সুনানে ইবনে মাজাহ - অধ্যায় "তালাক" হাদিস নং- ২০১৬-২০৮৯
তালাক
১০/১. অধ্যায়ঃ
ঘৃণ্য বৈধ বিষয়।
২০১৬
حَدَّثَنَا
سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ وَعَبْدُ اللهِ بْنُ عَامِرِ بْنِ زُرَارَةَ وَمَسْرُوقُ
بْنُ الْمَرْزُبَانِ قَالُوا حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي
زَائِدَةَ عَنْ صَالِحِ بْنِ صَالِحِ بْنِ حَيٍّ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ عَنْ
سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أَنَّ
رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم طَلَّقَ حَفْصَةَ ثُمَّ رَاجَعَهَا
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাফসাহ
(রাঃ) কে তালাক দেন, অতঃপর তাকে ফিরিয়ে নেন। [২০১৬]
[২০১৬]
আবূ দাউদ ২২৮৩, দারেমী ২২৬৪, ইরওয়া ২০৭৭। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী মাসরুক
ইবনুল মারযুবান সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে
তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায়
সন্দেহ করেন। সালিহ বিন মুহাম্মাদ বলেন, তিনি সত্যবাদী। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯০৪,
২৭/৪৫৮ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০১৭
-
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُؤَمَّلٌ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
عَنْ أَبِي إِسْحَقَ عَنْ أَبِي بُرْدَةَ عَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا بَالُ أَقْوَامٍ يَلْعَبُونَ بِحُدُودِ اللهِ
يَقُولُ أَحَدُهُمْ قَدْ طَلَّقْتُكِ قَدْ رَاجَعْتُكِ قَدْ طَلَّقْتُكِ
আবু মুসা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
লোকদের কি হলো যে, তারা আল্লাহর বিধান নিয়ে ছিনি মিনি খেলছে? তোমাদের কেউ বলে,
তোমাকে তালাক দিলাম, তোমাকে আবার ফিরিয়ে নিলাম, তোমাকে আবার তালাক দিলাম। [২২১৭]
[২২১৭]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। যঈফাহ ৪৪৩১। তাহকীক আলবানীঃ যঈফ। উক্ত
হাদিসের রাবী মুআম্মাল (বিন ইসমাইল) সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইসহাক বিন রাহওয়াহ
বলেন, তিনি সিকাহ। মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল
করেন। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আস-সাজী
বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল ও সন্দেহ করেন। ইবনু কানি' বলেন,
তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার
স্মৃতিশক্তি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৩১৯, ২৯/১৭৬ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২০১৮
-
حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ الْحِمْصِيُّ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ
عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ الْوَلِيدِ الْوَصَّافِيِّ عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
أَبْغَضُ الْحَلَالِ إِلَى اللهِ الطَّلَاقُ
আবদুল্লাহ বিন উমার
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
আল্লাহর নিকট সর্বাধিক ঘৃণ্য কাজ হচ্ছে তালাক। [২০১৮]
[২০১৮]
আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩। তাহকীক
আলবানীঃ যঈফ। উক্ত হাদিসের রাবী উবায়দুল্লাহ ইবনুল ওয়ালীদ আল-ওয়াসসাফী সম্পর্কে আবু
আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী
বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক দুর্বল। আবু জা'ফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ
করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী, আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল।
আবু হাতিম বিন হিব্বান ও ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন শু'আয়ব
আন-নাসায়ী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। ইমাম যাহাবী তাকে দুর্বল বলেছেন। (তাহযীবুল
কামালঃ রাবী নং ৩৬৯৪, ১৯/১৭৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১০/২. অধ্যায়ঃ
যথার্থ নিয়মে তালাক।
২০১৯
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ إِدْرِيسَ عَنْ
عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ طَلَّقْتُ امْرَأَتِي وَهِيَ
حَائِضٌ فَذَكَرَ ذَلِكَ عُمَرُ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ
مُرْهُ فَلْيُرَاجِعْهَا حَتَّى تَطْهُرَ ثُمَّ تَحِيضَ ثُمَّ تَطْهُرَ ثُمَّ إِنْ
شَاءَ طَلَّقَهَا قَبْلَ أَنْ يُجَامِعَهَا وَإِنْ شَاءَ أَمْسَكَهَا فَإِنَّهَا
الْعِدَّةُ الَّتِي أَمَرَ اللهُ
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে তার হায়িদ অবস্থায় তালাক দিলে পর উমার
(রাঃ) বিষয়টা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর গোচরে আনেন। তিনি
বলেনঃ তাকে নির্দেশ দাও, সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়, যাবত না সে
পবিত্রাবস্থায় ফিরে আসে, অতঃপর পুনরায় তার মাসিক ঋতু হয়, অতঃপর পবিত্রাবস্থায় ফিরে
আসে। অতঃপর সে চাইলে তাকে তালাক দিতে পারে তার সাথে সহবাস করার পূর্বে। আর চাইলে
সে তাকে স্ত্রী হিসাবে রেখেও দিতে পারে। এই হলো সেই উদ্দাত যা পালনের জন্য আল্লাহ
নির্দেশ দিয়েছেন। [২০১৯]
[২০১৯]
সহীহুল বুখারী ৪৯০৮, ৫২৫২, ৫২৫৩, ৫২৫৮, ৫৩৩২, ৬০৩৩, ৭১৬০, মুসলিম ১৪৭১, তিরমিযী ১১৭৫,
১১৭৬, নাসায়ী ৩৩৮৯, ৩৩৯০, ৩৩৯১, ৩৩৯২, ৩৩৯৬, ৩৩৯৭, ৩৩৯৮, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৫৫৫, ৩৪৪৫, ৩৫৫৬,
৩৫৫৭, ৩৫৫৮, ৩৫৫৯, আবূ দাউদ ২১৭৯, ২১৮১, ২১৮২, ২১৮৪, ২১৮৫, আহমাদ ৪৪৮৬, ৪৭৭৪, ৫০০৫,
৫১০০, ৫১৫২, ৫২০৬, ৫২৪৬, ৫২৭৭, ৫২৯৯, ৫৪১০, ৫৪৬৫, ৫৪৮০, ৫৪৯৯, ৫৫০০, ৫৭০৮, ৬০২৫, ৬০৮৪,
৬১০৬, ৬২৯৩, মুয়াত্তা মালেক ১২২০, ২২৬২, ২২৬৩, ইরওয়াহ ২০৫৯, সহীহ আবী দাউদ ১৮৯২, ১৮৯৫।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০২০
-
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ عَنْ
سُفْيَانَ عَنْ أَبِي إِسْحَقَ عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ
طَلَاقُ السُّنَّةِ أَنْ يُطَلِّقَهَا طَاهِرًا مِنْ غَيْرِ جِمَاعٍ.
আবদুল্লাহ (বিন
মাসউদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সহবাসমুক্ত পবিত্র অবস্থায় (তুহরে) তালাক প্রদান হচ্ছে
যথার্থ নিয়মের (সুন্নাত) তালাক। [২০২০]
[২০২০]
ইবনু মাজাহ ২০২১, নাসায়ী ৩৩৯৪, ৩৩৯৫, ইরওয়াহ ২০৫১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০২১
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ الرَّقِّيُّ حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ عَنْ
الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِي إِسْحَقَ عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ
فِي طَلَاقِ السُّنَّةِ يُطَلِّقُهَا عِنْدَ كُلِّ طُهْرٍ تَطْلِيقَةً فَإِذَا
طَهُرَتْ الثَّالِثَةَ طَلَّقَهَا وَعَلَيْهَا بَعْدَ ذَلِكَ حَيْضَةٌ.
আবদুল্লাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি সুন্নাত (যথার্থ নিয়মের) তালাক সম্পর্কে বলেন, স্বামী স্ত্রীকে
তার (সহবাসমুক্ত) প্রতি তুহরে এক তালাক দিবে এবং সে তৃতীয় তুহরে পৌঁছলে তাকে শেষ
তালাক দিবে। এরপর সে এক হায়িদ কাল ইদ্দাত পালন করবে। [২০২১]
[২০২১]
ইবনু মাজাহ ২০২০, নাসায়ী ৩৩৯৪, ৩৩৯৫, তাহকীক আলবানীঃ সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০২২
-
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْأَعْلَى
قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ يُونُسَ بْنِ جُبَيْرٍ أَبِي
غَلَّابٍ قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ عَنْ رَجُلٍ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ وَهِيَ
حَائِضٌ فَقَالَ تَعْرِفُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ وَهِيَ
حَائِضٌ فَأَتَى عُمَرُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَمَرَهُ أَنْ
يُرَاجِعَهَا قُلْتُ أَيُعْتَدُّ بِتِلْكَ قَالَ أَرَأَيْتَ إِنْ عَجَزَ
وَاسْتَحْمَقَ
য়ূনুস থেকে বর্ণিতঃ
আমি ইবনু উমার (রাঃ) কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম যে তার
স্ত্রীকে তার হায়িদ অবস্থায় তালাক দিয়েছে। তিনি বলেন, তুমি আবদুল্লাহ বিন উমারকে
চিন? সে তার স্ত্রীকে তার মাসিক ঋতু চলাকালে তালাক দিয়েছিল। উমার (রাঃ) নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আসলে তিনি তাকে নির্দেশ দেনঃ সে যেন
তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি তালাক হিসেবে গণনায় ধরা হবে?
তিনি বলেন, তুমি কি মনে কর, সে যদি অক্ষম হয়ে থাকে, আর আহম্মকী করে (তাহলে কে
দায়ী?)! [২০২২]
[২০২২]
সহীহুল বুখারী ৪৯০৮, ৫২৫২, ৫২৫৩, ৫২৫৮, ৫৩৩২, ৬০৩৩, ৭১৬০, মুসলিম ১৪৭১, তিরমিযী ১১৭৫,
১১৭৬, নাসায়ী ৩৩৮৯, ৩৩৯০, ৩৩৯১, ৩৩৯২, ৩৩৯৬, ৩৩৯৭, ৩৩৯৮, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৫৫৫, ৩৪৪৫, ৩৫৫৬,
৩৫৫৭, ৩৫৫৮, ৩৫৫৯, আবূ দাউদ ২১৭৯, ২১৮১, ২১৮২, ২১৮৪, ২১৮৫, আহমাদ ৪৪৮৬, ৪৭৭৪, ৫০০৫,
৫১০০, ৫১৫২, ৫২০৬, ৫২৪৬, ৫২৭৭, ৫২৯৯, ৫৪১০, ৫৪৬৫, ৫৪৮০, ৫৪৯৯, ৫৫০০, ৫৭০৮, ৬০২৫, ৬০৮৪,
৬১০৬, ৬২৯৩, মুয়াত্তা মালেক ১২২০, ২২৬২, ২২৬৩, ইরওয়াহ ৭/১৭। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৩. অধ্যায়ঃ
গর্ভবতী মহিলাকে
তালাক প্রদান।
২০২৩
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَا حَدَّثَنَا
وَكِيعٌ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ مَوْلَى آلِ
طَلْحَةَ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ وَهِيَ
حَائِضٌ فَذَكَرَ ذَلِكَ عُمَرُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مُرْهُ
فَلْيُرَاجِعْهَا ثُمَّ يُطَلِّقْهَا وَهِيَ طَاهِرٌ أَوْ حَامِلٌ
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তার স্ত্রীকে হায়য অবস্থায় তালাক দিয়েছিলেন। উমার (রাঃ) বিষয়টি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উত্থাপন করলে তিনি বলেনঃ তাকে
বলো, সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়, এরপর সে চাইলে তাকে তুহর অথবা গর্ভবতী
অবস্থায় তালাক দেয়। [২০২৩]
[২০২৩]
সহীহুল বুখারী ৪৯০৮, ৫২৫২, ৫২৫৩, ৫২৫৮, ৫৩৩২, ৬০৩৩, ৭১৬০, মুসলিম ১৪৭১, তিরমিযী ১১৭৫,
১১৭৬, নাসায়ী ৩৩৮৯, ৩৩৯০, ৩৩৯১, ৩৩৯২, ৩৩৯৬, ৩৩৯৭, ৩৩৯৮, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৫৫৫, ৩৪৪৫, ৩৫৫৬,
৩৫৫৭, ৩৫৫৮, ৩৫৫৯, আবূ দাউদ ২১৭৯, ২১৮১, ২১৮২, ২১৮৪, ২১৮৫, আহমাদ ৪৪৮৬, ৪৭৭৪, ৫০০৫,
৫১০০, ৫১৫২, ৫২০৬, ৫২৪৬, ৫২৭৭, ৫২৯৯, ৫৪১০, ৫৪৬৫, ৫৪৮০, ৫৪৯৯, ৫৫০০, ৫৭০৮, ৬০২৫, ৬০৮৪,
৬১০৬, ৬২৯৩, মুয়াত্তা মালেক ১২২০, ২২৬২, ২২৬৩, ইরওয়াহ ৭/১২৬, ১৩০, সহীহ, আবী দাউদ ১৮৯৪।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৪. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি একই
মজলিসে তিন তালাক দেয়।
২০২৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ إِسْحَقَ بْنِ أَبِي
فَرْوَةَ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ عَامِرٍ الشَّعْبِيِّ قَالَ قُلْتُ
لِفَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ حَدِّثِينِي عَنْ طَلَاقِكِ قَالَتْ طَلَّقَنِي زَوْجِي
ثَلَاثًا وَهُوَ خَارِجٌ إِلَى الْيَمَنِ فَأَجَازَ ذَلِكَ رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم
আমির থেকে বর্ণিতঃ
আমি ফাতিমাহ্ বিনতু কায়স (রাঃ) কে বললাম, আপনার তালাকের ঘটনাটি
আমাকে বলুন। তিনি বলেন, আমার স্বামী ইয়ামানে থাকা অবস্থায় আমাকে তিন তালাক দেয়।
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটিকে জায়িয বলে গণ্য করেন। [২০২৪]
[২০২৪]
ইবনু মাজাহ ২০৩২, ২০৩৩, মুসলিম ১৪৮০, সহীহ আবী দাউদ ১৯৭৬-১৯৮২, তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
উক্ত হাদিসের রাবী ইসহাক বিন আবদুল্লাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল জুরজানী বলেন,
তার সানাদ মা মাতান কোনটিরই কেউ অনুসরণ করেননি। আবু বকর আল বুরকানী ও আবু হাতিম আর-রাযী
বলেন, তিনি মাতরুক বা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু বকর আল-বাযযার বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য
নয়। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু ইয়ালা আল খালীলী বলেন, তিনি খুবই দুর্বল।
ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৭, ২/৪৪৬
নং পৃষ্ঠা) উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু ইসহাক বিন আবদুল্লাহ এর কারণে সানাদটি দুর্বল।
হাদিসটির ৯ টি শাহিদ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ দারাকুতনী ৩৮৭২, ৩৮৭৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৫. অধ্যায়ঃ
তালাক দেয়ার পর
স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া (রাজআত) ।
২০২৫
حَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ هِلَالٍ الصَّوَّافُ حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ
الضُّبَعِيُّ عَنْ يَزِيدَ الرِّشْكِ عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ
الشِّخِّيرِ أَنَّ عِمْرَانَ بْنَ الْحُصَيْنِ سُئِلَ عَنْ رَجُلٍ يُطَلِّقُ
امْرَأَتَهُ ثُمَّ يَقَعُ بِهَا وَلَمْ يُشْهِدْ عَلَى طَلَاقِهَا وَلَا عَلَى
رَجْعَتِهَا فَقَالَ عِمْرَانُ طَلَّقْتَ بِغَيْرِ سُنَّةٍ وَرَاجَعْتَ بِغَيْرِ
سُنَّةٍ أَشْهِدْ عَلَى طَلَاقِهَا وَعَلَى رَجْعَتِهَا.
