সহিহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "আযান" হাদিস নং -৮৫১ থেকে ৮৭৫
মুসল্লীদের নিয়ে সালাত আদায়ের পর কোন জরুরী কথা মনে পড়লে তাদের
ডিঙ্গিয়ে যাওয়া।
৮৫১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ
سَعِيدٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُقْبَةَ، قَالَ
صَلَّيْتُ وَرَاءَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ الْعَصْرَ
فَسَلَّمَ ثُمَّ قَامَ مُسْرِعًا، فَتَخَطَّى رِقَابَ النَّاسِ إِلَى بَعْضِ
حُجَرِ نِسَائِهِ، فَفَزِعَ النَّاسُ مِنْ سُرْعَتِهِ فَخَرَجَ عَلَيْهِمْ،
فَرَأَى أَنَّهُمْ عَجِبُوا مِنْ سُرْعَتِهِ فَقَالَ " ذَكَرْتُ شَيْئًا
مِنْ تِبْرٍ عِنْدَنَا فَكَرِهْتُ أَنْ يَحْبِسَنِي، فَأَمَرْتُ بِقِسْمَتِهِ
".
‘উকবাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মদীনায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
পিছনে আসরের সালাত আদায় করলাম। সালাম ফিরানোর পর তিনি তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে যান এবং
মুসল্লীগণকে ডিঙ্গিয়ে তাঁর সহধর্মিণীগণের কোন একজনের কক্ষে গেলেন। তাঁর এই
দ্রুততায় মুসল্লীগণ ঘাবড়িয়ে গেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের
নিকট ফিরে এলেন এবং দেখলেন যে, তাঁর দ্রুততার কারনে তাঁরা বিস্মিত হয়ে গেছেন। তাই
তিনি বললেনঃ আমাদের নিকট রাখা কিছু স্বর্ণের কথা মনে পড়ে যায়। তা আমার জন্য বাধা
হোক, তা আমি পছন্দ করি না। তাই আমি সেটার বণ্টনের নির্দেশ দিলাম।
সালাত শেষে ডানে ও বাম দিকে ফিরে যাওয়া ।
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) কখনো ডান দিকে এবং কখনো বাম দিকে ফিরে
যেতেন। নির্দিষ্ট করে ডান দিকে ফিরে যাওয়া দোষের মনে করতেন ।
৮৫২
حَدَّثَنَا
أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ عُمَارَةَ
بْنِ عُمَيْرٍ، عَنِ الأَسْوَدِ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ لاَ يَجْعَلْ
أَحَدُكُمْ لِلشَّيْطَانِ شَيْئًا مِنْ صَلاَتِهِ، يَرَى أَنَّ حَقًّا عَلَيْهِ
أَنْ لاَ يَنْصَرِفَ إِلاَّ عَنْ يَمِينِهِ، لَقَدْ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم كَثِيرًا يَنْصَرِفُ عَنْ يَسَارِهِ.
আসওয়াদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ (ইব্নু মাস'উদ) (রাঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ
যেন স্বীয় সালাতের কোন কিছু শয়তানের জন্য না করে। তা হল, কেবল ডান দিকে ফিরানো
আবশ্যক মনে করা। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে অধিকাংশ সময়ই বাম
দিকে ফিরতে দেখেছি।
১০/১৬০. অধ্যায়ঃ
কাঁচা রসুন, পিঁয়াজ ও দুর্গন্ধযুক্ত মসলা বা তরকারী ।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্ষুধা বা কোন কারণে
অবশ্যই কেউ যেন রসুন বা পিঁয়াজ খেয়ে আমাদের মসজিদের নিকট না আসে ।
৮৫৩
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي
نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ فِي غَزْوَةِ خَيْبَرَ " مَنْ أَكَلَ مِنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ
ـ يَعْنِي الثُّومَ ـ فَلاَ يَقْرَبَنَّ مَسْجِدَنَا ".
