুই করলেন না। এরপর
‘উমার (রাঃ) এই পথ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। আমি তাকেও আল্লাহ তা'আলার কিতাবের একটি
আয়াত প্রসঙ্গে সেই একই উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলাম, কিন্তু তিনিও চলে গেলেন এবং কিছুই
করলেন না। তারপর আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সামনে দিয়ে
যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে দেখা মাত্রই (আসল ব্যাপার বুঝতে পেরে) মুচকি হাসলেন এবং
বললেন, হে আবু হুরায়রা্! আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তিনি বললেন, চলো, তারপর তিনি চললেন, আমি তার অনুসরণ করলাম।
তিনি তার গৃহে প্রবেশ করলেন, আমিও ঢোকার অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাকে সম্মতি প্রদান
করলেন। তিনি ঘরে এক পেয়ালা দুধ দেখে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের জন্য এই দুধ কোথা হতে
এসেছে? বলা হলো, আমাদের জন্য অমুক ব্যক্তি উপহারস্বরূপ পাঠিয়েছে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা্! আমি বললাম, লাব্বাইকা।
তিনি বললেন, যাও সুফফাবাসীদেরকে ডেকে নিয়ে এসো, তারা তো মুসলিমদের অতিথি, তাদের
নির্ভর করার মতো ধন-সম্পদ, পরিবার পরিজন বলতে কিছুই নেই। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট সাদাকাহর কোন মাল আসলে তিনি তার কোন
অংশই না রেখে তাদের জন্য সবটুকু পাঠিয়ে দিতেন। আর উপহার আসলে তিনি তা হতে তাদের
জন্য কিছু পাঠিয়ে দিতেন এবং নিজেও কিছু নিতেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর আদেশ শুনে আমি নিরাশ হয়ে গেলাম এবং (মনে মনে) বললাম, এই এক
পেয়ালা দুধ দিয়ে আসহাবে সুফফার কি হবে? অথচ আমাকে তাদের নিকট পাঠানো হচ্ছে। এই
দুধ তাদের মধ্যে পরিবেশন করার জন্য তো তিনি আমাকেই আদেশ করবেন। তখন তার কোন অংশই
আমার জন্য জুটবে না। অথচ আমি আশা করছিলাম যে, আমি এটুকু পান করতে পারলে আমার জন্য
যথেষ্ট হবে। কিন্তু আল্লাহ ও তার রাসূলের আদেশ পালন করা ব্যতীত আর কোন পথও নেই।
অতএব আমি তাদের নিকট এসে তাদেরকে ডাকলাম। তারা এসে ঘরে প্রবেশ করে নিজ নিজ আসন
গ্রহণ করলে তিনি বললেনঃ হে আবু হুরায়রা! পেয়ালাটা নিয়ে তাদেরকে দুধ পরিবেশন কর।
আমি পেয়ালাটি নিলাম তারপর আমি একজন করে দিতে থাকলাম। সে পান করে পরিতৃপ্ত হয়ে
পেয়ালাটি আমাকে ফিরত দিলে আমি অন্যজনকে দিতাম। সেও পরিতৃপ্ত হতো। এভাবে আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পৌছলাম। সমবেত সকলেই
পরিতৃপ্ত হলো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পেয়ালাটি তার হাতে
নিয়ে মাথা তুলে আমার দিকে তাকিয়ে মুচুকি হাসলেন এবং বললেন, আবু হুরায়রা্! এখন
তুমি পান কর। আমি পান করলাম। তিনি আবার বললেন, পান কর। তারপর আমি পান করতেই থাকলাম
আর তিনি বলতেই থাকলেন, পান কর। অবশেষে আমি বলতে বাধ্য হলাম যে, আল্লাহর শপথ! যিনি
আপনাকে সত্য দ্বীনসহকারে পাঠিয়েছেন, আমার পেটে আর জায়গা নেই। তারপর তিনি পেয়ালা
হাতে নিয়ে আল্লাহ্ তা'আলার প্রশংসা করলেন এবং বিসমিল্লাহ বলে অবশিষ্ট দুধ পান
করলেন।
সহীহঃ বুখারী (৬৪৫২)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ
পেট
পূর্ণ করে খাদ্যগ্রহণকারী ব্যক্তি কিয়ামাতের দিন ক্ষুধার্ত থাকবে
২৪৭৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْقُرَشِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى الْبَكَّاءُ،
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ تَجَشَّأَ رَجُلٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ " كُفَّ عَنَّا جُشَاءَكَ فَإِنَّ أَكْثَرَهُمْ شِبَعًا فِي
الدُّنْيَا أَطْوَلُهُمْ جُوعًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
جُحَيْفَةَ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন এক
ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে ঢেকুর তুললো। তিনি
বললেন, আমাদের সামনে তোমার ঢেকুর তোলা বন্ধ কর। অবশ্যই যে সকল ব্যক্তি দুনিয়াতে
বেশি পরিতৃপ্ত হবে তারাই কিয়ামাতের দিন সবচেয়ে বেশি ক্ষুধার্ত থাকবে।
হাসানঃ ইবনু মা-জাহ (৩৩৫০-৩৩৫১)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান, এই সনদসূত্রে গারীব।
আবু জুহাইফা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ
সাহাবীদের
জীর্ণ পোশাক
২৪৭৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنْ أَبِي بُرْدَةَ بْنِ أَبِي مُوسَى، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ يَا بُنَىَّ لَوْ
رَأَيْتَنَا وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصَابَتْنَا
السَّمَاءُ لَحَسِبْتَ أَنَّ رِيحَنَا رِيحُ الضَّأْنِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّهُ كَانَ ثِيَابَهُمُ
الصُّوفُ فَكَانَ إِذَا أَصَابَهُمُ الْمَطَرُ يَجِيءُ مِنْ ثِيَابِهِمْ رِيحُ
الضَّأْنِ .
আবু
বুরদা (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (আবু মূসা) বলেন,
হে বাছা! যদি তুমি আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সাথে বৃষ্টিতে সিক্ত অবস্থায় দেখতে তাহলে নিশ্চয়ই আমাদের শরীরের গন্ধকে ভেড়ার
গন্ধ বলে ধারণা করতে।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৩৫৬২)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ। এই হাদীসের মর্ম এই যে,
তাদের শরীরে পশমী কাপড় থাকতো, বৃষ্টির পানিতে ভিজলে তা হতে ভেড়ার শরীরের দুর্গন্ধের
মতো দুৰ্গন্ধ বের হতো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৯. অনুচ্ছেদঃ
যে
ব্যক্তি বিনয়ের পোশাক পরিধান করে
২৪৮০
حَدَّثَنَا الْجَارُودُ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى،
عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ
النَّخَعِيِّ، قَالَ الْبِنَاءُ كُلُّهُ وَبَالٌ قُلْتُ أَرَأَيْتَ مَا لاَ بُدَّ
مِنْهُ قَالَ لاَ أَجْرَ وَلاَ وِزْرَ .
ইবরাহীম
নাখঈ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ দালান কোঠা
সবই বিপদের কারণ। আবূ হামযা বলেনঃ আমি প্রশ্ন করলাম যা না হইলেই নয় সে সম্পর্কে
আপনার অভিমত কি? তিনি বললেনঃ এতে সাওয়াবও নেই, গোনাহ্ও নেই।
দুর্বল সনদ, বিচ্ছিন্ন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৪৮১
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، عَنْ
أَبِي مَرْحُومٍ عَبْدِ الرَّحِيمِ بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ
أَنَسٍ الْجُهَنِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " مَنْ تَرَكَ اللِّبَاسِ تَوَاضُعًا لِلَّهِ وَهُوَ يَقْدِرُ
عَلَيْهِ دَعَاهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رُءُوسِ الْخَلاَئِقِ حَتَّى يُخَيِّرَهُ
مِنْ أَىِّ حُلَلِ الإِيمَانِ شَاءَ يَلْبَسُهَا " . هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَمَعْنَى قَوْلِهِ " حُلَلِ الإِيمَانِ " . يَعْنِي
مَا يُعْطَى أَهْلُ الإِيمَانِ مِنْ حُلَلِ الْجَنَّةِ .
