সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "সাওম" হাদিস নং -১৯৫১ থেকে ২০০৭

ঋতুবতী সালাত ও সওম উভয়ই ছেড়ে দিবে ।
আবুয-যিনাদ (রহঃ) বলেন, শরী’আতের হুকুম-আহকাম অনেক সময় কিয়াসের বিপরীতও হয়ে থাকে । মুসলমানের জন্য এর অনুসরণ ব্যতীত কোন উপায় নেই । এর একটি উদাহরণ হল যে, ঋতুবতী মহিলা সওমের কাযা করবে কিন্তু সলাতের কাযা করবে না।

১৯৫১

حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ حَدَّثَنِي زَيْدٌ عَنْ عِيَاضٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ تُصَلِّ وَلَمْ تَصُمْ فَذَلِكَ نُقْصَانُ دِينِهَا
আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এ কথা কি ঠিক নয় যে, ঋতু শুরু হলে মেয়েরা সালাত আদায় করে না এবং সওমও পালন করে না। এ হল তাদের দ্বীনেরই ত্রুটি।

৩০/৪২. অধ্যায়ঃ

সওমের কাযা রেখে যিনি মারা যান ।
হাসান (রহঃ) বলেন, তার পক্ষ হতে ত্রিশজন লোক একদিন সওম পালন করতে হবে ।

১৯৫২

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُوسَى بْنِ أَعْيَنَ حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ جَعْفَرٍ حَدَّثَهُ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صِيَامٌ صَامَ عَنْهُ وَلِيُّهُ
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সওমের কাযা যিম্মায় রেখে যদি কোন ব্যক্তি মারা যায় তাহলে তার অভিভাবক তার পক্ষ হতে সওম আদায় করবে।
ইব্‌নু ওয়াহাব (রহঃ) ‘আমর (রহঃ) হতে উক্ত হাদীসটি অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইয়াহইয়া ইব্‌নু আইয়ুব (রহঃ)...ইব্‌নু আবূ জা’ফর (রহঃ) হতেও এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

১৯৫৩

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا زَائِدَةُ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ مُسْلِمٍ الْبَطِينِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَعَلَيْهَا صَوْمُ شَهْرٍ أَفَأَقْضِيهِ عَنْهَا قَالَ نَعَمْ قَالَ فَدَيْنُ اللهِ أَحَقُّ أَنْ يُقْضَى قَالَ سُلَيْمَانُ فَقَالَ الْحَكَمُ وَسَلَمَةُ وَنَحْنُ جَمِيعًا جُلُوسٌ حِينَ حَدَّثَ مُسْلِمٌ بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالاَ سَمِعْنَا مُجَاهِدًا يَذْكُرُ هَذَا عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ وَيُذْكَرُ عَنْ أَبِي خَالِدٍ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ الْحَكَمِ وَمُسْلِمٍ الْبَطِينِ وَسَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ وَعَطَاءٍ وَمُجَاهِدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَتْ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أُخْتِي مَاتَتْ وَقَالَ يَحْيَى وَأَبُو مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ مُسْلِمٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَتْ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَقَالَ عُبَيْدُ اللهِ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ عَنْ الْحَكَمِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَتْ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَعَلَيْهَا صَوْمُ نَذْرٍ وَقَالَ أَبُو حَرِيزٍ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَتْ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَاتَتْ أُمِّي وَعَلَيْهَا صَوْمُ خَمْسَةَ عَشَرَ يَوْمًا
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমার মা এক মাসের সওম যিম্মায় রেখে মারা গেছেন, আমি কি তাঁর পক্ষ হতে এ সওম কাযা করতে পারি? তিনি বলেন: হাঁ, আল্লাহর ঋণ পরিশোধ করাই হল অধিক যোগ্য। সুলায়মান (রহঃ) বলেন, হাকাম (রহঃ) এবং সালামাহ (রহঃ) বলেছেন, মুসলিম (রহঃ) এ হাদীস বর্ণনা করার সময় আমরা সকলেই একসাথে উপবিষ্ট ছিলাম। তাঁরা উভয়ই বলেছেন যে, ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে মুজাহিদ (রহঃ)-কে এ হাদীস বর্ণনা করতে আমরা শুনেছি। আবূ খালিদ আহমার (রহঃ)....ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একজন মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, আমার বোন মারা গেছে। ইয়াহইয়া (রহঃ) ও আবূ মু’আবিয়া....ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, জনৈকা মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, আমার মা মারা গেছেন। ‘উবায়দুল্লাহ (রহঃ)....ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, এক মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, আমার মা মারা গেছে, অথচ তার যিম্মায় মানতের সওম রয়েছে। আবূ হারীয (রহঃ)....ইব্‌নু ‘আব্বাস (রহঃ) হতে বর্ণিত, এক মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, আমার মা মারা গেছে, অথচ তার যিম্মায় পনের দিনের সওম রয়ে গেছে।

৩০/৪৩. অধ্যায়ঃ

সায়িমের জন্য কখন ইফতার করা বৈধ ।
সূর্যের গোলাকার বৃত্ত অদৃশ্য হওয়ার সাথে সাথেই আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) ইফতার করতেন ।

১৯৫৪

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ سَمِعْتُ عَاصِمَ بْنَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَقْبَلَ اللَّيْلُ مِنْ هَا هُنَا وَأَدْبَرَ النَّهَارُ مِنْ هَا هُنَا وَغَرَبَتْ الشَّمْسُ فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ
‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রাত্র সে দিক হতে ঘনিয়ে আসে ও দিন এ দিক হতে চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায়, তখন সায়িম ইফতার করবে।

১৯৫৫

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ الْوَاسِطِيُّ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللهِ فِي سَفَرٍ وَهُوَ صَائِمٌ فَلَمَّا غَرَبَتْ الشَّمْسُ قَالَ لِبَعْضِ الْقَوْمِ يَا فُلاَنُ قُمْ فَاجْدَحْ لَنَا فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَوْ أَمْسَيْتَ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَوْ أَمْسَيْتَ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا قَالَ إِنَّ عَلَيْكَ نَهَارًا قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا فَنَزَلَ فَجَدَحَ لَهُمْ فَشَرِبَ النَّبِيُّ ثُمَّ قَالَ إِذَا رَأَيْتُمْ اللَّيْلَ قَدْ أَقْبَلَ مِنْ هَا هُنَا فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সফরে আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। আর তিনি ছিলেন সওমের অবস্থায়। যখন সূর্য ডুবে গেল তখন তিনি দলের কাউকে বললেনঃ হে অমুক! উঠ। আমাদের জন্য ছাতু গুলে আন। সে বলল, সন্ধ্যা হলে ভাল হতো। তিনি বললেনঃনেমে যাও এবং আমাদের জন্য ছাতু গুলে আন। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! সন্ধ্যা হলে ভাল হতো। তিনি বললেনঃ নেমে যাও এবং আমাদের জন্য ছাতু গুলে আন। সে বলল, দিন তো এখনো রয়ে গেছে। তিনি বললেনঃ তুমি নামো এবং আমাদের জন্য ছাতু গুলে আন। অতঃপর সে নামল এবং তাঁদের জন্য ছাতু গুলে আনল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা পান করলেন, অতঃপর বললেনঃ যখন তোমরা দেখবে, রাত একদিক হতে ঘনিয়ে আসছে, তখন সওম পালনকারী ইফতার করবে।

৩০/৪৪. অধ্যায়ঃ

পানি বা অন্য কিছু যা সহজলভ্য তদ্বারা ইফতার করবে ।

১৯৫৬

. حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الشَّيْبَانِيُّ سُلَيْمَانُ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِي أَوْفَى قَالَ سِرْنَا مَعَ رَسُولِ صلى الله عليه وسلم اللهِ وَهُوَ صَائِمٌ فَلَمَّا غَرَبَتْ الشَّمْسُ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَوْ أَمْسَيْتَ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ عَلَيْكَ نَهَارًا قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا فَنَزَلَ فَجَدَحَ ثُمَّ قَالَ إِذَا رَأَيْتُمْ اللَّيْلَ أَقْبَلَ مِنْ هَا هُنَا فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ وَأَشَارَ بِإِصْبَعِهِ قِبَلَ الْمَشْرِقِ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে রওয়ানা দিলাম এবং তিনি সওমরত ছিলেন। সূর্য অস্ত যেতেই তিনি বললেনঃ তুমি সওয়ারী হতে নেমে আমাদের জন্য ছাতু গুলে আন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আর একটু সন্ধ্যা হতে দিন। তিনি বললেনঃ তুমি নেমে যাও এবং আমাদের জন্য ছাতু গুলে আন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এখনো তো আপনার সামনে দিন রয়েছে। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি নেমে যাও এবং আমাদের জন্য ছাতু গুলে আন। অতঃপর তিনি সওয়ারী হতে নামলেন এবং ছাতু গুলে আনলেন। এরপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আঙ্গুল দ্বারা পূর্বদিক ইঙ্গিত করে বললেনঃ যখন তোমরা দেখবে যে, রাত এদিক হতে আসছে, তখনই সওম পালনকারীর ইফতারের সময় হয়ে গেল।

