সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "জিহাদ" হাদিস নং - ২৯৫১ থেকে ৩০০০

যুহরের পর সফরের উদ্দেশে বের হওয়া।

২৯৫১

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ أَبِيْ قِلَابَةَ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى بِالْمَدِيْنَةِ الظُّهْرَ أَرْبَعًا وَالْعَصْرَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ رَكْعَتَيْنِ وَسَمِعْتُهُمْ يَصْرُخُوْنَ بِهِمَا جَمِيْعًا
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনাতে যুহরের সালাত চার রাকআত আদায় করেন এবং যুল-হুলায়ফাতে পৌঁছে দু’রাকাআত আসর সালাত আদায় করেন। আমি তাদের হজ্জ ও ‘উমরা উভয়টির তালবিয়া জোরে পাঠ করতে শুনেছি।

৫৬/১০৫. অধ্যায়ঃ

মাসের শেষাংশে সফরে বের হওয়া।
কুরাইব (রহঃ) ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুল-কা’দার পাঁচ দিন থাকতে মদীনা থেকে রওয়ানা হন এবং যুল-হিজ্জার ৪ তারিখে মক্কায় পৌঁছেন।

২৯৫২

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهَا سَمِعَتْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا تَقُوْلُ خَرَجْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِخَمْسِ لَيَالٍ بَقِيْنَ مِنْ ذِي الْقَعْدَةِ وَلَا نُرَى إِلَّا الْحَجَّ فَلَمَّا دَنَوْنَا مِنْ مَكَّةَ أَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهُ هَدْيٌ إِذَا طَافَ بِالْبَيْتِ وَسَعَى بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ أَنْ يَحِلَّ قَالَتْ عَائِشَةُ فَدُخِلَ عَلَيْنَا يَوْمَ النَّحْرِ بِلَحْمِ بَقَرٍ فَقُلْتُ مَا هَذَا فَقَالَ نَحَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَزْوَاجِهِ قَالَ يَحْيَى فَذَكَرْتُ هَذَا الْحَدِيْثَ لِلقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ فَقَالَ أَتَتْكَ وَاللهِ بِالْحَدِيْثِ عَلَى وَجْهِهِ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা যুল-কাদার ৫ রাত থাকতে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে রওয়ানা হলাম। হজ্জ আদায় ব্যতীত আমাদের আর কোন উদ্দেশ্য ছিল না। মক্কার নিকটবর্তী হলে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের আদেশ দিলেন যাদের নিকট কুরবানীর জন্তু নেই, তারা বায়তুল্লাহর তাওয়াফ এবং সাফা মারওয়ার সা’ঈ করার পর ইহরাম খুলে ফেলবে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, কুরবানীর দিন আমাদের নিকট গরুর গোশ্‌ত পৌঁছান হলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এগুলো কিসের? বলা হলো, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের পক্ষ থেকে কুরবানী আদায় করেছেন। ইয়াহ্‌ইয়া (রহঃ) বলেন, আমি হাদীসটি কাসেম ইব্‌নু মুহাম্মাদ (রহঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বললেন, আল্লাহ্‌র কসম বর্ণনাকারিনী এ হাদীসটি আপনার নিকট সঠিকভাবে বর্ণনা করেছেন।

৫৬/১০৬. অধ্যায়ঃ

রমাযান মাসে সফরে বের হওয়া।

২৯৫৩

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ رَمَضَانَ فَصَامَ حَتَّى بَلَغَ الْكَدِيْدَ أَفْطَرَ قَالَ سُفْيَانُ قَالَ الزُّهْرِيُّ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ وَسَاقَ الْحَدِيْثَ. قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ هَذَا قَوْلُ الزُّهْرِيِّ وَإِنَّمَا يُقَالُ بِالْآخِرِ مِنْ فِعْلِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমাযান মাসে সফরে বের হন এবং সিয়াম পালন করেন। যখন তিন কাদীদ নামক স্থানে পৌঁছলেন তখন সিয়াম ছেড়ে দেন। সুফিয়ান (রহঃ)......ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে একইভাবে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ‘আব্দুল্লাহ (রহঃ) বলেন, এটা যুহরী (রহঃ)-এর উক্তি এবং আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সর্বশেষ কার্যই গ্রহণযোগ্য।

৫৬/১০৭. অধ্যায়ঃ

সফরকালে বিদায় দেয়া।

২৯৫৪

وَقَالَ ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنِيْ عَمْرٌو عَنْ بُكَيْرٍ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّهُ قَالَ بَعَثَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَعْثٍ وَقَالَ لَنَا إِنْ لَقِيْتُمْ فُلَانًا وَفُلَانًا لِّرَجُلَيْنِ مِنْ قُرَيْشٍ سَمَّاهُمَا فَحَرِّقُوْهُمَا بِالنَّارِ قَالَ ثُمَّ أَتَيْنَاهُ نُوَدِّعُهُ حِيْنَ أَرَدْنَا الْخُرُوْجَ فَقَالَ إِنِّيْ كُنْتُ أَمَرْتُكُمْ أَنْ تُحَرِّقُوْا فُلَانًا وَفُلَانًا بِالنَّارِ وَإِنَّ النَّارَ لَا يُعَذِّبُ بِهَا إِلَّا اللهُ فَإِنْ أَخَذْتُمُوْهُمَا فَاقْتُلُوْهُمَا
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে এক অভিযানে পাঠালেন। কুরাইশদের দু’জন লোকের নামোল্লেখ করে আমাদেরকে বললেন, তোমরা যদি অমুক ও অমুকের সাক্ষাৎ পাও তবে তাদেরকে আগুনে জ্বালিয়ে ফেলবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, অতঃপর আমরা রওয়ানা করার প্রাক্কালে বিদায় গ্রহণ করার জন্য আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তিনি বললেন, ‘আমি তোমাদেরকে অমুক অমুককে আগুনে জ্বালিয়ে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছিলাম, কিন্তু আগুনের শাস্তি দান করার অধিকার আল্লাহ্‌ তা’আলা ব্যতীত আর কারো নেই। তাই তোমরা যদি তাদেরকে ধরে ফেলতে সক্ষম হয়, তবে তাদের উভয়কে হত্যা করবে।

৫৬/১০৮. অধ্যায়ঃ

পাপ কাজের নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ইমামের কথা শুনা ও আনুগত্য করা।

২৯৫৫

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح و حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ صَبَّاحٍ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ زَكَرِيَّاءَ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ السَّمْعُ وَالطَّاعَةُ حَقٌّ مَا لَمْ يُؤْمَرْ بِالْمَعْصِيَةِ فَإِذَا أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ فَلَا سَمْعَ وَلَا طَاعَةَ
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘পাপ কাজের আদেশ না করা পর্যন্ত ইমামের কথা শোনা ও তার আদেশ মানা অপরিহার্য। তবে পাপ কাজের আদেশ করা হলে তা শোনা ও আনুগত্য করা যাবে না।’

৫৬/১০৯. অধ্যায়ঃ

ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধ করা ও তাঁর মাধ্যমে নিরাপত্তা লাভ করা।

২৯৫৬

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ أَنَّ الأَعْرَجَ حَدَّثَهُ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ نَحْنُ الْآخِرُوْنَ السَّابِقُوْنَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমরা সর্বশেষ আগমনকারী (পৃথিবীতে) সর্বাগ্রে প্রবেশকারী (জান্নাতে)।

২৯৫৭

وَبِهَذَا الْإِسْنَادِ مَنْ أَطَاعَنِيْ فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ وَمَنْ عَصَانِيْ فَقَدْ عَصَى اللهَ وَمَنْ يُطِعْ الأَمِيْرَ فَقَدْ أَطَاعَنِيْ وَمَنْ يَعْصِ الأَمِيْرَ فَقَدْ عَصَانِيْ وَإِنَّمَا الْإِمَامُ جُنَّةٌ يُقَاتَلُ مِنْ وَرَائِهِ وَيُتَّقَى بِهِ فَإِنْ أَمَرَ بِتَقْوَى اللهِ وَعَدَلَ فَإِنَّ لَهُ بِذَلِكَ أَجْرًا وَإِنْ قَالَ بِغَيْرِهِ فَإِنَّ عَلَيْهِ مِنْهُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আর এ সনদেই বর্ণিত হয়েছে যে, (রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন,) যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল, সে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলারই আনুগত্য করল আর যে ব্যক্তি আমার নাফরমানী করল, সে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলারই নাফরমানী করল। আর যে ব্যক্তি আমীরের আনুগত্য করল, সে ব্যক্তি আমারই আনুগত্য করল আর যে ব্যক্তি আমীরের নাফরমানী করল সে ব্যক্তি আমারই নাফরমানী করল। ইমাম তো ঢাল স্বরূপ। তাঁর নেতৃত্বে যুদ্ধ এবং তাঁরই মাধ্যমে নিরাপত্তা অর্জন করা হয়। অতঃপর যদি সে আল্লাহ্‌র তাকওয়ার নির্দেশ দেয় এবং সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে, তবে তার জন্য পুরষ্কার রয়েছে আর যদি সে এর বিপরীত করে তবে এর মন্দ পরিণাম তার উপরই বর্তাবে।

৫৬/১১০. অধ্যায়ঃ

যুদ্ধ থেকে পালিয়ে না যাওয়ার ব্যাপারে বায়’আত করা।
আর কেউ বলেছেন, মৃত্যুর উপর বায়’আত করা। যেহেতু আল্লাহ্‌ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ অবশ্যই আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা বৃক্ষের নিচে আপনার আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করল। (ফাত্‌হ ১৮)