মু'আয
ইবনু আনাস আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক ক্ষমতা থাকার পরেও আল্লাহ তা'আলার প্রতি
নম্রতাবশতঃ দামী জামা পরা ছেড়ে দিবে, তাকে কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তা'আলা সকল
সৃষ্টির সামনে ডেকে আনবেন এবং ঈমানদারদের পোশাকের মধ্যে যে কোন পোশাক পরিধান করার
অধিকার দিবেন।
হাসানঃ সহীহা (৭১৭)।
এ হাদীসটি হাসান। “হুলালুল ঈমান’ শব্দের অর্থ ঈমানদারগণকে
জান্নাতের যে পোশাক পরতে দেয়া হবে তা।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৪০. অনুচ্ছেদঃ
সব
ব্যয় আল্লাহ তা'আলার পথে, অট্টালিকা নির্মাণের ব্যয় ব্যতীত
২৪৮২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا زَافِرُ بْنُ
سُلَيْمَانَ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ شَبِيبِ بْنِ بَشِيرٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " النَّفَقَةُ
كُلُّهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ إِلاَّ الْبِنَاءَ فَلاَ خَيْرَ فِيهِ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . هَكَذَا قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ
حُمَيْدٍ شَبِيبُ بْنُ بَشِيرٍ وَإِنَّمَا هُوَ شَبِيبُ بْنُ بِشْرٍ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দালানকোঠা নির্মাণের খরচ ব্যতীত জীবন
যাপনের সকল খরচই আল্লাহ তা’আলার রাস্তায় বলে পরিগণিত। দালানকোঠা নির্মাণের খরচের
মধ্যে কোন কল্যাণ নেই।
যঈফ, যঈফা (১০৬১), তা’লীকুর গারীব (২/১১৩)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৪৮৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ، عَنْ حَارِثَةَ بْنِ مُضَرِّبٍ، قَالَ أَتَيْنَا خَبَّابًا نَعُودُهُ
وَقَدِ اكْتَوَى سَبْعَ كَيَّاتٍ فَقَالَ لَقَدْ تَطَاوَلَ مَرَضِي وَلَوْلاَ
أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ
تَمَنَّوُا الْمَوْتَ " . لَتَمَنَّيْتُ وَقَالَ " يُؤْجَرُ
الرَّجُلُ فِي نَفَقَتِهِ كُلِّهَا إِلاَّ التُّرَابَ أَوْ قَالَ فِي الْبِنَاءِ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
হারিসা
ইবনু মুযাররিব (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন
আমরা রুগ্ন খাব্বাব (রাঃ)-কে দেখতে গেলাম। তখন তিনি তার শরীরে সাতবার উত্তপ্ত
লোহার দাগ দিয়েছেন। তিনি বললেন, আমার রোগ দীর্ঘস্থায়ী হলো। যদি আমি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে না শুনতামঃ “তোমরা মৃত্যু কামনা করো না",
তাহলে আমি নিশ্চয়ই মৃত্যু কামনা করতাম। তিনি আরো বললেন, মানুষকে শুধুমাত্র মাটিতে
খরচ (দালান-কোঠা স্থাপনে খরচ) ছাড়া, সকল খরচেই নেকি দেয়া হবে।
সহীহঃ বুখারী, মুসলিম। ৯৫৭ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪১. অনুচ্ছেদঃ
বস্ত্র
দানকারী আল্লাহ্র হিফাযাতে থাকে
২৪৮৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ
الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ طَهْمَانَ أَبُو الْعَلاَءِ، حَدَّثَنَا
حُصَيْنٌ، قَالَ جَاءَ سَائِلٌ فَسَأَلَ ابْنَ عَبَّاسٍ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ
لِلسَّائِلِ أَتَشْهَدُ أَنْ لاَ، إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ قَالَ نَعَمْ . قَالَ
أَتَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ قَالَ نَعَمْ . قَالَ وَتَصُومُ
رَمَضَانَ قَالَ نَعَمْ . قَالَ سَأَلْتَ وَلِلسَّائِلِ حَقٌّ إِنَّهُ لَحَقٌّ
عَلَيْنَا أَنْ نَصِلَكَ . فَأَعْطَاهُ ثَوْبًا ثُمَّ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا مِنْ مُسْلِمٍ كَسَا مُسْلِمًا
ثَوْبًا إِلاَّ كَانَ فِي حِفْظِ اللَّهِ مَا دَامَ مِنْهُ عَلَيْهِ خِرْقَةٌ
" . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
হুসাইন
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক ভিক্ষুক
এসে ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট কিছু চাইল। ইবনু আব্বাস (রাঃ) তাকে প্রশ্ন করলেন,
তুমি কি এ কথার সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই? সে বলল, হ্যাঁ।
তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র রাসূল? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, তুমি কি
রমযানের রোযা রাখ? সে বলল, হ্যাঁ। এবার তিনি বললেন, তুমি আমার নিকট কিছু চেয়েছ। আর
যাঞ্চাকারীর অধিকার আছে। এখন তোমার সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করা আমার কর্তব্য। এ কথা
বলে তিনি তাকে একটি কাপড় দান করলেন, তারপর বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ কোন মুসলমান অপর মুসলমানকে কাপড় পরতে দিলে
সে তত দিন আল্লাহ্ তা’আলার হিফাযাতে থাকে, যত দিন পর্যন্ত সেই কাপড়ের সামান্য
অংশও তার শরীরে থাকে।
যইফ, মিশকাত(১৯২০), তা’লীকুর রাগীব(৩/১১২)
আবূ ঈসা বলেন,এ হাদিসটি হাসান এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪২. অনুচ্ছেদঃ
সালামের
প্রসার, খাদ্যদান ও গভীর রাতে নামায
২৪৮৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ
الثَّقَفِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، وَابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، وَيَحْيَى بْنُ
سَعِيدٍ، عَنْ عَوْفِ بْنِ أَبِي جَمِيلَةَ الأَعْرَابِيِّ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ
أَوْفَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ، قَالَ لَمَّا قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ انْجَفَلَ النَّاسُ إِلَيْهِ وَقِيلَ قَدِمَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجِئْتُ فِي النَّاسِ لأَنْظُرَ
إِلَيْهِ فَلَمَّا اسْتَبَنْتُ وَجْهَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
عَرَفْتُ أَنَّ وَجْهَهُ لَيْسَ بِوَجْهِ كَذَّابٍ وَكَانَ أَوَّلَ شَيْءٍ
تَكَلَّمَ بِهِ أَنْ قَالَ " أَيُّهَا النَّاسُ أَفْشُوا السَّلاَمَ
وَأَطْعِمُوا الطَّعَامَ وَصَلُّوا وَالنَّاسُ نِيَامٌ تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ
بِسَلاَمٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু সালাম (রাঃ) হ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মাদীনায় এসে পৌছলেন, মানুষ তখন দলে দলে তার
নিকট দৌঁড়ে গেল। বলাবলি হতে লাগলো যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এসেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসেছেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসেছেন। অতএব তাকে দেখার জন্য
আমিও লোকদের সাথে উপস্থিত হলাম। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখে বুঝতে পারলাম যে, এই চেহারা কোন মিথ্যুকের
চেহারা নয়। তখন তিনি সর্বপ্রথম যে কথা বললেন তা এইঃ হে মানুষগণ! তোমরা সালামের
প্রসার ঘটাও, খাদ্য দান কর এবং মানুষ ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় (তাহাজ্জুদ) নামায আদায়
কর। তাহলে নিশ্চয়ই তোমরা সহীহ-সালামতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (১৩৩৪, ৩২৫১)।
আৰু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৩. অনুচ্ছেদঃ
কৃতজ্ঞ
ভোজনকারী
২৪৮৬
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ مَعْنٍ الْمَدَنِيُّ الْغِفَارِيُّ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ سَعِيدٍ
الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" الطَّاعِمُ الشَّاكِرُ بِمَنْزِلَةِ الصَّائِمِ الصَّابِرِ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবু
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কৃতজ্ঞ আহারকারী ধৈর্যশীল রোযাদারের সমান মর্যাদাশীল।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (১৭৬৪, ১৭৬৫)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৪. অনুচ্ছেদঃ
মুহাজিরদের
প্রতি আনসারদের উদারতা
২৪৮৭
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ الْحَسَنِ الْمَرْوَزِيُّ، بِمَكَّةَ
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ لَمَّا
قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ أَتَاهُ الْمُهَاجِرُونَ
فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا رَأَيْنَا قَوْمًا أَبْذَلَ مِنْ كَثِيرٍ وَلاَ
أَحْسَنَ مُوَاسَاةً مِنْ قَلِيلٍ مِنْ قَوْمٍ نَزَلْنَا بَيْنَ أَظْهُرِهِمْ
لَقَدْ كَفَوْنَا الْمُؤْنَةَ وَأَشْرَكُونَا فِي الْمَهْنَإِ حَتَّى خِفْنَا أَنْ
يَذْهَبُوا بِالأَجْرِ كُلِّهِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" لاَ مَا دَعَوْتُمُ اللَّهَ لَهُمْ وَأَثْنَيْتُمْ عَلَيْهِمْ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মাদীনায় আগমন করলেন, মুহাজিরগণ তখন তার
নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা যাদের
কাছে হিজরাত করে এসেছি, তাদের মতো আর কাউকে দেখিনি সম্পদশালী অবস্থায় ও অস্বচ্ছল
অবস্থায় (আল্লাহ তা'আলার পথে) এত ব্যয় করতে এবং এত উত্তমরূপে সহানুভূতি দেখাতে।
আমাদের দুঃখ-দুর্দশা কমানোর জন্য তারাই যথেষ্ট এবং তারা নিজেদের পরিশ্রমে অর্জিত
সম্পদে আমাদেরকে ভাগীদার করেছেন। এমনকি আমাদের ভয় হচ্ছে যে, তারাই সমস্ত সাওয়াব
নিয়ে যাবেন। এসব কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, না,
তোমরা যতদিন তাদের জন্য দু'আ করবে এবং তাদের গুণগান করবে ততদিন তোমাদেরও সাওয়াব
হতে থাকবে।
সহীহঃ মিশকাত (৩২০৬), তা’লীকুর রাগীব (২/৫৬)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ, এই সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৫. অনুচ্ছেদঃ
যে
ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম হারাম
২৪৮৮
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ،
عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو الأَوْدِيِّ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِمَنْ يَحْرُمُ عَلَى النَّارِ أَوْ بِمَنْ تَحْرُمُ
عَلَيْهِ النَّارُ عَلَى كُلِّ قَرِيبٍ هَيِّنٍ لَيِّنٍ سَهْلٍ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি কি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবো না, কোন
ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম হারাম এবং জাহান্নামের জন্য কোন ব্যক্তি হারাম? যে
ব্যক্তি মানুষের কাছাকাছি (জনপ্রিয়), সহজ-সরল, নম্রভাষী ও সদাচারী।
সহীহঃ সহীহাহ (৯৩৫)।
আৰু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান গরীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৮৯
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنِ
الْحَكَمِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ قُلْتُ
لِعَائِشَةَ أَىُّ شَيْءٍ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ إِذَا
دَخَلَ بَيْتَهُ قَالَتْ كَانَ يَكُونُ فِي مِهْنَةِ أَهْلِهِ فَإِذَا حَضَرَتِ
الصَّلاَةُ قَامَ فَصَلَّى . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
আসওয়াদ
ইবনু ইয়াযীদ (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়িশাহ
(রাঃ) কে প্রশ্ন করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে থাকাবস্থায় কি
করতেন? তিনি বললেন, তিনি সংসারের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করতেন, তারপর নামাযের সময়
ঘনিয়ে এলে তিনি উঠে গিয়ে নামায আদায় করতেন।
