সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "সাওম" হাদিস নং -১৮৯১ থেকে ১৯৫০

রমযানের সওম ওয়াজিব হওয়া সম্পর্কে
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “হে মু’মিনগন! তোমাদের জন্য সিয়াম ফরয করা হল, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার।” (আল-বাকারাহঃ ১৮৩)

১৮৯১

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ أَبِي سُهَيْلٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ أَنَّ أَعْرَابِيًّا جَاءَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثَائِرَ الرَّأْسِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخْبِرْنِي مَاذَا فَرَضَ اللهُ عَلَيَّ مِنْ الصَّلاَةِ فَقَالَ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسَ إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ شَيْئًا فَقَالَ أَخْبِرْنِي مَا فَرَضَ اللهُ عَلَيَّ مِنْ الصِّيَامِ فَقَالَ شَهْرَ رَمَضَانَ إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ شَيْئًا فَقَالَ أَخْبِرْنِي بِمَا فَرَضَ اللهُ عَلَيَّ مِنْ الزَّكَاةِ فَقَالَ فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم شَرَائِعَ الإِسْلاَمِ قَالَ وَالَّذِي أَكْرَمَكَ لاَ أَتَطَوَّعُ شَيْئًا وَلاَ أَنْقُصُ مِمَّا فَرَضَ اللهُ عَلَيَّ شَيْئًا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ أَوْ دَخَلَ الْجَنَّةَ إِنْ صَدَقَ
তালহা ইব্‌নু ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এলোমেলো চুলসহ একজন গ্রাম্য আরব রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলেন। অতঃপর বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাকে বলুন, আল্লাহ্‌ তা’আলা আমার উপর কত সালাত ফারয্‌ করেছেন? তিনি বললেনঃ পাঁচ (ওয়াক্ত) সালাত; তবে তুমি যদি কিছু নফল আদায় কর তা স্বতন্ত্র কথা। এরপর তিনি বললেন, বলুন, আল্লাহ্‌ তা’আলা আমার উপর কত সিয়াম ফারয্‌ করেছেন? আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ রমযান মাসের সওম; তবে তুমি যদি কিছু নফল সিয়াম আদায় কর তা হল স্বতন্ত্র কথা। এরপর তিনি বললেন, বলুন, আল্লাহ আমার উপর কী পরিমাণ যাকাত ফরয করেছেন? রাবী বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে ইসলামের বিধান জানিয়ে দিলেন। এরপর তিনি বললেন, ঐ সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য দিয়ে সম্মানিত করেছেন, আল্লাহ আমার উপর যা ফরয করেছেন, আমি এর মাঝে কিছু বাড়াব না এবং কমাবও না। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে সত্য বলে থাকলে সফলতা লাভ করল কিংবা বলেছেন, সে সত্য বলে থাকলে জান্নাত লাভ করল।

১৮৯২

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ صَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ تُرِكَ وَكَانَ عَبْدُ اللهِ لاَ يَصُومُهُ إِلاَّ أَنْ يُوَافِقَ صَوْمَهُ
ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আশূরার দিন সিয়াম পালন করেছেন এবং এ সিয়ামের জন্য আদেশও করেছেন। পরে যখন রমযানের সিয়াম ফরয হল তখন তা ছেড়ে দেওয়া হয়। ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) এ সিয়াম পালন করতেন না, তবে মাসের যে দিনগুলোতে সাধারণত সিয়াম পালন করতেন তার সাথে মিল হলে করতেন।

১৮৯৩

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জাহিলী যুগে কুরায়শগণ ‘আশূরার দিন সওম পালন করত। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- ও পরে এ সওম পালনের নির্দেশ দেন। অবশেষে রমযানের সিয়াম ফরয হলে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যার ইচ্ছা ‘আশূরার সিয়াম পালন করবে এবং যার ইচ্ছা সে সওম পালন করবে না।

৩০/. অধায়ঃ

সাওমের ফযীলত

১৮৯৪

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الصِّيَامُ جُنَّةٌ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَجْهَلْ وَإِنْ امْرُؤٌ قَاتَلَهُ أَوْ شَاتَمَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّي صَائِمٌ مَرَّتَيْنِ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ تَعَالَى مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ يَتْرُكُ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ وَشَهْوَتَهُ مِنْ أَجْلِي الصِّيَامُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সিয়াম ঢাল স্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না এবং মূর্খের মত কাজ করবে না। যদি কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে চায়, তাকে গালি দেয়, তবে সে যেন দুই বার বলে, আমি সওম পালন করছি। ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই সওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ্‌র নিকট মিসকের সুগন্ধির চাইতেও উৎকৃষ্ট, সে আমার জন্য আহার, পান ও কামাচার পরিত্যাগ করে। সিয়াম আমারই জন্য। তাই এর পুরস্কার আমি নিজেই দান করব। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশ গুণ।

৩০/. অধ্যায়ঃ

সওম (পাপের) কাফ্‌ফারা (ক্ষতিপূরণ) ।

১৮৯৫

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا جَامِعٌ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ قَالَ عُمَرُ مَنْ يَحْفَظُ حَدِيثًا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْفِتْنَةِ قَالَ حُذَيْفَةُ أَنَا سَمِعْتُهُ يَقُولُ فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَجَارِهِ تُكَفِّرُهَا الصَّلاَةُ وَالصِّيَامُ وَالصَّدَقَةُ قَالَ لَيْسَ أَسْأَلُ عَنْ ذِهِ إِنَّمَا أَسْأَلُ عَنْ الَّتِي تَمُوجُ كَمَا يَمُوجُ الْبَحْرُ قَالَ وَإِنَّ دُونَ ذَلِكَ بَابًا مُغْلَقًا قَالَ فَيُفْتَحُ أَوْ يُكْسَرُ قَالَ يُكْسَرُ قَالَ ذَاكَ أَجْدَرُ أَنْ لاَ يُغْلَقَ إِلَى يَوْمِ
الْقِيَامَةِ فَقُلْنَا لِمَسْرُوقٍ سَلْهُ أَكَانَ عُمَرُ يَعْلَمُ مَنْ الْبَابُ فَسَأَلَهُ فَقَالَ نَعَمْ كَمَا يَعْلَمُ أَنَّ دُونَ غَدٍ اللَّيْلَةَ
হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা ‘উমার (রাঃ) বললেন, ফিতনা সম্পর্কিত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর হাদীসটি কার মুখস্ত আছে? হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি যে, পরিবার, ধন-সম্পদ এবং প্রতিবেশীই মানুষের জন্য ফিতনা। সালাত, সিয়াম এবং সদকা এর কাফ্‌ফারা হয়ে যায়। ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ ফিতনা সম্পর্কে আমি প্রশ্ন করছি না, আমি তো প্রশ্ন করেছি ঐ ফিতনা সম্পর্কে, যা সমুদ্রের ঢেউয়ের ন্যায় আন্দোলিত হতে থাকবে। হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন এ ফিতনার সামনে বন্ধ দরজা আছে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ দরজা কি খুলে যাবে, না ভেঙ্গে যাবে? হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, ভেঙ্গে যাবে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তাহলে তো তা কিয়ামত পর্যন্ত বন্ধ হবে না। আমরা মাসরূক (রহঃ)-কে বললাম, হুযাইফাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করুন, ’উমার (রাঃ) কি জানতেন, কে সেই দরজা? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি এরূপ জানতেন যেরূপ কালকের দিনের পূর্বে আজকের রাত।

৩০/. অধ্যায়ঃ

সওম পালনকারীর জন্য রাইয়্যান ।

১৮৯৬

حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ عَنْ سَهْلٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ بَابًا يُقَالُ لَهُ الرَّيَّانُ يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ يُقَالُ أَيْنَ الصَّائِمُونَ فَيَقُومُونَ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ فَإِذَا دَخَلُوا أُغْلِقَ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ
সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জান্নাতের রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সওম পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেয়া হবে, সওম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে।

১৮৯৭

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ قَالَ حَدَّثَنِي مَعْنٌ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ فِي سَبِيلِ اللهِ نُودِيَ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ يَا عَبْدَ اللهِ هَذَا خَيْرٌ فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلاَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّلاَةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجِهَادِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الْجِهَادِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصِّيَامِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الرَّيَّانِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّدَقَةِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا عَلَى مَنْ دُعِيَ مِنْ تِلْكَ الأَبْوَابِ مِنْ ضَرُورَةٍ فَهَلْ يُدْعَى أَحَدٌ مِنْ تِلْكَ الأَبْوَابِ كُلِّهَا قَالَ نَعَمْ وَأَرْجُو أَنْ تَكُونَ مِنْهُمْ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে কেউ আল্লাহ্‌র পথে জোড়া জোড়া ব্যয় করবে তাকে জান্নাতের দরজাসমূহ হতে ডাকা হবে, হে আল্লাহ্‌র বান্দা! এটাই উত্তম। অতএব যে সালাত আদায়কারী, তাকে সলাতের দরজা হতে ডাকা হবে। যে মুজাহিদ, তাকে জিহাদের দরজা হতে ডাকা হবে। যে সিয়াম পালনকারী, তাকে রাইয়্যান দরজা হতে ডাকা হবে। যে সদাকাহ দানকারী, তাকে সদাকাহ্‌র দরজা হতে ডাকা হবে। এরপর আবূ বকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক, সকল দরজা হতে কাউকে ডাকার কোন প্রয়োজন নেই, তবে কি কাউকে সব দরজা হতে ডাকা হবে? আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ। আমি আশা করি তুমি তাদের মধ্যে হবে।