৩০/৪৫. অধ্যায়ঃ

শীঘ্র ইফতার করা

১৯৫৭

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ أَبِي حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الْفِطْرَ
সাহল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: লোকেরা যতদিন শীঘ্র ইফতার করবে [১], ততদিন তারা কল্যাণের উপর থাকবে।
[১] হাদীসে জলদি জলদি ইফতার করার জন্য খুব তাগিদ দেয়া হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করতে হবে। চোখে সূর্যাস্ত দেখে ইফতার করা যায় । সূর্যাস্ত দেখতে না পাওয়া গেলে সূর্যাস্তের সময়সূচী বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস থেকে সংগ্রহ করা যায় । রেডিও ও টেলিভিশনে সূর্যাস্তের সময় ঘোষণা করা হয়, খবরের কাগজেও সূর্যাস্তের সময় লেখা হয় । আমাদের দেশে ইফতারের সময়সূচী প্রকাশ করা হয়-যেগুলিতে সূর্যাস্তের সময়ের সাথে ১ মিনিট বা ২ মিনিট বা ৫ মিনিট যোগ করে ইফতারের সময় বলে লেখা হয় । কিন্তু হাদীসে উল্লেখিত কল্যাণ লাভ করতে চাইলে সূর্যাস্তের সময় জেনে নিয়ে সাথে সাথেই ইফতার করতে হবে । সূর্যাস্ত হয়ে গেলেও ইফতার না করে বসে বসে অন্ধকার করা ইহুদী ও নাসারাদের কাজ । (আবূ দাউদ ২২৫৩, ইব্‌নু মাজাহ ১৬৯৮)

১৯৫৮

. حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ ابْنِ أَبِي أَوْفَى قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَصَامَ حَتَّى أَمْسَى قَالَ لِرَجُلٍ انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي قَالَ لَوْ انْتَظَرْتَ حَتَّى تُمْسِيَ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي إِذَا رَأَيْتَ اللَّيْلَ قَدْ أَقْبَلَ مِنْ هَا هُنَا فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ
ইব্‌নু আবূ ‘আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সফরে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি সন্ধ্যা পর্যন্ত সওম পালন করেন। এরপর এক ব্যক্তিকে বললেনঃ সওয়ারী হতে নেমে ছাতু গুলে আন। লোকটি বলল, আপনি যদি (পূর্ণ সন্ধ্যা হওয়া পর্যন্ত) অপেক্ষা করতেন। তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় বললেনঃ নেমে আমার জন্য ছাতু গুলে আন। [তারপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন] যখন তুমি এদিক (পূর্বদিক) হতে রাত্রির আগমন দেখতে পাবে তখন সওম পালনকারী ইফতার করবে।

৩০/৪৬. অধ্যায়ঃ

রমযানে ইফতারের পরে যদি সূর্য (আবার) দেখা যায় ।

১৯৫৯

حَدَّثَنِي عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ فَاطِمَةَ عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ قَالَتْ أَفْطَرْنَا عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ غَيْمٍ ثُمَّ طَلَعَتْ الشَّمْسُ قِيلَ لِهِشَامٍ فَأُمِرُوا بِالْقَضَاءِ قَالَ لاَ بُدَّ مِنْ قَضَاءٍ وَقَالَ مَعْمَرٌ سَمِعْتُ هِشَامًا لاَ أَدْرِي أَقَضَوْا أَمْ لاَ
আসমা বিনত আবূ বাকর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে একদা মেঘাচ্ছন্ন দিনে আমরা ইফতার করলাম, এরপর সূর্য দেখা যায়। বর্ণনাকারী হিশামকে জিজ্ঞেস করা হল, তাদের কি কাযা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল? হিশাম (রহঃ) বললেন, কাযা ব্যতীত উপায় কী? (অপর বর্ণনাকারী) মা’মার (রহঃ) বলেন, আমি হিশামকে বলতে শুনেছি, তাঁরা কাযা করেছিলেন কি না তা আমি জানি না।

৩০/৪৭. অধ্যায়ঃ

বাচ্চাদের সওম পালন করা ।
রমযানে দিনের বেলায় এক নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমাদের বাচ্চারা পর্যন্ত সওম পালন করছে । তোমার সর্বনাশ হোক! অতঃপর ‘উমার (রাঃ) তাকে মারলেন ।

১৯৬০

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ ذَكْوَانَ عَنْ الرُّبَيِّعِ بِنْتِ مُعَوِّذٍ قَالَتْ أَرْسَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم غَدَاةَ عَاشُورَاءَ إِلَى قُرَى الأَنْصَارِ مَنْ أَصْبَحَ مُفْطِرًا فَلْيُتِمَّ بَقِيَّةَ يَوْمِهِ وَمَنْ أَصْبَحَ صَائِمًا فَليَصُمْ قَالَتْ فَكُنَّا نَصُومُهُ بَعْدُ وَنُصَوِّمُ صِبْيَانَنَا وَنَجْعَلُ لَهُمْ اللُّعْبَةَ مِنْ الْعِهْنِ فَإِذَا بَكَى أَحَدُهُمْ عَلَى الطَّعَامِ أَعْطَيْنَاهُ ذَاكَ حَتَّى يَكُونَ عِنْدَ الإِفْطَارِ
রুবায়্যি’ বিনতু মু’আব্বিয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আশুরার সকালে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের সকল পল্লীতে এ নির্দেশ দিলেনঃ যে ব্যক্তি সওম পালন করেনি সে যেন দিনের বাকি অংশ না খেয়ে থাকে, আর যার সওম অবস্থায় সকাল হয়েছে, সে যেন সওম পূর্ণ করে। তিনি (রুবায়্যি’) (রাঃ) বলেন, পরবর্তীতে আমরা ঐ দিন সওম পালন করতাম এবং আমাদের শিশুদের সওম পালন করাতাম। আমরা তাদের জন্য পশমের খেলনা তৈরি করে দিতাম। তাদের কেউ খাবারের জন্য কাঁদলে তাকে ঐ খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম। আর এভাবেই ইফতারের সময় হয়ে যেত।

৩০/৪৮. অধ্যায়ঃ

সওমে বিসাল (বিরামহীন সওম) ।
আল্লাহ তা’আলার বাণী “রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর- (আল-বাকারাহঃ ১৮৭) । এর পরিপ্রেক্ষিতে রাতে সওম পালন করা যাবে না বলে যিনি অভিমত ব্যক্ত করেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মতের উপর দয়াপরবশ হয়েও তাদের স্বাস্থ্য রক্ষার খাতিরে সওমে বিসাল হতে নিষেধ করেছেন এবং কোন বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা নিন্দনীয় ।

১৯৬১

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِي قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ تُوَاصِلُوا قَالُوا إِنَّكَ تُوَاصِلُ قَالَ لَسْتُ كَأَحَدٍ مِنْكُمْ إِنِّي أُطْعَمُ وَأُسْقَى أَوْ إِنِّي أَبِيتُ أُطْعَمُ وَأُسْقَى
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা সওমে বিসাল পালন করবে না। লোকেরা বলল, আপনি যে সওমে বিসাল করেন? তিনি বলেনঃ আমি তোমাদের মত নই। আমাকে পানাহার করানো হয় (অথবা বললেন) আমি পানাহার অবস্থায় রাত অতিবাহিত করি।

১৯৬২

. حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ نَهَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْوِصَالِ قَالُوا إِنَّكَ تُوَاصِلُ قَالَ إِنِّي لَسْتُ مِثْلَكُمْ إِنِّي أُطْعَمُ وَأُسْقَى
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওমে বেসাল হতে নিষেধ করলেন। লোকেরা বললো, আপনি যে সওমে বেসাল পালন করেন! তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের মত নই, আমাকে পানাহার করানো হয়।

১৯৬৩

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ خَبَاب عَنْ أَبِي سَعِيدٍ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ تُوَاصِلُوا فَأَيُّكُمْ إِذَا أَرَادَ أَنْ يُوَاصِلَ فَلْيُوَاصِلْ حَتَّى السَّحَرِ قَالُوا فَإِنَّكَ تُوَاصِلُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنِّي لَسْتُ كَهَيْئَتِكُمْ إِنِّي أَبِيتُ لِي مُطْعِمٌ يُطْعِمُنِي وَسَاقٍ يَسْقِينِ
আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, তোমরা সওমে বিসাল পালন করবে না। তোমাদের কেউ সওমে বিসাল করতে চাইলে সে যেন সাহরীর সময় পর্যন্ত করে। লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রসূল! আপনি যে সওমে বিসাল পালন করেন? তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের মত নই, আমি রাত্রি যাপন করি এরূপ অবস্থায় যে, আমার জন্য একজন খাদ্য পরিবেশনকারী থাকেন যিনি আমাকে আহার করান এবং একজন পানীয় পরিবেশনকারী আমাকে পান করান।

১৯৬৪

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَمُحَمَّدٌ قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ نَهَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْوِصَالِ رَحْمَةً لَهُمْ فَقَالُوا إِنَّكَ تُوَاصِلُ قَالَ إِنِّي لَسْتُ كَهَيْئَتِكُمْ إِنِّي يُطْعِمُنِي رَبِّي وَيَسْقِينِ قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ لَمْ يَذْكُرْ عُثْمَانُ رَحْمَةً لَهُمْ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের উপর দয়াপরবশ হয়ে তাদেরকে সওমে বেসাল হতে নিষেধ করলে তারা বলল, আপনি যে সওমে বেসাল করে থাকেন! তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের মত নই, আমার প্রতিপালক আমাকে পানাহার করান। আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, রাবী ‘উসমান (রহঃ) ----- ‘তাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে’ কথাটি উল্লেখ করেননি।

