সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য" হাদিস নং - ৩৫৭১ থেকে ৩৬৪৮

ইসলামে নবুওয়াতের নিদর্শনাবলী।

৩৫৭১

حَدَّثَنَا أَبُوْ الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا سَلْمُ بْنُ زَرِيْرٍ سَمِعْتُ أَبَا رَجَاءٍ قَالَ حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ أَنَّهُمْ كَانُوْا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ مَسِيْرٍ فَأَدْلَجُوْا لَيْلَتَهُمْ حَتَّى إِذَا كَانَ وَجْهُ الصُّبْحِ عَرَّسُوْا فَغَلَبَتْهُمْ أَعْيُنُهُمْ حَتَّى ارْتَفَعَتْ الشَّمْسُ فَكَانَ أَوَّلَ مَنْ اسْتَيْقَظَ مِنْ مَنَامِهِ أَبُوْ بَكْرٍ وَكَانَ لَا يُوقَظُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ مَنَامِهِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ فَاسْتَيْقَظَ عُمَرُ فَقَعَدَ أَبُوْ بَكْرٍ عِنْدَ رَأْسِهِ فَجَعَلَ يُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ صَوْتَهُ حَتَّى اسْتَيْقَظَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلَ وَصَلَّى بِنَا الْغَدَاةَ فَاعْتَزَلَ رَجُلٌ مِنْ الْقَوْمِ لَمْ يُصَلِّ مَعَنَا فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ يَا فُلَانُ مَا يَمْنَعُكَ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَنَا قَالَ أَصَابَتْنِيْ جَنَابَةٌ فَأَمَرَهُ أَنْ يَتَيَمَّمَ بِالصَّعِيْدِ ثُمَّ صَلَّى وَجَعَلَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ رَكُوْبٍ بَيْنَ يَدَيْهِ وَقَدْ عَطِشْنَا عَطَشًا شَدِيْدًا فَبَيْنَمَا نَحْنُ نَسِيْرُ إِذَا نَحْنُ بِامْرَأَةٍ سَادِلَةٍ رِجْلَيْهَا بَيْنَ مَزَادَتَيْنِ فَقُلْنَا لَهَا أَيْنَ الْمَاءُ فَقَالَتْ إِنَّهُ لَا مَاءَ فَقُلْنَا كَمْ بَيْنَ أَهْلِكِ وَبَيْنَ الْمَاءِ قَالَتْ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ فَقُلْنَا انْطَلِقِيْ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ وَمَا رَسُوْلُ اللهِ فَلَمْ نُمَلِّكْهَا مِنْ أَمْرِهَا حَتَّى اسْتَقْبَلْنَا بِهَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَحَدَّثَتْهُ بِمِثْلِ الَّذِيْ حَدَّثَتْنَا غَيْرَ أَنَّهَا حَدَّثَتْهُ أَنَّهَا مُؤْتِمَةٌ فَأَمَرَ بِمَزَادَتَيْهَا فَمَسَحَ فِي الْعَزْلَاوَيْنِ فَشَرِبْنَا عِطَاشًا أَرْبَعِيْنَ رَجُلًا حَتَّى رَوِيْنَا فَمَلَانَا كُلَّ قِرْبَةٍ مَعَنَا وَإِدَاوَةٍ غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ نَسْقِ بَعِيْرًا وَهِيَ تَكَادُ تَنِضُّ مِنْ الْمِلْءِ ثُمَّ قَالَ هَاتُوْا مَا عِنْدَكُمْ فَجُمِعَ لَهَا مِنْ الْكِسَرِ وَالتَّمْرِ حَتَّى أَتَتْ أَهْلَهَا قَالَتْ لَقِيْتُ أَسْحَرَ النَّاسِ أَوْ هُوَ نَبِيٌّ كَمَا زَعَمُوْا فَهَدَى اللهُ ذَاكَ الصِّرْمَ بِتِلْكَ الْمَرْأَةِ فَأَسْلَمَتْ وَأَسْلَمُوْا
‘ইমরান ইব্ন হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক সফরে তাঁরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে ছিলেন। সারা রাত পথ চলার পর যখন ভোর কাছাকাছি হল, তখন বিশ্রাম নেয়ার জন্য থেমে গেলেন এবং গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে পড়লেন। অবশেষে সূর্য উদিত হয়ে অনেক উপরে উঠে গেল, [ইমরান (রাঃ) বলেন] যিনি সর্বপ্রথম ঘুম হতে জাগলেন তিনি হলেন আবূ বকর (রাঃ)। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে জাগ্রত না হলে তাঁকে জাগানো হত না। অতঃপর ‘উমর (রাঃ) জাগলেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁর শিয়রের নিকট গিয়ে বসে উচ্চৈঃস্বরে ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে লাগলেন। শেষে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জেগে উঠলেন এবং অন্যত্র চলে গিয়ে অবতরণ করে আমাদেরকে নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করলেন। তখন এক ব্যক্তি আমাদের সাথে সালাত আদায় না করে দূরে দাঁড়িয়ে থাকল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত শেষ করে বললেন, হে অমুক! আমাদের সঙ্গে সালাত আদায় করতে কিসে বাধা দিল? লোকটি বলল, আমি অপবিত্র হয়েছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে পাক মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করার নির্দেশ দিলেন, অতঃপর সে সালাত আদায় করল। (ইমরান (রাঃ) বলেন) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে অগ্রবর্তী দলের সঙ্গে পাঠিয়ে দিলেন এবং আমরা ভীষণ তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়লাম। এই অবস্থায় আমরা পথ চলছি। হঠাৎ উষ্ট্রে আরোহী এক মহিলা আমাদের নজরে পড়ল। সে পানি ভর্তি দু‘টি মশকের মাঝখানে পা ঝুলিয়ে বসে ছিল। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম, পানি কোথায়? সে বলল (আশেপাশে) কোথাও পানি নেই। আমরা বললাম, তোমার ও পানির জায়গার মধ্যে দূরত্ব কতটুকু? সে বলল একদিন ও এক রাতের দূরত্ব। আমরা তাকে বললাম, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট চল। সে বলল, আল্লাহ্‌র রাসূল কী? আমরা তাকে যেতে না দিয়ে তাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট নিয়ে গেলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এসেও ঐ রকম কথাই বলল যা সে আমাদের সঙ্গে বলেছিল। তবে সে তাঁর নিকট বলল, সে কয়েকজন ইয়াতীম সন্তানের মা। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মশক দু‘টি নামিয়ে ফেলতে আদেশ করলেন। অতঃপর তিনি মশক দু‘টির মুখে হাত বুলালেন। আমরা তৃষ্ণার্ত চল্লিশ জন মানুষ পানি পান করে পিপাসা মিটালাম। অতঃপর আমাদের সকল মশক, বাসনপত্র পানি ভর্তি করে নিলাম। তবে উটগুলোকে পানি পান করান হয়নি। এত সবের পরও মহিলার মশকগুলো এত পানি ভর্তি ছিল যে তা ফেটে যাবার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের নিকট যা কিছু আছে উপস্থিত কর। কিছু খেজুর ও রুটির টুকরা জমা করে তাঁকে দেয়া হল। এ নিয়ে নারীটি খুশীর সঙ্গে তার গৃহে ফিরে গেল। গৃহে গিয়ে সকলের নিকট সে বলল, আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল, এক মহা যাদুকরের সঙ্গে অথবা মানুষ যাকে নবী বলে ধারণা করে তার সঙ্গে। আল্লাহ্ এই মহিলার মাধ্যমে এ বস্তিবাসীকে হিদায়াত দান করলেন। স্ত্রীলোকটি নিজেও ইসলাম গ্রহণ করল এবং বস্তিবাসী সকলেই ইসলাম গ্রহণ করল।

৩৫৭২

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ عَدِيٍّ عَنْ سَعِيْدٍ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ أُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِإِنَاءٍ وَهُوَ بِالزَّوْرَاءِ فَوَضَعَ يَدَهُ فِي الْإِنَاءِ فَجَعَلَ الْمَاءُ يَنْبُعُ مِنْ بَيْنِ أَصَابِعِهِ فَتَوَضَّأَ الْقَوْمُ قَالَ قَتَادَةُ قُلْتُ لِأَنَسٍ كَمْ كُنْتُمْ قَالَ ثَلَاثَ مِائَةٍ أَوْ زُهَاءَ ثَلَاثِ مِائَةٍ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট একটি পানির পাত্র আনা হল, তখন তিনি যাওরা নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাত ঐ পাত্রে রেখে দিলেন আর তখনই পানি অঙ্গুলির ফাঁক দিয়ে উপচে পড়তে লাগল। ঐ পানি দিয়ে উপস্থিত সকলেই উযূ করে নিলেন। ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা কতজন ছিলেন? তিনি বললেন, আমরা তিনশ’ কিংবা প্রায় তিনশ’ জন ছিলাম।

৩৫৭৩

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّهُ قَالَ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَحَانَتْ صَلَاةُ الْعَصْرِ فَالْتُمِسَ الْوَضُوءُ فَلَمْ يَجِدُوْهُ فَأُتِيَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِوَضُوءٍ فَوَضَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ فِيْ ذَلِكَ الْإِنَاءِ فَأَمَرَ النَّاسَ أَنْ يَتَوَضَّئُوْا مِنْهُ فَرَأَيْتُ الْمَاءَ يَنْبُعُ مِنْ تَحْتِ أَصَابِعِهِ فَتَوَضَّأَ النَّاسُ حَتَّى تَوَضَّئُوْا مِنْ عِنْدِ آخِرِهِمْ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখতে পেলাম যখন ‘আসরের সালাতের সময় সন্নিকট। সকলেই পেরেশান হয়ে পানি খুঁজছেন কিন্তু পানি পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উযূর পানি আনা হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে পাত্রে তাঁর হাত রেখে দিলেন এবং সকলকে ঐ পাত্রের পানি দ্বারা উযূ করতে নির্দেশ দিলেন। আমি দেখলাম তাঁর হাতের নীচ হতে পানি সজোরে উথ্লে পড়ছিল। তাদের শেষ ব্যক্তিটি পর্যন্ত সকলেই এই পানি দিয়ে উযূ করলেন।

৩৫৭৪

حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مُبَارَكٍ حَدَّثَنَا حَزْمٌ قَالَ سَمِعْتُ الْحَسَنَ قَالَ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ قَالَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَعْضِ مَخَارِجِهِ وَمَعَهُ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ فَانْطَلَقُوْا يَسِيْرُوْنَ فَحَضَرَتْ الصَّلَاةُ فَلَمْ يَجِدُوْا مَاءً يَتَوَضَّئُوْنَ فَانْطَلَقَ رَجُلٌ مِنْ الْقَوْمِ فَجَاءَ بِقَدَحٍ مِنْ مَاءٍ يَسِيْرٍ فَأَخَذَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَتَوَضَّأَ ثُمَّ مَدَّ أَصَابِعَهُ الأَرْبَعَ عَلَى الْقَدَحِ ثُمَّ قَالَ قُومُوْا فَتَوَضَّئُوْا فَتَوَضَّأَ الْقَوْمُ حَتَّى بَلَغُوْا فِيْمَا يُرِيْدُوْنَ مِنْ الْوَضُوءِ وَكَانُوْا سَبْعِيْنَ أَوْ نَحْوَهُ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক সফরে বেরিয়ে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে সাহাবাগণও ছিলেন। তারা চলতে লাগলেন, তখন সালাতের সময় হয়ে গেল, কিন্তু উযূ করার জন্য কোথাও পানি পাওয়া গেল না। কাফেলার এক ব্যক্তি সামান্য পানিসহ একটি পেয়ালা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উপস্থিত করলেন। তিনি পেয়ালাটি হাতে নিয়ে তারই পানি দ্বারা উযূ করলেন এবং তাঁর হাতের চারটি আঙ্গুল পেয়ালার মধ্যে সোজা করে ধরে রাখলেন। আর বললেন, উঠ তোমরা উযূ কর। সকলেই ইচ্ছামত উযূ করে নিলেন। তারা ছিলেন সত্তর বা এর কাছাকাছি।

৩৫৭৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُنِيْرٍ سَمِعَ يَزِيْدَ أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ قَالَ حَضَرَتْ الصَّلَاةُ فَقَامَ مَنْ كَانَ قَرِيْبَ الدَّارِ مِنْ الْمَسْجِدِ يَتَوَضَّأُ وَبَقِيَ قَوْمٌ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمِخْضَبٍ مِنْ حِجَارَةٍ فِيْهِ مَاءٌ فَوَضَعَ كَفَّهُ فَصَغُرَ الْمِخْضَبُ أَنْ يَبْسُطَ فِيْهِ كَفَّهُ فَضَمَّ أَصَابِعَهُ فَوَضَعَهَا فِي الْمِخْضَبِ فَتَوَضَّأَ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ جَمِيْعًا قُلْتُ كَمْ كَانُوْا قَالَ ثَمَانُوْنَ رَجُلًا
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালাতের সময় উপস্থিত হল। যাদের বাড়ি মসজিদের নিকটে ছিল তারা উযূ করার জন্য নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেলেন। কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক গেলেন না। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সামনে পাথরের তৈরি একটি পাত্র আনা হল। এতে সামান্য পানি ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ পাত্রে তাঁর হাত রাখলেন। কিন্তু পাত্রটি ছোট্ট হওয়ার কারণে হাতের আঙ্গুলগুলো বিস্তৃত করতে পারলেন না বরং একত্রিত করে রেখে দিলেন। অতঃপর উপস্থিত লোকেরা ঐ পানি দ্বারাই উযূ করে নিল। হুমাইদ (রহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলাম আপনারা কতজন ছিলেন? বললেন, আশি জন।

৩৫৭৬

حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ عَطِشَ النَّاسُ يَوْمَ الْحُدَيْبِيَةِ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ يَدَيْهِ رِكْوَةٌ فَتَوَضَّأَ فَجَهِشَ النَّاسُ نَحْوَهُ فَقَالَ مَا لَكُمْ قَالُوْا لَيْسَ عِنْدَنَا مَاءٌ نَتَوَضَّأُ وَلَا نَشْرَبُ إِلَّا مَا بَيْنَ يَدَيْكَ فَوَضَعَ يَدَهُ فِي الرِّكْوَةِ فَجَعَلَ الْمَاءُ يَثُوْرُ بَيْنَ أَصَابِعِهِ كَأَمْثَالِ الْعُيُونِ فَشَرِبْنَا وَتَوَضَّأْنَا قُلْتُ كَمْ كُنْتُمْ قَالَ لَوْ كُنَّا مِائَةَ أَلْفٍ لَكَفَانَا كُنَّا خَمْسَ عَشْرَةَ مِائَةً
জাবির ইব্ন ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুদাইবিয়ায় অবস্থানের সময় একদা সাহাবাগণ পিপাসায় খুব কাতর হয়ে পড়লেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সামনে একটি পাত্রে অল্প পানি ছিল। তিনি উযূ করলেন। তাঁর নিকট পানি আছে ধারণা করে সকলে সেদিকে গেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের কী হয়েছে? তাঁরা বললেন, আপনার সামনের পাত্রের সামান্য পানি ছাড়া উযূ ও পান করার মত পানি আমাদের নিকট নাই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ পাত্রে তাঁর হাত রাখলেন। তখনই তাঁর হাত উপচে ঝর্ণা ধারার মত পানি ছুটে বের হতে লাগলো। আমরা সকলেই পানি পান করলাম ও উযূ করলাম। সারিম (একজন রাবী) বলেন, আমি জাবির (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা কতজন ছিলেন? তিনি বললেন, আমরা যদি এক লক্ষও হতাম তবুও আমাদের জন্য পানি যথেষ্ট হত। আমরা ছিলাম পনেরশ।’

৩৫৭৭

حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ الْبَرَاءِ قَالَ كُنَّا يَوْمَ الْحُدَيْبِيَةِ أَرْبَعَ عَشْرَةَ مِائَةً وَالْحُدَيْبِيَةُ بِئْرٌ فَنَزَحْنَاهَا حَتَّى لَمْ نَتْرُكْ فِيْهَا قَطْرَةً فَجَلَسَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى شَفِيْرِ الْبِئْرِ فَدَعَا بِمَاءٍ فَمَضْمَضَ وَمَجَّ فِي الْبِئْرِ فَمَكَثْنَا غَيْرَ بَعِيْدٍ ثُمَّ اسْتَقَيْنَا حَتَّى رَوِيْنَا وَرَوَتْ أَوْ صَدَرَتْ رَكَائِبُنَا
বারা’আ (ইবনু ‘আযিব) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে হুদাইবিয়ায় চৌদ্দশ’ লোক ছিলাম। হুদাইবিয়াহ একটি কূপ, আমরা তা থেকে পানি এমন ভাবে উঠিয়ে নিলাম যে তাতে এক ফোঁটা পানিও অবশিষ্ট থাকল না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কূপের কিনারায় বসে কিছু পানি আনার আদেশ করলেন। তিনি কুলি করে ঐ পানি কূপে নিক্ষেপ করলেন। অল্প সময় অপেক্ষা করলাম। তখন কূপটি পানিতে পূর্ণ হয়ে গেল। আমরা পানি পান করে তৃপ্তি লাভ করলাম, আমাদের উটগুলোও পানি পান করে পরিতৃপ্ত হল। অথবা বলেছেন আমাদের উটগুলো পানি পান করে ফিরল।

