সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "জিহাদ" হাদিস নং - ২৯০১ থেকে ২৯৫০

বর্শা বা তদ্রুপ কিছু নিয়ে খেলা করা।

২৯০১

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ ابْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ بَيْنَا الْحَبَشَةُ يَلْعَبُوْنَ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِحِرَابِهِمْ دَخَلَ عُمَرُ فَأَهْوَى إِلَى الْحَصَى فَحَصَبَهُمْ بِهَا فَقَالَ دَعْهُمْ يَا عُمَرُ وَزَادَ عَلِيٌّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ فِي الْمَسْجِدِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার একদল হাব্‌শী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বর্শা নিয়ে খেলা করছিলেন। এমন সময় ‘উমর (রাঃ) সেখানে এলেন এবং হাতে কাঁকর তুলে নিয়ে তাদের দিকে নিক্ষেপ করলেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে ‘উমর! তাদের করতে দাও। আলী……মা’মার (রহঃ) সূত্রে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন, (এ ঘটনা) মসজিদে ঘটেছিল।

৫৬/৮০. অধ্যায়ঃ

ঢাল ও যে লোক তার সঙ্গীর ঢাল ব্যবহার করে।

২৯০২

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كَانَ أَبُوْ طَلْحَةَ يَتَتَرَّسُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِتُرْسٍ وَاحِدٍ وَكَانَ أَبُوْ طَلْحَةَ حَسَنَ الرَّمْيِ فَكَانَ إِذَا رَمَى تَشَرَّفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَيَنْظُرُ إِلَى مَوْضِعِ نَبْلِهِ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ তাল্‌হা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একই ঢাল ব্যবহার করেছেন। আর আবূ তাল্‌হা (রাঃ) ছিলেন একজন ভালো তীরন্দাজ। তিনি যখন তীর ছুঁড়তেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা উঁচু করে তীর যে স্থানে পড়ত তা নযর রাখতেন।

২৯০৩

حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ عُفَيْرٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ سَهْلٍ قَالَ لَمَّا كُسِرَتْ بَيْضَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَلَى رَأْسِهِ وَأُدْمِيَ وَجْهُهُ وَكُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ وَكَانَ عَلِيٌّ يَخْتَلِفُ بِالْمَاءِ فِي الْمِجَنِّ وَكَانَتْ فَاطِمَةُ تَغْسِلُهُ فَلَمَّا رَأَتْ الدَّمَ يَزِيْدُ عَلَى الْمَاءِ كَثْرَةً عَمَدَتْ إِلَى حَصِيْرٍ فَأَحْرَقَتْهَا وَأَلْصَقَتْهَا عَلَى جُرْحِهِ فَرَقَأَ الدَّمُ
সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যুদ্ধের ময়দানে যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাথার শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে গেল ও তাঁর মুখমন্ডল রক্তে ভিজে গেল এবং তাঁর সামনের দাঁত ভেঙ্গে গেল, ‘আলী (রাঃ) ঢালে ভরে ভরে পানি আনতেন এবং ফাতিমা (রাঃ) ক্ষতস্থান ধুয়ে দিচ্ছিলেন। যখন ফাতিমা (রাঃ) দেখলেন যে, পানির চেয়ে রক্ত পড়া আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন একখানা চাটাই নিয়ে তা পোড়ালেন এবং তার ছাই ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলেন, তাতে রক্ত বন্ধ হয়ে গেল।

২৯০৪

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ بْنِ الْحَدَثَانِ عَنْ عُمَرَ قَالَ كَانَتْ أَمْوَالُ بَنِي النَّضِيْرِ مِمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَى رَسُوْلِهِ مِمَّا لَمْ يُوْجِفْ الْمُسْلِمُوْنَ عَلَيْهِ بِخَيْلٍ وَلَا رِكَابٍ فَكَانَتْ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَاصَّةً وَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِهِ نَفَقَةَ سَنَتِهِ ثُمَّ يَجْعَلُ مَا بَقِيَ فِي السِّلَاحِ وَالْكُرَاعِ عُدَّةً فِيْ سَبِيْلِ اللهِ
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বনূ নযীরের সম্পদ আল্লাহ তা’আলা তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘ফায়’ হিসেবে দান করেছিলেন। এতে মুসলিমগণ অশ্ব বা সাওয়ারী চালনা করেনি। এ কারণে তা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য নির্দিষ্ট ছিল। এ সম্পদ থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পরিবারকে এক বছরের খরচ দিয়ে দিতেন এবং বাকী আল্লাহ্‌র রাস্তায় জিহাদের প্রস্তুতির জন্য হাতিয়ার ও ঘোড়া ইত্যাদিতে ব্যয় করতেন।

২৯০৫

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَعْدُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شَدَّادٍ عَنْ عَلِيٍّ ح حَدَّثَنَا قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ شَدَّادٍ قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا يَقُوْلُ مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُفَدِّيْ رَجُلاً بَعْدَ سَعْدٍ سَمِعْتُهُ يَقُوْلُ ارْمِ فِدَاكَ أَبِيْ وَأُمِّي
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সা’দ (রাঃ) ব্যতীত আর কারো জন্যও তাঁর পিতা-মাতাকে উৎসর্গ করার কথা বলতে দেখিনি। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, ‘তুমি তীর নিক্ষেপ কর, তোমার জন্য আমার পিতা-মাতা উৎসর্গ (ফিদা) হোক।’

৫৬/৮১. অধ্যায়ঃ

চামড়ার ঢাল সম্পর্কিত।

২৯০৬

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ وَهْبٍ قَالَ عَمْرٌو حَدَّثَنِيْ أَبُو الأَسْوَدِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالت دَخَلَ عَلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدِيْ جَارِيَتَانِ تُغَنِّيَانِ بِغِنَاءِ بُعَاثَ فَاضْطَجَعَ عَلَى الْفِرَاشِ وَحَوَّلَ وَجْهَهُ فَدَخَلَ أَبُوْ بَكْرٍ فَانْتَهَرَنِيْ وَقَالَ مِزْمَارَةُ الشَّيْطَانِ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَقْبَلَ عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ دَعْهُمَا فَلَمَّا غَفَلَ غَمَزْتُهُمَا فَخَرَجَتَا
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট আসলেন। সে সময় দু’টি বালিকা বু’আস যুদ্ধের গৌরবগাঁথা গাচ্ছিল। তিনি এসেই বিছানায় গা এলিয়ে দিলেন এবং তাঁর মুখ ফিরিয়ে রাখলেন। এমন সময় আবূ বকর (রাঃ) এলেন এবং আমাকে ধমক দিলেন এবং বললেন, আল্লাহ্‌র রাসূলের নিকট শয়তানের বাজনা? আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দিকে ফিরে বললেন ওদের ছেড়ে দাও। অতঃপর যখন তিনি অন্য দিকে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন আমি বালিকা দু’টিকে খোঁচা দিলাম। আর তারা বেরিয়ে গেল।

২৯০৭

قَالَتْ وَكَانَ يَوْمُ عِيْدٍ يَلْعَبُ السُّوْدَانُ بِالدَّرَقِ وَالْحِرَابِ فَإِمَّا سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَإِمَّا قَالَ تَشْتَهِيْنَ تَنْظُرِيْنَ فَقَالَتْ نَعَمْ فَأَقَامَنِيْ وَرَاءَهُ خَدِّيْ عَلَى خَدِّهِ وَيَقُوْلُ دُوْنَكُمْ بَنِيْ أَرْفِدَةَ حَتَّى إِذَا مَلِلْتُ قَالَ حَسْبُكِ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَاذْهَبِيْ قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ قَالَ أَحْمَدُ عَنْ ابْنِ وَهْبٍ فَلَمَّا غَفَلَ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ঈদের দিনে হাবশী লোকেরা ঢাল ও বর্শা নিয়ে খেলা করত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলেছিলাম কিংবা তিনিই আমাকে বলেছিলেন, তুমি কি দেখতে চাও? আমি বললাম, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি আমাকে তাঁর পেছনে দাঁড় করালেন। আমার গাল তাঁর গালের উপর ছিল। তিনি বলছিলেন, হে বনূ আরফিদা, চালিয়ে যাও। যখন আমি ক্লান্ত হয়ে পড়লাম, তিনি আমাকে বললেন, যথেষ্ট হয়েছে? বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে যাও। আহমদ (রহঃ) ইব্‌নু ওয়াহাব (রহঃ) সূত্রে বলেন, তিনি যখন অন্য মনস্ক হলেন।

৫৬/৮২. অধ্যায়ঃ

কোষে ও স্কন্ধে তরবারি বহন।

২৯০৮

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَحْسَنَ النَّاسِ وَأَشْجَعَ النَّاسِ وَلَقَدْ فَزِعَ أَهْلُ الْمَدِيْنَةِ لَيْلَةً فَخَرَجُوْا نَحْوَ الصَّوْتِ فَاسْتَقْبَلَهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ اسْتَبْرَأَ الْخَبَرَ وَهُوَ عَلَى فَرَسٍ لِأَبِيْ طَلْحَةَ عُرْيٍ وَفِيْ عُنُقِهِ السَّيْفُ وَهُوَ يَقُوْلُ لَمْ تُرَاعُوْا لَمْ تُرَاعُوْا ثُمَّ قَالَ وَجَدْنَاهُ بَحْرًا أَوْ قَالَ إِنَّهُ لَبَحْرٌ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকল লোকের চেয়ে সুশ্রী ও সাহসী ছিলেন। এক রাতে মদীনার লোকেরা ভীত হয়ে শব্দের দিকে বের হলো। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের সামনে এলেন এমন অবস্থায় যে, তিনি শব্দের কারণ অন্বেষণ করে ফেলেছেন। তিনি আবূ ত্বলহার জিনবিহীন ঘোড়ার পিঠে সাওয়ার ছিলেন এবং তাঁর কাঁধে তরবারি ছিল। তিনি বলছিলেন, তোমরা ভীত হয়ো না। অতঃপর তিনি বললেন, আমি ঘোড়াটিকে সমুদ্রের মত গতিশীল পেয়েছি, অথবা তিনি বললেন, এটি সমুদ্র।

৫৬/৮৩. অধ্যায়ঃ

তলোয়ার স্বর্ণ-রৌপ্যে খচিতকরণ।

২৯০৯

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ قَالَ سَمِعْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ حَبِيْبٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ يَقُوْلُ لَقَدْ فَتَحَ الْفُتُوْحَ قَوْمٌ مَا كَانَتْ حِلْيَةُ سُيُوفِهِمْ الذَّهَبَ وَلَا الْفِضَّةَ إِنَّمَا كَانَتْ حِلْيَتُهُمْ الْعَلَابِيَّ وَالآنُكَ وَالْحَدِيْدَ
আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এই সব বিজয় এমন সব লোকেদের দ্বারা অর্জিত হয়েছিল, যাদের তলোয়ার স্বর্ণ বা রৌপ্য খচিত ছিল না, বরং তাদের তলোয়ার ছিল উঠের গর্দানের চামড়া এবং লৌহ কারুকার্য খচিত।

