সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "আনসারগণের মর্যাদা" হাদিস নং - ৩৮৪১ থেকে ৩৯০০

৩৮৪১
حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَصْدَقُ كَلِمَةٍ قَالَهَا الشَّاعِرُ كَلِمَةُ لَبِيْدٍ أَلَا كُلُّ شَيْءٍ مَا خَلَا اللهَ بَاطِلٌ وَكَادَ أُمَيَّةُ بْنُ أَبِي الصَّلْتِ أَنْ يُسْلِمَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সবচেয়ে সঠিক বাক্য যা কোন কবি বলেছেন তা হল লাবীদ এর এ পংক্তিটি - সাবধান, আল্লাহ্‌ ছাড়া সব জিনিসই বাতিল ও অসার। এবং কবি উমাইয়্যা ইব্‌নু আবূ সাল্‌ত ইসলাম গ্রহণের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬০)

৩৮৪২

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنِيْ أَخِيْ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلَالٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ لِأَبِيْ بَكْرٍ غُلَامٌ يُخْرِجُ لَهُ الْخَرَاجَ وَكَانَ أَبُوْ بَكْرٍ يَأْكُلُ مِنْ خَرَاجِهِ فَجَاءَ يَوْمًا بِشَيْءٍ فَأَكَلَ مِنْهُ أَبُوْ بَكْرٍ فَقَالَ لَهُ الْغُلَامُ أَتَدْرِيْ مَا هَذَا فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ وَمَا هُوَ قَالَ كُنْتُ تَكَهَّنْتُ لِإِنْسَانٍ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَمَا أُحْسِنُ الْكِهَانَةَ إِلَّا أَنِّيْ خَدَعْتُهُ فَلَقِيَنِيْ فَأَعْطَانِيْ بِذَلِكَ فَهَذَا الَّذِيْ أَكَلْتَ مِنْهُ فَأَدْخَلَ أَبُوْ بَكْرٍ يَدَهُ فَقَاءَ كُلَّ شَيْءٍ فِيْ بَطْنِهِ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) - এর একজন ক্রীতদাস ছিল। সে প্রতিদিন তার উপর ধার্য কর আদায় করত। আর আবূ বকর (রাঃ) তার দেওয়া কর হতে আহার করতেন। একদিন সে কিছু খাবার জিনিস এনে দিল। তা হতে তিনি আহার করলেন। তারপর গোলাম বলল, আপনি জানেন কি ওটা কিভাবে উপার্জিত করা হয়েছে যা আপনি খেয়েছেন? তিনি বললেন, বলত কিভাবে? গোলাম উত্তরে বলল, আমি জাহিলী যুগে এক ব্যক্তির ভবিষ্যৎ গণনা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভবিষ্যৎ গণনা আমার ভালভাবে জানা ছিল না। তথাপি প্রতারণা করে তা করেছিলাম। আমার সাথে তার দেখা হলে গণনার বিনিময়ে এ দ্রব্যাদি সে আমাকে হাদীয়া দিল যা হতে আপনি আহার করলেন। আবূ বকর (রাঃ) এটা শুনামাত্র মুখের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিলেন এবং পেটের ভিতর যা কিছু ছিল সবই বমি করে দিলেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬১)

৩৮৪৩

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ أَخْبَرَنِيْ نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَتَبَايَعُوْنَ لُحُومَ الْجَزُوْرِ إِلَى حَبَلِ الْحَبَلَةِ قَالَ وَحَبَلُ الْحَبَلَةِ أَنْ تُنْتَجَ النَّاقَةُ مَا فِيْ بَطْنِهَا ثُمَّ تَحْمِلَ الَّتِيْ نُتِجَتْ فَنَهَاهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذَلِكَ
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইসলামের পূর্ব যুগে মানুষ ‘হাবালুল হাবালা’ রুপে উটের গোশ্‌ত ক্রয়-বিক্রয় করত। রাবী বলেন, হাবালুল হাবালার অর্থ হল - তারা উট কেনা বেচা করত এই শর্তে যে, কোন নিদিষ্ট গর্ভবতী উটনী বাচ্চা প্রসব করলে পর ঐ প্রসব করা বাচ্চা যখন গর্ভবতী হবে তখন উটের দাম পরিশোধ করা হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে এরুপ কেনা বেচা করতে নিষেধ করে দিলেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬২)

৩৮৪৪

حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ قَالَ غَيْلَانُ بْنُ جَرِيْرٍ كُنَّا نَأْتِيْ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ فَيُحَدِّثُنَا عَنْ الأَنْصَارِ وَكَانَ يَقُوْلُ لِيْ فَعَلَ قَوْمُكَ كَذَا وَكَذَا يَوْمَ كَذَا وَكَذَا وَفَعَلَ قَوْمُكَ كَذَا وَكَذَا يَوْمَ كَذَا وَكَذَا
গায়লান ইব্‌নু জারীর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) - এর কাছে গেলে তিনি আমাদের কাছে আনসারদের ঘটনা বর্ণনা করতেন। রাবী বলেন, আমাকে লক্ষ্য করে তিনি বলতেন, তোমার জাতি অমুক অমুক দিন অমুক অমুক কাজ করেছে, অমুক অমুক দিন অমুক অমুক কাজ করেছে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৩)

৬৩/২৭. অধ্যায়ঃ

জাহিলী যুগের কাসামাহ ( শপথ গ্রহণ )

৩৮৪৫

حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا قَطَنٌ أَبُو الْهَيْثَمِ حَدَّثَنَا أَبُوْ يَزِيْدَ الْمَدَنِيُّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ إِنَّ أَوَّلَ قَسَامَةٍ كَانَتْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ لَفِيْنَا بَنِيْ هَاشِمٍ كَانَ رَجُلٌ مِنْ بَنِيْ هَاشِمٍ اسْتَأْجَرَهُ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ مِنْ فَخِذٍ أُخْرَى فَانْطَلَقَ مَعَهُ فِيْ إِبِلِهِ فَمَرَّ رَجُلٌ بِهِ مِنْ بَنِيْ هَاشِمٍ قَدْ انْقَطَعَتْ عُرْوَةُ جُوَالِقِهِ فَقَالَ أَغِثْنِيْ بِعِقَالٍ أَشُدُّ بِهِ عُرْوَةَ جُوَالِقِيْ لَا تَنْفِرُ الْإِبِلُ فَأَعْطَاهُ عِقَالًا فَشَدَّ بِهِ عُرْوَةَ جُوَالِقِهِ فَلَمَّا نَزَلُوْا عُقِلَتْ الْإِبِلُ إِلَّا بَعِيْرًا وَاحِدًا فَقَالَ الَّذِيْ اسْتَأْجَرَهُ مَا شَأْنُ هَذَا الْبَعِيْرِ لَمْ يُعْقَلْ مِنْ بَيْنِ الْإِبِلِ قَالَ لَيْسَ لَهُ عِقَالٌ قَالَ فَأَيْنَ عِقَالُهُ قَالَ فَحَذَفَهُ بِعَصًا كَانَ فِيْهَا أَجَلُهُ فَمَرَّ بِهِ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْيَمَنِ فَقَالَ أَتَشْهَدُ الْمَوْسِمَ قَالَ مَا أَشْهَدُ وَرُبَّمَا شَهِدْتُهُ قَالَ هَلْ أَنْتَ مُبْلِغٌ عَنِّيْ رِسَالَةً مَرَّةً مِنْ الدَّهْرِ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَكَتَبَ إِذَا أَنْتَ شَهِدْتَ الْمَوْسِمَ فَنَادِ يَا آلَ قُرَيْشٍ فَإِذَا أَجَابُوكَ فَنَادِ يَا آلَ بَنِيْ هَاشِمٍ فَإِنْ أَجَابُوكَ فَسَلْ عَنْ أَبِيْ طَالِبٍ فَأَخْبِرْهُ أَنَّ فُلَانًا قَتَلَنِيْ فِيْ عِقَالٍ وَمَاتَ الْمُسْتَأْجَرُ فَلَمَّا قَدِمَ الَّذِيْ اسْتَأْجَرَهُ أَتَاهُ أَبُوْ طَالِبٍ فَقَالَ مَا فَعَلَ صَاحِبُنَا قَالَ مَرِضَ فَأَحْسَنْتُ الْقِيَامَ عَلَيْهِ فَوَلِيْتُ دَفْنَهُ قَالَ قَدْ كَانَ أَهْلَ ذَاكَ مِنْكَ فَمَكُثَ حِيْنًا ثُمَّ إِنَّ الرَّجُلَ الَّذِيْ أَوْصَى إِلَيْهِ أَنْ يُبْلِغَ عَنْهُ وَافَى الْمَوْسِمَ فَقَالَ يَا آلَ قُرَيْشٍ قَالُوْا هَذِهِ قُرَيْشٌ قَالَ يَا آلَ بَنِيْ هَاشِمٍ قَالُوْا هَذِهِ بَنُوْ هَاشِمٍ قَالَ أَيْنَ أَبُوْ طَالِبٍ قَالُوْا هَذَا أَبُوْ طَالِبٍ قَالَ أَمَرَنِيْ فُلَانٌ أَنْ أُبْلِغَكَ رِسَالَةً أَنَّ فُلَانًا قَتَلَهُ فِيْ عِقَالٍ فَأَتَاهُ أَبُوْ طَالِبٍ فَقَالَ لَهُ اخْتَرْ مِنَّا إِحْدَى ثَلَاثٍ إِنْ شِئْتَ أَنْ تُؤَدِّيَ مِائَةً مِنْ الْإِبِلِ فَإِنَّكَ قَتَلْتَ صَاحِبَنَا وَإِنْ شِئْتَ حَلَفَ خَمْسُوْنَ مِنْ قَوْمِكَ إِنَّكَ لَمْ تَقْتُلْهُ فَإِنْ أَبَيْتَ قَتَلْنَاكَ بِهِ فَأَتَى قَوْمَهُ فَقَالُوْا نَحْلِفُ فَأَتَتْهُ امْرَأَةٌ مِنْ بَنِيْ هَاشِمٍ كَانَتْ تَحْتَ رَجُلٍ مِنْهُمْ قَدْ وَلَدَتْ لَهُ فَقَالَتْ يَا أَبَا طَالِبٍ أُحِبُّ أَنْ تُجِيْزَ ابْنِيْ هَذَا بِرَجُلٍ مِنْ الْخَمْسِيْنَ وَلَا تُصْبِرْ يَمِيْنَهُ حَيْثُ تُصْبَرُ الأَيْمَانُ فَفَعَلَ فَأَتَاهُ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَقَالَ يَا أَبَا طَالِبٍ أَرَدْتَ خَمْسِيْنَ رَجُلًا أَنْ يَحْلِفُوْا مَكَانَ مِائَةٍ مِنْ الْإِبِلِ يُصِيْبُ كُلَّ رَجُلٍ بَعِيْرَانِ هَذَانِ بَعِيْرَانِ فَاقْبَلْهُمَا عَنِّيْ وَلَا تُصْبِرْ يَمِيْنِيْ حَيْثُ تُصْبَرُ الأَيْمَانُ فَقَبِلَهُمَا وَجَاءَ ثَمَانِيَةٌ وَأَرْبَعُوْنَ فَحَلَفُوْا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَوَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ مَا حَالَ الْحَوْلُ وَمِنْ الثَّمَانِيَةِ وَأَرْبَعِيْنَ عَيْنٌ تَطْرِفُ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সর্বপ্রথম কাসামাহ হত্যাকারী গোত্রের লোকের (শপথ গ্রহণ) জাহিলী যুগে অনুষ্ঠিত হয় আমাদের হাশেম গোত্রে। কুরাইশের কোন একটি শাখা গোত্রের একজন লোক বনু হাশিমের একজন মানুষকে মজুর হিসাবে নিয়োগ করল। ঐ মজুর তার সাথে উটগুলির নিকট গমন করল। ঘটনাক্রমে বনু হাশিমের অপর এক ব্যক্তি তাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের নিকটবর্তী হওয়ার পর খাদ্যপূর্ণ বস্তার বাঁধন ছিড়ে গেল। তখন সে মজুর ব্যক্তিটিকে বলল, আমাকে একটি রশি দিয়ে সাহায্য কর, যেন আমার বস্তার মুখ বাঁধতে পারি এবং উটটিও যেন পালিয়ে যেতে না পারে। মজুর তাকে একটি রশি দিল। ঐ ব্যক্তি তার বস্তার মুখ বেঁধে নিল। যখন তারা অবতরণ করল তখন একটি ছাড়া সকল উট বেঁধে রাখা হল। মজুর নিয়োগকারী মজুরকে জিজ্ঞেস করল, সকল উট বাঁধা কিন্তু এ উটটি বাঁধা হল না কেন? মজুর উত্তরে বলল, এ উটটি বাঁধার কোন রশি নেই। তখন সে বলল, এই উটটির রশি কোথায়? রাবী বলেন, এ কথা শুনে মালিক মজুরকে লাঠি দিয়ে এমনভাবে আঘাত করল যে শেষ পর্যন্ত এ আঘাতেই তার মৃত্যু হল। আহত মজুরটি যখন মুমূর্ষ অবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুণছিল, তখন ইয়ামানের একজন লোক তার নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। আহত মজুর তাকে জিজ্ঞেস করল, আপনি কি এবার হাজ্জে যাবেন? সে বলল, না, তবে অনেকবার গিয়েছি। আহত মজুরটি বলল, আপনি কি আমার সংবাদটি আপনার জীবনে যে কোন সময় পৌছে দিতে পারেন? ইয়ামানী লোকটি উত্তরে বলল, হাঁ তা পারব। তারপর মজুরটি বলল, আপনি যখন হজ্জ উপলক্ষে মক্কায় উপস্থিত হবেন তখন হে কুরাইশের লোকজন বলে ঘোষণা দিবেন। যখন তারা আপনার ডাকে সাড়া দিবে, তখন আপনি বনু হাশিম গোত্রকে ডাক দিবেন, যদি তারা আপনার ডাকে সাড়া দেয়, তবে আপনি তাদেরকে আবূ তালিব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন এবং তাকে পেলে জানিয়ে দিবেন যে, অমুক ব্যক্তি একটি রশির কারণে আমাকে হত্যা করেছে। কিছুক্ষণ পর আহত মজুরটি মৃত্যু হল। মজুর নিয়োগকারী যখন মক্কায় ফিরে এল তখন আবূ তালিব তার নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন আমাদের ভাইটি কোথায়? তার কি হয়েছে? এখনও ফিরছে না কেন? সে বলল, আপনার ভাই হঠাৎ ভীষণ রোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত মারা গেছে। আমি যথাসাধ্য সেবা শুশ্রূষা করেছি। মারা যাওয়ার পর আমি তাকে যথারীতি সমাহিত করেছি। আবূ তালিব বললেন, তুমি এরূপ করবে আমরা এ আশাই পোষণ করি। এভাবে কিছুদিন কেটে গেল। তারপর ঐ ইয়ামানী ব্যক্তি যাকে সংবাদ পৌছে দেয়ার জন্য মজুর ব্যক্তিটি অসিয়াত করেছিল, হজ্জব্রত পালনে মক্কায় উপস্থিত হল এবং ‘হে কুরাইশগণ’ বলে ডাক দিল। তখন তাকে বলা হল, এই যে, কুরাইশ। সে আবার বলল, হে বনু হাশিম, বলা হল; এই যে, বনু হাশিম। সে জিজ্ঞেস করল, আবূ তালিব কোথায়? লোকজন আবূ তালিবকে দেখিয়ে দিল। তখন ইয়ামানী লোকটি বলল, আপনাদের অমুক ব্যক্তি আপনার নিকট এ সংবাদটি পৌছে দেয়ার জন্য আমাকে অসিয়াত করেছিল যে অমুক ব্যক্তি মাত্র একটি রশির কারণে তাকে হত্যা করেছে। এ কথা শুনে আবূ তালিব মজুর নিয়োগকারী ব্যক্তির নিকট গমন করে বলল; (তুমি আমাদের ভাইকে হত্যা করেছ) কাজেই আমদের তিনটি প্রস্তাবের যে কোন একটি তোমাকে মেনে নিতে হবে। তুমি হয়ত হত্যার বিনিময়ে একশ' উট দিবে অথবা তোমার গোত্রের বিশ্বাসযোগ্য পঞ্চাশ জন লোক হলফ করে বলবে যে তুমি তাকে হত্যা করনি। যদি তুমি এও করতে অস্বীকার কর তবে আমরা তোমাকে হত্যার বিনিময়ে হত্যা করব। তখন হত্যাকরী ব্যক্তিটি নিজ গোত্রীয় লোকদের নিকট গমন করে ঘটনা বর্ণনা করল। ঘটনা শুনে তারা বলল, আমরা হলফ করে বলব। তখন বনু হাশিম গোত্রের এক মহিলা যার বিবাহ হত্যাকারীর গোত্রে হয়েছিল এবং তার একটি সন্তানও হয়েছিল, আবূ তালিবের নিকট এসে বলল, হে আবূ তালিব, আমি এ আশা নিয়ে এসেছি যে, আপনি পঞ্চাশ জন হলফকারী হতে আমার এ সন্তানটিকে রেহাই দিবেন এবং ঐ স্থানে তার হলফ নিবেন না যে স্থানে হলফ নেয়া হয়। আবূ তালিব তার আবদারটি মনজুর করলেন। তারপর হত্যাকারীর গোত্রের এক পুরুষ আবূ তালিবের নিকট এসে বলল, হে আবূ তালিব, আপনি একশ’ উটের পরিবর্তে পঞ্চাশ জনের হলফ নিতে চাচ্ছেন, এ হিসাব অনুযায়ী প্রতিটি হলফকারীর উপর দু’টি উট পড়ে। আমার দু’টি উট গ্রহণ করুন এবং যেখানে হলফ করার জন্য দাঁড় করানো হয় সেখানে দাঁড় করানো হতে আমাকে অব্যাহতি দেন। অপর আট চল্লিশজন এসে যথাস্থানে হলফ করল। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম, হলফ করার পর একটি বছর অতিবাহিত হওয়ার পূর্বেই ঐ আটচল্লিশ জনের একজনও বেঁচে ছিল না।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৪)

