সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "হজ্জ" হাদিস নং -১৭৫১ থেকে ১৭৭২

জামারায়ে ‘আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ করে অপেক্ষা না করা।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে ইব্‌নু উমর (রাঃ) এ কথাটি বর্ণনা করেন।

২৫/১৪০. অধ্যায়ঃ

অপর দুই জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করে সমতল ভুমিতে গিয়ে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো।

১৭৫১

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا طَلْحَةُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَأَنَّهُ كَانَ يَرْمِي الْجَمْرَةَ الدُّنْيَا بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ يُكَبِّرُ عَلَى إِثْرِ كُلِّ حَصَاةٍ ثُمَّ يَتَقَدَّمُ حَتَّى يُسْهِلَ فَيَقُومَ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ فَيَقُومُ طَوِيلاً وَيَدْعُو وَيَرْفَعُ يَدَيْهِ ثُمَّ يَرْمِي الْوُسْطَى ثُمَّ يَأْخُذُ ذَاتَ الشِّمَالِ فَيَسْتَهِلُ وَيَقُومُ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ فَيَقُومُ طَوِيلاً وَيَدْعُو وَيَرْفَعُ يَدَيْهِ وَيَقُومُ طَوِيلاً ثُمَّ يَرْمِي جَمْرَةَ ذَاتِ الْعَقَبَةِ مِنْ بَطْنِ الْوَادِي وَلاَ يَقِفُ عِنْدَهَا ثُمَّ يَنْصَرِفُ فَيَقُولُ هَكَذَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَفْعَلُهُ

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি প্রথম জামারায় সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করতেন এবং প্রতিটি কঙ্কর নিক্ষেপের সাথে তাকবীর বলতেন। তারপর সামনে অগ্রসর হয়ে সমতল ভূমিতে এসে কিবলামুখী হয়ে দীর্ঘক্ষন দাঁড়াতেন এবং উভয় হাত তুলে দু’আ করতেন। অতঃপর মধ্যবর্তী জামারায় কঙ্কর মারতেন এবং দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতেন। এরপর বাতন ওয়াদী হতে জামারায়ে ‘আকাবায় কঙ্কর মারতেন। এর কাছে তিনি বিলম্ব না করে ফিরে আসতেন এবং বলতেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এরূপ করতে দেখেছি।
(১৭৫২,১৭৫৩) (আঃপ্রঃ ১৬২৯, ইঃফাঃ ১৬৩৭)

২৫/১৪১. অধ্যায়ঃ

নিকটবর্তী এবং মধ্যবর্তী জামারার নিকট দুই হস্ত উত্তোলন করা।

১৭৫২

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِي أَخِي عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ يُونُسَ بْنِ يَزِيدَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَرْمِي الْجَمْرَةَ الدُّنْيَا بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ ثُمَّ يُكَبِّرُ عَلَى إِثْرِ كُلِّ حَصَاةٍ ثُمَّ يَتَقَدَّمُ فَيُسْهِلُ فَيَقُومُ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ قِيَامًا طَوِيلاً فَيَدْعُو وَيَرْفَعُ يَدَيْهِ ثُمَّ يَرْمِي الْجَمْرَةَ الْوُسْطَى كَذَلِكَ فَيَأْخُذُ ذَاتَ الشِّمَالِ فَيُسْهِلُ وَيَقُومُ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ قِيَامًا طَوِيلاً فَيَدْعُو وَيَرْفَعُ يَدَيْهِ ثُمَّ يَرْمِي الْجَمْرَةَ ذَاتَ الْعَقَبَةِ مِنْ بَطْنِ الْوَادِي وَلاَ يَقِفُ عِنْدَهَا وَيَقُولُ هَكَذَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَفْعَلُ
সালিম ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) নিকটবর্তী জামারায় সাতটি কঙ্কর মারতেন এবং প্রতিটি কঙ্কর নিক্ষেপের সাথে তাকবীর বলতেন। এরপর সামনে এগিয়ে গিয়ে সমতল ভূমিতে এসে ক্বিবলামুখী হয়ে দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতেন এবং উভয় হাত উঠিয়ে দু’আ করতেন। অতঃপর মধ্যবর্তী জামারায় অনুরূপভাবে কঙ্কর মারতেন। এরপর বাঁ দিক হয়ে সমতল ভূমিতে এসে ক্বিবলামুখী হয়ে দীর্ধক্ষণ দাঁড়াতেন এবং উভয় হাত উঠিয়ে দু’আ করতেন। অতঃপর বাতন ওয়াদী হতে জামারায়ে আকাবায় কঙ্কর মারতেন এবং এর কাছে তিনি দেরী করতেন না। তিনি বলতেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি অনুরূপ করতে দেখেছি। (১৭৫১)
(আঃপ্রঃ১৬৩০, ই,ফা, ১৬৩৮)

