সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "জিহাদ" হাদিস নং - ৩০৫১ থেকে ৩০৯০
দারুল হার্বের অধিবাসী
নিরাপত্তাহীনভাবে দারুল ইসলামে প্রবেশ করল।
৩০৫১
حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا أَبُو الْعُمَيْسِ
عَنْ إِيَاسِ بْنِ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم عَيْنٌ مِنْ الْمُشْرِكِيْنَ وَهُوَ فِيْ سَفَرٍ فَجَلَسَ
عِنْدَ أَصْحَابِهِ يَتَحَدَّثُ ثُمَّ انْفَتَلَ فَقَالَ النَّبِيُّ اطْلُبُوْهُ
وَاقْتُلُوْهُ فَقَتَلَهُ
فَنَفَّلَهُ سَلَبَهُ
فَنَفَّلَهُ سَلَبَهُ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন এক সফরে মুশরিকদের জনৈক
গুপ্তচর তাঁর নিকট এল এবং তাঁর সাহাবীগণের সঙ্গে বসে কথাবার্তা বলতে লাগল ও
কিছুক্ষণ পরে চলে গেল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘তাকে
খুঁজে আন এবং হত্যা কর।’ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মালপত্র
হত্যাকারীকে প্রদান করলেন।
৫৬/১৭৪. অধ্যায়ঃ
জিম্মীদের নিরাপত্তা বিধানের
জন্য যুদ্ধ করা হবে এবং তাদেরকে গোলাম বানানো যাবে না।
৩০৫২
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ
عَوَانَةَ عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ عَنْ عُمَرَ قَالَ
وَأُوصِيْهِ بِذِمَّةِ اللهِ وَذِمَّةِ رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُوفَى
لَهُمْ بِعَهْدِهِمْ وَأَنْ يُقَاتَلَ مِنْ وَرَائِهِمْ وَلَا يُكَلَّفُوْا إِلَّا
طَاقَتَهُمْ
‘উমর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি এ অসীয়ত করেছি যে, ‘আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ হতে কাফিরদের সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার যেন যথাযথভাবে পূরণ করা হয়,
তাদের নিরাপত্তার প্রয়োজনে যুদ্ধ করা হয়, তাদের সামর্থের বাইরে তাদের উপর যেন
জিযিয়া ধার্য করা না হয়।’
৫৬/১৭৫. অধ্যায়ঃ
প্রতিনিধি দলকে উপঢৌকন দেয়া।
৫৬/১৭৬. অধ্যায়ঃ
জিম্মীদের জন্য সুপারিশ করা
যাবে কি এবং তাদের সঙ্গে আচার-ব্যবহার।
৩০৫৩
حَدَّثَنَا قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ
سُلَيْمَانَ الأَحْوَلِ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ قَالَ يَوْمُ الْخَمِيْسِ وَمَا يَوْمُ الْخَمِيْسِ ثُمَّ
بَكَى حَتَّى خَضَبَ دَمْعُهُ الْحَصْبَاءَ فَقَالَ اشْتَدَّ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى
الله عليه وسلم وَجَعُهُ يَوْمَ الْخَمِيْسِ فَقَالَ ائْتُوْنِيْ بِكِتَابٍ
أَكْتُبْ لَكُمْ كِتَابًا لَنْ تَضِلُّوْا بَعْدَهُ أَبَدًا فَتَنَازَعُوْا وَلَا
يَنْبَغِيْ عِنْدَ نَبِيٍّ تَنَازُعٌ فَقَالُوْا هَجَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ دَعُونِيْ فَالَّذِيْ أَنَا فِيْهِ خَيْرٌ مِمَّا تَدْعُونِيْ
إِلَيْهِ وَأَوْصَى عِنْدَ مَوْتِهِ بِثَلَاثٍ أَخْرِجُوْا الْمُشْرِكِيْنَ مِنْ
جَزِيْرَةِ الْعَرَبِ وَأَجِيْزُوْا الْوَفْدَ بِنَحْوِ مَا كُنْتُ أُجِيْزُهُمْ
وَنَسِيْتُ الثَّالِثَةَ وَقَالَ يَعْقُوْبُ بْنُ مُحَمَّدٍ سَأَلْتُ
الْمُغِيْرَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ جَزِيْرَةِ الْعَرَبِ فَقَالَ مَكَّةُ
وَالْمَدِيْنَةُ وَالْيَمَامَةُ وَالْيَمَنُ وَقَالَ يَعْقُوْبُ وَالْعَرْجُ
أَوَّلُ تِهَامَةَ
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বললেন, বৃহস্পতিবার! হায় বৃহস্পতিবার! অতঃপর তিনি কাঁদতে শুরু করলেন, এমনকি তাঁর
অশ্রুতে কঙ্করগুলো সিক্ত হয়ে গেল। আর তিনি বলতে লাগলেন, ‘বৃহস্পতিবারে আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রোগ যাতনা বেড়ে যায়। তখন তিনি বললেন,
তোমরা আমার জন্য লিখার কোন জিনিস নিয়ে এসো, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখিয়ে দিব।
যাতে অতঃপর তোমরা কখনও পথভ্রষ্ট না হও। এতে সাহাবীগণ পরস্পরে মতভেদ করেন। অথচ নবীর
সম্মুখে মতভেদ সমীচীন নয়। তাদের কেউ কেউ বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুনিয়া ত্যাগ করেছেন?’ তিনি বললেন, ‘আচ্ছা, আমাকে আমার
অবস্থায় থাকতে দাও। তোমরা আমাকে যে অবস্থার দিকে আহ্বান করছো তার চেয়ে আমি যে
অবস্থায় আছি তা উত্তম।’ অবশেষে তিনি ইন্তিকালের সময় তিনটি বিষয়ে ওসীয়ত করেন। (১)
মুশরিকদের আরব উপদ্বীপ হতে বিতাড়িত কর, (২) প্রতিনিধি দলকে আমি যেরূপ উপঢেৌকন
দিয়েছি তোমরাও তেমন দিও (রাবী বলেন) তৃতীয় ওসীয়তটি আমি ভুলে গিয়েছি। আবূ
আব্দুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ইব্নু মুহাম্মদ (রহঃ) ও ইয়া’কূব (রহঃ) বলেন, আমি মুগীরাহ
ইব্নু ‘আবদুর রহমানকে জাযীরাতুল আরব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি বললেন, তাহলো
মক্কা, মদীনা ও ইয়ামান। ইয়াকূব (রহঃ) বলেন, ‘তিহামাহ্ আরম্ভ হল ‘আরজ থেকে।’
৫৬/১৭৭. অধ্যায়ঃ
প্রতিনিধি দলের আগমন উপলক্ষে
সাজসজ্জা করা।
৩০৫৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ
عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ ابْنَ
عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ وَجَدَ عُمَرُ حُلَّةَ إِسْتَبْرَقٍ تُبَاعُ
فِي السُّوقِ فَأَتَى بِهَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ ابْتَعْ
هَذِهِ الْحُلَّةَ فَتَجَمَّلْ بِهَا لِلْعِيْدِ وَلِلْوُفُوْدِ فَقَالَ رَسُوْلُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّمَا هَذِهِ لِبَاسُ مَنْ لَا خَلَاقَ لَهُ أَوْ
إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لَا خَلَاقَ لَهُ فَلَبِثَ مَا شَاءَ اللهُ ثُمَّ
أَرْسَلَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِجُبَّةِ دِيْبَاجٍ فَأَقْبَلَ
بِهَا عُمَرُ حَتَّى أَتَى بِهَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا
رَسُوْلَ اللهِ قُلْتَ إِنَّمَا هَذِهِ لِبَاسُ مَنْ لَا خَلَاقَ لَهُ أَوْ
إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لَا خَلَاقَ لَهُ ثُمَّ أَرْسَلْتَ إِلَيَّ
بِهَذِهِ فَقَالَ تَبِيْعُهَا أَوْ تُصِيْبُ بِهَا بَعْضَ حَاجَتِكَ
(আবদুল্লাহ)
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘উমর (রাঃ) এক জোড়া রেশমী কাপড় বাজারে বিক্রি হতে দেখতে পেলেন। তিনি তা
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট নিয়ে এসে বললেন, হে
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ রেশমী কাপড় জোড়া আপনি ক্রয়
করুন এবং ‘ঈদ ও প্রতিনিধিদল আগমন উপলক্ষে এর দ্বারা আপনি সুসজ্জিত হবেন। তখন
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘এ পোশাক তো তার
(আখিরাতে) যার কোন অংশ নেই। অথবা (বলেন) এরূপ পোশাক সে-ই পরিধান করে (আখিরাতে) যার
কোন অংশ নেই।’ এ অবস্থায় ‘উমর (রাঃ) কিছুদিন অবস্থান করেন, যে পরিমাণ সময় আল্লাহ
তা‘আলার ইচ্ছে ছিল। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি রেশমী
জুব্বা ‘উমর (রাঃ)-এর নিকট পাঠিয়ে দেন। তিনি তা নিয়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি বলেছিলেন যে, এ তো তারই লেবাস (আখিরাতে) যার কোন অংশ
নেই, কিংবা (রাবীর সন্দেহ) এ পোশাক তো সে-ই পরিধান করে, যার (আখিরাতে) কোন অংশ
নেই। এরপরও আপনি তা আমার জন্য পাঠালেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি তা বিক্রয় করে ফেলবে অথবা (রাবীর সন্দেহ) বলেছেন, তুমি
তা তোমার কোন কাজে লাগাবে।
৫৬/১৭৮. অধ্যায়ঃ
শিশুদের কাছে কেমনভাবে
ইসলামকে তুলে ধরতে হবে?