২৯৫৮

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ عَنْ نَافِعٍ قَالَ قَالَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا رَجَعْنَا مِنْ الْعَامِ الْمُقْبِلِ فَمَا اجْتَمَعَ مِنَّا اثْنَانِ عَلَى الشَّجَرَةِ الَّتِيْ بَايَعْنَا تَحْتَهَا كَانَتْ رَحْمَةً مِنْ اللهِ فَسَأَلْتُ نَافِعًا عَلَى أَيِّ شَيْءٍ بَايَعَهُمْ عَلَى الْمَوْتِ قَالَ لَا بَلْ بَايَعَهُمْ عَلَى الصَّبْرِ
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন হুদাইবিয়া সন্ধির পরবর্তী বছর প্রত্যাবর্তন করলাম, তখন আমাদের মধ্য হতে দু’জন লোকও যে বৃক্ষের নীচে আমরা বায়’আত করেছিলাম সেটি চিহ্নিত করার ব্যাপারে একমত হতে সক্ষম হয়নি। তা ছিল আল্লাহ্‌ তা‘আলার পক্ষ থেকে রহমত স্বরূপ।’ বর্ণনাকারী বলেন, ‘আমি নাফি (রহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, তাঁদের নিকট হতে কিসের বায়’আত গ্রহণ করা হয়েছিল? তা কি মৃত্যুর উপর?’ তিনি বললেন, ‘না, বরং আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের নিকট হতে দৃঢ় থাকার উপর বায়’আত গ্রহণ করেছিলেন।’

২৯৫৯

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ يَحْيَى عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيْمٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ زَيْدٍ قَالَ لَمَّا كَانَ زَمَنُ الْحَرَّةِ أَتَاهُ آتٍ فَقَالَ لَهُ إِنَّ ابْنَ حَنْظَلَةَ يُبَايِعُ النَّاسَ عَلَى الْمَوْتِ فَقَالَ لَا أُبَايِعُ عَلَى هَذَا أَحَدًا بَعْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হার্‌রা নামক যুদ্ধের সময়ে তাঁর নিকট এক ব্যক্তি এসে বললো, ‘ইব্‌নু হানযালা (রাঃ) মানুষের নিকট থেকে মৃত্যুর উপর বায়’আত গ্রহণ করছেন। তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পর আমি তো কারো নিকট এমন বায়’আত করব না।

২৯৬০

حَدَّثَنَا الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ أَبِيْ عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ قَالَ بَايَعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ عَدَلْتُ إِلَى ظِلِّ الشَّجَرَةِ فَلَمَّا خَفَّ النَّاسُ قَالَ يَا ابْنَ الأَكْوَعِ أَلَا تُبَايِعُ قَالَ قُلْتُ قَدْ بَايَعْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ وَأَيْضًا فَبَايَعْتُهُ الثَّانِيَةَ فَقُلْتُ لَهُ يَا أَبَا مُسْلِمٍ عَلَى أَيِّ شَيْءٍ كُنْتُمْ تُبَايِعُوْنَ يَوْمَئِذٍ قَالَ عَلَى الْمَوْتِ
সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বায়’আত করলাম। অতঃপর আমি একটি বৃক্ষের ছায়ায় গেলাম। মানুষের ভীড় কমে গেলে, (তাঁর নিকট উপস্থিত হলে) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, ‘ইব্‌নু আকওয়া’! তুমি কি বায়’আত করবে না?’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি তো বায়'আত করেছি।’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আরেক বার।’ তখন আমি দ্বিতীয় বার আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বায়’আত করলাম। (বর্ণনাকারী) বলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আবূ মুসলিম! সেদিন তোমরা কোন্‌ জিনিসের উপর বায়’আত করেছিলে?’ তিনি বললেন, ‘মৃত্যুর উপর।’

২৯৬১

حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ حُمَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا يَقُوْلُ كَانَتْ الأَنْصَارُ يَوْمَ الْخَنْدَقِ تَقُوْلُ :
نَحْنُ الَّذِيْنَ بَايَعُوْا مُحَمَّــدَا * عَلَى الْجِهَادِ مَا حَيِيْنَا أَبَـدَا
فَأَجَابَهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ :
اللَّهُمَّ لَا عَيْشَ إِلَّا عَيْشُ الْآخِرَهْ * فَأَكْرِمْ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِـرَهْ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনসারগণ খন্দকে যুদ্ধের দিন আবৃত্তি করছিলেনঃ “আমরাই হচ্ছি সে সকল ব্যক্তি, যারা মুহাম্মাদের হাতে জিহাদ করার উপর বায়’আত গ্রহণ করেছি, যতদিন আমরা বেঁচে থাকব।” আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উত্তর দিয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ্‌! পরকালের সুখ হচ্ছে প্রকৃত সুখ; তাই তুমি আনসার ও মুহাজিরদেরকে সম্মানিত কর।

২৯৬২

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ سَمِعَ مُحَمَّدَ بْنَ فُضَيْلٍ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ عَنْ مُجَاشِعٍ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَنَا وَأَخِيْ فَقُلْتُ بَايِعْنَا عَلَى الْهِجْرَةِ فَقَالَ مَضَتْ الْهِجْرَةُ لِأَهْلِهَا فَقُلْتُ عَلَامَ تُبَايِعُنَا قَالَ عَلَى الْإِسْلَامِ وَالْجِهَادِ
মুজাশি’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আমি আমার ভ্রাতুস্পুত্রকে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত হলাম। অতঃপর আমি বললাম, ‘হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে হিজরতের উপর বায়’আত নিন।’ তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘হিজরত তো হিজরতকারীগণের জন্য অতীত হয়ে গেছে।’ আমি বললাম, ‘তাহলে আপনি আমাদের কিসের উপর বায়’আত নিবেন?’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘ইসলাম ও জিহাদের উপর।’

২৯৬৩

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ سَمِعَ مُحَمَّدَ بْنَ فُضَيْلٍ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ عَنْ مُجَاشِعٍ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَنَا وَأَخِيْ فَقُلْتُ بَايِعْنَا عَلَى الْهِجْرَةِ فَقَالَ مَضَتْ الْهِجْرَةُ لِأَهْلِهَا فَقُلْتُ عَلَامَ تُبَايِعُنَا قَالَ عَلَى الْإِسْلَامِ وَالْجِهَادِ
মুজাশি’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আমি আমার ভ্রাতুস্পুত্রকে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত হলাম। অতঃপর আমি বললাম, ‘হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে হিজরতের উপর বায়’আত নিন।’ তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘হিজরত তো হিজরতকারীগণের জন্য অতীত হয়ে গেছে।’ আমি বললাম, ‘তাহলে আপনি আমাদের কিসের উপর বায়’আত নিবেন?’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘ইসলাম ও জিহাদের উপর।’

৫৬/১১১. অধ্যায়ঃ

ইমাম মানুষকে তাদের সাধ্যানুযায়ী নির্দেশ করবে।

২৯৬৪

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ لَقَدْ أَتَانِي الْيَوْمَ رَجُلٌ فَسَأَلَنِيْ عَنْ أَمْرٍ مَا دَرَيْتُ مَا أَرُدُّ عَلَيْهِ فَقَالَ أَرَأَيْتَ رَجُلاً مُؤْدِيًا نَشِيْطًا يَخْرُجُ مَعَ أُمَرَائِنَا فِي الْمَغَازِيْ فَيَعْزِمُ عَلَيْنَا فِيْ أَشْيَاءَ لَا نُحْصِيْهَا فَقُلْتُ لَهُ وَاللهِ مَا أَدْرِيْ مَا أَقُوْلُ لَكَ إِلَّا أَنَّا كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَعَسَى أَنْ لَا يَعْزِمَ عَلَيْنَا فِيْ أَمْرٍ إِلَّا مَرَّةً حَتَّى نَفْعَلَهُ وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَنْ يَزَالَ بِخَيْرٍ مَا اتَّقَى اللهَ وَإِذَا شَكَّ فِيْ نَفْسِهِ شَيْءٌ سَأَلَ رَجُلاً فَشَفَاهُ مِنْهُ وَأَوْشَكَ أَنْ لَا تَجِدُوْهُ وَالَّذِيْ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ مَا أَذْكُرُ مَا غَبَرَ مِنْ الدُّنْيَا إِلَّا كَالثَّغْبِ شُرِبَ صَفْوُهُ وَبَقِيَ كَدَرُهُ
‘আবদুল্লাহ্‌ (ইব্‌নু মাস‘ঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আজ আমার নিকট এক ব্যক্তি আগমন করে। সে আমাকে একটি বিষয়ে প্রশ্ন করে, যার উত্তর কী দিব, তা আমার বুঝে আসছিল না।’ লোকটি বললো, ‘বলুন তো, এক ব্যক্তি সশস্ত্র অবস্থায় সন্তুষ্টচিত্তে আমাদের আমীরের সঙ্গে যুদ্ধে বের হল। কিন্তু সে আমীর এমন সব নির্দেশ দেন যা পালন করা সম্ভব নয়। আমি বললাম, ‘আল্লাহ্‌র কসম! আমি বুঝতে পারছি না যে, তোমাদের এ প্রশ্নের কী উত্তর দিব? হ্যাঁ, তবে এতটুকু বলতে পারি যে, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি সাধারণত আমাদেরকে কোন বিষয়ে কঠোর নির্দেশ দিতেন না। কিন্তু একবার মাত্র এরূপ নির্দেশ দিয়েছিলেন, আর আমরা তা পালন করেছিলাম। আর তোমাদের যে কেউ ততক্ষণ ভাল থাকবে, যতক্ষণ সে আল্লাহ্‌ তা’আলাকে ভয় করতে থাকবে। আর যখন সে কোন বিষয়ে সন্দিহান হয়ে পড়বে, তখন সে এমন ব্যক্তির নিকট প্রশ্ন করে নিবে, যে তাকে সন্দেহ মুক্ত করে দিবে। আর সে যুগ অতি নিকটে যে, তোমরা এমন ব্যক্তি পাবে না। শপথ সেই সত্তার যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। দুনিয়ায় যা অবশিষ্ট রয়েছে, তার উপমা এরূপ যেমন একটি পুকুরের মধ্যে পানি জমেছে। এর পরিষ্কার পানি তো পান করা হয়েছে, আর নীচের ঘোলা পানি বাকী রয়ে গেছে।

