সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "আনসারগণের মর্যাদা" হাদিস নং - ৩৭৭৬ থেকে ৩৮৪০

আনসারগণের মর্যাদা ৩৭৭৬ - ৩৯৪৮
আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আর যারা মুহাজিরগণের আগমনের পূর্ব হতেই এ নগরীতে (মদীনাতে) বসবাস করেছে ও ঈমান এনেছে এবং মুহাজিরগণকে ভালবাসে আর মুহাজিরদেরকে যা দেয়া হয়েছে তার জন্য তারা অন্তরে আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে না। (আল-হাশর ৯)

৩৭৭৬

حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا مَهْدِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ حَدَّثَنَا غَيْلَانُ بْنُ جَرِيْرٍ قَالَ قُلْتُ لِأَنَسٍ أَرَأَيْتَ اسْمَ الأَنْصَارِ كُنْتُمْ تُسَمَّوْنَ بِهِ أَمْ سَمَّاكُمْ اللهُ قَالَ بَلْ سَمَّانَا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ كُنَّا نَدْخُلُ عَلَى أَنَسٍ فَيُحَدِّثُنَا بِمَنَاقِبِ الأَنْصَارِ وَمَشَاهِدِهِمْ وَيُقْبِلُ عَلَيَّ أَوْ عَلَى رَجُلٍ مِنْ الأَزْدِ فَيَقُوْلُ فَعَلَ قَوْمُكَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا كَذَا وَكَذَا
গাইলান ইব্‌নু জারীর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) - কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের আনসার নামকরণ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কী? এ নাম কি আপনারা করেছেন, না আল্লাহ্ আপনাদের এ নামকরণ করেছেন? আনাস (রাঃ) বললেন, বরং আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের এ নামকরণ করেছেন। [গাইলান (রহঃ) বলেন] আমরা যখন আনাস (রাঃ) - এর নিকট যেতাম, তখন তিনি আমাদেরকে আনসারদের গুণাবলী ও কার্যাবলী বর্ণনা করে শুনাতেন। তিনি আমাকে অথবা আয্‌দ গোত্রের এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বলতেন, তোমার গোত্র অমুক দিন অমুক কাজ করেছেন, অমুক দিন অমুক কাজ করেছেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৯৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০২)

৩৭৭৭

حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ يَوْمُ بُعَاثَ يَوْمًا قَدَّمَهُ اللهُ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فَقَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ افْتَرَقَ مَلَؤُهُمْ وَقُتِلَتْ سَرَوَاتُهُمْ وَجُرِّحُوْا فَقَدَّمَهُ اللهُ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ دُخُوْلِهِمْ فِي الْإِسْلَامِ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বু’আস যুদ্ধ এমন একটি যুদ্ধ ছিল, যা আল্লাহ তা’আলা তাঁর মদীনা আগমনের পূর্বেই ঘটিয়েছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আগমন করলেন তখন সেখানকার গণ্যমান্য ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ নানা দলে উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। তাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণ এ যুদ্ধে নিহত ও আহত হয়েছিল। তাদের ইসলাম গ্রহণকে আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর জন্য অনুকূল করে দিয়েছিলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৯৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০৩)
৩৭৭৮
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا يَقُوْلُ قَالَتْ الأَنْصَارُ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ وَأَعْطَى قُرَيْشًا وَاللهِ إِنَّ هَذَا لَهُوَ الْعَجَبُ إِنَّ سُيُوفَنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَاءِ قُرَيْشٍ وَغَنَائِمُنَا تُرَدُّ عَلَيْهِمْ فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَدَعَا الأَنْصَارَ قَالَ فَقَالَ مَا الَّذِيْ بَلَغَنِيْ عَنْكُمْ وَكَانُوْا لَا يَكْذِبُوْنَ فَقَالُوْا هُوَ الَّذِيْ بَلَغَكَ قَالَ أَوَلَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَرْجِعَ النَّاسُ بِالْغَنَائِمِ إِلَى بُيُوْتِهِمْ وَتَرْجِعُوْنَ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى بُيُوْتِكُمْ لَوْ سَلَكَتْ الأَنْصَارُ وَادِيًا أَوْ شِعْبًا لَسَلَكْتُ وَادِيَ الأَنْصَارِ أَوْ شِعْبَهُمْ
আবূ তাইয়্যাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) - কে বলতে শুনেছি, মক্কাহ বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরাইশদেরকে মালে গনীমত দিলে কিছু সংখ্যক আনসার বলেছিলেন যে, এ বড় আশ্চর্যের বিষয় যে, তিনি কুরাইশদের মাল দিলেন অথচ আমাদের তলোয়ার হতে তাদের রক্ত এখনও ঝরছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট এ কথা পৌঁছলে তিনি আনসারদেরকে ডেকে বললেন, আমি তোমাদের হতে যে কথাটি শুনতে পেলাম, সে কথাটি কী? যেহেতু তাঁরা মিথ্যা কথা বলতেন না, সেহেতু তাঁরা বললেন, আপনার নিকট যা পৌঁছেছে তা সত্যই। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, লোকজন গনীমতের মাল নিয়ে তাদের ঘরে ফিরে যাবে আর তোমরা আল্লাহ্‌র রসূলকে নিয়ে নিজ ঘরে ফিরবে। যদি আনসারগণ উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে চলে তবে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়েই চলব।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৯৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০৪)

৬৩/. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর উক্তিঃ যদি হিজরত না হত তাহলে আমি আনসারদেরই একজন হতাম।
আবদুল্লাহ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একথা বর্ণনা করেছেন।

৩৭৭৯

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَوْ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ لَوْ أَنَّ الأَنْصَارَ سَلَكُوْا وَادِيًا أَوْ شِعْبًا لَسَلَكْتُ فِيْ وَادِي الأَنْصَارِ وَلَوْلَا الْهِجْرَةُ لَكُنْتُ امْرَأً مِنْ الأَنْصَارِ فَقَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ مَا ظَلَمَ بِأَبِيْ وَأُمِّيْ آوَوْهُ وَنَصَرُوْهُ أَوْ كَلِمَةً أُخْرَى
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অথবা তিনি বলেছেন, আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আনসারগণ যদি কোন উপত্যকা বা গিরিপথে চলে তবে আমি আনসারদের উপত্যকা দিয়েই চলব। যদি হিজরত না হত, তবে আমি আনসারদেরই একজন হতাম। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথায় কোন অত্যুক্তি করেননি। আমার মাতা-পিতা তাঁর উপর কুরবান হোক তারা তাঁকে আশ্রয় দিয়েছেন, সর্বতোভাবে সাহায্য করেছেন। কিংবা এমন কিছু বলেছেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৯৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০৫)

৬৩/. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক মুহাজির ও আনসারগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন।

৩৭৮০

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ لَمَّا قَدِمُوْا الْمَدِيْنَةَ آخَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَسَعْدِ بْنِ الرَّبِيْعِ قَالَ لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنِّيْ أَكْثَرُ الأَنْصَارِ مَالًا فَأَقْسِمُ مَالِيْ نِصْفَيْنِ وَلِيْ امْرَأَتَانِ فَانْظُرْ أَعْجَبَهُمَا إِلَيْكَ فَسَمِّهَا لِيْ أُطَلِّقْهَا فَإِذَا انْقَضَتْ عِدَّتُهَا فَتَزَوَّجْهَا قَالَ بَارَكَ اللهُ لَكَ فِيْ أَهْلِكَ وَمَالِكَ أَيْنَ سُوقُكُمْ فَدَلُّوْهُ عَلَى سُوقِ بَنِيْ قَيْنُقَاعَ فَمَا انْقَلَبَ إِلَّا وَمَعَهُ فَضْلٌ مِنْ أَقِطٍ وَسَمْنٍ ثُمَّ تَابَعَ الْغُدُوَّ ثُمَّ جَاءَ يَوْمًا وَبِهِ أَثَرُ صُفْرَةٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَهْيَمْ قَالَ تَزَوَّجْتُ قَالَ كَمْ سُقْتَ إِلَيْهَا قَالَ نَوَاةً مِنْ ذَهَبٍ أَوْ وَزْنَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ شَكَّ إِبْرَاهِيْمُ
‘আবদুর রহমান ইব্‌নু ‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন মুহাজিরগণ মদীনায় আগমন করলেন, তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুর রাহমান ইব্‌নু ‘আউফ ও সা’দ ইব্‌নু রাবী’ (রাঃ) এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন স্থাপন করে দিলেন। তখন তিনি [সা’দ (রাঃ)] ‘আবদুর রাহমান (রাঃ) কে বললেন, আনসারদের মধ্যে আমিই সব থেকে বেশি সম্পদের অধিকারী। আপনি আমার সম্পদকে দু’ভাগ করে নিন। আমার দু’জন স্ত্রী রয়েছে, আপনার যাকে পছন্দ হয় বলুন, আমি তাকে তালাক দিয়ে দিব। ইদ্দত শেষে আপনি তাকে বিয়ে করে নিবেন। ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বললেন, আল্লাহ আপনার পরিবারে এবং সম্পদে বরকত দান করুন। আপনাদের বাজার কোথায়? তারা তাঁকে বনূ কায়নুকার বাজার দেখিয়ে দিলেন। যখন ঘরে ফিরলেন তখন কিছু পনির ও কিছু ঘি সাথে নিয়ে ফিরলেন। এরপর প্রতিদিন সকাল বেলা বাজার যেতে লাগলেন। একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর কাছে এমন অবস্থায় আসলেন যে, তাঁর শরীর ও কাপড়ে হলুদ রং এর চিহ্ন ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ব্যাপার কী! তিনি (রাঃ) বললেন, আমি বিয়ে করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তাকে কী পরিমাণ মাহর দিয়েছ? তিনি বললেন, খেজুরের এক আঁটির পরিমাণ অথবা খেজুরের এক আঁটির ওজন পরিমাণ স্বর্ণ দিয়েছি।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৯৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০৬)

৩৭৮১

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّهُ قَالَ قَدِمَ عَلَيْنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ وَآخَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُ وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيْعِ وَكَانَ كَثِيْرَ الْمَالِ فَقَالَ سَعْدٌ قَدْ عَلِمَتْ الأَنْصَارُ أَنِّيْ مِنْ أَكْثَرِهَا مَالًا سَأَقْسِمُ مَالِيْ بَيْنِيْ وَبَيْنَكَ شَطْرَيْنِ وَلِيْ امْرَأَتَانِ فَانْظُرْ أَعْجَبَهُمَا إِلَيْكَ فَأُطَلِّقُهَا حَتَّى إِذَا حَلَّتْ تَزَوَّجْتَهَا فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بَارَكَ اللهُ لَكَ فِيْ أَهْلِكَ فَلَمْ يَرْجِعْ يَوْمَئِذٍ حَتَّى أَفْضَلَ شَيْئًا مِنْ سَمْنٍ وَأَقِطٍ فَلَمْ يَلْبَثْ إِلَّا يَسِيْرًا حَتَّى جَاءَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَعَلَيْهِ وَضَرٌ مِنْ صُفْرَةٍ فَقَالَ لَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَهْيَمْ قَالَ تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنْ الأَنْصَارِ فَقَالَ مَا سُقْتَ إِلَيْهَا قَالَ وَزْنَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ أَوْ نَوَاةً مِنْ ذَهَبٍ فَقَالَ أَوْلِمْ وَلَوْ بِشَاةٍ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু আউফ (রাঃ) হিজরত করে আমাদের কাছে এলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ও সা’দ ইব্‌নু রাবী’ (রাঃ) - এর মাঝে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জুড়ে দিলেন। সাদ (রাঃ) ছিলেন অনেক সম্পদশালী। সা’দ (রাঃ) বললেন, সকল আনসারগণ জানেন যে আমি তাঁদের মধ্যে অধিক সম্পদশালী। আমি শীঘ্রই আমার ও তোমার মাঝে আমার সম্পদ ভাগাভাগি করে দিব দুই ভাগে। আমার দু’জন স্ত্রী রয়েছে; তোমার যাকে পছন্দ হয় বল, আমি তাকে তালাক দিয়ে দিব। ইদ্দত শেষে তুমি তাকে বিয়ে করে নিবে। ‘আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ আপনার পরিবার পরিজনের মধ্যে বরকত দান করুন। ব্যবসা আরম্ভ করে বাজার হতে মুনাফা স্বরূপ ঘি ও পনির সাথে নিয়ে ফিরলেন। অল্প কয়েকদিন পর তিনি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট হাযির হলেন। তখন তাঁর শরীরে ও কাপড়ে হলুদ রংয়ের চিহ্ন ছিল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, ব্যাপার কী? তিনি বললেন, আমি একজন আনসারী মহিলাকে বিয়ে করেছি। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাঁকে কী পরিমাণ মাহর দিয়েছ? তিনি বললেন, খেজুরের এক আঁটির ওজন পরিমাণ স্বর্ণ দিয়েছি অথবা একটি আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ দিয়েছি। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, একটি বকরী দিয়ে হলেও ওয়ালীমা কর।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৯৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০৭)

৩৭৮২

حَدَّثَنَا الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَبُوْ هَمَّامٍ قَالَ سَمِعْتُ الْمُغِيْرَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَتْ الأَنْصَارُ اقْسِمْ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ النَّخْلَ قَالَ لَا قَالَ يَكْفُوْنَنَا الْمَئُوْنَةَ وَيُشْرِكُوْنَنَا فِي التَّمْرِ قَالُوْا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনসারগণ বললেন, আমাদের খেজুরের বাগানগুলি আমাদের এবং তাদের (মুহাজিরদের) মাঝে বন্টন করে দিন। তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেন, না, তখন আনসারগণ বললেন, আপনারা বাগানগুলির রক্ষণাবেক্ষণে আমাদের সাহায্য করুন এবং ফসলের অংশীদার হয়ে যান। মুহাজিরগণ বললেন, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫০০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০৮)

৬৩/. অধ্যায়ঃ

আনসারগণকে ভালবাসা।

৩৭৮৩

حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَوْ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الأَنْصَارُ لَا يُحِبُّهُمْ إِلَّا مُؤْمِنٌ وَلَا يُبْغِضُهُمْ إِلَّا مُنَافِقٌ فَمَنْ أَحَبَّهُمْ أَحَبَّهُ اللهُ وَمَنْ أَبْغَضَهُمْ أَبْغَضَهُ اللهُ
বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে বলতে শুনেছি, মু’মিন ছাড়া আনসারদেরকে কেউ ভালবাসবে না এবং মুনাফিক ছাড়া কেউ তাঁদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে না। যে ব্যক্তি তাঁদেরকে ভালবাসবে আল্লাহ্ তা’আলা তাকে ভালবাসবেন আর যে ব্যক্তি তাঁদের সাথে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করবে আল্লাহ্ তা’আলা তাকে ঘৃণা করবেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫০১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০৯)
৩৭৮৪
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ جَبْرٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ آيَةُ الْإِيْمَانِ حُبُّ الأَنْصَارِ وَآيَةُ النِّفَاقِ بُغْضُ الأَنْصَارِ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আনসারদের প্রতি ভালবাসা ঈমানেরই নিদর্শন এবং তাঁদের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ রাখা মুনাফিকীর নিদর্শন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫০২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১০)