সহীহঃ মুখতাসার শামায়িল (২৯৩)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬. অনুচ্ছেদঃ
মোসাফাহা
২৪৯০
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ زَيْدٍ التَّغْلِبِيِّ، عَنْ زَيْدٍ
الْعَمِّيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم إِذَا اسْتَقْبَلَهُ الرَّجُلُ فَصَافَحَهُ لاَ يَنْزِعُ يَدَهُ مِنْ يَدِهِ
حَتَّى يَكُونَ الرَّجُلُ الَّذِي يَنْزِعُ وَلاَ يَصْرِفُ وَجْهَهُ عَنْ وَجْهِهِ
حَتَّى يَكُونَ الرَّجُلُ هُوَ الَّذِي يَصْرِفُهُ وَلَمْ يُرَ مُقَدِّمًا
رُكْبَتَيْهِ بَيْنَ يَدَىْ جَلِيسٍ لَهُ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি
যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাক্ষাতে এসে মুসাফাহা
(করমর্দন) করত, তখন সেই ব্যক্তি তার হাত টেনে না নেয়া পর্যন্ত তিনি নিজের হাত টেনে
নিতেন না। আর সে তার চেহারা ফিরিয়ে না নেয়া পর্যন্ত তিনি ঐ ব্যক্তি হতে নিজের
চেহারা ফিরিয়ে নিতেন না। তিনি কখনো তাঁর পা দুটি তাঁর সামনে বসা লোকদের দিকে
প্রসারিত করতেন না।
দূর্বল, তবে মুসাফাহার অংশটুকু সহীহ ইবনু মাযাহ (৩৭১৬)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৭. অনুচ্ছেদঃ
অহঙ্কারীর
পরিণতি
২৪৯১
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ
السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " خَرَجَ رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ
قَبْلَكُمْ فِي حُلَّةٍ لَهُ يَخْتَالُ فِيهَا فَأَمَرَ اللَّهُ الأَرْضَ
فَأَخَذَتْهُ فَهُوَ يَتَجَلْجَلُ فِيهَا أَوْ قَالَ يَتَلَجْلَجُ فِيهَا إِلَى
يَوْمِ الْقِيَامَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের আগের উম্মাতের মধ্যে কোন এক
লোক তার দামী জামা পরে গর্বভরে পথে বের হলে আল্লাহ তা'আলা তখন তাকে গ্রাস করার
জন্য যমীনকে নির্দেশ দিলেন। অতএব যমীন তাকে গ্রাস করে এবং সে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত
এভাবে ধ্বসতেই থাকবে।
সহীহঃ আস-সহীহ আল জামি' (৩২১৭), বুখারী, মুসলিম আবু হুরায়রা হতে।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৯২
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
يُحْشَرُ الْمُتَكَبِّرُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَمْثَالَ الذَّرِّ فِي صُوَرِ
الرِّجَالِ يَغْشَاهُمُ الذُّلُّ مِنْ كُلِّ مَكَانٍ فَيُسَاقُونَ إِلَى سِجْنٍ
فِي جَهَنَّمَ يُسَمَّى بُولَسَ تَعْلُوهُمْ نَارُ الأَنْيَارِ يُسْقَوْنَ مِنْ
عُصَارَةِ أَهْلِ النَّارِ طِينَةِ الْخَبَالِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আমর
ইবনু শু'আইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবার ও তার দাদা থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দাম্ভিক ব্যক্তিদেরকে ক্বিয়ামাত দিবসে ক্ষুদ্র
পিপড়ার ন্যায় মানুষের রূপে সমবেত করা হবে। তাদেরকে চারদিক হতে অপমান ও লাঞ্ছনা
ছেয়ে ফেলবে। জাহান্নামের ‘বুলাস’ নামক একটি কারাগারের দিকে তাদেরকে টেনে নেয়া
হবে, আগুন তাদেরকে গ্রাস করবে, জাহান্নামীদের গলিত রক্ত ও পুঁজ তাদেরকে পান করানো
হবে।
হাসানঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৫১১২), তা’লীকুর রাগীব (৪/১৮)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৪৮. অনুচ্ছেদঃ
ক্রোধ
সংবরণকারীর মর্যাদা
২৪৯৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، وَعَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ
الدُّورِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ،
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، حَدَّثَنِي أَبُو مَرْحُومٍ عَبْدُ
الرَّحِيمِ بْنُ مَيْمُونٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَبِيهِ،
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ كَظَمَ غَيْظًا وَهُوَ
يَقْدِرُ عَلَى أَنْ يُنَفِّذَهُ دَعَاهُ اللَّهُ عَلَى رُءُوسِ الْخَلاَئِقِ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يُخَيِّرَهُ فِي أَىِّ الْحُورِ شَاءَ " .
قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
মু'আয
ইবনু আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাগ কার্যকর করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও
তা দমন করে, আল্লাহ্ তা'আলা কিয়ামাতের দিন তাকে আহবান করে সকল মাখলুকের (সৃষ্টি)
সামনে আনবেন এবং তাকে তার ইচ্ছামতো যে কোন হূর বেছে নেয়ার ক্ষমতা (স্বাধীনতা) দিবেন।
হাসানঃ রাওযুন নাযীর (৪৮১, ৮৫৪), তা’লীকুর রাগীব (৩/২৭৯)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৪৯৪
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ الْغِفَارِيُّ الْمَدَنِيُّ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِي بَكْرِ
بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ نَشَرَ اللَّهُ
عَلَيْهِ كَنَفَهُ وَأَدْخَلَهُ جَنَّتَهُ رِفْقٌ بِالضَّعِيفِ وَشَفَقَةٌ عَلَى
الْوَالِدَيْنِ وَإِحْسَانٌ إِلَى الْمَمْلُوكِ " قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَأَبُو بَكْرِ بْنُ الْمُنْكَدِرِ هُوَ أَخُو مُحَمَّدِ بْنِ
الْمُنْكَدِرِ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যার মধ্যে নিম্নোক্ত তিনটি গুণ রয়েছে,
আল্লাহ তা’আলা তার উপর তাঁর (রহমাতের) ডানা প্রসারিত করবেন এবং তাকে জান্নাতে
প্রবেশ করাবেনঃ দূর্বলদের সাথে ভদ্র ব্যবহার, পিতা-মাতার সাথে মমতা জড়ানো কোমল ব্যবহার
এবং দাস-দাসীর প্রতি অনুগ্রহপূর্ণ ও সৌজন্যমূলক আচরণ।
মাওযূ, যঈফা (৯২)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। আবূ বাক্র ইবনুল
মুনকাদির হলেন মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদিরের ভাই।
হাদিসের মানঃজাল হাদিস
২৪৯৫
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ لَيْثٍ، عَنْ
شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ غَنْمٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَقُولُ اللَّهُ
تَعَالَى يَا عِبَادِي كُلُّكُمْ ضَالٌّ إِلاَّ مَنْ هَدَيْتُهُ فَسَلُونِي
الْهُدَى أَهْدِكُمْ وَكُلُّكُمْ فَقِيرٌ إِلاَّ مَنْ أَغْنَيْتُ فَسَلُونِي
أَرْزُقْكُمْ وَكُلُّكُمْ مُذْنِبٌ إِلاَّ مَنْ عَافَيْتُ فَمَنْ عَلِمَ مِنْكُمْ
أَنِّي ذُو قُدْرَةٍ عَلَى الْمَغْفِرَةِ فَاسْتَغْفَرَنِي غَفَرْتُ لَهُ وَلاَ
أُبَالِي وَلَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَحَيَّكُمْ وَمَيِّتَكُمْ
وَرَطْبَكُمْ وَيَابِسَكُمُ اجْتَمَعُوا عَلَى أَتْقَى قَلْبِ عَبْدٍ مِنْ
عِبَادِي مَا زَادَ ذَلِكَ فِي مُلْكِي جَنَاحَ بَعُوضَةٍ وَلَوْ أَنَّ
أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَحَيَّكُمْ وَمَيِّتَكُمْ وَرَطْبَكُمْ وَيَابِسَكُمُ
اجْتَمَعُوا عَلَى أَشْقَى قَلْبِ عَبْدٍ مِنْ عِبَادِي مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِنْ
مُلْكِي جَنَاحَ بَعُوضَةٍ وَلَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَحَيَّكُمْ
وَمَيِّتَكُمْ وَرَطْبَكُمْ وَيَابِسَكُمُ اجْتَمَعُوا فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ
فَسَأَلَ كُلُّ إِنْسَانٍ مِنْكُمْ مَا بَلَغَتْ أُمْنِيَّتُهُ فَأَعْطَيْتُ كُلَّ
سَائِلٍ مِنْكُمْ مَا سَأَلَ مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِنْ مُلْكِي إِلاَّ كَمَا لَوْ
أَنَّ أَحَدَكُمْ مَرَّ بِالْبَحْرِ فَغَمَسَ فِيهِ إِبْرَةً ثُمَّ رَفَعَهَا
إِلَيْهِ ذَلِكَ بِأَنِّي جَوَادٌ مَاجِدٌ أَفْعَلُ مَا أُرِيدُ عَطَائِي كَلاَمٌ
وَعَذَابِي كَلاَمٌ إِنَّمَا أَمْرِي لِشَيْءٍ إِذَا أَرَدْتُهُ أَنْ أَقُولَ لَهُ
كُنْ فَيَكُونُ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَرَوَى بَعْضُهُمْ
هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ عَنْ مَعْدِيكَرِبَ عَنْ أَبِي ذَرٍّ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
আবূ
যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ হে আমার
বান্দাগণ! তোমরা তো সবাই পথভ্রষ্ট, তবে তারা নয়, যাদের আমি হিদায়াত করি। সুতরাং
তোমরা আমার নিকট হিদায়াতের আবেদন কর, আমি হিদায়াত করব। আর যাদের আমি ধনী করেছি
তাদের ব্যতীত তোমাদের সবই তো দরিদ্র। তোমরা আমার নিকটে প্রার্থনা কর আমি রিযিক
দেব। আর আমি যাদের মাফ করেছি তাদের ব্যতীত তোমাদের সকলেই তো গুনাহগার। তোমাদের
মধ্যে যে ব্যক্তি এ কথা জানা যে, আমি মাফ করার ক্ষমতা রাখি, তারপর সে ক্ষমা ভিক্ষা
করে, আমি তার গুনাহ মাফ করে দেই। আমি এ ব্যাপারে কোন ভ্রুক্ষেপ করি না। তোমাদের
পূর্বের ও পরের, জীবিত ও মৃত, সিক্ত ও শুষ্ক (স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল) সকলেই যদি আমার
বান্দাদের মধ্যে সর্বাধিক তাকওয়ার অধিকারী ব্যক্তির হৃদয়ের মত হয়ে যায়, তাহলে একটি
মশার পাখার সম-পরিমাণও আমার রাজত্বের শ্রীবৃ্দ্ধি ঘটবে না। আর তোমাদের আগের ও
পরের, জীবিত ও মৃত, ভিজা ও শুষ্ক (স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল) সকলেই যদি আমার বান্দাদের
মধ্যে সবচাইতে বড় পাপী বান্দার মত হয়ে যায়, তাহলে একটি মশার পাখার সম-পরিমাণও আমার
রাজত্বের হানি ঘটবে না। আর যদি তোমাদের আগের ও পরের, জীবিত ও মৃত, ভিজা ও শুষ্ক
সকলে একটি জায়গায় সমবেত হয় এবং প্রত্যেকেই তার পূর্ণ চাহিদামত আমার নিকট প্রার্থনা
করে, আর আমি তাদের চাওয়া অনুযায়ী সবকিছু যদি দেই, তাহলেও আমার রাজত্বের কিছুই কমবে
না, তবে এতটুকু পরিমাণ যে, তোমাদের কেউ সমুদ্রের মধ্য দিয়ে যাবার সময় তাতে একটি
সুঁই ডুবিয়ে তা তুলে নিলে তাতে সমুদ্রের পানি যতটুকু কমবে। কারণ আমি হলাম দাতা,
দয়ালু ও মহান। আমি যা চাই তাই করি। আমার দান হল আমার কথা আর আমার আযাব হল আমার
নির্দেশ। আমার ব্যাপার এই যে, আমি যখন কিছু ইচ্ছা করি তখন বলি, “হয়ে যাও” অমনি তা
হয়ে যায়।
এই বর্ণনাটি যঈফ, তবে হাদিসের অধিকাংশই সহীহ, মুসলিম, ইবনু মাযাহ (৪২৫৭)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান। কিছু রাবী এ হাদিস শাহর
ইবনু হাওশাব হতে মাদীকারিব-এর সূত্রে আবূ যার (রাঃ)-এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একই রকম বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
২৪৯৬
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ أَسْبَاطِ بْنِ مُحَمَّدٍ الْقُرَشِيُّ،
حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ الرَّازِيِّ، عَنْ سَعْدٍ، مَوْلَى طَلْحَةَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ
سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُحَدِّثُ حَدِيثًا لَوْ لَمْ أَسْمَعْهُ
إِلاَّ مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ حَتَّى عَدَّ سَبْعَ مَرَّاتٍ وَلَكِنِّي
سَمِعْتُهُ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ " كَانَ الْكِفْلُ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ لاَ يَتَوَرَّعُ مِنْ
ذَنْبٍ عَمِلَهُ فَأَتَتْهُ امْرَأَةٌ فَأَعْطَاهَا سِتِّينَ دِينَارًا عَلَى أَنْ
يَطَأَهَا فَلَمَّا قَعَدَ مِنْهَا مَقْعَدَ الرَّجُلِ مِنِ امْرَأَتِهِ
أُرْعِدَتْ وَبَكَتْ فَقَالَ مَا يُبْكِيكِ أَأَكْرَهْتُكِ قَالَتْ لاَ
وَلَكِنَّهُ عَمَلٌ مَا عَمِلْتُهُ قَطُّ وَمَا حَمَلَنِي عَلَيْهِ إِلاَّ
الْحَاجَةُ فَقَالَ تَفْعَلِينَ أَنْتِ هَذَا وَمَا فَعَلْتِهِ اذْهَبِي فَهِيَ
لَكِ . وَقَالَ لاَ وَاللَّهِ لاَ أَعْصِي اللَّهَ بَعْدَهَا أَبَدًا .