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবারের যুদ্ধের সময় বলেন,
যে ব্যক্তি এই জাতীয় বৃক্ষ হতে অর্থাৎ কাঁচা রসুন খায় সে যেন অবশ্যই আমাদের মসজিদে
না আসে।
৮৫৪
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، قَالَ
أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ
بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مَنْ
أَكَلَ مِنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ ـ يُرِيدُ الثُّومَ ـ فَلاَ يَغْشَانَا فِي
مَسَاجِدِنَا ". قُلْتُ مَا يَعْنِي بِهِ قَالَ مَا أُرَاهُ يَعْنِي
إِلاَّ نِيئَهُ. وَقَالَ مَخْلَدُ بْنُ يَزِيدَ عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ إِلاَّ
نَتْنَهُ.
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ যদি
এ জাতীয় গাছ হতে খায়, তিনি এ দ্বারা রসুন বুঝিয়েছেন, সে যেন আমাদের মসজিদে না আসে।
(রাবী আতা (রহঃ) বলেন) আমি জাবির (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দ্বারা কী বুঝিয়েছেন? (জাবির (রাঃ) বলেন, আমার ধারণা যে,
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর দ্বারা কাঁচা রসুন বুঝিয়েছেন এবং মাখ্লাদ
ইব্নু ইয়াযীদ (রহঃ) ইব্নু জুরাইজ (রহঃ) হতে দুর্গন্ধযুক্ত হবার কথা উল্লেখ
করেছেন।
৮৫৫
حَدَّثَنَا
سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، زَعَمَ عَطَاءٌ أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، زَعَمَ أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَكَلَ ثُومًا أَوْ بَصَلاً
فَلْيَعْتَزِلْنَا ـ أَوْ قَالَ ـ فَلْيَعْتَزِلْ مَسْجِدَنَا، وَلْيَقْعُدْ فِي
بَيْتِهِ ". وَأَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ بِقِدْرٍ
فِيهِ خَضِرَاتٌ مِنْ بُقُولٍ، فَوَجَدَ لَهَا رِيحًا فَسَأَلَ فَأُخْبِرَ بِمَا
فِيهَا مِنَ الْبُقُولِ فَقَالَ " قَرِّبُوهَا " إِلَى بَعْضِ
أَصْحَابِهِ كَانَ مَعَهُ، فَلَمَّا رَآهُ كَرِهَ أَكْلَهَا قَالَ " كُلْ
فَإِنِّي أُنَاجِي مَنْ لاَ تُنَاجِي ".
وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ عَنِ ابْنِ وَهْبٍ أُتِيَ بِبَدْرٍ. قَالَ ابْنُ وَهْبٍ يَعْنِي طَبَقًا فِيهِ خُضَرَاتٌ. وَلَمْ يَذْكُرِ اللَّيْثُ وَأَبُو صَفْوَانَ عَنْ يُونُسَ قِصَّةَ الْقِدْرِ، فَلاَ أَدْرِي هُوَ مِنْ قَوْلِ الزُّهْرِيِّ أَوْ فِي الْحَدِيثِ.
وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ عَنِ ابْنِ وَهْبٍ أُتِيَ بِبَدْرٍ. قَالَ ابْنُ وَهْبٍ يَعْنِي طَبَقًا فِيهِ خُضَرَاتٌ. وَلَمْ يَذْكُرِ اللَّيْثُ وَأَبُو صَفْوَانَ عَنْ يُونُسَ قِصَّةَ الْقِدْرِ، فَلاَ أَدْرِي هُوَ مِنْ قَوْلِ الزُّهْرِيِّ أَوْ فِي الْحَدِيثِ.