৩০/৪৯. অধ্যায়ঃ

অধিক পরিমাণে সওমে বিসালকারীর শাস্তি ।
আনাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ বর্ণনা করেছেন ।

১৯৬৫

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ نَهَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْوِصَالِ فِي الصَّوْمِ فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ مِنْ الْمُسْلِمِينَ إِنَّكَ تُوَاصِلُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَأَيُّكُمْ مِثْلِي إِنِّي أَبِيتُ يُطْعِمُنِي رَبِّي وَيَسْقِينِ فَلَمَّا أَبَوْا أَنْ يَنْتَهُوا عَنْ الْوِصَالِ وَاصَلَ بِهِمْ يَوْمًا ثُمَّ يَوْمًا ثُمَّ رَأَوْا الْهِلاَلَ فَقَالَ لَوْ تَأَخَّرَ لَزِدْتُكُمْ كَالتَّنْكِيلِ لَهُمْ حِينَ أَبَوْا أَنْ يَنْتَهُوا
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিরতিহীন সওম (সওমে বিসাল) পালন করতে নিষেধ করলে মুসলিমদের এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যে বিরতিহীন (সওমে বিসাল) সওম পালন করেন? তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে আমার অনুরূপ কে আছ? আমি এমনভাবে রাত যাপন করি যে, আমার প্রতিপালক আমাকে পানাহার করান। এরপর যখন লোকেরা সওমে বিসাল করা হতে বিরত থাকল না তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে দিনের পর দিন (লাগাতার) সওমে বিসাল করতে থাকলেন। এরপর লোকেরা যখন চাঁদ দেখতে পেল তখন তিনি বললেনঃ যদি চাঁদ উঠতে আরো দেরী হত তবে আমি তোমাদেরকে নিয়ে আরো বেশী দিন সওমে বিসাল করতাম। এ কথা তিনি তাদেরকে শাস্তি প্রদান স্বরূপ বলেছিলেন, যখন তারা বিরত থাকতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।

১৯৬৬

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ هَمَّامٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِيَّاكُمْ وَالْوِصَالَ مَرَّتَيْنِ قِيلَ إِنَّكَ تُوَاصِلُ قَالَ إِنِّي أَبِيتُ يُطْعِمُنِي رَبِّي وَيَسْقِينِ فَاكْلَفُوا مِنْ الْعَمَلِ مَا تُطِيقُونَ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা সওমে বেসাল পালন করা হতে বিরত থাক ( বাক্যটি তিনি ) দু’বার বললেন। তাঁকে বলা হল, আপনি তো সওমে বেসাল করেন। তিনি বললেনঃ আমি এভাবে রাত যাপন করি যে, আমার প্রতিপালক আমাকে পানাহার করিয়ে থাকেন। তোমরা তোমাদের সাধ্যানুযায়ী আমল করার দায়িত্ব গ্রহণ করো।

৩০/৫০. অধ্যায়ঃ

সাহরীর সময় পর্যন্ত সওমে বিসাল করা ।

১৯৬৭

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ حَمْزَةَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ يَزِيدَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ خَبَّاب عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ تُوَاصِلُوا فَأَيُّكُمْ أَرَادَ أَنْ يُوَاصِلَ فَلْيُوَاصِلْ حَتَّى السَّحَرِ قَالُوا فَإِنَّكَ تُوَاصِلُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَسْتُ كَهَيْئَتِكُمْ إِنِّي أَبِيتُ لِي مُطْعِمٌ يُطْعِمُنِي وَسَاقٍ يَسْقِينِ
আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, তোমরা সওমে বিসাল করবে না। তোমাদের কেউ যদি সওমে বিসাল করতে চায়, তবে যেন সাহরীর সময় পর্যন্ত করে। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি তো সওমে বিসাল পালন করেন? তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের মত নই। আমি এভাবে রাত যাপন করি যে, আমার জন্য একজন আহারদাতা রয়েছেন যিনি আমাকে আহার করান, একজন পানীয় দানকারী আছেন যিনি আমাকে পান করান।

৩০/৫১. অধ্যায়ঃ

কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের নফল সওম ভাঙ্গার জন্য কসম দিলে এবং তার জন্য এ সওমের কাযা ওয়াজিব মনে না করলে, যখন সওম পালন না করা তার জন্য ভাল হয় ।

১৯৬৮

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ حَدَّثَنَا أَبُو الْعُمَيْسِ عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ آخَى النَّبِيُّ بَيْنَ سَلْمَانَ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ فَزَارَ سَلْمَانُ أَبَا الدَّرْدَاءِ فَرَأَى أُمَّ الدَّرْدَاءِ مُتَبَذِّلَةً فَقَالَ لَهَا مَا شَأْنُكِ قَالَتْ أَخُوكَ أَبُو الدَّرْدَاءِ لَيْسَ لَهُ حَاجَةٌ فِي الدُّنْيَا فَجَاءَ أَبُو الدَّرْدَاءِ فَصَنَعَ لَهُ طَعَامًا فَقَالَ كُلْ قَالَ فَإِنِّي صَائِمٌ قَالَ مَا أَنَا بِآكِلٍ حَتَّى تَأْكُلَ قَالَ فَأَكَلَ فَلَمَّا كَانَ اللَّيْلُ ذَهَبَ أَبُو الدَّرْدَاءِ يَقُومُ قَالَ نَمْ فَنَامَ ثُمَّ ذَهَبَ يَقُومُ فَقَالَ نَمْ فَلَمَّا كَانَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ قَالَ سَلْمَانُ قُمْ الآنَ فَصَلَّيَا فَقَالَ لَهُ سَلْمَانُ إِنَّ لِرَبِّكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَلِنَفْسِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَلأَهْلِكَ عَلَيْكَ حَقًّا فَأَعْطِ كُلَّ ذِي حَقٍّ حَقَّهُ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صَدَقَ سَلْمَانُ
আবূ জুহায়ফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালমান (রাঃ) ও আবুদ দারদা (রাঃ)-এর মাঝে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন করে দেন। (একদা) সালমান (রাঃ) আবুদ দারদা (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করতে এসে উম্মুদ দারদা (রাঃ)-কে মলিন কাপড় পরিহিত দেখতে পান। তিনি এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে উম্মুদ দারদা (রাঃ) বললেন, আপনার ভাই আবুদ দারদার পার্থিব কোন কিছুরই প্রতি মোহ নেই। কিছুক্ষণ পরে আবুদ দারদা (রাঃ) এলেন। অতঃপর তিনি সালমান (রাঃ)-এর জন্য খাদ্য প্রস্তুত করান এবং বলেন, আপনি খেয়ে নিন, আমি সাওম পালন করছি। সালমান (রাঃ) বললেন, আপনি না খেলে আমি খাবো না। এরপর আবূদ দারদা (রাঃ) সালমান (রাঃ)- এর সঙ্গে খেলেন। রাত হলে আবূদ দারদা (রাঃ) (সালাত আদায়ে) দাঁড়াতে গেলেন। সালমান (রাঃ) বললেন, এখন ঘুমিয়ে পড়েন। আবূদ দারদা (রাঃ) ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পরে আবূদ দারদা (রাঃ) আবার সলাতে দাঁড়াতে উদ্যত হলেন, সালমান (রাঃ) বললেন, ঘুমিয়ে পড়েন। যখন রাতের শেষ ভাগ হলো, সালমান (রাঃ) আবূদ দারদা (রাঃ)-কে বললেন, এখন উঠুন। এরপর তাঁরা দু’জনে সালাত আদায় করলেন। পরে সালমান (রাঃ) তাঁকে বললেন, আপনার প্রতিপালকের হাক্ব আপনার উপর আছে। আপনার নিজেরও হাক্ব আপনার উপর রয়েছে। আবার আপনার পরিবারেরও হাক্ব রয়েছে। প্রত্যেক হাক্বদারকে তার হাক্ব প্রদান করুন। এরপর আবূদ দারদা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হাজির হয়ে এ ঘটনা বর্ণনা করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সালমান ঠিকই বলেছে।

৩০/৫২. অধ্যায়ঃ

শা’বান (মাস)-এর সওম ।

১৯৬৯

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ أَبِي النَّضْرِ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ لاَ يُفْطِرُ وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ لاَ يَصُومُ فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ إِلاَّ رَمَضَانَ وَمَا رَأَيْتُهُ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِي شَعْبَانَ
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একাধারে (এত অধিক) সওম পালন করতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর সওম পরিত্যাগ করবেন না। (আবার কখনো এত বেশী) সওম পালন না করা অবস্থায় একাধারে কাটাতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর (নফল) সওম পালন করবেন না। আমি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রমযান ব্যতীত কোন পুরা মাসের সওম পালন করতে দেখিনি এবং শা’বান মাসের চেয়ে কোন মাসে অধিক (নফল) সওম পালন করতে দেখিনি।

