যাদুকর ও জ্যোতিষীর গলায় ধারালো তরবারি-অধ্যায়-০৬

যাদুকর ও জ্যোতিষীর গলায় ধারালো তরবারি-অধ্যায়-০৬, ওয়াহীদ বিন আব্দুস সালাম বালী

৬.  যাদুর প্রতিকার

যাদুকে দমন করার পদ্ধতি

এই অধ্যায়ে ইনশাআল্লাহ যাদুর দ্বারা আক্রান্ত রোগের প্রকারভেদ এর প্রতিকার কুরআন হাদীসের আলোকে কি পদ্ধতিতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করব। প্রকাশ থাকে যে, অধ্যায় অন্যান্য অধ্যায়ে চিকিৎসা বিষয়ে আরো অনেক এমন বিষয়ও পাওয়া যাবে যা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বিশেষ কোন চিকিৎসার ব্যাপারে সরাসরি সাব্যস্ত নয় তবে সেই মৌলিক সূত্রের অন্তর্ভুক্ত পাওয়া যাবে যা কুরআন হাদীসে সাব্যস্ত। যেমনঃ কোন এক চিকিৎসা একটি আয়াত বা বিভিন্ন সূরার বিভিন্ন আয়াতে থাকতে পারে। সুতরাং তা সবগুলিই নিম্নের আয়াতের নির্দেশনার আওতায়

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ

অর্থঃআর আমার অবতরণ করা কুরআনের আয়াতে মু'মিনদের জন্যে আরোগ্য এবং রহমত রয়েছে।" (সূরা ইসরাঃ ৮২)

কোন কোন ইমাম বলেনঃ আয়াতে শিফা বা আরোগ্য বলতে আভ্যন্তরীণ আরোগ্যকে বুঝানো হয়েছে, অর্থাৎ সংশয়, শিরক, কুফর ইত্যাদি রোগের আরোগ্য। কেউ বলেনঃ দৈহিক আত্মিক উভয় রোগের আরোগ্য

অন্য এক হাদীস দ্বারাও প্রমাণিত হয়, আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার কাছে আগমন করলেন; সে সময় তার কাছে এক রমণী বসা ছিলেন, যে তার ঝাড়-ফুকের মাধ্যমে চিকিৎসা করছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃতাকে আল্লাহর কিতাব দ্বারা চিকিৎসা কর (নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) সহীহ বলেছেনঃ ১৯৩১)

এই হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কুরআনের কোন বিশেষ অংশের মাধ্যমে চিকিৎসার নির্দেশ না দিয়ে সাধারণ ভাবে কুরআনের কথা উল্লেখ করেছেন। তাদ্বারা বুঝা গেল যে, সমস্ত কুরআন আরোগ্য অর্জনের উপায়। বাস্তবতার আলোকে প্রমাণিত যে, কুরআন শুধুমাত্র, যাদু, বদনজর হিংসারই চিকিৎসা নয়; বরং দৈহিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেরও চিকিৎসা রয়েছে এতে

কেউ যদি বলেঃ আগ্রহী যুবকবৃন্দ যেই সব আয়াত দ্বারা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চিকিৎসা করেছেন সেই সব আয়াতের মাধ্যমেই চিকিৎসা করতে চায়, তাই নব প্রজন্মের অবগতির জন্যে সহীহ বুখারীর নিম্নের হাদীসটি পেশ করছি

আবু সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি সাহাবাদের সাথে ছিলেন। তারা একত্রে এক উপত্যকা ভ্রমণ করছিলেন। সেই উপত্যকার বাসিন্দার কাছে আতিথিয়তার আবেদন জানালেন; কিন্তু তারা তা গ্রহণ করল না। অতঃপর গোত্র প্রধানকে কোন বিষাক্ত প্রাণী দংশন করল। তখন সেখানের লোকজন দৌড়ে সাহাবাদের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল যে, তোমাদের মধ্যে কেউ কি এমন আছে যে ঝাড়-ফুক জানে?

উত্তরে আবু সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেনঃ যে আমি জানি তবে আমি ঝাড়-ফুক করব না যতক্ষণ না তোমরা এর প্রতিদান নির্ধারণ করবে। প্রতিদান নির্ধারণ হওয়ার পর তিনি ঝাড়লেন এবং অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠল। এরপর তারা সাহাবাদেরকে ছাগল দিলেন। তারা ছাগল নিয়ে রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিকট উপস্থিত হয়ে আল্লাহর রাসূলের কাছে সব ঘটনা খুলে বললেন। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবু সাঈদ খুদরী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করলেন যে, তুমি কিভাবে ঝাড়-ফুক করেছিলে? উত্তরে বললেন সূরা ফাতেহা পড়ে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি কিভাবে জানতে পারলে যে সূরা ফাতেহার মাধ্যমে চিকিৎসা করলে আরোগ্য লাভ হয়? আর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার এই বিষয়ে কোন আপত্তি করেননি; বরং এর প্রশংসাই করেছেন

এই হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, আবু সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর কাছে সুস্পষ্ট কোন নির্দেশনা না থাকার পরেও ঝাড়-ফুক করেছেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা সমর্থন করে স্বীকৃতি দিয়েছেন

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঝাড়-ফুকের সাধারণত কিছু মৌলিক পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন। সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, কিছু লোক নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করল যে আমরা জাহিলিয়াতের যুগে ঝাড়-ফুক করতাম। তিনি বললেন সেই সব মন্ত্র আমার কাছে পেশ কর। ঝাড়-ফুক করাতে নিষেধ নেই যদি তাতে কোন শিরকযুক্ত বাক্য না থাকে। এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ঝাড়-ফুক বৈধ তা কুরআন হাদীস দিয়ে হোক অথবা অন্য দুআর মাধ্যমে হোক এমনি জাহেলিয়্যাত যুগের ঝাড়-ফুক দিয়ে যদি তাতে শিরক না থাকে

  স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানোর যাদু

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَىٰ مُلْكِ سُلَيْمَانَ ۖ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنْزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ ۚ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ ۖ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ۚ وَمَا هُمْ بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ ۚ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ۚ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنْفُسَهُمْ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ

অর্থঃতারা সেই সব বিষয়ের অনুগত হয়ে গেল যেই সব বিষয় শয়তান সুলায়মান (আলাইহিস সালাম)-এর শাসনামলে পাঠ করত। অথচ সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) কখনও কুফুরি করেননি; বরং শয়তান কুফুরী করত এবং শয়তান লোকদের যাদু শিক্ষা দিত এবং বাবেলে হারুতমারুতের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল তা শিখত। আর সেই দুই ফেরেশতা কাউকে কোন কিছু শিখাতো না যতক্ষণ না তারা সতর্ক করে দিত যে, আমরা তোমাদের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ সুতরাং তোমরা কুফুরি করো না। তবুও তারা তাদের কাছ থেকে এমন বিষয় শিক্ষা নিত যা দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো হয়। আর তারা আল্লাহ হুকুম ব্যতীত কাউকে কোন ক্ষতিসাধন করতে পারবে না। আর তারা অলাভজনক ক্ষতিকর বিষয়গুলোর শিক্ষা নিত। অথচ তারা জানত যে নিশ্চয় যে ব্যক্তি এই সব ক্রয় করে নিবে তাদের জন্যে আখেরাতে কোন অংশ নেই। আর কত নিকৃষ্ট বিষয় তারা ক্রয় করেছে যদি তা তারা উপলব্ধি করত। (সূরা বাকারাঃ ১০২)

জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন, ইবলীস তার আসন পানিতে (সমুদ্রে) রাখে এবং সে তার বাহিনীকে অভিযানে প্রেরণ করে আর সর্বাপেক্ষা প্রিয় সেই শয়তান হয়, যে সবার থেকে বেশি ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে। অভিযান শেষে সকলেই অভিযানের সফলতা সরদার শয়তানের কাছে পেশ করতে থাকে। অতঃপর সরদার বলে, তোমরা কেউ কোন বড় ধরনের কাজ করে আসতে পারনি। অতঃপর সরদারের কাছে এক ছোট শয়তান এসে বলে, আমি অমুক ব্যক্তিকে ততক্ষণ পর্যন্ত ত্যাগ করিনি যতক্ষণ না আমি তার তার স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছি। এরপর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, শয়তানের সরদার সেই ছোট শয়তানকে তার নিকটতম করে নেয় বলে, তুমি কতইনা উত্তম। অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, বড় শয়তান ছোট শয়তানের সাথে আলিঙ্গন করে। (মুসলিম)

 প্রকারের পরিচয়ঃ

এটি যাদুর এমন এক কর্ম যা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ বা দুবন্ধুর মাঝে বা দু'অংশীদারের মাঝে হিংসা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে

যাদুর মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটানোর প্রকারভেদঃ

মা সন্তানের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো

২। পিতা সন্তানের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো

৩। দু'ভাইয়ের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো

বন্ধুদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো

ব্যবসায় শরীকদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো

স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছেদ ঘটানো। আর এই প্রকারটি সর্বাপেক্ষা ভয়ানক এবং তা বেশি প্রচলিত

বিচ্ছেদের যাদুর আলামত

হঠাৎ ভালবাসা থেকে শক্রতায় পরিণত হওয়া

২। উভয়ের মাঝে অধিক সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া

পরস্পর ক্ষমা না চাওয়া ক্ষমা না করা

৪। অতিমাত্রায় মতবিরোধ সৃষ্টি হওয়া যদিও তা সামান্য ব্যাপারকে কেন্দ্র করে

৫। স্ত্রীর সৌন্দর্য অসুন্দরে পরিণত হওয়া। যদিও সে খুবই সুন্দরী হোক স্বামীর কাছে নিকৃষ্ট মনে হওয়া। আর স্ত্রীর কাছে স্বামী নিকৃষ্ট উপলব্ধি হওয়া

৬। যাদুগ্রস্তের নিকট অপর জনের প্রত্যেক কৰ্মই অপছন্দ হওয়া

৭। যাদুগ্ৰস্ত অপর পক্ষের বসার স্থানকে অপছন্দ করা। যেমনঃ স্বামী গৃহের বাইরে খুব ভাল করে ঘরে প্রবেশ করলেই অন্তরে অতিসংকীর্ণতা বোধ করে। ইবনে কাসীর (রাহেমাহুল্লাহ) বলেনঃ স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছন্নতার যাদুর ফলে যাদুগ্ৰস্ত অপরজনকে কুদৃষ্টিতে দেখবে বা সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখবে বা ধরনের অন্যান্য বিচ্ছেদ সৃষ্টিকারী বিষয়ে পতিত হবে। (তাফসীর ইবনে কাসীরঃ /১৪৪)

 দুই ব্যক্তির মাঝে বিচ্ছেদের জন্য যাদু যেভাবে করা হয়

যখন কোন ব্যক্তি যাদুকরের কাছে গিয়ে বলে যে, অমুক অমুক ব্যক্তির মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিন। তখন যাদুকর তাকে সেই ব্যক্তির নাম তার মায়ের নাম জানাতে বলে। এছাড়া সেই ব্যক্তির কাপড়, টুপি, চুল ইত্যাদি নিয়ে আসতে বলে। আর যদি এসবগুলো পাওয়া সম্ভব না হয়, তবে সেই ব্যক্তির রাস্তায় যাদু করা পানি ঢেলে দেয়া হয় যে রাস্তায় উদ্দিষ্ট ব্যক্তি চলাফেরা করে। আর সেই পানি অতিক্রম করা মাত্রই যাদুর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে যায়। অথবা এমনও করা হয় যে, খাদ্যদ্রব্য যাদু করে খেতে দেয়া হয়

 চিকিৎসা - প্রথম স্তরঃ চিকিৎসার পূর্বের স্তরঃ

এর চিকিৎসা তিনটি স্তরে করতে হবেঃ

প্রথম স্তরঃ চিকিৎসার পূর্বের স্তরঃ

১। সেই ঘরে ঈমানী পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যেমনঃ সর্বপ্রথম সেই ঘরকে সকল প্রকার ছবি থেকে পবিত্র করতে হবে যেন ফেরেশতা প্রবেশ করতে পারে

২। সেই ঘরকে সকল প্রকার গান-বাজনা থেকে পবিত্র করতে হবে

৩। সেই ঘরের কেউ শরীয়তের বিধান অমান্য করবে না। যেমনঃ পুরুষ সোনা পরবে না আর মহিলা বেপর্দা থাকবে না এবং কোন ব্যক্তি ধুমপান করবে না

৪। অসুস্থ ব্যক্তির সাথে তাবীজ-কবচ, কড়ি বা এধরণের কিছু থাকলে তা খুলে জ্বালিয়ে দিবে

৫। পরিবারের সকলকেই বিশুদ্ধ আকীদায় বিশ্বাসী হিসেবে তৈরি করা। যেন সবাই এর জন্য আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো সাথে সম্পর্ক না রাখে

৬। অসুস্থ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হবে তার অবস্থা নির্ণয় তার লক্ষণ বুঝার জন্য যেমনঃ তোমার স্ত্রীকে কি কখনও তোমার নিকট ঘৃণা লাগে? তোমাদের মাঝে কি সাধারণ সামান্য বিষয় নিয়ে বিবাদ সৃষ্টি হয়? তুমি কি ঘরের বাহিরে আনন্দ উপলব্ধি করো? আর যখনই ঘরে প্রবেশ করো তখনই কি সমস্যা অনুভব হয়? সহবাসের সময় কি কারে বিরক্ত বোধ হয়? ঘুমের মাঝে কি তাদের উভয়ের মধ্যে কেউ অস্থিরতা অনুভব বা ভীতিজনক স্বপ্ন দেখতে পায়?