২৫/১৪২. অধ্যায়ঃ

দুই জামারার নিকটে দু’আ করা।

১৭৫৩

وَقَالَ مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا رَمَى الْجَمْرَةَ الَّتِي تَلِي مَسْجِدَ مِنًى يَرْمِيهَا بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ يُكَبِّرُ كُلَّمَا رَمَى بِحَصَاةٍ ثُمَّ تَقَدَّمَ أَمَامَهَا فَوَقَفَ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ رَافِعًا يَدَيْهِ يَدْعُو وَكَانَ يُطِيلُ الْوُقُوفَ ثُمَّ يَأْتِي الْجَمْرَةَ الثَّانِيَةَ فَيَرْمِيهَا بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ يُكَبِّرُ كُلَّمَا رَمَى بِحَصَاةٍ ثُمَّ يَنْحَدِرُ ذَاتَ الْيَسَارِ مِمَّا يَلِي الْوَادِيَ فَيَقِفُ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ رَافِعًا يَدَيْهِ يَدْعُو ثُمَّ يَأْتِي الْجَمْرَةَ الَّتِي عِنْدَ الْعَقَبَةِ فَيَرْمِيهَا بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ يُكَبِّرُ عِنْدَ كُلِّ حَصَاةٍ ثُمَّ يَنْصَرِفُ وَلاَ يَقِفُ عِنْدَهَا قَالَ الزُّهْرِيُّ سَمِعْتُ سَالِمَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يُحَدِّثُ مِثْلَ هَذَا عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَفْعَلُهُ
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মসজিদে মিনার দিক হতে প্রথমে অবস্থিত জামারায় যখন আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কঙ্কর মারতেন, সাতটি কঙ্কর মারতেন এবং প্রত্যেকটি কঙ্কর মারার সময় তিনি তাকবীর বলতেন। এরপর সামনে এগিয়ে গিয়ে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে উভয় হাত উঠিয়ে দু’আ করতেন এবং এখানে অনেক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতেন। অতঃপর দ্বিতীয় জামারায় এসে সাতটি কঙ্কর মারতেন এবং প্রতিটি কঙ্কর মারার সময় তাকবীর বলতেন। অতপর বাঁ দিকে মোড় নিয়ে ওয়াদীর কাছে এসে কিবলামূখী হয়ে দাঁড়াতেন এবং উভয় হাত উঠিয়ে দু’আ করতেন। অবশেষে ‘আকাবার কাছে জামারায় এসে তিনি সাতটি কঙ্কর মারতেন এবং প্রতিটি কঙ্কর মারার সময় তাকবীর বলতেন। এরপর ফিরে যেতেন, এখানে বিলম্ব করতেন না। যুহরী (রহঃ) বলেন, সালিম ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ)-কে তাঁর পিতার মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণনা করতে শুনেছি। (রাবী বলেন) ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)-ও তাই করতেন। (১৭৫১)
(আঃপ্রঃ ১৬৩১, ইঃফাঃ ১৬৩৯)

২৫/১৪৩. অধ্যায়ঃ

কঙ্কর নিক্ষেপ এর পর সুগন্ধি ব্যবহার এবং তাওয়াফে যিয়ারাতের পূর্বে মাথা মুণ্ডন।

১৭৫৪

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ الْقَاسِمِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَاهُ وَكَانَ أَفْضَلَ أَهْلِ زَمَانِهِ يَقُولُ سَمِعْتُ عَائِشَةَ تَقُولُ طَيَّبْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدَيَّ هَاتَيْنِ حِينَ أَحْرَمَ وَلِحِلِّهِ حِينَ أَحَلَّ قَبْلَ أَنْ يَطُوفَ وَبَسَطَتْ يَدَيْهَا
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার এ দু’হাত দিয়ে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে খুশবু লাগিয়েছি, যখন তিনি ইহ্‌রাম বাঁধার ইচ্ছা করেছেন এবং তাওয়াফে যিয়ারাহ্‌র পূর্বে যখন তিনি ইহ্‌রাম খুলে হালাল হয়েছেন। এ কথা বলে তিনি তাঁর উভয় হাত প্রসারিত করলেন। (১৫৩৯)
(আঃপ্রঃ ১৬৩২, ইঃফাঃ ১৬৪০)