فَمَاتَ مِنْ لَيْلَتِهِ فَأَصْبَحَ مَكْتُوبًا عَلَى بَابِهِ إِنَّ اللَّهَ قَدْ
غَفَرَ لِلْكِفْلِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . قَدْ
رَوَاهُ شَيْبَانُ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الأَعْمَشِ نَحْوَ هَذَا وَرَفَعُوهُ
وَرَوَى بَعْضُهُمْ عَنِ الأَعْمَشِ فَلَمْ يَرْفَعْهُ . وَرَوَى أَبُو بَكْرِ
بْنُ عَيَّاشٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الأَعْمَشِ فَأَخْطَأَ فِيهِ وَقَالَ عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ
وَهُوَ غَيْرُ مَحْفُوظٍ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الرَّازِيُّ هُوَ
كُوفِيٌّ وَكَانَتْ جَدَّتُهُ سُرِّيَّةً لِعَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ وَرَوَى
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الرَّازِيِّ عُبَيْدَةُ الضَّبِّيُّ
وَالْحَجَّاجُ بْنُ أَرْطَاةَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ كِبَارِ أَهْلِ الْعِلْمِ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একটি হাদিস বর্ণনা করতে
শুনেছি। আমি সে হাদীসটি তাঁকে একবার, দু’বার, এমনকি সাতবারের বেশী বর্ণনা করতে
শুনেছি। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ বনী
ইসরাঈলের মধ্যে ‘কিফ্ল’ নামক জনৈক ব্যক্তি কোন গুনাহ হতে বিরত থাকত না। কোন এক
সময় জনৈকা মহিলা (দারিদ্র্যক্লিষ্ট হয়ে) তার নিকটে আসলো। সে তাকে যেনা করার শর্তে
ষাট দীনার দিল। স্বামী যেমন স্ত্রীর উপর উঠে সে যখন তেমনই উঠল তখন মহিলা কাঁপতে
লাগল এবং কেঁদে ফেলল। সে প্রশ্ন করল, তুমি কাঁদছ কেন? আমি কি তোমার উপর
জোরযবরদস্তি করছি? মহিলা বলল, না; কিন্তু এ গুনাহর কাজটি আমি কখনো করিনি। প্রয়োজন
ও অভাব আজ আমাকে এ কাজ করতে বাধ্য করেছে। সে বলল, অভাবে পড়েই তুমি এসেছ এবং কখনও
তা করনি? তুমি চলে যাও এবং যা দিয়েছি এগুলো তোমার। সে বলল, আল্লাহ্ তা’আলার কসম !
এরপর হতে আমি আর কখনো আল্লাহ্ তা’আলার নাফারমানী করব না। ঐ রাতেই সে মারা গেল
সকাল হলে দেখা গেল তার বাড়ীর দরজায় লেখা রয়েছেঃ “আল্লাহ্ তা’আলা কিফ্লকে মাফ করে
দিয়েছেন”।
যঈফ, যঈফা (৪০৮৩)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান। শাইবান ও অন্যান্য রাবী
এটিকে আ’মাশের সূত্রে মারফূ হাদিস হিসাবে এ রকমই বর্ণনা করেছেন। কোন কোন রাবী এ হাদিস
আ’মাশের সূত্রে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু মারফূ হিসাবে নয়। আবূ বাক্র ইবনু আইয়্যাশ এ
হাদিস আ’মাশের সূত্রে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু সনদ বর্ণনায় ভুল করেছেন এবং বলেছেনঃ আবদুল্লাহ
ইবনু আবদুল্লাহ-সাঈদ ইবনু জুবাইর হতে তিনি ইবনু উমার (রাঃ) হতে। এটি সুরক্ষিত সনদ নয়।
আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ আর-রাযী কূফার অধিবাসী এবং তার দাদী ছিলেন আলী ইবনু আবূ তালিব
(রাঃ)-এর দাসী। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ আর-রাযীর বরাতে উবাইদা আয-যাব্বী, হাজ্জাজ
ইবনু আরতাত ও অপরাপর বিদ্বানগণ হাদিস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৯. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ
তা'আলা বান্দাহর তাওবায় অত্যধিক খুশি হন
২৪৯৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ سُوَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ، بِحَدِيثَيْنِ أَحَدُهُمَا عَنْ نَفْسِهِ، وَالآخَرُ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ عَبْدُ اللَّهِ إِنَّ الْمُؤْمِنَ يَرَى
ذُنُوبَهُ كَأَنَّهُ فِي أَصْلِ جَبَلٍ يَخَافُ أَنْ يَقَعَ عَلَيْهِ وَإِنَّ
الْفَاجِرَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَذُبَابٍ وَقَعَ عَلَى أَنْفِهِ قَالَ بِهِ هَكَذَا
فَطَارَ .
আল-হারিস
ইবনু সুয়াইদ (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের নিকট
আবদুল্লাহ (রাঃ) দুটি হাদীস বর্ণনা করেছেন, একটি তার পক্ষ হতে এবং আরেকটি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, ঈমানদার
লোক তার পাপকে এমনভাবে ভয় করে যেন সে পাহাড়ের গোড়ায় অবস্থান করছে, আর ভয় করছে
যে, পাহাড় ভেঙ্গে তার উপর পড়বে। আর অসৎ লোক তার পাপকে মনে করে যেন তার নাকের
ডগায় বসা একটি মাছি, হাত নাড়ালো আর অমনি তা উড়ে গেল।
সহীহঃ বুখারী (৬৩০৮), মুসলিম (৮/৯২)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৯৮
وَقَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَلَّهُ
أَفْرَحُ بِتَوْبَةِ أَحَدِكُمْ مِنْ رَجُلٍ بِأَرْضٍ دَوِيَّةٍ مُهْلِكَةٍ مَعَهُ
رَاحِلَتُهُ عَلَيْهَا زَادُهُ وَطَعَامُهُ وَشَرَابُهُ وَمَا يُصْلِحُهُ
فَأَضَلَّهَا فَخَرَجَ فِي طَلَبِهَا حَتَّى إِذَا أَدْرَكَهُ الْمَوْتُ قَالَ
أَرْجِعُ إِلَى مَكَانِي الَّذِي أَضْلَلْتُهَا فِيهِ فَأَمُوتُ فِيهِ فَرَجَعَ
إِلَى مَكَانِهِ فَغَلَبَتْهُ عَيْنُهُ فَاسْتَيْقَظَ فَإِذَا رَاحِلَتُهُ عِنْدَ
رَأْسِهِ عَلَيْهَا طَعَامُهُ وَشَرَابُهُ وَمَا يُصْلِحُهُ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
وَالنُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم .
বর্ণনাকারী
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আরো বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের
কারো তাওবায় সেই ব্যক্তির চেয়েও বেশি সন্তুষ্ট হন, যে এমন এক জন-মানবশূন্য
প্রান্তরে যাত্রা করেছে, যেখানে পদে পদে ভয়, আতংকজনক ও ভীতিপূর্ণ অবস্থা। তার সাথে
আছে একটি জন্তুযান, এর উপর তার আহার-পানীয় ও অন্যান্য মাল সামান। হঠাৎ জন্তুটি
হারিয়ে গেল। সে তা খোঁজ করতে লাগলো। অবশেষে সে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় মৃতপ্রায় হয়ে গেল।
মনে মনে সে বললো, আমি জন্তুটি যে জায়গায় হারিয়েছি সে জায়গায় গিয়েই মৃত্যুবরণ করবো।
তারপর সে পূর্বের জায়গায় ফিরে এলো এবং গভীর ঘুমে অচেতন হলো। সে জেগে উঠে দেখতে
পেলো যে, তার জন্তুযানটি তার শিয়রে দাঁড়ানো এবং তার পিঠে খাবার-পানীয় ও অন্যান্য
বস্তু-সামগ্রী যথাযথ আছে। (এই ব্যক্তি হারানো জন্তু ও বস্তু-সামগ্রী পেয়ে যেমন
আহলাদিত হয়, আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাহর তাওবাতে এর চেয়েও বেশি তুষ্ট হন)।
সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। আবূ হুরাইরা, নু‘মান
ইবনু বাশীর ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর সূত্রেও এই অনুচ্ছেদে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৯৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ،
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَسْعَدَةَ الْبَاهِلِيُّ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ
أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " كُلُّ ابْنِ آدَمَ
خَطَّاءٌ وَخَيْرُ الْخَطَّائِينَ التَّوَّابُونَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَلِيِّ بْنِ
مَسْعَدَةَ عَنْ قَتَادَةَ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষ মাত্রই গুনাহগার (অপরাধী)। আর গুনাহগারদের
মধ্যে তাওবাহকারীরাই উত্তম।
হাসানঃ ইবনু মা-জাহ (৪২৫১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি গারীব। আমরা এই হাদীসটি শুধুমাত্র
আলী ইবনু মাসআদা হতে কাতাদা (রাহঃ)- এর সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৫০. অনুচ্ছেদঃ
উত্তম
কথা বল অন্যথায় চুপ থাকো
২৫০০
حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ،
عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ
بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ
بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ
وَأَنَسٍ وَأَبِي شُرَيْحٍ الْعَدَوِيِّ الْكَعْبِيِّ الْخُزَاعِيِّ وَاسْمُهُ خُوَيْلِدُ
بْنُ عَمْرٍو .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক আল্লাহ তা‘আলা ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস
রাখে, সে যেন তার অতিথির অভ্যর্থনা ও আদর-যত্ন করে। আর যে লোক আল্লাহ তা‘আলা ও
আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা নীরব থাকে।
সহীহঃ ইরওয়া (২৫২৫), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ। ‘আয়িশাহ, আনাস, আবূ শুরাইহ
আল-কাবী (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ শুরাইহ আল-কাবী হলেন আল-আদাবী,
তার নাম খুওয়াইলিদ ইবনু ‘আমর।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫০১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ
عَمْرٍو الْمُعَافِرِيِّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" مَنْ صَمَتَ نَجَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ لَهِيعَةَ . وَأَبُو عَبْدِ
الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيُّ هُوَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক নীরব থাকলো, সে নাজাত (মুক্তি)
পেলো।
সহীহঃ সহীহাহ (৫৩৫)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি গারীব। আমরা এই হাদীস প্রসঙ্গে
শুধুমাত্র ইবনু লাহীআর বর্ণনা হতেই জেনেছি। আবূ ‘আবদুর রাহমান আল-হুবালীর নাম ‘আবদুল্লাহ
ইবনু ইয়াযীদ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫১. অনুচ্ছেদঃ
ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ
করা বা নকল সাজা নিষেধ
২৫০২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَلِيِّ
بْنِ الأَقْمَرِ، عَنْ أَبِي حُذَيْفَةَ، وَكَانَ، مِنْ أَصْحَابِ ابْنِ مَسْعُودٍ
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ حَكَيْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً فَقَالَ
" مَا يَسُرُّنِي أَنِّي حَكَيْتُ رَجُلاً وَأَنَّ لِي كَذَا وَكَذَا
" . قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ صَفِيَّةَ امْرَأَةٌ
وَقَالَتْ بِيَدِهَا هَكَذَا كَأَنَّهَا تَعْنِي قَصِيرَةً . فَقَالَ "
لَقَدْ مَزَجْتِ بِكَلِمَةٍ لَوْ مَزَجْتِ بِهَا مَاءَ الْبَحْرِ لَمُزِجَ
" .
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময়
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি জনৈক ব্যক্তির চালচলন নকল করে
দেখালাম। তিনি বললেনঃ আমাকে এই পরিমাণ সম্পদ প্রদান করা হলেও কারো চালচলন নকল করা
আমাকে আনন্দ দেয় না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! সাফিয়্যা তো বামন মহিলা লোক, এই বলে তিনি তা
হাতের ইশারায় দেখালেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
তুমি এমন একটি কথার দ্বারা বিদ্রুপ করেছো, তা সাগরের পানির সাথে মিশালেও তা উক্ত
পানিকে দূষিত করে ফেলতো।
সহীহঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৪৮৫৩, ৪৮৫৭), গাইয়াতুল মারাম (৪২৭)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫০৩
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَلِيِّ
بْنِ الأَقْمَرِ، عَنْ أَبِي حُذَيْفَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا أُحِبُّ أَنِّي حَكَيْتُ أَحَدًا
وَأَنَّ لِي كَذَا وَكَذَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَأَبُو حُذَيْفَةَ هُوَ كُوفِيٌّ مِنْ أَصْحَابِ ابْنِ مَسْعُودٍ
وَيُقَالُ اسْمُهُ سَلَمَةُ بْنُ صُهَيْبَةَ .
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাকে এত এত পরিমাণ সম্পদ দিলেও আমি
কারো বিকৃত করে নকল করা পছন্দ করি না।
সহীহঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব ছানী (৪৮৫৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। আবূ হুজাইফা আল-কূফী
ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)-এর শিষ্যগণের অন্তর্ভুক্ত। তার নাম সালামা ইবনু সুহাইবাহ বলে পরিচিত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫২. অনুচ্ছেদঃ
উত্তম
মুসলিম
২৫০৪
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعِيدٍ الْجَوْهَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو
أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا بُرَيْدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ
أَبِي مُوسَى، قَالَ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ
الْمُسْلِمِينَ أَفْضَلُ قَالَ " مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ
لِسَانِهِ وَيَدِهِ " . هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ أَبِي مُوسَى .
আবূ
মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হলোঃ সবচেয়ে ভাল মুসলিম কে?
তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তির জিহ্বা (কথাবার্তা) ও হাত (কাজ) হতে মুসলিমগণ নির্বিঘ্ন
থাকে।
সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ এবং আবূ মূসা (রাঃ)-এর
সূত্রে বর্ণিত হাদীস হিসাবে গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৩. অনুচ্ছেদঃ
গুনাহ
থেকে তাওবাকারীকে খোঁটা দেয়া নিষেধ
২৫০৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْحَسَنِ
بْنِ أَبِي يَزِيدَ الْهَمْدَانِيُّ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ
مَعْدَانَ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " مَنْ عَيَّرَ أَخَاهُ بِذَنْبٍ لَمْ يَمُتْ حَتَّى يَعْمَلَهُ
" . قَالَ أَحْمَدُ مِنْ ذَنْبٍ قَدْ تَابَ مِنْهُ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَلَيْسَ إِسْنَادُهُ بِمُتَّصِلٍ . وَخَالِدُ
بْنُ مَعْدَانَ لَمْ يُدْرِكْ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ وَرُوِيَ عَنْ خَالِدِ بْنِ
مَعْدَانَ أَنَّهُ أَدْرَكَ سَبْعِينَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم . وَمَاتَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ فِي خِلاَفَةِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ
وَخَالِدُ بْنُ مَعْدَانَ رَوَى عَنْ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ أَصْحَابِ مُعَاذٍ عَنْ
مُعَاذٍ غَيْرَ حَدِيثٍ .
মুআয
ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি তার কোন ভাইকে কোন গুনাহর
জন্য লজ্জা দিলে সে উক্ত গুনাহে না জড়িয়ে পরা পর্যন্ত মারা যাবে না।
মাওযূ, যঈফা (১৭৮)
আহমাদ (রাহঃ) বলেন, এ গুনাহ্র অর্থ হল, যা হতে সে তাওবা
করেছে।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি গারীব। এর সনদ সূত্র মুত্তাসিল নয়। খালিদ ইবনু মা’দান (রাহঃ)
মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ)-এর দেখা পাননি। খালিদ ইবনু মা’দান (রাহঃ) হতে বর্ণিত আছে যে,
তিনি সত্তরজন সাহাবীর দেখা পান। মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-এর
খিলাফাত কালে মারা যান। খালিদ ইবনু মা’দান উক্ত হাদিস ছাড়াও মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ)-এর
বহু শাগরিদের সূত্রে তার থেকে আরও হাদিস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৫৪. অনুচ্ছেদঃ
কারো
বিপদে আনন্দ প্রকাশ নিষিদ্ধ
২৫০৬
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُجَالِدِ بْنِ سَعِيدٍ
الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، ح قَالَ وَأَخْبَرَنَا سَلَمَةُ
بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا أُمَيَّةُ بْنُ الْقَاسِمِ الْحَذَّاءُ الْبَصْرِيُّ،
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنْ بُرْدِ بْنِ سِنَانٍ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ
وَاثِلَةَ بْنِ الأَسْقَعِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" لاَ تُظْهِرِ الشَّمَاتَةَ لأَخِيكَ فَيَرْحَمُهُ اللَّهُ وَيَبْتَلِيكَ
" . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَمَكْحُولٌ قَدْ سَمِعَ
مِنْ وَاثِلَةَ بْنِ الأَسْقَعِ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَأَبِي هِنْدٍ الدَّارِيِّ
وَيُقَالُ إِنَّهُ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أَحَدٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم إِلاَّ مِنْ هَؤُلاَءِ الثَّلاَثَةِ . وَمَكْحُولٌ شَامِيٌّ يُكْنَى
أَبَا عَبْدِ اللَّهِ وَكَانَ عَبْدًا فَأُعْتِقَ وَمَكْحُولٌ الأَزْدِيُّ
بَصْرِيٌّ سَمِعَ مِنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ يَرْوِي عَنْهُ عُمَارَةُ بْنُ
زَاذَانَ .
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ
تَمِيمِ بْنِ عَطِيَّةَ، قَالَ كَثِيرًا مَا كُنْتُ أَسْمَعُ مَكْحُولاً يُسْأَلُ
فَيَقُولُ نَدَانَمْ .