৬৩/. অধ্যায়ঃ

আনসারদের লক্ষ্য করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর উক্তিঃ মানুষের মাঝে তোমরা আমার কাছে সব চেয়ে প্রিয়।

৩৭৮৫

حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ رَأَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم النِّسَاءَ وَالصِّبْيَانَ مُقْبِلِيْنَ قَالَ حَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ مِنْ عُرُسٍ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُمْثِلًا فَقَالَ اللَّهُمَّ أَنْتُمْ مِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ قَالَهَا ثَلَاثَ مِرَارٍ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (আনসারের) কতিপয় বালক-বালিকা ও নারীকে রাবী (বর্ণনাকারী) বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছিলেন, কোন বিবাহ অনুষ্ঠান শেষে ফিরে আসতে দেখে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের উদ্দেশে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ্ জানেন, তোমরাই আমার সবচেয়ে প্রিয়জন। কথাটি তিনি তিনবার বললেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫০৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১১)

৩৭৮৬

حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ كَثِيْرٍ حَدَّثَنَا بَهْزُ بْنُ أَسَدٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ هِشَامُ بْنُ زَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ جَاءَتْ امْرَأَةٌ مِنْ الأَنْصَارِ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَعَهَا صَبِيٌّ لَهَا فَكَلَّمَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ إِنَّكُمْ أَحَبُّ النَّاسِ إِلَيَّ مَرَّتَيْنِ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একজন আনসারী মহিলা তার শিশুসহ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট হাযির হলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সঙ্গে কথা বললেন এবং বললেন, ঐ আল্লাহ্‌র কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, লোকদের মধ্যে তোমরাই আমার সবচেয়ে প্রিয়জন। কথাটি তিনি দু’বার বললেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫০৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১২)

৬৩/. অধ্যায়ঃ

আনসারগণের অনুসারীরা।

৩৭৮৭

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَمْرٍو سَمِعْتُ أَبَا حَمْزَةَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَتْ الأَنْصَارُ يَا رَسُوْلَ اللهِ لِكُلِّ نَبِيٍّ أَتْبَاعٌ وَإِنَّا قَدْ اتَّبَعْنَاكَ فَادْعُ اللهَ أَنْ يَجْعَلَ أَتْبَاعَنَا مِنَّا فَدَعَا بِهِ فَنَمَيْتُ ذَلِكَ إِلَى ابْنِ أَبِيْ لَيْلَى قَالَ قَدْ زَعَمَ ذَلِكَ زَيْدٌ
যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনসারগণ বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! প্রত্যেক নবীরই অনুসারী ছিলেন। আমরাও আপনার অনুসারী। আপনি আমাদের উত্তরসুরীদের জন্য দু’আ করুন যেন তারা আপনার অনুসারী হয়। তিনি দু’আ করলেন। (রাবী বলেন) আমি এই হাদীসটি ইব্‌নু আবূ লায়লার নিকট বর্ণনা করলাম, তিনি বললেন, যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) এভাবেই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫০৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১৩)

৩৭৮৮

حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ مُرَّةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا حَمْزَةَ رَجُلًا مِنْ الأَنْصَارِ قَالَتْ الأَنْصَارُ إِنَّ لِكُلِّ قَوْمٍ أَتْبَاعًا وَإِنَّا قَدْ اتَّبَعْنَاكَ فَادْعُ اللهَ أَنْ يَجْعَلَ أَتْبَاعَنَا مِنَّا قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اللَّهُمَّ اجْعَلْ أَتْبَاعَهُمْ مِنْهُمْ قَالَ عَمْرٌو فَذَكَرْتُهُ لِابْنِ أَبِيْ لَيْلَى قَالَ قَدْ زَعَمَ ذَاكَ زَيْدٌ قَالَ شُعْبَةُ أَظُنُّهُ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ
আবূ হামযাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হামযাহ (রাঃ) নামক একজন আনসারী হতে বর্ণিত, কতিপয় আনসার বললেন, প্রত্যেক জাতির মধ্যে অনুসরণকারী একটি দল থাকে। হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমরাও আপনার অনুসরণ করেছি। আপনি আল্লাহ্‌র নিকট দু’আ করুন যেন আমাদের উত্তরসুরিরা আমাদের অনুসারী হয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আল্লাহ্ তাঁদের উত্তরসুরীদেরকে তাদের মত করে দাও। আমর (রহঃ) বলেন, আমি হাদীসটি ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু আবূ লায়লা (রাঃ) - কে বললাম। তিনি বললেন, যায়দও এইভাবে হাদীসটি বলেছেন। শু’বা (রহঃ) বলেন, আমার ধারণা, ইনি যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ)-ই হবেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫০৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১৪)

৬৩/. অধ্যায়ঃ

আনসার গোত্রসমূহের মর্যাদা।

৩৭৮৯

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِيْ أُسَيْدٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَيْرُ دُوْرِ الأَنْصَارِ بَنُو النَّجَّارِ ثُمَّ بَنُوْ عَبْدِ الأَشْهَلِ ثُمَّ بَنُو الْحَارِثِ بْنِ خَزْرَجٍ ثُمَّ بَنُوْ سَاعِدَةَ وَفِيْ كُلِّ دُوْرِ الأَنْصَارِ خَيْرٌ فَقَالَ سَعْدٌ مَا أَرَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم إِلَّا قَدْ فَضَّلَ عَلَيْنَا فَقِيْلَ قَدْ فَضَّلَكُمْ عَلَى كَثِيْرٍ وَقَالَ عَبْدُ الصَّمَدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ سَمِعْتُ أَنَسًا قَالَ أَبُوْ أُسَيْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا وَقَالَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ
আবূ উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সবচেয়ে উত্তম গোত্র হল বানূ নাজ্জার, তারপর বানূ আবদুল আশহাল তারপর বানূ হারিস ইব্‌নু খাযরাজ তারপর বানূ সায়িদা এবং আনসারদের সকল গোত্রের মধ্যেই কল্যাণ রয়েছে। এ শুনে সা’দ (রাঃ) বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি অন্যদেরকে আমাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন? তখন তাকে বলা হল, তোমাদেরকে তো অনেক গোত্রের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। আবদুল ওয়ারিস (রহঃ)... আবূ উসাউদ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ রকমই বর্ণিত আছে। আর সা’দ ইব্‌নু ‘উবাদাহ (রাঃ) বলেছেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫০৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১৫)

৩৭৯০

حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ حَفْصٍ الطَّلْحِيُّ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيَى قَالَ أَبُوْ سَلَمَةَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ أُسَيْدٍ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ خَيْرُ الأَنْصَارِ أَوْ قَالَ خَيْرُ دُوْرِ الأَنْصَارِ بَنُو النَّجَّارِ وَبَنُوْ عَبْدِ الأَشْهَلِ وَبَنُو الْحَارِثِ وَبَنُوْ سَاعِدَةَ
আবূ উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আনসারদের মধ্যে বা আনসার গোত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম গোত্র হল বানূ নাজ্জার, বানূ আবদুল আশহাল, বানূ হারিস ও বানূ সা’য়িদা।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫০৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১৬)

৩৭৯১

حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ يَحْيَى عَنْ عَبَّاسِ بْنِ سَهْلٍ عَنْ أَبِيْ حُمَيْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ خَيْرَ دُوْرِ الأَنْصَارِ دَارُ بَنِي النَّجَّارِ ثُمَّ عَبْدِ الأَشْهَلِ ثُمَّ دَارُ بَنِي الْحَارِثِ ثُمَّ بَنِيْ سَاعِدَةَ وَفِيْ كُلِّ دُوْرِ الأَنْصَارِ خَيْرٌ فَلَحِقَنَا سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ فَقَالَ أَبَا أُسَيْدٍ أَلَمْ تَرَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ خَيَّرَ الأَنْصَارَ فَجَعَلَنَا أَخِيْرًا فَأَدْرَكَ سَعْدٌ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ خُيِّرَ دُوْرُ الأَنْصَارِ فَجُعِلْنَا آخِرًا فَقَالَ أَوَلَيْسَ بِحَسْبِكُمْ أَنْ تَكُوْنُوْا مِنْ الْخِيَارِ
আবূ হুমায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুমায়দ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনসারদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম গোত্র হল বানূ নাজ্জার, তারপর বানূ আবদুল আশহাল, তারপর বানূ হারিস এরপর বানূ সা’য়িদা। আনসারদের সকল গোত্রে রয়েছে কল্যাণ। (আবূ হুমায়দ (রহঃ) বলেন,) আমরা সা’দ ইব্‌নু ‘উবাদাহ (রাঃ) - এর নিকট গেলাম। তখন আবূ উসায়দ (রাঃ) বললেন, আপনি কি শোনেননি যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের পরস্পরের শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে আমাদের সকলের শেষ পর্যায়ে স্থান দিয়েছেন? তা শুনে সা’দ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আনসার গোত্রগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে এবং আমাদেরকে সকলের শেষ স্তরে স্থান দেয়া হয়েছে। তিনি বললেন, এটা কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, তোমরাও শ্রেষ্ঠদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছ?
(মুসলিম, ৪৩/৩ হাঃ নং ১৩৯২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫০৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১৭)

৬৩/. অধ্যায়ঃ

আনসারগণের ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর উক্তিঃ তোমরা ধৈর্য অবলম্বন করবে যে পর্যন্ত না তোমরা হাওয কাউসারে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ কর।
হাদীসটি ‘আব্দুল্লাহ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।

৩৭৯২

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أُسَيْدِ بْنِ حُضَيْرٍ أَنَّ رَجُلًا مِنْ الأَنْصَارِ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَا تَسْتَعْمِلُنِيْ كَمَا اسْتَعْمَلْتَ فُلَانًا قَالَ سَتَلْقَوْنَ بَعْدِيْ أُثْرَةً فَاصْبِرُوْا حَتَّى تَلْقَوْنِيْ عَلَى الْحَوْضِ
উসায়দ ইব্‌নু হুযায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একজন আনসারী বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল, আপনি কি আমাকে অমুকের ন্যায় দায়িত্বে নিয়োজিত করবেন না? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা আমার ওফাতের পর অপরকে অগ্রাধিকার দেওয়া দেখতে পাবে, তখন তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে অবশেষে আমার সাথে সাক্ষাত করবে এবং তোমাদের সাথে সাক্ষাত স্থান হল হাউয।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫১০/৩৫১১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১৮)

৩৭৯৩

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ هِشَامٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلأَنْصَارِ إِنَّكُمْ سَتَلْقَوْنَ بَعْدِيْ أَثَرَةً فَاصْبِرُوْا حَتَّى تَلْقَوْنِيْ وَمَوْعِدُكُمْ الْحَوْضُ
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা অচিরেই আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। অতএব তোমরা আমার সাথে সাক্ষাৎ হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ কর প্রতিশ্রুত হাউযের নিকট গমন পর্যন্ত।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ নাই, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ নাই)

৩৭৯৪

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ حِيْنَ خَرَجَ مَعَهُ إِلَى الْوَلِيْدِ قَالَ دَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الأَنْصَارَ إِلَى أَنْ يُقْطِعَ لَهُمْ الْبَحْرَيْنِ فَقَالُوْا لَا إِلَّا أَنْ تُقْطِعَ لِإِخْوَانِنَا مِنْ الْمُهَاجِرِيْنَ مِثْلَهَا قَالَ إِمَّا لَا فَاصْبِرُوْا حَتَّى تَلْقَوْنِيْ فَإِنَّهُ سَيُصِيْبُكُمْ بَعْدِيْ أَثَرَةٌ
ইয়াহ্‌ইয়া ইব্‌নু সাঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি যখন আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ)-এর সঙ্গে ওয়ালিদ (ইব্‌নু ‘আবদুল মালিক)-এর নিকট সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে বাসরা হতে দামেস্কে সফর করতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি আনাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাহ্‌রাইনের জমি তাদের জন্য বরাদ্দ করার জন্য আনসারদেরকে ডাকলে তারা বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসুল! আমাদের মুহাজির ভাইদের জন্য এরূপ জায়গার বরাদ্দ না করা পর্যন্ত আমরা তা গ্রহণ করব না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা যদি তা গ্রহণ করতে না চাও, তবে (ক্বিয়ামতের ময়দানে) হাউযের নিকটে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য অবলম্বন কর। কেননা শীঘ্রই তোমরা দেখতে পাবে, আমার পরে তোমাদের উপর অন্যদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫১২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১৯)

৬৩/. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর দু’আ- হে আল্লাহ্! আনসার ও মুহাজিরগণের কল্যান কর।

৩৭৯৫

حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِيَاسٍ مُعَاوِيَةُ بْنُ قُرَّةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا عَيْشَ إِلَّا عَيْشُ الْآخِرَةِ فَأَصْلِحْ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَةَ وَعَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ وَقَالَ فَاغْفِرْ لِلأَنْصَارِ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, হে আল্লাহ্‌! আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। হে আল্লাহ্‌! আনসার ও মুহাজিরগণের কল্যান করুন। (২৮৩৪)
কাতাদাহ (রহঃ) আনাস (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ রকম বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, হে আল্লাহ্‌! আনসারকে মাফ করে দিন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫১৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫২০)

৩৭৯৬

حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيْلِ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ كَانَتْ الأَنْصَارُ يَوْمَ الْخَنْدَقِ تَقُوْلُ نَحْنُ الَّذِيْنَ بَايَعُوْا مُحَمَّدَا عَلَى الْجِهَادِ مَا حَيِيْنَا أَبَدَا فَأَجَابَهُمْ اللَّهُمَّ لَا عَيْشَ إِلَّا عَيْشُ الْآخِرَهْ فَأَكْرِمْ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَهْ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনসারগণ খন্দক যুদ্ধের পরিখা খননের সময় বলেছিলেন, আমরা হলাম ঐ সমস্ত লোক যারা মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর হাতে জিহাদের জন্য বায়’আত করেছি যত দিন আমরা বেঁচে থাকব। এর উত্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আল্লাহ্‌! আখিরাতের জীবনই আসল জীবন। (হে আল্লাহ্‌) আনসার ও মুহাজিরদের সম্মান বাড়িয়ে দাও।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫১৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫২১)

