জামে' আত-তিরমিজি - অধ্যায় "সালাত (নামায)" হাদিস নং- ১৪৯- ৪৫১
সালাত (নামায)
১. অনুচ্ছেদঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে নামাযের ওয়াক্তসমূহের বর্ণনা
১৪৯
حَدَّثَنَا
هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي الزِّنَادِ،
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَيَّاشِ بْنِ أَبِي رَبِيعَةَ،
عَنْ حَكِيمِ بْنِ حَكِيمٍ، وَهُوَ ابْنُ عَبَّادِ بْنِ حُنَيْفٍ أَخْبَرَنِي
نَافِعُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَمَّنِي جِبْرِيلُ عَلَيْهِ
السَّلاَمُ عِنْدَ الْبَيْتِ مَرَّتَيْنِ فَصَلَّى الظُّهْرَ فِي الأُولَى
مِنْهُمَا حِينَ كَانَ الْفَىْءُ مِثْلَ الشِّرَاكِ ثُمَّ صَلَّى الْعَصْرَ حِينَ
كَانَ كُلُّ شَيْءٍ مِثْلَ ظِلِّهِ ثُمَّ صَلَّى الْمَغْرِبَ حِينَ وَجَبَتِ
الشَّمْسُ وَأَفْطَرَ الصَّائِمُ ثُمَّ صَلَّى الْعِشَاءَ حِينَ غَابَ الشَّفَقُ
ثُمَّ صَلَّى الْفَجْرَ حِينَ بَرَقَ الْفَجْرُ وَحَرُمَ الطَّعَامُ عَلَى الصَّائِمِ
. وَصَلَّى الْمَرَّةَ الثَّانِيَةَ الظُّهْرَ حِينَ كَانَ ظِلُّ كُلِّ شَيْءٍ
مِثْلَهُ لِوَقْتِ الْعَصْرِ بِالأَمْسِ ثُمَّ صَلَّى الْعَصْرَ حِينَ كَانَ ظِلُّ
كُلِّ شَيْءٍ مِثْلَيْهِ ثُمَّ صَلَّى الْمَغْرِبَ لِوَقْتِهِ الأَوَّلِ ثُمَّ
صَلَّى الْعِشَاءَ الآخِرَةَ حِينَ ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ ثُمَّ صَلَّى
الصُّبْحَ حِينَ أَسْفَرَتِ الأَرْضُ ثُمَّ الْتَفَتَ إِلَىَّ جِبْرِيلُ فَقَالَ
يَا مُحَمَّدُ هَذَا وَقْتُ الأَنْبِيَاءِ مِنْ قَبْلِكَ . وَالْوَقْتُ فِيمَا
بَيْنَ هَذَيْنِ الْوَقْتَيْنِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَبُرَيْدَةَ وَأَبِي مُوسَى وَأَبِي مَسْعُودٍ
الأَنْصَارِيِّ وَأَبِي سَعِيدٍ وَجَابِرٍ وَعَمْرِو بْنِ حَزْمٍ وَالْبَرَاءِ
وَأَنَسٍ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জিবরাইল (আঃ) কা’বা শরীফের চত্বরে দু’বার আমার নামাযে
ইমামতি করেছেন। তিনি প্রথমবার যুহরের নামায আদায় করালেন যখন প্রতিটি জিনিসের ছায়া
জুতার ফিতার মত ছিল। অতঃপর তিনি আসরের নামায আদায় করালেন যখন কোন বস্তুর ছায়া তার
সমান ছিল। অতঃপর মাগরিবের নামায আদায় করালেন যখন র্সূয ডুবে গেল এবং যে সময়ে
রোযাদার ইফতার করে। অতঃপর ‘ইশার নামায আদায় করালেন যখন লাল বর্ণ অদৃশ্য হয়ে গেল।
অতঃপর ফযরের নামায আদায় করালেন যখন ভোর বিদ্যুতের মত আলোকিত হল এবং যে সময়
রোযাদারের উপর পানাহার হারাম হয়। তিনি (জিবরাইল) দ্বিতীয় দিন যুহরের নামায আদায়
করালেন যখন কোন বস্তুর ছায়া তার সমান হল এবং পূর্ববর্তী দিন ঠিক যে সময় আসরের
নামায আদায় করেছিলেন। অতঃপর আসরের নামায আদায় করালেন যখন কোন বস্তুর ছায়া তার
দ্বিগুণ হল। অতঃপর মাগরিবের নামায আদায় করালেন পূর্বের দিনের সময়ে। অতঃপর ‘ইশার
নামায আদায় করালেন যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ চলে গেল এবং ফযরের নামায আদায় করালেন যখন
যমিন আলোকিত হয়ে গেল। অতঃপর জিবরাইল (আঃ) আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, হে মুহাম্মাদ!
এটাই হল আপনার পূর্ববতী নাবীদের (নামাযের) ওয়াক্ত। নামাযের ওয়াক্ত এই দুই সীমার
মাঝখানে।
হাসান সহীহ্। মিশকাত-(৫৮৩), ইরওয়া-(২৪৯), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৪১৬)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরায়রা, বুরাইদা, আবূ মূসা, আবূ মাসঊদ, আবূ সা’ঈদ, জাবির,
‘আমর ইবনু হাযাম, বারাআ ও আনাস (রাঃ) হতেও বর্ণনাকৃত হাদীস রয়েছে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
১৫০
أَخْبَرَنِي
أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ، أَخْبَرَنِي
وَهْبُ بْنُ كَيْسَانَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَمَّنِي جِبْرِيلُ " . فَذَكَرَ
نَحْوَ حَدِيثِ ابْنِ عَبَّاسٍ بِمَعْنَاهُ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ "
لِوَقْتِ الْعَصْرِ بِالأَمْسِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَحَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَقَالَ مُحَمَّدٌ أَصَحُّ شَيْءٍ فِي الْمَوَاقِيتِ حَدِيثُ جَابِرٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ وَحَدِيثُ جَابِرٍ فِي الْمَوَاقِيتِ
قَدْ رَوَاهُ عَطَاءُ بْنُ أَبِي رَبَاحٍ وَعَمْرُو بْنُ دِينَارٍ وَأَبُو
الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
نَحْوَ حَدِيثِ وَهْبِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ جَابِرٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم .
জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জিবরাইল (আঃ) আমার ইমামতি করলেন,
হাদীসের অবশিষ্ট বর্ণনা ইবনু আব্বাসের হাদীসের মত। তবে এ হাদীসে আসরের নামায
সম্পর্কে “গতকাল” শব্দটির উল্লেখ নেই।
সহীহ্। ইরওয়া-(২৫০), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৪১৮)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২. অনুচ্ছেদঃ
ঐ সম্পর্কেই
১৫১
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي
صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّ لِلصَّلاَةِ أَوَّلاً وَآخِرًا وَإِنَّ أَوَّلَ وَقْتِ صَلاَةِ
الظُّهْرِ حِينَ تَزُولُ الشَّمْسُ وَآخِرَ وَقْتِهَا حِينَ يَدْخُلُ وَقْتُ
الْعَصْرِ وَإِنَّ أَوَّلَ وَقْتِ صَلاَةِ الْعَصْرِ حِينَ يَدْخُلُ وَقْتُهَا
وَإِنَّ آخِرَ وَقْتِهَا حِينَ تَصْفَرُّ الشَّمْسُ وَإِنَّ أَوَّلَ وَقْتِ
الْمَغْرِبِ حِينَ تَغْرُبُ الشَّمْسُ وَإِنَّ آخِرَ وَقْتِهَا حِينَ يَغِيبُ
الأُفُقُ وَإِنَّ أَوَّلَ وَقْتِ الْعِشَاءِ الآخِرَةِ حِينَ يَغِيبُ الأُفُقُ
وَإِنَّ آخِرَ وَقْتِهَا حِينَ يَنْتَصِفُ اللَّيْلُ وَإِنَّ أَوَّلَ وَقْتِ
الْفَجْرِ حِينَ يَطْلُعُ الْفَجْرُ وَإِنَّ آخِرَ وَقْتِهَا حِينَ تَطْلُعُ
الشَّمْسُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو
. قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ حَدِيثُ الأَعْمَشِ عَنْ
مُجَاهِدٍ فِي الْمَوَاقِيتِ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ فُضَيْلٍ عَنِ
الأَعْمَشِ وَحَدِيثُ مُحَمَّدِ بْنِ فُضَيْلٍ خَطَأٌ أَخْطَأَ فِيهِ مُحَمَّدُ
بْنُ فُضَيْلٍ . حَدَّثَنَا هَنَّادٌ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ الْفَزَارِيِّ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ كَانَ يُقَالُ
إِنَّ لِلصَّلاَةِ أَوَّلاً وَآخِرًا فَذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ
فُضَيْلٍ عَنِ الأَعْمَشِ نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নামাযের ওয়াক্তের শুরু ও
শেষ সীমা রয়েছে। যুহরের নামাযের শুরুর সময় হচ্ছে যখন (সূর্য পশ্চিম দিকে) ঢলতে
শুরু করে এবং শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে আসরের ওয়াক্ত শুরু হওয়া। আসরের প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে
যখন আসরের ওয়াক্ত প্রবেশ করে (যুহরের শেষ সময়) এবং তার শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে যখন
সূর্যের আলো হলুদ রং ধারণ করে। মাগরিবের প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে সূর্য ডুবে যাওয়ার পর
এবং তার শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে যখন শাফাক চলে যায়। ‘ইশার প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে যখন শাফাক
বিলীন হয়ে যায়, আর তার শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে যখন অর্ধেক রাত চলে যায়।
ফযরের নামাযের প্রথম ওয়াক্ত যখন ভোর শুরু হয় এবং তার ওয়াক্ত শেষ হয় যখন সূর্য উঠা
শুরু হয়।
সহীহ্। আস্-সহীহাহ্-(১৬৯৬)।
এ অনুচ্ছেদে
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীস রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেন, আমি মুহাম্মাদকে
বলতে শুনেছি, নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে মুজাহিদ হতে আ’মাশের সূত্রে বর্ণনাকৃত হাদীসটি
আ’মাশ হতে মুহাম্মাদ ইবনু ফুযাইলের সূত্রে বর্ণিত হাদীসের চেয়ে বেশি সহীহ।
কেননা মুহাম্মাদ ইবনু ফুযাইল রাবীদের সনদের ধারা বর্ণনায় ত্রুটি করেছেন।
মুজাহিদ (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, কথিত আছে যে, নামাযের ওয়াক্তের শুরু এবং
শেষ প্রান্ত রয়েছে। এ হাদীসটি অর্থ ও বিষয়বস্তুর দিক হতে মুহাম্মাদ ইবনু ফুযাইল হতে
আ’মাশের সূত্রে বর্ণিত হাদীসের মতই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩. অনুচ্ছেদঃ
একই বিষয় সম্পর্কিত
১৫২
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، وَالْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَزَّارُ، وَأَحْمَدُ
بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى الْمَعْنَى، وَاحِدٌ، قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ يُوسُفَ الأَزْرَقُ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ
مَرْثَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ أَتَى
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَسَأَلَهُ عَنْ مَوَاقِيتِ الصَّلاَةِ
فَقَالَ " أَقِمْ مَعَنَا إِنْ شَاءَ اللَّهُ " . فَأَمَرَ
بِلاَلاً فَأَقَامَ حِينَ طَلَعَ الْفَجْرُ ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ حِينَ
زَالَتِ الشَّمْسُ فَصَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ فَصَلَّى
الْعَصْرَ وَالشَّمْسُ بَيْضَاءُ مُرْتَفِعَةٌ ثُمَّ أَمَرَهُ بِالْمَغْرِبِ حِينَ
وَقَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ ثُمَّ أَمَرَهُ بِالْعِشَاءِ فَأَقَامَ حِينَ غَابَ
الشَّفَقُ ثُمَّ أَمَرَهُ مِنَ الْغَدِ فَنَوَّرَ بِالْفَجْرِ ثُمَّ أَمَرَهُ
بِالظُّهْرِ فَأَبْرَدَ وَأَنْعَمَ أَنْ يُبْرِدَ ثُمَّ أَمَرَهُ بِالْعَصْرِ
فَأَقَامَ وَالشَّمْسُ آخِرَ وَقْتِهَا فَوْقَ مَا كَانَتْ ثُمَّ أَمَرَهُ
فَأَخَّرَ الْمَغْرِبَ إِلَى قُبَيْلِ أَنْ يَغِيبَ الشَّفَقُ ثُمَّ أَمَرَهُ
بِالْعِشَاءِ فَأَقَامَ حِينَ ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ ثُمَّ قَالَ "
أَيْنَ السَّائِلُ عَنْ مَوَاقِيتِ الصَّلاَةِ " . فَقَالَ الرَّجُلُ
أَنَا . فَقَالَ " مَوَاقِيتُ الصَّلاَةِ كَمَا بَيْنَ هَذَيْنِ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَقَدْ
رَوَاهُ شُعْبَةُ عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ أَيْضًا .
সুলাইমান ইবনু
বুরাইদা (রাঃ) হতে তাঁর পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (বুরাইদা) বলেন,
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ নবী ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে তাঁকে নামাযের ওয়াক্ত
সম্পর্কে প্রশ্ন করল। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা চান তো তুমি আমাদের সংগে থাক।
তিনি বিলাল (রাঃ)-কে নির্দেশ দিলেন এবং সে অনুযায়ী তিনি ভোর (সুবহি সদিক) উদয় হলে
ফযরের নামাযের ইক্বামাত দিলেন। তিনি আবার নির্দেশ দিলেন এবং সূর্য ঢলে গেলে তিনি
(বিলাল) ইক্বামাত দিলেন। অতঃপর তিনি যুহরের নামায আদায় করালেন। তিনি আবার নির্দেশ
দিলে বিলাল ইক্বামাত দিলেন। তখন সূর্য অনেক উপরে ছিল এবং আলোক উদ্ভাসিত ছিল। অতঃপর
তিনি ‘আসরের নামায আদায় করালেন। অতঃপর সূর্য ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে তিনি তাকে
মাগরিবের নামাযের ইক্বামাত দেয়ার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তিনি তাকে ‘ইশার নামাযের
(ইক্বামাতের) নির্দেশ দিলেন। শাফাক অদৃশ্য হলে তিনি ইক্বামাত দিলেন। পরবর্তী সকালে
তিনি তাকে (ইকামাতের) নির্দেশ দিলেন। ভোর খুব পরিষ্কার হওয়ার পর তিনি ফযরের নামায
আদায় করালেন। অতঃপর তিনি তাকে যুহরের নামাযের (ইক্বামাতের) নির্দেশ দিলেন এবং
(সূর্যের তাপ) যথেষ্ট ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত দেরি করে নামায আদায় করলেন। অতঃপর তিনি
তাকে আসরের নামাযের নির্দেশ দিলেন, সে অনুযায়ী তিনি (বিলাল) সূর্য শেষ সীমায় এবং
পূর্ব দিনের চেয়ে অনেক নীচে নেমে আসলে ইক্বামাত দিলেন [অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসরের নামায আদায় করালেন]।
অতঃপর তিনি তাকে (ইকামাতের) নির্দেশ দিলেন এবং শাফাক অদৃশ্য হওয়ার সামান্য পূর্বে
মাগরিবের নামায আদায় করালেন। অতঃপর তিনি তাকে ‘ইশার নামাযের ইক্বামাত দেয়ার
নির্দেশ দিলেন এবং সে অনুযায়ী এক-তৃতীয়াংশ রাত চলে যাবার পর ইক্বামাত দিলেন। অতঃপর
তিনি বললেনঃ নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে প্রশ্নকারী কোথায়? লোকটি বলল, আমি। তিনি
বললেনঃ নামাযের সময় এই দুই সীমার মাঝখানে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৬৬৭), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেন; হাদীসটি হাসান, গারীব সহীহ। শুবাও এ হাদীসটি ‘আলক্বামাহ্ ইবনু মারসাদ হতে বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪. অনুচ্ছেদঃ
ফযরের নামায অন্ধকার
থাকতেই আদায় করা
১৫৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، قَالَ وَحَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ،
حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ
عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ إِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
لَيُصَلِّي الصُّبْحَ فَيَنْصَرِفُ النِّسَاءُ قَالَ الأَنْصَارِيُّ فَيَمُرُّ
النِّسَاءُ مُتَلَفِّفَاتٍ بِمُرُوطِهِنَّ مَا يُعْرَفْنَ مِنَ الْغَلَسِ .
وَقَالَ قُتَيْبَةُ مُتَلَفِّعَاتٍ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ
وَأَنَسٍ وَقَيْلَةَ بِنْتِ مَخْرَمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ الزُّهْرِيُّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ
عَائِشَةَ نَحْوَهُ . وَهُوَ الَّذِي اخْتَارَهُ غَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ أَبُو بَكْرٍ
وَعُمَرُ وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنَ التَّابِعِينَ وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ
وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ يَسْتَحِبُّونَ التَّغْلِيسَ بِصَلاَةِ الْفَجْرِ .
আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফযরের নামায আদায় করতেন, অতঃপর
মহিলারা ফিরে আসতেন। আনসারীর বর্ণনায় আছে-মহিলারা নিজেদের চাদর মুড়িয়ে চলে যেতেন
এবং অন্ধকারের মধ্যে তাদের চেনা যেত না। কুতাইবার বর্ণনায় (মুতালাফফিফাতিন শব্দের
স্থলে) ‘মুতালাফফি’আতিন’ শব্দ রয়েছে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৬৬৯), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার, আনাস ও ক্বাইলা বিনতু মাখরামা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসও রয়েছে। আবু ‘ঈসা
বলেন, ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। যুহরী হাদীসটি উরওয়া হতে তিনি ‘আয়িশাহ্
হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। কিছু সাহাবা যেমন, আবূ বাকার ও ‘ঊমার (রাঃ) এবং তাদের পরবর্তীগণ
অন্ধকার থাকতেই ফযরের নামায আদায় করা মুস্তাহাব বলেছেন। ঈমাম শাফিঈ, আহামদ ও ইসহাক
একই মত ব্যক্ত করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫. অনুচ্ছেদঃ
ফযরের নামায অন্ধকার
বিদূরিত করে আদায় করা
১৫৪
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، - هُوَ ابْنُ سُلَيْمَانَ - عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
إِسْحَاقَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ
لَبِيدٍ، عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَقُولُ " أَسْفِرُوا بِالْفَجْرِ فَإِنَّهُ أَعْظَمُ لِلأَجْرِ
" . قَالَ وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ وَالثَّوْرِيُّ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ . قَالَ وَرَوَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ عَجْلاَنَ أَيْضًا
عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ وَجَابِرٍ وَبِلاَلٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَأَى غَيْرُ وَاحِدٍ
مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ
الإِسْفَارَ بِصَلاَةِ الْفَجْرِ . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ .
وَقَالَ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ مَعْنَى الإِسْفَارِ أَنْ يَضِحَ
الْفَجْرُ فَلاَ يُشَكَّ فِيهِ وَلَمْ يَرَوْا أَنَّ مَعْنَى الإِسْفَارِ
تَأْخِيرُ الصَّلاَةِ .
রাফি’ ইবনু খাদীজ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ তোমরা ফযরের নামায
(ভোরের অন্ধকার) ফর্সা করে আদায় কর। কেননা তাতে অনেক সাওয়াব রয়েছে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ -(৬৭২)।
শু’বা ও
সুফিয়ান সাওরী মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাকের সুত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু
‘আজলান ও আসিম ইবনু ‘ঊমারের সুত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ অনুচ্ছেদে আবূ বারযা,
জাবির এবং বিলাল (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ রাফি’ (রাঃ) হতে বর্ণিত
হাদীসটি হাসান সহীহ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একাধিক বিশেষজ্ঞ
সাহাবা ও তাবিঈন অন্ধকার চলে যাওয়ার পর ফযরের নামায আদায়ের পক্ষে মত দিয়েছেন। সুফিয়ান
সাওরী এ মত গ্রহন করেছেন। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাক বলেছেন, (অন্ধকার) ফর্সা হওয়ার
অর্থ হচ্ছে- সন্দেহাতীতরূপে ভোর হওয়া। কিন্তু ফর্সা হওয়ার অর্থ এই নয় যে, নামায দেরী
করে আদায় করতে হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬. অনুচ্ছেদঃ
যুহরের নামায
তাড়াতাড়ি আদায় করা
১৫৫
حَدَّثَنَا
هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ
جُبَيْرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا
رَأَيْتُ أَحَدًا كَانَ أَشَدَّ تَعْجِيلاً لِلظُّهْرِ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم وَلاَ مِنْ أَبِي بَكْرٍ وَلاَ مِنْ عُمَرَ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَخَبَّابٍ وَأَبِي بَرْزَةَ وَابْنِ
مَسْعُودٍ وَزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَأَنَسٍ وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَهُوَ الَّذِي اخْتَارَهُ
أَهْلُ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ
. قَالَ عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ وَقَدْ
تَكَلَّمَ شُعْبَةُ فِي حَكِيمِ بْنِ جُبَيْرٍ مِنْ أَجْلِ حَدِيثِهِ الَّذِي
رَوَى عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " مَنْ
سَأَلَ النَّاسَ وَلَهُ مَا يُغْنِيهِ " . قَالَ يَحْيَى وَرَوَى لَهُ
سُفْيَانُ وَزَائِدَةُ وَلَمْ يَرَ يَحْيَى بِحَدِيثِهِ بَأْسًا . قَالَ
مُحَمَّدٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ حَكِيمِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ
عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي تَعْجِيلِ الظُّهْرِ .
আইশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকার ও উমার (রাঃ)-এর
তুলনায় অন্য কাউকে আমি যুহরের নামায তাড়াতাড়ি আদায় করতে দেখিনি (ওয়াক্ত শুরু হলেই
তাঁরা নামায আদায় করে নিতেন)।
সনদ দূর্বল।
এ অনুচ্ছেদে
জাবির ইবনু আবদিল্লাহ, খাব্বাব,আবূ বারযা, ইবনু মাসউদ, যাইদ ইবনু সাবিত, আনাস ও জাবির
ইবনু সামূরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীস রয়েছে। আবূ ঈসা বলেন, আইশা (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান।
সাহাবায়ে কিরাম ও তাদের পরবর্তী বিদ্বানগন আওয়াল (প্রথম) ওয়াক্তে নামায আদায় করা পছন্দ
করেছেন। আলী ইবনুল মাদানী বলেন, ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ বলেছেন, হাকীম ইবনু জুবাইর (রহঃ)
ইবনু মাসউদ (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস,
“প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি মানুষের নিকট প্রার্থনা করে।”
বর্ণনা করার প্রেক্ষিতে শু‘বাহ্ তাঁর (হাকীমের) সমালোচনা করেছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনু মুঈন
বলেন, সুফইয়ান এবং যায়িদাহ্ তাঁর (হাকীম) নিকট হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনু
মুঈন তাঁর (হাকীম) বর্ণিত হাদীসে কোন ত্রুটি আছে বলে মনে করেন না। মুহাম্মদ (বুখারী)
বলেনঃ ‘যুহরের নামায আওয়াল ওয়াক্তে আদায় করা’ সম্পর্কিত আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীসটি হাকীম ইবনু জুবাইর সা‘ঈদ ইবনু জুবাইরের
সূত্রেও বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৫৬
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى الظُّهْرَ حِينَ زَالَتِ
الشَّمْسُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ أَحْسَنُ
حَدِيثٍ فِي هَذَا الْبَابِ . وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ .
আনাস ইবনু মালিক
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য ঢলে পড়লে যুহরের নামায আদায় করেছেন।
সহীহ্। বুখারী।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি সহীহ। এ অনুচ্ছেদে এ হাদীসটি সর্বোত্তম। এ অনুচ্ছেদে জাবির (রাঃ) হতে
বর্ণিত হাদীসও রয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭. অনুচ্ছেদঃ
অধিক গরমের সময়
যুহরের নামায দেরিতে আদায় করা
১৫৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ، وَأَبِي، سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا اشْتَدَّ الْحَرُّ فَأَبْرِدُوا عَنِ
الصَّلاَةِ فَإِنَّ شِدَّةَ الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ " . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي ذَرٍّ وَابْنِ عُمَرَ وَالْمُغِيرَةِ
وَالْقَاسِمِ بْنِ صَفْوَانَ عَنْ أَبِيهِ وَأَبِي مُوسَى وَابْنِ عَبَّاسٍ
وَأَنَسٍ . قَالَ وَرُوِيَ عَنْ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي
هَذَا وَلاَ يَصِحُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدِ اخْتَارَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ تَأْخِيرَ
صَلاَةِ الظُّهْرِ فِي شِدَّةِ الْحَرِّ وَهُوَ قَوْلُ ابْنِ الْمُبَارَكِ
وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . قَالَ الشَّافِعِيُّ إِنَّمَا الإِبْرَادُ بِصَلاَةِ
الظُّهْرِ إِذَا كَانَ مَسْجِدًا يَنْتَابُ أَهْلُهُ مِنَ الْبُعْدِ فَأَمَّا
الْمُصَلِّي وَحْدَهُ وَالَّذِي يُصَلِّي فِي مَسْجِدِ قَوْمِهِ فَالَّذِي أُحِبُّ
لَهُ أَنْ لاَ يُؤَخِّرَ الصَّلاَةَ فِي شِدَّةِ الْحَرِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَمَعْنَى مَنْ ذَهَبَ إِلَى تَأْخِيرِ الظُّهْرِ فِي شِدَّةِ الْحَرِّ هُوَ
أَوْلَى وَأَشْبَهُ بِالاِتِّبَاعِ وَأَمَّا مَا ذَهَبَ إِلَيْهِ الشَّافِعِيُّ
أَنَّ الرُّخْصَةَ لِمَنْ يَنْتَابُ مِنَ الْبُعْدِ وَالْمَشَقَّةِ عَلَى النَّاسِ
فَإِنَّ فِي حَدِيثِ أَبِي ذَرٍّ مَا يَدُلُّ عَلَى خِلاَفِ مَا قَالَ
الشَّافِعِيُّ . قَالَ أَبُو ذَرٍّ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فِي سَفَرٍ فَأَذَّنَ بِلاَلٌ بِصَلاَةِ الظُّهْرِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم " يَا بِلاَلُ أَبْرِدْ ثُمَّ أَبْرِدْ " . فَلَوْ
كَانَ الأَمْرُ عَلَى مَا ذَهَبَ إِلَيْهِ الشَّافِعِيُّ لَمْ يَكُنْ لِلإِبْرَادِ
فِي ذَلِكَ الْوَقْتِ مَعْنًى لاِجْتِمَاعِهِمْ فِي السَّفَرِ وَكَانُوا لاَ
يَحْتَاجُونَ أَنْ يَنْتَابُوا مِنَ الْبُعْدِ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন (সূর্যের) উত্তাপ
বেড়ে যায়, তখন তোমরা ঠান্ডা করে নামায আদায় কর (বিলম্ব করে নামায আদায় কর)। কেননা
প্রচন্ড উত্তাপ জাহান্নামের নিঃশ্বাস হতে হয়।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৬৭৮), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ সা’ঈদ, আবূ যার, ইবনু ‘উমার, মুগীরা, কাসিম ইবনু সাফওয়ান তাঁর পিতার সূত্রে, আবূ
মূসা, ইবনু ‘আব্বাস ও আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে ‘উমার (রাঃ)-এর একটি বর্ণনাও রয়েছে। কিন্তু এ বর্ণনাটি সহীহ
নয়। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রা বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ।
বিশেষজ্ঞদের একদল গরমের মৌসুমে যুহরের নামায বিলম্বে আদায় করা পছন্দ করেছেন। ইবনুল
মুবারাক, আহমাদ ও ইসহাক এই মতের সমর্থক। ইমাম শাফিঈ বলেন, লোকেরা যখন দূরদূরান্ত হতে
মসজিদে আসে তখন যুহরের নামায ঠান্ডার সময় আদায় করার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু যে ব্যক্তি
একাকী নামায আদায় করে অথবা নিজের গোত্রের মসজিদে নামায আদায় করে-খুব গরমের সময়েও আমি
তার জন্য প্রথম ওয়াক্তে নামায আদায় করা উত্তম মনে করি। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ অত্যধিক গরমের
সময়ে যারা বিলম্বে যুহরের নামায আদায়ের কথা বলেন, তাদের মত অনুসরণযোগ্য। কিন্তু আবূ
যার (রাঃ)-এর হাদীস ইমাম শাফিঈর বক্তব্যের (দূর হতে আসা মুসল্লীর কারণে যুহরের নামায
ঠান্ডার সময়ে আদায়ের নির্দেশ রয়েছে, কেননা তাতে তাদের কষ্ট কম হবে) পরিপন্থি। আবূ যার
(রাঃ) বলেনঃ “আমরা কোন এক সফরে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সাথে ছিলাম। বিলাল (রাঃ) যুহরের নামাজের আযান দিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে বিলাল! শীতল কর (গরমের তীব্রতা কমতে দাও)। তারপর শীতল করা হল
(বিলম্বে নামায আদায় করা হল)”।
ইমাম শাফিঈর বক্তব্য অনুযায়ী শীতল করার অর্থ যদি তাই হত তবে এ সময়ে শীতল করার কোন অর্থই
হয় না। কেননা সফরের অবস্থায় সবাই একই স্থানে সমবেত ছিল, দূর হতে কারো আসার কোন প্রশ্নই
ছিল না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৮
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، قَالَ
أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُهَاجِرٍ أَبِي الْحَسَنِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ،
عَنْ أَبِي ذَرٍّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ فِي سَفَرٍ
وَمَعَهُ بِلاَلٌ فَأَرَادَ بِلاَلٌ أَنْ يُقِيمَ فَقَالَ " أَبْرِدْ
" . ثُمَّ أَرَادَ أَنْ يُقِيمَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " أَبْرِدْ فِي الظُّهْرِ " . قَالَ حَتَّى رَأَيْنَا فَىْءَ
التُّلُولِ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّ شِدَّةَ الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ فَأَبْرِدُوا عَنِ
الصَّلاَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক সফরে ছিলেন। বিলাল (রাঃ)-ও তাঁর সাথে
ছিলেন। তিনি ইক্বামাত দিতে চাইলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ “যুহরকে শীতল কর”। আবূ যার (রাঃ) বলেন, বিলাল (রাঃ) আবার ইক্বামাত
দিতে চাইলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যুহরের নামায
আরও শীতল করে আদায় কর। আবূ যার (রাঃ) বলেন, এমনকি আমরা যখন বালির স্তূপের ছায়া
দেখতে পেলাম তখন তিনি ইক্বামাত দিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) নামায আদায় করালেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ “গরমের প্রচন্ডতা জাহান্নামের নিঃশ্বাস। তোমরা শীতল করে (রোদের
তাপ কমলে) নামায আদায় কর”।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৪২৯), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮. অনুচ্ছেদঃ
আসরের নামায শীঘ্রই
আদায় করা
১৫৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ
عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْعَصْرَ
وَالشَّمْسُ فِي حُجْرَتِهَا لَمْ يَظْهَرِ الْفَىْءُ مِنْ حُجْرَتِهَا . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَأَبِي أَرْوَى وَجَابِرٍ وَرَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ .
قَالَ وَيُرْوَى عَنْ رَافِعٍ أَيْضًا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي
تَأْخِيرِ الْعَصْرِ وَلاَ يَصِحُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ الَّذِي اخْتَارَهُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ
مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ عُمَرُ وَعَبْدُ اللَّهِ
بْنُ مَسْعُودٍ وَعَائِشَةُ وَأَنَسٌ وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنَ التَّابِعِينَ
تَعْجِيلُ صَلاَةِ الْعَصْرِ وَكَرِهُوا تَأْخِيرَهَا . وَبِهِ يَقُولُ عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (একদিন)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসরের নামায আদায় করালেন, তখনও
সূর্যের কিরণ তার (আয়িশাহ্’র) ঘরের মধ্যে ছিল এবং ছায়াও (দীর্ঘ না হওয়ার ফলে) তার
ঘরের বাইরে যায়নি।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৬৮৩)।
এ অনুচ্ছেদে
আনাস, আবূ আরওয়া, জাবির ও রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। রাফি (রাঃ)
হতে ‘আসরের নামায বিলম্বে আদায় করা’ সম্পর্কিত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এ বর্ণনাটি সহীহ নয়। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আয়িশাহ্
(রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান সহীহ।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু বিশেষজ্ঞ সাহাবা আসরের নামায
শীঘ্রই (প্রথম ওয়াক্তে) আদায় করা পছন্দ করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ‘উমার, আবদুল্লাহ্
ইবনু মাসউদ, আয়িশাহ্ ও আনাস (রাঃ)। একাধিক তাবিঈও এ মত গ্রহণ করেছেন এবং দেরিতে আসরের
নামায আদায় করা মাকরূহ বলেছেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাকও
একথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬০
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنِ الْعَلاَءِ
بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ فِي دَارِهِ
بِالْبَصْرَةِ حِينَ انْصَرَفَ مِنَ الظُّهْرِ وَدَارُهُ بِجَنْبِ الْمَسْجِدِ
فَقَالَ قُومُوا فَصَلُّوا الْعَصْرَ . قَالَ فَقُمْنَا فَصَلَّيْنَا فَلَمَّا
انْصَرَفْنَا قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" تِلْكَ صَلاَةُ الْمُنَافِقِ يَجْلِسُ يَرْقُبُ الشَّمْسَ حَتَّى إِذَا
كَانَتْ بَيْنَ قَرْنَىِ الشَّيْطَانِ قَامَ فَنَقَرَ أَرْبَعًا لاَ يَذْكُرُ
اللَّهَ فِيهَا إِلاَّ قَلِيلاً " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
‘আলা ইবনু ‘আবদুর
রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বসরায় আনাস
(রাঃ)-এর বাড়িতে আসলেন। তিনি তখন যুহরের নামায আদায় করে বাসায় ফিরে এসেছেন। তাঁর
ঘরটি মসজিদের পাশেই ছিল। তিনি (আনাস) বললেন, উঠো এবং আসরের নামায আদায় কর। ‘আলা
বলেন, আমরা উঠে গিয়ে ‘আসরের নামায আদায় করলাম। আমরা যখন নামায শেষ করলাম তখন তিনি
বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ এটা
মুনাফিকের নামায-যে বসে বসে সূর্যের অপেক্ষা করতে থাকে, যখন সূর্য শাইতানের শিং এর
মাঝখানে এসে যায় তখন উঠে চারটি ঠোকর মারে এবং তাতে আল্লাহ্ তা’আলাকে খুব কমই স্মরণ
করে।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৪২০), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯. অনুচ্ছেদঃ
আসরের নামায বিলম্বে
আদায় করা
১৬১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ،
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنِ ابْنِ أَبِي
مُلَيْكَةَ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم أَشَدَّ تَعْجِيلاً لِلظُّهْرِ مِنْكُمْ وَأَنْتُمْ أَشَدُّ تَعْجِيلاً
لِلْعَصْرِ مِنْهُ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ ابْنِ
عُلَيَّةَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ أُمِّ
سَلَمَةَ، نَحْوَهُ .
উম্মু সালামাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের নামায তোমাদের চেয়ে বেশি
তাড়াতাড়ি (প্রথম ওয়াক্তে) আদায় করতেন। আর তোমরা আসরের নামায তাঁর চেয়ে অধিক সকালে
আদায় কর।
সহীহ্। মিশকাত-(৬১৯৫) দ্বিতীয় তাহক্বীক্ব।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি ইসমাঈল ইবনু উলাইয়্যা-ইবনু জুরাইজ হতে, ইবনু আবী মুলাইকার সূত্রে উম্মু
সালমাহ্ হতে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬২
وَوَجَدْتُ
فِي كِتَابِي أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ
إِبْرَاهِيمَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، .
আলী ইবনু হুজর থেকে
বর্ণিতঃ
ইমাম তিরমিযী বলেনঃ আমি আমার গ্রন্থে এটি লেখা পেয়েছি যে, আলী ইবনু
হুজর, ইসমাঈল ইবনু ইবরাহীম হতে, তিনি ইবনু জুরাইজের সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
১৬৩
وَحَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ الْبَصْرِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ
عُلَيَّةَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ . وَهَذَا
أَصَحُّ .
বিশর ইবনু মু’আয
থেকে বর্ণিতঃ
বিশর ইবনু মু’আয,
ইসমাঈল ইবনু উলাইয়্যা হতে ইবনু জুরাইজের সূত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে।
আর এই বর্ণনাটি অধিক সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০. অনুচ্ছেদঃ
মাগরিবের ওয়াক্ত
সম্পর্কে
১৬৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي
عُبَيْدٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يُصَلِّي الْمَغْرِبَ إِذَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ وَتَوَارَتْ
بِالْحِجَابِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَالصُّنَابِحِيِّ
وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ وَأَنَسٍ وَرَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ وَأَبِي أَيُّوبَ وَأُمِّ
حَبِيبَةَ وَعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَابْنِ عَبَّاسٍ . وَحَدِيثُ
الْعَبَّاسِ قَدْ رُوِيَ مَوْقُوفًا عَنْهُ وَهُوَ أَصَحُّ . وَالصُّنَابِحِيُّ
لَمْ يَسْمَعْ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ صَاحِبُ أَبِي بَكْرٍ
رضى الله عنه . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ قَوْلُ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنَ التَّابِعِينَ اخْتَارُوا تَعْجِيلَ
صَلاَةِ الْمَغْرِبِ وَكَرِهُوا تَأْخِيرَهَا حَتَّى قَالَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ لَيْسَ لِصَلاَةِ الْمَغْرِبِ إِلاَّ وَقْتٌ وَاحِدٌ وَذَهَبُوا إِلَى
حَدِيثِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَيْثُ صَلَّى بِهِ جِبْرِيلُ . وَهُوَ
قَوْلُ ابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ .
সালামাহ্ ইবনুল
আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন সূর্য
ডুবে পর্দার অন্তরালে চলে যেত তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
মাগরিবের নামায আদায় করতেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ্-(৬৮৮), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
জাবির, সুনাবিহী, যাইদ ইবনু খালিদ, আনাস, রাফি’ ইবনু খাদীজ, আবূ আইউব, উম্মু হাবীবা,
আব্বাস ইবনু আব্দুল মুত্তালিব ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে।
‘আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীসটি মাওকূফ হিসাবেও বর্ণিত হয়েছে এবং এটাই বেশি সহীহ। সুনাবিহী
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস শুনেননি, তিনি আবূ বাকার (রাঃ)-এর
সাথী।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ সালামাহ্ ইবনুল আকওয়া (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবা এবং তাদের পরবর্তীগণ মাগরিবের নামায
সকাল সকাল (সূর্য ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে) আদায় করা পছন্দ করতেন এবং দেরি করা মাকরূহ
মনে করতেন। কোন কোন বিদ্বান এরূপ পর্যন্ত বলেছেন যে, মাগরিবের নামাযের জন্য একটি মাত্র
ওয়াক্ত নির্ধারিত।
তাঁরা ‘জিবরীলের ইমামতিতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামায
আদায় করা সম্পর্কিত হাদীসের উপর আমল করেছেন। ইবনুল মুবারাক ও শাফিঈ এ মত ব্যক্ত করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১. অনুচ্ছেদঃ
‘ইশার নামাযের ওয়াক্ত
১৬৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا أَبُو
عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ بَشِيرِ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ
سَالِمٍ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ أَنَا أَعْلَمُ النَّاسِ،
بِوَقْتِ هَذِهِ الصَّلاَةِ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّيهَا
لِسُقُوطِ الْقَمَرِ لِثَالِثَةٍ " .
নু’মান ইবনু বাশীর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
অন্যদের তুলনায় এ (ইশার) নামাজের ওয়াক্ত সম্পর্কে বেশী ভাল জানি। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তৃতীয়ার চাঁদ অস্ত গেলে এ নামায আদায় করতেন।
সহীহ্। মিশকাত-(৬১৩), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৪৪৫)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬৬
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، عَنْ أَبِي عَوَانَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو
عِيسَى رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ، هُشَيْمٌ عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ
سَالِمٍ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ هُشَيْمٌ
عَنْ بَشِيرِ بْنِ ثَابِتٍ، . وَحَدِيثُ أَبِي عَوَانَةَ أَصَحُّ عِنْدَنَا
لأَنَّ يَزِيدَ بْنَ هَارُونَ رَوَى عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، نَحْوَ
رِوَايَةِ أَبِي عَوَانَةَ .
নুমান ইবনু বাশীর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ হাদীসটি নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতে মুহাম্মাদ ইবনু আবান, আব্দুর
রহমান ইবনু মাহদী’র সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হুশাইম বর্ণনা করেছেন আবূ বিশর হতে, তিনি হাবীব ইবনু সালিম হতে তিনি
নু’মান ইবনু বাশীর হতে। হুশাইম তার বর্ণনায় বাশীর ইবনু সাবিতের উল্লেখ করেননি। আমাদের
মতে আবূ ‘আওয়ানার সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি সর্বাধিক সহীহ। কেননা ইয়াযীদ ইবনু হারুন শুবা
হতে, তিনি আবূ বিশর হতে আবূ আওয়ানার অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
১২. অনুচ্ছেদঃ
‘ইশার নামায দেরি করে
আদায় করা
১৬৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ سَعِيدٍ
الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم " لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لأَمَرْتُهُمْ أَنْ
يُؤَخِّرُوا الْعِشَاءَ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ أَوْ نِصْفِهِ " . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَأَبِي
بَرْزَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ
وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَهُوَ الَّذِي اخْتَارَهُ أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ وَغَيْرِهِمْ رَأَوْا تَأْخِيرَ
صَلاَةِ الْعِشَاءِ الآخِرَةِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি আমি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর
হবে বলে মনে না করতাম তাহলে তাদেরকে ইশার নামায রাতের এক তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধরাত
পর্যন্ত দেরি করে আদায়ের নির্দেশ দিতাম।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৬৯১)।
এ অনুচ্ছেদে
জাবির ইবনু সামুরা, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ, আবূ বারযা, ইবনু ‘আব্বাস, আবূ সা’ঈদ খুদরী,
যাইদ ইবনু খালিদ ও ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রা
(রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। বেশিরভাগ সাহাবা, তাবিঈন ও তাবা-তাবিঈন ইশার নামায দেরিতে
আদায় করা পছন্দ করেছেন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক এ অভিমত গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩. অনুচ্ছেদঃ
‘ইশার নামাজের পূর্বে
শোয়া এবং নামায আদায়ের পর কথাবার্তা বলা মাকরূহ
১৬৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا عَوْفٌ، قَالَ أَحْمَدُ
وَحَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ عَبَّادٍ، هُوَ الْمُهَلَّبِيُّ وَإِسْمَاعِيلُ ابْنُ
عُلَيَّةَ جَمِيعًا عَنْ عَوْفٍ، عَنْ سَيَّارِ بْنِ سَلاَمَةَ، هُوَ أَبُو
الْمِنْهَالِ الرِّيَاحِيُّ عَنْ أَبِي بَرْزَةَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم يَكْرَهُ النَّوْمَ قَبْلَ الْعِشَاءِ وَالْحَدِيثَ بَعْدَهَا . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَأَنَسٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي بَرْزَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ
كَرِهَ أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ النَّوْمَ قَبْلَ صَلاَةِ الْعِشَاءِ
وَالْحَدِيثَ بَعْدَهَا وَرَخَّصَ فِي ذَلِكَ بَعْضُهُمْ . وَقَالَ عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ أَكْثَرُ الأَحَادِيثِ عَلَى الْكَرَاهِيَةِ .
وَرَخَّصَ بَعْضُهُمْ فِي النَّوْمِ قَبْلَ صَلاَةِ الْعِشَاءِ فِي رَمَضَانَ .
وَسَيَّارُ بْنُ سَلاَمَةَ هُوَ أَبُو الْمِنْهَالِ الرِّيَاحِيُّ .
আবূ বারযা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার নামাযের আগে ঘুমানো এবং নামাযের পর
আলাপচারিতা করা অপছন্দ করতেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ্-(৭০১), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আয়িশাহ্ আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ
আবূ বারযা (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। বিদ্বানদের একদল ‘ইশার নামাযের আগে ঘুমানো
এবং নামাজের পরে আলাপচারিতা করা মাকরূহ বলেছেন এবং অপর দল অনুমতি দিয়েছেন। ‘আবদুল্লাহ
ইবনুল মুবারাক বলেছেন, বেশিরভাগ হাদীস মাকরূহ মতের পক্ষে। কিছু ব্যক্তি রমজান মাসে
‘ইশার নামাযের আগে ঘুমানোর অনুমতি দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪. অনুচ্ছেদঃ
‘ইশার নামাযের পর
কথাবার্তা বলার অনুমতি সম্পর্কে
১৬৯
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ
إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، قَالَ كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْمُرُ مَعَ أَبِي بَكْرٍ فِي الأَمْرِ مِنْ
أَمْرِ الْمُسْلِمِينَ وَأَنَا مَعَهُمَا . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عَمْرٍو وَأَوْسِ بْنِ حُذَيْفَةَ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ
الْحَسَنُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ رَجُلٍ
مِنْ جُعْفِيٍّ يُقَالُ لَهُ قَيْسٌ أَوِ ابْنُ قَيْسٍ عَنْ عُمَرَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَذَا الْحَدِيثَ فِي قِصَّةٍ طَوِيلَةٍ . وَقَدِ
اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَالتَّابِعِينَ وَمَنْ بَعْدَهُمْ فِي السَّمَرِ بَعْدَ صَلاَةِ الْعِشَاءِ
الآخِرَةِ فَكَرِهَ قَوْمٌ مِنْهُمُ السَّمَرَ بَعْدَ صَلاَةِ الْعِشَاءِ
وَرَخَّصَ بَعْضُهُمْ إِذَا كَانَ فِي مَعْنَى الْعِلْمِ وَمَا لاَ بُدَّ مِنْهُ
مِنَ الْحَوَائِجِ وَأَكْثَرُ الْحَدِيثِ عَلَى الرُّخْصَةِ . وَقَدْ رُوِيَ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ سَمَرَ إِلاَّ لِمُصَلٍّ
أَوْ مُسَافِرٍ " .
‘উমার ইবনুল
খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা আবূ বাকার (রাঃ)-এর
সাথে মুসলমানদের স্বার্থ সম্পর্কিত ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করতেন। আমিও তাঁদের সাথে
থাকতাম।
সহীহ্। সহীহাহ্ (২৭৮১)।
এ অনুচ্ছেদে
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর, আওস ইবনু হুযাইফা ও ‘ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘উমার (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান। হাদীসটি ‘উমার (রাঃ)-এর নিকট হতে
আরো একটি সূত্রে একটু দীর্ঘ ঘটনা প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে। ‘ইশার নামাযের পর কথাবার্তা
বলার ব্যাপারে সাহাবা, তাবিঈন ও পরবর্তী যুগের ‘আলিমদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। একদল
এটাকে মাকরূহ বলেছেন। অপর দলের মতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোচনা ও অতি প্রয়োজনীয় কথাবার্তা
বলার অনুমতি রয়েছে। (তিরমিযী বলেন) বেশিরভাগ হাদীস হতে অনুমতির কথাই প্রমাণিত হয়। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “নামাজী এবং মুসাফির ব্যতীত কারো জন্য ‘ইশার
নামাযের পর কথাবার্তা বলা জায়েয নেই”।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫. অনুচ্ছেদঃ
প্রথম ওয়াক্তের
ফাযিলত
১৭০
حَدَّثَنَا
أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ الْعُمَرِيِّ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ غَنَّامٍ،
عَنْ عَمَّتِهِ أُمِّ فَرْوَةَ، وَكَانَتْ، مِمَّنْ بَايَعَتِ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم قَالَتْ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الأَعْمَالِ
أَفْضَلُ قَالَ " الصَّلاَةُ لأَوَّلِ وَقْتِهَا " .
কাসিম ইবনু গান্নাম
(রহঃ) হতে তাঁর ফুফু ফারওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে বাই’আত গ্রহণকারিণীদের অন্তর্ভুক্ত
ছিলেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা
হল, কোন কাজটি সবচেয়ে ভাল? তিনি বললেন, আওয়াল (প্রথম) ওয়াক্তে নামায আদায় করা।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৪৫২), মিশকাত-(৬০৭)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ الْجُهَنِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عُمَرَ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي
طَالِبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ لَهُ " يَا عَلِيُّ ثَلاَثٌ لاَ تُؤَخِّرْهَا
الصَّلاَةُ إِذَا آنَتْ وَالْجَنَازَةُ إِذَا حَضَرَتْ وَالأَيِّمُ إِذَا وَجَدْتَ
لَهَا كُفْؤًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ حَسَنٌ .
‘আলী ইবনু আবূ
তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেনঃ হে ‘আলী! তিনটি ব্যাপারে দেরি করো নাঃ
‘নামায’-যখন তার ওয়াক্ত আসে, ‘জানাযা’-যখন উপস্থিত হয় এবং ‘বিবাহযোগ্য নারী’ যখন
তুমি তার উপযুক্ত (পাত্র) পাও।
যঈফ, মিশকাত ৬০৫
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৭২
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ الْوَلِيدِ الْمَدَنِيُّ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْوَقْتُ الأَوَّلُ مِنَ
الصَّلاَةِ رِضْوَانُ اللَّهِ وَالْوَقْتُ الآخِرُ عَفْوُ اللَّهِ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رَوَى ابْنُ عَبَّاسٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ
وَابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ وَابْنِ مَسْعُودٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
أُمِّ فَرْوَةَ لاَ يُرْوَى إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ
الْعُمَرِيِّ وَلَيْسَ هُوَ بِالْقَوِيِّ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ وَاضْطَرَبُوا
عَنْهُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ وَهُوَ صَدُوقٌ وَقَدْ تَكَلَّمَ فِيهِ يَحْيَى بْنُ
سَعِيدٍ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নামাযের প্রথম সময়ে রয়েছে
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের সুযোগ, আর শেষ সময়ে রয়েছে মার্জনা লাভের সুযোগ।
মাওযূ’, ইরওয়া ২৫৯, মিশকাত ৬০৬
আবূ ‘ঈসা
বলেন: এই হাদীসটি গারীব। ইবনু ‘আব্বাসও নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে
অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। এ অনুচ্ছেদে ‘আলী, ইবনু ‘উমার, আয়িশাহ্ ও ইবনু মাস‘ঊদ (রা:)
হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেন : উম্মু ফারওয়া (রা:)-এর হাদীসটি ‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার আল-‘উমারী ছাড়া আর কেউ বর্ণনা করেননি। অথচ তিনি (‘আবদুল্লাহ) হাদীস বিশারদদের
মতে শক্তিশালী রাবী নন, যদিও তিনি সত্যবাদী। তাদের মতে তিনি এ হাদীসের সনদে গোলমাল
করেছেন। ইয়াহ্’ইয়া ইবনু সা‘ঈদ তাঁর স্মরণশক্তির সমালোচনা করেছেন।
হাদিসের মানঃজাল হাদিস
১৭৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْفَزَارِيُّ، عَنْ أَبِي
يَعْفُورٍ، عَنِ الْوَليِدِ بْنِ الْعَيْزَارِ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو
الشَّيْبَانِيِّ، أَنَّ رَجُلاً، قَالَ لاِبْنِ مَسْعُودٍ أَىُّ الْعَمَلِ
أَفْضَلُ قَالَ سَأَلْتُ عَنْهُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ
" الصَّلاَةُ عَلَى مَوَاقِيتِهَا " . قُلْتُ وَمَاذَا يَا
رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " وَبِرُّ الْوَالِدَيْنِ " . قُلْتُ
وَمَاذَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " وَالْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى
الْمَسْعُودِيُّ وَشُعْبَةُ وَسُلَيْمَانُ هُوَ أَبُو إِسْحَاقَ الشَّيْبَانِيُّ
وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ الْعَيْزَارِ هَذَا الْحَدِيثَ .
আবূ আমর আশ-শাইবানী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি ইবনু
মাসঊদ (রাঃ)-কে প্রশ্ন করল, কোন কাজটি সবচেয়ে ভাল? তিনি বললেন, আমি এ বিষয়ে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি বলেছেনঃ
নির্দিষ্ট ওয়াক্তসমূহে নামায আদায় করা। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এরপর কোন
কাজটি সবচেয়ে ভাল? তিনি বললেনঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা। আমি বললাম, অতঃপর
কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলার রাস্তায় জিহাদ করা।
সহীহ্। বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। মাসঊদী, শুবা এবং সুলাইমান (আবূ ইসহাক শাইবানী) এবং আরো
অনেকে এই হাদীসটি ওয়ালিদ ইবনু আইযারের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ خَالِدِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
أَبِي هِلاَلٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عُمَرَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا صَلَّى
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلاَةً لِوَقْتِهَا الآخِرِ مَرَّتَيْنِ
حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
وَلَيْسَ إِسْنَادُهُ بِمُتَّصِلٍ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَالْوَقْتُ الأَوَّلُ
مِنَ الصَّلاَةِ أَفْضَلُ . وَمِمَّا يَدُلُّ عَلَى فَضْلِ أَوَّلِ الْوَقْتِ
عَلَى آخِرِهِ اخْتِيَارُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ
فَلَمْ يَكُونُوا يَخْتَارُونَ إِلاَّ مَا هُوَ أَفْضَلُ وَلَمْ يَكُونُوا
يَدَعُونَ الْفَضْلَ وَكَانُوا يُصَلُّونَ فِي أَوَّلِ الْوَقْتِ . قَالَ
حَدَّثَنَا بِذَلِكَ أَبُو الْوَلِيدِ الْمَكِّيُّ عَنِ الشَّافِعِيِّ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’বার কোন নামায শেষ ওয়াক্তে
আদায় করেননি। এমনকি এ অবস্থায় আল্লাহ তা’আলা তাঁকে তুলে নেন।
হাসান। মিশকাত-(৬০৮)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আর হাদীসের সনদ মুত্তাসিল (পরস্পর সংযোজিত) নয়। ইমাম শাফিঈ
বলেন, প্রথম ওয়াক্তে নামায আদায় করা খুবই ভাল। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকার ও ‘উমার (রাঃ) প্রথম ওয়াক্তেই নামায আদায় করতেন। তা হতে প্রমাণিত
হয় যে, ওয়াক্তের শেষ সময়ের উপর প্রথম সময়ের ফাযীলাত রয়েছে। বেশি ফাযীলাতের জিনিসই তাঁরা
গ্রহণ করতেন, তাঁরা ফাযীলাতপূর্ণ কাজ ছেড়ে দেননি। প্রথম ওয়াক্তে নামায আদায় করাই ছিল
তাদের আমল। ইমাম তিরমিযী বলেনঃ আবুল ওয়ালীদ মাক্কী এই উদ্বৃতিটি ইমাম শাফিঈ হতে বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৬. অনুচ্ছেদঃ
আসরের নামাযের ওয়াক্ত
ভুলে যাওয়া সম্পর্কে
১৭৫
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الَّذِي تَفُوتُهُ صَلاَةُ
الْعَصْرِ فَكَأَنَّمَا وُتِرَ أَهْلَهُ وَمَالَهُ " . وَفِي الْبَابِ
عَنْ بُرَيْدَةَ وَنَوْفَلِ بْنِ مُعَاوِيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ الزُّهْرِيُّ أَيْضًا
عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু ’উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তির আসরের নামায ছুটে গেল, (তার অবস্থা এরূপ)
যেন তার পরিবার-পরিজন ও ধন সম্পদ সবকিছু লুন্ঠিত হল।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৬৮৫), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
বুরাইদা ও নাওফাল ইবনু মুআবিয়া (রাঃ)-এর হাদীসও রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু উমারের
হাদীসটি হাসান সহীহ। ইমাম যুহরীও এ হাদীসটি তাঁর সনদ পরম্পরায় ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭. অনুচ্ছেদঃ
ইমাম যদি বিলম্বে
নামায আদায় করে তবে মুক্তাদীদের তা প্রথম ওয়াক্তে আদায় করা সম্পর্কে
১৭৬
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ مُوسَى الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ
الضُّبَعِيُّ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ الْجَوْنِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الصَّامِتِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" يَا أَبَا ذَرٍّ أُمَرَاءُ يَكُونُونَ بَعْدِي يُمِيتُونَ الصَّلاَةَ
فَصَلِّ الصَّلاَةَ لِوَقْتِهَا فَإِنْ صُلِّيَتْ لِوَقْتِهَا كَانَتْ لَكَ
نَافِلَةً وَإِلاَّ كُنْتَ قَدْ أَحْرَزْتَ صَلاَتَكَ " . وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَعُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ أَبِي ذَرٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَهُوَ قَوْلُ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ
أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ الصَّلاَةَ لِمِيقَاتِهَا
إِذَا أَخَّرَهَا الإِمَامُ ثُمَّ يُصَلِّي مَعَ الإِمَامِ وَالصَّلاَةُ الأُولَى
هِيَ الْمَكْتُوبَةُ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَأَبُو عِمْرَانَ
الْجَوْنِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ حَبِيبٍ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে আবূ যার! আমার পর এমন
সব আমীর (রাষ্ট্রপ্রধান) ক্ষমতায় আসবে যারা নামাযকে হত্যা করে ফেলবে। অতএব তুমি
সময়মত (আওয়াল ওয়াক্তে) নামায আদায় করে নিও। যদি তুমি নির্ধারিত সময়ে নামায (একাকি)
আদায় করে নাও তাহলে পরে ইমামের সাথে আদায় করা নামায তোমার জন্য নফল হিসাবে ধরা
হবে। পরে তুমি যদি ইমামের সাথে আবার নামায না আদায় কর তাহলে তুমি নিজের নামাযের
হিফাজাত করলে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২৫৬), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ ও ‘উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে, আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আবূ যার (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান। ইমাম যদি নামায আদায়ে দেরি করে, তাহলে যে কোন
ব্যক্তি একা নামায আদায় করে নেবে। অতঃপর ইমামের সাথে আবার তা আদায় করবে। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞের
মতে প্রথমের নামায ফরয হিসাবে বিবেচ্য হবে। আবূ ইমরান আলজাওনী’র নাম ‘আব্দুল মালিক
ইবনু হাবীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৮. অনুচ্ছেদঃ
নামায আদায় না করে
শুয়ে থাকা
১৭৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ
ذَكَرُوا لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَوْمَهُمْ عَنِ الصَّلاَةِ فَقَالَ
" إِنَّهُ لَيْسَ فِي النَّوْمِ تَفْرِيطٌ إِنَّمَا التَّفْرِيطُ فِي
الْيَقَظَةِ فَإِذَا نَسِيَ أَحَدُكُمْ صَلاَةً أَوْ نَامَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا
إِذَا ذَكَرَهَا " . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي
مَرْيَمَ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَجُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ وَأَبِي جُحَيْفَةَ
وَأَبِي سَعِيدٍ وَعَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ الضَّمْرِيِّ وَذِي مِخْبَرٍ وَيُقَالُ
ذِي مِخْمَرٍ وَهُوَ ابْنُ أَخِي النَّجَاشِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ
أَبِي قَتَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي
الرَّجُلِ يَنَامُ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ يَنْسَاهَا فَيَسْتَيْقِظُ أَوْ يَذْكُرُ
وَهُوَ فِي غَيْرِ وَقْتِ صَلاَةٍ عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ أَوْ عِنْدَ
غُرُوبِهَا . فَقَالَ بَعْضُهُمْ يُصَلِّيهَا إِذَا اسْتَيْقَظَ أَوْ ذَكَرَ
وَإِنْ كَانَ عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ أَوْ عِنْدَ غُرُوبِهَا . وَهُوَ قَوْلُ
أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ وَالشَّافِعِيِّ وَمَالِكٍ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ
يُصَلِّي حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ أَوْ تَغْرُبَ .
আবূ কাতাদা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লোকেরা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ‘নামাযের কথা ভুলে গিয়ে’
ঘুমিয়ে থাকা সম্পর্কে প্রশ্ন করল। তিনি বললেনঃ ঘুমন্ত ব্যক্তির কোন অপরাধ নেই,
জেগে থাকা অবস্থায় দোষ হবে। যখন তোমাদের কেউ নামাযের কথা ভুলে যায় অথবা তা আদায় না
করে ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে মনে পড়ার সাথে সাথে নামায পড়ে নেবে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ–(৬৯৮), মুসলিম, অনুরূপ।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু মাসঊদ, আবূ মারইয়াম, ইমরান ইবনু হুসাইন, জুবাইর ইবনু মুতইম, আবূ জুহাইফা, ‘আমর
ইবনু ঊমায়্যা ও যি-মিখবার (রাঃ) (তাঁকে যিমিখমারও বলা হয়ে থাকে আর তিনি হলেন নাজ্জাশীর
ভাতিজা) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ কাতাদার হাদীসটি হাসান সহীহ।
যদি কোন ব্যক্তি নামাযের কথা ভুলে যায় অথবা ঘুমে অচেতন থাকে, অতঃপর এমন সময় তার নামাযের
কথা মনে হয় অথবা ঘুম ভাংগে যখন নামাযের ওয়াক্ত চলে গেছে, অথবা সূর্য উঠছে কিংবা ডুবছে-এরূপ
অবস্থায় সে নামায আদায় করবে কি-না সে সম্পর্কে বিদ্বানদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
ইমাম আহমাদ, ইসহাক, শাফিঈ এবং মালিক (রহঃ) বলেছেন, এরূপ ক্ষেত্রে সে নামায আদায় করে
নেবে, চাই সেটা সূর্যোদয় অথবা ডুবে যাবার সময় হোক না কেন। অপর দলের মতে, সূর্যোদয় বা
অস্ত যাওয়ার সময় নামায আদায় করবে না, উদয় বা অস্ত শেষ হলেই নামায আদায় করবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তি নামাযের
কথা ভুলে গেছে
১৭৮
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَبِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " مَنْ نَسِيَ صَلاَةً فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا " .
وَفِي الْبَابِ عَنْ سَمُرَةَ وَأَبِي قَتَادَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَيُرْوَى عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ
أَنَّهُ قَالَ فِي الرَّجُلِ يَنْسَى الصَّلاَةَ قَالَ يُصَلِّيهَا مَتَى مَا
ذَكَرَهَا فِي وَقْتٍ أَوْ فِي غَيْرِ وَقْتٍ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ
وَأَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ وَإِسْحَاقَ . وَيُرْوَى عَنْ أَبِي بَكْرَةَ أَنَّهُ
نَامَ عَنْ صَلاَةِ الْعَصْرِ فَاسْتَيْقَظَ عِنْدَ غُرُوبِ الشَّمْسِ فَلَمْ
يُصَلِّ حَتَّى غَرَبَتِ الشَّمْسُ . وَقَدْ ذَهَبَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ
الْكُوفَةِ إِلَى هَذَا وَأَمَّا أَصْحَابُنَا فَذَهَبُوا إِلَى قَوْلِ عَلِيِّ
بْنِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নামায আদায়ের
কথা ভুলে গেছে সে যেন (নামাযের কথা) মনে হওয়ার সাথে সাথেই তা আদায় করে নেয়।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৬৯৬), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
সামুরা (রাঃ) ও আবূ কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে, আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আনাস (রাঃ)-এর
হাদীসটি হাসান সহীহ। ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি
নামাযের কথা ভুলে গেছে, মনে মনে হওয়ার সাথে সাথে সে তা আদায় করে নেবে, চাই নামাযের
ওয়াক্ত থাক বা না থাক”। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এই মত গ্রহন করেছেন। আবূ বাকরাহ
(রাঃ) প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে, “একবার তিনি ঘুমের ঘোরে আসরের নামাযের ওয়াক্ত কাটিয়ে দিলেন,
এমনকি সূর্য ডুবার সময় তিনি জেগে উঠলেন। অতঃপর সূর্যাস্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি
নামায আদায় করলেন না।” কুফার আলিমগন (আবূ হানীফা ও তাঁর মতানুসারীগন) এই মত গ্রহণ করেছেন।
(তিরমিযী বলেন) কিন্তু আমাদের সঙ্গীরা ‘আলী (রাঃ)-এর মত গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০. অনুচ্ছেদঃ
যার একাধারে কয়েক
ওয়াক্তের নামায ছুটে গেছে সে কোন ওয়াক্ত থেকে শুরু করবে
১৭৯
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ نَافِعِ بْنِ
جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ إِنَّ الْمُشْرِكِينَ
شَغَلُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَرْبَعِ صَلَوَاتٍ يَوْمَ
الْخَنْدَقِ حَتَّى ذَهَبَ مِنَ اللَّيْلِ مَا شَاءَ اللَّهُ فَأَمَرَ بِلاَلاً
فَأَذَّنَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْعَصْرَ
ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْمَغْرِبَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْعِشَاءَ "
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ لَيْسَ بِإِسْنَادِهِ بَأْسٌ إِلاَّ أَنَّ أَبَا عُبَيْدَةَ
لَمْ يَسْمَعْ مِنْ عَبْدِ اللَّهِ . وَهُوَ الَّذِي اخْتَارَهُ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ فِي الْفَوَائِتِ أَنْ يُقِيمَ الرَّجُلُ لِكُلِّ صَلاَةٍ إِذَا
قَضَاهَا وَإِنْ لَمْ يُقِمْ أَجْزَأَهُ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ .
আবূ উবাইদা ইবনু
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেছেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (লড়াইয়ে বিব্রত করে) চার ওয়াক্ত নামায হতে নিবৃত্ত রাখে।
পরিশেষে আল্লাহর ইচ্ছাই যখন কিছু রাত চলে গেল তখন তিনি বিলাল কে আযান দেওয়ার
নির্দেশ দিলেন। তিনি আযান দিলেন এবং ইক্বামাত বললেন৷ তিনি (রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) যুহরের নামায আদায় করালেন। অতঃপর বিলাল
ইক্বামাত দিলে তিনি আসরের নামায আদায় করালেন। অতঃপর বিলাল ইক্বামাত দিলে তিনি
মাগরিবের নামায আদায় করালেন। অতঃপর বিলাল ইক্বামাত দিলে তিনি ‘ইশার নামায আদায়
করালেন।
হাসান, ইরওয়া-(১/২৫৭)।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ সা’ঈদ ও জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসও রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর
হাদীসের সনদের মধ্যে কোন ত্রুটি নেই। কিন্তু আবূ উবাইদা আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর নিকট কিছু শুনেননি। এ হাদীসের
ভিত্তিতে এক দল বিদ্বান বলেছেন, এক সাথে কয়েক ওয়াক্ত নামায ছুটে গেলে তার কাযা করার
সময় প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য পৃথকভাবে ইক্বামত দিবে, তবে ইক্বামত না দিলেও চলে। ইমাম
শাফিঈ এ মত গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৮০
وَحَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، بُنْدَارٌ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي
أَبِي، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ،
قَالَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ وَجَعَلَ يَسُبُّ كُفَّارَ قُرَيْشٍ قَالَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ مَا كِدْتُ أُصَلِّي الْعَصْرَ حَتَّى تَغْرُبَ الشَّمْسُ . فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَاللَّهِ إِنْ صَلَّيْتُهَا
" . قَالَ فَنَزَلْنَا بُطْحَانَ فَتَوَضَّأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم وَتَوَضَّأْنَا فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْعَصْرَ
بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى بَعْدَهَا الْمَغْرِبَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খন্দকের যুদ্ধের দিন
‘উমার (রাঃ) কুরাইশ কাফিরদের গালি দিতে দিতে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সূর্য ডুবে
গেল অথচ আসরের নামায আদায় করার সুযোগ পেলামনা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমিও তা আদায় করার সুযোগ পাইনি। ‘ঊমার (রাঃ)
বললেন, আমরা বুতহান নামক উপত্যকায় গিয়ে নামলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ওযূ করলেন, আমরাও অযূ করলাম। সূর্য ডুবে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসরের নামায আদায় করলেন, এরপর মাগরিবের নামায
আদায় করলেন।
সহীহ্-বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১. অনুচ্ছেদঃ
মধ্যবর্তী নামায
আসরের নামায। তা যুহরের নামায বলেও কথিত আছে
১৮১
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، وَأَبُو
النَّضْرِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، عَنْ زُبَيْدٍ، عَنْ
مُرَّةَ الْهَمْدَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " صَلاَةُ الْوُسْطَى صَلاَةُ
الْعَصْرِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ ইবনে
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মধ্যবর্তী নামায হচ্ছে
আসরের নামায।
সহীহ্। মিশকাত-(৬৩৪), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৮২
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ،
عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ
" صَلاَةُ الْوُسْطَى صَلاَةُ الْعَصْرِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَلِيٍّ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَعَائِشَةَ
وَحَفْصَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي هَاشِمِ بْنِ عُتْبَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى قَالَ مُحَمَّدٌ قَالَ عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ حَدِيثُ الْحَسَنِ عَنْ
سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ حَدِيثٌ صَحِيحٌ وَقَدْ سَمِعَ مِنْهُ . وَقَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ سَمُرَةَ فِي صَلاَةِ الْوُسْطَى حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَهُوَ قَوْلُ أَكْثَرِ الْعُلَمَاءِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَغَيْرِهِمْ . وَقَالَ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ وَعَائِشَةُ صَلاَةُ
الْوُسْطَى صَلاَةُ الظُّهْرِ . وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَابْنُ عُمَرَ صَلاَةُ
الْوُسْطَى صَلاَةُ الصُّبْحِ . حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا قُرَيْشُ بْنُ أَنَسٍ عَنْ حَبِيبِ بْنِ الشَّهِيدِ قَالَ
قَالَ لِي مُحَمَّدُ بْنُ سِيرِينَ سَلِ الْحَسَنَ مِمَّنْ سَمِعَ حَدِيثَ
الْعَقِيقَةِ فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ سَمِعْتُهُ مِنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمَدِينِيِّ عَنْ قُرَيْشِ بْنِ أَنَسٍ بِهَذَا
الْحَدِيثِ . قَالَ مُحَمَّدٌ قَالَ عَلِيٌّ وَسَمَاعُ الْحَسَنِ مِنْ سَمُرَةَ
صَحِيحٌ . وَاحْتَجَّ بِهَذَا الْحَدِيثِ .
সামুরা ইবনু জুনদুব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মধ্যবর্তী নামায হল আসরের
নামায।
সহীহ্। মিশকাত-(৬৩৪), মুসলিম।
আবূ মূসা
মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না কুরাইশ ইবনু আনাস হতে, তিনি হাবীব ইবনু আনাস হতে বর্ণনা করেন
যে, তিনি (হাবীব) বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন আমাকে বললেনঃ তুমি হাসানকে জিজ্ঞেস কর
তিনি ‘আক্বীক্বাহ্ সংক্রান্ত হাদীসটি কার নিকট হতে শুনেছেন? ফলে আমি তাকে জিজ্ঞেস
করায় তিনি বললেন, আমি তা সামুরাহ্ ইবনু জুনদাবের নিকট শুনেছি।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল ‘আলী ইবনু আবদুল্লাহ ইবনুল মাদানী হতে তিনি কুরাইশ
ইবনু আনাস এই সানাদে এই হাদীসটি আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মাদ (বুখারী) বলেনঃ
‘আলী (ইবনুল মাদীনী) বলেছেন, সামুরাহ্র নিকট হতে হাসানের হাদীস শ্রবনের বিষয়টি সঠিক।
উপরে বর্ণিত হাদীস দ্বারা তিনি এর প্রমান পেশ করেছেন।
এ অনুচ্ছেদে ‘আলী, ইবনু মাসঊদ, যাইদ ইবনু সাবিত, আইশা, হাফসা, আবূ হুরায়রা ও আবূ হাশিম
ইবনু উতবা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ মুহাম্মাদ (বুখারী) বলেছেন,
আলী ইবনু আবদুল্লাহ বলেছেন, সামুরার সূত্রে আল-হাসান হতে বর্ণিত হাদীসটি সহীহ। তিনি
(হাসান) তাঁর নিকটে এই হাদীসটি শুনেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেন- সামুরার হাদীসটি হাসান।
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবা ও তাবেঈ ‘আসরের নামাযকেই
মধ্যবর্তী নামায বলেছেন। যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) ও ‘আয়িশাহ (রাঃ) যুহরের নামাযকে, মধ্যবর্তী
নামায বলেছেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) ও ইবনু ‘উমার (রাঃ) ফযরের নামাযকে মধ্যবর্তী নামায
বলেছেন।
সহীহ্। বুখারী, দেখুন-(১৪৭৮)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২. অনুচ্ছেদঃ
‘আসর ও ফযরের নামাযের
পর অন্য কোন নামায আদায় করা মাকরূহ
১৮৩
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا مَنْصُورٌ، وَهُوَ ابْنُ
زَاذَانَ عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو الْعَالِيَةِ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ سَمِعْتُ غَيْرَ، وَاحِدٍ، مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم مِنْهُمْ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَكَانَ مِنْ أَحَبِّهِمْ إِلَىَّ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْفَجْرِ
حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ وَعَنِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ
الشَّمْسُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي
سَعِيدٍ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَسَمُرَةَ
بْنِ جُنْدَبٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَمُعَاذِ بْنِ عَفْرَاءَ
وَالصُّنَابِحِيِّ وَلَمْ يَسْمَعْ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَسَلَمَةَ
بْنِ الأَكْوَعِ وَزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَعَائِشَةَ وَكَعْبِ بْنِ مُرَّةَ وَأَبِي
أُمَامَةَ وَعَمْرِو بْنِ عَبَسَةَ وَيَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ وَمُعَاوِيَةَ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَهُوَ قَوْلُ أَكْثَرِ الْفُقَهَاءِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ أَنَّهُمْ كَرِهُوا الصَّلاَةَ بَعْدَ صَلاَةِ الصُّبْحِ
حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ وَبَعْدَ صَلاَةِ الْعَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ الشَّمْسُ
وَأَمَّا الصَّلَوَاتُ الْفَوَائِتُ فَلاَ بَأْسَ أَنْ تُقْضَى بَعْدَ الْعَصْرِ
وَبَعْدَ الصُّبْحِ . قَالَ عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ قَالَ يَحْيَى بْنُ
سَعِيدٍ قَالَ شُعْبَةُ لَمْ يَسْمَعْ قَتَادَةُ مِنْ أَبِي الْعَالِيَةِ إِلاَّ
ثَلاَثَةَ أَشْيَاءَ حَدِيثَ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى
عَنِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ الشَّمْسُ وَبَعْدَ الصُّبْحِ
حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ وَحَدِيثَ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " لا يَنْبَغِي لأَحَدٍ أَنْ يَقُولَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ
يُونُسَ بْنِ مَتَّى " . وَحَدِيثَ عَلِيٍّ " الْقُضَاةُ
ثَلاَثَةٌ " .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একাধিক সাহাবীর নিকট হতে এ
হাদীস শুনেছি যাদের মধ্যে ‘উমার (রাঃ)-ও ছিলেন। সাহাবাদের মধ্যে তিনিই ছিলেন আমার
নিকট বেশি প্রিয়। (তাঁরা বলেছেন) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ফযরের নামাযের পর সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত এবং ‘আসরের নামাযের পর সূর্যাস্ত না
যাওয়া পর্যন্ত অন্য কোন নামায আদায় করতে নিষেধ করেছেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২৫০), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আলী, ইবনু মাসঊদ, ‘উকবা ইবনু ‘আমির, আবূ হুরায়রা, ইবনু ‘উমার, সামুরা ইবনু জুনদুব,
সালামা ইবনুল আকওয়া, যাইদ ইবনু সাবিত, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর, মু’আয ইবনু আফরাআ, সুনাবিহী,
‘আয়িশাহ্, কা’ব ইবনু মুররা, আবূ উমামা, ‘আমর ইবনু ‘আবাসা, ইয়া’লা ইবনু উমাইয়া এবং
মু’আবিয়া (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘উমার (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত
এই হাদীসটি হাসান সহীহ। সুনাবিহী নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট
হতে কোন হাদীস শুনেনি।
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বেশীরভাগ ফকীহ সাহাবা ও তাদের পরবর্তীগণ ফযরের
নামাযের পর হতে সূর্য উঠা পর্যন্ত এবং আসরের পর হতে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত সময়ের
মধ্যে কোন নামায আদায় করা মাকরূহ বলেছেন, কিন্তু ছুটে যাওয়া (ফওত হওয়া ফরয) নামায ফযর
ও আসরের পর আদায় করা যাবে। ‘আলী ইবনুল মাদীনী- ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদের সূত্রে, তিনি শু’বার
সুত্রে বর্ণনা করেন, তিনি (শু’বা) বলেছেন, কাতাদা আবুল ‘আলীয়ার নিকট হতে তিনটি কথা
ছাড়া আর কিছুই শুনেননি।
এক. ‘‘উমার (রাঃ)-এর হাদীস-“রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আসরের
নামাযের পর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত ফযরের নামাযের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে
নামায আদায় করতে নিষেধ করেছেন।”
দুই. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীস- রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ “কারো পক্ষে এটা শোভা পায় না যে, সে দাবি করবে, আমি ইউনুস (আঃ) ইবনু মাত্তার
চেয়ে উত্তম” ।
তিন. আলী (রাঃ)-এর হাদীস- ‘বিচারক তিন রকমের হয়ে থাকে’।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩. অনুচ্ছেদঃ
‘আসরের নামাযের পর
অন্য নামায আদায় প্রসঙ্গে
১৮৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ إِنَّمَا صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعَصْرِ لأَنَّهُ أَتَاهُ مَالٌ فَشَغَلَهُ عَنِ
الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الظُّهْرِ فَصَلاَّهُمَا بَعْدَ الْعَصْرِ ثُمَّ لَمْ
يَعُدْ لَهُمَا . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ وَمَيْمُونَةَ
وَأَبِي مُوسَى . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ .
وَقَدْ رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ صَلَّى
بَعْدَ الْعَصْرِ رَكْعَتَيْنِ . وَهَذَا خِلاَفُ مَا رُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ
نَهَى عَنِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ الشَّمْسُ " .
وَحَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ أَصَحُّ حَيْثُ قَالَ لَمْ يَعُدْ لَهُمَا . وَقَدْ
رُوِيَ عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ نَحْوُ حَدِيثِ ابْنِ عَبَّاسٍ . وَقَدْ رُوِيَ
عَنْ عَائِشَةَ فِي هَذَا الْبَابِ رِوَايَاتٌ رُوِيَ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم مَا دَخَلَ عَلَيْهَا بَعْدَ الْعَصْرِ إِلاَّ صَلَّى
رَكْعَتَيْنِ وَرُوِيَ عَنْهَا عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم أَنَّهُ نَهَى عَنِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ الشَّمْسُ
وَبَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ . وَالَّذِي اجْتَمَعَ عَلَيْهِ
أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَى كَرَاهِيَةِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى
تَغْرُبَ الشَّمْسُ وَبَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ إِلاَّ مَا
اسْتُثْنِيَ مِنْ ذَلِكَ مِثْلُ الصَّلاَةِ بِمَكَّةَ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى
تَغْرُبَ الشَّمْسُ وَبَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ بَعْدَ
الطَّوَافِ فَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رُخْصَةٌ فِي ذَلِكَ
. وَقَدْ قَالَ بِهِ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ . وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ
وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمُ الصَّلاَةَ بِمَكَّةَ
أَيْضًا بَعْدَ الْعَصْرِ وَبَعْدَ الصُّبْحِ . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ
الثَّوْرِيُّ وَمَالِكُ بْنُ أَنَسٍ وَبَعْضُ أَهْلِ الْكُوفَةِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসরের নামাযের পর দুই রাক‘আত নামায আদায়
করলেন। কেননা তাঁর নিকট কিছু সম্পদ এসেছিল, তিনি তা বিলি করতে ব্যস্ত ছিলেন এবং
যুহরের (ফরযের) পরের দুই রাক‘আত আদায়ের সুযোগ পাননি। এই দুই রাক‘আতই তিনি আসরের
নামাযের পর আদায় করলেন। তারপর তিনি কখনো তার পুণসঙ্ঘটন করেননি।
সনদ দুর্বল। তারপর তিনি কখনও পুণসঙ্ঘটন করেননি, অংশটুকু মুনকার।
এ অনুচ্ছেদে
আইশা, উম্মু সালামা, মাইমূনা ও আবূ মূসা (রা:) হতে বর্ণিত হাদীসও আছে। আবূ ঈসা বলেন,
ইবনু আব্বাস (রা:) বর্ণিত হাদীসটি হাসান। একাধিক ব্যক্তি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন যে, তিনি আসরের পর দুই রাক‘আত নামায আদায়
করেছিলেন। এই হাদীসটি আসরের পর নামায সম্পর্কিত নেতিবাচক হাদীস পরিপন্থী। ইবনু আব্বাস
(রা:)-এর হাদীসটি বেশী সহীহ, যাতে তিনি বলেছেন : তারপর তিনি তার পুণসঙ্ঘটন করেন নি।
ইবনু আব্বাসের হাদীসের অনুরূপ হাদীস যাইদ ইবনু সাবিত (রা:) হতেও বর্ণিত আছে। এ অনুচ্ছেদে
আইশা (রা:)-এর বেশ কয়েকটি বর্ণনা আছে। একটি বর্ণনা হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসরের নামাযের পর তাঁর ঘরে গেলেই তিনি দুই রাক‘আত নামায আদায়
করতেন।
আইশা (রা:)-এর দ্বিতীয় হাদীসটি উম্মু সালামা (রা:)-এর সূত্রে বর্ণিত, এতে আছে, নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসরের পর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত এবং ফযরের পর
সূর্য উঠা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নামায আদায় করতে নিষেধ করেছেন।
এ বিষয়ে বিদ্বানগণের অধিকাংশই ঐকমত্য পোষণ করেন যে, মক্কা মুআযযমায় বাইতুল্লাহ তাওয়াফের
পর আসরের পর হতে সূর্য ডোবা পর্যন্ত এবং ফযরের পর হতে সূর্য উঠা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে
নামায আদায় করা এই নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত রাখা হয়েছে। কেননা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাওয়াফের পর উল্লেখিত সময়ে নামায আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবা ও তাদের
পরবর্তীগণ (মাক্কাতে) উল্লেখিত সময়ে নামায আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ
এবং ইসহাকও এ অভিমত দিয়েছেন। সাহাবাদের অপর দল ও তাদের পরবর্তীগণ ফজরের পর এবং ‘আসরের
পর মক্কাতেও নামায আদায় করা মাকরূহ বলেছেন। সুফইয়ান সাওরী, মালিক ইবনু আনাস এবং কিছু
কুফাবাসী এ মত সমর্থন করেছেন।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
২৪. অনুচ্ছেদঃ
সূর্যাস্তের পর
মাগরিবের নামাযের পূর্বে নফল নামায আদায় করা
১৮৫
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ كَهْمَسِ بْنِ الْحَسَنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ لِمَنْ شَاءَ
" . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَقَدِ اخْتَلَفَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الصَّلاَةِ قَبْلَ
الْمَغْرِبِ فَلَمْ يَرَ بَعْضُهُمُ الصَّلاَةَ قَبْلَ الْمَغْرِبِ . وَقَدْ
رُوِيَ عَنْ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُمْ كَانُوا يُصَلُّونَ قَبْلَ صَلاَةِ الْمَغْرِبِ رَكْعَتَيْنِ بَيْنَ
الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ إِنْ صَلاَّهُمَا
فَحَسَنٌ . وَهَذَا عِنْدَهُمَا عَلَى الاِسْتِحْبَابِ .
আবদুল্লাহ ইবনু
মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ প্রত্যেক দুই আযানের মাঝখানে নামায আছে, যে চায় তা
আদায় করতে পারে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১১৬২), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেন, ‘আবদুল্লাহ
ইবনু মুগাফফাল (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। মাগরিবের নামাযের পূর্বে (অতিরিক্ত) নামায
আদায় সম্পর্কে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবাদের মধ্যে মতের অমিল
রয়েছে। তাদের কতেকের মত হল, মাগরিবের (আযানের পর এবং ইক্বামতের) পূর্বে কোন নামায না
আদায় করাই শ্রেয়। অপরদিকে একাধিক সাহাবা মাগরিবের আযান এবং ইক্বামাতের মাঝখানে দুই
রাকা’আত নামায আদায় করতেন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক বলেন, কেউ যদি এই দুই রাক’আত নামায আদায়
করে তবে সে ভালোই করে এ দু’রাক’আত আদায় করে নেয়াটা মুস্তাহাব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তি
সূর্যাস্তের পূর্বে আসরের এক রাক’আত নামায পেয়েছে
১৮৬
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكُ
بْنُ أَنَسٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، وَعَنْ
بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، وَعَنِ الأَعْرَجِ، يُحَدِّثُونَهُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَدْرَكَ مِنَ
الصُّبْحِ رَكْعَةً قَبْلَ أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ فَقَدْ أَدْرَكَ الصُّبْحَ
وَمَنْ أَدْرَكَ مِنَ الْعَصْرِ رَكْعَةً قَبْلَ أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ فَقَدْ
أَدْرَكَ الْعَصْرَ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَبِهِ يَقُولُ
أَصْحَابُنَا وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَمَعْنَى هَذَا
الْحَدِيثِ عِنْدَهُمْ لِصَاحِبِ الْعُذْرِ مِثْلُ الرَّجُلِ يَنَامُ عَنِ
الصَّلاَةِ أَوْ يَنْسَاهَا فَيَسْتَيْقِظُ وَيَذْكُرُ عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ
وَعِنْدَ غُرُوبِهَا .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি সূর্য উঠার পূর্বে ফজরের এক
রাক’আত (ফরয নামায) পেল সে ফযরের নামায পেল। আর যে ব্যক্তি সূর্যাস্তের পূর্বে
আসরের এক রাক’আত পেল সেও আসরের নামায পেল।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৬৭০, ৬৯৯), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসও রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর হাদীসটি
হাসান সহীহ। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ, ইসহাক ও আমাদের সাথীরা এ হাদীসকে তাদের দলীল হিসাবে
গ্রহণ করেছেন। তাদের মতে হাদীসে অর্পিত এ সুবিধা শুধু তারাই পাবে যাদের অজুহাত রয়েছে।
যেমন কেউ ঘুমিয়ে ছিল এবং এমন সময় জেগেছে যখন সূর্য উঠা বা ডুবার উপক্রম হয়েছে, অথবা
নামাযের কথা ভুলে গেছে এবং ঐ সময়ে মনে পড়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৬. অনুচ্ছেদঃ
মুক্বীম অবস্থায় দুই
ওয়াক্তের নামায এক সাথে আদায় করা
১৮৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ
أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ جَمَعَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَبَيْنَ
الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ بِالْمَدِينَةِ مِنْ غَيْرِ خَوْفٍ وَلاَ مَطَرٍ .
قَالَ فَقِيلَ لاِبْنِ عَبَّاسٍ مَا أَرَادَ بِذَلِكَ قَالَ أَرَادَ أَنْ لاَ
يُحْرِجَ أُمَّتَهُ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ قَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ رَوَاهُ
جَابِرُ بْنُ زَيْدٍ وَسَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ شَقِيقٍ
الْعُقَيْلِيُّ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم غَيْرُ هَذَا .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভয় অথবা বৃষ্টিজনিত কারণ ছাড়াই মাদীনাতে যুহর
ও আসরের নামায একত্রে এবং মাগরিব ও ‘ইশার নামায একত্রে আদায় করেছেন। সা’ঈদ ইবনু
যুবাইর বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হল, এরূপ করার পেছনে তাঁর
(রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) কি উদ্দেশ্য ছিল? তিনি বললেন,
উম্মাতের অসুবিধা হ্রাস করাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল।
সহীহ্। ইরওয়া-(১/৫৭৯), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(১০৯৬), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘আব্বাসের হাদীসটি
তাঁর নিকট হতে বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে। জাবির ইবনু যাইদ, সা’ঈদ ইবনু যুবাইর এবং
‘আবদুল্লাহ ইবনু শাকীকও এ হাদীসটি তাঁর নিকট হতে বর্ণনা করেছেন। ইবনু ‘আব্বাসের সূত্রে
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে ভিন্নরূপও বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৮৮
حَدَّثَنَا
أَبُو سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ
سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حَنَشٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ جَمَعَ بَيْنَ
الصَّلاَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ عُذْرٍ فَقَدْ أَتَى بَابًا مِنْ أَبْوَابِ
الْكَبَائِرِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَنَشٌ هَذَا هُوَ أَبُو عَلِيٍّ
الرَّحَبِيُّ وَهُوَ حُسَيْنُ بْنُ قَيْسٍ وَهُوَ ضَعِيفٌ عِنْدَ أَهْلِ
الْحَدِيثِ ضَعَّفَهُ أَحْمَدُ وَغَيْرُهُ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ
أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ لاَ يَجْمَعَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ إِلاَّ فِي السَّفَرِ
أَوْ بِعَرَفَةَ . وَرَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنَ التَّابِعِينَ فِي
الْجَمْعِ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ لِلْمَرِيضِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ
. وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ يَجْمَعُ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ فِي
الْمَطَرِ وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَلَمْ يَرَ
الشَّافِعِيُّ لِلْمَرِيضِ أَنْ يَجْمَعَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কোন অজুহাত ছাড়াই যে ব্যক্তি দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে আদায়
করে সে কাবীরা গুনাহের স্তরসমূহের মধ্যে একটি স্তরে পৌঁছে যায়।
খুবই দুর্বল। তা’লীকুর রাগীব (১/১৯৮), যঈফাহ্ (৪৫৮১)।
আবূ ‘ঈসা
বলেন: হাদীস বিশারদদের বিচারে হানাশ, উপনাম আবূ ‘আলী আল-রাহবী, নাম হুসাইন ইবনু কাইস
একজন দুর্বল রাবী। ইমাম আহমাদ ও অন্যরা তাঁকে দুর্বল মনে করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে সফর
ও ‘আরাফাতের ময়দান ছাড়া দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে আদায় করা যাবে না। কিছু তাবিঈ রুগ্ন
ব্যক্তিকে দুই ওয়াক্তের নামায একত্র করার অনুমতি দিয়েছেন। আহমাদ ও ইসহাক এ মত গ্রহণ
করেছেন। কিছু বিশেষজ্ঞ বৃষ্টির কারণে দুই নামায একত্রে আদায় করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন।
শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাক ও অনুরূপ কথা বলেছেন। কিন্তু শাফিঈ রুগ্ন ব্যক্তিকে দুই নামায
একত্রে আদায়ের অনুমতি দেননি।
হাদিসের মানঃখুবই দুর্বল
২৭. অনুচ্ছেদঃ
আযানের প্রবর্তন
১৮৯
حَدَّثَنَا
سَعِيدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأُمَوِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْحَارِثِ
التَّيْمِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَبِيهِ،
قَالَ لَمَّا أَصْبَحْنَا أَتَيْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَأَخْبَرْتُهُ بِالرُّؤْيَا فَقَالَ " إِنَّ هَذِهِ لَرُؤْيَا حَقٍّ
فَقُمْ مَعَ بِلاَلٍ فَإِنَّهُ أَنْدَى وَأَمَدُّ صَوْتًا مِنْكَ فَأَلْقِ
عَلَيْهِ مَا قِيلَ لَكَ وَلْيُنَادِ بِذَلِكَ " . قَالَ فَلَمَّا سَمِعَ
عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ نِدَاءَ بِلاَلٍ بِالصَّلاَةِ خَرَجَ إِلَى رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَجُرُّ إِزَارَهُ وَهُوَ يَقُولُ يَا رَسُولَ
اللَّهِ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لَقَدْ رَأَيْتُ مِثْلَ الَّذِي قَالَ .
قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " فَلِلَّهِ الْحَمْدُ
فَذَلِكَ أَثْبَتُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَقَدْ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
إِسْحَاقَ أَتَمَّ مِنْ هَذَا الْحَدِيثِ وَأَطْوَلَ وَذَكَرَ فِيهِ قِصَّةَ
الأَذَانِ مَثْنَى مَثْنَى وَالإِقَامَةِ مَرَّةً مَرَّةً . وَعَبْدُ اللَّهِ
بْنُ زَيْدٍ هُوَ ابْنُ عَبْدِ رَبِّهِ وَيُقَالُ ابْنُ عَبْدِ رَبٍّ وَلاَ نَعْرِفُ
لَهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا يَصِحُّ إِلاَّ هَذَا الْحَدِيثَ
الْوَاحِدَ فِي الأَذَانِ . وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدِ بْنِ عَاصِمٍ
الْمَازِنِيُّ لَهُ أَحَادِيثُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَمُّ
عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ .
মুহাম্মাদ ইবনু
‘আবদুল্লাহ ইবনু যাইদ (রাঃ) হতে তাঁর পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (যাইদ) বলেন,
যখন সকাল হল, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এলাম।
তাঁকে (আমার) স্বপ্নের কথা বললাম। তিনি বললেনঃ “এটা নিশ্চয়ই বাস্তব (সত্য) স্বপ্ন।
তুমি বিলালের সাথে যাও, কেননা তার কণ্ঠস্বর তোমার চেয়ে উঁচু এবং লম্বা। তাঁকে বলে
দাও যা তোমাকে বলা হয়েছে এবং এগুলো দিয়ে সে আযান দেবে।” যাইদ (রাঃ) বলেন, ‘উমার
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) যখন নামাযের জন্য বিলালের আযান শুনতে পেলেন, তখন তিনি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উদ্দেশ্যে বের হলেন। তিনি
নিজের চাদর টানতে টানতে এবং এই বলতে বলতে আসলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল, সেই সত্তার
শপথ যিনি আপনাকে সত্য সহযোগে পাঠিয়েছেন! বিলাল যেমন বলেছে আমি তেমনই স্বপ্নে
দেখেছি।’ রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, এটা আরো প্রবল হল।
হাসান। ইবনু মাজাহ-(৭০৬)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণনাকৃত হাদীসও রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আবদুল্লাহ ইবনু যাইদ
(রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। অপর এক সূত্রে এ হাদীসটি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা হয়েছে
এবং তাতে আযানের শব্দ দুই দুই বার এবং ইকামাতের শব্দ এক একবার উল্লেখ রয়েছে। এই হাদীসটি
ছাড়া আবদুল্লাহ ইবনু যাইদ ইবনু ‘আবদি রাব (রাঃ) হতে আর কোন সহীহ হাদীস বর্ণনা হয়েছে
বলে আমার জানা নেই।
আব্বাদ ইবনু তামীমের চাচা আব্দুল্লাহ ইবনু যাইদ ইবনু আসিম হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৯০
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ النَّضْرِ بْنِ أَبِي النَّضْرِ، حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ
مُحَمَّدٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنَا نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ،
قَالَ كَانَ الْمُسْلِمُونَ حِينَ قَدِمُوا الْمَدِينَةَ يَجْتَمِعُونَ
فَيَتَحَيَّنُونَ الصَّلَوَاتِ وَلَيْسَ يُنَادِي بِهَا أَحَدٌ فَتَكَلَّمُوا
يَوْمًا فِي ذَلِكَ فَقَالَ بَعْضُهُمُ اتَّخِذُوا نَاقُوسًا مِثْلَ نَاقُوسِ
النَّصَارَى . وَقَالَ بَعْضُهُمُ اتَّخِذُوا قَرْنًا مِثْلَ قَرْنِ الْيَهُودِ
. قَالَ فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ أَوَلاَ تَبْعَثُونَ رَجُلاً يُنَادِي
بِالصَّلاَةِ قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا
بِلاَلُ قُمْ فَنَادِ بِالصَّلاَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عُمَرَ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুসলমানরা
যখন হিজরাত করে মাদীনায় আসলেন, তখন তারা আন্দাজ করে নামাজের জন্য একটা সময় ঠিক করে
নিতেন এবং সে অনুসারে সমবেত হতেন। নামাযের জন্য কেউ আহ্বান করত না। একদিন তাঁরা
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলেন। কেউ কেউ প্রস্তাব করলেন, খৃষ্টানদের মত একটি ঘন্টা বাজানো
হোক। আবার কতেকে বললেন, ইয়াহূদীদের মত শিংগা বাজানো হোক। রাবী বলেন, ‘উমার (রাঃ)
বললেন, নামাযের জন্য ডাকতে তোমরা কি একজন লোক পাঠাতে পার না?
রাবী বলেন, অতএব রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে বিলাল!
ওঠো এবং নামাযের জন্য আহ্বান কর।
সহীহ্-বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবনু ‘উমার হতে গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৮. অনুচ্ছেদঃ
আযানের তারজী করা
১৯১
حَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ عَبْدِ
الْعَزِيزِ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي مَحْذُورَةَ، قَالَ أَخْبَرَنِي
أَبِي وَجَدِّي، جَمِيعًا عَنْ أَبِي مَحْذُورَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم أَقْعَدَهُ وَأَلْقَى عَلَيْهِ الأَذَانَ حَرْفًا حَرْفًا . قَالَ
إِبْرَاهِيمُ مِثْلَ أَذَانِنَا . قَالَ بِشْرٌ فَقُلْتُ لَهُ أَعِدْ عَلَىَّ
. فَوَصَفَ الأَذَانَ بِالتَّرْجِيعِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي
مَحْذُورَةَ فِي الأَذَانِ حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ
وَجْهٍ . وَعَلَيْهِ الْعَمَلُ بِمَكَّةَ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ .
আবূ মাহযুরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে নিজের নিকট বসিয়ে আযানের প্রতিটি হরফ এক
এক করে শিখিয়েছেন। (অধস্তন রাবী) ইবরাহীম বলেন, আমাদের আযানের মত। বিশর বলেন, আমি
তাঁকে বললাম, আমার সামনে পুনঃপাঠ করুন। তিনি তারজী সহকারে তা বললেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭০৮)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আবূ মাহযুরা (রাঃ)-এর আযান সম্পর্কিত হাদীসটি সহীহ। এ হাদীসটি তাঁর নিকট হতে
একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। মক্কার পবিত্র ভূমিতে এ নিয়মেই আযান দেওয়া হয়। ইমাম শাফিঈ
এ মতের সমর্থক।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯২
حَدَّثَنَا
أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا
هَمَّامٌ، عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ الْوَاحِدِ الأَحْوَلِ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُحَيْرِيزٍ، عَنْ أَبِي مَحْذُورَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم عَلَّمَهُ الأَذَانَ تِسْعَ عَشْرَةَ كَلِمَةً وَالإِقَامَةَ
سَبْعَ عَشْرَةَ كَلِمَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَأَبُو مَحْذُورَةَ اسْمُهُ سَمُرَةُ بْنُ مِعْيَرٍ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ
أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا فِي الأَذَانِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي
مَحْذُورَةَ أَنَّهُ كَانَ يُفْرِدُ الإِقَامَةَ .
আবূ মাহযুরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে তাঁকে ঊনিশ বাক্যে আযান এবং সতের বাক্যে ইক্বামাত
শিক্ষা দিয়েছেন।
হাসান সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭০৯)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবূ মাহযুরা এর নাম সামুরা ইবনু মি’য়ার। কিছু মনীষী আযানের
ব্যাপারে এ মত গ্রহণ করেছেন। অপর এক বর্ণনায়, আবূ মাহযুরা (রাঃ) ইক্বামাতের শব্দগুলো
একবার করে বলতেন।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
২৯. অনুচ্ছেদঃ
ইক্বামাতের শব্দগুলো
একবার করে বলা সম্পর্কে
১৯৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، وَيَزِيدُ بْنُ
زُرَيْعٍ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، قَالَ أُمِرَ بِلاَلٌ أَنْ يَشْفَعَ، الأَذَانَ وَيُوتِرَ الإِقَامَةَ
" . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ
أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ قَوْلُ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ وَبِهِ يَقُولُ مَالِكٌ
وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বিলাল
(রাঃ)-কে আযানের শব্দগুলো দুইবার এবং ইক্বামাতের শব্দগুলো এক একবার বলার নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭২৯-৭৩০)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণনাকৃত হাদীসও রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আনাস (রাঃ)-এর হাদীসটি
হাসান সহীহ। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতক সাহাবা, তাবিঈন, ইমাম মালিক,
শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এই মতের সমর্থক (ইক্বামাতের শব্দগুলো একবার করে বলতে হবে)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০. অনুচ্ছেদঃ
ইকামাতের শব্দগুলো
দুইবার বলা প্রসঙ্গে
১৯৪
حَدَّثَنَا
أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي
لَيْلَى، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ كَانَ أَذَانُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم شَفْعًا شَفْعًا فِي الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ رَوَاهُ وَكِيعٌ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ
عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى قَالَ
حَدَّثَنَا أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ
زَيْدٍ رَأَى الأَذَانَ فِي الْمَنَامِ . وَقَالَ شُعْبَةُ عَنْ عَمْرِو بْنِ
مُرَّةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ
زَيْدٍ رَأَى الأَذَانَ فِي الْمَنَامِ . وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ
أَبِي لَيْلَى . وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي لَيْلَى لَمْ يَسْمَعْ مِنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ الأَذَانُ
مَثْنَى مَثْنَى وَالإِقَامَةُ مَثْنَى مَثْنَى . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ
الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَأَهْلُ الْكُوفَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
ابْنُ أَبِي لَيْلَى هُوَ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى
كَانَ قَاضِيَ الْكُوفَةِ وَلَمْ يَسْمَعْ مِنْ أَبِيهِ شَيْئًا إِلاَّ أَنَّهُ
يَرْوِي عَنْ رَجُلٍ عَنْ أَبِيهِ .
আবদুল্লাহ ইবনু
যাইদ (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আযান ও ইকামাতের বাক্যগুলো জোড়ায়
জোড়ায় ছিল (দুই দুইবার বলা হত)।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা
বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনু যাইদের হাদীসটি ওয়াকী বর্ণনা করেছেন আ‘মাশ হতে তিনি আমর ইবনু
মুররাহ হতে, তিনি আব্দুর রহমান ইবনু আবী লাইলা হতে, তিনি বলেছেন : মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাহাবাগণ বর্ণনা করেছেন যে, আবদুল্লাহ ইবনু যাইদ (রা:) আযান
স্বপ্নে দেখেছেন। আর শুবা বর্ণনা করেছেন আমর ইবনু মুররাহ হতে তিনি আব্দুর রহমান ইবনু
আবী লাইলা আব্দুল্লাহ ইবনু যায়িদ হতে যে, তিনি আযান স্বপ্নে দেখেছেন। প্রথম বর্ণনাটির
চেয়ে পরবর্তী বর্ণনাগুলো বেশী সহীহ। আব্দুর রহমান ইবনু আবী লাইলা আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদ
হতে হাদীস শুনেন নাই। কতক বিদ্বান বলেছেন, আযান ও ইকামাতের শব্দগুলো দুই দুইবার বলতে
হবে। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক ও কুফাবাসীগণ এইমতেরই সমর্থক। আবূ ঈসা বলেন: ইবনু
আবী লাইলা হলেন মুহাম্মাদ ইবনু আব্দির রহমান ইবনু আবী লাইলা। তিনি কুফার কাজী ছিলেন।
তিনি তার পিতার নিকট কোন হাদীস শুনেন নাই। তিনি এক লোকের বরাতে তার পিতা থেকে হাদীস
বর্ণনা করেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১. অনুচ্ছেদঃ
আযানের শব্দগুলো থেমে
থেমে স্পষ্টভাবে বলা
১৯৫
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ، حَدَّثَنَا الْمُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْمُنْعِمِ، هُوَ صَاحِبُ السِّقَاءِ قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُسْلِمٍ،
عَنِ الْحَسَنِ، وَعَطَاءٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِبِلاَلٍ " يَا بِلاَلُ إِذَا
أَذَّنْتَ فَتَرَسَّلْ فِي أَذَانِكَ وَإِذَا أَقَمْتَ فَاحْدُرْ وَاجْعَلْ بَيْنَ
أَذَانِكَ وَإِقَامَتِكَ قَدْرَ مَا يَفْرُغُ الآكِلُ مِنْ أَكْلِهِ وَالشَّارِبُ
مِنْ شُرْبِهِ وَالْمُعْتَصِرُ إِذَا دَخَلَ لِقَضَاءِ حَاجَتِهِ وَلاَ تَقُومُوا
حَتَّى تَرَوْنِي " .
জাবির ইবনু
আব্দিল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিলাল (রাঃ)–কে বললেনঃ হে বিলাল! যখন তুমি
আযান দিবে, ধীরস্থিরভাবে ও দীর্ঘ স্বরে আযান দিবে এবং যখন ইকামাত দিবে তাড়াতাড়ি ও
অনুচ্চস্বরে ইকামাত দিবে। তোমার আযান ও ইকামাতের মাঝখানে এতটুকু সময় ফুরসত দিবে
যেন খাবার গ্রহণকারী তার খাবার হতে, পানকারী তার পান হতে এবং পেশাব-পায়খানারত
ব্যক্তি তার পায়খানা-পেশাব হতে অবসর হতে পারে। তোমরা আমাকে না দেখা পর্যন্ত নামাযে
দাঁড়াবে না।
খুবই দুর্বল। ইরওয়া (২২৮), হাদীসের বর্ণিত, তোমরা দাঁড়িওনা অংশটুকু সহীহ। যাহা ৫১২
নং হাদীসেরও অংশ।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
১৯৬
حَدَّثَنَا
عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبْدِ
الْمُنْعِمِ، نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ هَذَا حَدِيثٌ لاَ
نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الْمُنْعِمِ وَهُوَ
إِسْنَادٌ مَجْهُولٌ وَعَبْدُ الْمُنْعِمِ شَيْخٌ بَصْرِيٌّ .
আবদ ইবনু হুমাইদ
থেকে বর্ণিতঃ
আবদ ইবনু হুমাইদ
বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ইউনুস ইবনু মুহাম্মাদ হতে তিনি আব্দুল মুনয়িম হতে ......
পূর্বের হাদীসের অনুরূপ।
-দেখুন পূর্বের হাদীস
আবূ ঈসা
বলেনঃ জাবিরের এই হাদিসটি এই সূত্র ব্যতীত অন্য কোন সূত্রে আমরা জানতে পারিনি। যা আব্দুল
মুনয়িম কর্তৃক বর্ণিত। আর এই সনদ সূত্র অপরিচিত। আব্দুল মুনয়িম বাসরার অধিবাসী একজন
রাবী।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৩২. অনুচ্ছেদঃ
আযান দেওয়ার সময়
কানের মধ্যে আঙ্গুল ঢোকানো
১৯৭
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ
الثَّوْرِيُّ، عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ
بِلاَلاً يُؤَذِّنُ وَيَدُورُ وَيُتْبِعُ فَاهُ هَا هُنَا وَهَا هُنَا
وَإِصْبَعَاهُ فِي أُذُنَيْهِ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي قُبَّةٍ
لَهُ حَمْرَاءَ أُرَاهُ قَالَ مِنْ أَدَمٍ فَخَرَجَ بِلاَلٌ بَيْنَ يَدَيْهِ
بِالْعَنَزَةِ فَرَكَزَهَا بِالْبَطْحَاءِ فَصَلَّى إِلَيْهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَمُرُّ بَيْنَ يَدَيْهِ الْكَلْبُ وَالْحِمَارُ وَعَلَيْهِ
حُلَّةٌ حَمْرَاءُ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى بَرِيقِ سَاقَيْهِ . قَالَ سُفْيَانُ
نُرَاهُ حِبَرَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي جُحَيْفَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَعَلَيْهِ الْعَمَلُ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ أَنْ
يُدْخِلَ الْمُؤَذِّنُ إِصْبَعَيْهِ فِي أُذُنَيْهِ فِي الأَذَانِ . وَقَالَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ وَفِي الإِقَامَةِ أَيْضًا يُدْخِلُ إِصْبَعَيْهِ فِي
أُذُنَيْهِ . وَهُوَ قَوْلُ الأَوْزَاعِيِّ . وَأَبُو جُحَيْفَةَ اسْمُهُ
وَهْبُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ السُّوَائِيُّ .
আওন ইবনু জুহাইফা
(রাঃ) হতে তাঁর পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (আবূ জুহাইফা)
বলেন, আমি বিলাল (রাঃ)-কে আযান দিতে দেখলাম এবং তাঁকে এদিক সেদিক ঘুরতে ও মুখ
ঘুরাতে দেখলাম। তাঁর (দুই হাতের) দুই আঙ্গুল উভয় কানের মধ্যে ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর রঙ্গীন তাঁবুর মধ্যে ছিলেন। (রাবী বলেন) আমার ধারণা,
তিনি (আবূ জুহাইফা) বলেছেন, এটা চামড়ার তাঁবু ছিল। বিলাল (রাঃ) ছোট একটা বর্শা
নিয়ে সামনে আসলেন এবং তা বাতহার শিলাময় যমিনে গেড়ে দিলেন। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটা সামনে রেখে নামায আদায় করলেন। তাঁর সামনে
দিয়ে কুকুর এবং গাধা চলে যেত। তাঁর গায়ে লাল চাদর ছিল। আমি যেন তাঁর পায়ের গোছার
উজ্জ্বলতা দেখতে পাচ্ছি। সুফিয়ান বলেন, আমার মনে হয় এটা ইয়ামানের তৈরী চাদর ছিল।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭১১)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ জুহাইফার হাদীসটি হাসান সহীহ। মণীষীগণ আযানের সময় মুয়াযযিনের কানে আঙ্গুল দেওয়া
মুস্তাহাব বলেছেন। ইমাম আওযাঈ ইক্বামাতের সময়ও কানে আঙ্গুল দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
আবূ জুহাইফা (রাঃ)-এর নাম ওয়াহব ইবনু আব্দুল্লাহ আস্-সুয়াঈ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
ফযরের নামাযের
ওয়াক্তে তাসবীব করা প্রসঙ্গে
১৯৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا
أَبُو إِسْرَائِيلَ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى،
عَنْ بِلاَلٍ، قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ
تُثَوِّبَنَّ فِي شَيْءٍ مِنَ الصَّلَوَاتِ إِلاَّ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ "
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي مَحْذُورَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
بِلاَلٍ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي إِسْرَائِيلَ الْمُلاَئِيِّ .
وَأَبُو إِسْرَائِيلَ لَمْ يَسْمَعْ هَذَا الْحَدِيثَ مِنَ الْحَكَمِ بْنِ
عُتَيْبَةَ قَالَ إِنَّمَا رَوَاهُ عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عُمَارَةَ عَنِ الْحَكَمِ
بْنِ عُتَيْبَةَ . وَأَبُو إِسْرَائِيلَ اسْمُهُ إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي
إِسْحَاقَ وَلَيْسَ هُوَ بِذَاكَ الْقَوِيِّ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ . وَقَدِ
اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي تَفْسِيرِ التَّثْوِيبِ فَقَالَ بَعْضُهُمُ
التَّثْوِيبُ أَنْ يَقُولَ فِي أَذَانِ الْفَجْرِ الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ
النَّوْمِ وَهُوَ قَوْلُ ابْنِ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدَ . وَقَالَ إِسْحَاقُ فِي
التَّثْوِيبِ غَيْرَ هَذَا قَالَ التَّثْوِيبُ الْمَكْرُوهُ هُوَ شَيْءٌ
أَحْدَثَهُ النَّاسُ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَذَّنَ
الْمُؤَذِّنُ فَاسْتَبْطَأَ الْقَوْمَ قَالَ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ قَدْ
قَامَتِ الصَّلاَةُ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ . قَالَ
وَهَذَا الَّذِي قَالَ إِسْحَاقُ هُوَ التَّثْوِيبُ الَّذِي قَدْ كَرِهَهُ أَهْلُ
الْعِلْمِ وَالَّذِي أَحْدَثُوهُ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
وَالَّذِي فَسَّرَ ابْنُ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدُ أَنَّ التَّثْوِيبَ أَنْ يَقُولَ
الْمُؤَذِّنُ فِي أَذَانِ الْفَجْرِ الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ وَهُوَ
قَوْلٌ صَحِيحٌ وَيُقَالُ لَهُ التَّثْوِيبُ أَيْضًا وَهُوَ الَّذِي اخْتَارَهُ
أَهْلُ الْعِلْمِ وَرَأَوْهُ . وَرُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ
أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ
. وَرُوِيَ عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ دَخَلْتُ مَعَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ
مَسْجِدًا وَقَدْ أُذِّنَ فِيهِ وَنَحْنُ نُرِيدُ أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِ فَثَوَّبَ
الْمُؤَذِّنُ فَخَرَجَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ مِنَ الْمَسْجِدِ وَقَالَ
اخْرُجْ بِنَا مِنْ عِنْدِ هَذَا الْمُبْتَدِعِ . وَلَمْ يُصَلِّ فِيهِ .
قَالَ وَإِنَّمَا كَرِهَ عَبْدُ اللَّهِ التَّثْوِيبَ الَّذِي أَحْدَثَهُ النَّاسُ
بَعْدُ .
বিলাল (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেনঃ ফযরের নামায ছাড়া
অন্য কোন নামাযে ‘তাসবীব’ করো না।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৭১৫)।
এ অনুচ্ছেদ
আবূ মাহযুরা (রাঃ) হতে বর্ণনাকৃত হাদীসও আছে। আবূ ঈসা বলেন, আমরা শুধু আবূ ইসরাঈলের
সূত্রে বিলাল (রাঃ)-এর হাদীসটি জানতে পেরেছি। অথচ আবূ ইসরাঈল হাকামের নিকট এ হাদীসটি
কখনও শুনেননি। বরং তিনি হাসান ইবনু উমারার মাধ্যমে হাকামের নিকট হতে এ হাদীসটি সংগ্রহ
করেছেন। আবূ ইসরাঈলের নাম ইসমাঈল ইবনু আবূ ইসহাক। তিনি হাদীস বিশারদদের মতে নির্ভরযোগ্য
রাবী নন।
তাসবীব শব্দের ব্যাখ্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মাঝে মত পার্থক্য আছে। ইবনুল মুবারাক ও আহমাদের
মতে, ফযরের আযানের ‘আসসালাতু খাইরুম মিনান্ নাওম’ বাক্যটিকে তাসবীব বলা হয়। ইসহাকের
মতে, আযানের পর যদি লোকেরা আসতে দেরি করে তবে আযান ও ইকামাতের মাঝখানে ‘ক্বাদ কামাতিস্
সালাহ, হাইয়া ‘আলাস সালাহ ও হাইয়া ‘আলাল ফালাহ’ বলে লোকদের ডাকার নাম হল তাসবীব।
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পর লোকেরা এটা নতুনভাবে
চালু করেছে বিধায় ইসহাকের উল্লেখিত এ তাসবীবকে ‘আলিমগণ মাকরূহ বলেছেন।
ইবনুল মুবারাক ও আহমাদ তাসবীবের (উপরের উল্লেখিত) যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সেটাই নির্ভুল
এবং সহীহ। ফজরের আযানে এ তাসবীব করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে একেই তাসবীব বলা হয়। আর ‘আলিমগণ
এ তাসবীবকেই পছন্দ করেছেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি ভোরের
নামাযের সময় ‘আস্-সালাতু খাইরুম মিনান্ নাওম’ বলে (লোকদের) ডাকতেন। মুজাহিদ হতে বর্ণিত
আছে, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর সাথে কোন এক মাসজিদে গেলাম। সেখানে
আগেই আযান হয়ে গেছে। আমরা নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়েছিলাম, এমন সময় মুয়াযযিন
তাসবীব শুরু করে দিল। তা শুনা মাত্রই ইবনু ‘উমার (রাঃ) এ বলতে বলতে মাসজিদ হতে বের
হয়ে আসলেনঃ “এ বিদ‘আতীর কাছ থেকে চলে আস।” তিনি সেখানে নামায আদায় করলেন না। পরবর্তী
সময়ে লোকেরা যে তাসবীব আবিস্কার করেছে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) এটাকে খুবই মন্দ
জানতেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
যে আযান দিয়েছে সে
ইক্বামাত দিবে
১৯৯
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، وَيَعْلَى بْنُ عُبَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ زِيَادِ بْنِ أَنْعُمٍ الإِفْرِيقِيِّ، عَنْ زِيَادِ بْنِ نُعَيْمٍ
الْحَضْرَمِيِّ، عَنْ زِيَادِ بْنِ الْحَارِثِ الصُّدَائِيِّ، قَالَ أَمَرَنِي
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أُؤَذِّنَ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ
فَأَذَّنْتُ فَأَرَادَ بِلاَلٌ أَنْ يُقِيمَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " إِنَّ أَخَا صُدَاءٍ قَدْ أَذَّنَ وَمَنْ أَذَّنَ فَهُوَ
يُقِيمُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَحَدِيثُ زِيَادٍ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ الإِفْرِيقِيِّ
وَالإِفْرِيقِيُّ هُوَ ضَعِيفٌ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ
سَعِيدٍ الْقَطَّانُ وَغَيْرُهُ قَالَ أَحْمَدُ لاَ أَكْتُبُ حَدِيثَ
الإِفْرِيقِيِّ . قَالَ وَرَأَيْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يُقَوِّي
أَمْرَهُ وَيَقُولُ هُوَ مُقَارِبُ الْحَدِيثِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ
أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ مَنْ أَذَّنَ فَهُوَ يُقِيمُ .
যিয়াদ ইবনু হারিস
আস-সুদাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ফজরের নামাযের আযান দিতে বললেন। আমি
আযান দিলাম। বিলাল (রাঃ) ইকামাত দিতে চাইলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “সুদাঈ আযান দিয়েছে, আর যে আযান দিবে ইকামাতও সে-ই দিবে”।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৭১৭)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে, আবূ ‘ঈসা বলেনঃ যিয়াদের হাদীসটি আমরা ইফরিকীর
হাদীসের মাধ্যমেই জানতে পারি। অথচ ইফরিকী হাদীস বিশারদদের মতে দুর্বল রাবী। ইয়াহ্ইয়া
ইবনু সাঈদ ও অন্যরা তাঁকে দুর্বল মনে করেছেন। আহমাদ বলেছেন, আমি ইফরিকীর হাদীস লিখি
না। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমা‘ঈলকে দেখেছি তিনি তাঁকে মজবুত রাবী বলে
সমর্থন করেছেন এবং তিনি বলেছেন, ইফরিকী একজন প্রিয়ভাজন রাবী। বেশিরভাগ ‘আলিমদের মত
হল, যে আযান দিবে সে-ই ইকামাত দিবে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
বিনা ওযূতে আযান দেয়া
মাকরূহ
২০০
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ
يَحْيَى الصَّدَفِيِّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يُؤَذِّنُ إِلاَّ مُتَوَضِّئٌ "
.
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ বিনা ওযূতে কেউ যেন আযান না দেয়।
যঈফ, ইরওয়া (২২২)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২০১
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ لاَ يُنَادِي بِالصَّلاَةِ إِلاَّ
مُتَوَضِّئٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا أَصَحُّ مِنَ الْحَدِيثِ الأَوَّلِ
. قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ لَمْ يَرْفَعْهُ ابْنُ وَهْبٍ
وَهُوَ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ الْوَلِيدِ بْنِ مُسْلِمٍ . وَالزُّهْرِيُّ لَمْ
يَسْمَعْ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الأَذَانِ
عَلَى غَيْرِ وُضُوءٍ فَكَرِهَهُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ
الشَّافِعِيُّ وَإِسْحَاقُ . وَرَخَّصَ فِي ذَلِكَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ
وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدُ .
ইবনু শিহাব (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ
হুরাইরা (রাঃ) বলেছেন, বিনা ওযূতে কেউ যেন নামাযের আযান না দেয়।
যঈফ, প্রাগুক্ত।
আবূ ঈসা
বলেন, এ হাদীসটি পূর্বের হাদীস হতে বেশী সহীহ। ইবনু ওয়াহব্- আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর হাদীসটি
মারফূ হিসাবে বর্ণনা করেন নি। এটা ওয়ালীদ ইবনু মুসলিমের হাদীসের চেয়ে বেশি সহীহ। যুহরী
কখনও আবূ হুরাইরার নিকট হাদীস শুনেননি। বিনা ওযূতে আযান দেওয়া উচিত কি-না সে সম্পর্কে
আলিমদের মাঝে মতের অমিল আছে। ইমাম শাফিঈ এবং ইসহাক এটাকে মাকরূহ বলেছেন। সুফিয়ান সাওরী,
ইবনুল মুবারাক ও আহমদ বিনা ওযূতে আযান দেবার অনুমতি দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৬. অনুচ্ছেদঃ
ইমামই ইকামাত দেবার
বেশি হকদার
২০২
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا إِسْرَائِيلُ،
أَخْبَرَنِي سِمَاكُ بْنُ حَرْبٍ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ، يَقُولُ كَانَ
مُؤَذِّنُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُمْهِلُ فَلاَ يُقِيمُ حَتَّى
إِذَا رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ خَرَجَ أَقَامَ الصَّلاَةَ
حِينَ يَرَاهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ هُوَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَحَدِيثُ إِسْرَائِيلَ عَنْ سِمَاكٍ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ
مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَهَكَذَا قَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِنَّ
الْمُؤَذِّنَ أَمْلَكُ بِالأَذَانِ وَالإِمَامَ أَمْلَكُ بِالإِقَامَةِ .
জাবির ইবনু সামুরা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুয়াযযিন (তাঁর জন্য) প্রতীক্ষা করতে
থাকতেন এবং ইক্বামাত দিতেন না। যখন তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে (তাঁর ঘর হতে) বেরিয়ে আসতে দেখতেন তখনই নামাযের ইক্বামাত দিতেন।
হাসান। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৫৪৮), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ জাবির ইবনু সামুরার এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই সনদ ব্যতীত সিমাক হতে ইসরাঈলের
কোন হাদীস জানা নেই। বিভিন্ন বিদ্বান এরূপই বলেছেন যে, মুয়াযযিন আযানের অধিকারী এবং
ইমাম ইক্বামাতের অধিকারী ( অর্থাৎ আযান মুয়াযযিনের ইচ্ছায় এবং ইমামের ইচ্ছায় ইক্বামাত
দেয়া হবে) ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ
রাত থাকতে (ফযরের)
আযান দেওয়া সম্পর্কে
২০৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ
أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ بِلاَلاً
يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى تَسْمَعُوا تَأْذِينَ ابْنِ أُمِّ
مَكْتُومٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ
وَعَائِشَةَ وَأُنَيْسَةَ وَأَنَسٍ وَأَبِي ذَرٍّ وَسَمُرَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ
الْعِلْمِ فِي الأَذَانِ بِاللَّيْلِ فَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا
أَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ بِاللَّيْلِ أَجْزَأَهُ وَلاَ يُعِيدُ . وَهُوَ قَوْلُ
مَالِكٍ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا أَذَّنَ بِلَيْلٍ أَعَادَ . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ
الثَّوْرِيُّ . وَرَوَى حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ
ابْنِ عُمَرَ أَنَّ بِلاَلاً أَذَّنَ بِلَيْلٍ فَأَمَرَهُ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم أَنْ يُنَادِيَ " إِنَّ الْعَبْدَ نَامَ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَيْرُ مَحْفُوظٍ . قَالَ عَلِيُّ بْنُ
الْمَدِينِيِّ حَدِيثُ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ
ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هُوَ غَيْرُ مَحْفُوظٍ
وَأَخْطَأَ فِيهِ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ .
সালিম (রহঃ) হতে
তাঁর পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ বিলাল রাত থাকতে আযান দেয়। অতএব তোমরা ইবনু উম্মু
মাকতূমের আযান না শুনা পর্যন্ত পানাহার কর।
সহীহ্। ইরওয়া-(২১৯), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে ইবনু মাসঊদ, আইশা, উনাইসা, আনাস, আবূ যার ও সামুরা (রাঃ) হতেও হাদীস
বর্ণিত আছে। ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর বর্ণনাকৃত হাদীসটি হাসান সহীহ।
রাত থাকতে আযান দেওয়ার ব্যাপারে আলিমদের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে। তাদের কেউ কেউ বলেছেন,
মুয়াযযিন রাতে সুবহি সাদিকের আগে আযান দিলে তা জায়িয এবং এটা পুনর্বার দেওয়ার দরকার
নেই। ইমাম মালিক, শাফিঈ, ইবনুল মুবারাক, আহমাদ ও ইসহাকের এটাই মত।
অন্য দল বলেছেন, রাত থাকতে আযান দিলে পুনরায় আযান দিতে হবে। সুফিয়ান সাওরী এই মত প্রকাশ
করেছেন। হাম্মাদ আইউবের সূত্রে, তিনি নাফির সূত্রে, তিনি ইবনু উমারের নিকট হতে বর্ণনা
করেছেনঃ “একদা বিলাল (রাঃ) রাত থাকতে আযান দিলেন। রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাঁকে আবার আযান দেয়ার নির্দেশ দিলেন। (তিনি বললেন) লোকেরা ঘুমিয়ে পড়েছে
।”
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি সুরক্ষিত নয়। উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘‘উমার (রাঃ) ও অন্যরা নাফির
মাধ্যমে ইবনু ‘‘উমার (রাঃ)-এর নিকট হতে রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
যে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন সেটাই সহীহ। বর্ণনাটি নিম্নরূপঃ রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “বিলাল রাত থাকতে আযান দেয়। অতএব তোমরা (আবদুল্লাহ) ইবনু
উম্মি মাকতূমের আযান না শুনা পর্যন্ত পানাহার করতে থাক ।”
আবদুল আযীয ইবনু আবূ রাওয়াদ নাফি’র সূত্রে বর্ণনা করেছেনঃ “‘উমার (রাঃ)-এর মুয়াযযিন
রাত থাকতেই আযান দিলেন। ‘‘উমার (রাঃ) তাকে আবার আযান দেওয়ার নির্দেশ দিলেন ।”
এই বর্ণনাটিও সহীহ নয় কেননা নাফি’ এবং উমারের মাঝখানের একজন রাবী ছুটে গেছে। সম্ভবতঃ
হাম্মাদ ইবনু সালামা এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমারের বর্ণনাটিই সহীহ।
একাধিক রাবী নাফির সূত্রে ইবনু উমারের এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। যুহরী সালিমের সূত্রে,
তিনি ইবনু ‘‘উমার (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “বিলাল রাত থাকতে আযান দেয় ।”
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ হাম্মাদ হতে বর্ণিত হাদীসটি যদি সহীহ হয় তাহলে এই হাদীসের কোন অর্থ
হয় না যে, রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “বিলাল রাত থাকতে
আযান দেয় ।” বিলাল (রাঃ) যখনি ফযর উদয় হওয়ার পূর্বে আযান দিলেন এবং রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি তাঁকে আবার আযান দেয়ার নির্দেশ দিতেন তাহলে তিনি কখনো এ কথা
বলতেন না যে, “বিলাল রাত থাকতে আযান দেয় ।” আলী ইবনুল মাদানী বলেন, হাম্মাদ ইবনু সালামা
হতে, তিনি আইউব হতে, তিনি নাফি’ হতে, তিনি ইবনু ‘উমার হতে, তিনি রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে- বর্ণনাকৃত হাদীসটি সুরক্ষিত নয়। হাম্মাদ ইবনু সালামা তা
বর্ণনা করতে গিয়ে গোলমাল করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ
আযান হওয়ার পর মসজিদ
হতে চলে যওয়া মাকরূহ
২০৪
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ
الْمُهَاجِرِ، عَنْ أَبِي الشَّعْثَاءِ، قَالَ خَرَجَ رَجُلٌ مِنَ الْمَسْجِدِ
بَعْدَ مَا أُذِّنَ فِيهِ بِالْعَصْرِ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَمَّا هَذَا
فَقَدْ عَصَى أَبَا الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي
الْبَابِ عَنْ عُثْمَانَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَعَلَى هَذَا الْعَمَلُ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ أَنْ لاَ يَخْرُجَ
أَحَدٌ مِنَ الْمَسْجِدِ بَعْدَ الأَذَانِ إِلاَّ مِنْ عُذْرٍ أَنْ يَكُونَ عَلَى
غَيْرِ وُضُوءٍ أَوْ أَمْرٌ لاَ بُدَّ مِنْهُ . وَيُرْوَى عَنْ إِبْرَاهِيمَ
النَّخَعِيِّ أَنَّهُ قَالَ يَخْرُجُ مَا لَمْ يَأْخُذِ الْمُؤَذِّنُ فِي الإِقَامَةِ
. قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا عِنْدَنَا لِمَنْ لَهُ عُذْرٌ فِي الْخُرُوجِ
مِنْهُ . وَأَبُو الشَّعْثَاءِ اسْمُهُ سُلَيْمُ بْنُ أَسْوَدَ وَهُوَ وَالِدُ
أَشْعَثَ بْنِ أَبِي الشَّعْثَاءِ . وَقَدْ رَوَى أَشْعَثُ بْنُ أَبِي
الشَّعْثَاءِ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِيهِ .
আবূ শা’সা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আসরের
নামাযের আযান হয়ে যাওয়ার পর এক ব্যক্তি মসজিদ হতে বেরিয়ে চলে গেল। আবূ হুরায়রা
(রাঃ) বলেন, এই ব্যক্তি আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ
অমান্য করল।
হাসান সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭৩৩), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে উসমান (রাঃ) হতে বর্ণনাকৃত হাদীসও রয়েছে। আবূ হুরায়রার হাদীসটি হাসান
সহীহ।
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবা ও তাদের পরবর্তীদের মতে আযান হয়ে
যাওয়ার পর কোন ব্যক্তির মসজিদ হতে বেরিয়ে যাওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। হ্যাঁ, যদি ওযূ না
থাকে কিংবা খুব দরকারী কাজ থাকে তবে ভিন্ন কথা। ইবরাহীম নাখঈ বলেন, মুয়াযযিনের ইক্বামাতের
আগ পর্যন্ত বের হওয়া জায়িজ। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আমাদের মতে, যার প্রয়োজন রয়েছে শুধু সে
বের হতে পারে। আবূ শা’সার নাম সুলাইমান ইবনু আসওয়াদ। আর তিনি আশ’আস ইবনু আবী শা’সার
পিতা। এই হাদীস আশ’আস ও তার পিতা আবূ শা’সা হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩৯. অনুচ্ছেদঃ
সফরে থাকাকালে আযান
দেওয়া
২০৫
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ خَالِدٍ
الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ، قَالَ
قَدِمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَا وَابْنُ عَمٍّ لِي
فَقَالَ لَنَا " إِذَا سَافَرْتُمَا فَأَذِّنَا وَأَقِيمَا
وَلْيَؤُمَّكُمَا أَكْبَرُكُمَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ
اخْتَارُوا الأَذَانَ فِي السَّفَرِ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ تُجْزِئُ الإِقَامَةُ
إِنَّمَا الأَذَانُ عَلَى مَنْ يُرِيدُ أَنْ يَجْمَعَ النَّاسَ . وَالْقَوْلُ
الأَوَّلُ أَصَحُّ . وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
মালিক ইবনু
হুওয়াইরিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এবং
আমার এক চাচাত ভাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে
আসলাম। তিনি আমাদের বললেনঃ “যখন তোমরা উভয়ে সফর করবে তখন আযান দেবে, ইক্বামাত
বলবে, অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে বড় সে তোমাদের ইমামতি করবে”।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৯৭৯), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। বেশীরভাগ ‘আলিম এ হাদীসটি অনুযায়ী সফর অবস্থায় আযান দেওয়ার
কথা বলেছেন এবং এটা পছন্দনীয় মনে করেছেন। কিছু সংখ্যক ‘আলিম বলেছেন, শুধু ইক্বামাতই
যথেষ্ট। আযান তো সে ব্যক্তিই দেবে যে মানুষকে সমবেত করতে চায়। প্রথম মতটিই বেশি সহীহ।
ইমাম আহমাদ ও ইসহাক এ মতেরই প্রবক্তা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪০. অনুচ্ছেদঃ
আযান দেওয়ার ফাযীলাত
২০৬
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو تُمَيْلَةَ، حَدَّثَنَا
أَبُو حَمْزَةَ، عَنْ جَابِرٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَذَّنَ سَبْعَ سِنِينَ
مُحْتَسِبًا كُتِبَتْ لَهُ بَرَاءَةٌ مِنَ النَّارِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَثَوْبَانَ
وَمُعَاوِيَةَ وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَأَبُو تُمَيْلَةَ اسْمُهُ
يَحْيَى بْنُ وَاضِحٍ . وَأَبُو حَمْزَةَ السُّكَّرِيُّ اسْمُهُ مُحَمَّدُ بْنُ
مَيْمُونٍ . وَجَابِرُ بْنُ يَزِيدَ الْجُعْفِيُّ ضَعَّفُوهُ تَرَكَهُ يَحْيَى
بْنُ سَعِيدٍ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ . قَالَ أَبُو عِيسَى
سَمِعْتُ الْجَارُودَ يَقُولُ سَمِعْتُ وَكِيعًا يَقُولُ لَوْلاَ جَابِرٌ
الْجُعْفِيُّ لَكَانَ أَهْلُ الْكُوفَةِ بِغَيْرِ حَدِيثٍ وَلَوْلاَ حَمَّادٌ
لَكَانَ أَهْلُ الْكُوفَةِ بِغَيْرِ فِقْهٍ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি নেকীর আকাঙ্খায় একাধারে সাত বছর আযান দেবে
তার জন্য জাহান্নামের আগুন হতে নাজাত নির্ধারিত আছে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ(৭২৭)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু মাহঊদ, সাওবান, মুআবিয়া, আনাস, আবূ হুরাইরা ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
হয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘আব্বাসের হাদীসটি গারীব। আবূ তুমাইলা এর নাম ইয়াহইয়া ইবনু
ওয়াযিহ, আবূ হামযার নাম মুহাম্মাদ ইবনু মাইমূন। হাদীসের একজন রাবী জাবির ইবনু ইয়াযীদকে
মুহাদ্দিসগণ হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল বলেছেন। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ ও আবদুর রহমান ইবনু মাহদী
তাকে পরিত্যাগ করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, আমি জারূদের সূত্রে এবং তিনি ওয়াকীর সূত্রে শুনেছেন,
যদি জাবির আল-জুফী না হত তাহলে কূফাবাসীরা (আবূ হানীফা ও তাঁর মতানুসারীগণ) হাদীসবিহীন
অবস্থায় এবং যদি হাম্মাদ না হতেন তাহলে ফিক্হবিহীন অবস্থায় থাকতেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪১. অনুচ্ছেদঃ
ইমাম যিম্মাদার এবং
মুয়াযযিন আমানাতদার
২০৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " الإِمَامُ ضَامِنٌ وَالْمُؤَذِّنُ مُؤْتَمَنٌ اللَّهُمَّ
أَرْشِدِ الأَئِمَّةَ وَاغْفِرْ لِلْمُؤَذِّنِينَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ رَوَاهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ
وَحَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرَوَى أَسْبَاطُ بْنُ
مُحَمَّدٍ عَنِ الأَعْمَشِ قَالَ حُدِّثْتُ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইমাম হলো (নামাযের) যামিন
এবং মুয়াযযিন হল আমানাতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে মাফ কর।
সহীহ্। মিশকাত-(৬৬৩), ইরওয়া-(২১৭), সহীহ আবূ দাঊদ-(৫৩০)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আয়িশাহ্ সাহল ইবনু সা’দ ও ‘উকবা ইবনু ‘আমির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ হুরায়রার হাদীসটি আ’মাশের সূত্রে একাধিক রাবী বর্ণনা করেছেন। এটা আবূ সালিহ
হতে আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আমি আবূ যুর’আকে বলতে
শুনেছি, আবূ হুরায়রার নিকট হতে বর্ণিত হাদীসটি বেশী সহীহ। কিন্তু ইমাম বুখারী আয়িশাহ্
নিকট হতে বর্ণিত হাদীসটিকে বেশি সহীহ বলেছেন। কিন্তু ‘আলী ইবনুল মাদীনী এর কোনটিকেই
শক্তিশালী মনে করেন না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪২. অনুচ্ছেদঃ
আযান শুনে যা বলতে
হবে
২০৮
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ،
. قَالَ وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ
عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا سَمِعْتُمُ النِّدَاءَ فَقُولُوا
مِثْلَ مَا يَقُولُ الْمُؤَذِّنُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ
عَنْ أَبِي رَافِعٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأُمِّ حَبِيبَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عَمْرٍو وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبِيعَةَ وَعَائِشَةَ وَمُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ
وَمُعَاوِيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَهَكَذَا رَوَى مَعْمَرٌ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ مِثْلَ
حَدِيثِ مَالِكٍ . وَرَوَى عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِسْحَاقَ عَنِ الزُّهْرِيِّ
هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرِوَايَةُ مَالِكٍ أَصَحُّ .
আবূ সা’ঈদ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমরা আযান শুনতে
পাবে, তখন মুয়াযযিন যা বলে তোমরাও তাই বল।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭২০), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ রাফি’, আবূ হুরায়রা, উম্মু হাবীবা, আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর, ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাবী’আহ্,
‘আয়িশাহ্, মু’আয ইবনু আনাস ও মু’আবিয়া (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ
আবূ সা’ঈদের হাদীসটি হাসান সহীহ। আরো কয়েকটি সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। তার মধ্যে
মালিকের বর্ণনাটিই বেশি সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৩. অনুচ্ছেদঃ
আযানের বিনিময়ে
পারিশ্রমিক গ্রহণ করা মাকরূহ
২০৯
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو زُبَيْدٍ، - وَهُوَ عَبْثَرُ بْنُ الْقَاسِمِ عَنْ
أَشْعَثَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي الْعَاصِ، قَالَ إِنَّ مِنْ
آخِرِ مَا عَهِدَ إِلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنِ اتَّخِذْ
مُؤَذِّنًا لاَ يَأْخُذُ عَلَى أَذَانِهِ أَجْرًا . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
عُثْمَانَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ
كَرِهُوا أَنْ يَأْخُذَ الْمُؤَذِّنُ عَلَى الأَذَانِ أَجْرًا وَاسْتَحَبُّوا
لِلْمُؤَذِّنِ أَنْ يَحْتَسِبَ فِي أَذَانِهِ .
‘উসমান ইবনু আবুল
‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট হতে সর্বশেষ যে ওয়াদা
নিয়েছিলেন তা ছিলঃ আমি একজন মুয়াযযিন রাখব যে আযানের বিনিময়ে মাহিনা নেবে না।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭১৪)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ উসমানের হাদীসটি হাসান সহীহ্। বিশেষজ্ঞ ‘আলিমগণ আযান দিয়ে মাহিনা গ্রহণ করা
মাকরূহ বলেছেন। তাঁরা এটাই পছন্দ করেছেন যে, মুয়াযযিন আযানের বিনিময়ে নেকীর প্রত্যাশী
হবেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৪. অনুচ্ছেদঃ
মুয়াযযিনের আযান শুনে
যে দু’আ পাঠ করতে হবে
২১০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ الْحُكَيْمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
قَيْسٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ
الْمُؤَذِّنَ وَأَنَا أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ
شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا
وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا غُفِرَ لَهُ ذَنْبُهُ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ
مِنْ حَدِيثِ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ حُكَيْمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
قَيْسٍ .
সা’দ ইবনু আবূ
ওয়াককাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের আযান শুনে বলবে,
“ওয়া আনা আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু ওয়া আন্না
মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু রাযীতু বিল্লাহি রাব্বান ওয়া বিল-ইসলামি দীনান
ওয়া বি-মুহাম্মাদিন রাসূলান” আল্লাহ্ তা’আলা তার গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৭২১), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব। উপরিউক্ত সূত্র ছাড়া অন্য কোন সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত
হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৫. অনুচ্ছেদঃ
পূর্ববর্তী
অনুচ্ছেদের পরিপূরক
২১১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ سَهْلِ بْنِ عَسْكَرٍ الْبَغْدَادِيُّ، وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ
يَعْقُوبَ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَيَّاشٍ الْحِمْصِيُّ، حَدَّثَنَا
شُعَيْبُ بْنُ أَبِي حَمْزَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ
جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ النِّدَاءَ اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ
الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ
وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ إِلاَّ
حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ صَحِيحٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ
الْمُنْكَدِرِ لاَ نَعْلَمُ أَحَدًا رَوَاهُ غَيْرَ شُعَيْبِ بْنِ أَبِي حَمْزَةَ
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ . وَأَبُو حَمْزَةَ اسْمُهُ دِينَارٌ .
জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আযান শুনে
বলে, “হে আল্লাহ্! এই পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত নামাযের তুমিই প্রভু! তুমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নৈকট্য ও মর্যাদা দান কর এবং
তাঁকে তোমার ওয়াদাকৃত প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও” তার জন্য কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত
ওয়াজিব হবে।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৭২২), বুখারী।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং (মুনকাদিরের বর্ণনায়) গারীব। মুহাম্মাদ ইবনু মুনকাদিরের
নিকট হতে শুয়াইব ইবনু আবী হামযাহ ব্যাতীত অন্য কেউ বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই।
আবূ হামযাহ এর নাম দীনার।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬. অনুচ্ছেদঃ
আযান ও ইক্বামাতের
মধ্যবর্তী সময়ের দু’আ ব্যর্থ হবে না
২১২
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَعَبْدُ الرَّزَّاقِ، وَأَبُو
أَحْمَدَ وَأَبُو نُعَيْمٍ قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ زَيْدٍ
الْعَمِّيِّ، عَنْ أَبِي إِيَاسٍ، مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الدُّعَاءُ
لاَ يُرَدُّ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَاهُ أَبُو إِسْحَاقَ
الْهَمْدَانِيُّ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم مِثْلَ هَذَا .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আযান ও ইক্বামাতের
মধ্যবর্তী সময়ের দু’আ ফেরত দেয়া হয় না।
সহীহ, মিশকাত-(৬৭১), ইরওয়া-(২৪৪), সহীহ আবূ দাঊদ-(৫৩৪)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ্। ইবনু ইসহাকও তাঁর সনদ পরম্পরায় আনাস (রাঃ) হতে হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ তা’আলা
বান্দাদের উপর কত ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন
২১৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى النَّيْسَابُورِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ
فُرِضَتْ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ
الصَّلَوَاتُ خَمْسِينَ ثُمَّ نُقِصَتْ حَتَّى جُعِلَتْ خَمْسًا ثُمَّ نُودِيَ يَا
مُحَمَّدُ إِنَّهُ لاَ يُبَدَّلُ الْقَوْلُ لَدَىَّ وَإِنَّ لَكَ بِهَذِهِ
الْخَمْسِ خَمْسِينَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ
وَطَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ وَأَبِي ذَرٍّ وَأَبِي قَتَادَةَ وَمَالِكِ بْنِ
صَعْصَعَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মিরাজের
রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরয করা
হয়েছিল। অতঃপর কমাতে কমাতে পাঁচ ওয়াক্তে সীমাবদ্ধ করা হয়। অতঃপর ঘোষণা করা হল, হে
মুহাম্মাদ! আমার নিকট কথার কোন অদল বদল নাই। তোমার জন্য এই পাঁচ ওয়াক্তের মধ্যে
পঞ্চাশ ওয়াক্তের সওয়াব রয়েছে।
সহীহ। বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
উবাদা ইবনু সামিত, তালহা ইবনু উবাইদুল্লাহ, আবূ কাতাদা, আবূ যার, মালিক ইবনু সাসাআ
এবং আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি
হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৮. অনুচ্ছেদঃ
পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের
ফাযীলাত
২১৪
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنِ الْعَلاَءِ
بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ
إِلَى الْجُمُعَةِ كَفَّارَاتٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ مَا لَمْ تُغْشَ الْكَبَائِرُ
" . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَنَسٍ وَحَنْظَلَةَ
الأُسَيِّدِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ পাঁচ ওয়াক্তের নামায এবং জুমু’আর নামায
হতে পরবর্তী জুমু’আর নামাযে তার মাঝখানে সংঘটিত (ছোটখাট) গুনাহসমূহের কাফফারা
(ক্ষতিপূরণ) হয়ে যায়; তবে শর্ত হল কাবীরা গুনাহ হতে বেঁচে থাকতে হবে।
সহীহ। তা’লীকুর রাগীব-(১/১৩৭)।
এ অনুচ্ছেদে
জাবির, আনাস ও হানযালা আল-উসায়দী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ
হুরায়রার হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৯. অনুচ্ছেদঃ
জামা’আতে নামযে
আদায়ের ফাযীলাত
২১৫
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ،
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
صَلاَةُ الْجَمَاعَةِ تَفْضُلُ عَلَى صَلاَةِ الرَّجُلِ وَحْدَهُ بِسَبْعٍ
وَعِشْرِينَ دَرَجَةً " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
مَسْعُودٍ وَأُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ وَمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي
هُرَيْرَةَ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهَكَذَا رَوَى نَافِعٌ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " تَفْضُلُ صَلاَةُ الْجَمِيعِ
عَلَى صَلاَةِ الرَّجُلِ وَحْدَهُ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً " .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَعَامَّةُ مَنْ رَوَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
إِنَّمَا قَالُوا " خَمْسٍ وَعِشْرِينَ " . إِلاَّ ابْنَ عُمَرَ
فَإِنَّهُ قَالَ " بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ " .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির একাকি
আদায়কৃত নামাযের উপর জামা’আতে আদায়কৃত নামাযের সাতাশ গুন বেশি মর্যাদা রয়েছে।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৭৮৯), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু মাসঊদ, উবাই ইবনু কা’ব, মুআয ইবনু জাবাল, আবূ সাঈদ, আবূ হুরায়রা ও আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু উমারের হাদীসটি হাসান সহীহ।
একইভাবে নাফি হতে ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট হতে একই অর্থের অপর একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তাতে আছেঃ “জামা’আতের
নামায একাকি নামাযের তুলনায় সাতাশ গুন বেশি মর্যাদা রাখে।’’
এ সম্পর্কিত অন্যান্য সব বর্ণনায়ই পঁচিশ গুনের কথা উল্লেখ রয়েছে, শুধু ইবনু উমারের
বর্ণনায় সাতাশ গুনের কথা উল্লেখ আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১৬
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ،
عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ صَلاَةَ
الرَّجُلِ فِي الْجَمَاعَةِ تَزِيدُ عَلَى صَلاَتِهِ وَحْدَهُ بِخَمْسَةٍ
وَعِشْرِينَ جُزْءًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কোন ব্যক্তির জামা’আতের নামায তার একাকি
নামাযের তুলনায় পঁচিশ গুন (সাওয়াব) বৃদ্ধি পায়।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৭৮৬, ৭৮৭), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫০. অনুচ্ছেদঃ
আযান শুনে যে ব্যক্তি
তাতে সাড়া না দেয় (জামা’আতে উপস্থিত না হয়)
২১৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ بُرْقَانَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ
الأَصَمِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ فِتْيَتِي أَنْ يَجْمَعُوا حُزَمَ الْحَطَبِ
ثُمَّ آمُرَ بِالصَّلاَةِ فَتُقَامَ ثُمَّ أُحَرِّقَ عَلَى أَقْوَامٍ لاَ
يَشْهَدُونَ الصَّلاَةَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَمُعَاذِ
بْنِ أَنَسٍ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم أَنَّهُمْ قَالُوا مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ فَلَمْ يُجِبْ فَلاَ
صَلاَةَ لَهُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ هَذَا عَلَى التَّغْلِيظِ
وَالتَّشْدِيدِ وَلاَ رُخْصَةَ لأَحَدٍ فِي تَرْكِ الْجَمَاعَةِ إِلاَّ مِنْ
عُذْرٍ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমার ইচ্ছা হয়, আমি আমার যুবকদের কাঠের স্তুপ সংগ্রহ
করার নির্দেশ দেই, অতঃপর নামায আদায়ের নির্দেশ দেই এবং ইক্বামাত বলা হবে (নামায
শুরু হয়ে যাবে), অতঃপর যেসব লোক নামাযে উপস্থিত হয়নি তাদের (ঘরে) আগুন লাগিয়ে
পুড়িয়ে দেই।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৭৯১), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে ইবনু মাসঊদ, আবূ দারদা, ইবনু ‘আব্বাস, মু’আয ইবনু আনাস ও জাবির
(রাঃ) হতেও বর্ণিত হাদীস রয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ।
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বহু সংখ্যক সাহাবী হতে বর্ণিত আছে, তাঁরা
বলেছেন, যে ব্যক্তি আযান শুনার পরও জামা’আতে উপস্থিত হয়নি তার কোন নামায নেই। কিছু
বিশেষজ্ঞ ‘আলিম বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জামা’আতের
গুরুত্ব বুঝাতে এবং জামা’আতে অনুপস্থিত ব্যক্তিকে ভর্ৎসনা করার জন্য এরূপ বলেছেন। কোন
উপযুক্ত কারণ ছাড়া কারো পক্ষে জামা’আতে অনুপস্থিত থাকার অনুমতি নাই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১৮
قَالَ
مُجَاهِدٌ وَسُئِلَ ابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ رَجُلٍ، يَصُومُ النَّهَارَ وَيَقُومُ
اللَّيْلَ لاَ يَشْهَدُ جُمُعَةً وَلاَ جَمَاعَةً قَالَ هُوَ فِي النَّارِ .
قَالَ حَدَّثَنَا بِذَلِكَ هَنَّادٌ حَدَّثَنَا الْمُحَارِبِيُّ عَنْ لَيْثٍ عَنْ
مُجَاهِدٍ . قَالَ وَمَعْنَى الْحَدِيثِ أَنْ لاَ يَشْهَدَ الْجَمَاعَةَ
وَالْجُمُعَةَ رَغْبَةً عَنْهَا وَاسْتِخْفَافًا بِحَقِّهَا وَتَهَاوُنًا بِهَا
.
মুজাহিদ থেকে
বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে
এক ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হল, সে দিনভর রোযা রাখে এবং রাতভর নামায আদায় করে,
কিন্তু জুমু‘আ ও জামা‘আতে উপস্থিন হয় না। তিনি বললেন, সে জাহান্নামী। ইমাম তিরমিযী
বলেনঃ হান্নাদ মুহারেবী হতে তিনি লাইস হতে তিনি মুজাহিদ হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
সনদ দুর্বল, মুজাহিদ এ হাদীসের নিম্নরূপ ব্যাখ্যা করেছেনঃ যে ব্যক্তি জামা‘আতকে
তুচ্ছ ও হালকাজ্ঞান করে এরূপ করবে সে জাহান্নামী হবে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৫১. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তি একাকী
নামায আদায়ের পর আবার জামা’আত পেল
২১৯
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا يَعْلَى بْنُ عَطَاءٍ،
حَدَّثَنَا جَابِرُ بْنُ يَزِيدَ بْنِ الأَسْوَدِ الْعَامِرِيُّ، عَنْ أَبِيهِ،
قَالَ شَهِدْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَجَّتَهُ فَصَلَّيْتُ مَعَهُ
صَلاَةَ الصُّبْحِ فِي مَسْجِدِ الْخَيْفِ . قَالَ فَلَمَّا قَضَى صَلاَتَهُ
وَانْحَرَفَ إِذَا هُوَ بِرَجُلَيْنِ فِي أُخْرَى الْقَوْمِ لَمْ يُصَلِّيَا
مَعَهُ فَقَالَ " عَلَىَّ بِهِمَا " . فَجِيءَ بِهِمَا تُرْعَدُ
فَرَائِصُهُمَا فَقَالَ " مَا مَنَعَكُمَا أَنْ تُصَلِّيَا مَعَنَا
" . فَقَالاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا كُنَّا قَدْ صَلَّيْنَا فِي
رِحَالِنَا . قَالَ فَلاَ تَفْعَلاَ إِذَا صَلَّيْتُمَا فِي رِحَالِكُمَا ثُمَّ
أَتَيْتُمَا مَسْجِدَ جَمَاعَةٍ فَصَلِّيَا مَعَهُمْ فَإِنَّهَا لَكُمَا نَافِلَةٌ
" . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ مِحْجَنٍ الدِّيلِيِّ وَيَزِيدَ بْنِ
عَامِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ يَزِيدَ بْنِ الأَسْوَدِ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَهُوَ قَوْلُ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ
سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ قَالُوا إِذَا
صَلَّى الرَّجُلُ وَحْدَهُ ثُمَّ أَدْرَكَ الْجَمَاعَةَ فَإِنَّهُ يُعِيدُ
الصَّلَوَاتِ كُلَّهَا فِي الْجَمَاعَةِ وَإِذَا صَلَّى الرَّجُلُ الْمَغْرِبَ
وَحْدَهُ ثُمَّ أَدْرَكَ الْجَمَاعَةَ قَالُوا فَإِنَّهُ يُصَلِّيهَا مَعَهُمْ
وَيَشْفَعُ بِرَكْعَةٍ . وَالَّتِي صَلَّى وَحْدَهُ هِيَ الْمَكْتُوبَةُ
عِنْدَهُمْ .