৩০৫৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِيْ سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ
عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ عُمَرَ
انْطَلَقَ فِيْ رَهْطٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قِبَلَ ابْنِ صَيَّادٍ حَتَّى وَجَدُوْهُ يَلْعَبُ مَعَ الْغِلْمَانِ عِنْدَ
أُطُمِ بَنِيْ مَغَالَةَ وَقَدْ قَارَبَ يَوْمَئِذٍ ابْنُ صَيَّادٍ يَحْتَلِمُ
فَلَمْ يَشْعُرْ بِشَيْءٍ حَتَّى ضَرَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ظَهْرَهُ
بِيَدِهِ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَتَشْهَدُ أَنِّيْ رَسُوْلُ
اللهِ فَنَظَرَ إِلَيْهِ ابْنُ صَيَّادٍ فَقَالَ أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُوْلُ
الْأُمِّيِّيْنَ فَقَالَ ابْنُ صَيَّادٍ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَتَشْهَدُ أَنِّيْ رَسُوْلُ اللهِ قَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
آمَنْتُ بِاللهِ وَرُسُلِهِ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَاذَا تَرَى
قَالَ ابْنُ صَيَّادٍ يَأْتِيْنِيْ صَادِقٌ وَكَاذِبٌ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم خُلِطَ عَلَيْكَ الأَمْرُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنِّيْ
قَدْ خَبَأْتُ لَكَ خَبِيئًا قَالَ ابْنُ صَيَّادٍ هُوَ الدُّخُّ قَالَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم اخْسَأْ فَلَنْ تَعْدُوَ قَدْرَكَ قَالَ عُمَرُ يَا رَسُوْلَ
اللهِ ائْذَنْ لِيْ فِيْهِ أَضْرِبْ عُنُقَهُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
إِنْ يَكُنْهُ فَلَنْ تُسَلَّطَ عَلَيْهِ وَإِنْ لَمْ يَكُنْهُ فَلَا خَيْرَ لَكَ
فِيْ قَتْلِهِ
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘উমর (রাঃ) কয়েকজন সাহাবীসহ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সঙ্গে ইব্নু সাইয়াদের নিকট যান। তাঁরা তাকে বনী মাগালার টিলার উপর
ছেলে-পেলেদের সঙ্গে খেলাধূলা করতে দেখতে পান। আর এ সময় ইব্নু সাইয়াদ বালিগ হবার
নিকটবর্তী হয়েছিল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (আগমন) সে
কিছু টের না পেতেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পিঠে হাত দিয়ে
মৃদু আঘাত করলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি
সাক্ষ্য দাও যে, আমি আল্লাহ্র প্রেরিত রসূল? তখন ইব্নু সাইয়াদ তাঁর প্রতি তাকিয়ে
বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি উম্মী লোকদের রসূল। ইব্নু সাইয়াদ নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, আপনি কি এ সাক্ষ্য দেন যে, আমি
আল্লাহ্র রসূল? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, আমি আল্লাহ
তা‘আলা ও তাঁর সকল রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাকে প্রশ্ন করলেন, তুমি কী দেখ? ইব্নু সাইয়াদ বলল, আমার নিকট সত্য খবর
ও মিথ্যা খবর সবই আসে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আসল অবস্থা
তোমার কাছে সত্য মিথ্যা মিশিয়ে আছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো
বললেন, আচ্ছা, আমি আমার অন্তরে তোমার জন্য কিছু কথা গোপন রেখেছি। ইব্নু সাইয়াদ
বলল, তা হচ্ছে ধোঁয়া। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আরে থাম,
তুমি তোমার সীমার বাইরে যেতে পার না। ‘উমর (রাঃ) বলে উঠলেন, হে আল্লাহর রসূল!
আমাকে হুকুম দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, যদি সে প্রকৃত দাজ্জাল হয়, তবে তুমি তাকে কাবু করতে পারবে না, যদি
সে দাজ্জাল না হয়, তবে তাকে হত্যা করে তোমার কোন লাভ নেই।
৩০৫৬
قَالَ ابْنُ عُمَرَ انْطَلَقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم وَأُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ يَأْتِيَانِ النَّخْلَ الَّذِيْ فِيْهِ ابْنُ صَيَّادٍ
حَتَّى إِذَا دَخَلَ النَّخْلَ طَفِقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَتَّقِيْ
بِجُذُوعِ النَّخْلِ وَهُوَ يَخْتِلُ ابْنَ صَيَّادٍ أَنْ يَسْمَعَ مِنْ ابْنِ
صَيَّادٍ شَيْئًا قَبْلَ أَنْ يَرَاهُ وَابْنُ صَيَّادٍ مُضْطَجِعٌ عَلَى
فِرَاشِهِ فِيْ قَطِيْفَةٍ لَهُ فِيْهَا رَمْزَةٌ فَرَأَتْ أُمُّ ابْنِ صَيَّادٍ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَتَّقِيْ بِجُذُوعِ النَّخْلِ فَقَالَتْ
لِابْنِ صَيَّادٍ أَيْ صَافِ وَهُوَ اسْمُهُ فَثَارَ ابْنُ صَيَّادٍ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْ تَرَكَتْهُ بَيَّنَ
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল ও ‘উবাই ইব্নু কা’ব (রাঃ) উভয়ে সে খেজুর বৃক্ষের নিকট গমন করেন, যেখানে ইব্নু
সাইয়াদ অবস্থান করছিল। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে পৌঁছলেন,
তখন তিনি খেজুর ডালের আড়ালে চলতে লাগলেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল যে, ইব্নু সাইয়াদের
অজান্তে তিনি তার কিছু কথা শুনে নিবেন। ইব্নু সাইয়াদ নিজ বিছানা পেতে চাদর মুড়ি
দিয়ে শুয়েছিল এবং কী কী যেন গুনগুন করছিল। তার মা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে দেখে ফেলেছিল যে, তিনি খেজুর বৃক্ষ শাখার আড়ালে আসছেন। তখন সে ইব্নু
সাইয়াদকে বলে উঠল, হে সাফ! আর এ ছিল তার নাম। সে তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়াল। তখন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নারীটি যদি তাকে নিজ অবস্থায় ছেড়ে দিত,
তবে তার ব্যাপারটা প্রকাশ পেয়ে যেত।
৩০৫৭
وَقَالَ سَالِمٌ قَالَ ابْنُ عُمَرَ ثُمَّ قَامَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم فِي النَّاسِ فَأَثْنَى عَلَى اللهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ
ذَكَرَ الدَّجَّالَ فَقَالَ إِنِّيْ أُنْذِرُكُمُوْهُ وَمَا مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا
قَدْ أَنْذَرَهُ قَوْمَهُ لَقَدْ أَنْذَرَهُ نُوْحٌ قَوْمَهُ وَلَكِنْ سَأَقُوْلُ
لَكُمْ فِيْهِ قَوْلًا لَمْ يَقُلْهُ نَبِيٌّ لِقَوْمِهِ تَعْلَمُوْنَ أَنَّهُ
أَعْوَرُ وَأَنَّ اللهَ لَيْسَ بِأَعْوَرَ
সালিম
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, অতঃপর নবী লোকদের মাঝে দাঁড়ালেন। প্রথমে তিনি আল্লাহ
তা‘আলার যথাযথ প্রশংসা করলেন। অতঃপর দাজ্জাল সম্পর্কে উল্লেখ করলেন। আর বললেন, আমি
তোমাদের দাজ্জাল হতে সতর্ক করে দিচ্ছি। প্রত্যেক নবীই তাঁর সম্প্রদায়কে দাজ্জাল
সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। নূহ (‘আঃ) তাঁর সম্প্রদায়কে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক
করেছেন। কিন্তু আমি তোমাদেরকে তার সম্পর্কে এমন একটি কথা জানিয়ে দিব, যা কোন নবী
তাঁর সম্প্রদায়কে জানাননি। তোমরা জেনে রাখ যে, সে হবে এক চক্ষু বিশিষ্ট আর অবশ্যই
আল্লাহ এক চক্ষু বিশিষ্ট নন।
৫৬/১৭৯. অধ্যায়ঃ
ইয়াহূদীদের উদ্দশ্যে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ “ইসলাম গ্রহণ কর,
নিরাপত্তা লাভ কর”।
এ বাণী মাকবুরী আবূ হুরায়রা
(রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
৫৬/১৮০. অধ্যায়ঃ
কোন সম্প্রদায় দারুল হারবে
ইসলাম গ্রহণ করলে, তাদের ধন-সম্পত্তি ও ক্ষেত-খামার থাকলে তা তাদেরই থাকবে।
৩০৫৮
حَدَّثَنَا مَحْمُوْدٌ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ عَنْ عَمْرِو
بْنِ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ قَالَ قُلْتُ يَا
رَسُوْلَ اللهِ أَيْنَ تَنْزِلُ غَدًا فِيْ حَجَّتِهِ قَالَ وَهَلْ تَرَكَ لَنَا
عَقِيْلٌ مَنْزِلًا ثُمَّ قَالَ نَحْنُ نَازِلُوْنَ غَدًا بِخَيْفِ بَنِيْ
كِنَانَةَ الْمُحَصَّبِ حَيْثُ قَاسَمَتْ قُرَيْشٌ عَلَى الْكُفْرِ وَذَلِكَ أَنَّ
بَنِيْ كِنَانَةَ حَالَفَتْ قُرَيْشًا عَلَى بَنِيْ هَاشِمٍ أَنْ لَا
يُبَايِعُوْهُمْ وَلَا يُؤْوُوْهُمْ قَالَ الزُّهْرِيُّ وَالْخَيْفُ الْوَادِي
উসামা
ইব্নু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি বিদায় হাজ্জে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আগামীকাল আপনি মক্কায় পৌঁছে কোথায় অবতরণ করবেন? তিনি
বললেন, আকীল কি আমাদের জন্য কোন ঘর বাড়ি অবশিষ্ট রেখেছে? অতঃপর বললেন, আমরা
আগামীকাল খায়ফে বনূ কানানার মুহাস্সাব নামক স্থানে অবতরণ করব। যেখানে কুরায়েশ
লোকেরা কুফরীর উপর শপথ করেছিল। আর তা হচ্ছে এই যে, বনূ কানানা ও কুরায়শগণ একত্রে এ
শপথ করেছিল যে, তারা বনূ হাশেমের সঙ্গে কেনা-বেচা করবে না এবং তাদের নিজ বাড়িতে
আশ্রয়ও দিবে না। যুহরী (রহঃ) বলেন, খায়ফ হচ্ছে একটি উপত্যকা।