৩৮৪৬

حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ يَوْمُ بُعَاثٍ يَوْمًا قَدَّمَهُ اللهُ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فَقَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ افْتَرَقَ مَلَؤُهُمْ وَقُتِّلَتْ سَرَوَاتُهُمْ وَجُرِّحُوْا قَدَّمَهُ اللهُ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ دُخُوْلِهِمْ فِي الْإِسْلَامِ وَقَالَ ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنَا عَمْرٌو عَنْ بُكَيْرِ بْنِ الأَشَجِّ أَنَّ كُرَيْبًا مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ حَدَّثَهُ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَيْسَ السَّعْيُ بِبَطْنِ الْوَادِيْ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ سُنَّةً إِنَّمَا كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَسْعَوْنَهَا وَيَقُوْلُوْنَ لَا نُجِيْزُ الْبَطْحَاءَ إِلَّا شَدًّا
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বু’আস যুদ্ধ এমন একটি যুদ্ধ ছিল যা আল্লাহ্‌ তা'আলা তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর অনুকূলে হিজরতের পূর্বেই সংঘটিত করেছিলেন। এ যুদ্ধের কারণে তারা বিভিন্ন দলে উপদলে বিভক্ত হয়েছিল এবং এদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এই যুদ্ধে নিহত ও আহত হয়েছিল। আল্লাহ্‌ তা’আলা এ যুদ্ধ ঘটিয়ে ছিলেন এ কারণে যেন তারা ইসলাম গ্রহণ করে নেয়।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬০ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৫ শেষাংশ)

৩৮৪৭

حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ يَوْمُ بُعَاثٍ يَوْمًا قَدَّمَهُ اللهُ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فَقَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ وَقَدْ افْتَرَقَ مَلَؤُهُمْ وَقُتِّلَتْ سَرَوَاتُهُمْ وَجُرِّحُوْا قَدَّمَهُ اللهُ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ دُخُوْلِهِمْ فِي الْإِسْلَامِ وَقَالَ ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنَا عَمْرٌو عَنْ بُكَيْرِ بْنِ الأَشَجِّ أَنَّ كُرَيْبًا مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ حَدَّثَهُ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَيْسَ السَّعْيُ بِبَطْنِ الْوَادِيْ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ سُنَّةً إِنَّمَا كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَسْعَوْنَهَا وَيَقُوْلُوْنَ لَا نُجِيْزُ الْبَطْحَاءَ إِلَّا شَدًّا
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, সাফা ও মারওয়ার মধ্যে অবস্থিত বাতনে ওয়াদী নামক স্থানে সাঈ (দৌড়ান) করা সুন্নাত নয়। জাহিলী যুগের লোকেরাই কেবল সেখানে সাঈ করত এবং বলত, আমরা বাতহা নামক জায়গাটি তাড়াতাড়ি দৌড়ে পার হব।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬০ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৫ শেষাংশ)

৩৮৪৮

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ أَخْبَرَنَا مُطَرِّفٌ سَمِعْتُ أَبَا السَّفَرِ يَقُوْلُ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ يَا أَيُّهَا النَّاسُ اسْمَعُوْا مِنِّيْ مَا أَقُوْلُ لَكُمْ وَأَسْمِعُونِيْ مَا تَقُوْلُوْنَ وَلَا تَذْهَبُوْا فَتَقُوْلُوْا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ مَنْ طَافَ بِالْبَيْتِ فَلْيَطُفْ مِنْ وَرَاءِ الْحِجْرِ وَلَا تَقُوْلُوْا الْحَطِيْمُ فَإِنَّ الرَّجُلَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ كَانَ يَحْلِفُ فَيُلْقِيْ سَوْطَهُ أَوْ نَعْلَهُ أَوْ قَوْسَهُ
আবুস্‌ সাফার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবুস্‌ সাফার (রহঃ) বলেন, আমি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) - কে এ কথা বলতে শুনেছি, হে লোকেরা! আমি যা বলছি তা মনোযোগ দিয়ে শোন এবং তোমরা যা বলতে চাও তাও আমকে শুনাও এবং এমন যেন না হয় যে তোমরা এখান হতে চলে গিয়ে বলবে ইব্‌নু ‘আব্বাস এমন বলেছেন। যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করতে ইচ্ছা করে সে যেন হিজর এর বাহির হতে তাওয়াফ করে এবং এ জায়গাকে হাতীম বলবে না কারণ, জাহিলী যুগে কোন লোক এ জায়গাটিতে তার চাবুক, জুতা, তীর, ধনু ইত্যাদি নিক্ষেপ করে হলফ করত।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৬)

৩৮৪৯

حَدَّثَنَا نُعَيْمُ بْنُ حَمَّادٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ قَالَ رَأَيْتُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ قِرْدَةً اجْتَمَعَ عَلَيْهَا قِرَدَةٌ قَدْ زَنَتْ فَرَجَمُوْهَا فَرَجَمْتُهَا مَعَهُمْ
আমর ইব্‌নু মাইমূন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জাহিলীয়্যাতের যুগে দেখেছি, একটি বানরী ব্যাভিচার করার কারণে অনেকগুলো বানর একত্র হয়ে প্রস্তর নিক্ষেপে তাকে হত্যা করল। আমিও তাদের সাথে প্রস্তর নিক্ষেপ করলাম।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৭)

৩৮৫০

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ خِلَالٌ مِنْ خِلَالِ الْجَاهِلِيَّةِ الطَّعْنُ فِي الأَنْسَابِ وَالنِّيَاحَةُ وَنَسِيَ الثَّالِثَةَ قَالَ سُفْيَانُ وَيَقُوْلُوْنَ إِنَّهَا الِاسْتِسْقَاءُ بِالأَنْوَاءِ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাহিলী যুগের কাজের মধ্যে একটি হলঃ কারো বংশ-কুল নিয়ে খুঁটা দেয়া, কারো মৃত্যুতে বিলাপ করা। তৃতীয়টি (বারী 'উবাইদুল্লাহ) ভুলে গেছেন। তবে সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, তৃতীয় কাজটি হল, তারকার সাহায্যে বৃষ্টি চাওয়া।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৮)

৬৩/২৮. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নবু্য়্যাত লাভ।
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনু ‘আবদুল্লাহ্, ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব ইবনু হাশিম ইবনু আবদ মানাফ ইবনু কুসাঈ ইবনু কিলাব ইবনু মুর্রা ইবনু কা‘ব ইবনু লুআই ইবনু গালিব ইবনু ফিহর ইবনু মালিক ইবনু নাযর ইবনু কিনানাহ ইবনু খুযাইমাহ ইবনু মুদরিকাহ ইবনু ইলিয়াস ইবনু মুযার ইবনু নাযার ইবনু মা‘দ্দ ইবনু ‘আদনান।

৩৮৫১

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ ابْنُ أَبِيْ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا النَّضْرُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أُنْزِلَ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ ابْنُ أَرْبَعِيْنَ فَمَكَثَ بِمَكَّةَ ثَلَاثَ عَشْرَةَ سَنَةً ثُمَّ أُمِرَ بِالْهِجْرَةِ فَهَاجَرَ إِلَى الْمَدِيْنَةِ فَمَكَثَ بِهَا عَشْرَ سِنِيْنَ ثُمَّ تُوُفِّيَ صلى الله عليه وسلم
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর উপর যখন (ওয়াহী) নাযিল করা হয় তখন তাঁর বয়স ছিল চল্লিশ বছর। অতঃপর তিনি মক্কায় তের বছর অবস্থান করেন। অতঃপর তাকেঁ হিজরত করার আদেশ দেয়া হয়। তিনি হিজরত করে মদীনায় চলে গেলেন এবং সেখানে দশ বছর অবস্থান করলেন, তারপর তাঁর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যু হয়।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৯)

৬৩/২৯. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবীগণ মক্কার মুশরিকদের দ্বারা যে দুঃখ জ্বালা ভোগ করেছেন তার বিবরণ।

৩৮৫২

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا بَيَانٌ وَإِسْمَاعِيْلُ قَالَا سَمِعْنَا قَيْسًا يَقُوْلُ سَمِعْتُ خَبَّابًا يَقُوْلُ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مُتَوَسِّدٌ بُرْدَةً وَهُوَ فِيْ ظِلِّ الْكَعْبَةِ وَقَدْ لَقِيْنَا مِنْ الْمُشْرِكِيْنَ شِدَّةً فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَا تَدْعُو اللهَ فَقَعَدَ وَهُوَ مُحْمَرٌّ وَجْهُهُ فَقَالَ لَقَدْ كَانَ مَنْ قَبْلَكُمْ لَيُمْشَطُ بِمِشَاطِ الْحَدِيْدِ مَا دُوْنَ عِظَامِهِ مِنْ لَحْمٍ أَوْ عَصَبٍ مَا يَصْرِفُهُ ذَلِكَ عَنْ دِيْنِهِ وَيُوضَعُ الْمِنْشَارُ عَلَى مَفْرِقِ رَأْسِهِ فَيُشَقُّ بِاثْنَيْنِ مَا يَصْرِفُهُ ذَلِكَ عَنْ دِيْنِهِ وَلَيُتِمَّنَّ اللهُ هَذَا الأَمْرَ حَتَّى يَسِيْرَ الرَّاكِبُ مِنْ صَنْعَاءَ إِلَى حَضْرَمَوْتَ مَا يَخَافُ إِلَّا اللهَ زَادَ بَيَانٌ وَالذِّئْبَ عَلَى غَنَمِهِ
খাব্‌বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খাব্‌বাব (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট হাযির হলাম। তখন তিনি তাঁর নিজের চাদরকে বালিশ বানিয়ে কা’বা গৃহের ছায়ায় বিশ্রাম গ্রহণ করছিলেন। আমরা মুশরিকদের পক্ষ হতে কঠিন নির্যাতন ভোগ করছিলাম। তাই আমি বললাম, আপনি কি আল্লাহ্‌র কাছে দু’আ করবেন না? তখন তিনি উঠে বসলেন এবং তাঁর চেহারা লাল হয়ে গেল। তিনি বললেন, তোমাদের পূর্বের ঈমানদারদের মধ্যে কারো কারো শরীরের হাড় পর্যন্ত তামাম গোশত ও শিরা উপশিরাগুলি লোহার চিরুণী দিয়ে আঁচড়ে বের করে ফেলা হত। কিন্তু এসব নির্যাতনও তাদেরকে দ্বীন হতে বিমুখ করতে পারত না। তাঁদের মধ্যে কারো মাথার মাঝখানে করাত রেখে তাকে দ্বিখন্ডিত করে ফেলা হত। কিন্তু এ নির্যাতনও তাঁদেরকে তাঁদের দ্বীন হতে ফিরাতে পারত না। আল্লাহ্‌র কসম, আল্লাহ্‌ তা’আলা অবশ্যই দ্বীনকে পরিপূর্ণ করবেন, ফলে একজন উষ্ট্রারোহী সান’আ হতে হাযারা মাউত পর্যন্ত একাই সফর করবে। আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কাউকে সে ভয় করবে না। বারী (রহঃ) আরো বেশি বর্ণনা করেন - এবং তার মেষ পালের উপর নেকড়ে বাঘের আক্রমণ ছাড়া অন্য কোন ভয় সে করবে না।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭০)

৩৮৫৩

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَرَأَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم النَّجْمَ فَسَجَدَ فَمَا بَقِيَ أَحَدٌ إِلَّا سَجَدَ إِلَّا رَجُلٌ رَأَيْتُهُ أَخَذَ كَفًّا مِنْ حَصًا فَرَفَعَهُ فَسَجَدَ عَلَيْهِ وَقَالَ هَذَا يَكْفِيْنِيْ فَلَقَدْ رَأَيْتُهُ بَعْدُ قُتِلَ كَافِرًا بِاللهِ
আবদুল্লাহ [ইব্‌নু মাসউদ (রাঃ)] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা আন-নাজ্‌ম তিলাওয়াত করে সাজদাহ করলেন। তখন এক ব্যক্তি ছাড়া সকলেই সাজ্‌দাহ করলেন। ঐ ব্যক্তিকে আমি দেখলাম, সে এক মুষ্ঠি কাঁকর তুলে নিয়ে তার উপর সাজ্‌দাহ করল এবং সে বলল, আমার জন্য এমন সাজ্‌দাহ করাই ষথেষ্ট। [‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন] পরবর্তী সময়ে আমি তাকে কাফির অবস্থায় নিহত হতে দেখেছি।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭১)

৩৮৫৪

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ بَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَاجِدٌ وَحَوْلَهُ نَاسٌ مِنْ قُرَيْشٍ جَاءَ عُقْبَةُ بْنُ أَبِيْ مُعَيْطٍ بِسَلَى جَزُوْرٍ فَقَذَفَهُ عَلَى ظَهْرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَرْفَعْ رَأْسَهُ فَجَاءَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَام فَأَخَذَتْهُ مِنْ ظَهْرِهِ وَدَعَتْ عَلَى مَنْ صَنَعَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اللَّهُمَّ عَلَيْكَ الْمَلَا مِنْ قُرَيْشٍ أَبَا جَهْلِ بْنَ هِشَامٍ وَعُتْبَةَ بْنَ رَبِيْعَةَ وَشَيْبَةَ بْنَ رَبِيْعَةَ وَأُمَيَّةَ بْنَ خَلَفٍ أَوْ أُبَيَّ بْنَ خَلَفٍ شُعْبَةُ الشَّاكُّ فَرَأَيْتُهُمْ قُتِلُوْا يَوْمَ بَدْرٍ فَأُلْقُوْا فِيْ بِئْرٍ غَيْرَ أُمَيَّةَ بْنِ خَلَفٍ أَوْ أُبَيٍّ تَقَطَّعَتْ أَوْصَالُهُ فَلَمْ يُلْقَ فِي الْبِئْرِ
আবদুল্লাহ (ইব্‌নু মাস’উদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাজদাহ করলেন। তাঁর আশেপাশে কয়েকজন কুরাইশ লোক বসেছিল এমন সময় উকবা ইব্‌নু আবূ মুয়াইত উটের নাড়িভূঁড়ি নিয়ে উপস্থিত হল এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর পিঠের উপর চাপিয়ে দিল। ফলে তিনি তাঁর মাথা উঠাতে পারলেন না। ফাতিমাহ (রাঃ) এসে তাঁর পিঠের উপর হতে তা হটিয়ে দিলেন এবং যে এ কাজটি করেছে তার জন্য বদ দূ’আ করলেন। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আল্লাহ্‌! পাকড়াও কর কুরাইশ নেতৃবৃন্দকে - আবূ জাহাল ইব্‌নু হিশাম, ‘উৎবা ইবনু রাবি’য়াহ, শায়বাহ ইব্‌নু রাবি’য়াহ, উমাইয়াহ ইব্‌নু খালফ অথবা উবাই ইব্‌নু খালাফ। উমাইয়াহ ইব্‌নু খালফ না উবাই ইব্‌নু খালফ এ বিষয়ে শু’বা রাবী সন্দেহ করেন। (ইব্‌নু মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি এদের সবাইকে বদর যুদ্ধে নিহত অবস্থায় দেখেছি। উমাইয়া অথবা উবাই ছাড়া তাদের সকলকে সে দিন একটি কূপে ফেলা হয়েছিল। তার জোড়গুলি এমনভাবে ছিন্নভিন্ন হয়েছিল যে তাকে কূপে ফেলা যায়নি।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭২)

৩৮৫৫

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ حَدَّثَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ أَوْ قَالَ حَدَّثَنِي الْحَكَمُ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ أَمَرَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبْزَى قَالَ سَلْ ابْنَ عَبَّاسٍ عَنْ هَاتَيْنِ الْآيَتَيْنِ مَا أَمْرُهُمَا وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ (القرقان : 68)وَمَنْ يًّقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا (النساء :93) فَسَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ فَقَالَ لَمَّا أُنْزِلَتْ الَّتِيْ فِي الْفُرْقَانِ قَالَ مُشْرِكُوْ أَهْلِ مَكَّةَ فَقَدْ قَتَلْنَا النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ وَدَعَوْنَا مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ وَقَدْ أَتَيْنَا الْفَوَاحِشَ فَأَنْزَلَ اللهُ إِلَّا مَنْ تَابَ وَاٰمَنَ (الفرقان : 70) الْآيَةَ فَهَذِهِ لِأُوْلَئِكَ وَأَمَّا الَّتِيْ فِي النِّسَاءِ الرَّجُلُ إِذَا عَرَفَ الْإِسْلَامَ وَشَرَائِعَهُ ثُمَّ قَتَلَ فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ فَذَكَرْتُهُ لِمُجَاهِدٍ فَقَالَ إِلَّا مَنْ نَدِمَ
সা’ঈদ ইব্‌নু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু আবযা (রাঃ) একদিন আমাকে আদেশ করলেন যে, ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) কে আয়াত দুটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর, এর অর্থ কী? আয়াতটি হল এই “আল্লাহ্‌ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করবে না।” (আল ফুরকানঃ ৬৮) এবং “যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিনকে হত্যা করে।” (আন নিসাঃ ৯৩) আমি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম তখন তিনি বললেন, যখন সূরা আল-ফুরকানের আয়াতটি নাযিল করা হল তখন মক্কার মুশ্‌রিকরা বলল, আমরা তো মানুষকে হত্যা করেছি যা আল্লাহ্‌ হারাম করেছেন এবং আল্লাহ্‌র সাথে অন্যকে মা’বুদ হিসেবে শরীক করেছি। আরো নানা রকম অশ্লীল কাজ কর্ম করেছি। তখন আল্লাহ্‌ তা’আলা নাযিল করলেন, “কিন্তু যারা তওবা করেছে এবং ঈমান এনেছে....” (আল ফুরকানঃ ৭০) সুতরাং এ আয়াতটি তাদের জন্য প্রযোজ্য। আর সূরা নিসার যে আয়াতটি রয়েছে তা ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে যে ইসলাম ও তার বিধি-বিধানকে জেনে বুঝে কবুল করার পর কাউকে (ইচ্ছাকৃত) হত্যা করেছে। তখন তার শাস্তি জাহান্নাম। তারপর মুজাহিদ (রহঃ) কে আমি এ বিষয় জানালাম। তিনি বললেন, তবে যদি কেউ অনুশোচনা করে ...।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭৩)