৫৬/৮৪. অধ্যায়ঃ

সফরে দ্বিপ্রহরের বিশ্রামকালে তলোয়ার গাছে ঝুলিয়ে রাখা

২৯১০

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِيْ سِنَانُ بْنُ أَبِيْ سِنَانٍ الدُّؤَلِيُّ وَأَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَ أَنَّهُ غَزَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قِبَلَ نَجْدٍ فَلَمَّا قَفَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَفَلَ مَعَهُ فَأَدْرَكَتْهُمْ الْقَائِلَةُ فِيْ وَادٍ كَثِيْرِ الْعِضَاهِ فَنَزَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَتَفَرَّقَ النَّاسُ يَسْتَظِلُّوْنَ بِالشَّجَرِ فَنَزَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَحْتَ سَمُرَةٍ وَعَلَّقَ بِهَا سَيْفَهُ وَنِمْنَا نَوْمَةً فَإِذَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدْعُوْنَا وَإِذَا عِنْدَهُ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ إِنَّ هَذَا اخْتَرَطَ عَلَيَّ سَيْفِيْ وَأَنَا نَائِمٌ فَاسْتَيْقَظْتُ وَهُوَ فِيْ يَدِهِ صَلْتًا فَقَالَ مَنْ يَمْنَعُكَ مِنِّيْ فَقُلْتُ اللهُ ثَلَاثًا وَلَمْ يُعَاقِبْهُ وَجَلَسَ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে নাজদের দিকে কোন এক যুদ্ধে বের হয়েছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিরে আসলে তিনিও তাঁর সঙ্গে ফিরে আসলেন। তারা যখন কণ্টকময় বৃক্ষরাজীতে আবৃত এক উপত্যকায় উপস্থিত হলেন তখন তাঁদের দিবা বিশ্রামের সময় এলো। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে অবতরণ করেন। লোকেরা ছায়ার আশ্রয়ে বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি বাবলা গাছের নিচে অবতরণ করলেন এবং তাতে তাঁর তরবারী ঝুলিয়ে রাখলেন। অতঃপর আমরা সকলেই ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ এক সময় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের ডাকতে লাগলেন। দেখলাম তাঁর পার্শ্বে একজন গ্রাম্য আরব। তিনি বললেন, আমার নিদ্রাবস্থায় এই ব্যক্তি আমারই তরবারী আমারই উপর বের করে ধরেছে। জেগে উঠে দেখতে পেলাম যে, তার হাতে খোলা তরবারী। সে বলল, আমার থেকে তোমাকে কে রক্ষা করবে, আমি বললাম, আল্লাহ! আল্লাহ! তিনবার। তারপরও তিনি কোন প্রতিশোধ নেননি, অথচ সে সেখানে বসে আছে।

৫৬/৮৫. অধ্যায়ঃ

শিরস্ত্রাণ পরিধাণ।

২৯১১

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ سَهْلٍ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ جُرْحِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ فَقَالَ جُرِحَ وَجْهُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَكُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ وَهُشِمَتْ الْبَيْضَةُ عَلَى رَأْسِهِ فَكَانَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَام تَغْسِلُ الدَّمَ وَعَلِيٌّ يُمْسِكُ فَلَمَّا رَأَتْ أَنَّ الدَّمَ لَا يَزِيْدُ إِلَّا كَثْرَةً أَخَذَتْ حَصِيْرًا فَأَحْرَقَتْهُ حَتَّى صَارَ رَمَادًا ثُمَّ أَلْزَقَتْهُ فَاسْتَمْسَكَ الدَّمُ
সাহ্‌ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাকে উহুদের দিনে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আঘাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুখমন্ডল আহত হল এবং তাঁর সামনের দু’টি দাঁত ভেঙ্গে গেল, তাঁর মাথার শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে গেল। ফাতেমাহ (রাঃ) রক্ত ধুচ্ছিলেন আর ‘আলী (রাঃ) পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন। তিনি যখন দেখতে পেলেন যে, রক্ত পড়া বাড়ছেই, তখন একটি চাটাই ‍নিয়ে তা পুড়িয়ে ছাই করলেন এবং তা ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলেন। অতঃপর রক্ত পড়া বন্ধ হল।

৫৬/৮৬. অধ্যায়ঃ

কারো মৃত্যুকালে তার অস্ত্র বিনষ্ট করা যারা পছন্দ করে না

২৯১২

حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ قَالَ مَا تَرَكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَّا سِلَاحَهُ وَبَغْلَةً بَيْضَاءَ وَأَرْضًا جَعَلَهَا صَدَقَةً
‘আম্‌র ইব্‌নু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুই রেখে যাননি, কেবল তাঁর অস্ত্র, একটি সাদা খচ্চর ও এক টুকরো জমি, যা সদকা করে গিয়েছিলেন।

৫৬/৮৭. অধ্যায়ঃ

দুপুরের বিশ্রামকালে ইমাম থেকে তফাতে যাওয়া এবং গাছের ছায়ায় বিশ্রাম গ্রহন করা।

২৯১৩

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنَا سِنَانُ بْنُ أَبِيْ سِنَانٍ وَأَبُوْ سَلَمَةَ أَنَّ جَابِرًا أَخْبَرَهُ ح و حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ سِنَانِ بْنِ أَبِيْ سِنَانٍ الدُّؤَلِيِّ أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّهُ غَزَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَدْرَكَتْهُمْ الْقَائِلَةُ فِيْ وَادٍ كَثِيْرِ الْعِضَاهِ فَتَفَرَّقَ النَّاسُ فِي الْعِضَاهِ يَسْتَظِلُّوْنَ بِالشَّجَرِ فَنَزَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم تَحْتَ شَجَرَةٍ فَعَلَّقَ بِهَا سَيْفَهُ ثُمَّ نَامَ فَاسْتَيْقَظَ وَعِنْدَهُ رَجُلٌ وَهُوَ لَا يَشْعُرُ بِهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ هَذَا اخْتَرَطَ سَيْفِيْ فَقَالَ مَنْ يَمْنَعُكَ قُلْتُ اللهُ فَشَامَ السَّيْفَ فَهَا هُوَ ذَا جَالِسٌ ثُمَّ لَمْ يُعَاقِبْهُ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একটি যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন। তাদের দুপুরের বিশ্রামের সময় হল এমন একটি উপত্যকায় যাতে কাঁটাদার প্রচুর বৃক্ষ ছিল। লোকেরা কাঁটাদার বৃক্ষরাজির ছায়ায় বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়ল। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি বৃক্ষের নীচে অবতরণ করেন এবং একটি বৃক্ষে তাঁর তরবারী ঝুলিয়ে সেখানে ঘুমিয়ে পড়েন। তিনি জেগে উঠলেন এবং হঠাৎ তাঁর পার্শ্বে দেখতে পেলেন যে, জনৈক ব্যক্তি, অথচ তিনি তার ব্যাপারে টের পাননি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এই ব্যক্তিটি হঠাৎ আমার তরবারীটি উঁচিয়ে বলল, কে তোমাকে আমার হাত থেকে রক্ষা করবে? আমি বললাম, আল্লাহ্‌! তখন সে ব্যক্তি তলোয়ারটি খাপে রেখে দিল। আর এই সে ব্যক্তি, এখনো বসা, কিন্তু তিনি তার প্রতিশোধ নেননি।

৫৬/৮৮. অধ্যায়ঃ

তীর নিক্ষেপ প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে।
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উল্লেখ রয়েছে যে, তীরের ছায়ার নীচে আমার রিয্‌ক রাখা হয়েছে। যে ব্যক্তি আমার নির্দেশের বিরোধিতা করে, তার জন্য অপমান ও লাঞ্চনা নির্ধারিত আছে।

২৯১৪

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ أَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ مَوْلَى أَبِيْ قَتَادَةَ الأَنْصَارِيِّ عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ أَنَّهُ كَانَ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى إِذَا كَانَ بِبَعْضِ طَرِيْقِ مَكَّةَ تَخَلَّفَ مَعَ أَصْحَابٍ لَهُ مُحْرِمِيْنَ وَهُوَ غَيْرُ مُحْرِمٍ فَرَأَى حِمَارًا وَحْشِيًّا فَاسْتَوَى عَلَى فَرَسِهِ فَسَأَلَ أَصْحَابَهُ أَنْ يُنَاوِلُوْهُ سَوْطَهُ فَأَبَوْا فَسَأَلَهُمْ رُمْحَهُ فَأَبَوْا فَأَخَذَهُ ثُمَّ شَدَّ عَلَى الْحِمَارِ فَقَتَلَهُ فَأَكَلَ مِنْهُ بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَى بَعْضٌ فَلَمَّا أَدْرَكُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم سَأَلُوْهُ عَنْ ذَلِكَ قَالَ إِنَّمَا هِيَ طُعْمَةٌ أَطْعَمَكُمُوْهَا اللهُ وَعَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ فِي الْحِمَارِ الْوَحْشِيِّ مِثْلُ حَدِيْثِ أَبِي النَّضْرِ قَالَ هَلْ مَعَكُمْ مِنْ لَحْمِهِ شَيْءٌ
আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলেন। মক্কার পথে কোন এক স্থানে পৌঁছার পর আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) কয়েকজন সঙ্গীসহ তাঁর পেছনে রয়ে গেলেন। সঙ্গীরা ছিলেন ইহরাম অবস্থায় আর তিনি ছিলেন ইহরাম বিহীন। এ সময় তিনি একটি বুনো গাধা দেখতে পান এবং তাঁর ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করেন। তিনি তাঁর সঙ্গীদের তাঁর চাবুকটি উটিয়ে দিতে বলেন; কিন্তু তারা তা দিতে অস্বীকার করলেন। আবার তিনি তাঁর বর্শাটি উটিয়ে দিতে বলেন। তারা তাও দিতে অস্বীকার করলেন। তখন তিনি নিজেই তা উঠিয়ে নিলেন। অতঃপর গাধাটির উপর আক্রমণ চালালেন এবং তাকে হত্যা করলেন। সাথীরা কেউ কেউ এর গোশ্‌ত খেলেন এবং কেউ কেউ তা খেতে অস্বীকার করলেন। অতঃপর তারা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গিয়ে এ সম্পর্কে তাঁর নিকট জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন, এটি একটি আহারের বস্তু, যা আল্লাহ্‌ তা’আলা তোমাদের আহারের জন্য দিয়েছেন। যায়িদ ইব্‌নু আসলাম (রহঃ) আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে আবূ নাযর (রাঃ)-এর মতই বুনো গাধা সম্পর্কে হাদীস বর্ণনা করেছেন। এতে আছে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের সঙ্গে তার কিছু গোশ্‌ত আছে কি?