৩৭৯৭

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ سَهْلٍ قَالَ جَاءَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ نَحْفِرُ الْخَنْدَقَ وَنَنْقُلُ التُّرَابَ عَلَى أَكْتَادِنَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اللَّهُمَّ لَا عَيْشَ إِلَّا عَيْشُ الْآخِرَهْ فَاغْفِرْ لِلْمُهَاجِرِيْنَ وَالأَنْصَارِ
সাহ্‌ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা যখন পরিখা খনন করে আমাদের স্কন্ধে করে মাটি বহন করছিলাম, তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহ্‌! আখিরাতের জীবনই আসল জীবন। মুহাজির ও আনসারদের আপনি মাফ করে দিন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫১৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫২২)

৬৩/১০. অধ্যায়ঃ

(আল্লাহ্‌র বাণী): আর তারা (আনসারগণ) নিজেরা অসচ্ছল হওয়া সত্ত্বেও অন্যদেরকে নিজেদের উপর প্রাধান্য দেয়। (আল-হাশর ৯)

৩৭৯৮

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ دَاوُدَ عَنْ فُضَيْلِ بْنِ غَزْوَانَ عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَبَعَثَ إِلَى نِسَائِهِ فَقُلْنَ مَا مَعَنَا إِلَّا الْمَاءُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ يَضُمُّ أَوْ يُضِيْفُ هَذَا فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ الأَنْصَارِ أَنَا فَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى امْرَأَتِهِ فَقَالَ أَكْرِمِيْ ضَيْفَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ مَا عِنْدَنَا إِلَّا قُوْتُ صِبْيَانِيْ فَقَالَ هَيِّئِيْ طَعَامَكِ وَأَصْبِحِيْ سِرَاجَكِ وَنَوِّمِيْ صِبْيَانَكِ إِذَا أَرَادُوْا عَشَاءً فَهَيَّأَتْ طَعَامَهَا وَأَصْبَحَتْ سِرَاجَهَا وَنَوَّمَتْ صِبْيَانَهَا ثُمَّ قَامَتْ كَأَنَّهَا تُصْلِحُ سِرَاجَهَا فَأَطْفَأَتْهُ فَجَعَلَا يُرِيَانِهِ أَنَّهُمَا يَأْكُلَانِ فَبَاتَا طَاوِيَيْنِ فَلَمَّا أَصْبَحَ غَدَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ضَحِكَ اللهُ اللَّيْلَةَ أَوْ عَجِبَ مِنْ فَعَالِكُمَا فَأَنْزَلَ اللهُ وَيُؤْثِرُوْنَ عَلٰى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَنْ يُّوْقَ شُحَّ نَفْسِهٰ فَأُوْلٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ (الحشر : 9)
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর খেদমতে এল। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের কাছে লোক পাঠালেন। তাঁরা জানালেন, আমাদের নিকট পানি ছাড়া কিছুই নেই। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কে আছ যে এই ব্যক্তিকে মেহমান হিসেবে নিয়ে নিজের সাথে খাওয়াতে পার? তখন এক আনসারী সাহাবী [আবূ ত্বলহা (রাঃ)] বললেন, আমি। এ বলে তিনি মেহমানকে নিয়ে গেলেন এবং স্ত্রীকে বললেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর মেহমানকে সম্মান কর। স্ত্রী বললেন, বাচ্চাদের খাবার ছাড়া আমাদের ঘরে অন্য কিছুই নেই। আনসারী বললেন, তুমি আহার প্রস্তুত কর এবং বাতি জ্বালাও এবং বাচ্চারা খাবার চাইলে তাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে দাও। সে বাতি জ্বালাল, বাচ্চাদেরকে ঘুম পাড়াল এবং সামান্য খাবার যা তৈরী ছিল তা উপস্থিত করল। বাতি ঠিক করার বাহানা করে স্ত্রী উঠে গিয়ে বাতিটি নিভিয়ে দিলেন। তারপর তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জনই অন্ধকারের মধ্যে আহার করার মত শব্দ করতে লাগলেন এবং মেহমানকে বুঝাতে লাগলেন যে, তারাও সঙ্গে খাচ্ছেন। তাঁরা উভয়েই সারা রাত অভুক্ত অবস্থায় কাটালেন। ভোরে যখন তিনি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট গেলেন, তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্‌ তোমাদের গত রাতের কান্ড দেখে হেসে দিয়েছেন অথবা বলেছেন খুশী হয়েছেন এবং এ আয়াত নাযিল করেছেন। “তারা অভাবগ্রস্ত সত্ত্বেও নিজেদের উপর অন্যদেরকে অগ্রগণ্য করে থাকে। আর যাদেরকে অন্তরের কৃপণতা হতে মুক্ত রাখা হয়েছে, তারাই সফলতাপ্রাপ্ত।”
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫১৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫২৩)

৬৩/১১. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর উক্তিঃ তাদের (আনসারদের) সৎকর্মশীলদের পক্ষ হতে (সৎ কার্য) কবূল কর, এবং তাদের ভুল-ভ্রান্তিকারীদের ক্ষমা করে দাও।

৩৭৯৯

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى أَبُوْ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا شَاذَانُ أَخُوْ عَبْدَانَ حَدَّثَنَا أَبِيْ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ بْنُ الْحَجَّاجِ عَنْ هِشَامِ بْنِ زَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ مَرَّ أَبُوْ بَكْرٍ وَالْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا بِمَجْلِسٍ مِنْ مَجَالِسِ الأَنْصَارِ وَهُمْ يَبْكُوْنَ فَقَالَ مَا يُبْكِيكُمْ قَالُوْا ذَكَرْنَا مَجْلِسَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنَّا فَدَخَلَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَهُ بِذَلِكَ قَالَ فَخَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ عَصَبَ عَلَى رَأْسِهِ حَاشِيَةَ بُرْدٍ قَالَ فَصَعِدَ الْمِنْبَرَ وَلَمْ يَصْعَدْهُ بَعْدَ ذَلِكَ الْيَوْمِ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ أُوصِيكُمْ بِالأَنْصَارِ فَإِنَّهُمْ كَرِشِيْ وَعَيْبَتِيْ وَقَدْ قَضَوْا الَّذِيْ عَلَيْهِمْ وَبَقِيَ الَّذِيْ لَهُمْ فَاقْبَلُوْا مِنْ مُحْسِنِهِمْ وَتَجَاوَزُوْا عَنْ مُسِيئِهِمْ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন অন্তিম রোগে আক্রান্ত তখন আবূ বক্‌র ও ‘আব্বাস (রাঃ) আনসারদের কোন একটি মজলিসের পাশ দিয়ে যাওয়ার কালে দেখতে পেলেন যে, তারা কাঁদছেন। তাঁদের একজন জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা কাঁদছেন কেন? তাঁরা বললেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সাথে মজলিস স্মরণ করে কাঁদছি। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট এসে আনসারদের অবস্থা বললেন, রাবী (বর্ণনাকারী) বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাদরের কোণা দিয়ে মাথা বেঁধে বেরিয়ে আসলেন এবং মিম্বরে উঠে বসলেন। এ দিনের পর আর তিনি মিম্বরে আরোহণ করেননি। তারপর হামদ ও সানা পাঠ করে সমবেত সাহাবীদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি আনসারগণের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখার জন্য তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছি; কেননা তাঁরাই আমার অতি আপন জন, তাঁরাই আমার বিশ্বস্ত লোক। তারা তাঁদের উপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পরিপূর্ণভাবে পালন করেছে। তাঁদের যা প্রাপ্য তা তাঁরা এখনও পায়নি। তাঁদের নেক লোকদের নেক ‘আমালগুলো গ্রহণ করবে এবং তাঁদের ভুল-ত্রুটি মাফ করে দিবে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫১৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫২৪)

৩৮০০

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يَعْقُوْبَ حَدَّثَنَا ابْنُ الْغَسِيْلِ سَمِعْتُ عِكْرِمَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَعَلَيْهِ مِلْحَفَةٌ مُتَعَطِّفًا بِهَا عَلَى مَنْكِبَيْهِ وَعَلَيْهِ عِصَابَةٌ دَسْمَاءُ حَتَّى جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ أَيُّهَا النَّاسُ فَإِنَّ النَّاسَ يَكْثُرُوْنَ وَتَقِلُّ الأَنْصَارُ حَتَّى يَكُوْنُوْا كَالْمِلْحِ فِي الطَّعَامِ فَمَنْ وَلِيَ مِنْكُمْ أَمْرًا يَضُرُّ فِيْهِ أَحَدًا أَوْ يَنْفَعُهُ فَلْيَقْبَلْ مِنْ مُحْسِنِهِمْ وَيَتَجَاوَزْ عَنْ مُسِيئِهِمْ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি চাদর গায়ে জড়িয়ে, চাদরের দু-প্রান্ত দু’কাধে পেঁচিয়ে এবং মাথায় একটি কাল রঙের পাগড়ী বেঁধে বের হলেন এবং মিম্বরে উঠে বসলেন। হাম্‌দ ও সানার পর বললেন, হে লোক সকল, জনসংখ্যা ক্রমশঃ বাড়তে থাকবে আর আনসারগণের সংখ্যা ক্রমশঃ কমতে থাকবে! এমনকি তারা খাবারে লবণের পরিমাণের মত হয়ে যাবে। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ এমন ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব লাভ করে যে ইচ্ছা করলে কারো উপকার বা অপকার করতে পারে, তখন সে যেন নেক্‌কার আনসারদের নেক্‌ ‘আমালগুলো গ্রহণ করে এবং তাদের ভুল-ত্রুটি মাফ করে দেয়।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫১৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫২৫)

৩৮০১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الأَنْصَارُ كَرِشِيْ وَعَيْبَتِيْ وَالنَّاسُ سَيَكْثُرُوْنَ وَيَقِلُّوْنَ فَاقْبَلُوْا مِنْ مُحْسِنِهِمْ وَتَجَاوَزُوْا عَنْ مُسِيئِهِمْ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আনসারগণ আমার অতি আপনজন ও বিশ্বস্ত লোক। লোকসংখ্যা বাড়তে থাকবে আর তাদের সংখ্যা কমতে থাকবে। তাই তাদের নেক্‌কারদের নেক ‘আমালগুলো কবূল কর এবং তাদের ভুল-ত্রুটি মাফ করে দাও।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫১৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫২৬)

৬৩/১২. অধ্যায়ঃ

সা’দ ইব্‌নু মু’আয (রাঃ) - এর মর্যাদা।

৩৮০২

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ يَقُوْلُ أُهْدِيَتْ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حُلَّةُ حَرِيْرٍ فَجَعَلَ أَصْحَابُهُ يَمَسُّوْنَهَا وَيَعْجَبُوْنَ مِنْ لِيْنِهَا فَقَالَ أَتَعْجَبُوْنَ مِنْ لِيْنِ هَذِهِ لَمَنَادِيْلُ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ خَيْرٌ مِنْهَا أَوْ أَلْيَنُ رَوَاهُ قَتَادَةُ وَالزُّهْرِيُّ سَمِعَا أَنَسًا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে এক জোড়া রেশমী কাপড় হাদীয়া দেয়া হল। সহাবায়ে কেরাম (রাঃ) তা স্পর্শ করে এর কোমলতায় অবাক হয়ে গেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এর কোমলতায় তোমরা অবাক হচ্ছ? অথচ সা’দ ইব্‌নু মু’আয (রাঃ)- এর (জান্নাতের) রুমাল এর চেয়ে অনেক উত্তম, অথবা বলেছেন অনেক মোলায়েম। হাদীসটি ক্বাতাদাহ্‌ ও যুহরী (রহঃ) আনাস (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫২০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫২৭)

৩৮০৩

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জাবির (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে বলতে শুনেছি সা’দ ইব্‌নু মু’আয (রাঃ) - এর মৃত্যুতে আল্লাহ্‌ তা’আলার আরশ কেঁপে উঠেছিল। আমাশ (রহঃ)......নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ রকমই বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি জাবির (রাঃ) - কে বলল, বারা ইব্‌নু আযিব (রাঃ) তো বলেন, জানাযার খাট নড়েছিল। তদুত্তরে জাবির (রাঃ) বললেন, সা’দ ও বারা (রাঃ) - এর গোত্রদ্বয়ের মধ্যে কিছুটা বিরোধ ছিল, কেননা আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে “আল্লাহ্‌র আর্‌শ সা’দ ইব্‌নু মু’আযের (ওফাতে) কেঁপে উঠল” (কথাটি) বলতে শুনেছি।

৩৮০৪

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ أَبِيْ أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ أُنَاسًا نَزَلُوْا عَلَى حُكْمِ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ فَجَاءَ عَلَى حِمَارٍ فَلَمَّا بَلَغَ قَرِيْبًا مِنْ الْمَسْجِدِ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قُومُوْا إِلَى خَيْرِكُمْ أَوْ سَيِّدِكُمْ فَقَالَ يَا سَعْدُ إِنَّ هَؤُلَاءِ نَزَلُوْا عَلَى حُكْمِكَ قَالَ فَإِنِّيْ أَحْكُمُ فِيْهِمْ أَنْ تُقْتَلَ مُقَاتِلَتُهُمْ وَتُسْبَى ذَرَارِيُّهُمْ قَالَ حَكَمْتَ بِحُكْمِ اللهِ أَوْ بِحُكْمِ الْمَلِكِ
আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কতিপয় লোক (বনী কুরায়যার ইয়াহূদীগণ) সা’দ ইব্‌নু মু’আয (রাঃ) - কে সালিশ মেনে (দুর্গ থেকে) নেমে আসে। তাঁকে নিয়ে আসার জন্য লোক পাঠানো হল। তিনি গাধায় সাওয়ার হয়ে আসলেন। যখন মসজিদের নিকটে আসলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তি অথবা (বললেন) তোমাদের সরদার আসছেন তাঁর দিকে দাঁড়াও। তারপর তিনি বললেন, হে সা’দ! তারা তোমাকে সালিশ মেনে বেরিয়ে এসেছে। সা’দ (রাঃ) বললেন, আমি তাদের সম্পর্কে এ ফয়সালা দিচ্ছি যে, তাদের যোদ্ধাদেরকে হত্যা করা হোক এবং শিশু ও মহিলাদেরকে বন্দী করে রাখা হোক। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি আল্লাহ্‌ তা’আলার ফায়সালা মোতাবেক ফায়সালা দিয়েছ অথবা (বলেছিলেন) তুমি বাদশাহ্‌র অর্থাৎ আল্লাহ্‌র ফায়সালা অনুযায়ী ফায়সালা করেছ।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫২২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫২৯)