৩৫৭৮

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ طَلْحَةَ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ قَالَ أَبُوْ طَلْحَةَ لِأُمِّ سُلَيْمٍ لَقَدْ سَمِعْتُ صَوْتَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم ضَعِيْفًا أَعْرِفُ فِيْهِ الْجُوعَ فَهَلْ عِنْدَكِ مِنْ شَيْءٍ قَالَتْ نَعَمْ فَأَخْرَجَتْ أَقْرَاصًا مِنْ شَعِيْرٍ ثُمَّ أَخْرَجَتْ خِمَارًا لَهَا فَلَفَّتْ الْخُبْزَ بِبَعْضِهِ ثُمَّ دَسَّتْهُ تَحْتَ يَدِيْ وَلَاثَتْنِيْ بِبَعْضِهِ ثُمَّ أَرْسَلَتْنِيْ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَذَهَبْتُ بِهِ فَوَجَدْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَسْجِدِ وَمَعَهُ النَّاسُ فَقُمْتُ عَلَيْهِمْ فَقَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم آرْسَلَكَ أَبُوْ طَلْحَةَ فَقُلْتُ نَعَمْ قَالَ بِطَعَامٍ فَقُلْتُ نَعَمْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِمَنْ مَعَهُ قُومُوْا فَانْطَلَقَ وَانْطَلَقْتُ بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ حَتَّى جِئْتُ أَبَا طَلْحَةَ فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ أَبُوْ طَلْحَةَ يَا أُمَّ سُلَيْمٍ قَدْ جَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِالنَّاسِ وَلَيْسَ عِنْدَنَا مَا نُطْعِمُهُمْ فَقَالَتْ اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ فَانْطَلَقَ أَبُوْ طَلْحَةَ حَتَّى لَقِيَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَقْبَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُوْ طَلْحَةَ مَعَهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلُمِّيْ يَا أُمَّ سُلَيْمٍ مَا عِنْدَكِ فَأَتَتْ بِذَلِكَ الْخُبْزِ فَأَمَرَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَفُتَّ وَعَصَرَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ عُكَّةً فَأَدَمَتْهُ ثُمَّ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْهِ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَقُوْلَ ثُمَّ قَالَ ائْذَنْ لِعِشَرَةٍ فَأَذِنَ لَهُمْ فَأَكَلُوْا حَتَّى شَبِعُوْا ثُمَّ خَرَجُوْا ثُمَّ قَالَ ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ فَأَذِنَ لَهُمْ فَأَكَلُوْا حَتَّى شَبِعُوْا ثُمَّ خَرَجُوْا ثُمَّ قَالَ ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ فَأَذِنَ لَهُمْ فَأَكَلُوْا حَتَّى شَبِعُوْا ثُمَّ خَرَجُوْا ثُمَّ قَالَ ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ فَأَكَلَ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ وَشَبِعُوْا وَالْقَوْمُ سَبْعُوْنَ أَوْ ثَمَانُوْنَ رَجُلًا
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ ত্বলহা (রাঃ) উম্মু সুলায়মকে বললেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কণ্ঠস্বর দুর্বল শুনেছি। আমি তাঁর মধ্যে ক্ষুধা বুঝতে পেরেছি। তোমার নিকট খাবার কিছু আছে কি? তিনি বললেন, হাঁ আছে। এই বলে তিনি কয়েকটা যবের রুটি বের করলেন। অতঃপর তাঁর একখানা ওড়না বের করে কিয়দংশ দিয়ে রুটিগুলো মুড়ে আমার হাতে গোপন করে রেখে দিলেন ও ওড়নার অপর অংশ আমার শরীরে জড়িয়ে দিলেন এবং আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট পাঠালেন। রাবী আনাস বলেন, আমি তাঁর নিকট গেলাম। ঐ সময় তিনি কতক লোকসহ মসজিদে ছিলেন। আমি গিয়ে তাঁদের সামনে দাঁড়ালাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখে বললেন, তোমাকে আবূ ত্বলহা পাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি, হাঁ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, খাওয়ার দাও’আত দিয়ে পাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি- হাঁ। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সঙ্গীদেরকে বললেন, চল, আবূ ত্বলহা আমাকে দাও’আত করেছে। আমি তাঁদের আগেই চলে গিয়ে আবূ ত্বলহা (রাঃ) -কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর আগমনের কথা শুনালাম। এতদশ্রবণে আবূ ত্বলহা (রাঃ) বলেন, হে উম্মু সুলায়ম! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সঙ্গী সাথীদেরকে নিয়ে আসছেন। তাঁদেরকে খাওয়ানোর মত কিছু আমাদের নিকট নেই। উম্মু সুলায়ম (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। আবূ ত্বলহা (রাঃ) তাঁদেরকে স্বাগত জানানোর জন্য বাড়ি হতে কিছুদূর এগুলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে দেখা করলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ ত্বলহা (রাঃ) -কে সঙ্গে নিয়ে তার ঘরে আসলেন, আর বললেন, হে উম্মু সুলায়ম! তোমার নিকট যা কিছু আছে নিয়ে এসো। তিনি যবের ঐ রুটিগুলি হাজির করলেন এবং তাঁর নির্দেশে রুটিগুলো টুকরা টুকরা করা হল। উম্মু সুলায়ম ঘিয়ের পাত্র ঝেড়ে কিছু ঘি বের করে তরকারী হিসেবে উপস্থিত করলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঠ করে তাতে ফুঁ দিলেন অতঃপর দশজনকে নিয়ে আসতে বললেন। তাঁরা দশজন আসলেন এবং রুটি খেয়ে তৃপ্ত হয়ে চলে গেলেন। অতঃপর আরো দশজনকে আসতে বলা হল। তারা আসলেন এবং তৃপ্তি সহকারে রুটি খেয়ে চলে গেলেন। আবার আরো দশজনকে আসতে বলা হল। তাঁরাও আসলেন এবং পেট পুরে খেয়ে নিলেন। ঐভাবে উপস্থিত সকলেই রুটি খেয়ে তৃপ্ত হলেন। সর্বমোট সত্তর বা আশিজন লোক ছিলেন।

৩৫৭৯

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا أَبُوْ أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ كُنَّا نَعُدُّ الْآيَاتِ بَرَكَةً وَأَنْتُمْ تَعُدُّوْنَهَا تَخْوِيْفًا كُنَّا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَفَرٍ فَقَلَّ الْمَاءُ فَقَالَ اطْلُبُوْا فَضْلَةً مِنْ مَاءٍ فَجَاءُوْا بِإِنَاءٍ فِيْهِ مَاءٌ قَلِيْلٌ فَأَدْخَلَ يَدَهُ فِي الْإِنَاءِ ثُمَّ قَالَ حَيَّ عَلَى الطَّهُوْرِ الْمُبَارَكِ وَالْبَرَكَةُ مِنْ اللهِ فَلَقَدْ رَأَيْتُ الْمَاءَ يَنْبُعُ مِنْ بَيْنِ أَصَابِعِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَقَدْ كُنَّا نَسْمَعُ تَسْبِيْحَ الطَّعَامِ وَهُوَ يُؤْكَلُ
আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নিদর্শনাবলীকে বরকতময় মনে করতাম আর তোমরা ঐসব ঘটনাকে ভীতিকর মনে কর। আমরা আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে কোন এক সফরে ছিলাম। আমাদের পানি কমে আসলো। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, অতিরিক্ত পানি খোঁজ কর। (খুঁজে) সাহাবীগণ একটি পাত্র নিয়ে আসলেন যার ভিতর সামান্য পানি ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাত ঐ পাত্রের ভিতর ঢুকিয়ে দিলেন এবং ঘোষণা করলেন, বরকতময় পানি নিতে সকলেই এসো। এ বরকত আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ হতে দেয়া হয়েছে। তখন আমি দেখতে পেলাম আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে পানি উপচে পড়ছে। কখনও আমরা খাবারের তাসবীহ পাঠ শুনতাম আর তা খাওয়া হত।

৩৫৮০

حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَامِرٌ قَالَ حَدَّثَنِيْ جَابِرٌ أَنَّ أَبَاهُ تُوُفِّيَ وَعَلَيْهِ دَيْنٌ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ إِنَّ أَبِيْ تَرَكَ عَلَيْهِ دَيْنًا وَلَيْسَ عِنْدِيْ إِلَّا مَا يُخْرِجُ نَخْلُهُ وَلَا يَبْلُغُ مَا يُخْرِجُ سِنِيْنَ مَا عَلَيْهِ فَانْطَلِقْ مَعِيْ لِكَيْ لَا يُفْحِشَ عَلَيَّ الْغُرَمَاءُ فَمَشَى حَوْلَ بَيْدَرٍ مِنْ بَيَادِرِ التَّمْرِ فَدَعَا ثَمَّ آخَرَ ثُمَّ جَلَسَ عَلَيْهِ فَقَالَ انْزِعُوْهُ فَأَوْفَاهُمْ الَّذِيْ لَهُمْ وَبَقِيَ مِثْلُ مَا أَعْطَاهُمْ
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর পিতা (‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) উহুদ যুদ্ধে) ঋণ রেখে শাহাদাত লাভ করেন। তখন আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, আমার পিতা অনেক ঋণ রেখে গেছেন। আমার কাছে বাগানের কিছু খেজুর ছাড়া অন্য কোন মাল নেই। কয়েক বছরের খেজুর একত্র করলেও তাঁর ঋণ শোধ হবে না। আপনি দয়া করে আমার সঙ্গে চলুন, যাতে পাওনাদার আমার প্রতি কঠোর মনোভাব গ্রহণ না করে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সঙ্গে গেলেন এবং খেজুরের একটি স্তূপের চারপাশে ঘুরে দু’আ করলেন। অতঃপর অন্য স্তূপের নিকটে গেলেন এবং এর উপরে বসলেন এবং জাবির (রাঃ) -কে বললেন, খেজুর বের করে দিতে থাক। সকল পাওনাদারের প্রাপ্য শোধ হয়ে গেল আর তাদের যত দিলেন তত থেকে গেল।

৩৫৮১

حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ عَنْ أَبِيْهِ حَدَّثَنَا أَبُوْ عُثْمَانَ أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ أَصْحَابَ الصُّفَّةِ كَانُوْا أُنَاسًا فُقَرَاءَ وَأَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَرَّةً مَنْ كَانَ عِنْدَهُ طَعَامُ اثْنَيْنِ فَلْيَذْهَبْ بِثَالِثٍ وَمَنْ كَانَ عِنْدَهُ طَعَامُ أَرْبَعَةٍ فَلْيَذْهَبْ بِخَامِسٍ أَوْ سَادِسٍ أَوْ كَمَا قَالَ وَأَنَّ أَبَا بَكْرٍ جَاءَ بِثَلَاثَةٍ وَانْطَلَقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَشَرَةٍ وَأَبُوْ بَكْرٍ ثَلَاثَةً قَالَ فَهُوَ أَنَا وَأَبِيْ وَأُمِّيْ وَلَا أَدْرِيْ هَلْ قَالَ امْرَأَتِيْ وَخَادِمِيْ بَيْنَ بَيْتِنَا وَبَيْنَ بَيْتِ أَبِيْ بَكْرٍ وَأَنَّ أَبَا بَكْرٍ تَعَشَّى عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ لَبِثَ حَتَّى صَلَّى الْعِشَاءَ ثُمَّ رَجَعَ فَلَبِثَ حَتَّى تَعَشَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَ بَعْدَ مَا مَضَى مِنْ اللَّيْلِ مَا شَاءَ اللهُ قَالَتْ لَهُ امْرَأَتُهُ مَا حَبَسَكَ عَنْ أَضْيَافِكَ أَوْ ضَيْفِكَ قَالَ أَوَعَشَّيْتِهِمْ قَالَتْ أَبَوْا حَتَّى تَجِيءَ قَدْ عَرَضُوْا عَلَيْهِمْ فَغَلَبُوْهُمْ فَذَهَبْتُ فَاخْتَبَأْتُ فَقَالَ يَا غُنْثَرُ فَجَدَّعَ وَسَبَّ وَقَالَ كُلُوْا وَقَالَ لَا أَطْعَمُهُ أَبَدًا قَالَ وَايْمُ اللهِ مَا كُنَّا نَأْخُذُ مِنْ اللُّقْمَةِ إِلَّا رَبَا مِنْ أَسْفَلِهَا أَكْثَرُ مِنْهَا حَتَّى شَبِعُوْا وَصَارَتْ أَكْثَرَ مِمَّا كَانَتْ قَبْلُ فَنَظَرَ أَبُوْ بَكْرٍ فَإِذَا شَيْءٌ أَوْ أَكْثَرُ قَالَ لِامْرَأَتِهِ يَا أُخْتَ بَنِيْ فِرَاسٍ قَالَتْ لَا وَقُرَّةِ عَيْنِيْ لَهِيَ الْآنَ أَكْثَرُ مِمَّا قَبْلُ بِثَلَاثِ مَرَّاتٍ فَأَكَلَ مِنْهَا أَبُوْ بَكْرٍ وَقَالَ إِنَّمَا كَانَ الشَّيْطَانُ يَعْنِيْ يَمِيْنَهُ ثُمَّ أَكَلَ مِنْهَا لُقْمَةً ثُمَّ حَمَلَهَا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَصْبَحَتْ عِنْدَهُ وَكَانَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ قَوْمٍ عَهْدٌ فَمَضَى الأَجَلُ فَتَفَرَّقْنَا اثْنَا عَشَرَ رَجُلًا مَعَ كُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمْ أُنَاسٌ اللهُ أَعْلَمُ كَمْ مَعَ كُلِّ رَجُلٍ غَيْرَ أَنَّهُ بَعَثَ مَعَهُمْ قَالَ أَكَلُوْا مِنْهَا أَجْمَعُوْنَ أَوْ كَمَا قَالَ وَغَيْرُهُ يَقُوْلُ فَعَرَفْنَا مِنْ الْعِرَافَةِ
‘আবদুর রাহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আসহাবে সুফফায় কতক অসহায় গরীব লোক ছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার বললেন, যার ঘরে দু’জনের খাবার আছে সে যেন এদের মধ্য হতে তৃতীয় একজন নিয়ে যায়। আর যার ঘরে চার জনের খাবার রয়েছে সে এদের মধ্য হতে পঞ্চম একজন বা ষষ্ঠ একজনকে নিয়ে যায় অথবা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা বলেছেন। আবূ বকর (রাঃ) তিনজন নিলেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিয়ে গেলেন দশজন এবং আবূ বকর (রাঃ) তিনজন। ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন, আমি, আমার আব্বা ও আম্মা। আবূ উসমান (রাঃ) রাবী বলেন, আমার মনে নাই ‘আবদুর রাহমান (রাঃ) কি এও বলেছিলেন যে, আমার স্ত্রী ও আমাদের পিতা-পুত্রের একজন গৃহভৃত্যও ছিল। আবূ বকর (রাঃ) ঐ রাতে নবীজীর বাড়িতেই খেয়ে নিলেন এবং ইশার সালাত পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করলেন। ইশার সালাতের পর পুনরায় তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর গৃহে গমন করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর রাতের খাবার খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করলেন। অনেক রাতের পর বাড়ী ফিরলেন। তখন তাঁর স্ত্রী তাঁকে বললেন, মেহমান পাঠিয়ে আপনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন? তিনি বললেন, তাদের কি এখনো রাতের খাবার দাওনি? স্ত্রী বললেন, আপনার না আসা পর্যন্ত তারা খাবার খেতে রাযী হননি। তাদেরকে ঘরের লোকজন খাবার দিয়েছিল। কিন্তু তাদের অসম্মতির নিকট আমাদের লোকজন হার মেনেছে। ‘আবদুর রাহমান (রাঃ) বলেন, আমি তাড়াতাড়ি সরে পড়লাম। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, ওরে বেওকুফ! আহম্মক! আরো কিছু কড়া কথা বলে ফেললেন। অতঃপর মেহমান পক্ষকে সম্বোধন করে বললেন, আপনারা খেয়ে নিন। আমি কিছুতেই খাব না। ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র কসম, আমরা যখন গ্রাস তুলে নেই তখন দেখি পাত্রের খাবার অনেক বেড়ে যায়। খাওয়ার শেষে আবূ বকর (রাঃ) দেখলেন তৃপ্ত হয়ে আহারের পরেও পাত্রে খাবার আগের চেয়ে বেশি রয়ে গেছে। তখন স্ত্রীকে বললেন, হে বনী ফিরাস গোত্রের বোন! ব্যাপার কি? তিনি বললেন, হে আমার নয়নমণি! খাদ্যের পরিমাণ এখন তিনগুনের চেয়েও অধিক রয়েছে। আবূ বকর (রাঃ) তা হতে কয়েক লোকমা খেলেন এবং বললেন, আমার কসম শয়তানের প্ররোচনায় ছিল। অতঃপর অবশিষ্ট খাদ্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট নিয়ে গেলেন এবং ভোর পর্যন্ত ঐ খাদ্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হিফাযতে রইল। রাবী বলেন, আমাদের ও অন্য একটি গোত্রের মধ্যে সন্ধি ছিল। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াতে তাদের মোকাবেলা করার জন্য আমাদের বার জনকে নেতা বানানো হল। প্রত্যেক নেতার অধীনে আবার কয়েকজন করে লোক ছিল। আল্লাহ্ই ভাল জানেন তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে কতজন করে দেয়া হয়েছিল! ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন, এদের সকলেই এ খাবার হতে খেয়ে নিলেন। অথবা তিনি যেমন বলেছেন।

৩৫৮২

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيْزِ عَنْ أَنَسٍ وَعَنْ يُونُسَ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ أَصَابَ أَهْلَ الْمَدِيْنَةِ قَحْطٌ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَبَيْنَا هُوَ يَخْطُبُ يَوْمَ جُمُعَةٍ إِذْ قَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَلَكَتْ الْكُرَاعُ هَلَكَتْ الشَّاءُ فَادْعُ اللهَ يَسْقِيْنَا فَمَدَّ يَدَيْهِ وَدَعَا قَالَ أَنَسٌ وَإِنَّ السَّمَاءَ لَمِثْلُ الزُّجَاجَةِ فَهَاجَتْ رِيْحٌ أَنْشَأَتْ سَحَابًا ثُمَّ اجْتَمَعَ ثُمَّ أَرْسَلَتْ السَّمَاءُ عَزَالِيَهَا فَخَرَجْنَا نَخُوضُ الْمَاءَ حَتَّى أَتَيْنَا مَنَازِلَنَا فَلَمْ نَزَلْ نُمْطَرُ إِلَى الْجُمُعَةِ الْأُخْرَى فَقَامَ إِلَيْهِ ذَلِكَ الرَّجُلُ أَوْ غَيْرُهُ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ تَهَدَّمَتْ الْبُيُوْتُ فَادْعُ اللهَ يَحْبِسْهُ فَتَبَسَّمَ ثُمَّ قَالَ حَوَالَيْنَا وَلَا عَلَيْنَا فَنَظَرْتُ إِلَى السَّحَابِ تَصَدَّعَ حَوْلَ الْمَدِيْنَةِ كَأَنَّهُ إِكْلِيْلٌ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যুগে একবার মদীনাবাসী অনাবৃষ্টির কারণে দুর্ভিক্ষে নিপতিত হল। এ সময় কোন এক জুমু’আর দিনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুতবা দিয়েছিলেন, তখন এক লোক উঠে দাঁড়াল এবং বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! ঘোড়াগুলো নষ্ট হয়ে গেল, বকরীগুলো ধ্বংস হয়ে গেল। আল্লাহ্‌র দরবারে বৃষ্টির জন্য দু’আ করুন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তৎক্ষণাৎ দু’হাত উঠিয়ে দু’আ করলেন। আনাস (রাঃ) বলেন, তখন আকাশ কাঁচের মত নির্মল ছিল। হঠাৎ মেঘ সৃষ্টিকারী বাতাস শুরু হল এবং মেঘ ঘনীভূত হয়ে গেল। অতঃপর শুরু হল প্রবল বৃষ্টিপাত যেন আকাশ তার দরজা খুলে দিল। আমরা পানি ভেঙ্গে বাড়ী পৌঁছলাম। পরবর্তী শুক্রবার পর্যন্ত অনবরত বৃষ্টিপাত হল। ঐ শুক্রবারে জুমু’আর সময় ঐ ব্যক্তি বা অন্য কেউ দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! গৃহগুলো ধ্বংস হয়ে গেল। বৃষ্টি বন্ধের জন্য আল্লাহ্‌র দরবারে দু’আ করুন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হাসলেন এবং বললেন, আমাদের আশে পাশে বৃষ্টি হোক। আমাদের উপর নয়। [আনাস (রাঃ) বলেন,] তখন আমি দেখলাম, মদীনা আকাশ হতে মেঘরাশি চারিদিকে সরে গেছে আর মদীনাকে মুকুটের মত মনে হচ্ছে।

৩৫৮৩

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ كَثِيْرٍ أَبُوْ غَسَّانَ حَدَّثَنَا أَبُوْ حَفْصٍ وَاسْمُهُ عُمَرُ بْنُ الْعَلَاءِ أَخُوْ أَبِيْ عَمْرِو بْنِ الْعَلَاءِ قَالَ سَمِعْتُ نَافِعًا عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ إِلَى جِذْعٍ فَلَمَّا اتَّخَذَ الْمِنْبَرَ تَحَوَّلَ إِلَيْهِ فَحَنَّ الْجِذْعُ فَأَتَاهُ فَمَسَحَ يَدَهُ عَلَيْهِ وَقَالَ عَبْدُ الْحَمِيْدِ أَخْبَرَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ أَخْبَرَنَا مُعَاذُ بْنُ الْعَلَاءِ عَنْ نَافِعٍ بِهَذَا وَرَوَاهُ أَبُوْ عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ رَوَّادٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খেজুরের একটি কাণ্ডের সঙ্গে খুতবা প্রদান করতেন। যখন মিম্বার তৈরি করে দেয়া হল। তখন তিনি মিম্বরে উঠে খুতবা দিতে লাগলেন। কাণ্ডটি তখন কাঁদতে শুরু করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাণ্ডটির নিকটে গিয়ে হাত বুলাতে লাগলেন। উপরোক্ত হাদীসটি ‘আবদুল হামীদ ও আবূ ‘আসিম (রহঃ)...ইবনু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে... নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একইভাবে বর্ণনা করেছেন।