৫৬/৮৯. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বর্ম এবং যুদ্ধে ব্যবহৃত তাঁর জামা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, খালিদ (ইব্‌নু ওয়ালিদ) তো তাঁর বর্মগুলো আল্লাহ্‌র পথে ওয়াক্‌ফ করে দিয়েছে।

২৯১৫

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِيْ قُبَّةٍ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَنْشُدُكَ عَهْدَكَ وَوَعْدَكَ اللَّهُمَّ إِنْ شِئْتَ لَمْ تُعْبَدْ بَعْدَ الْيَوْمِ فَأَخَذَ أَبُوْ بَكْرٍ بِيَدِهِ فَقَالَ حَسْبُكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَدْ أَلْحَحْتَ عَلَى رَبِّكَ وَهُوَ فِي الدِّرْعِ فَخَرَجَ وَهُوَ يَقُوْلُ سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَيُوَلُّوْنَ الدُّبُرَ بَلْ السَّاعَةُ مَوْعِدُهُمْ وَالسَّاعَةُ أَدْهَى وَأَمَرُّ (النساء : 95) وَقَالَ وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا خَالِدٌ يَوْمَ بَدْرٍ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদরের দিন একটি গুম্বজওয়ালা তাঁবুতে অবস্থান কালে দু‘আ করছিলেন, হে আল্লাহ্‌! আমি আপনার প্রতিজ্ঞা ও ওয়াদার দোহাই ‍দিয়ে বলছি, আপনি যদি চান, তাহলে আজকের পরে আর আপনার ইবাদাত করা হবে না।’ এ সময় আবূ বকর (রাঃ) তাঁর হাত ধরে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! যথেষ্ট হয়েছে। আপনি বার বার নত হয়ে আপনার প্রতিপালকের কাছে দু‘আ করেছেন।’ সে সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বর্ম আচ্ছাদিত ছিলেন। অতঃপর তিনি এই আয়াত পাঠ করতে করতে বেরিয়ে এলেনঃ শীঘ্রই দুশমনরা পরাস্ত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে তদুপরি কিয়ামত শাস্তির নির্ধারিত কাল এবং কিয়ামত হবে অধিক কঠিন ও অধিক তিক্ত। (সূরা আল-ক্বামার ৪৫, ৪৬) ওয়াইব (রহঃ) বলেন, খালিদ (রহঃ) বলেছেন, ‘বদরের দিন’।

২৯১৬

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ تُوُفِّيَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَدِرْعُهُ مَرْهُوْنَةٌ عِنْدَ يَهُوْدِيٍّ بِثَلَاثِيْنَ صَاعًا مِنْ شَعِيْرٍ وَقَالَ يَعْلَى حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ دِرْعٌ مِنْ حَدِيْدٍ وَقَالَ مُعَلًّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ وَقَالَ رَهَنَهُ دِرْعًا مِنْ حَدِيْدٍ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর সময় তাঁর বর্মটি ত্রিশ সা’ যব-এর বিনিময়ে এক ইয়াহূদীর নিকট বন্ধক ‍ছিল।
মুআল্লাহ ‘আবদুল ওয়াহিদ (রহঃ) সূত্রে আ’মাশ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর লোহার বর্ম বন্ধক রেখেছিলেন। আর ইয়ালা (রহঃ) আ’মাশ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, বর্মটি ছিল লোহার।

২৯১৭

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا ابْنُ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَثَلُ الْبَخِيْلِ وَالْمُتَصَدِّقِ مَثَلُ رَجُلَيْنِ عَلَيْهِمَا جُبَّتَانِ مِنْ حَدِيْدٍ قَدْ اضْطَرَّتْ أَيْدِيَهُمَا إِلَى تَرَاقِيْهِمَا فَكُلَّمَا هَمَّ الْمُتَصَدِّقُ بِصَدَقَتِهِ اتَّسَعَتْ عَلَيْهِ حَتَّى تُعَفِّيَ أَثَرَهُ وَكُلَّمَا هَمَّ الْبَخِيْلُ بِالصَّدَقَةِ انْقَبَضَتْ كُلُّ حَلْقَةٍ إِلَى صَاحِبَتِهَا وَتَقَلَّصَتْ عَلَيْهِ وَانْضَمَّتْ يَدَاهُ إِلَى تَرَاقِيْهِ فَسَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ فَيَجْتَهِدُ أَنْ يُوَسِّعَهَا فَلَا تَتَّسِعُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কৃপণ ও দানশীল ব্যক্তির উদাহরণ এমন দু’ ব্যক্তির মত, যারা লৌহ বর্মে আচ্ছাদিত। বর্ম দু’টি এত আঁটসাঁট যে, তাদের উভয়ের হাত কব্জায় আবদ্ধ রয়েছে। দানশীল ব্যক্তি যখন দান করতে ইচ্ছে করে, তখন বর্মটি তার দেহের উপর প্রসারিত হয়, এমনকি তা তার পায়ের চিহ্ন মুছে ফেলে। আর কৃপণ ব্যক্তি যখন দান করতে ইচ্ছে করে তখন বর্মের কড়াগুলো পরস্পর গলে গিয়ে তার শরীরকে আঁকড়ে ধরে এবং তার উভয় হস্ত কন্ঠের সঙ্গে লেগে যায়। অতঃপর আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, সে হাত দু’টিকে প্রসারিত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে; কিন্তু প্রসারিত করতে পারে না।

৫৬/৯০. অধ্যায়ঃ

সফরে এবং যুদ্ধে জোব্বা পরিধান করা

২৯১৮

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ أَبِي الضُّحَى مُسْلِمٍ هُوَ ابْنُ صُبَيْحٍ عَنْ مَسْرُوقٍ قَالَ حَدَّثَنِي الْمُغِيْرَةُ بْنُ شُعْبَةَ قَالَ انْطَلَقَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِحَاجَتِهِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَلَقِيْتُهُ بِمَاءٍ فَتَوَضَّأَ وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ شَأمِيَّةٌ فَمَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ وَغَسَلَ وَجْهَهُ فَذَهَبَ يُخْرِجُ يَدَيْهِ مِنْ كُمَّيْهِ فَكَانَا ضَيِّقَيْنِ فَأَخْرَجَهُمَا مِنْ تَحْتُ فَغَسَلَهُمَا وَمَسَحَ بِرَأْسِهِ وَعَلَى خُفَّيْهِ
মুগীরাহ ইব্‌নু শু’বা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌ রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা হাজত পূরণের জন্য গেলেন। সেখান থেকে ফিরে এলে আমি তাঁর নিকট পানি নিয়ে গেলাম। তিনি তা দিয়ে উযূ করেন। তাঁর পরিধানে ছিল সিরীয় জোব্বা। তিনি কুলি করেন, নাকে পানি দেন ও মুখমণ্ডল ধৌত করেন। অতঃপর তিনি জামার আস্তিন গুটিয়ে দু’টি হাত বের করতে চাইলেন। কিন্তু আস্তিন দু’টি ছিল খুবই আঁটসাঁট। তাই তিনি ভেতরের দিক থেকে হাত বের করে উভয় হাত ধুলেন এবং মাথা মসেহ করলেন এবং উভয় মোজার উপর মাস্‌হ করলেন।

৫৬/৯১. অধ্যায়ঃ

যুদ্ধে রেশমী পরিচ্ছদ পরিধান করা।

২৯১৯

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْمِقْدَامِ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ قَتَادَةَ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَخَّصَ لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَالزُّبَيْرِ فِيْ قَمِيْصٍ مِنْ حَرِيْرٍ مِنْ حِكَّةٍ كَانَتْ بِهِمَا
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু আওফ (রাঃ) ও যুবায়র (রাঃ)-কে তাদের শরীরে চুলকানি থাকায় রেশমী জামা পরিধান করতে অনুমতি দিয়েছিলেন।

২৯২০

حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ ح حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ وَالزُّبَيْرَ شَكَوَا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَعْنِي الْقَمْلَ فَأَرْخَصَ لَهُمَا فِي الْحَرِيْرِ فَرَأَيْتُهُ عَلَيْهِمَا فِيْ غَزَاةٍ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুর রহমান ও যুবায়র (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উকুনের অভিযোগ করলে তিনি তাদেরকে রেশমী পোষাক পরার অনুমতি দেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি যুদ্ধে তাদের দেহে তা দেখেছি।

২৯২১

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ أَخْبَرَنِيْ قَتَادَةُ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ قَالَ رَخَّصَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَالزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ فِيْ حَرِيْرٍ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু আওফ ও যুবায়র ইব্‌নুল আওয়ামকে রেশমী পোষাক পরার অনুমতি দেন।

২৯২২

حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ سَمِعْتُ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ رَخَّصَ أَوْ رُخِّصَ لَهُمَا لِحِكَّةٍ بِهِمَا
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
শরীরে চুলকানী থাকার কারণে তাদের দু’জনকে (আবদুর রাহমান ও যুবায়রকে) রেশমী পোষাক পরার অনুমতি দিয়েছিলেন বা দেয়া হয়েছিল।

৫৬/৯২. অধ্যায়ঃ

ছুরি সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়েছে।

২৯২৩

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ الضَّمْرِيِّ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَأْكُلُ مِنْ كَتِفٍ يَحْتَزُّ مِنْهَا ثُمَّ دُعِيَ إِلَى الصَّلَاةِ فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ وَزَادَ فَأَلْقَى السِّكِّيْنَ
‘আম্‌র ইব্‌নু উমায়্যাহ যামরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (বকরির) হাত কেটে কেটে খেতে দেখেছি। অতঃপর তাঁকে সালাতের জন্য ডাকা হলে তিনি সালাত আদায় করলেন; কিন্তু তিনি উযূ করলেন না। আবুল ইয়ামান (রহঃ) শুয়াইব সূত্রে যুহরী (রহঃ) থেকে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছুরি রেখে দিলেন।

