সহিহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "আযান" হাদিস নং -৬২১ থেকে ৬৪৫

ফজরের ওয়াক্ত হবার পূর্বে আযান দেয়া ।
৬২১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، قَالَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لاَ يَمْنَعَنَّ أَحَدَكُمْ ـ أَوْ أَحَدًا مِنْكُمْ ـ أَذَانُ بِلاَلٍ مِنْ سَحُورِهِ، فَإِنَّهُ يُؤَذِّنُ ـ أَوْ يُنَادِي ـ بِلَيْلٍ، لِيَرْجِعَ قَائِمَكُمْ وَلِيُنَبِّهَ نَائِمَكُمْ، وَلَيْسَ أَنْ يَقُولَ الْفَجْرُ أَوِ الصُّبْحُ ‏"‏‏.‏ وَقَالَ بِأَصَابِعِهِ وَرَفَعَهَا إِلَى فَوْقُ وَطَأْطَأَ إِلَى أَسْفَلُ حَتَّى يَقُولَ هَكَذَا‏.‏ وَقَالَ زُهَيْرٌ بِسَ بابتَيْهِ إِحْدَاهُمَا فَوْقَ الأُخْرَى ثُمَّ مَدَّهَا عَنْ يَمِينِهِ وَشِمَالِهِ‏.‏
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ বিলালের আযান যেন তোমাদের কাউকে সাহ্‌রী খাওয়া হতে বিরত না রাখে। কেননা, সে রাত থাকতে আযান দেয়- যেন তোমাদের মধ্যে যারা তাহাজ্জুদের সালাতে রত তারা ফিরে যায় আর যারা ঘুমন্ত তাদেরকে জাগিয়ে দেয়। অতঃপর তিনি বললেনঃ ফজর বা সুবহে সাদিক বলা যায় না– তিনি একবার আঙ্গুল উপরের দিকে উঠিয়ে নীচের দিকে নামিয়ে ইঙ্গিত করে বললেন, যতক্ষণ না এরূপ হয়ে যায়। বর্ণনাকারী যুহাইর (রহঃ) তাঁর শাহাদাত আঙ্গুলদ্বয় একটি অপরটির উপর রাখার পর তাঁর ডানে ও বামে প্রসারিত করে দেখালেন।[১]
 [১] পূর্ব দিকে প্রথমে খাড়া আলোক-রেখা দেখা যায় এই আলোক রেখা প্রকৃত ফজর নয়। পূর্ব দিকে আড়াআড়িভাবে বিস্তৃত আলোক রেখাই প্রকৃত ফজরের সময় ।
৬২২
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو أُسَامَةَ، قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ حَدَّثَنَا عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ،‏.‏ وَعَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ‏.‏ ح
وَحَدَّثَنِي يُوسُفُ بْنُ عِيسَى الْمَرْوَزِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا الْفَضْلُ، قَالَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ "‏ إِنَّ بِلاَلاً يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ، فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُؤَذِّنَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ ‏"‏‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বিলাল (রাঃ) রাত থাকতে আযান দিয়ে থাকেন। কাজেই, ইব্‌নু উম্মু মাকতূম (রাঃ) যতক্ষণ আযান না দেয়, ততক্ষণ তোমরা (সাহারী) পানাহার করতে পার।
৬২৩
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو أُسَامَةَ، قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ حَدَّثَنَا عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ،‏.‏ وَعَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ‏.‏ ح
وَحَدَّثَنِي يُوسُفُ بْنُ عِيسَى الْمَرْوَزِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا الْفَضْلُ، قَالَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ "‏ إِنَّ بِلاَلاً يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ، فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُؤَذِّنَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ ‏"‏‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বিলাল (রাঃ) রাত থাকতে আযান দিয়ে থাকেন। কাজেই, ইব্‌নু উম্মু মাকতূম (রাঃ) যতক্ষণ আযান না দেয়, ততক্ষণ তোমরা (সাহারী) পানাহার করতে পার।
১০/১৪. অধ্যায়ঃ
আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে পার্থক্য কতটুকু ।
৬২৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ الْوَاسِطِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنِ الْجُرَيْرِيِّ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ الْمُزَنِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ ـ ثَلاَثًا ـ لِمَنْ شَاءَ ‏"‏‏.