৫৬/১১২. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দিবার প্রারম্ভে যুদ্ধারম্ভ না করলে সূর্য ঢলা অবধি যুদ্ধারম্ভ বিলম্ব করতেন।

২৯৬৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمٍ أَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ وَكَانَ كَاتِبًا لَهُ قَالَ كَتَبَ إِلَيْهِ عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فَقَرَأْتُهُ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَعْضِ أَيَّامِهِ الَّتِيْ لَقِيَ فِيْهَا انْتَظَرَ حَتَّى مَالَتْ الشَّمْسُ
‘উমর ইব্‌নু ‘উবাইদুল্লাহ্‌র আযাদকৃত গোলাম ও তার কাতিব সালিম আবূ নাযর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু আবূ আওফা (রাঃ) তার মনিবের নিকট পত্র লিখেন যা আমি পাঠ করলাম, তাতে ছিল যে, শত্রুদের সঙ্গে কোন এক মুখোমুখী যুদ্ধে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্য ঢলে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন।

২৯৬৬

ثُمَّ قَامَ فِي النَّاسِ خَطِيْبًا قَالَ أَيُّهَا النَّاسُ لَا تَتَمَنَّوْا لِقَاءَ الْعَدُوِّ وَسَلُوْا اللهَ الْعَافِيَةَ فَإِذَا لَقِيْتُمُوْهُمْ فَاصْبِرُوْا وَاعْلَمُوْا أَنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ ظِلَالِ السُّيُوفِ ثُمَّ قَالَ اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ وَمُجْرِيَ السَّحَابِ وَهَازِمَ الأَحْزَابِ اهْزِمْهُمْ وَانْصُرْنَا عَلَيْهِمْ
‘উমর ইব্‌নু ‘উবাইদুল্লাহ্‌র আযাদকৃত গোলাম ও তার কাতিব সালিম আবূ নাযর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অতঃপর তিনি তাঁর সাহাবীদের সামনে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিলেনঃ হে লোক সকল! শত্রুর সঙ্গে মোকেবেলায় অবতীর্ণ হবার কামনা করবে না এবং আল্লাহ্‌ তা‘আলার নিকট নিরাপত্তার দু‘আ করবে। অতঃপর যখন তোমরা শত্রুর সম্মুখীন হবে তখন তোমরা ধৈর্যধারণ করবে। জেনে রাখবে, জান্নাত তরবারীর ছায়ার নীচে অবস্থিত। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আ করলেন, হে আল্লাহ! কুরআন নাযিলকারী, মেঘমালা পরিচালনাকারী, সেনাদল পরাভূতকারী, আপনি কাফির সম্প্রদায়কে পরাজিত করুন এবং আমাদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করুন।

৫৬/১১৩. অধ্যায়ঃ

কোন ব্যক্তি কর্তৃক ইমামের অনুমতি গ্রহণ।
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ মু‘মিন তো তারাই যারা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান রাখে এবং যখন তারা কোন সমষ্টিগত কাজে রসূলের সাথে সমবেত হয় তখন তারা তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে চলে যায় না। (নূর ৬২)

২৯৬৭

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ أَخْبَرَنَا جَرِيْرٌ عَنْ الْمُغِيْرَةِ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ غَزَوْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ قَالَ فَتَلَاحَقَ بِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا عَلَى نَاضِحٍ لَنَا قَدْ أَعْيَا فَلَا يَكَادُ يَسِيْرُ فَقَالَ لِيْ مَا لِبَعِيْرِكَ قَالَ قُلْتُ عَيِيَ قَالَ فَتَخَلَّفَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَزَجَرَهُ وَدَعَا لَهُ فَمَا زَالَ بَيْنَ يَدَيْ الْإِبِلِ قُدَّامَهَا يَسِيْرُ فَقَالَ لِيْ كَيْفَ تَرَى بَعِيْرَكَ قَالَ قُلْتُ بِخَيْرٍ قَدْ أَصَابَتْهُ بَرَكَتُكَ قَالَ أَفَتَبِيْعُنِيْهِ قَالَ فَاسْتَحْيَيْتُ وَلَمْ يَكُنْ لَنَا نَاضِحٌ غَيْرُهُ قَالَ فَقُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَبِعْنِيْهِ فَبِعْتُهُ إِيَّاهُ عَلَى أَنَّ لِيْ فَقَارَ ظَهْرهِ حَتَّى أَبْلُغَ الْمَدِيْنَةَ قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ عَرُوسٌ فَاسْتَأْذَنْتُهُ فَأَذِنَ لِيْ فَتَقَدَّمْتُ النَّاسَ إِلَى الْمَدِيْنَةِ حَتَّى أَتَيْتُ الْمَدِيْنَةَ فَلَقِيَنِيْ خَالِيْ فَسَأَلَنِيْ عَنْ الْبَعِيْرِ فَأَخْبَرْتُهُ بِمَا صَنَعْتُ فِيْهِ فَلَامَنِيْ قَالَ وَقَدْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِيْ حِيْنَ اسْتَأْذَنْتُهُ هَلْ تَزَوَّجْتَ بِكْرًا أَمْ ثَيِّبًا فَقُلْتُ تَزَوَّجْتُ ثَيِّبًا فَقَالَ هَلَا تَزَوَّجْتَ بِكْرًا تُلَاعِبُهَا وَتُلَاعِبُكَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ تُوُفِّيَ وَالِدِيْ أَوْ اسْتُشْهِدَ وَلِيْ أَخَوَاتٌ صِغَارٌ فَكَرِهْتُ أَنْ أَتَزَوَّجَ مِثْلَهُنَّ فَلَا تُؤَدِّبُهُنَّ وَلَا تَقُومُ عَلَيْهِنَّ فَتَزَوَّجْتُ ثَيِّبًا لِّتَقُومَ عَلَيْهِنَّ وَتُؤَدِّبَهُنَّ قَالَ فَلَمَّا قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ غَدَوْتُ عَلَيْهِ بِالْبَعِيْرِ فَأَعْطَانِيْ ثَمَنَهُ وَرَدَّهُ عَلَيَّ قَالَ الْمُغِيْرَةُ هَذَا فِيْ قَضَائِنَا حَسَنٌ لَا نَرَى بِهِ بَأْسًا
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে এক যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুক্ষণ পরে এসে আমার সঙ্গে মিলিত হন; আমি তখন আমার পানি-সেচের উটনীর উপর আরোহী ছিলাম। উটনী ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল; এটি মোটেই চলতে পারছিল না। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার উটের কী হয়েছে? আমি বললাম, ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উটনীর পেছন দিক থেকে গিয়ে উটনীকে হাঁকালেন এবং এটির জন্য দু‘আ করলেন। অতঃপর এটি সবক’টি উটের আগে আগে চলতে থাকে। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, এখন তোমার উটনীটি কেমন মনে হচ্ছে? আমি বললাম, ভালই। এটি আপনার বরকত লাভ করেছে। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি এটি আমার নিকট বিক্রয় করবে? তিনি বলেন, আমি মনে মনে লজ্জাবোধ করলাম। (কারণ) আমার নিকট এ উটটি ব্যতীত পানি বহনের অন্য কোন উটনী ছিল না। আমি বললাম, হ্যাঁ। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে আমার নিকট বিক্রয় কর। অনন্তর আমি উটনীটি তাঁর নিকট এ শর্তে বিক্রয় করলাম যে, মদীনায় পৌঁছা পর্যন্ত এর উপর আরোহণ করব। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি সদ্য বিবাহিত একজন পুরুষ। অতঃপর আমি তাঁর নিকট অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন। আমি লোকদের আগে আগে চললাম এবং মদীনায় পৌঁছে গেলাম। তখন আমার মামা আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। তিনি আমাকে উটনীর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। আমি তাকে সে বিষয়ে অবহিত করলাম যা আমি করেছিলাম। তিনি আমাকে তিরস্কার করলেন। তিনি (রাবী) বলেন, আর যখন আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অনুমতি চেয়েছিলাম, তখন তিনি আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন, তুমি কি কুমারী বিবাহ করেছ, না এমন মহিলাকে বিবাহ করেছ যার পূর্বে বিবাহ হয়েছিল? আমি বললাম, এমন মহিলাকে বিবাহ করেছি যার পূর্বে বিবাহ হয়েছে। তিনি বললেন, তুমি কুমারী বিবাহ করলে না কেন? তুমি তার সঙ্গে খেলা করতে এবং সেও তোমার সঙ্গে খেলা করত। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতা শহীদ হয়েছেন। আমার কয়েকজন ছোট ছোট বোন রয়েছে। তাই আমি তাদের সমান বয়সের কোন মেয়ে বিবাহ করা পছন্দ করিনি; যে তাদেরকে আদব-আখলাক শিক্ষা দিতে পারবে না এবং তাদের দেখাশোনা করতে পারবে না। তাই আমি একজন পূর্বে বিবাহ হয়েছে এমন মহিলাকে বিবাহ করেছি; যাতে সে তাদের দেখাশোনা করতে পারে এবং তাদেরকে আদব-আখলাক শিক্ষা দিতে পারে। তিনি বলেন, যখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আসেন, পরদিন আমি তাঁর নিকট উটনীটি নিয়ে উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে এর মূল্য দিলেন এবং উটটিও ফেরত দিলেন। মুগীরাহ (রাঃ) বলেন, আমাদের বিবেচনায় এটি উত্তম। আমরা এতে কোন দোষ মনে করি না।