৫৬/৯৩. অধ্যায়ঃ

রোমীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে।

২৯২৪

حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ بْنُ يَزِيْدَ الدِّمَشْقِيُّ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ ثَوْرُ بْنُ يَزِيْدَ عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ أَنَّ عُمَيْرَ بْنَ الأَسْوَدِ الْعَنْسِيَّ حَدَّثَهُ أَنَّهُ أَتَى عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ وَهُوَ نَازِلٌ فِيْ سَاحَةِ حِمْصَ وَهُوَ فِيْ بِنَاءٍ لَهُ وَمَعَهُ أُمُّ حَرَامٍ قَالَ عُمَيْرٌ فَحَدَّثَتْنَا أُمُّ حَرَامٍ أَنَّهَا سَمِعَتْ النَّبِيَّ يَقُوْلُ أَوَّلُ جَيْشٍ مِنْ أُمَّتِيْ يَغْزُوْنَ الْبَحْرَ قَدْ أَوْجَبُوْا قَالَتْ أُمُّ حَرَامٍ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنَا فِيْهِمْ قَالَ أَنْتِ فِيْهِمْ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوَّلُ جَيْشٍ مِنْ أُمَّتِيْ يَغْزُوْنَ مَدِيْنَةَ قَيْصَرَ مَغْفُوْرٌ لَهُمْ فَقُلْتُ أَنَا فِيْهِمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ لَا
‘উমাইর ইব্‌নু আসওয়াদ আনসী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘উবাদা ইব্‌নু সামিত (রাঃ)-এর নিকট আসলেন। তখন ‘উবাদা (রাঃ) হিম্‌স উপকূলে তাঁর একটি ঘরে অবস্থান করছিলেন এবং তার সঙ্গে ছিলেন উম্মু হারাম। ‘উমাইর (রহঃ) বলেন, উম্মু হারাম (রাঃ) আমাদের নিকট বর্ণনা করেন, তিনি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, আমার উম্মাতের মধ্যে প্রথম যে দলটি নৌ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে তারা যেন জান্নাত অবধারিত করে ফেলল। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আমি কি তাদের মধ্যে হবো? তিনি বললেন, তুমি তাদের মধ্যে হবে। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার উম্মাতের প্রথম যে দলটি কায়সার-এর রাজধানী আক্রমণ করবে তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত। অতঃপর আমি বললাম, ‘হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি কি তাদের মধ্যে হবো?’ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘না।’

৫৬/৯৪. অধ্যায়ঃ

ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ

২৯২৫

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْفَرْوِيُّ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ تُقَاتِلُوْنَ الْيَهُوْدَ حَتَّى يَخْتَبِيَ أَحَدُهُمْ وَرَاءَ الْحَجَرِ فَيَقُوْلُ يَا عَبْدَ اللهِ هَذَا يَهُوْدِيٌّ وَرَائِيْ فَاقْتُلْهُ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এমনকি তাদের কেউ যদি পাথরের আড়ালে লুকিয়ে থাকে তাহলে পাথরও বলবে, ‘হে আল্লাহ্‌র বান্দা, আমার পেছনে ইয়াহূদী আছে, তাকে হত্যা কর।’

২৯২৬

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ أَخْبَرَنَا جَرِيْرٌ عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا الْيَهُوْدَ حَتَّى يَقُوْلَ الْحَجَرُ وَرَاءَهُ الْيَهُوْدِيُّ يَا مُسْلِمُ هَذَا يَهُوْدِيٌّ وَرَائِيْ فَاقْتُلْهُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যে পর্যন্ত না তোমরা ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এমনকি কোন ইয়াহূদী পাথরের আড়ালে লুকিয়ে থাকলে, পাথর বলবে, ‘হে মুসলিম, আমার পেছনে ইয়াহূদী আছে, তাকে হত্যা কর।’

৫৬/৯৫. অধ্যায়ঃ

তুর্কদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ

২৯২৭

حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا جَرِيْرُ بْنُ حَازِمٍ قَالَ سَمِعْتُ الْحَسَنَ يَقُوْلُ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ تَغْلِبَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ تُقَاتِلُوْا قَوْمًا يَنْتَعِلُوْنَ نِعَالَ الشَّعَرِ وَإِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ تُقَاتِلُوْا قَوْمًا عِرَاضَ الْوُجُوْهِ كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ
‘আম্‌র ইব্‌নু তাগলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কিয়ামতের আলামতসমূহের একটি এই যে, তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যারা পশমের জুতা পরিধান করবে। কিয়ামতের আর একটি আলামত এই যে, তোমরা এমন এক জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে, যাদের মুখমণ্ডল হবে চওড়া, তাদের মুখমণ্ডল যেন পিটানো চামড়ার ঢাল।

২৯২৮

حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ صَالِحٍ عَنْ الأَعْرَجِ قَالَ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا التُّرْكَ صِغَارَ الأَعْيُنِ حُمْرَ الْوُجُوْهِ ذُلْفَ الْأُنُوفِ كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ وَلَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا قَوْمًا نِعَالُهُمْ الشَّعَرُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ততদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতদিন তোমরা এমন তুর্ক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করবে, যাদের চোখ ছোট, চেহারা লাল, নাক চেপ্‌টা এবং মুখমণ্ডল পেটানো চামড়ার ঢালের মত। আর ততদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতদিন না তোমরা এমন এক জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে, যাদের জুতা হবে পশমের।

৫৬/৯৬. অধ্যায়ঃ

যারা পশমের জুতা পরিধান করবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।

২৯২৯

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ الزُّهْرِيُّ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا قَوْمًا نِعَالُهُمْ الشَّعَرُ وَلَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا قَوْمًا كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ قَالَ سُفْيَانُ وَزَادَ فِيْهِ أَبُو الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رِوَايَةً صِغَارَ الأَعْيُنِ ذُلْفَ الْأُنُوفِ كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না তোমরা এমন জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে যাদের জুতা হবে পশমের। আর কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না তোমরা এমন জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে, যাদের মুখমণ্ডল হবে পিটানো চামড়ার ঢালের মত। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, আ’রাজ সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে আবূযযিনাদ এই রেওয়ায়তে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন; তাদের চোখ হবে ছোট, নাক হবে চেপ্টা, তাদের চেহারা যেন পিটানো চামড়ার ঢাল।

৫৬/৯৭. অধ্যায়ঃ

পরাজয়ের সময় সঙ্গীদের সারিবদ্ধ করা, নিজের সওয়ারী থেকে নামা ও আল্লাহ্‌র সাহায্য প্রার্থনা করা।

২৯৩০

حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ الْحَرَّانِيُّ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ وَسَأَلَهُ رَجُلٌ أَكُنْتُمْ فَرَرْتُمْ يَا أَبَا عُمَارَةَ يَوْمَ حُنَيْنٍ قَالَ لَا وَاللهِ مَا وَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَكِنَّهُ خَرَجَ شُبَّانُ أَصْحَابِهِ وَأَخِفَّاؤُهُمْ حُسَّرًا لَيْسَ بِسِلَاحٍ فَأَتَوْا قَوْمًا رُمَاةً جَمْعَ هَوَازِنَ وَبَنِيْ نَصْرٍ مَا يَكَادُ يَسْقُطُ لَهُمْ سَهْمٌ فَرَشَقُوْهُمْ رَشْقًا مَا يَكَادُوْنَ يُخْطِئُوْنَ فَأَقْبَلُوْا هُنَالِكَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى بَغْلَتِهِ الْبَيْضَاءِ وَابْنُ عَمِّهِ أَبُوْ سُفْيَانَ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ يَقُوْدُ بِهِ فَنَزَلَ وَاسْتَنْصَرَ ثُمَّ قَالَ :
أَنَا الـنّـَبـِيُّ لَا كَـذِبْ * أَنَا ابْنُ عَـبـْدِ الْمُطَّـلِـبْ
ثُمَّ صَفَّ أَصْحَابَهُ
বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আবূ উমারা! হুনায়নের দিন আপনারা কি পলায়ন করেছিলেন? তিনি বললেন, না, আল্লাহ্‌র কসম, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পলায়ন করেননি। বরং তাঁর কিছু সংখ্যক নওজোয়ান সাহাবী হাতিয়ার ছাড়াই অগ্রসর হয়ে গিয়েছিলেন। তারা বনূ হাওয়াযিন ও বনূ নাসর গোত্রের সুদক্ষ তীরন্দাজদের সম্মুখীন হন। তাদের কোন তীরই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি। তারা এদের প্রতি এমনভাবে তীর বর্ষণ করল যে, তাদের কোন তীরই ব্যর্থ হয়নি। সেখান থেকে তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে উপস্থিত হলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাঁর সাদা খচ্ছরটির পিঠে ছিলেন এবং তাঁর চাচাতো ভাই আবূ সুফিয়ান ইব্‌নু হারিস ইব্‌নু ‘আবদুল মুত্তালিব তাঁর লাগাম ধরে ছিলেন। তখন তিনি নামেন এবং আল্লাহ্‌র সাহায্য প্রার্থনা করেন। অতঃপর তিনি বলেন, আমি নবী, এ কথা মিথ্যা নয়। আমি ‘আবদুল মুত্তালিবের পুত্র। অতঃপর তিনি সাহাবীদের সারিবদ্ধ করেন।

৫৬/৯৮. অধ্যায়ঃ

মুশরিকদের পরাজিত ও প্রকম্পিত করার দু‘আ।

২৯৩১

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوسَى أَخْبَرَنَا عِيْسَى حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ عَبِيْدَةَ عَنْ عَلِيٍّ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ الأَحْزَابِ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَلَا اللهُ بُيُوْتَهُمْ وَقُبُوْرَهُمْ نَارًا شَغَلُوْنَا عَنْ الصَّلَاةِ الْوُسْطَى حَتَّى غَابَتْ الشَّمْسُ
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আহযাব যুদ্ধের দিন আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আ করেন, ‘আল্লাহ্‌ তাদের (মুশরিকদের) ঘর ও কবর আগুনে পূর্ণ করুন। কেননা তারা মধ্যম সালাত (তথা ‘আসরের সালাত) থেকে আমাদেরকে ব্যস্ত করে রেখেছে, এমনকি সূর্য অস্তমিত হয়ে যায়।’

২৯৩২

حَدَّثَنَا قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ ابْنِ ذَكْوَانَ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَدْعُوْ فِي الْقُنُوْتِ اللَّهُمَّ أَنْجِ سَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ اللَّهُمَّ أَنْجِ الْوَلِيْدَ بْنَ الْوَلِيْدِ اللَّهُمَّ أَنْجِ عَيَّاشَ بْنَ أَبِيْ رَبِيْعَةَ اللَّهُمَّ أَنْجِ الْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنْ الْمُؤْمِنِيْنَ اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ اللَّهُمَّ سِنِيْنَ كَسِنِيْ يُوسُفَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুনূতে নাযিলায় এই দু‘আ করতেন, ‘হে আল্লাহ্‌! আপনি সালামা ইব্‌নু হিশামকে নাজাত দিন। হে আল্লাহ্‌! ওয়ালিদ ইব্‌নু ওয়ালীদকে নাজাত দিন। হে আল্লাহ্‌! আয়্যাশ ইব্‌নু আবী বারী‘আ-কে নাজাত দিন। হে আল্লাহ্‌! দুর্বল মুমিনদের নাজাত দিন। হে আল্লাহ্‌! মুযার গোত্রকে সমূলে উৎপাটিত করুন। হে আল্লাহ্‌! কাফিরদের উপর ইউসুফ (‘আঃ)-এর সময়ের দুর্ভিক্ষের মত দুর্ভিক্ষ নাযিল করুন।’