৬৩/১৩. অধ্যায়ঃ

উসায়দ ইব্‌নু হুযায়র ও আব্বাদ ইব্‌নু বিশ্‌র (রাঃ) - এর মর্যাদা।

৩৮০৫

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا حَبَّانُ بْنُ هِلَالٍ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ أَخْبَرَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَجُلَيْنِ خَرَجَا مِنْ عِنْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ لَيْلَةٍ مُظْلِمَةٍ وَإِذَا نُوْرٌ بَيْنَ أَيْدِيْهِمَا حَتَّى تَفَرَّقَا فَتَفَرَّقَ النُّوْرُ مَعَهُمَا وَقَالَ مَعْمَرٌ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ إِنَّ أُسَيْدَ بْنَ حُضَيْرٍ وَرَجُلًا مِنْ الأَنْصَارِ وَقَالَ حَمَّادٌ أَخْبَرَنَا ثَابِتٌ عَنْ أَنَسٍ كَانَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ وَعَبَّادُ بْنُ بِشْرٍ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
দু’ ব্যক্তি অন্ধকার রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট হতে বের হলেন। হঠাৎ তারা তাদের সম্মুখে একটি উজ্জ্বল আলো দেখতে পেলেন। রাস্তায় তাঁরা যখন আলাদা হলেন তখন আলোটিও তাঁদের উভয়ের সাথে আলাদা আলাদা হয়ে গেল। মা’মার (রহঃ) সাবিত এর মাধ্যমে আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, এদের একজন উসায়দ ইব্‌নু হুযায়র (রাঃ) এবং অন্যজন এক আনসারী ব্যক্তি ছিলেন এবং হাম্মাদ (রহঃ) সাবিত (রহঃ)- এর মাধ্যমে আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, উসায়দ (ইব্‌নু হুযায়র) ও আব্বাদ ইব্‌নু বিশ্‌র (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট ছিলেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫২৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৩০)

৬৩/১৪. অধ্যায়ঃ

মু’আয ইব্‌নু জাবাল (রাঃ) - এর মর্যাদা।

৩৮০৬

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ اسْتَقْرِئُوْا الْقُرْآنَ مِنْ أَرْبَعَةٍ مِنْ ابْنِ مَسْعُوْدٍ وَسَالِمٍ مَوْلَى أَبِيْ حُذَيْفَةَ وَأُبَيٍّ وَمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ
আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছি যে, কুরআন পাঠ শিখ চার জনের নিকট হতেঃ ইব্‌নু মাসউদ, আবূ হুযাইফার আযাদকৃত গোলাম সালিম, উবাই (ইব্‌নু কা’ব) ও মু’আয ইব্‌নু জাবাল (রাঃ) থেকে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫২৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৩১)

৬৩/১৫. অধ্যায়ঃ

সা’দ ইব্‌নু ‘উবাদাহ (রাঃ) - এর মর্যাদা।
‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, তিনি এর পূর্বে নেক লোক ছিলেন।

৩৮০৭

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ أَبُوْ أُسَيْدٍ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَيْرُ دُوْرِ الأَنْصَارِ بَنُو النَّجَّارِ ثُمَّ بَنُوْ عَبْدِ الأَشْهَلِ ثُمَّ بَنُو الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ ثُمَّ بَنُوْ سَاعِدَةَ وَفِيْ كُلِّ دُوْرِ الأَنْصَارِ خَيْرٌ فَقَالَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ وَكَانَ ذَا قِدَمٍ فِي الْإِسْلَامِ أَرَى رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ فَضَّلَ عَلَيْنَا فَقِيْلَ لَهُ قَدْ فَضَّلَكُمْ عَلَى نَاسٍ كَثِيْرٍ
আবূ উসাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আনসার গোত্রগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠতম গোত্র হল, বানু নাজ্জার, তারপর বানু ‘আবদ-ই-আশহাল, তারপর বানু হারিস ইব্‌নু খাযরাজ তারপর বানু সায়িদাহ। আনসারদের সব গোত্রের মধ্যেই কল্যাণ রয়েছে। তখন সা‘দ ইব্‌নু ‘উবাদাহ (রাঃ) যিনি ছিলেন প্রথম যুগের অন্যতম মুসলমান বললেন, আমার ধারণা যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্যদেরকে আমাদের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন, তাঁকে বলা হল, আপনাদেরকে বহু গোত্রের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫২৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৩২)

৬৩/১৬. অধ্যায়ঃ

উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) - এর মর্যাদা।

৩৮০৮

حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ مَسْرُوقٍ قَالَ ذُكِرَ عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْعُوْدٍ عِنْدَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو فَقَالَ ذَاكَ رَجُلٌ لَا أَزَالُ أُحِبُّهُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ خُذُوْا الْقُرْآنَ مِنْ أَرْبَعَةٍ مِنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ فَبَدَأَ بِهِ وَسَالِمٍ مَوْلَى أَبِيْ حُذَيْفَةَ وَمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ وَأُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ
মাসরূক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আমর (রাঃ) - এর মজলিসে ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ) – এর আলোচনা হচ্ছিল। তখন তিনি বললেন; তিনি সে ব্যক্তি যাঁকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর বক্তব্য শুনার পর হতে আমি খুব ভালবাসি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কুরআন শিক্ষা কর চারজনের নিকট থেকে, ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস‘উদ (সর্ব প্রথম তিনি এ নামটি বললেন), সালিম- আবূ হুযাইফার আযাদকৃত গোলাম, মু‘আয ইব্‌নু জাবাল ও উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ)।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫২৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৩৩)

৩৮০৯

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ قَالَ سَمِعْتُ شُعْبَةَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِأُبَيٍّ إِنَّ اللهَ أَمَرَنِيْ أَنْ أَقْرَأَ عَلَيْكَ لَمْ يَكُنِ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ قَالَ وَسَمَّانِيْ قَالَ نَعَمْ فَبَكَى
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) - কে বললেন, আল্লাহ "সূরা لَمْ يَكُنِ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ " তোমাকে পড়ে শুনানোর জন্য আমাকে আদেশ করেছেন। উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন আল্লাহ কি আমার নাম করেছেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হাঁ। তখন তিনি কেঁদে ফেললেন। (৪৯৫৯, ৪৯৬০, ৪৯৬১, মুসলিম ৬/৩৯, হাঃ নং ৭৯৯, আহমাদ ২১১৯৪
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫২৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৩৪)

৬৩/১৭. অধ্যায়ঃ

যায়দ ইব্‌নু সাবিত (রাঃ) - এর মর্যাদা।

৩৮১০

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ جَمَعَ الْقُرْآنَ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَرْبَعَةٌ كُلُّهُمْ مِنْ الأَنْصَارِ أُبَيٌّ وَمُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ وَأَبُوْ زَيْدٍ وَزَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ قُلْتُ لِأَنَسٍ مَنْ أَبُوْ زَيْدٍ قَالَ أَحَدُ عُمُومَتِي
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর যুগে (সর্বপ্রথম) যে চার ব্যক্তি সম্পূর্ণ কুরআন হিফয করেছিলেন, তাঁরা সকলেই ছিলেন আনসারী। (তাঁরা হলেন) উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ), মু‘আয ইব্‌নু জাবাল (রাঃ), আবূ যায়দ (রাঃ) ও যায়দ ইব্‌নু সাবিত (রাঃ)। কাতাদাহ্‌ (রাঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) - কে জিজ্ঞেস করলাম, আবূ যায়দ কে? তিনি বললেন, তিনি আমার চাচাদের একজন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫২৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৩৫)

৬৩/১৮. অধ্যায়ঃ

আবূ ত্বলহা (রাঃ) - এর মর্যাদা।

৩৮১১

حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ انْهَزَمَ النَّاسُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبُوْ طَلْحَةَ بَيْنَ يَدَيْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُجَوِّبٌ بِهِ عَلَيْهِ بِحَجَفَةٍ لَهُ وَكَانَ أَبُوْ طَلْحَةَ رَجُلًا رَامِيًا شَدِيْدَ الْقِدِّ يَكْسِرُ يَوْمَئِذٍ قَوْسَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا وَكَانَ الرَّجُلُ يَمُرُّ مَعَهُ الْجَعْبَةُ مِنْ النَّبْلِ فَيَقُوْلُ انْشُرْهَا لِأَبِيْ طَلْحَةَ فَأَشْرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَنْظُرُ إِلَى الْقَوْمِ فَيَقُوْلُ أَبُوْ طَلْحَةَ يَا نَبِيَّ اللهِ بِأَبِيْ أَنْتَ وَأُمِّيْ لَا تُشْرِفْ يُصِيْبُكَ سَهْمٌ مِنْ سِهَامِ الْقَوْمِ نَحْرِيْ دُوْنَ نَحْرِكَ وَلَقَدْ رَأَيْتُ عَائِشَةَ بِنْتَ أَبِيْ بَكْرٍ وَأُمَّ سُلَيْمٍ وَإِنَّهُمَا لَمُشَمِّرَتَانِ أَرَى خَدَمَ سُوقِهِمَا تُنْقِزَانِ الْقِرَبَ عَلَى مُتُوْنِهِمَا تُفْرِغَانِهِ فِيْ أَفْوَاهِ الْقَوْمِ ثُمَّ تَرْجِعَانِ فَتَمْلَانِهَا ثُمَّ تَجِيئَانِ فَتُفْرِغَانِهِ فِيْ أَفْوَاهِ الْقَوْمِ وَلَقَدْ وَقَعَ السَّيْفُ مِنْ يَدَيْ أَبِيْ طَلْحَةَ إِمَّا مَرَّتَيْنِ وَإِمَّا ثَلَاثًا
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ওহুদ যুদ্ধের এক সময়ে সহাবাগণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আলাদা হয়ে পড়েছিলেন। তখন আবূ ত্বলহা (রাঃ) ঢাল হাতে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সামনে প্রাচীরের মত দৃঢ় হয়ে দাঁড়ালেন। আবূ ত্বলহা (রাঃ) সুদক্ষ তীরন্দাজ ছিলেন। এক নাগাড়ে তীর ছুঁড়তে থাকায় তাঁর হাতে ঐদিন দু’ বা তিনটি ধনুক ভেঙ্গে যায়। ঐ সময় তীর ভর্তি তীরাধার নিয়ে যে কেউ তাঁর নিকট দিয়ে যেতো নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকেই বলতেন, তোমরা তীরগুলি আবূ ত্বলহার জন্য রেখে দাও। এক সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা উঁচু করে শত্রুদের অবস্থা দেখতে চাইলে আবূ ত্বলহা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র নবী! আমার মাতা পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনি মাথা উঁচু করবেন না। হয়ত শত্রুদের নিক্ষিপ্ত তীর এসে আপনার গায়ে লাগতে পারে। আমার বক্ষ আপনাকে রক্ষার জন্য ঢাল স্বরূপ। আনাস (রাঃ) বলেন, ঐদিন আমি আবূ বকর (রাঃ) - এর কন্যা ‘আয়িশা (রাঃ) - কে এবং (আমার মাতা) উম্মে সুলায়মকে দেখতে পেলাম যে, তাঁরা পরনের কাপড় এতটুকু পরিমাণ উঠিয়েছেন যে, তাঁদের পায়ের খাঁড়ু আমি দেখতে পাচ্ছিলাম। তাঁরা পানির মশক ভরে নিজেদের পিঠে বহন করে এনে আহতদের মুখে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন। পুনরায় ফিরে গিয়ে পানি ভরে নিয়ে আহতদেরকে পান করাচ্ছিলেন। ঐ সময় আবূ ত্বলহা (রাঃ) - এর হাত হতে (তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে) তাঁর তরবারিটি দু’বার অথবা তিনবার পড়ে গিয়েছিল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫২৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৩৬)

৬৩/১৯. অধ্যায়ঃ

আবদুল্লাহ ইব্‌নু সালাম (রাঃ) - এর মর্যাদা।

৩৮১২

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ قَالَ سَمِعْتُ مَالِكًا يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِيْ وَقَّاصٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ مَا سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ لِأَحَدٍ يَمْشِيْ عَلَى الأَرْضِ إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ إِلَّا لِعَبْدِ اللهِ بْنِ سَلَامٍ قَالَ وَفِيْهِ نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِنْ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ عَلَى مِثْلِهِ الْآيَةَ قَالَ لَا أَدْرِيْ قَالَ مَالِكٌ الْآيَةَ أَوْ فِي الْحَدِيْثِ
সা‘দ ইব্‌নু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে আবদুল্লাহ ইব্‌নু সালাম (রাঃ) ছাড়া যমীনে বিচরণশীল কারো ব্যাপারে এ কথাটি বলতে শুনিনি যে, “নিশ্চয়ই তিনি জান্নাতবাসী’। সা‘দ (রাঃ) বলেন, তাঁরই ব্যাপারে সুরাহ আহকাফের এ আয়াত নাযিল হয়েছেঃ “এ ব্যাপারে বনী ইসরাঈলের মধ্য থেকেও একজন সাক্ষ্য দান করেছে। (উক্ত হাদীসের শুরুতে উল্লেখিত সানাদে ইমাম বুখারীর উস্তাজ) ‘আবদুল্লাহ বিন ইউসুফ (সন্দেহ পোষণ করে) বলেন যে, বর্ণনাকারী মালিক উল্লেখিত আয়াতটি নিজের তরফ হতে এখানে বৃদ্ধি করে বলেছেন নাকি এ হাদীসের সানাদের সাথেই সম্পৃক্ত তা জানি না।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৩৭)