৩০৫৯
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ
زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ اسْتَعْمَلَ
مَوْلًى لَهُ يُدْعَى هُنَيًّا عَلَى الْحِمَى فَقَالَ يَا هُنَيُّ اضْمُمْ
جَنَاحَكَ عَنْ الْمُسْلِمِيْنَ وَاتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّ دَعْوَةَ
الْمَظْلُومِ مُسْتَجَابَةٌ وَأَدْخِلْ رَبَّ الصُّرَيْمَةِ وَرَبَّ الْغُنَيْمَةِ
وَإِيَّايَ وَنَعَمَ ابْنِ عَوْفٍ وَنَعَمَ ابْنِ عَفَّانَ فَإِنَّهُمَا إِنْ
تَهْلِكْ مَاشِيَتُهُمَا يَرْجِعَا إِلَى نَخْلٍ وَزَرْعٍ وَإِنَّ رَبَّ الصُّرَيْمَةِ
وَرَبَّ الْغُنَيْمَةِ إِنْ تَهْلِكْ مَاشِيَتُهُمَا يَأْتِنِيْ بِبَنِيْهِ
فَيَقُوْلُ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ أَفَتَارِكُهُمْ أَنَا لَا أَبَا لَكَ
فَالْمَاءُ وَالْكَلَا أَيْسَرُ عَلَيَّ مِنْ الذَّهَبِ وَالْوَرِقِ وَايْمُ اللهِ
إِنَّهُمْ لَيَرَوْنَ أَنِّيْ قَدْ ظَلَمْتُهُمْ إِنَّهَا لَبِلَادُهُمْ
فَقَاتَلُوْا عَلَيْهَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَأَسْلَمُوْا عَلَيْهَا فِي
الْإِسْلَامِ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَوْلَا الْمَالُ الَّذِيْ أَحْمِلُ
عَلَيْهِ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ مَا حَمَيْتُ عَلَيْهِمْ مِنْ بِلَادِهِمْ شِبْرًا
যায়দ
ইব্নু আসলাম (রাঃ) কর্তৃক তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
‘উমর
(রাঃ) হুনাইয়াহ নামক তাঁর এক আযাদকৃত গোলামকে সরকারী চারণভূমির তত্ত্বাবধানে
নিযুক্ত করেন। আর তাকে আদেশ করেন, হে হুনাইয়াহ! মুসলিমদের সঙ্গে অত্যন্ত বিনয়ী
থাকবে, মজলুমের বদ দু‘আ হতে বেঁচে থাকবে। কারণ, মজলুমের দু‘আ কবূল হয়। আর অল্প
সংখ্যক উট ও অল্প সংখ্যক বকরীর মালিককে এতে প্রবেশ করতে দিবে। আর ‘আবদুর রহমান ইব্নু
‘আউফ ও ‘উসমান ইব্নু ‘আফফান (রাঃ)-এর পশুর ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। কেননা যদি
তাদেঁর পশুগুলো ধ্বংস হয়ে যায়, তবে তাঁরা তাদেঁর কৃষি ক্ষেত ও খেজুর বাগানের প্রতি
মনোযোগ দিবেন। কিন্তু অল্প সংখ্যক উট-বকরীর মালিকদের পশু ধ্বংস হয়ে গেলে তাদের
পরিবার-পরিজন নিয়ে আমার নিকট উপস্থিত হবে। আর বলবে, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনার
পিতা ধ্বংস হোক! তখন আমি কি তাদের বঞ্চিত করতে পারব? সুতরাং পানি ও ঘাস দেয়া আমার
পক্ষে সহজ, স্বর্ণ-রেৌপ্য দেয়ার চাইতে। আল্লাহ্র শপথ! এ সব লোকেরা মনে করবে, আমি
তাদের প্রতি জুলুম করেছি। এটা তাদেরই শহর, জাহিলী যুগে তারা এতে যুদ্ধ করেছে,
ইসলামের যুগে তারা এতেই ইসলাম গ্রহণ করেছে। সে মহান আল্লাহ্র শপথ! যাঁর হাতে আমার
প্রাণ, যে সব ঘোড়ার উপর আমি যোদ্ধাগণকে আল্লাহ্র রাস্তায় আরোহণ করিয়ে থাকি যদি
সেগুলো না হতো তবে আমি তাদের দেশের এক বিঘত পরিমাণ জমিও সংরক্ষণ করতাম না।
৫৬/১৮১. অধ্যায়ঃ
ইমাম কর্তৃক লোকদের নাম
লিপিবদ্ধ করা।
৩০৬০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم اكْتُبُوْا لِيْ مَنْ تَلَفَّظَ بِالْإِسْلَامِ مِنْ النَّاسِ
فَكَتَبْنَا لَهُ أَلْفًا وَخَمْسَ مِائَةِ رَجُلٍ فَقُلْنَا نَخَافُ وَنَحْنُ
أَلْفٌ وَخَمْسُ مِائَةٍ فَلَقَدْ رَأَيْتُنَا ابْتُلِيْنَا حَتَّى إِنَّ
الرَّجُلَ لَيُصَلِّيْ وَحْدَهُ وَهُوَ خَائِفٌ
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ عَنْ أَبِيْ حَمْزَةَ عَنْ الأَعْمَشِ فَوَجَدْنَاهُمْ خَمْسَ مِائَةٍ قَالَ أَبُوْ مُعَاوِيَةَ مَا بَيْنَ سِتِّ مِائَةٍ إِلَى سَبْعِ مِائَةٍ
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ عَنْ أَبِيْ حَمْزَةَ عَنْ الأَعْمَشِ فَوَجَدْنَاهُمْ خَمْسَ مِائَةٍ قَالَ أَبُوْ مُعَاوِيَةَ مَا بَيْنَ سِتِّ مِائَةٍ إِلَى سَبْعِ مِائَةٍ
হুযাইফাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মানুষের মধ্যে যারা ইসলামের
কালিমাহ উচ্চারণ করেছে, তাদের নাম লিখে আমাকে দাও। হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, তখন আমরা
একহাজার পাঁচশ’ লোকের নাম লিখে তাঁর নিকট পেশ করি। [১] তখন আমরা বলতে লাগলাম, আমরা
এক হাজার পাঁচশত লোক, এক্ষণে আমাদের ভয় কিসের? (রাবী) হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, পরবর্তীকালে
আমরা দেখেছি যে, আমরা এমনভাবে ফিতনায় পড়েছি যাতে লোকেরা ভীত-শংকিত অবস্থায় একা একা
সালাত আদায় করছে। (মুসলিম ১/৬৭ হাঃ ১৪৯, আহমাদ ২৩৩১৯) (আ.প্র. ২৮৩০, ই.ফা. ২৮৪০)
---------------------
৩০৬০/১. আ’মাশ (রহঃ) হতে এ রিওয়ায়াত বর্ণনা করেছেন, তাতে উল্লেখ হয়েছে, আমরা তাদের পাঁচশ’ পেয়েছি। আবূ মু‘আবিয়াহর বর্ণনায় উল্লেখিত হয়েছে, ছয়শ’ হতে সাতশ’ এর মাঝামাঝি। (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ২৮৪১)
---------------------
৩০৬০/১. আ’মাশ (রহঃ) হতে এ রিওয়ায়াত বর্ণনা করেছেন, তাতে উল্লেখ হয়েছে, আমরা তাদের পাঁচশ’ পেয়েছি। আবূ মু‘আবিয়াহর বর্ণনায় উল্লেখিত হয়েছে, ছয়শ’ হতে সাতশ’ এর মাঝামাঝি। (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ২৮৪১)
[১] ঘটনাটি উহুদ যুদ্ধে যাবার পূর্বে অথবা
খন্দক খননের সময়ের।
৩০৬১
حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ
ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ أَبِيْ مَعْبَدٍ عَنْ ابْنِ
عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ كُتِبْتُ فِيْ غَزْوَةِ كَذَا
وَكَذَا وَامْرَأَتِيْ حَاجَّةٌ قَالَ ارْجِعْ فَحُجَّ مَعَ امْرَأَتِكَ
ইব্নু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে
আল্লাহর রসূল! অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখা হয়েছে আর আমার স্ত্রী হজ্জ আদায়ের সংকল্প
নিয়েছে। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘ফিরে যাও এবং
তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হজ্জ কর।
৫৬/১৮২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা’আলা কখনও পাপিষ্ঠ
লোকের দ্বারা দ্বীনের সাহায্য করেন।
৩০৬২
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ
الزُّهْرِيِّ ح و حَدَّثَنِيْ مَحْمُوْدُ بْنُ غَيْلَانَ حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ ابْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ
أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ شَهِدْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ لِرَجُلٍ مِمَّنْ يَدَّعِي الْإِسْلَامَ هَذَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ
فَلَمَّا حَضَرَ الْقِتَالُ قَاتَلَ الرَّجُلُ قِتَالًا شَدِيْدًا فَأَصَابَتْهُ
جِرَاحَةٌ فَقِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ الَّذِيْ قُلْتَ لَهُ إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ
النَّارِ فَإِنَّهُ قَدْ قَاتَلَ الْيَوْمَ قِتَالًا شَدِيْدًا وَقَدْ مَاتَ
فَقَالَ النَّبِيُّ إِلَى النَّارِ قَالَ فَكَادَ بَعْضُ النَّاسِ أَنْ يَرْتَابَ
فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى ذَلِكَ إِذْ قِيْلَ إِنَّهُ لَمْ يَمُتْ وَلَكِنَّ بِهِ
جِرَاحًا شَدِيْدًا فَلَمَّا كَانَ مِنْ اللَّيْلِ لَمْ يَصْبِرْ عَلَى الْجِرَاحِ
فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَأُخْبِرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِذَلِكَ فَقَالَ
اللهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنِّيْ عَبْدُ اللهِ وَرَسُوْلُهُ ثُمَّ أَمَرَ بِلَالًا
فَنَادَى بِالنَّاسِ إِنَّهُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ
وَإِنَّ اللهَ لَيُؤَيِّدُ هَذَا الدِّيْنَ بِالرَّجُلِ الْفَاجِرِ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে এক যুদ্ধে
উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি ইসলামের দাবীদার এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বললেন, এ
ব্যক্তি জাহান্নামী অথচ যখন যুদ্ধ শুরু হল, তখন সে লোকটি ভীষণ যুদ্ধ করল এবং আহত
হল। তখন বলা হল, হে আল্লাহ্র রসূল! যে লোকটি সম্পর্কে আপনি বলেছিলেন সে লোকটি
জাহান্নামী, আজ সে ভীষণ যুদ্ধ করেছে এবং মারা গেছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, সে জাহান্নামে গেছে। রাবী বলেন, এ কথার উপর কারো কারো অন্তরে এ
বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টির উপক্রম হয় এবং তাঁরা এ সম্পর্কিত কথাবার্তায় রয়েছেন, এ সময়
খবর এল যে, লোকটি মরে যায়নি বরং মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। যখন রাত্রি হল, সে আঘাতের