২৯৩৩

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ أَبِيْ خَالِدٍ أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ دَعَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الأَحْزَابِ عَلَى الْمُشْرِكِيْنَ فَقَالَ اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ سَرِيْعَ الْحِسَابِ اللَّهُمَّ اهْزِمْ الأَحْزَابَ اللَّهُمَّ اهْزِمْهُمْ وَزَلْزِلْهُمْ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আহযাবের দিনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই বলে মুশরিকদের বিরুদ্ধে দু‘আ করেছিলেন যে, হে কিতাব নাযিলকারী, সত্বর হিসাব গ্রহণকারী আল্লাহ্‌! হে আল্লাহ্‌! তাদের সকল দলকে পরাজিত করুন। হে আল্লাহ্‌! আপনি তাদের পর্যুদস্ত ও প্রকম্পিত করুন।’

২৯৩৪

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّيْ فِيْ ظِلِّ الْكَعْبَةِ فَقَالَ أَبُوْ جَهْلٍ وَنَاسٌ مِنْ قُرَيْشٍ وَنُحِرَتْ جَزُوْرٌ بِنَاحِيَةِ مَكَّةَ فَأَرْسَلُوْا فَجَاءُوْا مِنْ سَلَاهَا وَطَرَحُوْهُ عَلَيْهِ فَجَاءَتْ فَاطِمَةُ فَأَلْقَتْهُ عَنْهُ فَقَالَ اللَّهُمَّ عَلَيْكَ بِقُرَيْشٍ اللَّهُمَّ عَلَيْكَ بِقُرَيْشٍ اللَّهُمَّ عَلَيْكَ بِقُرَيْشٍ لِأَبِيْ جَهْلِ بْنِ هِشَامٍ وَعُتْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ وَشَيْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ وَالْوَلِيْدِ بْنِ عُتْبَةَ وَأُبَيِّ بْنِ خَلَفٍ وَعُقْبَةَ بْنِ أَبِيْ مُعَيْطٍ قَالَ عَبْدُ اللهِ فَلَقَدْ رَأَيْتُهُمْ فِيْ قَلِيْبِ بَدْرٍ قَتْلَى قَالَ أَبُوْ إِسْحَاقَ وَنَسِيْتُ السَّابِعَ قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ وَقَالَ يُوسُفُ بْنُ إِسْحَاقَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ أُمَيَّةُ بْنُ خَلَفٍ وَقَالَ شُعْبَةُ أُمَيَّةُ أَوْ أُبَيٌّ وَالصَّحِيْحُ أُمَيَّةُ
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা’বার ছায়ায় সালাত আদায় করছিলেন। তখন আবূ জাহল ও কুরায়েশদের কিছু ব্যক্তি পরামর্শ করে। সেই সময় মক্কার বাইরে একটি উট যব্‌হ হয়েছিল। কুরায়শরা একজন পাঠিয়ে সেখান থেকে এর ভুঁড়ি নিয়ে এলো এবং তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিঠে ঢেলে দিল। অতঃপর ফাতিমা (রাঃ) এসে এটি তাঁর থেকে সরিয়ে দিলেন। এই সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বিরুদ্ধে দু‘আ করেন, হে আল্লাহ্‌! আপনি কুরায়শদের ধ্বংস করুন। হে আল্লাহ্‌! আপনি কুরায়শদের ধ্বংস করুন। হে আল্লাহ্‌! আপনি কুরায়শদের ধ্বংস করুন। অর্থাৎ আবূ জাহ্‌ল, ইব্‌নু হিশাম, উতবা ইব্‌নু রবী‘আহ, শায়বা ইব্‌নু রবীআহ’, ওয়ালীদ ইব্‌নু উতবাহ, ‘উবাই ইব্‌নু খালফ এবং ‘উকবা ইব্‌নু আবী মু’আইত। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি তাদের সকলকে বদরের একটি পরিত্যক্ত কূয়ায় নিহত দেখেছি। আবূ ইসহাক (রহঃ) বলেন, আমি সপ্তম ব্যক্তির নাম ভুলে গিয়েছি। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ইউসুফ ইব্‌নু “ইসহাক (রহঃ) আবূ ইসহাক (রহঃ) সূত্রে উমাইয়া ইব্‌নু খালফ বলেছেন। শু‘বাহ (রহঃ) বলেন, উমাইয়া অথবা ‘উবাই। তবে সঠিক হলো উমাইয়াহ।

২৯৩৫

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ الْيَهُوْدَ دَخَلُوْا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوْا السَّامُ عَلَيْكَ فَلَعَنْتُهُمْ فَقَالَ مَا لَكِ قُلْتُ أَوَلَمْ تَسْمَعْ مَا قَالُوْا قَالَ فَلَمْ تَسْمَعِيْ مَا قُلْتُ وَعَلَيْكُمْ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা কয়েকজন ইয়াহূদী আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসল এবং বলল, তোমার মরণ হোক। ‘আয়িশা (রাঃ) তাদের অভিশাপ দিলেন। তাতে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কী হলো? ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, তারা কী বলেছে, আপনি কি তা শুনেননি? আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি বলেছি ‘তোমাদের উপর’ তা কি তুমি শোননি?

৫৬/৯৯. অধ্যায়ঃ

কোন মুসলিম কি আহলে কিতাবকে দ্বীনের পথ দেখাবে কিংবা তাদেরকে কুরআন শিক্ষা দিবে?

২৯৩৬

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِيْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَمِّهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَتَبَ إِلَى قَيْصَرَ وَقَالَ فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيْسِيِّيْنَ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কায়সারের নিকট চিঠি লিখেছিলেন এবং এতে বলেছিলেন, যদি তুমি মুখ ফিরিয়ে রাখ তাহলে প্রজাদের পাপের বোঝা তোমার উপরেই চাপানো হবে।

৫৬/১০০. অধ্যায়ঃ

মুশরিকদের হিদায়াত ও মন আকর্ষণের জন্য দু‘আ।

২৯৩৭

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ قَالَ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ قَدِمَ طُفَيْلُ بْنُ عَمْرٍو الدَّوْسِيُّ وَأَصْحَابُهُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ دَوْسًا عَصَتْ وَأَبَتْ فَادْعُ اللهَ عَلَيْهَا فَقِيْلَ هَلَكَتْ دَوْسٌ قَالَ اللَّهُمَّ اهْدِ دَوْسًا وَأْتِ بِهِمْ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তুফাইল ইব্‌নু ‘আম্‌র দাওসী ও তাঁর সঙ্গীরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, ‘হে আল্লাহ্‌র রসূল! দাওস গোত্রের লোকেরা (ইসলাম গ্রহণে) অবাধ্যতা করেছে ও অস্বীকার করেছে। আপনি তাদের বিরুদ্ধে দু‘আ করুন।’ অতঃপর বলা হলো, দাওস গোত্র ধ্বংস হোক। তখন আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘হে আল্লাহ্‌! আপনি দাওস গোত্রকে হিদায়াত করুন এবং তাদেরকে ইসলামে নিয়ে আসুন।’

৫৬/১০১. অধ্যায়ঃ

ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের প্রতি ইসলামের দা’ওয়াত এবং কোন্‌ অবস্থায় তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করা যায়?
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কায়সার ও কিস্‌রা-এর নিকট যা লিখেছিলেন এবং যুদ্ধের পূর্বে ইসলামের দাওয়াত দেয়া।

২৯৩৮

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْجَعْدِ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا يَقُوْلُ لَمَّا أَرَادَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَكْتُبَ إِلَى الرُّومِ قِيْلَ لَهُ إِنَّهُمْ لَا يَقْرَءُوْنَ كِتَابًا إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ مَخْتُومًا فَاتَّخَذَ خَاتَمًا مِنْ فِضَّةٍ فَكَأَنِّيْ أَنْظُرُ إِلَى بَيَاضِهِ فِيْ يَدِهِ وَنَقَشَ فِيْهِ مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোম-সম্রাটের প্রতি লেখার ইচ্ছা করেন তখন তাকে বলা হলো যে, তারা সীল মোহরকৃত পত্র ব্যতীত পাঠ করে না। অতঃপর তিনি রূপার একটি মোহর প্রস্তুত করেন। আমি এখনো যেন তাঁর হাতে এর শুভ্রতা দেখছি। তিনি তাতে অংকিত করেছিলেন, “মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ”।

২৯৩৯

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ بِكِتَابِهِ إِلَى كِسْرَى فَأَمَرَهُ أَنْ يَدْفَعَهُ إِلَى عَظِيْمِ الْبَحْرَيْنِ يَدْفَعُهُ عَظِيْمُ الْبَحْرَيْنِ إِلَى كِسْرَى فَلَمَّا قَرَأَهُ كِسْرَى حَرَّقَهُ فَحَسِبْتُ أَنَّ سَعِيْدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ قَالَ فَدَعَا عَلَيْهِمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُمَزَّقُوْا كُلَّ مُمَزَّقٍ
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পত্রসহ কিস্‌রার নিকট দূত পাঠালেন এবং দূতকে নির্দেশ দেন যে, তা যেন বাহরাইনের শাসনকর্তার কাছে দেয়া হয়। পরে বাহরায়নের শাসনকর্তা তা কিসরার নিকট পৌঁছিয়ে দেন। কিস্‌রা যখন তা পড়ল তা ছিঁড়ে টুকরো করে ফেলল। আমার মনে হয়, সা’ঈদ ইব্‌নু মুসায়্যাব (রহঃ) বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের ব্যাপারে দু‘আ করেন, যেন তাদেরকে একেবারে ছিন্নভিন্ন করে দেয়া হয়।

৫৬/১০২. অধ্যায়ঃ

ইসলাম ও নবুওয়াতের দিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আহ্বান আর মানুষ যেন আল্লাহ্‌ ব্যতীত তাদের পরস্পরকে রব হিসেবে গ্রহণ না করে।
আল্লাহ্ তা‘আলার বানীঃ “আল্লাহ্‌ কোন লোককে কিতাব, হিকমাত ও নাবুওয়াত দান করবেন তারপর সে লোকদের বলবেঃ তোমরা আল্লাহ্‌র পরিবর্তে আমার বান্দা হয়ে যাও এমন কথা শোভা পায় না? বরং সে বলবেঃ তোমরা আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও, এজন্য যে, তোমরা শিখাও কিতাব এবং নিজেরাও পাঠ কর।” (আল ‘ইমরান ৭৯)

