সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য" হাদিস নং - ৩৪৮৯ থেকে ৩৫৭০
মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য ৩৪৮৯ - ৩৬৪৮আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ
৩৪৮৯
ইব্ন
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
৩৪৯০
৩৪৯১
৩৪৯২
৩৪৯৩
৩৪৯৪
৩৪৯৫
৩৪৯৬
৩৪৯৭
৩৪৯৮
৩৪৯৯
৬১/২. অধ্যায়ঃ
৩৫০০
৩৫০১
৩৫০২
৩৫০৩
৩৫০৪
৩৫০৫
৬১/৩. অধ্যায়ঃ
৩৫০৬
৬১/৪. অধ্যায়ঃ
৩৫০৭
৩৫০৮
৩৫০৯
৩৫১০
৩৫১১
৬১/৬. অধ্যায়ঃ
৩৫১২
৩৫১৩
৩৫১৪
৩৫১৫
৩৫১৬
৬১/৭. অধ্যায়ঃ
৩৫১৭
৬১/৮. অধ্যায়ঃ
৩৫১৮
৩৫১৯
৬১/৯. অধ্যায়ঃ
৩৫২০
৩৫২১
৬১/১০. অধ্যায়ঃ
৬১/১১. অধ্যায়ঃ
৩৫২২
৬১/১২. অধ্যায়ঃ
৩৫২৩
৩৫২৪
৬১/১৩. অধ্যায়ঃ
৩৫২৫
৩৫২৬
৩৫২৭
৬১/১৪. অধ্যায়ঃ
৩৫২৮
৬১/১৫. অধ্যায়ঃ
৩৫২৯
৩৫৩০
৬১/১৬. অধ্যায়ঃ
৩৫৩১
৬১/১৭. অধ্যায়ঃ
৩৫৩২
৩৫৩৩
৬১/১৮. অধ্যায়ঃ
৩৫৩৪
৩৫৩৫
৬১/১৯. অধ্যায়ঃ
৩৫৩৬
৬১/২০. অধ্যায়ঃ
৩৫৩৭
৩৫৩৮
৩৫৩৯
৩৫৪০
৬১/২২. অধ্যায়ঃ
৩৫৪১
৬১/২৩. অধ্যায়ঃ
৩৫৪২
৩৫৪৩
৩৫৪৪
৩৫৪৫
৩৫৪৬
৩৫৪৭
৩৫৪৮
৩৫৪৯
৩৫৫০
৩৫৫১
৩৫৫২
৩৫৫৩
৩৫৫৪
৩৫৫৫
৩৫৫৬
৩৫৫৭
৩৫৫৮
৩৫৫৯
৩৫৬০
৩৫৬১
৩৫৬২
৩৫৬৩
৩৫৬৪
৩৫৬৫
৩৫৬৬
৩৫৬৭
৩৫৬৮
৬১/২৪. অধ্যায়ঃ
৩৫৬৯
৩৫৭০
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ হে
মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও একজন স্ত্রীলোক থেকে এবং
তোমাদেরকে পরিণত করেছি বিভিন্ন জাতিতে ও বিভিন্ন গোত্রে। (আল - হুজুরাত ১৩)
আল্লাহ্র বাণীঃ তোমরা ভয় কর আল্লাহ্কে যাঁর নামে তোমরা একে অপরের কাছে প্রার্থনা করে থাক এবং আত্মীয় - জ্ঞাতিদের সম্পর্কে সতর্ক থাক। নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখেন - (আন্ - নিসা ১)। এবং জাহিলীয়্যাত আমলের কথা - বার্তা নিষিদ্ধ হওয়া সম্পর্কে। (আরবী) পূর্বতন বড় বংশ এবং (আরবী) এর চেয়ে ছোট বংশ।
আল্লাহ্র বাণীঃ তোমরা ভয় কর আল্লাহ্কে যাঁর নামে তোমরা একে অপরের কাছে প্রার্থনা করে থাক এবং আত্মীয় - জ্ঞাতিদের সম্পর্কে সতর্ক থাক। নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখেন - (আন্ - নিসা ১)। এবং জাহিলীয়্যাত আমলের কথা - বার্তা নিষিদ্ধ হওয়া সম্পর্কে। (আরবী) পূর্বতন বড় বংশ এবং (আরবী) এর চেয়ে ছোট বংশ।
৩৪৮৯
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ يَزِيدَ الكَاهِلِيُّ [ص: 178] ،
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، {وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ
لِتَعَارَفُوا} [الحجرات: 13]، قَالَ: " الشُّعُوبُ: القَبَائِلُ العِظَامُ،
وَالقَبَائِلُ: البُطُونُ "
তিনি
বলেন, আয়াতে বর্ণিত (আরবী) অর্থ বড় গোত্র এবং (আরবী) অর্থ ছোট গোত্র।
৩৪৯০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى
بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي
سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ:
قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَكْرَمُ النَّاسِ؟ قَالَ: «أَتْقَاهُمْ»
قَالُوا: لَيْسَ عَنْ هَذَا نَسْأَلُكَ، قَالَ: «فَيُوسُفُ نَبِيُّ اللَّهِ»
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহ্র
রাসূল! মানুষের মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদাবান কে? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন, যে সবচেয়ে আল্লাহ্ভীরু, সে-ই অধিক সম্মানিত। সাহাবীগণ বললেন, হে
আল্লাহ্র রাসূল! আমরা এ ধরনের কথা জিজ্ঞেস করিনি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, তাহলে আল্লাহ্র নবী ইউসূফ ('আ)।
৩৪৯১
حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الوَاحِدِ، حَدَّثَنَا كُلَيْبُ بْنُ وَائِلٍ، قَالَ: حَدَّثَتْنِي رَبِيبَةُ
النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، زَيْنَبُ بِنْتُ أَبِي سَلَمَةَ،
قَالَ: قُلْتُ لَهَا: " أَرَأَيْتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ أَكَانَ مِنْ مُضَرَ؟ قَالَتْ: فَمِمَّنْ كَانَ إِلَّا مِنْ مُضَرَ،
مِنْ بَنِي النَّضْرِ بْنِ كِنَانَةَ "
কুলায়েব
ইব্ন ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর তত্ত্বাবধানে পালিতা আবূ সালমার কন্যা
যায়নাবকে আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি বলুন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কি মুযার গোত্রের ছিলেন? তিনি বললেন, বনু নযর ইব্ন কিনানা উদ্ভূত গোত্র মুযার
ব্যতীত আর কোন গোত্র হতে হবেন? এবং মুযার গোত্র নাযর ইব্ন কিনানা গোত্রের একটি
শাখা ছিল।
৩৪৯২
حَدَّثَنَا مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ،
حَدَّثَنَا كُلَيْبٌ، حَدَّثَتْنِي رَبِيبَةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ، وَأَظُنُّهَا زَيْنَبَ قَالَتْ: «نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الدُّبَّاءِ، وَالحَنْتَمِ، وَالنَّقِيرِ، وَالمُزَفَّتِ»
وَقُلْتُ لَهَا: أَخْبِرِينِي النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِمَّنْ كَانَ مِنْ مُضَرَ كَانَ؟ قَالَتْ: «فَمِمَّنْ كَانَ إِلَّا مِنْ مُضَرَ كَانَ مِنْ وَلَدِ النَّضْرِ بْنِ كِنَانَةَ»
وَقُلْتُ لَهَا: أَخْبِرِينِي النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِمَّنْ كَانَ مِنْ مُضَرَ كَانَ؟ قَالَتْ: «فَمِمَّنْ كَانَ إِلَّا مِنْ مُضَرَ كَانَ مِنْ وَلَدِ النَّضْرِ بْنِ كِنَانَةَ»
কুলায়ব
থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর তত্ত্বাবধানে পালিতা কন্যা বলেনঃ আর আমার
ধারণা তিনি হলেন যায়নাব। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কদুর বাওশ, সবুজ মাটির পাত্র মুকাইয়ার ও মুযাফ্ফাত (আলকাতরা লাগানো পাত্র বিশেষ)
ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। কুলায়ব বলেন, আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম, বলেন তো দেখি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন গোত্রের ছিলেন? তিনি কি মুযার
গোত্রের অন্তর্গত ছিলেন? তিনি জবাব দিলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মুযার গোত্র ব্যতীত আর কোন গোত্রের হবেন? আর মুযার নাযর ইব্ন কিনানার
বংশধর ছিল।
৩৪৯৩
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا
جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ:
«تَجِدُونَ النَّاسَ مَعَادِنَ، خِيَارُهُمْ فِي الجَاهِلِيَّةِ خِيَارُهُمْ فِي
الإِسْلاَمِ، إِذَا فَقِهُوا، وَتَجِدُونَ خَيْرَ النَّاسِ فِي هَذَا الشَّأْنِ
أَشَدَّهُمْ لَهُ كَرَاهِيَةً،
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা মানুষকে
খণির মত পাবে। আইয়্যামে জাহিলীয়্যাতের উত্তম ব্যক্তিগণ ইসলাম গ্রহণের পরও তারা
উত্তম। যখন তারা দ্বীনী জ্ঞান অর্জন করে আর তোমরা শাসন ও কর্তৃত্বের ব্যাপারে
লোকদের মধ্যে উত্তম ঐ ব্যক্তিকে পাবে যে এই ব্যাপারে তাদের মধ্যে সবচেয়ে অধিক
অনাসক্ত।
৩৪৯৪
وَتَجِدُونَ شَرَّ النَّاسِ ذَا الوَجْهَيْنِ الَّذِي
يَأْتِي هَؤُلاَءِ بِوَجْهٍ، وَيَأْتِي هَؤُلاَءِ بِوَجْهٍ»
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আর
মানুষের মধ্যে সব থেকে নিকৃষ্ট ঐ দু’মুখী ব্যক্তি যে একদলের সঙ্গে এক ভাবে কথা
বলে, অপর দলের সঙ্গে আরেকভাবে কথা বলে।
৩৪৯৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا
المُغِيرَةُ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ:
«النَّاسُ تَبَعٌ لِقُرَيْشٍ فِي هَذَا الشَّأْنِ، مُسْلِمُهُمْ تَبَعٌ
لِمُسْلِمِهِمْ، وَكَافِرُهُمْ تَبَعٌ لِكَافِرِهِمْ،
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, খিলাফত ও নেতৃত্বের
ব্যাপারে সকলেই কুরাইশদের অনুগত থাকবে। মুসলিমগণ তাদের মুসলিমদের এবং কাফিররা
তাদের কাফিরদের অনুগত।
৩৪৯৬
وَالنَّاسُ مَعَادِنُ، خِيَارُهُمْ فِي الجَاهِلِيَّةِ
خِيَارُهُمْ فِي الإِسْلاَمِ، إِذَا فَقِهُوا تَجِدُونَ مِنْ خَيْرِ النَّاسِ
أَشَدَّ النَّاسِ كَرَاهِيَةً لِهَذَا الشَّأْنِ، حَتَّى يَقَعَ فِيهِ»
بَابٌ
بَابٌ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আর
মানব সমাজ খণির মত। জাহিলী যুগের উত্তম ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পরও উত্তম যদি তারা
দ্বীনী ইল্ম অর্জন করে। তোমরা নেতৃত্ব ও শাসনের ব্যাপারে ঐ লোককেই সবচেয়ে উত্তম
পাবে যে এর প্রতি অনাসক্ত, যে পর্যন্ত না সে তা গ্রহণ করে।
৩৪৯৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ،
حَدَّثَنِي عَبْدُ المَلِكِ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهُمَا، {إِلَّا المَوَدَّةَ فِي القُرْبَى} [الشورى: 23]، قَالَ: فَقَالَ
سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ: قُرْبَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ،
فَقَالَ: " إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَكُنْ
بَطْنٌ مِنْ قُرَيْشٍ، إِلَّا وَلَهُ فِيهِ قَرَابَةٌ، فَنَزَلَتْ عَلَيْهِ [ص:
179] : إِلَّا أَنْ تَصِلُوا قَرَابَةً بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ "
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(আরবী)
এ আয়াতের প্রসঙ্গে রাবী তাউস (রহঃ) বলেন যে, সায়িদ ইব্ন জুবায়র (রাঃ) বলেন,
কুরবা শব্দ দ্বারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট
আত্মীয়কে বুঝান হয়েছে। তখন ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, কুরাইশের এমন কোন শাখা -
গোত্র নেই যাঁদের সঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর আত্মীয়তার
বন্ধন ছিল না। আয়াতটি তখনই নাযিল হয়। অর্থাৎ তোমরা আমার ও তোমাদের মধ্যকার আত্মীয়তার
প্রতি খেয়াল রাখ।
৩৪৯৮
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، يَبْلُغُ بِهِ
النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «مِنْ هَا هُنَا جَاءَتِ
الفِتَنُ، نَحْوَ المَشْرِقِ، وَالجَفَاءُ وَغِلَظُ القُلُوبِ فِي الفَدَّادِينَ
أَهْلِ الوَبَرِ، عِنْدَ أُصُولِ أَذْنَابِ الإِبِلِ وَالبَقَرِ، فِي رَبِيعَةَ،
وَمُضَرَ»
আবূ
মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, এই পূর্বদিক হতে ফিতনা-ফাসাদের উৎপত্তি
হবে। নির্মমতা ও অন্তরের কাঠিন্য উট ও গরু নিয়ে ব্যস্ত লোকদের মধ্যে। পশমী তাঁবুর
অধিবাসীরা রাবী‘আ ও মুযার গোত্রের যারা উট ও গরুর পিছনে চিৎকার করে (হাঁকায়),
তাদের মধ্যেই রয়েছে নির্মমতা ও কঠোরতা।
৩৪৯৯
حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ
أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «الفَخْرُ، وَالخُيَلاَءُ فِي الفَدَّادِينَ
أَهْلِ الوَبَرِ، وَالسَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الغَنَمِ، وَالإِيمَانُ يَمَانٍ،
وَالحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: «سُمِّيَتِ اليَمَنَ
لِأَنَّهَا عَنْ يَمِينِ الكَعْبَةِ، وَالشَّأْمَ لِأَنَّهَا عَنْ يَسَارِ
الكَعْبَةِ، وَالمَشْأَمَةُ المَيْسَرَةُ، وَاليَدُ اليُسْرَى الشُّؤْمَى،
وَالجَانِبُ الأَيْسَرُ الأَشْأَمُ»
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছি যে,
গর্ব-অহংকার পশমের তৈরি তাঁবুতে বসবাসকারী যারা (উট-গরু হাঁকানোর সময় চিৎকার করে)
তাদের মধ্যে (আরবী) অর্থ বাম দিক, বাম হাতকে (আরবী) এবং বাম দিককে (আরবী) বলা হয়।
আর শান্তভাব রয়েছে বকরী পালকদের মধ্যে। ঈমানের দৃশ্যতা ও হিক্মাত ইয়ামানবাসীদের
মধ্যে রয়েছে। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ইয়ামান নাম দেয়া হয়েছে যেহেতু তা কা’বা
ঘরের ডানদিকে (দক্ষিণ) অবস্থিত এবং শাম (সিরিয়া) কা‘বা ঘরের বাম (উত্তর) দিকে
অবস্থিত বিধায় তার শাম নাম দেয়া হয়েছে।
৬১/২. অধ্যায়ঃ
কুরাইশদের মর্যাদা ও গুণাবলী
৩৫০০
حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، قَالَ: كَانَ مُحَمَّدُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ يُحَدِّثُ
أَنَّهُ بَلَغَ مُعَاوِيَةَ وَهُوَ عِنْدَهُ فِي وَفْدٍ مِنْ قُرَيْشٍ: أَنَّ
عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ العَاصِ يُحَدِّثُ أَنَّهُ سَيَكُونُ مَلِكٌ
مِنْ قَحْطَانَ، فَغَضِبَ مُعَاوِيَةُ، فَقَامَ فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا
هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ: أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّ رِجَالًا
مِنْكُمْ يَتَحَدَّثُونَ أَحَادِيثَ لَيْسَتْ فِي كِتَابِ اللَّهِ، وَلاَ تُؤْثَرُ
عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأُولَئِكَ جُهَّالُكُمْ،
فَإِيَّاكُمْ وَالأَمَانِيَّ الَّتِي تُضِلُّ أَهْلَهَا، فَإِنِّي سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ «إِنَّ هَذَا الأَمْرَ
فِي قُرَيْشٍ لاَ يُعَادِيهِمْ أَحَدٌ، إِلَّا كَبَّهُ اللَّهُ عَلَى وَجْهِهِ،
مَا أَقَامُوا الدِّينَ»
মুহাম্মাদ
ইব্ন জুবায়ের ইব্ন মুত্‘ঈম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, মু‘আবিয়া (রাঃ) -এর নিকট কুরাইশ প্রতিনিধিদের সাথে তার উপস্থিতিতে সংবাদ
পৌঁছলো যে, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্ন ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) বর্ণনা করেন, শীঘ্রই কাহতান
বংশীয় জনৈক বাদশাহর আগমন ঘটবে। এতদশ্রবণে মু‘আবিয়া (রাঃ) ক্রুদ্ধ হয়ে খুতবাহ
দেয়ার উদ্দেশে দাঁড়িয়ে আল্লাহর যথাযোগ্য হামদ ও সানার পর তিনি বললেন, আমি জানতে
পেরেছি, তোমাদের মধ্য থেকে কিছু লোক এমন সব কথাবার্তা বলতে শুরু করেছে যা আল্লাহর
কিতাবে নেই এবং আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতেও বর্ণিত
হয়নি। এরাই মূর্খ, এদের হতে সাবধান থাক এবং এমন কাল্পনিক ধারণা হতে সতর্ক থাক যা
ধারণাকারীকে বিপথগামী করে। আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
-কে আমি বলতে শুনেছি যে, যত দিন তারা দ্বীন কায়েমে লেগে থাকবে ততদিন খিলাফত ও
শাসন ক্ষমতা কুরাইশদের হাতেই থাকবে। এ বিষয়ে যে - ই তাদের সাথে শত্রুতা করবে
আল্লাহ্ তাকে অধোঃমুখে নিক্ষেপ করবেন।
৩৫০১
حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ
مُحَمَّدٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبِي، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا،
عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لاَ يَزَالُ هَذَا
الأَمْرُ فِي قُرَيْشٍ مَا بَقِيَ مِنْهُمُ اثْنَانِ»
ইব্ন
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, এ বিষয় (খিলাফত ও শাসন ক্ষমতা)
সর্বদাই কুরাইশদের হাতে থাকবে, যতদিন তাদের দু’জন লোকও বেঁচে থাকবে।
৩৫০২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ ابْنِ المُسَيِّبِ، عَنْ جُبَيْرِ بْنِ
مُطْعِمٍ، قَالَ: مَشَيْتُ أَنَا وَعُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ
اللَّهِ، أَعْطَيْتَ بَنِي المُطَّلِبِ وَتَرَكْتَنَا، وَإِنَّمَا نَحْنُ وَهُمْ
مِنْكَ بِمَنْزِلَةٍ وَاحِدَةٍ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ: «إِنَّمَا بَنُو هَاشِمٍ وَبَنُو المُطَّلِبِ شَيْءٌ وَاحِدٌ»،
জুবায়র
ইব্ন মুত‘ঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি এবং ‘উসমান ইব্ন আফ্ফান (রাঃ) আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -এর দরবারে হাযির হলাম। ‘উসমান (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল!