১৯৭০

حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ أَنَّ عَائِشَةَ حَدَّثَتْهُ قَالَتْ لَمْ يَكُنْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ شَهْرًا أَكْثَرَ مِنْ شَعْبَانَ فَإِنَّهُ كَانَ يَصُومُ شَعْبَانَ كُلَّهُ وَكَانَ يَقُولُ خُذُوا مِنْ الْعَمَلِ مَا تُطِيقُونَ فَإِنَّ اللهَ لاَ يَمَلُّ حَتَّى تَمَلُّوا وَأَحَبُّ الصَّلاَةِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَا دُووِمَ عَلَيْهِ وَإِنْ قَلَّتْ وَكَانَ إِذَا صَلَّى صَلاَةً دَاوَمَ عَلَيْهَا
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শা’বান মাসের চাইতে বেশী (নফল) সওম কোন মাসে পালন করতেন না। তিনি (প্রায়) পুরা শা’বান মাসই সওম রাখতেন এবং তিনি বলতেনঃ তোমাদের মধ্যে যতটুকু সামর্থ্য আছে ততটুকু (নফল) আমল করো, কারণ তোমরা (আমল করতে করতে) পরিশ্রান্ত হয়ে না পড়া পর্যন্ত আল্লাহ্‌ তা’আলা (সাওয়াব দান) বন্ধ করেন না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় সালাত ছিল তাই- যা যথাযথ নিয়মে সর্বদা আদায় করা হত, যদিও তা পরিমাণে কম হত এবং তিনি যখন কোন (নফল) সালাত আদায় করতেন পরবর্তীতে তা অব্যাহত রাখতেন।

৩০/৫৩. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সওম পালন করা ও না করার বিবরণ ।

১৯৭১

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ أَبِي بِشْرٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ مَا صَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم شَهْرًا كَامِلاً قَطُّ غَيْرَ رَمَضَانَ وَيَصُومُ حَتَّى يَقُولَ الْقَائِلُ لاَ وَاللهِ لاَ يُفْطِرُ وَيُفْطِرُ حَتَّى يَقُولَ الْقَائِلُ لاَ وَاللهِ لاَ يَصُومُ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযান ব্যতীত কোন মাসে পুরা মাসের সওম পালন করেননি। তিনি এমনভাবে (নফল) সওম পালন করতেন যে, কেউ বলতে চাইলে বলতে পারতো, আল্লাহ্‌র কসম! তিনি আর সওম পালন পরিত্যাগ করবেন না। আবার এমনভাবে (নফল) সওম ছেড়ে দিতেন যে, কেউ বলতে চাইলে বলতে পারতো আল্লাহ্‌র কসম! তিনি আর সওম পালন করবেন না।

১৯৭২

حَدَّثَنِي عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ حُمَيْدٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسًا يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُفْطِرُ مِنْ الشَّهْرِ حَتَّى نَظُنَّ أَنْ لاَ يَصُومَ مِنْهُ وَيَصُومُ حَتَّى نَظُنَّ أَنْ لاَ يُفْطِرَ مِنْهُ شَيْئًا وَكَانَ لاَ تَشَاءُ تَرَاهُ مِنْ اللَّيْلِ مُصَلِّيًا إِلاَّ رَأَيْتَهُ وَلاَ نَائِمًا إِلاَّ رَأَيْتَهُ وَقَالَ سُلَيْمَانُ عَنْ حُمَيْدٍ أَنَّهُ سَأَلَ أَنَسًا فِي الصَّوْمِ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন মাসে এভাবে সওম ছেড়ে দিতেন যে, আমরা মনে করতাম, তিনি এ মাসে আর সওম পালন করবেন না। আবার কোন মাসে এভাবে সওম পালন করতেন যে, আমরা মনে করতাম তিনি এ মাসে আর সওম ছাড়বেন না। আর তুমি যদি তাঁকে রাতে সালাত আদায়রত অবস্থায় দেখতে চাইতে তবে তা দেখতে পেতে, আবার যদি তুমি তাঁকে ঘুমন্ত দেখতে চাইতে তবে তাও দেখতে পেতে। সুলায়মান (রহঃ) হুমাইদ (রহঃ) সূত্রে বলেন যে, তিনি আনাস (রাঃ)-কে সওম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছেন। (১১৪১)
(আ.প্র. ১৮৩৩, ই.ফা. ১৮৪৫)

১৯৭৩

حَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ هُوَ ابْنُ سَلاَمٍ أَخْبَرَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ قَالَ سَأَلْتُ أَنَسًا عَنْ صِيَامِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا كُنْتُ أُحِبُّ أَنْ أَرَاهُ مِنْ الشَّهْرِ صَائِمًا إِلاَّ رَأَيْتُهُ وَلاَ مُفْطِرًا إِلاَّ رَأَيْتُهُ وَلاَ مِنْ اللَّيْلِ قَائِمًا إِلاَّ رَأَيْتُهُ وَلاَ نَائِمًا إِلاَّ رَأَيْتُهُ وَلاَ مَسِسْتُ خَزَّةً وَلاَ حَرِيرَةً أَلْيَنَ مِنْ كَفِّ رَسُولِ اللهِ وَلاَ شَمِمْتُ مِسْكَةً وَلاَ عَبِيرَةً أَطْيَبَ رَائِحَةً مِنْ رَائِحَةِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
হুমাইদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (নফল) সওমের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, যে কোন মাসে আমি তাঁকে সওম পালনরত অবস্থায় দেখতে চেয়েছি, তাঁকে সে অবস্থায় দেখেছি, আবার তাঁকে সওম পালন না করা অবস্থায় দেখতে চাইলে তাও দেখতে পেয়েছি। রাতে যদি তাঁকে সালাত আদায়রত অবস্থায় দেখতে চেয়েছি, তা প্রত্যক্ষ করেছি। আবার ঘুমন্ত দেখতে চাইলে তাও দেখতে পেয়েছি। আমি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাত মুবারক হতে নরম কোন পশমী বা রেশমী কাপড় স্পর্শ করি নাই। আর আমি তাঁর (শরীরের) ঘ্রাণ হতে অধিক সুগন্ধযুক্ত কোন মিশক বা আম্বর পাইনি।

৩০/৫৪. অধ্যায়ঃ

সওমের ব্যাপারে মেহমানের হক ।

১৯৭৪

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا عَلِيٌّ حَدَّثَنَا يَحْيَى قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللهِ بْنُ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ الْحَدِيثَ يَعْنِي إِنَّ لِزَوْرِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِزَوْجِكَ عَلَيْكَ حَقًّا فَقُلْتُ وَمَا صَوْمُ دَاوُدَ قَالَ نِصْفُ الدَّهْرِ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কাছে এলেন। এরপর তিনি [‘আবদুল্লাহ (রাঃ)] হাদীসটি বর্ণনা করেন অর্থাৎ “তোমার উপর মেহমানের হাক্ব আছে, তোমার উপর তোমার স্ত্রীর হাক্ব আছে।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, সওমে দাউদ (আঃ) কি? তিনি বললেন, “অর্ধেক বছর” (-এর সওম পালন করা)।

৩০/৫৫. অধ্যায়ঃ

নফল সওমে শরীরের হক ।

১৯৭৫

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللهِ بْنُ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا عَبْدَ اللهِ أَلَمْ أُخْبَرْ أَنَّكَ تَصُومُ النَّهَارَ وَتَقُومُ اللَّيْلَ فَقُلْتُ بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَلاَ تَفْعَلْ صُمْ وَأَفْطِرْ وَقُمْ وَنَمْ فَإِنَّ لِجَسَدِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِعَيْنِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِزَوْجِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِزَوْرِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ بِحَسْبِكَ أَنْ تَصُومَ كُلَّ شَهْرٍ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ فَإِنَّ لَكَ بِكُلِّ حَسَنَةٍ عَشْرَ أَمْثَالِهَا فَإِنَّ ذَلِكَ صِيَامُ الدَّهْرِ كُلِّهِ فَشَدَّدْتُ فَشُدِّدَ عَلَيَّ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنِّي أَجِدُ قُوَّةً قَالَ فَصُمْ صِيَامَ نَبِيِّ اللهِ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَم وَلاَ تَزِدْ عَلَيْهِ قُلْتُ وَمَا كَانَ صِيَامُ نَبِيِّ اللهِ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَم قَالَ نِصْفَ الدَّهْرِ فَكَانَ عَبْدُ اللهِ يَقُولُ بَعْدَ مَا كَبِرَ يَا لَيْتَنِي قَبِلْتُ رُخْصَةَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ হে ‘আবদুল্লাহ! আমি এ সংবাদ পেয়েছি যে, তুমি প্রতিদিন সওম পালন কর এবং সারা রাত সালাত আদায় করে থাকো। আমি বললাম, ঠিক (শুনেছেন) হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি বললেনঃ এরূপ করবে না (বরং মাঝে মাঝে) সওম পালন করো আবার ছেড়েও দাও। (রাতে) সালাত আদায় কর আবার ঘুমাও। কেননা তোমার উপর তোমার শরীরের হাক্ব রয়েছে, তোমার চোখের হাক্ব রয়েছে, তোমার উপর তোমার স্ত্রীর হাক্ব আছে, তোমার মেহমানের হাক্ব আছে। তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সওম পালন কর। কেননা নেক ‘আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকী। এভাবে সারা বছরের সওম হয়ে যায়। আমি (বললাম) আমি এর চেয়েও কঠোর ‘আমল করতে সক্ষম। তখন আমাকে আরও কঠিন ‘আমলের অনুমতি দেয়া হল। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি আরো বেশী শক্তি রাখি। তিনি বললেনঃ তবে আল্লাহ্‌র নবী দাউদ (আঃ)-এর সওম পালন করো, এর হতে বেশী করতে যেয়ো না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ্‌র নবী দাউদ (আঃ)-এর সওম কেমন? তিনি বললেনঃ অর্ধেক বছর। রাবী বলেনঃ ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বৃদ্ধ বয়সে বলতেন, আহা! আমি যদি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদত্ত রুখসত (সহজতর বিধান) কবূল করে নিতাম !