২৯৪০

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ حَمْزَةَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَتَبَ إِلَى قَيْصَرَ يَدْعُوْهُ إِلَى الْإِسْلَامِ وَبَعَثَ بِكِتَابِهِ إِلَيْهِ مَعَ دِحْيَةَ الْكَلْبِيِّ وَأَمَرَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَدْفَعَهُ إِلَى عَظِيْمِ بُصْرَى لِيَدْفَعَهُ إِلَى قَيْصَرَ وَكَانَ قَيْصَرُ لَمَّا كَشَفَ اللهُ عَنْهُ جُنُوْدَ فَارِسَ مَشَى مِنْ حِمْصَ إِلَى إِيْلِيَاءَ شُكْرًا لِّمَا أَبْلَاهُ اللهُ فَلَمَّا جَاءَ قَيْصَرَ كِتَابُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ حِيْنَ قَرَأَهُ الْتَمِسُوْا لِيْ هَا هُنَا أَحَدًا مِنْ قَوْمِهِ لِأَسْأَلَهُمْ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কায়সারকে ইসলামের প্রতি আহ্বান জানিয়ে চিঠি লেখেন এবং দেহইয়া কালবী (রাঃ)-এর মারফত সে চিঠি পাঠান এবং তাকে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশ দেন যেন তা বুসরার গভর্নরের নিকট দেয়া হয়, জাতে তিনি তা কায়সারের নিকট পৌঁছিয়ে দেন। আল্লাহ্‌ যখন পারস্যের সৈন্য বাহিনীকে কায়সারের এলাকা থেকে হটিয়ে দেন, তখন আল্লাহ্‌র অনুগ্রহের এই শুকরিয়া হিসেবে কায়সার হিম্‌স থেকে পায়ে হেঁটে বায়তুল মুকাদ্দাস সফর করেন। এ সময় তাঁর নিকট আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চিঠি এসে পৌঁছলে তা পাঠ করে তিনি বললেন যে, তাঁর গোত্রের কাউকে খোঁজ কর যাতে আমি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে পারি।

২৯৪১

الَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَأَخْبَرَنِي أَبُو سُفْيَانَ، أَنَّهُ كَانَ بِالشَّأْمِ فِي رِجَالٍ مِنْ قُرَيْشٍ، قَدِمُوا تِجَارًا فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَتْ بَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَبَيْنَ كُفَّارِ قُرَيْشٍ، قَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَوَجَدَنَا رَسُولُ قَيْصَرَ بِبَعْضِ الشَّأْمِ فَانْطَلَقَ بِي وَبِأَصْحَابِي حَتَّى قَدِمْنَا إِيلِيَاءَ، فَأُدْخِلْنَا عَلَيْهِ، فَإِذَا هُوَ جَالِسٌ فِي مَجْلِسِ مُلْكِهِ وَعَلَيْهِ التَّاجُ، وَإِذَا حَوْلَهُ عُظَمَاءُ الرُّومِ فَقَالَ لِتُرْجُمَانِهِ سَلْهُمْ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا إِلَى هَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا أَقْرَبُهُمْ نَسَبًا‏.‏ قَالَ مَا قَرَابَةُ مَا بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ فَقُلْتُ هُوَ ابْنُ عَمِّي، وَلَيْسَ فِي الرَّكْبِ يَوْمَئِذٍ أَحَدٌ مِنْ بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ غَيْرِي‏.‏ فَقَالَ قَيْصَرُ أَدْنُوهُ‏.‏ وَأَمَرَ بِأَصْحَابِي فَجُعِلُوا خَلْفَ ظَهْرِي عِنْدَ كَتِفِي، ثُمَّ قَالَ لِتُرْجُمَانِهِ قُلْ لأَصْحَابِهِ إِنِّي سَائِلٌ هَذَا الرَّجُلَ عَنِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ، فَإِنْ كَذَبَ فَكَذِّبُوهُ‏.‏ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ وَاللَّهِ لَوْلاَ الْحَيَاءُ يَوْمَئِذٍ مِنْ أَنْ يَأْثُرَ أَصْحَابِي عَنِّي الْكَذِبَ لَكَذَبْتُهُ حِينَ سَأَلَنِي عَنْهُ، وَلَكِنِّي اسْتَحْيَيْتُ أَنْ يَأْثُرُوا الْكَذِبَ عَنِّي فَصَدَقْتُهُ، ثُمَّ قَالَ لِتُرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُ كَيْفَ نَسَبُ هَذَا الرَّجُلِ فِيكُمْ قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو نَسَبٍ‏.‏ قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ مِنْكُمْ قَبْلَهُ قُلْتُ لاَ‏.‏ فَقَالَ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ عَلَى الْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَأَشْرَافُ النَّاسِ يَتَّبِعُونَهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ قُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ‏.‏ قَالَ فَيَزِيدُونَ أَوْ يَنْقُصُونَ قُلْتُ بَلْ يَزِيدُونَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قُلْتُ لاَ، وَنَحْنُ الآنَ مِنْهُ فِي مُدَّةٍ، نَحْنُ نَخَافُ أَنْ يَغْدِرَ‏.‏ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ وَلَمْ يُمْكِنِّي كَلِمَةٌ أُدْخِلُ فِيهَا شَيْئًا أَنْتَقِصُهُ بِهِ لاَ أَخَافُ أَنْ تُؤْثَرَ عَنِّي غَيْرُهَا‏.‏ قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوهُ أَوْ قَاتَلَكُمْ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ فَكَيْفَ كَانَتْ حَرْبُهُ وَحَرْبُكُمْ قُلْتُ كَانَتْ دُوَلاً وَسِجَالاً، يُدَالُ عَلَيْنَا الْمَرَّةَ وَنُدَالُ عَلَيْهِ الأُخْرَى‏.‏ قَالَ فَمَاذَا يَأْمُرُكُمْ قَالَ يَأْمُرُنَا أَنْ نَعْبُدَ اللَّهَ وَحْدَهُ لاَ نُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا، وَيَنْهَانَا عَمَّا كَانَ يَعْبُدُ آبَاؤُنَا، وَيَأْمُرُنَا بِالصَّلاَةِ وَالصَّدَقَةِ وَالْعَفَافِ وَالْوَفَاءِ بِالْعَهْدِ وَأَدَاءِ الأَمَانَةِ‏.‏ فَقَالَ لِتُرْجُمَانِهِ حِينَ قُلْتُ ذَلِكَ لَهُ قُلْ لَهُ إِنِّي سَأَلْتُكَ عَنْ نَسَبِهِ فِيكُمْ، فَزَعَمْتَ أَنَّهُ ذُو نَسَبٍ، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي نَسَبِ قَوْمِهَا، وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ مِنْكُمْ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ، فَقُلْتُ لَوْ كَانَ أَحَدٌ مِنْكُمْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ قُلْتُ رَجُلٌ يَأْتَمُّ بِقَوْلٍ قَدْ قِيلَ قَبْلَهُ‏.‏ وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ، فَعَرَفْتُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَدَعَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ وَيَكْذِبَ عَلَى اللَّهِ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ، فَقُلْتُ لَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قُلْتُ يَطْلُبُ مُلْكَ آبَائِهِ‏.‏ وَسَأَلْتُكَ أَشْرَافُ النَّاسِ يَتَّبِعُونَهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَزَعَمْتَ أَنَّ ضُعَفَاءَهُمُ اتَّبَعُوهُ، وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَزِيدُونَ أَوْ يَنْقُصُونَ فَزَعَمْتَ أَنَّهُمْ يَزِيدُونَ، وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ حَتَّى يَتِمَّ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ، فَكَذَلِكَ الإِيمَانُ حِينَ تَخْلِطُ بَشَاشَتُهُ الْقُلُوبَ لاَ يَسْخَطُهُ أَحَدٌ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لاَ يَغْدِرُونَ‏.‏ وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَاتَلْتُمُوهُ وَقَاتَلَكُمْ فَزَعَمْتَ أَنْ قَدْ فَعَلَ، وَأَنَّ حَرْبَكُمْ وَحَرْبَهُ تَكُونُ دُوَلاً، وَيُدَالُ عَلَيْكُمُ الْمَرَّةَ وَتُدَالُونَ عَلَيْهِ الأُخْرَى، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْتَلَى، وَتَكُونُ لَهَا الْعَاقِبَةُ، وَسَأَلْتُكَ بِمَاذَا يَأْمُرُكُمْ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَعْبُدُوا اللَّهَ وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَيَنْهَاكُمْ عَمَّا كَانَ يَعْبُدُ آبَاؤُكُمْ، وَيَأْمُرُكُمْ بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ وَالْوَفَاءِ بِالْعَهْدِ، وَأَدَاءِ الأَمَانَةِ، قَالَ وَهَذِهِ صِفَةُ النَّبِيِّ، قَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ، وَلَكِنْ لَمْ أَظُنَّ أَنَّهُ مِنْكُمْ، وَإِنْ يَكُ مَا قُلْتَ حَقًّا، فَيُوشِكُ أَنْ يَمْلِكَ مَوْضِعَ قَدَمَىَّ هَاتَيْنِ، وَلَوْ أَرْجُو أَنْ أَخْلُصَ إِلَيْهِ لَتَجَشَّمْتُ لُقِيَّهُ، وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ قَدَمَيْهِ‏.‏ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُرِئَ فَإِذَا فِيهِ ‏"‏ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ، إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ، سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَعَلَيْكَ إِثْمُ الأَرِيسِيِّينَ وَ‏{‏يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ‏}‏‏"‏‏.‏ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَلَمَّا أَنْ قَضَى مَقَالَتَهُ، عَلَتْ أَصْوَاتُ الَّذِينَ حَوْلَهُ مِنْ عُظَمَاءِ الرُّومِ، وَكَثُرَ لَغَطُهُمْ، فَلاَ أَدْرِي مَاذَا قَالُوا، وَأُمِرَ بِنَا فَأُخْرِجْنَا، فَلَمَّا أَنْ خَرَجْتُ مَعَ أَصْحَابِي وَخَلَوْتُ بِهِمْ قُلْتُ لَهُمْ لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِي كَبْشَةَ، هَذَا مَلِكُ بَنِي الأَصْفَرِ يَخَافُهُ، قَالَ أَبُو سُفْيَانَ وَاللَّهِ مَا زِلْتُ ذَلِيلاً مُسْتَيْقِنًا بِأَنَّ أَمْرَهُ سَيَظْهَرُ، حَتَّى أَدْخَلَ اللَّهُ قَلْبِي الإِسْلاَمَ وَأَنَا كَارِهٌ‏.‏
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সুফিয়ান (রাঃ) আমাকে জানিয়াছেন যে, সে সময় আবু সুফিয়ান (রাঃ) কুরাইশদের কিছু লোকের সঙ্গে বাণিজ্য উপলক্ষে সিরিয়ায় ছিলেন। এ সময়টি ছিল আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও কাফির কুরাইশদের মধ্যে সন্ধির যুগ। আবূ সুফিয়ান (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, কায়সারের সেই দূতের সঙ্গে সিরিয়ার কোন স্থানে আমাদের দেখা হলে সে আমাকে আমার সঙ্গী-সাথীসহ বায়তুল মুকাদ্দাসে নিয়ে গেল। অতঃপর আমাদের কায়সারের দরবারে হাজির করা হল। তখন কায়সার মুকুট পরিহিত অবস্থায় রাজ সিংহাসনে উপবিষ্ট ছিলেন। রোমের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তাঁর পার্শ্বে ছিলেন। অতঃপর তিনি তাঁর দোভাষীকে বললেন, তাদের জিজ্ঞেস কর, যিনি নিজেকে নবী বলে দাবী করেন, এদের মধ্যে তাঁর নিকটাত্মীয় কে?