জাবির ইবনু ইয়াযীদ
ইবনু আসওয়াদ (রাঃ) হতে তাঁর পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (ইয়াযীদ) বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে তাঁর বিদায় হাজ্জে
উপস্থিত ছিলাম। আমি তাঁর সাথে (মিনায় অবস্থিত) মসজিদে খাইফে ফযরের নামায আদায়
করলাম। নামায শেষ করে তিনি মোড় ফিরলেন। তিনি লোকদের এক প্রান্তে দুই ব্যক্তিকে
দেখলেন, তারা তাঁর সাথে নামায আদায় করেনি। তিনি বললেনঃ এদেরকে আমার নিকট নিয়ে এসো।
তাদেরকে নিয়ে আসা হল, (কিন্তু ভয়ে) তাদের ঘাড়ের রগ কাঁপছিল। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ
আমার সাথে নামায আদায় করতে তোমাদের উভয়কে কিসে বাঁধা দিল? তারা বলল, হে আল্লাহর
রাসূল! আমরা বাড়িতে নামায আদায় করে এসেছি। তিনি বললেনঃ এরূপ আর করবেনা। তোমরা
বাড়িতে নামায আদায়ের পর যদি মসজিদে এসে জামা’আত হতে দেখ, তাহলে তাদের সাথে আবার
নামায আদায় করবে। এটা তোমাদের উভয়ের জন্য নফল হবে।
সহীহ্। মিশকাত-(১১৫২), সহীহ আবূ দাঊদ-(৫৯০)।
এ অনুচ্ছেদে
মিহজান ও ইয়াযীদ ইবনু ‘আমির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইয়াযিদ ইবনু
আসওয়াদের হাদীসটি হাসান সহীহ। সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক বলেছেন, কোন ব্যক্তি
একাকি নামায আদায়ের পর আবার জামা’আত পেলে পুনরায় নামায আদায় করে নেবে। যদি সে মাগরিবের
নামায একাকি আদায়ের পর আবার জামা’আত পায় তাহলে জামা’আতের সাথে তিন রাক’আত পড়ার পর সে
আরো এক রাক’আত মিলিয়ে আদায় করবে। সে পূর্বে একাকী যে নামায আদায় করল সেটা তাদের মতে
ফরয হিসেবে গণ্য হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫২. অনুচ্ছেদঃ
মসজিদে এক জামা’আত
হয়ে যাবার পর আবার জামা’আত করা
২২০
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ
سُلَيْمَانَ النَّاجِيِّ الْبَصْرِيِّ، عَنْ أَبِي الْمُتَوَكِّلِ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ وَقَدْ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ " أَيُّكُمْ يَتَّجِرُ عَلَى هَذَا " . فَقَامَ رَجُلٌ
فَصَلَّى مَعَهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ وَأَبِي مُوسَى
وَالْحَكَمِ بْنِ عُمَيْرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَهُوَ قَوْلُ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ مِنَ التَّابِعِينَ قَالُوا
لاَ بَأْسَ أَنْ يُصَلِّيَ الْقَوْمُ جَمَاعَةً فِي مَسْجِدٍ قَدْ صُلِّيَ فِيهِ
جَمَاعَةً . وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَالَ آخَرُونَ مِنْ
أَهْلِ الْعِلْمِ يُصَلُّونَ فُرَادَى . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ وَابْنُ
الْمُبَارَكِ وَمَالِكٌ وَالشَّافِعِيُّ يَخْتَارُونَ الصَّلاَةَ فُرَادَى .
وَسُلَيْمَانُ النَّاجِيُّ بَصْرِيٌّ وَيُقَالُ سُلَيْمَانُ بْنُ الأَسْوَدِ .
وَأَبُو الْمُتَوَكِّلِ اسْمُهُ عَلِيُّ بْنُ دَاوُدَ .
আবূ সা’ঈদ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক
ব্যক্তি এমন সময় (মসজিদে) আসল যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
নামায আদায় করে নিয়েছেন। তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে কে এই ব্যক্তির সাথে ব্যবসা
করতে চায়? এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়াল এবং তার সাথে নামায আদায় করল।
সহীহ্। মিশকাত-(১১৪৬), ইরওয়া–(৫৩৫), রাওযুন নাযীর–(৯৭৯)।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ উমামা, আবূ মূসা ও হাকাম ইবনু ‘উমাইর (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আবূ সা’ঈদ বর্ণিত হাদীসটি হাসান। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
একাধিক বিশেষজ্ঞ সাহাবা এবং তাবিঈদের মতেঃ মসজিদে জামা’আত হওয়ার পর কিছু লোক একত্র
হয়ে আবার জামা’আত করে নামায আদায় করে নিলে এতে কোন দোষ নেই। ইমাম আহমাদ এবং ইসহাকও
এমন কথা বলেছেন। অপর একদল বিদ্বান বলেছেন, প্রথম জামা’আত হওয়ার পরে আসা লোকেরা একাকি
নামায আদায় করবে। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, মালিক ও শাফিঈ একাকি নামায আদায় করা
পছন্দ করেছেন। সুলায়মান আন-নাজী বাসরীকে সুলাইমান ইবনু আসওয়াদও বলা হয়। আবুল মুতাওয়াক্কিলের
নাম আলী ইবনু দাঊদ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৩. অনুচ্ছেদঃ
ফযর ও ‘ইশার নামায
জামা’আতে আদায়ের ফাযীলাত
২২১
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي
عَمْرَةَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " مَنْ شَهِدَ الْعِشَاءَ فِي جَمَاعَةٍ كَانَ لَهُ قِيَامُ
نِصْفِ لَيْلَةٍ وَمَنْ صَلَّى الْعِشَاءَ وَالْفَجْرَ فِي جَمَاعَةٍ كَانَ لَهُ
كَقِيَامِ لَيْلَةٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَأَبِي
هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ وَعُمَارَةَ بْنِ رُوَيْبَةَ وَجُنْدَبِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ سُفْيَانَ الْبَجَلِيِّ وَأُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ وَأَبِي مُوسَى وَبُرَيْدَةَ
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُثْمَانَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا
الْحَدِيثُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ عَنْ عُثْمَانَ مَوْقُوفًا
وَرُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ عُثْمَانَ مَرْفُوعًا .
উসমান ইবনু আফফান
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এশার নামায
জামা’আতের সাথে আদায় করে তার জন্য অর্ধরাত (নফল) নামায আদায়ের সাওয়াব রয়েছে। যে
ব্যক্তি ‘ইশা ও ফযরের নামায জামা’আতের সাথে আদায় করে তার জন্য সারারাত (নফল) নামায
আদায়ের সমপরিমাণ সাওয়াব রয়েছে।
সহীহ। সহীহ আবূ দাঊদ-(৫৫৫), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার, আবূ হুরায়রা, আনাস, ‘উমারাহ ইবনু রুআইবা, জুনদাব, উবাই ইবনু কা’ব, আবূ
মূসা ও বুরাইদা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ উসমান হতে বর্ণিত হাদীসটি
হাসান সহীহ। আব্দুর রহমানের সূত্রে হাদীসটি উসমান হতে মাওকুফভাবেও বর্ণিত হয়েছে । আবার
বিভিন্ন সূত্রে উসমান হতে মাওফূরূপেও বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا دَاوُدُ
بْنُ أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ جُنْدَبِ بْنِ سُفْيَانَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ صَلَّى الصُّبْحَ فَهُوَ فِي
ذِمَّةِ اللَّهِ فَلاَ تُخْفِرُوا اللَّهَ فِي ذِمَّتِهِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জুনদাব ইবনু
সুফিয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি ফযরের নামায আদায় করল সে আল্লাহর হিফাজাতে
চলে গেল। অতএব তোমরা আল্লাহ তা’আলার হিফাজাতকে চূর্ণ কর না, তুচ্ছ মনে কর না।
সহীহ। তালীকুর রাগীব-(১/১৪১, ১৬৩), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২৩
حَدَّثَنَا
عَبَّاسٌ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ كَثِيرٍ أَبُو غَسَّانَ
الْعَنْبَرِيُّ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ الْكَحَّالِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَوْسٍ
الْخُزَاعِيِّ، عَنْ بُرَيْدَةَ الأَسْلَمِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " بَشِّرِ الْمَشَّائِينَ فِي الظُّلَمِ إِلَى الْمَسَاجِدِ
بِالنُّورِ التَّامِّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مَرْفُوعٌ هُوَ صَحِيحٌ مُسْنَدٌ
وَمَوْقُوفٌ إِلَى أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يُسْنَدْ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
বুরাইদা আল-আসলামী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যারা অন্ধকার পার হয়ে মসজিদে যায় তাদেরকে কিয়ামাতের
দিনের পরিপূর্ণ নূরের সুখবর দাও।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭৭৯-৭৮১)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এই হাদীসটি এই সনদে মারফূ গারীব। সহীহ্ সনদে হাদীসটি মাওকুফ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৪. অনুচ্ছেদঃ
প্রথম কাতারে
দাঁড়ানোর ফাযীলাত
২২৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ
أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " خَيْرُ صُفُوفِ الرِّجَالِ أَوَّلُهَا وَشَرُّهَا
آخِرُهَا وَخَيْرُ صُفُوفِ النِّسَاءِ آخِرُهَا وَشَرُّهَا أَوَّلُهَا "
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي
سَعِيدٍ وَأُبَىٍّ وَعَائِشَةَ وَالْعِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ وَأَنَسٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَسْتَغْفِرُ لِلصَّفِّ
الأَوَّلِ ثَلاَثًا وَلِلثَّانِي مَرَّةً .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পুরুষ লোকদের জন্য প্রথম
কাতার হচ্ছে সবচেয়ে ভাল এবং খুবই খারাপ হচ্ছে সবার পেছনের কাতার। স্ত্রী লোকদের
জন্য সবার পেছনের কাতার সবচেয়ে ভাল এবং খুবই খারাপ হচ্ছে প্রথম কাতার।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(১০০০-১০০১)।
এ অনুচ্ছেদে
জাবির, ইবনু ‘আব্বাস, আবূ সা’ঈদ, উবাই, ‘আয়িশাহ, ইরযাব ইবনু সারিয়াহ ও আনাস (রাঃ) হতেও
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রার হাদীসটি হাসান সহীহ।
বর্ণিত আছে যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথম কাতারের লোকদের জন্য
তিনবার এবং দ্বিতীয় কাতারের লোকদের জন্য একবার ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২৫
وَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لَوْ أَنَّ النَّاسَ يَعْلَمُونَ مَا فِي
النِّدَاءِ وَالصَّفِّ الأَوَّلِ ثُمَّ لَمْ يَجِدُوا إِلاَّ أَنْ يَسْتَهِمُوا
عَلَيْهِ لاَسْتَهَمُوا عَلَيْهِ " . قَالَ حَدَّثَنَا بِذَلِكَ
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنَا مَعْنٌ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ
سُمَىٍّ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم مِثْلَهُ .
বর্ণনাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকেরা যদি জানতে পারত আযান দেওয়া ও প্রথম কাতারে
দাঁড়ানোর মধ্যে কত সাওয়াব রয়েছে, তাহলে তাদের এতো ভীড় হত যে, শেষ পর্যন্ত লটারি
করে ঠিক করতে হত (কে আযান দেবে এবং কে প্রথম কাতারে দাঁড়াবে)।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯৯৮), বুখারী ও মুসলিম।
এ হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন ইসহাক ইবনু মূসা আনসারী, তিনি মা’ন হতে, তিনি মালিক হতে, তিনি সুমাই
হতে তিনি আবূ সালিহ হতে তিনি আবূ হুরায়রা হতে তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২৬
وَحَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، نَحْوَهُ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
এ হাদীসটি কুতাইবা মালিকের সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে অনুরূপ
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৫৫. অনুচ্ছেদঃ
কাতার সমান্তরাল করা
সম্পর্কে
২২৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنِ
النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يُسَوِّي صُفُوفَنَا فَخَرَجَ يَوْمًا فَرَأَى رَجُلاً خَارِجًا صَدْرُهُ عَنِ
الْقَوْمِ فَقَالَ " لَتُسَوُّنَّ صُفُوفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللَّهُ
بَيْنَ وُجُوهِكُمْ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ
وَالْبَرَاءِ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ
وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ
قَالَ " مِنْ تَمَامِ الصَّلاَةِ إِقَامَةُ الصَّفِّ " . وَرُوِيَ
عَنْ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يُوَكِّلُ رِجَالاً بِإِقَامَةِ الصُّفُوفِ فَلاَ
يُكَبِّرُ حَتَّى يُخْبَرَ أَنَّ الصُّفُوفَ قَدِ اسْتَوَتْ . وَرُوِيَ عَنْ
عَلِيٍّ وَعُثْمَانَ أَنَّهُمَا كَانَا يَتَعَاهَدَانِ ذَلِكَ وَيَقُولاَنِ
اسْتَوُوا . وَكَانَ عَلِيٌّ يَقُولُ تَقَدَّمْ يَا فُلاَنُ تَأَخَّرْ يَا
فُلاَنُ .
নু’মান ইবনু বাশীর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাতারসমূহ সমান করে দিতেন।
একদিন তিনি (ঘর হতে) বের হয়ে এসে দেখলেন, এক ব্যক্তির বুক কাতারের বাইরে এগিয়ে
রয়েছে। তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের সারিগুলো সোজা করে দাঁড়াবে, অন্যথায় আল্লাহ
তা’আলা তোমাদের মুখমণ্ডলে বিভেদ সৃষ্টি করে দেবেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯৯৪), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
জাবির ইবনু সামুরা, বারাআ, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ, আনাস, আবূ হুরায়রা ও’ আয়িশাহ্ (রাঃ)
হতেও বর্ণনাকৃত হাদীস রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ নু’মান ইবনু বাশীরের হাদীসটি হাসান সহীহ।
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ কাতার ঠিক করা
নামায পরিপূর্ণ করার অন্তর্ভুক্ত।
‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি কাতার ঠিক করার জন্য একজন লোক নিযুক্ত করতেন। যে
পর্যন্ত না তাঁকে জানানো না হত যে, কাতার সোজা হয়েছে সে পর্যন্ত তিনি তাকবির (তাহরীমা)
বলতেন না। উসমান এবং আলী (রাঃ) এদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতেন এবং তারা বলতেন, তোমরা সোজা
হও। আলী (রাঃ) তো নাম ধরেই বলতেন, অমুক একটু আগাও, অমুক একটু পিছাও।’’
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৬. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশঃ তোমাদের মধ্যকার বুদ্ধিমান ও
জ্ঞানীরা আমরা নিকটে দাঁড়াবে
২২৮
حَدَّثَنَا
نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ،
حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ، عَنْ أَبِي مَعْشَرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ
عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لِيَلِيَنِي مِنْكُمْ أُولُو الأَحْلاَمِ وَالنُّهَى ثُمَّ الَّذِينَ
يَلُونَهُمْ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ وَلاَ تَخْتَلِفُوا فَتَخْتَلِفَ
قُلُوبُكُمْ وَإِيَّاكُمْ وَهَيْشَاتِ الأَسْوَاقِ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ وَأَبِي مَسْعُودٍ وَأَبِي سَعِيدٍ
وَالْبَرَاءِ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ
كَانَ يُعْجِبُهُ أَنْ يَلِيَهُ الْمُهَاجِرُونَ وَالأَنْصَارُ لِيَحْفَظُوا
عَنْهُ . قَالَ وَخَالِدٌ الْحَذَّاءُ هُوَ خَالِدُ بْنُ مِهْرَانَ يُكْنَى
أَبَا الْمُنَازِلِ . قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يَقُولُ
يُقَالُ إِنَّ خَالِدًا الْحَذَّاءَ مَا حَذَا نَعْلاً قَطُّ إِنَّمَا كَانَ
يَجْلِسُ إِلَى حَذَّاءٍ فَنُسِبَ إِلَيْهِ . قَالَ وَأَبُو مَعْشَرٍ اسْمُهُ زِيَادُ
بْنُ كُلَيْبٍ .
আবদুল্লাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু
‘‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ তোমাদের মধ্যে যারা বয়স্ক ও বুদ্ধিমান তারা যেন আমার
নিকটে দাঁড়ায়; অতঃপর যারা (উভয় গুণে) এদের নিকটবর্তী; অতঃপর যারা এদের নিকটবর্তী।
আঁকাবাঁকা (কাতরে) দাঁড়িও না, তাতে তোমাদের অন্তরসমূহ আলাদা হয়ে যাবে। সাবধান!
মসজিদকে বাজারে পরিণত কর না (হৈ চৈ করে)।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৬৭৯), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
উবাই ইবনু কা’ব, আবূ মাসঊদ, আবূ সা’ঈদ, বারাআ ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু মাসঊদের হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
বর্ণিত আছে যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাজির ও আনসারদের নিজের
নিকট দাঁড়ানোকে পছন্দ করতেন। উদ্দেশ্য ছিল তাঁর নিকট হতে তারা (নামাযের নিয়ম কানুন
সঠিকভাবে) শিখে নেবে।
খালিদ আল-হায্যা তিনি হলেন, খালিদ ইবনু মিহরান, উপনাম আবুল মানাযিল। তিরমিযী বলেনঃ
আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে বলতে শুনেছি, বলা হয়ে থাকে যে, খালিদ আল-হায্যা কখনো
জুতা পরিধান করেননি। হায্যা’র নিকট বসতেন বলে তাকে হায্যা বলা হয়। আবূ মা’শার-এর
নাম যিয়াদ ইবনু কুলাইব ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৭. অনুচ্ছেদঃ
খাম্বাসমূহের
(খুঁটির) মাঝখানে কাতার করা মাকরূহ
২২৯
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ هَانِئِ بْنِ
عُرْوَةَ الْمُرَادِيِّ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ مَحْمُودٍ، قَالَ صَلَّيْنَا
خَلْفَ أَمِيرٍ مِنَ الأُمَرَاءِ فَاضْطَرَّنَا النَّاسُ فَصَلَّيْنَا بَيْنَ
السَّارِيَتَيْنِ فَلَمَّا صَلَّيْنَا قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ كُنَّا نَتَّقِي
هَذَا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَفِي الْبَابِ عَنْ
قُرَّةَ بْنِ إِيَاسٍ الْمُزَنِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مَنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ يُصَفَّ بَيْنَ
السَّوَارِي . وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَدْ رَخَّصَ قَوْمٌ
مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي ذَلِكَ .
আবদুল হামীদ ইবনু
মাহমূদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা জনৈক
আমীরের পেছনে নামায আদায় করলাম। লোকের এত ভীড় হল যে, আমরা বাধ্য হয়ে দুই খুঁটির
মাঝখানে নামাযে দাঁড়ালাম। যখন নামায শেষ করলাম, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বললেন, আমরা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে (এভাবে দাঁড়ানো) এড়িয়ে যেতাম।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১০০২)।
এ অনুচ্ছেদে
কুররা ইবনু ইয়াস আল-মুযানী (রাঃ) হতেও বর্ণিত হাদীস আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আনাস (রাঃ)
হতে বর্ণনাকৃত হাদীসটি হাসান সহীহ। ইমাম আহমাদ ও ইসহাকের মতে, দুই খুঁটির মাঝখানে নামাযের
কাতার করা মাকরূহ। কিছু বিশেষজ্ঞ ‘আলিম এর অনুমতি দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৮. অনুচ্ছেদঃ
কাতারের পেছনে একাকী
দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা
২৩০
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ
يِسَافٍ، قَالَ أَخَذَ زِيَادُ بْنُ أَبِي الْجَعْدِ بِيَدِي وَنَحْنُ
بِالرَّقَّةِ فَقَامَ بِي عَلَى شَيْخٍ يُقَالُ لَهُ وَابِصَةُ بْنُ مَعْبَدٍ مِنْ
بَنِي أَسَدٍ فَقَالَ زِيَادٌ حَدَّثَنِي هَذَا الشَّيْخُ أَنَّ رَجُلاً صَلَّى
خَلْفَ الصَّفِّ وَحْدَهُ وَالشَّيْخُ يَسْمَعُ فَأَمَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم أَنْ يُعِيدَ الصَّلاَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَلِيِّ بْنِ شَيْبَانَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ
وَابِصَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ
يُصَلِّيَ الرَّجُلُ خَلْفَ الصَّفِّ وَحْدَهُ وَقَالُوا يُعِيدُ إِذَا صَلَّى
خَلْفَ الصَّفِّ وَحْدَهُ . وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَدْ
قَالَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ يُجْزِئُهُ إِذَا صَلَّى خَلْفَ الصَّفِّ
وَحْدَهُ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ
وَالشَّافِعِيِّ . وَقَدْ ذَهَبَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْكُوفَةِ إِلَى حَدِيثِ
وَابِصَةَ بْنِ مَعْبَدٍ أَيْضًا قَالُوا مَنْ صَلَّى خَلْفَ الصَّفِّ وَحْدَهُ
يُعِيدُ . مِنْهُمْ حَمَّادُ بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ وَابْنُ أَبِي لَيْلَى
وَوَكِيعٌ . وَرَوَى حَدِيثَ حُصَيْنٍ عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ غَيْرُ وَاحِدٍ
مِثْلَ رِوَايَةِ أَبِي الأَحْوَصِ عَنْ زِيَادِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ عَنْ
وَابِصَةَ بْنِ مَعْبَدٍ . وَفِي حَدِيثِ حُصَيْنٍ مَا يَدُلُّ عَلَى أَنَّ
هِلاَلاً قَدْ أَدْرَكَ وَابِصَةَ وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْحَدِيثِ فِي هَذَا
فَقَالَ بَعْضُهُمْ حَدِيثُ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ عَنْ
عَمْرِو بْنِ رَاشِدٍ عَنْ وَابِصَةَ بْنِ مَعْبَدٍ أَصَحُّ . وَقَالَ
بَعْضُهُمْ حَدِيثُ حُصَيْنٍ عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ عَنْ زِيَادِ بْنِ أَبِي
الْجَعْدِ عَنْ وَابِصَةَ بْنِ مَعْبَدٍ أَصَحُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا
عِنْدِي أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ لأَنَّهُ قَدْ رُوِيَ مِنْ
غَيْرِ حَدِيثِ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ عَنْ زِيَادِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ عَنْ
وَابِصَةَ .
হিলাল ইবনু ইয়াসাফ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যিয়াদ
ইবনু আবুল যা’দ আমার হাত ধরলেন। এ সময়ে আমরা রাক্কা নামক জায়গায় ছিলাম। তিনি আমাকে
এক মুরুব্বির নিকট নিয়ে গেলেন। তিনি ছিলেন আসাদ গোত্রের ওয়াবিসা ইবনু মা’বাদ
(রাঃ)। যিয়াদ বললেন, আমাকে এই মুরুব্বি বলেছেন, এক ব্যক্তি কাতারের পেছনে একাকি
দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছিল। মুরুব্বি লোকটি শুনছিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে আবার নামায আদায়ের নির্দেশ দিলেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১০০৪)।
এ অনুচ্ছেদে
‘আলী ইবনু শাইবান ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ওয়াবিসার
হাদীসটি হাসান। কিছু বিশেষজ্ঞ আলিম কাতারের পেছনে একাকি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা মাকরূহ
বলেছেন। তাঁরা আরো বলেছেন, কেউ এভাবে নামায আদায় করলে তাকে আবার নামায আদায় করতে হবে।
ইমাম আহমাদ ও ইসহাক এ মত গ্রহণ করেছেন। অপর দল বলেছেন, নামায হয়ে যাবে। সুফিয়ান সাওরী,
ইবনুল মুবারাক ও শাফিঈ এমত গ্রহণ করেছেন। কূফাবাসীদের একদল ওয়াবিসার হাদীসের ভিত্তিতে
বলেছেন, সারির পিছনে একাকি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করলে তা আবার আদায় করতে হবে। এদের মধ্যে
রয়েছেন হাম্মাদ, ইবনু আবূ লাইলা ও ওয়াকী’।
হিলাল ইবনু ইয়াসাফের নিকট হতে প্রাপ্ত হুসাইনের হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
যেমন আবুল আহওয়াস যিয়াদ ইবনু আবুল যাদ হতে, তিনি ওয়াবিসা হতে বর্ণনা করেছেন। হুসাইনের
হাদীস হতে জানা যায়, হিলাল ওয়াবিসার সাক্ষাত পেয়েছেন। এ ব্যাপারে হাদীস বিশারদদের মধ্যে
মতের অমিল রয়েছে। কিছু লোক বলেছেন, হিলালের নিকট হতে ‘আমর ইবনু মুরার হতে বর্ণিত হাদীসটি
বেশি সহীহ। আবার কিছু লোক বলেছেন, হিলালের নিকট হতে হুসাইনের বর্ণিত হাদীসটি অধিক সহীহ্।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ শেষের বর্ণনাটিই বেশি সহীহ। কেননা এই বর্ণনাটি হিলাল ছাড়াও অন্য সূত্রে
বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ، عَنْ عَمْرِو
بْنِ رَاشِدٍ، عَنْ وَابِصَةَ بْنِ مَعْبَدٍ، أَنَّ رَجُلاً، صَلَّى خَلْفَ
الصَّفِّ وَحْدَهُ فَأَمَرَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُعِيدَ
الصَّلاَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَمِعْتُ الْجَارُودَ يَقُولُ سَمِعْتُ
وَكِيعًا يَقُولُ إِذَا صَلَّى الرَّجُلُ خَلْفَ الصَّفِّ وَحْدَهُ فَإِنَّهُ
يُعِيدُ .
ওয়াবিসা ইবনু
মা’বাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি কাতারের
পেছনে একাকী দাঁড়িয়ে নামায আদায় করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাকে আবার নামায আদায়ের নির্দেশ দিলেন।
সহীহ্। দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আমি জারূদকে বলতে শুনেছি, তিনি ওয়াকীকে বলতে শুনেছেনঃ কোন ব্যক্তি কাতারের পেছনে
একাকি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করলে তাকে আবার ঐ নামায আদায় করতে হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৯. অনুচ্ছেদঃ
দুই ব্যক্তির একসাথে
নামায আদায় করা
২৩২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْعَطَّارُ، عَنْ
عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ لَيْلَةٍ
فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِرَأْسِي
مِنْ وَرَائِي فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ
عَنْ أَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ قَالُوا إِذَا كَانَ الرَّجُلُ
مَعَ الإِمَامِ يَقُومُ عَنْ يَمِينِ الإِمَامِ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি এক
রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে নামায আদায় করলাম। আমি তাঁর
বাম পাশে দাঁড়ালাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার মাথার
পেছনের চুল ধরে আমাকে তাঁর ডান পাশে এনে দাঁড় করালেন।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৬২৩,১২৩৩), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহীহ।
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবা ও তাদের পরবর্তীদের মতে, ইমামের
সাথে মাত্র একজন মুক্তাদী হলে সে তার (ইমামের) ডান পাশে দাঁড়াবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬০. অনুচ্ছেদঃ
তিন ব্যক্তি একসাথে
নামায আদায় করা
২৩৩
حَدَّثَنَا
بُنْدَارٌ، مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَدِيٍّ،
قَالَ أَنْبَأَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ
بْنِ جُنْدَبٍ، قَالَ أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كُنَّا
ثَلاَثَةً أَنْ يَتَقَدَّمَنَا أَحَدُنَا . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ
عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَجَابِرٍ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَحَدِيثُ سَمُرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ
أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا إِذَا كَانُوا ثَلاَثَةً قَامَ رَجُلاَنِ خَلْفَ
الإِمَامِ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ أَنَّهُ صَلَّى بِعَلْقَمَةَ
وَالأَسْوَدِ فَأَقَامَ أَحَدَهُمَا عَنْ يَمِينِهِ وَالآخَرَ عَنْ يَسَارِهِ
وَرَوَاهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ النَّاسِ
فِي إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُسْلِمٍ الْمَكِّيِّ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
সামুরা ইবনু জুনদুব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেঃ আমরা যখন
তিনজন এক সাথে নামায আদায় করি তখন আমদের একজন যেন সামনে এগিয়ে যায় (ইমামতির জন্য)।
সনদ দূর্বল
আবূ ঈসা
বলেন, এ অনুচ্ছেদে ইবনু মাসঊদ, জাবির এবং আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। সামুরার হাদীসটি হাসান গারীব। বিশেষজ্ঞ আলিমগণ বলেছেন, তিনজন লোক হলে দুইজন ইমামের
পেছনে দাঁড়াবে। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি আলকামা ও আসওয়াদকে সাথে নিয়ে
নামায আদায় করলেন। একজনকে তাঁর ডান পাশে এবং অপরজনকে তাঁর বাম পাশে দাঁড় করালেন। ইবনু
মাসঊদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কেও এরূপ বর্ণনা
করেছেন। কেউ কেউ ইসমাঈল ইবনু মুসলিমের স্মরণশক্তির সমালোচনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৬১. অনুচ্ছেদঃ
ইমামের সাথে পুরুষ ও
স্ত্রীলোক উভয় ধরনের মুক্তাদী থাকলে
২৩৪
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ،
عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، أَنَّ جَدَّتَهُ، مُلَيْكَةَ دَعَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
لِطَعَامٍ صَنَعَتْهُ فَأَكَلَ مِنْهُ ثُمَّ قَالَ " قُومُوا فَلْنُصَلِّ
بِكُمْ " . قَالَ أَنَسٌ فَقُمْتُ إِلَى حَصِيرٍ لَنَا قَدِ اسْوَدَّ
مِنْ طُولِ مَا لُبِسَ فَنَضَحْتُهُ بِالْمَاءِ فَقَامَ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم وَصَفَفْتُ عَلَيْهِ أَنَا وَالْيَتِيمُ وَرَاءَهُ
وَالْعَجُوزُ مِنْ وَرَائِنَا فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ انْصَرَفَ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا إِذَا كَانَ مَعَ
الإِمَامِ رَجُلٌ وَامْرَأَةٌ قَامَ الرَّجُلُ عَنْ يَمِينِ الإِمَامِ
وَالْمَرْأَةُ خَلْفَهُمَا . وَقَدِ احْتَجَّ بَعْضُ النَّاسِ بِهَذَا
الْحَدِيثِ فِي إِجَازَةِ الصَّلاَةِ إِذَا كَانَ الرَّجُلُ خَلْفَ الصَّفِّ
وَحْدَهُ وَقَالُوا إِنَّ الصَّبِيَّ لَمْ تَكُنْ لَهُ صَلاَةٌ وَكَأَنَّ أَنَسًا
كَانَ خَلْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَحْدَهُ فِي الصَّفِّ . وَلَيْسَ
الأَمْرُ عَلَى مَا ذَهَبُوا إِلَيْهِ لأَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
أَقَامَهُ مَعَ الْيَتِيمِ خَلْفَهُ فَلَوْلاَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم جَعَلَ لِلْيَتِيمِ صَلاَةً لَمَا أَقَامَ الْيَتِيمَ مَعَهُ وَلأَقَامَهُ
عَنْ يَمِينِهِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّهُ
صَلَّى مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَقَامَهُ عَنْ يَمِينِهِ . وَفِي
هَذَا الْحَدِيثِ دَلاَلَةٌ أَنَّهُ إِنَّمَا صَلَّى تَطَوُّعًا أَرَادَ إِدْخَالَ
الْبَرَكَةِ عَلَيْهِمْ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর নানী মুলাইকা
(রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দাওয়াত করলেন। তিনি তাঁর
জন্য খাবার তৈরী করলেন। তিনি তা খেলেন, অতঃপর বললেনঃ উঠো, তোমাদের সাথে নামায আদায়
করব। আনাস (রাঃ) বলেন, নামায আদায়ের জন্য আমি একটি কালো পুরানো চাটাই নিলাম। এটাকে
পরিস্কার ও নরম করার জন্য পানি ছিটিয়ে দিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তার উপর দাঁড়ালেন। আমি এবং ইয়াতীম (ছেলে)-ও তার উপর তাঁর পেছনে
দাঁড়ালাম। বুড়ো নানী আমাদের পেছনে দাঁড়ালেন। তিনি আমাদের নিয়ে এভাবে দুই রাক’আত
নামায আদায় করার পর চলে গেলেন।
-সহিহ, বুখারি-মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ। বিশেষজ্ঞ ‘আলিমগণ এ হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী আমল করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, যদি ইমাম ছাড়া মুক্তাদীর সংখ্যা পুরুষ স্ত্রী মিলিয়ে দু’জন হয় তবে পুরুষ
লোকটি ইমামের ডান পাশে এবং স্ত্রীলোকটি তাদের পেছনে দাঁড়াবে। কিছু ‘আলিম এ হাদীসের
দ্বারা প্রমাণ করেছেন যে, কাতারের পেছনে একাকি দাঁড়িয়ে কোন ব্যাক্তি নামায আদায় করলে
তার নামায জায়িয হবে। কেননা আনাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
পেছনে একা দাঁড়িয়েছিলেন। যেসব বালক তার সাথে দাঁড়িয়েছিল তাদের উপর তো নামায ফরযই হয়নি।
(তিরমিযী বলেন,) কিন্তু এ দলীল বাস্তব ঘটনার পরিপন্থী। কেননা আনাসের সাথে বাচ্চাদের
দাঁড় করানো এটাই প্রমান করে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বালকদের
জন্যও নামাযের ব্যবস্থা করেছেন। অন্যথায় তিনি আনাসকে তাঁর ডান পাশেই দাঁড় করাতেন। মূসা
ইবনু আনাস হতে আনাসের সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি (আনাস) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে নামায আদায় করলেন। তিনি তাকে নিজের ডান পাশে দাঁড় করালেন। এ হাদীস
দ্বারা এটাও প্রমান হয় যে, তাদের ঘরে বারকাত হওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নফল আদায় করেছিলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬২. অনুচ্ছেদঃ
কে ইমাম হওয়ার যোগ্য
২৩৫
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ وَحَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ
نُمَيْرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ الزُّبَيْدِيِّ، عَنْ
أَوْسِ بْنِ ضَمْعَجٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيَّ، يَقُولُ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَؤُمُّ الْقَوْمَ
أَقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ اللَّهِ فَإِنْ كَانُوا فِي الْقِرَاءَةِ سَوَاءً
فَأَعْلَمُهُمْ بِالسُّنَّةِ فَإِنْ كَانُوا فِي السُّنَّةِ سَوَاءً
فَأَقْدَمُهُمْ هِجْرَةً فَإِنْ كَانُوا فِي الْهِجْرَةِ سَوَاءً فَأَكْبَرُهُمْ
سِنًّا وَلاَ يُؤَمُّ الرَّجُلُ فِي سُلْطَانِهِ وَلاَ يُجْلَسُ عَلَى
تَكْرِمَتِهِ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ " . قَالَ مَحْمُودُ بْنُ
غَيْلاَنَ قَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ فِي حَدِيثِهِ " أَقْدَمُهُمْ سِنًّا
" . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَأَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ وَمَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ وَعَمْرِو بْنِ سَلَمَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي مَسْعُودٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى
هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ . قَالُوا أَحَقُّ النَّاسِ بِالإِمَامَةِ
أَقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ اللَّهِ وَأَعْلَمُهُمْ بِالسُّنَّةِ . وَقَالُوا
صَاحِبُ الْمَنْزِلِ أَحَقُّ بِالإِمَامَةِ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِذَا أَذِنَ
صَاحِبُ الْمَنْزِلِ لِغَيْرِهِ فَلاَ بَأْسَ أَنْ يُصَلِّيَ بِهِ . وَكَرِهَهُ
بَعْضُهُمْ وَقَالُوا السُّنَّةُ أَنْ يُصَلِّيَ صَاحِبُ الْبَيْتِ . قَالَ
أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ وَقَوْلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " وَلاَ
يُؤَمُّ الرَّجُلُ فِي سُلْطَانِهِ وَلاَ يُجْلَسُ عَلَى تَكْرِمَتِهِ فِي
بَيْتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ " . فَإِذَا أَذِنَ فَأَرْجُو أَنَّ الإِذْنَ
فِي الْكُلِّ وَلَمْ يَرَ بِهِ بَأْسًا إِذَا أَذِنَ لَهُ أَنْ يُصَلِّيَ بِهِ .
আওস ইবনু যাম’আজ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ
মাসঊদ আনসারী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরা’আন বেশি ভাল পড়তে জানে সে লোকদের ইমামতি করবে। যদি কুর’আন
পাঠে সবাই সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি বেশি হাদীস (সুন্নাহ) জানে। যদি সুন্নাহর
বেলায়ও সবাই সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি প্রথম হিজরাত করেছে। যদি এ ব্যাপারেও সবাই
সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি বয়সে বড়। কোন ব্যক্তি যেন অন্যের অধিকার ও প্রভাবিত
এলাকায় তার সম্মতি ছাড়া ইমামতি না করে এবং তার অনুমতি ছাড়া তার বাড়িতে তার নিদিষ্ট
আসনে না বসে। মাহমূদ বলেন, ইবনু নুমাইর তাঁর হাদীসে (আকসারুহুম সিন্নান-এর স্থলে)
‘আকদামুহুম সিন্নান’ বর্ণনা করেছেন (যে ব্যক্তি বয়জ্যেষ্ঠ)।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯৮০), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আবূ সা’ঈদ, আনাস ইবনু মালিক, মালিক ইবনু হুয়াইরিস ও ‘আমর ইবনু সালামাহ্
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ মাসঊদের হাদীসটি হাসান সহীহ।
এ হাদীসের আলোকে বিদ্বানগণ বলেছেন, যে ব্যক্তি কুরআন ও হাদীসে রাসূলে বেশি জ্ঞানী,
সে-ই লোকদের ইমামতি করার বেশি হকদার। তাঁরা আরো বলেছেন, বাড়ির মালিক ইমামতি করার ব্যাপারে
বেশি হকদার। কিছু বিশেষজ্ঞ বলেছেন, বাড়ির মালিকের সম্মতি বলে যে কেউ ইমামতি করতে পারে।
কিন্তু অনেকে এটা পছন্দ করেননি। তাঁরা বলেছেন, বাড়ির মালিকের ইমামতি করাটাই সুন্নাত।
ইমাম আহমাদ বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বানীঃ “ অন্যের
অধিকার ও প্রভাবিত এলাকায় কেউ যেন ইমামতি না করে এবং তার সম্মানের আসনে সম্মতি ছাড়া
না বসে’’-এখানে বসার সম্মতি দিলে তার মধ্যে ইমামতি করার আজ্ঞাও নিহিত রয়েছে। অনুমতি
সাপেক্ষে ইমামতি করতেও দোষ নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৩. অনুচ্ছেদঃ
ইমাম নামায সংক্ষিপ্ত
করবে
২৩৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَمَّ أَحَدُكُمُ النَّاسَ فَلْيُخَفِّفْ فَإِنَّ
فِيهِمُ الصَّغِيرَ وَالْكَبِيرَ وَالضَّعِيفَ وَالْمَرِيضَ فَإِذَا صَلَّى
وَحْدَهُ فَلْيُصَلِّ كَيْفَ شَاءَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ وَأَنَسٍ وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ وَمَالِكِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَأَبِي وَاقِدٍ وَعُثْمَانَ بْنِ أَبِي الْعَاصِ وَأَبِي
مَسْعُودٍ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ قَوْلُ أَكْثَرِ
أَهْلِ الْعِلْمِ اخْتَارُوا أَنْ لاَ يُطِيلَ الإِمَامُ الصَّلاَةَ مَخَافَةَ الْمَشَقَّةِ
عَلَى الضَّعِيفِ وَالْكَبِيرِ وَالْمَرِيضِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَبُو
الزِّنَادِ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ ذَكْوَانَ . وَالأَعْرَجُ هُوَ عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ هُرْمُزَ الْمَدِينِيُّ وَيُكْنَى أَبَا دَاوُدَ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ লোকদের ইমামতি করলে সে যেন (নামায)
সংক্ষেপ করে। কেননা তাদের মধ্যে ছোট বালক, দুর্বল ও অসুস্থ লোক থাকতে পারে। যখন সে
একাকি নামায আদায় করে, বয়োবৃদ্ধ তখন নিজ ইচ্ছামত (দীর্ঘ করে) আদায় করতে পারে।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৭৫৯), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে ‘আদী ইবনু হাতিম, আনাস, জাবির ইবনু সামুরা, মালিক ইবনু ‘আবদুল্লাহ,
আবূ ওয়াকিদ, ‘উসমান ইবনু আবুল আস, আবূ মাসঊদ, জাবির ইবনু ‘আব্দুল্লাহ ও ইবনু ‘আব্বাস
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রার হাদীসটি হাসান সহীহ্। দুর্বল, বৃদ্ধ ও রুগ্নদের কষ্ট
হওয়ার আশংকায় বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ আলিম বলেছেন, ইমাম যেন নামায লম্বা না করে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবুয্ যান্নাদের নাম আব্দুল্লাহ ইবনু যাকওয়ান। আল-আ’রাজ হলেন, ‘আব্দুর
রহমান ইবনু হুরমুজ আল-মাদীনী তার উপনাম আবু দাঊদ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَخَفِّ النَّاسِ
صَلاَةً فِي تَمَامٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَاسْمُ أَبِي عَوَانَةَ وَضَّاحٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى سَأَلْتُ قُتَيْبَةَ
قُلْتُ أَبُو عَوَانَةَ مَا اسْمُهُ قَالَ وَضَّاحٌ . قُلْتُ ابْنُ مَنْ قَالَ
لاَ أَدْرِي كَانَ عَبْدًا لاِمْرَأَةٍ بِالْبَصْرَةِ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সব লোকের চেয়ে অধিক সংক্ষিপ্ত অথচ
পূর্ণাঙ্গ নামায আদায়কারী ছিলেন। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।
সহীহ্। বুখারী ও মুসলিম।
আবূ আউয়ানাহ’র
নাম ওয়ায্যাহ্। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আমি কুতাইবাকে জিজ্ঞেস করলাম, আবূ আউয়ানাহ’র নাম কি?
তিনি বললেন, ওয়ায্যাহ্। জিজ্ঞেস করলাম, কার ছেলে? তিনি বললেন, জানি না। তিনি বাসরার
এক মহিলার দাস ছিলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৪. অনুচ্ছেদঃ
নামায শুরু এবং শেষ
করার বাক্য
২৩৮
حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفُضَيْلِ، عَنْ أَبِي
سُفْيَانَ، طَرِيفٍ السَّعْدِيِّ عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مِفْتَاحُ الصَّلاَةِ
الطُّهُورُ وَتَحْرِيمُهَا التَّكْبِيرُ وَتَحْلِيلُهَا التَّسْلِيمُ وَلاَ
صَلاَةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بــ"الْحَمْدُ" وَسُورَةٍ _ فِي
فَرِيضَةٍ أَوْ غَيْرِهَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
. وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَعَائِشَةَ . قَالَ وَحَدِيثُ عَلِيِّ بْنِ
أَبِي طَالِبٍ فِي هَذَا أَجْوَدُ إِسْنَادًا وَأَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي
سَعِيدٍ وَقَدْ كَتَبْنَاهُ فِي أَوَّلِ كِتَابِ الْوُضُوءِ . وَالْعَمَلُ
عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَمَنْ بَعْدَهُمْ . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ
الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ أَنَّ تَحْرِيمَ الصَّلاَةِ
التَّكْبِيرُ وَلاَ يَكُونُ الرَّجُلُ دَاخِلاً فِي الصَّلاَةِ إِلاَّ
بِالتَّكْبِيرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَمِعْتُ أَبَا بَكْرٍ مُحَمَّدَ بْنَ
أَبَانَ مُسْتَمْلِيَ وَكِيعٍ يَقُولُ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ مَهْدِيٍّ
يَقُولُ لَوِ افْتَتَحَ الرَّجُلُ الصَّلاَةَ بِسَبْعِينَ اسْمًا مِنْ أَسْمَاءِ
اللَّهِ وَلَمْ يُكَبِّرْ لَمْ يُجْزِهِ وَإِنْ أَحْدَثَ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ
أَمَرْتُهُ أَنْ يَتَوَضَّأَ ثُمَّ يَرْجِعَ إِلَى مَكَانِهِ فَيُسَلِّمَ إِنَّمَا
الأَمْرُ عَلَى وَجْهِهِ . قَالَ وَأَبُو نَضْرَةَ اسْمُهُ الْمُنْذِرُ بْنُ
مَالِكِ بْنِ قُطَعَةَ .
আবূ সা’ঈদ খুদরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নামাযের চাবি হল
পবিত্রতা; তার তাহরীম হল শুরুতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলা; তার তাহলীল হল (শেষে) সালাম
বলা। যে ব্যক্তি আলহামদু লিল্লাহ (সূরা ফাতিহা) ও অন্য সূরা পাঠ করেনি তার নামায
হয়নি, চাই তা ফরয নামায হোক বা সুন্নাত নামায।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(২৭৫-২৭৬)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান।
এ অনুচ্ছেদ আলী ও আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। সনদের বিচারে আলী (রাঃ)-এর
হাদীস আবূ সা’ঈদের হাদীসের তুলনায় বেশি শক্তিশালী ও সহীহ যা তাহারাত অধ্যায়ে লিপিবদ্ধ
করেছি।
নাবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবা ও তাবিঈগণ এ হাদীসের
ভিত্তিতে বলেছেন, ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নামায শুরু করতে হবে। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক,
শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এই মত ব্যক্ত করেছেন যে আল্লাহু আকবার বলা ছাড়া কেউ নামাযের মধ্যে
প্রবেশ করতে পারে না। আবদুর রহমান ইবনু মাহদী বলেছেন, কোন লোক যদি আল্লাহ তা’আলার নিরানব্বই
নামের যে কোন সত্তরটি নাম নিয়ে নামায শুরু করে কিন্তু ‘আল্লাহু আকবার’ না বলে, তাহলে
তার নামায হবে না। আর সালাম ফিরানোর আগ মুহূর্তে যদি কারো ওযূ ছুটে যায়, তাহলে আমি
তাকে হুকুম করব, সে যেন আবার ওযূ করে নিজ স্থানে এসে সালাম ফিরায়। এ হাদীসের জাহিরী
আপাতদৃষ্ট অর্থই গ্রহণযোগ্য হবে। আবূ নাদরাহ’র নাম আল-মুনযির ইবনু মালিক ইবনু কুতায়াহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৫. অনুচ্ছেদঃ
তাকবীরে তাহরীমা বলার
সময় হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁক করা এবং ছাড়িয়ে দেয়া
২৩৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
الْيَمَانِ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ سَمْعَانَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَبَّرَ
لِلصَّلاَةِ نَشَرَ أَصَابِعَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ
حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ
عَنْ سَعِيدِ بْنِ سِمْعَانَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم كَانَ إِذَا دَخَلَ فِي الصَّلاَةِ رَفَعَ يَدَيْهِ مَدًّا . وَهَذَا
أَصَحُّ مِنْ رِوَايَةِ يَحْيَى بْنِ الْيَمَانِ وَأَخْطَأَ يَحْيَى بْنُ
الْيَمَانِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নামাযের জন্য তাকবীর তাহরীমা
বলতেন তখন হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁক করে ছড়িয়ে দিতেন।
যঈফ, তা’লীক আলা ইবনু খুযাইমাহ (৪৫৮)।
আবূ ঈসা
বলেনঃ আবূ হুরাইরার হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। এক বর্ণনায়
শব্দগুলো নিম্নরূপ-
“আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যখন নামাযে প্রবেশ করতেন, তখন উভয় হাত খাড়া করে (আঙ্গুল ফাঁক করে) উত্তোলন করতেন।”
(তিরমিযী বলেন,) শেষোক্ত বর্ণনাটি ইয়াহইয়া ইবনু ইয়ামানের বর্ণনার চেয়ে বেশি সহীহ। ইবনুল
ইয়ামান এ হাদীসের রিওয়ায়াতে ভুল করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৪০
قَالَ
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ
اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ،
عَنْ سَعِيدِ بْنِ سِمْعَانَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ رَفَعَ يَدَيْهِ
مَدًّا . قَالَ أَبُو عِيسَى قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ يَحْيَى بْنِ الْيَمَانِ وَحَدِيثُ يَحْيَى بْنِ
الْيَمَانِ خَطَأٌ .
সাঈদ ইবনু সামআন (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ
হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যখন নামাযে দাঁড়াতেন, তখন নিজের উভয় হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁক করে উপরে তুলতেন।
সহীহ্। সিফাতুস্ সালাত-(৬৭), তালীক আ’লা ইবনু খুযাইমাহ-(৪৫৯), সহীহ্ আবূ
দাঊদ-(৭৩৫)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দুর রহমান বলেছেন, এই হাদীসটি ইয়াহ্ইয়া ইবনুল ইয়ামানের হাদীস
হতে অধিক সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৬. অনুচ্ছেদঃ
তাকবীরে উলার ফাযীলাত
২৪১
حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ
مُكْرَمٍ، وَنَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو
قُتَيْبَةَ، سَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ عَنْ طُعْمَةَ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ حَبِيبِ
بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " مَنْ صَلَّى لِلَّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا فِي جَمَاعَةٍ
يُدْرِكُ التَّكْبِيرَةَ الأُولَى كُتِبَتْ لَهُ بَرَاءَتَانِ بَرَاءَةٌ مِنَ
النَّارِ وَبَرَاءَةٌ مِنَ النِّفَاقِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ
رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَنَسٍ مَوْقُوفًا وَلاَ أَعْلَمُ أَحَدًا رَفَعَهُ
إِلاَّ مَا رَوَى سَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ عَنْ طُعْمَةَ بْنِ عَمْرٍو عَنْ حَبِيبِ
بْنِ أَبِي ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ .
وَإِنَّمَا يُرْوَى هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ
الْبَجَلِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَوْلُهُ . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ،
هَنَّادٌ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ خَالِدِ بْنِ طَهْمَانَ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ
أَبِي حَبِيبٍ الْبَجَلِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، نَحْوَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ . وَرَوَى
إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ،
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم نَحْوَ هَذَا . وَهَذَا حَدِيثٌ غَيْرُ مَحْفُوظٍ وَهُوَ حَدِيثٌ
مُرْسَلٌ وَعُمَارَةُ بْنُ غَزِيَّةَ لَمْ يُدْرِكْ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ . قَالَ
مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَبِيبُ بْنُ أَبِي حَبِيبٍ يُكْنَى أَبَا
الْكَشُوثَى وَيُقَالُ أَبُو عُمَيْرَةَ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি আল্লাহ
তা’আলার সন্তোষ অর্জনের উদ্দেশ্যে একাধারে চল্লিশ দিন তাকবীরে উলার (প্রথম তাকবীর)
সাথে জামা’আতে নামায আদায় করতে পারলে তাকে দুটি নাজাতের ছাড়পত্র দেওয়া হয়ঃ
জাহান্নাম হতে নাজাত এবং মুনাফিকী হতে মুক্তি।
হাসান। তা’লীকুর রাগীব-(১/১৫১), সহীহাহ্- (২৬৫২)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি আনসের নিকট হতে একাধিক সূত্রে মাওকূফ হিসাবে বর্ণিত হয়েছে (রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লমের কথা নয়, আনাসের কথা হিসাবে)। হাবীব ইবনু আবী সাবিত
ব্যাতীত অন্য কোন সূত্রে হাদীসটি মারফূরূপে বর্ণিত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। বরং হাদীসটি
হাবীব ইবনু আবী হাবীব আল-বাজালীর সূত্রে আনাস হতে মাওকূফ রূপে বর্ণিত হয়েছে। অপর একটি
সূত্রে দেখা যায়, আনাস (রাঃ) ‘উমার (রাঃ)-এর মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লমের নিকট হতে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এ বর্ণনাটি অসংরক্ষিত এবং মুরসাল।
মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল বলেন, হাবীব ইবনু আবী হবীবের উপনাম আবূ কাশূসা বা আবূ উমাইরাহ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৬৭. অনুচ্ছেদঃ
নামায শুরু করে যা
পাঠ করতে হয়
২৪২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ مُوسَى الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ
الضُّبَعِيُّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَلِيٍّ الرِّفَاعِيِّ، عَنْ أَبِي
الْمُتَوَكِّلِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ بِاللَّيْلِ كَبَّرَ ثُمَّ
يَقُولُ " سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ
وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ " . ثُمَّ يَقُولُ "
اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا " . ثُمَّ يَقُولُ " أَعُوذُ بِاللَّهِ
السَّمِيعِ الْعَلِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ مِنْ هَمْزِهِ وَنَفْخِهِ
وَنَفْثِهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ
وَعَائِشَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَجَابِرٍ وَجُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ
وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ أَشْهَرُ حَدِيثٍ
فِي هَذَا الْبَابِ . وَقَدْ أَخَذَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ بِهَذَا
الْحَدِيثِ وَأَمَّا أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ فَقَالُوا بِمَا رُوِيَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ " سُبْحَانَكَ
اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ
غَيْرُكَ " . وَهَكَذَا رُوِيَ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَعَبْدِ
اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ
مِنَ التَّابِعِينَ وَغَيْرِهِمْ . وَقَدْ تُكُلِّمَ فِي إِسْنَادِ حَدِيثِ
أَبِي سَعِيدٍ كَانَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ يَتَكَلَّمُ فِي عَلِيِّ بْنِ عَلِيٍّ
الرِّفَاعِيِّ وَقَالَ أَحْمَدُ لاَ يَصِحُّ هَذَا الْحَدِيثُ .
আবূ সা’ঈদ খুদরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে নামায আদায় করতে উঠে প্রথমে
তাকবীর (আল্লাহু আকবার) বলতেন, অতঃপর এই দুআ পাঠ করতেনঃ সুবহানাকা
আল্লাহুমা.........ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা। অর্থাৎ “হে আল্লাহ! তুমি মহাপবিত্র,
তোমার জন্যই প্রশংসা, তোমার নাম বারকাতপূর্ণ, তোমার মর্যাদা সর্বোচ্চ এবং তুমি
ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই।” অতঃপর তিনি বলতেনঃ ‘আল্লাহু আকবার কাবীরা’ অতঃপর বলতেনঃ
‘আউযু বিল্লাহিস........ওয়া নাফাসিহি’। অর্থাৎ “অভিশপ্ত শাইত্বান এবং তার
কুমন্ত্রণা, ঝাড়ফুঁক ও যাদুমন্ত্র হতে আমি সর্বশ্রোতা ও সর্বময় জ্ঞানের অধিকারী
আল্লাহ তা’আলার নিকটে আশ্রয় চাই”।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮০৪)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আলী, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ, আয়িশাহ্, জাবির, জুবাইর ইবনু মুত’ইম
ও ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ সাঈদের হাদীসটি অধিক মাশহুর।
একদল বিদ্বান এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেন। কিন্তু বেশিরভাগ বিদ্বান বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘সুবহানাকা........ইলাহা গাইরুকা’ পর্যন্ত পড়তেন।
‘উমার ইবনুল খাত্তাব ও ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে এরূপই বর্ণিত আছে। বেশিরভাগ তাবিঈ ও অন্যান্যরা
এই হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। (তিরমিযী বলেন,) আবূ সা’ঈদের হাদীসটি সমালোচিত হয়েছে।
ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ এ হাদীসের এক রাবী ‘আলী ইবনু ‘আলীর সমালোচনা করেছেন (দুর্বল বলেছেন)।
ইমাম আহমাদ বলেছেন, এ হাদীসটি সহীহ নয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৩
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَرَفَةَ، وَيَحْيَى بْنُ مُوسَى، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو
مُعَاوِيَةَ، عَنْ حَارِثَةَ بْنِ أَبِي الرِّجَالِ، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا افْتَتَحَ
الصَّلاَةَ قَالَ " سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ
اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ عَائِشَةَ إِلاَّ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ . وَحَارِثَةُ قَدْ تُكُلِّمَ فِيهِ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ . وَأَبُو
الرِّجَالِ اسْمُهُ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَدِينِيُّ .
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নামায শুরু করতেন তখন বলতেনঃ
“সুবহানাকা আল্লাহুমা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তা’আলা জাদ্দুকা ওয়া লা
ইলাহা গাইরুকা”।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮০৬)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি আমরা উল্লেখিত সনদ পরম্পরায়ই জেনেছি। এ হাদীসের এক রাবী হারিসা ইবনু
আবূ রিজালের স্মরণক্তির সমালোচনা করা হয়েছে। আবূ রিজালের নাম মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুর
রহমান আল-মাদীনী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৮. অনুচ্ছেদঃ
“বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহীম” সশব্দে পাঠ না করা প্রসঙ্গে
২৪৪
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا
سَعِيدُ بْنُ إِيَاسٍ الْجُرَيْرِيُّ، عَنْ قَيْسِ بْنِ عَبَايَةَ، عَنِ ابْنِ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ، قَالَ سَمِعَنِي أَبِي، وَأَنَا فِي الصَّلاَةِ،
أَقُولُ: (بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ) فَقَالَ لِي أَىْ بُنَىَّ
مُحْدَثٌ إِيَّاكَ وَالْحَدَثَ . قَالَ وَلَمْ أَرَ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ أَبْغَضَ إِلَيْهِ الْحَدَثُ فِي
الإِسْلاَمِ يَعْنِي مِنْهُ . قَالَ وَقَدْ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَمَعَ أَبِي بَكْرٍ وَمَعَ عُمَرَ وَمَعَ عُثْمَانَ فَلَمْ أَسْمَعْ
أَحَدًا مِنْهُمْ يَقُولُهَا فَلاَ تَقُلْهَا إِذَا أَنْتَ صَلَّيْتَ فَقُلِ:
(الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ
أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ
أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ وَعَلِيٌّ وَغَيْرُهُمْ وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنَ
التَّابِعِينَ وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ
وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ لاَ يَرَوْنَ أَنْ يَجْهَرَ بِـ (بِسْمِ اللَّهِ
الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ) قَالُوا وَيَقُولُهَا فِي نَفْسِهِ .
ইবনু আবদুল্লাহ
ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার পিতা
(আবদুল্লাহ) আমাকে নামাযের মধ্যে শব্দ করে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ পাঠ করতে
শুনলেন। তিনি বললেন, হে বৎস! এটা তো বিদ’আত; বিদ’আত হতে সাবধান হও। তারপর তিনি
বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবাদের চেয়ে
অন্য কাউকে ইসলামে বিদ’আতের প্রচলন করার প্রতি এত বেশী ঘৃণা ও শত্রুতা পোষণ করতে
দেখিনি। তিনি আরও বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ
বাকার (রাঃ), উমার (রাঃ) ও উসমান (রাঃ)-এর সাথে নামায আদায় করেছি। কিন্তু তাদের
কাউকে বিসমিল্লাহ সশব্দে পাঠ করতে শুনিনি। অতএব তুমিও সশব্দে পাঠ কর না। যখন তুমি
নামায আদায় করবে তখন ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’-এর মাধ্যমে কিরা’আত শুরু
করবে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৮১৫)।
আবূ ঈসা
বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনু মুগাফফালের হাদিসটি হাসান। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবা (রাঃ) এ
হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন (তাসমিয়া চুপে-চুপে পাঠ করেছেন)। আবূ বাকার (রাঃ), উমার
(রাঃ), উসমান (রাঃ) ও আলী (রাঃ) তাঁদের অন্যতম। বেশিরভাগ তাবিঈ এই মতের অনুসারী। সুফিয়ান
সাওরী, ইবনুল মুবারাক, আহমাদ ও ইসহাক এ মত গ্রহণ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, তাসমিয়া জোরে
পাঠ করবে না, বরং আস্তে পাঠ করবে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৬৯. অনুচ্ছেদঃ
“বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহীম” সশব্দে পাঠ করা
২৪৫
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ،
قَالَ حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ حَمَّادٍ، عَنْ أَبِي خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَفْتَتِحُ صَلاَتَهُ بِـ
(بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِذَاكَ . وَقَدْ قَالَ بِهَذَا عِدَّةٌ مِنْ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ أَبُو
هُرَيْرَةَ وَابْنُ عُمَرَ وَابْنُ عَبَّاسٍ وَابْنُ الزُّبَيْرِ وَمَنْ
بَعْدَهُمْ مِنَ التَّابِعِينَ رَأَوُا الْجَهْرَ بِـ (بِسْمِ اللَّهِ
الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ) وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ . وَإِسْمَاعِيلُ بْنُ
حَمَّادٍ هُوَ ابْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ . وَأَبُو خَالِدٍ يُقَالُ هُوَ أَبُو خَالِدٍ
الْوَالِبِيُّ وَاسْمُهُ هُرْمُزُ وَهُوَ كُوفِيٌّ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ দিয়ে নামায
শুরু করতেন।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা
বলেন, এ হাদীসের সনদ খুব একটা শক্তিশালী নয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবা এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন
আবূ হুরাইরা, ইবনু উমার, ইবনু আব্বাস ও ইবনু যুবাইর (রাঃ)। তাবিঈদের একদল এই মত গ্রহণ
করেছেন এবং বলেছেন, সূরা ফাতিহা ও অন্যান্য সূরার মত বিসমিল্লাহও সশব্দে পাঠ করতে হবে।
ইমাম শাফিঈ এই মত সমর্থন করেছেন। ইসমাঈল ইবনু হাম্মাদ তিনি ইবনু আবূ সুলাইমান এবং আবূ
খালিদের নাম হুরমুয তিনি কুফী।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৭০. অনুচ্ছেদঃ
সূরা ফাতিহার মাধ্যমে
নামাযের কিরা’আত শুরু করা
২৪৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ
يَفْتَتِحُونَ الْقِرَاءَةَ بِـ (الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ )
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَالتَّابِعِينَ وَمَنْ بَعْدَهُمْ كَانُوا يَسْتَفْتِحُونَ الْقِرَاءَةَ بِـ
(الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ) . قَالَ الشَّافِعِيُّ إِنَّمَا
مَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا بَكْرٍ
وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ كَانُوا يَفْتَتِحُونَ الْقِرَاءَةَ بِـ (الْحَمْدُ
لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ) مَعْنَاهُ أَنَّهُمْ كَانُوا يَبْدَءُونَ
بِقِرَاءَةِ فَاتِحَةِ الْكِتَابِ قَبْلَ السُّورَةِ وَلَيْسَ مَعْنَاهُ أَنَّهُمْ
كَانُوا لاَ يَقْرَءُونَ ( بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ) .
وَكَانَ الشَّافِعِيُّ يَرَى أَنْ يُبْدَأَ بِـ( بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ
الرَّحِيمِ ) وَأَنْ يُجْهَرَ بِهَا إِذَا جُهِرَ بِالْقِرَاءَةِ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকার, ‘উমার ও উসমান (রাঃ)
‘আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আলামীন’ দিয়ে নামাযের কিরা’আত শুরু করতেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮১৩), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সাহাবা, তাবিঈন ও তাবা তাবিঈন এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাঁরা ‘আলহামদু লিল্লাহি
রব্বিল আলামীন’ (অর্থাৎ সূরা ফাতিহা) দিয়েই নামাযের কিরা’আত শুরু করেছেন। ইমাম শাফিঈ
বলেন, এ হাদীসের তাৎপর্য হল, নাবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম),
আবূ বাকার, ‘উমার ও উসমান (রাঃ) অন্য সূরা পাঠের পূর্বে সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন। এর
অর্থ এই নয় যে, তাঁরা বিসমিল্লাহ পাঠ করতেন না। ইমাম শাফিঈর মত হল ‘বিসমিল্লাহির রহমানির
রহীম’ দিয়েই কিরা’আত শুরু করতে হবে এবং যখন সূরা ফাতিহা উচ্চস্বরে পাঠ করা হবে তখন
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” ও উচ্চস্বরে পাঠ করতে হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭১. অনুচ্ছেদঃ
ফাতিহাতুল কিতাব ছাড়া
নামায হয় না
২৪৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ
الْعَدَنِيُّ، وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ، عَنْ عُبَادَةَ
بْنِ الصَّامِتِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ صَلاَةَ
لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ وَأَنَسٍ وَأَبِي قَتَادَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُبَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَعَلِيُّ بْنُ
أَبِي طَالِبٍ وَجَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَعِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ وَغَيْرُهُمْ
قَالُوا لاَ تُجْزِئُ صَلاَةٌ إِلاَّ بِقِرَاءَةِ فَاتِحَةِ الْكِتَابِ .
وَقَالَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ كُلُّ صَلاَةٍ لَمْ يُقْرَأْ فِيهَا
بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَهِيَ خِدَاجٌ غَيْرُ تَمَامٍ . وَبِهِ يَقُولُ ابْنُ
الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي
عُمَرَ يَقُولُ اخْتَلَفْتُ إِلَى ابْنِ عُيَيْنَةَ ثَمَانِيَةَ عَشْرَ سَنَةً
وَكَانَ الْحُمَيْدِيُّ أَكْبَرَ مِنِّي بِسَنَةٍ . وَسَمِعْتُ ابْنَ أَبِي
عُمَرَ يَقُولُ حَجَجْتُ سَبْعِينَ حَجَّةً مَاشِيًا عَلَى قَدَمَىَّ .
উবাদা ইবনু সামিত
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পাঠ করেনি তার নামায হয়নি।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৩৭), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরায়রা, ‘আয়িশাহ্, আনাস, আবূ কাতাদা ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতেও হাদীস
বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেন, ‘উবাদার হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাহাবী এ হাদীস অনুযায়ী ‘আমল করেছেন। ‘‘উমার ইবনুল
খাত্তাব, ‘আলী ইবনু আবী তালিব, জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ, ‘ইমরান ইবনু হুসাইন ও অপরাপর
সাহাবী (রাঃ) বলেছেন, সূরা ফাতিহা পাঠ করা না হলে নামায হবে না। ‘আলী ইবনু আবী তালিব
(রাঃ) বলেন: “যে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করা হয়নি ঐ নামায অসম্পূর্ণ” ইবনুল মুবারাক,
শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এ মত গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭২. অনুচ্ছেদ:
‘আমীন’ বলা সম্পর্কে
২৪৮
حَدَّثَنَا
بُنْدَارٌ، مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، وَعَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ
كُهَيْلٍ، عَنْ حُجْرِ بْنِ عَنْبَسٍ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، قَالَ سَمِعْتُ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ: (غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ
الضَّالِّينَ ) فَقَالَ " آمِينَ " . وَمَدَّ بِهَا صَوْتَهُ
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَبِهِ يَقُولُ غَيْرُ وَاحِدٍ
مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَالتَّابِعِينَ وَمَنْ بَعْدَهُمْ يَرَوْنَ أَنَّ الرَّجُلَ يَرْفَعُ صَوْتَهُ
بِالتَّأْمِينِ وَلاَ يُخْفِيهَا . وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ
وَإِسْحَاقُ . وَرَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ
عَنْ حُجْرٍ أَبِي الْعَنْبَسِ عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ : ( غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ
وَلاَ الضَّالِّينَ ) فَقَالَ " آمِينَ " . وَخَفَضَ بِهَا
صَوْتَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ حَدِيثُ سُفْيَانَ
أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ شُعْبَةَ فِي هَذَا وَأَخْطَأَ شُعْبَةُ فِي مَوَاضِعَ مِنْ
هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ عَنْ حُجْرٍ أَبِي الْعَنْبَسِ وَإِنَّمَا هُوَ حُجْرُ
بْنُ عَنْبَسٍ وَيُكْنَى أَبَا السَّكَنِ . وَزَادَ فِيهِ عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ
وَائِلٍ وَلَيْسَ فِيهِ عَنْ عَلْقَمَةَ وَإِنَّمَا هُوَ عَنْ حُجْرِ بْنِ
عَنْبَسٍ عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ وَقَالَ وَخَفَضَ بِهَا صَوْتَهُ وَإِنَّمَا
هُوَ وَمَدَّ بِهَا صَوْتَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَأَلْتُ أَبَا زُرْعَةَ
عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ حَدِيثُ سُفْيَانَ فِي هَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ
شُعْبَةَ . قَالَ وَرَوَى الْعَلاَءُ بْنُ صَالِحٍ الأَسَدِيُّ عَنْ سَلَمَةَ
بْنِ كُهَيْلٍ نَحْوَ رِوَايَةِ سُفْيَانَ .
ওয়াইল ইবনু হুজর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে “গাইরিল মাগযূবি ‘আলাইহিম
অলায্-যাল্লীন” পাঠ করতে এবং ‘আমীন’ বলতে শুনেছি। আমীন বলতে গিয়ে তিনি নিজের
কণ্ঠস্বর দীর্ঘ ও উচ্চ করলেন।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৮৫৫)।
এ অনুচ্ছেদে
‘আলী ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেন: ওয়াইল ইবনু হুজরের
হাদীসটি হাসান। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের একদল সাহাবা, তাবিঈন ও তাদের
পরবর্তীগণ ‘আমীন’ স্বশব্দে বলার পক্ষে মত দিয়েছেন এবং নিঃশব্দে বলতে নিষেধ করেছেন।
ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এই মত গ্রহণ করেছেন। শুবা এ হাদীসটি সালামা ইবনু কুহাইলের
সূত্রে তিনি হুজরের সূত্রে, তিনি ‘আলকামার সূত্রে, তিনি তাঁর পিতা ওয়াইলের সূত্রে বর্ণনা
করেছেন। তাতে আছে: “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘গাইরিল মাগযূবি
‘আলাইহিম অলায-যাল্লীন’ পাঠ করলেন, অতঃপর নীচু স্বরে ‘আমীন’ বললেন।” –শাজ। সহীহ আবূ
দাঊদ-(৮৬৩)।
আবূ ‘ঈসা বলেন: আমি মুহাম্মাদকে (বুখারীকে) বলতে শুনেছি, এ বিষয়ে শু’বার হাদীসের তুলনায়
সুফিয়ানের হাদীস বেশি সহীহ। কেননা শু’বা এ হাদীসের কয়েকটি স্থানে ভুল করেছেন।
যেমন তিনি বলেছেন (আরবী) অথচ হবে (আরবী) দ্বিতীয়তঃ তিনি ‘আলক্বামার নাম বাড়িয়ে বলেছেন,
অথচ তিনি হাদীসের রাবী নন।
এখানে সনদ হবে (আরবী) তৃতীয়তঃ তিনি বর্ণনা করেছেন (আরবী) অথচ হবে (আরবী)
আবূ ‘ঈসা বলেন: আমি আবূ যুরআকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, শু’বার হাদীসের চেয়ে সুফিয়ানের
হাদীসটি বেশি সহীহ। আল-আলা ইবনু সালিহ আল-আসাদী সালামা ইবনু কুহাইল হতে সুফিয়ানের বর্ণনা
অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪৯
قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا الْعَلاَءُ بْنُ صَالِحٍ الأَسَدِيُّ، عَنْ
سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ حُجْرِ بْنِ عَنْبَسٍ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ حَدِيثِ سُفْيَانَ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ
كُهَيْلٍ .
আবূ ‘ঈসা থেকে
বর্ণিতঃ
আবূ বকর মুহাম্মাদ
ইবনু আবান, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইবনু নুমাইর হতে, তিনি ‘আলা ইবনু সালিহ আল-আসাদী হতে
তিনি সালামাহ ইবনু কুহাইল হতে তিনি হুজর ইবনু আনবাস হতে, তিনি ওয়াইল ইবনু হুজর হতে
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে সালামা ইবনু কুহাইলের সূত্রে
সুফিয়ানের হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
সহীহ্। দেখুন পূর্বের-(২৪৮ নং) হাদীস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭৩. অনুচ্ছেদ:
আমীন বলার ফাযীলাত
২৫০
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ،
حَدَّثَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ، وَأَبِي، سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَمَّنَ الإِمَامُ فَأَمِّنُوا فَإِنَّهُ مَنْ
وَافَقَ تَأْمِينُهُ تَأْمِينَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ
ذَنْبِهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ইমাম যখন ‘আমীন’ বলবে তোমরাও তখন আমীন বলবে। কেননা যার
আমীন বলা ফেরেশতাদের আমীন বলার সাথে সাথে হবে তার পূর্বেকার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে
দেওয়া হবে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৫১), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেন: আবূ হুরায়রার হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭৪. অনুচ্ছেদঃ
দুই বিরতি স্থান
২৫১
حَدَّثَنَا
أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ
سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ، قَالَ سَكْتَتَانِ
حَفِظْتُهُمَا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَأَنْكَرَ ذَلِكَ
عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ وَقَالَ حَفِظْنَا سَكْتَةً . فَكَتَبْنَا إِلَى
أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ بِالْمَدِينَةِ فَكَتَبَ أُبَىٌّ أَنْ حَفِظَ سَمُرَةُ .
قَالَ سَعِيدٌ فَقُلْنَا لِقَتَادَةَ مَا هَاتَانِ السَّكْتَتَانِ قَالَ إِذَا
دَخَلَ فِي صَلاَتِهِ وَإِذَا فَرَغَ مِنَ الْقِرَاءَةِ . ثُمَّ قَالَ بَعْدَ
ذَلِكَ وَإِذَا قَرَأَ : (وَلاَ الضَّالِّينَ ) . قَالَ وَكَانَ
يُعْجِبُهُ إِذَا فَرَغَ مِنَ الْقِرَاءَةِ أَنْ يَسْكُتَ حَتَّى يَتَرَادَّ
إِلَيْهِ نَفَسُهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَمُرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَهُوَ قَوْلُ غَيْرِ وَاحِدٍ
مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ لِلإِمَامِ أَنْ يَسْكُتَ بَعْدَ مَا
يَفْتَتِحُ الصَّلاَةَ وَبَعْدَ الْفَرَاغِ مِنَ الْقِرَاءَةِ . وَبِهِ يَقُولُ
أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ وَأَصْحَابُنَا .
সামুরা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে দু’টি বিরতিস্থান
মুখস্থ করে নিয়েছি। ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) এতে ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, আমি একটি
মাত্র বিরতিস্থান মুখস্থ করেছি। (সামুরা বলেন, এর মীমাংসার জন্য) আমরা মাদীনায়
উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-এর কাছে পত্র লেখলাম। তিনি উত্তরে লেখে জানালেন, সামুরাই
সঠিকভাবে মুখস্থ রেখেছে। সাঈদ বলেন, আমরা কাতাদাকে প্রশ্ন করলাম, বিরতি দু’টো কোন
কোন জায়গায়? তিনি বলেন, যখন তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাযে
প্রবেশ করতেন (তাকবীরে তাহরীমা বাঁধার পর) এবং যখন কিরা’আত শেষ করতেন। পরে তিনি
(কাতাদা) বললেন, যখন তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
‘অলায-যআল্লীন’ পাঠ করতেন। রাবী বলেন, কিরা’আত পাঠের পর তিনি ভালভাবে নিঃশ্বাস
নেয়া পর্যন্ত বিরতি দেওয়া খুবই পছন্দ করতেন।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৮৪৪, ৮৪৫)
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সামুরার হাদিসটি হাসান। কিছু
বিশেষজ্ঞ আলিম নামায শুরু করার পর এবং কিরা’আত শেষ করার পর ইমামের জন্য বিরতি দেওয়াকে
মুস্তাহাব বলেছেন। ইমাম আহমাদ, ইসহাক ও আমাদের (তিরমিযীর) সঙ্গীরা এ মতের সমর্থক।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৭৫. অনুচ্ছেদ:
নামাযের মধ্যে ডান
হাত বাঁ হাতের উপর রাখা
২৫২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ
قَبِيصَةَ بْنِ هُلْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَؤُمُّنَا فَيَأْخُذُ شِمَالَهُ بِيَمِينِهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ وَغُطَيْفِ بْنِ الْحَارِثِ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ
مَسْعُودٍ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ هُلْبٍ حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ وَمَنْ بَعْدَهُمْ يَرَوْنَ أَنْ يَضَعَ
الرَّجُلُ يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ فِي الصَّلاَةِ . وَرَأَى بَعْضُهُمْ أَنْ
يَضَعَهُمَا فَوْقَ السُّرَّةِ . وَرَأَى بَعْضُهُمْ أَنْ يَضَعَهُمَا تَحْتَ
السُّرَّةِ . وَكُلُّ ذَلِكَ وَاسِعٌ عِنْدَهُمْ . وَاسْمُ هُلْبٍ يَزِيدُ
بْنُ قُنَافَةَ الطَّائِيُّ .