২৫/১৪৪. অধ্যায়ঃ

বিদায়ী তাওয়াফ।

১৭৫৫

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ ابْنِ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أُمِرَ النَّاسُ أَنْ يَكُونَ آخِرُ عَهْدِهِمْ بِالْبَيْتِ إِلاَّ أَنَّهُ خُفِّفَ عَنْ الْحَائِضِ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লোকদের আদেশ দেয়া হয় যে, তাদের শেষ কাজ যেন বায়তুল্লাহ তাওয়াফ। তবে এ হুকুম ঋতুবর্তী মহিলাদের জন্য শিতিল করা হয়েছে।
(৩২৯.মুসলিম ১৫/৬৭, হাঃ১৩২৮) (আঃপ্রঃ ১৬৩৩, ইঃফাঃ ১৬৪১)

১৭৫৬

حَدَّثَنَا أَصْبَغُ بْنُ الْفَرَجِ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ عَنْ قَتَادَةَ أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ حَدَّثَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ ثُمَّ رَقَدَ رَقْدَةً بِالْمُحَصَّبِ ثُمَّ رَكِبَ إِلَى الْبَيْتِ فَطَافَ بِهِ تَابَعَهُ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي خَالِدٌ عَنْ سَعِيدٍ عَنْ قَتَادَةَ أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ حَدَّثَهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যোহর, ‘আসর, মাগরিব ও ‘ইশার সালাত আদায় করে উপত্যকায় কিছুক্ষন শুয়ে থাকেন। অতঃপর সওয়ারীতে আরোহণ করে বায়তুল্লাহর দিকে এসে তিনি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন। লায়স (রহঃ) ... আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ)-এর মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ হাদীস বর্ণনায় ‘আমর ইব্‌নু হারিস (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন। (১৭৬৪)
(আঃপ্রঃ ১৬৩৪, ইঃফাঃ ১৬৪২)

২৫/১৪৫. অধ্যায়ঃ

তাওয়াফে যিয়ারতের পর কোন স্ত্রী লোকের ঋতু আসলে।

১৭৫৭

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ صَفِيَّةَ بِنْتَ حُيَيٍّ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَاضَتْ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَحَابِسَتُنَا هِيَ قَالُوا إِنَّهَا قَدْ أَفَاضَتْ قَالَ فَلاَ إِذًا
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই (রাঃ) ঋতুবর্তী হলেন এবং পরে এ কথাটি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অবগত করানো হয়। তখন তিনি বললেনঃ সে কি আমাদের যাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে? তারা বললেন, তিনি তো তাওয়াফে যিয়ারত সমাধা করে নিয়েছেন। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে তো আর বাধা নেই। (২৯৪)
(আঃপ্রঃ ১৬৩৫, ইঃফাঃ ১৬৪৩)

১৭৫৮

حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ عِكْرِمَةَ أَنَّ أَهْلَ الْمَدِينَةِ سَأَلُوا ابْنَ عَبَّاسٍ عَنْ امْرَأَةٍ طَافَتْ ثُمَّ حَاضَتْ قَالَ لَهُمْ تَنْفِرُ قَالُوا لاَ نَأْخُذُ بِقَوْلِكَ وَنَدَعُ قَوْلَ زَيْدٍ قَالَ إِذَا قَدِمْتُمْ الْمَدِينَةَ فَسَلُوا فَقَدِمُوا الْمَدِينَةَ فَسَأَلُوا فَكَانَ فِيمَنْ سَأَلُوا أُمُّ سُلَيْمٍ فَذَكَرَتْ حَدِيثَ صَفِيَّةَ رَوَاهُ خَالِدٌ وَقَتَادَةُ عَنْ عِكْرِمَةَ
ইক্‌রিমা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাওয়াফে যিয়ারতর পর ঋতু এসেছে এমন মহিলা সম্পর্কে মাদিনাবাসী ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি তাদের বললেন, সে রওয়ানা হয়ে যাবে। তারা বললেন, আমরা আপনার কথা গ্রহন করব না এবং যায়েদের কথাও বর্জন করব না। তিনি বললেন, তোমরা মদীনায় ফিরে গিয়ে জিজ্ঞাস করে নিবে। তাঁরা মদীনায় এসে জিজ্ঞেস করলেন যাদের কাছে তাঁরা জিজ্ঞেস করেছিলেন তাঁদের মধ্যে উম্মে সুলাইম (রাঃ)-ও ছিলেন। তিনি তাঁদের সাফিয়্যা (রাঃ) (উম্মুল মু’মিনীন) -এর ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। হাদীসটি খালিদ ও কাতাদাহ(রহঃ) ‘ইক্‌রিমা (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন।
(আঃপ্রঃ ১৬৩৬, ইঃফাঃ ১৬৪৪)