৫৬/১১৪. অধ্যায়ঃ

বিবাহের নতুন অবস্থায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা। এ প্রসঙ্গে জাবির (রাঃ) কর্তৃক আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণিত আছে
এ প্রসঙ্গে জাবির (রাঃ) কর্তৃক রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণিত আছে

৫৬/১১৫. অধ্যায়ঃ

স্ত্রীর সঙ্গে প্রথম মিলনের পর নব বিবাহিতের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা। এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণিত আছে
এ প্রসঙ্গে আবূ হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণিত আছে

৫৬/১১৬. অধ্যায়ঃ

ভয়-ভীতির সময় ইমামের অগ্রগমন।

২৯৬৮

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ حَدَّثَنِيْ قَتَادَةُ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كَانَ بِالْمَدِيْنَةِ فَزَعٌ فَرَكِبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَرَسًا لِّأَبِيْ طَلْحَةَ فَقَالَ مَا رَأَيْنَا مِنْ شَيْءٍ وَإِنْ وَجَدْنَاهُ لَبَحْرًا
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার মদীনায় ভীতি ছড়িয়ে পড়ল। তখন আল্লহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ ত্বলহা (রাঃ)-এর ঘোড়ায় আরোহণ করেন এবং বলেন যে, আমি তো ভয়ের কিছু দেখতে পেলাম না। তবে আমি এ ঘোড়াটিকে সমুদ্রের মত গতিশীল পেয়েছি।

৫৬/১১৭. অধ্যায়ঃ

ভয়-ভীতির সময় ত্বরা করা ও দ্রুত অশ্ব চালনা করা।

২৯৬৯

حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرُ بْنُ حَازِمٍ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ فَزِعَ النَّاسُ فَرَكِبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَرَسًا لِّأَبِيْ طَلْحَةَ بَطِيئًا ثُمَّ خَرَجَ يَرْكُضُ وَحْدَهُ فَرَكِبَ النَّاسُ يَرْكُضُوْنَ خَلْفَهُ فَقَالَ لَمْ تُرَاعُوْا إِنَّهُ لَبَحْرٌ فَمَا سُبِقَ بَعْدَ ذَلِكَ الْيَوْمِ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সময়ে লোকেরা ভীত হয়ে পড়ল। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ ত্বলহা (রাঃ)-এর ধীরগতি সম্পন্ন একটি ঘোড়ার উপর চড়লেন এবং একাকী ঘোড়াটিকে হাঁকিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। লোকেরা তখন তাঁর পিছু পিছু ঘোড়ায় চড়ে ছুটে চলল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা ভয় করো না। এ ঘোড়াটি তো দ্রুতগামী। বর্ণনাকারী বলেন, সেদিন হতে আর কখনো সে ঘোড়াটি কারো পেছনে পড়েনি।

৫৬/১১৮. অধ্যায়ঃ

ভয়-ভীতিকালে একাকী নিস্ক্রান্ত হওয়া।

৫৬/১১৯. অধ্যায়ঃ

পারিশ্রমিক প্রদানপূর্বক নিজের পক্ষ হতে অন্যের দ্বারা যুদ্ধ করানো এবং আল্লাহ্‌র পথে সাওয়ারী দান করা।
মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, আমি ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)-কে বললাম, আমি জিহাদে যেতে চাই। তিনি বললেন, আমি তোমাকে কিছু অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে চাই। আমি বললাম, আল্লাহ্‌ তা‘আলা আমাকে আর্থিক সচ্ছলতা দান করেছেন। তিনি, [ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)] বললেন, তোমার সচ্ছলতা তোমার জন্য। আমি চাই, আমার কিছু সম্পদ এ পথে ব্যয় হোক। ‘উমর (রাঃ) বলেন, এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছে, যারা জিহাদ করার জন্য অর্থ গ্রহণ করে, পরে জিহাদ করে না। যারা এরূপ করে, আমরা তার সম্পদে অধিক হকদার এবং আমরা তা ফেরত নিয়ে নিব, যা সে গ্রহণ করেছে। তাউস ও মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, যখন আল্লাহ্‌র রাহে বের হবার জন্য তোমাকে কিছু দান করা হয়, তা দিয়ে তুমি যা ইচ্ছা তা করতে পার আর তোমার পরিবার-পরিজনের কাছেও রেখে দিতে পার।

২৯৭০

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ سَمِعْتُ مَالِكَ بْنَ أَنَسٍ سَأَلَ زَيْدَ بْنَ أَسْلَمَ فَقَالَ زَيْدٌ سَمِعْتُ أَبِيْ يَقُوْلُ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ حَمَلْتُ عَلَى فَرَسٍ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَرَأَيْتُهُ يُبَاعُ فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ آشْتَرِيْهِ فَقَالَ لَا تَشْتَرِهِ وَلَا تَعُدْ فِيْ صَدَقَتِكَ
‘উমর ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রাহে একটি অশ্ব আরোহণের জন্য দান করেছিলাম। অতঃপর আমি তা বিক্রয় হতে দেখতে পাই। আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট জিজ্ঞেস করলাম, ‘আমি কি সেটা কিনে নিব?’ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘না, তুমি তা ক্রয় করো না এবং তোমার সদকা ফেরত নিও না।’

২৯৭১

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ حَمَلَ عَلَى فَرَسٍ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَوَجَدَهُ يُبَاعُ فَأَرَادَ أَنْ يَبْتَاعَهُ فَسَأَلَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَا تَبْتَعْهُ وَلَا تَعُدْ فِيْ صَدَقَتِكَ
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উমর ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) এক অশ্বারোহীকে আল্লাহ্‌র রাহে একটি অশ্ব দান করেন। অতঃপর তিনি দেখতে পান যে, তা বিক্রয় করা হচ্ছে। তখন তিনি তা কিনে নেয়ার ইচ্ছা করলেন এবং আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট জিজ্ঞেস করলেন। তখন তিনি [রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেন, ‘তুমি ওটা কিনিও না এবং তোমার সদকা ফেরত নিও না।’

২৯৭২

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ الأَنْصَارِيِّ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ صَالِحٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِيْ مَا تَخَلَّفْتُ عَنْ سَرِيَّةٍ وَلَكِنْ لَا أَجِدُ حَمُوْلَةً وَلَا أَجِدُ مَا أَحْمِلُهُمْ عَلَيْهِ وَيَشُقُّ عَلَيَّ أَنْ يَتَخَلَّفُوْا عَنِّيْ وَلَوَدِدْتُ أَنِّيْ قَاتَلْتُ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَقُتِلْتُ ثُمَّ أُحْيِيْتُ ثُمَّ قُتِلْتُ ثُمَّ أُحْيِيْتُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর মনে না করতাম, তবে আমি কোন সেনা অভিযান থেকে পিছিয়ে থাকতাম না। কিন্তু আমি তো (সকলের জন্য) সাওয়ারী সংগ্রহ করতে পারছি না এবং আমি এতগুলো সাওয়ারী পাচ্ছি না যার উপর আমি তাদের আরোহণ করাতে পারি। আর আমার জন্য এটা কষ্টদায়ক হবে যে, তারা আমার থেকে পেছনে পড়ে থাকবে। আমি তো এটাই কামনা করি যে, আমি আল্লাহ্‌র রাহে জিহাদ করব এবং শহীদ হয়ে যাবো, অতঃপর আমাকে আবার জীবিত করা হবে এবং আমি আবার শহীদ হবো। অতঃপর আমাকে আবার জীবিত করা হবে।

৫৬/১২০. অধ্যায়ঃ

মজুরী নিয়ে জিহাদে অংশগ্রহণ করা।
হাসান বসরী ও ইব্‌নু সীরীন (রহঃ) বলেন, মজদুরকেও গনীমত লব্ধ সম্পদে অংশ দান করা হবে। আতিয়্যা ইব্‌নু কায়েস (রাঃ) এক ব্যক্তি থেকে একটি অশ্ব এ শর্তে গ্রহণ করেন যে, গনীমত লব্ধ সম্পদে প্রাপ্ত অংশ অর্ধেক করে বন্টিত হবে। তিনি অশ্বটির অংশে চারশ’ দীনার পেয়েছিলেন। তখন তিনি দু’শ দীনার গ্রহণ করেন এবং দু’শ দীনার অশ্বের মালিককে দিয়ে দেন

