সহিহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "আযান" হাদিস নং -৬৪৬ থেকে ৬৭৫
৬৪৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ
حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ خَبَّابٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ يَقُولُ صَلاَةُ الْجَمَاعَةِ تَفْضُلُ
صَلاَةَ الْفَذِّ بِخَمْسٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً.
আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে
শুনেছেন, একাকী সালাত আদায়ের চেয়ে জামা’আতে সালাত আদায়ের ফযীলত পঁচিশগুন বেশী।
(আ.প্র. ৬১০, ই.ফা. নাই)
(আ.প্র. ৬১০, ই.ফা. নাই)
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْوَاحِدِ قَالَ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا صَالِحٍ يَقُولُ
سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
صَلاَةُ الرَّجُلِ فِي الْجَمَاعَةِ تُضَعَّفُ عَلَى صَلاَتِهِ فِي بَيْتِهِ وَفِي
سُوقِهِ خَمْسًا وَعِشْرِينَ ضِعْفًا وَذَلِكَ أَنَّهُ إِذَا تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ
الْوُضُوءَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الْمَسْجِدِ لاَ يُخْرِجُهُ إِلاَّ الصَّلاَةُ لَمْ
يَخْطُ خَطْوَةً إِلاَّ رُفِعَتْ لَهُ بِهَا دَرَجَةٌ وَحُطَّ عَنْهُ بِهَا
خَطِيئَةٌ فَإِذَا صَلَّى لَمْ تَزَلْ الْمَلَائِكَةُ تُصَلِّي عَلَيْهِ مَا دَامَ
فِي مُصَلاَّهُ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ وَلاَ يَزَالُ
أَحَدُكُمْ فِي صَلاَةٍ مَا انْتَظَرَ الصَّلاَةَ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
কোনো ব্যক্তির জামা‘আতের সাথে সালাতের সওয়াব, তার নিজের ঘরে ও বাজারে আদায়কৃত
সালাতের সওয়াবের চেয়ে পঁচিশ গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। এর কারণ এই যে, সে যখন উত্তমরূপে
উযূ করলো, অতঃপর একমাত্র সালাতের উদ্দেশে মসজিদে রওয়ানা করল তখন তার প্রতি কদমের
বিনিময়ে একটি মর্তবা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি গুনাহ মাফ করা হয়। সালাত আদায়ের পর সে
যতক্ষণ নিজ সালাতের স্থানে থাকে, মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) তার জন্য এ বলে দু‘আ করতে
থাকেন- “হে আল্লাহ! আপনি তার উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তার প্রতি অনুগ্রহ করুন।” আর
তোমাদের কেউ যতক্ষণ সালাতের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সে সালাতে রত বলে গণ্য
হয়। (১৭৬)
(আ.প্র. ৬১১, ই.ফা. ৬১৮)
(আ.প্র. ৬১১, ই.ফা. ৬১৮)
১০/৩১. অধ্যায়ঃ
ফজর সালাত জামা‘আতে আদায়ের ফযীলত ।
৬৪৮
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ،
عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، وَأَبُو
سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " تَفْضُلُ صَلاَةُ الْجَمِيعِ صَلاَةَ
أَحَدِكُمْ وَحْدَهُ بِخَمْسٍ وَعِشْرِينَ جُزْءًا، وَتَجْتَمِعُ مَلاَئِكَةُ
اللَّيْلِ وَمَلاَئِكَةُ النَّهَارِ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ ". ثُمَّ
يَقُولُ أَبُو هُرَيْرَةَ فَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ {إِنَّ قُرْآنَ الْفَجْرِ
كَانَ مَشْهُودًا}
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে
শুনেছেন যে, জামা‘আতের সালাত তোমাদের কারো একাকী সালাত হতে পঁচিশ গুণ অধিক সওয়াব
রাখে। আর ফজরের সালাতে রাতের ও দিনের মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) একত্রিত হয়। অতঃপর আবূ
হুরায়রা (রাঃ) বলতেন, তোমরা চাইলে (এর প্রমাণ স্বরূপ) ------- অর্থাৎ “ফজরের
সালাতে (মালাকগণ (ফেরেশতাগণ)) উপস্থিত হয়”- (সূরা ইসরা ১৭/১৮) এ আয়াত পাঠ কর।
৬৪৯
قَالَ شُعَيْبٌ وَحَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عُمَرَ، قَالَ تَفْضُلُهَا بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً.
শু‘আয়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমাকে নাফি‘ (রহঃ) ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) হতে বর্ণনা করে
শুনিয়েছেন যে, জামা‘আতের সালাতে একাকী সালাত হতে সাতাশ গুণ অধিক সওয়াব হয়।
৬৫০
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي
قَالَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ سَمِعْتُ سَالِمًا، قَالَ سَمِعْتُ أُمَّ
الدَّرْدَاءِ، تَقُولُ دَخَلَ عَلَىَّ أَبُو الدَّرْدَاءِ وَهْوَ مُغْضَبٌ
فَقُلْتُ مَا أَغْضَبَكَ فَقَالَ وَاللَّهِ مَا أَعْرِفُ مِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ
صلى الله عليه وسلم شَيْئًا إِلاَّ أَنَّهُمْ يُصَلُّونَ جَمِيعًا.
উম্মুদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আবূ দারদা (রাঃ) ভীষণ রাগান্বিত অবস্থায় আমার নিকট
এলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কিসে তোমাকে রাগান্বিত করেছে? তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ!