চিকিৎসক উপরোক্ত প্রশ্নাবলী থেকে দু'টি বা ততোধিক যদি সঠিক হয় তবে চিকিৎসা শুরু করবে

৭। চিকিৎসা আরম্ভ করার পূর্বে নিজে এবং সহযোগী উভয়েই ওযু করে নিবে

৮। অসুস্থ রোগী যদি মহিলা হয়ে থাকে, তবে পর্দা অবস্থায় না হলে চিকিৎসা করবে না

কোন এমন মহিলার চিকিৎসা করবে না, যে শরীয়ত পরিপন্থী পোশাকে রয়েছে যেমনঃ মুখ খোলা, সুগন্ধি ব্যবহৃত অবস্থায় বা নখ বড় করে কাফের মহিলা সদৃশ রয়েছে

১০। মহিলার চিকিৎসা তার মাহরামের (একান্ত আপনজন) উপস্থিতিতে হতে হবে

১১ মাহরাম ব্যতীত অন্য পুরুষ তার সাথে থাকতে পারবে না

১২। সফলতার জন্যে নিজকে সকল কলুষতা অন্যের প্রতি সকল আস্থা থেকে মুক্ত রাখবে। আর একমাত্র আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে তার উপরেই আস্থা রাখবে

 চিকিৎসার দ্বিতীয় স্তরঃ দু' আয়াত -

চিকিৎসক তার হাত রোগীর মাথায় রাখবে এবং তার কানের কাছে এই সব দু' আয়াত সতর্কতার সাথে এবং বিশুদ্ধ স্বজোরে পড়বে

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ

অর্থঃঅভিশপ্ত শয়তান থেকে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং এর অনিষ্ট কুমন্ত্রণা থেকেও আশ্রয় প্রার্থনা করছি আল্লাহর কাছে। অতি দয়ালু করুণাময় আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে যিনি সমস্ত বিশ্বের প্রতিপালক। যিনি অত্যন্ত দয়ালু করুণাময় বিচার দিনের মালিক আমরা কেবল তোমারি ইবাদত করি এবং তোমার কাছেই প্রার্থনা করি। হে প্রভু আমাদের সরল পথ দেখাও, সেই সব ব্যক্তিদের পথ যাদের তুমি পুরস্কৃত করেছ। সেই সব ব্যক্তির পথ নয় যাদের উপর তোমার অভিশাপ রয়েছে, আর পথভ্রষ্টদের পথ (সূরা ফাতেহা)

 দু' আয়াত -

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ، الم، ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ ۛ فِيهِ ۛ هُدًى لِلْمُتَّقِينَ، الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ، وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ وَبِالْآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ، أُولَٰئِكَ عَلَىٰ هُدًى مِنْ رَبِّهِمْ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

অর্থঃদয়ালু করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি। (ذلك الكتاب) এই কিতাবে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। পরহেযগারদের জন্যে হেদায়াত (পথ-প্রদর্শক) যারা অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে আমার দেয়া সম্পদ হতে (মানব কল্যাণে) ব্যায় করে। আর যারা আপনার প্রতি অবতীর্ণ বিষয়ের (কুরআনের) উপর এবং আপনার পূর্বে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আখেরাতের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে। তারাই এমন লোক যারা নিজ প্রভুর পক্ষ থেকে (পথ প্রদর্শিত) হেদায়াতপ্রাপ্ত এবং তারাই সফলতার অধিকারী। (সূরা বাকরাঃ -)

 দু' আয়াত -

وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَىٰ مُلْكِ سُلَيْمَانَ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنْزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ وَمَا هُمْ بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنْفُسَهُمْ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ

অর্থঃএবং সুলাইমানের রাজত্বকালে শয়তানরা যা আবৃত্তি করতো, তারা তারই অনুসরণ করছে এবং সুলাইমান কুফুরী করেননি কিন্তু শয়তানরাই কুফুরী করেছিল। তারা লোকদেরকে যাদু বিদ্যা এবং যা বাবেল শহরে হারুত-মারুত ফেরেশতাদ্বয়ের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল তা শিক্ষা দিতো, এবং তারা উভয়ে কাউকেও ওটা শিক্ষা দিতো না, যে পর্যন্ত তারা না বলতো যে, আমরা স্বরূপ, অতএব তুমি কুফরী করো না; অনন্তর যাতে স্বামী তদীয় স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ সংঘটিত হয়, তারা উভয়ের নিকট তা শিক্ষা করতো এবং তারা আল্লাহর হুকুম ব্যতীত তদ্বারা কারও অনিষ্ট সাধন করতে পারতো না এবং তারা ওটাই শিক্ষা করছে যাতে তাদের ক্ষতি হয় এবং তাদের কোন উপকার সাধিত হয় না এবং নিশ্চয় তারা জ্ঞাত আছে যে, অবশ্য যে কেউ ওটা ক্রয় করেছে, তার জন্যে পরকালে কোনই অংশ নেই এবং তদ্বিনিময়ে তারা যে আত্ম-বিক্রয় করেছে তা নিকৃষ্ট, যদি তারা তা জানতো!" (সূরা বাকারাঃ ১০২) আয়াতটি বেশি বেশি পড়বে

 দু' আয়াত -

وَإِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِي تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِمَا يَنْفَعُ النَّاسَ وَمَا أَنْزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّمَاءِ مِنْ مَاءٍ فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِنْ كُلِّ دَابَّةٍ وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخَّرِ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ

অর্থঃ এবং তোমাদের মাবুদ একমাত্র আল্লাহ; সেই সর্বদাতা করুণাময় ব্যতীত অন্য কোন সত্য মা'বূদ নেই। নিশ্চয় নভোমন্ডল ভূমন্ডল সৃষ্টিতে, দিন রাতের পরিবর্তনে, জাহাজসমূহের চলাচলেযা মানুষের লাভজনক এবং সম্ভার নিয়ে সমুদ্রে চলাচল করে, আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ দ্বারা পৃথিবীকে মৃত্যুর পর পরিবর্তনে এবং আকাশ পৃথিবীর মধ্যস্থ নিয়ন্ত্রিত মেঘমালায় সত্য জ্ঞানবান সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। (সূরা বাকারাঃ ১৬৩-১৬৪)