১৭৫৯

. حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ عِكْرِمَةَ أَنَّ أَهْلَ الْمَدِينَةِ سَأَلُوا ابْنَ عَبَّاسٍ عَنْ امْرَأَةٍ طَافَتْ ثُمَّ حَاضَتْ قَالَ لَهُمْ تَنْفِرُ قَالُوا لاَ نَأْخُذُ بِقَوْلِكَ وَنَدَعُ قَوْلَ زَيْدٍ قَالَ إِذَا قَدِمْتُمْ الْمَدِينَةَ فَسَلُوا فَقَدِمُوا الْمَدِينَةَ فَسَأَلُوا فَكَانَ فِيمَنْ سَأَلُوا أُمُّ سُلَيْمٍ فَذَكَرَتْ حَدِيثَ صَفِيَّةَ رَوَاهُ خَالِدٌ وَقَتَادَةُ عَنْ عِكْرِمَةَ
ইক্‌রিমা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাওয়াফে যিয়ারতর পর ঋতু এসেছে এমন মহিলা সম্পর্কে মাদিনাবাসী ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি তাদের বললেন, সে রওয়ানা হয়ে যাবে। তারা বললেন, আমরা আপনার কথা গ্রহন করব না এবং যায়েদের কথাও বর্জন করব না। তিনি বললেন, তোমরা মদীনায় ফিরে গিয়ে জিজ্ঞাস করে নিবে। তাঁরা মদীনায় এসে জিজ্ঞেস করলেন যাদের কাছে তাঁরা জিজ্ঞেস করেছিলেন তাঁদের মধ্যে উম্মে সুলাইম (রাঃ)-ও ছিলেন। তিনি তাঁদের সাফিয়্যা (রাঃ) (উম্মুল মু’মিনীন) -এর ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। হাদীসটি খালিদ ও কাতাদাহ(রহঃ) ‘ইক্‌রিমা (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন।
(আঃপ্রঃ ১৬৩৬, ইঃফাঃ ১৬৪৪)

১৭৬০

حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا ابْنُ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ رُخِّصَ لِلْحَائِضِ أَنْ تَنْفِرَ إِذَا أَفَاضَتْ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করার পর ঋতুরর্তী মহিলাকে রওয়ানা হয়ে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। (৩২৯)
(আঃপ্রঃ ১৬৩৭, ইঃফাঃ ১৬৪৫)

১৭৬১

قَالَ وَسَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يَقُولُ إِنَّهَا لاَ تَنْفِرُ ثُمَّ سَمِعْتُهُ يَقُولُ بَعْدُ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَخَّصَ لَهُنَّ
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
আমি ইব্‌নু উমর (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, সে মহিলা রওয়ানা হতে পারবেনা। পরবর্তীতে তাকে এ কথাও বলতে শুনেছি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদেরকে অনুমতি দিয়েছেন। (৩৩০) (আঃপ্রঃ ১৬৩৭, ইঃফাঃ ১৬৪৫)