২৯৭৩

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ صَفْوَانَ بْنِ يَعْلَى عَنْ أَبِيْهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ غَزَوْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَزْوَةَ تَبُوكَ فَحَمَلْتُ عَلَى بَكْرٍ فَهُوَ أَوْثَقُ أَعْمَالِيْ فِيْ نَفْسِيْ فَاسْتَأْجَرْتُ أَجِيْرًا فَقَاتَلَ رَجُلًا فَعَضَّ أَحَدُهُمَا الْآخَرَ فَانْتَزَعَ يَدَهُ مِنْ فِيْهِ وَنَزَعَ ثَنِيَّتَهُ فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَهْدَرَهَا فَقَالَ أَيَدْفَعُ يَدَهُ إِلَيْكَ فَتَقْضَمُهَا كَمَا يَقْضَمُ الْفَحْلُ
ইয়া‘লা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি তাবুক যুদ্ধে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে জিহাদে শরীক হই। আমি একটি জওয়ান উট (জিহাদে) আরোহণের জন্য (এক ব্যক্তিকে) দেই। আমার সঙ্গে এটিই ছিল আমার অধিক নির্ভরযোগ্য কাজ। আমি এক ব্যক্তিকে মজুরীর বিনিময়ে নিয়োগ করলাম। তখন সে এক ব্যক্তির সঙ্গে ঝগড়া লেগে যায়, একজন আরেকজনের হাত কামড়ে ধরলে সে তার হাত মুখ হতে সজোরে বের করে আনে। ফলে তার সামনের দাঁত উপড়ে আসে। উক্ত ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে উপস্থিত হল। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দাঁতের কোন প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। আর তিনি বললেন, সে কি তার হাতটিকে তোমার মুখে রেখে দিবে, আর তুমি তাকে উটের মত কামড়াতে থাকবে।

৫৬/১২১. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পতাকা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে।

২৯৭৪

حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ ثَعْلَبَةُ بْنُ أَبِيْ مَالِكٍ الْقُرَظِيُّ أَنَّ قَيْسَ بْنَ سَعْدٍ الأَنْصَارِيَّ وَكَانَ صَاحِبَ لِوَاءِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَرَادَ الْحَجَّ فَرَجَّلَ
কায়েস ইব্‌নু সা‘দ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আর তিনি ছিলেন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পতাকাবাহী, তিনি হজ্জের সংকল্প করেন, তখন তিনি মাথার চুল আঁচড়ে নিলেন।

২৯৭৫

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ قَالَ كَانَ عَلِيٌّ تَخَلَّفَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ خَيْبَرَ وَكَانَ بِهِ رَمَدٌ فَقَالَ أَنَا أَتَخَلَّفُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَخَرَجَ عَلِيٌّ فَلَحِقَ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا كَانَ مَسَاءُ اللَّيْلَةِ الَّتِيْ فَتَحَهَا فِيْ صَبَاحِهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَاعْطِيَنَّ الرَّايَةَ أَوْ قَالَ لَيَأْخُذَنَّ غَدًا رَجُلٌ يُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَوْ قَالَ يُحِبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ يَفْتَحُ اللهُ عَلَيْهِ فَإِذَا نَحْنُ بِعَلِيٍّ وَمَا نَرْجُوْهُ فَقَالُوْا هَذَا عَلِيٌّ فَأَعْطَاهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَفَتَحَ اللهُ عَلَيْهِ
সালামা ইব্‌নু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খায়বার যুদ্ধে ‘আলী (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে পেছনে থেকে যান, (কারণ) তাঁর চোখে অসুখ হয়েছিল। তখন তিনি বললেন, আমি কি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে পিছিয়ে থাকব? অতঃপর ‘আলী (রাঃ) বেরিয়ে পড়লেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে এসে মিলিত হলেন। যখন সে রাত এল, যে রাত শেষে সকালে ‘আলী (রাঃ) খায়বার জয় করেছিলেন, তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আগামীকাল আমি এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা দিব, কিংবা (বলেন) আগামীকাল এমন এক ব্যক্তি পতাকা গ্রহণ করবে যাকে আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভালবাসেন। অথবা তিনি বলেছিলেন, যে আল্লাহ্‌ তাআলা ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ভালবাসে। আল্লাহ্‌ তা‘আলা তারই হাতে খায়বার বিজয় দান করবেন। হঠাৎ আমরা দেখতে পেলাম যে, ‘আলী (রাঃ) এসে হাজির, অথচ আমরা তাঁর আগমন আশা করিনি। তারা বললেন, এই যে, ‘আলী (রাঃ) চলে এসেছেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে পতাকা প্রদান করলেন। আর আল্লাহ্‌ তা‘আলা তাঁরই হাতে বিজয় দিলেন।

২৯৭৬

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ سَمِعْتُ الْعَبَّاسَ يَقُوْلُ لِلْزُّبَيْرِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا هَا هُنَا أَمَرَكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ تَرْكُزَ الرَّايَةَ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি যুবাইর (রাঃ)-কে বলেছিলেন, এখানেই কি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনাকে পতাকা গাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন?

৫৬/১২২. অধ্যায়ঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তিঃ এক মাসের পথের দুরত্বে অবস্থিত শত্রুর মনেও আমার সম্পর্কে ভয়-ভীতি জাগরণের দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে।
মহান আল্লাহ্‌র তা‘আলার বানীঃ আমি কাফিরদের অন্তরে ভীতি প্রবিষ্ট করব। যেহেতু তারা আল্লাহ্‌র শরীক করেছে। (আল্‌ ইমরান ১৫১)
(এ প্রসঙ্গে) জাবির (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস উদ্ধৃত করেছেন

২৯৭৭

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بُعِثْتُ بِجَوَامِعِ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ فَبَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُتِيْتُ بِمَفَاتِيْحِ خَزَائِنِ الأَرْضِ فَوُضِعَتْ فِيْ يَدِيْ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ وَقَدْ ذَهَبَ رَسُوْلُ اللهِ وَأَنْتُمْ تَنْتَثِلُوْنَهَا
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, অল্প শব্দে ব্যাপক অর্থবোধক বাক্য বলার শক্তি সহ আমাকে পাঠানো হয়েছে এবং শত্রুর মনে ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। একবার আমি নিদ্রায় ছিলাম, তখন পৃথিবীর ধনভাণ্ডার সমূহের চাবি আমার হাতে দেয়া হয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো চলে গেছেন আর তোমারা ওগুলো বাহির করছ।

২৯৭৮

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سُفْيَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّ هِرَقْلَ أَرْسَلَ إِلَيْهِ وَهُمْ بِإِيْلِيَاءَ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ كَثُرَ عِنْدَهُ الصَّخَبُ فَارْتَفَعَتْ الأَصْوَاتُ وَأُخْرِجْنَا فَقُلْتُ لِأَصْحَابِيْ حِيْنَ أُخْرِجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِيْ كَبْشَةَ إِنَّهُ يَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الأَصْفَرِ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁকে আবূ সুফিয়ান জানিয়েছেন, হিরাক্‌ল আমাকে ডেকে পাঠান। তখন তিনি ইলিয়া নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। অতঃপর সম্রাট আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পত্রখানি আনতে আদেশ করেন যখন পত্র পাঠ সমাপ্ত হল, তখন বেশ হৈ চৈ ও শোরগোল পড়ে গেল। অতঃপর আমাদেরকে বাইরে নিয়ে আসা হল। যখন আমাদেরকে বের করে দেয়া হচ্ছিল তখন আমি আমার সঙ্গীদের উদ্দেশ্য করে বললাম, আবূ কাবশার পুত্রের [১] ব্যাপারটার গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেল। রোমের বাদশাহও তাঁকে ভয় করে।
 [১] আবূ কাবশা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুধ মা হালীমাহ (রাঃ)-এর স্বামী ছিলেন।

৫৬/১২৩. অধ্যায়ঃ

যুদ্ধে পাথেয় বহন করা।
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ “তোমরা পাথেয় সাথে নিও। আর তাকওয়াই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ পাথেয়।” (আল-বাকারা ১৯৭)

২৯৭৯

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ وَحَدَّثَتْنِيْ أَيْضًا فَاطِمَةُ عَنْ أَسْمَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ صَنَعْتُ سُفْرَةَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَيْتِ أَبِيْ بَكْرٍ حِيْنَ أَرَادَ أَنْ يُهَاجِرَ إِلَى الْمَدِيْنَةِ قَالَتْ فَلَمْ نَجِدْ لِسُفْرَتِهِ وَلَا لِسِقَائِهِ مَا نَرْبِطُهُمَا بِهِ فَقُلْتُ لِأَبِيْ بَكْرٍ وَاللهِ مَا أَجِدُ شَيْئًا أَرْبِطُ بِهِ إِلَّا نِطَاقِيْ قَالَ فَشُقِّيهِ بِاثْنَيْنِ فَارْبِطِيْهِ بِوَاحِدٍ السِّقَاءَ وَبِالْآخَرِ السُّفْرَةَ فَفَعَلْتُ فَلِذَلِكَ سُمِّيْتُ ذَاتَ النِّطَاقَيْنِ
আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ বকর (রাঃ)-এর গৃহে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সফরের সরঞ্জাম গোছগাছ করে দিয়েছিলাম, যখন তিনি মদীনায় হিজরত করার সংকল্প করেছিলেন। আসমা (রাঃ) বলেন, আমি তখন মালপত্র কিংবা পানির মশক বাঁধার জন্য কিছুই পাচ্ছিলাম না। তখন আবূ বকর (রাঃ)-কে বললাম, আল্লাহ্‌র শপথ! আমি আমার কোমর-বন্ধ ছাড়া বাঁধার কিছুই পাচ্ছি না। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, একে দু’ভাগ কর। এক খণ্ড দ্বারা মশক এবং অপর খণ্ড দ্বারা মালপত্র বেঁধে দাও। আমি তাই করলাম। এজন্যই আমাকে বলা হত দু’ কোমর বন্ধের মালিক।