৩০/. অধ্যায়ঃ

রমযান বলা হবে, না রমযান মাস বলা হবে? আর যাদের মতে উভয়টি বলা যাবে ।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি রমযানে সওম পালন করবে” এবং আরো বলেছেনঃ “তোমরা রমযানের আগে সওম পালন করবে না”

১৮৯৮

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ أَبِي سُهَيْلٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا جَاءَ رَمَضَانُ فُتِحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রমযান আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

১৮৯৯

حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي أَنَسٍ مَوْلَى التَّيْمِيِّينَ أَنَّ أَبَاهُ حَدَّثَهُ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ شَهْرُ رَمَضَانَ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتْ الشَّيَاطِينُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলতেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমযান আসলে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানগুলোকে শিকলবন্দী করে দেয়া হয়।

১৯০০

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَصُومُوا وَإِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَأَفْطِرُوا فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَاقْدُرُوا لَهُ وَقَالَ غَيْرُهُ عَنْ اللَّيْثِ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ وَيُونُسُ لِهِلاَلِ رَمَضَانَ
ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা তা (চাঁদ) দেখবে তখন সওম রাখবে, আবার যখন তা দেখবে তখন ইফ্‌তার করবে। আর যদি আকাশ মেঘলা থাকে তবে সময় হিসাব করে (ত্রিশ দিন) পূর্ণ করবে। ইয়াহইয়া ইব্‌নু বুকায়ার (রহঃ) ব্যতীত অন্যরা লায়স (রহঃ) হতে ‘উকায়ল এবং ইউনুস (রহঃ) সুত্রে বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কথাটি বলেছেন রমযানের চাঁদ সম্পর্কে।

৩০/. অধ্যায়ঃ

যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে সংকল্প সহকারে সিয়াম পালন করবে।
‘আয়িশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, কিয়ামাতের দিন নিয়ত অনুযায়ীই লোকদের উঠানো হবে ।

১৯০১

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদ্‌রে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রাত জেগে ‘ইবাদাত করে, তার পিছনের সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমযানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করা হবে।

৩০/. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানে সবচেয়ে বেশী দান করতেন ।

১৯০২

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَجْوَدَ النَّاسِ بِالْخَيْرِ وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ وَكَانَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَم يَلْقَاهُ كُلَّ لَيْلَةٍ فِي رَمَضَانَ حَتَّى يَنْسَلِخَ يَعْرِضُ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْقُرْآنَ فَإِذَا لَقِيَهُ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَم كَانَ أَجْوَدَ بِالْخَيْرِ مِنْ الرِّيحِ الْمُرْسَلَةِ
ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ধন-সম্পদ ব্যয় করার ব্যাপারে সকলের চেয়ে দানশীল ছিলেন। রমযানে জিবরাঈল (আঃ) যখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করতেন, তখন তিনি আরো অধিক দান করতেন। রমযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতেই জিবরাঈল (আঃ) তাঁর সঙ্গে একবার সাক্ষাত করতেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে কুরাআন শোনাতেন। জিবরাঈল যখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করতেন তখন তিনি রহমতসহ প্রেরিত বায়ুর চেয়ে অধিক ধন-সম্পদ দান করতেন।

৩০/. অধ্যায়ঃ

যে ব্যক্তি সওম পালনের সময় মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল পরিত্যাগ করে না ।

১৯০৩

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ فَلَيْسَ للهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তাঁর এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহ্‌র কোন প্রয়োজন নেই।

৩০/. অধ্যায়ঃ

কাউকে গালি দেয়া হলে সে কি বলবে, ‘আমি তো সায়িম?’

১৯০৪

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ عَنْ أَبِي صَالِحٍ الزَّيَّاتِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ اللهُ كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ لَهُ إِلاَّ الصِّيَامَ فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ وَالصِّيَامُ جُنَّةٌ وَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَصْخَبْ فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّي امْرُؤٌ صَائِمٌ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا إِذَا أَفْطَرَ فَرِحَ وَإِذَا لَقِيَ رَبَّهُ فَرِحَ بِصَوْمِهِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেন, সওম ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তাঁর নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম আমার জন্য। তাই আমি এর প্রতিদান দেব। সিয়াম ঢাল স্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন সিয়াম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাঁকে গালি দেয় অথবা তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন সায়িম। যার কবজায় মুহাম্মাদের প্রাণ, তাঁর শপথ! অবশ্যই সায়িমের মুখের গন্ধ আল্লাহ্‌র নিকট মিস্‌কের গন্ধের চাইতেও সুগন্ধি। সায়িমের জন্য রয়েছে দু’টি খুশী যা তাঁকে খুশী করে। যখন সে ইফতার করে, সে খুশী হয় এবং যখন সে তাঁর রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সওমের বিনিময়ে আনন্দিত হবে।

৩০/১০. অধ্যায়ঃ

অবিবাহিত ব্যক্তি যে নিজের ব্যাপারে ভয় করে, তার জন্য সওম ।

১৯০৫

حَدَّثَنَا عَبْدَانُ عَنْ أَبِي حَمْزَةَ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ بَيْنَا أَنَا أَمْشِي مَعَ عَبْدِ اللهِ فَقَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَنْ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ
‘আলকামাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর সঙ্গে চলতে ছিলাম, তখন তিনি বললেন, আমরা আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম, তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চোখকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সংযত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে। সওম তার প্রবৃত্তিকে দমন করে।
আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ------ শব্দের অর্থ বিবাহ।

৩০/১১. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তিঃ যখন তোমরা চাঁদ দেখ তখন সওম আরম্ভ কর আবার যখন চাঁদ দেখ তখনই ইফতার কর ।
সেলাহ (রহঃ) ‘আম্মার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সন্দেহের দিনে সওম পালন করল সে আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নাফরমানী করল ।

১৯০৬

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَأَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ذَكَرَ رَمَضَانَ فَقَالَ لاَ تَصُومُوا حَتَّى تَرَوْا الْهِلاَلَ وَلاَ تُفْطِرُوا حَتَّى تَرَوْهُ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَاقْدُرُوا لَهُ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানের কথা আলোচনা করে বললেনঃ চাঁদ না দেখে তোমরা সওম পালন করবে না এবং চাঁদ না দেখে ইফ্‌তার করবে না। যদি মেঘাচ্ছন্ন থাকে তাহলে তার সময় (ত্রিশ দিন) পরিমাণ পূর্ণ করবে।

১৯০৭

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الشَّهْرُ تِسْعٌ وَعِشْرُونَ لَيْلَةً فَلاَ تَصُومُوا حَتَّى تَرَوْهُ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَأَكْمِلُوا الْعِدَّةَ ثَلاَثِينَ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মাস ঊনত্রিশ রাত বিশিষ্ট হয়। তাই তোমরা চাঁদ না দেখে সওম শুরু করবে না। যদি আকাশ মেঘাবৃত থাকে তাহলে তোমরা ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।

১৯০৮

حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ جَبَلَةَ بْنِ سُحَيْمٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الشَّهْرُ هَكَذَا وَهَكَذَا وَخَنَسَ الإِبْهَامَ فِي الثَّالِثَةِ
ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (দু’হাতের আঙ্গুলি তুলে ইঙ্গিত করে) বলেনঃ মাস এত এত দিনে হয় এবং তৃতীয় বার বৃদ্ধাঙ্গুলিটি বন্ধ করে নিলেন।

১৯০৯

حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ زِيَادٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوْ قَالَ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صُومُوا لِرُؤْيَتِهِ وَأَفْطِرُوا لِرُؤْيَتِهِ فَإِنْ غُبِّيَ عَلَيْكُمْ فَأَكْمِلُوا عِدَّةَ شَعْبَانَ ثَلاَثِينَ
‘আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অথবা বলেন, আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা চাঁদ দেখে সিয়াম আরম্ভ করবে এবং চাঁদ দেখে ইফ্‌তার করবে। আকাশ যদি মেঘে ঢাকা থাকে তাহলে শা’বানের গণনা ত্রিশ দিন পুরা করবে।

১৯১০

حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ صَيْفِيٍّ عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم آلَى مِنْ نِسَائِهِ شَهْرًا فَلَمَّا مَضَى تِسْعَةٌ وَعِشْرُونَ يَوْمًا غَدَا أَوْ رَاحَ فَقِيلَ لَهُ إِنَّكَ حَلَفْتَ أَنْ لاَ تَدْخُلَ شَهْرًا فَقَالَ إِنَّ الشَّهْرَ يَكُونُ تِسْعَةً وَعِشْرِينَ يَوْمًا
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাসের মত তাঁর স্ত্রীদের সাথে ঈলা করলেন। ঊনত্রিশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর সকালে বা সন্ধ্যায় তিনি তাঁদের নিকট গমন করলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি তো এক মাস পর্যন্ত না আসার শপথ করেছিলেন? তিনি বললেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে।