৩৫৮৪

حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ أَيْمَنَ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُومُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلَى شَجَرَةٍ أَوْ نَخْلَةٍ فَقَالَتْ امْرَأَةٌ مِنْ الأَنْصَارِ أَوْ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَا نَجْعَلُ لَكَ مِنْبَرًا قَالَ إِنْ شِئْتُمْ فَجَعَلُوْا لَهُ مِنْبَرًا فَلَمَّا كَانَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ دُفِعَ إِلَى الْمِنْبَرِ فَصَاحَتْ النَّخْلَةُ صِيَاحَ الصَّبِيِّ ثُمَّ نَزَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَضَمَّهُ إِلَيْهِ تَئِنُّ أَنِيْنَ الصَّبِيِّ الَّذِيْ يُسَكَّنُ قَالَ كَانَتْ تَبْكِيْ عَلَى مَا كَانَتْ تَسْمَعُ مِنْ الذِّكْرِ عِنْدَهَا
জাবির ইব্ন ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি বৃক্ষের উপর কিংবা একটি খেজুর বৃক্ষের কাণ্ডের উপর শুক্রবারে খুতবা দেয়ার জন্য দাঁড়াতেন। এমতাবস্থায় একজন আনসারী মহিলা অথবা পুরুষ বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনার জন্য একটি মিম্বার বানিয়ে দিব? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের ইচ্ছে হলে দিতে পার। অতঃপর তারা একটি কাঠের মিম্বার বানিয়ে দিলেন। যখন শুক্রবার এল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে বসলেন, তখন কাণ্ডটি শিশুর মত চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বার হতে নেমে এসে ওটাকে জড়িয়ে ধরলেন। কিন্তু কাণ্ডটি শিশুর মত আরো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল। রাবী বলেন, কাণ্ডটি এজন্য কাঁদছিল যেহেতু সে খুতবাকালে যিকর শুনতে পেত।

৩৫৮৫

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَخِيْ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلَالٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ حَفْصُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ كَانَ الْمَسْجِدُ مَسْقُوفًا عَلَى جُذُوعٍ مِنْ نَخْلٍ فَكَانَ النَّبِيُّ إِذَا خَطَبَ يَقُومُ إِلَى جِذْعٍ مِنْهَا فَلَمَّا صُنِعَ لَهُ الْمِنْبَرُ وَكَانَ عَلَيْهِ فَسَمِعْنَا لِذَلِكَ الْجِذْعِ صَوْتًا كَصَوْتِ الْعِشَارِ حَتَّى جَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَيْهَا فَسَكَنَتْ
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
প্রথন দিকে খেজুরের কয়েকটি কাণ্ডের উপর মসজিদে নববীর ছাদ করা হয়েছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখনই খুতবা দানের ইচ্ছা করতেন, তখন একটি কাণ্ডে হেলান দিয়ে দাঁড়াতেন। অতঃপর তাঁর জন্য মিম্বার তৈরি করে দেয়া হলে তিনি সেই মিম্বারে উঠে দাঁড়াতেন। ঐ সময় আমরা কাণ্ডটি হতে দশ মাসের গর্ভবতী উষ্ট্রীর স্বরের মত কান্নার আওয়াজ শুনলাম। শেষে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছে এসে তাকে হাত বুলিয়ে সোহাগ করলেন। অতঃপর কাণ্ডটি শান্ত হল।

৩৫৮৬

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ عَدِيٍّ عَنْ شُعْبَةَ ح حَدَّثَنِيْ بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ يُحَدِّثُ عَنْ حُذَيْفَةَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالَ أَيُّكُمْ يَحْفَظُ قَوْلَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْفِتْنَةِ فَقَالَ حُذَيْفَةُ أَنَا أَحْفَظُ كَمَا قَالَ قَالَ هَاتِ إِنَّكَ لَجَرِيءٌ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِيْ أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَجَارِهِ تُكَفِّرُهَا الصَّلَاةُ وَالصَّدَقَةُ وَالأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْيُ عَنْ الْمُنْكَرِ قَالَ لَيْسَتْ هَذِهِ وَلَكِنْ الَّتِيْ تَمُوْجُ كَمَوْجِ الْبَحْرِ قَالَ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ لَا بَأْسَ عَلَيْكَ مِنْهَا إِنَّ بَيْنَكَ وَبَيْنَهَا بَابًا مُغْلَقًا قَالَ يُفْتَحُ الْبَابُ أَوْ يُكْسَرُ قَالَ لَا بَلْ يُكْسَرُ قَالَ ذَاكَ أَحْرَى أَنْ لَا يُغْلَقَ قُلْنَا عَلِمَ عُمَرُ الْبَابَ قَالَ نَعَمْ كَمَا أَنَّ دُوْنَ غَدٍ اللَّيْلَةَ إِنِّيْ حَدَّثْتُهُ حَدِيْثًا لَيْسَ بِالأَغَالِيْطِ فَهِبْنَا أَنْ نَسْأَلَهُ وَأَمَرْنَا مَسْرُوقًا فَسَأَلَهُ فَقَالَ مَنْ الْبَابُ قَالَ عُمَرُ
‘উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ফিতনা সম্বন্ধীয় হাদীস স্মরণ রেখেছ যেমনভাবে তিনি বর্ণনা করেছেন। হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, আমিই সর্বাধিক মনে রেখেছি। ‘উমর (রাঃ) বললেন, বর্ণনা কর, তুমি তো অত্যন্ত সাহসী ব্যক্তি। হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মানুষের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, এবং প্রতিবেশী দ্বারা সৃষ্ট ফিতনা-ফাসাদের ক্ষতিপূরণ হয়ে যাবে সালাত, সাদকা এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করার দ্বারা। ‘উমর (রাঃ) বললেন, আমি এ ধরনের ফিতনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিনি বরং উদ্বেলিত সমুদ্রের ঢেউয়ের মত ভীষণ আঘাত হানে ঐ ধরনের ফিতনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছি। হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! এ ধরনের ফিতনা সম্পর্কে আপনার শঙ্কিত হবার কোন কারণ নেই। আপনার এবং এ জাতীয় ফিতনার মধ্যে একটি সুদৃঢ় কপাট বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। ‘উমর (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, এ কপাটটি কি খোলা হবে, না ভেঙ্গে ফেলা হবে? হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, ভেঙ্গে ফেলা হবে। ‘উমর (রাঃ) বললেন, তা হলে এ কপাটটি আর সহজে বন্ধ করা যাবে না। আমরা হুযাইফাহকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘উমর (রাঃ) কি জানতেন, ঐ কপাট দ্বারা কাকে বুঝানো হয়েছে? তিনি বললেন, অবশ্যই; যেমন নিশ্চিতভাবে জানতেন আগামী দিনের পূর্বে আজ রাতের আগমন অনিবার্য। আমি তাঁকে এমন একটি হাদীস শুনিয়েছি, যাতে ভুল-চুকের সুযোগ নেই। আমরা হুযাইফাহকে ভয়ে জিজ্ঞেস করতে সাহস পাইনি, তাই মাসরূককে বললাম, মাসরূক (রহঃ) জিজ্ঞেস করলেন, এ বন্ধ কপাট কে? হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, ‘উমর (রাঃ) স্বয়ং।

৩৫৮৭

حَدَّثَنَا أَبُوْ الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا قَوْمًا نِعَالُهُمْ الشَّعَرُ وَحَتَّى تُقَاتِلُوْا التُّرْكَ صِغَارَ الأَعْيُنِ حُمْرَ الْوُجُوْهِ ذُلْفَ الْأُنُوفِ كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না তোমাদের যুদ্ধ হবে এমন এক জাতির সঙ্গে যাদের পায়ের জুতা হবে পশমের এবং যতক্ষণ না তোমাদের যুদ্ধ হবে তুর্কদের সাথে যাদের চক্ষু ছোট, নাক চেপ্টা, চেহারা লাল বর্ণ যেন তাদের চেহারা পেটানো ঢাল।

৩৫৮৮

وَتَجِدُوْنَ مِنْ خَيْرِ النَّاسِ أَشَدَّهُمْ كَرَاهِيَةً لِهَذَا الأَمْرِ حَتَّى يَقَعَ فِيْهِ وَالنَّاسُ مَعَادِنُ خِيَارُهُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ خِيَارُهُمْ فِي الْإِسْلَامِ
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম মানুষ হবে যারা নেতৃত্ব ও শাসন ক্ষমতায় জড়িয়ে না যাওয়া পর্যন্ত একে অত্যন্ত অপছন্দ করবে। মানুষ খণির মত। যারা জাহিলীয়্যাতের যুগে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম, ইসলাম গ্রহনের পরও তারা শ্রেষ্ঠ ও উত্তম।

৩৫৮৯

وَلَيَأْتِيَنَّ عَلَى أَحَدِكُمْ زَمَانٌ لَانْ يَرَانِيْ أَحَبُّ إِلَيْهِ مِنْ أَنْ يَكُوْنَ لَهُ مِثْلُ أَهْلِهِ وَمَالِهِ
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
তোমাদের নিকট এমন যুগ আসবে যখন তোমাদের পরিবার-পরিজনরা ধন-সম্পদের অধিকারী হবার চাইতেও আমার সাক্ষাৎ পাওয়া তার নিকট অত্যন্ত প্রিয় বলে গণ্য হবে।

৩৫৯০

حَدَّثَنِيْ يَحْيَى حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ هَمَّامٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا خُوْزًا وَكَرْمَانَ مِنْ الأَعَاجِمِ حُمْرَ الْوُجُوْهِ فُطْسَ الْأُنُوفِ صِغَارَ الأَعْيُنِ وُجُوْهُهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ نِعَالُهُمْ الشَّعَرُ تَابَعَهُ غَيْرُهُ عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবেনা যে পর্যন্ত তোমাদের যুদ্ধ না হবে খুয ও কিরমান নামক স্থানে (বসবাসরত) অনারব জাতিগুলোর সঙ্গে, যাদের চেহারা লালবর্ণ, চেহারা যেন পিটানো ঢাল, নাক চেপ্টা, চোখ ছোট এবং জুতা পশমের। ইয়াহইয়া ছাড়া অন্যান্য রাবীগণ ও আব্দুর রাজ্জাক (রহঃ) হতে পূর্বের হাদীস বর্ণনায় তার অনুসরণ করেছেন।

৩৫৯১

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ قَالَ إِسْمَاعِيْلُ أَخْبَرَنِيْ قَيْسٌ قَالَ أَتَيْنَا أَبَا هُرَيْرَةَ فَقَالَ صَحِبْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثَلَاثَ سِنِيْنَ لَمْ أَكُنْ فِيْ سِنِيَّ أَحْرَصَ عَلَى أَنْ أَعِيَ الْحَدِيْثَ مِنِّيْ فِيْهِنَّ سَمِعْتُهُ يَقُوْلُ وَقَالَ هَكَذَا بِيَدِهِ بَيْنَ يَدَيْ السَّاعَةِ تُقَاتِلُوْنَ قَوْمًا نِعَالُهُمْ الشَّعَرُ وَهُوَ هَذَا الْبَارِزُ وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً وَهُمْ أَهْلُ الْبَازِرِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে তিন বছর কাটিয়েছি। আমার জীবনে হাদীস মুখস্থ করার আগ্রহ এ তিন বছরের চেয়ে বেশি আর কখনো ছিল না। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে হাত দ্বারা এভাবে ইশারা করে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের পূর্বে তোমরা এমন এক জাতির সঙ্গে যুদ্ধ করবে যাদের জুতা হবে পশমের। এরা হবে পারস্যবাসী অথবা পাহাড়বাসী অনারব এবং একবার সুফইয়ান বলেছেন, তারা পারস্যবাসী বা পাহাড়বাসী অনারব।

৩৫৯২

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرُ بْنُ حَازِمٍ سَمِعْتُ الْحَسَنَ يَقُوْلُ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ تَغْلِبَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ بَيْنَ يَدَيْ السَّاعَةِ تُقَاتِلُوْنَ قَوْمًا يَنْتَعِلُوْنَ الشَّعَرَ وَتُقَاتِلُوْنَ قَوْمًا كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ
‘আমর ইবনু তাগলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, তোমরা কিয়ামতের আগে এমন এক জাতির সঙ্গে যুদ্ধ করবে যারা পশমের জুতা ব্যবহার করে এবং তোমরা এমন এক জাতির সঙ্গে লড়াই করবে যাদের মুখমণ্ডল হবে পিটানো ঢালের মত।

৩৫৯৩

حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ نَافِعٍ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ تُقَاتِلُكُمْ الْيَهُوْدُ فَتُسَلَّطُوْنَ عَلَيْهِمْ ثُمَّ يَقُوْلُ الْحَجَرُ يَا مُسْلِمُ هَذَا يَهُوْدِيٌّ وَرَائِيْ فَاقْتُلْهُ
আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, ইয়াহূদীরা তোমাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। তখন জয়লাভ করবে তোমরাই। স্বয়ং পাথরই বলবে, হে মুসলিম, এইতো ইয়াহূদী আমার পেছনে, একে হত্যা কর।

৩৫৯৪

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ جَابِرٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَأْتِيْ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ يَغْزُوْنَ فَيُقَالُ لَهُمْ فِيكُمْ مَنْ صَحِبَ الرَّسُوْلَ صلى الله عليه وسلم فَيَقُوْلُوْنَ نَعَمْ فَيُفْتَحُ عَلَيْهِمْ ثُمَّ يَغْزُوْنَ فَيُقَالُ لَهُمْ هَلْ فِيكُمْ مَنْ صَحِبَ مَنْ صَحِبَ الرَّسُوْلَ صلى الله عليه وسلم فَيَقُوْلُوْنَ نَعَمْ فَيُفْتَحُ لَهُمْ
আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (ভবিষ্যতে) মানুষের নিকট এমন এক সময় আসবে যে, তারা জিহাদ করবে। তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমাদের মধ্যে এমন কোন লোক আছেন কি যিনি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গ লাভ করেছেন? তখন তারা বলবে, হাঁ। তখন তাদেরকে জয়ী করা হবে। অতঃপরও তারা আরো জিহাদ করবে। তখন তাদের বলা হবে, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছেন কি যিনি সাহাবাদের সঙ্গ লাভ করেছেন? তখন তারা বলবে, হাঁ। তখন তাদেরকে জয়ী করা হবে।

৩৫৯৫

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْحَكَمِ أَخْبَرَنَا النَّضْرُ أَخْبَرَنَا إِسْرَائِيْلُ أَخْبَرَنَا سَعْدٌ الطَّائِيُّ أَخْبَرَنَا مُحِلُّ بْنُ خَلِيْفَةَ عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ قَالَ بَيْنَا أَنَا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذْ أَتَاهُ رَجُلٌ فَشَكَا إِلَيْهِ الْفَاقَةَ ثُمَّ أَتَاهُ آخَرُ فَشَكَا إِلَيْهِ قَطْعَ السَّبِيْلِ فَقَالَ يَا عَدِيُّ هَلْ رَأَيْتَ الْحِيْرَةَ قُلْتُ لَمْ أَرَهَا وَقَدْ أُنْبِئْتُ عَنْهَا قَالَ فَإِنْ طَالَتْ بِكَ حَيَاةٌ لَتَرَيَنَّ الظَّعِيْنَةَ تَرْتَحِلُ مِنْ الْحِيْرَةِ حَتَّى تَطُوفَ بِالْكَعْبَةِ لَا تَخَافُ أَحَدًا إِلَّا اللهَ قُلْتُ فِيْمَا بَيْنِيْ وَبَيْنَ نَفْسِيْ فَأَيْنَ دُعَّارُ طَيِّئٍ الَّذِيْنَ قَدْ سَعَّرُوْا الْبِلَادَ وَلَئِنْ طَالَتْ بِكَ حَيَاةٌ لَتُفْتَحَنَّ كُنُوْزُ كِسْرَى قُلْتُ كِسْرَى بْنِ هُرْمُزَ قَالَ كِسْرَى بْنِ هُرْمُزَ وَلَئِنْ طَالَتْ بِكَ حَيَاةٌ لَتَرَيَنَّ الرَّجُلَ يُخْرِجُ مِلْءَ كَفِّهِ مِنْ ذَهَبٍ أَوْ فِضَّةٍ يَطْلُبُ مَنْ يَقْبَلُهُ مِنْهُ فَلَا يَجِدُ أَحَدًا يَقْبَلُهُ مِنْهُ وَلَيَلْقَيَنَّ اللهَ أَحَدُكُمْ يَوْمَ يَلْقَاهُ وَلَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ تَرْجُمَانٌ يُتَرْجِمُ لَهُ فَلَيَقُوْلَنَّ لَهُ أَلَمْ أَبْعَثْ إِلَيْكَ رَسُوْلًا فَيُبَلِّغَكَ فَيَقُوْلُ بَلَى فَيَقُوْلُ أَلَمْ أُعْطِكَ مَالًا وَأُفْضِلْ عَلَيْكَ فَيَقُوْلُ بَلَى فَيَنْظُرُ عَنْ يَمِيْنِهِ فَلَا يَرَى إِلَّا جَهَنَّمَ وَيَنْظُرُ عَنْ يَسَارِهِ فَلَا يَرَى إِلَّا جَهَنَّمَ قَالَ عَدِيٌّ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ اتَّقُوْا النَّارَ وَلَوْ بِشِقَّةِ تَمْرَةٍ فَمَنْ لَمْ يَجِدْ شِقَّةَ تَمْرَةٍ فَبِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ قَالَ عَدِيٌّ فَرَأَيْتُ الظَّعِيْنَةَ تَرْتَحِلُ مِنْ الْحِيْرَةِ حَتَّى تَطُوفَ بِالْكَعْبَةِ لَا تَخَافُ إِلَّا اللهَ وَكُنْتُ فِيْمَنْ افْتَتَحَ كُنُوْزَ كِسْرَى بْنِ هُرْمُزَ وَلَئِنْ طَالَتْ بِكُمْ حَيَاةٌ لَتَرَوُنَّ مَا قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَبُوْ الْقَاسِمِ يُخْرِجُ مِلْءَ كَفِّهِ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَاصِمٍ أَخْبَرَنَا سَعْدَانُ بْنُ بِشْرٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ مُجَاهِدٍ حَدَّثَنَا مُحِلُّ بْنُ خَلِيْفَةَ سَمِعْتُ عَدِيًّا كُنْتُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
আদি ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মজলিসে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি এসে দুর্ভিক্ষের অভিযোগ করল। অতঃপর আর এক ব্যক্তি এসে ডাকাতের উপদ্রবের কথা বলে অনুযোগ করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আদী! তুমি কি হীরা নামক স্থানটি দেখেছ? আমি বললাম, দেখি নাই, তবে স্থানটি আমার জানা আছে। তিনি বললেন, তুমি যদি দীর্ঘজীবী হও তবে দেখবে একজন উষ্ট্রারোহী হাওদানশীল মহিলা হীরা হতে রওয়ানা হয়ে বায়তুল্লাহ শরীফে তাওয়াফ করে যাবে। আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করবে না। আমি মনে মনে বলতে লাগলাম তাঈ গোত্রের ডাকাতগুলো কোথায় থাকবে যারা ফিতনা ফাসাদের আগুন জ্বালিয়ে দেশকে জ্বালিয়ে দিচ্ছে। তিনি বললেন, তুমি যদি দীর্ঘজীবী হও, তবে নিশ্চয়ই দেখতে পাবে যে তোমরা কিসরার ধনভাণ্ডার দখল করেছ। আমি বললাম, কিসরা ইবনু হুরমুযের? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হাঁ, কিসরা ইবনু হুরমুযের। তোমার আয়ু যদি দীর্ঘ হয়, তবে অবশ্যই তুমি দেখতে পাবে, লোকজন মুঠভরা যাকাতের স্বর্ণ-রৌপ্য নিয়ে বের হবে এবং এমন ব্যক্তির খোঁজ করে বেড়াবে যে তাদের এ মাল গ্রহণ করে। কিন্তু গ্রহণকারী একটি লোকও পাবে না। তোমাদের প্রত্যেকটি মানুষ কিয়ামত দিবসে মহান আল্লাহ্‌র সাক্ষাৎ লাভ করবে। তখন তার ও আল্লাহ্‌র মাঝে অন্য কোন দোভাষী থাকবে না যিনি ভাষান্তর করে বলবেন। আল্লাহ্ বলবেন, আমি কি তোমার নিকট আমার বাণী পৌঁছানোর জন্য রাসূল প্রেরণ করিনি? সে বলবে হাঁ, প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ্ বলবেন, আমি কি তোমাকে ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি দান করিনি এবং দয়া মেহেরবাণী করিনি? তখন সে বলবে, হাঁ দিয়েছেন। অতঃপর সে ডানদিকে নযর করবে, জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। আবার সে বাম দিকে নযর করবে, তখনো সে জাহান্নাম ছাড়া কিছুই দেখবে না। আদী (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, আধখানা খেজুর দান করে হলেও জাহান্নামের আগুন হতে নিজেকে রক্ষা কর আর যদি তাও করার তৌফিক না হয় তবে মানুষের জন্য ভালো কথা বলে নিজেকে আগুন থেকে রক্ষা কর। আদী (রাঃ) বলেন, আমি নিজে দেখেছি, এক উষ্ট্রারোহী মহিলা হীরা হতে একাকী রওয়ানা হয়ে কা’বাহ শরীফ তাওয়াফ করেছে। সে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকেও ভয় করে না। আর পারস্য সম্রাট কিসরা ইবনু হুরমুযের ধনভাণ্ডার যারা দখল করেছিল, তাদের মধ্যে আমি একজন ছিলাম। তোমরা যদি আরও কিছুদিন বেঁচে থাক তাহলে দেখতে পাবে যেমন (ভবিষ্যদ্বাণী হিসাবে) আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা বলেছেন, এক ব্যক্তি এক মুষ্টি ভর্তি সোনা-রূপা নিয়ে বের হবে কিন্তু কেউ নিতে চাইবে না।
মুহিল্লি ইবনু খলীফাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আদী ইবনু হাতিমকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, একদা আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। (বাকী হাদীস পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপঃ এই বর্ণনায় মুহিল্লি ইবনু খলীফা হাদীসটি আদী ইবনু হাতিম হতে সরাসরি শুনেছেন বলে উল্লেখিত হয়েছে)