৩৮১৩

حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا أَزْهَرُ السَّمَّانُ عَنْ ابْنِ عَوْنٍ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ قَالَ كُنْتُ جَالِسًا فِيْ مَسْجِدِ الْمَدِيْنَةِ فَدَخَلَ رَجُلٌ عَلَى وَجْهِهِ أَثَرُ الْخُشُوعِ فَقَالُوْا هَذَا رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ تَجَوَّزَ فِيْهِمَا ثُمَّ خَرَجَ وَتَبِعْتُهُ فَقُلْتُ إِنَّكَ حِيْنَ دَخَلْتَ الْمَسْجِدَ قَالُوْا هَذَا رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ قَالَ وَاللهِ مَا يَنْبَغِيْ لِأَحَدٍ أَنْ يَقُوْلَ مَا لَا يَعْلَمُ وَسَأُحَدِّثُكَ لِمَ ذَاكَ رَأَيْتُ رُؤْيَا عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَصَصْتُهَا عَلَيْهِ وَرَأَيْتُ كَأَنِّيْ فِيْ رَوْضَةٍ ذَكَرَ مِنْ سَعَتِهَا وَخُضْرَتِهَا وَسْطَهَا عَمُوْدٌ مِنْ حَدِيْدٍ أَسْفَلُهُ فِي الأَرْضِ وَأَعْلَاهُ فِي السَّمَاءِ فِيْ أَعْلَاهُ عُرْوَةٌ فَقِيْلَ لِيْ ارْقَ قُلْتُ لَا أَسْتَطِيْعُ فَأَتَانِيْ مِنْصَفٌ فَرَفَعَ ثِيَابِيْ مِنْ خَلْفِيْ فَرَقِيْتُ حَتَّى كُنْتُ فِيْ أَعْلَاهَا فَأَخَذْتُ بِالْعُرْوَةِ فَقِيْلَ لَهُ اسْتَمْسِكْ فَاسْتَيْقَظْتُ وَإِنَّهَا لَفِيْ يَدِيْ فَقَصَصْتُهَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ تِلْكَ الرَّوْضَةُ الْإِسْلَامُ وَذَلِكَ الْعَمُوْدُ عَمُوْدُ الْإِسْلَامِ وَتِلْكَ الْعُرْوَةُ عُرْوَةُ الْوُثْقَى فَأَنْتَ عَلَى الْإِسْلَامِ حَتَّى تَمُوْتَ وَذَاكَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلَامٍ و قَالَ لِيْ خَلِيْفَةُ حَدَّثَنَا مُعَاذٌ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ عَنْ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ عُبَادٍ عَنْ ابْنِ سَلَامٍ قَالَ وَصِيْفٌ مَكَانَ مِنْصَفٌ
কায়স ইব্‌নু ‘উবাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মদীনার মসজিদে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন এমন এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করলেন যার চেহারায় বিনয় ও নম্রতার ছাপ ছিল। লোকজন বলতে লাগলেন, এই ব্যক্তি জান্নাতীগণের একজন। তিনি হালকাভাবে দু’রাকআত সলাত আদায় করে মসজিদ হতে বেরিয়ে এলেন। আমি তাঁকে অনুসরণ করলাম এবং তাঁকে বললাম, আপনি যখন মসজিদে প্রবেশ করছিলেন তখন লোকজন বলাবলি করছিল যে, ইনি জান্নাতবাসীগণের একজন। তিনি বললেন, আল্লাহ্‌র কসম কারো জন্য এমন বলা উচিত নয়, যা সে জানে না। আমি তোমাকে আসল কথা বলছি কেন তা বলা হয়। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর যামানায় একটি স্বপ্ন দেখে তাঁর নিকট বর্ণনা করলাম। আমি দেখলাম যে, আমি যেন একটি বাগানে অবস্থান করছি; বাগানটি বেশ প্রশস্ত, সবুজ। বাগানের মধ্যে একটি লোহার স্তম্ভ যার নিম্নভাগ মাটিতে এবং উপরিভাগ আকাশ স্পর্শ করেছে; স্তম্ভের উপরে একটি শক্ত কড়া সংযুক্ত রয়েছে। আমাকে বলা হল, উপরে উঠ। আমি বললাম, এটাতো আমার সামর্থ্যের বাইরে। তখন একজন খাদিম এসে পিছন দিক হতে আমার কাপড় সহ চেপে ধরে আমাকে উঠাতে সাহায্য করলেন। আমি উঠতে লাগলাম এবং উপরে গিয়ে আংটাটি ধরলাম। তখন আমাকে বলা হল, শক্তভাবে আংটাটি ধর। তারপর কড়াটি আমার হাতের মুঠায় ধরা অবস্থায় আমি জেগে গেলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট স্বপ্নটি বললে, তিনি বললেন, এ বাগান হল ইসলাম, আর স্তম্ভটি হল ইসলামের খুঁটিসমূহ, কড়াটি হল “উরুয়াতুল উস্‌কা” (শক্ত ও অটুট কড়া) এবং তুমি আজীবন ইসলামের উপর অটল থাকবে। (রাবী বলেন) এই ব্যক্তি হলেন, আবদুল্লাহ্ ইবনে সালাম (রাঃ)। খলীফা ‎‎(র.) ‎مَنْصِفٌ‎–এর স্থলে ‎وَصِيْفٌ‎ বলেছেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৩৮)

৩৮১৪

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَتَيْتُ الْمَدِيْنَةَ فَلَقِيْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ سَلَامٍ فَقَالَ أَلَا تَجِيءُ فَأُطْعِمَكَ سَوِيْقًا وَتَمْرًا وَتَدْخُلَ فِيْ بَيْتٍ ثُمَّ قَالَ إِنَّكَ بِأَرْضٍ الرِّبَا بِهَا فَاشٍ إِذَا كَانَ لَكَ عَلَى رَجُلٍ حَقٌّ فَأَهْدَى إِلَيْكَ حِمْلَ تِبْنٍ أَوْ حِمْلَ شَعِيْرٍ أَوْ حِمْلَ قَتٍّ فَلَا تَأْخُذْهُ فَإِنَّهُ رِبًا وَلَمْ يَذْكُرِ النَّضْرُ وَأَبُوْ دَاوُدَ وَوَهْبٌ عَنْ شُعْبَةَ الْبَيْتَ
আবূ বুরদাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বুরদাহ (রহঃ) বলেন, আমি মদীনায় গেলাম; আবদুল্লাহ ইব্‌নু সালামের সাথে আমার দেখা হল। তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমাদের এখানে আসবে না? তোমাকে আমি খেজুর ও ছাতু খেতে দিব এবং একটি ঘরে থাকতে দেব। অতঃপর তিনি বললেন, তুমি এমন স্থানে (ইরাকে) বসবাস কর, যেখানে সুদের কারবার খুব ব্যাপক। যখন কোন মানুষের নিকট তোমার কোন প্রাপ্য থাকে আর সেই মানুষটি যদি তোমাকে কিছু ঘাস, খড় অথবা খড়ের ন্যায় সামান্য কিছুও হাদীয়া পেশ করে তার কাছ থেকে তা গ্রহন কর না, যেহেতু তা সুদের অন্তর্ভুক্ত। নায্‌র (রাঃ), আবূ দাউদ (রহঃ) ও ওয়াহাব (রহঃ) শু‘বাহ্‌ (রহঃ) হতে بَيْتُ‎ শব্দটি বর্ণনা করেন নি।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৩৯)

৬৩/২০. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সাথে খাদীজাহ (রাঃ) - এর বিবাহ এবং তাঁর ফাযীলাত।

৩৮১৫

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ جَعْفَرٍ قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ ح حَدَّثَنِيْ صَدَقَةُ أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ جَعْفَرٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ خَيْرُ نِسَائِهَا مَرْيَمُ وَخَيْرُ نِسَائِهَا خَدِيْجَةُ
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মারিয়াম (আঃ) ছিলেন (পূর্বের) নারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতমা নারী। আর খাদীজাহ (রাঃ) (এ উম্মাতের) নারীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠা।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪০)

৩৮১৬

حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ عُفَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ كَتَبَ إِلَيَّ هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ مَا غِرْتُ عَلَى امْرَأَةٍ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَا غِرْتُ عَلَى خَدِيْجَةَ هَلَكَتْ قَبْلَ أَنْ يَتَزَوَّجَنِيْ لِمَا كُنْتُ أَسْمَعُهُ يَذْكُرُهَا وَأَمَرَهُ اللهُ أَنْ يُبَشِّرَهَا بِبَيْتٍ مِنْ قَصَبٍ وَإِنْ كَانَ لَيَذْبَحُ الشَّاةَ فَيُهْدِيْ فِيْ خَلَائِلِهَا مِنْهَا مَا يَسَعُهُنَّ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কোন স্ত্রীর প্রতি এতটুকু ঈর্ষা করিনি যতটুকু খাদীজাহ (রাঃ) - এর প্রতি করেছি। কেননা, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে তাঁর কথা বারবার আলোচনা করতে শুনেছি, অথচ আমাকে বিবাহ করার আগেই তিনি ইন্তিকাল করেছিলেন। খাদীজাহ (রাঃ) - কে জান্নাতে মণি-মুক্তা খচিত একটি প্রাসাদের খোশ খবর দেয়ার জন্য আল্লাহ তা‘আলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে আদেশ করেন। কোন দিন বকরী যবেহ হলে খাদীজাহ (রাঃ) - এর বান্ধবীদের নিকট তাদের প্রত্যেকের দরকার মত গোশত্‌ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপঢৌকন হিসেবে পাঠিয়ে দিতেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪১)

৩৮১৭

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ مَا غِرْتُ عَلَى امْرَأَةٍ مَا غِرْتُ عَلَى خَدِيْجَةَ مِنْ كَثْرَةِ ذِكْرِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِيَّاهَا قَالَتْ وَتَزَوَّجَنِيْ بَعْدَهَا بِثَلَاثِ سِنِيْنَ وَأَمَرَهُ رَبُّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَوْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَام أَنْ يُبَشِّرَهَا بِبَيْتٍ فِي الْجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর অন্য কোন স্ত্রীর ব্যাপারে এত ঈর্ষা পোষণ করিনি, যতটুকু খাদীজাহ (রাঃ) - এর প্রতি করেছি। যেহেতু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর আলোচনা বেশি করতেন। তিনি (আরো) বলেন, খাদীজাহ (রাঃ) - এর (ইন্তিকালের) তিন বছর পর তিনি আমাকে বিবাহ করেন। আল্লাহ নিজে অথবা জিব্‌রাঈল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে আদেশ করলেন যে, খাদীজাহ (রাঃ) - কে জান্নাতে মণিমুক্তা খচিত একটি ভবনের খোশ খবর দিন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪২)

৩৮১৮

حَدَّثَنِيْ عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ حَسَنٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا حَفْصٌ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ مَا غِرْتُ عَلَى أَحَدٍ مِنْ نِسَاءِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَا غِرْتُ عَلَى خَدِيْجَةَ وَمَا رَأَيْتُهَا وَلَكِنْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ ذِكْرَهَا وَرُبَّمَا ذَبَحَ الشَّاةَ ثُمَّ يُقَطِّعُهَا أَعْضَاءً ثُمَّ يَبْعَثُهَا فِيْ صَدَائِقِ خَدِيْجَةَ فَرُبَّمَا قُلْتُ لَهُ كَأَنَّهُ لَمْ يَكُنْ فِي الدُّنْيَا امْرَأَةٌ إِلَّا خَدِيْجَةُ فَيَقُوْلُ إِنَّهَا كَانَتْ وَكَانَتْ وَكَانَ لِيْ مِنْهَا وَلَدٌ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর অন্য কোন স্ত্রীর প্রতি এতটুকু ঈর্ষা করিনি যতটুকু খাদীজাহ (রাঃ) - এর প্রতি করেছি। অথচ আমি তাঁকে দেখিনি। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কথা বেশি সময় আলোচনা করতেন। কোন কোন সময় বকরী যবেহ করে গোশতে্‌র পরিমাণ বিবেচনায় হাড়-গোশত্‌কে ছোট ছোট টুকরো করে হলেও খাদীজাহ (রাঃ) - এর বান্ধবীদের ঘরে পৌঁছে দিতেন। আমি কোন সময় ঈর্ষা ভরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে বলতাম, মনে হয় খাদীজাহ (রাঃ) ছাড়া দুনিয়াতে যেন আর কোন নারী নাই। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেন, হাঁ। তিনি এমন ছিলেন, এমন ছিলেন, তাঁর গর্ভে আমার সন্তানাদি জন্মেছিল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৩)

৩৮১৯

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيْلَ قَالَ قُلْتُ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا بَشَّرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَدِيْجَةَ قَالَ نَعَمْ بِبَيْتٍ مِنْ قَصَبٍ لَا صَخَبَ فِيْهِ وَلَا نَصَبَ
ইসমাঈল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আবূ আউফা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদীজাহ (রাঃ) - কে জান্নাতের খোশ খবর দিয়েছিলেন কি? তিনি বললেন, হাঁ। এমন একটি ভবনের খোশ খবর দিয়েছিলেন, যে ভবনটি তৈরী করা হয়েছে এমন মোতি দ্বারা যার ভিতরদেশ ফাঁকা। আর সেখানে থাকবে না শোরগোল, কোন প্রকার ক্লেশ ও দুঃখ।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৪)

৩৮২০

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ عَنْ عُمَارَةَ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ أَتَى جِبْرِيْلُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذِهِ خَدِيْجَةُ قَدْ أَتَتْ مَعَهَا إِنَاءٌ فِيْهِ إِدَامٌ أَوْ طَعَامٌ أَوْ شَرَابٌ فَإِذَا هِيَ أَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنْ رَبِّهَا وَمِنِّيْ وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِي الْجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ لَا صَخَبَ فِيْهِ وَلَا نَصَبَ
وَقَالَ إِسْمَاعِيْلُ بْنُ خَلِيْلٍ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ اسْتَأْذَنَتْ هَالَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ أُخْتُ خَدِيْجَةَ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَرَفَ اسْتِئْذَانَ خَدِيْجَةَ فَارْتَاعَ لِذَلِكَ فَقَالَ اللَّهُمَّ هَالَةَ قَالَتْ فَغِرْتُ فَقُلْتُ مَا تَذْكُرُ مِنْ عَجُوْزٍ مِنْ عَجَائِزِ قُرَيْشٍ حَمْرَاءِ الشِّدْقَيْنِ هَلَكَتْ فِي الدَّهْرِ قَدْ أَبْدَلَكَ اللهُ خَيْرًا مِنْهَا
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, জিব্‌রাঈল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট হাযির হয়ে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! ঐ যে খাদীজাহ (রাঃ) একটি পাত্র হাতে নিয়ে আসছেন। ঐ পাত্রে তরকারী, অথবা খাদ্যদ্রব্য অথবা পানীয় ছিল। যখন তিনি পৌঁছে যাবেন তখন তাঁকে তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ হতে এবং আমার পক্ষ থেকেও সালাম জানাবেন আর তাঁকে জান্নাতের এমন একটি ভবনের খোশ খবর দিবেন যার অভ্যন্তর ভাগ ফাঁকা-মোতি দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে থাকবে না কোন প্রকার শোরগোল; কোন প্রকার দুঃখ-ক্লেশ।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৫ প্রথমাংশ)