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উম্মাতের মধ্যে জামা‘আতে সালাত
আদায় বাদ দিয়ে তাঁর তরীকার আর কিছুই দেখছি না।
৬৫১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، قَالَ حَدَّثَنَا
أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ
أَبِي مُوسَى، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَعْظَمُ
النَّاسِ أَجْرًا فِي الصَّلاَةِ أَبْعَدُهُمْ فَأَبْعَدُهُمْ مَمْشًى، وَالَّذِي
يَنْتَظِرُ الصَّلاَةَ حَتَّى يُصَلِّيَهَا مَعَ الإِمَامِ أَعْظَمُ أَجْرًا مِنَ
الَّذِي يُصَلِّي ثُمَّ يَنَامُ ".
আবূ মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (মসজিদ
হতে) যে যত অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে সালাতে আসে, তার তত অধিক পুণ্য হবে। আর যে
ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে সালাত আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তার পুণ্য সে ব্যক্তির
চেয়ে অধিক, যে একাকী সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে।
১০/৩২. অধ্যায়ঃ
প্রথম ওয়াক্তে যুহরের সালাতে যাওয়ার মর্যাদা ।
৬৫২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ سُمَىٍّ،
مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ السَّمَّانِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " بَيْنَمَا رَجُلٌ
يَمْشِي بِطَرِيقٍ وَجَدَ غُصْنَ شَوْكٍ عَلَى الطَّرِيقِ فَأَخَّرَهُ، فَشَكَرَ
اللَّهُ لَهُ، فَغَفَرَ لَهُ ". ثُمَّ قَالَ " الشُّهَدَاءُ
خَمْسَةٌ الْمَطْعُونُ، وَالْمَبْطُونُ، وَالْغَرِيقُ، وَصَاحِبُ الْهَدْمِ،
وَالشَّهِيدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ". وَقَالَ " لَوْ يَعْلَمُ
النَّاسُ مَا فِي النِّدَاءِ وَالصَّفِّ الأَوَّلِ ثُمَّ لَمْ يَجِدُوا إِلاَّ
أَنْ يَسْتَهِمُوا لاَسْتَهَمُوا عَلَيْهِ ". " وَلَوْ
يَعْلَمُونَ مَا فِي التَّهْجِيرِ لاَسْتَبَقُوا إِلَيْهِ، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا
فِي الْعَتَمَةِ وَالصُّبْحِ لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে চলার সময় রাস্তায় একটি কাঁটাযুক্ত ডাল দেখতে পেয়ে তা সরিয়ে
ফেলল। আল্লাহ তা‘আলা তার এ কাজ সাদরে কবুল করে তার গুনাহ মাফ করে দিলেন।
৬৫৩
See previous Hadith
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ শহীদ
পাঁচ প্রকার- ১. প্লেগে মৃত ব্যক্তি ২. কলেরায় মৃত ব্যক্তি ৩. পানিতে নিমজ্জিত ব্যক্তি
৪. চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি এবং ৫. আল্লাহ্র পথে (জিহাদে) শহীদ। তিনি আরও বলেছেনঃ
মানুষ যদি আযান দেয়া এবং প্রথম কাতারে সালাত আদায় করার কী ফযীলত তা জানত আর কুরআহ্র
মাধ্যমে ফায়সালা করা ছাড়া সে সুযোগ না পেতো, তাহলে কুরআহ্র মাধ্যমে হলেও তারা সে
সুযোগ গ্রহণ করতো।
৬৫৪
See previous Hadith
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আর আউয়াল ওয়াক্ত (যুহরের সালাতে যাওয়ার) কী ফযীলত তা যদি মানুষ
জানত, তাহলে এর জন্য তারা আবশ্যই সর্বাগ্রে যেত। আর ‘ইশা ও ফজর সালাত (জামা‘আতে)
আদায়ে কী ফযীলত, তা যদি তারা জানত তা হলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এজন্য অবশ্যই
উপস্থিত হতো।
১০/৩৩. অধ্যায়ঃ
(মসজিদে গমনে) প্রতি পদক্ষেপে পুণ্যের আশা রাখা ।
৬৫৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَوْشَبٍ،
قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، قَالَ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ،
قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " يَا بَنِي سَلِمَةَ أَلاَ
تَحْتَسِبُونَ آثَارَكُمْ ". وَقَالَ مُجَاهِدٌ فِي قَوْلِهِ
{وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَآثَارَهُمْ} قَالَ خُطَاهُمْ. وَقَالَ ابْنُ
أَبِي مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنِي حُمَيْدٌ،
حَدَّثَنِي أَنَسٌ، أَنَّ بَنِي سَلِمَةَ، أَرَادُوا أَنْ يَتَحَوَّلُوا، عَنْ
مَنَازِلِهِمْ، فَيَنْزِلُوا قَرِيبًا مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
فَكَرِهَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُعْرُوا {الْمَدِينَةَ}
فَقَالَ " أَلاَ تَحْتَسِبُونَ آثَارَكُمْ ". قَالَ مُجَاهِدٌ
خُطَاهُمْ آثَارُهُمْ أَنْ يُمْشَى فِي الأَرْضِ بِأَرْجُلِهِمْ.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে বনী
সালিমা! তোমরা কি (মসজিদে আসার পথে) তোমাদের পদক্ষেপের নেকী কামনা কর না?
