সুনানে আবু দাউদ - অধ্যায় "জানাযা" হাদিস ৩০৮৯-৩২৪১
অনুচ্ছেদ-১
অসুস্থতার কারণে মুমিনের গুনাহ ক্ষমা হয়
৩০৮৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ
النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
إِسْحَاقَ، قَالَ حَدَّثَنِي رَجُلٌ، مِنْ أَهْلِ الشَّامِ يُقَالُ لَهُ أَبُو
مَنْظُورٍ عَنْ عَمِّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي عَمِّي، عَنْ عَامِرٍ الرَّامِ، أَخِي
الْخُضْرِ - قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ النُّفَيْلِيُّ هُوَ الْخُضْرُ وَلَكِنْ
كَذَا قَالَ - قَالَ إِنِّي لَبِبِلاَدِنَا إِذْ رُفِعَتْ لَنَا رَايَاتٌ
وَأَلْوِيَةٌ فَقُلْتُ مَا هَذَا قَالُوا هَذَا لِوَاءُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَأَتَيْتُهُ وَهُوَ تَحْتَ شَجَرَةٍ قَدْ بُسِطَ لَهُ كِسَاءٌ وَهُوَ
جَالِسٌ عَلَيْهِ وَقَدِ اجْتَمَعَ إِلَيْهِ أَصْحَابُهُ فَجَلَسْتُ إِلَيْهِمْ
فَذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الأَسْقَامَ فَقَالَ " إِنَّ
الْمُؤْمِنَ إِذَا أَصَابَهُ السَّقَمُ ثُمَّ أَعْفَاهُ اللَّهُ مِنْهُ كَانَ
كَفَّارَةً لِمَا مَضَى مِنْ ذُنُوبِهِ وَمَوْعِظَةً لَهُ فِيمَا يَسْتَقْبِلُ
وَإِنَّ الْمُنَافِقَ إِذَا مَرِضَ ثُمَّ أُعْفِيَ كَانَ كَالْبَعِيرِ عَقَلَهُ
أَهْلُهُ ثُمَّ أَرْسَلُوهُ فَلَمْ يَدْرِ لِمَ عَقَلُوهُ وَلَمْ يَدْرِ لِمَ
أَرْسَلُوهُ " . فَقَالَ رَجُلٌ مِمَّنْ حَوْلَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
وَمَا الأَسْقَامُ وَاللَّهِ مَا مَرِضْتُ قَطُّ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " قُمْ عَنَّا فَلَسْتَ مِنَّا " . فَبَيْنَا
نَحْنُ عِنْدَهُ إِذْ أَقْبَلَ رَجُلٌ عَلَيْهِ كِسَاءٌ وَفِي يَدِهِ شَىْءٌ قَدِ
الْتَفَّ عَلَيْهِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي لَمَّا رَأَيْتُكَ
أَقْبَلْتُ إِلَيْكَ فَمَرَرْتُ بِغَيْضَةِ شَجَرٍ فَسَمِعْتُ فِيهَا أَصْوَاتَ
فِرَاخِ طَائِرٍ فَأَخَذْتُهُنَّ فَوَضَعْتُهُنَّ فِي كِسَائِي فَجَاءَتْ
أُمُّهُنَّ فَاسْتَدَارَتْ عَلَى رَأْسِي فَكَشَفْتُ لَهَا عَنْهُنَّ فَوَقَعَتْ
عَلَيْهِنَّ مَعَهُنَّ فَلَفَفْتُهُنَّ بِكِسَائِي فَهُنَّ أُولاَءِ مَعِي .
قَالَ " ضَعْهُنَّ عَنْكَ " . فَوَضَعْتُهُنَّ وَأَبَتْ
أُمُّهُنَّ إِلاَّ لُزُومَهُنَّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
لأَصْحَابِهِ " أَتَعْجَبُونَ لِرُحْمِ أُمِّ الأَفْرَاخِ فِرَاخَهَا
" . قَالُوا نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ "
فَوَالَّذِي بَعَثَنِي بِالْحَقِّ لَلَّهُ أَرْحَمُ بِعِبَادِهِ مِنْ أُمِّ
الأَفْرَاخِ بِفِرَاخِهَا ارْجِعْ بِهِنَّ حَتَّى تَضَعَهُنَّ مِنْ حَيْثُ
أَخَذْتَهُنَّ وَأُمُّهُنَّ مَعَهُنَّ " . فَرَجَعَ بِهِنَّ .
আল-খুদর গোত্রের তীরন্দাজ ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নুফাইলী বলেন,
শব্দটি ‘খাদরি’ নয়, বরং খুদর, তবে ব্যবহারে তা প্রচলিত হয়ে গেছে। ‘আমির বলেন, আমি
আমাদের শহরেই ছিলাম। এমন সময় আমরা কিছু পতাকা উড্ডীন দেখতে পেয়ে লোকদের জিজ্ঞেস
করি, এসব কি? তারা বললো, এগুলো রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
পতাকা। আমি তাঁর নিকট আসলাম। তখন তিনি একটি গাছের নিচে তাঁর জন্য বিছানো একটি
কম্বলের উপর বসা ছিলেন। তাঁর চারপাশে তাঁর সাহাবীগণও বসা ছিলেন। আমি তাদের কাছে
বসলাম।
রাসূল্ললাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোগ সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তিনি
বললেনঃ মুমিন ব্যক্তি যখন অসুস্থ হয়, অতঃপর আল্লাহ্ তাঁকে রোগমুক্তি দেন, এটা তার
অতীতের গুনাহের জন্য কাফফারা স্বরূপ এবং তার ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য শিক্ষণীয়।
পক্ষান্তরে কোন মুনাফিক অসুস্থ হওয়ার পর তাকে তা থেকে মুক্তি দেয়া হলে সে এমন উটের
মত যাকে তার মালিক শক্ত করে বেঁধে আবার ছেড়ে দিলো। কিন্তু সে কিছুই বুঝলো না, তার
মালিক তাকে কেনই বা শক্ত করে বাঁধলো আর কেনই বা ছেড়ে দিলো। তাঁর আশেপাশে বসা
লোকদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহ্র রাসূল! কিসের অসুস্থতা? আল্লাহ্র
শপথ! আমি তো কখনও অসুস্থ হইনি? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
তুমি আমাদের এখান থেকে উঠে যাও, কারণ তুমি আমাদের দলভুক্ত নও।
বর্ণনাকারী বলেন, আমরা তাঁর কাছে বসা। এমতাবস্থায় তাঁর কাছে এক ব্যক্তি আসলো। তার
গায়ে কম্বল জড়ানো এবং তার হাতে কিছু একটা ছিলো। সে বললো, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমি
আপনাকে দেখতে পেয়েই আপনার কাছে উপস্থিত হলাম। গাছপালার মধ্য দিয়ে পথ অতিক্রম করার
সময় আমি পাখির বাচ্চার আওয়াজ শুনতে পাই। আমি সেগুলো ধরে আমার কম্বলের মধ্যে রাখি।
বাচ্চাগুলোর মা এসে আমার মাথার উপর চক্কর দিতে লাগলো। আমি বাচ্চাগুলোকে তাদের
মায়ের জন্য কম্বলের মধ্য থেকে বের করে দিলাম। পাখিটি এসে বাচ্চাগুলোর সাথে মিলিত
হলো। আমি সবগুলোকে আমার কম্বল দিয়ে লেপটিয়ে ধরে ফেললাম। এখন সবগুলো পাখি আমার সাথে
রয়েছে। তিনি বললেনঃ সেগুলো বের করে রাখো। সুতারাং আমি বের করলাম। কিন্তু মা পাখিটা
বাচ্চাদের রেখে যেতে চাইলো না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁর সাহাবীদের বললেনঃ বাচ্চাদের প্রতি মা পাখিটার মায়ায় তোমরা কি আশ্চর্যবোধ করছো
না! তারা বললেন, হাঁ হে আল্লাহ্র রাসূল! তিনি বললেনঃ সেই সত্তার শপথ, যিনি আমাকে
সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন! বাচ্চাদের প্রতি মা পাখিটার যে মায়া রয়েছে, আল্লাহ্
অবশ্যই তাঁর বান্দাদের প্রতি আরো অধিক মমতাময়ী। তুমি যেখান থেকে বাচ্চাগুলোকে ধরে
এনেছ মা-সহ তাদেরকে সেখানে রেখে আসো। সুতারাং সে পাখিগুলো সেখানে রেখে এলো।
দুর্বল : মিশকাত (১৫৭১)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩০৯০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ
النُّفَيْلِيُّ، وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ مَهْدِيٍّ الْمِصِّيصِيُّ، - الْمَعْنَى -
قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو الْمَلِيحِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ خَالِدٍ، - قَالَ أَبُو
دَاوُدَ قَالَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَهْدِيٍّ السُّلَمِيُّ - عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
جَدِّهِ، وَكَانَتْ، لَهُ صُحْبَةٌ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ الْعَبْدَ
إِذَا سَبَقَتْ لَهُ مِنَ اللَّهِ مَنْزِلَةٌ لَمْ يَبْلُغْهَا بِعَمَلِهِ
ابْتَلاَهُ اللَّهُ فِي جَسَدِهِ أَوْ فِي مَالِهِ أَوْ فِي وَلَدِهِ " .
قَالَ أَبُو دَاوُدَ زَادَ ابْنُ نُفَيْلٍ " ثُمَّ صَبَّرَهُ عَلَى ذَلِكَ
" . ثُمَّ اتَّفَقَا " حَتَّى يُبْلِغَهُ الْمَنْزِلَةَ الَّتِي
سَبَقَتْ لَهُ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى " .
মুহাম্মাদ ইবনু খালিদ (রহঃ) হতে তার পিতা ও দাদার সূত্র
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
(দাদা) রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহচর্য লাভ করেছেন। তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : কোন
ব্যক্তির জন্য বিনাশ্রমে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে মর্যাদার আসন নির্ধারিত হলে আল্লাহ্
তার দেহ, সম্পদ অথবা সন্তানকে বিপদগ্রস্ত করেন। অতঃপর সে তাতে ধৈর্য ধারণ করলে শেষ
পর্যন্ত বরকতময় মহান আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত উক্ত মর্যাদার স্তরে উপনীত হয়।
সহীহ : সহীহাহ (২৫৯৯)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২
কোন ব্যক্তি সৎকাজে অভ্যস্ত হলে পরবর্তীতে অসুস্থতা বা
সফরের কারণে তা করতে বাধাগ্রস্ত হলে
৩০৯১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى،
وَمُسَدَّدٌ، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنِ الْعَوَّامِ بْنِ
حَوْشَبٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السَّكْسَكِيِّ، عَنْ أَبِي
بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
غَيْرَ مَرَّةٍ وَلاَ مَرَّتَيْنِ يَقُولُ " إِذَا كَانَ الْعَبْدُ
يَعْمَلُ عَمَلاً صَالِحًا فَشَغَلَهُ عَنْهُ مَرَضٌ أَوْ سَفَرٌ كُتِبَ لَهُ
كَصَالِحِ مَا كَانَ يَعْمَلُ وَهُوَ صَحِيحٌ مُقِيمٌ " .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একবার দুইবার নয়, বহুবার
বলতে শুনেছি : কোন বান্দা নেক কাজ করলে এবং পড়ে রোগ বা সফর তাকে সে কাজ হতে বিরত
রাখলে তার আমলনামায় সুস্থ ও আবাসে অবস্থানকালে তার কৃত সৎ আমলের ন্যায় সওয়াব লেখা
হবে।
হাসান : ইরওয়া (৫৬০)।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩
মহিলা রোগীর সেবা করা
৩০৯২
حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ بَكَّارٍ، عَنْ
أَبِي عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أُمِّ الْعَلاَءِ،
قَالَتْ عَادَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا مَرِيضَةٌ فَقَالَ
" أَبْشِرِي يَا أُمَّ الْعَلاَءِ فَإِنَّ مَرَضَ الْمُسْلِمِ يُذْهِبُ
اللَّهُ بِهِ خَطَايَاهُ كَمَا تُذْهِبُ النَّارُ خَبَثَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ
" .
উম্মূল ‘আলা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি অসুস্থ হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে
আসলেন। তিনি বললেনঃ হে ‘আলার মা! সুসংবাদ গ্রহণ করো, আগুন যেভাবে সোনা-রূপার ময়লা
দূর করে দেয় তদ্রুপ মহান আল্লাহ্ কোন মুসলিমের রোগের দ্বারা তার গুনাহসমূহ দূর করে
দেন।
সহীহ : সহীহাহ (৭১৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩০৯৩
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى،
ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، -
قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهَذَا لَفْظُ ابْنِ بَشَّارٍ - عَنْ أَبِي عَامِرٍ
الْخَزَّازِ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قُلْتُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي لأَعْلَمُ أَشَدَّ آيَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَالَ "
أَيَّةُ آيَةٍ يَا عَائِشَةُ " . قَالَتْ قَوْلُ اللَّهِ تَعَالَى {
مَنْ يَعْمَلْ سُوءًا يُجْزَ بِهِ } قَالَ " أَمَا عَلِمْتِ يَا
عَائِشَةُ أَنَّ الْمُؤْمِنَ تُصِيبُهُ النَّكْبَةُ أَوِ الشَّوْكَةُ فَيُكَافَأُ
بِأَسْوَإِ عَمَلِهِ وَمَنْ حُوسِبَ عُذِّبَ " . قَالَتْ أَلَيْسَ
اللَّهُ يَقُولُ { فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا } قَالَ "
ذَاكُمُ الْعَرْضُ يَا عَائِشَةُ مَنْ نُوقِشَ الْحِسَابَ عُذِّبَ " .
قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهَذَا لَفْظُ ابْنِ بَشَّارٍ قَالَ أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي
مُلَيْكَةَ .
‘আয়িশাহ (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি বললাম : হে আল্লাহ্র রাসূল! মহান আল্লাহ্র কিতাবের সবচেয়ে কঠোর আয়াতটি
আমি অবশ্যই অবহিত আছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেন : হে ‘আয়িশাহ! সেটি কোন আয়াত? তিনি
বললেনঃ মহান আল্লাহ্র বাণী : “কেউ পাপ করলে তার প্রতিফলন সেই পাবে এবং সে আল্লাহ্র
বিপক্ষে কোন বন্ধু ও সাহায্যকারী পাবে না” (সূরাহ আন-নিসা : ১২৩)। তিনি বললেনঃ হে
‘আয়িশাহ! তুমি কি জানো, কোন মুসলিম যখন বিপদগ্রস্ত বা নির্যাতিত হয়, এতে তার আমলের
মন্দ দিকগুলো দূরীভূত হয়ে যায়। যে ব্যক্তির হিসাব নেয়া হবে সে মারা পড়বে বা শাস্তি
পাবে। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ কি বলেননি, “যার আমলনামা তার ডান হাতে দেয়া
হবে তার হিসাব সহজে গ্রহণ করা হবে” (সূরা আল-ইনশিক্বাক্ব : ৮)। তিনি বললেনঃ হে ‘আয়িশাহ!
এর অর্থ আমল পেশ করা। অন্যথায় যার হিসাবে কড়াকড়ি হবে সে তো মারা পড়বে।
সানাদ দুর্বল। কিন্তু [...আরবী...] অংশটি সহীহ।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
অনুচ্ছেদ-৪
রোগী দেখতে যাওয়া
৩০৯৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ
يَحْيَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ،
عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ خَرَجَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعُودُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ فِي
مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ عَرَفَ فِيهِ الْمَوْتَ
قَالَ " قَدْ كُنْتُ أَنْهَاكَ عَنْ حُبِّ يَهُودَ " . قَالَ
فَقَدْ أَبْغَضَهُمْ أَسْعَدُ بْنُ زُرَارَةَ فَمَهْ فَلَمَّا مَاتَ أَتَاهُ
ابْنُهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ قَدْ
مَاتَ فَأَعْطِنِي قَمِيصَكَ أُكَفِّنْهُ فِيهِ . فَنَزَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَمِيصَهُ فَأَعْطَاهُ إِيَّاهُ .
উসামাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, (মুনাফিক সর্দার) ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মরণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখতে যান। তিনি তার কাছে
প্রবেশ করে তার চেহারায় মৃত্যুর ছাপ দেখে বললেনঃ আমি তোমাকে ইয়াহুদীদেরকে
ভালোবাসতে নিষেধ করতাম। ‘আবদুল্লাহ বললো, তাদের প্রতি আস’আদ ইবনু যুরারাহ বিদ্বেষ
পোষণ করে কী পেয়েছে? ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেলে তার ছেলে ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) এসে
বললেন, হে আল্লাহ্র নাবী! ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেছে। তাকে কাফন দেয়ার জন্য
আপনার একটা জামা দিন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর গায়ের
চাঁদরটি খুলে তাকে দিলেন।
সানাদ দুর্বল। কিন্তু কামীসের ঘটনা সহীহ।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
অনুচ্ছেদ-৫
অমুসলিম রোগী দেখা
৩০৯৫
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، - يَعْنِي ابْنَ زَيْدٍ - عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ
غُلاَمًا، مِنَ الْيَهُودِ كَانَ مَرِضَ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يَعُودُهُ فَقَعَدَ عِنْدَ رَأْسِهِ فَقَالَ لَهُ " أَسْلِمْ " .
فَنَظَرَ إِلَى أَبِيهِ وَهُوَ عِنْدَ رَأْسِهِ فَقَالَ لَهُ أَبُوهُ أَطِعْ أَبَا
الْقَاسِمِ . فَأَسْلَمَ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَقُولُ
" الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَنْقَذَهُ بِي مِنَ النَّارِ "
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
ইয়াহুদী যুবক অসুস্থ হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখতে যান।
তিনি তার মাথার কাছে বসে বললেনঃ তুমি ইসলাম গ্রহণ করো। সে তার পিতার দিকে তাকালো।
সেও তার মাথার কাছেই বসা ছিলো। তার পিতা তাকে বললো, আবুল ক্বাসিমের কথা মেনে নাও।
সে ইসলাম গ্রহণ করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখান থেকে উঠে আসার
সময় বললেনঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র, যিনি তাকে আমার মাধ্যমে দোযখ থেকে মুক্তি
দিলেন।
সহীহ : ইরওয়া (১২৭২)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬
পায়ে হেঁটে রোগী দেখতে যাওয়া
৩০৯৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يَعُودُنِي لَيْسَ بِرَاكِبِ بَغْلٍ وَلاَ بِرْذَوْنٍ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পায়ে হেঁটে আমাকে দেখতে আসেন। তিনি
খচ্চর বা তুর্কী ঘোড়ায় চড়ে আসেননি।
সহীহ : তিরমিযী (৪১২৩)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭
উযু করে রোগী দেখতে যাওয়ার ফাযীলাত
৩০৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَوْفٍ
الطَّائِيُّ، حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ بْنُ رَوْحِ بْنِ خُلَيْدٍ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ دَلْهَمٍ الْوَاسِطِيُّ، عَنْ
ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ وَعَادَ
أَخَاهُ الْمُسْلِمَ مُحْتَسِبًا بُوعِدَ مِنْ جَهَنَّمَ مَسِيرَةَ سَبْعِينَ
خَرِيفًا " . قُلْتُ يَا أَبَا حَمْزَةَ وَمَا الْخَرِيفُ قَالَ الْعَامُ
. قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَالَّذِي تَفَرَّدَ بِهِ الْبَصْرِيُّونَ مِنْهُ
الْعِيَادَةُ وَهُوَ مُتَوَضِّئٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ উত্তমরূপে উযু
করে নেকীর আশায় তার কোন (অসুস্থ) মুসলিম ভাইকে দেখতে গেলে তাকে জাহান্নাম থেকে
সত্তর খারীফ (সত্তর বছরের) পথ দূরে রাখা হবে। আমি (সাবিত আল-বানানী) আবূ হামযাহকে
জিজ্ঞেস করি, খারীফ শব্দের তাৎপর্য কি? তিনি বললেন, বছর। আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন,
বাসরাহ্র মুহাদ্দিসগণ শুধু ‘উযু করে রোগী দেখার’ অংশটুকু বর্ণনা করেছেন।
দুর্বল : মিশকাত (১৫৫২), যঈফ আল-জামি’উস সাগীর (৫৫৩৯)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩০৯৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نَافِعٍ، عَنْ
عَلِيٍّ، قَالَ مَا مِنْ رَجُلٍ يَعُودُ مَرِيضًا مُمْسِيًا إِلاَّ خَرَجَ مَعَهُ
سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ يَسْتَغْفِرُونَ لَهُ حَتَّى يُصْبِحَ وَكَانَ لَهُ
خَرِيفٌ فِي الْجَنَّةِ وَمَنْ أَتَاهُ مُصْبِحًا خَرَجَ مَعَهُ سَبْعُونَ أَلْفَ
مَلَكٍ يَسْتَغْفِرُونَ لَهُ حَتَّى يُمْسِيَ وَكَانَ لَهُ خَرِيفٌ فِي الْجَنَّةِ
.
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, কেউ বিকাল বেলা কোন রোগীকে দেখতে গেলে সত্তর হাজার ফেরেশতা তার সাথে রওয়ানা
হয় এবং তারা তার জন্য ভোর হওয়া পর্যন্ত ক্ষমা চাইতে থাকে। উপরন্তু তার জন্য
জান্নাতে একটি বাগান তৈরি করা হয়। আর কোন ব্যক্তি দিনের প্রথমভাগে রোগী দেখতে গেলে
তার সাথেও সত্তর হাজার ফেরেশতা রওয়ানা হয় এবং তারা সন্ধ্যা হওয়া পর্যন্ত তার জন্য
ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। তাকেও জান্নাতে একটি বাগান দেয়া হয়।
সহীহ মাওকুফ : সহীহাহ (১৩৬৭)।
হাদিসের মানঃ সহিহ মাওকুফ
৩০৯৯
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَلِيٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم بِمَعْنَاهُ لَمْ يَذْكُرِ الْخَرِيفَ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَاهُ
مَنْصُورٌ عَنِ الْحَكَمِ أَبِي حَفْصٍ كَمَا رَوَاهُ شُعْبَةُ .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আলী (রাঃ) হতে এ
সানাদেও উপরের হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সূত্রে বর্ণিত।
কিন্তু এতে ‘খারীফ’ শব্দের উল্লেখ নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ মারফু
৩১০০
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ نَافِعٍ، قَالَ - وَكَانَ نَافِعٌ غُلاَمَ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ -
قَالَ جَاءَ أَبُو مُوسَى إِلَى الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ يَعُودُهُ . قَالَ أَبُو
دَاوُدَ وَسَاقَ مَعْنَى حَدِيثِ شُعْبَةَ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ أُسْنِدَ هَذَا
عَنْ عَلِيٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ صَحِيحٍ .