৩৮২১

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ عَنْ عُمَارَةَ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ أَتَى جِبْرِيْلُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذِهِ خَدِيْجَةُ قَدْ أَتَتْ مَعَهَا إِنَاءٌ فِيْهِ إِدَامٌ أَوْ طَعَامٌ أَوْ شَرَابٌ فَإِذَا هِيَ أَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنْ رَبِّهَا وَمِنِّيْ وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِي الْجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ لَا صَخَبَ فِيْهِ وَلَا نَصَبَ وَقَالَ إِسْمَاعِيْلُ بْنُ خَلِيْلٍ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ اسْتَأْذَنَتْ هَالَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ أُخْتُ خَدِيْجَةَ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَرَفَ اسْتِئْذَانَ خَدِيْجَةَ فَارْتَاعَ لِذَلِكَ فَقَالَ اللَّهُمَّ هَالَةَ قَالَتْ فَغِرْتُ فَقُلْتُ مَا تَذْكُرُ مِنْ عَجُوْزٍ مِنْ عَجَائِزِ قُرَيْشٍ حَمْرَاءِ الشِّدْقَيْنِ هَلَكَتْ فِي الدَّهْرِ قَدْ أَبْدَلَكَ اللهُ خَيْرًا مِنْهَا
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ খাদীজাহ্‌র বোন হালা বিনতে খুয়াইলিদ (একদিন) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য অনুমতি চাইলেন। (দু’বোনের গলার স্বর ও অনুমতি চাওয়ার ভঙ্গি একই রকম ছিল বলে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদীজাহ্‌র অনুমতি চাওয়ার কথা মনে করে হতচকিত হয়ে পড়েন। তারপর (প্রকৃতিস্থ হয়ে) তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! এতো দেখছি হালা! ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ এতে আমার ভারী ঈর্ষা হলো। আমি বললাম, কুরাইশদের বুড়ীদের মধ্য থেকে এমন এক বুড়ীর কথা আপনি আলোচনা করেন যার দাঁতের মাড়ির লাল বর্ণটাই শুধু বাকি রয়ে গিয়েছিল, যে শেষ হয়ে গেছে কতকাল আগে। তার পরিবর্তে আল্লাহ তো আপনাকে তার চাইতেও উত্তম স্ত্রী দান করেছেন। [১]
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ নাই)
 [১] ‘আয়িশা (রাঃ) - এর এ কথার জবাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী বলেছেন তার উল্লেখ বুখারীতে নেই। তবে হাদীস সংকলন আহমাদ ও তাবারানী এ প্রসঙ্গে বর্ণনা করেছেন যে, ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ এতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্রুদ্ধ হন। অবশেষে আমি বললামঃ যিনি আপনাকে সত্যের বাহকরূপে পাঠিয়েছেন তাঁর কসম, ভবিষ্যতে আমি তাঁর (খাদীজাহ্‌র) সম্পর্কে উত্তম মন্তব্য ছাড়া অন্য কোনরূপ মন্তব্য করবো না।

৬৩/২১. অধ্যায়ঃ

জারীর ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ বাজালী (রাঃ) - এর উল্লেখ।

৩৮২২

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ الْوَاسِطِيُّ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ بَيَانٍ عَنْ قَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُوْلُ قَالَ جَرِيْرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ مَا حَجَبَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مُنْذُ أَسْلَمْتُ وَلَا رَآنِيْ إِلَّا ضَحِكَ
জারীর ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইসলাম গ্রহণ করার পর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর গৃহে প্রবেশ করতে কোনদিন আমাকে বাধা প্রদান করেননি এবং যখনই আমাকে দেখেছেন, মুচকি হাসি দিয়েছেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪০ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৬ প্রথমাংশ)

৩৮২৩

وَعَنْ قَيْسٍ عَنْ جَرِيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَانَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ بَيْتٌ يُقَالُ لَهُ ذُو الْخَلَصَةِ وَكَانَ يُقَالُ لَهُ الْكَعْبَةُ الْيَمَانِيَةُ أَوْ الْكَعْبَةُ الشَّأْمِيَّةُ فَقَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ أَنْتَ مُرِيْحِيْ مِنْ ذِي الْخَلَصَةِ قَالَ فَنَفَرْتُ إِلَيْهِ فِيْ خَمْسِيْنَ وَمِائَةِ فَارِسٍ مِنْ أَحْمَسَ قَالَ فَكَسَرْنَا وَقَتَلْنَا مَنْ وَجَدْنَا عِنْدَهُ فَأَتَيْنَاهُ فَأَخْبَرْنَاهُ فَدَعَا لَنَا وَلِأَحْمَسَ
জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জারীর (রাঃ) আরো বলেন, জাহিলী যুগে যুল-খালাসা নামে একটি ঘর ছিল। যাকে কা‘বায়ে ইয়ামানী ও কা‘বায়ে শামী বলা হত। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, তুমি কি যুল-খালাসার ব্যাপারে আমাকে শান্তি দিতে পার? জারীর (রাঃ) বলেন, আমি আহমাস গোত্রের একশ পঞ্চাশ জন ঘোড়-সওয়ার সৈন্য নিয়ে যাত্রা করলাম এবং (প্রতীমা ঘরটি) বিধ্বস্ত করে দিলাম। সেখানে যাদেরকে পেলাম হত্যা করলাম। এসে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে খবর জানালাম। তিনি আমাদের জন্য এবং আহমাস গোত্রের জন্য দু‘আ করলেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪০ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৬ শেষাংশ)

৬৩/২২. অধ্যায়ঃ

হুযাইফাহ ইব্‌নুল ইয়ামান ‘আবসী (রাঃ) - এর উল্লেখ।

৩৮২৪

حَدَّثَنِيْ إِسْمَاعِيْلُ بْنُ خَلِيْلٍ أَخْبَرَنَا سَلَمَةُ بْنُ رَجَاءٍ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ لَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ هُزِمَ الْمُشْرِكُوْنَ هَزِيْمَةً بَيِّنَةً فَصَاحَ إِبْلِيْسُ أَيْ عِبَادَ اللهِ أُخْرَاكُمْ فَرَجَعَتْ أُوْلَاهُمْ عَلَى أُخْرَاهُمْ فَاجْتَلَدَتْ أُخْرَاهُمْ فَنَظَرَ حُذَيْفَةُ فَإِذَا هُوَ بِأَبِيْهِ فَنَادَى أَيْ عِبَادَ اللهِ أَبِيْ أَبِيْ فَقَالَتْ فَوَاللهِ مَا احْتَجَزُوْا حَتَّى قَتَلُوْهُ فَقَالَ حُذَيْفَةُ غَفَرَ اللهُ لَكُمْ قَالَ أَبِيْ فَوَاللهِ مَا زَالَتْ فِيْ حُذَيْفَةَ مِنْهَا بَقِيَّةُ خَيْرٍ حَتَّى لَقِيَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ওহুদ যুদ্ধে মুশরিকগণ যখন শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে পড়লো, তখন ইব্‌লীস চীৎকার করে (মুসলমানগণকে) বলল, হে আল্লাহ্‌র বান্দাগণ! পিছনের দিকে লক্ষ্য কর। তখন অগ্রগামী দল পিছন দিকে ফিরে গেল (শত্রুদল মনে করে) নিজদলের উপর আক্রমণ করে বসল এবং একে অন্যকে হত্যা করতে লাগল। এমন সময় হুযাইফাহ (রাঃ) পিছনের দলে তাঁর পিতাকে দেখতে পেয়ে চীৎকার করে বলতে লাগলেন, হে আল্লাহ্‌র বান্দাগণ! এই যে আমার পিতা, এই যে আমার পিতা। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র শপথ, কিন্তু তারা কেউই বিরত হয়নি। অবশেষে তাঁকে হত্যা করে ফেলল। হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিন। (অধস্তন রাবী হিশাম বলেন) আমার পিতা উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র কসম, এ কথার কারণে হুযাইফাহ (রাঃ) - এর মধ্যে তাঁর জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত কল্যাণের চিহ্ন বিদ্যমান ছিল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৭)

৬৩/২৩. অধ্যায়ঃ

উতবাহ ইব্‌নু রাবী‘আহ্‌র কন্যা হিন্দ (রাঃ) - এর আলোচনা।

৩৮২৫

وَقَالَ عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ جَاءَتْ هِنْدٌ بِنْتُ عُتْبَةَ قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا كَانَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ مِنْ أَهْلِ خِبَاءٍ أَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ يَذِلُّوْا مِنْ أَهْلِ خِبَائِكَ ثُمَّ مَا أَصْبَحَ الْيَوْمَ عَلَى ظَهْرِ الْأَرْضِ أَهْلُ خِبَاءٍ أَحَبَّ إِلَيَّ أَنْ يَعِزُّوْا مِنْ أَهْلِ خِبَائِكَ قَالَتْ وَأَيْضًا وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ مِسِّيكٌ فَهَلْ عَلَيَّ حَرَجٌ أَنْ أُطْعِمَ مِنْ الَّذِيْ لَهُ عِيَالَنَا قَالَ لَا أُرَاهُ إِلَّا بِالْمَعْرُوفِ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উতবাহ্‌র মেয়ে হিন্দ (রাঃ) এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! এক সময় আমার মনের অবস্থা পৃথিবীর বুকে কোন পরিবারের লাঞ্ছিত হতে দেখা আমার নিকট আপনার পরিবারের অপমানিত দেখার চেয়ে অধিক কাঙ্ক্ষিত ছিল না। কিন্তু এখন আমার অবস্থা এমন হয়েছে যে দুনিয়ার বুকে কোন পরিবারের সম্মানিত হতে দেখা আমার নিকট আপনার পরিবারের সম্মানিত দেখার চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। তিনি বললেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ। তারপর সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আবূ সুফইয়ান (রাঃ) একজন কৃপণ ব্যক্তি। যদি তার মাল আমি ছেলে-মেয়েদের জন্য ব্যয় করি তবে তাতে কি আমার কিছু হবে? তিনি বললেন, না, যদি যথাযথ ব্যয় করা হয়।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১৩৩ পরিচ্ছেদ)

৬৩/২৪. অধ্যায়ঃ

যায়দ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নু নুফায়ল (রাঃ) - এর ঘটনা।

৩৮২৬

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ حَدَّثَنَا سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَقِيَ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ بِأَسْفَلِ بَلْدَحٍ قَبْلَ أَنْ يَنْزِلَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْوَحْيُ فَقُدِّمَتْ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سُفْرَةٌ فَأَبَى أَنْ يَأْكُلَ مِنْهَا ثُمَّ قَالَ زَيْدٌ إِنِّيْ لَسْتُ آكُلُ مِمَّا تَذْبَحُوْنَ عَلَى أَنْصَابِكُمْ وَلَا آكُلُ إِلَّا مَا ذُكِرَ اسْمُ اللهِ عَلَيْهِ وَأَنَّ زَيْدَ بْنَ عَمْرٍو كَانَ يَعِيْبُ عَلَى قُرَيْشٍ ذَبَائِحَهُمْ وَيَقُوْلُ الشَّاةُ خَلَقَهَا اللهُ وَأَنْزَلَ لَهَا مِنْ السَّمَاءِ الْمَاءَ وَأَنْبَتَ لَهَا مِنْ الأَرْضِ ثُمَّ تَذْبَحُوْنَهَا عَلَى غَيْرِ اسْمِ اللهِ إِنْكَارًا لِذَلِكَ وَإِعْظَامًا لَهُ
আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, ওয়াহী নাযিল হওয়ার পূর্বে একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার নিম্ন অঞ্চলের বালদাহ নামক জায়গায় যায়দ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নু নুফায়লের সাথে সাক্ষাৎ করলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সামনে খাদ্য পূর্ণ একটি ‘খানচা’ পেশ করা হল। তিনি তা হতে কিছু খেতে অস্বীকার করলেন। এরপর যায়দ (রাঃ) বললেন, আমিও ঐ সব জন্তুর গোশ্‌ত খাই না যা তোমরা তোমাদের দেব-দেবীর নামে যবেহ কর। আল্লাহ্‌র নামে যবেহকৃত ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করা জন্তুর গোশ্‌ত আমি কিছুতেই খাই না। যায়দ ইব্‌নু ‘আমর কুরাইশের যবেহকৃত জন্তু সম্পর্কে তাদের উপর দোষারোপ করতেন এবং বলতেন; বকরীকে সৃষ্টি করলেন আল্লাহ্‌, তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আকাশ হতে বারি বর্ষণ করলেন। ভূমি হতে উৎপন্ন করলেন তৃণ-লতা অথচ তোমরা আল্লাহ্‌ তা‘আলার সমূহদান অস্বীকার করে প্রতিমার প্রতি সম্মান করে আল্লাহ্‌র নাম ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করছ। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৩ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৮ প্রথমাংশ)