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে
ব্যক্তি রসুন বা পিঁয়াজ খায় সে যেন আমাদের হতে দূরে থাকে অথবা বলেছেন, সে যেন
আমাদের মসজিদ হতে দূরে থাকে আর নিজ ঘরে বসে থাকে। (উক্ত সানাদে আরো বর্ণিত আছে
যে,) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট একটি পাত্র যার মধ্যে
শাক-সব্জি ছিল আনা হলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর গন্ধ পেলেন
এবং এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন, তখন তাঁকে সে পাত্রে রক্ষিত শাক-সবজি সম্পর্কে
জানানো হলো, তখন একজন সাহাবা [আবূ আইয়ুব (রাঃ)–কে উদ্দেশ্য করে বললেন, তাঁর নিকট
এগুলো পৌঁছে দাও। কিন্তু তিনি তা খেতে অপছন্দ করলেন, এ দেখে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি খাও! আমি যাঁর সাথে গোপনে আলাপ করি তাঁর সাথে
তুমি আলাপ কর না (মালাইকার সাথে আমার আলাপ হয়, তাঁরা দুর্গন্ধকে অপছন্দ করেন)।
আহমাদ ইব্নু সালিহ্ (রহঃ) ইব্নু ওয়াহ্ব (রহঃ) হতে বলেছেন 'أُتِيَ بِبَدرٍ' ইব্নু ওয়াহ্ব–এর অর্থ বলেছেন, খাঞ্চা যার মধ্যে শাক-সব্জী ছিল। আর
লায়স ও আবূ সাফওয়ান (রহঃ) ইউনুস (রহঃ) হতে রিওয়ায়াত বর্ণনায় 'قَدرِ' এর বর্ণনা উল্লেখ করেননি। [ইমাম বুখারী (রহঃ)
বলেন] -'قَدرِ' এর বর্ণনা যুহরী (রহঃ)–এর উক্তি না হাদীসের অংশ
তা আমি বলতে পারছি না।
৮৫৬
حَدَّثَنَا
أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ،
قَالَ سَأَلَ رَجُلٌ أَنَسًا مَا سَمِعْتَ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي
الثُّومِ فَقَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَكَلَ مِنْ
هَذِهِ الشَّجَرَةِ فَلاَ يَقْرَبْنَا، أَوْ لاَ يُصَلِّيَنَّ مَعَنَا ".
‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন,
আপনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে রসুন খাওয়া সম্পর্কে কী বলতে
শুনেছেন? তখন আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে
ব্যক্তি এ জাতীয় গাছ হতে খায় সে যেন অবশ্যই আমাদের নিকট না আসে এবং আমাদের সাথে
সালাত আদায় না করে।
১০/১৬১. অধ্যায়ঃ
শিশুদের উযূ করা, কখন তাদের উপর গোসল ও পবিত্রতা অর্জন আবশ্যক হয় এবং
সালাতের জামা‘আতে , দু' ‘ঈদে এবং জানাযায় তাদের উপস্থিত হওয়া এবং কাতারবন্দী হওয়া
।
৮৫৭
حَدَّثَنَا
ابْنُ الْمُثَنَّى، قَالَ حَدَّثَنِي غُنْدَرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ
سَمِعْتُ سُلَيْمَانَ الشَّيْبَانِيَّ، قَالَ سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ، قَالَ
أَخْبَرَنِي مَنْ، مَرَّ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَلَى قَبْرٍ
مَنْبُوذٍ، فَأَمَّهُمْ وَصَفُّوا عَلَيْهِ. فَقُلْتُ يَا أَبَا عَمْرٍو مَنْ
حَدَّثَكَ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ.
শা'বী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,এমন এক ব্যক্তি আমাকে খবর দিয়েছেন, যিনি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একটি পৃথক কবরের নিকট গেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে লোকদের ইমামত করেন। লোকজন কাতারবন্দী হয়ে তাঁর পিছনে
দাঁড়িয়ে গেল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আবূ 'আমর! কে আপনাকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন?
তিনি বললেন, ইব্নু 'আব্বাস (রাঃ)।
৮৫৮
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنِي
صَفْوَانُ بْنُ سُلَيْمٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْغُسْلُ
يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ ".