আবূ জাফর ‘আবদুল্লাহ ইবনু নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা আল-হাসান
ইবনু ‘আলী (রাঃ) অসুস্থ হলে তাকে আবূ মূসা (রাঃ) দেখতে আসেন। আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন,
এ হাদীসের বর্ণনা শু’বাহ (রহঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। আবূ দাঊদ (রহঃ)
বলেন, হাদীসের সানাদসুত্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত মারফু
করা হয়েছে, তবে এটি যথার্থ নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ মারফু
অনুচ্ছেদ-৮
বারবার রোগী দেখা
৩১০১
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَمَّا أُصِيبَ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ يَوْمَ
الْخَنْدَقِ رَمَاهُ رَجُلٌ فِي الأَكْحَلِ فَضَرَبَ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم خَيْمَةً فِي الْمَسْجِدِ فَيَعُودُهُ مِنْ قَرِيبٍ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
খন্দকের যুদ্ধের দিন এক ব্যক্তির নিক্ষিপ্ত তীরে সা’দ ইবনু মু’আয (রাঃ)
আঘাতপ্রাপ্ত হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জন্য
মাসজিদের ভেতর একটি তাঁবু টানালেন। যেন তিনি কাছ থেকে তাকে দেখতে পারেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯
চক্ষু রোগীকে দেখতে যাওয়া
৩১০২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ
النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ يُونُسَ بْنِ أَبِي
إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، قَالَ عَادَنِي رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ وَجَعٍ كَانَ بِعَيْنَىَّ .
যায়িদ ইবনু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা
আমার চোখে ব্যাথা হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে
আসেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০
মহামারী উপদ্রুত এলাকা ত্যাগ করা
৩১০৩
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ،
عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدِ
بْنِ الْخَطَّابِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ
نَوْفَلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ
بْنُ عَوْفٍ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا
سَمِعْتُمْ بِهِ بِأَرْضٍ فَلاَ تُقْدِمُوا عَلَيْهِ وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ
وَأَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوا فِرَارًا مِنْهُ " . يَعْنِي
الطَّاعُونَ .
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
বলতে শুনেছি : তোমরা কোন অঞ্চলে প্লেগ-মহামারীর প্রাদুর্ভাবের কথা শুনলে সেখানে
যাবে না। আর যদি কোন এলাকায় মহামারী ছড়িয়ে পড়ে এবং তোমরাও সেখানে অবস্থান করো,
তাহলে সেখান থেকে পালিয়ে এসো না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১
রোগী দেখতে গিয়ে রোগীর সুস্থতা চেয়ে দু’আ করা
৩১০৪
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ،
حَدَّثَنَا مَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا الْجُعَيْدُ، عَنْ عَائِشَةَ
بِنْتِ سَعْدٍ، أَنَّ أَبَاهَا، قَالَ اشْتَكَيْتُ بِمَكَّةَ فَجَاءَنِي
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَعُودُنِي وَوَضَعَ يَدَهُ عَلَى جَبْهَتِي ثُمَّ
مَسَحَ صَدْرِي وَبَطْنِي ثُمَّ قَالَ " اللَّهُمَّ اشْفِ سَعْدًا
وَأَتْمِمْ لَهُ هِجْرَتَهُ " .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তার পিতা বলেছেন,
আমি মক্কাতে অসুস্থ হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে আসেন।
তিনি আমার কপালে হাত রাখলেন এবং বুক ও পেট মলে দিলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ হে
আল্লাহ্! সা’দ কে রোগমুক্ত করে দিন এবং তার হিজরাতকে পূর্ণ করে দিন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১০৫
حَدَّثَنَا ابْنُ كَثِيرٍ، قَالَ
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ أَبِي مُوسَى
الأَشْعَرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
أَطْعِمُوا الْجَائِعَ وَعُودُوا الْمَرِيضَ وَفُكُّوا الْعَانِيَ " .
قَالَ سُفْيَانُ وَالْعَانِي الأَسِيرُ .
আবূ মূসা আল-আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্ষুধার্তকে খাদ্য
দাও, রোগীর সাথে দেখা-সাক্ষাত করো এবং বন্দীকে মুক্ত করো। সুফিয়ান আস-সাওরী (রহঃ)
বলেন, ‘আল-‘আনী’ অর্থ বন্দী।
সহীহ : তাখরীজ মুশকিলাতুল ফিক্বর (১১২)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২
রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দু’আ করা
৩১০৬
حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ بْنُ يَحْيَى،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ أَبُو خَالِدٍ، عَنِ الْمِنْهَالِ بْنِ
عَمْرٍو، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ عَادَ مَرِيضًا لَمْ يَحْضُرْ أَجَلُهُ
فَقَالَ عِنْدَهُ سَبْعَ مِرَارٍ أَسْأَلُ اللَّهَ الْعَظِيمَ رَبَّ الْعَرْشِ
الْعَظِيمِ أَنْ يَشْفِيَكَ إِلاَّ عَافَاهُ اللَّهُ مِنْ ذَلِكَ الْمَرَضِ
" .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি এমন রোগীকে দেখতে গেলো যার
অন্তিম সময় আসেনি, সে যেন তার সামনে সাতবার বলে : “আমি মহান আরশের প্রভু মহামহিম
আল্লাহ্র নিকট প্রার্থনা করছি, তিনি যেন তোমাকে রোগমুক্তি দেন,” তাহলে তাকে
নিশ্চয়ই রোগমুক্তি দেয়া হবে।
সহীহ : মিশকাত (১৫৫৩)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১০৭
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ خَالِدٍ
الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ حُيَىِّ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ
أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، عَنِ ابْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِذَا جَاءَ الرَّجُلُ يَعُودُ مَرِيضًا
فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ اشْفِ عَبْدَكَ يَنْكَأُ لَكَ عَدُوًّا أَوْ يَمْشِي لَكَ
إِلَى جَنَازَةٍ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَقَالَ ابْنُ السَّرْحِ
" إِلَى صَلاَةٍ " .
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ কোন রোগীকে দেখতে গেলে
সে যেন বলেঃ “হে আল্লাহ! আপনার বান্দাকে আরোগ্য দিন যাতে সে আপনার উদ্দেশ্যে
শত্রুকে আঘাত হানতে পারে এবং আপনার জন্য জানাযায় বা সলাতে শরীক হতে পারে।”
সহীহঃ সহীহাহ (১৫০৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৩
মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা করা অনুচিত
৩১০৮
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ
يَدْعُوَنَّ أَحَدُكُمْ بِالْمَوْتِ لِضُرٍّ نَزَلَ بِهِ وَلَكِنْ لِيَقُلِ
اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا
كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন বিপদে
পড়ে মৃত্যু কামনা না করে। বরং সে যেন বলে, “হে আল্লাহ! যে পর্যন্ত জীবিত থাকা আমার
জন্য কল্যাণকর, আমাকে ততক্ষণ জীবিত রাখুন এবং যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর, তখন
আমাকে মৃত্যু দিন”।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১০৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ،
حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يَتَمَنَّيَنَّ
أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ " . فَذَكَرَ مِثْلَهُ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে...
হাদীসের বাকী অংশ উপরের হাদীসে অনুরূপ।
সহীহঃ এর পূর্বেরটি দেখুন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৪
আকস্মিক মৃত্যু
৩১১০
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى،
عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ تَمِيمِ بْنِ سَلَمَةَ، أَوْ سَعْدِ بْنِ
عُبَيْدَةَ عَنْ عُبَيْدِ بْنِ خَالِدٍ السُّلَمِيِّ، - رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَرَّةً عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
ثُمَّ قَالَ مَرَّةً عَنْ عُبَيْدٍ - قَالَ " مَوْتُ الْفَجْأَةِ أَخْذَةُ
أَسَفٍ " .
বনু সুলাইমের ‘উবাইদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অন্যতম সাহাবী ছিলেন। অধস্তন বর্ণনাকারী
মুসাদ্দাদ এটি কখনো নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মারফূ‘ হাদিসরূপে
আবার কখনো উবাইদ ইবনু খালিদের কাছ থেকে মওকুফ হাদীস হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আকস্মিক মৃত্যু গযবের দ্বারা
গ্রেপ্তারস্বরূপ।
সহীহঃ মিশকাত (১৬১১)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৫
মহামারীতে মৃত্যুবরণকারীর ফাযীলত
৩১১১
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَابِرِ بْنِ عَتِيكٍ، عَنْ عَتِيكِ
بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَتِيكٍ، - وَهُوَ جَدُّ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
أَبُو أُمِّهِ - أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَمَّهُ جَابِرَ بْنَ عَتِيكٍ
أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَاءَ يَعُودُ عَبْدَ
اللَّهِ بْنَ ثَابِتٍ فَوَجَدَهُ قَدْ غُلِبَ فَصَاحَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم فَلَمْ يُجِبْهُ فَاسْتَرْجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَقَالَ " غُلِبْنَا عَلَيْكَ يَا أَبَا الرَّبِيعِ " . فَصَاحَ
النِّسْوَةُ وَبَكَيْنَ فَجَعَلَ ابْنُ عَتِيكٍ يُسْكِتُهُنَّ فَقَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " دَعْهُنَّ فَإِذَا وَجَبَ فَلاَ تَبْكِيَنَّ
بَاكِيَةٌ " . قَالُوا وَمَا الْوُجُوبُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ
" الْمَوْتُ " . قَالَتِ ابْنَتُهُ وَاللَّهِ إِنْ كُنْتُ
لأَرْجُو أَنْ تَكُونَ شَهِيدًا فَإِنَّكَ كُنْتَ قَدْ قَضَيْتَ جِهَازَكَ .
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ
قَدْ أَوْقَعَ أَجْرَهُ عَلَى قَدْرِ نِيَّتِهِ وَمَا تَعُدُّونَ الشَّهَادَةَ
" . قَالُوا الْقَتْلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " الشَّهَادَةُ سَبْعٌ سِوَى الْقَتْلِ فِي سَبِيلِ
اللَّهِ الْمَطْعُونُ شَهِيدٌ وَالْغَرِقُ شَهِيدٌ وَصَاحِبُ ذَاتِ الْجَنْبِ
شَهِيدٌ وَالْمَبْطُونُ شَهِيدٌ وَصَاحِبُ الْحَرِيقِ شَهِيدٌ وَالَّذِي يَمُوتُ
تَحْتَ الْهَدْمِ شَهِيدٌ وَالْمَرْأَةُ تَمُوتُ بِجُمْعٍ شَهِيدٌ " .
জাবির ইবনু ‘আতীক্ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাবিতের (রাঃ) মুমূর্ষ
অবস্থায় তাকে দেখতে যান। তিনি দেখলেন, সে বেহুঁশ অবস্থায় রয়েছে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে সশব্দে ডাকলেন। কিন্তু তিনি তাঁর ডাকে
সাড়া দিতে পারলেন না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) “ইন্না
লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন” পাঠ করলেন। তিনি বললেনঃ হে আবুর রাবী‘! আমরা
তোমার ব্যাপারে পরাজিত। এতে মহিলারা চিৎকার করলো এবং কাঁদতে লাগলো। ইবনু ‘আতীক্ব
(রাঃ) তাদেরকে থামাতে চেষ্টা করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, তাদেরকে ছেড়ে দাও। ওয়াজিব হয়ে গেলে কোন ক্রন্দনকারিণীই কাঁদবে না।
সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ওয়াজিবের তাৎপর্য কি? তিনি বললেনঃ
মৃত্যু। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাবিতের কন্যা বললো, আল্লাহর শপথ! আমি মনে করেছিলাম, (হে
আমার পিতা) তুমি শহীদ হবে। কারণ তুমি জিহাদের সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছিলে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মহামহিম আল্লাহ নিশ্চয়ই তার নিয়্যাত
অনুযায়ী প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। তোমরা কাকে শহীদ বলে গণ্য করো? তারা
বললেন, আল্লাহর পথে (যুদ্ধে) নিহত ব্যক্তিকে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহর পথে যুদ্ধকারী শহীদ, পানিতে ডুবে নিহত ব্যক্তি শহীদ,
চাপা পড়ে নিহত ব্যক্তি শহীদ এবং প্রসবকালীন কষ্টে নিহত নারী শহীদ। আবূ দাঊদ (রহঃ)
বলেন, ‘আল-জুমউ’ অর্থ গর্ভবতী মহিলা।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (৩৮০৩)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৬
রোগীর নখ ও লজ্জাস্থানের চুল কাটা
৩১১২
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ،
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي
عُمَرُ بْنُ جَارِيَةَ الثَّقَفِيُّ، حَلِيفُ بَنِي زُهْرَةَ - وَكَانَ مِنْ
أَصْحَابِ أَبِي هُرَيْرَةَ - عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ ابْتَاعَ بَنُو
الْحَارِثِ بْنِ عَامِرِ بْنِ نَوْفَلٍ خُبَيْبًا - وَكَانَ خُبَيْبٌ هُوَ قَتَلَ
الْحَارِثَ بْنَ عَامِرٍ يَوْمَ بَدْرٍ - فَلَبِثَ خُبَيْبٌ عِنْدَهُمْ أَسِيرًا
حَتَّى أَجْمَعُوا لِقَتْلِهِ فَاسْتَعَارَ مِنَ ابْنَةِ الْحَارِثِ مُوسَى
يَسْتَحِدُّ بِهَا فَأَعَارَتْهُ فَدَرَجَ بُنَىٌّ لَهَا وَهِيَ غَافِلَةٌ حَتَّى
أَتَتْهُ فَوَجَدَتْهُ مُخْلِيًا وَهُوَ عَلَى فَخِذِهِ وَالْمُوسَى بِيَدِهِ فَفَزِعَتْ
فَزْعَةً عَرَفَهَا فِيهَا فَقَالَ أَتَخْشَيْنَ أَنْ أَقْتُلَهُ مَا كُنْتُ
لأَفْعَلَ ذَلِكَ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَى هَذِهِ الْقِصَّةَ شُعَيْبُ بْنُ
أَبِي حَمْزَةَ عَنِ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
عِيَاضٍ أَنَّ ابْنَةَ الْحَارِثِ أَخْبَرَتْهُ أَنَّهُمْ حِينَ اجْتَمَعُوا -
يَعْنِي لِقَتْلِهِ - اسْتَعَارَ مِنْهَا مُوسَى يَسْتَحِدُّ بِهَا فَأَعَارَتْهُ
.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বনুল
হারিস ইবনু ‘আমির ইবনু নাওফাল খুবাইব (রাঃ)-কে খরিদ করেছিল। ইনি সেই খুবাইব যিনি
বদর যুদ্ধের দিন আল-হারিস ইবনু ‘আমিরকে হত্যা করেছেন। খুবাইব (রাঃ) তাদের কাছে
বন্দী ছিলেন। তারা তাকে হত্যা করতে একত্র হলো। তিনি হারিসের কন্যার কাছে ক্ষৌরি
হওয়ার জন্য একটি ছুরি চাইলেন। সে তাকে তা এনে দিলো। তার অজান্তেই তার শিশু পুত্রটি
খুবাইবের কাছে এসে পড়লো। স্ত্রীলোকটি এসে দেখলো, ছেলেটি তার রানের উপর বসে আছে এবং
তার হাতে ঐ ধারাল ছুরিটি রয়েছে। সে খুব ভীত হয়ে পড়লো। তার চেহারা দেখে খুবাইব তা
বুঝতে পেরে বললেন, তুমি কি আশংকা করছো আমি একে হত্যা করবো, আমি কখনো এরূপ করবো না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৭
মৃত্যুর সময় আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ উত্তম
৩১১৩
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عِيسَى
بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ قَبْلَ
مَوْتِهِ بِثَلاَثٍ قَالَ " لاَ يَمُوتُ أَحَدُكُمْ إِلاَّ وَهُوَ
يُحْسِنُ الظَّنَّ بِاللَّهِ " .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর মৃত্যুর তিন দিন পূর্বে
বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ যেন আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ না করে মৃত্যু বরণ না
করে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৮
মৃত্যুর সময় মুমূর্ষ রোগীর পরিধেয় বস্ত্র পরিষ্কার থাকা
ভাল
৩১১৪
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ،
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، عَنِ ابْنِ
الْهَادِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ لَمَّا حَضَرَهُ الْمَوْتُ دَعَا بِثِيَابٍ جُدُدٍ
فَلَبِسَهَا ثُمَّ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" إِنَّ الْمَيِّتَ يُبْعَثُ فِي ثِيَابِهِ الَّتِي يَمُوتُ فِيهَا "
.
আবূ সাঈদ আল-খুদঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তার
মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে তিনি নতুন কাপড় নিয়ে ডাকলেন এবং তা পরিধান করে বললেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ কোন ব্যক্তি যে
কাপড় পরিধান করে মারা যাবে, ক্বিয়ামাতের দিন তাকে ঐ কাপড়েই উঠানো হবে।
সহীহঃ সহীহাহ (১৬৭১)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯
মৃত্যুপথযাত্রীর সামনে যে ধরনের কথা বলা উচিত
৩১১৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ أُمِّ
سَلَمَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا
حَضَرْتُمُ الْمَيِّتَ فَقُولُوا خَيْرًا فَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ يُؤَمِّنُونَ
عَلَى مَا تَقُولُونَ " . فَلَمَّا مَاتَ أَبُو سَلَمَةَ قُلْتُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ مَا أَقُولُ قَالَ " قُولِي اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ
وَأَعْقِبْنَا عُقْبَى صَالِحَةً " . قَالَتْ فَأَعْقَبَنِي اللَّهُ
تَعَالَى بِهِ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم .
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কোন
মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির কাছে উপস্থিত হলে উত্তম কথা বলবে। কেননা কথার সাথে
ফেরেশতারা আমীন আমীন বলেন। আবূ সালমাহ (রাঃ) মারা গেলে আমি বললাম, হে আল্লাহর
রাসূল! আমি কী বলবো? তিনি বললেনঃ তুমি বলো, “হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন এবং
আমাদেরকে কল্যাণকর পরিণতি দান করুন।” উম্মু সালমাহ (রাঃ) বলেন, এ দু‘আর বদৌলতে
মহান আল্লাহ আমার কল্যাণময় পরিণতি দান করলেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে (তার সাথে বিবাহ হয়)।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১৪৪৭)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২০
মুমূর্ষু ব্যক্তিকে তালক্বীন দেয়া সম্পর্কে
৩১১৬
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ عَبْدِ الْوَاحِدِ
الْمِسْمَعِيُّ، حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنِي صَالِحُ بْنُ أَبِي عَرِيبٍ، عَنْ كَثِيرِ
بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " مَنْ كَانَ آخِرُ كَلاَمِهِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ دَخَلَ
الْجَنَّةَ " .
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যারা সর্বশেষ বাক্য হবে
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১১৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا بِشْرٌ،
حَدَّثَنَا عُمَارَةُ بْنُ غَزِيَّةَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عُمَارَةَ، قَالَ
سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " لَقِّنُوا مَوْتَاكُمْ قَوْلَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
" .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মৃত্যুপথ যাত্রীকে
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” তালক্বীন দাও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২১
মৃতের চোখ বন্ধ করা
৩১১৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ حَبِيبٍ
أَبُو مَرْوَانَ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، - يَعْنِي الْفَزَارِيَّ - عَنْ
خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ قَبِيصَةَ بْنِ ذُؤَيْبٍ، عَنْ
أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى أَبِي
سَلَمَةَ وَقَدْ شَقَّ بَصَرُهُ فَأَغْمَضَهُ فَصَيَّحَ نَاسٌ مِنْ أَهْلِهِ
فَقَالَ " لاَ تَدْعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ إِلاَّ بِخَيْرٍ فَإِنَّ
الْمَلاَئِكَةَ يُؤَمِّنُونَ عَلَى مَا تَقُولُونَ " . ثُمَّ قَالَ
" اللَّهُمَّ اغْفِرْ لأَبِي سَلَمَةَ وَارْفَعْ دَرَجَتَهُ فِي
الْمَهْدِيِّينَ وَاخْلُفْهُ فِي عَقِبِهِ فِي الْغَابِرِينَ وَاغْفِرْ لَنَا
وَلَهُ رَبَّ الْعَالَمِينَ اللَّهُمَّ افْسَحْ لَهُ فِي قَبْرِهِ وَنَوِّرْ لَهُ
فِيهِ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَتَغْمِيضُ الْمَيِّتِ بَعْدَ خُرُوجِ
الرُّوحِ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ مُحَمَّدِ بْنِ النُّعْمَانِ الْمُقْرِئَ قَالَ
سَمِعْتُ أَبَا مَيْسَرَةَ رَجُلاً عَابِدًا يَقُولُ غَمَّضْتُ جَعْفَرًا
الْمُعَلِّمَ وَكَانَ رَجُلاً عَابِدًا فِي حَالَةِ الْمَوْتِ فَرَأَيْتُهُ فِي
مَنَامِي لَيْلَةَ مَاتَ يَقُولُ أَعْظَمُ مَا كَانَ عَلَىَّ تَغْمِيضُكَ لِي
قَبْلَ أَنْ أَمُوتَ .
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ সালামাহর (রাঃ) নিকট
প্রবেশ করেন। তখনও তার চোখ খোলা থাকায় তিনি তা বন্ধ করে দেন। অতঃপর তার পরিবারের
কিছু লোক চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো। তিনি বললেনঃ নিজেদের জন্য কল্যাণ কামনা ছাড়া
তোমরা অযথা কিছু বলো না। কারণ তোমরা যা বলবে তার সাথে সাথে ফেরেশতারা আমীন বলবেন।
পুনরায় তিনি বললেনঃ “হে আল্লাহ! তুমি আবূ সালামাহকে ক্ষমা করে দাও এবং তাকে
হেদায়াতপ্রাপ্তদের মধ্যে উচ্চ মর্যাদা দান করো। তার পেছনে যারা রয়ে গেলো, তুমিই
তাদের অভিভাবক হও। হে জগতসমূহের প্রতিপালক! তার কবরকে প্রশস্ত করো এবং তা আলোকিত
করো।”
আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, রূহ বের হয়ে যাওয়ার পর চোখ বন্ধ করে দিবে। আবূ মাইসারাহ
(রহঃ) নামক এক ইবাদতগুজার ব্যক্তি বলেন, আমি ইবাদতপ্রিয় জা’ফার আল-মু’আল্লিমের
(রহঃ) মৃত্যুকালে তার চোখ বন্ধ করে দিয়েছি। তার মৃত্যুর রাতে আমি তাকে স্বপ্নে
দেখি এবং তিনি বললেন, মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে তুমি যে আমার চোখ বন্ধ করে দিয়েছিলে
তা ছিল আমার প্রতি তোমার মহাঅনুগ্রহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২২
ইন্না লিল্লাহ পাঠ করা
৩১১৯
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ،
حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، أَخْبَرَنَا ثَابِتٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ بْنِ أَبِي
سَلَمَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " إِذَا أَصَابَتْ أَحَدَكُمْ مُصِيبَةٌ فَلْيَقُلْ {
إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ } اللَّهُمَّ عِنْدَكَ أَحْتَسِبُ
مُصِيبَتِي فَآجِرْنِي فِيهَا وَأَبْدِلْ لِي خَيْرًا مِنْهَا " .
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো উপর
বিপদ আসলে সে যেন বলেঃ “আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা নিশ্চয়ই তাঁর কাছে ফিরে যাবো।
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছেই আমার বিপদের কথা পেশ করছি। সুতরাং আমাকে এর উত্তম
প্রতিফল দান করুন এবং বিপদকে আমার জন্য কল্যাণকর বস্তুতে পরিবর্তন করে দিন।”
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১৫৯৮)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৩
মৃতের শরীর ঢেকে রাখা
৩১২০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ
أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُجِّيَ فِي
ثَوْبٍ حِبَرَةٍ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে একটি ডোরাদার চাঁদর দিয়ে ঢেকে দেয়া
হয়েছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৪
মৃত্যুপথযাত্রীর নিকট কুরআন পাঠ
৩১২১
دَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ،
وَمُحَمَّدُ بْنُ مَكِّيٍّ الْمَرْوَزِيُّ، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا
ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، -
وَلَيْسَ بِالنَّهْدِيِّ - عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ، قَالَ قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " اقْرَءُوا { يس } عَلَى مَوْتَاكُمْ
" . وَهَذَا لَفْظُ ابْنِ الْعَلاَءِ .