৩৮২৭

قَالَ مُوْسَى حَدَّثَنِيْ سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ وَلَا أَعْلَمُهُ إِلَّا تَحَدَّثَ بِهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ خَرَجَ إِلَى الشَّأْمِ يَسْأَلُ عَنْ الدِّينِ وَيَتْبَعُهُ فَلَقِيَ عَالِمًا مِنْ الْيَهُوْدِ فَسَأَلَهُ عَنْ دِيْنِهِمْ فَقَالَ إِنِّيْ لَعَلِّيْ أَنْ أَدِيْنَ دِيْنَكُمْ فَأَخْبِرْنِيْ فَقَالَ لَا تَكُوْنُ عَلَى دِيْنِنَا حَتَّى تَأْخُذَ بِنَصِيْبِكَ مِنْ غَضَبِ اللهِ قَالَ زَيْدٌ مَا أَفِرُّ إِلَّا مِنْ غَضَبِ اللهِ وَلَا أَحْمِلُ مِنْ غَضَبِ اللهِ شَيْئًا أَبَدًا وَأَنَّى أَسْتَطِيْعُهُ فَهَلْ تَدُلُّنِيْ عَلَى غَيْرِهِ قَالَ مَا أَعْلَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ حَنِيْفًا قَالَ زَيْدٌ وَمَا الْحَنِيْفُ قَالَ دِيْنُ إِبْرَاهِيْمَ لَمْ يَكُنْ يَهُوْدِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَا يَعْبُدُ إِلَّا اللهَ فَخَرَجَ زَيْدٌ فَلَقِيَ عَالِمًا مِنْ النَّصَارَى فَذَكَرَ مِثْلَهُ فَقَالَ لَنْ تَكُوْنَ عَلَى دِيْنِنَا حَتَّى تَأْخُذَ بِنَصِيْبِكَ مِنْ لَعْنَةِ اللهِ قَالَ مَا أَفِرُّ إِلَّا مِنْ لَعْنَةِ اللهِ وَلَا أَحْمِلُ مِنْ لَعْنَةِ اللهِ وَلَا مِنْ غَضَبِهِ شَيْئًا أَبَدًا وَأَنَّى أَسْتَطِيْعُ فَهَلْ تَدُلُّنِيْ عَلَى غَيْرِهِ قَالَ مَا أَعْلَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ حَنِيْفًا قَالَ وَمَا الْحَنِيْفُ قَالَ دِيْنُ إِبْرَاهِيْمَ لَمْ يَكُنْ يَهُوْدِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَا يَعْبُدُ إِلَّا اللهَ فَلَمَّا رَأَى زَيْدٌ قَوْلَهُمْ فِيْ إِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَام خَرَجَ فَلَمَّا بَرَزَ رَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَشْهَدُ أَنِّيْ عَلَى دِيْنِ إِبْرَاهِيْمَ وَقَالَ اللَّيْثُ كَتَبَ إِلَيَّ هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِيْ بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَتْ رَأَيْتُ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ قَائِمًا مُسْنِدًا ظَهْرَهُ إِلَى الْكَعْبَةِ يَقُوْلُ يَا مَعَاشِرَ قُرَيْشٍ وَاللهِ مَا مِنْكُمْ عَلَى دِيْنِ إِبْرَاهِيْمَ غَيْرِيْ وَكَانَ يُحْيِي الْمَوْءُوْدَةَ يَقُوْلُ لِلرَّجُلِ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَقْتُلَ ابْنَتَهُ لَا تَقْتُلْهَا أَنَا أَكْفِيكَهَا مَئُوْنَتَهَا فَيَأْخُذُهَا فَإِذَا تَرَعْرَعَتْ قَالَ لِأَبِيْهَا إِنْ شِئْتَ دَفَعْتُهَا إِلَيْكَ وَإِنْ شِئْتَ كَفَيْتُكَ مَئُوْنَتَهَا
আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মূসা (সনদসহ) বলেন, সালিম ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। মূসা (রহঃ) বলেন, আমার জানা মতে তিনি ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) হতে এ ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন যে, যায়দ ইব্‌নু ‘আমর সঠিক তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত দ্বীনের খোঁজে সিরিয়ায় যান। সে সময় একজন ইয়াহূদী আলেমের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হল। তিনি তার নিকট তাদের দ্বীন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন এবং বললেন, হয়ত আমি তোমাদের দ্বীনের অনুসারী হব, আমাকে সে সম্পর্কে জানাও। তিনি বললেন, তুমি আমাদের দ্বীন গ্রহন করবে না। গ্রহণ করলে যতখানি গ্রহণ করবে সে পরিমাণ আল্লাহ্‌র গযব তোমার উপর পতিত হবে। যায়দ বললেন, আমি তো আল্লাহ্‌র গযব হতে পালিয়ে আসছি। আমি যথাসাধ্য আল্লাহ্‌র সামান্য পরিমাণ গযবও বহন করব না। আর আমার কি তা বহনের শক্তি-সামার্থ্য আছে? তুমি কি আমাকে এছাড়া অন্য কোন পথের দিশা দিতে পার? সে বলল, আমি তা জানি না, তবে তুমি দীনে হানীফ কবুল করে নাও। যায়দ জিজ্ঞেস করলেন (দ্বীনে) হানীফ কী? সে বলল, তা হল ইব্‌রাহীম (আঃ) - এর দীন। তিনি ইয়াহূদীও ছিলেন না, নাসারাও ছিলেন না। তিনি আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করতেন না। তখন যায়দ বের হলেন এবং তাঁর সাথে একজন খ্রিস্টান আলিমের সাক্ষাত হল। ইয়াহূদী ‘আলিমের নিকট ইতিপূর্বে তিনি যা যা বলেছিলেন তার কাছেও তা বললেন। তিনি বললেন, তুমি আমাদের দ্বীন গ্রহণ করবে না। গ্রহণ করলে যত পরিমাণ গ্রহণ করবে তত পরিমাণ আল্লাহ্‌র লা‘নত তোমার উপর পতিত হবে। যায়দ বললেন, আমি তো আল্লাহ্‌র লা‘নত হতে পালিয়ে আসছি। আর আমি যথাসাধ্য সামান্য আল্লাহ্‌র লা‘নতও বহন করব না। আমি কি তা বহনের শক্তি রাখি? তুমি কি আমাকে এছাড়া অন্য কোন পথের দিশা দেবে? সে বলল, আমি অন্য কিছু জানি না। শুধু এতটুকু বলতে পারি যে, তুমি দীনে হানীফ গ্রহণ কর। তিনি বললেন, হানীফ কী? উত্তরে তিনি বললেন, তা হল ইব্‌রাহীম (আঃ) - এর দীন, তিনি ইয়াহূদীও ছিলেন না এবং খ্রিস্টানও ছিলেন না এবং আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কারো ইবাদত করতেন না। যায়দ যখন ইব্‌রাহীম (আঃ) সম্পর্কে তাদের মন্তব্য জানতে পারলেন, তখন তিনি বেরিয়ে পড়ে দু’হাত তুলে বললেন, হে আল্লাহ্‌! আমি তোমাকে সাক্ষী রেখে বলছি আমি দ্বীনে ইব্‌রাহীম (আঃ) - এর উপর আছি।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৩ মধ্যমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৮ মধ্যমাংশ)

৩৮২৮

قَالَ مُوْسَى حَدَّثَنِيْ سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ وَلَا أَعْلَمُهُ إِلَّا تَحَدَّثَ بِهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ خَرَجَ إِلَى الشَّأْمِ يَسْأَلُ عَنْ الدِّينِ وَيَتْبَعُهُ فَلَقِيَ عَالِمًا مِنْ الْيَهُوْدِ فَسَأَلَهُ عَنْ دِيْنِهِمْ فَقَالَ إِنِّيْ لَعَلِّيْ أَنْ أَدِيْنَ دِيْنَكُمْ فَأَخْبِرْنِيْ فَقَالَ لَا تَكُوْنُ عَلَى دِيْنِنَا حَتَّى تَأْخُذَ بِنَصِيْبِكَ مِنْ غَضَبِ اللهِ قَالَ زَيْدٌ مَا أَفِرُّ إِلَّا مِنْ غَضَبِ اللهِ وَلَا أَحْمِلُ مِنْ غَضَبِ اللهِ شَيْئًا أَبَدًا وَأَنَّى أَسْتَطِيْعُهُ فَهَلْ تَدُلُّنِيْ عَلَى غَيْرِهِ قَالَ مَا أَعْلَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ حَنِيْفًا قَالَ زَيْدٌ وَمَا الْحَنِيْفُ قَالَ دِيْنُ إِبْرَاهِيْمَ لَمْ يَكُنْ يَهُوْدِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَا يَعْبُدُ إِلَّا اللهَ فَخَرَجَ زَيْدٌ فَلَقِيَ عَالِمًا مِنْ النَّصَارَى فَذَكَرَ مِثْلَهُ فَقَالَ لَنْ تَكُوْنَ عَلَى دِيْنِنَا حَتَّى تَأْخُذَ بِنَصِيْبِكَ مِنْ لَعْنَةِ اللهِ قَالَ مَا أَفِرُّ إِلَّا مِنْ لَعْنَةِ اللهِ وَلَا أَحْمِلُ مِنْ لَعْنَةِ اللهِ وَلَا مِنْ غَضَبِهِ شَيْئًا أَبَدًا وَأَنَّى أَسْتَطِيْعُ فَهَلْ تَدُلُّنِيْ عَلَى غَيْرِهِ قَالَ مَا أَعْلَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ حَنِيْفًا قَالَ وَمَا الْحَنِيْفُ قَالَ دِيْنُ إِبْرَاهِيْمَ لَمْ يَكُنْ يَهُوْدِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَا يَعْبُدُ إِلَّا اللهَ فَلَمَّا رَأَى زَيْدٌ قَوْلَهُمْ فِيْ إِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَام خَرَجَ فَلَمَّا بَرَزَ رَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَشْهَدُ أَنِّيْ عَلَى دِيْنِ إِبْرَاهِيْمَ وَقَالَ اللَّيْثُ كَتَبَ إِلَيَّ هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِيْ بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَتْ رَأَيْتُ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ قَائِمًا مُسْنِدًا ظَهْرَهُ إِلَى الْكَعْبَةِ يَقُوْلُ يَا مَعَاشِرَ قُرَيْشٍ وَاللهِ مَا مِنْكُمْ عَلَى دِيْنِ إِبْرَاهِيْمَ غَيْرِيْ وَكَانَ يُحْيِي الْمَوْءُوْدَةَ يَقُوْلُ لِلرَّجُلِ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَقْتُلَ ابْنَتَهُ لَا تَقْتُلْهَا أَنَا أَكْفِيكَهَا مَئُوْنَتَهَا فَيَأْخُذُهَا فَإِذَا تَرَعْرَعَتْ قَالَ لِأَبِيْهَا إِنْ شِئْتَ دَفَعْتُهَا إِلَيْكَ وَإِنْ شِئْتَ كَفَيْتُكَ مَئُوْنَتَهَا
লায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
লায়স (রহঃ) বলেন হিশাম তাঁর পিতা সূত্রে তিনি আসমা বিন্‌ত আবূ বকর (রাঃ) হতে বর্ণনা করতে গিয়ে আমার কাছে লিখছেন যে, তিনি (আসমা) বলেন, আমি দেখলাম যায়দ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নু নুফায়ল কা’বা শরীফের দেয়ালে পিঠ লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন এবং বলছেন, হে কুরাইশ গোত্র, আল্লাহ্‌র কসম, আমি ব্যতীত তোমাদের কেউ-ই দ্বীনে ইব্‌রাহীমের উপর নেই। আর তিনি যেসব কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেয়ার জন্য নেয়া হত তাদেরকে তিনি বাঁচাবার ব্যবস্থা করতেন। যখন কোন লোক তার কন্যা সন্তানকে হত্যা করার জন্য ইচ্ছা করত, তখন তিনি এসে বলতেন, হত্যা করো না, আমি তার জীবিকার ব্যয়ভার গ্রহণ করবো। এ বলে তিনি শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসতেন। শিশুটি বড় হলে তার পিতাকে বলতেন, তুমি যদি তোমার কন্যাকে নিয়ে যেতে চাও তাহলে আমি দিয়ে দেব। আর তুমি যদি নিতে না চাও, তবে আমিই এর সকল ব্যয় ভার বহন করে যাব।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৮ শেষাংশ)

৬৩/২৫. অধ্যায়ঃ

কা‘বা নির্মাণ।

৩৮২৯

حَدَّثَنِيْ مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ دِيْنَارٍ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا بُنِيَتْ الْكَعْبَةُ ذَهَبَ النَّبِيُّ وَعَبَّاسٌ يَنْقُلَانِ الْحِجَارَةَ فَقَالَ عَبَّاسٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم اجْعَلْ إِزَارَكَ عَلَى رَقَبَتِكَ يَقِيكَ مِنْ الْحِجَارَةِ فَخَرَّ إِلَى الأَرْضِ وَطَمَحَتْ عَيْنَاهُ إِلَى السَّمَاءِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ إِزَارِيْ إِزَارِيْ فَشَدَّ عَلَيْهِ إِزَارَهُ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন কা‘বা গৃহ পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ‘আব্বাস (রাঃ) পাথর বয়ে আনছিলেন। ‘আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে বললেন, তোমার লুঙ্গিটি কাঁধের উপর রাখ, পাথরের ঘর্ষণ হতে তোমাকে রক্ষা করবে। (লুঙ্গি খুলতেই) তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন। তাঁর চোখ দু’টি আকাশের দিকে নিবিষ্ট ছিল। তাঁর চেতনা ফিরে এল, তখন তিনি বলতে লাগলেন, আমার লুঙ্গি, আমার লুঙ্গি। তৎক্ষণাৎ তাঁর লুঙ্গি পরিয়ে দেয়া হল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৯)

৩৮৩০

حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ وَعُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ يَزِيْدَ قَالَا لَمْ يَكُنْ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَوْلَ الْبَيْتِ حَائِطٌ كَانُوْا يُصَلُّوْنَ حَوْلَ الْبَيْتِ حَتَّى كَانَ عُمَرُ فَبَنَى حَوْلَهُ حَائِطًا قَالَ عُبَيْدُ اللهِ جَدْرُهُ قَصِيْرٌ فَبَنَاهُ ابْنُ الزُّبَيْرِ
আমর ইব্‌নু দীনার ও ‘উবাইদুল্লাহ ইব্‌নু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারা বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর যুগে কা‘বা ঘরের চারিপাশে কোন প্রাচীর ছিল না। লোকজন কা‘বা ঘরকে কেন্দ্র করে তার চারপাশে সলাত আদায় করত। ‘উমার (রাঃ) কা‘বার চতুষ্পার্শ্বে প্রাচীর নির্মাণ করেন। ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, এ প্রাচীর ছিল নীচু, অতঃপর ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ) তা নির্মাণ করেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫০)

৬৩/২৬. অধ্যায়ঃ

জাহিলীয়্যাতের যুগ।

৩৮৩১

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا هِشَامٌ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ يَوْمُ عَاشُوْرَاءَ يَوْمًا تَصُومُهُ قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصُومُهُ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِيْنَةَ صَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانُ كَانَ مَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ لَا يَصُومُهُ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাহিলী যুগে আশুরার দিন কুরাইশগণ ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাওম পালন করতেন। যখন হিজরত করে মদীনায় আগমন করলেন, তখন তিনি নিজেও আশুরার সাওম পালন করতেন এবং অন্যকেও তা পালনের নির্দেশ দিতেন। যখন রমাযানের সাওম ফরয করা হল তখন যার ইচ্ছা (আশুরা) সওম করতেন আর যার ইচ্ছা করতেন না।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫১)

৩৮৩২

حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا ابْنُ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانُوْا يَرَوْنَ أَنَّ الْعُمْرَةَ فِيْ أَشْهُرِ الْحَجِّ مِنْ الْفُجُوْرِ فِي الأَرْضِ وَكَانُوْا يُسَمُّوْنَ الْمُحَرَّمَ صَفَرًا وَيَقُوْلُوْنَ إِذَا بَرَا الدَّبَرْ وَعَفَا الأَثَرْ حَلَّتْ الْعُمْرَةُ لِمَنْ اعْتَمَرْ قَالَ فَقَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ رَابِعَةً مُهِلِّيْنَ بِالْحَجِّ وَأَمَرَهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَجْعَلُوْهَا عُمْرَةً قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَيُّ الْحِلِّ قَالَ الْحِلُّ كُلُّهُ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাজ্জের মাসগুলোতে ‘উমরাহ পালন করাকে কুরাইশগণ পাপ কাজ বলে মনে করত। তারা মুহাররম মাসের নামকে পরিবর্তন করে সফর মাস নাম দিত এবং বলত, (উটের) যখম যখন শুকিয়ে যাবে এবং পায়ের চিহ্ন মুছে যাবে তখন ‘উমরাহ পালন করা হালাল হবে যারা পালন করতে চায়। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সঙ্গী সাথীগণ যিলহাজ্জ মাসের চার তারিখে হাজ্জের তালবিয়াহ পড়তে পড়তে মক্কায় হাযির হলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তারঁ সঙ্গী-সাথীদেরকে বললেন, তোমরা ‘উমরায় পরিণত করে নেও। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাদের জন্য কোন্‌ কোন্‌ বিষয় হালাল হবে? তিনি বললেন, সকল বিষয় হালাল হয়ে যাবে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫২)