আবূ সুফিয়ান (রাঃ) বললেন, আমি বললাম, বংশের দিক দিয়ে আমি তাঁর সর্বাধিক নিকটতম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার ও তাঁর মধ্যে কি ধরনের আত্মীয়তা রয়েছে? আমি বললাম, তিনি আমার চাচাতো ভাই। সে সময় উক্ত কাফেলায় আমি ব্যতীত ‘আব্‌দ মানাফ গোত্রের আর কেউ ছিল না। কায়সার বললেন, তাকে আমার নিকট নিয়ে এস। অতঃপর বাদশাহর নির্দেশে আমার সকল সঙ্গীকে আমার পেছনে কাঁধের নিকট সমবেত করা হল। অতঃপর কায়সার তর্জমাকারীকে বললেন, লোকটির সাথীদের জানিয়ে দাও, আমি তার নিকট সেই ব্যক্তিটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে চাই, যিনি নবী বলে দাবী করেন। যদি সে মিথ্যা বলে, তবে তোমরা তার প্রতিবাদ করবে।

আবূ সুফিয়ান (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র কসম! আমি যদি এ ব্যাপারে লজ্জাবোধ না করতাম যে, আমার সাথীরা আমাকে মিথ্যাচারী বলে প্রচার করবে, তাহলে তাঁর প্রশ্নের জবাবে নবী সম্পর্কে কিছু (মিথ্যা) কথা বলতাম। কিন্তু আমি লজ্জাবোধ করলাম যে, আমার সঙ্গীরা আমি মিথ্যা বলেছি বলে প্রচার করবে। ফলে আমি সত্যই বললাম।

অতঃপর তিনি তাঁর দোভাষীকে বললেন, জিজ্ঞেস করো, তোমাদের মধ্যে নবীর বংশ মর্যাদা কিরূপ? আমি বললাম, আমাদের মধ্যে তিনি উচ্চ বংশীয়। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর বংশের অন্য কোন ব্যক্তি কি ইতোপূর্বে এরূপ দাবী করেছে? জবাব দিলাম, না। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর এ নবুওয়াতের আগে কোন সময় কি তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে তোমরা অভিযুক্ত করেছ? আমি বললাম, না। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর পূর্ব পুরুষদের কেউ কি বাদশাহ ছিল? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, সবলেরা তাঁর অনুসারী হচ্ছে, না দুর্বল (শ্রেণীর) লোকেরা? আমি বললাম, বরং দুর্বলরাই। তিনি বললেন, এদের সংখ্যা কি বৃদ্ধি পাচ্ছে না কমছে? আমি বললাম, বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বললেন, তাঁর দীনে প্রবেশ করার পর কেউ কি সে দ্বীনের প্রতি অপছন্দ করে তা পরিত্যাগ করেছে? আমি বললাম, না। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তিনি কি কখনো চুক্তি ভঙ্গ করেছেন? আমি বললাম, না। তবে আমরা বর্তমানে তাঁর সঙ্গে একটি চুক্তির মেয়াদে আছি এবং আশঙ্কা করছি যে, তিনি তা ভঙ্গ করতে পারেন। আবূ সুফিয়ান (রাঃ) বলেন, আমার বক্তব্যে এই কথা ব্যতীত এমন কোন কথা লুকানো সম্ভব হয়নি যাতে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে খাট করা হয় আর আমার প্রতি অপপ্রচারের আশঙ্কা না হয়। কায়সার জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি তাঁর বিরুদ্ধে এবং তিনি কি তোমাদের বিরুদ্ধে কখনো যুদ্ধ করেছেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাঁর ও তোমাদের মধ্যে যুদ্ধে ফলাফল কী? আমি বললাম, যুদ্ধ কূয়ার বালতির মত। কখনো তিনি আমাদের উপর বিজয়ী হন, কখনো আমরা তাঁর উপর বিজয়ী হই। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তিনি কী বিষয়ে আদেশ করেন? আমি বললাম, তিনি আমাদের আদেশ করেন, একমাত্র আল্লাহ্‌র ‘ইবাদত করতে এবং তাঁর সঙ্গে কিছুই শরীক না করতে। আমাদের পিতৃ পুরুষেরা যে সবের ‘ইবাদত করত তিনি সে সবের ‘ইবাদত করতে আমাদের নিষেধ করেন। আর তিনি আমাদের আদেশ করেন সালাত আদায় করতে; সদকা দিতে, পূত পবিত্র থাকতে, চুক্তি পালন করতে এবং আমানত আদায় করতে।
আমি তাকে এসব জানালে তিনি দোভাষীকে আদেশ দিলেন, তাকে বলো আমি তোমাদের মধ্যে তাঁর বংশ মর্যাদা সম্পর্কে জানতে চাইলে তুমি বলেছ যে, তিনি উচ্চ বংশীয়। সেরূপই রসূলগণ তাঁদের কাওমের উচ্চ বংশেই প্রেরিত হন। আমি তোমাদের নিকট জানতে চেয়েছিলাম যে, তোমাদের কেউ কি এর আগে এ ধরনের দাবী করেছে? তুমি বললে, না। তোমাদের মধ্যে ইতোপূর্বে যদি কোন ব্যক্তি এরূপ কথা বলতে থাকতো, তাহলে আমি বলতাম, ব্যক্তিটি পূর্ব কথিত একটি কথারই অনুসরণ করেছে। আমি জানতে চেয়েছি, তাঁর এ (নবুওয়্যাত) দাবীর পূর্বে কি তোমরা তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিলে? তুমি বলেছ, না। এতে আমি বুজতে পেরেছি যে, যে ব্যক্তি মানুষের ব্যাপারে মিথ্যা বলেননি, তিনি আল্লাহ্‌র ব্যাপারে মিথ্যা বলবেন, এমন হতে পারেনা। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর পূর্বপুরুষদের কেউ কি বাদশাহ ছিলেন? তুমি বলেছ, না। আমি বলছি, যদি তাঁর পিতৃ পুরুষদের কেউ বাদশাহ থাকতো, তাহলে আমি বলতাম, সে পিতৃ পুরুষদের রাজত্ব উদ্ধার করতে ইচ্ছুক। আমি তোমার নিকট জানতে চেয়েছি যে, প্রভাবশালী লোকেরাই তাঁর অনুসরণ করছে, না দুর্বল (শ্রেণীর) লোকেরা? তুমি বলেছ, দুর্বলরাই। প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের (দুর্বল) লোকেরাই রসূলগণের অনুসারী হয়ে থাকে। আমি তোমার নিকট জানতে চেয়েছি, তাদের সংখ্যা বাড়ছে না কমছে? তুমি বলেছ, বাড়ছে। ঈমান এভাবেই (বাড়তে বাড়তে) পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর দ্বীন গ্রহণ করার পর কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা পরিত্যাগ করেছে? তুমি বলেছ, না। ঈমান এরূপই হয়ে থাকে, যখন তা হৃদয়ের গভীরে পৌঁছে, তখন কেউ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয় না। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি যে, তিনি কি চুক্তিভঙ্গ করেন? তুমি বলেছ, না। ঠিকই, রসূলগন কখনো চুক্তিভঙ্গ করেন না। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তোমরা কি কখনো তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করেছ এবং তিনি কি কখনো তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন? তুমি বলেছ, করেছেন। তোমাদের ও তাঁর মধ্যকার লড়াই কূপের বালতির মতো। কখনো তোমরা তাঁর উপর জয়ী হয়েছ, আমার কখনো তিনি তোমাদের উপর জয়ী হয়েছেন। এভাবেই রসূলগন পরীক্ষিত হন এবং পরিণাম তাঁদেরই অনুকূল হয়। আমি আরো জিজ্ঞেস করেছি, তিনি তোমাদের কী কী বিষয়ে আদেশ করে থাকেন? তুমি বলেছ, তিনি তোমাদের আদেশ করেন যেন তোমরা আল্লাহ্‌র ‘ইবাদত কর এবং তাঁর সঙ্গে কিছুই শরীক না কর। আর তিনি তোমাদের পিতৃপুরুষেরা যে সবের ‘ইবাদত করত তা থেকে নিষেধ করেন আর তোমাদের নির্দেশ দেন, সালাত আদায় করতে, সদকা দিতে, পূত পবিত্র থাকতে, চুক্তি পালন করতে, আমানাত আদায় করতে। এসব নবীগনের গুনাবলী। আমি জানতাম, তাঁর আগমন ঘটবে। কিন্তু তিনি তোমাদের মধ্যে আসবেন, সে ধারণা আমার ছিল না। তুমি যা যা বললে, তা যদি সত্য হয়, তবে অচিরেই তিনি আমার এই পায়ের নীচের জায়গার মালিক হয়ে যাবেন। আমি যদি আশা করতে পারতাম যে, তাঁর নিকট পৌঁছতে পারবো, তবে কষ্ট করে তাঁর সাক্ষাতের চেষ্টা করতাম। যদি আমি তাঁর নিকট থাকতাম, তবে তাঁর দু’টি পা ধুয়ে দিতাম।
আবূ সুফিয়ান (রাঃ) বলেন, তার পর তিনি তাঁর পত্রখানি চেয়ে নিলেন। তা পাঠ করে শুনানো হলো। তাতে ছিলঃ
বিস্‌মিল্লাহির রাহ্‌মানির রাহীম। আল্লাহ্‌র বান্দা ও তাঁর রসূল মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে রোমের সম্রাট হিরাক্লিয়াসের প্রতি......যারা হিদায়াতের অনুসরণ করে তাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আমি আপনাকে ইসলামের দা’ওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তিতে থাকবেন। আপনি ইসলাম গ্রহণ করলে আল্লাহ্‌ আপনাকে দ্বিগুন প্রতিফল দান করবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেন তাহলে রোমের সমস্ত প্রজার পাপ আপনার উপর বর্তাবে। “হে কিতাবীগন! এসো একটি কথার দিকে যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই, যেন আমরা আল্লাহ্‌ ব্যতীত কারো ‘ইবাদত না করি, কোন কিছুকে তাঁর শরীক না করি এবং আমাদের কেউ যেন আল্লাহ্‌ ব্যতীত কাউকে রব হিসেবে গ্রহণ না করে। আর যদি তারা মুখ ঘুরিয়ে নেয়, তবে বলঃ তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলিম।” (সূরা আল ‘ইমরানঃ ৬৪)
আবূ সুফিয়ান (রাঃ) বলেন, তার কথা শেষ হলে তার পার্শ্বের রোমের পদস্থ ব্যক্তিরা চিৎকার করতে লাগল এবং হৈ চৈ করতে লাগল। তারা কী বলছিল তা আমি বুঝতে পারিনি এবং নির্দেশক্রমে আমাদের বের করে দেয়া হলো। আমি সঙ্গীদের নিয়ে বেরিয়ে এসে তাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে, তাদের বললাম, নিশ্চয় মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যাপার তো বিরাট আকার ধারণ করেছে। এই যে রোমের বাদশাহ তাঁকে ভয় করছে। আবূ সুফিয়ান (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌র কসম! অতঃপর থেকে আমি অপমানবোধ করতে লাগলাম এবং এ ব্যাপারে আমার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মিল যে, মুহাম্মাদের দা’ওয়াত অচিরেই বিজয় লাভ করবে, এমনকি শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্‌ তা’আলা আমার অন্তরে ইসলাম প্রবেশ করিয়ে দিলেন যদিও আমি অপছন্দ করছিলাম।