আপনি মুত্তালিবের সন্তানদেরকে দান করলেন এবং আমাদেরকে বাদ দিলেন। অথচ তারা ও আমরা
আপনার বংশগতভাবে সম স্তরের। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বনূ
হাশিম ও বনূ মুত্তালিব এক ও অভিন্ন।
৩৫০৩
وَقَالَ اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي أَبُو الأَسْوَدِ مُحَمَّدٌ،
عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، قَالَ: ذَهَبَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ
مَعَ أُنَاسٍ مِنْ بَنِي زُهْرَةَ إِلَى عَائِشَةَ، «وَكَانَتْ أَرَقَّ شَيْءٍ
عَلَيْهِمْ، لِقَرَابَتِهِمْ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ»
‘উরওয়া
ইব্নু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্ন জুবায়র (রাঃ) বনূ যুহরার কতিপয় লোকের সঙ্গে ‘আয়িশা
(রাঃ)-এর নিকটে হাযির হলেন। ‘আয়িশা (রাঃ) তাদের প্রতি অত্যন্ত নম্র ও দয়ার্দ্র
ছিলেন। কেননা, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে
তাঁদের আত্মীয়তা ছিল।
৩৫০৪
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ
سَعْدٍ، قَالَ: يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ أَبِيهِ،
قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ هُرْمُزَ الأَعْرَجُ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ [ص: 180] ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قُرَيْشٌ، وَالأَنْصَارُ، وَجُهَيْنَةُ، وَمُزَيْنَةُ،
وَأَسْلَمُ، وَأَشْجَعُ، وَغِفَارُ مَوَالِيَّ، لَيْسَ لَهُمْ مَوْلًى دُونَ
اللَّهِ وَرَسُولِهِ»
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কুরাইশ, আনসার,
জুহায়না, মুযায়না, আসলাম, আশজা‘ ও গিফার গোত্রগুলো আমার সাহায্যকারী। আল্লাহ্ ও
তাঁর রাসূল ছাড়া তাঁদের সাহায্যকারী আর কেউ নেই।
৩৫০৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا
اللَّيْثُ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو الأَسْوَدِ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ،
قَالَ: كَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ أَحَبَّ البَشَرِ إِلَى عَائِشَةَ
بَعْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبِي بَكْرٍ، وَكَانَ
أَبَرَّ النَّاسِ بِهَا، وَكَانَتْ لاَ تُمْسِكُ شَيْئًا مِمَّا جَاءَهَا مِنْ
رِزْقِ اللَّهِ إِلَّا تَصَدَّقَتْ، فَقَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ: يَنْبَغِي أَنْ
يُؤْخَذَ عَلَى يَدَيْهَا، فَقَالَتْ: «أَيُؤْخَذُ عَلَى يَدَيَّ، عَلَيَّ نَذْرٌ
إِنْ كَلَّمْتُهُ»، فَاسْتَشْفَعَ إِلَيْهَا بِرِجَالٍ مِنْ قُرَيْشٍ، وَبِأَخْوَالِ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَاصَّةً فَامْتَنَعَتْ، فَقَالَ
لَهُ الزُّهْرِيُّونَ أَخْوَالُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ،
مِنْهُمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الأَسْوَدِ بْنِ عَبْدِ يَغُوثَ، وَالمِسْوَرُ
بْنُ مَخْرَمَةَ: إِذَا اسْتَأْذَنَّا فَاقْتَحِمُ الحِجَابَ، فَفَعَلَ فَأَرْسَلَ
إِلَيْهَا بِعَشْرِ رِقَابٍ فَأَعْتَقَتْهُمْ، ثُمَّ لَمْ تَزَلْ تُعْتِقُهُمْ
حَتَّى بَلَغَتْ أَرْبَعِينَ، فَقَالَتْ: «وَدِدْتُ أَنِّي جَعَلْتُ حِينَ
حَلَفْتُ عَمَلًا أَعْمَلُهُ فَأَفْرُغُ مِنْهُ»
‘উরওয়া
ইব্ন যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইব্ন যুবায়র (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও
আবূ বকর (রাঃ) -এর পর ‘আয়িশা (রাঃ) -এর নিকট সকল লোকদের মধ্যে সবচেয়ে
প্রিয়পাত্র ছিলেন এবং তিনি সকল লোকদের মধ্যে ‘আয়িশা (রাঃ) -এর প্রতি সবচেয়ে
অধিক সদাচারী ছিলেন। ‘আয়িশা (রাঃ) -এর নিকট আল্লাহ্র পক্ষ হতে রিজিক হিসেবে যা
কিছু আসত তা জমা না রেখে সদাকাহ করে দিতেন। এতে ‘আবদুল্লাহ ইব্ন যুবায়র (রাঃ)
বললেন, অধিক দান খয়রাত করা হতে তাকে বারণ করা উচিত। তখন ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন,
আমাকে দান করা হতে বারণ করা হবে? আমি যদি তার সঙ্গে কথা বলি, তাহলে আমাকে কাফ্ফারা
দিতে হবে এবং ‘আবদুল্লাহ ইব্ন যুবায়র (রাঃ) তাঁর নিকট কুরাইশের কিছু লোক,
বিশেষভাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মাতৃবংশের কিছু লোক দ্বারা
সুপারিশ করালেন। তবুও তিনি তাঁর সঙ্গে কথা বলা হতে বিরত থাকলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মাতৃবংশ বনী যুহরার কতক বিশিষ্ট লোক যাদের মধ্যে ‘আবদুর
রহমান ইব্ন আস্ওয়াদ এবং মিসওয়ার ইব্ন মাখরামাহ (রাঃ) ছিলেন তারা বললেন, আমরা
যখন ‘আয়িশা (রাঃ) -এর গৃহে প্রবেশের অনুমতি চাইব তখন তুমি পর্দার ভিতরে ঢুকে
পড়বে। তিনি তাই করলেন। পরে ইব্ন যুবায়র (রাঃ) কাফ্ফারা আদায়ের জন্য তার নিকট
দশটি ক্রীতদাস পাঠিয়ে দিলেন। ‘আয়িশা (রাঃ) তাদের সবাইকে আযাদ করে দিলেন। অতঃপর
তিনি বরাবর আযাদ করতে থাকলেন। এমন কি তা সংখ্যা চল্লিশে পৌঁছে। ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন,
আমি যখন কোন কাজ করার কসম করি, তখন এরাদা থাকে যে আমি যেন সে কাজটা করে দায়িত্ব
মুক্ত হয়ে যাই এবং তিনি আরো বলেন, আমি যখন কোন কাজ করার কসম করি তা যথাযথ পূরণের
ইচ্ছা রাখি।
৬১/৩. অধ্যায়ঃ
কুরআন কুরাইশদের ভাষায়
অবতীর্ণ হয়েছে।
৩৫০৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ،
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ
عُثْمَانَ، دَعَا زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ، وَعَبْدَ اللَّهِ بْنَ الزُّبَيْرِ،
وَسَعِيدَ بْنَ العَاصِ، وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ
فَنَسَخُوهَا فِي المَصَاحِفِ، وَقَالَ عُثْمَانُ لِلرَّهْطِ القُرَشِيِّينَ
الثَّلاَثَةِ: «إِذَا اخْتَلَفْتُمْ أَنْتُمْ وَزَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ فِي شَيْءٍ
مِنَ القُرْآنِ، فَاكْتُبُوهُ بِلِسَانِ قُرَيْشٍ، فَإِنَّمَا نَزَلَ
بِلِسَانِهِمْ فَفَعَلُوا ذَلِكَ»
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উসমান
(রাঃ), যায়দ ইব্ন সাবিত (রাঃ), ‘আবদুল্লাহ ইব্ন যুবায়র (রাঃ), সা‘ঈদ ইবনুল ‘আস
(রাঃ) ‘আবদুর রাহমান ইব্ন হারিস (রাঃ) -কে ডেকে পাঠালেন। তাঁরা সংরক্ষিত কুরআনকে
সমবেতভাবে লিপিবদ্ধ করলেন। ‘উসমান (রাঃ) কুরাইশ বংশীয় তিনজনকে বললেন, যদি যায়দ
ইব্ন সাবিত (রাঃ) এবং তোমাদের মধ্যে কোন শব্দে মতবিরোধ দেখা দেয় তবে কুরাইশের
ভাষায় তা লিপিবদ্ধ কর। যেহেতু কুরআন শরীফ তাদের ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তাঁরা
তা-ই করলেন।
৬১/৪. অধ্যায়ঃ
ইয়ামানবাসীর সম্পর্ক ইসমাঈল
('আঃ) -এর সঙ্গে;
তার মধ্যে আসলাম ইব্ন আফসা
ইব্ন হারিসাহ ইব্ন ‘আমর ইব্ন ‘আমির ও খুযা‘আহ গোত্রের অন্তর্গত।
৩৫০৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ يَزِيدَ
بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا سَلَمَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: خَرَجَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَلَى قَوْمٍ مِنْ أَسْلَمَ
يَتَنَاضَلُونَ بِالسُّوقِ، فَقَالَ: «ارْمُوا بَنِي إِسْمَاعِيلَ فَإِنَّ
أَبَاكُمْ كَانَ رَامِيًا، وَأَنَا مَعَ بَنِي فُلاَنٍ» لِأَحَدِ الفَرِيقَيْنِ،
فَأَمْسَكُوا بِأَيْدِيهِمْ، فَقَالَ: «مَا لَهُمْ» قَالُوا: وَكَيْفَ نَرْمِي
وَأَنْتَ مَعَ بَنِي فُلاَنٍ؟ قَالَ: «ارْمُوا وَأَنَا مَعَكُمْ كُلِّكُمْ»
সালামা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার আসলাম গোত্রের কিছু লোক বাজারের নিকটে প্রতিযোগিতামূলক তীর নিক্ষেপের
চর্চা করছিল। এমন সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন এবং
তাদেরকে দেখে বললেন, হে ইসমাঈল (আরবী) -এর বংশধর। তোমরা তীর নিক্ষেপ কর। কেননা
তোমাদের পিতাও তীর নিক্ষেপে অভিজ্ঞ ছিলেন এবং আমি তোমাদের অমুক দলের পক্ষে রয়েছি।
তখন একটি পক্ষ তাদের হাত গুটিয়ে নিল। বর্ণনাকারী বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের কী হল? তারা বলল, আপনি অমুক পক্ষে থাকলে
আমরা কী করে তীর নিক্ষেপ করতে পারি? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, তোমরা তীর নিক্ষেপ কর। আমি তোমাদের উভয় দলের সাথে আছি।
৬১/৫. অধ্যায়ঃ
৩৫০৮
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ،
عَنِ الحُسَيْنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، قَالَ: حَدَّثَنِي يَحْيَى
بْنُ يَعْمَرَ، أَنَّ أَبَا الأَسْوَدِ الدِّيلِيَّ، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِي ذَرٍّ
رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «لَيْسَ مِنْ رَجُلٍ ادَّعَى لِغَيْرِ أَبِيهِ - وَهُوَ
يَعْلَمُهُ - إِلَّا كَفَرَ، وَمَنِ ادَّعَى قَوْمًا لَيْسَ لَهُ فِيهِمْ،
فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ»
আবূ
যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছেন, কোন লোক যদি নিজ পিতা
সম্পর্কে অবগত থাকা সত্ত্বেও অন্য কাকে তার পিতা বলে দাবী করে তবে সে আল্লাহ্র
কুফরী করল এবং যে ব্যক্তি নিজেকে এমন বংশের সঙ্গে বংশ সম্পর্কিত দাবী করল যে বংশের
সঙ্গে তার কোন বংশ সম্পর্ক নেই, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নেয়।
৩৫০৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنَا حَرِيزٌ،
قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ الوَاحِدِ [ص: 181] بْنُ عَبْدِ اللَّهِ النَّصْرِيُّ،
قَالَ: سَمِعْتُ وَاثِلَةَ بْنَ الأَسْقَعِ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ مِنْ أَعْظَمِ الفِرَى أَنْ يَدَّعِيَ
الرَّجُلُ إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ، أَوْ يُرِيَ عَيْنَهُ مَا لَمْ تَرَ، أَوْ
يَقُولُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا لَمْ يَقُلْ»
ওয়ায়িলাহ
ইব্ন আসকা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন লোকের এমন লোককে পিতা বলে দাবি
করা তার পিতা নয় এবং প্রকৃতই যা দেখেনি তা দেখার দাবি করা এবং আল্লাহ্র রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা বলেননি তা তাঁর প্রতি মিথ্যারোপ করা
নিঃসন্দেহে বড় মিথ্যা।
৩৫১০
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَبِي
جَمْرَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، يَقُولُ:
قَدِمَ وَفْدُ عَبْدِ القَيْسِ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ، فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ: إِنَّا مِنْ هَذَا الحَيِّ مِنْ
رَبِيعَةَ، قَدْ حَالَتْ بَيْنَنَا وَبَيْنَكَ كُفَّارُ مُضَرَ، فَلَسْنَا نَخْلُصُ
إِلَيْكَ إِلَّا فِي كُلِّ شَهْرٍ حَرَامٍ، فَلَوْ أَمَرْتَنَا بِأَمْرٍ
نَأْخُذُهُ عَنْكَ وَنُبَلِّغُهُ مَنْ وَرَاءَنَا، قَالَ: " آمُرُكُمْ
بِأَرْبَعٍ، وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ: الإِيمَانِ بِاللَّهِ شَهَادَةِ أَنْ
لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَأَنْ
تُؤَدُّوا إِلَى اللَّهِ خُمْسَ مَا غَنِمْتُمْ، وَأَنْهَاكُمْ عَنِ الدُّبَّاءِ،
وَالحَنْتَمِ وَالنَّقِيرِ، وَالمُزَفَّتِ "
ইব্ন
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন ‘আবদুল কায়স গোত্রের এক প্রতিনিধি দল আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দরবারে হাজির হয়ে আরয করল, হে আল্লাহ্র রাসূল! এ
গোত্রটি রাবী’আহ বংশের। আমাদের এবং আপনার মধ্যে মূযার গোত্রের কাফিররা বাধা সৃষ্টি
করে রেখেছে। আমরা সম্মানিত চার মাস ছাড়া অন্য সময় আপনার নিকট হাযির হতে পারি না।
খুবই ভালো হতো যদি আপনি আমাদেরকে এমন কিছু আদেশ দিয়ে দিতেন যা আপনার নিকট হতে
গ্রহণ করে আমাদের পিছনে অবস্থিত লোকদের পৌঁছে দিতাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি তোমাদেরকে চারটি কাজের আদেশ দিচ্ছি এবং চারটি কাজের
নিষেধাজ্ঞা প্রদান করছি। (এক) আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনা এবং এ সাক্ষ্য দেয়া যে,
আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন প্রকৃত ইলাহ নেই, (দুই) সালাত কায়িম করা, (তিন) যাকাত
আদায় করা, (চার) গনীমতের যে মাল তোমরা লাভ কর তার পঞ্চমাংশ আল্লাহ্র জন্য
বায়তুল মালে দান করা। আর আমি তোমাদেরকে দুব্বা (কদু পাত্র), হান্তম (সবুজ রং এর
ঘড়া), নাকীর (খেজুর বৃক্ষের মূল খোদাই করে তৈরি পাত্র), মযাফ্ফাত (আলকাতরা লাগানো
মাটির পাত্র, এই চারটি পাত্রের) ব্যবহার করতে নিষেধ করছি।
৩৫১১
حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ
اللَّهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: وَهُوَ عَلَى المِنْبَرِ: «أَلاَ إِنَّ
الفِتْنَةَ هَا هُنَا يُشِيرُ إِلَى المَشْرِقِ مِنْ حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنُ
الشَّيْطَانِ»
‘আবদুল্লাহ
ইব্ন ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মিম্বরের উপর
উপবিষ্ট অবস্থায় পূর্ব দিকে [১] ইঙ্গিত করে বলতে শুনেছি, সাবধান! ফিতনা ফাসাদের
উদ্ভব ঐদিক থেকেই হবে এবং ঐদিক থেকেই শয়তানের শিং উদিত হবে।
[১] এখানে ‘আবদুল্লাহ বিন ‘উমর (রাঃ)
হতে বর্ণিত হাদীসে দেখা যায় যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পূর্বদিকে
ইশারা করে এক সাবধান বাণী বা ভবিষ্যদ্বাণী উচ্চারণ করলেন। এখানে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছেন, পৃথিবীর পূর্বদিক হতেই সমস্ত ফিতনাহ্র উদ্ভব হবে। ইসলামের
ইতিহাস তথা বিশ্ব ইসলাম ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ইসলাম বিনাশী বড় বড়
ফিত্না ফাসাদ ও প্রলয়কারী বিদ‘আতসমূহ পৃথিবীর পূর্বপ্রান্ত থেকেই মাথা চাড়া দিয়ে
উঠেছে।
সর্বপ্রথম ‘আলী ও মু‘আবিয়া (রাঃ)’র খিলাফাত সম্পর্কিত গৃহযুদ্ধকে কেন্দ্র করে মুসলিমদের মধ্যে খারিজী ও শী’আ দলের উদ্ভব হয়। যা পূর্বদেশ থেকেই ঘটেছিল। অতঃপর যুগে যুগে মু‘তাজিলা, ক্বাদারিয়াহ, জাবারিয়াহ, জাহমিয়াহ, চিশতিয়া, মুজাদ্দেদীয়া, সাহরাওয়ার্দিয়াহ, আজমেরী রেযাখানী (রেজা আহমদ খান ব্রেলভী যিনি আজমিরের কবর পূজার প্রবর্তক), বাহাই, কাদিয়ানী, ইলিয়াসী ইত্যাদি যাবতীয় ফিতনার উদ্ভব পূর্ব দিক থেকেই ঘটেছে যার কয়েকটির অতি সংক্ষিপ্ত পরিচিত তুলে ধরা হলোঃ
খারিজী: ইসলামের সর্বপ্রথম ধর্মীয় সম্প্রদায়। খিলাফাত এবং বিশ্বাস বা কর্মের যৌক্তিকতা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে তারা নিজেদেরকে আলাদা করে ফেলে। রাজনীতি ক্ষেত্রে তারা যে প্রধান ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল তা ছিল পুনঃ পুনঃ বিদ্রোহ সংগঠন এবং সাময়িকভাবে কোন অঞ্চল দখল করতঃ গন্ডগোল সৃষ্টি করা। ‘আলী (রাঃ) -এর খিলাফাতের শেষ দুই বৎসর এবং উমায়্যাহ আমলে তারা মুসলিম সাম্রাজ্যের পূর্বাংশে অশান্তি সৃষ্টি করেছিল এবং পরোক্ষ ‘আলী (রাঃ) -এর বিরুদ্ধে মু‘আবিয়াকে এবং উমায়্যাহদের বিরুদ্ধে ‘আব্বাসীয়গণকে যুদ্ধে জয়লাভ করতে সাহায্য করেছিল।