--------- “তাদের কর্ম ও কীর্তিসমূহ লিখে রাখি” (সূরা ইয়া সীন ৩৬/১২) তাঁর এ বাণী
সম্পর্কে মুজাহিদ বলেন। ----- অর্থাৎ তোমাদের পদক্ষেপসমূহ।
৬৫৬
وَقَالَ ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ
أَيُّوبَ حَدَّثَنِي حُمَيْدٌ حَدَّثَنِي أَنَسٌ أَنَّ بَنِي سَلِمَةَ أَرَادُوا
أَنْ يَتَحَوَّلُوا عَنْ مَنَازِلِهِمْ فَيَنْزِلُوا قَرِيبًا مِنْ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ فَكَرِهَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُعْرُوا
الْمَدِينَةَ فَقَالَ أَلاَ تَحْتَسِبُونَ آثَارَكُمْ قَالَ مُجَاهِدٌ خُطَاهُمْ
آثَارُهُمْ أَنْ يُمْشَى فِي الْأَرْضِ بِأَرْجُلِهِمْ.
ইব্নু মারইয়াম (রহঃ) বলেন, আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বনী সালিমা গোত্রের লোকেরা নিজেদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বসতি স্থাপন করতে চেয়েছিল। আনাস
(রাঃ) বলেন, কিন্তু মদীনার কোনো এলাকা একেবারে শূন্য হওয়াটা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পছন্দ করেননি। তাই তিনি তোমরা কি (মসজিদে আসা যাওয়ায়)
তোমাদের পদচিহ্নগুলোর সওয়াব কামনা কর না? মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, -------- অর্থাৎ
যমীনে চলার পদচিহ্নসমূহ।
১০/৩৪. অধ্যায়ঃ
‘ইশার সালাত জামা‘আতে আদায় করার ফযীলত ।
৬৫৭
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي
قَالَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو صَالِحٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لَيْسَ صَلاَةٌ
أَثْقَلَ عَلَى الْمُنَافِقِينَ مِنَ الْفَجْرِ وَالْعِشَاءِ، وَلَوْ يَعْلَمُونَ
مَا فِيهِمَا لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا، لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ
الْمُؤَذِّنَ فَيُقِيمَ، ثُمَّ آمُرَ رَجُلاً يَؤُمُّ النَّاسَ، ثُمَّ آخُذَ
شُعَلاً مِنْ نَارٍ فَأُحَرِّقَ عَلَى مَنْ لاَ يَخْرُجُ إِلَى الصَّلاَةِ بَعْدُ
".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
মুনাফিকদের জন্য ফজর ও ‘ইশার সালাত অপেক্ষা অধিক ভারী সালাত আর নেই। এ দু’ সালাতের
কী ফযীলত, তা যদি তারা জানতো, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হতো।
(রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন) আমি ইচ্ছে করেছিলাম যে,
মুয়াজ্জিনকে ইক্বামাত দিতে বলি এবং কাউকে লোকদের ইমামত করতে বলি, আর আমি নিজে একটি
আগুনের মশাল নিয়ে গিয়ে অতঃপর যারা সালাতে আসেনি, তাদের উপর আগুন ধরিয়ে দেই।
১০/৩৫. অধ্যায়ঃ
দু’জন বা ততোধিক ব্যক্তি হলেই জামা‘আত ।
৬৫৮
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ
زُرَيْعٍ، قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ
الْحُوَيْرِثِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا
حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَأَذِّنَا وَأَقِيمَا، ثُمَّ لِيَؤُمَّكُمَا أَكْبَرُكُمَا
".
মালিক ইব্নু হুওয়াইরিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
সালাতের সময় হলে তোমাদের দু’জনের একজন আযান দিবে এবং ইক্বামাত বলবে। অতঃপর তোমাদের
মধ্যে যে বয়সে অধিক বড় সে ইমামাত করবে।
১০/৩৬. অধ্যায়ঃ
মসজিদে সালাতে অপেক্ষমান ব্যক্তি এবং মসজিদের ফযীলত ।
৬৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ،
عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْمَلاَئِكَةُ تُصَلِّي عَلَى
أَحَدِكُمْ مَا دَامَ فِي مُصَلاَّهُ مَا لَمْ يُحْدِثْ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ،
اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ. لاَ يَزَالُ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَةٍ مَا دَامَتِ
الصَّلاَةُ تَحْبِسُهُ، لاَ يَمْنَعُهُ أَنْ يَنْقَلِبَ إِلَى أَهْلِهِ إِلاَّ
الصَّلاَةُ ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের
কেউ যতক্ষণ তার সালাতের স্থানে থাকে তার উযূ ভঙ্গ না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য
মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) এ বলে দু‘আ করেন যে, হে আল্লাহ্! আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন, হে
আল্লাহ! আপনি তার উপর রহম করুন। আর তোমাদের মাঝে যে ব্যক্তির সালাতই তাকে বাড়ি
ফিরে যাওয়া হতে বিরত রাখে, সে সালাতে রত আছে বলে পরিগণিত হবে।
স
৬৬০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا
يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ
يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ الإِمَامُ الْعَادِلُ، وَشَابٌّ نَشَأَ فِي
عِبَادَةِ رَبِّهِ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي الْمَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ
تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ، وَرَجُلٌ
طَلَبَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ.
وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ أَخْفَى حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ
يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে দিন আল্লাহ্র
(রহমতের) ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর
নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক, ২. সে যুবক যার জীবন গড়ে
উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদতের মধ্যে, ৩. সে ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে
সম্পৃক্ত রয়েছে, ৪. সে দু’ ব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালবাসে আল্লাহর ওয়াস্তে, একত্র
হয় আল্লাহ্র জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহ্র জন্য, ৫. সে ব্যক্তি যাকে কোনো উচ্চ
বংশীয় রূপসী নারী আহবান জানায়, কিন্তু সে এ বলে প্রত্যাখ্যান করে যে, ‘আমি
আল্লাহকে ভয় করি’, ৬. সে ব্যক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে
বাম হাত তা জানে না, ৭. সে ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর যিক্র করে, ফলে তার দু’
চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে থাকে।
৬৬১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، قَالَ سُئِلَ أَنَسٌ هَلِ اتَّخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم خَاتَمًا فَقَالَ نَعَمْ، أَخَّرَ لَيْلَةً صَلاَةَ الْعِشَاءِ
إِلَى شَطْرِ اللَّيْلِ، ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ بَعْدَ مَا صَلَّى
فَقَالَ " صَلَّى النَّاسُ وَرَقَدُوا وَلَمْ تَزَالُوا فِي صَلاَةٍ
مُنْذُ انْتَظَرْتُمُوهَا ". قَالَ فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى وَبِيصِ
خَاتَمِهِ.
হুমাইদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি আংটি ব্যবহার করতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। এক
রাতে তিনি ‘ইশার সালাত অর্ধরাত পর্যন্ত বিলম্বে আদায় করলেন। সালাত শেষ করে আমাদের
দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, লোকেরা সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে গেছে। কিন্তু তোমরা যতক্ষণ
সালাতের জন্য অপেক্ষা করেছ, ততক্ষণ সালাতে রত ছিলে বলে গণ্য করা হয়েছে। আনাস (রাঃ)
বলেন, এ সময় আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আংটির
উজ্জ্বলতা লক্ষ্য করছিলাম।
১০/৩৭. অধ্যায়ঃ
সকাল-সন্ধ্যায় মসজিদে যাবার ফযীলত ।
৬৬২
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا
يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُطَرِّفٍ، عَنْ زَيْدِ
بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ غَدَا إِلَى الْمَسْجِدِ
وَرَاحَ أَعَدَّ اللَّهُ لَهُ نُزُلَهُ مِنَ الْجَنَّةِ كُلَّمَا غَدَا أَوْ رَاحَ
".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি
সকালে বা সন্ধ্যায় যতবার মসজিদে যায়, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতে ততবার
মেহমানদারীর ব্যবস্থা করে রাখেন।
১০/৩৮. অধ্যায় :
ইক্বামাত হয়ে গেলে ফরয ব্যতীত অন্য কোন সালাত নেই ।
৬৬৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ ابْنِ بُحَيْنَةَ، قَالَ مَرَّ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم بِرَجُلٍ. قَالَ وَحَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ، قَالَ
حَدَّثَنَا بَهْزُ بْنُ أَسَدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي
سَعْدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ سَمِعْتُ حَفْصَ بْنَ عَاصِمٍ، قَالَ سَمِعْتُ
رَجُلاً، مِنَ الأَزْدِ يُقَالُ لَهُ مَالِكٌ ابْنُ بُحَيْنَةَ أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَأَى رَجُلاً وَقَدْ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ يُصَلِّي
رَكْعَتَيْنِ، فَلَمَّا انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَثَ بِهِ
النَّاسُ، وَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الصُّبْحَ
أَرْبَعًا، الصُّبْحَ أَرْبَعًا ". تَابَعَهُ غُنْدَرٌ وَمُعَاذٌ عَنْ
شُعْبَةَ فِي مَالِكٍ. وَقَالَ ابْنُ إِسْحَاقَ عَنْ سَعْدٍ عَنْ حَفْصٍ عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ ابْنِ بُحَيْنَةَ. وَقَالَ حَمَّادٌ أَخْبَرَنَا سَعْدٌ عَنْ
حَفْصٍ عَنْ مَالِكٍ.
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মালিক ইব্নু বুহাইনাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তির পাশ
দিয়ে গেলেন। অন্য সূত্রে ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ‘আবদুর রহমান (রহঃ)… হাফ্স ইব্নু
আসিম (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মালিক ইব্নু বুহাইনাহ নামক আয্দ গোত্রীয়
এক ব্যক্তিকে বলতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক
ব্যক্তিকে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করতে দেখলেন। তখন ইক্বামাত হয়ে গেছে। আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত শেষ করলেন, লোকেরা সে লোকটিকে
ঘিরে ফেলল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ ফজর কি
চার রাক‘আত? ফজর কি চার রাক‘আত? [১]
গুনদার ও মু‘আয (রহঃ) শু‘বা (রহঃ) সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ইব্নু ইসহাক (রহঃ) সাদ (রহঃ)-এর মাধ্যমে সে হাফ্স (রহঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করতে গিয়ে ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু বুহাইনাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন। (এ বর্ণনাটিই সঠিক) তবে হাম্মাদ (রহঃ) সাদ (রহঃ)-এর মাধ্যমে তিনি হাফ্স (রহঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করতে গিয়ে মালিক ইব্নু বুহাইনাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন।
গুনদার ও মু‘আয (রহঃ) শু‘বা (রহঃ) সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ইব্নু ইসহাক (রহঃ) সাদ (রহঃ)-এর মাধ্যমে সে হাফ্স (রহঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করতে গিয়ে ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু বুহাইনাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন। (এ বর্ণনাটিই সঠিক) তবে হাম্মাদ (রহঃ) সাদ (রহঃ)-এর মাধ্যমে তিনি হাফ্স (রহঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করতে গিয়ে মালিক ইব্নু বুহাইনাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন।
[১] ইক্বামাত হয়ে গেলে কোন
নফল সালাত আদায় করা যাবে না। এ সংক্রান্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু অতীব দুঃখের
বিষয় অনেকে ইক্বামাত হয়ে যাবার পরও নফল সালাত আদায় করতে থাকেন। বিশেষ করে ফজরের
সালাত চলাকালীন সময়ে অনেককেই দেখা যায় সুন্নাত দু’ রাকা‘আত সালাত আদায় করতে। ফজরের
জামা‘আত চলতে থাকলে ঐ জামা‘আতে শামিল না হয়ে তাড়াহুড়ো করে সুন্নাত পড়ে জামা‘আতে
শামিল হওয়া হাদীসের বিরোধিতা করার শামিল । প্রমাণ নিম্নের হাদীসগুলোঃ ‘আবদুল্লাহ
ইব্নু সারজাস বলেন, এক ব্যক্তি এল। তখন (রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ফজরের সালাতে ছিলেন। ফলে লোকটি দু’ রাক‘আত আদায় করে জামা‘আতে প্রবেশ করল।
(রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত শেষ করে তাকে বললেন, ওহো
অমুক! সালাত কোনটি! যেটি আমাদের সঙ্গে আদায় করলে সেটি না যেটি তুমি একা আদায় করলে?