কাবীসা ইবনু হুলব
(রাঃ) হতে তাঁর পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (হুলব) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের ইমামতি করতেন এবং (দাঁড়ানো
অবস্থায়) নিজের ডান হাত দিয়ে বাঁ হাত ধরতেন।
হাসান, ইবনু মাজাহ-(৮০৯)।
এ অনুচ্ছেদে
ওয়াইল ইবনু হুজর, গুতাইফ ইবনু হারিস, ইবনু ‘আব্বাস, ইবনু মাসঊদ ও সাহল ইবনু সাদ (রাঃ)
হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন: হুলব এর হাদীসটি হাসান। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবা,
তাবিঈন ও তাবা-তাবিঈন এ হাদীসের ভিত্তিতে মত দিয়েছেন যে, নামাযের মধ্যে ডান হাত বাঁ
হাতের উপর রাখতে হবে। কারো কারো মতে হাত নাভির উপরে বাঁধতে হবে; আবার কারো কারো মতে
নাভির নীচে বাঁধতে হব। তাঁরা এরূপও বলেছেন যে, নাভির উপরে-নীচে যে কোন স্থানে হাত বাঁধার
অবকাশ আছে। হুলব এর নাম ইয়াযিদ ইবনু কুনাফা আত্-তাঈ।
নাভীর নীচে হাত বাঁধা কোন কোন বিদ্বানগণের অভিমত মাত্র। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর কোন সহীহ্ হাদীস নয়-অনুবাদক।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৭৬. অনুচ্ছেদ:
রুকূ-সাজদাহ্র সময়ে
তাকবীর বলা
২৫৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَلْقَمَةَ، وَالأَسْوَدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُكَبِّرُ فِي
كُلِّ خَفْضٍ وَرَفْعٍ وَقِيَامٍ وَقُعُودٍ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي مَالِكٍ
الأَشْعَرِيِّ وَأَبِي مُوسَى وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَوَائِلِ بْنِ حُجْرٍ
وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم مِنْهُمْ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ وَعَلِيٌّ
وَغَيْرُهُمْ وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنَ التَّابِعِينَ وَعَلَيْهِ عَامَّةُ
الْفُقَهَاءِ وَالْعُلَمَاءِ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (নামাযরত
অবস্থায়) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেকবার উঠা, নীচু
হওয়া, দাঁড়ানো ও বসার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন। আবূ বাকার এবং ‘‘উমার (রাঃ)-ও
এরূপ আমল করতেন।
সহীহ। ইরওয়া-(৩৩০)।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরায়রা, আনাস, ইবনু ‘উমার, আবূ মালিক আশআরী, আবূ মূসা, ‘ইমরান ইবনু হুসাইন, ওয়াইল
ইবনু হুজর এবং ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন: ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদের হাদীসটি হাসান সহীহ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবা যেমন আবূ বাক্র, ‘উমার, উসমান ও আলী (রাঃ), তাঁদের
পরবর্তীগণ এবং সমস্ত ফিক্হবিদ ও বিশেষজ্ঞ আলিমগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭৭. অনুচ্ছেদ:
একই বিষয় সম্পর্কিত
২৫৪
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُنِيرٍ الْمَرْوَزِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ عَلِيَّ بْنَ
الْحَسَنِ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنِ ابْنِ
جُرَيْجٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُكَبِّرُ وَهُوَ
يَهْوِي . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ قَوْلُ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ
مِنَ التَّابِعِينَ قَالُوا يُكَبِّرُ الرَّجُلُ وَهُوَ يَهْوِي لِلرُّكُوعِ
وَالسُّجُودِ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (নামাযে) নীচের দিকে যেতে তাকবীর বলতেন।
সহীহ্। ইরওয়া-(৩৩১), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেন: এ হাদীসটি হাসান সহীহ। সাহাবয়ি কিরাম ও তাবিঈনেরও এই মত রুকূ-সাজদাহ্য় যাওয়ার
সময় ঝুকে পড়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭৮. অনুচ্ছেদ:
রুকূর সময় উভয় হাত
উত্তোলন করা (রফউল ইয়াদাইন)
২৫৫
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم إِذَا افْتَتَحَ الصَّلاَةَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى
يُحَاذِيَ مَنْكِبَيْهِ وَإِذَا رَكَعَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ
. وَزَادَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ فِي حَدِيثِهِ وَكَانَ لاَ يَرْفَعُ بَيْنَ
السَّجْدَتَيْنِ .
সালিম (রহঃ) হতে
তাঁর পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (আবদুল্লাহ)
বলেন, আমি দেখেছি, যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায শুরু
করতেন, তখন নিজের কাঁধ পর্যন্ত হাত তুলতেন এবং যখন রুকূতে যেতেন এবং রুকূ হতে
উঠতেন (তখনও এরূপ করতেন)। ইবনু আবূ ‘উমার তাঁর বর্ণিত হাদীসে আরো বলেছেন, ‘কিন্তু
তিনি (রাসূলুল্লাহ) (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুই সাজদাহ্র মাঝখানে হাত
তুলতেন না।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৮৫৮), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেন: ইবনু উমারের বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫৬
قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَ
حَدِيثِ ابْنِ أَبِي عُمَرَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ، وَعَلِيٍّ،
وَوَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، وَمَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ، وَأَنَسٍ، وَأَبِي،
هُرَيْرَةَ وَأَبِي حُمَيْدٍ وَأَبِي أُسَيْدٍ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ وَمُحَمَّدِ
بْنِ مَسْلَمَةَ وَأَبِي قَتَادَةَ وَأَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ وَجَابِرٍ
وَعُمَيْرٍ اللَّيْثِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَبِهَذَا يَقُولُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمُ ابْنُ عُمَرَ وَجَابِرُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ وَأَبُو هُرَيْرَةَ وَأَنَسٌ وَابْنُ عَبَّاسٍ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ
وَغَيْرُهُمْ وَمِنَ التَّابِعِينَ الْحَسَنُ الْبَصْرِيُّ وَعَطَاءٌ وَطَاوُسٌ
وَمُجَاهِدٌ وَنَافِعٌ وَسَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَسَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ
وَغَيْرُهُمْ . وَبِهِ يَقُولُ مَالِكٌ وَمَعْمَرٌ وَالأَوْزَاعِيُّ وَابْنُ
عُيَيْنَةَ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ
وَإِسْحَاقُ . وَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ قَدْ ثَبَتَ حَدِيثُ
مَنْ يَرْفَعُ يَدَيْهِ وَذَكَرَ حَدِيثَ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ
وَلَمْ يَثْبُتْ حَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
لَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلاَّ فِي أَوَّلِ مَرَّةٍ . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ
أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الآمُلِيُّ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ زَمْعَةَ عَنْ
سُفْيَانَ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ . قَالَ
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي
أُوَيْسٍ قَالَ كَانَ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ يَرَى رَفْعَ الْيَدَيْنِ فِي
الصَّلاَةِ . وَقَالَ يَحْيَى وَحَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ قَالَ كَانَ
مَعْمَرٌ يَرَى رَفْعَ الْيَدَيْنِ فِي الصَّلاَةِ . وَسَمِعْتُ الْجَارُودَ
بْنَ مُعَاذٍ يَقُولُ كَانَ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ وَعُمَرُ بْنُ هَارُونَ
وَالنَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ يَرْفَعُونَ أَيْدِيَهُمْ إِذَا افْتَتَحُوا الصَّلاَةَ
وَإِذَا رَكَعُوا وَإِذَا رَفَعُوا رُءُوسَهُمْ .
আবূ ‘ঈসা থেকে
বর্ণিতঃ
ফাযল ইবনু সাবাহ
বাগদাদী তিনি সুফইয়ান ইবনু উয়াইনাহ হতে তিনি যুহরী হতে এই সনদ পরম্পরায় ইবনু আবী
উমারের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
সহীহ্। দেখুন পূর্বের হাদীস
এ অনুচ্ছেদে
‘উমার, ‘আলী, ওয়াইল ইবনু হুজর, মালিক ইবনু হুয়াইরিস, আনাস, আবূ হুরায়রা, আবূ হুমাইদ,
আবূ উসাইদ, সাহল ইবনু সাদ, মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা, আবূ কাতাদা, আবূ মূসা আশ’আরী, জাবির
ও উমাইর লাইসী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবা যেমন, ইবনু ‘উমার,
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ, আবূ হুরায়রা, আনাস, ইবনু ‘আব্বাস, ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর
(রাঃ) ও আরো অনেকে; তাবিঈদের মধ্যে হাসান বাসরী, ‘আতা, তাউস, মুজাহিদ, নাফি’, সালিম
ইবনু আবদুল্লাহ, সা’ঈদ ইবনু যুবাইর প্রমুখ রুকূতে যাওয়া এবং রুকূ হতে উঠার সময় ‘রফউল
ইয়াদাইন’ করার পক্ষে মত দিয়েছেন। ইমাম মালিক মা’মার, আওযায়ী ইবনু ‘উয়াইনাহ ইমাম ‘আবদুল্লাহ
ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ) এই মত গ্রহণ করেছেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক
বলেন, হাত উত্তোলন সম্পর্কিত হাদীস সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুপ্রমাণিত। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) যে
বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শুধু একবার রফউল ইয়াদাইন করেছেন,
অতঃপর আর কখনো করেননি এ হাদীসটি প্রমাণিত নয় এবং প্রতিষ্ঠিতও নয়। আমাকে এ কথা আহমাদ
ইবনু আবদাহ্ বলেছেন, তিনি ওয়াহ্ব ইবনু যামআর সূত্রে তিনি সুফিয়ান ইবনু আবদুল মালিকের
সূত্রে এবং তিনি আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাকের সূত্রে পেয়েছেন।
জারুদ ইবনু মু’আয বলেন: সুফইয়ান ইবনু উয়াইনা, ‘উমার ইবনু হারুন, নায্র ইবনু শুমাইল
প্রমুখ ইমামগণ নামায শুরু করতে রুকূতে যাওয়ার সময় এবং রুকূ হতে উঠার সময় রফউল ইয়াদাইন
করতেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭৯. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথমবার ব্যতীত নামাযে আর কোথাও রফউল ইয়াদাইন
করেননি
২৫৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ مَسْعُودٍ أَلاَ أُصَلِّي بِكُمْ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَصَلَّى فَلَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلاَّ فِي أَوَّلِ مَرَّةٍ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ
مَسْعُودٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَبِهِ يَقُولُ غَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ .
وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ .
‘আলকামা (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বললেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (নিয়মে) নামায আদায় করে দেখাব না? তিনি (‘আবদুল্লাহ)
নামায আদায় করলেন, কিন্তু প্রথম বার (তাকবীরে তাহরীমার সময়) ছাড়া আর কোথাও রফউল
ইয়াদাইন করেননি।
সহীহ্। সিফাতুস সালাত, মূল-মিশকাত-(৮০৯)।
এ অনুচ্ছেদে
বারা ইবনু আযিব (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু মাসঊদের হাদীসটি
হাসান। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের একাধিক সাহাবা ও তাবিঈন এ হাদীসের অনুকূলে
মত দিয়েছেন। সুফিয়ান সাওরী ও কুফাবাসীগণ এই মত গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮০. অনুচ্ছেদঃ
রুকূতে দুই হাত দুই
হাঁটুতে রাখা
২৫৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنَا أَبُو
حَصِينٍ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، قَالَ قَالَ لَنَا عُمَرُ
بْنُ الْخَطَّابِ رضى الله عَنْهُ إِنَّ الرُّكَبَ سُنَّتْ لَكُمْ فَخُذُوا
بِالرُّكَبِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَعْدٍ وَأَنَسٍ وَأَبِي حُمَيْدٍ
وَأَبِي أُسَيْدٍ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ وَمُحَمَّدِ بْنِ مَسْلَمَةَ وَأَبِي
مَسْعُودٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ وَمَنْ بَعْدَهُمْ لاَ اخْتِلاَفَ بَيْنَهُمْ فِي
ذَلِكَ إِلاَّ مَا رُوِيَ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَبَعْضِ أَصْحَابِهِ أَنَّهُمْ
كَانُوا يُطَبِّقُونَ . وَالتَّطْبِيقُ مَنْسُوخٌ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
আবূ ‘আবদুর রাহমান
আস-সুলামী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) আমাদের বললেন, রুকূতে হাঁটুতে হাত রাখা তোমাদের জন্য সুন্নাত।
অতএব তোমরা হাঁটুতে হাত রাখ।
সনদ সহীহ্।
এ অনুচ্ছেদে
সা’দ, আনাস, আবূ হুমাইদ, আবূ উসাইদ, সাহল ইবনু সা’দ, মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা ও আবূ
মাসঊদ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ উমারের হাদীসটি হাসান সহীহ। সাহাবা,
তাবিঈন ও তাবি তাবিঈনের মধ্যে রুকূর সময় হাঁটুতে হাত রাখার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই।
কিন্তু ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে যা বর্ণিত হয়েছে (রুকূর সময় দুই হাত একত্রে মিলিয়ে দুই
ঊরুর মাঝখানে রাখা) তার সাথে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য বিশেষজ্ঞ আলিমগণ বলেন, তাঁর বর্ণনাটি
মানসুখ (বাতিল) হয়ে গেছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫৯
قَالَ
سَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ كُنَّا نَفْعَلُ ذَلِكَ فَنُهِينَا عَنْهُ وَأُمِرْنَا
أَنْ نَضَعَ الأَكُفَّ عَلَى الرُّكَبِ . قَالَ حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ
حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ أَبِي يَعْفُورٍ عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ
أَبِيهِ سَعْدٍ بِهَذَا . وَأَبُو حُمَيْدٍ السَّاعِدِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ سَعْدِ بْنِ الْمُنْذِرِ . وَأَبُو أُسَيْدٍ السَّاعِدِيُّ
اسْمُهُ مَالِكُ بْنُ رَبِيعَةَ . وَأَبُو حَصِينٍ اسْمُهُ عُثْمَانُ بْنُ
عَاصِمٍ الأَسَدِيُّ . وَأَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ حَبِيبٍ . وَأَبُو يَعْفُورٍ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عُبَيْدِ
بْنِ نِسْطَاسٍ . وَأَبُو يَعْفُورٍ الْعَبْدِيُّ اسْمُهُ وَاقِدٌ وَيُقَالُ
وَقْدَانُ وَهُوَ الَّذِي رَوَى عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى . وَكِلاَهُمَا
مِنْ أَهْلِ الْكُوفَةِ .
সা’দ ইবনু আবূ
ওয়াককাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা প্রথমে এরূপ
করতাম (দুই হাত একসাথে মিলিয়ে দুই রানের মাঝখানে রাখতাম)। কিন্তু পরে আমাদেরকে
এমনটি করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং রুকূর সময় হাঁটুর উপর হাত রাখার নির্দেশ দেওয়া
হয়েছে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৭৩), বুখারী ও মুসলিম।
মুস’আব
ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে তাঁর পিতা সা’দের সূত্রেও উপরে উল্লেখিত হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।
আবূ হুমাইদ সায়িদী’র নাম আব্দুর রহমান ইবনু সা’দ ইবনুল মুনযির, আবূ উসাইদের নাম মালিক
ইবনু রাবিয়্যাহ, আবূ হুসাইনের নাম উসমান ইবনু ‘আসিম, আবূ ‘আব্দুর রহমান সুলামীর নাম
‘আব্দুল্লাহ ইবনু হাবীব। আবূ ইয়া’ফূর-এর নাম ‘আব্দুর রহমান ইবনু উবাইদ। আবূ ইয়া’কূব
আবদী’র নাম ওয়াক্বিক। আর ইনিই ‘আব্দুল্লাহ ইবনু আবী আউফা হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
এরা উভয়েই কুফাবাসী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮১. অনুচ্ছেদঃ
রুকূ অবস্থায় উভয় হাত
পেটের পার্শ্বদেশ হতে পৃথক রাখা
২৬০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، بُنْدَارٌ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ،
حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا عَبَّاسُ بْنُ سَهْلِ بْنِ
سَعْدٍ، قَالَ اجْتَمَعَ أَبُو حُمَيْدٍ وَأَبُو أُسَيْدٍ وَسَهْلُ بْنُ سَعْدٍ
وَمُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ فَذَكَرُوا صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم . فَقَالَ أَبُو حُمَيْدٍ أَنَا أَعْلَمُكُمْ بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَكَعَ فَوَضَعَ
يَدَيْهِ عَلَى رُكْبَتَيْهِ كَأَنَّهُ قَابِضٌ عَلَيْهِمَا وَوَتَّرَ يَدَيْهِ
فَنَحَّاهُمَا عَنْ جَنْبَيْهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي حُمَيْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ الَّذِي
اخْتَارَهُ أَهْلُ الْعِلْمِ أَنْ يُجَافِيَ الرَّجُلُ يَدَيْهِ عَنْ جَنْبَيْهِ
فِي الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ .
‘আব্বাস ইবনু সাহল
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আবূ
হুমাইদ, আবূ সা’ঈদ, সাহল ইবনু সা’দ এবং মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) একত্র হলেন।
তাঁরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামায সম্পর্কে একে
অপরের সংগে আলাপ করছিলেন। আবূ হুমাইদ (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামায আদায়ের নিয়ম সম্পর্কে আমি তোমাদের চেয়ে অনেক ভাল
জানি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূর সময় দুই হাত দুই
হাঁটুতে রাখলেন। তিনি হাত দু’টোকে টানা তীরের মত (সোজা) রাখলেন এবং পার্শ্বদেশ হতে
পৃথক (ফাঁক) করে রাখলেন।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৭২৩), মিশকাত-(৮০১), সিফাতুস সালাত-(১১০)।
এ অনুচ্ছেদে
আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুমাইদ-এর হাদীসটি হাসান সহীহ।
বিশেষজ্ঞগণ রুকূ সাজদাহ্র সময় উভয় হাত পার্শ্বদেশ (পেট) হতে পৃথক রাখার নিয়মই অবলম্বন
করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮২. অনুচ্ছেদঃ
রুকূ-সাজদাহ্র
তাসবীহ
২৬১
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ،
عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ يَزِيدَ الْهُذَلِيِّ، عَنْ عَوْنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إِذَا رَكَعَ أَحَدُكُمْ فَقَالَ فِي رُكُوعِهِ سُبْحَانَ رَبِّيَ
الْعَظِيمِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَقَدْ تَمَّ رُكُوعُهُ وَذَلِكَ أَدْنَاهُ .
وَإِذَا سَجَدَ فَقَالَ فِي سُجُودِهِ سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى ثَلاَثَ
مَرَّاتٍ فَقَدْ تَمَّ سُجُودُهُ وَذَلِكَ أَدْنَاهُ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ حُذَيْفَةَ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
ابْنِ مَسْعُودٍ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِمُتَّصِلٍ . عَوْنُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عُتْبَةَ لَمْ يَلْقَ ابْنَ مَسْعُودٍ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ أَنْ لاَ يَنْقُصَ الرَّجُلُ فِي الرُّكُوعِ
وَالسُّجُودِ مِنْ ثَلاَثِ تَسْبِيحَاتٍ . وَرُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ أَسْتَحِبُّ لِلإِمَامِ أَنْ يُسَبِّحَ خَمْسَ
تَسْبِيحَاتٍ لِكَىْ يُدْرِكَ مَنْ خَلْفَهُ ثَلاَثَ تَسْبِيحَاتٍ . وَهَكَذَا
قَالَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ .
ইবনু মাসঊদ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন তোমাদের কেউ রুকূ করবে তখন রুকূতে তিনবার
“সুবাহানা রব্বিয়াল আযীম” (আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি) বলবে। তাহলে
তার রুকূ পূর্ণ হবে। আর এটা হল সর্বনিম্ন পরিমাণ। যখন সে সিজদা করবে তখন সিজদায়
তিনবার “সুবহানা রব্বিয়াল আলা” বলবে। তাহলে তার সিজদা পূর্ণ হবে। আর এটা হল
সর্বনিম্ন পরিমাণ।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৮৯০)
এ অনুচ্ছেদে
হুযাইফা ও উকবা ইবনু আমির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, ইবনু মাসঊদ
(রাঃ)-এর হাদীসের সনদ মুত্তাসিল নয় (অর্থাৎ, এটা সনদসূত্র কর্তিত হাদীস)। কেননা ইবনু
মাসঊদ (রাঃ)-এর সাথে আওন ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উতবার দেখা হয়নি।
বিশেষজ্ঞ আলিমগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাঁরা রুকূ ও সিজদায় তিন তাসবীহ-এর কম
না বলাই মুস্তাহাব বলেছেন। ইবনুল মুবারাক বলেছেন, আমি ইমামের জন্য পাঁচ বার তাসবীহ
বলা মুস্তাহাব মনে করি। এতে মুক্তাদী ধীরেসুস্থে তিন তাসবীহ পাঠ করে নিতে পারবে। ইসহাক
ইবনু ইবরাহীমও অনুরূপ কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৬২
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ،
عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ عُبَيْدَةَ، يُحَدِّثُ عَنِ
الْمُسْتَوْرِدِ، عَنْ صِلَةَ بْنِ زُفَرَ، عَنْ حُذَيْفَةَ، أَنَّهُ صَلَّى مَعَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَانَ يَقُولُ فِي رُكُوعِهِ " سُبْحَانَ
رَبِّيَ الْعَظِيمِ " . وَفِي سُجُودِهِ " سُبْحَانَ رَبِّيَ
الأَعْلَى " . وَمَا أَتَى عَلَى آيَةِ رَحْمَةٍ إِلاَّ وَقَفَ وَسَأَلَ
وَمَا أَتَى عَلَى آيَةِ عَذَابٍ إِلاَّ وَقَفَ وَتَعَوَّذَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
হুযাইফা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে নামায আদায় করছেন। তিনি (রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) রুকূতে ‘সুবহানা রব্বিয়াল আযীম’ এবং সিজদায়
‘সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা’ বলতেন। যখনই কোন রাহমাত সম্পর্কিত আয়াতে আসতেন, তখনই তিনি
সামনে অগ্রসর হওয়া বন্ধ রেখে ‘রাহমাত’ চাইতেন। যখনই তিনি কোন শাস্তি সম্পর্কিত
আয়াতে আসতেন, তখন সামনে অগ্রসর হওয়া বন্ধ রেখে শাস্তি হতে আশ্রয় চাইতেন।
সহীহ। মিশকাত-(৮৮১)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৬৩
قَالَ
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ، نَحْوَهُ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ حُذَيْفَةَ، هَذَا
الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ أَنَّهُ صَلَّى بِاللَّيْلِ مَعَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ الْحَدِيثَ .
ইমাম তিরমিযী থেকে
বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ ইবনু বাশ্শার
‘আব্দুর রহমান ইবনু মাহদী হতে, তিনি শু’বা হতে স্বীয় সনদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন।
সহীহ্। দেখুন পূর্বের হাদীস।
হুযাইফা
হতে অন্য সূত্রেও হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। তাতে তিনি রাত্রে নামায আদায় করেছেন বলে উল্লেখ
আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮৩. অনুচ্ছেদঃ
রুকূ-সাজদাহ্তে
কুর’আন পাঠ নিষেধ
২৬৪
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكُ
بْنُ أَنَسٍ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ
إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُنَيْنٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ
أَبِي طَالِبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ لُبْسِ
الْقَسِّيِّ وَالْمُعَصْفَرِ وَعَنْ تَخَتُّمِ الذَّهَبِ وَعَنْ قِرَاءَةِ
الْقُرْآنِ فِي الرُّكُوعِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ قَوْلُ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ
وَمَنْ بَعْدَهُمْ كَرِهُوا الْقِرَاءَةَ فِي الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ .
‘আলী ইবনু আবূ
তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেনঃ কাচ্ছি নামক রেশমী কাপড় ও কড়া
লাল রং- এর কাপড় পরতে, সোনার আংটি পরতে এবং রুকূর মধ্যে কুর’আনের আয়াত পাঠ করতে।
সহীহ্। মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আলী (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান
সহীহ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবা ও তাদের পরবর্তী বিদ্বানগণ
রুকূ ও সাজদাহ্র মধ্যে কুর’আনের আয়াত পাঠ করা মাকরূহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮৪. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তি রুকূ ও
সাজদাহ্তে পিঠ সোজা করে না
২৬৫
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عُمَارَةَ
بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ
الْبَدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لا
تُجْزِئُ صَلاَةٌ لاَ يُقِيمُ فِيهَا الرَّجُلُ يَعْنِي صُلْبَهُ فِي الرُّكُوعِ
وَالسُّجُودِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيِّ بْنِ شَيْبَانَ
وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَرِفَاعَةَ الزُّرَقِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ يَرَوْنَ أَنْ يُقِيمَ الرَّجُلُ صُلْبَهُ فِي الرُّكُوعِ
وَالسُّجُودِ . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ مَنْ لَمْ يُقِمْ
صُلْبَهُ فِي الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ فَصَلاَتُهُ فَاسِدَةٌ لِحَدِيثِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم " لاَ تُجْزِئُ صَلاَةٌ لاَ يُقِيمُ الرَّجُلُ فِيهَا
صُلْبَهُ فِي الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ " . وَأَبُو مَعْمَرٍ اسْمُهُ
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَخْبَرَةَ . وَأَبُو مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيُّ
الْبَدْرِيُّ اسْمُهُ عُقْبَةُ بْنُ عَمْرٍو .
আবূ মাসঊদ আনসারী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রুকূ ও
সাজদাহ্তে পিঠ স্থিরভাবে সোজা করে না তার নামায সহীহ হয় না।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৭০)।
এ অনুচ্ছেদে
আলী ইবনু শাইবান, আনাস, আবূ হুরায়রা ও রিফা’আহ আয-যুরাকী হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
‘ঈসা বলেনঃ আবূ মাসঊদের এ হাদীসটি হাসান সহীহ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবা ও তাদের পরবর্তীদের মত অনুসারে রুকূ এবং সাজদাহ্য় পিঠ
স্থিরভাবে সোজা করতে হবে। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক বলেন, যে ব্যক্তি রুকূ-সাজদাহ্য়
পিঠ স্থিরভাবে সোজা না করবে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীসের
তাৎপর্য অনুযায়ী তার নামায বিফল হয়ে যাবে।
আবূ মা’মার এর নাম ‘আব্দুল্লাহ ইবনু সাখবারাহ, আবূ মাসঊদ আনসারী এর নাম উকবা ইবনু
‘আমর।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮৫. অনুচ্ছেদঃ
রুকূ হতে মাথা উঠানোর
সময় যা বলতে হবে
২৬৬
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ الْمَاجِشُونُ،
حَدَّثَنِي عَمِّي، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ
بْنِ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ قَالَ
" سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ
السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا بَيْنَهُمَا وَمِلْءَ مَا شِئْتَ
مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ
عَبَّاسٍ وَابْنِ أَبِي أَوْفَى وَأَبِي جُحَيْفَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ قَالَ يَقُولُ هَذَا
فِي الْمَكْتُوبَةِ وَالتَّطَوُّعِ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْكُوفَةِ يَقُولُ
هَذَا فِي صَلاَةِ التَّطَوُّعِ وَلاَ يَقُولُهَا فِي صَلاَةِ الْمَكْتُوبَةِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَإِنَّمَا يُقَالُ الْمَاجِشُونِيُّ لأَنَّهُ مِنْ وَلَدِ
الْمَاجِشُونِ .
‘আলী ইবনু আবূ
তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূ হতে মাথা উঠানোর সময় বলতেনঃ
“সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ্ রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ মিলআস সামাওয়াতি ওয়া মিলআল
আরযি ওয়া মিলআ মা বাইনাহুমা ওয়া মিলআ মাশি’তা মিন শাই-ইম বাদু”।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৭৩৮), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার, ইবনু ‘আব্বাস, ইবনু আবূ আওফা, আবূ জুহাইফা ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও হাদীস
বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
একদল মনীষী এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। ইমাম শাফিঈ এই মত গ্রহণ করেছেন এবং বলেছেন,
ফরয ও অন্যান্য সব নামাযেই এই দু’আ পাঠ করতে হবে। কোন কোন কুফাবাসী (ইমাম আবূ হানীফা
ও তাঁর মতানুসারীগণ) বলেছেন, এই দু’আ ফরয নামাযে পাঠ করবে না, নাফল ও অন্যান্য নামাযে
পাঠ করবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮৬. অনুচ্ছেদঃ
একই বিষয়
২৬৭
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ،
عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا قَالَ الإِمَامُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ
حَمِدَهُ . فَقُولُوا رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ
قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ
عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَمَنْ بَعْدَهُمْ أَنْ يَقُولَ الإِمَامُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ
رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ . وَيَقُولُ مَنْ خَلْفَ الإِمَامِ رَبَّنَا وَلَكَ
الْحَمْدُ . وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ . وَقَالَ ابْنُ سِيرِينَ وَغَيْرُهُ يَقُولُ
مَنْ خَلْفَ الإِمَامِ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ
. مِثْلَ مَا يَقُولُ الإِمَامُ . وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَإِسْحَاقُ
.
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ইমাম যখন ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’
বলে, তোমরা তখন ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’ বল। কেননা যার কথা ফেরেশতাদের কথার সাথে
মিলে যাবে তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাউদ-(৭৯৪), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ
সাহাবা ও তাদের পরবর্তীগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাঁরা বলেছেন, ইমাম রুকূ হতে
উঠতে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ বলবে এবং তার পেছনের লোকেরা
‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’ বলবে। ইমাম আহমাদ এই মত দিয়েছেন। ইবনু সীরীন ও অপরাপর মনীষীগণ
বলেছেন, ইমামের মত মুক্তাদীরাও ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’
বলবে। ইমাম শাফিঈ ও ইসহাস এই মত প্রকাশ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮৭. অনুচ্ছেদঃ
সিজদার সময় হাঁটু
দু’টি রাখার পর দুই হাত রাখতে হবে
২৬৮
حَدَّثَنَا
سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، وَالْحَسَنُ
بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُنِيرٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ،
قَالُوا حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ، عَنْ عَاصِمِ
بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سَجَدَ يَضَعُ رُكْبَتَيْهِ قَبْلَ يَدَيْهِ
وَإِذَا نَهَضَ رَفَعَ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ . قَالَ زَادَ الْحَسَنُ
بْنُ عَلِيٍّ فِي حَدِيثِهِ قَالَ يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ وَلَمْ يَرْوِ شَرِيكٌ
عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ إِلاَّ هَذَا الْحَدِيثَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُ أَحَدًا رَوَاهُ مِثْلَ هَذَا عَنْ شَرِيكٍ
. وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَرَوْنَ أَنْ يَضَعَ
الرَّجُلُ رُكْبَتَيْهِ قَبْلَ يَدَيْهِ وَإِذَا نَهَضَ رَفَعَ يَدَيْهِ قَبْلَ
رُكْبَتَيْهِ . وَرَوَى هَمَّامٌ عَنْ عَاصِمٍ هَذَا مُرْسَلاً وَلَمْ يَذْكُرْ
فِيهِ وَائِلَ بْنَ حُجْرٍ .
ওয়াইল ইবনু হুজর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি- তিনি যখন সিজদা করতেন
তখন মাটিতে হাত রাখার আগে হাঁটু রাখতেন এবং যখন তিনি (সিজদা হতে) উঠতেন তখন হাঁটু
উঠানোর আগে হাত উঠাতেন।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৮৮২)।
হাসান ইবনু
আলী তাঁর হাদীসে উল্লেখ করেছেন, ইয়াযীদ ইবনু হারূন বলেছেন। আসিমের নিকট হতে শারীক শুধু
এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। শারীক ছাড়া আর কেউ
এ হাদীস বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই।
বেশিরভাগ মনীষীই এ হাদীসের উপর আমল করেছেন এবং বলেছেন, সিজদায় যাওয়ার সময় মাটিতে প্রথমে
হাঁটু ও পরে হাত রাখতে হবে এবং উঠার সময় আগে হাত ও পরে হাঁটু তুলতে হবে।
হাম্মাম আসিমের নিকট হতে এ হাদীস মুরসাল হিসাবে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তাতে ওয়াইল ইবনু
হুজরের নাম উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৮৮. অনুচ্ছেদঃ
একই বিষয়বস্তু
২৬৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نَافِعٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ حَسَنٍ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَعْمِدُ
أَحَدُكُمْ فَيَبْرُكُ فِي صَلاَتِهِ بَرْكَ الْجَمَلِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ
أَبِي الزِّنَادِ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ
الْمَقْبُرِيُّ ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ وَغَيْرُهُ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ তার নামাযে কি উটের মত ভর দিয়ে বসবে?
সহীহ্। মিশকাত-(৮৯৯), ইরওয়া-(২/৭৮), সহীহ আবূ দাঊদ-(৭৮৯)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। কেননা এ হাদীসটি আমরা শুধুমাত্র আবুয যিনাদের সূত্রেই জেনেছি।
‘আবদুল্লাহ ইবনু সা’ঈদ আল-মাকবুরী তাঁর পিতার সূত্রে আবূ হুরায়রার নিকট হতে এ হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ আল-কাত্তন ও অন্যরা ‘আবদুল্লাহ ইবনু সা’ঈদ
আল-মাকবুরীকে যঈফ (দুর্বল) বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮৯. অনুচ্ছেদঃ
নাক ও কপাল দিয়ে
সাজদাহ্ করা
২৭০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، بُنْدَارٌ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ،
حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنِي عَبَّاسُ بْنُ سَهْلٍ، عَنْ
أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا
سَجَدَ أَمْكَنَ أَنْفَهُ وَجَبْهَتَهُ مِنَ الأَرْضِ وَنَحَّى يَدَيْهِ عَنْ
جَنْبَيْهِ وَوَضَعَ كَفَّيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ وَوَائِلِ بْنِ حُجْرٍ وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ أَبِي حُمَيْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ
أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ يَسْجُدَ الرَّجُلُ عَلَى جَبْهَتِهِ وَأَنْفِهِ فَإِنْ
سَجَدَ عَلَى جَبْهَتِهِ دُونَ أَنْفِهِ فَقَدْ قَالَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ
الْعِلْمِ يُجْزِئُهُ . وَقَالَ غَيْرُهُمْ لاَ يُجْزِئُهُ حَتَّى يَسْجُدَ
عَلَى الْجَبْهَةِ وَالأَنْفِ .
আবূ হুমাইদ
আস-সায়েদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সাজদাহ্ করতেন তখন নিজের নাক ও কপাল
যমিনের সাথে লাগিয়ে রাখতেন, উভয় হাত পাঁজর হতে আলাদা রাখতেন এবং হাতের তালু কাঁধ
বরারব রাখতেন।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৭২৩), মিশকাত (৮০১), সিফাতুস সালাত (১২৩)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘আব্বাস, ওয়াইল ইবনু হুজর ও আবূ সা’ঈদ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আবূ হুমাইদের হাদীসটি হাসান সহীহ। ‘আলিমগণের মতে, নাক ও কপাল দিয়ে সাজদাহ্ করতে
হবে। যদি শুধু কপাল দিয়ে সাজদাহ্ করা হয় এবং নাক মাটিতে না ঠেকান হয় তবে এক দল আলিমের
মতে নামায হয়ে যাবে। কিন্তু অন্য দলের মতে নাক ও কপাল মাটিতে না ঠেকালে নামায সম্পূর্ণ
হবে না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯০. অনুচ্ছেদঃ
সাজদাহ্র সময়
মুখমন্ডল কোন্ জায়গায় রাখতে হবে
২৭১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ الْحَجَّاجِ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ، قَالَ قُلْتُ لِلْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ أَيْنَ كَانَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم يَضَعُ وَجْهَهُ إِذَا سَجَدَ فَقَالَ بَيْنَ كَفَّيْهِ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ وَأَبِي حُمَيْدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ الْبَرَاءِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَهُوَ الَّذِي اخْتَارَهُ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ تَكُونَ يَدَاهُ قَرِيبًا مِنْ أُذُنَيْهِ .
আবূ ইসহাক (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বারাআ
ইবনু আযিব (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলামঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সাজদাহ্তে মুখমন্ডল কোন জায়গায় রাখতেন? তিনি বললেন, দুই হাতের তালুর মাঝ বরাবর
রাখতেন।
সহীহ্। মুসলিম-(২/১৩)।
এ অনুচ্ছেদে
ওয়াইল ইবনু হুজর ও আবূ হুমাইদ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ বারাআ-এর হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। কোন কোন বিদ্বান এ হাদীস অনুযায়ী
সাজদাহ্তে উভয় হাত কান বরাবর রাখার নিয়ম অবলম্বন করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯১. অনুচ্ছেদঃ
সাত অঙ্গের সমন্বয়ে
সাজদাহ্ করা
২৭২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنِ
الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا سَجَدَ الْعَبْدُ سَجَدَ مَعَهُ سَبْعَةُ
آرَابٍ وَجْهُهُ وَكَفَّاهُ وَرُكْبَتَاهُ وَقَدَمَاهُ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرٍ وَأَبِي سَعِيدٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ الْعَبَّاسِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَعَلَيْهِ
الْعَمَلُ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
‘আব্বাস ইবনু
‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ বান্দা যখন সাজদাহ্ করে তখন
তার সাথে তার (শরীরের) সাতটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও সাজদাহ্ করে অর্থাৎ মুখমন্ডল, উভয়
হাতরে তালু, দুই হাঁটু ও দুই পা।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৮৫), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘আব্বাস, আবূ হুরায়রা, জাবির ও আবূ সা’ঈদ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহীহ। বিশেষজ্ঞগণ এ হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী
‘আমল করেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৭৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ
طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أُمِرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ
يَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةِ أَعْظُمٍ وَلاَ يَكُفَّ شَعْرَهُ وَلاَ ثِيَابَهُ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আদিষ্ট হয়েছেন সাত অঙ্গের সমন্বয়ে সাজদাহ্
করতে এবং (নামাযের মধ্যে) চুল ও কাপড় না গোছাতে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৮৪), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান-সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯২. অনুচ্ছেদঃ
সাজদাহ্তে হাত বাহু
হতে ফাঁক করে রাখা
২৭৪
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ قَيْسٍ،
عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الأَقْرَمِ الْخُزَاعِيِّ، عَنْ
أَبِيهِ، قَالَ كُنْتُ مَعَ أَبِي بِالْقَاعِ مِنْ نَمِرَةَ فَمَرَّتْ رَكَبَةٌ
فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَائِمٌ يُصَلِّي . قَالَ فَكُنْتُ
أَنْظُرُ إِلَى عُفْرَتَىْ إِبْطَيْهِ إِذَا سَجَدَ أَىْ بَيَاضِهِ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ بُحَيْنَةَ وَجَابِرٍ وَأَحْمَرَ بْنِ
جَزْءٍ وَمَيْمُونَةَ وَأَبِي حُمَيْدٍ وَأَبِي مَسْعُودٍ وَأَبِي أُسَيْدٍ
وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ وَمُحَمَّدِ بْنِ مَسْلَمَةَ وَالْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ
وَعَدِيِّ بْنِ عَمِيرَةَ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَحْمَرُ بْنُ
جَزْءٍ هَذَا رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَهُ حَدِيثٌ
وَاحِدٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَقْرَمَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ دَاوُدَ بْنِ قَيْسٍ وَلاَ نَعْرِفُ
لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَقْرَمَ الْخُزَاعِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
غَيْرَ هَذَا الْحَدِيثِ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ وَعَبْدُ
اللَّهِ بْنُ أَقْرَمَ الْخُزَاعِيُّ إِنَّمَا لَهُ هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم . وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَرْقَمَ الزُّهْرِيُّ صَاحِبُ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَهُوَ كَاتِبُ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ .
উবাইদুল্লাহ ইবনু
‘আবদুল্লাহ ইবনু আকরাম আল-খুযাঈ (রাঃ) হতে তাঁর পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (আবদুল্লাহ)
বলেন, আমি আমার পিতার সাথে নামিরার সমতল ভূমিতে অবস্থান করছিলাম। ইতিমধ্যে একদল
সাওয়ারী (আমাদের) পার হয়ে গেল। হঠাৎ দেখলাম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছেন। রাবী বলেন, যখন তিনি সাজদাহ্য় যেতেন তখন আমি
তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখে নিতাম।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৮১)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘আব্বাস, ইবনু বুহাইনা, জাবির, আহমাদ ইবনু জায, মাইমূনা, আবূ হুমাইদ, আবূ উসাইদ,
আবূ মাসঊদ, সাহল ইবনু সা’দ, মুহাম্মাদ ইবুন মাসলামা, বারাআ ইবনু আযিব, ‘আদী ইবনু ‘আমীরা
ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আহমার ইবনু জায নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের
অন্তর্ভুক্ত।
আবু ‘ঈসা বলেনঃ আবদুল্লাহ ইবনু আকরামের হাদীসটি হাসান। দাঊদ ইবনু কাইসের মাধ্যমেই আমরা
এ হাদীসটি জেনেছি। ‘আবদুল্লাহ ইবনু আকরাম (রাঃ)-এর নিকট হতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর এ হাদীসটিই শুধু আমরা জানি। তিনি একটিমাত্র হাদীস বর্ণনা করেছেন।
‘আলিমগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেন (সাজদাহ্তে হাত এমনভাবে ছড়িয়ে রাখতে হবে যেন বগল
ফাঁক থাকে)।
‘আবদুল্লাহ ইবনু আকরাম আয-যুহরী সাহাবী ছিলেন এবং তিনি আবূ বাকার সিদ্দীক (রাঃ)-এর
কাতিব (সচিব) ছিলেন। আর আবদুল্লাহ ইবনু আকরাম আল-খুযাঈ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুধু এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯৩. অনুচ্ছেদঃ
সঠিকভাবে সাজদাহ্ করা
২৭৫
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ،
عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا سَجَدَ
أَحَدُكُمْ فَلْيَعْتَدِلْ وَلاَ يَفْتَرِشْ ذِرَاعَيْهِ افْتِرَاشَ الْكَلْبِ
" . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ شِبْلٍ وَأَنَسٍ
وَالْبَرَاءِ وَأَبِي حُمَيْدٍ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ
يَخْتَارُونَ الاِعْتِدَالَ فِي السُّجُودِ وَيَكْرَهُونَ الاِفْتِرَاشَ
كَافْتِرَاشِ السَّبُعِ .
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ যখন সাজদাহ্ করে তখন সে যেন সঠিকভাবে
সাজদাহ্ করে এবং কুকুরের মত যমিনে যেন হাত বিছিয়ে না দেয়।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৯১)।
এ অনুচ্ছেদে
‘আবদুর রহমান ইবুন শিবল, বারাআ, আনাস, আবূ হুমাইদ ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ জাবিরের হাদীসটি হাসান সহীহ। ‘আলিমগণ সঠিকভাবে সাজদাহ্ করার (এবং
দুই সাজদাহ্র মাঝখানে বিরতি দেয়ার) প্রতি জোর দিয়েছেন এবং হিংস্র জন্তুর মত হাত মাটিতে
বিছিয়ে দেয়াকে মাকরূহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৭৬
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
قَتَادَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا، يَقُولُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " اعْتَدِلُوا فِي السُّجُودِ وَلاَ يَبْسُطَنَّ أَحَدُكُمْ
ذِرَاعَيْهِ فِي الصَّلاَةِ بَسْطَ الْكَلْبِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
কাতাদা (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস
(রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
তোমরা সঠিকভাবে সাজদাহ্ কর। তোমাদের কেউ যেন নামাযের মধ্যে কুকুরের মত যমিনে হাত
বিছিয়ে না দেয়।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৯২), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯৪. অনুচ্ছেদঃ
সাজদাহ্র সময় যমিনে
হাত রাখা এবং পায়ের পাতা খাড়া করে রাখা
২৭৭
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ،
حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِوَضْعِ الْيَدَيْنِ وَنَصْبِ
الْقَدَمَيْنِ .
‘আমির ইবনু সা’দ
(রাঃ) হতে তাঁর পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাত (তালু) মাটিতে রাখতে এবং পা খাড়া রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
হাসান। সিফাতুস সালাত-(১২৬)।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৭৮
قَالَ
عَبْدُ اللَّهِ وَقَالَ مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ
مَسْعَدَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ،
عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِوَضْعِ
الْيَدَيْنِ فَذَكَرَ نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ أَبِيهِ . قَالَ
أَبُو عِيسَى وَرَوَى يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلاَنَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَامِرِ بْنِ
سَعْدٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِوَضْعِ الْيَدَيْنِ وَنَصْبِ
الْقَدَمَيْنِ . مُرْسَلٌ وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ وُهَيْبٍ . وَهُوَ
الَّذِي أَجْمَعَ عَلَيْهِ أَهْلُ الْعِلْمِ وَاخْتَارُوهُ .
বর্ণনাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
অপর এক বর্ণনায় আছে ‘আমির ইবনু সা’দ এ হাদীসটি মুরসাল হিসাবে বর্ণনা
করেছেন। (হাসান) পূর্বের হাদীসের কারণে। এ বর্ণনা সূত্রটি ওহাইবের বর্ণনার চেয়ে
বেশি সহীহ। মনীষীগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করা পছন্দ করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৯৫. অনুচ্ছেদঃ
রুকূ ও সাজদাহ্ হতে
মাথা তুলে পিঠ সোজা রাখা
২৭৯
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى الْمَرْوَزِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ كَانَتْ
صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَكَعَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ
مِنَ الرُّكُوعِ وَإِذَا سَجَدَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ قَرِيبًا
مِنَ السَّوَاءِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ .
বারাআ ইবনু আযিব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামাযের নিয়ম ছিলঃ যখন তিনি
রুকূ করতেন, যখন রুকু হতে মাথা তুলতেন, যখন সাজদাহ্ করতেন এবং সাজদাহ্ হতে মাথা
তুলতেন তখন এ কাজগুলোর মধ্যে সময়ের ব্যবধান প্রায় সমানই হত।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৭৯৮), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৮০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ الْبَرَاءِ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
মুহাম্মদ ইবনু বাশ্শার
থেকে বর্ণিতঃ
মুহাম্মদ ইবনু বাশ্শার, তিনি মুহাম্মদ ইবনু জা’ফর হতে, তিনি শু’বা
হতে তিনি হাকাম হতে, তিনি স্বীয় সনদে পূর্বের হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ বারাআ’র হাদীসটি হাসান সহীহ্। বিশেষজ্ঞ আলিমগণ উপরোক্ত হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৯৬. অনুচ্ছেদঃ
ইমামের সাথে সাথে
রুকূ-সাজদাহ্য় যাওয়া ভাল নয়
২৮১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ،
حَدَّثَنَا الْبَرَاءُ، وَهُوَ غَيْرُ كَذُوبٍ قَالَ كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا
خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَرَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ
لَمْ يَحْنِ رَجُلٌ مِنَّا ظَهْرَهُ حَتَّى يَسْجُدَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَنَسْجُدَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَمُعَاوِيَةَ وَابْنِ
مَسْعَدَةَ صَاحِبِ الْجُيُوشِ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
الْبَرَاءِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَبِهِ يَقُولُ أَهْلُ الْعِلْمِ إِنَّ
مَنْ خَلْفَ الإِمَامِ إِنَّمَا يَتْبَعُونَ الإِمَامَ فِيمَا يَصْنَعُ لاَ
يَرْكَعُونَ إِلاَّ بَعْدَ رُكُوعِهِ وَلاَ يَرْفَعُونَ إِلاَّ بَعْدَ رَفْعِهِ
. لاَ نَعْلَمُ بَيْنَهُمْ فِي ذَلِكَ اخْتِلاَفًا .
আবদুল্লাহ ইবনু
ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদেরকে
বারাআ (রাঃ) বলেছেন আর তিনি মিথ্যাবাদী নন। আমরা যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে নামায আদায় করতাম, তখন তিনি রুকূ হতে মাথা তুলার পর
সাজদাহ্য় যাওয়ার আগে আমাদের কেউই নিজ নিজ পিঠ (সাজদাহ্র জন্য) ঝুঁকিয়ে দিত না।
তিনি সাজদাহ্য় যাওয়ার পর আমরা সাজদাহ্য় যেতাম।
সহীহ্। সহীহ্ আবু দাঊদ-(৬৩১-৬৩৩), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আনাস, মুআবিয়া, ইবনু মাসআদা ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ
বারাআ’র হাদীসটি হাসান সহীহ্। আলিমগণ বলেছেন, মুক্তাদীগণ ইমামের প্রতিটি কাজে তাকে
অনুসরণ করবে এবং ইমাম রুকূতে যাওয়ার পর তারা রুকূতে যাবে, তার মাথা তুলার পর তারা মাথা
তুলবে। এ ব্যাপারে বিদ্বানদের মধ্যে কোন মতের অমিল আছে বলে আমাদের জানা নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯৭. অনুচ্ছেদঃ
দুই সিজদার মঝখানে
ইক্আ করা মাকরুহ
২৮২
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ
عَلِيٍّ، قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا
عَلِيُّ أُحِبُّ لَكَ مَا أُحِبُّ لِنَفْسِي وَأَكْرَهُ لَكَ مَا أَكْرَهُ
لِنَفْسِي لاَ تُقْعِ بَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ عَلِيٍّ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي
إِسْحَاقَ عَنِ الْحَارِثِ عَنْ عَلِيٍّ . وَقَدْ ضَعَّفَ بَعْضُ أَهْلِ
الْعِلْمِ الْحَارِثَ الأَعْوَرَ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ
أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَكْرَهُونَ الإِقْعَاءَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
عَائِشَةَ وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ .
আলী (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হে আলী! আমি নিজের জন্য যা ভাল মনে করি
তোমার জন্যও তা হিত মনে করি এবং আমার নিজের জন্য যা অপছন্দ করি তা তোমার জন্যও
অপছন্দ করি। তুমি দুই সিজদার মাঝে ইকআ রীতিতে বস না।
যইফ, ইবনু মাজাহ(৮৯৪, ৮৯৫)
আবি ঈসা
বলেনঃ আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত এই হাদিসটি শুধুমাত্র আবু ইসহাক হতে হারিসের সুত্রে জানতে
পেরেছি। কোন কোন জ্ঞানি ব্যক্তি এ হাদীসের রাবী হারিসকে যঈফ বলেছেন। বেশিরভাগ বিদ্বান
এ হাদীসের উপর আমল করেছেন এবং ইক্আ পদ্ধতিতে বসা মাকরুহ বলেছেন। এ অনুচ্ছেদে আইশা,
আনাস আবু হুরাইরা (রাঃ) হতেও বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৯৮. অনুচ্ছেদঃ
ইক্ব’আর অনুমতি
২৮৩
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ،
أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ طَاوُسًا، يَقُولُ قُلْنَا لاِبْنِ
عَبَّاسٍ فِي الإِقْعَاءِ عَلَى الْقَدَمَيْنِ قَالَ هِيَ السُّنَّةُ .
فَقُلْنَا إِنَّا لَنَرَاهُ جَفَاءً بِالرَّجُلِ قَالَ بَلْ هِيَ سُنَّةُ
نَبِيِّكُمْ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لاَ يَرَوْنَ بِالإِقْعَاءِ بَأْسًا
وَهُوَ قَوْلُ بَعْضِ أَهْلِ مَكَّةَ مِنْ أَهْلِ الْفِقْهِ وَالْعِلْمِ . قَالَ
وَأَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ يَكْرَهُونَ الإِقْعَاءَ بَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ .
তাউস (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ)-কে ইক্ব’আ সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, এটা সুন্নাত। আমরা
বললাম, এতে আমরা পায়ে ব্যথা পাই। তিনি আবার বললেন, এটা তোমাদের রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাত।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৭৯১), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। কিছু জ্ঞানী সাহাবা (রাঃ) এ হাদীসের উপর আমল করেছেন।
তাঁরা ইক্ব’আয় (দুই পায়ের পাতা খাড়া রেখে তার উপর নিতম্ব রেখে বসাতে) কোন সমস্যা দেখেন
না। মক্কার কোন কোন ফিক্হবিদেরও এই মত। কিন্তু বেশিভাগ বিদ্বান দুই সাজদাহ্র মাঝখানে
এভাবে বসা মাকরূহ মনে করেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯৯. অনুচ্ছেদঃ
দুই সাজদাহ্র মাঝে
বিরতির সময় যা পাঠ করতে হবে
২৮৪
حَدَّثَنَا
سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ، عَنْ كَامِلٍ أَبِي
الْعَلاَءِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ بَيْنَ
السَّجْدَتَيْنِ " اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَاجْبُرْنِي
وَاهْدِنِي وَارْزُقْنِي " .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুই সাজদাহ্র মাঝখানে বলতেন, ‘আল্লাহুম্মাগফিরলী ওয়ারহামনী
ওয়াজবুরনী ওয়াহদিনী ওয়ারযুকনী।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৯৮)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৮৫
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ
هَارُونَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ حُبَابٍ، عَنْ كَامِلٍ أَبِي الْعَلاَءِ، نَحْوَهُ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَهَكَذَا رُوِيَ عَنْ عَلِيٍّ، .
وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ يَرَوْنَ هَذَا جَائِزًا فِي
الْمَكْتُوبَةِ وَالتَّطَوُّعِ . وَرَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ
كَامِلٍ أَبِي الْعَلاَءِ مُرْسَلاً .
হাসান ইবনু আলী
আল-খাল্লাল আল-হুলওয়ানী থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ইয়াযিদ ইবনু হারুন হতে, তিনি যাইদ ইবনু হুবাব হতে, তিনি আবুল
‘আলা কামিল হতে স্বীয় সনদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। ‘আলী (রাঃ) হতে একই রকম হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ
ও ইসহাক এ হাদীসের সমর্থক। তাঁরা ফরয, নফল সব নামাযে এ দু’আ পাঠ করা জায়িয বলেছেন।
কেউ কেউ এ হাদীসটি আবুল ‘আলা কামিল হতে মুরসাল হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
১০০. অনুচ্ছেদঃ
সিজদার সময় কিছুতে ভর
দেওয়া
২৮৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ
أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ اشْتَكَى بَعْضُ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَشَقَّةَ
السُّجُودِ عَلَيْهِمْ إِذَا تَفَرَّجُوا فَقَالَ " اسْتَعِينُوا
بِالرُّكَبِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ
نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ اللَّيْثِ عَنِ ابْنِ
عَجْلاَنَ . وَقَدْ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ وَغَيْرُ
وَاحِدٍ عَنْ سُمَىٍّ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ أَبِي عَيَّاشٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم نَحْوَ هَذَا . وَكَأَنَّ رِوَايَةَ هَؤُلاَءِ أَصَحُّ مِنْ
رِوَايَةِ اللَّيْثِ .
আবু হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী কারিম
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবাগন তাঁর নিকট অভিযোগ করলেনঃ যখন তারা
সিজদায় যান তখন কনুই পৃথক রাখতে তাদের খুব অসুবিধা হয়। তিনি বলেনঃ হাঁটুর সাথে
কনুই ঠেকিয়ে সাহায্য নাও।
যঈফ, যঈফ আবু দাউদ(১৬০)।
আবু ঈসা
বলেন এ হাদীসটী গারিব। এ হাদীসটি আমরা আবু সালিহের সনদ পরম্পরায় লাইসের মাধ্যমে ইবনু
আজলানের সুত্রেই জানতে পেরেছি। নুমান ইবনু আবু আইয়াশও এরকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। লাইসের
বর্ণনা চাইতে এই বর্ণনা বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১০১. অনুচ্ছেদঃ
সাজদাহ্ হতে উঠার
নিয়ম
২৮৭
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي
قِلاَبَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ اللَّيْثِيِّ، أَنَّهُ رَأَى
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فَكَانَ إِذَا كَانَ فِي وِتْرٍ مِنْ
صَلاَتِهِ لَمْ يَنْهَضْ حَتَّى يَسْتَوِيَ جَالِسًا . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ
عَلَيْهِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَبِهِ يَقُولُ إِسْحَاقُ وَبَعْضُ
أَصْحَابِنَا . وَمَالِكٌ يُكْنَى أَبَا سُلَيْمَانَ .
মালিক ইবনু
হুয়াইরিস আল-লাইসী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নামায আদায় করতে দেখেছেন। তিনি যখন নামাযের
বেজোর রাকআতে থাকতেন তখন (সাজদাহ্ হতে উঠে) সোজা হয়ে না বসা পর্যন্ত (পরবর্তী
রাক’আতের জন্য) দাঁড়াতেন না।
সহীহ্। ইরওয়া-(২/৮২-৮৩), সিফাতুস সালাত-(১৩৬), বুখারী।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ মালিক ইবনু হুযাইরিসের হাদীসটি হাসান সহীহ্। কোন কোন বিদ্বান এ হাদীসের উপর আমল
করেছেন। ইমাম ইসহাক (রহঃ) ও আমাদের কিছু সঙ্গীরা এই মত গ্রহণ করেছেন। মালিকের উপনাম
আবূ সুলাইমান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০২. অনুচ্ছেদঃ
একই বিষয়
২৮৮
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ
إِلْيَاسَ، عَنْ صَالِحٍ، مَوْلَى التَّوْأَمَةِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَنْهَضُ فِي الصَّلاَةِ عَلَى صُدُورِ
قَدَمَيْهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ عَلَيْهِ الْعَمَلُ
عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَخْتَارُونَ أَنْ يَنْهَضَ الرَّجُلُ فِي الصَّلاَةِ
عَلَى صُدُورِ قَدَمَيْهِ . وَخَالِدُ بْنُ إِلْيَاسَ هُوَ ضَعِيفٌ عِنْدَ
أَهْلِ الْحَدِيثِ . قَالَ وَيُقَالُ خَالِدُ بْنُ إِيَاسٍ أَيْضًا .
وَصَالِحٌ مَوْلَى التَّوْأَمَةِ هُوَ صَالِحُ بْنُ أَبِي صَالِحٍ . وَأَبُو
صَالِحٍ اسْمُهُ نَبْهَانُ وَهُوَ مَدَنِيٌّ .
আবু হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাযে (সিজদা হতে ) নিজের পায়ের
তালুতে (ভর দিয়ে) দাঁড়িয়ে যেতেন।
যঈফ, ইরওয়া ৩৬২।
আবু ঈসা
বলেন, বিদ্বানগন আবু হুরাইরা বর্ণিত হাদীসের উপর আমল করেছেন। তারা নামাযের মধ্যে (সিজদা
হতে ) পায়ের পাতার উপর দাঁড়ানোই মনঃপূত করেছেন। হাদীস বিশারদদের মতে খালিদ ইবনু আইয়াশ
একজন যঈফ রাবী।
তাকে খালিদ ইবনু ইয়াসও বলা হয়। আর সালিহ তিনি হলেন সালিহ ইবনু আবু সালিহ। আবু সালিহের
নাম নাবহান, তিনি মদীনার অধিবাসী।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১০৩. অনুচ্ছেদঃ
তাশাহহুদ পাঠ করা
২৮৯
حَدَّثَنَا
يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ
الأَشْجَعِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ
الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ عَلَّمَنَا
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَعَدْنَا فِي الرَّكْعَتَيْنِ أَنْ
نَقُولَ التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلاَمُ
عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلاَمُ
عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ
اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَجَابِرٍ وَأَبِي مُوسَى وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ قَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ . وَهُوَ
أَصَحُّ حَدِيثٍ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي التَّشَهُّدِ .
وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنَ التَّابِعِينَ . وَهُوَ قَوْلُ
سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ خُصَيْفٍ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم فِي الْمَنَامِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ النَّاسَ قَدِ
اخْتَلَفُوا فِي التَّشَهُّدِ فَقَالَ " عَلَيْكَ بِتَشَهُّدِ ابْنِ
مَسْعُودٍ " .
আবদুল্লাহ ইবনু
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দুই
রাক’আত নামায আদয়ের পর বসে যা পাঠ করতে হবে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে তা শিক্ষা দিয়েছেন। তা হলঃ “আত্ত্যাহিয়্যাতু
লিল্লাহি..........আবদুহু ওয়া রাসূলুহু”।
অর্থাৎ-“সমস্ত সম্মান, ইবাদাত, আরাধনা এবং পবিত্রতা আল্লাহর জন্য। হে নাবী! আপনার
উপর শান্তি বর্ষিত হোক, আল্লাহর রাহমাত এবং প্রাচুর্যও। আমাদের উপর এবং আল্লাহর
পুণ্যশালী বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ব্যতীত
কোন ইলাহ নাই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দাহ ও রাসূল।”
সহীহ্। ইরওয়া-(৩৩৬), দেখুন ইবনু মাজাহ-(৮৯৯)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার, জাবির, আবূ মূসা ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ
ইবনু মাসঊদের হাদীসটি একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। তাশাহ্হুদ সম্পর্কিত এ হাদীসটি
বেশি সহীহ্। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ সাহাবা এবং
তাদের পরবর্তীগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, আহমাদ
ইসহাক এরকম অভিমত দিয়েছেন। আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু মূসার সূত্রে তিনি আব্দুল্লাহ
ইবনুল মুবারক হতে, তিনি মা’মার হতে, তিনি খুসাইফ হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন-“আমি
স্বপ্নে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পেয়ে বললাম, ‘হে আল্লাহর
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকেরা তাশাহহুদের ব্যাপারে বিভক্ত হয়ে গেছে।
তিনি বললেন, ‘তুমি ইবনু মাসঊদ বর্ণিত তাশাহ্হুদকে আঁকড়ে ধর’।”
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০৪. অনুচ্ছেদঃ
একই বিষয় সম্পর্কিত
২৯০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
جُبَيْرٍ، وَطَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يُعَلِّمُنَا التَّشَهُّدَ كَمَا يُعَلِّمُنَا الْقُرْآنَ فَكَانَ
يَقُولُ " التَّحِيَّاتُ الْمُبَارَكَاتُ الصَّلَوَاتُ الطَّيِّبَاتُ
لِلَّهِ سَلاَمٌ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ
سَلاَمٌ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ
إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ .
وَقَدْ رَوَى عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ حُمَيْدٍ الرُّؤَاسِيُّ هَذَا الْحَدِيثَ
عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ نَحْوَ حَدِيثِ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ . وَرَوَى
أَيْمَنُ بْنُ نَابِلٍ الْمَكِّيُّ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ عَنْ
جَابِرٍ وَهُوَ غَيْرُ مَحْفُوظٍ . وَذَهَبَ الشَّافِعِيُّ إِلَى حَدِيثِ ابْنِ
عَبَّاسٍ فِي التَّشَهُّدِ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন.
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে যেভাবে কুরাআন শিক্ষা
দিতেন ঠিক অনুরূপভাবে ‘তাশাহ্হুদ’ শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বলতেনঃ “আত্তাহিয়্যাতুল
মুবারাকাতুস সালাওয়াতুত তাইয়্যিবাতু লিল্লাহি.............মুহাম্মাদুর
রাসূলুল্লাহ”।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯০০), মুসলিম।
অর্থাৎ,
“সমস্ত বারকাতময় সম্মান, ইবাদাত এবং পবিত্রতা আল্লাহ তা’আলার জন্য। হে নাবী! আপনার
প্রতি শান্তি এবং আল্লাহর রাহমাত ও প্রাচুর্য বর্ষিত হোক। আমাদের উপর এবং আল্লাহ তা’আলার
উপর নেক বান্দাদের উপরও শান্তি আসুক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কোন
মাবূদ নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ আল্লাহ তা’আলার রাসূল।”
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহীহ্ গরীব। আরো কয়েকটি সূত্রে এ হাদীসটি
বর্ণিত হয়েছে। জাবির (রাঃ)-এর নিকট হতেও এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এ বর্ণনাটি
সংরক্ষিত নয়। ইমাম শাফিঈ এ হাদীসে উল্লেখিত তাশাহ্হুদ গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০৫. অনুচ্ছেদঃ
নীরবে তাশাহ্হুদ পাঠ
করবে
২৯১
حَدَّثَنَا
أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الأَسْوَدِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ مِنَ السُّنَّةِ أَنْ يُخْفِيَ، التَّشَهُّدَ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
ইবনু মাসঊদ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নিঃশব্দে
তাশাহ্হুদ পাঠ করাই সুন্নাত।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৯০৬), সিফাতুস সালাত-(১৪২)।
আবু ‘ঈসা
বলেনঃ ইবুন মাসঊদের এ হাদীসটি হাসান গারীব। ‘আলিমগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০৬. অনুচ্ছেদঃ
তাশাহ্হুদের সময়
বসার নিয়ম
২৯২
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، حَدَّثَنَا عَاصِمُ
بْنُ كُلَيْبٍ الْجَرْمِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، قَالَ
قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ قُلْتُ لأَنْظُرَنَّ إِلَى صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم فَلَمَّا جَلَسَ - يَعْنِي - لِلتَّشَهُّدِ افْتَرَشَ رِجْلَهُ
الْيُسْرَى وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُسْرَى يَعْنِي عَلَى فَخِذِهِ الْيُسْرَى
وَنَصَبَ رِجْلَهُ الْيُمْنَى . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ
سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ وَابْنِ الْمُبَارَكِ .
ওয়াইল ইবনু হুজর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
মদীনায় আসলাম। আমি (মনে মনে) বললাম, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লামের নামায আদায় করা দেখব। তিনি যখন তাশাহ্হুদ পাঠ করতে বসলেন তখন বাম পা
বিছিয়ে দিলেন, বাম হাত বাম ঊরুপ উপর রাখলেন এবং ডান পা খাড়া করে রাখলেন।
সহীহ। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৭১৬)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্। বেশিরভাগ বিদ্বান এ হাদীসের উপর আমর করেছেন। সুফিয়ান সাওরী,
ইবনুল মুবারক ও কুফাবাসীগণও (আবূ হানীফা ও তাঁর অনুসারীগণ) এ মতই ব্যক্ত করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০৭. অনুচ্ছেদঃ
তাশাহ্হুদ সম্পর্কেই
২৯৩
حَدَّثَنَا
بُنْدَارٌ، مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ،
حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ الْمَدَنِيُّ، حَدَّثَنِي عَبَّاسُ بْنُ
سَهْلٍ السَّاعِدِيُّ، قَالَ اجْتَمَعَ أَبُو حُمَيْدٍ وَأَبُو أُسَيْدٍ وَسَهْلُ
بْنُ سَعْدٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ فَذَكَرُوا صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم . فَقَالَ أَبُو حُمَيْدٍ أَنَا أَعْلَمُكُمْ بِصَلاَةِ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَلَسَ -
يَعْنِي - لِلتَّشَهُّدِ فَافْتَرَشَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَأَقْبَلَ بِصَدْرِ
الْيُمْنَى عَلَى قِبْلَتِهِ وَوَضَعَ كَفَّهُ الْيُمْنَى عَلَى رُكْبَتِهِ
الْيُمْنَى وَكَفَّهُ الْيُسْرَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُسْرَى وَأَشَارَ
بِأُصْبَعِهِ يَعْنِي السَّبَّابَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَبِهِ يَقُولُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ
وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ قَالُوا يَقْعُدُ فِي التَّشَهُّدِ الآخِرِ عَلَى وَرِكِهِ
وَاحْتَجُّوا بِحَدِيثِ أَبِي حُمَيْدٍ وَقَالُوا يَقْعُدُ فِي التَّشَهُّدِ
الأَوَّلِ عَلَى رِجْلِهِ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ الْيُمْنَى .
‘আব্বাস ইবনু সাহল
আস-সাইদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ
হুমাইদ, আবূ উসাইদ, সাহর ইবনু সা’দ ও মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) একত্র হলেন
তাঁরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামায আদায়ের নিময়
প্রসঙ্গে একে অপরে আলাপ করলেন। আবূ হুমাইদ (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামায সম্পর্কে তোমাদের চেয়ে অনেক ভাল
জানি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন তাশাহ্হুদ পাঠ করতে
বসতেন, তখন বাম পা বিছিয়ে দিতেন, ডান পায়ের (পাতার) মাথার দিকটা কিবলার দিকে
রাখতেন, ডান হাতের তালু ডান হাঁটুর উপর, বাম হাতের তালু বাম হাঁটুর উপর রাখতেন এবং
তর্জনী (শাহাদাত আঙ্গুল) দিয়ে ইশারা করতেন।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৭২৩)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্। কোন কোন বিদ্বান এ হাদীসের উপর আমল করেছেন। ইমাম শাফিঈ,
আহমাদ ও ইসহাক এ হাদীসের অনুগামী। তাঁরা বলেন, শেষ বৈঠকে নিতম্বের উপর বসতে হবে। তাঁরা
আবূ হুমাইদের হাদীস দলীল হিসাবে গ্রহণ করেছেন এবং বলেছেন, প্রথম বৈঠকে বাঁ পায়ের উপর
বসতে হবে এবং ডান পা খাড়া রাখতে হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০৮. অনুচ্ছেদঃ
তাশাহ্হুদ পাঠ করার
সময় আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করা
২৯৪
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَيَحْيَى بْنُ مُوسَى، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ
عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
كَانَ إِذَا جَلَسَ فِي الصَّلاَةِ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رُكْبَتِهِ
وَرَفَعَ إِصْبَعَهُ الَّتِي تَلِي الإِبْهَامَ الْيُمْنَى يَدْعُو بِهَا وَيَدُهُ
الْيُسْرَى عَلَى رُكْبَتِهِ بَاسِطَهَا عَلَيْهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ وَنُمَيْرٍ الْخُزَاعِيِّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ
وَأَبِي حُمَيْدٍ وَوَائِلِ بْنِ حُجْرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ
عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ
عُمَرَ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ بَعْضِ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ
يَخْتَارُونَ الإِشَارَةَ فِي التَّشَهُّدِ وَهُوَ قَوْلُ أَصْحَابِنَا .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নামাযে বসতেন তখন ডান হাত
(ডান) হাঁটুতে রাখতেন, (ডান হাতের) বৃদ্ধাঙ্গুলের পার্শ্ববর্তী আঙ্গুল (তর্জনী)
উত্তোলন করতেন এবং তা দিয়ে দু’আ করতেন এবং বাঁ হাত বাঁ হাঁটুর উপর বিছিয়ে রাখতেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯১৩), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর, নুমাইর ‘আল-খুযাঈ, আবূ হুরায়রা, আবূ হুমাইদ ও ওয়াইল ইবনু হুজর
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে, আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু উমারের হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা
শুধু উল্লেখিত সনদেই এ হাদীসটি জেনেছি। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের একদল
সাহাবী এবং তাবিঈগণ তাশাহ্হুদ পাঠের সময় ইশারা করা পছন্দ করেছেন। আমাদের সঙ্গীরা এ
কথাই বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০৯. অনুচ্ছেদঃ
নামাযের সালাম ফিরানো
সম্পর্কে
২৯৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يُسَلِّمُ عَنْ
يَمِينِهِ وَعَنْ يَسَارِهِ " السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ
السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ وَابْنِ عُمَرَ وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ وَالْبَرَاءِ
وَأَبِي سَعِيدٍ وَعَمَّارٍ وَوَائِلِ بْنِ حُجْرٍ وَعَدِيِّ بْنِ عَمِيرَةَ
وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ
الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ وَهُوَ
قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
আবদুল্লাহ ইবনু
মাসঊদ থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায শেষে ডান দিকে তারপর বাম দিকে এ বলে
সালাম ফিরাতেন, আস্সালামু ‘আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আস্সালামু আলাইকুম ওয়া
রাহমাতুল্লাহ।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯১৪), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদ
সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস, ইবনু ‘উমার, জাবির ইবনু সামুরা, বারাআ, আবূ সাঈদ, ‘আম্মার,
ওয়াইল ইবনু হুজর, ‘আদী ইবনু উমাইরা ও জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু মাসঊদের হাদীসটি হাসান সহীহ্। নাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বেশিরভাগ সাহাবা এবং তাদের উত্তরসুরিগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন।
সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারক, আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১০. অনুচ্ছেদঃ
সালাম সম্পর্কেই
২৯৬
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى النَّيْسَابُورِيُّ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ أَبِي
سَلَمَةَ أَبُو حَفْصٍ التِّنِّيسِيُّ، عَنْ زُهَيْرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ
هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم كَانَ يُسَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ تَسْلِيمَةً وَاحِدَةً تِلْقَاءَ
وَجْهِهِ يَمِيلُ إِلَى الشِّقِّ الأَيْمَنِ شَيْئًا . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ عَائِشَةَ لاَ
نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ
إِسْمَاعِيلَ زُهَيْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَهْلُ الشَّأْمِ يَرْوُونَ عَنْهُ
مَنَاكِيرَ وَرِوَايَةُ أَهْلِ الْعِرَاقِ عَنْهُ أَشْبَهُ وَأَصَحُّ . قَالَ
مُحَمَّدٌ وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ كَأَنَّ زُهَيْرَ بْنَ مُحَمَّدٍ
الَّذِي كَانَ وَقَعَ عِنْدَهُمْ لَيْسَ هُوَ هَذَا الَّذِي يُرْوَى عَنْهُ
بِالْعِرَاقِ كَأَنَّهُ رَجُلٌ آخَرُ قَلَبُوا اسْمَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَقَدْ قَالَ بِهِ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي التَّسْلِيمِ فِي الصَّلاَةِ
وَأَصَحُّ الرِّوَايَاتِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَسْلِيمَتَانِ
وَعَلَيْهِ أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَالتَّابِعِينَ وَمَنْ بَعْدَهُمْ . وَرَأَى قَوْمٌ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ تَسْلِيمَةً وَاحِدَةً فِي
الْمَكْتُوبَةِ . قَالَ الشَّافِعِيُّ إِنْ شَاءَ سَلَّمَ تَسْلِيمَةً وَاحِدَةً
وَإِنْ شَاءَ سَلَّمَ تَسْلِيمَتَيْنِ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাযে এক সালামই ফিরাতেন, প্রথমে সামনের দিকে
(শুরু করে) তারপর ডান দিকে কিছুটা মুখ ঘুরাতেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯১৯)।
এ অনুচ্ছেদে
সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আমরা শুধু উল্লেখিত সুত্রেই
‘আয়িশার হাদীসটি মারফু হিসাবে পেয়েছি। মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল (বুখারী) বলেন, সিরিয়াবাসীগণ
মুহাম্মাদ ইবনু যুহাইরের সূত্রে মুনকার হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইরাকবাসীগণ তার নিকট হতে
যে বর্ণনা গ্রহণ করেছেন তা অধিক সহীহ্। মুহাম্মাদ বলেন, আহমাদ ইবনু হাম্বল বলেছেন,
সিরিয়াবাসীগণ যে যুহাইরের দেখা পেয়েছিলেন সম্ভবতঃ তিনি সেই যুহাইর নন যার বর্ণনা ইরাকবাসীগণ
গ্রহণ করেছেন। সম্ভবতঃ ইনি অন্য এক ব্যক্তি।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ কোন কোন ‘আলিম হাদীসে উল্লেখিত নিয়মে নামাযে সালাম ফিরানোর পদ্ধতি গ্রহণ
করেছেন। কিন্তু সবচাইতে সহীহ্ বর্ণনামতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
দু’বার সালাম ফিরাতেন। বেশিরভাগ সাহাবা, তাবিঈন ও তাবউ’ তাবিঈন এ মতই গ্রহণ করেছেন।
একদল সাহাবা, তাবি’ঈন ও অন্যান্যরা ফরয নামাযে একবার সালাম ফিরানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।
ইমাম শাফিঈ বলেছেন, দুটি পদ্ধতিরই অনুমতি আছে, ইচ্ছা করলে এক সালাম বা দুই সালামও ফিরাতে
পারে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১১. অনুচ্ছেদঃ
সালাম খুব লম্বা করে
টানবে না, এটাই সুন্নত
২৯৭
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، وَهِقْلُ
بْنُ زِيَادٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ قُرَّةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ حَذْفُ
السَّلاَمِ سُنَّةٌ . قَالَ عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ يَعْنِي أَنْ لاَ تَمُدَّهُ مَدًّا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ الَّذِي يَسْتَحِبُّهُ أَهْلُ الْعِلْمِ
وَرُوِيَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ أَنَّهُ قَالَ التَّكْبِيرُ جَزْمٌ
وَالسَّلاَمُ جَزْمٌ . وَهِقْلٌ يُقَالُ كَانَ كَاتِبَ الأَوْزَاعِيِّ .
আবু হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেল, সালামের
মধ্য হযফ করা সুন্নাত।
যঈফ, আবু দাউদ ১৭৯।
আবু ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। আলী ইবন হুজর বলেন, ইবনুল মুবারক বলেছেন, ‘হযফের’ তাৎপয
হল সালাম খুব লম্বা করে না টেনে বরং স্বাভাবিক অবস্থায় রাখা। বিশেষজ্ঞগন এ নিয়মকে মুস্তাহাব
বলেছেন। ইব্রাহিম নাখঈ বলেছেন, তাকবীর এবং সালাম অধিক্ষন টানবে না। রাবী হিকল সম্পর্কে
বলা হয়, তিনি ইমাম আওযায়ীর সচিব ছিলেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১১২. অনুচ্ছেদঃ
সালাম ফিরানোর পর যা
বলবে
২৯৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سَلَّمَ لاَ يَقْعُدُ إِلاَّ مِقْدَارَ مَا
يَقُولُ " اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ
ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ " .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাম ফিরানোর পর এই দু’আ পাঠের
বেশি সময় বসতেন না-“আল্লাহুম্মা আনতাস্ সালামু......ওয়াল ইকরাম”। অর্থাৎ-“হে
আল্লাহ! তুমিই শান্তিদাতা তোমার নিকট হতেই শান্তি আসে। হে সম্মান ও গৌরবের মালিক!