৩৮৫৬

حَدَّثَنَا عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا الْوَلِيْدُ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنِي الأَوْزَاعِيُّ حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ أَبِيْ كَثِيْرٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ التَّيْمِيِّ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أَخْبِرْنِيْ بِأَشَدِّ شَيْءٍ صَنَعَهُ الْمُشْرِكُوْنَ بِالنَّبِيِّ قَالَ بَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّيْ فِيْ حِجْرِ الْكَعْبَةِ إِذْ أَقْبَلَ عُقْبَةُ بْنُ أَبِيْ مُعَيْطٍ فَوَضَعَ ثَوْبَهُ فِيْ عُنُقِهِ فَخَنَقَهُ خَنْقًا شَدِيْدًا فَأَقْبَلَ أَبُوْ بَكْرٍ حَتَّى أَخَذَ بِمَنْكِبِهِ وَدَفَعَهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَتَقْتُلُوْنَ رَجُلًا أَنْ يَّقُوْلَ رَبِّـيَ اللهُ (غافر : 28) الْآيَةَ تَابَعَهُ ابْنُ إِسْحَاقَ حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ عُرْوَةَ عَنْ عُرْوَةَ قُلْتُ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو وَقَالَ عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ قِيْلَ لِعَمْرِو بْنِ الْعَاصِ وَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ الْعَاصِ
উরওয়াহ ইব্‌নু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উরওয়াহ ইব্‌নু যুবায়র (রহঃ) বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নুল ‘আস (রাঃ) এর নিকটে বললাম, মক্কার মুশরিক কর্তৃক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে সর্বাপেক্ষা কঠোর আচরণের বর্ণনা দিন। তিনি বললেন, একদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা’বা শরীফের হিজর নামক স্থানে সলাত আদায় করছিলেন। তখন ‘উকবাহ ইব্‌নু আবূ মু’য়াইত এল এবং তার চাদর দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কন্ঠনালি পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে ফেলল। তখন আবূ বকর (রাঃ) এগিয়ে এসে ‘উকবাহ্‌কে কাঁধে ধরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট হতে হটিয়ে দিলেন এবং বললেন, “তোমরা এমন লোককে হত্যা করতে চাও যিনি বলেন, একমাত্র আল্লাহই আমার রব।”
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭৪)

৬৩/৩০. অধ্যায়ঃ

আবূ বক্‌র সিদ্দীক (রাঃ) - এর ইসলাম গ্রহন।

৩৮৫৭

حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ حَمَّادٍ الْآمُلِيُّ قَالَ حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ مَعِيْنٍ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ مُجَالِدٍ عَنْ بَيَانٍ عَنْ وَبَرَةَ عَنْ هَمَّامِ بْنِ الْحَارِثِ قَالَ قَالَ عَمَّارُ بْنُ يَاسِرٍ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَا مَعَهُ إِلَّا خَمْسَةُ أَعْبُدٍ وَامْرَأَتَانِ وَأَبُوْ بَكْرٍ
আম্মার ইব্‌নু ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আম্মার ইব্‌নু ইয়াসির (রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করলাম যে, তখন তাঁর সঙ্গে মুসলিম পাঁচজন ক্রীতদাস, দু’জন মহিলা ও আবূ বকর (রাঃ) ব্যতীত অন্য কেউ ছিল না।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭৫)

৬৩/৩১. অধ্যায়ঃ

সা’দ ইব্‌নু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) - এর ইসলাম গ্রহন।

৩৮৫৮

حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا هَاشِمٌ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ سَعْدَ بْنَ أَبِيْ وَقَّاصٍ يَقُوْلُ مَا أَسْلَمَ أَحَدٌ إِلَّا فِي الْيَوْمِ الَّذِيْ أَسْلَمْتُ فِيْهِ وَلَقَدْ مَكُثْتُ سَبْعَةَ أَيَّامٍ وَإِنِّيْ لَثُلُثُ الْإِسْلَامِ
সা’দ ইব্‌নু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা’দ ইব্‌নু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, যেদিন আমি ইসলাম গ্রহন করলাম সেদিন ছাড়া তার পূর্বে কেউ ইসলাম গ্রহন করেনি। আর আমি সাতদিন পর্যন্ত (বয়স্কদের মধ্যে) ইসলাম গ্রহনকারী তৃতীয় জন ছিলাম।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭৬)

৬৩/৩২. অধ্যায়ঃ

জ্বিনদের উল্লেখ।
এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ “আপনি বলুনঃ আমার প্রতি ওয়াহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, জ্বিনদের একটি দল মনযোগ সহকারে কুরআন শ্রবণ করেছে।” (আল-জ্বিন ১)

৩৮৫৯

حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ عَنْ مَعْنِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ قَالَ سَأَلْتُ مَسْرُوقًا مَنْ آذَنَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بِالْجِنِّ لَيْلَةَ اسْتَمَعُوْا الْقُرْآنَ فَقَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوكَ يَعْنِيْ عَبْدَ اللهِ أَنَّهُ آذَنَتْ بِهِمْ شَجَرَةٌ
আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুর রহমান (রহঃ) বলেন, আমি মাসরূক (রহঃ) - কে জিজ্ঞেস করলাম, যে রাতে জ্বিনরা মনযোগের সঙ্গে কুরআন শ্রবণ করেছিল ঐ রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে তাদের উপস্থিতির খবর কে দিয়েছিল? তিনি বললেন, তোমার পিতা ‘আবদুল্লাহ [ইব্‌নু মাসউদ (রাঃ)] আমাকে বলেছেন যে, একটি গাছ তাদের উপস্থিতির খবর দিয়েছিল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭৭)

৩৮৬০

حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ جَدِّيْ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّهُ كَانَ يَحْمِلُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِدَاوَةً لِوَضُوئِهِ وَحَاجَتِهِ فَبَيْنَمَا هُوَ يَتْبَعُهُ بِهَا فَقَالَ مَنْ هَذَا فَقَالَ أَنَا أَبُوْ هُرَيْرَةَ فَقَالَ ابْغِنِيْ أَحْجَارًا أَسْتَنْفِضْ بِهَا وَلَا تَأْتِنِيْ بِعَظْمٍ وَلَا بِرَوْثَةٍ فَأَتَيْتُهُ بِأَحْجَارٍ أَحْمِلُهَا فِيْ طَرَفِ ثَوْبِيْ حَتَّى وَضَعْتُهَا إِلَى جَنْبِهِ ثُمَّ انْصَرَفْتُ حَتَّى إِذَا فَرَغَ مَشَيْتُ فَقُلْتُ مَا بَالُ الْعَظْمِ وَالرَّوْثَةِ قَالَ هُمَا مِنْ طَعَامِ الْجِنِّ وَإِنَّهُ أَتَانِيْ وَفْدُ جِنِّ نَصِيْبِيْنَ وَنِعْمَ الْجِنُّ فَسَأَلُونِي الزَّادَ فَدَعَوْتُ اللهَ لَهُمْ أَنْ لَا يَمُرُّوْا بِعَظْمٍ وَلَا بِرَوْثَةٍ إِلَّا وَجَدُوْا عَلَيْهَا طَعَامًا
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর উযু ও ইস্তিন্‌জার ব্যবহারের জন্য পানি ভর্তি একটি পাত্র নিয়ে পিছনে পিছনে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ তিনি তাকিয়ে বললেন, কে? আমি বললাম, আমি আবূ হুরায়রা। তিনি বললেন, আমাকে কয়েকটি পাথর তালাশ করে দাও। আমি তা দিয়ে ইস্তিন্‌জা করব। [১] তবে, হাড় এবং গোবর আনবে না। আমি আমার কাপড়ের কিনারায় কয়েকটি পাথর এনে তাঁর কাছে রেখে দিলাম এবং আমি সেখান থেকে কিছুটা দূরে গেলাম। তিনি যখন ইস্তিন্‌জা হতে বেরোলেন, তখন আমি এগিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হাড় ও গোবরের ব্যাপার কি? তিনি বললেন, এগুলো জ্বিনের খাবার। আমার কাছে নাসীবীন [২] নামের জায়গা হতে জ্বিনের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। তারা ভাল জ্বিন ছিল। তারা আমার কাছে খাদ্যদ্রব্যের আবেদন জানাল। তখন আমি আল্লাহ্‌র নিকট দু'আ করলাম যে, যখন কোন হাড্ডি বা গোবর তারা লাভ করে তখন তারা যেন তাতে খাদ্য পায়। [৩]
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭৮)
 [১] উক্ত হাদীস হতে জানা যায় যে, পাথর বা তার বিকল্প জিনিস যথা মাটির ঢিলা, টিস্যু ইত্যাদি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করা বৈধ। পানি ও পাথর/ঢিলা একত্রে ব্যবহার করা অতি উত্তম। কেননা তাতে বেশী পবিত্রতা অর্জন হয়। তবে পানি ও ঢিলা উভয়টি বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও যে কোন একটি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা বৈধ। তবে পানি ও ঢিলার যে কোন একটি ব্যবহার করলে, পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা উত্তম।
[২] সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যে আল-জাযিরার একটি নগরী।
[৩] উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় ইব্‌নুততীম বলেনঃ আল্লাহ্ হাড্ডি বা গোবরকে জ্বীনদের খাবারে পরিণত করেন। অথবা তা থেকে খাদ্যের স্বাদ গ্রহন করান। (সূত্রঃ ফাতহুল বারী ৭ম খণ্ড ২১৯ পৃষ্ঠা)

৬৩/৩৩. অধ্যায়ঃ

আবূ যার (রাঃ) - এর ইসলাম গ্রহন।

৩৮৬১

حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ حَدَّثَنَا الْمُثَنَّى عَنْ أَبِيْ جَمْرَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا بَلَغَ أَبَا ذَرٍّ مَبْعَثُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِأَخِيْهِ ارْكَبْ إِلَى هَذَا الْوَادِيْ فَاعْلَمْ لِيْ عِلْمَ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِيْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ يَأْتِيْهِ الْخَبَرُ مِنْ السَّمَاءِ وَاسْمَعْ مِنْ قَوْلِهِ ثُمَّ ائْتِنِيْ فَانْطَلَقَ الأَخُ حَتَّى قَدِمَهُ وَسَمِعَ مِنْ قَوْلِهِ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى أَبِيْ ذَرٍّ فَقَالَ لَهُ رَأَيْتُهُ يَأْمُرُ بِمَكَارِمِ الأَخْلَاقِ وَكَلَامًا مَا هُوَ بِالشِّعْرِ فَقَالَ مَا شَفَيْتَنِيْ مِمَّا أَرَدْتُ فَتَزَوَّدَ وَحَمَلَ شَنَّةً لَهُ فِيْهَا مَاءٌ حَتَّى قَدِمَ مَكَّةَ فَأَتَى الْمَسْجِدَ فَالْتَمَسَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَلَا يَعْرِفُهُ وَكَرِهَ أَنْ يَسْأَلَ عَنْهُ حَتَّى أَدْرَكَهُ بَعْضُ اللَّيْلِ فَاضْطَجَعَ فَرَآهُ عَلِيٌّ فَعَرَفَ أَنَّهُ غَرِيْبٌ فَلَمَّا رَآهُ تَبِعَهُ فَلَمْ يَسْأَلْ وَاحِدٌ مِنْهُمَا صَاحِبَهُ عَنْ شَيْءٍ حَتَّى أَصْبَحَ ثُمَّ احْتَمَلَ قِرْبَتَهُ وَزَادَهُ إِلَى الْمَسْجِدِ وَظَلَّ ذَلِكَ الْيَوْمَ وَلَا يَرَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَمْسَى فَعَادَ إِلَى مَضْجَعِهِ فَمَرَّ بِهِ عَلِيٌّ فَقَالَ أَمَا نَالَ لِلرَّجُلِ أَنْ يَعْلَمَ مَنْزِلَهُ فَأَقَامَهُ فَذَهَبَ بِهِ مَعَهُ لَا يَسْأَلُ وَاحِدٌ مِنْهُمَا صَاحِبَهُ عَنْ شَيْءٍ حَتَّى إِذَا كَانَ يَوْمُ الثَّالِثِ فَعَادَ عَلِيٌّ عَلَى مِثْلِ ذَلِكَ فَأَقَامَ مَعَهُ ثُمَّ قَالَ أَلَا تُحَدِّثُنِيْ مَا الَّذِيْ أَقْدَمَكَ قَالَ إِنْ أَعْطَيْتَنِيْ عَهْدًا وَمِيْثَاقًا لَتُرْشِدَنِّيْ فَعَلْتُ فَفَعَلَ فَأَخْبَرَهُ قَالَ فَإِنَّهُ حَقٌّ وَهُوَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا أَصْبَحْتَ فَاتْبَعْنِيْ فَإِنِّيْ إِنْ رَأَيْتُ شَيْئًا أَخَافُ عَلَيْكَ قُمْتُ كَأَنِّيْ أُرِيْقُ الْمَاءَ فَإِنْ مَضَيْتُ فَاتْبَعْنِيْ حَتَّى تَدْخُلَ مَدْخَلِيْ فَفَعَلَ فَانْطَلَقَ يَقْفُوْهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَدَخَلَ مَعَهُ فَسَمِعَ مِنْ قَوْلِهِ وَأَسْلَمَ مَكَانَهُ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ارْجِعْ إِلَى قَوْمِكَ فَأَخْبِرْهُمْ حَتَّى يَأْتِيَكَ أَمْرِيْ قَالَ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَاصْرُخَنَّ بِهَا بَيْنَ ظَهْرَانَيْهِمْ فَخَرَجَ حَتَّى أَتَى الْمَسْجِدَ فَنَادَى بِأَعْلَى صَوْتِهِ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ ثُمَّ قَامَ الْقَوْمُ فَضَرَبُوْهُ حَتَّى أَضْجَعُوْهُ وَأَتَى الْعَبَّاسُ فَأَكَبَّ عَلَيْهِ قَالَ وَيْلَكُمْ أَلَسْتُمْ تَعْلَمُوْنَ أَنَّهُ مِنْ غِفَارٍ وَأَنَّ طَرِيْقَ تِجَارِكُمْ إِلَى الشَّأْمِ فَأَنْقَذَهُ مِنْهُمْ ثُمَّ عَادَ مِنْ الْغَدِ لِمِثْلِهَا فَضَرَبُوْهُ وَثَارُوْا إِلَيْهِ فَأَكَبَّ الْعَبَّاسُ عَلَيْهِ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর আবির্ভাবের খবর যখন আবূ যার (রাঃ) এর কাছে পৌঁছল, তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেন, তুমি এই উপত্যকায় গিয়ে ঐ লোক সম্পর্কে জেনে আস যে লোক নিজেকে নবী বলে দাবী করছেন ও তাঁর কাছে আসমান হতে সংবাদ আসে। তাঁর কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শুন এবং ফিরে এসে আমাকে শুনাও। তাঁর ভাই রওয়ানা হয়ে ঐ লোকের কাছে পৌঁছে তাঁর কথাবার্তা শুনলেন। এরপর তিনি আবূ যারের নিকট ফিরে গিয়ে বললেন, আমি তাঁকে দেখেছি যে, তিনি উত্তম আখলাক গ্রহন করার জন্য নির্দেশ দান করছেন এবং এমন কালাম যা পদ্য নয়। এতে আবূ যার (রাঃ) বললেন, আমি যে জন্য তোমাকে পাঠিয়েছিলাম সে বিষয়ে তুমি আমাকে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারলে না। আবূ যার (রাঃ) সফরের জন্য সামান্য পাথেয় সংগ্রহ করলেন এবং একটি ছোট্ট পানির মশকসহ মক্কায় উপস্থিত হলেন। মসজিদে হারামে প্রবেশ করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে খোঁজ করতে লাগলেন। তিনি তাঁকে চিনতেন না। আবার কাউকে তাঁর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করাও পছন্দ করলেন না। এ অবস্থায় রাত হয়ে গেল। তিনি শুয়ে পড়লেন। ‘আলী (রাঃ) তাঁকে দেখে বুঝলেন যে, লোকটি বিদেশী। যখন আবূ যার ‘আলী (রাঃ) - কে দেখলেন, তখন তিনি তাঁর পিছনে পিছনে গেলেন। কিন্তু সকাল পর্যন্ত একে অন্যকে কোন কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করলেন না। আবূ যার (রাঃ) পুনরায় তাঁর পাথেয় ও মশক নিয়ে মসজিদে হারামের দিকে চলে গেলেন। এ দিনটি এমনিভাবে কেটে গেল, কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখতে পেলেন না। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল। তিনি শোয়ার জায়গায় ফিরে গেলেন। তখন ‘আলী (রাঃ) তাঁর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, এখনও কি মুসাফিরের গন্তব্য স্থানের সন্ধান হয়নি? সে এখনও এ জায়গায় অবস্থান করছে। তিনি তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন। কেউ কাউকে কোন কিছু জিজ্ঞেস করলেন না। এ অবস্থায় তৃতীয় দিন হয়ে গেল। ‘আলী (রাঃ) পূর্বের ন্যায় তাঁর পাশ দিয়ে যেতে লাগলেন। তিনি তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন। এরপর তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন - তুমি কি আমাকে বলবে না কোন জিনিস এখানে তোমাকে অনুপ্রেরিত করেছে? আবূ যার (রাঃ) বললেন, তুমি যদি আমাকে সঠিক রাস্তা দেখানোর পাকা অঙ্গীকার কর তবেই আমি তোমাকে বলতে পারি। ‘আলী (রাঃ) অঙ্গীকার করলেন এবং আবূ যার (রাঃ) ও তাঁর আগমনের উদেশ্য বললেন। ‘আলী (রাঃ) বললেন, তিনি সত্য, তিনি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। যখন ভোর হয়ে যাবে তখন তুমি আমার অনুসরণ করবে। তোমার জন্য ভয়ের কারণ আছে এমন যদি কোন ব্যাপার আমি দেখতে পাই তবে আমি রাস্তার পাশে চলে যাব যেন আমি পেশাব করতে চাই। আর যদি আমি সোজা চলতে থাকি তবে তুমিও আমার অনুসরণ করতে থাকবে এবং যে ঘরে আমি প্রবেশ করি সে ঘরে তুমিও প্রবেশ করবে। আবূ যার (রাঃ) তাই করলেন। ‘আলী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে প্রবেশ করলেন এবং তিনিও তাঁর [‘আলী (রাঃ)] সাথে প্রবেশ করলেন। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কথাবার্তা শুনলেন এবং ঐখানেই তিনি ইসলাম গ্রহন করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি তোমার স্বগোত্রে ফিরে যাও এবং আমার নির্দেশ না পৌঁছা পর্যন্ত আমার ব্যাপারে তাদেরকে অবহিত করবে। আবূ যার (রাঃ) বললেন, ঐ সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমি আমার ইসলাম গ্রহনকে মুশরিকদের সম্মুখে উচ্চস্বরে ঘোষণা করব। এই বলে তিনি বেরিয়ে পড়লেন ও মসজিদে হারামে গিয়ে হাজির হলেন এবং উচ্চকন্ঠে ঘোষণা করলেন, (আরবি) (তৎক্ষণাৎ) লোকেরা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং মারতে মারতে তাঁকে মাটিতে ফেলে দিল। এমন সময় ‘আব্বাস (রাঃ) এসে তাঁকে রক্ষা করলেন এবং বললেন, তোমাদের বিপদ অবধারিত। তোমরা কি জান না, এ লোকটি গিফার গোত্রের? আর তোমাদের ব্যবসায়ী কাফেলাগুলোকে গিফার গোত্রের নিকট দিয়েই সিরিয়া যাতায়াত করতে হয়। এ কথা বলে তিনি তাদের হাত হতে আবূ যারকে রক্ষা করলেন। পরদিন সকালে তিনি ঐরূপই বলতে লাগলেন। লোকেরা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে ভীষণভাবে মারতে লাগল। ‘আব্বাস (রাঃ) এসে তাঁকে সামলে নিলেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭৯)