৩৫৯৬

حَدَّثَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ شُرَحْبِيْلٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ يَزِيْدَ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ يَوْمًا فَصَلَّى عَلَى أَهْلِ أُحُدٍ صَلَاتَهُ عَلَى الْمَيِّتِ ثُمَّ انْصَرَفَ إِلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ إِنِّيْ فَرَطُكُمْ وَأَنَا شَهِيْدٌ عَلَيْكُمْ إِنِّيْ وَاللهِ لَانْظُرُ إِلَى حَوْضِي الْآنَ وَإِنِّيْ قَدْ أُعْطِيْتُ خَزَائِنَ مَفَاتِيْحِ الأَرْضِ وَإِنِّيْ وَاللهِ مَا أَخَافُ بَعْدِيْ أَنْ تُشْرِكُوْا وَلَكِنْ أَخَافُ أَنْ تَنَافَسُوْا فِيْهَا
‘উকবাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে মৃত ব্যক্তির সালাতে জানাযার মত উহুদ যুদ্ধে শহীদ সাহাবাগণের কবরের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর ফিরে এসে মিম্বারে উঠে বললেন, আমি তোমাদের জন্য অগ্রগামী ব্যক্তি, আমি তোমাদের হয়ে আল্লাহ্‌র দরবারে সাক্ষ্য দিব। আল্লাহ্‌র কসম, আমি এখানে বসে থেকেই আমার হাউযে কাওসার দেখতে পাচ্ছি। পৃথিবীর ধন-ভাণ্ডারের চাবি আমার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। আল্লাহ্‌র কসম! আমার মৃত্যুর পর তোমরা মুশরিক হয়ে যাবে এ আশঙ্কা আমি করি না। তবে আমি তোমাদের ব্যাপারে এ আশঙ্কা করি যে, দুনিয়ার ধন-সম্পদের মোহে তোমরা আত্নকলহে লিপ্ত হয়ে পড়বে।

৩৫৯৭

حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ أُسَامَةَ قَالَ أَشْرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى أُطُمٍ مِنْ الْآطَامِ فَقَالَ هَلْ تَرَوْنَ مَا أَرَى إِنِّيْ أَرَى الْفِتَنَ تَقَعُ خِلَالَ بُيُوْتِكُمْ مَوَاقِعَ الْقَطْرِ
উসামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা মদীনায় একটি উঁচু টিলায় উঠলেন, অতঃপর বললেন, আমি যা দেখছি, তোমরা কি তা দেখতে পাচ্ছ? আমি দেখছি পানির স্রোতের মত ফাসাদ ঢুকে পড়ছে তোমাদের ঘরে ঘরে।

৩৫৯৮

حَدَّثَنَا أَبُوْ الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ زَيْنَبَ بِنْتَ أَبِيْ سَلَمَةَ حَدَّثَتْهُ أَنَّ أُمَّ حَبِيْبَةَ بِنْتَ أَبِيْ سُفْيَانَ حَدَّثَتْهَا عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَيْهَا فَزِعًا يَقُوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَيْلٌ لِلْعَرَبِ مِنْ شَرٍّ قَدْ اقْتَرَبَ فُتِحَ الْيَوْمَ مِنْ رَدْمِ يَأْجُوْجَ وَمأْجُوْجَ مِثْلُ هَذَا وَحَلَّقَ بِإِصْبَعِهِ وَبِالَّتِيْ تَلِيْهَا فَقَالَتْ زَيْنَبُ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنَهْلِكُ وَفِيْنَا الصَّالِحُوْنَ قَالَ نَعَمْ إِذَا كَثُرَ الْخَبَثُ
যায়নাব বিনতু জাহশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়তে পড়তে তাঁর গৃহে প্রবেশ করলেন এবং বলতে লাগলেন, শীঘ্রই একটি দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি হবে। এতে আরবের ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী। ইয়াজুজ ও মাজুজের দেয়ালে এতটুকু পরিমাণ ছিদ্র হয়ে গিয়েছে, একথা বলে দু’টি আঙ্গুল গোলাকার করে দেখালেন। যায়নাব (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, “হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমরা কি ধ্বংস হয়ে যাব, অথচ আমাদের মধ্যে বহু নেক ব্যক্তি আছেন?” নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, যখন অশ্লীলতা বেড়ে যাবে।

৩৫৯৯

وَعَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَتْنِيْ هِنْدُ بِنْتُ الْحَارِثِ أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ قَالَتْ اسْتَيْقَظَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ سُبْحَانَ اللهِ مَاذَا أُنْزِلَ مِنْ الْخَزَائِنِ وَمَاذَا أُنْزِلَ مِنْ الْفِتَنِ
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জেগে উঠলেন এবং বলতে লাগলেন, সুবাহানাল্লাহ, আজ কী অফুরন্ত ধনভাণ্ডার অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং তারই সঙ্গে অগণিত ফিতনা-ফাসাদ নাযিল করা হয়েছে।

৩৬০০

حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ أَبِيْ سَلَمَةَ بْنِ الْمَاجِشُونِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِيْ صَعْصَعَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ لِيْ إِنِّيْ أَرَاكَ تُحِبُّ الْغَنَمَ وَتَتَّخِذُهَا فَأَصْلِحْهَا وَأَصْلِحْ رُعَامَهَا فَإِنِّيْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ يَأْتِيْ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ تَكُوْنُ الْغَنَمُ فِيْهِ خَيْرَ مَالِ الْمُسْلِمِ يَتْبَعُ بِهَا شَعَفَ الْجِبَالِ أَوْ سَعَفَ الْجِبَالِ فِيْ مَوَاقِعِ الْقَطْرِ يَفِرُّ بِدِيْنِهِ مِنْ الْفِتَنِ
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আবূ সা‘সা‘আহকে বললেন, তোমাকে দেখছি তুমি বকরীকে অত্যন্ত ভালবেসে এদেরকে সর্বদা লালন-পালন কর, তাই, তুমি এদের যত্ন কর এবং রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা কর। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, এমন এক সময় আসবে, যখন বকরীই হবে মুসলিমের উত্তম সম্পদ। তাকে নিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় বৃষ্টি বর্ষণের স্থানে চলে যাবে এবং তাঁদের দীনকে ফিতনা থেকে রক্ষা করবে।

৩৬০১

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ الْأُوَيْسِيُّ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ ابْنِ الْمُسَيَّبِ وَأَبِيْ سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم سَتَكُوْنُ فِتَنٌ الْقَاعِدُ فِيْهَا خَيْرٌ مِنْ الْقَائِمِ وَالْقَائِمُ فِيْهَا خَيْرٌ مِنْ الْمَاشِيْ وَالْمَاشِيْ فِيْهَا خَيْرٌ مِنْ السَّاعِيْ وَمَنْ يُشْرِفْ لَهَا تَسْتَشْرِفْهُ وَمَنْ وَجَدَ مَلْجَأً أَوْ مَعَاذًا فَلْيَعُذْ بِهِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, শীঘ্রই ফিতনা রাশি আসতে থাকবে। ঐ সময় উপবিষ্ট ব্যক্তি দাঁড়ানো ব্যক্তির চেয়ে উত্তম (নিরাপদ), দাঁড়ানো ব্যক্তি ভ্রাম্যমান ব্যক্তি হতে অধিক রক্ষিত আর ভ্রাম্যমান ব্যক্তি ধাবমান ব্যক্তির চেয়ে অধিক বিপদমুক্ত। যে ব্যক্তি ফিতনার দিকে চোখ তুলে তাকাবে ফিতনা তাকে গ্রাস করবে। তখন যদি কোন ব্যক্তি তার দ্বীন রক্ষার জন্য কোন ঠিকানা অথবা নিরাপদ আশ্রয় পায়, তবে সেখানে আশ্রয় গ্রহণ করাই উচিৎ হবে।

৩৬০২

وَعَنْ ابْنِ شِهَابٍ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مُطِيْعِ بْنِ الأَسْوَدِ عَنْ نَوْفَلِ بْنِ مُعَاوِيَةَ مِثْلَ حَدِيْثِ أَبِيْ هُرَيْرَةَ هَذَا إِلَّا أَنَّ أَبَا بَكْرٍ يَزِيْدُ مِنْ الصَّلَاةِ صَلَاةٌ مَنْ فَاتَتْهُ فَكَأَنَّمَا وُتِرَ أَهْلَهُ وَمَالَهُ
ইবনু শিহাব যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্‌ন শিহাব যুহরী (রহঃ).... নাওফাল ইব্‌ন মু‘আবিয়া (রাঃ) হতে আবূ হুরায়রা (রাঃ) -এর হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। তবে অতিরিক্ত আর একটি কথাও বর্ণনা করেছেন যে এমন একটি সালাত রয়েছে যে ব্যক্তির ঐ সালাত ফওত হয়ে গেল, তার পরিবার-পরিজন ধন-সম্পদ সবই যেন ধ্বংস হয়ে গেল।

৩৬০৩

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ عَنْ ابْنِ مَسْعُوْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ سَتَكُوْنُ أَثَرَةٌ وَأُمُوْرٌ تُنْكِرُوْنَهَا قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ فَمَا تَأْمُرُنَا قَالَ تُؤَدُّوْنَ الْحَقَّ الَّذِيْ عَلَيْكُمْ وَتَسْأَلُوْنَ اللهَ الَّذِيْ لَكُمْ
ইব্ন মাস‘ঊদ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, শীঘ্রই স্বজনপ্রীতির বিস্তৃতি ঘটবে এবং এমন ব্যাপার ঘটবে যা তোমরা পছন্দ করতে পারবে না। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! ঐ অবস্থায় আমাদের কী করতে বলেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে আর তোমাদের প্রাপ্য আল্লাহ্‌র কাছে চাইবে।

৩৬০৪

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ إِسْمَاعِيْلُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُهْلِكُ النَّاسَ هَذَا الْحَيُّ مِنْ قُرَيْشٍ قَالُوْا فَمَا تَأْمُرُنَا قَالَ لَوْ أَنَّ النَّاسَ اعْتَزَلُوْهُمْ قَالَ مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ دَاوُدَ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কুরাইশ গোত্রের এ লোকগুলি (যুবকগণ) মানুষের ধ্বংস ডেকে আনবে। সাহাবাগণ বললেন, তখন আমাদেরকে আপনি কী করতে বলেন? তিনি বললেন, মানুষেরা যদি এদের সংসর্গ ত্যাগ করত তবে ভালই হত।

৩৬০৫

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْمَكِّيُّ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ الْأُمَوِيُّ عَنْ جَدِّهِ قَالَ كُنْتُ مَعَ مَرْوَانَ وَأَبِيْ هُرَيْرَةَ فَسَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ الصَّادِقَ الْمَصْدُوقُ يَقُوْلُ هَلَاكُ أُمَّتِيْ عَلَى يَدَيْ غِلْمَةٍ مِنْ قُرَيْشٍ فَقَالَ مَرْوَانُ غِلْمَةٌ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ إِنْ شِئْتَ أَنْ أُسَمِّيَهُمْ بَنِيْ فُلَانٍ وَبَنِيْ فُلَانٍ
আহমদ ইব্ন মুহাম্মাদ মাক্কী (রহঃ).... সাঈদ উমাব্বী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এবং মারওয়ান (রাঃ) -এর নিকট ছিলাম। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলতে লাগলেন, আমি সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মাতের ধ্বংস কুরাইশের কতকগুলি অল্প বয়স্ক যুবকের হাতে এবং মারওয়ান বললেন, অল্প বয়স্ক ছেলেদের হাতে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, তুমি শুনতে চাইলে তাদের নামও বলতে পারি, অমুকের ছেলে অমুক, অমুকের ছেলে অমুক।

৩৬০৬

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا الْوَلِيْدُ قَالَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ جَابِرٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ بُسْرُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ الْحَضْرَمِيُّ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ إِدْرِيسَ الْخَوْلَانِيُّ أَنَّهُ سَمِعَ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ يَقُوْلُ كَانَ النَّاسُ يَسْأَلُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْخَيْرِ وَكُنْتُ أَسْأَلُهُ عَنْ الشَّرِّ مَخَافَةَ أَنْ يُدْرِكَنِيْ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّا كُنَّا فِيْ جَاهِلِيَّةٍ وَشَرٍّ فَجَاءَنَا اللهُ بِهَذَا الْخَيْرِ فَهَلْ بَعْدَ هَذَا الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ وَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الشَّرِّ مِنْ خَيْرٍ قَالَ نَعَمْ وَفِيْهِ دَخَنٌ قُلْتُ وَمَا دَخَنُهُ قَالَ قَوْمٌ يَهْدُوْنَ بِغَيْرِ هَدْيِيْ تَعْرِفُ مِنْهُمْ وَتُنْكِرُ قُلْتُ فَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ دُعَاةٌ إِلَى أَبْوَابِ جَهَنَّمَ مَنْ أَجَابَهُمْ إِلَيْهَا قَذَفُوْهُ فِيْهَا قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صِفْهُمْ لَنَا فَقَالَ هُمْ مِنْ جِلْدَتِنَا وَيَتَكَلَّمُوْنَ بِأَلْسِنَتِنَا قُلْتُ فَمَا تَأْمُرُنِيْ إِنْ أَدْرَكَنِيْ ذَلِكَ قَالَ تَلْزَمُ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِيْنَ وَإِمَامَهُمْ قُلْتُ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلَا إِمَامٌ قَالَ فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا وَلَوْ أَنْ تَعَضَّ بِأَصْلِ شَجَرَةٍ حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ عَلَى ذَلِكَ
হুযাইফাহ ইব্ন ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লোকজন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে কল্যাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন আর আমি তাঁকে অকল্যাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতাম; এই ভয়ে যেন আমি ঐ সবের মধ্যে পড়ে না যাই। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমরা জাহিলীয়্যাতে অকল্যাণকর অবস্থায় জীবন যাপন করতাম অতঃপর আল্লাহ্ আমাদের এ কল্যাণ দান করেছেন। এ কল্যাণকর অবস্থার পর আবার কোন অকল্যাণের আশঙ্কা আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ঐ অকল্যাণের পর কোন কল্যাণ আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আছে। তবে তা মন্দ মেশানো। আমি বললাম, মন্দ মেশানো কি? তিনি বললেন, এমন একদল লোক যারা আমার সুন্নাত ত্যাগ করে অন্যপথে পরিচালিত হবে। তাদের কাজে ভাল-মন্দ সবই থাকবে। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, অতঃপর কি আরো অকল্যাণ আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তখন জাহান্নামের দিকে আহবানকারীদের উদ্ভব ঘটবে। যারা তাদের ডাকে সাড়া দিবে তাকেই তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। আমি বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! এদের পরিচয় বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, তারা আমাদেরই সম্প্রদায়ভুক্ত এবং কথা বলবে আমাদেরই ভাষায়। আমি বললাম, আমি যদি এ অবস্থায় পড়ে যাই তাহলে আপনি আমাকে কি করতে আদেশ দেন? তিনি বললেন, মুসলিমদের দল ও তাঁদের ইমামকে আঁকড়ে ধরবে। আমি বললাম, যদি মুসলিমদের এহেন দল ও ইমাম না থাকে? তিনি বলেন, তখন তুমি তাদের সকল দল উপদলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করবে এবং মৃত্যু না আসা পর্যন্ত বৃক্ষমূল দাঁতে আঁকড়ে ধরে হলেও তোমার দ্বীনের উপর থাকবে।

৩৬০৭

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى قَالَ حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنِيْ قَيْسٌ عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ تَعَلَّمَ أَصْحَابِي الْخَيْرَ وَتَعَلَّمْتُ الشَّرَّ
হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার সঙ্গীরা কল্যাণ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন আর আমি জানতে চেয়েছি অকল্যাণ সম্পর্কে।

৩৬০৮

حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ نَافِعٍ حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَقْتَتِلَ فِئَتَانِ دَعْوَاهُمَا وَاحِدَةٌ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কিয়ামত হবে না যে পর্যন্ত এমন দু’টি দলের মধ্যে যুদ্ধ না হবে যাদের দাবী হবে এক।

৩৬০৯

حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَقْتَتِلَ فِئَتَانِ فَيَكُوْنَ بَيْنَهُمَا مَقْتَلَةٌ عَظِيْمَةٌ دَعْوَاهُمَا وَاحِدَةٌ وَلَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُبْعَثَ دَجَّالُوْنَ كَذَّابُوْنَ قَرِيْبًا مِنْ ثَلَاثِيْنَ كُلُّهُمْ يَزْعُمُ أَنَّهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যে পর্যন্ত দু’টি দলের মধ্যে যুদ্ধ না হবে। তাদের মধ্যে হবে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। তাদের দাবী হবে এক। আর কিয়ামত কায়িম হবে না যে পর্যন্ত প্রায় ত্রিশজন মিথ্যাচারী দাজ্জালের আবির্ভাব না হবে। এরা সবাই নিজেকে আল্লাহ্‌র রাসূল বলে দাবী করবে।