(নাসায়ী, মাবসূত ১ম খণ্ড ১০১ পৃষ্ঠা লাহোরী ছাপা) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন, যখন ফারয সালাতের তাকবীর দেয়া হয়ে যায় তখন ফারয সালাত ব্যতীত
অন্য কোন (নফল বা সুন্নাত) সালাত হবে না। (মুসলিম, মিশকাত ৯৬ পৃষ্ঠা)
হানাফী ইমাম মুহাম্মাদ বলেন, সুন্নাত না আদায় করে জামা‘আতেই ঢুকতে হবে। (মাবসূত ১ম খণ্ড ১৬৭ পৃষ্ঠা) ফজরের সুন্নাত সালাত ছুটে গেলে ফারয সালাত আদায়ের পর পরই পড়ে নিবে অথবা কোন জরুরী প্রয়োজন থাকলে এ দু’ রাক‘আত সালাত সূর্যোদয়ের পরেও পড়তে পারবেন। (তিরমিযী ১ম খণ্ড)
হানাফী ইমাম মুহাম্মাদ বলেন, সুন্নাত না আদায় করে জামা‘আতেই ঢুকতে হবে। (মাবসূত ১ম খণ্ড ১৬৭ পৃষ্ঠা) ফজরের সুন্নাত সালাত ছুটে গেলে ফারয সালাত আদায়ের পর পরই পড়ে নিবে অথবা কোন জরুরী প্রয়োজন থাকলে এ দু’ রাক‘আত সালাত সূর্যোদয়ের পরেও পড়তে পারবেন। (তিরমিযী ১ম খণ্ড)
১০/৩৯.অধ্যায়ঃ
রোগাক্রান্ত ব্যক্তির কী পরিমাণ রোগাক্রান্ত অবস্থায় জামা‘আতে শামিল
হওয়া উচিত ।
৬৬৪
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، قَالَ
حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ
الأَسْوَدُ قَالَ كُنَّا عِنْدَ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ فَذَكَرْنَا
الْمُوَاظَبَةَ عَلَى الصَّلاَةِ وَالتَّعْظِيمَ لَهَا، قَالَتْ لَمَّا مَرِضَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَضَهُ الَّذِي مَاتَ فِيهِ، فَحَضَرَتِ
الصَّلاَةُ فَأُذِّنَ، فَقَالَ " مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ
بِالنَّاسِ ". فَقِيلَ لَهُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ، إِذَا
قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ، وَأَعَادَ
فَأَعَادُوا لَهُ، فَأَعَادَ الثَّالِثَةَ فَقَالَ " إِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ
يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ". فَخَرَجَ أَبُو
بَكْرٍ فَصَلَّى، فَوَجَدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ نَفْسِهِ خِفَّةً،
فَخَرَجَ يُهَادَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ كَأَنِّي أَنْظُرُ رِجْلَيْهِ تَخُطَّانِ
مِنَ الْوَجَعِ، فَأَرَادَ أَبُو بَكْرٍ أَنْ يَتَأَخَّرَ، فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ مَكَانَكَ، ثُمَّ أُتِيَ بِهِ حَتَّى جَلَسَ
إِلَى جَنْبِهِ. قِيلَ لِلأَعْمَشِ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّي وَأَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي بِصَلاَتِهِ، وَالنَّاسُ يُصَلُّونَ بِصَلاَةِ
أَبِي بَكْرٍ فَقَالَ بِرَأْسِهِ نَعَمْ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ عَنْ شُعْبَةَ
عَنِ الأَعْمَشِ بَعْضَهُ. وَزَادَ أَبُو مُعَاوِيَةَ جَلَسَ عَنْ يَسَارِ أَبِي
بَكْرٍ فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي قَائِمًا.
আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা ‘আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট বসে নিয়মিত সালাত আদায় ও
তার মর্যাদা সম্বন্ধে আলোচনা করছিলাম। ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন অন্তিম রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন, তখন সালাতের সময় হলে
আযান দেয়া হলো। তখন তিনি বললেন, আবূ বক্রকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বল।
তাঁকে বলা হলো যে, আবূ বকর (রাঃ) অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের লোক, তিনি যখন আপনার স্থানে
দাঁড়াবেন তখন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না। আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার সে কথা বললেন এবং তারাও আবার তা-ই বললেন।
তৃতীয়বারও তিনি সে কথা ব’লে বললেন, তোমরা ইউসুফের সাথীদের মত। আবূ বক্রকে নির্দেশ
দাও যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে নেয়। আবূ বকর (রাঃ) এগিয়ে গিয়ে সালাত শুরু
করলেন। এদিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেকে একটু হালকাবোধ করলেন।
দু’জন লোকের কাঁধে ভর দিয়ে বেরিয়ে এলেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমার চোখে এখনও স্পষ্ট
ভাসছে। অসুস্থতার কারণে তাঁর দু’পা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। তখন আবূ বকর
(রাঃ) পিছনে সরে আসতে চাইলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে
স্বস্থানে থাকার জন্য ইঙ্গিত করলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে আনা হলো, তিনি আবূ বকর (রাঃ)-এর পাশে বসলেন।
আ‘মাশকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ তাহলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইমামাত করছিলেন। আর আবূ বকর (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসরণে সালাত আদায় করছিলেন এবং লোকেরা আবূ বকর (রাঃ)-এর সালাতের অনুসরণ করছিল। আ‘মাশ (রাঃ) মাথার ইঙ্গিতে বললেন, হ্যাঁ। আবূ দাঊদ (রহঃ) শু‘বা (রহঃ) সূত্রে আ‘মাশ (রাঃ) হতে হাদীসের কিয়দংশ উল্লেখ করেছেন। আবূ মু‘আবিয়াহ (রহঃ) অতিরিক্ত বলেছেন, তিনি আবূ বকর (রাঃ)-এর বাঁ দিকে বসেছিলেন এবং আবূ বকর (রাঃ) দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন।
আ‘মাশকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ তাহলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইমামাত করছিলেন। আর আবূ বকর (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসরণে সালাত আদায় করছিলেন এবং লোকেরা আবূ বকর (রাঃ)-এর সালাতের অনুসরণ করছিল। আ‘মাশ (রাঃ) মাথার ইঙ্গিতে বললেন, হ্যাঁ। আবূ দাঊদ (রহঃ) শু‘বা (রহঃ) সূত্রে আ‘মাশ (রাঃ) হতে হাদীসের কিয়দংশ উল্লেখ করেছেন। আবূ মু‘আবিয়াহ (রহঃ) অতিরিক্ত বলেছেন, তিনি আবূ বকর (রাঃ)-এর বাঁ দিকে বসেছিলেন এবং আবূ বকর (রাঃ) দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন।
৬৬৫
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، قَالَ أَخْبَرَنَا
هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي
عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ لَمَّا ثَقُلَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَاشْتَدَّ وَجَعُهُ اسْتَأْذَنَ أَزْوَاجَهُ أَنْ
يُمَرَّضَ فِي بَيْتِي فَأَذِنَّ لَهُ، فَخَرَجَ بَيْنَ رَجُلَيْنِ تَخُطُّ
رِجْلاَهُ الأَرْضَ، وَكَانَ بَيْنَ الْعَبَّاسِ وَرَجُلٍ آخَرَ. قَالَ عُبَيْدُ
اللَّهِ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لاِبْنِ عَبَّاسٍ مَا قَالَتْ عَائِشَةُ فَقَالَ لِي
وَهَلْ تَدْرِي مَنِ الرَّجُلُ الَّذِي لَمْ تُسَمِّ عَائِشَةُ قُلْتُ لاَ.
قَالَ هُوَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন
একেবারে কাতর হয়ে গেলেন এবং তাঁর রোগের তীব্রতা বেড়ে গেলো, তখন তিনি আমার ঘরে
সেবা-শুশ্রূষার জন্য তাঁর অন্যান্য স্ত্রীগণের নিকট সম্মতি চাইলেন। তাঁরা সম্মতি
দিলেন। সে সময় দু’ জন লোকের কাঁধে ভর করে (সালাতের জন্য) তিনি বের হলেন, তাঁর দু’
পা মাটিতে হেঁচড়িয়ে যাচ্ছিল। তিনি ছিলেন ‘আব্বাস (রাঃ) ও অপর এক সাহাবীর মাঝখানে।
(বর্ণনাকারী) উবাইদুল্লাহ্ (রহঃ) বলেন, ‘আয়িশা (রাঃ)-এর বর্ণিত এ ঘটনা ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট ব্যক্ত করি। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান, তিনি
কে ছিলেন, যার নাম ‘আয়িশা (রাঃ) বলেননি? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তিনি ছিলেন
‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব (রাঃ)।
১০/৪০. অধ্যায়ঃ
বৃষ্টি ও ওজরবশত নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায়ের অনুমতি ।
৬৬৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا
مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، أَذَّنَ بِالصَّلاَةِ فِي لَيْلَةٍ
ذَاتِ بَرْدٍ وَرِيحٍ ثُمَّ قَالَ أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ. ثُمَّ قَالَ
إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْمُرُ الْمُؤَذِّنَ إِذَا
كَانَتْ لَيْلَةٌ ذَاتُ بَرْدٍ وَمَطَرٍ يَقُولُ أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ.
নাফি‘ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইব্নু ‘উমর (রাঃ) একদা তীব্র শীত ও বাতাসের রাতে সালাতের
আযান দিলেন। অতঃপর ঘোষণা করলেন, প্রত্যেকেই নিজ নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায় করে নাও,
অতঃপর তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রচণ্ড শীত ও
বৃষ্টির রাত হলে মুয়াজ্জিনকে এ কথা বলার নির্দেশ দিতেন- “প্রত্যেকে নিজ নিজ
আবাসস্থলে সালাত আদায় করে নাও।”
৬৬৭
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّ عِتْبَانَ
بْنَ مَالِكٍ، كَانَ يَؤُمُّ قَوْمَهُ وَهْوَ أَعْمَى، وَأَنَّهُ قَالَ لِرَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّهَا تَكُونُ الظُّلْمَةُ
وَالسَّيْلُ وَأَنَا رَجُلٌ ضَرِيرُ الْبَصَرِ، فَصَلِّ يَا رَسُولَ اللَّهِ فِي
بَيْتِي مَكَانًا أَتَّخِذُهُ مُصَلًّى، فَجَاءَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ " أَيْنَ تُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ ". فَأَشَارَ
إِلَى مَكَانٍ مِنَ الْبَيْتِ، فَصَلَّى فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم.
