সহিহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "আযান" হাদিস নং -৮০১ থেকে ৮৫০
৮০১
حَدَّثَنَا
أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنِ ابْنِ أَبِي
لَيْلَى، عَنِ الْبَرَاءِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ رُكُوعُ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَسُجُودُهُ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ وَبَيْنَ
السَّجْدَتَيْنِ قَرِيبًا مِنَ السَّوَاءِ.
বারা‘আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রুকূ‘ ও সিজদা
এবং তিনি যখন রুকূ‘ হতে মাথা উঠাতেন, এবং দু‘ সিজদার মধ্যবর্তী সময় সবই প্রায় সমান
হত।
৮০২
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ،
عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، قَالَ كَانَ مَالِكُ بْنُ الْحُوَيْرِثِ يُرِينَا كَيْفَ
كَانَ صَلاَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَذَاكَ فِي غَيْرِ وَقْتِ صَلاَةٍ،
فَقَامَ فَأَمْكَنَ الْقِيَامَ، ثُمَّ رَكَعَ فَأَمْكَنَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ رَفَعَ
رَأْسَهُ فَأَنْصَتَ هُنَيَّةً، قَالَ فَصَلَّى بِنَا صَلاَةَ شَيْخِنَا هَذَا
أَبِي بُرَيْدٍ. وَكَانَ أَبُو بُرَيْدٍ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السَّجْدَةِ
الآخِرَةِ اسْتَوَى قَاعِدًا ثُمَّ نَهَضَ.
তিনি বলেন, মালিক ইব্নু হুওায়াইরিস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)–এর সালাত কেমন ছিল তা আমাদের দেখালেন। অতঃপর রুকূ’তে গেলেন এবং
ধিরস্থিরভাবে রুকূ’ আদায় করলেন; অতঃপর তাঁর মাথা উঠালেন এবং কিছুক্ষণ সোজা হয়ে
দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর তিনি আমাদের নিয়ে আমাদের এই শায়খ আবূ বুরাইদ (রহঃ)–এর ন্যায়
সালাত আদায় করলেন। আর আবূ বুরাইদ (রহঃ) দ্বিতীয় সিজদা হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে
বসতেন, অতঃপর দাঁড়াতেন।
১০/১২৮. অধ্যায়ঃ
সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলতে বলতে নত হওয়া ।
নাফি’(রহঃ) বলেন, ইব্নু ‘উমর (রাঃ) সিজদায় যাওয়ার সময় হাঁটু রাখার
পূর্বে হাত রাখতেন ।[১]
[১] এ সম্পর্কে যুগ শ্রেষ্ঠ আল্লামাহ ও মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দিন আলবানীর সিফাতু সলাতুন্নাবী থেকে তাঁর উদ্ধৃতি পেশ করছি। তিনি উক্ত বিষয়ে শিরোনাম দিয়েছেনঃ হস্তদ্বয়ের উপর ভর করে সিজদায় গমন করা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) মাটিতে হাঁটু রাখার পূর্বে হস্তদ্বয় রাখতেন। ইব্নু খুযাইমাহ (১/৭৬/১), দারাকুত্বনী, হাকিম এবং তিনি একে সহিহ বলেছেন ও যাহাবী তাতে ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন। এর বিপরীতে যে হাদিস এসেছে তা সহিহ নয়। এই মত পোষণ করেছেন ইমাম মালিক। ইমাম আহমেদ থেকেও এমনটি এসেছে। ইব্নুল জাওযীর ‘আতত্বাহকীক’ গ্রন্থে (১০৮/২), মারওয়াযী স্বীয় ‘মাসায়িল’ গ্রন্থে (১/১৪৭/১) ইমাম আওযায়ী‘ থেকে সহিহ সানাদে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন আমি লোকজনকে হাঁটুর পূর্বে হাত রাখার উপর পেয়েছি । তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে বলতেনঃ তোমাদের কেউ যখন সিজদা করে তখন যেন উটের ন্যায় না বসে বরং সে যেন স্বীয় হাঁটুদ্বয়ের পূর্বে হস্তদ্বয় রাখে। আবূ দাউদ, তাম্মাম ‘আল ফাওয়াইদ’ গ্রন্থে (ক্বাফ ১০৮/১) সহীহ সানাদে নাসাঈ, ‘আসসুগরা’ ও ‘আল-কুবরা’ (৪৭/১ ফটোকপি) বাদশাহ আবদুল আজিজ ইউনিভার্সিটি, মক্কা) ‘আবদুল হক্ব আল-আহকামুল কুবরাতে (৫৪/১) একে সহিহ বলেছেন এবং “কিতাবুত্তাহাজ্জুদে” (৫৬/১) বলেছেনঃ এটি পূর্বের হাদিস অর্থাৎ তার বিরোধী ওয়াইল এর হাদিস অপেক্ষা উত্তম সনদ বিশিষ্ট বরং এটি যেমন (ওয়াইলের হাদিস) উপরোক্ত সহীহ হাদিস ও তার পূর্বের হাদিস বিরোধী ঠিক তদ্রূপ সানাদের দিক দিয়েও তা সহিহ নয় এবং এ অর্থে যে সব হাদিস এসেছে এগুলোও অনুরূপ। দেখুন আমার আলোচনা ‘আয্ যঈফাহ্’ (৯২৯) ও ‘আল ইরওয়া’ (৩৫৭)। জেনে রাখুন উটের হাঁটুর পূর্বে হাত রাখার বিষয়ে ব্যতিক্রম হওয়ার কারণ হচ্ছে এই যে, সে সর্ব প্রথম হাঁটু রাখে এবং তার হাঁটু হাতের মধ্যে হয়ে থাকে। দেখুন ‘লিসানুল আরব’ ও অন্যান্য অভিধান গ্রন্থ, ত্বাহাবি ‘মুশকিলুল আ-ছা-র’ ও ‘শারহু মা’য়ানিল আ-ছার’ গ্রন্থে এরূপ কথাই উল্লেখ করছেন। ইমাম ক্বাসিম সরক্বসত্বী রাহিমাহুল্লাহ-ও ‘গরীবুল হাদিছে’ (২/৭০/১-২) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে সহিহ সনদে বর্ণনা করেছেন যে, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ পলাতক উটের ন্যায় যেন অবতরণ না করে ।” ইমাম ক্বাসিম বলেনঃ এটা সিজদার ব্যাপারে বলা হচ্ছে যে, পূর্ণ ধীরতা ও পরযায়ক্রমতা বজায় না রেখে বিচলিত উটের ন্যায় নিজেকে নিক্ষেপ না করে এবং ধীরস্থিরতার সাথে অবতরণ করে। প্রথমে হস্তদ্বয় রাখবে অতঃপর হাঁটুদ্বয় রাখবে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি হাদিছও বর্ণিত হয়েছে। অতঃপর উপরোল্লিখিত হাদীছ উল্লেখ করেন। ইব্নুল কাইয়িম এমন এক মন্তব্য করেছেনঃ যেটা বিবেক সম্মত নয় এবং ভাষাবিদগণও এই ব্যাখ্যার সাথে পরিচিত নন। কিন্তু আমি যেসব প্রমানপঞ্জির দিকে ইঙ্গিত করেছি তা এর প্রতিবাদ করে এবং এছাড়াও আরো অনেক প্রমাণপঞ্জি আছে । (দেখুনঃ নাসিরুদ্দিন আলবানি কৃত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর “ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি” বঙ্গানুবাদ ও সম্পাদনায়– আকরামুজ্জামান বিন আবদুস সালাম ও আবূ রাশাদ আজমল বিন আবদুন নূর)
[১] এ সম্পর্কে যুগ শ্রেষ্ঠ আল্লামাহ ও মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দিন আলবানীর সিফাতু সলাতুন্নাবী থেকে তাঁর উদ্ধৃতি পেশ করছি। তিনি উক্ত বিষয়ে শিরোনাম দিয়েছেনঃ হস্তদ্বয়ের উপর ভর করে সিজদায় গমন করা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) মাটিতে হাঁটু রাখার পূর্বে হস্তদ্বয় রাখতেন। ইব্নু খুযাইমাহ (১/৭৬/১), দারাকুত্বনী, হাকিম এবং তিনি একে সহিহ বলেছেন ও যাহাবী তাতে ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন। এর বিপরীতে যে হাদিস এসেছে তা সহিহ নয়। এই মত পোষণ করেছেন ইমাম মালিক। ইমাম আহমেদ থেকেও এমনটি এসেছে। ইব্নুল জাওযীর ‘আতত্বাহকীক’ গ্রন্থে (১০৮/২), মারওয়াযী স্বীয় ‘মাসায়িল’ গ্রন্থে (১/১৪৭/১) ইমাম আওযায়ী‘ থেকে সহিহ সানাদে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন আমি লোকজনকে হাঁটুর পূর্বে হাত রাখার উপর পেয়েছি । তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে বলতেনঃ তোমাদের কেউ যখন সিজদা করে তখন যেন উটের ন্যায় না বসে বরং সে যেন স্বীয় হাঁটুদ্বয়ের পূর্বে হস্তদ্বয় রাখে। আবূ দাউদ, তাম্মাম ‘আল ফাওয়াইদ’ গ্রন্থে (ক্বাফ ১০৮/১) সহীহ সানাদে নাসাঈ, ‘আসসুগরা’ ও ‘আল-কুবরা’ (৪৭/১ ফটোকপি) বাদশাহ আবদুল আজিজ ইউনিভার্সিটি, মক্কা) ‘আবদুল হক্ব আল-আহকামুল কুবরাতে (৫৪/১) একে সহিহ বলেছেন এবং “কিতাবুত্তাহাজ্জুদে” (৫৬/১) বলেছেনঃ এটি পূর্বের হাদিস অর্থাৎ তার বিরোধী ওয়াইল এর হাদিস অপেক্ষা উত্তম সনদ বিশিষ্ট বরং এটি যেমন (ওয়াইলের হাদিস) উপরোক্ত সহীহ হাদিস ও তার পূর্বের হাদিস বিরোধী ঠিক তদ্রূপ সানাদের দিক দিয়েও তা সহিহ নয় এবং এ অর্থে যে সব হাদিস এসেছে এগুলোও অনুরূপ। দেখুন আমার আলোচনা ‘আয্ যঈফাহ্’ (৯২৯) ও ‘আল ইরওয়া’ (৩৫৭)। জেনে রাখুন উটের হাঁটুর পূর্বে হাত রাখার বিষয়ে ব্যতিক্রম হওয়ার কারণ হচ্ছে এই যে, সে সর্ব প্রথম হাঁটু রাখে এবং তার হাঁটু হাতের মধ্যে হয়ে থাকে। দেখুন ‘লিসানুল আরব’ ও অন্যান্য অভিধান গ্রন্থ, ত্বাহাবি ‘মুশকিলুল আ-ছা-র’ ও ‘শারহু মা’য়ানিল আ-ছার’ গ্রন্থে এরূপ কথাই উল্লেখ করছেন। ইমাম ক্বাসিম সরক্বসত্বী রাহিমাহুল্লাহ-ও ‘গরীবুল হাদিছে’ (২/৭০/১-২) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে সহিহ সনদে বর্ণনা করেছেন যে, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ পলাতক উটের ন্যায় যেন অবতরণ না করে ।” ইমাম ক্বাসিম বলেনঃ এটা সিজদার ব্যাপারে বলা হচ্ছে যে, পূর্ণ ধীরতা ও পরযায়ক্রমতা বজায় না রেখে বিচলিত উটের ন্যায় নিজেকে নিক্ষেপ না করে এবং ধীরস্থিরতার সাথে অবতরণ করে। প্রথমে হস্তদ্বয় রাখবে অতঃপর হাঁটুদ্বয় রাখবে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি হাদিছও বর্ণিত হয়েছে। অতঃপর উপরোল্লিখিত হাদীছ উল্লেখ করেন। ইব্নুল কাইয়িম এমন এক মন্তব্য করেছেনঃ যেটা বিবেক সম্মত নয় এবং ভাষাবিদগণও এই ব্যাখ্যার সাথে পরিচিত নন। কিন্তু আমি যেসব প্রমানপঞ্জির দিকে ইঙ্গিত করেছি তা এর প্রতিবাদ করে এবং এছাড়াও আরো অনেক প্রমাণপঞ্জি আছে । (দেখুনঃ নাসিরুদ্দিন আলবানি কৃত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর “ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি” বঙ্গানুবাদ ও সম্পাদনায়– আকরামুজ্জামান বিন আবদুস সালাম ও আবূ রাশাদ আজমল বিন আবদুন নূর)
৮০৩
حَدَّثَنَا
أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ
أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ،
وَأَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، كَانَ
يُكَبِّرُ فِي كُلِّ صَلاَةٍ مِنَ الْمَكْتُوبَةِ وَغَيْرِهَا فِي رَمَضَانَ
وَغَيْرِهِ، فَيُكَبِّرُ حِينَ يَقُومُ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْكَعُ، ثُمَّ
يَقُولُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. ثُمَّ يَقُولُ رَبَّنَا وَلَكَ
الْحَمْدُ. قَبْلَ أَنْ يَسْجُدَ، ثُمَّ يَقُولُ اللَّهُ أَكْبَرُ. حِينَ
يَهْوِي سَاجِدًا، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ،
ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَسْجُدُ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ
السُّجُودِ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَقُومُ مِنَ الْجُلُوسِ فِي الاِثْنَتَيْنِ،
وَيَفْعَلُ ذَلِكَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ حَتَّى يَفْرُغَ مِنَ الصَّلاَةِ، ثُمَّ
يَقُولُ حِينَ يَنْصَرِفُ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَقْرَبُكُمْ
شَبَهًا بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِنْ كَانَتْ هَذِهِ
لَصَلاَتَهُ حَتَّى فَارَقَ الدُّنْيَا.