৩৬১০

حَدَّثَنَا أَبُوْ الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا سَعِيْدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَقْسِمُ قِسْمًا أَتَاهُ ذُوْ الْخُوَيْصِرَةِ وَهُوَ رَجُلٌ مِنْ بَنِيْ تَمِيْمٍ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ اعْدِلْ فَقَالَ وَيْلَكَ وَمَنْ يَعْدِلُ إِذَا لَمْ أَعْدِلْ قَدْ خِبْتَ وَخَسِرْتَ إِنْ لَمْ أَكُنْ أَعْدِلُ فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُوْلَ اللهِ ائْذَنْ لِيْ فِيْهِ فَأَضْرِبَ عُنُقَهُ فَقَالَ دَعْهُ فَإِنَّ لَهُ أَصْحَابًا يَحْقِرُ أَحَدُكُمْ صَلَاتَهُ مَعَ صَلَاتِهِمْ وَصِيَامَهُ مَعَ صِيَامِهِمْ يَقْرَءُوْنَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُوْنَ مِنْ الدِّينِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنْ الرَّمِيَّةِ يُنْظَرُ إِلَى نَصْلِهِ فَلَا يُوْجَدُ فِيْهِ شَيْءٌ ثُمَّ يُنْظَرُ إِلَى رِصَافِهِ فَمَا يُوْجَدُ فِيْهِ شَيْءٌ ثُمَّ يُنْظَرُ إِلَى نَضِيِّهِ وَهُوَ قِدْحُهُ فَلَا يُوْجَدُ فِيْهِ شَيْءٌ ثُمَّ يُنْظَرُ إِلَى قُذَذِهِ فَلَا يُوْجَدُ فِيْهِ شَيْءٌ قَدْ سَبَقَ الْفَرْثَ وَالدَّمَ آيَتُهُمْ رَجُلٌ أَسْوَدُ إِحْدَى عَضُدَيْهِ مِثْلُ ثَدْيِ الْمَرْأَةِ أَوْ مِثْلُ الْبَضْعَةِ تَدَرْدَرُ وَيَخْرُجُوْنَ عَلَى حِيْنِ فُرْقَةٍ مِنْ النَّاسِ
قَالَ أَبُوْ سَعِيْدٍ فَأَشْهَدُ أَنِّيْ سَمِعْتُ هَذَا الْحَدِيْثَ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَشْهَدُ أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِيْ طَالِبٍ قَاتَلَهُمْ وَأَنَا مَعَهُ فَأَمَرَ بِذَلِكَ الرَّجُلِ فَالْتُمِسَ فَأُتِيَ بِهِ حَتَّى نَظَرْتُ إِلَيْهِ عَلَى نَعْتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الَّذِيْ نَعَتَهُ
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি কিছু গনীমতের মাল বন্টন করছিলেন। তখন বানু তামীম গোত্রের জুলখোয়াইসিরাহ্ নামে এক ব্যক্তি এসে হাযির হল এবং বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনি ইন্সাফ করুন। তিনি বললেন তোমার দুর্ভাগ্য! আমি যদি ইন্সাফ না করি, তবে ইন্সাফ করবে কে? আমি তো নিষ্ফল ও ক্ষতিগ্রস্ত হব যদি আমি ইন্সাফ না করি। ‘উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমাকে অনুমতি দিন আমি এর গর্দান উড়িয়ে দিই। তিনি বললেন, একে ছেড়ে দাও। তার এমন কিছু সঙ্গী সাথী রয়েছে তোমারা তাদের সালাতের তুলনায় নিজের সালাত এবং সিয়াম নগণ্য বলে মনে করবে। এরা কুরআন পাঠ করে, কিন্তু কুরআন তাদের কন্ঠনালীর নিচে প্রবেশ করে না। তারা দ্বীন হতে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর ধনুক হতে বেরিয়ে যায়। তীরের অগ্রভাগের লোহা দেখা যাবে কিন্তু কোন চিহ্ন পাওয়া যাবে না। কাঠের অংশ দেখলে তাতেও কিছু পাওয়া যাবে না। মাঝের অংশ দেখলে তাতেও কিছু পাওয়া যাবে না। তার পালক দেখলে তাতেও কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না। অথচ তীরটি শিকারী জন্তুর নাড়িভুঁড়ি ভেদ করে রক্তমাংস পার হয়ে বেরিয়ে গেছে। এদের নিদর্শন হল এমন একটি কাল মানুষ যার একটি বাহু নারীর স্তনের মত অথবা মাংস খণ্ডের মত নড়াচড়া করবে। তারা লোকদের মধ্যে বিরোধকালে আত্মপ্রকাশ করবে।
আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি স্বয়ং আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট হতে এ কথা শুনেছি। আমি এ-ও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, ‘আলী ইব্‌ন আবূ তালিব (রাঃ) এদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। আমিও তার সঙ্গে ছিলাম। তখন ‘আলী (রাঃ) ঐ লোককে খুঁজে বের করতে আদেশ দিলেন। খোঁজ করে যখন আনা হল আমি মনোযোগের সঙ্গে তাকিয়ে তার মধ্যে ঐ সব চিহ্নগুলি দেখতে পেলাম, যা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন।

৩৬১১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ خَيْثَمَةَ عَنْ سُوَيْدِ بْنِ غَفَلَةَ قَالَ قَالَ عَلِيٌّ إِذَا حَدَّثْتُكُمْ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَانْ أَخِرَّ مِنْ السَّمَاءِ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَكْذِبَ عَلَيْهِ وَإِذَا حَدَّثْتُكُمْ فِيْمَا بَيْنِيْ وَبَيْنَكُمْ فَإِنَّ الْحَرْبَ خَدْعَةٌ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ يَأْتِيْ فِيْ آخِرِ الزَّمَانِ قَوْمٌ حُدَثَاءُ الأَسْنَانِ سُفَهَاءُ الأَحْلَامِ يَقُوْلُوْنَ مِنْ خَيْرِ قَوْلِ الْبَرِيَّةِ يَمْرُقُوْنَ مِنْ الْإِسْلَامِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنْ الرَّمِيَّةِ لَا يُجَاوِزُ إِيْمَانُهُمْ حَنَاجِرَهُمْ فَأَيْنَمَا لَقِيْتُمُوْهُمْ فَاقْتُلُوْهُمْ فَإِنَّ قَتْلَهُمْ أَجْرٌ لِمَنْ قَتَلَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
সুয়াইদ ইব্ন গাফালা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) বলেছেন, আমি যখন তোমাদের নিকট আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কোন হাদীস বর্ণনা করি, তখন আমার এমন অবস্থা হয় যে, তাঁর উপর মিথ্যারোপ করার চেয়ে আকাশ হতে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়া আমার নিকট বেশি পছন্দনীয় এবং আমরা নিজেরা যখন আলোচনা করি তখন কথা হল এই যে, যুদ্ধ ছল-চাতুরী মাত্র। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, শেষ যুগে একদল যুবকের আবির্ভাব ঘটবে যারা হবে স্বল্পবুদ্ধি সম্পন্ন। তারা মুখে খুব ভাল কথা বলবে। তারা ইসলাম হতে বেরিয়ে যাবে যেভাবে তীর ধনুক হতে বেরিয়ে যায়। তাদের ঈমান গলদেশ পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবে না। যেখানেই এদের সঙ্গে তোমাদের দেখা মিলবে, এদেরকে তোমরা হত্যা করে ফেলবে। যারা তাদের হত্যা করবে তাদের এই হত্যার পুরস্কার আছে ক্বিয়ামতের দিন।

৩৬১২

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا قَيْسٌ عَنْ خَبَّابِ بْنِ الأَرَتِّ قَالَ شَكَوْنَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مُتَوَسِّدٌ بُرْدَةً لَهُ فِيْ ظِلِّ الْكَعْبَةِ قُلْنَا لَهُ أَلَا تَسْتَنْصِرُ لَنَا أَلَا تَدْعُوْ اللهَ لَنَا قَالَ كَانَ الرَّجُلُ فِيْمَنْ قَبْلَكُمْ يُحْفَرُ لَهُ فِي الأَرْضِ فَيُجْعَلُ فِيْهِ فَيُجَاءُ بِالْمِنْشَارِ فَيُوضَعُ عَلَى رَأْسِهِ فَيُشَقُّ بِاثْنَتَيْنِ وَمَا يَصُدُّهُ ذَلِكَ عَنْ دِيْنِهِ وَيُمْشَطُ بِأَمْشَاطِ الْحَدِيْدِ مَا دُوْنَ لَحْمِهِ مِنْ عَظْمٍ أَوْ عَصَبٍ وَمَا يَصُدُّهُ ذَلِكَ عَنْ دِيْنِهِ وَاللهِ لَيُتِمَّنَّ هَذَا الأَمْرَ حَتَّى يَسِيْرَ الرَّاكِبُ مِنْ صَنْعَاءَ إِلَى حَضْرَمَوْتَ لَا يَخَافُ إِلَّا اللهَ أَوْ الذِّئْبَ عَلَى غَنَمِهِ وَلَكِنَّكُمْ تَسْتَعْجِلُوْنَ
খাব্বাব ইব্ন আরত্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর খেদমতে অভিযোগ করলাম। তখন তিনি তাঁর চাদরকে বালিশ বানিয়ে কা‘বা শরীফের ছায়ায় বিশ্রাম করছিলেন। আমরা তাঁকে বললাম, আপনি কি আমাদের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করবেন না? আপনি কি আমাদের জন্য আল্লাহ্‌র নিকট দু’আ করবেন না? তিনি বললেন, তোমাদের আগের লোকদের অবস্থা ছিল এই, তাদের জন্য মাটিতে গর্ত খুঁড়া হত এবং ঐ গর্তে তাকে পুঁতে রেখে করাত দিয়ে তার মাথা দ্বিখণ্ডিত করা হত। এটা তাদেরকে দ্বীন হতে টলাতে পারত না। লোহার চিরুনী দিয়ে শরীরের হাড় মাংস ও শিরা-উপশিরা সব কিছু ছিন্নভিন্ন করে দিত। এটা তাদেরকে দ্বীন হতে সরাতে পারেনি। আল্লাহ্‌র কসম, আল্লাহ্ এ দীনকে অবশ্যই পূর্ণতা দান করবেন। তখন একজন উষ্ট্রারোহী সান‘আ হতে হাযারামাউত পর্যন্ত সফর করবে, আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকেও ভয় করবে না। অথবা তার মেষপালের জন্য নেকড়ে বাঘের ভয়ও করবে না। কিন্তু তোমরা তাড়াহুড়া করছ।

৩৬১৩

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا أَزْهَرُ بْنُ سَعْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ قَالَ أَنْبَأَنِيْ مُوْسَى بْنُ أَنَسٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم افْتَقَدَ ثَابِتَ بْنَ قَيْسٍ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنَا أَعْلَمُ لَكَ عِلْمَهُ فَأَتَاهُ فَوَجَدَهُ جَالِسًا فِيْ بَيْتِهِ مُنَكِّسًا رَأْسَهُ فَقَالَ مَا شَأْنُكَ فَقَالَ شَرٌّ كَانَ يَرْفَعُ صَوْتَهُ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ فَأَتَى الرَّجُلُ فَأَخْبَرَهُ أَنَّهُ قَالَ كَذَا وَكَذَا فَقَالَ مُوْسَى بْنُ أَنَسٍ فَرَجَعَ الْمَرَّةَ الْآخِرَةَ بِبِشَارَةٍ عَظِيْمَةٍ فَقَالَ اذْهَبْ إِلَيْهِ فَقُلْ لَهُ إِنَّكَ لَسْتَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ وَلَكِنْ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ
আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাবিত ইব্‌ন কায়েস (রাঃ) -কে তাঁর মাজলিসে অনুপস্থিত পেলেন। তখন এক সহাবী বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমি তার সম্পর্কে জানি। তিনি গিয়ে দেখেন সাবিত (রাঃ) তাঁর ঘরে অবনত মস্তকে বসে আছেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে সাবিত! কী অবস্থা তোমার? তিনি বললেন, অত্যন্ত খারাপ। তার গলার স্বর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর গলার স্বর হতে উচ্চ হয়েছিল। কাজেই তার সব নেক আমল নষ্ট হয়ে গেছে। সে জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। ঐ ব্যক্তি ফিরে এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জানালেন সাবিত (রাঃ) এসব কথা বলেছে। মূসা ইব্‌ন আনাস (রহঃ) বলেন, ঐ সাহাবী এক মহা সুসংবাদ নিয়ে হাযির হলেন যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তুমি যাও সাবিতকে বল, নিশ্চয়ই তুমি জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত নও বরং তুমি জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত।

৩৬১৪

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَرَأَ رَجُلٌ الْكَهْفَ وَفِي الدَّارِ الدَّابَّةُ فَجَعَلَتْ تَنْفِرُ فَسَلَّمَ فَإِذَا ضَبَابَةٌ أَوْ سَحَابَةٌ غَشِيَتْهُ فَذَكَرَهُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ اقْرَأْ فُلَانُ فَإِنَّهَا السَّكِيْنَةُ نَزَلَتْ لِلْقُرْآنِ أَوْ تَنَزَّلَتْ لِلْقُرْآنِ
বার‘আ ইব্ন ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সাহাবী সূরা কাহ্‌ফ তিলাওয়াত করছিলেন। তাঁর বাড়িতে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল। ঘোড়াটি তখন লাফালাফি করতে লাগল। তখন ঐ সহাবী শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য আল্লাহ্‌র দরবারে দু’আ করলেন। তখন তিনি দেখলেন, একখণ্ড মেঘ এসে তাকে ঢেকে দিয়েছে। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে বিষয়টি উল্লেখ করলেন। তখন তিনি বললেন, হে অমুক! তুমি এভাবে তিলাওয়াত করবে। এটা তো প্রশান্তি ছিল, যা কুরআন তিলাওয়াতের কারণে নাযিল হয়েছিল।

৩৬১৫

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يَزِيْدَ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ أَبُوْ الْحَسَنِ الْحَرَّانِيُّ حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ يَقُوْلُ جَاءَ أَبُوْ بَكْرٍ إِلَى أَبِيْ فِيْ مَنْزِلِهِ فَاشْتَرَى مِنْهُ رَحْلًا فَقَالَ لِعَازِبٍ ابْعَثْ ابْنَكَ يَحْمِلْهُ مَعِيْ قَالَ فَحَمَلْتُهُ مَعَهُ وَخَرَجَ أَبِيْ يَنْتَقِدُ ثَمَنَهُ فَقَالَ لَهُ أَبِيْ يَا أَبَا بَكْرٍ حَدِّثْنِيْ كَيْفَ صَنَعْتُمَا حِيْنَ سَرَيْتَ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ أَسْرَيْنَا لَيْلَتَنَا وَمِنْ الْغَدِ حَتَّى قَامَ قَائِمُ الظَّهِيْرَةِ وَخَلَا الطَّرِيْقُ لَا يَمُرُّ فِيْهِ أَحَدٌ فَرُفِعَتْ لَنَا صَخْرَةٌ طَوِيْلَةٌ لَهَا ظِلٌّ لَمْ تَأْتِ عَلَيْهِ الشَّمْسُ فَنَزَلْنَا عِنْدَهُ وَسَوَّيْتُ لِلنَّبِيِّ مَكَانًا بِيَدِيْ يَنَامُ عَلَيْهِ وَبَسَطْتُ فِيْهِ فَرْوَةً وَقُلْتُ نَمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَأَنَا أَنْفُضُ لَكَ مَا حَوْلَكَ فَنَامَ وَخَرَجْتُ أَنْفُضُ مَا حَوْلَهُ فَإِذَا أَنَا بِرَاعٍ مُقْبِلٍ بِغَنَمِهِ إِلَى الصَّخْرَةِ يُرِيْدُ مِنْهَا مِثْلَ الَّذِيْ أَرَدْنَا فَقُلْتُ لَهُ لِمَنْ أَنْتَ يَا غُلَامُ فَقَالَ لِرَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الْمَدِيْنَةِ أَوْ مَكَّةَ قُلْتُ أَفِيْ غَنَمِكَ لَبَنٌ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ أَفَتَحْلُبُ قَالَ نَعَمْ فَأَخَذَ شَاةً فَقُلْتُ انْفُضْ الضَّرْعَ مِنْ التُّرَابِ وَالشَّعَرِ وَالْقَذَى قَالَ فَرَأَيْتُ الْبَرَاءَ يَضْرِبُ إِحْدَى يَدَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى يَنْفُضُ فَحَلَبَ فِيْ قَعْبٍ كُثْبَةً مِنْ لَبَنٍ وَمَعِيْ إِدَاوَةٌ حَمَلْتُهَا لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَرْتَوِيْ مِنْهَا يَشْرَبُ وَيَتَوَضَّأُ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَكَرِهْتُ أَنْ أُوقِظَهُ فَوَافَقْتُهُ حِيْنَ اسْتَيْقَظَ فَصَبَبْتُ مِنْ الْمَاءِ عَلَى اللَّبَنِ حَتَّى بَرَدَ أَسْفَلُهُ فَقُلْتُ اشْرَبْ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ فَشَرِبَ حَتَّى رَضِيْتُ ثُمَّ قَالَ أَلَمْ يَأْنِ لِلرَّحِيْلِ قُلْتُ بَلَى قَالَ فَارْتَحَلْنَا بَعْدَمَا مَالَتْ الشَّمْسُ وَاتَّبَعَنَا سُرَاقَةُ بْنُ مَالِكٍ فَقُلْتُ أُتِيْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَالَ لَا تَحْزَنْ إِنَّ اللهَ مَعَنَا فَدَعَا عَلَيْهِ النَّبِيُّ فَارْتَطَمَتْ بِهِ فَرَسُهُ إِلَى بَطْنِهَا أُرَى فِيْ جَلَدٍ مِنْ الأَرْضِ شَكَّ زُهَيْرٌ فَقَالَ إِنِّيْ أُرَاكُمَا قَدْ دَعَوْتُمَا عَلَيَّ فَادْعُوَا لِيْ فَاللهُ لَكُمَا أَنْ أَرُدَّ عَنْكُمَا الطَّلَبَ فَدَعَا لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَنَجَا فَجَعَلَ لَا يَلْقَى أَحَدًا إِلَّا قَالَ قَدْ كَفَيْتُكُمْ مَا هُنَا فَلَا يَلْقَى أَحَدًا إِلَّا رَدَّهُ قَالَ وَوَفَى لَنَا
বারা ইব্ন ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আবূ বকর (রাঃ) আমার পিতার কাছে আমাদের বাড়িতে আসলেন। তিনি আমার পিতার কাছ হতে একটি হাওদা কিনলেন এবং আমার পিতাকে বললেন, তোমার ছেলে বারাকে আমার সঙ্গে হাওদাটি বয়ে নিয়ে যেতে বল। আমি হাওদাটি বয়ে তাঁর সঙ্গে চললাম। আমার পিতাও ওটার মূল্য নেয়ার জন্য আমাদের সঙ্গী হলেন। আমার পিতা তাঁকে বললেন, হে আবূ বক্‌র! দয়া করে আপনি আমাদেরকে বলুন, আপনারা কী করেছিলেন যে রাতে আপনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথী ছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। অবশ্যই আমরা সারা রাত পথ চলে পরদিন দুপুর অবধি চললাম। যখন রাস্তাঘাট লোকশূন্য হয়ে পড়ল, রাস্তায় কোন মানুষের আনাগোনা ছিল না। হঠাৎ একটি লম্বা ও চওড়া পাথর আমাদের নযরে পড়লো, যার ছায়ায় সূর্যের তাপ প্রবেশ করছিল না। আমরা সেখানে গিয়ে নামলাম। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্য নিজ হাতে একটি জায়গা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে নিলাম, যাতে সেখানে তিনি ঘুমাতে পারেন। আমি ওখানে একটি চামড়ার বিছানা পেতে দিলাম এবং বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনি শুয়ে পড়ুন। আমি আপনার নিরাপত্তার জন্য পাহারায় থাকলাম। তিনি শুয়ে পড়লেন। আর আমি চারপাশের অবস্থা দেখার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম, একজন মেষ রাখাল তার মেষপাল নিয়ে পাথরের দিকে ছুটে আসছে। সেও আমাদের মত পাথরের ছায়ায় আশ্রয় নিতে চায়। আমি বললাম, হে যুবক! তুমি কার রাখাল? সে মদীনার কি মক্কার এক লোকের নাম বলল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তোমার মেষপালে কি দুধেল মেষ আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। আমি বললাম, তুমি কি দুহে দিবে? সে বলল, হ্যাঁ। অতঃপর সে একটি বক্রী ধরে নিয়ে এল। আমি বললাম, এর স্তন ধূলা-বালি, পশম ও ময়লা হতে পরিস্কার করে নাও। রাবী আবূ ইসহাক (রহঃ) বলেন, আমি বারাআ (রাঃ) -কে দেখলাম এক হাত অন্য হাতের উপর রেখে ঝাড়ছেন। অতঃপর ঐ যুবক একটি কাঠের বাটিতে কিছু দুধ দোহন করল। আমার সঙ্গেও একটি চামড়ার পাত্র ছিল। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উযূর পানি ও পান করার পানি রাখার জন্য নিয়েছিলাম। আমি দুধ নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আসলাম। তাঁকে জাগানো ভাল মনে করলাম না। কিছুক্ষণ পর তিনি জেগে উঠলেন। আমি দুধ নিয়ে হাযির হলাম। আমি দুধের মধ্যে কিছু পানি ঢেলেছিলাম তাতে দুধের নিচ পর্যন্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনি দুধ পান করুন। তিনি পান করলেন, আমি তাতে সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এখন কি আমাদের যাত্রা শুরুর সময় হয়নি? আমি বললাম, হ্যাঁ হয়েছে। পুনরায় শুরু হল আমাদের সফর। ততক্ষণে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে। সুরাকা ইব্‌ন মালিক আমাদের পিছন নিয়েছিল। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমাদের অনুসরণে কে যেন আসছে। তিনি বললেন, চিন্তা করোনা, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বিরুদ্ধে দু’আ করলেন। তৎক্ষণাৎ আরোহীসহ ঘোড়া তার পেট পর্যন্ত মাটিতে দেবে গেল, শক্ত মাটিতে। রাবী যুহায়র এই শব্দটি সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন আমার ধারণা এ রকম শব্দ বলেছিলেন। সুরাকা বলল, আমার বিশ্বাস আপনারা আমার বিরুদ্ধে দু‘আ করেছেন। আমার জন্য আপনারা দু‘আ করে দিন। আল্লাহ্‌র কসম আপনাদের খোঁজকারীদেরকে আমি ফিরিয়ে নিয়ে যাব। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জন্য দু‘আ করলেন। সে বেঁচে গেল। ফিরে যাবার পথে যার সঙ্গে তার দেখা হত, সে বলত আমি সব দেখে এসেছি। যাকেই পেয়েছে, ফিরিয়ে দিয়েছে। আবূ বকর (রাঃ) বলেন, সে আমাদের সঙ্গে করা অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে।