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মুগাফ্‌ফাল মুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে সালাত রয়েছে। একথা তিনি তিনবার বললেন, (তারপর বলেন) যে চায় তার জন্য।
৬২৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ عَمْرَو بْنَ عَامِرٍ الأَنْصَارِيَّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ الْمُؤَذِّنُ إِذَا أَذَّنَ قَامَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَبْتَدِرُونَ السَّوَارِيَ حَتَّى يَخْرُجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَهُمْ كَذَلِكَ يُصَلُّونَ الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْمَغْرِبِ، وَلَمْ يَكُنْ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ شَىْءٌ‏.‏ قَالَ عُثْمَانُ بْنُ جَبَلَةَ وَأَبُو دَاوُدَ عَنْ شُعْبَةَ لَمْ يَكُنْ بَيْنَهُمَا إِلاَّ قَلِيلٌ‏.‏
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুয়াজ্জিন যখন আযান দিতো, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণের মধ্যে কয়েকজন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বের হওয়া পর্যন্ত (মসজিদের) খুঁটির নিকট গিয়ে দাঁড়াতেন এবং এ অবস্থায় মাগরিবের পূর্বে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতেন। অথচ মাগরিবের আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে কিছু (সময়) থাকত না। ‘উসমান ইব্‌নু জাবালাহ ও আবূ দাউদ (রহঃ) শু’বাহ (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, এ দু’য়ের মধ্যবর্তী ব্যবধান খুবই সামান্য হত।
১০/১৫. অধ্যায়ঃ
ইক্বামাতের জন্য অপেক্ষা করা ।
৬২৬
أَبُو الْيَمَانِ قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سَكَتَ الْمُؤَذِّنُ بِالْأُولَى مِنْ صَلاَةِ الْفَجْرِ قَامَ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الْفَجْرِ بَعْدَ أَنْ يَسْتَبِينَ الْفَجْرُ ثُمَّ اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الْأَيْمَنِ حَتَّى يَأْتِيَهُ الْمُؤَذِّنُ لِلْإِقَامَةِ.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন মুয়াজ্জিন ফজরের সালাতের প্রথম আযান শেষ করতেন তখন আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে যেতেন এবং সুবহে সাদিকের পর ফজরের সালাতের পূর্বে দু’ রাক’আত সালাত সংক্ষেপে আদায় করতেন, অতঃপর ডান কাতে শুয়ে পড়তেন এবং ইক্বামাতের জন্য মুয়াজ্জিন তাঁর নিকট না আসা পর্যন্ত শুয়ে থাকতেন।

(৯৯৪, ১১২৩, ১১৬০, ১১৭০, ৬৩১০) (আ.প্র. ৫৯০, ই.ফা. ৫৯৮)
১০/১৬. অধ্যায়ঃ
কেউ ইচ্ছা করলে আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ে সালাত আদায় করতে পারেন
৬২৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ يَزِيدَ قَالَ حَدَّثَنَا كَهْمَسُ بْنُ الْحَسَنِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُغَفَّلٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ ثُمَّ قَالَ فِي الثَّالِثَةِ لِمَنْ شَاءَ.
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ে সালাত আদায় করা যায়। তৃতীয়বার এ কথা বলার পর তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে। (৬২৪)

(আ.প্র. ৫৯১, ই.ফা. ৫৯৯)
১০/১৭. অধ্যায়ঃ
সফরে এক মুয়াজ্জিন যেন আযান দেয় ।
৬২৮
مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ قَالَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ أَتَيْتُ النَّبِيَّ فِي نَفَرٍ مِنْ قَوْمِي فَأَقَمْنَا عِنْدَهُ عِشْرِينَ لَيْلَةً وَكَانَ رَحِيمًا رَفِيقًا فَلَمَّا رَأَى شَوْقَنَا إِلَى أَهَالِينَا قَالَ ارْجِعُوا فَكُونُوا فِيهِمْ وَعَلِّمُوهُمْ وَصَلُّوا فَإِذَا حَضَرَتْ الصَّلاَةُ فَلْيُؤَذِّنْ لَكُمْ أَحَدُكُمْ وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ.
