আল-ফিকহুল আকবর অধ্যায়-০১ – ভূমিকা

গ্রন্থাকারের ভূমিকা

প্রশংসা মহান আল্লাহর নিমিত্ত। সালাত সালাম তাঁর বান্দা রাসূল, তাঁর প্রিয়তম মুহাম্মাদ (ﷺ), তাঁর পরিজন, সহচর অনুসারীদের উপর

এহইয়াউস সুনানইসলামী আকীদাগ্রন্থদ্বয়ে আকীদা সুন্নাত বিষয়ক বিভিন্ন প্রসঙ্গে ইমাম আবূ হানীফা রাহিমাহুল্লাহুর বক্তব্য উদ্ধৃত করে উল্লেখ করেছি যে, আমাদের সমাজের অনেকে তাঁর অনুসারী হওয়া সত্ত্বেও সকল বিষয়ে তাঁর মতের সাথে সাংঘর্ষিক মত পোষণ করেন। সকল বক্তব্য অনেক পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অনেকে ঈমান, আকীদা, সুন্নাত, বিদআত ইত্যাদি বিষয়ে ইমাম আবূ হানীফা তাঁর ছাত্রদের মত জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন: আমরা তো ফিকহী বিষয়ে হানাফী, আকীদায় আশআরী বা মাতুরিদী তরীকায় কাদিরী, চিশতী বা নকশবন্দী। আমরা কি ফিকহ, আকীদা তরীকা সকল বিষয়ে হানাফী হতে পারি না? ইমাম আবূ হানীফার কি কোনো আকীদা তরীকা ছিল না? থাকলে তা কী ছিল?

প্রকৃতপক্ষে ইমাম আবূ হানীফা (রাহ) আকীদাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা দেখব যে, তিনি ফিকহ বিষয়ে কোনো গ্রন্থ রচনা না করলেও আকীদা বিষয়ে কয়েকটি পুস্তিকা রচনা করেছেন, আকীদা বিষয়ক জ্ঞানকে শ্রেষ্ঠ ফিকহ বাআল-ফিকহুল আকবারবলে আখ্যায়িত করেছেন এবং ফিকহী বিষয়ে ইজতিহাদ মতভেদের অনুমতি দিয়েছেন কিন্তু আকীদা বিষয়ে ইজতিহাদ মতভেদ নিষেধ করেছেন

ইমাম আযমের (রাহ) রচনাবলির মধ্যে আকীদা বিষয়ক ৫টি পুস্তিকা প্রসিদ্ধ। তন্মধ্যেআল-ফিকহুল আকবারপুস্তিকাটির দুটি ভাষ্য। একটিআল-ফিকহুল আকবারএবং অন্যটিআল-ফিকহুল আবসাতনামে প্রসিদ্ধ। কোনো কোনো গবেষক দ্বিতীয় পুস্তিকাটি, অর্থাৎআল-ফিকহুল আবসাতনামে পরিচিত পুস্তিকাটিই মূলআল-ফিকহুল আকবারবলে মত প্রকাশ করেছেন।ইমাম আবূ হানীফার রচনাবলিপরিচ্ছেদে আমরা দেখব যে, সনদ মতনে প্রথম পুস্তিকাটিওআল-ফিকহুল আকবারহিসেবে প্রমাণিত। আমরা পুস্তিকাটিকেই অনুবাদের জন্য মূল হিসেবে গ্রহণ করেছি। কারণ পুস্তিকাটিতেআল-ফিকহুল আবসাত তাঁর রচিত সবগুলো পুস্তিকার আলোচ্য বিষয়ের সার-সংক্ষেপ সহজ ভাষায় আলোচিত। ইসলামী আকীদার বিভিন্ন দিকের সামগ্রিক আলোচনা পুস্তিকায় যেভাবে বিদ্যমান তাঁর রচিত অন্যান্য পুস্তিকায় সেভাবে নেই। এজন্য আমি পুস্তিকাটি অনুবাদ করার এবং এর ভিত্তিতে ইসলামী আকীদার বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। পাশাপাশিআল-ফিকহুল আবসাত অন্যান্য পুস্তিকা থেকে প্রাসঙ্গিক সকল বক্তব্য উদ্ধৃত করেছি

আল-ফিকহুল আকবারের ব্যাখ্যায় আকীদা বিষয়ে ইমাম আবূ হানীফা (রাহ)-এর মত জানতে তাঁর লেখা পুস্তিকাগুলো ছাড়া আরো দুটি গ্রন্থের উপর নির্ভর করেছি:

() তৃতীয়-চতুর্থ শতকের প্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ ইমাম আবূ জাফর আহমদ ইবন সালামা তাহাবী (২৩৮-৩২১ হি) রচিতআল-আকীদাহ আত-তাহাবিয়্যাহ পুস্তিকাটি তিনি ইমাম আবূ হানীফা তাঁর সাথীদ্বয়ের আকীদা বর্ণনায় রচনা করেন

() চতুর্থ-পঞ্চম হিজরী শতকের প্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ ইমাম আবুল আলা সায়িদ ইবন মুহাম্মাদ ইবন আহমদ নাইসাপূরী (৩৪৩-৪৩২ হি) রচিত আল-তিকাদ। গ্রন্থটিতে তিনি ইমাম আবূ হানীফার আকীদা বিষয়ক বক্তব্যগুলো সংকলন করেছেন

ফিকহুল আকবার গ্রন্থের একটি বৈশিষ্ট আলোচ্য বিষয়ের বৈচিত্র। আকীদার পরিচিত আলোচ্য বিষয়গুলো ছাড়াও তারাবীহ, রিয়া, উজব, কিয়ামতের আলামত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সমত্মানদের পরিচয় ইত্যাদি অনেক বিষয় তিনি আলোচনা করেছেন। বিষয়ক আলোচনা ব্যাখ্যা আমাদের বইটির কলেবর কিছুটা বৃদ্ধি করেছে

আল-ফিকহুল আকবারের অনুবাদ ব্যাখ্যা করতে যেয়ে দেখলাম যে, মুসলিম উম্মাহর বিভ্রান্তির উৎস বিষয়বস্ত্ত দ্বিতীয় শতকে যা ছিল বর্তমানেও প্রায় তা- রয়েছে। খারিজীগণেরতাকফীর জিহাদ নামের উগ্রতা, জাহমী-মুরজিয়াদের মারিফাত ঈমান বিষয়ক প্রান্তিকতা, শীয়াগণের অতিভক্তি বাতিনী ইলমের নামে অন্ধত্ব এবং মুতাযিলীগণের বুদ্ধিবৃত্তিকতার নামে ওহীর অবমূল্যায়ন বর্তমান যুগেও একইভাবে উম্মাতের সকল ফিতনার মূল বিষয়। এগুলোর সাথে বর্তমান যুগে যোগ হয়েছে তাওহীদ বিষয়ক অজ্ঞতা শিরকের ব্যাপকতা। সকল ফিতনার সমাধানে সে যুগে ইমাম আবূ হানীফা অন্যান্য ইমাম যা বলেছেন বর্তমান যুগেও সেগুলোই আমাদের সমাধানের পথ দেখাবে। জন্য সকল বিষয়ে ফিকহুল আকবারের বক্তব্য ছাড়াও ইমাম আবূ হানীফা আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অন্যান্য ইমামের বক্তব্য বিস্তারিত আলোচনা করেছি। স্বভাবতই এতে ব্যাখ্যার কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে

আল-ফিকহুল আকবারের অন্যতম আলোচ্য মহান আল্লাহর বিশেষণ। বিষয়টি আমাদের অনেকের জন্যই সম্পূর্ণ নতুন বা ভিন্ন আঙ্গিকের। আমাদের সমাজে প্রচলিত অনেক আকীদা এক্ষেত্রে ইমাম আবূ হানীফা তাঁর ছাত্রদের আকীদার সম্পূর্ণ উল্টো। যেমন, ‘মহান আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান’- আকীদাকে ইমাম আবূ হানীফা তাঁর ছাত্রগণ জাহমী ফিরকার কুফরী আকীদা এবং সর্বেশ্বরবাদেরই ভিন্নরূপ বলে গণ্য করেছেন। পক্ষান্তরে আমাদের সমাজের অনেক মুসলিম আকীদা পোষণ করেন। বিষয়টি জটিল হওয়াতে আমি একটু বিস্তারিতভাবে তা পর্যালোচনার চেষ্টা করেছি

বইটিকে আমি দুটি পর্বে ভাগ করেছি। প্রথম পর্ব তিনটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত। প্রথম পরিচ্ছেদে ইমাম আবূ হানীফার জীবনী মূল্যায়ন, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে ইমাম আবূ হানীফার রচনাবলি তৃতীয় পরিচ্ছেদে ইলমুল আকীদা ইলমুল কালাম বিষয়ে আলোচনা করেছি