মা’কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের
মুমূর্ষু ব্যক্তিদের নিকট ‘সূরাহ ইয়াসীন’ পাঠ করো।
দুর্বলঃ মিশকাত (১৬২২), ইরওয়া (৬৮৮)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৫
বিপদের সময় (মাসজিদে) বসা
৩১২২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ كَثِيرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَمْرَةَ،
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَمَّا قُتِلَ زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ وَجَعْفَرٌ وَعَبْدُ
اللَّهِ بْنُ رَوَاحَةَ جَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي
الْمَسْجِدِ يُعْرَفُ فِي وَجْهِهِ الْحُزْنُ وَذَكَرَ الْقِصَّةَ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
যায়িদ ইবনু হারিসাহ, জা’ফার ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) যখন শহীদ হন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাসজিদে গিয়ে বসেন। তাঁর চেহারায়
চিন্তার ছাপ পরিলক্ষিত হলো।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৬
মৃতের জন্য শোক প্রকাশ
৩১২৩
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ خَالِدِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُفَضَّلُ، عَنْ
رَبِيعَةَ بْنِ سَيْفٍ الْمَعَافِرِيِّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ
الْحُبُلِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ قَبَرْنَا
مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم - يَعْنِي مَيِّتًا - فَلَمَّا فَرَغْنَا
انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَانْصَرَفْنَا مَعَهُ فَلَمَّا
حَاذَى بَابَهُ وَقَفَ فَإِذَا نَحْنُ بِامْرَأَةٍ مُقْبِلَةٍ - قَالَ أَظُنُّهُ
عَرَفَهَا - فَلَمَّا ذَهَبَتْ إِذَا هِيَ فَاطِمَةُ - عَلَيْهَا السَّلاَمُ -
فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا أَخْرَجَكِ يَا
فَاطِمَةُ مِنْ بَيْتِكِ " . فَقَالَتْ أَتَيْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَهْلَ هَذَا الْبَيْتِ فَرَحَّمْتُ إِلَيْهِمْ مَيِّتَهُمْ أَوْ عَزَّيْتُهُمْ
بِهِ . فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " فَلَعَلَّكِ
بَلَغْتِ مَعَهُمُ الْكُدَى " . قَالَتْ مَعَاذَ اللَّهِ وَقَدْ
سَمِعْتُكَ تَذْكُرُ فِيهَا مَا تَذْكُرُ . قَالَ " لَوْ بَلَغْتِ
مَعَهُمُ الْكُدَى " . فَذَكَرَ تَشْدِيدًا فِي ذَلِكَ فَسَأَلْتُ
رَبِيعَةَ عَنِ الْكُدَى فَقَالَ الْقُبُورُ فِيمَا أَحْسِبُ .
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাথে আমরা একটি লাশ
দাফন করলাম। আমরা অবসর হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফিরে
আসলেন। আমরাও তাঁর সাথে ফিরে এলাম। তিনি ঘরের দরজার নিকট পৌছে থামলেন। আমরা এক
মহিলার মুখোমুখি হলাম। বর্ণনাকারী বলেন, আমি ধারণা করলাম, তিনি সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলাটিকে চিনতে পেরেছেন। মহিলাটি চলে যাওয়ার সময় দেখা
গেলো, তিনি তো ফাত্বিমাহ (রাঃ)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তাকে বললেনঃ হে ফাত্বিমাহ! কোন জিনিস তোমাকে ঘর থেকে বের হতে বাধ্য করেছে? তিনি
বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এসেছিলাম এ বাড়ির লোকদের সান্ত্বনা দিতে এবং ধৈর্য
ধারণের নসিহত করতে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেনঃ খুব
সম্ভব তুমি তাদের সাথে কবর পর্যন্ত গিয়েছিলে। তিনি বললেন, আল্লাহর আশ্রয় চাই।
নারীদের কবরস্তানে যাওয়ার বিষয়ে আমি আপনার আলোচনা শুনেছি। তিনি বললেনঃ যদি তুমি
তাদের সাথে কবরস্তানে যেতে তাহলে আমি তোমাকে এই করতাম। তিনি এ বিষয়ে কঠোর বাণী
উচ্চারণ করলেন। আমি (মুফাদ্দাল) রবী’আহকে ‘আল-কুদা’ শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করলে তিনি
বললেন, আমার ধারণা, এর অর্থ কবর।
দুর্বলঃ নাসায়ী (১৮৮০)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৭
বিপদে ধৈর্যধারণ
৩১২৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ،
قَالَ أَتَى نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى امْرَأَةٍ تَبْكِي عَلَى
صَبِيٍّ لَهَا فَقَالَ لَهَا " اتَّقِي اللَّهَ وَاصْبِرِي " .
فَقَالَتْ وَمَا تُبَالِي أَنْتَ بِمُصِيبَتِي فَقِيلَ لَهَا هَذَا النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم . فَأَتَتْهُ فَلَمْ تَجِدْ عَلَى بَابِهِ بَوَّابِينَ فَقَالَتْ
يَا رَسُولَ اللَّهِ لَمْ أَعْرِفْكَ فَقَالَ " إِنَّمَا الصَّبْرُ عِنْدَ
الصَّدْمَةِ الأُولَى " . أَوْ " عِنْدَ أَوَّلِ صَدْمَةٍ
" .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক মহিলার কাছে যান। মহিলাটি তার ছেলের
মৃত্যুশোকে কাঁদছিল। তিনি তাকে বললেনঃ আল্লাহ্কে ভয় করো এবং ধৈর্য ধরো। মহিলাটি
বললো, তুমি তো আমার মতো বিপদগ্রস্ত হওনি। তাকে বলা হলো, ইনি নবী সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম। পরে মহিলাটি তাঁর বাড়িতে এলো, কিন্তু দরজায় কোন দারোয়ান
দেখলো না। সে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তখন আপনাকে চিনতে পারিনি। তিনি বললেনঃ
প্রকৃত ধৈর্য বিপদের প্রথম দিকেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৮
মৃতের জন্য কান্নাকাটি করা
৩১২৫
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ
الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، قَالَ سَمِعْتُ
أَبَا عُثْمَانَ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، أَنَّ ابْنَةً لِرَسُولِ اللَّهِ،
صلى الله عليه وسلم أَرْسَلَتْ إِلَيْهِ وَأَنَا مَعَهُ وَسَعْدٌ وَأَحْسِبُ
أُبَيًّا أَنَّ ابْنِي أَوْ بِنْتِي قَدْ حُضِرَ فَاشْهَدْنَا . فَأَرْسَلَ
يُقْرِئُ السَّلاَمَ فَقَالَ " قُلْ لِلَّهِ مَا أَخَذَ وَمَا أَعْطَى
وَكُلُّ شَىْءٍ عِنْدَهُ إِلَى أَجَلٍ " . فَأَرْسَلَتْ تُقْسِمُ
عَلَيْهِ فَأَتَاهَا فَوُضِعَ الصَّبِيُّ فِي حِجْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم وَنَفْسُهُ تَقَعْقَعُ فَفَاضَتْ عَيْنَا رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ لَهُ سَعْدٌ مَا هَذَا قَالَ " إِنَّهَا رَحْمَةٌ وَضَعَهَا
اللَّهُ فِي قُلُوبِ مَنْ يَشَاءُ وَإِنَّمَا يَرْحَمُ اللَّهُ مِنْ عِبَادِهِ
الرُّحَمَاءَ " .
উসামাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহর
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কন্যা (যাইনাব (রাঃ)) তাঁর নিকট লোক পাঠালেন।
তখন আমি ও সাদ (রাঃ) তাঁর সাথে ছিলাম। সম্ভবত উবাই (রাঃ) আমাদের সাথেই ছিলেন। তিনি
বলে পাঠান, আমার একটি শিশু পুত্র বা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) কন্যা মুমূর্ষু অবস্থায়
আছে। আপনি আমাদের এখানে আসুন। তিনি তাকে লোক মারফত সালাম পাঠিয়ে বললেনঃ বলো,
আল্লাহ যা গ্রহণ করেন এবং যা দান করেন তা সবই তাঁর। তাঁর কাছে প্রতিটি বস্তুর একটা
নির্দিষ্ট সময়কাল আছে। তিনি পুনরায় কসম দিয়ে লোক পাঠালেন। তিনি সেখানে গেলেন।
বাচ্চাটি রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোলে রাখা হলো। তখন তার
প্রাণ ছটফট করছিল। এ দৃশ্য দেখে রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম
দু’চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগলো। সা’দ (রাঃ) তাঁকে বললেন, এ কি? তিনি
বললেনঃ এটাই হলো মায়া। আল্লাহ যাদেরকে চান তাদের অন্তরে এটি স্থাপন করেন।
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে দয়াবানদের দয়া করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১২৬
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ،
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
وُلِدَ لِيَ اللَّيْلَةَ غُلاَمٌ فَسَمَّيْتُهُ بِاسْمِ أَبِي إِبْرَاهِيمَ
" . فَذَكَرَ الْحَدِيثَ قَالَ أَنَسٌ لَقَدْ رَأَيْتُهُ يَكِيدُ
بِنَفْسِهِ بَيْنَ يَدَىْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَدَمَعَتْ عَيْنَا
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " تَدْمَعُ الْعَيْنُ
وَيَحْزَنُ الْقَلْبُ وَلاَ نَقُولُ إِلاَّ مَا يَرْضَى رَبُّنَا إِنَّا بِكَ يَا
إِبْرَاهِيمُ لَمَحْزُونُونَ " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আজ রাতে আমার ঘরে একটি
পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে। আমি আমার পূর্বপুরুষ ইবরাহীম (আ)-এর নাম অনুসারে
তার নাম রেখেছি ইবরাহীম। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি দেখেছি ইবরাহীম রাসূলুল্লাহর
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সামনেই প্রাণ ত্যাগ করলেন। রাসূলুল্লাহর
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই চোখ বেয়ে পানি ঝরছে। তিনি বললেনঃ চোখ অশ্রু
ঝরাচ্ছে, অন্তর দুঃখভারাক্রান্ত, তবুও আমরা শুধুমাত্র তাই বলবো যাতে আমাদের
প্রতিপালক সস্তুষ্ট হবেন (অর্থাৎ ইন্না লিল্লাহি ওয়া..)। হে ইবরাহীম! তোমার
বিচ্ছেদে আমরা শোকার্ত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৯
বিলাপ করে কান্নাকাটি করা
৩১২৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْوَارِثِ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ إِنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَانَا عَنِ النِّيَاحَةِ .
উম্মু ‘আতিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে উচ্চস্বরে বিলাপ করে
কাঁদতে নিষেধ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১২৮
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى،
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ بْنِ
عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم النَّائِحَةَ وَالْمُسْتَمِعَةَ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলাপকারিণী ও তা শ্রবণকারিণীকে
অভিশম্পাত করেছেন।
সানাদ দুর্বলঃ ইরওয়া (৭৬৯)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩১২৯
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، عَنْ
عَبْدَةَ، وَأَبِي، مُعَاوِيَةَ - الْمَعْنَى - عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ " .
فَذُكِرَ ذَلِكَ لِعَائِشَةَ فَقَالَتْ وَهِلَ - تَعْنِي ابْنَ عُمَرَ - إِنَّمَا
مَرَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى قَبْرٍ فَقَالَ " إِنَّ صَاحِبَ
هَذَا لَيُعَذَّبُ وَأَهْلُهُ يَبْكُونَ عَلَيْهِ " . ثُمَّ قَرَأَتْ {
وَلاَ تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى } قَالَ عَنْ أَبِي مُعَاوِيَةَ عَلَى
قَبْرِ يَهُودِيٍّ .
ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবারের
লোকজনের কান্নাকাটির কারণে শাস্তি দেয়া হয়। এ কথা ‘আয়িশাহ (রাঃ) এর নিকট উল্লেখ
করা হলে তিনি বললেন, এ ধরনের কথা ইবনু ‘উমার কোত্থেকে শুনেছে। একদা নবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি ক্ববরের পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে বললেনঃ
কবরবাসীর পরিবারের লোকজনের কান্নাকাটির কারণে এ ক্ববরের বাসিন্দাকে শাস্তি দেয়া
হচ্ছে। অতঃপর ‘আয়িশাহ এ আয়াত তিলাওয়াত করলেনঃ “একের বোঝা অন্যের উপর চাপানো হবে
না" (সূরাহ আল-আন’আমঃ ১৬৪, বনী ইসরাঈলঃ ১৫, ফাত্বিরঃ ১৮, যুমারঃ ৩৯ এবং নাজমঃ
৩৮)। হান্নাদ (রহঃ) আবূ মু’আবিয়াহর সূত্রে বলেন, তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এক ইয়াহুদীর ক্ববরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৩০
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ
أَوْسٍ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى أَبِي مُوسَى وَهُوَ ثَقِيلٌ فَذَهَبَتِ امْرَأَتُهُ
لِتَبْكِي أَوْ تَهُمَّ بِهِ فَقَالَ لَهَا أَبُو مُوسَى أَمَا سَمِعْتِ مَا قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ بَلَى . قَالَ فَسَكَتَتْ فَلَمَّا
مَاتَ أَبُو مُوسَى - قَالَ يَزِيدُ - لَقِيتُ الْمَرْأَةَ فَقُلْتُ لَهَا مَا
قَوْلُ أَبِي مُوسَى لَكِ أَمَا سَمِعْتِ مَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم ثُمَّ سَكَتِّ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
لَيْسَ مِنَّا مَنْ حَلَقَ وَمَنْ سَلَقَ وَمَنْ خَرَقَ " .
যায়িদ ইবনু আওস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি অসুস্থ আবূ মূসা (রাঃ)-কে দেখতে যাই, তার স্ত্রী কাঁদতে লাগলেন। আবূ
মূসা (রাঃ) তাকে বললেন, তুমি কি রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম
নির্দেশ শুনোনি? তিনি বললেন, হাঁ শুনেছি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি কান্না থামিয়ে
চুপ হলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) যখন মারা যান, তখন ইয়াযীদ বলেন, আমি
মহিলার সাথে সাক্ষাত করে তাকে বললাম, আবূ মূসা আপনাকে কী বলেছিলেন? (তিনি
বলেছিলেন, তুমি কি রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ শুনোনি-
অতঃপর আপনি তখন চুপ হয়েছিলেন। মহিলাটি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ (মৃত্যুশোক প্রকাশে) যে মহিলা মাথা মুড়িয়ে বিলাপ করে কাঁদে
এবং কাপড় ছিঁড়ে ফেলে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।
সহীহ : ইরওয়া (৭৭১)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৩১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حُمَيْدُ
بْنُ الأَسْوَدِ، حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ، - عَامِلٌ لِعُمَرَ بْنِ عَبْدِ
الْعَزِيزِ عَلَى الرَّبَذَةِ حَدَّثَنِي أَسِيدُ بْنُ أَبِي أَسِيدٍ، عَنِ
امْرَأَةٍ، مِنَ الْمُبَايِعَاتِ قَالَتْ كَانَ فِيمَا أَخَذَ عَلَيْنَا رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَعْرُوفِ الَّذِي أَخَذَ عَلَيْنَا أَنْ لاَ
نَعْصِيَهُ فِيهِ أَنْ لاَ نَخْمِشَ وَجْهًا وَلاَ نَدْعُوَ وَيْلاً وَلاَ نَشُقَّ
جَيْبًا وَأَنْ لاَ نَنْشُرَ شَعْرًا .
আসীদ ইবনু আসীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বাই’আত
গ্রহণকারী জনৈক মহিলার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছ থেকে যেসব সৎকাজের বাই’আত গ্রহণ
করেছিলেন তাতে এটাও ছিলঃ আমরা তাঁর অবাধ্য হবো না, মুখমণ্ডল ক্ষতবিক্ষত করবো না,
বুক চাপড়াবো না, ধ্বংসের আহবান করবো না, কাপড়-চোপড় ফাঁড়বো না এবং চুল এলোমেলো
করবো না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩০
মৃতের পরিবারের জন্য খাদ্য প্রেরণ
৩১৩২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ جَعْفَرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
اصْنَعُوا لآلِ جَعْفَرٍ طَعَامًا فَإِنَّهُ قَدْ أَتَاهُمْ أَمْرٌ شَغَلَهُمْ
" .
আবদুল্লাহ ইবনু জা’ফর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তোমরা জা’ফরের
পরিবারের জন্য খাবার তৈরি করো। কারণ তাদের কাছে এমন দুঃসংবাদ এসেছে যা তাদেরকে
ব্যস্ত রাখবে।
হাসানঃ ইবনু মাজাহ (১৬১০-১৬১১), মিশকাত (১৭৩৯)।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩১
শহীদকে গোসল দিবে কিনা?
৩১৩৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا مَعْنُ بْنُ عِيسَى، ح وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ
الْجُشَمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ
بْنِ طَهْمَانَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ رُمِيَ رَجُلٌ
بِسَهْمٍ فِي صَدْرِهِ أَوْ فِي حَلْقِهِ فَمَاتَ فَأُدْرِجَ فِي ثِيَابِهِ كَمَا
هُوَ - قَالَ - وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক
ব্যক্তির বুকে বা কণ্ঠনালীতে একটি তীর বিদ্ধ হলে তাতেই সে নিহত হলো। অতঃপর তার
পরিহিত কাপড়েই তাকে (দাফনে) জড়ানো হলো। আমরা তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথেই ছিলাম।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩১৩৪
حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ،
وَعِيسَى بْنُ يُونُسَ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَاصِمٍ، عَنْ عَطَاءِ
بْنِ السَّائِبِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أَمَرَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِقَتْلَى أُحُدٍ أَنْ يُنْزَعَ عَنْهُمُ
الْحَدِيدُ وَالْجُلُودُ وَأَنْ يُدْفَنُوا بِدِمَائِهِمْ وَثِيَابِهِمْ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উহুদের শহীদদের ব্যাপারে
নির্দেশ দিলেন যে, তাদের শরীর থেকে যুদ্ধাস্ত্র ও চামড়ার বস্ত্র খুলে নিয়ে তাদের
রক্তমাখা পরিধেয় বস্ত্রসহ তাদেরকে দাফন করতে হবে।
দুর্বলঃ ইবনু মাজাহ (১৫১৫), মিশকাত (১৬৪৩), ইরওয়া (৭০৯)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩১৩৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ،
حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، ح وَحَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْمَهْرِيُّ،
أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، - وَهَذَا لَفْظُهُ - أَخْبَرَنِي أُسَامَةُ بْنُ
زَيْدٍ اللَّيْثِيُّ، أَنَّ ابْنَ شِهَابٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ
حَدَّثَهُمْ أَنَّ شُهَدَاءَ أُحُدٍ لَمْ يُغَسَّلُوا وَدُفِنُوا بِدِمَائِهِمْ
وَلَمْ يُصَلَّ عَلَيْهِمْ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উহুদ যুদ্ধের
শহীদদেরকে গোসল দেয়া হয়নি। তাদেরকে রক্তরঞ্জিত দেহেই দাফন করা হয় এবং তাদের উপর
জানাযা পড়া হয়নি।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩১৩৬
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا زَيْدٌ، - يَعْنِي ابْنَ الْحُبَابِ - ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ
سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو صَفْوَانَ، - يَعْنِي الْمَرْوَانِيَّ - عَنْ
أُسَامَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، - الْمَعْنَى - أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ عَلَى حَمْزَةَ وَقَدْ مُثِّلَ بِهِ
فَقَالَ " لَوْلاَ أَنْ تَجِدَ صَفِيَّةُ فِي نَفْسِهَا لَتَرَكْتُهُ
حَتَّى تَأْكُلَهُ الْعَافِيَةُ حَتَّى يُحْشَرَ مِنْ بُطُونِهَا " .
وَقَلَّتِ الثِّيَابُ وَكَثُرَتِ الْقَتْلَى فَكَانَ الرَّجُلُ وَالرَّجُلاَنِ
وَالثَّلاَثَةُ يُكَفَّنُونَ فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ - زَادَ قُتَيْبَةُ - ثُمَّ
يُدْفَنُونَ فِي قَبْرٍ وَاحِدٍ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَسْأَلُ " أَيُّهُمْ أَكْثَرُهُمْ قُرْآنًا " . فَيُقَدِّمُهُ
إِلَى الْقِبْلَةِ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হামযাহ (রাঃ)-এর (লাশের) পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে
দেখলেন, তার লাশ বিকৃত করা হয়েছে। তিনি বললেনঃ সাফিয়্যাহ্ (হামযাহ্র বোন) যদি
কষ্ট না পেতো তাহলে আমি তার লাশ পড়ে থাকতে দিতাম এবং পশুপাখিরা তা খেয়ে নিতো এবং
ক্বিয়ামাতের দিন তাকে এদের পেট থেকেই উত্থিত করা হতো। এ সময় কাফনের কাপড় কম
ছিলো, কিন্তু মৃতদেহ ছিল অনেক। ফলে এক, দুই, এমনকি তিন ব্যক্তিকে একই কাপড়ে
জড়িয়ে কাফন দেয়া হয়। কুতাইবাহ্র বর্ণনায় রয়েছেঃ অতঃপর তাদেরকে একই ক্ববরে
দাফন করা হয়। এ সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস
করতেনঃ এদের মধ্যে কোন ব্যক্তি কুরআন সম্পর্কে অধিক পারদর্শী ছিল। তিনি তাকে
ক্বিবলাহ্র দিকে (ডানে) রাখতেন।
হাসানঃ তিরমিযী (১০২৭)।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩১৩৭
حَدَّثَنَا عَبَّاسٌ الْعَنْبَرِيُّ،
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا أُسَامَةُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ
أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِحَمْزَةَ وَقَدْ مُثِّلَ
بِهِ وَلَمْ يُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنَ الشُّهَدَاءِ غَيْرِهِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হামযাহ (রাঃ) এর লাশের পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে
দেখলেন, তার মৃতদেহ বিকৃত করা হয়েছে। তিনি হামযাহ (রাঃ) ছাড়া অন্য কোন শহীদের
জানাযা পড়েননি।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩১৩৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
وَيَزِيدُ بْنُ خَالِدِ بْنِ مَوْهَبٍ، أَنَّ اللَّيْثَ، حَدَّثَهُمْ عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ جَابِرَ بْنَ
عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ
يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ وَيَقُولُ " أَيُّهُمَا
أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ " . فَإِذَا أُشِيرَ لَهُ إِلَى
أَحَدِهِمَا قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ وَقَالَ " أَنَا شَهِيدٌ عَلَى
هَؤُلاَءِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . وَأَمَرَ بِدَفْنِهِمْ بِدِمَائِهِمْ
وَلَمْ يُغَسَّلُوا .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উহুদ যুদ্ধের শহীদদের দুইজনকে একই ক্ববরে দাফনের
নির্দেশ দেন এবং জিজ্ঞেস করতে থাকেনঃ এদের মধ্যে কোন ব্যক্তি কুরআন সম্পর্কে অধিক
পারদর্শী ছিল। অতঃপর তাদের কারো প্রতি ইঙ্গিত করা হলে তাকেই তিনি প্রথমে ক্ববরে
রাখতেন। তিনি বললেনঃ আমি ক্বিয়ামাতের দিন তাদের জন্য সাক্ষী হবো। তিনি
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে রক্তমাখা দেহে দাফনের নির্দেশ দেন এবং
তাদের গোসল দিলেন না।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১৫১৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৩৯
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ
الْمَهْرِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنِ اللَّيْثِ، بِهَذَا الْحَدِيثِ
بِمَعْنَاهُ قَالَ يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ فِي ثَوْبٍ
وَاحِدٍ .