ইমরান বিন হুসায়ন
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাকে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো যে তার স্ত্রীকে তালাক
দেয়ার পর তার সাথে সহবাস করেছে, কিন্তু তাকে তালাক দেয়া এবং ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে
কোন স্বাক্ষী রাখেনি। ইমরান (রাঃ) বলেন, তুমি সুন্নাত নিয়মের বহির্ভূত তালাক
দিয়েছো এবং সুন্নাত নিয়মের বহির্ভূত ফিরিয়ে নিয়েছো। তুমি তাকে তালাক দেয়া ও ফিরিয়ে
নেয়ার বিষয়ে সাক্ষী রাখো। [২০২৫]
[২০২৫]
আবূ দাউদ ২১৮৬, ইরওয়াহ ২০৭৮, সহীহ আবী দাউদ ১৮৯৯। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৬. অধ্যায়ঃ
গর্ভাবস্থায়
তালাকপ্রাপ্তা নারীর সন্তান প্রসবের সাথে সাথে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায়।
২০২৬
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُمَرَ بْنِ هَيَّاجٍ حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ بْنُ عُقْبَةَ
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ الزُّبَيْرِ
بْنِ الْعَوَّامِ أَنَّهُ كَانَتْ عِنْدَهُ أُمُّ كُلْثُومٍ بِنْتُ عُقْبَةَ
فَقَالَتْ لَهُ وَهِيَ حَامِلٌ طَيِّبْ نَفْسِي بِتَطْلِيقَةٍ فَطَلَّقَهَا
تَطْلِيقَةً ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الصَّلَاةِ فَرَجَعَ وَقَدْ وَضَعَتْ فَقَالَ مَا
لَهَا خَدَعَتْنِي خَدَعَهَا اللهُ ثُمَّ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ سَبَقَ الْكِتَابُ أَجَلَهُ اخْطُبْهَا إِلَى نَفْسِهَا
যুবায়র ইবনুল
আওওয়াম থেকে বর্ণিতঃ
উম্মু কুলসুম বিনতু উকবাহ (রাঃ) ছিলেন তার স্ত্রী। তিনি তার
গর্ভাবস্থায় যুবায়র (রাঃ) কে বলেন, আমাকে এক তালাক দিয়ে সন্তুষ্ট করুন। তিনি তাকে
এক তালাক দিলেন, অতঃপর সলাত পড়তে চলে গেলেন। তিনি ফিরে এসে দেখেন যে, তার স্ত্রী
একটি সন্তান প্রসব করেছে। যুবায়র (রাঃ) বললেন, সে কেন আমাকে প্রতারিত করলো! আল্লাহ
যেন তাকেও প্রতারিত করেন। এরপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
নিকট উপস্থিত হলে তিনি বলেন: আল্লাহর কিতাবে বর্ণিত তার ইদ্দাত পূর্ণ হয়ে গেছে।
তাকে বিবাহের প্রস্তাব দাও।
হাদিসটি
ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইরওয়াহ ২১১৭। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের
রাবী কাবিসাহ বিন উকবাহ সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম
আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস
বর্ণনায় সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। আব্দুর রহমান বিন ইউসুফ বলেন, তিনি
সত্যবাদী। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৮৪৩, ২৩/৪৮১ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৭. অধ্যায়ঃ
গর্ভবতী মহিলার
স্বামী মারা গেলে,সন্তান প্রসবের পরপরই সে অন্য স্বামী গ্রহণ করতে পারে।
২০২৭
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا أَبُو الْأَحْوَصِ عَنْ مَنْصُورٍ
عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ الْأَسْوَدِ عَنْ أَبِي السَّنَابِلِ قَالَ وَضَعَتْ
سُبَيْعَةُ الْأَسْلَمِيَّةُ بِنْتُ الْحَارِثِ حَمْلَهَا بَعْدَ وَفَاةِ
زَوْجِهَا بِبِضْعٍ وَعِشْرِينَ لَيْلَةً فَلَمَّا تَعَلَّتْ مِنْ نِفَاسِهَا
تَشَوَّفَتْ فَعِيبَ ذَلِكَ عَلَيْهَا وَذُكِرَ أَمْرُهَا لِلنَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم فَقَالَ إِنْ تَفْعَلْ فَقَدْ مَضَى أَجَلُهَا
আবুস সানাবিল (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আসলাম গোত্রের হারিসের কন্যা সুবায়আহ তার স্বামীর মৃত্যুর
বিশাধিক দিন পর একটি সন্তান প্রসব করেন। তিনি নিফাস (সন্তান প্রসবজনিত ঋতু) হওয়ার
পর নতুন পরিচ্ছদ পরতে লাগলেন। (অর্থাৎ সাজগোজ করতে লাগলেন)। এতে তার প্রতি দোষারোপ
হতে থাকলে বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে অবহিত করা হয়। তিনি
বলেনঃ সে তা করতে পারে, কারণ তার ইদ্দাতকাল পূর্ণ হয়েছে। [২০২৭]
[২০২৭]
তিরমিযী ১১৯৩, আহমাদ ১৮২৩৮, ১৮২৩৯, দারেমী ২২৮১, সহীহ আবী দাউদ ১৯৯৬। তাহকীক আলবানীঃ
সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০২৮
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ دَاوُدَ
بْنِ أَبِي هِنْدٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ مَسْرُوقٍ وَعَمْرِو بْنِ عُتْبَةَ
أَنَّهُمَا كَتَبَا إِلَى سُبَيْعَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ يَسْأَلَانِهَا عَنْ
أَمْرِهَا فَكَتَبَتْ إِلَيْهِمَا إِنَّهَا وَضَعَتْ بَعْدَ وَفَاةِ زَوْجِهَا
بِخَمْسَةٍ وَعِشْرِينَ فَتَهَيَّأَتْ تَطْلُبُ الْخَيْرَ فَمَرَّ بِهَا أَبُو
السَّنَابِلِ بْنُ بَعْكَكٍ فَقَالَ قَدْ أَسْرَعْتِ اعْتَدِّي آخِرَ
الْأَجَلَيْنِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ اسْتَغْفِرْ لِي قَالَ وَفِيمَ ذَاكَ
فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ إِنْ وَجَدْتِ زَوْجًا صَالِحًا فَتَزَوَّجِي
বর্ণনাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
সুবায়আহ (রাঃ) কে উত্তরে তাদের নিকট লেখে পাঠান যে, তিনি তার স্বামীর
মৃত্যুর ২৫ দিন পর সন্তান প্রসব করেন এবং পুনর্বিবাহের জন্য প্রস্তুতি নেন। আবূস
সানাবিল বিন বাকাক তার নিকট দিয়ে গমনকালে বলেন, তুমি খুব তাড়াহুড়া করে ফেললে।
ইদ্দাতের দু’ মেয়াদকালের মধ্যে দীর্ঘতর মেয়াদ অর্থাৎ চার মাস দশ দিন অতিবাহিত করো।
অতএব আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললাম, হে
আল্লাহর রসূল! আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি বলেনঃ তা কী ব্যপারে? আমি
তাঁকে ঘটনাটি খুলে বললাম। তিনি বলেন সৎকর্মপরায়ণ স্বামী পেয়ে গেলে বিবাহ করো।
[২০২৮]
[২০২৮]
সহীহুল বুখারী ৫৩১৯, মুসলিম ১৪৮৪, নাসায়ী ৩৫১৮, ৩৫১৯, ৩৫২০, আবূ দাউদ ২৩০৬, ২৬৮৮৯,
সহীহাহ ২৭২২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০২৯
-
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ قَالَا حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللهِ بْنُ دَاوُدَ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ
الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ
سُبَيْعَةَ أَنْ تَنْكِحَ إِذَا تَعَلَّتْ مِنْ نِفَاسِهَا
মিসওয়ার বিন
মাখরামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুবায়আহ (রাঃ) কে
তার নিফাস থেকে পবিত্র হওয়ার পরপরই বিবাহ করার অনুমতি দেন।[২০২৯]
[২০২৯]
সহীহুল বুখারী ৫৩২০, নাসায়ী ৫৩০৬, ৫৩০৭, আহমাদ ১৮৪৩৮, মুয়াত্তা মালেক ১২৫২, তাহকীক
আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৩০
-
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ عَنْ
الْأَعْمَشِ عَنْ مُسْلِمٍ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ
وَاللهِ لَمَنْ شَاءَ لَاعَنَّاهُ لَأُنْزِلَتْ سُورَةُ النِّسَاءِ الْقُصْرَى
بَعْدَ أَرْبَعَةِ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا.
আবদুল্লাহ বিন
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! কেউ ইচ্ছা করলে আমার থেকে লিআন জাতীয় শপথ
গ্রহণ করাতে পারে যে, নিশ্চই এই ক্ষুদ্র সূরা নিসা (অর্থ্যাৎ সূরা তালাক) “চার মাস
দশ দিন” সম্বলিত আয়াত (সূরা বাকারা) নাযিল হওয়ার পরে নাযিল হয়েছে। [২০৩০]
[২০৩০]
আবূ দাউদ ২৩০৭, সহীহ আবী দাউদ ১৯৯৭, তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৮. অধ্যায়ঃ
বিধবা স্ত্রী যেখানে
ইদ্দাত পালন করবে।
২০৩১
-
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ
الْأَحْمَرُ سُلَيْمَانُ بْنُ حَيَّانَ عَنْ سَعْدِ بْنِ إِسْحَقَ بْنِ كَعْبِ
بْنِ عُجْرَةَ عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ وَكَانَتْ تَحْتَ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ أُخْتَهُ الْفُرَيْعَةَ بِنْتَ مَالِكٍ قَالَتْ خَرَجَ
زَوْجِي فِي طَلَبِ أَعْلَاجٍ لَهُ فَأَدْرَكَهُمْ بِطَرَفِ الْقَدُومِ
فَقَتَلُوهُ فَجَاءَ نَعْيُ زَوْجِي وَأَنَا فِي دَارٍ مِنْ دُورِ الْأَنْصَارِ
شَاسِعَةٍ عَنْ دَارِ أَهْلِي فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ
يَا رَسُولَ اللهِ جَاءَ نَعْيُ زَوْجِي وَأَنَا فِي دَارٍ شَاسِعَةٍ عَنْ دَارِ
أَهْلِي وَدَارِ إِخْوَتِي وَلَمْ يَدَعْ مَالًا يُنْفِقُ عَلَيَّ وَلَا مَالًا
وَرِثْتُهُ وَلَا دَارًا يَمْلِكُهَا فَإِنْ رَأَيْتَ أَنْ تَأْذَنَ لِي
فَأَلْحَقَ بِدَارِ أَهْلِي وَدَارِ إِخْوَتِي فَإِنَّهُ أَحَبُّ إِلَيَّ
وَأَجْمَعُ لِي فِي بَعْضِ أَمْرِي قَالَ فَافْعَلِي إِنْ شِئْتِ قَالَتْ
فَخَرَجْتُ قَرِيرَةً عَيْنِي لِمَا قَضَى اللهُ لِي عَلَى لِسَانِ رَسُولِ اللهِ
صلى الله عليه وسلم حَتَّى إِذَا كُنْتُ فِي الْمَسْجِدِ أَوْ فِي بَعْضِ
الْحُجْرَةِ دَعَانِي فَقَالَ كَيْفَ زَعَمْتِ قَالَتْ فَقَصَصْتُ عَلَيْهِ
فَقَالَ امْكُثِي فِي بَيْتِكِ الَّذِي جَاءَ فِيهِ نَعْيُ زَوْجِكِ حَتَّى
يَبْلُغَ الْكِتَابُ أَجَلَهُ قَالَتْ فَاعْتَدَدْتُ فِيهِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ
وَعَشْرًا
ফুরায়আহ বিনতু
মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার স্বামী তার (পলাতক) গোলামের খোঁজে রওয়ানা হয়ে কাদুম
নামক স্থানে তাদের ধরে ফেলেন। তারা আমার স্বামীকে হত্যা করে। যখন আমার স্বামীর
মৃত্যুসংবাদ আসে, তখন আমি আমার পরিবার-পরিজন থেকে অনেক দূরে আনসারদের বসতিতে অবস্থান
করছিলাম। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললাম, হে
আল্লাহর রাসূল! যখন আমার স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ এলো তখন আমি আমার পরিজন ও ভাইদের
বাড়ি থেকে দূরে বসবাস করছিলাম। তিনি আমার ভরণপোষনের জন্যে কোন মাল রেখে যাননি এবং
তার এমন কোন মালও নেই, আমি যার ওয়ারিস হতে পারি, এমনকি তার মালিকানাভুক্ত কোন ঘরও
নেই। আপনি আমাকে অনুমতি দিলে আমি আমার পরিবার ও ভাইদের বাড়িতে উঠতে পারি। আর এটা
আমার জন্যে অধিক প্রিয় এবং বিভিন্ন দিক দিয়ে সুবিধাজনক। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি চাইলে তা করতে পারো। মহিলাটি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মুখে আমার জন্যে আল্লাহর এই
ফায়সালা শুনে খুশি মনে ফিরে যেতে লাগলাম। আমি মাসজিদে অথবা তাঁর কোন এক হুজরার
নিকট পৌঁছতেই ,তিনি আমাকে ডেকে বলেনঃ তুমি জানি কি বলেছিলে? মহিলাটি বললো, আমি
পুনরায় তাকে আমার বিবরণ শুনালাম। তিনি বলেনঃ তুমি ঐ ঘরেই অবস্থান করো, যেখানে
তোমার স্বামীর মৃত্যুসংবাদ পেয়েছো, যতক্ষণ না তোমার ইদ্দাত পূর্ণ হয়। ফুরায়আহ
(রাঃ) বলেন, এরপর আমি সেখানেই চার মাস দশ দিন ইদ্দাত পালন করলাম।[২০৩১]
[২০৩১]
তিরমিযী ১২০৪, নাসায়ী ৩৫২৮, ৩৫২৯, ৩৫৩০, ৩৫৩২, আবূ দাউদ ২৩০০, আহমাদ ২৬৫৪৭, ২৬৮১৭,
মুয়াত্তা মালেক ১২৫৪, দারেমী ২২৮৭, ইরওয়াহ ২১৩১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের
রাবী আবু খালিদ আল-আহমার সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি সত্যবাদী
তবে হুজ্জাহ নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন,
তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি সিকাহ।
তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি সত্যবাদী ও সিকাহ রাবীর সদৃশ। (তাহযীবুল
কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৯. অধ্যায়ঃ
ইদ্দাত পালনরত
অবস্থায় নারীরা কি বাইরে যেতে পারে?
২০৩২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ
دَخَلْتُ عَلَى مَرْوَانَ فَقُلْتُ لَهُ امْرَأَةٌ مِنْ أَهْلِكَ طُلِّقَتْ
فَمَرَرْتُ عَلَيْهَا وَهِيَ تَنْتَقِلُ فَقَالَتْ أَمَرَتْنَا فَاطِمَةُ بِنْتُ
قَيْسٍ وَأَخْبَرَتْنَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَهَا أَنْ
تَنْتَقِلَ فَقَالَ مَرْوَانُ هِيَ أَمَرَتْهُمْ بِذَلِكَ قَالَ عُرْوَةُ فَقُلْتُ
أَمَا وَاللهِ لَقَدْ عَابَتْ ذَلِكَ عَائِشَةُ وَقَالَتْ إِنَّ فَاطِمَةَ كَانَتْ
فِي مَسْكَنٍ وَحْشٍ فَخِيفَ عَلَيْهَا فَلِذَلِكَ أَرْخَصَ لَهَا رَسُولُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم
ফাতিমাহ (বিনতু
কায়স) ও আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উরওয়াহ বলেন, আমি মারওয়ানের নিকট প্রবেশ করে তাকে বললাম, আপনার
পরিবারের এক মহিলাকে তালাক দেওয়া হয়েছে। আমি তার ওখান দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম যে,
সে বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে। সে বললো, ফাতিমাহ বিনতু কায়স (রাঃ) আমাদের এরূপ নির্দেশ
দিয়েছেন এবং তিনি আমাদের বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাকে (ইদ্দাত পালনকালে) স্থানান্তর এর অনুমতি দিয়েছেন। মারওয়ান বলেন,
ফাতিমাহ বিনতু কায়স (রাঃ) তাদের এরূপ নির্দেশ দিয়েছেন। উরওয়া (রাঃ) বলেন, আমি
বললাম, আল্লাহর শপথ! আয়িশা (রাঃ) তা আপত্তিকর বলেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, ফাতিমাহ
হিংশ্র পশুর উৎপাতের এলাকায় বাস করতেন বলে তার জানমালের ক্ষতির আশংকা ছিলো। আর এ
কারণেই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার বেলায় এরূপ অনুমতি
দিয়েছিলেন। [২০৩২]
[২০৩২]
ইবনু মাজাহ ২০২৪, ২০৩৩,মুসলিম ১৪৮০, সহীহ আবী দাউদ ১৯৮৪। তাহকীক আলবানীঃ হাসান। উক্ত
হাদিসের রাবী আবু যিনাদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট হাফিয
নয়। আবুল কাসিম বিন বিশকাওয়াল বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে
হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হবে না। আবু যুরআহ আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন।
আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ
রাবী নং ৩৮১৬, ১৭/৯৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২০৩৩
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ عَنْ هِشَامِ
بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ قَيْسٍ يَا رَسُولَ اللهِ
إِنِّي أَخَافُ أَنْ يُقْتَحَمَ عَلَيَّ فَأَمَرَهَا أَنْ تَتَحَوَّلَ
ফাতিমাহ বিনতু কায়স
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার আশংকা হয় যে, কেউ হয়তো আমার ঘরে
জোরপূর্বক ঢূকে আমার ক্ষতি করবে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাকে অন্য স্থানে চলে যাওয়ার অনুমতি দেন। [২০৩৩]
[২০৩৩]
ইবনু মাজাহ ২০৩২, ২০২৪, মুসলিম ১৪৮০, সহীহ আবী দাউদ ১৯৮১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৩৪
حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ حَدَّثَنَا رَوْحٌ ح و حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنْصُورٍ
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ جَمِيعًا عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي
أَبُو الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ طُلِّقَتْ خَالَتِي
فَأَرَادَتْ أَنْ تَجُدَّ نَخْلَهَا فَزَجَرَهَا رَجُلٌ أَنْ تَخْرُجَ إِلَيْهِ
فَأَتَتْ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ بَلَى فَجُدِّي نَخْلَكِ
فَإِنَّكِ عَسَى أَنْ تَصَدَّقِي أَوْ تَفْعَلِي مَعْرُوفًا
জাবির বিন
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার খালা তালাকপ্রাপ্তা হওয়ার পর তিনি তার খেজুর বাগানে
গিয়ে ফল কাটতে চেয়েছিলেন। এক ব্যক্তি তাকে এই উদ্দ্যেশ্যে বের হতে কঠোরভাবে নিষেধ
করে। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আসলে তিনি বলেন, হ্যাঁ
তুমি তোমার বাগানের খেজুর সংগ্রহ করো। হয়তো তুমি দান-খয়রাত করবে অথবা অন্য কোন
সৎকাজ করবে। [২০৩৪]
[২০৩৪]
মুসলিম ১৪৮৩, নাসায়ী ৩৫৫০, আবূ দাউদ ২২৯৭, আহমাদ ১৪০৩৫, নাসায়ী ২২৮৮, ইরওয়াহ ২১৩৪,
সহীহাহ ৭২৩। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/১০ অধ্যায়ঃ
তিন তালাকপ্রাপ্তা
নারী কি বাসস্থান ও খোরপোষ পাবে?
