সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "দুই ঈদ" হাদিস নং -৯৬১ থেকে ৯৭৫
৯৬১
وَعَنْ جَابِرِ
بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
قَامَ فَبَدَأَ بِالصَّلاَةِ ثُمَّ خَطَبَ النَّاسَ بَعْدُ فَلَمَّا فَرَغَ
نَبِيُّ اللهِ نَزَلَ فَأَتَى النِّسَاءَ فَذَكَّرَهُنَّ وَهُوَ يَتَوَكَّأُ عَلَى
يَدِ بِلَالٍ وَبِلاَلٌ بَاسِطٌ ثَوْبَهُ يُلْقِي فِيهِ النِّسَاءُ صَدَقَةً
قُلْتُ لِعَطَاءٍ أَتَرَى حَقًّا عَلَى الْإِمَامِ الْآنَ أَنْ يَأْتِيَ
النِّسَاءَ فَيُذَكِّرَهُنَّ حِينَ يَفْرُغُ قَالَ إِنَّ ذَلِكَ لَحَقٌّ
عَلَيْهِمْ وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يَفْعَلُوا.
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে প্রথমে সালাত আদায়
করলেন এবং পরে লোকদের উদ্দেশে খুত্বা দিলেন। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) খুত্বা শেষ করলেন, তিনি (মিম্বর হতে) নেমে মহিলাগণের (কাতারের) নিকট
আসলেন এবং তাঁদের নসীহত করলেন। তখন তিনি বিলাল (রাঃ)-এর হাতে ভর করেছিলেন এবং
বিলাল (রাঃ) তাঁর কাপড় ছড়িয়ে ধরলে, নারীরা এতে সদাকার বস্তু ফেলতে লাগলেন। আমি
‘আতা (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি এখনো যরুরী মনে করেন যে, ইমাম খুত্বা শেষ
করে নারীদের নিকট এসে তাদের নসীহত করবেন? তিনি বললেন, নিশ্চয় তা তাদের জন্য অবশ্যই
জরুরী। তাদের কী হয়েছে যে, তাঁরা তা করবে না?
‘ঈদের সালাতের পর খুতবা।
৯৬২
حَدَّثَنَا
أَبُو عَاصِمٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي الْحَسَنُ
بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ شَهِدْتُ الْعِيدَ مَعَ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ ـ رضى
الله عنهم ـ فَكُلُّهُمْ كَانُوا يُصَلُّونَ قَبْلَ الْخُطْبَةِ.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ
বক্র, ‘উমর এবং ‘উসমান (রাঃ)-এর সঙ্গে সালাতে হাযির ছিলাম। সকলেই খুত্বার আগে
সালাত আদায় করতেন।
৯৬৩
حَدَّثَنَا
يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا
عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ ـ رضى الله عنهما ـ يُصَلُّونَ
الْعِيدَيْنِ قَبْلَ الْخُطْبَةِ.
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর এবং ‘উমর
(রাঃ) উভয়ে ‘ঈদের সালাত খুতবার আগে আদায় করতেন।
৯৬৪
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ،
عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم صَلَّى يَوْمَ الْفِطْرِ رَكْعَتَيْنِ، لَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلاَ
بَعْدَهَا، ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ وَمَعَهُ بِلاَلٌ، فَأَمَرَهُنَّ
بِالصَّدَقَةِ، فَجَعَلْنَ يُلْقِينَ، تُلْقِي الْمَرْأَةُ خُرْصَهَا
وَسِخَابَهَا.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিত্রে দু’ রাক’আত
সালাত আদায় করেন। এর পূর্বে ও পরে কোন সালাত আদায় করেননি। অতঃপর বিলাল (রাঃ)-কে
সঙ্গে নিয়ে নারীদের নিকট এলেন এবং সদাকা প্রদানের জন্য তাদের নির্দেশ দিলেন। তখন
তাঁরা দিতে লাগলেন। নারীদের কেউ দিলেন আংটি, আবার কেউ দিলেন গলার হার।
৯৬৫
حَدَّثَنَا
آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا زُبَيْدٌ، قَالَ سَمِعْتُ
الشَّعْبِيَّ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم " إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ فِي يَوْمِنَا هَذَا أَنْ
نُصَلِّيَ، ثُمَّ نَرْجِعَ فَنَنْحَرَ، فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدْ أَصَابَ
سُنَّتَنَا، وَمَنْ نَحَرَ قَبْلَ الصَّلاَةِ فَإِنَّمَا هُوَ لَحْمٌ قَدَّمَهُ
لأَهْلِهِ، لَيْسَ مِنَ النُّسْكِ فِي شَىْءٍ ". فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ
الأَنْصَارِ يُقَالُ لَهُ أَبُو بُرْدَةَ بْنُ نِيَارٍ يَا رَسُولَ اللَّهِ،
ذَبَحْتُ وَعِنْدِي جَذَعَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُسِنَّةٍ. فَقَالَ " اجْعَلْهُ
مَكَانَهُ، وَلَنْ تُوفِيَ أَوْ تَجْزِيَ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ ".