 দু' আয়াত -

اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

অর্থঃআল্লাহ তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই, তিনি চিরজীবন্ত সবার রক্ষণা-বেক্ষণকারী, তন্দ্রা নিদ্রা তাকে স্পর্শ করে না, নভোমন্ডলে ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সব তারই এমন কে আছে যে তার অনুমতি ব্যতীত তার নিকট সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখের পশ্চাতের সবই তিনি অবগত আছেন; তিনি যা ইচ্ছে করেন তা ব্যতীত তার অনন্ত জ্ঞানের কোন বিষয়ই কেউ আয়ত্ব করতে পারে না; তার কুরসী নভোমন্ডল ভূমন্ডল পরিব্যপ্ত হয়ে আছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাকে পরিশ্রান্ত করে না এবং তিনি সমুন্নত, মহীয়ান!" (সূরা বাকরাঃ ২৫৫)

 দু' আয়াত -

آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ

অর্থঃরাসূল তার প্রতিপালক হতে তার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা বিশ্বাস করেন এবং মুমিনগণও (বিশ্বাস করেন); তারা সবাই ঈমান এনেছে আল্লাহর উপর তার ফেরেশতাগণের উপর, তার গ্রন্থসমূহের উপর এবং তার রাসূলগণের উপর। আমরা তার রাসূলগণের মধ্যে কাউকেও পার্থক্য করি না, তারা বলে, আমরা শ্রবণ করলাম স্বীকার করলাম, হে আমাদের প্রতিপালক। আমরা আপনারই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনারই দিকে চূড়ান্ত প্রত্যাবর্তন

কোন ব্যক্তিকেই আল্লাহ তার সাধ্যের অতিরিক্ত কর্তব্য পালনে বাধ্য করেন না; কারণ সে যা উপার্জন করেছে তা তারই জন্যে এবং সে যা (অন্যায়) করেছে তা তারই উপর বর্তায়। হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা ভুলে যাই অথবা না জেনে ভুল করি তজ্জন্যে আমাদেরকে দোষারোপ করবেন না, হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের পূর্ববতীগণের উপর যেরূপ ভার অর্পণ করেছিলেন, আমাদের উপর তদ্রুপ ভার অর্পণ করবেন না; হে আমাদের প্রভু, যা আমাদের শক্তির অতীত ঐরূপ ভার বহনে আমাদেরকে বাধ্য করবেন না এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন আমাদেরকে মার্জনা করুন এবং আমাদের দয়া করুন; আপনিই আমাদের অভিভাবক। অতএব কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।" (সূরা বাকারাঃ ২৮৫)

দু' আয়াত -

شَهِدَ اللَّهُ أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَالْمَلَائِكَةُ وَأُولُو الْعِلْمِ قَائِمًا بِالْقِسْطِ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَمَنْ يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ

অর্থঃআল্লাহ সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, নিশ্চয়ই তিনি ব্যতীত সত্য কেউ মাবুদ নেই এবং ফেরেশতাগণ, ন্যায় নিষ্ঠ বিদ্যানগণ (সাক্ষ্য প্রদান করেন) তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্য মাবুদ নেই, তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়

নিশ্চয়ই ইসলামই আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম এবং যাদেরকে গ্রন্থ প্রদান করা হয়েছে তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর তারা পরস্পর বিদ্বেষবসত বিরোধে লিপ্ত হয়েছিল এবং যে আল্লাহর নিদর্শন-সমূহ অস্বীকার করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্বর হিসাব গ্রহণকারী।” (সূরা আলে ইমরানঃ ১৮-১৯)

 দু' আয়াত -

إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ، ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ، وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَا وَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِنَ الْمُحْسِنِينَ

অর্থঃআমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি শয়তানের অনিষ্ট থেকে।" নিশ্চয় তোমাদের প্রভু আল্লাহ যিনি আসমান যমীনকে সৃষ্টি করেছেন। ছয় দিনে অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি দিন-রাতের প্রত্যাবর্তন করেন। আর সূর্য চন্দ্র তারকারাজি তারই নির্দেশের অনুগত। খবরদার! সৃষ্টি জগত তারই। সমস্ত জগতের প্রভু আল্লাহ তিনি মহান। তোমরা তোমাদের প্রভুকে বিনয়ের সাথে এবং গোপনে আহবান কর। তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। আর আল্লাহর যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করো না এবং তাকে আহবান কর ভয়ে আশায়। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত সৎলোকদের জন্যে অবধারিত। (সূরা 'রাফঃ ৫৪-৫৬)

 দু' আয়াত -

وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ، فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ، فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانْقَلَبُوا صَاغِرِينَ، وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ، قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ، رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ

অর্থঃ আমি আল্লাহ তায়ালার আশায় প্রার্থনা করছি অভিশপ্ত শয়তান থেকে। আর মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর কাছে ওহী প্রেরণ করেছি যে, আপনি আপনার লাঠি মাটিতে ফেলে দিন। দেখামাত্র সাপে পরিণত হয়ে) যাদুকরদের যাদুর সাপ গিলে ফেলছে। সত্যের বিজয় প্রতিষ্ঠিত হল, ধংসপ্রাপ্ত হল তাদের কর্ম। সেখানে তারা পরাজিত হয়েছে এবং অপদস্ত পর্যুদস্ত হয়েছে। সকল যাদুকর সেজদারত হল। তারা বললঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করলাম সমস্ত জগতের প্রভুর উপর যিনি মূসা হারুণের প্রভু।" (সূরাঃ আরাফঃ ১১৭-১২২) আয়াতগুলি বেশি বেশি পড়বে, বিশেষ করে وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَঅংশটি

 দু' আয়াত - ১০

১০

فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُمْ بِهِ السِّحْرُ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ، وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ

অর্থঃমূসা (আঃ) বললেন তোমরা যেই যাদু দেখাচ্ছে আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই তা ধ্বংস করে দিবেন। আল্লাহ তায়ালা ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের কর্মের সংশোধন করেন না এবং আল্লাহ সত্যকে তার নির্দেশে প্রতিষ্ঠিত করবেন যদিও অপরাধীগণ তা অপছন্দ করে।" (সূরা ইউনুসঃ ৮১-৮২ এটিও বেশি বেশি পড়বে, বিশেষ করেঃ " إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ " অংশটি বেশি বেশি পড়বে।)

 দু' আয়াত - ১১

১১

إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ

অর্থঃতারা কেবলমাত্র যাদুকরের ষড়যন্ত্র প্রস্তুত করেছে। আর যাদুকর সফলকাম হবে না তারা যাই করুক।” (সূরা ত্বাহাঃ ৬৯)