কষ্টে ধৈর্যধারণ করতে পারল না এবং আত্মহত্যা করল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছানো হল, তিনি বলে উঠলেন, আল্লাহ্ আকবার! আমি
সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলার বান্দা এবং তাঁর রসূল। অতঃপর নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিলাল (রাঃ)-কে আদেশ করলেন, তখন তিনি লোকদের
মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, মুসলিম ব্যতীত কেউ বেহেশ্তে প্রবেশ করবে না। আর আল্লাহ
তা‘আলা এই দ্বীনকে মন্দ লোকের দ্বারা সাহায্য করেন।
৫৬/১৮৩. অধ্যায়ঃ
শত্রুর আশংকায় সৈনাধ্যক্ষের
অনুমতি ব্যতিরেকেই নিজেই সেনা পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করা।
৩০৬৩
حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا ابْنُ
عُلَيَّةَ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلَالٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ
قَالَ خَطَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَخَذَ الرَّايَةَ زَيْدٌ
فَأُصِيْبَ ثُمَّ أَخَذَهَا جَعْفَرٌ فَأُصِيْبَ ثُمَّ أَخَذَهَا عَبْدُ اللهِ
بْنُ رَوَاحَةَ فَأُصِيْبَ ثُمَّ أَخَذَهَا خَالِدُ بْنُ الْوَلِيْدِ عَنْ غَيْرِ
إِمْرَةٍ فَفُتِحَ عَلَيْهِ وَمَا يَسُرُّنِيْ أَوْ قَالَ مَا يَسُرُّهُمْ
أَنَّهُمْ عِنْدَنَا وَقَالَ وَإِنَّ عَيْنَيْهِ لَتَذْرِفَانِ
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুত্বা দিতে গিয়ে বললেন,
যায়িদ পতাকা ধারণ করেছেন এবং শাহাদাত লাভ করেছেন, অতঃপর জা‘ফর (রাঃ) পতাকা ধারণ
করেছেন এবং শাহাদাত বরণ করেছেন। অতঃপর ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) পতাকা ধারণ
করেছেন এবং শাহাদাত লাভ করেছেন। অতঃপর খালিদ ইব্নু অলীদ (রাঃ) মনোনয়ন ব্যতীতই
পতাকা ধারণ করেছেন, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মাধ্যমে বিজয় দান করেছেন আর বললেন, এ আমার
নিকট পছন্দনীয় নয় অথবা রাবী বলেন, তাদের নিকট পছন্দনীয় নয় যে, তারা দুনিয়ায় আমার
নিকট অবস্থান করতো। রাবী বলেন, আর তাঁর চক্ষুদ্বয় হতে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল।
৫৬/১৮৪. অধ্যায়ঃ
সাহায্যকারী দল প্রেরণ
প্রসঙ্গে।
৩০৬৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ
أَبِيْ عَدِيٍّ وَسَهْلُ بْنُ يُوسُفَ عَنْ سَعِيْدٍ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَتَاهُ رِعْلٌ وَذَكْوَانُ وَعُصَيَّةُ
وَبَنُوْ لَحْيَانَ فَزَعَمُوْا أَنَّهُمْ قَدْ أَسْلَمُوْا وَاسْتَمَدُّوْهُ
عَلَى قَوْمِهِمْ فَأَمَدَّهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِسَبْعِيْنَ مِنْ
الأَنْصَارِ قَالَ أَنَسٌ كُنَّا نُسَمِّيهِمْ الْقُرَّاءَ يَحْطِبُوْنَ
بِالنَّهَارِ وَيُصَلُّوْنَ بِاللَّيْلِ فَانْطَلَقُوْا بِهِمْ حَتَّى بَلَغُوْا
بِئْرَ مَعُوْنَةَ غَدَرُوْا بِهِمْ وَقَتَلُوْهُمْ فَقَنَتَ شَهْرًا يَدْعُوْ
عَلَى رِعْلٍ وَذَكْوَانَ وَبَنِيْ لَحْيَانَ قَالَ قَتَادَةُ وَحَدَّثَنَا أَنَسٌ
أَنَّهُمْ قَرَءُوْا بِهِمْ قُرْآنًا أَلَا بَلِّغُوْا عَنَّا قَوْمَنَا بِأَنَّا
قَدْ لَقِيَنَا رَبَّنَا فَرَضِيَ عَنَّا وَأَرْضَانَا ثُمَّ رُفِعَ ذَلِكَ بَعْدُ
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট রি-ল, যাকওয়ান, উসইয়াহ ও বনূ লাহ্ইয়ান
গোত্রের কিছু লোক এসে বলল, আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি। এবং তারা তাঁর নিকট তাদের
গোত্রের মুকাবেলায় সাহায্য প্রার্থনা করল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সত্তর জন আনসার পাঠিয়ে তাদের সাহায্য করলেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা
তাঁদের ক্বারী নামে আখ্যায়িত করতাম। তাঁরা দিনের বেলায় লাকড়ি সংগ্রহ করতেন, আর
রাত্রিকালে সালাতে মগ্ন থাকতেন। তারা তাঁদের নিয়ে রওয়ানা হয়ে গেল। যখন তাঁরা ‘বীরে
মা‘উনাহ’ [১] নামক স্থানে পৌঁছল, তখন তারা বিশ্বাসঘাতকতা করল এবং তাঁদের হত্যা করে
ফেলল। এ সংবাদ শোনার পর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রিল,
যাকওয়ান ও বনূ লাহ্ইয়ান গোত্রের বিরুদ্ধে দু‘আ করে এক মাস যাবৎ কুনূতে নাযিলা পাঠ
করেন। ক্বাতাদা (রহঃ) বলেন, আনাস (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তাঁরা তাদের
সম্পর্কে কিছুকাল যাবৎ কুরআনের এ আয়াতটি পড়তে থাকেনঃ “আমাদের সংবাদ আমাদের কাওমের
নিকট পৌঁছিয়ে দাও যে, আমরা আমাদের প্রতিপালকের সাক্ষাত পেয়েছি। তিনি আমাদের প্রতি
সন্তুষ্ট হয়েছেন আর তিনি আমাদের সন্তুষ্ট করেছেন।” অতঃপর এ আয়াত উঠিয়ে নেয়া হয়।
[১] উসফান ও হুজাইল এর মধ্যবর্তী স্থান।
৫৬/১৮৫. অধ্যায়ঃ
শত্রুর উপর বিজয়ী হলে তাদের
স্থানের বহির্ভাগে তিন দিবস অবস্থান করা।
৩০৬৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا
رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ قَتَادَةَ قَالَ ذَكَرَ لَنَا
أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ عَنْ أَبِيْ طَلْحَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ إِذَا ظَهَرَ عَلَى قَوْمٍ أَقَامَ بِالْعَرْصَةِ
ثَلَاثَ لَيَالٍ تَابَعَهُ مُعَاذٌ وَعَبْدُ الأَعْلَى حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ
قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنْ أَبِيْ طَلْحَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
আবূ
ত্বলহা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কোন সম্প্রদায়ের উপর বিজয় লাভ করতেন, তখন
তিনি তাদের বাহির অঙ্গনে তিন রাত্রি অবস্থান করতেন। মু‘আয, ‘আবদুল আ’লা ও আবূ
ত্বলহা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণনায়
রাওহা ইবনে ‘উবাদা (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।
৫৬/১৮৬. অধ্যায়ঃ
যুদ্ধক্ষেত্রে ও সফরে গণীমত
বন্টন করা।
রাফি’ (রাঃ) বলেন, আমরা
যুল-হুলাইফাহ নামক স্থানে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সঙ্গে ছিলাম। তখন আমরা উট ও বকরী লাভ করলাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) দশটি বকরীকে একটি উটের সমান গণ্য করেন।
৩০৬৬
حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ
قَتَادَةَ أَنَّ أَنَسًا أَخْبَرَهُ قَالَ اعْتَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم مِنْ الْجِعْرَانَةِ حَيْثُ قَسَمَ غَنَائِمَ حُنَيْنٍ
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিরানা নামক জায়গা হতে ‘উমারাহর
জন্য ইহরাম বাঁধলেন, যেখানে তিনি হুনাইন যুদ্ধের গনীমত বণ্টন করেছিলেন।
৫৬/১৮৭. অধ্যায়ঃ
মুশরিকরা মুসলিমের মালামাল
লুন্ঠন করে নিলে মুসলিমদের তা প্রাপ্ত হওয়া।
৩০৬৭
قَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ
نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ ذَهَبَ فَرَسٌ لَهُ
فَأَخَذَهُ الْعَدُوُّ فَظَهَرَ عَلَيْهِ الْمُسْلِمُوْنَ فَرُدَّ عَلَيْهِ فِيْ
زَمَنِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبَقَ عَبْدٌ لَهُ فَلَحِقَ
بِالرُّومِ فَظَهَرَ عَلَيْهِمْ الْمُسْلِمُوْنَ فَرَدَّهُ عَلَيْهِ خَالِدُ بْنُ
الْوَلِيْدِ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন যে, তাঁর একটি ঘোড়া ছুটে গেলে শত্রু তা আটক করে। অতঃপর মুসলিমগণ তাদের উপর
বিজয় লাভ করেন। তখন সে ঘোড়াটি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
যুগেই তাঁকে ফেরত দেয়া হয়। আর তাঁর একটি গোলাম পলায়ন করে রোমের কাফিরদের সঙ্গে
মিলিত হয়। অতঃপর মুসলিমগণ তাদের উপর বিজয় অর্জন করেন। তখন খালিদ ইব্নু ওয়ালীদ
(রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যামানার পর তা তাঁকে
ফেরত দিয়ে দেন।
৩০৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى
عَنْ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ نَافِعٌ أَنَّ عَبْدًا لِّابْنِ عُمَرَ
أَبَقَ فَلَحِقَ بِالرُّومِ فَظَهَرَ عَلَيْهِ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيْدِ فَرَدَّهُ
عَلَى عَبْدِ اللهِ وَأَنَّ فَرَسًا ِلاِبْنِ عُمَرَ عَارَ فَلَحِقَ بِالرُّومِ
فَظَهَرَ عَلَيْهِ فَرَدُّوْهُ عَلَى عَبْدِ اللهِ قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ عَارَ
مُشْتَقٌّ مِنْ الْعَيْرِ وَهُوَ حِمَارُ وَحْشٍ أَيْ هَرَبَ
নাফি’
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্নু
‘উমর (রাঃ)-এর একটি গোলাম পালিয়ে গিয়ে রোমের মুশরিকদের সঙ্গে মিলিত হয়। অতঃপর
খালিদ ইব্নু ওয়ালীদ (রাঃ) রোম জয় করেন। তখন তিনি সে গোলামটি ‘আবদুল্লাহ (ইব্নু
‘উমর) (রাঃ)-কে ফেরত দিয়ে দেন। আর ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাঃ)-এর একটি ঘোড়া ছুটে