১৭৬২

حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلاَ نَرَى إِلاَّ الْحَجَّ فَقَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَطَافَ بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَلَمْ يَحِلَّ وَكَانَ مَعَهُ الْهَدْيُ فَطَافَ مَنْ كَانَ مَعَهُ مِنْ نِسَائِهِ وَأَصْحَابِهِ وَحَلَّ مِنْهُمْ مَنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهُ الْهَدْيُ فَحَاضَتْ هِيَ فَنَسَكْنَا مَنَاسِكَنَا مِنْ حَجِّنَا فَلَمَّا كَانَ لَيْلَةَ الْحَصْبَةِ لَيْلَةُ النَّفْرِ قَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كُلُّ أَصْحَابِكَ يَرْجِعُ بِحَجٍّ وَعُمْرَةٍ غَيْرِي قَالَ مَا كُنْتِ تَطُوفِينَ بِالْبَيْتِ لَيَالِيَ قَدِمْنَا قُلْتُ لاَ قَالَ فَاخْرُجِي مَعَ أَخِيكِ إِلَى التَّنْعِيمِ فَأَهِلِّي بِعُمْرَةٍ وَمَوْعِدُكِ مَكَانَ كَذَا وَكَذَا فَخَرَجْتُ مَعَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ إِلَى التَّنْعِيمِ فَأَهْلَلْتُ بِعُمْرَةٍ وَحَاضَتْ صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَيٍّ فَقَالَ النَّبِيُّ عَقْرَى حَلْقَى إِنَّكِ لَحَابِسَتُنَا أَمَا كُنْتِ طُفْتِ يَوْمَ النَّحْرِ قَالَتْ بَلَى قَالَ فَلاَ بَأْسَ انْفِرِي فَلَقِيتُهُ مُصْعِدًا عَلَى أَهْلِ مَكَّةَ وَأَنَا مُنْهَبِطَةٌ أَوْ أَنَا مُصْعِدَةٌ وَهُوَ مُنْهَبِطٌ وَقَالَ مُسَدَّدٌ قُلْتُ لاَ تَابَعَهُ جَرِيرٌ عَنْ مَنْصُورٍ فِي قَوْلِهِ لاَ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বের হলাম। হজ্জই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় পৌঁছে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ ও সাফা ও মারওয়ার সা’য়ী করলেন। তবে ইহ্‌রাম খুলেনি। তাঁর সঙ্গে কুরবানীর জানওয়ার ছিল। তাঁর সহধর্মিণি ও সাহাবীগনের মধ্যে যারা তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁরাও তাওয়াফ করলেন। তবে যাদের সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিলনা, তাঁরা হালাল হয়ে গেলেন। এরপর ‘আয়েশা (রাঃ) ঋতুবর্তী হয়ে পড়লেও(বর্ণনাকারী) বলেন) আমরা হজ্জের সমুদয় হুকুম-আহকাম আদায় করলাম। এরপর যখন লায়লাতুল –হাসবা অর্থাৎ রওয়ানা হওয়ার রাত হল, তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি ব্যতীত আপনার সকল সাহাবীতো হজ্জ ও উমরাহ করে ফিরেছেন। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমরা যে রাতে এসেছি সে রাতে তুমি কি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করনি? আমি বললাম, না। অতঃপর তিনি বললেনঃ তুমি তোমার ভাইয়ের সঙ্গে তান’ঈম(নামক স্থানে) চলে যাও এবং সেখান হতে উমরাহ’র ইহ্‌রাম বেঁধে নাও। আর অমুক অমুক স্থানে তোমার সঙ্গে সাক্ষাতের ওয়াদা থাকল। ‘আয়েশা বলেন, এরপর আমি আব্দুর রাহমান (রাঃ)-এর সাথে তান’ঈম এর দিকে গেলাম এবং উমরাহর ইহ্‌রাম বাঁধলাম। আর সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই (রাঃ)-এর ঋতু দেখা দিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা শুনে বিরক্ত হয়ে বলেনঃ তুমিতো আমাদেরকে আটকিয়ে ফেললে। তুমি কি কুরবানীর দিন তাওয়াফ করেছিলে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন তাহলে কোন বাধা নেই, রওয়ানা হও।[আয়েশা (রাঃ) বলেন] আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে মিলিত হলাম। এমতাবস্থায় যে, তিনি মক্কার উপরের দিকে উঠছিলেন, আর আমি নিচের দিকে নামছিলাম। অথবা আমি উঠছিলাম আর তিনি নামছিলেন। মুসাদ্দাস(রহঃ)-এর বর্ণনায় এ হাদীসে(হ্যাঁ)-এর পরিবর্তে ‘লা’ (না) রয়েছে। রাবী জারীর (রহঃ) মনসূর (রহঃ) হতে এ হাদীস বর্ণনায় মুসাদ্দাদ(রহঃ)-এর অনুরূপ ‘লা’ (না) বর্ণনা করেছেন। (২৯৪)
(আঃপ্রঃ ১৬৩৮, ইঃফাঃ ১৬৪৯)

২৫/১৪৬. অধ্যায়ঃ

(মিনা হতে) ফেরার দিন আবতাহ নামক স্থানে ‘আসর সালাত আদায় করা।

১৭৬৩

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ رُفَيْعٍ قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ أَخْبِرْنِي بِشَيْءٍ عَقَلْتَهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَيْنَ صَلَّى الظُّهْرَ يَوْمَ التَّرْوِيَةِ قَالَ بِمِنًى قُلْتُ فَأَيْنَ صَلَّى الْعَصْرَ يَوْمَ النَّفْرِ قَالَ بِالأَبْطَحِ افْعَلْ كَمَا يَفْعَلُ أُمَرَاؤُكَ
‘আবদুল ‘আযীয ইব্‌নু রুফা’য় (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ)-কে বললাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে মনে রেখেছেন এমন কিছু কথা আমাকে বলুন, তারবিয়ার দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যোহরের সালাত কোথায় আদায় করেছেন? তিনি বললেন, মিনাতে। আমি বললাম, প্রত্যাবর্তনের দিন ‘আসরের সালাত কোথায় আদায় করেছেন? তিনি বললেন, আবতাহ নামক স্থানে। (তারপর বললেন) তুমি তাই কর, যেভাবে তোমার শাসকগণ করেন। (১৬৫৩)