২৯৮০

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَطَاءٌ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كُنَّا نَتَزَوَّدُ لُحُومَ الأَضَاحِيِّ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْمَدِيْنَةِ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে কুরবানীর গোশত মদীনা পর্যন্ত পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করতাম।

২৯৮১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى قَالَ أَخْبَرَنِيْ بُشَيْرُ بْنُ يَسَارٍ أَنَّ سُوَيْدَ بْنَ النُّعْمَانِ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ خَرَجَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَامَ خَيْبَرَ حَتَّى إِذَا كَانُوْا بِالصَّهْبَاءِ وَهِيَ مِنْ خَيْبَرَ وَهِيَ أَدْنَى خَيْبَرَ فَصَلَّوْا الْعَصْرَ فَدَعَا النَّبِيُّ بِالأَطْعِمَةِ فَلَمْ يُؤْتَ النَّبِيُّ إِلَّا بِسَوِيْقٍ فَلُكْنَا فَأَكَلْنَا وَشَرِبْنَا ثُمَّ قَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَمَضْمَضَ وَمَضْمَضْنَا وَصَلَّيْنَا
সুয়াইদ ইব্‌নু নু‘মান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, খায়বার যুদ্ধে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে তিনি জিহাদে অংশ গ্রহণ করেন। তাঁরা যখন খায়বারের সন্নিকটে অবস্থিত সাহবা নামক স্থানে পৌঁছলেন, তাঁরা সেখানে ‘আসরের সালাত আদায় করলেন। অতঃপর আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাবার নিয়ে আসতে বললেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যবের ছাতু ছাড়া কিছুই নেয়া হয়নি। আমরা তা পানির সঙ্গে মিশিয়ে আহার করলাম ও পান করলাম। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে দাঁড়ালেন এবং কুলি করলেন, আমরাও কুলি করলাম ও সালাত আদায় করলাম।

২৯৮২

حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مَرْحُومٍ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ قَالَ خَفَّتْ أَزْوَادُ النَّاسِ وَأَمْلَقُوْا فَأَتَوْا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِيْ نَحْرِ إِبِلِهِمْ فَأَذِنَ لَهُمْ فَلَقِيَهُمْ عُمَرُ فَأَخْبَرُوْهُ فَقَالَ مَا بَقَاؤُكُمْ بَعْدَ إِبِلِكُمْ فَدَخَلَ عُمَرُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا بَقَاؤُهُمْ بَعْدَ إِبِلِهِمْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَادِ فِي النَّاسِ يَأْتُوْنَ بِفَضْلِ أَزْوَادِهِمْ فَدَعَا وَبَرَّكَ عَلَيْهِ ثُمَّ دَعَاهُمْ بِأَوْعِيَتِهِمْ فَاحْتَثَى النَّاسُ حَتَّى فَرَغُوْا ثُمَّ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنِّيْ رَسُوْلُ اللهِ
সালামা (ইব্‌নু আকওয়া’) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সফরে লোকদের পাথেয় কমে যায় এবং তারা অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হাযির হয়ে তাদের উট যব্‌হ করার অনুমতি চাইলেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে অনুমতি দিলেন। সে সময় ‘উমর (রাঃ)-এর সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ হল। তারা তাঁকে বিষয়টি জানালো। তিনি বললেন, উট যব্‌হ করে অতঃপর তোমরা কিরূপে টিকে থাকবে? ‘উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এ সকল লোক উট যব্‌হ করে খেয়ে ফেলার পর কিভাবে বাঁচবে? তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নিজ নিজ অবশিষ্ট পাথেয় নিয়ে হাজির করার জন্য তাদের মধ্যে ঘোষণা দাও। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাবারের জন্য বরকতের দু‘আ করলেন। অতঃপর তাদেরকে নিজ নিজ পাত্র নিয়ে হাজির হতে বললেন। তারা তাদের পাত্র ভরে নিতে লাগলো, অবশেষে সকলই নিয়ে নিল। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্‌ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই। আর আমি আল্লাহ্‌র রসূল।’

৫৬/১২৪. অধ্যায়ঃ

স্কন্ধে পাথেয় বহন করা।

২৯৮৩

حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ وَهْبِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ خَرَجْنَا وَنَحْنُ ثَلَاثُ مِائَةٍ نَحْمِلُ زَادَنَا عَلَى رِقَابِنَا فَفَنِيَ زَادُنَا حَتَّى كَانَ الرَّجُلُ مِنَّا يَأْكُلُ فِيْ كُلِّ يَوْمٍ تَمْرَةً قَالَ رَجُلٌ يَا أَبَا عَبْدِ اللهِ وَأَيْنَ كَانَتْ التَّمْرَةُ تَقَعُ مِنْ الرَّجُلِ قَالَ لَقَدْ وَجَدْنَا فَقْدَهَا حِيْنَ فَقَدْنَاهَا حَتَّى أَتَيْنَا الْبَحْرَ فَإِذَا حُوْتٌ قَدْ قَذَفَهُ الْبَحْرُ فَأَكَلْنَا مِنْهُ ثَمَانِيَةَ عَشَرَ يَوْمًا مَا أَحْبَبْنَا
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা এক জিহাদে বের হলাম এবং আমরা সংখ্যায় তিনশ’ ছিলাম। প্রত্যেকে নিজ নিজ পাথেয় নিজেদের কাঁধে বহন করছিলাম। পথে আমাদের পাথেয় নিঃশেষ হয়ে গেল। এমনকি আমরা দৈনিক একটি মাত্র খেজুর খেতে থাকলাম। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আবূ ‘আবদুল্লাহ্‌! একটি মাত্র খেজুর একজন লোকের কী করে যথেষ্ট হত? তিনি বললেন, যখন আমরা তাও হারালাম তখন এর হারানোটা টের পেলাম। অবশেষে আমরা সমুদ্র তীরে এসে উপস্থিত হলাম। হঠাৎ সমুদ্র একটা বিরাট মাছ কূলে নিক্ষেপ করল। আমরা সে মাছটি মজা করে আঠার দিন পর্যন্ত খেলাম।

৫৬/১২৫. অধ্যায়ঃ

উটের পিঠে ভাই এর পশ্চাতে মহিলার উপবেশন।

২৯৮৪

حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَاصِمٍ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ الأَسْوَدِ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّهَا قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ يَرْجِعُ أَصْحَابُكَ بِأَجْرِ حَجٍّ وَعُمْرَةٍ وَلَمْ أَزِدْ عَلَى الْحَجِّ فَقَالَ لَهَا اذْهَبِيْ وَلْيُرْدِفْكِ عَبْدُ الرَّحْمَنِ فَأَمَرَ عَبْدَ الرَّحْمَنِ أَنْ يُعْمِرَهَا مِنْ التَّنْعِيْمِ فَانْتَظَرَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِأَعْلَى مَكَّةَ حَتَّى جَاءَتْ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনার সাহাবীগণ তো হজ্জ ও ‘উমরার সওয়াব নিয়ে ফিরছেন, আর আমি তো হাজ্জের বেশি কিছুই করতে পারলাম না।’ তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, তুমি যাও, ‘আবদুর রহমান তোমাকে তার পেছনে সাওয়ারীতে বসিয়ে নিবে। তিনি ‘আবদুর রহমানকে আদেশ করলেন, তাঁকে তানয়ীম থেকে ‘উমরার ইহরাম করিয়ে আনতে। আর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় উঁচুভূমিতে তাঁর ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকলেন।

২৯৮৫

حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ أَوْسٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِيْ بَكْرٍ الصِّدِّيقِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَمَرَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ أُرْدِفَ عَائِشَةَ وَأُعْمِرَهَا مِنْ التَّنْعِيْمِ
‘আবদুর রহমান ইব্‌নু আবূ বক্‌র সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ)-কে আমার পেছনে বসিয়ে তানয়ীম থেকে ‘উমরার ইহরাম করিয়ে আনার জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

৫৬/১২৬. অধ্যায়ঃ

যুদ্ধ ও হাজ্জে একই সাওয়ারীতে পেছনে বসা।

২৯৮৬

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ أَبِيْ قِلَابَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كُنْتُ رَدِيْفَ أَبِيْ طَلْحَةَ وَإِنَّهُمْ لَيَصْرُخُوْنَ بِهِمَا جَمِيْعًا الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ তলহা (রাঃ)-এর পেছনে একই সওয়ারীতে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন লোকেরা হজ্জ ও ‘উমরা পালনের জন্য লাব্বায়ক ধ্বনি তুলছিল।

৫৬/১২৭. অধ্যায়ঃ

গাধার পিঠে অপরের পেছনে বসা।

২৯৮৭

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا أَبُوْ صَفْوَانَ عَنْ يُونُسَ بْنِ يَزِيْدَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَكِبَ عَلَى حِمَارٍ عَلَى إِكَافٍ عَلَيْهِ قَطِيْفَةٌ وَأَرْدَفَ أُسَامَةَ وَرَاءَهُ
উসামা ইব্‌নু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গাধার পিঠে পালান চাপিয়ে তার উপর চাদর বিছিয়ে তাতে চড়লেন। আর উসামহ (রাঃ) কে তাঁর পেছনে বসিয়ে নিলেন।