৩০/৫৬. অধ্যায়ঃ

পুরা বছর সওম করা ।

১৯৭৬

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ وَأَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرٍو قَالَ أُخْبِرَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنِّي أَقُولُ وَاللهِ لأصُومَنَّ النَّهَارَ وَلأقُومَنَّ اللَّيْلَ مَا عِشْتُ فَقُلْتُ لَهُ قَدْ قُلْتُهُ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي قَالَ فَإِنَّكَ لاَ تَسْتَطِيعُ ذَلِكَ فَصُمْ وَأَفْطِرْ وَقُمْ وَنَمْ وَصُمْ مِنْ الشَّهْرِ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ فَإِنَّ الْحَسَنَةَ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا وَذَلِكَ مِثْلُ صِيَامِ الدَّهْرِ قُلْتُ إِنِّي أُطِيقُ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ قَالَ فَصُمْ يَوْمًا وَأَفْطِرْ يَوْمَيْنِ قُلْتُ إِنِّي أُطِيقُ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ قَالَ فَصُمْ يَوْمًا وَأَفْطِرْ يَوْمًا فَذَلِكَ صِيَامُ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَم وَهُوَ أَفْضَلُ الصِّيَامِ فَقُلْتُ إِنِّي أُطِيقُ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ
‘আব্দুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আমার সম্পর্কে এ কথা পোঁছে যায় যে, আমি বলেছি, আল্লাহ্‌র কসম, আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন সওম পালন করব এবং রাতভর সালাত আদায় করব। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করায় আমি বললাম, আপনার উপর আমার পিতা-মাতা কুরবান হোন! আমি এ কথা বলেছি। তিনি বললেনঃ তুমি তো এরূপ করতে সক্ষম হবে না। বরং তুমি সওম পালন কর ও ছেড়েও দাও, (রাতে) সালাত আদায় কর ও নিদ্রাও যাও। তুমি মাসে তিন দিন করে সওম পালন কর, কারণ নেক কাজের ফল তার দশগুণ; এভাবেই সারা বছরের সওম পালন হয়ে যাবে। আমি বললাম, আমি এর হতে বেশী করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেনঃ তাহলে একদিন সওম পালন কর এবং দু’দিন ছেড়ে দাও। আমি বললাম, আমি এর হতে বেশি করার শক্তি রাখি। তিনি বললেনঃ তাহলে একদিন সওম পালন কর আর একদিন ছেড়ে দাও। এ হল দাউদ (আঃ)-এর সওম এবং এ হল সর্বোত্তম (সওম)। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশী করার সামর্থ্য রাখি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এর চেয়ে উত্তম সওম (রাখার পদ্ধতি) আর নেই।

৩০/৫৭. অধ্যায়ঃ

সওম পালনের ব্যাপারে পরিবার-পরিজনের অধিকার ।
আবূ জুহায়ফাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এরূপ বর্ণনা করেছেন ।

১৯৭৭

حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ أَخْبَرَنَا أَبُو عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ سَمِعْتُ عَطَاءً أَنَّ أَبَا الْعَبَّاسِ الشَّاعِرَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرٍو بَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَنِّي أَسْرُدُ الصَّوْمَ وَأُصَلِّي اللَّيْلَ فَإِمَّا أَرْسَلَ إِلَيَّ وَإِمَّا لَقِيتُهُ فَقَالَ أَلَمْ أُخْبَرْ أَنَّكَ تَصُومُ وَلاَ تُفْطِرُ وَتُصَلِّي فَصُمْ وَأَفْطِرْ وَقُمْ وَنَمْ فَإِنَّ لِعَيْنِكَ عَلَيْكَ حَظًّا وَإِنَّ لِنَفْسِكَ وَأَهْلِكَ عَلَيْكَ حَظًّا قَالَ إِنِّي لأقْوَى لِذَلِكَ قَالَ فَصُمْ صِيَامَ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَم قَالَ وَكَيْفَ قَالَ كَانَ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا وَلاَ يَفِرُّ إِذَا لاَقَى قَالَ مَنْ لِي بِهَذِهِ يَا نَبِيَّ اللهِ قَالَ عَطَاءٌ لاَ أَدْرِي كَيْفَ ذَكَرَ صِيَامَ الأَبَدِ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ صَامَ مَنْ صَامَ الأَبَدَ مَرَّتَيْنِ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ সংবাদ পোঁছে যে, আমি একটানা সওম পালন করি এবং রাতভর সালাত আদায় করি। এরপর হয়ত তিনি আমার কাছে লোক পাঠালেন অথবা আমি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করলাম। তিনি বললেনঃ আমি কি এ কথা ঠিক শুনিনি যে, তুমি সওম পালন করতে থাক আর ছাড় না এবং তুমি (রাতভর) সালাত আদায় করতে থাক আর ঘুমাও না? (আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি সওম পালন কর এবং মাঝে মাঝে তা ছেড়েও দাও। রাতে সালাত আদায় কর এবং নিদ্রাও যাও। কেননা তোমার উপর তোমার চোখের হক রয়েছে এবং তোমার নিজের শরীরের ও তোমার পরিবারের হক তোমার উপর আছে। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, আমি এর চেয়ে বেশী শক্তি রাখি। তিনি [আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ] বললেনঃ তাহলে তুমি দাউদ (আঃ)-এর সিয়াম পালন কর। রাবী বলেন, ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, তা কিভাবে? তিনি বললেনঃ দাউদ (আঃ) একদিন সওম পালন করতেন, একদিন ছেড়ে দিতেন এবং তিনি (শত্রুর) সম্মুখীন হলে পলায়ন করতেন না। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র নবী ! আমাকে এ শক্তি কে যোগাবে? বর্ণনাকারী ‘আত্বা (রহঃ) বলেন, (এ হাদীসে) কিভাবে সব সময়ের সিয়ামের প্রসঙ্গ আসে সে কথাটুকু আমার মনে নেই (অবশ্য) এতটুকু মনে আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’বার এ কথাটি বলেছেন, সব সময়ের সওম কোন সওম নয়।

৩০/৫৮. অধ্যায়ঃ

একদিন সওম করা ও একদিন পরিত্যাগ করা ।

১৯৭৮

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُغِيرَةَ قَالَ سَمِعْتُ مُجَاهِدًا عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ صُمْ مِنْ الشَّهْرِ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ قَالَ أُطِيقُ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ فَمَا زَالَ حَتَّى قَالَ صُمْ يَوْمًا وَأَفْطِرْ يَوْمًا فَقَالَ اقْرَإِ الْقُرْآنَ فِي كُلِّ شَهْرٍ قَالَ إِنِّي أُطِيقُ أَكْثَرَ فَمَا زَالَ حَتَّى قَالَ فِي ثَلاَثٍ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি প্রতি মাসে তিন দিন সওম পালন কর। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, আমি এর চেয়ে বেশী করার শক্তি রাখি। এভাবে তিনি বৃদ্ধির আবেদন করতে লাগলেন, অবশেষে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ একদিন সওম পালন কর আর একদিন ছেড়ে দাও এবং আরো বললেনঃ প্রতি মাসে (এক খতম) কুরআন পাঠ করো। তিনি বললেন, আমি এর চেয়ে বেশী শক্তি রাখি। এভাবে বলতে লাগলেন, অবশেষে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে তিন দিনে (পাঠ করো)।

৩০/৫৯. অধ্যায়ঃ

দাউদ (আঃ)-এর সওম ।

১৯৭৯

حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الْعَبَّاسِ الْمَكِّيَّ وَكَانَ شَاعِرًا وَكَانَ لاَ يُتَّهَمُ فِي حَدِيثِهِ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّكَ لَتَصُومُ الدَّهْرَ وَتَقُومُ اللَّيْلَ فَقُلْتُ نَعَمْ قَالَ إِنَّكَ إِذَا فَعَلْتَ ذَلِكَ هَجَمَتْ لَهُ الْعَيْنُ وَنَفِهَتْ لَهُ النَّفْسُ لاَ صَامَ مَنْ صَامَ الدَّهْرَ صَوْمُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ صَوْمُ الدَّهْرِ كُلِّهِ قُلْتُ فَإِنِّي أُطِيقُ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ قَالَ فَصُمْ صَوْمَ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَم كَانَ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا وَلاَ يَفِرُّ إِذَا لاَقَى
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি সব সময় সওম পালন কর এবং রাতভর সালাত আদায় করে থাকো? আমি বললাম, জী হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তুমি এরূপ করলে চোখ বসে যাবে এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। যে সারা বছর সওম পালন করে সে যেন সওম পালন করে না। মাসে তিন দিন করে সওম পালন করা সারা বছর সওম পালনের সমতুল্য। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশী করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি দাউদী সওম পালন করো, তিনি একদিন সওম পালন করতেন আর একদিন ছেড়ে দিতেন এবং যখন শত্রুর সম্মুখীন হতেন তখন পলায়ন করতেন না।