মালিক ইব্‌নু হুয়াইরিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার গোত্রের কয়েকজন লোকের সঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট এলাম এবং আমরা তাঁর নিকট বিশ রাত অবস্থান করলাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত দয়ালু ও বন্ধু বৎসল ছিলেন। তিনি যখন আমাদের মধ্যে নিজ পরিজনের নিকট ফিরে যাওয়ার আগ্রহ লক্ষ্য করলেন, তখন তিনি আমাদের বললেনঃ তোমরা পরিজনের নিকট ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে বসবাস কর, আর তাদের দ্বীন শিক্ষা দিবে এবং সালাত আদায় করবে। যখন সালাত উপস্থিত হয়, তখন তোমাদের কেউ আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে ইমামত করবে।

(৬৩০, ৬৩১, ৬৫৮, ৬৮৫, ৮১৯, ২৮৪৮, ৬০০৮, ৭২৪৬; মুসলিম ৫/৫৩, হাঃ ৬৭৪, আহমাদ ১৫৫৯৮) (আ.প্র. ৫৯২, ই.ফা. ৬০০)
১০/১৮. অধ্যায়ঃ
মুসাফিরদের জামা’আতের জন্য আযান ও ইক্বামাত দেয়া ।
আরাফা ও মুয্‌দালিফার হুকুমও অনুরূপ এবং প্রচণ্ড শীতের রাতে ও বৃষ্টির সময় মুআয্‌যিনের এ মর্মে ঘোষণা করা যে, “আবাস স্থলেই সালাত” ।
৬২৯
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْمُهَاجِرِ أَبِي الْحَسَنِ عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَأَرَادَ الْمُؤَذِّنُ أَنْ يُؤَذِّنَ فَقَالَ لَهُ أَبْرِدْ ثُمَّ أَرَادَ أَنْ يُؤَذِّنَ فَقَالَ لَهُ أَبْرِدْ ثُمَّ أَرَادَ أَنْ يُؤَذِّنَ فَقَالَ لَهُ أَبْرِدْ حَتَّى سَاوَى الظِّلُّ التُّلُولَ فَقَالَ النَّبِيُّ إِنَّ شِدَّةَ الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ.
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা এক সফরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাথে ছিলাম। মুয়াজ্জিন আযান দিতে চাইলে তিনি বললেনঃ ঠাণ্ডা হতে দাও। কিছুক্ষণ পর মুয়াজ্জিন পুনরায় আযান দিতে চাইলে তিনি বললেন, ঠাণ্ডা হতে দাও। অতঃপর সে আবার আযান দিতে চাইলে তিনি আবার বললেন, ঠাণ্ডা হতে দাও। এভাবে বিলম্ব করতে করতে টিলাগুলোর ছায়া তার সমান হয়ে গেলো। পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ উত্তাপের প্রখরতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের অংশ বিশেষ। (৫৩৫)

(আ.প্র. ৫৯৩, ই.ফা. ৬০১)
৬৩০
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ قَالَ أَتَى رَجُلَانِ النَّبِيَّ يُرِيدَانِ السَّفَرَ فَقَالَ النَّبِيُّ إِذَا أَنْتُمَا خَرَجْتُمَا فَأَذِّنَا ثُمَّ أَقِيمَا ثُمَّ لِيَؤُمَّكُمَا أَكْبَرُكُمَا.