তুমি প্রাচুর্যময় ও বারকাতময়”।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯২৪), মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৯
حَدَّثَنَا
هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْفَزَارِيُّ،
وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ
وَقَالَ " تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ ثَوْبَانَ وَابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي
سَعِيدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . وَالْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى خَالِدٌ
الْحَذَّاءُ هَذَا الْحَدِيثَ مِنْ حَدِيثِ عَائِشَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الْحَارِثِ نَحْوَ حَدِيثِ عَاصِمٍ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ بَعْدَ التَّسْلِيمِ " لاَ إِلَهَ إِلاَّ
اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ
وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ
مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ "
. وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ " سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ
الْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ وَسَلاَمٌ عَلَى الْمُرْسَلِينَ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ
رَبِّ الْعَالَمِينَ " .
আসিম আল-আহওয়াল
থেকে বর্ণিতঃ
আসিম আল-আহওয়াল হতে
উপরের হাদীসের মতই বর্ণিত হয়েছে। শুধু ‘যাল-জালালি’ শব্দের পূর্বে ‘ইয়া’ (হে)
শব্দটি অতিরিক্ত বর্ণিত হয়েছে।
সহীহ্। দেখুন পূর্বের হাদীস।
এ অনুচ্ছেদে
সাওবান, ইবনু ‘উমার, ইবনু ‘আব্বাস, আবূ সা’ঈদ, আবূ হুরায়রা ও মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ)
হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আয়িশাহ্’র হাদীসটি হাসান সহীহ্। খালিদ আল-হায্যা
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে ‘আব্দুল্লাহ ইবনু হারিসের সূত্রে ‘আসিমের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে আরো বর্ণিত হয়েছে,
তিনি সালাম ফিরানোর পর এ দু’আ পাঠ করতেনঃ
“আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শারীক নেই, (মহাবিশ্বের) রাজত্ব তাঁরই
হাতে, তাঁর জন্য সকল প্রশংসা। তিনিই হায়াত দেন, তিনিই মউত দেন, তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
হে আল্লাহ! তুমি যাকে দান কর তা প্রতিরোধ করার শক্তি কারো নেই; তুমি যার প্রতিবন্ধক
হও তাকে কেউ দান করতে পারে না এবং কোন চেষ্টা-তদবিরকারীই তার চেষ্টার মাধ্যমে তোমার
নিকট হতে মঙ্গল ছিনিয়ে নিতে সমর্থ নয়”।
অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বলতেনঃ
“তারা যা বলে থাকে তা থেকে আপনার রব, যিনি মহা মহিমান্বিত সকল ক্ষমতার মালিক, মহান
পবিত্র। সালাম বর্ষিত হোক রাসূলদের প্রতি। সকল প্রশংসা সারা বিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহর
জন্যই”। (সূরাঃ আস-সাফফাত-১৮০)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০০
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي شَدَّادٌ أَبُو عَمَّارٍ،
حَدَّثَنِي أَبُو أَسْمَاءَ الرَّحَبِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي ثَوْبَانُ، مَوْلَى
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم إِذَا أَرَادَ أَنْ يَنْصَرِفَ مِنْ صَلاَتِهِ اسْتَغْفَرَ اللَّهَ ثَلاَثَ
مَرَّاتٍ ثُمَّ قَالَ " اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ
تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو عَمَّارٍ اسْمُهُ شَدَّادُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ .
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুক্ত করা গোলাম সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নামায হতে ফুরসত হতে চাইতেন
তখন তিনবার মার্জনা প্রার্থনা করতেন; তারপর বলতেন, “হে আল্লাহ! তুমিই শান্তি
আনায়নকারী। তোমার নিকট হতেই শান্তি আসে। হে পরাক্রম ও সম্মানের অধিকারী! তুমি
বারকাত ও প্রাচুর্যময়”।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯২৮), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৩. অনুচ্ছেদঃ
ডান অথবা বাম পাশে
ফেরা
৩০১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ
قَبِيصَةَ بْنِ هُلْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَؤُمُّنَا فَيَنْصَرِفُ عَلَى جَانِبَيْهِ جَمِيعًا عَلَى يَمِينِهِ وَعَلَى
شِمَالِهِ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَأَنَسٍ
وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
هُلْبٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَعَلَيْهِ الْعَمَلُ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّهُ
يَنْصَرِفُ عَلَى أَىِّ جَانِبَيْهِ شَاءَ إِنْ شَاءَ عَنْ يَمِينِهِ وَإِنْ شَاءَ
عَنْ يَسَارِهِ . وَقَدْ صَحَّ الأَمْرَانِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
. وَيُرْوَى عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ أَنَّهُ قَالَ إِنْ كَانَتْ
حَاجَتُهُ عَنْ يَمِينِهِ أَخَذَ عَنْ يَمِينِهِ وَإِنْ كَانَتْ حَاجَتُهُ عَنْ
يَسَارِهِ أَخَذَ عَنْ يَسَارِهِ .
কাবিসা ইবনু হুলব
(রাঃ) হতে তার পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (হুলব) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের ইমামতি করতেন। (সালাম
ফিরানোর পর) তিনি ডান এবং বাম উভয় পাশেই ফিরে বসতেন।
এ অনুচ্ছেদে ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ, আনাস, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ও আবূ হুরায়রা
(রাঃ) হতেও হাদীস উল্লেখিত আছে।
হাসান সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯২৯)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হুলব-এর হাদীসটি হাসান। এ হাদীসের দ্বারা বিশেষজ্ঞগণ বলেন, ডান, বাম যে কোন পাশে
ইচ্ছা ফিরে বসা যেতে পারে। দুই পাশের যে কোন পাশে ঘুরে বসার বিধান রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে ত্রুটিহীনভাবে প্রমানিত। ‘আলী (রাঃ) বলেন, যদি ডান পাশে ঘুরে
বসার প্রয়োজন হয় তবে ডান পাশে ঘুরে বসবে; যদি বাম পাশে ঘুরে বসার প্রয়োজন হয় তবে সেদিকে
ঘুরে বসবে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
১১৪. অনুচ্ছেদঃ
নামায পড়ার নিয়ম
৩০২
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ
عَلِيِّ بْنِ يَحْيَى بْنِ خَلاَّدِ بْنِ رَافِعٍ الزُّرَقِيِّ، عَنْ جَدِّهِ،
عَنْ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَمَا
هُوَ جَالِسٌ فِي الْمَسْجِدِ يَوْمًا قَالَ رِفَاعَةُ وَنَحْنُ مَعَهُ إِذْ
جَاءَهُ رَجُلٌ كَالْبَدَوِيِّ فَصَلَّى فَأَخَفَّ صَلاَتَهُ ثُمَّ انْصَرَفَ
فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم " وَعَلَيْكَ فَارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " .
فَرَجَعَ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَقَالَ " وَعَلَيْكَ
فَارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . فَفَعَلَ ذَلِكَ
مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا كُلُّ ذَلِكَ يَأْتِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فَيُسَلِّمُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم " وَعَلَيْكَ فَارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ "
. فَخَافَ النَّاسُ وَكَبُرَ عَلَيْهِمْ أَنْ يَكُونَ مَنْ أَخَفَّ صَلاَتَهُ
لَمْ يُصَلِّ فَقَالَ الرَّجُلُ فِي آخِرِ ذَلِكَ فَأَرِنِي وَعَلِّمْنِي
فَإِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ أُصِيبُ وَأُخْطِئُ . فَقَالَ " أَجَلْ إِذَا
قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَتَوَضَّأْ كَمَا أَمَرَكَ اللَّهُ ثُمَّ تَشَهَّدْ
وَأَقِمْ فَإِنْ كَانَ مَعَكَ قُرْآنٌ فَاقْرَأْ وَإِلاَّ فَاحْمَدِ اللَّهَ
وَكَبِّرْهُ وَهَلِّلْهُ ثُمَّ ارْكَعْ فَاطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ اعْتَدِلْ
قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ فَاعْتَدِلْ سَاجِدًا ثُمَّ اجْلِسْ فَاطْمَئِنَّ جَالِسًا
ثُمَّ قُمْ فَإِذَا فَعَلْتَ ذَلِكَ فَقَدْ تَمَّتْ صَلاَتُكَ وَإِنِ انْتَقَصْتَ
مِنْهُ شَيْئًا انْتَقَصْتَ مِنْ صَلاَتِكَ " . قَالَ وَكَانَ هَذَا
أَهْوَنَ عَلَيْهِمْ مِنَ الأَوَّلِ أَنَّهُ مَنِ انْتَقَصَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا
انْتَقَصَ مِنْ صَلاَتِهِ وَلَمْ تَذْهَبْ كُلُّهَا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ رِفَاعَةَ هَذَا
الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ .
রিফাআ ইবনু রাফি
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে অবস্থান করছিলেন। রিফাআ (রাঃ) বলেন,
আমরাও তাঁর সাথে ছিলাম। এমন সময় বিদুইনের বেশে এক ব্যক্তি আসল। সে নামায আদায় করল,
কিন্তু হালকাভাবে (তাড়াহুড়া করে, নামাযের রুকনসমূহ ঠিকভাবে আদায় না করে) নামায শেষ
করে সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম করল। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমাকেও (সালাম), ফিরে গিয়ে আবার নামায আদায় কর,
কেননা তুমি নামায পড়নি। সে ফিরে গিয়ে নামায আদায় করল, তারপর এসে তাঁকে সালাম করল।
তিনি পুনরায় বললেনঃ তোমাকেও (সালাম), ফিরে গিয়ে আবার নামায আদায় কর, কেননা তুমি
নামায পড়নি। দুই অথবা তিনবার এরূপ হল। প্রত্যেকবার সে এসে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম করল। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলতে থাকলেনঃ তোমাকেও (সালাম), ফিরে গিয়ে আবার নামায আদায় কর, কেননা তুমি নামায
আদায় করনি। ব্যাপারটা লোকদের (সাহাবাদের) নিকট ভয়ানক ও অস্বস্তিকর মনে হল যে, যে
ব্যক্তি হালকাভাবে নামায আদায় করল তার নামাযই হল না। অবশেষে লোকটি বলল, আমাকে
দেখিয়ে দিন, শিখিয়ে দিন, কেননা আমি তো একজন মানুষ ছাড়া আর কিছু নই, কখনও শুদ্ধ কাজ
করি কখনও ত্রুটি করি। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন তুমি নামায আদায় করতে দাঁড়াও, তখন
তিনি (আল্লাহ) তোমাকে যেভাবে ওযূ করার নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে ওযূ কর, তারপর
তাশাহ্হুদ পাঠ কর (আযান দাও), তারপর ইকামাত বল। যদি তোমার কুরআন জানা থাকে তবে তা
হতে পাঠ কর। অন্যথায়-’আলহামদুলিল্লাহ’ তাকবীর-’আল্লাহু আকবার’ তাহলীল-’লা-ইলাহা
ইল্লাল্লাহু’ পাঠ কর, অতঃপর রুকূ কর, শান্তভাবে রুকূতে অবস্থান কর। তারপর রুকূ হতে
সোজা হয়ে দাঁড়াও, তারপর সাজদাহ্য় যাও, ঠিকভাবে সাজদাহ্ কর, সাজদাহ্ হতে উঠে
শান্তভাবে বস, তারপর উঠো। যদি তুমি এভাবে নামায আদায় কর তবে তোমার নামায পূর্ণ হল।
যদি তুমি তাতে কোনরূপ ভুল কর তবে তোমার নামাযের মধ্যেই ভুল করলে। রাবী বলেন,
পূর্বের কথার চেয়ে এই পরবর্তী কথাটা লোকদের (সাহাবাদের) নিকট সহজ লাগল। কেননা যে
নামাযের মধ্যে কোনরূপ ভুল করল তার নামাযে ভুল হল কিন্তু পরিপূর্ণ নামায নষ্ট হল না।
সহীহ্। মিশকাত-(৮০৪), সিফাতুস সালাত (মূল), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৮০৩-৮০৭),
ইরওয়া-(১/৩২১-৩২২)।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরায়রা ও ‘আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ রিফাআ
ইবনু রাফি’র হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি রিফা’আ (রাঃ)-এর নিকট হতে অন্যান্য সূত্রেও বর্ণিত
হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ،
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي
سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَدَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ
عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ فَقَالَ
" ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . فَرَجَعَ الرَّجُلُ
فَصَلَّى كَمَا كَانَ صَلَّى ثُمَّ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَرَدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " .
حَتَّى فَعَلَ ذَلِكَ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَقَالَ لَهُ الرَّجُلُ وَالَّذِي بَعَثَكَ
بِالْحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَ هَذَا فَعَلِّمْنِي . فَقَالَ " إِذَا
قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَكَبِّرْ ثُمَّ اقْرَأْ بِمَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ
الْقُرْآنِ ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى
تَعْتَدِلَ قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ
حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا وَافْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ كُلِّهَا "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَقَدْ رَوَى
ابْنُ نُمَيْرٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
. وَرِوَايَةُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَصَحُّ
. وَسَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ قَدْ سَمِعَ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَرَوَى عَنْ
أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبُو سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيُّ اسْمُهُ كَيْسَانُ
وَسَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ يُكْنَى أَبَا سَعْدٍ وَكَيْسَانُ عَبْدٌ كَانَ
مُكَاتَبًا لِبَعْضِهِمْ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে গেলেন। এ সময় একটি লোক এসে নামায আদায়
করল। (নামায শেষ করে) সে এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম
করল। তিনি সালামের উত্তর দিয়ে তাকে বললেনঃ তুমি আবার গিয়ে নামায আদায় করে এসো,
তোমার নামায হয়নি। এভাবে সে তিনবার নামায আদায় করল। তারপর লোকটি তাঁকে বলল, সেই
সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন! আমি এর চেয়ে ভালভাবে নামায আদায়
করতে পারছি না, আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ যখন তুমি নামায আদায় করতে দাঁড়াও
তখন তাকবীর (তাহরীমা) বল, তারপর কুরআনের যে জায়গা হতে পাঠ করতে সহজ হয় তা পাঠ কর;
তারপর রুকূতে যাও এবং রুকূর মধ্যে স্থির থাক; তারপর মাথা তুলে সোজা হয়ে দাঁড়াও;
তারপর সাজদাহ্ কর এবং সাজদাহ্র মধ্যে স্থির থাক; তারপর মাথা তুলে আরামে বস।
তোমার সমস্ত নামায এভাবে আদায় কর।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১০৬০), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। ইবনু নুমাইর বর্ণনা করেছেন ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘উমার
হতে, তিনি সা’ঈদ আল-মাক্ববুরী হতে তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। এই বর্ণনায়
সাঈদ তার পিতা থেকে কথাটি উল্লেখ নেই। উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘উমার হতে ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদের
বর্ণনাটি অধিক সহীহ্। সা’ঈদ মাক্ববুরী আবূ হুরায়রার নিকট হাদীস শুনেছেন। আবার তার
পিতার সূত্রে আবূ হুরায়রা হতেও বর্ণনা করেছেন। আবূ সা’ঈদ মাক্ববুরী’র নাম কাইসান। উপনাম
আবূ সা’ঈদ। কাইসান মুকাতাব দাস ছিলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৫. অনুচ্ছেদঃ
একই বিষয়
৩০৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ
السَّاعِدِيِّ، قَالَ سَمِعْتُهُ وَهُوَ، فِي عَشَرَةٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم أَحَدُهُمْ أَبُو قَتَادَةَ بْنُ رِبْعِيٍّ يَقُولُ أَنَا
أَعْلَمُكُمْ بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالُوا مَا
كُنْتَ أَقْدَمَنَا لَهُ صُحْبَةً وَلاَ أَكْثَرَنَا لَهُ إِتْيَانًا قَالَ بَلَى
. قَالُوا فَاعْرِضْ . فَقَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ اعْتَدَلَ قَائِمًا وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى
يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ
حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ قَالَ " اللَّهُ أَكْبَرُ
" . وَرَكَعَ ثُمَّ اعْتَدَلَ فَلَمْ يُصَوِّبْ رَأْسَهُ وَلَمْ يُقْنِعْ
وَوَضَعَ يَدَيْهِ عَلَى رُكْبَتَيْهِ ثُمَّ قَالَ " سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ
حَمِدَهُ " . وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَاعْتَدَلَ حَتَّى يَرْجِعَ كُلُّ
عَظْمٍ فِي مَوْضِعِهِ مُعْتَدِلاً ثُمَّ أَهْوَى إِلَى الأَرْضِ سَاجِدًا ثُمَّ
قَالَ " اللَّهُ أَكْبَرُ " . ثُمَّ جَافَى عَضُدَيْهِ عَنْ
إِبْطَيْهِ وَفَتَخَ أَصَابِعَ رِجْلَيْهِ ثُمَّ ثَنَى رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَقَعَدَ
عَلَيْهَا ثُمَّ اعْتَدَلَ حَتَّى يَرْجِعَ كُلُّ عَظْمٍ فِي مَوْضِعِهِ
مُعْتَدِلاً ثُمَّ أَهْوَى سَاجِدًا ثُمَّ قَالَ " اللَّهُ أَكْبَرُ
" . ثُمَّ ثَنَى رِجْلَهُ وَقَعَدَ وَاعْتَدَلَ حَتَّى يَرْجِعَ كُلُّ
عَظْمٍ فِي مَوْضِعِهِ ثُمَّ نَهَضَ ثُمَّ صَنَعَ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ
مِثْلَ ذَلِكَ حَتَّى إِذَا قَامَ مِنَ السَّجْدَتَيْنِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ
حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ كَمَا صَنَعَ حِينَ افْتَتَحَ الصَّلاَةَ
ثُمَّ صَنَعَ كَذَلِكَ حَتَّى كَانَتِ الرَّكْعَةُ الَّتِي تَنْقَضِي فِيهَا
صَلاَتُهُ أَخَّرَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَقَعَدَ عَلَى شِقِّهِ مُتَوَرِّكًا ثُمَّ
سَلَّمَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَمَعْنَى
قَوْلِهِ وَرَفَعَ يَدَيْهِ إِذَا قَامَ مِنَ السَّجْدَتَيْنِ يَعْنِي قَامَ مِنَ
الرَّكْعَتَيْنِ .
মুহাম্মাদ ইবনু
‘আমর ইবনু আতা (রহঃ) হতে আবূ হুমাইদ আস-সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (মুহাম্মাদ)
বলেন, আমি তাঁকে (আবূ হুমাইদকে) দশজন সাহাবীর উপস্থিতিতে এ হাদীস বলতে শুনেছি। আবূ
কাতাদা ইবনু রিব্ঈ (রাঃ)-ও তাদের অন্তর্ভুক্ত। তাদের সামনে তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামায সম্পর্কে তোমাদের চেয়ে বেশি জানি।
তাঁরা বললেন, তা কেমন করে? তুমি তো আমাদের আগে তাঁর সান্নিধ্য লাভ করতে পারনি।
তাছাড়া তুমি তাঁর নিকট আমাদের চেয়ে বেশি যাতায়াত করতে না। তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারা
বললেন, ঠিক আছে বর্ণনা কর। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যখন নামাযে দাঁড়াতেন তখন সোজা হয়ে দাঁড়াতেন, কাঁধ পর্যন্ত হাত তুলতেন
(তাকবীরে তাহরীমা করার জন্য); যখন রুকূতে যাওয়ার ইচ্ছা করতেন কাঁধ পর্যন্ত হাত
তুলতেন; তারপর ‘আল্লাহু আকবার’ বলে রুকূতে যেতেন এবং শান্তভাবে রুকূতে থাকতেন,
মাথা নীচের দিকেও ঝুঁকাতেন না এবং উপরের দিকেও উঠাতেন না, উভয় হাত উভয় হাঁটুতে
রাখতেন; তারপর ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলে রুকূ হতে উঠতেন, রফউল ইয়াদাইন
করতেন (উভয় হাত উপরের দিকে তুলতেন) এবং সোজা হয়ে দাঁড়াতেন, এমনকি প্রতিটি হাড় নিজ
নিজ স্থানে স্বাভাবিকভাবে এসে যেত। তারপর সাজদাহ্র জন্য যমিনের দিকে নীচু হতেন
এবং ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন; দুই বাহু দুই বগল হতে আলাদা রাখতেন; পায়ের
আঙ্গুলগুলোকে ফাঁক করে দিতেন; বাম পা বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসতেন; অতঃপর সোজা হয়ে
বসতেন যাতে তাঁর প্রতিটি হাড় নিজ নিজ স্থানে ঠিকভাবে বসে যেত; অতঃপর দ্বিতীয়
সাজদাহ্য় যেতেন; ‘আল্লাহু আকবার’ বলে সাজদাহ্ হতে উঠে পা বিছিয়ে দিয়ে বসতেন
(জলসায়ে ইস্তিরাহাত করতেন); এমনকি প্রতিটি হাড় নিজ নিজ স্থানে ঠিকভাবে বসে যেত;
তারপর দাঁড়াতেন; তারপর দ্বিতীয় রাক’আতেও এরূপ করতেন। তারপর দুই রাক’আত আদায় করতে
যখন দাঁড়াতেন, তখনও তাকবীর বলতেন এবং দুই হাত নামায শুরু করার সময়ের মত কাঁধ
পর্যন্ত তুলতেন। বাকী নামাযেও তিনি এরূপ করতেন; তারপর যখন শেষ সাজদাহ্য় পৌঁছাতেন
যেখানে তাঁর নামায শেষ হত তখন বাঁ পা বিছিয়ে দিতেন এবং পাছার উপর চেপে বসতেন; তারপর
সালাম ফিরাতেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১০৬১)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্। ‘দুই সাজদাহ্র পর যখন দাঁড়াতেন’ বাক্যাংশটুকুর অর্থ ‘দুই
রাক’আত শেষ করে যখন দাঁড়াতেন’।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَالْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ الْحُلْوَانِيُّ،
وَسَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ
النَّبِيلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا حُمَيْدٍ السَّاعِدِيَّ، فِي
عَشَرَةٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ أَبُو قَتَادَةَ
بْنُ رِبْعِيٍّ فَذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ بِمَعْنَاهُ وَزَادَ
فِيهِ أَبُو عَاصِمٍ عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ جَعْفَرٍ هَذَا الْحَرْفَ
قَالُوا صَدَقْتَ هَكَذَا صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو
عِيسَى زَادَ أَبُو عَاصِمٍ الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ فِي هَذَا الْحَدِيثِ عَنْ
عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ جَعْفَرٍ هَذَا الْحَرْفَ قَالُوا صَدَقْتَ هَكَذَا صَلَّى
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم .
মুহাম্মাদ ইবনু
‘আমর ইবনু আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ
হুমাইদ আস-সায়েদী (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
দশজন সাহাবীর সামনে বলতে শুনেছি, তাদের মধ্যে কাতাদা ইবনু রিবঈ (রাঃ)-ও উপস্থিত
ছিলেন। পরবর্তী বর্ণনা ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ইদের হাদীসের অনুরূপ। তবে আবূ আসিম এ
হাদীসে আবদুল হামীদ ইবনু জাফরের সূত্রে এ কথাটুকুও বর্ণনা করেছেনঃ তাঁরা বললেন,
তুমি সত্যিই বলেছ, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুরূপভাবেই
নামায আদায় করতেন।
সহীহ্। দেখুন পূর্বের হাদীস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৬. অনুচ্ছেদঃ
ফযরের নামাযের
কিরা’আত
৩০৬
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مِسْعَرٍ، وَسُفْيَانَ، عَنْ زِيَادِ بْنِ
عَلاَقَةَ، عَنْ عَمِّهِ، قُطْبَةَ بْنِ مَالِكٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الْفَجْرِ : (وَالنَّخْلَ بَاسِقَاتٍ ) فِي
الرَّكْعَةِ الأُولَى . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ
وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ السَّائِبِ وَأَبِي بَرْزَةَ
وَأُمِّ سَلَمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ قُطْبَةَ بْنِ مَالِكٍ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَرُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَرَأَ
فِي الصُّبْحِ بِالْوَاقِعَةِ . وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ يَقْرَأُ فِي
الْفَجْرِ مِنْ سِتِّينَ آيَةً إِلَى مِائَةٍ . وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ قَرَأَ
: (إِذََا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ ) . وَرُوِيَ عَنْ عُمَرَ أَنَّهُ كَتَبَ
إِلَى أَبِي مُوسَى أَنِ اقْرَأْ فِي الصُّبْحِ بِطِوَالِ الْمُفَصَّلِ . قَالَ
أَبُو عِيسَى وَعَلَى هَذَا الْعَمَلُ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَبِهِ قَالَ
سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ .
কুতবা ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ফযরের প্রথম রাকআতে
‘ওয়ান-নাখলা বাসিকাতিন’ (সূরা কাফ) পাঠ করতে শুনেছি।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮১৬)।
এ অনুচ্ছেদে
‘আমর ইবনু হুরাইস, জাবির ইবনু সামুরা, ‘আবদুল্লাহ ইবনুস সায়িব, আবূ বারযা ও উম্মু সালামা
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ কুতবা ইবনু মালিকের হাদীসটি হাসান সহীহ্।
অপর এক বর্ণনায় আছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকালের নামাযে সূরা ওয়াকিয়া
পাঠ করেছেন। অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি ফযরের নামাযে ষাট হতে একশো আয়াত পাঠ করতেন। আর
এক বর্ণনায় আছে, তিনি “ইযাশ শামসু কুব্বিরাত” সূরা পাঠ করেছেন। বর্ণিত আছে যে, ‘উমার
(রাঃ) আবূ মূসা (রাঃ)-কে লিখে পাঠালেন, তুমি ফযর নামাযে লম্বা সূরা (তিওয়ালে মুফাসসাল)
পাঠ কর। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আলিমগণ এর উপরই আমল করেছেন। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক ও
শাফিঈ একই রকম অভিমত দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৭. অনুচ্ছেদঃ
যুহর ও আসরের নামাযের
কিরা’আত
৩০৭
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ
بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ
بِالسَّمَاءِ ذَاتِ الْبُرُوجِ وَالسَّمَاءِ وَالطَّارِقِ وَشِبْهِهِمَا . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ خَبَّابٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي قَتَادَةَ وَزَيْدِ بْنِ
ثَابِتٍ وَالْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرِ بْنِ
سَمُرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ قَرَأَ فِي الظُّهْرِ قَدْرَ تَنْزِيلُ السَّجْدَةَ . وَرُوِيَ عَنْهُ
أَنَّهُ كَانَ يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مِنَ الظُّهْرِ قَدْرَ
ثَلاَثِينَ آيَةً وَفِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ قَدْرَ خَمْسَ عَشْرَةَ آيَةً
. وَرُوِيَ عَنْ عُمَرَ أَنَّهُ كَتَبَ إِلَى أَبِي مُوسَى أَنِ اقْرَأْ فِي
الظُّهْرِ بِأَوْسَاطِ الْمُفَصَّلِ . وَرَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ
الْقِرَاءَةَ فِي صَلاَةِ الْعَصْرِ كَنَحْوِ الْقِرَاءَةِ فِي صَلاَةِ
الْمَغْرِبِ يَقْرَأُ بِقِصَارِ الْمُفَصَّلِ . وَرُوِيَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ
النَّخَعِيِّ أَنَّهُ قَالَ تَعْدِلُ صَلاَةُ الْعَصْرِ بِصَلاَةِ الْمَغْرِبِ فِي
الْقِرَاءَةِ . وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ تُضَاعَفُ صَلاَةُ الظُّهْرِ عَلَى صَلاَةِ
الْعَصْرِ فِي الْقِرَاءَةِ أَرْبَعَ مِرَارٍ .
জাবির ইবনু সামুরা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর এবং আসরের নামাযে সূরা “ওয়াস সামায়ি
যাতিল বুরুজ’, ‘ওয়াস সামায়ি ওয়াত তারিক্ব’ এ ধরনের (আকার বিশিষ্ট) সূরা পাঠ করতেন।
হাসান সহীহ্। সিফাতুস সালাত-(৯৪), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৭৬৭)।
এ অনুচ্ছেদে
খাব্বাব, আবূ সা’ঈদ, আবূ কাতাদা, যাইদ ইবনু সাবিত ও বারাআ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ জাবির ইবনু সামুরার হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের নামাযে ‘তানযীলুস সাজদা’র মত লম্বা সূরা
পাঠ করেছেন। অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি যুহরের প্রথম রাকআতে তিরিশ আয়াত পরিমাণ এবং দ্বিতীয়
রাকআতে পনের আয়াত পরিমাণ কিরা’আত পাঠ করতেন। ‘উমার (রাঃ) হতেও বর্ণিত আছে, তিনি আবূ
মূসা (রাঃ)-কে লিখে পাঠানঃ যুহরের নামাযে মধ্যম (আওসাতে মুফাসসাল) ধরনের সূরা পাঠ কর।
কিছু বিদ্বান ‘আসরের নামাযে মাগরিবের নামাযের মত সূরা অর্থাৎ কিসারি মুফাসসাল ধরনের
সূরা পাঠ করার পক্ষে মত দিয়েছেন। ইবরাহীম নাখঈ বলেছেন, আসরের নামাযের কিরা’আত মাগরিবের
নামাযের কিরা’আতের সমান হবে। তিনি আরো বলেছেন, যুহরের নামাযের কিরা’আত আসরের কিরা’আতের
চার গুণ লম্বা হবে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
১১৮. অনুচ্ছেদঃ
মাগরিবের নামাযের
কিরা’আত
৩০৮
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ،
عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ،
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ أُمِّهِ أُمِّ الْفَضْلِ، قَالَتْ خَرَجَ إِلَيْنَا
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَاصِبٌ رَأْسَهُ فِي مَرَضِهِ
فَصَلَّى الْمَغْرِبَ فَقَرَأَ بِالْمُرْسَلاَتِ قَالَتْ فَمَا صَلاَّهَا بَعْدُ
حَتَّى لَقِيَ اللَّهَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ
وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي أَيُّوبَ وَزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ أُمِّ الْفَضْلِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَرَأَ فِي الْمَغْرِبِ بِالأَعْرَافِ فِي
الرَّكْعَتَيْنِ كِلْتَيْهِمَا . وَرُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ قَرَأَ فِي الْمَغْرِبِ بِالطُّورِ . وَرُوِيَ عَنْ عُمَرَ أَنَّهُ
كَتَبَ إِلَى أَبِي مُوسَى أَنِ اقْرَأْ فِي الْمَغْرِبِ بِقِصَارِ الْمُفَصَّلِ
. وَرُوِيَ عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ أَنَّهُ قَرَأَ فِي الْمَغْرِبِ
بِقِصَارِ الْمُفَصَّلِ . قَالَ وَعَلَى هَذَا الْعَمَلُ عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ ابْنُ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَالَ
الشَّافِعِيُّ وَذُكِرَ عَنْ مَالِكٍ أَنَّهُ كَرِهَ أَنْ يُقْرَأَ فِي صَلاَةِ
الْمَغْرِبِ بِالسُّوَرِ الطُّوَلِ نَحْوِ الطُّورِ وَالْمُرْسَلاَتِ قَالَ
الشَّافِعِيُّ لاَ أَكْرَهُ ذَلِكَ بَلْ أَسْتَحِبُّ أَنْ يُقْرَأَ بِهَذِهِ
السُّوَرِ فِي صَلاَةِ الْمَغْرِبِ .
উম্মুল ফযল (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট আসলেন। অসুখের কারণে
এ সময়ে তাঁর মাথায় পট্টি বাঁধা ছিল। তিনি মাগরিবের নামায আদায় করলেন এবং তাতে সূরা
“ওয়াল মুরসালাত” পাঠ করলেন। তারপর তিনি মহান আল্লাহ তা’আলার সাথে মিলিত হওয়ার
পূর্ব পর্যন্ত আর কখনও এ সূরা পাঠ করেননি।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৩১), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
যুবাইর ইবনু মুতঈম, ইবনু ‘উমার, আবূ আইউব ও যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ উম্মুল ফযলের হাদীসটি হাসান সহীহ্। বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিবের উভয় রাকআতে সূরা আল-আরাফ হতেও পাঠ করেছেন। আরো বর্ণিত
আছে যে, তিনি মাগরিবের নামাযে সূরা তূর পাঠ করেছেন। ‘উমার (রাঃ) মাগরিবের নামাযে ছোট
সূরা (কিসারি মুফাস্সাল) পাঠ করার জন্য আবূ মূসা (রাঃ)-কে নির্দেশ পাঠান। আবূ বাক্র
(রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি মাগরিবের নামাযে ছোট আকারের সূরা পাঠ করতেন। ইমাম তিরমিযী
বলেন, বিশেষজ্ঞ ‘আলিমগণ এরকমই ‘আমল করেছেন। ইবনুল মুবারাক, আহমাদ ও ইসহাক এরকমই বলেছেন।
ইমাম শাফিঈ বলেন, ইমাম মালিক মাগরিবের নামাযে সূরা তূর, মুরসালাত ইত্যাদির মত লম্বা
সূরা পাঠ করা মাকরূহ জানতেন। শাফিঈ আরো বলেন, আমি মাগরিবের নামাযে এ ধরনের লম্বা সূরা
পাঠ করা মাকরূহ মনে করি না, বরং মুস্তাহাব মনে করি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৯. অনুচ্ছেদঃ
‘ইশার নামাযের
কিরা’আত
৩০৯
حَدَّثَنَا
عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْخُزَاعِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ
الْحُبَابِ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ وَاقِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَقْرَأُ فِي الْعِشَاءِ الآخِرَةِ بِالشَّمْسِ وَضُحَاهَا وَنَحْوِهَا مِنَ
السُّوَرِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ وَأَنَسٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ بُرَيْدَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَرَأَ فِي الْعِشَاءِ الآخِرَةِ
بِالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ . وَرُوِيَ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ أَنَّهُ
كَانَ يَقْرَأُ فِي الْعِشَاءِ بِسُوَرٍ مِنْ أَوْسَاطِ الْمُفَصَّلِ نَحْوِ
سُورَةِ الْمُنَافِقِينَ وَأَشْبَاهِهَا . وَرُوِيَ عَنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ أَنَّهُمْ قَرَءُوا بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا
وَأَقَلَّ فَكَأَنَّ الأَمْرَ عِنْدَهُمْ وَاسِعٌ فِي هَذَا . وَأَحْسَنُ شَيْءٍ
فِي ذَلِكَ مَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَرَأَ
بِالشَّمْسِ وَضُحَاهَا وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু
বুরাইদা (রাঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (বুরাইদা) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার নামাযে ‘ওয়াশ-শামসি ওয়া
যুহাহা’ ও এ ধরনের সূরাগুলো পাঠ করতেন।
সহীহ্। সিফাতুস সালাত-(৯৭)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ বুরাইদার হাদীসটি হাসান। এ অনুচ্ছেদে বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার নামাযে
‘ওয়াত-তীনি ওয়ায-যাইতূন’ সূরা পাঠ করেছেন। উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ) ‘ইশার নামাযে সূরা
‘আল-মুনাফিকূন’ ও অনুরূপ ধরনের আওসাতি মুফাফ্সাল সূরা পাঠ করতেন। অন্যান্য সাহাবা
ও তাবিঈদের প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে, তাঁরা কখনও উল্লেখিত পরিমাণের বেশিও পাঠ করেছেন আবার
কখনও কম পাঠ করেছেন। তাদের মতে, সূরা পাঠের আকার-আয়তন ও পরিধি ব্যাপক। সূরা-কিরা’আত
বড় বা ছোট করার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ)-এর বর্ণনাটি সবচাইতে
ভাল। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার নামাযে ‘ওয়াশ-শামসি
ওয়া যুহাহা’ ও ‘ওয়াত-তীনি ওয়ায-যাইতূন সূরা’ পাঠ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১০
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
الأَنْصَارِيِّ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ فِي الْعِشَاءِ الآخِرَةِ بِالتِّينِ
وَالزَّيْتُونِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
বারাআ ইবনু ‘আযিব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার নামাযে ‘ওয়াত-তীনি ওয়ায-যাইতূন’ সূরা পাঠ করেছেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৩৪), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২০. অনুচ্ছেদঃ
ইমামের পিছনে কিরা’আত
পাঠ করা
৩১১
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ،
عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ،
قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصُّبْحَ فَثَقُلَتْ عَلَيْهِ
الْقِرَاءَةُ فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ " إِنِّي أَرَاكُمْ تَقْرَءُونَ
وَرَاءَ إِمَامِكُمْ " . قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِي
وَاللَّهِ . قَالَ " فَلاَ تَفْعَلُوا إِلاَّ بِأُمِّ الْقُرْآنِ
فَإِنَّهُ لاَ صَلاَةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِهَا " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ وَأَنَسٍ وَأَبِي قَتَادَةَ وَعَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُبَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
. وَرَوَى هَذَا الْحَدِيثَ الزُّهْرِيُّ عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ عَنْ
عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ
صَلاَةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ " . قَالَ وَهَذَا
أَصَحُّ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ فِي الْقِرَاءَةِ خَلْفَ الإِمَامِ
عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَالتَّابِعِينَ وَهُوَ قَوْلُ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَابْنِ الْمُبَارَكِ
وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ يَرَوْنَ الْقِرَاءَةَ خَلْفَ الإِمَامِ
.
উবাদাহ ইবনুস সামিত
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকালে (ফযরের) নামায আদায় করলেন।
কিন্তু কিরা’আত পাঠ তাঁর নিকট একটু শক্ত ঠেকল। তিনি নামায শেষে বললেন, আমার মনে হয়
তোমরা তোমাদের ইমামের পিছনে কিরা’আত পাঠ কর। রাবী বলেন, আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল,
আল্লাহর শপথ! হ্যাঁ আমরা পাঠ করে থাকি। তিনি বললেনঃ সূরা ফাতিহা ছাড়া (ইমামের
পিছনে) অন্য কোন কিরা’আত পাঠ করবে না। কেননা যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পাঠ করে না
তার নামায হয় না।
যঈফ। যঈফ আবূ দাঊদ-(১৪৬)।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরায়রা, আনাস, আবূ কাতাদা ও আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান।
“এ হাদীসটি ইমাম যুহরী (রহঃ) মাহমূদ ইবনু রাবী হতে, তিনি ‘উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাঃ)-এর
সূত্রে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ
যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পাঠ করেনি তার নামায হয়নি।”
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৮৩৭), বুখারী ও মুসলিম।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১৩
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ،
عَنْ أَبِي نُعَيْمٍ، وَهْبِ بْنِ كَيْسَانَ أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ
اللَّهِ، يَقُولُ مَنْ صَلَّى رَكْعَةً لَمْ يَقْرَأْ فِيهَا بِأُمِّ الْقُرْآنِ
فَلَمْ يُصَلِّ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ وَرَاءَ الإِمَامِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ নু’আইম ওয়াহ্ব
ইবনু কাইসান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি নামায আদায় করল অথচ তাতে সূরা ফাতিহা
পাঠ করল না, সে নামাযই আদায় করেনি। হ্যাঁ ইমামের পিছনে হলে ভিন্ন কথা, সেক্ষেত্রে
ফাতিহা পাঠের দরকার নাই।
সহীহ্। মাওফূফ ইরওয়া-(২/২৩৭)।
আবূ ঈসা
বলেনঃ এ হাদিসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২২. অনুচ্ছেদঃ
মসজিদে প্রবেশের দু’আ
৩১৪
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ لَيْثٍ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَسَنِ، عَنْ أُمِّهِ، فَاطِمَةَ بِنْتِ الْحُسَيْنِ
عَنْ جَدَّتِهَا، فَاطِمَةَ الْكُبْرَى قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم إِذَا دَخَلَ الْمَسْجِدَ صَلَّى عَلَى مُحَمَّدٍ وَسَلَّمَ وَقَالَ
" رَبِّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ "
. وَإِذَا خَرَجَ صَلَّى عَلَى مُحَمَّدٍ وَسَلَّمَ وَقَالَ " رَبِّ
اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ فَضْلِكَ " .
ফাতিমা আল-কুবরা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মসজিদে ঢুকতেন তখন
মুহাম্মাদের (স্বয়ং নিজের) প্রতি দুরুদ ও সালাম পাঠ করতেন এবং বলতেনঃ “রাব্বিগফির
লী যুনূবী ওয়াফতাহ্ লী আবওয়াবারাহমাতিকা।” যখন তিনি মসজিদ হতে বের হতেন তখনও
মুহাম্মাদের (নিজের) প্রতি দুরুদ ও সালাম পাঠ করতেন এবং বলতেনঃ “রব্বিগফির লী
যুনূবী ওয়াফতাহ্ লী আবওয়াবা ফাদলিকা।”
রব্বিগ ফিরলী বাক্যবাদে সহীহ্। ফজলুস্ সালাত আলান্নাবী-(৭২-৭৩), তামাতুল
মিন্নাহ-(২৯০)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৫
وَقَالَ
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ قَالَ إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ فَلَقِيتُ عَبْدَ
اللَّهِ بْنَ الْحَسَنِ بِمَكَّةَ فَسَأَلْتُهُ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ،
فَحَدَّثَنِي بِهِ، قَالَ كَانَ إِذَا دَخَلَ قَالَ " رَبِّ افْتَحْ لِي
بَابَ رَحْمَتِكَ وَإِذَا خَرَجَ $$قَالَ رَبِّ افْتَحْ لِي بَابَ فَضْلِكَ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ وَأَبِي
أُسَيْدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ فَاطِمَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ وَلَيْسَ إِسْنَادُهُ بِمُتَّصِلٍ . وَفَاطِمَةُ بِنْتُ الْحُسَيْنِ لَمْ
تُدْرِكْ فَاطِمَةَ الْكُبْرَى إِنَّمَا عَاشَتْ فَاطِمَةُ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم أَشْهُرًا .
‘আলী ইবনু হুজর
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইসমাঈল ইবনু ইবরাহীম
বলেছেন, আমি মক্কায় আবদুল্লাহ ইবনু হাসানের সাথে দেখা করে তাঁকে এ হাদীস প্রসঙ্গে
প্রশ্ন করলাম। তিনি আমার নিকট হাদীসটি এভাবে বর্ণনা করলেন-“যখন তিনি (রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) মসজিদে ঢুকতেন তখন বলতেনঃ “রাব্বিফ্তাহ্লী
বাবা রাহমাতিকা” এবং যখন বের হতেন তখন বলতেনঃ রাব্বিফ্তাহলী বাবা ফায্লিকা।
সহীহ্। পূর্বের হাদীসের শব্দগুলো অধিক সহীহ্।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুমাইদ, আবূ উসাইদ ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ
ফাতিমা (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান। ফাতিমার হাদীসের সনদ মুত্তাসিল (পরস্পর সংযুক্ত) নয়।
কেননা হুসাইন (রাঃ)-এর কন্যা ফাতিমা তাঁর দাদী ফাতিমাতুল কুবরা (রাঃ)-এর দেখা পাননি।
কেননা ফাতিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের
পর মাত্র কয়েক মাস বেঁচে ছিলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৩. অনুচ্ছেদঃ
মসজিদে ঢুকে দুই
রাক’আত নামায আদায় করবে
৩১৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ، عَنْ
أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا
جَاءَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ
" . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَبِي أُمَامَةَ وَأَبِي
هُرَيْرَةَ وَأَبِي ذَرٍّ وَكَعْبِ بْنِ مَالِكٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ
أَبِي قَتَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ
مُحَمَّدُ بْنُ عَجْلاَنَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الزُّبَيْرِ نَحْوَ رِوَايَةِ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ . وَرَوَى سُهَيْلُ بْنُ
أَبِي صَالِحٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الزُّبَيْرِ عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَهَذَا حَدِيثٌ غَيْرُ مَحْفُوظٍ
وَالصَّحِيحُ حَدِيثُ أَبِي قَتَادَةَ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ
عِنْدَ أَصْحَابِنَا اسْتَحَبُّوا إِذَا دَخَلَ الرَّجُلُ الْمَسْجِدَ أَنْ لاَ
يَجْلِسَ حَتَّى يُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ لَهُ عُذْرٌ .
قَالَ عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ وَحَدِيثُ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ خَطَأٌ
أَخْبَرَنِي بِذَلِكَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ
الْمَدِينِيِّ .
আবূ কাতাদা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি যখন
মসজিদে আসে, তখন সে যেন বসার আগে দুই রাকা’আত নামায আদায় করে নেয়।
সহীহ। ইবনু মাজাহ–(১০১৩), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
জাবির, আবূ উমামা, আবূ হুরায়রা, আবূ যার ও কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবু কাতাদা’র হাদীসটি হাসান সহীহ। মুহাম্মাদ ইবনু ‘আজলান এবং আরো অনেকে
‘আমির ইবনু ‘আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর হতে মালিক ইবনু আনাসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। সুহাইল
ইবনু আবূ সালিহ স্বীয় সনদে জাবির ইবনু আব্দুল্লাহর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে এটি সুরক্ষিত নয়। আবূ কাতাদা (রাঃ) হতে
বর্ণিত হাদীসটিই সঠিক। আমাদের সংগীরা এ হাদীসের উপর আমল করেছেন। কোন ব্যক্তির মসজিদে
ঢুকার পর বসার আগে দুই রাকা’আত নামায আদায় করাকে তারা মুস্তাহাব মনে করেন।
তিরমিয়ী বলেনঃ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আমাকে তথ্য দিয়েছেন যে, আলী ইবনু মাদীনী বলেন,
সুহাইল ইবনু আবী সালিহ-এর হাদীসটি ভুল।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৪. অনুচ্ছেদঃ
কবরস্থান ও গোসলখানা
ছাড়া সমগ্র পৃথিবীই নামায আদায়ের জায়গা
৩১৭
حَدَّثَنَا
ابْنُ أَبِي عُمَرَ، وَأَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ الْمَرْوَزِيُّ
قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى،
عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " الأَرْضُ كُلُّهَا مَسْجِدٌ إِلاَّ الْمَقْبُرَةَ
وَالْحَمَّامَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ
وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ
وَحُذَيْفَةَ وَأَنَسٍ وَأَبِي أُمَامَةَ وَأَبِي ذَرٍّ قَالُوا إِنَّ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " جُعِلَتْ لِيَ الأَرْضُ مَسْجِدًا وَطَهُورًا
" . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ قَدْ رُوِيَ عَنْ عَبْدِ
الْعَزِيزِ بْنِ مُحَمَّدٍ رِوَايَتَيْنِ مِنْهُمْ مَنْ ذَكَرَهُ عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ وَمِنْهُمْ مَنْ لَمْ يَذْكُرْهُ . وَهَذَا حَدِيثٌ فِيهِ اضْطِرَابٌ
. رَوَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى عَنْ أَبِيهِ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلٌ . وَرَوَاهُ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ
عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم . وَرَوَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى
عَنْ أَبِيهِ قَالَ وَكَانَ عَامَّةُ رِوَايَتِهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَكَأَنَّ رِوَايَةَ الثَّوْرِيِّ عَنْ عَمْرِو
بْنِ يَحْيَى عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَثْبَتُ وَأَصَحُّ
مُرْسَلاً .
আবূ সা’ঈদ আল-খুদরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কবরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া
সারা পৃথিবীই নামায আদায়ের উপযোগী।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭৪৫)।
এ অনুচ্ছেদে
‘আলী, আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর, আবূ হুরায়রা, জাবির, ইবনু ‘আব্বাস, হুযাইফা, আনাস, আবূ
উমামা ও আবূ যার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। তাঁরা বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
“সারা পৃথিবীকে আমার জন্য মসজিদ এবং পবিত্র হওয়ার মাধ্যম বানানো হয়েছে”।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ সা’ঈদের হাদীসটি ‘আবদুল আযীয ইবনু মুহাম্মাদের সূত্রে দুটি ধারায়
বর্ণিত হয়েছে। একটি ধারায় আবূ সা’ঈদের বরাত দিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে, অপর ধারায় তাঁর
নাম উল্লেখ করা হয়নি। এ হাদীসটিকে মুযতারিব (গোলমাল) বলা হয়েছে। সুফিয়ান সাওরী-’আমর
ইবনু ইয়াহ্ইয়া হতে, তিনি তাঁর পিতার সূত্রে এ হাদীসটি মুরসাল হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
এ সূত্রটিই বেশি সহীহ্ ও সুপ্রতিষ্ঠিত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৫. অনুচ্ছেদঃ
মসজিদ নির্মাণের
ফাযীলাত
৩১৮
حَدَّثَنَا
بُنْدَارٌ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ
بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ لَبِيدٍ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ
عَفَّانَ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ
بَنَى لِلَّهِ مَسْجِدًا بَنَى اللَّهُ لَهُ مِثْلَهُ فِي الْجَنَّةِ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعَلِيٍّ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عَمْرٍو وَأَنَسٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعَائِشَةَ وَأُمِّ حَبِيبَةَ وَأَبِي ذَرٍّ
وَعَمْرِو بْنِ عَبَسَةَ وَوَاثِلَةَ بْنِ الأَسْقَعِ وَأَبِي هُرَيْرَةَ
وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُثْمَانَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَمَحْمُودُ بْنُ لَبِيدٍ قَدْ أَدْرَكَ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم وَمَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ قَدْ رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
وَهُمَا غُلاَمَانِ صَغِيرَانِ مَدَنِيَّانِ .
‘উসমান ইবনু ‘আফফান
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি
আল্লাহ তা’আলার সুপ্রসন্নতা অর্জনের উদ্দেশ্যে একটি মসজিদ তৈরী করে, আল্লাহ তা’আলা
তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ একটি ঘর তৈরী করেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭৩৬), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ বাকর, ‘উমার, ‘আলী, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর, আনাস, ইবনু ‘আব্বাস, ‘আয়িশাহ্, উম্মু
হাবীবা, আবূ যার, ‘আমর ইবনু আবাসা, ওয়াসিলা ইবনুল আসকা’, আবূ হুরায়রা ও জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘উসমানের হাদীসটি হাসান সহীহ্।
মাহমুদ ইবনু লাবীদ নাবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পেয়েছেন
এবং মাহমুদ ইবনু রাবী’ও নাবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছেন।
তারা দু’জনই মাদীনার বালক ছিলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৯
وَقَدْ
رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " مَنْ بَنَى
لِلَّهِ مَسْجِدًا صَغِيرًا كَانَ أَوْ كَبِيرًا بَنَى اللَّهُ لَهُ بَيْتًا فِي
الْجَنَّةِ " . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا نُوحُ بْنُ
قَيْسٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ مَوْلَى قَيْسٍ عَنْ زِيَادٍ النُّمَيْرِيِّ عَنْ
أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا .
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ যে
ব্যক্তি আল্লাহ তালার সুপ্রসন্নতা অর্জনের উদ্দেশ্যে একটি মসজিদ তৈরি করতে চাই তা
ছোট হোক বা বড়, আল্লাহ তাআলা তাঁর জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করেন।
যঈফ, তা’লিকুর রাগিব (১/১১৭)।
এ হাদীসটি
কুতাইবা তিনি নুহু ইবনু কাইস হতে তিনি আব্দুর রহমান হতে তিনি যিয়াদ আন-নুসাইরী হতে
তিনি আনাস (রাঃ) হতে তিনি নাবী কারিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১২৬. অনুচ্ছেদঃ
কবরের উপর মসজিদ তৈরি
করা মাকরুহ
৩২০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
جُحَادَةَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم زَائِرَاتِ الْقُبُورِ وَالْمَتَّخِذِينَ عَلَيْهَا
الْمَسَاجِدَ وَالسُّرُجَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ .
وَأَبُو صَالِحٍ هَذَا هُوَ مَوْلَى أُمِّ هَانِئٍ بِنْتِ أَبِي طَالِبٍ وَاسْمُهُ
بَاذَانُ وَيُقَالُ بَاذَامُ أَيْضًا .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কবর যিয়ারতকারীনীদের, কবরের উপর
মসজিদ নির্মাণকারীদের এবং কবরে বাতি জ্বালানো ব্যক্তিদের অভিসম্পাত করেছেন।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৫৭৫)। অধিক যিয়ারতকারীনী এই অর্থে এবং বাতি জ্বালানো বাদে
হাদীসটি সহিহ।
এ অনুচ্ছেদে
আবু হুরাইরা ও আইশা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনু আব্বাসের হাদীসটি
হাসান। রাবি আবু সালিহ আবু তালিবের কন্যা উম্মে হানির আযাদকৃত গোলাম, তাঁর নাম বাযান
বা বাযাম।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
১২৭. অনুচ্ছেদঃ
মসজিদে ঘুমানো
৩২১
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ،
عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كُنَّا نَنَامُ عَلَى
عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَسْجِدِ وَنَحْنُ شَبَابٌ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ
رَخَّصَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي النَّوْمِ فِي الْمَسْجِدِ . قَالَ
ابْنُ عَبَّاسٍ لاَ يَتَّخِذُهُ مَبِيتًا وَلاَ مَقِيلاً . وَقَوْمٌ مِنْ أَهْلِ
الْعِلْمِ ذَهَبُوا إِلَى قَوْلِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবন কালে মসজিদে ঘুমাতাম। অথচ
আমরা তখন যুবক ছিলাম।
সহীহ্। বুখারী।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ ইবনু ‘উমারের হাদীসটি হাসান সহীহ্। একদল বিদ্বান মসজিদে ঘুমানোর পক্ষে অভিমত
দিয়েছেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, “মসজিদকে দিনের বা রাতের শোয়ার জায়গায় পরিণত কর
না”। বিদ্বানদের একদল ইবনু ‘আব্বাসের মতকেই গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৮. অনুচ্ছেদঃ
মসজিদের মধ্যে
ক্রয়-বিক্রয়, হারানো জিনিস খোঁজা এবং কবিতা আবৃত্তি করা মাকরূহ
৩২২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ نَهَى عَنْ تَنَاشُدِ الأَشْعَارِ فِي الْمَسْجِدِ وَعَنِ الْبَيْعِ
وَالاِشْتِرَاءِ فِيهِ وَأَنْ يَتَحَلَّقَ النَّاسُ فِيهِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ
قَبْلَ الصَّلاَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ بُرَيْدَةَ وَجَابِرٍ وَأَنَسٍ
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ
حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَعَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ هُوَ ابْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ . قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ
رَأَيْتُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ وَذَكَرَ غَيْرَهُمَا يَحْتَجُّونَ بِحَدِيثِ
عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَقَدْ سَمِعَ شُعَيْبُ بْنُ مُحَمَّدٍ
مِنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى وَمَنْ
تَكَلَّمَ فِي حَدِيثِ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ إِنَّمَا ضَعَّفَهُ لأَنَّهُ
يُحَدِّثُ عَنْ صَحِيفَةِ جَدِّهِ كَأَنَّهُمْ رَأَوْا أَنَّهُ لَمْ يَسْمَعْ
هَذِهِ الأَحَادِيثَ مِنْ جَدِّهِ . قَالَ عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَذُكِرَ
عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ قَالَ حَدِيثُ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عِنْدَنَا
وَاهِي . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ الْبَيْعَ وَالشِّرَاءَ
فِي الْمَسْجِدِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ
بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنَ التَّابِعِينَ رُخْصَةٌ فِي الْبَيْعِ وَالشِّرَاءِ
فِي الْمَسْجِدِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي غَيْرِ
حَدِيثٍ رُخْصَةٌ فِي إِنْشَادِ الشِّعْرِ فِي الْمَسْجِدِ .
‘আমর ইবনু শুআইব
(রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করতে, কেনা-বেচা করতে
এবং জুমু’আর দিন জুমু’আর নামাযের আগে বৃত্তাকারে গোল হয়ে বসতে নিষেধ করেছেন।
হাসান। ইবনু মাজাহ-(৭৪৯)।
এ অনুচ্ছেদে
বুরাইদা, জাবির ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আব্দুল্লাহ ইবনু
‘আমর ইবনুল আস-এর হাদীসটি হাসান। ‘আমর ইবনু শু’আইব হলেন ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল বুখারী (রহঃ) বলেন, আমি দেখেছি, ইমাম আহমাদ,
ইসহাক ও অন্যান্যরা নিজেদের মতের সপক্ষে ‘আমর ইবনু শু’আইবের হাদীসকে দলীল হিসাবে গ্রহণ
করেছেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) আরও বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু শুআইব (রহঃ) তাঁর দাদা ‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আমর (রাঃ)-এর হাদীস শুনেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ কিছু লোক ‘আমর ইবনু শুআইবের হাদীসের
সমালোচনা করেছেন এবং তাঁকে যঈফ বলেছেন। তাঁরা মনে করেন, ‘আমর তাঁর দাদার লিখিত সহীফা
(সংকলিত হাদীসগ্রন্থ) হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন। মনে হয় তাঁরা একথাই বলতে চান যে, ‘আমর
ইবনু শুআইব তাঁর দাদার নিকট হতে এসব হাদীস শুনেননি। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ বলেছেন, আমাদের
মতে ‘আমর ইবনু শু’আইবের হাদীসটি দুর্বল।
একদল বিশেষজ্ঞ ‘আলিম মসজিদে কেনা-বেচা করা মাকরূহ বলেছেন। আহমাদ ও ইসহাক একইরকম মত
পোষণ করেছেন। তাবিঈদের একদল বিদ্বান এ ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কয়েকটি হাদীস হতে মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করার অনুমতির কথা জানা
যায়।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১২৯. অনুচ্ছেদঃ
যে মসজিদের ভিত্তি
তাকওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত
৩২৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ أُنَيْسِ بْنِ أَبِي
يَحْيَى، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ امْتَرَى رَجُلٌ
مِنْ بَنِي خُدْرَةَ وَرَجُلٌ مِنْ بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ فِي الْمَسْجِدِ
الَّذِي أُسِّسَ عَلَى التَّقْوَى فَقَالَ الْخُدْرِيُّ هُوَ مَسْجِدُ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَقَالَ الآخَرُ هُوَ مَسْجِدُ قُبَاءٍ .
فَأَتَيَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ذَلِكَ فَقَالَ " هُوَ
هَذَا يَعْنِي مَسْجِدَهُ وَفِي ذَلِكَ خَيْرٌ كَثِيرٌ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ عَنْ
عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ سَأَلْتُ يَحْيَى بْنَ سَعِيدٍ عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ أَبِي يَحْيَى الأَسْلَمِيِّ فَقَالَ لَمْ يَكُنْ بِهِ بَأْسٌ وَأَخُوهُ
أُنَيْسُ بْنُ أَبِي يَحْيَى أَثْبَتُ مِنْهُ .
আবূ সা’ঈদ আল-খুদরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খুদরা
গোত্রের এক ব্যক্তি এবং ‘আমর ইবনু আওফ গোত্রের এক ব্যক্তি ‘তাকওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত
মসজিদ’ কোনটি-তা নিয়ে সন্দেহে পতিত হল। খুদরা গোত্রের লোকটি বলল, এটা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদ (মাদীনার মসজিদ)। অপর ব্যক্তি বলল, এটা
কুবার মসজিদ। বিষয়টি নিয়ে তারা উভয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকটে আসল। তিনি বললেনঃ এটা এই মসজিদ অর্থাৎ মসজিদে নাব্বী। এ মসজিদে
অফুরন্ত কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
সহীহ্। মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদীসের রাবী ওনাইস ইবনু আবী ইয়াহইয়া সম্পর্কে ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদকে জিজ্ঞেস করা হলে
উত্তরে তিনি বলেন, তার মধ্যে কোন সমস্যা নেই। তার ভাই উনাইস ইবনু আবী ইয়াহইয়া তার চাইতে
অধিক সুদৃঢ়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩০. অনুচ্ছেদঃ
কুবার মসজিদে নামায
আদায় করা
৩২৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ أَبُو كُرَيْبٍ، وَسُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، قَالاَ
حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ جَعْفَرٍ، قَالَ
حَدَّثَنَا أَبُو الأَبْرَدِ، مَوْلَى بَنِي خَطْمَةَ أَنَّهُ سَمِعَ أُسَيْدَ
بْنَ ظُهَيْرٍ الأَنْصَارِيَّ، وَكَانَ، مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم يُحَدِّثُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الصَّلاَةُ
فِي مَسْجِدِ قُبَاءٍ كَعُمْرَةٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَهْلِ
بْنِ حُنَيْفٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أُسَيْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
. وَلاَ نَعْرِفُ لأُسَيْدِ بْنِ ظُهَيْرٍ شَيْئًا يَصِحُّ غَيْرَ هَذَا
الْحَدِيثِ وَلاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي أُسَامَةَ عَنْ عَبْدِ
الْحَمِيدِ بْنِ جَعْفَرٍ . وَأَبُو الأَبْرَدِ اسْمُهُ زِيَادٌ مَدِينِيٌّ .
উসাইদ ইবনু যুহাইর
আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবা ছিলেন। তিনি (রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) বলেন, কুবার মসজিদে নামায আদায় করলে ‘উমরা
করার সমান নেকী পাওয়া যায়।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৪১১)।
এ অনুচ্ছেদে
সাহল ইবনু হুনাইফ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ উসাইদ-এর হাদীসটি হাসান
গারীব। ‘আবদুল হামীদ ইবনু জা’ফর হতে আবূ উসামা বর্ণিত এ হাদীসটি ব্যতীত উসাইদের আর
কোন সহীহ্ হাদীস আমাদের জানা নেই। রাবী আবুল আবরাদের নাম যিয়াদ মাদীনী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩১. অনুচ্ছেদঃ
কোন্ মসজিদ সবচেয়ে
বেশি মর্যাদাপূর্ণ
৩২৫
حَدَّثَنَا
الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، ح وَحَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ رَبَاحٍ، وَعُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ
أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " صَلاَةٌ
فِي مَسْجِدِي هَذَا خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ صَلاَةٍ فِيمَا سِوَاهُ إِلاَّ
الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَلَمْ يَذْكُرْ
قُتَيْبَةُ فِي حَدِيثِهِ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ إِنَّمَا ذَكَرَ عَنْ زَيْدِ بْنِ
رَبَاحٍ عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرُّ
اسْمُهُ سَلْمَانُ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ
وَمَيْمُونَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَجُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ وَابْنِ عُمَرَ وَعَبْدِ
اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ وَأَبِي ذَرٍّ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমার এই মসজিদে এক রাক’আত নামায আদায়
করা অন্য মাসাজিদে এক হাজার রাক’আত নামায আদায় করা হতেও উত্তম, কিন্তু মাসজিদুল
হারাম ব্যতীত।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৪০৪), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসের রাবী কুতাইবা তার সনদে উবাইদুল্লাহ’র উল্লেখ করেননি। বরং তার সনদ যাইদ
ইবনু রাবাহ, তিনি আবূ আব্দুল্লাহ আল-আগার তিনি আবূ হুরায়রাহ হতে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
এ হাদীসটি আবূ হুরায়রার নিকট হতে বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। আবূ ‘আব্দুল্লাহ্ আল-আগারের
নাম সালমান। এ অনুচ্ছেদে আলী, মাইমূনা, আবূ সা’ঈদ, জুবাইর ইবনু মুত’ইম, ‘আবদুল্লাহ
ইবনুয যুবাইর, ইবনু ‘উমার ও আবূ যার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৬
حَدَّثَنَا
ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ
بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ قَزَعَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلاَّ
إِلَى ثَلاَثَةِ مَسَاجِدَ مَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَسْجِدِي هَذَا وَمَسْجِدِ
الأَقْصَى " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য
কোথাও (সাওয়াবের আশায়) সফর করা যায় না। এ মসজিদগুলো হল, মাসজিদুল হারাম, আমার এই
মসজিদ এবং মাসজিদুল আকসা।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৪০৯), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩২. অনুচ্ছেদঃ
মসজিদে পায়ে হেঁটে
যাতায়াত
৩২৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ
بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ تَأْتُوهَا وَأَنْتُمْ تَسْعَوْنَ وَلَكِنِ
ائْتُوهَا وَأَنْتُمْ تَمْشُونَ وَعَلَيْكُمُ السَّكِينَةُ فَمَا أَدْرَكْتُمْ
فَصَلُّوا وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا " . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
قَتَادَةَ وَأُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَجَابِرٍ
وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الْمَشْىِ إِلَى
الْمَسْجِدِ فَمِنْهُمْ مَنْ رَأَى الإِسْرَاعَ إِذَا خَافَ فَوْتَ التَّكْبِيرَةِ
الأُولَى حَتَّى ذُكِرَ عَنْ بَعْضِهِمْ أَنَّهُ كَانَ يُهَرْوِلُ إِلَى
الصَّلاَةِ . وَمِنْهُمْ مَنْ كَرِهَ الإِسْرَاعَ وَاخْتَارَ أَنْ يَمْشِيَ
عَلَى تُؤَدَةٍ وَوَقَارٍ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ وَقَالاَ الْعَمَلُ
عَلَى حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ . وَقَالَ إِسْحَاقُ إِنْ خَافَ فَوْتَ
التَّكْبِيرَةِ الأُولَى فَلاَ بَأْسَ أَنْ يُسْرِعَ فِي الْمَشْىِ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নামাযের জামাআত শুরু হয়ে
গেলে তোমরা দৌঁড়ে বা তাড়াহুড়া করে এসো না, বরং ধীরেসুস্থে হেঁটে এসো। জামাআতে
যতটুকু পাও আদায় করে নাও, যতটুকু ছুটে যায় তা সালামের পরে পুরা কর।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭৭৫), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ কাতাদা, উবাই ইবনু কা’ব, আবূ সা’ঈদ, যাইদ ইবনু সাবিত, জাবির ও আনাস (রাঃ) হতেও
হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ মসজিদে হেঁটে আসা সম্পর্কে আলিমদের মধ্যে মতের অমিল
রয়েছে। এক দলের মতে, তাকবীরে উলা (তাকবীরে তাহরীমা) ছুটে যাওয়ার আশংকা হলে তাড়াতাড়ি
আসবে। তাদের কারো কারো সম্পর্কে এ পর্যন্তও বর্ণিত আছে, তাঁরা দৌঁড়ে এসে নামায ধরতেন।
অপর দল দৌঁড়ে আসাকে মাকরূহ বলেছেন। তাঁরা ধীরেসুস্থে, শান্তভাবে আসাই পছন্দ করেছেন।
ইমাম আহমাদ ইসহাক এই মতের প্রবক্তা। তাঁরা উভয়ে বলেছেন, এ ব্যাপারে আবূ হুরায়রার হাদীস
অনুযায়ী আমল করতে হবে। ইসহাক বলেছেন, তাকবীরে উলা ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে দ্রুত
হেঁটে এসে জামাআত ধরাতে কোন অপরাধ নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৮
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ حَدِيثِ أَبِي سَلَمَةَ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ بِمَعْنَاهُ . هَكَذَا قَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ
سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم . وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ يَزِيدَ بْنِ زُرَيْعٍ .
আল-হাসান ইবনু আলী
থেকে বর্ণিতঃ
আল-হাসান ইবনু আলী বর্ণনা করেন, তিনি আব্দুর রাজ্জাক হতে, তিনি
মা’মার হতে, তিনি যুহরী হতে, তিনি সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব হতে, তিনি আবূ হুরায়রা হতে
তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে, আবূ সালামার সূত্রে
বর্ণিত আবূ হুরায়রা’র মতোই হাদীস বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসটি ইয়াযিদ ইবনু যুরাই-এর
হাদীসের চেয়ে অধিক সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৯
حَدَّثَنَا
ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
نَحْوَهُ .
ইবনু আবী ‘উমার
থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু আবী ‘উমার বর্ণনা করেছেন সুফইয়ান হতে, তিনি যুহরী হতে, তিনি
সা’ঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব হতে তিনি আবূ হুরায়রা হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
১৩৩. অনুচ্ছেদঃ
মসজিদে বসা এবং
নামাযের জন্য অপেক্ষা করার ফযিলত
৩৩০
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ،
عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَزَالُ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَةٍ مَا
دَامَ يَنْتَظِرُهَا وَلاَ تَزَالُ الْمَلاَئِكَةُ تُصَلِّي عَلَى أَحَدِكُمْ مَا
دَامَ فِي الْمَسْجِدِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ مَا لَمْ
يُحْدِثْ " . فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ حَضْرَمَوْتَ وَمَا الْحَدَثُ يَا
أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ فُسَاءٌ أَوْ ضُرَاطٌ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
عَلِيٍّ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَنَسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَسَهْلِ بْنِ
سَعْدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কোন
ব্যক্তি যে পর্যন্ত মসজিদে নামাযের প্রতীক্ষায় থাকে, সে যেন নামাযের মধ্যেই থাকে,
আর যতক্ষন পর্যন্ত তোমাদের কেউ মসজিদে থাকে ফেরেশতারা সে পর্যন্ত তার জন্য দু’আ
করতে থাকে- “আল্লাহুম্মাগফিরহু আল্লাহুম্মারহামহু।” হাদাস (ওযূ ছুটে) না যাওয়া
পর্যন্ত তার জন্য দু’আ চলতে থাকে। হাযরামাওতের এক ব্যক্তি বলল, হে আবূ হুয়াইরা!
হাদাস কাকে বলে? তিনি বললেন, নিঃশব্দে বা স্বশব্দে বায়ু বের হওয়া।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৭৯৯), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আলী, আবূ সাঈদ, আনাস, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ ও সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রা’র হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩৪. অনুচ্ছেদঃ
চাটাইর উপর নামায
আদায় করা
৩৩১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ
عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّي عَلَى الْخُمْرَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ
وَابْنِ عُمَرَ وَأُمِّ سُلَيْمٍ وَعَائِشَةَ وَمَيْمُونَةَ وَأُمِّ كُلْثُومٍ
بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الأَسَدِ وَلَمْ تَسْمَعْ مِنَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَأُمِّ سَلَمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَبِهِ يَقُولُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَقَالَ
أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ قَدْ ثَبَتَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الصَّلاَةُ
عَلَى الْخُمْرَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَالْخُمْرَةُ هُوَ حَصِيرٌ قَصِيرٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাটাইয়ের উপর নামায আদায় করতেন।
হাসান সহীহ্। ইবনু মাজাহ, বুখারী।
এ অনুচ্ছেদে
উম্মু হাবীবা, ইবনু ‘উমার, উম্মু সালামা, ‘আয়িশাহ্, মাইমূনা ও উম্মু কুলসূম বিনতু আবূ
সালামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। উম্মু কুলসুম নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ও উম্মু-সালামাহ্ হতে হাদীস শুনেননি।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহীহ্। কিছু আলিম এ হাদীসের পক্ষে মত
দিয়েছেন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক বলেন, চাটাইয়ের উপর নামায আদায় করা নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতেই প্রমাণিত। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘খুমরা অর্থ ছোট চাটাই অথবা মাদুর।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
১৩৫. অনুচ্ছেদঃ
মাদুরের উপর নামায
আদায় করা
৩৩২
حَدَّثَنَا
نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ
أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم صَلَّى عَلَى حَصِيرٍ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ
وَالْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ
حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ .
إِلاَّ أَنَّ قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ اخْتَارُوا الصَّلاَةَ عَلَى الأَرْضِ
اسْتِحْبَابًا . وَأَبُو سُفْيَانَ اسْمُهُ طَلْحَةُ بْنُ نَافِعٍ .
আবূ সা’ঈদ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদুরের উপর নামায আদায় করেছেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১০২৯), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আনাস ও মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ‘ঈসা বলেনঃ আবূ সা’ঈদের
হাদীসটি হাসান। আলিমগণ এ হাদীসের উপর আমল করেছেন। অত্যন্ত অল্প সংখ্যক বিদ্বান মাটিতে
নামায আদায় করা মুস্তাহাব মনে করেছেন। রাবী আবূ সুফ্ইয়ানের নাম তালহা ইবনু নাফি’।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩৬. অনুচ্ছেদঃ
বিছানার উপর নামায
আদায় করা
৩৩৩
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ
الضُّبَعِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يُخَالِطُنَا حَتَّى إِنْ كَانَ يَقُولُ لأَخٍ لِي صَغِيرٍ
" يَا أَبَا عُمَيْرٍ مَا فَعَلَ النُّغَيْرُ " . قَالَ وَنُضِحَ
بِسَاطٌ لَنَا فَصَلَّى عَلَيْهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ لَمْ يَرَوْا بِالصَّلاَةِ عَلَى الْبِسَاطِ
وَالطُّنْفُسَةِ بَأْسًا . وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَاسْمُ
أَبِي التَّيَّاحِ يَزِيدُ بْنُ حُمَيْدٍ .
আবূ তাইয়াহ
আয্-যুবাঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
(কপট লোকাচার বাদ দিয়ে) স্বাভাবিকভাবে আমাদের সাথে মিলেমিশে থাকতেন। এমনকি তিনি
আমার ছোট ভাইকে বলতেনঃ হে আবূ উমাইর! কোথা তোমার নুগায়ির (লাল পাখি)। রাবী বলেন, আমাদের
বিছানা পানি দিয়ে ধুয়ে দেয়া হল, তিনি তার উপর নামায আদায় করলেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৩৭২০, ৩৭৪০), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ্।
বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবা ও তাদের উত্তরসুরিগণ বিছানা ও কার্পেটের উপর নামায আদায় করা
দোষণীয় মনে করেন না। আহমাদ এবং ইসহাক এ কথা বলেছেন। আবূ তাইয়্যাহ’র নাম ইয়াযিদ ইবনু
হুমাইদ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩৭. অনুচ্ছেদঃ
বাগানের মধ্যে নামায
আদায় করা
৩৩৪
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ
أَبِي جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ، عَنْ مُعَاذِ
بْنِ جَبَلٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَسْتَحِبُّ الصَّلاَةَ
فِي الْحِيطَانِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ يَعْنِي الْبَسَاتِينَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ مُعَاذٍ حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ
الْحَسَنِ بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ . وَالْحَسَنُ بْنُ أَبِي جَعْفَرٍ قَدْ
ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ وَغَيْرُهُ وَأَبُو الزُّبَيْرِ اسْمُهُ مُحَمَّدُ
بْنُ مُسْلِمِ بْنِ تَدْرُسَ وَأَبُو الطُّفَيْلِ اسْمُهُ عَامِرُ بْنُ وَاثِلَةَ
.
মুআয ইবনু জাবাল
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাগানের মধ্যে নামায আদায় করা পছন্দ করতেন।
যঈফ, যঈফাহ (৪২৭০)।
আবু ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি গারিব। কেননা আমারা এ হাদিসটি শুধু হাসান ইবনু আবু জাফরের সূত্রেই জানতে
পেরেছি। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাইয়িদ ও অন্যান্যরা হাসান ইবনু আবু জাফরকে যঈফ বলেছেন। রাবি
আবু যুবাইরের নাম মুহাম্মদ ইবনু মুসলিম তাদরুস। আবু তুফাইলের নাম আমির ইবনু ওয়াসিলাহ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৩৮. অনুচ্ছেদঃ
নামাযীর সামনে
অন্তরাল (সুতরা) রাখা
৩৩৫
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَهَنَّادٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ
حَرْبٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " إِذَا وَضَعَ أَحَدُكُمْ بَيْنَ يَدَيْهِ مِثْلَ
مُؤَخَّرَةِ الرَّحْلِ فَلْيُصَلِّ وَلاَ يُبَالِي مَنْ مَرَّ وَرَاءَ ذَلِكَ
" . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَسَهْلِ بْنِ أَبِي
حَثْمَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَسَبْرَةَ بْنِ مَعْبَدٍ الْجُهَنِيِّ وَأَبِي
جُحَيْفَةَ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ طَلْحَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَقَالُوا سُتْرَةُ
الإِمَامِ سُتْرَةٌ لِمَنْ خَلْفَهُ .