আবূ বকর ইব্নু ‘আবদুর রহমান (রহঃ) ও আবু সালামা ইব্নু ‘আবদুর
রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবু হুরায়রা (রাঃ) রমযান মাসের সালাত বা অন্য কোন সময়ের সালাত ফরয
হোক বা অন্য কোন সালাত হোক, দাঁড়িয়ে শুরু করার সময় তাকবীর বলতেন, আবার রুকু‘তে
যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন। তারপর (রুকূ’ থেকে উঠার সময়) 'سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه' বলতেন, সিজ্দায় যাওয়ার পূর্বে 'رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ' বলতেন। অতঃপর সিজদার জন্য অবনত হবার সময় আল্লাহু আকবর বলতেন। আবার
সিজদা হতে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর বলতেন। অতঃপর (দ্বিতীয়) সিজদায় যাওয়ার সময়
তাকবীর বলতেন এবং সিজদা হতে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর বলতেন। দু’ রাক’আত আদায় করে
দাঁড়ানোর সময় আবার তাকবীর বলতেন। সালাত শেষ করা পর্যন্ত প্রতি রাক’আতে এরূপ করতেন।
সালাত শেষে তিনি বলতেন, যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! তোমাদের মধ্য হতে
আমার সালাত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সালাতের সাথে অধিক
সাদৃশ্যপূর্ণ। দুনিয়া হতে বিদায় নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)–এর সালাত এ রকমই ছিল।
৮০৪
قَالاَ وَقَالَ
أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ يَقُولُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ
الْحَمْدُ. يَدْعُو لِرِجَالٍ فَيُسَمِّيهِمْ بِأَسْمَائِهِمْ فَيَقُولُ
" اللَّهُمَّ أَنْجِ الْوَلِيدَ بْنَ الْوَلِيدِ وَسَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ
وَعَيَّاشَ بْنَ أَبِي رَبِيعَةَ، وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ،
اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ، وَاجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ سِنِينَ
كَسِنِي يُوسُفَ ". وَأَهْلُ الْمَشْرِقِ يَوْمَئِذٍ مِنْ مُضَرَ
مُخَالِفُونَ لَهُ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রুকূ’ হতে
মাথা উঠাতেন তখন 'سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ ' বলতেন। আর কতিপয় লোকের নাম উল্লেখ করে তাঁদের জন্য দু’আ করতেন।
দু’আয় তিনি বলতেন, হে আল্লাহ্! ওয়ালীদ ইব্নু ওয়ালীদ, সালামা ইব্নু হিশাম,
আইয়্যাস ইব্নু আবু রাবী’আ (রাঃ) এবং অপরাপর দুর্বল মুসলিমদেরকে রক্ষা করুন। হে
আল্লাহ্! মুদার গোত্রের উপর আপনার পাকড়াও কঠোর করুন, ইউসুফ (আঃ)–এর যুগে যেমন
খাদ্য সংকট ছিল তাঁদের জন্যও তেমন খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে দিন। (রাবী বলেন) এ যুগে
পূর্বাঞ্চলের অধিবাসী মুদার গোত্রের লোকেরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)–এর বিরোধী ছিল।
৮০৫
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، غَيْرَ مَرَّةٍ عَنِ
الزُّهْرِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ سَقَطَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ فَرَسٍ ـ وَرُبَّمَا قَالَ سُفْيَانُ مِنْ فَرَسٍ
ـ فَجُحِشَ شِقُّهُ الأَيْمَنُ، فَدَخَلْنَا عَلَيْهِ نَعُودُهُ، فَحَضَرَتِ
الصَّلاَةُ، فَصَلَّى بِنَا قَاعِدًا وَقَعَدْنَا ـ وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً
صَلَّيْنَا قُعُودًا ـ فَلَمَّا قَضَى الصَّلاَةَ قَالَ " إِنَّمَا جُعِلَ
الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا رَكَعَ
فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ
حَمِدَهُ. فَقُولُوا رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ. وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا
". قَالَ سُفْيَانُ كَذَا جَاءَ بِهِ مَعْمَرٌ قُلْتُ نَعَمْ. قَالَ
لَقَدْ حَفِظَ، كَذَا قَالَ الزُّهْرِيُّ وَلَكَ الْحَمْدُ. حَفِظْتُ مِنْ
شِقِّهِ الأَيْمَنِ. فَلَمَّا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِ الزُّهْرِيِّ قَالَ ابْنُ
جُرَيْجٍ ـ وَأَنَا عِنْدَهُ ـ فَجُحِشَ سَاقُهُ الأَيْمَنُ.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ঘোড়া হতে পড়ে যান। কোন কোন সময় সুফিয়ান (রহঃ) হাদীস বর্ণনা সময় 'عَن فَرَس' শব্দের স্থলে 'مَن فَرَس' শব্দ বলতেন। ফলে তাঁর ডান পাঁজর আহত হয়ে পড়ে।
আমরা তাঁর শুশ্রুষা করার জন্য সেখানে গেলাম। এ সময় সালাতের ওয়াক্ত হলো। তিনি
আমাদের নিয়ে বসে সালাত আদায় করলেন, আমরাও বসেই আদায় করলাম। সুফিয়ান (রহঃ) আর একবার
বলেছেন, আমরা বসে সালাত আদায় করলাম। সালাতের পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁকে ইকতিদা করার জন্য। তিনি যখন তাকবীর
বলেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে, তিনি যখন রুকু‘ করেন তখন তোমরাও রুকু‘ করবে। তিনি
যখন রুকু‘ হতে উঠেন, তখন তোমরাও উঠবে, তিনি যখন 'سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه ' বলেন, তখন তোমরা ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ বলবে। তিনি যখন সিজদা করেন, তখন তোমরাও সিজদা
করবে। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, মা’মারও কি এরূপ বর্ণনা করেছেন? [‘আলী (রহঃ) বলেন] আমি
বললাম হ্যাঁ। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, তিনি ঠিকই স্মরণ রেখেছেন, এরূপই যুহরী (রহঃ) ‘وَلَكَ الحَمدُ’ বর্ণনা করেছেন। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, (যুহরীর কাছ হতে) ডান পাঁজর
জখম হওয়ার কথা মুখস্ত করেছিলাম। কিন্তু যখন তাঁর কাছ হতে বেরিয়ে আসলাম, তখন ইব্নু
জুরায়জ (রহঃ) বললেন, আমিও তাঁর নিকট ছিলাম। (তিনি বলেছেন) নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ডান পায়ের নল যখন হয়েছিল।
১০/১২৯. অধ্যায়ঃ
সিজদার ফযীলত ।
৮০৬
حَدَّثَنَا
أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ
أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، وَعَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ اللَّيْثِيُّ،
أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَخْبَرَهُمَا أَنَّ النَّاسَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ،
هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ " هَلْ تُمَارُونَ فِي
الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَيْسَ دُونَهُ سَحَابٌ ". قَالُوا لاَ يَا
رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ " فَهَلْ تُمَارُونَ فِي الشَّمْسِ لَيْسَ
دُونَهَا سَحَابٌ ". قَالُوا لاَ. قَالَ " فَإِنَّكُمْ
تَرَوْنَهُ كَذَلِكَ، يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، فَيَقُولُ مَنْ
كَانَ يَعْبُدُ شَيْئًا فَلْيَتَّبِعْ. فَمِنْهُمْ مَنْ يَتَّبِعُ الشَّمْسَ،
وَمِنْهُمْ مَنْ يَتَّبِعُ الْقَمَرَ وَمِنْهُمْ مَنْ يَتَّبِعُ الطَّوَاغِيتَ،
وَتَبْقَى هَذِهِ الأُمَّةُ فِيهَا مُنَافِقُوهَا، فَيَأْتِيهِمُ اللَّهُ
فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ هَذَا مَكَانُنَا حَتَّى يَأْتِيَنَا
رَبُّنَا، فَإِذَا جَاءَ رَبُّنَا عَرَفْنَاهُ. فَيَأْتِيهِمُ اللَّهُ فَيَقُولُ
أَنَا رَبُّكُمْ. فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا. فَيَدْعُوهُمْ فَيُضْرَبُ
الصِّرَاطُ بَيْنَ ظَهْرَانَىْ جَهَنَّمَ، فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يَجُوزُ مِنَ
الرُّسُلِ بِأُمَّتِهِ، وَلاَ يَتَكَلَّمُ يَوْمَئِذٍ أَحَدٌ إِلاَّ الرُّسُلُ،
وَكَلاَمُ الرُّسُلِ يَوْمَئِذٍ اللَّهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ. وَفِي جَهَنَّمَ
كَلاَلِيبُ مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ، هَلْ رَأَيْتُمْ شَوْكَ السَّعْدَانِ
". قَالُوا نَعَمْ. قَالَ " فَإِنَّهَا مِثْلُ شَوْكِ
السَّعْدَانِ، غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يَعْلَمُ قَدْرَ عِظَمِهَا إِلاَّ اللَّهُ،
تَخْطَفُ النَّاسَ بِأَعْمَالِهِمْ، فَمِنْهُمْ مَنْ يُوبَقُ بِعَمَلِهِ،
وَمِنْهُمْ مَنْ يُخَرْدَلُ ثُمَّ يَنْجُو، حَتَّى إِذَا أَرَادَ اللَّهُ رَحْمَةَ
مَنْ أَرَادَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ، أَمَرَ اللَّهُ الْمَلاَئِكَةَ أَنْ
يُخْرِجُوا مَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللَّهَ، فَيُخْرِجُونَهُمْ وَيَعْرِفُونَهُمْ
بِآثَارِ السُّجُودِ، وَحَرَّمَ اللَّهُ عَلَى النَّارِ أَنْ تَأْكُلَ أَثَرَ
السُّجُودِ فَيَخْرُجُونَ مِنَ النَّارِ، فَكُلُّ ابْنِ آدَمَ تَأْكُلُهُ النَّارُ
إِلاَّ أَثَرَ السُّجُودِ، فَيَخْرُجُونَ مِنَ النَّارِ قَدِ امْتَحَشُوا،
فَيُصَبُّ عَلَيْهِمْ مَاءُ الْحَيَاةِ، فَيَنْبُتُونَ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ
فِي حَمِيلِ السَّيْلِ، ثُمَّ يَفْرُغُ اللَّهُ مِنَ الْقَضَاءِ بَيْنَ
الْعِبَادِ، وَيَبْقَى رَجُلٌ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ، وَهْوَ آخِرُ أَهْلِ
النَّارِ دُخُولاً الْجَنَّةَ، مُقْبِلٌ بِوَجْهِهِ قِبَلَ النَّارِ فَيَقُولُ يَا
رَبِّ اصْرِفْ وَجْهِي عَنِ النَّارِ، قَدْ قَشَبَنِي رِيحُهَا، وَأَحْرَقَنِي
ذَكَاؤُهَا. فَيَقُولُ هَلْ عَسَيْتَ إِنْ فُعِلَ ذَلِكَ بِكَ أَنْ تَسْأَلَ
غَيْرَ ذَلِكَ فَيَقُولُ لاَ وَعِزَّتِكَ. فَيُعْطِي اللَّهَ مَا يَشَاءُ مِنْ
عَهْدٍ وَمِيثَاقٍ، فَيَصْرِفُ اللَّهُ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ، فَإِذَا أَقْبَلَ
بِهِ عَلَى الْجَنَّةِ رَأَى بَهْجَتَهَا سَكَتَ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَسْكُتَ،
ثُمَّ قَالَ يَا رَبِّ قَدِّمْنِي عِنْدَ باب الْجَنَّةِ. فَيَقُولُ اللَّهُ
لَهُ أَلَيْسَ قَدْ أَعْطَيْتَ الْعُهُودَ وَالْمَوَاثِيقَ أَنْ لاَ تَسْأَلَ
غَيْرَ الَّذِي كُنْتَ سَأَلْتَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ لاَ أَكُونُ أَشْقَى
خَلْقِكَ. فَيَقُولُ فَمَا عَسَيْتَ إِنْ أُعْطِيتَ ذَلِكَ أَنْ لاَ تَسْأَلَ
غَيْرَهُ فَيَقُولُ لاَ وَعِزَّتِكَ لاَ أَسْأَلُ غَيْرَ ذَلِكَ. فَيُعْطِي
رَبَّهُ مَا شَاءَ مِنْ عَهْدٍ وَمِيثَاقٍ، فَيُقَدِّمُهُ إِلَى باب الْجَنَّةِ،
فَإِذَا بَلَغَ بَابَهَا، فَرَأَى زَهْرَتَهَا وَمَا فِيهَا مِنَ النَّضْرَةِ
وَالسُّرُورِ، فَيَسْكُتُ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَسْكُتَ، فَيَقُولُ يَا رَبِّ
أَدْخِلْنِي الْجَنَّةَ. فَيَقُولُ اللَّهُ وَيْحَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا
أَغْدَرَكَ، أَلَيْسَ قَدْ أَعْطَيْتَ الْعَهْدَ وَالْمِيثَاقَ أَنْ لاَ تَسْأَلَ
غَيْرَ الَّذِي أُعْطِيتَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ لاَ تَجْعَلْنِي أَشْقَى
خَلْقِكَ. فَيَضْحَكُ اللَّهُ ـ عَزَّ وَجَلَّ ـ مِنْهُ، ثُمَّ يَأْذَنُ لَهُ
فِي دُخُولِ الْجَنَّةِ فَيَقُولُ تَمَنَّ. فَيَتَمَنَّى حَتَّى إِذَا
انْقَطَعَتْ أُمْنِيَّتُهُ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ تَمَنَّ كَذَا وَكَذَا.
أَقْبَلَ يُذَكِّرُهُ رَبُّهُ، حَتَّى إِذَا انْتَهَتْ بِهِ الأَمَانِيُّ قَالَ
اللَّهُ تَعَالَى لَكَ ذَلِكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ ". قَالَ أَبُو سَعِيدٍ
الْخُدْرِيُّ لأَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنهما ـ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " قَالَ اللَّهُ لَكَ ذَلِكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ
". قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ لَمْ أَحْفَظْ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم إِلاَّ قَوْلَهُ " لَكَ ذَلِكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ ".
قَالَ أَبُو سَعِيدٍ إِنِّي سَمِعْتُهُ يَقُولُ " ذَلِكَ لَكَ وَعَشَرَةُ
أَمْثَالِهِ ".