বারা'আ ইব্নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আজকের এ
দিনে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে সালাত আদায় করা। অতঃপর আমরা ফিরে আসব এবং কুরবাণী
করব। কাজেই যে ব্যক্তি তা করল, সে আমাদের নিয়ম পালন করল। যে ব্যক্তি সালাতের
পূর্বে কুরবাণী করল, তা শুধু গোশ্ত বলেই গণ্য হবে, যা সে পরিবারবর্গের জন্য
পূর্বেই করে ফেলেছে। এতে কুরবাণীর কিছুই নেই। তখন আবূ বুরদাহ ইব্নু নিয়ার (রাঃ)
নামক এক আনসারী বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি তো যবেহ্ করে ফেলেছি। এখন আমার নিকট
এমন একটি মেষ শাবক আছে যা এক বছর বয়সের মেষের চেয়ে উৎকৃষ্ট। তিনি বললেন, সেটির
স্থলে এটাকে যবেহ্ করে দাও। তবে তোমার পর অন্য কারো জন্য তা যথেষ্ট হবে না।
১৩/৯. অধ্যায়ঃ
‘ঈদের জামা’আতে এবং হারাম শরীফে অস্ত্রবহন করা নিষিদ্ধ।
হাসান বাসরী (রহঃ) বলেছেন, শত্রুর ভয় ছাড়া ‘ঈদের দিনে অস্ত্র বহণ
করতে তাদের নিষেধ করা হয়েছে।
৯৬৬
حَدَّثَنَا
زَكَرِيَّاءُ بْنُ يَحْيَى أَبُو السُّكَيْنِ، قَالَ حَدَّثَنَا الْمُحَارِبِيُّ،
قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُوقَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ
كُنْتُ مَعَ ابْنِ عُمَرَ حِينَ أَصَابَهُ سِنَانُ الرُّمْحِ فِي أَخْمَصِ
قَدَمِهِ، فَلَزِقَتْ قَدَمُهُ بِالرِّكَابِ، فَنَزَلْتُ فَنَزَعْتُهَا وَذَلِكَ
بِمِنًى، فَبَلَغَ الْحَجَّاجَ فَجَعَلَ يَعُودُهُ فَقَالَ الْحَجَّاجُ لَوْ
نَعْلَمُ مَنْ أَصَابَكَ. فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ أَنْتَ أَصَبْتَنِي. قَالَ
وَكَيْفَ قَالَ حَمَلْتَ السِّلاَحَ فِي يَوْمٍ لَمْ يَكُنْ يُحْمَلُ فِيهِ،
وَأَدْخَلْتَ السِّلاَحَ الْحَرَمَ وَلَمْ يَكُنِ السِّلاَحُ يُدْخَلُ
الْحَرَمَ.
সা’ঈদ ইব্নু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইব্নু ‘উমর (রাঃ)-এর সংগে ছিলাম যখন বর্শার অগ্রভাগ
তাঁর পায়ের তলদেশে বিদ্ধ হয়েছিল। ফলে তাঁর পা রেকাবের সঙ্গে আটকে গিয়েছিল। আমি তখন
নেমে সেটি টেনে বের করে ফেললাম। এটা ঘটেছিল মিনায়। এ সংবাদ হাজ্জাজের নিকট পৌঁছলে
তিনি তাঁকে দেখতে আসেন। হাজ্জাজ বললো, যদি আমি জানতে পারতাম কে আপনাকে আঘাত করেছে,
(তবে তাকে শাস্তি দিতাম)। তখন ইব্নু ‘উমর (রাঃ) বললেন, তুমিই আমাকে আঘাত করেছ। সে
বলল, তা কিভাবে? ইব্নু ‘উমর (রাঃ) বললেন, তুমিই সেদিন (ঈদের দিন) অস্ত্র ধারণ
করেছ, যে দিন অস্ত্র বহন করা হতো না। তুমিই অস্ত্রকে হারামের মধ্যে প্রবেশ করিয়েছ
অথচ হারামের মধ্যে কখনো অস্ত্র প্রবেশ করা হয় না।
৯৬৭
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ يَعْقُوبَ، قَالَ حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ عَمْرِو
بْنِ سَعِيدِ بْنِ الْعَاصِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ دَخَلَ الْحَجَّاجُ عَلَى ابْنِ
عُمَرَ وَأَنَا عِنْدَهُ، فَقَالَ كَيْفَ هُوَ فَقَالَ صَالِحٌ. فَقَالَ مَنْ
أَصَابَكَ قَالَ أَصَابَنِي مَنْ أَمَرَ بِحَمْلِ السِّلاَحِ فِي يَوْمٍ لاَ
يَحِلُّ فِيهِ حَمْلُهُ، يَعْنِي الْحَجَّاجَ.