ওয়াসিলা
ইবনুল আসকা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমার কোন ভাইয়ের বিপদে তুমি আনন্দ
প্রকাশ করো না। অন্যথায় আল্লাহ্ তা’আলা তাকে দয়া করবেন এবং তোমাকে সেই বিপদে
নিক্ষিপ্ত করবেন।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৪৮৫৬)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। মাকহূল (রাহঃ) ওয়াসিলা
ইবনুল আসকা’, আনাস ইবনু মালিক ও আবূ হিন্দ আদ-দারী (রাঃ)-এর নিকট হাদিস শুনেছেন। আরও
কথিত আছে যে, মাকহূল (রাহঃ) এই তিনজন সাহাবী ব্যতীত আর কোন সাহাবীর নিকট হাদিস শুনেননি।
মাকহূল শামীর উপনাম আবূ আবদুল্লাহ এবং তিনি ছিলেন ক্রীতদাস, পরে তাকে দাসত্বমুক্ত করা
হয়। আর বসরার অধিবাসী মাকহূল আল-আযদী (রাহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ)-এর নিকট হাদিস
শুনেছেন এবং তার সূত্রে উমারা ইবনু যাযান হাদিস বর্ণনা করেছেন।
আলী ইবনু হুজর হতে ইসমাইল ইবনু আইয়্যাশ-এর সূত্রে তামীম-আতিয়া (রাহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, ‘মাকহূল’ কে কোন কিছু প্রশ্ন করা হলে বেশীরভাগ সময়ই আমি তাঁকে বলতে শুনেছি,
“আমি জানি না”।
উত্তম সনদ তবে তা বিচ্ছিন্ন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৫৫. অনুচ্ছেদঃ
মানুষের
সাথে মেলামেশাকারী ও তাদের কষ্ট সহ্যকারী ব্যক্তিই উত্তম
২৫০৭
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا ابْنُ
أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ الأَعْمَشِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ
وَثَّابٍ، عَنْ شَيْخٍ، مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ الْمُسْلِمَ إِذَا كَانَ
مُخَالِطًا النَّاسَ وَيَصْبِرُ عَلَى أَذَاهُمْ خَيْرٌ مِنَ الْمُسْلِمِ الَّذِي
لاَ يُخَالِطُ النَّاسَ وَلاَ يَصْبِرُ عَلَى أَذَاهُمْ " . قَالَ أَبُو
مُوسَى قَالَ ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ كَانَ شُعْبَةُ يَرَى أَنَّهُ ابْنُ عُمَرَ .
ইয়াহইয়া
ইবনু ওয়াস্সাব (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে মুসলিম মানুষের সাথে মেলামেশা করে এবং তাদের দেয়া
যন্ত্রণায় ধৈর্য ধারণ করে সে এমন মুসলিমের চেয়ে উত্তম যে মানুষের সাথে মেলামেশাও
করে না এবং তাদের দেয়া যন্ত্রণায় ধৈর্যও ধরে না।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪০৩২)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, ইবনু আবূ আদী বলেছেন, শুবা মনে করতেন যে,
উক্ত সাহাবী ইবনু উমার (রাঃ)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৬. অনুচ্ছেদঃ
পরস্পর
সুসম্পর্ক স্থাপন ও বিদ্বেষ বর্জন
২৫০৮
حَدَّثَنَا أَبُو يَحْيَى، مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ
الْبَغْدَادِيُّ حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ جَعْفَرٍ الْمَخْرَمِيُّ، هُوَ مِنْ وَلَدِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ عَنْ
عُثْمَانَ بْنِ مُحَمَّدٍ الأَخْنَسِيِّ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِيَّاكُمْ
وَسُوءَ ذَاتِ الْبَيْنِ فَإِنَّهَا الْحَالِقَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَمَعْنَى قَوْلِهِ
" وَسُوءَ ذَاتِ الْبَيْنِ " . إِنَّمَا يَعْنِي الْعَدَاوَةَ
وَالْبَغْضَاءَ وَقَوْلُهُ " الْحَالِقَةُ " . يَقُولُ إِنَّهَا
تَحْلِقُ الدِّينَ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করা হতে নিবৃত্ত
থাকো। যেহেতু, তা দ্বীনকে মুন্ডন (বিনাশ) করে দেয়।
হাসানঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব ছানী (৫০৪১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ, তবে এই সূত্রে গারীব।
“সূআযাতিল বাইন” কথার অর্থঃ পরস্পর শত্রুতা ও হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ। আর “আল-হালিকাতু”
শব্দের অর্থঃ দ্বীনকে মুন্ডনকারী (বিনাশকারী)।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৫০৯
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ أُمِّ
الدَّرْدَاءِ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَفْضَلَ مِنْ دَرَجَةِ الصِّيَامِ
وَالصَّلاَةِ وَالصَّدَقَةِ " . قَالُوا بَلَى . قَالَ "
صَلاَحُ ذَاتِ الْبَيْنِ فَإِنَّ فَسَادَ ذَاتِ الْبَيْنِ هِيَ الْحَالِقَةُ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَيُرْوَى عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " هِيَ الْحَالِقَةُ لاَ
أَقُولُ تَحْلِقُ الشَّعْرَ وَلَكِنْ تَحْلِقُ الدِّينَ " .
আবুদ
দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি কি তোমাদেরকে নামায, রোযা ও
সাদাকাহর চেয়ে উত্তম কাজ প্রসঙ্গে অবহিত করবো না? সাহাবীগণ বলেন, হ্যাঁ। তিনি
বললেনঃ পরস্পর সুসম্পর্ক স্থাপন। কারণ, পরস্পর সুসম্পর্ক নষ্ট হওয়ার অর্থ হলো
দ্বীন বিনাশ হওয়া।
সহীহঃ গাইয়াতুল মারাম (৪১৪), মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৫০৩৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ। নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আরো বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ “এটা মুন্ডন করে দেয়। আমি বলছি
না যে, তা মাথা মুড়িয়ে দেয়, বরং তা দ্বীনকে মুন্ডন করে দেয় (বিনাশ করে)”।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫১০
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، عَنْ حَرْبِ بْنِ شَدَّادٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ
يَعِيشَ بْنِ الْوَلِيدِ، أَنَّ مَوْلَى الزُّبَيْرِ، حَدَّثَهُ أَنَّ الزُّبَيْرَ
بْنَ الْعَوَّامِ حَدَّثَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
دَبَّ إِلَيْكُمْ دَاءُ الأُمَمِ قَبْلَكُمُ الْحَسَدُ وَالْبَغْضَاءُ هِيَ
الْحَالِقَةُ لاَ أَقُولُ تَحْلِقُ الشَّعْرَ وَلَكِنْ تَحْلِقُ الدِّينَ
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلاَ
تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا أَفَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِمَا يُثَبِّتُ ذَاكُمْ
لَكُمْ أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ قَدِ اخْتَلَفُوا فِي رِوَايَتِهِ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ
فَرَوَى بَعْضُهُمْ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ يَعِيشَ بْنِ الْوَلِيدِ
عَنْ مَوْلَى الزُّبَيْرِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يَذْكُرُوا
فِيهِ عَنِ الزُّبَيْرِ .
যুবাইর
ইবনুল আওয়াম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের আগেকার উম্মাতদের রোগ তোমাদের মধ্যেও
সংক্রমিত হয়েছে। তা হলো পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃণা। আর এই রোগ মুন্ডন করে দেয়।
আমি বলছি না যে, চুল মুন্ডন করে দেয়, বরং এটা দ্বীনকে মুন্ডন (বিনাশ) করে দেয়। সেই
মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার জীবন! তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে
প্রবেশ করবে না। তোমরা যদি পরস্পরকে না ভালবাস তাহলে ঈমানদার হতে পারবে না। আমি কি
তোমাদেরকে বলবো না যে, পারস্পারিক ভালবাসা কোন কাজের মাধ্যমে মজবুত হয়? তোমরা
পরস্পর সালামের বিস্তার ঘটাও।
হাসানঃ তা’লীকুর রাগীব (৩/১২), ইরওয়া (২৩৮), তাখরীজু মুশকিলাতিল ফাকর (২০),
গাইয়াতুল মারাম (৪১৪), সহীহুল আদব (১৯৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর হতে
বর্ণনার ক্ষেত্রে বর্ণনাকারীগণ মতবিরোধ করেছেন। তাদের অনেকে এই হাদীসটি ইয়াহইয়া ইবনু
আবূ কাসীর-ইয়াঈশ ইবনুল ওয়ালীদ হতে, তিনি যুবাইরের আযাদকৃত গোলাম হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন এবং সনদের মধ্যে যুবাইর (রাঃ)-এর
নাম যুক্ত করেননি।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৫৭. অনুচ্ছেদঃ
দু’টি
পাপের শাস্তি দুনিয়াতে এবং পরকালেও দেয়া হয়
২৫১১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عُيَيْنَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي
بَكْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ
ذَنْبٍ أَجْدَرُ أَنْ يُعَجِّلَ اللَّهُ لِصَاحِبِهِ الْعُقُوبَةَ فِي الدُّنْيَا
مَعَ مَا يَدَّخِرُ لَهُ فِي الآخِرَةِ مِنَ الْبَغْىِ وَقَطِيعَةِ الرَّحِمِ
" . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (ন্যায়পরায়ণ শাসকের বিরুদ্ধে) বিদ্রোহ
ও রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার মতো মারাত্মক আর কোন পাপ নেই, আল্লাহ
তা‘আলা যার সাজা পৃথিবীতেও প্রদান করেন এবং আখিরাতের জন্যও অবশিষ্ট রাখেন।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪২১১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৮. অনুচ্ছেদঃ
দ্বীনের
ব্যাপারে উচ্চশ্রেণীর এবং দুনিয়াবী ব্যাপারে নিম্নশ্রেণীর লোকের প্রতি দৃষ্টিপাত
করা
২৫১২
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنِ
الْمُثَنَّى بْنِ الصَّبَّاحِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" خَصْلَتَانِ مَنْ كَانَتَا فِيهِ كَتَبَهُ اللَّهُ شَاكِرًا صَابِرًا
وَمَنْ لَمْ تَكُونَا فِيهِ لَمْ يَكْتُبْهُ اللَّهُ شَاكِرًا وَلاَ صَابِرًا مَنْ
نَظَرَ فِي دِينِهِ إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَهُ فَاقْتَدَى بِهِ وَنَظَرَ فِي
دُنْيَاهُ إِلَى مَنْ هُوَ دُونَهُ فَحَمِدَ اللَّهَ عَلَى مَا فَضَّلَهُ بِهِ
عَلَيْهِ كَتَبَهُ اللَّهُ شَاكِرًا صَابِرًا وَمَنْ نَظَرَ فِي دِينِهِ إِلَى
مَنْ هُوَ دُونَهُ وَنَظَرَ فِي دُنْيَاهُ إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَهُ فَأَسِفَ
عَلَى مَا فَاتَهُ مِنْهُ لَمْ يَكْتُبْهُ اللَّهُ شَاكِرًا وَلاَ صَابِرًا
" .
