রাহে বেলায়াত দ্বিতীয় অধ্যায় অনুচ্ছেদ-১৩: ঘ. আল্লাহর পথের পথিকদের পাপ - (১০) ঝগড়া-তর্ক
ঘ. আল্লাহর পথের পথিকদের পাপ - (১০) ঝগড়া-তর্ক
আল্লাহর পথের পথিক বা ধার্মিক মানুষদের জন্য শয়তানের একটি ফাঁদ ঝগড়া ও বিতর্কে জড়িয়ে পড়া। ধার্মিক মানুষেরা অনেক সময়েই ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া-তর্কে জড়িয়ে পড়েন। আবূ উমামা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেনঃ
مَا ضَلَّ قَوْمٌ بَعْدَ هُدًى كَانُوا
عَلَيْهِ إِلَّا أُوتُوا الْجَدَلَ
“কোনো সম্প্রদায়ের সুপথপ্রাপ্ত হওয়ার পরে বিভ্রান্ত হওয়ার একটিই কারণ যে, তারা ঝগড়া-বিতর্কে লিপ্ত হয়ে পড়ে।”[1]
আমাদের সর্বদা চেষ্টা করতে হবে বিতর্ক এড়িয়ে চলার। ধর্মীয় আলোচনার দায়িত্ব আলিমদের উপর ছেড়ে দিতে হবে। একান্তই বাধ্য হলে আমরা আলোচনায় লিপ্ত হব, কিন্তু ঝগড়ায় লিপ্ত হব না। তথ্য ভিত্তিক আলোচনা বা মত-বিনিময় জ্ঞান বৃদ্ধি করে। আর ঝগড়া-তর্ক জ্ঞান গ্রহণের পথ রুদ্ধ করে দেয়। আলোচনার ক্ষেত্রে প্রত্যেকে নিজের জানা তথ্যাদি উপস্থাপন করেন এবং অন্যের নিকট নতুন কিছু পেলে বা নিজের ভুল ধরতে পারলে তা আননিদত চিত্তে গ্রহণ করেন। পক্ষান্তরে ঝগড়-তর্কে উভয় পক্ষই নিজের জ্ঞানকে চূড়ান্ত বলে মনে করেন এবং যে কোনো ভাবে নিজের মতের সঠিকতা ও অন্য মতের ভুল প্রমাণ করতে চেষ্টা করেন। নিজের জ্ঞানের ভুল স্বীকার করাকে ব্যক্তিগত পরাজয় বলে মনে করেন। এ কারণে ইসলামে ঝগড়া-তর্ক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
من ترك المراء وهو مبطل بني له بيت في
ربض الجنة ومن تركه وهو محق بني له في وسطها ومن حسن خلقه بني له في أعلاها
“নিজের মত বাতিল হওয়ার কারণে যে ব্যক্তি বিতর্ক পরিত্যাগ করবে তার জন্য জান্নাতের পাদদেশে বাড়ি নির্মাণ করা হবে। আর যে ব্যক্তি নিজের মত সঠিক হওয়া সত্ত্বেও বিতর্ক পরিত্যাগ করবে তার জন্য জান্নাতের মধ্যবর্তী স্থানে বাড়ি নির্মাণ করা হবে। আর যার আচরণ সুন্দর তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে বাড়ি নির্মাণ করা হবে।” হাদীসটি সহীহ।[2]
[1] তিরমিযী, আস-সুনান ৫/৩৭৮। তিরমিযী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।
[2] মুনযিরী, আত-তারগীব ১/৭৭; আলবানী, সহীহুত তারগীব ১/১৩২।
No comments