আবূ সা'ঈদ খুদ্রী (রাঃ) সুত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জুমু‘আর দিন প্রত্যেক বয়ঃপ্রাপ্ত (মুসলিমের) গোসল করা
ওয়াজিব।
৮৫৯
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، قَالَ
أَخْبَرَنِي كُرَيْبٌ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ بِتُّ عِنْدَ
خَالَتِي مَيْمُونَةَ لَيْلَةً، فَنَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا
كَانَ فِي بَعْضِ اللَّيْلِ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَوَضَّأَ
مِنْ شَنٍّ مُعَلَّقٍ وُضُوءًا خَفِيفًا ـ يُخَفِّفُهُ عَمْرٌو وَيُقَلِّلُهُ
جِدًّا ـ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي، فَقُمْتُ فَتَوَضَّأْتُ نَحْوًا مِمَّا تَوَضَّأَ،
ثُمَّ جِئْتُ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ، فَحَوَّلَنِي فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ،
ثُمَّ صَلَّى مَا شَاءَ اللَّهُ، ثُمَّ اضْطَجَعَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ،
فَأَتَاهُ الْمُنَادِي يُؤْذِنُهُ بِالصَّلاَةِ فَقَامَ مَعَهُ إِلَى الصَّلاَةِ،
فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ. قُلْنَا لِعَمْرٍو إِنَّ نَاسًا يَقُولُونَ إِنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَنَامُ عَيْنُهُ وَلاَ يَنَامُ قَلْبُهُ. قَالَ
عَمْرٌو سَمِعْتُ عُبَيْدَ بْنَ عُمَيْرٍ يَقُولُ إِنَّ رُؤْيَا الأَنْبِيَاءِ
وَحْىٌ ثُمَّ قَرَأَ {إِنِّي أَرَى فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ}.
ইব্নু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক রাতে আমার খালা (উম্মুল মু'মিনীন) মাইমূনাহ (রাঃ)
এর নিকট রাত্র কাটালাম। সে রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও সেখানে
নিদ্রা যান। রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হলে তিনি উঠলেন এবং একটি ঝুলন্ত মশ্ক হতে পানি
নিয়ে হালকা উযূ করলেন। আম্র (বর্ণনাকারী) এটাকে হাল্কা এবং অতি কম বুঝলেন। অতঃপর
তিনি সালাতে দাঁড়ালেন। ইব্নু 'আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি উঠে তাঁর মতই সংক্ষিপ্ত উযূ
করলাম, অতঃপর এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বামপাশে দাঁড়িয়ে
গেলাম। তখন তিনি আমাকে ঘুরিয়ে তাঁর ডানপাশে করে দিলেন। অতঃপর যতক্ষণ আল্লাহ্র
ইচ্ছা সালাত আদায় করলেন, অতঃপর বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসের
আওয়াজ হতে লাগল, অতঃপর মুয়াজ্জিন এসে সালাতের কথা জানালে তিনি উঠে তাঁর সালাতের
জন্য চলে গেলেন এবং সালাত আদায় করলেন। কিন্তু (নতুন) উযূ করলেন না। সুফিয়ান (রহঃ)
বলেন, আমি আমর (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, লোকজন বলে থাকেন, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চোখ নিদ্রায় যেত কিন্তু তাঁর কাল্ব (হৃদয়) জাগ্রত থাকত।
আম্র (রহঃ) বললেন, 'উবায়দ ইব্নু 'উমর (রহঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি যে, নিশ্চয়ই
নবীগণের স্বপ্ন ওয়াহী। অতঃপর তিনি তেলাওয়াত করলেন إِنّيِ أَرَى في المَنامِ أَنّيِ أَذبَحُكَ [ইব্রাহীম (আঃ), ইসমা'ঈল (আঃ)-কে বললেন] ''আমি
স্বপ্ন দেখলাম, তোমাকে কুরবানী করছি।'' (সূরা আস্-সাফ্ফাত ৩৭/১০২)।
৮৬০
حَدَّثَنَا
إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ جَدَّتَهُ، مُلَيْكَةَ دَعَتْ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِطَعَامٍ صَنَعَتْهُ، فَأَكَلَ مِنْهُ
فَقَالَ " قُومُوا فَلأُصَلِّيَ بِكُمْ ". فَقُمْتُ إِلَى
حَصِيرٍ لَنَا قَدِ اسْوَدَّ مِنْ طُولِ مَا لُبِسَ، فَنَضَحْتُهُ بِمَاءٍ فَقَامَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالْيَتِيمُ مَعِي، وَالْعَجُوزُ مِنْ وَرَائِنَا،
فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইসহাক (রহঃ)-এর দাদী মুলাইকা (রাঃ) খাদ্য তৈরি করে আল্লাহ্র রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দাওয়াত করলেন। তিনি তার তৈরি খাবার খেলেন।
অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা উঠে দাঁড়াও, আমি তোমাদের দিয়ে সালাত আদায় করব। আনাস (রাঃ)
বলেন, আমি একটি চাটাইয়ে দাড়ালাম যা অধিক ব্যাবহারের কারণে কালো হয়ে গিয়েছিল। আমি
এতে পানি ছিটিয়ে দিলাম। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে
দাঁড়ালেন, আমার সঙ্গে এক ইয়াতীম বাচ্চাও দাঁড়াল এবং বৃদ্ধা আমাদের পিছনে দাঁড়ালেন।
আমাদের নিয়ে তিনি দু'রাক'আত সালাত আদায় করলেন।
৮৬১
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ
اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما
ـ أَنَّهُ قَالَ أَقْبَلْتُ رَاكِبًا عَلَى حِمَارٍ أَتَانٍ وَأَنَا يَوْمَئِذٍ
قَدْ نَاهَزْتُ الاِحْتِلاَمَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي
بِالنَّاسِ بِمِنًى إِلَى غَيْرِ جِدَارٍ، فَمَرَرْتُ بَيْنَ يَدَىْ بَعْضِ
الصَّفِّ، فَنَزَلْتُ وَأَرْسَلْتُ الأَتَانَ تَرْتَعُ وَدَخَلْتُ فِي الصَّفِّ،
فَلَمْ يُنْكِرْ ذَلِكَ عَلَىَّ أَحَدٌ.
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একটি গাধার উপর আরোহণ করে অগ্রসর হলাম। তখন আমি প্রায়
বয়ঃপ্রাপ্ত। এ সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিনায় প্রাচীর
ব্যতীত অন্য কিছু সামনে রেখে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। আমি কোন এক কাতারের
সম্মুখ দিয়ে অগ্রসর হয়ে এক জায়গায় নেমে গেলাম এবং গাধাটিকে চরে বেড়ানোর জন্য ছেড়ে
দিলাম। অতঃপর আমি কাতারে ঢুকে পড়লাম। আমার এ কাজে কেউ আপত্তি করলেন না।
৮৬২
حَدَّثَنَا
أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ
أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ، قَالَتْ أَعْتَمَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم. وَقَالَ عَيَّاشٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى
حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله
عنها ـ قَالَتْ أَعْتَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْعِشَاءِ
حَتَّى نَادَاهُ عُمَرُ قَدْ نَامَ النِّسَاءُ وَالصِّبْيَانُ. فَخَرَجَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " إِنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ
الأَرْضِ يُصَلِّي هَذِهِ الصَّلاَةَ غَيْرُكُمْ ". وَلَمْ يَكُنْ أَحَدٌ
يَوْمَئِذٍ يُصَلِّي غَيْرَ أَهْلِ الْمَدِينَةِ.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
‘ইশার সালাত আদায়ে দেরি করলেন। অবশেষে ‘উমর (রাঃ) তাঁকে আহবান করে বললেন, নারী ও
শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে বললেনঃ তোমরা ছাড়া পৃথিবীতে কেউ আর এ সালাত আদায় করে
না। (রাবী বলেন,) সে সময় মদীনাবাসী ছাড়া আর কেউ সালাত আদায় করতো না।
৮৬৩
حَدَّثَنَا
عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ،
حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَابِسٍ، سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله
عنهما ـ قَالَ لَهُ رَجُلٌ شَهِدْتَ الْخُرُوجَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ نَعَمْ، وَلَوْلاَ مَكَانِي مِنْهُ مَا شَهِدْتُهُ ـ يَعْنِي مِنْ
صِغَرِهِ ـ أَتَى الْعَلَمَ الَّذِي عِنْدَ دَارِ كَثِيرِ بْنِ الصَّلْتِ، ثُمَّ
خَطَبَ ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ فَوَعَظَهُنَّ وَذَكَّرَهُنَّ وَأَمَرَهُنَّ أَنْ