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সাহাবীগণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন,
হে আল্লাহ্র রসূল! আমরা কি ক্বিয়ামাতের দিন আমাদের রবকে দেখতে পাবো? তিনি বললেনঃ
মেঘমুক্ত পূর্ণিমার রাতের চাঁদকে দেখার ব্যাপারে তোমরা কি সন্দেহ পোষণ করো? তাঁরা
বললেন, না, হে আল্লাহ্র রসূল! তিনি বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখার ব্যাপারে
কি তোমাদের কোন সন্দেহ আছে? সবাই বললেন, না। তখন তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে তোমরাও
আল্লাহকে তেমনিভাবে দেখতে পাবে। কিয়ামতের দিন সকল মানুষকে সমবেত করা হবে। অতঃপর
আল্লাহ্ তাআলা বলবেন, যে যার উপাসনা করতে সে যেন তার অনুসরণ করে। তাই তাদের কেউ
সূর্যের অনুসরণ করবে, কেউ চন্দ্রের অনুসরণ করবে, কেউ তাগুতের অনুসরণ করবে। আর বাকী
থাকবে শুধুমাত্র উম্মাহ্, তবে তাঁদের সাথে মুনাফিকার থাকবে। তাঁদের মাঝে এই সময়
আল্লাহ্ তা’আলা আগমন করবেন এবং বলবেনঃ “আমি তোমাদের রব।” তখন তারা বলবে, যতক্ষণ
পর্যন্ত আমাদের রবের আগমন না হবে, ততক্ষণ আমরা এখানেই থাকব। আর তার যখন আগমন হবে
তখন আমরা অবশ্যই তাঁকে চিনতে পারব। তখন তাদের মাঝে মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ্
তা’আলা আগমন করবেন এবং বলবেন, “আমি তোমাদের রব।” তাঁরা বলবে, হাঁ, আপনিই আমাদের
রব। আল্লাহ্ তা’আলা তাদের ডাকবেন। আর জাহান্নামের উপর একটি সেতু স্থাপন করা হবে।
রসূলগণের মধ্যে আমিই সবার আগে আমার উম্মাত নিয়ে এ পথ অতিক্রম করব। সেদিন রসূলগণ
ব্যতীত আর কেউ কথা বলবে না। আর রসূলগণের কথা হবেঃ ‘اللَّهُمَّ سَلِّم سَلِّم’ (আল্লাহুম্মা সাল্লিম সাল্লিম) হে আল্লাহ্! রক্ষা করুন, রক্ষা
করুন। আর জাহান্নামে বাঁকা লোহার বহু শলাকা থাকবে; সেগুলো হবে সা’দান কাঁটার মতো।
তোমরা কি সা’দান কাঁটা দেখেছো? তারা বলবে, হাঁ, দেখেছি। তিনি বলবেন, সেগুলো দেখতে
সা’দান [১] কাঁটার মতোই। তবে সেগুলো কত বড় হবে তা একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া আর কেউ
জানে না। সে কাঁটা লোকের ‘আমল অনুযায়ী তাদের তড়িৎ গতিতে ধরবে। তাদের কিছু লোক
ধ্বংস হবে তাদের ‘আমলের কারণে। আর কারোর পায়ে জখম হবে, কিছু লোক কাঁটায় আক্রান্ত
হবে, অতঃপর নাজাত পেয়ে যাবে। জাহান্নামীদের হতে যাদের প্রতি আল্লাহ্ তা’আলা রহমত
করতে ইচ্ছা করবেন, তাদের ব্যাপারে মালাইকাকে নির্দেশ দেবেন যে, যারা আল্লাহ্র
‘ইবাদত করতো, তাদের যেন জাহান্নাম হতে বের করে আনা হয়। মালাইকা তাদের বের করে
আনবেন এবং সিজদার চিহ্ন দেখে তাঁরা তাদের চিনতে পারবেন। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা
জাহান্নামের জন্য সিজদার চিহ্নগুলো মিটিয়ে দেয়া হারাম করে দিয়েছেন। ফলে তাদের
জাহান্নাম হতে বের করে আনা হবে। কাজেই সিজদার চিহ্ন ছাড়া আগুন বানী আদামের সব
কিছুই গ্রাস করে ফেলবে। অবশেষে, তাদেরকে অঙ্গারে পরিণত অবস্থায় জাহান্নাম হতে বের
করা হবে। তাদের উপর ‘আবে-হায়াত’ ঢেলে দেয়া হবে ফলে তারা স্রোতে বাহিত ফেনার উপর
গজিয়ে উঠা উদ্ভিদের মত সঞ্জীবিত হয়ে উঠবে। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা বান্দাদের বিচার
কাজ সমাপ্ত করবেন কিন্তু একজন লোক জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখানে থেকে যাবে। তাঁর
মুখমণ্ডল তখনো জাহান্নামের দিকে ফেরানো থাকবে। জাহান্নামবাসীদের মধ্যে জান্নাতে
প্রবেশকারী সেই শেষ ব্যক্তি। সে তখন নিবেদন করবে, হে আমার রব! জাহান্নাম হতে আমার
চেহারা ফিরিয়ে দিন। এর দূষিত হাওয়া আমাকে বিষিয়ে তুলছে, এর লেলিহান শিখা আমাকে
যন্ত্রণা দিচ্ছে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, তোমার নিবেদন গ্রহণ করা হলে, তুমি
এছাড়া আর কিছু চাইবে না তো? সে বলবে, না, আপনার ইজ্জতের শপথ! সে তার ইচ্ছামত
আল্লাহ্ তা’আলাকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দিবে। কাজেই আল্লাহ্ তা’আলা তার
চেহারাকে জাহান্নামের দিক হতে ফিরিয়ে দিবেন। অতঃপর সে যখন জান্নাতের দিকে মুখ
ফিরাবে, তখন সে জান্নাতের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহ্র ইচ্ছা সে
চুপ করে থাকবে। অতঃপর সে বলবে, হে আমার রব! আপনি জান্নাতের দরজার নিকট পৌঁছে দিন।
তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাকে বলবেন, তুমি পূর্বে যা চেয়েছিলে, তা ছাড়া আর কিছু
চাইবেনা বলে তুমি কি অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দাওনি? তখন সে বলবে, হে আমার রব!
তোমার সৃষ্টির সবচাইতে হতভাগ্য আমি হতে চাইনা। আল্লাহ্ তাৎক্ষণিক বলবেন, তোমার
এটি পূরণ করা হলে তুমি এছাড়া আর কিছু চাইবে না তো? সে বলবে, না, আপনার ইজ্জতের
কসম! এছাড়া আমি আর কিছুই চাইব না। এ ব্যাপারে সে তার ইচ্ছানুযায়ী অঙ্গীকার ও
প্রতিশ্রুতি দিবে। সে যখন জান্নাতের দরজায় তখন জান্নাতের অনবীল সৌন্দর্য ও
আভ্যন্তরীণ সুখ শান্তি ও আনন্দঘন পরিবেশ দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহ্ তা’আলা ইচ্ছা
করবেন সে চুপ করে থাকবে। অতঃপর সে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে
দাও। তখন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ হে আদম সন্তান, কি আশ্চর্য! তুমি কত
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী! তুমি কি আমার সঙ্গে অঙ্গীকার করনি এবং প্রতিশ্রুতি দাওনি
যে, তোমাকে যা দেওয়া হয়েছে, তাছাড়া আর কিছু চাইবেনা? তখন সে বলবে, হে আমার রব!
আপনার সৃষ্টির মধ্যে আমাকে সবচাইতে হতভাগ্য করবেন না। এতে আল্লাহ্ হেসে দেবেন।
অতঃপর তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমুতি দিবেন এবং বলবেন, চাও। সে তখন চাইবে, এমন কি
তার চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ফুরিয়ে যাবে। তখন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ এটা চাও,
ওটা চাও। এভাবে তার রব তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে থাকবেন। অবশেষে যখন তার আকাঙ্ক্ষা
শেষ হয়ে যাবে, তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলেবেনঃ এ সবই তোমার, এ সাথে আরো সমপরিমাণ
(তোমাকে দেয়া হল)। আবু সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ)-কে বললেন, আল্লাহ্র
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন যে, আল্লাহ্ তা’আলা বলেবেনঃ এ
সবই তোমার, তার সাথে আরও দশগুণ (তোমাকে দেয়া হল)। আবু হুরায়রা (রাঃ) বললেন, আমি
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুধু এ কথাটি স্মরণ রেখেছি
যে, এ সবই তোমার এবং এর সাথে সমপরিমাণ। আবু সা’ঈদ (রাঃ) বললেন, আমি তাঁকে বলতে
শুনেছি যে, এসব তোমার এবং এর সাথে আরও দশগুণ।
[১] সা’দান চতুস্পার্শ্বে
কাঁটা বিশিষ্ট এক প্রকার গাছ, মরু অঞ্চলে জন্মে, কাঁটাগুলো বাঁকা থাকে। এগুলো উটের
খাদ্য।
১০/১৩০. অধ্যায়ঃ
সিজদার সময় দু’বাহু পার্শ্ব দেশ হতে পৃথক রাখা ।
৮০৭
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي بَكْرُ بْنُ مُضَرَ، عَنْ جَعْفَرٍ، عَنِ
ابْنِ هُرْمُزَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ ابْنِ بُحَيْنَةَ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا صَلَّى فَرَّجَ بَيْنَ يَدَيْهِ حَتَّى
يَبْدُوَ بَيَاضُ إِبْطَيْهِ. وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ
رَبِيعَةَ نَحْوَهُ.
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মালিক (রহঃ) যিনি ইব্নু বুহাইনা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত আদায় করতেন, তখন
উভয় হাত এমন ফাঁক করতেন যে, তাঁর উভয় বগলের শুভ্রতা প্রকাশ হয়ে পড়ত। লায়স (রহঃ)
বলেন, জা’ফার বিন বারী’আ (রহঃ) আমার নিকট এ রকম বর্ণনা করেছেন।
১০/১৩১. অধ্যায়ঃ
সালাতে উভয় পায়ের আঙ্গুল ক্বিবলাহ্মুখী রাখা ।
আবূ হুমায়দ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ রকম
হাদীস বর্ণনা করেছেন ।
পূর্ণভাবে সিজদা না করলে ।
৮০৮
حَدَّثَنَا
الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ، عَنْ وَاصِلٍ، عَنْ أَبِي
وَائِلٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، رَأَى رَجُلاً لاَ يُتِمُّ رُكُوعَهُ وَلاَ سُجُودَهُ،
فَلَمَّا قَضَى صَلاَتَهُ قَالَ لَهُ حُذَيْفَةُ مَا صَلَّيْتَ ـ قَالَ
وَأَحْسِبُهُ قَالَ ـ وَلَوْ مُتَّ مُتَّ عَلَى غَيْرِ سُنَّةِ مُحَمَّدٍ صلى الله
عليه وسلم.
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন, সে রুকূ‘ ও সিজদা পুর্ণরূপে আদায় করছে না।
সে যখন তার সালাত শেষ করে, তখন হুযাইফা (রাঃ) তাকে বললেন, তুমি তো সালাত আদায়
করনি। আবূ ওয়াইল (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয় তিনি এও বলেছিলেন যে, এভাবে সালাত আদায়
করে তুমি যদি মারা যাও, তাহলে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
তরীকা হতে বিচ্যুত হয়ে মারা যাবে।
১০/১৩৩. অধ্যায়ঃ
সাত অঙ্গ দ্বারা সিজদা করা ।
৮০৯
حَدَّثَنَا
قَبِيصَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ
طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أُمِرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ
يَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةِ أَعْضَاءٍ، وَلاَ يَكُفَّ شَعَرًا وَلاَ ثَوْبًا
الْجَبْهَةِ وَالْيَدَيْنِ وَالرُّكْبَتَيْنِ وَالرِّجْلَيْنِ.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাতটি অঙ্গের
দ্বারা সিজদা করতে এবং চুল ও কাপড় না গুটাতে নির্দেশিত হয়েছিলেন। (অঙ্গ সাতটি হল)
কপাল, দু’হাত, দু’হাঁটু ও দু’পা।
৮১০
حَدَّثَنَا
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ
طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " أُمِرْنَا أَنْ نَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةِ أَعْظُمٍ وَلاَ
نَكُفَّ ثَوْبًا وَلاَ شَعَرًا ".
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমরা সাতটি অঙ্গের
দ্বারা সিজদা করতে এবং চুল ও কাপড় না গুটাতে নির্দেশিত হয়েছি।
৮১১
حَدَّثَنَا
آدَمُ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
يَزِيدَ الْخَطْمِيِّ، حَدَّثَنَا الْبَرَاءُ بْنُ عَازِبٍ ـ وَهْوَ غَيْرُ
كَذُوبٍ ـ قَالَ كُنَّا نُصَلِّي خَلْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا
قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. لَمْ يَحْنِ أَحَدٌ مِنَّا ظَهْرَهُ
حَتَّى يَضَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم جَبْهَتَهُ عَلَى الأَرْضِ.
বারা‘আ ইব্নু ‘আযিব (রাঃ) যিনি অবশ্যই মিথ্যাবাদী ছিলেন না থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পশ্চাতে
সালাত আদায় করতাম। তিনি ‘سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَه ’ বলার পর যতক্ষণ না কপাল মাটিতে স্থাপন করতেন,
ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ সিজদার জন্য পিঠ ঝুঁকাত না।
১০/১৩৪. অধ্যায়ঃ
নাক দ্বারা সিজদা করা ।
৮১২
حَدَّثَنَا
مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما قَالَ قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أُمِرْتُ أَنْ أَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةِ
أَعْظُمٍ عَلَى الْجَبْهَةِ ـ وَأَشَارَ بِيَدِهِ عَلَى أَنْفِهِ ـ وَالْيَدَيْنِ،
وَالرُّكْبَتَيْنِ وَأَطْرَافِ الْقَدَمَيْنِ، وَلاَ نَكْفِتَ الثِّيَابَ
وَالشَّعَرَ ".