২৯৮৮

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ يُونُسُ أَخْبَرَنِيْ نَافِعٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَقْبَلَ يَوْمَ الْفَتْحِ مِنْ أَعْلَى مَكَّةَ عَلَى رَاحِلَتِهِ مُرْدِفًا أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ وَمَعَهُ بِلَالٌ وَمَعَهُ عُثْمَانُ بْنُ طَلْحَةَ مِنْ الْحَجَبَةِ حَتَّى أَنَاخَ فِي الْمَسْجِدِ فَأَمَرَهُ أَنْ يَأْتِيَ بِمِفْتَاحِ الْبَيْتِ فَفَتَحَ وَدَخَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَعَهُ أُسَامَةُ وَبِلَالٌ وَعُثْمَانُ فَمَكَثَ فِيْهَا نَهَارًا طَوِيْلاً ثُمَّ خَرَجَ فَاسْتَبَقَ النَّاسُ وَكَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ أَوَّلَ مَنْ دَخَلَ فَوَجَدَ بِلَالاً وَرَاءَ الْبَابِ قَائِمًا فَسَأَلَهُ أَيْنَ صَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَشَارَ لَهُ إِلَى الْمَكَانِ الَّذِيْ صَلَّى فِيْهِ قَالَ عَبْدُ اللهِ فَنَسِيْتُ أَنْ أَسْأَلَهُ كَمْ صَلَّى مِنْ سَجْدَةٍ
‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন আপন সওয়ারীর পিঠে নিজের পেছনে উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) কে বসিয়ে মক্কার উঁচু ভূমির দিক থেকে আসলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিলাল (রাঃ) এবং চাবি রক্ষণকারী ‘উসামান ইব্‌নু ত্বলহা। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদের পাশে উটটিকে বসালেন। অতঃপর ‘উসমান(রাঃ)-কে কা’বা গৃহের চাবি নিয়ে আসতে আদেশ করলেন। কাবা খুলে দেয়া হল এবং আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভেতরে প্রবেশ করলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন উসামা, বিলাল ও ‘উসমান (রাঃ)। দিনের দীর্ঘ সময় তিনি সেখানে অবস্থান করলেন। অতঃপর সেখান হতে বেরিয়ে এলেন। এ সময়ে লোকেরা প্রবেশ করার জন্য দৌড়িয়ে আসল। সকলের আগে ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) ভেতরে প্রবেশ করলেন এবং বিলাল (রাঃ)-কে দরজার পেছনে দাঁড়ানো দেখতে পেলেন। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন স্থানে সালাত আদায় করেছিলেন? ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) বলেন, আমি তাঁকে একথা জিজ্ঞেস করতে ভুলে গিয়েছিলাম যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কত রাক‘আত সালাত আদায় করেছিলেন?

৫৬/১২৮. অধ্যায়ঃ

রিকাব বা অনুরূপ কিছু ধরে আরোহণে সাহায্য করা।

২৯৮৯

حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كُلُّ سُلَامَى مِنْ النَّاسِ عَلَيْهِ صَدَقَةٌ كُلَّ يَوْمٍ تَطْلُعُ فِيْهِ الشَّمْسُ يَعْدِلُ بَيْنَ الِاثْنَيْنِ صَدَقَةٌ وَيُعِيْنُ الرَّجُلَ عَلَى دَابَّتِهِ فَيَحْمِلُ عَلَيْهَا أَوْ يَرْفَعُ عَلَيْهَا مَتَاعَهُ صَدَقَةٌ وَالْكَلِمَةُ الطَّيِّبَةُ صَدَقَةٌ وَكُلُّ خُطْوَةٍ يَخْطُوْهَا إِلَى الصَّلَاةِ صَدَقَةٌ وَيُمِيْطُ الأَذَى عَنْ الطَّرِيْقِ صَدَقَةٌ
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, মানুষের প্রত্যেক জোড়ার প্রতি সদকা রয়েছে, প্রতি দিন যাতে সূর্য উদিত হয় দু’জন লোকের মাঝে সুবিচার করাও সদকা, কাউকে সাহায্য করে সাওয়ারীতে আরোহণ করিয়ে দেয়া বা তার উপরে তার মালপত্র তুলে দেয়াও সদকা, ভাল কথাও সদকা, সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে পথ চলায় প্রতিটি কদমেও সদকা, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করাও সদকা।

৫৬/১২৯. অধ্যায়ঃ

কুরআন শরীফ নিয়ে শত্রু দেশে সফর করা অপছন্দনীয়।
একইভাবে মুহাম্মদ ইব্‌নু বিশর (রহঃ) ...ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) এর মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। ‘উবায়দুল্লাহ্‌ (রহঃ) এর অনুসরণকারী ইব্‌নু ইসহাকও ... ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) এর মাধ্যমে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। অবশ্য আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণ (রাঃ) শত্রুর ভূখণ্ডে সফর করেছেন এবং তাঁরা কুরআন জানতেন।

২৯৯০

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى أَنْ يُسَافَرَ بِالْقُرْآنِ إِلَى أَرْضِ الْعَدُوِّ
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআন সঙ্গে নিয়ে শত্রু-দেশে সফর করতে নিষেধ করেছেন।

৫৬/১৩০. অধ্যায়ঃ

যুদ্ধকালীন তাকবীর উচ্চারণ করা।

২৯৯১

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ صَبَّحَ النَّبِيُّ خَيْبَرَ وَقَدْ خَرَجُوْا بِالْمَسَاحِيْ عَلَى أَعْنَاقِهِمْ فَلَمَّا رَأَوْهُ قَالُوْا هَذَا مُحَمَّدٌ وَالْخَمِيْسُ مُحَمَّدٌ وَالْخَمِيْسُ فَلَجَئُوْا إِلَى الْحِصْنِ فَرَفَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَدَيْهِ وَقَالَ اللهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِيْنَ وَأَصَبْنَا حُمُرًا فَطَبَخْنَاهَا فَنَادَى مُنَادِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ يَنْهَيَانِكُمْ عَنْ لُحُومِ الْحُمُرِ فَأُكْفِئَتْ الْقُدُوْرُ بِمَا فِيْهَا تَابَعَهُ عَلِيٌّ عَنْ سُفْيَانَ رَفَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى اللهُ عَلَيْه وَسَلَّمَ يَدَيْهِ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অতি সকালে খায়বার প্রান্তরে প্রবেশ করেন। সে সময়ে ইয়াহূদীগণ কাঁধে কোদাল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। তারা যখন তাঁকে দেখতে পেল, তখন বলতে লাগল, মুহাম্মদ সেনাদলসহ আগমণ করেছে, মুহাম্মদ সেনাদলসহ আগমণ করেছে ফলে তারা দূর্গে ঢুকে পড়ল। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উভয় হাত তুলে বললেন, আল্লাহু আকবর, খায়বার ধ্বংস হোক। আমরা যখন কোন সম্প্রদায়ের অঞ্চলে অবতরণ করি, তখন সাবধান করে দেয়া লোকদের সকাল মন্দ হয়। আমরা সেখানে কিছু গাধা পেলাম। অতঃপর আমরা এগুলোর (গোশ্‌ত) রান্না করলাম। এর মধ্যে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘোষণা দানকারী ঘোষণা দিল, নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে গাধার গোশত হতে নিষেধ করেছেন। ডেকগুলো উল্টে দেয়া হল তার সামগ্রীসহ। ‘আলী সুফিয়ান সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দু’হাত উপরে উঠান বর্ণনায় ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু মুহাম্মদ (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।

৫৬/১৩১. অধ্যায়ঃ

তাকবীর পাঠে আওয়াজ উচ্চ করা।

২৯৯২

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ عَنْ أَبِيْ مُوسَى الأَشْعَرِيِّ قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَكُنَّا إِذَا أَشْرَفْنَا عَلَى وَادٍ هَلَّلْنَا وَكَبَّرْنَا ارْتَفَعَتْ أَصْوَاتُنَا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَا أَيُّهَا النَّاسُ ارْبَعُوْا عَلَى أَنْفُسِكُمْ فَإِنَّكُمْ لَا تَدْعُوْنَ أَصَمَّ وَلَا غَائِبًا إِنَّهُ مَعَكُمْ إِنَّهُ سَمِيْعٌ قَرِيْبٌ تَبَارَكَ اسْمُهُ وَتَعَالَى جَدُّهُ-
আবূ মূসা আল-আশ’আরী ( রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সফরে আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা যখন কোন উপত্যকায় আরোহণ করতাম, তখন লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার বলতাম। আর আমাদের আওয়াজ অতি উঁচু হয়ে যেত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বললেন, হে লোক সকল! তোমরা নিজেদের প্রতি সদয় হও। তোমরা তো বধির বা অনুপস্থিত কাউকে ডাকছ না। বরং তিনি তো তোমাদের সঙ্গেই আছেন, তিনি তো শ্রবণকারী ও নিকটবর্তী।

৫৬/১৩২. অধ্যায়ঃ

কোন উপত্যকায় অবতরণ করার সময় তাসবীহ পাঠ করা।

২৯৯৩

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ حُصَيْنِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كُنَّا إِذَا صَعِدْنَا كَبَّرْنَا وَإِذَا نَزَلْنَا سَبَّحْنَا
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আমরা যখন কোন উঁচু স্থানে আরোহণ করতাম, তখন তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করতাম আর যখন কোন উপত্যকায় অবতরণ করতাম, সে সময়ে সুবহানাল্লাহ্‌ বলতাম।