দ্বিতীয় পর্ব আল-ফিকহুল আকবার গ্রন্থের অনুবাদ ব্যাখ্যা। তাবিয়ী যুগের আলিমগণ পরবর্তী যুগের মত অধ্যায় বিন্যস্ত গ্রন্থ রচনা করেন নি। তাঁরা তাঁদের বক্তব্যগুলো অনেকটা অবিন্যস্তভাবে সংকলন করেছেন। অথবা তাঁরা মুখে বলেছেন এবং ছাত্ররা তা লিখেছে। এজন্যআল-ফিকহুল আকবারপুস্তিকাটির আলোচ্য বিষয় পরবর্তী যুগের গ্রন্থাদির মত সুবিন্যস্ত নয়। একই বিষয় বিভিন্ন স্থানে আলোচনা করা হয়েছে। এজন্য এর আলোচ্য বিষয়কে বিষয়ভিত্তিক পরিচ্ছেদে বিভক্ত করা কঠিন। বিন্যাসের সুবিধার জন্য আমি আল-ফিকহুল আকবার গ্রন্থের বক্তব্যের ধারাবাহিকতা ঠিক রেখে অনুবাদ ব্যাখ্যাকে পাঁচটি পরিচ্ছেদে ভাগ করেছি। প্রত্যেক পরিচ্ছেদে ইমাম আযমের বক্তব্যের ধারাবাহিকতায় আলোচ্য বিষয় ব্যাখ্যা করেছি

আকীদা বিষয়ক সুন্নাহ নির্ভর সকল আলোচনা গ্রন্থ রচনায় আমার প্রেরণার উৎস ছিলেন আমার শ্বশুর ফুরফুরার পীর শাইখ আবুল আনসার সিদ্দিকী (রাহ) সুন্নাহ ভিত্তিক বিশুদ্ধ আকীদা গ্রহণে প্রচারে তিনি ছিলেন আপোষহীন। আমাদেরকেও আপোষহীন হতে প্রেরণা দিয়েছেন। মহান আল্লাহ তাঁর ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করুন, তাঁর নেক আমলগুলো কবুল করুন, আমাদের উম্মাতের পক্ষ থেকে তাঁকে সর্বোত্তম পুরস্কার প্রদান করুন এবং আখিরাতের অনন্ত জীবনে আমাদেরকে জান্নাতে একত্রিত করুন

আল-ফিকহুল আকবার’-এর অনুবাদ ব্যাখ্যা রচনায় আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা, উৎসাহ পরামর্শ দিয়েছেন ভাই শামসুল আরিফিন খালিদ। শুরু থেকেই তিনি উৎসাহ দিয়েছেন এবং বারবার পাণ্ডুলিপি দেখে বিভিন্ন গঠনমূলক পরামর্শ দিয়েছেন। ইমাম আবূ হানীফা, চার ইমাম সালাফ সালিহীনের (রাহিমাহুমুল্লাহ) বক্তব্যের আলোকে বিশুদ্ধ সুন্নাহ নির্ভর আকীদার প্রচার এবং আকীদা বিষয়ক বিতর্ক, হানাহানি প্রান্তিকতার অবসানে তাঁর আন্তরিক আবেগ, পরামর্শ প্রচেষ্টা মহান আল্লাহ কবুল করুন তাঁকে দুনিয়া আখিরাতের সফলতা দান করুন

আমার প্রিয়জনেরা গ্রন্থটির রচনায় অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। বিশেষত আস-সুন্নাহ ট্রাস্টে আমার সহকর্মীগণ . শুআইব আহমদ, মুফতি শহীদুল্লাহ, শাইখ যাকারিয়া, শাইখ মুশাহিদ আলী, ভাই আব্দুর রহমান অন্যান্য সকলেই বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন। প্রফেসর . অলী উল্যাহ, ডা. আব্দুস সালাম সুমন মাওলানা ইমদাদুল হক প্রুফ দেখেছেন পরামর্শ দিয়েছেন। আল্লাহ তাঁদেরকে এবং অন্যান্য উলামায়ে কিরাম যারা আমাকে বিভিন্ন গঠনমূলক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন সকলকেই উত্তম পুরস্কার দান করুন