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ
আমি সাতটি অঙ্গের দ্বারা সিজদা করার জন্য নির্দেশিত হয়েছি। কপাল দ্বারা এবং তিনি
হাত দিয়ে নাকের প্রতি ইশারা করে এর অন্তর্ভুক্ত করেন, আর দু’হাত, দু’হাঁটু এবং
দু’পায়ের আঙ্গুলসমূহ দ্বারা। আর আমরা যেন চুল ও কাপড় গুটিয়ে না নেই।
১০/১৩৫. অধ্যায়ঃ
নাক দ্বারা কাদামাটির উপর সিজদা করা ।
৮১৩
حَدَّثَنَا
مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ
انْطَلَقْتُ إِلَى أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ فَقُلْتُ أَلاَ تَخْرُجُ بِنَا
إِلَى النَّخْلِ نَتَحَدَّثْ فَخَرَجَ. فَقَالَ قُلْتُ حَدِّثْنِي مَا، سَمِعْتَ
مِنَ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ. قَالَ اعْتَكَفَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَشْرَ الأُوَلِ مِنْ رَمَضَانَ،
وَاعْتَكَفْنَا مَعَهُ، فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ إِنَّ الَّذِي تَطْلُبُ
أَمَامَكَ. فَاعْتَكَفَ الْعَشْرَ الأَوْسَطَ، فَاعْتَكَفْنَا مَعَهُ، فَأَتَاهُ
جِبْرِيلُ فَقَالَ إِنَّ الَّذِي تَطْلُبُ أَمَامَكَ. فَقَامَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم خَطِيبًا صَبِيحَةَ عِشْرِينَ مِنْ رَمَضَانَ فَقَالَ "
مَنْ كَانَ اعْتَكَفَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلْيَرْجِعْ، فَإِنِّي
أُرِيتُ لَيْلَةَ الْقَدْرِ، وَإِنِّي نُسِّيتُهَا، وَإِنَّهَا فِي الْعَشْرِ
الأَوَاخِرِ فِي وِتْرٍ، وَإِنِّي رَأَيْتُ كَأَنِّي أَسْجُدُ فِي طِينٍ وَمَاءٍ
". وَكَانَ سَقْفُ الْمَسْجِدِ جَرِيدَ النَّخْلِ وَمَا نَرَى فِي
السَّمَاءِ شَيْئًا، فَجَاءَتْ قَزْعَةٌ فَأُمْطِرْنَا، فَصَلَّى بِنَا النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم حَتَّى رَأَيْتُ أَثَرَ الطِّينِ وَالْمَاءِ عَلَى جَبْهَةِ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَرْنَبَتِهِ تَصْدِيقَ رُؤْيَاهُ.
আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ সা’ঈদ খুদ্রী (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম,
আমার সঙ্গে খেজুর বাগানে চলুন, (হাদীস সংক্রান্ত) আলাপ আলোচনা করব। তিনি বেরিয়ে
আসলেন। আবূ সালামা (রাঃ) বলেন, আমি তাকে বললাম, ‘লাইলাতুল কাদ্র’ সম্পর্কে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে যা শুনেছেন, তা আমার নিকট বর্ণনা করুন।
তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানের প্রথম দশ
দিন ‘ইতিকাফ করলেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে ই’তিকাফ করলাম। জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, আপনি
যা তালাশ করছেন, তা আপনার সামনে রয়েছে। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী দশদিন ই’তিকাফ করলেন,
আমরাও তাঁর সঙ্গে ই’তিকাফ করলাম। পুনরায় জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, আপনি যা তালাশ
করছেন, তা আপনার সামনে রয়েছে। অতঃপর রমযানের বিশ তারিখ সকালে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুত্বা দিতে দাঁড়িয়ে বললেন, যারা আল্লাহ্র নবীর সঙ্গে
ই’তিকাফ করেছেন, তারা যেন ফিরে আসেন (আবার ই’তিকাফ করেন) কেননা, আমাকে স্বপ্নে
‘লাইলাতুল কাদ্র’ অবগত করানো হয়েছে। তবে আমাকে তা (নির্ধারিত তারিখটি) ভুলিয়ে
দেয়া হয়েছে। নিঃসন্দেহে তা শেষ দশ দিনের কোন এক বেজোড় তারিখে। স্বপ্নে দেখলাম যেন
আমি কাদা ও পানির উপর সিজদা করছি। তখন মসজিদের ছাদ খেজুরের ডাল দ্বারা নির্মিত
ছিল। আমরা আকাশে কোন কিছুই (মেঘ) দেখিনি, একখণ্ড হালকা মেঘ আসল এবং আমাদের উপর
(বৃষ্টি) বর্ষিত হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিয়ে সালাত
আদায় করলেন। এমন কি আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
কপাল ও নাকের অগ্রভাগে পানি ও কাদার চিহ্ন দেখতে পেলাম। এভাবেই তাঁর স্বপ্ন সত্যে
রূপ লাভ করল।
১০/১৩৬. অধ্যায়ঃ
কাপড়ে গিরা লাগানো ও তা বেঁধে নেয়া এবং সতর প্রকাশ হয়ে পড়ার ভয়ে কাপড়
জড়িয়ে নেয়া ।
৮১৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ
سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ كَانَ النَّاسُ يُصَلُّونَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَهُمْ عَاقِدُو أُزْرِهِمْ مِنَ الصِّغَرِ عَلَى رِقَابِهِمْ فَقِيلَ
لِلنِّسَاءِ لاَ تَرْفَعْنَ رُءُوسَكُنَّ حَتَّى يَسْتَوِيَ الرِّجَالُ
جُلُوسًا.
সাহ্ল ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাহাবীগণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সঙ্গে সালাত আদায় করতেন। কিন্তু ইযার বা লুঙ্গী ছোট হবার কারণে তা গলার সাথে বেঁধে
নিতেন। আর নারীদেরকে বলে দেয়া হয়েছিল, তোমরা সিজদা হতে মাথা উঠাবে না যে পর্যন্ত
পুরুষগণ ঠিকমত না বসবে।
১০/১৩৭. অধ্যায়ঃ
সালাতের মধ্যে মাথার চুল একত্র করবে না ।
৮১৫
حَدَّثَنَا
أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ ـ وَهْوَ ابْنُ زَيْدٍ ـ عَنْ
عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أُمِرَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةِ أَعْظُمٍ، وَلاَ
يَكُفَّ ثَوْبَهُ وَلاَ شَعَرَهُ.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাতটি অঙ্গের
সাহায্যে সিজদা করতে এবং সালাতের মধ্যে চুল একত্র না করতে এবং কাপড় টেনে না ধরতে
নির্দেশ প্রাপ্ত হয়েছিলেন।
১০/১৩৮. অধ্যায়ঃ
সালাতের মধ্যে কাপড় টেনে না ধরা ।
৮১৬
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ
طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " أُمِرْتُ أَنْ أَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةٍ، لاَ أَكُفُّ شَعَرًا
وَلاَ ثَوْبًا ".
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি সাত অঙ্গে সিজদা
করতে, সালাতের মধ্যে চুল একত্র না করতে এবং কাপড় টেনে না ধরতে নির্দেশিত হয়েছি।
১০/১৩৯. অধ্যায়ঃ
সিজদায় তাসবীহ্ ও দু’আ পাঠ ।
৮১৭
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي
مَنْصُورٌ، عَنْ مُسْلِمٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ
أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ أَنْ يَقُولَ فِي
رُكُوعِهِ وَسُجُودِهِ " سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ،
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي " يَتَأَوَّلُ الْقُرْآنَ.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর রুকূ‘ ও
সিজদায় অধিক পরিমাণে 'سُبحانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّناَ وَبِحَمدِكَ اللَّهُمَّ اغفِرلي ' “হে আল্লাহ্! হে আমাদের রব! আপনার প্রশংসাসহ
পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন” পাঠ করতেন। এতে তিনি পবিত্র কুরআনের
নির্দেশ পালন করতেন। [১]
[১] এর দ্বারা সূরা নাসর-এর ৩ নং আয়াত "فَسَبِّح بِحَمدِ رَبِّكَ وَاستَغفِرهُ إِنَّهُ كانَ تَوّاَباً" (আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ও
মহিমা ঘোষণা করুন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি তো তাওবাহ কবুলকারী) এর দিকে
ইঙ্গিত করা হয়েছে ।
১০/১৪০. অধ্যায়ঃ
দু’ সিজদার মধ্যে অপেক্ষা করা ।
৮১৮
حَدَّثَنَا
أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي
قِلاَبَةَ، أَنَّ مَالِكَ بْنَ الْحُوَيْرِثِ، قَالَ لأَصْحَابِهِ أَلاَ
أُنَبِّئُكُمْ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَذَاكَ فِي
غَيْرِ حِينِ صَلاَةٍ، فَقَامَ، ثُمَّ رَكَعَ فَكَبَّرَ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ،
فَقَامَ هُنَيَّةً، ثُمَّ سَجَدَ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ هُنَيَّةً، فَصَلَّى
صَلاَةَ عَمْرِو بْنِ سَلِمَةَ شَيْخِنَا هَذَا. قَالَ أَيُّوبُ كَانَ يَفْعَلُ
شَيْئًا لَمْ أَرَهُمْ يَفْعَلُونَهُ، كَانَ يَقْعُدُ فِي الثَّالِثَةِ
وَالرَّابِعَةِ. قَالَ فَأَتَيْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَقَمْنَا
عِنْدَهُ فَقَالَ " لَوْ رَجَعْتُمْ إِلَى أَهْلِيكُمْ صَلُّوا صَلاَةَ
كَذَا فِي حِينِ كَذَا، صَلُّوا صَلاَةَ كَذَا فِي حِينِ كَذَا، فَإِذَا حَضَرَتِ
الصَّلاَةُ فَلْيُؤَذِّنْ أَحَدُكُمْ وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ "
আবূ কিলাবা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মালিক ইব্নু হুয়াইরিস (রাঃ) তাঁর সাথীদের বললেন, আল্লাহ্র রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত সম্পর্কে আমি কি তোমাদের অবহিত করব
না? (রাবী) আবূ কিলাবা (রহঃ) বলেন, এ ছিল সালাতের সময় ছাড়া অন্য সময়। অতঃপর তিনি
(সালাতে) দাঁড়ালেন, অতঃপর রুকূ’ করলেন, এবং তাকবীর বলে মাথা উঠালেন আর কিছুক্ষণ
দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর সিজদায় গেলেন এবং সিজদা হতে মাথা উঠিয়ে কিছুক্ষণ বসে পুনরায়
সিজদা করলেন। অতঃপর মাথা উঠিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন। এভাবে তিনি আমাদের এ শায়খ
‘আম্র ইব্নু সালিমাহ্র সালাতের মত সালাত আদায় করলেন। আইয়ুব (রহঃ) বলেন, ‘আম্র
ইব্নু সালিমা (রহঃ) এমন কিছু করতেন যা অন্যদের করতে দেখিনি। তা হল তিনি তৃতীয়
অথবা চতুর্থ রাক’আতে বসতেন।
৮১৯
قَالَ
فَأَتَيْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَقَمْنَا عِنْدَهُ فَقَالَ لَوْ
رَجَعْتُمْ إِلَى أَهْلِيكُمْ صَلُّوا صَلاَةَ كَذَا فِي حِينِ كَذَا صَلُّوا
صَلاَةَ كَذَا فِي حِينِ كَذَا فَإِذَا حَضَرَتْ الصَّلاَةُ فَلْيُؤَذِّنْ
أَحَدُكُمْ وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ.
মালিক ইব্নু হুয়াইরিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে কিছুদিন অবস্থান
করলাম। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা তোমাদের পরিবার পরিজনদের মধ্যে ফিরে যাবার পর
অমুক সালাত অমুক সময়, অমুক সালাত অমুক সময় আদায় করবে। সময় হলে তোমাদের কেউ আযান
দেবে এবং তোমাদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ইমামাত করবে।
৮২০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، مُحَمَّدُ
بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الزُّبَيْرِيُّ قَالَ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ، عَنِ الْحَكَمِ،
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ كَانَ
سُجُودُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَرُكُوعُهُ، وَقُعُودُهُ بَيْنَ
السَّجْدَتَيْنِ قَرِيبًا مِنَ السَّوَاءِ.
বারা‘আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সিজদা, রুকূ‘
এবং দু’ সিজদার মধ্যে বসা প্রায় সমান (সময়ের) হতো।
৮২১
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ،
عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ إِنِّي لاَ آلُو أَنْ أُصَلِّيَ بِكُمْ كَمَا
رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي بِنَا. قَالَ ثَابِتٌ كَانَ
أَنَسٌ يَصْنَعُ شَيْئًا لَمْ أَرَكُمْ تَصْنَعُونَهُ، كَانَ إِذَا رَفَعَ
رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ قَامَ حَتَّى يَقُولَ الْقَائِلُ قَدْ نَسِيَ.
وَبَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ حَتَّى يَقُولَ الْقَائِلُ قَدْ نَسِيَ.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যেভাবে
আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করতে দেখেছি, কমবেশি না করে আমি তোমাদের সেভাবেই সালাত
আদায় করে দেখাব। সাবিত (রহঃ) বলেন, আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) এমন কিছু করতেন যা
তোমাদের করতে দেখিনা। তিনি রুকূ’ হতে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে এত বিলম্ব করতেন যে, কেউ
বলত, তিনি (সিজদার কথা) ভুলে গেছেন।
১০/১৪১. অধ্যায়ঃ
সিজদায় কনুই বিছিয়ে না দেয়া ।
আবূ হুমাইদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সিজদা করেছেন এবং তাঁর দু’হাত রেখেছেন, কিন্তু বিছিয়েও দেননি আর তা
গুটিয়েও দেননি ।
৮২২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " اعْتَدِلُوا فِي السُّجُودِ، وَلاَ
يَبْسُطْ أَحَدُكُمْ ذِرَاعَيْهِ انْبِسَاطَ الْكَلْبِ ".
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সিজদায় (অঙ্গ
প্রত্যঙ্গের) সামঞ্জস্য রক্ষা কর এবং তোমাদের মধ্যে কেউ যেন দু’হাত বিছিয়ে না দেয়,
যেমন কুকুর দেয়।
১০/১৪২. অধ্যায়ঃ
সালাতের বেজোড় রাক’আতে সিজদা হতে উঠে বসার পর দণ্ডায়মান হওয়া ।
৮২৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، قَالَ أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، قَالَ أَخْبَرَنَا
خَالِدٌ الْحَذَّاءُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ
الْحُوَيْرِثِ اللَّيْثِيُّ، أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّي، فَإِذَا كَانَ فِي وِتْرٍ مِنْ صَلاَتِهِ لَمْ يَنْهَضْ حَتَّى
يَسْتَوِيَ قَاعِدًا.