লাইস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
লাইস (রহঃ) হতে
অনুরূপ অর্থবোধক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উহুদ যুদ্ধের শহীদদের দুই দুই ব্যক্তিকে একই কাপড়ে একত্রে কাফন দেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩২
গোসলের সময় মৃত ব্যক্তির লজ্জাস্থান ঢেকে রাখা
৩১৪০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ سَهْلٍ
الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أُخْبِرْتُ عَنْ
حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ ضَمْرَةَ، عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تُبْرِزْ فَخِذَكَ وَلاَ
تَنْظُرَنَّ إِلَى فَخِذِ حَىٍّ وَلاَ مَيِّتٍ " .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমার রান অনাবৃত করবে না এবং জীবিত ও
মৃত কারো রানের প্রতি দৃষ্টিপাত করবে না।
খুবই দুর্বলঃ ইবনু মাজাহ (১৪৬০), ইরওয়া (২৬৯)।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
৩১৪১
حَدَّثَنَا النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ
عَبَّادٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ قَالَ
سَمِعْتُ عَائِشَةَ، تَقُولُ لَمَّا أَرَادُوا غَسْلَ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالُوا وَاللَّهِ مَا نَدْرِي أَنُجَرِّدُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم مِنْ ثِيَابِهِ كَمَا نُجَرِّدُ مَوْتَانَا أَمْ نُغَسِّلُهُ وَعَلَيْهِ
ثِيَابُهُ فَلَمَّا اخْتَلَفُوا أَلْقَى اللَّهُ عَلَيْهِمُ النَّوْمَ حَتَّى مَا
مِنْهُمْ رَجُلٌ إِلاَّ وَذَقْنُهُ فِي صَدْرِهِ ثُمَّ كَلَّمَهُمْ مُكَلِّمٌ مِنْ
نَاحِيَةِ الْبَيْتِ لاَ يَدْرُونَ مَنْ هُوَ أَنِ اغْسِلُوا النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم وَعَلَيْهِ ثِيَابُهُ فَقَامُوا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَغَسَلُوهُ وَعَلَيْهِ قَمِيصُهُ يَصُبُّونَ الْمَاءَ فَوْقَ الْقَمِيصِ
وَيُدَلِّكُونَهُ بِالْقَمِيصِ دُونَ أَيْدِيهِمْ وَكَانَتْ عَائِشَةُ تَقُولُ
لَوِ اسْتَقْبَلْتُ مِنْ أَمْرِي مَا اسْتَدْبَرْتُ مَا غَسَّلَهُ إِلاَّ
نِسَاؤُهُ .
আব্বাস ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যখন সাহাবীগণ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-কে গোসল দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, তারা বললেন, আল্লাহর শপথ! আমরা বুঝে উঠতে
পারছি না, আমরা কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বস্ত্র খুলে
নিবো যেভাবে সাধারণ লোকের মৃতদেহ থেকে বস্ত্র খুলে নেই, নাকি তাঁর পরিধেয়
বস্ত্রসহ তাকে গোসল দিবো? তারা এ নিয়ে মতভেদে লিপ্ত হলে মহান আল্লাহ তাদের উপর
ঘুম চাপিয়ে দিলেন। ঘুমের ঘোরে তাদের প্রত্যেকের থুতনী নিজ নিজ বুকের সাথে ঠেকে
গেলো। এমতাবস্থায় ঘরের এককোণ থেকে অদৃশ্য আওয়াজ আসলো। ঐ আওয়াজ কে দিলো তা জানা গেলো
না। “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে কাপড়ে আবৃত অবস্থায়ই গোসল
দাও।” একথা শুনে তারা জেগে উঠলেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে
তাঁর জামা পরিহিত অবস্থায় গোসল দিলেন। তারা জামার উপর পানি ঢাললেন এবং হাতের
পরিবর্তে জামা দিয়ে তাঁর শরীর রগরালেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি যদি আগে বুঝতে
পারতাম যা পরে বুঝতে পেরেছি তাহলে তাঁর স্ত্রীরাই তার গোসল দিতেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৩
মৃতকে গোসল দেয়ার পদ্ধতি
৩১৪২
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ،
ح وَحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، - الْمَعْنَى - عَنْ
أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ دَخَلَ
عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ تُوُفِّيَتِ ابْنَتُهُ
فَقَالَ " اغْسِلْنَهَا ثَلاَثًا أَوْ خَمْسًا أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ -
إِنْ رَأَيْتُنَّ ذَلِكَ - بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَاجْعَلْنَ فِي الآخِرَةِ كَافُورًا
أَوْ شَيْئًا مِنْ كَافُورٍ فَإِذَا فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي " .
فَلَمَّا فَرَغْنَا آذَنَّاهُ فَأَعْطَانَا حَقْوَهُ فَقَالَ " أَشْعِرْنَهَا
إِيَّاهُ " . قَالَ عَنْ مَالِكٍ يَعْنِي إِزَارَهُ وَلَمْ يَقُلْ
مُسَدَّدٌ دَخَلَ عَلَيْنَا .
উম্মু ‘আতিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কন্যা (যাইনাব (রাঃ)) মারা
গেলে তিনি আমাদের কাছে এসে বললেনঃ তোমরা তাকে কুল পাতা মেশানো সিদ্ধ পানি দিয়ে
তিন, পাঁচ অথবা প্রয়োজনবোধ এর চেয়ে অধিকবার গোসল করাও এবং শেষবারে কাফুর মিশিয়ে
নাও। গোসল দেয়া শেষ হলে তোমরা আমাকে খবর দিবে। অতঃপর আমরা গোসল দেয়া শেষ করে
তাঁকে খবর দিলাম। তিনি তাঁর ব্যবহৃত একখানা কাপড় দিয়ে আমাদেরকে বললেনঃ এটা তার
গায়ে পরিয়ে দাও।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১৪৫৮)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৪৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ،
وَأَبُو كَامِلٍ - بِمَعْنَى الإِسْنَادِ - أَنَّ يَزِيدَ بْنَ زُرَيْعٍ،
حَدَّثَهُمْ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ حَفْصَةَ،
أُخْتِهِ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ مَشَطْنَاهَا ثَلاَثَةَ قُرُونٍ .
উম্মু ‘আতিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা
তার (যয়নাব (রাঃ)) চুলগুলো তিন গোছায় ভাগ করেছিলাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৪৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ،
عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ وَضَفَّرْنَا رَأْسَهَا ثَلاَثَةَ قُرُونٍ ثُمَّ
أَلْقَيْنَاهَا خَلْفَهَا مُقَدَّمَ رَأْسِهَا وَقَرْنَيْهَا .
উম্মু ‘আতিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা
তাঁর (যাইনাবের) মাথার চুল তিন গোছায় ভাগ করলাম। এরপর কপালের (একভাগ) চুল এবং
মাথার দু’পাশের (দুইভাগ) চুল তার পিছনের দিকে ফেলে দিলাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৪৫
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ، وَحَدَّثَنَا
إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ، عَنْ أُمِّ
عَطِيَّةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهُنَّ فِي غُسْلِ
ابْنَتِهِ " ابْدَأْنَ بِمَيَامِنِهَا وَمَوَاضِعِ الْوُضُوءِ مِنْهَا
" .
উম্মু ‘আতিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কন্যার (যাইনাবের) গোসল সম্পর্কে তাদেরকে
বললেনঃ তোমরা তার ডান দিক থেকে এবং উযুর অঙ্গসমূহ থেকে গোসল দেয়া আরম্ভ করবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৪৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ،
حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أُمِّ
عَطِيَّةَ، بِمَعْنَى حَدِيثِ مَالِكٍ زَادَ فِي حَدِيثِ حَفْصَةَ عَنْ أُمِّ
عَطِيَّةَ بِنَحْوِ هَذَا وَزَادَتْ فِيهِ " أَوْ سَبْعًا أَوْ أَكْثَرَ
مِنْ ذَلِكَ إِنْ رَأَيْتُنَّهُ " .
উম্মু ‘আতিয়্যাহ্ (রাঃ) হতে হাফসাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদীস
বর্ণনা করেছেন। তাতে এও রয়েছেঃ [তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন]
অথবা সাতবার বা প্রয়োজনে এর চেয়ে অধিকবার গোসল দিবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৪৭
حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ،
حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ،
أَنَّهُ كَانَ يَأْخُذُ الْغُسْلَ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، يَغْسِلُ بِالسِّدْرِ
مَرَّتَيْنِ وَالثَّالِثَةَ بِالْمَاءِ وَالْكَافُورِ .
মুহাম্মদ ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি উম্মু
‘আতিয়্যার (রাঃ) নিকট গোসল দেয়ার পদ্ধতি শিখেছেন। মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেন, কুলপাতা
মিশানো গরম পানি দিয়ে দুইবার এবং কর্পুর মিশ্রিত পানি দিয়ে একবার গোসল দিতে হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৪
কাফনের বর্ণনা
৩১৪৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ أَبِي
الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يُحَدِّثُ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ خَطَبَ يَوْمًا فَذَكَرَ رَجُلاً مِنْ
أَصْحَابِهِ قُبِضَ فَكُفِّنَ فِي كَفَنٍ غَيْرِ طَائِلٍ وَقُبِرَ لَيْلاً
فَزَجَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُقْبَرَ الرَّجُلُ بِاللَّيْلِ
حَتَّى يُصَلَّى عَلَيْهِ إِلاَّ أَنْ يُضْطَرَّ إِنْسَانٌ إِلَى ذَلِكَ وَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِذَا كَفَّنَ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ
فَلْيُحْسِنْ كَفَنَهُ " .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন খুত্ববাহ দেয়ার সময় তাতে তাঁর এক
সাহাবীর কথা উল্লেখ করলেন। ঐ সাহাবী মারা গেলে লোকেরা তাকে রাতের বেলায় অপর্যাপ্ত
কাপড়ে কাফন দিয়েছিল। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত ব্যক্তিকে
রাতের বেলায় কবরস্থ করাকে তিরস্কার করলেন, যেন লোকজন জানাযা শরীক হতে পারে। তবে
কেউ বিশেষ কারণে রাতে ক্ববর দিতে চাইলে তা ভিন্ন কথা। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আরো বললেনঃ তোমাদের কেউ তার ভাইকে কাফন পরালে যেন উত্তমরূপে কাফন
পরায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৪৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ،
حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا
الزُّهْرِيُّ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ أُدْرِجَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ثَوْبٍ حِبَرَةٍ ثُمَّ أُخِّرَ عَنْهُ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (তাঁর ইন্তেকালের পর)
একটি ডোরাদার ইয়ামানী চাঁদর দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। অতঃপর তা পাল্টিয়ে সাদা চাঁদরে
ঢেকে দেয়া হয়।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১৪৬৯)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৫০
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ
الْبَزَّارُ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنِي ابْنَ عَبْدِ الْكَرِيمِ -
حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ عَقِيلِ بْنِ مَعْقِلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَهْبٍ،
- يَعْنِي ابْنَ مُنَبِّهٍ - عَنْ جَابِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا تُوُفِّيَ أَحَدُكُمْ فَوَجَدَ شَيْئًا
فَلْيُكَفَّنْ فِي ثَوْبٍ حِبَرَةٍ " .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ মারা
গেলে এবং ‘তার পরিজন সচ্ছল হলে তারা যেন ডোরাদার ইয়ামানী চাদরে কাফন দেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৫১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ،
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي،
أَخْبَرَتْنِي عَائِشَةُ، قَالَتْ كُفِّنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي
ثَلاَثَةِ أَثْوَابٍ يَمَانِيَةٍ بِيضٍ لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلاَ عِمَامَةٌ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (তাঁর ইন্তেকালের পর) ইয়ামানের
তৈরী তিনটি সাদা কাপড়ে কাফন দেয়া হয়েছিল। কাফনে কোন কামীস ও পাগড়ী ছিলো না।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১৪৬৯)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৫২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا
حَفْصٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، مِثْلَهُ
زَادَ مِنْ كُرْسُفٍ . قَالَ فَذُكِرَ لِعَائِشَةَ قَوْلُهُمْ فِي ثَوْبَيْنِ
وَبُرْدِ حِبَرَةٍ فَقَالَتْ قَدْ أُتِيَ بِالْبُرْدِ وَلَكِنَّهُمْ رَدُّوهُ
وَلَمْ يُكَفِّنُوهُ فِيهِ .
হিশাম ইবনু ‘উরওয়াহ (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি (পিতা)
‘আয়িশাহর (রাঃ) কাছ থেকে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। কিন্তু তাতে সুতীর
কাপড় উল্লেখ আছে। কেউ ‘আয়িশাহর (রাঃ) নিকট লোকজনের বক্তব্য ‘তাঁর কাফনে দু’টি সাদা
কাপড় ও একটি কারুকার্য খচিত ইয়ামানী চাদর ছিল’ উল্লেখ করলে তিনি বলেন, (কাফনের
জন্য) ইয়ামানী চাদরটি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সাহাবীগণ তা ফিরিয়ে দেন। তারা তাঁকে ঐ
চাঁদরে কাফন দেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৫৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ،
وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ
يَزِيدَ، - يَعْنِي ابْنَ أَبِي زِيَادٍ - عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
قَالَ كُفِّنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ثَلاَثَةِ أَثْوَابٍ
نَجْرَانِيَّةٍ الْحُلَّةُ ثَوْبَانِ وَقَمِيصُهُ الَّذِي مَاتَ فِيهِ . قَالَ
أَبُو دَاوُدَ قَالَ عُثْمَانُ فِي ثَلاَثَةِ أَثْوَابٍ حُلَّةٍ حَمْرَاءَ
وَقَمِيصِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তিনটি কাপড়ে কাফন দেয়া হয়।
এগুলো ছিল নাজরানের তৈরী। যার একটি ছিল চাদর, একটি লুঙ্গি এবং অপরটি ছিল
মৃত্যশয্যায় তাঁর পরিহিত পোশাক। ‘উসমান ইবনু আবূ শাইবাহ্র বর্ণনায় রয়েছেঃ তাকে
তিনটি কাপড়ে কাফন দেয়া হয়েছিল- যার দু’টি চাদর লাল বর্ণের এবং যে জামা পরিহিত
অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেল-৩৫
দামী কাফন ব্যবহার অপছন্দনীয়
৩১৫৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ
الْمُحَارِبِيُّ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ هَاشِمٍ أَبُو مَالِكٍ الْجَنْبِيُّ،
عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ عَامِرٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي
طَالِبٍ، قَالَ لاَ تَغَالِ لِي فِي كَفَنٍ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ تَغَالَوْا فِي الْكَفَنِ فَإِنَّهُ
يُسْلَبُهُ سَلْبًا سَرِيعًا " .
আলী ইবনু আবূ ত্বালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, তোমরা বেশি দামী কাফন ব্যবহার করবে না। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা কাফনের জন্য বেশি দামী কাপড় ব্যবহার
করো না। কেননা তা শিঘ্রই নষ্ট হয়ে যাবে।
দুর্বলঃ মিশকাত (১৬৩৯)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩১৫৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا
سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ خَبَّابٍ، قَالَ إِنَّ
مُصْعَبَ بْنَ عُمَيْرٍ قُتِلَ يَوْمَ أُحُدٍ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ إِلاَّ نَمِرَةٌ
كُنَّا إِذَا غَطَّيْنَا بِهَا رَأْسَهُ خَرَجَ رِجْلاَهُ وَإِذَا غَطَّيْنَا
رِجْلَيْهِ خَرَجَ رَأْسُهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
غَطُّوا بِهَا رَأْسَهُ وَاجْعَلُوا عَلَى رِجْلَيْهِ شَيْئًا مِنَ الإِذْخِرِ
" .
আবূ ওয়াইল (রহঃ) হতে খাব্বাব (রাঃ) এর সূত্র থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, মুস’আব ইবনু ‘উমাইর (রাঃ) উহুদ যুদ্ধে শহীদ হন।তার কাফনের জন্য একটি কম্বল
ছাড়া কিছুই ছিলো না। আমরা তা দিয়ে তার মাথা ঢাকলে তার দু’পা উম্মুক্ত হয়ে যেতো
আবার তার দু’পা ঢাকলে তার মাথা উম্মুক্ত হয়ে যেতো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ কম্বল দিয়ে তার মাথা ঢেকে দাও এবং তার দূ’পায়ের উপর
ইযখির ঘাস বিছিয়ে দাও।
সহীহঃ তিরমিযী (৪১২৫)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৫৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ،
حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ حَاتِمِ بْنِ
أَبِي نَصْرٍ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ نُسَىٍّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ
الصَّامِتِ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " خَيْرُ
الْكَفَنِ الْحُلَّةُ وَخَيْرُ الأُضْحِيَةِ الْكَبْشُ الأَقْرَنُ " .
উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ উত্তম কাফন হচ্ছে হুল্লা এবং কুরবানীর
জন্য উত্তম পশু হচ্ছে শিংওয়ালা দুম্বা।
দুর্বলঃ ইবনু মাজাহ (১৪৭৩), মিশকাত (১৬৪১), যঈফ সুনান আত-তিরমিযী (২৬৩/১৫৭০)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৬
মহিলাদের কাফন সম্পর্কে
৩১৫৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ،
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ،
حَدَّثَنِي نُوحُ بْنُ حَكِيمٍ الثَّقَفِيُّ، - وَكَانَ قَارِئًا لِلْقُرْآنِ -
عَنْ رَجُلٍ، مِنْ بَنِي عُرْوَةَ بْنِ مَسْعُودٍ يُقَالُ لَهُ دَاوُدُ قَدْ
وَلَّدَتْهُ أُمُّ حَبِيبَةَ بِنْتُ أَبِي سُفْيَانَ زَوْجُ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم عَنْ لَيْلَى بِنْتِ قَانِفٍ الثَّقَفِيَّةِ قَالَتْ كُنْتُ فِيمَنْ
غَسَّلَ أُمَّ كُلْثُومٍ بِنْتَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ
وَفَاتِهَا فَكَانَ أَوَّلُ مَا أَعْطَانَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
الْحِقَاءَ ثُمَّ الدِّرْعَ ثُمَّ الْخِمَارَ ثُمَّ الْمِلْحَفَةَ ثُمَّ
أُدْرِجَتْ بَعْدُ فِي الثَّوْبِ الآخِرِ قَالَتْ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم جَالِسٌ عِنْدَ الْبَابِ مَعَهُ كَفَنُهَا يُنَاوِلُنَاهَا ثَوْبًا ثَوْبًا
.
গাক্বীফ গোত্রের কানিফের কন্যা লায়লাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ্র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যা উম্মু কুলসুম (রাঃ) মারা
গেলে যে মহিলা তাকে গোসল দেয় তার সাথে আমিও ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে (কাফনের জন্য) প্রথমে তহবন্দ, তারপর কামীস, তারপর
ওড়না, তারপর চাদর, এবং অন্য একটি কাপড় দিলেন। যা দিয়ে লাশ পেচিয়ে দেয়া হলো। লায়লাহ
(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাফনের কাপড়সহ দরজার
পাশেই বসা ছিলেন। তিনি সেখান থেকে একটি একটি করে কাপড়গুলো আমাদেরকে প্রদান করেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৭
মৃতের জন্য মিশ্কের সুগন্ধি ব্যবহার
৩১৫৮
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
حَدَّثَنَا الْمُسْتَمِرُّ بْنُ الرَّيَّانِ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
أَطْيَبُ طِيبِكُمُ الْمِسْكُ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের সুগন্ধির মধ্যে
সর্বোত্তম হলো কস্তুরী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৮
দাফন-কাফনে জলদি করা
৩১৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ
مُطَرِّفٍ الرُّؤَاسِيُّ أَبُو سُفْيَانَ، وَأَحْمَدُ بْنُ جَنَابٍ، قَالاَ
حَدَّثَنَا عِيسَى، - قَالَ أَبُو دَاوُدَ هُوَ ابْنُ يُونُسَ - عَنْ سَعِيدِ بْنِ
عُثْمَانَ الْبَلَوِيِّ، عَنْ عَزْرَةَ، - وَقَالَ عَبْدُ الرَّحِيمِ عُرْوَةُ
بْنُ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيُّ - عَنْ أَبِيهِ، عَنِ الْحُصَيْنِ بْنِ وَحْوَحٍ،
أَنَّ طَلْحَةَ بْنَ الْبَرَاءِ، مَرِضَ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يَعُودُهُ فَقَالَ " إِنِّي لاَ أَرَى طَلْحَةَ إِلاَّ قَدْ حَدَثَ فِيهِ
الْمَوْتُ فَآذِنُونِي بِهِ وَعَجِّلُوا فَإِنَّهُ لاَ يَنْبَغِي لِجِيفَةِ
مُسْلِمٍ أَنْ تُحْبَسَ بَيْنَ ظَهْرَانَىْ أَهْلِهِ " .
আল-হুসাইন ইবনু ওয়াহওয়াজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ত্বালহা
ইবনুল বারাআ (রাঃ) অসুস্থ হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখতে
এসে বললেনঃ আমি দেখতে পাচ্ছি ত্বালহার মৃত্যু আসন্ন। কাজেই তোমরা আমাকে তার খবর
জানাবে এবং তার দাফন-কাফনের ব্যবস্থা দ্রুত করবে। কেননা কোন মুসলিমের লাশ তার
পরিবারের মধ্যে আটকে রাখা ঠিক নয়।
দুর্বলঃ যঈফাহ (৩২৩২), যঈফ আল-জামি’উস সাগীর (২০৯৯), মিশকাত (১৬২৫)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৯
মৃতকে গোসলদাতার গোসল করা সম্পর্কে
৩১৬০
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا، حَدَّثَنَا مُصْعَبُ
بْنُ شَيْبَةَ، عَنْ طَلْقِ بْنِ حَبِيبٍ الْعَنَزِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا حَدَّثَتْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم كَانَ يَغْتَسِلُ مِنْ أَرْبَعٍ مِنَ الْجَنَابَةِ وَيَوْمَ الْجُمُعَةِ
وَمِنَ الْحِجَامَةِ وَغُسْلِ الْمَيِّتِ .
‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) হতে ‘আয়িশাহ (রাঃ) সূত্র
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি যুবাইর
(রাঃ) কে হাদীস শুনিয়েছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চার অবস্থায়
গোসল করতেনঃ সহবাসের পর, জুমু’আর দিনে গোসল, শিংগা লাগানোর পর এবং মৃতকে গোসল
দেয়ার পর গোসল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩১৬১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ،
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الْقَاسِمِ
بْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ غَسَّلَ الْمَيِّتَ
فَلْيَغْتَسِلْ وَمَنْ حَمَلَهُ فَلْيَتَوَضَّأْ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি মৃতকে গোসল দেয় সে যেন গোসল
করে এবং যে ব্যক্তি লাশ বহন করে সে যেন উযু করে।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১৪৬৩)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৬২
حَدَّثَنَا حَامِدُ بْنُ يَحْيَى، عَنْ
سُفْيَانَ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ إِسْحَاقَ،
مَوْلَى زَائِدَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِمَعْنَاهُ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ هَذَا مَنْسُوخٌ سَمِعْتُ أَحْمَدَ بْنَ
حَنْبَلٍ وَسُئِلَ عَنِ الْغُسْلِ مِنْ غَسْلِ الْمَيِّتِ فَقَالَ يُجْزِيهِ
الْوُضُوءُ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ أَدْخَلَ أَبُو صَالِحٍ بَيْنَهُ وَبَيْنَ
أَبِي هُرَيْرَةَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ - يَعْنِي إِسْحَاقَ مَوْلَى زَائِدَةَ -
قَالَ وَحَدِيثُ مُصْعَبٍ ضَعِيفٌ فِيهِ خِصَالٌ لَيْسَ الْعَمَلُ عَلَيْهِ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
উপরের অনুরূপ
হাদীস বর্ণিত। আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, মৃতকে গোসল দেয়ার পর গোসল করা সম্পর্কিত হাদীস
রহিত হয়েছে। আমি আহমাদ ইবনু হাম্বলের নিকট শুনেছি, তাকে মৃতের গোসল দেয়ার পর গোসল
করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তার জন্য উযু করাই যথেষ্ট। আবু দাউদ
(রহঃ) বলেন, আবূ সালিহ এ হাদীসের সানাদে তার ও আবূ হুরায়রা্র মাঝে ইসহাক্বের নাম
ঢুকিয়েছেন। তিনি বলেন, মুস’আবের হাদীসটি দুর্বল। তাতে এমন কিছু আছে, যার উপর আমল
করা হয় না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪০
লাশকে চুম্বন করা
৩১৬৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنِ الْقَاسِمِ،
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُقَبِّلُ
عُثْمَانَ بْنَ مَظْعُونٍ وَهُوَ مَيِّتٌ حَتَّى رَأَيْتُ الدُّمُوعَ تَسِيلُ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘উসমান ইবনু মাযউনের
লাশে চুমু খেতে দেখেছি। আমি তাঁর চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে দেখেছি।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১৪৫৬)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪১
রাতে দাফন করা
৩১৬৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمِ بْنِ
بَزِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ عَمْرِو
بْنِ دِينَارٍ، أَخْبَرَنِي جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، - أَوْ سَمِعْتُ جَابِرَ
بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، - قَالَ رَأَى نَاسٌ نَارًا فِي الْمَقْبَرَةِ فَأَتَوْهَا
فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْقَبْرِ وَإِذَا هُوَ يَقُولُ
" نَاوِلُونِي صَاحِبَكُمْ " . فَإِذَا هُوَ الرَّجُلُ الَّذِي
كَانَ يَرْفَعُ صَوْتَهُ بِالذِّكْرِ .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা
রাতের বেলায় কবরস্থানে আলো দেখতে পেয়ে লোকেরা সেখানে এসে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ক্ববরের মধ্যে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখলো। তিনি
বললেনঃ তোমাদের সাথীকে আমার কাছে দাও। এ লোকটি উচ্চস্বরে যিকির করতো।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪২
মৃতদেহ এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় নেয়া
৩১৬৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ نُبَيْحٍ، عَنْ جَابِرِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا حَمَلْنَا الْقَتْلَى يَوْمَ أُحُدٍ لِنَدْفِنَهُمْ
فَجَاءَ مُنَادِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَدْفِنُوا الْقَتْلَى فِي مَضَاجِعِهِمْ
فَرَدَدْنَاهُمْ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা
উহুদের শহীদদের দাফনের জন্য অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছিলাম। এমন সময় নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ঘোষক এসে ঘোষণা করলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, শহীদদের লাশ যেন তাদের নিহত হওয়ার স্থানে
দাফন করা হয়। সুতরাং আমরা তাদের লাশ (পূর্বের স্থানে) ফিরিয়ে আনি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৩
জানাযার সলাতের কাতার সম্পর্কে
৩১৬৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ،
حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي
حَبِيبٍ، عَنْ مَرْثَدٍ الْيَزَنِيِّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ هُبَيْرَةَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ
فَيُصَلِّي عَلَيْهِ ثَلاَثَةُ صُفُوفٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ إِلاَّ أَوْجَبَ
" . قَالَ فَكَانَ مَالِكٌ إِذَا اسْتَقَلَّ أَهْلَ الْجَنَازَةِ
جَزَّأَهُمْ ثَلاَثَةَ صُفُوفٍ لِلْحَدِيثِ .
মালিক ইবনু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ মারা গেলে এবং
মুসলিমদের তিন কাতার লোক তার জানাযা পড়লে (আল্লাহ তার জন্য জান্নাত) ওয়াজিব করে
দেন। বর্ণনাকারী বলেন, এ কারনে মালিক (রহঃ) জানাযায় লোক সংখ্যা কম হলে তাদেরকে তিন
কাতারে বিভক্ত করতেন, এ হাদীস মোতাবেক আমলের উদ্দেশ্যে।
দুর্বলঃ কিন্তু মাওকুফ হাসান। মিশকাত (১৬৮৭)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৪
জানাযায় নারীদের অংশগ্রহণ
৩১৬৭
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا
حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ نُهِينَا
أَنْ نَتَّبِعَ، الْجَنَائِزَ وَلَمْ يُعْزَمْ عَلَيْنَا .
উম্মু ‘আতিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
আমাদের মহিলাদেরকে জানাযায় অংশগ্রহণে নিষেধ করা হয়, তবে এ বিষয়ে আমাদের উপর কড়াকড়ি
করা হয় নি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৫
জানাযায় অংশগ্রহণ ও লাশের অনুগমনের ফযীলাত
৩১৬৮
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، يَرْوِيهِ
قَالَ مَنْ تَبِعَ جَنَازَةً فَصَلَّى عَلَيْهَا فَلَهُ قِيرَاطٌ وَمَنْ تَبِعَهَا
حَتَّى يُفْرَغَ مِنْهَا فَلَهُ قِيرَاطَانِ أَصْغَرُهُمَا مِثْلُ أُحُدٍ أَوْ
أَحَدُهُمَا مِثْلُ أُحُدٍ .
আবূ হুরাইরাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি লাশের অনুগমন
করে এবং তাঁর জানাযা আদায় করে তার জন্য এক ক্বীরাত সওয়াব রয়েছে। আর যে ব্যক্তি
লাশের অনুগমন করে এবং দাফন শেষ করা পর্যন্ত শরীক থাকে তার জন্য রয়েছে দুই ক্বীরাত
সওয়াব। এ দুই ক্বীরাতের ছোট ক্বীরাতটি উহুদ পাহাড়ের সমান অথবা উভয়ের একটি উহুদ
পাহাড়ের সমান।
সহীহঃ আল-আহকাম (৬৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৬৯
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ،
وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ حُسَيْنٍ الْهَرَوِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا الْمُقْرِئُ،
حَدَّثَنَا حَيْوَةُ، حَدَّثَنِي أَبُو صَخْرٍ، - وَهُوَ حُمَيْدُ بْنُ زِيَادٍ -
أَنَّ يَزِيدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قُسَيْطٍ، حَدَّثَهُ أَنَّ دَاوُدَ بْنَ
عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ كَانَ
عِنْدَ ابْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ إِذْ طَلَعَ خَبَّابٌ صَاحِبُ
الْمَقْصُورَةِ فَقَالَ يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ أَلاَ تَسْمَعُ مَا
يَقُولُ أَبُو هُرَيْرَةَ إِنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ " مَنْ خَرَجَ مَعَ جَنَازَةٍ مِنْ بَيْتِهَا وَصَلَّى عَلَيْهَا
" . فَذَكَرَ مَعْنَى حَدِيثِ سُفْيَانَ فَأَرْسَلَ ابْنُ عُمَرَ إِلَى
عَائِشَةَ فَقَالَتْ صَدَقَ أَبُو هُرَيْرَةَ .
দাউদ ইবনু ‘আমির ইবনু সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রহঃ) হতে
তার পিতার সুত্র থেকে বর্ণিতঃ
একদা দাউদের পিতা
‘আমির (রাঃ) ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার ইবনুল খাত্তাবের (রাঃ) কাছে উপস্থিত ছিলেন। এমন
সময় ক্ষুদ্র কুটিরবাসী খাব্বাব (রাঃ) এসে উপস্থিত হয়ে বললেন, হে আবদুল্লাহ ইবনু
উমার! আবূ হুরায়রা (রাঃ) কি বলছেন তা কি আপনি শুনেছেন? তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি মৃতের ঘর থেকে
রওয়ানা হয়ে তার পিছনে পিছনে যায় এবং তার জানাযা পড়ে...অতঃপর সুফিয়ান হাদিসের
অনুরূপ। ইবনু ‘উমার (রাঃ) ‘আয়িশাহর (রাঃ) কাছে লোক পাঠালে তিনি বললেন, আবূ হুরায়রা
ঠিকই বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৭০
حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ شُجَاعٍ
السَّكُونِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو صَخْرٍ، عَنْ شَرِيكِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي نَمِرٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا مِنْ
مُسْلِمٍ يَمُوتُ فَيَقُومُ عَلَى جَنَازَتِهِ أَرْبَعُونَ رَجُلاً لاَ
يُشْرِكُونَ بِاللَّهِ شَيْئًا إِلاَّ شُفِّعُوا فِيهِ " .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ কোন মুসলিম মারা গেলে তার
জানাযায় যদি এমন চল্লিশ ব্যক্তি অংশ গ্রহন করে যারা কখনও আল্লাহর সাথে শরীক করে
নাই তবে তার জন্য তাদের সুপারিশ মঞ্জুর করা হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৬
আগুন সাথে নিয়ে লাশের সাথে যাওয়া
৩১৭১
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَبُو
دَاوُدَ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَرْبٌ، - يَعْنِي ابْنَ شَدَّادٍ - حَدَّثَنَا
يَحْيَى، حَدَّثَنِي بَابُ بْنُ عُمَيْرٍ، حَدَّثَنِي رَجُلٌ، مِنْ أَهْلِ
الْمَدِينَةِ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " لاَ تُتْبَعُ الْجَنَازَةُ بِصَوْتٍ وَلاَ نَارٍ " .
زَادَ هَارُونُ " وَلاَ يُمْشَى بَيْنَ يَدَيْهَا " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করে এবং আগুন
নিয়ে লাশের অনুসরন করা যাবে না। হারূনের বর্ণনায় রয়েছেঃ লাশের আগে আগেও চলা যাবে
না।
দুর্বলঃ ইরওয়া (৭৪২)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৭
লাশের জন্য (সম্মানার্থে) দাঁড়ানো
৩১৭২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَامِرِ بْنِ
رَبِيعَةَ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم " إِذَا
رَأَيْتُمُ الْجَنَازَةَ فَقُومُوا لَهَا حَتَّى تُخَلِّفَكُمْ أَوْ تُوضَعَ
" .
আমির ইবনু রবী’আহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যদি তোমরা জানাযা বহন করে নিয়ে যেতে
দেখো তাহলে তা তোমাদেরকে অতিক্রম না করা পর্যন্ত অথবা নিচে নামিয়ে না রাখা পর্যন্ত
তোমরা দাঁড়িয়ে থাকবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৭৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ،
حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا سُهَيْلُ بْنُ أَبِي صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " إِذَا تَبِعْتُمُ الْجَنَازَةَ فَلاَ تَجْلِسُوا حَتَّى تُوضَعَ
" . قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ الثَّوْرِيُّ عَنْ
سُهَيْلٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ فِيهِ حَتَّى تُوضَعَ بِالأَرْضِ
وَرَوَاهُ أَبُو مُعَاوِيَةَ عَنْ سُهَيْلٍ قَالَ حَتَّى تُوضَعَ فِي اللَّحْدِ
. قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَسُفْيَانُ أَحْفَظُ مِنْ أَبِي مُعَاوِيَةَ .
ইবনু আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রহঃ) হতে তার পিতার সুত্র থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যখন লাশের অনুসরণ
করবে তখন তা নামিয়ে না রাখা পর্যন্ত বসবে না। আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, সুফিয়ান সাওরী
এ হাদীসটি সুহাইলের সুত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি তার পিতা হতে আবূ হুরায়রা (রাঃ)
সুত্রে বর্ণনা করেছেন। তাতে রয়েছেঃ লাশ মাটিতে না নামানো পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকবে।
আবূ মু’আবিয়াহও হাদীসটি সুহাইলে সুত্রে বর্ণনা করেছেন। তাতে রয়েছেঃ লাশ ক্ববরে না
নামানো পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকবে। আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, সুফিয়ান (রহঃ) আবূ মু’আবিয়াহর
তুলনায় অধিক স্মৃতি সম্পন্ন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৭৪
حَدَّثَنَا مُؤَمَّلُ بْنُ الْفَضْلِ
الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَمْرٍو، عَنْ يَحْيَى
بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ مِقْسَمٍ، حَدَّثَنِي جَابِرٌ،
قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذْ مَرَّتْ بِنَا جَنَازَةٌ
فَقَامَ لَهَا فَلَمَّا ذَهَبْنَا لِنَحْمِلَ إِذَا هِيَ جَنَازَةُ يَهُودِيٍّ
فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّمَا هِيَ جَنَازَةُ يَهُودِيٍّ . فَقَالَ
" إِنَّ الْمَوْتَ فَزَعٌ فَإِذَا رَأَيْتُمْ جَنَازَةً فَقُومُوا "
.
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ছিলাম। এমন সময় আমাদের
সামনে দিয়ে একটি লাশ নিয়ে যাওয়া হলে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে গেলেন। অতঃপর আমরা তা বহন
করতে অগ্রসর হয়ে দেখি সেটা এক ইহূদীর লাশ। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এটা তো
ইয়াহুদীর লাশ। তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই মৃত্যু একটি ভয়াবহ ঘটনা। কাজেই তোমরা কোন লাশ
নিয়ে যেতে দেখলে উঠে দাঁড়াবে।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১৫৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৭৫
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ،
عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ وَاقِدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ
الأَنْصَارِيِّ، عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ مَسْعُودِ بْنِ
الْحَكَمِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
قَامَ فِي الْجَنَائِزِ ثُمَّ قَعَدَ بَعْدُ .
আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন লাশ নিয়ে যেতে দেখলে প্রথমে দাঁড়াতেন,
তারপর বসে পড়তেন।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ(১৫৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৭৬
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ بَهْرَامَ
الْمَدَائِنِيُّ، أَخْبَرَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو
الأَسْبَاطِ الْحَارِثِيُّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سُلَيْمَانَ بْنِ جُنَادَةَ
بْنِ أَبِي أُمَيَّةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ
الصَّامِتِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُومُ فِي
الْجَنَازَةِ حَتَّى تُوضَعَ فِي اللَّحْدِ فَمَرَّ بِهِ حَبْرٌ مِنَ الْيَهُودِ
فَقَالَ هَكَذَا نَفْعَلُ . فَجَلَسَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ
" اجْلِسُوا خَالِفُوهُمْ "
উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছ দিয়ে লাশ নিয়ে যাওয়া
হলে তিনি দাঁড়িয়ে যেতেন এবং তা ক্ববরে না নামানো পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতেন। একবার এক
ইয়াহুদী ‘আলিম তাঁর কাছে এসে বললো, আমরাও এরূপ করি। একথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসে গেলেন এবং বললেনঃ তোমরা তাদের বিপরীত করার জন্য বসে যাও।
হাসানঃ ইবনু মাজাহ (১৫৪৫)।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৮
বাহনে চড়ে লাশের সাথে যাওয়া
৩১৭৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى
الْبَلْخِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ
يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
عَوْفٍ، عَنْ ثَوْبَانَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ
بِدَابَّةٍ وَهُوَ مَعَ الْجَنَازَةِ فَأَبَى أَنْ يَرْكَبَهَا فَلَمَّا انْصَرَفَ
أُتِيَ بِدَابَّةٍ فَرَكِبَ فَقِيلَ لَهُ فَقَالَ " إِنَّ الْمَلاَئِكَةَ
كَانَتْ تَمْشِي فَلَمْ أَكُنْ لأَرْكَبَ وَهُمْ يَمْشُونَ فَلَمَّا ذَهَبُوا
رَكِبْتُ " .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য একটি বাহন আনা হলো। তিনি
তখন একটি লাশের সাথে সাথে চলছিলেন। তিনি সওয়ারীতে চড়তে অসম্মতি জানালেন। অতঃপর
(লাশ দাফন থেকে) অবসর হলে তাঁকে সওয়ারী দেয়া হলে তিনি তাতে চড়লেন। তাঁকে এ বিষয়ে
জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ ফেরেশতারা পায়ে হেঁটে লাশের সাথে যাচ্ছিলেন। তাদের
হেঁটে যাওয়া অবস্থায় আমার বাহনে চড়ে যাওয়া সংগত মনে করিনি। অতঃপর তারা যখন চলে
গেলেন তখন আমি সওয়ারীতে আরোহন করলাম।
সহীহ : আহকাম (৭৫)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৭৮
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ،
حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكٍ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ
سَمُرَةَ، قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى ابْنِ الدَّحْدَاحِ
وَنَحْنُ شُهُودٌ ثُمَّ أُتِيَ بِفَرَسٍ فَعُقِلَ حَتَّى رَكِبَهُ فَجَعَلَ
يَتَوَقَّصُ بِهِ وَنَحْنُ نَسْعَى حَوْلَهُ .
সিমাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
জাবির ইবনু সামুরাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন : নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ইবনুদ দাহদাহ্ (রাঃ)-এর জানাযা আদায় করলেন। তাতে আমরাও শরীক ছিলাম। অতঃপর একটি
ঘোড়া আনা হলে, তিনি তা বেঁধে রাখলেন। পরে তিনি তাতে আরোহণ করলে ঘোড়াটি দ্রুত যেতে
থাকে। তখন আমরাও তাঁর চারপাশে সাথে সাথে দৌড়িয়ে চলছিলাম।
সহীহ : তিরমিযী (১০২৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৯
লাশের আগে আগে যাওয়া
৩১৭৯
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ
رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ يَمْشُونَ
أَمَامَ الْجَنَازَةِ .
সালিম (রহঃ) হতে তাঁর পিতার থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বকর ও 'উমার (রাঃ)-কে
লাশের আগে আগে চলতে দেখেছি।
সহীহ : ইবনু মাজাহ (১৪৮২)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৮০
حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ، عَنْ
خَالِدٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنْ زِيَادِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ
الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، - وَأَحْسَبُ أَنَّ أَهْلَ، زِيَادٍ أَخْبَرُونِي
أَنَّهُ، رَفَعَهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم - قَالَ "
الرَّاكِبُ يَسِيرُ خَلْفَ الْجَنَازَةِ وَالْمَاشِي يَمْشِي خَلْفَهَا
وَأَمَامَهَا وَعَنْ يَمِينِهَا وَعَنْ يَسَارِهَا قَرِيبًا مِنْهَا وَالسِّقْطُ
يُصَلَّى عَلَيْهِ وَيُدْعَى لِوَالِدَيْهِ بِالْمَغْفِرَةِ وَالرَّحْمَةِ
" .
যিয়াদ ইবনু জুবাইর (রহঃ) তার পিতা হতে মুগীরাহ ইবনু
শু'বাহ (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
যিয়াদ
ইবনু জুবাইর (রহঃ) তার পিতা হতে মুগীরাহ ইবনু শু'বাহ (রাঃ) সূত্রে এ হাদীস বর্ণনা
করেছেন। বর্ণনাকারী ইউনুস (রহঃ) বলেন, আমার ধারণা, যিয়াদ পরিবারের সদস্যরা আমাকে
জানিয়েছেন, যিয়াদ হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বাহনে আরোহী ব্যক্তি
লাশের পিছনে পিছনে চলবে এবং পায়ে হাটা ব্যক্তি লাশের পিছনে, সামনে, ডানে, বামে এবং
সাথে সাথেও যেতে পারবে। অপূর্ণাঙ্গভাবে প্রসবিত বাচ্চার জানাযা পড়তে হবে এবং তার
পিতা-মাতার জন্য ক্ষমা ও রহমাতের দু'আ করতে হবে।
সহীহ : ইবনু মাজাহ (১৪৮১, ১৫০৭)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫০
জানাযা দ্রুত বহন করা সম্পর্কে
৩১৮১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
أَسْرِعُوا بِالْجَنَازَةِ فَإِنْ تَكُ صَالِحَةً فَخَيْرٌ تُقَدِّمُونَهَا
إِلَيْهِ وَإِنْ تَكُ سِوَى ذَلِكَ فَشَرٌّ تَضَعُونَهُ عَنْ رِقَابِكُمْ "
.
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা মৃতের দাফন-কাফনের কাজ জলদি করবে।
কেননা সে যদি নেককার হয় তবে তো ভালো। তাকে তোমরা তার কল্যাণকর পরিণতির দিকে দ্রুত
পৌঁছে দিবে। আর যদি সে খারাপ লোক হয় তবে তো অমঙ্গল। তোমরা তোমাদের ঘার থেকে
অমঙ্গলকে দ্রুত নামিয়ে দিলে।
সহীহ : ইবনু মাজাহ (১৫৭৭)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৮২
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عُيَيْنَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ،
أَنَّهُ كَانَ فِي جَنَازَةِ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي الْعَاصِ وَكُنَّا نَمْشِي
مَشْيًا خَفِيفًا فَلَحِقَنَا أَبُو بَكْرَةَ فَرَفَعَ سَوْطَهُ فَقَالَ لَقَدْ
رَأَيْتُنَا وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَرْمُلُ رَمَلاً
.
'উয়াইনাহ ইবনু 'আবদুর রহমান (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
(পিতা) 'উসমান ইবনু আবুল 'আসের (রাঃ) লাশের সঙ্গে ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা ধীরে
ধীরে হাঁটছিলাম। এমন সময় আবূ বকরাহ (রাঃ) আমাদের সাথে মিলিত হলেন। তিনি তার চাবুক
উঠিয়ে বললেন, তোমরা তো দেখেছো যে, আমরা রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সাথে (লাশ নিয়ে) দ্রুত চলেছি।
সহীহ। কিন্তু 'উসমান ইবনু আবুল 'আস কথাটি শায। মাহফূয হলো 'আবদুর রহমান ইবনু
সামুরাহ। যেমন পরের হাদীসে আসছে। নাসায়ী (১৯১২, ১৯৭৩)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৮৩
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ،
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، ح وَحَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى،
حَدَّثَنَا عِيسَى، - يَعْنِي ابْنَ يُونُسَ - عَنْ عُيَيْنَةَ، بِهَذَا
الْحَدِيثِ قَالاَ فِي جَنَازَةِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَمُرَةَ وَقَالَ
فَحَمَلَ عَلَيْهِمْ بَغْلَتَهُ وَأَهْوَى بِالسَّوْطِ .