৬৩/৩৪. অধ্যায়ঃ

সা'ঈদ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) - এর ইসলাম গ্রহন।

৩৮৬২

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ قَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ فِيْ مَسْجِدِ الْكُوفَةِ يَقُوْلُ وَاللهِ لَقَدْ رَأَيْتُنِيْ وَإِنَّ عُمَرَ لَمُوْثِقِيْ عَلَى الْإِسْلَامِ قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ عُمَرُ وَلَوْ أَنَّ أُحُدًا ارْفَضَّ لِلَّذِيْ صَنَعْتُمْ بِعُثْمَانَ لَكَانَ
কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কায়স (রাঃ) বলেন, আমি সা’ঈদ ইব্‌নু যায়দ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নু নুফায়ল (রাঃ) - কে কুফার মসজিদে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ, ‘উমরের ইসলাম গ্রহনের আগে আমার ইসলাম গ্রহনের কারণে তাঁর হাতে আমাকে বন্দী হতে দেখেছি। তোমরা ‘উসমান (রাঃ) এর সাথে যে আচরণ করলে এ কারণে যদি উহুদ পাহাড় বিদীর্ণ হয়ে যায় তবে তা হওয়া ঠিকই হবে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৮০)

৬৩/৩৫. অধ্যায়ঃ

উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)-এর ইসলাম গ্রহন।

৩৮৬৩

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ مَا زِلْنَا أَعِزَّةً مُنْذُ أَسْلَمَ عُمَ
আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) যেদিন থেকে ইসলাম গ্রহন করলেন ঐ দিন হতে আমরা সর্বদা সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত আছি।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৮১)

৩৮৬৪

حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ وَهْبٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ فَأَخْبَرَنِيْ جَدِّيْ زَيْدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ بَيْنَمَا هُوَ فِي الدَّارِ خَائِفًا إِذْ جَاءَهُ الْعَاصِ بْنُ وَائِلٍ السَّهْمِيُّ أَبُوْ عَمْرٍو عَلَيْهِ حُلَّةُ حِبَرَةٍ وَقَمِيْصٌ مَكْفُوفٌ بِحَرِيْرٍ وَهُوَ مِنْ بَنِيْ سَهْمٍ وَهُمْ حُلَفَاؤُنَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَقَالَ لَهُ مَا بَالُكَ قَالَ زَعَمَ قَوْمُكَ أَنَّهُمْ سَيَقْتُلُونِيْ إِنْ أَسْلَمْتُ قَالَ لَا سَبِيْلَ إِلَيْكَ بَعْدَ أَنْ قَالَهَا أَمِنْتُ فَخَرَجَ الْعَاصِ فَلَقِيَ النَّاسَ قَدْ سَالَ بِهِمْ الْوَادِيْ فَقَالَ أَيْنَ تُرِيْدُوْنَ فَقَالُوْا نُرِيْدُ هَذَا ابْنَ الْخَطَّابِ الَّذِيْ صَبَا قَالَ لَا سَبِيْلَ إِلَيْهِ فَكَرَّ النَّاسُ
ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাঁর পিতা ‘উমার (রাঃ) একদিন নিজ গৃহে ভীত অবস্থায় অবস্থান করছিলেন। তখন আবূ ‘আমর ‘আস ইব্‌নু ওয়াইল সাহমী তাঁর নিকট এলেন। তার গায়ে ছিল ধারিদার চাদর ও রেশমী জরির জামা। তিনি বানু সাহম গোত্রের লোক ছিলেন। জাহিলী যুগে তারা আমাদের হালীফ (বিপদকালে সাহায্যের চুক্তি যাদের সাথে করা হয়) ছিল। ‘আস ‘উমার (রাঃ) - কে জিজ্ঞের করলেন আপনার অবস্থা কেমন? ‘উমার (রাঃ) উত্তর দিলেন ইসলাম গ্রহন করার কারণে তোমার গোত্রের লোকজন অচিরেই আমাকে হত্যা করবে। তা শুনে ‘আস (রাঃ) বললেন, তোমার কোন কিছু করার শক্তি ক্ষমতা তাদের নেই। তার কথা শুনে ‘উমর (রাঃ) বললেন, তোমার কথা শুনে আমি নিঃশঙ্ক হলাম। ‘আস বেরিয়ে পড়লেন এবং দেখতে পেলেন, মক্কা ভূমি লোকে ভরপুর। তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা কোথায় যাচ্ছ? তারা বলল, আমরা ‘উমার ইব্‌নুল খাত্তাবের নিকট যাচ্ছি, সে নিজ ধর্ম ত্যাগ করতঃ বিধর্মী হয়ে গেছে। ‘আস বললেন তার নিকট যাওয়ার, তার কোন কিছু করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। এতে লোকজন ফিরে গেল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৮২)

৩৮৬৫

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ عَمْرُوْ بْنُ دِيْنَارٍ سَمِعْتُهُ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا لَمَّا أَسْلَمَ عُمَرُ اجْتَمَعَ النَّاسُ عِنْدَ دَارِهِ وَقَالُوْا صَبَا عُمَرُ وَأَنَا غُلَامٌ فَوْقَ ظَهْرِ بَيْتِيْ فَجَاءَ رَجُلٌ عَلَيْهِ قَبَاءٌ مِنْ دِيْبَاجٍ فَقَالَ قَدْ صَبَا عُمَرُ فَمَا ذَاكَ فَأَنَا لَهُ جَارٌ قَالَ فَرَأَيْتُ النَّاسَ تَصَدَّعُوْا عَنْهُ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوْا الْعَاصِ بْنُ وَائِلٍ
আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বলেন, যখন ‘উমার (রাঃ) ইসলাম গ্রহন করলেন, তখন লোকেরা তাঁর গৃহের কাছে জড় হল এবং বলতে লাগল, ‘উমার স্বধর্ম ত্যাগ করেছে। আমি তখন ছোট ছেলে। আমাদের ঘরের ছাদে দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখছিলাম। তখন একজন লোক এসে বলল, তার গায়ে রেশমী জুববা ছিল, ‘উমার স্বধর্ম ত্যাগ করেছে, কিন্তু এ সমাবেশ কেন? আমি তাকে আশ্রয় দিচ্ছি। ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বলেন, তখন আমি দেখলাম, লোকজন চারিদিকে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ লোকটি কে? লোকেরা বলল, ‘আস ইব্‌নু ওয়াইল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৮৩)

৩৮৬৬

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ وَهْبٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُمَرُ أَنَّ سَالِمًا حَدَّثَهُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ مَا سَمِعْتُ عُمَرَ لِشَيْءٍ قَطُّ يَقُوْلُ إِنِّيْ لَاظُنُّهُ كَذَا إِلَّا كَانَ كَمَا يَظُنُّ بَيْنَمَا عُمَرُ جَالِسٌ إِذْ مَرَّ بِهِ رَجُلٌ جَمِيْلٌ فَقَالَ لَقَدْ أَخْطَأَ ظَنِّيْ أَوْ إِنَّ هَذَا عَلَى دِيْنِهِ فِي الْجَاهِلِيَّةِ أَوْ لَقَدْ كَانَ كَاهِنَهُمْ عَلَيَّ الرَّجُلَ فَدُعِيَ لَهُ فَقَالَ لَهُ ذَلِكَ فَقَالَ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ اسْتُقْبِلَ بِهِ رَجُلٌ مُسْلِمٌ قَالَ فَإِنِّيْ أَعْزِمُ عَلَيْكَ إِلَّا مَا أَخْبَرْتَنِيْ قَالَ كُنْتُ كَاهِنَهُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ قَالَ فَمَا أَعْجَبُ مَا جَاءَتْكَ بِهِ جِنِّيَّتُكَ قَالَ بَيْنَمَا أَنَا يَوْمًا فِي السُّوقِ جَاءَتْنِيْ أَعْرِفُ فِيْهَا الْفَزَعَ فَقَالَتْ أَلَمْ تَرَ الْجِنَّ وَإِبْلَاسَهَا وَيَأْسَهَا مِنْ بَعْدِ إِنْكَاسِهَا وَلُحُوقَهَا بِالْقِلَاصِ وَأَحْلَاسِهَا قَالَ عُمَرُ صَدَقَ بَيْنَمَا أَنَا نَائِمٌ عِنْدَ آلِهَتِهِمْ إِذْ جَاءَ رَجُلٌ بِعِجْلٍ فَذَبَحَهُ فَصَرَخَ بِهِ صَارِخٌ لَمْ أَسْمَعْ صَارِخًا قَطُّ أَشَدَّ صَوْتًا مِنْهُ يَقُوْلُ يَا جَلِيْحْ أَمْرٌ نَجِيْحْ رَجُلٌ فَصِيْحْ يَقُوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فَوَثَبَ الْقَوْمُ قُلْتُ لَا أَبْرَحُ حَتَّى أَعْلَمَ مَا وَرَاءَ هَذَا ثُمَّ نَادَى يَا جَلِيْحْ أَمْرٌ نَجِيْحْ رَجُلٌ فَصِيْحْ يَقُوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فَقُمْتُ فَمَا نَشِبْنَا أَنْ قِيْلَ هَذَا نَبِيٌّ
আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি যখনই ‘উমার (রাঃ) - কে কোন ব্যাপারে এ কথা বলতে শুনেছি যে, আমার মনে হয় ব্যাপারটি এমন হবে, তবে তার ধারণা মত ব্যাপারটি সংঘটিত হয়েছে। একবার ‘উমার (রাঃ) উপবিষ্ট ছিলেন, এমন সময় এক সুদর্শন লোক তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমার ধারণা ভুলও হতে পারে তবে আমার মনে হয় লোকটি জাহেলী ধর্মাবলম্বী কিংবা ভবিষ্যৎ গণনাকারীও হতে পারে। লোকটিকে আমার কাছে নিয়ে এস। তাকে তাঁর কাছে ডেকে আনা হল। ‘উমার (রাঃ) তার ধারণার কথা তাকে শুনালেন। তখন সে বলল, ইতিপূর্বে আমি কোন মুসলিম ব্যক্তিকে এরূপ কথা বলতে দেখিনি। ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমি তোমাকে কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, তুমি আমাকে তোমার বিষয়টি খুলে বল। সে বলল, জাহিলী যুগে আমি তাদের ভবিষ্যৎ গণনাকারী ছিলাম। ‘উমার (রাঃ) বললেন, জ্বিনেরা তোমাকে যে সব কথাবার্তা বলেছে, তন্মধ্যে কোন কথাটি তোমার কাছে সবচেয়ে বিস্ময়কর ছিল। সে বলল, আমি একদিন বাজারে ছিলাম। তখন একটি মহিলা জ্বিন আমার নিকট আসল। আমি তাকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখতে পেলাম। তখন সে বলল, তুমি কি জ্বিন জাতির অবস্থা দেখছনা, তারা কেমন দুর্বল হয়ে পড়ছে? তাদের মধ্যে হতাশার চিহ্ণ দেখা যাচ্ছে। তারা ক্রমশঃ উটওয়ালাদের এবং চাদর জুব্বা পরিধানকারীদের অনুগত হয়ে পড়ছে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, সে সত্য কথা বলেছে। আমি একদিন তাদের দেবতাদের কাছে ঘুমিয়ে ছিলাম। তখন এক লোক একটি গরুর বাছুর নিয়ে হাজির হল এবং সেটা যবেহ করে দিল। ঐ সময় এক লোক এমন বিকট চিৎকার করে উঠল, যা আমি আর কখনো শুনিনি। সে চিৎকার করে বলছিল, হে জলীহ্‌! একটি সাধারণ কল্যাণময় ব্যাপার শীঘ্রই প্রকাশ লাভ করবে। তা হল- একজন শুদ্ধভাষী লোক বলবেন; لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ (শুনে) লোকজন ছুটাছুটি করে পলায়ন করল। আমি বললাম, এ ঘোষণার রহস্য অবশ্যই বের করব। তারপর আবার ঘোষণা দেয়া হল। হে জলীহ্‌! একটি সাধারণ ও কল্যাণময় ব্যাপার অতি শীঘ্র প্রকাশ পাবে। তাহল একজন বাগ্মী ব্যক্তি لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ এর প্রকাশ্যে ঘোষণা দিবে। তারপর আমি উঠে দাঁড়ালাম। এর কিছুদিন পরেই বলা হল যে, ইনিই নবী।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৮৪)

৩৮৬৭

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا قَيْسٌ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ زَيْدٍ يَقُوْلُ لِلْقَوْمِ لَوْ رَأَيْتُنِيْ مُوْثِقِيْ عُمَرُ عَلَى الْإِسْلَامِ أَنَا وَأُخْتُهُ وَمَا أَسْلَمَ وَلَوْ أَنَّ أُحُدًا انْقَضَّ لِمَا صَنَعْتُمْ بِعُثْمَانَ لَكَانَ مَحْقُوقًا أَنْ يَنْقَضَّ
কাইস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কাইস (রহঃ) বলেন, আমি সা’ঈদ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) - কে তাঁর গোত্রকে লক্ষ্য করে একথা বলতে শুনেছি যে, আমি দেখেছি ‘উমার (রাঃ) আমাকে এবং তার বোন ফাতিমাকে ইসলাম গ্রহন করার কারণে বেঁধে রেখেছেন। তখন তিনি ইসলাম গ্রহন করেননি। তোমরা ‘উসমান (রাঃ) - এর সাথে যে অসদাচারণ করেছ তার কারণে যদি উহুদ পাহাড় বিদীর্ণ হয় তবে তা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৮০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৮৫)

৬৩/৩৬. অধ্যায়ঃ

চাঁদকে দুই খন্ড করা।

৩৮৬৮

حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ عَرُوْبَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ أَهْلَ مَكَّةَ سَأَلُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُرِيَهُمْ آيَةً فَأَرَاهُمْ الْقَمَرَ شِقَّتَيْنِ حَتَّى رَأَوْا حِرَاءً بَيْنَهُمَا
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, মক্কাবাসী রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে তাঁর নবুওয়াতের নিদর্শন দেখানোর দাবী জানাল। তিনি তাদেরকে চাঁদ দু'খণ্ড করে দেখালেন। এমনকি তারা দু'খণ্ডের মাঝে হেরা পাহাড়কে দেখতে পেল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৮১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৮৬)

৩৮৬৯

حَدَّثَنَا عَبْدَانُ عَنْ أَبِيْ حَمْزَةَ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ أَبِيْ مَعْمَرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ انْشَقَّ الْقَمَرُ وَنَحْنُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِنًى فَقَالَ اشْهَدُوْا وَذَهَبَتْ فِرْقَةٌ نَحْوَ الْجَبَلِ وَقَالَ أَبُو الضُّحَى عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ انْشَقَّ بِمَكَّةَ وَتَابَعَهُ مُحَمَّدُ بْنُ مُسْلِمٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ أَبِيْ مَعْمَرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ
আবদুল্লাহ (ইব্‌নু মাসউদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয় তখন আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে মিনায় ছিলাম। তিনি আমাদেরকে বললেন, তোমরা সাক্ষী থাক। তখন আমরা দেখলাম, চাঁদের একটি খণ্ড হেরা পাহাড়ের দিকে চলে গেল। আবূ যুহা মাসরূকের বরাত দিয়ে ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয় মক্কায়। মুহাম্মাদ বিন মুসলিম অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৮২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৮৭)

৩৮৭০

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ قَالَ حَدَّثَنِيْ جَعْفَرُ بْنُ رَبِيْعَةَ عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُوْدٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ الْقَمَرَ انْشَقَّ عَلَى زَمَانِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর যুগে চাঁদ দু’খণ্ড হয়েছিল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৮৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৮৮)

৩৮৭১

حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ عَنْ أَبِيْ مَعْمَرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ انْشَقَّ الْقَمَرُ
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর যুগে) চাঁদ দু’খণ্ড হয়েছিল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৮৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৮৯)

৬৩/৩৭. অধ্যায়ঃ

হাবাশাহ্‌য় হিজরত।
‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের হিজরা্তের স্থান আমাকে (স্বপ্নে) দেখান হয়েছে। যেখানে রয়েছে অনেক বৃক্ষ আর সে স্থানটি ছিল দুই পাহাড়ের মাঝখানে। তখন হিজরাতকারীগণ মদিনা্য় হিজরাত করলেন এবং যারা এর আগে হাবশাহ্য় হিজরাত করেছিলেন তারাও মদিনা্য় ফিরে আসলেন। এ সম্পর্কে আবূ মূসা ও আসমা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে হাদীস বর্ণিত আছে।