শী‘আ: রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মৃত্যুর পর ‘আলী (রাঃ) ন্যায়তঃ খালীফাহ হওয়ার দাবীদার ছিলেন। এই মতবাদের ভিত্তিতে শী‘আ দলের উদ্ভব হয়। শী‘আগণ খিলাফত বনাম গণসমর্থনের ভিত্তিতে নির্বাচিত খালীফাহ্র আনুগত্য স্বীকার করতে রাজী নয় - এমনকি কুরাইশ হলেও না। তাদের মত হল, আহলি বায়ত (নবীর পরিবার) অর্থাৎ ‘আলী ও ফাতিমাহ্ (রাঃ) -এর বংশোদ্ভূতগণই ইমামাত (খিলাফাত নয়) এর অধিকারী। পূর্ববর্তী ইমাম তাঁর উত্তরাধিকারী পরবর্তী ইমামের মনোনয়ন দিবেন। শী‘আ ধর্ম - পুস্তকে দেখা যায় যে, যে ব্যক্তি তার সময়ের প্রকৃত ইমাম কে (?) তা না জেনে মারা যায়, সে কাফিররূপে মারা যায় (আরবী) “আলীর দল’ কথাটি হতে সংক্ষেপে শী‘আ নামের প্রচলন হয়েছিল।
মু‘তাযিলা: যে ধর্মতাত্ত্বিক দল ইসলামী ধর্ম বিশ্বাসের ব্যাপারে যুক্তিমূলক মতবাদকে সর্বপ্রধান সূত্র হিসেবে গ্রহণ করে তার নাম।
কাদারিয়্যাহ: তাকদীরের সঠিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে তাত্ত্বিক আলোচনার ফলে বসরাতে এই দলের উদ্ভব হয়। কাদারিয়্যা দলের মত হল মন্দ ইচ্ছা ও কর্মের সম্পর্ক আল্লাহর প্রতি প্রযোজ্য হতে পারে না। এর সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে।
জাবারিয়্যাহ: জাবারিয়্যাহ মতে মানুষের ইচ্ছা বা কর্ম - স্বাধীনতা নাই। আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তিনি যা ইচ্ছে তাই করেন।
জাহমিয়্যাহ: জাহম ইব্ন সাফওয়ান (মৃত্যু ৭৪৬ খ্রীঃ) ধর্মতত্ত্ববিদ হিসেবে কিছুটা স্বাধীন মত পোষণ করতেন। ঈমানকে তিনি অন্তরের ব্যাপার বলে জানতেন, জান্নাত ও জাহান্নামকে চিরস্থায়ী মনে করতেন না। তার অনুসারীরা জাহমিয়্যাহ নামে পরিচিত।
চিশতিয়্যা: ভারত উপমহাদেশের একটি সূফী তারীকা। খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী দ্বাদশ শতাব্দীতে সূফীবাদের এই সিলসিলাঃ ভারত উপমহাদেশে নিয়ে আসেন এবং আজমীরে এর প্রথম কেন্দ্র স্থাপন করেন।
নাকশ্বন্দী: মুহাম্মাদ ইব্ন মুহাম্মাদ বাহাউদ্দীন আল - বুখারী (৭১৭ - ৭৯১/১৩১৭ - ১৩৮৯) নাকশ্বন্দী প্রতিষ্ঠিত সূফী সম্প্রদায়।
কাদিরিয়্যাহ: আব্দুল কাদির জীলানী (রহঃ) নামানুসারে একটি সূফী তারীকার নাম কাদিরিয়্যাহ।
বাহাঈ: বাহাউল্লাহ ও ‘আব্দুল বাহা কর্তৃক ইরান থেকে প্রচারিত ধর্মমত। সময়কাল ১৮১৭ - ১৮৯২ খ্রীঃ।
কাদিয়ানী: ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গুরুদাসপুর জেলার কাদিয়ান উপশহরে ১৮৩৫ সালে জন্মগ্রহণকারী ভন্ড নবী মির্যা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর প্রচারিত ধর্মমত।
কবরপূজা, দরগাহপূজা, ইসলামের বিকৃত অবস্থা, বিকৃতিকরণ, তথা উক্ত প্রক্রিয়ার উৎসস্থল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী পৃথিবীর পূর্ব প্রান্ত বটে। এখান থেকেই শয়তানের শিং গজিয়ে উঠবে এবং উক্ত শিং সঠিক ইসলামকে গূতা দিতে দিতে একেবারে কোণঠাসা করে ফেলবে। যার বাস্তব চিত্র অনেকটা প্রকাশ পেতে চলেছে। যেমন ঈদে মিলাদুন্নবীর মিছিলকারী বিদ‘আতীদের রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পদচারণা ও তৎপরতায় মনে হয় এ দেশের ইসলাম ও দ্বীন দরদী একমাত্র এরাই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সারা জীবনে পূর্ববর্তী কোন নবীদের জন্ম দিবস পালন করে যাননি। নিজের জন্মদিনও পালন করেননি। তদ্বীয় সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) তাঁদের প্রাণাধিক প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্মদিবস, মৃত্যুদিবস পালন করেননি। অথচ পূর্বদেশীয় উক্ত বিভ্রান্ত লোকেদের ধারণা মতে যারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্ম ও ওফাত দিবস পালন না করবে তারা ফাসেক, গোমরাহ্ ইত্যাদি ইত্যাদি। এখন প্রশ্ন হলো, নবীর যুগে, সাহাবাদের যুগে, তাবি’ঈনদের যুগে তথা ইসলামের মহামতি ইমাম চতুষ্টয়ের যুগে এভাবে ঘটা করে বিশাল আয়োজনের সাথে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্ম দিবস ও ওফাত দিবস পালন না করায় তাদের কি কোন অন্যায় বা ক্ষতি হয়েছে? নিশ্চয় বলবেন, তাঁদের কোন অন্যায় হয়নি। বরং তাঁরা এবম্বিধ কার্যাদি পালন হতে বিরত থেকেই সঠিক কাজ করেছেন। সুতরাং ইত্যাকার কাজে যারা জড়িত তাদের কাজ যে সঠিক নয় তা আর যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নেই।
অতঃপর চিল্লাধারী বন্ধুদের চিল্লার পর চিল্লার মাধ্যমে স্বীয় পরিবার - পরিজনের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে অবজ্ঞা প্রদর্শন করা, আল্লাহর নির্দেশ- (আরবী) (তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ও পরিবারবর্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও)’র প্রতি ভ্রুক্ষেপ না ক’রে দেশ - দেশান্তরে গমন করা, (আরবী) (তোমাদের কাছে দু’টো জিনিস ছেড়ে গেলাম (আরবী) আল্লাহর কিতাব ও তাঁর নবীর সুন্নাহ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এ অন্তিম বাণীকে উপেক্ষা করে বানোয়াট, জাল, উদ্ভট ও আজগুবি কথায় পরিপূর্ণ নিজেদের সিলেবাসের কিতাব পড়তে বাধ্য করা, হাজারো অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, সুদ, ঘুষ, জুয়া ইত্যাদির ব্যাপারে মুখ - চোখ - কান বন্ধ করে রেখে (আরবী) এর ফারযকে দূরে নিক্ষেপ করে মুসলমানদের খাসি করণের অভিযান পরিচালনা করা, দা’ওয়াত দেয়ার নামে মু’মিন মুসল্লীদেরকে মসজিদের গেটে যখন তখন বিরক্ত করা ও বিভিন্ন বিদ’আতী তৎপরতা, অন্যায়ের প্রতিবাদী ইসলামের জিহাদী রূপকে ম্লান করতে চলেছে বটে।
পাক - ভারত উপমহাদেশ তথা ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ পূর্বাঞ্চলীয় মুসলিমদের মধ্যে প্রচলিত তাবলীগের মাধ্যমে যে ধর্মনিরপেক্ষ তথাকথিত এক প্রকারের ইসলামী চেতনা পরিলক্ষিত হচ্ছে তা যদি যুল্ম, নির্যাতন, হত্যা, শোষণ, লুন্ঠন, অত্যাচার, অবিচার, অশ্লীলতা, নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনার বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদী না হয়, শিরক, বিদ‘আতের বিরুদ্ধে আপোষহীন না হয়, সর্বশ্রেণীকে ম্যানেজ করে চলার সুবিধাবাদী নীতি পরিহারকারী না হয়, তাহলে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী উক্ত প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আতকেও পূর্বাঞ্চলীয় বিভেদ সৃষ্টিকারী, ফিতনা ও ফাসাদ সৃষ্টিকারী দ্বীন বিকৃতিকারী একটি দল ব’লে নিঃসন্দেহে সনাক্ত করা যাবে। কেননা উক্ত দলটির তথাকথিত নবীওয়ালা কাজের ফাঁকা বুলি পূর্ববর্তী দ্বীনদার মুসলিমদের কাজের সহিত সামঞ্জস্যশীল নয় বলেই তখন গণ্য হবে।
সর্বপ্রথম ‘আলী ও মু‘আবিয়া (রাঃ)’র খিলাফাত সম্পর্কিত গৃহযুদ্ধকে কেন্দ্র করে মুসলিমদের মধ্যে খারিজী ও শী’আ দলের উদ্ভব হয়। যা পূর্বদেশ থেকেই ঘটেছিল। অতঃপর যুগে যুগে মু‘তাজিলা, ক্বাদারিয়াহ, জাবারিয়াহ, জাহমিয়াহ, চিশতিয়া, মুজাদ্দেদীয়া, সাহরাওয়ার্দিয়াহ, আজমেরী রেযাখানী (রেজা আহমদ খান ব্রেলভী যিনি আজমিরের কবর পূজার প্রবর্তক), বাহাই, কাদিয়ানী, ইলিয়াসী ইত্যাদি যাবতীয় ফিতনার উদ্ভব পূর্ব দিক থেকেই ঘটেছে যার কয়েকটির অতি সংক্ষিপ্ত পরিচিত তুলে ধরা হলোঃ
খারিজী: ইসলামের সর্বপ্রথম ধর্মীয় সম্প্রদায়। খিলাফাত এবং বিশ্বাস বা কর্মের যৌক্তিকতা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে তারা নিজেদেরকে আলাদা করে ফেলে। রাজনীতি ক্ষেত্রে তারা যে প্রধান ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল তা ছিল পুনঃ পুনঃ বিদ্রোহ সংগঠন এবং সাময়িকভাবে কোন অঞ্চল দখল করতঃ গন্ডগোল সৃষ্টি করা। ‘আলী (রাঃ) -এর খিলাফাতের শেষ দুই বৎসর এবং উমায়্যাহ আমলে তারা মুসলিম সাম্রাজ্যের পূর্বাংশে অশান্তি সৃষ্টি করেছিল এবং পরোক্ষ ‘আলী (রাঃ) -এর বিরুদ্ধে মু‘আবিয়াকে এবং উমায়্যাহদের বিরুদ্ধে ‘আব্বাসীয়গণকে যুদ্ধে জয়লাভ করতে সাহায্য করেছিল।
শী‘আ: রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মৃত্যুর পর ‘আলী (রাঃ) ন্যায়তঃ খালীফাহ হওয়ার দাবীদার ছিলেন। এই মতবাদের ভিত্তিতে শী‘আ দলের উদ্ভব হয়। শী‘আগণ খিলাফত বনাম গণসমর্থনের ভিত্তিতে নির্বাচিত খালীফাহ্র আনুগত্য স্বীকার করতে রাজী নয় - এমনকি কুরাইশ হলেও না। তাদের মত হল, আহলি বায়ত (নবীর পরিবার) অর্থাৎ ‘আলী ও ফাতিমাহ্ (রাঃ) -এর বংশোদ্ভূতগণই ইমামাত (খিলাফাত নয়) এর অধিকারী। পূর্ববর্তী ইমাম তাঁর উত্তরাধিকারী পরবর্তী ইমামের মনোনয়ন দিবেন। শী‘আ ধর্ম - পুস্তকে দেখা যায় যে, যে ব্যক্তি তার সময়ের প্রকৃত ইমাম কে (?) তা না জেনে মারা যায়, সে কাফিররূপে মারা যায় (আরবী) “আলীর দল’ কথাটি হতে সংক্ষেপে শী‘আ নামের প্রচলন হয়েছিল।
মু‘তাযিলা: যে ধর্মতাত্ত্বিক দল ইসলামী ধর্ম বিশ্বাসের ব্যাপারে যুক্তিমূলক মতবাদকে সর্বপ্রধান সূত্র হিসেবে গ্রহণ করে তার নাম।
কাদারিয়্যাহ: তাকদীরের সঠিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে তাত্ত্বিক আলোচনার ফলে বসরাতে এই দলের উদ্ভব হয়। কাদারিয়্যা দলের মত হল মন্দ ইচ্ছা ও কর্মের সম্পর্ক আল্লাহর প্রতি প্রযোজ্য হতে পারে না। এর সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে।
জাবারিয়্যাহ: জাবারিয়্যাহ মতে মানুষের ইচ্ছা বা কর্ম - স্বাধীনতা নাই। আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তিনি যা ইচ্ছে তাই করেন।
জাহমিয়্যাহ: জাহম ইব্ন সাফওয়ান (মৃত্যু ৭৪৬ খ্রীঃ) ধর্মতত্ত্ববিদ হিসেবে কিছুটা স্বাধীন মত পোষণ করতেন। ঈমানকে তিনি অন্তরের ব্যাপার বলে জানতেন, জান্নাত ও জাহান্নামকে চিরস্থায়ী মনে করতেন না। তার অনুসারীরা জাহমিয়্যাহ নামে পরিচিত।
চিশতিয়্যা: ভারত উপমহাদেশের একটি সূফী তারীকা। খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী দ্বাদশ শতাব্দীতে সূফীবাদের এই সিলসিলাঃ ভারত উপমহাদেশে নিয়ে আসেন এবং আজমীরে এর প্রথম কেন্দ্র স্থাপন করেন।
নাকশ্বন্দী: মুহাম্মাদ ইব্ন মুহাম্মাদ বাহাউদ্দীন আল - বুখারী (৭১৭ - ৭৯১/১৩১৭ - ১৩৮৯) নাকশ্বন্দী প্রতিষ্ঠিত সূফী সম্প্রদায়।
কাদিরিয়্যাহ: আব্দুল কাদির জীলানী (রহঃ) নামানুসারে একটি সূফী তারীকার নাম কাদিরিয়্যাহ।
বাহাঈ: বাহাউল্লাহ ও ‘আব্দুল বাহা কর্তৃক ইরান থেকে প্রচারিত ধর্মমত। সময়কাল ১৮১৭ - ১৮৯২ খ্রীঃ।
কাদিয়ানী: ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গুরুদাসপুর জেলার কাদিয়ান উপশহরে ১৮৩৫ সালে জন্মগ্রহণকারী ভন্ড নবী মির্যা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর প্রচারিত ধর্মমত।
কবরপূজা, দরগাহপূজা, ইসলামের বিকৃত অবস্থা, বিকৃতিকরণ, তথা উক্ত প্রক্রিয়ার উৎসস্থল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী পৃথিবীর পূর্ব প্রান্ত বটে। এখান থেকেই শয়তানের শিং গজিয়ে উঠবে এবং উক্ত শিং সঠিক ইসলামকে গূতা দিতে দিতে একেবারে কোণঠাসা করে ফেলবে। যার বাস্তব চিত্র অনেকটা প্রকাশ পেতে চলেছে। যেমন ঈদে মিলাদুন্নবীর মিছিলকারী বিদ‘আতীদের রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পদচারণা ও তৎপরতায় মনে হয় এ দেশের ইসলাম ও দ্বীন দরদী একমাত্র এরাই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সারা জীবনে পূর্ববর্তী কোন নবীদের জন্ম দিবস পালন করে যাননি। নিজের জন্মদিনও পালন করেননি। তদ্বীয় সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) তাঁদের প্রাণাধিক প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্মদিবস, মৃত্যুদিবস পালন করেননি। অথচ পূর্বদেশীয় উক্ত বিভ্রান্ত লোকেদের ধারণা মতে যারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্ম ও ওফাত দিবস পালন না করবে তারা ফাসেক, গোমরাহ্ ইত্যাদি ইত্যাদি। এখন প্রশ্ন হলো, নবীর যুগে, সাহাবাদের যুগে, তাবি’ঈনদের যুগে তথা ইসলামের মহামতি ইমাম চতুষ্টয়ের যুগে এভাবে ঘটা করে বিশাল আয়োজনের সাথে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্ম দিবস ও ওফাত দিবস পালন না করায় তাদের কি কোন অন্যায় বা ক্ষতি হয়েছে? নিশ্চয় বলবেন, তাঁদের কোন অন্যায় হয়নি। বরং তাঁরা এবম্বিধ কার্যাদি পালন হতে বিরত থেকেই সঠিক কাজ করেছেন। সুতরাং ইত্যাকার কাজে যারা জড়িত তাদের কাজ যে সঠিক নয় তা আর যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নেই।
অতঃপর চিল্লাধারী বন্ধুদের চিল্লার পর চিল্লার মাধ্যমে স্বীয় পরিবার - পরিজনের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে অবজ্ঞা প্রদর্শন করা, আল্লাহর নির্দেশ- (আরবী) (তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ও পরিবারবর্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও)’র প্রতি ভ্রুক্ষেপ না ক’রে দেশ - দেশান্তরে গমন করা, (আরবী) (তোমাদের কাছে দু’টো জিনিস ছেড়ে গেলাম (আরবী) আল্লাহর কিতাব ও তাঁর নবীর সুন্নাহ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এ অন্তিম বাণীকে উপেক্ষা করে বানোয়াট, জাল, উদ্ভট ও আজগুবি কথায় পরিপূর্ণ নিজেদের সিলেবাসের কিতাব পড়তে বাধ্য করা, হাজারো অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, সুদ, ঘুষ, জুয়া ইত্যাদির ব্যাপারে মুখ - চোখ - কান বন্ধ করে রেখে (আরবী) এর ফারযকে দূরে নিক্ষেপ করে মুসলমানদের খাসি করণের অভিযান পরিচালনা করা, দা’ওয়াত দেয়ার নামে মু’মিন মুসল্লীদেরকে মসজিদের গেটে যখন তখন বিরক্ত করা ও বিভিন্ন বিদ’আতী তৎপরতা, অন্যায়ের প্রতিবাদী ইসলামের জিহাদী রূপকে ম্লান করতে চলেছে বটে।
পাক - ভারত উপমহাদেশ তথা ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ পূর্বাঞ্চলীয় মুসলিমদের মধ্যে প্রচলিত তাবলীগের মাধ্যমে যে ধর্মনিরপেক্ষ তথাকথিত এক প্রকারের ইসলামী চেতনা পরিলক্ষিত হচ্ছে তা যদি যুল্ম, নির্যাতন, হত্যা, শোষণ, লুন্ঠন, অত্যাচার, অবিচার, অশ্লীলতা, নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনার বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদী না হয়, শিরক, বিদ‘আতের বিরুদ্ধে আপোষহীন না হয়, সর্বশ্রেণীকে ম্যানেজ করে চলার সুবিধাবাদী নীতি পরিহারকারী না হয়, তাহলে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী উক্ত প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আতকেও পূর্বাঞ্চলীয় বিভেদ সৃষ্টিকারী, ফিতনা ও ফাসাদ সৃষ্টিকারী দ্বীন বিকৃতিকারী একটি দল ব’লে নিঃসন্দেহে সনাক্ত করা যাবে। কেননা উক্ত দলটির তথাকথিত নবীওয়ালা কাজের ফাঁকা বুলি পূর্ববর্তী দ্বীনদার মুসলিমদের কাজের সহিত সামঞ্জস্যশীল নয় বলেই তখন গণ্য হবে।
৬১/৬. অধ্যায়ঃ
আসলাম, গিফার, মুযায়না,
জুহায়না ও আশজা’ গোত্রের উল্লেখ।
৩৫১২
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ
سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ: «قُرَيْشٌ، وَالأَنْصَارُ، وَجُهَيْنَةُ، وَمُزَيْنَةُ، وَأَسْلَمُ،
وَغِفَارُ، وَأَشْجَعُ مَوَالِيَّ لَيْسَ لَهُمْ مَوْلًى دُونَ اللَّهِ
وَرَسُولِهِ»
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন কুরাইশ, আনসার, জুহায়নাহ,
মুযায়নাহ, আসলাম, গিফার এবং আশজা‘ গোত্রগুলো আমার আপনজন। আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল
ছাড়া অন্য কেউ তাদের আপনজন নেই।
৩৫১৩
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ غُرَيْرٍ الزُّهْرِيُّ،
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا
نَافِعٌ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ عَلَى المِنْبَرِ: «غِفَارُ غَفَرَ اللَّهُ لَهَا، وَأَسْلَمُ