সা‘ঈদ ইব্নু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইব্নু ‘উমর (রাঃ)- এর নিকট হাজ্জাজ এলো। আমি তখন তাঁর
নিকট ছিলাম। হাজ্জাজ জিজ্ঞেস করলো, তিনি কেমন আছেন? ইব্নু ‘উমর (রাঃ) বললেন, ভাল।
হাজ্জাজ জিজ্ঞেস করলো, আপনাকে কে আঘাত করেছে? তিনি বললেন আমাকে সে ব্যক্তি আঘাত
করেছে যে, সে দিন অস্ত্র বহনের আদেশ দিয়েছে যে দিন তা বহন করা বৈধ নয়। অর্থাৎ
হাজ্জাজ।
১৩/১০. অধ্যায়ঃ
ঈদের সালাতের জন্য সকাল সকাল রওআনা হওয়া ।
‘আবদুল্লাহ ইব্নু বুস্র (রাঃ) বলেছেন, আমরা চাশ্তের সালাতের সময়
‘ঈদের সালাত সমাপ্ত করতাম।
৯৬৮
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ زُبَيْدٍ، عَنِ
الشَّعْبِيِّ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ خَطَبَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يَوْمَ النَّحْرِ قَالَ " إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ بِهِ فِي يَوْمِنَا
هَذَا أَنْ نُصَلِّيَ ثُمَّ نَرْجِعَ فَنَنْحَرَ، فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدْ
أَصَابَ سُنَّتَنَا، وَمَنْ ذَبَحَ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ فَإِنَّمَا هُوَ لَحْمٌ
عَجَّلَهُ لأَهْلِهِ، لَيْسَ مِنَ النُّسُكِ فِي شَىْءٍ ". فَقَامَ
خَالِي أَبُو بُرْدَةَ بْنُ نِيَارٍ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنَا ذَبَحْتُ
قَبْلَ أَنْ أُصَلِّيَ وَعِنْدِي جَذَعَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُسِنَّةٍ. قَالَ
" اجْعَلْهَا مَكَانَهَا ـ أَوْ قَالَ اذْبَحْهَا ـ وَلَنْ تَجْزِيَ
جَذَعَةٌ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ ".
বারাআ ইব্নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানীর দিন
আমাদের উদ্দেশে খুত্বা দেন। তিনি বলেন, আজকের দিনে আমাদের প্রথম কাজ হল সালাত
আদায় করা। অতঃপর ফিরে এসে কুরবানী করা। যে ব্যক্তি এরূপ করবে সে আমাদের রীতি পালন
করল। যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বেই যবেহ্ করবে, তা শুধু গোশতের জন্যই হবে, যা সে
পরিবারের জন্য তাড়াতাড়ি করে ফেলেছে। কুরবানী সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। তখন আমার
মামা আবূ বুরদাহ ইব্নু নিয়ার (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমি তো
সালাতের পূর্বেই যবেহ্ করে ফেলেছি। তবে এখন আমার নিকট এমন একটি মেষশাবক আছে যা
‘মুসিন্না’ [১] মেষের চাইতেও উত্তম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ তার স্থলে এটিই (কুরবানী) করে নাও। অথবা তিনি বললেনঃ এটিই যবেহ্ কর। তবে
তুমি ব্যতীত আর কারো জন্যই মেষ শাবক যথেষ্ট হবে না।
[১] ‘মুসিন্না’ অর্থ যার
বয়স এক বছর পূর্ণ হয়ে দ্বিতীয় বছরে পড়েছে।
১৩/১১. অধ্যায়ঃ