'উয়াইনাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উপরের
হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। তবে এতে রয়েছে : এটি ছিলো 'আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ্র
(রাঃ) জানাযার ঘটনা। আবূ বকরাহ (রাঃ) দ্রুত তার খচ্চর হাঁকালেন এবং (দ্রুত চলতে)
তার চাবুক দিয়ে ইশারা করলেন।
সহীহ। এটাই মাহফূয।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৮৪
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو
عَوَانَةَ، عَنْ يَحْيَى الْمُجَبِّرِ، - قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهُوَ يَحْيَى بْنُ
عَبْدِ اللَّهِ التَّيْمِيُّ - عَنْ أَبِي مَاجِدَةَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ
سَأَلْنَا نَبِيَّنَا صلى الله عليه وسلم عَنِ الْمَشْىِ مَعَ الْجَنَازَةِ
فَقَالَ " مَا دُونَ الْخَبَبِ إِنْ يَكُنْ خَيْرًا تَعَجَّلْ إِلَيْهِ
وَإِنْ يَكُنْ غَيْرَ ذَلِكَ فَبُعْدًا لأَهْلِ النَّارِ وَالْجَنَازَةُ
مَتْبُوعَةٌ وَلاَ تُتْبَعُ لَيْسَ مَعَهَا مَنْ تَقَدَّمَهَا " . قَالَ
أَبُو دَاوُدَ وَهُوَ ضَعِيفٌ هُوَ يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَهُوَ يَحْيَى
الْجَابِرُ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهَذَا كُوفِيٌّ وَأَبُو مَاجِدَةَ بَصْرِيٌّ
. قَالَ أَبُو دَاوُدَ أَبُو مَاجِدَةَ هَذَا لاَ يُعْرَفُ .
ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে জানাযার সাথে
চলার নিয়ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ দৌড়ের চেয়ে কিছুটা কম গতিতে চলবে। যদি
নেককার হয় তবে আমরা তাকে দ্রুত তার উত্তম পরিণতির দিকে পৌঁছে দিচ্ছি। আর যদি সে এর
বিপরীত হয় তবে আগুনের বাসিন্দারা ধবংস হয়েছে। জানাযা (লাশ) আগে আগে থাকবে আর
লোকেরা তার পিছনে চলবে। যে ব্যক্তি লাশের আগে চলে সে যেন জানাযার সাথেই যাচ্ছে না।
আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, বর্ণনাকারী ইয়াহইয়া ইবনু 'আবদুল্লাহ হাদীস বর্ণনায় দুর্বল।
তিনি হলেন, ইয়াহইয়া আল-জাবির। আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, তিনি কূফার অধিবাসী। আর আবূ
মাজিদা বাসরাহ্র অধিবাসী। আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, এই আবূ মাজিদা অজ্ঞাত।
দুর্বল : ইবনু মাজাহ (১৪৮৪), যঈফ সুনান আত-তিরমিযী (১৬৯/১০২২), মিশকাত (১৬৬৯), যঈফ
আল-জামি'উস সাগীর (৫০৬৬)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫১
ইমাম আত্মহত্যাকারীর জানাযা পড়বে না
৩১৮৫
حَدَّثَنَا ابْنُ نُفَيْلٍ، حَدَّثَنَا
زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا سِمَاكٌ، حَدَّثَنِي جَابِرُ بْنُ سَمُرَةَ، قَالَ مَرِضَ
رَجُلٌ فَصِيحَ عَلَيْهِ فَجَاءَ جَارُهُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ لَهُ إِنَّهُ قَدْ مَاتَ . قَالَ " وَمَا يُدْرِيكَ
" . قَالَ أَنَا رَأَيْتُهُ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " إِنَّهُ لَمْ يَمُتْ " . قَالَ فَرَجَعَ فَصِيحَ عَلَيْهِ
فَجَاءَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّهُ قَدْ مَاتَ .
فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّهُ لَمْ يَمُتْ " .
فَرَجَعَ فَصِيحَ عَلَيْهِ فَقَالَتِ امْرَأَتُهُ انْطَلِقْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَأَخْبِرْهُ . فَقَالَ الرَّجُلُ اللَّهُمَّ الْعَنْهُ .
قَالَ ثُمَّ انْطَلَقَ الرَّجُلُ فَرَآهُ قَدْ نَحَرَ نَفْسَهُ بِمِشْقَصٍ مَعَهُ
فَانْطَلَقَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَهُ أَنَّهُ قَدْ مَاتَ
فَقَالَ " مَا يُدْرِيكَ " . قَالَ رَأَيْتُهُ يَنْحَرُ نَفْسَهُ
بِمَشَاقِصَ مَعَهُ . قَالَ " أَنْتَ رَأَيْتَهُ " . قَالَ
نَعَمْ . قَالَ " إِذًا لاَ أُصَلِّي عَلَيْهِ " .
জানির ইবনু সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক
ব্যক্তি অসুস্থ হলে তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লো। তার এক প্রতিবেশি এসে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললো, সে মৃত্যু বরণ করেছে।
তিনি বললেনঃ তুমি কিভাবে জানলে? সে বললো, আমি দেখে এসেছি। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ অবশ্যই সে মারা যায়নি। বর্ণনাকারী
বলেন, লোকটি ফিরে গেলো এবং পুনরায় তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লো। সে আবার এসে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললো, সে মৃত্যু বরণ করেছে।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ অবশ্যই সে মারা যায়নি। বর্ণনাকারী
বলেন, সে ফিরে গেলো এবং পুনরায় তার মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লো। রোগীর স্ত্রী তার
প্রতিবেশীকে বললো, রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট গিয়ে এ
খবর দাও। সে বললো, হে আল্লাহ্! এর (রোগীর) প্রতি অভিশাপ বর্ষণ করুন। বর্ণনাকারী
বলেন, লোকটি রোগীর কাছে এসে দেখলো, সে তার কাছে রক্ষিত তীরের ফলা দিয়ে আত্মহত্যা
করেছে। সে পুনরায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গিয়ে তাঁকে
বললো, সে মৃত্যু বরণ করেছে। তিনি বললেনঃ তুমি কিভাবে জানলে? লোকটি বললো, আমি তাকে
তীর দিয়ে আত্মহত্যা করতে দেখেছি। তিনি বললেনঃ তুমি দেখেছো? সে বললো, হাঁ। তিনি বললেনঃ তাহলে আমি
তার জানাযা পড়বো না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫২
শারঈ হদ্দ কার্যকরে নিহত অপরাধীর জানাযা পড়া সম্পর্কে
৩১৮৬
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ، حَدَّثَنَا
أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، حَدَّثَنِي نَفَرٌ، مِنْ أَهْلِ الْبَصْرَةِ
عَنْ أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
لَمْ يُصَلِّ عَلَى مَاعِزِ بْنِ مَالِكٍ وَلَمْ يَنْهَ عَنِ الصَّلاَةِ عَلَيْهِ
.
আবূ বারযা আল-আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মা'ইয ইবনু মালিকের জানাযা সালাত পড়েননি এবং
পড়তে নিষেধও করেননি।
হাসান সহীহ : ইরওয়া (৭/৩৫৩)।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৫৩
মৃত শিশুর জানাযা পড়া
৩১৮৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ
فَارِسٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا أَبِي،
عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ
عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَاتَ إِبْرَاهِيمُ
ابْنُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ ابْنُ ثَمَانِيَةَ عَشَرَ شَهْرًا
فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পুত্র ইবরাহীম (রাঃ) আঠার মাস বয়সে মারা
যান। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জানাযা সালাত পড়েননি।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩১৮৮
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، عَنْ وَائِلِ بْنِ دَاوُدَ، قَالَ سَمِعْتُ
الْبَهِيَّ، قَالَ لَمَّا مَاتَ إِبْرَاهِيمُ ابْنُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
صَلَّى عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَقَاعِدِ . قَالَ
أَبُو دَاوُدَ قَرَأْتُ عَلَى سَعِيدِ بْنِ يَعْقُوبَ الطَّالْقَانِيِّ قِيلَ لَهُ
حَدَّثَكُمُ ابْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ يَعْقُوبَ بْنِ الْقَعْقَاعِ عَنْ عَطَاءٍ
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى عَلَى ابْنِهِ إِبْرَاهِيمَ وَهُوَ
ابْنُ سَبْعِينَ لَيْلَةً .
ওয়াইল ইবনু দাঊদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
আল-বাহীকে বলতে শুনেছি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পুত্র ইবরাহীম
(রাঃ) মারা গেলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বসার
জায়গাতে তার জানাযা পড়েন। আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, এ হাদীসটি আমি সাঈদ ইবনু ইয়া‘কূব
আত-তালাকানীর সামনে করলাম। ইবনুল মুবারক (রহঃ) আপনাদের কাছে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন
ইয়া‘কূব ইবনু কা‘কা‘র হতে ‘আত্বা সূত্রে: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁর পুত্র ইবরাহীমের জানাযা সালাত আদায় করেছেন। তখন তার বয়স ছিল সত্তর দিন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল মুনকার
অনুচ্ছেদ-৫৪
মাসজিদে জানাযার সালাত আদায়
৩১৮৯
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ،
حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ صَالِحِ بْنِ عَجْلاَنَ، وَمُحَمَّدِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّادٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ وَاللَّهِ مَا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم عَلَى سُهَيْلِ ابْنِ الْبَيْضَاءِ إِلاَّ فِي الْمَسْجِدِ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর শপথ! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুহাইল ইবনু
বাইদার জানাযা মাসজিদের ভিতরেই আদায় করেছেন।
সহীহ : ইবনু মাজাহ (১৫১৮)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৯০
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ،
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، عَنِ الضَّحَّاكِ، - يَعْنِي ابْنَ عُثْمَانَ -
عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ وَاللَّهِ
لَقَدْ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى ابْنَىْ بَيْضَاءَ فِي
الْمَسْجِدِ سُهَيْلٍ وَأَخِيهِ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর শপথ! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাইদার
পুত্র-সুহাইল ও তার ভাইয়ের জানাযা মাসজিদের ভিতরেই আদায় করেছেন।
সহীহ : এর পূর্বেরটি দেখুন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৯১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى،
عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، حَدَّثَنِي صَالِحٌ، مَوْلَى التَّوْأَمَةِ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ
صَلَّى عَلَى جَنَازَةٍ فِي الْمَسْجِدِ فَلاَ شَىْءَ عَلَيْهِ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যে ব্যক্তি
মাসজিদের ভিতরে জানাযার সালাত পড়ে তার কোন গুনাহ হবে না।
হাসান : কিন্তু এ শব্দে: (আরবি)। সহীহাহ (২৩৫১)।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৫
সূর্য উদয় ও সূর্যাস্তের সময় লাশ দাফন করা সম্পর্কে
৩১৯২
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُلَىِّ بْنِ رَبَاحٍ، قَالَ سَمِعْتُ
أَبِي يُحَدِّثُ، أَنَّهُ سَمِعَ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ، قَالَ ثَلاَثُ سَاعَاتٍ
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ
أَوْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى
تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ وَحِينَ
تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ أَوْ كَمَا قَالَ .
উক্ববাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে তিন সময়ে সালাত
আদায় করতে এবং আমাদের মৃত ব্যক্তিদের দাফন করতে নিষেধ করেছেন। (তা হলো) : সূর্য উদয়ের
সময় হতে তা উপরে না উঠা পর্যন্ত ; ঠিক দুপুর বেলায় সূর্য পশ্চিম দিকে না ঢলে পড়া
পর্যন্ত এবং সূর্য ডুবে যাওয়ার সময় তা সম্পূর্ণ ডুবে না যাওয়া পর্যন্ত অথবা তিনি
অনুরূপ কিছু বলেছেন।
সহীহ : আহকাম (১৩০)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৬
পুরুষ ও নারীর লাশ একত্রে উপস্থিত হলে কার লাশ আগে থাকবে
৩১৯৩
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ خَالِدِ بْنِ
مَوْهَبٍ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ
يَحْيَى بْنِ صُبَيْحٍ، حَدَّثَنِي عَمَّارٌ، مَوْلَى الْحَارِثِ بْنِ نَوْفَلٍ
أَنَّهُ شَهِدَ جَنَازَةَ أُمِّ كُلْثُومٍ وَابْنِهَا فَجُعِلَ الْغُلاَمُ مِمَّا
يَلِي الإِمَامَ فَأَنْكَرْتُ ذَلِكَ وَفِي الْقَوْمِ ابْنُ عَبَّاسٍ وَأَبُو
سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ وَأَبُو قَتَادَةَ وَأَبُو هُرَيْرَةَ فَقَالُوا هَذِهِ
السُّنَّةُ .
আল-হারিস ইবনু নাওফালের মুক্তদাস ‘আম্মার (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
উম্মু কুলসুম (রাঃ) ও তার পুত্রে জানাযায় উপস্থিত ছিলেন। ছেলেকে ইমামের নিকটে রাখা
হলে আমি প্রতিবাদ করলাম। উপস্থিত লোকদের মধ্যে ইবনু ‘আব্বাস, আবূ সাঈদ আল-খুদরী,
আবূ ক্বাতাদাহ ও আবূ হুরায়রা (রাঃ)-ও ছিলেন। তারা বললেন, এটিই সুন্নাত।
সহীহ: আহকাম (১০৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৭
জানাযা সলাতে ইমাম কোথায় দাঁড়াবেন
৩১৯৪
حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ مُعَاذٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ نَافِعٍ أَبِي غَالِبٍ، قَالَ كُنْتُ فِي
سِكَّةِ الْمِرْبَدِ فَمَرَّتْ جَنَازَةٌ مَعَهَا نَاسٌ كَثِيرٌ قَالُوا جَنَازَةُ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَيْرٍ فَتَبِعْتُهَا فَإِذَا أَنَا بِرَجُلٍ عَلَيْهِ
كِسَاءٌ رَقِيقٌ عَلَى بُرَيْذِينَتِهِ وَعَلَى رَأْسِهِ خِرْقَةٌ تَقِيهِ مِنَ
الشَّمْسِ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا الدِّهْقَانُ قَالُوا هَذَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ
. فَلَمَّا وُضِعَتِ الْجَنَازَةُ قَامَ أَنَسٌ فَصَلَّى عَلَيْهَا وَأَنَا
خَلْفَهُ لاَ يَحُولُ بَيْنِي وَبَيْنَهُ شَىْءٌ فَقَامَ عِنْدَ رَأْسِهِ
فَكَبَّرَ أَرْبَعَ تَكْبِيرَاتٍ لَمْ يُطِلْ وَلَمْ يُسْرِعْ ثُمَّ ذَهَبَ
يَقْعُدُ فَقَالُوا يَا أَبَا حَمْزَةَ الْمَرْأَةُ الأَنْصَارِيَّةُ
فَقَرَّبُوهَا وَعَلَيْهَا نَعْشٌ أَخْضَرُ فَقَامَ عِنْدَ عَجِيزَتِهَا فَصَلَّى
عَلَيْهَا نَحْوَ صَلاَتِهِ عَلَى الرَّجُلِ ثُمَّ جَلَسَ فَقَالَ الْعَلاَءُ بْنُ
زِيَادٍ يَا أَبَا حَمْزَةَ هَكَذَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّي عَلَى الْجَنَازَةِ كَصَلاَتِكَ يُكَبِّرُ عَلَيْهَا أَرْبَعًا وَيَقُومُ
عِنْدَ رَأْسِ الرَّجُلِ وَعَجِيزَةِ الْمَرْأَةِ قَالَ نَعَمْ . قَالَ يَا
أَبَا حَمْزَةَ غَزَوْتَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ
غَزَوْتُ مَعَهُ حُنَيْنًا فَخَرَجَ الْمُشْرِكُونَ فَحَمَلُوا عَلَيْنَا حَتَّى
رَأَيْنَا خَيْلَنَا وَرَاءَ ظُهُورِنَا وَفِي الْقَوْمِ رَجُلٌ يَحْمِلُ
عَلَيْنَا فَيَدُقُّنَا وَيَحْطِمُنَا فَهَزَمَهُمُ اللَّهُ وَجَعَلَ يُجَاءُ
بِهِمْ فَيُبَايِعُونَهُ عَلَى الإِسْلاَمِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ عَلَىَّ نَذْرًا إِنْ جَاءَ اللَّهُ
بِالرَّجُلِ الَّذِي كَانَ مُنْذُ الْيَوْمِ يَحْطِمُنَا لأَضْرِبَنَّ عُنُقَهُ
. فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجِيءَ بِالرَّجُلِ فَلَمَّا
رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ تُبْتُ إِلَى
اللَّهِ . فَأَمْسَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يُبَايِعُهُ
لِيَفِيَ الآخَرُ بِنَذْرِهِ . قَالَ فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَتَصَدَّى لِرَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِيَأْمُرَهُ بِقَتْلِهِ وَجَعَلَ يَهَابُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَقْتُلَهُ فَلَمَّا رَأَى رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم أَنَّهُ لاَ يَصْنَعُ شَيْئًا بَايَعَهُ فَقَالَ الرَّجُلُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ نَذْرِي . فَقَالَ " إِنِّي لَمْ أُمْسِكْ عَنْهُ مُنْذُ
الْيَوْمِ إِلاَّ لِتُوفِيَ بِنَذْرِكَ " . فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَلاَ أَوْمَضْتَ إِلَىَّ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّهُ
لَيْسَ لِنَبِيٍّ أَنْ يُومِضَ " . قَالَ أَبُو غَالِبٍ فَسَأَلْتُ عَنْ
صَنِيعِ أَنَسٍ فِي قِيَامِهِ عَلَى الْمَرْأَةِ عِنْدَ عَجِيزَتِهَا
فَحَدَّثُونِي أَنَّهُ إِنَّمَا كَانَ لأَنَّهُ لَمْ تَكُنِ النُّعُوشُ فَكَانَ
الإِمَامُ يَقُومُ حِيَالَ عَجِيزَتِهَا يَسْتُرُهَا مِنَ الْقَوْمِ . قَالَ
أَبُو دَاوُدَ قَوْلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " أُمِرْتُ أَنْ
أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ " .
نَسَخَ مِنْ هَذَا الْحَدِيثِ الْوَفَاءَ بِالنَّذْرِ فِي قَتْلِهِ بِقَوْلِهِ
إِنِّي قَدْ تُبْتُ .
নাফি‘ আবূ গালিব (রহঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা আমি আল-মিওবাদের গলিপথে ছিলাম। এ সময় সেখান দিয়ে একটি জানাযা (লাশ)
যাচ্ছিল, তার সাথে অনেক লোক ছিল। তারা বলছিল, এটা ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমাইরের লাশ।
আমিও লাশের পিছনে চললাম। তখন আমি দেখি, হালকা কাপড় পরিহিত এক ব্যক্তি একটি ছোট্ট
মাথাবিশিষ্ট ঘোড়ায় বসা এবং তিনি নিজ মাথায় এক টুকরা কাপড় দিয়ে রোদ থেকে আত্নরক্ষা
করছিলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিটি কে? লোকেরা বললো, আনাস ইবনু
মালিক (রাঃ)। অতঃপর লাশ নামানো হলে আনাস (রাঃ) দাঁড়িয়ে তার জানাযা পড়ালেন। আমি তার
পিছনেই দাঁড়ালাম; তার ও আমার মাঝে কোন প্রতিবন্ধক ছিল না। তিনি লাশের মাথা বরাবর
দাঁড়ালেন। তিনি চার তাকবীরে সালাত আদায় করলেন। জানাযার সালাত দীর্ঘও করেননি,
একেবারে সংক্ষিপ্তও করেননি। অতঃপর তিনি বসার জন্য গেলেন। লোকেরা বললো, হে আবূ
হামযাহ! এটি একজন আনসারী মহিলার লাশ (এর জানাযা পড়ুন)। লাশটি তার নিকটে আনা হলো।
সে একটি সবুজ গেলাফে আবৃত ছিলো। তিনি তার নিতম্ব বরাবর দাঁড়ালেন। অতঃপর তিনি
পূর্বের পুরুষ লোকটির নিয়মেই তার জানাযা পড়ালেন। এরপর তিনি বসে গেলেন। ‘আলা ইবনু
যিয়াদ তাকে বলেন, হে আবূ হামযাহ! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কি আপনার আদায়কৃত সলাতের নিয়মেই মৃতের জানাযা পড়তেন? তিনিও কি মহিলাদের জানাযায়
চার তাকবীর বলতেন এবং পুরুষের মাথা বরাবর এবং মহিলাদের কোমর বরাবর দাঁড়াতেন? তিনি
বললেন, হাঁ।
‘আলা পুনরায় জিজ্ঞেস করেন, হে আবূ হামযাহ! আপনি কি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে কোন যুদ্ধে যোগদান করেছেন? তিনি বললেন, হাঁ আমি তাঁর
সাথে হুনাইনের যুদ্ধে যোগদান করেছি। মুশরিকরা আমাদের বিরুদ্ধে রওয়ানা হলো। তারা
আমাদের উপর কঠিন আক্রমণ করলো। এমনকি আমাদের লোকদের পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পালাতে
দেখলাম। শত্রুবাহিনীর এক লোক আমাদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছিল। সে তরবারির আঘাতে
আমাদের ক্ষত-বিক্ষত করছিল। পরিশেষে আল্লাহ তাদের পরাস্ত করলেন। তিনি তাদের নিয়ে
আসেন এবং তারা এসে রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে ইসলাম
গ্রহণের বাই‘আত নিলো।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীদের একজন বললেন, আমার একটি মানত আছে।
তা হলো, সেদিন যে লোকটি আমাদের আহত করছিল, আল্লাহ যদি তাকে আমাদের করায়ত্ত করেন
তবে আমি তাকে হত্যা করবো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নীরব
থাকলেন। লোকটিকে উপস্থিত করা হলে সে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে দেখে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আল্লাহর নিকট তওবা করেছি।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার বাই‘আত নেয়া থেকে বিরত থাকলেন
এবং ঐ সাহাবীকে তার মানত পূর্ণ করার সুযোগ দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, সাহাবী লোকটিকে
মারার জন্য রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশের অপেক্ষায়
ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন দেখলেন, সাহাবী কিছুই
করছেন না, তখন তিনি লোকটির বাই‘আত নিলেন। সেই সাহাবী বললেন, হে আল্লাহর রাসূল!
আমার মানত কিভাবে পূর্ণ হবে? তিনি বললেনঃআমি তো তোমার মানত পূর্ণ করতে তার বাই‘আত
গ্রহণে বিরত ছিলাম। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে ইশারা করেননি কেন?
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃকোন নাবীর জন্য ইশারা করা শোভনীয়
নয়।
আবূ গালিব (রহঃ) বলেন, মহিলার কোমর বরাবর আনাসের (রাঃ) দাঁড়ানোর বিষয়ে আমি লোকদের
জিজ্ঞেস করলে তারা আমাকে বললেন, প্রথম যুগে এরূপই করা হতো। কেননা তখন কোন খাটিয়ার
ব্যবস্থা ছিল না। সুতরাং ইমাম মহিলাদের কোমর বরাবর দাঁড়াতেন, যেন লোকদের ও লাশের
মাঝে আড়াল সৃষ্টি হয়।
সহীহ : কিন্তু এ কথাটি বাদে: (আরবি)। কেননা এটি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের ভিন্ন রায়।
আহকাম (১০৮-১০৯)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৯৫
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ
بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ الْمُعَلِّمُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
بُرَيْدَةَ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، قَالَ صَلَّيْتُ وَرَاءَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم عَلَى امْرَأَةٍ مَاتَتْ فِي نِفَاسِهَا فَقَامَ عَلَيْهَا
لِلصَّلاَةِ وَسَطَهَا .
সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পিছনে এক মহিলার জানাযা
পড়েছি। তিনি নিফাসগ্রস্থ অবস্থায় মারা যান। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) জানাযায় তার দেহের মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছিলেন।
সহীহ : আহকাম (১১০)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৮
জানাযার সলাতে তাকবীর সংখ্যা
৩১৯৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ،
قَالَ أَخْبَرَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ، عَنِ
الشَّعْبِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِقَبْرٍ رَطْبٍ
فَصَفُّوا عَلَيْهِ وَكَبَّرَ عَلَيْهِ أَرْبَعًا . فَقُلْتُ لِلشَّعْبِيِّ مَنْ
حَدَّثَكَ قَالَ الثِّقَةُ مَنْ شَهِدَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ .
আশ-শা‘বী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি নতুন ক্ববরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন
সাহাবীগণ কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চার
তাকবীরে জানাযার সালাত আদায় করলেন। আমি (আবূ ইসহাক্ব) আশ-শা‘বীকে জিজ্ঞেস করলাম, এ
হাদীস আপনাকে কে বর্ণনা করেছে? তিনি বললেন, একজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি যার সাথে
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সাক্ষাত করেছেন।
সহীহ : আহকাম (৮৭)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১৯৭
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ
الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَمْرِو
بْنِ مُرَّةَ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، قَالَ كَانَ زَيْدٌ - يَعْنِي ابْنَ
أَرْقَمَ - يُكَبِّرُ عَلَى جَنَائِزِنَا أَرْبَعًا وَإِنَّهُ كَبَّرَ عَلَى جَنَازَةٍ
خَمْسًا فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يُكَبِّرُهَا . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَأَنَا لِحَدِيثِ ابْنِ الْمُثَنَّى
أَتْقَنُ .
ইবনু আবূ লাইলাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যায়িদ
ইবনু আরক্বাম (রাঃ) আমাদের জানাযার সলাতে চার তাকবীর বলতেন। একবার এক জানাযা সলাতে
তিনি পাঁচ তাকবীর দিলেন। আমি এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঁচ তাকবীরও দিতেন। আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, আমি
ইবনুল মুসান্নার হাদীসটি ভালভাবে স্মরণ রেখেছি।
সহীহ : আহকাম (১১২)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৯
জানাযার সলাতে ক্বিরাআত পাঠ
৩১৯৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَوْفٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ ابْنِ عَبَّاسٍ عَلَى جَنَازَةٍ
فَقَرَأَ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَقَالَ إِنَّهَا مِنَ السُّنَّةِ .
ত্বালহা ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আওফ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ইবনু ‘আব্বাসের (রাঃ) সাথে জানাযার সালাত পড়েছি। তিনি সূরাহ আল-ফাতিহা
পাঠ করলেন। তিনি বললেন, ফাতিহা পড়া সুন্নাত।
সহীহ: আহকাম (১১৯)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬০
মৃতের জন্য দু‘আ করা
৩১৯৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ يَحْيَى
الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ، - يَعْنِي ابْنَ سَلَمَةَ - عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا صَلَّيْتُمْ عَلَى الْمَيِّتِ
فَأَخْلِصُوا لَهُ الدُّعَاءَ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : তোমরা
কোন মৃতের জানাযা পড়লে তার জন্য নিষ্ঠার সাথে দু‘আ করবে।
হাসান : আহকাম (১২৩)।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩২০০
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا أَبُو الْجُلاَسِ،
عُقْبَةُ بْنُ سَيَّارٍ حَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ شَمَّاخٍ، قَالَ شَهِدْتُ
مَرْوَانَ سَأَلَ أَبَا هُرَيْرَةَ كَيْفَ سَمِعْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يُصَلِّي عَلَى الْجَنَازَةِ قَالَ أَمَعَ الَّذِي قُلْتَ قَالَ نَعَمْ .
قَالَ كَلاَمٌ كَانَ بَيْنَهُمَا قَبْلَ ذَلِكَ . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ
" اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبُّهَا وَأَنْتَ خَلَقْتَهَا وَأَنْتَ هَدَيْتَهَا
لِلإِسْلاَمِ وَأَنْتَ قَبَضْتَ رُوحَهَا وَأَنْتَ أَعْلَمُ بِسِرِّهَا
وَعَلاَنِيَتِهَا جِئْنَاكَ شُفَعَاءَ فَاغْفِرْ لَهُ " . قَالَ أَبُو
دَاوُدَ أَخْطَأَ شُعْبَةُ فِي اسْمِ عَلِيِّ بْنِ شَمَّاخٍ قَالَ فِيهِ عُثْمَانُ
بْنُ شَمَّاسٍ وَسَمِعْتُ أَحْمَدَ بْنَ إِبْرَاهِيمَ الْمَوْصِلِيَّ يُحَدِّثُ
أَحْمَدَ بْنَ حَنْبَلٍ قَالَ مَا أَعْلَمُ أَنِّي جَلَسْتُ مِنْ حَمَّادِ بْنِ
زَيْدٍ مَجْلِسًا إِلاَّ نَهَى فِيهِ عَنْ عَبْدِ الْوَارِثِ وَجَعْفَرِ بْنِ
سُلَيْمَانَ .
আলী ইবনু শাম্মাখ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা আমি মারওয়ানের নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে
জিজ্ঞেস করলেন, মৃতের জানাযায় আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে কোন দু‘আ পড়তে শুনেছেন? তিনি বললেন, আপনি কি এ কথাই আমাকে জিজ্ঞেস
করছেন? মারওয়ান বললেন, হাঁ। ইবনু শাম্মাখ বলেন, ইতিপূর্বে তাদের উভয়ের মধ্যে এ
বিষয়ে কথোপকথন হয়। আবূ হুরায়রা বললেন, তিনি এ দু‘আ পাঠ করতেন : “হে আল্লাহ! তুমিই
তার প্রভু, তুমি তাকে সৃষ্টি করেছ, তুমি তাকে ইসলামের পথে হিদায়াত দিয়েছ, তুমি তার
রূহ ক্ববয করেছ, তুমি তার গোপন-প্রকাশ্য সবকিছুই অবহিত। আমরা তোমার কাছে তার
সুপারিশকারী হিসেবে এসেছি, তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও।”
সানাদ দুর্বল : মিশকাত (১৬৮৮)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৩২০১
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ مَرْوَانَ
الرَّقِّيُّ، حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ، - يَعْنِي ابْنَ إِسْحَاقَ - عَنِ
الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى
جَنَازَةٍ فَقَالَ " اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا
وَصَغِيرِنَا وَكَبِيرِنَا وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا
اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الإِيمَانِ وَمَنْ
تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الإِسْلاَمِ اللَّهُمَّ لاَ تَحْرِمْنَا
أَجْرَهُ وَلاَ تُضِلَّنَا بَعْدَهُ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানাযার সলাতে এ দু‘আ পড়তেন
: “হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত-মৃত, ছোট-বড়, পুরুষ-নারী, এবং উপস্থিত-অনুপস্থিত সকলকে
ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ! আমাদের মধ্যে আপনি যাকে জীবিত রাখবেন তাকে ইসলামের উপর
জীবিত রাখেন এবং আমাদের মধ্যে যাকে মৃত্যু দিবেন তাকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দিন। হে
আল্লাহ! এর সওয়াব থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না এবং এরপর আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করবেন
না।”
সহীহ : আহকাম (১২৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২০২
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، ح وَحَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ
بْنُ مُوسَى الرَّازِيُّ، أَخْبَرَنَا الْوَلِيدُ، - وَحَدِيثُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
أَتَمُّ - حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ جُنَاحٍ، عَنْ يُونُسَ بْنِ مَيْسَرَةَ بْنِ
حَلْبَسٍ، عَنْ وَاثِلَةَ بْنِ الأَسْقَعِ، قَالَ صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم عَلَى رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ "
اللَّهُمَّ إِنَّ فُلاَنَ بْنَ فُلاَنٍ فِي ذِمَّتِكَ فَقِهِ فِتْنَةَ الْقَبْرِ
" . قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ " فِي ذِمَّتِكَ وَحَبْلِ جِوَارِكَ
فَقِهِ مِنْ فِتْنَةِ الْقَبْرِ وَعَذَابِ النَّارِ وَأَنْتَ أَهْلُ الْوَفَاءِ
وَالْحَمْدِ اللَّهُمَّ فَاغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ
الرَّحِيمُ " . قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ عَنْ مَرْوَانَ بْنِ جُنَاحٍ
.
ওয়াসিলাহ ইবনুল আসকা‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে সাথে নিয়ে
মুসলিমদের এক লোকের জানাযার সালাত আদায় করলেন। তখন আমি তাঁকে এ দু‘আ করতে শুনেছি:
“ হে আল্লাহ! অমুকের পুত্র অমুক আপনার দায়িত্বে থাকলো, আপনি তাকে ক্ববরের ফিতনাহ ও
রক্ষা করুন।” ‘আবদুর রহমানের বর্ণনায় রয়েছে: “এ ব্যক্তি আপনার যিম্মায় ও প্রতিবেশি
থাকলো। সুতরাং আপনি তাকে ক্ববরের বিপদ ও দোযখের ‘আযাব থেকে রক্ষা করুন। আপনি তো
প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী ও সত্যের অধিকারী। হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন এবং
তার প্রতি অনুগ্রহ করুন। কেননা আপনিই একমাত্র ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। ”
সহীহ : আহকাম (১২৫)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬১
ক্ববরের উপর জানাযা পড়া
৩২০৩
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ،
وَمُسَدَّدٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ امْرَأَةً، سَوْدَاءَ أَوْ رَجُلاً كَانَ يَقُمُّ
الْمَسْجِدَ فَفَقَدَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَ عَنْهُ فَقِيلَ
مَاتَ . فَقَالَ " أَلاَّ آذَنْتُمُونِي بِهِ " . قَالَ
" دُلُّونِي عَلَى قَبْرِهِ " . فَدَلُّوهُ فَصَلَّى عَلَيْهِ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একটি
কালো মহিলা বা পুরুষ মাসজিদে নাববীতে ঝাড়ু দিতো। একদিন তাকে দেখতে না পেয়ে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বলা হয় যে, সে
মৃত্যু বরণ করেছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতোমরা আমাকে
জানালে না কেন? তিনি বললেনঃআমাকে তার ক্ববর দেখিয়ে দাও। তারা তাঁকে ক্ববর দেখিয়ে দিলে
তিনি ক্ববরের পাশে দাঁড়িয়ে জানাযা আদায় করলেন।
সহীহ : আহকাম (৮৭)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬২
মুশরিকদের দেশে মৃত মুসলিমের জানাযা
৩২০৪
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، قَالَ قَرَأْتُ
عَلَى مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَعَى لِلنَّاسِ
النَّجَاشِيَّ فِي الْيَوْمِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ وَخَرَجَ بِهِمْ إِلَى
الْمُصَلَّى فَصَفَّ بِهِمْ وَكَبَّرَ أَرْبَعَ تَكْبِيرَاتٍ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদেরকে নাজ্জাশীর মৃত্যুর দিন তার মৃত্যু
সংবাদ জানালেন। তিনি তাদেরকে নিয়ে ঈদের মাঠে গিয়ে সেখানে সারিবদ্ধ হয়ে চার তাকবীরে
জানাযা সালাত পড়লেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২০৫
حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ مُوسَى،
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ - عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ
أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ أَمَرَنَا رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ نَنْطَلِقَ إِلَى أَرْضِ النَّجَاشِيِّ فَذَكَرَ
حَدِيثَهُ قَالَ النَّجَاشِيُّ أَشْهَدُ أَنَّهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم وَأَنَّهُ الَّذِي بَشَّرَ بِهِ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ وَلَوْلاَ مَا أَنَا
فِيهِ مِنَ الْمُلْكِ لأَتَيْتُهُ حَتَّى أَحْمِلَ نَعْلَيْهِ .
আবূ বুরদাহ (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (পিতা)
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নাজ্জাশীর দেশে
হিজরাত করতে নির্দেশ দেন। অতঃপর বর্ণবাকারী পরবর্তী ঘটনা বর্ণনা করেন । নাজ্জাশী
বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তিনি আল্লাহর রাসূল। তিনি সেই রাসূল, যাঁর সম্পর্কে
ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) সুসংবাদ প্রদান করেছেন। আমি যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে
না থাকতাম তবে আমি তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর জুতা জোড়া বহন করতাম।
সানাদ দুর্বল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৩
একাধিক লাশ এক ক্ববরে দাফন করা এবং ক্ববরের নিশানা রাখা
সম্পর্কে
৩২০৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ
نَجْدَةَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ سَالِمٍ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
الْفَضْلِ السِّجِسْتَانِيُّ، حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، - يَعْنِي ابْنَ إِسْمَاعِيلَ -
بِمَعْنَاهُ عَنْ كَثِيرِ بْنِ زَيْدٍ الْمَدَنِيِّ، عَنِ الْمُطَّلِبِ، قَالَ لَمَّا
مَاتَ عُثْمَانُ بْنُ مَظْعُونٍ أُخْرِجَ بِجَنَازَتِهِ فَدُفِنَ أَمَرَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً أَنْ يَأْتِيَهُ بِحَجَرٍ فَلَمْ
يَسْتَطِعْ حَمْلَهُ فَقَامَ إِلَيْهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَحَسَرَ عَنْ ذِرَاعَيْهِ - قَالَ كَثِيرٌ قَالَ الْمُطَّلِبُ قَالَ الَّذِي
يُخْبِرُنِي ذَلِكَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ - كَأَنِّي
أَنْظُرُ إِلَى بَيَاضِ ذِرَاعَىْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ
حَسَرَ عَنْهُمَا ثُمَّ حَمَلَهَا فَوَضَعَهَا عِنْدَ رَأْسِهِ وَقَالَ "
أَتَعَلَّمُ بِهَا قَبْرَ أَخِي وَأَدْفِنُ إِلَيْهِ مَنْ مَاتَ مِنْ أَهْلِي
" .
আল-মুত্তালিব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘উসমান ইবনু মাযঊন (রাঃ) মারা গেলে তার লাশ আনা হলো, তারপর লাশ দাফন করা
হলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে তাঁর কাছে একটি পাথর
নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দিলেন। কিন্তু লোকটি তা বহন করতে অক্ষম হলো। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে পাথরটির কাছে গেলেন এবং নিজের জামার
আস্তিন গুটালেন। বর্ণনাকারী কাসির (রহঃ) বলেন, আল-মুত্তালিব বললেন, আমাকে যে
ব্যক্তি এ ঘটনা অবহিত করেছেন তিনি বললেন, আমি যেন এখনও রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাহুদ্বয়ের শুভ্রতা দেখতে পাচ্ছি যখন তিনি তাঁর জামার আস্তিন
গুটিয়েছিলেন। অতঃপর তিনি পাথরটি দু’হাতে তুলে এনে (‘উসমান ইবনু মাযঊনের) শিয়রে
রাখলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ এর দ্বারা আমি আমার ভাইয়ের ক্ববর চিনতে পারবো এবং আমার
পরিবারের কেউ মারা গেলে তার পাশে দাফন করবো।
হাসান : আহকাম (১৫৫)।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৪
ক্ববর খননকারী মৃতের হাড় দেখতে পেলে সে স্থান পরিহার করবে
কিনা
৩২০৭
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سَعْدٍ، - يَعْنِي ابْنَ سَعِيدٍ - عَنْ
عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " كَسْرُ عَظْمِ الْمَيِّتِ كَكَسْرِهِ حَيًّا
" .
'আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মৃত ব্যক্তির হাড় ভাঙ্গা যেন তার
জীবিতকালে হাড় ভাঙ্গার মতই।
সহীহ : আহকাম (২৩৩)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৫
লাহ্দ ক্ববর
৩২০৮
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ،
حَدَّثَنَا حَكَّامُ بْنُ سَلْمٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اللَّحْدُ لَنَا وَالشَّقُّ لِغَيْرِنَا
" .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লাহ্দ (কবর) আমাদের
জন্য, শাক্ক (কবর) আমরা ব্যতীত অন্যদের জন্য।
সহীহ : আহকাম (১৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৬
লাশ রাখতে কতজন ক্ববরে নামবে
৩২০৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا
زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ عَامِرٍ، قَالَ
غَسَّلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلِيٌّ وَالْفَضْلُ وَأُسَامَةُ بْنُ
زَيْدٍ وَهُمْ أَدْخَلُوهُ قَبْرَهُ قَالَ وَحَدَّثَنِي مُرَحَّبٌ أَوِ ابْنُ
أَبِي مُرَحَّبٍ أَنَّهُمْ أَدْخَلُوا مَعَهُمْ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ
فَلَمَّا فَرَغَ عَلِيٌّ قَالَ إِنَّمَا يَلِي الرَّجُلَ أَهْلُهُ .
আমির (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে ‘আলী (রাঃ), আল-ফাদল
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) ও উসামাহ ইবনু যায়িয (রাঃ) গোসল দিয়েছেন এবং তারাই তাঁকে
ক্ববরে নামিয়েছেন। আশ-শা’বী (রহঃ) বলেন, মারহাব কিংবা ইবনু আবূ মারহাব আমাদের কাছে
বর্ণনা করেন, তারা ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) – কেও তাদের সাথে শরীক করেন। দাফন
সম্পন্ন করে ‘আলী (রাঃ) বললেন, মৃত ব্যক্তির দাফন কাজ তার স্বজনদের সম্পন্ন করা
উচিত।
সহীহ : আহকাম (১৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২১০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ،
أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ خَالِدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ أَبِي
مُرَحَّبٍ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ، نَزَلَ فِي قَبْرِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِمْ أَرْبَعَةً .
আবূ মারহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুর রহমান ইবনু
‘আওফ (রাঃ) – ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ক্ববরে নেমেছিলেন। আমি
যেন তাদের চারজনকে এখনও প্রত্যক্ষ করছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৭
ক্ববরে লাশ কিভাবে রাখবে
৩২১১
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ،
حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ أَوْصَى
الْحَارِثُ أَنْ يُصَلِّيَ، عَلَيْهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ فَصَلَّى
عَلَيْهِ ثُمَّ أَدْخَلَهُ الْقَبْرَ مِنْ قِبَلِ رِجْلَىِ الْقَبْرِ وَقَالَ
هَذَا مِنَ السُّنَّةِ .
আবূ ইসহাক্ক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
আল-হারিস (রাঃ) তার মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়াত করেন যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ)
যেন তার জানাযা সালাত পড়ান। সুতরাং তিনি তার জানাযা পড়ালেন। অতঃপর তিনি তাকে পায়ের
দিক থেকে ক্ববরে রাখলেন। তিনি বললেন, এটাই সুন্নাত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৮
ক্ববরের পাশে বসার নিয়ম
৩২১২
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنِ الْمِنْهَالِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ
زَاذَانَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فِي جَنَازَةِ رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ فَانْتَهَيْنَا إِلَى
الْقَبْرِ وَلَمْ يُلْحَدْ بَعْدُ فَجَلَسَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ وَجَلَسْنَا مَعَهُ .
আল-বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা
রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে আনসারদের এক ব্যক্তির
জানাযা পড়ার জন্য বের হলাম। আমরা সেখানে পৌছে দেখি, তখনও ক্ববর খনন শেষ হয়নি। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বিবলাহমুখি হয়ে বসলেন। আমরাও তাঁর সাথে বসে
গেলাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৯
লাশ ক্ববরে রাখার সময় মৃতের জন্য দু'আ করা
৩২১৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، ح
وَحَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنْ أَبِي الصِّدِّيقِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
كَانَ إِذَا وَضَعَ الْمَيِّتَ فِي الْقَبْرِ قَالَ " بِسْمِ اللَّهِ
وَعَلَى سُنَّةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " . هَذَا لَفْظُ
مُسْلِمٍ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্ববরে লাশ রাখার সময় বলতেন : “আল্লাহর নামে
এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর তরীকার উপর রাখা হলো।”
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭০
কোন মুসলিমের মুশরিক স্বজন মারা গেলে
৩২১৪
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى،
عَنْ سُفْيَانَ، حَدَّثَنِي أَبُو إِسْحَاقَ، عَنْ نَاجِيَةَ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ
عَلِيٍّ، عَلَيْهِ السَّلاَمُ قَالَ قُلْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ
عَمَّكَ الشَّيْخَ الضَّالَّ قَدْ مَاتَ . قَالَ " اذْهَبْ فَوَارِ
أَبَاكَ ثُمَّ لاَ تُحْدِثَنَّ شَيْئًا حَتَّى تَأْتِيَنِي " .
فَذَهَبْتُ فَوَارَيْتُهُ وَجِئْتُهُ فَأَمَرَنِي فَاغْتَسَلْتُ وَدَعَا لِي .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা
আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বললাম, আপনার পথভ্রষ্ট বৃদ্ধ
চাচা আবূ ত্বালিব মৃত্যু বরণ করেছে। তিনি বললেনঃ যাও এবং তোমার পিতাকে মাটিতে দাফন
করে আসো। আমার কাছে ফিরে আসার আগে অন্য কিছু করো না। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাকে
মাটি দিয়ে তাঁর কাছে আসি। তিনি আমাকে গোসল
করতে নির্দেশ করেন। সুতরাং আমি গোসল করলাম। তিনি আমার জন্য দু’আ করলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭১
ক্ববর গভীর করে খনন করা
৩২১৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ
الْقَعْنَبِيُّ، أَنَّ سُلَيْمَانَ بْنَ الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَهُمْ عَنْ حُمَيْدٍ،
- يَعْنِي ابْنَ هِلاَلٍ - عَنْ هِشَامِ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ جَاءَتِ الأَنْصَارُ
إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ فَقَالُوا أَصَابَنَا
قَرْحٌ وَجَهْدٌ فَكَيْفَ تَأْمُرُنَا قَالَ " احْفِرُوا وَأَوْسِعُوا
وَاجْعَلُوا الرَّجُلَيْنِ وَالثَّلاَثَةَ فِي الْقَبْرِ " . قِيلَ
فَأَيُّهُمْ يُقَدَّمُ قَالَ " أَكْثَرُهُمْ قُرْآنًا " . قَالَ
أُصِيبَ أَبِي يَوْمَئِذٍ عَامِرٌ بَيْنَ اثْنَيْنِ أَوْ قَالَ وَاحِدٌ .
হিশাম ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
উহুদের যুদ্ধের দিন আনসাররা রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট
এসে বললেন, আমরা আহত এবং ক্লান্ত।। আমাদেরকে এখন কি করতে বলেন? তিনি বললেনঃ ক্ববর
প্রশস্ত করে খনন করো এবং একই ক্ববরে দুই-তিন জনকে দাফন করো। জিজ্ঞেস করা হলো, কাকে
আগে (ডানদিকে) রাখা হবে? তিনি বলেন, যে ব্যক্তি কুরআন সম্পর্কে অধিক পারদর্শী।
হিশাম বলেন, সেদিন আমার পিতা ‘আমির (রাঃ) শহীদ হন। তাকে দু’জনের অথবা একজনের সাথে
ক্ববর দেয়া হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২১৬
حَدَّثَنَا أَبُو صَالِحٍ، - يَعْنِي
الأَنْطَاكِيَّ - أَخْبَرَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، - يَعْنِي الْفَزَارِيَّ - عَنِ
الثَّوْرِيِّ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلاَلٍ، بِإِسْنَادِهِ
وَمَعْنَاهُ زَادَ فِيهِ " وَأَعْمِقُوا " .
হুমাইদ ইবনু হিলাল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই সানাদে একই
অর্থবোধক হাদীস বর্ণিত। এতে আরো রয়েছে : নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ ক্ববর খনন গভীর করবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২১৭
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، - يَعْنِي ابْنَ هِلاَلٍ - عَنْ سَعْدِ
بْنِ هِشَامِ بْنِ عَامِرٍ، بِهَذَا الْحَدِيثِ .