৫৬/১৩৩. অধ্যায়ঃ

উঁচু স্থানে আরোহণের সময় তাকবীর পাঠ করা।

২৯৯৪

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ عَدِيٍّ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ سَالِمٍ عَنْ جَابِرٍ قَالَ كُنَّا إِذَا صَعِدْنَا كَبَّرْنَا وَإِذَا تَصَوَّبْنَا سَبَّحْنَا
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আমরা যখন কোন উঁচুস্থানে আরোহণ করতাম, তখন তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করতাম আর যখন নিম্ন ভূখণ্ডে অবতরণ করতাম, সে সময়ে সুবহানাল্লাহ্‌ বলতাম।

২৯৯৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَفَلَ مِنْ الْحَجِّ أَوْ الْعُمْرَةِ وَلَا أَعْلَمُهُ إِلَّا قَالَ الْغَزْوِ يَقُوْلُ كُلَّمَا أَوْفَى عَلَى ثَنِيَّةٍ أَوْ فَدْفَدٍ كَبَّرَ ثَلَاثًا ثُمَّ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ آيِبُوْنَ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ سَاجِدُوْنَ لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ صَدَقَ اللهُ وَعْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَهَزَمَ الأَحْزَابَ وَحْدَهُ قَالَ صَالِحٌ فَقُلْتُ لَهُ أَلَمْ يَقُلْ عَبْدُ اللهِ إِنْ شَاءَ اللهُ قَالَ لَا
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন হজ্জ কিংবা ‘উমরা থেকে ফিরতেন, বর্ণনাকারী বলেন, আমি জানি না, নাকি এরূপ বলেছেন যে, যখন জিহাদ থেকে ফিরতেন, তখন তিনি ঘাঁটি অথবা প্রস্তরময় ভূমিতে পৌঁছে তিনবার আল্লাহু আকবর বলতেন। অতঃপর এ দু‘আ পাঠ করতেন , “আল্লাহ্‌ ছাড়া কোন ইলাহ নেই; তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই, কর্তৃত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই; তিনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাবান। আমরা সফর থেক প্রত্যাবর্তনকারী, গুনাহ থেকে তওবাকারী, ‘ইবাদতকারী, সিজদাকারী, আমাদের প্রতিপালকের প্রসংশাকারী। আল্লাহ্‌ তা’আলা তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন, তাঁর বান্দাহকে সাহায্য করেছেন, কাফির সৈন্যদলকে তিনি একাই পরাস্ত করেছেন।” সালেহ (রহঃ) বলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আবদুল্লাহ্‌ কি ইন শা আল্লাহ্‌ বলেননি? তিনি বললেন, না।

৫৬/১৩৪. অধ্যায়ঃ

মুসাফিরের জন্য তা-ই লিখিত হবে, যা স্বীয় আবাসে ‘আমল করত।

২৯৯৬

حَدَّثَنَا مَطَرُ بْنُ الْفَضْلِ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ هَارُوْنَ حَدَّثَنَا الْعَوَّامُ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ أَبُوْ إِسْمَاعِيْلَ السَّكْسَكِيُّ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا بُرْدَةَ وَاصْطَحَبَ هُوَ وَيَزِيْدُ بْنُ أَبِيْ كَبْشَةَ فِيْ سَفَرٍ فَكَانَ يَزِيْدُ يَصُومُ فِي السَّفَرِ فَقَالَ لَهُ أَبُوْ بُرْدَةَ سَمِعْتُ أَبَا مُوسَى مِرَارًا يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا مَرِضَ الْعَبْدُ أَوْ سَافَرَ كُتِبَ لَهُ مِثْلُ مَا كَانَ يَعْمَلُ مُقِيْمًا صَحِيْحًا
আবু ইসমাঈল আসসাক্‌সাকী থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বুরদাহ্‌-কে বলতে শুনেছি, তিনি এবং ইয়াযিদ ইব্‌নু আবূ কাবশা (রাঃ) সফরে ছিলেন। আর ইয়াযিদ (রাঃ) মুসাফির অবস্থায় রোযা রাখতেন। আবূ বুরদাহ (রাঃ) তাঁকে বললেন, আমি আবূ মুসা (আশ’আরী) (রাঃ)- কে একাধিকবার বলতে শুনেছি,তিনি বলেন, আল্লহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন বান্দা পীড়িত হয় কিংবা সফরে থাকে, তখন তাঁর জন্য তা-ই লেখা হয়, যা সে সুস্থ অবস্থায় ‘আমল করত।

৫৬/১৩৫. অধ্যায়ঃ

নিঃসঙ্গ ভ্রমণ

২৯৯৭

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ نَدَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم النَّاسَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ فَانْتَدَبَ الزُّبَيْرُ ثُمَّ نَدَبَهُمْ فَانْتَدَبَ الزُّبَيْرُ ثُمَّ نَدَبَهُمْ فَانْتَدَبَ الزُّبَيْرُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ لِكُلِّ نَبِيٍّ حَوَارِيًّا وَحَوَارِيَّ الزُّبَيْرُ قَالَ سُفْيَانُ الْحَوَارِيُّ النَّاصِرُ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খন্দকের যুদ্ধের দিন লোকদেরকে ডাক দিলেন। যুবাইর (রাঃ) সে ডাকে সাড়া দিলেন, পুনরায় তিনি লোকদেরকে ডাক দিলেন, আবারও যুবাইর (রাঃ) সে ডাকে সাড়া দিলেন। পুনরায় তিনি লোকদেরকে ডাকলেন, আবারও যুবাইর (রাঃ) সে ডাকে সাড়া দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘প্রত্যেক নবীর জন্য একজন বিশেষ সাহায্যকারী থাকে আর আমার বিশেষ সাহায্যকারী হচ্ছে যুবাইর।’ সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, হাওয়ারী সাহায্যকারী কে বলা হয়।

২৯৯৮

حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي الْوَحْدَةِ مَا أَعْلَمُ مَا سَارَ رَاكِبٌ بِلَيْلٍ وَحْدَهُ
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সুত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যদি লোকেরা একা সফরে কী ক্ষতি আছে তা জানত, যা আমি জানি, তবে কোন আরোহী রাতে একাকী সফর করত না।

৫৬/১৩৬. অধ্যায়ঃ

ভ্রমনে ত্বরা করা।
আবূ হুমাইদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি দ্রুত মদীনাহ্‌য় পৌঁছতে চাই, কাজেই যে ব্যাক্তি আমার সঙ্গে জলদি যেতে চায় সে যেন জলদি চলে।

২৯৯৯

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ هِشَامٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ قَالَ سُئِلَ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا كَانَ يَحْيَى يَقُوْلُ وَأَنَا أَسْمَعُ فَسَقَطَ عَنِّيْ عَنْ مَسِيْرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ قَالَ فَكَانَ يَسِيْرُ الْعَنَقَ فَإِذَا وَجَدَ فَجْوَةً نَصَّ وَالنَّصُّ فَوْقَ الْعَنَقِ
হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার পিতা বর্ণনা করেছেন যে, উসামা ইব্‌নু যায়দ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, বিদায় হজ্জে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কেমন গতিতে পথ চলেছিলেন। রাবী ইয়াহয়া (রাঃ) বলতেন, উরওইয়াহ (রহঃ) বলেন, “আমি শুনতেছিলাম, তবে আমার বর্ণনায় তা ছুটে গেছে। উসামা (রহঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সহজ দ্রুতগতিতে চলতেন আর যখন প্রশস্ত ফাঁকা জায়গা পেতেন, তখন দ্রুত চলতেন। নাস হচ্ছে সহজ গতির চেয়ে দ্রুততর চলা।

৩০০০

حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ زَيْدٌ هُوَ ابْنُ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ كُنْتُ مَعَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا بِطَرِيْقِ مَكَّةَ فَبَلَغَهُ عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ أَبِيْ عُبَيْدٍ شِدَّةُ وَجَعٍ فَأَسْرَعَ السَّيْرَ حَتَّى إِذَا كَانَ بَعْدَ غُرُوْبِ الشَّفَقِ ثُمَّ نَزَلَ فَصَلَّى الْمَغْرِبَ وَالْعَتَمَةَ يَجْمَعُ بَيْنَهُمَا وَقَالَ إِنِّيْ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم إِذَا جَدَّ بِهِ السَّيْرُ أَخَّرَ الْمَغْرِبَ وَجَمَعَ بَيْنَهُمَا
আসলাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মক্কার পথে ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম। পথে তাঁর নিকট সাফিয়্যাহ বিনতু আবু ‘উবাইদ (রাঃ)- এর ভীষণ অসুস্থতার সংবাদ পৌঁছে। তখন তিনি দ্রুতগতিতে চলতে থাকেন। এমনকি যখন সূর্যাস্তের পরে লালিমা কেটে গেল, তখন তিনি উট থেকে নেমে মাগরিব ও এশা সালাত একত্রে আদায় করেন। আর ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি, যখন তাঁর দ্রুত গতিতে চলার প্রয়োজন দেখা দিত, তখন তিনি মাগরিবকে বিলম্বিত করে মাগরিব ও এশার উভয় সালাত একত্রে আদায় করতেন।

No comments

Powered by Blogger.