মালিক ইব্নু হুয়াইরিস লাইসী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাত আদায় করতে
দেখেছেন। তিনি তাঁর সালাতের বেজোড় রাক’আতে (সিজদা হতে) উঠে না বসে দাঁড়াতেন না।
[১]
[১] আমাদের দেশে বেশীর ভাগ মসজিদে এ হাদীসের বিপরীত ‘আমল
পরিলক্ষিত হয়। অথচ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেজোড় রাক’আতগুলতে
সিজদা শেষে উঠার পূর্বে জলসায়ে ইস্তিতিরাহাত করতেন ।
(বুখারী ১ম ১১৩ পৃষ্ঠা। আবূ দাউদ ১১১, ১১২ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৭৩ পৃষ্ঠা। ইব্নু মাজাহ ৬৪ পৃষ্ঠা। মেশতাক ৭৫ পৃষ্ঠা, মেশতাক নূর মোহাম্মদ আযমী ও মাদ্রাসা পাঠ্য ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭৩৪, ৭৪০। বুখারী আযীযুল হক ১ম খণ্ড হাদীস নং ৪৭৩, বুখারী আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৭৫৮, ৭৭৭, ৭৭৮। বুখারী ইঃফাঃ হাদীস ৭৮৩; মুসলিম ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭৬৯। আবূ দাউদ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ৮৪২, ৮৪৪। তিরমিযী ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২৮। ইসলামিয়াত বি-এ. হাদীস পর্ব ১২৫ পৃষ্ঠা)
(বুখারী ১ম ১১৩ পৃষ্ঠা। আবূ দাউদ ১১১, ১১২ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৭৩ পৃষ্ঠা। ইব্নু মাজাহ ৬৪ পৃষ্ঠা। মেশতাক ৭৫ পৃষ্ঠা, মেশতাক নূর মোহাম্মদ আযমী ও মাদ্রাসা পাঠ্য ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭৩৪, ৭৪০। বুখারী আযীযুল হক ১ম খণ্ড হাদীস নং ৪৭৩, বুখারী আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৭৫৮, ৭৭৭, ৭৭৮। বুখারী ইঃফাঃ হাদীস ৭৮৩; মুসলিম ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭৬৯। আবূ দাউদ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ৮৪২, ৮৪৪। তিরমিযী ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২৮। ইসলামিয়াত বি-এ. হাদীস পর্ব ১২৫ পৃষ্ঠা)
১০/১৪৩. অধ্যায়ঃ
রাক‘আত শেষে কীরূপে জমিনে ভর দিয়ে দাঁড়াবে ।
৮২৪
حَدَّثَنَا
مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي
قِلاَبَةَ، قَالَ جَاءَنَا مَالِكُ بْنُ الْحُوَيْرِثِ فَصَلَّى بِنَا فِي
مَسْجِدِنَا هَذَا فَقَالَ إِنِّي لأُصَلِّي بِكُمْ، وَمَا أُرِيدُ الصَّلاَةَ،
وَلَكِنْ أُرِيدُ أَنْ أُرِيَكُمْ كَيْفَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّي. قَالَ أَيُّوبُ فَقُلْتُ لأَبِي قِلاَبَةَ وَكَيْفَ كَانَتْ صَلاَتُهُ
قَالَ مِثْلَ صَلاَةِ شَيْخِنَا هَذَا ـ يَعْنِي عَمْرَو بْنَ سَلِمَةَ ـ قَالَ
أَيُّوبُ وَكَانَ ذَلِكَ الشَّيْخُ يُتِمُّ التَّكْبِيرَ، وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ
عَنِ السَّجْدَةِ الثَّانِيَةِ جَلَسَ وَاعْتَمَدَ عَلَى الأَرْضِ، ثُمَّ قَامَ.
আবু কিলাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইব্নু হুয়াইরিস (রাঃ) এসে আমাদের এ মসজিদে আমাদের নিয়ে
সালাত আদায় করেন। তিনি বললেন, আমি তোমাদের নিয়ে সালাত আদায় করব। এখন আমার সালাত
আদায়ের কোন ইচ্ছা ছিল না, তবে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছি তা তোমাদের দেখাতে চাই। আইয়ুব (রহঃ)
বলেন, আমি আবূ কিলাবা (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তাঁর [মালিক ইব্নু হুয়াইরিস (রাঃ)-এর]
সালাত কীরূপ ছিল? তিনি [আবূ কিলাবা (রহঃ)] বলেন, আমাদের এ শায়খ অর্থাৎ আম্র ইব্নু
সালিমা (রহঃ)-এর সালাতের মতো। আইয়ুব (রহঃ) বললেন, শায়খ তাকবীর পূর্ণ বলতেন এবং যখন
দ্বিতীয় সিজদা হতে মাথা উঠাতেন তখন বসতেন, অতঃপর মাটিতে ভর দিয়ে দাঁড়াতেন।
১০/১৪৪. অধ্যায়ঃ
দু’ সিজদার শেষে উঠার সময় তাকবীর বলবে ।
ইব্নু যুবায়র (রাঃ) উঠার সময় তাকবীর পাঠ করতেন ।
৮২৫
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ صَالِحٍ، قَالَ حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدِ
بْنِ الْحَارِثِ، قَالَ صَلَّى لَنَا أَبُو سَعِيدٍ فَجَهَرَ بِالتَّكْبِيرِ حِينَ
رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ، وَحِينَ سَجَدَ، وَحِينَ رَفَعَ، وَحِينَ قَامَ
مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ وَقَالَ هَكَذَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم.
সা’ঈদ ইব্নু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আবূ সা’ঈদ (রাঃ) সালাতে আমাদের ইমামাত করেন। তিনি
প্রথম সিজদা হতে মাথা উঠানোর সময়, দ্বিতীয় সিজদা করার সময়, দ্বিতীয় সিজদা হতে মাথা
উঠানোর সময় এবং দু’ রাক‘আত শেষে (তাশাহ্হুদের বৈঠকের পর) দাঁড়ানোর সময় সশব্দে
তাকবীর বলেন। তিনি বলেন, আমি এভাবেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
(সালাত আদায় করতে) দেখেছি।
৮২৬
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ
حَدَّثَنَا غَيْلاَنُ بْنُ جَرِيرٍ، عَنْ مُطَرِّفٍ، قَالَ صَلَّيْتُ أَنَا
وَعِمْرَانُ، صَلاَةً خَلْفَ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ ـ رضى الله عنه ـ فَكَانَ
إِذَا سَجَدَ كَبَّرَ، وَإِذَا رَفَعَ كَبَّرَ، وَإِذَا نَهَضَ مِنَ
الرَّكْعَتَيْنِ كَبَّرَ، فَلَمَّا سَلَّمَ أَخَذَ عِمْرَانُ بِيَدِي فَقَالَ
لَقَدْ صَلَّى بِنَا هَذَا صَلاَةَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم. أَوْ قَالَ
لَقَدْ ذَكَّرَنِي هَذَا صَلاَةَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم.
মুতার্রিফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ও ‘ইমরান (রাঃ) একবার ‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব
(রাঃ)-এর পিছনে সালাত আদায় করি। তিনি সিজদা করার সময় তাকবীর বলেছেন। উঠার সময়
তাকবীর বলেছেন এবং দু’রাক’আত শেষে দাঁড়ানোর সময় তাকবির বলেছেন। সালাম ফিরানোর পর
‘ইমরান (রাঃ) আমার হাত ধরে বললেন, ইনি তো (‘আলী) আমাকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত স্মরণ করিয়ে দিলেন।
১০/১৪৫. অধ্যায়ঃ
তাশাহ্হুদে বসার নিয়ম ।
উম্মু দারদা (রাঃ) তাঁর সালাতে পুরুষের মত বসতেন, তিনি ছিলেন দ্বীন
সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞানী ।
৮২৭
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
الْقَاسِمِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ
أَنَّهُ، كَانَ يَرَى عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ يَتَرَبَّعُ
فِي الصَّلاَةِ إِذَا جَلَسَ، فَفَعَلْتُهُ وَأَنَا يَوْمَئِذٍ حَدِيثُ السِّنِّ،
فَنَهَانِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ وَقَالَ إِنَّمَا سُنَّةُ الصَّلاَةِ أَنْ
تَنْصِبَ رِجْلَكَ الْيُمْنَى وَتَثْنِيَ الْيُسْرَى. فَقُلْتُ إِنَّكَ تَفْعَلُ
ذَلِكَ. فَقَالَ إِنَّ رِجْلَىَّ لاَ تَحْمِلاَنِي.
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘আবদুল্লাহ ইব্নু উমর (রাঃ)-কে সালাতে আসন পিঁড়ি করে বসতে
দেখেছেন। ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি সে সময় অল্প বয়স্ক ছিলাম।
আমিও এমন করলাম। ‘আবদুল্লাহ ইব্নু উমর (রাঃ) আমাকে নিষেধ করলেন এবং তিনি বললেন,
সালাতে (বসার) সুন্নাত তরীকা হল তুমি ডান পা খাড়া রাখবে এবং বাঁ পা বিছিয়ে রাখবে।
তখন আমি বললাম, আপনি এমন করেন? তিনি বললেন, আমার দু’পা আমার ভার বহন করতে পারে না।
৮২৮
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ سَعِيدٍ،
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَلْحَلَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ
عَطَاءٍ،. وَحَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، وَيَزِيدَ
بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَلْحَلَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، أَنَّهُ كَانَ جَالِسًا مَعَ نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْنَا صَلاَةَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ أَبُو حُمَيْدٍ السَّاعِدِيُّ أَنَا كُنْتُ أَحْفَظَكُمْ لِصَلاَةِ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَأَيْتُهُ إِذَا كَبَّرَ جَعَلَ يَدَيْهِ
حِذَاءَ مَنْكِبَيْهِ، وَإِذَا رَكَعَ أَمْكَنَ يَدَيْهِ مِنْ رُكْبَتَيْهِ، ثُمَّ
هَصَرَ ظَهْرَهُ، فَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ اسْتَوَى حَتَّى يَعُودَ كُلُّ فَقَارٍ
مَكَانَهُ، فَإِذَا سَجَدَ وَضَعَ يَدَيْهِ غَيْرَ مُفْتَرِشٍ وَلاَ قَابِضِهِمَا،
وَاسْتَقْبَلَ بِأَطْرَافِ أَصَابِعِ رِجْلَيْهِ الْقِبْلَةَ، فَإِذَا جَلَسَ فِي
الرَّكْعَتَيْنِ جَلَسَ عَلَى رِجْلِهِ الْيُسْرَى وَنَصَبَ الْيُمْنَى، وَإِذَا
جَلَسَ فِي الرَّكْعَةِ الآخِرَةِ قَدَّمَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَنَصَبَ الأُخْرَى
وَقَعَدَ عَلَى مَقْعَدَتِهِ. وَسَمِعَ اللَّيْثُ يَزِيدَ بْنَ أَبِي حَبِيبٍ
وَيَزِيدُ مِنْ مُحَمَّدِ بْنِ حَلْحَلَةَ وَابْنُ حَلْحَلَةَ مِنَ ابْنِ
عَطَاءٍ. قَالَ أَبُو صَالِحٍ عَنِ اللَّيْثِ كُلُّ فَقَارٍ. وَقَالَ ابْنُ
الْمُبَارَكِ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَيُّوبَ قَالَ حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ أَبِي
حَبِيبٍ أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ عَمْرٍو حَدَّثَهُ كُلُّ فَقَارٍ.
মুহাম্মাদ ইব্নু ‘আমর ইব্নু আত্বা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল সাহাবীর সঙ্গে
বসা ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত
সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তখন আবূ হুমাইদ সা’ঈদী (রাঃ) বলেন, আমিই তোমাদের মধ্যে
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত সম্পর্কে অধিক স্মরণ
রেখেছি। আমি তাঁকে দেখেছি (সালাত শুরু করার সময়) তিনি তাকবীর বলে দু’হাত কাঁধ
বরাবর উঠাতেন। আর যখন রুকূ‘ করতেন তখন দু’হাত দিয়ে হাঁটু শক্ত করে ধরতেন এবং পিঠ
সমান করে রাখতেন। অতঃপর রুকূ হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতেন যাতে মেরুদন্ডের
হাড়গুলো স্ব-স্ব স্থানে ফিরে আসতো। অতঃপর যখন সিজদা করতেন তখন দু’হাত সম্পূর্ণভাবে
মাটির উপর বিছিয়ে দিতেন না, আবার গুটিয়েও রাখতেন না। এবং তাঁর উভয় পায়ের আঙ্গুলির
মাথা ক্বিবলামুখী করে দিতেন। যখন দু’রাকআতের পর বসতেন তখন বাম পা-এর উপর বসতেন আর
ডান পা খাড়া করে দিতেন এবং যখন শেষ রাক‘আতে বসতেন তখন বাঁ পা এগিয়ে দিয়ে ডান পা
খাড়া করে নিতম্বের উপর বসতেন।
লায়স (রহঃ) ...... ইব্নু আত্বা (রহঃ) হতে হাদীসটি শুনেছেন। আবূ সালিহ (রহঃ) লায়স (রহঃ) হতে 'كُلُّ فَقاَرٍ مَكاَنَهُ' বলেছেন। আর ইব্ন মুবারক (রহঃ).......মুহাম্মদ ইবনে আমর (রহঃ) থেকে শুধু 'كُلُّ فَقاَرٍ' বর্ণনা করেছেন।
লায়স (রহঃ) ...... ইব্নু আত্বা (রহঃ) হতে হাদীসটি শুনেছেন। আবূ সালিহ (রহঃ) লায়স (রহঃ) হতে 'كُلُّ فَقاَرٍ مَكاَنَهُ' বলেছেন। আর ইব্ন মুবারক (রহঃ).......মুহাম্মদ ইবনে আমর (রহঃ) থেকে শুধু 'كُلُّ فَقاَرٍ' বর্ণনা করেছেন।
১০/১৪৬. অধ্যায়ঃ
যারা প্রথম বৈঠকে তাশাহ্হুদ ওয়াজিব নয় বলে মনে করেন ।
কেননা, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’রাকআত শেষে
(তাশাহ্হুদ না পড়ে) দাঁড়ালেন এবং আর (বসার জন্য) ফেরেননি ।
৮২৯
حَدَّثَنَا
أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ
حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ هُرْمُزَ، مَوْلَى بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ
ـ وَقَالَ مَرَّةً مَوْلَى رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ ـ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ
ابْنَ بُحَيْنَةَ ـ وَهْوَ مِنْ أَزْدِ شَنُوءَةَ وَهْوَ حَلِيفٌ لِبَنِي عَبْدِ
مَنَافٍ، وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى بِهِمُ الظُّهْرَ فَقَامَ فِي
الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ لَمْ يَجْلِسْ، فَقَامَ النَّاسُ مَعَهُ حَتَّى
إِذَا قَضَى الصَّلاَةَ، وَانْتَظَرَ النَّاسُ تَسْلِيمَهُ، كَبَّرَ وَهْوَ
جَالِسٌ، فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ ثُمَّ سَلَّمَ.