মূসা ইবনু তালহা
(রাঃ) হতে তাঁর পিতার থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (তালহা) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন নিজের
সামনে হাওদার খুঁটির মত কিছু রেখে দেয়, তারপর তার দিকে নামায আদায় করে তখন খুঁটির
বাইরে দিয়ে কেউ চলাচল করলে কোন ভয় নেই।
হাসান সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯৪০)।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরায়রা, সাহল ইবনু হাসমা, ইবনু ‘উমার, সাবরা ইবনু মাবাদ, আবূ জুহাইফা ও ‘আয়িশাহ্
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ তালহার হাদীসটি হাসান সহীহ্। আলিমগণ এ
হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাঁরা বলেছেন, ইমামের সুতরাই (অন্তরাল) মুক্তাদীদের জন্য
যথেষ্ট।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
১৩৯. অনুচ্ছেদঃ
নামাযরত ব্যক্তির
সামনে দিয়ে যাওয়া মাকরূহ
৩৩৬
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكُ
بْنُ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، أَنَّ زَيْدَ بْنَ
خَالِدٍ الْجُهَنِيَّ، أَرْسَلَهُ إِلَى أَبِي جُهَيْمٍ يَسْأَلُهُ مَاذَا سَمِعَ
مِنْ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَارِّ بَيْنَ يَدَىِ
الْمُصَلِّي فَقَالَ أَبُو جُهَيْمٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" لَوْ يَعْلَمُ الْمَارُّ بَيْنَ يَدَىِ الْمُصَلِّي مَاذَا عَلَيْهِ
لَكَانَ أَنْ يَقِفَ أَرْبَعِينَ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَمُرَّ بَيْنَ يَدَيْهِ
" . قَالَ أَبُو النَّضْرِ لاَ أَدْرِي قَالَ أَرْبَعِينَ يَوْمًا أَوْ
شَهْرًا أَوْ سَنَةً قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي جُهَيْمٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ
رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " لأَنْ يَقِفَ
أَحَدُكُمْ مِائَةَ عَامٍ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَمُرَّ بَيْنَ يَدَىْ أَخِيهِ
وَهُوَ يُصَلِّي " . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ
كَرِهُوا الْمُرُورَ بَيْنَ يَدَىِ الْمُصَلِّي وَلَمْ يَرَوْا أَنَّ ذَلِكَ
يَقْطَعُ صَلاَةَ الرَّجُلِ . وَاسْمُ أَبِي النَّضْرِ سَالِمٌ مَوْلَى عُمَرَ
بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ الْمَدِينِيُّ .
বুসর ইবনু সা’ঈদ
থেকে বর্ণিতঃ
যাইদ ইবনু খালিদ
আল-জুহানী (রহঃ) আবূ জুহাইমের নিকট লোক পাঠালেন। উদ্দেশ্য ছিল, নামাযীর সামনে দিয়ে
যাওয়া সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তিনি যা
শুনেছেন তা জিজ্ঞেস করা। আবূ জুহাইম (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নামাযীর সামনে দিয়ে চলাচকারী যদি জানত তার কত বড় গুনাহ হয়,
তবে সে নামাযীর সামনে দিয়ে চলাচল করা অপেক্ষা চল্লিশ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা নিজের
জন্য ভাল মনে করত। আবূ নায্র বলেন, তিনি (আবূ জুহাইম) কি চল্লিশ দিন না চল্লিশ মাস
না চল্লিশ বছরের কথা বলেছেন তা আমার মনে নেই।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯৪৫), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ অনুচ্ছেদে আবূ সাঈদ আল-খুদরী, আবূ হুরায়রা, ইবনু ‘উমার
ও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে-
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে আরো বর্ণিত আছে। তিনি বলেছেনঃ
“তোমাদের কোন ব্যক্তির জন্য তার নামাযরত ভাইয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার চেয়ে একশত বছর অপেক্ষা
করা বেশি কল্যাণকর।”
বিদ্বানগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাঁরা বলেছেন, নামাযরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে
যাওয়া মাকরূহ। তবে কেউ গেলে তাতে নামাযীর নামায নষ্ট হবে বলে তাঁরা মনে করেন না। আবূ
নায্রের নাম সালিম। তিনি ‘উমার ইবনু উবাইদুল্লাহ আল-মাদীনী’র আযাদকৃত গোলাম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪০. অনুচ্ছেদঃ
নামাযীর সামনে দিয়ে
কোন কিছু গেলে তাতে নামায নষ্ট হয় না
৩৩৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ
بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كُنْتُ رَدِيفَ
الْفَضْلِ عَلَى أَتَانٍ فَجِئْنَا وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي
بِأَصْحَابِهِ بِمِنًى . قَالَ فَنَزَلْنَا عَنْهَا فَوَصَلْنَا الصَّفَّ
فَمَرَّتْ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ فَلَمْ تَقْطَعْ صَلاَتَهُمْ . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَالْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ عُمَرَ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنَ التَّابِعِينَ قَالُوا لاَ يَقْطَعُ
الصَّلاَةَ شَيْءٌ . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَالشَّافِعِيُّ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একটি
গাধীর পীঠে ফযলের পিছনে সাওয়ার ছিলাম। আমরা মিনায় পৌঁছলাম তখন রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সাহাবাদের নিয়ে নামাযরত অবস্থায় ছিলেন।
আমরা গাধার পীঠ হতে নেমে (নামাযের) কাতারে শামিল হয়ে গেলাম। গাধীটা কাতারের সামানে
দিয়ে চলে গেল। কিন্তু তাতে তাদের নামায নষ্ট হয়নি।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৯৪৭), বুখারী ও মুসলিম
এ অনুচ্ছেদে
‘আয়িশাহ্, ফযল ইবনু ‘আব্বাস ও ইবনু ‘ঊমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ
ইবনু ‘আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ
সাহাবা ও তাদের পরবর্তীদের মতে, কোন জিনিস নামায নষ্ট করতে পারে না। সুফিয়ান সাওরী
এবং শাফিঈও একথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪১. অনুচ্ছেদঃ
কুকুর, গাধা ও
স্ত্রীলোক ছাড়া অন্য কিছু নামাযীর সামনে দিয়ে গেলে নামায নষ্ট হয় না
৩৩৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ بْنُ عُبَيْدٍ،
وَمَنْصُورُ بْنُ زَاذَانَ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلاَلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الصَّامِتِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " إِذَا صَلَّى الرَّجُلُ وَلَيْسَ بَيْنَ يَدَيْهِ كَآخِرَةِ
الرَّحْلِ أَوْ كَوَاسِطَةِ الرَّحْلِ قَطَعَ صَلاَتَهُ الْكَلْبُ الأَسْوَدُ
وَالْمَرْأَةُ وَالْحِمَارُ " . فَقُلْتُ لأَبِي ذَرٍّ مَا بَالُ
الأَسْوَدِ مِنَ الأَحْمَرِ مِنَ الأَبْيَضِ فَقَالَ يَا ابْنَ أَخِي سَأَلْتَنِي
كَمَا سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " الْكَلْبُ
الأَسْوَدُ شَيْطَانٌ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
وَالْحَكَمِ بْنِ عَمْرٍو الْغِفَارِيِّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي ذَرٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ ذَهَبَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَيْهِ قَالُوا يَقْطَعُ الصَّلاَةَ الْحِمَارُ
وَالْمَرْأَةُ وَالْكَلْبُ الأَسْوَدُ . قَالَ أَحْمَدُ الَّذِي لاَ أَشُكُّ
فِيهِ أَنَّ الْكَلْبَ الأَسْوَدَ يَقْطَعُ الصَّلاَةَ وَفِي نَفْسِي مِنَ
الْحِمَارِ وَالْمَرْأَةِ شَيْءٌ . قَالَ إِسْحَاقُ لاَ يَقْطَعُهَا شَيْءٌ
إِلاَّ الْكَلْبُ الأَسْوَدُ .
আবদুল্লাহ ইবনু
সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ
যার (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ যখন কোন বাক্তি নামায আদায় করে তখন তার সামনে হাওদার পিছনের কাঠের মত কিছু
(অন্তরাল) না থাকলে কালো কুকুর, গাদা ও স্ত্রীলোক তার নামায নষ্ট করে দিবে। আমি
আবু যার (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, কালো কুকুর এমন কি অপরাধ করল, অথচ লাল অথবা সাদা
কুকুরও তো রয়েছে? তিনি বললেন হে ভ্রাতুষ্পুত্র! আমিও তোমার মত রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এমন প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি বললেন কালো
কুকুর শাইতান সমতুল্য।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯৫২), মুসলিম
এ অনুচ্ছেদে
আবূ সা’ঈদ, হাকাম আল-গীফারী, আবূ হুরায়রা ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
‘ঈসা বলেনঃ আবূ যার-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। কিছু সংখ্যক বিদ্বান এ হাদিসের ভিত্তিতে
বলেছেন, গাধা, স্ত্রীলোক ও কালো কুকুর নামাযীর সামনে দিয়ে গেলে নামায নষ্ট হয়ে যায়।
ইমাম আহমাদ বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নেই যে, কালো কুকুর নামায নষ্ট করে দেয়;
কিন্তু গাধা এবং স্ত্রীলোকের ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে। ইমাম ইসহাক বলেন, কালো কুকুর
নামায নষ্ট করে দেয়। এছাড়া আর কোন কিছু নামায নষ্ট করতে পারে না ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪২. অনুচ্ছেদঃ
এক কাপড়ে নামায আদায়
করা
৩৩৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، أَنَّهُ رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يُصَلِّي فِي بَيْتِ أُمِّ سَلَمَةَ مُشْتَمِلاً فِي ثَوْبٍ
وَاحِدٍ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرٍ وَسَلَمَةَ
بْنِ الأَكْوَعِ وَأَنَسٍ وَعَمْرِو بْنِ أَبِي أُسَيْدٍ وَعُبَادَةَ بْنِ
الصَّامِتِ وَأَبِي سَعِيدٍ وَكَيْسَانَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعَائِشَةَ وَأُمِّ
هَانِئٍ وَعَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ وَطَلْقِ بْنِ عَلِيٍّ وَصَامِتٍ الأَنْصَارِيِّ
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنَ التَّابِعِينَ وَغَيْرِهِمْ
قَالُوا لاَ بَأْسَ بِالصَّلاَةِ فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ . وَقَدْ قَالَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ يُصَلِّي الرَّجُلُ فِي ثَوْبَيْنِ .
ঊমার ইবনু আবূ
সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ঊম্মূ সালামা (রাঃ)–এর ঘরে এক কাপড়ে নামায
আদায় করতে দেখেছেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১০৪৯), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরায়রা, জাবির, সালামা ইবনু আকওয়া, আনাস, আমর ইবনু আবূ ঊসাইদ, আবূ সা’ঈদ, কাইসান,
ইবনু ‘আব্বাস, ‘আয়িশাহ্, ঊম্মূ হানী, ‘আম্মার ইবনু ইয়াসির, তলক ইবনু আলী ও উবাদা ইবনু
সামিত (রাঃ) হতেও বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘উমার ইবনু আবী সালামার হাদীসটি হাসান
সহীহ।
বেশিরভাগ সাহাবা ও তাবিঈন এ হাদীসের পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, একই কাপড়ে নামায আদায় করা
হলে তাতে আপত্তির কিছু নেই। কিছু আলিম বলেছেন, দুই কাপড়ে নামায আদায় করা উচিত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪৩. অনুচ্ছেদঃ
কিবলা শুরু হওয়ার
বর্ণনা
৩৪০
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ
الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ لَمَّا قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
الْمَدِينَةَ صَلَّى نَحْوَ بَيْتِ الْمَقْدِسِ سِتَّةَ أَوْ سَبْعَةَ عَشَرَ
شَهْرًا وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُحِبُّ أَنْ يُوَجَّهَ إِلَى
الْكَعْبَةِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَىْ: (قَدْ نَرَى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ
فِي السَّمَاءِ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ
الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ) فَوُجِّهَ نَحْوَ الْكَعْبَةِ وَكَانَ يُحِبُّ ذَلِكَ
فَصَلَّى رَجُلٌ مَعَهُ الْعَصْرَ ثُمَّ مَرَّ عَلَى قَوْمٍ مِنَ الأَنْصَارِ
وَهُمْ رُكُوعٌ فِي صَلاَةِ الْعَصْرِ نَحْوَ بَيْتِ الْمَقْدِسِ فَقَالَ هُوَ
يَشْهَدُ أَنَّهُ صَلَّى مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَّهُ قَدْ
وُجِّهَ إِلَى الْكَعْبَةِ . قَالَ فَانْحَرَفُوا وَهُمْ رُكُوعٌ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعُمَارَةَ بْنِ أَوْسٍ
وَعَمْرِو بْنِ عَوْفٍ الْمُزَنِيِّ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ
الْبَرَاءِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ
عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ .
বারআ ইবনু ‘আযিব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনায় আসার পর হতে ষোল অথবা
সতের মাস বাইতুল মুকাদ্দাসকে কিবলা করে নামায আদায় করলেন। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আন্তরিক বাসনা ছিল কাবার দিকে ফিরে নামায
আদায় করা। তারপর মহান আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ “তোমরা বারবার আকাশের
দিকে মুখ করে তাকানোকে আমরা দেখতে পাচ্ছি। তোমার আকাংখিত কিবলার দিকে আমরা তোমার মুখ
ফিরিয়ে দিচ্ছি। এখন হতে মসজিদে হারামের দিকে তোমর মুখ ফিরাও" (সূরাঃ
আল-বাকারা-১৪৪)। তিনি কা’বার দিকে মুখ ফিরালেন, আর তিনি এটাই চাচ্ছিলেন। এক বাক্তি
তাঁর সাথে আসরের নামায আদায়ের পর আনসার সম্প্রদায়ের একদল লোকের নিকট দিয়ে
যাচ্ছিলেন। তারা তখন বাইতুল মুকাদ্দাসকে সামনে রেখে আসরের নামাযের রুকূর মধ্যে
ছিলেন। লোকটি সাক্ষ্য দিয়ে বললেন যে, তিনি এই মাত্র রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে কাবার দিকে মুখ করে নামায আদায় করে এসেছেন। রাবী
বলেন, তারা রুকূর অবস্থাই ঘুরে গেলেন।
সহীহ্। সিফাতুস সালাত-(৫৬), ইরওয়া-(২৯০), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার, ইবনু আব্বাস, ‘উমারা ইবনু আওস, আমর ইবনু ‘আওফ ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস
বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৪১
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانُوا رُكُوعًا فِي صَلاَةِ الصُّبْحِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তারা তখন
ফজরের নামাযের রুকূতে ছিলেন।
সহীহ্। সিফাতুস সালাত-(৫৭), ইরওয়া-(২৯০), বুখারী ও মুসলিম।
আবু ‘ঈসা
বলেনঃ ইবনু উমারের এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪৪. অনুচ্ছেদঃ
পূর্ব ও পশ্চিমের
মাঝখানে কিবলা
৩৪২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي مَعْشَرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو،
عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قِبْلَةٌ "
.
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পূর্ব ও পশ্চিমের
মধ্যবর্তী দিকে কিবলা অবস্থিত।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১০১১)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৪৩
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي مَعْشَرٍ، مِثْلَهُ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ قَدْ رُوِيَ عَنْهُ، مِنْ غَيْرِ
هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي أَبِي مَعْشَرٍ
مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ وَاسْمُهُ نَجِيحٌ مَوْلَى بَنِي هَاشِمٍ . قَالَ
مُحَمَّدٌ لاَ أَرْوِي عَنْهُ شَيْئًا وَقَدْ رَوَى عَنْهُ النَّاسُ . قَالَ
مُحَمَّدٌ وَحَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ الْمَخْرَمِيِّ عَنْ عُثْمَانَ
بْنِ مُحَمَّدٍ الأَخْنَسِيِّ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
أَقْوَى مِنْ حَدِيثِ أَبِي مَعْشَرٍ وَأَصَحُّ .
ইয়াহহিয়া ইবনু মূসা
থেকে বর্ণিতঃ
ইয়াহহিয়া ইবনু মূসা তিনি মুহাম্মাদ ইবনু আবী মা’শার হতে অনুরূপ
বর্ণনা করেছেন।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আবূ হুরায়রা হাদীসটি বিভিন্ন সুত্রে বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন বিশেষজ্ঞ আবূ মা’শারের
স্মরণশক্তি সম্পর্কে ওজর তুলেছেন। আবূ মাশারের নাম নাজীহ। মুহাম্মাদ বলেন, আমি তার
নিকট হতে কিছু বর্ণনা করিনা, অন্য লোকেরা তার নিকট হতে বর্ণনা করে থাকে। মুহাম্মাদ
বলেন, আবূ মা’শারের বর্ণনার চেয়ে আবদুল্লাহ ইবনু জাফরের বর্ণনাটি বেশি শক্তিশালী এবং
সহীহ্।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৩৪৪
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ بَكْرٍ الْمَرْوَزِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعَلَّى بْنُ مَنْصُورٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ الْمَخْرَمِيُّ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ
مُحَمَّدٍ الأَخْنَسِيِّ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ
وَالْمَغْرِبِ قِبْلَةٌ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَإِنَّمَا قِيلَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ الْمَخْرَمِيُّ
لأَنَّهُ مِنْ وَلَدِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ غَيْرِ
وَاحِدٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " مَا بَيْنَ
الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قِبْلَةٌ " . مِنْهُمْ عُمَرُ بْنُ
الْخَطَّابِ وَعَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ وَابْنُ عَبَّاسٍ . وَقَالَ ابْنُ
عُمَرَ إِذَا جَعَلْتَ الْمَغْرِبَ عَنْ يَمِينِكَ وَالْمَشْرِقَ عَنْ يَسَارِكَ
فَمَا بَيْنَهُمَا قِبْلَةٌ إِذَا اسْتَقْبَلْتَ الْقِبْلَةَ . وَقَالَ ابْنُ
الْمُبَارَكِ " مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قِبْلَةٌ "
. هَذَا لأَهْلِ الْمَشْرِقِ . وَاخْتَارَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ
التَّيَاسُرَ لأَهْلِ مَرْوٍ .
আবু হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে কিবলা অবস্থিত।
সহীহ্। দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবু ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ‘আব্দুল্লাহ ইবনু জাফর মাখরামী এজন্য বলা হয়ে থাকে যে,
তিনি মিসওয়ার ইবনু মাখরামার সন্তান। এ হাদীসটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর একাধিক সাহাবা বর্ণনা করেছেন। ‘উমার ঈবনুল খাত্তাব, আলি ইবনু আবূ তালিব
ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তাদের অন্তর্ভূক্ত। ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেনঃ
“যখন তুমি পশ্চিমকে ডান দিকে এবং পূর্বকে বাম দিকে রেখে কিবলামুখী হয়ে দাড়াও তখন এই
উভয় দিকের মধ্যবর্তী দিকই কিবলার দিক”।
ইবনূল মুবারাক বলেন, পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যবর্তী দিকগুলো প্রাচ্যবাসীদের কিবলা। তিনি
মরুবাসীদের জন্য বাঁ দিক কিবলা নির্দিষ্ট করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪৫. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তি
বৃষ্টি–বাদলের কারণে কিবলা ব্যতীত অন্যদিকে ফিরে নামায আদায় করে
৩৪৫
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا أَشْعَثُ بْنُ سَعِيدٍ
السَّمَّانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم فِي سَفَرٍ فِي لَيْلَةٍ مُظْلِمَةٍ فَلَمْ نَدْرِ أَيْنَ الْقِبْلَةُ
فَصَلَّى كُلُّ رَجُلٍ مِنَّا عَلَى حِيَالِهِ فَلَمَّا أَصْبَحْنَا ذَكَرْنَا
ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلَ: (فَأَيْنَمَا تُولُّوا
فَثَمَّ وَجْهُ الله) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ
بِذَاكَ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَشْعَثَ السَّمَّانِ . وَأَشْعَثُ
بْنُ سَعِيدٍ أَبُو الرَّبِيعِ السَّمَّانُ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ . وَقَدْ
ذَهَبَ أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا . قَالُوا إِذَا صَلَّى فِي
الْغَيْمِ لِغَيْرِ الْقِبْلَةِ ثُمَّ اسْتَبَانَ لَهُ بَعْدَ مَا صَلَّى أَنَّهُ
صَلَّى لِغَيْرِ الْقِبْلَةِ فَإِنَّ صَلاَتَهُ جَائِزَةٌ . وَبِهِ يَقُولُ
سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
‘আব্দুল্লাহ ইবনু
‘আমির ইবনু রবী’আ (রাঃ) হতে তাঁর পিতার থেকে বর্ণিতঃ
, তিনি (‘আমির) বলেন,
এক অন্ধকার রাতে নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সফরে
ছিলাম। কিবলা যে কোন দিকে তা আমরা ঠিক করতে পারলাম না। আমাদের প্রত্যেকে যার যার
সামনের দিকে ফিরে নামায আদায় করলাম। সকাল বেলা আমরা এ ঘটনা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বললাম। এ প্রসঙ্গে এই আয়াত অবতীর্ণ হল-“পূর্ব ও পশ্চিম সবই আল্লাহ
তা’আলার। যে দিকে তুমি মুখ ফিরাবে, সেদিকেই আল্লাহ তা’আলার চেহারা বিরাজমান”-(সূরা
আল-বাকারা-১১৫)।
হাসান। ইবনু মাজাহ-(১০২০)।
আবু ‘ঈসা
বলেন–এ হাদীসের সনদ খুব একটা শক্তিশালী নয়। এ হাদীসের রাবি আশ’আস ইবনু সা’ঈদ একজন দুর্বল
রাবি। আমরা শুধু তাঁর মাধ্যমেই হাদীসটি জেনেছি।
বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, মেঘের কারণে কিবলা ছাড়া অন্য দিকে নামায আদায় করা হল, তারপর
নামায শেষে জানা গেল যে, কিবলার দিক ব্যতীত অন্য দিকে ফিরে নামায আদায় করা হয়েছে, এ
অবস্থায় নামায নির্ভুল হবে। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, আহমাদ ও ইসহাক এ মতের সমর্থক।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৪৬. অনুচ্ছেদঃ
কোথায় এবং কিসের দিকে
ফিরে নামায আদায় করা মাকরুহ
৩৪৬
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا الْمُقْرِئُ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
أَيُّوبَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ جَبِيرَةَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ الْحُصَيْنِ، عَنْ
نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى أَنْ
يُصَلَّى فِي سَبْعَةِ مَوَاطِنَ فِي الْمَزْبَلَةِ وَالْمَجْزَرَةِ
وَالْمَقْبُرَةِ وَقَارِعَةِ الطَّرِيقِ وَفِي الْحَمَّامِ وَفِي مَعَاطِنِ
الإِبِلِ وَفَوْقَ ظَهْرِ بَيْتِ اللَّهِ " .
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাতটি জায়গায় নামায আদায় করতে নিষেধ করেছেনঃ
ময়লা রাখার স্থানে, কসাইখানায়, কবরস্থানে, পথিমধ্যে, গোসলখানায়, উট (পশু)-শালায়
এবং বাইতুল্লাহর (কাবা ঘরের) ছাদে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ(৭৪৬)।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৪৭
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ زَيْدِ
بْنِ جَبِيرَةَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ حُصَيْنٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي مَرْثَدٍ وَجَابِرٍ وَأَنَسٍ . أَبُو مَرْثَدٍ اسْمُهُ
كَنَّازُ بْنُ حُصَيْنٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ
إِسْنَادُهُ لَيْسَ بِذَاكَ الْقَوِيِّ . وَقَدْ تُكُلِّمَ فِي زَيْدِ بْنِ
جَبِيرَةَ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَزَيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ
الْكُوفِيُّ أَثْبَتُ مِنْ هَذَا وَأَقْدَمُ وَقَدْ سَمِعَ مِنَ ابْنِ عُمَرَ .
وَقَدْ رَوَى اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عُمَرَ الْعُمَرِيِّ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنْ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم مِثْلَهُ . وَحَدِيثُ دَاوُدَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَشْبَهُ وَأَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ اللَّيْثِ
بْنِ سَعْدٍ . وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ الْعُمَرِيُّ ضَعَّفَهُ بَعْضُ
أَهْلِ الْحَدِيثِ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ مِنْهُمْ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ
الْقَطَّانُ .
আলী ইবনু হুজুর
থেকে বর্ণিতঃ
আলী ইবনু হুজুর স্বীয়
সনদে ইবনু উমর (রাঃ) এর সুত্রে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নিকট হতে উপরের হাদীসের মতই হাদীস বর্ণনা করেছেন।
যঈফ, দেখুন পূর্বের হাদীস।
এ অনুচ্ছেদে আবু মারসাদ, জাবির ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন,
ইবনু উমারের হাদীসের সনদ খুব একটা শক্তিশালী নয়। যাইদ ইবনু জাবিরার স্মরণশক্তির
সমালোচনা করা হয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ যাইদ ইবনু যুবাইর আল-কুফী যাইদ ইবনু জাবিরার
তুলনায় অধিক বিশস্ত ও অধিক বয়স্ক আর তিনি ইব্ন উমার হতে হাদিস শুনেছেন। লাইস ইবনু
সা’দ-আব্দুল্লাহ ইব্ন উমর আল-উমারির সনদ পরম্পরায় ইবনু উমারের হাদীসটি বর্ণনা
করেছেন। দাউদের হাদীস নাফী’ হতে তিনি ইবনু উমার হতে তিনি রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। এই বর্ণনাটি লাইসের বর্ণনা
চেয়ে অধিক সহিহ। কিছু হাদীস বিশারদ আল-উমারির স্মরণশক্তির সমালোচনা করেছেন এবং
বলেছেন, তার স্মৃতিশক্তি অত্যন্ত দুর্বল। সমালোচকদের মধ্যে ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ
আল-কাত্তান অন্যতম।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৪৭. অনুচ্ছেদঃ
ছাগলের ঘরে ও উটশালায়
নামায আদায় করা
৩৪৮
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ،
عَنْ هِشَامٍ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " صَلُّوا فِي مَرَابِضِ الْغَنَمِ وَلاَ
تُصَلُّوا فِي أَعْطَانِ الإِبِلِ " .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ছাগলের ঘরে নামায
আদায় করতে পার কিন্তু উটশালায় নামায আদায় করবেনা।
সহীহ্। ইবনে মাজাহ-(৭৬৮)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৪৯
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ،
عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ أَوْ بِنَحْوِهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ وَالْبَرَاءِ وَسَبْرَةَ بْنِ مَعْبَدٍ الْجُهَنِيِّ
وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَعَلَيْهِ الْعَمَلُ عِنْدَ
أَصْحَابِنَا وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَحَدِيثُ أَبِي حَصِينٍ
عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَرَوَاهُ إِسْرَائِيلُ عَنْ أَبِي حَصِينٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ مَوْقُوفًا وَلَمْ يَرْفَعْهُ . وَاسْمُ أَبِي حَصِينٍ
عُثْمَانُ بْنُ عَاصِمٍ الأَسَدِيُّ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন......উপরের
হাদীসের অনুরূপ।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আবূ হুরায়রার হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ অনুচ্ছেদে জাবির ইবনু সামুরা, বারাআ, সাবরা
ইবনু মাবাদ, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল, ইবনু ‘উমার ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আমাদের সঙ্গীরা এই হাদীস অনুসারে আমল করেন। আহমাদ এবং ইসহাকও একই
রকম কথা বলেন। আবূ হুরায়রা হতে আবূ সালিহ’র সূত্রে হাসীন কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি গারীব।
এ হাদীসটি ইসরাঈল আবূ হাসীন হতে তিনি আবূ সালিহ হতে তিনি আবূ হুরায়রা হতে মাওকূফরূপে
বর্ণনা করেছেন। আবূ হাসীনের নাম উসমান ইবনু ‘আসিম।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৩৫০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ
أَبِي التَّيَّاحِ الضُّبَعِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي فِي مَرَابِضِ الْغَنَمِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو التَّيَّاحِ الضُّبَعِيُّ اسْمُهُ
يَزِيدُ بْنُ حُمَيْدٍ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বকরীশালায় নামায আদায় করতেন।
সহীহ্। বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেন এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪৮. অনুচ্ছেদঃ
চতুস্পদ জন্তুর পিঠে থাকা
কালে জন্তুটি যেদিকে মুখ করে আছে সেদিকে ফিরে নামায আদায় করা
৩৫১
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَيَحْيَى بْنُ آدَمَ، قَالاَ
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ بَعَثَنِي
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي حَاجَةٍ فَجِئْتُ وَهُوَ يُصَلِّي عَلَى
رَاحِلَتِهِ نَحْوَ الْمَشْرِقِ وَالسُّجُودُ أَخْفَضُ مِنَ الرُّكُوعِ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَعَامِرِ بْنِ
رَبِيعَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ
رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ جَابِرٍ . وَالْعَمَلُ عَلَى
هَذَا عِنْدَ عَامَّةِ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ نَعْلَمُ بَيْنَهُمُ اخْتِلاَفًا .
لاَ يَرَوْنَ بَأْسًا أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ عَلَى رَاحِلَتِهِ تَطَوُّعًا حَيْثُمَا
كَانَ وَجْهُهُ إِلَى الْقِبْلَةِ أَوْ غَيْرِهَا .
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে কোন এক কাজে পাঠালেন। আমি
ফিরে এসে দেখি, তিনি তাঁর সওয়ারীর উপর পূর্ব দিকে ফিরে নামায আদায় করেছেন এবং
সিজদাতে রুকূ অপেক্ষা বেশী নীচু হচ্ছেন।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(১১১২), বুখারী ও মুসলিম সিজদার কথা উল্লেখ না করে; বুখারী,
কাজে পাঠানো শব্দ ব্যতীত।
এ অনুচ্ছেদে
আনাস, ইবনু ‘উমার, আবূ সা’ঈদ ও ‘আমির ইবনু রাবী’আহ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
‘ঈসা বলেনঃ জাবিরের হাদীসটি হাসান সহীহ। উল্লেখিত হাদীসটি জাবিরের নিকট হতে একাধিক
সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
সব বিশেষজ্ঞ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। আমরা তাদের মধ্যে এ ব্যপারে কোনরূপ অমিল খুঁজে
পাইনি। জন্তুযান যানবাহন যেদিকে মুখ করে থাকে আরোহী সেদিকে ফিরেই নফল নামায আদায় করতে
পারে, এই বিষয়ে তাদের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, চাই জন্তুযান যানবাহন কিবলার
দিকে হোক বা অন্যদিকে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪৯. অনুচ্ছেদঃ
জন্তুযানের দিকে ফিরে
নামায আদায় করা
৩৫২
حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ عُبَيْدِ
اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم صَلَّى إِلَى بَعِيرِهِ أَوْ رَاحِلَتِهِ وَكَانَ يُصَلِّي عَلَى
رَاحِلَتِهِ حَيْثُمَا تَوَجَّهَتْ بِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ قَوْلُ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ
بِالصَّلاَةِ إِلَى الْبَعِيرِ بَأْسًا أَنْ يَسْتَتِرَ بِهِ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উট বা বাহনের দিকে (বাহন সামনে রেখে) নামায আদায়
করেছেন। জন্তুযান যানবাহন তাঁকে নিয়ে যেদিকে চলত সেদিকে ফিরেই (ফরয ছাড়া অন্যান্য)
নামায আদায় করতেন।
সহীহ্। সিফাতুস সালাত–(৫৫), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৬৯১, ১১০৯), বুখারী ও মুসলিম,
বিচ্ছিন্নভাবে।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্। কিছু বিশেষজ্ঞ বলেছেন, উটকে অন্তরাল বানিয়ে (নামাযীর সামনে
রেখে ) নামায আদায় করতে কোন অপরাধ নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫০. অনুচ্ছেদঃ
রাতের খাবার উপস্থিত
হওয়ার পর নামায শুরু হলে প্রথমে খাবার খেয়ে নাও
৩৫৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ
أَنَسٍ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا
حَضَرَ الْعَشَاءُ وَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَابْدَءُوا بِالْعَشَاءِ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَسَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ
وَأُمِّ سَلَمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَعَلَيْهِ الْعَمَلُ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَابْنُ عُمَرَ .
وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ يَقُولاَنِ يَبْدَأُ بِالْعَشَاءِ وَإِنْ
فَاتَتْهُ الصَّلاَةُ فِي الْجَمَاعَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ
الْجَارُودَ يَقُولُ سَمِعْتُ وَكِيعًا يَقُولُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ يَبْدَأُ
بِالْعَشَاءِ إِذَا كَانَ طَعَامًا يُخَافُ فَسَادُهُ . وَالَّذِي ذَهَبَ
إِلَيْهِ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ أَشْبَهُ بِالاِتِّبَاعِ وَإِنَّمَا أَرَادُوا أَنْ لاَ يَقُومَ
الرَّجُلُ إِلَى الصَّلاَةِ وَقَلْبُهُ مَشْغُولٌ بِسَبَبِ شَيْءٍ . وَقَدْ
رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ قَالَ لاَ نَقُومُ إِلَى الصَّلاَةِ وَفِي
أَنْفُسِنَا شَيْءٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন রাতের খাবার পরিবেশন করা হয় এবং নামাযের ইকামতও
দেওয়া হয়, তখন আগে খাবার খেয়ে নাও।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ –(৯৩৩), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আয়িশাহ্, ইবনু ‘উমার, সালামা ইবনুল আকওয়া ও উম্মু সালামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের
একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবা যেমন, আবূ বাক্র, ‘উমার ও ইবনু ‘উমার (রাঃ) এ হাদীস অনুসারে আমল
করেছেন। ইমাম আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম মত দিয়েছেন। তারা উভয়েই বলেছেনঃ যদি নামাযের
জামাআতও হারাবার আশংকা থাকে তবুও আগে খাবার খেয়ে নিবে। ওয়াকী (রহঃ) এ হাদীসের ব্যাপারে
বলেছেন, যদি খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, তবে প্রথমে খেয়ে নিবে। নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু সাহাবা উল্লেখিত হাদীসের এই মর্ম গ্রহণ করেছেন যে, মন
যদি কোন জিনিস নিয়ে চিন্তিত থাকে তবে তখন নামায আদায় করবে না। এই মতের অনুসরণ করাই
উত্তম। খাবারের ব্যাপারটাও একইরকম, সুতরাং আহারই আগে খেয়ে নিবে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস
(রাঃ) বলেছেন “মনের কোন চিন্তা বা দুশ্চিন্তা ব্যস্ততা থাকলে আমরা নামাযে দাঁড়াইনা।
”
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৫৪
وَرُوِيَ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ "
إِذَا وُضِعَ الْعَشَاءُ وَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَابْدَءُوا بِالْعَشَاءِ
" . قَالَ وَتَعَشَّى ابْنُ عُمَرَ وَهُوَ يَسْمَعُ قِرَاءَةَ الإِمَامِ
. قَالَ حَدَّثَنَا بِذَلِكَ هَنَّادٌ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ عَنْ عُبَيْدِ
اللَّهِ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ “যখন
রাতের খাবার উপস্থিত করা হয় এবং নামাযেরও ইকামত দেওয়া তখন প্রথমে খাবার খেয়ে নাও। ”
সহীহ্। বুখারী ও মুসলিম।
ইমামের
কিরাআতের শব্দ শুনার পরও ইবনু ‘উমার (রাঃ) “প্রথমে খাবার খেয়ে নিতেন।”
তিরমিযী বলেনঃ আমাদের ইহা বর্ণনা করেছেন হান্নাদ, তিনি ‘আবদাহ হতে, তিনি ‘উবাইদুল্লাহ
হতে, তিনি নাফি’ হতে, তিনি ইবনু ‘উমার হতে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫১. অনুচ্ছেদঃ
তন্দ্রা অবস্থায়
নামায আদায় করা উচিত নয়
৩৫৫
حَدَّثَنَا
هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ
الْكِلاَبِيُّ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ،
قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا نَعَسَ
أَحَدُكُمْ وَهُوَ يُصَلِّي فَلْيَرْقُدْ حَتَّى يَذْهَبَ عَنْهُ النَّوْمُ
فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا صَلَّى وَهُوَ يَنْعَسُ لَعَلَّهُ يَذْهَبُ يَسْتَغْفِرُ
فَيَسُبَّ نَفْسَهُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَأَبِي
هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নামাযরত অবস্থায় তোমাদের
কারও ঘুম আসলে সে যেন প্রথমে ঘুমিয়ে নেয়। তাতে তার ঘুমের আবেশ কেটে যাবে। কেননা সে
যদি তন্দ্রা অবস্থায় নামায আদায় করে তবে এরূপ হওয়া মোটেই অসম্ভব নয় যে, সে গুনাহের
জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে গিয়ে নিজেকে গালি দিবে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৩৭০), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আনাস ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আয়িশাহ্’র হাদীসটি
হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫২. অনুচ্ছেদঃ
কোন সম্প্রদায়ের সাথে
দেখা-সাক্ষাত করতে গিয়ে তাদের ইমাম হওয়া উচিত নয়
৩৫৬
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَهَنَّادٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ أَبَانَ
بْنِ يَزِيدَ الْعَطَّارِ، عَنْ بُدَيْلِ بْنِ مَيْسَرَةَ الْعُقَيْلِيِّ، عَنْ
أَبِي عَطِيَّةَ، رَجُلٍ مِنْهُمْ قَالَ كَانَ مَالِكُ بْنُ الْحُوَيْرِثِ
يَأْتِينَا فِي مُصَلاَّنَا يَتَحَدَّثُ فَحَضَرَتِ الصَّلاَةُ يَوْمًا فَقُلْنَا
لَهُ تَقَدَّمْ . فَقَالَ لِيَتَقَدَّمْ بَعْضُكُمْ حَتَّى أُحَدِّثَكُمْ لِمَ
لاَ أَتَقَدَّمُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ "
مَنْ زَارَ قَوْمًا فَلاَ يَؤُمَّهُمْ وَلْيَؤُمَّهُمْ رَجُلٌ مِنْهُمْ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَغَيْرِهِمْ قَالُوا صَاحِبُ الْمَنْزِلِ أَحَقُّ بِالإِمَامَةِ مِنَ الزَّائِرِ
. وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا أَذِنَ لَهُ فَلاَ بَأْسَ أَنْ
يُصَلِّيَ بِهِ . وَقَالَ إِسْحَاقُ بِحَدِيثِ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ
وَشَدَّدَ فِي أَنْ لاَ يُصَلِّيَ أَحَدٌ بِصَاحِبِ الْمَنْزِلِ وَإِنْ أَذِنَ
لَهُ صَاحِبُ الْمَنْزِلِ . قَالَ وَكَذَلِكَ فِي الْمَسْجِدِ لاَ يُصَلِّي
بِهِمْ فِي الْمَسْجِدِ إِذَا زَارَهُمْ يَقُولُ لِيُصَلِّ بِهِمْ رَجُلٌ مِنْهُمْ
.
আবূ আতীয়া (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তাদের মধ্যকার এক
ব্যক্তি বলল, মালিক ইবনু হুয়াইরিস (রাঃ) আমাদের নামাযের জায়গায় (মসজিদে) এসে আমদের
সাথে আলাপ-আলোচনা করতেন। একদিন নামাযের ওয়াক্ত হয়ে গেল। আমরা তাঁকে বললাম সামনে
যান, (ইমামতি করুন)। তিনি বললেন, তোমাদের কেউ সামনে যাক। আমি সামনে না যাওয়ার কারন
তোমাদের বলব। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ
কোন ব্যক্তি কোন কাওমের সাথে করতে গিয়ে সে যেন ইমামতি না করে, বরং তাদের মধ্যেরই
কেউ যেন ইমামতি করে।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৬০৯), মালিকের ঘটনা উল্লেখ ব্যতীত।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ
সাহাবা ও অন্যান্যরা এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাঁরা বলেছেন, ইমামতি করার ব্যাপারে
বাড়ীওয়ালাই সাক্ষাতপ্রার্থীর চেয়ে বেশী হকদার। কিছু মনীষী বলেছেন, বাড়ির মালিকের অনুমতি
সাপেক্ষে মেহমানের ইমামতি হওয়াতে কোন অপরাধ নেই। ইমাম ইসহাক কঠোরতার সাথে বলেছেন, বাড়িওয়ালা
অনুমতি দিলেও মেহমানের ইমামতি করা উচিত নয়। ঠিক তেমনি ভাবে মসজিদেও ইমামতি করবে না,
বরং তাদেরই কেউ ইমামতি করা উচিত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৩. অনুচ্ছেদঃ
ইমামের কেবল নিজের
জন্য দু’আ করা মাকরূহ
৩৫৭
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنِي حَبِيبُ
بْنُ صَالِحٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ شُرَيْحٍ، عَنْ أَبِي حَىٍّ الْمُؤَذِّنِ
الْحِمْصِيِّ، عَنْ ثَوْبَانَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" لاَ يَحِلُّ لاِمْرِئٍ أَنْ يَنْظُرَ فِي جَوْفِ بَيْتِ امْرِئٍ حَتَّى
يَسْتَأْذِنَ فَإِنْ نَظَرَ فَقَدْ دَخَلَ وَلاَ يَؤُمَّ قَوْمًا فَيَخُصَّ
نَفْسَهُ بِدَعْوَةٍ دُونَهُمْ فَإِنْ فَعَلَ فَقَدْ خَانَهُمْ وَلاَ يَقُومُ
إِلَى الصَّلاَةِ وَهُوَ حَقِنٌ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ وَأَبِي أُمَامَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ثَوْبَانَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ صَالِحٍ عَنِ
السَّفْرِ بْنِ نُسَيْرٍ عَنْ يَزِيدَ بْنِ شُرَيْحٍ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ يَزِيدَ بْنِ
شُرَيْحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَكَأَنَّ
حَدِيثَ يَزِيدَ بْنِ شُرَيْحٍ عَنْ أَبِي حَىٍّ الْمُؤَذِّنِ عَنْ ثَوْبَانَ فِي
هَذَا أَجْوَدُ إِسْنَادًا وَأَشْهَرُ .
সাওবান (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: বাড়ির মালিকের অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তির
পক্ষেই তার ঘরের মধ্যে তাকানো জায়িয নয়। যদি সে তাকায়, তবে সে যেন বিনা অনুমতিতেই
তার ঘরে ঢুকলো। কোন ব্যক্তির পক্ষেই এটা শোভনীয় নয় যে, সে লোকদের ইমামতি করে এবং
তাদেরকে বাদ দিয়ে শুধু নিজের জন্য দু’আ করে। যদি সে এমনটি করে তবে সে যেন শঠতা
(বিশ্বাসভংগ) করল। প্রাকৃতিক প্রয়োজনের বেগ নিয়েও কেউ যেন নামাযে না দাঁড়ায়।
-প্রাকৃতিক প্রয়োজনের বেগ নিয়ে কেউ যেন নামাযে না দাঁড়ায়। হাদীসের এই অংশটুকু বাদে
হাদীসটি যঈফ। যঈফ আবূ দাঊদ–(১১-১২)। হাদীসের শেষ অংশ “প্রাকৃতিক প্রয়োজনের বেগ
নিয়েও কেউ যেন নামাযে না দাঁড়ায়।” – এই বাক্যটি সহীহ্। ইবনু মাজাহ (৬১৭)
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরায়রা ও আবূ উমামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেন: সাওবানের হাদীসটি
হাসান। উল্লেখিত হাদীসটি আলাদা আলাদাভাবে আবূ উমামা ও আবূ হুরায়রা (রাঃ)-ও রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে বর্ণনা করেছেন। তবে সাওবানের বর্ণনাসূত্রটি
খুব বেশি মজবুত এবং বিখ্যাত।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
১৫৪. অনুচ্ছেদঃ
লোকদের অসন্তোষ
সত্ত্বেও তাদের ইমামতি করা
৩৫৮
حَدَّثَنَا
عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ وَاصِلِ بْنِ عَبْدِ الأَعْلَى الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْقَاسِمِ الأَسَدِيُّ، عَنِ الْفَضْلِ بْنِ دَلْهَمٍ، عَنِ
الْحَسَنِ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَةً رَجُلٌ أَمَّ قَوْمًا وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ
وَامْرَأَةٌ بَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَلَيْهَا سَاخِطٌ وَرَجُلٌ سَمِعَ حَىَّ عَلَى
الْفَلاَحِ ثُمَّ لَمْ يُجِبْ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
وَطَلْحَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَبِي أُمَامَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ لاَ يَصِحُّ لأَنَّهُ قَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ
الْحَسَنِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَمُحَمَّدُ بْنُ الْقَاسِمِ تَكَلَّمَ فِيهِ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ وَضَعَّفَهُ
وَلَيْسَ بِالْحَافِظِ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ
يَؤُمَّ الرَّجُلُ قَوْمًا وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ فَإِذَا كَانَ الإِمَامُ غَيْرَ
ظَالِمٍ فَإِنَّمَا الإِثْمُ عَلَى مَنْ كَرِهَهُ . وَقَالَ أَحْمَدُ
وَإِسْحَاقُ فِي هَذَا إِذَا كَرِهَ وَاحِدٌ أَوِ اثْنَانِ أَوْ ثَلاَثَةٌ فَلاَ
بَأْسَ أَنْ يُصَلِّيَ بِهِمْ حَتَّى يَكْرَهَهُ أَكْثَرُ الْقَوْمِ .
হাসান (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস
(রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিন
ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন। তারা হলঃ যে ব্যক্তি মুক্তাদীদের অপছন্দ সত্ত্বেও তাদের
ইমামতি করে; যে নারী স্বামীর বিরাগ নিয়ে রাত কাটায় এবং যে ব্যক্তি ‘হাইয়্যা আলাল
ফালাহ’ শুনেও তাতে সাড়া দেয় না (জামা’আতে উপস্থিত হয় না)।
সনদ খুবই দুর্বল
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু আব্বাস, তালহা, আবদুল্লাহ ইবনু আমর ও আবূ উমামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি সহীহ নয়। কেননা এটি হাসানের সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে মুরসাল হিসাবেও বর্ণিত হয়েছে। তাছাড়া ইমাম আহমাদ
এ হাদীসের অধঃস্তন রাবী মুহাম্মাদ ইবনুল কাসিমের সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন, তিনি
হাদীস শাস্ত্রে যঈফ এবং তাঁর স্মরণ শক্তি মোটেই ধারালো নয়।
একদল বিশেষজ্ঞ বলেছেন, লোকেরা যদি ইমামকে খারাপ জানে তবে তাদের ইমামতি করা তার জন্য
মাকরূহ। কিন্তু ইমাম যদি যালিম না হয় তবে যারা তাকে খারাপ জানে তারা গুনাহগার হবে।
এ প্রসঙ্গে ইমাম আহমাদ ও ইসহাক বলেছেন, যদি এক, দুই অথবা তিনজন লোক তাকে খারাপ জানে
তবে তার ইমামতি করাতে কোন অপরাধ নেই। হ্যাঁ যদি বেশীর ভাগ মুক্তাদী তাকে খারাপ জানে
তবে তাদের ইমামতি করা তাঁর জন্য শ্রেয় হবে না।
হাদিসের মানঃখুবই দুর্বল
৩৫৯
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ، عَنْ
زِيَادِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ بْنِ الْمُصْطَلِقِ،
قَالَ كَانَ يُقَالُ أَشَدُّ النَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ اثْنَانِ
امْرَأَةٌ عَصَتْ زَوْجَهَا وَإِمَامُ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ . قَالَ
هَنَّادٌ قَالَ جَرِيرٌ قَالَ مَنْصُورٌ فَسَأَلْنَا عَنْ أَمْرِ الإِمَامِ
فَقِيلَ لَنَا إِنَّمَا عَنَى بِهَذَا أَئِمَّةً ظَلَمَةً فَأَمَّا مَنْ أَقَامَ
السُّنَّةَ فَإِنَّمَا الإِثْمُ عَلَى مَنْ كَرِهَهُ .
আমর ইবনুল হারিস
ইবনু মুস্তালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কথিত আছে,
দুই ব্যক্তির উপর সবচেয়ে ভয়াবহ শাস্তি হবেঃ যে নারী তার স্বামীর অবাধ্যাচরণ করে
এবং কোন গোত্রের ইমাম যাকে তারা অপছন্দ করে।
সনদ সহীহ্।
হান্নাদ
বলেন, জারীর বলেন যে, মানসূর বলেছেন, আমরা ইমাম প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। আমাদেরকে বলা
হল, এটা যালিম ইমাম সম্পর্কে বলা হয়েছে। যে ইমাম সুন্নাত (ইসলামী বিধান) কায়িম করে,
তাকে অপছন্দকারী গুনাহগার বলে গণ্য হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৬০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحَسَنِ، حَدَّثَنَا
الْحُسَيْنُ بْنُ وَاقِدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو غَالِبٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا
أُمَامَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثَةٌ
لاَ تُجَاوِزُ صَلاَتُهُمْ آذَانَهُمُ الْعَبْدُ الآبِقُ حَتَّى يَرْجِعَ
وَامْرَأَةٌ بَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَلَيْهَا سَاخِطٌ وَإِمَامُ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ
كَارِهُونَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ . وَأَبُو غَالِبٍ اسْمُهُ حَزَوَّرٌ .
আবূ উমামা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তিন ব্যক্তির নামায তাদের কান ডিঙ্গায়
না (কবূল হয় না)। পলায়নকারী দাস যে পর্যন্ত তার মালিকের নিকটে ফিরে না আসে; যে মহিলা
তার স্বামীর বিরাগ নিয়ে রাত কাটায় এবং যে ইমামকে তার সম্প্রদায়ের লোকেরা পছন্দ করে
না।
হাসান। মিশকাত–(১১২২)।
আবূ ‘ঈসা
বলেন: এ সূত্রে হাদীসটি হাসান গারীব। আবূ গালিবের নাম হাযাওয়ার।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৫৫. অনুচ্ছেদঃ
ইমাম যখন বসে নামায
আদায় করে তখন তোমরাও বসে নামায আদায় কর
৩৬১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ،
أَنَّهُ قَالَ خَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ فَرَسٍ فَجُحِشَ
فَصَلَّى بِنَا قَاعِدًا فَصَلَّيْنَا مَعَهُ قُعُودًا ثُمَّ انْصَرَفَ فَقَالَ
" إِنَّمَا الإِمَامُ أَوْ إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ فَإِذَا
كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا
وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ فَقُولُوا رَبَّنَا وَلَكَ
الْحَمْدُ وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا وَإِذَا صَلَّى قَاعِدًا فَصَلُّوا قُعُودًا
أَجْمَعُونَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ
وَجَابِرٍ وَابْنِ عُمَرَ وَمُعَاوِيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَنَسٍ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَّ عَنْ فَرَسٍ فَجُحِشَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ مِنْهُمْ جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَأُسَيْدُ بْنُ
حُضَيْرٍ وَأَبُو هُرَيْرَةَ وَغَيْرُهُمْ . وَبِهَذَا الْحَدِيثِ يَقُولُ
أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا صَلَّى الإِمَامُ
جَالِسًا لَمْ يُصَلِّ مَنْ خَلْفَهُ إِلاَّ قِيَامًا فَإِنْ صَلَّوْا قُعُودًا
لَمْ تُجْزِهِمْ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَمَالِكِ بْنِ أَنَسٍ
وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক
সময়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোড়ার পিঠ হতে পড়ে গিয়ে আহত
হলেন। তিনি বসে বসে আমাদের নামায আদায় করালেন, আমরাও তাঁর সাথে বসে বসে নামায আদায়
করলাম। নামায হতে ফিরে তিনি বললেনঃ ইমাম এজন্যই নিযুক্ত করা হয় যাতে তার অনুসরণ করা
হয়। যখন সে আল্লাহু আকবার বলবে তখন তোমরাও তাকবীর বলবে, যখন সে রুকূতে যাবে তোমরাও
রুকূতে যাবে; যখন সে মাথা তুলবে তোমরাও মাথা তুলবে; যখন সে ‘সামিআল্লাহু লিমান
হামিদাহ’ বলে তোমরা তখন ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’ বল; যখন তিনি সাজদাহ্তে যান
তোমরাও সিজদায় যাও; যখন তিনি বসে নামায আদায় করেন তোমরাও সবাই বসে নামায আদায় কর।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(১২৩৮), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আয়িশাহ্, আবূ হুরায়রা, জাবির, ইবনু ‘উমার ও মু’আবিয়া (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন: আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ্। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
কিছু সাহাবী এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাদের মধ্যে জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ, উসাইদ
ইবনু হুযাইর, আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও অন্যান্যরা রয়েছেন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক একই রকম কথা
বলেছেন। অপর একদল বিদ্বান বলেছেন, ইমাম বসে নামায আদায় করলেও মুক্তাদীগণ দাঁড়িয়ে নামায
আদায় করবে। যদি তারা বসে নামায আদায় করে তবে তাদের নামায হবে না। ইমাম সুফিয়ান সাওরী,
মালিক ইবনু আনাস, ইবনুল মুবারাক ও শাফিঈ একথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৬. অনুচ্ছেদঃ
একই বিষয় সম্পর্কে
৩৬২
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ بْنُ سَوَّارٍ، عَنْ شُعْبَةَ،
عَنْ نُعَيْمِ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَلْفَ أَبِي
بَكْرٍ فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ قَاعِدًا . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " إِذَا صَلَّى الإِمَامُ
جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا " . وَرُوِيَ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم خَرَجَ فِي مَرَضِهِ وَأَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ فَصَلَّى
إِلَى جَنْبِ أَبِي بَكْرٍ وَالنَّاسُ يَأْتَمُّونَ بِأَبِي بَكْرٍ وَأَبُو بَكْرٍ
يَأْتَمُّ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرُوِيَ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم صَلَّى خَلْفَ أَبِي بَكْرٍ قَاعِدًا . وَرُوِيَ عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى خَلْفَ أَبِي بَكْرٍ
وَهُوَ قَاعِدٌ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে রোগে অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন ঐ
রোগে তিনি আবূ বাকার (রাঃ)–এর পিছনে বসে বসে নামায আদায় করেছেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২৩২), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ ‘আয়িশাহ্’র হাদীসটি হাসান, সহীহ্ গারীব।
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে আরো বর্ণিত আছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
“ইমাম যখন বসে নামায আদায় করে, তখন তোমরাও বসে নামায আদায় কর।”
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে আরো বর্ণিত আছে, “নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোগাক্রান্ত
অবস্থায় মসজিদে আসলেন। আবূ বাকার (রাঃ) তখন লোকদের নামায পড়াচ্ছিলেন। তিনি আবূ বাকারের
পাশে বসে নামায আদায় করলেন। লোকেরা আবূ বাকারের অনুসরণে নামায আদায় করলেন” আর আবূ বাকার
(রাঃ) রাসূলের অনুসরণ করলেনঃ
আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে আরো বর্ণিত আছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বাকারের
পিছনে বসে বসে নামায আদায় করেছেন।
একইভাবে আনাস (রাঃ) হতেও বর্ণিত আছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ
বাকার (রাঃ)-এর পিছনে বসে বসে নামায আদায় করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৬৩
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي زِيَادٍ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ بْنُ سَوَّارٍ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَلْحَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ،
قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي مَرَضِهِ خَلْفَ أَبِي
بَكْرٍ قَاعِدًا فِي ثَوْبٍ مُتَوَشِّحًا بِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَهَكَذَا رَوَاهُ يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ عَنْ
حُمَيْدٍ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ . وَقَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ
حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ ثَابِتٍ . وَمَنْ ذَكَرَ
فِيهِ عَنْ ثَابِتٍ فَهُوَ أَصَحُّ .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোগাক্রান্ত অবস্থায় এক কাপড় পরে
আবূ বাকার (রাঃ)-এর পিছনে বসে বসে নামায আদায় করেছেন।
সহীহ। তা’লীকাত হাস্সান-(৩/২৮৩/২১২২)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্। অনুরূপভাবে ইয়াহইয়া ইবনু আইয়ূব বর্ণনা করেছেন হুমাইদ হতে,
তিনি সাবিত হতে তিনি আনাস হতে। আরো কয়েকটি সুত্রে এ হাদীসটি আনাস (রাঃ)-এর নিকট হতে
বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু সেসব বর্ণনায় সাবিতের নাম উল্লেখ করা হয়নি। যেসব বর্ণনাকারী সাবিতের
মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন, তাদের সুত্রটিই সবচাইতে সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৭. অনুচ্ছেদঃ
ইমাম যদি দু’রাক’আত
আদায় করে ভুলে দাঁড়িয়ে যায়
৩৬৪
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي لَيْلَى،
عَنِ الشَّعْبِيِّ، قَالَ صَلَّى بِنَا الْمُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةَ فَنَهَضَ فِي
الرَّكْعَتَيْنِ فَسَبَّحَ بِهِ الْقَوْمُ وَسَبَّحَ بِهِمْ فَلَمَّا صَلَّى
بَقِيَّةَ صَلاَتِهِ سَلَّمَ ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ وَهُوَ جَالِسٌ
ثُمَّ حَدَّثَهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَلَ بِهِمْ مِثْلَ
الَّذِي فَعَلَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ وَسَعْدٍ
وَعَبْدِ اللَّهِ ابْنِ بُحَيْنَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ الْمُغِيرَةِ
بْنِ شُعْبَةَ قَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ
. قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي ابْنِ أَبِي
لَيْلَى مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ . قَالَ أَحْمَدُ لاَ يُحْتَجُّ بِحَدِيثِ ابْنِ
أَبِي لَيْلَى . وَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ ابْنُ أَبِي لَيْلَى هُوَ
صَدُوقٌ وَلاَ أَرْوِي عَنْهُ لأَنَّهُ لاَ يَدْرِي صَحِيحَ حَدِيثِهِ مِنْ
سَقِيمِهِ وَكُلُّ مَنْ كَانَ مِثْلَ هَذَا فَلاَ أَرْوِي عَنْهُ شَيْئًا .
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ
شُعْبَةَ رَوَاهُ سُفْيَانُ عَنْ جَابِرٍ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُبَيْلٍ عَنْ
قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ . وَجَابِرٌ
الْجُعْفِيُّ قَدْ ضَعَّفَهُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ تَرَكَهُ يَحْيَى بْنُ
سَعِيدٍ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ وَغَيْرُهُمَا . وَالْعَمَلُ عَلَى
هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا قَامَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ
مَضَى فِي صَلاَتِهِ وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ مِنْهُمْ مَنْ رَأَى قَبْلَ التَّسْلِيمِ
وَمِنْهُمْ مَنْ رَأَى بَعْدَ التَّسْلِيمِ . وَمَنْ رَأَى قَبْلَ التَّسْلِيمِ
فَحَدِيثُهُ أَصَحُّ لِمَا رَوَى الزُّهْرِيُّ وَيَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ
الأَنْصَارِيُّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ابْنِ
بُحَيْنَةَ .
শাবী (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা
মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) আমাদের নামায আদায় করালেন। তিনি দ্বিতীয় রাকআতে (ভুলে)
দাঁড়িয়ে গেলেন। মুক্তাদীগণ তাঁকে শুনিয়ে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলল। তিনিও তাদের সাথে
সুবহানাল্লাহ বললেন। নামায শেষ করে তিনি সালাম ফিরালেন তারপর তিনি বসা অবস্থায়
সাহু (ভুলের) সাজদাহ্ করলেন। অতঃপর তাদেরকে বললেন, (নামাযে ভুল হওয়ায়) তিনি
(মুগীরা) যেরূপ করলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে
নিয়ে ঠিক এরূপই করেছেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ–(১২০৮)।
এ অনুচ্ছেদে
উকবাহ্ ইবনু আমির, সা’দ ও আবদুল্লাহ ইবনু বুহাইনা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
‘ঈসা বলেনঃ মুগীরা (রাঃ)–এর হাদীসটি আরো কয়েকটি সূত্রে বর্ণনা হয়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞ
আবদুল্লাহ ইবনু আবী লাইলার স্মরণশক্তির সমালোচনা করেছেন। ইমাম আহমাদ বলেছেন, ইবনু আবী
লাইলার হাদীস দলীল হিসাবে গ্রহণ করা যায় না। মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল (বুখারী) বলেছেন,
ইবনু আবী লাইলা একজন সত্যবাদী লোক। কিন্তু আমি তাঁর নিকট হতে হাদীস বর্ণনা করি না।
কেননা তিনি সহীহ্ এবং যঈফ হাদীসের মধ্যে কোন ভেদাভেদ করেন না। এ ধরনের যে কোন ব্যক্তির
নিকট হতে আমি হাদীস বর্ণনা করি না। সুফিয়ান সাওরীও তাঁর সনদ পরম্পরায় মুগীরার হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এ সুত্রের একজন রাবী জাবির আল-জুফীকে কিছু হাদীস বিশারদ জ’ঈফ
বলেছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ ও ‘আবদুর রহমান ইবনু মাহদী তাকে বাদ দিয়েছেন ।
আলিমগণ বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তি (ভুলে) দ্বিতীয় রাকআতে না বসেই দাঁড়িয়ে যায় তবে সে
বাকী নামায আদায় করতে থাকবে এবং পরে দুটো সাজদাহ্ করে নিবে। একদল বলেছেন, সালাম ফিরানোর
আগে সাজদাহ্ করবে। অন্য দল বলেছেন, সালাম ফিরানোর পর সাজদাহ্ করবে। যারা সালাম ফিরানোর
আগে সাজদাহ্ করার মত দিয়েছেন তাদের হাদীস বেশি সহীহ্। তাদের পক্ষের হাদীসটি যুহরী
ও ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ আল-আনসারী-’আবদুর রহমানের সূত্রে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু বুহাইনা
(রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৬৫
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنِ
الْمَسْعُودِيِّ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلاَقَةَ، قَالَ صَلَّى بِنَا الْمُغِيرَةُ
بْنُ شُعْبَةَ فَلَمَّا صَلَّى رَكْعَتَيْنِ قَامَ وَلَمْ يَجْلِسْ فَسَبَّحَ بِهِ
مَنْ خَلْفَهُ فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَنْ قُومُوا فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ صَلاَتِهِ
سَلَّمَ وَسَجَدَ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ وَسَلَّمَ وَقَالَ هَكَذَا صَنَعَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ
شُعْبَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
যিয়াদ ইবনু ইলাক্বা
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা
মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) আমাদের নামায আদায় করালেন। তিনি দুই রাক’আত আদায় করে না
বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। তাঁর পিছনের লোকেরা তাঁকে শুনিয়ে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলল। তিনি
তাদেরকে ইশারায় বললেন, দাঁড়িয়ে যাও। নামায শেষ করে তিনি সালাম ফিরালেন, তারপর দুটি
ভুলের সাজদাহ্ করলেন এবং আবার সালাম ফিরালেন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনটিই করেছেন।
সহীহ। দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আরো কয়েকটি সূত্রে এ হাদীসটি মুগীরা ইবনু শু’বা হতে বর্ণিত
হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৮. অনুচ্ছেদঃ
প্রথম দুই রাক’আতের
পর বসার পরিমাণ
৩৬৬
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، - هُوَ الطَّيَالِسِيُّ
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنَا سَعْدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا
عُبَيْدَةَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا جَلَسَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ
الأُولَيَيْنِ كَأَنَّهُ عَلَى الرَّضْفِ . قَالَ شُعْبَةُ ثُمَّ حَرَّكَ سَعْدٌ
شَفَتَيْهِ بِشَيْءٍ فَأَقُولُ حَتَّى يَقُومَ فَيَقُولُ حَتَّى يَقُومَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ إِلاَّ أَنَّ أَبَا عُبَيْدَةَ لَمْ يَسْمَعْ
مِنْ أَبِيهِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَخْتَارُونَ
أَنْ لاَ يُطِيلَ الرَّجُلُ الْقُعُودَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ وَلاَ
يَزِيدَ عَلَى التَّشَهُّدِ شَيْئًا . وَقَالُوا إِنْ زَادَ عَلَى التَّشَهُّدِ
فَعَلَيْهِ سَجْدَتَا السَّهْوِ . هَكَذَا رُوِيَ عَنِ الشَّعْبِيِّ وَغَيْرِهِ
.
আবদুল্লাহ ইবনু
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন প্রথম দুই রাক’আত আদায় করার
পর বসতেন, তখন মনে হত যেন গরম পাথরের উপর বসেছেন (অল্প সময় বসতেন)। শুবা বলেন,
সা’দ কিছু বলে ঠোঁট নাড়ছিলেন [অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কিছু পাঠ করতেন]। আমি তখন বললাম, তারপর তিনি উঠে যেতেন? তিনি বললেন,
হ্যাঁ তিনি তারপর উঠে যেতেন।
যঈফ, মিশকাত (৯১৫), যঈফ আবূ দাঊদ (১৭৭)
আবূ ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। কিন্তু আবূ উবায়দাহ তার পিতার নিকট হাদীস শুনেন নাই। আলিমগণ
এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাঁরা এই পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন, কোন লোক প্রথম দুই রাকআতের
পরের বৈঠক যেন লম্বা না করে এবং তাশাহ্হুদের পর অন্য কিছু না পড়ে। তাঁরা আরো বলেছেন,
তাশাহ্হুদের পর বেশী কিছু পড়লে দুটি সাহু সিজদা করা ওয়াজিব হবে। শাবী ও অন্যান্যরা
এমনই বলেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৫৯. অনুচ্ছেদঃ
নামাযের মধ্যে ইশারা
করা
৩৬৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ الأَشَجِّ، عَنْ نَابِلٍ، صَاحِبِ الْعَبَاءِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ
صُهَيْبٍ، قَالَ مَرَرْتُ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُصَلِّي
فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ إِلَىَّ إِشَارَةً . وَقَالَ لاَ أَعْلَمُ إِلاَّ
أَنَّهُ قَالَ إِشَارَةً بِإِصْبَعِهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ بِلاَلٍ
وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ وَعَائِشَةَ .
সুহাইব (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একবার
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি
তখন নামাযে ছিলেন। আমি তাকে সালাম করলাম। তিনি ইশারায় আমার সালামের জবাব দিলেন।
সহীহ। সহীহ আবু দাউদ-(৮৫৮)।
ইবনু ‘উমর
(রাঃ) বলেন, আমি এটাই জানি যে, তিনি (সুহাইব) বলেছেন, তিনি আঙ্গুল দিয়ে ইঙ্গিত করেছেন।
এ অনুচ্ছেদে বিলাল, আবু হুরায়রা, আনাস ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আমরা
এ হাদীসটি বুকাইরের সূত্রে লাইছ হতে জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৬৮
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ،
عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قُلْتُ لِبِلاَلٍ كَيْفَ كَانَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم يَرُدُّ عَلَيْهِمْ حِينَ كَانُوا يُسَلِّمُونَ عَلَيْهِ
وَهُوَ فِي الصَّلاَةِ قَالَ كَانَ يُشِيرُ بِيَدِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَحَدِيثُ صُهَيْبٍ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
حَدِيثِ اللَّيْثِ عَنْ بُكَيْرٍ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قُلْتُ لِبِلاَلٍ كَيْفَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم يَصْنَعُ حَيْثُ كَانُوا يُسَلِّمُونَ عَلَيْهِ فِي مَسْجِدِ بَنِي عَمْرِو
بْنِ عَوْفٍ قَالَ كَانَ يَرُدُّ إِشَارَةً . وَكِلاَ الْحَدِيثَيْنِ عِنْدِي
صَحِيحٌ لأَنَّ قِصَّةَ حَدِيثِ صُهَيْبٍ غَيْرُ قِصَّةِ حَدِيثِ بِلاَلٍ .
وَإِنْ كَانَ ابْنُ عُمَرَ رَوَى عَنْهُمَا فَاحْتَمَلَ أَنْ يَكُونَ سَمِعَ
مِنْهُمَا جَمِيعًا .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বিলালকে
প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নামাযে থাকতেন
তখন তাকে সাহাবাগণ সালাম দিলে তিনি কিভাবে জবাব দিতেন? তিনি বলেন, তিনি হাত দিয়ে
ইশারা করতেন।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(১০১৭)।
এ হাদীসটি
হাসান সহীহ। যাইদ ইবনু আসলাম ইবনু ‘উমার হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ “আমি বিলালকে
প্রশ্ন করলাম, লোকেরা যখন আমর ইবনু আওফ গোত্রের মসজিদে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লামকে সালাম করত তখন তিনি কিভাবে তাদের সালামের জবাব দিতেন? তিনি বললেন, তিনি
ইশারায় জবাব দিতেন।”
এ দুটি হাদীসই আমার নিকট সহীহ। কেননা সুহাইবের হাদীসের ঘটনা বিলালের হাদীসের ঘটনা হতে
ভিন্ন। যদিও ইবনু উমর (রাঃ) উভয়ের সূত্রে বর্ণনা করেছেন। হতে পারে তিনি দু’জনের নিকটই
শুনেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬০. অনুচ্ছেদঃ
পুরুষদের
সুবহানাল্লাহ বলা ও নারীদের হাততালি দেয়া
৩৬৯
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
التَّسْبِيحُ لِلرِّجَالِ وَالتَّصْفِيقُ لِلنِّسَاءِ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ وَجَابِرٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ
عُمَرَ . وَقَالَ عَلِيٌّ كُنْتُ إِذَا اسْتَأْذَنْتُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَهُوَ يُصَلِّي سَبَّحَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي
هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ
الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
আবু হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ (ইমাম যখন নামাযে ভুল করে
তাকে সতর্ক করার জন্য) পুরুষ মুক্তাদীগণ সুবহানাল্লাহ বলবে এবং স্ত্রীলোকেরা
‘হাততালি’ দিবে।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(১০৩৪-১০৩৬), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আলী, সাহল ইবনু সা’দ, জাবির, আবু সাঈদ ও ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আলী
(রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট সম্মতি চাইলে
তিনি নামাযের মধ্যে থাকলে সুবহানাল্লাহ’ বলতেন। আবু ‘ঈসা বলেনঃ আবু হুরায়রা (রাঃ)’র
হাদীসটি হাসান সহীহ। আলিমগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেন। ইমাম আহমাদ এবং ইসহাকও একই
রকম কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬১. অনুচ্ছেদঃ
নামাযের মধ্যে হাই
তোলা মাকরূহ
৩৭০
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنِ الْعَلاَءِ
بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " التَّثَاؤُبُ فِي الصَّلاَةِ مِنَ
الشَّيْطَانِ فَإِذَا تَثَاءَبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَكْظِمْ مَا اسْتَطَاعَ "
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ وَجَدِّ عَدِيِّ بْنِ
ثَابِتٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ التَّثَاؤُبَ فِي الصَّلاَةِ .
قَالَ إِبْرَاهِيمُ إِنِّي لأَرُدُّ التَّثَاؤُبَ بِالتَّنَحْنُحِ .
আবু হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ নামাযের মধ্যে হাই তোলা শাইতানের তরফ হতে
হয়ে থাকে। তোমাদের কারো হাই আসলে সে যেন তা ফিরাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে।
সহীহ। য’ঈফা-(২৪২০), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবু সাঈদ আল-খুদরী এবং আদী ইবনু সাবিতের দাদা হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ‘ঈসা বলেনঃ
আবু হুরায়রা (রাঃ)’র হাদীসটি হাসান সহীহ। আলিমদের একটি দল নামাযের মধ্যে হাই তোলা মাকরূহ
মনে করেন। ইবরাহীম নাখঈ বলেন, আমি কাশি দিয়ে হাই তোলা নিবারণ করি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬২. অনুচ্ছেদঃ
বসে নামায আদায় করলে
দাড়িয়ে আদায়ের অর্ধেক সাওয়াব পাওয়া যায়
৩৭১
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ
الْمُعَلِّمُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ
حُصَيْنٍ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَلاَةِ
الرَّجُلِ وَهُوَ قَاعِدٌ فَقَالَ " مَنْ صَلَّى قَائِمًا فَهُوَ أَفْضَلُ
وَمَنْ صَلَّى قَاعِدًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ الْقَائِمِ وَمَنْ صَلَّى نَائِمًا
فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ الْقَاعِدِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَنَسٍ وَالسَّائِبِ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইমরান ইবনু হুসাইন
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে কোন ব্যক্তির বসে বসে নামায
আদায় করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি দাড়িয়ে (নফল) নামায
আদায় করে সেটাই উত্তম। যে ব্যক্তি বসে নামায আদায় করে তার জন্য দাঁড়িয়ে নামায
আদায়কারীর অর্ধেক নেকী রয়েছে। আর যে ব্যক্তি ঘুমে অসাড় অবস্থায় বা শুয়ে নামায আদায়
করে তার জন্য বসে বসে নামায আদায়কারীর অর্ধেক নেকী রয়েছে।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(১২৩১), বুখারী।
এ অনুচ্ছেদে
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর, আনাস ও সাইব (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ‘ঈসা বলেনঃ ‘ইমরান
ইবনু হুসাইনের হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৭২
وَقَدْ
رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ طَهْمَانَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ
إِلاَّ أَنَّهُ يَقُولُ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَلاَةِ الْمَرِيضِ فَقَالَ " صَلِّ
قَائِمًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى
جَنْبٍ " . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ هَنَّادٌ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ
إِبْرَاهِيمَ بْنِ طَهْمَانَ عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ بِهَذَا الْحَدِيثِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَلاَ نَعْلَمُ أَحَدًا رَوَى عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ
نَحْوَ رِوَايَةِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ طَهْمَانَ . وَقَدْ رَوَى أَبُو أُسَامَةَ
وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ نَحْوَ رِوَايَةِ عِيسَى بْنِ
يُونُسَ . وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي
صَلاَةِ التَّطَوُّعِ . حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ
أَبِي عَدِيٍّ عَنْ أَشْعَثَ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ عَنِ الْحَسَنِ قَالَ إِنْ
شَاءَ الرَّجُلُ صَلَّى صَلاَةَ التَّطَوُّعِ قَائِمًا وَجَالِسًا وَمُضْطَجِعًا
. وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي صَلاَةِ الْمَرِيضِ إِذَا لَمْ يَسْتَطِعْ
أَنْ يُصَلِّيَ جَالِسًا فَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ يُصَلِّي عَلَى جَنْبِهِ
الأَيْمَنِ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ يُصَلِّي مُسْتَلْقِيًا عَلَى قَفَاهُ
وَرِجْلاَهُ إِلَى الْقِبْلَةِ . وَقَالَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ فِي هَذَا
الْحَدِيثِ " مَنْ صَلَّى جَالِسًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ الْقَائِمِ
" . قَالَ هَذَا لِلصَّحِيحِ وَلِمَنْ لَيْسَ لَهُ عُذْرٌ . يَعْنِي
فِي النَّوَافِلِ فَأَمَّا مَنْ كَانَ لَهُ عُذْرٌ مِنْ مَرَضٍ أَوْ غَيْرِهِ
فَصَلَّى جَالِسًا فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ الْقَائِمِ . وَقَدْ رُوِيَ فِي بَعْضِ
هَذَا الْحَدِيثِ مِثْلُ قَوْلِ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ .
ইমরান ইবনু হুসাইন
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অসুস্থ ব্যক্তির নামায আদায় করা
প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ দাড়িয়ে নামায আদায় কর; যদি দাড়িয়ে আদায়
করতে সক্ষম না হও তবে বসে নামায আদায় কর; যদি বসে নামায আদায় করতে সক্ষম না হও
তবে (শুয়ে) কাত হয়ে নামায আদায় কর।
সহীহ্। ইরওয়া-(২৯৯), বুখারী।
আবু ‘ঈসা
বলেনঃ হুসাইন আল-মুয়াল্লিম হতে ইবরাহীম ইবনু তাহমানের বর্ণনার মতো অন্য কেউ বর্ণনা
করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। আবু উসামা এবং আরো অনেকে হুসাইন আল-মুয়াল্লিম হতে ‘ঈসা
ইবনু ইউনুসের বর্ণনার অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। কিছু বিদ্বানের মতে নফল নামাযের জন্য এ
সম্মতি দেয়া হয়েছে।
হাসান (বাসরী) হতে বর্ণিত আছে, নফল নামায আদায়কারী ইচ্ছা করলে দাড়িয়ে, বসে বা শুয়েও
নামায আদায় করতে পারে। সনদ সহীহ।
যে অসুস্থ ব্যক্তি বসে নামায আদায় করতে অক্ষম সে ব্যক্তি কিভাবে নামায আদায় করবে
এ ব্যাপারে বিদ্বানগণের মতের অমিল রয়েছে। একদল বিদ্বান বলেন, এমন ব্যক্তি ডানকাতে
শুয়ে (কিবলার দিকে মুখ করে) নামায আদায় করবে। আরেক দল বিদ্বান বলেন, চিৎ হয়ে শুয়ে
কিবলার দিকে পা দিয়ে (মাথা সামান্য উচু করে) নামায আদায় করবে। ইমরান ইবনু হুসাইনের
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় সুফইয়ান সাওরী বলেনঃ সুস্থ্য ব্যক্তি যার কোন উযর নেই সে বসে
নামায পড়লে দাড়িয়ে নামায পড়ার অর্ধেক সাওয়াব পাবে যদি তা নফল নামায হয়। আর যে
ব্যক্তির উযর বা আপত্তি আছে সে যদি বসে নামায পড়ে তবে সে দাড়িয়ে নামায পড়ার মতোই
সাওয়াব পাবে। কোন কোন হাদীসে সুফইয়ান সাওরীর মতের সমর্থনে বর্ণনা রয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬৩. অনুচ্ছেদঃ
নফল নামায বসে আদায়
করা
৩৭৩
حَدَّثَنَا
الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ الْمُطَّلِبِ بْنِ أَبِي وَدَاعَةَ
السَّهْمِيِّ، عَنْ حَفْصَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهَا
قَالَتْ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي سُبْحَتِهِ
قَاعِدًا حَتَّى كَانَ قَبْلَ وَفَاتِهِ صلى الله عليه وسلم بِعَامٍ فَإِنَّهُ
كَانَ يُصَلِّي فِي سُبْحَتِهِ قَاعِدًا وَيَقْرَأُ بِالسُّورَةِ وَيُرَتِّلُهَا
حَتَّى تَكُونَ أَطْوَلَ مِنْ أَطْوَلَ مِنْهَا . وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ
سَلَمَةَ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ حَفْصَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ
كَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ جَالِسًا فَإِذَا بَقِيَ مِنْ قِرَاءَتِهِ قَدْرُ
ثَلاَثِينَ أَوْ أَرْبَعِينَ آيَةً قَامَ فَقَرَأَ ثُمَّ رَكَعَ ثُمَّ صَنَعَ فِي
الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ مِثْلَ ذَلِكَ . وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ
يُصَلِّي قَاعِدًا فَإِذَا قَرَأَ وَهُوَ قَائِمٌ رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ قَائِمٌ
وَإِذَا قَرَأَ وَهُوَ قَاعِدٌ رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ قَاعِدٌ . قَالَ أَحْمَدُ
وَإِسْحَاقُ وَالْعَمَلُ عَلَى كِلاَ الْحَدِيثَيْنِ . كَأَنَّهُمَا رَأَيَا
كِلاَ الْحَدِيثَيْنِ صَحِيحًا مَعْمُولاً بِهِمَا .