(আঃপ্রঃ ১৬৩৯, ইঃফাঃ ১৬৪৭)

১৭৬৪

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمُتَعَالِ بْنُ طَالِبٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ أَنَّ قَتَادَةَ حَدَّثَهُ أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ حَدَّثَهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ صَلَّى الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ وَرَقَدَ رَقْدَةً بِالْمُحَصَّبِ ثُمَّ رَكِبَ إِلَى الْبَيْتِ فَطَافَ بِهِ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যোহর, আসর, মাগরিব, ঈশার সালাত আদায়ের পর মুহাস্‌সাবে কিছুক্ষন শুয়ে থাকেন, পরে সওয়ার হয়ে বাইতুল্লাহ্‌র দিকে গেলেন এবং বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করলেন। (১৭৫৬)
(আঃপ্রঃ ১৬৪০, ইঃফাঃ ১৬৫৮)

২৫/১৪৭. অধ্যায়ঃ

মুহাসসাব।

১৭৬৫

حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ إِنَّمَا كَانَ مَنْزِلٌ يَنْزِلُهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِيَكُونَ أَسْمَحَ لِخُرُوجِهِ يَعْنِي بِالأَبْطَحِ
‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তা হল একটি মানযিল মাত্র, যেখানে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবতরণ করেতেন, যাতে বেরিয়ে যাওয়া সহজতর হয় অর্থাৎ এর দ্বারা আবতাহ বুঝানো হয়েছে।

(মুসলিম ১৫/৫৯, হাঃ ১৩১১, আহমদ ২৫৭৭৮) (আঃপ্রঃ ১৬৪১, ইঃফাঃ ১৬৪৯)

১৭৬৬

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ عَمْرٌو عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ لَيْسَ التَّحْصِيبُ بِشَيْءٍ إِنَّمَا هُوَ مَنْزِلٌ نَزَلَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাস্‌সাবে অবতরণ করা হজ্জের- কিছুই নয়। এ তো শুধু একটি মানযিল, যেখানে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবতরণ করেছিলেন।
(মুসলিম ১৫/৫৯, হাঃ ১৩১২, আহমদ ১৯২৫) (আঃপ্রঃ ১৬৪২, ইঃফাঃ ১৬৫০)

২৫/১৪৮. অধ্যায়ঃ

মক্কার প্রবেশের পূর্বে যু-তুয়া উপত্যকায় অবতরণ এবং মক্কা হতে ফেরার সময় যুল-হুলাইফার বাতহাতে অবতরণ।

১৭৬৭

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَبُو ضَمْرَةَ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ يَبِيتُ بِذِي طُوًى بَيْنَ الثَّنِيَّتَيْنِ ثُمَّ يَدْخُلُ مِنْ الثَّنِيَّةِ الَّتِي بِأَعْلَى مَكَّةَ وَكَانَ إِذَا قَدِمَ مَكَّةَ حَاجًّا أَوْ مُعْتَمِرًا لَمْ يُنِخْ نَاقَتَهُ إِلاَّ عِنْدَ بَابِ الْمَسْجِدِ ثُمَّ يَدْخُلُ فَيَأْتِي الرُّكْنَ الأَسْوَدَ فَيَبْدَأُ بِهِ ثُمَّ يَطُوفُ سَبْعًا ثَلاَثًا سَعْيًا وَأَرْبَعًا مَشْيًا ثُمَّ يَنْصَرِفُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ يَنْطَلِقُ قَبْلَ أَنْ يَرْجِعَ إِلَى مَنْزِلِهِ فَيَطُوفُ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَكَانَ إِذَا صَدَرَ عَنْ الْحَجِّ أَوْ الْعُمْرَةِ أَنَاخَ بِالْبَطْحَاءِ الَّتِي بِذِي الْحُلَيْفَةِ الَّتِي كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُنِيخُ بِهَا
নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইব্‌নু উমর (রাঃ) দু’ পাহাড়ের মদ্যস্থিত যু-তুয়া নামক স্থানে রাত যাপন করতেন। এরপর মক্কার উঁচু গিরিপথের দিকে প্রবেশ করতেন। হজ্জ বা ‘উমরাহর আদায়ের জন্য মক্কা আসলে তিনি মাসজিদে হারামের দরজার সামনে ব্যতীত কোথাও উট বসাতেন না। অতঃপর মাসজিদে প্রবেশ করে হাজারে আসওয়াদের কাছে আসতেন এবং সেখান হতে তাওয়াফ আরম্ভ করতেন এবং সাত চক্কর তাওয়াফ করতেন। তিনবার দ্রুতবেগে আর চারবার স্বাভাবিক গতিতে। এরপর ফিরে এসে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতেন এবং নিজের মানযিলে ফিরে যাওয়ার আগে সাফা-মারওয়ার মধ্যে সা’য়ী করতেন। আর যখন হজ্জ বা উমরাহ হতে ফিরতেন তখন যুল-হুলাইফা উপত্যকার বাতহা নামক স্থানে অবতরণ করেতেন, যেখানে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবতরণ করেছিলেন। (৪৯১)
(আঃপ্রঃ ১৬৪৩, ইঃফাঃ ১৬৫১)