২৯৪২

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ القَعْنَبِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ يَوْمَ خَيْبَرَ لَاعْطِيَنَّ الرَّايَةَ رَجُلاً يَفْتَحُ اللهُ عَلَى يَدَيْهِ فَقَامُوْا يَرْجُوْنَ لِذَلِكَ أَيُّهُمْ يُعْطَى فَغَدَوْا وَكُلُّهُمْ يَرْجُوْ أَنْ يُعْطَى فَقَالَ أَيْنَ عَلِيٌّ فَقِيْلَ يَشْتَكِيْ عَيْنَيْهِ فَأَمَرَ فَدُعِيَ لَهُ فَبَصَقَ فِيْ عَيْنَيْهِ فَبَرَأَ مَكَانَهُ حَتَّى كَأَنَّه لَمْ يَكُنْ بِهِ شَيْءٌ فَقَالَ نُقَاتِلُهُمْ حَتَّى يَكُوْنُوْا مِثْلَنَا فَقَالَ عَلَى رِسْلِكَ حَتَّى تَنْزِلَ بِسَاحَتِهِمْ ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى الْإِسْلَامِ وَأَخْبِرْهُمْ بِمَا يَجِبُ عَلَيْهِمْ فَوَاللهِ لَانْ يُهْدَى بِكَ رَجُلٌ وَاحِدٌ خَيْرٌ لَكَ مِنْ حُمْرِ النَّعَمِ
সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’আদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি খায়বারের যুদ্ধের সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন, আমি এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা দিব যার হাতে বিজয় আসবে। অতঃপর কাকে পতাকা দেয়া হবে, সেজন্য সকলেই আশা করতে লাগলেন। পরদিন সকালে প্রত্যেকেই এ আশায় অপেক্ষা করতে লাগলেন যে, হয়ত তাকে পতাকা দেয়া হবে। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আলী কোথায়? তাঁকে জানানো হলো যে, তিনি চক্ষুরোগে আক্রান্ত। তখন তিনি ‘আলীকে ডেকে আনতে বললেন। তাকে ডেকে আনা হল। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মুখের লালা তাঁর উভয় চোখে লাগিয়ে দিলেন। তৎক্ষণাৎ তিনি এমনভাবে সুস্থ হয়ে গেলেন যে, তাঁর যেন কোন অসুখই ছিল না। তখন ‘আলী (রাঃ) বললেন, আমি তাদের বিরুদ্ধে ততক্ষণ লড়াই চালিয়ে যাব, যতক্ষণ না তারা আমাদের মত হয়ে যায়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি সোজা এগিয়ে যাও। তুমি তাদের প্রান্তরে উপস্থিত হলে প্রথমে তাদেরকে ইসলামের প্রতি আহ্বান জানাও এবং তাদের কর্তব্য সম্পর্কে তাদের অবহিত কর। আল্লাহ্‌র কসম, যদি একটি ব্যক্তিও তোমার দ্বারা হিদায়াত লাভ করে, তবে তা তোমার জন্য লাল রংয়ের উটের চেয়েও উত্তম।

২৯৪৩

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ عَنْ حُمَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا يَقُوْلُ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا غَزَا قَوْمًا لَمْ يُغِرْ حَتَّى يُصْبِحَ فَإِنْ سَمِعَ أَذَانًا أَمْسَكَ وَإِنْ لَمْ يَسْمَعْ أَذَانًا أَغَارَ بَعْدَ مَا يُصْبِحُ فَنَزَلْنَا خَيْبَرَ لَيْلاً
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন কাওমের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেলে সকাল না হওয়া পর্যন্ত আক্রমন করতেন না। আজান শুনলে আক্রমণ থেকে বিরত থাকতেন। আযান না শুনলে সকাল হবার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণ করতেন। আমরা খায়বারে রাত্রিকালে অবতরণ করলাম।

২৯৪৪

... حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا غَزَا بِنَا ..
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন আমাদেরকে নিয়ে কোন যুদ্ধে যেতেন ............

২৯৪৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ إِلَى خَيْبَرَ فَجَاءَهَا لَيْلاً وَكَانَ إِذَا جَاءَ قَوْمًا بِلَيْلٍ لَا يُغِيْرُ عَلَيْهِمْ حَتَّى يُصْبِحَ فَلَمَّا أَصْبَحَ خَرَجَتْ يَهُوْدُ بِمَسَاحِيْهِمْ وَمَكَاتِلِهِمْ فَلَمَّا رَأَوْهُ قَالُوْا مُحَمَّدٌ وَاللهِ مُحَمَّدٌ وَالْخَمِيْسُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اللهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِيْنَ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে রাতে সেখানে উপস্থিত হলেন। তিনি জিহাদের উদ্দেশে রাত্রিকালে কোন জনপদে গেলে সকাল না হওয়া পর্যন্ত তাদের উপর আক্রমণ করেন না। যখন সকাল হলো ইয়াহূদীরা কোদাল ও ঝুড়ি নিয়ে বের হল তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পেয়ে বলে উঠল, মুহাম্মাদ, আল্লাহ্‌র কসম! মুহাম্মাদ তাঁর পুরো সেনাবাহিনী নিয়ে উপস্থিত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করেন এবং বললেন, খায়বার ধ্বংস হল, নিশ্চয়ই আমরা যখন কোন জনপদের আঙ্গিনায় উপস্থিত হই, তখন সতর্ককৃত লোকদের সকাল কত মন্দ!

২৯৪৬

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُوْلُوْا لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فَمَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فَقَدْ عَصَمَ مِنِّيْ نَفْسَهُ وَمَالَهُ إِلَّا بِحَقِّهِ وَحِسَابُهُ عَلَى اللهِ رَوَاهُ عُمَرُ وَابْنُ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমাকে ততক্ষন পর্যন্ত লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করার আদেশ দেয়া হয়েছে, যতক্ষণ না তারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বলে আর যে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বলবে সে তার জান ও মাল আমার হাত থেকে বাঁচিয়ে নিল। অবশ্য ইসলামের কর্তব্যাদি আলাদা, আর তাঁর হিসাব আল্লাহর উপর ন্যস্ত।

৫৬/১০৩. অধ্যায়ঃ

যে ব্যক্তি যুদ্ধ করার ইচ্ছা করে এবং অন্যদিকে আকর্ষণের মাধ্যমে তা গোপন করে রাখে আর যে বৃহস্পতিবারে সফরে বের হতে পছন্দ করে।

২৯৪৭

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ كَعْبٍ وَكَانَ قَائِدَ كَعْبٍ مِنْ بَنِيْهِ قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ حِيْنَ تَخَلَّفَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يَكُنْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُرِيْدُ غَزْوَةً إِلَّا وَرَّى بِغَيْرِهَا
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু কা‘ব ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ছিলেন কা‘বের পুত্রদের মধ্যে নেতা, তিনি বলেন, আমি কা’ব ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে শুনেছি, যখন তিনি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে পেছনে থেকে গিয়েছিলেন। রাসূলূল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখনই কোথাও যুদ্ধে যাবার ইচ্ছা করতেন, তখন তিনি অন্য দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়ে তা গোপন রাখতেন।

২৯৪৮

و حَدَّثَنِيْ أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَلَّمَا يُرِيْدُ غَزْوَةً يَغْزُوْهَا إِلَّا وَرَّى بِغَيْرِهَا حَتَّى كَانَتْ غَزْوَةُ تَبُوكَ فَغَزَاهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَرٍّ شَدِيْدٍ وَاسْتَقْبَلَ سَفَرًا بَعِيْدًا وَمَفَازًا وَاسْتَقْبَلَ غَزْوَ عَدُوٍّ كَثِيْرٍ فَجَلَّى لِلْمُسْلِمِيْنَ أَمْرَهُمْ لِيَتَأَهَّبُوْا أُهْبَةَ عَدُوِّهِمْ وَأَخْبَرَهُمْ بِوَجْهِهِ الَّذِيْ يُرِيْدُ
কা’ব ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, অধিকাংশ সময় আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন নির্দিষ্ট জায়গায় যুদ্ধের ইচ্ছা করলে অন্য দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়ে তা গোপন রাখতেন কিন্তু যখন তাবুক যুদ্ধ এল, যে যুদ্ধে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রওয়ানা দিলেন, প্রচণ্ড গরম এবং সম্মুখীন হলেন দীর্ঘ সফরের ও মরুময় পথের আর অধিক সংখ্যক সৈন্যের মোকাবেলায় অগ্রসর হলেন। তাই তিনি মুসলিমদের সামনে বিষয়টি প্রকাশ করলেন, যাতে তারা শত্রুর মুকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে এবং ইচ্ছার লক্ষ্য সবাইকে জানিয়ে দিলেন।

২৯৪৯

وَعَنْ يُونُسَ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ كَانَ يَقُوْلُ لَقَلَّمَا كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَخْرُجُ إِذَا خَرَجَ فِيْ سَفَرٍ إِلَّا يَوْمَ الْخَمِيْسِ
কা‘ব ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখনই কোন সফরে যাবার ইচ্ছা করতেন তখন বৃহস্পতিবারেই যাত্রা করতেন।

২৯৫০

حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ يَوْمَ الْخَمِيْسِ فِيْ غَزْوَةِ تَبُوكَ وَكَانَ يُحِبُّ أَنْ يَخْرُجَ يَوْمَ الْخَمِيْسِ
কা’ব ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাবূকের যুদ্ধে বৃহস্পতিবার বের হন আর বৃহস্পতিবার বের হওয়াই তিনি পছন্দ করতেন।

No comments

Powered by Blogger.