বানূ ‘আবদুল মুত্তালিবের আযাদকৃত দাস এবং রাবী কোন সময়ে বলেছেন
রাবীয়া ইব্নু হারিসের আযাদকৃত দাস, ‘আবদুর রহমান ইব্নু হুরমুয (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
বনূ ‘আবদ মানাফের বন্ধু গোত্র আয্দ শানআর লোক ‘আবদুল্লাহ ইব্নু
বুহাইনাহ (রাঃ) যিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণের
অন্যতম। তিনি বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের নিয়ে যুহরের
সালাত আদায় করলেন। তিনি প্রথমে দু’রাকআত পড়ার পর না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। মুক্তাদীগণ
তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে গেলেন। এভাবে সালাতের শেষভাবে মুক্তাদীগণ সালামের জন্য অপেক্ষা
করছিলেন। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসাবস্থায় তাকবীর বললেন
এবং সালাম ফিরানোর পূর্বে দু’বার সিজদা করলেন, এরপর সালাম ফিরালেন।
১০/১৪৭. অধ্যায়ঃ
প্রথম বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়া ।
৮৩০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا بَكْرٌ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ رَبِيعَةَ،
عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ ابْنِ بُحَيْنَةَ، قَالَ
صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ فَقَامَ وَعَلَيْهِ
جُلُوسٌ، فَلَمَّا كَانَ فِي آخِرِ صَلاَتِهِ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ وَهْوَ
جَالِسٌ.
‘আবদুল্লাহ ইব্নু মালিক (রাঃ) যিনি ইব্নু বুহাইনা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের
নিয়ে যুহরের সালাত আদায় করলেন। দু’ রাক‘আত পড়ার পর দাঁড়িয়ে গেলেন অথচ তাঁর বসা
জরুরী ছিল। অতঃপর সালাতের শেষভাগে বসে তিনি দু’টো সিজদা করলেন।
১০/১৪৮. অধ্যায়ঃ
শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়া ।
৮৩১
حَدَّثَنَا
أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ شَقِيقِ بْنِ سَلَمَةَ، قَالَ
قَالَ عَبْدُ اللَّهِ كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قُلْنَا السَّلاَمُ عَلَى جِبْرِيلَ وَمِيكَائِيلَ، السَّلاَمُ عَلَى فُلاَنٍ
وَفُلاَنٍ. فَالْتَفَتَ إِلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ
" إِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّلاَمُ، فَإِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَقُلِ
التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ، وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ
أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا
وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ. فَإِنَّكُمْ إِذَا قُلْتُمُوهَا
أَصَابَتْ كُلَّ عَبْدٍ لِلَّهِ صَالِحٍ فِي السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، أَشْهَدُ أَنْ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
".
শাকীক ইব্নু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ (ইব্নু মাসউদ) (রাঃ) বলেন, আমরা যখন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে সালাত আদায় করতাম, তখন আমরা বলতাম,
“আস্সালামু আলা জিব্রীল ওয়া মিকাইল এবং আস্সালামু আলা ফুলান ওয়া ফুলান।” তখন
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ
আল্লাহ্ নিজেই তো সালাম, তাই তখন তোমরা কেউ সালাত আদায় করবে, তখন সে যেন বলে-
التَّحِيّاتُ للَّهِ وَالصَّلَواتُ وَالطَيِّباتُ السَّلامُ عَلَيكَ إِيُّهاَ النَّبِيُّ وَرَحمَةُ اللهِ وَبَرَكاتُهُ السَّلامُ علَيناَ وَعَلَى عِبادِ اللهِ الصالِحينَ
“সকল মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ‘ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার উপর আল্লাহর সালাম, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। সালাম আমাদের ও আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর বর্ষিত হোক।” কেননা, যখন তোমরা এ বলবে তখন আসমান ও যমীনের আল্লাহ্র সকল নেক বান্দার নিকট পৌছে যাবে। এর সঙ্গে أَشهَدُ أَن لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ واَشهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبدُهُ وَرَسولُهُ (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মা’বূদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রসূল)-ও পড়বে।
التَّحِيّاتُ للَّهِ وَالصَّلَواتُ وَالطَيِّباتُ السَّلامُ عَلَيكَ إِيُّهاَ النَّبِيُّ وَرَحمَةُ اللهِ وَبَرَكاتُهُ السَّلامُ علَيناَ وَعَلَى عِبادِ اللهِ الصالِحينَ
“সকল মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ‘ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার উপর আল্লাহর সালাম, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। সালাম আমাদের ও আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর বর্ষিত হোক।” কেননা, যখন তোমরা এ বলবে তখন আসমান ও যমীনের আল্লাহ্র সকল নেক বান্দার নিকট পৌছে যাবে। এর সঙ্গে أَشهَدُ أَن لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ واَشهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبدُهُ وَرَسولُهُ (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মা’বূদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রসূল)-ও পড়বে।
১০/১৪৯. অধ্যায়ঃ
সালামের আগে দু’আ ।
৮৩২
حَدَّثَنَا
أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ
أَخْبَرَنَا عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ
يَدْعُو فِي الصَّلاَةِ " اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ
الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ، وَأَعُوذُ بِكَ
مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَفِتْنَةِ الْمَمَاتِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ
مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ ". فَقَالَ لَهُ قَائِلٌ مَا أَكْثَرَ
مَا تَسْتَعِيذُ مِنَ الْمَغْرَمِ فَقَالَ " إِنَّ الرَّجُلَ إِذَا غَرِمَ
حَدَّثَ فَكَذَبَ، وَوَعَدَ فَأَخْلَفَ ". وَعَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ
أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْتَعِيذُ فِي صَلاَتِهِ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ
‘উরওয়াহ ইব্নু যুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রাঃ)
তাঁকে বলেছেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে এ বলে
দু’আ করতেন:
اللَّهُمَّ إِنّي أَعوُذُبِكَ مِن عَذابِ القَبرِ واعوُذُبِكَ مِن فِتنَةِ المَسيِحِ الدَجّاَلِ واعوُذُبِكَ مِن فِتنَةِ المَحياَ وَفِتنَةِ المَماتِ
“কবরের আযাব হতে, মাসীহে দাজ্জালের ফিত্না হতে এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিত্না হতে ইয়া আল্লাহ! আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! গুনাহ ও ঋণগ্রস্থতা হতে আপনার নিকট আশ্রয় চাই।”
তখন এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, আপনি কতই না ঋণগ্রস্থতা হতে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। তিনি (আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) বললেনঃ যখন কোন ব্যক্তি ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ে তখন বলার সময় মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে।
মুহাম্মদ ইব্ন ইউসুফ (র.) বলেন, খালফ ইব্ন আমির (র.)-কে বলতে আমি শুনেছি যে, مَسيح ও مَسيح এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। উভয় শব্দই সমার্থবোধক তবে একজন হলেন ঈসা (আ.) এবং অপর ব্যক্তি হলো দাজ্জাল।
اللَّهُمَّ إِنّي أَعوُذُبِكَ مِن عَذابِ القَبرِ واعوُذُبِكَ مِن فِتنَةِ المَسيِحِ الدَجّاَلِ واعوُذُبِكَ مِن فِتنَةِ المَحياَ وَفِتنَةِ المَماتِ
“কবরের আযাব হতে, মাসীহে দাজ্জালের ফিত্না হতে এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিত্না হতে ইয়া আল্লাহ! আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! গুনাহ ও ঋণগ্রস্থতা হতে আপনার নিকট আশ্রয় চাই।”
তখন এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, আপনি কতই না ঋণগ্রস্থতা হতে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। তিনি (আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) বললেনঃ যখন কোন ব্যক্তি ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ে তখন বলার সময় মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে।
মুহাম্মদ ইব্ন ইউসুফ (র.) বলেন, খালফ ইব্ন আমির (র.)-কে বলতে আমি শুনেছি যে, مَسيح ও مَسيح এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। উভয় শব্দই সমার্থবোধক তবে একজন হলেন ঈসা (আ.) এবং অপর ব্যক্তি হলো দাজ্জাল।
৮৩৩
وَعَنْ
الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ
اللهُ عَنْهَا قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَسْتَعِيذُ فِي
صَلاَتِهِ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ.
‘উরওয়াহ ইব্নু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁর সালাতে দাজ্জালের ফিতনা হতে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন।
৮৩৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي
حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي الْخَيْرِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي
بَكْرٍ الصِّدِّيقِ ـ رضى الله عنه ـ. أَنَّهُ قَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم عَلِّمْنِي دُعَاءً أَدْعُو بِهِ فِي صَلاَتِي. قَالَ " قُلِ
اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ
إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ، وَارْحَمْنِي إِنَّكَ
أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ ".
আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট
আরয করলেন, আমাকে সালাতে পাঠ করার জন্য একটি দু’আ শিখেয়ে দেন। তিনি বললেন, এ
দু’আটি বলবে
اللَّهُمَّ إِنّيِ ظَلَمتُ نَفسيِ ظُلماً كَثِراً وَّلاَ يَغفِرُ الذُّنوبَ إِلاَّ أَنتَ فاَغفِرليِ مَغفِرَةً مِن عِندِكَ وَارحَمنيِ إِنَّكَ أَنتَ الغَفورُ الرَحيمُ
“হে আল্লাহ! আমি নিজের উপর অধিক যুলম করেছি। আপনি ছাড়া সে অপরাধ ক্ষমা করার আর কেউ নেই। আপনার পক্ষ হতে আমাকে তা ক্ষমা করে দিন এবং আমার উপর রহমত বর্ষন করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।”
اللَّهُمَّ إِنّيِ ظَلَمتُ نَفسيِ ظُلماً كَثِراً وَّلاَ يَغفِرُ الذُّنوبَ إِلاَّ أَنتَ فاَغفِرليِ مَغفِرَةً مِن عِندِكَ وَارحَمنيِ إِنَّكَ أَنتَ الغَفورُ الرَحيمُ
“হে আল্লাহ! আমি নিজের উপর অধিক যুলম করেছি। আপনি ছাড়া সে অপরাধ ক্ষমা করার আর কেউ নেই। আপনার পক্ষ হতে আমাকে তা ক্ষমা করে দিন এবং আমার উপর রহমত বর্ষন করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।”
১০/১৫০. অধ্যায়ঃ
তাশাহ্হুদের পর যে দু‘আটি বেছে নেয়া হয়, অথচ তা আবশ্যক নয় ।
৮৩৫
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنِ الأَعْمَشِ، حَدَّثَنِي شَقِيقٌ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا إِذَا كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فِي الصَّلاَةِ قُلْنَا السَّلاَمُ عَلَى اللَّهِ مِنْ عِبَادِهِ، السَّلاَمُ
عَلَى فُلاَنٍ وَفُلاَنٍ. فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لاَ
تَقُولُوا السَّلاَمُ عَلَى اللَّهِ. فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّلاَمُ، وَلَكِنْ
قُولُوا التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ، وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ
عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ
عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ. فَإِنَّكُمْ إِذَا قُلْتُمْ
أَصَابَ كُلَّ عَبْدٍ فِي السَّمَاءِ أَوْ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، أَشْهَدُ
أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ
وَرَسُولُهُ، ثُمَّ يَتَخَيَّرُ مِنَ الدُّعَاءِ أَعْجَبَهُ إِلَيْهِ فَيَدْعُو
".
‘আবদুল্লাহ ইব্নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের অবস্থা এ ছিল যে, যখন আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাতে থাকতাম, তখন আমরা বলতাম, বান্দার পক্ষ হতে
আল্লাহ্র প্রতি সালাম। সালাম অমুকের প্রতি, সালাম অমুকের প্রতি। এতে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্র প্রতি সালাম, তোমরা এরূপ বল
না। কারণ আল্লাহ্ নিজেই সালাম। বরং তোমরা বল-
التَّحِيّاتُ للَّهِ وَالصَّلَواتُ وَالطَيِّباتُ السَّلامُ عَلَيكَ إِيُّهاَ النَّبِيُّ وَرَحمَةُ اللهِ وَبَرَكاتُهُ السَّلامُ علَيناَ وَعَلَى عِبادِ اللهِ الصالِحينَ
“সমস্ত মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ্র জন্য। হে নবী! আপনার উপর প্রতি সালাম এবং আল্লাহ্র রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহ্র নেক বান্দাগণের প্রতি।” তোমরা যখন তা বলবে তখন আসমান বা আসমান ও যমীনের মধ্যে আল্লাহ্র প্রত্যেক বান্দার নিকট তা পৌছে যাবে। (এরপর বলবে) أَشهَدُ أَن لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ واَشهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبدُهُ وَرَسولُهُ "আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন মাবূদ নাই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র বান্দা ও রাসূল।" তারপর যে দু'আ তার পছন্দ হয় তা সে বেছে নিবে এবং পড়বে।
التَّحِيّاتُ للَّهِ وَالصَّلَواتُ وَالطَيِّباتُ السَّلامُ عَلَيكَ إِيُّهاَ النَّبِيُّ وَرَحمَةُ اللهِ وَبَرَكاتُهُ السَّلامُ علَيناَ وَعَلَى عِبادِ اللهِ الصالِحينَ
“সমস্ত মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ্র জন্য। হে নবী! আপনার উপর প্রতি সালাম এবং আল্লাহ্র রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহ্র নেক বান্দাগণের প্রতি।” তোমরা যখন তা বলবে তখন আসমান বা আসমান ও যমীনের মধ্যে আল্লাহ্র প্রত্যেক বান্দার নিকট তা পৌছে যাবে। (এরপর বলবে) أَشهَدُ أَن لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ واَشهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبدُهُ وَرَسولُهُ "আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন মাবূদ নাই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র বান্দা ও রাসূল।" তারপর যে দু'আ তার পছন্দ হয় তা সে বেছে নিবে এবং পড়বে।
১০/১৫১. অধ্যায়ঃ
সালাত সমাপ্ত হওয়া অবধি যিনি কপাল ও নাকের ধূলাবালি মোছেননি ।
আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আমি হুমাইদী (রহঃ)-কে দেখেছি যে, সালাত
শেষ হবার পূর্বে কপাল না মুছার ব্যাপারে এ হাদীস দিয়ে দলিল পেশ করতেন ।
৮৩৬
حَدَّثَنَا
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ، قَالَ سَأَلْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ فَقَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْجُدُ فِي الْمَاءِ وَالطِّينِ حَتَّى رَأَيْتُ
أَثَرَ الطِّينِ فِي جَبْهَتِهِ.
আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পানি ও কাদার মধ্যে সিজদা
করতে দেখেছি। এমন কি তাঁর কপালে কাদামাটির চিহ্ন লেগে থাকতে দেখেছি।
১০/১৫২. অধ্যায়ঃ
সালাম ফিরান ।
৮৩৭
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا
الزُّهْرِيُّ، عَنْ هِنْدٍ بِنْتِ الْحَارِثِ، أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ ـ رضى الله
عنها ـ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سَلَّمَ قَامَ
النِّسَاءُ حِينَ يَقْضِي تَسْلِيمَهُ، وَمَكَثَ يَسِيرًا قَبْلَ أَنْ يَقُومَ.
قَالَ ابْنُ شِهَابٍ فَأُرَى ـ وَاللَّهُ أَعْلَمُ ـ أَنَّ مُكْثَهُ لِكَىْ
يَنْفُذَ النِّسَاءُ قَبْلَ أَنْ يُدْرِكَهُنَّ مَنِ انْصَرَفَ مِنَ الْقَوْمِ.
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন
সালাম ফিরাতেন তখন সালাম শেষ হলেই মহিলাগণ দাঁড়িয়ে পড়তেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ানোর পূর্বে কিছুক্ষণ বসে অপেক্ষা করতেন। ইব্নু শিহাব
(রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ই ভাল জানেন, আমার মনে হয়, তাঁর এ অপেক্ষা এ কারনে যাতে
মুসল্লীগন হতে যে সব পুরুষ ফিরে যান তাদের পূর্বেই মহিলারা নিজ অবস্থানে পৌঁছে
জেতে পারেন।
১০/১৫৩. অধ্যায়ঃ
ইমামের সালাম ফিরানোর সময় মুক্তাদিগণও সালাম ফিরাবে ।
ইব্নু 'উমর (রাঃ) ইমামের সালাম ফিরানোর সময় মুক্তাদীগণের সালাম
ফিরানো মুস্তাহাব মনে করতেন ।
৮৩৮
حَدَّثَنَا
حِبَّانُ بْنُ مُوسَى، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ، عَنْ عِتْبَانَ،
قَالَ صَلَّيْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمْنَا حِينَ
سَلَّمَ.
ইত্বান ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর
সঙ্গে সালাত আদায় করেছি। তিনি যখন সালাম ফিরান তখন আমরাও সালাম ফিরাই।
১০/১৫৪. অধ্যায়ঃ
যারা ইমামের সালামের জবাব দেয়া দরকার মনে করেন না এবং সালাতের
সালামকেই যথেষ্ট মনে করেন ।
৮৩৯
حَدَّثَنَا
عَبْدَانُ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي مَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ،، وَزَعَمَ، أَنَّهُ
عَقَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَعَقَلَ مَجَّةً مَجَّهَا مِنْ دَلْوٍ
كَانَ فِي دَارِهِمْ. قَالَ سَمِعْتُ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ الأَنْصَارِيَّ،
ثُمَّ أَحَدَ بَنِي سَالِمٍ قَالَ كُنْتُ أُصَلِّي لِقَوْمِي بَنِي سَالِمٍ،
فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ إِنِّي أَنْكَرْتُ بَصَرِي،
وَإِنَّ السُّيُولَ تَحُولُ بَيْنِي وَبَيْنَ مَسْجِدِ قَوْمِي، فَلَوَدِدْتُ
أَنَّكَ جِئْتَ فَصَلَّيْتَ فِي بَيْتِي مَكَانًا، حَتَّى أَتَّخِذَهُ مَسْجِدًا
فَقَالَ " أَفْعَلُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ ". فَغَدَا عَلَىَّ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ مَعَهُ بَعْدَ مَا اشْتَدَّ
النَّهَارُ، فَاسْتَأْذَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَذِنْتُ لَهُ، فَلَمْ
يَجْلِسْ حَتَّى قَالَ " أَيْنَ تُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ مِنْ بَيْتِكَ
". فَأَشَارَ إِلَيْهِ مِنَ الْمَكَانِ الَّذِي أَحَبَّ أَنْ يُصَلِّيَ
فِيهِ، فَقَامَ فَصَفَفْنَا خَلْفَهُ ثُمَّ سَلَّمَ، وَسَلَّمْنَا حِينَ
سَلَّمَ.
মাহমূদ ইব্নূ রাবী‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর কথা
তাঁর স্পষ্ট মনে আছে, যে তাঁদের বাড়িতে রাখা একটি বালতির (পানি নিয়ে) নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুলি করেছেন।
৮৪০
قَالَ سَمِعْتُ
عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ الأَنْصَارِيَّ، ثُمَّ أَحَدَ بَنِي سَالِمٍ قَالَ كُنْتُ
أُصَلِّي لِقَوْمِي بَنِي سَالِمٍ، فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فَقُلْتُ إِنِّي أَنْكَرْتُ بَصَرِي، وَإِنَّ السُّيُولَ تَحُولُ بَيْنِي وَبَيْنَ
مَسْجِدِ قَوْمِي، فَلَوَدِدْتُ أَنَّكَ جِئْتَ فَصَلَّيْتَ فِي بَيْتِي مَكَانًا،
حَتَّى أَتَّخِذَهُ مَسْجِدًا فَقَالَ " أَفْعَلُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ
". فَغَدَا عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ
مَعَهُ بَعْدَ مَا اشْتَدَّ النَّهَارُ، فَاسْتَأْذَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم فَأَذِنْتُ لَهُ، فَلَمْ يَجْلِسْ حَتَّى قَالَ " أَيْنَ تُحِبُّ أَنْ
أُصَلِّيَ مِنْ بَيْتِكَ ". فَأَشَارَ إِلَيْهِ مِنَ الْمَكَانِ الَّذِي
أَحَبَّ أَنْ يُصَلِّيَ فِيهِ، فَقَامَ فَصَفَفْنَا خَلْفَهُ ثُمَّ سَلَّمَ،
وَسَلَّمْنَا حِينَ سَلَّمَ.
মাহমূদ ইব্নূ রাবী‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি ‘ইতবান ইব্নু মালিক আনসারী (রাঃ) যিনি বনূ সালিম
গোত্রের একজন, তাঁকে বলতে শুনেছি, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর
নিকট গিয়ে বললাম, আমার দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে গেছে এবং আমার বাড়ি হতে আমার কাওমের মসজিদ
পর্যন্ত পানি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার একান্ত ইচ্ছা আপনি আমার বাড়িতে এসে এক
জায়গায় সালাত আদায় করবেন যেটা আমি সালাত আদায় করার জন্য নির্দিষ্ট করে নিব। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ইন্শা আল্লাহ্, আমি তা করব। পরদিন
রোদের তেজ বৃদ্ধি পেলে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং আবূ
বকর (রাঃ) আমার বাড়িতে এলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রবেশের
অনুমতি চাইলে আমি তাঁকে দিলাম। তিনি না বসেই বললেনঃ তোমার ঘরের কোন্ স্থানে তুমি
আমার সালাত আদায় পছন্দ কর? তিনি পছন্দ মত একটি স্থান নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)–কে সালাত আদায়ের জন্য ইঙ্গিত করে দেখালেন। অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন আমরাও
তাঁর পিছনে কাতারে দাঁড়ালাম। অবশেষে তিনি সালাম ফিরালেন, আমরাও তাঁর সালামের সময়
সালাম ফিরালাম।
১০/১৫৫. অধ্যায়ঃ
সালামের পর যিক্র ।
৮৪১
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ أَخْبَرَنَا
ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، أَنَّ أَبَا مَعْبَدٍ، مَوْلَى ابْنِ
عَبَّاسٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَخْبَرَهُ أَنَّ
رَفْعَ الصَّوْتِ بِالذِّكْرِ حِينَ يَنْصَرِفُ النَّاسُ مِنَ الْمَكْتُوبَةِ
كَانَ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ
كُنْتُ أَعْلَمُ إِذَا انْصَرَفُوا بِذَلِكَ إِذَا سَمِعْتُهُ.
ইব্নু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সময়
মুসল্লীগন ফরয সালাত শেষ হলে উচ্চৈঃস্বরে যিক্র করতেন। ইব্নু 'আব্বাস (রাঃ)
বলেন, আমি এরূপ শুনে বুঝতাম, মুসল্লীগন সালাত শেষ করেছেন।
৮৪২
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، {عَنْ عَمْرٍو،}
قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو مَعْبَدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ
كُنْتُ أَعْرِفُ انْقِضَاءَ صَلاَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِالتَّكْبِيرِ.
ইব্নু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাকবীর শুনে আমি বুঝতে পারতাম সালাত শেষ হয়েছে। ‘আলী
(রাঃ) বলেন, সুফিয়ান (রহঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, আবূ মা‘বাদ (রহঃ) ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ)–এর আযাদকৃত দাসসমূহের মধ্যে অধিক সত্যবাদী দাস ছিলেন। ‘আলী (রহঃ)
বলেন, তার নাম ছিল নাফিয।
৮৪৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، عَنْ عُبَيْدِ
اللَّهِ، عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه
ـ قَالَ جَاءَ الْفُقَرَاءُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا ذَهَبَ
أَهْلُ الدُّثُورِ مِنَ الأَمْوَالِ بِالدَّرَجَاتِ الْعُلاَ وَالنَّعِيمِ
الْمُقِيمِ، يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي، وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ، وَلَهُمْ
فَضْلٌ مِنْ أَمْوَالٍ يَحُجُّونَ بِهَا، وَيَعْتَمِرُونَ، وَيُجَاهِدُونَ،
وَيَتَصَدَّقُونَ قَالَ " أَلاَ أُحَدِّثُكُمْ بِأَمْرٍ إِنْ أَخَذْتُمْ
بِهِ أَدْرَكْتُمْ مَنْ سَبَقَكُمْ وَلَمْ يُدْرِكْكُمْ أَحَدٌ بَعْدَكُمْ،
وَكُنْتُمْ خَيْرَ مَنْ أَنْتُمْ بَيْنَ ظَهْرَانَيْهِ، إِلاَّ مَنْ عَمِلَ
مِثْلَهُ تُسَبِّحُونَ وَتَحْمَدُونَ، وَتُكَبِّرُونَ خَلْفَ كُلِّ صَلاَةٍ
ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ ". فَاخْتَلَفْنَا بَيْنَنَا فَقَالَ بَعْضُنَا
نُسَبِّحُ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَنَحْمَدُ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَنُكَبِّرُ
أَرْبَعًا وَثَلاَثِينَ. فَرَجَعْتُ إِلَيْهِ فَقَالَ " تَقُولُ
سُبْحَانَ اللَّهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، حَتَّى يَكُونَ
مِنْهُنَّ كُلِّهِنَّ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দরিদ্রলোকেরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর
নিকট এসে বললেন, সম্পদশালী ও ধনী ব্যক্তিরা তাদের সম্পদের দ্বারা উচ্চমর্যাদা ও
স্থায়ী আবাস লাভ করছেন, তাঁরা আমাদের মত সালাত আদায় করছেন, আমাদের মত সিয়াম পালন
করছেন এবং অর্থের দ্বারা হাজ্জ, ‘উমরাহ্, জিহাদ ও সদাক্বাহ করার মর্যাদাও লাভ
করছেন। এ শুনে তিনি বললেন, আমি কি তোমাদের এমন কিছু কাজের কথা বলব, যা তোমরা করলে,
যারা নেক কাজে তোমাদের চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গেছে, তাদের পর্যায়ে পৌঁছতে পারবে। তবে
যারা পুনরায় এ ধরনের কাজ করবে তাদের কথা স্বতন্ত্র। তোমরা প্রত্যেক সালাতের পর
তেত্রিশ বার করে তাসবীহ্ (সুবহানাল্লাহ্), তাহ্মীদ (আলহামদু লিল্লাহ্) এবং
তাকবীর (আল্লাহ আকবার) পাঠ করবে। (এ নিয়ে) আমাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হলো। কেউ
বলল, আমরা তেত্রিশ বার তাসবীহ্ পড়ব। তেত্রিশ বার তাহ্মীদ আর চৌত্রিশ বার তাকবীর
পড়ব। অতঃপর আমি তাঁর নিকট ফিরে গেলাম। তিনি বললেন, سُبحانَ اللهِ وَالحَمدُ للّهِ وَ اللهُ أَكبَر বলবে, যাতে সবগুলোই তেত্রিশবার করে হয়ে যায়।
৮৪৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ
عُمَيْرٍ، عَنْ وَرَّادٍ، كَاتِبِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ أَمْلَى
عَلَىَّ الْمُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةَ فِي كِتَابٍ إِلَى مُعَاوِيَةَ أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ
مَكْتُوبَةٍ " لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ
الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ، اللَّهُمَّ لاَ
مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلاَ يَنْفَعُ ذَا
الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ ". وَقَالَ شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ
بِهَذَا، وَعَنِ الْحَكَمِ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُخَيْمِرَةَ عَنْ وَرَّادٍ
بِهَذَا. وَقَالَ الْحَسَنُ الْجَدُّ غِنًى.