يَتَصَدَّقْنَ فَجَعَلَتِ الْمَرْأَةُ تُهْوِي بِيَدِهَا إِلَى حَلْقِهَا تُلْقِي
فِي ثَوْبِ بِلاَلٍ، ثُمَّ أَتَى هُوَ وَبِلاَلٌ الْبَيْتَ.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করল, আপনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর সাথে কখনো ‘ঈদের মাঠে গমন করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, গেছি। তবে তাঁর
নিকট আমার যে মর্যাদা ছিল তা না থাকলে আমি অল্প বয়স্ক হবার কারণে সেখানে যেতে
পারতাম না। তিনি কাসীর ইব্নু সালাতের বাড়ির নিকট যে নিশানা ছিল সেখানে আসলেন
(সালাত আদায়ের) পরে খুত্বা দিলেন। অতঃপর মহিলাদের নিকট গিয়ে তিনি তাদের ওয়ায ও নসীহাত
করেন। এবং তাদের সদকা করতে নির্দেশ দেন। ফলে মহিলারা তাঁদের হাতের আংটি খুলে বিলাল
(রাঃ)-এর কাপড়ের মধ্যে নিক্ষেপ করতে থাকলেন। অতঃপর নবী ও বিলাল (রাঃ) বাড়ি
পৌছালেন।
১০/১৬২. অধ্যায়ঃ
রাতে ও অন্ধকারে মহিলাগণের মসজিদের দিকে বের হওয়া ।
৮৬৪
حَدَّثَنَا
أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ
أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ
أَعْتَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْعَتَمَةِ حَتَّى نَادَاهُ
عُمَرُ نَامَ النِّسَاءُ وَالصِّبْيَانُ. فَخَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ " مَا يَنْتَظِرُهَا أَحَدٌ غَيْرُكُمْ مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ
". وَلاَ يُصَلَّى يَوْمَئِذٍ إِلاَّ بِالْمَدِينَةِ، وَكَانُوا
يُصَلُّونَ الْعَتَمَةَ فِيمَا بَيْنَ أَنْ يَغِيبَ الشَّفَقُ إِلَى ثُلُثِ
اللَّيْلِ الأَوَّلِ.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আল্লাহ্র রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
‘ইশার সালাত আদায়ে দেরি করলেন। ফলে ‘উমর (রাঃ) তাঁকে আহবান করে বললেন, মহিলা ও
শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে এসে
বললেনঃ এ সালাতের জন্য পৃথিবীতে অন্য কেউ অপেক্ষারত নেই। সে সময় মদীনাবাসী ছাড়া
অন্য কোথাও সালাত আদায় করা হতো না। তারা সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশের লালিমা
অদৃশ্য হবার সময় হতে রাতের প্রথম তৃতীয়াংশ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে 'ইশার সালাত আদায়
করতেন।
৮৬৫
حَدَّثَنَا
عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ حَنْظَلَةَ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " إِذَا اسْتَأْذَنَكُمْ نِسَاؤُكُمْ بِاللَّيْلِ إِلَى
الْمَسْجِدِ فَأْذَنُوا لَهُنَّ ". تَابَعَهُ شُعْبَةُ عَنِ الأَعْمَشِ
عَنْ مُجَاهِدٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি তোমাদের
স্ত্রীরা রাতের বেলা মসজিদে আসতে চায় তাহলে তাদের অনুমতি দিবে। শু'বাহ
(রহঃ).....ইব্নু ‘উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস
বর্ণনায় ‘উবাইদুল্লাহ্ ইব্নু মূসা (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।
১৬৩/১০. অধ্যায়ঃ
ইমামের দাঁড়ানো পর্যন্ত মানুষের অপেক্ষা ।
৮৬৬
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، أَخْبَرَنَا
يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ حَدَّثَتْنِي هِنْدُ بِنْتُ الْحَارِثِ، أَنَّ
أُمَّ سَلَمَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهَا أَنَّ
النِّسَاءَ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كُنَّ إِذَا سَلَّمْنَ
مِنَ الْمَكْتُوبَةِ قُمْنَ، وَثَبَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ
صَلَّى مِنَ الرِّجَالِ مَا شَاءَ اللَّهُ، فَإِذَا قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَامَ الرِّجَالُ.
