কোরআনুল কারীমে বর্ণিত ৩টি দোয়া- যেগুলো আল্লাহ কবুল করেছেন
কোরআনুল কারীমে অনেক দোয়া বর্ণিত হয়েছে। বর্ণিত এসব দোয়ার মাঝে ৩টি বিশেষ দোয়া রয়েছে, যেগুলো আল্লাহতায়ালা কবুল করেছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
আরও অবাক করার মতো বিষয় হলো, সৃষ্টিকর্তা মহান মালিকের মঞ্জুরকৃত দোয়াগুলো সবক’টিই জীবনঘনিষ্ঠ। এর প্রথম দোয়াটি রোগমুক্তির জন্য, দ্বিতীয়টি বিপদমুক্তির জন্য আর তৃতীয় দোয়াটি হলো- সন্তানলাভের জন্য।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত প্রথম দোয়াটি হলো- আল্লাহর নবী হজরত আইয়ুব আলাইহিস সালামের। তার দোয়াটি ছিলো-
দোয়াটি-
رَبِّ أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ-
রাব্বি
আন্নি
মাসসানিয়ায
যুররু
ওয়া
আনতা
আরহামুর
রাহিমিন।
অর্থ-
হে
আমার
প্রভু!
আমি
দুঃখে
কষ্টে
পতিত
হয়েছি,
তুমিইতো
দয়ালুদের
মধ্যে
শ্রেষ্ঠ
দয়ালু।
(সূরা
আম্বিয়া
: আয়াত
৮৩)
এ ঘটনাটি
আল্লাহ
কুরআনে
এভাবে
তুলে
ধরেন-
وَأَيُّوبَ إِذْ نَادَى رَبَّهُ أَنِّي مَسَّنِيَ
الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ - فَاسْتَجَبْنَا لَهُ فَكَشَفْنَا
مَا بِهِ مِن ضُرٍّ وَآتَيْنَاهُ أَهْلَهُ وَمِثْلَهُم مَّعَهُمْ رَحْمَةً مِّنْ عِندِنَا
وَذِكْرَى لِلْعَابِدِينَ
অর্থাৎ
এবং
স্মরণ
করুন
আইউবের
কথা,
যখন
তিনি
তাঁর
পালনকর্তাকে
আহবান
করে
বলেছিলেনঃ
আমি
দুঃখকষ্টে
পতিত
হয়েছি
এবং
আপনি
দয়াবানদের
চাইতেও
সর্বশ্রেষ্ট
দয়াবান।
অতঃপর
আমি
তাঁর
আহবানে
সাড়া
দিলাম
এবং
তাঁর
দুঃখকষ্ট
দূর
করে
দিলাম
এবং
তাঁর
পরিবরাবর্গ
ফিরিয়ে
দিলাম,
আর
তাদের
সঙ্গে
তাদের
সমপরিমাণ
আরও
দিলাম
আমার
পক্ষ
থেকে
কৃপাবশতঃ
আর
এটা
ইবাদত
কারীদের
জন্যে
উপদেশ
স্বরূপ।
(সূরা
আম্বিয়া
: আয়াত
৮৩-৮৪)
দ্বিতীয় দোয়াটি
ছিল আল্লাহর নবী
হজরত ইউনুস আলাইহিস
সালামের। ওই
দোয়াটি হলো-
لَّا
إِلَٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
উচ্চারণ: লা ইলাহা
ইল্লা আনতা সুবহানাকা
ইন্নী কুনতু মিনাজ
জোয়ালিমীন।
অর্থ: তুমি ব্যতীত
কোনো উপাস্য নেই;
তুমি নির্দোষ আমি
গোনাহগার। -সূরা
আম্বিয়া : ৮৭
এই দোয়া
বর্ণনার পর
আল্লাহতায়ালা বলেন,
‘অতঃপর আমি তার
(সেই) আহবানে সাড়া
দিলাম এবং তাকে
দুশ্চিন্তা থেকে
মুক্তি দিলাম। আমি
এমনিভাবে বিশ্ববাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে
থাকি। ’ -সূরা আম্বিয়া
: ৮৮
তৃতীয় দোয়াটি
হলো হজরত জাকারিয়া
আলাইহিস সালামের।
বরকতময় এই দোয়ার
দু’টি অংশ
পবিত্র কোরআনের ভিন্ন
দুই জায়গায় বর্ণিত
হয়েছে।
ক. رَبِّ لَا تَذَرْنِي فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ
الْوَارِثِينَ
উচ্চারণ: রাব্বী লা
তাযারনী ফারদান
ওয়া আনতা খাইরুল
ওয়ারিসীন।
অর্থ: হে আমার
পালনকর্তা! আমাকে
একা রেখো না।
তুমি তো উত্তম
ওয়ারিস। -সূরা
আম্বিয়া : ৮৯
এই দোয়া
কবুল হওয়া প্রসঙ্গে
আল্লাহতায়ালা বলেন,
‘অতঃপর আমি তার
দোয়া কবুল করেছিলাম,
তাকে দান করেছিলাম
ইয়াহইয়া এবং
তার জন্যে তার
স্ত্রীকে প্রসবযোগ্য
করেছিলাম। ’ -সূরা
আম্বিয়া : ৯০
খ. একই বিষয়ে তিনি
আরেকটি দোয়া করেছিলেন।
সেই দোয়ার পর
আল্লাহতায়ালার পক্ষ
থেকে ফেরেশতারা এসে
তাকে দোয়া কবুলের
সুসংবাদ দিয়েছিলেন।
যা সূরা আলে
ইমরানের ৩৯
নম্বর আয়াতে বলা
হয়েছে।
দোয়াটি হলো-
رَبِّ
هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء
উচ্চারণ: রাব্বী হাবলী মিল্লাদুনকা
যুর্যিইয়াতান ত্বায়্যিবাতান ইন্নাকা সামিউদ্দোয়া।
অর্থ: হে আমার পালকর্তা!
তোমার নিকট থেকে
আমাকে পূত-পবিত্র
সন্তান দান করো,
নিশ্চয়ই তুমি
প্রার্থনা শ্রবণকারী।
-সূরা আলে ইমরান:
৩৮
দোয়ার উপরোক্ত
ভাষ্যগুলোর গ্রহণযোগ্যতা
যেহেতু পরীক্ষিত, সুতরাং
রোগ মু্ক্তি, বিপদমুক্তি
কিংবা সন্তান লাভের
জন্য এসব দোয়ার
মাধ্যমে প্রার্থনা
করা বুদ্ধিমানের কাজ।
আল্লাহতায়ালা আমাদের
তওফিক দান করুন।
আমিন।
পরামর্শ: বর্ণিত দোয়াগুলো
আপনার নিকটস্থ মসজিদের
ইমাম-খতিব অথবা
কোনো অভিজ্ঞ আলেমের
কাছ থেকে সহিহ-শুদ্ধভাবে শিখে
নিবেন।
লেখক: ইসলাম প্রচারক, দাম্মাম ইসলামিক সেন্টার, সৌদি আরব



No comments