৩৬১৬

حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ مُخْتَارٍ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَى أَعْرَابِيٍّ يَعُوْدُهُ قَالَ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ عَلَى مَرِيْضٍ يَعُوْدُهُ قَالَ لَا بَأْسَ طَهُوْرٌ إِنْ شَاءَ اللهُ فَقَالَ لَهُ لَا بَأْسَ طَهُوْرٌ إِنْ شَاءَ اللهُ قَالَ قُلْتُ طَهُوْرٌ كَلَا بَلْ هِيَ حُمَّى تَفُوْرُ أَوْ تَثُوْرُ عَلَى شَيْخٍ كَبِيْرٍ تُزِيْرُهُ الْقُبُوْرَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَنَعَمْ إِذًا
ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন অসুস্থ একজন বেদুঈনকে দেখতে গেলেন। রাবী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর অভ্যাস ছিল যে, পীড়িত ব্যক্তিকে দেখতে গেলে বলতেন, কোন দুশ্চিন্তার কারণ নেই, ইনশাআল্লাহ্ গোনাহ হতে তুমি পবিত্র হয়ে যাবে। ঐ বেদুঈনকেও তিনি বললেন। চিন্তা করো না গুনাহ হতে তুমি পবিত্র হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ্। বেদুঈন বলল, আপনি বলেছেন গোনাহ হতে তুমি পবিত্র হয়ে যাবে। তা নয়। বরং এতো এমন এক জ্বর যা বয়োঃবৃদ্ধের উপর প্রভাব ফেলছে। তাকে কবরের সাক্ষাৎ করাবে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাই হোক।

৩৬১৭

حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ رَجُلٌ نَصْرَانِيًّا فَأَسْلَمَ وَقَرَأَ الْبَقَرَةَ وَآلَ عِمْرَانَ فَكَانَ يَكْتُبُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَعَادَ نَصْرَانِيًّا فَكَانَ يَقُوْلُ مَا يَدْرِيْ مُحَمَّدٌ إِلَّا مَا كَتَبْتُ لَهُ فَأَمَاتَهُ اللهُ فَدَفَنُوْهُ فَأَصْبَحَ وَقَدْ لَفَظَتْهُ الأَرْضُ فَقَالُوْا هَذَا فِعْلُ مُحَمَّدٍ وَأَصْحَابِهِ لَمَّا هَرَبَ مِنْهُمْ نَبَشُوْا عَنْ صَاحِبِنَا فَأَلْقَوْهُ فَحَفَرُوْا لَهُ فَأَعْمَقُوْا فَأَصْبَحَ وَقَدْ لَفَظَتْهُ الأَرْضُ فَقَالُوْا هَذَا فِعْلُ مُحَمَّدٍ وَأَصْحَابِهِ نَبَشُوْا عَنْ صَاحِبِنَا لَمَّا هَرَبَ مِنْهُمْ فَأَلْقَوْهُ فَحَفَرُوْا لَهُ وَأَعْمَقُوْا لَهُ فِي الأَرْضِ مَا اسْتَطَاعُوْا فَأَصْبَحَ وَقَدْ لَفَظَتْهُ الأَرْضُ فَعَلِمُوْا أَنَّهُ لَيْسَ مِنْ النَّاسِ فَأَلْقَوْهُ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক খ্রিস্টান ব্যক্তি মুসলিম হল এবং সূরা বাকারাহ ও সূরা আল-ইমরান শিখে নিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্য সে অহী লিখত। অতঃপর সে আবার খ্রিস্টান হয়ে গেল। সে বলতে লাগল, আমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে যা লিখে দিতাম তার চেয়ে বেশি কিছু তিনি জানেন না। (নাউজুবিল্লাহ) কিছুদিন পর আল্লাহ্ তাকে মৃত্যু দিলেন। খ্রিস্টানরা তাকে দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে বাইরে নিক্ষেপ করে দিয়েছে। এটা দেখে খ্রিস্টানরা বলতে লাগল- এটা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সাহাবীদেরই কাজ। যেহেতু আমাদের এ সাথী তাদের হতে পালিয়ে এসেছিল। এ জন্যই তারা আমাদের সাথীকে কবর হতে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। তাই যতদূর পারা যায় গভীর করে কবর খুঁড়ে তাকে আবার দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে আবার বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবারও তারা বলল, এটা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীদের কাণ্ড। তাদের নিকট হতে পালিয়ে আসার কারণে তারা আমাদের সাথীকে কবর হতে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবার আরো গভীর করে কবর খনন করে দাফন করল। পরদিন ভোরে দেখা গেল কবরের মাটি এবারও তাকে বাইরে নিক্ষেপ করেছে। তখন তারাও বুঝল, এটা মানুষের কাজ নয়। কাজেই তারা লাশটি ফেলে রাখল।

৩৬১৮

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يُونُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ وَأَخْبَرَنِيْ ابْنُ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا هَلَكَ كِسْرَى فَلَا كِسْرَى بَعْدَهُ وَإِذَا هَلَكَ قَيْصَرُ فَلَا قَيْصَرَ بَعْدَهُ وَالَّذِيْ نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَتُنْفِقُنَّ كُنُوْزَهُمَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন কিস্রা ধ্বংস হবে, অতঃপর অন্য কোন কিস্রা হবে না। যখন কায়সার ধ্বংস হবে তখন আর কোন কায়সার হবে না। ঐ সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ নিশ্চয়ই ঐ দু’এর ধন-ভাণ্ডার তোমরা আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় করবে।

৩৬১৯

حَدَّثَنَا قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ رَفَعَهُ قَالَ إِذَا هَلَكَ كِسْرَى فَلَا كِسْرَى بَعْدَهُ وَذَكَرَ وَقَالَ لَتُنْفَقَنَّ كُنُوْزُهُمَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ
জাবির ইব্ন সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কিস্রা ধ্বংস হয়ে যাবার পর আর কোন কিস্রা হবে না এবং কায়সার ধ্বংস হয়ে যাবার পর আর কোন কায়সার হবে না। তিনি আরো বলেছেন, নিশ্চয়ই তাদের ধন-ভাণ্ডার তোমরা আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় করবে।

৩৬২০

حَدَّثَنَا أَبُوْ الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ حُسَيْنٍ حَدَّثَنَا نَافِعُ بْنُ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَدِمَ مُسَيْلِمَةُ الْكَذَّابُ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يَقُوْلُ إِنْ جَعَلَ لِيْ مُحَمَّدٌ الأَمْرَ مِنْ بَعْدِهِ تَبِعْتُهُ وَقَدِمَهَا فِيْ بَشَرٍ كَثِيْرٍ مِنْ قَوْمِهِ فَأَقْبَلَ إِلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَعَهُ ثَابِتُ بْنُ قَيْسِ بْنِ شَمَّاسٍ وَفِيْ يَدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قِطْعَةُ جَرِيْدٍ حَتَّى وَقَفَ عَلَى مُسَيْلِمَةَ فِيْ أَصْحَابِهِ فَقَالَ لَوْ سَأَلْتَنِيْ هَذِهِ الْقِطْعَةَ مَا أَعْطَيْتُكَهَا وَلَنْ تَعْدُوَ أَمْرَ اللهِ فِيكَ وَلَئِنْ أَدْبَرْتَ ليَعْقِرَنَّكَ اللهُ وَإِنِّيْ لَارَاكَ الَّذِيْ أُرِيْتُ فِيكَ مَا رَأَيْتُ
ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যামানায় মুসায়লামাতুল কায্যাব আসল এবং বলতে লাগল, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি তাঁর পর আমাকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করেন, তাহলে আমি তাঁর অনুসরণ করব। তার জাতির অনেক লোক নিয়ে সে এসেছিল। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট আসলেন। আর তাঁর সাথী ছিলেন সাবিত ইব্‌ন কায়েস ইব্‌ন শাম্মাস (রাঃ)। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হাতে খেজুরের একটি ডাল ছিল। তিনি সঙ্গী-সাথী পরিবেষ্টিত মুসায়লামার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং বললেন, তুমি যদি আমার নিকট খেজুরের এই ডালটিও চাও, তবুও আমি তা তোমাকে দিব না। তোমার ব্যাপারে আল্লাহ্‌র যা ফায়সালা তা তুমি লঙ্ঘন করতে পারবে না। যদি তুমি কিছু দিন বেঁচেও থাক তবুও আল্লাহ্ তোমাকে অবশ্যই ধ্বংস করে দিবেন। অবশ্যই তুমি ঐ লোক যার সম্বন্ধে স্বপ্নে আমাকে সব কিছু দেখানো হয়েছে।

৩৬২১

فَأَخْبَرَنِيْ أَبُوْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَمَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُ فِيْ يَدَيَّ سِوَارَيْنِ مِنْ ذَهَبٍ فَأَهَمَّنِيْ شَأْنُهُمَا فَأُوْحِيَ إِلَيَّ فِي الْمَنَامِ أَنْ انْفُخْهُمَا فَنَفَخْتُهُمَا فَطَارَا فَأَوَّلْتُهُمَا كَذَّابَيْنِ يَخْرُجَانِ بَعْدِيْ فَكَانَ أَحَدُهُمَا الْعَنْسِيَّ وَالْآخَرُ مُسَيْلِمَةَ الْكَذَّابَ صَاحِبَ الْيَمَامَةِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(ইব্‌ন ‘আব্বাস (রহঃ)...বলেন, ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। স্বপ্নে দেখতে পেলাম আমার দু’হাতে সোনার দু’টি বালা। বালা দু’টি আমাকে চিন্তায় ফেলল। স্বপ্নেই আমার নিকট অহী এল, আপনি ফুঁ দিন। আমি তাই করলাম। বালা দু’টি উড়ে অদৃশ্য হয়ে গেল। আমি স্বপ্নের ব্যাখ্যা এভাবে করলাম, আমার পর দু’জন কায্যাব বের হবে। এদের একজন আনসী, অপরজন ইয়ামামাহবাসী মুসায়লামাতুল কাজ্জাব।

৩৬২২

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ جَدِّهِ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى أُرَاهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَأَيْتُ فِي الْمَنَامِ أَنِّيْ أُهَاجِرُ مِنْ مَكَّةَ إِلَى أَرْضٍ بِهَا نَخْلٌ فَذَهَبَ وَهَلِيْ إِلَى أَنَّهَا الْيَمَامَةُ أَوْ هَجَرُ فَإِذَا هِيَ الْمَدِيْنَةُ يَثْرِبُ وَرَأَيْتُ فِيْ رُؤْيَايَ هَذِهِ أَنِّيْ هَزَزْتُ سَيْفًا فَانْقَطَعَ صَدْرُهُ فَإِذَا هُوَ مَا أُصِيْبَ مِنْ الْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ أُحُدٍ ثُمَّ هَزَزْتُهُ بِأُخْرَى فَعَادَ أَحْسَنَ مَا كَانَ فَإِذَا هُوَ مَا جَاءَ اللهُ بِهِ مِنْ الْفَتْحِ وَاجْتِمَاعِ الْمُؤْمِنِيْنَ وَرَأَيْتُ فِيْهَا بَقَرًا وَاللهُ خَيْرٌ فَإِذَا هُمْ الْمُؤْمِنُوْنَ يَوْمَ أُحُدٍ وَإِذَا الْخَيْرُ مَا جَاءَ اللهُ بِهِ مِنْ الْخَيْرِ وَثَوَابِ الصِّدْقِ الَّذِيْ آتَانَا اللهُ بَعْدَ يَوْمِ بَدْرٍ
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি স্বপ্নে দেখতে পেলাম, আমি মক্কা হতে হিজরত করে এমন জায়গায় যাচ্ছি যেখানে বহু খেজুর গাছ রয়েছে। তখন আমার ধারণা হল, এ স্থানটি ইয়ামামা অথবা হাযর হবে। স্থানটি মদীনা ছিল। যার পূর্বনাম ইয়াস্রিব। স্বপ্নে আমি আরো দেখতে পেলাম যে আমি একটি তলোয়ার হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছি। হঠাৎ তার অগ্রাংশ ভেঙ্গে গেল। উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের যে বিপদ ঘটেছিল এটা তা-ই। অতঃপর দ্বিতীয় বার তলোয়ারটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করলাম তখন সেটি আগের চেয়েও আরো উত্তম হয়ে গেল। এটা হল যে, আল্লাহ্ মুসলিমগণকে বিজয়ী ও একত্রিত করে দিবেন। আমি স্বপ্নে আরো দেখতে পেলাম, একটি গরু (যবহ হচ্ছে) এবং শুনতে পেলাম আল্লাহ্ যা করেন সবই ভাল। এটাই হল উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের শাহাদাত বরণ। আর খায়ের হল- আল্লাহ্‌র পক্ষ হতে ঐ সকল কল্যাণই কল্যাণ এবং সত্যবাদিতার পুরস্কার যা আল্লাহ্ আমাদেরকে বাদার দিবসের পর দান করেছেন।

৩৬২৩

حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ عَنْ فِرَاسٍ عَنْ عَامِرٍ الشَّعْبِيِّ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ أَقْبَلَتْ فَاطِمَةُ تَمْشِيْ كَأَنَّ مِشْيَتَهَا مَشْيُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ مَرْحَبًا بِابْنَتِيْ ثُمَّ أَجْلَسَهَا عَنْ يَمِيْنِهِ أَوْ عَنْ شِمَالِهِ ثُمَّ أَسَرَّ إِلَيْهَا حَدِيْثًا فَبَكَتْ فَقُلْتُ لَهَا لِمَ تَبْكِيْنَ ثُمَّ أَسَرَّ إِلَيْهَا حَدِيْثًا فَضَحِكَتْ فَقُلْتُ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ فَرَحًا أَقْرَبَ مِنْ حُزْنٍ فَسَأَلْتُهَا عَمَّا قَالَ فَقَالَتْ مَا كُنْتُ لِأُفْشِيَ سِرَّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى قُبِضَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْتُهَا
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চলার ভঙ্গিতে চলতে চলতে ফাতিমা (রাঃ) আমাদের নিকট আগমন করলেন। তাঁকে দেখে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার স্নেহের কন্যাকে মোবারাকবাদ। অতঃপর তাঁকে তার ডানপাশে বা বামপাশে বসালেন এবং তাঁর সঙ্গে চুপিচুপি কথা বললেন। তখন ফাতিমা (রাঃ) কেঁদে দিলেন। আমি [‘আয়িশা (রাঃ) তাঁকে বললাম] কাঁদছেন কেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় চুপিচুপি তার সঙ্গে কথা বললেন। ফাতিমা (রাঃ) এবার হেসে উঠলেন। আমি [‘আয়িশা (রাঃ) বললাম, আজকের মত দুঃখ ও বেদনার সঙ্গে সঙ্গে আনন্দ ও খুশী আমি আর কখনো দেখিনি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী বলেছিলেন? তিনি উত্তর দিলেন, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর গোপন কথাকে প্রকাশ করব না। শেষে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ইন্তেকাল হয়ে যাবার পর আমি তাঁকে (আবার) জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কী বলেছিলেন?