سَالَمَهَا اللَّهُ، وَعُصَيَّةُ عَصَتِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ»
‘আবদুল্লাহ
(ইব্ন ‘উমর) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে উপবিষ্ট অবস্থায় বলেন, গিফার
গোত্র, আল্লাহ্ তাদেরকে মাফ করুন, আসলাম গোত্র, আল্লাহ্ তাদেরকে নিরাপত্তা দান
করুন আর ‘উসাইয়া গোত্র, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল অবাধ্যতা করেছে।
৩৫১৪
حَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ
الثَّقَفِيُّ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ:
«أَسْلَمُ سَالَمَهَا اللَّهُ، وَغِفَارُ غَفَرَ اللَّهُ لَهَا»
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আসলাম গোত্র, আল্লাহ্ তাদেরকে
নিরাপত্তা দিন। গিফার গোত্র, আল্লাহ তাদেরকে মাফ করুন।
৩৫১৫
حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنِي
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ
عَبْدِ المَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ،
عَنْ أَبِيهِ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَرَأَيْتُمْ
إِنْ كَانَ جُهَيْنَةُ، وَمُزَيْنَةُ، وَأَسْلَمُ، وَغِفَارُ، خَيْرًا مِنْ بَنِي
تَمِيمٍ، وَبَنِي أَسَدٍ، وَمِنْ بَنِي عَبْدِ اللَّهِ بْنِ غَطَفَانَ، وَمِنْ
بَنِي عَامِرِ بْنِ صَعْصَعَةَ» [ص: 182] فَقَالَ رَجُلٌ: خَابُوا وَخَسِرُوا،
فَقَالَ: «هُمْ خَيْرٌ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ، وَمِنْ بَنِي أَسَدٍ، وَمِنْ بَنِي
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ غَطَفَانَ، وَمِنْ بَنِي عَامِرِ بْنِ صَعْصَعَةَ»
আবূ
বাক্রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বলত জুহায়নাহ, মুযায়নাহ,
আসলাম ও গিফার গোত্র যদি আল্লাহর নিকট বানূ তামীম, বানূ আসাদ, বানূ গাতফান ও বানূ
‘আমের হতে উত্তম বিবেচিত হয় তবে কেমন হবে? তখন এক সহাবী বললেন, তবে তারা বঞ্চিত ও
ক্ষতিগ্রস্ত হলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তারা বানূ
তামীম, বানূ আসাদ, বানূ ‘আবদুল্লাহ ইব্ন গাত্ফান এবং বানূ ‘আমের ইব্ন সা‘সা‘আহ
হতে উত্তম।
৩৫১৬
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي يَعْقُوبَ، قَالَ: سَمِعْتُ
عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ الأَقْرَعَ بْنَ
حَابِسٍ، قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّمَا بَايَعَكَ
سُرَّاقُ الحَجِيجِ، مِنْ أَسْلَمَ وَغِفَارَ وَمُزَيْنَةَ، - وَأَحْسِبُهُ -
وَجُهَيْنَةَ - ابْنُ أَبِي يَعْقُوبَ شَكَّ - قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ أَسْلَمُ، وَغِفَارُ، وَمُزَيْنَةُ، -
وَأَحْسِبُهُ - وَجُهَيْنَةُ، خَيْرًا مِنْ بَنِي تَمِيمٍ، وَبَنِي عَامِرٍ،
وَأَسَدٍ، وَغَطَفَانَ خَابُوا وَخَسِرُوا» قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: «وَالَّذِي
نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّهُمْ لَخَيْرٌ مِنْهُمْ»
আবূ
বাকরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আকরা‘
ইব্ন হাবিস নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট ‘আরয করলেন, আসলাম
গোত্রের সুররাক হাজীজ, গিফার ও মুযায়না গোত্রদ্বয় আপনার নিকট বায়‘আত করেছে এবং
(রাবী বলেন) আমার ধারণা জুহায়না গোত্রও। এ ব্যাপারে ইব্ন আবূ ইয়াকুব সন্দেহ
পোষণ করেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তুমি কি জান, আসলাম,
গিফার ও মুযায়নাহ গোত্রত্রয়, (রাবী বলেন) আমার মনে হয় তিনি জুহায়নাহ গোত্রের
কথাও উল্লেখ করেছেন যে বনূ তামীম, বনূ ‘আমির, আসাদ ও গাতফান (গোত্রগুলো) যারা
ক্ষতিগ্রস্ত ও বঞ্চিত হয়েছে, তাদের তুলনায় পূর্বোক্ত গোত্রগুলো উত্তম। রাবী
বলেন, হাঁ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সে সত্তার কসম যাঁর
হাতে আমার প্রাণ, পূর্বোক্তগুলো শেষোক্ত গোত্রগুলোর তুলনায় অবশ্যই অতি উত্তম।
(৩৫১৫)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩২৫৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩২৬৩)
-------------
৩৫১৬ মীম. আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী বলেন, আসলাম, গিফার এবং মুযাইনাহ ও জুহানাহ গোত্রের কিছু অংশ অথবা জুহানাহ্ও কিছু অংশ মুযায়নাহ্ও কিছু অংশ আল্লাহর নিকট অথবা বলেছেন কিয়ামাতের দিন আসাদ, তামীম, হাওয়াযিন ও গাতাফান গোত্র অপেক্ষা উত্তম বলে বিবেচিত হবে।
(আ.প্র. ৩২৫৪, ই.ফা. ৩২৬৪)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩২৫৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩২৬৩)
-------------
৩৫১৬ মীম. আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী বলেন, আসলাম, গিফার এবং মুযাইনাহ ও জুহানাহ গোত্রের কিছু অংশ অথবা জুহানাহ্ও কিছু অংশ মুযায়নাহ্ও কিছু অংশ আল্লাহর নিকট অথবা বলেছেন কিয়ামাতের দিন আসাদ, তামীম, হাওয়াযিন ও গাতাফান গোত্র অপেক্ষা উত্তম বলে বিবেচিত হবে।
(আ.প্র. ৩২৫৪, ই.ফা. ৩২৬৪)
৬১/৭. অধ্যায়ঃ
কাহতান গোত্রের উল্লেখ।
৩৫১৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ
حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي
الْغَيْثِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَخْرُجَ رَجُلٌ مِنْ قَحْطَانَ
يَسُوقُ النَّاسَ بِعَصَاهُ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যে
পর্যন্ত কাহ্তান গোত্র হতে এমন এক ব্যক্তির আগমন না হবে যে মানুষ জাতিকে তার লাঠির
সাহায্যে পরিচালিত করবে।
৬১/৮. অধ্যায়ঃ
জাহেলী যুগের মত সাহাস্য
প্রার্থনা করা নিষিদ্ধ
৩৫১৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، أَخْبَرَنَا مَخْلَدُ بْنُ يَزِيدَ،
أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، أَنَّهُ
سَمِعَ جَابِرًا ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ غَزَوْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَقَدْ ثَابَ مَعَهُ نَاسٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ حَتَّى كَثُرُوا،
وَكَانَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ رَجُلٌ لَعَّابٌ فَكَسَعَ أَنْصَارِيًّا، فَغَضِبَ
الأَنْصَارِيُّ غَضَبًا شَدِيدًا، حَتَّى تَدَاعَوْا، وَقَالَ الأَنْصَارِيُّ يَا
لَلأَنْصَارِ. وَقَالَ الْمُهَاجِرِيُّ يَا لَلْمُهَاجِرِينَ. فَخَرَجَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " مَا بَالُ دَعْوَى أَهْلِ
الْجَاهِلِيَّةِ ". ثُمَّ قَالَ " مَا شَأْنُهُمْ ".
فَأُخْبِرَ بِكَسْعَةِ الْمُهَاجِرِيِّ الأَنْصَارِيَّ قَالَ فَقَالَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم " دَعُوهَا فَإِنَّهَا خَبِيثَةٌ ". وَقَالَ
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ ابْنُ سَلُولَ أَقَدْ تَدَاعَوْا عَلَيْنَا، لَئِنْ
رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ.
فَقَالَ عُمَرُ أَلاَ نَقْتُلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَذَا الْخَبِيثَ لِعَبْدِ
اللَّهِ. فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَتَحَدَّثُ
النَّاسُ أَنَّهُ كَانَ يَقْتُلُ أَصْحَابَهُ ".
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পরিচালনায় যুদ্ধে শামিল
ছিলাম। এ যুদ্ধে বহু মুহাজির সাহাবী যোগদান করেছিলেন। মুহাজিরদের মধ্যে একজন কৌতুক
পুরুষ ছিলেন। তিনি কৌতুকবশতঃ একজন আনসারীকে আঘাত করলেন। তাতে আনসারী সাহাবী
অত্যন্ত রাগান্বিত হলেন এবং উভয় গোত্রের সাহায্যের জন্য নিজ নিজ লোকদের আহবান
জানালেন। আনসারী সহাবী বললেন, হে আনসারীগণ! মুহাজির সাহাবী বললেন, হে মুহাজিরগণ
সাহায্যে এগিয়ে আস। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এতদশ্রবণে বের হয়ে
আসলেন এবং বললেন, জাহেলী যুগের ডাকাডাকি কেন? অতঃপর বললেন, তাদের ব্যাপার কী?
তাঁকে ঘটনা জানানো হল। মুহাজির সাহাবী আনসারী সাহাবীর কোমরে আঘাত করেছে। রাবী
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ ধরনের হাঁকডাক ত্যাগ কর,
এ অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। ‘আবদুল্লাহ ইব্ন উবাই ইব্ন সালূল বলল, তারা আমাদের
বিরুদ্ধে ডাক দিয়েছে? আমরা যদি মদীনায় নিরাপদে ফিরে যাই তবে সম্মানিত ব্যক্তিগণ
অবশ্যই বাহির করে দিবে অপদস্ত ব্যক্তিদেরকে। তখন ‘উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র
রাসূল! আপনি কি এই খাবীসকে হত্যা করার অনুমতি দিবেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, লোকজন বলাবলি করবে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁর সাহাবীদেরকে হত্যা করে থাকে।
৩৫১৯
حَدَّثَنِي ثَابِتُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ،
عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. وَعَنْ
سُفْيَانَ، عَنْ زُبَيْدٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " لَيْسَ مِنَّا مَنْ ضَرَبَ
الْخُدُودَ، وَشَقَّ الْجُيُوبَ، وَدَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ ".
‘আবদুল্লাহ
ইব্ন মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ঐ ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয় যে গালে
চপেটাঘাত করে, পরনের কাপড় ছিন্নভিন্ন করে এবং জাহিলীয়াতের যুগের মত হাঁকডাক করে।
৬১/৯. অধ্যায়ঃ
খুযা’আহ গোত্রের কাহিনী।
৩৫২০
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ آدَمَ، أَخْبَرَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي
صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " عَمْرُو بْنُ لُحَىِّ بْنِ قَمَعَةَ بْنِ خِنْدِفَ
أَبُو خُزَاعَةَ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘আম্র ইব্ন লুহাই ইব্ন কাম’আহ ইব্ন
খিনদাফ খুযা’আহ গোত্রের পূর্বপুরুষ ছিল।
৩৫২১
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ، قَالَ الْبَحِيرَةُ
الَّتِي يُمْنَعُ دَرُّهَا لِلطَّوَاغِيتِ وَلاَ يَحْلُبُهَا أَحَدٌ مِنَ
النَّاسِ، وَالسَّائِبَةُ الَّتِي كَانُوا يُسَيِّبُونَهَا لآلِهَتِهِمْ فَلاَ
يُحْمَلُ عَلَيْهَا شَىْءٌ. قَالَ وَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ قَالَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم " رَأَيْتُ عَمْرَو بْنَ عَامِرِ بْنِ لُحَىٍّ
الْخُزَاعِيَّ يَجُرُّ قُصْبَهُ فِي النَّارِ، وَكَانَ أَوَّلَ مَنْ سَيَّبَ
السَّوَائِبَ ".
যুহরী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি
সাঈ’দ ইব্ন মুসাইয়্যাব (রহঃ) -কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, বাহীরাহ বলে দেবতার
নামে উৎসর্গ করা উটনী যার দুধ আট্কিয়ে রাখা হত এবং কোন লোক তার দুধ দোহন করত না।
সা-য়িবাহ বলে ঐ পশুকে যাকে তারা ছেড়ে দিত দেবতার নামে। তাকে বোঝা বহন ইত্যাদি
কোন কাজ কর্মে ব্যবহার করা হয় না। রাবী বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি ‘আম্র ইব্ন ‘আমির খুয’আহকে তার
বহির্গত নাড়ি - ভুঁড়ি নিয়ে জাহান্নামের আগুনে চলাফেরা করতে দেখেছি। সেই প্রথম
ব্যক্তি যে সা-য়্যিবাহ উৎসর্গ করার প্রথা প্রচলন করে।
৬১/১০. অধ্যায়ঃ
আবূ যর গিফারী (রাঃ) -এর
ইসলাম গ্রহণের ঘটনা। [১]
[১] এ অধ্যায়ের হাদীস ৩৮৬১
নং হাদীস যথাস্থানেই বর্ণিত হয়েছে।
৬১/১১. অধ্যায়ঃ
যমযম কূপের ঘটনা।
৩৫২২
حَدَّثَنَا زَيْدٌ ـ هُوَ ابْنُ أَخْزَمَ ـ قَالَ أَبُو
قُتَيْبَةَ سَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ حَدَّثَنِي مُثَنَّى بْنُ سَعِيدٍ الْقَصِيرُ،
قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو جَمْرَةَ، قَالَ لَنَا ابْنُ عَبَّاسِ أَلاَ أُخْبِرُكُمْ
بِإِسْلاَمِ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قُلْنَا بَلَى. قَالَ قَالَ أَبُو ذَرٍّ كُنْتُ
رَجُلاً مِنْ غِفَارٍ، فَبَلَغَنَا أَنَّ رَجُلاً قَدْ خَرَجَ بِمَكَّةَ، يَزْعُمُ
أَنَّهُ نَبِيٌّ، فَقُلْتُ لأَخِي انْطَلِقْ إِلَى هَذَا الرَّجُلِ كَلِّمْهُ
وَأْتِنِي بِخَبَرِهِ. فَانْطَلَقَ فَلَقِيَهُ، ثُمَّ رَجَعَ فَقُلْتُ مَا
عِنْدَكَ فَقَالَ وَاللَّهِ لَقَدْ رَأَيْتُ رَجُلاً يَأْمُرُ بِالْخَيْرِ
وَيَنْهَى عَنِ الشَّرِّ. فَقُلْتُ لَهُ لَمْ تَشْفِنِي مِنَ الْخَبَرِ.
فَأَخَذْتُ جِرَابًا وَعَصًا، ثُمَّ أَقْبَلْتُ إِلَى مَكَّةَ فَجَعَلْتُ لاَ
أَعْرِفُهُ، وَأَكْرَهُ أَنْ أَسْأَلَ عَنْهُ، وَأَشْرَبُ مِنْ مَاءِ زَمْزَمَ
وَأَكُونُ فِي الْمَسْجِدِ. قَالَ فَمَرَّ بِي عَلِيٌّ فَقَالَ كَأَنَّ
الرَّجُلَ غَرِيبٌ. قَالَ قُلْتُ نَعَمْ. قَالَ فَانْطَلِقْ إِلَى
الْمَنْزِلِ. قَالَ فَانْطَلَقْتُ مَعَهُ لاَ يَسْأَلُنِي عَنْ شَىْءٍ، وَلاَ
أُخْبِرُهُ، فَلَمَّا أَصْبَحْتُ غَدَوْتُ إِلَى الْمَسْجِدِ لأَسْأَلَ عَنْهُ،
وَلَيْسَ أَحَدٌ يُخْبِرُنِي عَنْهُ بِشَىْءٍ. قَالَ فَمَرَّ بِي عَلِيٌّ
فَقَالَ أَمَا نَالَ لِلرَّجُلِ يَعْرِفُ مَنْزِلَهُ بَعْدُ قَالَ قُلْتُ لاَ.
قَالَ انْطَلِقْ مَعِي. قَالَ فَقَالَ مَا أَمْرُكَ وَمَا أَقْدَمَكَ هَذِهِ
الْبَلْدَةَ قَالَ قُلْتُ لَهُ إِنْ كَتَمْتَ عَلَىَّ أَخْبَرْتُكَ. قَالَ
فَإِنِّي أَفْعَلُ. قَالَ قُلْتُ لَهُ بَلَغَنَا أَنَّهُ قَدْ خَرَجَ هَا هُنَا
رَجُلٌ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ، فَأَرْسَلْتُ أَخِي لِيُكَلِّمَهُ فَرَجَعَ
وَلَمْ يَشْفِنِي مِنَ الْخَبَرِ، فَأَرَدْتُ أَنْ أَلْقَاهُ. فَقَالَ لَهُ
أَمَا إِنَّكَ قَدْ رَشَدْتَ، هَذَا وَجْهِي إِلَيْهِ، فَاتَّبِعْنِي، ادْخُلْ
حَيْثُ أَدْخُلُ، فَإِنِّي إِنْ رَأَيْتُ أَحَدًا أَخَافُهُ عَلَيْكَ، قُمْتُ إِلَى
الْحَائِطِ، كَأَنِّي أُصْلِحُ نَعْلِي، وَامْضِ أَنْتَ، فَمَضَى وَمَضَيْتُ
مَعَهُ، حَتَّى دَخَلَ وَدَخَلْتُ مَعَهُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَقُلْتُ لَهُ اعْرِضْ عَلَىَّ الإِسْلاَمَ. فَعَرَضَهُ فَأَسْلَمْتُ مَكَانِي،
فَقَالَ لِي " يَا أَبَا ذَرٍّ اكْتُمْ هَذَا الأَمْرَ، وَارْجِعْ إِلَى
بَلَدِكَ، فَإِذَا بَلَغَكَ ظُهُورُنَا فَأَقْبِلْ ". فَقُلْتُ وَالَّذِي
بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لأَصْرُخَنَّ بِهَا بَيْنَ أَظْهُرِهِمْ. فَجَاءَ إِلَى
الْمَسْجِدِ، وَقُرَيْشٌ فِيهِ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ، إِنِّي أَشْهَدُ
أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ
وَرَسُولُهُ. فَقَالُوا قُومُوا إِلَى هَذَا الصَّابِئِ. فَقَامُوا فَضُرِبْتُ
لأَمُوتَ فَأَدْرَكَنِي الْعَبَّاسُ، فَأَكَبَّ عَلَىَّ ثُمَّ أَقْبَلَ
عَلَيْهِمْ، فَقَالَ وَيْلَكُمْ تَقْتُلُونَ رَجُلاً مِنْ غِفَارَ، وَمَتْجَرُكُمْ
وَمَمَرُّكُمْ عَلَى غِفَارَ. فَأَقْلَعُوا عَنِّي، فَلَمَّا أَنْ أَصْبَحْتُ
الْغَدَ رَجَعْتُ فَقُلْتُ مِثْلَ مَا قُلْتُ بِالأَمْسِ، فَقَالُوا قُومُوا إِلَى
هَذَا الصَّابِئِ. فَصُنِعَ {بِي} مِثْلَ مَا صُنِعَ بِالأَمْسِ
وَأَدْرَكَنِي الْعَبَّاسُ فَأَكَبَّ عَلَىَّ، وَقَالَ مِثْلَ مَقَالَتِهِ
بِالأَمْسِ. قَالَ فَكَانَ هَذَا أَوَّلَ إِسْلاَمِ أَبِي ذَرٍّ رَحِمَهُ
اللَّهُ.