 দু' আয়াত - ১২

১২

أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ، فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ، وَمَنْ يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِنْدَ رَبِّهِ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ، وَقُلْ رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

অর্থঃতোমরা কি এই ধারণা করছ যে, তোমাদেরকে আমি অযথা সৃষ্টি করেছি। আর তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে না। অতএব আল্লাহ মহান যিনি প্রকৃত বাদশাহ। তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই আর তিনি মোবারক আরশের প্রভু। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করবে এর তার উপর কোন প্রমাণ নেই, তার হিসাব তার পালনকর্তার নিকট আছে। নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না। বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা ক্ষমা করুন রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ঠ রহমকারী।” (সূরা মু'মিনুনঃ ১১৫-১১৮)

 দু' আয়াত - ১৩

১৩

وَالصَّافَّاتِ صَفًّا، فَالزَّاجِرَاتِ زَجْرًا، فَالتَّالِيَاتِ ذِكْرًا، إِنَّ إِلَٰهَكُمْ لَوَاحِدٌ، رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ الْمَشَارِقِ، إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ، وَحِفْظًا مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ مَارِدٍ، لَا يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلَإِ الْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِنْ كُلِّ جَانِبٍ، دُحُورًا وَلَهُمْ عَذَابٌ وَاصِبٌ، إِلَّا مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ

অর্থঃশপথ তাদের যারা (ফেরেশতাগণ) সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান। যারা কঠোর পরিচালক (মেঘমালার) এবং যারা কুরআন আবৃত্তিতে রত। নিশ্চয়ই তোমাদের মাবুদ এক। যিনি আকাশমন্ডলী পৃথিবী এবং এতোদুভয়ের অন্তর্বর্তী সব কিছুর প্রতিপালক এবং প্রতিপালক সকল উদয় স্থলের। আমি পৃথিবীর আকাশকে নক্ষত্ররাজির শোভা দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং রক্ষা করেছি প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান হতে। ফলে, তারা উর্ধ্ব জগতের কিছু শ্রবণ করতে পারে না এবং তাদের প্রতি (জ্বলন্ত তারকা) নিক্ষিপ্ত হয় সকল দিক হতে-বিতাড়নের জন্যে এবং তাদের জন্যে আছে অবিরাম শাস্তি। তবে কেউ হঠাৎ ছো মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তাদের পশ্চাদ্ধাবন করে।" (সূরা সাফফাত -১০)

 দু' আয়াত - ১৪

১৪

وَإِذْ صَرَفْنَا إِلَيْكَ نَفَرًا مِنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ الْقُرْآنَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوا أَنْصِتُوا فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْا إِلَىٰ قَوْمِهِمْ مُنْذِرِينَ، قَالُوا يَا قَوْمَنَا إِنَّا سَمِعْنَا كِتَابًا أُنْزِلَ مِنْ بَعْدِ مُوسَىٰ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ يَهْدِي إِلَى الْحَقِّ وَإِلَىٰ طَرِيقٍ مُسْتَقِيمٍ، يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ اللَّهِ وَآمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُمْ مِنْ ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ، وَمَنْ لَا يُجِبْ دَاعِيَ اللَّهِ فَلَيْسَ بِمُعْجِزٍ فِي الْأَرْضِ وَلَيْسَ لَهُ مِنْ دُونِهِ أَوْلِيَاءُ أُولَٰئِكَ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ

অর্থঃস্মরণ কর, আমি তোমার প্রতি আকৃষ্ট করেছিলাম একদল জ্বিনকে, যারা কুরআন পাঠ শুনতেছিল, যখন তারা তার (নবীর) নিকট উপস্থিত হলো, তারা একে অপরকে বলতে লাগলোঃ চুপ করে শ্রবণ কর। যখন কুরআন পাঠ সমাপ্ত হলো তখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে গেল সতর্ককারী রূপেতারা বলেছিলঃ হে আমাদের সম্পপ্রদায়! আমরা এমন এক কিতাবের পাঠ শ্রবণ করেছি যা অবতীর্ণ হয়েছে মূসা (&)-এর পরে, এটা ওর পূর্ববর্তী কিতাবের সমর্থন করে এবং সত্য সরল পথের দিকে পরিচালিত করে। হে আমাদের সম্প্রদায়! আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, আল্লাহ তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হতে তোমাদেরকে রক্ষা করবেন। কেউ যদি আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া না দেয় তবে সে পৃথিবীতে আল্লাহর অভিপ্রায় ব্যর্থ করতে পারবে না এবং আল্লাহ ছাড়া তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না তারাই সুস্পষ্ট বিভ্রান্তি তে রয়েছে। (সূরা আহকাফঃ ২৯-৩২)

 দু' আয়াত - ১৫

১৫

يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ إِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ تَنْفُذُوا مِنْ أَقْطَارِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ فَانْفُذُوا لَا تَنْفُذُونَ إِلَّا بِسُلْطَانٍ، فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

অর্থঃহে জিন মানুষ সম্প্রদায়! আকাশমন্ডলী পৃথিবীর সীমা তোমরা যদি অতিক্রম করতে পার, অতিক্রম কর, কিন্তু তোমরা তা পারবে না, শক্তি ব্যতিরেকে। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? তোমাদের উভয়ের প্রতি প্রেরিত হবে অগ্নিশিখা ধুম্ৰপুঞ্জ, তখন তোমরা প্রতিরোধ করতে পারবে না। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?" (সূরা রহমানঃ ৩৩-৩৬)

 দু' আয়াত - ১৬

১৬

لَوْ أَنْزَلْنَا هَٰذَا الْقُرْآنَ عَلَىٰ جَبَلٍ لَرَأَيْتَهُ خَاشِعًا مُتَصَدِّعًا مِنْ خَشْيَةِ اللَّهِ وَتِلْكَ الْأَمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ، هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ، هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ، هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ

অর্থঃযদি আমি এই কুরআন পর্বতের উপর অবতীর্ণ করতাম তবে তুমি দেখতে যে, ওটা আল্লাহর ভয়ে বিনীত বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত বর্ণনা করি মানুষের জন্য যাতে তারা চিন্তা করে তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত সত্য কোন মাবুদ নেই, তিনি অদৃশ্য এবং দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা; তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু। তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত সত্য কোন মা'বূদ নেই। তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই পবিত্র, মহান। তিনিই আল্লাহ সৃজনকর্তা, উদ্ভাবন কর্তা, রূপদাতা, সকল উত্তম নাম তারই। আকাশ পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সমস্তই তার পবিত্রতা মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।" (সূরা হাশরঃ ২১-২৪)