১৯১১

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ آلَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ نِسَائِهِ وَكَانَتْ انْفَكَّتْ رِجْلُهُ فَأَقَامَ فِي مَشْرُبَةٍ تِسْعًا وَعِشْرِينَ لَيْلَةً ثُمَّ نَزَلَ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم آلَيْتَ شَهْرًا فَقَالَ إِنَّ الشَّهْرَ يَكُونُ تِسْعًا وَعِشْرِينَ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের সাথে ঈলা করলেন। এ সময় তাঁর পা মচকে গিয়েছিল। তখন তিনি উপরের কামরায় ঊনত্রিশ রাত অবস্থান করেন। এরপর তিনি নেমে আসলে সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি তো এক মাসের জন্য ঈলা করেছিলেন। তিনি বললেনঃ মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে।

৩০/১২. অধ্যায়ঃ

ঈদের দুই মাস কম হয় না ।
আবূ আবদুল্লাহ বলেন, ইসহাক বলেছেন, যদি কম (ঊনত্রিশ) হয় সেটাই পূর্ণ হিসেবে গণ্য । আর মুহাম্মাদ বলেন, (একই বছরে) উভয় ঈদ অপূর্ণ (ঊনত্রিশদিনের) মাস হবে না ।

১৯১২

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ قَالَ سَمِعْتُ إِسْحَاقَ بْنَ سُوَيْدٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَحَدَّثَنِي مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ أَبِي بَكْرَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ شَهْرَانِ لاَ يَنْقُصَانِ شَهْرَا عِيدٍ رَمَضَانُ وَذُو الْحَجَّةِ
‘আবদুর রহমান ইব্‌নু আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দু’টি মাস কম হয় না। তা হল ঈদের দু’মাস- রমযানের মাস ও যুলহাজ্জের মাস। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেছেন, আহমাদ ইব্‌নু হাম্বল (রহঃ) বলেন, রমযান ঘাটতি হলে যুলহাজ্জ পূর্ণ হবে। আর যুলহাজ্জ ঘাটতি হলে রমযান পূর্ণ হবে। আবুল হাসান (রহঃ) বলেন, ইসহাক ইব্‌নু রাহওয়াই (রহঃ) বলেন, ফাযীলতের দিক হতে এ দু’ মাসে কোন ঘাটতি নেই, মাস ঊনত্রিশ দিনে হোক বা ত্রিশ দিনে হোক।

৩০/১৩. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ আমরা লিপিবদ্ধ করি না এবং হিসাবও করি না ।

১৯১৩

حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا الأَسْوَدُ بْنُ قَيْسٍ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَمْرٍو أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ إِنَّا أُمَّةٌ أُمِّيَّةٌ لاَ نَكْتُبُ وَلاَ نَحْسُبُ الشَّهْرُ هَكَذَا وَهَكَذَا يَعْنِي مَرَّةً تِسْعَةً وَعِشْرِينَ وَمَرَّةً ثَلاَثِينَ
ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমরা উম্মী জাতি। আমরা লিখি না এবং হিসাবও করি না। মাস এরূপ অর্থাৎ কখনও ঊনত্রিশ দিনের আবার কখনো ত্রিশ দিনের হয়ে থাকে।

৩০/১৪. অধ্যায়ঃ

রমযানের একদিন বা দু’দিন পূর্বে সওম আরম্ভ করবে না ।

১৯১৪

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَتَقَدَّمَنَّ أَحَدُكُمْ رَمَضَانَ بِصَوْمِ يَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ رَجُلٌ كَانَ يَصُومُ صَوْمَهُ فَلْيَصُمْ ذَلِكَ الْيَوْمَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কেউ রমযানের একদিন কিংবা দু’দিন আগে হতে সওম শুরু করবে না। তবে কেউ যদি এ সময় সিয়াম পালনে অভ্যস্ত থাকে তাহলে সে সেদিন সওম পালন করতে পারবে।

৩০/১৫. অধায়ঃ

মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে সিয়ামের রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা । তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক । আল্লাহ্ জানতেন যে, তোমরা নিজেদের সাথে প্রতারণা করছিলে । সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিলেন । অতএব, এখন থেকে তোমরা তাদের সাথে সহবাস করতে পার এবং আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর ।” (আল-বাকারাহ্ : ১৮৭)

১৯১৫

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى عَنْ إِسْرَائِيلَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ الْبَرَاءِ قَالَ كَانَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ إِذَا كَانَ الرَّجُلُ صَائِمًا فَحَضَرَ الإِفْطَارُ فَنَامَ قَبْلَ أَنْ يُفْطِرَ لَمْ يَأْكُلْ لَيْلَتَهُ وَلاَ يَوْمَهُ حَتَّى يُمْسِيَ وَإِنَّ قَيْسَ بْنَ صِرْمَةَ الأَنْصَارِيَّ كَانَ صَائِمًا فَلَمَّا حَضَرَ الإِفْطَارُ أَتَى امْرَأَتَهُ فَقَالَ لَهَا أَعِنْدَكِ طَعَامٌ قَالَتْ لاَ وَلَكِنْ أَنْطَلِقُ فَأَطْلُبُ لَكَ وَكَانَ يَوْمَهُ يَعْمَلُ فَغَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ فَجَاءَتْهُ امْرَأَتُهُ فَلَمَّا رَأَتْهُ قَالَتْ خَيْبَةً لَكَ فَلَمَّا انْتَصَفَ النَّهَارُ غُشِيَ عَلَيْهِ فَذُكِرَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ {أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَائِكُمْ} فَفَرِحُوا بِهَا فَرَحًا شَدِيدًا وَنَزَلَتْ {وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمْ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنْ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ}
বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণের অবস্থা এই ছিল যে, যদি তাঁদের কেউ সওম পালন করতেন তাহলে ইফ্‌তারের সময় হলে ইফ্‌তার না করে নিদ্রা গেলে সে রাত্রে এবং পরের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কিছুই খেতেন না। কায়স ইব্‌নু সিরমা আনসারী (রাঃ) সওম করেছিলেন। ইফ্‌তারের সময় তিনি তাঁর স্ত্রীর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কিছু খাবার আছে কি? তিনি বলেলন, না, তবে আমি যাচ্ছি, দেখি আপনার জন্য কিছু খোঁজ করে আনি। তিনি দিনে কাজে নিয়োজিত থাকতেন। তাই ঘুমে তাঁর দু’চোখ বুজে গেল। এরপর তাঁর স্ত্রী এসে যখন তাঁকে দেখলেন, তখন তাঁকে বললেন, হায়, তুমি বঞ্চিত হয়ে গেলে ! পরদিন দুপুর হলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। এ ঘটনাটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উল্লেখ করা হলে কুরআনের এ আয়াত অবতীর্ণ হয়- “সিয়ামের রাতে তোমাদের স্ত্রী সম্ভোগ হালাল করা হয়েছে”- (আল-বাকারাহ্‌: ১৮৭)। এর হুকুম সম্বন্ধে অবহিত হয়ে সাহাবীগণ খুবই খুশি হলেন। এরপর নাযিল হলঃ “আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা পরিষ্কার দেখা যায়”- (আল-বাকারাহ্‌: ১৮৭)।

৩০/১৬. অধ্যায়ঃ

মহান আল্লাহর বাণীঃ “আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না কালো রেখা ভোরের সাদা রেখা পরিষ্কার দেখা যায় । তারপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত”- (আল-বাকারাহ্: ১৮৭) । এ বিষয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বারা (রাঃ) হাদীস বর্ণনা করেছেন ।

১৯১৬

حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ قَالَ أَخْبَرَنِي حُصَيْنُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمْ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنْ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ} عَمَدْتُ إِلَى عِقَالٍ أَسْوَدَ وَإِلَى عِقَالٍ أَبْيَضَ فَجَعَلْتُهُمَا تَحْتَ وِسَادَتِي فَجَعَلْتُ أَنْظُرُ فِي اللَّيْلِ فَلاَ يَسْتَبِينُ لِي فَغَدَوْتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْتُ لَهُ ذَلِكَ فَقَالَ إِنَّمَا ذَلِكَ سَوَادُ اللَّيْلِ وَبَيَاضُ النَّهَارِ
‘আদী ইব্‌নু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এই আয়াত নাযিল হলোঃ “তোমারা পানাহার কর (রাত্রির) কাল রেখা হতে (ভোরের) সাদা রেখা যতক্ষণ স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়” তখন আমি একটি কাল এবং একটি সাদা রশি নিলাম এবং উভয়টিকে আমার বালিশের নিচে রেখে দিলাম। রাতে আমি এগুলোর দিকে বারবার তাকাতে থাকি। কিন্তু আমার নিকট পার্থক্য প্রকাশিত হলো না। তাই সকালেই আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গিয়ে এ বিষয় বললাম। তিনি বললেনঃ এতো রাতের আঁধার এবং দিনের আলো।