গিয়ে রোমে পৌঁছে যায়। অতঃপর উক্ত এলাকা মুসলিমদের দখলে আসলে তারা ঘোড়াটি ইব্নু
‘উমর (রাঃ)-কে ফেরত দিয়ে দেন। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, ---- শব্দটি ------ হতে
উদগত। আর তা হল বন্য গাধা। --- এর অর্থ ----- অর্থাৎ পলায়ন করেছে।
৩০৬৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ عَنْ
مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا
أَنَّهُ كَانَ عَلَى فَرَسٍ يَوْمَ لَقِيَ الْمُسْلِمُوْنَ وَأَمِيْرُ
الْمُسْلِمِيْنَ يَوْمَئِذٍ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيْدِ بَعَثَهُ أَبُوْ بَكْرٍ
فَأَخَذَهُ الْعَدُوُّ فَلَمَّا هُزِمَ الْعَدُوُّ رَدَّ خَالِدٌ فَرَسَهُ
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
একটি ঘোড়ার উপর আরোহী ছিলেন। যখন মুসলিমগণ রোমীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন, সে সময়
মুসলিমদের অধিনায়ক হিসেবে খালিদ ইব্নু ওয়ালীদ (রাঃ)-কে আবূ বক্র সিদ্দীক (রাঃ)
নিযুক্ত করেছিলেন। সে সময় দুশমনরা তাঁর ঘোড়াটিকে নিয়ে যায়। অতঃপর যখন দুশমনরা
পরাজিত হল তখন খালিদ ইব্নু ওয়ালীদ (রাঃ) তাঁর ঘোড়াটি তাঁকে ফেরত দেন।
৫৬/১৮৮. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি ফার্সী কিংবা কোন
অনারবী ভাষায় কথা বলে।
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ আর
তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বিভিন্নতার মধ্যে (রূম ২২) এবং তিনি আরও বলেছেনঃ আর আমি
প্রত্যেক রসূলকেই তার নিজ জাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি। (ইব্রাহীম ৪)
৩০৭০
حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا أَبُوْ
عَاصِمٍ أَخْبَرَنَا حَنْظَلَةُ بْنُ أَبِيْ سُفْيَانَ أَخْبَرَنَا سَعِيْدُ بْنُ
مِيْنَاءَ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ
قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ ذَبَحْنَا بُهَيْمَةً لَنَا وَطَحَنْتُ صَاعًا مِنْ
شَعِيْرٍ فَتَعَالَ أَنْتَ وَنَفَرٌ فَصَاحَ النَّبِيُّ فَقَالَ يَا أَهْلَ
الْخَنْدَقِ إِنَّ جَابِرًا قَدْ صَنَعَ سُؤْرًا فَحَيَّ هَلًا بِكُمْ
জাবির
ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আমার একটি ছাগল ছানা
যব্হ করেছি এবং আমার স্ত্রী এক সা যবের আটা পাকিয়েছে। আপনি কয়েকজন সঙ্গীসহ আসুন।
তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উচ্চৈঃস্বরে বলে উঠলেন, হে
খন্দকের লোকেরা! জাবির তোমাদের জন্য খানার আয়োজন করেছে, তাই তোমরা চল।
৩০৭১
حَدَّثَنَا حِبَّانُ بْنُ مُوسَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ
عَنْ خَالِدِ بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أُمِّ خَالِدٍ بِنْتِ خَالِدِ بْنِ
سَعِيْدٍ قَالَتْ أَتَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَعَ أَبِيْ
وَعَلَيَّ قَمِيْصٌ أَصْفَرُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم سَنَهْ
سَنَهْ قَالَ عَبْدُ اللهِ وَهِيَ بِالْحَبَشِيَّةِ حَسَنَةٌ قَالَتْ فَذَهَبْتُ
أَلْعَبُ بِخَاتَمِ النُّبُوَّةِ فَزَبَرَنِيْ أَبِيْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم دَعْهَا ثُمَّ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَبْلِيْ
وَأَخْلِقِيْ ثُمَّ أَبْلِيْ وَأَخْلِقِيْ ثُمَّ أَبْلِيْ وَأَخْلِقِيْ قَالَ
عَبْدُ اللهِ فَبَقِيَتْ حَتَّى ذَكَرَ
উম্মু
খালিদ বিনতে খালিদ ইব্নু সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আমার পিতার সঙ্গে হলুদ বর্ণের জামা পরে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, সান্না-সান্না। (রাবী) ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, হাবশী ভাষায় তা
‘সুন্দর’ অর্থ বুঝায়। উম্মু খালিদ (রাঃ) বলেন, আতঃপর আমি তাঁর মহরে নবুয়্যতের
স্থান নিয়ে কৌতুক করতে লাগলাম। আমার পিতা আমাকে ধমক দিলেন। আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘ছোট মেয়ে তাকে করতে দাও।’ অতঃপর
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, এ কাপড় পর আর
পুরানো কর, আবার পর, পুরানো কর, আবার পর, পুরানো কর। ‘আবদুল্লাহ (ইব্নু মুবারক)
(রহঃ) বলেন, উম্মু খালিদ (রাঃ) যতদিন জীবিত থাকেন, তাঁর আলোচনা চলতে থাকে।
৩০৭২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ
الْحَسَنَ بْنَ عَلِيٍّ أَخَذَ تَمْرَةً مِنْ تَمْرِ الصَّدَقَةِ فَجَعَلَهَا فِيْ
فِيْهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْفَارِسِيَّةِ كِخْ كِخْ أَمَا
تَعْرِفُ أَنَّا لَا نَأْكُلُ الصَّدَقَةَ قَالَ عِكْرِمَةُ سنه الحنة بالحبشة قال
أبو عبد الله لم تعثى امرءة مثل ما عشت هذه بعني أم خالد
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাসান
ইব্নু ‘আলী (রাঃ) সদাকাহ্র খেজুর হতে একটি খেজুর নিয়ে তা তাঁর মুখে দেন। তখন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাখ্-কাখ্ বললেন, তুমি কি জান না যে, আমরা
সদকা খাই না।
৫৬/১৮৯. অধ্যায়ঃ
গনীমতের মালামাল আত্মসাৎ
করা।
আল্লাহ তা‘আলার বানী: “কেউ
কোন কিছু অন্যায়ভাবে গোপন করে রাখলে সে তা কিয়ামাতের দিন নিয়ে আসবে।” (আল ‘ইমরান
১৬১)
৩০৭৩
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ أَبِيْ
حَيَّانَ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ زُرْعَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ هُرَيْرَةَ
قَالَ قَامَ فِيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ الْغُلُوْلَ
فَعَظَّمَهُ وَعَظَّمَ أَمْرَهُ قَالَ لَا أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ شَاةٌ لَهَا ثُغَاءٌ عَلَى رَقَبَتِهِ فَرَسٌ لَهُ
حَمْحَمَةٌ يَقُوْلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَغِثْنِيْ فَأَقُوْلُ لَا أَمْلِكُ لَكَ
شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ وَعَلَى رَقَبَتِهِ بَعِيْرٌ لَهُ رُغَاءٌ يَقُوْلُ يَا
رَسُوْلَ اللهِ أَغِثْنِيْ فَأَقُوْلُ لَا أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ
أَبْلَغْتُكَ وَعَلَى رَقَبَتِهِ صَامِتٌ فَيَقُوْلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ
أَغِثْنِيْ فَأَقُوْلُ لَا أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ أَوْ عَلَى
رَقَبَتِهِ رِقَاعٌ تَخْفِقُ فَيَقُوْلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَغِثْنِيْ فَأَقُوْلُ
لَا أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ وَقَالَ أَيُّوْبُ عَنْ أَبِيْ
حَيَّانَ فَرَسٌ لَهُ حَمْحَمَةٌ
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাঝে দাঁড়ান এবং গনীমতের মাল
আত্মসাৎ প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। আর তিনি তা মারাত্মক অপরাধ ও তার ভয়াবহ পরিণতির কথা
উল্লেখ করেন। তিনি বললেন, আমি তোমাদের কাউকে যেন এ অবস্থায় কেয়ামতের দিন না পাই
যে, তাঁর কাঁধে বকরি বয়ে বেড়াচ্ছে আর তা ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে চিৎকার দিচ্ছে। অথবা তাঁর
কাঁধে রয়েছে ঘোড়া আর তা হি হি করে আওয়াজ দিচ্ছে। ঐ ব্যক্তি আমাকে বলবে, হে আল্লাহ্র
রসূল! আমাকে সাহায্য করুন। আমি বলব, আমি তোমার জন্য কিছু করতে পারব না। আমি তো
(দুনিয়ায়) তোমার নিকট পৌঁছে দিয়েছি। অথবা কেউ তার কাঁধে বয়ে বেড়াবে উট যা চিৎকার
করছে, সে আমাকে বলবে, হে আল্লাহ্র রসূল! একটু সাহায্য করুন। আমি বলব, আমি তোমার
জন্য কিছু করতে পারব না। আমি তো তোমার নিকট পৌঁছে দিয়েছি। অথবা কেউ তার কাঁধে বয়ে
বেড়াবে ধন-দৌলত এবং আমাকে বলবে, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে সাহায্য করুন। আমি বলব,
আমি তোমার জন্য কিছু করতে পারব না। আমি তো তোমার নিকট পৌঁছে দিয়েছি। অথবা কেউ তার
কাঁধে বয়ে বেড়াবে কাপড়ের টুকরাসমূহ যা দুলতে থাকবে। সে আমাকে বলবে, হে আল্লাহর
রসূল! আমাকে সাহায্য করুন। আমি বলব, আমি তোমার জন্য কিছু করতে পারব না; আমি তো
তোমার নিকট পৌঁছে দিয়েছি।
৫৬/১৯০. অধ্যায়ঃ
স্বল্প পরিমাণ গনীমতের মাল
আত্মসাৎ করা।
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আম্র
(রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ বর্ণনায় তিনি
আত্মসাৎকারীর মালপত্র জ্বালিয়ে দিয়েছেন-কথাটি উল্লেখ করেননি। এটাই বিশুদ্ধ।
৩০৭৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
عَنْ عَمْرٍو عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو
قَالَ كَانَ عَلَى ثَقَلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ
كِرْكِرَةُ فَمَاتَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هُوَ فِي النَّارِ
فَذَهَبُوْا يَنْظُرُوْنَ إِلَيْهِ فَوَجَدُوْا عَبَاءَةً قَدْ غَلَّهَا قَالَ
أَبُوْ عَبْد اللهِ قَالَ ابْنُ سَلَامٍ كَرْكَرَةُ يَعْنِيْ بِفَتْحِ الْكَافِ
وَهُوَ مَضْبُوطٌ كَذَا
‘আবদুল্লাহ
ইব্নু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পাহারা দেয়ার জন্য এক
ব্যক্তি নিযুক্ত ছিল। তাকে কার্কারা নামে ডাকা হত। সে মারা গেল। আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে জাহান্নামী! লোকেরা তাকে দেখতে গেল
আর তারা একটি আবা পেল যা সে আত্মসাত করেছিল। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ইব্নু
সালাম (রহঃ) বলেছেন, কারকারা।
৫৬/১৯১. অধ্যায়ঃ
গনীমতের উট ও ছাগল (বণ্টিত
হওয়ার পূর্বে) যব্হ করা মাকরূহ।
৩০৭৫
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ
عَوَانَةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ مَسْرُوقٍ عَنْ عَبَايَةَ بْنِ رِفَاعَةَ عَنْ
جَدِّهِ رَافِعٍ قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِذِي
الْحُلَيْفَةِ فَأَصَابَ النَّاسَ جُوعٌ وَأَصَبْنَا إِبِلًا وَغَنَمًا وَكَانَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ أُخْرَيَاتِ النَّاسِ فَعَجِلُوْا فَنَصَبُوْا
الْقُدُوْرَ فَأَمَرَ بِالْقُدُوْرِ فَأُكْفِئَتْ ثُمَّ قَسَمَ فَعَدَلَ عَشَرَةً
مِنْ الْغَنَمِ بِبَعِيْرٍ فَنَدَّ مِنْهَا بَعِيْرٌ وَفِي الْقَوْمِ خَيْلٌ
يَسِيْرَةٌ فَطَلَبُوْهُ فَأَعْيَاهُمْ فَأَهْوَى إِلَيْهِ رَجُلٌ بِسَهْمٍ
فَحَبَسَهُ اللهُ فَقَالَ هَذِهِ الْبَهَائِمُ لَهَا أَوَابِدُ كَأَوَابِدِ
الْوَحْشِ فَمَا نَدَّ عَلَيْكُمْ فَاصْنَعُوْا بِهِ هَكَذَا فَقَالَ جَدِّيْ
إِنَّا نَرْجُوْ أَوْ نَخَافُ أَنْ نَلْقَى الْعَدُوَّ غَدًا وَلَيْسَ مَعَنَا
مُدًى أَفَنَذْبَحُ بِالْقَصَبِ فَقَالَ مَا أَنْهَرَ الدَّمَ وَذُكِرَ اسْمُ
اللهِ عَلَيْهِ فَكُلْ لَيْسَ السِّنَّ وَالظُّفُرَ وَسَأُحَدِّثُكُمْ عَنْ ذَلِكَ
أَمَّا السِّنُّ فَعَظْمٌ وَأَمَّا الظُّفُرُ فَمُدَى الْحَبَشَةِ
রাফি’
ইব্নু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে যুল-হুলাইফায় অবস্থান
করছিলাম। লোকেরা ক্ষুধার্ত হয়েছিল। আর আমরা গানীমাত স্বরূপ কিছু উট ও বকরী লাভ
করেছিলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের পেছনে সারিতে ছিলেন।
লোকেরা তাড়াতাড়ি করে পাতিল চড়িয়ে দিয়েছিল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) নির্দেশ দিলেন এবং পাতিলগুলো উপুড় করে ফেলে দেয়া হল। অতঃপর তিনি দশটি
বকরীকে একটি উটের সমান ধরে তা বন্টন করে দিলেন। তার নিকট হতে একটি উট পালিয়ে গেল।
লোকদের নিকট ঘোড়া কম ছিল। তাঁরা তা অনুসন্ধানে বেরিয়ে গেল এবং তারা ক্লান্ত হয়ে
পড়ল। অতঃপর এক ব্যক্তি উটটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করল, আল্লাহ তা‘আলা তার গতিরোধ করে
দিলেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘এ সকল
গৃহপালিত জন্তুর মধ্যেও কতক বন্য পশুর মত অবাধ্য হয়ে যায়। সুতরাং যা তোমাদের নিকট হতে
পলায়ন করে তার সঙ্গে এরূপ আচরণ করবে।’ রাবী বলেন, আমার দাদা রাফি ইব্নু খাদীজ
(রাঃ) বলেছেন, আমরা আশা করি কিংবা বলেছেন আশঙ্কা করি যে, আমরা আগামীকাল শত্রুর
মুখোমুখি হব। আর আমাদের সঙ্গে ছুরি নেই। আমরা কি বাঁশের ধারালো চোকলা দ্বারা যব্হ
করব? আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘যা রক্ত প্রবাহিত
করে এবং আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়েছে তা আহার কর। কিন্তু দাঁত ও নখ দিয়ে নয়।
কারণ আমি বলে দিচ্ছি: তা এই যে, দাঁত হল হাড় আর নখ হল হাবশীদের ছুরি।’
৫৬/১৯২. অধ্যায়ঃ
বিজয়ের সুসংবাদ প্রদান
প্রসঙ্গে।
৩০৭৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ قَيْسٌ قَالَ قَالَ لِيْ جَرِيْرُ
بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَلَا
تُرِيْحُنِيْ مِنْ ذِي الْخَلَصَةِ وَكَانَ بَيْتًا فِيْهِ خَثْعَمُ يُسَمَّى
كَعْبَةَ الْيَمَانِيَةِ فَانْطَلَقْتُ فِيْ خَمْسِيْنَ وَمِائَةٍ مِنْ أَحْمَسَ
وَكَانُوْا أَصْحَابَ خَيْلٍ فَأَخْبَرْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَنِّيْ
لَا أَثْبُتُ عَلَى الْخَيْلِ فَضَرَبَ فِيْ صَدْرِيْ حَتَّى رَأَيْتُ أَثَرَ
أَصَابِعِهِ فِيْ صَدْرِيْ فَقَالَ اللَّهُمَّ ثَبِّتْهُ وَاجْعَلْهُ هَادِيًا
مَهْدِيًّا فَانْطَلَقَ إِلَيْهَا فَكَسَرَهَا وَحَرَّقَهَا فَأَرْسَلَ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُبَشِّرُهُ فَقَالَ رَسُوْلُ جَرِيْرٍ لِرَسُوْلِ
اللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَالَّذِيْ بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا جِئْتُكَ حَتَّى
تَرَكْتُهَا كَأَنَّهَا جَمَلٌ أَجْرَبُ فَبَارَكَ عَلَى خَيْلِ أَحْمَسَ
وَرِجَالِهَا خَمْسَ مَرَّاتٍ قَالَ مُسَدَّدٌ بَيْتٌ فِيْ خَثْعَمَ
জারীর
ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, ‘তুমি কি
যুলখালাসা মন্দিরটি ধ্বংস করে আমাকে সান্ত্বনা দিবে না?’ এ ঘরটি খাস‘আম গোত্রের
একটি মন্দির ছিল। যাকে ইয়ামানের কা’বা বলা হতো। অতঃপর আমি আহমাস গোত্রের দেড়শ’ লোক
নিয়ে রওয়ানা হলাম। তাঁরা সবাই দক্ষ ঘোড় সওয়ার ছিলেন। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানালাম যে, আমি ঘোড়ার উপর স্থির থাকতে পারি না। তখন তিনি
আমার বুকে হাত দ্বারা আঘাত করলেন। এমন কি আমি আমার বুকে তাঁর আঙ্গুলের ছাপ দেখতে
পেলাম এবং তিনি আমার জন্য দু‘আ করে বললেন, ‘হে আল্লাহ! তাকে ঘোড়ার পিঠে স্থির রাখ
এবং তাকে পথপ্রদর্শক ও সুপথপ্রাপ্ত করুন।’ অবশেষে জারীর (রাঃ) তথায় গমন করলেন। ঐ
মন্দিরটি ভেঙ্গে দিলেন ও জ্বালিয়ে দিলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে সুসংবাদ প্রদানের জন্য দূত পাঠালেন। জারীর (রাঃ)-এর দূত রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ
করেছেন, সে সত্তার কসম! আমি ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার নিকট আসিনি, যতক্ষণ না আমি তাকে
জ্বালিয়ে কাল উটের মত করে ছেড়েছি। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আহমাস গোত্রের অশ্বারোহী ও পদাতিক লোকদের জন্য পাঁচবার বরকতের দু‘আ
করলেন। মুসাদ্দাদ (রহঃ) বলেন, হাদীসে উল্লেখিত যুলখালাস অর্থ খাস‘আম গোত্রের একটি
ঘর।
৫৬/১৯৩. অধ্যায়ঃ
সুসংবাদ বহনকারীকে পুরস্কৃত
করা।
কা’ব ইব্নু মালিক (রাঃ)-কে
যখন তওবা কবুলের সুসংবাদ দান করা হয়, তখন তিনি সংবাদদাতাকে পুরস্কার স্বরূপ
দু’খানা কাপড় দান করেছিলেন।
৫৬/১৯৪. অধ্যায়ঃ
(মক্কা) বিজয়ের পর হিজরতের
কোন প্রয়োজন নেই।
৩০৭৭
حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِيْ إِيَاسٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ
عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ لَا هِجْرَةَ
وَلَكِنْ جِهَادٌ وَنِيَّةٌ وَإِذَا اسْتُنْفِرْتُمْ فَانْفِرُوْا
‘আবদুল্লাহ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন বলেছেন, ‘মক্কা
বিজয়ের পর হতে (মক্কা থেকে) হিজরতের প্রয়োজন নেই। কিন্তু জিহাদ ও নেক কাজের নিয়ত
বাকী আছে আর যখন তোমাদের জিহাদের ডাক দেয়া হবে তখন তোমরা বেরিয়ে পড়বে।’
৩০৭৮
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوسَى أَخْبَرَنَا يَزِيْدُ
بْنُ زُرَيْعٍ عَنْ خَالِدٍ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ عَنْ مُجَاشِعِ
بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ جَاءَ مُجَاشِعٌ بِأَخِيْهِ مُجَالِدِ بْنِ مَسْعُوْدٍ
إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ هَذَا مُجَالِدٌ يُبَايِعُكَ عَلَى
الْهِجْرَةِ فَقَالَ لَا هِجْرَةَ بَعْدَ فَتْحِ مَكَّةَ وَلَكِنْ أُبَايِعُهُ
عَلَى الْإِسْلَامِ
মুজাশি’
ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, মুজাশি’ তাঁর ভাই মুজালিদ ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) কে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর নিকট এসে বললেন, ‘এ মুজালিদ আপনার নিকট হিজরত করার জন্য
বাই‘আত করতে চায়। ‘তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
‘মক্কা জয়ের পর আর হিজরতের দরকার নেই। কাজেই আমি তাঁর নিকট হতে ইসলামের বাই‘আত
নিচ্ছি।’
৩০৭৯
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوسَى
أَخْبَرَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ عَنْ خَالِدٍ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ
النَّهْدِيِّ عَنْ مُجَاشِعِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ جَاءَ مُجَاشِعٌ بِأَخِيْهِ