৩৬২৪

فَقَالَتْ أَسَرَّ إِلَيَّ إِنَّ جِبْرِيْلَ كَانَ يُعَارِضُنِي الْقُرْآنَ كُلَّ سَنَةٍ مَرَّةً وَإِنَّهُ عَارَضَنِي الْعَامَ مَرَّتَيْنِ وَلَا أُرَاهُ إِلَّا حَضَرَ أَجَلِيْ وَإِنَّكِ أَوَّلُ أَهْلِ بَيْتِيْ لَحَاقًا بِيْ فَبَكَيْتُ فَقَالَ أَمَا تَرْضَيْنَ أَنْ تَكُوْنِيْ سَيِّدَةَ نِسَاءِ أَهْلِ الْجَنَّةِ أَوْ نِسَاءِ الْمُؤْمِنِيْنَ فَضَحِكْتُ لِذَلِكَ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বললেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথম বার আমাকে বলেছিলেন, জিব্রাঈল (আঃ) প্রতি বছর একবার আমার সঙ্গে কুরআন পাঠ করতেন, এ বছর দু’বার পড়ে শুনিয়েছেন। আমার মনে হয় আমার বিদায় বেলা উপস্থিত এবং অতঃপর আমার পরিবারের মধ্যে তুমিই সর্বপ্রথম আমার সঙ্গে মিলিত হবে। তা শুনে আমি কেঁদে দিলাম। অতঃপর বলেছিলেন, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, জান্নাতবাসী নারীদের অথবা মু’মিন নারীদের তুমি সরদার হবে। এ কথা শুনে আমি হেসেছিলাম।

৩৬২৫

حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ دَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَاطِمَةَ ابْنَتَهُ فِيْ شَكْوَاهُ الَّذِيْ قُبِضَ فِيْهِ فَسَارَّهَا بِشَيْءٍ فَبَكَتْ ثُمَّ دَعَاهَا فَسَارَّهَا فَضَحِكَتْ قَالَتْ فَسَأَلْتُهَا عَنْ ذَلِكَ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্তিম পীড়িতাবস্থায় তাঁর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) -কে ডেকে পাঠালেন। অতঃপর চুপিচুপি কী যেন বললেন। ফাতিমা (রাঃ) তা শুনে কেঁদে ফেললেন। অতঃপর আবার ডেকে তাঁকে চুপিচুপি আরো কী যেন বললেন। এতে ফাতিমা (রাঃ) হেসে উঠলেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি হাসি-কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলাম।

৩৬২৬

فَقَالَتْ سَارَّنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَنِيْ أَنَّهُ يُقْبَضُ فِيْ وَجَعِهِ الَّذِيْ تُوُفِّيَ فِيْهِ فَبَكَيْتُ ثُمَّ سَارَّنِيْ فَأَخْبَرَنِيْ أَنِّيْ أَوَّلُ أَهْلِ بَيْتِهِ أَتْبَعُهُ فَضَحِكْتُ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে চুপে চুপে বলেছিলেন, যে রোগে তিনি রোগাক্রান্ত হয়েছেন এ রোগেই তাঁর মৃত্যু হবে; তাই আমি কেঁদে দিয়েছিলাম। অতঃপত তিনি চুপিচুপি আমাকে বলেছিলেন, তাঁর পরিবার-পরিজনের মধ্যে সর্বপ্রথম আমিই তাঁর সঙ্গে মিলিত হব, এতে আমি হাসলাম।

৩৬২৭

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يُدْنِيْ ابْنَ عَبَّاسٍ فَقَالَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ إِنَّ لَنَا أَبْنَاءً مِثْلَهُ فَقَالَ إِنَّهُ مِنْ حَيْثُ تَعْلَمُ فَسَأَلَ عُمَرُ ابْنَ عَبَّاسٍ عَنْ هَذِهِ الْآيَةِ إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ (النصر :1) فَقَالَ أَجَلُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعْلَمَهُ إِيَّاهُ قَالَ مَا أَعْلَمُ مِنْهَا إِلَّا مَا تَعْلَمُ
ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমর ইব্‌ন খাত্তাব (রাঃ) ইব্‌ন ‘আব্বাস (রাঃ) -কে বিশেষ মর্যাদা দান করতেন। একদা ‘আবদুর রাহমান ইব্‌ন আউফ (রাঃ) তাঁকে বললেন, তাঁর মত ছেলে আমাদেরও আছে। এতে তিনি বললেন, এর কারণ তো আপনি নিজেও জানেন। তখন ‘উমর (রাঃ) ইব্‌ন ‘আব্বাস (রাঃ) -কে ডেকে (আরবী) আয়াতের ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করেন। ইব্‌ন ‘আব্বাস (রাঃ) উত্তর দিলেন, এ আয়াতে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে তাঁর মৃত্যু সন্নিকট বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। ‘উমর (রাঃ) বললেন, এ আয়াতের অর্থ তুমি যা জান তা ছাড়া ভিন্ন কিছু আমি জানি না।

৩৬২৮

حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سُلَيْمَانَ بْنِ حَنْظَلَةَ بْنِ الْغَسِيْلِ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ مَرَضِهِ الَّذِيْ مَاتَ فِيْهِ بِمِلْحَفَةٍ قَدْ عَصَّبَ بِعِصَابَةٍ دَسْمَاءَ حَتَّى جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ النَّاسَ يَكْثُرُوْنَ وَيَقِلُّ الأَنْصَارُ حَتَّى يَكُوْنُوْا فِي النَّاسِ بِمَنْزِلَةِ الْمِلْحِ فِي الطَّعَامِ فَمَنْ وَلِيَ مِنْكُمْ شَيْئًا يَضُرُّ فِيْهِ قَوْمًا وَيَنْفَعُ فِيْهِ آخَرِيْنَ فَلْيَقْبَلْ مِنْ مُحْسِنِهِمْ وَيَتَجَاوَزْ عَنْ مُسِيئِهِمْ فَكَانَ آخِرَ مَجْلِسٍ جَلَسَ بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শেষ রোগে আক্রান্ত হবার পর একটি চাদর পরে মাথায় একটি কাল কাপড় দিয়ে পট্টি বেঁধে ঘর হতে বের হয়ে মিম্বরের উপর গিয়ে বসলেন। আল্লাহ্ তা’আলার হামদ ও সানা পাঠ করার পর বললেন, আম্মা বাদ। লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকবে, আর আনসারদের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকবে। অবশেষে তাঁদের অবস্থা লোকের মাঝে যেমন খাদ্যের মধ্যে লবণের মত হবে। তখন তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তির মানুষের উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা থাকবে সে যেন আনসারদের ভাল কাজ গ্রহণ করে এবং তাদের ভুল-ক্রুটি ক্ষমা করে। এটাই ছিল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সর্বশেষ মজলিস যা তিনি করেছিলেন।

৩৬২৯

حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ الْجُعْفِيُّ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى عَنْ الْحَسَنِ عَنْ أَبِيْ بَكْرَةَ أَخْرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ الْحَسَنَ فَصَعِدَ بِهِ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ ابْنِيْ هَذَا سَيِّدٌ وَلَعَلَّ اللهَ أَنْ يُصْلِحَ بِهِ بَيْنَ فِئَتَيْنِ مِنْ الْمُسْلِمِيْنَ
আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা হাসান (রাঃ) -কে নিয়ে বেরিয়ে এলেন এবং তাঁকে সহ মিম্বারে আরোহণ করলেন। অতঃপর বললেন, আমার এ ছেলেটি সরদার। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’আলা এর মাধ্যমে বিবাদমান দু’দল মুসলমানের মধ্যে সমঝোতা করিয়ে দিবেন।

৩৬৩০

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلَالٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَعَى جَعْفَرًا وَزَيْدًا قَبْلَ أَنْ يَجِيءَ خَبَرُهُمْ وَعَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ
আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জা’ফর এবং যায়দ [ইব্‌ন হারিস (রাঃ)] -এর শাহাদাত অর্জনের সংবাদ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাদের উভয়ের শাহাদাত অর্জনের সংবাদ আসার পূর্বেই। তখন তাঁর দু’চোখ হতে অশ্রু ঝরছিল।

৩৬৩১

حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم هَلْ لَكُمْ مِنْ أَنْمَاطٍ قُلْتُ وَأَنَّى يَكُوْنُ لَنَا الأَنْمَاطُ قَالَ أَمَا إِنَّهُ سَيَكُوْنُ لَكُمْ الأَنْمَاطُ فَأَنَا أَقُوْلُ لَهَا يَعْنِيْ امْرَأَتَهُ أَخِّرِيْ عَنِّيْ أَنْمَاطَكِ فَتَقُوْلُ أَلَمْ يَقُلْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّهَا سَتَكُوْنُ لَكُمْ الأَنْمَاطُ فَأَدَعُهَا
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের নিকট আনমাত (গালিচার কার্পেট) আছে কি? আমি বললাম আমরা তা পাব কোথায়? তিনি বললেন, শীঘ্রই তোমরা আনমাত লাভ করবে। তখন আমি আমার স্ত্রীকে বলি, আমার বিছানা হতে এটা সরিয়ে দাও। তখন সে বলল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেননি যে, শীঘ্রই তোমরা আনমাত পেয়ে যাবে? তখন আমি তা রাখতে দেই।

৩৬৩২

حَدَّثَنِيْ أَحْمَدُ بْنُ إِسْحَاقَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ انْطَلَقَ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ مُعْتَمِرًا قَالَ فَنَزَلَ عَلَى أُمَيَّةَ بْنِ خَلَفٍ أَبِيْ صَفْوَانَ وَكَانَ أُمَيَّةُ إِذَا انْطَلَقَ إِلَى الشَّأْمِ فَمَرَّ بِالْمَدِيْنَةِ نَزَلَ عَلَى سَعْدٍ فَقَالَ أُمَيَّةُ لِسَعْدٍ انْتَظِرْ حَتَّى إِذَا انْتَصَفَ النَّهَارُ وَغَفَلَ النَّاسُ انْطَلَقْتُ فَطُفْتُ فَبَيْنَا سَعْدٌ يَطُوفُ إِذَا أَبُوْ جَهْلٍ فَقَالَ مَنْ هَذَا الَّذِيْ يَطُوفُ بِالْكَعْبَةِ فَقَالَ سَعْدٌ أَنَا سَعْدٌ فَقَالَ أَبُوْ جَهْلٍ تَطُوفُ بِالْكَعْبَةِ آمِنًا وَقَدْ آوَيْتُمْ مُحَمَّدًا وَأَصْحَابَهُ فَقَالَ نَعَمْ فَتَلَاحَيَا بَيْنَهُمَا فَقَالَ أُمَيَّةُ لسَعْدٍ لَا تَرْفَعْ صَوْتَكَ عَلَى أَبِي الْحَكَمِ فَإِنَّهُ سَيِّدُ أَهْلِ الْوَادِيْ ثُمَّ قَالَ سَعْدٌ وَاللهِ لَئِنْ مَنَعْتَنِيْ أَنْ أَطُوفَ بِالْبَيْتِ لَاقْطَعَنَّ مَتْجَرَكَ بِالشَّامِ قَالَ فَجَعَلَ أُمَيَّةُ يَقُوْلُ لِسَعْدٍ لَا تَرْفَعْ صَوْتَكَ وَجَعَلَ يُمْسِكُهُ فَغَضِبَ سَعْدٌ فَقَالَ دَعْنَا عَنْكَ فَإِنِّيْ سَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَزْعُمُ أَنَّهُ قَاتِلُكَ قَالَ إِيَّايَ قَالَ نَعَمْ قَالَ وَاللهِ مَا يَكْذِبُ مُحَمَّدٌ إِذَا حَدَّثَ فَرَجَعَ إِلَى امْرَأَتِهِ فَقَالَ أَمَا تَعْلَمِيْنَ مَا قَالَ لِيْ أَخِي الْيَثْرِبِيُّ قَالَتْ وَمَا قَالَ قَالَ زَعَمَ أَنَّه سَمِعَ مُحَمَّدًا يَزْعُمُ أَنَّهُ قَاتِلِيْ قَالَتْ فَوَاللهِ مَا يَكْذِبُ مُحَمَّدٌ قَالَ فَلَمَّا خَرَجُوْا إِلَى بَدْرٍ وَجَاءَ الصَّرِيْخُ قَالَتْ لَهُ امْرَأَتُهُ أَمَا ذَكَرْتَ مَا قَالَ لَكَ أَخُوكَ الْيَثْرِبِيُّ قَالَ فَأَرَادَ أَنْ لَا يَخْرُجَ فَقَالَ لَهُ أَبُوْ جَهْلٍ إِنَّكَ مِنْ أَشْرَافِ الْوَادِيْ فَسِرْ يَوْمًا أَوْ يَوْمَيْنِ فَسَارَ مَعَهُمْ فَقَتَلَهُ اللهُ
আবদুল্লাহ্ ইব্ন মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সা’দ ইব্‌ন মু’আয (রাঃ) ‘উমরাহ আদায় করার জন্য গেলেন এবং সাফওয়ানের পিতা উমাইয়াহ ইব্‌ন খালাফ এর বাড়িতে তিনি অতিথি হলেন। উমাইয়াহ ও সিরিয়া গমনকালে (মদীনায়) সা’দ (রাঃ) -এর বাড়িতে অবস্থান করত। উমাইয়াহ সা’দ (রাঃ) -কে বলল, অপেক্ষা করুন, যখন দুপুর হবে এবং যখন চলাফেরা কমে যাবে, তখন আপনি গিয়ে তাওয়াফ করে নিবেন। সা’দ (রাঃ) তাওয়াফ করছিলেন। এমতাবস্থায় আবূ জাহাল এসে হাজির হল। সা’দ (রাঃ) -কে দেখে জিজ্ঞেস করল, এ ব্যক্তি কে যে কা’বার তাওয়াফ করছে সা’দ (রাঃ) বললেন, আমি সা’দ। আবূ জাহাল বলল, তুমি নির্বিঘ্নে কা’বার তাওয়াফ করছ? অথচ তোমরাই মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাথীদেরকে আশ্রয় দিয়েছ? সা’দ (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। এভাবে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হল। তখন উমাইয়াহ সা’দ (রাঃ) -কে বলল, আবুল হাকামের সঙ্গে উচ্চঃস্বরে কথা বল না, কারণ সে মক্কাবাসীদের নেতা। অতঃপর সা’দ (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌র কসম! তুমি যদি আমাকে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করতে বাধা প্রদান কর, তবে আমিও তোমার সিরিয়ার সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্যের রাস্তা বন্ধ করে দিব। উমাইয়াহ সা’দ (রাঃ) -কে তখন বলতে লাগল, তোমার স্বর উঁচু করো না এবং সে তাঁকে বিরত করতে চেষ্টা করতে লাগল। তখন সা’দ (রাঃ) ক্রোধান্বিত হয়ে বললেন, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, তারা তোমাকে হত্যা করবে। উমাইয়াহ বলল আমাকেই? তিনি বললেন হ্যাঁ। উমাইয়াহ বলল, আল্লাহ্‌র কসম মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনও মিথ্যা কথা বলেন না। অতঃপর উমাইয়া তার স্ত্রীর নিকট ফিরে এসে বলল, তুমি কি জান, আমার ইয়াসরিবী ভাই আমাকে কী বলেছে? স্ত্রী জিজ্ঞেস করল কী বলেছে? উমাইয়াহ বলল, সে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছে যে, তারা আমাকে হত্যা করবে। তার স্ত্রী বলল, আল্লাহ্‌র কসম, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিথ্যা বলেন না। যখন মক্কার মুশরিকরা বদরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল এবং আহবানকারী আহবান জানাল। তখন উমাইয়াহর স্ত্রী তাকে স্মরণ করিয়ে দিল, তোমার ইয়াসরিবী ভাই তোমাকে যে কথা বলছিল সে কথা তোমার মনে নেই? তখন উমাইয়া না যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিল। আবূ জাহল তাকে বলল, তুমি এ অঞ্চলের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। আমাদের সঙ্গে দুইএকদিনের পথ চল। উমাইয়াহ তাদের সঙ্গে চলল। আল্লাহ্ তা’আলার ইচ্ছায় সে নিহত হল।

৩৬৩৩

حَدَّثَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْمُغِيْرَةِ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ مُوْسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَأَيْتُ النَّاسَ مُجْتَمِعِيْنَ فِيْ صَعِيْدٍ فَقَامَ أَبُوْ بَكْرٍ فَنَزَعَ ذَنُوْبًا أَوْ ذَنُوْبَيْنِ وَفِيْ بَعْضِ نَزْعِهِ ضَعْفٌ وَاللهُ يَغْفِرُ لَهُ ثُمَّ أَخَذَهَا عُمَرُ فَاسْتَحَالَتْ بِيَدِهِ غَرْبًا فَلَمْ أَرَ عَبْقَرِيًّا فِي النَّاسِ يَفْرِيْ فَرِيَّهُ حَتَّى ضَرَبَ النَّاسُ بِعَطَنٍ وَقَالَ هَمَّامٌ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَنَزَعَ أَبُوْ بَكْرٍ ذَنُوْبًا أَوْ ذَنُوْبَيْنِ
আবদুল্লাহ্ (ইব্ন ‘উমর) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, একদা (স্বপ্নে) লোকজনকে একটি মাঠে সমবেত দেখতে পেলাম। তখন আবূ বকর (রাঃ) উঠে দাঁড়ালেন এবং এক অথবা দুই বালতি পানি উঠালেন। পানি উঠাতে তিনি দুর্বলতা বোধ করছিলেন। আল্লাহ্ তাঁকে ক্ষমা করুন। অতঃপর ‘উমর (রাঃ) বালতিটি হাতে নিলেন। বালতিটি তখন বড় আকার ধারণ করল। আমি মানুষের মধ্যে পানি উঠাতে ‘উমারের মত সুদক্ষ ও শক্তিশালী ব্যক্তি আর দেখিনি। শেষে উপস্থিত লোক তাদের উটগুলোকে পানি পান করিয়ে উটশালে নিয়ে গেল। হাম্মাম (রহঃ) বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) -কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করতে শুনেছি আবূ বক্‌র দু’বালতি পানি উঠালেন।

৩৬৩৪

حَدَّثَنِيْ عَبَّاسُ بْنُ الْوَلِيْدِ النَّرْسِيُّ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ حَدَّثَنَا أَبُوْ عُثْمَانَ قَالَ أُنْبِئْتُ أَنَّ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَام أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدَهُ أُمُّ سَلَمَةَ فَجَعَلَ يُحَدِّثُ ثُمَّ قَامَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِأُمِّ سَلَمَةَ مَنْ هَذَا أَوْ كَمَا قَالَ قَالَ قَالَتْ هَذَا دِحْيَةُ قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ ايْمُ اللهِ مَا حَسِبْتُهُ إِلَّا إِيَّاهُ حَتَّى سَمِعْتُ خُطْبَةَ نَبِيِّ اللهِ يُخْبِرُ جِبْرِيْلَ أَوْ كَمَا قَالَ قَالَ فَقُلْتُ لِأَبِيْ عُثْمَانَ مِمَّنْ سَمِعْتَ هَذَا قَالَ مِنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ
আবূ ‘উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে জানানো হল যে, একবার জিব্রাঈল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আসলেন। তখন উম্মু সালামা (রাঃ) তাঁর নিকট ছিলেন। তিনি এসে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করলেন। অতঃপর উঠে গেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু সালামা (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলেন, লোকটিকে চিনতে পেরেছ কি? তিনি বললেন, এতো দেহ্ইয়া। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমি দেহ্ইয়া বলেই বিশ্বাস করেছিলাম কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে তাঁর খুতবায় জিব্রাঈল (আঃ) -এর আগমনের কথা বলতে শুনলাম। [সুলায়মান (রাবী) বলেন, আমি আবূ ‘উসমানকে জিজ্ঞেস করলাম এ হাদীসটি আপনি কার নিকট শুনেছেন? তিনি বললেন, উসামাহ ইব্‌ন যায়দ (রাঃ) -এর নিকট শুনেছি।

৬১/২৬. অধ্যায়ঃ

মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ যাদের আমি কিতাব দিয়েছি তারা তাকে সেরূপ চেনে, যেরূপ তারা তাদের পুত্রদের চেনে। আর তাদের একদল জেনে শুনে নিশ্চিতভাবে সত্য গোপন করে। (আল-বাক্বারাহ ১৪৬)