বইয়ের মধ্যে অগণিত ইমাম, আলিম বুজুর্গের নাম বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। প্রত্যেকের নামের সাথে প্রত্যেক স্থানে দুআর ইঙ্গিত হিসেবে (রাহ) লেখা সম্ভব হয় নি। পাঠকের প্রতি অনুরোধ, সকল আলিমের নামের সাথেরাহিমাহুল্লাহবলে তাঁদের জন্য দুআ করবেন। তাঁদের মাধ্যমেই আমরা দীন পেয়েছি এবং তাঁদের জন্য দুআ করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। মহান আল্লাহ গ্রন্থে উল্লেখকৃত সকল আলিমকে এবং মুসলিম উম্মাহর সকল আলিমকে অফুরন্ত রহমত দান করুন। আমীন

তথ্যসূত্র প্রদানে পাদটীকায় গ্রন্থকারের নাম, গ্রন্থের নাম পৃষ্ঠা উল্লেখ করেছি। গ্রন্থ বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য বইয়ের শেষেগ্রন্থপঞ্জীরমধ্যে উল্লেখ করেছি। অনেক ক্ষেত্রেআল-মাকতাবাতুশ শামিলা’- উপর নির্ভর করেছি

আল-ফিকহুল আকবার-এর ব্যাখ্যা সাধারণ বাঙালী পাঠকদের জন্য সহজবোধ্য করার চেষ্টা করেছি। এজন্য অনেক বিষয়ে বিস্তারিত বিতর্ক, আলোচনা বা উদ্ধৃতি পরিহার করেছি। ফলে অনেক সময় আলিমগণের নিকট বিষয়টি অসম্পূর্ণ বা ত্রম্নটিপূর্ণ মনে হতে পারে। এছাড়া বিষয়বস্ত্তর জটিলতা আমার ইলমী সীমাবদ্ধতার কারণে বইয়ের মধ্যে ভুলভ্রান্তি থেকে যাওয়াই স্বাভাবিক। সম্মানিত কোনো পাঠক যদি ভুলভ্রান্তিগুলো জানিয়ে দেন তবে তা আমার প্রতি বড় ইহসান হবে। মহান আল্লাহ তাঁকে পুরস্কৃত করবেন। এছাড়া তথ্যগত উপস্থাপনাগত যে কোনো পরামর্শ আমরা সাদরে গ্রহণ করব। আমরা পরবর্তী সংস্করণে ভুলগুলো সংশোধন করব, ইনশা আল্লাহ

ইসলামী ইলমের সকল শাখার উদ্দেশ্য মুমিনের জীবনকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর অনুসরণে পরিচালিত করা। ইলমুল ফিকহ-এর উদ্দেশ্য মুমিনের ইবাদত, মুআমালাত সকল কর্মকান্ড যেন অবিকল রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবীগণের আদলেই পালিত হয়। ইলমুত তাযকিয়া বা তাসাউফের উদ্দেশ্য মুমিনের হৃদয়ের অবস্থা যেন অবিকল তাঁদের পবিত্র হৃদয়গুলোর মত হয়ে যায়। ইলমুল আকীদার উদ্দেশ্য মুমিনের বিশ্বাসের সকল বিষয় যেন হুবহু তাঁদের বিশ্বাসের সাথে মিলে যায়। আমরা বিশ্বাস করি, আকীদা বিষয়ে সুন্নাতে নববীর পুনরুজ্জীবনের জন্যই ইমাম আবূ হানীফা কলম ধরেছিলেন। আমাদের অনুবাদ ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যও একই। আমরা মহান আল্লাহর দরবারে দুআ করি, আমাদের নগণ্য প্রচেষ্টাকে তাঁর প্রিয়তমের সুন্নাতের পুনরুজ্জীবন প্রতিষ্ঠায় কবুল করে নিন। আমাদের সকলের হৃদয়কে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সুন্নাতের অনুগত করে দিন। ঈমানে, আকীদায়, ফিকহে, তাযকিয়ায় জীবনের সকল ক্ষেত্রে সুন্নাত জানতে, মানতে, প্রচার করতে সুন্নাতের জন্য সুন্নাতের ব্যতিক্রম সকল কিছুকে অকাতরে বিসজর্ন দিতে আমাদের হৃদয়গুলোকে শক্তি দান করুন। আমীন

মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন দয়া করে আমার গ্রন্থটির ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করে এটি কবুল করে নেন। একে আমার, আমার পিতামাতা, স্ত্রী-পরিজন, শুভাকাঙ্খীগণ সকল পাঠকের নাজাতের ওসীলা বানিয়ে দেন। আমীন! সালাত সালাম আল্লাহর খালীল মুহাম্মাদ (ﷺ), তাঁর পরিজন সহচরগণের উপর

আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর

No comments

Powered by Blogger.