১৯৮০

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ شَاهِينَ الْوَاسِطِيُّ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو الْمَلِيحِ قَالَ دَخَلْتُ مَعَ أَبِيكَ عَلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو فَحَدَّثَنَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ذُكِرَ لَهُ صَوْمِي فَدَخَلَ عَلَيَّ فَأَلْقَيْتُ لَهُ وِسَادَةً مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيفٌ فَجَلَسَ عَلَى الأَرْضِ وَصَارَتْ الْوِسَادَةُ بَيْنِي وَبَيْنَهُ فَقَالَ أَمَا يَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلاَثَةُ أَيَّامٍ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ خَمْسًا قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ سَبْعًا قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ تِسْعًا قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِحْدَى عَشْرَةَ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ صَوْمَ فَوْقَ صَوْمِ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَم شَطْرَ الدَّهَرِ صُمْ يَوْمًا وَأَفْطِرْ يَوْمًا
‘আব্দুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আমার সওমের (সওম পালন পদ্ধতি সম্পর্কে) আলোচনা করায় তিনি আমার এখানে আগমন করেন। আমি তাঁর জন্য খেজুরের গাছের ছালে পরিপূর্ণ চামড়ার বালিশ (হেলান দিয়ে বসার জন্য) উপস্থিত করলাম। তিনি মাটিতে বসে পড়লেন। বালিশটি তাঁর ও আমার মাঝে পরে থাকল। তিনি বললেনঃ প্রতি মাসে তুমি তিন দিন সওম পালন করলে হয় না? ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! (আরো করতে সক্ষম)। তিনি বললেনঃ সাত দিন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! (আরো করতে সক্ষম)। তিনি বললেনঃ নয় দিন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! (আরো করতে সক্ষম)। তিনি বললেনঃ এগারো দিন। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, দাউদ (আঃ)-এর সওমের চেয়ে উত্তম সওম আর হয় না- (তা হচ্ছে) অর্ধেক বছর, একদিন সওম পালন কর ও একদিন ছেড়ে দাও।

৩০/৬০. অধ্যায়ঃ

সিয়ামুল বীয ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ (এর সওম) ।

১৯৮১

حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا أَبُو التَّيَّاحِ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو عُثْمَانَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ أَوْصَانِي خَلِيلِي صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثٍ صِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَرَكْعَتَيْ الضُّحَى وَأَنْ أُوتِرَ قَبْلَ أَنْ أَنَامَ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বন্ধু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতি মাসে তিন দিন করে সওম পালন করা এবং দু’রাক’আত সলাতুয-যুহা এবং ঘুমানোর পূর্বে বিতর সালাত আদায় করা।

৩০/৬১. অধ্যায়ঃ

কারো সাথে দেখা করতে গিয়ে (নফল) সওম ভেঙ্গে না ফেলা ।

১৯৮২

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى قَالَ حَدَّثَنِي خَالِدٌ هُوَ ابْنُ الْحَارِثِ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ دَخَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى أُمِّ سُلَيْمٍ فَأَتَتْهُ بِتَمْرٍ وَسَمْنٍ قَالَ أَعِيدُوا سَمْنَكُمْ فِي سِقَائِهِ وَتَمْرَكُمْ فِي وِعَائِهِ فَإِنِّي صَائِمٌ ثُمَّ قَامَ إِلَى نَاحِيَةٍ مِنْ الْبَيْتِ فَصَلَّى غَيْرَ الْمَكْتُوبَةِ فَدَعَا لأُمِّ سُلَيْمٍ وَأَهْلِ بَيْتِهَا فَقَالَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ لِي خُوَيْصَّةً قَالَ مَا هِيَ قَالَتْ خَادِمُكَ أَنَسٌ فَمَا تَرَكَ خَيْرَ آخِرَةٍ وَلاَ دُنْيَا إِلاَّ دَعَا لِي بِهِ قَالَ اللَّهُمَّ ارْزُقْهُ مَالاً وَوَلَدًا وَبَارِكْ لَهُ فِيهِ فَإِنِّي لَمِنْ أَكْثَرِ الأَنْصَارِ مَالاً وَحَدَّثَتْنِي ابْنَتِي أُمَيْنَةُ أَنَّهُ دُفِنَ لِصُلْبِي مَقْدَمَ حَجَّاجٍ الْبَصْرَةَ بِضْعٌ وَعِشْرُونَ وَمِائَةٌ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ قَالَ حَدَّثَنِي حُمَيْدٌ سَمِعَ أَنَسًا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (আমার মাতা) উম্মু সুলাইম (রাঃ)-এর ঘরে আগমন করলেন। তিনি তাঁর সামনে খেজুর ও ঘি পেশ করলেন। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের ঘি মশকে এবং খেজুর তার বরতনে রেখে দাও। কারণ আমি সায়িম। এরপর তিনি ঘরের এক পাশে গিয়ে নফল সালাত আদায় করলেন এবং উম্মু সুলাইম (রাঃ) ও তাঁর পরিজনের জন্য দু’আ করলেন। উম্মু সুলাইম (রাঃ) আরয করলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার একটি ছোট ছেলে আছে। তিনি বললেনঃ কে সে? উম্মু সুলাইম (রাঃ) বললেন, আপনার খাদেম আনাস। তখন আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের যাবতীয় কল্যাণের দু’আ করলেন। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! তুমি তাকে মাল ও সন্তান-সন্ততি দান কর এবং তাকে বরকত দাও। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি আনসারগণের মধ্যে অধিক সম্পদশালীদের একজন। এবং আমার কন্যা উমায়না আমাকে জানিয়েছেন যে, হাজ্জাজ (ইব্‌নু ইউসুফ) বসরায় আগমনের পূর্ব পর্যন্ত একশত বিশের অধিক আমার নিজের সন্তান মারা গেছে। হুমায়দ (রহঃ.) আনাস (রাঃ)- কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছেন।

৩০/৬২. অধ্যায়ঃ

মাসের শেষভাগে সওম ।

১৯৮৩

حَدَّثَنَا الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ عَنْ غَيْلاَنَ ح و حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا مَهْدِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ حَدَّثَنَا غَيْلاَنُ بْنُ جَرِيرٍ عَنْ مُطَرِّفٍ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ سَأَلَهُ أَوْ سَأَلَ رَجُلاً وَعِمْرَانُ يَسْمَعُ فَقَالَ يَا أَبَا فُلاَنٍ أَمَا صُمْتَ سَرَرَ هَذَا الشَّهْرِ قَالَ أَظُنُّهُ قَالَ يَعْنِي رَمَضَانَ قَالَ الرَّجُلُ لاَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَإِذَا أَفْطَرْتَ فَصُمْ يَوْمَيْنِ لَمْ يَقُلْ الصَّلْتُ أَظُنُّهُ يَعْنِي رَمَضَانَ قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ وَقَالَ ثَابِتٌ عَنْ مُطَرِّفٍ عَنْ عِمْرَانَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ سَرَرِ شَعْبَانَ
‘ইমরান ইব্‌নু হুইায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে অথবা (রাবী বলেন) অন্য এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করেন এবং ‘ইমরান (রাঃ) তা শুনছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে অমুকের পিতা!! তুমি কি এ মাসের শেষভাগে সওম পালন কর নি? (রাবী) বলেন, আমার মনে হয় (আমার ওস্তাদ) বলেছেন, অর্থাৎ রমযান। লোকটি উত্তর দিলো, হে আল্লাহ্‌র রসূল! না। তিনি বললেনঃ যখন সওম পালন শেষ করবে তখন দু’দিন সওম পালন করে নিবে। আমার মনে হয় সালত (রহঃ) রমযান শব্দটি বর্ণনা করেননি। সাবিত (রহঃ) ‘ইমরান সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে ----- শা’বানের শেষভাগে বলে উল্লেখ করেছেন। আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, শা’বান শব্দটি অধিকতর সহীহ।

৩০/৬৩. অধ্যায়ঃ

জুমু’আর দিনে সওম করা । যদি জুমু’আর দিনে সওম পালনরত অবস্থায় ভোর হয় তবে তার উচিত সওম ছেড়ে দেয়া । অর্থাৎ যদি এর আগের দিনে সওম পালন না করে থাকে এবং পরের দিনে সওম পালনের ইচ্ছা না থাকে ।

১৯৮৪

حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ شَيْبَةَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبَّادٍ قَالَ سَأَلْتُ جَابِرًا نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَوْمِ يَوْمِ الْجُمُعَةِ قَالَ نَعَمْ زَادَ غَيْرُ أَبِي عَاصِمٍ يَعْنِي أَنْ يَنْفَرِدَ بِصَوْمٍ
মুহাম্মাদ ইব্‌নু ‘আব্বাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি জুমু’আর দিনে (নফল) সওম পালন করতে নিষেধ করেছেন? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ। আবূ ‘আসিম (রহঃ) ব্যতীত অন্যেরা অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, পৃথকভাবে জুমু’আর দিনে সওম পালন (-কে নিষেধ করেছেন)।

১৯৮৫

حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ حَدَّثَنَا أَبُو صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ يَصُومَنَّ أَحَدُكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلاَّ يَوْمًا قَبْلَهُ أَوْ بَعْدَهُ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের কেউ যেন শুধু জুমু’আর দিনে সওম পালন না করে কিন্তু তার পূর্বে একদিন অথবা পরের দিন (যদি পালন করে তবে জুমু’আর দিনে সওম পালন করা যায়)।

১৯৮৬

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ ح وحَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ عَنْ جُوَيْرِيَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَيْهَا يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَهِيَ صَائِمَةٌ فَقَالَ أَصُمْتِ أَمْسِ قَالَتْ لاَ قَالَ تُرِيدِينَ أَنْ تَصُومِي غَدًا قَالَتْ لاَ قَالَ فَأَفْطِرِي وَقَالَ حَمَّادُ بْنُ الْجَعْدِ سَمِعَ قَتَادَةَ حَدَّثَنِي أَبُو أَيُّوبَ أَنَّ جُوَيْرِيَةَ حَدَّثَتْهُ فَأَمَرَهَا فَأَفْطَرَتْ
জুয়াইরিয়া বিনতে হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু’আর দিনে তাঁর নিকট প্রবেশ করেন তখন তিনি (জুয়াইরিয়া) সওম পালনরত ছিলেন। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি গতকাল সওম পালন করেছিলে? তিনি বললেন, না। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি আগামীকাল সওম পালনের ইচ্ছা রাখো? তিনি বললেন, না। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে সওম ভেঙ্গে ফেল। হাম্মাদ ইব্‌নুল জা’দ (রহঃ) স্বীয় সূত্রে জুয়াইরিয়া (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে আদেশ দেন এবং তিনি সওম ভঙ্গ করেন।

৩০/৬৪. অধ্যায়ঃ

সওমের (উদ্দেশে) কোন দিন কি নির্দিষ্ট করা যায় ?