দু' আয়াত - ১৭

১৭

قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِنَ الْجِنِّ فَقَالُوا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا، يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا، وَأَنَّهُ تَعَالَىٰ جَدُّ رَبِّنَا مَا اتَّخَذَ صَاحِبَةً وَلَا وَلَدًا، وَأَنَّهُ كَانَ يَقُولُ سَفِيهُنَا عَلَى اللَّهِ شَطَطًا، وَأَنَّا ظَنَنَّا أَنْ لَنْ تَقُولَ الْإِنْسُ وَالْجِنُّ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا، وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِنَ الْإِنْسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا، وَأَنَّهُمْ ظَنُّوا كَمَا ظَنَنْتُمْ أَنْ لَنْ يَبْعَثَ اللَّهُ أَحَدًا، وَأَنَّا لَمَسْنَا السَّمَاءَ فَوَجَدْنَاهَا مُلِئَتْ حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا، وَأَنَّا كُنَّا نَقْعُدُ مِنْهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمْعِ فَمَنْ يَسْتَمِعِ الْآنَ يَجِدْ لَهُ شِهَابًا رَصَدًا

অর্থঃ বলঃ আমার প্রতি অহী প্রেরিত হয়েছে যে, জীনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করেছে এবং বলেছেঃ আমরা তো এক বিস্ময়কর কুরআন শ্রবণ করেছি। যা সঠিক পথ-নির্দেশ করে; ফলে, আমরা এতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা কখনো আমাদের প্রতি পালকের কোন শরীক স্থাপন করবো না এবং নিশ্চয়ই সমুচ্চ আমাদের প্রতিপালকের মর্যাদা; তিনি গ্রহণ করেন নি কোন পত্নী এবং না কোন সন্তান এবং আমাদের মধ্যকার নিবোধরা আল্লাহর সম্বন্ধে অতি অবাস্তব উক্তি করতো। অথচ আমরা মনে করতাম যে, মানুষ এবং জ্বিন আল্লাহ সম্বন্ধে কখনো মিথ্যা আরোপ করবে না। আর কতিপয় মানুষ কতক জ্বিনের আশ্রয় প্রার্থনা করতো, ফলে তারা জিনদের আত্মম্ভরিতা বাড়িয়ে দিতো। (আর জিনেরা বলেছিলঃ) তোমাদের মত মানুষও মনে করে যে, মৃত্যুর পর আল্লাহ কাউকেও পুনরথিত করবেন না এবং আমরা চেয়েছিলাম আকাশের তথ্য সংগ্রহ করতে; কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম কঠোর প্রহরী উল্কাপিন্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ। আর পূর্বে আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাটিতে সংবাদ শুনবার জন্যে বসতাম; কিন্তু এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে তার উপর নিক্ষেপের জন্যে প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিন্ডের সম্মুখীন হয়। (সূরা জ্বিন -)

 ১৮ সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস

১৮। সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ، اللَّهُ الصَّمَدُ، لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ، وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ

অর্থঃবলঃ তিনিই আল্লাহ একক ( অদ্বিতীয়), আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, (সবাই তার মুখাপেক্ষী); তার কোন সন্তান নেই এবং তিনিও কারো সন্তান নন এবং তার সমতুল্য কেউই নেই।" (সূরা ইখলাস)

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ، مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ، وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ، وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ

অর্থঃবলঃ আমি আশ্রয় চাচ্ছি উষার স্রষ্টার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট হতে, অনিষ্ট হতে রাত্রির যখন তা অন্ধকারা ছন্ন হয়; এবং সব নারীর অনিষ্ট হতে যারা গ্রন্থিতে ফুৎকার দেয়, (অর্থাৎ যাদু করার উদ্দেশ্যে) এবং অনিষ্ট হতে হিংসুকের, যখন সে হিংসা করে।" (সূরা ফালাক)

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ، مَلِكِ النَّاسِ، إِلَٰهِ النَّاسِ، مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ، الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ، مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ

অর্থঃবলঃ আমি আশ্রয় চাচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের, যিনি মানবমন্ডলীর মালিক (বা অধিপতি;) যিনি মানবমন্ডলীর উপাস্য; আর গোপনকারী কুমন্ত্রনাদাতার অনিষ্ট হতে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিনের মধ্য হতে অথবা মানুষের মধ্য হতে।” (সূরা নাস)

উপরোক্ত সমস্ত আয়াত সূরা রোগীর কর্ণপার্শ্বে উচু আওয়াজে এবং বিশুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করবে। এরপর রোগীর তিনটি অবস্থার যে কোন একটি হতে পারে। প্রথমতঃ হয়ত রোগী বেহুশ হয়ে পড়ে যাবে এবং সে যেই জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত যে যাদুর দায়িত্বে সেই জ্বিন কথা বলতে থাকবে। এমতবাস্থায় চিকিৎসক জিনের ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা নেয়া উচিত সে ব্যবস্থা নিবে, যা আমি আমার অন্য বইয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। এরপর সে জিনকে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলি করবেঃ

তোমার নাম কি? আর তোমার ধর্ম কি? ধর্মের উপর ভিত্তি করে কথা বলতে হবে। যদি সে অমুসলিম হয়ে থাকে তবে তাকে ইসলাম গ্রহণের জন্যে আহবান করবে আর যদি সে মুসলমান হয়ে থাকে তবে তাকে বুঝাবে যে, তোমার জন্য এটা বৈধ নয় যে, তুমি যাদুকরের সেবায় নিয়োজিত থাক। আর না ইসলাম এর অনুমতি দেয়

তাকে জিজ্ঞাসা করবে যে, যাদু কোথায় রয়েছে? তাকে সত্য কথা বলতে বাধ্য করতে হবে। কেননা জ্বিন সব সময় মিথ্যা বলে। সে যদি কোন জায়গার খবর দেয় তবে লোক পাঠিয়ে তা বের করতে হবে

৩। ওকে জিজ্ঞাসা করবে যে, সে কি একাই যাদুর সাথে জড়িত না কি আরও কেউ তার সাথে রয়েছে? যদি অন্য আরও জ্বিন থাকে তবে তার মধ্যে সেই জ্বিনকেও উপস্থিত হতে বাধ্য করবে। অতঃপর তার কথাও শোনবে

কখনও জ্বিন বলবে যে, অমুক ব্যক্তি যাদুকরের কাছে গিয়ে যাদু করতে বলেছে। এমন সব কথাও বিশ্বাস করা যাবে না। কেননা জিনের উদ্দেশ্য হল দুই ব্যক্তি মাঝে শক্রতা বৃদ্ধি করা আর শরীয়তে এসব জ্বিনের সাক্ষ্য গ্রহণীয় নয়। কেননা যাদুকরের সেবায় নিয়োজিত ফাসেক সে