মালিক ইব্‌নু হুওয়ায়ইরিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দু’জন লোক সফরে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করার জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট এল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বললেন, তোমরা উভয়ে যখন সফরে বেরুবে (সালাতের সময় হলে) তখন আযান দিবে, অতঃপর ইক্বামাত দিবে এবং তোমাদের উভয়ের মধ্যে যে বয়সে বড় সে ইমামত করবে। (৬২৮)
(আ.প্র. ৫৯৪, ই.ফা. ৬০২)
৬৩১
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ قَالَ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ قَالَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ أَتَيْنَا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ شَبَبَةٌ مُتَقَارِبُونَ فَأَقَمْنَا عِنْدَهُ عِشْرِينَ يَوْمًا وَلَيْلَةً وَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَحِيمًا رَفِيقًا فَلَمَّا ظَنَّ أَنَّا قَدْ اشْتَهَيْنَا أَهْلَنَا أَوْ قَدْ اشْتَقْنَا سَأَلَنَا عَمَّنْ تَرَكْنَا بَعْدَنَا فَأَخْبَرْنَاهُ قَالَ ارْجِعُوا إِلَى أَهْلِيكُمْ فَأَقِيمُوا فِيهِمْ وَعَلِّمُوهُمْ وَمُرُوهُمْ وَذَكَرَ أَشْيَاءَ أَحْفَظُهَا أَوْ لاَ أَحْفَظُهَا وَصَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي فَإِذَا حَضَرَتْ الصَّلاَةُ فَلْيُؤَذِّنْ لَكُمْ أَحَدُكُمْ وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ
মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা সমবয়সী একদল যুবক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট হাযির হলাম। বিশদিন ও বিশ রাত আমরা তাঁর নিকট অবস্থান করলাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত দয়ালু ও নম্র স্বভাবের লোক ছিলেন। তিনি যখন বুঝতে পারলেন যে, আমরা আমাদের পরিজনের নিকট ফিরে যেতে চাই বা ফিরে যাওয়ার জন্য উৎসুক হয়ে পড়েছি, তখন তিনি আমাদের জিজ্ঞেস করলেন, আমরা আমাদের পিছনে কাদের রেখে এসেছি। আমরা তাঁকে জানালাম। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের পরিজনের নিকট ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে বসবাস কর। আর তাদের (দ্বীন) শিক্ষা দাও, এবং (সৎ কাজের) নির্দেশ দাও। (বর্ণনাকারী বলেন) মালিক (রাঃ) আরও কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছিলেন যা আমার মনে আছে বা মনে নেই। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছ সেভাবে সালাত আদায় করবে। সালাতের সময় উপস্থিত হলে তোমাদের একজন যেন আযান দেয় এবং যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে যেন ইমামত করে। (৬২৮)

(আ.প্র. ৫৯৫, ই.ফা. ৬০৩)
৬৩২
مُسَدَّدٌ قَالَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ حَدَّثَنِي نَافِعٌ قَالَ أَذَّنَ ابْنُ عُمَرَ فِي لَيْلَةٍ بَارِدَةٍ بِضَجْنَانَ ثُمَّ قَالَ صَلُّوا فِي رِحَالِكُمْ فَأَخْبَرَنَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْمُرُ مُؤَذِّنًا يُؤَذِّنُ ثُمَّ يَقُولُ عَلَى إِثْرِهِ أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ فِي اللَّيْلَةِ الْبَارِدَةِ أَوْ الْمَطِيرَةِ فِي السَّفَرِ.
নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রচণ্ড এক শীতের রাতে ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) যাজনান নামক স্থানে আযান দিলেন। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেনঃ তোমরা আবাস স্থলেই সালাত আদায় করে নাও। পরে তিনি আমাদের জানালেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আযান দিতে বললেন এবং সাথে সাথে এ কথাও ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা নিজ বাসস্থলে সালাত আদায় কর।

(৬৬৬; মুসলিম ৬/৩, হাঃ ৬৯৭, আহমাদ ৪৫৮০) (আ.প্র. ৫৯৬, ই.ফা. ৬০৪)
৬৩৩
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ قَالَ أَخْبَرَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الْعُمَيْسِ عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِالْأَبْطَحِ فَجَاءَهُ بِلاَلٌ فَآذَنَهُ بِالصَّلاَةِ ثُمَّ خَرَجَ بِلاَلٌ بِالْعَنَزَةِ حَتَّى رَكَزَهَا بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللهِ بِالْأَبْطَحِ وَأَقَامَ الصَّلاَةَ.
আবূ যুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আবতাহ্‌ নামক জায়গায় দেখলাম, বিলাল (রাঃ) তাঁর নিকট আসলেন এবং আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে সালাতের সংবাদ দিলেন। অতঃপর বিলাল (রাঃ) একটি বর্শা নিয়ে বের হলেন। অবশেষে আবতাহে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সামনে তা পুঁতে দিলেন, অতঃপর সালাতের ইক্বামাত দিলেন। (১৮৭)

(আ.প্র. ৫৯৭, ই.ফা. ৬০৫)
১০/১৯. অধ্যায়ঃ
মুয়াজ্জিন কি (আযানের সময়) ডানে বামে মুখ ফিরাবেন এবং এদিক সেদিক তাকাতে পারবেন?