২০৩৫
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَا حَدَّثَنَا
وَكِيعٌ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي الْجَهْمِ بْنِ
صُخَيْرٍ الْعَدَوِيِّ قَالَ سَمِعْتُ فَاطِمَةَ بِنْتَ قَيْسٍ تَقُولُ إِنَّ
زَوْجَهَا طَلَّقَهَا ثَلَاثًا فَلَمْ يَجْعَلْ لَهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم سُكْنَى وَلَا نَفَقَةً
ফাতিমা বিনতু কায়স
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(আবূ বকর) বলেন, আমি ফাতিমা বিনতু কায়স (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, তার
স্বামী তাকে তিন তালাক দিলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার
জন্যে বাসস্থান ও খোরপোষের নির্দেশ দেন নি। [২০৩৫]
[২০৩৫]
ইবনু মাজাহ ২০৩২, ২০৩৩, মুসলিম ১৪৮০, আবী দাউদ ১৯৭৬-১৯৮০,১৯৮২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৩৬
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ مُغِيرَةَ عَنْ
الشَّعْبِيِّ قَالَ قَالَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ قَيْسٍ طَلَّقَنِي زَوْجِي عَلَى
عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثَلَاثًا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم لَا سُكْنَى لَكِ وَلَا نَفَقَةَ
ফাতিমাহ বিনতু কায়স
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়
আমার স্বামী আমাকে তিন তালাক দেয়। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, তোমার জন্য বাসস্থান ও খোরপোষ নাই। [২০৩৬]
[২০৩৬]
ইবনু মাজাহ ২০৩২, ২০৩৩, মুসলিম ১৪৮০, বায়হাকী ১০/৬১, আল হাকিম ফিল-মুসতাদরাক ২/১৯৮।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ্।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/১১ অধ্যায়ঃ
তালাকের উপঢৌকন
(মুতআ)।
২০৩৭
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ الْمِقْدَامِ أَبُو الْأَشْعَثِ الْعِجْلِيُّ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ
بْنُ الْقَاسِمِ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ
أَنَّ عَمْرَةَ بِنْتَ الْجَوْنِ تَعَوَّذَتْ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه
وسلم حِينَ أُدْخِلَتْ عَلَيْهِ فَقَالَ لَقَدْ عُذْتِ بِمُعَاذٍ فَطَلَّقَهَا
وَأَمَرَ أُسَامَةَ أَوْ أَنَسًا فَمَتَّعَهَا بِثَلَاثَةِ أَثْوَابٍ رَازِقِيَّةٍ
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
জাওন কন্যা আমরাকে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট পেশ করা হলে সে রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে (আল্লাহর) আশ্রয় প্রার্থনা করে। তিনি
বলেনঃ তুমি এক মহান সত্তার নিকটই আশ্রয় প্রার্থনা করেছো। অতঃপর তিনি তাকে তিন
তালাক দিলেন এবং উসামাহ অথবা আনাস (রাঃ) কে নির্দেশ দিলে তদুনযায়ী তিনি তাকে
(উপঢৌকনস্বরূপ) তিনখানা সাদা লম্বা কাপড় দেন। [২০৩৭]
তাহকীক আলবানীঃ আবূ উসাইদ নির্দেশ দেওয়ার শব্দে সহীহ এবং উসামাহ ও আনাস উল্লেখের
সাথে মুনকার।
[২০৩৭]
সহীহুল বুখারী ৫২৫৪, নাসায়ী ৩৪১৭, বায়হাকী ৭/৩১৮, ইরওয়াহ ৭/১৪৬। তাহকীক আলবানীঃ আবূ
উসাইদ নির্দেশ দেওয়ার শব্দে সহীহ এবং উসামাহ ও আনাস উল্লেখের সাথে মুনকার। উক্ত হাদিসের
রাবী উবায়দ ইবনুল কাসিম সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল।
আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তার ব্যাপারে জাল (বানিয়ে) হাদিস বর্ণনার অভিযোগ রয়েছে।
আবু নুয়ায়ম আল-আসবাহানী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী
ও ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। ইমাম দারাকুতনী বলেন,
তিনি দুর্বল। সালিহ বিন মুহাম্মাদ বলেন, তিনি মিথ্যুক। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭৩৩,
১৯/২২৯ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
১০/১২. অধ্যায়ঃ
স্বামী তালাক
অস্বীকার করলে।
২০৩৮
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ أَبِي سَلَمَةَ أَبُو حَفْصٍ
التَّنِّيسِيُّ عَنْ زُهَيْرٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ
عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا
ادَّعَتْ الْمَرْأَةُ طَلَاقَ زَوْجِهَا فَجَاءَتْ عَلَى ذَلِكَ بِشَاهِدٍ عَدْلٍ
اسْتُحْلِفَ زَوْجُهَا فَإِنْ حَلَفَ بَطَلَتْ شَهَادَةُ الشَّاهِدِ وَإِنْ نَكَلَ
فَنُكُولُهُ بِمَنْزِلَةِ شَاهِدٍ آخَرَ وَجَازَ طَلَاقُه
আবদুল্লাহ বিন আমর
ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, স্ত্রী তার স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে বলে দাবি করলে এবং
এর স্বপক্ষে একজন ন্যাপরায়ণ সাক্ষী উপস্থিত করলে তার স্বামীকে শপথ করানো হবে। সে
শপথ করলে সাক্ষীর সাক্ষ্য বাতিল হয়ে যাবে। আর সে (স্বামী) শপথ করতে অস্বীকৃত হলে
তার এ অস্বীকৃতি আরেকজন সাক্ষী স্থানীয় গণ্য হবে এবং তার তালাক কার্যকর হবে।
[২০৩৮]
[২০৩৮]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ৭/৩১৯, যঈফাহ ২২১০। তাহকীক
আলবানীঃ যঈফ। উক্ত হাদিসের রাবী আমর বিন আবু সালামাহ সম্পর্কে আবু জা'ফার আল-উকায়লী
বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিস গ্রহন করা
যায় তবে তা দলীলযোগ্য নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায়
সন্দেহ করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল।
(তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৩৭৮, ২২/৫১ নং পৃষ্ঠা) ২. যুহায়র সম্পর্কে আবু হাতিম বিন
হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। আহমাদ
বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনু আবদুল বার আল-আন্দালাসী বলেন, তিনি সকলের
নিকট দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২০১৭, ৯/৪১৪ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১০/১৩. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি
উপহাসোচ্ছলে তালাক দিলো, বিবাহ করলো অথবা তালাক প্রত্যাহার করলো।
২০৩৯
حَدَّثَنَا
هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ حَبِيبِ بْنِ أَرْدَكَ حَدَّثَنَا عَطَاءُ بْنُ أَبِي رَبَاحٍ
عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ
وَالطَّلَاقُ وَالرَّجْعَةُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
তিনটি বিষয়ে বাস্তবিকই বলা হলেও যথার্থ বিবেচিত হবে অথবা উপহাসোচ্ছলে বলা হলেও
যথার্থ গণ্য হবেঃ বিবাহ, তালাক ও প্রত্যাহার। [২০৩৯]
[২০৩৯]
তিরমিযী ১১৮৪, বায়হাকী ৩১৮, ইরওয়াহ ১৮২৬, সহীহ আবী দাউদ ১৯০৪, মিশকাত ৩২৮৪। তাহকীক
আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী আব্দুর রহমান বিন হাবীব বিন আরদাক সম্পর্কে আহমাদ
বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি মুনকার অর্থাৎ কুফুরী নয় এমন কোন কওলী বা আমলী ফিসক
এর সাথে জড়িত। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন
ও তা বর্ণনা করেন। ইমাম যাহাবী বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী
নং ৩৭৯২, ১৭/৫২ নং পৃষ্ঠা) উক্ত হাদিসটি হাসান কিন্তু আব্দুর রহমান বিন হাবীব বিন আরদাক
এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৫৬ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৯ টি অধিক দুর্বল,
২৭ টি দুর্বল, ১৩ টি হাসান, ৭ টি সহিহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিযি
১১৮৪, আবু দাউদ ২১৯৪, দারাকুতনী ৩৫৯৩, ৩৫৯৫, ৩৫৯৬, ৩৮৯৫, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১০২৪৯,
১০২৫০ শারহুস সুন্নাহ ২৩৫৬।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১০/১৪ অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি মনে মনে
তালাক দিয়ে মুখে সে সম্পর্কে কিছু বলেনি।
২০৪০
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ وَعَبْدَةُ
بْنُ سُلَيْمَانَ ح و حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ حَدَّثَنَا خَالِدُ
بْنُ الْحَارِثِ جَمِيعًا عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ
زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ لِأُمَّتِي عَمَّا حَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا
مَا لَمْ تَعْمَلْ بِهِ أَوْ تَكَلَّمْ بِهِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
আল্লাহ আমার উম্মাতের মনে মনে বলা কথা উপেক্ষা (ক্ষমা) করেছেন, যাবত না সে
তদুনুযায়ী কাজ করে অথবা মুখে উচ্চারণ করে।[২০৪০]
[২০৪০]
সহীহুল বুখারী ২৫২৮, ৫২৬৯, ৬৬৬৪, মুসলিম ১২৭, তিরমিযী ১১৮৩, নাসায়ী ৩৪৩৩, ৩৪৩৪, ৩৪৩৫,
আবূ দাউদ ২২০৯, আহমাদ ৮৮৬৪, ৯২১৪, ৯৭৮৬, ৯৮৭৮, ৯৯৯০, সহীহ আবী দাউদ ১৯১৫, ইরওয়াহ ২০৬২।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/১৫. অধ্যায়ঃ
জড়বুদ্ধিসম্পন্ন
ব্যক্তি,নাবালেগ ও ঘুমন্ত ব্যক্তির তালাক।
২০৪১
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ ح و
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدِ بْنِ خِدَاشٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَا
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ
عَنْ حَمَّادٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ الْأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ عَنْ النَّائِمِ
حَتَّى يَسْتَيْقِظَ وَعَنْ الصَّغِيرِ حَتَّى يَكْبَرَ وَعَنْ الْمَجْنُونِ
حَتَّى يَعْقِلَ أَوْ يُفِيقَ قَالَ أَبُو بَكْرٍ فِي حَدِيثِهِ وَعَنْ
الْمُبْتَلَى حَتَّى يَبْرَأَ
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তিন
ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছেঃ ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষন না সে জাগ্রত হয়,
নাবালেগ যতক্ষন না সে বালেগ হয় এবং পাগল, যতক্ষন না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা সুস্থ
হয়। অধস্তন রাবী আবূ বাকর (রহঃ) এর বর্ণনায় আছেঃ বেহুঁশ ব্যক্তি যতক্ষণ না সে হুঁশ
ফিরে পায়। [২০৪১]
[২০৪১]
নাসায়ী ৩৪৩২, আবূ দাউদ ৪৩৯৮, আহমাদ ২৪১৭৩, ২৪১৮২, ২৪৫৯০, দারেমী ২২৯৬, ইরওয়াহ ২৯৭,
মিশকাত ৩২৮৭-৩২৮৮। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী হাম্মাদ সম্পর্কে আবু হাতিম
আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন
হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে মুরজিয়া মতাবলম্বী। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল।
মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল ও সন্দেহ করেন। (তাহযীবুল
কামালঃ রাবী নং ১৪৮৩, ৭/২৬৯ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৪২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ حَدَّثَنَا ابْنُ
جُرَيْجٍ أَنْبَأَنَا الْقَاسِمُ بْنُ يَزِيدَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ يُرْفَعُ الْقَلَمُ عَنْ الصَّغِيرِ
وَعَنْ الْمَجْنُونِ وَعَنْ النَّائِمِ
আলী বিন আবূ তালিব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
নাবালেগ, পাগল ও ঘুমন্ত ব্যক্তি থেকে কলম তুলে নেয়া হয়েছে।[২০৪২]
[২০৪২]
তিরমিযী ১৪২৩, ইরওয়া ২৯৭। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবী কাসিম বিন ইয়াযীদ
সম্পর্কে ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী
নং ৪৮৩৬, ২৩/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা) উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু কাসিম বিন ইয়াযীদ এর কারণে সানাদটি
দুর্বল। হাদিসটির ৯১ টি শাহিদ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিযি ১৪২৩,
আবু দাউদ ৪৩৯৮, ৪৪০২, ৪৪০৩, দারিমী ২২৯৬, আহমাদ ৯৪৩, ৯৫৯, ১১৮৭, ১৩৩০, ১৩৬৬, ২৪১৭২,
২৪১৮১, ২৪৫৮৯, দারাকুতনী ৩২৪০, মু'জামুল আওসাত ৩৪০৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/১৬. অধ্যায়ঃ
বল প্রয়োগে বাধ্য হয়ে
অথবা ভুলবশত প্রদত্ত তালাক।
২০৪৩
حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ يُوسُفَ الْفِرْيَابِيُّ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ
بْنُ سُوَيْدٍ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ الْهُذَلِيُّ عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ
عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا
اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
আবূ যার আল-গিফারী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
আল্লাহ আমার উম্মাতের ভুল , বিস্মৃতি ও বলপূর্বক যা করিয়ে নেয়া হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন।
[২০৪৩]
[২০৪৩]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত ৬২৮৪, ইরওয়া ৮২। তাহকীক আলবানীঃ
সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আয়্যুব বিন সুওয়ায়দ সম্পর্কে আবু বকর আল-ইসমাইলী বলেন,
তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস
গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন
শু'আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী
তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম
বুখারী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৬, ৩/৪৭৪ নং
পৃষ্ঠা) ২. আবু বাকর আল-হুযালী সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের
নিকট নির্ভরযোগ্য নয় তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হবে না। আবু যুরআহ
আর-রাযী ও আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি দুর্বল। মুহাম্মাদ বিন জা'ফার বলেন, তিনি মিথ্যা
কথা বলতেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৭২৬৮, ৩৩/১৫৯ নং পৃষ্ঠা) ৩. শাহর বিন হাওশাব সম্পর্কে
ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান এবং আল-আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। শু'বাহ ইবনুল
হাজ্জাজ তাকে বর্জন করেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, কোন সমস্যা
নেই। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৭৮১, ১২/৫৭৮ নং পৃষ্ঠা) উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু আয়্যুব
বিন সুওয়ায়দ ও আবু বাকর আল-হুযালী এবং শাহর বিন হাওশাব এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির
৫৯ টি শাহিদ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ দারাকুতনী ৪৩০৬, মুসান্নাফ
আব্দুর রাযযাক ১১৪১৬, মুজামুল আওসাত ২১৩৭, ৮২৭৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৪৪
حَدَّثَنَا
هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ مِسْعَرٍ عَنْ
قَتَادَةَ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ لِأُمَّتِي عَمَّا تُوَسْوِسُ
بِهِ صُدُورُهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ بِهِ أَوْ تَتَكَلَّمْ بِهِ وَمَا
اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
. আবূ হুরায়রা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
নিশ্চই আল্লাহ আমার উম্মাতের মনের মন্দ কল্পনা যতক্ষন না সে তা কার্যকর করে অথবা মুখে
উচ্চারণ করে এবং তার উপর বলপ্রয়োগে কৃত কর্ম উপেক্ষা করেছেন। [২০৪৪]
[২০৪৪]
সহীহুল বুখারী ২৫২৮, ৫২৬৯, ৬৬৬৪, মুসলিম ১২৭, বুখারী, মুসলিম বল প্রয়োগের কথা ব্যতীত।
তিরমিযী ১১৮৩, নাসায়ী ৩৪৩৩, ৩৪৩৪, ৩৪৩৫, আবূ দাউদ ২২০৯, আহমাদ ৮৮৬৪, ৯২১৪, ৯৭৮৬, ৯৮৭৮,
৯৯৯০, সহীহ আবী দাউদ ১৯১৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৪৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُصَفَّى الْحِمْصِيُّ حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ
حَدَّثَنَا الْأَوْزَاعِيُّ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ وَضَعَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ
وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ
আমার উম্মাতকে ভুল ,বিস্মৃতি ও জোরপূর্বক কৃত কাজের দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
[২০৪৫]
[২০৪৫]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত ৬২৮৪, রাওদুন নাদীর ৪০৪, ইরওয়াহ
৮২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ ইবনুল মুসাফফা আল-হিমসী সম্পর্কে
আবু হাতিম আর-রাযী ও ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনু হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও
অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী
তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ ও তাদলীস করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬১৩, ২৬/৪৬৫ নং
পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৪৬
-
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ
نُمَيْرٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَقَ عَنْ ثَوْرٍ عَنْ عُبَيْدِ بْنِ أَبِي
صَالِحٍ عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ شَيْبَةَ قَالَتْ حَدَّثَتْنِي عَائِشَةُ أَنَّ
رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا طَلَاقَ وَلَا عَتَاقَ فِي إِغْلَاقٍ
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
জোরপূর্বক আদায়কৃত তালাক ও দাসমুক্তি কার্যকর হবে না।[২০৪৬]
[২০৪৬]
আবূ দাউদ ২১৯৩, আহমাদ ২৫৮২৮, ইরওয়াহ ২০৪৭, সহীহ আবী দাউদ ১৯০৩। তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি
সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ।
সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী
বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল
কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা) ২. উবায়দ বিন আবু সালিহ সম্পর্কে আবু হাতিম
আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হিব্বান তার সিকাহ গ্রন্থে তার নাম
উল্লেখ করেছেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং
৫৪৪২, ২৬/৬২ নং পৃষ্ঠা) উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু উবায়দ বিন আবু সালিহ এর কারণে কারণে
সানাদটি দুর্বল। তবে সঠিক নামটি হলঃ মুহাম্মাদ বিন উবায়দ বিন আবু সালিহ। হাদিসটির ২০০
টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২ টি জাল, ২৩ টি অধিক দুর্বল, ৫১ টি দুর্বল, ৬৬ টি
হাসান, ৫৮ টি সহিহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ আবু দাউদ ২১৯৩, আহমাদ
২৫৮২৭, দারাকুতনী ৩৮৯১, ৩৮৯২, ৩৮৯৪, ৩৯৪২, ৩৯৪৩, ৩৯৪৪, ৪৩২২, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক
১১৪৫০, ১১৪৫৭, ১১৪৫৮, ১৩৮৯৭, ১৩৮৯৯, ১৫৯১৯।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১০/১৭. অধ্যায়ঃ
বিবাহের পূর্বে কোন
তালাক নেই।
২০৪৭
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ أَنْبَأَنَا عَامِرٌ الْأَحْوَلُ ح و
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ جَمِيعًا عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ
عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا طَلَاقَ فِيمَا
لَا تَمْلِكُ
আবদুল্লাহ বিন আমর
ইবনুন আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
তালাক দেয়ার অধিকার জন্মানোর আগে প্রদত্ত তালাক কার্যকর হয় না। [২০৪৭]
[২০৪৭]
তিরমিযী ১১৮১, আবূ দাউদ ২১৯০, সহীহ, ইরওয়াহ ১৭৫১, ২০৬৯, সহীহ আবী দাউদ ১৯০০, রাওদুন
নাদীর ৫৭১, আত-তা'লীকু আলাত তানকীল ২/৬২। তাহকীক আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী
১. আমির আল-আহওয়াল সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তার রেওয়াত বর্ণনায়
আম কোন অসুবিধা দেখি না। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন শু'আয়ব
আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী
তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩০৫৪, ১৪/৬৫ নং পৃষ্ঠা) ২. আব্দুর
রহমান ইবনুল হারিস সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল তাকে দুর্বল বলেছেন, অন্যত্র বলেন, তিনি
প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল।
ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আলী ইবনুল
মাদীনী তাকে দুর্বল বলেছেন। মুহাম্মাদ বিন সা'দ বলেন, তিনি সিকাহ। (তাহযীবুল কামালঃ
রাবী নং ৩৭৮৭, ১৭/৩৭ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
২০৪৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ
وَاقِدٍ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ
الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا
طَلَاقَ قَبْلَ نِكَاحٍ وَلَا عِتْقَ قَبْلَ مِلْكٍ
মিসওয়ার বিন মাখ্মারাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিন বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বিবাহের আগে
তালাক নাই এবং মালিকানা লাভের আগে দাসমুক্তি নাই। [২০৪৮]
[২০৪৮]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ৭/৩১৪, সহীহ ইরওয়াহ ৭/১৫২।
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহিহ। আলী ইবনুল হুসায়ন বিন ওয়াকীদ সম্পর্কে আবু জা'ফার আল-উকায়লী
বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায়
দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন।
(তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪০৫২, ২০/৪০৬ নং পৃষ্ঠা) ২. হিশাম বিন সা'দ সম্পর্কে আহমাদ
বিন হাম্বল বলেন, তার মুখস্তশক্তি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিস গ্রহন
করা যায় কিন্তু দলীলযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৫৭৭, ৩০/২০৪ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
২০৪৯
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَنْبَأَنَا مَعْمَرٌ عَنْ
جُوَيْبِرٍ عَنْ الضَّحَّاكِ عَنْ النَّزَّالِ بْنِ سَبْرَةَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ
أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا
طَلَاقَ قَبْلَ النِّكَاحِ
আলী বিন আবূ তালিব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বিবাহের
পূর্বে তালাক নাই। [২০৪৯]
[২০৪৯]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের
রাবী জুওয়ায়বির (বিন সাঈদ) সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল।
আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন,
তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী তাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শু'আয়ব
আন-নাসায়ী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি খুবই
দুর্বল। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৯৮৫,
৫/১৬৭ নং পৃষ্ঠা) উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু জুওয়ায়বির (বিন সাঈদ) এর কারণে সানাদটি
খুবই দুর্বল। হাদিসটির ২০০ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২ টি জাল, ২৩ টি অধিক দুর্বল,
৫১ টি দুর্বল, ৬৬ টি হাসান, ৫৮ টি সহিহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ
আবু দাউদ ২১৯৩, আহমাদ ২৫৮২৭, দারাকুতনী ৩৮৯০, ৩৮৯২, ৩৮৯৪, ৩৯৪৩, ৩৯৪৪, ৪৩২২, মুসান্নাফ
আব্দুর রাযযাক ১১৪৫০, ১১৪৫৭, ১১৪৫৮, ১৩৮৯৭, ১৩৮৯৯, ১৫৯১৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/১৮. অধ্যায়ঃ
যেসব বাক্যে তালাক
সংঘটিত হয়।
২০৫০
حَدَّثَنَا
عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدِّمَشْقِيُّ حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ
مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا الْأَوْزَاعِيُّ قَالَ سَأَلْتُ الزُّهْرِيَّ أَيُّ أَزْوَاجِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم اسْتَعَاذَتْ مِنْهُ فَقَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ
عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ ابْنَةَ الْجَوْنِ لَمَّا دَخَلَتْ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى
الله عليه وسلم فَدَنَا مِنْهَا قَالَتْ أَعُوذُ بِاللهِ مِنْكَ فَقَالَ رَسُولُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم عُذْتِ بِعَظِيمٍ الْحَقِي بِأَهْلِكِ
আওযাঈ (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
আমি যুহ্রী (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর কোন স্ত্রী তাঁর থেকে আশ্রয় চেয়েছিলেন? তিনি বলেম, উরওয়া (রাঃ) আয়িশা
(রাঃ)-এর বরাতে আমাকে অবহিত করেন যে, জাওন-এর কন্যা যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসে এবং তিনি তাঁর সান্নিধ্যে যান তখন সে বলে, আমি
আপনার থেকে আল্লাহ্র নিকট আশ্রয় চাই। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ তুমি এক সুমহান সত্তার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করেছ। অতএব তুমি তোমার
পরিবারের সাথে গিয়ে মিলিত হও (চলে যাও)। [২০৫০]
[২০৫০]
সহীহুল বুখারী ৫২৫৪, নাসায়ী ৩৪১৭, ইরওয়াহ ২০৬৪। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/১৯. অধ্যায়ঃ
চূড়ান্ত (বাত্তা)
তালাক।
২০৫১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَا حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ جَرِيرِ
بْنِ حَازِمٍ عَنْ الزُّبَيْرِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ
يَزِيدَ بْنِ رُكَانَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ
الْبَتَّةَ فَأَتَى رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ فَقَالَ مَا
أَرَدْتَ بِهَا قَالَ وَاحِدَةً قَالَ اللهِ مَا أَرَدْتَ بِهَا إِلَّا وَاحِدَةً
قَالَ اللهِ مَا أَرَدْتُ بِهَا إِلَّا وَاحِدَةً قَالَ فَرَدَّهَا عَلَيْهِ
قَالَ مُحَمَّد بْن مَاجَةَ سَمِعْت أَبَا الْحَسَنِ عَلِيَّ بْنَ مُحَمَّدٍ
الطَّنَافِسِيَّ يَقُولُ مَا أَشْرَفَ هَذَا الْحَدِيثَ قَالَ ابْن مَاجَةَ أَبُو
عُبَيْدٍ تَرَكَهُ نَاجِيَةُ وَأَحْمَدُ جَبُنَ عَنْهُ.
ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
ইয়াযীদ (রাঃ) তাঁর স্ত্রীকে চূড়ান্ত (বাত্তা) তালাক দিলেন। অতঃপর
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে তাঁকে (বিধান)
জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বলেনঃ তুমি এর দ্বারা কী নিয়াত করেছিলে? ইয়াযিদ (রাঃ) বলেন,
এক তালাকের। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ্র শপথ!
তুমি কি এক তালাকেরই নিয়াত করেছিলে? ইয়াযীদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি এক
তালাকেরই ইচ্ছা করেছিলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে
তাঁর স্ত্রী ফেরত দিলেন। [২০৫১]
[২০৫১]
তিরমিযী ১১৭৭, আবূ দাউদ ২২০৬, ২২০৮, দারেমী ২২৭২, ইরওয়াহ ২০৬৩, মিশকাত ৩২৮২। তাহকীক
আলবানীঃ যঈফ। উক্ত হাদিসের রাবী যুবায়র বিন সাঈদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন,
তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু জা'ফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ
করা যাবে না। আহমাদ বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী
বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া
আস-সাজী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৯৬৩, ৯/৩০৪ নং পৃষ্ঠা) ২. আবদুল্লাহ
বিন আলী বিন ইয়াযীদ বিন রুকানাহ সম্পর্কে আবু জা'ফার আল-উকায়লী বলেন,তিনি হাদিস বর্ণনায়
ইদতিরাব করেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি
যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ইমাম যাহাবী তাকে সিকাহ বলেছেন।
(তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৩৪, ১৫/৩২৩ নং পৃষ্ঠা) ৩. আলী বিন ইয়াযীদ বিন রুকানাহ সম্পর্কে
ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার কিছু বিষয় অজ্ঞাত। ইমাম বুখারী বলেন, তার হাদিস বিশুদ্ধ
নয়। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। (তাহযীবুল
কামালঃ রাবী নং ৪১৫২, ২১/১৭৪ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১০/২০. অধ্যায়ঃ
স্বামী তার স্ত্রীকে
তালাকের এখতিয়ার প্রদান করলে।
২০৫২
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ عَنْ الْأَعْمَشِ
عَنْ مُسْلِمٍ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ خَيَّرَنَا رَسُولُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم فَاخْتَرْنَاهُ فَلَمْ نَرَهُ شَيْئًا
আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে
(তার স্ত্রীত্বে থাকা বা তাকে ত্যাগ করার) এখতিয়ার প্রদান করেন। আমরা তাঁকেই গ্রহণ
করি। সুতরাং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একে তালাক গণ্য
করেননি। [২০৫২]
[২০৫২]
মাজাহ ২০৫৩, সহীহুল বুখারী ৪৭৮৬,৫২৬২, ৫২৬৪, মুসলিম ১৪৭৫, ১৪৭৭, তিরমিযী ১১৭৯, ৩২০৪,
নাসায়ী ৩২০১, ৩২০২, ৩২০৩, ৩৪৩৯, ৩৪৪১, ৩৪৪২, ৩৪৪৩, ৩৪৪৪, ৩৪৪৫,আবূ দাউদ ২২০৩, আহমাদ
২৩৬৬১, ২৩৭৮৮, ২৪২০০, ২৪৬৬৭, ২৪৭৭১, ২৪৮৪৮, ২৪৮৭৩, ২৪৯৯১, ২৫১৩৮, ২৫১৭৫, ২৫৪৯২, ২৫৫০৫,
২৫৫৭৭, ২৫৭৩৯, দারেমী ২২৬৯, সহীহ আবী দাউদ ১৯১৩। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৫৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَنْبَأَنَا مَعْمَرٌ عَنْ
الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ لَمَّا نَزَلَتْ {وَإِنْ
كُنْتُنَّ تُرِدْنَ اللهَ وَرَسُولَهُ} دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم فَقَالَ يَا عَائِشَةُ إِنِّي ذَاكِرٌ لَكِ أَمْرًا فَلَا عَلَيْكِ أَنْ
لَا تَعْجَلِي فِيهِ حَتَّى تَسْتَأْمِرِي أَبَوَيْكِ قَالَتْ قَدْ عَلِمَ وَاللهِ
أَنَّ أَبَوَيَّ لَمْ يَكُونَا لِيَأْمُرَانِي بِفِرَاقِهِ قَالَتْ فَقَرَأَ
عَلَيَّ {يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ
الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا} الْآيَاتِ فَقُلْتُ فِي هَذَا أَسْتَأْمِرُ
أَبَوَيَّ قَدْ اخْتَرْتُ اللهَ وَرَسُولَهُ
আয়িশাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এ আয়াতটি নাযিল হলো (অর্থানুবাদ): “যদি তোমার আল্লাহ্
ও তার রসূলের সন্তুষ্টি চাও” (সূরা আল-আহযাব ৩৩ঃ২৯), তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট প্রবেশ করে বলেন, হে আয়িশা! আমি তোমাকে একটি কথা
জিজ্ঞেস করবো। তুমি তোমার পিতা-মাতার সাথে পরামর্শ না করে সে সম্পর্কে তাড়াহুড়া
করে কিছু বলবে না। আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র শপথ! তিনি জানতেন যে, নিশ্চয়
আমার পিতা-মাতা কখনো তাঁর থেকে আমার বিচ্ছেদের পক্ষে মত দিবেন না। আয়িশাহ্ (রাঃ)
বলেন, এরপর তিনি আমাকে এ আয়াতটি পড়ে শুনান (অনুবাদ): “হে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি আপনার স্ত্রীদের বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও এর
ভূষণ চাও... (সূরা আল-আহযাব ৩৩ : ২৮)। তখন আমি বললাম, এ সম্পর্কে আমার পিতা-মাতার
সাথে আমি আর কী পরামর্শ করবো! আমি আল্লাহ্ ও তার রসূলকেই গ্রহণ করলাম। [২০৫৩]
[২০৫৩]
মাজাহ ২০৫২, সহীহুল বুখারী ৪৭৮৬,৫২৬২, ৫২৬৪, মুসলিম ১৪৭৫, ১৪৭৭, তিরমিযী ১১৭৯, ৩২০৪,
নাসায়ী ৩২০১, ৩২০২, ৩২০৩, ৩৪৩৯, ৩৪৪১, ৩৪৪২, ৩৪৪৩, ৩৪৪৪, ৩৪৪৫,আবূ দাউদ ২২০৩, আহমাদ
২৩৬৬১, ২৩৭৮৮, ২৪২০০, ২৪৬৬৭, ২৪৭৭১, ২৪৮৪৮, ২৪৮৭৩, ২৪৯৯১, ২৫১৩৮, ২৫১৭৫, ২৫৪৯২, ২৫৫০৫,
২৫৫৭৭, ২৫৭৩৯, দারেমী ২২৬৯, তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/২১. অধ্যায়ঃ না
নারীর জন্য খোলা
তালাক নিন্দনীয়।
২০৫৪
حَدَّثَنَا
بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ أَبُو بِشْرٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ عَنْ جَعْفَرِ بْنِ
يَحْيَى بْنِ ثَوْبَانَ عَنْ عَمِّهِ عُمَارَةَ بْنِ ثَوْبَانَ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ
ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا تَسْأَلُ
الْمَرْأَةُ زَوْجَهَا الطَّلَاقَ فِي غَيْرِ كُنْهِهِ فَتَجِدَ رِيحَ الْجَنَّةِ
وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে
স্ত্রীলোক একান্ত অনন্যোপায় অবস্থা ছাড়া, স্বামীর নিকট তালাক দাবি করে, সে
জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ চল্লিশ বছরের (পথের) দূরত্ব
থেকে পাওয়া যাবে। [২০৫৪]
[২০৫৪]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইরওয়াহ ৭/১০১, যঈফাহ ৪৭৭৭, যইফ আল-জামি'
৬২১। তাহকীক আলবানীঃ যঈফ। উক্ত হাদিসের রাবী উমারাহ বিন সাওবান সম্পর্কে আবুল হাসান
ইবনুল কাত্তান বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার
কিছু বিষয় অজ্ঞাত। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত।
আবদুল হাক বিন আব্দুর রহমান বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৭৭,
২১/২৩১ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২০৫৫
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ الْأَزْهَرِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ عَنْ حَمَّادِ
بْنِ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ أَبِي قِلَابَةَ عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ عَنْ
ثَوْبَانَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّمَا امْرَأَةٍ
سَأَلَتْ زَوْجَهَا الطَّلَاقَ فِي غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا
رَائِحَةُ الْجَنَّةِ
সাওবান (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন , রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
যে নারী তার স্বামীর কাছে একান্ত অসুবিধা ছাড়া তালাক দাবি করে, তার জন্য জান্নাতের
সুঘ্রাণ হারাম। [২০৫৫]
[২০৫৫]
তিরমিযী ১১৮৬, ১১৮৭, আবূ দাউদ ২২২৬, আহমাদ ২১৮৭৪, ২১৯৩৪, দারেমী ২২৭০, ইরওয়াহ ২১৩৫,
মিশকাত ৩২৭৯, সহীহ আবী দাউদ ১৯২৮। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/২২. অধ্যায়ঃ
খোলা তালাক
দাবিকারিনী স্ত্রীকে প্রদত্ত সম্পদ ফেরত নেয়া প্রসঙ্গে।
২০৫৬
حَدَّثَنَا
أَزْهَرُ بْنُ مَرْوَانَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْأَعْلَى بْنُ عَبْدِ الْأَعْلَى
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ
ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ جَمِيلَةَ بِنْتَ سَلُولَ أَتَتْ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَتْ وَاللهِ مَا أَعْتِبُ عَلَى ثَابِتٍ فِي دِينٍ وَلَا خُلُقٍ
وَلَكِنِّي أَكْرَهُ الْكُفْرَ فِي الْإِسْلَامِ لَا أُطِيقُهُ بُغْضًا فَقَالَ
لَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَتَرُدِّينَ عَلَيْهِ حَدِيقَتَهُ قَالَتْ
نَعَمْ فَأَمَرَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَأْخُذَ مِنْهَا
حَدِيقَتَهُ وَلَا يَزْدَادَ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালূল-কন্যা জামীলা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট এসে বলেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি সাবিতের দ্বীনদারী ও চরিত্রের
ব্যাপারে কোন ত্রুটির অভিযোগ করছি না। কিন্তু আমি দ্বীন ইসলামে (থেকে) কুফরি আচরণ
অপছন্দ করি। আমি যে তাকে মনের দিক থেকে মোটেই বরদাশত করতে পারছি না। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেনঃ তুমি কি সাবিতের দেয়া বাগানটি ফেরত
দিবে? তিনি বলেন, হাঁ। অতএব রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাবিত
(রাঃ)-কে তার থেকে বাগানটি ফেরত নিতে বলেন এবং অতিরিক্ত কিছু নিতে বারণ করেন।
[২০৫৬]
[২০৫৬]
সহীহুল বুখারী ৫২৭৩, ৫২৭৫, ৫২৭৭, নাসায়ী ৩৪৬৩, ইরওয়াহ ২০৩৬, সহীহ আবী দাউদ, ১৯২৯। তাহকীক
আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৫৭
حَدَّثَنَا
أَبُو كُرَيْبٍ حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الْأَحْمَرُ عَنْ حَجَّاجٍ عَنْ عَمْرِو
بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ كَانَتْ حَبِيبَةُ بِنْتُ سَهْلٍ
تَحْتَ ثَابِتِ بْنِ قَيْسِ بْنِ شَمَّاسٍ وَكَانَ رَجُلًا دَمِيمًا فَقَالَتْ يَا
رَسُولَ اللهِ وَاللهِ لَوْلَا مَخَافَةُ اللهِ إِذَا دَخَلَ عَلَيَّ لَبَصَقْتُ
فِي وَجْهِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَتَرُدِّينَ عَلَيْهِ
حَدِيقَتَهُ قَالَتْ نَعَمْ فَرَدَّتْ عَلَيْهِ حَدِيقَتَهُ قَالَ فَفَرَّقَ
بَيْنَهُمَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
আবদুল্লাহ বিন আমর
ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাহল কন্যা হাবীবা (রাঃ) সাবিত বিন কায়স বিন সামমাস (রাঃ)
এর স্ত্রী ছিলেন। সাবিত (রাঃ) ছিলেন কুৎসিত চেহারাবিশিষ্ট। হাবিবা (রাঃ) বলেন, হে
আল্লাহ্র রসুল! আল্লাহ্র শপথ! আল্লাহর ভয় না থাকলে সাবিত যখন আমার নিকট আসে তখন
অবশ্যই আমি তার মুখে থুথু নিক্ষেপ করতাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ তুমি কি তার বাগানটি ফেরত দিতে রাজি আছো? তিনি বলেন, হাঁ। রাবী
বলেন, তিনি তার বাগানটি তাকে ফেরত দিলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাদের দু’জনকে পৃথক করে দিলেন। [২০৫৭]
[২০৫৭]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইরওয়াহ ৭/১০৩/২০৩৭। সহীহ আবু দাউদ
১৯২৯। তাহকীক আলবানীঃ যঈফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১.আবু খালিদ আল আহমার সম্পর্কে ইয়াহইয়া
বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন,
তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই।
ইবনু আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সালেহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ ও ভুল করেন।
(তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা) ২. হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু
আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন,
তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়, অন্যত্র তিনি তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ
আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সা'দ তাকে
দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল তার হাদিস দ্বারা দলীল
গ্রহনযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/২৩. অধ্যায়ঃ
খোলাকারিনী মহিলার
ইদ্দাত।
২০৫৮
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ سَلَمَةَ النَّيْسَابُورِيُّ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ
بْنِ سَعْدٍ حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ ابْنِ إِسْحَقَ أَخْبَرَنِي عُبَادَةُ بْنُ
الْوَلِيدِ بْنِ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ عَنْ الرُّبَيِّعِ بِنْتِ مُعَوِّذِ
ابْنِ عَفْرَاءَ قَالَ قُلْتُ لَهَا حَدِّثِينِي حَدِيثَكِ قَالَتْ اخْتَلَعْتُ
مِنْ زَوْجِي ثُمَّ جِئْتُ عُثْمَانَ فَسَأَلْتُ مَاذَا عَلَيَّ مِنْ الْعِدَّةِ
فَقَالَ لَا عِدَّةَ عَلَيْكِ إِلَّا أَنْ يَكُونَ حَدِيثَ عَهْدٍ بِكِ
فَتَمْكُثِينَ عِنْدَهُ حَتَّى تَحِيضِينَ حَيْضَةً قَالَتْ وَإِنَّمَا تَبِعَ فِي
ذَلِكَ قَضَاءَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي مَرْيَمَ الْمَغَالِيَّةِ
وَكَانَتْ تَحْتَ ثَابِتِ بْنِ قَيْسٍ فَاخْتَلَعَتْ مِنْهُ
উবাদাহ থেকে
বর্ণিতঃ
আমি মু’আব্বিয বিন আফরা’র কন্যা রুবায়’ (রাঃ)-কে বললাম, তুমি তোমার ঘটনাটি
আমাকে বলো তো। সে বললো, আমি আমার স্বামীর থেকে খোলা তালাক নিয়েছিলাম। অতঃপর আমি
উসমান (রাঃ)-এর নিকট এসে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে কিরূপে ইদ্দাত পালন করতে হবে?