১৯৮৭

. حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ هَلْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَخْتَصُّ مِنْ الأَيَّامِ شَيْئًا قَالَتْ لاَ كَانَ عَمَلُهُ دِيمَةً وَأَيُّكُمْ يُطِيقُ مَا كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُطِيقُ
‘আলকামা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি কোন দিন কোন কাজের জন্য নির্দিষ্ট করে নিতেন? উত্তরে তিনি বললেন, না, বরং তাঁর আমল স্থায়ী হতো এবং আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সব ‘আমল করার শক্তি–সামর্থ্য রাখতেন তোমাদের মধ্যে কে আছে যে সে সবের সামর্থ্য রাখে?

৩০/৬৫. অধ্যায়ঃ

‘আরাফাতের দিবসে সওম করা।

১৯৮৮

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ مَالِكٍ قَالَ حَدَّثَنِي سَالِمٌ قَالَ حَدَّثَنِي عُمَيْرٌ مَوْلَى أُمِّ الْفَضْلِ أَنَّ أُمَّ الْفَضْلِ حَدَّثَتْهُ ح وحَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ أَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ عُمَيْرٍ مَوْلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ الْعَبَّاسِ عَنْ أُمِّ الْفَضْلِ بِنْتِ الْحَارِثِ أَنَّ نَاسًا تَمَارَوْا عِنْدَهَا يَوْمَ عَرَفَةَ فِي صَوْمِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ بَعْضُهُمْ هُوَ صَائِمٌ وَقَالَ بَعْضُهُمْ لَيْسَ بِصَائِمٍ فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ بِقَدَحِ لَبَنٍ وَهُوَ وَاقِفٌ عَلَى بَعِيرِهِ فَشَرِبَهُ
উম্মুল ফাযল বিনতে হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কিছু সংখ্যক লোক ‘আরাফাতের দিনে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সওম পালন সম্পর্কে তাঁর কাছে সন্দেহ প্রকাশ করে। তাদের কেউ বলল, তিনি সওম পালন করেছেন। আর কেউ বলল, না, তিনি করেন নি। এতে উম্মুল ফাযল (রাঃ) এক পেয়ালা দুধ আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন এবং তিনি তা পান করে নিলেন। এ সময় তিনি উটের পিঠে (‘আরাফাতে) উকূফ অবস্থায় ছিলেন।

১৯৮৯

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ أَوْ قُرِئَ عَلَيْهِ قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرٌو عَنْ بُكَيْرٍ عَنْ كُرَيْبٍ عَنْ مَيْمُونَةَ أَنَّ النَّاسَ شَكُّوا فِي صِيَامِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ عَرَفَةَ فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ بِحِلاَبٍ وَهُوَ وَاقِفٌ فِي الْمَوْقِفِ فَشَرِبَ مِنْهُ وَالنَّاسُ يَنْظُرُونَ
মায়মূনাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কিছু সংখ্যক লোক ‘আরাফাতের দিনে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সওম পালন সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করলে তিনি স্বল্প পরিমাণ দুধ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পাঠিয়ে দিলে তিনি তা পান করলেন ও লোকেরা তা প্রত্যক্ষ করছিল। তখন তিনি (‘আরাফাতে) অবস্থান স্থলে ওকূফ করছিলেন।

৩০/৬৬. অধ্যায়ঃ

ঈদুল ফিতরের দিবসে সওম করা ।

১৯৯০

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي عُبَيْدٍ مَوْلَى ابْنِ أَزْهَرَ قَالَ شَهِدْتُ الْعِيدَ مَعَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَقَالَ هَذَانِ يَوْمَانِ نَهَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ صِيَامِهِمَا يَوْمُ فِطْرِكُمْ مِنْ صِيَامِكُمْ وَالْيَوْمُ الآخَرُ تَأْكُلُونَ فِيهِ مِنْ نُسُكِكُمْ قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ مَنْ قَالَ مَوْلَى ابْنِ أَزْهَرَ فَقَدْ أَصَابَ وَمَنْ قَالَ مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ عَوْفٍ فَقَدْ أَصَابَ
বনূ আযহারের আযাদকৃত গোলাম আবূ ‘উবাইদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একদা ঈদে ‘উমার ইব্‌নুল খাত্তাব (রাঃ)-এর সাথে ছিলাম, তখন তিনি বললেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই দুই দিনে সওম পালন করতে নিষেধ করেছেন। (ঈদুল ফিতরের দিন) যে দিন তোমরা তোমাদের সওম ছেড়ে দাও। আরেক দিন, যেদিন তোমরা তোমাদের কুরবানীর গোশত্ খাও। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ইব্‌নু ‘উয়ায়নাহ (রহঃ) বলেন, যিনি ইব্‌নু আযহারের মাওলা বলে উল্লেখ করেছেন, তিনি ঠিক বর্ণনা করেছেন; আর যিনি ‘আবদুর রহমান ইব্‌নু ‘আওফ (রাঃ)- এর মাওলা বলেছেন, তিনিও ঠিক বর্ণনা করেছেন।

১৯৯১

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ يَحْيَى عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَوْمِ يَوْمِ الْفِطْرِ وَالنَّحْرِ وَعَنْ الصَّمَّاءِ وَأَنْ يَحْتَبِيَ الرَّجُلُ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ
আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদুল ফিতরের দিন এবং কুরবানীর ঈদের দিন সওম পালন করা হতে, ‘সাম্মা’ ধরণের কাপড় পরিধান করতে, এক কাপড় পরিধানরত অবস্থায় দুই হাঁটু তুলে নিতম্বের উপর বসতে (কেননা এতে সতর প্রকাশ পাওয়ার আশংকা রয়েছে)।

১৯৯২

. وَعَنْ صَلاَةٍ بَعْدَ الصُّبْحِ وَالْعَصْرِ
আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজর ও ‘আসরের পরে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।

৩০/৬৭. অধ্যায়ঃ

কুরবানীর দিবসে সওম

১৯৯৩

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ مِينَا قَالَ سَمِعْتُهُ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ يُنْهَى عَنْ صِيَامَيْنِ وَبَيْعَتَيْنِ الْفِطْرِ وَالنَّحْرِ وَالْمُلاَمَسَةِ وَالْمُنَابَذَةِ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দু’ (দিনের) সওম ও দু’ (প্রকারের) ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করা হয়েছে, ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর (দিনের) সওম এবং মুলামাসা ও মুনাবাযা (পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয়) হতে।

১৯৯৪

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُعَاذٌ أَخْبَرَنَا ابْنُ عَوْنٍ عَنْ زِيَادِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ عُمَرَ فَقَالَ رَجُلٌ نَذَرَ أَنْ يَصُومَ يَوْمًا قَالَ أَظُنُّهُ قَالَ الِاثْنَيْنِ فَوَافَقَ ذَلِكَ يَوْمَ عِيدٍ فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ أَمَرَ اللهُ بِوَفَاءِ النَّذْرِ وَنَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَوْمِ هَذَا الْيَوْمِ
যিয়াদ ইব্‌নু জুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি এসে (‘আবদুল্লাহ) ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ)- কে বলল যে, এক ব্যক্তি কোন এক দিনের সওম পালন করার মানত করেছে, আমার মনে হয় সে সোমবারের কথা বলেছিল। ঘটনাক্রমে ঐ দিন ঈদের দিন পড়ে যায়। ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা মানত পুরা করার নির্দেশ দিয়েছেন আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই (ঈদের) দিনে সওম পালন করতে নিষেধ করেছেন।

১৯৯৫

حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عُمَيْرٍ قَالَ سَمِعْتُ قَزَعَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَكَانَ غَزَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثِنْتَيْ عَشْرَةَ غَزْوَةً قَالَ سَمِعْتُ أَرْبَعًا مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَعْجَبْنَنِي قَالَ لاَ تُسَافِرْ الْمَرْأَةُ مَسِيرَةَ يَوْمَيْنِ إِلاَّ وَمَعَهَا زَوْجُهَا أَوْ ذُو مَحْرَمٍ وَلاَ صَوْمَ فِي يَوْمَيْنِ الْفِطْرِ وَالأَضْحَى وَلاَ صَلاَةَ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ وَلاَ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ وَلاَ تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلاَّ إِلَى ثَلاَثَةِ مَسَاجِدَ مَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَسْجِدِ الأَقْصَى وَمَسْجِدِي هَذَا
আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বারোটি যুদ্ধে শরীক ছিলেন, তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে চারটি কথা শুনেছি, যা আমার খুব ভালো লেগেছে। তিনি বলেছেন, স্বামী অথবা মাহরাম (যার সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ) পুরুষ ব্যতীত কোন নারী যেন দুই দিনের দূরত্বের সফর না করে। ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর দিনে সওম নেই। ফাজরের সলাতের পরে সূর্যোদয় এবং ‘আসরের সলাতের পরে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোন সালাত নেই। মাসজিদে হারাম, মাসজিদে আকসা ও আমার এই মাসজিদ ছাড়া অন্য কোন মাসজিদের উদ্দেশ্যে কেউ যেন সফর না করে।