তাশ্রীকের দিনগুলোতে ‘আমলের গুরুত্ব।
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, وَاذكُرُوا اللهِ فِي اَيَّامِ مَعلُومَاتٍ (সূরা আল-বাকারা ২/২০৩) দ্বারা (যিলহাজ্জ মাসের) দশ দিন বুঝায় এবং وَالاَيَّامُ المَعدُودَاتُ দ্বারা ‘আইয়ামুত তাশরীক’ বুঝায়। ইব্নু ‘উমর ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) এই
দশ দিন তাকবীর বলতে বলতে বাজারের দিকে যেতেন এবং তাদের তাকবীরের সঙ্গে অন্যরাও
তাকবীর বলত। মুহাম্মদ ইব্নু ‘আলী (রহঃ) নফল [১] সালাতের পরেও তাকবীর বলতেন।
[১] এটি তাঁর নিজস্ব মত। অন্য ইমামগণের মতে শুধু ফরয সালাতের পরেই তাকবীর বলতে হয়।
[১] এটি তাঁর নিজস্ব মত। অন্য ইমামগণের মতে শুধু ফরয সালাতের পরেই তাকবীর বলতে হয়।
৯৬৯
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ
مُسْلِمٍ الْبَطِينِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " مَا الْعَمَلُ فِي أَيَّامِ
الْعَشْرِ أَفْضَلَ مِنَ الْعَمَلِ فِي هَذِهِ ". قَالُوا وَلاَ
الْجِهَادُ قَالَ " وَلاَ الْجِهَادُ، إِلاَّ رَجُلٌ خَرَجَ يُخَاطِرُ
بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ فَلَمْ يَرْجِعْ بِشَىْءٍ ".
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যিলহাজ্জ মাসের
প্রথম দশ দিনের ‘আমলের চেয়ে অন্য কোন দিনের ‘আমলই উত্তম নয়। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন,
জিহাদও কি (উত্তম) নয়? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ জিহাদও নয়।
তবে সে ব্যক্তির কথা ছাড়া যে নিজের জান ও মালের ঝুঁকি নিয়েও জিহাদে যায় এবং কিছুই
নিয়ে ফিরে আসে না।
১৩/১২. অধ্যায়ঃ
মিনা’র দিনগুলোতে এবং সকালে আরাফায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলা
‘উমর (রাঃ) মিনায় নিজের তাবূতে তাকবীর বলতেন। মসজিদের লোকেরা তা শুনে
তারাও তাকবীর বলতেন এবং বাজারের লোকেরাও তাকবীর বলতেন। ফলে সমস্ত মিনা তাকবীরে
আওয়াযে গুঞ্জরিত হয়ে উঠত। ইব্নু ‘উমর (রাঃ) সে দিনগুলোতে মিনায় তাকবীর বলতেন এবং
সালাতের পরে, বিছানায়, খীমায়, মজলিসে এবং চলার সময় এ দিনগুলোতে তাকবীর বলতেন।
মাইমূনা (রাঃ) কুরবানীর দিন তাকবীর বলতেন এবং মহিলারা আবান ইব্নু ’উসমান ও ‘উমর
ইব্নু ’আবদুল ’আযীয (রহঃ)- এর পিছনে তাশরীকের রাতগুলোতে মসজিদে পুরুষদের সঙ্গে
সঙ্গে তাকবীর বলতেন।
৯৭০
حَدَّثَنَا
أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الثَّقَفِيُّ، قَالَ سَأَلْتُ أَنَسًا وَنَحْنُ
غَادِيَانِ مِنْ مِنًى إِلَى عَرَفَاتٍ عَنِ التَّلْبِيَةِ كَيْفَ كُنْتُمْ
تَصْنَعُونَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ كَانَ يُلَبِّي الْمُلَبِّي
لاَ يُنْكَرُ عَلَيْهِ، وَيُكَبِّرُ الْمُكَبِّرُ فَلاَ يُنْكَرُ عَلَيْهِ.