أَخْبَرَنَا مُوسَى بْنُ حِزَامٍ الرَّجُلُ الصَّالِحُ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ
إِسْحَاقَ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا
الْمُثَنَّى بْنُ الصَّبَّاحِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ وَلَمْ يَذْكُرْ سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ فِي حَدِيثِهِ عَنْ أَبِيهِ
.
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যার মধ্যে দু’টি বৈশিষ্ট্য
রয়েছে, আল্লাহ্ তা’আলা কৃতজ্ঞ ও ধৈর্যশীলদের মধ্যে তার নাম লিখে রাখেন। আর যার
মধ্যে এ দু’টি বৈশিষ্ট্য নেই, আল্লাহ্ তা’আলা কৃতজ্ঞ ও ধৈর্যশীলদের দলে তার নাম
লিখেন না। যে ব্যক্তি ধর্মীয় ব্যাপারে তার চাইতে উঁচু স্তরের লোকের দিকে দেখে এবং
তার অনুসরণ করে; আর পার্থিব ব্যাপারে তার চাইতে নীচু স্তরের লোকের দিকে দেখে এবং
আল্লাহ্ তা’আলা তাকে সে লোকের উপর যে মর্যাদা ও নি’আমাত দান করেছেন তার শুকরিয়া
আদায় করে এবং আল্লাহ্ তা’আলার প্রশংসা করে, আল্লাহ্ তা’আলা তার নাম কৃতজ্ঞ ও
ধৈর্যশীলদের দলে লিখে রাখেন। আর যে ব্যক্তি ধর্মীয় ব্যাপারে তার চাইতে নিম্নমানের
লোকের দিকে এবং পার্থিব ব্যাপারে তার চাইতে উঁচু স্তরের লোকের দিকে দেখে এবং তার
কাছে পার্থিব সামগ্রী না থাকার কারণে আফসোস করে, আল্লাহ্ তা’আলা তার নাম কৃতজ্ঞ ও
ধৈর্যশীল বান্দাদের দলে লিখেন না।
য’ঈফ, য’ঈফাহ্- হাঃ নং- ৬৩৩, ১৯২৪
মূসা ইবনু হিশাম-‘আলী ইবনু ইসহাক হতে তিনি ‘আবদুল্লাহ
ইবনুল মুবারাক হতে তিনি মুসান্না ইবনুস সাব্বাহ হতে তিনি ‘আমর ইবনু শু’আইব (রহঃ) হতে
তিনি তাঁর পিতা হতে স্বীয় দাদার সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে উপরোক্ত হাদিসের সমার্থবোধক হাদিস বর্ণনা করেছেন। এ হাদিসটি হাসান ও গারীব। সুওয়াইদ
ইবনু নাসর তার সনদসূত্রে “তার পিতা থেকে” কথাটুকু উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৫১৩
ব্যাখ্যা
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " انْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ
مِنْكُمْ وَلاَ تَنْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ فَإِنَّهُ أَجْدَرُ أَنْ
لاَ تَزْدَرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ " . هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ
.
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের চেয়ে কম সম্পদশালী
মানুষদের প্রতি (পার্থিব ব্যাপারে) দৃষ্টি দিও, তোমাদের চেয়ে ধনশালী মানুষদের দিকে
নয়। এতে করে তোমাদেরকে আল্লাহ তা‘আলার দেয়া নি‘আমাতসমূহ নগন্য মনে হবে না।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪১৪২), মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৯. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে সাহাবীগণের এক অবস্থা এবং পরে অন্য
অবস্থা
২৫১৪
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ
سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدٍ الْجُرَيْرِيِّ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ
عَبْدِ اللَّهِ الْبَزَّازُ، حَدَّثَنَا سَيَّارٌ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ
سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدٍ الْجُرَيْرِيِّ الْمَعْنَى، وَاحِدٌ، عَنْ أَبِي
عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ حَنْظَلَةَ الأُسَيْدِيِّ، وَكَانَ، مِنْ كُتَّابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ مَرَّ بِأَبِي بَكْرٍ وَهُوَ يَبْكِي
فَقَالَ مَا لَكَ يَا حَنْظَلَةُ قَالَ نَافَقَ حَنْظَلَةُ يَا أَبَا بَكْرٍ
نَكُونُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُذَكِّرُنَا بِالنَّارِ
وَالْجَنَّةِ كَأَنَّا رَأْىَ عَيْنٍ فَإِذَا رَجَعْنَا إِلَى الأَزْوَاجِ
وَالضَّيْعَةِ نَسِينَا كَثِيرًا . قَالَ فَوَاللَّهِ إِنَّا لَكَذَلِكَ
انْطَلِقْ بِنَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَانْطَلَقْنَا
فَلَمَّا رَآهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَا لَكَ يَا
حَنْظَلَةُ " . قَالَ نَافَقَ حَنْظَلَةُ يَا رَسُولَ اللَّهِ نَكُونُ
عِنْدَكَ تُذَكِّرُنَا بِالنَّارِ وَالْجَنَّةِ كَأَنَّا رَأْىَ عَيْنٍ فَإِذَا
رَجَعْنَا عَافَسْنَا الأَزْوَاجَ وَالضَّيْعَةَ وَنَسِينَا كَثِيرًا . قَالَ
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَوْ تَدُومُونَ عَلَى
الْحَالِ الَّذِي تَقُومُونَ بِهَا مِنْ عِنْدِي لَصَافَحَتْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ
فِي مَجَالِسِكُمْ وَفِي طُرُقِكُمْ وَعَلَى فُرُشِكُمْ وَلَكِنْ يَا حَنْظَلَةُ
سَاعَةً وَسَاعَةً وَسَاعَةً " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
হানযালা
আল-উসাইদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সচিবগণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি কোন
একদিন কাঁদতে কাঁদতে আবূ বাকর (রাঃ) এর সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আবূ বাকর (রাঃ)
তাঁকে প্রশ্ন করেন, হে হানযালা! তোমার কি হয়েছে? তিনি বললেন, হে আবূ বাকর! হানযালা
তো মুনাফিক্ব হয়ে গেছে। আমরা যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
মাজলিসে অবস্থান করি এবং তিনি আমাদেরকে জান্নাত-জাহান্নামের স্মরণে নাসীহাত করেন,
তখন মনে হয় যেন আমরা সেগুলো স্বচক্ষে দেখছি। কিন্তু বাড়ি ফিরে আসার পর
স্ত্রী-পুত্র-পরিজন ও বিষয়-সম্পদের কাজে ব্যাকুল হয়ে পড়ি এবং অনেক কিছুই ভুলে যাই।
আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! আমাদেরও তো এই অবস্থা। চলো আমরা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যাই। তারপর আমরা সেদিকে যাত্রা শুরু
করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে দেখে প্রশ্ন করেন,
হে হানযালা! কি সংবাদ? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)! হানযালা তো মুনাফিক্ব হয়ে গেছে। আমরা যখন আপনার নিকটে থাকি আর আপনি
জান্নাত-জাহান্নামের নাসীহাত করেন, তখন মনে হয় যেন আমরা সেগুলো প্রত্যক্ষভাবে
দেখছি। পরে যখন বাড়ি ফিরে গিয়ে স্ত্রী-পুত্র-পরিজন ও বিষয়-সম্পদের কাজে ব্যাকুল হয়ে
পড়ি তখন অনেক কিছুই ভুলে যাই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ তোমরা আমার নিকট হতে যে অবস্থায় ফিরে যাও, যদি সবসময় সেই অবস্থায় থাকতে
তাহলে অবশ্যই তোমাদের বৈঠকে, বিছানায় এবং পথে-ঘাটে ফেরেশতারা তোমাদের সাথে
মুসাফাহা (করমর্দন) করতো। হে হানযালা! সেই অবস্থা মাঝে মধ্যে হয়ে থাকে।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪২৩৬), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫১৫
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لأَخِيهِ
مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি নিজের জন্য যা পছন্দ করে
সেটা তার ভাইয়ের জন্যও পছন্দ না করা পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৬৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫১৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى، أَخْبَرَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ، وَابْنُ، لَهِيعَةَ
عَنْ قَيْسِ بْنِ الْحَجَّاجِ، قَالَ وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ،
حَدَّثَنِي قَيْسُ بْنُ الْحَجَّاجِ الْمَعْنَى، وَاحِدٌ، عَنْ حَنَشٍ
الصَّنْعَانِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كُنْتُ خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَوْمًا فَقَالَ " يَا غُلاَمُ إِنِّي أُعَلِّمُكَ كَلِمَاتٍ
احْفَظِ اللَّهَ يَحْفَظْكَ احْفَظِ اللَّهَ تَجِدْهُ تُجَاهَكَ إِذَا سَأَلْتَ
فَاسْأَلِ اللَّهَ وَإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ وَاعْلَمْ أَنَّ
الأُمَّةَ لَوِ اجْتَمَعَتْ عَلَى أَنْ يَنْفَعُوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوكَ
إِلاَّ بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ لَكَ وَلَوِ اجْتَمَعُوا عَلَى أَنْ
يَضُرُّوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوكَ إِلاَّ بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ
عَلَيْكَ رُفِعَتِ الأَقْلاَمُ وَجَفَّتِ الصُّحُفُ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময়
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে ছিলাম। তিনি বললেনঃ
হে তরুণ! আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিখিয়ে দিচ্ছি- তুমি আল্লাহ তা‘আলার
(বিধি-নিষেধের) রক্ষা করবে, আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে রক্ষা করবেন। তুমি আল্লাহ তা‘আলার
সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখবে, আল্লাহ তা‘আলাকে তুমি কাছে পাবে। তোমার কোন কিছু
চাওয়ার প্রয়োজন হলে আল্লাহ তা‘আলার নিকট চাও, আর সাহায্য প্রার্থনা করতে হলে
আল্লাহ তা‘আলার নিকটেই কর। আর জেনে রাখো, যদি সকল উম্মাতও তোমার কোন উপকারের
উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে ততটুকু উপকারই করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তা‘আলা
তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। অপরদিকে যদি সকল উম্মাত তোমার কোন ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে
একতাবদ্ধ হয়, তাহলে ততটুকু ক্ষতিই করতে সক্ষম হবে, যতটুকু আল্লাহ তা‘আলা তোমার
তাক্বদিরে লিখে রেখেছেন। কলম তুলে নেয়া হয়েছে এবং লিখিত কাগজসমূহও শুকিয়ে গেছে।
সহীহঃ মিশকাত (৫৩০২), যিলালুল জান্নাত (৩১৬-৩১৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬০. অনুচ্ছেদঃ
উট
বাঁধো তারপর তাওয়াক্কুল (ভরসা) কর
২৫১৭
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ بْنُ أَبِي قُرَّةَ السَّدُوسِيُّ،
قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَعْقِلُهَا وَأَتَوَكَّلُ أَوْ أُطْلِقُهَا وَأَتَوَكَّلُ قَالَ "
اعْقِلْهَا وَتَوَكَّلْ " . قَالَ عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ قَالَ يَحْيَى
وَهَذَا عِنْدِي حَدِيثٌ مُنْكَرٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
مِنْ حَدِيثِ أَنَسٍ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَقَدْ رُوِيَ
عَنْ عَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ الضَّمْرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
نَحْوُ هَذَا .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বললেন কোন একজন লোক
বললো, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি কি সেটা (উট)
বেঁধে রেখে আল্লাহর তা’আলার উপর ভরসা করবো, না বাঁধন খুলে রেখে আল্লাহ্ তা'আলার
উপর ভরসা করবো? তিনি বললেনঃ তুমি সেটা বেঁধে রেখে (আল্লাহ্ তা'আলার উপর) ভরসা করবে।
হাসানঃ তাখরীজুল মুশকিলাহ (২২)।
ইয়াহ্ইয়া বলেন, আমার মতে এর হাদীসটি 'মুন্কার'। আবু 'ঈসা
বলেন, এই হাদীসটি আনাস (রাঃ)-এর বর্ণনা হিসাবে গারীব। শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই আমরা
এর হাদীসটি জেনেছি। ‘আম্র ইবনু উমাইয়্যা (রাঃ)-সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে উপরোক্ত হাদীসের মতো হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৫১৮
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
إِدْرِيسَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ أَبِي
الْحَوْرَاءِ السَّعْدِيِّ، قَالَ قُلْتُ لِلْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ مَا حَفِظْتَ
مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ حَفِظْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لاَ يَرِيبُكَ فَإِنَّ
الصِّدْقَ طُمَأْنِينَةٌ وَإِنَّ الْكَذِبَ رِيبَةٌ " . وَفِي الْحَدِيثِ
قِصَّةٌ . قَالَ وَأَبُو الْحَوْرَاءِ السَّعْدِيُّ اسْمُهُ رَبِيعَةُ بْنُ
شَيْبَانَ . قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
حَدَّثَنَا بُنْدَارٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ،
عَنْ بُرَيْدٍ، فَذَكَرَ نَحْوَهُ .