১৯১৭

حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ ح حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ مُحَمَّدُ بْنُ مُطَرِّفٍ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ أُنْزِلَتْ {وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمْ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنْ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ} وَلَمْ يَنْزِلْ {مِنْ الْفَجْرِ} فَكَانَ رِجَالٌ إِذَا أَرَادُوا الصَّوْمَ رَبَطَ أَحَدُهُمْ فِي رِجْلِهِ الْخَيْطَ الأَبْيَضَ وَالْخَيْطَ الأَسْوَدَ وَلَمْ يَزَلْ يَأْكُلُ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَهُ رُؤْيَتُهُمَا فَأَنْزَلَ اللهُ بَعْدُ {مِنْ الْفَجْرِ} فَعَلِمُوا أَنَّهُ إِنَّمَا يَعْنِي اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ
সাহল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এই আয়াত নাযিল হলঃ “তোমরা পানাহার কর, যতক্ষণ কাল রেখা হতে সাদা রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়।” কিন্তু তখনো ----- কথাটি নাযিল হয়নি। তখন সওম পালন করতে ইচ্ছুক লোকেরা নিজেদের দুই পায়ে একটি কাল এবং একটি সাদা সুতলি বেঁধে নিতেন এবং সাদা কাল এই দু’টির মধ্যে পার্থক্য না দেখা পর্যন্ত তাঁরা পানাহার করতে থাকতেন। এরপর আল্লাহ্‌ তা’আলা ------ শব্দটি নাযিল করলে সকলেই বুঝতে পারলেন যে, এ দ্বারা উদ্দেশ্য হল রাত (-এর আঁধার) এবং দিন (-এর আলো)।

৩০/১৭. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর বাণীঃ বিলালের আযান তোমাদের সাহরী হতে যেন বিরত না রাখে ।

১৯১৮

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ عَنْ أَبِي أُسَامَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَالْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ بِلاَلاً كَانَ يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُؤَذِّنَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ فَإِنَّهُ لاَ يُؤَذِّنُ حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বিলাল (রাঃ) রাতে আযান দিতেন। তাই আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেনঃ ইব্‌নু উম্মু মাকতূম (রাঃ) আযান না দেয়া পর্যন্ত তোমরা পানাহার কর। কেননা ফাজর না হওয়া পর্যন্ত সে আযান দেয় না।

১৯১৯

. قَالَ الْقَاسِمُ وَلَمْ يَكُنْ بَيْنَ أَذَانِهِمَا إِلاَّ أَنْ يَرْقَى ذَا وَيَنْزِلَ ذَا
কাসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এদের উভয়ের আযানের মাঝে শুধু এতটুকু ব্যবধান ছিল যে, একজন নামতেন এবং অন্যজন উঠতেন।

৩০/১৮. অধ্যায়ঃ

(সময়ের) শেষভাগে সাহরী খাওয়া ।

১৯২০

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ أَبِي حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ كُنْتُ أَتَسَحَّرُ فِي أَهْلِي ثُمَّ تَكُونُ سُرْعَتِي أَنْ أُدْرِكَ السُّجُودَ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
সাহল ইব্‌নু ‘সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার পরিবার-পরিজনের মাঝে সাহরী খেতাম। এরপর আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সালাতে অংশ গ্রহণ করার জন্য জলদি করতাম।

৩০/১৯. অধ্যায়ঃ

সাহরী ও ফাজরের সলাতের মধ্যে সময়ের পরিমাণ কত?

১৯২১

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ قَالَ تَسَحَّرْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ قُلْتُ كَمْ كَانَ بَيْنَ الأَذَانِ وَالسَّحُورِ قَالَ قَدْرُ خَمْسِينَ آيَةً
যায়দ ইব্‌নু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে সাহরী খাই এরপর তিনি সলাতের জন্য দাঁড়ান। বর্ণনাকারী বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, আযান ও সাহরীর মাঝে কতটুকু ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, পঞ্চাশ আয়াত (পাঠ করা) পরিমাণ।

৩০/২০. অধ্যায়ঃ

সাহরীতে বারকাত রয়েছে তবে তা ওয়াজিব নয় ।
কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণ ক্রমাগতভাবে সওম পালন করেছেন কিন্তু সেখানে সাহরীর কোন উল্লেখ নেই ।

১৯২২

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَاصَلَ فَوَاصَلَ النَّاسُ فَشَقَّ عَلَيْهِمْ فَنَهَاهُمْ قَالُوا إِنَّكَ تُوَاصِلُ قَالَ لَسْتُ كَهَيْئَتِكُمْ إِنِّي أَظَلُّ أُطْعَمُ وَأُسْقَى
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটানা সওম পালন করতে থাকলে লোকেরাও একটানা সওম পালন করতে শুরু করে। এ কাজ তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের নিষেধ করলেন। তারা বলল, আপনি যে একনাগাড়ে সওম পালন করছেন? তিনি বললেনঃ আমি তো তোমাদের মত নই। আমাকে খাওয়ানো হয় ও পান করানো হয়।

১৯২৩

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ صُهَيْبٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم تَسَحَّرُوا فَإِنَّ فِي السَّحُورِ بَرَكَةً
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাহরী খাও। কেননা সাহরীতে বরকত রয়েছে।

৩০/২১. অধ্যায়ঃ

কেউ যদি দিনের বেলা সওমের নিয়ত করে ।
উম্মু দারদা (রাঃ) বলেন, আবুদ-দারদা (রাঃ) তাঁকে এসে জিজ্ঞেস করতেন, তোমাদের কাছে কিছু খাবার আছে? আমরা যদি বলতাম, নেই, তাহলে তিনি বলতেন, আজ সওম পালন করব । আবূ তালহা, আবূ হুরায়রা, ইব্‌নু আব্বাস এবং হুযায়ফা (রাঃ) অনুরূপ করতেন ।

১৯২৪

حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ رَجُلاً يُنَادِي فِي النَّاسِ يَوْمَ عَاشُورَاءَ إِنَّ مَنْ أَكَلَ فَلْيُتِمَّ أَوْ فَلْيَصُمْ وَمَنْ لَمْ يَأْكُلْ فَلاَ يَأْكُلْ
সালমা ইব্‌নু আকওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আশূরার দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে এ বলে লোকদের মধ্যে ঘোষণা দেয়ার জন্য পাঠালেন যে, যে ব্যক্তি খেয়ে ফেলেছে সে যেন পূর্ণ করে নেয় অথবা বলেছেন, সে যেন সওম আদায় করে নেয় আর যে এখনো খায়নি সে যেন আর না খায়।

৩০/২২. অধ্যায়ঃ

নাপাক অবস্থায় সওম পালনকারীর সকাল হওয়া ।

১৯২৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ سُمَيٍّ مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بنِ الحَارِثِ بْنِ هِشَامِ بْنِ المُغِيرَةِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ قَالَ كُنْتُ أَنَا وَأَبِي حِينَ دَخَلْنَا عَلَى عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ ح و حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّ أَبَاهُ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ أَخْبَرَ مَرْوَانَ أَنَّ عَائِشَةَ وَأُمَّ سَلَمَةَ أَخْبَرَتَاهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُدْرِكُهُ الْفَجْرُ وَهُوَ جُنُبٌ مِنْ أَهْلِهِ ثُمَّ يَغْتَسِلُ وَيَصُومُ وَقَالَ مَرْوَانُ لِعَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ أُقْسِمُ بِاللهِ لَتُقَرِّعَنَّ بِهَا أَبَا هُرَيْرَةَ وَمَرْوَانُ يَوْمَئِذٍ عَلَى الْمَدِينَةِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ فَكَرِهَ ذَلِكَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ ثُمَّ قُدِّرَ لَنَا أَنْ نَجْتَمِعَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ وَكَانَتْ لأَبِي هُرَيْرَةَ هُنَالِكَ أَرْضٌ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ لأَبِي هُرَيْرَةَ إِنِّي ذَاكِرٌ لَكَ أَمْرًا وَلَوْلاَ مَرْوَانُ أَقْسَمَ عَلَيَّ فِيهِ لَمْ أَذْكُرْهُ لَكَ فَذَكَرَ قَوْلَ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ فَقَالَ كَذَلِكَ حَدَّثَنِي الْفَضْلُ بْنُ عَبَّاسٍ وَهُنَّ أَعْلَمُ وَقَالَ هَمَّامٌ وَابْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ كَانَ النَّبِيُّ يَأْمُرُ بِالْفِطْرِ وَالأَوَّلُ أَسْنَدُ
আবূ বাকর ইব্‌নু আব্দুর রাহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এবং আমার পিতা আয়িশাহ (রাঃ) এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ) এর নিকট গেলাম। (অপর বর্ণনায়) আবুল ইয়ামান (রহঃ)... মারওয়ান (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, আয়িশাহ (রাঃ) এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ) তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, নিজ স্ত্রীর সাথে মিলনজনিত জুনূবী অবস্থায় আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর ফাজরের সময় হয়ে যেত। তখন তিনি গোসল করতেন এবং সওম পালন করতেন। মারওয়ান (রহঃ) ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু হারিস (রহঃ)-কে বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ করে বলছি, এ হাদীস শুনিয়ে তুমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে শঙ্কিত করে দিবে। এ সময় মারওয়ান (রহঃ) মাদীনার গভর্নর ছিলেন। আবূ বাকর (রহঃ) বলেন, মারওয়ান এর কথা আবদুর রাহমান (রহঃ) পছন্দ করেননি। রাবী বলেন, এরপর ভাগ্যক্রমে আমরা যুল-হুলাইফাতে একত্রিত হই। সেখানে আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর একখণ্ড জমি ছিল। ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বললেন, আমি আপনার নিকট একটি কথা বলতে চাই, মারওয়ান যদি এ বিষয়টি আমাকে কসম দিয়ে না বলতেন, তা হলে আমি তা আপনার সঙ্গে আলোচনা করতাম না। অতঃপর তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ) ও উম্মু সালামাহ (রাঃ) এর বর্ণিত উক্তিটি উল্লেখ করলেন। ফায্‌ল ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) অনুরূপ একটি হাদীস আমাকে শুনিয়েছেন এবং এ বিষয়ে তিনি সর্বাধিক অবগত। হাম্মাম (রহঃ) এবং ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, এরূপ ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওম পরিত্যাগ করে খাওয়ার হুকুম দিতেন। প্রথমোক্ত হাদীসটি সনদের দিক হতে বিশুদ্ধ।