৩৮৭২

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنَا عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ عُبَيْدَ اللهِ بْنَ عَدِيِّ بْنِ الْخِيَارِ أَخْبَرَهُ أَنَّ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الأَسْوَدِ بْنِ عَبْدِ يَغُوْثَ قَالَا لَهُ مَا يَمْنَعُكَ أَنْ تُكَلِّمَ خَالَكَ عُثْمَانَ فِيْ أَخِيْهِ الْوَلِيْدِ بْنِ عُقْبَةَ وَكَانَ أَكْثَرَ النَّاسُ فِيْمَا فَعَلَ بِهِ قَالَ عُبَيْدُ اللهِ فَانْتَصَبْتُ لِعُثْمَانَ حِيْنَ خَرَجَ إِلَى الصَّلَاةِ فَقُلْتُ لَهُ إِنَّ لِيْ إِلَيْكَ حَاجَةً وَهِيَ نَصِيْحَةٌ فَقَالَ أَيُّهَا الْمَرْءُ أَعُوْذُ بِاللهِ مِنْكَ فَانْصَرَفْتُ فَلَمَّا قَضَيْتُ الصَّلَاةَ جَلَسْتُ إِلَى الْمِسْوَرِ وَإِلَى ابْنِ عَبْدِ يَغُوْثَ فَحَدَّثْتُهُمَا بِالَّذِيْ قُلْتُ لِعُثْمَانَ وَقَالَ لِيْ فَقَالَا قَدْ قَضَيْتَ الَّذِيْ كَانَ عَلَيْكَ فَبَيْنَمَا أَنَا جَالِسٌ مَعَهُمَا إِذْ جَاءَنِيْ رَسُوْلُ عُثْمَانَ فَقَالَا لِيْ قَدْ ابْتَلَاكَ اللهُ فَانْطَلَقْتُ حَتَّى دَخَلْتُ عَلَيْهِ فَقَالَ مَا نَصِيْحَتُكَ الَّتِيْ ذَكَرْتَ آنِفًا قَالَ فَتَشَهَّدْتُ ثُمَّ قُلْتُ إِنَّ اللهَ بَعَثَ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ وَكُنْتَ مِمَّنْ اسْتَجَابَ لِلهِ وَرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم وَآمَنْتَ بِهِ وَهَاجَرْتَ الْهِجْرَتَيْنِ الْأُوْلَيَيْنِ وَصَحِبْتَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَرَأَيْتَ هَدْيَهُ وَقَدْ أَكْثَرَ النَّاسُ فِيْ شَأْنِ الْوَلِيْدِ بْنِ عُقْبَةَ فَحَقٌّ عَلَيْكَ أَنْ تُقِيْمَ عَلَيْهِ الْحَدَّ فَقَالَ لِيْ يَا ابْنَ أَخِيْ آدْرَكْتَ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ قُلْتُ لَا وَلَكِنْ قَدْ خَلَصَ إِلَيَّ مِنْ عِلْمِهِ مَا خَلَصَ إِلَى الْعَذْرَاءِ فِيْ سِتْرِهَا قَالَ فَتَشَهَّدَ عُثْمَانُ فَقَالَ إِنَّ اللهَ قَدْ بَعَثَ مُحَمَّدًا بِالْحَقِّ وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ وَكُنْتُ مِمَّنْ اسْتَجَابَ لِلهِ وَرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم وَآمَنْتُ بِمَا بُعِثَ بِهِ مُحَمَّدٌ وَهَاجَرْتُ الْهِجْرَتَيْنِ الْأُوْلَيَيْنِ كَمَا قُلْتَ وَصَحِبْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَبَايَعْتُهُ وَاللهِ مَا عَصَيْتُهُ وَلَا غَشَشْتُهُ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللهُ ثُمَّ اسْتَخْلَفَ اللهُ أَبَا بَكْرٍ فَوَاللهِ مَا عَصَيْتُهُ وَلَا غَشَشْتُهُ ثُمَّ اسْتُخْلِفَ عُمَرُ فَوَاللهِ مَا عَصَيْتُهُ وَلَا غَشَشْتُهُ ثُمَّ اسْتُخْلِفْتُ أَفَلَيْسَ لِيْ عَلَيْكُمْ مِثْلُ الَّذِيْ كَانَ لَهُمْ عَلَيَّ قَالَ بَلَى قَالَ فَمَا هَذِهِ الأَحَادِيْثُ الَّتِيْ تَبْلُغُنِيْ عَنْكُمْ فَأَمَّا مَا ذَكَرْتَ مِنْ شَأْنِ الْوَلِيْدِ بْنِ عُقْبَةَ فَسَنَأْخُذُ فِيْهِ إِنْ شَاءَ اللهُ بِالْحَقِّ قَالَ فَجَلَدَ الْوَلِيْدَ أَرْبَعِيْنَ جَلْدَةً وَأَمَرَ عَلِيًّا أَنْ يَجْلِدَهُ وَكَانَ هُوَ يَجْلِدُهُ وَقَالَ يُونُسُ وَابْنُ أَخِي الزُّهْرِيِّ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَفَلَيْسَ لِيْ عَلَيْكُمْ مِنْ الْحَقِّ مِثْلُ الَّذِيْ كَانَ لَهُمْ
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ بَلَآءٌ مِّنْ رِّبِّكُمْ (البقرة : 49) مَا ابْتُلِيْتُمْ بِهِ مِنْ شِدَّةٍ وَفِيْ مَوْضِعٍ الْبَلَاءُ الِابْتِلَاءُ وَالتَّمْحِيْصُ مَنْ بَلَوْتُهُ وَمَحَّصْتُهُ أَيْ اسْتَخْرَجْتُ مَا عِنْدَهُ يَبْلُوْ يَخْتَبِرُ مُبْتَلِيْكُمْ (البقرة : 249) مُخْتَبِرُكُمْ وَأَمَّا قَوْلُهُ بَلَآءٌ عَظِيْمٌ النِّعَمُ وَهِيَ مِنْ أَبْلَيْتُهُ وَتِلْكَ مِنْ ابْتَلَيْتُهُ
উবাইদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আদী ইব্‌নু খিয়ার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উরওয়াহ ইবনু যুবায়রকে বলেন যে, মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ এবং ‘আবদুর রহমান ইবনু আসওয়াদ ইবনু ‘আবদ ইয়াগুস (রাঃ) উভয়ই তাকে বলেন, তুমি তোমার মামা ‘উসমান (রাঃ)-এর সাথে তার (বৈপিত্রেয়) ভাই ওয়ালীদ ইবনু ‘উকবাহ সম্পর্কে কোন আলাপ-আলোচনা করছ না কেন? জনগণ তার বিরুদ্ধে শক্তভাবে সমালোচনা করছে। ‘উবাইদুল্লাহ বলেন, ‘উসমান (রাঃ) যখন সালাতের জন্য মসজিদে আসছিলেন তখন আমি তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম এবং তাঁকে লক্ষ্য করে বললাম, আপনার সাথে আমার কথা বলার দরকার আছে এবং তা আপনার কল্যাণের জন্যই। তিনি বললেন, ওহে, আমি তোমা হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি তখন ফিরে আসলাম এবং যখন সালাত শেষ করলাম, তখন মিসওয়ার ও ইবনু ‘আবদ ইয়াগুস (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে বসলাম এবং ‘উসমান (রাঃ)-কে আমি যা বলেছি এবং তিনি যে উত্তর দিয়েছেন তা দু’জনকে শুনালাম। তারা বললেন, তোমার উপর যে দায়িত্ব ও কর্তব্য ছিল তা তুমি আদায় করেছ। আমি তাদের নিকট উপবিষ্টই আছি এ সময়‘উসমান (রাঃ)-এর পক্ষ হতে একজন দূত আমাকে ডেকে নেয়ার জন্য আসলেন। তারা দু’জন আমাকে বললেন, আল্লাহ্ তোমাকে পরীক্ষায় ফেলেছেন। আমি চললাম এবং ‘উসমান (রাঃ)-এর নিকট প্রবেশ করলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কী উপদেশ যা তুমি কিছুক্ষণ আগে বলতে চেয়েছিলে? তখন আমি কালিমা শাহাদাত পাঠ করে বললাম, আল্লাহ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রাসূলরূপে প্রেরণ করেছেন, তাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। আর আপনি ঐ দলেরই অন্তর্ভুক্ত যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছেন, আপনি তাঁর উপর ঈমান এনেছেন, এবং প্রথম দু’ হিজরতে আপনি অংশ নিয়েছেন, আপনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গ লাভ করেছেন এবং তাঁর স্বভাব-চরিত্র চক্ষে দেখেছেন। জন সাধারণ ওয়ালিদ ইবনু ‘উকবাহ্ সম্পর্কে অনেক সমালোচনা করছে, আপনার কর্তব্য তাঁর উপর দন্ড জারি করা। ‘উসমান (রাঃ) আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে ভাতিজা! তুমি কি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পেয়েছ? আমি বললাম না, পাইনি। তবে তাঁর বিষয় আমার নিকট এমন ভাবে পৌঁছেছে যেমন ভাবে কুমারী মেয়েদের নিকট পর্দার সংবাদ পৌঁছে থাকে। ‘উবাইদুল্লাহ (রহ.) বলেন, ‘উসমান (রাঃ) কালিমা শাহাদত পাঠ করলেন এবং বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মুহম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, তাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে আমিও ছিলাম। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যা সহ প্রেরণ করা হয়েছিল আমি তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি। ইসলামের প্রথম যুগের দু’ হিজরতে অংশ গ্রহণ করেছি যেমন তুমি বলছ। আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গ লাভ করেছি, তাঁর হাতে বায়‘আত করেছি। আল্লাহর কসম, আমি তাঁর অবাধ্যতা করিনি। তাঁর সাথে প্রতারণা করিনি। এমতাবস্থায় তাঁর ওফাত হয়ে যায়। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা আবূ বাকর (রাঃ) কে খালীফাহ নিযুক্ত করলেন। আল্লাহর কসম, আমি তাঁরও নাফরমানী করিনি, তাঁর সাথে প্রতারণা করিনি। অতঃপর ‘উমার (রাঃ) খালীফাহ মনোনীত হলেন। আল্লাহর কসম, আমি তাঁরও অবাধ্য হইনি, তাঁর সাথে প্রতারণা করিনি। তিনিও মৃত্যুপ্রাপ্ত হলেন। এবং তারপর আমাকে খলীফা নিযুক্ত করা হল। আমার উপর তাদের বাধ্য থাকার যে রূপ হক ছিল তোমাদের উপর তাদের ন্যায় আমার প্রতি বাধ্য থাকার কি কোন কর্তব নেই? ‘উবাইদুল্লাহ বললেন, হাঁ। অবশ্যই হক আছে। ‘উসমান (রাঃ) বললেন, তাহলে এসব কথাবার্তা কী, তোমাদের পক্ষ হতে আমার নিকট আসছে? আর ওয়ালীদ ইবনু ‘উকবাহর ব্যাপারে তুমি যা বললে, সে ব্যাপারে আমি অতি সত্বর সঠিক পদক্ষেপ নিব ইন্শাআল্লাহ্। অতঃপর তিনি ওয়ালীদকে চল্লিশটি বেত্রাঘাত করার রায় প্রদান করলেন এবং তা বাস্তবায়িত করার জন্য ‘‘আলী (রাঃ)-কে আদেশ করলেন। সেকালে অপরাধীদেরকে শাস্তি প্রদানের দায়িত্বে ‘আলী (রাঃ) নিযুক্ত ছিলেন। ইউনুস এবং যুহরীর ভাতিজা যুহরী সূত্রে যে বর্ণনা করেন তাতে রয়েছে; ‘তোমাদের উপর আমার কি অধিকার নেই যেমন অধিকার ছিল তাদের জন্য।’
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৮৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৯০)
আবূ ‘আব্দুল্লাহ বলেন, অতঃপর ওয়ালীদকে চল্লিশটি বেত্রাঘাত করা হলো এবং ‘আলী (রাঃ)-কে নির্দেশ করা হলো তাকে বেত্রাঘাত করার। এবং তিনি তাকে বেত্রাঘাত করেছিলেন। (৩৬৯৬)
আবূ ‘আব্দুল্লাহ বলেন,
بَلَاءٌ مِنْ رَبِّكُمْ ‘‘তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে শক্ত পরীক্ষা স্বরূপ।’’ (আল-বাকারাহঃ ৪৯) অন্যস্থানে الْبَلَاءُ শব্দ الاِبْتِلَاءُالتَّمْحِيْصُ অর্থে এসেছে। যথা بَلَوْتُهُ وَمَحَّصْتُهُ তার ভিতরের জিনিষ উদ্ঘাটন করেছি। يَبْلُوْ পরীক্ষা করা অর্থে এসেছে, যথা مُبْتَلِيكُمْ ‘‘তিনি তোমাদের পরীক্ষা করবেন।’’ (আল-বাকারাহঃ ২৪৯) আর بَلَاءٌ عَظِيْمٌ অর্থাৎ বড় নি‘মাত। এখানে أَبْلَيْتُهُ আমি তাকে নি‘মাত দান করেছি।’’ এ অর্থে এসেছে। আর পূর্বের আয়াতে ابْتَلَيْتُهُ ‘‘আমি তাকে পরীক্ষা করেছি।’’ এর অর্থে এসেছে।

৩৮৭৩

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন উম্মু হাবীবাহ ও উম্মু সালামাহ (রাঃ) তাঁর সাথে আলোচনা করলেন যে তাঁরা হাবাশায় খ্রিস্টানদের একটি গির্জা দেখে এসেছেন। সে গির্জায় নানা ধরনের চিত্র অঙ্কিত রয়েছে। তাঁরা দু'জন এসব কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে উল্লেখ করলেন। তখন তিনি বললেন, তাদের কোন নেক্‌কার লোক মারা গেলে তার কবরের উপর মসজিদ তৈরি করত এবং এসব ছবি অঙ্কিত করে রাখত, এরাই ক্বিয়ামাতের দিনে আল্লাহর সর্ব নিকৃষ্ট সৃষ্টি হিসেবে গণ্য হবে।

৩৮৭৪

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيْدٍ السَّعِيْدِيُّ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أُمِّ خَالِدٍ بِنْتِ خَالِدٍ قَالَتْ قَدِمْتُ مِنْ أَرْضِ الْحَبَشَةِ وَأَنَا جُوَيْرِيَةٌ فَكَسَانِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَمِيْصَةً لَهَا أَعْلَامٌ فَجَعَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَمْسَحُ الأَعْلَامَ بِيَدِهِ وَيَقُوْلُ سَنَاهْ سَنَاهْ قَالَ الْحُمَيْدِيُّ يَعْنِيْ حَسَنٌ حَسَنٌ
উম্মু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি যখন হাবাশা হতে মদীনায় আসলাম তখন আমি ছোট্ট বালিকা ছিলাম। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে একটি চাদর পরিয়ে দিলেন যাতে ডোরা কাটা ছিল। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ ডোরাগুলির উপর হাত বুলাতে লাগলেন, এবং বলতে ছিলেন সানাহ-সানাহ। হুমায়দী (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ সুন্দর সুন্দর।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৯২)

৩৮৭৫

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمَّادٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ كُنَّا نُسَلِّمُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُصَلِّيْ فَيَرُدُّ عَلَيْنَا فَلَمَّا رَجَعْنَا مِنْ عِنْدِ النَّجَاشِيِّ سَلَّمْنَا عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْنَا فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّا كُنَّا نُسَلِّمُ عَلَيْكَ فَتَرُدُّ عَلَيْنَا قَالَ إِنَّ فِي الصَّلَاةِ شُغْلًا فَقُلْتُ لِإِبْرَاهِيْمَ كَيْفَ تَصْنَعُ أَنْتَ قَالَ أَرُدُّ فِيْ نَفْسِي
আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস'উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সলাতে রত অবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে আমরা সালাম করতাম, তিনিও আমাদের সালামের উত্তর দিতেন। যখন আমরা নাজাশীর কাছ থেকে ফিরে এলাম, তখন সলাতে রত অবস্থায় তাঁকে সালাম করলাম, কিন্তু তিনি সালামের জবাব দিলেন না। আমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা আপনাকে সালাম করতাম এবং আপনিও সালামের উত্তর দিতেন। কিন্তু আজ আপনি আমাদের সালামের জবাব দিলেন না? তিনি বললেন, সলাতের মধ্যে আল্লাহ্‌র দিকে একাগ্রতা থাকে। রাবী বলেন, আমি ইবরাহীম নাখয়ীকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি করেন? তিনি বললেন, আমি মনে মনে জবাব দিয়ে দেই।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৮৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৯৩)

৩৮৭৬

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا بُرَيْدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى بَلَغَنَا مَخْرَجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ بِالْيَمَنِ فَرَكِبْنَا سَفِيْنَةً فَأَلْقَتْنَا سَفِيْنَتُنَا إِلَى النَّجَاشِيِّ بِالْحَبَشَةِ فَوَافَقْنَا جَعْفَرَ بْنَ أَبِيْ طَالِبٍ فَأَقَمْنَا مَعَهُ حَتَّى قَدِمْنَا فَوَافَقْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ افْتَتَحَ خَيْبَرَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَكُمْ أَنْتُمْ يَا أَهْلَ السَّفِيْنَةِ هِجْرَتَانِ
আবূ মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের কাছে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর আবির্ভাবের খবর এসে পৌঁছল। তখন আমরা ইয়ামানে ছিলাম। আমরা একটি নৌকায় আরোহণ করলাম। কিন্তু আমাদের নৌকা হাবাশায় নাজাশীর নিকট নিয়ে গেল। সেখানে জা'ফর ইব্‌নু আবূ তালিবের (রাঃ) সাথে সাক্ষাৎ হল। আমরা তাঁর সাথে থাকতে লাগলাম। কিছুদিন পর আমরা সেখান হতে রওয়ানা হলাম। এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন খায়বার বিজয় করলেন তখন আমরা তাঁর সাথে মিলিত হলাম। আমাদেরকে দেখে তিনি বললেন, হে নৌকার আরোহীরা! তোমরা দু'টি হিজরত লাভ করেছ।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৮৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৯৪)