আর আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে বলেনঃ

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَنْ تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ

অর্থঃহে মুমিন ব্যক্তিবর্গ তোমাদের কাছে কোন ফাসেক কোন সংবাদ নিয়ে আসলে তা সূক্ষ্মভাবে তদন্ত কর যাতে করে তোমরা কোন সম্প্রদায়ের প্রতি অবিচার না কর অজ্ঞতাবশত। অতঃপর তোমরা কৃতকর্মে লজ্জিত হও।" (সূরা হুজুরাতঃ )

জিনের তথ্যানুযায়ী যদি সেই যাদুর স্থান পাওয়া যায় আর তা বের করা হয়। তবে পানিতে নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ পড়বেঃ

وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ، فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ، فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانْقَلَبُوا صَاغِرِينَ، وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ، قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ، رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ

অর্থঃ আমি আল্লাহ তায়ালার আশায় প্রার্থনা করছি অভিশপ্ত শয়তান থেকে। আর মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর কাছে ওহী প্রেরণ করেছি যে, আপনি আপনার লাঠি মাটিতে ফেলে দিন। দেখামাত্র সাপে পরিণত হয়ে) যাদুকরদের যাদুর সাপ গিলে ফেলছে। সত্যের বিজয় প্রতিষ্ঠিত হল, ধ্বংসপ্রাপ্ত হল তাদের কর্ম। সেখানে তারা পরাজিত হয়েছে এবং অপদস্ত পর্যুদস্ত হয়েছে। সকল যাদুকর সেজদারত হল। তারা বললঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করলাম সমস্ত জগতের প্রভুর উপর যিনি মূসা হারুণের প্রভু।” (সূরাঃ আরাফঃ ১১৭-১২২)

إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ

অর্থঃতারা কেবলমাত্র যাদুকরের ষড়যন্ত্র প্রস্তুত করেছে। আর যাদুকর সফলকাম হবে না তারা যাই করুক।” (সূরা ত্বাহাঃ ৬৯)

فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُمْ بِهِ السِّحْرُ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ، وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ

অর্থঃমূসা (আঃ) বললেন তোমরা যেই যাদু দেখাচ্ছে আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই তা ধ্বংস করে দিবেন। আল্লাহ তায়ালা ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের কর্মের সংশোধন করেন না এবং আল্লাহ সত্যকে তার নির্দেশে প্রতিষ্ঠিত করবেন যদিও অপরাধীগণ তা অপছন্দ করে।” (সূরা ইউনুসঃ ৮১-৮২)

এসব আয়াতসমূহ এক পাত্র পানিতে পড়ে ফুক দিবে যাতে কুরআন পড়া ভাপ পানিতে যায়। এরপর যাদুকে সেই পানিতে ডুবিয়ে দিবে তা যে কোন ধরণের যাদুর বস্তুই হোক কাগজ বা সুগন্ধি ইত্যাদি। এরপর সেই পানিকে সাধারণ রাস্তা থেকে অনেক দূরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসবে। যদি জ্বিন বলে যে, যাদু আক্রান্ত রোগীকে যাদু পান করিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে রোগীকে জিজ্ঞাসা করতে হবে যে তার পেটে ব্যাথা আছে কি না? যদি ব্যাথা থাকে তবে বুঝতে হবে যে, জ্বিন সত্য বলেছে আর ব্যাথ্য না থাকলে বুঝতে হবে যে, জ্বিন মিথ্যা বলেছে

যদি জ্বিন থেকে সত্য তথ্য সংগ্রহ করা শেষ হয় তখন জ্বিনকে বলবে রোগী থেকে বের হয়ে যেতে এবং আর কখনও যেন ফিরে না আসে এমনিভাবেই ইনশাআল্লাহ যাদু ধ্বংস করা যাবে। অতঃপর পানিতে ইতিপূর্বেই যে তিনটি আয়াত উল্লেখ হয়েছে তা পড়বে এবং সূরা বাকারার ১০২ নং আয়াত পড়ে পানিতে ফুঁ দিবে। রোগীকে তা দ্বারা কিছুদিন গোসল পান করতে বলবে

আর যদি জ্বিন বলে যে, রোগী যাদুর বস্তুর উপর দিয়ে অতিক্রম করেছে অথবা তার কোন কিছু যেমন চুল, কাপড় দিয়ে যাদু করেছে তাহলে এমতাবাস্থায় ইতিপূর্বে উল্লেখিত আয়াতগুলি দ্বারা পানি পড়া থেকে কিছুদিন রোগী পান করবে এবং তা দিয়ে গোসল করে নিবে। গোসল বাথরুমে না করে বরং বাথরুমের বাইরে যে কোন জায়গায় করবে এভাবে ব্যাথা দূর না হওয়া পর্যন্ত করতে থাকবে

এরপর জ্বিনকে বলবে যে, সে যেন এই ব্যক্তিকে ছেড়ে চলে যায় আর ফিরে না আসার অঙ্গীকার করে। এরপর প্রায় এক সপ্তাহ পর রুগী দ্বিতীয়বার পড়বে। যদি অসুস্থ ব্যক্তি কোন কিছু অনুভব না করে। তবে বুঝতে হবে যে, যাদু ধ্বংস হয়ে গেছে। যদি রোগী আবারও বেহুশ হয়ে পড়ে তবে বুঝতে হবে যে, জ্বিন মিথ্যাবাদী এবং এখনও সে রোগী থেকে বের হয়ে যায়নি। ওকে বের না হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করবে নম্রতার সাথে আর যদি এরপরও কথা অমান্য করে তবে মারবে এবং কুরআনের আয়াতসমূহ পড়বে। যদি রোগী বেহুশ না হয় এবং তার শরীরে কাপন শুরু হয় এবং তার নিঃশ্বাস ফুলতে থাকে তবে আয়াতুল কুরসীর ক্যাসেট রোগী প্রতিদিন তিনবার প্রতিবার এক ঘণ্টাব্যাপী শোনবে। এভাবে একমাস শুনবে তারপর পুনরায় সাক্ষাতে আসলে তাকে ঝাড়-ফুঁক দিবে। এবার ইনশাআল্লাহ আরোগ্য লাভ করবে

আর যদি আরোগ্য লাভ না হয় তবে সূরা সাফফাত, ইয়াসীন, দুখান, সূরা জ্বিন এসব সূরার রেকর্ডকৃত ক্যাসেট দিবে যাতে করে দিনে তিনবার তিন সপ্তাহ পর্যন্ত শুনবে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা তাকে সুস্থ করে দিবেন। আর না হয় সময়সীমা বৃদ্ধি করতে হবে

