রাহে বেলায়াত তৃতীয় অধ্যায় - অনুচ্ছেদ-৩০, সকাল-বিকাল বা সকাল-সন্ধ্যার যিকর - (১৬) যিকর নং ১১৫ হইতে (১৭) যিকর নং ১১৬ পর্যন্ত
তৃতীয় অধ্যায় - অনুচ্ছেদ-৩০,
তৃতীয় প্রকার যিকর : সকাল-বিকাল বা সকাল-সন্ধ্যার যিকর - (১৬) যিকর নং ১১৫ হইতে (১৭) যিকর নং ১১৬ পর্যন্ত
(১৬) যিকর
নং
১১৫
: (সকাল-সন্ধ্যার
দু‘আ
: ১
বার)
اللهم عالم الغيب والشهادة فاطر
السموات والأرض رب كل شيء ومليكه أشهد ألا إله إلا أنت أعوذ بك من شر نفسي ومن شر
الشيطان وشركه وأن أقترف على نفسي سواء أو أجره إلى مسلم
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা, ‘আ-লিমাল গাইবি ওয়াশ শাহা-দাতি, ফা-তিরাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি, রাব্বা কুল্লি শাইয়িন ওয়া মালীকাহু, আশহাদু আল-লা ইলা-হা ইল্লা- আনতা, আ‘ঊযু বিকা মিন শার্রি নাফসী, ওয়া মিন শাররিশ শাইতা-নি ওয়া শিরকিহী, ওয়া আন আক্ব্তারিফা ‘আলা- নাফসী সূআন আও আজুররাহু ইলা- মুসলিম)
অর্থ: “হে আল্লাহ, গোপন (গায়েব) ও প্রকাশ্য সকল জ্ঞানের অধিকারী, আসমান ও জমিনের সৃষ্টিকর্তা, সকল কিছুর প্রভু ও মালিক, আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আপনি ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই। আমি আপনার আশ্রয় গ্রহণ করছি আমার নিজের অকল্যাণ থেকে এবং শাইতানের অকল্যাণ ও তার শির্ক থেকে। আমি আপনার আশ্রয় চাচ্ছি, আমি এমন কোনো কর্ম না করি যাতে আমার নিজের কোনো ক্ষতি বা অমঙ্গল হয়, অথবা কোনো মুসলমানের জীবনে ক্ষতি বা অমঙ্গল বয়ে আনে।”
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আবু বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলেন, আমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দিন যা আমি সকালে ও সন্ধ্যায় বলব। তখন তিনি তাঁকে উপরের দু‘আটি সকালে, সন্ধ্যায় ও বিছানায় শোয়ার পরে বলতে নির্দেশ দেন।[1]
(১৭) যিকর নং ১১৬ : (সকাল-সন্ধ্যার দু‘আ : ১ বার)
اللهم إني أسألك العفو والعافية في
الدنيا والآخرة، اللهم إني أسألك العفو والعافية في ديني ودنياي، وأهلي ومالي،
اللهم استر عوراتي وآمن روعاتي، اللهم احفظني من بين يدي ومن خلفي، وعن يميني وعن
شمالي ومن فوقي، وأعوذ بعظمتك أن أُغتال من تحتي
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা, ইন্নী আস্আলুকাল ‘আফওয়া ওয়াল ‘আ-ফিয়্যাতা ফিদ্ দুন্ইয়া- ওয়াল আ-খিরাহ। আল্লাহুম্মা, ইন্নী আস্আলুকাল ‘আফ্ওয়া ওয়াল ‘আ-ফিয়্যাতা ফী দীনী ওয়া দুন্ইয়াই-য়া, ওয়া আহলী ওয়া মালী। আল্লা-হুম্মাস- তুর ‘আউরা-তী ওয়া আ-মিন রাউ‘আ-তী। আল্লা-হুম্মাহ্ ফাযনী মিম বাইনি ইয়াদাইয়্যা ওয়া মিন খালফী, ওয়া ‘আন ইয়ামীনী ওয়া ‘আন শিমালী, ওয়া মিন ফাউক্বী। ওয়া আ‘ঊযু বি‘আযামাতিকা আন উগতা-লা মিন তাহতী।
অর্থঃ “হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট চাই ক্ষমা ও সার্বিক সুস্থতা- নিরাপত্তা দুনিয়াতে এবং আখেরাতে। হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে চাই ক্ষমা ও সার্বিক সুস্থতা-নিরাপত্তা আমার দ্বীনের মধ্যে, আমার দুনিয়াবী বিষয়ের মধ্যে, আমার পরিবার পরিজনের মধ্যে ও আমার সম্পদের মধ্যে। হে আল্লাহ, আমার দোষত্রুটিগুলি গোপন করুন এবং আমার ভয়ভীতিকে নিরাপত্তা দান করুন। হে আল্লাহ, আপনি আমাকে হেফাযত করুন আমার সামনে থেকে, আমার পিছন থেকে, আমার ডান থেকে, আমার বাম থেকে, আমার উপর থেকে এবং আমি আপনার মহত্তেবর আশ্রয় গ্রহণ করছি যে, আমি আমার নিম্ন দিক থেকে আক্রান্ত হব।”
আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)কখনোই সকাল হলে ও সন্ধ্যা হলে উপরের এই কথাগুলি বলতে ছাড়তেন না (সর্বদা তিনি সকালে ও সন্ধ্যায় এগুলি বলতেন)। হাদীসটি সহীহ।[2]
সকালে ও সন্ধ্যায় রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো অনেক দু‘আ করতেন এবং অনেক দু‘আ শিখিয়েছেন, যেগুলির ভাষা ও ভাব অত্যন্ত মর্মস্পর্শী, আবেগময় এবং নবুয়্যতের নূরে ভরা। এসকল দু‘আ মুমিনের কবলবে অবর্ণনীয় প্রভাব বিস্তার করে। মুমিন তাঁর হৃদয় ভরে অনুভব করেন বরকত, রহমত ও প্রশান্তি।
আরবী আমাদের জন্য বিদেশী ভাষা হওয়াতে আমাদের জন্য আরবী দোয়গুলি বিশুদ্ধভাবে অর্থসহ মুখস্থ করা একটু সময় ও শ্রম সাপেক্ষ বিষয়। আগ্রহ ও ভালবাসা থাকলে অবশ্য এতটুকু সময় ও শ্রম প্রদান করা কোনো সমস্যাই নয়। তবুও সাধারণ যাকির ও পাঠকগণের অসুবিধার কথা চিন্তা করে আমি বইয়ের কলেবর বৃদ্ধি না করে এখানেই এই পর্ব শেষ করছি। মহান আল্লাহর কাছে দু‘আ করি, উপরে যে সকল মাসনূন যিকর উল্লেখ করলাম, সেগুলি পালন করার তাওফীক আমাকে ও পাঠকদেরকে দান করুন এবং দয়া করে কবুল করে নিন; আমীন।[
1] হাদিসটির সনদ হাসান। সুনানুত তিরমিযী ৫/৪৬৭, নং ৩৩৯২, ৫/৫৪২, নং ৩৫২৯, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/২৪২, মুসনাদ আহমাদ ২/১০, ১৯৬, বুখারী, খালকু আফ’আলিল ইবাদ, পৃ. ১১৩।
[2] মুসনাদ আহমাদ ২/২৫, সুনানু ইবনি মাজাহ ২/১২৭৩, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৯৮, মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৩৮১-৩৮৩, সহীহুত তারগীব ১/৩৪৩।
No comments