১৯২৬

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ سُمَيٍّ مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بنِ الحَارِثِ بْنِ هِشَامِ بْنِ المُغِيرَةِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ قَالَ كُنْتُ أَنَا وَأَبِي حِينَ دَخَلْنَا عَلَى عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ ح و حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّ أَبَاهُ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ أَخْبَرَ مَرْوَانَ أَنَّ عَائِشَةَ وَأُمَّ سَلَمَةَ أَخْبَرَتَاهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُدْرِكُهُ الْفَجْرُ وَهُوَ جُنُبٌ مِنْ أَهْلِهِ ثُمَّ يَغْتَسِلُ وَيَصُومُ وَقَالَ مَرْوَانُ لِعَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ أُقْسِمُ بِاللهِ لَتُقَرِّعَنَّ بِهَا أَبَا هُرَيْرَةَ وَمَرْوَانُ يَوْمَئِذٍ عَلَى الْمَدِينَةِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ فَكَرِهَ ذَلِكَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ ثُمَّ قُدِّرَ لَنَا أَنْ نَجْتَمِعَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ وَكَانَتْ لأَبِي هُرَيْرَةَ هُنَالِكَ أَرْضٌ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ لأَبِي هُرَيْرَةَ إِنِّي ذَاكِرٌ لَكَ أَمْرًا وَلَوْلاَ مَرْوَانُ أَقْسَمَ عَلَيَّ فِيهِ لَمْ أَذْكُرْهُ لَكَ فَذَكَرَ قَوْلَ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ فَقَالَ كَذَلِكَ حَدَّثَنِي الْفَضْلُ بْنُ عَبَّاسٍ وَهُنَّ أَعْلَمُ وَقَالَ هَمَّامٌ وَابْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ كَانَ النَّبِيُّ يَأْمُرُ بِالْفِطْرِ وَالأَوَّلُ أَسْنَدُ
আবূ বাকর ইব্‌নু আব্দুর রাহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এবং আমার পিতা আয়িশাহ (রাঃ) এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ) এর নিকট গেলাম। (অপর বর্ণনায়) আবুল ইয়ামান (রহঃ)... মারওয়ান (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, আয়িশাহ (রাঃ) এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ) তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, নিজ স্ত্রীর সাথে মিলনজনিত জুনূবী অবস্থায় আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর ফাজরের সময় হয়ে যেত। তখন তিনি গোসল করতেন এবং সওম পালন করতেন। মারওয়ান (রহঃ) ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু হারিস (রহঃ)-কে বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ করে বলছি, এ হাদীস শুনিয়ে তুমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে শঙ্কিত করে দিবে। এ সময় মারওয়ান (রহঃ) মাদীনার গভর্নর ছিলেন। আবূ বাকর (রহঃ) বলেন, মারওয়ান এর কথা আবদুর রাহমান (রহঃ) পছন্দ করেননি। রাবী বলেন, এরপর ভাগ্যক্রমে আমরা যুল-হুলাইফাতে একত্রিত হই। সেখানে আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর একখণ্ড জমি ছিল। ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বললেন, আমি আপনার নিকট একটি কথা বলতে চাই, মারওয়ান যদি এ বিষয়টি আমাকে কসম দিয়ে না বলতেন, তা হলে আমি তা আপনার সঙ্গে আলোচনা করতাম না। অতঃপর তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ) ও উম্মু সালামাহ (রাঃ) এর বর্ণিত উক্তিটি উল্লেখ করলেন। ফায্‌ল ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) অনুরূপ একটি হাদীস আমাকে শুনিয়েছেন এবং এ বিষয়ে তিনি সর্বাধিক অবগত। হাম্মাম (রহঃ) এবং ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, এরূপ ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওম পরিত্যাগ করে খাওয়ার হুকুম দিতেন। প্রথমোক্ত হাদীসটি সনদের দিক হতে বিশুদ্ধ।

৩০/২৩. অধ্যায়ঃ

সায়িম কর্তৃক স্ত্রীকে স্পর্শ করা ।
আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, সওম পালনকারীর জন্য তার স্ত্রীর লজ্জাস্থান হারাম ।

১৯২৭

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ قَالَ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ الْحَكَمِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُقَبِّلُ وَيُبَاشِرُ وَهُوَ صَائِمٌ وَكَانَ أَمْلَكَكُمْ لإِرْبِهِ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওমের অবস্থায় চুমু খেতেন এবং গায়ে গা লাগাতেন। তবে তিনি তাঁর প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে তোমাদের চেয়ে অধিক সক্ষম ছিলেন।

ইব্‌ন ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন ,
اِربٌ মানে হাজত বা চাহিদা। তাউস (রহঃ) বলেন, غَيرَ اُولِي الاَربَةِ মানে বোধহীন , যার মেয়েদের প্রতি কোন খাহিশ নেই।

৩০/২৪. অধ্যায়ঃ

সায়িমের চুম্বন দেয়া ।
জাবির ইব্‌নু যায়দ (রহঃ) বলেন, (নারীদের দিকে) তাকালে যদি বীর্যপাত ঘটে, তাহলেও সওম পূর্ণ করবে ।

১৯২৮

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ هِشَامٍ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح وحَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ إِنْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَيُقَبِّلُ بَعْضَ أَزْوَاجِهِ وَهُوَ صَائِمٌ ثُمَّ ضَحِكَتْ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সায়িম অবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কোন কোন স্ত্রীকে চুমু খেতেন। (এ কথা বলে) ‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) হেসে দিলেন।

১৯২৯

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ هِشَامِ بْنِ أَبِي عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ زَيْنَبَ ابْنَةِ أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ أُمِّهَا قَالَتْ بَيْنَمَا أَنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ فِي الْخَمِيلَةِ إِذْ حِضْتُ فَانْسَلَلْتُ فَأَخَذْتُ ثِيَابَ حِيضَتِي فَقَالَ مَا لَكِ أَنَفِسْتِ قُلْتُ نَعَمْ فَدَخَلْتُ مَعَهُ فِي الْخَمِيلَةِ وَكَانَتْ هِيَ وَرَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَغْتَسِلاَنِ مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ وَكَانَ يُقَبِّلُهَا وَهُوَ صَائِمٌ
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একই চাদরে আমি ছিলাম। এমন সময় আমার ঋতু শুরু হল। তখন আমি আমার হায়যের কাপড় পরিধান করলাম। তিনি বললেনঃ তোমার কী হলো? তোমার কি ঋতু দেখা দিয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ; অতঃপর আমি আবার তাঁর সঙ্গে চাদরের ভিতর ঢুকে পড়লাম। তিনি এবং আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই পাত্র হতে গোসল করতেন এবং সায়িম অবস্থায় আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে চুমু দিতেন।

৩০/২৫. অধ্যায়ঃ

সায়িমের গোসল করা ।
সওমরত অবস্থায় ইব্‌নু উমার (রাঃ) একটি কাপড় ভিজালেন এরপর তা গায়ে দেয়া হলো । সওমরত অবস্থায় শাবী (রহঃ) গোসলখানায় প্রবেশ করেছেন । ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) বলেন, হাঁড়ি হতে কিছু বা অন্য কোন জিনিস চেটে স্বাদ দেখায় দোষ নেই । হাসান (রহঃ) বলেন, সওম পালনকারীর কুলি করা এবং ঠাণ্ডা লাগান দূষণীয় নয় । ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ সওম পালন করলে সে যেন সকালে তেল লাগায় এবং চুল আঁচড়িয়ে নেয় । আনাস (রাঃ) বলেন, আমার একটি হাউস আছে, আমি সায়িম অবস্থায় তাতে প্রবেশ করি । নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত যে, তিনি সায়িম অবস্থায় মিস্ওয়াক করতেন । ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) সায়িম অবস্থায় দিনের প্রথমভাগে এবং শেষভাগে মিস্ওয়াক করতেন । আত্বা (রহঃ) বলেন, থুথু গিলে ফেললে সওম ভঙ্গ হয়েছে বলা যায় না । ইব্‌নু সীরীন (রহঃ) বলেন, কাঁচা মিস্ওয়াক ব্যবহারে কোন দোষ নেই । প্রশ্ন করা হল, কাঁচা মিস্ওয়াকের তো স্বাদ রয়েছে? তিনি বলেন, পানিরও তো স্বাদ আছে, অথচ এ পানি দিয়েই তুমি কুলি কর । আনাস (রাঃ), হাসান (রহঃ) এবং ইবরাহীম (রহঃ) সায়িমের সুরমা ব্যবহারে কোন দোষ মনে করতেন না ।