বিলাল (রাঃ) থেকে উল্লেখ করা হয় যে, তিনি আযানের সময় দু’কানে দু’টি আঙ্গুল রাখতেন। তবে ইব্‌ন উমর (রাঃ) দু’কানে আঙ্গুল রাখতেন না। ইবরাহীম (র.) বলেন, বিনা উযূ তে আযান কোন দোষ নেই। আতা (র.) বলেন, (আযানের জন্য) উযূ জরুরী এবং সুন্নাত। আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বক্ষণ আল্লাহ্‌র যিক্‌র করতেন।
৬৩৪
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ رَأَى بِلَالاً يُؤَذِّنُ فَجَعَلْتُ أَتَتَبَّعُ فَاهُ هَهُنَا وَهَهُنَا بِالْأَذَانِ.
আবূ যুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বিলাল (রাঃ)–কে আযান দিতে দেখেছেন। (এরপর তিনি বলেন) তাই আমি তাঁর (বিলালের) ন্যায় আযানের মাঝে মুখ এদিক সেদিক (ডানে-বামে) ফিরাই। (১৮৭)

(আ.প্র. ৫৯৮, ই.ফা. ৬০৬)
১০/২০. অধ্যায়ঃ
‘আমাদের সালাত ছুটে গেছে’ কারো এরূপ বলা ।
ইব্‌ন সীরীন (র.)-এর মতে 'আমাদের সালাত ফাওত হয়ে গেছে' বলা অপছন্দনীয় । বরং 'আমরা সালাত পাইনি' এরূপ বলা উচিৎ । তবে এ ব্যাপারে নবী (সা.) যা বলেছেন তাই সঠিক ।
৬৩৫
أَبُو نُعَيْمٍ قَالَ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيَى عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذْ سَمِعَ جَلَبَةَ رِجَالٍ فَلَمَّا صَلَّى قَالَ مَا شَأْنُكُمْ قَالُوا اسْتَعْجَلْنَا إِلَى الصَّلاَةِ قَالَ فَلاَ تَفْعَلُوا إِذَا أَتَيْتُمْ الصَّلاَةَ فَعَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا.
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সঙ্গে সালাত আদায় করছিলাম। হঠাৎ তিনি লোকদের (আগমনের) আওয়ায শুনতে পেলেন। সালাত শেষে তিনি জিজ্ঞেস করলেন তোমাদের কি হয়েছিল? তাঁরা বললেন, আমরা সালাতের জন্য তাড়াহুড়া করে আসছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এরূপ করবে না। যখন সালাতে আসবে ধীরস্থিরভাবে আসবে (ইমামের সাথে) যতটুকু পাও আদায় করবে, আর যতটুকু ছুটে যায় তা (ইমামের সালাম ফিরানোর পর) পূর্ণ করবে।

(মুসলিম ৫/২৮, হাঃ ৬০৩, আহমাদ ২২৬৭১) (আ.প্র. ৫৯৯, ই.ফা. ৬০৭)
১০/২১. অধ্যায়ঃ
সালাতের (জামা’আতের) দিকে দৌড়ে আসবে না, বরং শান্ত ও ধীরস্থিরভাবে আসবে ।
তিনি বলেন, তোমারা ইমামের সঙ্গে যতটুকু পাও আদায় করবে, আর তোমাদের যা ছুটে যায় তা ( ইমামের সালাম ফিরানোর পর ) পুরা করে নিবে। আবু কাতাদা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ কথা বর্ণনা করেছেন।
৬৩৬
آدَمُ قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ قَالَ حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَعَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا سَمِعْتُمْ الْإِقَامَةَ فَامْشُوا إِلَى الصَّلاَةِ وَعَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ وَالْوَقَارِ وَلاَ تُسْرِعُوا فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন তোমরা ইক্বামাত শুনতে পাবে, তখন সালাতের দিকে চলে আসবে, তোমাদের উচিত স্থিরতা ও গাম্ভীর্য অবলম্বন করা। তাড়াহুড়া করবে না। ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় তা পূর্ণ করবে।
(৯০৮; মুসলিম ৫/২৯, হাঃ ৬০৪, আহমাদ ২২৭১২) (আ.প্র. ৬০০, ই.ফা. ৬০৮)
১০/২২. অধ্যায়ঃ
ইক্বামাতের সময় ইমামকে দেখলে লোকেরা কখন দাঁড়াবে?