৬৩/৩৮. অধ্যায়ঃ

নাজাশীর মৃত্যু।

৩৮৭৭

حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيْعِ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ جَابِرٍ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ مَاتَ النَّجَاشِيُّ مَاتَ الْيَوْمَ رَجُلٌ صَالِحٌ فَقُومُوْا فَصَلُّوْا عَلَى أَخِيكُمْ أَصْحَمَ
যাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নাজাশীর মৃত্যু হল তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আজ একজন সৎ ব্যক্তি মারা গেছেন। উঠো, এবং তোমাদের ভাই আসহামার জন্য জানাযার সলাত আদায় কর।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৯০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৯৫)

৩৮৭৮

حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ أَنَّ عَطَاءً حَدَّثَهُمْ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الأَنْصَارِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى عَلَى أَصْحَمَةَ النَّجَاشِيِّ فَصَفَّنَا وَرَاءَهُ فَكُنْتُ فِي الصَّفِّ الثَّانِيْ أَوْ الثَّالِثِ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাজাশীর উপর জানাযার সলাত আদায় করেন। আমরাও তাঁর পিছনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেলাম। আমি দ্বিতীয় বা তৃতীয় কাতারে ছিলাম।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৯১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৯৬)

৩৮৭৯

حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ هَارُوْنَ عَنْ سَلِيْمِ بْنِ حَيَّانَ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ مِيْنَاءَ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى عَلَى أَصْحَمَةَ النَّجَاشِيِّ فَكَبَّرَ عَلَيْهِ أَرْبَعًا تَابَعَهُ عَبْدُ الصَّمَدِ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসহামাহ নাজাশীর উপর জানাযার সলাত আদায় করেন এবং চারবার তাক্‌বীর বলেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৯২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৯৭)

৩৮৮০

حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَابْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ أَخْبَرَهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَعَى لَهُمْ النَّجَاشِيَّ صَاحِبَ الْحَبَشَةِ فِي الْيَوْمِ الَّذِيْ مَاتَ فِيْهِ وَقَالَ اسْتَغْفِرُوْا لِأَخِيكُمْ
আবদুর রহমান ও ইব্‌নুল মুসাইয়াব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুর রহমান ও ইব্‌নুল মুসাইয়াব (রহঃ) বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) তাদেরকে বলেছেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সহাবাদেরকে হাবাশা-এর বাদশাহ নাজাশীর মৃত্যু খবর সেদিন শুনালেন, যেদিন তিনি মারা গিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের (দ্বীনী) ভাই এর জন্য মাগফিরাত চাও।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৯৩ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৯৮ প্রথমাংশ)

৩৮৮১

وَعَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ أَخْبَرَهُمْ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَفَّ بِهِمْ فِي الْمُصَلَّى فَصَلَّى عَلَيْهِ وَكَبَّرَ أَرْبَعًا
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে এমনও বর্ণিত আছে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সহাবাদেরকে নিয়ে মুসল্লায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ালেন এবং নাজাশীর জন্য জানাযার সলাত আদায় করলেন আর তিনি চারবার তাকবীরও দিলেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৯৩ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৯৮ শেষাংশ)

৬৩/৩৯. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর বিরুদ্ধে মুশরিকদের শপথ গ্রহণ।

৩৮৮২

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ أَرَادَ حُنَيْنًا مَنْزِلُنَا غَدًا إِنْ شَاءَ اللهُ بِخَيْفِ بَنِيْ كِنَانَةَ حَيْثُ تَقَاسَمُوْا عَلَى الْكُفْرِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুনায়ন যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেন, তখন তিনি বললেন, আমরা আগামীকল্য খায়ফে বনী কেনানায় অবতরণ করব ‘ইন শা আল্লাহ্‌’ যেখানে কুরাইশরা সকলে কুফর ও শির্‌ক এর উপর থাকার শপথ করেছিল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৯৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৯৯)

৬৩/৪০. অধ্যায়ঃ

আবু ত্বলিবের কিস্‌সা।

৩৮৮৩

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ الْحَارِثِ حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَا أَغْنَيْتَ عَنْ عَمِّكَ فَإِنَّهُ كَانَ يَحُوطُكَ وَيَغْضَبُ لَكَ قَالَ هُوَ فِيْ ضَحْضَاحٍ مِنْ نَارٍ وَلَوْلَا أَنَا لَكَانَ فِي الدَّرَكِ الأَسْفَلِ مِنْ النَّارِ
আব্বাস ইব্‌নু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আব্বাস ইব্‌নু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) বলেন, আমি একদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি আপনার চাচা আবূ ত্বলিবের কী উপকার করলেন অথচ তিনি আপনাকে দুশমনের সকল আক্রমণ ও ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে তিনি খুব ক্ষুব্ধ হতেন। তিনি বললেন, সে জাহান্নামে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত আগুনে আছে। যদি আমি না হতাম তাহলে সে জাহান্নামের একেবারে নিম্ন স্তরে থাকত।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৯৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬০০)

৩৮৮৪

حَدَّثَنَا مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ ابْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ أَبَا طَالِبٍ لَمَّا حَضَرَتْهُ الْوَفَاةُ دَخَلَ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدَهُ أَبُوْ جَهْلٍ فَقَالَ أَيْ عَمِّ قُلْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ كَلِمَةً أُحَاجُّ لَكَ بِهَا عِنْدَ اللهِ فَقَالَ أَبُوْ جَهْلٍ وَعَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ أُمَيَّةَ يَا أَبَا طَالِبٍ تَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَلَمْ يَزَالَا يُكَلِّمَانِهِ حَتَّى قَالَ آخِرَ شَيْءٍ كَلَّمَهُمْ بِهِ عَلَى مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَاسْتَغْفِرَنَّ لَكَ مَا لَمْ أُنْهَ عَنْهُ فَنَزَلَتْ مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ أَنْ يَّسْتَغْفِرُوْا لِلْمُشْرِكِيْنَ وَلَوْ كَانُوْآ أُولِيْ قُرْبٰى مِنْم بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيْمِ (التوبة : 113) وَنَزَلَتْ إِنَّكَ لَا تَهْدِيْ مَنْ أَحْبَبْتَ (القصص : 56)
ইব্‌নু মুসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্‌নু মুসাইয়্যাব তার পিতা মুসাইয়্যাব (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন, যখন আবূ তালিবের মুমূর্ষ অবস্থা তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট গেলেন। আবূ জাহলও তার নিকট উপবিষ্ট ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে লক্ষ্য করে বললেন, চাচাজান, (আরবী) কলেমাটি একবার পড়ুন, তাহলে আমি আপনার জন্য আল্লাহ্‌র নিকট কথা বলতে পারব। তখন আবূ জাহাল ও ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু আবূ উমাইয়া বলল, হে আবূ তালিব! তুমি কি ‘আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম হতে ফিরে যাবে? এরা দু’জন তার সাথে একথাটি বারবার বলতে থাকল। সর্বশেষ আবূ তালিব তাদের সাথে যে কথাটি বলল, তাহল, আমি ‘আবদুল মুত্তালিবের মিল্লাতের উপরেই আছি। এ কথার পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি আপনার জন্য ক্ষমা চাইতে থাকব যে পর্যন্ত আপনার ব্যাপারে আমাকে নিষেধ করা না হয়। এ প্রসঙ্গে এ আয়াতটি নাযিল হলঃ নবী ও মুমিনদের পক্ষে উচিত নয় যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে মুশরিকদের জন্য যদি তারা নিকটাত্মীয়ও হয় যখন তাদের কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামী - (আত-তাওবাহ ১১৩)। আরো নাযিল হলঃ আপনি যাকে ভালোবাসেন, ইচ্ছা করলেই তাকে হিদায়াত করতে পারবেন না- (আল-কাসাস ৫৬)।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৯৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬০১)

৩৮৮৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنَا ابْنُ الْهَادِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ خَبَّابٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَذُكِرَ عِنْدَهُ عَمُّهُ فَقَالَ لَعَلَّهُ تَنْفَعُهُ شَفَاعَتِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُجْعَلُ فِيْ ضَحْضَاحٍ مِنْ النَّارِ يَبْلُغُ كَعْبَيْهِ يَغْلِيْ مِنْهُ دِمَاغُهُ
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ حَمْزَةَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ حَازِمٍ وَالدَّرَاوَرْدِيُّ عَنْ يَزِيْدَ بِهَذَا وَقَالَ تَغْلِيْ مِنْهُ أُمُّ دِمَاغِهِ
আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে বলতে শুনেছেন, যখন তাঁরই সামনে তাঁর চাচা আবূ তালিবের আলোচনা করা হল, তিনি বললেন, আশা করি কিয়ামাতের দিনে আমার সুপারিশ তার উপকারে আসবে। অর্থাৎ আগুনের হালকা স্তরে তাকে ফেলা হবে, যা তার পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত পৌঁছবে আর এতে তার মগয ফুটতে থাকবে। (আ.প্র. ৩৫৯৭, ই.ফা. ৩৬০২)
ইয়াযিদ (রহঃ) – ও এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আরো বলেছেন, এর তাপে মস্তিষ্কের মূল পর্যন্ত ফুটতে থাকবে।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৯৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬০৩)

৬৩/৪১. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর ভ্রমণের ঘটনা।
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দকে রজনী যোগে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদে হারাম হতে মসজিদে আক্‌সা পর্যন্ত।” (আল-ইসরা/বানী ইসরাঈলঃ ১)

৩৮৮৬

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ لَمَّا كَذَّبَتْنِيْ قُرَيْشٌ قُمْتُ فِي الْحِجْرِ فَجَلَا اللهُ لِيْ بَيْتَ الْمَقْدِسِ فَطَفِقْتُ أُخْبِرُهُمْ عَنْ آيَاتِهِ وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَيْهِ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে বলতে শুনেছেন, যখন কুরাইশরা আমাকে অস্বীকার করল, তখন আমি কা’বার হিজর অংশে দাঁড়ালাম। আল্লাহ তা’আলা তখন আমার সামনে বায়তুল মুকাদ্দাসকে তুলে ধরলেন, যার কারণে আমি দেখে দেখে বাইতুল মুকাদ্দাসের নিদর্শনগুলো তাদের কাছে ব্যক্ত করছিলাম।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৯৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬০৪)