৩৬৩৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ الْيَهُوْدَ جَاءُوْا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرُوْا لَهُ أَنَّ رَجُلًا مِنْهُمْ وَامْرَأَةً زَنَيَا فَقَالَ لَهُمْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا تَجِدُوْنَ فِي التَّوْرَاةِ فِيْ شَأْنِ الرَّجْمِ فَقَالُوْا نَفْضَحُهُمْ وَيُجْلَدُوْنَ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلَامٍ كَذَبْتُمْ إِنَّ فِيْهَا الرَّجْمَ فَأَتَوْا بِالتَّوْرَاةِ فَنَشَرُوْهَا فَوَضَعَ أَحَدُهُمْ يَدَهُ عَلَى آيَةِ الرَّجْمِ فَقَرَأَ مَا قَبْلَهَا وَمَا بَعْدَهَا فَقَالَ لَهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلَامٍ ارْفَعْ يَدَكَ فَرَفَعَ يَدَهُ فَإِذَا فِيْهَا آيَةُ الرَّجْمِ فَقَالُوْا صَدَقَ يَا مُحَمَّدُ فِيْهَا آيَةُ الرَّجْمِ فَأَمَرَ بِهِمَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَرُجِمَا قَالَ عَبْدُ اللهِ فَرَأَيْتُ الرَّجُلَ يَجْنَأُ عَلَى الْمَرْأَةِ يَقِيْهَا الْحِجَارَةَ
আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইয়াহুদীরা আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর খিদমতে এসে বলল, তাদের একজন পুরুষ ও একজন মহিলা ব্যভিচার করেছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করা সম্পর্কে তাওরাতে কী বিধান পেয়েছ? তারা বলল, আমরা এদেরকে অপমানিত করব এবং তাদের বেত্রাঘাত করা হবে। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন সালাম (রাঃ) বললেন, তোমরা মিথ্যা বলছ। তাওরাতে প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যার বিধান রয়েছে। তারা তাওরাত নিয়ে এসে বাহির করল এবং প্রস্তর হত্যা করা সম্পর্কীয় আয়াতের উপর হাত রেখে তার আগের ও পরের আয়াতগুলি পাঠ করল। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন সালাম (রাঃ) বললেন, তোমরা হাত সরাও। সে হাত সরাল। তখন দেখা গেল প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করার আয়াত আছে। তখন ইয়াহুদীরা বলল, হে মুহাম্মাদ! তিনি সত্যই বলছেন। তাওরাতে প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যার আয়াতই আছে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রস্তর নিক্ষেপে দু’জনকে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন। ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি ঐ পুরুষটিকে মেয়েটির দিকে ঝুঁকে পড়তে দেখেছি। সে মেয়েটিকে বাচাঁনোর চেষ্টা করছিল।
(১৩২৯, মুসলিম ২৯/৬, হাঃ ১৬৯৯, আহমাদ ৪৪৯৮) (আ.প্র. ৩৩৬৪, ই.ফা. ৩৩৭১)

৬১/২৭. অধ্যায়ঃ

মুশরিকরা নিদর্শন দেখানোর জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বললে তিনি চাঁদ দু’ভাগ করে দেখালেন।

৩৬৩৬

حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ أَبِيْ مَعْمَرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ انْشَقَّ الْقَمَرُ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم شِقَّتَيْنِ فَقَالَ النَّبِيُّ اشْهَدُوْا
আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যুগে চাঁদ দ্বিখন্ডিত হয়েছিল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা সাক্ষী থাক।
(৩৮৬৯, ৩৮৭১, ৪৮৬৪, ৪৮৬৫, মুসলিম ৫০/৮, হাঃ ২৮০০, আহমাদ ৩৫৮৩) (আ.প্র. ৩৩৬৫, ই.ফা. ৩৩৭২)

৩৬৩৭

حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يُونُسُ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ح و قَالَ لِيْ خَلِيْفَةُ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّهُ حَدَّثَهُمْ أَنَّ أَهْلَ مَكَّةَ سَأَلُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُرِيَهُمْ آيَةً فَأَرَاهُمْ انْشِقَاقَ الْقَمَرِ
আনাস (ইব্‌ন মালিক) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মক্কাবাসী কাফিররা আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট নির্দশন দেখানোর জন্য বললে তিনি তাদেরকে চাঁদ দু’ভাগ করে দেখালেন।
(৩৮৬৮, ৪৮৬৭, ৪৮৬৮, মুসলিম ৫০/৮, হাঃ ২৮০২) (আ.প্র. ৩৩৬৬, ই.ফা. ৩৩৭৩)

৩৬৩৮

حَدَّثَنِيْ خَلَفُ بْنُ خَالِدٍ الْقُرَشِيُّ حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ عَنْ جَعْفَرِ بْنِ رَبِيْعَةَ عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ الْقَمَرَ انْشَقَّ فِيْ زَمَانِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
ইব্‌ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যুগে চাদঁ দু’খন্ড হয়েছিল।
(৩৮৭০, ৪৮৬৬, মুসলিম ৫০/৮, হাঃ ২৮০৩) (আ.প্র. ৩৩৬৭, ই.ফা. ৩৩৭৪)
৬১/২৮. অধ্যায়ঃ

৩৬৩৯

بَاب حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُعَاذٌ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ قَتَادَةَ حَدَّثَنَا أَنَسٌ أَنَّ رَجُلَيْنِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَا مِنْ عِنْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ لَيْلَةٍ مُظْلِمَةٍ وَمَعَهُمَا مِثْلُ الْمِصْبَاحَيْنِ يُضِيئَانِ بَيْنَ أَيْدِيْهِمَا فَلَمَّا افْتَرَقَا صَارَ مَعَ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا وَاحِدٌ حَتَّى أَتَى أَهْلَهُ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দু’জন সহাবী অন্ধকার রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট হতে বের হলেন, তখন তাদের সঙ্গে দু’টি বাতির মত কিছু তাদের সম্মুখ ভাগ আলোকিত করে চলল। যখন তাঁরা আলাদা হয়ে গেলেন তখন প্রত্যেকের সঙ্গে এক একটি বাতি চলতে লাগল। তাঁরা নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছা পর্যন্ত। (৪৬৫)
(আ.প্র. ৩৩৬৮, ই.ফা. ৩৩৭৫)

৩৬৪০

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِي الأَسْوَدِ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا قَيْسٌ سَمِعْتُ الْمُغِيْرَةَ بْنَ شُعْبَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا يَزَالُ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِيْ ظَاهِرِيْنَ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ أَمْرُ اللهِ وَهُمْ ظَاهِرُوْنَ
মুগীরা ইব্‌ন শু’বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা বিজয়ী থাকবে। এমনকি যখন ক্বিয়ামত আসবে তখনও তারা বিজয়ী থাকবে। (৭৩১১, ৭৪৫৯, মুসলিম ৩৩/৫৩, হাঃ ১৯২১) (আ.প্র. ৩৩৬৯, ই.ফা. ৩৩৭৬)

৩৬৪১

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا الْوَلِيْدُ قَالَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ جَابِرٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُمَيْرُ بْنُ هَانِئٍ أَنَّهُ سَمِعَ مُعَاوِيَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ لَا يَزَالُ مِنْ أُمَّتِيْ أُمَّةٌ قَائِمَةٌ بِأَمْرِ اللهِ لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ وَلَا مَنْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ أَمْرُ اللهِ وَهُمْ عَلَى ذَلِكَ قَالَ عُمَيْرٌ فَقَالَ مَالِكُ بْنُ يُخَامِرَ قَالَ مُعَاذٌ وَهُمْ بِالشَّأْمِ فَقَالَ مُعَاوِيَةُ هَذَا مَالِكٌ يَزْعُمُ أَنَّهُ سَمِعَ مُعَاذًا يَقُوْلُ وَهُمْ بِالشَّأْمِ
মু’আবিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা আল্লাহ্‌র দ্বীনের উপর অটল থাকবে। তাদেরকে যারা অপমান করতে চাইবে অথবা তাদের বিরোধিতা করবে, তারা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। এমনকি কিয়ামত আসা পর্যন্ত তাঁরা এই অবস্থার উপর থাকবে। ‘উমাইর ইব্‌ন হানী (রহঃ) মালিক ইব্‌ন ইউখামিরের (রহঃ) বরাত দিয়ে বলেন, মু’আয (রাঃ) বলেছেন, ঐ দলটি সিরিয়ায় অবস্থান করবে। মু’আবিয়া (রহঃ) বলেন, মালিক (রহঃ) -এর ধারণা যে ঐ দলটি সিরিয়ায় অবস্থান করবে বলে মু’আয (রাঃ) বলছেন। (৭১)
(আ.প্র. ৩৩৭০, ই.ফা. ৩৩৭৭)

৩৬৪২

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا شَبِيْبُ بْنُ غَرْقَدَةَ قَالَ سَمِعْتُ الْحَيَّ يُحَدِّثُوْنَ عَنْ عُرْوَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَعْطَاهُ دِيْنَارًا يَشْتَرِيْ لَهُ بِهِ شَاةً فَاشْتَرَى لَهُ بِهِ شَاتَيْنِ فَبَاعَ إِحْدَاهُمَا بِدِيْنَارٍ وَجَاءَهُ بِدِيْنَارٍ وَشَاةٍ فَدَعَا لَهُ بِالْبَرَكَةِ فِيْ بَيْعِهِ وَكَانَ لَوْ اشْتَرَى التُّرَابَ لَرَبِحَ فِيْهِ قَالَ سُفْيَانُ كَانَ الْحَسَنُ بْنُ عُمَارَةَ جَاءَنَا بِهَذَا الْحَدِيْثِ عَنْهُ قَالَ سَمِعَهُ شَبِيْبٌ مِنْ عُرْوَةَ فَأَتَيْتُهُ فَقَالَ شَبِيْبٌ إِنِّيْ لَمْ أَسْمَعْهُ مِنْ عُرْوَةَ قَالَ سَمِعْتُ الْحَيَّ يُخْبِرُوْنَهُ عَنْهُ
‘উরওয়া বারিকী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি বকরী কিনে দেয়ার জন্য তাকে একটি দিনার দিলেন। তিনি ঐ দীনার দিয়ে দু’টি বকরী কিনলেন। অতঃপর এক দীনার মূল্যে একটি বকরী বিক্রি করে দিলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর খিদমতে একটি বকরী ও একটি দীনার নিয়ে উপস্থিত হলেন। তা দেখে তিনি তার ব্যবসা বাণিজ্যে বরকত হবার জন্য দু’আ করে দিলেন। অতঃপর তার অবস্থা এমন হল যে, ব্যবসার জন্য যদি মাটিও তিনি কিনতেন তাতেও তিনি লাভবান হতেন। এ হাদীসের একজন বর্ণনাকারী সুফিয়ান ইব্‌ন ‘উয়াইনাহ বলেন, হাসান ইব্‌ন ‘উমারাহ শাবীব ও ‘উরওয়ার বরাদ দিয়ে এ হাদীসটি আমাদেরকে বলেছেন। তারপর আমি শাবীবকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন যে, আমি সরাসরি ‘উরওয়া থেকে শুনিনি। একটি গোত্র ‘উরওয়ার বরাত দিয়ে আমাকে হাদীস বলেছেন। তবে ‘উরওয়ার থেকে আমি (অপর) একটি হাদীস শুনেছি।
(আ.প্র. ৩৩৭১ প্রথমাংশ, ই.ফা. ৩৩৭৮ প্রথমাংশ)

৩৬৪৩

وَلَكِنْ سَمِعْتُهُ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ الْخَيْرُ مَعْقُوْدٌ بِنَوَاصِي الْخَيْلِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ قَالَ وَقَدْ رَأَيْتُ فِيْ دَارِهِ سَبْعِيْنَ فَرَسًا قَالَ سُفْيَانُ يَشْتَرِيْ لَهُ شَاةً كَأَنَّهَا أُضْحِيَّةٌ
‘উরওয়া বারিকী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আর তা হলো এইঃ ‘উরওয়া বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, ঘোড়ার কপালের কেশদামে বরকত ও কল্যাণ আছে ক্বিয়ামাত অবধি। রাবী বলেন, আমি তার গৃহে সত্তরটি ঘোড়া দেখেছি। সুফইয়ান (রহঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্য যে বকরীটি কেনা হয়েছিল তা ছিল কুরবানীর জন্য। (২৮৫০)
(আ.প্র. ৩৩৭১ শেষাংশ, ই.ফা. ৩৩৭৮ শেষাংশ)

৩৬৪৪

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْخَيْلُ فِيْ نَوَاصِيْهَا الْخَيْرُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ
ইব্‌ন ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ঘোড়ার কপালের কেশদামে কিয়ামত অবধি কল্যাণ ও বরকত আছে।
(২৮৪৯) (আ.প্র. ৩৩৭২, ই.ফা. ৩৩৭৯)

৩৬৪৫

حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْخَيْلُ مَعْقُوْدٌ فِيْ نَوَاصِيْهَا الْخَيْرُ
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ঘোড়ার কপালে কল্যাণ ও বরকত আছে। (২৮৫১)
(আ.প্র. ৩৩৭৩, ই.ফা. ৩৩৮০)

৩৬৪৬

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْخَيْلُ لِثَلَاثَةٍ لِرَجُلٍ أَجْرٌ وَلِرَجُلٍ سِتْرٌ وَعَلَى رَجُلٍ وِزْرٌ فَأَمَّا الَّذِيْ لَهُ أَجْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَأَطَالَ لَهَا فِيْ مَرْجٍ أَوْ رَوْضَةٍ وَمَا أَصَابَتْ فِيْ طِيَلِهَا مِنْ الْمَرْجِ أَوْ الرَّوْضَةِ كَانَتْ لَهُ حَسَنَاتٍ وَلَوْ أَنَّهَا قَطَعَتْ طِيَلَهَا فَاسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ كَانَتْ أَرْوَاثُهَا حَسَنَاتٍ لَهُ وَلَوْ أَنَّهَا مَرَّتْ بِنَهَرٍ فَشَرِبَتْ وَلَمْ يُرِدْ أَنْ يَسْقِيَهَا كَانَ ذَلِكَ لَهُ حَسَنَاتٍ وَرَجُلٌ رَبَطَهَا تَغَنِّيًا وَسِتْرًا وَتَعَفُّفًا وَلَمْ يَنْسَ حَقَّ اللهِ فِيْ رِقَابِهَا وَظُهُوْرِهَا فَهِيَ لَهُ كَذَلِكَ سِتْرٌ وَرَجُلٌ رَبَطَهَا فَخْرًا وَرِيَاءً وَنِوَاءً لِأَهْلِ الْإِسْلَامِ فَهِيَ وِزْرٌ وَسُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْحُمُرِ فَقَالَ مَا أُنْزِلَ عَلَيَّ فِيْهَا إِلَّا هَذِهِ الْآيَةُ الْجَامِعَةُ الْفَاذَّةُ فَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَّرَهُ وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَهُ (الزلزلة : 7-8)
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ঘোড়া তিন প্রকার। একজনের জন্য পূণ্য, আর একজনের জন্য আবরণ ও অন্য আর একজনের জন্য পাপের কারণ। সে ব্যক্তির জন্য পূণ্য, যে আল্লাহ্‌র রাস্তায় ঘোড়াকে সর্বদা প্রস্তুত রাখে এবং সে ব্যক্তি যখন লম্বা রশি দিয়ে ঘোড়াটি কোন চারণভূমি বা বাগানে বেঁধে রাখে তখন ঐ লম্বা দড়ির মধ্যে চারণভূমি অথবা বাগানের যে অংশ পড়বে তত পরিমান সাওয়াব সে পাবে। যদি ঘোড়াটি দড়ি ছিঁড়ে ফেলে এবং দুই একটি টিলা পার হয়ে কোথাও চলে যায় তার পরে তার লাদাগুলিও নেকী বলে গন্য হবে। যদি কোন নদী-নালায় গিয়ে পানি পান করে, মালিক যদিও পানি পান করানোর ইচ্ছা করেনি তাও তার নেক আমলে গন্য হবে। আর যে ব্যক্তি নিজের অস্বচ্ছলতা দারিদ্রের গ্লানি ও পরমুখাপেক্ষিতা হতে নিজেকে রক্ষা করার জন্য ঘোড়া পালন করে এবং তার গর্দান ও পিঠে আল্লাহ্‌র যে হক রয়েছে তা ভুলে না যায়। তবে এই ঘোড়া তার জন্য আযাব হতে আবরণ হবে। অপর এক ব্যক্তি যে অহংকার, লোক দেখানো এবং আহলে ইসলামের সঙ্গে শত্রুতার কারণে ঘোড়া লালন-পালন করে এ ঘোড়া তার জন্য পাপের বোঝা হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে গাধা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি বললেন, এ সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোন আয়াত আমার নিকট অবতীর্ণ হয়নি। তবে ব্যাপক অর্থবোধক অনন্য আয়াতটি আমার নিকট নাযিল হয়েছেঃ যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ নেক আমল করবে সে তার প্রতিফল অবশ্যই দেখতে পাবে। আর যে অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করবে সেও তার প্রতিফল দেখতে পাবে। (যিলযালঃ ৭৮)
(২৩৭১) (আ.প্র. ৩৩৭৪, ই.ফা. ৩৩৮১)

৩৬৪৭

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ مُحَمَّدٍ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ صَبَّحَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ بُكْرَةً وَقَدْ خَرَجُوْا بِالْمَسَاحِيْ فَلَمَّا رَأَوْهُ قَالُوْا مُحَمَّدٌ وَالْخَمِيسُ وَأَحَالُوْا إِلَى الْحِصْنِ يَسْعَوْنَ فَرَفَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَدَيْهِ وَقَالَ اللهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِيْنَ
আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুব সকালে খায়বারে পৌঁছলেন। তখন খায়বারবাসী কোদাল নিয়ে ঘর হতে বের হচ্ছিল। তাঁকে (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখে তারা বলতে লাগল, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুরা সেনা বাহিনী নিয়ে এসে পড়েছে। (এ বলে) তারা দৌড়াদৌড়ি করে তাদের সুরক্ষিত কিল্লায় ঢুকে পড়ল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’হাত উপরে উঠিয়ে বললেন, “আল্লাহু আকবার” খায়বার ধ্বংস হোক, আমরা যখন কোন জাতির, আঙ্গিণায় অবতরণ করি তখন এসব সাবধানকৃত লোকদের প্রভাতটি অত্যন্ত অশুভ হয়। (৩৭১)
(আ.প্র. ৩৩৭৫, ই.ফা. ৩৩৮২)

৩৬৪৮

حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي الْفُدَيْكِ عَنْ ابْنِ أَبِيْ ذِئْبٍ عَنْ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ سَمِعْتُ مِنْكَ حَدِيْثًا كَثِيْرًا فَأَنْسَاهُ قَالَ ابْسُطْ رِدَاءَكَ فَبَسَطْتُ فَغَرَفَ بِيَدِهِ فِيْهِ ثُمَّ قَالَ ضُمَّهُ فَضَمَمْتُهُ فَمَا نَسِيْتُ حَدِيْثًا بَعْدُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বললেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনার হতে অনেক হাদীস আমি শুনেছি, তবে তা আমি ভুলে যাই। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার চাদরটি বিছাও। আমি চাদরটি বিছালাম। তিনি তাঁর হাত দিয়ে চাদরের মধ্যে কী যেন রাখলেন এবং বললেন, চাদরটি চেপে ধর। আমি চেপে ধরলাম, অতঃপর আমি আর কোন হাদীস ভুলিনি। (১১৮)
(আ.প্র. ৩৩৭৬, ই.ফা. ৩৩৮৩)

অধ্যায় "মর্যাদা বৈশিষ্ট্য" হাদিস নং - ৩৪৮৯ থেকে ৩৫৭০

No comments

Powered by Blogger.