১৭৬৮

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ قَالَ سُئِلَ عُبَيْدُ اللهِ عَنْ الْمُحَصَّبِ فَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ قَالَ نَزَلَ بِهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَعُمَرُ وَابْنُ عُمَرَ وَعَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ يُصَلِّي بِهَا يَعْنِي الْمُحَصَّبَ الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ أَحْسِبُهُ قَالَ وَالْمَغْرِبَ قَالَ خَالِدٌ لاَ أَشُكُّ فِي الْعِشَاءِ وَيَهْجَعُ هَجْعَةً وَيَذْكُرُ ذَلِكَ عَنْ النَّبِيِّ
খালিদ ইব্‌নু হারিস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উবায়দুল্লাহ (রহঃ)-কে মুহাসসাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি নাফি’(রহঃ) হতে আমাদের কাছে বর্ণনা করলেন যে, তিনি বলেছেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), ‘উমর ও ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সেখানে অবতরণ করেছেন। নাফি’ (রহঃ) হতে আরো বর্ণিত রয়েছে যে, ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) মুহাসসাবে যোহর ও ‘আসর সালাত আদায় করতেন। আমার মনে হচ্ছে, তিনি মাগরিবের কথাও বলেছেন, খালিদ (রাঃ) বলেন, ঈসা সম্পর্কে আমার কোন সন্দেহ নেই এবং তিনি সেখানে কিছূক্ষন নিদ্রা যেতেন। এ কথা ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতেই বর্ণনা করতেন।
(আঃপ্রঃ ১৬৪৪, ইঃফাঃ ১৬৫২)

২৫/১৪৯. অধ্যায়ঃ

মক্কা হতে প্রত্যাবর্তনের সময় যু-তুয়া উপত্যকায় অবতরন করা।

১৭৬৯

وَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ إِذَا أَقْبَلَ بَاتَ بِذِي طُوًى حَتَّى إِذَا أَصْبَحَ دَخَلَ وَإِذَا نَفَرَ مَرَّ بِذِي طُوًى وَبَاتَ بِهَا حَتَّى يُصْبِحَ وَكَانَ يَذْكُرُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَفْعَلُ ذَلِكَ
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি যখনই মক্কা আসতেন তখনই যু-তুয়া উপত্যকায় রাত যাপন করতেন। আর সকাল হলে (মক্কায়) প্রবেশ করতেন। ফিরার সময়ও তিনি যু-তুয়ার দিকে যেতেন এবং সেখানে ভোর পর্যন্ত অবস্থান করেতেন। ‘ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বলতেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করতেন। (৪৯১)
(আঃপ্রঃ অনুচ্ছেদ ৪৮ কিতাবুল হজ্জ ইঃফাঃ ১৬৫২)