হিন্দ বিন্ত হারিস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী সালামা (রাঃ)
তাঁকে জানিয়েছেন, নারীরা আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সময় ফরয সালাতের সালাম ফিরানোর সাথে সাথে উঠে যেতেন এবং আল্লাহ্র রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও তাঁর সঙ্গে সালাত আদায়কারী পুরুষগণ, আল্লাহ্
যতক্ষণ ইচ্ছা করেন অবস্থান করতেন। অতঃপর আল্লাহ্র রসূল উঠলে পুরুষরাও উঠে যেতেন।
৮৬৭
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ
عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ إِنْ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيُصَلِّي الصُّبْحَ، فَيَنْصَرِفُ النِّسَاءُ
مُتَلَفِّعَاتٍ بِمُرُوطِهِنَّ، مَا يُعْرَفْنَ مِنَ الْغَلَسِ.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন
ফজরের সালাত শেষ করতেন তখন নারীরা চাদরে সর্বাঙ্গ আচ্ছাদিত করে ঘরে ফিরতেন।
অন্ধকারের দরুন তখন তাঁদেরকে চেনা যেতো না।
৮৬৮
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ مِسْكِينٍ، قَالَ حَدَّثَنَا بِشْرٌ، أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ،
حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ
الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِنِّي لأَقُومُ إِلَى الصَّلاَةِ وَأَنَا أُرِيدُ أَنْ أُطَوِّلَ فِيهَا،
فَأَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ، فَأَتَجَوَّزُ فِي صَلاَتِي كَرَاهِيَةَ أَنْ
أَشُقَّ عَلَى أُمِّهِ ".
আবূ কাতাদা আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ আমি সালাতে দাঁড়িয়ে তা দীর্ঘায়িত করব বলে ইচ্ছা করি, অতঃপর শিশুর কান্না
শুনতে পেয়ে আমি সালাত সংক্ষিপ্ত করি এ আশংকায় যে, তার মা কষ্ট পাবে।
৮৬৯
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ
سَعِيدٍ، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ لَوْ أَدْرَكَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَحْدَثَ النِّسَاءُ لَمَنَعَهُنَّ كَمَا
مُنِعَتْ نِسَاءُ بَنِي إِسْرَائِيلَ. قُلْتُ لِعَمْرَةَ أَوَ مُنِعْنَ قَالَتْ
نَعَمْ.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যদি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
জানতেন যে, নারীরা কী অবস্থা সৃষ্টি করেছে, তাহলে বনী ইসরাঈলের নারীদের যেমন বারণ
করা হয়েছিল, তেমনি এদেরও মসজিদে আসা নিষেধ করে দিতেন। (রাবী) ইয়াহ্ইয়া ইব্নু
সা'ঈদ (রহঃ) বলেন,আমি ‘আম্রাহ্ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তাদের কি নিষেধ করা
হয়েছিল? তিনি বললেন, হাঁ।
১০/১৬৪. অধ্যায়ঃ
পুরুষদের পিছনে নারীদের সালাত।
৮৭০
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ هِنْدٍ بِنْتِ الْحَارِثِ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ـ رضى الله
عنها ـ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سَلَّمَ قَامَ
النِّسَاءُ حِينَ يَقْضِي تَسْلِيمَهُ، وَيَمْكُثُ هُوَ فِي مَقَامِهِ يَسِيرًا
قَبْلَ أَنْ يَقُومَ. قَالَ نَرَى ـ وَاللَّهُ أَعْلَمُ ـ أَنَّ ذَلِكَ كَانَ
لِكَىْ يَنْصَرِفَ النِّسَاءُ قَبْلَ أَنْ يُدْرِكَهُنَّ أَحَدٌ مِنَ
الرِّجَالِ.
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন ,নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাম
ফিরাতেন, তখন মহিলারা তাঁর সালাম শেষ করার পর উঠে যেতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ানোর পূর্বে স্বীয় স্থানে কিছুক্ষণ অবস্থান করতেন। রাবী
যুহরী (রহঃ) বলেন, আমাদের মনে হয়, তা এজন্য যে, অবশ্য আল্লাহ্ ভাল জানেন, যাতে
পুরুষদের যাবার পূর্বেই নারীরা চলে যেতে পারে।
৮৭১
حَدَّثَنَا
أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ إِسْحَاقَ، عَنْ أَنَسٍ
ـ رضى الله عنه ـ قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي بَيْتِ أُمِّ
سُلَيْمٍ، فَقُمْتُ وَيَتِيمٌ خَلْفَهُ، وَأُمُّ سُلَيْمٍ خَلْفَنَا.