৬৩/৪২. অধ্যায়ঃ

মি’রাজের বিবরণ।

৩৮৮৭

حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَدَّثَهُمْ عَنْ لَيْلَةِ أُسْرِيَ بِهِ بَيْنَمَا أَنَا فِي الْحَطِيْمِ وَرُبَّمَا قَالَ فِي الْحِجْرِ مُضْطَجِعًا إِذْ أَتَانِيْ آتٍ فَقَدَّ قَالَ وَسَمِعْتُهُ يَقُوْلُ فَشَقَّ مَا بَيْنَ هَذِهِ إِلَى هَذِهِ فَقُلْتُ لِلْجَارُوْدِ وَهُوَ إِلَى جَنْبِيْ مَا يَعْنِيْ بِهِ قَالَ مِنْ ثُغْرَةِ نَحْرِهِ إِلَى شِعْرَتِهِ وَسَمِعْتُهُ يَقُوْلُ مِنْ قَصِّهِ إِلَى شِعْرَتِهِ فَاسْتَخْرَجَ قَلْبِيْ ثُمَّ أُتِيْتُ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ مَمْلُوءَةٍ إِيْمَانًا فَغُسِلَ قَلْبِيْ ثُمَّ حُشِيَ ثُمَّ أُعِيْدَ ثُمَّ أُتِيْتُ بِدَابَّةٍ دُوْنَ الْبَغْلِ وَفَوْقَ الْحِمَارِ أَبْيَضَ فَقَالَ لَهُ الْجَارُوْدُ هُوَ الْبُرَاقُ يَا أَبَا حَمْزَةَ قَالَ أَنَسٌ نَعَمْ يَضَعُ خَطْوَهُ عِنْدَ أَقْصَى طَرْفِهِ فَحُمِلْتُ عَلَيْهِ فَانْطَلَقَ بِيْ جِبْرِيْلُ حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الدُّنْيَا فَاسْتَفْتَحَ فَقِيْلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيْلُ قِيْلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ قِيْلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ قِيْلَ مَرْحَبًا بِهِ فَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ فَفَتَحَ فَلَمَّا خَلَصْتُ فَإِذَا فِيْهَا آدَمُ فَقَالَ هَذَا أَبُوكَ آدَمُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ السَّلَامَ ثُمَّ قَالَ مَرْحَبًا بِالِابْنِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ ثُمَّ صَعِدَ بِيْ حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الثَّانِيَةَ فَاسْتَفْتَحَ قِيْلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيْلُ قِيْلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ قِيْلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ قِيْلَ مَرْحَبًا بِهِ فَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ فَفَتَحَ فَلَمَّا خَلَصْتُ إِذَا يَحْيَى وَعِيْسَى وَهُمَا ابْنَا الْخَالَةِ قَالَ هَذَا يَحْيَى وَعِيْسَى فَسَلِّمْ عَلَيْهِمَا فَسَلَّمْتُ فَرَدَّا ثُمَّ قَالَا مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ ثُمَّ صَعِدَ بِيْ إِلَى السَّمَاءِ الثَّالِثَةِ فَاسْتَفْتَحَ قِيْلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيْلُ قِيْلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ قِيْلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ قِيْلَ مَرْحَبًا بِهِ فَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ فَفُتِحَ فَلَمَّا خَلَصْتُ إِذَا يُوْسُفُ قَالَ هَذَا يُوْسُفُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ ثُمَّ قَالَ مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ ثُمَّ صَعِدَ بِيْ حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الرَّابِعَةَ فَاسْتَفْتَحَ قِيْلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيْلُ قِيْلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ قِيْلَ أَوَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ قِيْلَ مَرْحَبًا بِهِ فَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ فَفُتِحَ فَلَمَّا خَلَصْتُ إِلَى إِدْرِيْسَ قَالَ هَذَا إِدْرِيْسُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ ثُمَّ قَالَ مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ ثُمَّ صَعِدَ بِيْ حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الْخَامِسَةَ فَاسْتَفْتَحَ قِيْلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيْلُ قِيْلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ قِيْلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ قِيْلَ مَرْحَبًا بِهِ فَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ فَلَمَّا خَلَصْتُ فَإِذَا هَارُونُ قَالَ هَذَا هَارُونُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ ثُمَّ قَالَ مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ ثُمَّ صَعِدَ بِيْ حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ السَّادِسَةَ فَاسْتَفْتَحَ قِيْلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيْلُ قِيْلَ مَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ قِيْلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ قَالَ مَرْحَبًا بِهِ فَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ فَلَمَّا خَلَصْتُ فَإِذَا مُوْسَى قَالَ هَذَا مُوْسَى فَسَلِّمْ عَلَيْهِ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ ثُمَّ قَالَ مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ فَلَمَّا تَجَاوَزْتُ بَكَى قِيْلَ لَهُ مَا يُبْكِيكَ قَالَ أَبْكِيْ لِأَنَّ غُلَامًا بُعِثَ بَعْدِيْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِهِ أَكْثَرُ مِمَّنْ يَدْخُلُهَا مِنْ أُمَّتِيْ ثُمَّ صَعِدَ بِيْ إِلَى السَّمَاءِ السَّابِعَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيْلُ قِيْلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيْلُ قِيْلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ قِيْلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ قَالَ مَرْحَبًا بِهِ فَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ فَلَمَّا خَلَصْتُ فَإِذَا إِبْرَاهِيْمُ قَالَ هَذَا أَبُوكَ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ قَالَ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ السَّلَامَ قَالَ مَرْحَبًا بِالِابْنِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ ثُمَّ رُفِعَتْ إِلَيَّ سِدْرَةُ الْمُنْتَهَى فَإِذَا نَبْقُهَا مِثْلُ قِلَالِ هَجَرَ وَإِذَا وَرَقُهَا مِثْلُ آذَانِ الْفِيَلَةِ قَالَ هَذِهِ سِدْرَةُ الْمُنْتَهَى وَإِذَا أَرْبَعَةُ أَنْهَارٍ نَهْرَانِ بَاطِنَانِ وَنَهْرَانِ ظَاهِرَانِ فَقُلْتُ مَا هَذَانِ يَا جِبْرِيْلُ قَالَ أَمَّا الْبَاطِنَانِ فَنَهْرَانِ فِي الْجَنَّةِ وَأَمَّا الظَّاهِرَانِ فَالنِّيلُ وَالْفُرَاتُ ثُمَّ رُفِعَ لِي الْبَيْتُ الْمَعْمُوْرُ ثُمَّ أُتِيْتُ بِإِنَاءٍ مِنْ خَمْرٍ وَإِنَاءٍ مِنْ لَبَنٍ وَإِنَاءٍ مِنْ عَسَلٍ فَأَخَذْتُ اللَّبَنَ فَقَالَ هِيَ الْفِطْرَةُ الَّتِيْ أَنْتَ عَلَيْهَا وَأُمَّتُكَ ثُمَّ فُرِضَتْ عَلَيَّ الصَّلَوَاتُ خَمْسِيْنَ صَلَاةً كُلَّ يَوْمٍ فَرَجَعْتُ فَمَرَرْتُ عَلَى مُوْسَى فَقَالَ بِمَا أُمِرْتَ قَالَ أُمِرْتُ بِخَمْسِيْنَ صَلَاةً كُلَّ يَوْمٍ قَالَ إِنَّ أُمَّتَكَ لَا تَسْتَطِيْعُ خَمْسِيْنَ صَلَاةً كُلَّ يَوْمٍ وَإِنِّيْ وَاللهِ قَدْ جَرَّبْتُ النَّاسَ قَبْلَكَ وَعَالَجْتُ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ أَشَدَّ الْمُعَالَجَةِ فَارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ التَّخْفِيْفَ لِأُمَّتِكَ فَرَجَعْتُ فَوَضَعَ عَنِّيْ عَشْرًا فَرَجَعْتُ إِلَى مُوْسَى فَقَالَ مِثْلَهُ فَرَجَعْتُ فَوَضَعَ عَنِّيْ عَشْرًا فَرَجَعْتُ إِلَى مُوْسَى فَقَالَ مِثْلَهُ فَرَجَعْتُ فَوَضَعَ عَنِّيْ عَشْرًا فَرَجَعْتُ إِلَى مُوْسَى فَقَالَ مِثْلَهُ فَرَجَعْتُ فَأُمِرْتُ بِعَشْرِ صَلَوَاتٍ كُلَّ يَوْمٍ فَرَجَعْتُ فَقَالَ مِثْلَهُ فَرَجَعْتُ فَأُمِرْتُ بِخَمْسِ صَلَوَاتٍ كُلَّ يَوْمٍ فَرَجَعْتُ إِلَى مُوْسَى فَقَالَ بِمَ أُمِرْتَ قُلْتُ أُمِرْتُ بِخَمْسِ صَلَوَاتٍ كُلَّ يَوْمٍ قَالَ إِنَّ أُمَّتَكَ لَا تَسْتَطِيْعُ خَمْسَ صَلَوَاتٍ كُلَّ يَوْمٍ وَإِنِّيْ قَدْ جَرَّبْتُ النَّاسَ قَبْلَكَ وَعَالَجْتُ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ أَشَدَّ الْمُعَالَجَةِ فَارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ التَّخْفِيْفَ لِأُمَّتِكَ قَالَ سَأَلْتُ رَبِّيْ حَتَّى اسْتَحْيَيْتُ وَلَكِنِّيْ أَرْضَى وَأُسَلِّمُ قَالَ فَلَمَّا جَاوَزْتُ نَادَى مُنَادٍ أَمْضَيْتُ فَرِيْضَتِيْ وَخَفَّفْتُ عَنْ عِبَادِي
মালিক ইব্‌নু সা’সা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে রাতে তাকেঁ ভ্রমণ করানো হয়েছে সে রাতের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, এক সময় আমি কা’বা ঘরের হাতিমের অংশে ছিলাম। কখনো কখনো রাবী (কাতাদাহ) বলেছেন, হিজরে শুয়েছিলাম। হঠাৎ একজন আগন্তুক আমার নিকট এলেন এবং আমার এস্থান হতে সে স্থানের মাঝের অংশটি চিরে ফেললেন। রাবী কাতাদাহ বলেন, আনাস (রাঃ) কখনো কাদ্দা (চিরলেন) শব্দ আবার কখনো শাক্‌কা (বিদীর্ণ) শব্দ বলেছেন। রাবী বলেন, আমি আমার পার্শ্বে বসা জারূদ (রহঃ) - কে জিজ্ঞেস করলাম, এ দ্বারা কী বুঝিয়েছেন? তিনি বললেন, হকলূমের নিম্নদেশ হতে নাভি পর্যন্ত। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) - কে এ-ও বলতে শুনেছি বুকের উপরিভাগ হতে নাভির নীচ পর্যন্ত। তারপর আগন্তুক আমার হৃদপিণ্ড বের করলেন। তারপর আমার নিকট একটি সোনার পাত্র আনা হল যা ঈমানে পরিপূর্ণ ছিল। তারপর আমার হৃদপিন্ডটি ধৌত করা হল এবং ঈমান দ্বারা পরিপূর্ণ করে যথাস্থানে আবার রেখে দেয়া হল। তারপর সাদা রং এর একটি জন্তু আমার নিকট আনা হল। যা আকারে খচ্চর হতে ছোট ও গাধা হতে বড় ছিল। জারুদ তাকে বলেন, হে আবূ হামযা, এটাই কি বুরাক? আনাস (রাঃ) বললেন, হাঁ। সে একেক কদম রাখে দৃষ্টির শেষ সীমায়। আমাকে তার উপর সওয়ার করানো হল। তারপর আমাকে নিয়ে জিবরাঈল (আঃ) চললেন। প্রথম আসমানে নিয়ে এসে দরজা খুলে দিতে বললেন, জিজ্ঞেস করা হল, ইনি কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। আবার জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। আবার জিজ্ঞেস করা হল, তাঁকে কি ডেকে পাঠান হয়েছে? তিনি বললেন, হাঁ। তখন বলা হল, মারহাবা, উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে। তারপর আসমানের দরজা খুলে দেয়া হল। আমি যখন পৌঁছলাম, তখন সেখানে আদম (আঃ) - এর সাক্ষাৎ পেলাম জিবরাঈল (আঃ) বললেন, ইনি আপনার আদি পিতা আদম (আঃ) তাঁকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম করলাম। তিনি সালামের জবাব দিলেন এবং বললেন, নেক্‌কার পুত্র ও নেক্‌কার নবীর প্রতি খোশ আমদেদ। তারপর উপরের দিকে চলে দ্বিতীয় আসমানে পৌঁছে দরজা খুলে দিতে বললেন, জিজ্ঞেস করা হল কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। জিজ্ঞেস করা হল, তাঁকে কি ডেকে পাঠানো হয়েছে? তিনি উত্তর দিলেন, হাঁ। তারপর বলা হল - মারহাবা! উত্তম আগমনকারীর আগমন ঘটেছে। তারপর খুলে দেয়া হল। যখন সেখানে পৌঁছলাম তখন সেখানে ইয়াহ্‌ইয়া ও ‘ঈসা(আঃ) - এর সাক্ষাৎ পেলাম। তাঁরা দু’জন ছিলেন পরস্পরের খালাত ভাই। তিনি (জিবরাঈল) বললেন, এরা হলেন, ইয়াহ্‌ইয়া ও ঈসা (আঃ)। তাদের প্রতি সালাম করুন। তখন আমি সালাম করলাম। তাঁরা জবার দিলেন, তারপর বরলেন, নেক্‌কার ভাই ও নেক্‌কার নবীর প্রতি খোশ - আমদেদ। এরপর তিনি আমাকে নিয়ে তৃতীয় আসমানের দিকে চললেন, সেখানে পৌঁছে জিবরাঈল বললেন, খুলে দাও। তাঁকে বলা হল কে? তিনি উত্তর দিলেন, জিবরাঈল (আঃ)। জিজ্ঞেস করা হল আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। জিজ্ঞেস করা হল, তাঁকে কি ডেকে পাঠানো হয়েছে? তিনি উত্তর দিলেন, হাঁ। বলা হল, তাঁর জন্য খোশ - আমদেদ। উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে। তারপর দরজা খুলে দেয়া হল। আমি তথায় পৌঁছে ইউসুফ (আঃ) - কে দেখতে পেলাম। জিবরাঈল বললেন, ইনি ইউসুফ (আঃ) আপনি তাঁকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম করলাম, তিনিও জবাব দিলেন এবং বললেন, নেক্‌কার ভাই, নেক্‌কার নবীর প্রতি খোশ-আমদেদ। তারপর জিবরাঈল (আঃ) আমাকে নিয়ে উপর দিকে চললেন এবং চতুর্থ আসমানে পৌঁছলেন। আর দরজা খুলে দিতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। জিজ্ঞেস করা হল, তাঁকে কি ডেকে পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হাঁ। তখন বলা হল, তাঁর প্রতি মারহাবা। উত্তম আগমনকারীর আগমন ঘটেছে। তারপর খুলে দেয়া হল। আমি ইদ্রীস (আঃ) - এর কাছে পৌঁছলে জিবরাঈল বললেন, ইনি ইদ্রীস (আঃ)। তাকেঁ সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম করলাম। তিনিও জবার দিলেন। তারপর বললেন, নেক্‌কার ভাই ও নেক্‌কার নবীর প্রতি মারহাবা। এরপর তিনি আমাকে নিয়ে উপর দিকে গিয়ে পঞ্চম আসমানে পৌঁছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হল আপনি কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি উত্তর দিলেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। জিজ্ঞেস করা হল, তাঁকে কি ডেকে পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হাঁ। বলা হল, তাঁর প্রতি মারহাবা। উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে। তথায় পৌঁছে হারূন (আঃ) - কে পেলাম। জিবরাঈল বললেন, ইনি হারূন (আঃ) তাঁকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম করলাম; তিনিও জবাব দিলেন, এবং বললেন, নেক্‌কার ভাই ও নেক্‌কার নবীর প্রতি মারহাবা। তারপর আমাকে নিয়ে যাত্রা করে ষষ্ঠ আকাশে পৌঁছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। প্রশ্ন করা হল, তাকে কি ডেকে পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হাঁ। ফেরেশ্‌তা বললেন, তার প্রতি মারহাবা। উত্তম আগন্তুক এসেছেন। তথায় পৌঁছে আমি মূসা (আঃ) - কে পেলাম। জিবরাঈল (আঃ) বললেন, ইনি মূসা (আঃ)। তাঁকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম করলাম। তিনি জবাব দিলেন এবং বললেন, নেক্‌কার ভাই ও নেক্‌কার নবীর প্রতি মারহাবা। আমি যখন অগ্রসর হলাম তখন তিনি কেঁদে ফেললেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কিসের জন্য কাঁদছেন? তিনি বললেন, আমি এজন্য কাঁদছি যে, আমার পর একজন যুবককে নবী বানিয়ে পাঠানো হয়েছে, যাঁর উম্মত আমার উম্মত হতে অধিক সংখ্যায় জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারপর জিবরাঈল (আঃ) আমাকে নিয়ে সপ্তম আকাশের দিকে গেলেন এবং দরজা খুলে দিতে বললেন, জিজ্ঞেস করা হল এ কে? তিনি উত্তর দিলেন, আমি জিবরাঈল। আবার জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। জিজ্ঞেস করা হল, তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে কি? তিনি বললেন, হাঁ। বলা হল, তাঁর প্রতি মারহাবা। উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে। আমি সেখানে পৌঁছে ইব্‌রাহীম (আঃ) - কে দেখতে পেলাম। জিবরাঈল (আঃ) বললেন, ইনি আপনার পিতা তাঁকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম করলাম। তিনি সালামের জবার দিলেন এবং বললেন, নেক্‌কার পুত্র ও নেক্‌কার নবীর প্রতি মারহাবা। তারপর আমাকে সিদ্‌রাতুল মুনতাহা [১] পর্যন্ত উঠানো হল। দেখতে পেলাম, তার ফল ‘হাজার’ অঞ্চলের মটকার ন্যায় এবং তার পাতাগুলি হাতির কানের মত। আমাকে বলা হল, এ হল সিদরাতুল মু্‌নতাহা। সেখানে আমি চারটি নহর দেখতে পেলাম, যাদের দু’টি ছিল অপ্রকাশ্য দু’টি ছিল প্রকাশ্য। তখন আমি জিব্‌রাঈল (আঃ) - কে জিজ্ঞেস করলাম, এ নহরগুলি কী? তিনি বললেন, অপ্রকাশ্য, দু’টি হল জান্নাতের দু’টি নহর। আর প্রকাশ্য দু’টি হল নীল নদী ও ফুরাত নদী। তারপর আমার সামনে ‘আল-বায়তুল মামুর’ প্রকাশ করা হল, এরপর আমার সামনে একটি শরাবের পাত্র, একটি দুধের পাত্র ও একটি মধুর পাত্র রাখ হল। আমি দুধের পাত্রটি গ্রহণ করলাম। তখন জিবরাঈল বললেন, এ-ই হচ্ছে ফিতরাত। আপনি ও আপনার উম্মতগণ এর উপর প্রতিষ্ঠিত। তারপর আমার উপর দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত সলাত ফরয করা হল। এরপর আমি ফিরে আসলাম। মূসা (আঃ) - এর সম্মুখ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আল্লাহ্‌ তা’আলা আপনাকে কী আদেশ করেছেন? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমাকে দৈনিক পঞ্চাশ ওয়াক্ত সলাতের আদেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বললেন, আপনার উম্মত দৈনিক পঞ্চাশ ওয়াক্ত সলাত আদায় করতে সমর্থ হবে না। আল্লাহ্‌র কসম। আমি আপনার আগে লোকদের পরীক্ষা করেছি এবং বানী ইসরাঈলের হিদায়াতের জন্য কঠোর শ্রম দিয়েছি। তাই আপনি আপনার প্রতিপালকের নিকট ফিরে যান এবং আপনার উম্মতের (বোঝা) হালকা করার জন্য আরয করুন। আমি ফিরে গেলাম। ফলে আমার উপর হতে দশ হ্রাস করে দিলেন। আমি আবার মূসা (আঃ) - এর নিকট ফিরে এলাম। তিনি আবার আগের মত বললেন, আমি আবার ফিরে গেলাম। ফলে আল্লাহ তা’আলা আরো দশ কমিয়ে দিলেন। ফিরার পথে মূসা (আঃ) - এর নিকট পৌঁছলে, তিনি আবার আগের কথা বললেন, আমি আবার ফিরে গেলাম। আল্লাহ তা’আলা আরো দশ হ্রাস করলেন। আমি মূসা (আঃ) - এর নিকট ফিরে এলাম। তিনি আবার ঐ কথাই বললেন। আমি আবার ফিরে গেলাম। তখন আমাকে প্রতিদিন দশ সলাতের আদেশ দেয়া হয়। আমি ফিরে এলাম। মূসা (আঃ) ঐ কথাই আগের মত বললেন। আমি আবার ফিরে গেলাম, তখন আমাকে পাঁচ সলাতের আদেশ করা হয়। তারপর মূসা (আঃ) নিকট ফিরে এলাম। তিনি বললেন, আপনাকে কী আদেশ দেয়া হয়েছে। আমি বললাম, আমাকে দৈনিক পাঁচবার সলাত আদায়ের আদেশ দেয়া হয়েছে? মূসা (আঃ) বললেন, আপনার উম্মত দৈনিক পাঁচ সলাত আদায় করতেও সমর্থ হবে না। আপনার পূর্বে আমি লোকদের পরীক্ষা করেছি। বনী ইসরাঈলের হিদায়াতের জন্য কঠোর শ্রম দিয়েছি। আপনি আপনার রবের নিকট ফিরে যান এবং আপনার উম্মতের জন্য আরো সহজ করার আরযি করুন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি আমার রবের নিকট আরজি করেছি, এতে আমি লজ্জাবোধ করছি। আর আমি এতেই সন্তুষ্ট হয়েছি এবং তা মেনে নিয়েছি। এরপর তিনি বললেন, আমি যখন অগ্রসর হলাম, তখন এক ঘোষণাকারী ঘোষণা দিলেন, আমি আমার অবশ্য প্রতিপাল্য নির্দেশ জারি করে দিলাম এবং আমার বান্দাদের উপর হালকা করে দিলাম।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬০০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬০৫)
 [১] ‘সিদরাহ’ শব্দের অর্থ কূল বৃক্ষ এবং ‘মুনতাহা’ শব্দের অর্থ শেষসীমা। পৃথিবী হতে উর্ধ্বলোকে নীত হয় তা ওখানে গিয়েই থেমে পড়ে, অতঃপর তার অপর পাড়ে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা সেখান হতে তা গ্রহণ করে উপরে নিয়ে যান। শেষ সীমায় চিহ্নস্বরূপ ঐ স্থানটাতে একটা কূল বৃক্ষ থাকায় ঐ সীমান্ত চিহ্নকে ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ বলা হয়।

৩৮৮৮

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرٌو عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فِيْ قَوْلِهِ تَعَالَى وَمَا جَعَلْنَا الرُّؤْيَا الَّتِيْ أَرَيْنَاكَ إِلَّا فِتْنَةً لِّلنَّاسِ (الإسراء : 20) قَالَ هِيَ رُؤْيَا عَيْنٍ أُرِيَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ قَالَ وَالشَّجَرَةَ الْمَلْعُوْنَةَ فِي الْقُرْآنِ قَالَ هِيَ شَجَرَةُ الزَّقُّومِ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলার বাণী “আর আমি যে দৃশ্য আপনাকে দেখিয়েছি তা কেবল মানুষের পরীক্ষার জন্য” (ইসরা/বানী ইসরাঈলঃ ২০) এর তাফসীরে বলেন, এটি হল প্রত্যক্ষভাবে চোখের দেখা যা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে সে রাতে দেখানো হয়েছে যে রাতে তাঁকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণ করানো হয়েছিল। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) আরো বলেন, কুরআনে যে অভিশপ্ত বৃক্ষের কথা বলা হয়েছে, তা হল যাক্‌কুম বৃক্ষ।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬০১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬০৬)

৬৩/৪৩. অধ্যায়ঃ

মক্কায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আনসারের প্রতিনিধি দল এবং আকাবার বায়’আত।

৩৮৮৯

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ ح حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ كَعْبٍ وَكَانَ قَائِدَ كَعْبٍ حِيْنَ عَمِيَ قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ يُحَدِّثُ حِيْنَ تَخَلَّفَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَزْوَةِ تَبُوكَ بِطُوْلِهِ قَالَ ابْنُ بُكَيْرٍ فِيْ حَدِيْثِهِ وَلَقَدْ شَهِدْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ الْعَقَبَةِ حِيْنَ تَوَاثَقْنَا عَلَى الْإِسْلَامِ وَمَا أُحِبُّ أَنَّ لِيْ بِهَا مَشْهَدَ بَدْرٍ وَإِنْ كَانَتْ بَدْرٌ أَذْكَرَ فِي النَّاسِ مِنْهَا
আবদুল্লাহ ইব্‌নু কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইব্‌নু কা’ব (রহঃ) যিনি কা’ব এর পথ প্রদর্শক ছিলেন যখন কা’ব অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি বলেন, আমি কা’ব ইব্‌নু মালিক (রাঃ) - কে তাবূক যুদ্ধকালে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে তাঁর পশ্চাতে হতে যাওয়ার ঘটনাটি সবিস্তারে বর্ণনা করতে শুনেছি। ইব্‌নু বুকায়র তাঁর বর্ণনায় এ কথাটিও বলেন যে, কা’ব (রাঃ) বলেছেন, আমি ‘আকাবার রাতে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। যখন আমরা ইসলামের উপর দৃঢ় থাকার অঙ্গীকার করেছিলাম। সে রাতের পরিবর্তে বদর যুদ্ধে উপস্থিত হওয়া আমার নিকট অধিক প্রিয় নয়, যদিও বদর যুদ্ধ জনগণের মধ্যে ‘আকাবার চেয়ে বেশি আলোচিত ছিল।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬০২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬০৭)