১৯৩০

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ وَأَبِي بَكْرٍ قَالَتْ عَائِشَةُ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُدْرِكُهُ الْفَجْرُ فِي رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ حُلْمٍ فَيَغْتَسِلُ وَيَصُومُ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রমযান মাসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভোর হয়ে যেত ইহতিলাম (স্বপ্নদোষ) ব্যতিত (জুনুবী অবস্থায়)। তখন তিনি গোসল করতেন এবং সওম পালন করতেন।

১৯৩১

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ سُمَيٍّ مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بنِ الحَارِثِ بْنِ هِشَامِ بْنِ المُغِيرَةِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ كُنْتُ أَنَا وَأَبِي فَذَهَبْتُ مَعَهُ حَتَّى دَخَلْنَا عَلَى عَائِشَةَ قَالَتْ أَشْهَدُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنْ كَانَ لَيُصْبِحُ جُنُبًا مِنْ جِمَاعٍ غَيْرِ احْتِلاَمٍ
আবূ বাকর ইব্‌নু আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার পিতার সঙ্গে রওয়ানা হয়ে ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর নিকট পৌঁছলাম। তিনি বললেন, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি, তিনি ইহতিলাম ব্যতীত স্ত্রী সহবাসের কারণে জুনুবী অবস্থায় সকাল পর্যন্ত থেকেছেন এবং এরপর সওম পালন করেছেন।

১৯৩২

ثُمَّ يَصُومُهُ ثُمَّ دَخَلْنَا عَلَى أُمِّ سَلَمَةَ فَقَالَتْ مِثْلَ ذَلِكَ
আবূ বাকর ইব্‌নু আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অতঃপর আমরা উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। তিনিও অনুরূপ কথাই বললেন।

৩০/২৬. অধ্যায়ঃ

সায়িম ভুলবশতঃ কিছু খেলে বা পান করে ফেললে ।
আত্বা (রহঃ) বলেন, নাকে পানি দিতে গিয়ে যদি তা কণ্ঠনালীতে ঢুকে যায়, আর সে ফিরাতে সক্ষম না হয় তা হলে দোষ নেই । হাসান (রহঃ) বলেন, সায়িম ব্যক্তির কণ্ঠনালীতে মাছি ঢুকে পড়লে তার কিছু করতে হবে না । হাসান এবং মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, সায়িম ব্যক্তি যদি ভুলবশতঃ স্ত্রী সহবাস করে ফেলে, তবে তার কিছু করতে হবে না ।

১৯৩৩

حَدَّثَنَا عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا ابْنُ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا نَسِيَ فَأَكَلَ وَشَرِبَ فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ فَإِنَّمَا أَطْعَمَهُ اللهُ وَسَقَاهُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সওম পালনকারী ভুলক্রমে যদি আহার করে বা পান করে ফেলে, তাহলে সে যেন তার সওম পুরা করে নেয়। কেননা আল্লাহ্‌ই তাকে পানাহার করিয়েছেন।

৩০/২৭. অধ্যায়ঃ

সায়িমের জন্য কাঁচা বা শুকনো দাঁতন ব্যবহার করা ।
আমির ইব্‌নু রাবী’আহ (রাঃ) হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সায়িম অবস্থায় অসংখ্য বার মিসওয়াক করতে দেখেছি । আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমার উম্মাতের জন্য যদি কষ্টকর মনে না করতাম তাহলে প্রতিবার উযুর সময়ই আমি তাদের মিসওয়াকের নির্দেশ দিতাম । জাবির (রাঃ) এবং যায়েদ ইব্‌নু খালিদ (রাঃ)-এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে এবং তিনি সায়িম এবং যে সায়িম নয়, তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করেননি । ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, মিসওয়াক করায় রয়েছে মুখের পবিত্রতা ও আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি । ‘আত্বা (রহঃ) এবং কাতাদাহ (রহঃ) বলেছেন, সায়িম তার মুখের থুথু গিলে ফেলতে পারে ।

১৯৩৪

حَدَّثَنَا عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ قَالَ حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ حُمْرَانَ رَأَيْتُ عُثْمَانَ تَوَضَّأَ فَأَفْرَغَ عَلَى يَدَيْهِ ثَلاَثًا ثُمَّ تَمَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا ثُمَّ غَسَلَ يَدَهُ الْيُمْنَى إِلَى الْمَرْفِقِ ثَلاَثًا ثُمَّ غَسَلَ يَدَهُ الْيُسْرَى إِلَى الْمَرْفِقِ ثَلاَثًا ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَهُ الْيُمْنَى ثَلاَثًا ثُمَّ الْيُسْرَى ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَوَضَّأَ نَحْوَ وَضُوئِي هَذَا ثُمَّ قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ لاَ يُحَدِّثُ نَفْسَهُ فِيهِمَا بِشَيْءٍ إِلاَّ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
হুমরান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উসমান (রাঃ)-কে উযূ করতে দেখেছি। তিনি তিনবার হাতের উপর পানি ঢাললেন। এরপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন। অতঃপর তিনবার চেহারা (মুখমণ্ডল) ধুলেন। এরপর ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন এবং বামহাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। এরপর তিনি মাথা মাসাহ করলেন। অতঃপর ডান পা তিনবার ধুলেন অতঃপর বাম পা তিনবার ধুলেন। এরপর বললেন, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে উযূ করতে দেখেছি আমার এ উযূর মতই। এরপর তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার এ উযূর মত উযূ করে দু’রাক’আত সালাত আদায় করবে এবং এতে মনে মনে কোন কিছুর চিন্তা-ভাবনায় লিপ্ত হবে না, তার অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

৩০/২৮. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর বাণীঃ যখন উযূ করবে তখন নাকের ছিদ্র দিয়ে পানি টেনে নিবে ।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সায়িম এবং সায়িম নয়, তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করেননি । হাসান (রহঃ) বলেন, সায়িমের জন্য নাকে ঔষধ ব্যবহার করায় দোষ নেই যদি তা কণ্ঠনালীতে না পৌঁছে এবং সে সুরমা ব্যবহার করতে পারবে । ‘আত্বা (রহঃ) বলেন, কুলি করে মুখের পানি ফেলে দেয়ার পর থুথু এবং মুখের অবশিষ্ট পানি গিলে ফেলায় কোন ক্ষতি নেই এবং সায়িম গোন্দ (আঠা) চিবাবে না । গোন্দ চিবিয়ে যদি কেউ থুথু গিলে ফেলে, তা হলে তার সওম নষ্ট হয়ে যাবে, আমি এ কথা বলছি না, তবে এরূপ করা হতে নিষেধ করা উচিত ।

৩০/২৯. অধ্যায়ঃ

রমযানে যৌন মিলন করা
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে একটি মারফূ হাদীসে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি ওযর এবং রোগ ব্যতীত রমযানের একটি সওম ভেঙ্গে ফেলল, তার সারা জীবনের সওমের দ্বারাও এ কাযা আদায় হবে না, যদিও সে সারা জীবন সওম পালন করে । ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ)-ও অনুরূপ কথাই বলেছেন । সা’ঈদ ইব্‌নু মুসায়্যাব, শা’বী, ইব্‌নু যুবায়র, ইব্রাহীম, কাতাদাহ এবং হাম্মাদ (রহঃ) বলেছেন, তার স্থলে একদিন কাযা করবে ।

১৯৩৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُنِيرٍ سَمِعَ يَزِيدَ بْنَ هَارُونَ حَدَّثَنَا يَحْيَى هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ بْنَ الْقَاسِمِ أَخْبَرَهُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرِ بْنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ بْنِ خُوَيْلِدٍ عَنْ عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَمِعَ عَائِشَةَ تَقُولُ إِنَّ رَجُلاً أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّهُ احْتَرَقَ قَالَ مَا لَكَ قَالَ أَصَبْتُ أَهْلِي فِي رَمَضَانَ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمِكْتَلٍ يُدْعَى الْعَرَقَ فَقَالَ أَيْنَ الْمُحْتَرِقُ قَالَ أَنَا قَالَ تَصَدَّقْ بِهَذَا
‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল যে, সে তো জ্বলে গেছে। তিনি বললেনঃ তোমার কি হয়েছে? লোকটি বলল, রমযানে আমি স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে (খেজুর ভর্তি) ঝুড়ি এল, যাকে আরাক (১৫ সা’ পরিমাণ) বলা হয়। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ অগ্নিদগ্ধ লোকটি কোথায়? লোকটি বলল, আমি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ গুলো সদাকাহ করে দাও।

৩০/৩০. অধ্যায়ঃ

যদি রমযানে স্ত্রী মিলন করে এবং তার নিকট কিছু না থাকে এবং তাকে সদকাহ দেয়া হয়, তাহলে সে যেন তা কাফফারা স্বরূপ দিয়ে দেয় ।