মাহমুদ ইব্নু রাবী ‘আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘ইতবান ইব্নু মালিক (রাঃ) তাঁর নিজ গোত্রের ইমামাত
করতেন। তিনি ছিলেন অন্ধ। একদা তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! কখনো কখনো ঘোর অন্ধকার ও বর্ষণ প্রবাহিত হয়ে
পড়ে। অথচ আমি একজন অন্ধ ব্যক্তি। হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমার ঘরে কোন এক স্থানে
সালাত আদায় করুন যে স্থানটিকে আমার সালাতের স্থান হিসেবে নির্ধারিত করব। অতঃপর
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার ঘরে এলেন এবং বললেনঃ আমার
সালাত আদায়ের জন্য কোন্ জায়গাটি তুমি ভাল মনে কর? তিনি ইংগিত করে ঘরের জায়গা
দেখিয়ে দিলেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে স্থানে সালাত
আদায় করলেন।
১০/৪১. অধ্যায়ঃ
যারা উপস্থিত হয়েছে তাদের নিয়েই কি সালাত আদায় করবে এবং বৃষ্টির দিনে
কি জুমু’আর খুত্বা পড়বে?
৬৬৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، قَالَ
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ، صَاحِبُ
الزِّيَادِيِّ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الْحَارِثِ، قَالَ خَطَبَنَا
ابْنُ عَبَّاسٍ فِي يَوْمٍ ذِي رَدْغٍ، فَأَمَرَ الْمُؤَذِّنَ لَمَّا بَلَغَ حَىَّ
عَلَى الصَّلاَةِ. قَالَ قُلِ الصَّلاَةُ فِي الرِّحَالِ، فَنَظَرَ بَعْضُهُمْ
إِلَى بَعْضٍ، فَكَأَنَّهُمْ أَنْكَرُوا فَقَالَ كَأَنَّكُمْ أَنْكَرْتُمْ هَذَا
إِنَّ هَذَا فَعَلَهُ مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنِّي ـ يَعْنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم ـ إِنَّهَا عَزْمَةٌ، وَإِنِّي كَرِهْتُ أَنْ أُحْرِجَكُمْ. وَعَنْ
حَمَّادٍ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
نَحْوَهُ، غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ كَرِهْتُ أَنْ أُؤَثِّمَكُمْ، فَتَجِيئُونَ
تَدُوسُونَ الطِّينَ إِلَى رُكَبِكُمْ.
‘আবদুল্লাহ ইব্নু হারিস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ঝড়-বৃষ্টির দিনে ইব্নু আব্বাস (রাঃ) আমাদের উদ্দেশ্য
খুত্বা দিচ্ছিলেন। মুয়াজ্জিন যখন ----- পর্যন্ত পৌঁছল, তখন তিনি তাকে বললেন,
ঘোষণা করে দাও যে, “সালাত যার যার আবাসস্থলে।" এ শুনে লোকেরা একে অন্যের দিকে
তাকাতে লাগলো- যেন তারা বিষয়টাকে অপছন্দ করলো। তিনি তাদের লক্ষ্য করে বললেন, মনে
হয় তোমরা বিষয়টি অপছন্দ করছ। তবে, আমার চেয়ে যিনি উত্তম ছিলেন অর্থাৎ আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনিই এরূপ করেছেন। একথা সত্য যে, জুমু’আর
সালাত ওয়াজিব। তবে তোমাদের অসুবিধায় ফেলা আমি পছন্দ করিনা। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)
হতেও অনুরূপ বর্ণিত আছে। তবে এ সূত্রে এমন উল্লেখ আছে, আমি তোমাদের গুনাহর অভিযোগে
ফেলতে পছন্দ করিনা যে, তোমরা হাঁটু পর্যন্ত কাদা মাড়িয়ে আসবে।
৬৬৯
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا
هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ سَأَلْتُ أَبَا سَعِيدٍ
الْخُدْرِيَّ فَقَالَ جَاءَتْ سَحَابَةٌ فَمَطَرَتْ حَتَّى سَالَ السَّقْفُ،
وَكَانَ مِنْ جَرِيدِ النَّخْلِ، فَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ، فَرَأَيْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْجُدُ فِي الْمَاءِ وَالطِّينِ، حَتَّى رَأَيْتُ
أَثَرَ الطِّينِ فِي جَبْهَتِهِ.
আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ)- কে (লাইলাতুল কাদ্র
সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, এক খণ্ড মেঘ এসে এমনভাবে বর্ষণ শুরু করল যে,
যার ফলে (মসজিদে নাববীর) ছাদ দিয়ে পানি পড়া শুরু হল। কেননা, (তখন মসজিদের) ছাদ ছিল
খেজুরের ডালের তৈরি। এমন সময় সালাতের ইক্বামাত দেওয়া হল, আমি আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে পানি ও কাদার উপর সিজদা করতে দেখলাম, এমন
কি আমি তাঁর কপালেও কাদামাটির চিহ্ন দেখলাম।
৬৭০
حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ
حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ سِيرِينَ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا، يَقُولُ قَالَ رَجُلٌ
مِنَ الأَنْصَارِ إِنِّي لاَ أَسْتَطِيعُ الصَّلاَةَ مَعَكَ. وَكَانَ رَجُلاً
ضَخْمًا، فَصَنَعَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم طَعَامًا فَدَعَاهُ إِلَى مَنْزِلِهِ،
فَبَسَطَ لَهُ حَصِيرًا وَنَضَحَ طَرَفَ الْحَصِيرِ، صَلَّى عَلَيْهِ
رَكْعَتَيْنِ. فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ آلِ الْجَارُودِ لأَنَسٍ أَكَانَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى قَالَ مَا رَأَيْتُهُ صَلاَّهَا إِلاَّ
يَوْمَئِذٍ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক আনসারী (সাহাবী) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কে বললেন, আমি আপনার সাথে মসজিদে এসে সালাত আদায় করতে অপারগ। তিনি ছিলেন মোটা।
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য কিছু খাবার তৈরি করলেন এবং
তাঁকে বাড়িতে দাওয়াত করে নিয়ে গেলেন। তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে এর জন্য একটি চাটাই পেতে দিলেন এবং চাটাইয়ের এক প্রান্তে কিছু পানি
ছিটিয়ে দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে চাটাইয়ের উপর দু’রাকআত
সালাত আদায় করলেন। জারূদ গোত্রের এক ব্যক্তি আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল, নবী কি
চাশ্তের নামাজ আদায় করতেন? তিনি বললেন, ঐ দিন ছাড়া আর কোনদিন তাঁকে এ সালাত আদায়
করতে দেখিনি।
১০/৪২. অধ্যায়ঃ
খাবার উপস্থিত হবার পর যদি সালাতের ইক্বামাত হয় ।
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) (সালাতের) পূর্বে রাতের খাবার খেয়ে নিতেন। আবূ
দারদা (রাঃ) বলেছেন, জ্ঞানীর পরিচয় হল, প্রথমে নিজের প্রয়োজন মেটানো, যাতে
নিশ্চিতভাবে সালাতে মনোনিবেশ করতে পারে।
৬৭১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ
هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " إِذَا وُضِعَ الْعَشَاءُ وَأُقِيمَتِ
الصَّلاَةُ فَابْدَءُوا بِالْعَشَاءِ ".
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন
রাতের খাবার উপস্থিত করা হয়, আর সে সময় সালাতের ইক্বামাত হয়ে যায়, তখন প্রথমে
খাবার খেয়ে নাও।
৬৭২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا
اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا قُدِّمَ الْعَشَاءُ
فَابْدَءُوا بِهِ قَبْلَ أَنْ تُصَلُّوا صَلاَةَ الْمَغْرِبِ، وَلاَ تَعْجَلُوا
عَنْ عَشَائِكُمْ ".
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিকেলের
খাবার পরিবেশন করা হলে মাগরিবের সালাতের পূর্বে তা খেয়ে নিবে। খাওয়া রেখে সালাতে
তাড়াহুড়া করবে না।
৬৭৩
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ أَبِي
أُسَامَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا وُضِعَ عَشَاءُ أَحَدِكُمْ
وَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَابْدَءُوا بِالْعَشَاءِ، وَلاَ يَعْجَلْ حَتَّى يَفْرُغَ
مِنْهُ ". وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يُوضَعُ لَهُ الطَّعَامُ وَتُقَامُ
الصَّلاَةُ فَلاَ يَأْتِيهَا حَتَّى يَفْرُغَ، وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ قِرَاءَةَ
الإِمَامِ.
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
যখন তোমাদের কারো সামনে রাতের খাবার এসে পড়ে, অপরদিকে সালাতের ইক্বামাত হয়ে যায়।
তখন পূর্বে খাবার খেয়ে নিবে। খাওয়া রেখে সালাতে তাড়াহুড়া করবেনা। [নাফি’ (রহঃ) বলেন]
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) এর জন্য খাবার পরিবেশন করা হত, সে সময় সালাতের ইক্বামাত দেওয়া
হত, তিনি খাবার শেষ না করে সালাতে আসতেন না। অথচ তিনি ইমামের কিরাআত শুনতে পেতেন।
৬৭৪
وَقَالَ زُهَيْرٌ وَوَهْبُ بْنُ عُثْمَانَ عَنْ مُوسَى بْنِ
عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم " إِذَا كَانَ أَحَدُكُمْ عَلَى الطَّعَامِ فَلاَ يَعْجَلْ حَتَّى
يَقْضِيَ حَاجَتَهُ مِنْهُ، وَإِنْ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ ". رَوَاهُ
إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ عَنْ وَهْبِ بْنِ عُثْمَانَ، وَوَهْبٌ
مَدِينِيٌّ.
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন
খাবার খেতে থাক, তখন সালাতের ইক্বামাত হয়ে গেলেও খাওয়া শেষ না করে তাড়াহুড়া
করবেনা। আবু ‘আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, আমাকে ইবরাহীম ইব্নু মুনযির
(রহঃ) এ হাদীসটি ওয়াহব ইব্নু উসমান (রহঃ) হতে বর্ণনা করেছেন এবং ওয়াহব হলেন
মদীনাবাসী।
১০/৪৩. অধ্যায়ঃ
খাবার হাতে থাকা অবস্থায় ইমামকে সালাতের দিকে আহবান করলে ।
৬৭৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي
جَعْفَرُ بْنُ عَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ، أَنَّ أَبَاهُ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْكُلُ ذِرَاعًا يَحْتَزُّ مِنْهَا، فَدُعِيَ إِلَى
الصَّلاَةِ فَقَامَ فَطَرَحَ السِّكِّينَ، فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ.
আমর ইব্নু উমাইয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে
(বকরীর) সামনের রানের গোশ্ত কেটে খেতে দেখতে পেলাম, এমনসময় তাঁকে সালাতের জন্য
ডাকা হলে তিনি ছুরি রেখে দিয়ে উঠে গেলেন ও নতুন উযূ না করেই সালাত আদায় করলেন।
No comments