مُجَالِدِ بْنِ مَسْعُوْدٍ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ هَذَا
مُجَالِدٌ يُبَايِعُكَ عَلَى الْهِجْرَةِ فَقَالَ لَا هِجْرَةَ بَعْدَ فَتْحِ
مَكَّةَ وَلَكِنْ أُبَايِعُهُ عَلَى الْإِسْلَامِ
মুজাশি’
ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, মুজাশি’ তাঁর ভাই মুজালিদ ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) কে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর নিকট এসে বললেন, ‘এ মুজালিদ আপনার নিকট হিজরত করার জন্য
বাই‘আত করতে চায়। ‘তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
‘মক্কা জয়ের পর আর হিজরতের দরকার নেই। কাজেই আমি তাঁর নিকট হতে ইসলামের বাই‘আত
নিচ্ছি।’
৩০৮০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
قَالَ عَمْرٌو وَابْنُ جُرَيْجٍ سَمِعْتُ عَطَاءً يَقُوْلُ ذَهَبْتُ مَعَ عُبَيْدِ
بْنِ عُمَيْرٍ إِلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا وَهِيَ مُجَاوِرَةٌ
بِثَبِيْرٍ فَقَالَتْ لَنَا انْقَطَعَتْ الْهِجْرَةُ مُنْذُ فَتَحَ اللهُ عَلَى
نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم مَكَّةَ
‘আত্বা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘উবাইদ ইব্নু ‘উমাইর (রাঃ) সহ ‘আয়িশা (রাঃ) এর নিকট গেলাম। তখন তিনি
সাবীর পাহাড়ের উপর অবস্থান করছিলেন। তিনি আমাদেরকে বললেন, ‘যখন হতে আল্লাহ্
তা‘আলা তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে মক্কা বিজয় দান করেছেন,
তখন থেকে হিজরত বন্ধ হয়ে গেছে।
৫৬/১৯৫. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা’আআলার না-ফরমানি
করলে প্রয়োজনে জিম্মী অথবা মুসলিম নারীর চুল দেখা ও তাদের কে বিবস্ত্র করা।
৩০৮১
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ حَوْشَبٍ
الطَّائِفِيُّ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ أَخْبَرَنَا حُصَيْنٌ عَنْ سَعْدِ بْنِ
عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَكَانَ عُثْمَانِيًّا فَقَالَ لِابْنِ
عَطِيَّةَ وَكَانَ عَلَوِيًّا إِنِّيْ لَاعْلَمُ مَا الَّذِيْ جَرَّأَ صَاحِبَكَ
عَلَى الدِّمَاءِ سَمِعْتُهُ يَقُوْلُ بَعَثَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
وَالزُّبَيْرَ فَقَالَ ائْتُوْا رَوْضَةَ كَذَا وَتَجِدُوْنَ بِهَا امْرَأَةً
أَعْطَاهَا حَاطِبٌ كِتَابًا فَأَتَيْنَا الرَّوْضَةَ فَقُلْنَا الْكِتَابَ
قَالَتْ لَمْ يُعْطِنِيْ فَقُلْنَا لَتُخْرِجِنَّ أَوْ لَاجَرِّدَنَّكِ
فَأَخْرَجَتْ مِنْ حُجْزَتِهَا فَأَرْسَلَ إِلَى حَاطِبٍ فَقَالَ لَا تَعْجَلْ
وَاللهِ مَا كَفَرْتُ وَلَا ازْدَدْتُ لِلْإِسْلَامِ إِلَّا حُبًّا وَلَمْ يَكُنْ
أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِكَ إِلَّا وَلَهُ بِمَكَّةَ مَنْ يَدْفَعُ اللهُ بِهِ عَنْ
أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَلَمْ يَكُنْ لِيْ أَحَدٌ فَأَحْبَبْتُ أَنْ أَتَّخِذَ
عِنْدَهُمْ يَدًا فَصَدَّقَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ عُمَرُ
دَعْنِيْ أَضْرِبْ عُنُقَهُ فَإِنَّهُ قَدْ نَافَقَ فَقَالَ مَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ
اللهَ اطَّلَعَ عَلَى أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ اعْمَلُوْا مَا شِئْتُمْ فَهَذَا
الَّذِيْ جَرَّأَهُ
আবূ
‘আবদূর রাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আর
তিনি ছিলেন ‘উসমান (রাঃ) এর সমর্থক। তিনি ইব্নু আতিয়্যাকে উদ্দেশ্য করে বলেন,
যিনি ‘আলী (রাঃ)-এর সমর্থক ছিলেন, কোন্ বস্তু তোমাদের সাথী (আলী (রাঃ)- কে
রক্তপাতে সাহস যুগিয়েছে, তা আমি জানি। আমি তাঁর নিকট শুনেছি, তিনি বলতেন,
‘রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এবং যুবাইর (ইব্নু আওয়াম)
(রাঃ)-কে প্রেরণ করেছেন, আর বলেছেন, তোমরা খাক বাগানের দিকে চলে যাও, সেখানে তোমরা
একজন মহিলাকে পাবে, হাতিব তাকে একটি পত্র দিয়েছে।’ আমরা সে বাগানে পৌঁছলাম এবং
মহিলাটিকে বললাম, পত্রখানি দাও, সে বলল, আমাকে কোন পত্র দেয়নি। তখন আমরা বললাম,
‘হয় তুমি পত্র বের করে দাও, নচেৎ আমরা তোমাকে বিবস্ত্র করব।’ তখন সে মহিলা তার
কেশের ভাঁজ থেকে পত্রখানা বের করে দিল। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হাতিবকে ডেকে পাঠান। তখন সে বলল, ‘আমার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করবেন না।
আল্লাহ্র কসম! আমি কুফরী করিনি, আমার হৃদয়ে ইসলামের প্রতি অনুরাগই বর্ধিত হয়েছে।
আপনার সাহাবীগণের মধ্যে কেউই এমন নেই, মক্কায় যার সাহায্যকারী আত্মীয় স্বজন না
আছে। যদ্দারা আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর পরিবার-পরিজন ধন-সম্পদ রক্ষা করেছেন। আর আমার
এমন কেউ নেই। তাই আমি তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে চেয়েছি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে সত্যবাদী হিসেবে স্বীকার করে নিলেন। ‘উমর (রাঃ) বললেন,
লোকটিকে আমার হাতে ছেড়ে দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই, সে তো মুনাফিকী করেছে। তখন
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘তুমি জান কি? অবশ্যই
আল্লাহ্ তা‘আলা আহলে বদর সম্পর্কে ভালভাবে জানেন এবং তাদের সম্পর্কে তিনি বলেছেন,
‘তোমরা যেমন ইচ্ছা ‘আমল কর।’ একথাই তাঁকে (আলী (রাঃ) দুঃসাহসী করেছে।
৫৬/১৯৬. অধ্যায়ঃ
মুজাহিদদেরকে সাদর সম্ভাষণ
জ্ঞাপন করা।
৩০৮২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِي الأَسْوَدِ حَدَّثَنَا
يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ وَحُمَيْدُ بْنُ الأَسْوَدِ عَنْ حَبِيْبِ بْنِ
الشَّهِيْدِ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ قَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ لِابْنِ
جَعْفَرٍ أَتَذْكُرُ إِذْ تَلَقَّيْنَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَا
وَأَنْتَ وَابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ نَعَمْ فَحَمَلَنَا وَتَرَكَكَ
ইব্নু
আবূ মুলাইকা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্নু
যুবাইর (রাঃ), ইব্নু জা‘ফর (রাঃ) কে বললেন, তোমার কি মনে আছে, যখন আমি ও তুমি এবং
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) আল্লাহ্র রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে
মিলিত হয়েছিলাম? ইবনু জা‘ফর বললেন, হ্যাঁ, স্মরণ আছে। রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বাহনে তুলে নিলেন আর তোমাকে ছেড়ে আসলেন।
৩০৮৩
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا ابْنُ
عُيَيْنَةَ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ قَالَ السَّائِبُ بْنُ يَزِيْدَ ذَهَبْنَا
نَتَلَقَّى رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَعَ الصِّبْيَانِ إِلَى ثَنِيَّةِ
الْوَدَاعِ
সায়িব
ইব্নু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে আমরাও আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে অভ্যর্থনা জানানোর উদ্দেশে সানিয়্যাতুল বিদা পর্যন্ত গিয়েছিলাম।
৫৬/১৯৭. অধ্যায়ঃ
জিহাদ হতে ফিরে আসার কালে যা
বলবে।
৩০৮৪
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا
جُوَيْرِيَةُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
كَانَ إِذَا قَفَلَ كَبَّرَ ثَلَاثًا قَالَ آيِبُوْنَ إِنْ شَاءَ اللهُ
تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ حَامِدُوْنَ لِرَبِّنَا سَاجِدُوْنَ صَدَقَ اللهُ
وَعْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَهَزَمَ الأَحْزَابَ وَحْدَهُ
‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিহাদ হতে ফিরতেন, তখন তিনবার তাকবীর
বলতেন। অতঃপর বলতেন, আল্লাহ্র ইচ্ছায় আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, গুনাহ হতে তওবাকারী,
তাঁরই ‘ইবাদতকারী, প্রশংসাকারী, আমাদের প্রতিপালককে সিজ্দাকারী। আল্লাহ্ তাআলা
তাঁর অঙ্গীকার সত্য প্রমাণিত করেছেন, তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং একাই শত্রু
দলকে পরাভূত করেছেন।
৩০৮৫
حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ
قَالَ حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ
كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ مَقْفَلَهُ مِنْ عُسْفَانَ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم عَلَى رَاحِلَتِهِ وَقَدْ أَرْدَفَ صَفِيَّةَ بِنْتَ حُيَيٍّ فَعَثَرَتْ