১৯৩৬

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلَكْتُ قَالَ مَا لَكَ قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي وَأَنَا صَائِمٌ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ تَجِدُ رَقَبَةً تُعْتِقُهَا قَالَ لاَ قَالَ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لاَ فَقَالَ فَهَلْ تَجِدُ إِطْعَامَ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لاَ قَالَ فَمَكَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ أُتِيَ النَّبِيُّ بِعَرَقٍ فِيهَا تَمْرٌ وَالْعَرَقُ الْمِكْتَلُ قَالَ أَيْنَ السَّائِلُ فَقَالَ أَنَا قَالَ خُذْهَا فَتَصَدَّقْ بِهِ فَقَالَ الرَّجُلُ أَعَلَى أَفْقَرَ مِنِّي يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَوَاللهِ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا يُرِيدُ الْحَرَّتَيْنِ أَهْلُ بَيْتٍ أَفْقَرُ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي فَضَحِكَ النَّبِيُّ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ ثُمَّ قَالَ أَطْعِمْهُ أَهْلَكَ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার কি হয়েছে? সে বলল, আমি সায়িম অবস্থায় আমার স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছি। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আযাদ করার মত কোন ক্রীতদাস তুমি মুক্ত করতে পারবে কি? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি একাধারে দু’মাস সওম পালন করতে পারবে? সে বলল, না। এরপর তিনি বললেনঃ ষাটজন মিসকীন খাওয়াতে পারবে কি? সে বলল, না। রাবী বলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেমে গেলেন, আমরাও এ অবস্থায় ছিলাম। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এক ‘আরাক পেশ করা হল যাতে খেজুর ছিল। ‘আরাক হল ঝুড়ি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়? সে বলল, আমি। তিনি বললেনঃ এগুলো নিয়ে সদাকাহ করে দাও। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমার চাইতেও বেশি অভাবগ্রস্থকে সদাকাহ করব? আল্লাহ্‌র শপথ, মাদীনার উভয় লাবা অর্থাৎ উভয় প্রান্তের মধ্যে আমার পরিবারের চেয়ে অভাবগ্রস্থ কেউ নেই। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেসে উঠলেন এবং তাঁর দাঁত (আইনয়াব) দেখা গেল। অতঃপর তিনি বললেনঃ এগুলো তোমার পরিবারকে খাওয়াও।

৩০/৩১. অধ্যায়ঃ

রমযানের সায়িম অবস্থায় যে ব্যক্তি স্ত্রী মিলন করেছে সে ব্যক্তি কি কাফ্‌ফারা হতে তার অভাবগ্রস্থ পরিবারকে খাওয়াতে পারবে?

১৯৩৭

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ الأَخِرَ وَقَعَ عَلَى امْرَأَتِهِ فِي رَمَضَانَ فَقَالَ أَتَجِدُ مَا تُحَرِّرُ رَقَبَةً قَالَ لاَ قَالَ فَتَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لاَ قَالَ أَفَتَجِدُ مَا تُطْعِمُ بِهِ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لاَ قَالَ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ وَهُوَ الزَّبِيلُ قَالَ أَطْعِمْ هَذَا عَنْكَ قَالَ عَلَى أَحْوَجَ مِنَّا مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَهْلُ بَيْتٍ أَحْوَجُ مِنَّا قَالَ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, এই হতভাগা স্ত্রী সহবাস করেছে রমযানে। তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে পারবে? লোকটি বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি ক্রমাগত দু’মাস সিয়াম পালন করতে পারবে? লোকটি বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি ষাটজন মিসকীন খাওয়াতে পারবে? সে বলল, না। এমতাবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক ‘আরাক অর্থাৎ এক ঝুড়ি খেজুর এল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এগুলো তোমার তরফ হতে লোকদেরকে আহার করাও। লোকটি বলল, আমার চাইতেও অধিক অভাবগ্রস্থ কে? অথচ মাদীনার উভয় লাবার অর্থাৎ হাররার মধ্যবর্তী স্থলে আমার পরিবারের চেয়ে অধিক অভাবগ্রস্থ কেউ নেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তা হলে তুমি স্বীয় পরিবারকেই খাওয়াও।

৩০/৩২. অধ্যায়ঃ

সায়িমের শিঙ্গা লাগানো বা বমি করা ।
ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ইয়াহইয়া ইব্‌নু সালিহ (রহঃ) আমাকে বলেছেন... আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, বমি করলে সওম ভঙ্গ হয় না । কেননা এতে কিছু বের হয়, ভিতরে প্রবেশ করে না । আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে এও বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, সওম ভঙ্গ হয়ে যাবে । প্রথম উক্তিটি বেশি সহীহ । ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) এবং ইকরিমাহ (রহঃ) বলেন, কোন কিছু ভিতরে প্রবেশ করলে সওম নষ্ট হয়; কিন্তু বের হওয়ার কারণে নয় । ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) সায়িম অবস্থায় শিঙ্গা লাগাতেন । অবশ্য পরবর্তী সময় তিনি দিনে শিঙ্গা লাগানো ছেড়ে দিয়ে রাতে শিঙ্গা লাগাতেন । আবূ মূসা (রাঃ) রাতে শিঙ্গা লাগিয়েছেন । সা’ঈদ, যায়দ ইব্‌নু আরকাম এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ) সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তাঁরা সকলেই সওম পালনকারী অবস্থায় শিঙ্গা লাগাতেন । বুকায়র (রহঃ) উম্মু আলকামাহ (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, আমরা ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর সামনে শিঙ্গা লাগাতাম, তিনি আমাদের নিষেধ করতেন না । হাসান (রহঃ) হতে একাধিক রাবী সূত্রে মরফূ‘ হাদীসে আছে যে, শিঙ্গা প্রয়োগকারী এবং গ্রহণকারী উভয়ের সওমই নষ্ট হয়ে যাবে । ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ‘আইয়াশ (রহঃ) হাসান (রহঃ) হতে আমার নিকট অনুরূপ বর্ণনা করেছেন । তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এ কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত? তিনি বললেন, হাঁ । অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহই সবচেয়ে অধিক জানেন ।

১৯৩৮

حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ :أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم احْتَجَمَ وَهُوَ مُحْرِمٌ وَاحْتَجَمَ وَهُوَ صَائِمٌ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহরিম অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন এবং সায়িম অবস্থায়ও শিঙ্গা লাগিয়েছেন।

১৯৩৯

حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ احْتَجَمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ صَائِمٌ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সায়িম অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন।

১৯৪০

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ سَمِعْتُ ثَابِتًا الْبُنَانِيَّ قَالَ سُئِلَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَكُنْتُمْ تَكْرَهُونَ الْحِجَامَةَ لِلصَّائِمِ قَالَ لاَ إِلاَّ مِنْ أَجْلِ الضَّعْفِ وَزَادَ شَبَابَةُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
সাবিত আল-বুনানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হল, আপনারা কি সায়িমের শিঙ্গা লাগানো (রক্তমোক্ষম) অপছন্দ করতেন? তিনি বললেন, না। তবে দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে অপছন্দ করতাম। শাবাবা (রহঃ) শু’বাহ (রহঃ) হতে ------ ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে’ কথাটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন।

৩০/৩৩. অধ্যায়ঃ

সফরে সওম পালন করা বা না করা ।

১৯৪১

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ الشَّيْبَانِيِّ سَمِعَ ابْنَ أَبِي أَوْفَى قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَقَالَ لِرَجُلٍ انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم الشَّمْسُ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم الشَّمْسُ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي فَنَزَلَ فَجَدَحَ لَهُ فَشَرِبَ ثُمَّ رَمَى بِيَدِهِ هَا هُنَا ثُمَّ قَالَ إِذَا رَأَيْتُمْ اللَّيْلَ أَقْبَلَ مِنْ هَا هُنَا فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ تَابَعَهُ جَرِيرٌ وَأَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ ابْنِ أَبِي أَوْفَى قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ فِي سَفَرٍ
ইব্‌নু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সফরে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে ছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বললেনঃ সওয়ারী হতে নেমে আমার জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! সূর্য এখনো অস্ত যায়নি। তিনি বললেনঃ সওয়ারী হতে নেমে আমার জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! সূর্য এখনো ডুবেনি। তিনি বললেনঃ সওয়ারী হতে নামো এবং আমার জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। অতঃপর সে সাওয়ারী হতে নেমে ছাতু গুলিয়ে আনলে তিনি তা পান করলেন এবং হাতের ইঙ্গিতে বললেনঃ যখন দেখবে রাত এদিক হতে ঘনিয়ে আসছে তখন বুঝবে, সওম পালনকারী ব্যক্তির ইফতারের সময় হয়েছে। জারীর (রাঃ) এবং আবূ বাকর ইব্‌নু ‘আইয়াশ...ইব্‌নু আবূ ‘আওফা (রাঃ) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, কোন এক সফরে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম।

১৯৪২

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ هِشَامٍ قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ حَمْزَةَ بْنَ عَمْرٍو الأَسْلَمِيَّ قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنِّي أَسْرُدُ الصَّوْمَ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হামযাহ ইব্‌নু আমর আসলামী (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি একাধারে সিয়ামব্রত পালন করছি।