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের এক বছর পূর্ব পর্যন্ত
আমি তাকে বসে বসে নফল নামায আদায় করতে দেখিনি। তারপর তিনি বসে বসে নফল নামায
আদায় করতেন এবং সূরাসমূহ শান্ত-স্থিরভাবে থেমে থেমে পাঠ করতেন। এতে তা দীর্ঘ হতে
দীর্ঘতর হত।
সহীহ্। সিফাতুস সালাত-(৬০), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
উন্মু সালামা এবং আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ‘ঈসা বলেনঃ হাফসার
হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট হতে এরূপও বর্ণিত
হয়েছেঃ “তিনি রাতের বেলা বসে নামায আদায় করতেন। কিরা’আতের তিরিশ অথবা চল্লিশ আয়াত
বাকি থাকতে তিনি উঠে দাড়াতেন এবং তা পড়ে রুকূ-সাজদাহ করতেন। দ্বিতীয় রাকআতেও তিনি
এরূপ করতেন। আরো বর্ণিত আছে, তিনি বসে নামায আদায় করতেন যখন তিনি দাড়িয়ে কিরা’আত
পাঠ করতেন, রুকূ-সাজদাহও দাড়িয়ে করতেন। তিনি বসে কিরা’আত পাঠ করলে রুকূ-সাজদাহও বসে
করতেন।”
ইমাম আহমাদ ও ইসহাক বলেন, উভয় হাদীস অনুযায়ী আমল করা যায়। অর্থাৎ দু’টো হাদীসই সহীহ
এবং তদনুযায়ী আমল করার যোগ্য।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৭৪
حَدَّثَنَا
الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ،
عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ
يُصَلِّي جَالِسًا فَيَقْرَأُ وَهُوَ جَالِسٌ فَإِذَا بَقِيَ مِنْ قِرَاءَتِهِ
قَدْرُ مَا يَكُونُ ثَلاَثِينَ أَوْ أَرْبَعِينَ آيَةً قَامَ فَقَرَأَ وَهُوَ
قَائِمٌ ثُمَّ رَكَعَ وَسَجَدَ ثُمَّ صَنَعَ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ مِثْلَ
ذَلِكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বসে নামায আদায় করলে কিরা’আতও বসে পাঠ করতেন।
তার কিরাআতের তিরিশ বা চল্লিশ আয়াত বাকি থাকতে তিনি উঠে দাড়িয়ে তা পাঠ করতেন,
তারপর রুকূ-সাজদাহ করতেন। দ্বিতীয় রাকআতেও তিনি অনুরূপ করতেন।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(১২২৬), বুখারী ও মুসলিম।
আবু ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৭৫
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا خَالِدٌ، وَهُوَ
الْحَذَّاءُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَ سَأَلْتُهَا
عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ تَطَوُّعِهِ قَالَتْ كَانَ
يُصَلِّي لَيْلاً طَوِيلاً قَائِمًا وَلَيْلاً طَوِيلاً قَاعِدًا فَإِذَا قَرَأَ
وَهُوَ قَائِمٌ رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ قَائِمٌ وَإِذَا قَرَأَ وَهُوَ جَالِسٌ
رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ جَالِسٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু
শাকীক হতে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তাকে (‘আয়িশাহ্কে)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের নফল নামায আদায় করা প্রসঙ্গে
প্রশ্ন করলেন। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, তিনি কখনও দীর্ঘ রাত পর্যন্ত দাড়িয়ে নামায
আদায় করতেন, আবার কখনও দীর্ঘ রাত ধরে বসে নামায আদায় করতেন। তিনি যখন দাড়িয়ে
কিরা’আত পাঠ করতেন, তখন রুকূ-সাজদাহও দাড়ানো অবস্থায় করতেন। তিনি বসে কিরা’আত
পাঠ করলে রুকূ-সাজদাহও বসে করতেন
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(১২২৮), মুসলিম।
আবু ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬৪. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীঃ আমি শিশুদের কান্না শুনলে নামায
সংক্ষেপ করি
৩৭৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْفَزَارِيُّ، عَنْ حُمَيْدٍ،
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" وَاللَّهِ إِنِّي لأَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ وَأَنَا فِي الصَّلاَةِ
فَأُخَفِّفُ مَخَافَةَ أَنْ تُفْتَتَنَ أُمُّهُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি নামাযের মধ্যে
বাচ্চার কান্না শুনতে পেলে তার মায়ের ব্যাকুল হওয়ার সম্ভাবনায় আমি নামায
সংক্ষেপ করি।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৯৮৯), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবু কাতাদা, আবু সাঈদ ও আবু হুরায়রা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবু ‘ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬৫. অনুচ্ছেদঃ
দোপাট্টা পরিধান ছাড়া
প্রাপ্তবয়স্কার নামায ক্ববূল হয় না
৩৭৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ صَفِيَّةَ ابْنَةِ الْحَارِثِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تُقْبَلُ صَلاَةُ
الْحَائِضِ إِلاَّ بِخِمَارٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . وَقَوْلُهُ " الْحَائِضُ " . يَعْنِي
الْمَرْأَةَ الْبَالِغَ يَعْنِي إِذَا حَاضَتْ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ
الْمَرْأَةَ إِذَا أَدْرَكَتْ فَصَلَّتْ وَشَيْءٌ مِنْ شَعْرِهَا مَكْشُوفٌ لاَ
تَجُوزُ صَلاَتُهَا . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ قَالَ لاَ تَجُوزُ صَلاَةُ
الْمَرْأَةِ وَشَيْءٌ مِنْ جَسَدِهَا مَكْشُوفٌ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَقَدْ
قِيلَ إِنْ كَانَ ظَهْرُ قَدَمَيْهَا مَكْشُوفًا فَصَلاَتُهَا جَائِزَةٌ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ওড়না ব্যতিত
প্রাপ্তবয়স্কা মেয়েদের নামায ক্ববূল হয় না।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৬৫৫)।
এ অনুচ্ছেদে
‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। হাদীস বর্ণিত হায়িয শব্দের অর্থ
বালেগ।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আয়িশাহ্’র হাদীসটি হাসান। বিদ্বানগন এ হাদীসের আলোকে বলেছেন, কোন
মহিলা বালেগ হওয়ার পর নামাযের সময় মাথার চুলের কিছু অংশ খোলা রাখলে তার নামায জায়িয
হবে না। ইমাম শাফিঈ এমত পোষণ করেন। তিনি বলেছেন, তার শরীরের কোন অংশ অনাবৃত থাকলে তার
নামায হবে না, হ্যাঁ পায়ের পাতার পিঠ খোলা থাকলে নামায হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬৬. অনুচ্ছেদঃ
নামাযের মধ্যে সাদল
করা (কাঁধের উপর কাপর লটকে রাখা) মাকরুহ
৩৭৮
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ عِسْلِ بْنِ
سُفْيَانَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ نَهَى
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ السَّدْلِ فِي الصَّلاَةِ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي جُحَيْفَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي
هُرَيْرَةَ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ عَطَاءٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ مَرْفُوعًا
إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عِسْلِ بْنِ سُفْيَانَ . وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ
فِي السَّدْلِ فِي الصَّلاَةِ فَكَرِهَ بَعْضُهُمُ السَّدْلَ فِي الصَّلاَةِ
وَقَالُوا هَكَذَا تَصْنَعُ الْيَهُودُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّمَا كُرِهَ
السَّدْلُ فِي الصَّلاَةِ إِذَا لَمْ يَكُنْ عَلَيْهِ إِلاَّ ثَوْبٌ وَاحِدٌ
فَأَمَّا إِذَا سَدَلَ عَلَى الْقَمِيصِ فَلاَ بَأْسَ . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ
وَكَرِهَ ابْنُ الْمُبَارَكِ السَّدْلَ فِي الصَّلاَةِ .
আবু হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাযের মধ্যে সাদল করতে (কাপড়
ঝুলিয়ে দিতে) নিষেধ করেছেন।
এ অনুচ্ছেদে আবূ জুহাইফা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। হাসান। মিশকাত-(৭৬৪),
তা’লীক ‘আলা ইবনু খুজাইমাহ-(৯১৮), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৬৫০)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আবূ হুরায়রার হাদীসটি আমরা ‘আতার সূত্রে মারফূ হিসাবে জানতে পারিনি, তবে ইসল
ইবনু সুফিয়ানের সূত্রে জেনেছি।
নামাযের মধ্যে বন্ধনহীনভাবে কাপড় ঝুলিয়ে দেয়া প্রসঙ্গে বিদ্বানদের মধ্যে মতপার্থক্য
রয়েছে। তাদের একদল এটাকে মাকরূহ বলেছেন।
তাঁরা আরো বলেছেন, ইহূদীরা এরূপ করে। অপর দল বলেছেন, এক কাপড়ে নামায আদায় করলে বন্ধনহীনভাবে
কাপড় ঝুলিয়ে দেয়া মাকরূহ। জামার উপড় কাপড়ে সাদল করা হলে কোন আপত্তি নেই। ইমাম আহমাদ
এই মত দিয়েছেন। ইবনুল মুবারাক নামাযের মধ্যে সাদল করা মাকরূহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৬৭. অনুচ্ছেদঃ
নামাযের মধ্যে
পাথর-টুকরা অপসারণ করা মাকরূহ
৩৭৯
حَدَّثَنَا
سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ إِلَى
الصَّلاَةِ فَلاَ يَمْسَحِ الْحَصَى فَإِنَّ الرَّحْمَةَ تُوَاجِهُهُ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ مُعَيْقِيبٍ وَعَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ وَحُذَيْفَةَ
وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي ذَرٍّ حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَرِهَ
الْمَسْحَ فِي الصَّلاَةِ وَقَالَ " إِنْ كُنْتَ لاَ بُدَّ فَاعِلاً
فَمَرَّةً وَاحِدَةً " . كَأَنَّهُ رُوِيَ عَنْهُ رُخْصَةٌ فِي
الْمَرَّةِ الْوَاحِدَةِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ যখন নামাযে দাঁড়ায় তখন সে যেন তার সামনের
কাঁকর না মুছে। কেননা তখন ‘রাহমাত’ তার সামনে থাকে।
যঈফ, ইবনূ মাজাহ (১০২৭)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৮০
حَدَّثَنَا
الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ
الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو
سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ مُعَيْقِيبٍ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ مَسْحِ الْحَصَى فِي الصَّلاَةِ فَقَالَ
" إِنْ كُنْتَ لاَ بُدَّ فَاعِلاً فَمَرَّةً وَاحِدَةً " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
মু’আইক্বীব (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নামাযের মধ্যে কাঁকর সরানো
প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তা সরানো খুবই দরকার হয় তবে একবার মাত্র
সরাবে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১০২৬)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬৮. অনুচ্ছেদঃ
নামাযের মধ্যে
(মাটিতে) ফুঁ দেওয়া মাকরূহ
৩৮১
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ الْعَوَّامِ، أَخْبَرَنَا
مَيْمُونٌ أَبُو حَمْزَةَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، مَوْلَى طَلْحَةَ عَنْ أُمِّ
سَلَمَةَ، قَالَتْ رَأَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم غُلاَمًا لَنَا يُقَالُ
لَهُ أَفْلَحُ إِذَا سَجَدَ نَفَخَ فَقَالَ " يَا أَفْلَحُ تَرِّبْ
وَجْهَكَ " . قَالَ أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ وَكَرِهَ عَبَّادُ بْنُ
الْعَوَّامِ النَّفْخَ فِي الصَّلاَةِ وَقَالَ إِنْ نَفَخَ لَمْ يَقْطَعْ
صَلاَتَهُ . قَالَ أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ وَبِهِ نَأْخُذُ . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَرَوَى بَعْضُهُمْ عَنْ أَبِي حَمْزَةَ هَذَا الْحَدِيثَ وَقَالَ مَوْلًى
لَنَا يُقَالُ لَهُ رَبَاحٌ .
উম্মু সালামা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আফলাহ নামের যুবককে দেখলেন, সে যখন সিজদায় যায়
তখন ফুঁ দিয়ে ধুলা সরায়। তিনি বললেনঃ হে আফলাহ! তোমার চেহারায় ধুলা বালি লাগাও।
যঈফ, তালীকুর রাগীব (১/১৯৩), মিশকাত (১০০২), যঈফাহ (৫৪৮৫)।
আহমাদ ইবনু
মানী বলেন, আব্বাদ ইবনু আওয়াম (রাঃ) নামাযের মধ্যে ফুঁ দেয়া মাকরূহ মনে করতেন। তিনি
বলেছেন, এরূপ করলে নামায অবশ্য নষ্ট হবে না। আহমাদ ইবনু মানী বলেনঃ আমি এই অভিমত সমর্থন
করি। অপর এক বর্ণনায় এ যুবকের নাম ‘রাবাহ’ বলে উল্লেখ আছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৮২
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ
مَيْمُونٍ أَبِي حَمْزَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ وَقَالَ غُلاَمٌ لَنَا
يُقَالُ لَهُ رَبَاحٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أُمِّ سَلَمَةَ
إِسْنَادُهُ لَيْسَ بِذَاكَ . وَمَيْمُونٌ أَبُو حَمْزَةَ قَدْ ضَعَّفَهُ بَعْضُ
أَهْلِ الْعِلْمِ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي النَّفْخِ فِي الصَّلاَةِ
فَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنْ نَفَخَ فِي الصَّلاَةِ اسْتَقْبَلَ الصَّلاَةَ . وَهُوَ
قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ
يُكْرَهُ النَّفْخُ فِي الصَّلاَةِ وَإِنْ نَفَخَ فِي صَلاَتِهِ لَمْ تَفْسُدْ
صَلاَتُهُ . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
আহমাদ ইবনু আবদা
আয-যাব্বী থেকে বর্ণিতঃ
আহমাদ ইবনু আবদা
আয-যাব্বী হতে, তিনি হাম্মাদ ইবনু যাইদ হতে, তিনি মাইমূন হতে….. উক্ত সূত্রে
অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। এই বর্ণনায় গোলামের নাম রাবাহ উল্লেখিত হয়েছে।
আবূ ঈসা বলেনঃ উম্মু সালামার হাদীসের সনদ তেমন একটা সুবিধাজনক নয়। মাইমুন-আবূ
হামাযাকে কিছু বিশেষজ্ঞ দুর্বল বলেছেন। নামাযের মধ্যে ফুঁ দেয়া প্রসঙ্গে আলিমদের
মধ্যে মতের অমিল আছে। একদল বলেছেন, নামাযের মধ্যে ফুঁ দিলে আবার নামায আদায় করতে
হবে। সুফিয়ান সাওরী ও কুফাবাসীগণ এ মত ব্যক্ত করেছেন। অপরদল বলেছেন, এটা মাকরূহ,
তবে এতে নামায নষ্ট হবে না। আহমাদ ও ইসহাক এ কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
১৬৯. অনুচ্ছেদঃ
নামাযের মধ্যে কোমরে
হাত রাখা নিষেধ
৩৮৩
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم نَهَى أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ مُخْتَصِرًا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ
ابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَقَدْ كَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ الاِخْتِصَارَ فِي الصَّلاَةِ
. وَكَرِهَ بَعْضُهُمْ أَنْ يَمْشِيَ الرَّجُلُ مُخْتَصِرًا . وَالاِخْتِصَارُ
أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ يَدَهُ عَلَى خَاصِرَتِهِ فِي الصَّلاَةِ أَوْ يَضَعَ
يَدَيْهِ جَمِيعًا عَلَى خَاصِرَتَيْهِ . وَيُرْوَى أَنَّ إِبْلِيسَ إِذَا مَشَى
مَشَى مُخْتَصِرًا .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কোন ব্যক্তিকে কোমরে হাত রেখে নামায আদায় করতে নিষেধ
করেছেন।
সহীহ্। সিফাতুস সালাত-(৬৯), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৮৭৩), রাওয-(১১৫২), ইরওয়া-(৩৭৪),
বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রার হাদীসটি হাসান
সহীহ্। একদল বিশেষজ্ঞ কোমরে হাত দিয়ে নামাযে দাঁড়ানো মাকরূহ বলেছেন। অপর একদল বিদ্বান
কোমরে হাত রেখে হাঁটা মাকরূহ বলেছেন। নামাযের মধ্যে এক হাত অথবা দুই হাত কোমরে রাখাকে
ইখতিসার বলে। বর্ণিত আছে, ইবলীস পথ চলার সময় কোমরে হাত রেখে চলে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭০. অনুচ্ছেদঃ
চুল বেঁধে নামায আদায়
করা মাকরূহ
৩৮৪
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ،
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ مُوسَى، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ،
عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، أَنَّهُ مَرَّ بِالْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ وَهُوَ
يُصَلِّي وَقَدْ عَقَصَ ضَفِرَتَهُ فِي قَفَاهُ فَحَلَّهَا فَالْتَفَتَ إِلَيْهِ
الْحَسَنُ مُغْضَبًا فَقَالَ أَقْبِلْ عَلَى صَلاَتِكَ وَلاَ تَغْضَبْ فَإِنِّي
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " ذَلِكَ كِفْلُ
الشَّيْطَانِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ وَعَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي رَافِعٍ حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا أَنْ
يُصَلِّيَ الرَّجُلُ وَهُوَ مَعْقُوصٌ شَعْرُهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَعِمْرَانُ
بْنُ مُوسَى هُوَ الْقُرَشِيُّ الْمَكِّيُّ وَهُوَ أَخُو أَيُّوبَ بْنِ مُوسَى .
আবূ রাফি (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি হাসান ইবনু ‘আলী
(রাঃ)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি নামায আদায় করছিলেন। তাঁর চুল ঘাড়ের নিকট
বাঁধা ছিল। তিনি (আবূ রাফি) তা খুলে দিলেন। এতে হাসান (রাঃ) রাগান্বিত হয়ে তাঁর
দিকে তাকালেন। তিনি (আবূ রাফি) বললেন, নামাযে মনোনিবেশ কর, রাগ কর না। কেননা আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, এটা (নামাযে চুল
বাঁধা) শাইতানের অংশ।
হাসান। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৬৫৩)।
এ অনুচ্ছেদে
উম্মু সালামা ও ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ
আবূ রাফির হাদীসটি হাসান। বিদ্বানগন এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাঁরা ঘাড়ের নিকট
চুল বাঁধা রেখে নামায আদায় করা মাকরূহ বলেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইমরান ইবনু মূসা মক্কাবাসী
কুরাইশ, তিনি আইয়ুব ইবনু মূসার ভাই।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৭১. অনুচ্ছেদঃ
নামাযে বিনয় হওয়া
৩৮৫
حَدَّثَنَا
سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا
اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ رَبِّهِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عِمْرَانَ
بْنِ أَبِي أَنَسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نَافِعِ ابْنِ الْعَمْيَاءِ، عَنْ
رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ، عَنِ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الصَّلاَةُ مَثْنَى مَثْنَى تَشَهَّدُ فِي
كُلِّ رَكْعَتَيْنِ وَتَخَشَّعُ وَتَضَرَّعُ وَتَمَسْكَنُ وَتَذَرَّعُ وَتُقْنِعُ
يَدَيْكَ يَقُولُ تَرْفَعُهُمَا إِلَى رَبِّكَ مُسْتَقْبِلاً بِبُطُونِهِمَا
وَجْهَكَ وَتَقُولُ يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَنْ لَمْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَهُوَ كَذَا
وَكَذَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَالَ غَيْرُ ابْنِ الْمُبَارَكِ فِي
هَذَا الْحَدِيثِ " مَنْ لَمْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَهِيَ خِدَاجٌ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يَقُولُ رَوَى شُعْبَةُ
هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ فَأَخْطَأَ فِي مَوَاضِعَ
فَقَالَ عَنْ أَنَسِ بْنِ أَبِي أَنَسٍ وَهُوَ عِمْرَانُ بْنُ أَبِي أَنَسٍ
وَقَالَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ وَإِنَّمَا هُوَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
نَافِعِ ابْنِ الْعَمْيَاءِ عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ . وَقَالَ شُعْبَةُ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ عَنِ الْمُطَّلِبِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَإِنَّمَا هُوَ عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ
الْمُطَّلِبِ عَنِ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
. قَالَ مُحَمَّدٌ وَحَدِيثُ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ يَعْنِي أَصَحَّ مِنْ
حَدِيثِ شُعْبَةَ .
ফযল ইবনু আব্বাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নামায দুই দুই রাক’আত;
প্রতি দুই রাক’আত পর তাশাহ্হুদ পাঠ করতে হবে; নামাযী কে বিনয়ী হতে হবে, মিনতির
সাথে প্রার্থনা করতে হবে; কপর্দকহীন হতে হবে। কোন কিছুকে ওয়াসীলা করে চাইতে হবে। এ
অবস্থায় তোমার প্রতিপালকের দরবারে নিজের দু’হাত তুলবে, হাতের তালু তোমার চেহারার
দিকে থাকবে, তারপর বলবে, হে প্রভু, হে প্রতিপালক। যে ব্যক্তি এমনটি না করবে তার
নামায এরূপ এবং এরূপ হবে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ(১৩২৫)।
আবূ ঈসা
বলেনঃ ইবনুল মুবারাক ছাড়া অন্যান্য রাবীগণ হাদীসের শেষের অংশ এরূপ বর্ণনা করেছেনঃ যে
ব্যক্তি এরূপ (বিনয়-নম্রতা অবলম্বন) করল না তার নামায পূর্ণাঙ্গ হল না।
আবূ ঈসা বলেন, আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল বুখারী কে বলতে শুনেছি, শুবা এ হাদীসটি আবদে
রব্বিহি ইবনু সাঈদের সূত্রে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি কয়েকটি জায়াগায় ভুল করেছেন।
তিনি বলেছেন, আনাস ইবনু আবী আনাস হতে প্রকৃতপক্ষে তা হবে ইমরান ইবনু আবী আনাস, তিনি
বলেছেন আব্দুল্লাহ ইবনুল হারিস হতে প্রকৃতপক্ষে তা হবে আব্দুল্লাহ ইবনুল নাফি হতে তিনি
রাবীয়া ইবনুল হারিস হতে। শুবা বলেছেন আব্দুল্লাহ ইবনুল হারিস হতে তিনি মুত্তালিব হতে
তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে। প্রকৃতপক্ষে তা হবে রাবীয়া ইবনুল
হারিস ইবনু আব্দুল মুত্তালিব হতে, তিনি ফাযল ইবনুল আব্বাস হতে তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে। মুহাম্মাদ (বুখারী) বলেছেন, শুবার বর্ণিত হাদীসের চেয়ে লাইসের
বর্ণনাটি বেশি সহীহ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৭২. অনুচ্ছেদঃ
নামাযের মধ্যে উভয়
হাতের আঙ্গুলসমূহ পরস্পরের মধ্যে ঢোকানো মাকরূহ
৩৮৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ سَعِيدٍ
الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ رَجُلٍ، عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا تَوَضَّأَ أَحَدُكُمْ فَأَحْسَنَ
وُضُوءَهُ ثُمَّ خَرَجَ عَامِدًا إِلَى الْمَسْجِدِ فَلاَ يُشَبِّكَنَّ بَيْنَ
أَصَابِعِهِ فَإِنَّهُ فِي صَلاَةٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ مِثْلَ حَدِيثِ
اللَّيْثِ . وَرَوَى شَرِيكٌ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلاَنَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ هَذَا الْحَدِيثِ
وَحَدِيثُ شَرِيكٍ غَيْرُ مَحْفُوظٍ .
কা’ব ইবনু উযরা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন তোমাদের কেউ ভালভাবে ওযূ করে নামায
আদায়ের নিয়্যাতে মসজিদের দিকে যেতে থাকে তখন সে যেন নিজের হাতের আঙ্গুলগুলো
পরস্পরের মধ্যে প্রবেশ না করায়। কেননা সে তখন নামাযের মধ্যেই আছে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(৯৭৬)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ কা’ব ইবনু উযরার হাদীসটি একাধিক সূত্রে ইবনু ‘আজলান হতে লাইসের হাদীসের অনুরূপ
বর্ণিত আছে। শারীক তাঁর সনদ পরস্পরায় এ হাদীসটি আবূ হুরায়রার নিকট হতে বর্ণনা করেছেন।
কিন্তু তাঁর বর্ণনাসূত্রটি সঠিকভাবে রক্ষিত হয়নি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৩. অনুচ্ছেদঃ
নামাযে দীর্ঘ কিয়াম
করা (দাঁড়ানো)
৩৮৭
حَدَّثَنَا
ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي
الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قِيلَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَىُّ
الصَّلاَةِ أَفْضَلُ قَالَ " طُولُ الْقُنُوتِ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُبْشِيٍّ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ
جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ .
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হল, কোন্ ধরনের নামায উত্তম? তিনি
বললেনঃ যে নামাযে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানো হয়।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৪২১), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আবদুল্লাহ ইবনু হুবশী ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ
জাবির ইবনু ‘আব্দুল্লাহর হাদীসটি হাসান সহীহ্। উল্লেখিত হাদীসটি জাবিরের নিকট হতে
বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৪. অনুচ্ছেদঃ
অধিক পরিমাণে
রুকু-সাজদাহ্ করার (নামায আদায় করা) ফাযিলাত
৩৮৮
حَدَّثَنَا
أَبُو عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، قَالَ وَحَدَّثَنَا أَبُو مُحَمَّدٍ،
رَجَاءٌ قَالَ حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، قَالَ
حَدَّثَنِي الْوَلِيدُ بْنُ هِشَامٍ الْمُعَيْطِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي مَعْدَانُ
بْنُ طَلْحَةَ الْيَعْمَرِيُّ، قَالَ لَقِيتُ ثَوْبَانَ مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ لَهُ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ يَنْفَعُنِي اللَّهُ بِهِ
وَيُدْخِلُنِي الْجَنَّةَ فَسَكَتَ عَنِّي مَلِيًّا ثُمَّ الْتَفَتَ إِلَىَّ
فَقَالَ عَلَيْكَ بِالسُّجُودِ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَقُولُ " مَا مِنْ عَبْدٍ يَسْجُدُ لِلَّهِ سَجْدَةً إِلاَّ
رَفَعَهُ اللَّهُ بِهَا دَرَجَةً وَحَطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةً " .
মা’দান ইবনু আবূ
তালহা আল-ইয়ামারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আযাদকৃত দাস সাওবান (রাঃ)-এর
সাথে দেখা করলাম। আমি তাঁকে বললাম, আমাকে এমন একটি কাজের কথা বলে দিন যার বিনিময়ে
আল্লাহ তা’আলা আমাকে উপকৃত করবেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আমার প্রশ্নে তিনি
কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। তারপর তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, তুমি অবশ্যই বেশি বেশি
সাজদাহ্ করবে। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে
শুনেছিঃ যে কোন বান্দাহ আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তাঁর জন্য একটি
সাজদাহ্ করে, আল্লাহ তা’আলা তার একটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেন এবং তার একটি গুনাহ
ক্ষমা করে দেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৪২৩), মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৮৯
قَالَ
مَعْدَانُ بْنُ طَلْحَةَ فَلَقِيتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ فَسَأَلْتُهُ عَمَّا
سَأَلْتُ عَنْهُ ثَوْبَانَ فَقَالَ عَلَيْكَ بِالسُّجُودِ فَإِنِّي سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا مِنْ عَبْدٍ يَسْجُدُ
لِلَّهِ سَجْدَةً إِلاَّ رَفَعَهُ اللَّهُ بِهَا دَرَجَةً وَحَطَّ عَنْهُ بِهَا
خَطِيئَةً " . قَالَ مَعْدَانُ بْنُ طَلْحَةَ الْيَعْمَرِيُّ وَيُقَالُ
ابْنُ أَبِي طَلْحَةَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي
أُمَامَةَ وَأَبِي فَاطِمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ثَوْبَانَ وَأَبِي
الدَّرْدَاءِ فِي كَثْرَةِ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي هَذَا الْبَابِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ طُولُ
الْقِيامِ فِي الصَّلاَةِ أَفْضَلُ مِنْ كَثْرَةِ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ .
وَقَالَ بَعْضُهُمْ كَثْرَةُ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ أَفْضَلُ مِنْ طُولِ
الْقِيَامِ . وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ قَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فِي هَذَا حَدِيثَانِ وَلَمْ يَقْضِ فِيهِ بِشَيْءٍ . وَقَالَ
إِسْحَاقُ أَمَّا فِي النَّهَارِ فَكَثْرَةُ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ وَأَمَّا
بِاللَّيْلِ فَطُولُ الْقِيَامِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ رَجُلٌ لَهُ جُزْءٌ
بِاللَّيْلِ يَأْتِي عَلَيْهِ فَكَثْرَةُ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ فِي هَذَا
أَحَبُّ إِلَىَّ لأَنَّهُ يَأْتِي عَلَى جُزْئِهِ وَقَدْ رَبِحَ كَثْرَةَ الرُّكُوعِ
وَالسُّجُودِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَإِنَّمَا قَالَ إِسْحَاقُ هَذَا لأَنَّهُ
كَذَا وُصِفَ صَلاَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِاللَّيْلِ وَوُصِفَ طُولُ
الْقِيَامِ وَأَمَّا بِالنَّهَارِ فَلَمْ يُوصَفْ مِنْ صَلاَتِهِ مِنْ طُولِ
الْقِيَامِ مَا وُصِفَ بِاللَّيْلِ .
মা’দান থেকে
বর্ণিতঃ
অতঃপর আমি আবূ দারদা
(রাঃ)-এর সাথে দেখা করে তাঁকেও সাওবানের নিকট যে প্রশ্ন করেছিলাম তাই করলাম। তিনি
বললেন, তুমি অবশ্যই সাজদাহ্ করতে থাক। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে কোন ব্যক্তিই আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি
লাভের উদ্দেশ্যে তাঁকে একটি সাজদাহ্ করে, আল্লাহ তা’আলা তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন
এবং তার একটি গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
সহীহ্। দেখুন পূর্বের হাদীস।
মা’দান
ইবনু ইয়া’মারীকে ইবনু আবী তালহাও বলা হয়।
এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরায়রা, আবূ উমামা ও আবূ ফাতিমা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
‘ঈসা বলেনঃ অধিক রুকু সাজদাহ্ সম্পর্কিত সাওবান ও আবূ দারদা (রাঃ)-এর হাদীস দুটো হাসান
সহীহ্। হাদীসে বর্ণিত বিষয়ে বিদ্বানগণের মতের অমিল রয়েছে।
একদল আলিম বলেছেন, নামাযে দীর্ঘ কিয়াম করা বেশি রুকু সাজদাহ্ করা হতেও উত্তম। অপর
দল বলেছেন, দীর্ঘ কিয়ামের তুলনায় বেশি রুকু-সাজদাহ্ করা উত্তম। ইমাম আহমাদ বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস দুটি হতে উভয় মতেরই সমর্থন পাওয়া যায়,
তাতে কোন সমাধান নাই। ইসহাক বলেন, দিনের বেলা বেশি রুকু-সাজদাহ্ এবং রাতের বেলা দীর্ঘ
কিয়াম করা উত্তম। হ্যাঁ যদি কোন ব্যক্তি রাতের কিয়ামের জন্য সময় নির্দিষ্ট করে নেয়
তবে বেশি রুকূ সাজদাহ্ করাই উত্তম। কেননা সে তার নির্দিষ্ট সময়ও পূর্ণ করবে আর বেশি
রুকূ সাজদাহ্’রও সাওয়াব পাবে এবং কল্যানের মধ্যে থাকবে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইমাম ইসহাকের
এ মতের সমর্থনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আমল বিদ্যমান রয়েছে।
তিনি রাতে দীর্ঘ কিয়াম করতেন এবং দিনে বেশি রুকু-সাজদাহ্ করতেন (অনেক রাক’আত নামায
আদায় করতেন)। তিনি দিনের নামাযে রাতের নামাযের মতো দীর্ঘ কিয়াম করতেন না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৫. অনুচ্ছেদঃ
নামাযে থাকা অবস্থায়
সাপ, বিছা হত্যা করা
৩৯০
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، هُوَ ابْنُ
إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْمُبَارَكِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ،
عَنْ ضَمْضَمِ بْنِ جَوْسٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم بِقَتْلِ الأَسْوَدَيْنِ فِي الصَّلاَةِ الْحَيَّةُ
وَالْعَقْرَبُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي رَافِعٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ
. وَكَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ قَتْلَ الْحَيَّةِ وَالْعَقْرَبِ فِي
الصَّلاَةِ . وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ إِنَّ فِي الصَّلاَةِ لَشُغْلاً .
وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাযে থাকা অবস্থায়ও দুটি কালো
প্রাণী অর্থাৎ সাপ এবং বিছা হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২৪৫)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘আব্বাস ও আবূ রাফি (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রার
হাদীসটি হাসান সহীহ্। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল সাহাবা ও অন্যান্যরা
এ হাদীস অনুসারে আমল করেছেন। ইমাম আহমাদ এবং ইসহাকও একইরকম কথা বলেছেন। কিছু বিদ্বান
নামাযে থাকা অবস্থায় সাপ-বিছা মারা মাকরূহ বলেছেন। ইবরাহীম বলেছেন, নামাযের মধ্যে একটা
ব্যস্ততা রয়েছে। (তিরমিযী বলেন) প্রথম কথাটাই বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৬. অনুচ্ছেদঃ
সালাম ফিরানোর পূর্বে
সাহুসাজদাহ্ করা
৩৯১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ،
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
ابْنِ بُحَيْنَةَ الأَسَدِيِّ، حَلِيفِ بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَامَ فِي صَلاَةِ الظُّهْرِ وَعَلَيْهِ جُلُوسٌ
فَلَمَّا أَتَمَّ صَلاَتَهُ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ يُكَبِّرُ فِي كُلِّ سَجْدَةٍ
وَهُوَ جَالِسٌ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ وَسَجَدَهُمَا النَّاسُ مَعَهُ مَكَانَ مَا
نَسِيَ مِنَ الْجُلُوسِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
عَوْفٍ .
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، وَأَبُو
دَاوُدَ قَالاَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، وَالسَّائِبَ الْقَارِئَ،
كَانَا يَسْجُدَانِ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ قَبْلَ التَّسْلِيمِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ بُحَيْنَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى
هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ يَرَى سُجُودَ
السَّهْوِ كُلِّهِ قَبْلَ السَّلاَمِ وَيَقُولُ هَذَا النَّاسِخُ لِغَيْرِهِ مِنَ
الأَحَادِيثِ وَيَذْكُرُ أَنَّ آخِرَ فِعْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم كَانَ
عَلَى هَذَا . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ إِذَا قَامَ الرَّجُلُ فِي
الرَّكْعَتَيْنِ فَإِنَّهُ يَسْجُدُ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ قَبْلَ السَّلاَمِ عَلَى
حَدِيثِ ابْنِ بُحَيْنَةَ . وَعَبْدُ اللَّهِ ابْنُ بُحَيْنَةَ هُوَ عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ مَالِكٍ وَهُوَ ابْنُ بُحَيْنَةَ مَالِكٌ أَبُوهُ وَبُحَيْنَةُ
أُمُّهُ . هَكَذَا أَخْبَرَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمَدِينِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَاخْتَلَفَ أَهْلُ
الْعِلْمِ فِي سَجْدَتَىِ السَّهْوِ مَتَى يَسْجُدُهُمَا الرَّجُلُ قَبْلَ
السَّلاَمِ أَوْ بَعْدَهُ فَرَأَى بَعْضُهُمْ أَنْ يَسْجُدَهُمَا بَعْدَ
السَّلاَمِ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ .
وَقَالَ بَعْضُهُمْ يَسْجُدُهُمَا قَبْلَ السَّلاَمِ . وَهُوَ قَوْلُ أَكْثَرِ
الْفُقَهَاءِ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ مِثْلِ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ وَرَبِيعَةَ
وَغَيْرِهِمَا وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِذَا كَانَتْ
زِيَادَةً فِي الصَّلاَةِ فَبَعْدَ السَّلاَمِ وَإِذَا كَانَ نُقْصَانًا فَقَبْلَ
السَّلاَمِ . وَهُوَ قَوْلُ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ . وَقَالَ أَحْمَدُ مَا
رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي سَجْدَتَىِ السَّهْوِ
فَيُسْتَعْمَلُ كُلٌّ عَلَى جِهَتِهِ يَرَى إِذَا قَامَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ عَلَى
حَدِيثِ ابْنِ بُحَيْنَةَ فَإِنَّهُ يَسْجُدُهُمَا قَبْلَ السَّلاَمِ وَإِذَا
صَلَّى الظُّهْرَ خَمْسًا فَإِنَّهُ يَسْجُدُهُمَا بَعْدَ السَّلاَمِ وَإِذَا
سَلَّمَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ فَإِنَّهُ يَسْجُدُهُمَا
بَعْدَ السَّلاَمِ وَكُلٌّ يُسْتَعْمَلُ عَلَى جِهَتِهِ . وَكُلُّ سَهْوٍ لَيْسَ
فِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ذِكْرٌ فَإِنَّ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ
قَبْلَ السَّلاَمِ . وَقَالَ إِسْحَاقُ نَحْوَ قَوْلِ أَحْمَدَ فِي هَذَا
كُلِّهِ إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ كُلُّ سَهْوٍ لَيْسَ فِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم ذِكْرٌ فَإِنْ كَانَتْ زِيَادَةً فِي الصَّلاَةِ يَسْجُدُهُمَا بَعْدَ
السَّلاَمِ وَإِنْ كَانَ نُقْصَانًا يَسْجُدُهُمَا قَبْلَ السَّلاَمِ .
আবদুল্লাহ ইবনু
বুহাইনা আল-আসাদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের নামাযে (দ্বিতীয় রাক’আতে) বসার
পরিবর্তে দাঁড়িয়ে গেলেন। নামায শেষ করার পর সালাম ফিরানোর আগে তিনি বসা অবস্থায়
তাকবীরসহকারে দুটি সাজদাহ্ করলেন। তার সাথের লোকেরাও সাজদাহ্ করলো। ভুলে বর্জিত
বসার পরিবর্তে এ সাজদাহ্।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২০৬, ১২০৭), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরায়রা ও আব্দুল্লাহ ইবনু
সায়িব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তারা উভয়েই সালামের পূর্বে সাহু সাজদাহ্ করতেন। সনদ সহীহ্।
সায়িব তিনি ইবনু ‘উমাইর। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ বুহাইনার হাদীসটি হাসান সহীহ্।
কিছু বিদ্বান এই হাদীসের উপর ‘আমল করেন। ইমাম শাফিঈ এই মত পোষণ করেন। তার মতে সকল সাহু
সাজদাহ্ই সালামের পূর্বে। তিনি আরো বলেন, এই হাদীস অন্যান্য হাদীসের নাসিখ। কেননা
এটাই রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সর্বশেষ ‘আমল। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক
বলেন, কোন ব্যক্তি যদি দ্বিতীয় রাক’আতের পর দাঁড়িয়ে যায় তাহলে ইবনু বুহাইনার হাদীস
অনুযায়ী সালামের পূর্বেই সাহু সাজদাহ্ করবে। ‘আব্দুল্লাহ ইবনু বুহাইনা তিনি ‘আব্দুল্লাহ
ইবনু মালিক। তার মাতার নাম বুহাইনা। ইসহাক ইবনু মানসুর আলী ইবনু আব্দিল্লাহ আল-মাদানী
হতে এরূপই বর্ণনা করেছেন।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ সাহু সাজদাহ্ কখন করবে এ ব্যাপারে বিদ্বানগণের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে।
কতক বিদ্বানের মতে সালামের পড়ে সাহু সাজদাহ্ করতে হবে। সুফ্ইয়ান সাওরী ও কুফাবাসীর
মত এটাই। কতক বিদ্বানের মতে সালামের পূর্বেই সাহু সাজদাহ্ করবে। এটাই অধিকাংশ মদীনাবাসী
ফুকাহদের অভিমত। যেমন-ইয়াহিয়ায়া ইবনু সা’ঈদ, রাবীয়া এবং অন্যান্য ইমামগণ। শাফিঈরও মত
এটাই। আবার কেউ কেউ বলেন, নামাযে যদি অতিরিক্ত করে ফেলে তাহলে সালামের পরে, আর যদি
নামাযে স্বল্পতা থাকে তবে সালামের পূর্বে। মালিক ইবনু আনাসের মত এটাই। ইমাম আহমাদ বলেন,
সাহু সাজদাহ্ সম্পর্কে হাদীসসমূহে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যে
নিয়ম বর্ণিত হয়েছে সে নিয়ম অনুযায়ীই আমল করতে হবে। যদি দুই রাক’আত শেষে দাঁড়িয়ে যায়
তাহলে বুহাইনার হাদীস অনুযায়ী সালামের পূর্বে সাহু সাজদাহ্ করবে। আর যদি যুহরের নামায
পাঁচ রাকআত পড়ে ফেলে তাহলে সালামের পরে সাহু সাজদাহ্ করবে। যদি যুহর বা আসরে দুই রাকআতের
পর সালাম ফিরায় তাহলে সালামের পরে সাহু সাজদাহ্ করবে। আর যে সমস্ত ভুলের ব্যাপারে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে কোন বিবরণ নেই তাতে সালামের পূর্বেই
সাহু সাজদাহ্ করবে। ইসহাকও আহমাদ অনুরূপ মত পোষণ করেন। তবে তিনি বলেন, যে সমস্ত ভুলের
বিবরণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত হয়নি তা যদি নামাযে
অতিরিক্ত হয় তবে সালামের পরে সাহু সাজদাহ্ করবে, আর যদি নামাযে স্বল্পতা হয় তবে সালামের
পূর্বেই সাহু সাজদাহ্ করবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৭. অনুচ্ছেদঃ
সালাম ও কথাবার্তা
বলার পর সাহুসাজদাহ্ করা
৩৯২
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى
الظُّهْرَ خَمْسًا فَقِيلَ لَهُ أَزِيدَ فِي الصَّلاَةِ فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ
بَعْدَ مَا سَلَّمَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের নামায পাঁচ রাক’আত আদায় করলেন। তাঁকে
বলা হল, নামায কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? ফলে সালাম ফিরানোর পর তিনি দুটি সাজদাহ্
করলেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২০৫, ১২১১, ১২১২, ১২১৮), বুখারি ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৯৩
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سَجَدَ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ بَعْدَ الْكَلاَمِ .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ مُعَاوِيَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ وَأَبِي
هُرَيْرَةَ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কথাবার্তা বলার পর সাহুসিজদা করেছেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২১২)।
এ অনুচ্ছেদে
মু’আবিয়া, ‘আবদুল্লাহ ইবনু জা’ফর ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৯৪
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم سَجَدَهُمَا بَعْدَ السَّلاَمِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ أَيُّوبُ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ .
وَحَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا
عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا إِذَا صَلَّى الرَّجُلُ الظُّهْرَ خَمْسًا
فَصَلاَتُهُ جَائِزَةٌ وَسَجَدَ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ وَإِنْ لَمْ يَجْلِسْ فِي
الرَّابِعَةِ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ
بَعْضُهُمْ إِذَا صَلَّى الظُّهْرَ خَمْسًا وَلَمْ يَقْعُدْ فِي الرَّابِعَةِ
مِقْدَارَ التَّشَهُّدِ فَسَدَتْ صَلاَتُهُ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ
الثَّوْرِيِّ وَبَعْضِ أَهْلِ الْكُوفَةِ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু
‘‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভুলের সাজদাহ্, দুটো সালাম ফিরানোর পর করেছেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২১৪), বুখারী ও মুসলিমে বিস্তারিত।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীসটি আইয়ূব এবং আরো অনেকে ইবনু সীরীন হতে বর্ণনা
করেছেন। ইবনু মাসঊদের হাদীসটিও হাসান সহীহ্।
একদল বিদ্বান এ হাদীসের উপর ‘আমল করেছেন। তাঁরা বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তি ভুলে যুহরে
পাঁচ রাক’আত নামায আদায় করে ফেলে তবে তার নামায জায়িয হবে, সে যদি চতুর্থ রাক’আতে নাও
বসে থাকে, তবে দুটি ভুলের সাজদাহ্ করবে। ইমাম শাফঈ, আহমাদ ও ইসহাক এ কথা বলেছেন। সুফিয়ান
সাওরী ও কিছু কুফাবাসী বলেছেন, যদি যুহরের নামায পাঁচ রাক’আত আদায় করা হয় এবং চতুর্থ
রাক’আতে তাশাহ্হুদের পরিমাণ সময় না বসা হয়ে থাকে তবে এ নামায ফাসিদ বলে ধরা হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৮. অনুচ্ছেদঃ
ভুলের সিজদার পর
তাশাহ্হুদ পাঠ করা
৩৯৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى النَّيْسَابُورِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَشْعَثُ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ
خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي الْمُهَلَّبِ، عَنْ
عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى بِهِمْ
فَسَهَا فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ تَشَهَّدَ ثُمَّ سَلَّمَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثُ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى مُحَمَّدُ بْنُ سِيرِينَ عَنْ
أَبِي الْمُهَلَّبِ وَهُوَ عَمُّ أَبِي قِلاَبَةَ غَيْرَ هَذَا الْحَدِيثِ .
وَرَوَى مُحَمَّدٌ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ أَبِي
قِلاَبَةَ عَنْ أَبِي الْمُهَلَّبِ . وَأَبُو الْمُهَلَّبِ اسْمُهُ عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ عَمْرٍو وَيُقَالُ أَيْضًا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو . وَقَدْ رَوَى
عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ وَهُشَيْمٌ وَغَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ
عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ بِطُولِهِ وَهُوَ حَدِيثُ
عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سَلَّمَ فِي ثَلاَثِ
رَكَعَاتٍ مِنَ الْعَصْرِ فَقَامَ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ الْخِرْبَاقُ .
وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي التَّشَهُّدِ فِي سَجْدَتَىِ السَّهْوِ فَقَالَ
بَعْضُهُمْ يَتَشَهَّدُ فِيهِمَا وَيُسَلِّمُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ لَيْسَ
فِيهِمَا تَشَهُّدٌ وَتَسْلِيمٌ وَإِذَا سَجَدَهُمَا قَبْلَ السَّلاَمِ لَمْ
يَتَشَهَّدْ . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ قَالاَ إِذَا سَجَدَ
سَجْدَتَىِ السَّهْوِ قَبْلَ السَّلاَمِ لَمْ يَتَشَهَّدْ .
ইমরান ইবনু হুসাইন
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের নামায আদায় করালেন। তিনি ভুল করলেন, তারপর দুটি সিজদা
করলেন, তারপর তাশাহ্হুদ পাঠ করলেন, তারপর সালাম ফিরালেন।
তাশাহ্হুদের উল্লেখ সহ বর্ণনাটি শাজ, ইরওয়া (৪০৩), যঈফ আবূ দাঊদ (১৯৩), মিশকাত
(১০১৯)
আবূ ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান গারীব। মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন অন্যান্য হাদীস আবূ কিলাবার চাচা
আবুল মুহাল্লাব হতে বর্ণনা করেছেন। আর তিনি এ হাদীসটি খালিদ আল-হাযযা হতে, তিনি কিলাবা
হতে তিনি আবুল মুহাল্লাব হতে বর্ণনা করেছেন। আবুল মুহাল্লাব-এর নাম আব্দুর রহমান। তাকে
মুয়াবিয়া ইবনু আমরও বলা হয়। আব্দুল ওয়াহ্হাব আস সাকাফী হুশাইম ও অন্যান্যরা এ হাদীসটি
খালিদ আল-হায্যা হতে তিনি আবূ কিলাবা হতে পূর্ণটাই বর্ণনা করেছেন। ইমরান ইবনু হুসাইনের
অপর বর্ণনায় আছেঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসরের তৃতীয় রাক‘আতে
সালাম ফিরালেন। এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়ালো, তার নাম ছিল খিরবাক।
সিজদা সাহুর পর তাশাহ্হুদ পাঠের ব্যাপারে আলিমদের মধ্যে মতের অমিল আছে। একদল বলেছেন,
সিজদা করার পর তাশাহ্হুদ পাঠ করবে, তারপর সালাম ফিরাবে। অপর দল বলেছেন, সিজদা সাহুর
পর তাশাহ্হুদ নেই, সালামও নেই। সালাম ফিরানোর পূর্বে সিজদা করলে তাশাহ্হুদ পাঠ করবে
না। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক এই মতের সমর্থক। তাঁরা উভয়ে বলেছেন, সালাম ফিরানোর পূর্বে সিজদা
সাহু করলে তাশাহ্হুদ পাঠ করবে না।
হাদিসের মানঃশায
১৭৯. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তি নামাযে কম
অথবা বেশি আদায় করার সন্দেহে পরে যায়
৩৯৬
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا
هِشَامٌ الدَّسْتَوَائِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عِيَاضٍ
يَعْنِي ابْنَ هِلاَلٍ، قَالَ قُلْتُ لأَبِي سَعِيدٍ أَحَدُنَا يُصَلِّي فَلاَ
يَدْرِي كَيْفَ صَلَّى فَقَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلَمْ يَدْرِ كَيْفَ صَلَّى فَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ
وَهُوَ جَالِسٌ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُثْمَانَ وَابْنِ
مَسْعُودٍ وَعَائِشَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي
سَعِيدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ قَالَ " إِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي الْوَاحِدَةِ وَالثِّنْتَيْنِ
فَلْيَجْعَلْهُمَا وَاحِدَةً وَإِذَا شَكَّ فِي الثِّنْتَيْنِ وَالثَّلاَثِ
فَلْيَجْعَلْهُمَا ثِنْتَيْنِ وَيَسْجُدْ فِي ذَلِكَ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ
يُسَلِّمَ " . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَصْحَابِنَا . وَقَالَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا شَكَّ فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يَدْرِ كَمْ صَلَّى
فَلْيُعِدْ .
‘ইয়ায ইবনু হিলাল
(রঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ
সা’ঈদ (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, আমাদের কেউ নামায আদায় করল কিন্তু তার মনে নেই সে কত
রাক’আত আদায় করল? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন নামায আদায় করে, কিন্তু বলতে পারছে না সে কত রাক’আত আদায়
করল, সে বসা অবস্থায়ই দুটি সাজদাহ্ করবে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২০৪), মুসলিম অনুরূপ আরো পূর্ণভাবে।
এ অনুচ্ছেদে
‘উসমান, ইবনু মাসঊদ, ‘আয়িশাহ্, আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আবূ সা’ঈদের হাদীসটি হাসান। উল্লেখিত হাদীসটি আবূ সা’ঈদের নিকট হতে অপরাপর সূত্রেও
বর্ণিত হয়েছে। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আরো বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ
‘যদি তোমাদের কেউ এক এবং দুই রাক’আতের মধ্যে দ্বিধায় পরে যায় (এক রাক’আত আদায় করেছে
না দুই রাক’আত আদায় করেছে) তবে সে এক রাক’আতই হিসাবে ধরবে। যদি সে দুই এবং তিন রাক’আতের
মধ্যে সন্দেহে পরে তবে দুই রাক’আতই হিসাবে ধরবে এবং সালাম ফিরানোর পূর্বে দুটি সাজদাহ্
করবে।’’
আমাদের সঙ্গীরা এ হাদীস অনুযায়ী ‘আমল করেন। এক দল ‘আলিম বলেছেন, কত রাক’আত আদায় করেছে
তা ঠিক করতে পারছে না- এ ধরনের সন্দেহে পরলে আবার নামায আদায় করবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৯৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِنَّ الشَّيْطَانَ يَأْتِي أَحَدَكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَيَلْبِسُ عَلَيْهِ حَتَّى
لاَ يَدْرِي كَمْ صَلَّى فَإِذَا وَجَدَ ذَلِكَ أَحَدُكُمْ فَلْيَسْجُدْ
سَجْدَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কারো নামাযের সময়
শাইত্বান উপস্থিত হয়ে তার নামাযের মধ্যে গণ্ডগোল সৃষ্টি করে। এমনকি সে (কোন কোন
সময়) বলতে পারে না যে, সে কত রাক’আত আদায় করেছে। তোমাদের কেউ এরূপ অবস্থায় পরলে সে
যেন বসা অবস্থায়ই দুটি সাজদাহ্ করে।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৯৪৩-৯৪৫), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৯৮
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ ابْنُ عَثْمَةَ
الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ
بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" إِذَا سَهَا أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يَدْرِ وَاحِدَةً صَلَّى أَوْ
ثِنْتَيْنِ فَلْيَبْنِ عَلَى وَاحِدَةٍ فَإِنْ لَمْ يَدْرِ ثِنْتَيْنِ صَلَّى أَوْ
ثَلاَثًا فَلْيَبْنِ عَلَى ثِنْتَيْنِ فَإِنْ لَمْ يَدْرِ ثَلاَثًا صَلَّى أَوْ
أَرْبَعًا فَلْيَبْنِ عَلَى ثَلاَثٍ وَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ
يُسَلِّمَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ مِنْ غَيْرِ
هَذَا الْوَجْهِ رَوَاهُ الزُّهْرِيُّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عُتْبَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
‘আবদুর রহমান ইবনু
‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ যখন
তার নামাযে ভুল করে তারপর সে বলতে পারছে না সে কি এক রাক’আত আদায় করেছে না দুই
রাক’আত আদায় করেছে, এমতাবস্থায় সে এক রাক’আতের উপরই ভিত্তি করবে। সে কি দুই রাক’আত
আদায় করেছে না তিন রাক’আত-তা ঠিক করতে না পারলে দুই রাক’আতকেই ভিত্তি ধরবে। সে তিন
রাক’আত আদায় করেছে না চার রাক’আত-তা ঠিক করতে না পারলে তিন রাক’আতকেই ভিত্তি ধরবে
এবং সালাম ফিরানোর আগে দুটি সাজদাহ্ করবে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২০৯)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ্। ‘আবদুর রহমান (রাঃ)-এর নিকট হতে অপরাপর সূত্রেও
এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। যুহরী তার সনদ পরম্পরায় ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফের সূত্রে হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৮০. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তি যুহর বা
‘আসরের দুই রাক’আত আদায় করে সালাম ফিরায়
৩৯৯
حَدَّثَنَا
الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ أَبِي
تَمِيمَةَ، وَهُوَ أَيُّوبُ السَّخْتِيَانِيُّ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم انْصَرَفَ مِنَ
اثْنَتَيْنِ فَقَالَ لَهُ ذُو الْيَدَيْنِ أَقُصِرَتِ الصَّلاَةُ أَمْ نَسِيتَ يَا
رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَصَدَقَ
ذُو الْيَدَيْنِ " . فَقَالَ النَّاسُ نَعَمْ . فَقَامَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى اثْنَتَيْنِ أُخْرَيَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ
ثُمَّ كَبَّرَ فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ ثُمَّ كَبَّرَ فَرَفَعَ
ثُمَّ سَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي
الْبَابِ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَابْنِ عُمَرَ وَذِي الْيَدَيْنِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ
الْكُوفَةِ إِذَا تَكَلَّمَ فِي الصَّلاَةِ نَاسِيًا أَوْ جَاهِلاً أَوْ مَا كَانَ
فَإِنَّهُ يُعِيدُ الصَّلاَةَ وَاعْتَلُّوا بِأَنَّ هَذَا الْحَدِيثَ كَانَ قَبْلَ
تَحْرِيمِ الْكَلاَمِ فِي الصَّلاَةِ . قَالَ وَأَمَّا الشَّافِعِيُّ فَرَأَى
هَذَا حَدِيثًا صَحِيحًا فَقَالَ بِهِ وَقَالَ هَذَا أَصَحُّ مِنَ الْحَدِيثِ
الَّذِي رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الصَّائِمِ إِذَا أَكَلَ
نَاسِيًا فَإِنَّهُ لاَ يَقْضِي وَإِنَّمَا هُوَ رِزْقٌ رَزَقَهُ اللَّهُ .
قَالَ الشَّافِعِيُّ وَفَرَّقُوا هَؤُلاَءِ بَيْنَ الْعَمْدِ وَالنِّسْيَانِ فِي
أَكْلِ الصَّائِمِ بِحَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ . وَقَالَ أَحْمَدُ فِي حَدِيثِ
أَبِي هُرَيْرَةَ إِنْ تَكَلَّمَ الإِمَامُ فِي شَيْءٍ مِنْ صَلاَتِهِ وَهُوَ
يَرَى أَنَّهُ قَدْ أَكْمَلَهَا ثُمَّ عَلِمَ أَنَّهُ لَمْ يُكْمِلْهَا يُتِمُّ
صَلاَتَهُ وَمَنْ تَكَلَّمَ خَلْفَ الإِمَامِ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّ عَلَيْهِ
بَقِيَّةً مِنَ الصَّلاَةِ فَعَلَيْهِ أَنْ يَسْتَقْبِلَهَا . وَاحْتَجَّ
بِأَنَّ الْفَرَائِضَ كَانَتْ تُزَادُ وَتُنْقَصُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَإِنَّمَا تَكَلَّمَ ذُو الْيَدَيْنِ وَهُوَ عَلَى يَقِينٍ
مِنْ صَلاَتِهِ أَنَّهَا تَمَّتْ وَلَيْسَ هَكَذَا الْيَوْمَ لَيْسَ لأَحَدٍ أَنْ
يَتَكَلَّمَ عَلَى مَعْنَى مَا تَكَلَّمَ ذُو الْيَدَيْنِ لأَنَّ الْفَرَائِضَ
الْيَوْمَ لاَ يُزَادُ فِيهَا وَلاَ يُنْقَصُ . قَالَ أَحْمَدُ نَحْوًا مِنْ
هَذَا الْكَلاَمِ . وَقَالَ إِسْحَاقُ نَحْوَ قَوْلِ أَحْمَدَ فِي الْبَابِ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
একদা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুই রাক’আত নামায আদায় করে সালাম ফিরালেন।
যুল-ইয়াদাইন (রাঃ) তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! নামায কি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে না
আপনি ভুলে গেছেন? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (লোকদের) প্রশ্ন
করলেনঃ যুল-ইয়াদাইন কি ঠিক বলছে? লোকেরা বলল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে দাঁড়ালেন, বাকী দুই রাক’আত আদায় করালেন, তারপর সালাম
ফিরালেন, তারপর তাকবীর বললেন, এবং আগের সাজদাহ্র সমান অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সময়
সাজদাহ্য় থাকলেন, তারপর তাকবীর বলে মাথা তুললেন। তিনি আবার সাজদাহ্য় গিয়ে আগের
সাজদাহ্র সমান অথবা তার চেয়ে বেশি সময় সাজদাহ্য় কাটালেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২১৪), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘ইমরান ইবনু হুসাইন, ইবনু ‘উমার ও যুল-ইয়াদাইন (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আবূ হুরায়রা হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীসকে কেন্দ্র করে বিদ্বানদের মধ্যে মত
পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। কুফাবাসীদের একদল বলেছেন, যদি ভুলে অথবা অজ্ঞতাবশত অথবা যে
কোন প্রকারে নামাযের মধ্যে কথা বলা হয় তবে আবার নামায আদায় করতে হবে। কেননা এ হাদীসটি
নামাযের মধ্যে কথাবার্তা হারাম হওয়ার পূর্বেকার। ইমাম শাফিঈর মতে উল্লেখিত হাদীসটি
সহীহ্। তিনি এ হাদীসের সমর্থক। তিনি বলেছেন, “রোযাদার যদি ভুলক্রমে পানাহার করে ফেলে
তবে তাকে এ রোজা আর রাখতে হবে না (কাযা করতে হবে না)। কেননা আল্লাহ তা’আলাই তাকে এ
রিযক দিয়েছেন’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এ হাদীসটির তুলনায়
পূর্বল্লেখিত হাদীসটি বেশি সহীহ্। তিনি আরো বলেছেন, ফাকীহগণ আবূ হুরায়রার হাদীস অনুযায়ী
রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করা এবং ভুলে পানাহার করার মধ্যে পার্থক্য করেছেন।
আবূ হুরায়রার হাদীস প্রসঙ্গে ইমাম আহমাদ বলেন, নামায পূর্ণ হয়েছে এই মনে করে যদি ইমাম
নামাযের মধ্যে কথা বলে এবং পরে জানতে পারে যে, নামায এখনও বাকী রয়েছে-এ অবস্থায় সে
বাকী নামায পূর্ণ করবে (কথা বলায় নামায বাতিল হয়নি)। নামায এখনো বাকী রয়েছে একথা জেনেও
মুক্তাদী যদি কথা বলে তবে তাকে আবার নামায আদায় করতে হবে। তিনি এ যুক্তি প্রদান করেন
যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ফরয নামাযে (ওহীর মাধ্যমে)
কম বেশি করা হত। এজন্য যুল-ইয়াদাইনের বিশ্বাস ছিল হয়ত নামায পূর্ণ হয়েছে। তাই তিনি
কথা বলেছেন, কিন্তু আজকাল এরূপ কথা চলবে না, কেননা এখন আর নামাযের মধ্যে কম-বেশি হওয়ার
সম্ভাবনা নেই। এজন্য আজকাল আর যুল-ইয়াদাইনের মত (নামায কি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে?) প্রশ্ন
করা চলবে না। ইমাম ইসহাকও এ ব্যাপারে ইমাম আহমাদের সাথে একমত ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৮১. অনুচ্ছেদঃ
জুতা পরে নামায আদায়
করা
৪০০
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ سَعِيدِ
بْنِ يَزِيدَ أَبِي مَسْلَمَةَ، قَالَ قُلْتُ لأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَكَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فِي نَعْلَيْهِ قَالَ نَعَمْ .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ
أَبِي حَبِيبَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَعَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ
وَشَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ وَأَوْسٍ الثَّقَفِيِّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعَطَاءٍ
رَجُلٍ مِنْ بَنِي شَيْبَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
সা’ঈদ ইবনু ইয়াযীদ
আবূ মাসলামা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কি জুতা পরে নামায আদায় করেছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
সহীহ্। সিফাতুস সালাত মূল, বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ, ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ হাবীবা, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর, ‘আমর ইবনু
হুরাইস, সাদ্দাদ ইবনু আওস, আওস আস-সাকাফী, আবূ হুরায়রা ও ‘আতা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ্। আলিমগণ এ হাদীসের সমর্থনে সমাধান
গ্রহণ করেছেন (জুতা পরা অবস্থায় নামায আদায় করা বৈধ, যদি তাতে নাপাক না থাকে)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৮২. অনুচ্ছেদঃ
ফযরের নামাযে দু’আ
কুনূত পাঠ করা
৪০১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم كَانَ يَقْنُتُ فِي صَلاَةِ الصُّبْحِ وَالْمَغْرِبِ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَخُفَافِ
بْنِ إِيمَاءَ بْنِ رَحْضَةَ الْغِفَارِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
الْبَرَاءِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي
الْقُنُوتِ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ فَرَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمُ الْقُنُوتَ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ
وَهُوَ قَوْلُ مَالِكٍ وَالشَّافِعِيِّ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ لاَ
يَقْنُتُ فِي الْفَجْرِ إِلاَّ عِنْدَ نَازِلَةٍ تَنْزِلُ بِالْمُسْلِمِينَ
فَإِذَا نَزَلَتْ نَازِلَةٌ فَلِلإِمَامِ أَنْ يَدْعُوَ لِجُيُوشِ الْمُسْلِمِينَ
.
বারাআ ইবনু ‘আযিব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফযর ও মাগরিবের নামাযে দু’আ কুনূত পাঠ করতেন।
সহীহ্৷ মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আলী, আনাস, আবূ হুরায়রা, ইবনু ‘আব্বাস এবং খুফাফ ইবনু ঈমাআ ইবনুন রাহাযাহ্ আলগিফারী
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে । আবূ ‘ঈসা বলেনঃ বারাআর হাদীসটি হাসান সহীহ্। বিশেষজ্ঞগণ
ফযরের নামাযে দু’আ কুনূত পাঠ নিয়ে মতভেদ করেছেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
একদল সাহাবী ও অন্যরা ফযরের নামাযে কুনূত পাঠের পক্ষে মত দিয়েছেন। ইমাম মালিক ও শাফিঈ
এ মত মেনে নিয়েছেন। আহমাদ ও ইসহাক বলেন, আমাদের মতে ফযরে কোন কুনূত পাঠ করবে না। হ্যাঁ
যদি কোথাও মুসলমানদের উপর মুসিবত এসে যায় তবে ইমাম সাহেব মুসলিম বাহিনীর জন্য দু’আ
করতে পারেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৮৩. অনুচ্ছেদঃ
কুনূত ছেড়ে দেয়া
৪০২
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ أَبِي مَالِكٍ
الأَشْجَعِيِّ، قَالَ قُلْتُ لأَبِي يَا أَبَةِ إِنَّكَ قَدْ صَلَّيْتَ خَلْفَ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ
وَعَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ هَا هُنَا بِالْكُوفَةِ نَحْوًا مِنْ خَمْسِ سِنِينَ
أَكَانُوا يَقْنُتُونَ قَالَ أَىْ بُنَىَّ مُحْدَثٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ
الْعِلْمِ . وَقَالَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ إِنْ قَنَتَ فِي الْفَجْرِ فَحَسَنٌ
وَإِنْ لَمْ يَقْنُتْ فَحَسَنٌ . وَاخْتَارَ أَنْ لاَ يَقْنُتَ . وَلَمْ يَرَ
ابْنُ الْمُبَارَكِ الْقُنُوتَ فِي الْفَجْرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَبُو
مَالِكٍ الأَشْجَعِيُّ اسْمُهُ سَعْدُ بْنُ طَارِقِ بْنِ أَشْيَمَ .
আবূ মালিক
আল-আশজা’ঈ (রঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার
পিতাকে বললাম, আব্বাজান! আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম),
আবূ বাক্র, ‘উমার ও ‘উসমান (রাঃ)-এর পিছনে নামায আদায় করেছেন এবং এই কুফা শহরে
প্রায় পাঁচ বছর যাবত ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ)-এর পিছনে নামায আদায় করেছেন। তাঁরা
কি কুনূত পাঠ করতেন? তিনি উত্তর দিলেন, হে বৎস! এটা তো বিদ’আত।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১২৪১)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। বেশিরভাগ বিদ্বান এই হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। সুফিয়ান
সাওরী বলেছেন, ফযরের নামাযে কুনূত পাঠ করে নিলে সেটাই উত্তম এবং যদি পাঠ না করে তাও
উত্তম। কিন্তু তিনি পাঠ না করাই অবলম্বন করেছেন। ইবনুল মুবারাকের মতেও ফযরে কোন কুনূত
নেই। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসের রাবী আবূ মালিক আল-আশজাঈর নাম সা’দ ইবনু তারিক ইবনু
আশইয়াম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪০৩
حَدَّثَنَا
صَالِحُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي مَالِكٍ
الأَشْجَعِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ .
আবূ মালিক আল-আশজাঈ
থেকে বর্ণিতঃ
সালিহ ইবনু আব্দুল্লাহ আবূ ‘আওয়ানার সূত্রে আবূ মালিক আল-আশজাঈ হতে
উপরিউক্ত সনদে হাদীসটি ঐরূপ অর্থেই বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
১৮৪. অনুচ্ছেদঃ
নামাযের মধ্যে হাঁচি
দেয়া প্রসঙ্গে
৪০৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا رِفَاعَةُ بْنُ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ الزُّرَقِيُّ، عَنْ عَمِّ، أَبِيهِ مُعَاذِ بْنِ رِفَاعَةَ
عَنْ أَبِيهِ، قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَعَطَسْتُ فَقُلْتُ الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا
فِيهِ مُبَارَكًا عَلَيْهِ كَمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضَى . فَلَمَّا صَلَّى
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم انْصَرَفَ فَقَالَ " مَنِ
الْمُتَكَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ " . فَلَمْ يَتَكَلَّمْ أَحَدٌ ثُمَّ
قَالَهَا الثَّانِيَةَ " مَنِ الْمُتَكَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ " .
فَلَمْ يَتَكَلَّمْ أَحَدٌ ثُمَّ قَالَهَا الثَّالِثَةَ " مَنِ
الْمُتَكَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ " . فَقَالَ رِفَاعَةُ بْنُ رَافِعِ ابْنِ
عَفْرَاءَ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " كَيْفَ قُلْتَ "
. قَالَ قُلْتُ الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ
مُبَارَكًا عَلَيْهِ كَمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضَى فَقَالَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدِ ابْتَدَرَهَا بِضْعَةٌ
وَثَلاَثُونَ مَلَكًا أَيُّهُمْ يَصْعَدُ بِهَا " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ أَنَسٍ وَوَائِلِ بْنِ حُجْرٍ وَعَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ رِفَاعَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَكَأَنَّ هَذَا الْحَدِيثَ عِنْدَ
بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّهُ فِي التَّطَوُّعِ لأَنَّ غَيْرَ وَاحِدٍ مِنَ
التَّابِعِينَ قَالُوا إِذَا عَطَسَ الرَّجُلُ فِي الصَّلاَةِ الْمَكْتُوبَةِ
إِنَّمَا يَحْمَدُ اللَّهَ فِي نَفْسِهِ وَلَمْ يُوَسِّعُوا فِي أَكْثَرَ مِنْ
ذَلِكَ .
রিফা’আ ইবনু রাফি’
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে নামায আদায় করছিলাম।
হঠাৎ আমার হাঁচি বের হল। আমি বললাম, “আলহামদু লিল্লাহি হামদান কাসীরান তাইয়্যিবান
মুবারাকান ফীহে মুবারাকান ‘আলাইহি কামা ইউহিব্বু রব্বুনা ওয়া ইয়ারদা।” রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নামায শেষ করে ফিরে বসলেন তখন প্রশ্ন
করলেনঃ নামাযের মধ্যে কে কথা বলেছে? কেউ কোন সাড়া শব্দ করল না। তিনি দ্বিতীয় বার
প্রশ্ন করলেনঃ নামাযের মধ্যে কে কথা বলেছে? এবারও কেউ কোন কথা বলল না। তিনি তৃতীয়
বার প্রশ্ন করলেনঃ নামাযের মধ্যে কে কথা বলেছে? (রাবী) রিফা’আহ্ ইবনু রাফি’ ইবনু
আফরাআ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কথা বলেছি। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ তুমি
কিভাবে বললে? রাবী বলেন, আমি বলেছি, “আল্লাহর জন্য অশেষ প্রশংসা, পবিত্রময়
প্রশংসা, বারকাতময় প্রশংসা (এবং প্রশংসাকারীর জন্য) বারকাতময় প্রশংসা যা আমাদের
প্রতিপালক ভালবাসেন ও পছন্দ করেন।” রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহর শপথ, আমি দেখেছি তিরিশের বেশি ফেরেশতা তাড়াহুড়া করছে কে
কার আগে এটা নিয়ে উপরে উঠবে।
হাসান। সহীহ্ আবূ দাঊদ-৭৪৭, মিশকাত-(৯৯২)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু মাসঊদ ও মুয়াবিয়া ইবনু হাকাম হতেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ যাঈদ ইবনু
আরকামের হাদীসটি হাসান সহীহ্। অধিকাংশ বিদ্বানের আমল-এর উপরই। তারা বলেন, কেউ যদি নামাযে
স্বেচ্ছায় বা ভুলে কথা বলে তাহলে পুনরায় নামায পড়তে হবে । সুফইয়ান সাওরী, ইবনু মুবারক
ও কুফাবাসীদের অভিমত এটাই। কারো মতে যদি স্বেচ্ছায় কথা বলে তাহলে পুনরায় নামায পড়তে
হবে। আর যদি ভুলে বা অজ্ঞতাবশতঃ কথা বলে তাহলে পুনরায় পড়ার প্রয়োজন নেই। ইমাম শাফিঈ
এ মতের সমর্থক।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৮৬. অনুচ্ছেদঃ
তাওবা করার সময় নামায
আদায় করা
৪০৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ الْمُغِيرَةِ، عَنْ
عَلِيِّ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ أَسْمَاءَ بْنِ الْحَكَمِ الْفَزَارِيِّ، قَالَ
سَمِعْتُ عَلِيًّا، يَقُولُ إِنِّي كُنْتُ رَجُلاً إِذَا سَمِعْتُ مِنْ، رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَدِيثًا نَفَعَنِي اللَّهُ مِنْهُ بِمَا شَاءَ أَنْ
يَنْفَعَنِي بِهِ وَإِذَا حَدَّثَنِي رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِهِ اسْتَحْلَفْتُهُ
فَإِذَا حَلَفَ لِي صَدَّقْتُهُ وَإِنَّهُ حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرٍ وَصَدَقَ أَبُو
بَكْرٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا
مِنْ رَجُلٍ يُذْنِبُ ذَنْبًا ثُمَّ يَقُومُ فَيَتَطَهَّرُ ثُمَّ يُصَلِّي ثُمَّ
يَسْتَغْفِرُ اللَّهَ إِلاَّ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ " . ثُمَّ قَرَأَ
هَذِهِ الآيَةَ : (وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا
أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ وَمَنْ يَغْفِرُ
الذُّنُوبَ إِلاَّ اللَّهُ وَلَمْ يُصِرُّوا عَلَى مَا فَعَلُوا وَهُمْ
يَعْلَمُونَ ) . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي
الدَّرْدَاءِ وَأَنَسٍ وَأَبِي أُمَامَةَ وَمُعَاذٍ وَوَاثِلَةَ وَأَبِي الْيَسَرِ
وَاسْمُهُ كَعْبُ بْنُ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ
حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ عُثْمَانَ بْنِ
الْمُغِيرَةِ . وَرَوَى عَنْهُ شُعْبَةُ وَغَيْرُ وَاحِدٍ فَرَفَعُوهُ مِثْلَ
حَدِيثِ أَبِي عَوَانَةَ . وَرَوَاهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَمِسْعَرٌ
فَأَوْقَفَاهُ وَلَمْ يَرْفَعَاهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ
رُوِيَ عَنْ مِسْعَرٍ هَذَا الْحَدِيثُ مَرْفُوعًا أَيْضًا . وَلاَ نَعْرِفُ
لأَسْمَاءَ بْنِ الْحَكَمِ حَدِيثًا مَرْفُوعًا إِلاَّ هَذَا .
আসমা ইবনু হাকাম
আল-ফাযারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আলী
(রাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ আমি এমন এক ব্যক্তি ছিলাম যখন আমি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন হাদীস শুনতাম, আল্লাহ তা’আলা যতটুকু
চাইতেন আমি তা হতে ফায়দা উঠাতাম। যখন তাঁর কোন সাহাবী আমার নিকট হাদীস বলতেন আমি
তাঁকে শপথ করাতাম। সে যখন শপথ করে বলত আমি তাকে বিশ্বাস করতাম। আবূ বকর (রাঃ)
আমাকেও হাদীস বলেছেন, আর তিনি সত্যিই বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে কোন ব্যক্তি যদি গুনাহ করে
ফেলে, তারপর উঠে পবিত্রতা অর্জন করে কিছু নামায আদায় করে আল্লাহ তা’আলার নিকট
তাওবা করে আল্লাহ তা’আলা তার গুনাহ মাফ করে দিবেন। তারপর তিনি (রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “যাদের অবস্থা এরূপ যে,
তাদের দ্বারা যদি কোন অশ্লীল কাজ সংঘটিত হয় অথবা তারা কোন গুনাহ করে নিজেদের উপর
যুলুম করে বসে, তবে সংগে সংগেই তারা তারা আল্লাহ তা’আলার কথা মনে করে এবং তাদের
গুনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ তা’আলা ছাড়া গুনাহ মাফ করতে পারে এমন কে আছে?