৬৩৭
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ قَالَ كَتَبَ إِلَيَّ يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أُقِيمَتْ الصَّلاَةُ فَلاَ تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي.
আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতের ইক্বামাত হলে আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না।
(৬৩৮, ৯০৯; মুসলিম ৫/২৯, হাঃ ৬০৪, আহমাদ ২২৭১২) (আ.প্র. ৬০১, ই.ফা. ৬০৯)
১০/২৩. অধ্যায়ঃ
তাড়াহুড়া করে সালাতের দিকে দৌড়াতে নেই, বরং শান্ত ও ধীরস্থিরভাবে দাঁড়াতে হবে ।
৬৩৮
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي وَعَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ ‏"‏‏.‏ تَابَعَهُ عَلِيُّ بْنُ الْمُبَارَكِ‏.‏
আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতের ইক্বামাত হলে আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না। ধীরস্থিরতার প্রতি লক্ষ্য রাখা তোমাদের জন্য একান্ত কর্তব্য। ‘‘আলী ইব্‌নু মুবারক (রহঃ) হাদীস বর্ণনায় শায়বান (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন। (৬৩৭)
(আ.প্র. ৬০২, ই.ফা. ৬১০)
১০/২৪. অধ্যায়ঃ
প্রয়োজনে মসজিদ হতে বের হওয়া যায় কি?
৬৩৯
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ وَقَدْ أُقِيمَتْ الصَّلاَةُ وَعُدِّلَتْ الصُّفُوفُ حَتَّى إِذَا قَامَ فِي مُصَلاَّهُ انْتَظَرْنَا أَنْ يُكَبِّرَ انْصَرَفَ قَالَ عَلَى مَكَانِكُمْ فَمَكَثْنَا عَلَى هَيْئَتِنَا حَتَّى خَرَجَ إِلَيْنَا يَنْطِفُ رَأْسُهُ مَاءً وَقَدْ اغْتَسَلَ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের কক্ষ হতে সালাতের জন্য তাশরীফ নিয়ে আসলেন। এদিকে সালাতের ইক্বামাত দেয়া হয়েছে এবং কাতার সোজা করে নেয়া হয়েছে, এমন কি তিনি মুসাল্লায় দাঁড়ালেন, আমরা তাক্‌বীরের অপেক্ষা করছি, এমন সময় তিনি ফিরে গেলেন এবং বলে গেলেন তোমরা নিজ নিজ স্থলে অপেক্ষা কর। আমরা নিজ নিজ অবস্থায় অপেক্ষা করতে থাকলাম যে পর্যন্ত না তিনি আমাদের কাছে বেরিয়ে আসলেন। তাঁর মাথা হতে ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ছিল, তিনি গোসল করেছিলেন। (২৭৫)
(আ.প্র. ৬০৩, ই.ফা. ৬১১)
১০/২৫. অধ্যায়ঃ
ইমাম যদি বলেন, আমি ফিরে আসা পর্যন্ত তোমরা অপেক্ষা কর, তাহলে মুক্‌তাদীগণ তার জন্য অপেক্ষা করবে ।
৬৪০
إِسْحَاقُ قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ قَالَ حَدَّثَنَا الْأَوْزَاعِيُّ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ أُقِيمَتْ الصَّلاَةُ فَسَوَّى النَّاسُ صُفُوفَهُمْ فَخَرَجَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم فَتَقَدَّمَ وَهُوَ جُنُبٌ ثُمَّ قَالَ عَلَى مَكَانِكُمْ فَرَجَعَ فَاغْتَسَلَ ثُمَّ خَرَجَ وَرَأْسُهُ يَقْطُرُ مَاءً فَصَلَّى بِهِمْ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (একবার) সালাতের ইক্বামাত দেয়া হয়ে গেছে, লোকেরা তাদের কাতার সোজা করে নিয়েছে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে আসলেন এবং সামনে এগিয়ে গেলেন, তখন তাঁর উপর গোসল ফরয ছিল। তিনি বললেনঃ তোমরা নিজ নিজ জায়গায় অপেক্ষা কর। অতঃপর তিনি ফিরে গেলেন এবং গোসল করলেন, অতঃপর ফিরে আসলেন, তখন তাঁর মাথা হতে পানি টপ্‌টপ্‌ করে পড়ছিল। অতঃপর সবাইকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। (২৭৫)
(আ.প্র. ৬০৪, ই.ফা. ৬১২)
১০/২৬. অধ্যায়ঃ
‘আমরা সালাত আদায় করিনি’ কারো এরূপ বলা ।
৬৪১