৩০/৬৮. অধ্যায়ঃ

আইয়্যামে তাশরীকে সওম করা।

১৯৯৬

وَقَالَ لِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ هِشَامٍ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي كَانَتْ عَائِشَةُ تَصُومُ أَيَّامَ التَّشْرِيقِ بِمِنًى وَكَانَ أَبُوهَا يَصُومُهَا
মুহাম্মাদ ইব্‌নুল মুসান্না (রহঃ)...হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমার পিতা আমার নিকট বর্ণনা করেছেন, ‘আয়িশাহ (রাঃ) মিনাতে (অবস্থানের) দিনগুলোতে সওম পালন করতেন। আর তাঁর পিতাও সে দিনগুলোতে সওম পালন করতেন।

১৯৯৭

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عِيسى بْنِ أَبِي لَيْلَى عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ وَعَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالاَ لَمْ يُرَخَّصْ فِي أَيَّامِ التَّشْرِيقِ أَنْ يُصَمْنَ إِلاَّ لِمَنْ لَمْ يَجِدْ الْهَدْيَ
আয়িশাহ্‌ (রাঃ) ও ইব্‌নু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা উভয়ে বলেন, যাঁর নিকট কুরবানীর পশু নেই তিনি ব্যতীত অন্য কারও জন্য আইয়্যামে তাশরীকে সওম পালন করার অনুমতি দেয়া হয়নি।

১৯৯৮

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عِيسى بْنِ أَبِي لَيْلَى عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ وَعَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالاَ لَمْ يُرَخَّصْ فِي أَيَّامِ التَّشْرِيقِ أَنْ يُصَمْنَ إِلاَّ لِمَنْ لَمْ يَجِدْ الْهَدْيَ
আয়িশাহ্‌ (রাঃ) ও ইব্‌নু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা উভয়ে বলেন, যাঁর নিকট কুরবানীর পশু নেই তিনি ব্যতীত অন্য কারও জন্য আইয়্যামে তাশরীকে সওম পালন করার অনুমতি দেয়া হয়নি।

১৯৯৯

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ الصِّيَامُ لِمَنْ تَمَتَّعَ بِالْعُمْرَةِ إِلَى الْحَجِّ إِلَى يَوْمِ عَرَفَةَ فَإِنْ لَمْ يَجِدْ هَدْيًا وَلَمْ يَصُمْ صَامَ أَيَّامَ مِنًى وَعَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ مِثْلَهُ تَابَعَهُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ
ইব্‌নু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে ব্যক্তি একই সঙ্গে হাজ্জ ও ‘উমরাহ পালনের সুযোগ লাভ করল সে ‘আরাফাত দিবস পর্যন্ত সওম পালন করবে। সে যদি কুরবানী না করতে পারে এবং সওমও পালন না করে থাকে তবে মিনার দিনগুলোতে সওম পালন করবে। (আ.প্র. ১৮৫৮, ই.ফা. ১৮৭০)
আয়িশাহ (রাঃ) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইবরাহীম ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) ইব্‌নু শিহাব (রহঃ) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ১৮৫৮, ই.ফা. ১৮৭০ শেষাংশ)

৩০/৬৯. অধ্যায়ঃ

‘আশুরার দিনে সওম করা ।

২০০০

حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ عَاشُورَاءَ إِنْ شَاءَ صَامَ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘আশূরার দিনে কেউ ইচ্ছা করলে সওম পালন করতে পারে।

২০০১

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِصِيَامِ يَوْمِ عَاشُورَاءَ فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ كَانَ مَنْ شَاءَ صَامَ وَمَنْ شَاءَ أَفْطَرَ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথমে ‘আশূরার দিনে সওম পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন, পরে যখন রমযানের সওম ফরয করা হলো তখন যার ইচ্ছা (‘আশুরার) সওম পালন করত আর যার ইচ্ছা করত না।

২০০২

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ يَوْمُ عَاشُورَاءَ تَصُومُهُ قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُهُ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ صَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ تَرَكَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ فَمَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাহিলিয়্যাতের যুগে কুরাইশগণ ‘আশূরার সওম পালন করত এবং আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- ও এ সওম পালন করতেন। যখন তিনি মাদীনায় আগমন করেন তখনও এ সওম পালন করেন এবং তা পালনের নির্দেশ দেন। যখন রমযানের সওম ফরয করা হল তখন ‘আশূরার সওম ছেড়ে দেয়া হলো, যার ইচ্ছা সে পালন করবে আর যার ইচ্ছা পালন করবে না।

২০০৩

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ أَنَّهُ سَمِعَ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ عَامَ حَجَّ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ يَا أَهْلَ الْمَدِينَةِ أَيْنَ عُلَمَاؤُكُمْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ هَذَا يَوْمُ عَاشُورَاءَ وَلَمْ يَكْتُبْ اللهُ عَلَيْكُمْ صِيَامَهُ وَأَنَا صَائِمٌ فَمَنْ شَاءَ فَلْيَصُمْ وَمَنْ شَاءَ فَلْيُفْطِرْ
হুমাইদ ইব্‌নু ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে বছর মু’আবিয়াহ (রাঃ) হাজ্জ করেন সে বছর ‘আশূরার দিনে (মসজিদে নববীর) মিম্বরে তিনি (রাবী) তাঁকে বলতে শুনেছেন যে, হে মাদীনাবাসিগণ! তোমাদের আলিমগণ কোথায়? আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, আজকে ‘আশূরার দিন, আল্লাহ তা’আলা এর সওম তোমাদের উপর ফরয করেননি বটে, তবে আমি (আজ) সওম পালন করছি। যার ইচ্ছা সে সওম পালন করুক, যার ইচ্ছা সে পালন না করুক।

২০০৪

حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ فَرَأَى الْيَهُودَ تَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ فَقَالَ مَا هَذَا قَالُوا هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ هَذَا يَوْمٌ نَجَّى اللهُ بَنِي إِسْرَائِيلَ مِنْ عَدُوِّهِمْ فَصَامَهُ مُوسَى قَالَ فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوسَى مِنْكُمْ فَصَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ
ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, ইয়াহুদীগণ ‘আশুরার দিনে সওম পালন করে। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ কি ব্যাপার? (তোমরা এ দিনে সওম পালন কর কেন?) তারা বলল, এ অতি উত্তম দিন, এ দিনে আল্লাহ তা’আলা বনী ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর কবল হতে নাজাত দান করেন, ফলে এ দিনে মূসা (আ) সওম পালন করেন। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি তোমাদের অপেক্ষা মূসার অধিক নিকটবর্তী, এরপর তিনি এ দিনে সওম পালন করেন এবং সওম পালনের নির্দেশ দেন।

২০০৫

. حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ أَبِي عُمَيْسٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ كَانَ يَوْمُ عَاشُورَاءَ تَعُدُّهُ الْيَهُودُ عِيدًا قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَصُومُوهُ أَنْتُمْ
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আশূরার দিনকে ইয়াহুদীগণ ‘ঈদ (উৎসবের দিন) মনে করত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সাহাবীগণকে) বললেনঃ তোমরাও এ দিনের সওম পালন কর।

২০০৬

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى عَنْ ابْنِ عُيَيْنَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِي يَزِيدَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَتَحَرَّى صِيَامَ يَوْمٍ فَضَّلَهُ عَلَى غَيْرِهِ إِلاَّ هَذَا الْيَوْمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَهَذَا الشَّهْرَ يَعْنِي شَهْرَ رَمَضَانَ
ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে ‘আশূরার দিনের সওমের উপরে অন্য কোন দিনের সওমকে প্রাধান্য প্রদান করতে দেখিনি এবং এ মাস অর্থাৎ রমযান মাস (এর উপর অন্য মাসের গুরুত্ব প্রদান করতেও দেখিনি)।

২০০৭

حَدَّثَنَا الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ قَالَ أَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً مِنْ أَسْلَمَ أَنْ أَذِّنْ فِي النَّاسِ أَنَّ مَنْ كَانَ أَكَلَ فَلْيَصُمْ بَقِيَّةَ يَوْمِهِ وَمَنْ لَمْ يَكُنْ أَكَلَ فَلْيَصُمْ فَإِنَّ الْيَوْمَ يَوْمُ عَاشُورَاءَ
সালামাহ ইব্‌নু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তিকে লোকজনের মধ্যে এ মর্মে ঘোষণা দিতে আদেশ করলেন যে, যে ব্যক্তি খেয়েছে, সে যেন দিনের বাকি অংশে সওম পালন করে, আর যে খায়নি, সেও যেন সওম পালন করে। কেননা আজকের দিন ‘আশূরার দিন।

No comments

Powered by Blogger.