আনাস (ইব্নু মালিক) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু সুলাইম
(রাঃ)-এর ঘরে সালাত আদায় করেন। আমি এবং একটি ইয়াতীম তাঁর পিছনে দাড়ালাম আর উম্মু
সুলাইম (রাঃ) আমাদের পিছনে দাঁড়ালেন।
১০/১৬৫. অধ্যায়ঃ
ফজরের সালাত শেষে নারীদের তাড়াতাড়ি বাড়ীতে প্রত্যাবর্তন করা এবং
মসজিদে তাদের সল্পকাল অবস্থান করা ।
৮৭২
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ،
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله
عنها أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي الصُّبْحَ بِغَلَسٍ
فَيَنْصَرِفْنَ نِسَاءُ الْمُؤْمِنِينَ، لاَ يُعْرَفْنَ مِنَ الْغَلَسِ، أَوْ لاَ
يَعْرِفُ بَعْضُهُنَّ بَعْضًا.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্ধকার থাকতেই
ফজরের সালাত আদায় করতেন। অতঃপর মু'মিনদের স্ত্রীগণ চলে যেতেন, অন্ধকারের জন্য
তাদের চেনা যেতনা অথবা বলেছেন, অন্ধকারের জন্য তাঁরা একে অপরকে চিনতেন না।
১০/১৬৬.১. অধ্যায়ঃ
মসজিদে যাওয়ার জন্য স্বামীর নিকট মহিলার সম্মতি চাওয়া ।
৮৭৩
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ،
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم. " إِذَا اسْتَأْذَنَتِ امْرَأَةُ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَمْنَعْهَا
".
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) সুত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমাদের কারো স্ত্রী যদি (সালাতের জন্য মসজিদে যাবার)
অনুমতি চায় তাহলে তার স্বামী তাকে যেন বাধা না দেয়।
১০/১৬৬.২. অধ্যায়ঃ
পুরুষদের পিছনে মহিলাদের সালাত আদায়।
৮৭৪
حَدَّثَنَا
أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ إِسْحَاقَ، عَنْ أَنَسٍ،
قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي بَيْتِ أُمِّ سُلَيْمٍ، فَقُمْتُ
وَيَتِيمٌ خَلْفَهُ، وَأُمُّ سُلَيْمٍ خَلْفَنَا.
আনাস (ইব্নু মালিক) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু সুলাইম
(রাঃ)-এর ঘরে সালাত আদায় করেন। আমি এবং একটি ইয়াতীম তাঁর পিছনে দাঁড়ালাম আর উম্মু
সুলাইম (রাঃ) আমাদের পিছনে দাঁড়ালেন।
৮৭৫
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ،
عَنْ هِنْدَ بِنْتِ الْحَارِثِ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سَلَّمَ قَامَ النِّسَاءُ حِينَ يَقْضِي
تَسْلِيمَهُ، وَهُوَ يَمْكُثُ فِي مَقَامِهِ يَسِيرًا قَبْلَ أَنْ يَقُومَ.
قَالَتْ نُرَى ـ وَاللَّهُ أَعْلَمُ ـ أَنَّ ذَلِكَ كَانَ لِكَىْ يَنْصَرِفَ
النِّسَاءُ قَبْلَ أَنْ يُدْرِكَهُنَّ الرِّجَالُ.
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাম
ফিরাতেন, তখন মহিলারা তাঁর সালাম শেষ করার পর উঠে যেতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ানোর পূর্বে স্বীয় স্থানে কিছুক্ষণ অবস্থান করতেন। রাবী
যুহরী (রহঃ) বলেন,আমাদের মনে হয়, তা এজন্য যে, অবশ্য আল্লাহ্ ভাল জানেন, যাতে
পুরুষদের যাবার পূর্বেই নারীরা চলে যেতে পারে।
No comments