এ লোকেরা জেনে বুঝে নিজেদের অন্যায় কাজ বারবার করে না”-(সূরাঃ আলে ইমরান-১৩৫)।
হাসান, ইবনু মাজাহ-(১৩৯৫)।
উসমান ইবনু
মুগীরার সূত্রেই আমরা হাদীসটি জেনেছি। এ অনুচ্ছেদে ইবনু মাসঊদ, আবূ দারদা, আনাস, আবূ
উমামা, মুআয, ওয়াসিলা এবং আবুল ইয়াসার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আলীর হাদীসটি হাসান। আমরা হাদীসটি শুধুমাত্র ‘উসমান ইবনু মুগীরার সূত্রেই
জেনেছ। উল্লেখিত হাদীসটি শু’বা মারফূ হিসাবে বর্ণনা করেছেন, সুফিয়ান সাওরী ও মিসআর
মাওকূফ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। মিসআর অবশ্য মারফূ হিসাবেও এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
আসমা ইবনুল হাকাম হতে এই হাদীসটি ছাড়া আমাদের অন্য কোন মারফূ হাদীস জানা নেই।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১৮৭. অনুচ্ছেদঃ
বালকদের কখন হতে
নামায আদায়ের নির্দেশ দিতে হবে
৪০৭
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ
الرَّبِيعِ بْنِ سَبْرَةَ الْجُهَنِيُّ، عَنْ عَمِّهِ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ
الرَّبِيعِ بْنِ سَبْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " عَلِّمُوا الصَّبِيَّ الصَّلاَةَ ابْنَ
سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُ عَلَيْهَا ابْنَ عَشْرٍ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
سَبْرَةَ بْنِ مَعْبَدٍ الْجُهَنِيِّ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَعَلَيْهِ
الْعَمَلُ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ
. وَقَالاَ مَا تَرَكَ الْغُلاَمُ بَعْدَ الْعَشْرِ مِنَ الصَّلاَةِ فَإِنَّهُ
يُعِيدُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَبْرَةُ هُوَ ابْنُ مَعْبَدٍ الْجُهَنِيُّ
وَيُقَالَ هُوَ ابْنُ عَوْسَجَةَ .
সাবরা ইবনু মা’বাদ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সাত বছর বয়সে বালকদের
নামায শিখাও এবং দশ বছরে পৌঁছলে নামায আদায়ের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য দৈহিক শাস্তি
দাও।
এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাসান সহীহ্। মিশকাত-(৫৭২, ৫৭৩), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(২৪৭), ইরওয়া-(২৪৭), তা’লীক আলা
ইবনু খুজাইমাহ-(১০০২)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ সাবরা ইবনু মা’বাদের হাদীসটি হাসান সহীহ্। একদল বিদ্বান এ হাদীসের উপর আমল করেছেন।
ইমাম আহমাদ এবং ইসহাকও একথা বলছেন। তাঁরা উভয়ে বলেছেন, কোন বালক দশ বছরের পর নামায
না আদায় করলে এগুলোর কাযা তাকে অবশ্যই আদায় করতে হবে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ সাবরা হলেন ইবনু মা’বাদ আল-জুহানী, এও বলা হয়ে থাকে যে, তিনি ইবনু
‘আওসাজাহ।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
১৮৮. অনুচ্ছেদঃ
তাশাহ্হুদ পাঠের পর
ওযূ ভঙ্গ হলে
৪০৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى الْمُلَقَّبُ، مَرْدَوَيْهِ قَالَ
أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زِيَادِ
بْنِ أَنْعُمَ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ رَافِعٍ، وَبَكْرَ بْنَ سَوَادَةَ،
أَخْبَرَاهُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " إِذَا أَحْدَثَ - يَعْنِي الرَّجُلَ - وَقَدْ جَلَسَ فِي
آخِرِ صَلاَتِهِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ فَقَدْ جَازَتْ صَلاَتُهُ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ إِسْنَادُهُ لَيْسَ بِذَاكَ الْقَوِيِّ وَقَدِ
اضْطَرَبُوا فِي إِسْنَادِهِ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى
هَذَا . قَالُوا إِذَا جَلَسَ مِقْدَارَ التَّشَهُّدِ وَأَحْدَثَ قَبْلَ أَنْ
يُسَلِّمَ فَقَدْ تَمَّتْ صَلاَتُهُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا
أَحْدَثَ قَبْلَ أَنْ يَتَشَهَّدَ وَقَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ أَعَادَ الصَّلاَةَ .
وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ . وَقَالَ أَحْمَدُ إِذَا لَمْ يَتَشَهَّدْ
وَسَلَّمَ أَجْزَأَهُ لِقَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم "
وَتَحْلِيلُهَا التَّسْلِيمُ " وَالتَّشَهُّدُ أَهْوَنُ قَامَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم فِي اثْنَتَيْنِ فَمَضَى فِي صَلاَتِهِ وَلَمْ يَتَشَهَّدْ .
وَقَالَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ إِذَا تَشَهَّدَ وَلَمْ يُسَلِّمْ أَجْزَأَهُ
. وَاحْتَجَّ بِحَدِيثِ ابْنِ مَسْعُودٍ حِينَ عَلَّمَهُ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم التَّشَهُّدَ فَقَالَ " إِذَا فَرَغْتَ مِنْ هَذَا فَقَدْ
قَضَيْتَ مَا عَلَيْكَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
زِيَادِ بْنِ أَنْعُمٍ هُوَ الإِفْرِيقِيُّ وَقَدْ ضَعَّفَهُ بَعْضُ أَهْلِ
الْحَدِيثِ مِنْهُمْ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ وَأَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ
.
আব্দুল্লাহ ইবনু
আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যদি নামাযের
শেষে (তাশাহ্হুদের জন্য) বসে সালাম ফিরানোর পূর্বে বাতকর্ম করে তবে তার নামায
জায়িয হবে (নতুন করে আদায় করতে হবে না)।
যঈফ, আবূ দাঊদ (২৬, ১৮১)
আবূ ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসের সনদ তেমন শক্তিশালী নয়। এর বর্ণনাকারীগণ তাদের বর্ণনায় গরমিল করেছেন।
এ হাদীসের ভিত্তিতে একদল মনীষী বলেছেনঃ তাশাহ্হুদ পাঠের পরিমাণ সময় বসার পর এবং সালাম
ফিরানোর পূর্বে বাতকর্ম হলে নামায পূর্ণ হয়ে যাবে। অপর একদল মনীষী বলেছেনঃ যদি তাশাহ্হুদ
ও সালাম ফিরানোর পূর্বে বাতকর্ম হয় তবে আবার নামায আদায় করতে হবে। ইমাম শাফিঈ একথা
বলেছেন। ইমাম আহমাদ বলেছেন, যদি তাশাহ্হুদ পাঠ না করে সালাম ফিরানো হয় তবে নামায হয়ে
যাবে। কেননা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “নামাযের সমাপ্তি
ঘোষণা হল সালাম।” আর তাশাহ্হুদ এমন কোন জরুরী বিষয় নয়। একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাশাহ্হুদ পাঠ না করেই দ্বিতীয় রাক’আত থেকে উঠে দাঁড়ালেন এবং
নামায পূর্ণ করলেন। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম বলেছেন, তাশাহ্হুদ পাঠের পর এবং সালাম ফিরানোর
পূর্বে (বাতকর্ম হলে) নামায জায়িয হবে। তিনি ইবনু মাসঊদের হাদীসকে তাঁর মতের সমর্থনে
দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে তাশাহ্হুদ
শিক্ষা দেওয়ার সময় বললেনঃ “যখন তুমি এটা পাঠ করে অবসর হলে, তখন তোমার দায়িত্ব শেষ হল।”
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসের এক রাবী আবদুর রহমান ইবনু যিয়াদকে হাদীসবিশারদগণ দুর্বল বলেছেন।
ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ ও আহমাদ ইবনু হাম্বল তাদের মধ্যে আছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৮৯. অনুচ্ছেদঃ
বৃষ্টির সময় ঘরে
নামায আদায় করা প্রসঙ্গে
৪০৯
حَدَّثَنَا
أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ،
عَنْ جَابِرٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ
فَأَصَابَنَا مَطَرٌ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مَنْ شَاءَ
فَلْيُصَلِّ فِي رَحْلِهِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ
وَسَمُرَةَ وَأَبِي الْمَلِيحِ عَنْ أَبِيهِ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَمُرَةَ
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ
رَخَّصَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الْقُعُودِ عَنِ الْجَمَاعَةِ وَالْجُمُعَةِ فِي
الْمَطَرِ وَالطِّينِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . قَالَ أَبُو عِيسَى
سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ يَقُولُ رَوَى عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ
عَلِيٍّ حَدِيثًا . وَقَالَ أَبُو زُرْعَةَ لَمْ نَرَ بِالْبَصْرَةِ أَحْفَظَ
مِنْ هَؤُلاَءِ الثَّلاَثَةِ عَلِيِّ بْنِ الْمَدِينِيِّ وَابْنِ الشَّاذَكُونِيِّ
وَعَمْرِو بْنِ عَلِيٍّ . وَأَبُو الْمَلِيحِ اسْمُهُ عَامِرٌ وَيُقَالُ زَيْدُ
بْنُ أُسَامَةَ بْنِ عُمَيْرٍ الْهُذَلِيُّ .
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা কোন
এক সফরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। আমাদেরকে বৃষ্টিতে
পেল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যার ইচ্ছা নিজের হাওদার মধ্যে
নামায আদায় করে নিতে পারে।
সহীহ্। ইরওয়া-(২/৩৪০, ৩৪১), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৯৭৬)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার, সামুরা, আবুল মালীহ নিজ পিতার সূত্রে ও ‘আবদুর রহমান ইবনু সামুরা (রাঃ)
হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ জাবিরের হাদীসটি হাসান সহীহ্। বিদ্বানগণ বৃষ্টি
ও কাদা মাটির কারণে জামা’আত ছেড়ে ঘরে নামায আদায়ের সম্মতি দিয়েছেন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক
একই রকম কথা বলেছেন।
আবূ যুর’আহ্ বলেন, ‘আফফান ইবনু মুসলিম (রহঃ) ‘আমর ইবনু ‘আলী (রহঃ)-এর সূত্রে একটি
হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ যুর’আ আরো বলেন, আমি বসরায় আলী ইবনুল মাদীনী, ইবনুশ শাযাকূনী
ও ‘আমর ইবনু ‘আলী (রহঃ)-এর চেয়ে বড় হাফিজে হাদীস দেখিনি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯০. অনুচ্ছেদঃ
নামাযের পর তাসবীহ
পাঠ করা
৪১০
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ حَبِيبِ بْنِ الشَّهِيدِ الْبَصْرِيُّ،
وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَتَّابُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ خُصَيْفٍ،
عَنْ مُجَاهِدٍ، وَعِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ جَاءَ الْفُقَرَاءُ
إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ
الأَغْنِيَاءَ يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَلَهُمْ
أَمْوَالٌ يُعْتِقُونَ وَيَتَصَدَّقُونَ قَالَ " فَإِذَا صَلَّيْتُمْ
فَقُولُوا سُبْحَانَ اللَّهِ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ مَرَّةً وَالْحَمْدُ لِلَّهِ
ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ مَرَّةً وَاللَّهُ أَكْبَرُ أَرْبَعًا وَثَلاَثِينَ مَرَّةً
وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ عَشْرَ مَرَّاتٍ فَإِنَّكُمْ تُدْرِكُونَ بِهِ مَنْ
سَبَقَكُمْ وَلاَ يَسْبِقُكُمْ مَنْ بَعْدَكُمْ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ وَأَنَسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَزَيْدِ بْنِ
ثَابِتٍ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي ذَرٍّ . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَحَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَفِي الْبَابِ
أَيْضًا عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَالْمُغِيرَةِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " خَصْلَتَانِ لاَ يُحْصِيهِمَا رَجُلٌ
مُسْلِمٌ إِلاَّ دَخَلَ الْجَنَّةَ يُسَبِّحُ اللَّهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ
عَشْرًا وَيَحْمَدُهُ عَشْرًا وَيُكَبِّرُهُ عَشْرًا وَيُسَبِّحُ اللَّهَ عِنْدَ
مَنَامِهِ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَيَحْمَدُهُ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ
وَيُكَبِّرُهُ أَرْبَعًا وَثَلاَثِينَ " .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বিলেন, গরীব
সাহাবাগণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এলেন। তাঁরা
বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ! ধনীরা আমাদের মত নামায আদায় করে এবং রোযা রাখে। তাদের
সম্পদ আছে, তারা দাস আযাদ করতে পারে এবং দান-খয়রাত করতে পারে। তিনি বললেনঃ যখন
তোমরা নামায আদায় করবে তখন (নামায শেষে) তেত্রিশ বার “সুবহানাল্লাহ” তেত্রিশবার
“আলহামদু লিল্লাহ”, চৌত্রিশবার “আল্লাহু আকবার” এবং দশবার “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”
পাঠ করবে। যারা (সাওয়াবের ক্ষেত্রে) তোমাদেরকে ছাড়িয়ে গেছে এর দ্বারা তোমরা
তাদেরকে ধরে ফেলতে পারবে। আর যারা তোমাদের পিছে পড়ে আছে তারা তোমাদেরকে ধরতে পারবে
না।
সনদ দুর্বল, তালীকুর রাগীব (২/২৬০), তাহলীলের অংশটুকু মুনকার।
এ অনুচ্ছেদে
কা’ব ইবনু উজরা, আনাস, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, যাইদ ইবনু সাবিত, আবূ দারদা, ইবনু উমার
আবূ যার, আবূ হুরাইরা ও মুগীরা (রাঃ) হতেও হাদিস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেনঃ ইবনু আব্বাসের
হাদিসটি হাসান গারীব। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট হতে
আরো বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ দুটি বৈশিষ্ট্য যে মুসলমানের মধ্যে পাওয়া যাবে সে জান্নাতে
যাবে। তার একটি হল, প্রতি ওয়াক্তের নামাযের পর দশবার “সুবহানাল্লাহ”, দশবার “আলহামদু
লিল্লাহ” এবং চৌত্রিশবার “আল্লাহু আকবার” পাঠ করা। দ্বিতীয়টি হল, শোয়ার সময় তেত্রিশবার
“সুবহানাল্লাহ”, তেত্রিশবার “আলহামদু লিল্লাহ” এবং চৌত্রিশবার “আল্লাহু আকবার” পাঠ
করা।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৯১. অনুচ্ছেদঃ
বৃষ্টি ও কাদার কারণে
পশুর (যানবাহনে) উপর নামায আদায় প্রসঙ্গে
৪১১
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ بْنُ سَوَّارٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ
الرَّمَّاحِ الْبَلْخِيُّ، عَنْ كَثِيرِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
عُثْمَانَ بْنِ يَعْلَى بْنِ مُرَّةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّهُمْ
كَانُوا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي مَسِيرٍ فَانْتَهَوْا إِلَى
مَضِيقٍ وَحَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَمُطِرُوا السَّمَاءُ مِنْ فَوْقِهِمْ
وَالْبِلَّةُ مِنْ أَسْفَلَ مِنْهُمْ فَأَذَّنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم وَهُوَ عَلَى رَاحِلَتِهِ وَأَقَامَ - أَوْ أَقَامَ - فَتَقَدَّمَ عَلَى
رَاحِلَتِهِ فَصَلَّى بِهِمْ يُومِئُ إِيمَاءً يَجْعَلُ السُّجُودَ أَخْفَضَ مِنَ
الرُّكُوعِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ تَفَرَّدَ بِهِ عُمَرُ
بْنُ الرَّمَّاحِ الْبَلْخِيُّ لاَ يُعْرَفُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِهِ . وَقَدْ رَوَى
عَنْهُ غَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَكَذَلِكَ رُوِيَ عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ أَنَّهُ صَلَّى فِي مَاءٍ وَطِينٍ عَلَى دَابَّتِهِ . وَالْعَمَلُ
عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
‘আমর ইবনু ‘উসমান
ইবনু ইয়ালা ইবনু মুররাহ (রাঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার থেকে বর্ণিতঃ
একবার তাঁরা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সফরে ছিলেন। তারা একটি
সংকীর্ণ স্থান গিয়ে পৌঁছালো। নামাযের ওয়াক্ত এসে গেল। উপর থেকে আকাশ বৃষ্টিবর্ষণ
করছিল এবং নীচে ছিল কর্দমাক্ত মাটি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁর জন্তুযান থেকে আযান দিলেন এবং ইক্বামাত বললেন অথবা শুধু ইক্বামাত
দিলেন। তিনি আপন সওয়ারীসহ সামনে আগালেন এবং তাদের নামায আদায় করালেন। তিনি ইশারায়
রুকূ’ সিজদা করলেন এবং রুকূ’র চেয়ে সিজদায় বেশি ঝুঁকলেন।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা
বলেনঃ হাদিসটি গারীব। কেননা এক পর্যায়ে উমার ইবনু রিমাহ আল-বলখী একা বর্ণনা করেছেন।
অবশ্য তাঁর নিকট হতে অনেকেই বর্ণনা করেছেন। এমনিভাবে আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে,
‘তিনি পানি কাদার সময় বাহনের পিঠে নামায আদায় করেছেন।’
বিশেষজ্ঞগণ বাহনের পিঠে বসে নামায আদায় করা জায়িয বলেছেন। ইমাম আহমাদ এবং ইসহাকও একই
রকম কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১৯২. অনুচ্ছেদঃ
নামাযে কষ্ট স্বীকার
করা
৪১২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، وَبِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ الْعَقَدِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو
عَوَانَةَ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلاَقَةَ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، قَالَ
صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى انْتَفَخَتْ قَدَمَاهُ فَقِيلَ
لَهُ أَتَتَكَلَّفُ هَذَا وَقَدْ غُفِرَ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا
تَأَخَّرَ قَالَ " أَفَلاَ أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا " . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
মুগীরা ইবনু
শু’বাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এত সময় ধরে নামায আদায় করলেন যে,
তাঁর পা দুটি ফুলে উঠল। তাঁকে বলা হল, আপনি এতো কষ্ট করছেন, অথচ আপনার পূর্বাপর সব
গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বললেনঃ আমি কি একজন কৃতজ্ঞ বান্দা হব না।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৪১৯, ১৪২০), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরায়রা ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ মুগীরা ইবনু
শু’বার হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯৩. অনুচ্ছেদঃ
কিয়ামাতের দিন
বান্দার নিকট হতে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হবে
৪১৩
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ نَصْرِ بْنِ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ
حَمَّادٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، قَالَ حَدَّثَنِي قَتَادَةُ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ
حُرَيْثِ بْنِ قَبِيصَةَ، قَالَ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَقُلْتُ اللَّهُمَّ
يَسِّرْ لِي جَلِيسًا صَالِحًا . قَالَ فَجَلَسْتُ إِلَى أَبِي هُرَيْرَةَ
فَقُلْتُ إِنِّي سَأَلْتُ اللَّهَ أَنْ يَرْزُقَنِي جَلِيسًا صَالِحًا
فَحَدِّثْنِي بِحَدِيثٍ سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
لَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يَنْفَعَنِي بِهِ فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ بِهِ الْعَبْدُ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ مِنْ عَمَلِهِ صَلاَتُهُ فَإِنْ صَلُحَتْ فَقَدْ أَفْلَحَ وَأَنْجَحَ
وَإِنْ فَسَدَتْ فَقَدْ خَابَ وَخَسِرَ فَإِنِ انْتَقَصَ مِنْ فَرِيضَتِهِ شَيْءٌ
قَالَ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ انْظُرُوا هَلْ لِعَبْدِي مِنْ تَطَوُّعٍ
فَيُكَمَّلَ بِهَا مَا انْتَقَصَ مِنَ الْفَرِيضَةِ ثُمَّ يَكُونُ سَائِرُ
عَمَلِهِ عَلَى ذَلِكَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ تَمِيمٍ
الدَّارِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ
هَذَا الْوَجْهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَقَدْ رَوَى بَعْضُ أَصْحَابِ الْحَسَنِ
عَنِ الْحَسَنِ عَنْ قَبِيصَةَ بْنِ حُرَيْثٍ غَيْرَ هَذَا الْحَدِيثِ
وَالْمَشْهُورُ هُوَ قَبِيصَةُ بْنُ حُرَيْثٍ . وَرُوِيَ عَنْ أَنَسِ بْنِ
حَكِيمٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوُ هَذَا
.
হুরাইস ইবনু
ক্বাবীসা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
মাদীনায় আসলাম এবং বললাম, “হে আল্লাহ! আমাকে একজন নেককার সহযোগী দান কর”। রাবী
বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর নিকট অবস্থান করলাম। আমি (তাঁকে) বললাম, আমি
আল্লাহ তা’আলার নিকট একজন উত্তম সহযোগী চাইলাম। অতএব আপনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট শুনেছেন এমন একটি হাদীস আমাকে বলুন।
আশা করা যায় আল্লাহ তা’আলা আমাকে এর মাধ্যমে কল্যাণ দিবেন। তিনি বললেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ ক্বিয়ামাতের দিন
বান্দার কাজসমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হবে। যদি (নিয়মিতভাবে)
ঠিকমত নামায আদায় করা হয়ে থাকে তবে সে নাজাত পাবে এবং সফলকাম হবে। যদি নামায নষ্ট
হয়ে থাকে তবে সে ব্যর্থ ও বিপর্যস্ত হবে। যদি ফরয নামাযের মধ্যে কিছু কমতি হয়ে
থাকে তবে মহান আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ দেখ, বান্দার কোন নফল নামায আছে কি না। থাকলে
তা দিয়ে ফরযের এ ঘাটতি পূরণ করা হবে। তারপর সকল কাজের বিচার পালাক্রমে এভাবে করা
হবে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৪২৫, ১৪২৬)।
এ অনুচ্ছেদে
তামীম আদ-দারী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রার হাদীসটি উপরোক্ত
সূত্রে হাসান গারীব। উল্লেখিত হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর নিকট হতে একাধিক সূত্রে
বর্ণিত হয়েছে। হাসানের কোন কোন সঙ্গী হাসানের সূত্রে ক্বাবীসা ইবনু হুরাইস হতে অন্য
হাদীস বর্ণনা করেছেন। আনাস ইবনু হাকীমের সূত্রে ও আবূ হুরায়রা হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত
হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯৪. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তি দৈনিক বার
রাকা’আত সুন্নাত নামায আদায় করে তার ফযিলত
৪১৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ النَّيْسَابُورِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ
سُلَيْمَانَ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ بْنُ زِيَادٍ، عَنْ عَطَاءٍ،
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ
ثَابَرَ عَلَى ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً مِنَ السُّنَّةِ بَنَى اللَّهُ لَهُ
بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ
بَعْدَهَا وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ
وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْفَجْرِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ
حَبِيبَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي مُوسَى وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَمُغِيرَةُ
بْنُ زِيَادٍ قَدْ تَكَلَّمَ فِيهِ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ
.
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সবসময় বার
রাক’আত সুন্নাত নামায আদায় করে আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরী
করেন। এ সুন্নাতগুলো হল, যুহরের (ফরযের) পূর্বে চার রাক’আত ও পরে দুই রাক’আত,
মাগরিবের (ফরযের) পর দুই রাক’আত, ‘ইশার (ফরযের) পর দুই রাক’আত এবং ফযরের (ফরযের)
পূর্বে দুই রাক’আত।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১১৪০)।
এ অনুচ্ছেদে
উম্মু হাবীবা, আবূ হুরায়রা, আবূ মূসা ও ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
‘ঈসা বলেনঃ উল্লেখিত সনদে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসটি গারীব। একদল বিশেষজ্ঞ মুগীরা
ইবনু যিয়াদের স্মরণশক্তির (দুর্বলতার) সমালোচনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪১৫
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا مُؤَمَّلٌ، - هُوَ ابْنُ إِسْمَاعِيلَ
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْمُسَيَّبِ بْنِ
رَافِعٍ، عَنْ عَنْبَسَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ، قَالَتْ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ صَلَّى فِي يَوْمٍ
وَلَيْلَةٍ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً بُنِيَ لَهُ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ
أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ
الْمَغْرِبِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ
الْفَجْرِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ عَنْبَسَةَ عَنْ أُمِّ
حَبِيبَةَ فِي هَذَا الْبَابِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ
عَنْبَسَةَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ .
উম্মু হাবীবা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দিন রাতে বার
রাক’আত নামায আদায় করবে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করা হবে। যুহরের নামাযের
পূর্বে চার রাক’আত ও পরে দুই রাক’আত, মাগরিবের নামাযের পরে দুই রাক’আত, ‘ইশার
নামাযের পরে দুই রাক’আত এবং ভোরের ফজরের নামাযের পূর্বে দুই রাক’আত।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১১৪১)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আনবাসার সূত্রে উম্মু হাবীবার হাদীসটি হাসান সহীহ্। আনবাসা হতে অন্য সূত্রেও
হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯৫. অনুচ্ছেদঃ
ফজরের দুই রাক’আত
সুন্নাতের ফাজিলাত
৪১৬
حَدَّثَنَا
صَالِحُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ التِّرْمِذِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " رَكْعَتَا
الْفَجْرِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا " . قَالَ وَفِي الْبَابِ
عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ عَنْ
صَالِحِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ التِّرْمِذِيِّ حَدِيثَ عَائِشَةَ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফজরের দুই রাক’আত
(সুন্নাত) নামায দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়েও উত্তম।
সহীহ্। ইরওয়া-(৪৩৭), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আলী, ইবনু ‘উমার ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আয়িশাহ্
(রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান সহীহ্। আহমাদ ইবনু হাম্বাল সালিহ ইবনু আব্দিল্লাহর সূত্রে
‘আয়িশাহ্ হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯৬. অনুচ্ছেদঃ
ফজরের সুন্নাত এবং
তার কিরা’আত সংক্ষিপ্ত করা
৪১৭
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَأَبُو عَمَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ
الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ مُجَاهِدٍ،
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ رَمَقْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم شَهْرًا فَكَانَ
يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْفَجْرِ بِـْ : (يَا أَيُّهَا
الْكَافِرُونَ ) وَ (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ) قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ
ابْنِ مَسْعُودٍ وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَحَفْصَةَ
وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ وَلاَ
نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ الثَّوْرِيِّ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ
أَبِي أَحْمَدَ وَالْمَعْرُوفُ عِنْدَ النَّاسِ حَدِيثُ إِسْرَائِيلَ عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي أَحْمَدَ عَنْ إِسْرَائِيلَ هَذَا
الْحَدِيثُ أَيْضًا . وَأَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ ثِقَةٌ حَافِظٌ . قَالَ
سَمِعْتُ بُنْدَارًا يَقُولُ مَا رَأَيْتُ أَحَدًا أَحْسَنَ حِفْظًا مِنْ أَبِي
أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيِّ . وَأَبُو أَحْمَدَ اسْمُهُ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ الْكُوفِيُّ الأَسَدِيُّ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক
মাস পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পর্যবেক্ষণ করলাম।
তিনি ফজরের (ফরযের) পূর্বের দুই রাক’আতে সূরা ‘কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরূন’ ও কুল
হুওয়াল্লাহু আহাদ’ পাঠ করতেন।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(১১৪৯)।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু মাসঊদ, আনাস, আবূ হুরায়রা, ইবনু ‘আব্বাস, হাফসা ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস
বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘উমারের হাদীসটি হাসান। আমরা উল্লেখিত হাদীসটি সুফিয়ান
সাওরী হতে আবূ ইসহাকের সূত্রে আবূ আহমাদ ছাড়া অন্য কারো নিকট থেকে পাইনি। লোকদের নিকট
ইসরাঈল হতে আবূ ইসহাকের সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি বেশি পরিচিত। ইসরাঈল হতে আবু আহমাদের
সূত্রেও হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। আবূ আহমাদ নির্ভরযোগ্য হাফিজ। বুনদার বলেন, আবূ আহমাদ
আয-যুবাইরীর চেয়ে উত্তম স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন আর কাউকে দেখিনি। আবূ আহমাদের নাম মুহাম্মাদ
ইবনু আব্দিল্লাহ আয-যুবাইর আল-কূফী আল-আসাদী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯৭. অনুচ্ছেদঃ
ফজরের দুই রাক’আত
সুন্নাত আদায়ের পর কথাবার্তা বলা
৪১৮
حَدَّثَنَا
يُوسُفُ بْنُ عِيسَى الْمَرْوَزِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ،
قَالَ سَمِعْتُ مَالِكَ بْنَ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ،
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى
رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فَإِنْ كَانَتْ لَهُ إِلَىَّ حَاجَةٌ كَلَّمَنِي وَإِلاَّ
خَرَجَ إِلَى الصَّلاَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَقَدْ كَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَغَيْرِهِمُ الْكَلاَمَ بَعْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ حَتَّى يُصَلِّيَ صَلاَةَ
الْفَجْرِ إِلاَّ مَا كَانَ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ أَوْ مِمَّا لاَ بُدَّ مِنْهُ
وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের দুই রাক’আত সুন্নাত আদায়
করতেন, তারপর আমার সাথে কথা বলার দরকার হলে কথা বলতেন, নতুবা নামাযের জন্য মসজিদে
চলে যেতেন।
সহীহ্। সহীহ আবূ দাঊদ-(১১৪৭, ১১৪৮), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন কোন সাহাবা
ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর হতে নামায আদায়ের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে কথাবার্তা বলা মাকরূহ
বলেছেন। হ্যাঁ আল্লাহর যিকির ও অতি প্রয়োজনীয় কথা বলা যেতে পারে। ইমাম আহমাদ এবং ইসহাকও
একই রকম মত দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯৮. অনুচ্ছেদঃ
ফজর শুরু হওয়ার পর
দুই রাক’আত সুন্নাত ব্যতীত আর কোন নামায নেই
৪১৯
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ
مُحَمَّدٍ، عَنْ قُدَامَةَ بْنِ مُوسَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْحُصَيْنِ، عَنْ
أَبِي عَلْقَمَةَ، عَنْ يَسَارٍ، مَوْلَى ابْنِ عُمَرَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ صَلاَةَ بَعْدَ الْفَجْرِ
إِلاَّ سَجْدَتَيْنِ " . وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ إِنَّمَا يَقُولُ
لاَ صَلاَةَ بَعْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ إِلاَّ رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَحَفْصَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ
قُدَامَةَ بْنِ مُوسَى وَرَوَى عَنْهُ غَيْرُ وَاحِدٍ . وَهُوَ مَا اجْتَمَعَ
عَلَيْهِ أَهْلُ الْعِلْمِ كَرِهُوا أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ بَعْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ
إِلاَّ رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর দুই রাক’আত
(সুন্নাত) নামায ব্যতীত আর কোন নামায নেই।
উল্লেখিত হাদীসের অর্থ হল, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন
যে, ফজরের দুই রাক’আত সুন্নাত নামায ছাড়া ফজরের ফরয নামাযের আগে সুবহি সাদিক শুরু
হওয়ার পর আর কোন নামায নেই।
সহীহ্। ইরওয়া-(৪৭৮)। সহীহ আবূ দাঊদ-(১১৫৯)।
এ অনুচ্ছেদে
‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর ও হাফসা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু
‘উমারের হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু মাত্র কুদামা ইবনু মূসার সূত্রেই হাদীসটি জেনেছি।
ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর ফরয নামাযের আগে দুই রাক’আত সুন্নাত ব্যতীত অন্য কোন নামায
আদায় করা মাকরূহ। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অভিন্নমত রয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯৯. অনুচ্ছেদঃ
ফজরের সুন্নাত আদায়ের
পর শোয়া
৪২০
حَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ الْعَقَدِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ،
حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ رَكْعَتَىِ
الْفَجْرِ فَلْيَضْطَجِعْ عَلَى يَمِينِهِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
عَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا صَلَّى رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فِي
بَيْتِهِ اضْطَجَعَ عَلَى يَمِينِهِ . وَقَدْ رَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ
أَنْ يُفْعَلَ هَذَا اسْتِحْبَابًا .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ ফজরের
দুই রাক’আত সুন্নাত আদায় করে তখন সে যেন ডান কাতে একটু শুয়ে নেয়।
সহীহ্। মিশকাত-(১২০৬), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(১১৪৬)।
এ অনুচ্ছেদে
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রার হাদীসটি এই সূত্রে
হাসান সহীহ গারীব।
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, “নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নিজের
ঘরে ফজরের দুই রাক’আত সুন্নাত নামায আদায় করতেন তখন ডান কাতে শুয়ে নিতেন।’’
কোন কোন বিদ্বান এটাকে মুস্তাহাব বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০০. অনুচ্ছেদঃ
ইক্বামাত হয়ে গেলে
ফরয নামায ছাড়া অন্য নামায নেই
৪২১
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا
بْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَطَاءَ بْنَ
يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ صَلاَةَ إِلاَّ الْمَكْتُوبَةُ
" . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ بُحَيْنَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عَمْرٍو وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَرْجِسَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَنَسٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَهَكَذَا رَوَى
أَيُّوبُ وَوَرْقَاءُ بْنُ عُمَرَ وَزِيَادُ بْنُ سَعْدٍ وَإِسْمَاعِيلُ بْنُ
مُسْلِمٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ جُحَادَةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ عَنْ عَطَاءِ
بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
وَرَوَى حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ وَسُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارٍ فَلَمْ يَرْفَعَاهُ . وَالْحَدِيثُ الْمَرْفُوعُ أَصَحُّ عِنْدَنَا .
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ أَنْ لاَ
يُصَلِّيَ الرَّجُلُ إِلاَّ الْمَكْتُوبَةَ . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ
الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ رَوَاهُ عَيَّاشُ بْنُ عَبَّاسٍ الْقِتْبَانِيُّ
الْمِصْرِيُّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم نَحْوَ هَذَا .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন নামাযের জন্য ইকামাত
দেওয়া হয় তখন ফরয নামায ছাড়া অন্য কোন নামায নেই।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(১১৫১), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু বুহাইনা, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সারজিস, ইবনু ‘আব্বাস ও আনাস
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রার হাদীসটি হাসান। আইউব, ওয়ারাকা
ইবনু ‘উমার, যিয়াদ ইবনু সা’দ, ইসমাঈল ইবনু মুসলিম এবং মুহাম্মাদ ইবনু জুহাদা সম্মিলিতভাবে
এ হাদীসটি ‘আমর ইবনু দীনার হতে, তিনি আতা হতে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে মারফু’ হিসাবে
বর্ণনা করেছেন। হাম্মাদ ইবনু যায়িদ ও সুফিয়ান ইবনু ‘উআইনা তাদের সনদ পরম্পরায় ‘আমর
ইবনু দীনার-এর সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তাঁরা মারফূ’ হিসাবে বর্ণনা
করেননি। তবে মারফূ’ হিসাবে বর্ণিত হাদীসটিই আমাদের মতে বেশি সহীহ্।
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী ও অন্যান্যরা এ হাদীস অনুসারে আমল
করেছেন। তাঁরা বলেছেন, নামাযের জন্য ইক্বামাত দেওয়া হলে কোন ব্যক্তিই ফরয নামায ব্যতীত
অন্য কোন নামায আদায় করবে না। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাকও
একই রকম কথা বলেছেন। আরো কয়েকটি সূত্রে আবূ হুরায়রার নিকট হতে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।
‘আইয়্যাশ ইবনু ‘আব্বাস আবূ সালামা হতে তিনি আবূ হুরায়রা হতে তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০১. অনুচ্ছেদঃ
ফজরের সুন্নাত ফরযের
আগে আদায় করতে না পারলে ফরয নামায আদায়ের পর তা আদায় করবে
৪২২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو السَّوَّاقُ الْبَلْخِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
إِبْرَاهِيمَ، عَنْ جَدِّهِ، قَيْسٍ قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَصَلَّيْتُ مَعَهُ الصُّبْحَ ثُمَّ انْصَرَفَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدَنِي أُصَلِّي فَقَالَ " مَهْلاً يَا
قَيْسُ أَصَلاَتَانِ مَعًا " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي لَمْ
أَكُنْ رَكَعْتُ رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ . قَالَ " فَلاَ إِذًا "
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ لاَ نَعْرِفُهُ
مِثْلَ هَذَا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ . وَقَالَ سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ سَمِعَ عَطَاءُ بْنُ أَبِي رَبَاحٍ مِنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ هَذَا
الْحَدِيثَ . وَإِنَّمَا يُرْوَى هَذَا الْحَدِيثُ مُرْسَلاً . وَقَدْ قَالَ
قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ بِهَذَا الْحَدِيثِ لَمْ يَرَوْا بَأْسًا أَنْ
يُصَلِّيَ الرَّجُلُ الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَكْتُوبَةِ قَبْلَ أَنْ تَطْلُعَ
الشَّمْسُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَعْدُ بْنُ سَعِيدٍ هُوَ أَخُو يَحْيَى بْنِ
سَعِيدٍ الأَنْصَارِيِّ . قَالَ وَقَيْسٌ هُوَ جَدُّ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
الأَنْصَارِيِّ وَيُقَالُ هُوَ قَيْسُ بْنُ عَمْرٍو وَيُقَالُ هُوَ قَيْسُ بْنُ
قَهْدٍ . وَإِسْنَادُ هَذَا الْحَدِيثِ لَيْسَ بِمُتَّصِلٍ مُحَمَّدُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيُّ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ قَيْسٍ . وَرَوَى بَعْضُهُمْ
هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ فَرَأَى قَيْسًا . وَهَذَا أَصَحُّ
مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الْعَزِيزِ عَنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ .
মুহাম্মাদ ইবনু
ইবরাহীম হতে তাঁর দাদা ক্কাইস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (ক্কাইস) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (নিজের ঘর হতে) বেরিয়ে আসলেন,
অতঃপর নামাযের ইক্কামাত দেওয়া হল। আমি তাঁর সাথে নামায আদায় করলাম। নামায হতে অবসর
হয়ে তিনি আমাকে নামাযরত অবস্থায় দেখলেন। তিনি বললেনঃ হে ক্কাইস, থামো! তুমি কি দুই
নামায একত্রে আদায় করছ? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ফজরের দুই রাক’আত
(সুন্নাত) আদায় করতে পারিনি। তিনি বললেনঃ তাহলে কোন দোষ নেই (পড়ে নাও)।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(১১৫১)
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ সা’দ ইবনু সা’ঈদের হাদীসের মাধ্যমেই কেবল আমরা মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীমের হাদীসটি
এভাবে জেনেছি। সুফিয়ান ইবনু ‘উআইনা বলেন, ‘আতা ইবনু আবূ রাবাহ এ হাদীসটি সা’দ ইবনু
সা’ঈদের নিকট শুনেছেন। এ হাদীসটি মুরসাল হিসাবে বর্ণিত হয়েছে। মক্কাবাসী ‘আলিমদের একদল
ফরয নামাযের পর সূর্য উঠার পূর্বে ফাওত হওয়া সুন্নাত দুই রাক’আত আদায় করতে কোন অপরাধ
মনে করেন না।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসের সনদ মুত্তাসিল (পরস্পর সংযুক্ত) নয়। মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম
কখনও কাইসের নিকট শুনেননি। অপর এক বর্ণনায় আছেঃ
“রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন এবং কাইসকে দেখতে পেলেন......।’’
সা’দ ইবনু সা’ঈদের সুত্রে বর্ণিত ‘আব্দুল ‘আযীযের হাদীসের চেয়ে এটি অধিক সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০২. অনুচ্ছেদঃ
ফজরের দুই রাক’আত
সুন্নাত ফরযের পূর্বে আদায় করতে না পারলে তা সূর্য উঠার পর আদায় করবে
৪২৩
حَدَّثَنَا
عُقْبَةُ بْنُ مُكْرَمٍ الْعَمِّيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ
عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ النَّضْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ
بَشِيرِ بْنِ نَهِيكٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " مَنْ لَمْ يُصَلِّ رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فَلْيُصَلِّهِمَا
بَعْدَ مَا تَطْلُعُ الشَّمْسُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ
عُمَرَ أَنَّهُ فَعَلَهُ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ
الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ
وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . قَالَ وَلاَ نَعْلَمُ أَحَدًا رَوَى
هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ هَمَّامٍ بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَ هَذَا إِلاَّ عَمْرَو
بْنَ عَاصِمٍ الْكِلاَبِيَّ . وَالْمَعْرُوفُ مِنْ حَدِيثِ قَتَادَةَ عَنِ
النَّضْرِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ بَشِيرِ بْنِ نَهِيكٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنْ
صَلاَةِ الصُّبْحِ قَبْلَ أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ فَقَدْ أَدْرَكَ الصُّبْحَ
" .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ফজরের দুই
রাক’আত সুন্নাত (ফরযের পুর্বে) আদায় করতে পারেনি সে সূর্য উঠার পর তা আদায় করবে।
সহীহ্। সহীহাহ্-(২৩৬১)
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ আমরা উল্লেখিত সূত্রেই শুধুমাত্র এ হাদীসটি জেনেছি। ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার
(রাঃ) এই হাদীস অনুসারে ‘আমল করতেন। একদল বিশেষজ্ঞ এ হাদীসের উপর ‘আমল করেছেন। সুফিয়ান
সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ, ইসহাক এবং ইবনুল মুবারাক একই রকম মত ব্যক্ত করেছেন। আবূ ‘ঈসা
আরো বলেনঃ ‘আমর ইবনু ‘আসিম ব্যতীত অন্য কেউ হাম্মাম হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন বলে
আমাদের জানা নেই।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে আরো বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, “যে ব্যক্তি সূর্য উঠার পূর্বে ফজরের এক রাক’আত ধরতে পারল সে ফজরের ওয়াক্ত পেল।’’
– উপরোক্ত সূত্রে বর্ণিত এ হাদীসটিই প্রসিদ্ধ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৩. অনুচ্ছেদঃ
যুহরের ফরয নামাযের
পূর্বে চার রাক’আত সুন্নাত
৪২৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ ضَمْرَةَ، عَنْ عَلِيٍّ،
قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعًا
وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَأُمِّ
حَبِيبَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ . قَالَ أَبُو
بَكْرٍ الْعَطَّارُ قَالَ عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
عَنْ سُفْيَانَ قَالَ كُنَّا نَعْرِفُ فَضْلَ حَدِيثِ عَاصِمِ بْنِ ضَمْرَةَ عَلَى
حَدِيثِ الْحَارِثِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ
مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ يَخْتَارُونَ
أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ . وَهُوَ قَوْلُ
سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَإِسْحَاقَ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ .
وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ صَلاَةُ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ مَثْنَى مَثْنَى
يَرَوْنَ الْفَصْلَ بَيْنَ كُلِّ رَكْعَتَيْنِ . وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ
.
‘আলী (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের (ফরয) নামাযের পূর্বে চার
রাক’আত এবং পরে দুই রাক’আত (সুন্নাত নামায) আদায় করতেন।
সহীহ্ ইবনু মাজাহ-(১১৬১)।
৪৩০ নং
হাদীসে এর বাকী অংশ বর্ণিত হবে। এ অনুচ্ছেদে ‘আয়িশাহ্ ও উম্মু হাবীবা (রাঃ) হতেও হাদীস
বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেন-’আলী (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটি হাসান। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবা ও তাঁদের পরবর্তীগণ যুহরের পূর্বে
চার রাক’আত সুন্নাত নামায আদায় করা পছন্দ করেছেন। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, ইসহাক
এবং কুফাবাসীগন একই রকম কথা বলেছেন। একদল বিশেষজ্ঞ বলেছেন, রাত এবং দিনের (অন্যান্য)
নামায দুই দুই রাক’আত। তাঁরা দুই দুই রাক’আত পর সালাম ফিরানোর কথা বলেছেন। ইমাম শাফিঈ
এবং ইমাম আহমাদ একথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৪. অনুচ্ছেদঃ
যুহরের ফরয নামাযের
পর দুই রাক’আত সুন্নাত
৪২৫
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ
أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ
عُمَرَ حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে যুহরের (ফরয) নামাযের পূর্বে দুই
রাক’আত এবং পরে দুই রাক’আত সুন্নাত আদায় করেছি।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(১১৩৮), বুখারী আরো পূর্ণভাবে।
এ অনুচ্ছেদে
‘আলী ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘উমারের হাদীসটি
হাসান সাহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৫. অনুচ্ছেদঃ
পূর্ববর্তী বিষয়ের
উপর
৪২৬
حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ الْعَتَكِيُّ الْمَرْوَزِيُّ،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم كَانَ إِذَا لَمْ يُصَلِّ أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ صَلاَّهُنَّ بَعْدَهُ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ
حَدِيثِ ابْنِ الْمُبَارَكِ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رَوَاهُ قَيْسُ بْنُ
الرَّبِيعِ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ نَحْوَ هَذَا . وَلاَ
نَعْلَمُ أَحَدًا رَوَاهُ عَنْ شُعْبَةَ غَيْرَ قَيْسِ بْنِ الرَّبِيعِ وَقَدْ
رُوِيَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم نَحْوُ هَذَا .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি যুহরের পূর্বে চার রাক’আত না আদায় করতেন
তবে যুহরের (ফরযের) পর তা আদায় করতেন।
সহীহ্। তামামুল মিন্নাহ্। যঈফা-(৪২০৮)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। ইবনুল মুবারাকের সুত্রেই আমরা এ হাদীসটি জেনেছি। ক্বাইস
ইবনু রাবী শুবা’র সুত্রে খালিদ হাযযা হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। কাইস ইবনু রাবী ব্যতীত
অন্য কেউ শুবা হতে বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। ‘আব্দুর রহমান ইবনু আবী লাইলার
সুত্রেও নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪২৭
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ الشُّعَيْثِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَنْبَسَةَ بْنِ أَبِي
سُفْيَانَ، عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " مَنْ صَلَّى قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعًا وَبَعْدَهَا أَرْبَعًا
حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ .
উম্মু হাবীবা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যুহরের
(ফরযের) পূর্বে চার রাক’আত এবং পরে চার রাক’আত নামায আদায় করবে আল্লাহ তা’আলা তার
প্রতি জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১১৬০)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। অন্য সূত্রেও হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪২৮
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ الْبَغْدَادِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ التِّنِّيسِيُّ الشَّأْمِيُّ، حَدَّثَنَا الْهَيْثَمُ بْنُ
حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنِي الْعَلاَءُ، هُوَ ابْنُ الْحَارِثِ عَنِ الْقَاسِمِ أَبِي
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَنْبَسَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ، قَالَ سَمِعْتُ
أُخْتِي أُمَّ حَبِيبَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَقُولُ سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ حَافَظَ عَلَى
أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ وَأَرْبَعٍ بَعْدَهَا حَرَّمَهُ اللَّهُ
عَلَى النَّارِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَالْقَاسِمُ هُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ يُكْنَى
أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَهُوَ مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ خَالِدِ بْنِ
يَزِيدَ بْنِ مُعَاوِيَةَ وَهُوَ ثِقَةٌ شَأْمِيٌّ وَهُوَ صَاحِبُ أَبِي أُمَامَةَ
.
‘আনবাসা ইবনু আবূ
সুফিয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বোন
এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবা (রাঃ)-কে বলতে
শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে
শুনেছিঃ যে ব্যক্তি যুহরের (ফরযের) পূর্বে চার রাক’আত এবং পরে চার রাক’আত নামাযের
হিফাজাত করবে আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন।
সহীহ্। প্রাগুক্ত।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। আবূ ‘আবদুর রহমান আল-কাসিম একজন সিকাহ রাবী। তিনি
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আবূ উমামার শাগরিদ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৬. অনুচ্ছেদঃ
আসরের (ফরয নামাযের)
পূর্বে চার রাক’আত
৪২৯
حَدَّثَنَا
بُنْدَارٌ، مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، هُوَ الْعَقَدِيُّ
عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ
عَاصِمِ بْنِ ضَمْرَةَ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّي قَبْلَ الْعَصْرِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ يَفْصِلُ بَيْنَهُنَّ
بِالتَّسْلِيمِ عَلَى الْمَلاَئِكَةِ الْمُقَرَّبِينَ وَمَنْ تَبِعَهُمْ مِنَ
الْمُسْلِمِينَ وَالْمُؤْمِنِينَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنِ
ابْنِ عُمَرَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَاخْتَارَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ أَنْ لاَ
يُفْصَلَ فِي الأَرْبَعِ قَبْلَ الْعَصْرِ وَاحْتَجَّ بِهَذَا الْحَدِيثِ .
وَقَالَ إِسْحَاقُ وَمَعْنَى أَنَّهُ يَفْصِلُ بَيْنَهُنَّ بِالتَّسْلِيمِ يَعْنِي
التَّشَهُّدَ . وَرَأَى الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ صَلاَةَ اللَّيْلِ
وَالنَّهَارِ مَثْنَى مَثْنَى يَخْتَارَانِ الْفَصْلَ فِي الأَرْبَعِ قَبْلَ
الْعَصْرِ .
‘আলী (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আসরের (ফরয নামাযের) পূর্বে চার রাক’আত নামায
আদায় করতেন। তিনি (আল্লাহর) নৈকট্য লাভকারী ফেরেশতা ও তাদের অনুগামী মুসলমান এবং
মু’মিনদের প্রতি সালাম করার মাধ্যমে এ নামাযের মাঝখানে বিভক্তি করতেন (দুই সালামে
চার রাক’আত আদায় করতেন)।
হাসান। ইবনু মাজাহ-(১১৬১), এটা পূর্বে বর্ণিত ৪২৫ নং হাদীসের বাকী অংশ।
এ অনুচ্ছেদে
ইবনু ‘উমার ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আলী
(রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ‘আসরের পূর্বে এক সালামেই চার রাক’আত আদায়
করা পছন্দ করেছেন। তিনি এ হাদীসকে দলীল হিসাবে গ্রহন করে বলেছেন, ‘সালামের মাধ্যমে
বিভক্তি করার’ তাৎপর্য হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুই রাক’আত
পর তাশাহ্হুদ পাঠ করতেন। ইমাম শাফিঈ এবং আহমাদের মতে, রাত এবং দিনের (ফরয নামায ছাড়া
অন্যান্য সব) নামায দুই রাক’আত করে আদায় হবে। তাঁরা উভয়ে আসরের পূর্বের চার রাক’আতে
দুই রাক’আত পর পর সালাম ফিরানোই পছন্দ করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৪৩০
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَأَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ
الدَّوْرَقِيُّ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُسْلِمِ بْنِ مِهْرَانَ، سَمِعَ
جَدَّهُ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
رَحِمَ اللَّهُ امْرَأً صَلَّى قَبْلَ الْعَصْرِ أَرْبَعًا " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ حَسَنٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি ‘আসরের পূর্বে চার রাক’আত নামায আদায় করবে
আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি অনুগ্রহ করুন।
হাসান। মিশকাত-(১১৭০), সহীহ্ আবূ দাঊদ-(১১৫৪), তা’লীকুর রাগীব-(১/২০৪), তা’লীক
আলা ইবনু খুজাইমাহ-(১১৯৩)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২০৭. অনুচ্ছেদঃ
মাগরিবের দুই রাক’আত
সুন্নাত এবং তার কিরা’আত
৪৩১
حَدَّثَنَا
أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا بَدَلُ بْنُ الْمُحَبَّرِ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ مَعْدَانَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ بَهْدَلَةَ، عَنْ
أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّهُ قَالَ مَا أُحْصِي
مَا سَمِعْتُ مِنْ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي
الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ
الْفَجْرِ بِـ :(قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ ) وَ (قُلْ هُوَ اللَّهُ
أَحَدٌ ) . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ مَسْعُودٍ لاَ
نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَعْدَانَ عَنْ عَاصِمٍ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মাগরিবের পরের দুই রাক’আতে এবং
ফজরের পূর্বের দুই রাক’আতে "কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরূন" এবং "কুল
হুওয়াল্লাহু আহাদ" সূরা দুটি এত সংখ্যকবার পাঠ করতে শুনেছি যে, তা গণনা করে
শেষ করতে পারব না। এ অনুচ্ছেদে ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১১৬৬)।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ ইবনু মাসঊদের হাদীসটি গারীব। ‘আবদুল মালিক ইবনু মা’দান হতে শুধুমাএ ‘আসিমের সূত্রেই
এই হাদীসটি আমারা জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৮. অনুচ্ছেদঃ
মাগরিবের (সুন্নাত)
দুই রাক’আত বাসায় আদায় করা
৪৩২
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ
أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ فِي بَيْتِهِ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ وَكَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে তাঁর বাসায় মাগরিবের পর দুই রাক’আত
সুন্নাত নামায আদায় করেছি।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(১১৫৮), বুখারী।
এ অনুচ্ছেদে
রাফি’ ইবনু খাদীজ ও কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু
‘উমারের হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৩৩
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ، قَالَ حَفِظْتُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَشْرَ رَكَعَاتٍ
كَانَ يُصَلِّيهَا بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الظُّهْرِ
وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ وَرَكْعَتَيْنِ
بَعْدَ الْعِشَاءِ الآخِرَةِ . قَالَ وَحَدَّثَتْنِي حَفْصَةُ أَنَّهُ كَانَ
يُصَلِّي قَبْلَ الْفَجْرِ رَكْعَتَيْنِ . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে দশ রাক’আত নামায
মুখস্থ রেখেছি। তিনি দিনরাত (চব্বিশ ঘণ্টায়) এ নামাযগুলো আদায় করতেন। যুহরের
পূর্বে দুই রাক’আত এবং পরে দুই রাক’আত, মাগরিবের পরে দুই রাক’আত এবং ‘ইশার পর দুই
রাক’আত। রাবী বলেন হাফসাহ্ আমাকে বলেছেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ) ফজরের পূর্বেও দুই
রাক’আত আদায় করতেন।
সহীহ্। ইরওয়া-(৪৪০), বুখারী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৩৪
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ،
عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم مِثْلَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
সারিম হতে ও ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে........ একই হাদীস পুনর্বার বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
২০৯. অনুচ্ছেদঃ
মাগরিবের পর ছয়
রাক’আত নফল নামায আদায়ের ফাযীলাত
৪৩৫
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، - يَعْنِي مُحَمَّدَ بْنَ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيَّ حَدَّثَنَا
زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ أَبِي خَثْعَمٍ، عَنْ يَحْيَى
بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ
سِتَّ رَكَعَاتٍ لَمْ يَتَكَلَّمْ فِيمَا بَيْنَهُنَّ بِسُوءٍ عُدِلْنَ لَهُ
بِعِبَادَةِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ سَنَةً " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ
رُوِيَ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ
صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ عِشْرِينَ رَكْعَةً بَنَى اللَّهُ لَهُ بَيْتًا فِي
الْجَنَّةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ
غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ زَيْدِ بْنِ الْحُبَابِ عَنْ عُمَرَ
بْنِ أَبِي خَثْعَمٍ . قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يَقُولُ
عُمَرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي خَثْعَمٍ مُنْكَرُ الْحَدِيثِ .
وَضَعَّفَهُ جِدًّا .
আবূ হুরাইরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির মাগরিবের পর
ছয় রাক’আত নামায আদায় করলে এবং তার মাঝখানে কোন অশালীন কথা না বললে তাঁকে এর
বিনিময়ে বার বছরের ইবাদাতের সমান সাওয়াব দেয়া হবে।
অত্যন্ত দুর্বল, ইবনু মাজাহ (১১৬৭)।
আবূ ঈসা
বলেনঃ আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাক’আত নামায আদায় করে আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য
জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করেন।
আবূ ঈসা বলেনঃ আবূ হুরাইরার হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র যাইদ ইবনু হুবাব হতে উমার
ইবনু আবূ খাসআমের সূত্রেই এ হাদীসটি জানতে পেরেছি। আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে বলতে
শুনেছি, উমার ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু আবূ খাসআম একজন প্রত্যাখ্যাত রাবী। হাদিসশাস্ত্রে
তিনি খুবই দুর্বল।
হাদিসের মানঃখুবই দুর্বল
২১০. অনুচ্ছেদঃ
‘ইশার নামাযের পর দুই
রাক’আত সুন্নাত
৪৩৬
حَدَّثَنَا
أَبُو سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ
خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ
عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ كَانَ يُصَلِّي
قَبْلَ الظُّهْرِ رَكْعَتَيْنِ وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ وَبَعْدَ الْمَغْرِبِ
ثِنْتَيْنِ وَبَعْدَ الْعِشَاءِ رَكْعَتَيْنِ وَقَبْلَ الْفَجْرِ ثِنْتَيْنِ .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ عَنْ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু
শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
‘আয়িশা (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামায
প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ) যুহরের পূর্বে দুই রাক’আত
এবং পরে দুই রাক’আত, মাগরিবের পর দুই রাক’আত, ‘ইশার পর দুই রাক’আত এবং ফজরের
পূর্বে দুই রাক’আত নামায আদায় করতেন।
সহীহ। মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আলী ও ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আবদুল্লাহ ইবনু শাকীকের
সূত্রে ‘আয়িশাহ্’র হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১১. অনুচ্ছেদঃ
রাতের (নফল) নামায
দুই দুই রাক’আত
৪৩৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " صَلاَةُ اللَّيْلِ مَثْنَى
مَثْنَى فَإِذَا خِفْتَ الصُّبْحَ فَأَوْتِرْ بِوَاحِدَةٍ وَاجْعَلْ آخِرَ
صَلاَتِكَ وِتْرًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عَمْرِو
بْنِ عَبَسَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ صَلاَةَ
اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ
الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ . وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, রাতের নামায দুই দুই রাক’আত (করে আদায় করতে হয়)। তুমি
যদি ভোর হয়ে যাওয়ার ভয় কর তবে এক রাক’আত করে বিতর পূর্ণ করে নাও। বিতর নামাযকেই
তোমার সর্বশেষ নামায কর।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৩১৯, ১৩২০), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
আমর ইবনু আবাসা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু উমারের হাদীসটি হাসান
সহীহ্। বিশেষজ্ঞগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন এবং রাতের নামায দুই দুই রাক’আত করে
আদায় করেছেন। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাক এই কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১২. অনুচ্ছেদঃ
রাতের (তাহাজ্জুদ)
নামাযের ফযিলত
৪৩৮
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ شَهْرِ
رَمَضَانَ شَهْرُ اللَّهِ الْمُحَرَّمُ وَأَفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ
صَلاَةُ اللَّيْلِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَبِلاَلٍ
وَأَبِي أُمَامَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَبُو بِشْرٍ اسْمُهُ جَعْفَرُ بْنُ
أَبِي وَحْشِيَّةَ وَاسْمُ أَبِي وَحْشِيَّةَ إِيَاسٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রামাযান মাসের রোযার পর
সর্বোৎকৃষ্ট রোযা হল আল্লাহ তা’আলার মাস মুহাররামের রোযা। ফরয নামাযের পর
সর্বোৎকৃষ্ট নামায হল রাতের (তাহাজ্জুদের) নামায।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৭৪২), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
জাবির, বিলাল ও আবূ উমামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রা
(রাঃ)’র হাদীসটি হাসান সহীহ্।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ রাবী আবূ বিশরের নাম জা’ফর ইবনু আবী ওয়াহশীয়াহ আবূ ওয়াহশীয়ার নাম ইয়াস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১৩. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাতের নামাযের বৈশিষ্ট্য
৪৩৯
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ،
عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، أَنَّهُ
أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَأَلَ عَائِشَةَ كَيْفَ كَانَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم بِاللَّيْلِ فِي رَمَضَانَ فَقَالَتْ مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يَزِيدُ فِي رَمَضَانَ وَلاَ فِي غَيْرِهِ عَلَى إِحْدَى
عَشْرَةَ رَكْعَةً يُصَلِّي أَرْبَعًا فَلاَ تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ
وَطُولِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّي أَرْبَعًا فَلاَ تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ
ثُمَّ يُصَلِّي ثَلاَثًا . فَقَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَتَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوتِرَ فَقَالَ " يَا عَائِشَةُ إِنَّ عَيْنَىَّ
تَنَامَانِ وَلاَ يَنَامُ قَلْبِي " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ সালামা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
‘আয়িশা (রাঃ)-কে
প্রশ্ন করা হল, রামাযান মাসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নামাজের বৈশিষ্ট্য কি বা ধরন কেমন ছিল? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রামাযান মাসে ও অন্যান্য সময়ে (রাতের বেলা) এগার রাক’আত
নামাযের বেশি আদায় করতেন না। তিনি চার রাক’আত করে মোট আট রাক’আত আদায় করতেন। এর
সৌন্দর্য এবং দৈর্ঘ্য সম্পর্কে তুমি আমাকে আর প্রশ্ন কর না। অতঃপর তিনি তিন রাক’আত
নামায আদায় করতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি বিতর
আদায়ের পূর্বে ঘুমান? তিনি বললেন. হে ‘আয়িশাহ্! আমার চক্ষু দুটি ঘুমায় কিন্তু আমার
অন্তর ঘুমায় না।
সহীহ্। সালাতুত্ তারাবীহ্, সহীহ্ আবু দাঊদ-(১২১২), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৪০
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا
مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ إِحْدَى عَشْرَةَ
رَكْعَةً يُوتِرُ مِنْهَا بِوَاحِدَةٍ فَإِذَا فَرَغَ مِنْهَا اضْطَجَعَ عَلَى
شِقِّهِ الأَيْمَنِ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা এগার রাক’আত নামায আদায় করতেন। তার
মধ্যে এক রাক’আত বিতর আদায় করে নিতেন। তিনি নামায শেষে অবসর হয়ে ডান কাতে শুয়ে
যেতেন।
সহীহ্। এই হাদীসে শুবার বর্ণনাটি সাজ, সহীহ্ আবূ দাঊদ-(১২০৬)। সঠিক কথা হচ্ছে-
শুবার বর্ণনা ফজরের সুন্নাতের পরে-বুখারী।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
৪৪১
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু শিহাব থেকে
বর্ণিতঃ
কুতাইবা মালিকের সূত্রে ইবনু শিহাব হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
২১৪. অনুচ্ছেদঃ
একই বিষয়
৪৪২
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ
الضُّبَعِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو جَمْرَةَ الضُّبَعِيُّ اسْمُهُ نَصْرُ بْنُ
عِمْرَانَ الضُّبَعِيُّ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা তের রাক’আত নামায আদায় করতেন।
সহীহ্। সহীহ্ আবু দাঊদ-(১২০৫), বুখারী ও মুসলিম আরো পূর্ণরূপে।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূ জামরাহ যুবাঈর নাম নাস্র ইবনু ‘ইমরান যুবাঈ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১৫. অনুচ্ছেদঃ
একই বিষয়
৪৪৩
حَدَّثَنَا
هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ
الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ تِسْعَ رَكَعَاتٍ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ وَالْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাতের বেলা নয় রাক’আত নামায আদায় করতেন।
সহীহ্। সহীহ্ আবু দাঊদ-(১২১৩), মুসলিম আরো পূর্ণরূপে।
এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরায়রা, যাইদ ইবনু খালিদ ও ফজল ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসটি উল্লেখিত সনদে হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৪৪
وَرَوَاهُ
سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَنِ الأَعْمَشِ، نَحْوَ هَذَا حَدَّثَنَا بِذَلِكَ،
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنِ
الأَعْمَشِ، . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَكْثَرُ مَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فِي صَلاَةِ اللَّيْلِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً مَعَ الْوِتْرِ
وَأَقَلُّ مَا وُصِفَ مِنْ صَلاَتِهِ بِاللَّيْلِ تِسْعُ رَكَعَاتٍ .
সুফিয়ান সাওরী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সুফিয়ান সাওরী আ’মাশের বরাতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাতের (তাহাজ্জুদের) নামায বিতরসহ সর্বোচ্চ
তের রাক’আত এবং সর্বনিন্ম নয় রাক’আত ছিল বলে বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
২১৬. অনুচ্ছেদঃ
যদি রাতে নামায আদায়
না করেই ঘুমিয়ে যেতেন তবে তা দিনে আদায় করতেন
৪৪৫
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ
أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم إِذَا لَمْ يُصَلِّ مِنَ اللَّيْلِ - مَنَعَهُ مِنْ ذَلِكَ
النَّوْمُ أَوْ غَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ
رَكْعَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَسَعْدُ بْنُ هِشَامٍ هُوَ ابْنُ عَامِرٍ الأَنْصَارِيُّ وَهِشَامُ بْنُ
عَامِرٍ هُوَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . حَدَّثَنَا
عَبَّاسٌ هُوَ ابْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ الْعَنْبَرِيُّ حَدَّثَنَا عَتَّابُ بْنُ
الْمُثَنَّى عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ قَالَ كَانَ زُرَارَةُ بْنُ أَوْفَى قَاضِيَ
الْبَصْرَةِ وَكَانَ يَؤُمُّ فِي بَنِي قُشَيْرٍ فَقَرَأَ يَوْمًا فِي صَلاَةِ
الصُّبْحِ: (فَإِذَا نُقِرَ فِي النَّاقُورِ * فَذَلِكَ يَوْمَئِذٍ يَوْمٌ
عَسِيرٌ ) فَخَرَّ مَيِّتًا فَكُنْتُ فِيمَنِ احْتَمَلَهُ إِلَى دَارِهِ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি বেশি ঘুম অথবা তন্দ্রার কারণে রাতের নামায
আদায় করতে সক্ষম না হতেন, তবে দিনের বেলা বার রাক’আত আদায় করে নিতেন।
সহীহ্। মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান সহীহ্। রাবী হিশাম তিনি ইবনু ‘আমির আর হিশাম ইবনু ‘আমির সাহাবীদের
মধ্যে একজন।
বাহ্য ইবনু হাকীম (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, যুরারা ইবনু আওফা বসরার ক্বাযী
(বিচারপতি) ছিলেন। তিনি কুশাইর গোত্রের ইমামতি করতেন। একদিন সকালের নামাযে তিনি এই
আয়াত পাঠ করলেনঃ ‘‘স্মরণ কর, যখন শিংগায় ফুঁ দেওয়া হবে। সে দিনটি বড়ই কঠোর ও সাংঘাতিক
হবে”-(সূরাঃ আল-মুদ্দাসসির-৮, ৯)। তিনি সাথে সাথে পড়ে গিয়ে মারা গেলেন। যারা তাঁকে
তুলে তাঁর ঘরে নিয়ে গেলেন, আমিও তাদেও সাথে ছিলাম। -সনদ হাসান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১৭. অনুচ্ছেদঃ
প্রতি রাতে
প্রাচুর্যময় আল্লাহ তা’আলা দুনিয়ার নিকটতম আকাশে অবতরণ করেন
৪৪৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الإِسْكَنْدَرَانِيُّ،
عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَنْزِلُ اللَّهُ إِلَى
السَّمَاءِ الدُّنْيَا كُلَّ لَيْلَةٍ حِينَ يَمْضِي ثُلُثُ اللَّيْلِ الأَوَّلُ
فَيَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ مَنْ ذَا الَّذِي يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ
ذَا الَّذِي يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ مَنْ ذَا الَّذِي يَسْتَغْفِرُنِي
فَأَغْفِرَ لَهُ فَلاَ يَزَالُ كَذَلِكَ حَتَّى يُضِيءَ الْفَجْرُ " .
قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ وَأَبِي سَعِيدٍ
وَرِفَاعَةَ الْجُهَنِيِّ وَجُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي
الدَّرْدَاءِ وَعُثْمَانَ بْنِ أَبِي الْعَاصِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ
أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ
أَوْجُهٍ كَثِيرَةٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ " يَنْزِلُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ حِينَ
يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ " . وَهُوَ أَصَحُّ الرِّوَايَاتِ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা রাতের প্রথম এক তৃতীয়াংশ
চলে যাওয়ার পর প্রতি রাতে পৃথিবীর নিকটতম আকাশে অবতরণ করেন। অতঃপর তিনি বলেনঃ আমিই
রাজাধিরাজ। আমার নিকট প্রার্থনাকারী কে আছে, আমি তার প্রার্থনা কবুল করব। আমার
নিকট আবেদনকারী কে আছে, আমি তার আবেদন পূর্ণ করব। কবুল করব। আমার কাছে ক্ষমা
প্রার্থনাকারী কে আছে, আমি তাকে ক্ষমা করব। সকাল আলোকিত না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ
তা’আলা তার বান্দাদের এভাবে আহবান করতে থাকেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ-(১৩৬৬), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘আলী ইবনু আবূ তালিব, আবূ সা’ঈদ, রিফাআ আল-জুহানী, জুবাইর ইবনু মুত’ইম, ইবনু মাসঊদ,
আবু দারদা ও ‘উসমান ইবনু আবুল আস (রাঃ) হতেও বর্ণিত আছে, আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরায়রা
(রাঃ)’র হাদীসটি হাসান সহীহ্।
উল্লেখিত হাদীসটি আবূ হুরায়রা নিকট হতে অসংখ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হতে এও বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ রাতের
এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা (পৃথিবীর) নিকটতম আকাশে অবতীর্ণ হন।
সব বর্ণনাগুলোর মধ্যে এটিই সর্বাধিক সহীহ্ বর্ণনা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১৮. অনুচ্ছেদঃ
রাতের (তাহাজ্জুদ)
নামাযের কিরা’আত
৪৪৭
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ إِسْحَاقَ، هُوَ
السَّالَحِينِيُّ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لأَبِي بَكْرٍ " مَرَرْتُ بِكَ
وَأَنْتَ تَقْرَأُ وَأَنْتَ تَخْفِضُ مِنْ صَوْتِكَ " . فَقَالَ إِنِّي
أَسْمَعْتُ مَنْ نَاجَيْتُ . قَالَ " ارْفَعْ قَلِيلاً " .
وَقَالَ لِعُمَرَ " مَرَرْتُ بِكَ وَأَنْتَ تَقْرَأُ وَأَنْتَ تَرْفَعُ صَوْتَكَ
" . قَالَ إِنِّي أُوقِظُ الْوَسْنَانَ وَأَطْرُدُ الشَّيْطَانَ قَالَ
" اخْفِضْ قَلِيلاً " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ
وَأُمِّ هَانِئٍ وَأَنَسٍ وَأُمِّ سَلَمَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَإِنَّمَا أَسْنَدَهُ يَحْيَى بْنُ إِسْحَاقَ
عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ وَأَكْثَرُ النَّاسِ إِنَّمَا رَوَوْا هَذَا
الْحَدِيثَ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ مُرْسَلاً .
আবূ কাতাদা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বাকার (রাঃ)-কে বললেনঃ আমি আপনার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম
তখন আপনি নামায আদায় করছিলেন এবং আপনার কন্ঠস্বর খুব নীচু ছিল। তিনি (আবূ বাকর)
বললেন, আমি তাঁকে শুনাচ্ছিলাম যিনি আমার কানকথাও জানেন। তিনি (রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) বল্লেনঃ কিছুটা উচ্চস্বরে পাঠ করুন। তিনি
(রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) ‘উমার (রাঃ)-কে বললেনঃ আমি
আপনার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন আপনি নামায আদায় করছিলেন এবং আপনার কন্ঠস্বর খুব
উঁচু ছিল। তিনি (‘উমার) বললেন, আমি অলসদের জাগরিত করছিলাম এবং শাইতানকে
তাড়াচ্ছিলাম। তিনি বললেন, আপনার কন্ঠস্বর কিছুটা নীচু করুন।
সহীহ্। সহীহ্ আবু দাঊদ-(১২০০), মিশকাত-(১২০৪)।
এ অনুচ্ছেদে
‘আয়িশাহ্, উম্মু হানী, আনাস, উম্মু সালামাহ্ ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত
আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি গারীব। উল্লেখিত হাদীসটি ইয়াহ্ইয়া ইবনু ইসহাক মুসনাদ
হিসেবে বর্ণনা করেছেন, আর অনেকেই এই হাদীসটিকে আবদুল্লাহ ইবনু আবূ রবাহর নিকট হতে মুরসাল
হিসাবেও বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৪৮
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ نَافِعٍ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ
بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُسْلِمٍ الْعَبْدِيِّ، عَنْ
أَبِي الْمُتَوَكِّلِ النَّاجِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَامَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم بِآيَةٍ مِنَ الْقُرْآنِ لَيْلَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআনের একটি আয়াত পাঠ করেই রাত কাটিয়ে
দিলেন।
সনদ সহীহ্।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এই হাদীসটি উপরোক্ত সূত্রে হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৪৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ صَالِحٍ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ أَبِي قَيْسٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ كَيْفَ كَانَ قِرَاءَةُ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِاللَّيْلِ أَكَانَ يُسِرُّ بِالْقِرَاءَةِ أَمْ
يَجْهَرُ فَقَالَتْ كُلُّ ذَلِكَ قَدْ كَانَ يَفْعَلُ رُبَّمَا أَسَرَّ
بِالْقِرَاءَةِ وَرُبَّمَا جَهَرَ . فَقُلْتُ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي جَعَلَ
فِي الأَمْرِ سَعَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
.
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ
ক্বাইস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
‘আয়িশা (রাঃ)–কে প্রশ্ন করলাম, রাতের (তাহাজ্জুদ) নামাযে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিরা’আত কেমন ছিল? তিনি নিরবে কিরা’আত করতেন না সরবে?
তিনি (‘আয়িশাহ্) বললেন, কখনও তিনি নিচু আওয়াজে এবং কখনও উঁচু আওয়াযে কিরা’আত পাঠ
করতেন। আমি বললাম, সকল প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার জন্য যিনি এ কাজের মধ্যে প্রশস্ততা
রেখেছেন।
সহীহ। সহীহ আবূ দাঊদ-(১২৯১), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা
বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১৯. অনুচ্ছেদঃ
বাড়িতে নফল নামায
আদায়ের ফযিলত
৪৫০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ سَالِمٍ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ
بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " أَفْضَلُ صَلاَتِكُمْ فِي بُيُوتِكُمْ إِلاَّ الْمَكْتُوبَةَ
" . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَجَابِرِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ
وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعْدٍ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ . قَالَ أَبُو
عِيسَى حَدِيثُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدِ اخْتَلَفَ النَّاسُ
فِي رِوَايَةِ هَذَا الْحَدِيثِ فَرَوَاهُ مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ وَإِبْرَاهِيمُ
بْنُ أَبِي النَّضْرِ عَنْ أَبِي النَّضْرِ مَرْفُوعًا وَرَوَاهُ مَالِكُ بْنُ
أَنَسٍ عَنْ أَبِي النَّضْرِ وَلَمْ يَرْفَعْهُ وَأَوْقَفَهُ بَعْضُهُمْ
وَالْحَدِيثُ الْمَرْفُوعُ أَصَحُّ .
যাইদ ইবনু সাবিত
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ফরয ব্যতীত তোমাদের বাড়িতে আদায়কৃত নামায সর্বোৎকৃষ্ট।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(১৩০১), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে
‘উমার, জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ, আবু সা’ঈদ, আবূ হুরায়রা, ইবনু ‘উমার, ‘আয়িশাহ্, আবদুল্লাহ
ইবনু সা’দ ও যাইদ ইবনু খালিদ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ যাইদ ইবনু
সাবিতের হাদীসটি হাসান। এ হাদীসের বর্ণনায় রাবীগনের মধ্যে (সনদের দিক হতে) মতের অমিল
হয়েছে। মূসা ইবনু ‘উক্ববা ও ইবরাহীম ইবনু আবূ নাযর আবূ নাযর হতে মারফূরূপে বর্ণনা করেছেন।
মালিক ইবনু আনাস আবূ নাযর হতে এ হাদীসটি মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেননি। মারফূ বর্ণনাটি
অপেক্ষাকৃত সহীহ্
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৫১
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ
عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " صَلُّوا فِي بُيُوتِكُمْ وَلاَ تَتَّخِذُوهَا
قُبُورًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের বাড়িতেও নামায আদায় কর, তাঁকে কবরস্থানে পরিনত
কর না।
সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ-(৯৫৮, ১৩০২), বুখারী ও মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
No comments