সা’দ ইবনু হিশাম ইবনু আমির (র:) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে একই
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
তাহকিক
আলবানীঃ আমি এটি সহীহ এবং যঈফেও পাইনি।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
অনুচ্ছেদ-৭২
ক্ববর সমতল করা
৩২১৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي
وَائِلٍ، عَنْ أَبِي هَيَّاجٍ الأَسَدِيِّ، قَالَ بَعَثَنِي عَلِيٌّ قَالَ لِي
أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِي عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ
لاَ أَدَعَ قَبْرًا مُشْرِفًا إِلاَّ سَوَّيْتُهُ وَلاَ تِمْثَالاً إِلاَّ
طَمَسْتُهُ .
আবুল হাইয়ায আল-আসাদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা
‘আলী (রাঃ) আমাকে পাঠালেন এবং বললেন, আমি কি তোমাকে এমন কাজে প্রেরণ করবো যে কাজে
আমাকে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঠিয়েছিলেন? তা হলোঃ আমি
যেন কোন উঁচু কবর দেখলে তা সমতল করা ব্যতীত এবং কোন মূর্তি দেখলে চূর্ণ-বির্চূন না
করে নিভৃত না হই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২১৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ
السَّرْحِ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، أَنَّ
أَبَا عَلِيٍّ الْهَمْدَانِيَّ، حَدَّثَهُ قَالَ كُنَّا مَعَ فَضَالَةَ بْنِ
عُبَيْدٍ بِرُودِسَ مِنْ أَرْضِ الرُّومِ فَتُوُفِّيَ صَاحِبٌ لَنَا فَأَمَرَ
فَضَالَةُ بِقَبْرِهِ فَسُوِّيَ ثُمَّ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَأْمُرُ بِتَسْوِيَتِهَا . قَالَ أَبُو دَاوُدَ رُودِسُ جَزِيرَةٌ فِي
الْبَحْرِ .
আমর ইবনুল হারিস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ আলী
আল-হামদানী (রহঃ) তাকে এ হাদীসটি জানান। তিনি বলেছেন, আমরা ফাদালাহ ইবনু ‘উবাইদের
(রাঃ) সাথে রোম দেশের রূযিস নামক স্থানে ছিলাম। আমাদের এক ব্যক্তি এখানে মৃত্যূ
বরণ করলো। তার ক্ববর সর্ম্পকে ফাদালাহর (রাঃ) নির্দেশ মোতাবেক মাটি সমান করে দেয়া
হলো। অতঃপর তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে
কবর সমতল করার নির্দেশ দিতে শুনেছি। আবু দাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘রূযিস’ সমুদ্রে অবস্থিত
একটি দ্বীপের নাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২২০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ،
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ بْنِ
هَانِئٍ، عَنِ الْقَاسِمِ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَقُلْتُ يَا أُمَّهْ
اكْشِفِي لِي عَنْ قَبْرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَصَاحِبَيْهِ رضى الله عنهما
فَكَشَفَتْ لِي عَنْ ثَلاَثَةِ قُبُورٍ لاَ مُشْرِفَةٍ وَلاَ لاَطِئَةٍ
مَبْطُوحَةٍ بِبَطْحَاءِ الْعَرْصَةِ الْحَمْرَاءِ قَالَ أَبُو عَلِيٍّ يُقَالُ
إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُقَدَّمٌ وَأَبُو بَكْرٍ عِنْدَ
رَأْسِهِ وَعُمَرُ عِنْدَ رِجْلَىْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
আল-ক্বাসিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
‘আয়িশাহর (রাঃ) নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, ফুফু! রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর দুই সাথীর ক্ববর খুলে আমাকে একটু দেখান। তিনি তিনটি কবরই
আমাকে (পর্দা) খুলে দেখালেন। আমি দেখি যে, তা খুব উঁচুও নয়, আবার একেবারে সমতলও
নয়। কবর তিনটির উপর আল-আরসা নামক স্থানের লালা কাঁকর বিছানো ছিলো। আবূ আলী (রহঃ)
বলেন, কথিত আছে, সম্মুখভাগে রাসুলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কবর,
তাঁর মাথার দিকে আবূ বকর (রাঃ) এর কবর এবং তাঁর পায়ের দিকে ‘উমার (রাঃ) এর কবর।
‘উমার (রাঃ) এর মাথা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পায়ের
কাছে অবস্থিত।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৩
দাফন শেষে ফেরার সময় ক্ববরের পাশে দাঁড়িয়ে মৃতের জন্য
ক্ষমা প্রার্থনা
৩২২১
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى
الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَحِيرٍ، عَنْ
هَانِئٍ، مَوْلَى عُثْمَانَ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم إِذَا فَرَغَ مِنْ دَفْنِ الْمَيِّتِ وَقَفَ عَلَيْهِ فَقَالَ
" اسْتَغْفِرُوا لأَخِيكُمْ وَسَلُوا لَهُ التَّثْبِيتَ فَإِنَّهُ الآنَ
يُسْأَلُ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ بَحِيرُ بْنُ رَيْسَانَ .
উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃতের দাফন শেষ করে সেখানে দাঁড়িয়ে বলতেনঃ
তোমাদের ভাইয়ের জন্য তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং সে যেন প্রতিষ্ঠিত থাকে সেজন্য
দু’আ করো। কেননা তাকে এখনই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৪
ক্ববরের পাশে পশু যাবাহ করা নিষিদ্ধ
৩২২২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى الْبَلْخِيُّ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ عَقْرَ فِي
الإِسْلاَمِ " . قَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ كَانُوا يَعْقِرُونَ عِنْدَ
الْقَبْرِ بَقَرَةً أَوْ شَاةً .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইসলামে কোন বলিদান নেই।
‘আবদুর রাযযাক (রহঃ) বলেন, জাহিলী যুগে লোকেরা ক্ববরের কাছে গরু ছাগল বলি দিতো।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৫
পরবর্তী সময়ে ক্ববরের উপর জানাযা পড়া
৩২২৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي الْخَيْرِ،
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ
يَوْمًا فَصَلَّى عَلَى أَهْلِ أُحُدٍ صَلاَتَهُ عَلَى الْمَيِّتِ ثُمَّ انْصَرَفَ
.
উক্ববাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনাহ থেকে বেরিয়ে উহুদের শহীদদের ক্ববরের
নিকট গিয়ে মৃতের জন্য জানাযার নিয়মে সালাত আদায় করে ফিরে আসলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২২৪
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ،
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ حَيْوَةَ
بْنِ شُرَيْحٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالَ إِنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى عَلَى قَتْلَى أُحُدٍ بَعْدَ ثَمَانِ
سِنِينَ كَالْمُوَدِّعِ لِلأَحْيَاءِ وَالأَمْوَاتِ .
ইয়াযীদ ইবনু আবূ হাবীব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদেও একই
হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আট বছর পর
উহুদ যুদ্ধের শহীদদের জন্য জানাযা পড়েছেন জীবিত ও মৃতের দু’আ করার অনুরূপ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৬
ক্ববরের উপর কিছু নির্মাণ করা সর্ম্পকে
৩২২৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو
الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرًا، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم نَهَى أَنْ يُقْعَدَ عَلَى الْقَبْرِ وَأَنْ يُقَصَّصَ وَيُبْنَى
عَلَيْهِ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ক্ববরের উপর বসতে, তাতে চুনকাম করতে
এবং তার উপর কিছু নির্মাণ করতে নিষেধ করতে শুনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২২৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، وَعُثْمَانُ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ،
عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ مُوسَى، وَعَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، بِهَذَا
الْحَدِيثِ قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ عُثْمَانُ أَوْ يُزَادَ عَلَيْهِ وَزَادَ
سُلَيْمَانُ بْنُ مُوسَى أَوْ أَنْ يُكْتَبَ عَلَيْهِ وَلَمْ يَذْكُرْ مُسَدَّدٌ
فِي حَدِيثِهِ أَوْ يُزَادَ عَلَيْهِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ خَفِيَ عَلَىَّ مِنْ
حَدِيثِ مُسَدَّدٍ حَرْفُ وَأَنْ .
জাবির (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদেও অনুরূপ
হাদীস বর্ণিত হয়েছে। বর্ণনাকারী ‘উসমানের বর্ণনায় রয়েছেঃ এতে অতিরিক্ত কিছু যোগ
করতে নিষেধ করেছেন। সুলাইমান ইবনু মূসার বর্ণনায় রয়েছেঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ক্ববরের উপর লিখতে নিষেধ করেছেন। ‘উসমানের বর্ণনার অতিরিক্ত অংশটি
মুসাদ্দাদের বর্ণনায় নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২২৭
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ،
عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " قَاتَلَ اللَّهُ
الْيَهُودَ اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ " .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ ইয়াহুদীদের ধ্বংস করুন। তারা তাদের নবীদের
কবরসমূহকে সাজদাহর স্থানে (মাসজিদে) পরিণত করেছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৭
ক্ববরের উপর বসা নিষেধ
৩২২৮
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ،
حَدَّثَنَا سُهَيْلُ بْنُ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لأَنْ يَجْلِسَ
أَحَدُكُمْ عَلَى جَمْرَةٍ فَتَحْرِقَ ثِيَابَهُ حَتَّى تَخْلُصَ إِلَى جِلْدِهِ
خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَجْلِسَ عَلَى قَبْرٍ " .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি আগুনের
ফুলকির উপর বসে এবং তাতে তার পরিধের বস্ত্র পুড়ে ঐ আগুন তার শরীরের চামড়া পর্যন্ত
পৌঁছে যায় এটা তার জন্য ক্ববরের উপরে বসা থেকে উত্তম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২২৯
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى
الرَّازِيُّ، أَخْبَرَنَا عِيسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي ابْنَ
يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ - عَنْ بُسْرِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ
وَاثِلَةَ بْنَ الأَسْقَعِ، يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا مَرْثَدٍ الْغَنَوِيَّ،
يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَجْلِسُوا عَلَى
الْقُبُورِ وَلاَ تُصَلُّوا إِلَيْهَا " .
আবূ মারসাদ আল-গানাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ক্ববরের উপর বসবে
না এবং ক্ববরের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৮
জুতা পায়ে কবরস্থানের উপর দিয়ে হাঁটা
৩২৩০
حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ بَكَّارٍ،
حَدَّثَنَا الأَسْوَدُ بْنُ شَيْبَانَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ سُمَيْرٍ السَّدُوسِيِّ،
عَنْ بَشِيرِ بْنِ نَهِيكٍ، عَنْ بَشِيرٍ، مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَكَانَ اسْمُهُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ زَحْمُ بْنُ مَعْبَدٍ فَهَاجَرَ إِلَى
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " مَا اسْمُكَ " .
قَالَ زَحْمٌ . قَالَ " بَلْ أَنْتَ بَشِيرٌ " . قَالَ
بَيْنَمَا أَنَا أُمَاشِي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِقُبُورِ
الْمُشْرِكِينَ فَقَالَ " لَقَدْ سَبَقَ هَؤُلاَءِ خَيْرًا كَثِيرًا
" . ثَلاَثًا ثُمَّ مَرَّ بِقُبُورِ الْمُسْلِمِينَ فَقَالَ "
لَقَدْ أَدْرَكَ هَؤُلاَءِ خَيْرًا كَثِيرًا " . وَحَانَتْ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم نَظْرَةٌ فَإِذَا رَجُلٌ يَمْشِي فِي الْقُبُورِ عَلَيْهِ
نَعْلاَنِ فَقَالَ " يَا صَاحِبَ السِّبْتِيَّتَيْنِ وَيْحَكَ أَلْقِ
سِبْتِيَّتَيْكَ " . فَنَظَرَ الرَّجُلُ فَلَمَّا عَرَفَ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم خَلَعَهُمَا فَرَمَى بِهِمَا .
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
মুক্তদাস বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জাহিলী যুগে তার
নাম ছিল জাহম ইবনু মা’বদ। তিনি হিজরাত করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর কাছে চলে আসলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ
তোমার নাম কি? তিনি বললেন জাহম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
বরং তোমার নাম বাশীর। তিনি বলেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সাথে যাচ্ছিলাম। তিনি মুশরিকদের কতিপয় ক্ববরের পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে
বললেনঃ এরা বিরাট কল্যাণ লাভের পূর্বেই অতীত হয়ে গেছে। তিনি তিনবার এরূপ বললেন।
অতঃপর তিনি কতিপয় মুসলিমের ক্ববরের পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে বললেনঃএরা প্রচুর কল্যাণ
প্রাপ্ত হয়েছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক
ব্যক্তিকে জুতা পরিহিত অবস্থায় কবরস্থানের উপর দিয়ে চলতে দেখে বললেনঃ হে জুতা
পরিধানকারী! তোমার জন্য দুঃখ হচ্ছে, তুমি জুতা খুলে ফেলো। লোকটি
রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দিকে তাকালো এবং তাঁকে চিনতে
পেরে সে তার পায়ের জুতা খুলে ফেলে দিলো।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩২৩১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ
الأَنْبَارِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، - يَعْنِي ابْنَ عَطَاءٍ - عَنْ
سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ قَالَ " إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ وَتَوَلَّى عَنْهُ
أَصْحَابُهُ إِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ " .
আনাস (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন কোন বান্দাকে ক্ববরে রাখা হয়, অতঃপর
তার সাথীরা সেখান থেকে চলে যেতে থাকে, তখন সে তাদের জুতার শব্দ শুনতে পায়।
সহীহঃ এর চেয়ে পরিপূর্ণ বর্ণনা সামনে আসছে (৪৭৫১), সহীহাহ (১৩৪৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৯
বিশেষ কারণে ক্ববর থেকে লাশ স্থানান্তরিত করা
৩২৩২
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَزِيدَ أَبِي مَسْلَمَةَ،
عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ دُفِنَ مَعَ أَبِي رَجُلٌ فَكَانَ فِي
نَفْسِي مِنْ ذَلِكَ حَاجَةٌ فَأَخْرَجْتُهُ بَعْدَ سِتَّةِ أَشْهُرٍ فَمَا
أَنْكَرْتُ مِنْهُ شَيْئًا إِلاَّ شُعَيْرَاتٍ كُنَّ فِي لِحْيَتِهِ مِمَّا يَلِي
الأَرْضَ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার
পিতার সাথে (একই ক্ববরে) অন্য এক লোককে দাফন করা হয়েছিল। তাই আমি তার লাশ অন্যত্র
সরিতে নেয়ার ইচ্ছা করলাম। অতঃপর ছয় মাস পর আমি পিতার লাশ তুললাম (এবং অন্যত্র দাফন
করলাম)। তার শরীরের কোন অংশই পরিবর্তন হয়নি। কেবল দাড়ির কিছু চুল মাটির সংস্পর্শে
কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছিলো।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮০
মৃত ব্যক্তির প্রশংসা করা
৩২৩৩
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَامِرٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ مَرُّوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِجَنَازَةٍ
فَأَثْنَوْا عَلَيْهَا خَيْرًا فَقَالَ " وَجَبَتْ " . ثُمَّ
مَرُّوا بِأُخْرَى فَأَثْنَوْا عَلَيْهَا شَرًّا فَقَالَ " وَجَبَتْ
" . ثُمَّ قَالَ " إِنَّ بَعْضَكُمْ عَلَى بَعْضٍ شُهَدَاءُ
" .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা
রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সামনে দিয়ে লোকেরা একটা লাশ নিয়ে
আসার সময় মৃতের উত্তম প্রশংসা করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ (জান্নাত) ওয়াজিব হয়ে গেছে। অতঃপর লোকজন তাঁর সামনে দিয়ে আরেকটি লাশ নিয়ে
গেলো এবং তারা মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করলো। তিনি বললেনঃ (জাহান্নাম)
ওয়াজিব হয়ে গেছে। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমাদের একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে সাক্ষী হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮১
ক্ববর যিয়ারত করা
৩২৩৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ
الأَنْبَارِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ
كَيْسَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَتَى رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَبْرَ أُمِّهِ فَبَكَى وَأَبْكَى مَنْ حَوْلَهُ
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اسْتَأْذَنْتُ رَبِّي
تَعَالَى عَلَى أَنْ أَسْتَغْفِرَ لَهَا فَلَمْ يُؤْذَنْ لِي فَاسْتَأْذَنْتُ أَنْ
أَزُورَ قَبْرَهَا فَأُذِنَ لِي فَزُورُوا الْقُبُورَ فَإِنَّهَا تُذَكِّرُ
بِالْمَوْتِ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মায়ের ক্ববরের নিকট এসে
কাঁদলেন এবং তাঁর সাথীরাও কাঁদলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ আমি আমার মহান প্রভুর নিকট আমার মায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার
অনুমতি চেয়েছি; কিন্তু আমাকে অনুমতি দেয়া হয়নি। অতঃপর ক্ববর যিয়ারতের অনুমতি চাইলে
আমাকে তার অনুমতি দেয়া হয়। সুতরাং তোমরা ক্ববর যিয়ারত করো। কারণ তা মৃত্যুকে স্মরণ
করিয়ে দেয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২৩৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ،
حَدَّثَنَا مُعَرِّفُ بْنُ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ
بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُورِ فَزُورُوهَا فَإِنَّ فِي
زِيَارَتِهَا تَذْكِرَةً " .
বুরাইদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি তোমাদেরকে ক্ববর
যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা তা যিয়ারত করতে পারো। কেননা ক্ববর যিয়ারতের
মধ্যে (শিক্ষা গ্রহণের) সুযোগ রয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮২
মহিলাদের ক্ববর যিয়ারত প্রসঙ্গে
৩২৩৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُحَادَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا
صَالِحٍ، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم زَائِرَاتِ الْقُبُورِ وَالْمُتَّخِذِينَ عَلَيْهَا الْمَسَاجِدَ
وَالسُّرُجَ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্ববর যিয়ারতকারী মহিলাদের
অভিসম্পাত করেছেন। যারা ক্ববরের উপর মাসজিদ নির্মাণ করে এবং ক্ববরে বাতি জ্বালায়
তাদেরকেও অভিসম্পাত করেছেন।
দূর্বলঃ যঈফ সুনান আত-তিরমিযী (৫১), যঈফ সুনান নাসায়ী (১১৮), মিশকাত (৮৪০)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৩
কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কি বলবে?
৩২৩৭
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ،
عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ إِلَى الْمَقْبَرَةِ فَقَالَ
" السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ
اللَّهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ " . .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা রাসূল্লাহ(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্ববর যিয়ারত করতে গিয়ে বললেনঃ“হে মৃত্যুবাসিন্দা মুমিনগণ,
তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, ইনশাআল্লাহ আমরাও তোমাদের সাথে অচিরেই মিলিত
হবো।"
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৪
কেউ ইহরাম অবস্থায় মারা গেলে কিভাবে (দাফন-কাফন)দিবে?
৩২৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
بِرَجُلٍ وَقَصَتْهُ رَاحِلَتُهُ فَمَاتَ وَهُوَ مُحْرِمٌ فَقَالَ "
كَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْهِ وَاغْسِلُوهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَلاَ تُخَمِّرُوا
رَأْسَهُ فَإِنَّ اللَّهَ يَبْعَثُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُلَبِّي " .
قَالَ أَبُو دَاوُدَ سَمِعْتُ أَحْمَدَ بْنَ حَنْبَلٍ يَقُولُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ
خَمْسُ سُنَنٍ " كَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْهِ " . أَىْ يُكَفَّنُ
الْمَيِّتُ فِي ثَوْبَيْنِ " وَاغْسِلُوهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ " .
أَىْ إِنَّ فِي الْغَسَلاَتِ كُلِّهَا سِدْرًا " وَلاَ تُخَمِّرُوا
رَأْسَهُ " . وَلاَ تُقَرِّبُوهُ طِيبًا وَكَانَ الْكَفَنُ مِنْ جَمِيعِ
الْمَالِ .
ইবনু ‘আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এমন এক ব্যক্তিকে আনা
হলো যার উষ্ট্রী তাকে ফেলে দিয়ে তার ঘাড় ভেঙ্গে দিয়েছে এবং এতে সে ইহরাম অবস্থায়
মারা গেছে। তিনি বললেনঃতাকে তার ইহরামের দুই কাপড়েই কাফন পরাও, বরই পাতা মিশানো
পানি দিয়ে তাকে গোসল করাও এবং তার মাথা ঢাকবে না কেননা ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ
তাকে তালবিয়া পাঠরাত অবস্থায় উঠাবেন"
আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, আমি আহমদ ইবনু হাম্বল (রহঃ)-কে এ হাদীসের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য
বণনা করতে শুনেছি (১) তার ইহরামের দুই কাপড়েই কাফন পরাও অর্থাৎ ইহরাম অবস্থায়
মৃত্যুবরণকারীকে দুই কাপড়ে কাফন দিতে হবে। (২) বরই পাতা মিশানো পানি দিয়ে গোসল
করাও- অর্থাৎ প্রতিটি লাশ বরই পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল দিতে হবে। (৩) ইহরাম
অবস্থায় মৃত ব্যক্তির মাথা ঢাকবে না। (৪) তার শরীরে সুগন্ধি লাগাবে না এবং (৫) তার
সমস্ত সম্পদ থেকে প্রথমে তার কাফনের ব্যবস্থা করো।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২৩৯
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ،
وَمُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ
عَمْرٍو، وَأَيُّوبَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، نَحْوَهُ
قَالَ " وَكَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْنِ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ
قَالَ سُلَيْمَانُ قَالَ أَيُّوبُ " ثَوْبَيْهِ " . وَقَالَ
عَمْرٌو " ثَوْبَيْنِ " . وَقَالَ ابْنُ عُبَيْدٍ قَالَ أَيُّوبُ
" فِي ثَوْبَيْنِ " . وَقَالَ عَمْرٌو " فِي ثَوْبَيْهِ
" . زَادَ سُلَيْمَانُ وَحْدَهُ " وَلاَ تُحَنِّطُوهُ "
.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদেও অনুরূপ
হাদীস বর্ণিত: তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তাকে দুই কাপড়ে কাফন
দিবে। আবূ দাঊদ (রহঃ) সুলাইমান হতে আইয়ুব সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি ‘সাওবাই’ শব্দ
বর্ণনা করেছেন, কিন্তু ‘আমর ‘সাওবাইহি’ শব্দ বর্ণনা করেছেন। আর সুলাইমান এককভাবে
“তাকে সুগন্ধিযুক্ত করো না” কথাটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২৪০
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا
حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
نَحْوَهُ بِمَعْنَى سُلَيْمَانَ " فِي ثَوْبَيْنِ " .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
সুলাইমানের
হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২৪১
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ،
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ وَقَصَتْ بِرَجُلٍ مُحْرِمٍ نَاقَتُهُ فَقَتَلَتْهُ
فَأُتِيَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " اغْسِلُوهُ
وَكَفِّنُوهُ وَلاَ تُغَطُّوا رَأْسَهُ وَلاَ تُقَرِّبُوهُ طِيبًا فَإِنَّهُ
يُبْعَثُ يُهِلُّ " .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক
ব্যক্তিকে তার ইহরাম অবস্হায় তার উষ্ট্রী পিঠ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করলে তাকে
রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট আনা হয়। তিনি বললেনঃ তাকে
গোসল দিয়ে কাফন পরাও, কিন্ত তার মাথা ঢাকবে না এবং তার শরীরে সুগন্ধি লাগাবে না।
কেননা (ক্বিয়ামাতের দিন) তাকে তাহলীল পাঠরত অবস্থায় উঠানো হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
No comments