১৯৪৩

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ حَمْزَةَ بْنَ عَمْرٍو الأَسْلَمِيَّ قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَأَصُومُ فِي السَّفَرِ وَكَانَ كَثِيرَ الصِّيَامِ فَقَالَ إِنْ شِئْتَ فَصُمْ وَإِنْ شِئْتَ فَأَفْطِرْ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হামযাহ ইব্‌নু ‘আমর আসলামী (রাঃ) অধিক সওম পালনে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, আমি সফরেও কি সওম পালন করতে পারি? তিনি বললেনঃ ইচ্ছা করলে তুমি সওম পালন করতে পার, আবার ইচ্ছা করলে নাও করতে পার।

৩০/৩৪. অধ্যায়ঃ

রমযানের কয়েক দিন সওম করে যদি কেউ সফর শুরু করে ।

১৯৪৪

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ إِلَى مَكَّةَ فِي رَمَضَانَ فَصَامَ حَتَّى بَلَغَ الْكَدِيدَ أَفْطَرَ فَأَفْطَرَ النَّاسُ قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ وَالْكَدِيدُ مَاءٌ بَيْنَ عُسْفَانَ وَقُدَيْدٍ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওমের অবস্থায় কোন এক রমযানে মক্কার পথে যাত্রা করলেন। কাদীদ নামক স্থানে পৌঁছার পর তিনি সওম ভঙ্গ করে ফেললে লোকেরা সকলেই সওম ভঙ্গ করলেন। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, উসফান ও কুদায়দ নামক দুই স্থানের মধ্যে কাদীদ একটি ঝর্ণা।
৩০/৩৫.অধ্যায়ঃ

১৯৪৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ أَنَّ إِسْمَاعِيلَ بْنَ عُبَيْدِ اللهِ حَدَّثَهُ عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ فِي يَوْمٍ حَارٍّ حَتَّى يَضَعَ الرَّجُلُ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ مِنْ شِدَّةِ الْحَرِّ وَمَا فِينَا صَائِمٌ إِلاَّ مَا كَانَ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَابْنِ رَوَاحَةَ
আবুদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সফরে প্রচণ্ড গরমের দিনে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে যাত্রা করলাম। গরম এত প্রচণ্ড ছিল যে, প্রত্যেকেই আপন আপন হাত মাথার উপর তুলে ধরেছিলেন। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং ইবনে রাওয়াহা (রাঃ) ব্যতীত আমাদের কেউই সিয়ামরত ছিলেন না।

৩০/৩৬. অধ্যায়ঃ

প্রচণ্ড গরমের জন্য যে ব্যক্তির উপর ছায়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে তাঁর সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর বাণীঃ সফরে সওম পালন করায় সাওয়াব নেই ।

১৯৪৬

حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ الأَنْصَارِيُّ قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَرَأَى زِحَامًا وَرَجُلاً قَدْ ظُلِّلَ عَلَيْهِ فَقَالَ مَا هَذَا فَقَالُوا صَائِمٌ فَقَالَ لَيْسَ مِنْ الْبِرِّ الصَّوْمُ فِي السَّفَرِ
জাবির ইব্‌নু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সফরে ছিলেন, হঠাৎ তিনি লোকের জটলা এবং ছায়ার নিচে এক ব্যক্তিকে দেখে জিজ্ঞেস করলেনঃ এর কি হয়েছে? লোকেরা বলল, সে সায়িম। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সফরে সওম পালনে কোন সওয়াব নেই।

৩০/৩৭. অধ্যায়ঃ

সওম করা ও না করার ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণ পরস্পরের প্রতি দোষারোপ করতেন না ।

১৯৪৭

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كُنَّا نُسَافِرُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَعِبْ الصَّائِمُ عَلَى الْمُفْطِرِ وَلاَ الْمُفْطِرُ عَلَى الصَّائِمِ
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সফরে যেতাম। সায়িম ব্যক্তি গায়ের সায়িমকে (যে সওম পালন করছে না) এবং গায়ের সায়িম ব্যক্তি সায়িমকে দোষারোপ করত না।

৩০/৩৮. অধ্যায়ঃ

লোকদেরকে দেখানোর জন্য সফর অবস্থায় সওম ভঙ্গ করা ।

১৯৪৮

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ الْمَدِينَةِ إِلَى مَكَّةَ فَصَامَ حَتَّى بَلَغَ عُسْفَانَ ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ فَرَفَعَهُ إِلَى يَدَيْهِ لِيُرِيَهُ النَّاسَ فَأَفْطَرَ حَتَّى قَدِمَ مَكَّةَ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ فَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَقُولُ قَدْ صَامَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَفْطَرَ فَمَنْ شَاءَ صَامَ وَمَنْ شَاءَ أَفْطَرَ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনাহ হতে মক্কায় রওয়ানা হলেন। তখন তিনি সওম পালন করছিলেন। ‘উসফানে পৌঁছার পর তিনি পানি আনার জন্য আদেশ দিলেন। অতঃপর তিনি লোকদেরকে দেখানোর জন্য পানি হাতের উপর উঁচু করে ধরে সওম ভঙ্গ করলেন এবং এ অবস্থায় মক্কায় পৌঁছলেন। এ ছিল রমযান মাসে। তাই ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলতেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওম পালন করেছেন এবং সওম ভঙ্গ করেছেন। যার ইচ্ছা সওম পালন করতে পারে আর যার ইচ্ছা সওম ভঙ্গ করতে পারে।

৩০/৩৯. অধ্যায়ঃ

“আর (সওম) যাদের জন্য অতিশয় কষ্ট দেয়, তাদের করণীয়, তারা এর বদলে ফিদইয়া হিসেবে একজন মিসকীনকে খাদ্য দেবে ।” (আল-বাকারাহ : ১৮৪)
ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) এবং সালামাহ ইব্‌নু আকওয়া’ (রাঃ) বলেন যে, উক্ত আয়াতকে রহিত করেছে এ আয়াত : “ রমযান মাস, এ মাসেই কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য হিদায়াত, সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী । সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে । তবে কেউ অসুস্থ হলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য সময়ে সওম এর সংখ্যা পূরণ করে দিবে । আল্লাহ চান তোমাদের জন্য সহজ করতে, তিনি এমন কিছু চান না যা তোমাদের জন্য কষ্টকর । যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার দরুন আল্লাহর মহিমা বর্ণনা কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার ।” (আল-বাকারাহ : ১৮৫)
ইব্‌নু নুমাইর (রহঃ) ইব্‌নু আবূ লায়লা (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণ আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, রমযানের হুকুম নাযিল হলে তা পালন করা তাঁদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় । তাই তাঁদের মধ্যে কেউ সওম পালনে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও সওম ত্যাগ করে প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াতো। এ ব্যাপারে তাদের অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল । (আরবী) ‘আর সওম পালন করাই তোমাদের জন্য উত্তম, এ আয়াতটি পূর্বের হুকুমকে রহিত করে দেয় এবং সবাইকে সওম পালনের নির্দেশ দেয়া হয়।

১৯৪৯

حَدَّثَنَا عَيَّاشٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَرَأَ {فِدْيَةٌ طَعَامُ مَسَاكِينَ} قَالَ هِيَ مَنْسُوخَةٌ
ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি فِدْيَةٌ طَعَامُ مَسَاكِينَ আয়াতটি পড়ে বলেছেন যে, ইহা মানসূখ (রহিত)।

৩০/৪০. অধ্যায়ঃ

রমযানের কাযা কখন আদায় করতে হবে?
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, পৃথক পৃথক রাখলে কোন ক্ষতি নেই । কেননা আল্লাহ বলেছেন, ‘অন্যদিনে এর সংখ্যা পূর্ণ করবে’ (আল-বাকারাহ (২) : ১৮৪) । সা’ঈদ ইব্‌নু মুসায়্যাব (রহঃ) বলেছেন, রমযানের কাযা আদায় না করে যুলহাজ্জ মাসের প্রথম দশকে সওম পালন করা উচিত নয় । ইবরাহীম নাখ’ঈ (রহঃ) বলেন, অবহেলার কারণে যদি পরবর্তী রমযান এসে যায় তাহলে উভয় রমযানের সওম এক সাথে আদায় করবে । মিসকীন খাওয়াতে হবে বলে তিনি মনে করেন না । আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত । একটি মুরসাল হাদীসে এবং ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, সে খাওয়াবে; অথচ আল্লাহ তাআলা খাওয়ানোর কথাটি উল্লেখ করেননি । বরং তিনি বলেছেন, ‘অন্যদিনে এর সংখ্যা পূর্ণ করবে’- (আল-বাকারাহ : ১৮৪) ।

১৯৫০

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ تَقُولُ كَانَ يَكُونُ عَلَيَّ الصَّوْمُ مِنْ رَمَضَانَ فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقْضِيَ إِلاَّ فِي شَعْبَانَ قَالَ يَحْيَى الشُّغْلُ مِنْ النَّبِيِّ أَوْ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার উপর রমযানের যে কাযা হয়েছে তা পরবর্তী শা’বান ব্যতীত আমি আদায় করতে পারতাম না। ইয়াহইয়া (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যস্ততার কারণে কিংবা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ব্যস্ততার কারণে।

No comments

Powered by Blogger.