মুগীরাহ ইব্নু শু‘বাহ (রাঃ)–এর কাতিব ওয়ার্রাদ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুগীরাহ ইব্নু শু‘বাহ (রাঃ) আমাকে দিয়ে মু‘আবিয়াহ
(রাঃ)-কে একখানা পত্র লিখালেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
প্রত্যেক ফরয সালাতের পর বলতেনঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحدَهُ لاَ شَريكَ لَهُ لَهُ المُلكُ وَلَهُ الحمَدُ وَهوَ عَلى كُلِّ شَيٍّ قَديرُ، اللَّهُمَّ لا مَنِعَ لِماَ اعطَيتَ وَلاَ مُعطي لِماَ مَنَعتَ وَلا يَنفَعُ ذاَ الجَدِّ مِنكَ الجَدُّ
"এক আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই, সার্বভৌমত্ব একমাত্র তাঁরই, সমস্ত প্রশংসা একমাত্র তাঁরই জন্য, তিনি সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল। হে আল্লাহ্! আপনি যা প্রদান করতে চান তা রোধ করার কেউ নেই, আর আপনি যা রোধ করেন তা প্রদান করার কেউ নেই। আপনার নিকট (সৎকাজ ভিন্ন) কোন সম্পদশালীর সম্পদ উপকারে আসে না।” শু‘বাহ (রহঃ) আবদুল মালিক (রহঃ) হতে এ রকমই বলেছেন, আপনার নিকট (সৎ কাজ ছাড়া) এবং হাসান (রহঃ) বলেন, جَدُّ অর্থ সম্পদ এবং শু‘বাহ (রহঃ) ওয়ার্রাদ (রহঃ) হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحدَهُ لاَ شَريكَ لَهُ لَهُ المُلكُ وَلَهُ الحمَدُ وَهوَ عَلى كُلِّ شَيٍّ قَديرُ، اللَّهُمَّ لا مَنِعَ لِماَ اعطَيتَ وَلاَ مُعطي لِماَ مَنَعتَ وَلا يَنفَعُ ذاَ الجَدِّ مِنكَ الجَدُّ
"এক আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই, সার্বভৌমত্ব একমাত্র তাঁরই, সমস্ত প্রশংসা একমাত্র তাঁরই জন্য, তিনি সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল। হে আল্লাহ্! আপনি যা প্রদান করতে চান তা রোধ করার কেউ নেই, আর আপনি যা রোধ করেন তা প্রদান করার কেউ নেই। আপনার নিকট (সৎকাজ ভিন্ন) কোন সম্পদশালীর সম্পদ উপকারে আসে না।” শু‘বাহ (রহঃ) আবদুল মালিক (রহঃ) হতে এ রকমই বলেছেন, আপনার নিকট (সৎ কাজ ছাড়া) এবং হাসান (রহঃ) বলেন, جَدُّ অর্থ সম্পদ এবং শু‘বাহ (রহঃ) ওয়ার্রাদ (রহঃ) হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
১০/১৫৬. অধ্যায়ঃ
সালাম ফিরানোর পর ইমাম মুক্তাদিগণের দিকে ঘুরে বসবেন ।
৮৪৫
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا
أَبُو رَجَاءٍ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم إِذَا صَلَّى صَلاَةً أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ.
সামুরা ইব্নু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত শেষ
করতেন, তখন আমাদের দিকে মুখ ফিরাতেন।
৮৪৬
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنْ
عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنْ زَيْدِ
بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّهُ قَالَ صَلَّى لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم صَلاَةَ الصُّبْحِ بِالْحُدَيْبِيَةِ عَلَى إِثْرِ سَمَاءٍ كَانَتْ مِنَ
اللَّيْلَةِ، فَلَمَّا انْصَرَفَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ فَقَالَ " هَلْ
تَدْرُونَ مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ ". قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ
أَعْلَمُ. قَالَ " أَصْبَحَ مِنْ عِبَادِي مُؤْمِنٌ بِي وَكَافِرٌ،
فَأَمَّا مَنْ قَالَ مُطِرْنَا بِفَضْلِ اللَّهِ وَرَحْمَتِهِ فَذَلِكَ مُؤْمِنٌ
بِي وَكَافِرٌ بِالْكَوْكَبِ، وَأَمَّا مَنْ قَالَ بِنَوْءِ كَذَا وَكَذَا
فَذَلِكَ كَافِرٌ بِي وَمُؤْمِنٌ بِالْكَوْكَبِ ".
যায়দ ইব্নু খালিদ জুহানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে
বৃষ্টি হবার পর হুদায়বিয়াতে আমাদের নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষ করে
তিনি লোকদের দিকে ফিরে বললেনঃ তোমরা কি জান, তোমাদের পরাক্রমশালী ও মহিমাময়
প্রতিপালক কি বলেছেন? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলই বেশি জানেন। আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ (রব) বলেন, আমার বান্দাদের মধ্য
কেউ আমার প্রতি মু’মিন হয়ে গেল এবং কেউ কাফির। যে বলেছে, আল্লাহ্র করুনা ও রহমতে
আমরা বৃষ্টি লাভ করেছি, সে হল আমার প্রতি বিশ্বাসী এবং নক্ষত্রের প্রতি অবিশ্বাসী।
আর যে বলেছে, অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের উপর বৃষ্টিপাত হয়েছে, সে আমার
প্রতি অবিশ্বাসী হয়েছে এবং নক্ষত্রের প্রতি বিশ্বাসী হয়েছে।
৮৪৭
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ، سَمِعَ يَزِيدَ، قَالَ أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ
أَخَّرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصَّلاَةَ ذَاتَ لَيْلَةٍ إِلَى
شَطْرِ اللَّيْلِ ثُمَّ خَرَجَ عَلَيْنَا، فَلَمَّا صَلَّى أَقْبَلَ عَلَيْنَا
بِوَجْهِهِ فَقَالَ " إِنَّ النَّاسَ قَدْ صَلَّوْا وَرَقَدُوا،
وَإِنَّكُمْ لَنْ تَزَالُوا فِي صَلاَةٍ مَا انْتَظَرْتُمُ الصَّلاَةَ ".
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অর্ধরাত
পর্যন্ত সালাত বিলম্ব করলেন। এরপর তিনি আমাদের সামনে বের হয়ে এলেন। সালাত শেষে
তিনি আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, লোকেরা সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু
তোমরা যতক্ষণ পর্যন্ত সালাতের অপেক্ষায় থাকবে ততক্ষণ তোমরা যেন সালাতে রত থাকবে।
১০/১৫৭. অধ্যায়ঃ
সালামের পরে ইমামের মুসাল্লায় বসে থাকা ।
৮৪৮
وَقَالَ لَنَا
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، قَالَ كَانَ ابْنُ
عُمَرَ يُصَلِّي فِي مَكَانِهِ الَّذِي صَلَّى فِيهِ الْفَرِيضَةَ. وَفَعَلَهُ
الْقَاسِمُ. وَيُذْكَرُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَفَعَهُ لاَ يَتَطَوَّعُ
الإِمَامُ فِي مَكَانِهِ. وَلَمْ يَصِحَّ.
নাফি‘ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্নু 'উমর (রাঃ) যে স্থানে দাঁড়িয়ে ফরয সালাত আদায় করতেন সেখানে
দাঁড়িয়ে অন্য সালাত আদায় করতেন। এরূপ ক্বাসিম (রহঃ) ‘আমল করেছেন। আবূ হুরায়রা
(রাঃ) হতে মারফূ‘ হাদিস বর্ণনা করা হয়ে থাকে যে, ইমাম তাঁর জায়গায় দাঁড়িয়ে নফল
সালাত আদায় করবেন। [ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন] এ হাদীসটি মারফূ‘ হিসেবে রিওয়ায়াত করা
ঠিক নয়।
৮৪৯
حَدَّثَنَا
أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ،
عَنْ هِنْدٍ بِنْتِ الْحَارِثِ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم كَانَ إِذَا سَلَّمَ يَمْكُثُ فِي مَكَانِهِ يَسِيرًا. قَالَ ابْنُ
شِهَابٍ فَنُرَى ـ وَاللَّهُ أَعْلَمُ ـ لِكَىْ يَنْفُذَ مَنْ يَنْصَرِفُ مِنَ
النِّسَاءِ. وَقَالَ ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا نَافِعُ بْنُ يَزِيدَ،
قَالَ أَخْبَرَنِي جَعْفَرُ بْنُ رَبِيعَةَ، أَنَّ ابْنَ شِهَابٍ، كَتَبَ إِلَيْهِ
قَالَ حَدَّثَتْنِي هِنْدُ بِنْتُ الْحَارِثِ الْفِرَاسِيَّةُ، عَنْ أُمِّ
سَلَمَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَكَانَتْ مِنْ صَوَاحِبَاتِهَا
قَالَتْ كَانَ يُسَلِّمُ فَيَنْصَرِفُ النِّسَاءُ، فَيَدْخُلْنَ بُيُوتَهُنَّ مِنْ
قَبْلِ أَنْ يَنْصَرِفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. وَقَالَ ابْنُ
وَهْبٍ عَنْ يُونُسَ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَتْنِي هِنْدُ الْفِرَاسِيَّةُ.
وَقَالَ عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنِ الزُّهْرِيِّ
حَدَّثَتْنِي هِنْدُ الْفِرَاسِيَّةُ. وَقَالَ الزُّبَيْدِيُّ أَخْبَرَنِي
الزُّهْرِيُّ أَنَّ هِنْدَ بِنْتَ الْحَارِثِ الْقُرَشِيَّةَ أَخْبَرَتْهُ،
وَكَانَتْ تَحْتَ مَعْبَدِ بْنِ الْمِقْدَادِ ـ وَهْوَ حَلِيفُ بَنِي زُهْرَةَ ـ
وَكَانَتْ تَدْخُلُ عَلَى أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. وَقَالَ
شُعَيْبٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَتْنِي هِنْدُ الْقُرَشِيَّةُ. وَقَالَ ابْنُ
أَبِي عَتِيقٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ هِنْدٍ الْفِرَاسِيَّةِ. وَقَالَ
اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَهُ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنِ
امْرَأَةٍ مِنْ قُرَيْشٍ حَدَّثَتْهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.
উম্মুল মু’মিনীন উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাম ফিরানোর পর নিজ জায়গায়
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেন। ইব্নু শিহাব (রহঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর বসে থাকার কারণ আল্লাহ্ই অধিক জ্ঞাত। তবে আমার মনে হয়
সালাতের পর মহিলাগণ যাতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পান।
৮৫০
وَقَالَ ابْنُ
أَبِي مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا نَافِعُ بْنُ يَزِيدَ، قَالَ أَخْبَرَنِي جَعْفَرُ
بْنُ رَبِيعَةَ، أَنَّ ابْنَ شِهَابٍ، كَتَبَ إِلَيْهِ قَالَ حَدَّثَتْنِي هِنْدُ
بِنْتُ الْحَارِثِ الْفِرَاسِيَّةُ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَكَانَتْ مِنْ صَوَاحِبَاتِهَا قَالَتْ كَانَ يُسَلِّمُ
فَيَنْصَرِفُ النِّسَاءُ، فَيَدْخُلْنَ بُيُوتَهُنَّ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَنْصَرِفَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. وَقَالَ ابْنُ وَهْبٍ عَنْ يُونُسَ عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَتْنِي هِنْدُ الْفِرَاسِيَّةُ. وَقَالَ عُثْمَانُ بْنُ
عُمَرَ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنِ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَتْنِي هِنْدُ
الْفِرَاسِيَّةُ. وَقَالَ الزُّبَيْدِيُّ أَخْبَرَنِي الزُّهْرِيُّ أَنَّ هِنْدَ
بِنْتَ الْحَارِثِ الْقُرَشِيَّةَ أَخْبَرَتْهُ، وَكَانَتْ تَحْتَ مَعْبَدِ بْنِ
الْمِقْدَادِ ـ وَهْوَ حَلِيفُ بَنِي زُهْرَةَ ـ وَكَانَتْ تَدْخُلُ عَلَى
أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. وَقَالَ شُعَيْبٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ
حَدَّثَتْنِي هِنْدُ الْقُرَشِيَّةُ. وَقَالَ ابْنُ أَبِي عَتِيقٍ عَنِ
الزُّهْرِيِّ عَنْ هِنْدٍ الْفِرَاسِيَّةِ. وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي
يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَهُ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنِ امْرَأَةٍ مِنْ قُرَيْشٍ
حَدَّثَتْهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.
হিন্দ বিন্ত হারিস ফিরাসিয়াহ্ (রাঃ) যিনি উম্মু সালামা (রাঃ)–এর
বান্ধবী তাঁর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাম
ফিরাতেন, অতঃপর মহিলারা ফিরে গিয়ে তাঁদের ঘরে প্রবেশ করতেন, আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর ফিরবার পূর্বেই। ইব্নু ওহাব (রহঃ) ইউনুস
(রহঃ) সূত্রে শিহাব (রহঃ) হতে বলেন যে, আমাকে হিন্দ ফিরাসিয়াহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন
এবং ‘উসমান ইব্নু 'উমর (রহঃ) বলেন, আমাকে ইউনুস (রহঃ) যুহরি (রহঃ) হতে বলেন যে,
আমাকে হিন্দ ফিরাসিয়াহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, আর যুবাইদী (রহঃ) বলেন, আমাকে যুহরী
(রহঃ) বর্ণনা করেছেন যে, হিন্দ বিনত হারিস কুরাশিয়াহ (রহঃ) তাকে বর্ণনা করেছেন এবং
তিনি মা‘বাদ ইব্নু মিকদাদ (রহঃ)-এর স্ত্রী। আর মা‘বাদ বনূ যুহরার সাথে সন্ধি
চূক্তিতে আবদ্ধ ছিলেন এবং তিনি (হিন্দ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর
সহধর্মিণীগণের নিকট যাতায়াত করতেন। শু‘আয়ব (রহঃ) যুহরী (রহঃ) হতে বলেন যে, আমাকে
হিন্দ কুরাশিয়াহ (রহঃ) বর্ণনা করেছেন। আর ইব্নু আবূ আতীক (রহঃ) যুহরী (রহঃ)
সূত্রে হিন্দ ফিরাসিয়াহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করছেন। লায়স (রহঃ) ইয়াহ্ইয়া ইব্নু
সায়ীদ (রহঃ) সূত্রে ইব্নু শিহাব (রহঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, কুরাইশের এক মহিলা
তাঁকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।
No comments