আবূ
জামরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) আমাদেরকে বললেন, আমি কি তোমাদেরকে আবূ যার
(রাঃ) এর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করব? আমরা বললাম হাঁ, অবশ্যই।
তিনি বলেন, আবূ যার (রাঃ) বলেছেন, আমি গিফার গোত্রের একজন মানুষ। আমরা জানতে পেলাম
মক্কায় এক ব্যক্তি আত্মপ্রকাশ করে নিজেকে নবী বলে দাবী করছেন। আমি আমার ভাইকে
বললাম, তুমি মক্কায় গিয়ে ঐ ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ ও আলোচনা করে বিস্তারিত খোঁজ -
খবর নিয়ে এস। সে রওয়ানা হয়ে গেল এবং মক্কার ঐ লোকটির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আলাপ -
আলোচনা করে ফিরে আসলে আমি জিজ্ঞেস করলাম- কী খবর নিয়ে এলে? সে বলল, আল্লাহ্র কসম!
আমি একজন মহান ব্যক্তিকে দেখেছি যিনি সৎকাজের আদেশ এবং মন্দ কাজ হতে নিষেধ করেন।
আমি বললাম, তোমার খবরে আমি সন্তুষ্ট হতে পারলাম না। অতঃপর আমি একটি ছড়ি ও এক
পাত্র খাবার নিয়ে মক্কার দিকে রওয়ানা হলাম। মক্কায় পৌছে আমার অবস্থা দাঁড়াল
এমন- তিনি আমার পরিচিত নন, কারো নিকট জিজ্ঞেস করাও আমি সমীচীন মনে করি না। তাই আমি
যমযমের পানি পান করে মসজিদে থাকতে লাগলাম। একদিন সন্ধ্যা বেলা ‘আলী (রাঃ) আমার
নিকট দিয়ে গমনকালে আমার প্রতি ইশারা করে বললেন, মনে হয় লোকটি বিদেশী। আমি বললাম,
হাঁ। তিনি বললেন, আমার সঙ্গে আমার বাড়িতে চল। পথেই তিনি আমাকে কোন কিছু জিজ্ঞেস
করেননি। আর আমিও ইচ্ছা করে কোন কিছু বলিনি। তাঁর বাড়িতে রাত্রি যাপন করে ভোর
বেলায় আবার মসজিদে গেলাম যাতে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করব। কিন্তু ওখানে এমন
কোন লোক ছিল না যে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু বলবে। ঐ দিনও ‘আলী (রাঃ) আমার নিকট
দিয়ে চলার সময় বললেন, এখনো কি লোকটি তার গন্তব্যস্থল ঠিক করতে পারেনি? আমি
বললাম, না। তিনি বললেন, আমার সঙ্গে চল। পথিমধ্যে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন বল,
তোমার বিষয় কী? কেন এ শহরে এসেছ? আমি বললাম, যদি আপনি আমার বিষয়টি গোপন রাখার
আশ্বাস দেন তাহলে তা আপনাকে বলতে পারি। তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি গোপন করব। আমি
বললাম, আমরা জানতে পেরেছি, এখানে এমন এক লোকের আবির্ভাব হয়েছে যিনি নিজেকে নবী
বলে দাবী করেন। আমি তাঁর সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ আলোচনা করার জন্য আমার ভাইকে
পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সে ফেরত গিয়ে আমাকে সন্তোষজনক কোন কিছু বলতে পারেনি। তাই
নিজে দেখা করার ইচ্ছা নিয়ে এখানে আগমন করেছি। ‘আলী (রাঃ) বললেন, তুমি সঠিক
পথপ্রদর্শক পেয়েছ। আমি এখনই তাঁর কাছে উপস্থিত হবার জন্য রওয়ানা হয়েছি। তুমি
আমাকে অনুসরণ কর এবং আমি যে গৃহে প্রবেশ করি তুমিও সে গৃহে প্রবেশ করবে। রাস্তায়
যদি তোমার বিপদজনক কোন লোক দেখতে পাই তবে আমি জুতা ঠিক করার অজুহাতে দেয়ালের
পার্শ্বে সরে দাঁড়াব, যেন আমি জুতা ঠিক করছি। তুমি কিন্তু চলতেই থাকবে। ‘আলী
(রাঃ) পথ চলতে শুরু করলেন। আমিও তাঁর অনুসরণ করে চলতে লাগলাম। তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট প্রবেশ করলে, আমিও তাঁর সঙ্গে ঢুকে
পড়লাম। আমি বললাম, আমার নিকট ইসলাম পেশ করুন। তিনি পেশ করলেন। আর আমি মুসলিম হয়ে
গেলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আবূ যার। এখনকার মত
তোমার ইসলাম গ্রহণ গোপন রেখে তোমার দেশে চলে যাও। যখন আমাদের বিজয়ের খবর জানতে
পাবে তখন এসো। আমি বললাম, যে আল্লাহ্ আপনাকে সত্য দীনসহ পাঠিয়েছেন তাঁর শপথ! আমি
কাফির মুশরিকদের সামনে উচ্চঃস্বরে তৌহীদের বাণী ঘোষণা করব। (ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ)
বলেন, ) এই কথা বলে তিনি মসজিদে হারামে গমন করলেন, কুরাইশের লোকজনও সেখানে হাজির
ছিল। তিনি বললেন হে কুরাইশগণ! আমি নিশ্চিতভাবে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া
কোন মা’বুদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র বান্দা ও তাঁর রাসূল। এতদশ্রবণে কুরাইশগণ বলে উঠল, ধর এই
ধর্মত্যাগী লোকটিকে। তারা আমার দিকে এগিয়ে আসলো এবং আমাকে নির্মমভাবে প্রহার করতে
লাগল; যেন আমি মরে যাই। তখন ‘আব্বাস (রাঃ) আমার নিকট পৌঁছে আমাকে ঘিরে রাখলেন।
অতঃপর তিনি কুরাইশকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমাদের বিপদ অবশ্যম্ভাবী। তোমরা গিফার
বংশের জনৈক ব্যক্তিকে হত্যা করতে উদ্যোগী হয়েছ অথচ তোমাদের ব্যবসা - বাণিজ্যের
কাফেলাকে গিফার গোত্রের নিকট দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এ কথা শুনে তারা সরে পড়ল।
পরদিন ভোরবেলা কাবাগৃহে উপস্থিত হয়ে গতদিনের মতই আমি আমার ইসলাম গ্রহণের পূর্ণ
ঘোষনা দিলাম। কুরাইশগণ বলে উঠলো, ধর এই ধর্মত্যাগী লোকটিকে। গতদিনের মত আজও তারা
নির্মমভাবে আমাকে মারধর করলো। এই দিনও ‘আব্বাস (রাঃ) এসে আমাকে রক্ষা করলেন এবং
কুরাইশদেরকে উদ্দেশ্য করে ঐ দিনের মত বক্তব্য রাখলেন। ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন,
এটাই ছিল আবূ যার (রাঃ) -এর ইসলাম গ্রহণের প্রথম ঘটনা।
৬১/১২. অধ্যায়ঃ
যমযমের ঘটনা ও আরবের
মূর্খতা।
৩৫২৩
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ،
عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ
قَالَ أَسْلَمُ وَغِفَارُ وَشَىْءٌ مِنْ مُزَيْنَةَ وَجُهَيْنَةَ ـ أَوْ قَالَ
شَىْءٌ مِنْ جُهَيْنَةَ أَوْ مُزَيْنَةَ ـ خَيْرٌ عِنْدَ اللَّهِ ـ أَوْ قَالَ ـ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ أَسَدٍ وَتَمِيمٍ وَهَوَازِنَ وَغَطَفَانَ.
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আসলাম, গিফার এবং মুযাইনাহ ও জুহানাহ
গোত্রের কিছু অংশ অথবা জুহানাহর কিছু অংশ কিংবা মুযায়নাহর কিছু অংশ আল্লাহ্র
নিকট অথবা বলেছেন কিয়ামতের দিন আসাদ, তামীম, হাওয়াযিন ও গাত্ফান গোত্র চেয়ে
উত্তম বলে বিবেচিত হবে।
৩৫২৪
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا أَبُو
عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ
رضى الله عنهما ـ قَالَ إِذَا سَرَّكَ أَنْ تَعْلَمَ جَهْلَ الْعَرَبِ فَاقْرَأْ
مَا فَوْقَ الثَّلاَثِينَ وَمِائَةٍ فِي سُورَةِ الأَنْعَامِ {قَدْ خَسِرَ
الَّذِينَ قَتَلُوا أَوْلاَدَهُمْ سَفَهًا بِغَيْرِ عِلْمٍ} إِلَى قَوْلِهِ
{قَدْ ضَلُّوا وَمَا كَانُوا مُهْتَدِينَ}.
ইব্ন
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, তুমি যদি আরবদের অজ্ঞতা সম্বন্ধে জানতে আগ্রহী হও, তবে সূরা আন্’আমের ১৩০ আয়াতের
অংশটুকু মনোযোগের সঙ্গে পাঠ কর। “অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা যারা নিজ
সন্তানদেরকে হত্যা করেছে বোকামির দরুন ও অজ্ঞতাবশতঃ এবং হারাম করে নিয়েছে তা যা
আল্লাহ্ তাদেরকে জীবিকা হিসেবে দিয়েছিলেন, কেবল আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা
করার উদ্দেশ্যে। নিশ্চয় তারা বিপথগামী হয়েছে এবং তারা হিদায়াতপ্রাপ্তও ছিল না”।
(আল-আনআম ১৪০)
৬১/১৩. অধ্যায়ঃ
যিনি ইসলাম ও জাহিলী যুগে
পিতৃপুরুষের সঙ্গে বংশধারা সম্পর্কিত করেন।
ইব্ন ‘উমর (রাঃ) ও আবূ
হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সম্ভ্রান্ত
বংশ - ধারার সন্তান হলেন ইউসুফ (আঃ) ইব্ন ইয়া’কূব (আঃ) ইব্ন ইসহাক (আঃ) ইব্ন
ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ্ (আঃ)। বারা’আহ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন আমি ‘আবদুল মুত্তালিবের বংশধর। (আ.প্র. ৩২৬২, ই.ফা. ২০৬৩ পরিচ্ছেদ)
৩৫২৫
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي،
حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ
{وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ} جَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يُنَادِي " يَا بَنِي فِهْرٍ، يَا بَنِي عَدِيٍّ لِبُطُونِ قُرَيْشٍ
".
ইব্ন
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন এ আয়াত “তোমার নিকট আত্মীয়গণকে সতর্ক কর” (আশ শু’আরাঃ ২১৪) অবতীর্ণ হল,
তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে বানী ফিহ্র, হে বনী ‘আদি!
বিভিন্ন কুরাইশ শাখা গোত্রগুলিকে নাম ধরে ধরে ইসলামের পথে ডাক দিতে লাগলেন।
৩৫২৬
وَقَالَ لَنَا قَبِيصَةُ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ
حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ} جَعَلَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَدْعُوهُمْ قَبَائِلَ قَبَائِلَ.
ইবন
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন এ আয়াত “তোমার নিকট আত্মীয়গণকে সতর্ক কর” (আশ শু’আরাঃ ২১৪) অবতীর্ণ হল,
তখন নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে গোত্র গোত্র ধরে ডাক দিতে
লাগলেন।
৩৫২৭
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ،
أَخْبَرَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله
عنه ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَا بَنِي عَبْدِ
مَنَافٍ، اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللَّهِ، يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ
اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللَّهِ، يَا أُمَّ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ
عَمَّةَ رَسُولِ اللَّهِ، يَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ، اشْتَرِيَا
أَنْفُسَكُمَا مِنَ اللَّهِ، لاَ أَمْلِكُ لَكُمَا مِنَ اللَّهِ شَيْئًا، سَلاَنِي
مِنْ مَالِي مَا شِئْتُمَا ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আব্দে মানাফের বংশধরগণ! তোমরা
তোমাদের নিজেদেরকে আল্লাহ্র শাস্তি হতে বাঁচাও। হে ‘আবদুল মুত্তালিবের বংশধরগণ!
তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে হিফাজত কর। হে যুবায়রের মা- আল্লাহ্র রাসূলের ফুফু, হে
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কন্যা ফাতিমা! তোমরা তোমাদের
নিজেদেরকে রক্ষা কর। তোমাদেরকে আজাব হতে বাঁচানোর সামান্যতম ক্ষমতাও আমার নাই আর
আমার ধন - সম্পদ হতে তোমরা যা ইচ্ছা তা চেয়ে নিতে পার।
৬১/১৪. অধ্যায়ঃ
ভাগ্নে ও আযাদকৃত গোলাম
নিজের গোত্রেরই অন্তর্ভুক্ত।
৩৫২৮
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ،
عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ دَعَا النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم الأَنْصَارَ فَقَالَ " هَلْ فِيكُمْ أَحَدٌ مِنْ غَيْرِكُمْ
". قَالُوا لاَ، إِلاَّ ابْنُ أُخْتٍ لَنَا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " ابْنُ أُخْتِ الْقَوْمِ مِنْهُمْ ".
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের বললেন, তোমাদের মধ্যে অপর
গোত্রের কেউ আছে কি? তারা বললেন না, অন্য কেউ নেই। তবে আমাদের এক ভাগিনা আছে। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন কোন গোত্রের ভাগ্নে সে গোত্রেরই
অন্তর্ভুক্ত।
৬১/১৫. অধ্যায়ঃ
হাবশীদের কাহিনী
এবং রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তি হে বনূ আরফিদা
৩৫২৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ أَبَا
بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ دَخَلَ عَلَيْهَا وَعِنْدَهَا جَارِيَتَانِ فِي أَيَّامِ
مِنًى تُدَفِّفَانِ وَتَضْرِبَانِ، وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُتَغَشٍّ
بِثَوْبِهِ، فَانْتَهَرَهُمَا أَبُو بَكْرٍ، فَكَشَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم عَنْ وَجْهِهِ، فَقَالَ " دَعْهُمَا يَا أَبَا بَكْرٍ، فَإِنَّهَا
أَيَّامُ عِيدٍ، وَتِلْكَ الأَيَّامُ أَيَّامُ مِنًى ". وَقَالَتْ
عَائِشَةُ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتُرُنِي، وَأَنَا أَنْظُرُ
إِلَى الْحَبَشَةِ، وَهُمْ يَلْعَبُونَ فِي الْمَسْجِدِ فَزَجَرَهُمْ {عُمَرُ}
فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " دَعْهُمْ أَمْنًا بَنِي
أَرْفَدَةَ ". يَعْنِي مِنَ الأَمْنِ.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মিনায়
অবস্থানের দিনগুলোতে (অর্থাৎ ১০, ১১, ১২ তারিখে) আবূ বকর (রাঃ) আমার গৃহে প্রবেশ
করলেন। তখন তাঁর কাছে দু’টি বালিকা ছিল। তারা দফ বাজিয়ে নেচে নেচে গান করছিল। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে শুয়েছিলেন। আবূ বকর
(রাঃ) এদেরকে ধমক দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন মুখ হতে
চাদর সরিয়ে বললেন, হে আবূ বকর (রাঃ)! এদেরকে গাইতে দাও। কেননা, আজ ঈদের দিনও
মিনার দিনগুলির অন্তর্ভুক্ত।
৩৫৩০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ أَبَا
بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ دَخَلَ عَلَيْهَا وَعِنْدَهَا جَارِيَتَانِ فِي أَيَّامِ
مِنًى تُدَفِّفَانِ وَتَضْرِبَانِ، وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُتَغَشٍّ
بِثَوْبِهِ، فَانْتَهَرَهُمَا أَبُو بَكْرٍ، فَكَشَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم عَنْ وَجْهِهِ، فَقَالَ " دَعْهُمَا يَا أَبَا بَكْرٍ، فَإِنَّهَا أَيَّامُ
عِيدٍ، وَتِلْكَ الأَيَّامُ أَيَّامُ مِنًى ". وَقَالَتْ عَائِشَةُ
رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتُرُنِي، وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَى
الْحَبَشَةِ، وَهُمْ يَلْعَبُونَ فِي الْمَسْجِدِ فَزَجَرَهُمْ {عُمَرُ}
فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " دَعْهُمْ أَمْنًا بَنِي
أَرْفَدَةَ ". يَعْنِي مِنَ الأَمْنِ.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে আড়াল করে দাঁড়িয়ে ছিলেন আর আমি
হাবশীদের খেলা দেখছিলাম। মসজিদের কাছে তারা যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে খেলা করছিল। এমন
সময় ‘উমর (রাঃ) এসে তাদেরকে ধমক দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, হে ‘উমর! তাদেরকে বনূ আরফিদাকে নিরাপদ ছেড়ে দাও।
৬১/১৬. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে,
তার বংশকে যেন গালি দেয়া না হয়।
৩৫৩১
حَدَّثَنِي عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا
عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتِ
اسْتَأْذَنَ حَسَّانُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي هِجَاءِ الْمُشْرِكِينَ،
قَالَ " كَيْفَ بِنَسَبِي ". فَقَالَ حَسَّانُ لأَسُلَّنَّكَ
مِنْهُمْ كَمَا تُسَلُّ الشَّعَرَةُ مِنَ الْعَجِينِ. وَعَنْ أَبِيهِ قَالَ
ذَهَبْتُ أَسُبُّ حَسَّانَ عِنْدَ عَائِشَةَ فَقَالَتْ لاَ تَسُبُّهُ فَإِنَّهُ
كَانَ يُنَافِحُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, হাসসান (রাঃ) কবিতার ছন্দে মুশরিকদের নিন্দা করতে অনুমতি চাইলে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার বংশকে কিভাবে তুমি আলাদা করবে?