মুহাম্মদ ইব্নু আবূ বাক্র সাক্বাফী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা সকাল বেলা মিনা হতে যখন ‘আরাফাতের দিকে যাচ্ছিলাম,
তখন আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ)-এর নিকট তালবিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কিরূপ করতেন? তিনি বললেন, তালবিয়া
পাঠকারী তালবিয়া পড়ত, তাকে নিষেধ করা হতো না। তাকবীর পাঠকারী তাকবীর পাঠ করত,
তাকেও নিষেধ করা হতো না।
৯৭১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدٌ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ عَاصِمٍ،
عَنْ حَفْصَةَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ كُنَّا نُؤْمَرُ أَنْ نَخْرُجَ
يَوْمَ الْعِيدِ، حَتَّى نُخْرِجَ الْبِكْرَ مِنْ خِدْرِهَا، حَتَّى نُخْرِجَ
الْحُيَّضَ فَيَكُنَّ خَلْفَ النَّاسِ، فَيُكَبِّرْنَ بِتَكْبِيرِهِمْ،
وَيَدْعُونَ بِدُعَائِهِمْ يَرْجُونَ بَرَكَةَ ذَلِكَ الْيَوْمِ وَطُهْرَتَهُ.
উম্মু ‘আতিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন আমাদের বের হবার আদেশ দেয়া হত। এমন কি আমরা
কুমারী মেয়েদেরকেও অন্দর মহল হতে বের করতাম এবং ঋতুবতী মেয়েদেরকেও। তারা পুরুষদের
পিছনে থাকতো এবং তাদের তাকবীরের সাথে তাকবীর বলতো এবং তাদের দু’আর সাথে দু’আ করত-
সে দিনের বরকত এবং পবিত্রতা তারা আশা করত।
১৩/১৩. অধ্যায়ঃ
‘ঈদের দিন যুদ্ধের হাতিয়ারের সম্মুখে সালাত আদায়।
৯৭২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، قَالَ حَدَّثَنَا
عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم كَانَ تُرْكَزُ الْحَرْبَةُ قُدَّامَهُ يَوْمَ الْفِطْرِ وَالنَّحْرِ
ثُمَّ يُصَلِّي.
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর সামনে যুদ্ধের হাতিয়ার রেখে দেয়া হত। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করতেন।
১৩/১৪. অধ্যায়ঃ
‘ঈদের দিন ইমামের সামনে বর্শা পুঁতে সালাত আদায় করা।
৯৭৩
حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالَ حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، قَالَ حَدَّثَنَا
أَبُو عَمْرٍو، قَالَ أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَغْدُو إِلَى الْمُصَلَّى، وَالْعَنَزَةُ بَيْنَ
يَدَيْهِ، تُحْمَلُ وَتُنْصَبُ بِالْمُصَلَّى بَيْنَ يَدَيْهِ فَيُصَلِّي
إِلَيْهَا.
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর সামনে বর্শা পুঁতে দেয়া হত। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করতেন।
১৩/১৫. অধ্যায়ঃ
নারীদের ও ঋতুবতীদের ‘ঈদগাহে যাওয়া।
৯৭৪
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ
أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ أُمِرْنَا أَنْ
نُخْرِجَ، الْعَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ. وَعَنْ أَيُّوبَ عَنْ حَفْصَةَ
بِنَحْوِهِ. وَزَادَ فِي حَدِيثِ حَفْصَةَ قَالَ أَوْ قَالَتِ الْعَوَاتِقَ
وَذَوَاتِ الْخُدُورِ، وَيَعْتَزِلْنَ الْحُيَّضُ الْمُصَلَّى.
উম্মু ‘আতিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন (‘ঈদের সালাতের উদ্দেশে) যুবতী ও পর্দানশীন মেয়েদের নিয়ে
যাবার জন্য আমাদের নির্দেশ দেয়া হতো। আইয়ুব (রহঃ) হতে হাফসা (রাঃ) সূত্রে অনুরূপ
বর্ণিত আছে এবং হাফসা (রাঃ) হতে বর্ণিত রিওয়ায়াতে অতিরিক্ত বর্ণনা আছে, ‘ঈদগাহে
ঋতুবতী নারীরা আলাদা থাকতেন।
১৩/১৬. অধ্যায়ঃ
বালকদের ‘ঈদমাঠে গমন।
৯৭৫
حَدَّثَنَا
عَمْرُو بْنُ عَبَّاسٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، قَالَ
خَرَجْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ فِطْرٍ أَوْ أَضْحَى،
فَصَلَّى ثُمَّ خَطَبَ، ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ فَوَعَظَهُنَّ وَذَكَّرَهُنَّ،
وَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে ‘ঈদুল
ফিতর বা আযহার দিন বের হলাম। তিনি সালাত আদায় করলেন। অতঃপর খুতবা দিলেন। অতঃপর
নারীদের নিকট গিয়ে তাঁদের নসীহত করলেন এবং তাঁদেরকে সদকা করার নির্দেশ দিলেন।
No comments