২৫/১৫০. অধ্যায়ঃ

(হজ্জের) মৌসুমে ব্যবসা করা এবং জাহিলি যুগের বাজারগুলোতে ক্রয়-বিক্রয় করা।

১৭৭০

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ الْهَيْثَمِ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كَانَ ذُو الْمَجَازِ وَعُكَاظٌ مَتْجَرَ النَّاسِ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَلَمَّا جَاءَ الإِسْلاَمُ كَأَنَّهُمْ كَرِهُوا ذَلِكَ حَتَّى نَزَلَتْ {لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَبْتَغُوا فَضْلاً مِنْ رَبِّكُمْ} فِي مَوَاسِمِ الْحَجِّ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাহিলি যুগে যল-মাজায ও ‘উকায লোকদের ব্যবসা কেন্দ্র ছিল। ইসলাম আসার পর মুসলিমগণ যেন তা অপছন্দ করতে লাগল, অবশেষে এ আয়াত নাযিল হলঃ ‘হজ্জের মৌসুমে তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ সন্ধান করাতে তোমাদের পাপ নেই (আল-বাকারাঃ১৯৮)
(২০৫০,২০৯৮,৪৫১৯) (আঃপ্রঃ ১৬৪৫, ইঃফাঃ ১৬৫৩)

২৫/১৫১. অধ্যায়ঃ

মুহাসসাব হতে শেষ রাতে যাত্রা করা।

১৭৭১

حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ حَاضَتْ صَفِيَّةُ لَيْلَةَ النَّفْرِ فَقَالَتْ مَا أُرَانِي إِلاَّ حَابِسَتَكُمْ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَقْرَى حَلْقَى أَطَافَتْ يَوْمَ النَّحْرِ قِيلَ نَعَمْ قَالَ فَانْفِرِي
‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রত্যাবর্তনের দিন সাফিয়্যা (রাঃ)-এর ঋতু দেখা দিলে তিনি বললেন, আমার মনে হচ্ছে আমি তোমাদেরকে আটকিয়ে ফেললাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা শুনে “আররা’, ‘হালকা’ বলে বিরক্তি প্রকাশ করলেন এবং বললেনঃ সে কি কুরবানীর দিন তাওয়াফ করেছে? বলা হল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তবে চল। (২৯৪)
(আঃপ্রঃ ১৬৪৬, ইঃফাঃ ১৬৫৪)

১৭৭২

قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ وَزَادَنِي مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا مُحَاضِرٌ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ نَذْكُرُ إِلاَّ الْحَجَّ فَلَمَّا قَدِمْنَا أَمَرَنَا أَنْ نَحِلَّ فَلَمَّا كَانَتْ لَيْلَةُ النَّفْرِ حَاضَتْ صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَيٍّ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَلْقَى عَقْرَى مَا أُرَاهَا إِلاَّ حَابِسَتَكُمْ ثُمَّ قَالَ كُنْتِ طُفْتِ يَوْمَ النَّحْرِ قَالَتْ نَعَمْ قَالَ فَانْفِرِي قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنِّي لَمْ أَكُنْ حَلَلْتُ قَالَ فَاعْتَمِرِي مِنْ التَّنْعِيمِ فَخَرَجَ مَعَهَا أَخُوهَا فَلَقِينَاهُ مُدَّلِجًا فَقَالَ مَوْعِدُكِ مَكَانَ كَذَا وَكَذَا
‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে রওয়ানা হলাম। হজ্জ আদায় করাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। আমরা(মক্কায়) আসলাম, তখন আমাদের হালাল হওয়ার নির্দেশ দেন। অতঃপর প্রত্যাবর্তনের রাত এলে সাফিয়্যাহ বিন্তু হুয়াই (রাঃ) এর ঋতু আরম্ভ হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘হালকা’ ‘আকরা’, বলে বিরক্তি প্রকাশ করে বললেনঃ আমার ধারণা, সে তোমাদের আটকিয়েই ফেলবে। অতঃপর বললেনঃ তুমি কি কুরবানীর দিন তাওয়াফ করেছিলে? সাফিয়্যাহ (রাঃ) বললেনঃ হ্যাঁ। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তবে চল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি তো (‘উমরা আদায় করে) হালাল হইনি। তিনি বললেনঃ তাহলে এখন তুমি তান’ঈম হতে ‘উমরাহ আদায় করে নাও। অতঃপর তাঁর সঙ্গে তার ভাই [‘আব্দুর রাহমান ইব্‌নু আবূ বক্‌র(রাঃ)] গেলেন। ‘আয়েশা (রাঃ) বলেন, (‘উমরা আদায় করার পর) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়, যখন তিনি শেষ রাতে (বিদায়ী তাওয়াফের জন্য) যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ অমুক স্থানে তোমরা সাক্ষাৎ করবে।
(২৪৯, মুসলিম ১৫/১৭, হাঃ ১২১১, আহমাদ ২৬২২৪) (আঃপ্রঃ ১৬৪৬, ইঃফাঃ ১৬৫৪)

No comments

Powered by Blogger.