আবুল
হাওরা আস-সা'দী (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাসান ইবনু
'আলী (রাঃ)-কে আমি প্রশ্ন করলাম, আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে কোন কথাটা মনে রেখেছেন? তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই কথাটি মনে রেখেছিঃ যে বিষয়ে তোমার সন্দেহ হয়, তা ছেড়ে
দিয়ে যাতে সন্দেহের সম্ভাবনা নেই তা গ্রহণ কর। যেহেতু, সত্য হলো শান্তি ও স্বস্তি
এবং মিথ্যা হলো দ্বিধা-সন্দেহ।
সহীহঃ ইরওয়াহ্ (১২, ২০৭৪), আযযিলাল (১৭৯), আর রাওযুন নাযীর (১৫২)। এ হাদীসটিতে আরো
বক্তব্য আছে।
আবুল হাওরা আস-সা'দীর নাম রাবী'আহ্ ইবনু শাইবান। আবূ
'ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি সহীহ। বুনদার মুহাম্মাদ ইবনু জাফর হতে, তিনি শু'বাহ্ হতে, তিনি
বুরাইদ (রাহঃ)-এর সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের সমার্থবোধক হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫১৯
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَخْزَمَ الطَّائِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيمُ بْنُ أَبِي الْوَزِيرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ
الْمَخْرَمِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ نُبَيْهٍ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ ذُكِرَ رَجُلٌ عِنْدَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِعِبَادَةٍ وَاجْتِهَادٍ وَذُكِرَ عِنْدَهُ آخَرُ
بِرِعَةٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَعْدِلْ
بِالرِّعَةِ " . وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ هُوَ مِنْ وَلَدِ
الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ وَهُوَ مَدَنِيٌّ ثِقَةٌ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
هَذَا الْوَجْهِ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সামনে কোন এক ব্যক্তির ‘ইবাদাত-বন্দিগী ও
কঠোর সাধনার কথা এবং অন্য ব্যক্তির পরহিযগারী ও আল্লাহ্ ভীতি প্রসঙ্গে উল্লেখ করা
হল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কোন কিছুই পরহেযগারী ও
খোদাভীতির সমতুল্য হতে পারে না।
য’ঈফ, য’ঈফাহ্- হাঃ নং-৪৮১৭
‘আবদুল্লাহ ইবনু জাফর হলেন মিসওয়ার ইবনু মাখরামার সন্তান।
তিনি মাদীনার অধিবাসী এবং হাদিস শাস্ত্রবিদগণের মতে নির্ভরযোগ্য রাবী। আবূ ‘ঈসা বলেন,
এ হাদিসটি গারীব। শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই আমরা এ হাদিস জেনেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৫২০
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، وَأَبُو زُرْعَةَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ قَالُوا
أَخْبَرَنَا قَبِيصَةُ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ مِقْلاَصٍ
الصَّيْرَفِيِّ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ
أَكَلَ طَيِّبًا وَعَمِلَ فِي سُنَّةٍ وَأَمِنَ النَّاسُ بَوَائِقَهُ دَخَلَ
الْجَنَّةَ " . فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ هَذَا
الْيَوْمَ فِي النَّاسِ لَكَثِيرٌ . قَالَ " وَسَيَكُونُ فِي قُرُونٍ
بَعْدِي " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ
إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ إِسْرَائِيلَ .
حَدَّثَنَا عَبَّاسٌ الدُّورِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي بُكَيْرٍ، عَنْ
إِسْرَائِيلَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ . وَسَأَلْتُ مُحَمَّدَ بْنَ
إِسْمَاعِيلَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ، فَلَمْ يَعْرِفْهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ
إِسْرَائِيلَ وَلَمْ يَعْرِفِ اسْمَ أَبِي بِشْرٍ .
আবূ
সা’ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হালাল খাবার খায়, সুন্নাত
মুতাবিক ‘আমাল করে এবং যার উৎপীড়ন হতে মানুষ নিরাপদ থাকে, সে জান্নাতে যাবে। জনৈক
ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল ! আজকাল তো এ ধরনের অনেক লোক রয়েছে। তিনি বললেনঃ
আমার পরবর্তী যুগসমূহেও এমন লোক থাকবে।
য’ঈফ, মিশকাত- হাঃ নং-১৭৮; তা’লীকুর রাগীব- হাঃ নং- ১/৪১
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উল্লেখিত
সূত্রে ইসরা’ঈলের রিওয়ায়াত হিসাবে এ হাদিস জেনেছি। ‘আব্বাস আদ-দূরী-ইয়াহ্ইয়া ইবনু
আবূ বুকাইর হতে তিনি ইসরা’ঈল হতে তিনি হিলাল ইবনু মিকলাস (রহঃ) সূত্রে কাবীসার সূত্রে
ইসরা’ঈল বর্ণিত হাদিসের সমার্থবোধক হাদিস বর্ণনা করেছেন। আমি মুহাম্মদ ইবনু ইসমা’ঈলকে
এ হাদিস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে উত্তরে বলেন যে, তিনি ইসরা’ঈলের সূত্রেই শুধুমাত্র এ
হাদিস জেনেছেন। তবে তিনি আবূ বিশরের নাম প্রসঙ্গে অজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৫২১
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي
مَرْحُومٍ عَبْدِ الرَّحِيمِ بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ
أَنَسٍ الْجُهَنِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " مَنْ أَعْطَى لِلَّهِ وَمَنَعَ لِلَّهِ وَأَحَبَّ لِلَّهِ
وَأَبْغَضَ لِلَّهِ وَأَنْكَحَ لِلَّهِ فَقَدِ اسْتَكْمَلَ إِيمَانَهُ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
মু'আয
ইবনু আনাস আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক আল্লাহ্ তা'আলার উদ্দেশ্যে
দান-খায়রাত করে, আল্লাহ্ তা'আলার উদ্দেশ্যে (দান করা হতে) নিবৃত্ত থাকে, আল্লাহ
তা'আলার জন্য ভালবাসে, আল্লাহ তা'আলার জন্যই ঘৃণা করে এবং আল্লাহ তা'আলার
(সন্তুষ্টির) উদ্দেশ্যে বিয়ে প্রদান করে, সে তাঁর ঈমান সুসম্পন্ন করেছে।
হাসানঃ সহীহাহ্ (১/১১৩)।
আবূ 'ঈসা বলেন, এই হাদীসটি মুন্কার।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৫২২
حَدَّثَنَا عَبَّاسٌ الدُّورِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ
بْنُ مُوسَى قَالَ: أَخْبَرَنَا شَيْبَانُ، عَنْ فِرَاسٍ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ
أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
قَالَ: «أَوَّلُ زُمْرَةٍ تَدْخُلُ الجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ القَمَرِ لَيْلَةَ
البَدْرِ، وَالثَّانِيَةُ عَلَى لَوْنِ أَحْسَنِ كَوْكَبٍ دُرِّيٍّ فِي
السَّمَاءِ، لِكُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ عَلَى كُلِّ زَوْجَةٍ سَبْعُونَ
حُلَّةً يَبْدُو مُخُّ سَاقِهَا مِنْ وَرَائِهَا». «هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ»
আবূ
সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সর্বপ্রথম যে দলটি জান্নাতে প্রবেশ করবে সেই দলের
সদস্যগণ হবেন পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল। আর দ্বিতীয় দলের সদস্যগন হবেন
আকাশের মুক্তার মতো ঝল্ঝল্কারী তারকার ন্যায়। তাঁদের প্রত্যেকের দু'জন করে স্ত্রী
থাকবে এবং প্রত্যেক স্ত্রীর শরীরে সত্তরজোড়া কাপড় থাকবে। এই সব কাপরের ভিতর থেকেও
তার পায়ের জংঘার মগজ প্রকাশ পাবে।
সহীহঃ সহীহাহ্ (১৭৩৬)।
আবূ 'ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
No comments