হাসসান (রাঃ) বললেন, আমি তাদের মধ্য হতে এমনভাবে আপনাকে আলাদা করে নিব যেমনভাবে
আটার খামির হতে চুলকে আলাদা করে নেয়া হয়। ‘উরওয়াহ্ (রহঃ) বলেন, আমি হাসসান
(রাঃ) -কে ‘আয়িশা (রাঃ) -এর সম্মুখে তিরস্কার করতে উদ্যত হলে, তিনি আমাকে বললেন,
তাকে গালি দিও না। সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর তরফ হতে কবিতার
মাধ্যমে শত্রুর কথার আঘাত প্রতিহত করত।
৬১/১৭. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -এর নামসমূহ সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে।
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ
“মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা
নয়; মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র রাসূল ও তাঁর সঙ্গে
যারা আছেন তারা কুফরের বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর” (আল - ফাতহঃ ২৯) আর তাঁর বাণীঃ “আমার
পর যিনি আসবেন তাঁর নাম আহমাদ”। (সফঃ ৬)
৩৫৩২
حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالَ
حَدَّثَنِي مَعْنٌ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لِي خَمْسَةُ أَسْمَاءٍ أَنَا مُحَمَّدٌ،
وَأَحْمَدُ، وَأَنَا الْمَاحِي الَّذِي يَمْحُو اللَّهُ بِي الْكُفْرَ، وَأَنَا
الْحَاشِرُ الَّذِي يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى قَدَمِي، وَأَنَا الْعَاقِبُ
".
যুবায়র
‘ইব্ন মুত’ঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমার পাঁচটি (প্রসিদ্ধ) নাম
রয়েছে, আমি মুহাম্মাদ, আমি আহমাদ, আমি আল-মাহী আমার দ্বারা আল্লাহ্ কুফর ও শিরককে
নিশ্চিহ্ন করে দিবেন। আমি আল-হাশির আমার চারপাশে মানব জাতিকে একত্রিত করা হবে। আমি
আল-আক্বিব (সর্বশেষে আগমনকারী)।
৩৫৩৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى
الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَلاَ
تَعْجَبُونَ كَيْفَ يَصْرِفُ اللَّهُ عَنِّي شَتْمَ قُرَيْشٍ وَلَعْنَهُمْ
يَشْتِمُونَ مُذَمَّمًا وَيَلْعَنُونَ مُذَمَّمًا وَأَنَا مُحَمَّدٌ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা কি আশ্চর্যান্বিত
হও না? আমার উপর আরোপিত কুরাইশদের নিন্দা ও অভিশাপকে আল্লাহ্ তা’আলা কি চমৎকারভাবে
দূরীভূত করছেন? তারা আমাকে নিন্দিত ভেবে গালি দিচ্ছে, অভিশাপ করছে অথচ আমি
মুহাম্মাদ চির প্রশংসিত।
৬১/১৮. অধ্যায়ঃ
খাতামুন-নাবীয়্যীন।
৩৫৩৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا سَلِيمٌ،
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مِينَاءَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله
عنهما ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مَثَلِي وَمَثَلُ
الأَنْبِيَاءِ كَرَجُلٍ بَنَى دَارًا فَأَكْمَلَهَا وَأَحْسَنَهَا، إِلاَّ
مَوْضِعَ لَبِنَةٍ، فَجَعَلَ النَّاسُ يَدْخُلُونَهَا وَيَتَعَجَّبُونَ،
وَيَقُولُونَ لَوْلاَ مَوْضِعُ اللَّبِنَةِ ".
জাবির
‘ইব্ন ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন আমার ও অন্যান্য নবীগণের
অবস্থা এমন, যেন কেউ একটি গৃহ নির্মাণ করলো আর একটি ইটের স্থান শূন্য রেখে নির্মাণ
কাজ শেষ করে গৃহটিকে সুসজ্জিত করে নিল। জনগণ মুগ্ধ হল এবং তারা বলাবলি করতে লাগল,
যদি একটি ইটের জায়গাটুকু খালি রাখা না হত।
৩৫৩৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا
إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي
صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " إِنَّ مَثَلِي وَمَثَلَ الأَنْبِيَاءِ مِنْ قَبْلِي
كَمَثَلِ رَجُلٍ بَنَى بَيْتًا فَأَحْسَنَهُ وَأَجْمَلَهُ، إِلاَّ مَوْضِعَ
لَبِنَةٍ مِنْ زَاوِيَةٍ، فَجَعَلَ النَّاسُ يَطُوفُونَ بِهِ وَيَعْجَبُونَ لَهُ،
وَيَقُولُونَ هَلاَّ وُضِعَتْ هَذِهِ اللَّبِنَةُ قَالَ فَأَنَا اللَّبِنَةُ،
وَأَنَا خَاتِمُ النَّبِيِّينَ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি এবং আমার পূর্ববর্তী
নবীগণের অবস্থা এমন, এক ব্যক্তি যেন একটি গৃহ নির্মাণ করল; তাকে সুশোভিত ও
সুসজ্জিত করল, কিন্তু এক পাশে একটি ইটের জায়গা খালি রয়ে গেল। অতঃপর লোকজন এর চারপাশে
ঘুরে আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল ঐ শূন্যস্থানের ইটটি লাগানো হল না কেন? নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমিই সে ইট। আর আমিই সর্বশেষ নবী।
৬১/১৯. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু।
৩৫৩৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا
اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ،
عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تُوُفِّيَ
وَهْوَ ابْنُ ثَلاَثٍ وَسِتِّينَ. وَقَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِي سَعِيدُ
بْنُ الْمُسَيَّبِ مِثْلَهُ.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মৃত্যু হয় তখন তাঁর বয়স হয়েছিল
তেষট্টি বছর। ইব্ন শিহাব বলেন, সা’ঈদ ইবনুল মুসায়্যিব এভাবেই আমার কাছে বর্ণনা
করেন।
৬১/২০. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -এর উপনামসমূহ।
৩৫৩৭
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم فِي السُّوقِ فَقَالَ رَجُلٌ يَا أَبَا الْقَاسِمِ. فَالْتَفَتَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " سَمُّوا بِاسْمِي، وَلاَ تَكْتَنُوا
بِكُنْيَتِي ".
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন বাজারে গিয়েছিলেন। তখন এক
ব্যক্তি ‘হে আবুল কাসিম!’ বলে ডাক দিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সেদিকে ফিরে তাকালেন। তখন তিনি বললেন, তোমরা আমার আসল নামে নাম রাখতে পার, কিন্তু
আমার উপনামে কারো নাম রেখ না।
৩৫৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ،
عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ جَابِرٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " تَسَمَّوْا بِاسْمِي، وَلاَ تَكْتَنُوا
بِكُنْيَتِي "
জাবির
(রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বললেন, আমার আসল নামে অন্যের নামকরণ করতে পার, কিন্তু আমার উপনাম অন্যের জন্য
রেখোনা।
৩৫৩৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ،
يَقُولُ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم " سَمُّوا بِاسْمِي،
وَلاَ تَكْتَنُوا بِكُنْيَتِي "
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আবূল কাসিম (নবী) (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমার নামে
নামকরণ করতে পার, কিন্তু আমার উপনামে তোমাদের নাম রেখ না।
৬১/২১. অধ্যায়ঃ
৩৫৪০
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى،
عَنِ الْجُعَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، رَأَيْتُ السَّائِبَ بْنَ يَزِيدَ
ابْنَ أَرْبَعٍ وَتِسْعِينَ جَلْدًا مُعْتَدِلاً فَقَالَ قَدْ عَلِمْتُ مَا
مُتِّعْتُ بِهِ سَمْعِي وَبَصَرِي إِلاَّ بِدُعَاءِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم، إِنَّ خَالَتِي ذَهَبَتْ بِي إِلَيْهِ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ
ابْنَ أُخْتِي شَاكٍ فَادْعُ اللَّهَ. قَالَ فَدَعَا لِي.
জু’আইদ
ইব্ন ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘সাইব ইব্ন ইয়াযীদকে চুরানব্বই বছর বয়সে সুস্থ - সবল ও সুঠাম দেহের
অধিকারী দেখেছি। তিনি বললেন, তুমি অবশ্যই জ্ঞাত আছ যে, আমি এখনও নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দু’আর বরকতেই চোখ ও কান দিয়ে উপকার লাভ করছি। আমার
খালা একদিন আমাকে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট গেলেন
এবং বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমার ভাগিনাটি রোগাক্রান্ত। আপনি তার জন্য আল্লাহ্র
কাছে দু’আ করুন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার জন্য দু’আ
করলেন।
৬১/২২. অধ্যায়ঃ
নবুওয়াতের মোহর।
৩৫৪১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا
حَاتِمٌ، عَنِ الْجُعَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سَمِعْتُ السَّائِبَ
بْنَ يَزِيدَ، قَالَ ذَهَبَتْ بِي خَالَتِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ ابْنَ أُخْتِي. وَقَعَ فَمَسَحَ
رَأْسِي وَدَعَا لِي بِالْبَرَكَةِ، وَتَوَضَّأَ فَشَرِبْتُ مِنْ وَضُوئِهِ، ثُمَّ
قُمْتُ خَلْفَ ظَهْرِهِ فَنَظَرْتُ إِلَى خَاتَمٍ بَيْنَ كَتِفَيْهِ. قَالَ
ابْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ الْحُجْلَةُ مِنْ حُجَلِ الْفَرَسِ الَّذِي بَيْنَ
عَيْنَيْهِ. قَالَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ حَمْزَةَ مِثْلَ زِرِّ الْحَجَلَةِ
জু’আইদ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি
‘সাইব ইব্ন ইয়াযীদকে বলতে শুনেছি যে, আমার খালা আমাকে আল্লাহ্র রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট নিয়ে গেলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্র
রাসূল! আমার ভাগিনা রোগাক্রান্ত। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং আমার জন্য বরকতের দু’আ করলেন। তিনি ওযু করলেন, তাঁর
ওযুর বাকি পানি আমি পান করলাম। অতঃপর আমি তাঁর পিছন দিকে গিয়ে দাঁড়ালাম তাঁর
স্কন্ধের মাঝে “মোহরে নাবুওয়্যাত” দেখলাম যা কবুতরের ডিমের মত অথবা বাসর ঘরের
পর্দার বুতামের মত।
ইব্ন ‘উবায়দুল্লাহ বলেন, (আরবী) অর্থ সাদা চিহ্ন, যা ঘোড়ার কপালের সাদা অংশ এর অর্থ হতে গৃহীত। আর ইব্রাহীম ইব্ন হামযাহ বলেন, কবুতরের ডিমের মত। আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন বিশুদ্ধ (আরবী) এর পূর্বে (আরবী) হবে অর্থাৎ (আরবী)।
ইব্ন ‘উবায়দুল্লাহ বলেন, (আরবী) অর্থ সাদা চিহ্ন, যা ঘোড়ার কপালের সাদা অংশ এর অর্থ হতে গৃহীত। আর ইব্রাহীম ইব্ন হামযাহ বলেন, কবুতরের ডিমের মত। আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন বিশুদ্ধ (আরবী) এর পূর্বে (আরবী) হবে অর্থাৎ (আরবী)।
৬১/২৩. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) –এর বর্ণনা।
৩৫৪২
حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ سَعِيدِ بْنِ
أَبِي حُسَيْنٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ الْحَارِثِ،
قَالَ صَلَّى أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ الْعَصْرَ، ثُمَّ خَرَجَ يَمْشِي
فَرَأَى الْحَسَنَ يَلْعَبُ مَعَ الصِّبْيَانِ، فَحَمَلَهُ عَلَى عَاتِقِهِ
وَقَالَ بِأَبِي شَبِيهٌ بِالنَّبِيِّ لاَ شَبِيهٌ بِعَلِيٍّ. وَعَلِيٌّ
يَضْحَكُ.
‘উকবা
ইবন হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদিন আবূ বকর (রাঃ) বাদ আসরের সালাত শেষে বের হয়ে চলতে লাগলেন। হাসান
(রাঃ) -কে ছেলেদের সঙ্গে খেলা করতে দেখলেন। তখন তিনি তাঁকে স্কন্ধে তুলে নিলেন এবং
বললেন, আমার পিতা কুরবান হোন! এ-ত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর
সাদৃশ্য, আলীর সাদৃশ্য নয়। তখন ‘আলী (রাঃ) হাসছিলেন।
৩৫৪৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ،
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ أَبِي جُحَيْفَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَأَيْتُ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ الْحَسَنُ يُشْبِهُهُ.
আবূ
জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখেছি। আর হাসান (রাঃ)
তাঁরই সদৃশ।
৩৫৪৪
حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا ابْنُ
فُضَيْلٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا
جُحَيْفَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
وَكَانَ الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ ـ عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ ـ يُشْبِهُهُ قُلْتُ
لأَبِي جُحَيْفَةَ صِفْهُ لِي. قَالَ كَانَ أَبْيَضَ قَدْ شَمِطَ. وَأَمَرَ
لَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثَ عَشْرَةَ قَلُوصًا قَالَ فَقُبِضَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَبْلَ أَنْ نَقْبِضَهَا.
আবূ
জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখেছি। হাসান ইব্ন ‘আলী
ছিলেন (রাঃ) তাঁরই সদৃশ। (রাবী বলেন) আমি আবূ জুহায়ফাকে বললাম, আপনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বর্ণনা দিন। তিনি বললেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গৌর বর্ণের ছিলেন। কাল কেশরাজির মধ্যে
সামান্য সাদা চুলও ছিল। তিনি তেরটি সবল উটনী আমাদেরকে দেয়ার আদেশ দিয়েছিলেন,
কিন্তু আমাদের হাতে আসার আগেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মৃত্যু
হয়।
৩৫৪৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَجَاءٍ، حَدَّثَنَا
إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ وَهْبٍ أَبِي جُحَيْفَةَ السُّوَائِيِّ،
قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَرَأَيْتُ بَيَاضًا مِنْ تَحْتِ
شَفَتِهِ السُّفْلَى الْعَنْفَقَةَ.
আবূ
জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখেছি আর
তাঁর নীচ ঠোঁটের নিন্মভাগে দাড়িতে সামান্য সাদা চুল দেখেছি।
৩৫৪৬
حَدَّثَنَا عِصَامُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا حَرِيزُ بْنُ
عُثْمَانَ، أَنَّهُ سَأَلَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ بُسْرٍ صَاحِبَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ أَرَأَيْتَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ شَيْخًا
قَالَ كَانَ فِي عَنْفَقَتِهِ شَعَرَاتٌ بِيضٌ.
হারীয
ইব্ন ‘উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাহাবী ‘আবদুল্লাহ ইব্ন বুসরকে
জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখেছেন যে,
তিনি কি বৃদ্ধ ছিলেন? তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর
নিম্ন দাড়িতে কয়েকটি চুল সাদা ছিল।
৩৫৪৭
حَدَّثَنِي ابْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ،
عَنْ خَالِدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِلاَلٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَصِفُ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ كَانَ رَبْعَةً مِنَ الْقَوْمِ، لَيْسَ بِالطَّوِيلِ وَلاَ
بِالْقَصِيرِ، أَزْهَرَ اللَّوْنِ لَيْسَ بِأَبْيَضَ أَمْهَقَ وَلاَ آدَمَ، لَيْسَ
بِجَعْدٍ قَطَطٍ وَلاَ سَبْطٍ رَجِلٍ، أُنْزِلَ عَلَيْهِ وَهْوَ ابْنُ
أَرْبَعِينَ، فَلَبِثَ بِمَكَّةَ عَشْرَ سِنِينَ يُنْزَلُ عَلَيْهِ
وَبِالْمَدِينَةِ عَشْرَ سِنِينَ، وَلَيْسَ فِي رَأْسِهِ وَلِحْيَتِهِ عِشْرُونَ
شَعَرَةً بَيْضَاءَ. قَالَ رَبِيعَةُ فَرَأَيْتُ شَعَرًا مِنْ شَعَرِهِ، فَإِذَا
هُوَ أَحْمَرُ فَسَأَلْتُ فَقِيلَ احْمَرَّ مِنَ الطِّيبِ.
রাবী’আ
ইব্ন আবূ ‘আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) -কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
-এর বর্ণনা দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
লোকেদের মধ্যে মাঝারি গড়নের ছিলেন- বেশি লম্বাও ছিলেন না বা বেঁটেও ছিলেন না।
তাঁর শরীরের রং গোলাপী ধরণের ছিল, ধবধবে সাদাও নয় কিংবা তামাটে বর্ণেরও নয়।
মাথার চুল কোঁকড়ানোও ছিলনা, আবার একেবারে সোজাও ছিলনা। চল্লিশ বছর বয়সে তাঁর উপর
ওয়াহী নাযিল হওয়া শুরু হয়। প্রথম দশ বছর মক্কায় অবস্থানকালে ওয়াহী যথারীতি
নাযিল হতে থাকে। অতঃপর দশ বছর মদীনায় কাটান। অতঃপর তাঁর মৃত্যুর সময় তাঁর মাথা ও
দাড়িতে কুড়িটি সাদা চুলও ছিলনা। রাবী’আ (রহঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর একটি চুল দেখেছি তা লাল রং-এর ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলে
বলা হল যে, সুগন্ধী লাগানোর জন্য তা লাল হয়েছিল।তিনি বলেন, আমি আনাস ইব্ন মালিক
(রাঃ) -কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বর্ণনা দিতে শুনেছি। তিনি
বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকেদের মধ্যে মাঝারি গড়নের
ছিলেন- বেশি লম্বাও ছিলেন না বা বেঁটেও ছিলেন না। তাঁর শরীরের রং গোলাপী ধরণের
ছিল, ধবধবে সাদাও নয় কিংবা তামাটে বর্ণেরও নয়। মাথার চুল কোঁকড়ানোও ছিলনা, আবার
একেবারে সোজাও ছিলনা। চল্লিশ বছর বয়সে তাঁর উপর ওয়াহী নাযিল হওয়া শুরু হয়।
প্রথম দশ বছর মক্কায় অবস্থানকালে ওয়াহী যথারীতি নাযিল হতে থাকে। অতঃপর দশ বছর
মদীনায় কাটান। অতঃপর তাঁর মৃত্যুর সময় তাঁর মাথা ও দাড়িতে কুড়িটি সাদা চুলও
ছিলনা। রাবী’আ (রহঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর একটি
চুল দেখেছি তা লাল রং-এর ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলে বলা হল যে, সুগন্ধী লাগানোর জন্য
তা লাল হয়েছিল।
৩৫৪৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا
مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم لَيْسَ بِالطَّوِيلِ الْبَائِنِ وَلاَ بِالْقَصِيرِ، وَلاَ
بِالأَبْيَضِ الأَمْهَقِ، وَلَيْسَ بِالآدَمِ وَلَيْسَ بِالْجَعْدِ الْقَطَطِ
وَلاَ بِالسَّبْطِ، بَعَثَهُ اللَّهُ عَلَى رَأْسِ أَرْبَعِينَ سَنَةً، فَأَقَامَ
بِمَكَّةَ عَشْرَ سِنِينَ، وَبِالْمَدِينَةِ عَشْرَ سِنِينَ، فَتَوَفَّاهُ
اللَّهُ، وَلَيْسَ فِي رَأْسِهِ وَلِحْيَتِهِ عِشْرُونَ شَعْرَةً بَيْضَاءَ.