৩৮৯০

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ كَانَ عَمْرٌو يَقُوْلُ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ شَهِدَ بِيْ خَالَايَ الْعَقَبَةَ قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ أَحَدُهُمَا الْبَرَاءُ بْنُ مَعْرُوْرٍ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আকাবা রাতে আমার দু’জন মামা আমাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ইব্‌নু উয়ায়না বলেন, দু’জন মামান একজন হলেন বারা’ ইব্‌নু মা’রূর (রাঃ)।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬০৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬০৮)

৩৮৯১

حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ قَالَ عَطَاءٌ قَالَ جَابِرٌ أَنَا وَأَبِيْ وَخَالِيْ مِنْ أَصْحَابِ الْعَقَبَةِ
আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, জাবির (রাঃ) বলেন, আমি, আমার পিতা আবদুল্লাহ এবং আমার মামা ‘আকাবায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলাম।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬০৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬০৯)

৩৮৯২

حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ أَخْبَرَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِيْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَمِّهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ إِدْرِيْسَ عَائِذُ اللهِ أَنَّ عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ مِنْ الَّذِيْنَ شَهِدُوْا بَدْرًا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمِنْ أَصْحَابِهِ لَيْلَةَ الْعَقَبَةِ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَحَوْلَهُ عِصَابَةٌ مِنْ أَصْحَابِهِ تَعَالَوْا بَايِعُونِيْ عَلَى أَنْ لَا تُشْرِكُوْا بِاللهِ شَيْئًا وَلَا تَسْرِقُوْا وَلَا تَزْنُوْا وَلَا تَقْتُلُوْا أَوْلَادَكُمْ وَلَا تَأْتُوْا بِبُهْتَانٍ تَفْتَرُوْنَهُ بَيْنَ أَيْدِيكُمْ وَأَرْجُلِكُمْ وَلَا تَعْصُونِيْ فِيْ مَعْرُوفٍ فَمَنْ وَفَى مِنْكُمْ فَأَجْرُهُ عَلَى اللهِ وَمَنْ أَصَابَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَعُوقِبَ بِهِ فِي الدُّنْيَا فَهُوَ لَهُ كَفَّارَةٌ وَمَنْ أَصَابَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَسَتَرَهُ اللهُ فَأَمْرُهُ إِلَى اللهِ إِنْ شَاءَ عَاقَبَهُ وَإِنْ شَاءَ عَفَا عَنْهُ قَالَ فَبَايَعْتُهُ عَلَى ذَلِكَ
আবূ ইদরীস আইযুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, ‘উবাদাহ ইব্‌নু সামিত (রাঃ) যিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে বদর যুদ্ধে এবং আকাবার রাতে উপস্থিত সাহাবীদের মধ্যে ছিলেন - তিনি আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের একটি দলকে লক্ষ্য করে বললেন, এস তোমরা আমার কাছে একথার উপর বায়’আত [১] কর যে, তোমরা আল্লাহ তা’আলার সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না, তোমরা চুরি করবে না, তোমরা ব্যভিচার করবে না; তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, তোমরা অপবাদ আরোপ করবে না যা তোমরা নিজে হতে বানিয়ে নাও, তোমরা নেক কাজে আমার নাফরমানী করবে না, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এসব শর্ত পূরণ করে চলবে সে আল্লাহ তা’আলার নিকট তার প্রতিদান অবশ্যই পাবে। আর যে এ সবের কোন কিছুতে লিপ্ত হয় এবং তাকে এ কারণে দুনিয়াতে শাস্তি দেয়া হয়, তবে এ শাস্তি তার প্রতি কাফ্‌ফারা হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি এ সবের কোনটিতে লিপ্ত হল আর আল্লাহ তা গোপন রাখেন, তবে তার ব্যাপারটি আল্লাহ তা’আলার ওপর ন্যস্ত। তিনি ইচ্ছা করলে শাস্তি দিবেন আর ইচছা করলে ক্ষমা করবেন। ‘উবাদাহ (রাঃ) বলেন, আমিও এসব শর্তের উপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট হাতে বায়’আত করেছি।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬০৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬১০)
 [১] ‘বায়’আত’ শব্দের সাধারণ অর্থ বিক্রি করা। শর’ঈয়াতের পরিভাষায় এর বিশেষ অর্থ হলোঃ কারো আনুগত্যের অঙ্গীকার করা, কারো কথা পালন করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়া।

৩৮৯৩

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ حَبِيْبٍ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ الصُّنَابِحِيِّ عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ أَنَّهُ قَالَ إِنِّيْ مِنْ النُّقَبَاءِ الَّذِيْنَ بَايَعُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ بَايَعْنَاهُ عَلَى أَنْ لَا نُشْرِكَ بِاللهِ شَيْئًا وَلَا نَسْرِقَ وَلَا نَزْنِيَ وَلَا نَقْتُلَ النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ وَلَا نَنْتَهِبَ وَلَا نَعْصِيَ بِالْجَنَّةِ إِنْ فَعَلْنَا ذَلِكَ فَإِنْ غَشِيْنَا مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا كَانَ قَضَاءُ ذَلِكَ إِلَى اللهِ
উবাদাহ ইব্‌নু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ঐ মনোনীত প্রতিনিধি দলে ছিলাম, যারা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে বায়’আত গ্রহণ করেছিল। তিনি আরও বলেন, আমরা তাঁর কাছে বায়’আত গ্রহণ করেছিলাম জান্নাত লাভের জন্য যদি আমরা এই কাজগুলো করি এই শর্তে যে, আমরা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন কিছুকেই শরীক করব না, ব্যভিচার করব না, চুরি করব না। আল্লাহ্‌ যাতে হত্যা করা হারাম করেছেন, তাকে না হক হত্যা করব না, লুটতরাজ করব না এবং নাফরমানী করব না। আর যদি আমরা এর মধ্যে কোনটিতে লিপ্ত হই, তাহলে এর ফয়সালা আল্লাহ্‌ তা’আলার উপর।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬০৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬১১)

৬৩/৪৪. অধ্যায়ঃ

আয়িশা (রাঃ) এর সঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিবাহ, তাঁর মদীনা উপস্থিতি এবং ‘আয়িশা (রাঃ) - এর সঙ্গে তাঁর বাসর।

৩৮৯৪

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন আমাকে বিবাহ করেন, তখন আমার বয়স ছিল ছয় বছর। তারপর আমরা মদীনায় এলাম এবং বনু হারিস গোত্রে অবস্থান করলাম। সেখানে আমি জ্বরে আক্রান্ত হলাম। এতে আমার চুল পড়ে গেল। পরে যখন আমার মাথার সামনের চুল জমে উঠল। সে সময় আমি একদিন আমার বান্ধবীদের সাথে দোলনায় খেলা করছিলাম। তখন আমার মাতা উম্মে রূমান আমাকে উচ্চ:স্বরে ডাকলেন। আমি তাঁর কাছে এলাম। আমি বুঝতে পারিনি, তার উদ্দেশ্য কী? তিনি আমার হাত ধরে ঘরের দরজায় এসে আমাকে দাঁড় করালেন। আর আমি হাঁফাচ্ছিলাম। শেষে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস কিছুটা প্রশমিত হল। এরপর তিনি কিছু পানি নিলেন এবং তা দিয়ে আমার মুখমণ্ডল ও মাথা মাসেহ করে দিলেন। তারপর আমাকে ঘরের ভিতর প্রবেশ করালেন। সেখানে কয়েকজন আনসারী মহিলা ছিলেন। তাঁরা বললেন, কল্যাণময়, বরকতময় এবং সৌভাগ্যমণ্ডিত হোক। আমাকে তাদের কাছে দিয়ে দিলেন। তাঁরা আমার অবস্থান ঠিক করে দিলেন, তখন ছিল দ্বিপ্রহরের পূর্ব মুহূর্ত। হঠাৎ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে দেখে আমি হকচকিয়ে গেলাম। তাঁরা আমাকে তাঁর কাছে তুলে দিল। সে সময় আমি নয় বছরের বালিকা।

৩৮৯৫

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বলেন, দু’বার তোমাকে আমায় স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। আমি দেখলাম, তুমি একটি রেশমী কাপড়ে আবৃতা এবং আমাকে বলছে ইনি আপনার স্ত্রী, আমি তার ঘোমটা সরিয়ে দেখলাম, সে মহিলা তুমিই। তখন আমি ভাবছিলাম, যদি তা আল্লাহ্‌র পক্ষ হতে হয়ে থাকে, তবে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন।

৩৮৯৬

হিশাম এর পিতা হতে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর মদীনার দিকে বের হওয়ার তিন বছর আগে খাদীজাহ (রাঃ) - এর মৃত্যু হয়। তারপর দু’বছর অথবা এর কাছাকাছি সময় অতিবাহিত করে তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) - কে বিবাহ করেন। যখন তিনি ছিলেন ছয় বছরের বালিকা। তারপর নয় বছর বয়সে বাসর উদ্‌যাপন করেন।

৬৩/৪৫. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সাহাবীদের মদীনায় হিজরত।
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু যায়দ ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, যদি হিজরতের ফাযীলাত না হত তবে আমি আনসারদেরই একজন হতাম। আবূ মূসা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি মক্কা হতে হিজরত করছি এমন জায়গায় যেখানে খেজুর বাগান আছে। আমি ভাবলাম, তা হবে ইয়ামামাহ কিংবা হাজার। [১] পরে দেখলাম যে, তা মদীনা-ইয়াস্‌রিব।
[১] উক্ত স্থান সম্পর্কে সর্বোত্তম মত হচ্ছে এটি ইয়ামান এর একটি শহর এর নাম (ফাতহুল বারী)।

৩৮৯৭

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ يَقُوْلُ عُدْنَا خَبَّابًا فَقَالَ هَاجَرْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نُرِيْدُ وَجْهَ اللهِ فَوَقَعَ أَجْرُنَا عَلَى اللهِ فَمِنَّا مَنْ مَضَى لَمْ يَأْخُذْ مِنْ أَجْرِهِ شَيْئًا مِنْهُمْ مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ قُتِلَ يَوْمَ أُحُدٍ وَتَرَكَ نَمِرَةً فَكُنَّا إِذَا غَطَّيْنَا بِهَا رَأْسَهُ بَدَتْ رِجْلَاهُ وَإِذَا غَطَّيْنَا رِجْلَيْهِ بَدَا رَأْسُهُ فَأَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ نُغَطِّيَ رَأْسَهُ وَنَجْعَلَ عَلَى رِجْلَيْهِ شَيْئًا مِنْ إِذْخِرٍ وَمِنَّا مَنْ أَيْنَعَتْ لَهُ ثَمَرَتُهُ فَهُوَ يَهْدِبُهَا
উবূ ওয়াইল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উবূ ওয়াইল (রাঃ) বলেন, আমরা পীড়িত খাব্বাব (রাঃ) - কে দেখতে গেলাম। তিনি আমাদেরকে বললেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে হিজরত করেছিলাম - আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে। আল্লাহ্‌র নিকট আমাদের সওয়াব রয়েছে। তবে আমাদের মথ্যে কেউ কেউ কোন প্রতিদানের কিছু না নিয়েই চলে গেছেন। এদের মধ্যে ছিলেন মুস’আব ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ)। তিনি ওহুদের দিন শহীদ হন। তিনি একখানা চাদর রেখে যান। আমরা যখন এটি দিয়ে তাঁর মাথা ঢেকে দিতাম, তখন তাঁর পা বেরিয়ে পড়ত, আর যখন আমরা পা ঢেকে দিতাম, তখন তাঁর মাথা বেরিয়ে পড়ত। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নির্দেশ করলেন যে, আমরা যেন তাঁর মাথা ঢেকে দিই এবং তাঁর পায়ের উপর কিছু ইয্‌খির রেখে দিই। আর আমাদের মধ্যে এমন কেউ কেউ আছেন, যাদের ফল পরিপক্ক হয়েছে আর তারা তা পেড়ে খাচ্ছেন।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬১০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬১৫)

৩৮৯৮

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ هُوَ ابْنُ زَيْدٍ عَنْ يَحْيَى عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَقَّاصٍ قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ الأَعْمَالُ بِالنِّيَّةِ فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيْبُهَا أَوْ
امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِهِ فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উমার (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে বলতে শুনেছি যে, আমলের ফলাফল নির্ভর করে নিয়্যাতের [১] উপর। সুতরাং যার হিজরত [২] হয় দুনিয়া লাভের জন্য কিংবা কোন স্ত্রীলোককে বিবাহ করার উদ্দেশে, তাহলে তার হিজরত হবে যে উদ্দেশে সে হিজরত করেছে। আর যার হিজরত হবে আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্য, তবে তার হিজরত হবে আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূলেরই জন্য। (১)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬১১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬১৬)
[১] ‘নিয়্যাত’ শব্দের অর্থ অন্তরের দৃঢ় সংকল্প। শর’ঈয়াতের পরিভাষায় এর বিশেষ অর্থ নিম্নরূপঃ (১) কোন কাজকে কোন কাজ থেকে পৃথক করা বা নির্দিষ্ট করে নেয়া। যথা ফারয সলাতের নিয়্যাত করা মানে সুন্নাত তথা নাফল থেকে পৃথক বা নির্দিষ্ট করা। (২) কোন কাজ সম্পাদনের সংকল্প করা। যথা হাজ্জের নিয়্যাত করা মানে হাজ্জ সম্পাদনের সংকল্প করা। (৩) নিয়্যাত মানে কোন কাজের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য। উক্ত হাদীসে ‘নিয়্যাত’ শব্দটি এ শেষোক্ত অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ যে কোন কাজের ফরাফল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের উপরই নির্ভর করে।
এখানে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, নিয়্যাত যেহেতু অন্তরের সংকল্পেরই নাম, সেহেতু কোন কাজের নিয়্যাতের সময় অন্তরে সংকল্প না করে শুধু মুখে উচ্চারণ করলে চলবে না। যেমন সলাত আদায়ের পূর্বে অনেক মুসল্লীকে সলাতের আরবীতে তথাকথিত গদবাধা নিয়্যাত করতে দেখা যায় - যার প্রমাণ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কোন হাদীসে পাওয়া যায় না। সুতরাং সলাতের নিয়্যতে নির্দিষ্টভাবে মনের দৃঢ় সংকল্পই যথেষ্ট; মুখে উচ্চারণ রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাহ্‌র পরিপন্থী যা নবাবিষ্কৃত হিসেবে গণ্য।
[২] ‘হিজরত’ শব্দের অর্থ ত্যাগ করা, ছিন্ন করা। শর’ঈয়াতের পরিভাষায় এর দু’ধরনের অর্থ রয়েছ। (১) আল্লাহ্‌র সন্তোষ লাভের জন্য এক স্থান ত্যাগ করে অন্য স্থানে যাওয়া, ঈমান ও ধর্ম রক্ষার জন্য নিরাপদ স্থানে গমন করা। যথা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীদের মক্কা হতে মদীনায় গমনকে হিজরত বলা হয়। (২) শর’ঈয়াতের নিষিদ্ধ কাজগুলোকে পরিহার করা। তাই রসূল হাদীসে বলেনঃ প্রকৃত মুহাজির ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহ্‌র নিষিদ্ধ বিষয়সমূহকে ত্যাগ করেছে।

৩৮৯৯

حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ بْنُ يَزِيْدَ الدِّمَشْقِيُّ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ عَمْرٍو الأَوْزَاعِيُّ عَنْ عَبْدَةَ بْنِ أَبِيْ لُبَابَةَ عَنْ مُجَاهِدِ بْنِ جَبْرٍ الْمَكِّيِّ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا كَانَ يَقُوْلُ لَا هِجْرَةَ بَعْدَ الْفَتْحِ
আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বলতেন, (মক্কা) বিজয়ের পর হিজরতের কোন প্রয়োজন নেই।

৩৯০০

قَالَ يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ وَحَدَّثَنِي الأَوْزَاعِيُّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِيْ رَبَاحٍ قَالَ زُرْتُ عَائِشَةَ مَعَ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ اللَّيْثِيِّ فَسَأَلْنَاهَا عَنْ الْهِجْرَةِ فَقَالَتْ لَا هِجْرَةَ الْيَوْمَ كَانَ الْمُؤْمِنُوْنَ يَفِرُّ أَحَدُهُمْ بِدِيْنِهِ إِلَى اللهِ تَعَالَى وَإِلَى رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم مَخَافَةَ أَنْ يُفْتَنَ عَلَيْهِ فَأَمَّا الْيَوْمَ فَقَدْ أَظْهَرَ اللهُ الْإِسْلَامَ وَالْيَوْمَ يَعْبُدُ رَبَّهُ حَيْثُ شَاءَ وَلَكِنْ جِهَادٌ وَنِيَّةٌ
আওয়াযী ‘আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আওয়াযী ‘আতা (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি ইবায়দ ইব্‌নু উমায়র লাইসী (রাঃ) - এর সঙ্গে ‘আয়িশা (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম। তারপর তাঁকে হিজরত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এখন আর হিজরতের কোন প্রয়োজন নেই। অতীতে মু’মিনদের কেউ তার দ্বীনের জন্য তার প্রতি ফিত্‌নার ভয়ে আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূলের দিকে হিজরত করতেন আর আজ আল্লাহ্‌ ইসলামকে বিজয়ী করেছেন। এখন কোন মু’মিন তার রবের ইবাদত যেখানে ইচ্ছা করতে পারে। তবে এখন আছে জিহাদ ও নিয়্যাত।
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬১২/৩৬১৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬১৭)


এই অধ্যায়ের বাকি হাদিসের জন্য নিচের লিংকে ক্লিক রুরন

অধ্যায় "আনসারগণের মর্যাদা" হাদিস নং - ৩৭৭৬ থেকে ৩৮৪০

 অধ্যায় "আনসারগণের মর্যাদা" হাদিস নং - ৩৯০১ থেকে ৩৯৪৮

No comments

Powered by Blogger.