نَاقَتُهُ فَصُرِعَا جَمِيْعًا فَاقْتَحَمَ أَبُوْ طَلْحَةَ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ
اللهِ جَعَلَنِي اللهُ فِدَاءَكَ قَالَ عَلَيْكَ الْمَرْأَةَ فَقَلَبَ ثَوْبًا
عَلَى وَجْهِهِ وَأَتَاهَا فَأَلْقَاهُ عَلَيْهَا وَأَصْلَحَ لَهُمَا
مَرْكَبَهُمَا فَرَكِبَا وَاكْتَنَفْنَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
فَلَمَّا أَشْرَفْنَا عَلَى الْمَدِيْنَةِ قَالَ آيِبُوْنَ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ
لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ فَلَمْ يَزَلْ يَقُوْلُ ذَلِكَ حَتَّى دَخَلَ
الْمَدِيْنَةَ
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, উসফান হতে প্রত্যাবর্তনের সময় আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম, আর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর
সাওয়ারীর উপর আরোহী ছিলেন। তিনি সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই (রাঃ) কে তাঁর পেছনে
সাওয়ারীর উপর বসিয়েছিলেন। এ সময় উট পিছলিয়ে গেল এবং তাঁরা উভয়ে ছিটকে পড়েন। এ দেখে
আবূ ত্বলহা (রাঃ) দ্রুত এসে বললেন, ‘হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্ তাআলা আমাকে
আপনার জন্য কুরবান করুন। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, আগে মহিলার খোঁজ নাও। আবূ ত্বলহা (রাঃ) তখন একটা কাপড়ে নিজের মুখমণ্ডল ঢেকে
তাঁর নিকট আসলেন এবং সে কাপড়টা দিয়ে তাকে ঢেকে দিলেন। অতঃপর তাঁদের দু’জনের জন্য
সাওয়ারীকে ঠিক করলেন। তাঁরা উভয়েই আরোহণ করলেন, আর আমরা সবাই আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চারপাশে বেষ্টন করে চললাম। যখন আমরা মদীনার
নিকটবর্তী হলাম, তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ দুয়া
পড়লেন --------------------------------------- আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, আমরা
তওবাকারী, আমরা ‘ইবাদতকারী, আমরা আমাদের প্রতিপালকের প্রশংসাকারী। আর মদীনায়
প্রবেশ করা পর্যন্ত তিনি এ দু‘আ পড়তে থাকলেন।
৩০৮৬
حَدَّثَنَا عَلِيٌّ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّهُ
أَقْبَلَ هُوَ وَأَبُوْ طَلْحَةَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَعَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صَفِيَّةُ مُرْدِفَهَا عَلَى رَاحِلَتِهِ فَلَمَّا
كَانُوْا بِبَعْضِ الطَّرِيْقِ عَثَرَتْ النَّاقَةُ فَصُرِعَ النَّبِيُّ
وَالْمَرْأَةُ وَإِنَّ أَبَا طَلْحَةَ قَالَ أَحْسِبُ قَالَ اقْتَحَمَ عَنْ
بَعِيْرِهِ فَأَتَى رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا نَبِيَّ اللهِ
جَعَلَنِي اللهُ فِدَاءَكَ هَلْ أَصَابَكَ مِنْ شَيْءٍ قَالَ لَا وَلَكِنْ
عَلَيْكَ بِالْمَرْأَةِ فَأَلْقَى أَبُوْ طَلْحَةَ ثَوْبَهُ عَلَى وَجْهِهِ
فَقَصَدَ قَصْدَهَا فَأَلْقَى ثَوْبَهُ عَلَيْهَا فَقَامَتْ الْمَرْأَةُ فَشَدَّ
لَهُمَا عَلَى رَاحِلَتِهِمَا فَرَكِبَا فَسَارُوْا حَتَّى إِذَا كَانُوْا
بِظَهْرِ الْمَدِيْنَةِ أَوْ قَالَ أَشْرَفُوْا عَلَى الْمَدِيْنَةِ قَالَ
النَّبِيُّ آيِبُوْنَ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ فَلَمْ
يَزَلْ يَقُوْلُهَا حَتَّى دَخَلَ الْمَدِيْنَةَ
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
ও আবূ ত্বলহা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে চলছিলেন। আর
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে সাফিয়্যাহ (রাঃ)-ও ছিলেন। তিনি
তাঁকে নিজ সাওয়ারীতে তাঁর পেছনে বসিয়ে ছিলেন। পথিমধ্যে এক জায়গায় উটনীটির পা পিছলে
গেল। এতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাফিয়্যাহ ছিটকে পড়ে গেলেন। আর
আবূ ত্বলহা (রাঃ) তাঁর উট থেকে তাড়াতাড়ি নেমে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বললেন, ‘হে আল্লাহ্র নবী! আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে আপনার জন্য
কুরবান করুন। আপনার কি কোন আঘাত লেগেছে?’ আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘না। তবে তুমি মহিলাটির খোঁজ নাও।’ আবূ ত্বলহা (রাঃ) একটা
কাপড় দিয়ে মুখমণ্ডল ঢেকে তাঁর নিকট গেলেন এবং সেই কাপড় দিয়ে তাঁকে ঢেকে দিলেন। তখন
সাফিয়্যাহ (রাঃ) উঠে দাঁড়ালেন। অতঃপর তিনি আবূ ত্বলহা (রাঃ) তাঁদের উভয়ের জন্য
সাওয়ারীটি উত্তমরূপে বাঁধলেন। আর তাঁরা উভয়ে (তার উপর) আরোহণ করে চলতে শুরু করেন।
অবশেষে যখন তাঁরা মদীনার উপকন্ঠে পৌঁছলেন অথবা বর্ণনাকারী বলেন, যখন মদীনার
নিকটবর্তী হলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ দু‘আ পড়লেন, “আমরা
প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, ‘ইবাদতকারী, এবং আমাদের প্রতিপালকের প্রশংসাকারী।” আর
মদিনাহ্য় প্রবেশ করা পর্যন্ত তিনি এ দু‘আ পড়তে থাকলেন।
৫৬/১৯৮. অধ্যায়ঃ
সফর হতে প্রত্যাবর্তনের পর
সালাত আদায় করা।
৩০৮৭
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ
عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَفَرٍ
فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِيْنَةَ قَالَ لِيْ ادْخُلْ الْمَسْجِدَ فَصَلِّ
رَكْعَتَيْنِ
জাবির
ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক সফরে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা
যখন মদীনায় উপস্থিত হলাম, তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘মসজিদে প্রবেশ কর এবং দু’ রাক‘আত
সালাত আদায় কর।’
৩০৮৮
حَدَّثَنَا أَبُوْ عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ ابْنِ
شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبٍ عَنْ أَبِيْهِ
وَعَمِّهِ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ كَعْبٍ عَنْ كَعْبٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم كَانَ إِذَا قَدِمَ مِنْ سَفَرٍ ضُحًى دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَصَلَّى
رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ
কা’ব
(ইব্নু মালিক) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন চাশতের সময় সফর হতে ফিরতেন, তখন মসজিদে
প্রবেশ করে বসার পূর্বে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করে নিতেন।
৫৬/১৯৯. অধ্যায়ঃ
সফর হতে ফিরে খাদ্য গ্রহন
প্রসঙ্গে
আর (‘আবদুল্লাহ) ইব্নু ‘উমর
(রাঃ) আগত মেহমানের সম্মানে সাওম পালন করতেন না।
৩০৮৯
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا وَكِيْعٌ عَنْ شُعْبَةَ
عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا قَدِمَ الْمَدِيْنَةَ
نَحَرَ جَزُوْرًا أَوْ بَقَرَةً زَادَ مُعَاذٌ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ مُحَارِبٍ
سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ اشْتَرَى مِنِّي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
بَعِيْرًا بِوَقِيَّتَيْنِ وَدِرْهَمٍ أَوْ دِرْهَمَيْنِ فَلَمَّا قَدِمَ صِرَارًا
أَمَرَ بِبَقَرَةٍ فَذُبِحَتْ فَأَكَلُوْا مِنْهَا فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِيْنَةَ
أَمَرَنِيْ أَنْ آتِيَ الْمَسْجِدَ فَأُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ وَوَزَنَ لِيْ ثَمَنَ
الْبَعِيْرِ
জাবির
ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মাদিনাহ্য় ফিরতেন, তখন একটি উট অথবা
একটি গাভী যব্হ করতেন। আর মু‘আয (রাঃ) ... জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে
অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, [জাবির (রাঃ) বলেন] আল্লাহ্র রসূল আমার নিকট হতে এক
উট দু’ উকিয়া ও একটি দিরহাম কিংবা দু’ দিরহাম দ্বারা কিনে নেন এবং যখন তিনি সিরার
নামক স্থানে পোঁছেন, তখন একটি গাভী যব্হ করার নির্দেশ দেন। অতঃপর তা যব্হ করা হয়
এবং সকলে তাঁর গোশ্ত আহার করে। আর যখন তিনি মদীনায় উপস্থিত হলেন, তখন আমাকে
মসজিদে প্রবেশ করে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করতে আদেশ করলেন এবং আমাকে উটের মূল্য
পরিশোধ করে দিলেন।
৩০৯০
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ
مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَدِمْتُ مِنْ سَفَرٍ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صَلِّ رَكْعَتَيْنِ صِرَارٌ مَوْضِعٌ نَاحِيَةً
بِالْمَدِيْنَةِ
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি এক সফর হতে ফিরে এলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাকে বললেন, ‘দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করে নাও।’ সিরার হচ্ছে মাদিনাহ্র সন্নিকটে
একটি স্থানের নাম।
No comments