আনাস
ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অতিরিক্ত লম্বাও ছিলেন
না এবং বেঁটেও ছিলেন না। ধবধবে সাদাও ছিলেন না, আবার তামাটে রং এরও ছিলেন না।
কেশগুচ্ছ একেবারে কুঞ্চিত ছিল না, পুরোপুরি সোজাও ছিল না। চল্লিশ বছর বয়সে তিনি
নবুওয়্যাত পান। তাঁর নবুওয়্যাত সময়ের প্রথম দশ বছর মক্কায় এবং পরের দশ বছর
মদীনায় কাটান। তাঁর মৃত্যুকালে মাথা ও দাড়িতে বিশটি চুলও সাদা ছিল না।
৩৫৪৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ،
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ، يَقُولُ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَحْسَنَ النَّاسِ وَجْهًا وَأَحْسَنَهُ خَلْقًا،
لَيْسَ بِالطَّوِيلِ الْبَائِنِ وَلاَ بِالْقَصِيرِ.
বারাআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চেহারা ছিল মানুষের
মধ্যে [১] সর্বাপেক্ষা সুন্দর এবং তিনি ছিলেন সর্বোত্তম আখলাকের অধিকারী। তিনি
বেশি লম্বাও ছিলেন না এবং বেঁটেও ছিলেন না।
[১] নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
-এর নবুওয়্যাতের আলামতসমূহের উপরে মহামতি ইমাম বুখারী (রহঃ) সহীহ সনদে প্রমাণিত কতিপয়
নির্ভরযোগ্য হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে
যে সমুদয় বৈশিষ্ট্য ও নিদর্শনাবলী বর্ণনা করেছেন, তাতে এ কথা পরিষ্কারভাবেই প্রমাণিত
হয় যে, মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষ ছিলেন। তিনি আল্লাহ্ তা’আলার
খাস নূরে তৈরি বা বিশেষ কোন নূরানী কায়দায় সৃষ্ট বা স্বয়ং আল্লাহ্ তা’আলাই মুহাম্মদ
নাম ধারণ করে মানবরূপে আত্মপ্রকাশ করেছেন- এবম্বিধ যাবতীয় চিন্তা-চেতনা, আক্বীদাহ-বিশ্বাস
ও কথাবার্তা নিঃসন্দেহে বিভ্রান্তিকর তথা কুফরী কার্য বটে।
কেননা আল্লাহ্ তা’আলা উপরোক্ত বিষয়ে স্বীয় কুরআন মাজীদের মাধ্যমেই বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে অন্য কারো কোন অতিরিক্ত চিন্তা-ভাবনা করার অবকাশ নেই। সূরা কাহফের শেষ আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে লক্ষ্য করে এরশাদ করেছেনঃ (আরবী) হে নবী! তুমি বলে দাও, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। (আল-কাহ্ফঃ ১১০ আয়াতাংশ) এ বিষয়ে অন্যত্র আরো এরশাদ হচ্ছেঃ (আরবী) অর্থাৎ আল্লাহ্ তা’আলা মু’মিনদের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য হতেই (ফেরেশতা বা মানুষ নয় এমন কোন ভিন্ন জাতির মধ্য হতে প্রেরণ করেননি বরং) একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন। সূরা আল্ ইমরান, আয়াত নং - ১৬৪। উক্ত আয়াতে উল্লেখিত (আরবী) এই শব্দ দু’টির ব্যাখ্যায় হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে রুহুল মা’আনীতে আল্লামা শায়খ শেহাবুদ্দীন আলুসী-আল্ হানাফী (রহঃ) লিখেছেনঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মানুষ বলে জানা ও তাঁকে মানুষের সন্তান মানুষ বলেই গ্রহণ করা সহীহ হওয়ার জন্য একান্ত শর্ত। তাঁকে ফেরেশতা, জ্বীন, নূরের দ্বারা তৈরী এসব কিছু বলা যাবে না বা চিন্তাও করা যাবে না। যেমন রুহুল মা’আনীর নিন্মোদ্ধৃত ভাষ্যে পরিষ্কার করেই বলা হয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষ ছিলেন, কি আরবীয় মানুষ ছিলেন, এ বিষয়ে জ্ঞাত হওয়া এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মানুষ বলেই জানা ঈমানের জন্য শর্ত না; ফারযি কিফায়াহ (আরবী)? এর জবাব এই যে, উক্ত বিষয়টি ঈমানের জন্য শর্ত বটে। অতঃপর কেউ যদি বলে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সমস্ত মাখলুকের জন্য নবী এটা বিশ্বাস করি, তবে তিনি মানুষ কি জ্বিন, কি ফেরেশতা, বা আরবের কি অনারবের এটা আমি জানিনা। উক্ত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে কাফের। কেননা সে কুরআনের ঘোষণাকে অস্বীকার করেছে। (আরবী) পৃষ্ঠা নং- ১১৩, ৪র্থ খন্ড। অতএব এখানে লক্ষ্যণীয় এই যে, কতিপয় বিভ্রান্ত লোক নিজেদেরকে হানাফী আল্-ক্বাদরী, আল্-চিশ্তী ইত্যাদি নাম দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে অতিমাত্রায় ভক্তি ও শ্রদ্ধা দেখাতে গিয়ে তাঁকে আল্লাহ্র আসনে বসিয়েছে। (আরবি) (আহাদ) ও (আরবি) (আহমাদ) -এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নিজেদের অজ্ঞতাবশতঃ এ ব্যাখ্যাও দিয়েছে, যে (আরবী) ও (আরবী) এর মধ্যে মাত্র একটি মীমের পার্থক্য ছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই। (আরবী) প্রকাশ থাকে। পাক-ভারত উপমহাদেশের বিদ’আতীরা কুরআন ও সহীহ হাদীস বিরোধী সমস্ত কার্যাবলী চালু করে নিজেদের নাম দিয়ে রেখেছে আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামা’আহ। এ যেন বেদানা ফলের মতই অবস্থা। বেদানা ফল দানায় ভর্তি, অথচ নাম তার বেদানা। তথাকথিত (আরবী) (আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামা’আহ) নাম দিয়ে বিদ’আতীরা এ পৃথিবীর এমন কোন বিদ’আত নেই, যা এরা করছে না। যেমন কবর পূজা, পীর পূজা, মীলাদ, ওরশ ওরসেকূল, ইসালে সওয়াব, জশ্নে জুলুস, মিছিল, ঈদে মিলাদুন্নাবী ইত্যাদি ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, এক শ্রেণীর বিদ’আতীরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মর্যাদা তথা অত্যধিক পরিমাণে শান-মান দেয়ার নামে এতোই সীমালঙ্ঘন করছে যে, (আরবী) ‘আলিমুল গায়িব আল্লাহ্ তা’আলার বিশেষ ক্ষমতা হলো এই যে, তিনি সমস্ত গায়িবী খবরা-খবর জানেন। এ বিষয়ে বিদ’আতীদের আক্বীদাহ্ এই যে, নাউযুবিল্লাহ মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আল্লাহ্ তা’আলার ন্যায় গায়িবী খবর জানতেন ও জানেন- যা সরাসরি কুরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াস ও জমহারে ‘উলামাসহ হাকপন্থী সর্বশ্রেণীর মুসলমানদের আক্বীদাহ্র বিপরীত। এ ব্যাপারে খোদ আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ (আরবী) অদৃশ্য বিষয়সমূহের চাবিকাঠি আল্লাহ্র নিকটে, তিনি ব্যতীত উক্ত বিষয়াবলী আর কেউ জানেনা। (সূরা আন’আম ৫৯) এ বিষয়ে ইমাম বুখারী (রহঃ) বর্ণনা করেনঃ (আরবী) অতীতকালের বিভ্রান্ত জাতিসমূহ তাদের নবীগণকে মাত্রাতিরিক্ত মর্যাদা দিতে গিয়ে আল্লাহ্র নামে শির্ক করেছিল। ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টান জাতি ‘উযাইর ও ঈসা (আঃ) -দ্বয়কে আল্লাহ্র পুত্র বানিয়ে তাঁদের পূজা অর্চনা করতে শুরু করেছে এবং বর্তমানের বিভ্রান্ত মুসলমানদের একটা শ্রেণী উল্লেখিত জাতিদ্বয়কে ছাড়িয়ে গিয়ে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আল্লাহ্র সাথে একাকার করে ফেলেছে যা বড়ই পরিতাপের বিষয় বটে। এ জাতীয় বিদ’আতীদেরকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সেই কালজয়ী বাণীটি স্মরণ করিয়ে দিতে চাইঃ (আরবী) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেনঃ মারইয়াম তনয় ‘ঈসা (আঃ) -কে নিয়ে খ্রিস্টানরা যেভাবে বাড়াবাড়ি করছে তোমরা আমাকে নিয়ে সেভাবে বাড়াবাড়ি করোনা, আমি কেবল একজন বান্দা। অতএব তোমরা আমাকে আল্লাহ্র বান্দা ও তাঁর রসূল বলে সম্বোধন করবে।
কেননা আল্লাহ্ তা’আলা উপরোক্ত বিষয়ে স্বীয় কুরআন মাজীদের মাধ্যমেই বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে অন্য কারো কোন অতিরিক্ত চিন্তা-ভাবনা করার অবকাশ নেই। সূরা কাহফের শেষ আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে লক্ষ্য করে এরশাদ করেছেনঃ (আরবী) হে নবী! তুমি বলে দাও, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। (আল-কাহ্ফঃ ১১০ আয়াতাংশ) এ বিষয়ে অন্যত্র আরো এরশাদ হচ্ছেঃ (আরবী) অর্থাৎ আল্লাহ্ তা’আলা মু’মিনদের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য হতেই (ফেরেশতা বা মানুষ নয় এমন কোন ভিন্ন জাতির মধ্য হতে প্রেরণ করেননি বরং) একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন। সূরা আল্ ইমরান, আয়াত নং - ১৬৪। উক্ত আয়াতে উল্লেখিত (আরবী) এই শব্দ দু’টির ব্যাখ্যায় হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে রুহুল মা’আনীতে আল্লামা শায়খ শেহাবুদ্দীন আলুসী-আল্ হানাফী (রহঃ) লিখেছেনঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মানুষ বলে জানা ও তাঁকে মানুষের সন্তান মানুষ বলেই গ্রহণ করা সহীহ হওয়ার জন্য একান্ত শর্ত। তাঁকে ফেরেশতা, জ্বীন, নূরের দ্বারা তৈরী এসব কিছু বলা যাবে না বা চিন্তাও করা যাবে না। যেমন রুহুল মা’আনীর নিন্মোদ্ধৃত ভাষ্যে পরিষ্কার করেই বলা হয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষ ছিলেন, কি আরবীয় মানুষ ছিলেন, এ বিষয়ে জ্ঞাত হওয়া এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মানুষ বলেই জানা ঈমানের জন্য শর্ত না; ফারযি কিফায়াহ (আরবী)? এর জবাব এই যে, উক্ত বিষয়টি ঈমানের জন্য শর্ত বটে। অতঃপর কেউ যদি বলে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সমস্ত মাখলুকের জন্য নবী এটা বিশ্বাস করি, তবে তিনি মানুষ কি জ্বিন, কি ফেরেশতা, বা আরবের কি অনারবের এটা আমি জানিনা। উক্ত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে কাফের। কেননা সে কুরআনের ঘোষণাকে অস্বীকার করেছে। (আরবী) পৃষ্ঠা নং- ১১৩, ৪র্থ খন্ড। অতএব এখানে লক্ষ্যণীয় এই যে, কতিপয় বিভ্রান্ত লোক নিজেদেরকে হানাফী আল্-ক্বাদরী, আল্-চিশ্তী ইত্যাদি নাম দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে অতিমাত্রায় ভক্তি ও শ্রদ্ধা দেখাতে গিয়ে তাঁকে আল্লাহ্র আসনে বসিয়েছে। (আরবি) (আহাদ) ও (আরবি) (আহমাদ) -এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নিজেদের অজ্ঞতাবশতঃ এ ব্যাখ্যাও দিয়েছে, যে (আরবী) ও (আরবী) এর মধ্যে মাত্র একটি মীমের পার্থক্য ছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই। (আরবী) প্রকাশ থাকে। পাক-ভারত উপমহাদেশের বিদ’আতীরা কুরআন ও সহীহ হাদীস বিরোধী সমস্ত কার্যাবলী চালু করে নিজেদের নাম দিয়ে রেখেছে আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামা’আহ। এ যেন বেদানা ফলের মতই অবস্থা। বেদানা ফল দানায় ভর্তি, অথচ নাম তার বেদানা। তথাকথিত (আরবী) (আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামা’আহ) নাম দিয়ে বিদ’আতীরা এ পৃথিবীর এমন কোন বিদ’আত নেই, যা এরা করছে না। যেমন কবর পূজা, পীর পূজা, মীলাদ, ওরশ ওরসেকূল, ইসালে সওয়াব, জশ্নে জুলুস, মিছিল, ঈদে মিলাদুন্নাবী ইত্যাদি ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, এক শ্রেণীর বিদ’আতীরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মর্যাদা তথা অত্যধিক পরিমাণে শান-মান দেয়ার নামে এতোই সীমালঙ্ঘন করছে যে, (আরবী) ‘আলিমুল গায়িব আল্লাহ্ তা’আলার বিশেষ ক্ষমতা হলো এই যে, তিনি সমস্ত গায়িবী খবরা-খবর জানেন। এ বিষয়ে বিদ’আতীদের আক্বীদাহ্ এই যে, নাউযুবিল্লাহ মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আল্লাহ্ তা’আলার ন্যায় গায়িবী খবর জানতেন ও জানেন- যা সরাসরি কুরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াস ও জমহারে ‘উলামাসহ হাকপন্থী সর্বশ্রেণীর মুসলমানদের আক্বীদাহ্র বিপরীত। এ ব্যাপারে খোদ আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ (আরবী) অদৃশ্য বিষয়সমূহের চাবিকাঠি আল্লাহ্র নিকটে, তিনি ব্যতীত উক্ত বিষয়াবলী আর কেউ জানেনা। (সূরা আন’আম ৫৯) এ বিষয়ে ইমাম বুখারী (রহঃ) বর্ণনা করেনঃ (আরবী) অতীতকালের বিভ্রান্ত জাতিসমূহ তাদের নবীগণকে মাত্রাতিরিক্ত মর্যাদা দিতে গিয়ে আল্লাহ্র নামে শির্ক করেছিল। ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টান জাতি ‘উযাইর ও ঈসা (আঃ) -দ্বয়কে আল্লাহ্র পুত্র বানিয়ে তাঁদের পূজা অর্চনা করতে শুরু করেছে এবং বর্তমানের বিভ্রান্ত মুসলমানদের একটা শ্রেণী উল্লেখিত জাতিদ্বয়কে ছাড়িয়ে গিয়ে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আল্লাহ্র সাথে একাকার করে ফেলেছে যা বড়ই পরিতাপের বিষয় বটে। এ জাতীয় বিদ’আতীদেরকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সেই কালজয়ী বাণীটি স্মরণ করিয়ে দিতে চাইঃ (আরবী) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেনঃ মারইয়াম তনয় ‘ঈসা (আঃ) -কে নিয়ে খ্রিস্টানরা যেভাবে বাড়াবাড়ি করছে তোমরা আমাকে নিয়ে সেভাবে বাড়াবাড়ি করোনা, আমি কেবল একজন বান্দা। অতএব তোমরা আমাকে আল্লাহ্র বান্দা ও তাঁর রসূল বলে সম্বোধন করবে।
৩৫৫০
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ
قَتَادَةَ، قَالَ سَأَلْتُ أَنَسًا هَلْ خَضَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ لاَ، إِنَّمَا كَانَ شَىْءٌ فِي صُدْغَيْهِ.
ক্বাতাদাহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আনাস (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
চুলে খেযাব লাগাতেন কি? তিনি বললেন, না। তাঁর কানের পাশে সামান্য কয়টা চুল সাদা
হয়েছিল মাত্র।
৩৫৫১
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ
أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كَانَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَرْبُوعًا، بَعِيدَ مَا بَيْنَ الْمَنْكِبَيْنِ،
لَهُ شَعَرٌ يَبْلُغُ شَحْمَةَ أُذُنِهِ، رَأَيْتُهُ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ، لَمْ
أَرَ شَيْئًا قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهُ. قَالَ يُوسُفُ بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ
أَبِيهِ إِلَى مَنْكِبَيْهِ.
বারাআ
ইব্ন ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাঝারি গড়নের ছিলেন। তাঁর উভয়
কাঁধের মধ্যস্থল প্রশস্ত ছিল। তাঁর মাথার চুল দুই কানের লতি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
আমি তাঁকে লাল ডোরাকাটা জোড় চাদর পরা অবস্থায় দেখেছি। তাঁর চেয়ে বেশি সুন্দর
আমি কখনো কাউকে দেখিনি। ইউসুফ ইব্ন আবূ ইসহাক তাঁর পিতা হতে হাদীস বর্ণনায় বলেন,
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মাথার চুল কাঁধ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
৩৫৫২
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، عَنْ
أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سُئِلَ الْبَرَاءُ أَكَانَ وَجْهُ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم مِثْلَ السَّيْفِ قَالَ لاَ بَلْ مِثْلَ الْقَمَرِ.
আবূ
ইসহাক তাবি-ঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, বারাআ (রহঃ) -কে জিজ্ঞেস করা হল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
-এর চেহারা মুবারক কি তলোয়ারের মত ছিল? তিনি বললেন, না বরং চাঁদের ন্যায় ছিল।
৩৫৫৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مَنْصُورٍ أَبُو عَلِيٍّ،
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ الأَعْوَرُ، بِالْمَصِّيصَةِ حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا جُحَيْفَةَ، قَالَ خَرَجَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْهَاجِرَةِ إِلَى الْبَطْحَاءِ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ
صَلَّى الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ، وَالْعَصْرَ رَكْعَتَيْنِ، وَبَيْنَ يَدَيْهِ
عَنَزَةٌ. {قَالَ شُعْبَةُ} وَزَادَ فِيهِ عَوْنٌ عَنْ أَبِيهِ أَبِي
جُحَيْفَةَ قَالَ كَانَ يَمُرُّ مِنْ وَرَائِهَا الْمَرْأَةُ، وَقَامَ النَّاسُ
فَجَعَلُوا يَأْخُذُونَ يَدَيْهِ، فَيَمْسَحُونَ بِهَا وُجُوهَهُمْ، قَالَ
فَأَخَذْتُ بِيَدِهِ، فَوَضَعْتُهَا عَلَى وَجْهِي، فَإِذَا هِيَ أَبْرَدُ مِنَ
الثَّلْجِ، وَأَطْيَبُ رَائِحَةً مِنَ الْمِسْكِ.
হাকাম
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আবূ জুহাইফাহ (রাঃ) -কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, একদিন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুপুর বেলায় বাতহার দিকে বেরোলেন। সে স্থানে
উযূ করে যুহরের দু’রাকআত ও আসরের দু’ রাক’আত সালাত আদায় করেন। তাঁর সামনে একটি
বর্শা পোঁতা ছিল। বর্শার বাহির দিয়ে নারীরা যাতায়াত করছিল। সালাত শেষে লোকজন
দাঁড়িয়ে গেল এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দু’ হাত ধরে তারা
নিজেদের মাথা ও মুখমণ্ডলে বুলাতে লাগলেন। আমিও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর হাত ধরে আমার মুখমণ্ডলে বুলাতে লাগলাম। তাঁর হাত বরফের থেকেও স্নিগ্ধ
শীতল ও কস্তুরীর থেকেও বেশি সুগন্ধিময় ছিল।
৩৫৫৪
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ،
أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم أَجْوَدَ النَّاسِ، وَأَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ،
حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ، وَكَانَ جِبْرِيلُ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ يَلْقَاهُ
فِي كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ، فَيُدَارِسُهُ الْقُرْآنَ فَلَرَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم أَجْوَدُ بِالْخَيْرِ مِنَ الرِّيحِ الْمُرْسَلَةِ.