তিনি বলেন, তোমাকে কোন ইদ্দাত পালন করতে হবে না। তবে তোমার স্বামী খুব কাছাকাছি
সময়ে তোমার সাথে সহবাস করে থাকলে তোমাকে তার নিকট এক হায়িদ কাল থাকতে হবে। রুবাই
(রাঃ) বলেন, উসমান (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সেই
সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেছেন, যা তিনি মারইয়াম আল-মাগালিয়ার ব্যাপারে দিয়েছিলেন। তিনি
ছিলেন সাবিত বিন কায়স (রাঃ) এর স্ত্রী এবং তিনি স্বামী থেকে খোলা তালাক নিয়েছিলেন।
[২০৫৮]
[২০৫৮]
নাসায়ী ৩৪৯৮, সহীহ আবী দাউদ ১৯৩১, বায়হাকী ৭/৩৩৭। তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত
হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ।
আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান
বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি
আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ
রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
১০/২৪. অধ্যায়ঃ
ঈলা (স্ত্রীসহবাস না
করার শপথ) ।
২০৫৯
حَدَّثَنَا
هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي الرِّجَالِ عَنْ
أَبِيهِ عَنْ عَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ أَقْسَمَ رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم أَنْ لَا يَدْخُلَ عَلَى نِسَائِهِ شَهْرًا فَمَكَثَ تِسْعَةً
وَعِشْرِينَ يَوْمًا حَتَّى إِذَا كَانَ مِسَاءَ ثَلَاثِينَ دَخَلَ عَلَيَّ
فَقُلْتُ إِنَّكَ أَقْسَمْتَ أَنْ لَا تَدْخُلَ عَلَيْنَا شَهْرًا فَقَالَ
الشَّهْرُ هَكَذَا يُرْسِلُ أَصَابِعَهُ فِيهَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَالشَّهْرُ
هَكَذَا وَأَرْسَلَ أَصَابِعَهُ كُلَّهَا وَأَمْسَكَ إِصْبَعًا وَاحِدًا فِي
الثَّالِثَةِ
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই মর্মে
শপথ করেন, একমাস যাবত তার স্ত্রীদের সংস্পর্শে যাবেন না। তিনি একাধারে উনত্রিশ দিন
এভাবে কাটিয়ে দিলেন। অবশেষে তিরিশ দিনের সন্ধ্যা হলে তিনি আমার নিকট আসেন। আমি
বললাম, আপনি তো শপথ করেছিলেন যে, আপনি একমাস আমাদের সংস্পর্শে আসবেন না। তিনি
বলেনঃ মাস এভাবেও হয়। তিনি তাঁর দু’হাতের আঙ্গুলসমূহ তিনবার সম্পূর্ণ উন্মুক্ত
রেখে ইশারায় বলেনঃ মাস এভাবেও হয়, তিনি পুনরায় (দু’বার পূর্বোক্ত নিয়মে দেখান)
কিন্তু তিনি তৃতীয় বারে তিনি একটি আঙ্গুল মুষ্টিবদ্ধ রাখেন (অর্থাৎ মাস উনতিরিশ
দিনেও হয়)। [২০৫৯]
[২০৫৯]
আহমাদ ২৩৫৩০, তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী আব্দুর রহমান বিন আবু রিজাল
সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ
বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস
বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮১৩, ১৯/৩৭৪ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
২০৬০
حَدَّثَنَا
سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ
عَنْ حَارِثَةَ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ عَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ
صلى الله عليه وسلم إِنَّمَا آلَى لِأَنَّ زَيْنَبَ رَدَّتْ عَلَيْهِ هَدِيَّتَهُ
فَقَالَتْ عَائِشَةُ لَقَدْ أَقْمَأَتْكَ فَغَضِبَ صلى الله عليه وسلم فَآلَى
مِنْهُنَّ.
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যায়নব (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) প্রদত্ত উপঢৌকন তাঁকে ফেরত দেওয়ার কারনে তিনি ঈলা করেছিলেন। আয়িশা (রাঃ)
বলেছিলেন, যায়নব তো আপনাকে আপমান করেছে! এতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) অসুন্তুষ্ট হন এবং তাদের সংস্পর্শে না আশার শপথ (ঈলা) করেন। [২০৬০]
[২০৬০]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ যঈফ। তা’লীক, ইবনু
মাজাহ। উক্ত হাদিসের রাবী হারিসাহ বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল দুর্বল
বলেছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায়
মুনকার। আবু যুরআহ আর-রাযী তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি
হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ও মুনকার। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, কোন সমস্যা নেই।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২০৬১
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ يُوسُفَ السُّلَمِيُّ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ
عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ صَيْفِيٍّ عَنْ عِكْرِمَةَ
بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم آلَى مِنْ بَعْضِ نِسَائِهِ شَهْرًا فَلَمَّا كَانَ تِسْعَةً وَعِشْرِينَ
رَاحَ أَوْ غَدَا فَقِيلَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّمَا مَضَى تِسْعٌ وَعِشْرُونَ
فَقَالَ الشَّهْرُ تِسْعٌ وَعِشْرُونَ
উম্মু সালামাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কতক
স্ত্রীর সংস্পর্শে না আসার জন্য এক মাসের ঈলা করেছিলেন। উনতিরিশ দিন অতিবাহিত
হওয়ার পর বিকালে অথবা সকালে তিনি (স্ত্রীদের নিকট) আসেন। বলা হলো, হে আল্লাহ্র
রসূল! ঊনতিরিশ দিন তো অতিবাহিত হয়েছে? তিনি বললেন, মাস ঊনতিরিশ দিনেও হয়। [২০৬১]
[২০৬১]
সহীহুল বুখারী ১৯১০, মুসলিম ১০৮৫, আহমাদ ২৬১৪৩, তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/২৫. অধায়ঃ
যিহার প্রসঙ্গে।
২০৬২
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ نُمَيْرٍ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَقَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ
عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ صَخْرٍ الْبَيَاضِيِّ قَالَ
كُنْتُ امْرَأً أَسْتَكْثِرُ مِنْ النِّسَاءِ لَا أَرَى رَجُلًا كَانَ يُصِيبُ
مِنْ ذَلِكَ مَا أُصِيبُ فَلَمَّا دَخَلَ رَمَضَانُ ظَاهَرْتُ مِنْ امْرَأَتِي
حَتَّى يَنْسَلِخَ رَمَضَانُ فَبَيْنَمَا هِيَ تُحَدِّثُنِي ذَاتَ لَيْلَةٍ
انْكَشَفَ لِي مِنْهَا شَيْءٌ فَوَثَبْتُ عَلَيْهَا فَوَاقَعْتُهَا فَلَمَّا
أَصْبَحْتُ غَدَوْتُ عَلَى قَوْمِي فَأَخْبَرْتُهُمْ خَبَرِي وَقُلْتُ لَهُمْ
سَلُوا لِي رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا مَا كُنَّا نَفْعَلُ إِذًا
يُنْزِلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِينَا كِتَابًا أَوْ يَكُونَ فِينَا مِنْ رَسُولِ
اللهِ صلى الله عليه وسلم قَوْلٌ فَيَبْقَى عَلَيْنَا عَارُهُ وَلَكِنْ سَوْفَ
نُسَلِّمُكَ لِجَرِيرَتِكَ اذْهَبْ أَنْتَ فَاذْكُرْ شَأْنَكَ لِرَسُولِ اللهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ فَخَرَجْتُ حَتَّى جِئْتُهُ فَأَخْبَرْتُهُ الْخَبَرَ
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْتَ بِذَاكَ فَقُلْتُ أَنَا بِذَاكَ
وَهَا أَنَا يَا رَسُولَ اللهِ صَابِرٌ لِحُكْمِ اللهِ عَلَيَّ قَالَ فَأَعْتِقْ
رَقَبَةً قَالَ قُلْتُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أَصْبَحْتُ أَمْلِكُ
إِلَّا رَقَبَتِي هَذِهِ قَالَ فَصُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ قُلْتُ
يَا رَسُولَ اللهِ وَهَلْ دَخَلَ عَلَيَّ مَا دَخَلَ مِنْ الْبَلَاءِ إِلَّا
بِالصَّوْمِ قَالَ فَتَصَدَّقْ أَوْ أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ قُلْتُ
وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لَقَدْ بِتْنَا لَيْلَتَنَا هَذِهِ مَا لَنَا
عَشَاءٌ قَالَ فَاذْهَبْ إِلَى صَاحِبِ صَدَقَةِ بَنِي زُرَيْقٍ فَقُلْ لَهُ
فَلْيَدْفَعْهَا إِلَيْكَ وَأَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا وَانْتَفِعْ
بِبَقِيَّتِهَا
সালামাহ বিন সাখর
আল-বায়াদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নারীদের প্রতি অধিক আসক্ত ছিলাম। অন্য পুরুষের তুলনায়
আমি তাদের সাথে বেশি সহবাসে লিপ্ত হতাম। রমাদান মাস শুরু হলে আমি আমার স্ত্রীর
সাথে যিহার করলাম। রমাদান মাস প্রায় শেষ হতে যাচ্ছে। একদা রাতের বেলা সে আমার সাথে
কথাবার্তা বলছিল তখন তার দেহের একটি অংশ আমার সামনে উন্মক্ত হয়ে গেলো। আমি তার উপর
ঝাপিয়ে পড়লাম এবং তার সাথে সহবাস করলাম। ভোর হলে আমি সকাল সকাল আমার সম্প্রদায়ের
লোকদের নিকট উপস্থিত হয়ে তাদেরকে আমার ঘটনাটি জানালাম। আমি তাদের বললাম, তোমারা
আমার ব্যাপারে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করো।
তারা বললো, আমরা তা করতে পারবো না। হয়ত বা আল্লাহ্ আমাদের সম্পর্কে কিতাব
(কুরআনের আয়াত) নাযিল করবেন অথবা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাদেরকে এমন কিছু বলবেন, যা আমাদের জন্য লজ্জার কারন হয়ে থাকবে। বরং আমরা তোমার
অপরাধসহ তোমাকে সোপর্দ করবো। তুমি নিজেই গিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর নিকট তোমার ঘটনাটি বলো। রাবী বলেন, আমি রওয়ানা হয়ে তাঁর নিকট
উপস্থিত হয়ে আমার বিষয়টি তাঁকে জানালাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন, তুমি এটা করেছো? আমি বললাম, আমিই এটা করেছি। আমি এখানে আছি হে
আল্লাহ্র রসূল! আমার প্রতি আল্লাহ্র যে হুকুম হয় তাতে আমি ধৈর্য ধারণ করবো। তিনি
বলেন, একটি গোলামকে দাসত্বমুক্ত করো। আমি বললাম সেই সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে
সত্যসহ পাঠিয়েছেন! আমি আমার দেহটি ছাড়া আর কিছুর মালিক নই। তিনি বলেনঃ তাহলে
একাধারে দুমাস সিয়াম রাখো। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার উপর যে বিপদ এসেছে তা
তে এই রোযার কারণেই। তিনি বলেন, তাহলে দান-খয়রাত করো অথবা ষাটজন মিসকিনকে আহার
করাও। রাবী বলেন, আমি বললাম, সেই সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন! আমরা
এ রাতটি নিরন্ন অবস্থায় অতিবাহিত করেছি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন, তুমি বনু যুরাইক-এর যাকাত বণ্টনকারীর নিকট যাও এবং তাঁকে বলো, সে
যেন তোমাকে যাকাতের কিছু মাল দান করে। তা দিয়ে তুমি ষাটজন মিসকিনকে আহার করাও এবং
অবশিষ্ট যা থাকে তা নিজের উপকারে লাগাও। [২০৬২]
[২০৬২]
ইবনু মাজাহ ২০৬৪, তিরমিযী ১১৯৮, ১২০০, ৩২৯৯, আবূ দাউদ ২২১৩, আহমাদ ২৩১৮৮, দারেমী ২২৭৩,
ইরওয়াহ ২০৯১, সহীহআবী দাউদ ১৯১৭। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া
বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী
ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি
মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি
হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৬৩
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُبَيْدَةَ
حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ الْأَعْمَشِ عَنْ تَمِيمِ بْنِ سَلَمَةَ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ
الزُّبَيْرِ قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ تَبَارَكَ الَّذِي وَسِعَ سَمْعُهُ كُلَّ
شَيْءٍ إِنِّي لَأَسْمَعُ كَلَامَ خَوْلَةَ بِنْتِ ثَعْلَبَةَ وَيَخْفَى عَلَيَّ
بَعْضُهُ وَهِيَ تَشْتَكِي زَوْجَهَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
وَهِيَ تَقُولُ يَا رَسُولَ اللهِ أَكَلَ شَبَابِي وَنَثَرْتُ لَهُ بَطْنِي حَتَّى
إِذَا كَبِرَتْ سِنِّي وَانْقَطَعَ وَلَدِي ظَاهَرَ مِنِّي اللّٰهُمَّ إِنِّي
أَشْكُو إِلَيْكَ فَمَا بَرِحَتْ حَتَّى نَزَلَ جِبْرَائِيلُ بِهَؤُلَاءِ
الْآيَاتِ {قَدْ سَمِعَ اللهُ قَوْلَ الَّتِي تُجَادِلُكَ فِي زَوْجِهَا
وَتَشْتَكِي إِلَى اللهِ}
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
বরকতময় সেই সত্তা যার শ্রবণশক্তি সব কিছুতে পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে। আমি
সা’লাবার কন্যা খাওলা (রাঃ) এর কিছু কথা শুনলাম এবং কিছু কথা আমার অজ্ঞাত থেকে
যায়। তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট তার স্বামীর
বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করেন। তিনি বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! সে আমার যৌবন উপভোগ
করেছে এবং আমি আমার পেট থেকে তাঁকে অনেক সন্তান উপহার দিয়েছি। অবশেষে আমি যখন
বার্ধক্যে উপনীত হলাম এবং সন্তানদানে অক্ষম হলাম, তখন সে আমার সাথে যিহার করেছে।
হে আল্লাহ্! আমি তোমার দরবারে আমার অভিযোগ পেশ করছি। অতঃপর বেশি সময় অতিবাহিত না
হতেই জিবরাঈল (আঃ) এ আয়াতগুলো নিয়ে অবতরণ করলেন (অনুবাদ)ঃ “আল্লাহ্ অবশ্যই
শুনেছেন সেই নারীর কথা, যে নিজের স্বামীর বিষয়ে তোমার সাথে বাদানুবাদ করছে এবং
আল্লাহ্র নিকট ফরিয়াদ করছে...” (সুরা মজাদালাহঃ ১)[২০৬৩]
[২০৬৩]
ইবনু মাজাহ ১৮৮, নাসায়ী ৩৪৬০, ইরওয়াহ ৭/১৭৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/২৬. অধ্যায়ঃ
যিহারকারী কাফফারা
আদায়ের পূর্বে সহবাসে লিপ্ত হলে।
২০৬৪
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللهِ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ إِدْرِيسَ عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ إِسْحَقَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ
يَسَارٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ صَخْرٍ الْبَيَاضِيِّ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم فِي الْمُظَاهِرِ يُوَاقِعُ قَبْلَ أَنْ يُكَفِّرَ قَالَ كَفَّارَةٌ
وَاحِدَةٌ
সালামাহ বিন সখর
আল-বাদায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কাফফারা আদায়ের পূর্বে সহবাসে লিপ্ত হওয়া যিহারকারী সম্পর্কে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, একই কাফফারা হবে (অর্থাৎ সহবাসের জন্য
স্বতন্ত্র কাফফারা হবে না)। [২০৬৪]
[২০৬৪]
ইবনু মাজাহ ২০৬২, তিরমিযী ১১৯৮, ১২০০, ৩২৯৯, আবূ দাউদ ২২১৩, আহমাদ ২৩১৮৮, দারেমী ২২৭৩,
মুখতাসারুল হাদীস (২০৬২)। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক
সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি
হাসানুল হাদিস। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান
বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায়
নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫
নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৬৫
حَدَّثَنَا
الْعَبَّاسُ بْنُ يَزِيدَ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الْحَكَمِ
بْنِ أَبَانَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَجُلًا ظَاهَرَ مِنْ
امْرَأَتِهِ فَغَشِيَهَا قَبْلَ أَنْ يُكَفِّرَ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ مَا حَمَلَكَ عَلَى ذَلِكَ قَالَ يَا رَسُولَ
اللهِ رَأَيْتُ بَيَاضَ حِجْلَيْهَا فِي الْقَمَرِ فَلَمْ أَمْلِكْ نَفْسِي أَنْ
وَقَعْتُ عَلَيْهَا فَضَحِكَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَمَرَهُ أَلَّا
يَقْرَبَهَا حَتَّى يُكَفِّرَ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে যিহার করে এবং কাফফারা
আদায়ের পূর্বে তার সাথে সহবাস করে। অতপর সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বিষয়টি তাঁকে অবহিত করে। তিনি বলেন, এরূপ করতে
তোমাকে কিসে প্ররোচিত করলো! সে বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! চাঁদের আলোতে আমি তার
পদদ্বয়ের মলের উজ্জ্বল্য দেখে ফেলি এবং নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে তার সাথে
সহবাস করে বসি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার বর্ণনা শুনে
হাসলেন এবং তাঁকে কাফফারা আদায় না করা পর্যন্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস না করার নির্দেশ
দিলেন। [২০৬৫]
[২০৬৫]
তিরমিযী ১১৯৯, নাসায়ী ৩৪৫৭, ৩৪৫৮, ৩৪৫৯, আবূ দাউদ ২২২১, ২২২২, ইরওয়াহ ৭/১৭৯। তাহকীক
আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আব্বাস বিন ইয়াযীদ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী
বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল
করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মাসলামাহ
ইবনুল কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। (তাহযীবুল
কামালঃ রাবী নং ৩১৪৬, ১৪/২৬১ নং পৃষ্ঠা) ২. হাকাম বিন আবান সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন
আদী আল-জুরজানী বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস
বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন, তিনি সত্যবাদী।
আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে
হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৪২২, ৭/৮৬ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১০/২৭. অধ্যায়ঃ
লিআন ( অভিশাপযুক্ত
শপথ )।
২০৬৬
حَدَّثَنَا
أَبُو مَرْوَانَ الْعُثْمَانِيُّ مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ
السَّاعِدِيِّ قَالَ جَاءَ عُوَيْمِرٌ إِلَى عَاصِمِ بْنِ عَدِيٍّ فَقَالَ سَلْ
لِي رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَرَأَيْتَ رَجُلًا وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِهِ
رَجُلًا فَقَتَلَهُ أَيُقْتَلُ بِهِ أَمْ كَيْفَ يَصْنَعُ فَسَأَلَ عَاصِمٌ
رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذَلِكَ فَعَابَ رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم الْمَسَائِلَ ثُمَّ لَقِيَهُ عُوَيْمِرٌ فَسَأَلَهُ فَقَالَ مَا
صَنَعْتَ فَقَالَ صَنَعْتُ أَنَّكَ لَمْ تَأْتِنِي بِخَيْرٍ سَأَلْتُ رَسُولَ
اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَابَ الْمَسَائِلَ فَقَالَ عُوَيْمِرٌ وَاللهِ
لَآتِيَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَأَسْأَلَنَّهُ فَأَتَى رَسُولَ
اللهِ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدَهُ وَقَدْ أُنْزِلَ عَلَيْهِ فِيهِمَا فَلَاعَنَ
بَيْنَهُمَا قَالَ عُوَيْمِرٌ وَاللهِ لَئِنْ انْطَلَقْتُ بِهَا يَا رَسُولَ اللهِ
لَقَدْ كَذَبْتُ عَلَيْهَا قَالَ فَفَارَقَهَا قَبْلَ أَنْ يَأْمُرَهُ رَسُولُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم فَصَارَتْ سُنَّةً فِي الْمُتَلَاعِنَيْنِ ثُمَّ قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم انْظُرُوهَا فَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أَسْحَمَ أَدْعَجَ
الْعَيْنَيْنِ عَظِيمَ الْأَلْيَتَيْنِ فَلَا أُرَاهُ إِلَّا قَدْ صَدَقَ
عَلَيْهَا وَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أُحَيْمِرَ كَأَنَّهُ وَحَرَةٌ فَلَا أُرَاهُ
إِلَّا كَاذِبًا قَالَ فَجَاءَتْ بِهِ عَلَى النَّعْتِ الْمَكْرُوهِ
উয়ায়মির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
উয়ায়মির (রাঃ), আসিম বিন আদী (রাঃ)-এর নিকট এসে বলেন, আপনি আমার পক্ষ
থেকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করুন যে, কোন
ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীর সাথে অপর কোন পুরুষ লোককে পেয়ে তাঁকে হত্যা করে, তাহলে কি
এই প্রতিশোধে তাকেও হত্যা করা হবে অথবা কী করা হবে? আসিম (রাঃ) এ ব্যাপারে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশ্নকারির প্রশ্ন অপছন্দ করেন।
উয়াইমির (রাঃ) আসিম (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি
করেছেন? আসিম (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করেছি। তুমি কোন শুভ বিষয় আমার নিকট
পৌছাওনি। আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করলে তিনি
তা অপছন্দ করেন। উয়াইমির (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি অবশ্যই রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সম্পর্কে তাঁকে
জিজ্ঞেস করবো। অতএব তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট
পৌছে দেখেন যে, এইমাত্র তাদের ব্যাপারে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর উপর ওহি নাযিল হয়েছে। তিনি তাদের উভয়কে লিআন করান। উয়াইমির (রাঃ)
বলেন, আল্লাহ্র শপথ, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি যদি তাঁকে নিয়ে (স্ত্রী হিসেবে) বাড়ি
যাই, তাহলে আমি তার ওপর যেনার মিথ্যা অভিযোগ আরোপকারী সাব্যস্ত হব। এই বলে তিনি
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নির্দেশ দানের আগেই তাকে তালাক
দেন। পরবর্তীতে লিআনকারীদ্বয়ের ব্যাপারে এটাই বিধানরূপে ধার্য হয়। এরপর নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা এই নারীর প্রতি লক্ষ্য রাখো। সে যদি
কৃষ্ণকায়, বড় চোখবিশিষ্ট ও মোটা নিতম্ববিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে, তবে আমি মনে করবো
যে, উয়াইমির সত্যবাদী। আর যদি সে এমন লাল বর্ণের সন্তান প্রসব করে, যা মনে হয় লাল
রঙের কীট, তবে আমি মনে করবো যে, উয়াইমির মিথ্যাবাদী। রাবী বলেন, সেই নারী একটি
কৃষ্ণকায় সন্তান প্রসব করেছিল।[২০৬৬]
[২০৬৬]
সহীহুল বুখারী ৪২৩, ৪৭৪৫, ৪৭৪৬, ৫২৫৯, ৫৩০৮, ৫৩০৯, ৬৮৫৪, ৭১৬৬, ৭৩০৪, মুসলিম ১৪৯২,
নাসায়ী ৩৪০২, ৩৪৬৬, আবূ দাউদ ২২৪৫, ২২৪৮, ২২৫১, আহমাদ ২২৩২০, ২২৩৩০, ২২৩৪৪, ২২৩৪৬,
মুয়াত্তা মালেক ১২০১, দারেমী ২২২৯, ইরওয়া ২১০০ সহীহ, আবী দাউদ ১৯৪২-১৯৪৯। তাহকীক আলবানীঃ
সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল-উসমানী সম্পর্কে আবু হাতিম
আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন
ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী
তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইমাম বুখারী তাকে সত্যবাদী বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী
নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৬৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ أَنْبَأَنَا هِشَامُ بْنُ
حَسَّانَ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ هِلَالَ بْنَ أُمَيَّةَ
قَذَفَ امْرَأَتَهُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِشَرِيكِ ابْنِ
سَحْمَاءَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْبَيِّنَةَ أَوْ حَدٌّ فِي
ظَهْرِكَ فَقَالَ هِلَالُ بْنُ أُمَيَّةَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ إِنِّي
لَصَادِقٌ وَلَيُنْزِلَنَّ اللهُ فِي أَمْرِي مَا يُبَرِّئُ ظَهْرِي قَالَ
فَنَزَلَتْ {وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ
إِلَّا أَنْفُسُهُمْ حَتَّى بَلَغَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللهِ عَلَيْهَا
إِنْ كَانَ مِنْ الصَّادِقِينَ} فَانْصَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فَأَرْسَلَ إِلَيْهِمَا فَجَاءَا فَقَامَ هِلَالُ بْنُ أُمَيَّةَ فَشَهِدَ
وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِنَّ اللهَ يَعْلَمُ أَنَّ أَحَدَكُمَا
كَاذِبٌ فَهَلْ مِنْ تَائِبٍ ثُمَّ قَامَتْ فَشَهِدَتْ فَلَمَّا كَانَ عِنْدَ
الْخَامِسَةِ {أَنَّ غَضَبَ اللهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنْ الصَّادِقِينَ}
قَالُوا لَهَا إِنَّهَا لَمُوجِبَةٌ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَتَلَكَّأَتْ
وَنَكَصَتْ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهَا سَتَرْجِعُ فَقَالَتْ وَاللهِ لَا أَفْضَحُ
قَوْمِي سَائِرَ الْيَوْمِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم انْظُرُوهَا
فَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أَكْحَلَ الْعَيْنَيْنِ سَابِغَ الْأَلْيَتَيْنِ خَدَلَّجَ
السَّاقَيْنِ فَهُوَ لِشَرِيكِ ابْنِ سَحْمَاءَ فَجَاءَتْ بِهِ كَذَلِكَ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْلَا مَا مَضَى مِنْ كِتَابِ اللهِ عَزَّ
وَجَلَّ لَكَانَ لِي وَلَهَا شَأْنٌ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হিলাল বিন উমাইয়্যা (রাঃ) তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট শরীক বিন সাহমার সাথে যেনায় লিপ্ত
হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ প্রমাণ
পেশ করো অন্যথায় তোমার পিঠে হদ্দ কার্যকর হবে। হেলাল বিন উমাইয়্যা (রাঃ) বলেন, সেই
সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য দীনসহ পাঠিয়েছেন। আমি অবশ্যই সত্যবাদী এবং আল্লাহ্
আমার অভিযোগের ব্যাপারে এমন বিধান নাযিল করবেন, যা আমার পিঠকে হদ্দ থেকে রক্ষা
করবে। তখন এই আয়াত নাযিল হলো (অনুবাদ) “ আর যারা নিজেদের স্ত্রীর প্রতি যেনার
অপবাদ আরোপ করে অথচ নিজেরা ব্যতীত তাদের কোন সাক্ষী নাই, তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য
এই হবে যে, সে আল্লাহ্র নামে চারবার শপথ করে বলবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী এবং
পঞ্চমবারে বলবে, সে মিথ্যাবাদী হলে তার উপর নেমে আসবে আল্লাহ্র লানত” (সূরা নূরঃ
৬৭)। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুখ ফিরিয়ে তাদের দু’জনকে ডেকে
পাঠান। তারা উপস্থিত হলে প্রথমে হেলাল বিন উমাইয়্যা (রাঃ) দাড়িয়ে শপথ করেন এবং নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ অবশ্যই জানেন যে, তোমাদের মধ্যে
একজন মিথ্যাবাদী। অতএব কেও তওবা করবে কি? অতঃপর স্ত্রীলোক দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দিলো।
পঞ্চমবারে সে যখন বলতে যাচ্ছিল যে, সে (স্বামী) সত্যবাদী হলে তার নিজের উপর
আল্লাহ্র গযব পতিত হোক, তখন লোকেরা তাকে বলল, এটি কিন্তু অবধারিতকারী বাক্য। বিন
আব্বাস (রাঃ) বলেন, সেই নারী তখন আর কিছু না বলে থেমে গিয়ে পিছনে হটে গেলো। শেষে আমরা
মনে করলাম সে হয়তো ফিরে যাবে (বিরত থাকবে)। কিন্তু সে বললো, আল্লাহ্র শপথ! আমি
আমার সম্প্রদায়কে চিরদিনের জন্য কালিমালিপ্ত করতে পারি না। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা তার প্রতি লক্ষ্য রেখো। সে যদি সুরমাদীপ্ত চোখ,
মাংসল নিতম্ব ও মাংসল পদযুগলবিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে তবে এটি শরীক বিন সাহমার।
অতঃপর সে এই ধরণের সন্তানই প্রসব করলো। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্র কিতাবে আগেই যদি (লিআনকারীর) বিধান না দেয়া থাকতো, তাহলে
তার ও আমার মধ্যে কিছু একটা ঘটে যেতো (তাকে শাস্তি দিতাম)। [২০৬৭]
[২০৬৭]
সহীহুল বুখারী ২৬৭১, ৪৭৪৭, ৫৩০৭,তিরমিযী ৩১৭৯, আবূ দাউদ ২২৫৪, ২২৫৫, ২২৫৬, আহমাদ ২৪৬৪,
ইরওয়াহ ২০৯৮, সহীহ আবী দাঊদ ১৯৫১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৬৮
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ خَلَّادٍ الْبَاهِلِيُّ وَإِسْحَقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ
حَبِيبٍ قَالَا حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ عَنْ الْأَعْمَشِ عَنْ
إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ كُنَّا فِي الْمَسْجِدِ
لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ فَقَالَ رَجُلٌ لَوْ أَنَّ رَجُلًا وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِهِ
رَجُلًا فَقَتَلَهُ قَتَلْتُمُوهُ وَإِنْ تَكَلَّمَ جَلَدْتُمُوهُ وَاللهِ
لَأَذْكُرَنَّ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَهُ لِلنَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ آيَاتِ اللِّعَانِ ثُمَّ جَاءَ
الرَّجُلُ بَعْدَ ذَلِكَ يَقْذِفُ امْرَأَتَهُ فَلَاعَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم بَيْنَهُمَا وَقَالَ عَسَى أَنْ تَجِيءَ بِهِ أَسْوَدَ فَجَاءَتْ بِهِ
أَسْوَدَ جَعْدًا
আবদুল্লাহ বিন
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা জুমুআহর রাতে মাসজিদে অবস্থানরত ছিলাম। তখন এক
ব্যক্তি বললো, কোন ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীর সাথে অপর কোন ব্যক্তিকে (অপকর্মে
লিপ্ত) পেয়ে তাকে হত্যা করে, তাহলে তোমরা তাকে হত্যা করবে! আর যদি যেনার অপবাদ
দেয়, তাহলে তোমরা তাকে অবশ্যি বেত্রাঘাতে জর্জরিত করবে। আল্লাহ্র শপথ! আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে বিষয়টি তুলে ধরবো। অতএব সে তা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সামনে পেশ করলে আল্লাহ তাআলা লিআন সংক্রান্ত
আয়াত নাযিল করেন। অতঃপর লোকটি তার স্ত্রীর প্রতি যেনার অপবাদসহ হাযির হলে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের উভয়কে লিআন করান এবং সাথে সাথে আরও
বলেনঃ হয়তো সে একটি কৃষ্ণকায় সন্তান প্রসব করবে। পরে সে একটি কৃষ্ণকায় ও কোঁকড়ানো
চুলবিশিষ্ট একটি বাচ্চা প্রসব করে। [২০৬৮]
[২০৬৮]
মুসলিম ১৪৯৫, আবূ দাউদ ২২৫৩, সহীহ আবী দাউদ ১৯৫০। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৬৯
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ سِنَانٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ عَنْ مَالِكِ
بْنِ أَنَسٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَجُلًا لَاعَنَ امْرَأَتَهُ
وَانْتَفَى مِنْ وَلَدِهَا فَفَرَّقَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
بَيْنَهُمَا وَأَلْحَقَ الْوَلَدَ بِالْمَرْأَةِ
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে লিআন করায় এবং তার গর্ভের
সন্তানকে অস্বীকার করে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের
দু’জনের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেন এবং সন্তানটি উক্ত নারীর সাথে যুক্ত করেন। [২০৬৯]
[২০৬৯]
সহীহুল বুখারী ৪৭৪৮, ৫৩০৬, ৫৩১১, ৫৩১২, ৫৩১৩, ৫৩১৪, ৫৩১৫, ৫৩৪৯, ৬৭৪৮, মুসলিম ১৪৯৩,
১৪৯৪, তিরমিযী ১২০৩, নাসায়ী ৩৪৭৩, ৩৪৭৪, ৩৪৭৫, ৩৪৭৬, ৩৪৭৭, আবূ দাউদ ২২৫৮, ২২৫৯, আহমাদ
৪৪৬৩, ৪৫১৩, ৪৫৮৯, ৪৬৭৯, ৪৯২৬, ৪৯৮৯, ৫১৮০, ৫২৯০,৬০৬৩ মুয়াত্তা মালেক ১২০২, দারেমী
২২৩২, সহীহ আবী দাউদ ১৯৫৫, ইরওয়াহ ৭/১৮৭। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৭০
-
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ سَلَمَةَ النَّيْسَابُورِيُّ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ ابْنِ إِسْحَقَ قَالَ ذَكَرَ
طَلْحَةُ بْنُ نَافِعٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ
تَزَوَّجَ رَجُلٌ مِنْ الْأَنْصَارِ امْرَأَةً مِنْ بَلْعِجْلَانَ فَدَخَلَ بِهَا
فَبَاتَ عِنْدَهَا فَلَمَّا أَصْبَحَ قَالَ مَا وَجَدْتُهَا عَذْرَاءَ فَرُفِعَ
شَأْنُهَا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَدَعَا الْجَارِيَةَ فَسَأَلَهَا
فَقَالَتْ بَلَى قَدْ كُنْتُ عَذْرَاءَ فَأَمَرَ بِهِمَا فَتَلَاعَنَا
وَأَعْطَاهَا الْمَهْرَ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনসার সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি বালইজলান গোত্রের এক নারীকে
বিবাহ করে। অতঃপর সে তার ঘরে প্রবেশ করে তার সাথে রাত কাটায়। ভোর হলে সে বললো, আমি
তাকে কুমারী পাইনি। তার বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে
পেশ করা হলে তিনি যুবতীকে ডেকে পাঠান। তিনি তাকে জিজ্ঞেশ করলে সে বললো, হাঁ,
অবশ্যই আমি কুমারী ছিলাম। তিনি তাদেরকে নির্দেশ দিলে তারা উভয়ে লিআন করে। তিনি
তাকে মোহরানা প্রদানের ব্যবস্থা করেন। [২০৭০]
[২০৭০]
আহমাদ ২৩৬৩, তাহকীক আলবানীঃ যঈফ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া
বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী
ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি
মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি
হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২০৭১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ الْحَضْرَمِيُّ عَنْ
ضَمْرَةَ بْنِ رَبِيعَةَ عَنْ ابْنِ عَطَاءٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَمْرِو بْنِ
شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
أَرْبَعٌ مِنْ النِّسَاءِ لَا مُلَاعَنَةَ بَيْنَهُنَّ النَّصْرَانِيَّةُ تَحْتَ
الْمُسْلِمِ وَالْيَهُودِيَّةُ تَحْتَ الْمُسْلِمِ وَالْحُرَّةُ تَحْتَ
الْمَمْلُوكِ وَالْمَمْلُوكَةُ تَحْتَ الْحُرِّ
আবদুল্লাহ বিন আমর
ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, চার ধরণের দম্পতির
মধ্যে লিআনের বিধান প্রযোজ্য নয়ঃ মুসলিম ব্যক্তির বিবাহাধীন খ্রিস্টান নারী,
মুসলিম ব্যক্তির বিবাহাধীন ইহূদী নারী, ক্রিতদাসের বিবাহাধীন স্বাধীনা নারী এবং
স্বাধীন পুরুষের বিবাহাধীন ক্রীতদাসী। [২০৭১]
[২০৭১]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। যইফাহ ৪১২৭। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত
হাদিসের রাবী ১. দমারাহ বিন রাবীআহ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সালিহ। আবু
সাঈদ বিন ইয়ুনুস আল-মিসরী বলেন, তিনি তাদের যুগে একজন ফকিহ ছিলেন। আহমাদ বিন শু'আয়ব
আন-নাসায়ী ও আহমাদ বিন সালেহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন,
তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কিছু সন্দেহ করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী
বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৯৩৮,
১৩/৩১৬ নং পৃষ্ঠা) ২. (উসমান) ইবনু আতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য
নয়। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী
বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য নয়। আহমাদ বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী
বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ
রাবী নং ৩৮৪৬, ১৯/৪৪১ নং পৃষ্ঠা) ৩. আতা বিন আবু মুসলিম সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী
বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। শু'বাহ ইবনুল হাজ্জাজ বলেন, তিনি হাদিস ভুলে যেয়েন। আহমাদ
বিন হাম্বল বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৪১,
২০/১০৬ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১০/২৮. অধ্যায়ঃ
কোন বৈধ বিষয় হারাম
করা সম্পর্কে।
২০৭২
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ قَزْعَةَ حَدَّثَنَا مَسْلَمَةُ بْنُ عَلْقَمَةَ حَدَّثَنَا
دَاوُدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ عَنْ عَامِرٍ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ
آلَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ نِسَائِهِ وَحَرَّمَ فَجَعَلَ
الْحَلَالَ حَرَامًا وَجَعَلَ فِي الْيَمِينِ كَفَّارَةً
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর
স্ত্রীদের সংস্পর্শে না আসার শপথ (ঈলা) করে হালালকে হারাম করেন। ফলে তিনি (তাঁর
জন্য) হালাল বিষয়টি হারাম করলেন এবং শপথ ভঙ্গের জন্য কাফফারা প্রদানের ব্যবস্থা
করেন। [২০৭২]
[২০৭২]
তিরমিযী ১২০১, তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। তা’লীক ইবনু মাজাহ্। উক্ত হাদিসের রাবী মুসলিম
বিন আলকামাহ সম্পর্কে আহমাদ বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনু
হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আব্দুর রহমান
বিন মাহদী তার হাদিস বর্জন করেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯৫৭, ২৭/৫৬৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৭৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ
الدَّسْتُوَائِيُّ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ يَعْلَى بْنِ حَكِيمٍ
عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فِي الْحَرَامِ يَمِينٌ
وَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَقُولُ {لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللهِ أُسْوَةٌ
حَسَنَةٌ}.
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
হালাল বস্তু (নিজের উপর) হারাম করা শপথরূপে গণ্য হবে। ইবনু আব্বাস
(রাঃ) বলতেনঃ “তোমাদের জন্য আল্লাহ্র রসূলের মধ্যে রয়েছে অনুসরণীয় আদর্শ “(সূরা
আহযাবঃ ২১)। [২০৭৩]
[২০৭৩]
সহীহুল বুখারী ৪৯১১, মুসলিম ১৪৭৩, নাসায়ী ৩৪২০, ইরওয়াহ ২০৮৮। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/২৯. অধ্যায়ঃ
দাসী দাসত্বমুক্ত
হওয়ার সাথে সাথে বিবাহ রদের এখতিয়ার লাভ করে।
২০৭৪
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ عَنْ
الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ الْأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ عَائِشَةَ
أَنَّهَا أَعْتَقَتْ بَرِيرَةَ فَخَيَّرَهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
وَكَانَ لَهَا زَوْجٌ حُرٌّ
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বারীরাকে
দাসত্বমুক্ত করে দিলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে (তার
বিবাহ বন্ধন রাখা বা না রাখার) এখতিয়ার দেন। তার স্বামী ছিল স্বাধীন পুরুষ। [২০৭৪]
তাহকীক আলবানীঃ স্বাধীন শব্দ ব্যতীত সহীহ, কিন্তু আবদ বা দাস শব্দে মাহফূয।
[২০৭৪]
ইবনু মাজাহ ২০৭৬,সহীহুল বুখারী ৪৫৬, ১৪৯৩, ২১৫৫, ২১৫৬, ২১৬৮, ২১৬৯, ২৫৩৬, ২৫৬১, ২৫৬৩,
২৫৬৪, ২৫৬৫, ২৫৭৮, ২৭১৭, ২৭২৬, ২৭২৯, ২৭৩৫, ৫০৯৭, ৫২৭৯, ৫২৮৪, ৫৪৩০, ৬৭১৭, ৬৭৫১, ৬৭৫৪,
৬৭৫৮, ৬৭৬০, মুসলিম ১০৭৫, ১৫০৪, তিরমিযী ১১৫৪, ১১৫৫, ২১২৪, ২১২৫, নাসায়ী ২৬১৪, ৩৪৪৭,
৩৪৪৮, ৩৪৪৯, ৩৪৫১, ৩৪৫২,৩৪৫৩, ৩৪৫৪, ৪৬৪২, ৪৪৪৬, ৪৬৫৫, ৪৪৫৬,আবূ দাউদ ২২৩৩, ২২৩৬, ২৯১৬,
৩৯২৯, আহমাদ ২৩৫৩৩, ২৩৬৩০, ২৩৬৬৭, ২৪০০১, ২৪৩১৮, ২৪৩৭৫, ২৪৩৯৮, ২৪৫১০, ২৪৬৪৪, ২৪৭৫৬,
২৪৮৩৮, ২৪৮৬৫, ২৪৮৯৮, ২৪৯২৪, ২৪৯৪০, ২৫০০৬, ২৫০৩৬, ২৫০৫৭, ২৫১৯৮, ২৫২২৭, ২৫২৫৮, ২৫৭৮৫,
২৫৮০৩, মুয়াত্তা মালেক ১১৯২, ১৫১৯, দারেমী ২২৮৯, ইরওয়াহ ৭/২৭৬, সহীহ আবী দাউদ ১৯৩৭।
তাহকীক আলবানীঃ স্বাধীন শব্দ ব্যতীত সহীহ, এ শব্দে শায, কিন্তু আবদ বা দাস শব্দে মাহফূয।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
২০৭৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى وَمُحَمَّدُ بْنُ خَلَّادٍ الْبَاهِلِيُّ قَالَا
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ عَنْ
عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ زَوْجُ بَرِيرَةَ عَبْدًا يُقَالُ
لَهُ مُغِيثٌ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِ يَطُوفُ خَلْفَهَا وَيَبْكِي وَدُمُوعُهُ
تَسِيلُ عَلَى خَدِّهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلْعَبَّاسِ يَا
عَبَّاسُ أَلَا تَعْجَبُ مِنْ حُبِّ مُغِيثٍ بَرِيرَةَ وَمِنْ بُغْضِ بَرِيرَةَ
مُغِيثًا فَقَالَ لَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْ رَاجَعْتِيهِ
فَإِنَّهُ أَبُو وَلَدِكِ قَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ تَأْمُرُنِي قَالَ إِنَّمَا
أَشْفَعُ قَالَتْ لَا حَاجَةَ لِي فِيهِ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বারীরার স্বামী মুগীস ছিল ক্রীতদাস। আমি যেন তাকে দেখছি
যে, সে বারীরার পিছে ছুটছে আর কাঁদছে এবং তার অশ্রু তার গাল বেয়ে পড়ছে। রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আব্বাস (রাঃ) কে বলেনঃ হে আব্বাস! বারীরার
প্রতি মুগীছের ভালবাসা এবং মুগীছের প্রতি বারীরার ঘৃণাতে কি আপনি আশ্চার্যান্বিত
হচ্ছেন না! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারীরাকে বললেনঃ তুমি যদি তার
কাছে ফিরে যেতে। কেননা সে তোমার সন্তানের পিতা। সে বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি
কি আমাকে নির্দেশ করছেন? তিনি বলেনঃ আমি কেবল সুপারিশ করছি। সে বলল, তাকে আমার
প্রয়োজন নাই। [২০৭৫]
[২০৭৫]
সহীহুল বুখারী ৫২৮০, ৫২৮১, ৫২৮২, ৫২৮৩, তিরমিযী ১১৫৬, নাসায়ী ৫৪১৭, আবূ দাউদ ২২৩১,
২২৩২, আহমাদ ১৮৪৭, ২৫৩৮, ৩৩৯৫, দারেমী ২২৯২, সহীহ আবী দউদ ১৯৩৩-১৯৩৪। তাহকীক আলবানীঃ
সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৭৬
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ عَنْ
الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ مَضَى فِي بَرِيرَةَ ثَلَاثُ
سُنَنٍ خُيِّرَتْ حِينَ أُعْتِقَتْ وَكَانَ زَوْجُهَا مَمْلُوكًا وَكَانُوا
يَتَصَدَّقُونَ عَلَيْهَا فَتُهْدِي إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَيَقُولُ هُوَ عَلَيْهَا صَدَقَةٌ وَهُوَ لَنَا هَدِيَّةٌ وَقَالَ الْوَلَاءُ
لِمَنْ أَعْتَقَ
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
বারীরার প্রসঙ্গ থেকে শরীয়াতের তিনটি বিধান জারী হয়েছে। তাকে
দাসত্বমুক্ত করার পর তাকে তার ক্রীতদাস স্বামীর বিবাহাধীনে থাকা বা না থাকার
এখতিয়ার দেয়া হয়। লোকেরা তাকে পর্যাপ্ত দান-খয়রাত করতো। সে তা থেকে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে উপঢৌকন দিতো। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ তা তার জন্য সদাকা (দান) কিন্তু আমাদের বেলায় উপঢৌকন।
তার প্রসঙ্গে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আযাদকারী
ব্যক্তিই ওয়ালাআর (অভিভাবকত্বের) অধিকারী। [২০৭৬]
[২০৭৬]
মাজাহ ২০৭৪, সহীহুল বুখারী ৪৫৬, ১৪৯৩, ২১৫৫, ২১৫৬, ২১৬৮, ২১৬৯, ২৫৩৬, ২৫৬১, ২৫৬৩, ২৫৬৪,
২৫৬৫, ২৫৭৮, ২৭১৭, ২৭২৬, ২৭২৯, ২৭৩৫, ৫০৯৭, ৫২৭৯, ৫২৮৪, ৫৪৩০, ৬৭১৭, ৬৭৫১, ৬৭৫৪, ৬৭৫৮,
৬৭৬০, মুসলিম ১০৭৫, ১৫০৪, তিরমিযী ১১৫৪, ১১৫৫, ২১২৪, ২১২৫, নাসায়ী ২৬১৪, ২৪৪৭, ২৪৪৮,
২৪৪৯, ২৪৫৪, ৪৬৪২, ৪৪৪৬, ৪৬৫৫, ৪৪৫৬,আবূ দাউদ ২২৩৩, ২২৩৬, ২৯১৬, ৩৯২৯, আহমাদ ২৩৫৩৩,
২৩৬৩০, ২৩৬৬৭, ২৪০০১, ২৪৩১৮, ২৪৩৭৫, ২৪৩৯৮, ২৪৫১০, ২৪৬৪৪, ২৪৭৫৬, ২৪৮৩৮, ২৪৮৬৫, ২৪৮৯৮,
২৪৯২৪, ২৪৯৪০, ২৫০০৬, ২৫০৩৬, ২৫০৫৭, ২৫১৯৮, ২৫২২৭, ২৫২৫৮, ২৫৭৮৫, ২৫৮০৩, মুয়াত্তা মালেক
১১৯২, ১৫১৯, দারেমী ২২৮৯, ইরওয়াহ ২/২৭৪, সহীহ আবী দাউদ ১৪৫৯, ২৪৮৯। তাহকীক আলবানীঃ
হাসান সহীহ।
উক্ত হাদিসের রাবী উসামাহ বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনু হিব্বান তাকে সিকাহ উল্লেখ করে বলেন,
তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল-আজলী তাকে সিকাহ বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন,
তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীল হিসেবে নয়। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য
নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৭, ২/৩৪৭ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
২০৭৭
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ
إِبْرَاهِيمَ عَنْ الْأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ أُمِرَتْ بَرِيرَةُ أَنْ
تَعْتَدَّ بِثَلَاثِ حِيَضٍ
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বারীরাকে তিন হায়িদকাল ইদ্দাত পালনের নির্দেশ দেয়া হয়।
[২০৭৭]
[২০৭৭]
তিরমিযী ১১৮২, আবূ দাউদ ২১৮৯, দারেমী ২২৯৪, ইরওয়াহ ২১২০, সহীহ, আবী দাউদ ১৯৩৭। তাহকীক
আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৭৮
حَدَّثَنَا
إِسْمَعِيلُ بْنُ تَوْبَةَ حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ الْعَوَّامِ عَنْ يَحْيَى
بْنِ أَبِي إِسْحَقَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أُذَيْنَةَ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَيَّرَ بَرِيرَةَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারীরাকে
(বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল রাখা বা না রাখার) ইখতিয়ার প্রদান করেন। [২০৭৮]
[২০৭৮]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ১/১৮৩। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ,
তা’লীক ইবনু মাজাহ। উক্ত হাদিসের রাবী ইয়াহইয়া বিন আবু ইসহাক সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী
বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় কোন অসুবিধা নেই। আবু হাতিম বিন হিব্বান তার সিকাহ গ্রন্থে
তার নাম উল্লেখ করেছেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায়
কখনো কখনো ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৮৩, ৩১/১৯৯ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৩০. অধ্যায়ঃ
দাসীর তালাক ও তার
ইদ্দতকাল।
২০৭৯
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ طَرِيفٍ وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعِيدٍ الْجَوْهَرِيُّ قَالَا
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ شَبِيبٍ الْمُسْلِيُّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عِيسَى عَنْ
عَطِيَّةَ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
طَلَاقُ الْأَمَةِ اثْنَتَانِ وَعِدَّتُهَا حَيْضَتَانِ
ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
ক্রীতদাসীর তালাক হচ্ছে দু’বার এবং তার ইদ্দাতকাল দু’হায়িদকাল। [২০৭৯]
[২০৭৯]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইরওয়াহ ৭/১৫০। তাহকীক আলবানীঃ যঈফ।
উক্ত হাদিসের রাবী ১. আমর বিন শু'আয়ব আল-মুসলী সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন,
তিনি দুর্বল, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। আবু জা'ফার আল-উকায়লী বলেন, তার
হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়
তবে তা দলীলযোগ্য হবে না। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন
করেন ও তা বর্ণনা করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ
রাবী নং ৪২৫৬, ২১/৩৯০ নং পৃষ্ঠা) ২. আতিয়্যাহ (বিন সা'দ) সম্পর্কে আবু বকর আল-বায়হাকী
বলেন, তিনি দুর্বল, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য হবে না। আবু হাতিম বিন হিব্বান
বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল পেশ করা সঠিক নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস
গ্রহনে শিথিল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী
বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৫৬,
২০/১৪৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২০৮০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
بَشَّارٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ مُظَاهِرِ بْنِ
أَسْلَمَ عَنْ الْقَاسِمِ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ طَلَاقُ الْأَمَةِ تَطْلِيقَتَانِ وَقُرْؤُهَا حَيْضَتَانِ
قَالَ أَبُو عَاصِمٍ فَذَكَرْتُهُ لِمُظَاهِرٍ فَقُلْتُ حَدِّثْنِي كَمَا
حَدَّثْتَ ابْنَ جُرَيْجٍ فَأَخْبَرَنِي عَنْ الْقَاسِمِ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ طَلَاقُ الْأَمَةِ تَطْلِيقَتَانِ
وَقُرْؤُهَا حَيْضَتَانِ
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, “দাসীর তালাক হলো দু’টি এবং
তার ইদ্দাত কাল দু’ হায়িদ”। [উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হয়েছে,
অপর সানাদটি হলঃ]
২/২০৮০(১). আয়িশা (রাঃ), তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
ক্রীতদাসীর তালাক হচ্ছে দুটি এবং তার ইদ্দাত দু’ হায়িদকাল। [২০৮০]
তাহকীক আলবানীঃ দঈফ।
[২০৮০]
তিরমিযি ১১৮৫২, আবু দাউদ ২১৮৯, দারেমী ২২৮৯, ইরওয়াহ ২০৬৬, যঈফ আবী দাউদ ৩৭৭। তাহকীক
আলবানীঃ যঈফ। উক্ত হাদিসের রাবী মুযাহির বিন আসলাম সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন,
তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি একজন অপরিচিত ব্যাক্তি।
আহমাদ বিন শু'আয়ব ও ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী
নং ৬০১৬, ২৮/৯৬ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১০/৩১. অধ্যায়ঃ
ক্রীতদাসের তালাক।
২০৮১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ
حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ
عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ
فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ
أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ
عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ
لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
নিকটে এসে বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার মনিব তাঁর বাদীকে আমার সাথে বিবাহ
দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন,
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর
বললেন, হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যে, সে তার গোলামের সাথে তার
বাদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার
জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার। [২০৮১]
[২০৮১]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১। তাহকীক
আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী ইবনু লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার
হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায়
হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করেছেন তা দুর্বল।
আবু কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তার হাদিস
দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী
বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন।
বিশর ইবনুস সারী বলেন, যদি তার সাথে আমার সাক্ষাৎ হত তবে আমি তার থেকে কোন হাদিস গ্রহন
করতাম না। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
১০/৩২. অধ্যায়ঃ
কেউ দাসীকে দু’ তালাক
দেয়ার পর তাকে ক্রয় করলে।
২০৮২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ زَنْجَوَيْهِ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ
حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ مُعَتِّبٍ
عَنْ أَبِي الْحَسَنِ مَوْلَى بَنِي نَوْفَلٍ قَالَ سُئِلَ ابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ
عَبْدٍ «طَلَّقَ امْرَأَتَهُ تَطْلِيقَتَيْنِ ثُمَّ أُعْتِقَا يَتَزَوَّجُهَا
قَالَ نَعَمْ فَقِيلَ لَهُ عَمَّنْ قَالَ قَضَى بِذَلِكَ رَسُولُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم».
قَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ الْمُبَارَكِ لَقَدْ تَحَمَّلَ
أَبُو الْحَسَنِ هَذَا صَخْرَةً عَظِيمَةً عَلَى عُنُقِهِ.
বানূ নাওফালের
মুক্ত দাস আবূল হাসান (মাকবুল) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে একটি গোলাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল যে, সে তার
স্ত্রীকে দু’তালাক দিয়েছে, পরে তাদের উভয়কে দাসত্বমুক্ত করা হয়েছে, সে কি তাকে
বিবাহ করতে পারে? তিনি বলেন, হাঁ। অতঃপর তাকে জিজ্ঞেস করা হল আপনি কার বরাতে
বলছেন? তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুরূপ ফয়সালা
দিয়েছেন। আব্দুর রাযযাক বলেন, আবদুল্লাহ বিন মুবারাক বলেছেন, আবুল হাসান যে মস্তবড়
পাথর তার গর্দানে চাপিয়ে নিয়েছে। [২০৮২]
[২০৮২]
নাসায়ী ৩৪২৮, আবূ দাউদ ২১৮৭, যঈফ আবী দাউদ ৩৭৫-৩৭৬। তাহকীক আলবানীঃ যঈফ। উক্ত হাদিসের
রাবী উমার বিন মুআত্তিব সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, আমরা তাকে চিনি না। ইবনু
হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য
নয়, তিনি তার দু'আফা গ্রন্থে তার নাম উল্লেখ করেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৩০৯,
২১/৫০৮ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
১০/৩৩. অধ্যায়ঃ উম
উম্মুল ওয়ালাদ এর
উদ্দাত।
২০৮৩
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ
عَنْ مَطَرٍ الْوَرَّاقِ عَنْ رَجَاءِ بْنِ حَيْوَةَ عَنْ قَبِيصَةَ بْنِ ذُؤَيْبٍ
عَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ لَا تُفْسِدُوا عَلَيْنَا سُنَّةَ نَبِيِّنَا
مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم عِدَّةُ أُمِّ الْوَلَدِ أَرْبَعَةُ أَشْهُرٍ
وَعَشْرًا
আমর ইবনুল আস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমরা আমাদের সামনে আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মুহাম্মাদ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাতকে
বিপর্যস্ত করো না। উম্মুল ওয়ালাদের ইদ্দত চারমাস দশ দিন। [২০৮৩]
[২০৮৩]
আবূ দাউদ ২৩০৮, ইরওয়াহ ২১৪১, সহীহ আবী দাউদ ১৯৯৮। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের
রাবী মাতারিল ওয়াররাক সম্পর্কে আবু বকর আল-বাযযার বলেন, তার হাদিস কেউ বর্জন করেছেন
এ মর্মে আমার জানা নেই। আবু জা'ফার আল-উকায়লী বলেন, এই সানাদে তার হাদিসের অনুসরণ করা
যাবে না। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ
বিন হাম্বল বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী
তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯৯৪, ২৮/৫১ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৩৪. অধ্যায়ঃ
যে মহিলার স্বামী
মারা গেছে ইদ্দাত চলাকালে তার রূপচর্চা করা মাকরূহ।
২০৮৪
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ أَنْبَأَنَا
يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ نَافِعٍ أَنَّهُ سَمِعَ زَيْنَبَ ابْنَةَ
أُمِّ سَلَمَةَ تُحَدِّثُ أَنَّهَا سَمِعَتْ أُمَّ سَلَمَةَ وَأُمَّ حَبِيبَةَ
تَذْكُرَانِ أَنَّ امْرَأَةً أَتَتْ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ
إِنَّ ابْنَةً لَهَا تُوُفِّيَ عَنْهَا زَوْجُهَا فَاشْتَكَتْ عَيْنُهَا فَهِيَ
تُرِيدُ أَنْ تَكْحَلَهَا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ كَانَتْ
إِحْدَاكُنَّ تَرْمِي بِالْبَعْرَةِ عِنْدَ رَأْسِ الْحَوْلِ وَإِنَّمَا هِيَ
أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا
যায়নাব বিনতু উম্মু
সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি উম্মু সালামাহ ও উম্মু হাবিবা (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, এক
স্ত্রীলোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, আমার
মেয়ের স্বামী মারা গেছে। এখন তার চোখে অসুখ দেখা দিয়েছে, তাই সে তার চোখে সুরমা
লাগাতে চায়। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের অবস্থা
এরূপ ছিল যে, কোন নারী এক বছর পূর্ণ হলে পর গোবর ছিটিয়ে ইদ্দত সমাপ্ত করতো। এখন তা
কেবল চার মাস দশ দিন। [২০৮৪]
[২০৮৪]
সহীহুল বুখারী ১২৮০, ১২৮২, ৫৩৩৪, ৫৩৩৭, ৫৩৩৯, ৫৩৪৫, ৫৭০৭, মুসলিম ১৪৮৬, ১৪৮৯, ১৪৮৮,
১৪৮৬, তিরমিযী ১১৯৫, ১১৯৭, নাসায়ী ৩৫০০, ৩৫০১,৩৫০২, ৩৫০৪, ৩৫২৭, ৩৫৩৩, ৩৫৩৫, ৩৫৩৮,
৩৫৩৯, ৩৫৪০, ৩৫৪১, আবূ দাউদ ২২৯৯,আহমাদ ২৫৯৬২, ২৬১১২, ২৬২২৫, ২৬২২৬, আহমাদ ২৬৮৫২, মুয়াত্তা
মালেক ১২৬৮, ১২৭০, দারেমী ২২৮৪, সহীহ আবী দাউদ ১৯৯২, ইরওয়াহ ২১১৪। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৩৫. অধ্যায়ঃ
স্বামী ব্যতীত অপরের
মৃত্যুতে কি মহিলারা রূপচর্চা বর্জন করবে?
২০৮৫
-
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ أَنْ تُحِدَّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ
ثَلَاثٍ إِلَّا عَلَى زَوْجٍ
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কোন নারীর
জন্য স্বামী ব্যতীত অপর কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক রূপচর্চা বর্জন (বা শোক
পালন) করা বৈধ নয়। [২০৮৫]
[২০৮৫]
মুসলিম ১৪৯০, আবূ দাউদ ২৩৫৭২, ২৪৯৮৬, ২৫৫৯০, ২৫৮৭২, ২৫৯১৩, ২৫৯১৭, মুয়াত্তা মালেক ১২৭১,
দারেমী ২২৮৩, ইরওয়াহ ৭./১৯৪। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৮৬
حَدَّثَنَا
هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ حَدَّثَنَا أَبُو الْأَحْوَصِ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
عَنْ نَافِعٍ عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ أَبِي عُبَيْدٍ عَنْ حَفْصَةَ زَوْجِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ تُحِدَّ
عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلَاثٍ إِلَّا عَلَى زَوْجٍ
নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
যে নারী আল্লাহ ও আখিরাতের দিনের উপর ঈমান রাখে, তার জন্য স্বামী ব্যতীত অন্য কারো
মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক রূপচর্চা বর্জন করা (বা শোক পালন করা) বৈধ নয়। [২০৮৬]
[২০৮৬]
মুসলিম ১৪৯০, নাসায়ী ৩৫০৩, আবূ দাউদ ২৪৯৮৬, আহমাদ ২৫৯১৩, ২৫৯১৭, তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৮৭
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ نُمَيْرٍ عَنْ
هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ عَنْ حَفْصَةَ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم «لَا تُحِدُّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلَاثٍ إِلَّا
امْرَأَةٌ تُحِدُّ عَلَى زَوْجِهَا أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا وَلَا تَلْبَسُ
ثَوْبًا مَصْبُوغًا إِلَّا ثَوْبَ عَصْبٍ وَلَا تَكْتَحِلُ وَلَا تَطَيَّبُ إِلَّا
عِنْدَ أَدْنَى طُهْرِهَا بِنُبْذَةٍ مِنْ قُسْطٍ أَوْ أَظْفَارٍ
উম্মু আতিয়্যাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
কোন নারী মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের অধিক শোক পালন করবে না। তবে স্বামীর
মৃত্যুতে স্ত্রী চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে। সে রঙ্গিন বস্ত্র পরিধান করবে না,
তবে ইয়ামানের বিশেষ ধরনের রঙ্গীন চাদর পরতে পারবে। সুরমা ও সুগন্ধি ব্যবহার করবে
না, তবে হায়িদ থেকে পবিত্র হওয়ার সময় গোসলের বেলায় সামান্য কস্তূরী ও চন্দন
ব্যবহার করতে পারবে। [২০৮৭]
[২০৮৭]
সহীহুল বুখারী ৩১৩, ১২৭৯, ৫৩৪০, ৫৩৪১, ৫৩৪৩, মুসলিম ৯৩৮, নাসায়ী ৩৫৩৪, ৩৫৩৬, আবূ দাউদ
২৩০২, আহমাদ ২০২৭০, ২৬৭৫৯, দারেমী ২২৮৬, ইরওয়াহ ৭/১৯৪-১৯৫, সহীহ আবী দাউদ ১৯৯৪। তাহকীক
আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০/৩৬. অধ্যায়ঃ
পিতা পুত্রকে তার
স্ত্রীকে তালাক দিতে নির্দেশ দিলে।
২০৮৮
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ وَعُثْمَانُ
بْنُ عُمَرَ قَالَا حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ عَنْ خَالِهِ الْحَارِثِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ عَبْدِ
اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ كَانَتْ تَحْتِي امْرَأَةٌ وَكُنْتُ أُحِبُّهَا وَكَانَ
أَبِي يُبْغِضُهَا فَذَكَرَ ذَلِكَ عُمَرُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَأَمَرَنِي أَنْ أُطَلِّقَهَا فَطَلَّقْتُهَا
আবদুল্লাহ বিন উমার
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার এক স্ত্রী ছিল। তাকে আমি খুব ভালবাসতাম। কিন্তু আমার
পিতা তার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন। উমার (রাঃ) বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর কাছে উল্লেখ করেন। তিনি তাকে তাকে তালাক দেওয়ার জন্য আমাকে নির্দেশ
দেন। অতএব আমি তাকে তালাক দিলাম। [২০৮৮]
[২০৮৮]
তিরমিযী ১১৮৯, আবূ দাউদ ৫১৩৮, সহীহাহ ৯১৩। তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২০৮৯
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ
عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ رَجُلًا
أَمَرَهُ أَبُوهُ أَوْ أُمُّهُ شَكَّ شُعْبَةُ أَنْ يُطَلِّقَ امْرَأَتَهُ
فَجَعَلَ عَلَيْهِ مِائَةَ مُحَرَّرٍ فَأَتَى أَبَا الدَّرْدَاءِ فَإِذَا هُوَ
يُصَلِّي الضُّحَى وَيُطِيلُهَا وَصَلَّى مَا بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ
فَسَأَلَهُ فَقَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ أَوْفِ بِنَذْرِكَ وَبِرَّ وَالِدَيْكَ
وَقَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
الْوَالِدُ أَوْسَطُ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ فَحَافِظْ عَلَى وَالِدَيْكَ أَوْ
اتْرُكْ
আবুদ দারদা' (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তিকে তার পিতা অথবা তার মা তার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার নির্দেশ
দেয়। এদিকে সে শপথ করে বললো যে, সে তার স্ত্রীকে তালাক দিলে তাকে এক শত গোলাম
দাসত্বমুক্ত করতে হবে। এমতাবস্থায় সে আবূ দারদা (রাঃ) এর নিকট হাযির হল। তখন তিনি
চাশতের সালাত পড়ছিলেন এবং তিনি তা দীর্ঘায়িত করেন। আর যোহর ও আসরের মাঝে ও তিনি
সালাত পড়তেন। লোকটি তাকে তার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে আবূ দারদা (রাঃ) বলেন, তোমার
মানত পূর্ণ করো এবং তোমার পিতা-মাতার হুকুমও পালন করো। আবূ দারদা (রাঃ) আরও বললেন,
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ পিতা হচ্ছে
জান্নাতের উত্তম দরজা। অতএব তুমি তোমার পিতা-মাতার অধিকার সংক্ষণ করো কিংবা ত্যাগ
করো। [২০৮৯]
[২০৮৯]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সহীহাহ ৯১৪। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
উক্ত হাদিসের রাবী আতা ইবনুস সায়িব সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি
শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন,
তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় পরিবর্তন করেছেন। আয়্যুব বিন আবু তামিমাহ আস-সাখতিয়ানী
বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শেষ বয়সে হাদিস
বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৩৪, ২০/৮৬ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
No comments