৩৮৩৩

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ كَانَ عَمْرٌو يَقُوْلُ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ جَاءَ سَيْلٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَكَسَا مَا بَيْنَ الْجَبَلَيْنِ قَالَ سُفْيَانُ وَيَقُوْلُ إِنَّ هَذَا لَحَدِيْثٌ لَهُ شَأْنٌ
সা‘ঈদ ইব্‌নু মুসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা‘ঈদ ইব্‌নু মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতার মাধ্যমে দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, জাহিলীয়্যাতের যুগে একটি বন্যা হয়েছিল। যাতে মক্কায় দু’টি পাহাড়ের মধ্যস্থল সম্পূর্ন প্লাবিত হয়েছিল। সুফ্‌ইয়ান (রহঃ) বলেন, ‘আমর ইব্‌নু দীনার বলতেন, এ হাদীসটির একটি দীর্ঘ পটভূমি আছে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৩)

৩৮৩৪

حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ بَيَانٍ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِيْ حَازِمٍ قَالَ دَخَلَ أَبُوْ بَكْرٍ عَلَى امْرَأَةٍ مِنْ أَحْمَسَ يُقَالُ لَهَا زَيْنَبُ فَرَآهَا لَا تَكَلَّمُ فَقَالَ مَا لَهَا لَا تَكَلَّمُ قَالُوْا حَجَّتْ مُصْمِتَةً قَالَ لَهَا تَكَلَّمِيْ فَإِنَّ هَذَا لَا يَحِلُّ هَذَا مِنْ عَمَلِ الْجَاهِلِيَّةِ فَتَكَلَّمَتْ فَقَالَتْ مَنْ أَنْتَ قَالَ امْرُؤٌ مِنْ الْمُهَاجِرِيْنَ قَالَتْ أَيُّ الْمُهَاجِرِيْنَ قَالَ مِنْ قُرَيْشٍ قَالَتْ مِنْ أَيِّ قُرَيْشٍ أَنْتَ قَالَ إِنَّكِ لَسَئُوْلٌ أَنَا أَبُوْ بَكْرٍ قَالَتْ مَا بَقَاؤُنَا عَلَى هَذَا الأَمْرِ الصَّالِحِ الَّذِيْ جَاءَ اللهُ بِهِ بَعْدَ الْجَاهِلِيَّةِ قَالَ بَقَاؤُكُمْ عَلَيْهِ مَا اسْتَقَامَتْ بِكُمْ أَئِمَّتُكُمْ قَالَتْ وَمَا الأَئِمَّةُ قَالَ أَمَا كَانَ لِقَوْمِكِ رُءُوْسٌ وَأَشْرَافٌ يَأْمُرُوْنَهُمْ فَيُطِيْعُوْنَهُمْ قَالَتْ بَلَى قَالَ فَهُمْ أُوْلَئِكِ عَلَى النَّاسِ
কাইস ইব্‌নু আবূ হাযিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন আবূ বকর (রাঃ) আহমাস গোত্রের যায়নাব নামের এক নারীর নিকট গেলেন। তিনি গিয়ে দেখতে পেলেন, নারীটি কথাবার্তা বলছে না। তিনি (লোকজনকে) জিজ্ঞেস করলেন, নারীটির এ অবস্থা কেন, কথাবার্তা বলছে না কেন? তারা তাঁকে জানালেন, এ নারী নীরব থেকে থেকে হাজ্জ পালন করে আসছেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে বললেন, কথা বল, কেননা এটা হালাল নয়। এটা জাহিলীয়্যাত যুগের কাজ। তখন নারীটি কথাবার্তা বলল। জিজ্ঞেস করল, আপনি কে? আবূ বকর (রাঃ) উত্তরে বললেন, আমি একজন মুহাজির লোক। মহিলাটি জিজ্ঞেস করল, আপনি কোন গোত্রের মুহাজির? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, কুরাইশ গোত্রের। মহিলাটি জিজ্ঞেস করলেন, কোন কুরাইশের কোন শাখার আপনি? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তুমি তো অত্যধিক উত্তম প্রশ্নকারিণী। আমি আবূ বকর। তখন মহিলাটি তাঁকে জিজ্ঞেস করল, জাহিলীয়্যা যুগের পর যে উত্তম দ্বীন ও কল্যাণময় জীবন বিধান আল্লাহ আমাদেরকে দান করেছেন সে দ্বীনের উপর আমরা কতদিন সঠিকভাবে টিকে থাকতে পারব? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, যতদিন তোমাদের ইমামগণ তোমাদেরকে নিয়ে দ্বীনের উপর অটল থাকবেন। মহিলা জিজ্ঞেস করল, ইমামগণ কারা? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তোমাদের গোত্রে ও সমাজে এমন সম্ভ্রান্ত ও নেতৃস্থানীয় লোক কি দেখনি যারা নির্দেশ দিলে সকলেই তা মেনে চলে? নারীটি উত্তর দিল, হাঁ। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, এরাই হলেন জনগণের ইমাম।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৪)

৩৮৩৫

حَدَّثَنِيْ فَرْوَةُ بْنُ أَبِي الْمَغْرَاءِ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ أَسْلَمَتْ امْرَأَةٌ سَوْدَاءُ لِبَعْضِ الْعَرَبِ وَكَانَ لَهَا حِفْشٌ فِي الْمَسْجِدِ قَالَتْ فَكَانَتْ تَأْتِيْنَا فَتَحَدَّثُ عِنْدَنَا فَإِذَا فَرَغَتْ مِنْ حَدِيْثِهَا قَالَتْ وَيَوْمُ الْوِشَاحِ مِنْ تَعَاجِيْبِ رَبِّنَا أَلَا إِنَّهُ مِنْ بَلْدَةِ الْكُفْرِ أَنْجَانِيْ فَلَمَّا أَكْثَرَتْ قَالَتْ لَهَا عَائِشَةُ وَمَا يَوْمُ الْوِشَاحِ قَالَتْ خَرَجَتْ جُوَيْرِيَةٌ لِبَعْضِ أَهْلِيْ وَعَلَيْهَا وِشَاحٌ مِنْ أَدَمٍ فَسَقَطَ مِنْهَا فَانْحَطَّتْ عَلَيْهِ الْحُدَيَّا وَهِيَ تَحْسِبُهُ لَحْمًا فَأَخَذَتْهُ فَاتَّهَمُونِيْ بِهِ فَعَذَّبُوْنِيْ حَتَّى بَلَغَ مِنْ أَمْرِيْ أَنَّهُمْ طَلَبُوْا فِيْ قُبُلِيْ فَبَيْنَاهُمْ حَوْلِيْ وَأَنَا فِيْ كَرْبِيْ إِذْ أَقْبَلَتْ الْحُدَيَّا حَتَّى وَازَتْ بِرُءُوْسِنَا ثُمَّ أَلْقَتْهُ فَأَخَذُوْهُ فَقُلْتُ لَهُمْ هَذَا الَّذِيْ اتَّهَمْتُمُونِيْ بِهِ وَأَنَا مِنْهُ بَرِيئَةٌ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আরবের কোন এক গোত্রের এক (মুক্তিপ্রাপ্ত) কৃষ্ণকায় মহিলা ইসলাম গ্রহণ করেন। মসজিদের পাশে ছিল তার একটি ছোট ঘর। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, সে আমদের নিকট আসত এবং আমাদের সাথে কথাবার্তা বলত। যখন তার বাক্যালাপ শেষ হত তখন প্রায়ই বলতো, ইয়াওমূল বিশাহ (মণিমুক্তা খচিত হারের দিন) আমাদের রবের পক্ষ হতে আশ্চর্যজনক ঘটনাবলীর একটি দিন জেনে রাখুন! আমার রব আমাকে কুফর এর দেশ হতে মুক্তি দিয়েছেন। সে এ কথাটি প্রায়ই বলত। একদিন ‘আয়িশা (রাঃ) ঐ মহিলাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়াওমূল বিশাহ’ কী? তখন সে বলল যে, আমার মুনিবের পরিবারের এক শিশু কন্যা ঘর হতে বের হল। তার গলায় চামড়ার (উপর মনিমুক্তা খচিত) একটি হার ছিল। হারটি (ছিড়ে) গলা হতে পড়ে গেল। তখন একটি চিল ওটা গোশ্‌তের টুকরা মনে করে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল। তারা আমাকে হার চুরির সন্দেহে শাস্তি ও নির্যাতন করতে লাগল। অবশেষে তারা আমার লজ্জাস্থানে তল্লাশী চালাল। যখন তারা আমার চারপাশে ছিল এবং আমি চরম দুঃখে ছিলাম এমন সময় একটি চিল কোত্থেকে উড়ে আসল এবং আমাদের মাথার উপরে এসে হারটি ফেলে দিল। তারা হারটি তুলে নিল। তখন আমি বললাম, এটা হল সেই হার যেটা চুরির জন্য আমার উপর অপবাদ দিয়েছ, অথচ এ ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৫)

৩৮৩৬

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَلَا مَنْ كَانَ حَالِفًا فَلَا يَحْلِفْ إِلَّا بِاللهِ فَكَانَتْ قُرَيْشٌ تَحْلِفُ بِآبَائِهَا فَقَالَ لَا تَحْلِفُوْا بِآبَائِكُمْ
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাবধান! যদি তোমাদের কসম করতে হয় তাহলে আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করো না। লোকজন তাদের বাপ-দাদার নামে কসম করত। তিনি বললেন, সাবধান! বাপ-দাদার নামে কসম করো না।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৬)

৩৮৩৭

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَمْرٌو أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الْقَاسِمِ حَدَّثَهُ أَنَّ الْقَاسِمَ كَانَ يَمْشِيْ بَيْنَ يَدَيْ الْجَنَازَةِ وَلَا يَقُومُ لَهَا وَيُخْبِرُ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَقُومُوْنَ لَهَا يَقُوْلُوْنَ إِذَا رَأَوْهَا كُنْتِ فِيْ أَهْلِكِ مَا أَنْتِ مَرَّتَيْنِ
‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু কাসিম (রাঃ) তার কাছে বলেছেন যে, কাসিম জানাযা বহন করার সময় আগে আগে চলতেন। জানাযা দেখলে তিনি দাঁড়াতেন না [১] এবং তিনি বর্ণনা করেছেন যে, ‘আয়িশা (রাঃ) বলতেন, জাহিলী যুগে মুশরিকগণ জানাযা দেখলে দাঁড়াত এবং মৃত ব্যক্তির রূহকে লক্ষ্য করে বলত, তুমি তোমার আপন জনদের সাথেই আছ যেমন তোমার জীবদ্দশায় ছিলে। এ কথাটি তার দু’বার বলত।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৭)
[১] ১৩১১, ১৩১২, ১৩১৩ নং হাদীস এর বৈপরিত্য লক্ষ্য করা যায়। উক্ত হাদীসগুলোতে জানাযা দেখে দাঁড়ানোর প্রমান পাওয়া যায়। এব্যাপারে ইব্‌নু হাজার আসকালানী (রহঃ) - এর ফাতহুল বারীতে আছে, যে সকল মাসাআলার সাথে অন্যান্য সাহাবীর সঙ্গে মা ‘আয়িশা (রাঃ) - এর মত পার্থক্য ছিল এটি তার অন্তর্গত। তবে এখানে উক্ত হাদীসত্রয়ের আলোকে যা মা ‘আয়িশার মতের চেয়ে অন্যান্য সাহাবীর মতই প্রাধান্য পায়।

(ফাতহুল বারী ৭ম খন্ড ১৯২ পৃষ্ঠা )

৩৮৩৮

حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ إِنَّ الْمُشْرِكِيْنَ كَانُوْا لَا يُفِيْضُوْنَ مِنْ جَمْعٍ حَتَّى تَشْرُقَ الشَّمْسُ عَلَى ثَبِيْرٍ فَخَالَفَهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَفَاضَ قَبْلَ أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ
আমর ইব্‌নু মায়মূন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার ইব্‌নুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, মুশরিকগণ সাবীর পাহাড়ের উপর সূর্যের কিরণ না পড়া পর্যন্ত মুয্‌দালাফা হতে রওয়ানা হত না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্য উঠার আগে রাওয়ানা হয়ে তাদের প্রথার খেলাফ করেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৮)

৩৮৩৯

حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ قُلْتُ لِأَبِيْ أُسَامَةَ حَدَّثَكُمْ يَحْيَى بْنُ الْمُهَلَّبِ حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ عَنْ عِكْرِمَةَ وَكَأْسًا دِهَاقًا قَالَ مَلأَى مُتَتَابِعَةً قَالَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ سَمِعْتُ أَبِيْ يَقُوْلُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ اسْقِنَا كَأْسًا دِهَاقًا (النبا : 34)
ইকরিমাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইকরিমাহ (রহঃ) বলেন, আল্লাহর বাণীঃ كَأْسًا دِهَاقًا (আন-নাবাঃ ৩৪) এর তাফসীর প্রসঙ্গে বলেন, একের পর এক শরাবে পূর্ণ পেয়ালা। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৪ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৯ প্রথমাংশ)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৪ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৯ প্রথমাংশ)

৩৮৪০

حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ قُلْتُ لِأَبِيْ أُسَامَةَ حَدَّثَكُمْ يَحْيَى بْنُ الْمُهَلَّبِ حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ عَنْ عِكْرِمَةَ وَكَأْسًا دِهَاقًا قَالَ مَلأَى مُتَتَابِعَةً قَالَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ سَمِعْتُ أَبِيْ يَقُوْلُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ اسْقِنَا كَأْسًا دِهَاقًا
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমার পিতা ‘আব্বাস (রাঃ) - কে ইসলামের পূর্ব যুগে বলতে শুনেছি, আমাদেরকে পাত্র ভর্তি শরাব একের পর এক পান করাও।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৯ শেষাংশ)
এই অধ্যায়ের বাকি হাদিসের জন্য নিচের লিংকে ক্লিক রুরন

অধ্যায় "আনসারগণের মর্যাদা" হাদিস নং - ৩৮৪১ থেকে ৩৯০০

 অধ্যায় "আনসারগণের মর্যাদা" হাদিস নং - ৩৯০১ থেকে ৩৯৪৮

No comments

Powered by Blogger.