أَبُو نُعَيْمٍ قَالَ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيَى قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ يَقُولُ أَخْبَرَنَا جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم جَاءَهُ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يَوْمَ الْخَنْدَقِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاللهِ مَا كِدْتُ أَنْ أُصَلِّيَ حَتَّى كَادَتْ الشَّمْسُ تَغْرُبُ وَذَلِكَ بَعْدَ مَا أَفْطَرَ الصَّائِمُ فَقَالَ النَّبِيُّ وَاللهِ مَا صَلَّيْتُهَا فَنَزَلَ النَّبِيُّ إِلَى بُطْحَانَ وَأَنَا مَعَهُ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ صَلَّى يَعْنِي الْعَصْرَ بَعْدَ مَا غَرَبَتْ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى بَعْدَهَا الْمَغْرِبَ.
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন ‘উমর ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আল্লাহ্‌র কসম! আমি সালাত আদায় করতে পারিনি, এমন কি সূর্য ডুবতে লাগলো, [জাবির (রাঃ) বলেন,] যখন কথা হচ্ছিল তখন এমন সময়, যখন সওম পালনকারী ইফ্‌তার করে ফেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্‌র কসম! আমিও সে সালাত আদায় করিনি। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘বুতহান’ নামক উপত্যকায় গেলেন, আমিও তাঁর সঙ্গে ছিলাম। সেখানে তিনি উযূ করলেন এবং সূর্যাস্তের পরে তিনি (প্রথমে) আসর সালাত আদায় করলেন, অতঃপর তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করলেন। (৫৯৬)
(আ.প্র. ৬০৫, ই.ফা. ৬১৩)
১০/২৭. অধ্যায়ঃ
ইক্বামাতের পর ইমামের কোন প্রয়োজন দেখা দিলে ।
৬৪২
أَبُو مَعْمَرٍ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَمْرٍو قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ صُهَيْبٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ أُقِيمَتْ الصَّلاَةُ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُنَاجِي رَجُلاً فِي جَانِبِ الْمَسْجِدِ فَمَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ حَتَّى نَامَ الْقَوْمُ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালাতের ইক্বামাত হয়ে গেছে তখনও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদের এক পাশে এক ব্যক্তির সাথে একান্তে কথা বলছিলেন, অবশেষে যখন লোকদের ঘুম আসছিল তখন তিনি সালাতে দাঁড়ালেন। [১]
(৬৪৩, ৬২৯২; মুসলিম ৩/৩৩, হাঃ ৩৭৬) (আ.প্র. ৬০৬, ই.ফা. ৬১৪)
 [১] ইক্বামাত হয়ে যাওয়ার পরও প্রয়োজনে ইমাম কথা বলতে পারেন। এতে নতুন করে ইক্বামাত দিতে হবে না। অন্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ইক্বামাত হয়ে যাবার পর মুসল্লীদের দিকে ফিরে ইমাম মুসল্লীদের কাতার সোজা করার জন্য কাঁধ ও পায়ের সাথে পা মিলিয়ে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিবে, অতঃপর ইমাম সালাত আরম্ভ করবেন। কিন্তু আমাদের দেশে এ সুন্নাতের বৈপরিত্য লক্ষ্য করা যায় যা বিদ’আত।
(বুখারী ৬৭৬ নং হাদীস দ্রষ্টব্য)
১০/২৮. অধ্যায়ঃ
ইক্বামাত হয়ে গেলে কথা বলা ।
৬৪৩
عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيدِ قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْأَعْلَى قَالَ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ قَالَ سَأَلْتُ ثَابِتًا الْبُنَانِيَّ عَنْ الرَّجُلِ يَتَكَلَّمُ بَعْدَ مَا تُقَامُ الصَّلاَةُ فَحَدَّثَنِي عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ أُقِيمَتْ الصَّلاَةُ فَعَرَضَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَحَبَسَهُ بَعْدَ مَا أُقِيمَتْ الصَّلاَةُ.
হুমাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালাতের ইক্বামাত হয়ে যাবার পর কোন ব্যক্তি কথা বললে তার সম্পর্কে আমি সাবিত বুনানীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমাকে আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত একটি হাদীস বর্ণনা করলেন। তিনি বলেন, সালাতের ইক্বামাত দেয়া হয় এমন সময় এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলো এবং ইক্বামাতের পরও তাঁকে কথার মধ্যে ব্যস্ত রাখল। (৬৪২)
(আ.প্র. ৬০৭, ই.ফা. ৬১৫)
১০/২৯. অধ্যায়ঃ
জামা’আতে সালাত আদায় করা ওয়াজিব ।
হাসান বাসরী (র.) বলেন, কোন মা যদি তাঁর সন্তানের প্রতি স্নেহবশত ইশার সালাত জামা’আতে আদায় করতে নিষেধ করে, তবে এ ব্যাপারে সন্তান তার মায়ের আনুগত্য করবে না।
৬৪৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِحَطَبٍ فَيُحْطَبَ ثُمَّ آمُرَ بِالصَّلاَةِ فَيُؤَذَّنَ لَهَا ثُمَّ آمُرَ رَجُلاً فَيَؤُمَّ النَّاسَ ثُمَّ أُخَالِفَ إِلَى رِجَالٍ فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ يَعْلَمُ أَحَدُهُمْ أَنَّهُ يَجِدُ عَرْقًا سَمِينًا أَوْ مِرْمَاتَيْنِ حَسَنَتَيْنِ لَشَهِدَ الْعِشَاءَ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর শপথ! আমার ইচ্ছা হয়, জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করতে আদেশ দেই, অতঃপর সালাত কায়েমের আদেশ দেই, অতঃপর সালাতের আযান দেয়া হোক, অতঃপর এক ব্যক্তিকে লোকদের ইমামত করার নির্দেশ দেই। অতঃপর আমি লোকদের নিকট যাই এবং তাদের (যারা সালাতে শামিল হয়নি) ঘর জ্বালিয়ে দেই। যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! যদি তাদের কেউ জানত যে, একটি গোশ্‌তহীন মোটা হাড় বা ছাগলের ভালো দু’টি পা পাবে তাহলে অবশ্যই সে ‘ইশা সালাতের জামা’আতেও হাযির হতো।
(৬৫৭, ২৪২০, ৭২২৪; মুসলিম ৫/২৪, হাঃ ৬৫১, আহমাদ ৭৩৩২) (আ.প্র. ৬০৮, ই.ফা. ৬১৬)
১০/৩০. অধ্যায়ঃ
জামা’আতে সালাত আদায় করার মর্যাদা ।
জামা’আত না পেলে আসওয়াদ ইব্‌ন ইয়াযীদ (রাঃ) অন্য মসজিদে চলে যেতেন । আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) এমন এক মসজিদে গেলেন যেখানে ইকামত দিয়ে জামা’আতে সালাত আদায় করলেন ।
৬৪৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ صَلاَةُ الْجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلاَةَ الْفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً.
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জামা’আতে সালাতের ফযীলত একাকী আদায়কৃত সালাত অপেক্ষা সাতাশ গুণ বেশী।
(৬৪৯, মুসলিম ৫/৪২, হাঃ ৬৫০, আহমাদ ৫৩৩২) (আ.প্র. ৬০৯, ই.ফা. ৬১৭)

No comments

Powered by Blogger.