প্রশ্নঃ ২৭. কোরবানির জন্য টাকা জমিয়ে তা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করেছি এখন কি কুরবানী দিতে হবে?

প্রশ্নঃ ২৭আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি সাভার থেকে পারভেজ বলছি।আমি ছোট একটা দোকানে চাকরি করি। আমরা আমার পরিবার নানাভাবে ঋনগ্রস্থ ছিলাম যা প্রায়ই কাটিয়ে ওঠি। সে মতে আমার পরিবার গত কোরবানির পর থেকে ১রুমের ভাড়া জমিয়ে কোরবানি দেয়ার ইচ্ছাপোষণ করি। তাতে কিছু টাকাও জমা হয়। কিন্তু বাড়ির নির্মাণ কাজে আবার কিছু টাকা ঋন করতে বাধ্য হই এবং সেই জমানো টাকা টাও খরচ করে ফেলি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ওই যে নিয়্যাতের টাকা খরচ করে ফেলার দরুন আমার আর কি করনিয় আছে.? আর তাছাড়া আমরা এখন ঋনগ্রস্থ, সেক্ষেত্রে কোরবানি আমাদের জন্য কি ফরজ হবে.?আশা করি বুঝাতে পেরেছি। যথাযথ উত্তরের আশাবাদী। ধন্যবাদ।

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

মাসআলা : প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন-অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বর্তমানে বসবাস খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (.) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.) ভরি। টাকা-পয়সা অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্ত্ত মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। যেমন কারো নিকট কিছু স্বর্ণ কিছু টাকা আছে, যা সর্বমোট সাড়ে বায়ান্ন তোলা চাঁদির মূল্য সমান হয় তাহলে তার উপরও কুরবানী ওয়াজিব।

কাজেই ঋণ থাকার পরও যদি আপনাদের কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে আপনাদের ওপর কুরবাণী ওয়জিব হবে। তা না হলে নয়।

.প্রশ্নের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে আপনা শুধু কুরবানী করার নিয়ত করেছেন। কসম বা মান্নত নয়। কাজেই আপনাদের ওপর ওই কুরবানি আবশ্যক নয়। তবে কোনো ভালো কাজের নিয়ত করলে তা বাস্তবায়ন করা উচিত।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

No comments

Powered by Blogger.