ইব্ন
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বাপেক্ষা বেশি দানশীল ছিলেন।
তাঁর দানশীলতা বহুগুন বর্ধিত হত রমাযানের পবিত্র দিনে যখন জিব্রাঈল (আঃ) তাঁর
সঙ্গে দেখা করতেন। জিব্রাঈল (আঃ) রমাযানের প্রতি রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করে কুরআনের
সবক দিতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কল্যাণ বণ্টনে প্রবাহিত
বাতাসের চেয়েও বেশি দানশীল ছিলেন।
৩৫৫৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ
عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ
عَلَيْهَا مَسْرُورًا تَبْرُقُ أَسَارِيرُ وَجْهِهِ، فَقَالَ " أَلَمْ
تَسْمَعِي مَا قَالَ الْمُدْلِجِيُّ لِزَيْدٍ وَأُسَامَةَ ـ وَرَأَى
أَقْدَامَهُمَا ـ إِنَّ بَعْضَ هَذِهِ الأَقْدَامِ مِنْ بَعْضٍ ".
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত আনন্দিত ও খুশী মনে তাঁর নিকট
প্রবেশ করলেন। খুশীর কারণে তাঁর চেহারায় খুশীর চিহ্ন পরিস্ফুট হচ্ছিল। তিনি তখন
‘আয়িশাকে বললেন, হে ‘আয়িশা! তুমি শুননি, মুদলাজী যায়দ ও উসামাহ সম্পর্কে কী
বলেছে? পিতা-পুত্রের শুধু পা দেখে বলল, এ পাগুলোর একটি অন্যটির অংশ।
৩৫৫৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ كَعْبٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ كَعْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ
مَالِكٍ، يُحَدِّثُ حِينَ تَخَلَّفَ عَنْ تَبُوكَ، قَالَ فَلَمَّا سَلَّمْتُ عَلَى
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ يَبْرُقُ وَجْهُهُ مِنَ السُّرُورِ،
وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سُرَّ اسْتَنَارَ وَجْهُهُ،
حَتَّى كَأَنَّهُ قِطْعَةُ قَمَرٍ، وَكُنَّا نَعْرِفُ ذَلِكَ مِنْهُ.
‘আবদুল্লাহ
ইব্ন কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আমার পিতা কা’ব ইব্ন মালিক (রাঃ) -কে তার তাবূক যুদ্ধে না যাওয়ার ঘটনা
বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে
সালাম করলাম, খুশী ও আনন্দে তাঁর চেহারা ঝলমল করে উঠলো। তাঁর চেহারা এমনিই আনন্দে
টগবগ করত। মনে হত যেন চাঁদের একটি টুক্রা। তাঁর মুখমণ্ডলের এ অবস্থা হতে আমরা তা
বুঝতে পারতাম।
৩৫৫৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ
بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" بُعِثْتُ مِنْ خَيْرِ قُرُونِ بَنِي آدَمَ قَرْنًا فَقَرْنًا، حَتَّى كُنْتُ
مِنَ الْقَرْنِ الَّذِي كُنْتُ فِيهِ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি বনি আদমের সর্বোত্তম যুগে আবির্ভূত
হয়েছি। যুগের পর যুগ অতিবাহিত হয়ে আমি সেই যুগেই এসেছি যে যুগ আমার জন্য
নির্দিষ্ট ছিল।
৩৫৫৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم كَانَ يَسْدِلُ شَعَرَهُ، وَكَانَ الْمُشْرِكُونَ يَفْرُقُونَ
رُءُوسَهُمْ فَكَانَ أَهْلُ الْكِتَابِ يَسْدِلُونَ رُءُوسَهُمْ، وَكَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُحِبُّ مُوَافَقَةَ أَهْلِ الْكِتَابِ فِيمَا لَمْ
يُؤْمَرْ فِيهِ بِشَىْءٍ، ثُمَّ فَرَقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
رَأْسَهُ.
ইব্ন
‘আব্বাস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চুল পিছনে দিকে আঁচড়ে রাখতেন আর
মুশ্রিকগণ তাদের চুল দু‘ভাগ করে সিঁথি কেটে রাখত। আহলে কিতাব তাদের চুল পিছন দিকে
আঁচড়ে রাখত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কোন বিষয়ে আল্লাহ্র
নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত আহলে কিতাবের অনুসরণ পছন্দ করতেন। অতঃপর নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চুল দু’ভাগ করে সিঁথি করে রাখতে লাগলেন।
৩৫৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عَمْرٍو ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فَاحِشًا وَلاَ مُتَفَحِّشًا وَكَانَ يَقُولُ " إِنَّ مِنْ خِيَارِكُمْ
أَحْسَنَكُمْ أَخْلاَقًا ".
‘আবদুল্লাহ্
ইব্ন ‘আম্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অশ্লীল ভাষী ও অসদাচরণের অধিকারী
ছিলেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই সর্বোত্তম যে নৈতিকতায়
সর্বোত্তম।
৩৫৬০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا
مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ
رضى الله عنها ـ أَنَّهَا قَالَتْ مَا خُيِّرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
بَيْنَ أَمْرَيْنِ إِلاَّ أَخَذَ أَيْسَرَهُمَا، مَا لَمْ يَكُنْ إِثْمًا، فَإِنْ
كَانَ إِثْمًا كَانَ أَبْعَدَ النَّاسِ مِنْهُ، وَمَا انْتَقَمَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم لِنَفْسِهِ، إِلاَّ أَنْ تُنْتَهَكَ حُرْمَةُ اللَّهِ
فَيَنْتَقِمَ لِلَّهِ بِهَا.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে যখনই দু’টি জিনিসের একটি গ্রহণের
স্বাধীনতা দেয়া হত, তখন তিনি সহজটিই গ্রহণ করতেন যদি তা গুনাহ না হত। গুনাহ হতে
তিনি অনেক দূরে অবস্থান করতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের
ব্যাপারে কখনো প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। তবে আল্লাহ্র সীমারেখা লঙ্ঘন করা হলে
আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করার জন্য প্রতিশোধ নিতেন।
৩৫৬১
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ،
عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ مَا مَسِسْتُ حَرِيرًا وَلاَ
دِيبَاجًا أَلْيَنَ مِنْ كَفِّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، وَلاَ شَمِمْتُ
رِيحًا قَطُّ أَوْ عَرْفًا قَطُّ أَطْيَبَ مِنْ رِيحِ أَوْ عَرْفِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হাতের তালুর চেয়ে মোলায়েম
কোন নরম ও গরদকেও আমি স্পর্শ করিনি। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
-এর শরীরের সুঘ্রাণ অপেক্ষা অধিক সুঘ্রাণ আমি কখনো পাইনি।
৩৫৬২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ،
عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي عُتْبَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَشَدَّ
حَيَاءً مِنَ الْعَذْرَاءِ فِي خِدْرِهَا.
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، وَابْنُ، مَهْدِيٍّ قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، مِثْلَهُ وَإِذَا كَرِهَ شَيْئًا عُرِفَ فِي وَجْهِهِ.
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، وَابْنُ، مَهْدِيٍّ قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، مِثْلَهُ وَإِذَا كَرِهَ شَيْئًا عُرِفَ فِي وَجْهِهِ.
আবূ
সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গৃহবাসিনী পর্দানশীন কুমারীদের
চেয়েও বেশি লজ্জাশীল ছিলেন। মুহাম্মদ (রহঃ).... শু’বাহ (রহঃ) হতে একই রূপ
রিওয়ায়াত বর্ণিত হয়েছে। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন কিছু
অপছন্দ করতেন তা চেহারায় বুঝা যেত।
৩৫৬৩
حَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ الْجَعْدِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ،
عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ
قَالَ مَا عَابَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم طَعَامًا قَطُّ، إِنِ اشْتَهَاهُ
أَكَلَهُ، وَإِلاَّ تَرَكَهُ.
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো কোন খাদ্যকে মন্দ বলতেন না। রুচি
হলে খেতেন না হলে বাদ দিতেন।
৩৫৬৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا بَكْرُ
بْنُ مُضَرَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ مَالِكٍ ابْنِ بُحَيْنَةَ الأَسْدِيِّ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم إِذَا سَجَدَ فَرَّجَ بَيْنَ يَدَيْهِ حَتَّى نَرَى إِبْطَيْهِ. قَالَ
وَقَالَ ابْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا بَكْرٌ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ.
‘আবদুল্লাহ্
ইব্ন মালিক ইব্ন বুহায়নাহ আসাদিইয়ি (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সাজদাহ্ করতেন, তখন উভয়
বাহুকে শরীর হতে এমনভাবে আলাদা করতেন যে, আমরা তাঁর বগল দেখতে পেতাম। ইব্ন বুকাইর
বলেন,
বক্র হাদীস বর্ণনা করে বলেছেন, তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখতে পেতাম।
৩৫৬৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، حَدَّثَنَا
يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّ أَنَسًا ـ رضى
الله عنه ـ حَدَّثَهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ
يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِي شَىْءٍ مِنْ دُعَائِهِ، إِلاَّ فِي الاِسْتِسْقَاءِ،
فَإِنَّهُ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يُرَى بَيَاضُ إِبْطَيْهِ.
وَقَالَ أَبُو مُوسَى دَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَرَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ
وَقَالَ أَبُو مُوسَى دَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَرَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইস্তিস্কায় যতটা
উঠাতেন অন্য কোন দু’আয় তাঁর বাহুদ্বয় এতটা ঊর্ধ্বে উঠাতেন না, কেননা এতে হাত এত
ঊর্ধ্বে উঠাতেন যে তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখা যেত। আবূ মূসা (রহঃ) হাদীস বর্ণনায়
বলেন, আনাস (রাঃ) বলেছেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আর মধ্যে
দু’হাত উপরে উঠিয়েছেন এবং আমি তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখেছি।
৩৫৬৬
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ سَابِقٍ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ مِغْوَلٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَوْنَ
بْنَ أَبِي جُحَيْفَةَ، ذَكَرَ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ دُفِعْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَهْوَ بِالأَبْطَحِ فِي قُبَّةٍ كَانَ بِالْهَاجِرَةِ، خَرَجَ
بِلاَلٌ فَنَادَى بِالصَّلاَةِ، ثُمَّ دَخَلَ فَأَخْرَجَ فَضْلَ وَضُوءِ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَوَقَعَ النَّاسُ عَلَيْهِ يَأْخُذُونَ مِنْهُ،
ثُمَّ دَخَلَ فَأَخْرَجَ الْعَنَزَةَ، وَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى وَبِيصِ سَاقَيْهِ فَرَكَزَ الْعَنَزَةَ، ثُمَّ
صَلَّى الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ وَالْعَصْرَ رَكْعَتَيْنِ، يَمُرُّ بَيْنَ يَدَيْهِ
الْحِمَارُ وَالْمَرْأَةُ.
আবূ
জুহায়ফাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন যে, আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে নেয়া হল। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন আবতাহ নামক জায়গায় দুপুর বেলায় একটি
তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন। বিলাল (রাঃ) তাঁবু হতে বেরিয়ে এসে যুহরের সালাতের আযান
দিলেন এবং আবার প্রবেশ করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উযূর
অবশিষ্ট পানি নিয়ে বেরিয়ে এলেন। লোকজন তা নেওয়ার জন্য ঝাপিয়ে পড়ল। অতঃপর তিনি
আবার তাঁবুতে ঢুকে একটি ছোট্ট বর্শা নিয়ে বেরিয়ে আসলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -ও বেরিয়ে আসলেন। আমি যেন তাঁর পায়ের গোছার উজ্জ্বলতা,
এখনো দেখতে পাচ্ছি। বর্শাটি সম্মুখে পুঁতে রাখলেন। অতঃপর যুহরের দু’ রাক‘আত এবং
পরে আসরের দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। বর্শার বাহির দিয়ে গাধা ও নারীরা
চলাফেরা করছিল।
৩৫৬৭
حَدَّثَنِي الْحَسَنُ بْنُ صَبَّاحٍ الْبَزَّارُ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى
الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُحَدِّثُ حَدِيثًا لَوْ
عَدَّهُ الْعَادُّ لأَحْصَاهُ. وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّهُ قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، عَنْ
عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ أَلاَ يُعْجِبُكَ أَبُو فُلاَنٍ جَاءَ فَجَلَسَ إِلَى
جَانِبِ حُجْرَتِي يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم،
يُسْمِعُنِي ذَلِكَ وَكُنْتُ أُسَبِّحُ فَقَامَ قَبْلَ أَنْ أَقْضِيَ سُبْحَتِي،
وَلَوْ أَدْرَكْتُهُ لَرَدَدْتُ عَلَيْهِ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم لَمْ يَكُنْ يَسْرُدُ الْحَدِيثَ كَسَرْدِكُمْ.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনভাবে কথা বলতেন যে, কোন গণনাকারী গুনতে
চাইলে তাঁর কথাগুলি গণনা করতে পারত।
৩৫৬৮
حَدَّثَنِي الْحَسَنُ بْنُ صَبَّاحٍ الْبَزَّارُ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى
الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُحَدِّثُ حَدِيثًا لَوْ
عَدَّهُ الْعَادُّ لأَحْصَاهُ. وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّهُ قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، عَنْ
عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ أَلاَ يُعْجِبُكَ أَبُو فُلاَنٍ جَاءَ فَجَلَسَ إِلَى
جَانِبِ حُجْرَتِي يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم،
يُسْمِعُنِي ذَلِكَ وَكُنْتُ أُسَبِّحُ فَقَامَ قَبْلَ أَنْ أَقْضِيَ سُبْحَتِي،
وَلَوْ أَدْرَكْتُهُ لَرَدَدْتُ عَلَيْهِ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم لَمْ يَكُنْ يَسْرُدُ الْحَدِيثَ كَسَرْدِكُمْ.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, তুমি অমুকের অবস্থা দেখে কি অবাক হও না? তিনি এসে আমার হুজরার পাশে বসে
আমাকে শুনিয়ে হাদীস বর্ণনা করেন। আমি তখন সালাতে ছিলাম। আমার সালাত শেষ হবার আগেই
তিনি উঠে চলে যান। যদি আমি তাকে পেতাম তবে আমি অবশ্যই তাকে সতর্ক করে দিতাম যে,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের মত দ্রুততার সঙ্গে কথা
বলতেন না।
৬১/২৪. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -এর চোখ বন্ধ থাকত কিন্তু তাঁর অন্তর থাকত বিনিদ্র।
সা‘ঈদ ইব্ন মীনাআ (রহঃ)
জাবির (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উক্ত হাদীসটি
বর্ণনা করেন।
৩৫৬৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ
سَعِيْدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُ
سَأَلَ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا كَيْفَ كَانَتْ صَلَاةُ رَسُوْلِ اللهِ صلى
الله عليه وسلم فِيْ رَمَضَانَ قَالَتْ مَا كَانَ يَزِيْدُ فِيْ رَمَضَانَ وَلَا
فِيْ غَيْرِهِ عَلَى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يُصَلِّيْ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ
فَلَا تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُوْلِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّيْ أَرْبَعًا فَلَا
تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُوْلِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّيْ ثَلَاثًا فَقُلْتُ يَا
رَسُوْلَ اللهِ تَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوْتِرَ قَالَ تَنَامُ عَيْنِيْ وَلَا
يَنَامُ قَلْبِي
আবূ
সালামা ইব্ন ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
‘আয়িশা (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলেন, রমাযান মাসে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সালাত কেমন ছিল? ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমাযান মাসে ও অন্যান্য সব মাসের রাতে এগার রাক‘আতের অধিক
সালাত আদায় রকতেন না। প্রথমে চার রাক‘আত পড়তেন। এ চার রাক‘আত আদায়ের সৌন্দর্য ও
দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। অতঃপর আরো চার রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। এ চার
রাক‘আতের সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। অতঃপর তিন রাক‘আত আদায়
করতেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি কি বিতর সালাত আদায়ের পূর্বে
ঘুমিয়ে পড়েন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার চোখ ঘুমায়,
আমার অন্তর ঘুমায় না।
৩৫৭০
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَخِيْ عَنْ
سُلَيْمَانَ عَنْ شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ نَمِرٍ سَمِعْتُ أَنَسَ
بْنَ مَالِكٍ يُحَدِّثُنَا عَنْ لَيْلَةِ أُسْرِيَ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم مِنْ مَسْجِدِ الْكَعْبَةِ جَاءَهُ ثَلَاثَةُ نَفَرٍ قَبْلَ أَنْ يُوْحَى
إِلَيْهِ وَهُوَ نَائِمٌ فِيْ مَسْجِدِ الْحَرَامِ فَقَالَ أَوَّلُهُمْ أَيُّهُمْ
هُوَ فَقَالَ أَوْسَطُهُمْ هُوَ خَيْرُهُمْ وَقَالَ آخِرُهُمْ خُذُوْا خَيْرَهُمْ
فَكَانَتْ تِلْكَ فَلَمْ يَرَهُمْ حَتَّى جَاءُوْا لَيْلَةً أُخْرَى فِيْمَا يَرَى
قَلْبُهُ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم نَائِمَةٌ عَيْنَاهُ وَلَا يَنَامُ
قَلْبُهُ وَكَذَلِكَ الأَنْبِيَاءُ تَنَامُ أَعْيُنُهُمْ وَلَا تَنَامُ
قُلُوْبُهُمْ فَتَوَلَاهُ جِبْرِيْلُ ثُمَّ عَرَجَ بِهِ إِلَى السَّمَاءِ
আনাস
ইব্ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
মসজিদে কা‘বা হতে রাতে অনুষ্ঠিত ইসরা -এর ঘটনা বর্ণনা করছিলেন যে, তিন ব্যক্তি
তাঁর নিকট হাযির হলেন মি‘রাজ সম্পর্কে ওয়াহী অবতরণের পূর্বে। তখন তিনি মাসজিদুল
হারামে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাঁদের প্রথম জন বলল, তাদের কোন জন তিনি? মাঝের জন উত্তর
দিল, তিনিই তাদের শ্রেষ্ঠ জন। আর শেষজন বলল, শ্রেষ্ঠ জনকে নিয়ে চল। এ রাতে এটুকুই
হলো এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাদেরকে আর দেখেন নাই। অতঃপর
আর এক রাতে তাঁরা আসলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর অন্তর তা
দেখতে পাচ্ছিল। যেহেতু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চোখ ঘুমাত
কিন্তু তাঁর অন্তর কখনও ঘুমাত না। এভাবে সকল আম্বিয়ায়ে কেরামের চোখ ঘুমাত কিন্তু
অন্তর ঘুমাত না। অতঃপর জিব্রাঈল (আঃ) দায়িত্ব গ্রহণ করলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে নিয়ে আকাশের দিকে চড়তে লাগলেন।
এই অধ্যায়ের বাকি হাদিসের
জন্য নিচের লিংকে ক্লিক রুরন
No comments