 দ্বিতীয় অবস্থা

ঝাড়-ফুঁকের সময় রোগী যদি কষ্ট অনুভব করে অথবা কাপতে থাকে, ঝাকুনি আসে অথবা মাথায় খুব বেশি ব্যাথা অনুভব করে বেহুশ না হয়, তবে অবস্থায় তিনবার করে শরয়ী ঝাড়-ফুক করবে। যদি রোগী বেহুশ হয়ে যায় তবে পূর্বে উল্লেখিত পদ্ধতি গ্রহণ করবে। আর যদি বেহুশ না হয় মাথা ব্যাথা কাপনি কমতে থাকে তবে কিছুদিন তাকে ঝাড়-ফুক করবে। ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই সে আরোগ্য লাভ করবে। যদি সুস্থ না হয়, তবে নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলি গ্রহণ করবেঃ

১। সূরা সাফফাত সম্পূর্ণ একবার এবং আয়াতুল কুরসী একাধিকবার রেকর্ড করবে। এরপর রোগীকে দিনে তিনবার শোনাবে

২। নামায জামাআতের সাথে আদায় করবে

৩। রোগী ফজর নামাযের পর নিম্নের এই দুআ

(لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير)

একশত বার করে এক মাস পর্যন্ত পড়বে; কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, রোগীর কষ্ট ১০ অথবা ১৫ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে; কিন্তু ধীরে ধীরে কমতে থাকবে এবং মাসের শেষে সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যাবে

এবার যখন পুনরায় ঝাড়-ফুক করবে তাতে রোগী কোন কষ্ট অনুভব করবে না। ইনশাআল্লাহ যাদু ধ্বংস হয়ে যাবে। এমনও হতে পারে যে, অসুস্থ রোগীর কষ্ট এক মাসেও লাঘব হয়নি। সাথে সাথে রোগীর উদ্বেগও থাকে। অবস্থায় যখন রোগী চিকিৎসকের কাছে আসবে তাকে তখন পূর্বের উল্লেখিত আয়াত সূরা সমূহ পড়ে ফুক দিবে। এরপর শীঘ্রই বেহুশ হয়ে যাবে। অতঃপর প্রথম অবস্থার পূর্বের পদ্ধতি গ্রহণ করবে

 তৃতীয় অবস্থা

যদি ঝাড়-ফুক করার সময় কোন পরিবর্তন পরিলক্ষিত না হয়; তবে তাকে পুনরায় তার লক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে হবে এরপর যদি অধিকাংশ লক্ষণই অবর্তমান হয়, তবে বুঝতে হবে সে যাদুগ্ৰস্ত বা অন্য কোন রোগী নয়। অবস্থা নিশ্চিত হবে, অতঃপর তিনবার করে ঝাড়-ফুক করবে এরপরও যদি লক্ষণ ফুটে না ওঠে আর বার বার ঝাড়-ফুক করা হয়; কিন্তু কিছুই অনুভব না করে, তবে অবস্থা খুবই কম। এমতাবস্থায় নিম্নোক্ত পদ্ধতি গ্রহণ করবেঃ

সূরা ইয়াসীন, দুখান এবং সূরা জ্বিন ক্যাসেটে রেকর্ড করাবে এবং তা প্রত্যেক দিন তিনবার রোগীকে শোনানো হবে

বেশি বেশি তাওবা ইস্তেগফার করবে কমপক্ষে দিনে ১০০ বার অথবা বেশি

৩। প্রত্যেক দিন ১০০ বার অথবা এর থেকে বেশি (লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) পড়বে। এই পদ্ধতি একমাস পর্যন্ত করতে থাকবে

তারপর তার উপর ঝাড়-ফুক করবে এবং পূর্বের দুই অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে

 চিকিৎসার তৃতীয় স্তর হলো চিকিৎসা শেষের পরের স্তর

যদি আল্লাহ তায়ালা আপনার প্রচেষ্টায় রোগীকে সুস্থ করে দেন আর রোগী প্রশান্তি লাভ করে তাহলে আপনি আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করুন যিনি আপনাকে এই সুযোগ দান করেছেন। আর আল্লাহকে বেশি করে স্মরণ করতে হবে যেন আল্লাহ আপনাকে অন্যের জন্যও আরো তাওফীক প্রদান করেন। আর আপনার চিকিৎসায় সফলতা যেন আপনার সীমালজঘনও অহংকারের কারণ না হয়

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ


وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ

অর্থঃআর যখন আল্লাহ তায়ালা (আপনার প্রভু) প্রকাশ্যে ঘোষণা করে দিয়েছেন যে, যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে তবে আমি তোমাদেরকে আরও বেশি দিব। আর যদি তোমরা অকৃজ্ঞ হও তবে জেনে রাখ যে আমার শাস্তি বড়ই কঠিন।" (সূরা ইবরাহীমঃ )

আর রোগী সুস্থ হওয়ার পরও আশঙ্কা মুক্ত নয়, কোথাও আবার কেউ দ্বিতীয়বার তার যাদু পুনরাবৃত্তি না করে। কেননা যারা যাদু করিয়েছে তারা যদি তার চিকিৎসকের নিকট গিয়ে সুস্থ হওয়ার বিষয় জানতে পারে তবে তারা দ্বিতীয়বার যাদুকরের নিকট গিয়ে যাদু করতে সচেষ্ট হবে। সুতরাং রোগী তার চিকিৎসকের নিকট যাওয়ার বিষয় গোপন রাখবে। আর রোগীর সুরক্ষার জন্যে নিম্নের নির্দেশাবলী তাকে প্রদান করুনঃ

জামাতের সাথে নামায আদায় করা

২। গান-বাজনা শ্রবণ না করা

৩। ঘুমানোর পূর্বে ওযু করে নেয়া এবং আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াত করা

৪। সব কাজ বিসমিল্লাহ বলে করা

৫। ফজরের নামাযের পর দৈনিক নিম্নের দু' ১০০ বার পড়া

(لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير)

৬। প্রত্যহ সামান্য হলেও কুরআনের তিলাওয়াত অবশ্যই করা। যদি কুরআন পড়তে না জানে তবে অন্য কারো থেকে অথবা ক্যাসেটে শুনবে। (কুরআন কারীমের শিক্ষা গ্রহণ করবে। কেননা মুসলমানদের জন্য তা অবশ্যই জরুরী।)

৭। সৎলোকদের সংস্পর্শে ওঠা-বসা করবে

৮। সকাল-সন্ধ্যার মাসনুন দু'আসমূহ পড়বে

No comments

Powered by Blogger.